hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সাজদা থেকে (বসার পর) উঠার পদ্ধতি

লেখকঃ মুহাম্মাদ আলী খাসখিলি

১২
সদুক্ব বনাম মাক্ববুল রাবী ও শায়েখ আলবানী (রহ)-এর পক্ষপাতিত্ব
ইমাম আলবানী (রহ) নিজের নিয়মের পক্ষে দশটি এমন বর্ণনা উল্লেখ করেছেন যাদেরকে (রাবীদেরকে) ইবনে হাজার সদুক্ব, মাহাল্লুহুস সিদক্ব প্রভৃতি বলেছেন। আর স্বয়ং শায়েখ আলবানী (রহ)-এর উক্তি অনুযায়ী এদেরকে ইমাম ইবনে হিব্বান (রহ) ছাড়া কেউই সিক্বাহ বলেননি। এমনকি তিনি (রহ) একজন রাবী মালিক বিন খায়ের যিয়াদি সম্পর্কে বিবরণ উল্লেখ করে নিজের পক্ষকে মজবুত করার চেষ্টা করেছেন।

যাদের বর্ণনা ইমাম আলবানী (রহ) উল্লেখ করেছেন তারা হলেন:

১) আহমাদ বিন সাবিত আল-জাহদারি, ২) আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন ইয়াহইয়া আল-বসরি, ৩) আহমাদ বিন মুসাররাফ আল-ইয়ামা, ৪) ইবরাহিম বিন আব্দুল্লাহ বিন হারিস আল-জামহি, ৫) ইবরাহিম বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ আল-আসাদি, ৬) ইবরাহিম বিন মুহাম্মাদ বিন মুআবিয়াহ বিন আব্দুল্লাহ, ৭) ইসহাক্ব বিন ইবরাহিম বিন দাউদ আস-সিওয়াক্ব, ৮) ইসমাঈল বিন ইবরাহিম আল-বালিসি, ৯) ইসমাঈল বিন মাসউদ বিন হাকাম আয-যুরক্বি, ১০) আসওয়াদ বিন সাঈদ আল-হামদানি। [তামামুল মিন্নাহ পৃ. ২০৪]

অতঃপর মালিক বিন খায়ের যিয়াদি সম্পর্কে ইমাম যাহাবী থেকে নিম্নোক্ত উদ্ধৃতি দিয়েছেন:

" محله الصدق . . . روى عنه حيوة بن شريح ، وابن وهب ، وزيد بن الحباب ، ورشدين . قال ابن القطان : هو ممن لم تثبت عدالته . . . يريد أنه ما نص أحد على أنه ثقة . . . والجمهور على أن من كان من المشايخ قد روى عنه جماعة ، ولم يأت بما ينكر عليه ، أن حديثه صحيح "

“মালিক বিন খায়ের মাহাল্লুহুস সিদক্ব। … তার থেকে বর্ণনা করেছেন হায়ওয়াহ বিন শারিহ, ইবনে ওয়াহহাব, যায়েদ বিন হাব্বাব ও রুশদায়ন। ইবনুল ক্বত্তান বলেন: সে ঐ সমস্ত রাবীদের অন্তর্ভুক্ত যাদের আদালত (বিশ্বস্ততা) প্রমাণিত নয়। … এর দাবি হলো, সিক্বাহ হওয়ার ক্ষেত্রে তার পক্ষে একটিও দলিল নেই। … জুমহুরের নিকট যার কাছ থেকে মাশায়েখের একটি জামাআত বর্ণনা করেছেন, তার ক্ষেত্রে মুনকার বর্ণনা প্রযোজ্য নয়। তার হাদীস সহীহ হিসেবে গণ্য।” [তামামুল মিন্নাহ পৃ. ২০৪]

এখন আমরা ইমাম আলবানী (রহ)-এরউপস্থাপনাকে দু’টি স্তরে বিস্তারিত জবাব দেব। প্রথমত, ইমাম সাহেব যে দশ জন রাবীর বর্ণনা পেশ করেছেন, তার অধিকাংশের তাওসিক্ব বর্ণিত হয়েছে। যেমন –

ক) রাবী নং ৩, ৭, ৮-কে ইমাম ইবনে হিব্বান কেবল ‘কিতাবুস সিক্বাতে’-ই উল্লেখ করেননি। বরং ‘মুস্তাকিমুল হাদীস’-ও বলেছেন। [তাহযিবুত তাহযিব পৃ. ১/১১৬, ১৭৮ ও ২৪৫]

খ) রাবী নং ১ অর্থাৎ- আহমাদ বিন সাবিত আল-জাহদারি-কে ‘মুস্তাক্বিমুল আমর ফিল হাদীস’ বলা হয়েছে। [তাহযিব ১/১৮]

গ) রাবী নং ২ অর্থাৎ- আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন ইয়াহইয়া আল-বসরি-কে ইমাম আবু হাতিম (রহ) ও তাঁর ছেলে উভয়েই ‘সদুক্ব’ বলেছেন। আর ইবনে হিব্বান বলেছেন: ‘তিনি মুতক্বিন ছিলেন।’ [তাহযিবুত তাহযিব ১/৬৯, জারাহ ওয়াত তা‘দিল ২/৭৪]

এক্ষণে যখন উসূলে হাদীস মোতাবেক তাদের প্রতি জারাহ বর্ণিত হয়নি, আর অন্যান্য ইমামের পক্ষ থেকে তাদের তাওসিক্ব বর্ণিত হয়েছে (ইবনে হিব্বান কর্তৃক ‘মুস্তাক্বিমুল হাদীস’ বলা। এ থেকে প্রমাণিত হয়, তিনি তার হাদীস সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে জ্ঞাত)। ফলে হাফেয ইবনে হাজার (রহ) তাঁকে ‘সদুক্ব’ গণ্য করেছেন। বাকি থাকল ঐ বর্ণনা, যা ইবনে হিব্বান কেবল তাঁর কিতাব ‘সিক্বাতে’ উল্লেখ করেছেন। কিন্তু কোনো হুকুম লাগাননি। হাফেয ইবনে হাজার (রহ) কর্তৃক তাঁকে ‘সদুক্ব’ বলাটা আমাদের তাহক্বীক্ব মোতাবেক ভুলের উপর প্রতিষ্ঠিত। কেননা হাফেয সাহেব এক্ষেত্রে বর্ণনাকে সাধারণভাবে ‘মাক্ববুল’ [. মাক্ববুল : এটি হাফেয ইবনে হাজার (রহ) এর নিজস্ব পরিভাষা। কেননা ‘আত-তাক্বরিবে’ (পৃ. ১০) বলেছেন : من ليس له من الحديث إلا قليل، و لم يثبت فيه ما يترك حديثه من أجله، و إليه الإشارة بلفظ : مقبول، حيث يتابع , و إلا فلين الحديث “যার থেকে সামান্য হাদীস ছাড়া কিছু বর্ণিত হয়নি। আর এটাও প্রমাণ হয়নি যে, তার থেকে উন্নতদের হাদীস তিনি ছেড়ে দেননি। এক্ষেত্রে তার হাদীসের ব্যাপারে ইশারা করা হয় : মাক্ববুল, হায়সু ইয়ুতাবি‘ (অনুসারী); অন্যথায় তা লাইয়িনুল হাদীস হয়।”তেমনি মাসতুর বা মাজহুল রাবী সম্পর্কে বলেছেন : من روى عنه أكثر من واحد ولم يوثق وإليه الاشارة بلفظ " مستور " أو " مجهول الحال "“যার থেকে একের অধিক মুহাদ্দিস বর্ণনা করেছেন এবং তার প্রতি তাওসিক্বের শব্দ ব্যবহার করেননি, সেক্ষেত্রে সে ‘মাসতুর’ বা ‘মাজহুলুল হাল’।] বা ‘মাসুতর’ থেকে অধিক মর্যাদা দেননি। বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য আমি নিচে এ সম্পর্কে কয়েকটি উদাহরণ পেশ করছি:

১) আহমাদ বিন আইয়ুব বিন রাশিদ আল-বসরি: তাঁর থেকে বর্ণনা করেছেন - ইমাম বুখারী (রহ) (আদাবুল মুফরাদে’), আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন হাম্বাল (রহ), আবু যুরআহ (রহ), হাসান বিন আলী আল-মু‘আম্মারি (রহ), আবু ইয়া‘লা (রহ), আলী বিন হুসাইন বিন জুনাইদ (রহ)। আর ইমাম ইবনে হিব্বান (রহ) তাকে ‘কিতাবুস সিক্বাতে’ বর্ণনা করেছেন।

অথচ এ সমস্ত জলিলুল ক্বদর ইমাম তাঁর থেকে বর্ণনা করা এবং ইবনে হিব্বানের ‘সিক্বাহ’ বলার পরও হাফেয ইবনে হাজার তাঁকে মাক্ববুল বলেছেন। [তাক্বরিব: ১১ পৃ.]

২) ইবরাহিম বিন মারযুক্ব আস-সাক্বাফি: তাঁর থেকে বর্ণনা করেছেন– আবু বাকার (বিন আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ) বিন আবুল আসওয়াদ, মুহাম্মাদ বিন সাঈদ আল-খাযায়ি, সাঈদ বিন আওন ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন (রহ)। ইমাম আবু হাতিম (রহ) বলেছেন: ‘শায়েখ, তার হাদীস লেখা হয়।’ আর ইবনে হিব্বান তাঁর ‘সিক্বাতে’ উল্লেখ করেছেন। [আত-তাহযিব ১/১৪২, আল-জারাহ ওয়াত তা’দিল ২/১৩৭, তারিখে কাবির লিল-বুখারী ১/৩৩০]

অথচ হাফেয ইবনে হাজার (রহ) তাকে ‘মাক্ববুল’ বলেছেন।[আত-তাক্বরিব:২৩ পৃ.]

৩) আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন উমার বিন আলী বিন আবু তালিব: তাঁর থেকে বর্ণনা করেছেন – তাঁর ছেলে ঈসা বিন আব্দুল্লাহ, হুসাইন বিন যায়েদ বিন আলী বিন হুসাইন বিন আলী বিন আবু তালিব, আব্দুল্লাহ বিন মুবারক, মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল বিন আবি ফাসিক ও আবু উসামাহ প্রমুখ। ইবনে হিব্বান তাঁকে ‘সিক্বাতে’ উল্লেখ করেছেন। ইমাম আলী ইবনুল মাদীনি তাঁকে ‘মধ্যপন্থী’ বলেছেন।’[তাহ. তাহযিব ৬/১৬]

অথচ হাফেয ইবনে হাজার (রহ) তাঁকে ‘মাক্ববুল’ বলেছেন।[আত-তাক্বরিব: ১৮৮]

৪) আব্দুল্লাহ বিন ওয়াক্বিদ বিন আব্দুল্লাহ বিন উমার বিন খাত্তাব আল-মাদানি: তাঁর থেকে বর্ণনা করেছেন– উমার বিন মুহাম্মাদ বিন ইয়াযিদ, আব্দুল্লাহ বিন আবি বাকার বিন মুহাম্মাদ বিন আমর বিন হাযম, ফুযায়েল বিন গাযওয়ান, ইবরাহিম বিম মুজমা‘, সাঈদ বিন ইবরাহিম, মুহাম্মাদ বিন জা‘ফার, ওয়ালিদ বিন মুসলিম প্রমুখ। তিনি সহীহ মুসলিম, আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ’র রাবী। ইবনে হিব্বান (রহ) তাঁকে ‘সিক্বাতে’ উল্লেখ করেছেন। [তাহযিব ৬/৬০, জারাহ ওয়াত তা‘দিল ৫/১৯০]

হাফেয ইবনে হাজার (রহ) তাঁকে ‘মাক্ববুল’ বলেছেন।[আত-তাক্বরিব: ১৯২-৯৩ পৃ.]

৫) আব্দুল্লাহ বিন ওয়াযাহ বিন সাঈদ আল-লু‘লুয়ি: তাঁর থেকে বর্ণনা করেছেন– ইমাম তিরমিযী, আবু হাতিম, উমার বিন মুহাম্মাদ বিন বাজিরিল বাজিরি, ইবনে খুযায়মাহ, ইয়াক্বুব বিন সুফিয়ান, মুসা বিন ইসহাক্ব, ইবনে আবিদ দুনইয়া, আবূ বাকার আহমাদ বিন আমর বিন আব্দুল খালিক্ব বাযযার, আহমাদ বিন হুসাইন আল-আওফি, ইয়াহইয়া বিন মুহাম্মাদ বিন সাঈদ প্রমুখ। ইবনে হিব্বান (রহ) তাঁকে ‘সিক্বাতে’ উল্লেখ করেছেন। আর ইমাম তিরমিযী (রহ) তার হাদীসকে ‘হাসান সহীহ’ বলেছেন। [তাহযিব ৬/৬৩, তিরমিযী ৪/৩১৪ হা/১৯৮৯]

এরপরেও হাফেয ইবনে হাজার (রহ) তাঁকে ‘মাক্ববুল’ থেকে অধিক স্তরের বর্ণনা করেননি। [আত-তাক্বরিব: ১৯৩ পৃ.]

৬) আব্দুল আ‘লা বিন আব্দুল্লাহ বিন আমির আল-বসরি: তার থেকে বর্ণনা করেছেন– খালিদ আল-হিযা, হারিস বিন আব্দুর রহমান, হাসান বিন ক্বাসিম আল-আরযুক্বি, আমর বিন আসবাগ ও মুখাল্লিদ ওয়ালিদ আবু আসিম। ইবনে হিব্বান (রহ) তাঁকে ‘সিক্বাতে’ উল্লেখ করেছেন ...। “ [তাহযিব: ৬/৮৭]

হাফেয ইবনে হাজার (রহ) তাঁকে ‘মাক্ববুল’ বলেছেন। [আত-তাক্বরিব: ১৯৫ পৃ.]

৭) আব্দুল হামিদ বিন বিকার আস-সালমা আদ-দামেশকি: তার থেকে বর্ণনা করেছেন– আবু দাউদ তাঁর ‘মারাসিলে’, নাসাঈ ‘মুসনাদে মালিকে’। তা ছাড়া ইমাম আবু যুরআহ রাযি, আবু আব্দুল মালিক আহমাদ বিন ইবরাহিম, আব্বাস বিন ওয়ালিদ, ইয়াযিদ বিন মুহাম্মাদ, আহমাদ বিন মা‘লা বিন ইয়াযিদ, সা‘দ বিন মুহাম্মাদ আল-বায়রুতাও বর্ণনা করেছেন। ইবনে হিব্বান (রহ) তাঁকে ‘সিক্বাতে’ উল্লেখ করেছেন। [তাহযিবুত তাহযিব ৬/৯৯, আল-জারাহ ওয়াত তা‘দিল ৬/৯]

হাফেয ইবনে হাজার (রহ) তাঁকে ‘মাক্ববুল’ বলেছেন। [আত-তাক্বরিব: ১৯৬ পৃ.]

৮) আব্দ রব্বিহি বিন খালিদ বিন আব্দুল মালিক আবু মুগলাস বসরি: তার থেকে বর্ণনা করেছেন– ইবনে মাজাহ, ইবনে আবি আসিম, ইবনে আবিদ দুনইয়া, আল-মুআম্মারি, ইয়াক্বুব বিন সুফিয়ান, মুহাম্মাদ বিন আলী বিন হাবিব আল-রুক্বা প্রমুখ। ইবনে হিব্বান (রহ) তাঁকে ‘সিক্বাতে’ উল্লেখ করেছেন। [তাহ. তাহযিব ৬/১১৫]

হাফেয ইবনে হাজার (রহ) তাঁকে ‘মাক্ববুল’ বলেছেন। [আত-তাক্বরিব: ১৯৬ পৃ.]

৯) আব্দুর রহমান বিন বাশার বিন মাসউদ আল-আনসারি: ‘তাহযিব’ ও ‘আল-জারাহ ওয়াত তা‘দিলে’ তার পিতার নাম বাশার লেখা হয়েছে। পক্ষান্তরে ‘তাক্বরিবে’ বাশির লেখা হয়েছে। এখানে বাশার-ই সহীহ।

সে মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ‘র রাবী। তার থেকে বর্ণনা করেছেন– ইবরাহিম নাখঈ, মুহাম্মাদ বিন সিরিন, মুসা বিন আব্দুল্লাহ বিন ইয়াযিদ আল-খাতমি, জা‘ফার বিন আবু ওয়াহশিয়া, রিজাউল আনসারি ও আবু হুসাইন। ইবনে হিব্বান (রহ) তাঁকে ‘সিক্বাতে’ উল্লেখ করেছেন। আর ইবনে সা‘দ তাঁকে ‘কম হাদীস বর্ণনাকারী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। [তাহযিব ৬/১৩২, জারাহ ওয়াত তা‘দিল ৫/২১৪-১৫]

হাফেয ইবনে হাজার (রহ) তাঁকে ‘মাক্ববুল’ বলেছেন। [আত-তাক্বরিব: ১৯৯ পৃ.]

১০) মুসাওওয়ার বিন রিফাআহ বিন আবি মালিক আল-কুরযা: তার থেকে বর্ণনা করেছেন– ইমাম মালেক, ইবনে ইসহাক্ব, আবু আলকামা আল-ফারাওয়া, আবু বাকার বিন আবি সাবরাহ, ইবরাহিম বিন সামামাহ, দাউদ বিন সিনান, আব্দুর রহমান বিন উরওয়াহ, ইবরাহিম বিন সা‘দ বর্ণনা করেছেন। আর ইবনে হিব্বান তাঁকে ‘কিতাবুস সিক্বাতে’ বর্ণনা করেছেন। [তাহযিব ১০/১৩৬, আল-জারাহ ওয়াত তা‘দিল ৮/২৯৭-৮, তারিখুল কাবির ৭/৪১১]

হাফেয ইবনে হাজার (রহ) তাঁকে ‘মাক্ববুল’ বলেছেন। [আত-তাক্বরিব: ৩৩৭ পৃ.]

উক্ত উদাহরণগুলো থেকে এটা সুর্যের মতো সুস্পষ্ট, এ ধরনের রাবী – যাদের থেকে একটি জামাআত বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম ইবনে হিব্বান ‘কিতাবুস সিক্বাতে’ উল্লেখ করেছেন। কিন্তু কোনো মুহাদ্দিসের পক্ষ থেকে তার তাওসিক্ব প্রমাণিত নয়। আবার হাফেয ইবনে হাজার (রহ)-এর নিকট তিনি ‘মাক্ববুল’। এর দাবি হলো, যদি তার মুতাবাআত থাকে, তবে তিনি ‘মাক্ববুল’। অন্যথায় তিনি ‘লাইয়িনুল হাদীস’।

… উক্ত উদাহরণের আলোকে আমরা এটা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে, হাফেয ইবনে হাজার (রহ) হায়সাম বিন ইমরান-কে সর্বোচ্চ মাক্ববুল বলেছেন।

এ কারণে ইমাম আলবানী (রহ) কর্তৃক এ ধরনের রাবীকে ‘সদুক্ব ও দলিলযোগ্য’ বলাটা অনেক বড় …।

ইমাম আলবানী (রহ)-এর পক্ষ থেকে ইমাম যাহাবী (রহ)-এর বক্তব্যকে দলিল হিসেবে উল্লেখ করাটাও সংগত হয়নি।

প্রথমত: ইমাম আলবানী (রহ) উদ্ধৃতি দেয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম মানেননি। যে বক্তব্য ইমাম আলবানী (রহ) উল্লেখ করেননি, তা হলো:

وفي رواة " الصحيحين " عدد كثير ما علمنا أن أحدا نص على توثيقهم والجمهور على أن من كان من المشايخ قد روى عنه جماعة ولم يأت بما ينكر عليه أن حديثه صحيح

“সহীহাইনে (বুখারী-মুসলিমে) এমন অনেক সংখ্যক বর্ণনা আছে যাদের (রাবীদের) সম্পর্কে আমরা জানি না তাদের সিক্বাহ হওয়ার ব্যাপারে কোনো নস (প্রমাণ) রয়েছে। জুমহুরের নিকট যে সমস্ত রাবী মাশায়েখের কাছ থেকে বর্ণনা করেছেন তাদের থেকে কোনো জামাআত বর্ণনা করলে সেটা মুনকার হয় না, কেননা তাদের হাদীস সহীহ।” [মিযানুল ই‘তিদাল ৩/৪২৬]

ইমাম যাহাবী (রহ)-এর উক্তিটি ইবনুল ক্বত্তানের উক্তি “ هو ممن لم يثبت عدالته ” -এর খণ্ডনে বর্ণিত হয়েছে। কেননা ইমাম ইবনুল ক্বত্তানের রেওয়ায়াত সম্পর্কিত নিয়ম সবার থেকে ভিন্ন। স্বয়ং ইমাম যাহাবী (রহ) ইবনুল ক্বত্তানের নিয়মটি এভাবে উল্লেখ করেছেন:

فإن ابن القطان يتكلم في كل من لم يقل فيه إمام عاصر ذاك الرجل أو أخذ عمن عاصره ما يدل على عدالته .

“অর্থাৎ ইবনুল ক্বত্তান এমন প্রত্যেক রাবীর প্রতি কালাম করেছেন, যাদের সম্পর্কে তাঁর সমসাময়িক ইমামদের থেকে বর্ণিত হয়নি, কিংবা সমসাময়িক ইমামদের থেকে তার আদালতের দলিল বর্ণিত হয়নি।” [মিযানুল ই‘তিদাল ১/৫৫৬]

এ ছাড়াও উল্লিখিত স্থানে ইমাম যাহাবী (রহ) ইমাম ইবনুল ক্বত্তানের উপর আপত্তি করে বলেছেন:

ففي الصحيحين من هذا النمط خلق كثير مستورون ما ضعفهم أحد ولا هم بمجاهيل

“সহীহাইনে (বুখারী-মুসলিমে) এমন অনেকসংখ্যক মাসতুর রাবী আছেন, যাদেরকে না কোনো মুহাদ্দিস যঈফ বলেছেন, আর না মাজহুল বলেছেন।” [মিযানুল ই‘তিদাল ১/৫৫৬]

বুঝা গেল, ইমাম যাহাবী (রহ)-এর এই উক্তিটি ছিল সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম সম্পর্কিত। কেননা তাদের বর্ণনাকারীদের তাওসিক্ব ক্বাতঈ, যদিও তাদের তাওসিক্ব আমাদের জানা নেই। এর কারণ হলো, ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম (রহ)-এর শর্তের মধ্যে একটি শর্ত, তারা সিক্বাহ রাবী ছাড়া কারো কাছ থেকে দলিল নেননি। [হাদয়ুস সারি পৃ. ১১ ও ৪০৩, তাদরিবুর রাবী ১/১২৪ ও ১৩০, কওয়ায়িদুত তাহদিস পৃ. ১৯০-৯৩ প্রভৃতি]

বরং ইমাম যাহাবী স্বয়ং ‘আল-মাওয়াক্বিযাহ’ (পৃ. ৭৮)-এ উক্ত বিষয়ের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে লিখেছেন:

الثقة من وثقه كثير ولم يضعف، ودونه من لم يوثق ولا ضعف، فإن خرّج حديث هذا في الصحيحين فهو موثق بذلك

“সিক্বাহ রাবী তিনি – যার প্রতি অধিকাংশ তাওসিক্ব করেছেন, তাঁকে যঈফ বলা যাবে না। এ ছাড়া ঐ সমস্ত রাবী যাদের সিক্বাহ বা যঈফ হওয়াটা বর্ণিত হয়নি, কিন্তু তাদের হাদীস সহীহাইনের অন্তর্ভুক্ত তাঁরা সবাই সিক্বাহ গণ্য হবে।” [যাওয়াবিতে আল-জারাহ ওয়াত তা’দিল লিদ-দুকতুর আব্দুল আযিয বিন মুহাম্মাদ পৃ. ৮৮]

বুঝা গেল, ইমাম আলবানী (রহ) কর্তৃক ইমাম যাহাবী (রহ)-এর উদ্ধৃতি দ্বারা সমস্ত রাবীকে একই হুকুম গণ্য করাটা ভুল। এরই ভিত্তিতে তিনি হায়সাম বিন ইমরানকে ক্বিয়াস করে তাঁকে হুজ্জাত গণ্য করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।

দ্বিতীয়ত: স্বয়ং হাফেয ইবনে হাজার (রহ) ‘লিসানুল মিযানে’ (৫/৩) ইমাম যাহাবী (রহ)-এর আলোচ্য উদ্ধৃতির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে লিখেছেন:

وهذا الذي نسبه إلى آخره لا ينازع فيه بل ليس كذلك بل هذا شيء نادر لأن غالبهم معرفون بالثقة إلا من خرجا له في الاستشهاد

“যা কিছু (ইমাম যাহাবী (রহ)) শেষ পর্যন্ত উল্লেখ করেছেন, এতে না কোনো আপত্তি আছে। আবার না সবক্ষেত্রে বিষয়টি এমন হবে। বরং বিষয়টি নাদির (বিরল)। কেননা অধিকাংশ রাবী সিক্বাহ হওয়ার সাথে সাথে প্রসিদ্ধ হতে হবে। তবে যাদের বর্ণনা (সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে) শাহেদ হিসেবে উল্লিখিত হয়েছে (তারা ছাড়া)।” [আরো দ্র: ফতহুল মুগিস ১/৩২৩]

বুঝা গেল, ইমাম যাহাবী (রহ)-এর উদ্ধৃতি সব ধরনের (বা কিতাবের) বর্ণনা সম্পর্কে প্রযোজ্য নয়। অন্যথায় যে সমস্ত রাবী এ মর্যাদাতে উত্তীর্ণ, তাদের সবাইকে সিক্বাহ বা সদুক্ব গণ্য করতে হয়।

তৃতীয়ত: ইমাম যাহাবী (রহ) কর্তৃক ‘মালিক বিন খায়ের’-কে ‘মাহাল্লুহুস সিদক্ব’ বলাটা ইমাম হাকিমের তাওসিক্বের উপর নির্ভর করার কারণে হয়েছে, আল্লাহই সর্বজ্ঞ। কেননা ইমাম হাকিম (রহ) তাঁকে সিক্বাহ বলেছেন (মুস্তাদরাকে হাকিম ১/১২২)। আর ইমাম হাকিমের উপর নির্ভর করেই যাহাবী (রহ) তাঁকে সিক্বাহ বলেছেন (তালখিস মুস্তাদরাকে হাকিম ১/১২২)। আর যদিও-বা ইবনে হিব্বান (রহ) তাঁকে ‘কিতাবুস সিক্বাতে’ (৭/৪৬) উল্লেখ করেছেন। আর তার উপর কোনো জারাহও নেই। এ কারণে নীতিমালার ভিত্তিতে তিনি তাঁকে সিক্বাহ হিসেবে গণ্য করেছেন।

জ্ঞাতব্য: ‘সিক্বাহ’ ও ‘মাহাল্লুহুস সিদক্ব’-এর মধ্যে স্তরগত পার্থক্য অনেক। [তাইসিরু মুসতালাহুল হাদীস পৃ. ১৫১-৫২]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন