hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহচর্য

লেখকঃ শাইখ সালেহ ইবন আবদিল্লাহ আদ-দারওয়ীশ

১৭
ওয়াফুদ তথা প্রতিনিধি দলসমূহকে অভ্যর্থনা
সূরা হুজুরাতে কিছু আয়াত আছে যাতে স্পষ্টভাবে সাহাবীদের মর্যাদা বুঝানো হয়েছে। এ সূরা আক্বীদা, শরি‘য়াহ ও মানব অস্তিত্বের প্রকৃত অবস্থার মৌলিক বিষয়ের বিবরণ দেয়া হয়েছে। এতে মুসলিম সমাজের বৈশিষ্ট্য, ঈমানী ভ্রাতৃত্ব এবং যেসব জিনিস এ সবের বিপরীত ও যা এর ভিত্তিকে দুর্বল করে দেয় সেসব ব্যাপারে বর্ণনা করা হয়েছে।

এখানে আয়াতে বর্ণিত দু’টি অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করব:

প্রথমত: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আচরণবিধি ও বেদুইনদের অবস্থা সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।

সূরাটি মু’মিনদেরকে সম্বোধন করে শুরু হয়েছে। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ মান্য করা, তাদের হুকুমের সামনে কোনো কিছু অগ্রাধিকার না দেয়া বরং তাদের রায়ের উপর সন্তুষ্ট থাকা, আত্মসমর্পণ করা, তাড়াহুড়া করে রাসূলের উপর কোন মত না দেয়া এবং কোন ব্যাপারে আল্লাহর বিধান না আসা পর্যন্ত তাদের কোন কথা বলা উচিত নয়, এমনিভাবে কোন কাজ না করা ইত্যাদি সম্পর্কে সূরাতে আলোচনা করা হয়েছে।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়, স্বর উচুঁ না করা ইত্যাদি সুমহান শিষ্টাচার সম্পর্কে ভাবুন। আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক সাহাবী ও বেদুইনদের মাঝে শিষ্টাচারের পার্থক্য সম্পর্কে ভাবুন। এটা দ্বারাই সাহাবীদের মর্যাদা প্রমাণিত হয়।

চিন্তা ও গবেষণা করুন:

উপরিউক্ত আয়াতসমূহে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাস্তব জীবনের সাথে সাহাবীদের জীবন্ত চিত্র লক্ষ্য করুন।

দ্বিতীয়ত: আয়াতে সাহাবীদের সুমহান মর্যাদা সম্পর্কে আলোকপাত হয়েছে। এতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, তাদের মাঝে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপস্থিতিই হচ্ছে সবচেয়ে বড় নি‘আমত।

﴿ وَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّ فِيكُمۡ رَسُولَ ٱللَّهِۚ ٧ ﴾ [ الحجرات : ٧ ]

“আর তোমরা জেনে রাখ যে, তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল রয়েছেন”। [আল-হুজুরাত: ৭]

এ আয়াতের উদ্দেশ্য কি? সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর আল্লাহর পক্ষ থেকে অহী নাযিল হত আর তিনি সাহাবীদের মাঝে অবস্থান করতেন। ফলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে এ মু’মিন সম্প্রদায়ের সাথে মহান আল্লাহর সম্পর্ক সৃষ্টি হত। তাদের খোঁজ খবর ও অবস্থা সম্পর্কে অহী নাযিল হতো। এমনকি তাদের অন্তরের খবর ও বিপদ আপদে তাদের ফয়সালা সরাসরি আল্লাহর তরফ থেকে নাযিল হতো।

এমনকি তাদের ব্যক্তিগত বিষয়েও অহী নাযিল হতো।

﴿ قَدۡ سَمِعَ ٱللَّهُ قَوۡلَ ٱلَّتِي تُجَٰدِلُكَ فِي زَوۡجِهَا ١ ﴾ [ المجادلة : ١ ]

“আল্লাহ অবশ্যই সে রমণীর কথা শুনেছেন যে তার স্বামীর ব্যাপারে তোমার সাথে বাদানুবাদ করছিল”। [সূরা : আল্-মুজাদালা: ১]

আল্লাহ উম্মুল মু’মিনীন উম্মে হানী রাদিয়াল্লাহু আনহার উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন। তিনি ও তাঁর কাছে যেসব সাহাবীরা ছিলেন তারা সবাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুতে অহী বন্ধ হওয়ায় কান্নাকাটি করছিলেন। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ও অন্যান্য সাহাবীরা তাঁর (উম্মে হানী রাদিয়াল্লাহু আনহু) মৃত্যুর পরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুকরণে তাঁর কবর যিয়ারত করছিলেন। উক্ত ঘটনাটি একটি প্রসিদ্ধ ঘটনা।

অতঃপর এ আয়াত সম্পর্কে ভাবুন:

﴿ وَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّ فِيكُمۡ رَسُولَ ٱللَّهِۚ لَوۡ يُطِيعُكُمۡ فِي كَثِيرٖ مِّنَ ٱلۡأَمۡرِ لَعَنِتُّمۡ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ حَبَّبَ إِلَيۡكُمُ ٱلۡإِيمَٰنَ وَزَيَّنَهُۥ فِي قُلُوبِكُمۡ وَكَرَّهَ إِلَيۡكُمُ ٱلۡكُفۡرَ وَٱلۡفُسُوقَ وَٱلۡعِصۡيَانَۚ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلرَّٰشِدُونَ ٧ ﴾ [ الحجرات : ٧ ]

“আর তোমরা জেনে রাখ যে, তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল রয়েছেন। সে যদি অধিকাংশ বিষয়ে তোমাদের কথা মেনে নিত, তাহলে তোমরা অবশ্যই কষ্টে পতিত হতে। কিন্তু আল্লাহ তোমাদের কাছে ঈমানকে প্রিয় করে দিয়েছেন এবং তা তোমাদের অন্তরে সুশোভিত করেছেন। আর তোমাদের কাছে কুফরী, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে অপছন্দনীয় করে দিয়েছেন। তারাই তো সত্য পথপ্রাপ্ত”। [সূরা আল-হুজুরাত: ৭]

হ্যাঁ, সাহাবীদের উপর মহান আল্লাহর অনুগ্রহ হলো তাদের অন্তরে ঈমানকে দৃঢ় ও স্বভাবসুলভ করে দিয়েছেন। তাদের নিকট প্রবৃত্তির ভালবাসার চেয়ে ঈমানের ভালবাসা অধিক প্রিয়। এ আয়াতের তাগীদ সম্পর্কে ভাবুন। ‘এবং তা তোমাদের অন্তরে সুশোভিত করেছেন’। এরপরে ঈমানের ভালবাসার বিপরীত ও ত্রুটিযুক্ত দিকগুলো উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর তোমাদের কাছে কুফরী, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে অপছন্দনীয় করে দিয়েছেন’। আল্লাহ তা‘আলা যা কিছুই ঈমানের ঘাটতি ঘটায় তা সব কিছুই সাহাবীদের অন্তরে অপছন্দনীয় করে দিয়েছেন। আল্লাহু আকবর। আয়াতের শেষাংশ নিয়ে ভাবুন।

أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلرَّٰشِدُونَ

“তারাই তো সত্য পথপ্রাপ্ত”। [সূরা আল-হুজুরাত: ৭]

এ দলটির উপর মহান আল্লাহর অনুগ্রহ হলো তিনি তাদেরকে তাঁর নবীর সাহচর্য হিসেবে নির্বাচিত করেছেন এবং তাদেরকে ঈমানের হিদায়াত দান করেছেন। এ ঈমান তাদের অন্তরে সুশোভিত করেছেন। তাদেরকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবী হওয়ার যোগ্য করে তুলেছেন। ফলে তারা কুফরী, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে অপছন্দ করতেন। এতে পরিপূর্ণ হিকমত রয়েছে। কেননা আয়াতে ঈমানের বিপরীত তিনটি খারাপ দোষের কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। তা হলো কুফরী, পাপাচার ও অবাধ্যতা।

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ : " إِنَّ اللهَ نَظَرَ فِي قُلُوبِ الْعِبَادِ، فَوَجَدَ قَلْبَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرَ قُلُوبِ الْعِبَادِ، فَاصْطَفَاهُ لِنَفْسِهِ، فَابْتَعَثَهُ بِرِسَالَتِهِ، ثُمَّ نَظَرَ فِي قُلُوبِ الْعِبَادِ بَعْدَ قَلْبِ مُحَمَّدٍ، فَوَجَدَ قُلُوبَ أَصْحَابِهِ خَيْرَ قُلُوبِ الْعِبَادِ، فَجَعَلَهُمْ وُزَرَاءَ نَبِيِّهِ، يُقَاتِلُونَ عَلَى دِينِهِ

“আব্দুল্লাহ ইবন মাস ‘উদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহ বান্দাহদের অন্তরের দিকে তাকালেন। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্তরকে সবচেয়ে উত্তম পেলেন। ফলে তাকে নবুওতের জন্য নির্বাচিত করেছেন এবং রিসালাত দিয়ে প্রেরণ করেছেন। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্তরের পরে আবার বান্দাহর অন্তরের দিকে তাকালেন। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্তরের পরে সাহাবীদের অন্তর উত্তম অন্তর হিসেবে পেলেন। ফলে তিনি তাদেরকে তাঁর নবীর সাহায্যকারী করলেন, তারা তাঁর দ্বীনের জন্য জিহাদ করেছেন”। [মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ৩৬০০।]

হ্যাঁ, এ আয়াতে সাহাবীদের মর্যাদা, ন্যায়পরায়ণতা, যোগ্যতা ও মহান আল্লাহর কাছে তাদের অপরিসীম সম্মান ও মর্যাদার স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে। মহান মাওলার নিন্মোক্ত বাণী সম্পর্কে ভাবুন:

أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلرَّٰشِدُونَ

“তারাই তো সত্য পথপ্রাপ্ত”। [সূরা আল-হুজুরাত: ৭]

এর পরে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿ فَضۡلٗا مِّنَ ٱللَّهِ وَنِعۡمَةٗۚ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٞ ٨ ﴾ [ الحجرات : ٨ ]

“আল্লাহর পক্ষ থেকে করুণা ও নিআমত স্বরূপ। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়”। [সূরা : আল-হুজুরাত: ৮]

হ্যাঁ, রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহচর্য মহান আল্লাহর তরফ থেকে এক বিরাট নি‘আমত যা আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদেরকে দান করেছেন। তিনি সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়। আল্লাহর হিকমত হলো তিনি মুহাম্মদ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রাসূল হিসেবে নির্বাচিত করেছেন, তিনি তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল করেছেন। এমনিভাবে সাহাবীদেরকে সর্বশ্রেষ্ঠ সাহচর্য হিসেবে নির্বাচন করেছেন। সাহাবীদের মর্যাদার কারণ হলো রাসূলের সাহচর্য আর তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন