hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইলমে গায়েব

লেখকঃ অধ্যাপক আবদুন নূর সালাফী (রহ.)

প্রমাণপঞ্জি উল্লেখ করে দাঁতভাঙ্গা জবাব প্রদান
বিদআতী বলে থাকে যে, কুরআন মাজীদে নবী করীম (সাঃ)-কে সম্বোধন করে বলা হয়েছে?

(আরবী)

“হে নবী! আল্লাহ তোমাকে এমন সব কথা শিখিয়েছেন যা তুমি জানতে না।” এখানে ‘মা’ শব্দটি এছেম মৌছুল, যা অনির্দিষ্ট বাচক শব্দরূপে ব্যবহৃত হয়েছে। যার অর্থ হয় যা কিছু, সব কিছু ইত্যাদি। এ আয়াতের দ্বারা প্রমাণ হচ্ছে যে, মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে সমুদয় বস্তুর বিদ্যা শিখানো হয়েছে। এরই নাম ইলমে গায়েব'। সুতরাং নবী (সাঃ) ‘গায়েব দা’ ছিলেন। উত্তরে আমরা বলব যে, এ ‘মা’ শব্দটি সাধারণ মুসলমানের জন্যও ব্যবহার করা হয়েছে। এরশাদ হচ্ছে?

(আরবী)

‘যা তোমরা জানতে না তা তোমাদেরকে (আল্লাহ) শিখিয়েছেন।' (সূরা আল-বাকারার শেষাংশ)

তবে কি আমরা সমস্ত মুসলমান (যাদেরকে এ আয়াতে সম্বোধন করা হয়েছে) গায়েব জানি? কস্মিনকালেও না। অর্থাৎ মুসলমানেরা কোন সময়ই গায়েব জানে না।

কুরআন মাজীদে সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও ‘মা’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।

(আরবী)

“মানুষ যা জানত না আল্লাহ সে জ্ঞান তাদেরকে শিখিয়েছেন।” সূরা আলাক ৫) তবে কি মানব জাতির সকলে গায়েব জান্তা? কষ্মিনকালেও না। অনুরূপভাবে ‘মা’ শব্দ রসূল (সাঃ)-এর ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়েছে মাত্র। সুতরাং আল্লামাকা মা লাম তাকুন তালামু-এর অর্থ হচ্ছে যে সব ধর্মীয় তত্ত্বজ্ঞান তোমার ছিল না, আল্লাহ তাআলা সেগুলো তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন। কুরআন মাজীদের যত্রতত্র ‘মা’ শব্দে রসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে সম্বোধন করে ব্যবহার করা হয়েছে। এরশাদ হচ্ছে?

(আরবী)

“হে মুহাম্মাদ! (অহী আসার) পূর্বে তুমি জানতে না যে, কিতাব কি আর ঈমানই বা কি? কিন্তু আমরা সে কুরআনকে তোমার অন্তরে জ্যোতি বা নূর স্বরূপ করেছি, এর দ্বারা আমার বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছে হিদায়াত করে থাকি”- (সূরা শুরা ৫২)। এ আয়াতের শিক্ষা হচ্ছে আল্লাহ তা'আলা রসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন। এ শিক্ষাকে তো ‘ইলমে গায়েব বলা হয় না।

বিদআতীদের পক্ষ থেকে এও প্রশ্ন করা হয় যে, রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

(আরবী)

“অতীত ও ভবিষ্যতের, বিগত ও আগত সকল জ্ঞান আমাকে দান করা হয়েছে।”

এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে যে, রসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে বিগত ও আগত সব কিছুর জ্ঞান দেয়া হয়েছিল। সুতরাং তিনি গায়েব জানতেন।

এর উত্তরে আলোচ্য হাদীসটির অর্থ হৃদয়ঙ্গম করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। এর অর্থ হচ্ছে আল্লাহকে চেনার যে সব তত্ত্বজ্ঞান আমার পূর্বের বিগত সৎলোকগণের ছিল এবং আমার পরে আগত লোক সকলের যে তত্ত্বজ্ঞান লাভ হবে, সেগুলো আমাকে দেয়া হয়েছে। এজন্যে তাঁকে এসব তত্ত্বজ্ঞান দিয়ে ভূষিত করা হয়েছে, যেহেতু তিনি আদম সন্তানাদির সরদার বা নেতা এবং সবচেয়ে বড় সাধু। সুতরাং তার জ্ঞান বেশী থাকা সম্বন্ধে কারোর কোন দ্বিমত নেই। এবারে বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করছি।

উদ্ধৃত হাদীসে 'ইলম' শব্দটি ‘আউয়ালীন’ শব্দের-যা কর্তা-এর দিকে সম্বন্ধ করা হয়েছে। যার অর্থ হচ্ছে, যতটুকু তত্ত্বজ্ঞান ও ধর্মীয় জ্ঞান আগের ও পরের লোক সকলের অর্জন হয়েছিল এবং হবে তার সবগুলোই আমার জানা আছে।

(আরবী)

“হে মুহাম্মাদ বল ও নভোমণ্ডলে এবং ভূমণ্ডলে যারা অবস্থান করছে, আল্লাহ ব্যতীত তাদের কেউই গায়েব জানে না।”-অনুযায়ী অতীত ও ভবিষ্যতের কেউই গায়েব জানে না। সুতরাং “ইলমুল আউয়ালীন ওয়াল আখেরীন’ এর তাৎপর্য হচ্ছে যতটুকু শরীয়তের জ্ঞান বিগত ও আগত মানবমণ্ডলীর ছিল, হবে এবং আছে-তার সবগুলো মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে শিক্ষা দেয়া হয়েছে। যদি উক্ত হাদীস থেকে নবী (সাঃ)-এর ‘গায়েব দা’ হওয়া প্রমাণ হয়, তাহল কুরআনী আয়াতসমূহের, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের, ফিকাহ শাস্ত্রবিদগণের, সমস্ত মুহাদ্দিসীন এবং কামিল আউলিয়া কিরামের বিরুদ্ধে মতামত ব্যক্ত করা হবে। এতদভিন্ন কুরআন মাজীদে প্রা ল ভাষায় বলা হয়েছে?

(আরবী)

“হে রসূল! এদেরকে বল ও ভবিষ্যতে আমার ও তোমাদের সাথে কি কি আচরণ করা হবে, আমি তা জানি না।” (সূরা আহকাফ)

আয়াতের তাৎপর্য এই যে, আল্লাহ গায়েব জানেন, আমি জানি না। আমার ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্র কোথায় হবে, সত্য ধর্ম প্রচারের কোন ভাল পন্থা অবলম্বন করা হবে, আমি তা জানি না। পক্ষান্তরে তোমাদের ভবিষ্যৎ পরিণাম কি আছে, আমি তাও জানি না। তাহলে কি করে মুহাম্মাদ (সাঃ) গায়েব জান্তা হতে পারেন?

ইলমুল আউয়ালীন ওয়াল আখেরীন-এর অর্থ এও হতে পারে, যে সমস্ত ঘটনা প্রবাহের কুরআন মাজীদে ও হাদীসে উল্লেখ আছে যার বিবরণ রসূল (সাঃ) প্রদান করেছেন, সেগুলো রসূল (সাঃ)-কে শিক্ষা দেয়া হয়েছে। কেননা যে পরিমাণ জ্ঞানের কথা আল্লাহ বলেছেন, সে পরিমাণ সম্পর্কে কোন মতভেদ নেই এবং সেটাকে কেউ অস্বীকারও করে না। অস্বীকার করা হয় কেবলমাত্র “মুহাম্মাদ (সাঃ) ও অন্যান্য নবীগণ গায়েব জানতেন-এ কথাকে।

আরও বড় আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, প্রকাশ্য আয়াতের বিরুদ্ধে, বরং ফিকাহ শাস্ত্রবিদগণের সম্মিলিত মতামতের বিরুদ্ধে অহেতুক অপচেষ্টা করে মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে গায়েব জান্তা হিসাবে প্রকাশ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

উপরের বিস্তারিত আলোচনা দ্বারা আমরা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কেউই গায়েব জানে না। আমরা এও প্রমাণ করেছি যে, নবী, অলী, ফেরেশতা ইত্যাদি কেউই গায়েব জানে না। কুরআন ও সুন্নাহর স্পষ্ট প্রমাণাদি সত্ত্বেও বিদআতীরা রসূল (সাঃ)-কে গায়েব জান্তা বলে মতামত ব্যক্ত করে থাকে। সত্যিই বড় পরিতাপের বিষয়। তারা বলে থাকে যে, আসলে রসূল (সাঃ) গায়েব জানতেন কিন্তু তিনি বিনয়াবনত হয়ে বলেছেন যে, আমি গায়েব জানি না।

একটা উদাহরণঃ কুরআন হাদীস ও ফিকাহ শাস্ত্রের পণ্ডিত একজন পীর সাহেবকে স্নাতক শ্রেণীর ইংরেজী গদ্য ও পদ্য সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, আমি ইংরেজী জানি না; আর ইংরেজী লেখা পড়াও শিখি না। এক্ষেত্রে যদি কোন অন্ধভক্ত মুরীদ ব্যাখ্যা করে বলে যে, পীর সাহেব বিনয়াবনত হয়ে বলেছেন, তিনি ইংরেজী জানেন।

তিনি জন্মগতভাবে ইংরেজ নন। আসলে তিনি ইংরেজীতে মহাপণ্ডিত। পীর সাহেব পরিষ্কার ভাষায় উত্তর প্রদান করার পরেও যদি অন্ধ ভক্ত মুরীদ অপব্যাখ্যা দিয়ে পীর সাহেবকে ইংরেজী জান্তা মনে করে তাহলে আমাদের বলার কিছুই নেই। প্রিয় পাঠক-পাঠিকাবৃন্দ! আশা করি উল্লিখিত অপব্যাখ্যাকে কেউই শুদ্ধ বলে মেনে নিবেন না। এরূপ অপব্যাখ্যা কোন ভাবেই শুদ্ধ হতে পারে না।

অনুরূপভাবে নিখিল। ধরণীর রহমত, রসূলগণের সম্রাট, সরওয়ারে কায়েনাত, মোফাখখারে মওজুদাত মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (সাঃ) গায়েব জান্তা ছিলেন না। তার কাছে যে ওয়াহী বা প্রত্যাদেশ এসেছিল সেগুলো জনসাধারণের মধ্যে প্রকাশের জন্যই এসেছিল। ওয়াহী প্রকাশের পর আর গায়েব থাকে না। এতদসত্ত্বেও যারা রসূল (সাঃ)-কে গায়েব জান্তা বলে মনে করে তাদের মূল প্রমাণাদি নিয়ে আলোচনা করে এ প্রসঙ্গ সমাপ্ত করব ইনশাআল্লাহ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন