hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

নারী-পুরুষে দেখাদেখি, নির্জনে অবস্থান ও সহাবস্থান সংক্রান্ত বিবিধ ফাতওয়া

লেখকঃ শাইখ আবদুল ‘আযীয ইবন আবদিল্লাহ ইবন বায, শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-‘উসাইমীন, শাইখ আবদুল্লাহ ইবন আবদির রহমান আল-জিবরীন এবং স্থায়ী ফতোয়া বোর্ডের ফতোয়া

স্কুল, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে ছেলে-মেয়ের মাঝে মেলামেশার ভয়াবহ ঝুঁকি
প্রশ্ন: এক যুবক বলে: সে ধনী পরিবারের সন্তান, লেখাপড়া করে একটা নারী-পুরুষ সহাবস্থান করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, যার সুবাদে একটা মেয়ের সাথে তার খারাপ সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং সে পাপচারের মধ্যে ডুবে যায়। সুতরাং সে তা পরিত্যাগ করার জন্য এখন কী করবে? আর তার জন্য তাওবার সুযোগ আছে কি? আর এ তাওবার জন্য শর্তগুলো কী কী?

উত্তর: এ প্রশ্নে দু’টি মাসআলা:

প্রথমত: আমাদের জন্য উচিত হলো ইসলামী রাষ্ট্রগুলোর শাসকবর্গের মনোযোগ আকর্ষণ করা এ জন্য যে, তারা তাদের নাগরিকগণের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করেছেন নারী ও পুরুষের সহাবস্থানে গড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। কারণ, এ অবস্থাটি ইসলামী শরী‘আতের বিরোধী এবং তার ওপর বিদ্যমান থাকাটা মুসলিমগণের জন্য উচিত নয়।

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«خَيْرُ صُفُوفِ النِّسَاءِ آخِرُهَا، وَشَرُّهَا أَوَّلُهَا»

“নারীদের সর্বোত্তম সারি বা কাতার হলো শেষ কাতার এবং সবচেয়ে মন্দ কাতার হলো তাদের প্রথম কাতার।” [ইবনু মাজাহ, হাদীস নং- ১০০০। আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]

এটা এ জন্য যে, তাদের প্রথম সারি পুরুষদের একবারে নিকটবর্তী সারি, আর শেষ সারি পুরুষদের থেকে দূরবর্তী সারি। সুতরাং যখন সালাতের মতো ‘ইবাদাতের স্থানে নারী ও পুরুষদের মাঝে দূরত্ব বজায় রাখার ও তাদের মাঝে সহাবস্থান না করার জন্য উৎসাহিত করা হয়, যেখানে মুসল্লি (সালাত আদায়কারী ব্যক্তি) অনুভব করে যে, সে দুনিয়া সংশ্লিষ্ট সবকিছু থেকে দূরে থেকে তার রবের সামনে উপস্থিত, তখন আপনার অবস্থাটা কী হওয়া উচিত যখন নারী ও পুরুষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সহাবস্থানের মতো পরিবেশ সৃষ্টি হবে? তখন কি তার থেকে দূরুত্ব বজায় রাখা ও সহাবস্থানের বিষয়টি বর্জন করাটা আরও অধিক উত্তম হবে না? নারীদের সাথে পুরুষদের মেলামেশা ও উঠাবসার বিষয়টি একটি বড় ধরনের ফিতনা, যাকে আমাদের শত্রুগণ রংচং লাগিয়ে আকর্ষণীয় করে দিয়েছে, শেষ পর্যন্ত আমাদের অনেকে সে ফিতনার শিকার হয়েছে।

সহীহ বুখারীতে উম্মু সালামা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:

«كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا سَلَّمَ قَامَ النِّسَاءُ حِينَ يَقْضِي تَسْلِيمَهُ وَيَمْكُثُ هُوَ فِي مَقَامِهِ يَسِيرًا قَبْلَ أَنْ يَقُومَ قَالَتْ : نَرَى وَاللَّهُ أَعْلَمُ أَنَّ ذَلِكَ كَانَ لِكَيْ يَنْصَرِفَ النِّسَاءُ قَبْلَ أَنْ يُدْرِكَهُنَّ أَحَدٌ مِنْ الرِّجَالِ»

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন (সালাতে) সালাম ফিরাতেন, তখন তাঁর সালাম ফিরানোর কাজটি শেষ হওয়ার সাথে সাথে নারীগণ দাঁড়িয়ে যেত এবং তিনি দাঁড়ানোর আগে তাঁর অবস্থানে কিছু সময় অবস্থান করতেন। তিনি (বর্ণনাকারিনী) বলেন: আমরা মনে করতাম, (আর আল্লাহই ভালো জানেন) এর উদ্দেশ্য হলো, যাতে পুরুষদের মধ্য থেকে কেউ নারীদেরকে নাগাল পাওয়ার আগেই তারা চলে যেতে পারে।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং- ৮৩২]

ইসলামী রাষ্ট্রগুলোর দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের জন্য আবশ্যকীয় কর্তব্য হলো, তারা এ বিষয়টিকে তাদের দেখাশুনার দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করা এবং তাদের নাগরিকগণকে যাবতীয় খারাপি ও ফিতনার উপায়-উপকরণ বা উপলক্ষ্য থেকে রক্ষা করা। কারণ, তাদেরকে যে দায়িত্ব বা ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে, অচিরেই আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে তাদের কর্তব্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন। আর তাদের জেনে রাখা উচিত যে, তারা যখন আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্য করবে এবং কম হউক বেশি হউক তাদের সকল কাজে তাঁর শরী‘আত অনুযায়ী শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করবে, তখন আল্লাহ তা‘আলা অবশ্যই তাদের হৃদয়গুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে দেবেন এবং ভালোবাসা ও পারস্পরিক কল্যাণ কামনায় তাদের মনগুলো ভরে দেবেন, আর তাদের জন্য তাদের কাজসমূহ সহজ করে দেবেন এবং তাদের প্রতি তাদের নাগরিকগণ বন্ধুত্ব ও আনুগত্যের পরকাষ্ঠা প্রদর্শন করবেন।

নারী ও পুরুষের এ ধরনের সহাবস্থানের মাঝে যেসব খারাপি ও ফিতনা-ফ্যাসাদের সৃষ্টি হয়, সেসব ব্যাপারে মুসলিম মিল্লাতের শাসক ও সাধারণ নাগরিকগণের চিন্তাভাবনা করা উচিত, আর এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ও সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো এ প্রশ্নকর্তা খারাপ সম্পর্কের ব্যাপারে যা উল্লেখ করেছে, যার কু-প্রভাব ও পাপসমূহ থেকে এখন সে পরিত্রাণ পাওয়ার চেষ্টা করছে।

বস্তুত নারী-পুরুষে সহাবস্থানের মতো ফিতনাটিকে সঠিক পরিকল্পনা ও সংস্কারের ব্যাপারে দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার দ্বারা নির্মূল করা সম্ভব, আর এটা হবে কতগুলো বিশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করার মাধ্যমে, যেগুলোতে শুধু নারীরাই পড়াশুনা করবে এবং তাদের সাথে সেখানে পুরুষদের অংশগ্রহণ থাকবে না।

আর যখন নারীগণ পুরুষগণের সহোদর হয়, তখন তাদের (নারীদের) জন্য অধিকার আছে তাদের (পুরুষদের) কাছ থেকে উপকারী জ্ঞান অর্জন করার, যেমনিভাবে অধিকার আছে পুরুষদেরও; কিন্তু তাদের (নারীদের) জন্য আমাদের পুরুষদের আবশ্যকীয় করণীয় হলো তাদেরকে শিক্ষা দেওয়ার ক্যাম্পাসটি পুরুষদের শিক্ষার ক্যাম্পাস থেকে আলাদা করার ব্যবস্থা করা। সহীহ বুখারীতে আবূ সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:

«جَاءَتِ امْرَأَة إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَقَالَتْ : يَا رَسُولَ اللهِ ذَهَبَ الرِّجَالُ بِحَدِيثِكَ، فَاجْعَلْ لَنَا مِنْ نَفْسِكَ يَوْمًا نَأْتِيكَ فِيهِ، تُعَلِّمُنَا مِمَّا عَلَّمَكَ اللهُ فَقَالَ : اجْتَمِعْنَ فِي يَوْمِ كَذَا وَكَذَا، فِي مَكَانِ كَذَا وَكَذَا . فَاجْتَمَعْنَ، فَأَتَاهُنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَعَلَّمَهُنَّ مِمَّا عَلَّمَهُ اللهُ ...»

“জনৈকা মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল: হে আল্লাহর রাসূল! আপনার হাদীস তো শুধু পুরুষ লোকেরাই শুনতে পায়। সুতরাং আপনার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একটি দিন নির্দিষ্ট করে দিন, যে দিন আমরা আপনার নিকট আসব, আল্লাহ আপনাকে যা কিছু শিক্ষা দিয়েছেন, তা থেকে আপনি আমাদের শিক্ষা দেবেন। তখন তিনি বললেন, তোমরা অমুক অমুক দিন অমুক অমুক স্থানে সমবেত হবে। তারপর (নির্দিষ্ট দিনে) তাঁরা সমবেত হলেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে এলেন এবং আল্লাহ তাঁকে যা শিক্ষা দিয়েছেন, তা থেকে তাদের শিক্ষা দিলেন....”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং- ৬৮৮০]

আর এটা হলো শিক্ষার জন্য নারীদেরকে বিশেষ কোনো স্থানে আলাদা করে নেওয়ার ব্যাপারে সুস্পষ্ট বক্তব্য। কেননা তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে বলেন নি যে, তোমরা পুরুষদের সাথে উপস্থিত হতে পার না?! আল্লাহ তা‘আলার নিকট প্রর্থনা করছি যে, তিনি যেন সকল মুসলিমকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণের সুন্নাতের উপর চলার তাওফীক দান করুন, যাতে তারা এর দ্বারা দুনিয়া ও আখিরাতে ইয্যত ও সম্মান লাভ করতে পারে।

দ্বিতীয় মাসআলা: প্রশ্নকর্তার প্রশ্ন, যা সে নিজ সম্পর্কে অবতারণা করেছে- তা হলো, সে একটা মেয়ের সাথে তার খারাপ সম্পর্ক স্থাপন করার মাধ্যমে পাপাচারে নিমজ্জিত হয়ে গেছে, এখন সে কী করবে? তার জন্য তাওবার সুযোগ আছে কি? থাকলে তার শর্তগুলো কী কী?

জবাবে আমি তাকে সুসংবাদ দিচ্ছি যে, প্রত্যেক তাওবাকারীর জন্যই তাওবার দরজা খোলা আছে, আর আল্লাহ তাওবাকারীগণকে ভালোবাসেন এবং যে ব্যক্তি গুনাহ্ থেকে তাওবা করে, তিনি তার সকল গুনাহ্ ক্ষমা করে দেন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿وَٱلَّذِينَ لَا يَدۡعُونَ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهًا ءَاخَرَ وَلَا يَقۡتُلُونَ ٱلنَّفۡسَ ٱلَّتِي حَرَّمَ ٱللَّهُ إِلَّا بِٱلۡحَقِّ وَلَا يَزۡنُونَۚ وَمَن يَفۡعَلۡ ذَٰلِكَ يَلۡقَ أَثَامٗا ٦٨ يُضَٰعَفۡ لَهُ ٱلۡعَذَابُ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ وَيَخۡلُدۡ فِيهِۦ مُهَانًا ٦٩ إِلَّا مَن تَابَ وَءَامَنَ وَعَمِلَ عَمَلٗا صَٰلِحٗا فَأُوْلَٰٓئِكَ يُبَدِّلُ ٱللَّهُ سَيِّ‍َٔاتِهِمۡ حَسَنَٰتٖۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ٧٠ وَمَن تَابَ وَعَمِلَ صَٰلِحٗا فَإِنَّهُۥ يَتُوبُ إِلَى ٱللَّهِ مَتَابٗا ٧١﴾ [ الفرقان : ٦٧، ٧١ ]

“এবং তারা আল্লাহর সাথে কোনো ইলাহ-কে ডাকে না। আর আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন, যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না। আর তারা ব্যভিচার করে না, যে এগুলো করে সে শাস্তি ভোগ করবে। কিয়ামতের দিন তার শাস্তি বর্ধিতভাবে প্রদান করা হবে এবং সেখানে সে স্থায়ী হবে হীন অবস্থায়, তবে যে তাওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, আল্লাহ তাদের গুণাহসমূহ নেক দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর যে তাওবা করে ও সৎকাজ করে, সে তো সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর অভিমুখী হয়”। [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ৬৭-৭১]

তাওবার শর্ত পাঁচটি:

প্রথম শর্ত: তাওবা হতে হবে খালেস তথা নির্ভেজালভাবে আল্লাহ তা‘আলার উদ্দেশ্যে, যাতে কোনো প্রকার প্রদর্শনী ও কোনো সৃষ্টিকে ভয় করার মত কোনো বিষয় থাকবে না; বরং তা হবে আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যে। কারণ, মানুষ তার রবের উদ্দেশ্য একনিষ্ঠ না হয়ে তাঁর নৈকট্য হাসিলের জন্য যে আমলই করুক না কেন, তা অর্থহীন ও বাতিল বলে গণ্য হবে। আল্লাহ তা‘আলা হাদীসে কুদসীতে বলেন:

«أنَا أغْنَى الشُّرَكَاءِ عَنِ الشِّرْكِ ، مَنْ عَمِلَ عَمَلاً أشْرَكَ فِيهِ مَعِي غَيْرِي تَرَكْتُهُ وَشِرْكَهُ»

“আমি শির্ককারীদের (মুশরিকদের) আরোপিত শির্ক বা অংশ থেকে মুক্ত। যে ব্যক্তি এমন কোনো কাজ করল যার মধ্যে আমার সাথে অন্য কাউকে শরীক করল, আমি তাকে এবং তার শির্ককে প্রত্যাখ্যান করি।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং- ৭৬৬৬]

দ্বিতীয় শর্ত: সে যে গুনাহের কাজ করেছে, তার জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হওয়া এবং এ ব্যাপারে নিজেকে অপরাধী মনে করা, এমনকি আল্লাহ তা‘আলার কাছ থেকে ক্ষমা ও মার্জনা পাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা।

তৃতীয় শর্ত: যদি গুনাহের কাজের সাথে লিপ্ত থাকে, তাহলে তা পরিত্যাগ করা। কারণ, গুনাহের কাজ অব্যাহত রাখলে কোনো তাওবাই গ্রহণযোগ্য হবে না। সুতরাং গুনাহগার ব্যক্তি যদি বলে: আমি গুনাহ থেকে তাওবা করলাম অথচ সে তা অব্যাহতভাবে সে অপরাধ করেই যাচ্ছে, তাহলে এটা আল্লাহ তা‘আলার সাথে ঠাট্টা-বিদ্রূপ বলে গণ্য হবে। যেমন, তুমি যদি কাউকে উদ্দেশ্য করে বল, আপনার সাথে আমি যে বেয়াদবি করেছি আমি তার জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত, অথচ তুমি তখনও তার সাথে বেয়াদবি করেই যাচ্ছ, তাহলে মনে হবে যেন তুমি তার সাথে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করছ, আর মহান রব আল্লাহ তা‘আলা তার চেয়ে অনেক বেশি মহামহিয়ান ও গৌরবময় যে, তুমি দাবি করবে, তুমি তাঁর অবাধ্য হওয়া থেকে তাওবা করেছ, অথচ তুমি তা অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছ।

চতুর্থ শর্ত: ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ পুনরায় আর করবে না বলে দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।

পঞ্চম শর্ত: তাওবাটি তার সময়মতো হওয়া, যে সময়ে তাওবা করলে তাওবাকারীর তাওবা গ্রহণ করা হয় অর্থাৎ তাওবাটি হতে হবে মানুষের মৃত্যুর ঘন্টা বেজে যাওয়ার আগে এবং সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদয় হওয়ার পূর্বে। কেননা, সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদয় হওয়ার পরে তাওবা করলে সে তাওবা কোনো উপকারে লাগবে না। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿هَلۡ يَنظُرُونَ إِلَّآ أَن تَأۡتِيَهُمُ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ أَوۡ يَأۡتِيَ رَبُّكَ أَوۡ يَأۡتِيَ بَعۡضُ ءَايَٰتِ رَبِّكَۗ يَوۡمَ يَأۡتِي بَعۡضُ ءَايَٰتِ رَبِّكَ لَا يَنفَعُ نَفۡسًا إِيمَٰنُهَا لَمۡ تَكُنۡ ءَامَنَتۡ مِن قَبۡلُ أَوۡ كَسَبَتۡ فِيٓ إِيمَٰنِهَا خَيۡرٗاۗ قُلِ ٱنتَظِرُوٓاْ إِنَّا مُنتَظِرُونَ ١٥٨﴾ [ الانعام : ١٥٨ ]

“তারা কি শুধু এরই প্রতীক্ষা করে যে, তাদের কাছে ফিরিশতা আসবে কিংবা আপনার রব আসবেন কিংবা আপনার রবের কোনো নিদর্শন আসবে? যেদিন আপনার রবের কোনো নিদর্শন আসবে, সেদিন তার ঈমান কোন কাজে আসবে না, যে পূর্বে ঈমান আনে নি অথবা যে ব্যক্তি ঈমানের মাধ্যমে কল্যাণ লাভ করে নি। বলুন, ‘তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমরাও প্রতীক্ষায় রইলাম’।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১৫৮]

আর সে কোনো নিদর্শন মানেই সূর্য তার অস্ত যাওয়ার স্থান (পশ্চিম দিক) থেকে উদয় হওয়া, অনুরূপভাবে আরেকটি নিদর্শন মৃত্যু উপস্থিত হওয়ার সময়টিও তাওবা কবুল না হওয়ার সময়। কেননা, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿وَلَيۡسَتِ ٱلتَّوۡبَةُ لِلَّذِينَ يَعۡمَلُونَ ٱلسَّيِّ‍َٔاتِ حَتَّىٰٓ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ ٱلۡمَوۡتُ قَالَ إِنِّي تُبۡتُ ٱلۡـَٰٔنَ وَلَا ٱلَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمۡ كُفَّارٌۚ أُوْلَٰٓئِكَ أَعۡتَدۡنَا لَهُمۡ عَذَابًا أَلِيمٗا ١٨﴾ [ النساء : ١٨ ]

“তাওবা তাদের জন্য নয়, যারা আজীবন মন্দ কাজ করে, অবশেষে তাদের কারো মৃত্যু উপস্থিত হলে সে বলে, ‘আমি এখন তাওবা করছি’ এবং তাদের জন্যও নয়, যাদের মৃত্যু হয় কাফের অবস্থায়। এরাই তারা যাদের জন্য আমরা কষ্টদায়ক শাস্তির ব্যবস্থা করেছি”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৮]

সুতরাং এ পাঁচটি শর্ত যদি আপনার মধ্যে যথাযথভাবে বাস্তবায়িত থাকে, তাহলে আপনার তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে ইনশা-আল্লাহ।

শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-‘উসাইমীন

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন