hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

দীনের ওপর অবিচল থাকার উপায়

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ

২১
ফিতনার প্রকারসমূহ
-সম্পদের ফিতনা

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمِنۡهُم مَّنۡ عَٰهَدَ ٱللَّهَ لَئِنۡ ءَاتَىٰنَا مِن فَضۡلِهِۦ لَنَصَّدَّقَنَّ وَلَنَكُونَنَّ مِنَ ٱلصَّٰلِحِينَ ٧٥ فَلَمَّآ ءَاتَىٰهُم مِّن فَضۡلِهِۦ بَخِلُواْ بِهِۦ وَتَوَلَّواْ وَّهُم مُّعۡرِضُونَ ٧٦ ﴾ [ التوبة : ٧٥، ٧٦ ]

“আর তাদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার করে যে, যদি আল্লাহ তার স্বীয় অনুগ্রহে আমাদের দান করেন, আমরা অবশ্যই দান-খয়রাত করব এবং অবশ্যই আমরা নেককারদের অন্তর্ভুক্ত হব। অতঃপর যখন তিনি তাদেরকে তাঁর অনুগ্রহ দান করলেন, তারা তাতে কার্পণ্য করল এবং বিমুখ হয়ে ফিরে গেল”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৭৫-৭৬]

-ইজ্জতের ফিতনা

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَٱصۡبِرۡ نَفۡسَكَ مَعَ ٱلَّذِينَ يَدۡعُونَ رَبَّهُم بِٱلۡغَدَوٰةِ وَٱلۡعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجۡهَهُۥۖ وَلَا تَعۡدُ عَيۡنَاكَ عَنۡهُمۡ تُرِيدُ زِينَةَ ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَاۖ وَلَا تُطِعۡ مَنۡ أَغۡفَلۡنَا قَلۡبَهُۥ عَن ذِكۡرِنَا وَٱتَّبَعَ هَوَىٰهُ وَكَانَ أَمۡرُهُۥ فُرُطٗا ٢٨﴾ [ الكهف : ٢٨ ]

“আর তুমি নিজকে ধৈর্যশীল রাখ তাদের সাথে, যারা সকাল-সন্ধ্যায় তাদের রবকে ডাকে, তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশে এবং দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্য কামনা করে তোমার দু’চোখ যেন তাদের থেকে ঘুরে না যায়। আর ঐ ব্যক্তির আনুগত্য করো না, যার অন্তরকে আমি আমার যিকির থেকে গাফেল করে দিয়েছি এবং যে তার প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে এবং যার কর্ম বিনষ্ট হয়েছে”। [সূরা আল-কাহাফ, আয়াত: ২৮]

উল্লিখিত ফিতনা দুটির ক্ষতি ও ভয়াবহতা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَا ذِئْبَانِ جَائِعَانِ أُرْسِلَا فِي غَنَمٍ أَفْسَدَ لَهَا مِنْ حِرْصِ الْمَرْءِ عَلَى الْمَالِ، وَالشَّرَفِ لِدِينِهِ»

“ক্ষুধার্ত দু’টি বাঘ ছাগলের পালে ছেড়ে দিলে তা ছাগলের জন্য যতটুকু ক্ষতিকর ও ভয়াবহ, একজন মানুষের দীনের জন্য ধন-সম্পদ ও পদের লোভ তার চেয়েও অধিক ক্ষতিকর ও ভয়াবহ।” [ইমাম আহমদ: ৪৬০/৩; সহীহ আল-জামে‘, হাদীস নং ৫৪৯৬]

- স্ত্রীর ফিতনা: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِنَّ مِنۡ أَزۡوَٰجِكُمۡ وَأَوۡلَٰدِكُمۡ عَدُوّٗا لَّكُمۡ فَٱحۡذَرُوهُمۡۚ ١٤﴾ [ التغابن : ١٤ ]

“হে মুমিনগণ, তোমাদের স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিদের কেউ কেউ তোমাদের শত্রু”। [অর্থাৎ তারা কখনো কখনো আল্লাহর পথে চলা, তাঁর আনুগত্য করা অথবা আল্লাহর যিকর ও আখিরাতের স্মরণ থেকে তোমাদের বিরত রাখতে পারে। এ আয়াতে শত্রুতা বলতে এর প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে।] অতএব, তোমরা তাদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর”। [সূরা আত-তাগাবুন, আয়াত: ১৪]

- সন্তানের ফিতনা: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«الولد مجبنة مبخلة محزنة»

“সন্তান ভীরু হওয়া, কৃপণ হওয়া ও দুশ্চিন্তার কারণ হয়” [আবু ইয়া‘লা, ৩০৫/২ এর আরও শাওয়াহেদ রয়েছে। সহীহ আল জামে‘, হাদীস নং ৭০৩৭]

- যুলুম, অত্যাচার ও নির্যাতনের পরীক্ষা: এর সবচেয়ে উত্তম ও উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত হলো আসহাবে উখদূদ সম্পর্কে আল্লাহর বাণী— আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿قُتِلَ أَصۡحَٰبُ ٱلۡأُخۡدُودِ ٤ ٱلنَّارِ ذَاتِ ٱلۡوَقُودِ ٥ إِذۡ هُمۡ عَلَيۡهَا قُعُودٞ ٦ وَهُمۡ عَلَىٰ مَا يَفۡعَلُونَ بِٱلۡمُؤۡمِنِينَ شُهُودٞ ٧ وَمَا نَقَمُواْ مِنۡهُمۡ إِلَّآ أَن يُؤۡمِنُواْ بِٱللَّهِ ٱلۡعَزِيزِ ٱلۡحَمِيدِ ٨ ٱلَّذِي لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ شَهِيدٌ ٩﴾ [ البروج : ٤، ٩ ]

“ধ্বংস হয়েছে গর্তের অধিপতিরা, (যাতে ছিল) ইন্ধনপূর্ণ আগুন। যখন তারা তার কিনারায় উপবিষ্ট ছিল। আর তারা মুমিনদের সাথে যা করছিল তার প্রত্যক্ষদর্শী। আর তারা তাদেরকে নির্যাতন করেছিল শুধুমাত্র এ কারণে যে, তারা মহা পরাক্রমশালী প্রশংসিত আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল। আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্ব যার। আর আল্লাহ প্রতিটি বিষয়ের প্রত্যক্ষদর্শী”। [সূরা আল-বুরূজ, আয়াত: ৪-৯]

ইমাম বুখারী রহ. সহীহ বুখারীতে খাব্বাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন,

«شَكَوْنَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَهُوَ مُتَوَسِّدٌ بُرْدَةً لَهُ فِي ظِلِّ الكَعْبَةِ، قُلْنَا لَهُ : أَلاَ تَسْتَنْصِرُ لَنَا، أَلاَ تَدْعُو اللَّهَ لَنَا؟ قَالَ : «كَانَ الرَّجُلُ فِيمَنْ قَبْلَكُمْ يُحْفَرُ لَهُ فِي الأَرْضِ، فَيُجْعَلُ فِيهِ، فَيُجَاءُ بِالْمِنْشَارِ فَيُوضَعُ عَلَى رَأْسِهِ فَيُشَقُّ بِاثْنَتَيْنِ، وَمَا يَصُدُّهُ ذَلِكَ عَنْ دِينِهِ، وَيُمْشَطُ بِأَمْشَاطِ الحَدِيدِ مَا دُونَ لَحْمِهِ مِنْ عَظْمٍ أَوْ عَصَبٍ، وَمَا يَصُدُّهُ ذَلِكَ عَنْ دِينِهِ، وَاللَّهِ لَيُتِمَّنَّ هَذَا الأَمْرَ، حَتَّى يَسِيرَ الرَّاكِبُ مِنْ صَنْعَاءَ إِلَى حَضْرَمَوْتَ، لاَ يَخَافُ إِلَّا اللَّهَ، أَوِ الذِّئْبَ عَلَى غَنَمِهِ، وَلَكِنَّكُمْ تَسْتَعْجِلُونَ»

“একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কা‘বা শরীফের ছায়ায় স্বীয় চাদরকে বালিশ বানিয়ে শুয়ে আছেন। আমরা তার নিকট অভিযোগ নিয়ে গিয়ে তাকে বললাম, আমাদের জন্য কি সাহায্য চাইবেন না, আমাদের জন্য কি আল্লাহর কাছে দো‘আ করবেন না। তিনি বললেন, তোমাদের পূর্বের লোকদের অবস্থা এমন ছিল যে, একজন লোককে ধরে নিয়ে আসা হতো এবং তার জন্য যমীনে গর্ত করে তাকে তাতে নিক্ষেপ করা হত। তারপর একটি করাত এনে তাকে তা দ্বারা দুই টুকরা করা হত। এত নির্যাতনের পরও লোকটিকে দীন থেকে চুল পরিমাণ বিচ্যুত করা যেত না। লোহার চিরুনি দিয়ে তাদের হাড় ও রগ থেকে গোশতকে আলাদা করা হতো। তারপরও তাদেরকে দীন থেকে বিচ্যুত করা যেতো না। আল্লাহ তা‘আলার শপথ, অবশ্যই তিনি এ দীনকে পরিপূর্ণ করবেন। এমনকি একজন আরোহী সান‘আ থেকে হাদরামাউত পর্যন্ত নিরাপদে ভ্রমণ করবে সে আল্লাহকে ছাড়া আর কাউকে ভয় করবে না এবং ছাগলের ওপর বাঘের আক্রমণ ছাড়া আর কোনো কিছুর ভয় থাকবে না। তবে তোমরা তাড়াহুড়া কর” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৬১২; ফাতহুল বারী: ৩১৫/১২]

- দাজ্জালের ফিতনা:

এটি দুনিয়ার জীবনে সবচেয়ে বড় ফিতনা,

«إِنَّهُ لَمْ تَكُنْ فِتْنَةٌ فِي الْأَرْضِ، مُنْذُ ذَرَأَ اللَّهُ ذُرِّيَّةَ آدَمَ، أَعْظَمَ مِنْ فِتْنَةِ الدَّجَّالِ، ... يَا عِبَادَ اللَّهِ فَاثْبُتُوا، فَإِنِّي سَأَصِفُهُ لَكُمْ صِفَةً لَمْ يَصِفْهَا إِيَّاهُ نَبِيٌّ قَبْلِي ... »

“আদম সন্তানদের সৃষ্টির পর থেকে এ পর্যন্ত দাজ্জালের ফিতনার চেয়ে আর কোন বড় ফিতনা ভূ-পৃষ্ঠে দেখা দেবে না...। হে আল্লাহর বান্দাগণ তোমরা দাজ্জালের ফিতনার সময় অটল ও অবিচল থাক। আমি তোমাদের নিকট দাজ্জালের পরিচয় এমনভাবে বর্ণনা করব এর পূর্বে কোনো নবী এমন পরিষ্কারভাবে দাজ্জালের পরিচিতি বর্ণনা করেন নি” [ইবন মাজাহ, হাদীস ১৩৫৯/২; সহীহ আল-জামে হাদীস নং ৭৭৫২]।

ফিতনার সামনে অন্তর অটল ও অবিচল থাকা ও বক্র হয়ে যাওয়া বিভিন্ন স্তর সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«تُعْرَضُ الْفِتَنُ عَلَى الْقُلُوبِ كَالْحَصِيرِ عُودًا عُودًا، فَأَيُّ قَلْبٍ أُشْرِبَهَا، نُكِتَ فِيهِ نُكْتَةٌ سَوْدَاءُ، وَأَيُّ قَلْبٍ أَنْكَرَهَا، نُكِتَ فِيهِ نُكْتَةٌ بَيْضَاءُ، حَتَّى تَصِيرَ عَلَى قَلْبَيْنِ، عَلَى أَبْيَضَ مِثْلِ الصَّفَا فَلَا تَضُرُّهُ فِتْنَةٌ مَا دَامَتِ السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ، وَالْآخَرُ أَسْوَدُ مُرْبَادًّا كَالْكُوزِ، مُجَخِّيًا لَا يَعْرِفُ مَعْرُوفًا، وَلَا يُنْكِرُ مُنْكَرًا، إِلَّا مَا أُشْرِبَ مِنْ هَوَاهُ»

“ফিতনা মানুষের অন্তরের সাথে এমনভাবে লেগে থাকবে যেমনিভাবে চাটাই একটির পর একটি করে লেগে থাকে। ফলে যে অন্তর এ ফিতনার মধ্যে প্রবেশ করবে, তার অন্তরে একটি কালো দাগ সৃষ্টি হবে। আর যে অন্তর তা প্রত্যাখ্যান করবে, তার অন্তরে একটি সাদা দাগ সৃষ্টি হবে। ফলে অন্তর দু’টি ভাগে বিভক্ত হবে।

এক- সাদা অন্তর; যা হবে মর্মর পাথরের মত। যতক্ষণ পর্যন্ত আসমান ও যমীন স্থির থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো ফিতনা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।

দুই- কালোর সাথে সাদা মিশ্রিত অন্তর। তার দৃষ্টান্ত হলো, উল্টো করে রাখা পান পাত্রের মত (যাতে কোনো কিছুই প্রবেশ করতে পারে না) ফলে সে অন্তর কোনো ভালো চিনতে পারে না এবং কোনো কু-কর্মকে বাধা দেয় না, কেবল সেটাই সে করে যা তার প্রবৃত্তিতে সে গ্রহণ করেছে” [ইমাম নববী রহ.-এর ব্যাখ্যায় এসেছে, অর্থাৎ যখন কোনো ব্যক্তি তার প্রবৃত্তির অনুসরণ করে এবং গুনাহের কর্মে লিপ্ত থাকে, তখন তার অন্তরে প্রতিটি গুনাহের পরিবর্তে একটি একটি অন্ধকার ছেয়ে বসে। ফলে সে ফিতনায় আক্রান্ত হয় এবং তার অন্তর থেকে ইসলামের নূর দূরীভূত হয়ে যায়। আর তার অন্তর উল্টো করে রাখা পান-পাত্রের মত হয়ে যায়। তখন তার মধ্যে কিছুই রাখা যায় না, কোনো কিছুই আর তাতে অবশিষ্ট থাকে না এবং এর ফলে তার অন্তরে আর কোনো কিছুই প্রবেশ করে না।]

এখানে عرض الحصير এর অর্থ, মানুষের অন্তরে ফিতনাসমূহ এমনভাবে দাগ কাটবে যেমনিভাবে বিছানায় ঘুমন্ত ব্যক্তির পিঠে বিছানা বা চাটাইর দাগ পড়ে। আর مربدا এর অর্থ ধবধবে সাদা যার সাথ কালোর মিশ্রণ রয়েছে। আর مجخياً এর অর্থ ভাঙ্গ পাত্র।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন