hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

অন্তর বিধ্বংসী বিষয়সমূহ অহংকার

লেখকঃ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জেদ

অহংকার বা কিবিরের সংজ্ঞা
কিবিরের আভিধানিক অর্থ:

আল্লামা ইবন ফারেস রহ. বলেন, কিবির অর্থ: বড়ত্ব, বড়াই, অহংকার ইত্যাদি। অনুরূপভাবে الكبرياء অর্থও বড়ত্ব, বড়াই, অহংকার। প্রবাদে আছে:

ورثوا المجد كابرًا عن كابر .

“ইজ্জত সম্মানের দিক দিয়ে যিনি বড়, তিনি তার মত সম্মানীদের থেকে সম্মানের উত্তরসূরি বা উত্তরাধিকারী হন।”

আর আল্লামা ইবন মানযূর উল্লেখ করেন, الكِبْر শব্দটিতে কাফটি যের বিশিষ্ট। এর অর্থ হলো, বড়ত্ব, অহংকার ও দাম্ভিক।

আবার কেউ কেউ বলেন, তাকাব্বারা শব্দটি কিবির থেকে নির্গত। আর تَكابَر من السن শব্দটি দ্বারা বার্ধক্য বুঝায়। আর তাকাব্বুর ও ইস্তেকবার শব্দটির অর্থ হলো, বড়ত্ব, দাম্ভিক ও অহমিকা। [লিসানুল আরব ১২৫/৫০।]

ইসলামী পরিভাষায় কিবিরের সংজ্ঞা:

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই স্বীয় হাদীসে কিবিরের সংজ্ঞা বর্ণনা করেন।

আব্দুল্লাহ ইবন মাসুদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«لا يْدخُلُ الجَنةََّ مَنْ كَانَ فِي قَلْبهِِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ كبِرٍ قَالَ رَجُلٌ : إِنَّ الرَّجُلَ يُحبُِّ أَنْ يَكُونَ ثَوْبُهُ حسَنًا، وَنْعُلُه حَسَنَةً . قَالَ : إِنَّ الله جَميِلٌ يُحبُ الجَمَالَ، الْكبِر بَطَرُ الحَقِّ، وَغَمْطُ الناَّسِ»

“যার অন্তরে একটি অণু পরিমাণ অহংকার থাকে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বললে, এক লোক দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল, কোনো কোনো লোক এমন আছে, সে সুন্দর কাপড় পরিধান করতে পছন্দ করে, সুন্দর জুতা পরিধান করতে পছন্দ করে, এসবকে কি অহংকার বলা হবে? উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর তা‘আলা নিজেই সুন্দর, তিনি সুন্দরকে পছন্দ করেন। (সুন্দুর কাপড় পরিধান করা অহংকার নয়) অহংকার হলো, সত্যকে গোপন করা এবং মানুষকে নিকৃষ্ট বলে জানা। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯১।]

এ হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’টি অংশে অহংকারের সংজ্ঞা তুলে ধরেন।

এক:

হককে অস্বীকার করা, হককে কবুল না করে তার প্রতি অবজ্ঞা করা এবং হক কবুল করা হতে বিরত থাকা। বর্তমান সমাজে আমরা অধিকাংশ মানুষকে দেখতে পাই, যখন তাদের নিকট এমন কোনো লোক হকের দাওয়া নিয়ে আসে, যে বয়স বা সম্মানের দিক দিয়ে তার থেকে ছোট, তখন সে তার কথার প্রতি কোনো প্রকার গুরুত্ব দেয় না। আর তা যদি তাদের মতামত অথবা তারা যা নির্ধারণ ও যার ওপর তারা আমল করছে, তার পরিপন্থী হয়, তখন তারা তা অস্বীকার ও প্রত্যাখ্যান করে। আর অধিকাংশ মানুষের স্বভাব হলো, যে লোকটি তাদের নিকট দাওয়াত নিয়ে আসবে, তাকে ছোট মনে করবে এবং তার বিরোধিতায় অটল ও অবিচল থাকবে, যদিও কল্যাণ নিহিত থাকে সত্য ও হকের আনুগত্যের মধ্যে এবং তারা যে অন্যায়ের অপর অটুট রয়েছে, তাতে তাদের ক্ষতি ছাড়া কোনোই কল্যাণ না থাকে। আমাদের সমাজে এ ধরনের লোকের অভাব নেই। বিশেষ করে ছোট পরিসরে এ ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটতে থাকে। যেমন, পরিবার, স্কুল মাদ্রাসায়, অফিস আদালত ও বন্ধু বান্ধবদের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা নিত্যদিন ঘটে থাকে।

অহংকারীরা যে বিষয়টির আশংকা করে অপর থেকে সত্যকে গ্রহণ করে না, তা হলো, সে যদি অপর ব্যক্তি থেকে প্রমাণিত সত্যকে গ্রহণ করে, তাকে মানুষ সম্মান দেবে না, মানুষ অপর লোকটিকে সম্মান দেবে। তখন সম্মান অপরের হাতে চলে যাবে এবং সেই মানুষের সামনে বড় ও সম্মানী লোক হিসেবে বিবেচিত হবে, অহংকারীকে কেউ সম্মান করবে না। এ কারণেই সে কাউকে মেনে নিতে পারে না, সে মনে করে সত্যকে গ্রহণ করলে তার সম্মান নিয়ে টানাটানি হবে এবং মানুষ তার প্রতি আর আকৃষ্ট হবে না। মানুষ সে লোকটিকেই বড় মনে করবে এবং তাকেই মানবে। আর বাধ্য হয়ে অহংকারীকেও অপরের অনুসারী হতে হবে।

কিন্তু এ অহংকারী লোকটি যদি বুঝতে পারত, তার জন্য সত্যিকার ইজ্জত ও সম্মান হলো, হকের অনুসরণ ও আনুগত্য করার মধ্যে, বাতিলের মধ্যে ডুবে থাকাতে নয়, তা ছিল তার জন্য অধিক কল্যাণকর ও প্রশংসনীয়।

উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আবু মুসা আশয়ারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট চিঠি লিখেন, তুমি গত কাল যে ফায়সালা দিয়েছিলে, তার মধ্যে তুমি চিন্তা ফিকির করে যখন সঠিক ও সত্য তার বিপরীতে পাও, তাহলে তা থেকে ফিরে আসাতে যেন তোমার নফস তোমাকে বাধা না দেয়। কারণ, সত্য চিরন্তন, সত্যের পথে ফিরে আসা বাতিলের মধ্যে সময় নষ্ট করার চেয়ে অনেক উত্তম। [দারাকুতনী ২০৬/৪।]

আব্দুর রহমান ইবন মাহদী রহ. বলেন, একদা আমরা একটি জানাযায় উপস্থিত হলাম, তাতে কাজী উবাইদুল্লাহ ইবনুল হাসান রহ. হাযির হলো। আমি তাকে একটি বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে, সে ভুল উত্তর দেয়, আমি তাকে বললাম, আল্লাহ আপনাকে সংশোধন করে দিক, এ মাসআলার সঠিক উত্তর এভাবে...। তিনি কিছু সময় মাথা নিচু করে চুপ করে বসে থাকলেন, তারপর মাথা উঠিয়ে বললেন, আমি আমার কথা থেকে ফিরে আসলাম, আমি লজ্জিত। সত্য গ্রহণ করে লেজ হওয়া আমার নিকট মিথ্যার মধ্যে থেকে মাথা হওয়ার চেয়ে অধিক উত্তম। [তারিখ বাগদাদ ৩০৭/১০।]

দ্বিতীয়: [ غمط الناس ] মানুষকে নিকৃষ্ট জানা।

الغمط বলা হয়, নিকৃষ্ট মনে করা, ছোট মনে করা ও অবজ্ঞা করাকে।

সুতরাং [ غمط الناس ] “মানুষ কে নিকৃষ্ট মনে করা, অবজ্ঞা করা, তুচ্ছ মনে করা ও মানুষকে ঘৃণা করা। মানুষের গুণের থেকে নিজের গুণকে বড় মনে করা। কারো কোনো কর্মকে স্বীকৃতি না দেওয়া, কোনো ভালো গুণকে মেনে নেওয়ার মানসিকতা না থাকা।

মনে রাখতে হবে, যারা মানুষকে খারাপ জানে, তাদের কর্মের পরিণতি হলো, মানুষ তাদের খারাপ জানবে। এ ধরনের লোকেরা মানুষের সুনামকে ক্ষুণ্ণ এবং তাদের যোগ্যতাকে ম্লান করতে আপ্রাণ চেষ্টা করে। সে অন্যদের ওপর তার নিজের বড়ত্ব ও উচ্চ মর্যাদা প্রকাশ করার লক্ষ্যে, মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন ও ছোট করে। মানুষের সম্মানহানি ঘটানোর উদ্দেশ্যে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে ও অপবাদ রটায়। অহংকারীরা কখনোই মানুষের চোখে ভালো হতে পারে না, মানুষ তাদের ভালো চোখে দেখে না।

অহংকারী তার নিজের কর্ম ও গুণ দিয়ে কখনোই উচ্চ মর্যাদা বা সম্মান লাভ করতে সক্ষম নয়। তাই সে নিজে সম্মান লাভ করতে না পেরে নিজের মর্যাদা ঠিক রাখার জন্য অন্যদের কৃতিত্বকে নষ্ট করে এবং তাদের মান-মর্যাদাকে খাট করে দেখে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন