hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শির্ক কী ও কেন

লেখকঃ ড. মুহাম্মদ মুয্‌যাম্মিল আলী

২৯
কোনো মানুষ বা কোনো বস্তুকে সরাসরি উপকারী বা অপকারী বলা শির্কঃ
মানুষের তাকদীরে যাবতীয় কল্যাণ আর অকল্যাণ যখন আল্লাহর পক্ষ থেকে পূর্ব নির্ধারিত, তখন কোনো মানুষ বা অপর কোনো বস্তুর সহযোগিতায় তা প্রাপ্ত হওয়ার ফলে সে মানুষ বা সে বস্তুকে সরাসরি উপকারী বা অপকারী বলা শর‘য়ী দৃষ্টিতে স্বীকৃত নয়। কেননা, কোনো মানুষ বা কোনো বস্তু নিজ থেকে কারো কোনো উপকার বা অপকার করতে পারে না। মানুষ বা কোনো বস্তুর মাধ্যমে মানুষের সে কল্যাণই অর্জিত হতে পারে যা আল্লাহই সে বস্তু বা সে মানুষের মাধ্যমে কাউকে দেয়ার ইচ্ছা করেছেন। এ প্রসঙ্গে ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :

«وَاعْلَمْ أَنَّ الْأُمَّةَ لَوْ اجْتَمَعَتْ عَلَى أَنْ يَنْفَعُوْكَ بَشَيْءٍ لَمْ يَنْفَعُوْكَ إَلاَّ بِشَيْءْ قَدْ كَتَبَهُ اللهُ لَكَ، وَلَوْاجْتَمَعُوْا عَلَى أَنْ يَضُرُّوْكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَضُرُّوْكَ إِلاَّ بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَه اللهُ عَلَيْكَ رُفِعتِ الْأَقْلاَمُ وَجُفَّتِ الصُّحُفُ»

“জেনে রাখো! সমগ্র জাতির লোকেরা যদি তোমার কোনো কল্যাণ করার জন্য সমবেত হয়, তবে তারা তোমার সে কল্যাণই করতে পারবে যার কথা আল্লাহ তোমার জন্যে লিখে রেখেছেন, তারা যদি তোমার কোনো অকল্যাণ করার জন্য সমবেত হয়, তবে তারা তোমার সে অকল্যাণই করতে পারবে যা আল্লাহ তোমার উপর লিখে রেখেছেন। তাকদীর লিখার পর কলম উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে, আর কাগজ শুকিয়ে গেছে।’’ [. তিরমিযী, প্রাগুক্ত; কিতাবু সিফাতিল কিয়ামাহ, বাব : নং ৫৯, ৪/৬৬৭।]

এ হাদীসটি আমাদেরকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করে দিচ্ছে যে, আল্লাহ তা‘আলাই এককভাবে আমাদের যাবতীয় কল্যাণ ও অকল্যাণ দানের মালিক। তিনি প্রজ্ঞা ও ইনসাফের ভিত্তিতে আমাদের তাকদীর পরিচালনা করে থাকেন। আমরা কর্ম ও দু‘আ করে কেবল সে কল্যাণই অর্জন করতে পারবো যা তিনি বিজ্ঞতার সাথে আমাদের জন্যে মঞ্জুর করে রেখেছেন। তাঁর মঞ্জুরীর বাইরে আমরা কোনো কল্যাণই অর্জন কিংবা কোনো অকল্যাণই দূর করতে পারবো না। অতএব, আল্লাহর পরিচালনাগত বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে শির্ক করা থেকে বাঁচতে হলে আমাদের করণীয় হবে :

কেবলমাত্র আল্লাহকেই যাবতীয় কল্যাণ ও অকল্যাণের মালিক বলে মনে করতে হবে।

যাবতীয় কল্যাণার্জন ও অকল্যাণ দূরীকরণের জন্য সাধ্যানুযায়ী কর্ম করে তাঁরই নিকট তা প্রাপ্তির জন্য চাইতে হবে এবং তাঁরই উপর ভরসা করতে হবে।

সকল কল্যাণার্জন ও অকল্যাণ দূরীকরণের কৃতিত্ব নিজের কর্মকে বা অপর কাউকে বা অপর কোনো বস্তুকে না দিয়ে কেবল আল্লাহকেই দান করতে হবে।

যে সব ক্ষেত্রে কারো পক্ষে কারো কল্যাণার্জন বা অকল্যাণ দূরীকরণে কোনো প্রকার সাহায্য করার সাধ্য নেই, সে সব ক্ষেত্রে তিনি ব্যতীত অন্য কারো সাহায্য কামনা করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

বিপদে পড়লে তিনি ব্যতীত কোনো অলি ও দরবেশকে স্মরণ না করে বিপদ থেকে মুক্তির জন্য কেবল তাঁকেই স্মরণ করে কেবল তাঁর কাছেই সাহায্য কামনা করতে হবে।

বিপদ মুক্তির জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা অলিগণের নাম ও তাঁদের মর্যাদার ওসীলা না ধরে আল্লাহর তাওহীদ, তাঁর উত্তম নামাবলী, নিজের অপরাধের স্বীকৃতি, বিপদের প্রাক্কালে নিজের অপারগতা ও অসহায়তার কথা বলে, নিজের সৎকর্ম, বিশেষ করে সালাত ও ধৈর্যের মাধ্যমে অথবা কোনো সৎ জীবিত মানুষের দু‘আর ওসীলা গ্রহণ করে দু‘আ করতে হবে।

এখানে স্মর্তব্য যে, যারাই উপর্যুক্ত করণীয় বিষয়ে ব্যতিক্রম করবে নিঃসন্দেহে তারা পরিচালনাগত শির্কের শিকারে পরিণত হবে। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে যে, কারো ভাগ্যে বিপদ লিখা থাকলে আল্লাহর ইচ্ছা না হলে হাজারো চেষ্টা করেও সে তা দূর করতে পারবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও তাঁর সাহাবীদের জীবনে নানাবিধ বিপদ এসেছে, তাঁর পক্ষেও সে সব দূর করা সম্ভব হয় নি, আল্লাহ তা‘আলা নিজেও রাসূলের মর্যাদার দিক বিবেচনা করে তাঁর বিপদ দূর করে দেন নি। তাই যার উপর যে বিপদ আসার চুড়ান্ত ফয়সালা হয়ে রয়েছে, তার উপর তা আসবেই, তা কোনোভাবেই দূর করা যাবে না। আল্লাহর ইচ্ছার সামনে আমাদের সকল ইচ্ছা ম্লান হয়ে যেতে বাধ্য। আল্লাহর কাছে রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যথেষ্ট মান ও মর্যাদা থাকা সত্ত্বেও তিনি যখন তাঁর ও তাঁর সাহাবীদের বিপদ দূর করতে পারেন নি; তখন এ জগতে আর কে এ ধরনের যোগ্যতার অধিকারী থাকতে পারে? তিনি যেমন তাঁর মর্যাদার ওসীলায় তাঁর সাহাবীদের পার্থিব বিপদ দূর করতে পারেন নি, তেমনি তিনি আখেরাতেও তাঁর মর্যাদার ওসীলায় কারো পরকালীন বিপদ দূর করতে পারবেন না। তাঁর আত্মীয় স্বজনরা যাতে এ ধরনের কোনো সুযোগের আশায় থেকে আখেরাতে বিপদে না পড়ে, সে-জন্য তিনি তাঁর আদরের মেয়ে ফাতিমাসহ অন্যান্য সকল নিকটাত্মীয়দের ডেকে ডেকে সুস্পষ্ট ভাষায় তা জানিয়ে দিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে,

«لَمَّا نَزَلَتْ ( وَأَنْذِرْ عَشِيْرَتَكَ الْأَقْرَبِيْنَ ) دَعَا النَّبِيُّ قُرْبَتَهً فَعَمَّ وَخَصَّ، فَقَالَ : يَا بَنِيْ كَعْبَ بْنَ لُؤَيْ ! أَنْقِذُوْا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، فَإِنَّيْ لاَ أَمْلِكُ لَكُمْ مِنَ اللهِ شَيْئًا أَوْ قَالَ : فَإَنِّيْ لاَ أُغْنِيْ عَنْكُمْ مِنَ اللهِ شَيْئًا . وَ يَا بَنِيْ هَاشِمْ ! أَنْقِذُوْا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّار فَإِنَّيْ لاَ أُغْنِيْ عَنْكُمْ مِنَ اللهِ شَيْئًا . وَ يَا بَنِيْ عَبْدِ الْمُطَّلِبْ ! أَنْقِذُوْا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّار فَإِنَّيْ لاَ أُغْنِيْ عَنْكُمْ مِنَ اللهِ شَيْئًا . وَ يَا فَاطِمَةُ ! انْقِذِيْ نَفْسَكِ مِنَ النَّارِ، سَلِيْنِيْ مَا شِئْتِ مِنْ مَالِيْ فَإِنِّيْ لاَ أُغْنِيٍ مِنَ اللهِ شَيْئًا»

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর যখন (তোমার নিকটাত্মীয়দের ভয় প্রদর্শন কর) এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়, তখন তিনি তাঁর নিকটাত্মীয়দেরকে সাধারণ ও বিশেষভাবে উপদেশ প্রদান করেন। বনী কা‘ব ইবন লুআইদের ডেকে বলেন : ওহে বনী কা‘ব! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর; কারণ, আমি তোমাদেরকে আল্লাহর পাকড়াও থেকে রক্ষা করতে পারবো না। ওহে বনী হাশিম! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও; কেননা আমি তোমাদেরকে আল্লাহর পাকড়াও থেকে বাঁচাতে পারবো না। ওহে বনী মুত্তালিব! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও; কেননা আমি তোমাদেরকে আল্লাহর পাকড়াও থেকে বাঁচাতে পারবো না। হে ফাতিমা! তুমি তোমার নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে উদ্ধার কর, আমার অর্থ সম্পদ থেকে যা খুশী চেয়ে নাও, আমি আল্লাহর বিরুদ্ধে তোমার কোনো উপকার করতে পারবো না।’’ [. বুখারী, প্রাগুক্ত; কিতাবুল-ওয়াসা-য়া, বাব : ১১, হাদীস নং ২৬০৬; ৩/১০১২; মুসলিম, প্রাগুক্ত; কিতাবুর ঈমান, বাব নং ৮৯, হাদীস নং ২০৪, ১/১৯২ ; আবু ঈসা= আত-তিরমিযী, প্রাগুক্ত; কিতাবুত তাফসীর, বাব : ২৭, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জাতির জনগণকে সতর্ক করা প্রসঙ্গে যা বর্ণিত হয়েছে), ৫/৩৩৮।]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবী এবং তাঁর নিকটাত্মীয়দের দুনিয়া-আখেরাতের বিপদ দূরীকরণের ক্ষেত্রে তাঁর অবস্থা যদি এই হয়, তাহলে তাঁর উম্মতের মাঝে তাঁর চেয়ে অধিক মর্যাদাবান এমন কে থাকতে পারে, যিনি তাঁর মর্যাদা ব্যবহার করে এমন সব কাজ করতে পারবেন, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষে সম্ভব নয়?

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন