hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শির্ক কী ও কেন

লেখকঃ ড. মুহাম্মদ মুয্‌যাম্মিল আলী

২২
ইলমে গায়েব সম্পর্কিত সংশয় নিরসন :
কারো অন্তরে এমন সন্দেহের উদ্রেক হতে পারে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গায়েব সম্পর্কে কেমন করে জ্ঞাত হবেন না, অথচ তিনি আমাদেরকে পার্থিব ও পরকালীন অসংখ্য গায়েব সম্পর্কিত বিষয়ের সংবাদ দান করেছেন? এ জাতীয় সংশয় নিরসনের জবাব রয়েছে কুরআনুল কারীমের নিম্নোক্ত আয়াতে। মহান আল্লাহ বলেন :

﴿ عَٰلِمُ ٱلۡغَيۡبِ فَلَا يُظۡهِرُ عَلَىٰ غَيۡبِهِۦٓ أَحَدًا ٢٦ إِلَّا مَنِ ٱرۡتَضَىٰ مِن رَّسُولٖ﴾ [ الجن : ٢٦، ٢٧ ]

‘‘তিনি গায়েবের জ্ঞানী, তাঁর মনোনীত রাসূল ব্যতীত অপর কারো কাছে তাঁর গায়েবকে প্রকাশ করেন না।’’ [. আল-কুরআন, সূরা আল-জিন : ২৬, ২৭।]

এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ তা‘আলাই হলেন অদৃশ্যের একক জ্ঞানী। তিনি শুধুমাত্র তাঁর মনোনীত রাসূলদেরকে তাঁদের প্রতি অর্পিত রেসালতের দায়িত্ব আদায়ের প্রয়োজনে যতটুকু অদৃশ্য সম্পর্কে তাঁদেরকে অবহিত করা প্রয়োজনবোধ করেন, ঠিক ততটুকুই তাঁদেরকে অবহিত করেন। আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মনোনীত রাসূল ছিলেন বিধায়, তাঁকেও রিসালতের প্রয়োজনে কিছু গায়েবের সংবাদ দিয়েছিলেন। এটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইচ্ছাধীন কোনো বিষয় ছিল না যে, যখন ইচ্ছা তিনি তখনই তা জানতে পারতেন এবং জনগণকে তা বলে বেড়াতে পারতেন।

প্রকৃতকথা হলো, রিসালত আদায়ের স্বার্থে এবং জনগণের মাঝে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর প্রয়োজনে তাঁকে গায়েবের সাথে সম্পৃক্ত যা কিছু জানানো আল্লাহ তা‘আলা জরুরী মনে করেছিলেন, তাঁকে ঠিক সেটুকুই জানিয়েছিলেন। এর বাইরে গায়েবের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়াদি জানার তাঁর নিজস্ব বা আল্লাহ প্রদত্ত স্থায়ী কোনো যোগ্যতা ছিল না।

সাধারণ জনগণের মাঝে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে আল্লাহ্‌ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অসাক্ষাতে সংঘটিত হওয়া কিছু বিষয়াদির সংবাদ দিয়েছিলেন। উদাহরণস্বরূপ নিম্নে এমনি ধরনের দু’টি গায়েবের উদ্ধৃতি প্রদান করা হলো :

এক. বদর যুদ্ধের পর ‘উমায়ের ইবন ওয়াহাব ও সাফওয়ান ইবন উমাইয়্যাহ এ মর্মে একমত পোষণ করেছিলেন যে, ‘উমায়ের তার ছেলেকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যে মদীনায় যেয়ে সুযোগমত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হত্যা করবে, এতে ‘উমায়েরের জীবন নাশ হলে সাফওয়ান তার যাবতীয় দেনা শোধ এবং আজীবন তার পরিবারের সদস্যদের ব্যয়ভার গ্রহণ করবে। এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে যখন ‘উমায়ের মদীনায় গমন করে এবং কোষবদ্ধ তরবারী নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে উপস্থিত হয়, তখন তিনি তাকে তাদের সে ষড়যন্ত্রের কথা ফাঁস করে দেন। [. বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন : ইবনে হিশাম, প্রাগুক্ত; ১/৬৬২।]

ঘটনার বিবরণে যদিও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কিভাবে তা জানলেন এর কোনো বর্ণনা নেই, তথাপি এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, মহান আল্লাহই তাঁকে তা জানিয়েছিলেন। ঘটনার সাক্ষী ‘উমায়ের এর মুখেও আমরা এ কথারই স্বীকৃতি দেখতে পাই। ‘উমায়ের নিজেই তাদের ষড়যন্ত্রের কথা ফাঁস হয়ে যাওয়া দেখে সাথে সাথে বলে উঠে যে, এটি এমন একটি ঘটনা যা আমি এবং সাফওয়ান ব্যতীত অপর কেউ জানে না। আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি! আমি নিশ্চিত করে বলছি, এ সংবাদ আপনাকে আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ দেয় নি। এ কথা বলেই তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। [. তদেব।]

দুই. আত্তাব ইবন উসায়েদ, আবু সুফিয়ান ও হারিছ ইবন হিশাম এ তিন ব্যক্তি মক্কা বিজয়ের দিনে কা‘বা শরীফের সামনে দাঁড়িয়ে মক্কার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে পরস্পর মত বিনিময় করছিল। এ সময় আত্তাব বলেছিল : ‘আল্লাহ উসায়েদকে বড় সম্মান দিয়েছেন যে, মক্কার উপর মুহাম্মদ এর বিজয়ী হওয়ার সংবাদ তাকে শ্রবণ করান নি। বেঁচে থাকলে হয়তো মুহাম্মদ -থেকে এমন কোনো কথা তাকে শুনতে হতো, যা তাকে রাগান্বিত করতো’। আত্তাবের এ কথা শুনার পর এবার হারিছ বললো : ‘আল্লাহর শপথ! আমি কোনো প্রকার মন্তব্য করবো না, কারণ; আমি যদি কোনো কথা বলি তাহলে আমার পক্ষ থেকে এ পাথরকণাও মুহাম্মদকে আমার কথার সংবাদ প্রদান করবে’। তাদের এ কথোপকথনের পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কা‘বা শরীফের ভিতর থেকে বের হয়ে তাদের তিন জনকে লক্ষ্য করে বললেন :

«قَدْ عَلِمْتُ الَّذِيْ قُلْتُم»

‘‘তোমরা পরস্পর যা বলাবলি করেছিলে আমি তা অবগত হতে পেরেছি।” এই বলে তিনি তাদের এ আলোচনার কথা বলে দিলে সাথে সাথেই আত্তাব ও হারিছ এই বলে ইসলাম গ্রহণ করেন:

نَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُوْلُ اللهِ وَاللهِ مَا اطَّلَعَ عَلٰى هٰذَا أَحَدٌ كَانَ مَعَنَا فَنَقُوْل : أَخْبَرَكَ

‘‘আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি আল্লাহর রাসূল। আল্লাহর শপথ! আমাদের সাথের কেউই তো এ কথাগুলো শ্রবণ করতে পারে নি, যার ফলে আমরা এ কথা বলতে পারতাম যে, হয়তোবা কেউ আপনাকে এ সবের সংবাদ দিয়েছে।’’ [বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন : আল-মুবারকপুরী, সফিউর রহমান, প্রাগুক্ত ; পৃ. ৪০৫।]

এ দু’টি ঘটনার ন্যায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবনের যত ঘটনাই আমাদের সম্মুখে আসবে আমাদেরকে বুঝতে হবে যে, এ সব গায়েবী বিষয়াদি তিনি নিজের যোগ্যতা বলে জানতে পারেন নি, মহান আল্লাহ তাঁকে তা জানিয়েছিলেন। পরকালীন গায়েবী বিষয়াদি সম্পর্কে আল্লাহই তাঁকে যা অবগত করিয়েছিলেন, তা-ই তিনি বলেছেন, আবার তাও চুলচেরা বিশ্লেষণ করে তাঁকে জানান নি। আখেরাতে তাঁর মর্যাদাপূর্ণ অবস্থার কথা তিনি আমাদের বলে থাকলেও তাঁর মর্যাদার সঠিক ধরন ও প্রকৃতি কেমন হবে, সে সম্পর্কেও তিনি বিস্তারিতভাবে কিছুই জানতেন না। এ প্রসঙ্গে কুরআনুল কারীমে আল্লাহ বলেন :

﴿ قُلۡ مَا كُنتُ بِدۡعٗا مِّنَ ٱلرُّسُلِ وَمَآ أَدۡرِي مَا يُفۡعَلُ بِي وَلَا بِكُمۡۖ إِنۡ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَىٰٓ إِلَيَّ﴾ [ الاحقاف : ٩ ]

‘‘বলুন : আমি নতুন কোন রাসূল নয়, আমার ও তোমাদের সাথে (আখেরাতে) কেমন আচরণ করা হবে তা আমি (বিস্তারিতভাবে) জানি না, আমিতো কেবল তা-ই অনুসরণ করে থাকি যা আমার নিকট প্রত্যাদেশ করা হয়।’’ [.আল-কুরআন, সূরা আল-আহক্বাফ : ৯।]

উম্মুল ‘আলা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এরশাদ করেন :

«وَاللَّهِ مَا أَدْرِي، وَأَنَا رَسُولُ اللَّهِ، مَا يُفْعَلُ بِي وَلاَ بِكُمْ»

‘‘আল্লাহ শপথ! আমি আল্লাহর রাসূল হয়েও আমার ও তোমাদের সাথে আখেরাতে কেমন আচরণ করা হবে তা আমি জানি না।’’ [.বুখারী, হাদীস নং ৭০১৮; ইমাম আহমদ, প্রাগুক্ত; ২/২৩৫; আত-তাবরিযী, ওয়ালী উদ্দীন আল-খতীব, মিশকাতুল মাসাবীহ; (মাকতাবা রশীদিয়্যাহ, সংস্করণ বিহীন, তারিখ বিহীন, পৃ. ৪৫৬)]

উক্ত আয়াত ও হাদীস দ্বারা এ কথা প্রমাণিত হয় যে, আখেরাতের সাথে সম্পর্কিত গায়েব সম্পর্কে তিনি জনগণকে যা কিছু বলেছেন, তা কোন নতুন কথা নয়, বরং এ জাতীয় কথা অতীতের বহু নবী ও রাসূলগণ বলে গেছেন। তা ছাড়া আখেরাতের সাথে সম্পর্কিত গায়েব সম্পর্কে অবগত হওয়া তাঁর নিজস্ব কোন কৃতিত্ব নয়, বরং এ সম্পর্কে তিনি যা কিছু বলেছেন, তা অহীর মাধ্যমে অবগত হয়েই বলেছেন। আবার আল্লাহ তাঁকে যে বিষয়ে যতটুকু জানিয়েছেন সে বিষয়ে তাঁর পক্ষে এর বাইরে বিস্তারিত করে আরো কিছু বলারও তাঁর নিজস্ব কোন সূত্র ছিল না। [.ইমাম ত্বীবী বলেন : আখেরাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তাঁর উম্মতের সাথে কেমন আচরণ করা হবে তা তাঁর না জানা বলতে তা বিস্তারিতভাবে না জানার কথাই বুঝানো হয়েছে। তিনি যে এ-সব বিষয় মোটামুটিভাবে জানতেন সে জানাটুকুকে এর দ্বারা অস্বীকার করা হয় নি। দেখুন: মিশকাত; টীকা নং - ৬, পৃ. ৪৫৬ ।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন