hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হজ, উমরা ও যিয়ারত গাইড

লেখকঃ ড. মনজুরে এলাহী, আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান, নোমান আবুল বাশার কাউসার বিন খালেদ, ইকবাল হোসাইন মাসুম, আবুল কালাম আজাদ, জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের, মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান

৩৪
হজের সফর শুরু
১.সরকারী ব্যবস্থাপনায় যাবেন না বেসরকারি কাফেলা- ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে যাবেন এসব ব্যাপারে সৎ-নেককার ও অভিজ্ঞ লোকদের পরামর্শ নিন, ও এস্তেখারা করুন। এস্তেখারার নিয়ম হল—প্রথমে ভাল করে ওজু করুন। দু’রাকাত সালাত আদায় করুন ও মনযোগের সাথে এই দোয়াটি পড়ুন ও الأمر শব্দের পর যে বিষয়ে এস্তেখারা করছেন সে বিষয়টি উল্লেখ করুন—

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيمِ فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلَا أَقْدِرُ وَتَعْلَمُ وَلَا أَعْلَمُ وَأَنْتَ عَلَّامُ الْغُيُوبِ اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الْأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي ِ فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الْأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي فَاصْرِفْهُ عَنِّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ وَاقْدُرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ ثُمَّ أَرْضِنِي [- বোখারি : হাদিস নং ১০৯৬]

২. সফরে বের হওয়ার পূর্বে মুস্তাহাব হল, দেনা-পাওনা বিষয়ে একটি অসিয়তনামা লেখা [- আব্দুল্লাহ বিন ওমরের () একটি হাদিসে পরিষ্কারভাবে এ কথাটি ব্যক্ত হয়েছে।] ও উক্ত অসিয়তনামায় একজনকে সাক্ষী হিসেবে রাখা।

৩. আপনার কাছে কেউ কোনো জিনিস আমানত রেখে থাকলে তা মালিকের কাছে পৌঁছিয়ে দিন।

৪. ছেলে-সন্তান, পরিবার পরিজনকে তাকওয়া-পরহেজগারির ব্যাপারে বুঝান, অসিয়ত করুন। তারা যেন আপনার অনুপস্থিতিতে আরো বেশি একাগ্রতা নিয়ে দ্বীন-ধর্ম মেনে চলে, কোনো পাপ কর্মের ধারে-কাছে না যায় এ সব ব্যাপারে তাদেরকে বুঝান। এ ধরনের অসিয়ত ইসলামি শরিয়তে মুস্তাহাব।

৫. কোনো হক্কানি আলেম বা নেককার ও অভিজ্ঞ ব্যক্তির সফর-সঙ্গী হোন। তাতে হজ-ওমরা পালনসহ তাকওয়া-পরহেজগারির সীমানায় থেকে হজের পবিত্র সফর সম্পন্ন করা সহজ হবে। বিশেষ করে ভুলভ্রান্তি থেকে বেঁচে-থাকা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।

৬. পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজন, আলেম-ওলামা ও আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে বলে-কয়ে বিদায় নেয়া মুস্তাহাব। [- দেখুন ইবনে মাযাহ : হাদিস নং ২৮২৫]

৭. যাদেরকে ছেড়ে হজের সফরে বের হচ্ছেন তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলবেন,‘ اَسْتَوْدِعُكُمُ اللهَ الَّذِي لا تَضِيْعُ وَدَائِعُهُ ’ -আমি তোমাদেরকে আল্লাহর হেফাযতে রেখে যাচ্ছি যার হেফাযতে- থাকা কেউই ক্ষতিগ্রস্ত হয় না’ [- আহমদ : ২/৪০৩] নবী আকরাম (ﷺ) তাঁর সাথিদের কেউ সফরে বের হওয়ার উপক্রম করলে তিনি বলতেন, أَسْتَوْدِعُ اللهَ دِيْنَكَ وَ أَمَانَتَكَ وَخَوَاتِيْمَ عَمَلِكَ -আমি তোমার দ্বীন তোমার আমানত এবং তোমার আমলের সমাপ্তি পর্যায়কে আল্লাহর হেফাযতে ছেড়ে যাচ্ছি।’ [- আলবানী : সহিহু আবি দাউদ :২/৪৯৩] কোনো মুসাফির রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট নসিহতের প্রার্থনা করলে আল্লাহর রাসূল বলতেন—

زَوَّدَكَ اللَّهُ التَّقْوَى وَغَفَرَ ذَنْبَكَ وَيَسَّرَ لَكَ الْخَيْرَ حَيْثُمَا كُنْتَ

আল্লাহ তা’আলা তোমাকে তাকওয়া দ্বারা ভূষিত করুন। তোমার গুনাহ ক্ষমা করে দিন এবং তুমি যেখানেই অবস্থান করো তোমার জন্যে কল্যাণকে সহজলভ্য করে দিন। [- তিরমিযী : হাদিস নং ৩৩৬৬]

৮. ঘর থেকে বের হওয়ার সময় এই দোয়াটি পড়া মুস্তাহাব—

اللَّهُمَّ أَعُوذُ بِكَ أَنْ أَضِلَّ أَوْ أُضَلَّ أَوْ أَزِلَّ أَوْ أُزَلَّ أَوْ أَظْلِمَ أَوْ أُظْلَمَ أَوْ أَجْهَلَ أَوْ يُجْهَلَ عَلَيَّ

হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি নিজে বিভ্রান্ত হওয়া থেকে, এবং অপর দ্বারা বিভ্রান্ত হওয়া থেকে, নিজে পদস্খলিত হওয়া থেকে, এবং অপর দ্বারা পদস্খলিত হওয়া থেকে। কারো উপর জুলুম করা থেকে এবং আমি কারো দ্বারা নির্যাতিত হওয়া থেকে। কারো সাথে মূর্খতাপূর্ণ আচরণ করা থেকে, এবং অন্যের মূর্খতা জনিত আচরণে আক্রান্ত হওয়া থেকে। [- আবু দাউদ : হাদিস নং ৪৪৩০]

৯. গাড়ি, বিমান বা যে কোন যানবাহনে উঠে দোয়া পড়া মুস্তাহাব। সে হিসেবে যানবাহনে উঠে এই দোয়াটি পড়ুন—

اللهُ أَكْبَرُ ، اللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ، سُبْحانَ الذِيْ سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينْ، وإِنَّا إِلَى ربِّنَا لَمُنْقَلِبُون، الَّلهُمُّ إِنَّا نَسْألُكَ فِيْ سَفَرِِنا هَذَا البِرَّ والتَّقْوى، ومِنَ الْعَمَلِ ما تَرْضَى، الَّلهُمُّ هوِّن عَلَيْنا سَفَرَنا هَذَا واطْوِعنَّا بُعدَه، الَّلهُمُّ أنْتَ الصَّاحِبُ في السَّفَرِ، وَالْخَلِيْفَةُ فِي الأَهْلِ، الَّلهُمُّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنْ وَعْثَاءِ السَّفَرِ وَكَآبَةِ الْمَنْظَر، وَسُوءِ المُنْقَلَبِ فِيْ الْمَالِ والأَهْلِ .

(আল্লাহ মহান। আল্লাহ মহান। আল্লাহ মহান। পবিত্র সেই মহান সত্তা যিনি আমাদের জন্যে একে বশীভূত করে দিয়েছেন, যদিও আমরা একে বশীভূত করতে সক্ষম ছিলাম না। আর আমরা অবশ্যই প্রত্যাবর্তন করব আমাদের প্রতিপালকের নিকট। হে আল্লাহ! আমাদের এ সফরে আমরা তোমার নিকট প্রার্থনা জানাই পূর্ণ হেদায়েত ও তাকওয়ার এবং এমন আমলের যা তুমি পছন্দ কর। হে আল্লাহ! আমাদের জন্যে এ সফরকে সহজসাধ্য করে দাও। হে আল্লাহ! এ সফরে তুমিই আমাদের সাথি আর (আমাদের গৃহে রেখে আসা) পরিবার পরিজনের তুমিই খলিফা (রক্ষণাবেক্ষণ কারী) হে আল্লাহ অমারা তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি সফরের ক্লেশ হতে ও অবাঞ্ছিত কষ্টদায়ক দৃশ্য দর্শন হতে। [- মুসলিম : হাদিস নং ১৩৪২]

১০. সফরে সকলে মিলে একজনকে আমির নির্ধারণ করা মুস্তাহাব। এতে করে যে কোন বিষয়ে সহজে সিদ্ধান্তে পৌঁছা যায়, এবং ঐক্য সুদৃঢ় হয়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, তিনজনের একটি দল সফরে বের হলে একজনকে যেন আমির বানিয়ে নেয়া হয়। [ - إذا خرج ثلاثة في سفر فليؤمروا أحدهم (আবু দাউদ:২২৪১)]

১১.পথে কোথাও অবস্থানের প্রয়োজন হলে দলের সকলে একত্রে একস্থানে মিশে থাকা মুস্তাহাব। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কতিপয় সাহাবি কোথাও অবতরণ করলে বিভিন্ন উপত্যকা এবং গিরিপথে বিক্ষিপ্ত হয়ে যেতেন। একবার রাসূলুল্লাহ (ﷺ) (এ কাজের নিন্দা জানিয়ে) বলেন, তোমাদের এ বিক্ষিপ্ততা শয়তানের পক্ষ থেকে।

১২. সফর অবস্থায় কোথাও অবতরণ করলে এই দোয়াটি পড়বেন

أَعَوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقْ

‘‘আমি আল্লাহ তা’আলার পরিপূর্ণ কালেমা সমূহের মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করছি তাঁর সৃষ্ট-বস্ত্তর সমুদয় অনিষ্ট থেকে।’ [- মুসলিম : ২/২০৮০] যদি কোন ব্যক্তি নতুন স্থানে গিয়ে এ দোয়া পড়ে তাহলে সেখান থেকে ফেরত আসা পর্যন্ত কোন বস্ত্ত তার বিন্দু পরিমাণ ক্ষতি করতে পারবে না।

১৩. উঁচু স্থানে ওঠার সময় الله أكبر বলা এবং নিচুস্থানে অবতরণের সময় سبحان الله -বলা মুস্তাহাব। জাবের (রাঃ) বর্ণিত হাদিস তাই প্রমাণ করে। [- বোখারি : হাদিস নং ২৯৯৩] তবে হজের এহরাম অবস্থায় তালবিয়া পাঠের সময়সীমায় উল্লেখিত জায়গাসমূহে তালবিয়া পড়া বাঞ্ছনীয়।

১৪. সফরে ভোরের আলো ফুটতে লাগলে নিম্নোক্ত দোয়া পড়া মুস্তাহাব -

سَمِعَ سَامِعٌ بِحَمْدِ اللَّهِ وَحُسْنِ بَلَائِهِ عَلَيْنَا، رَبَّنَا صَاحِبْنَا وَأَفْضِلْ عَلَيْنَا عَائِذًا بِاللَّهِ مِنَ النَّارِ .

শ্রোতা শুনুক আমাদের কর্তৃক আল্লাহর প্রশংসা ও তাঁর উত্তম নেয়ামতের বর্ণনা। হে অমাদের প্রতিপালক, আমাদের সাথে থাকুন, আমাদের উপর অনুকম্পা ও নিয়ামত বর্ষণ করুন। আশ্রয় চাইছি আল্লাহর কাছে জাহান্নামের আগুন থেকে। [- মুসলিম : হাদিস নং ৪৮৯৫]

১৫. সফরে বেশি পরিমাণ আল্লাহর নিকট দোয়া করা মুস্তাহাব; কারণ সফরে দোয়া কবুল হয়ে থাকে এবং কাঙ্ক্ষিত বস্ত্ত প্রদান করা হয়।

১৬. জ্ঞান ও সামর্থ্য অনুযায়ী সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ হতে মানুষদেরকে বারণ করবেন। এক্ষেত্রে বিশেষভাবে জরুরি হচ্ছে, যে বিষয়ে আদেশ বা নিষেধ করবেন, আগে নিজে সে বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করবেন এবং নম্র ব্যবহার ও মাধুর্যপূর্ণ ভাষার মাধ্যমে তা প্রয়োগ করবেন।

১৭. সর্বপ্রকার অন্যায়-অপরাধ ও গুনাহ থেকে দূরে থাকবেন। কাউকে মন্দ বলবেন না। কাউকে শারীরিকভাবে কষ্ট দেবেন না। এমন ভিড় ও জটলা পাকাবেন না যে অপর হাজিদের কষ্ট হয়। সবসময় ভিড় এড়িয়ে চলবেন। সকল প্রকার গিবত দোষচর্চা, পরনিন্দা কুৎসা রটনা মুনাফেকিসহ পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট হয়, দূরত্ব সৃষ্টি হয়, শ্রদ্ধাবোধ লোপ পায় এমন সকল কাজ এড়িয়ে চলবেন। মিথ্যা কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকবেন। এবং না জেনে ধর্মীয় কোন বিষয়ে মুখ খুলবেন না। মোটকথা যাবতীয় অন্যায় ও অশ্লীল কাজ বর্জন করবেন কঠিনভাবে। আল্লাহ তা’আলা বলেন—

لْحَجُّ أَشْهُرٌ مَعْلُومَاتٌ فَمَنْ فَرَضَ فِيهِنَّ الْحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَلَا فُسُوقَ وَلَا جِدَالَ فِي الْحَجِّ

-হজ হয় সুবিদিত কয়েকটি মাসে। যে কেউ এ মাস গুলোতে হজ করা স্থির করে, তার জন্য হজে যৌনতা, অন্যায় আচরণ ও কলহ-বিবাদ বিধেয় নয়। [- সূরা আল বাকারা : ১৯৭] তাছাড়া হারাম এলাকার ন্যায় পবিত্র স্থানে কোনো গুনাহ করা অন্য স্থানের মতো নয়। আল্লাহ তা’আলা বলেন—

وَمَنْ يُرِدْ فِيهِ بِإِلْحَادٍ بِظُلْمٍ نُذِقْهُ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ

-আর যে ব্যক্তি মসজিদুল হারামে সীমা-লঙ্ঘন করার ইচ্ছা পোষণ করে, আমি তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করাব। [- সূরা আল হাজ্জ : ২৫]

১৮. অত্যাবশ্যকীয়ভাবে পালনীয় সকল ফরজ ও ওয়াজিবের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন যার শীর্ষে রয়েছে সালাত। বিশেষ করে ফরজ সালাতসমূহ জামাতের সাথে সময় মত আদায়ে সবিশেষ যত্নবান থাকবেন, পাশা-পাশী অন্যান্য ইবাদত, যথা, কুরআন তিলাওয়াত, জিকির-আযকার, দোয়া, পরোপকার, দান-সদকা ইত্যাদি অধিক পরিমাণে করার চেষ্টা করবেন।

১৯. সফর অবস্থায় মানুষের সাথে লেনদেনের ক্ষেত্রে সুন্দর আচরণ বজায় রাখবেন।

২০. যারা দুর্বল, সফর অবস্থায় তাদের সহায়তা করুন, পয়সা দিয়ে হোক শ্রম দিয়ে হোক বা পরামর্শের মাধ্যমে হোক যে কোনো উপায়ে তাদেরকে সহায়তা করার চেষ্টা করুন। নিজ সাথিবৃন্দের প্রতিও এরূপ সহমর্মীতাপূর্ণ আচরণ করে যাবেন।

২১. সফরের কার্যক্রম শেষ হয়ে গেলে খুব দ্রুত বাড়ি ফিরে আসবেন। অকারণে বিলম্ব করবেন না।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, সফর আযাবের একটি টুকরো বিশেষ। তোমাদেরকে স্বাধীন ভাবে খাবার, পানীয় ও নিদ্রা হতে বাঁধা দিয়ে থাকে, সুতরাং তোমাদের সফরের কাজ সারা হয়ে গেলেই অতি দ্রুত পরিজনের নিকট ফিরে আসবে।

২২. সফর থেকে ফেরার সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে প্রমাণিত দোয়া ও জিকিরগুলো পড়া মুস্তাহাব। নবী (ﷺ) যখন কোন যুদ্ধ বা হজ-উমরার সফর থেকে ফিরতেন তখন প্রত্যেক উঁচু স্থানে তিন বার করে الله أكبر বলতেন। অত:পর বলতেন—

لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ، لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ . آيِبُونَ، تَائِبُونَ، عَابِدُونَ، لِرَبِّنَا حَامِدُونَ، صَدَقَ اللَّهُ وَعْدَهُ، وَنَصَرَ عَبْدَهُ، وَهَزَمَ الْأَحْزَابَ وَحْدَهُ .

‘আললাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। তিনি অদ্বিতীয়। তার কোনো শরিক নেই। রাজত্ব তারই। প্রশংসাও তাঁর। তিনি সকল কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। অমরা প্রত্যাবর্তন করছি সফর থেকে তাওবা করতে করতে, ইবাদতরত অবস্থায়, এবং আমাদের প্রভুর প্রশংসা করে করে। আল্লাহ তাঁর অঙ্গীকার পূর্ণ করেছেন এবং স্বীয় বান্দাকে সাহায্য করেছেন, সকল গোত্রকে একাই পরাভূত করেছেন।’ [- বুখারী ৭/১৬৩ মুসলিম ২/৯৮০]

২৩. দীর্ঘ দিনের সফর হলে একান্ত প্রয়োজন না হলে রাত্রিকালে বাড়ি ফিরতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নিষেধ করেছেন।

২৪. সফর থেকে ফেরার পর বাড়ি প্রবেশের পূর্বে পাশের মসজিদে গিয়ে দু’রাকাত সালাত আদায় করা মুস্তাহাব। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরূপ করতেন। [ - أن النبي صلى الله عليه وسلم إذا قدم من سفر بدأ بالمسجد فركع فيه ركعتين (মুসলিম : ২৪২৮)]

২৫. সফর থেকে ফেরার পর নিজ পরিবার ও আশে পাশের শিশুরা তাকে ইস্তেকবাল-অভ্যর্থনা করলে তাদের সাথে হৃদ্যতাপূর্ণ ব্যবহার করা, তাদের স্নেহ করা, মুস্তাহাব। ইবনে আববাস (রাঃ) এর হাদিসের দাবিও তাই।

২৬. অপরকে হাদিয়া দেয়া এবং অপরের হাদিয়া গ্রহণ করা মুস্তাহাব। এর মাধ্যমে হৃদ্যতা বৃদ্ধি পায়, মনের কৌলীন্য দূর হয়। এবং সহাবস্থান সহজ হয়। রাসূলু্ল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, তোমরা পরস্পর হাদিয়া আদান- প্রদান কর এতে পারস্পরিক ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে।

২৭. মুসাফির সফর থেকে ফিরে এলে তার সাথে মু’আনাকা করা মুস্তাহাব। সাহাবায়ে কেরাম এরূপ করতেন বলে হাদিসে এসেছে, যেমন আনাস (রাঃ) বলেন, তাঁরা (সাহাবাগণ) যখন পরস্পর মিলিত হতেন মুসাফা করতেন আর যখন সফর থেকে ফিরে আসতেন মুআনাকা করতেন। [ - كان أصحاب النبي إذا تلاقوا تصافحوا ، وإذا قدموا من سفر تعانقوا (তিবরানী : ১/৯৭) আলবানী এ হাদিসটি সহিহ বলেছেন।]

২৮. সফর থেকে ফিরে এসে স্বীয় সাথি সঙ্গী ও বন্ধু বান্ধবদের একত্রিত করা এবং খাবারের আয়োজন করা মুস্তাহাব। নবী আকরাম (ﷺ) নিজেও সফর থেকে ফিরে এমন ব্যবস্থা করতেন। [- দেখুন বোখারি : হাদিস নং ৩০৮৯]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন