hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

নারী-পুরুষে দেখাদেখি, নির্জনে অবস্থান ও সহাবস্থান সংক্রান্ত বিবিধ ফাতওয়া

লেখকঃ শাইখ আবদুল ‘আযীয ইবন আবদিল্লাহ ইবন বায, শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-‘উসাইমীন, শাইখ আবদুল্লাহ ইবন আবদির রহমান আল-জিবরীন এবং স্থায়ী ফতোয়া বোর্ডের ফতোয়া

৪০
জাতীয় বা অনুরূপ অনুষ্ঠানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদেরকে বাদ্যের তালে তালে নৃত্য প্রদর্শনীতে ব্যবহার করা এবং এ কাজে তাদেরকে বাধ্য করার বিধান সম্পর্কে ফতোয়া
প্রশ্ন: উচ্চ মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদেরকে বাদ্যের তালে তালে কুচকাওয়াজ, সুরসঙ্গীত ও নৃত্যের কাজে ব্যবহার করা বৈধ হবে কি, অথচ এসব ছাত্রী এমন সংকীর্ণ টাইটপিট পাজামা পরিধান করে, যা শরীরের প্রতিটি অঙ্গ ও যৌন-সম্মোহনী বস্তুগুলো পরিমাপসহ প্রকাশ করে দেয় এবং পরিধান করে দুই বিগত পরিমাণ লম্বা পোশাক?

উত্তর: এটা বৈধ নয়। কারণ, তাতে তাদের গোপন অঙ্গসমূহ উন্মুক্ত হয়ে যায় এবং সংক্ষিপ্ত (ছোট) ও সংকীর্ণ পোশাক পরিধান করার কারণে তাদের দেহের যৌন-সম্মোহনী বস্তুগুলো প্রকাশ পেয়ে যায়, তাছাড়া তাতে বাদ্যের তালে তালে নৃত্য ও সুর-সঙ্গীতের মত আমোদ-প্রমোদের ব্যাপারে রয়েছে এবং এ দু’টি জিনিসই অত্যন্ত খারাপ উত্তেজক, যা উপস্থিত দর্শকদের যৌনতাকে উস্কে দেয় এবং তাতে অশ্লীলতা, অন্যায় ও নৈতিক অবক্ষয়ের উপায়-উপকরণসমূহ সক্রিয় হয়ে উঠে, আর এ জন্য শারিরীক কুচকাওয়াজের আগের পরের সকল কাজই অবৈধ, আর তার জন্য কতগুলো প্রাথমিক প্রস্তুতি রয়েছে, তা হলো এসব ছাত্রীদেরকে আপত্তিকর পোশাক পরিধান করে কুচকাওয়াজের জন্য প্রস্তুতিমূলক বাদ্যের তালে তালে নৃত্য ও সুর-সঙ্গীতের প্রশিক্ষণ দেওয়া, যাতে তারা এ ঘৃণিত বিষয়ে দক্ষ ও পারদর্শী হয়ে উঠে এবং উপস্থিত দর্শকদের আনন্দ দেওয়ার দ্বারা খারাপির ক্ষেত্রে সফলতার গ্যারান্টি ও নিশ্চয়তা বিধান করতে পারে, আর তার (কুচকাওয়াজের) পরপর আরও কতগুলো নিকৃষ্ট কর্ম আছে যেগুলোর দ্বারা অথবা যেগুলোর অধিকাংশের দ্বারা তার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়, আর সেগুলো হলো— যার উপর তারা প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং যে ক্ষেত্রে তারা প্রদর্শনী করেছে, তার জন্য তাদেরকে দেওয়া পুরস্কার গ্রহণ করা, ফলে তারা তার থেকে পঙ্কিলতা উপার্জন করল, যার দ্বারা তারা দুনিয়ার আমোদ-প্রমোদ ও রঙ্গ-তামাশা অর্জন করবে।

প্রশ্ন: এ ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দানের জন্য কি ছাত্রীর অভিভাবক গুনাহগার হবেন?

উত্তর: এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকেই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে, যাকে আল্লাহ তা‘আলা কোনো দায়িত্ব দিয়েছেন। সুতরাং ছাত্রীর অভিভাবক পিতা বা তার পক্ষ থেকে অভিভাবকের দায়িত্ব পালনকারীকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। অতএব, তিনি যদি ইসলামের আদব বা শিষ্টাচারগুলো তাকে সুন্দরভাবে শিক্ষা দেন এবং তাকে খারাপ ও অন্যায় কাজের পিচ্ছিল জায়গাসমূহ থেকে রক্ষা করেন, তাহলে আল্লাহ তাকে পুরস্কার ও সাওয়াব দান করবেন এবং তার মর্যাদা ও মানসম্মান রক্ষা ও সংরক্ষণ করবেন, আর যদি তিনি তাকে খারাপ শিক্ষায় প্রশিক্ষিত করেন অথবা যথাযথ শিক্ষা দানের কাজে অবহেলা করেন অথবা তাকে ফিতনার জায়গাগুলোতে ও খেল-তামাশার ময়দানে ঠেলে দেন, তাহলে তার অপরাধের কারণে তিনি অপরাধি ও গুনাহগার হবেন, যার অভিভাবকের দায়িত্ব তাকে আল্লাহ দিয়েছেন এবং তার শেষ পরিণতিও শুভ হবে না। কারণ, তিনি তার দায়িত্বের অপব্যবহার করার কারণে তার দুনিয়ার জীবনে ব্যর্থতা ও হতাশার ফল ভোগ করবেন এবং পরকালীন জীবনে শাস্তি ভোগ করবেন, যদি আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রহমত দ্বারা তাকে ক্ষমা না করেন।

প্রশ্ন: সরকারী কর্তৃপক্ষের জন্য জাতীয় বা রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের নামে ছাত্রীদেরকে এ কাজে বাধ্য করা সঠিক ও যথাযথ হবে কিনা?

উত্তর: এমন প্রশাসন ব্যতীত জাতির সৌভাগ্য, উন্নতি, সকল বিষয়ে সুশৃঙ্খলা এবং তার অস্তিত্ব রক্ষা করা সম্ভব হবে না, যারা আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে পাওয়া তাওফীকের মাধ্যমে আকিদা-বিশ্বাসে, কথায়, কাজে ও তাদের মধ্যকার উদ্ভূত সমস্যার সমাধানে তাদেরকে শাসন ও পরিচালনা করবে আল্লাহ তা‘আলার কিতাব ও তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ’র (কর্মপদ্ধিতির) আলোকে এবং তাদেরকে নেতৃত্ব দেবে সুন্দর ও সুচারুরূপে।

আর কোনো শাসক শ্রেণি ও প্রশাসনের পক্ষে স্থায়িত্ব, গ্রহণযোগ্যতা ও গৌরব অর্জন করা সম্ভব নয় এমন এক জাতির উপস্থিতি ব্যতীত, যার অবস্থা জীবনের সকল দিক ও বিভাগে দীন, সততা, সরলতা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, শিল্প, কৃষি, শক্তি ও সামর্থসহ সকল ক্ষেত্রে এমন না হয়, যার দ্বারা জাতি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তার ভিত মজবুত ও শক্তিশালী হয়, এমনকি তা সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তে পরিণত হয়, যার প্রতি মুগ্ধ হয়ে বুদ্ধিজীবীগণ তার দিকে তাদের দৃষ্টি উত্থাপন করে এবং তার অবস্থা সম্পর্কে যিনি অবগত হন, তিনি তাকে সম্মান ও সমীহ করেন।

সুতরাং শাসকশ্রেণী তাদের জাতি ও নাগরিকগণের জন্য যে পরিমাণ ভালো সেবা, প্রাপ্য অধিকার ও সুশাসন উপহার দিতে পরবে, তারা শক্তি, সম্মান, গৌরব ও উচ্চমর্যাদার মতো ফল ভোগ করতে পারবে, আর জনগণও যে পরিমাণে তাদের কল্যাণকামী প্রশাসন কর্তৃক তাদেরকে যে ভালো কাজের দিকে আহ্বান করা হয়, সে আহ্বানে সাড়া দেবে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য তাদেরকে সহযোগিতা করবে, তারাও সে পরিমাণে উন্নতি, কল্যাণ, সমৃদ্ধি, সুখ-শান্তি ইত্যাদি লাভ করতে পারবে।

সুতরাং মুসলিম সমাজের শাসকবর্গ ও প্রশাসকশ্রেণীর জন্য আবশ্যক হলো, তারা তাদের প্রজাদেরকে ইসলমী শাসননীতির ভিত্তিতে পরিচালিত করবেন এবং এ ক্ষেত্রে তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের যথাযথ অনুকরণ করবেন, আর সাথে সাথে তারা তাঁর হিদায়াতের পথে চলবেন এবং তাঁর খোলাফায়ে রাশেদীনের পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন, যাতে তারা সৌভাগ্যবান হন এবং তাদের নাগরিকগণও সৌভাগ্যবান হয়, আর তাদের ইহকালীন ও পরকালীন পরিণতি যাতে প্রশংসনীয় হয়, আর যাতে ইসলমী শরী‘য়ত ও তার মজবুত নিয়ম-নীতির বিরুদ্ধাচরণ করা থেকে সতর্কতা অবলম্বন করতে পারে। কারণ, তাদের প্রজাগণের শাসন করার ক্ষেত্রে, তাদের আচার অনুষ্ঠান ও চারিত্রিক বিচ্যুতির ক্ষেত্রে এবং তাদের সভ্যতা-সংস্কৃতি ও শিক্ষাব্যবস্থায় খেল-তামাশা, আমোদ-প্রমোদ ও রঙ্গ-তামাশার অনুপ্রবেশ ঘটানোর মাধ্যমে এবং সেখানে নারী ও পুরুষে সহাবস্থানের পরিবেশ সৃষ্টি করার মাধ্যমে এবং এ ধরনের নানান রকমের অন্যায় ও খারাপির প্রথা চালু করার ব্যাপারে তারা তাদের প্রবৃত্তির খেয়াল খুশির অনুরসরণ করলে এবং নাস্তিক্যবাদী রাষ্ট্রসমূহের অনুকরণ করলে তারা তাদের স্বহস্তে নিজেদেরকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেবে। সুতরাং তারা যদি এ কাজ করেন, তাহলে তাদের বন্ধন ছিন্ন হয়ে যাবে এবং ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাবে, আর যদি তারা আল্লাহকে তুচ্ছজ্ঞান করে, তাহলে তিনি তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন এবং তাদের জন্য শাস্তির ঘোষণা সত্যে পরিণত হবে, আর এটাই হলো বিশৃঙ্খলা ও বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের যথাযথ পুরস্কার।

আর পরিশেষে বলতে হয়, প্রজ্ঞাপূর্ণ বক্তব্য ও গভীর অর্থবোধক বাণীর অধিকারী নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ ও উপদেশ থেকে এত বেশি সুন্দর, পরিপূর্ণ, সুস্পষ্ট ও ব্যাপক অর্থবোধক কথা অন্য কেনো মানুষের কথার মধ্যে পাওয়া যায় না। কেননা তিনি বলেছেন:

«ألا كُلُّكُمْ راعٍ، وكُلُّكُمْ مَسؤولٌ عن رَعِيَّتِهِ، فالإمامُ الذي على النَّاسِ راعٍ، وهو مَسؤولٌ عن رَعِيَّتِهِ، والرجلُ راعٍ على أَهل بيتِهِ، وهو مَسؤولٌ عن رَعِيَّتِهِ ، والمرأةُ رَاعِيَةٌ على أَهْلِ بَيْتِ زوجها، وولدِهِ، وهي مسؤولَةٌ عنهم، وَعَبدُ الرَّجل راعٍ على مال سيِّدِهِ، وهو مَسْؤولٌ عنه، ألا كُلُّكُمْ رَاعٍ، وكُلُّكُمْ مَسؤولٌ عن رَعِيَّتِهِ» .

“জেনে রেখো! তোমাদের প্রত্যেকেই একজন দায়িত্বশীল, আর তোমরা প্রত্যেকেই নিজ অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। অতএব, ইমাম, যিনি জনগণের দায়িত্বশীল, তিনি তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন; পুরুষ গৃহকর্তা তার পরিবারের দায়িত্বশীল, সে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। নারী তার স্বামীর পরিবার ও সন্তান-সন্ততির ওপর দায়িত্বশীল, সে তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। কোনো ব্যক্তির গোলাম স্বীয় মালিকের সম্পদের দায়িত্বশীল, সে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। সাবধান! তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল, আর তোমরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ দায়িত্বাধীন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।” [সহীহ বুখারী হাদীস নং- ৬৭১৯; সহীহ মুসলিম।]

তিনি আরও বলেন:

«مَا مِنْ عَبْدٍ يَستَرْعِيهِ اللهُ رَعِيَّةً ، فَلَمْ يَحُطْهَا بِنُصْحِهِ إلاَّ لَمْ يَجِدْ رَائِحَةَ الجَنَّة» .

“কোনো বান্দাকে যদি আল্লাহ তা‘আলা জনগণের নেতৃত্ব প্রদান করেন, আর সে কল্যাণকামিতার সাথে তাদের তত্ত্বাবধান না করে, তাহলে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।” [সহীহ বুখারী ( হাদীস নং- ৬৭৩১) ও মুসলিম।]

অপর এক বর্ণনায় এসেছে:

«مَا مِنْ وَالٍ يَلِي رَعِيَّةً مِنْ الْمُسْلِمِينَ فَيَمُوتُ وَهُوَ غَاشٌّ لَهُمْ إِلَّا حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ» .

“যদি কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি মুসলিম জনগণের দায়িত্ব লাভ করল এবং তার মৃত্যু হল এ অবস্থায় যে, সে ছিল খিয়ানতকারী, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং- ৬৭৩২]

সুতরাং প্রত্যেক দায়িত্বশীল বা প্রশাসক যেন সেসব ব্যক্তির ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করে, যাদের নেতৃত্ব আল্লাহ তাকে প্রদান করেছেন, আর তিনি যেন তাদের কল্যাণ কামনা করেন এবং তাদের মধ্যে সত্য ও ন্যায়বিচার করেন। কারণ, তিনি তাদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবেন।

আল্লাহ হলেন তাওফীক দাতা।

و صلى الله على نبينا محمد و على آله و صحبه و سلم .

(আল্লাহ সালাত ও সালাম প্রেরণ করুন আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর এবং তাঁর পরিবার-পরিজন ও সকল সাহাবীর ওপর)।

শিক্ষা গবেষণা ও ফতোয়োর স্থায়ী বোর্ড

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন