hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সঠিক ইসলামী মতবাদ [আর-রিসালাতুশ শামিয়্যাহ]

লেখকঃ আব্দুল আযীয ইবন মারযূক আত-ত্বারীফী

১৭
চতুর্দশ অধ্যায়: মানব জাতির মধ্যে আল্লাহর নাবীগণের পর সর্বোত্তম মানুষ হলেন মহানাবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ
মানব জাতির মধ্যে আল্লাহর নাবীগণের পর সর্বোত্তম মানুষ হলেন মহানাবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ। তাঁদের মহামর্যাদার কথা প্রবিত্র কুরআনের মধ্যে এসেছে। তাই মহান আল্লাহ বলেছেন:

﴿مُّحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاء عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاء بَيْنَهُمْ تَرَاهُمْ رُكَّعًا سُجَّدًا يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِّنَ اللَّهِ وَرِضْوَانًا﴾ [ الفتح : 29] 

“মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল এবং তাঁর সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল। আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় আপনি তাদেরকে রুকু ও সেজদারত দেখবেন।” [সূরা আল-ফাতহ, আয়াত: 29]

যেমন নাবীগণের মর্যাদার মধ্যে তফাত রয়েছে, তেমনি সাহাবীগণের মর্যাদার মধ্যেও তফাত রয়েছে। নাবীগণের মধ্যে যে নাবীর মর্যাদা সব চেয়ে কম, তিনি হলেন সাহাবীগণের মধ্যে যিনি সর্বোত্তম মর্যাদার অধিকারী তাঁর চেয়েও অনেক বেশি মর্যাদার অধিকারী। আর সাহাবীগণের মধ্যে যে সাহাবীর মর্যাদা সব চেয়ে কম, তিনি হলেন তাবেয়ীগণের মধ্যে যিনি সর্বোত্তম মর্যাদার অধিকারী তাঁর চেয়েও অনেক বেশি মর্যাদার অধিকারী।

সাহাবীগণের মধ্যে যে সব সাহাবী অগ্রবর্তী এবং ইসলামের প্রাথমিক যুগে ইসলাম গ্রহণ করেছেন, তাঁরাই হলেন সর্বোত্তম মর্যাদার অধিকারী। তাই যে সাহাবী আল্লাহর নাবীর প্রতি ঐ সময় ঈমান আনয়ন করেছেন, যখন তিনি অসহয় অবস্থায় ছিলেন, তাঁর মর্যাদা ঐ সাহাবীর চেয়ে বেশি উত্তম, যে সাহাবী আল্লাহর নাবীর প্রতি ঐ সময় ঈমান আনয়ন করেছেন, যখন তিনি শক্তিশালী ও বলবান ছিলেন। সুতরাং যে ব্যক্তি মক্কা বিজয়ের পূর্বে আল্লাহর নাবীর প্রতি ঈমান আনয়ন করেছেন, সে ব্যক্তি ঐ ব্যক্তির চেয়ে উত্তম যে ব্যক্তি মক্কা বিজয়ের পরে ঈমান আনয়ন করেছেন। মহান আল্লাহ বলেছেন:

﴿لَا يَسْتَوِي مِنكُم مَّنْ أَنفَقَ مِن قَبْلِ الْفَتْحِ وَقَاتَلَ أُوْلَئِكَ أَعْظَمُ دَرَجَةً مِّنَ الَّذِينَ أَنفَقُوا مِن بَعْدُ وَقَاتَلُوا﴾ [ الحديد : 10] 

“তোমাদের মধ্যে যারা মক্কা বিজয়ের পূর্বে ব্যয় করেছে ও জেহাদ করেছে, সে সমান নয়। এরূপ লোকদের মর্যদা বড় তাদের অপেক্ষা, যারা পরে ব্যয় করেছে ও জেহাদ করেছে।” [সূরা আল হাদীদ, আয়াত: 10]

﴿وَالسَّابِقُونَ الأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالأَنصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُم بِإِحْسَانٍ رَّضِيَ اللّهُ عَنْهُمْ وَرَضُواْ عَنْهُ﴾ [ التوبة : 100] 

“আর যারা সর্বপ্রথম হিজরতকারী ও আনসারদের মাঝে পুরাতন, এবং যারা তাদের অনুসরণ করেছে, আল্লাহ সে সমস্ত লোকদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে।” [সূরা আত তাওবা, আয়াত: 100]

আর যারা সর্বপ্রথম হিজরতকারী ও আনসারদের মাঝে পুরাতন সাহাবী তাদের মধ্যে ঐ দশ জন সাহাবী হলেন সর্বোত্তম মানুষ, যে দশ জন সাহাবীকে জান্নাত প্রাপ্ত হওয়ার সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে। আর উক্ত দশ জন সাহাবীদের মধ্যে চার জন খুলাফায়ে রাশেদীন সাহাবী হলেন সর্বোত্তম মানুষ। অতঃপর বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবীগণ হলেন সর্বোত্তম মানুষ। এই সমস্ত সাহাবীগণের পর ওহুদের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবীগণ হলেন সর্বোত্তম মানুষ। এবং এই সমস্ত সাহাবীগণের পর বৃক্ষের নীচে আনুগত্যের শপথ গ্রহণকারী সাহাবীগণ হলেন সর্বোত্তম মানুষ। এই বৃক্ষের নীচে আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করার নাম হলো বাইয়াতুর রিদওয়ান। মহান আল্লাহ বলেছেন:

﴿لَقَدْ رَضِيَ اللَّهُ عَنِ الْمُؤْمِنِينَ إِذْ يُبَايِعُونَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِي قُلُوبِهِمْ فَأَنزَلَ السَّكِينَةَ عَلَيْهِمْ وَأَثَابَهُمْ فَتْحًا قَرِيبًا ﴾ [ الفتح : 18]

“আল্লাহ মুমিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন, যখন তারা বৃক্ষের নীচে আপনার কাছে শপথ করছিলেন। আল্লাহ অবগত ছিলেন যা তাদের অন্তরে ছিল। অতঃপর তিনি তাদের প্রতি প্রশান্তি নাযিল করেছেন এবং তাদেরকে আসন্ন বিজয় পুরস্কার প্রদান করেছেন।” [সূরা আল ফাতহ, আয়াত: 18]

এই বিষয়ে সঠিক হাদীস উল্লিখিত হয়েছে:

عَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ لَنَا رَسُوْلُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «أَنْتُمُ   خَيْرُ أَهْلِ الْأَرْضِ» .

( صحيح البخاري، رقم الحديث 4154 ، واللفظ له، وصحيح مسلم، رقم الحديث 71 - (1856)،).

অর্থ: জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে লক্ষ্য করে বলেছেন: “তোমরাই ভূপৃষ্ঠের উপরে সর্বোত্তম মানুষ।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং 4154 এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং 71 - (1856), তবে হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে।]

বাইয়াতুর রিদওয়ানে বৃক্ষের নীচে আনুগত্যের শপথ গ্রহণকারী সাহাবীগণের সংখ্যা ছিল এক হাজার চার শত জন।

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ হলেন অহী তথা পবিত্র কুরআন, হাদীস এবং ইসলামের ধারক বাহক ও প্রকৃত প্রচারক। তাই তাঁদের দোষ চর্চা করা কিংবা দোষত্রুটি উল্লেখ কতাঁদেরকে অপবাদ দেওয়ার অর্থ হলো ইসলামের মধ্যে এবং তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেওয়া। এবং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীসের মধ্যে সন্দেহের অবকাশ স্থাপন করা। অথচ তাঁরা হলেন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পর শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতীক। তাই আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন:

«َ وَأَنَا أَمَنَةٌ لِأَصْحَابِيْ؛ فَإِذَا ذَهَبْتُ؛ أَتَى أَصْحَابِيْ مَا يُوعَدُوْنَ، وَأَصْحَابِيْ أَمَنَةٌ لِأُمَّتِي؛ فَإِذَا ذَهَبَ أَصْحَابِيْ أَتَى أُمَّتِي مَا يُوعَدُونَ» .

( صحيح مسلم، رقم الحديث 207 - (2531)،).

অর্থ: “আমি আমার সাহাবীদের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তার দুর্গ স্বরূপ। অতএব যখন আমি ইহকাল ত্যাগ করবো, তখন তাঁদেরকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাঁদের মধ্যে অশান্তি, মতানৈক্য এবং ফ্যাসাদ প্রকাশ পাবে। এবং আমার সাহাবীরা আমার উম্মতের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তার দুর্গ স্বরূপ। অতএব যখন তাঁদের যুগের অবসান ঘটবে, তখন আমার উম্মতের মধ্যে বিভিন্ন রকমের অশান্তি, মতানৈক্য এবং ফ্যাসাদের সুত্রপাত ঘটবে।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং 207 - (2531)]

সাহাবীগণ ভুলের ঊর্ধ্বে নন, তবে তাঁদের ভুলের কারণে তাঁদের দোষ চর্চা করা এবং তাঁদেরকে অপবাদ দেওয়া বৈধ নয়। তাঁদের মতভেদের সমস্ত কথা বর্জন করা উচিত। কিন্তু তাঁদের মতভেদের ঐ সব কথা উল্লেখ করা যাবে যে সব কথার মধ্যে ফিকহের জ্ঞান লাভ হবে এবং সত্যের উপদেশ পাওয়া যাবে। এবং এই সব ক্ষেত্রে তাঁদের মতভেদের কথা সম্মানের সহিত উপযুক্ত অজুহাত পেশ করেই উল্লেখ করতে হবে। যেহেতু সাহাবীগণের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হোক আর ঐকমত্য সৃষ্টি হোক, তাঁরা অন্যদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ ও উৎকৃষ্ট। কেননা মহান আল্লাহ তাঁদেরকে মহামর্যাদা প্রদান করেছেন এই জন্য যে তাঁরা আল্লাহর নাবীর সাথে ভালোভাবে সুসম্পর্ক স্থাপন করেছেন, আর শুধু মাত্র এই জন্য নয় যে তাঁরা তাঁদের মধ্যে একে অপরের সাথে ভালোভাবে সুসম্পর্ক স্থাপন করেছেন। তাই জেনে রাখা উচিত যে, তাঁদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হয়েছে ইসলামী বিধানকে সঠিকভাবে অনুধাবন করার বিষয়ে গবেষণামূলক প্রয়াসের ক্ষেত্রে। তাই তাঁদের মধ্যে এই বিষয়ে ভুল হয়ে গেলেও তাঁরা মহান আল্লাহর কাছে থেকে পুণ্য লাভ করবেন এবং তাঁরা পুণ্যবান মানুষ হিসেবেই বিবেচিত হবেন। আর মহান আল্লাহর নাবীর বিরুদ্ধাচরণ করার বিষয়টি হলো মহা অন্যায় বা জুলুম, এই মহা অন্যায় বা জুলুম থেকে মহান আল্লাহ তাঁদেরকে পবিত্র করে রেখেছেন। যেহেতু তাঁরা মহান আল্লাহর নাবীর সাথে সদ্ব্যবহার সর্বোত্তম পন্থায় স্থাপন করেছেন এবং বজায় রেখেছেন। আর এই কারণেই তাঁদেরকে মানব জাতির মধ্যে সব চেয়ে শ্রেষ্ঠ ও উৎকৃষ্ট মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে।

আর সাহাবীগণের মধ্যে যে সব মতভেদের ঘটনা ঘটেছে, সে সব ঘটনার মধ্যে কোনো এক জন সাহাবীর কথা উল্লেখ করা হলে, অন্য সমস্ত সাহাবীর কথা চলে আসবে। তাই এই বিষয়ে তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীন এবং আইম্মায়ে মুজতাহিদীন কোনো প্রকারের মন্তব্য পেশ করা থেকে বিরত থাকার পথ অবলম্বন করেছেন।

ওমার বিন আব্দুল আজীজকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল আলী এবং ওসমান দুই খলীফার বিষয়ে এবং জামাল ও সিফ্ফীনের যুদ্ধের বিষয়ে এবং সাহাবীগণের মধ্যে যে সব মতভেদের ঘটনা ঘটেছে সেই সব বিষয়ে। তাই তিনি উত্তরে বলেছিলেন: “সেই সমস্ত রক্ত থেকে মহান আল্লাহ আমার দুই হাতকে রক্ষা করেছেন। তাই আমি আমার জিহ্বাকে সেই রক্তে ডুবাতে বা নিমজ্জিত করতে ঘৃণা করি।” [ইবনু সায়াদের আত তবাকাতুল কুবরা (5/394) এবং ইবনু আসাকিরের তারীখু দিমাশক (65/133) ।]

পরকালে কেয়ামতের দিনে সাহাবীগণের পরের মুসলিমদেরকে সাহাবীগণের মধ্যে যে সব মতভেদের ঘটনা ঘটেছে, সেই সব বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করা হবে না, কিন্তু তাদেরকে প্রশ্ন করা হবে যে, তারা সাহাবীগণের শ্রেষ্ঠ ও উৎকৃষ্ট মর্যাদার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল কি না? এই বিষয়েই তাদেরকে প্রশ্ন করা হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন