hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মৃত্যু ও কবর সম্পর্কে করণীয় ও বর্জনীয়

লেখকঃ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল

৫৬
চার মাযহাবের সম্মানিত আলেমদের অভিমত:
১) হানাফী মাযহাবঃ

ক) মোল্লা আলী কারী হানাফী রহ. “শরহুল ফিকহিল আকবার” কিতাবের ১১০ পৃষ্ঠায় লিখেছেন:

“ইমাম আবু হানীফা,ইমাম মালেক এবং ইমাম আহমদের একটি বর্ণনা অনুপাতে কবরের নিকট কুরআন পাঠ করা হারাম। কেননা,এটা একটা বিদয়াত যার ব্যপারে কোন হাদীস বর্ণিত হয়নি। ‘এহয়াউল উলূম’ গ্রন্থের ব্যাখ্যাকারের বক্তব্যও তাই।

খ) ইমাম বারকুভী তার “আত ত্বারীকাহ আল মুহাম্মাদীয়া” গ্রন্থের ৩য় পরিচ্ছদে বিভিন্ন বিদয়াত এবং বাতিল কর্ম-কাণ্ড সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন,মানুষ সওয়াবের কাজ ভেবে বিভিন্ন গুনাহের দিকে ধাবিত হয়। উদাহরণ স্বরূপ, মানুষ মারা গেলে পানাহারের আয়োজন করা,ইসালে সওয়াব উপলক্ষ্যে কুরআন পাঠকারীদের পয়সা দেয়া,বিভিন্ন তাসবীহ পাঠ করা-এগুলো সবই বিদয়াত। এমন কি মৃত ব্যক্তি যদি জীবিত থাকা অবস্থায় এসব করার ওসীয়তও করে যায় তবুও সেগুলো পালন করা বিদয়াত এবং বাতিল কাজ। এসব কাজের বিনিময় গ্রহণ করা হারাম এবং এসব যারা পাঠ করবে তারাও গুনাহগার হবে।

গ) ইমাম ইয বিন আব্দুস সালাম রাহ. কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল,কুরআন তেলাওয়াতের সওয়াব মৃত্যের উদ্দেশ্যে বখশানো হলে তা কি মৃতের নিকট পৌঁছে?

সম্মানিত ইমাম জবাবে বলেছেন,“তেলাওয়াতকারীর সওয়াব কেবল তেলায়াতকারীর জন্যই নির্ধারিত। সে ছাড়া কারও নিকট এ সওয়াব পৌঁছে না।” তিনি আরও বলেন,“আমি অবাক হই,কিছু লোক স্বপ্নের মাধ্যমে এর দলীল পেশ করে থাকেন অথচ স্বপ্ন কখনো দলীল হতে পারে না। ”

২) মালেকী মাযহাব:

মালেকী মাযহাবের আলেম শাইখ ইবনে আবি হামযা রহ. বলেন: “কবরের নিকট কুরআন পড়া সুন্নত নয় বরং বিদয়াত।” (আল মাদখাল)

মালেকী মাযহাবের আরেক আলেম শাইখ দারদীর তার প্রসিদ্ধ ‘শরহুস সগীর’ গ্রন্থের ১৮০ পৃষ্ঠায় লিখেন,“কারও মৃত্যু বরণ করার সময় তার পাশে কুরআনের কোন অংশ পাঠ করা এবং মৃত্যু বরণ করার পর কবরের নিকট কুরআন পাঠ করা মাকরূহ। কোননা,সালাফে-সালেহীন তথা সাহাবা-তাবেঈগণ এমনটি আদৌ করেন নি। তাদের নিয়ম ছিল,মৃতের জন্য রহমত ও মাগফিরাতের দু’আ করা এবং কবর থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা। ”

৩) শাফেঈ মাযহাব

কুরআনখানীর সওয়াব মৃতের নিকট না পৌঁছার ব্যাপারে ইমাম শাফেঈ রহ. কুরআনের এই আয়াত দ্বারা প্রমাণ গ্রহণ করেনঃ

وَأَنْ لَيْسَ لِلْإِنْسَانِ إِلَّا مَا سَعَى

“এবং মানুষ তাই পায় যা সে করে। ” (সূরা নজম: ৪৯) এবং নিম্নোক্ত হাদীস দ্বারাও প্রমাণ গ্রহণ করেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

إِذَا مَاتَ الْإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلَّا مِنْ ثَلَاثَةٍ ...

“মানুষ মৃত্যু বরণ করলে তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়, তিনটি ব্যতীত...। ” (সহীহ মুসলিম)

ইমাম নববী (রাহ:) এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন,“কুরআন পাঠ করে তার সওয়াব মৃতের উদ্দেশ্যে বখশানো,মৃতের পক্ষ থেকে নামায আদায় করা ইত্যাদি ব্যাপারে ইমাম শাফেঈ (রাহ:) সহ অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মত হল,এগুলোর সওয়াব মৃতের নিকট পৌঁছে না। ”ইমাম নববী সহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যা গ্রন্থে এ বিষয়টি একাধিক স্থানে উল্লেখ করেছেন।

’শরহুল মিনহাজ’গ্রন্থে ইব্ন নাহবী লিখেছেন,আমাদের মত হল,কুরআন পাঠের সওয়াব মৃত ব্যক্তির নিকট পৌঁছে না। ”

৪) হাম্বলী মাযহাব:

ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহ. কাউকে কবরের নিকট কুরআন পড়তে দেখলে বলতেন,“হে লোক,কবরের নিকট কুরআন পড়া তো বিদয়াত। ”এটাই পূর্ববর্তী অধিকাংশ আলেমের অভিমত এবং ইমাম আহমদ রাহ. এর ফতোয়াও তাই। তিনি বলতেন: القراءةُ على المَيّتِ بعدَ مَوتِه بِدٌعَةٌ “মৃত্যু বরণের পর মৃতের উদ্দেশ্যে কুরআন পাঠ করা বিদয়াত।”

তিনি আরও বলতেন,সালাফে-সালেহীন যখন নফল নামায পরতেন বা নফল হজ্জ আদায় করতেন অথবা কুরআন পাঠ করতেন তখন সেগুলোর সওয়াব মৃত মুসলিমদের উদ্দেশ্যে বখশানো তাদের নিয়ম ছিল না। অতএব,পূর্ববর্তী মনিষীদের অনুসৃত পথ থেকে দূরে যাওয়া আমাদের উচিত নয়।

এখন অবশিষ্ট থাকল এই হাদীসটি: “তোমরা তোমাদের মৃতদের উদ্দেশ্যে সূরা ইয়াসীন পাঠ কর। ”এ হাদীসটির বর্ণনাসূত্র مضطرب الإسناد (গোলযোগপূর্ণ) এবং তার বর্ণনাসূত্রে এমন বর্ণনাকারী রয়েছে যার পরিচয় জানা যায় না ( مجهول السند )। সুতরাং হাদীসটি ছহীহ নয়।

সহীহ ধরে নেওয়া হলেও তার অর্থ এ নয় যে,মৃত মানুষের উদ্দেশ্যে সূরা ইয়াসীন পাঠ কর বরং অর্থ হলো,তোমাদের যখন কেউ মৃত্যু শয্যায় শায়ীত হয় তখন তার নিকট সুরা ইয়াসীন পাঠ কর।

ইমাম আবুল হাসান বা’লী বর্ণনা করেন,মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্তে অসহায় অবস্থায় কোন মানুষের পাশে কুরআন পড়া কিংবা কুরআন পড়ে তার সওয়াব বখশানো কোনটাই বৈধ নয়। কেননা,এ ব্যাপারে কুরআন-হাদীস থেকে কোন দলীল বা পূর্ববর্তী আলেমগণ থেকে কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না।

কোন ব্যক্তি পয়সার বিনিময়ে কুরআন পাঠ করলে তার সওয়াব তো সে নিজেই পাবে না তাহলে মৃতের উদ্দেশ্যে সে কী উৎসর্গ করবে?মৃত ব্যক্তি কেবল পায় শুধু তার নিজস্ব আমলের সওয়াব। অধিকাংশ আলিমের ফতোয়া হচ্ছে, কুরআন পাঠ করার সওয়াব কেবল পাঠকই পাবে;মৃতের নিকট তা পৌঁছবে না।

কুরআন পড়ার সওয়াব মৃতের নিকট যদি পৌঁছতই তবে একজন মুসলিমও জাহান্নামে যেতনা। কেননা,আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা. হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

" مَنْ قَرَأَ حَرْفًا مِنْ كِتَابِ اللَّهِ فَلَهُ بِهِ حَسَنَةٌ وَالْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا لَا أَقُولُ الم حَرْفٌ وَلَكِنْ أَلِفٌ حَرْفٌ وَلَامٌ حَرْفٌ وَمِيمٌ حَرْفٌ "

“যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ পাঠ করবে সে একটি নেকী লাভ করবে। আর একটি নেকী দশটি নেকীর সমান। আমি এ কথা বলব না যে, ‘‘আলীফ-লাম-মীম’ একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ,লাম একটি হরফ এবং মীম একটি হরফ। ” [আত তারগীব ওয়াত তারহীব ২/২৯৬]

কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমেই যদি কবরবাসীর শাস্তি লাঘব হয়ে যায়,তবে গোরস্থানে কুরআন তেলাওয়াতের টেপ রেকোর্ডার বসিয়ে রাখা হয় না কেন?রেকোর্ডকৃত তেলাওয়াত দিন-রাত গোরস্থানে বাজতে থাকবে আর তেলাওয়াতের আওয়াজে কবরবাসীদের সকল আজাব মাফ হয়ে যাবে! এরই মাধ্যমে বিবেকবানের বিবেকের উদয় হওয়া উচিত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন