hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মৃত্যু ও কবর সম্পর্কে করণীয় ও বর্জনীয়

লেখকঃ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল

৫০
কুরআন নাযিলের উদ্দেশ্য
আল্লাহ তায়ালা কী উদ্দেশ্যে কুরআন অবতীর্ণ করেছেন? এ জন্য কি যে,এর দ্বারা তাবিজ বানিয়ে শিশু এবং রোগীদের গলায় ঝুলানো হবে?

নাকি এ জন্য যে,গোরস্থানে মৃতদের উদ্দেশ্যে পড়ে তার মাধ্যমে কাঠ মোল্লাদের অর্থ লুটের মাধ্যম বানানো হবে?

না এ উদ্দেশ্যে যে,ধান্দাবাজরা পাত্রের গায়ে লিখে তা ধুয়ে ধুয়ে রোগী এবং যাদুগ্রস্থদের পান করাবে?

না এ উদ্দেশ্যে যে,ফাঁকিবাজ এবং অলস লোকেরা কুরআনের মাধ্যমে রাস্তায় বসে ভিক্ষা করবে?

না এ লক্ষ্যে যে,পুরো কুরআন এক পৃষ্ঠায় ছেপে শোভা বর্ধনের উদ্দেশ্যে ঘরের দেয়ালে এবং বরকত লাভের উদ্দেশ্যে তাবিজ বানিয়ে গলায় লটকিয়ে রাখা হবে?

না এ উদ্দেশ্যে যে,মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করে আয়াতুল কুরসী এবং সূরা নাস-ফালাকের তাবিজ পাঁচ টাকা দরে বিক্রি করা হবে?

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কি এ উদ্দেশ্যে কুরআন অবতীর্ণ করেছেন যে,কাওয়ালী পাঠকারী এবং গায়করা শুধু সুললিত কন্ঠে তা পাঠ করবে আর শ্রোতারা তাদের বাদ্যযন্ত্র ও সুরের মূর্ছনায় পাগলপারা হয়ে নাচ-গানের বাজার বসাবে?

এ উদ্দেশ্যে কি কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে যে,যার মাধ্যমে আমাদের পূর্বসুরীরা বিশ্ব জয় করেছিলেন সেই কুরআনকে ঘরের এক কোনে গিলাফবদ্ধ করে রেখে দেয়া হবে এবং ধুলো-বালি ও ময়লার আস্তরণের নিচে তা চাপা পড়ে থাকবে? হে আল্লাহ, তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর।

এই মহাগ্রন্থ তুমি এ সব উদ্দেশ্যে অবতীর্ণ কর নি। অবতীর্ণ করেছো এ জন্যে যে, মানব জাতি এই কুরআনের আয়াত সমূহ গবেষণা করবে। এটা তো মানবতার জন্য উজ্জল আলোকবর্তীকা। তুমি এই গ্রন্থ নাযিল করেছ বিশ্ব মানবতার জন্যে সুসংবাদদাত এবং সতর্ককারী হিসেবে।

তুমি কুরআন অবতীর্ণ করেছ প্রাণস্পন্দিত জীবিত মানুষের জন্যে। নির্জীব মানুষের জন্যে নয়। তুমি কুরআন অবতীর্ণ করেছ এ উদ্দেশ্যে যে,মুসলিমরা একে তাদের পরিবার, সমাজ তথা জীবনের সর্ব ক্ষেত্রে সংবিধান হিসেবে গ্রহণ করবে।

বাস্তব জীবনে আমরা কুরআন পরিত্যাগ করেছি। জীবনের পথ পরিক্রমায় কুরআনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও কর্মসূচী থেকে সরে গেছি অনেক দূরে। কুরআনের বিরুদ্ধে আমাদের আচরণ সীমালঙ্ঘণ করেছে। যার ফলে আমরা নিপতিত হয়েছি পশ্চাদপদতা,দূর্ভাগ্য ও লাঞ্চনা- গাঞ্চনার গহীন খাদে।

কুরআনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও মর্মবাণীকে আমরা এমন বিস্ময়কর প্রক্রিয়ায় পাল্টে ফেলেছি যার নজীর পূর্ববর্তী জাতি সমূহে পাওয়া যায় না। পূর্ববর্তী উম্মতগণ আসমানী গ্রন্থসমূহকে অস্বীকার করেছিল বটে,কিন্তু কোন উম্মতের ব্যাপারে একথা শোনা যায় নি যে,তারা আসমানী গ্রন্থসমূহকে মৃত মানুষের পুঁজি হিসাবে গ্রহণ করেছিল।

আমরা কোটি কোটি মানুষকে লাগামহীন ভাবে ছেড়ে দিয়েছি যাদের দিক নির্দেশনা এবং তাবলীগের দায়িত্ব আমাদেরকে দেয়া হয়েছিল। ফলশ্রুতিতে তারা তৈরী করেছে যুদ্ধ এবং ধ্বংসের এমন অসংখ্য মরণাস্ত্র যা তাদের নিজেদের এবং আমাদের সকলের বিনাশ সাধন ও ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রায় চৌদ্দ শতাব্দী পূর্বে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের এই সুসংবাদ প্রদান করেছিলেনঃ

تَرَكْتُ فِيكُمْ أَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوا مَا تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا كِتَابَ اللَّهِ وَسُنَّةَ نَبِيِّهِ

“আমি তোমাদের মাঝে দুটি জিনিস রেখে গেলাম যে দুটিকে তোমরা দৃঢ়ভাবে ধারণ করলে অবশ্যই পথভ্রষ্ট হবে না। সে দুটি জিনিস হল আল্লাহর কিতাব এবং তার রাসূলের সুন্নত।” [মুয়াত্তা মালেক। অধ্যায়: তাকদীর সম্পর্কে মন্তব্য করা নিষেধ। হাদীস নং ৩৩৩৮। আল্লামা আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। দেখুন: তাহকীক মিশকাত, হাদীস নং ১৮৬]

আমাদের পূর্ব পুরুষগণ কুরআনের প্রকৃত মর্মবাণীকে অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে ধারণ করেছিলেন এবং নিজেদের জীবন ও কর্মের সংবিধান হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন বলেই তারা অতি অল্প সময়ে সারা বিশ্বের নেতৃত্ব ও বিশ্ব মানবতার পথ প্রদর্শকে পরিণত হয়েছিলেন। কুরআন তো আমরা প্রতিদিনই তেলওয়াত করি কিন্তু সে তেলাওয়াত আমাদের কন্ঠনালী অতিক্রম করে না। কুরআন পাঠ করি কিন্তু বুঝার চেষ্টা করি না গবেষণাও করি না এবং বাস্তব জীবনে আমরা কুরআনের শিক্ষাকে অনুসরণ করতে আগ্রীহ নই। আমাদের এই কুরআন তেলাওয়াতের ব্যাপারে জনৈক মনিষির এই উক্তিটিই প্রযোজ্যঃ

رُبَّ تَالٍ للقُرآنِ والقُرآنُ يَلعَنُه

“এমন অনেক কুরআন পাঠক রয়েছে কুরআন যাদের উপর অভিশম্পাত করে। ” উদাহরণ স্বরূপ,মুসলমানেরা কুরআনের এই আয়াতটি পড়ছেঃ

أَلَا لَعْنَةُ اللَّهِ عَلَى الظَّالِمِينَ

“সাবধান! আল্লাহর অভিশাপ জালিমদের উপর। ” [সূরা হুদ: ১১] অথচ সে কখনো কখনো নিজেই জালিমের ভূমিকায় অবর্তীণ হয়। নিজের জবান দ্বারাই নিজের উপর আল্লাহর অভিশাপ পতিত হচ্ছে কিন্তু এ ব্যাপারে তার কোন অনুভূতি নেই!

হে মুসলিম জনগোষ্ঠী,এখনো কি তোমাদের গাফলাতির ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার সময় হয় নি?সকল গোমরাহী ও ভ্রষ্টতার পংকিলতা থেকে নিজেদের আঁচল মুক্ত করার সুযোগ আসে নি?আমাদের আলেম সমাজ এ সকল বিদয়াতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা কখন করবে? এসব বিদয়াতের বিরুদ্ধে সংগ্রাম সূচনার সাহস যদি তাদের না থাকে তাহলে তাদের মাথা থেকে দস্তারে ফযীলত নামিয়ে রাখা উচিত অথবা কমপক্ষে ঐ সকল মানুষের সমর্থন দেয়া কর্তব্য যারা বিদয়াতের বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছে। কিন্তু আফসোস তো এখানেই যে,স্বয়ং ঐ সকল আলেমে দ্বীন নিজেরাই এ সব বিদয়াতকে নিজেদের রুটি-রুজির মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করে বসেছে! বরং এসব কাজের বিরোধীতাকারীদেরকে বিভিন্ন অপমানজনক ও ঘৃণ্য অভিযোগে অভিযুক্ত করতেও তারা পিছুপা হন না।

এ নাজুক পরিস্থিতিতে যখন আমরা বংশীয়,সমাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইত্যাদি চর্তুমূখী সমস্যা ও বিপদে পরিব্যাপ্ত তখন আমাদের কর্তব্য হবে আমাদের গভীর নিদ্রা থেকে জাগ্রত হওয়া। আল্লাহর কিতাবকে শক্ত হাতে ধারণ করা এবং গবেষণার মানষিকতা নিয়ে তা অধ্যয়ন করা সেই সাথে আল্লাহর এই কিতাবকে আমারদেরজ জীবন ও জগতের একমাত্র কর্মসূচী ও সংবিধান হিসাবে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করা।

এক ইসলামী চিন্তাবিদ বলেছেন:

“হে মুসলিম সম্প্রদায়! তোমরা আজ পর্যন্ত ধর্মের নামে কতিপয় নাম সর্বস্ব ঠিকাদার এবং স্বল্প বিদ্যার মোল্লাদের নিকট গোলাম হয়ে রয়েছ। তোমরা এখনো নিজেদের জীবন-দর্শন এবং জীবন পরিচালনার আইন-কানুনের ক্ষেত্রে কুরআনের হেকমত ও আদর্শ থেকে সাহায্য নিতে পার নি।

যদিও কুরআন তোমাদের জীবনের অভিষ্ট লক্ষ্য,তোমাদের শক্তি ও সাহসের উৎসমূল,কিন্তু এখন তা তোমাদের চঞ্চলমুখর জীবনের জন্য নয় বরং তা হল মৃতদের জন্য! যখন জীবনের সকল কাজ শেষ হয়ে তোমরা মৃত্যুপুরীর সীমান্তে প্রবেশ কর,যখন প্রাণ বায়ু বের হওয়ার সময় ঘনিয়ে আসে তখন তোমাদের নিকট এই কুরআন পড়া হয় যেন তোমরা সহজে মরতে পার! কি বিস্ময়ের কথা! যে কুরআন এসেছিল মৃত দেহে আত্মার সঞ্চার ঘটাতে,দূর্বল ও অসাড় শরীরে শক্তির উন্মেষ ঘটাতে সেই কুরআন পড়া হচ্ছে যাতে শান্তিতে মৃত্যু বরণ করা য়ায!

ইসলাম বিমুখকারী সকল বস্তাপচা তাকলীদ ও অন্ধ অনুকরণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা প্রয়োজন। আজ প্রয়োজন জাহেলী আরবের মুশরেকদের চেয়েও বড় মুশরিক কবর পূজারীদের সংশোধনের জন্যে শ্রম ব্যয় করা। যারা বিপদে পড়লে কবরের পচাঁ হাড্ডির দিকে ফরিয়াদের হাত বাড়ায়, নিজেদের আভাব মোচনের জন্য কবরের কাছে আবেদন-নিবেদন করে,কবরবাসীদেরকে বানায় আল্লাহ ও তাদের মাঝে ওসীলা বা মাধ্যম। তাদের নামে পশু জবাই করে এই আশায় যে,এ কবরবাসীরাই হয়তো ওদেরকে আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের ব্যবস্থা করে দিবে।

মহান আল্লাহ অসংখ্য আয়াতে ঐ সকল কবর পুজারীকে তিরষ্কার করেছেন যারা মৃত মানুষের নিকট সাহায্য ভিক্ষা করে নিজেদের বিবেকের বিলোপ সাধন করেছে এবং হত্যা করেছে নিজেদের চেতনাকে। তারা আল্লাহর কিতাবকে পরিত্যাগ করায় শিরক তাদের অন্তঃকরণে বদ্ধমূল হয়ে গেছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنْ يَدْعُو مِنْ دُونِ اللَّهِ مَنْ لَا يَسْتَجِيبُ لَهُ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَهُمْ عَنْ دُعَائِهِمْ غَافِلُونَ

“যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া এমন বস্তুকে ডাকে,যে কেয়ামত পর্যন্ত তার ডাকে সাড়া দিবে না,তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে হতে পারে? তারা তো তাদের ডাক থেকে বেখবর। ” [সূরা আহক্বাফঃ ৪৬] তিনি আরও বলেনঃ

لَهُ دَعْوَةُ الْحَقِّ وَالَّذِينَ يَدْعُونَ مِنْ دُونِهِ لَا يَسْتَجِيبُونَ لَهُمْ بِشَيْءٍ إِلَّا كَبَاسِطِ كَفَّيْهِ إِلَى الْمَاءِ لِيَبْلُغَ فَاهُ وَمَا هُوَ بِبَالِغِهِ وَمَا دُعَاءُ الْكَافِرِينَ إِلَّا فِي ضَلَالٍ

“সত্যের আহবান একমাত্র তাঁরই এবং এরা তাঁকে ছাড়া যাদেরকে ডাকে,তারা তাদের কোন কাজে আসে না;ওদের দৃষ্টান্ত সেরূপ,যেমন কেউ দু হাত পানির দিকে প্রসারিত করে যাতে পানি তার মুখে পৌঁছে যায়। অথচ পানি কোন সময় পৌঁছবে না। কাফেরদের যত আহবান তার সবই পথভ্রষ্টতা। [সূরা রাদঃ ১৪]

আজ প্রয়োজন শরীয়তে মুহাম্মদীকে বিদয়াতের আবর্জনা থেকে মুক্ত করে দ্বীনের মশাল হাতে উঠে দাঁড়ানো। এর মধ্যেই নিহিত রয়েছে দীনের উন্নয়ন ও অগ্রগতি। আলেম সমাজের নিকট উদাত্ত আহবান জানাই,আসুন, দীনের সংস্কার ও সংশোধনের জন্য আমরা আবারও উঠে দাঁড়াই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন