hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

অন্তর বিধ্বংসী বিষয়সমূহ অহংকার

লেখকঃ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জেদ

৪২
দুনিয়াতে অহংকারীর শাস্তি:
১. একজন অহংকারীকে তার চাহিদার বিপরীত দান করার মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হয়। যেমন, সে মানুষের নিকট চায় সম্মান কিন্তু মানুষ তাকে বিপরীতটি উপহার দেয়, অর্থাৎ ঘৃণা করে।

অহংকারীকে লোকেরা নিকৃষ্ট মানুষ মনে করে এবং ঘৃণা করে। এটি হলো, একজন অহংকারীর জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে বিশেষ শাস্তি। দুনিয়ার চিরন্তন নিয়মই হলো, অহংকারীকে কেউ ভালো চোখে দেখে না, সবাই তাকে ঘৃণা করে। আর যে ব্যক্তি অহংকার করে, নিজেকে বড় মনে করে আল্লাহ তা‘আলা তাকে ছোট করে, আর যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য বিনয় ও নম্রতা অবলম্বন করে, আল্লাহ তা‘আলা তার মর্যাদাকে বৃদ্ধি করে। আর যে ব্যক্তি হকের বিপক্ষে বড়াই করে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে অসম্মান ও অপমান করে।

২. চিন্তা-ফিকির, উপদেশ গ্রহণ করা ও আল্লাহর আয়াতসমূহ হতে নছিহত অর্জন করা হতে বঞ্চিত হয়।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿سَأَصۡرِفُ عَنۡ ءَايَٰتِيَ ٱلَّذِينَ يَتَكَبَّرُونَ فِي ٱلۡأَرۡضِ بِغَيۡرِ ٱلۡحَقِّ وَإِن يَرَوۡاْ كُلَّ ءَايَةٖ لَّا يُؤۡمِنُواْ بِهَا وَإِن يَرَوۡاْ سَبِيلَ ٱلرُّشۡدِ لَا يَتَّخِذُوهُ سَبِيلٗا وَإِن يَرَوۡاْ سَبِيلَ ٱلۡغَيِّ يَتَّخِذُوهُ سَبِيلٗاۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ كَذَّبُواْ بِ‍َٔايَٰتِنَا وَكَانُواْ عَنۡهَا غَٰفِلِينَ ١٤٦﴾ ] الأعراف : 146[

“যারা অন্যায়ভাবে যমীনে অহঙ্কার করে আমার আয়াতসমূহ থেকে তাদেরকে আমি অবশ্যই ফিরিয়ে রাখব। আর তারা সকল আয়াত দেখলেও তাতে ঈমান আনবে না এবং তারা সঠিক পথ দেখলেও তাকে পথ হিসাবে গ্রহণ করবে না। আর তারা ভ্রান্ত পথ দেখলে তা পথ হিসাবে গ্রহণ করবে। এটা এ জন্য যে, তারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে এবং সে সম্পর্কে তারা ছিল গাফেল।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৪৬]

আল্লামা সাদী রহ. বলেন, আমার আয়াতসমূহ হতে তাদের আমি ফিরিয়ে রাখবো এ কথার অর্থ হলো, আমি তাদের আমার আয়াত হতে উপদেশ গ্রহণ করতে এবং আমার আয়াতের মর্মার্থ বুঝা হতে ফিরিয়ে রাখবো।

অর্থাৎ যারা আমার বান্দাদের ওপর অহংকার করে, হকের বিরুদ্ধাচরণ করে ও যারা হক নিয়ে যারা আসছে, তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, আমি তাদের আমার আয়াতসমূহ থেকে উপদেশ গ্রহণ করা হতে বিরত রাখবো। আর যারা এ ধরনের গুণে গুণান্বিত হবে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে অনেক কল্যাণ হতে বঞ্চিত ও অপমান অপদস্থ করবে। আল্লাহর আয়াতসমূহ হতে যা তার উপকারে আসবে তা হতে তাকে ফিরিয়ে রাখা হবে। বরং, অনেক সময় অবস্থা এমন হবে, তার নিকট সব কিছুর বাস্তবতা উলট পলট হয়ে যাবে। তখন সে ভালোকে খারাপ জানবে আর খারাপকে ভালো জানবে।

৩. দুনিয়াতে তাদের শাস্তি দেওয়া হয়।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অহংকারীদের দুনিয়াতে শাস্তির ঘোষণা দেন।

সালামা ইবন আকওয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« لَا يَزَاُل الرَّجُلُ يَذْهَبُ بنِفْسِهِ حَتَّى يُكْتَبَ فِي الَّجَبارِينَ فَيُصيبُهُ مَا أَصَابَهُمْ»

“একজন মানুষ সর্বদা অহংকার করতে থাকে। অতঃপর একটি সময় আসে তখন তার নাম জাব্বারিনদের খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়, তখন তাকে এমন আযাব আক্রান্ত বা গ্রাস করে, যা অহংকারীদের গ্রাস করেছিল”। [তিরমিযী, হাদীস নং ২০০০ এবং তিনি বলেন হাদীসটি হাসান।]

মানুষ অহংকার করতে করতে নিজেকে অনেক বড় মনে করে, সে মনে করে তার মর্যাদা অন্য মানুষের চেয়ে অনেক ঊর্ধ্বে, এভাবে চলতে চলতে একটি সময় আসে, তখন তার নাম অহংকারী যালেমদের খাতায় লিখা হয়। ফিরআউন হামান ও কারূনের কাতারে তাকে শামিল করা হয়। এ হাদীসটি একটি বাস্তব নমুনা তুলে ধরে, তা হলো, একজন মানুষ প্রথমেই বড় ধরনের যালিম হয়ে যায় না। বরং তা হলো চলমান পক্রিয়া। একটা সময় আসে তখন সে আর ইচ্ছা করলে ফিরে আসতে পারে না। এ কারণেই আমরা বলি, হে জ্ঞানীরা তোমরা অহংকারের পরিণতিকে ভয় কর। প্রথম থেকেই তোমরা অহংকার থেকে বাঁচতে চেষ্টা কর। রোগ যখন ছোট থাকে তখন চিকিৎসা করতে হয়, অন্যথায় যখন বড় হয়ে যায়, তখন চিকিৎসা করা সম্ভব নাও হতে পারে। অনুরূপভাবে যত বড় বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটে, তা প্রথমে ছোট কয়লা থেকেই শুরু হয় তারপর তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। যদি প্রথমেই তা নিভিয়ে দেওয়া যেত, তা হলে এতবড় বিপদ হত না।

চার. অহংকারীদের থেকে নি‘আমতসমূহ ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

অহংকার নি‘আমতসমূহ ছিনিয়ে নেওয়া ও আল্লাহর আযাব অবতীর্ণ হওয়ার কারণ হয়ে থাকে।

সালামাহ ইবনুল আকওয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«أن رجلا أكل عند رسول الله صلى الله عليه و سلم بشماله فقال : كُلْ بيَمِينكَِ قال لا أستطيع قال : لَا اسَتَطْعَت ما منعه إلا الكبر . قال : فما رفعها إلى فيه»

“একদিন এক লোক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে বাম হাত দিয়ে খাওয়া শুরু করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি ডান হাত দিয়ে খাও। উত্তরে লোকটি বলল, আমি পারছিনা! তার কথার প্রেক্ষাপটে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলল, তুমি পারবে না? মূলত: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথার অনুকরণ করা হতে তাকে তার অহংকারই বিরত রাখে। বর্ণনাকারী বলেন, লোকটি আর কখনোই তার হাতকে তার মুখ পর্যন্ত উঠাতে পারে নি। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২০২১]

ইমাম নববী রহ. বলেন, এ হাদীসটি দ্বারা প্রমাণিত হয়, যে ব্যক্তি কোনো প্রকার অপারগতা ও যুক্তি ছাড়া শরী‘আতের বিধানের বিরোধিতা করে তার জন্য বদদোয়া করা জায়েয আছে। এ লোকটিকে তার অহংকার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুকরণ ও তার নির্দেশ মানা হতে বিরত রাখে, তার অহংকারের তড়িৎ শাস্তি হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার অক্ষমতার জন্য বদ-দো‘আ করেন। আল্লাহ তা‘আলা তার নবীর বদ-দো‘আ কবুল করেন এবং সাথে সাথে লোকটি আক্রান্ত হয়। ফলে সে আর কখনোই তার হাতকে তার মুখ পর্যন্ত উঠাতে সক্ষম হন নি।

ঐ সব অহংকারী যাদেরকে তাদের অহংকার সত্যের অনুকরণ করা হতে নিষেধ করে, তারা কি ভয় করে না যে, আল্লাহ তা‘আলা তাদের সে সব নি‘আমতসমূহ ছিনিয়ে নেবেন যে সব নি‘আমতের তারা নাফরমানী করে এবং অহংকার করে।

৫. অহংকার জমি ধ্বস ও কবর আযাবের কারণ হয়।

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীসে বিষয়টি স্পষ্ট করেন। যেমন, আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« بَيْنَمَا رَجُلٌ مِمنّْ كَانَ قَبْلكُمْ يمْشِي فِي حُلَّةٍ تُعْجُبهُ نَفْسُهُ، مُرَجِّلٌ جُّمتَهُ، إذِْ خَسَفَ الله بهِِ الْأرَض فَهُو يَتَجْلَجُل فيِهَا إلِى يَوِْم الْقِيَاَمِة»

“তোমাদের পূর্বের যুগের এক লোক একটি কাপড় ও লুঙ্গি পরিধান করে ও তার চুল গুলো তার কাঁধের ওপর ঝুলিয়ে অহংকার করে হাঁটছিল। কাপড়দ্বয় লোকটিকে অহংকারের দিকে নিয়ে যায়। আল্লাহ তা‘আলা লোকটিকে যমিনের অভ্যন্তরে কিয়ামত দিবস পর্যন্ত পুঁততে থাকবে। আর সে কিয়ামত দিবস পর্যন্ত এ দিক সেদিক নড়াচড়া করতে থাকবে।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৭৮৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২০৮৮।]

আল্লামা ফিরোজ আবাদি রহ. বলেন, স্থান ধ্বসে যাওয়া অর্থ হলো, সে ভু-গর্বে চলে গেল। আর আল্লাহ অমুককে যমিনে ধ্বসে দিল, অর্থাৎ তাকে যমিনে গায়েব করে ফেলল।

আল্লামা ইবন হাজার রহ. বলেন, يمشي في حلة এর অর্থ হলো, একটি চাদর ও লুঙ্গি পরিধান করে হাঁটছিল। আর সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে হাদীসটি এ শব্দে বর্ণিত-

«بَيْنمَا رجُل يتَبخْتَر فِي بُرْدَيْهِ»

مرجل جمته এ কথাটির “চুলগুলোকে একত্র করে মাথা থেকে নিয়ে কাঁধ পর্যন্ত অথবা তার চেয়ে আরও বেশি ঝুলিয়ে দেওয়া। الشعر ترجيل “তারজীলুশ শার” কথাটির “মাথা আঁচড়ানো ও মাথায় তেল লাগানো।

«إذْ خَسَفَ الله بهِِ الْأرَْض فَهَو يتَجَلْجَل فيِهَا إلَى يَوْم الْقِيَامَة»

: التجلجل التحرك তাজালজুল শব্দের অর্থ হলো, নড়াচড়া করা। আবার কেউ কেউ বলেন, আওয়াযের সাথে নড়াচড়া করা। আর আল্লামা ইবন ফারেস রহ. বলেন, التجلجل শব্দের “কঠিন ভু-কম্পনসহ যমীনে ধ্বসে যাওয়া এবং এদিক সেদিক নড়বড় করা। সুতরাং يتجلجل في الأرض শব্দের অর্থ হলো, যমীনে নামতে থাকবে কঠিন কম্পন ও হরকত সহ। আর হাদীসের অর্থ হলো, যমিন এ লোকটির দেহকে ভক্ষণ করবে না ফলে তাকে ধ্বংস করা সহজ হবে। আর বলা হবে সে এমন এক কাফির যার দেহ মৃত্যুর পর নিঃশেষ হবে না। [ফাতহুল বারী ২৬১/১০।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন