মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
কুরআন ও সুন্নাহ তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কোথাও কোন দলিল প্রমাণ পাওয়া যায় না, যদ্বারা রসূলের সর্বস্থানে উপস্থিত থাকার কথা প্রমাণ হয়। পক্ষান্তরে আল্লাহ বলেনঃ
(আরবী)
“আর যে কোন স্থানে তোমরা অবস্থান কর না কেন তিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন এবং তোমাদের কৃত কর্মগুলো সম্বন্ধে আল্লাহ হচ্ছেন সম্যক পর্যবেক্ষক।” সূরা হাদীদ৪) উক্ত আয়াতে আল্লাহ তোমাদের সাথে (সঙ্গে) আছেন অর্থ তোমরা তাঁর গোচরে আছ। এর অর্থ এ নয় যে, প্রতিটি মানুষের অন্তরে আল্লাহ বিরাজমান। যেমন অদ্বৈতবাদীরা আকীদা পোষণ করে থাকে যে, প্রত্যেকে আসলে আল্লাহ। ভ্রমবশতঃ অনেক মানুষ এ রকম মনে করে থাকে। তাদের মতে কিছু তপজপ করলে সে ভ্রম ভেঙ্গে যায়। প্রতিটি মানুষ আল্লাহরই বহিঃপ্রকাশ মাত্র।
মুসলিম ভ্রাতৃবৃন্দ! অদ্বৈতবাদের আকীদা বেদান্তবাদ থেকে নেয়া হয়েছে। তারা বহু ইশ্বর আছে বলে মনে প্রাণে বিশ্বাস করে। এ মতবাদকে সুফিবাদের মাধ্যমে ইসলামে ঢুকিয়ে দিতে সমর্থ হয়েছে। আলোচ্য প্রবন্ধে আমরা বলতে চাচ্ছি যে, একমাত্র আল্লাহ সদা সর্বস্থানে উপস্থিত। আল্লাহ এ গুণকে কোন বান্দার সাথে জড়িত করার অর্থই হলো আল্লাহর সাথে মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে সমতুল্য করা। আল্লাহর সাথে অন্য যে কোন সত্তাকে সমতুল্য করা স্পষ্ট শির্ক। এ মহাপাপ সম্পাদনকারীরা চিরস্থায়ী জ্বলন্ত হুতাশনে জ্বলবে।
এবারে শুনুন! যারা রসূলকে সদা সর্বস্থানে উপস্থিত জানে, তারা ‘ইয়া আল্লাহ' এর সাথে ইয়া মুহাম্মাদু' বা 'ইয়া রসূলাল্লাহ' বলে সমভাবে আহ্বান করে থাকে। আরবী ভাষায় ‘ইয়া’ শব্দটি জীবিত সত্তা ব্যক্তিকে নিকটে থেকে সম্বোধন করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এভাবে সম্বোধন করে আহ্বান করার অর্থ হচ্ছে, সে শুনতে পায়। যেহেতু আমরা সকলে আল্লাহর গোচরে আছি এবং মহান আল্লাহ তার মহতী জ্ঞানের মাধ্যমে সদা আমাদের সাথে বিরাজমান।
সেহেতু তাকে বলে সম্বোধন করা হয়। কিন্তু মুহাম্মাদ (সাঃ) স্বীয় প্রজ্ঞা দ্বারা সদা সর্বস্থানে উপস্থিত নন গতিকে অথবা বা এরূপ আর কোন আহ্বানসূচক শব্দ ব্যবহার করে ডাকা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এরূপ আহ্বান করা সিদ্ধ থাকলে আল্লাহ এবং মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর মধ্যে কোন পার্থক্য থাকবে না। এ কথাকে যে কোন বিচার-বিবেক সম্পন্ন ব্যক্তি স্বীকার করতে পারে না। যারা খাঁটি একত্ববাদে বিশ্বাসী, তারা কোন মতেই বা বলে রসূলকে সম্বোধন করতে পারে না। রসূল যখন জীবিত ছিলেন তখন বা, অথবা ইত্যাদি বলা বৈধ ছিল। রসূলের মৃত্যুর পরই সাহাবাবৃন্দ নামাযে আত্তাহিয়্যাতু ......... পাঠের সময় “আস্সালামু আলাইকা আইয়ুহান্নাবীও এর স্থলে ‘আস্সালামু আলান্নাবিয়্যি’ বলেছিলেন।
যেহেতু রসূল জীবিত নেই, সেহেতু রসূলের সাহাবাবৃন্দ আস্সালামু আলাইকা আইয়ুহান্নাবিও’ অর্থাৎ হে নবী তোমার প্রতি সালাম, বললে নবী করীম (সাঃ)-কে জীবিত অবস্থায় সম্বোধন করার মতো মনে হয়। সুতরাং তারা ‘আইয়ুহান্নাবীও’ ‘হে নবী তোমার প্রতি সালাম' এর স্থলে নবীর প্রতি সালাম হোক’-‘আলান্নাবী' বলেছেন। সাহাবাবৃন্দ সতর্কতামূলক এ কাজ করেছেন। অন্যথায় পরে আগত উম্মতবৃন্দ মনে করতে পারে যে,-বলতে নবী করীম (সাঃ) জীবিত আছেন বলে বুঝায়। অথবা এভাবে আহ্বান করলে রসূল শ্রবণ করতে পারেন ইত্যাদি দ্বারা এ পথ পূর্বেই বন্ধ করার ব্যবস্থা করেছেন। এতদসত্ত্বেও
বিদআতীর দল রসূলকে বা অথবা অনুরূপ শব্দ প্রয়োগে ডাকতে কোন ত্রুটি করে না। বড় আশ্চর্যের বিষয়! প্রায় মসজিদের ডান পাশে। এবং বাম পাশে লিখে ঝুলিয়ে রেখেছে। তাহলে কি আল্লাহ এবং মুহাম্মাদ সমান? কস্মিনকালেও না। উপরন্তু কথা হচ্ছে এই যে, ইয়া মুহাম্মাদ বললে রসূল (সাঃ) কস্মিনকালেও শ্রবণ করেন না। ইয়া রসূলাল্লাহ বলতে রসূল শ্রবণ করেন-এরূপ কোন দলিল প্রমাণ কুরআন-সুন্নাহতে নেই। রসূল সদা সর্বস্থানে উপস্থিত থাকলে শ্রবণ করা সম্ভব হতো। এ ব্যাপারে কুরআন কি বলছে? আমরা সেই দিকে পাঠকবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
কুরআনের বর্ণনা মতে বিবি মারইয়াম আলাইহিস সালাম-এর ‘অভিভাবক’ কে হবেন এ নিয়ে বাদানুবাদ হয়েছিল। প্রত্যেকের মন-বাসনা ছিল যে, সে বিবি মারইয়ামের অভিভাবক হবে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাদানুবাদের সূচনা হয়। তদানিন্তন কালে ইয়াহুদ সমাজে কোন মতভেদ ঘটলে তার ফয়সালা লটারীর মাধ্যমে মীমাংসা করার নিয়ম প্রচলিত ছিল। বিবি মারইয়ামের অভিভাবক নির্বাচনের জন্যও তারা লটারীর তীরগুলো অথবা কলমগুলো ব্যবহার করেছিল। লটারীতে রসূল জাকারিয়া আলাইহিস সালাম বিবি মারইয়ামের অভিভাবক নিযুক্ত হন। এ ঘটনা ব্যক্ত করে আল্লাহ বলেন :
(আরবী)
হে রসূল! এগুলো হচ্ছে অতীতের অজ্ঞাত সংবাদ যা আমরা তোমাকে অহী দ্বারা জানিয়ে দিচ্ছি; তাদের মধ্যকার কোন ব্যক্তি মারইয়ামের অভিভাবক হতে পারবে-(এ প্রশ্নের মীমাংসার জন্য) যখন তারা নিজেদের লটারীর তীরগুলো নিক্ষেপ করেছিল, তখন তো তুমি তাদের কাছে উপস্থিত ছিলে না, আর যখন তারা (এ ব্যাপারে নিয়ে) বাদানুবাদ করছিল তখনও তুমি তাদের কাছে উপস্থিত ছিলে না। (সূরা আলে ইমরান ৪৪)
উক্ত আয়াতে মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে আল্লাহ সম্বোধন করে বলেছেন যে, “বিবি মারইয়ামের ঘটনা প্রবাহ যা তোমার অজ্ঞাত ছিল, অহী দ্বারা আল্লাহ তোমার কাছে তা ব্যক্ত করে দিয়েছেন।” অহী আসার পূর্বে রসূল এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না। প্রমাণিত হলো, রসূল অজ্ঞাত জানতেন না। একই আয়াতে আল্লাহ আরও বলেছেন যে, যখন তারা জুয়ার তীরগুলো নিক্ষেপ করছিল, সে সময়ে তুমি তাদের নিকটে উপস্থিত ছিলে না। অর্থাৎ রসূল যদি সদা সর্বস্থানে উপস্থিত বা হাজের নাজের হতেন, তাহলে আল্লাহ এ আয়াত দু’দু' বার তখন তুমি তাদের কাছে উপস্থিত ছিলে না’ বলতেন না।
প্রিয় পাঠকবৃন্দ! জেনে রাখুন সদা সর্বস্থানে উপস্থিত থাকা আল্লাহর গুণ। এ গুণ দ্বারা কোন দাসকে বা মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে গুণান্বিত করা চলে না। কল্পিত মর্যাদা। দানের মাধ্যমে রসূলের মর্যাদা কস্মিনকালেও বৃদ্ধি হয় না বরং আল্লাহর সাথে রসূলকে তুলনা করলে শির্ক নামের পাপই উপার্জন হবে। মনে করুন, থানার সাধারণ একজন কনস্টেবলকে পুলিশের জেনারেল বললে যে ওর সাথে বিদ্রুপ ও উপহাস করা হবে, এতে কোন সন্দেহ নেই। তদ্রুপ, সৃষ্ট জীবকে স্রষ্টার সমতুল্য হাজের নাজের মনে করা হলে রসূলের অবমাননাই যে করা হবে, তাতেও কোন সন্দেহ নেই। এরা কল্পিত মর্যাদা দান করে রসূলের অবমাননা করতেও ত্রুটি করছে না।
কিয়ামত দিবসে যখন রসূল (সাঃ)-কে অবহিত করা হবে যে, এরা তোমাকে আল্লাহর মতো হাজের নাজের জানত, সেদিন রসূল রাগান্বিত হয়ে আল্লাহর নিকট অভিহিত করবেন। তিনিই কেনই বা অভিযোগ করবেন না? আল্লাহর একত্ববাদ ভিন্ন, আর আল্লাহর বান্দা মুহাম্মাদের নবুওত ও রিসালাত ভিন্ন জিনিস। সৃষ্টি ও সৃষ্টা কস্মিনকালেও সমতুল্য পদাধিকারী ও মর্যাদাবান হতে পারে না।
আরও শুনুন! আল্লাহ তা'আলা অহী দ্বারা পূর্বের উম্মত বর্গের ও নবীগণের সংবাদ মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে অবহিত করেছেন। যে বিষয়গুলো রসূল জ্ঞাত ছিলেন না, সেগুলো তাকে জানিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে হচ্ছে এই যে, তিনি আপনার উম্মতের কাছে। তা পাঠ করে শুনাবেন, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। অনুরূপভাবে মূসা আলাইহিস সালাম মিসর থেকে মাদইয়ানে গমন করেছিলেন। সেখান থেকে মিসরে প্রত্যাবর্তনের সময় তুর পাহাড়ের পশ্চিম প্রান্তে তাকে নবুওত দান করে ফিরআউনের নিকটে পাঠানো হয়েছিল। এ সমুদয় ঘটনা বর্ণনা করে রসূলকে সম্বোধন করে আল্লাহ এরশাদ করেছেন?
(আরবী)
“আর তুমি (পর্বতের) পশ্চিম দিকে উপস্থিত ছিলে না যখন আমরা মূসার প্রতি নবুওতের ব্যাপারটাকে সুসম্পন্ন করে দিলাম এবং তুমি তার সাক্ষাৎ দর্শকও ছিলে না।” (সুরা কাসাস ৪৪)
কুরআনের বাহক মুহাম্মাদ মোস্তফা (সাঃ) মূসার যুগে জন্মগ্রহণ করেননি। সে ইতিবৃত্তগুলো অবগত হওয়ারও তার কোন সম্ভাবনা ছিল না। বস্তুত তিনি এসব তত্ত্ব অবগত হয়েছেন অহী দ্বারা। অহীর মারফতে জেনে সঠিক ঘটনা বর্ণনা করতে সক্ষম হচ্ছেন তিনি। রসূল (সাঃ) হাজের নাজের হলে মূসা আলাইহিস সালাম-কে নবুওত প্রদানের সময় তূর পর্বতের পশ্চিম প্রান্তে উপস্থিত থাকতেন। কিন্তু তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না এবং সাক্ষাৎ দর্শকও ছিলেন না। প্রমাণিত হলো, রসূল (সাঃ) সদা সর্বস্থানে উপস্থিত থাকেন না এবং তিনি হাজের নাজেরও নন।
(আরবী)
কিন্তু (অবস্থা এই যে) বহু যুগ সমাজকে আমরা পয়দা করলাম, সে মতে এদের জীবনকাল দীর্ঘ হয়ে গেল, অধিকন্তু তুমি মাদইয়ানবাসীদের মধ্যেও বসবাস করনি, যে মতে মক্কাবাসীদিগের নিকট আমাদের আয়াতগুলোর আবৃত্তি করছ। বরং হে মুহাম্মাদ! আমরা তোমাকে নবীরূপে প্রেরণ করতে কৃত সংকল্প ছিলাম। সূরা কাসাস৪৫), কাল চক্রের আবর্তন ও বিবর্তনে বহু যুগ সমাজের আবর্তন ও বিবর্তন ঘটেছিল, তাদের ঘটনা এবং মাদইয়ানবাসীদের ঘটনা অহী দ্বারা জ্ঞাত হয়ে মক্কাবাসীদের কাছে পড়ে শুনাচ্ছ। অথচ তুমি মাদইয়ান নগরীতে বসবাস করনি। বিগত উম্মতের কাহিনী অহী দ্বারা জ্ঞাত হয়েই বলতে পারছ। অন্যথায় তুমি কিছুই বলতে পারতে না। রসূল (সাঃ) যদি হাজের নাজের হতেন, তাহলে তাঁর অহীর
প্রয়োজন থাকত না। কিন্তু রসূল (সাঃ) যেহেতু সদা সর্বস্থানে উপস্থিত ছিলেন না, কাজেই কোন কিছুর বর্ণনা দান করা নবুওত লাভের দরুনই সম্ভব হয়েছে।
আল্লাহ আরও বলেন।
(আরবী)
“আর তুমি (সে সময়) তুর পর্বতের পার্শ্বেও উপস্থিত ছিলে না যখন (মূসাকে) আমরা আহ্বান করেছিলাম। তবে তোমার প্রভুর রহমত বশতঃ (তুমি এসব বৃত্তান্ত অবগত হতে পারলে)।” (সূরা কাসাস ৪৬)
আলোচ্য আয়াতেও বলা হয়েছে- মূসা আলাইহিস সালাম-এর সাথে আল্লাহ রাব্দুল আলামীনের কথোপকথনের সময় নবী (সাঃ) তূর পর্বতের পার্শ্বে উপস্থিত ছিলেন। হাজের নাজের থাকলে তা বলা সম্ভব হতো। কিন্তু আল্লাহর রহমত নবুওত লাভের দরুন অহী দ্বারা জ্ঞাত হয়ে সঠিক ঘটনা বলা সম্ভব হচ্ছে।
দীর্ঘ আলোচনায় প্রমাণ করেছি যে, নবী (সাঃ) সদা সর্বস্থানে উপস্থিত নন। সুতরাং তাকে! বলে সম্বোধন করার মত ... বা অনুরূপ শব্দ ইয়া রসূলাল্লাহ ইত্যাদি প্রয়োগ করা শরীয়ত সম্মত হতে পারে না। তবে কুরআনের আয়াত পাঠের সময় অথবা হাদীসের মধ্যে যেখানে রসূলকে সম্বোধন করা হয়েছে, সেগুলোকে হুবহু পাঠ করা বৈধ আছে। আর একটি কথা স্মরণ রাখবেন! নিয়ত গুণে সব কিছুর ফয়সালা আল্লাহ করবেন। নিয়ত ভাল তো সব ভাল, অন্যথায় পুণ্যের পরিবর্তে শির্ক নামের মহাপাপের দায়ে অভিযুক্ত হবার সম্ভাবনা আছে। খুব সাবধানে কথাবার্তা বলা উচিত। আল্লাহ বলেনঃ মুহাম্মাদ (সাঃ) হাজের নাজের নন। আর এক শ্রেণীর বিদআতী মৌলবী কল্পিত মর্যাদা দান করতে গিয়ে বলছে যে, তিনি (সাঃ) সদা সর্বস্থানে উপস্থিত এবং হাজের ও নাজের। তবু বলুন! আল্লাহ সত্যবাদী না যারা বলে যে, হাজের নাজের তারা সত্যবাদী? নিশ্চয় বলবেন যে, আল্লাহ সত্যবাদী এবং কল্পিত মর্যাদা দানকারীর দল মিথ্যাবাদী।
প্রিয় পাঠকবৃন্দ
কল্পিত মর্যাদা দানকারীরা রসূলকে আল্লাহর যাবতীয় গুণ গরিমা দান করতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না। এমনকি তারা রসূলকে আল্লাহর অবতার বলতেও ত্রুটি করেনি। বক্ষ্যমান প্রবন্ধে আমরা দু'একটি কল্পিত মর্যাদা দান করার উল্লেখ করতে প্রয়াশ পাব ইনশাআল্লাহ। তাজ কোম্পানী কর্তৃক প্রকাশিত কুরআন মাজীদের প্রারম্ভে আল্লাহ তাআলার একশত গুণ বাচক নামের তালিকা প্রদান করা হয়েছে। অনুরূপভাবে শেষের দিকে মুহাম্মাদ (সাঃ)-এরও একশত গুণ বাচক নাম প্রকাশ ও প্রচার করা হয়েছে। রসূলের গুণবাচক নামগুলোর মধ্যে রসূলের চারটি এমন গুণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যে গুণগুলো কেবলমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত, অন্য কথায়। যেগুলো কেবলমাত্র আল্লাহর সত্তায় প্রযোজ্য। সে গুণগুলো নির্ধারণঃ
“মুহাম্মাদ (সাঃ) সর্বপ্রথম যার সত্তার পূর্বে কোন কিছুই ছিল না এবং সব কিছু ধ্বংসের পরও তিনি একাই থাকবেন অর্থাৎ সর্বশেষ। তিনি সদা প্রকাশ ও প্রচ্ছন্ন।” অর্থাৎ হযরত মুহাম্মাদ আদি, অন্ত, সদা প্রকাশিত ও সদা প্রচ্ছন্ন। তাজ কোম্পানী লিমিটেড রসূলের মর্যাদা বৃদ্ধি করণার্থে রসূলকে এমন কতকগুলো বিশেষ গুণে গুণান্বিত করেছেন, যা কেবলমাত্র আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট। হাদীসের পুস্তকগুলিতে রসূলের যে সমস্ত গুণের বর্ণনা করা হয়েছে, তা তন্ন তন্ন করে খুঁজেও রসূলের উক্ত রূপ গুণ পাওয়া যায় না। পক্ষান্তরে আমরা কুরআন মাজীদে ঐ গুণগুলো কেবলমাত্র আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট দেখতে পাচ্ছি। আল্লাহ তাআলা সূরা হাদীদে ইরশাদ করেছেনঃ
(আরবী)
“তিনি অনাদি হিসাবে আদি ও অনন্ত হিসাবে অন্ত এবং বাহ্যজ্ঞানের হিসাবে স্বতঃ প্রকাশিত ও তত্ত্ব জ্ঞানের দিক দিয়ে সদা প্রচ্ছন্ন এবং তিনি হচ্ছেন সকল বিষয় সম্বন্ধে সর্ববেত্তা।” (সূরা হাদীদ ৩)
আল্লাহ আদি এবং অন্তের ব্যাখ্যা হচ্ছে, সমস্ত সৃষ্টির পূর্বেও আল্লাহ বিদ্যমান ছিলেন এবং সব কিছু লয় হবার পরেও আল্লাহ বিদ্যমান থাকবেন। আল্লাহ বলেন :
(আরবী)
“যা কিছু তাতে আছে, সমস্তই নশ্বর। আর অবিনশ্বর হয়ে রবে তোমার মহাপ্রতাপ মঙ্গল বিধান প্রভুর জাত (সত্তা)।” উল্লিখিত মহাবিনাশের পর যে সত্তা বিরাজমান থাকবেন তিনিই হচ্ছেন অন্ত এবং তিনিই আমাদের আল্লাহ। তিনি মুহাম্মাদ নন। সূরা হাদীদের আয়াত “জাহের ও বাতেন শব্দের অর্থ যথাক্রমে প্রকাশমান ও প্রচ্ছন্ন। ইমাম রাগেত ও শওকানী অনুরূপ অর্থ করেছেন। বাহ্য জ্ঞানের হিসেবে আল্লাহ সদা স্বতঃ প্রকাশমান এবং তত্ত্ব জ্ঞানের দিক দিয়ে আল্লাহ প্রচ্ছন্ন বা লুক্কায়িত
মুসলমানদের আকীদা এবং বিশ্বাস এই যে, আল্লাহই একমাত্র সত্তা যিনি অনাদি হিসেবে আদি অর্থাৎ সর্বপ্রথম। অন্য কথায় সৃষ্টির পূর্বে তিনিই প্রথম এবং অনন্ত হিসেবে অন্ত, অর্থাৎ সব কিছুর ধ্বংসের পরেও তিনি একাই বিরাজমান। আর বাহ্য জ্ঞানের হিসেবে সদা প্রকাশ তিনি এবং তত্ত্ব জ্ঞানের দিক দিয়ে সদা প্রচ্ছন্ন তিনি। এই আকীদা ছাড়া ভিন্ন আকীদা বা বিশ্বাস পোষণ করার অর্থ হচ্ছে রসূলকে আল্লাহ বলে বিশ্বাস করার সমতুল্য। কারণ আল্লাহ যে গুণ গরিমা নিজের সত্তার জন্য নির্ধারণ করেছেন তা রসূলকে প্রদান করার অর্থ হচ্ছে রসূল তাহলে আল্লাহর সমতুল্য? এরূপ আকীদা কোন ক্রমেই পোষণ করা যেতে পারে না
মনে রাখবেন! যে কেউই এরূপ আকীদা পোষণ করবে সেই পৌত্তলিক হয়ে যাবে। উপরন্তু যখন কিছুই ছিল না তখনও একমাত্র আল্লাহর সত্তাই ছিল বিরাজমান এবং যখন সব কিছুই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যাবে, তখনও একমাত্র আল্লাহই স্বতঃই প্রকাশমান এবং তত্ত্ব জ্ঞানের দিক দিয়েও আল্লাহই সদা প্রচ্ছন্ন বা লুক্কায়িত। অহেতুক মর্যাদা দান করলেই রসূলের পদ মর্যাদা বৃদ্ধি ও হবে না এবং তিনি সৃষ্টি থেকে স্রষ্টার আসনও লাভ করবেন না। সাধারণ নিয়মানুযায়ী সর্বদা অতি ভক্তি কল্যাণের
পরিবর্তে অকল্যাণই ধারণ করে। অনুরূপভাবে উক্ত বিশেষণগুলোর দ্বারা রসূলকে বিশেষিত করলে, তিনি আল্লাহর স্থলাভিষিক্ত হবেন না এবং এরূপ আকীদা পোষণকারীদেরকে শাফা'আত করে বেহেশতেও প্রবেশ করাতে পারবেন না। প্রত্যেকের স্মরণ রাখা উচিত যে, স্বয়ং আল্লাহ শির্ক গুনাহ ক্ষমা করবেন না। যারা আল্লাহর গুণে রসূলকে গুণান্বিত করে পৌত্তলিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে এবং হবে। তাদেরকে শাফাআতের মাধ্যমে তরিয়ে নেবার প্রশ্নই উঠে না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/234/15
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।