hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন ও হাদীসের আলোকে শাফা‘আত

লেখকঃ মুহাম্মাদ নাজমুল ইসলাম

১৬
গাইরুল্লাহর কাছে শাফা‘আতের দো‘আ করার হুকুম
গাইরুল্লাহ তথা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে শাফা‘আতের দো‘আ বা প্রার্থনা করা শির্ক। কারণ, দো‘আ ইবাদত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«الدُّعَاءُ هُوَ الْعِبَادَةُ»

“দো‘আই ইবাদত।” [তিরমিযী।]

আর ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট। ইবাদতে তাঁর আর কোনো শরীক নেই। আর শির্ক হচ্ছে, গাইরুল্লাহকে ইবাদতে অংশীদার করার নাম। সুতরাং দো‘আ যেহেতু ইবাদত, সেহেতু একমাত্র আল্লাহ তা‘আলারই কাছে দো‘আ করতে হবে। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে শাফা‘আত বা অন্য কোনো কিছুর দো‘আ করা শির্ক। কেননা দো‘আ ইবাদত। যে গাইরুল্লাহর নিকট দো‘আ করল সে তার ইবাদত করল। কিন্তু আমরা তো ইবাদত করি একমাত্র আল্লাহর।

উপরোক্ত আলোচনা থেকে একথা স্পষ্ট হয়ে গেল যে, শাফা‘আত প্রার্থনা একমাত্র আল্লাহর নিকট করতে হবে। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নিকট শাফা‘আত প্রার্থনা করা শির্ক। কেননা একদিকে দো‘আ ইবাদত এবং অপরদিকে সমস্ত শাফা‘আত একমাত্র আল্লাহর ক্ষমতাধীন। এতে অন্য কারো বিন্দুমাত্র অংশ নেই। তাই গাইরুল্লাহর নিকট শাফা‘আত প্রার্থনা শিরকে আকবর। বাংলাদেশের কোনো কোনো অঞ্চলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আহবান করে কবিতার মত করে জপ করে প্রার্থনা জানানো হয়, তা অবশ্যই মারাত্মক শির্কের অন্তর্ভুক্ত। কারণ,

প্রথমত:

‘শাফা‘আত করুন’ বাক্যটি রিযিক দান করুন, ক্ষমা করুন ইত্যদি দো‘আর বাক্যের মতো। আর দো‘আ ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট। রাসূলের কাছে দো‘আ করে শ্রেষ্ঠতম ইবাদতে আল্লাহর সাথে শরীক করা হয়েছে। অথচ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই আল্লাহর বান্দা, আল্লাহরই দরবারে প্রার্থী। সুতরাং এমনটি করা শির্ক।

দ্বিতীয়ত:

তারা রাসূলের কাছে এমন একটি দয়া ও করুণা প্রার্থনা করেছে যা এককভাবে আল্লাহর এখতিয়ারে, তাঁরই ক্ষমতা ও ইচ্ছাধীন। আর যা সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর ক্ষমতাধীন, এমন কিছুর প্রার্থনা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে করা শির্ক। বস্তুত শাফা‘আত একমাত্র আল্লাহর ক্ষমতাধীন, একক এখতিয়ারে। সুতরাং রাসূলের কাছে শাফা‘আত প্রার্থনা করা শির্ক। কেননা এ ব্যাপারে তাঁর নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নেই। আল্লাহর অনুমতি ছাড়া তিনিও করো জন্য শাফা‘আত করতে সক্ষম হবেন না। আল্লাহ তা‘আলা এক মুমিন বান্দার তাওহীদ দীপ্ত উক্তি কুরআনে বর্ণনা করেছেন।

﴿ءَأَتَّخِذُ مِن دُونِهِۦٓ ءَالِهَةً إِن يُرِدۡنِ ٱلرَّحۡمَٰنُ بِضُرّٖ لَّا تُغۡنِ عَنِّي شَفَٰعَتُهُمۡ شَيۡ‍ٔٗا وَلَا يُنقِذُونِ ٢٣﴾ [ يس : ٢٣ ]

যদি মহান দয়াময় আল্লাহ আমার কোনো ক্ষতি সাধন করতে চান তবে তাদের শাফা‘আত-সুপারিশ আমার কোনো কাজে আসবে না, আমাকে তারা বাঁচাতেও পারবে না”। [সূরা ইয়াসীন, আয়াত: ২৩]

শির্কের প্রতিবাদ করে আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,

﴿أَمِ ٱتَّخَذُواْ مِن دُونِ ٱللَّهِ شُفَعَآءَ﴾ [ الزمر : ٤٣ ]

“তবে কি তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে শাফা‘আতকারী গ্রহণ করেছে।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৪৩]

তৃতীয়ত:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহর মতো দূর থেকে ডাকাডাকি করা, তাঁর নিকট শাফা‘আতের দো‘আ করা প্রকাশ্য শির্ক। কারণ, কোনো গাইরুল্লাহকে এরূপে ডাকাডাকি করাকে আকাঈদ শাস্ত্রবিদগণ شِرْكُ الدَّعْوَةِ বা আহ্বানের শির্ক বলে ঘোষণা করেছেন। অন্যথায় তাওহীদ শির্কের মাঝে কোনো পার্থক্য থাকে না। কেননা আল্লাহ তা‘আলা খোদ নবীজীকে শিখিয়ে দিয়েছেন:

﴿قُلۡ إِنَّمَآ أَدۡعُواْ رَبِّي وَلَآ أُشۡرِكُ بِهِۦٓ أَحَدٗا ٢٠﴾ [ الجن : ٢٠ ]

“বল, আমি একমাত্র আমার রবকে ডাকি এবং তার সাথে কাউকেই শরীক করি না।” [সূরা আল-জিন্ন, আয়াত: ২০]

আল্লাহ তালা আরও শিখিয়েছেন:

﴿وَلَا تَدۡعُ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَا لَا يَنفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَۖ فَإِن فَعَلۡتَ فَإِنَّكَ إِذٗا مِّنَ ٱلظَّٰلِمِينَ ١٠٦﴾ [ يونس : ١٠٦ ]

“তুমি আল্লাহ ছাড়া এমন কাউকে ডেকো না, যে না তোমার কোনো উপকার করতে পারে, আর না কোনো ক্ষতি করতে পারে। যদি তা কর তবে নিশ্চয় তুমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।” [সূরা ইউনুস, আয়াত: ১০৬]

অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কিছু লোক এর চেয়েও জগন্য শির্কে লিপ্ত রয়েছে। তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আহ্বান করে বলে:

يَارَسُوْلَ الْكِبْرِيَاءِ احْفَظْ عَنْ كُلِّ الْبَلاَءِ : اِسْتَجِبْ هَذَا الدُّعَاءَ يَا مُحَمَّدْ عَرَبِيْ

“হে রাসূলে কিবরিয়া সর্বপ্রকার বালা মুসীবত থেকে রক্ষা করুন, হে মুহাম্মাদে আরবী! এই দো‘আ কবুল করুন।!” (নাউযুবিল্লাহ)

এই যে মারাত্বক শির্ক ও জঘন্য কুফুরী কথা, তা কোনো ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখে না। একজন সাধারণ লেখা-পড়া জানা ব্যক্তিও বুঝে যে দো‘আ একমাত্র আল্লাহরই কাছে করতে হয়, কোনো সৃষ্টির কাছে নয়। কেননা সকল নবী-রাসূলই আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেছেন এবং তারা নিজেরাই সব চেয়ে কঠিন বালা মুসীবতের শিকার হয়েছিলেন। অন্যদেরকে এ থেকে রক্ষা করার প্রশ্নই উঠে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই বলেছেন:

«أشَدُّ النَّاسِ بَلاَءً اَلْأَنْبِيَاءُ ثُمَّ الصَّالِحُوْنَ . وَفي رواية : ثُمَّ الْأَمْثَلُ فَالْأَمْثَلُ»

“সর্বাপেক্ষা বেশি বালা-মুসীবতের শিকার হয়েছেন নবী-রাসূলগণ, অতঃপর নেককার বান্দাগণ”।

আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আহ্বান করছি বালা-মুসীবত থেকে রক্ষা করার জন্য। আর আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে বলেছেন:

﴿قُل لَّآ أَمۡلِكُ لِنَفۡسِي ضَرّٗا وَلَا نَفۡعًا إِلَّا مَا شَآءَ ٱللَّهُ﴾ [ يونس : ٤٩ ]

“হে নবী বলে দাও, আল্লাহ যা চান তা ছাড়া আমি আমার নিজের জন্যও ক্ষতি বা উপকার করার ক্ষমতা রাখি না”। [সূরা ইউনুস, আয়াত: ৪৯]

তিনি আরও বলেছেন:

﴿قُلۡ إِنِّي لَآ أَمۡلِكُ لَكُمۡ ضَرّٗا وَلَا رَشَدٗا ٢١﴾ [ الجن : ٢١ ]

“বল! আমি তোমাদের কোনো ক্ষতি করা বা সৎপথে আনার ক্ষমতা রাখি না”। [সূরা আল-জিন্ন, আয়াত: ২১]

তিনি আরও বলেছেন:

﴿وَإِن يَمۡسَسۡكَ ٱللَّهُ بِضُرّٖ فَلَا كَاشِفَ لَهُۥٓ إِلَّا هُوَ﴾ [ الانعام : ١٧ ]

“আল্লাহ যদি তোমাকে কোনো দুঃখ-কষ্ট দেন তবে তিনি ছাড়া তা অপসারণকারী আর কেউ নেই।” [সূরা আল-আন‘আম: ১৭]

এ জন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় আদরের কন্যা কলিজার টুকরা ফাতিমা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে বলেছেন:

«يَا فَاطِمة بِنْت مُحَمَّدِِ سَلِيْنِي مِنْ مَالِي مَاشِئْتِ , لَا أغْنِيْ عَنْكِ مِنَ اللهِ شَيْئاً»

“হে মুহাম্মাদের কন্যা ফাতিমা, আমার সম্পদ থেকে যা খুশি চেয়ে নাও। কিন্তু আল্লাহর কাছে (জবাবদিহি করার ব্যাপারে) তোমার কোনো উপকার করার ক্ষমতা আমার নেই”। [সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম।]

এখানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক নিজ মেয়েকে মুহাম্মাদের মেয়ে বলে সম্বোধন করাটা সবিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এতে বুঝানো হয়েছে যে, আল্লাহর কাছে কারো গ্রহণ যোগ্যতা তার পিতৃ বা বংশ পরিচয়ের নিক্তিতে হবে না, হবে নিজ নিজ ঈমান, আমলের মূল্য ও মানের ভিত্তিতে।

যেখানে তিনি নিজের মেয়েকে রক্ষা করতে পারবেন না সেখানে অমুক-তমুককে কীভাবে রক্ষা করবেন? তাই আকাঈদ শাস্ত্রবিদগণ বলেছেন:

«فَإِذَا كَانَ سَيِّدُ الْخَلْقِ وَ أَفْضَلُ الْشُفَعَاءِ يَقُوْلُ لأخَصِّ النَّاسِ بِهِ : لاَ أَمْلِكُ لَكُمْ مِنَ اللهِ شَيْئاً فَماَ الظَّن بِغَيْرِه»

“যদি সৃষ্টির সেরা ও সর্বোত্তম সুপারিশকারী তাঁর একান্ত বিশেষ ব্যক্তিদের বলেন,

«لَااَمْلِكُ لَكُمْ مِنَ اللهِ شَيْئاً»

“আল্লাহর সামনে আমি তোমাদের কোনো উপকার করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখি না” তাহলে অন্যদের বেলায় কি ধারণা?” [শরহু আকীদাতুত তাহাবিয়া: ২৩৭।]

নবীজীর শাফা‘আত এক প্রকার দো‘আ। তিনিও শাফা‘আতের প্রার্থনা জানাবেন একমাত্র আল্লাহর দরবারে। যেমন তিনি বলেছেন:

«لِكُلِّ نَبيٍ دَعْوَةٌ مُسْتَجَابَةٌ وَإِنِّي إخْتَبَأتُ دَعْوَتِى شَفَاعَةً لِاُمَّتي يَوْمَ الْقِيَامَةِ»

“প্রত্যেক নবীর জন্য এমন একটি দো‘আ রয়েছে যা আল্লাহর কাছে মকবুল। আর আমি নিজ দো‘আটি কিয়ামতের দিন আমার উম্মতের শাফা‘আতের জন্য সংরক্ষিত করে রেখেছি”।” [বর্ণনায়: সহীহ বুখারী ও মুসলিম।]

সুতরাং আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে দো‘আ করা যাবে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন