মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
বর্তমানে ইউরোপের বিশেষ করে উন্নতিশীল কোন কোন দেশের সরকার বন্দী ও সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের অবস্থার সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সংস্থা খুলে রেখেছে। আধুনিক যুগের লোকদের ধারণা যে, মানবীয় সহনুভূতি এবং পাপী আত্মার প্রতি এ ধরণের অন্তরঙ্গতা এ যুগেরই একটি আবিস্কার। এ সমস্ত লোক জানেনা যে, ৯৯ হিজরীর উমাইয়া সাম্রাজ্যের খলিফা ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ ছিলেন এ জাতীয় নিপীড়িত মানবতার প্রতি সর্বপ্রথম ভ্রাতৃত্বের হস্ত সম্প্রাসারিতকারী। যারা স্বাভাবিক দুর্বলতা এবং ভ্রান্ত শিক্ষার শিকারে পরিণত হয়ে বিভিন্ন প্রকার অন্যায় কাজে অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠে এবং অত্যাচারী শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচারের স্টীম রোলারে নিষ্পেষিত হতে থাকে। কথিত আছে যে, হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ সাধারণ অপরাধে অপরাধী এক লক্ষ লোকের বুকের তাজা রক্ত হাত রঞ্জিত করেছিল। সে সাধারণ ত্রুটি-বিচ্যুতির দরুন দলে দলে মানুষকে জেলখানায় বন্দী করে রাখতো। ঐতিহাসিক ইয়াকুবি অভিযোগ করেছেন যে, ওয়ালিদের মত ব্যক্তি ও সাধারণ সন্দেহের কারণে লোককে বন্দী করে শাস্তি প্রদান করত।
এমনকি বিনা বিচারে মানুষকে হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করত না। সুলায়মান ও তাদের শাসনকর্তাদেরও একই নীতি ছিল। উসামা ইবনে যায়েদ তামহী ইয়াযিদ ইবনে মাহলাব, মুখাল্লাদ, আব্দুর রহমান, আশআছ এবং এ জাতীয় অন্যান্য উমুরী শাসকগণ সাধারণ অপরাধে জনসাধারণকে কঠোর ও নির্মম শাস্তি প্রদান করত। তাদের চোখ বন্ধ করে অন্ধকারে প্রকাষ্ঠে আবদ্ধ রাখত, তাদের হাত পা কেটে দেওয়া হতো এবং তাদের দ্বারা ঘানি টেনে অনাহারে রাখা হতো। নিম্নমানের জেলে তাদেরকে বন্দী করে রাখা হত। যদি কোন আসামী মারা যেত তবে দাফন কাফনহীন অবস্থায় তার লাশ কয়েকদিন পড়ে থাকত। অসহায় কয়াদীগণ ভিক্ষা সংগ্রহ করে তাদের সঙ্গীর লাশের সৎকার করত। যে সমস্ত শাসক মনুষত্বের মূল্য বুঝত না যারা বিনা কারণে হাজার হাজার লোককে মজবুত সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়াই তরবারীর আঘাতে মৃত্যুর দুয়ারে পৌছে দিত, তারা এ সমস্ত হতভাগ্য মানুষের অবস্থা-উন্নয়নের জন্য কিরূপ লক্ষ্য করবে? মানুষের প্রতি সহানুভুতি, তদুপরি অপরাধীদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করা শুধু সৎ সাহস ছিল না যে, তারা প্রতিপক্ষের কঠোর সমালোচনা সহ্য করে তাদের তরবারী কোষবদ্ধ করে রাখবে।
ঐতিহাসিক ইবনে কুতাইবা কবি ফারজদাকের কথা উল্লেখ করে বলেছেন যে, একবার খলীফা সুলায়মানের নিকট কিছু বন্দী আনা হল। সুলায়মান পরীক্ষামূলক ফারজদাকের হাতে তরবারী তুলে দিয়ে বললেন, এদের কাউকে হত্যা কর। কবি হাত উঠালেন বটে কিন্তু হাত কাঁপতে লাগলো। তরবারীও কাঁপতে লাগলো। এটা দেখে সুলায়মান ও তার পরিষদবর্গ হাসতে লাগল।
এরা বন্দী ছিল বটে তাবে শরিয়তের বিচারে মৃত্যুদন্ড দেয়ার উপযোগী অপরাধী ছিল না। সুলায়মান এটা দ্বারা শুধু তার সাহস পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন।
অন্য ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয় যে, সুলায়মানের নিকট বন্দীদের জীবনের কোন মূল্যই ছিল না। তারা অতি সহজেই তাদেরকে হত্যা করে ফেলতো। তারা তাদের উন্নতির ও প্রগতির জন্য কিরূপ দৃষ্টিপার করবে?
যদি বাস্তবতার অনুসন্ধান করা যায় তবে জানা যাবে যে, সে যুগে এ মানব সন্তানরা সব চেয়ে বেশী নিপীড়িত নির্যাতিত ছিল। যদি মানবীয় দুর্বলতা বা অন্য কোন অপরাধে তারা সামান্যতম অপরাধীও সাব্যস্ত হত তবে যালেম উমুবী শাসকরা তাদেরকে পুতিগন্ধময় মৃত্যু গহবরের মত অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বন্দী করে রাখতো। হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজই সর্বপ্রথম এ নির্যাতিত মানব সন্তানদের প্রতি করুণার হাত প্রসারিত করেছিলেন। তিনি সর্বপ্রথম অপরাধের সীমা নির্ধারণ করে শরিয়ত অনুমোদিত সর্বপ্রকার শাস্তির প্রথা রহিত করেন এবং শাসকদের লিখেছিলেন যে, আল্লাহর সীমার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবে, কাকেও শরিয়ত অননুমোদিত শাস্তি প্রদান করবে না।
ইতিপূর্বে শাসনকর্তাদের হিসাব নিকাশ অধ্যায়ে হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ লিখিত কয়েকটি চিঠির মর্মার্থ উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে তিনি বারবার তার কর্মকর্তাগণকে এ কথাই হৃদয়ঙ্গম করাতে চেয়েছেন যে, শরিয়তের নির্ধারিত শাস্তিই প্রদান করবে। নিজের পক্ষ হতে নতুন কোন শাস্তি প্রদান করবে না, এমনকি তিনি শুধু সন্দেহের কারণে ভালভাবে অনুসন্ধান ব্যতীত অপরাধী কর্মকর্তাগণকে শাস্তি দিতে পছন্দ করতেন না।
মদীনার গভর্ণর ইবনে হাজম একবার হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজকে লিখলেন যে, কোন কোন কর্মচারীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আছে। যদি আপনার অনুমতি হয় তাহলে আমি তাদেরকে অপরাধ স্বীকার করতে শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারি। হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ তাকে যে ভাষায় উত্তর দিয়েছিলেন, তার দ্বারাই তাঁর অনুসৃত কর্মপদ্ধতি স্পষ্ট হয়ে যায়। তিনি তাকে লিখলেন-
আশ্চর্যের কথা হলো তুমি মানুষকে শাস্তি দেয়ার জন্য আমরা অনুমতি চেয়েছ? হয়ত তোমার বিশ্বাস, আমার এ অনুমতি তোমাকে আল্লাহর রোষ ও গজব হতে রক্ষা করবে।
মনে রেখ, যদি তোমার নিকট এমন কোন স্পষ্ট প্রমাণ থাক যে, অমুকের নিকট কোন কিছু প্রাপ্য, তাবে তা আদায় করে নিও বা যদি কেউ স্বেচ্ছায় কিছু স্বীকার করে তাহলে তাও গ্রহণ কর। কিন্তু যদি কেউ অস্বীকার করে এবং কসম করে তাহলে তাকে ছেড়ে দাও।
এখানে লক্ষ্যনীয় বিষয়, হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ এ কর্মপদ্ধতি সেসব কর্মকর্তাদের বেলায়ও ছিল যাদের বিরুদ্ধে বায়তুল মালের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ছিল। হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের কাছে মুসলমানদের বায়তুলমালের হেফাজত করা অতীত পবিত্র দায়িত্ব হিসেবেই বিবেচিত ছিল। এ অর্থ আত্মসাতের কল্পনা করাও তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। এহেন বিরাট অভিযোগের পর তিনি কর্মকর্তাদের প্রতি কোন প্রকার কঠোরতা করতে নিষেধ করতেন। কারণ তার মতে অপরাধ অবশ্যেই শাস্তিযোগ্য। কিন্তু তাঁর নিকট এটা মোটেই পছন্দনীয় ছিল না যে, তাঁর পক্ষ হতে বা তাঁর কর্মকর্তাদের পক্ষে হতে এমন কোন কঠোরতা প্রকাশ করা হোক যা শরিয়ত বিরোধী।
তিনি হাজ্জাজের পরম দুশমন ছিলেন, কারণ সে আল্লাহর প্রদত্ত সীমালংঘন করে আল্লাহর বান্দাগণকে শাস্তি দিত। হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ যার হাতে ইরাকের শাসনভার ন্যস্ত করেন তাকে বার বার লিখে হাজ্জাজের অনুকরণ হতে বিরত করেছিলেন। ইরাকের দুজন শাসনকর্তা ছিলেন। একজনকে দেওয়া হয়েছিল অর্থ বিভাগের দায়িত্ব আর অপর জনকে সামরিক বিভাগের দায়িত্ব। তারা উভয়ই তাকে পরামর্শ দিতেন যে, অপরাধ প্রতিরোধের জন্য অপরাধীকে হত্যা করা প্রয়োজন, তা না হলে অপরাধ কমবে না। হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ তাদের এ পরামর্শের দরুন তাদের প্রতি এমন কঠোর ভাষা ব্যবহার করলেন যে হয়ত আর কখনও কোন গভর্ণরের প্রতি এই ধরনের ভাষা ব্যবহৃত হয়নি।
তিনি লিখলেন- দুটি নীচ ব্যক্তি তাদের নীচতা ও অভদ্রতার দরুন আমাকে মুসলমানদের পবিত্র রক্তে হাত কলংকিত করতে পরামর্শ দিচ্ছে।
এটা কত কঠোর পত্র। মনে হয় তাদের চিঠি তার ধমনীতে অগ্নিস্ফুলিঙ্গে প্রবেশ করে দিয়েছিল। অপরাধীকে তার অপরাধের তুলনায় অধিক শাস্তি দেয়ার কথা তিনি মোটেই সহ্য করতে পারতেন না। তিনি মিশরের শাসনবর্তাকেও এ কথাই লিখেছিলেন।
মানুষকে তাদের অপরাধ অনুযায়ীই শাস্তি দিবে, যদি তা একটি বেত্রাঘাতও হয়। কাউকে শাস্তি দিতে আল্লাহর সীমা লংঘন করবে না।
অপরাধের তুলনায় বেশি শাস্তি দেয়া নিষিদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি বন্দীদের প্রতি দৃষ্টিপাত করলেন এবং সে যুগের জেলাখানাগুলোকেও তিনি বর্তমান ইউরোপ-আমেরিকার জেলখানা থেকে উন্নত করলেন। অপ্রশস্ত কক্ষের পরিবর্তে প্রশস্ত ও খোলা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে নির্মান করলেন। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করলেন। প্রত্যেক প্রাদেশিক গভর্ণরকে লিখলেন যে, প্রত্যেক সপ্তাহে স্থনীয় জেলখানায় উপস্থিত হয়ে স্বয়ং কয়েদীদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবে এবং তাদের অভিযোগ শুনবে।
ইবনে সা’দ ইবনে উবায়দের ভাষ্য বর্ণনা করে বলেছেন যে, হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ সকল প্রাদেশিক গভর্ণরকে বন্দীদের সম্পর্কে যে ফরমান লিখেছিলেন তাতে এ নির্দেশও ছিল তাদেরকে কঠোর শাস্তি দিবে না। তাদের মধ্যে যারা অসুস্থ তাদের সেবা শুশ্রুসার ব্যবস্থা করবে, যার কেউ নেই বা যার কোন অর্থ সম্পদ নেই তাদের দেখা শুনা করবে।
যারা অভাবের দরুন ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় বন্দী হয়েছে, তাদেরকে অন্যান্য নৈতিক অপরাধে অপরাধীদের সঙ্গে একই জেলখানা বা বন্দী শিবিরে রাখবেন। মহিলাদের জন্য পৃথক জেলখানার ব্যবস্থা করবে। আর যাদেরকে হিসাব নিকাশের দায়িত্ব দিবে তাদের অবশ্যই নির্ভরযোগ্য হতে হবে তারা যেন ঘুষ গ্রহণ না করে। যারা ঘুষ বা উত্কুচ গ্রহণ করে তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবে এবং দায়িত্ব হতে সরিয়ে দিবে।
ইবনে সা’দ বলেন, হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের এ নির্দেশ সকল সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তাদের নিকটই একটি গুরত্বপূর্ণ ফরমান হিসেবে বিবেচিত ছিল। অন্য কথায় হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের এই নির্দেশে বিভিন্ন অপরাধীদের জন্য বিভিন্ন প্রকার জেলখানা নির্মিত হল। নৈতিক অপরাধীদের জন্য পৃথক জেলখানা, ঋণ খেলাপীদের জন্য পৃথক মহিলাদের জন্য পৃথক জেলখানা নির্মিত হল।
বিশ্বের ইতিহাসে বন্দীদের অবস্থার সংস্কারের জন্য এটাই ছিল সর্বপ্রথম পদক্ষেপ। হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের পূর্বে বন্দীদের অবস্থার উন্নতির জন্য এরূপ নির্দেশ আর কোন শাসনকর্তাই জালী করেননি।
এটা ছিল একটি মৌলিক সংস্কার। দ্বিতীয়ত: তিনি প্রত্যেক বন্দীর জন্য ভাতা নির্ধারণ করে তাদের দুরাবস্থার সংস্কার সাধন করেছিলেন। তাদের এ ভাতা অন্যান্য সরকারী কর্মচারীদের মত নিয়মিত প্রদান করা হতো।
মদীনার শাসনকর্তা ইবনে হাজম বলেন, আমরা হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের নির্দশ বন্দীদের রেজিষ্টার নিয়ে জেলখানায় উপস্থিত হতাম এবং তাদেরকে ভাতা দেয়ার জন্য জেলখানার বাইরে নিয়ে আসতাম।
কাজী আবু ইউসুফ এ ব্যাপারে হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের এ আদেশ নকল করেছেন। যার ভিত্তিতে তিনি নিম্নলিখিত সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করে এ সম্পর্কে যে নির্দেশনামা প্রস্তুত করেছিলেন নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
১। বন্দীদের উপর কোন প্রকার কঠোরতা করা যাবে না।
২। তাদের সেবা-শুশ্রুষা করতে হবে, অসুস্থ হলে তার চিকিত্সার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩। যে বেড়ী পরালে নামায পড়তে অসুবিধা হয়, মুসলমান বন্দীদের এ ধরণের কোন বেড়ী পরান যাবে না।
৪। রাতে প্রত্যেক বন্দীর বেড়ী ও হাতকড়া খুলে দিতে হবে যাতে তারা আরাম করে শয়ন করতে পারে।
৫। প্রত্যেক বন্দীর জন্য এ পরিমাণ ভাতা দিতে হবে যাতে তার মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারে।
৬। প্রত্যেক বন্দীর নিজ নিজ ভাতা গ্রহন করার ও খাদ্য তৈরি করে খাওয়ার অনুমতি থাকবে।
৭। জেলখানায কোন খাদ্য তৈরি করা চলবে না, কারণ জেলের কর্মচারীরা ভাল খাদ্য তৈরি করতে পারে না।
৮। জেলের কর্মচারীদেরকে বিশ্বস্ত, সহানুভুতিশীল ও সৎ হতে হবে। তাদের নিকট সকল বন্দীর নাম ঠিকানা থাকতে হবে।
৯। প্রত্যেক মাসেই তারা বন্দীদের নামের তালিকা অনুযায়ী তাদের মাসিক ভাতা নিয়মিত আদায় করবে। প্রত্যেক বন্দীকে নিজের নিকট ডেকে এনে তার হাতেই তার ভাতা প্রদান করবে।
১০। শীতের দিনে প্রত্যেক বন্দীকে একটি কম্বল, একটি জামা এবং গরমের দিনে একটি জামা ও একটি লুঙ্গি দিতে হবে।
১১। মহিলা বন্দীদেরকে প্রয়োজনীয পোষাক ব্যতীত ও একটি অতিরিক্ত চাদর দিতে হবে।
১২। সরকারী ব্যয়ে মৃতদের কাফন ও দাফন করতে হবে।
১৩। সরকারী ব্যয়ে রোগীদের চিকিত্সার ব্যবস্থ করতে হবে।
এ নির্দেশনামার অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা ছিল যে, শুধু যে সমস্ত অপরাধীর অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে, তাদেরকেই বন্দী করা হবে। আর যার অপরাধ প্রমান হয়নি, শুধু সন্দেহের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে বন্দী করে রাখা যাবে না।
হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের এ নির্দেশনামার পরিপ্রেক্ষিতে সে যুগের জেলখানাসমূহ শিক্ষাগারে পরিবর্তিত হয়েছিল, ফলে প্রত্যেক কায়েদী জেলখানা হতে একজন উন্নত নাগরিক হিসেবে বের হত। জেলের তত্ত্বাবধায়ক তাদের শিক্ষা দীক্ষার বিশেষ ব্যবস্থা করতেন। তাদের চিকিত্সার ব্যবস্থা করতেন এবং তাদের মধ্যে আত্মনির্ভরশীলতার মনোভাব সৃষ্টি করে দিতেন। একমাত্র হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত বন্দী ছাড়া অন্য কারো প্রতি কঠোর ব্যবহার করতে দিতেন না। হত্যাকারীকে তার অনুমতি ক্রমে বেড়ী পরান হত। কারণ হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের মতে হত্যা একটি জঘন্যতম ও ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ ছিল। তিনি মুসলমান বা যিম্মি কাউকেও হত্যা করতে ঘৃণা বোধ করতেন। যে ব্যক্তি এ অপরাধ করত, তিনি তাকে ক্ষমা করতেন না। সে যেই হোক না কেন, কিন্তু তাদের অপরাধ প্রমাণিত হবার পরই শুধু তাদেরকে বেড়ী পরান হত। হযরত ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের নির্দেশ ছিল যে,
জেলখানার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখবে। আর জেলে শুধু ঐসব লোককেই রাখবে যাদের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। অপরাধ প্রমাণিত না হলে কাউকে জেলে কাউকে জেলে আটক রাখা যাবে না। সমগ্র সাম্রাজ্যে তার এ নির্দেশ পালিত হয়েছিল এবং এই নির্যাতিত মানবগোষ্ঠী সর্বত্রই তাকে প্রাণে ভরে দোয়া করছিল। আর তার অযাচিত করুণার জন্য নিজ অপরাধ হতে তাওবা করে নিজেকে সংশোধিত করে নিত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/441/31
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।