hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শির্ক কী ও কেন

লেখকঃ ড. মুহাম্মদ মুয্‌যাম্মিল আলী

২৪৭
জাহান্নামীদের জন্য ফেরেশ্তা, নবী ও মু’মিনদের শাফা‘আত:
রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পর পর তিন থেকে চার বার শাফা‘আতে তাঁর উম্মতের মধ্যকার শির্ক ব্যতীত অন্যান্য অপরাধে জাহান্নামবাসী অসংখ্য মু’মিন নর-নারী মুক্তি পাওয়ার পরেও তাঁর উম্মতের মধ্যকার কিছু লোক জাহান্নামে থেকে যাবে। তখন জান্নাতবাসী মু’মিনরা তাদের পরিচিত অনেককে শেষ পর্যন্ত জান্নাতে দেখতে না পেয়ে তারা সে-সব লোকদের জন্যে আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ জানাবে। তখন আল্লাহ তাদেরকে সে-সব লোকদের জন্য শাফা‘আতের অনুমতি প্রদান করবেন। আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে এ কথাগুলো এভাবে বর্ণিত হয়েছে:

«... حَتَّى إِذَا خَلُصَ الْمُؤْمِنُوْنَ مِنَ النَّارِ فَوَ الَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ ! مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ بِأَشَدَّ مُنَاشَدَةً لِلَّهِ فِيْ اسْتِقْصَاءِ الْحَقِّ، مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ يَومَ الْقِيَامَةِ لِإِخْوَانِهِمُ الَّذِيْنَ فِيْ النَّارِ . يَقُوْلُوْنَ : رَبَّنَا ! كَانُوْا يَصُوْمُوْنَ مَعَنَا ، وَ يُصَلُّوْنَ وَ يَحُجُّوْنَ . فَيُقَالُ لَهُمْ : أَخْرِجُوْا مَنْ عَرَفْتُمْ . فَتُحْرَمُ صُوَرُهُمْ عَلَى النَّارِ فَيُخْرِجُوْنَ خَلْقًا كَثِيْرًا قَدْ أَخَذَتِ النَّارُ إِلى نِصْفِ سَاقَيْهِ وَإِلى رُكْبَتِهِ . ثُمَّ يَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا ! مَا بَقِيَ فِيْهَا أَحَدٌ مِمَّنْ أَمَرْتَنَا بِهِ . فَيَقُوْلُ : ارْجِعُوْا فَمَنْ وَجَدتُّمْ فِيْ قَلْبِهِ مِثْقَالُ دِيْنَارٍ مِنْ خَيْرٍ فَأَخْرِجُوْهُ . فَيُخْرِجُوْنَ خَلْقًا كَثِيْرًا . ثُمَّ يَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا ! لَمْ نَذّرْ فِيْهَا أَحَدًا مِمَّنْ أَمَرْتَنَا . ثُمَّ يَقُوْلُ اللهً : ارْجِعُوْا فَمَنْ وَجَدْتُمْ فِيْ قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ خَيْرٍ فَأَخْرِجُوْهُ . فَيُخْرِجُوْنَ خَلْقًا كَثِيْرًا . ثُمَّ يَقُوْلُوْنَ رَبَّنَا ! لَمْ نّذّرْ فِيْهَا خَيْرًا . فَيَقُوْلُ اللهُ تَعَالَى : شَفَعَتِ الْمَلاَئِكَةُ و شَفَعَ النِّبِيُّوْنَ وَ الْمُؤْمِنُوْنَ وَ لَمْ يَبْقَ إِلاَّ أَرْحَمُ الرَّاحِمِيْنَ ، فَيَقْبِضُ اللهُ قَبْضَةً مِنَ النَّارِ فَيُخْرِجُ مِنْهَا قَوْمًا لَمْ يَعْمَلُوْا خَيْرًا قَطٌّ»

‘‘...অবশেষে যখন (নির্দিষ্ট সময়সীমার জন্য জাহান্নামে প্রবেশকারী) মু’মিনরা (রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শাফা‘আতে) নাযাত পাবে, তখন আল্লাহর শপথ যার হাতের মধ্যে আমার আত্মা! তোমাদের প্রত্যেকেই কেয়ামতের দিন তার অধিকার পরিপূর্ণভাবে আদায়ের লক্ষ্যে তাদের জাহান্নামবাসী ভাইদের মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে অধিকভাবে অনুনয়-বিনয় করতে থাকবে। তারা বলবে:প্রভু হে! তারা আমাদের সাথে রোযা পালন করতো, নামায আদায় করতো ও হজ্জ করতো। তখন তাদেরকে বলা হবে:তোমরা যাদের চিনতে পারো, তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে নিয়ে এসো। এ-সময়ে তাদের পরিচিত জনদের মুখমণ্ডল জাহান্নামের উপর হারাম করা হবে, তখন তারা তাদের চিনতে পেরে অসংখ্য লোকদের বের করে নিয়ে আসবে এমতাবস্থায় যে, তাদের কারো উভয় পায়ের জঙ্ঘার অর্ধ পর্যন্ত, কারো হাঁটু পর্যন্ত আগুনে পুড়ে গেছে। এরপর তারা বলবে:প্রভু হে! যাদের আপনি বের করে নিয়ে আসার জন্য আমাদেরকে আদেশ করেছিলেন, তাদের কাউকেই আমরা রেখে আসিনি। তখন আল্লাহ তা‘আলা পুনরায় বলবেন: ফিরে যাও, যাদের অন্তরে এক দীনার পরিমাণ ওজনের কল্যাণ পাও তাদেরকে বের করে নিয়ে এসো। এবারও তারা অনেক লোককদেরকে বের করে নিয়ে আসবে। অতঃপর বলবে: আল্লাহ আপনি যাদেরকে বের করে নিয়ে আসতে আদেশ করেছিলেন, তাদের একজনকেও আমরা সেখানে রেখে আসিনি। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে আবার বলবেন: ফিরে যাও, যাদের অন্তরে অণু পরিমাণ কল্যাণ পাও, তাদেরকেও বের করে নিয়ে এসো। এবারও তারা অনেক লোককে বের করে নিয়ে এসে বলবে: প্রভু হে! কল্যাণ আছে এমন কাউকে আমরা জাহান্নামে রেখে আসিনি। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন:ফেরেশ্তা, নবীগণ ও মু’মিনরা শাফা‘আত করলো, শুধুমাত্র রহমানুর রাহীম ব্যতীত আর কারো শাফা‘আত অবশিষ্ট থাকেনি। এ-কথা বলে আল্লাহ একমুষ্টি আগুন তাঁর হাতে নেবেন এবং সেখান থেকে এমন কিছু লোকদের বের করে আনবেন যারা কখনও কোনো ভাল কাজ করেনি’’। [.বুখারী, প্রাগুক্ত; (কিতাবুত তাওহীদ, বাব নং ২০, হাদীস নং ৭০০১), ৬/২৭০৭; মুসলিম, প্রগুক্ত; (কিতাবুল ঈমান, বাব নং ৮০, হাদীস নং ১৮২), ১/১৬৯; ক্বুরত্ববী; প্রাগুক্ত; ৩/২৭৪।]

আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদীসের এ অংশ দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, ফেরেশ্তা, নবী, ওলি ও সালেহীনদের শাফা‘আত হবে সে সকল অপরাধীদের জাহান্নাম থেকে বের করে আনার ক্ষেত্রে, যারা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জাহান্নামে প্রবেশ করেছে। কাউকে জাহান্নামে প্রবেশ করতে না দেয়ার জন্য তাঁদের কোনো শাফা‘আত হবে-এ জাতীয় কোনো কথার প্রমাণ নেই। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, পীর ও মাশায়েখগণ আখেরাতে কারো জন্যে শাফা‘আতের অনুমতি পাবেন কি না, তা নিশ্চিতভাবে না জানা সত্ত্বেও তারা তাদের ভক্তদেরকে তাদের শাফা‘আতের ব্যাপারে আশ্বস্ত করে থাকেন। মু’মিন ও অলিগণের শাফা‘আত জাহান্নামবাসীদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে আনার ক্ষেত্রে হয়ে থাকলেও তারা হাশরের ময়দানেই তাদের মুরীদদেরকে জাহান্নামে যেতে না দেবার জন্যে শাফা‘আত করবেন বলে প্রচার করেন। অথচ আমরা দেখতে পাই যে, আখেরাতের ব্যাপারে কুরআনের বক্তব্য হচ্ছে- এ দিনে কারো রক্তের সম্পর্ক কারো কোনো উপকারে আসবে না। [.আল্লাহ বলেন: لَنْ تَنْفَعَكُمْ أَرْحَامُكُمْ وَ أَوْلاَدُكُمْ يَوْمَ الْقَيَامَةِ .কেয়ামতের দিন তোমাদের বংশের সম্পর্ক ও সন্তানাদি কোনই কাজে আসবে না’’। আল-কুরআন, সূরা মুমতাহিনাঃ: ২।] সে দিন কোনো পিতা তার সন্তানের এবং কোনো সন্তান তার পিতার কোনো কাজে আসবে না। [.আল্লাহ বলেন: ﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱتَّقُواْ رَبَّكُمۡ وَٱخۡشَوۡاْ يَوۡمٗا لَّا يَجۡزِي وَالِدٌ عَن وَلَدِهِۦ وَلَا مَوۡلُودٌ هُوَ جَازٍ عَن وَالِدِهِۦ شَيۡ‍ًٔاۚ ﴾ [ لقمان : ٣٣ ] ‘হে লোক সকল ! তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর, এবং এমন এক দিনকে ভয় কর যেদিন কোন পিতা তার সন্তান এবং কোন সন্তান তার পিতার কোন উপকারে আসবে না’’। আল-কুরআন, সূরা লুক্বমান: ৩৩।] যেখানে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ-সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-তাঁর নিকটাত্মীদেরকে এই বলে সাবধান করে দিয়েছিলেন:

«لاَ أُغْنِيْ عَنْكُمْ مِنَ اللهِ شَيْئًا»

‘আমি (আখেরাতে আল্লাহর পাকড়াও থেকে রক্ষার জন্য) তোমাদের কোনই উপকার করতে পারবো না’’, [.বুখারী, প্রাগুক্ত; (কিতাবুল ওয়াসায়া, বাব: নং ১১, হাল ইয়াদখুলুন নিসা-উ ওয়াল ওয়ালাদু ফিল আকারিব), ৩/১০১২; মুসলিম, প্রাগুক্ত; (কিতাবুল ঈমান, বাব:৮৯, হাদীস নং ২০৪), ১/১৯২।] সেখানে পীর ও মাশায়েখগণ তাঁদের নিকটাত্মীয় ও ভক্তদের জন্য কিভাবে শাফা‘আত করার আশ্বাস দিতে পারেন, সত্যিই তা হতবাক করার মত বিষয়।

আখেরাতে ওলিগণকে অভয় প্রদানের তাৎপর্য:

কুরআনুল কারীমে মহান আল্লাহ অলিগণের সংজ্ঞা প্রদান পূর্বক তাঁদেরকে একটি অভয় বাণী এ মর্মে দান করেছেন যে,

﴿ أَلَآ إِنَّ أَوۡلِيَآءَ ٱللَّهِ لَا خَوۡفٌ عَلَيۡهِمۡ وَلَا هُمۡ يَحۡزَنُونَ ٦٢ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَكَانُواْ يَتَّقُونَ ٦٣ ﴾ [ يونس : ٦٢، ٦٣ ]

‘‘জেনে রেখো! নিশ্চয় আল্লাহর অলিগণের কোনো ভয় নেই, তাঁরা চিন্তিতও হবেনা। ওলিগণ তাঁরাই যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছে’’। [.আল-কুরআন, সূরা: ইউনুস: ৬২।] অনেক সাধারণ লোকেরা এ আয়াতের বাহ্যিক অর্থের প্রতি লক্ষ্য করে মনে করেন যে, যেহেতু অলিগণের আখেরাতে কোনো ভয় ও ভীতি নেই, সুতরাং আখেরাতে তারা শুধু তাঁদের ভক্তদের মুক্তির জন্য সুপারিশ নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন। এমনকি এ আয়াতের ভিত্তিতে একদিন আমি নিজেই একজনের পক্ষ থেকে এ ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিলাম। আসলে আখেরাতের ভয়াবহ অবস্থা সম্পর্কে তাদের যথার্থ জ্ঞান না থাকার কারণেই তারা মূলত এ ধরনের উক্তি করে থাকেন। এ আয়াতের সারকথা হচ্ছে: যারা মু’মিন ও মুত্তাক্বী, তারাই হলো আল্লাহর ওলি। আর তাঁদের জন্যেই রয়েছে আখেরাতে এ অভয়বাণী। এ জন্যে কারো আব্দুল কাদির জীলানী ও মঈনুদ্দীন চিশ্তীর মত সর্বজনের নিকট ওলি হিসেবে পরিচিত হওয়া কোনো জরুরী ব্যাপার নয়। বরং আল্লাহ তা‘আলার দৃষ্টিতে যারাই মু’মিন ও মুত্তাক্বী বলে বিবেচিত হবে, তারাই হবে আল্লাহর ওলি এবং এ অভয়বাণী পাওয়ার যোগ্য। এ অভয়বাণী মূলত সে রকমেরই একটি অভয়বাণী যেমনটি কুরআনুল কারীমের বিভিন্ন আয়াতে অন্যান্য সৎকর্মশীলদেরকেও দান করা হয়েছে। [.আমরা যে-সব সৎকর্মশীলদেরকে সাধারণত আল্লাহ তা‘আলার ওলি বলে মনে করি না, সেরকম সৎকর্মশীলদের জন্য অনুরূপ অভয়বাণী উচ্চারণের বিষয়টি জানার জন্য প্রয়োজনে দেখুন: সূরায়ে বাক্বারাঃ এর ৩৮, ১১২, ২৬২, ২৭৭ নং আয়াত, সূরায়ে আলে ইমরানের ১৭০ নং আয়াত, সূরায়ে নিসা এর ৮৩ নং আয়াত, সূরায়ে আন‘আমের ৪৮ নং আয়াত ও সূরায়ে আ‘রাফের ৩৫ ও ৩৯ নং আয়াত। এ-সব আয়াত পাঠ করলে যে কেউই বুঝতে পারবে যে, ‘আখেরাতে আল্লাহর অলিদের কোন ভয় ও চিন্তা নেই’ এ অভয়বাণী শুধু তথাকথিত ওলি আল্লাহদের জন্যেই নয়, বরং আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে এরকম অভয়বাণী যে কোন মু‘মিন ও সৎকর্মশীলদের জন্যেও রয়েছে। লেখক]যেমন আল্লাহ তা‘আলা অপর আয়াতে বলেন:

﴿ يَٰبَنِيٓ ءَادَمَ إِمَّا يَأۡتِيَنَّكُمۡ رُسُلٞ مِّنكُمۡ يَقُصُّونَ عَلَيۡكُمۡ ءَايَٰتِي فَمَنِ ٱتَّقَىٰ وَأَصۡلَحَ فَلَا خَوۡفٌ عَلَيۡهِمۡ وَلَا هُمۡ يَحۡزَنُونَ ٣٥ ﴾ [ الاعراف : ٣٥ ]

‘‘হে আদম সন্তানরা! যদি তোমাদের কাছে তোমাদেরই মধ্য থেকে রাসূলগণ আগমন করে তোমাদেরকে আমার আয়াতসমূহ বর্ণনা করে, তবে যে ব্যক্তি তাক্বওয়ার পথ অবলম্বন করে এবং নিজেকে সংশোধন করে নেয়, তাদের কোনো আশঙ্কা নেই এবং তারা দুঃখিত হবেনা’’। [.আল-কুরআন, সূরা আ‘রাফ:৩৫।]এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে যে, যারা তাক্বওয়ার পথ অবলম্বন করবে এবং নিজেকে সংশোধন করে নিবে তাদের জন্যেও ওলিদের ন্যায় সমান অভয়বাণী প্রদান করা হয়েছে। এতে বুঝা যাচ্ছে যে, যারাই এ আয়াতে বর্ণিত বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হবে তাঁরাই আল্লাহর ওলি হিসেবে গণ্য হবে। যদিও সাধারণ মানুষের নিকট তাঁরা ওলি হিসেবে পরিচিত নাও হতে পারেন।

এ জাতীয় আয়াতসমূহে এ অভয়বাণী প্রদানের অর্থ হচ্ছে-মু’মিন, মুত্তাক্বী তথা সৎকর্মশীলদেরকে এ মর্মে আশ্বস্ত করা যে, আখেরাতে তাঁদের ভয়ের কোনো কারণ নেই, তাঁদেরকে অবশ্যই সে-দিন তাঁদের কর্মের বিনিময় স্বরূপ সম্মানজনক স্থানে পৌঁছে দেয়া হবে। এর অর্থ এ-নয় যে, তাঁরা আল্লাহর ওলি হয়েছেন বলে আখেরাতে হিসাব-নিকাশের পূর্বে তাঁরা যেমন খুশী তেমন করে ঘুরে বেড়াবেন। নিজের পরিণতির ব্যাপারে কোনো চিন্তা না করে কেবল পরের চিন্তায় ব্যস্ত থাকবেন। আখেরাতে যেখানে রাসূলুল্লাহ -সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- ব্যতীত অন্যান্য সকল নবীগণ নিজের চিন্তায় মগ্ন থাকবেন, সেখানে কী করে ওলিগণ পরের চিন্তায় ব্যস্ত থাকবেন? তা ছাড়া কে সত্যিকারের অলি, তা তো প্রমাণিত হবে হিসাব-নিকাশ গ্রহণের মধ্য দিয়ে। তাই হিসাবের পূর্বে সাধারণ মানুষের ন্যায় তাঁরাও নিজের কী হয়, তা নিয়ে কম-বেশী উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার মধ্যে থাকবেন। তাঁদের অন্তরে অন্যের চিন্তা আসলেও সে-দিনে আল্লাহর ক্রোধ ও প্রচণ্ড প্রতাপ দেখে জান্নাতে না যাওয়া পর্যন্ত মনের কথা মনের মধ্যেই থেকে যাবে। তা বের করার মত কারো সাহস হবে না। এ অভয়বাণীকে একজন ভাল পরীক্ষা দানকারীর ভাল ফলাফল লাভের আশার সাথে তুলনা করা যায়। ভাল পরীক্ষা দানকারীর অন্তরে ভাল ফলাফল লাভের আশা থাকলেও ফলাফল প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত তার অন্তরে সে আশার পাশাপাশি তার নিজের অজান্তে কোনো ভুল হয়ে যাওয়ার কারণে নম্বর কমে যায় কী না, তা নিয়ে অনেক উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা থাকে, তেমনি ওলিগণ এ সুসংবাদ প্রাপ্ত হয়ে থাকলেও মানুষ হিসেবে তাঁদের ভুল-ভ্রান্তি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় হিসেব নিকাশের মাধ্যমে নিজেদের জান্নাতবাসী হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের অন্তর আল্লাহর শাস্তির ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত থাকবে এবং সে ভয়ই তাঁদেরকে অন্যের মুক্তির ব্যাপারে চিন্তা করা থেকে বিরত রাখবে। নবীগণ যেখানে আল্লাহর ভয়ে নফসী নফসী করবেন, সেখানে অলীগণ অন্যের চিন্তা করবেন, এটা কী করে সম্ভব হতে পারে!? তবে হ্যাঁ, নিজের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে জান্নাতে যাওয়ার পর তাঁরা অন্যের ব্যাপারে চিন্তা করবেন এবং শাফা‘আতের সুযোগ আসলেই তাঁরা তাঁদের সে সুযোগের সদ্ব্যবহার করবেন, তাতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। কেননা, এটিই কুরআন, সুন্নাহ ও যুক্তি দ্বারা প্রমাণিত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন