মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
না, এরপর আমার আর কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকলো না। আমি প্রশান্তচিত্তে স্থির সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম, প্রয়োজনে জান দেবো তবু আমার মেজবানকে, আমার উপকারী বন্ধুকে আমি রক্ষা করবো। আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও।
প্রথমে আমি আমার মহান মেজবানের আরাম-বিশ্রাম ও পানাহারের সু-ব্যবস্থা করলাম। আর আমার খাস গোলামকে ডেকে বললাম, ‘আজীবন তুমি আমার অনেক খিদমত করেছে। আজ আমি তোমার কাছে জীবনের শেষ খিদমতটুকু চাই। আশা করি নিরাশ করবে না!’
সব ঘটনা জানিয়ে আমি তাকে বললাম, ‘এই নাও দশ হাজার দিরহাম! আস্তাবলের শ্রেষ্ঠ ঘোড়াটা বের করো এবং রাতের আঁধারেই তাকে বাগদাদের সীমানা পার করে দাও! বরং তাকে দামেস্কে তার বাড়িতে পৌঁছে দাও! এরপরই তুমি মুক্ত!’
আমার শরীফ মেজবানকে চিনবার আরো কিছু বাকি ছিলো, সেটাও এখন পূর্ণ হলো। ভেবেছিলাম, আমার পরিকল্পনা শুনে তিনি খুশি হবেন। কিন্তু তার চেহারা দেখে মনে হলো, তাকে যেনো বিনা ছুরিতে জবাই করা হচ্ছে। বেদনার্থ কন্ঠে তিনি বললেন, ‘বন্ধু! তুমি খলীফা আল-মামুনের চেয়ে কঠিন ফরমান জারি করছো! মাফ করো বন্ধু, এ মেনে নেয়া আমার পক্ষে সম্ভব না!’
কোনোভাবেই যখন তাকে সম্মত করতে পারলাম না, তখন তার শারাফাত ও মহত্ত্বকেই ঢাল বানিয়ে বললাম, ‘দামেস্কে আমি যখন তোমার মেহমান ছিলাম তখন তোমার দান প্রত্যাখ্যান করিনি। এখন তুমি আমার মেহমান। মেজবানের দায়িত্ব পালনে আশা করি তুমিও আজ আমাকে বাধা দেবে না! তাছাড়া তুমি নিশ্চিত থাকো। আমি আমার আল্লাহর পক্ষ হতে ইশারা পেয়েছি!’
এরপর আর কিছু বলার সুযোগ ছিলো না তাঁর।
অশ্রুভেজা চোখে ‘আল্লাহ হাফেজ’ বলে তিনি অনেকটা অনিচ্ছায়ই বের হয়ে গেলেন। যখন ঘোড়ার ঠক্ঠক্ আওয়াজ কানে এলো, তখন হৃদয় ও আত্মার যে প্রশান্তি অনুভব করলাম- তা শুধুই অনুভবযোগ্য!
এরপর আমি স্ত্রী-পুত্রদের ডেকে এনে পাশে বসালাম এবং আদ্যোপান্ত ঘটনা খুলে বললাম।
স্ত্রী বললেন - ‘আল-হামদুলিল্লাহ! আমার স্বামীকে আল্লাহ শরীফ ইনসানের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণের তাওফীক দান করেছেন। আমাদেরকে আল্লাহ্ হাওয়ালা করুন, তিনিই যথেষ্ট!’
পুত্র-কন্যাদের দিকে তাকালাম। আমার হৃদয়ে পিতৃস্নেহ তোলপাড় করে উঠলো। অনেক চেষ্টা করেও উদগত কান্না রোধ করতে পারলাম না। দরদরিয়ে নেমে এলো ফোটা ফোটা অশ্রু।
আমি কি সন্তানের স্নেহের কাছে কাতর হয়ে পড়ছি?..
তাড়াতাড়ি চোখ মুছতে উঠে দাঁড়ালাম।
ফজরের নামাজ আদায় করে দু’হাত তুলে আল্লাহর কাছে মুনাজাত করলাম। আগে বা পরে আর কখনো এমন মুনাজাত করার তাওফীক আমার হয় নি!
ভোরের আলো ফুটে উঠলো। চারদিক ফর্সা হয়ে এলো। এরই মধ্যে খলীফার তলব এসে গেলো।
ছেলে-মেয়েদের ‘আল্লাহ হাফেজ’ বলে আমি বের হয়ে গেলাম।
স্ত্রী-পুত্র-কন্যারা অশ্রুসজল দৃষ্টিতে দরোজা পর্যন্ত এসে আমাকে বিদায় জানালো। কিন্তু আমার স্ত্রীকে আশ্চর্য রকম প্রশান্ত মনে হচ্ছিলো। তিনি শুধু বললেন, ‘আমার মন বলছে, আল্লাহ চাহে তো আবার আমাদের দেখা হবে!’
খলীফাতুল মুসলিমীন আমাকে একা দেখে অবাক হলেন। ভ্রু- কুঞ্চিত করে বললেন, ‘বন্দি কোথায়? যদি বলো পালিয়ে গেছে তাহলে নিশ্চিত জেনো, তোমারও আয়ু ফুরিয়ে গেছে।’
আল-হামদুলিল্লাহ! প্রাণের হুমকির মুখেও আমার কোনো ভাবান্তর হলো না। আমি শান্ত কণ্ঠে বললাম, ‘আমীরুল মু’মিনীন! বন্দি আপনার পালায়নি। তবে অনুমতি হলে তার সম্পর্কে কিছু বলতে চাই।’
ইশারায় অনুমতি পেয়ে পুরো ঘটনা আমি খলীফার খিদমতে আরজ করলাম। তারপর আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বললাম, ‘আমীরুল মু’মিনীন! ওয়াফাদারী ও কৃতজ্ঞতা এবং ইনসাফ ও ন্যায়পরতা আপনার কাছেই আমরা শিখেছি। আমি আমার বিবেকের নির্দেশ পালন করেছি। আমার মেজবান যদি নির্দোষ হয় তাহলে সৎ সাহসের পুরস্কার আমার প্রাপ্য আর অপরাধী হলে গর্দান আমার হাজির! এই দেখুন, কাফনের কাপড়! আমি মৃত্যুর জন্যে প্রস্তুত হয়েই এসেছি!’
কথা শেষ করে অবনত দৃষ্টি তুলে যা দেখলাম, তাতে একদিকে আমার বিস্ময় আর অন্যদিকে আমার পুলকের কোনো সীমা রইলো না! দেখলাম, খলীফার দু’চোখে অশ্রুধারা বয়ে চলেছে! এমন মহানুভব খলীফার কাছে সত্য বলতে, একজন নির্দোষ মানুষের দুঃখের কাহিনী বলতে কেন তবে আমি শুধু শুধু ভয় পাচ্ছিলাম?
অশ্রু মুছতে মুছতে খলীফা আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, ‘তাকে আমার কাছে এনেও তো সব কথা বলতে পারতে! তোমার কি মনে হয় যে, সব জেনেও আমি তাকে হত্যা করবো, এমনই জালিম আমি?!’
একটা কিছু বলতে যাচ্ছিলাম। এমন সময় দ্বাররক্ষী এসে খবর দিলো ‘আমীরুল মু’মিনীন! অভিজাত এক লোক বলছে- ‘দামেস্কের বন্দি’ আমীরুল মুমিনীন-এর সাক্ষাতপ্রার্থী!’
এ-কথা শুনে আমি হতবাক হয়ে গেলাম! খলীফা আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বললেন, ‘আমি ভাবছিলাম, তোমার কথা সত্য হলে অবশ্যই দামেস্ক না গিয়ে এখানে তার ছুটে আসার কথা!’
দ্বাররক্ষী দামেস্কের বন্দিকে নিয়ে হাজির হলো। আর তিনি অনুমতির অপেক্ষা না করেই বলতে লাগলেন। ‘আমীরুল মুমিনীন! অপরাধ যা কিছু সে আমার এবং শাস্তি গ্রহণের জন্যেও আমি প্রস্তুত। আমার কারণে এই বেকসুর শরীফ ইনসানের কোনো ক্ষতি হোক তা আমি চাই না।’
খলীফা মৃদু হেসে বললেন, “আচ্ছা ক্ষতি যা হবার আমারই হোক! তোমাকে দশ হাজার দিনার পুরস্কার দেয়া হলো। যদি পছন্দ করো তাহলে কিছুদিন আমার মেহমানখানায় অবস্থান করো, কিংবা শাহী ব্যবস্থাপনায় দামেস্কে রওয়ানা হয়ে যাও। তবে আব্বাসের যদি কোনো কথা থাকে তাহলে তাই হোক।’
দামেস্কের মেহমান স্বপ্নবিষ্টের মতো দাঁড়িয়ে থাকলেন। তারপর ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ বলে সেখানেই সেজদায় লুটিয়ে পড়লেন!
আমার স্ত্রীর বিদায় মুহূর্তের কথা আমার মনে পড়ে গেলো— ‘আমার মন বলছে, আল্লাহ চাহে তো আবার আমাদের দেখা হবে!’
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/683/17
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।