hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মৃত্যু ও কবর সম্পর্কে করণীয় ও বর্জনীয়

লেখকঃ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল

৫৯
কুরআনখানী ও ইসালে সওয়াব সম্পর্কে কাতার ইসলামী আদালতের মহামান্য বিচারপতি আল্লামা শায়খ আহমদ ইবনে হাজার রহ. এর একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য:
“...মৃতদের নিকট সওয়াব বখশানোর উদ্দেশ্যে কুরআনখানী করার প্রচলিত প্রথা বিদয়াত। যারা কুরআন ও সুন্নাহর সামান্য ঘ্রাণও পেয়েছেন তারা অবশ্যই জানেন যে,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,সাহাবায়ে কেরাম এবং সম্মানিত ইমামগণ থেকে এর কোন প্রমাণ নেই। ইসালে সওয়াব কিংবা কবরের নিকট কুরআনখানীকে যারা জায়েয বলেন তারাও স্পষ্ট কোন প্রমাণ পেশ করতে পারেন নি। এরা কেবল ফকীহগণের এ একটি কথাকেই ধরে বসে আছে যে,“সকল প্রকার সৎ আমল ও নেক কাজের সওয়াব মৃতদের উদ্দেশ্যে দান করা জায়েয। ”

সর্বপ্রকার শব্দটি একটি আম বা ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ যা সর্বপ্রকার আমলকে শামিল করে। ব্যাস,একথার উপর ভিত্তি করে পরবর্তীরা এটার পরিধী বাড়িয়ে দ্বীনের ভেতর এমন অনেক জিনিস ঢুকিয়ে দিয়েছে যা আল্লাহর পক্ষ থেকে অনুমদিত নয়। তারা এ বিষয়টিকে মৃতের পক্ষ থেকে বদলী হজ্জ আদায় করা এবং কোন কোন মাযহাব অনুসারে মৃতের পক্ষ থেকে রোযা কাযা করার উপর কিয়াস করে নিয়েছেন। (যেমন এটি ইমাম শাফেঈ রহ. এর পূর্বের মত আর ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহ. এর মাযহাব হল,কোন ব্যক্তি জীবিত থাকা অবস্থায় রোযা করার মান্নত করেছে কিন্তু তা পূরণ করার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে তাহলে তার পক্ষ থেকে রোযা আদায় করা যাবে)।

পরবর্তীকালের মানুষ কেউ অমুক শায়খের অভিমত,কেউ অমুক আলিমের বক্তব্য,কেউ অমুকের টিকাকে প্রমাণ হিসাবে গ্রহণ করে একথা একেবারে ভুলে গেছে যে,আল্লাহর কিতাব ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত সহীহ বা হাসান হাদীস ব্যতিরেকে অন্য কিছুই প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না।

আর আলেমগণের মতামতের ব্যাপারে কথা হল,একজন আলেম যত বড়ই হোক না কেন এবং তিনি জ্ঞানের যত উচ্চ স্তরে আসীন হোক না কেন;তার কথা কেবল ততটুকুই গ্রহণীয় যা কিতাব ও সুন্নাহর অনুকুলে হয়। এ ছাড়া তার সকল মতামত এবং সিদ্ধান্ত ভুল ও সঠিক উভয়টি হওয়ার সম্ভবনা রাখে। অবশ্য তা নির্ভূল প্রমাণিত হলে তিনি দ্বিগুণ সওয়াব এবং ভুল প্রমাণিত হলে একগুণ সওয়াবের অধিকারী হবেন। তবে যে সকল ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণিত হয়েছে,সে সকল ক্ষেত্রে অন্ধভাবে তার অনুসরণ করা কারও জন্য বৈধ নয়।

আর এ মূলনীতির প্রতি আমরা ইতোপূর্বে ইঙ্গিত দিয়েছি যে, ইসালে সওয়াবের মাসআলাটি যে বা যারা চালু করেছে তারা নিঃসন্দেহে একটি ভুল বিষয় চালু করেছেন তিনি যত বড়ই পণ্ডিত হোন না কেন। কেননা কুরআন পাঠ একটি ইবাদত। আর কোন ইবাদত ততক্ষণ পর্যন্ত করা যাবে না যতক্ষণ না তার স্বপক্ষে প্রমাণ পাওয়া যায়। অর্থাৎ আমাদের নিজেদের একথা বলার কোন অধিকার নেই যে,অমুক কাজটি বৈধ,অমুক কাজটি মুস্তাহাব বা ওয়াজিব। আমরা শুধু এতটুকু বলতে পারি যা আল্লাহ বলেছেন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত।

অতএব,যেহেতু মৃতের পক্ষ থেকে বদলী হজ্জ সম্পাদন করার ব্যাপারে ছহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে এবং রোযা পালনের বিষয়টি প্রমাণিত সেহেতু আমরা এদুটির বৈধতার কথা বলেছি।

আর যে সব বিষয়ে সহীহ হদীছ পাওয়া যায় না যেমন,মৃতের পক্ষ থেকে নামায পড়া,কুরআন পড়া,মৃতের জন্য মাতম করা,শোক দিবস পালন করা,চল্লিশা করা বা এ জাতীয় মনগড়া বিভিন্ন প্রথা ও অনুষ্ঠান পালনের আমরা পক্ষপাতি নই এবং তা বৈধ মনে করি না। সুতরাং কারো জন্য এ সকল দলীল বিহীন অনুষ্ঠানাদি পালন করা জায়েয নয়।

আবার এমনও হচ্ছে যে,হয়ত কোন আলেম সৎ নিয়তে বা অসতর্কতা বশতঃ কোন ভুল কাজ করে ফেলেছেন কিন্তু তার অনুপস্থিতিতে তার কোন ভক্ত বা অনুসারী হাদীস, তাফসির এবং পূর্ববর্তী মনীষীদের বক্তব্যকে যাচাই-বাছাই করার কষ্টসাধ্য কর্মে জড়িত না হয়ে ঐ আলেম বা বুযুর্গের উক্তি বা কাজকে অলংঘনীয় এবং চুড়ান্ত বলে মনে-প্রাণে মেনে নিয়েছে। উদাহরণ সরূপ বলা যায়,কতিপয় আলেম বিদয়াতকে পাঁচ ভাগে বিভক্ত করেছেন। যথাঃ ১. ওয়াজিব (আবশ্যক) ২. মুস্তাহাব (উত্তম) ৩. হাসানা (ভাল) ৪. সায়্যেয়াহ (খারাপ) ৫. হারাম (নিষিদ্ধ) অথচ এ চিন্তা তাদের মস্তিস্কে উদিত হয়নি যে,বিদয়াতের প্রকারভেদ থেকে কত রকম যে বিভ্রান্তি ও গোমরাহী সৃষ্টি হয়ে সমাজে বিস্তার লাভ করবে! আর বাস্তবে হয়েছেও তাই। পরবর্তীতে মানুষ একথাই প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করে বেদ্আতে হাসানার নামে অসংখ্য বিদয়াত ও গুমরাহী দিয়ে তাদের বই-পুস্তক ভরে ফেলেছে। এসব বিদয়াতের মধ্যে মৃতদের উদ্দেশ্যে কুরআন খানীর বিদয়াত অন্যতম।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের যুগে অসংখ্য মুসলিম ইহধাম ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন,অগণিত সাহাবা এবং তাবেঈগণের ওফাত হয়েছে কিন্তু এমন একটি বর্ণনাও পাওয়া যায় না যে,কেউ কোন মৃতের উদ্দেশ্যে কবরে,মসজিদে কিংবা কোন মাহফিলে কুরআন পাঠের আয়োজন করেছেন। আশ্চর্যের ব্যাপার হল, যে সকল লোক নিজেদেরকে ইমাম মালেক ও ইমাম শাফেঈ রহ. এর মাযহাবের অনুসারী বলে দাবি করেন,তারাই ইসালে সওয়াবকে বৈধ ভাবেন। অথচ উক্ত ইমামদ্বয় এটি বৈধতার বিপক্ষে ছিলেন যা কিনা এসব অনুসারীগণ আবার নিজেরা স্বীকারও করেন! ইমাম খাযেন রহ. এবং ইমাম ইবনে কাসীর রহ. প্রমুখ তাদের এ প্রসঙ্গটি সুস্পষ্টভাবে আলোচনা করেছেন। এছাড়াও অন্য সকল তাফসীর এবং হাদীসের ব্যাখ্যা গ্রন্থ প্রমাণ করে যে,ইমাম শাফেঈ ও ইমাম মালেক এটাকে বৈধ মনে করতেন না।

পরবর্তী যুগের লোকেরা কিতাব, সুন্নাহ এবং সাহাবীগণের অনুসরণীয় রীতি ও কর্মপন্থাকে পাশ কাটিয়ে সম্পূর্ণ দলীল বিহীনভাবে ইসালে সওয়াবের পক্ষে বৈধতার সার্টিফিকেট দিয়েছেন। যেমনটি ইতোপূর্বে বলেছি,এরা নিজেদের আলেম ও বুযুর্গদের উক্তি এবং অভিমতকে দলীল হিসেবে ধরে এ কুপ্রথার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে। আর যখন কারও অভিমতকে সমর্থন করতে চায় তখন তারা নিজেদেরকে মুজতাহিদ হিসেবে জাহির করেন এবং কিছু আয়াত ও হাদীসের ভাবার্থকে প্রমাণ হিসাবে পেশ করে সেগুলো যত দূর্বলই হোক না কেন। তাদেরকে যখন আল্লাহর কিতাব ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাতের দিকে আহবান জানিয়ে বলা হয়, এর কথা,ওর কথা বাদ দিয়ে কুরআন ও হাদীসকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করুন তখন তারা বলে,আমাদের তো যোগ্যতা নাই.. আমাদের কাজ শুধু তাকলীদ করা,আমাদের জন্যে ইজতিহাদ (গবেষণা) করা জায়েয় নেই,ইজতিহাদের দরজা কয়েক শতাব্দী আগেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে.. ইত্যাদি ইত্যাদি কথা।

মোট কথা হল,সওয়াব রেসানী করা এবং মৃত মানুষের উদ্দেশ্যে কবরের নিকট গিয়ে অথবা মসজিদ ও মাহফিলে কুরআনখানীর আয়োজন করা সম্পূর্ণ বিদয়াত এবং গোমরাহী মূলক কাজ। এ সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা অতি আবশ্যক। হাদীস শরীফে এসেছেঃ

يَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَإِنَّ كُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ

“(দীনের ক্ষেত্রে) নতুন আবিস্কৃত বিষয়াদীর ব্যাপারে তোমরা সাবধান হও। কারণ,প্রতিটি নতুন জিনিসই বিদয়াত আর প্রতিটি বিদয়াতই গোমরাহী। [মুসনাদ আহমাদ (৩৫/৯) প্রখ্যাত সাহাবী ইরবায ইবনে সারিয়া রা. থেকে বর্ণিত।]

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. হতে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও ঘোষণা করেছেনঃ

مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ فَهُوَ رَدّ

“যে আমাদের এ ব্যাপারে তথা ইসলামী শরীয়তে এমন নতুন কিছু আবিস্কার করল যা এর অন্তর্ভুক্ত নয় তা পরিত্যাজ্য। ” [সহীহ বুখারী,অধ্যায়: কোন আমলকারী অথবা শাষক যদি ইজতেহাদ করে ফায়সালা দেয় এবং না জানার কারণে সেটা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ফয়সালার বিপরীত প্রমাণিত হয় তবে তা প্রত্যাখ্যাত। মুসলিম, অধ্যায়: অন্যায় বিধান ভেঙ্গে ফেলা।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন