hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সাজদা থেকে (বসার পর) উঠার পদ্ধতি

লেখকঃ মুহাম্মাদ আলী খাসখিলি

যেসব হাদীসে ‘হাত’ শব্দটি ‘হাতের তালু’ অর্থে এসেছে
উক্ত হাদীসগুলোতে জমিনে হাত রাখার দ্বারা হাতের পাতার সাহায্য নেয়াকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে। এ বিষয়টি অনেকগুলো হাদীস থেকে সুস্পষ্ট হয়। তন্মধ্যে নিচে কয়েকটি পেশ করছি:

ক) সাহাবি ইবনে আব্বাস (রা) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ (স) বলেছেন:

أُمِرتُ أن أسجدَ على سبعةٍ أعظُمٍ، على الجبهةِ ... واليدينِ، والركبتينِ، وأطرافِ القدمينِ ... ألخ الحديث

“আমাকে সাতটি অঙ্গে সাজদা করতে হুকুম দেয়া হয়েছে– কপাল, দুই হাত, দুই হাঁটুর, দুই পায়ের পাতার অগ্রভাগ।…” [সহীহ বুখারী হা/৮১২, সহীহ মুসলিম ৪/৪৫৩, নাসাঈ ২/২০৯ (১০৯৭), দারেমি ১/৩৪৬; মিশকাত হা/৮৮৭]

এখানে দুই হাত বলতে দুটি হাতের তালুকে জমিনে রাখার অর্থ হবে। কেননা সহীহ মুসলিমের (৪/৪৫২) একটি বর্ণনাতে الكفيْن والركبتيْن والقدميْن والجبهةِ ‘দুই হাতের তালু, দুই হাঁটুর, দুই পা ও কপাল’ শব্দগুলো এসেছে। অর্থাৎ হাদীসটি দ্বারা اليدينِ (দুই হাত)-এর ব্যাখ্যা করা হয়েছে الكفيْن (দুই হাতের তালু)।

খ) সাহাবি ওয়ায়েল ইবনে হুজর (রা) বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদীসে নবী (স)-এর সালাতের বর্ণনা প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে : فلما سَجَدَ ، سَجَدَ بين كَفَّيْه “যখন তিনি সাজদা করতেন, সাজদা করতে দুই হাতের তালুর মাঝে।” [সহীহ মুসলিম ৪/৩৫৭-৫৮]

এই হাদীসটিতেও اليدينِ (দুই হাত)-এর ব্যাখ্যা করা হয়েছে الكفيْن (দুই হাতের তালু)।

গ) সাহাবি আম্মার বিন ইয়াসার (রা) বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদীসে নবী (স)-এর তায়াম্মুম শিক্ষা দেয়া হয়েছে। এই হাদীসটির শেষে বর্ণিত হয়েছে:

ثم ضربَ بيديه الأرضَ ضربةً واحدةً ، ثم مَسَحَ الشمالَ على اليمينِ ، وظاهرَ كفَيْه ، ووجهَه

“অতঃপর তিনি হাতদুটিকে একবার মাটিতে মারলেন। এরপর মাসাহ করলেন বামকে ডানের উপর রেখে উভয় হাতের পাতার উপরিভাগ ও মুখমণ্ডলকে।” [সহীহ মুসলিম – তায়াম্মুম অধ্যায়]

উক্ত হাদীসে بيديه ‘তাঁর দুই হাত’ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এটি অপর হাদীসে দুই হাতের তালু হিসেবে ব্যাখ্যা এসেছে। তা নিম্নরূপ:

فضرَب النبيُّ صلَّى اللهُ عليه وسلَّم بكفَّيه الأرضَ ، ونفَخ فيهما ، ثم مسَح بهما وجهَه وكفَّيه

“অতঃপর নবী (স) নিজের দুটি হাতের তালুকে মাটিতে মারলেন এবং সে দুটিতে ফুঁক দিলেন। তারপর দুই হাত দ্বারা তাঁর মুখমণ্ডল ও দুই তালু মাসাহ করলেন।” [সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, মিশকাত হা/৫২৯]

অর্থাৎ তায়াম্মুমের ক্ষেত্রে হাত বলতে হাতের তালুকে বুঝানো হয়েছে।

ঘ) যখন রসূলুল্লাহ (স) পুরুষদের থেকে বাইয়াত নিতেন, তখন তাঁর হাতের উপর নিতেন। কিন্তু নারীদের থেকে সব-সময় মুখে বাইয়াত নিতেন। কখনই তিনি তাদের হাত ছুঁতেন না। যেমন– আয়েশা (রা) বলেন:

ما مَسَّت يدُ رسولِ اللَّهِ يدَ امرأةٍ إلَّا امرَأةً يملِكُها

“রসূলুল্লাহ (স)-এর হাত নিজের মহিলা (স্ত্রী) ছাড়া অন্য কোনো নারীর হাতে লাগেনি।” [সহীহ বুখারী মাআ ফতহুল বারি ১৩/২১৬, সহীহ মুসলিম ১৩/১৩-১৪, তিরিমিযী মাআ আহমাদ মুহাম্মাদ শাকির ৫/৩৮৩, ইবনে মাজাহ পৃ. ২১৬, মুসনাদে আহমাদ মাআ ফতহুর রব্বানি ১৭/৩৫১]

এখানে হাত বলতে হাতের পাতাকে বুঝানো হয়েছে, যেভাবে সহীহ মুসলিম (১৩/১৩-১৪) ও ইবনে মাজাহতে (২১৬ পৃ.) ব্যাখ্যা এসেছে।

ঙ) মুসআব বিন সা‘দের হাদীসেও তাতবিক্ব তথা রুকু‘ অবস্থাতে দুই হাতকে মিলিয়ে রানের মধ্যভাগে রাখার বর্ণনা এসেছে। অবশ্য এই আমলটি পরবর্তী সময়ে মানসুখ হয়। তখন রসূলুল্লাহ (স) হাতকে হাঁটুতে রাখতে নির্দেশ দেন। যেমন– সা‘দ (রা) নিজের পুত্র মুসআবকে বলেছেন:

كنا نفعَلُه فنُهِينا عنه ، وأُمِرْنا أن نضعَ أيديَنا على الرُّكَبِ .

“আমাদেরকে এমনটি করতে নিষেধ করা হয়, আর আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয় আমরা যেন আমাদের হাতকে হাঁটুর উপর রাখি।” [সহীহ বুখারী মাআ ফতহুল বারি ২/৩১৯, সহীহ মুসলিম ৫/২০-২১, আবু দাউদ মাআ মুখতাসার মুনযিরি ১/৪১৭-১৮]

এই হাদীসটিতে أيديَنا (আমাদের দুই হাত) আছে। আবার অপর হাদীসে كفيك (তোমার দুই হাতের তালু) শব্দ এসেছে। [দ্র. সুনানে নাসাঈ ২/১৮৫]

এ থেকে সুস্পষ্ট হয়, এখানেও হাত বলতে হাতের তালুকে বুঝানো হয়েছে।

কিছু উদাহরণে يديَن ‘দুই হাত’-এর ব্যাখ্যা হিসেবে ‘দুই তালু’ হুবহু আসেনি, কিন্তু মৌলিক দাবির ভিত্তিতে كفين ‘দুই তালু’-কেই বুঝানো হয়েছে। যেমন একটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, যখন রসূলুল্লাহ (স) ইস্তিনজা প্রভৃতি থেকে অবসর নিতেন তখন ثم مسح يده على الارض ‘নিজের হাত জমিনে ঘষতেন।’ [আবু দাউদ মাআ মুখতাসার মুনযিরি ১/৩৯, নাসাঈ ১/৪৫, ইবনে মাজাহ ৩০ পৃ., দারেমি ১/১৮৩ – আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন (তাহক্বীক্ব মিশকাত ১/১১৬/৩৬০)]

এই হাদীসের ‘হাত’ শব্দের পরিপূরক হিসেবে কোনো হাদীসে ‘হাতের তালু’ শব্দ ব্যবহৃত হয়নি (আল্লাহই সর্বজ্ঞ)। কিন্তু প্রকাশ্য অর্থ থেকে বুঝা যায়, ইস্তিনজা প্রভৃতির শেষে মাটিতে সম্পূর্ণ বাহুসহ হাত ঘষা হয় না। বরং হাতের তালুকে মাটিতে ঘষা হয়। সুতরাং সুস্পষ্টভাবে কোনো হাদীসে ব্যাখ্যা না থাকলেও এখানে ‘হাত’ বলতে ‘হাতের তালুকে’ উদ্দেশ্য করাটা নিশ্চিত হয়।

অপর একটি উদাহরণ হলো, মুসাফাহা। আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমাদের কেউ যখন তার ভাই বা বন্ধুর সাথে সাক্ষাত করে তখন সে কি তার প্রতি ঝুঁকবে? নবী (স) বললেন: না। সে জিজ্ঞাসা করল, তার গালে কি চুমা দেবে? তিনি (স) বললেন: না। তখন সে বলল: فأخذ بيده ويصافحه؟ قال نعم ‘তা হলে কি সে তার হাতটি ধরবে ও মুসাফাহ করবে।’ নবী (স) বললেন: হাঁ। [তিরমিযী মাআ আহমাদ শাকির ৫/৭০-৭১, তিরমিযী (রহ) বলেন: হাদীসটি হাসান। মুসনাদে আহমাদ মাআ ফতহুর রব্বানি ১৭/৩৪৭, সুনানে কুবরা ৭/১০০। আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। (তাহক্বীক্ব মিশকাত ৩/১৩২৮/৪৬৮০)]

হাফেয ইবনে হাজার আসকালানি (রহ) লিখেছেন:

المصافحة هي مفاعلة من الصفحة والمراد بها الإفضاء بصفحة اليد إلى صفحة اليد

“মুসাফাহ শব্দটি বাবে ‘মুফাআলাহ’ থেকে এবং صفحة -এর মুশতাক্ব ফে‘ল মাসদারের সিগাহ। এর অর্থ– কোনো ব্যক্তির একটি হাতের তালু অপর ব্যক্তির একটি হাতের তালুর সাথে মিলানো।” [ফতহুল বারি ১১/৫৭]

পূর্বের হাদীসেও হাত বলতে হাতের তালুকে বুঝানো হয়েছে। এ রকম আরো অনেক উদাহরণ পেশ করা যায়, যা থেকে প্রমাণিত হয় যে, হাত বলতে সাধারণভাবে হাতের তালুকে বুঝানো হয়েছে। তা ছাড়া অভিধানের গ্রন্থে যেমন – আল্লামাহ ওয়াহিদুয যামানের মুনজিদ, লুগাতুল হাদীস প্রভৃতিতে হাতের এই সাধারণ অর্থ নেয়া হয়েছে।

উক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণিত হলো, সাজদা বা তাশাহহুদ থেকে উঠার সময় দুই হাতকে জমিনে ভর করে উঠতে হবে। এ সম্পর্কিত হাদীসগুলোতে عجن (‘আজন) তথা ‘মুষ্টির উপর ভর করার’ কথা উল্লেখ নেই। এ ব্যাপারে ঐকমত্য যে, সাজদাতে যাওয়ার সময় হাতের তালুকে জমিনে রাখতে হবে। আর যখন এই বিষয়টি প্রমাণিত ও সুস্পষ্ট, তখন উঠার সময় সেটা কেন ভিন্ন নিয়মে হবে?

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন