hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ধূমপান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ফাতাওয়া

লেখকঃ আমের সালেহ আলাওয়ী নাজী

৪. তামাক বিক্রি করা ও তামাক কোম্পানীতে কাজ করার হুকুম কী?
প্রশ্ন/ এ প্রশ্নটি করা হয়েছিল আল্লামা শাইখ ইবনে উসাইমীন রহমাতুল্লাহ আলাইহি কে: আমি কঠোর পরিশ্রমের একটি কাজ করতাম, কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিকতে পারিনি, অতঃপর হালকা একটি কাজের সন্ধান করে সিগারেট তৈরীর কাজ ছাড়া অন্য কোনো কাজ পাইনি, আমি কয়েক মাস যাবৎ এতে কাজ করে যাচ্ছি। উল্লেখ্য যে, আমি সিগারেট বা এ জাতীয় কোনো কিছু পান করি না। প্রশ্ন হলো: আমার এ কাজের পারিশ্রমিক হালাল না হারাম? আলহামদু লিল্লাহ আমি কিন্তু মনোযোগ সহকারে আমার কাজ করে যাচ্ছি।

উত্তর: সিগারেট তৈরীর কারখানায় আপনার কাজ করা জায়েয হবে না; কারণ সিগারেট তৈরী এবং তা ক্রয় বিক্রির লেনদেন করা হারাম, আর এ কোম্পানীতে কাজ করা হারামের উপর সহযোগিতার শামিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ وَتَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡبِرِّ وَٱلتَّقۡوَىٰۖ وَلَا تَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡعُدۡوَٰنِۚ ﴾ [ المائ‍دة : ٢ ]

“তোমরা পরস্পরে ভাল এবং তাকওয়াপূর্ণ কাজে সহযোগিতা কর পক্ষান্তরে পাপ এবং আল্লাহদ্রোহী কাজে সহযোগিতা করো না।” [সূরা মায়েদা: ২] কাজেই এ কোম্পানীতে আপনার কাজ চালিয়ে যাওয়া হারাম এবং আপনার পারিশ্রমিকও হারাম। আপনার উচিত হলো এ কোম্পানীর কাজ ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর নিকট তাওবা করা। হালাল কর্ম করে হালাল কম উপার্জন করা হারাম অধিক উপার্জনের চেয়ে উত্তম। কেননা কোনো ব্যক্তি যখন হারাম উপার্জন করে আল্লাহ তাতে বরকত দান করেন না, তা সদকা করে দিলে আল্লাহ তা কবুল করেন না আর তা ছেড়ে গেলে সেটা তার জন্য গোনাহের কাজ হবে যদিও ওয়ারিসদের জন্য প্রাপ্ত সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে। জেনে রাখুন! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সাব্যস্ত রয়েছে যে, তিনি বলেছেন: ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ পবিত্র, তিনি কেবল পবিত্রকেই গ্রহণ করেন এবং আল্লাহ মুমিনগণকে সেই নির্দেশ দিয়েছেন; যে নির্দেশ দিয়েছিলেন রাসূলগণকে’। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلرُّسُلُ كُلُواْ مِنَ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَٱعۡمَلُواْ صَٰلِحًاۖ إِنِّي بِمَا تَعۡمَلُونَ عَلِيمٞ ٥١﴾ [ المؤمنون : ٥١ ]

“হে রাসূলগণ! আপনারা ভাল পবিত্র জিনিস ভক্ষণ করুন এবং সৎকর্ম সম্পাদন করুন, নিশ্চয়ই আমি আপনাদের কর্ম সম্পর্কে অবগত আছি।” [সূরা মুমিনূন: ৫১]। তিনি আরও বলেন:

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُلُواْ مِن طَيِّبَٰتِ مَا رَزَقۡنَٰكُمۡ وَٱشۡكُرُواْ لِلَّهِ إِن كُنتُمۡ إِيَّاهُ تَعۡبُدُونَ ١٧٢ ﴾ [ البقرة : ١٧٢ ]

“হে মুমিনগণ ! আমি তোমাদেরকে যে পবিত্র রিযিক দিয়েছি তা থেকেই তোমরা ভক্ষণ কর এবং আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর; যদি তোমরা সত্যিকারার্থে তাঁর ইবাদত করে থাক।” [সুরা বাকারা: ১৭২]। এরপর রাসূল কোনো ব্যক্তির দীর্ঘ ভ্রমণের কথা জানিয়ে বললেন, লোকটির কেশ এলোমেলো অবস্থায়, আকাশের দিকে দু’হাত বাড়িয়ে বলে: হে আল্লাহ! হে আল্লাহ! অথচ তার আহার হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক পরিচ্ছেদ হারাম, শরীর গঠন হয়েছে হারাম দিয়ে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: ‘তাহলে কি ভাবে তার দো‘আ কবুল হবে?” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০১৫, ফাতাওয়া ইসলামিয়া ৪/৩১০-৩১১।]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই ব্যক্তির দো‘আ কবুল হওয়া অসম্ভব বলেছেন অথচ লোকটি দো‘আ কবুল হওয়ার কারণ (সফর) অবলম্বন করেছে; কারণ তার আহার হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক পরিচ্ছেদ হারাম, শরীর গঠন হয়েছে হারাম দিয়ে। এ প্রার্থনাকারী দো‘আ কবুলের কারণগুলো অবলম্বন করার পরও তার দো‘আ কবুল হয়নি, কারণ তার সকল জিনিস হারাম ছিল, কাজেই মানুষের উচিত হলো: হারাম খাদ্য পরিত্যাগ করা এবং এ থেকে দূরে থাকা।

﴿ وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّهُۥ مَخۡرَجٗا ٢ وَيَرۡزُقۡهُ مِنۡ حَيۡثُ لَا يَحۡتَسِبُۚ﴾ [ الطلاق : ٢، ٣ ]

“যে ব্যক্তি আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে তিনি তার জন্য রাস্তা বের করে দেন এবং বিনা হিসাবে তিনি তাকে রিযিক দিয়ে থাকেন।” [সূরা তালাক: ২-৩]

﴿ وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّهُۥ مِنۡ أَمۡرِهِۦ يُسۡرٗا ﴾ [ الطلاق : ٤ ]

“এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে তিনি তার কাজকে সহজ করে দেন।” [সূরা তালাক: ৪]

আপনার প্রতি আমার উপদেশ হলো, আপনি আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করুন! এবং এ কোম্পানী থেকে বের হয়ে এসে হালাল রিযিক অনুসন্ধান করুন, যেন আল্লাহ এতে বরকত দান করেন [ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ৪/৩১০-৩১১।]।

প্রশ্ন/ এ প্রশ্নটি করা হয়েছিল ফাতাওয়ার স্থায়ী কমিটিকে: আমার এক ভাই সিগারেট বিক্রি করে, আমি জানি যে সিগারেট বিক্রি, ক্রয় এবং তা পান করা জায়েয নেই, কিন্তু তাকে যখন এ কথা বললাম তখন সে আমাকে উত্তর দিল: আমার টাকার প্রয়োজন, বেশী দিন এ ব্যবসা করব না, কিছু টাকা হলেই তা ছেড়ে দিয়ে অন্য ব্যবসা করব। এমতাবস্থায় সিগারেট বিক্রি করা কি জায়েয হবে?

উত্তর: তামাক বা সিগারেটের ক্ষতি, অপবিত্রতা এবং ব্যক্তি ও সমাজে এর খারাপ পরিণতির উপর বিভিন্ন দলীল প্রমাণিত হওয়ার কারণে তা বিক্রি করা সর্বাবস্থায় হারাম। আপনার ভাই টাকার যে প্রয়োজন উল্লেখ করেছেন তা হারাম ব্যবসা দ্বারা অর্জন করার বৈধতা প্রদান করে না। হারাম থেকে বেঁচে হালালই যথেষ্ট। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّهُۥ مَخۡرَجٗا ٢ وَيَرۡزُقۡهُ مِنۡ حَيۡثُ لَا يَحۡتَسِبُۚ﴾ [ الطلاق : ٢، ٣ ]

“যে ব্যক্তি আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে তিনি তার জন্য রাস্তা বের করে দেন এবং বিনা হিসাবে তিনি তাকে রিযিক দিয়ে থাকেন।” [সূরা তালাক: ২-৩]। [ফাতাওয়া নং ১৮৪৪১, ২৫/১২/১৪১৬ হি।]

প্রশ্ন/ যারা অশ্লীল ম্যাগাজিন, তামাক বা বিড়ি সিগারেট এবং মদ বিক্রি করে তাদের বেতন হালাল না হারাম?

উত্তর: যে সমস্ত দোকানে বা জায়গায় অশ্লীল ম্যাগাজিন, তামাক বা বিড়ি সিগারেট এবং মদ বিক্রি করা হয় সেখানে কাজ করা হারাম, কারণ তা অপবিত্র বিধায় উপার্জনও অপবিত্র। তাছাড়া যে সকল জিনিস মূলত হারাম তা ক্রয় বিক্রয় ও এর মূল্য থেকে উপকার লাভ করাও হারাম, এর উপর ভিত্তি করে বলা যায় যে, এ সমস্ত দোকানে বা জায়গাতে কাজ করে বেতন নেয়া হালাল নয়। কেননা তাতে কাজ করায় তা সম্প্রসারিত হয়, মানুষের দ্বীন ও দুনিয়ার ক্ষতি সাধন হয় এবং বাতিল ও পাপ কাজে সহযোগিতা করা হয়। আল্লাহ বলেন:

﴿ وَتَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡبِرِّ وَٱلتَّقۡوَىٰۖ وَلَا تَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡعُدۡوَٰنِۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۖ إِنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلۡعِقَابِ﴾ [ المائ‍دة : ٢ ]

“তোমরা পরস্পরে ভাল এবং তাকওয়াপূর্ণ কাজে সহযোগিতা কর; পক্ষান্তরে পাপ এবং আল্লাহদ্রোহী কাজে সহযোগিতা করো না, তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।” [সূরা মায়েদা: ২]।

ইমাম আহমদ রহমাতুল্লাহ আলাইহি তার মুসনাদে বর্ণনা করেছেন, ইবনে উমর রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«لُعِنَتِ الْخَمْرُ عَلَى عَشْرَةِ وُجُوهٍ : لُعِنَتِ الْخَمْرُ بِعَيْنِهَا، وَشَارِبُهَا، وَسَاقِيهَا، وَبَائِعُهَا، وَمُبْتَاعُهَا، وَعَاصِرُهَا، وَمُعْتَصِرُهَا، وَحَامِلُهَا، وَالْمَحْمُولَةُ إِلَيْهِ، وَآكِلُ ثَمَنِهَا»

“মদকে দশটি দিক থেকে অভিসম্পাৎ করা হয়েছে: স্বয়ং মদকে, তার পানকারী, পরিবেশনকারী, বিক্রেতা, ক্রেতা, প্রস্তুতকারক, যার জন্য প্রস্তুত হরা হয়, তা বহনকারী, যার জন্য বহন করা হয় এবং এর মূল্য ভক্ষণকারীকে অভিসম্পাৎ করা হয়েছে।” [মুসনাদে আহমাদ ২/২৫।] তাছাড়া তিরমিযী ও ইবনে মাজাহসহ আরও অন্যান্যরা হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

উল্লেখিত দোকানে যারা কাজ করে টাকা উপার্জন করবে তাদের উচিত হলো: কাজ ত্যাগ করা এবং উপার্জিত টাকা পয়সা কোনো ভাল ও কল্যাণকর কাজে ব্যয় করে দেওয়া। যেমন: যদি সম্ভব হয় তবে ফকীর মিসকিনকে দিয়ে দেওয়া, সেই সাথে আল্লাহর নিকট তাওবা করা, এমনিভাবে সে কাজ ছেড়ে দিয়ে অন্য কাজ করা যার উপার্জন হালাল ও পবিত্র। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য কোনো কিছু ছেড়ে দেয় আল্লাহ তাকে এর চেয়ে ভাল প্রতিদান দিয়ে থাকেন।

তিনি বলেন:

﴿وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّهُۥ مَخۡرَجٗا ٢ وَيَرۡزُقۡهُ مِنۡ حَيۡثُ لَا يَحۡتَسِبُۚ﴾ [ الطلاق : ٢، ٣ ]

“যে ব্যক্তি আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে তিনি তার জন্য রাস্তা বের করে দেন এবং বিনা হিসাবে তিনি তাকে রিযিক দিয়ে থাকেন।” [সূরা তালাক: ২-৩]।

তিনি আরও বলেন:

﴿ وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّهُۥ مِنۡ أَمۡرِهِۦ يُسۡرٗا﴾ [ الطلاق : ٤ ]

“এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে তিনি তার কাজকে সহজ করে দেন।” [সূরা তালাক: ৪]

আর আল্লাহর কাছেই তাওফীক চাচ্ছি, হে আল্লাহ, আমাদের নবী মুহাম্মদ এর উপর ও তাঁর পরিবার পরিজন এবং সাহাবীগণের উপর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন। [স্থায়ী কমিটির ফাতাওয়া - ১৪/৪৬০-৪৬১।]

প্রশ্ন/ আমি একটি ফ্লাটে থাকি এবং আমার বাবা অন্য ফ্লাটে থাকেন, তিনি তামাক ও সিগারেট তৈরী এবং তা বিক্রি করার কারখানায় কাজ করেন, বাবা মাঝে মধ্যে খাবার নিয়ে এসে আমাকে খেতে বলেন, সিগারেট কোম্পানীতে কাজের উপার্জনের টাকা দিয়ে ক্রয় করা খাবার আমি খেয়ে থাকি, এটা কি হারাম? তার সাথে খাবার খাওয়াও কি হারাম? এমনিভাবে আমার ছেলে-মেয়েরাও খেয়ে থাকে। আমি একটি এ্যালুমিনিয়াম কোম্পানীতে কাজ করি। বাবা সে কোম্পানীতে প্রায় ত্রিশ বছর যাবৎ কাজ করছেন, এ থেকে বিরত থাকার পদ্ধতি কি?

উত্তর: যেটা হয়ে গিয়েছে তা আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন ইন-শাআল্লাহ, কিন্তু ভবিষ্যতে চেষ্টা করুন হালাল ও ভাল খাবার খেতে, তা আপনার উপার্জন থেকে হোক বা অন্যের উপার্জনের হোক। আর আপনার বাবাকে আপনি ভালোর দিকে দাওয়াত দিতে থাকুন, হালাল খাবার ও পবিত্র উপার্জনের জন্য তাকে উৎসাহ দিতে থাকুন এবং তার সাথে ভাল ব্যবহার করুন, হয়তো আল্লাহ তাকে হক্বের দিকে হেদায়েত করতে পারেন।

আর আল্লাহর কাছেই তাওফীক চাচ্ছি, হে আল্লাহ, আমাদের নবী মুহাম্মদ এর উপর ও তাঁর পরিবার পরিজন এবং সাহাবীগণের উপর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন। [স্থায়ী কমিটির ফাতাওয়া ২২/ ৩৪২।]

প্রশ্ন/ আমি একজন ব্যবসায়ী, তামাক বা সিগারেট বিক্রি করি, এটাও আমার ব্যবসার অন্তর্ভুক্ত। এটা কি আমার জন্য জায়েয হবে? উল্লেখ্য যে, আমি ধূমপান করি না এবং আমার নিকট একটি টেলিভিশন আছে, আমার বন্ধুরা একত্রিত হয়ে তাতে খেলাধুলা এবং টিভি সিরিয়াল (নাটক) দেখে; এতে তারা মাঝে মধ্যে নামাযও ছেড়ে দিচ্ছে। এমতাবস্থায় এভাবে টিভি রাখা আমার জন্য জায়েয হবে কি? এমনিভাবে আমি মার্কেটের এক পার্শ্বে একটি দোকানে থাকি, আমার নিকট থেকে মাসজিদের দূরত্ব হলো প্রায় ২০০ মিটার, আমি দোকানে নামায পড়ি কিন্তু মাসজিদে জামাতের সাথে পড়ি না, আমার এ কাজের হুকুম কি?

উত্তর: তামাক বা বিড়ি সিগারেট একটি অপবিত্র এবং ক্ষতিকর জিনিস, তা বিক্রি বা পান করা জায়েয নেই। কেননা আল্লাহ কোনো জিনিস হারাম করলে এর মূল্যও হারাম করেন, কাজেই আপনার উচিত হলো তা বিক্রি করা থেকে আল্লাহর নিকট তাওবা করে হালাল জিনিস বিক্রির উপর সীমাবদ্ধ থাকা। এতেই কল্যাণ ও বরকত রয়েছে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য কোনো কিছু ছেড়ে দেয় আল্লাহ তাকে এর চেয়ে ভাল প্রতিদান দিয়ে থাকেন। তদ্রুপ আপনার বন্ধুরা আপনার নিকট এভাবে এসে টিভি দেখে নামায ছেড়ে দিলে তাদেরকে আসতে দেওয়া ঠিক নয়, আপনার উচিত হলো দোকান বন্ধ করে তাদেরকে সাথে নিয়ে মাসজিদে যাওয়া।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تُلۡهِكُمۡ أَمۡوَٰلُكُمۡ وَلَآ أَوۡلَٰدُكُمۡ عَن ذِكۡرِ ٱللَّهِۚ وَمَن يَفۡعَلۡ ذَٰلِكَ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡخَٰسِرُونَ ٩ ﴾ [ المنافقون : ٩ ]

“হে মুমিনগণ! তোমাদের ধন- সম্পদ এবং সন্তান সমত্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর যিকির থেকে গাফেল না করে দেয়। এবং যারা এ কারণে গাফেল হবে তারাইতো ক্ষতিগ্রস্ত।” [সূরা মুনাফিকুন: ৯]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«مَنْ سَمِعَ النِّدَاءَ فَلَمْ يَأْتِهِ، فَلَا صَلَاةَ لَهُ، إِلَّا مِنْ عُذْرٍ»

“যে ব্যক্তি আযান শুনেও মাসজিদে আসবে না তার বিনা উযরে নামায হবে না। [ইবন মাজাহ: ৭৯৩।]” ইবনে আব্বাসকে জিজ্ঞাসা করা হলো সে উযর কি? তিনি বললেন: ‘ভয় বা অসুস্থতা’ [আবু দাউদ: ৫১১।]।

তাঁর থেকে আরও সাব্যস্ত আছে যে,

أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ أَعْمَى، فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ، إِنَّهُ لَيْسَ لِي قَائِدٌ يَقُودُنِي إِلَى الْمَسْجِدِ، فَسَأَلَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُرَخِّصَ لَهُ، فَيُصَلِّيَ فِي بَيْتِهِ، فَرَخَّصَ لَهُ، فَلَمَّا وَلَّى، دَعَاهُ، فَقَالَ : «هَلْ تَسْمَعُ النِّدَاءَ بِالصَّلَاةِ؟» قَالَ : نَعَمْ، قَالَ : «فَأَجِبْ»

“একদা এক অন্ধ ব্যক্তি বলল: হে আল্লাহর রাসূল! মাসজিদে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমার কোনো লোক নেই, ঘরে নামায পড়ার জন্য আমার কোনো অনুমতি আছে কি? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তুমি আযান শুনতে পাও কি? বলল: জি হ্যাঁ, তিনি বললেন: তাহলে মাসজিদে আস [মুসলিম: ৬৫৩।]।” [স্থায়ী কমিটির ফাতাওয়া - ১৩/৬৩-৬৪।]

প্রশ্ন/ মিসরীয় মুফতী শাইখ নাসর ফরিদ ওয়াসেলকে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলো করা হয়েছে: শরীয়ত যদি ধূমপানকে হারাম স্বীকৃতি দিয়ে থাকে তাহলে এর ব্যবসায়ী, প্রস্তুতকারক এবং ক্রেতার ব্যাপারে শরীয়তের হুকুম কি? তাদের এ কাজ কি হারাম না হালাল? এর লভ্যাংশ হারাম না হালাল? এবং এ লভ্যাংশ সদকা করা, তা দিয়ে হজ্জ করা এবং যাবতীয় ভাল কাজ করা হারাম না হালাল?

উত্তর: ইসলামী শরীয়তে স্থায়ী মূলনীতি হলো: আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে সৃষ্টি করে সম্মানিত করেছেন, তাদেরকে প্রতিনিধি করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন তা আবাদ করার জন্য এবং এর গুপ্তধন ও কল্যাণগুলো খোঁজে বের করার জন্য, তাদেরকে গ্রহণ করার জন্য বিশ্বকে উপযোগী করে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন যেন তারা পৃথিবীতে প্রতিনিধি হতে পারে।

আল্লাহ বলেন:

﴿ وَإِذۡ قَالَ رَبُّكَ لِلۡمَلَٰٓئِكَةِ إِنِّي جَاعِلٞ فِي ٱلۡأَرۡضِ خَلِيفَةٗۖ ...﴾ [ البقرة : ٣٠ ]

“আর আপনার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদিগকে বললেন: আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে চাচ্ছি ...” [বাক্বারা: ৩০]। মানুষকে আল্লাহ তা‘আলা প্রতিনিধি করার অর্থই হচ্ছে তাদেরকে অন্যান্য সকল সৃষ্টির উপর সম্মান ও মর্যাদা দেওয়া।

তিনি বলেন:

﴿۞وَلَقَدۡ كَرَّمۡنَا بَنِيٓ ءَادَمَ وَحَمَلۡنَٰهُمۡ فِي ٱلۡبَرِّ وَٱلۡبَحۡرِ وَرَزَقۡنَٰهُم مِّنَ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَفَضَّلۡنَٰهُمۡ عَلَىٰ كَثِيرٖ مِّمَّنۡ خَلَقۡنَا تَفۡضِيلٗا ٧٠ ﴾ [ الاسراء : ٧٠ ]

“নিশ্চয়ই আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমি তাদেরকে জলে ও স্থলে চলাচলের জন্য বাহন দান করেছি, তাদেরকে পবিত্র ও ভাল জীবিকা দিয়েছি এবং তাদেরকে অনেক সৃষ্ট বস্তুর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।” [সূরা বানী-ইসরাঈল: ৭০]

আর মানুষকে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা এসেছে অন্যান্য সকল সৃষ্টির উপর সুস্থ জ্ঞান দ্বারা পার্থক্যের মাধ্যমে। পৃথিবীতে মানুষের আগমনের এটিই অর্পিত দায়িত্ব যাকে মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ধরা হয়।

তিনি বলেন:

﴿ وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦ مَآ أُرِيدُ مِنۡهُم مِّن رِّزۡقٖ وَمَآ أُرِيدُ أَن يُطۡعِمُونِ ٥٧ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلرَّزَّاقُ ذُو ٱلۡقُوَّةِ ٱلۡمَتِينُ ٥٨ ﴾ [ الذاريات : ٥٦، ٥٨ ]

“শুধু আমার ইবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জ্বিনকে সৃষ্টি করেছি, আমি তাদের নিকট জীবিকা চাই না এবং এটাও চাই না যে, তারা আমার আহার্য যোগাবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা জীবিকাদাতা অধিক শক্তিধর পরাক্রান্ত।” [সূরা যারিয়াত: ৫৬-৫৮]

মানুষকে আল্লাহ সম্মান দেওয়ার বহু দিক রয়েছে, এর মধ্যে: আল্লাহ মানুষকে নিজের নাফস, শরীর এবং অন্যান্য মানুষকে হেফাজত করার নির্দেশ দিয়েছেন বিধায় তার নিজেকে এবং অন্যদেরকে যে কোনো ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া উচিত নয়।

আল্লাহ বলেন:

﴿ وَلَا تَقۡتُلُوٓاْ أَنفُسَكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِكُمۡ رَحِيمٗا ﴾ [ النساء : ٢٩ ]

“তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে হত্যা করো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি অত্যন্ত অনুগ্রহশীল।” [সূরা নিসা: ২৯]

তিনি আরও বলেন:

﴿وَلَا تُلۡقُواْ بِأَيۡدِيكُمۡ إِلَى ٱلتَّهۡلُكَةِ وَأَحۡسِنُوٓاْۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلۡمُحۡسِنِينَ ﴾ [ البقرة : ١٩٥ ]

“তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিওনা, আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন।” [সূরা বাকারা: ১৯৫]

তারপরও ইসলামী শরীয়তের মূল উদ্দেশ্য এবং প্রয়োজনীয় বিষয় হল পাঁচটি জিনিস- দ্বীন, নাফস, বংশ, জ্ঞান এবং সম্পদকে রক্ষা করা। এর কোনো একটি হারালে তা ধ্বংসের শামিল; যা থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য। কারণ মানুষের মালিক একমাত্র আল্লাহ এবং সবকিছু তারই সৃষ্টি, কাজেই এ ইন্দ্রিয়গুলোর ব্যাপারে কোনো মানুষের এ রকম হস্তক্ষেপ করা উচিত নয় যাতে এর ক্ষতি হয় বা বিনাশ এবং ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়। মানুষ তার নিজের উপর বা তার কোনো অঙ্গের উপর অথবা অন্য কারো উপর যে কোনো ক্ষতি সাধন করাকে ইসলামী শরীয়ত হারাম করেছে এবং যারা তা করবে তাদেরকে জাহান্নামে চিরস্থায়ী থাকার অঙ্গিকার দিয়েছে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«وَمَنْ قَتَلَ نَفْسَهُ بِحَدِيدَةٍ عُذِّبَ بِهِ فِي نَارِ جَهَنَّمَ»

“যে ব্যক্তি কোনো লোহা দ্বারা আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামে সর্বদা ঐ লোহা দ্বারা তার পেটে আঘাত করতে থাকবে।” [বুখারী: ১৩৬৩; মুসলিম: ১০৯।]

এমনিভাবে তার নিজেকে, তার জীবনকে এবং তার স্বাস্থ্যকে রক্ষার জন্য এবং তার নিজের ও অন্যদের থেকে সকল কষ্ট এবং ধ্বংসকে দূরে রাখার জন্য যাবতীয় পদ্ধতি অবলম্বন করার জন্য ইসলাম নির্দেশ দিয়েছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, যা কিছু মানুষের ক্ষতি ও ধ্বংস বয়ে আনে তা শরীয়তের দিক দিয়ে হারাম। আর যে কোনো পদ্ধতিতে মানুষের ক্ষতি সাধনে কেউ অংশ নিলে বা সহযোগিতা করলে সে আল্লাহর হারাম করা কাজে পতিত হবে। কেননা তিনি বলেন:

﴿ مِنۡ أَجۡلِ ذَٰلِكَ كَتَبۡنَا عَلَىٰ بَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ أَنَّهُۥ مَن قَتَلَ نَفۡسَۢا بِغَيۡرِ نَفۡسٍ أَوۡ فَسَادٖ فِي ٱلۡأَرۡضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ ٱلنَّاسَ جَمِيعٗا ﴾ [ المائ‍دة : ٣٢ ]

“এ কারণেই আমি বনী ইসরাঈলের প্রতি লিখে দিয়েছি যে, যে কেউ প্রাণের বদলে প্রাণ বা পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করা ব্যতীত কাউকে হত্যা করে সে যেন সকল মানুষকেই হত্যা করে।” [সূরা মায়েদা: ৩২]

আর প্রশ্নের ব্যাপারে বলা যায় যে, ধূমপান শরীয়তের মাপকাটিতে সার্বিকভাবেই হারাম, কারণ এতে ধূমপায়ী ও পার্শ্ববর্তী লোকদের ক্ষতি হয়। বরং ইহা হারাম করার হুকুমটা মদের হারামের চেয়ে কঠোর। কেননা, মদ শুধু মদ্যপায়ীকেই ক্ষতি করে, আর ধূমপান করা ধূমপায়ী এবং অন্যকে তাদের অজান্তে ক্ষতি করা হয় যা বৈজ্ঞানিকদের মতে সাব্যস্ত রয়েছে। যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীস মদ্যপায়ী, তা বিক্রেতা, বহনকারী, প্রস্তুতকারক, যার জন্য প্রস্তুত করা হয় এবং যার জন্য বহন করা হয় তাদের সকলের উপর লা‘নত করে তবে ধূমপায়ীও এর মধ্যে শামিল; কারণ ধূমপানে বিরাট ক্ষতি হয়। আর যদি ধূমপান শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম হয় তবে এর ব্যবসায়ী, প্রস্তুতকারক, বিক্রেতা এবং ক্রেতার যাবতীয় কাজ কর্মও হারাম। এর দ্বারা তাদের পাওয়া লভ্যাংশ ও উপার্জনের টাকা হারাম, তা সদকা করা বা কল্যাণকর কোনো কাজে দান করা ঠিক হবে না, কেননা আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্রকেই ভালবাসেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ : { يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ } [ المؤمنون : 51] وَقَالَ : { يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ } [ البقرة : 172] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟»

‘হে লোকসকল! নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র ব্যতীত আর কিছু গ্রহণ করেন না, নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদেরকে সে জিনিসের নির্দেশই প্রদান করেছেন যার নির্দেশ তিনি রাসূলদেরকে দিয়েছেন, তিনি রাসূলদের বলেছেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلرُّسُلُ كُلُواْ مِنَ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَٱعۡمَلُواْ صَٰلِحًاۖ ﴾ [ المؤمنون : ٥١ ]

“হে রাসূলগণ, আপনারা ভাল পবিত্র খাবার আহার করুন এবং সৎকর্ম সম্পাদন করুন।” [সূরা মুমিনুন: ৫১]

তিনি আরও বলেন:

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُلُواْ مِن طَيِّبَٰتِ مَا رَزَقۡنَٰكُمۡ ﴾ [ البقرة : ١٧٢ ]

“হে মুমিনগণ, তোমাদেরকে আমি যে পবিত্র খাবার দিয়েছি তাই তোমরা আহার কর।” [সূরা বাকারা: ১৭২]

এরপর তিনি বললেন: ‘কোনো ব্যক্তির দীর্ঘ ভ্রমণ, এলোমেলো কেশ নিয়ে আকাশের দিকে দু’হাত বাড়িয়ে প্রার্থনা করে: হে আল্লাহ! হে আল্লাহ! অথচ তার আহার হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক পরিচ্ছেদ হারাম, শরীর গঠন হয়েছে হারাম দিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “তাহলে কীভাবে তার দো‘আ কবুল হবে?” [মুসলিম: ১০১৫।]

যদি সে এই টাকা দিয়ে ফরয হজ্জ করে তবে তার ফরয হজ্জ আদায় হয়ে যাবে কিন্তু এর কোনো সাওয়াব বা পূণ্য পাবে না, কারণ সে হারাম টাকা দিয়ে হজ্জ করেছে; যার মধ্যে কোনো ভাল এবং সাওয়াব নেই।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«وَإِذَا خَرَجَ بِالنَّفَقَةِ الْخَبِيثَةِ، فَوَضَعَ رِجْلَهُ فِي الْغَرْزِ، فَنَادَى : لَبَّيْكَ، نَادَاهُ مُنَادٍ مِنَ السَّمَاءِ : لَا لَبَّيْكَ وَلَا سَعْدَيْكَ، زَادُكَ حَرَامٌ وَنَفَقَتُكَ حَرَامٌ، وَحَجُّكَ غَيْرُ مَبْرُورٍ»

‘যখন কোনো ব্যক্তি অপবিত্র মাল দ্বারা হজ্জের জন্য বের হয়ে তার পা বাহনে রেখে লাব্বাইক বলে তাকবীর দেয়; তখন আকাশ থেকে আহ্বানকারী বলতে থাকেন: কোনো লাব্বাইক নয় এবং তোমাকে স্বাগতও নয়, তোমার আহার হারাম, তোমার মাল হারাম এবং তোমার হজ্জ তোমার উপর প্রত্যাখ্যাত [তাবারানী, মু‘জামুল আওসাত্ব: ৫২২৮।]।” [ফাতওয়া নং ৮৭২ প্রথম প্রশ্ন, ১৯৯৯ ইং। তবে এর সনদ খুবই দুর্বল।]

প্রশ্ন/ তামাক কোম্পানীর শেয়ার এবং এর মত আরও যা আছে তা ক্রয় করা হারাম না হালাল? তা ক্রয় করা থেকে বিরত থাকা কি ওয়াজিব?

উত্তর: তামাক কোম্পানীর শেয়ারের লেনদেন ও ব্যবসা করা শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েয নেই এবং এর লেনদেন করা কোনো মুসলিমেরও উচিত নয়। কারণ এ কোম্পানীর কার্যকলাপ হলো তামাক তৈরী, তা বিক্রি এবং এর ব্যবসা করা। আর মানুষের জন্য তামাকের এমন ক্ষতি নিশ্চিত হয়েছে যা তাকে বা যে কোনো অঙ্গকে ধ্বংস করে ফেলতে পারে এবং মালকে ধ্বংস করে দেয়। আর তা সকল বিষেশজ্ঞ ডাক্তার মুসলিম হোক বা অমুসলিম হোক তাদের এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। ইসলামী শরীয়তের আলেমদের ঐক্যমতে প্রতিটি ক্ষতিকর জিনিস হারাম এবং নিষিদ্ধ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ وَلَا تُلۡقُواْ بِأَيۡدِيكُمۡ إِلَى ٱلتَّهۡلُكَةِ ﴾ [ البقرة : ١٩٥ ]

“তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিওনা।” [সূরা বাকারা: ১৯৫] তিনি আরও বলেন:

﴿ وَلَا تَقۡتُلُوٓاْ أَنفُسَكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِكُمۡ رَحِيمٗا ﴾ [ النساء : ٢٩ ]

“তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি অত্যন্ত অনুগ্রহশীল” [সূরা নিসা: ২৯]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “নিজের কোনো অনিষ্টতা বা ক্ষতি এবং অন্য কারো ক্ষতি করা যাবে না”

তাছাড়া অনুসন্ধান ও বাস্তবতার প্রেক্ষিতে প্রমাণিত যে, তামাক তথা টোবাকো বা বিড়ি সিগারেট মানুষের জন্য মদ এবং অন্যান্য নেশা জাতীয় জিনিস থেকে অধিক ক্ষতিকর, যা ইসলামে ইজমা‘ এবং নিষেধাবলী দ্বারা নিশ্চিত হারাম করা হয়েছে, তামাক ক্ষতিকর হওয়ায় মদের উপর কিয়াস বা ভিত্তি করে তা হারাম করা হয়েছে, তার উপর একে হারাম করার উপর প্রমাণবহ সাধারণ প্রমাণাদি তো রয়েছেই, অনুরূপভাবে এর সাথে সম্পৃক্ত প্রয়োজনীয় বিষয়াদি তো আছেই, যা পূর্বে উল্লেখ করেছি। মিসরীয় দারুল ইফতা থেকে ধূমপান, তামাক ও এর মত অন্যান্য জিনিস হারাম হওয়ার ব্যাপারে সরকারী শর‘য়ী ফাতাওয়াও প্রকাশিত হয়েছে, কারণ তা মানুষ এবং সম্পদ বিধ্বংসী। তাছাড়া যেহেতু শরীয়তের দৃষ্টিতে কোনো কাজের মাধ্যমগুলোও তার উদ্দেশ্যের হুকুম গ্রহণ করে সেহেতু হারামের দিকে বয়ে নিয়ে যাওয়া পদ্ধতিও হারাম এবং তামাক উৎপাদনকারী কোম্পানীও টাকা উপার্জনের একটি হারাম পদ্ধতি। কেননা তা তামাক উৎপন্ন করে যা ব্যবহারের ফলে মানুষ এবং তাদের সম্পদের নিশ্চিত ক্ষতি সাধন হয়।

অতএব, এর শেয়ার ক্রয়, বণ্ড ক্রয়, তা উৎপন্ন এবং বিক্রি করা হারাম, এদের সাথে লেনদেন করা ঠিক হবে না, বরং তা ক্রয় বিক্রয় থেকে বিরত থাকা ফরয।’ [ফাতাওয়া নং (৮৭২) প্রশ্ন ৫।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন