hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হজ, উমরা ও যিয়ারত গাইড

লেখকঃ ড. মনজুরে এলাহী, আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান, নোমান আবুল বাশার কাউসার বিন খালেদ, ইকবাল হোসাইন মাসুম, আবুল কালাম আজাদ, জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের, মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান

১১৯
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর পবিত্র কবর যিয়ারতের সময় নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর পবিত্র কবর হুজরা শরীফের অভ্যন্তরে অবস্থিত। তাই কবরের দেয়াল ছুঁয়ে বরকত নেয়ার জজবা অনেকের মধ্যে থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। আসলে এ ধরনের জজবা-বাসনা থাকাই উচিত না। কেননা কবরের চার পাশে তাওয়াফ, কবর ছুঁয়ে বরকত নেয়া ইত্যাদি শরিয়তে অনুমোদিত নয়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কঠিনভাবে নিষেধ করেছেন যে তাঁর কবরকে যেন পূজ্য মূর্তিতে রূপান্তরিত করা না হয়। [- রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দোয়া করে বলেছেন, হে আল্লাহ ! আমার কবরকে আপনি পূজার মূর্তিতে পরিণত করবেন না।] আর স্পর্শ ও চুম্বন করার বিধান তো কেবল হাজরে আসওয়াদের বৈশিষ্ট্য। পবিত্র কাবার রুকনে য়ামেনিও স্পর্শ করার বিধান রয়েছে। এছাড়া অন্য কোনো জায়গা, এমনকী পবিত্র কাবার অন্য কোনো অংশ স্পর্শ করে বরকত নেয়ারও বিধান নেই। মুআবিয়া (রাঃ) একদা হজ করার সময় রুকনে শামি ও রুকনে গারবি অর্থাৎ কাবা শরীফের উত্তর পাশের দুই কোণ স্পর্শ করলেন। ইবনে আববাস (রাঃ) বিরোধিতা করলেন। এরূপ করা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর বিধানে নেই, স্পষ্ট করে তিনি মুআবিয়া (রাঃ) কে বুঝিয়ে দিলেন। মুআবিয়া খলিফা থাকা সত্ত্বেও ইবনে আববাস (রাঃ) এর কথা মেনে নিলেন। হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে য়ামেনি ব্যতীত যদি পবিত্র কাবার অন্য কোনো অংশ স্পর্শ করা শরিয়ত বহির্ভূত কাজ হয়ে থাকে তবে অন্য কোনো জায়গা ছুঁয়ে বরকত নিতে যাওয়া যে বড়ো বেদআত, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই কবরে ঘর্ষণ মর্দন, গন্ডদেশ ও বক্ষ লাগিয়ে বরকত নেয়ার ইচ্ছা করা হকপন্থী সকল মুসলমানদের কাছে অবৈধ। বরং এটা একপ্রকার শিরক। [- ইবনে কুদামা : আল মুগনি, ৩/৫৫৯] পবিত্র কাবার অনুমোদিত অংশ ব্যতীত অন্য কোনো অংশ মাসেহ করা, ছোঁয়া যদি পুণ্যের কাজ না হয়ে থাকে তাহলে হুজরার দরজা জানালা স্পর্শ করে কী কোনো পুণ্যের আশা করা যেতে পারে?। হুজরার দেয়াল ও দরজা-জানালা তো নির্মিত হয়েছে বহু পরে। রাসূলের মহববত কবরের দরজা-জানালা স্পর্শ করে নয় বরং যথার্থভাবে রাসূলের আনুগত্য-ইত্তেবার মাধ্যমেই প্রকাশ করতে হয় রাসূলুল্লাহর মহববত ও তাজিম।

বিপদমুক্তি অথবা কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে প্রার্থনা করা যাবে না। বলা যাবে না যে হে আল্লাহর রাসূল আমাকে অমুক বিপদ থেকে মুক্ত করুন। অথবা আর্থিক স্বচ্ছলতা দান করুন। কেননা এজাতীয় কাজ করা শিরক। এজাতীয় দোয়া কেবল আল্লাহ রাববুল আলামিনকে খেতাব করেই করতে হয়। এরশাদ হয়েছে—

وَقَالَ رَبُّكُمْ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ

-এবং তোমাদের প্রতিপালক বললেন, আমাকে ডাকো আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা আমার ইবাদতের প্রতি দম্ভ প্রদর্শন করে তারা প্রবেশ করবে জাহান্নামে, অপদস্ত হয়ে। [- সূরা গাফের : ৬০] অন্য এক জায়গায় এরশাদ হয়েছে, ‘ قُلْ لَا أَمْلِكُ لِنَفْسِي ضَرًّا وَلَا نَفْعًا إِلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ -বলুন আমি আমার নিজের কোনো অকল্যাণের বা কল্যাণের মালিক নই, তবে আল্লাহ যা চান। [- সূরাতুল আরাফ : ১৮৮] রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন নিজের কল্যাণের-অকল্যাণের মালিক নিজে নন, তাহলে তিনি অন্যদের কল্যাণ-অকল্যাণ কীভাবে সাধন করতে পারেন। এ কথাটাই অন্য একটি আয়াতে স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে, আয়াতটি হল— قُلْ إِنِّي لَا أَمْلِكُ لَكُمْ ضَرًّا وَلَا رَشَدًا -বলুন, আমি তোমাদের কোনো ক্ষতি বা কল্যাণের মালিক নই। [- সূরা আল জিন্ন : ২১] আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন, যখন ‘ وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الْأَقْرَبِينَ -আপনি আপনার সগোত্রীয় নিকট ব্যক্তিদেরকে ভয় দেখান [- শুয়ারা : ২১৪], তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দাঁড়িয়ে বললেন, ‘হে ফাতেমা বিনতে মুহাম্মদ, হে সাফিইয়া বিনতে আব্দুল মুত্তালিব, হে আব্দুল মুত্তালিবের সন্তানরা, আল্লাহর পক্ষ থেকে আমি তোমাদের জন্য কোনো কিছুরই মালিক নই। আমার সম্পদ থেকে তোমাদের যা ইচ্ছা চাও।

গুনাহ মাফ করানোর জন্য রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে বলাও ঠিক নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ (স) এর ওফাতের পূর্বে এরূপ করা যেতো কিন্তু ওফাতের পর এ ধরনের কোনো অবকাশ নেই। মৃত্যুর পর মানুষের সকল কাজ রহিত হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে একটি স্পষ্ট হাদিস রয়েছে। [ - إذا مات ابن آدم انقطع عمله (মুসলিম : ৪২২৩ )] সূরা নিসার ৬৪ নম্বর আয়াত যেখানে আল্লাহ পাক বলেছেন—

وَلَوْ أَنَّهُمْ إِذْ ظَلَمُوا أَنفُسَهُمْ جَاءُوكَ فَاسْتَغْفَرُوا اللَّهَ وَاسْتَغْفَرَ لَهُمْ الرَّسُولُ َوَجَدُوا اللَّهَ تَوَّابًا رَحِيمًا

অর্থ : এবং যদি তারা স্বীয় জীবনের উপর অত্যাচর করার পর তোমার নিকট আগমন করত, তৎপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করত, আর রাসূলও তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইত, তবে নিশ্চয় তারা আল্লাহকে তওবা কবুলকারী, করুনাময় প্রাপ্ত হত। [নিসা : আয়াত : ৬৪]

-এ আয়তের সম্পর্ক রাসূলুল্লাহর জীবদ্দশার সাথে। এ আয়াতের মধ্যে রাসূলুল্লাহর মৃত্যুর পরও গুনাহ মাফ করানোর জন্য আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার করতে তাঁর কাছে আর্জি পেশ করার কথা উল্লেখ নেই। আরবি ভাষার ব্যবহার রীতি অনুযায়ী এখানে إذا ব্যবহার করলে ভবিষ্যৎ কালেও এ প্রক্রিয়াটি কার্যকর থাকত। কিন্তু এখানে إذا ব্যবহার না করে إذ ব্যবহার করায় প্রক্রিয়াটি অতীতকালের জন্য নির্দিষ্ট হয়ে গিয়েছে। এর অর্থ, অতীতে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর জীবদ্দশায়, অন্যায় করে যদি কেউ আল্লাহর কাছে গুনাহ মাফ চায়, এবং রাসূলুল্লাহও তাদের জন্য গুনাহ মাফ চান, তাহলে তারা নিশ্চয়ই আল্লাহকে তাওবা গ্রহণকারী ও দয়াময় পাবে।

নারীর কবর যিয়ারত নিয়ে বিতর্ক আছে। এক হাদিসে কবর যিয়ারতকারী নারীর প্রতি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অভিসম্পাত করেছেন। এই হাদিসের ওপর ভিত্তি করে ইসলামি শরিয়তজ্ঞ ওলামাদের একদল নারীর কবর যিয়ারত, হোক তা রাসূলুল্লাহর কবর, অবৈধ বলেছেন। অপর পক্ষে অন্যদল বলেছেন বৈধ। তাদের মতে কবর যিয়ারত, পূর্বে, নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই অবৈধ ছিল। পরবর্তীতে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিয়ে যিয়ারতের অনুমতি দেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)। [ - كنت نهيتكم عن زيارة القبور ، فزوروها فإنها تزهد في الدنيا و تذكر بالآخرة . (ইবনে মাজাহ : ১৫৬০)] এ অনুমতি নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই ছিল বলে দাবি করেন তারা। বিতর্ক থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য উচিত হবে নারীদের কবর যিয়ারতে না যাওয়া। বিশেষ করে বর্তমান-যুগের সার্বিক পরিবেশ নারীর পক্ষে সহায়ক নয়। বরং ফিতনা ও অনিরাপত্তার আশঙ্কা দিন দিন আরো প্রকট আকার ধারণ করছে। তাই নারীদেরকে করব যিয়ারত হতে নিরুৎসাহিত করাই হবে উত্তম। আর অনুমতি প্রদানের হাদিসে নারীদেরকে শামিল করা হয়েছে কি-না, তার পক্ষে কোনো স্পষ্ট প্রমাণ নেই। কেননা নারীদের প্রতি নিষেধাজ্ঞা ‘লানত’ শব্দ দিয়ে এসেছিল।

তবে কি নারীরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর প্রতি সালাম পেশ করবে না? হাঁ, অবশ্যই করবে। তবে তা কবরে গিয়ে নয়। যে কোনো জায়গা থেকেই করা যায়। হাদিসে এসেছে, ‘তোমাদের ঘর-বাড়ি কবরে পরিণত করো না। আর আমার কবরকে উৎসবে পরিণত করো না। আমার জন্য তোমরা দরুদ পাঠ করো। তোমাদের দরুদ আমার কাছে পৌঁছে, তোমরা যেখানেই থাকো না কেন। [ - عن أبي هريرة قال قال رسول الله صلى اللهم عليه وسلم لا تجعلوا بيوتكم قبورا ولا تجعلوا قبري عيدا وصلوا علي فإن صلاتكم تبلغني حيث كنتم (আবু দাউদ : হাদিস নং ১৭৪৬]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন