hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শির্ক কী ও কেন

লেখকঃ ড. মুহাম্মদ মুয্‌যাম্মিল আলী

১৭১
সকল বিষয়ে নির্দিষ্ট করে এক মাযহাব পালন করা জরুরী না হওয়ার কারণ:
নির্দিষ্ট কোনো এক মাযহাবের নির্বিচারে অনুসরণ করা ঠিক না হওয়ার কারণ হলো : মানুষ মাত্রেরই ভুল হওয়াই স্বাভাবিক। সে-জন্য ইজতেহাদী বিষয়াদিতে কোনো মাযহাবই এককভাবে সকল ক্ষেত্রে সঠিক মত ও পথের উপর হতে পারে না। তাই মতবিরোধপূর্ণ বিষয়ে সত্য যেখানে বা যে মাযহাবেই থাকুক না কেন সঠিক ও সবল দলীল এবং গ্রহণযোগ্য যুক্তির ভিত্তিতে তা খোঁজ করে নিয়ে এর অনুসরণ করা এবং সাধারণ জনগণকেও তা পালন করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে আলিম সমাজের দায়িত্ব। কেননা, চোখ থাকতে অন্ধ না হয়ে দেখে শুনে ও বুঝে সুঝে কিছু অনুসরণ করার মধ্যেই আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণের পাশাপাশি নিজ মাযহাবের ইমামেরও অনুসরণ নিহিত রয়েছে। কোনো কিছু অনুসরণ করার পূর্বে তা বুঝে সুঝে অনুসরণ করতে হবে এবং সে অনুযায়ী জনগণকে সেদিকে আহ্বান করতে হবে, এটিই হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক অনুসরণের নির্দেশিত সরল ও সঠিক পন্থা। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন :

﴿ قُلۡ هَٰذِهِۦ سَبِيلِيٓ أَدۡعُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِۚ عَلَىٰ بَصِيرَةٍ أَنَا۠ وَمَنِ ٱتَّبَعَنِيۖ وَسُبۡحَٰنَ ٱللَّهِ وَمَآ أَنَا۠ مِنَ ٱلۡمُشۡرِكِينَ ١٠٨ ﴾ [ يوسف : ١٠٨ ]

‘‘বলুন : এ হচ্ছে আমার পথ। আমি আল্লাহর দিকে বুঝে সুঝে দাওয়াত দেই- আমি এবং আমার অনুসারীরা। আল্লাহ পবিত্র। আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই।’’ [. আল-কুরআন, সূরা ইউসুফ : ১০৮।]

আরবের মুশরিকরা না বুঝে বাপ দাদার অন্ধ অনুসরণ করতো বলেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা এ মর্মে ঘোষণা করতে বলেন যে, না বুঝে কিছু অনুসরণ করা আমার ও আমার অনুসারীদের পথ নয়। যারা এমনটি করে তারা মুশরিক। সুতরাং আমি মুশরিকদের অন্তর্গত নই। এ আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, যারা বিভিন্ন অসার যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করে অন্ধভাবে কারো মত ও পথের অনুসরণ করতে গিয়ে কুরআন ও বিশুদ্ধ হাদীসের কথার উপরে নিজের ইমাম বা মাযহাবের কথাকে গুরুত্ব দান করেন, তারা নিজেদেরকে আল্লাহর অনুসরণের উপাসনায় নিজ ইমাম বা মাযহাবকে শরীক করার অভিযোগে অভিযুক্ত করেন।

অন্ধ তাকলীদের সমালোচনা প্রসঙ্গে দারুল উলূম দেওবন্দের প্রখ্যাত শিক্ষক সাঈদ আহমদ বলেন : যিনি ভুল-ত্রুটির উর্ধে নন এমন কারো অন্ধ তাকলীদ করা শির্কের শামিল । এ সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন :

‘‘যিনি ভুল-ত্রুটির উর্ধে নন সাধারণ মানুষের মাঝে তাঁর অন্ধ তাকলীদ করার প্রকৃতি ও স্বরূপ এমন যে, কোনো বিষয়ে মুসলিম উম্মাহের কোনো একজন জ্ঞানী ব্যক্তি ইজতেহাদ করে থাকবেন। তাঁর অনুসারীগণ তাঁর ইজতেহাদের ব্যাপারে এ-ধারণা পোষণ করে বসবেন যে, তাঁর যাবতীয় ইজতেহাদই একশ’ভাগ সঠিক অথবা অধিকাংশই সঠিক। এ ধারণার ভিত্তিতে তারা তাঁর ইজতেহাদী সিদ্ধান্তের দ্বারা কোনো সহীহ হাদীসকে প্রত্যাখ্যান করবেন। অথচ রহমাতপ্রাপ্ত এ উম্মতে যে তাকলীদের ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছিলেন [সম্ভবত লেখক এখানে যার বক্তব্য বর্ণনা করছেন তার মত তুলে ধরেছেন, নতুবা তাকলীদের ব্যাপারে ঐকমত্য হওয়ার বিষয়টি প্রসিদ্ধ কথা নয়। [সম্পাদক]], উপর্যুক্ত ধরনের তাকলীদটি সে তাকলীদের অন্তর্গত নয়। কেননা; তারাতো এ বিষয়টি জানার ভিত্তিতে মুজতাহিদগণের তাকলীদ করা জায়েয হওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছিলেন যে, ইজতেহাদকৃত বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কোনো ‘নাস’ আছে কী না, তা জানার ব্যাপারে মুজতাহিদগণের অন্তরে অধীর আগ্রহ থাকার পাশাপাশি সে বিষয়ে ইজতেহাদ করতে গিয়ে তাঁরা ভুল ও শুদ্ধ উভয়ই করে থাকবেন এবং এ সংকল্পের ভিত্তিতে তাঁদের তাকলীদ করা হবে যে, যখন কোনো বিষয়ে তাকলীদ করার পর এর বিপরীতে কোনো সহীহ হাদীস প্রমাণিত হবে, তখন তাকলীদকে বর্জন করা হবে এবং হাদীসের অনুসরণ করা হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম { اتخذوا أحبارهم ورهبانهم ... الآية } এর ব্যাখ্যায় বলেছেন : ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানরা তাদের ধর্মীয় বিষয়ে জ্ঞানী ও ধর্মযাজকদের উপাসনা করতো না, কিন্তু তারা যখন তাদের জন্য কিছু হালাল বলতো তারা তা হালাল মনে করতো, আর যখন কিছু হারাম বলতো তখন তারা তা হারাম মনে করতো ।’’ [. মূল আরবী হচ্ছে, أن يجتهد واحد من علماء الأمة في مسئلة فيظن متبعوه أنه على الإصابة قطعا أو غالبا، فيردوا به حديثا صحيحا . و هذا التقليد غير ما اتفق عليه الأمة المرحومة؛ فإنهم اتفقوا على جواز التقليد للمجتهدين، مع العلم بأن المجتهد يخطئ و يصيب، مع الاستشراف لنص النبي صلى الله عليه وسلم في المسئلة، والعزم على أنه إذا ظهر حديث صحيح خلاف ما قلد فيه ، ترك التقليد و اتبع الحديث، قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : اتخذوا أحبارهم ورهبانهم أربابا من دون الله ) أنهم لم يكونوا يعبدونهم ولكنهم إذا أحلوا لهم شيئا استتحلوه و إذا حرموا عليهم شيئا حرموه . দেখুন: সাঈদ আহমদ বালনপুরী, আল-আউনুল কবীর ফিল ফাওযিল কবীর্; (দেওবন্দ : মাকতাবাতু হেজায, সংস্করণ বিহিন, সন বিহীন), পৃ. ৮৩।]

ইমাম আবু হানীফা (রহ.) বা তাঁর নামে প্রচলিত মাযহাবের অন্ধ তাকলীদের মাঝে যে আমাদের পরকালীন মুক্তি নয় তা স্বয়ং ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর একটি স্বপ্নের দ্বারাও আমরা অবগত হতে পারি। কথিত আছে যে, ইমাম আবু হানীফা (রহ.) একদা আল্লাহ তা‘আলাকে স্বপ্নে দেখেন। তাতে আল্লাহ তাঁকে বলেন: ‘‘আমি তোমাকে এবং কেয়ামত পর্যন্ত যারা তোমার মাযহাবের অনুসরণ করে তাদেরকেও ক্ষমা করলাম’’। ইমাম ইবনে আবিদীন আল-হানাফী ( ولمن اتبعك ) এ কথার ব্যাখ্যায় বলেন : এর অর্থ হচ্ছে- দ্বীনের খেদমত ও তা জানার ক্ষেত্রে অথবা তোমার ইজতেহাদ দ্বারা তুমি যে সব আদেশ ও নিষেধ অবগত হয়ে থাকবে, সে সব ক্ষেত্রে যারা তোমার অনুসরণ করবে, এত্থেকে বিচ্যুত হবে না, তোমার অনুসরণ স্রেফ (অন্ধ) তাকলীদের মাধ্যমে করবে না, (বরং যারা বুঝে শুনে তোমার তাকলীদ করবে) আমি তাদেরকেও ক্ষমা করলাম। [ঘটনাটির মূল ভাষ্য হচ্ছে, و نقل قصة رأى أبو حنيفة في المنام ، وفيه قال الله له : قد غفرنا لك و لمن اتبعك من كان على مذهبك إلى يوم القيامة . قوله : ولمن اتبعك أى في الخدمة و المعرفة أو فيما أدى إليه اجتهادك من الأوامر و النواهي و لم يزغ عنها ، لا بمجرد التقليد দেখুন : ইবন ‘আবিদীন, রাদ্দুল মুহতার; (পাকিস্তান : এইচ. এম. সাঈদ কোম্পানী, সংস্করণ বিহীন, সন বিহীন), ১/৫২।(তবে এ ধরণের কিসসা-কাহিনী ও স্বপ্ন দ্বারা দলীল পেশ করা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আলেমদের সঠিক পদ্ধতি নয়। [সম্পাদক])]

বিশুদ্ধ দলীলের ভিত্তিতে কারো মত ও পথের অনুসরণ ও তাকলীদের চর্চা অনেক আলেমগণের দ্বারা স্বীকৃতি না পাওয়ার ফলে, অনুসরণ ও আনুগত্য সম্পর্কে আমাদের প্রতি আল্লাহর যে নির্দেশ রয়েছে, তা তাদের দ্বারা অগ্রাহ্য হওয়ার পাশাপাশি, অনুসরণ সম্পর্কে তাদের প্রতি নিজ ইমামেরও যে নির্দেশ রয়েছে, তাও তারা অসতর্কতা হেতু অমান্য করে চলেছেন; কেননা ইমাম আবু হানীফা (রহ.) নিজেই তাঁর অনুসারীদের লক্ষ্য করে বলেছেন:

إذا صح الحديث فهو مذهبي

‘‘হাদীস যখন সহীহ পাওয়া যাবে তখন সেটাই আমার মাযহাব হিসেবে গণ্য হবে।’’ [. ক্বাযী সানাউল্লাহ পানিপথী, প্রাগুক্ত; ২/৬৫।] অনুসরণ সম্পর্কে ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর এত সুস্পষ্ট বক্তব্য থাকা সত্ত্বেও আমাদের অনেক আলেমগণ তা পালন করেন না। তবে আশার কথা হলো : অতীতের কিছু সংখ্যক জ্ঞানীদের ন্যায় অধুনা দেশের প্রখ্যাত কিছু আলেমগণকে সাধারণ আলেমদের চেয়ে কিছু ব্যতিক্রম করতে দেখা যাচ্ছে। তাঁরা বেসরকারী কোনো কোনো প্রচার মাধ্যমের প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠানে অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে নিজ মাযহাবে প্রচলিত কোনো কোনো আমল পরিত্যাগ করে এর বিপরীতে সহীহ অথবা অধিক সহীহ হাদীসের দ্বারা প্রমাণিত কিছু আমল করার প্রতি দেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করছেন। فلله الحمد و المنة

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন