hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শির্ক কী ও কেন

লেখকঃ ড. মুহাম্মদ মুয্‌যাম্মিল আলী

১৬৯
১৫. আল্লাহ ও রাসূল ব্যতীত কোনো মানুষের মত ও পথের অন্ধ আনুগত্য ও অনুসরণ করা :
কুরআন ও সহীহ হাদীসে বর্ণিত যাবতীয় বিধানের যথাসাধ্য অনুসরণ ও আনুগত্য করা হচ্ছে আল্লাহর বিধানের আনুগত্যের উপাসনা। এ উপাসনার প্রতি নির্দেশ করে মহান আল্লাহ বলেছেন:

﴿ٱتَّبِعُواْ مَآ أُنزِلَ إِلَيۡكُم مِّن رَّبِّكُمۡ وَلَا تَتَّبِعُواْ مِن دُونِهِۦٓ أَوۡلِيَآءَۗ﴾ [ الاعراف : ٣ ]

‘‘তোমাদের প্রতি তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে, তোমরা তা অনুসরণ কর এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো অভিভাবকদের অনুসরণ করো না।’’ [. আল-কুরআন, সূরা আ‘রাফ : ৩।]

আল্লাহর বিধানের অনুসরণ ও আনুগত্যের এ উপাসনা মানুষের যাবতীয় চিন্তা, চেতনা, কাজ-কর্ম ও কথার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হবে। আর সে-জন্যে জ্ঞানী ও সাধারণ মানুষ নির্বিশেষে সবাইকে তাকলীদ বা অনুসরণের যে সঠিক পদ্ধতির কথা প্রথম অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে তা অনুসরণ করতে হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, এক্ষেত্রেও দেশের সাধারণ লোকদের মত অনেক জ্ঞানী লোকেরাও অনেকটা নিজেদের অজান্তেই অনুসরণের বৈধ নীতিমালা লঙ্ঘন করে চলেছেন। সাধারণ লোকজন অন্ধভাবে তাদের পীরদের আনুগত্য ও অনুসরণ করে থাকেন। কুরআন ও সহীহ হাদীস দ্বারা তাদের কোনো কর্মের ত্রুটি প্রমাণ করে দিলেও তারা তাদের পীর সাহেবের নির্দেশ ব্যতীত তা পরিত্যাগ করেন না।

ধর্মীয় ক্ষেত্রে জ্ঞানী অধিকাংশ আলেমগণ নিজ মাযহাবের নিঃশর্ত ও নির্বিচারে অনুসরণ করেন। কোনো বিষয়ে নিজের ইমাম বা মাযহাবে প্রচলিত আমলের বিপরীতে সহীহ হাদীসের সন্ধান পেলেও বিভিন্ন অনর্থক যুক্তি ও তর্ক দাঁড় করিয়ে তারা নিজের ইমামের মত বা মাযহাবের অনুসরণ করেন এবং সহীহ হাদীসকে আমলের অযোগ্য বা তা শাফিঈ মাযহাবের অনুসারীদের জন্য প্রযোজ্য বলে পরিত্যাগ করেন। এভাবে তারা নিজ মাযহাবে প্রচলিত যাবতীয় আমলকেই নির্বিচারে ও অন্ধভাবে অনুসরণ করে থাকেন। যদিও মাযহাবের কিতাবাদির ব্যাখ্যা গ্রন্থে বা টীকা-টিপ্পনীতে অনেক সত্যানুরাগী আলেমগণ নিজ মাযহাবে প্রচলিত কিছু কিছু আমলের বিপরীতে অবস্থিত সহীহ হাদীসসমূহের উপর আমল করাকেই সঠিক বলে মত প্রকাশ করেছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লামা সুন‘উল্লাহিল হালাবী আল-হানাফী (মৃত ১০৫০হি:) তাঁর ‘আল-কাউলুস সদীদ ফী মাসাইলিত তাকলীদ’ নামক রিসালায় বলেন :

" لا علينا أن لا نأخذ بما ظهر لنا صواب خلافه إذ أنعم الله علينا بحصول ضرب من النظر ، يمكن الوقوف به على الصواب ، هذا ونحن مع ذلك لا نخرج عن درجة التقليد لإمامنا الأعظم أبي حنيفة المقدم "

‘‘নিজ ইমামের মতের বিপরীত কোনো সঠিক বিষয় আমাদের নিকট প্রমাণিত হলে তা গ্রহণ করাতে আমাদের কোনো দোষ নেই কারণ, আল্লাহ আমাদেরকে কিছু চিন্তা-ভাবনা করার নেয়ামত দান করেছেন, যদদ্বারা আমাদের পক্ষেও সত্য উপলব্ধি করা সম্ভব। ইমামের মতের বিপরীতে সঠিক কথা গ্রহণ করলেও এতে আমরা আমাদের অগ্রবর্তী ইমামে আ‘যম আবু হানীফা (রহ.)-এর তাকলীদ করা থেকে মুক্ত হবো না।’’ [. দেখুন : মাওলানা আবুল হাসানাত আব্দুল হাই হানাফী, ফতাওয়া আব্দুল হাই; (মাকতাবাহ থানবী : দেওবন্দ, ১ম সংস্করণ, ১৯৮৯ খ্রি.), পৃ. ১৫৭।]

এমনকি তাঁরা সে সব হাদীসের উপর মাযহাবের অতীতের বহু মীষীগণের আমল থাকার কথাও অকপটে স্বীকার করেছেন। সহীহ হাদীস নিজ ইমামের ফতোয়ার বিপরীতে পাওয়া গেলে তা পরিত্যাগ করে হাদীসের উপর আমল না করলে নিজ ইমামকে নিজের প্রতিপালক বানিয়ে নেয়া হবে বলেও ক্বাযী মাওলানা সানাউল্লাহ পানিপথী হানাফী নিজ মাযহাবের অনুসারীদের সতর্ক করেছেন। [তিনি তাঁর তাফছীরে মাযহারী গ্রন্থে وَ لاَ يَتَّخِذّ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِّنْ دُوْنِ الله ‘‘আমরা আল্লাহকে ব্যতীত পরস্পরকে অসংখ্য রব বানিয়ে না নেই’’ এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন : ومن هنا يظهر أنه إذا صح عند أحد حديث مرفوع من النبي صلى الله علية وسلم سالما من المعارضة، ولم يظهر له ناسخ و كان فتوى أبي حنيفة رحمه الله مثلا خلافه، وقد ذهب على وفق الحديث أحد من الآئمة الأربعة، يجب عليه اتباع الحديث الثابت، و لا يمنعه الجمود على مذهبه من ذلك ، لئلا يلزم اتخاذ بعضنا بعضا أربابا من دون الله অর্থাৎ এ আয়াত থেকে প্রমাণিত হয় যে, যখন কারো নিকট কোনো প্রকার বিরোধ ছাড়াই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এমন কোনো মারফু‘ হাদীস প্রমাণিত হয়, যা মানসূখ হয়ে গেছে বলে তার নিকট কোনো প্রমাণ থাকে না থাকে, কিন্তু ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর কোনো ফতোয়া উদাহরণত সে হাদীসের বিপরীত প্রমাণিত হয়, আর চার ইমামের কোনো ইমাম এ হাদীসটি গ্রহণ করে থাকেন। তবে উক্ত প্রমাণিত হাদীসের অনুসরণ করা সে ব্যক্তির উপর ওয়াজিব হয়ে যাবে। তার মাযহাবকে কঠিনভাবে অনুসরণ করা যেন তাকে এ হাদীসের উপর আমল করা থেকে বিরত না রাখে। কেননা; এতে পরস্পরকে অসংখ্য রব বানানোর শামিল হবে।’’ দেখুন: মাওলানা সানাউল্লাহ পানিপতী, তাফসীরে মাযহারী; (এদারাতু এশা‘আতিল ইসলাম : দিল্লী, সংস্করণ ও সন বিহীন), ২/৬৩-৬৪।] নির্দিষ্ট কোনো এক মাযহাবের অন্ধ তাকলীদ ও একচ্ছত্র অনুসরণ করা জরুরী বলে কেউ কেউ মত পোষণ করে থাকলেও আসলে যাঁরা তা জরুরী নয় বলে মত দিয়েছেন, তাঁদের কথাই অধিক সঠিক।’’ [. যেমন ইবনে আবিদীন তাঁর হাশিয়াতু রদ্দিল মুহতার গ্রন্থে বলেছেন : أنه لو التزم مذهبا معينا كأبي حنيفة و الشافعي، فقيل : يلزمه، وقيل : لا، وهو الأصح .‘‘কেউ যদি ইমাম আবু হানীফা অথবা ইমাম শাফি‘ঈ এর মাযহাব অনুসরণ করে, তা হলে সে ব্যক্তির উপর সকল ক্ষেত্রে সে মাযহাবই অনুসরণ করা কি জরুরী হয়ে যাবে? কারো কারো মতে তা জরুরী হয়ে যাবে, আবার কারো কারো মতে তা জরুরী হবে না এবং জরুরী না হওয়ার মতই অধিক সঠিক।’’ তদেব; পৃ.১৪৪; অন্ধ তাকলিদের সমালোচনা করতে গিয়ে শাহ ওয়ালি উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী বলেন : وفيمن لا يجوز أن يستفتي الحنفي مثلا فقيها شافعيا و بالعكس، ولا يجوز أن يقتدي الحنفي بإمام شافعي مثلا فإن هذا قد خالف إجماع القرون الأولى و ناقض الصحابة والتابعين . উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যিনি কোনো হানাফী ব্যক্তিকে কোনো শাফিঈ ফকীহ এর নিকট এবং কোন শাফিঈ ব্যাক্তিকে কোনো হানাফী ফকীহ এর নিকট ফতোয়া জিজ্ঞাসা করাকে জায়েয মনে না করেন, কোনো হানাফীকে কোনো শাফিঈ মাযহাবের অনুসারী ইমামের পিছনে নামায পড়াকে জায়েয মনে না করেন, তিনি উম্মতের প্রথম যুগে অনুষ্ঠিত ইজমা‘ এর বিরুদ্ধাচরণ করে থাকবেন এবং সাহাবা ও তাবেঈনদের অনুসৃত রীতির বিরোধিতা করবেন। দেখুন : শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী, হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ; ১/১৫৪-১৫৬।] হানাফী মাযহাবের উসূলে ফিকহের গ্রন্থ ‘আত-তাহরীর’ এর ব্যাখ্যা ‘আত-তায়সীর’ নামক গ্রন্থে বলা হয়েছে : ‘‘কেউ কেউ বলেছেন: সকল বিষয়ে নির্দিষ্ট এক মাযহাব অনুসরণ করা জরুরী নয়। তাঁদের কথাই অধিক সঠিক; কেননা, আল্লাহ তা‘আলা যা ওয়াজিব করেছেন তা ব্যতীত ওয়াজিব বলতে আর কিছু নেই।’’ [. আবুল হাসানাত আব্দুল হাই আল-লক্ষ্ণৌভী আল-হানাফী, প্রাগুক্ত; পৃ. ১৫০।] যারা নির্দিষ্ট মাযহাবের নির্বিচারে অনুসরণ করার কথা বলেন এবং কেউ নিজ ইমামের মাযহাব ত্যাগ করলে তাকে শাস্তি দেয়ার কথা বলেন, তাদের ব্যাপারে মাওলানা আব্দুল হাই লক্ষ্ণৌভী হানাফী বলেন :

" والحق أنه تعصب لا دليل عليه أصلا . و إنما هو تشريع من عند نفسه "

‘‘সঠিক কথা হচ্ছে- নির্দিষ্ট কোনো মাযহাবের অনুসরণ করা একটি গোঁড়ামি বিশেষ। প্রকৃতপক্ষে এর যথার্থতার কোনো দলীল নেই। এটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিজস্ব বানানো শরী‘আত বৈ আর কিছুই নয়।’’ [. আবুল হাসানাত আব্দুল হাই লক্ষ্ণেীভী আল-হানাফী , প্রাগুক্ত; পৃ. ১৫০।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন