hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হজ, উমরাহ ও যিয়ারতের পদ্ধতি [মাসনূন দো‘আসহ]

লেখকঃ হাজী ও উমরাকারীদের হাদিয়া অফিসস্থ ইসলামী গবেষণা পরিষদ, মক্কা

১৯
জিলহজ মাসের দশ তারিখ কুরবাণীর দিন হাজীদের করণীয়
কুরবানীর দিন হলো সমস্ত মুসলিম দেশে মুসলিমদের ঈদের দিন। এ দিনটিকে তারা আনন্দ ও উৎফুল্লের সাথে স্বাগত জানায়। এ দিনটিই হলো হজের বড় দিন যাতে হজের অধিকাংশ কাজ সংঘটিত হয়। যেমন, কংকর নিক্ষেপ করা, হলোক করা, কুরবানী করা, বায়তুল্লার তাওয়াফ করা ও সাফা-মারওয়ায় সা‘ঈ করা।

প্রিয় হাজী ভাই, আপনি যখন কুরবানীর দিন সকালে মিনায় পৌঁছবেন, তখন আপনি চারটি কাজ পালন করবেন। সেগুলো হলো:

জামরায়ে ‘আকাবায় যাবেন। এটি হলো মক্কার নিকটবর্তী শেষোক্ত বড় জামরা। সেখানে পৌঁছে তালবিয়া পড়া বন্ধ করুন। মিনাকে ডান পাশে, ক্বিবলাকে বাম পাশে ও জামরাতুল ‘আকাবাকে সামনে রেখে এতে পর পর সাতটি কংকর নিক্ষেপ করুন এবং প্রত্যেকটি কংকর নিক্ষেপের সাথে ‘আল্লাহু আকবার’ বলুন।

এটিই একমাত্র জামরা, যাতে এদিন সকাল বেলা কংকর নিক্ষেপ করা হবে। আর অন্য জামরাগুলোতে কংকর নিক্ষেপ এদিন নয়, বরং পরের সব দিনগুলোতে সূর্য ঢলে পড়ার পরই করতে হবে।

কংকর সাতটির চেয়ে কম কিংবা বেশি নিক্ষেপ করা যাবে না। আর বাড়াবাড়ি করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা কোনো কোনো হাজী বড় পাথর, জুতা ইত্যাদি নিক্ষেপ করে থাকেন। কংকর নিক্ষেপের জন্য জামরার কাছে ভীড় জমানো, ধস্তাধস্তি ও আপনার মুসলিম ভাইদেরকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকুন; কেননা মুসলিম ভাইদেরকে কষ্ট দিয়ে আল্লাহ তাঁর ইবাদাত ও আনুগত্য করার নির্দেশ দেননি।

কিছু লোক একসাথে সমস্ত কংকর নিক্ষেপ করে। আপনি তা থেকে সতর্ক থাকুন। যে ব্যক্তি এমনটি করবে, তার জন্য একটি কংকর মারা হয়েছে বলে ধরা হবে। আর তার উচিৎ হবে নিজের আশ পাশ থেকে কংকর সংগ্রহ করে সাতটি কংকর নিক্ষেপ পরিপূর্ণ করা। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি কোনো একটি বা সকল কংকর হারিয়ে ফেলে, সে যে স্থানে রয়েছে সেখান থেকে কংকর কুড়িয়ে নিতে পারবে, যদিও সে জামরার নিকটে থাকে।

অনুরূপভাবে কতেক হাজী জামরায় কংকর নিক্ষেপের সময় যে চিৎকার ও গালিগালাজ করে থাকে এ বিশ্বাসে যে, তারা শয়তানের প্রতি কংকর নিক্ষেপ করছে, তা থেকে ও সতর্ক থাকুন। কেননা এ হলো বাতিল ধারণা। জামরাসমূহে ধীরস্থির ও শান্তভাবে এবং দো‘আ ও যিকরের সাথে কংকর নিক্ষেপ করা উচিৎ। আর জামরা সমূহে কংকর নিক্ষেপ তো নিশ্চয় আল্লাহর যিকির প্রতিষ্ঠার জন্যই ওয়াজিব করা হয়েছে।

প্রিয় ভাই, আপনি হাওয তথা গোলাকার বৃত্তের ভেতর কংকর নিক্ষেপের চেষ্টা করুন। কোনো কোনো হাজী স্তম্ভটিকে মারার জন্য কষ্ট করে থাকে। অথচ এতে কখনো কখনো কংকর হাওয থেকে বেরিয়ে যায়। এটা হাজীদের ভুল। এক্ষেত্রে করণীয় হলো কংকর হাওযে ফেলা, তা দিয়ে স্তম্ভকে আঘাত করা নয়।

কংকর নিক্ষেপের কাজ শেষ করে আপনি হাদী কুরবানী করুন, যদি আপনি তামাত্তু বা ক্বিরানকারী হয়ে থাকেন। আর তা থেকে নিজে আহার করুন, ফকীরদেরকে দান করুন ও আহার করান এবং আপনি ভালোবাসেন এমন লোকদের হাদিয়া দিন, চাই আপনি মিনাতেই হাদী যবেহ করুন এবং এটাই উত্তম অথবা মক্কায় যবেহ করে থাকুন। তবে মক্কার হারামের সীমানার বাইরে যবেহ করবেন না।

হাদী কুরবানী করার কাজ যখন আপনি শেষ করবেন, তখন আপনার মাথা হলোক করুন অথবা চুল ছোট করে ছেঁটে নিন। পুরুষদের জন্য হলোক করাই উত্তম, কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলোককারীদের জন্য তিনবার মাগফিরাতের দো‘আ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন:

«اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِلْمُحَلِّقِين، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِلْمُحَلِّقِين، اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِلْمُحَلِّقِين»

“হে আল্লাহ! আপনি হলোককারীদের ক্ষমা করুন।হে আল্লাহ! আপনি হলককারীদের ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! আপনি হলককারীদের ক্ষমা করুন।” এরপর তিনি কসরকারী তথা চুল ছোট করে যারা ছাঁটেন তাদের জন্য একবার দো‘আ করেছিলেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৭২৮ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩২০৮।]

আর মেয়েরা তাদের চুলের প্রত্যেক গোছা থেকে আংগুলের মাথা পরিমাণ কাটবে।

প্রিয় ভাই, কুরবানীর দিন আপনি যখন কংকর মারবেন, চুল হলোক করবেন কিংবা ছোট করে ছাঁটবেন,তখন ইহরামের কারণে যত কিছু আপনার ওপর হারাম ছিল, শুধুমাত্র স্ত্রী ছাড়া আর সব কিছু আপনার জন্য হালাল হয়ে যাবে। একে বলা হয় ‘প্রথম তাহাল্লুল’ (প্রথম হালাল)। এ সময় আপনার জন্য সুন্নাত হলো পাক সাফ হয়ে সুগন্ধি লাগানো এবং সুন্দর পোষাক পরিধান করা।

আপনি যখন কংকর নিক্ষেপ, হাদী কুরবানী এবং মাথার চুল হলোক কিংবা ছোট করার কাজ শেষ করবেন, তখন বায়তুল্লায় তাওয়াফ করার উদ্দেশ্যে মক্কার দিকে রওয়ানা করুন। এ তাওয়াফকে বলা হয় তাওয়াফে ইফাদা বা তাওয়াফে যিয়ারাহ। এ তাওয়াফ করার নিয়ম উমরার তওয়াফ কিংবা তাওয়াফে কুদুমের নিয়মের মতই, যা ইতোপূর্বে আপনার উদ্দেশ্যে আমরা বর্ণনা করেছি। তবে এতে রমল (সবেগে পদ সঞ্চালন) ও ইদতিবা’ (ইহরামের কাপড় ডান বোগলের নিচ দিয়ে পরা এবং ডান কাঁধ খালী রাখা) নেই। পবিত্রাবস্থায় সাধারণ পোষাক পরে আপনি এ তাওয়াফ করবেন। তাওয়াফ করা শেষ হলে মাকামে ইবরাহীমের পেছনে দু’রাকাত সালাত পড়বেন। বেশির ভাগ সময় ভীড়ের কারণে হাজীদের পক্ষে মাকামে ইবরাহীমের পেছনে সালাত পড়া কষ্টকর হয়ে থাকে। তাই উত্তম হলো কিছুটা দূরে সরে যাওয়া, যাতে হাজী সাহেব তাওয়াফকারীদের কষ্ট না দেন এবং তাওয়াফকারীগণও তাকে কষ্ট না দেয়। এরপর পূর্ব বর্ণনানুযায়ী যমযমের পানি পান করুন। তারপর সা‘ঈর স্থানে গিয়ে সাফা-মারওয়ায় সাত চক্কর সা‘ঈ করুন, উমরার সা‘ঈর মতই, যা আপনার উদ্দেশ্যে ইতঃপূর্বে আমরা বর্ণনা করেছি। তামাত্তুকারীর ওপর এ সা‘ঈ ওয়াজিব। কেননা তার প্রথম সা‘ঈ ছিল উমরার জন্য। আর এ সা‘ঈ হলো হজের সা‘ঈ।

ক্বিরান ও ইফরাদকারীদের একটিই মাত্র সা‘ঈ করতে হয়। যদি তারা ইতোপূর্বে তাওয়াফে কুদুমের পর এ সা‘ঈ আদায় করে থাকেন, তাহলে সেটিই তার জন্য যথেষ্ট এবং ঈদের দিন তাওয়াফে ইফাদার পর তার আর সা‘ঈ করতে হবে না। আর ক্বিরান ও ইফরাদকারী যদি তাওয়াফে কুদুমের পর সা‘ঈ না করে থাকেন, তাহলে তাওয়াফে ইফাদার পর তার ওপর সা‘ঈ করা ওয়াজিব।

দু’একদিন দেরী করে তাওয়াফে ইফাদা আদায় করা কিংবা হজের কাজ শেষ করে মক্কা থেকে যখন বেরিয়ে যাওয়ার নিয়ত করবেন তখন বিদায়ী তাওয়াফের সাথে মিলিতভাবে তা আদায় আপনার জন্য জায়েয এবং শেষোক্ত ক্ষেত্রে একটিই তাওয়াফ আদায় করবেন।

প্রিয় হাজী ভাই, আপনি যদি জামরায়ে ‘আকাবায় রমী করেন, হলোক কিংবা কসর করেন, তাওয়াফে ইফাদা ও এরপর সা‘ঈ করেন যদি আপনার ওপর সা‘ঈ করা ওয়াজিব হয়ে থাকে, তাহলে এর দ্বারা আপনার ওপর ইহরামের কারণে যত কিছু হারাম ছিল সবই এমন কি স্ত্রীও হালাল হয়ে যাবে। আর একে বলা হয় ‘দ্বিতীয় তাহাল্লুল’ (দ্বিতীয় হালাল)।

উত্তম হলো: এ চারটি কাজ ধারাবাহিকভাবে করা, যেভাবে আমরা আপনার উদ্দেশ্যে বর্ণনা করেছি। প্রথমত: জামরায়ে আকাবায় রমী করবেন, তারপর কুরবানী করবেন, এরপর চুল হলোক বা ছোট করবেন, তরপর বায়তুল্লার তাওয়াফ করবেন এবং এরপর সা‘ঈ করবেন যদি তামাত্তুকারী হন কিংবা তাওয়াফে কুদুমের সা‘ঈ করেননি এমন ক্বিরানকারী বা ইফরাদকারী হন। এভাবেই বিদায় হজের সময় আপনার নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদায় করেছিলেন।

কিন্ত এ চারটি কাজের ধারাবাহিকতা ভঙ্গ করে একটির আগে অন্যটি করলে আপনার কোনো অসুবিধা নেই। আর আল্লাহ চাহেত আপনার হজ শুদ্ধ হবে। এ ব্যাপারে কুরবানীর দিন সাহাবায়ে কেরামের পক্ষ থেকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি একের পর এক প্রশ্ন পেশ করা হয়েছিলো। তাদের কেউ কুরবানীর আগে হলোক করেছিলেন, কেউ রমী করার আগে তাওয়াফ করেছিলেন এবং এভাবে আরো ঘটনা সংঘটিত হয়েছিলো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে তাদেরকে বলেছিলেন: “করুন, এতে কোনো অসুবিধা নেই”। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাদের কষ্ট লাঘবকরণ, তাদের প্রতি তাঁর দয়া ও করুণা। হে আল্লাহ! আপনি যা সহজ করে দিয়েছেন এবং যে শরী‘আত প্রণয়ন করেছেন সে জন্য সকল প্রশংসা আপনারই প্রাপ্য।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন