মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
হে মুসলিম ভাই, আপনার সামনে সালাত সম্পর্কীয় কতিপয় শিক্ষণীয় সতর্কবাণী পেশ করার প্রয়াস পেয়েছি যা আপনার সন্তানের জন্য অনুকরণীয় বস্ত্ত হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন।
১. শিশুরা ধারণা করে বড়রা যা করে সবই ঠিক। তাদের পিতারাই হল পরিপূর্ণ ও শ্রেষ্ঠ। তাই তাদের উপরই বিশ্বাস রাখে, সব ক্ষেত্রে তাদেরকেই অনুকরণ করতে চায়। তারা ঐ বয়সে আদেশ-উপদেশ দ্বারা প্রভাবিত হয়না, যদি না তার সামনে বাস্তবে অনুকরণ যোগ্য কোন আদর্শ থাকে। সে বিবেচনায় সালাতের প্রতি পিতার নিয়মানুবর্তিতা তাদের হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলে নি:সন্দেহে।
২. পিতার উচিত এ জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করা, যেমন করেছিলেন নবী ইবরাহীম আলাইহিস সাল্লাম -‘হে আল্লাহ আমাকে এবং আমার বংশধরদেরকে সালাত প্রতিষ্ঠাকারী হিসেবে গ্রহন কর’।
৩. পিতার জানা থাকা উচিত যে, শিক্ষা দানের ক্ষেত্রে শারীরিক শাস্তি প্রদান হচ্ছে (শর্তের অনুবর্তিতায় হলেও) সর্বশেষ মাধ্যম, এতে যেন শিশু অভ্যস্ত না হয়ে পড়ে সে দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে ফলে এর প্রয়োগ যত কম করা যায় ততই ভাল; তাহলে এর পর আর কোন হাতিয়ার থাকবে না।
৪. পিতার উচিত নিজের সন্তানকে ওযু-পবিত্রতা অর্জনসহ প্রাত্যহিক প্রয়োজনীয় মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে তার মত করে বুঝিয়ে দেয় অত:পর হাতে-কলমে শিক্ষা দেয়া, এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করা এবং তাকে নিজে করে দেখানোর সুযোগ দেয়া। এরপর দেখাতে গিয়ে যদি সে ভুল করে তাকে আবারও শিক্ষা দিবে, দিক নির্দেশনা দিবে সস্নেহ ও কোমলভাবে। কোন ভাবেই কঠিন ও রূঢ়ভাব দেখানো ঠিক হবে না। যদি সে সুন্দর ও নিখুঁত ভাবে ওজু করে দেখাতে পারে তবে উৎসাহ প্রদান মূলক তার প্রশংসা করবে, আদর করে চুমো দিবে।
৫.সন্তানদেরকে ওজুর ফযিলত শিক্ষা দিবে যেন সে নেকি অর্জনে উদ্বুদ্ধ হয়।
৬. শিশু বয়সেই সালাত বিষয়ক শিক্ষা সম্পন্ন করতে হবে তবে সরাসরি আদেশ দিয়ে নয়। বরং ঘরে তার সামনে বারবার নফল আদায় করার মাধ্যমে। এটা তাদের কচি মনে প্রভাব ফেলবে গভীর ভাবে- যখন সে দেখবে, তার পিতা আল্লাহর জন্য সেজদার মাধ্যমে বিনম্র ভাবে আপন চেহারা ধূলোয় মলিন করছে। সালাত তাকে তার পরিপার্শ্ব থেকে একেবারে পৃথক করে দিয়েছে । এতে শিশুদের অন্তরে আল্লাহর বড়ত্বের বীজ বোপিত হবে।
৭. সন্তান প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগে পিতা তাকে সালাত ও তার আনুষঙ্গিক বিষয়াদি যেমন পবিত্রতা অর্জন, সতর ঢাকা ইত্যাদি বিষয়ে কড়াকড়ি করবে না বরং তাকে তার স্বাভাবিক অবস্থার উপর ছেড়ে দিয়ে যতটুকু হোক ,যে ভাবে হোক তাকে দিয়ে করাবে এবং তার অবস্থাদি পর্যবেক্ষণ করবে, কোন বিষয়েই তাকে বাধ্য করবে না। কারণ এতে করে সালাতের প্রতি তার অনীহা সৃষ্টি হয়ে যেতে পারে। পরবর্তীতে -সালাতের বয়স হলে- সালাত থেকে দূরে সরে যাবে এবং অপছন্দ ও কষ্টকর মনে করবে।
৮. সন্তান সপ্তম বছরে পদার্পণ করলে পিতা তাকে সালাতের আদেশ করবে। নবী স. ইরশাদ করেন,
مروا أولادكم بالصلاة وهم أبناء سبع سنين .
‘তোমাদের সন্তানদের বয়স সাত বছর পূর্ণ হলে তাদের সালাতের আদেশ দাও’। [আবুদাউদ] এবং তাকে সালাতের শর্তাদি, পবিত্রতা, সতর ঢাকা ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষাগ্রহণ করতে আদেশ কর ।
৯. সপ্তম বছরে পদার্পণ পূর্ব পর্যন্ত দিনগুলো কোন প্রকার উৎসাহ প্রদান , শিক্ষাদান ব্যতীত শুধুমাত্র এমনি এমনি পার হয়ে যাবে এমনটি করা ঠিক হবে না। বরং পূর্ব হতেই তাকে সালাতের মত আবশ্যিক একটি মহান কাজ তার সামনে আসছে মর্মে অবগত ও প্রস্ত্তত করা যেতে পারে। এবং বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে ক্ষেত্র তৈরি করে নেয়া যেতে পারে। এরপর যখন সাত বছরে পৌঁছবে এবং প্রথম ফরয আদায় করার সময় আসবে। পিতা তার বন্ধু-বান্ধব ও নিকট আত্মীয়-পরিজনদের একত্র করে এ উপলক্ষে একটি ছোট অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারে। এ উপলক্ষে তাকে ছোটখাট একটি উপহার যেমন হাত ঘড়ি বা এ জাতীয় কিছু উপহার দিয়ে মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করে রাখতে পারে। যেন সে সময়মত সালাত আদায়ে উৎসাহ অনুভব করে।এবং এর প্রতি অধিক যত্নবান থাকে।
১০. সালাতের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ, উপদেশ প্রদান এবং বিরক্তির উদ্রেক না করে এমন ভাবে বার বার উৎসাহ প্রদান-নির্দেশদান ইত্যাদি বিষয়ের প্রতি সযত্ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখা জরুরী। পিতার ব্যস্ততা বা অনুপস্থিতিতে অপরকে তার তদারকির দায়িত্ব দিবে।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ বলেন:
حَافِظُوْا على أبْنَائكم في الصلاةِ ، وَ عوِّدواهم الخيرَ فإن الخيرَ عَادةٌ .
‘তোমাদের সন্তানদের সালাতের ব্যাপারে যত্নবান হও, এবং তাদেরকে নেক কাজে অভ্যস্ত কর কারণ নেক কাজ অভ্যাসের ফলে হয়’। [তাবরানি : মুজামুল কাবির]
১১. সালাতে নিয়মিত ও যত্নবান হওয়ায় মাঝে মধ্যে পুরস্কৃত করা দোষনীয় নয়; তবে সব সময় এমনটি করবে না। হাদিয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবারের হাদিয়া ভিন্ন হওয়া ভাল।
১২. সন্তানদের পছন্দনীয় ও প্রিয় কাজগুলোকে সালাতের সাথে জড়িয়ে দেয়া। উদাহরণ স্বরূপ আসর বা মাগরিবের সালাত আদায়ের সাথে ভ্রমণে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া। যেমন বলল যে আসরের পর আজ আমরা অমুক জায়গায় ঘুরতে যাব।এতে করে তারা পুলকিত হবে এবং সময়মত সালাতের জন্য প্রস্ত্তত হবে।
১৩. এমনিভাবে সন্তানদের সাথে সকল প্রকার প্রোগ্রাম সেট করবে সালাতের সময়ের সাথে মিল করে। এতে করে সালাতের সময়ের সাথে মিল করে তারা সময় বিন্যাস শিখবে।
১৪. মাঝে মধ্যে সময় সুযোগ করে তাদেরকে কুরআন হাদীসে বর্ণিত সালাতের ফযিলতগুলো স্মরণ করিয়ে দিবে। এতে করে সালাত এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে তাদের চিন্তা ও ধ্যান-ধারণা পরিপূর্ণতা লাভ করবে।
১৫. ফরয সালাতের সাথে সাথে সুন্নাতে মুয়াক্কাদাগুলোও আদায়ের অভ্যাস করিয়ে নিবে। বিশেষত: দশ বছর পর থেকে। পাশাপাশি ক্বিয়ামুল লাইলের প্রতিও তাদেরকে উৎসাহ দিবে; রাতের সামান্য কিছু অংশ হলেও। পিতা সন্তানদের মাঝে ঘোষণা করবে যে, তিনি আজ অমুক সময় তাহাজ্জুদ আদায়ের জন্য জাগ্রত হবেন, ওই সময় (নিজ আগ্রহে)কে কে উঠতে পারে এ প্রতিযোগিতায় তাদের ছেড়ে দিবেন। তাদেরকে আত্মবিশ্বাসী এবং দৃঢ় মনোবলের অধিকারী করার জন্য পিতা নিজে তাদের জাগ্রত করবেন না। সালাতের ব্যাপারে তাদের উপর সহজ করবেন। তাদের মাঝে কারো তন্দ্রা এসে গেলে স্নেহের নিদর্শন স্বরূপ তাকে ঘুমাতে বলবেন।
১৬. দশ বছরের পর সন্তান যদি সালাতে ত্রুটি ও অবহেলা করে পিতার কর্তব্য তাকে উপদেশ দেওয়া এবং সালাত বিষয়ে কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত বর্ণনাগুলো স্মরণ করানো। এরপরও যদি অবহেলা অব্যাহত থাকে তার প্রতি কঠোরতা করবেন। তার সাথে মেলামেশা করবেন না। তাদেও সাথে খোশগল্প করবেন না। অভিমান করে কথা বলবেন না। তার প্রিয় বস্ত্ত হতে তাকে বঞ্চিত করবেন। যদি মানসিক শাস্তির এ প্রক্রিয়া কাজে না আসে। তাহলে নির্ধারিত শর্তাদি মেনে নিয়ে শারীরিক শাস্তির শরণাপন্ন হবেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: ‘সালাত না পড়ার জন্য তাদের প্রহার কর যখন তাদের বয়স দশ বছর হয়’।
১৭. শিশুকে ছোট বয়সেই জামাআতে সালাত আদায়ে অভ্যস্ত করবেন। যাতে তার মন মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত হয়। এখানে তারা আলেমদের থেকে জানতে পারবে এবং শিক্ষার আসরে বসার আদবসমূহ হাতে কলমে শিক্ষা ও চর্চা করতে পারবে।
১৮. মসজিদে উপস্থিত হওয়ার আগেই তাকে মানসিকভাবে এর জন্য তৈরি করে নিবেন। তার কাছে মসজিদের গুণাবলী বর্ণনা করবেন। যাতে সে কোন আকস্মিকতার মখোমুখি না হয়। এবং তার সামনে মসজিদ নিয়ে বেশি বেশি আলোচনা করবেন। মসজিদের পাশ দিয়ে গমনকালে তাকে বলবেন এ দেখ, কি সুন্দর বিল্ডিং, এটা হল মসজিদ। আমি তোমাকে অচিরেই আমার সাথে মসজিদে নিয়ে যাব, তুমি তাতে সালাত আদায় করবে।
১৯. তাকে সঙ্গে করে মসজিদে নিয়ে যাওয়ার পূর্বে মসজিদের পরিবেশও তৈরি করে নিবেন। ইমাম, মুয়াযি্যন, প্রতিবেশী মুসলী এবং তাদের ছেলেদের সাথে কথা বলে নিবেন। তারা যেন তার সাথে মিশে, তাকে আদর করে, সুন্দর করে কথা বলে। এতে করে সে ঘনিষ্ঠতাবোধ করবে,আড়ষ্টতা কেটে যাবে। ফলে আহলে মসজিদের প্রতি তার আস্থা ও সম্মান তৈরী হবে। পরিণতিতে তার মনে সালাতের মর্যাদা জন্মাবে, সালাত আদায়ে আগ্রহ বোধ করবে।
২০. মসজিদের ইমামের সহায়তায় তাকে কুরআন হেফয ও শুদ্ধকরনের লক্ষ্যে মসজিদ সংলগ্ন মাদরাসা মক্তবের সাথে সম্পৃক্ত করে দেয়া।
২১. মসজিদের সাথে তার সম্পৃক্তাকে দৃঢ়করণে গুরুত্ব দিতে হবে বাচ্চাদের উপকারী বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ ও অনুষ্ঠানাদির আয়োজনের মাধ্যমে।
২২. জুমআর রসালাতকে তার সামনে বড় করে উপস্থাপন করা। এর আহকাম, আদব এবং একে সম্মান প্রদর্শনের প্রয়োজনীয়তার বর্ণনা দেয়া।
২৩. পিতা খতীব নির্বাচনের ব্যাপারটিও মাথায় রাখবেন। কারণ তাঁর খোৎবা এবং তাঁর মতাদর্শের একটা গভীর প্রভাব পড়ে সন্তানের চরিত্রে। বিশেষত: যদি সে খুৎবার ভাষা বুঝে। খুৎবার পর তাদেরকে খুৎবার বিষয়বস্ত্ত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা যেতে পারে। মসজিদে প্রবেশের পূর্বে সন্তানকে নীরবতা পালনের ব্যাপারে বুঝাবে এবং আগেই বলে দিবে যে, সালাতের পর খুৎবার মূল বক্তব্য কি সে বিষয়ে আমাকে বলতে হবে।
এ ছিল সুসন্তান গঠনে কতিপয় উপকারী নির্দেশিকা ও আদব। যে ব্যাপারে প্রত্যেক পিতাকেই গভীর ভাবে চিন্তা করা উচিত এবং আদর্শ জাতি ও সুন্দর ভবিষ্যৎ গঠনকল্পে উক্ত নির্দেশিকা সন্তানদের মাঝে প্রতিফলিত করার ব্যাপারে উদ্যোগি হওয়া সময়ের দাবি। আমাদের সন্তান আমাদের ভবিষ্যৎ। আমাদের ভবিষ্যৎ গঠনে আমাদেরকেই ভূমিকা নিতে হবে সামনে থেকে। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/85/23
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।