hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মহা নাবীর সর্ব শেষ ওসিয়ত আস-সালাত, আস-সালাত

লেখকঃ নূর মুহাম্মদ বদীউর রহমান

২১
ফজর সালাত সময়মত আদায়ের উপায়সমূহ :
১.সময়মত সালাত আদায় সম্পর্কিত কুরআন ও হাদীসের উদ্ধৃতিগুলো পড়া, বিশেষভাবে ফজরের সালাত সংক্রান্ত উদ্ধৃতিগুলো অধ্যয়ন করা অত্যাবশক। এ বিষয়ে অনেক উদ্ধৃতি পূর্বে বর্ণিত হয়েছে। এখানে তার কয়েকটি উল্লেখ করা হল:

وَقُرْآنَ الْفَجْرِ إنَّ قُرْآنَ الْفَجْرِ كَانَ مَشْهُوْدا

‘এবং ফজরের কুরআন পাঠ, নিশ্চয় ফজরের কুরআন পাঠ উপস্থিতিপূর্ণ’ [সূরা ইসরা, ৭৮।]

এতে উদ্দেশ্য হল ফজরের সালাতে রাত-দিন উভয় সময়ের ফেরেস্তারা উপস্থিত হয়।

بَشِّرِ الْمَشَّائيْنَ فِيْ الْظُلَمِ إلِى الْمَسَاجِدِ باِلنُّوْرِ التَّامِ يَوْمَ الْقِيَامِةِ .

‘অন্ধকারে মসজিদে গমনকারীদেরকে কিয়ামত দিবসে পরিপূর্ণ নূরের’সুসংবাদ দাও। [আবুদাউদ, ৫৬১, তিরমিযি,২২৩।]

এ নূর তাদেরকে সকল দিক থেকে বেষ্টন করে রাখবে, এ হলো যথার্থ বিনিময়।

رَكَعَتَا الْفَجْرِ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا .

‘ফজরের দুই রাকাত সালাত দুনিয়া এবং এর মাঝে বিদ্যমান সবকিছু হতে শ্রেষ্ঠ’ [মুসলিম, ৭২৫।]

এ যদি হয় ফজরের দু রাকআত সুন্নাতের মর্যাদা তাহলে ফরযের মর্যাদা কেমন হবে?

.. سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ : تَجْتَمِعُ مَلَائكَة الْلَيْلِ وَمَلَائِكَةُالنَّهَارِ فِيْ صَلَاةِ الْفَجْرِ .....

‘আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, রাতের ফেরেস্তা এবং দিনের ফেরেস্তা একত্র হয় ফজরের সালাতে’- আবু হোরায়রা রা. এ বিবরণ দেয়ার পর বললেন, ইচ্ছে হলে পড়ে দেখতে পার-

إِنَّ قُرْآَنَ الْفَجْرِ كَانَ مَشْهُودًا ﴿الإسراء :৭৮﴾

অর্থাৎ ফজরের সালাতের ক্বিরাত তা উপস্থিতিপূর্ণ। ফেরেস্তারা এ সালাতে উপস্থিত হন। একত্র হন এতে রাত ও দিনের ফেরেস্তারা। ক্বিরাত এবং সময়ের মর্যাদার জন্য রাসূল স. ফজরের সালাতে ক্বিরাত দীর্ঘ করতেন।

ফজরের সালাতকে আল্লাহ তা‘আলা নির্দিষ্ট করেছেন এর প্রতি অতিরিক্ত যত্ন এবং একে বিশেষভাবে স্মরণের জন্য-

وَأَقِمِ الصَّلَاةَ طَرَفَيِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ﴿১১৪﴾

‘আর দিনের দুই প্রান্তে সালাত কায়েম কর এবং রাতের প্রান্তভাগে। অবশ্যই পুণ্য কাজ পাপ দূর করে দেয়.....’ [সূরা হুদ, ১১৪।]।

তাফসীরবিদগণ এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেছেন:

আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন: এর দ্বারা ফজর এবং মাগরিব উদ্দেশ্য, মুজাহিদ রহ. বলেন: ফজর, যোহর ও আসর।

এছাড়াও অন্যান্য মনীষীগণ ফজর ও আসর বলে নিজেদের মত উল্লেখ করেছেন।

এসব ব্যাখ্যা প্রতিভাত হচ্ছে যে, ফজরের সালাতের ফযিলত অনেক, এ সালাত গুনাহ মোচনকারী এবং মন্দ বিদূরিতকারী বলা হয়েছে।

উপরোক্ত কয়েকটি বাক্যে ফজরের সালাতের ফযিলতের বর্ণনা হয়েছে। মুমিন ও আল্লাহ ভীরুদের অন্তরে আগ্রহ সৃষ্টির জন এতটুকু বর্ণনাই যথেষ্ট।

উসমান ইবনে আফ্ফান রা. বলেন:আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি:

من صلى العشاء في جماعة فكأنما قام نصف الليل، ومن صلى الصبح في جماعة فكأنما صلى الليل كله

যে ব্যক্তি এশার সালাত জামাআতে আদায় করল, সে যেন অর্ধরাত জাগ্রত থেকে ইবাদাত করল। আর যে ফজরের সালাত জামাআতে আদায় করল সে যেন পূর্ণ রাত ইবাদতে অতিবাহিত করল। [মুসলিম, ৪৫৪।]

মুসলমানের উচিত বারবার এসব ফযিলত পড়ার অভ্যাস করা। যাতে তার ইচ্ছা জাগ্রত হয়, এবং তার সংকল্প সুদৃঢ় হয়। কারণ উপদেশ স্মরণ এবং বারংবার পঠন মুমেনদের জন্য উপকারী।

এসব কারণে মুমিনগণ ফজরের সালাতের জন্য জাগ্রত হওয়া এবং অধিক সতর্কতা অবলম্বন করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে যেন শয়তানের কুমন্ত্রণাকে পরাভূত করতে পারে।

তাই নেক আমলে আগ্রহী ও অবিচল সংকল্পের অধিকারী ব্যক্তিদেরকে উৎসাহ প্রদান করতে ফজরের ওয়াক্ত প্রবেশের আগে প্রথম আযান শরিয়ত অনুমোদন করেছে’। আবার আযানের মধ্যে এমন বিশেষ বাক্যগুচ্ছ রাখা হয়েছে যা বিদ্যুৎ গতিতে মুমিনের হৃদয়ে প্রবেশ করে, এবং তাড়িয়ে দেয় তার ঘুম। الصلاة خير من النوم ধ্বনি তাকে অনুপ্রাণিত করে আল্লাহর পানে ধাবিত হতে। জেনে রাখ, সালাতের স্বাদ উত্তম, ঘুমের স্বাদ থেকে। যে আযান শুনল এবং তার হৃদয়ে তা কোন প্রভাব সৃষ্টি করতে পারল না সে দুনিয়ার স্বাদকে আখেরাতের নিয়ামতের উপর প্রাধান্য দিল। তাকে এ মর্মে শাস্তি দেয়া হবে। শয়তান তার উভয় কানে পেশাব করবে। তার সকাল হবে দুষ্ট আত্মা নিয়ে আর সে থাকবে গাফেল ।

২. আত্মার ব্যধিসমূহ অনুসন্ধান , নির্ণয় করা এবং ঔষধ সেবনের মাধ্যমে তা নিরাময়ের চেষ্টা করা। কারণ আত্মা হচ্ছে অধিনায়ক। সে যদি ঠিক থাকে তাহলে তার বাহিনী তথা অঙ্গ-প্রতঙ্গও ঠিক থাকবে। আর অঙ্গ-প্রতঙ্গ ঠিক থাকলে পুরো শরীর ঠিক থাকবে। নবী স. ইরশাদ করেন,‘বান্দার ঈমান সঠিক হয় না যতক্ষণ না তার আত্মা সঠিক হয়। আর এটা জানা কথা যে, ঈমানের বৃক্ষ অন্তরে-কুরআন তার সাক্ষ্য দিচ্ছে, সেচ হল আল্লাহর যিকর, কান্ডে দাঁড়ানো হল আল্লাহর সীমানা হেফাযত এবং আল্লাহর আদেশ-নিষেধকে সম্মান দেখান।

الَّذِينَ آَمَنُوا وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُمْ بِذِكْرِ اللَّهِ ﴿২৮﴾

‘যারা ঈমান আনে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে’ [রায়াদ, ২৮&]

৩. এশা, তার পরের সুন্নাত ও বিতির সালাত পড়ে রাতের প্রথম অংশে ঘুমিয়ে যাওয়া এবং রাত জেগে গল্প-গুজব করা থেকে বিরত থাকা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এশা’র সালাত আদায়ের আগে ঘুমানো এবং এশার পর গল্প-গুজব করা অপছন্দ করতেন।

তবে দ্বীনি বিষয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা, মেহমানের সঙ্গে আলাপ করা অথবা স্ত্রীর সঙ্গে খোশগল্প করা যাবে, যদি তাকে ঘুম থেকে ডেকে উঠানোর লোক থাকে। অথবা তার অভ্যাস আছে যে সে জাগ্রত হয়ে যায়। পক্ষান্তরে যদি প্রবল ধারণা হয় যে সালাতের ক্ষতি হবে তাহলে রাত জেগে গল্পে লিপ্ত হবে না। এবং অধিক রাত জাগ্রত থেকে ক্বিয়ামুল লাইল তথা নফল এবাদতও করবে না যদি তার ফজর সালাতের উপস্থিতিতে ব্যাঘাত ঘটে। এ জন্য হাদীসে কুদসীতে উল্লেখ হয়েছে-

مَا تَقَرَّبَ إلَيَّ عَبْدِيْ بِشَيْئٍ أحَبُّ إلَيَّ مِمَّا افْتَرَضْتُهُ عَلَيْهِ .

‘যে সব আমল দ্বারা বান্দা আমার নৈকট্য অর্জন করে তার মধ্যে আমার কাছে সর্বাধিক প্রিয় হচ্ছে যা আমি তার উপর ফরজ করেছি। []

এক দীর্ঘ ঘটনায় হযরত উমর বিন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু সম্পর্কে বণির্ত আছে, তিনি আবু হাতামা গোত্রের উম্মে সোলাইমান শিফা এর নিকট গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, আজকের ফজরে সোলাইমানকে দেখলাম না যে?, তিনি উত্তরে বললেন, সে রাত্রে জাগ্রত থেকে এবাদত করায় ঘুম থেকে উঠতে পারেনি। উমর রা. বললেন,

لأن أشهد صلاة الصبح في الجماعة أحب إلي من أن أقوم ليلة .

আমি ফজরের জামাআতে উপস্থিত হতে পারাকে পুরো একরাত জাগ্রত থেকে ইবাদাত করা থেকে অধিক প্রিয় মনে করি। []

এশার পর মধ্যরাত পর্যন্ত যারা মাইক্রোফোনে ওয়াজ-নসীহত নিয়ে ব্যস্ত থাকেন!! আপনাদের মাঝে যদি বর্ণিত বৈশিষ্টাবলী বিদ্যমান থাকে তাহলে তো ভাল। আর যদি না থাকে তাহলে?... এটি কোন ক্রমেই সঙ্গত হবে না।

শা’বী রহ. বলতেন, যার ফজরের দুই রাকাত ছুটে গেল তাকে যেন জ্বিন- ইনসান অভিশাপ দেয়।

এ উক্তির উপর নির্ভর করে বলা যায়, যে ব্যক্তি অধিক রাত্রি জাগ্রত থাকল এবং অনীহা-অনাগ্রহের সাথে ফজর আদায় করল সে ঐ মুনাফিকের ন্যায় হল, যে কেবল অলস অবস্থায়ই সালাতে আসে’। তোমরা ঐ সব মেহমানকে স্বগাতম জানানো পরিহার কর, যারা ফজরের সালাত মাটি করে দিতে পরওয়া করে না; রাত জাগা এবং গল্পে লিপ্ত থাকাই যাদের কাছে প্রিয়।

৪. আধুনিক কোনো যন্ত্র সংগ্রহ করবে যা ঘুমন্ত ব্যক্তিকে জাগিয়ে তুলে। যেমন- এ্যালার্ম ঘড়ি, মোবাইল এ্যালার্ম।অথবা প্রতিবেশীদেরকে বলবে নেক কাজে সহযোগিতা স্বরূপ একে অপরকে জাগিয়ে দিতে। এতে তার হৃদয়ও ঝুঁকে থাকবে আল্লাহর প্রতি।

৫. ঘুমের আদব এবং দু‘আ-আযকার আদায়ে যত্নবান হবে। বিশেষতঃ ঘুমের সময় আয়াতুল কুরসি, সূরা ইখলাস ,সূরা ফালাক এবং সূরা নাস পাঠ করে পবিত্র আবস্থায় ঘুমান। (আল্লাহ আপনার প্রতি অনুগ্রহ করুন) একটি কথা স্মরণ রাখবেন। বান্দার সামর্থ্যে যা আছে তা যদি সে ঠিকমত পালন করে,তাহলে যে বিষয়ে সে সামর্থ্য রাখে না আল্লাহ তা‘আলা সাহায্য করেন। সুতরাং সে যদি শরীয়ত নির্ধরিত নিয়ম পালন করে ঘুমাতে যায় তাহলে ফজর সালাতে উপস্থিত হওয়া তার পক্ষে সহজ হয়ে যাবে।

৬. নিয়মিত এক মসজিদে ফজরের সালাতে উপস্থিত হওয়া। যেন সে সালাতে না এলে তার অন্যান্য দ্বীনী ভাইয়েরা তার অনুপস্থিতি টের পায়। সুতরাং সে যদি অবহেলা করে সালাতে না যেয়ে থাকে তাহলে তারা তাকে উপদেশ দিবে এবং আল্লাহর আনুগত্যের ব্যাপারে তাকে সহযোগিতা করবে। কারণ শয়তান মানুষের জন্য নেকড়ে তুল্য আর নেকড়ে দল থেকে বিচ্ছিন্ন ছাগলই শিকার করে।

বিশিষ্ট তাফসীরবিদ মুজাহিদ রহ. বলেন, যদি কোন মুসলিম তার অপর মুসলিম ভাই থেকে কোন ভাবে উপকৃত নাও হয়, তবে তার প্রতি লজ্জাবোধ থাকায় সেটি তাকে গুনাহ হতে বিরত রাখে। তাহলে এতটুকুই তার জন্য যথেষ্ট।

৭. আল্লাহর রাসূলের নিম্নোক্ত বাণী পালন করার চেষ্টা করবে নিরন্তর ভাবে, নবীজী বলেন: ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে চলিশ দিন পর্যন্ত তাকবীরে ঊলাসহ জামাআতের সাথে সালাত আদায় করবে, আল্লাহ তার পুরস্কার স্বরূপ দুইটি মুক্তি ঘোষনা করেছেন। একটি জাহান্নামের আগুন থেকে অপরটি নিফাক থেকে।

বরং মৃত্যু পর্যন্ত সারাজীবন তাকবীরে উলাসহ সালাত আদায় করার দৃঢ় সঙ্কল্প করবে। মুমিনের নিয়ত আমলের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এবং এসব বিষয়ে সালফে সালেহীনদের জীবনী পাঠ করবে এবং তাদের অনুসরণ করবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন