hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

হজ, উমরাহ ও যিয়ারতের পদ্ধতি [মাসনূন দো‘আসহ]

লেখকঃ হাজী ও উমরাকারীদের হাদিয়া অফিসস্থ ইসলামী গবেষণা পরিষদ, মক্কা

২২
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মসজিদ যিয়ারত
প্রিয় মুসলিম ভাই, আল্লাহ যখন আপনার হজ পূর্ণ করার সামর্থ দিয়েছেন এবং যে মসজিদুল হারামে একটি সালাত আদায় অন্যত্র একলক্ষ সালাত আদায়ের সমতুল্য, সেখানে সালাত আদায়ের তাওফীক দিয়ে আপনার প্রতি অনুগ্রহ করলেন, তখন এ মহান অনুগ্রহ পরিপূর্ণ করার অংশ হলো রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লামের হিজরতস্থল, পবিত্র ও বরকতময় মদীনা নগরীতে অবস্থিত রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মসজিদ যিয়ারত করা। ফলে আপনি মসজিদে নববীতে সালাত আদায় করতে পারবেন, যাতে একটি সালাত আদায় করা মসজিদুল হারাম ব্যতীত অন্য যে কোনো মসজিদে এক হাজার সালাত আদায়ের সমতুল্য।

প্রিয় ভাই, আপনাকে কয়েকটি বিষয় স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি:

পবিত্র মসজিদে নববী যিয়ারত করার সাথে হজের কোনো সম্পর্ক নেই। কেননা এর যিয়ারত হজের কোনো ওয়াজিব বা রুকন কোনোটাই নয়। বৎসরের সব সময়ই তা মুস্তাহাব। হারামাইন শরীফাইনের দেশে আপনার অবস্থানের কারণেই এখানে সে সম্পর্কে আলোকপাত করা সংগতিপূর্ণ।

যে হাদীসে বলা হয়েছে: “যে হজ করেছে অথচ আমার যিয়ারত করলো না, সে আমাকে কষ্ট দিল।” সে হাদিসটি বানোয়াট, যার বর্ণনা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুদ্ধ নয়।

যিয়ারতকারী ভাই, আপনি যখন মসজিদে নববীতে প্রবেশ করবেন, তখন আপনার জন্য মুস্তাহাব হলো- প্রবেশের সময় আগে ডান পা দেওয়া ও বলা :

«بِسْمِ اللهِ وَالصَّلاةُ وَالسَّلامُ عَلى رَسُوْلِ الله، اللّهُمَّ افْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ، أَعُوْذُ باِللهِ الْعَظِيمِ وَ وَجْهِهِ الْكَرِيْمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيْمِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ»

এ হাদীসের অর্থ ইতোপূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে। [দেখুন পৃ. নং ১৩]

অন্যান্য মসজিদের মতই মসজিদে নববীর তাহিয়্যাতের দু’রাকাত সালাত আদায় করবেন। এতে আপনি আপনার ইচ্ছানুযায়ী দো‘আ করবেন। উত্তম হলো তা রওযা শরীফে (রিয়াদুল জান্নায়) আদায় করা। এ স্থানটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিম্বর ও তাঁর যে হুজরায় এখন তাঁর কবর রয়েছে - এর মাঝামাঝি অবস্থিত। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«مَا بَيْنَ بَيْتِي وَمِنْبَرِي رَوْضَةٌ مِنْ رِيَاضِ الْجَنَّةِ وَمِنْبَرِي عَلَى حَوْضِي»

“আমার ঘর ও মিম্বরের মাঝখানের স্থানটি জান্নাতের বাগিচা সমূহের একটি বাগিচা। আর আমার মিম্বর আমার হাওযের উপর অবস্থিত।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৩৩৫ ও সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৪৩৬।]

আর আপনি এমনটি করতে না পারলে হারামের ভেতর যে স্থানেই মুনাসিব হয়, সেখানে দু’রাকাত পড়ে নিন।

৪. এরপর আপনি সালাম দেওয়ার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবরের কাছে গমন করুন। আদব শিষ্টাচারের সাথে স্বর নিচু রেখে তাঁর কবরের সামনে আপনি দাঁড়ান। এরপর এ বলে সালাম দিন:

«السلام عليك أيها النبي و رحمة الله و بركاته، اللهم صل على محمد و على آل محمد كما صليت على إبراهيم و على آل إبراهيم إنك حميد مجيد . اللهم بارك على محمد و على آل محمد كما باركت على إبراهيم و على آل إبراهيم إنك حميد مجيد»

আর নিচের দো‘আটি যদি বলেন, তবে কোনো অসুবিধা নেই:

«أشهد أنك رسول الله حقاً، و أنك بلغت الرسالة و أديت الأمانة، و جاهدت في الله حق جهاده، و نصحت الأمة فجزاك الله عن أمتك أفضل ما جزى نبياً عن أمته»

“আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি সত্যই আল্লাহর রাসূল। নিশ্চয় আপনি বাণী প্রচার করেছেন, আমানত আদায় করেছেন, আল্লাহর পথে যথাযথভাবে জিহাদ করেছেন, উম্মতকে নসীহত করেছেন। আল্লাহ আপনাকে আপনার উম্মতের পক্ষ হতে সে সর্বোত্তম বিনিময় দান করুন, যা তিনি একজন নবীকে তার উম্মতের পক্ষ থেকে দিয়ে থাকেন”।

এটা বলায় কোনো দোষ নেই এজন্য যে, এসবই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গুণাবলীর অন্তর্গত।

এরপর কিছুটা এগিয়ে আবু বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহুকে সালাম করুন এবং রহমত, মাগফিরাত ও উত্তম বিনিময়ের যা কিছু তার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ তা দিয়ে তার জন্য দো‘আ করুন। এরপর এগিয়ে কিছুটা ডানে সরে উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহুকে সালাম করুন এবং রহমত, মাগফিরাত ও উত্তম বিনিময়ের যা কিছু তার জন্য মুনাসিব তা দিয়ে তার উদ্দেশ্যে দো‘আ করুন।

৫. প্রিয় ভাই, মসজিদে নববী যিয়ারতকারীদের কেউ কেউ এমন কিছু কাজ করে যা তাদের আদর্শ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিক্ষার পরিপন্থী, যে নবী মুহাম্মাদকে তারা তাঁর আদেশ ও নিষেধের ক্ষেত্রে মান্য করে থাকে। সুতরাং আপনি তাঁর সুন্নাত বিরোধীদের অন্তর্ভূক্ত হওয়া থেকে সাবধান থাকুন। কোনো কোনো যিয়ারতকারী আবার আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় হুজরা বা এর জানালা মাসেহ করে এবং এর চারপাশে তাওয়াফ করে। কেউ কেউ আবার রাসূলের কাছে নিজের অভাব মোচন কিংবা রোগের আরোগ্য ইত্যাদি প্রার্থনা করে থাকে। এসবের কিছুই জায়েয নেই। যদি তা সঠিকই হতো, তাহলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে তা করার নির্দেশ দিতেন এবং আমাদের আগেই সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম আজমায়ী’ন তা করতেন।

৬. মহিলাদের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবর ও অন্য কারো কবর যিয়ারত জায়েয নেই। তবে মহিলারা মসজিদে নববী যিয়ারত করতে পারবে এবং এতে ইবাদাতও করতে পারবে। তারা নিজ স্থানে বসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর সালাম পাঠাবে। আর তারা যেখানেই থাকুক সে সালাম তাঁর কাছে পৌঁছবে।

প্রিয় যিয়ারতকারী ভাই, মদীনায় অবস্থান কালে পুরুষদের জন্য সুন্নাত হলো বাকী’ এর কবর যিয়ারত করা। বাকী'তে যাদের কবর রয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন তৃতীয় খলীফা উসমান ইবন ‘আফফান। পুরুষদের জন্য আরো সুন্নাত হলো হামযা রাদিয়াল্লাহু আনহু সহ ওহুদের শহীদ সাহাবাদের কবর যিয়ারত করা। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কবর যিয়ারত করেছেন এবং তাদের জন্য দো‘আ করেছেন। তাদের কবর যিয়ারতকালে তিনি বলতেন:

«السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الدِّيَارِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُسْلِمِينَ وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ لَلاَحِقُونَ يَرْحَمُ اللَّهُ الْمُسْتَقْدِمِينَ مِنَّا وَالْمُسْتَأْخِرِين أَسْأَلُ اللَّهَ لَنَا وَلَكُمُ الْعَافِيَةَ»

“হে কবরবাসী মুমিন, মুসলিমগণ; আপনাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ চাহেত আমরাও আপনাদের সাথে মিলিত হব। আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদেরকে আল্লাহ রহম করুন। আল্লাহর কাছে আমাদের জন্য এবং আপনাদের জন্য নিরাপত্তা কামনা করছি”। [এ দোয়াটি সহীহ মুসলিমের দু’টো হাদীস থেকে সংকলিত ।]

৮. যিয়ারতকারী ভাই ও বোনেরা, যে সকল স্থান যিয়ারত করা শরী‘আতে বৈধ তম্মধ্যে রয়েছে মসজিদে কুবা। “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাহনে চড়ে ও হেঁটে এ মসজিদ যিয়ারত করতেন এবং তাতে দু’রাকাত সালাত আদায় করতেন।” [ইবন উমার থেকে বুখারী ও মুসলিম এটি বর্ণনা করেছেন, দেখুন সহীহ বুখারী-১১৯৩, সহীহ মুসলিম-৩৪৫৬।] এতে সালাত পড়ার ফযীলত সম্পর্কে সাহল ইবন হানীফ থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَنْ تَطَهَّرَ في بَيْتِه ثُمَّ أَتَى مَسْجِدَ قُبَاء فَصَلَّى فِيْه صَلاةً كَانَ لَه كَأَجْرِ عُمْرَةٍ»

“যে ব্যক্তি নিজ গৃহে পবিত্রতা অর্জন করে মসজিদে কুবায় এসে সালাত পড়ে, তার একটি উমরাহ করার সাওয়াব হবে।” [নাসাঈ, ইবন মাজাহ, আহমাদ ও হাকেম কর্তৃক বর্ণিত । আলবানী সহীহ বলেছেন ।]

হজ ও উমরাহ পালনকারী ভাই!

এই বইয়ের শেষে এখন আপনাকে কিছু অসীয়ত করছি। সম্ভবত এদ্বারা আল্লাহ আপনাকে উপকৃত করবেন। পবিত্র ঘরের আঙিনা আনুগত্যের সহায়ক এবং নাফরমানী ও পাপ বিতাড়নকারী।

প্রথমত: মসজিদুল হারামে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়ে সচেষ্ট থাকুন। আগে ভাগে পৌঁছতে নিজেকে বাধ্য করুন। সালাতের মধ্যে যথাসম্ভব ধ্যানমগ্ন হওয়া ও বিনয়াবনত থাকার চেষ্টা করুন।

দ্বিতীয়ত: কুরআন পাঠ আল্লাহর নৈকট্য লাভের বড় উপায় সমূহের একটি। সুতরাং আপনার এ হজ ও উমরার মধ্যে কুরআনের কতকাংশ চয়ন করে তা পাঠ করুন, আপনার সাধ্যানুযায়ী আপনি তা ঠিক করুন।

তৃতীয়ত: মসজিদুল হারামে সালাত পড়া অন্য মসজিদে এক লক্ষ বার সালাত পড়ার চেয়ে উত্তম। অতএব, এখানে বেশি বেশি নফল ও সুন্নাত আদায়ে সচেষ্ট থাকুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এক ব্যক্তি এসে জান্নাতে তাঁর সাহচর্য প্রার্থনা করল। তিনি বললেন, “অধিক সাজদাহ দিয়ে আপনার ব্যাপারে আমাকে সহায়তা করুন”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২২।]

চতুর্থত: সকাল-সন্ধ্যার যিকিরসমুহ রীতিমত পাঠ করা কল্যাণকর কাজ। তাই এ যিকির গুলো মুখস্থ করার চেষ্টা করুন। এ বিষয়ে কিছু গ্রন্থ ও লিফলেট সংকলিত হয়েছে। যেমন, তম্মধ্যে একটি গ্রন্থ উচ্চ উলামা পরিষদের সদস্য শাইখ বকর ইবন আবদুল্লাহ আবু যায়েদ লিখেছেন।

পঞ্চমত: সুন্দর চরিত্র ও সুন্দর মোয়া’মেলার পরিচয় দিতে চেষ্টা করুন। গীবত, চোগলখুরী ও কষ্টদায়ক কথা বলে কারো মন্দ দিকটি উল্লেখ করা থেকে সতর্ক থাকুন। জেনে রাখুন, মক্কায় গোনাহ ও নাফরমানীর কাজ অন্যত্র গোনাহ ও নাফরমানী করার চেয়ে আল্লাহর কাছে ভয়াবহ ও মারাত্মক।

ষষ্ঠত: প্রিয় ভাই, আপনি আল্লাহর কাছে তাওবা করার প্রতি দ্রুত অগ্রসর হোন। আপনার জীবনের নতুন একটি অধ্যায় উম্মুক্ত করুন, যা হবে ঈমান ও পূণ্য কাজে ভরপুর। আর এ বরকতময় সফরটা যেন কল্যাণের সে দরজায় পরিণত হয় যা আপনাকে আপনার স্রষ্টা ও প্রভুর নিকটবর্তী করে দেবে।

সর্বশেষে: হজ ও উমরাপালনকারীদের হাদিয়াদান সংস্থা আপনাদের জন্য আল্লাহর কাছে দো‘আ করছে -তিনি যেন আপনাদের প্রচেষ্টার প্রতিদান দেন, আপনাদের হজ ও উমরাহ কবুল করেন, আপনাদেরকে স্বজনদের কাছে নিরাপদে ও বিত্তশালী হয়ে ফিরিয়ে নেন এবং আমাদের ও আপনাদের সকলকেই দ্বীনের ওপর অবিচল থাকার এবং উত্তম কাজ করার তাওফীক দেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন