HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
মাসিক আত-তাহরীক প্রশ্নোত্তর ২০১৫
লেখকঃ দারুল ইফতা
-সজল*, হারুপুর, রাজশাহী।
উত্তর : সালাম সর্বাবস্থায় আদান-প্রদান করা যায়। রাসূল (ছাঃ) ছালাতরত অবস্থাতেও হাতের ইশারায় সালামের উত্তর দিতেন (আবুদাউদ হা/৯২৬, তিরমিযী হা/৩৬৭, মিশকাত হা/৯৯১)। কেবল পেশাব-পায়খানার সময় তিনি সালামের উত্তর দিতেন না, বরং বের হয়ে উত্তর দিতেন (যদি সেই ব্যক্তি মওজুদ থাকত) (বুখারী হা/৩৩৭, আবুদাঊদ হা/১৭, মিশকাত হা/৪৬৭, ৫৩৫)।
*[আরবীতে ইসলামী নাম রাখুন ও সেই নামে ডাকুন (স.স.)]।
উত্তর : সালাম সর্বাবস্থায় আদান-প্রদান করা যায়। রাসূল (ছাঃ) ছালাতরত অবস্থাতেও হাতের ইশারায় সালামের উত্তর দিতেন (আবুদাউদ হা/৯২৬, তিরমিযী হা/৩৬৭, মিশকাত হা/৯৯১)। কেবল পেশাব-পায়খানার সময় তিনি সালামের উত্তর দিতেন না, বরং বের হয়ে উত্তর দিতেন (যদি সেই ব্যক্তি মওজুদ থাকত) (বুখারী হা/৩৩৭, আবুদাঊদ হা/১৭, মিশকাত হা/৪৬৭, ৫৩৫)।
*[আরবীতে ইসলামী নাম রাখুন ও সেই নামে ডাকুন (স.স.)]।
-আব্দুল মুত্তালিব
বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : মুমিনের কাফন-দাফন সম্পন্ন করা অত্যন্ত নেকীর কাজ। মুসলমানগণ নেকীর আশায় উক্ত কাজে শরীক হয়ে থাকে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন মুসলিম মাইয়েতকে গোসল করাল। অতঃপর তার গোপনীয়তাসমূহ গোপন রাখল, আল্লাহ তাকে চল্লিশ বার ক্ষমা করবেন। যে ব্যক্তি মাইয়েতের জন্য কবর খনন করল, অতঃপর দাফন শেষে তা ঢেকে দিল, আল্লাহ তাকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত পুরস্কার দিবেন জান্নাতের একটি বাড়ীর সমপরিমাণ, যেখানে আল্লাহ তাকে রাখবেন। যে ব্যক্তি মাইয়েতকে কাফন পরাবে, আল্লাহ তাকে ক্বিয়ামতের দিন জান্নাতের মিহি ও মোটা রেশমের পোষাক পরাবেন’(বায়হাক্বী ৩/৩৯৫; ত্বাবারাণী, ছহীহ আত-তারগীব হা/৩৪৯২, সনদ ছহীহ)। কিন্তু হিন্দু বা অমুসলিমদের উক্ত নিয়ত থাকে না। তবে সাধারণভাবে তারা ছোট-খাট যেকোন সহযোগিতা করতে পারে।
বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : মুমিনের কাফন-দাফন সম্পন্ন করা অত্যন্ত নেকীর কাজ। মুসলমানগণ নেকীর আশায় উক্ত কাজে শরীক হয়ে থাকে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন মুসলিম মাইয়েতকে গোসল করাল। অতঃপর তার গোপনীয়তাসমূহ গোপন রাখল, আল্লাহ তাকে চল্লিশ বার ক্ষমা করবেন। যে ব্যক্তি মাইয়েতের জন্য কবর খনন করল, অতঃপর দাফন শেষে তা ঢেকে দিল, আল্লাহ তাকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত পুরস্কার দিবেন জান্নাতের একটি বাড়ীর সমপরিমাণ, যেখানে আল্লাহ তাকে রাখবেন। যে ব্যক্তি মাইয়েতকে কাফন পরাবে, আল্লাহ তাকে ক্বিয়ামতের দিন জান্নাতের মিহি ও মোটা রেশমের পোষাক পরাবেন’(বায়হাক্বী ৩/৩৯৫; ত্বাবারাণী, ছহীহ আত-তারগীব হা/৩৪৯২, সনদ ছহীহ)। কিন্তু হিন্দু বা অমুসলিমদের উক্ত নিয়ত থাকে না। তবে সাধারণভাবে তারা ছোট-খাট যেকোন সহযোগিতা করতে পারে।
৪
প্রশ্ন (৩/১২৩) : ইমাম জুম‘আ ব্যতীত কোন ছালাত আদায় করে না এবং সিগারেট-জর্দা-গুল ব্যবহার করে। এক্ষণে আমাদের করণীয় কি?আমাদের মসজিদের ইমাম জুম‘আ ব্যতীত কোন ছালাত আদায় করে না এবং সিগারেট-জর্দা-গুল ব্যবহার করে। তাকে সরিয়ে দেওয়াও সম্ভব নয়। এক্ষণে আমাদের করণীয় কি?
-আব্দুল্লাহ
মাটিয়ানী, পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও।
উত্তর : ইমাম যদি জুম‘আ ব্যতীত পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত তরককারী হয়, তবে তার পিছনে ছালাত সিদ্ধ হবে না। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘মুমিন ও কাফির-মুশরিকের মধ্যে পার্থক্য হ’ল ছালাত’ (মুসলিম হা/১৩৪, মিশকাত হা/৫৬৯)। প্রশ্নে উল্লিখিত অবস্থায় ইমামকে নছীহত করতে হবে অথবা এড়িয়ে যেতে হবে। আর ঐ ইমামের ছালাত কবুল হয় না মুছল্লীরা যাকে শারঈ কারণে অপসন্দ করে (তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১১২২, ২৮)।
-আব্দুল্লাহ
মাটিয়ানী, পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও।
উত্তর : ইমাম যদি জুম‘আ ব্যতীত পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত তরককারী হয়, তবে তার পিছনে ছালাত সিদ্ধ হবে না। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘মুমিন ও কাফির-মুশরিকের মধ্যে পার্থক্য হ’ল ছালাত’ (মুসলিম হা/১৩৪, মিশকাত হা/৫৬৯)। প্রশ্নে উল্লিখিত অবস্থায় ইমামকে নছীহত করতে হবে অথবা এড়িয়ে যেতে হবে। আর ঐ ইমামের ছালাত কবুল হয় না মুছল্লীরা যাকে শারঈ কারণে অপসন্দ করে (তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১১২২, ২৮)।
অনেকে বলে থাকে যে, রাতের অন্ধকারে ছালাত আদায় করা ঠিক নয়, বরং আলো জ্বালিয়ে ছালাত আদায় করতে হবে। এ বক্তব্য সঠিক কি-না জানিয়ে বাধিত করবেন।
-মুহসিন আলম, ছোট বনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : বক্তব্যটি ভিত্তিহীন। আলো ছালাতের কবুল হওয়ার কোন শর্ত নয়। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) স্বীয় গৃহে অনেক সময় অন্ধকারে ছালাত আদায় করেছেন (বুখারী হা/৩৮২; মুসলিম হা/৫১২, মিশকাত হা/৭৮৬, ‘সুৎরা’ অনুচ্ছেদ)। তবে মসজিদে আলোর ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক। যাতে সাপ-বিচ্ছু বা অন্য কিছুর ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং মুছল্লী সহজে জামা‘আতে শরীক হ’তে পারে।
-মুহসিন আলম, ছোট বনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : বক্তব্যটি ভিত্তিহীন। আলো ছালাতের কবুল হওয়ার কোন শর্ত নয়। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) স্বীয় গৃহে অনেক সময় অন্ধকারে ছালাত আদায় করেছেন (বুখারী হা/৩৮২; মুসলিম হা/৫১২, মিশকাত হা/৭৮৬, ‘সুৎরা’ অনুচ্ছেদ)। তবে মসজিদে আলোর ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক। যাতে সাপ-বিচ্ছু বা অন্য কিছুর ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং মুছল্লী সহজে জামা‘আতে শরীক হ’তে পারে।
-রায়হানা, পাবনা।
উত্তর : পর্দার মধ্যে মহিলা পরিবেশে প্রয়োজন নেই। অন্য সময়ে যথাসাধ্য ঢেকে রাখবে। কেননা দু’হাতের তালু ও চেহারা ব্যতীত মহিলাদের সর্বাঙ্গ সতরের অন্তর্ভুক্ত (আবুদাঊদ হা/৪১০৪; মিশকাত হা/৪৩৭২)। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সাধ্যমত আল্লাহ্কে ভয় কর’ (তাগাবুন ৬৪/১৬)।
উত্তর : পর্দার মধ্যে মহিলা পরিবেশে প্রয়োজন নেই। অন্য সময়ে যথাসাধ্য ঢেকে রাখবে। কেননা দু’হাতের তালু ও চেহারা ব্যতীত মহিলাদের সর্বাঙ্গ সতরের অন্তর্ভুক্ত (আবুদাঊদ হা/৪১০৪; মিশকাত হা/৪৩৭২)। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সাধ্যমত আল্লাহ্কে ভয় কর’ (তাগাবুন ৬৪/১৬)।
৭
প্রশ্ন (৬/১২৬) : কথা কাটাকাটি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের কারণে ৬/৭ মাস বান্ধবীর সাথে কথা না বলার কারণে কি আমি গোনাহগার হচ্ছি?কথা কাটাকাটির কারণে এবং পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের কারণে ৬/৭ মাস যাবৎ বান্ধবীর সাথে কথা বলিনি। এক্ষণে এর জন্য কি আমি গোনাহগার হচ্ছি?
-রাশীদা, নাটোর।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তিন দিনের বেশী কোন মুসলমানের জন্য অপর মুসলিম হ’তে সম্পর্ক ছিন্ন রাখা হালাল নয়। তাদের উভয়ের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে প্রথমে সালাম করে’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫০২৭ ‘সালাম’ অনুচ্ছেদ)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, যে ব্যক্তি তিন দিনের বেশী সম্পর্ক ছিন্ন রাখবে এবং ঐ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে’ (আহমাদ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫০৩৫)। অতএব মন থেকে দূরত্ব পরিহার করতে হবে এবং সম্ভবপর যেকোন মাধ্যমে দ্রুত তার সাথে যোগাযোগ করে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে নিতে হবে।
-রাশীদা, নাটোর।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তিন দিনের বেশী কোন মুসলমানের জন্য অপর মুসলিম হ’তে সম্পর্ক ছিন্ন রাখা হালাল নয়। তাদের উভয়ের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে প্রথমে সালাম করে’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫০২৭ ‘সালাম’ অনুচ্ছেদ)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, যে ব্যক্তি তিন দিনের বেশী সম্পর্ক ছিন্ন রাখবে এবং ঐ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে’ (আহমাদ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫০৩৫)। অতএব মন থেকে দূরত্ব পরিহার করতে হবে এবং সম্ভবপর যেকোন মাধ্যমে দ্রুত তার সাথে যোগাযোগ করে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে নিতে হবে।
৮
প্রশ্ন (৭/১২৭) : কোন ব্যক্তি ওয়ায মাহফিলে যাওয়ার ইচ্ছা করে সামনের পা বাড়িয়ে পিছনের পা তোলার আগেই সকল গোনাহ মাফ হয়ে যায়?জনৈক ব্যক্তি বলেন, কোন ব্যক্তি ওয়ায মাহফিলে যাওয়ার ইচ্ছা করে সামনের পা বাড়িয়ে পিছনের পা তোলার আগেই সকল গোনাহ মাফ হয়ে যায়। একথার কোন সত্যতা আছে কি?
-মাহবূব, শঠীবাড়ী, রংপুর।
উত্তর : এইরূপ শব্দে হাদীছ পাওয়া যায় না। তবে নেকীর উদ্দেশ্যে পূর্ণ ইখলাছের সাথে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক কোন আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করলে অসংখ্য নেকী পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, আল্লাহ তা‘আলা নেকী ও পাপ লিখেন। অতএব যে ব্যক্তি কোন নেকী করার ইচ্ছা করে তা বাস্তবায়ন করতে পারে না, আল্লাহ তার পূর্ণ নেকী লিখে থাকেন। আর যে ব্যক্তি তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়, তার আমলনামায় ১০ থেকে ৭শ’র অধিক নেকী লেখা হয়’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৩৭৪ ‘আল্লাহর রহমত প্রশস্ত’ অনুচ্ছেদ, ‘দো‘আ’ অধ্যায়)। তিনি আরো বলেন, যে ব্যক্তি ইলম অর্জনের জন্য রাস্তায় বের হ’ল, আল্লাহ তাঁর জান্নাতের রাস্তা সহজ করে দিবেন (মুসলিম, মিশকাত হা/২০৪)। তিনি বলেন, ‘যখন কোন কওম আল্লাহ্কে স্মরণ করার জন্য একত্রিত হয়ে বসে, তখন ফেরেশতাগণ তাদেরকে ঘিরে নেন, আল্লাহর রহমত তাদেরকে ঢেকে ফেলে এবং তাদের উপর শান্তি বর্ষিত হয়। আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর পাশের ফেরেশতাগণের সামনে তাদের প্রশংসামূলক আলোচনা করেন’(মুসলিম হা/২৭০০; ছহীহুল জামে‘ হা/৫৫০৯; মিশকাত হা/২২৬১)।
-মাহবূব, শঠীবাড়ী, রংপুর।
উত্তর : এইরূপ শব্দে হাদীছ পাওয়া যায় না। তবে নেকীর উদ্দেশ্যে পূর্ণ ইখলাছের সাথে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক কোন আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করলে অসংখ্য নেকী পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, আল্লাহ তা‘আলা নেকী ও পাপ লিখেন। অতএব যে ব্যক্তি কোন নেকী করার ইচ্ছা করে তা বাস্তবায়ন করতে পারে না, আল্লাহ তার পূর্ণ নেকী লিখে থাকেন। আর যে ব্যক্তি তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়, তার আমলনামায় ১০ থেকে ৭শ’র অধিক নেকী লেখা হয়’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৩৭৪ ‘আল্লাহর রহমত প্রশস্ত’ অনুচ্ছেদ, ‘দো‘আ’ অধ্যায়)। তিনি আরো বলেন, যে ব্যক্তি ইলম অর্জনের জন্য রাস্তায় বের হ’ল, আল্লাহ তাঁর জান্নাতের রাস্তা সহজ করে দিবেন (মুসলিম, মিশকাত হা/২০৪)। তিনি বলেন, ‘যখন কোন কওম আল্লাহ্কে স্মরণ করার জন্য একত্রিত হয়ে বসে, তখন ফেরেশতাগণ তাদেরকে ঘিরে নেন, আল্লাহর রহমত তাদেরকে ঢেকে ফেলে এবং তাদের উপর শান্তি বর্ষিত হয়। আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর পাশের ফেরেশতাগণের সামনে তাদের প্রশংসামূলক আলোচনা করেন’(মুসলিম হা/২৭০০; ছহীহুল জামে‘ হা/৫৫০৯; মিশকাত হা/২২৬১)।
৯
প্রশ্ন (৮/১২৮) : স্কুল-কলেজে নাচ-গানসহ বিভিন্ন অনৈসলামিক কর্মকান্ডের পাপের ভার কি কেবল বর্তমান পরিচালকদের নাকি প্রতিষ্ঠাতার আমলনামাতেও যুক্ত হবে?জনৈক দানশীল ধার্মিক ব্যক্তি কিছু স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠার পর মারা গেছেন। বর্তমানে সেগুলিতে নাচ-গানসহ বিভিন্ন অনৈসলামিক কর্মকান্ড হয়ে থাকে। এক্ষণে এসব পাপের ভার কি কেবল বর্তমান পরিচালকদের না উক্ত প্রতিষ্ঠাতার আমলনামাতেও যুক্ত হবে?
-আব্দুল্লাহ
সোহাগদল, নেছারাবাদ, পিরোজপুর।
উত্তর : যেহেতু প্রতিষ্ঠাতা মারা যাওয়ার পর এসব কার্যকলাপ শুরু হয়েছে, সেহেতু তিনি এর জন্য দায়ী হবেন না। বরং বর্তমান পরিচালকগণ এর জন্য গুনাহগার হবে। আল্লাহ বলেন, ‘একজনের পাপের বোঝা আরেকজন বইবে না’ (আন‘আম ৬/১৬৪)। তবে যদি এগুলির পিছনে প্রতিষ্ঠাতার সমর্থন ছিল বলে প্রমাণিত হয়, তবে তিনিও দায়ী হবেন।
-আব্দুল্লাহ
সোহাগদল, নেছারাবাদ, পিরোজপুর।
উত্তর : যেহেতু প্রতিষ্ঠাতা মারা যাওয়ার পর এসব কার্যকলাপ শুরু হয়েছে, সেহেতু তিনি এর জন্য দায়ী হবেন না। বরং বর্তমান পরিচালকগণ এর জন্য গুনাহগার হবে। আল্লাহ বলেন, ‘একজনের পাপের বোঝা আরেকজন বইবে না’ (আন‘আম ৬/১৬৪)। তবে যদি এগুলির পিছনে প্রতিষ্ঠাতার সমর্থন ছিল বলে প্রমাণিত হয়, তবে তিনিও দায়ী হবেন।
আমার জানা মতে, হিন্দুরা যেমন সিঁদুর ব্যবহার করে স্বামীর মঙ্গলের জন্য, মুসলিমদের মাঝেও নাকফুল পরিধানের নীতি এরূপ কারণেই এসেছে। এক্ষণে মহিলাদের জন্য এটা ব্যবহার করা শরী‘আত সম্মত হবে কি?
-হাফীযুর রহমান
মহাদেবপুর, নওগাঁ।
উত্তর : উক্ত বক্তব্য ভুল। কোন মুসলিম মহিলাই স্বামীর মঙ্গলের জন্য নাকফুল পরে না। বরং এটি নারীদের অলংকার বিশেষ। যা তারা তাদের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার জন্য পরিধান করে থাকে। অতএব নাকফুল ব্যবহারে শরী‘আতে কোন বাধা নেই (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ২৪/৩৬)। আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘স্বর্ণ ও রেশমী কাপড় আমার উম্মতের নারীদের জন্য হালাল করা হয়েছে এবং পুরুষদের জন্য হারাম করা হয়েছে’ (ইবনু মাজাহ হা/৩৫৯৫, আবুদাঊদ হা/৪০৫৭, মিশকাত হা/৪৩৯৪)। উল্লেখ্য, মেয়েদের কান ফুটানোর বিষয়টিও জায়েয আছে। জাহেলী যুগে এটা করা হ’ত। কিন্তু ইসলামী যুগে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এটাতে কোন আপত্তি করেননি (ফিক্বহুস সুন্নাহ পৃঃ ২/৩৪)।
-হাফীযুর রহমান
মহাদেবপুর, নওগাঁ।
উত্তর : উক্ত বক্তব্য ভুল। কোন মুসলিম মহিলাই স্বামীর মঙ্গলের জন্য নাকফুল পরে না। বরং এটি নারীদের অলংকার বিশেষ। যা তারা তাদের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার জন্য পরিধান করে থাকে। অতএব নাকফুল ব্যবহারে শরী‘আতে কোন বাধা নেই (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ২৪/৩৬)। আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘স্বর্ণ ও রেশমী কাপড় আমার উম্মতের নারীদের জন্য হালাল করা হয়েছে এবং পুরুষদের জন্য হারাম করা হয়েছে’ (ইবনু মাজাহ হা/৩৫৯৫, আবুদাঊদ হা/৪০৫৭, মিশকাত হা/৪৩৯৪)। উল্লেখ্য, মেয়েদের কান ফুটানোর বিষয়টিও জায়েয আছে। জাহেলী যুগে এটা করা হ’ত। কিন্তু ইসলামী যুগে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এটাতে কোন আপত্তি করেননি (ফিক্বহুস সুন্নাহ পৃঃ ২/৩৪)।
-মান্না সরকার
পাঁচবিবি, জয়পুরহাট।
উত্তর: রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে, তখন তার সমস্ত আমল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কেবল তিনটি আমল ব্যতীত। (১) ছাদাক্বায়ে জারিয়াহ। (যেমন মসজিদ, মাদরাসা, ইয়াতীমখানা, রাস্তা ও বাঁধ নির্মাণ, অনাবাদী জমিকে আবাদকরণ, সুপেয় পানির ব্যবস্থাকরণ, দাতব্য চিকিৎসালয় ও হাসপাতাল স্থাপন বই ক্রয় করে বা ছাপিয়ে বিতরণ, বৃক্ষরোপণ ইত্যাদি)। (২) ইলম, যা দ্বারা মানুষ উপকৃত হয়। (যা মানুষকে নির্ভেজাল তাওহীদ ও ছহীহ সুন্নাহর পথ দেখায় এবং যাবতীয় শিরক ও বিদ‘আত হ’তে বিরত রাখে। উক্ত উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে শিক্ষাদান করা, ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে সহযোগিতা প্রদান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আমল সম্পন্ন বই-প্রবন্ধ লেখা, ছাপানো ও বিতরণ করা এবং এজন্য অন্যান্য স্থায়ী প্রচার মাধ্যম স্থাপন ও পরিচালনা করা ইত্যাদি)। (৩) সুসন্তান, যে তার জন্য দো‘আ করে’। (মৃতের জন্য সর্বোত্তম হাদিয়া হ’ল সুসন্তান, যে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, ছাদাক্বা করে, তার পক্ষ হ’তে হজ্জ করে ইত্যাদি)। (মুসলিম হা/১৬৩১, মিশকাত হা/২০৩)।
অন্য বর্ণনায় রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘মৃত্যুর পর কবরে থাকা অবস্থায় বান্দার সাতটি আমল জারী থাকে। (১) দ্বীনী ইলম শিক্ষা দান করা (২) নদী-নালা প্রবাহিত করা (৩) কূপ খনন করা (৪) খেজুর তথা ফলবান বৃক্ষ রোপণ করা (৫) মসজিদ নির্মাণ করা (৬) কুরআন বিতরণ করা (৭) এমন সন্তান রেখে যাওয়া, যে পিতার মৃত্যুর পর তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে’ (মুসনাদ বাযযার হা/৭২৮৯; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান; ছহীহুল জামে‘ হা/৩৬০২)। এটি পূর্বের হাদীছের ব্যাখ্যা স্বরূপ।
পাঁচবিবি, জয়পুরহাট।
উত্তর: রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে, তখন তার সমস্ত আমল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কেবল তিনটি আমল ব্যতীত। (১) ছাদাক্বায়ে জারিয়াহ। (যেমন মসজিদ, মাদরাসা, ইয়াতীমখানা, রাস্তা ও বাঁধ নির্মাণ, অনাবাদী জমিকে আবাদকরণ, সুপেয় পানির ব্যবস্থাকরণ, দাতব্য চিকিৎসালয় ও হাসপাতাল স্থাপন বই ক্রয় করে বা ছাপিয়ে বিতরণ, বৃক্ষরোপণ ইত্যাদি)। (২) ইলম, যা দ্বারা মানুষ উপকৃত হয়। (যা মানুষকে নির্ভেজাল তাওহীদ ও ছহীহ সুন্নাহর পথ দেখায় এবং যাবতীয় শিরক ও বিদ‘আত হ’তে বিরত রাখে। উক্ত উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে শিক্ষাদান করা, ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে সহযোগিতা প্রদান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আমল সম্পন্ন বই-প্রবন্ধ লেখা, ছাপানো ও বিতরণ করা এবং এজন্য অন্যান্য স্থায়ী প্রচার মাধ্যম স্থাপন ও পরিচালনা করা ইত্যাদি)। (৩) সুসন্তান, যে তার জন্য দো‘আ করে’। (মৃতের জন্য সর্বোত্তম হাদিয়া হ’ল সুসন্তান, যে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, ছাদাক্বা করে, তার পক্ষ হ’তে হজ্জ করে ইত্যাদি)। (মুসলিম হা/১৬৩১, মিশকাত হা/২০৩)।
অন্য বর্ণনায় রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘মৃত্যুর পর কবরে থাকা অবস্থায় বান্দার সাতটি আমল জারী থাকে। (১) দ্বীনী ইলম শিক্ষা দান করা (২) নদী-নালা প্রবাহিত করা (৩) কূপ খনন করা (৪) খেজুর তথা ফলবান বৃক্ষ রোপণ করা (৫) মসজিদ নির্মাণ করা (৬) কুরআন বিতরণ করা (৭) এমন সন্তান রেখে যাওয়া, যে পিতার মৃত্যুর পর তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে’ (মুসনাদ বাযযার হা/৭২৮৯; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান; ছহীহুল জামে‘ হা/৩৬০২)। এটি পূর্বের হাদীছের ব্যাখ্যা স্বরূপ।
১২
প্রশ্ন (১১/১৩১) : যে উদ্দেশ্যে মানত করা হয়েছিল, তা পূরণ না হলে মানত আদায় করতে হবে? আর যে বস্ত্তর মানত করা হয়েছিল তার পরিবর্তে সমমানের বস্ত্ত দান করা যাবে?যে উদ্দেশ্য পূরণের জন্য মানত করা হয়েছিল, তা পূরণ হয়নি। এক্ষণে মানত আদায় করতে হবে কি? আর যে বস্ত্ত দান করার মানত করা হয়েছিল তার পরিবর্তে সমমানের বস্ত্ত দান করা যাবে কি?
-মি‘রাজুল ইসলাম, কানাডা।
উত্তর : উদ্দেশ্য পূরণ না হ’লে মানত আদায় করতে হবে না (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা, ফৎওয়া নং ৭৬৪২)। কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই সমস্ত আমল নিয়তের উপরে নির্ভরশীল এবং প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য তাই হবে, যার সে নিয়ত করবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১)। দ্বিতীয়তঃ যে জিনিসের মানত মেনেছে সেটাই আদায় করতে হবে, যদি তা আল্লাহর আনুগত্যপূর্ণ কাজ হয়ে থাকে (বুখারী, মিশকাত হা/৩৪২৭)। সমমানের অন্য বস্ত্ত দ্বারা আদায় করা যাবে না। না পারলে কাফফারা দিতে হবে। তা হ’ল দশজন অভাবগ্রস্তকে মধ্যম মানের খাদ্য অথবা বস্ত্র দান করা অথবা একজন (মুমিন) ক্রীতদাস মুক্ত করা অথবা তিনদিন (একটানা) ছিয়াম রাখা (মায়েদাহ ৮৯, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৪২৯)।
-মি‘রাজুল ইসলাম, কানাডা।
উত্তর : উদ্দেশ্য পূরণ না হ’লে মানত আদায় করতে হবে না (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা, ফৎওয়া নং ৭৬৪২)। কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই সমস্ত আমল নিয়তের উপরে নির্ভরশীল এবং প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য তাই হবে, যার সে নিয়ত করবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১)। দ্বিতীয়তঃ যে জিনিসের মানত মেনেছে সেটাই আদায় করতে হবে, যদি তা আল্লাহর আনুগত্যপূর্ণ কাজ হয়ে থাকে (বুখারী, মিশকাত হা/৩৪২৭)। সমমানের অন্য বস্ত্ত দ্বারা আদায় করা যাবে না। না পারলে কাফফারা দিতে হবে। তা হ’ল দশজন অভাবগ্রস্তকে মধ্যম মানের খাদ্য অথবা বস্ত্র দান করা অথবা একজন (মুমিন) ক্রীতদাস মুক্ত করা অথবা তিনদিন (একটানা) ছিয়াম রাখা (মায়েদাহ ৮৯, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৪২৯)।
১৩
প্রশ্ন (১২/১৩২) : গোসল কি ওযূর বিকল্প হ’তে পারে? কেউ যদি ভুলবশতঃ কেবল গোসল করে ছালাত আদায় করে, তবে তা কবুল হবে কি?-নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
চরকুড়া, কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ।
উত্তর : ছালাত কবুল হওয়ার জন্য ওযূ শর্ত (মায়েদাহ ৫/৬)। অতএব গোসল ওযূর বিকল্প হবে না। ওযূ না করে গোসল করলে ছালাতের জন্য পুনরায় ওযূ করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, বায়ু নিঃসরণের পর ওযূ না করা পর্যন্ত আল্লাহ তোমাদের ছালাত কবুল করবেন না (বুখারী হা৬৯৫৪/, মুসলিম হা/২২৫)। এছাড়া ওযূ করার পর সর্বাঙ্গ ধৌত করাই গোসলের সুন্নাতী নিয়ম (বুখারী হা/২৪৮, মুসলিম হা/৩১৬, মিশকাত হা/৪৩৫)। অতএব ওযূ ব্যতীত স্রেফ গোসল করে ছালাত আদায় করলে পুনরায় ওযূ করে তা আদায় করতে হবে।
চরকুড়া, কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ।
উত্তর : ছালাত কবুল হওয়ার জন্য ওযূ শর্ত (মায়েদাহ ৫/৬)। অতএব গোসল ওযূর বিকল্প হবে না। ওযূ না করে গোসল করলে ছালাতের জন্য পুনরায় ওযূ করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, বায়ু নিঃসরণের পর ওযূ না করা পর্যন্ত আল্লাহ তোমাদের ছালাত কবুল করবেন না (বুখারী হা৬৯৫৪/, মুসলিম হা/২২৫)। এছাড়া ওযূ করার পর সর্বাঙ্গ ধৌত করাই গোসলের সুন্নাতী নিয়ম (বুখারী হা/২৪৮, মুসলিম হা/৩১৬, মিশকাত হা/৪৩৫)। অতএব ওযূ ব্যতীত স্রেফ গোসল করে ছালাত আদায় করলে পুনরায় ওযূ করে তা আদায় করতে হবে।
১৪
প্রশ্ন (১৩/১৩৩) : যাকাত ফান্ডের অর্থ মসজিদের সম্প্রসারণ, ইমাম ও মুওয়াযযিনের বেতন ইত্যাদি খাতে ব্যয় করা যাবে?যাকাত ফান্ডের অর্থ ছহীহ আক্বীদা আমলের প্রচারের স্বার্থে নির্মিত মসজিদের সম্প্রসারণ, ইমাম ও মুওয়াযযিনের বেতন ইত্যাদি খাতে ব্যয় করা যাবে কি?
-ডা. মানছূর আলী
তাহেরপুর, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : আল্লাহ রাববুল ‘আলামীন যাকাত বণ্টনের যেসব খাত উল্লেখ করেছেন, মসজিদ তার অন্তর্ভুক্ত নয় (তওবা ৯/৬০)। অতএব যাকাতের টাকা দিয়ে মসজিদ সম্প্রসারণ করা যাবে না (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৩৭৬, ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, মাসআলা নং ৩৬৮)। ইমাম বা মুওয়াযযিন অভাবগ্রস্থ হ’লে তাদেরকে দেওয়া যাবে। কিন্তু বেতন হিসাবে দেওয়া যাবে না। স্মর্তব্য যে, ইমাম-মুওয়াযযিন হচ্ছেন সমাজের সম্মানিত ব্যক্তি। তাদের দায়-দায়িত্ব সমাজের উপর ন্যস্ত। সুতরাং সমাজের লোকদের উচিত সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্মানজনক ভাতা বা বেতনের ব্যবস্থা করা (আবুদাঊদ হা/৩৫৮৮, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৩৭৪৮)।
-ডা. মানছূর আলী
তাহেরপুর, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : আল্লাহ রাববুল ‘আলামীন যাকাত বণ্টনের যেসব খাত উল্লেখ করেছেন, মসজিদ তার অন্তর্ভুক্ত নয় (তওবা ৯/৬০)। অতএব যাকাতের টাকা দিয়ে মসজিদ সম্প্রসারণ করা যাবে না (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৩৭৬, ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, মাসআলা নং ৩৬৮)। ইমাম বা মুওয়াযযিন অভাবগ্রস্থ হ’লে তাদেরকে দেওয়া যাবে। কিন্তু বেতন হিসাবে দেওয়া যাবে না। স্মর্তব্য যে, ইমাম-মুওয়াযযিন হচ্ছেন সমাজের সম্মানিত ব্যক্তি। তাদের দায়-দায়িত্ব সমাজের উপর ন্যস্ত। সুতরাং সমাজের লোকদের উচিত সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্মানজনক ভাতা বা বেতনের ব্যবস্থা করা (আবুদাঊদ হা/৩৫৮৮, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৩৭৪৮)।
১৫
প্রশ্ন (১৪/১৩৪) : আল্লাহ তা‘আলা একদিন জিবরীল (আঃ)-কে একজন আল্লাহভীরু ব্যক্তি সহ একটি শহর ধ্বংস করার নির্দেশ দানের বর্ণনাটির সত্য?আল্লাহ তা‘আলা একদিন জিবরীল (আঃ)-কে কয়েকটি শহর ধ্বংস করতে বললে তিনি ঘুরে এসে বললেন, শহরগুলির একটিতে একজন আল্লাহভীরু ব্যক্তি রয়েছেন। কিন্তু তিনি তাঁকে সহই শহরটি ধ্বংস করার নির্দেশ দিলেন। বর্ণনাটির সত্যতা জানিয়ে বাধিত করবেন।
-মুস্তাফীযুর রহমান, পার্বতীপুর, দিনাজপুর।
উত্তর : এ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ, যা বিভিন্ন গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে (শু‘আবুল ঈমান হা/৭১৮৯; মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/১২১৫৬; মিশকাত হা/৫১৫২)। এর সনদে উবায়েদ বিন ইসহাক্ব ও আম্মার বিন সাইফ নামক দু’জন দুর্বল রাবী রয়েছেন (বিস্তারিত দ্রঃ আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/১৯০৪; হায়ছামী ও হাফেয ইরাক্বীও বর্ণনাটিকে যঈফ বলেছেন)।
-মুস্তাফীযুর রহমান, পার্বতীপুর, দিনাজপুর।
উত্তর : এ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ, যা বিভিন্ন গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে (শু‘আবুল ঈমান হা/৭১৮৯; মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/১২১৫৬; মিশকাত হা/৫১৫২)। এর সনদে উবায়েদ বিন ইসহাক্ব ও আম্মার বিন সাইফ নামক দু’জন দুর্বল রাবী রয়েছেন (বিস্তারিত দ্রঃ আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/১৯০৪; হায়ছামী ও হাফেয ইরাক্বীও বর্ণনাটিকে যঈফ বলেছেন)।
১৬
প্রশ্ন (১৫/১৩৫) : আযানের সময় বিভিন্ন মসজিদের যেকোন একটির উত্তর দিলেই হবে, না সবগুলিরই উত্তর দিতে হবে?আযানের সময় বিভিন্ন মসজিদের আযান শোনা যায়। এক্ষণে যেকোন একটির উত্তর দিলেই যথেষ্ট হবে, না সবগুলিরই উত্তর দিতে হবে?
-মূসা, সাঘাটা, গাইবান্ধা।
উত্তর : একটির উত্তর দিলেই যথেষ্ট হবে। এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যখন তোমরা আযান শুনবে, তখন মুওয়াযযিন যা বলে তদ্রূপ বল’... (মুসলিম, মিশকাত হা/৬৫৭)। অন্যত্র তিনি এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি মুওয়ায্যিনের পিছে পিছে আযানের বাক্যগুলি অন্তর থেকে পাঠ করে..., সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৬৫৮)। উল্লেখ্য যে, ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ’ বলার পরে ‘ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বলা যাবে না।
-মূসা, সাঘাটা, গাইবান্ধা।
উত্তর : একটির উত্তর দিলেই যথেষ্ট হবে। এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যখন তোমরা আযান শুনবে, তখন মুওয়াযযিন যা বলে তদ্রূপ বল’... (মুসলিম, মিশকাত হা/৬৫৭)। অন্যত্র তিনি এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি মুওয়ায্যিনের পিছে পিছে আযানের বাক্যগুলি অন্তর থেকে পাঠ করে..., সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৬৫৮)। উল্লেখ্য যে, ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ’ বলার পরে ‘ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বলা যাবে না।
-আযীম সরকার, সাভার, ঢাকা।
উত্তর : নিজ ধর্ম যথাযথভাবে পালন সাপেক্ষে বিধর্মী কোন ব্যক্তির সাথে হালাল ব্যবসা-বাণিজ্য করা যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে না এবং তোমাদেরকে তোমাদের বাড়ি থেকে বিতাড়িত করে না, তাদের সাথে সদাচরণ করতে আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করেন না’ (মুমতাহিনা ৬০/৮)। তিনি বলেন, ‘তোমরা ভাল ও তাক্বওয়াশীল কাজে পরস্পর সহযোগিতা কর। পাপ ও সীমালংঘনের কাজে সহযোগিতা করো না’ (মায়েদাহ ৪/২)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) খায়বারের জমি ও বাগান সেখানকার ইহূদীদেরকে নির্দিষ্ট অংশ প্রদানের শর্তে চাষাবাদ করার জন্য দিয়েছিলেন(বুখারী, মিশকাত হা/২৯৭২)। খেয়াল রাখতে হবে যেন উক্ত ব্যবসায় কোনভাবে সূদ-ঘুষ বা লেনদেনের কমবেশী ও কোনরূপ প্রতারণার আশ্রয় না নেওয়া হয়। কেননা এগুলি ইসলামী ব্যবসানীতির ঘোর বিরোধী।
উত্তর : নিজ ধর্ম যথাযথভাবে পালন সাপেক্ষে বিধর্মী কোন ব্যক্তির সাথে হালাল ব্যবসা-বাণিজ্য করা যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে না এবং তোমাদেরকে তোমাদের বাড়ি থেকে বিতাড়িত করে না, তাদের সাথে সদাচরণ করতে আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করেন না’ (মুমতাহিনা ৬০/৮)। তিনি বলেন, ‘তোমরা ভাল ও তাক্বওয়াশীল কাজে পরস্পর সহযোগিতা কর। পাপ ও সীমালংঘনের কাজে সহযোগিতা করো না’ (মায়েদাহ ৪/২)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) খায়বারের জমি ও বাগান সেখানকার ইহূদীদেরকে নির্দিষ্ট অংশ প্রদানের শর্তে চাষাবাদ করার জন্য দিয়েছিলেন(বুখারী, মিশকাত হা/২৯৭২)। খেয়াল রাখতে হবে যেন উক্ত ব্যবসায় কোনভাবে সূদ-ঘুষ বা লেনদেনের কমবেশী ও কোনরূপ প্রতারণার আশ্রয় না নেওয়া হয়। কেননা এগুলি ইসলামী ব্যবসানীতির ঘোর বিরোধী।
১৮
প্রশ্ন (১৭/১৩৭) : কাফন-দাফনে আগত আত্মীয়-স্বজনের জন্য মৃতের পরিবার থেকে খাবার ব্যবস্থা করা বা টাকা-পয়সা দিয়ে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে ব্যবস্থা করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?মৃত ব্যক্তির কাফন-দাফনের সময় আগত আত্মীয়-স্বজনের আপ্যায়নের জন্য মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে খাবার ব্যবস্থা করা বা টাকা-পয়সা দিয়ে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে ব্যবস্থা করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?
-কামরুল হাসান
আটগ্রাম, আত্রাই, নওগাঁ।
উত্তর : মৃত ব্যক্তির বাড়ীতে আত্মীয়-স্বজনের আপ্যায়নের জন্য রান্না-বান্না করা যাবে না। বরং প্রতিবেশীরা বা আত্মীয়-স্বজন উক্ত পরিবারের জন্য রান্না করে খাওয়াবে। মুতার যুদ্ধে জা‘ফর বিন আবু তালেব (রাঃ)-এর মৃত্যু খবর আসলে রাসূল (ছাঃ) বললেন, তোমরা জা‘ফরের পরিবারের জন্য খাদ্য তৈরী কর। কারণ তার পরিবার এখন শোকে কাতর (তিরমিযী, মিশকাত হা/১৭৩৯, ১৭৪৩)। প্রত্যেক মুসলিম সমাজে এ সুন্নাতী আমল জারী রাখা অবশ্য কর্তব্য। উল্লেখ্য যে, সমাজে মৃতব্যক্তির জানাযায় আগত সকলকে খাওয়ানোর রীতি চালু আছে, যা সুন্নাত পরিপন্থী। অতএব তা পরিত্যাজ্য।
-কামরুল হাসান
আটগ্রাম, আত্রাই, নওগাঁ।
উত্তর : মৃত ব্যক্তির বাড়ীতে আত্মীয়-স্বজনের আপ্যায়নের জন্য রান্না-বান্না করা যাবে না। বরং প্রতিবেশীরা বা আত্মীয়-স্বজন উক্ত পরিবারের জন্য রান্না করে খাওয়াবে। মুতার যুদ্ধে জা‘ফর বিন আবু তালেব (রাঃ)-এর মৃত্যু খবর আসলে রাসূল (ছাঃ) বললেন, তোমরা জা‘ফরের পরিবারের জন্য খাদ্য তৈরী কর। কারণ তার পরিবার এখন শোকে কাতর (তিরমিযী, মিশকাত হা/১৭৩৯, ১৭৪৩)। প্রত্যেক মুসলিম সমাজে এ সুন্নাতী আমল জারী রাখা অবশ্য কর্তব্য। উল্লেখ্য যে, সমাজে মৃতব্যক্তির জানাযায় আগত সকলকে খাওয়ানোর রীতি চালু আছে, যা সুন্নাত পরিপন্থী। অতএব তা পরিত্যাজ্য।
১৯
প্রশ্ন (১৮/১৩৮) : ফল পাকার সময় চাষীরা সুরক্ষার জন্য জাল টাঙিয়ে রাখে। কিন্তু তাতে পাখি আটকা পড়ে মারা যায়। এরূপ জাল ব্যবহারে শরী‘আতে বাধা আছে কি?কুল, লিচু, আঙ্গুর ইত্যাদি ফল পাকার সময় পাখিরা ক্ষতি করায় চাষীরা সুরক্ষার জন্য জাল টাঙিয়ে রাখে। কিন্তু তাতে পাখি বসে আটকা পড়ে এবং মারা যায়। এক্ষণে এরূপ জাল ব্যবহার করায় শরী‘আতে বাধা আছে কি?
-আব্দুছ ছবূর, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : সম্পদ রক্ষার উপকরণ ব্যবহার করাতে ক্ষতিকারক যে কোন কীট-পতঙ্গ বা পশু-পাখী মারা গেলে তাতে তারা দায়ী হবে না। কেননা প্রত্যেকেরই নিজের সম্পদ রক্ষা করার অধিকার রয়েছে। সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে ডাকাত বা ছিনতাইকারীকে হত্যা করা হ’লে নিহত ব্যক্তি জাহান্নামী হবে। আর মালিক মারা গেলে সে শহীদ হবে (মুসলিম হা/১৪০; মিশকাত হা/৩৫১৩)।
-আব্দুছ ছবূর, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : সম্পদ রক্ষার উপকরণ ব্যবহার করাতে ক্ষতিকারক যে কোন কীট-পতঙ্গ বা পশু-পাখী মারা গেলে তাতে তারা দায়ী হবে না। কেননা প্রত্যেকেরই নিজের সম্পদ রক্ষা করার অধিকার রয়েছে। সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে ডাকাত বা ছিনতাইকারীকে হত্যা করা হ’লে নিহত ব্যক্তি জাহান্নামী হবে। আর মালিক মারা গেলে সে শহীদ হবে (মুসলিম হা/১৪০; মিশকাত হা/৩৫১৩)।
-তাজুল ইসলাম, গাছবাড়ী, সিলেট।
উত্তর : এরূপ পোষাক ব্যবহার করা যাবে না। মিক্বদাম (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূল (ছাঃ) হিংস্র জন্তুর চামড়া পরতে এবং তার উপর বসতে নিষেধ করেছেন (আবুদাঊদ হা/৪১৩১, মিশকাত হা/৫০৫)। তিনি বলেন ‘তোমরা রেশমী কাপড় এবং বাঘের চামড়ার তৈরী গদির উপর সওয়ার হয়ো না (আবুদাঊদ হা/৪১২৯; নাসাঈ, মিশকাত হা/৪৩৫৭, সনদ ছহীহ)। অতএব সকল প্রকার হিংস্র প্রাণীর চামড়া পোষাক বা বসার স্থান হিসাবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
উত্তর : এরূপ পোষাক ব্যবহার করা যাবে না। মিক্বদাম (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূল (ছাঃ) হিংস্র জন্তুর চামড়া পরতে এবং তার উপর বসতে নিষেধ করেছেন (আবুদাঊদ হা/৪১৩১, মিশকাত হা/৫০৫)। তিনি বলেন ‘তোমরা রেশমী কাপড় এবং বাঘের চামড়ার তৈরী গদির উপর সওয়ার হয়ো না (আবুদাঊদ হা/৪১২৯; নাসাঈ, মিশকাত হা/৪৩৫৭, সনদ ছহীহ)। অতএব সকল প্রকার হিংস্র প্রাণীর চামড়া পোষাক বা বসার স্থান হিসাবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
-মাহতাবুদ্দীন, ঘোড়াঘাট, দিনাজপুর।
উত্তর : বার্ধক্যের কোন চিকিৎসা বা ঔষধ নেই। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, হে আল্লাহর বান্দারা! তোমরা ঔষধ ব্যবহার কর কেননা আল্লাহ তা‘আলা এমন কোন রোগ দেননি, যার আরোগ্যের কোন ব্যবস্থা দেননি। তবে একটি রোগ ব্যতীত। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, সে রোগটি কি? তিনি বললেন, বার্ধক্য’ (আহমাদ, তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৫৩২, সনদ ছহীহ)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিম্নোক্ত দো‘আটি পড়ে অতি বার্ধক্য হ’তে পানাহ চেয়েছেন, আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল জুব্নে ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিনাল বুখ্লে ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন আরযালিল ‘উমুরে; ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন্ ফিৎনাতিদ দুন্ইয়া ওয়া ‘আযা-বিল ক্বাবরে। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি ভীরুতা হ’তে, আশ্রয় প্রার্থনা করছি কৃপণতা হ’তে, আশ্রয় প্রার্থনা করছি নিকৃষ্টতম বয়স হ’তে এবং আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুনিয়ার ফিৎনা হ’তে ও কবরের আযাব হ’তে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৯৬৪)।
উত্তর : বার্ধক্যের কোন চিকিৎসা বা ঔষধ নেই। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, হে আল্লাহর বান্দারা! তোমরা ঔষধ ব্যবহার কর কেননা আল্লাহ তা‘আলা এমন কোন রোগ দেননি, যার আরোগ্যের কোন ব্যবস্থা দেননি। তবে একটি রোগ ব্যতীত। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, সে রোগটি কি? তিনি বললেন, বার্ধক্য’ (আহমাদ, তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৫৩২, সনদ ছহীহ)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিম্নোক্ত দো‘আটি পড়ে অতি বার্ধক্য হ’তে পানাহ চেয়েছেন, আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল জুব্নে ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিনাল বুখ্লে ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন আরযালিল ‘উমুরে; ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন্ ফিৎনাতিদ দুন্ইয়া ওয়া ‘আযা-বিল ক্বাবরে। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি ভীরুতা হ’তে, আশ্রয় প্রার্থনা করছি কৃপণতা হ’তে, আশ্রয় প্রার্থনা করছি নিকৃষ্টতম বয়স হ’তে এবং আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুনিয়ার ফিৎনা হ’তে ও কবরের আযাব হ’তে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৯৬৪)।
-আব্দুল্লাহিল কাফী, ছোটবনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : এ তাফসীরে কিছু ভ্রান্ত আক্বীদা ও আমল এবং বহু স্থানে ভুল তাফসীরের সমাবেশ ঘটেছে। ফলে একে বিশুদ্ধ তাফসীর বলা যায় না। এর মধ্যে উল্লেখিত ভুলগুলোর কিছু দৃষ্টান্ত পেশ করা হ’ল : (১) ‘নবী’ বা ‘ওলী’র বরাত দিয়েও আল্লাহ তা‘আলার সাহায্য প্রার্থনা করা কুরআনের নির্দেশ ও হাদীছের বর্ণনায় বৈধ প্রমাণিত হয়েছে’ (পৃঃ ৯, ৩২৭)। অথচ মৃত নবী বা অন্য কারুর অসীলা দিয়ে প্রার্থনা করা স্পষ্ট শিরক (মুসলিম হা/২০৪; মিশকাত হা/৫৩৭৩) (২) ‘সৃষ্ট জগতের মাঝে সর্বপ্রথম রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নূর সৃষ্টি করা হয়েছে’... এক হাদীছে বলা হয়েছে, আল্লাহ তা‘আলা সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করেছেন’ (পৃঃ ৪২৮)। অথচ এটি সম্পূর্ণ ভুল আক্বীদা এবং হাদীছটি জাল (ছহীহাহ হা/৪৫৮-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)। (৩) ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁর পবিত্র রওজা শরীফে জীবিত আছেন।... এ কারণই তাঁর পরিত্যক্ত সম্পত্তি বণ্টন করা হয়নি এবং এর ভিত্তিতেই তাঁর পত্নীগণের অবস্থা অপরাপর বিধবা নারীদের মত হয়নি’ (পৃঃ ১০৯৩)। অথচ ‘হায়াতুন্নবী’-র এই আক্বীদা পরিষ্কার শিরকী আক্বীদা (যুমার ৩০) (৪) ‘কোন না কোন একজন মুজতাহিদ ইমামের তাক্বলীদ করা অপরিহার্য। সকল মুজতাহিদ ইমামই সত্য’ (পৃঃ ৭৪৩)। অথচ কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণই কেবল অপরিহার্য এবং মুজতাহিদ ইমামগণ ভুলের ঊর্ধ্বে নন (৫) ‘আল্লাহ তা‘আলার কোন আকার নেই’ (পৃঃ ১৪৬৫)। অথচ কুরতুবী স্বীয় তাফসীরে অন্যের মন্তব্য উদ্ধৃত করেছেন এভাবে যে, ‘আমরা মানুষকে সর্বোত্তম অবয়বে সৃষ্টি করেছি’। এর অর্থ অনেকে করেছেন علي صورة الرحمن ‘আল্লাহর আকৃতিতে’। অথচ আল্লাহর বাস্তব আকার ( صورة مةشخصة ) কোথায় আছে ভাবার্থ ব্যতীত? (ঐ, ২০/১১৪)’। এ বিষয়ে সঠিক আক্বীদা হ’ল এই যে, আললাহর আকার আছে। কিন্তু তার তুলনীয় কিছুই নেই (শূরা ১১)। (৬) ‘এলমে তাছাউফও ফরযে আইনের অন্তর্ভুক্ত’ (পৃঃ ৫৯৬)। অথচ দ্বীনী ইলম হাছিল করা ফরয। ইসলামের সকল ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য হ’ল তাযকিয়ায়ে নাফ্স বা আত্মশুদ্ধি। পৃথকভাবে ইলমে তাছাউওফের কোন অস্তিত্ব শরী‘আতে নেই। বরং কথিত ছুফীবাদের চোরাগলি দিয়েই মুলমানদের মধ্যে অধিকাংশ শিরক প্রবেশ করেছে (৭) অনুরূপভাবে সূরায়ে ‘মুহাম্মাদ’ ৩৮ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম সৈয়ূতীর বরাতে বলা হয়েছে যে, ‘আলোচ্য আয়াতে ইমাম আবু হানীফা ও তাঁর সহচরদেরকে বুঝানো হয়েছে। কেননা তাঁরা পারস্য সন্তান। কোন দলই জ্ঞানের সেই স্তরে পৌঁছেনি, যেখানে আবু হানীফা ও তাঁর সহচরগণ পৌঁছেছেন’ (পৃঃ ১২৬৩)। এমনিভাবে অসংখ্য শিরকী আক্বীদা ও বিদ‘আতী আমলের প্রচারণা চালানো হয়েছে অত্র তাফসীর গ্রন্থে। অতএব কেউ পড়তে চাইলে জ্ঞান-বিবেক জাগ্রত রেখেই এ তাফসীর পড়তে হবে। কেননা তার মধ্যে অনেক শিক্ষণীয় বিষয় ও রয়েছে।
উত্তর : এ তাফসীরে কিছু ভ্রান্ত আক্বীদা ও আমল এবং বহু স্থানে ভুল তাফসীরের সমাবেশ ঘটেছে। ফলে একে বিশুদ্ধ তাফসীর বলা যায় না। এর মধ্যে উল্লেখিত ভুলগুলোর কিছু দৃষ্টান্ত পেশ করা হ’ল : (১) ‘নবী’ বা ‘ওলী’র বরাত দিয়েও আল্লাহ তা‘আলার সাহায্য প্রার্থনা করা কুরআনের নির্দেশ ও হাদীছের বর্ণনায় বৈধ প্রমাণিত হয়েছে’ (পৃঃ ৯, ৩২৭)। অথচ মৃত নবী বা অন্য কারুর অসীলা দিয়ে প্রার্থনা করা স্পষ্ট শিরক (মুসলিম হা/২০৪; মিশকাত হা/৫৩৭৩) (২) ‘সৃষ্ট জগতের মাঝে সর্বপ্রথম রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নূর সৃষ্টি করা হয়েছে’... এক হাদীছে বলা হয়েছে, আল্লাহ তা‘আলা সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করেছেন’ (পৃঃ ৪২৮)। অথচ এটি সম্পূর্ণ ভুল আক্বীদা এবং হাদীছটি জাল (ছহীহাহ হা/৪৫৮-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)। (৩) ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁর পবিত্র রওজা শরীফে জীবিত আছেন।... এ কারণই তাঁর পরিত্যক্ত সম্পত্তি বণ্টন করা হয়নি এবং এর ভিত্তিতেই তাঁর পত্নীগণের অবস্থা অপরাপর বিধবা নারীদের মত হয়নি’ (পৃঃ ১০৯৩)। অথচ ‘হায়াতুন্নবী’-র এই আক্বীদা পরিষ্কার শিরকী আক্বীদা (যুমার ৩০) (৪) ‘কোন না কোন একজন মুজতাহিদ ইমামের তাক্বলীদ করা অপরিহার্য। সকল মুজতাহিদ ইমামই সত্য’ (পৃঃ ৭৪৩)। অথচ কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণই কেবল অপরিহার্য এবং মুজতাহিদ ইমামগণ ভুলের ঊর্ধ্বে নন (৫) ‘আল্লাহ তা‘আলার কোন আকার নেই’ (পৃঃ ১৪৬৫)। অথচ কুরতুবী স্বীয় তাফসীরে অন্যের মন্তব্য উদ্ধৃত করেছেন এভাবে যে, ‘আমরা মানুষকে সর্বোত্তম অবয়বে সৃষ্টি করেছি’। এর অর্থ অনেকে করেছেন علي صورة الرحمن ‘আল্লাহর আকৃতিতে’। অথচ আল্লাহর বাস্তব আকার ( صورة مةشخصة ) কোথায় আছে ভাবার্থ ব্যতীত? (ঐ, ২০/১১৪)’। এ বিষয়ে সঠিক আক্বীদা হ’ল এই যে, আললাহর আকার আছে। কিন্তু তার তুলনীয় কিছুই নেই (শূরা ১১)। (৬) ‘এলমে তাছাউফও ফরযে আইনের অন্তর্ভুক্ত’ (পৃঃ ৫৯৬)। অথচ দ্বীনী ইলম হাছিল করা ফরয। ইসলামের সকল ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য হ’ল তাযকিয়ায়ে নাফ্স বা আত্মশুদ্ধি। পৃথকভাবে ইলমে তাছাউওফের কোন অস্তিত্ব শরী‘আতে নেই। বরং কথিত ছুফীবাদের চোরাগলি দিয়েই মুলমানদের মধ্যে অধিকাংশ শিরক প্রবেশ করেছে (৭) অনুরূপভাবে সূরায়ে ‘মুহাম্মাদ’ ৩৮ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম সৈয়ূতীর বরাতে বলা হয়েছে যে, ‘আলোচ্য আয়াতে ইমাম আবু হানীফা ও তাঁর সহচরদেরকে বুঝানো হয়েছে। কেননা তাঁরা পারস্য সন্তান। কোন দলই জ্ঞানের সেই স্তরে পৌঁছেনি, যেখানে আবু হানীফা ও তাঁর সহচরগণ পৌঁছেছেন’ (পৃঃ ১২৬৩)। এমনিভাবে অসংখ্য শিরকী আক্বীদা ও বিদ‘আতী আমলের প্রচারণা চালানো হয়েছে অত্র তাফসীর গ্রন্থে। অতএব কেউ পড়তে চাইলে জ্ঞান-বিবেক জাগ্রত রেখেই এ তাফসীর পড়তে হবে। কেননা তার মধ্যে অনেক শিক্ষণীয় বিষয় ও রয়েছে।
২৩
প্রশ্ন (২২/১৪২) : মালফূযাত গ্রন্থের ২৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিত ‘যাকাতের দরজা হাদিয়ার নিম্নে।’ এর সত্যতা জানিয়ে বাধিত করবেন।মাওলানা ইলিয়াস ছাহেব লিখিত মালফূযাত গ্রন্থের ২৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে যে, ‘যাকাতের দরজা হাদিয়ার নিম্নে। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর উপর ছাদাক্বা হারাম ছিল, হাদিয়া হারাম ছিল না।’ এর সত্যতা জানিয়ে বাধিত করবেন।
-আব্দুল আলীম
কাঞ্চন, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।
উত্তর : উল্লিখিত মন্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কারণ ইসলামী শরী‘আতে যাকাত ‘ফরয’। যে পাঁচটি স্তম্ভের উপর ইসলাম দাঁড়িয়ে আছে, তার অন্যতম হচ্ছে যাকাত। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা ছালাত কায়েম কর, যাকাত আদায় কর ও রাসূলের আনুগত্য কর। অবশ্যই তোমরা রহমত প্রাপ্ত হবে’ (নূর ২৪/৫৬)। পবিত্র কুরআনের বহু স্থানে ছালাতের পরেই যাকাতের নির্দেশ এসেছে। ছহীহ হাদীছে যাকাতকে ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ বলা হয়েছে। অপরদিকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার জন্য হাদিয়ার কথা বলেছেন মাত্র। পারস্পরিক ‘হাদিয়া’ প্রদান করা সুন্নাত। কাজেই যাকাতের ‘ফরয’ দরজা হাদিয়ার নিম্নে উল্লেখ করা নিতান্ত অন্যায়। দ্বিতীয়তঃ যাকাত হ’ল ছাদাক্বা বা ফরয অনুদান। যা গ্রহণ করা বিশ্বনবী হিসাবে রাসূল (ছাঃ) ও তাঁর পরিবারের জন্য মর্যাদাকর নয়। পক্ষান্তরে ‘হাদিয়া’ হ’ল উপঢৌকন। এতে মর্যাদা হানিকর কিছু নেই। সম্ভবতঃ সেকারণে রাসূল (ছাঃ)-এর জন্য ‘হাদিয়া’ হারাম করা হয়নি।
-আব্দুল আলীম
কাঞ্চন, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।
উত্তর : উল্লিখিত মন্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কারণ ইসলামী শরী‘আতে যাকাত ‘ফরয’। যে পাঁচটি স্তম্ভের উপর ইসলাম দাঁড়িয়ে আছে, তার অন্যতম হচ্ছে যাকাত। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা ছালাত কায়েম কর, যাকাত আদায় কর ও রাসূলের আনুগত্য কর। অবশ্যই তোমরা রহমত প্রাপ্ত হবে’ (নূর ২৪/৫৬)। পবিত্র কুরআনের বহু স্থানে ছালাতের পরেই যাকাতের নির্দেশ এসেছে। ছহীহ হাদীছে যাকাতকে ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ বলা হয়েছে। অপরদিকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার জন্য হাদিয়ার কথা বলেছেন মাত্র। পারস্পরিক ‘হাদিয়া’ প্রদান করা সুন্নাত। কাজেই যাকাতের ‘ফরয’ দরজা হাদিয়ার নিম্নে উল্লেখ করা নিতান্ত অন্যায়। দ্বিতীয়তঃ যাকাত হ’ল ছাদাক্বা বা ফরয অনুদান। যা গ্রহণ করা বিশ্বনবী হিসাবে রাসূল (ছাঃ) ও তাঁর পরিবারের জন্য মর্যাদাকর নয়। পক্ষান্তরে ‘হাদিয়া’ হ’ল উপঢৌকন। এতে মর্যাদা হানিকর কিছু নেই। সম্ভবতঃ সেকারণে রাসূল (ছাঃ)-এর জন্য ‘হাদিয়া’ হারাম করা হয়নি।
-আনোয়ারুল ইসলাম
বামনগ্রাম, লালপুর, নাটোর।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ছালাত আদায়কারী তার ডানে এবং বামে থাকা ভাইদেরকে সালাম প্রদান করবে (মুসলিম হা/৪৩১; ছহীহুল জামে‘ হা/৪০১৯)। অতএব সালাম ফিরানোর সময় ডানে এবং বামে থাকা ভাইদেরকে সালাম প্রদানের নিয়ত করবে। আর যদি একাকী ছালাত আদায় করে, তাহ’লে ডানে ও বামে থাকা ফেরেশতাদের সালাম প্রদানের নিয়ত করবে (ইমাম নববী, আল-মাজমূ‘ ৩/৪৫৬, ৪৬২; ইবনু কুদামা, আল-মুগনী ১/৩২৬, ৩২৭; শায়খ ওছাইমীন, শারহুল মুমতে‘ ৩/২০৮)। সর্বোপরি রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত অনুসরণে এটা করা হয়। যার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা সম্ভব।
বামনগ্রাম, লালপুর, নাটোর।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ছালাত আদায়কারী তার ডানে এবং বামে থাকা ভাইদেরকে সালাম প্রদান করবে (মুসলিম হা/৪৩১; ছহীহুল জামে‘ হা/৪০১৯)। অতএব সালাম ফিরানোর সময় ডানে এবং বামে থাকা ভাইদেরকে সালাম প্রদানের নিয়ত করবে। আর যদি একাকী ছালাত আদায় করে, তাহ’লে ডানে ও বামে থাকা ফেরেশতাদের সালাম প্রদানের নিয়ত করবে (ইমাম নববী, আল-মাজমূ‘ ৩/৪৫৬, ৪৬২; ইবনু কুদামা, আল-মুগনী ১/৩২৬, ৩২৭; শায়খ ওছাইমীন, শারহুল মুমতে‘ ৩/২০৮)। সর্বোপরি রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত অনুসরণে এটা করা হয়। যার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা সম্ভব।
প্রস্রাব শেষে দু’এক কদম হাঁটার পর সবসময়ই দু’এক ফোঁটা প্রস্রাব নির্গত হ’তে দেখা যায়। এক্ষণে টয়লেটের মধ্যেই টিস্যু নিয়ে দু’এক কদম হাঁটায় কোন বাধা আছে কি?
-এম. এ. রহমান
রাণীবাজার, ঘোড়ামারা, রাজশাহী।
উত্তর : এটা এক প্রকার রোগ। এর জন্য চিকিৎসা নিতে হবে। এক্ষত্রে সর্বশেষ ফোঁটা বের হয়ে আসা পর্যন্ত বসে থেকে পানি দিয়ে ধুয়ে তারপর উঠবে। আর পানি না থাকলে ঢিলা অথবা টিস্যু ব্যবহার করবে (তিরমিযী হা/১৬, ইবনু মাজাহ হা/৩১৬, সনদ ছহীহ)। এরপরেও দু’এক ফোঁট নির্গত হ’তে দেখলে টয়লেটের ভিতরে থেকে প্রস্রাব হ’তে পবিত্র হওয়ার জন্য যে কোন উপায় গ্রহণ করা যেতে পারে।
-এম. এ. রহমান
রাণীবাজার, ঘোড়ামারা, রাজশাহী।
উত্তর : এটা এক প্রকার রোগ। এর জন্য চিকিৎসা নিতে হবে। এক্ষত্রে সর্বশেষ ফোঁটা বের হয়ে আসা পর্যন্ত বসে থেকে পানি দিয়ে ধুয়ে তারপর উঠবে। আর পানি না থাকলে ঢিলা অথবা টিস্যু ব্যবহার করবে (তিরমিযী হা/১৬, ইবনু মাজাহ হা/৩১৬, সনদ ছহীহ)। এরপরেও দু’এক ফোঁট নির্গত হ’তে দেখলে টয়লেটের ভিতরে থেকে প্রস্রাব হ’তে পবিত্র হওয়ার জন্য যে কোন উপায় গ্রহণ করা যেতে পারে।
২৬
প্রশ্ন (২৫/১৪৫) : সূরা ফাতিহার ‘ওয়ালাযযাল্লীন’ পাঠে উচ্চারণগত মতপার্থক্যের কারণে ছালাত বিনষ্ট বা গুনাহ হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে কি?সূরা ফাতিহার ‘ওয়ালাযযাল্লীন’ পাঠে ক্বারীগণের মতভেদ রয়েছে। এক্ষণে এরূপ উচ্চারণগত মতপার্থক্যের কারণে ছালাত বিনষ্ট বা গুনাহ হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে কি?
-আব্দুল লতীফ, বগুড়া।
উত্তর : বিশুদ্ধভাবে কুরআন পাঠকারী ক্বারীদের মাঝে ‘ওয়ালাযযাল্লীন’ পাঠের ক্ষেত্রে কোন মতভেদ নেই। প্রতিটি আরবী অক্ষরের মাখরাজ বা নির্দিষ্ট উচ্চারণস্থল রয়েছে। আরবী অক্ষর মাখরাজ অনুযায়ী উচ্চারণ করতে হবে। ‘যোয়াদ’-কে অন্য অক্ষরের ন্যায় উচ্চারণ করা হ’লে অর্থ পরিবর্তন হয়ে যাবে। ফলে ছালাত বাতিল না হ’লেও ত্রুটিপূর্ণ হবে। অতএব আরবী হরফের মাখরাজ অনুযায়ী বিশুদ্ধভাবে উচ্চারণ করে পড়া যরূরী। তবে ভুলক্রমে বা চেষ্টা করা সত্ত্বেও উচ্চারণ করতে না পারলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
-আব্দুল লতীফ, বগুড়া।
উত্তর : বিশুদ্ধভাবে কুরআন পাঠকারী ক্বারীদের মাঝে ‘ওয়ালাযযাল্লীন’ পাঠের ক্ষেত্রে কোন মতভেদ নেই। প্রতিটি আরবী অক্ষরের মাখরাজ বা নির্দিষ্ট উচ্চারণস্থল রয়েছে। আরবী অক্ষর মাখরাজ অনুযায়ী উচ্চারণ করতে হবে। ‘যোয়াদ’-কে অন্য অক্ষরের ন্যায় উচ্চারণ করা হ’লে অর্থ পরিবর্তন হয়ে যাবে। ফলে ছালাত বাতিল না হ’লেও ত্রুটিপূর্ণ হবে। অতএব আরবী হরফের মাখরাজ অনুযায়ী বিশুদ্ধভাবে উচ্চারণ করে পড়া যরূরী। তবে ভুলক্রমে বা চেষ্টা করা সত্ত্বেও উচ্চারণ করতে না পারলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
২৭
প্রশ্ন (২৬/১৪৬) : জামা‘আতবদ্ধ ছালাতে ইমাম অধিকহারে ভুল করলে মুক্তাদীদের করণীয় কি? এরূপ ছালাত পুনরায় আদায় করতে হবে কি?-আব্দুল হাদী নাসীম
আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা।
উত্তর : ছালাতে ইমাম ভুল করলে মুক্তাদীদের কর্তব্য হ’ল লোকমা দিয়ে ভুলটি শুধরিয়ে দেওয়া (আবুদাঊদ হা/৯০৭, সনদ হাসান)। আর শুধরানো সম্ভব না হ’লে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ছালাত বাতিল হবে না। আর ইমাম উদাসীনতার কারণে বার বার ভুল করলে এর গুনাহ তার উপরে বর্তাবে, মুক্তাদীর উপরে নয়। ছালাতে ভুলক্রমে কোন ‘ওয়াজিব’ তরক হয়ে গেলে শেষ বৈঠকের তাশাহ্হুদ শেষে সালাম ফিরানোর পূর্বে ‘সিজদায়ে সহো’ দিতে হয়। শাওকানী বলেন, ওয়াজিব তরক হ’লে ‘সিজদায়ে সহো’ ওয়াজিব হবে এবং সুন্নাত তরক হ’লে ‘সিজদায়ে সহো’ সুন্নাত হবে (আস-সায়লুল জাররা-র ১/২৭৪ পৃঃ)। কিন্তু ছালাতে ক্বিরাআত ভুল হ’লে বা সের্রী ছালাতে ভুলবশত ক্বিরাআত জোরে বা তার বিপরীত হয়ে গেলে সহো সিজদার প্রয়োজন নেই।
স্মর্তব্য যে, ছালাতের প্রতি যত্নবান হওয়া সফল মুমিনের বৈশিষ্ট্য (মা‘আরিজ ৭০/৩৪)। আর ছালাতে উদাসীনদের জন্য রয়েছে ‘দুর্ভোগ’ (মাউন ১০৭/৫)। অতএব ইমামদের কর্তব্য হ’ল পূর্ণ সচেতনতার সাথে ইমামতির দায়িত্ব পালন করা।
আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা।
উত্তর : ছালাতে ইমাম ভুল করলে মুক্তাদীদের কর্তব্য হ’ল লোকমা দিয়ে ভুলটি শুধরিয়ে দেওয়া (আবুদাঊদ হা/৯০৭, সনদ হাসান)। আর শুধরানো সম্ভব না হ’লে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ছালাত বাতিল হবে না। আর ইমাম উদাসীনতার কারণে বার বার ভুল করলে এর গুনাহ তার উপরে বর্তাবে, মুক্তাদীর উপরে নয়। ছালাতে ভুলক্রমে কোন ‘ওয়াজিব’ তরক হয়ে গেলে শেষ বৈঠকের তাশাহ্হুদ শেষে সালাম ফিরানোর পূর্বে ‘সিজদায়ে সহো’ দিতে হয়। শাওকানী বলেন, ওয়াজিব তরক হ’লে ‘সিজদায়ে সহো’ ওয়াজিব হবে এবং সুন্নাত তরক হ’লে ‘সিজদায়ে সহো’ সুন্নাত হবে (আস-সায়লুল জাররা-র ১/২৭৪ পৃঃ)। কিন্তু ছালাতে ক্বিরাআত ভুল হ’লে বা সের্রী ছালাতে ভুলবশত ক্বিরাআত জোরে বা তার বিপরীত হয়ে গেলে সহো সিজদার প্রয়োজন নেই।
স্মর্তব্য যে, ছালাতের প্রতি যত্নবান হওয়া সফল মুমিনের বৈশিষ্ট্য (মা‘আরিজ ৭০/৩৪)। আর ছালাতে উদাসীনদের জন্য রয়েছে ‘দুর্ভোগ’ (মাউন ১০৭/৫)। অতএব ইমামদের কর্তব্য হ’ল পূর্ণ সচেতনতার সাথে ইমামতির দায়িত্ব পালন করা।
২৮
প্রশ্ন (২৭/১৪৭) : তাশাহহুদে বসা অবস্থায় দৃষ্টি সিজদার স্থানের দিকে না আঙ্গুল নাড়ানোর দিকে রাখতে হবে?-যাকারিয়া হাবীব, বগুড়া।
উত্তর : তাশাহহুদে বসা অবস্থায় দৃষ্টি রাখতে হবে আঙ্গুলের ইশারার দিকে। রাসূল (ছাঃ) যখন তাশাহহুদে বসতেন, তখন ...তর্জনী আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন এবং তাঁর দৃষ্টি আঙ্গুলের ইশারা বরাবর থাকত তার বাইরে যেত না। (আবুদাউদ হা/৯৮৮, ৯৯০; নাসাঈ হা/১২৭৫; মিশকাত হা/৯১২)। ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, তাশাহহুদের সময় দৃষ্টি আঙ্গুলের উপর রাখাই সুন্নাত (নববী, শারহ মুসলিম হা/৯১০, নায়লুল আওতার ২/৩১৭)।
উত্তর : তাশাহহুদে বসা অবস্থায় দৃষ্টি রাখতে হবে আঙ্গুলের ইশারার দিকে। রাসূল (ছাঃ) যখন তাশাহহুদে বসতেন, তখন ...তর্জনী আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন এবং তাঁর দৃষ্টি আঙ্গুলের ইশারা বরাবর থাকত তার বাইরে যেত না। (আবুদাউদ হা/৯৮৮, ৯৯০; নাসাঈ হা/১২৭৫; মিশকাত হা/৯১২)। ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, তাশাহহুদের সময় দৃষ্টি আঙ্গুলের উপর রাখাই সুন্নাত (নববী, শারহ মুসলিম হা/৯১০, নায়লুল আওতার ২/৩১৭)।
৩০
প্রশ্ন (২৯/১৪৯) : পেনশন দ্বারা হজ্জের ফরযিয়াত আদায় করা যরূরী না স্ত্রী-সন্তানদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ করা যরূরী হবে?আমি পেনশন হিসাবে যে অর্থ পেয়েছি তা দ্বারা আমার জন্য হজ্জের ফরযিয়াত আদায় করা যরূরী না স্ত্রী-সন্তানদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ করা যরূরী হবে? সঠিক সিদ্ধান্ত জানতে চাই।
-কামাল হোসাইন, পাংশা, রাজবাড়ী।
উত্তর : খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা এগুলি মানুষের মৌলিক চাহিদা। এক্ষণে যদি পরিবারের জন্য থাকার উপযোগী নিজস্ব কোন বাসস্থান না থাকে, তাহ’লে প্রথমে বাসস্থান নির্মাণ করবে। অতঃপর সামর্থ্য থাকলে হজ্জ করবে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) বলেন, একজন লোক তাকে জিজ্ঞেস করল, আমরা কি দরিদ্র মুহাজিরদের অন্তর্ভুক্ত নই? আব্দুল্লাহ (রাঃ) তাকে বললেন, তোমার কি স্ত্রী আছে, যেখানে তুমি শান্তি পেতে পার? লোকটি বলল, হ্যাঁ। তোমার বাসস্থান আছে কি যেখানে তুমি আশ্রয় নিতে পার? লোকটি বলল, জি হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহ’লে তুমি ধনী (মুসলিম হা/২৯৭৯, মিশকাত হা/৫২৫৭)।
-কামাল হোসাইন, পাংশা, রাজবাড়ী।
উত্তর : খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা এগুলি মানুষের মৌলিক চাহিদা। এক্ষণে যদি পরিবারের জন্য থাকার উপযোগী নিজস্ব কোন বাসস্থান না থাকে, তাহ’লে প্রথমে বাসস্থান নির্মাণ করবে। অতঃপর সামর্থ্য থাকলে হজ্জ করবে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) বলেন, একজন লোক তাকে জিজ্ঞেস করল, আমরা কি দরিদ্র মুহাজিরদের অন্তর্ভুক্ত নই? আব্দুল্লাহ (রাঃ) তাকে বললেন, তোমার কি স্ত্রী আছে, যেখানে তুমি শান্তি পেতে পার? লোকটি বলল, হ্যাঁ। তোমার বাসস্থান আছে কি যেখানে তুমি আশ্রয় নিতে পার? লোকটি বলল, জি হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহ’লে তুমি ধনী (মুসলিম হা/২৯৭৯, মিশকাত হা/৫২৫৭)।
৩১
প্রশ্ন (৩০/১৫০) : জনৈক ধার্মিক ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাত করে বিপুল সম্পদের মালিক। তার ধার্মিক কোন মেয়েকে বিবাহ করা জায়েয হবে কি?জনৈক ধার্মিক ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাতের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে পরবর্তীতে মারা গেছেন। তার মেয়েরাও ধার্মিক। এক্ষণে তার কোন মেয়েকে বিবাহ করা জায়েয হবে কি?
-মাহফূযুর রহমান, জেদ্দা, সঊদী আরব।
উত্তর : এরূপ মেয়েদের বিবাহ করায় কোন দোষ নেই। বরং ধার্মিক মনে করলে তাদেরকেই বিবাহ করতে হবে (তিরমিযী, মিশকাত হা/৩০৯০)। অবৈধ সম্পদ উপার্জনের জন্য পিতা দায়ী হবেন, সন্তানরা নয় (আন‘আম ৬/১৬৪)।
-মাহফূযুর রহমান, জেদ্দা, সঊদী আরব।
উত্তর : এরূপ মেয়েদের বিবাহ করায় কোন দোষ নেই। বরং ধার্মিক মনে করলে তাদেরকেই বিবাহ করতে হবে (তিরমিযী, মিশকাত হা/৩০৯০)। অবৈধ সম্পদ উপার্জনের জন্য পিতা দায়ী হবেন, সন্তানরা নয় (আন‘আম ৬/১৬৪)।
৩২
প্রশ্ন (৩১/১৫১) : বোন পিতার সম্মতি ছাড়াই বিবাহ করে বাড়ি ছাড়লে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা যাবে কি?আমার ছোট বোন জনৈক লম্পট ছেলেকে পিতার সম্মতি ছাড়াই বিবাহ করে বাড়ি ছেড়েছে। এক্ষণে আমাদের করণীয় কি? তার দৈনিক খরচ নির্বাহের জন্য প্রদত্ত অর্থ এবং পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা যাবে কি? অথচ তা প্রদান করলেও উক্ত লম্পট ছেলেটি তা হারাম কাজে ব্যবহার করবে। এক্ষণে আমাদের করণীয় কি?
-আমীনুল সরকার
ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক।
উত্তর : ধর্মত্যাগ ও হত্যাকারী ব্যতীত সন্তানকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার কোন বিধান শরী‘আতে নেই (বুখারী, মুসলিম, আবুদাঊদ মিশকাত হা/৩০৪৩, ৩৫০০)। পিতা-মাতা একাজ করলে সন্তানের হক নষ্ট করা হবে, যা পরকালে নিজের নেকী থেকে তাকে পরিশোধ করতে হবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১২৭)। এক্ষণে পিতার জন্য করণীয় হ’ল, দ্রুত সমাঝোতা করে নতুনভাবে বিবাহের ব্যবস্থা করা অথবা মেয়েকে বুঝিয়ে ফিরিয়ে আনা। কারণ অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত নারীদের বিবাহ জায়েয নয় (তিরমিযী, মিশকাত হা/৩১৩১)। অথবা মেয়ে স্বামীর সাথে ‘খোলা’ করে ফিরে আসবে। কারণ এভাবে একত্রে অবস্থান করা যেনার শামিল।
-আমীনুল সরকার
ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক।
উত্তর : ধর্মত্যাগ ও হত্যাকারী ব্যতীত সন্তানকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার কোন বিধান শরী‘আতে নেই (বুখারী, মুসলিম, আবুদাঊদ মিশকাত হা/৩০৪৩, ৩৫০০)। পিতা-মাতা একাজ করলে সন্তানের হক নষ্ট করা হবে, যা পরকালে নিজের নেকী থেকে তাকে পরিশোধ করতে হবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১২৭)। এক্ষণে পিতার জন্য করণীয় হ’ল, দ্রুত সমাঝোতা করে নতুনভাবে বিবাহের ব্যবস্থা করা অথবা মেয়েকে বুঝিয়ে ফিরিয়ে আনা। কারণ অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত নারীদের বিবাহ জায়েয নয় (তিরমিযী, মিশকাত হা/৩১৩১)। অথবা মেয়ে স্বামীর সাথে ‘খোলা’ করে ফিরে আসবে। কারণ এভাবে একত্রে অবস্থান করা যেনার শামিল।
৩৩
প্রশ্ন (৩২/১৫২) : রাসূল (ছাঃ) ঋতুবতীদের ঈদের ছালাতে অংশগ্রহণ না করে দো‘আয় শরীক হ’তে বলা কি ছালাতে সম্মিলিত মুনাজাত প্রমাণ হয় না?রাসূল (ছাঃ) ঋতুবতীদের ঈদের ছালাতে অংশগ্রহণ না করে দো‘আয় শরীক হ’তে বলেছেন। এটা দ্বারা কি উক্ত ছালাতে সম্মিলিত মুনাজাত প্রমাণ হয় না?
-এ. কে. এম. আব্দুল খালেক
৮নং উপশহর, সদর, দিনাজপুর।
উত্তর: এখানে দো‘আয় শরীক হওয়ার অর্থ হ’ল, খুৎবা শ্রবণ করা, তা থেকে নছীহত গ্রহণ করা, উক্ত সমাগমে শরীক হয়ে তাকবীর, তাহলীল, তাহমীদ ও তাসবীহে অংশগ্রহণ করা ইত্যাদি। সেকারণ ঊক্ত হাদীছের বর্ণনাকারী উম্মু আতিয়া (রাঃ) বলেন, আমাদের পর্দানশীন কুমারী হায়েযা মহিলারা ঈদের ময়দানে বের হ’তেন। অতঃপর লোকদের পিছনে অবস্থান করে তাদের সাথে তাকবীরে অংশগ্রহণ করতেন (মুসলিম হা/৮৯০; ছহীহাহ হা/৬০০)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘অতঃপর মহিলারা পুরুষদের পিছনে থাকত, তারপর তাদের তাকবীরের সাথে তাকবীর ও তাদের দো‘আর সাথে দো‘আ করত এবং এই দিনের বরকত ও পবিত্রতার প্রত্যাশা করত’ (বুখারী হা/৯৭১)। উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় মিশকাতের ভাষ্যকার ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী বলেন, ‘মুসলিমদের দো‘আ বলতে সকলকে শামিল করে। উক্ত কথা দ্বারা ঈদের ছালাতের পরে দো‘আ করা বুঝানো হয়, যেমনটি পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতের শেষে করা হয়। অথচ তা ত্রুটিপূর্ণ। কারণ ঈদায়েনের ছালাতের পর দো‘আ করা রাসূল (ছাঃ) থেকে প্রমাণিত নয়। আর কেউ তা বর্ণনাও করেনি। বরং তাঁর থেকে প্রমাণিত আছে যে, ছালাতের পরে খুৎবা ছাড়া দ্বিতীয় কোন কাজ করতেন না। সুতরাং ‘দা‘ওয়াতুল মুসলিমীন’ দ্বারা উক্ত অর্থ গ্রহণ করা ঠিক হবে। বরং এর মূল উদ্দেশ্য হ’ল- যিকির-আযকার-দো‘আ, বক্তব্য-নছীহত। কারণ দাওয়াত শব্দটি ব্যাপক’ (মির‘আতুল মাফাতীহ ৫/৩১)।
-এ. কে. এম. আব্দুল খালেক
৮নং উপশহর, সদর, দিনাজপুর।
উত্তর: এখানে দো‘আয় শরীক হওয়ার অর্থ হ’ল, খুৎবা শ্রবণ করা, তা থেকে নছীহত গ্রহণ করা, উক্ত সমাগমে শরীক হয়ে তাকবীর, তাহলীল, তাহমীদ ও তাসবীহে অংশগ্রহণ করা ইত্যাদি। সেকারণ ঊক্ত হাদীছের বর্ণনাকারী উম্মু আতিয়া (রাঃ) বলেন, আমাদের পর্দানশীন কুমারী হায়েযা মহিলারা ঈদের ময়দানে বের হ’তেন। অতঃপর লোকদের পিছনে অবস্থান করে তাদের সাথে তাকবীরে অংশগ্রহণ করতেন (মুসলিম হা/৮৯০; ছহীহাহ হা/৬০০)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘অতঃপর মহিলারা পুরুষদের পিছনে থাকত, তারপর তাদের তাকবীরের সাথে তাকবীর ও তাদের দো‘আর সাথে দো‘আ করত এবং এই দিনের বরকত ও পবিত্রতার প্রত্যাশা করত’ (বুখারী হা/৯৭১)। উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় মিশকাতের ভাষ্যকার ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী বলেন, ‘মুসলিমদের দো‘আ বলতে সকলকে শামিল করে। উক্ত কথা দ্বারা ঈদের ছালাতের পরে দো‘আ করা বুঝানো হয়, যেমনটি পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতের শেষে করা হয়। অথচ তা ত্রুটিপূর্ণ। কারণ ঈদায়েনের ছালাতের পর দো‘আ করা রাসূল (ছাঃ) থেকে প্রমাণিত নয়। আর কেউ তা বর্ণনাও করেনি। বরং তাঁর থেকে প্রমাণিত আছে যে, ছালাতের পরে খুৎবা ছাড়া দ্বিতীয় কোন কাজ করতেন না। সুতরাং ‘দা‘ওয়াতুল মুসলিমীন’ দ্বারা উক্ত অর্থ গ্রহণ করা ঠিক হবে। বরং এর মূল উদ্দেশ্য হ’ল- যিকির-আযকার-দো‘আ, বক্তব্য-নছীহত। কারণ দাওয়াত শব্দটি ব্যাপক’ (মির‘আতুল মাফাতীহ ৫/৩১)।
৩৪
প্রশ্ন (৩৩/১৫৩) : নবী করীম (ছাঃ)-এর দেহে খাতমে নবুঅতের চিহ্ন কোথায় এবং কেমন ছিল? কোন কোন ছাহাবী তা চুমু দিয়েছিলেন?নবী করীম (ছাঃ)-এর দেহে খাতমে নবুঅতের চিহ্ন কোথায় ছিল এবং তা কেমন ছিল? কোন কোন ছাহাবী তা চুমু দিয়েছিলেন বলে যা প্রচলিত রয়েছে। এর সত্যতা আছে কি?
-আতাউর রহমান, বান্দাইখাড়া, নওগাঁ।
উত্তর : নবী করীম (ছাঃ)-এর খাতমে নবুঅতের চিহ্ন তাঁর উভয় কাঁধের মধ্যস্থলে ছিল। আর তা ছিল কবুতরের ডিমের মত (মুসলিম হা/২৩৪৪; তিরমিযী হা/৩৬৪৪; মিশকাত হা/৫৭৭৯; ছহীহাহ হা/৩০০৫)। ছাহাবী সালমান ফারেসী (রাঃ) সেটা দেখেই তাকে আখেরী নবী ও সত্যনবী হিসাবে চিনেছিলেন এবং তাতে চুমু খেয়েছিলেন (আহমাদ হা/২৩৭৮৮; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৮৯৪)।
-আতাউর রহমান, বান্দাইখাড়া, নওগাঁ।
উত্তর : নবী করীম (ছাঃ)-এর খাতমে নবুঅতের চিহ্ন তাঁর উভয় কাঁধের মধ্যস্থলে ছিল। আর তা ছিল কবুতরের ডিমের মত (মুসলিম হা/২৩৪৪; তিরমিযী হা/৩৬৪৪; মিশকাত হা/৫৭৭৯; ছহীহাহ হা/৩০০৫)। ছাহাবী সালমান ফারেসী (রাঃ) সেটা দেখেই তাকে আখেরী নবী ও সত্যনবী হিসাবে চিনেছিলেন এবং তাতে চুমু খেয়েছিলেন (আহমাদ হা/২৩৭৮৮; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৮৯৪)।
-খন্দকার আব্দুল মালেক
টুনিরহাট, পঞ্চগড়।
উত্তর : মানবজাতির ন্যায় জিন জাতিকে বিচারের সম্মুখীন করা হবে। আল্লাহ বলেন, ‘আমি জিন ও মানব জাতিকে কেবল আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি’ (যারিয়াত ৫১/৫৬)। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমি জিন ও মানুষ দিয়ে জাহান্নামকে পূর্ণ করব’ (সাজদাহ ৩২/১৩)। তিনি আরো বলেন, ‘হে জিন ও মানব সম্প্রদায়! তোমাদের কাছে কি তোমাদের মধ্য থেকে পয়গম্বরগণ আগমন করেননি, যাঁরা তোমাদেরকে আমার বিধানসমূহ বর্ণনা করতেন এবং তোমাদেরকে আজকের এ দিনে সাক্ষাতের ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করতেন? (আন‘আম ৬/১৩০)। উল্লিখিত আয়াতসমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, জিন জাতি বিচারের সম্মুখীন হবে, তারা জান্নাতী বা জাহান্নামী হবে। সূরা আহক্বাফের ৩১ আয়াতের আলোকে ইবনু কাছীর (রহঃ) একথাকেই প্রধান্য দিয়েছেন (ইবনু কাছীর আহক্বাফ ৩১ আয়াতের তাফসীর দ্রঃ)। আর মুহাম্মাদ (ছাঃ) মানব ও জিন সহ সমস্ত সৃষ্টির নিকটে নবী হিসাবে প্রেরিত হয়েছেন (মুসলিম হা/৫২৩; তিরমিযী হা/১৫৫৩; মিশকাত হা/৫৭৪৮)। এছাড়া অন্যান্য নবীগণের সময়ে জিনেরা তাঁদের অনুসারী উম্মত ছিল।
টুনিরহাট, পঞ্চগড়।
উত্তর : মানবজাতির ন্যায় জিন জাতিকে বিচারের সম্মুখীন করা হবে। আল্লাহ বলেন, ‘আমি জিন ও মানব জাতিকে কেবল আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি’ (যারিয়াত ৫১/৫৬)। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমি জিন ও মানুষ দিয়ে জাহান্নামকে পূর্ণ করব’ (সাজদাহ ৩২/১৩)। তিনি আরো বলেন, ‘হে জিন ও মানব সম্প্রদায়! তোমাদের কাছে কি তোমাদের মধ্য থেকে পয়গম্বরগণ আগমন করেননি, যাঁরা তোমাদেরকে আমার বিধানসমূহ বর্ণনা করতেন এবং তোমাদেরকে আজকের এ দিনে সাক্ষাতের ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করতেন? (আন‘আম ৬/১৩০)। উল্লিখিত আয়াতসমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, জিন জাতি বিচারের সম্মুখীন হবে, তারা জান্নাতী বা জাহান্নামী হবে। সূরা আহক্বাফের ৩১ আয়াতের আলোকে ইবনু কাছীর (রহঃ) একথাকেই প্রধান্য দিয়েছেন (ইবনু কাছীর আহক্বাফ ৩১ আয়াতের তাফসীর দ্রঃ)। আর মুহাম্মাদ (ছাঃ) মানব ও জিন সহ সমস্ত সৃষ্টির নিকটে নবী হিসাবে প্রেরিত হয়েছেন (মুসলিম হা/৫২৩; তিরমিযী হা/১৫৫৩; মিশকাত হা/৫৭৪৮)। এছাড়া অন্যান্য নবীগণের সময়ে জিনেরা তাঁদের অনুসারী উম্মত ছিল।
-কামারুযযামান, মান্দা, নওগাঁ।
উত্তর : ‘তাহরীক’ ( تحريك ) অর্থ আন্দোলন। ‘আত-তাহরীক’ অর্থ বিশেষ আন্দোলন। ইংরেজীতে যাকে বলা যাবে The Movement অথবা That very Movement। অতএব ‘আত-তাহরীক’ বিশেষ একটি আন্দোলনের লক্ষ্যে আত্মপ্রকাশ করেছে। সে আন্দোলন পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক জীবন গড়ার আন্দোলন। সে আন্দোলন আললাহ প্রেরিত সর্বশেষ অহি ভিত্তিক সমাজ গড়ার আন্দোলন। সে আন্দোলন বিশ্ব মানবতার প্রকৃত মুক্তি আন্দোলন। যে মানুষ নিজের জ্ঞানকে অহি-র জ্ঞানের সামনে বিনা দ্বিধায় সমর্পণ করে দিবে, যে মানুষ পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের নির্দেশকে সানন্দে মাথা পেতে মেনে নিবে, দুনিয়ার চাইতে আখেরাতকে সর্বক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিবে ‘আত-তাহরীক’ ইনশাআল্লাহ তাদেরই মুখপত্র।
উত্তর : ‘তাহরীক’ ( تحريك ) অর্থ আন্দোলন। ‘আত-তাহরীক’ অর্থ বিশেষ আন্দোলন। ইংরেজীতে যাকে বলা যাবে The Movement অথবা That very Movement। অতএব ‘আত-তাহরীক’ বিশেষ একটি আন্দোলনের লক্ষ্যে আত্মপ্রকাশ করেছে। সে আন্দোলন পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক জীবন গড়ার আন্দোলন। সে আন্দোলন আললাহ প্রেরিত সর্বশেষ অহি ভিত্তিক সমাজ গড়ার আন্দোলন। সে আন্দোলন বিশ্ব মানবতার প্রকৃত মুক্তি আন্দোলন। যে মানুষ নিজের জ্ঞানকে অহি-র জ্ঞানের সামনে বিনা দ্বিধায় সমর্পণ করে দিবে, যে মানুষ পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের নির্দেশকে সানন্দে মাথা পেতে মেনে নিবে, দুনিয়ার চাইতে আখেরাতকে সর্বক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিবে ‘আত-তাহরীক’ ইনশাআল্লাহ তাদেরই মুখপত্র।
৩৭
প্রশ্ন (৩৬/১৫৬) : জানাযার ছালাতের লাশ সামনে রেখে মৃতের ঋণ ও অছিয়ত ছাড়াও সমাজের বিশিষ্টজন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের আলোচনা শরী‘আতসম্মত কি?জানাযার ছালাতের সময় লাশ সামনে রেখে মৃতের ঋণ ও অছিয়ত ছাড়াও একজন পরিচালকের মাধ্যম সমাজের বিশিষ্টজন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের আলোচনার সুযোগ দেওয়া হয়। এরূপ কর্মকান্ড শরী‘আতসম্মত কি?
-আব্দুল লতীফ
রাজপুর, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : এরূপ করা শরী‘আতসম্মত নয়। রাসূল (ছাঃ) এবং ছাহাবায়ে কেরাম থেকে এ ব্যাপারে কোন আমল পাওয়া যায় না। যিনি ইমামতি করবেন, তিনি উপস্থিত জনসাধরণের উদ্দেশ্যে ঈমান বর্ধক সংক্ষিপ্তভাবে কিছু নছীহত করতে পারবেন। যাতে উপস্থিতগণ নিজেদেরকে মৃত্যুর জন্য প্রস্ত্তত করতে পারেন (বুখারী হা/৪৯৪৯; আবুদাউদ হা/৪৭৫৩; মিশকাত হা/১৬৩০)।
-আব্দুল লতীফ
রাজপুর, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : এরূপ করা শরী‘আতসম্মত নয়। রাসূল (ছাঃ) এবং ছাহাবায়ে কেরাম থেকে এ ব্যাপারে কোন আমল পাওয়া যায় না। যিনি ইমামতি করবেন, তিনি উপস্থিত জনসাধরণের উদ্দেশ্যে ঈমান বর্ধক সংক্ষিপ্তভাবে কিছু নছীহত করতে পারবেন। যাতে উপস্থিতগণ নিজেদেরকে মৃত্যুর জন্য প্রস্ত্তত করতে পারেন (বুখারী হা/৪৯৪৯; আবুদাউদ হা/৪৭৫৩; মিশকাত হা/১৬৩০)।
-শরীফুল ইসলাম, মহেশপুর, ঝিনাইদহ।
উত্তর : মসজিদে প্রবেশ করে যদি কেউ দেখেন যে, মুছল্লীগণ ছালাত আদায় করে নিয়েছেন ও মাসবূক তার বাকী ছালাত আদায় করছেন। এমতাবস্থায় তিনি জামা‘আতের নেকীর আশায় মাসবূককে ইমাম করতে পারেন মর্মে বহু বিদ্বান মত প্রকাশ করেছেন। তবে এ ব্যাপারে ছাহাবায়ে কেরাম থেকে কোন আমল পাওয়া যায় না।
শায়খ ওছায়মীন (রহঃ) বলেন, এ ব্যাপারে বিদ্বানগণ মতভেদ করেছেন। কেউ বলেছেন, এটি ছহীহ নয়। কেউ বলেছেন, এটা ছহীহ। তবে উত্তমের বিরোধী’। (তিনি বলেন,) এটি ছহীহ হ’লেও সুন্নাতের চাইতে বিদ‘আতের অধিক নিকটবর্তী। কেননা ছাহাবায়ে কেরাম এমনটি করেননি। কোন ব্যক্তির যখন জামা‘আতের কিছু অংশ ছুটে যায়, তখন তিনি বাকীটা একাকী দাঁড়িয়ে আদায় করেন। অতঃপর যদি মাসবূকের ইমামতি ছহীহ ধরা হয়, তাহ’লে এটাতে ধারাবাহিকতা সৃষ্টি হ’তে পারে। ফলে পরে যিনি প্রবেশ করবেন তিনি দ্বিতীয় ব্যক্তির, তারপর যিনি প্রবেশ করবেন তিনি তৃতীয় ব্যক্তির, অতঃপর চতুর্থ ব্যক্তির, এভাবে জামা‘আত চলতেই থাকবে... (ওছায়মীন, মুহাযারাতুল মাক্বরূআহ, লিকাউল বাবিল মাফতূহ-১২)।
উত্তর : মসজিদে প্রবেশ করে যদি কেউ দেখেন যে, মুছল্লীগণ ছালাত আদায় করে নিয়েছেন ও মাসবূক তার বাকী ছালাত আদায় করছেন। এমতাবস্থায় তিনি জামা‘আতের নেকীর আশায় মাসবূককে ইমাম করতে পারেন মর্মে বহু বিদ্বান মত প্রকাশ করেছেন। তবে এ ব্যাপারে ছাহাবায়ে কেরাম থেকে কোন আমল পাওয়া যায় না।
শায়খ ওছায়মীন (রহঃ) বলেন, এ ব্যাপারে বিদ্বানগণ মতভেদ করেছেন। কেউ বলেছেন, এটি ছহীহ নয়। কেউ বলেছেন, এটা ছহীহ। তবে উত্তমের বিরোধী’। (তিনি বলেন,) এটি ছহীহ হ’লেও সুন্নাতের চাইতে বিদ‘আতের অধিক নিকটবর্তী। কেননা ছাহাবায়ে কেরাম এমনটি করেননি। কোন ব্যক্তির যখন জামা‘আতের কিছু অংশ ছুটে যায়, তখন তিনি বাকীটা একাকী দাঁড়িয়ে আদায় করেন। অতঃপর যদি মাসবূকের ইমামতি ছহীহ ধরা হয়, তাহ’লে এটাতে ধারাবাহিকতা সৃষ্টি হ’তে পারে। ফলে পরে যিনি প্রবেশ করবেন তিনি দ্বিতীয় ব্যক্তির, তারপর যিনি প্রবেশ করবেন তিনি তৃতীয় ব্যক্তির, অতঃপর চতুর্থ ব্যক্তির, এভাবে জামা‘আত চলতেই থাকবে... (ওছায়মীন, মুহাযারাতুল মাক্বরূআহ, লিকাউল বাবিল মাফতূহ-১২)।
- জাহাঙ্গীর আলম, নীলফামারী।
উত্তর : নিরুপায় অবস্থায় হেফাযতের উদ্দেশ্য ব্যাংকে টাকা রাখা যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আল্লাহ যা তোমাদের উপর হারাম করেছেন, তা স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন। তবে তোমরা নিরূপায় হয়ে পড়লে তা স্বতন্ত্র কথা... (আন‘আম ১১৯)। তবে অন্য কোন নিরাপদ ব্যবস্থা থাকলে না রাখাই কর্তব্য। কেননা এরূপ রাখার মাধ্যমে পাপের সহযোগিতা করা হয়। আর আল্লাহ পাপের সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন (মায়েদাহ ৫/২)।
উত্তর : নিরুপায় অবস্থায় হেফাযতের উদ্দেশ্য ব্যাংকে টাকা রাখা যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আল্লাহ যা তোমাদের উপর হারাম করেছেন, তা স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন। তবে তোমরা নিরূপায় হয়ে পড়লে তা স্বতন্ত্র কথা... (আন‘আম ১১৯)। তবে অন্য কোন নিরাপদ ব্যবস্থা থাকলে না রাখাই কর্তব্য। কেননা এরূপ রাখার মাধ্যমে পাপের সহযোগিতা করা হয়। আর আল্লাহ পাপের সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন (মায়েদাহ ৫/২)।
৪০
প্রশ্ন (৩৯/১৫৯) : আদম (আঃ) আরশের পায়ায় লেখা কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ দেখার কোন সত্যতা আছে কি?আদম (আঃ) আরশের পায়ায় লেখা কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ দেখে বলেন, আল্লাহ তুমি আমাকে ‘মুহাম্মাদ’ নামের অসীলায় মাফ করে দাও, তখন আল্লাহ তাকে মাফ করেন। একথার কোন সত্যতা আছে কি?
- আমানুল্লাহ
কাকিয়ার চর, বুড়িচং, কুমিল্লা।
উত্তর : উক্ত মর্মে বর্ণিত হাদীছটি ‘মওযূ‘ বা জাল (আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/২৫; হাকেম হা/৪২২, তাহকীক যাহাবী, সনদ জাল)।
- আমানুল্লাহ
কাকিয়ার চর, বুড়িচং, কুমিল্লা।
উত্তর : উক্ত মর্মে বর্ণিত হাদীছটি ‘মওযূ‘ বা জাল (আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/২৫; হাকেম হা/৪২২, তাহকীক যাহাবী, সনদ জাল)।
৪১
প্রশ্ন (৪০/১৬০) : রাসূল (ছাঃ)-কে তাঁর চাচা আবু ত্বালেব যে দুশমনদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন এর বিনিময়ে কি তিনি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেন? তার অবস্থা কি হবে?-রবীউল ইসলাম
বোয়ালিয়া, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : জান্নাতবাসী হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা এবং তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক না করা। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর চাচা আবু ত্বালেব এর মৃত্যু মুশরিক অবস্থায় হয়েছিল। তবে রাসূল (ছাঃ)-এর কারণে জাহান্নামীদের মধ্যে তার শাস্তি সর্বাপেক্ষা সহজতর হবে। ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘জাহান্নামীদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সহজতর শাস্তি হবে আবু ত্বালেবের। তাঁর দু’পায়ে দু’খানা আগুনের জুতা পরানো হবে। এতে তার মাথার মগজ ফুটতে থাকবে’ (বুখারী হা/৬৫৬২, মুসলিম হা/২১২, মিশকাত হা/৫৬৬৮)। তিনি বলেন, যদি আমি না হ’তাম (অর্থাৎ শাফা‘আত না থাকত), তাহ’লে তিনি জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকতেন। অতঃপর আমি তাকে নিম্নস্তর থেকে টাখনু পর্যন্ত উঠিয়ে আনি’ (মুসলিম হা/২০৯)। নিঃসন্দেহে এটি ছিল রাসূল (ছাঃ)-এর বিশেষ সম্মান ও মর্যাদা (আলোচনা দ্রঃ সিলসিলা ছহীহাহ হা/৫৫)।
বোয়ালিয়া, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : জান্নাতবাসী হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা এবং তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক না করা। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর চাচা আবু ত্বালেব এর মৃত্যু মুশরিক অবস্থায় হয়েছিল। তবে রাসূল (ছাঃ)-এর কারণে জাহান্নামীদের মধ্যে তার শাস্তি সর্বাপেক্ষা সহজতর হবে। ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘জাহান্নামীদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সহজতর শাস্তি হবে আবু ত্বালেবের। তাঁর দু’পায়ে দু’খানা আগুনের জুতা পরানো হবে। এতে তার মাথার মগজ ফুটতে থাকবে’ (বুখারী হা/৬৫৬২, মুসলিম হা/২১২, মিশকাত হা/৫৬৬৮)। তিনি বলেন, যদি আমি না হ’তাম (অর্থাৎ শাফা‘আত না থাকত), তাহ’লে তিনি জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকতেন। অতঃপর আমি তাকে নিম্নস্তর থেকে টাখনু পর্যন্ত উঠিয়ে আনি’ (মুসলিম হা/২০৯)। নিঃসন্দেহে এটি ছিল রাসূল (ছাঃ)-এর বিশেষ সম্মান ও মর্যাদা (আলোচনা দ্রঃ সিলসিলা ছহীহাহ হা/৫৫)।
৪২
ফেব্রুয়ারি
প্রশ্ন (১/১৬১) : ‘ক্বিয়ামতের দিন সূর্য সোয়া হাত নীচে নেমে আসবে’ হাদীছের এই বাণীটির যৌক্তিকতা ও ওলামায়ে কেরামের ব্যাখ্যা জানতে চাই।-যুলফিক্বার আলম
খানপুকুর, পঞ্চগড়।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ক্বিয়ামতের দিন সূর্যকে সৃষ্টিকুলের অতি নিকটে করে দেওয়া হবে। এমনকি সূর্য প্রায় এক বা দুই মাইলের ব্যবধানে হয়ে যাবে (মুসলিম হা/২৮৬৪, আহমাদ হা/২৩৮৬৪, মিশকাত হা/৫৫৪০)। অতএব প্রশ্নে বর্ণিত ‘সোয়া হাত নীচে নেমে আসবে’ কথাটি সঠিক নয়। হাদীছটির বর্ণনাকারী তাবেঈ সুলাইম বিন আমের (রহঃ) বলেন, আমি জানি না যে ‘মীল’ শব্দ দ্বারা যমীনের দূরত্ব না চোখে সুরমা দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত শলাকার দূরত্ব বুঝানো হয়েছে’ (মুসলিম ঐ দ্রঃ)। মূলতঃ এর দ্বারা সূর্যের নিকটবর্তী হওয়ার পরিমাণ বুঝানো হয়েছে (মিরক্বাত হা/৫৫৪০-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)।
প্রথমতঃ হাদীছ অনুযায়ী সূর্য সেদিন যত নিকটবর্তী হবে এবং তার প্রভাবে মানুষের যে অবস্থার কথা বর্ণিত হয়েছে, দুনিয়াবী হিসাবে তা অবিশ্বাস্য। কিন্তু এটা গায়েবের খবর হওয়ায় মুমিনের জন্য তা সত্য বলে মেনে নেওয়া আবশ্যক। আর এর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা বিদ‘আত (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৩৩/১৭৮)।
দ্বিতীয়তঃ ক্বিয়ামতের দিন দুনিয়াবী বৈশিষ্ট্য থেকে পৃথক শারীরিক গঠন ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে মানুষ পুনরুত্থিত হবে। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘যেদিন এই পৃথিবীকে অন্য পৃথিবীতে পরিবর্তন করা হবে এবং সকলেই আল্লাহর সামনে প্রকাশিত হবে, যিনি এক ও মহা পরাক্রান্ত (ইবরাহীম ১৪/৪৮)। সেদিনের দৈর্ঘ্য হবে দুনিয়ার হিসাবে পঞ্চাশ হাযার বছর (মা‘আরেজ ৭০/৪)। অতএব গায়েবের বিষয়ে যুক্তি তালাশ করা নিতান্ত নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক। বরং পূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে পরকালীন প্রস্ত্ততি গ্রহণ করাই মুমিনের কর্তব্য (বিস্তারিত দ্রঃ মাজমূ‘ ফাতাওয়া ওছায়মীন ২/৩৬)।
খানপুকুর, পঞ্চগড়।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ক্বিয়ামতের দিন সূর্যকে সৃষ্টিকুলের অতি নিকটে করে দেওয়া হবে। এমনকি সূর্য প্রায় এক বা দুই মাইলের ব্যবধানে হয়ে যাবে (মুসলিম হা/২৮৬৪, আহমাদ হা/২৩৮৬৪, মিশকাত হা/৫৫৪০)। অতএব প্রশ্নে বর্ণিত ‘সোয়া হাত নীচে নেমে আসবে’ কথাটি সঠিক নয়। হাদীছটির বর্ণনাকারী তাবেঈ সুলাইম বিন আমের (রহঃ) বলেন, আমি জানি না যে ‘মীল’ শব্দ দ্বারা যমীনের দূরত্ব না চোখে সুরমা দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত শলাকার দূরত্ব বুঝানো হয়েছে’ (মুসলিম ঐ দ্রঃ)। মূলতঃ এর দ্বারা সূর্যের নিকটবর্তী হওয়ার পরিমাণ বুঝানো হয়েছে (মিরক্বাত হা/৫৫৪০-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)।
প্রথমতঃ হাদীছ অনুযায়ী সূর্য সেদিন যত নিকটবর্তী হবে এবং তার প্রভাবে মানুষের যে অবস্থার কথা বর্ণিত হয়েছে, দুনিয়াবী হিসাবে তা অবিশ্বাস্য। কিন্তু এটা গায়েবের খবর হওয়ায় মুমিনের জন্য তা সত্য বলে মেনে নেওয়া আবশ্যক। আর এর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা বিদ‘আত (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৩৩/১৭৮)।
দ্বিতীয়তঃ ক্বিয়ামতের দিন দুনিয়াবী বৈশিষ্ট্য থেকে পৃথক শারীরিক গঠন ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে মানুষ পুনরুত্থিত হবে। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘যেদিন এই পৃথিবীকে অন্য পৃথিবীতে পরিবর্তন করা হবে এবং সকলেই আল্লাহর সামনে প্রকাশিত হবে, যিনি এক ও মহা পরাক্রান্ত (ইবরাহীম ১৪/৪৮)। সেদিনের দৈর্ঘ্য হবে দুনিয়ার হিসাবে পঞ্চাশ হাযার বছর (মা‘আরেজ ৭০/৪)। অতএব গায়েবের বিষয়ে যুক্তি তালাশ করা নিতান্ত নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক। বরং পূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে পরকালীন প্রস্ত্ততি গ্রহণ করাই মুমিনের কর্তব্য (বিস্তারিত দ্রঃ মাজমূ‘ ফাতাওয়া ওছায়মীন ২/৩৬)।
-আবু আমাতুল্লাহ
মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর।
উত্তর : খাঁচায় আটকে রেখে পাখি পালনে শরী‘আতে কোন বাধা নেই। তবে অবশ্যই পাখির আহার প্রদানসহ যথাযথ যত্ন নিতে হবে। আনাস (রাঃ)-এর ছোট ভাই আবু উমায়ের বুলবুলি পাখি পুষতেন এবং তার সাথে খেলা করতেন। একদা পাখিটি মারা গেলে রাসূল (ছাঃ) মজা করে বলেছিলেন, হে আবু উমায়ের! তোমার ছোট বুলবুলিটির কি হ’ল?’ (বুখারী হা/৬১২৯, মুসলিম হা/২১৫০, মিশকাত হা/৪৮৮৪)। আর যথাযথভাবে খাদ্য প্রদান ও যত্ন না নিতে পারলে জায়েয হবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, এক মহিলা একটি বিড়ালকে বেঁধে রেখে খেতে না দেওয়ায় মারা যায়। ফলে মহিলাটিকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয় (বুখারী হা/৩৩১৮, মুসলিম হা/২৬১৯; মিশকাত হা/৫৩৪১)।
মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর।
উত্তর : খাঁচায় আটকে রেখে পাখি পালনে শরী‘আতে কোন বাধা নেই। তবে অবশ্যই পাখির আহার প্রদানসহ যথাযথ যত্ন নিতে হবে। আনাস (রাঃ)-এর ছোট ভাই আবু উমায়ের বুলবুলি পাখি পুষতেন এবং তার সাথে খেলা করতেন। একদা পাখিটি মারা গেলে রাসূল (ছাঃ) মজা করে বলেছিলেন, হে আবু উমায়ের! তোমার ছোট বুলবুলিটির কি হ’ল?’ (বুখারী হা/৬১২৯, মুসলিম হা/২১৫০, মিশকাত হা/৪৮৮৪)। আর যথাযথভাবে খাদ্য প্রদান ও যত্ন না নিতে পারলে জায়েয হবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, এক মহিলা একটি বিড়ালকে বেঁধে রেখে খেতে না দেওয়ায় মারা যায়। ফলে মহিলাটিকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয় (বুখারী হা/৩৩১৮, মুসলিম হা/২৬১৯; মিশকাত হা/৫৩৪১)।
-রেযওয়ান রানা
ফৌজদারহাট, চট্টগ্রাম।
উত্তর : জন্মদিবস, মৃত্যুদিবস, শোক দিবস সহ যত দিবস পালিত হয়, তার সাথে ইসলামের কোনই সম্পর্ক নেই। এগুলি স্রেফ জাহেলিয়াত এবং বিজাতীয় অপসংস্কৃতি মাত্র। অতএব এগুলি পালন করা, এর জন্য শুভেচ্ছা জানানো, কার্ড পাঠানো ইত্যাদি সবই নিষিদ্ধ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে ব্যক্তি (কিয়ামতের দিন) তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৩৪৭)।
ফৌজদারহাট, চট্টগ্রাম।
উত্তর : জন্মদিবস, মৃত্যুদিবস, শোক দিবস সহ যত দিবস পালিত হয়, তার সাথে ইসলামের কোনই সম্পর্ক নেই। এগুলি স্রেফ জাহেলিয়াত এবং বিজাতীয় অপসংস্কৃতি মাত্র। অতএব এগুলি পালন করা, এর জন্য শুভেচ্ছা জানানো, কার্ড পাঠানো ইত্যাদি সবই নিষিদ্ধ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে ব্যক্তি (কিয়ামতের দিন) তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৩৪৭)।
৪৫
প্রশ্ন (৪/১৬৪) : গরু বা অন্য কোন পশুকে কৃত্রিমভাবে প্রজনন করা এবং এর বিনিময় গ্রহণ করতে কোন বাধা আছে কি?-রওশানুল ইসলাম
গজঘন্টা, গংগাচড়া, রংপুর।
উত্তর : পশুর ক্ষেত্রে প্রজনন বৃদ্ধির জন্য যে কোন পদ্ধতি গ্রহণ করা যায়। কারণ শরী‘আতের বিধান পশুর উপরে প্রযোজ্য নয়। তা কেবল জিন ও ইনসানের প্রতি প্রযোজ্য (যারিয়াত ৫৬; মায়েদাহ ৫/৩)। অতএব কৃত্রিমভাবে প্রজনন করা জায়েয। আর এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ ব্যক্তি হিসাবে কাজের বিনিময় গ্রহণেও কোন বাধা নেই।
গজঘন্টা, গংগাচড়া, রংপুর।
উত্তর : পশুর ক্ষেত্রে প্রজনন বৃদ্ধির জন্য যে কোন পদ্ধতি গ্রহণ করা যায়। কারণ শরী‘আতের বিধান পশুর উপরে প্রযোজ্য নয়। তা কেবল জিন ও ইনসানের প্রতি প্রযোজ্য (যারিয়াত ৫৬; মায়েদাহ ৫/৩)। অতএব কৃত্রিমভাবে প্রজনন করা জায়েয। আর এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ ব্যক্তি হিসাবে কাজের বিনিময় গ্রহণেও কোন বাধা নেই।
৪৬
প্রশ্ন (৫/১৬৫) : জনৈক হিন্দু ব্যক্তি সুস্থ হওয়ায় নিয়ত অনুযায়ী মসজিদে কিছু টাকা ও কুরআন দিয়ে মানত পূরণ করতে চায়। এক্ষণে উক্ত মানত গ্রহণ করা যাবে কি?-কাওছার আলী, দিনাজপুর।
উত্তর : উক্ত মানত গ্রহণ করা যাবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অমুসলিমদের নিকট থেকে বিভিন্ন সময়ে ‘হাদিয়া’ গ্রহণ করেছেন (বুখারী হা/২৬১৫-১৮ ‘মুশরিকদের নিকট থেকে হাদিয়া গ্রহণ’ অনুচ্ছেদ)।
উত্তর : উক্ত মানত গ্রহণ করা যাবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অমুসলিমদের নিকট থেকে বিভিন্ন সময়ে ‘হাদিয়া’ গ্রহণ করেছেন (বুখারী হা/২৬১৫-১৮ ‘মুশরিকদের নিকট থেকে হাদিয়া গ্রহণ’ অনুচ্ছেদ)।
৪৭
প্রশ্ন (৬/১৬৬) : ছালাতে শেষ বৈঠকে দো‘আ মাছূরাহ পড়ার পর নিজের জন্য ইচ্ছানুযায়ী দো‘আ করা যায় কি? তাশাহ্হুদ লম্বা করা নিষিদ্ধ?ছালাতে শেষ বৈঠকে দো‘আ মাছূরাহ পড়ার পর নিজের জন্য ইচ্ছানুযায়ী দো‘আ করা যায় কি? অনেকেই বলেন, তাশাহ্হুদ লম্বা করা নিষিদ্ধ। এ বিষয়ে জানিয়ে বাধিত করবেন।
-আদৃতা*, জার্মানী।
উত্তর : ছালাতের শেষ বৈঠক দো‘আ কবূল হওয়ার অন্যতম প্রধান স্থান। রাসূল (ছাঃ) বলেন, সবচেয়ে বেশী দো‘আ কবুল হয় শেষ রাতে এবং প্রত্যেক ফরয ছালাতের শেষে (তিরমিযী হা/৩৪৯৯, মিশকাত হা/৯৬৮)। উক্ত হাদীছে ‘ছালাতের শেষ ভাগ’ অর্থ সালামের পূর্বে শেষ বৈঠক (ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ ১/৩০৫; উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৩/২৬৮)। রাসূল (ছাঃ) শেষ তাশাহ্হুদে একাধিক দো‘আ করতেন (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/৯০৯)। অতএব শেষ বৈঠকে ইচ্ছা মত দো‘আ করতে কোন বাধা নেই। আর বান্দার যেকোন মনষ্কামনা পেশ করার জন্য ‘রববানা আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া... আযা-বান্নার’ দো‘আটি পাঠ করাই যথেষ্ট। রাসূল (ছাঃ) এই দো‘আটিই অধিকাংশ সময় পাঠ করতেন’ (বুখারী হা/৪৫২২; মিশকাত হা/২৪৮৭)।
এক্ষণে শেষ বৈঠক তুলনামূলক কিছু লম্বা করায় দোষ নেই। তবে এমন লম্বা নয়, তাতে ছালাতের সাযুজ্য বিনষ্ট হয় এবং মুছল্লী বিরক্ত হয়।
* [আপনার নাম পরিবর্তন করে আরবীতে ইসলামী নাম রাখুন (স.স.)]
-আদৃতা*, জার্মানী।
উত্তর : ছালাতের শেষ বৈঠক দো‘আ কবূল হওয়ার অন্যতম প্রধান স্থান। রাসূল (ছাঃ) বলেন, সবচেয়ে বেশী দো‘আ কবুল হয় শেষ রাতে এবং প্রত্যেক ফরয ছালাতের শেষে (তিরমিযী হা/৩৪৯৯, মিশকাত হা/৯৬৮)। উক্ত হাদীছে ‘ছালাতের শেষ ভাগ’ অর্থ সালামের পূর্বে শেষ বৈঠক (ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ ১/৩০৫; উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৩/২৬৮)। রাসূল (ছাঃ) শেষ তাশাহ্হুদে একাধিক দো‘আ করতেন (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/৯০৯)। অতএব শেষ বৈঠকে ইচ্ছা মত দো‘আ করতে কোন বাধা নেই। আর বান্দার যেকোন মনষ্কামনা পেশ করার জন্য ‘রববানা আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া... আযা-বান্নার’ দো‘আটি পাঠ করাই যথেষ্ট। রাসূল (ছাঃ) এই দো‘আটিই অধিকাংশ সময় পাঠ করতেন’ (বুখারী হা/৪৫২২; মিশকাত হা/২৪৮৭)।
এক্ষণে শেষ বৈঠক তুলনামূলক কিছু লম্বা করায় দোষ নেই। তবে এমন লম্বা নয়, তাতে ছালাতের সাযুজ্য বিনষ্ট হয় এবং মুছল্লী বিরক্ত হয়।
* [আপনার নাম পরিবর্তন করে আরবীতে ইসলামী নাম রাখুন (স.স.)]
৪৮
প্রশ্ন (৭/১৬৭) :‘ফেরেশতারা শিশুদের সাথে খেলা করার কারণে তারা হাসে বা কাঁদে’- এ বিষয়টির কোন সত্যতা আছে কি?-মাহমূদ আল-ফারূক
ওমরপুর, নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : কথাটি ভিত্তিহীন। তবে প্রত্যেক মানুষের সাথেই সর্বদা ফেরেশতা থাকে। আল্লাহ বলেন, ‘প্রত্যেক মানুষের জন্য তার সামনে ও পিছনে পরপর আগত পাহারাদার ফেরেশতাগণ রয়েছে। যারা তাকে হেফাযত করে আল্লাহর হুকুমে’ (রা‘দ ১৩/১১)। সে হিসাবে শিশুদের সাথেও ফেরেশতা থাকে। কিন্তু তারা শিশুদের সাথে খেলা করে মর্মে কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না।
ওমরপুর, নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : কথাটি ভিত্তিহীন। তবে প্রত্যেক মানুষের সাথেই সর্বদা ফেরেশতা থাকে। আল্লাহ বলেন, ‘প্রত্যেক মানুষের জন্য তার সামনে ও পিছনে পরপর আগত পাহারাদার ফেরেশতাগণ রয়েছে। যারা তাকে হেফাযত করে আল্লাহর হুকুমে’ (রা‘দ ১৩/১১)। সে হিসাবে শিশুদের সাথেও ফেরেশতা থাকে। কিন্তু তারা শিশুদের সাথে খেলা করে মর্মে কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না।
-মাসঊদ, মিরপুর, ঢাকা।
উত্তর : ‘আযল’ হ’ল, স্ত্রীমিলনের সময় বাইরে বীর্যপাত করা। যার উদ্দেশ্য স্ত্রীকে গর্ভধারণ থেকে বিরত রাখা। শারীরিক অসুস্থতা অথবা দুই সন্তানের মাঝে প্রয়োজনীয় ব্যবধান রাখার ক্ষেত্রে অস্থায়ীভাবে আযল করা শরী‘আতে বৈধ। জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য এটি একটি কৌশল মাত্র। তবে বিশ্বাস রাখতে হবে যে, আল্লাহ চাইলে এর পরেও গর্ভে সন্তান আসতে পারে। জনৈক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট এসে বলল, আমার দাসীর সাথে আমি মিলিত হ’লেও তার গর্ভধারণ আমি পসন্দ করি না। তিনি বললেন, তুমি চাইলে আযল করতে পার, তবে আল্লাহ তা‘আলা যা তাক্বদীরে লিখেছেন তা হবেই (মুসলিম হা/৩৬২৯; মিশকাত হা/৩১৮৫)।
সন্তানের ভরণ-পোষণের ভয়ে ‘আযল’ করা নিষিদ্ধ। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা দরিদ্রতার ভয়ে সন্তানদেরকে হত্যা করো না। কেননা আমি যেমন তোমাদেরকে রূযী দেই, তেমনি তাদেরকেও রূযী দেব’ (আন‘আম ৬/১৫১)। অতএব আযল পদ্ধতি অথবা বর্তমান যুগে আবিষ্কৃত জন্মনিয়ন্ত্রণের যত পদ্ধতি রয়েছে, সেগুলো শারীরিক অসুস্থতা অথবা দুই সন্তানের মাঝে প্রয়োজনীয় ব্যবধান রাখার উদ্দেশ্যে অস্থায়ীভাবে গ্রহণ করা জায়েয। স্থায়ীভাবে গর্ভনিরোধ নিষিদ্ধ।
মনে রাখতে হবে যে, ইসলামে অধিক সন্তান লাভে উৎসাহিত করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা প্রেমময়ী ও অধিক সন্তানদায়িনী নারীকে বিবাহ কর। কেননা আমি ক্বিয়ামতের দিন অন্যান্য উম্মতের চাইতে তোমাদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে গর্ব করব’ (আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৩০৯১; আহমাদ)। জন্মনিয়ন্ত্রণ বা জন্মনিরোধে উক্ত উদ্দেশ্য যেমন ব্যাহত হয়, তেমনি নারীর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। যে নারীর যত সন্তান বেশী, সে নারী তত সুখী ও স্বাস্থ্যবর্তী। সন্তান জন্ম দেওয়াই নারীর প্রকৃতি। আর এই প্রকৃতির উপর হস্তক্ষেপ করলে তার মন্দ প্রতিক্রিয়া হওয়াটাই স্বাভাবিক।
উত্তর : ‘আযল’ হ’ল, স্ত্রীমিলনের সময় বাইরে বীর্যপাত করা। যার উদ্দেশ্য স্ত্রীকে গর্ভধারণ থেকে বিরত রাখা। শারীরিক অসুস্থতা অথবা দুই সন্তানের মাঝে প্রয়োজনীয় ব্যবধান রাখার ক্ষেত্রে অস্থায়ীভাবে আযল করা শরী‘আতে বৈধ। জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য এটি একটি কৌশল মাত্র। তবে বিশ্বাস রাখতে হবে যে, আল্লাহ চাইলে এর পরেও গর্ভে সন্তান আসতে পারে। জনৈক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট এসে বলল, আমার দাসীর সাথে আমি মিলিত হ’লেও তার গর্ভধারণ আমি পসন্দ করি না। তিনি বললেন, তুমি চাইলে আযল করতে পার, তবে আল্লাহ তা‘আলা যা তাক্বদীরে লিখেছেন তা হবেই (মুসলিম হা/৩৬২৯; মিশকাত হা/৩১৮৫)।
সন্তানের ভরণ-পোষণের ভয়ে ‘আযল’ করা নিষিদ্ধ। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা দরিদ্রতার ভয়ে সন্তানদেরকে হত্যা করো না। কেননা আমি যেমন তোমাদেরকে রূযী দেই, তেমনি তাদেরকেও রূযী দেব’ (আন‘আম ৬/১৫১)। অতএব আযল পদ্ধতি অথবা বর্তমান যুগে আবিষ্কৃত জন্মনিয়ন্ত্রণের যত পদ্ধতি রয়েছে, সেগুলো শারীরিক অসুস্থতা অথবা দুই সন্তানের মাঝে প্রয়োজনীয় ব্যবধান রাখার উদ্দেশ্যে অস্থায়ীভাবে গ্রহণ করা জায়েয। স্থায়ীভাবে গর্ভনিরোধ নিষিদ্ধ।
মনে রাখতে হবে যে, ইসলামে অধিক সন্তান লাভে উৎসাহিত করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা প্রেমময়ী ও অধিক সন্তানদায়িনী নারীকে বিবাহ কর। কেননা আমি ক্বিয়ামতের দিন অন্যান্য উম্মতের চাইতে তোমাদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে গর্ব করব’ (আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৩০৯১; আহমাদ)। জন্মনিয়ন্ত্রণ বা জন্মনিরোধে উক্ত উদ্দেশ্য যেমন ব্যাহত হয়, তেমনি নারীর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। যে নারীর যত সন্তান বেশী, সে নারী তত সুখী ও স্বাস্থ্যবর্তী। সন্তান জন্ম দেওয়াই নারীর প্রকৃতি। আর এই প্রকৃতির উপর হস্তক্ষেপ করলে তার মন্দ প্রতিক্রিয়া হওয়াটাই স্বাভাবিক।
৫০
প্রশ্ন (৯/১৬৯) : ব্রেসলেটের ম্যাগনেটিক পাথরের মধ্যে কোন ওষধি গুণ আছে কি? যদি থাকে তবে তা ব্যবহার করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?-মীযানুর রহমান
বদরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, রংপুর।
উত্তর : এতে কোন ঔষধি গুণ নেই। এসম্পর্কে যা কিছু ধারণা করা হয়, তা কুসংস্কার মাত্র। তাছাড়া রাসূল (ছাঃ) অসুস্থতা দূর করার জন্য শরীরে কোন কিছু ঝুলাতে নিষেধ করেছেন (তিরমিযী হা/২০৭২; মিশকাত হা/৪৫৫৬)। অতএব রোগ প্রতিরোধ, চোখ লাগা ইত্যাদি যে উদ্দেশ্যেই হৌক না কেন, তা ব্যবহার থেকে বিরত থাকা আবশ্যক (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ, ফৎওয়া নং ১৭০৪২)।
বদরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, রংপুর।
উত্তর : এতে কোন ঔষধি গুণ নেই। এসম্পর্কে যা কিছু ধারণা করা হয়, তা কুসংস্কার মাত্র। তাছাড়া রাসূল (ছাঃ) অসুস্থতা দূর করার জন্য শরীরে কোন কিছু ঝুলাতে নিষেধ করেছেন (তিরমিযী হা/২০৭২; মিশকাত হা/৪৫৫৬)। অতএব রোগ প্রতিরোধ, চোখ লাগা ইত্যাদি যে উদ্দেশ্যেই হৌক না কেন, তা ব্যবহার থেকে বিরত থাকা আবশ্যক (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ, ফৎওয়া নং ১৭০৪২)।
-আব্দুল কুদ্দূস, লালমণিরহাট।
উত্তর : অসুস্থ ব্যক্তির প্রয়োজনে রক্ত দান করায় কোন বাধা নেই। বরং মানুষের জীবন বাঁচানোর স্বার্থে এরূপ সাহায্য করা নিঃসন্দেহে নেকীর কাজ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। যে ব্যক্তি তার কোন ভাইয়ের সাহায্যে এগিয়ে আসে, আল্লাহ তা‘আলা তার সাহায্যে এগিয়ে আসেন। যে ব্যক্তি দুনিয়াতে তার ভাইয়ের কোন কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ তা‘আলাও ক্বিয়ামতের দিন তার একটি কষ্ট দূর করবেন’ (বুখারী হা/২৪৪২; মুসলিম হা/২৫৮০; মিশকাত হা/৪৯৫৮ ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়, ‘সৃষ্টির প্রতি দয়া’ অনুচ্ছেদ)। তিনি বলেন, (নেকীর উদ্দেশ্যে কৃত) প্রত্যেক সৎকর্মই ছাদাক্বা (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/১৮৯৩)। অতএব এটিও ছাদাক্বার অন্তর্ভুক্ত হবে।
উত্তর : অসুস্থ ব্যক্তির প্রয়োজনে রক্ত দান করায় কোন বাধা নেই। বরং মানুষের জীবন বাঁচানোর স্বার্থে এরূপ সাহায্য করা নিঃসন্দেহে নেকীর কাজ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। যে ব্যক্তি তার কোন ভাইয়ের সাহায্যে এগিয়ে আসে, আল্লাহ তা‘আলা তার সাহায্যে এগিয়ে আসেন। যে ব্যক্তি দুনিয়াতে তার ভাইয়ের কোন কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ তা‘আলাও ক্বিয়ামতের দিন তার একটি কষ্ট দূর করবেন’ (বুখারী হা/২৪৪২; মুসলিম হা/২৫৮০; মিশকাত হা/৪৯৫৮ ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়, ‘সৃষ্টির প্রতি দয়া’ অনুচ্ছেদ)। তিনি বলেন, (নেকীর উদ্দেশ্যে কৃত) প্রত্যেক সৎকর্মই ছাদাক্বা (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/১৮৯৩)। অতএব এটিও ছাদাক্বার অন্তর্ভুক্ত হবে।
৫২
প্রশ্ন (১১/১৭১) : শ্বশুর বাড়ীতে স্থায়ীভাবে থাকলেও মাঝে মধ্যে পিতার বাড়িতে যাই। এক্ষণে পিতার বাড়িতে ছালাত ক্বছর করা যাবে কি?-এম.এস.এ আব্দুর রব
ওমরগাড়ী, চারঘাট, রাজশাহী।
উত্তর : সাময়িকভাবে অবস্থান করলে পারবে। কেননা রাসূল (ছাঃ) মদীনা থেকে মক্কায় হজ্জব্রত পালন করতে গিয়ে ক্বছর করেছিলেন, যদিও তিনি পূর্বে মক্কার অধিবাসী ছিলেন। তাঁর সাথে বহুসংখ্যক ছাহাবী ছিলেন, মক্কায় যাদের বাড়ি-ঘর ও নিকটাত্মীয় ছিল। কিন্তু রাসূল (ছাঃ) কাউকেই পূর্ণ ছালাত আদায়ের নির্দেশ দেননি (ইমাম শাফেঈ, কিতাবুল উম্ম ১/২১৬)। এছাড়া রাসূল (ছাঃ) সেখানে জুম‘আ আদায় না করে যোহর ছালাত আদায় করেছিলেন (ইরওয়া হা/৫৯৪)।
ওমরগাড়ী, চারঘাট, রাজশাহী।
উত্তর : সাময়িকভাবে অবস্থান করলে পারবে। কেননা রাসূল (ছাঃ) মদীনা থেকে মক্কায় হজ্জব্রত পালন করতে গিয়ে ক্বছর করেছিলেন, যদিও তিনি পূর্বে মক্কার অধিবাসী ছিলেন। তাঁর সাথে বহুসংখ্যক ছাহাবী ছিলেন, মক্কায় যাদের বাড়ি-ঘর ও নিকটাত্মীয় ছিল। কিন্তু রাসূল (ছাঃ) কাউকেই পূর্ণ ছালাত আদায়ের নির্দেশ দেননি (ইমাম শাফেঈ, কিতাবুল উম্ম ১/২১৬)। এছাড়া রাসূল (ছাঃ) সেখানে জুম‘আ আদায় না করে যোহর ছালাত আদায় করেছিলেন (ইরওয়া হা/৫৯৪)।
৫৩
প্রশ্ন (১২/১৭২) : সতর না ঢেকে সামান্য বস্ত্র পরা অবস্থায় ওযূ করলে উক্ত ওযূতে ছালাত আদায় করা যাবে কি, না সতর ঢেকে পুনরায় ওযূ করতে হবে?-খাদীজা
চারঘাট, রাজশাহী।
উত্তর : এ অবস্থায় পুনরায় ওযূ করতে হবে না। কারণ সতর অনাবৃত অবস্থায় ওযূ করা ওযূ ভঙ্গের কারণ সমূহের অন্তর্ভুক্ত নয়। ওযূ ভঙ্গের প্রধান কারণ হ’ল, পেশাব ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে কিছু বের হওয়া (নিসা ৪/৪৩, বুখারী হা/১৩৫)।
চারঘাট, রাজশাহী।
উত্তর : এ অবস্থায় পুনরায় ওযূ করতে হবে না। কারণ সতর অনাবৃত অবস্থায় ওযূ করা ওযূ ভঙ্গের কারণ সমূহের অন্তর্ভুক্ত নয়। ওযূ ভঙ্গের প্রধান কারণ হ’ল, পেশাব ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে কিছু বের হওয়া (নিসা ৪/৪৩, বুখারী হা/১৩৫)।
৫৪
প্রশ্ন (১৩/১৭৩) : পিতা-মাতাকে মারধর করে ভুল বুঝে ক্ষমা চাইলে মাতা ক্ষমা করলেও জীবিত পিতা ক্ষমা করেননি। আল্লাহর নিকটে তওবা করলে উক্ত গোনাহ মাফ হবে?পিতা-মাতাকে মারধর করার পর ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চাইলে মাতা ক্ষমা করলেও জীবিত পিতা ক্ষমা করেননি। এক্ষণে আল্লাহর নিকটে তওবা করলে উক্ত গোনাহ মাফ হবে কি?
-যুবায়ের, পিংলু, জয়পুরহাট।
উত্তর : পিতা-মাতাকে প্রহার করা কবীরা গোনাহের অন্তর্ভুক্ত (বুখারী হা/৬১৭১, মিশকাত হা/৩৭৭৭)। এ গোনাহটি হাক্কুল ইবাদের সাথে সম্পর্কিত গোনাহ। সুতরাং এর জন্য কেবল আল্লাহর নিকটে তওবা করলেই যথেষ্ট হবে না (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৮/১৮৭; নববী, শরহ মুসলিম হা/১৮৮৬-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)। বরং অনুতপ্ত হয়ে পিতার নিকটে ক্ষমা নেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে এবং তার সাথে সদ্ব্যবহার অব্যাহত রাখতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘পিতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং পিতার অসন্তুষ্টিতে আল্লাহর অসন্তুষ্টি’ (তিরমিযী হা/১৮৯৯, মিশকাত হা/৪৯২৭)।
-যুবায়ের, পিংলু, জয়পুরহাট।
উত্তর : পিতা-মাতাকে প্রহার করা কবীরা গোনাহের অন্তর্ভুক্ত (বুখারী হা/৬১৭১, মিশকাত হা/৩৭৭৭)। এ গোনাহটি হাক্কুল ইবাদের সাথে সম্পর্কিত গোনাহ। সুতরাং এর জন্য কেবল আল্লাহর নিকটে তওবা করলেই যথেষ্ট হবে না (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৮/১৮৭; নববী, শরহ মুসলিম হা/১৮৮৬-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)। বরং অনুতপ্ত হয়ে পিতার নিকটে ক্ষমা নেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে এবং তার সাথে সদ্ব্যবহার অব্যাহত রাখতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘পিতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং পিতার অসন্তুষ্টিতে আল্লাহর অসন্তুষ্টি’ (তিরমিযী হা/১৮৯৯, মিশকাত হা/৪৯২৭)।
৫৫
প্রশ্ন (১৪/১৭৪) : প্রবল শীতের কারণে বা রোগ বৃদ্ধির আশংকায় ফরয গোসল না করে তায়াম্মুম বা ওযূ করে ছালাত আদায় করা যাবে কি?-আব্দুর রহীম
পুঠিয়া, রাজশাহী।
উত্তর : প্রবল শীতের কারণে শারীরিক অসুস্থতা, রোগ সৃষ্টি বা বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকলে ওযূ নয়, বরং তায়াম্মুম করে ছালাত আদায় করবে (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৩১)। আমর ইবনুল ‘আছ (রাঃ) বলেন, ‘যাতুস সালাসিল’ যুদ্ধে শীতের রাতে আমার স্বপ্নদোষ হয়েছিল। শারীরিক অসুস্থতার আশংকায় গোসল না করে তায়াম্মুম করে সাথীদের নিয়ে ফজরের ছালাত আদায় করলাম। পরে সাথীরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকটে এই ঘটনা বর্ণনা করলে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি কি অপবিত্রাবস্থায় তোমার সাথীদের নিয়ে ছালাত আদায় করেছ? তখন আমি গোসল না করার কারণ ব্যাখ্যা করলাম এবং বললাম আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের সম্মুখীন কর না’ (বাক্বারাহ ২/১৯৫)। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হাসলেন এবং চুপ থাকলেন (আবুদাঊদ হা/৩৩৪, ‘ঠান্ডা লাগার ভয় থাকলে অপবিত্র ব্যক্তি কি করবে’ অনুচ্ছেদ, সনদ ছহীহ)।
পুঠিয়া, রাজশাহী।
উত্তর : প্রবল শীতের কারণে শারীরিক অসুস্থতা, রোগ সৃষ্টি বা বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকলে ওযূ নয়, বরং তায়াম্মুম করে ছালাত আদায় করবে (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৩১)। আমর ইবনুল ‘আছ (রাঃ) বলেন, ‘যাতুস সালাসিল’ যুদ্ধে শীতের রাতে আমার স্বপ্নদোষ হয়েছিল। শারীরিক অসুস্থতার আশংকায় গোসল না করে তায়াম্মুম করে সাথীদের নিয়ে ফজরের ছালাত আদায় করলাম। পরে সাথীরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকটে এই ঘটনা বর্ণনা করলে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি কি অপবিত্রাবস্থায় তোমার সাথীদের নিয়ে ছালাত আদায় করেছ? তখন আমি গোসল না করার কারণ ব্যাখ্যা করলাম এবং বললাম আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের সম্মুখীন কর না’ (বাক্বারাহ ২/১৯৫)। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হাসলেন এবং চুপ থাকলেন (আবুদাঊদ হা/৩৩৪, ‘ঠান্ডা লাগার ভয় থাকলে অপবিত্র ব্যক্তি কি করবে’ অনুচ্ছেদ, সনদ ছহীহ)।
৫৬
প্রশ্ন (১৫/১৭৫) : ৪৫ বছরের অধিক বয়সী মহিলা শারীরিক অক্ষমতার কারণে স্বামীর চাহিদা মিটাতে অপারগতা প্রকাশ করলে গোনাহগার হবেন কি?-মুহাম্মাদ ইবরাহীম, চাঁদপুর।
উত্তর : আল্লাহ তা‘আলা কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না (বাক্বারাহ ২/২৮৬)। তবে তাকে সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করতে হবে। চেষ্টায় ঘাটতি হ’লে গুনাহগার হবে (তাগাবুন ৬৪/১৬)। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন কোন ব্যক্তি স্ত্রীকে তার বিছানায় ডাকে সে তার বিছানায় যেতে অস্বীকার করে এবং অসন্তুষ্ট অবস্থায় রাত্রি যাপন করে, তখন ফেরেশতাগণ তার প্রতি সকাল পর্যন্ত অভিশাপ করতে থাকেন’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩২৪৬)।
উত্তর : আল্লাহ তা‘আলা কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না (বাক্বারাহ ২/২৮৬)। তবে তাকে সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করতে হবে। চেষ্টায় ঘাটতি হ’লে গুনাহগার হবে (তাগাবুন ৬৪/১৬)। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন কোন ব্যক্তি স্ত্রীকে তার বিছানায় ডাকে সে তার বিছানায় যেতে অস্বীকার করে এবং অসন্তুষ্ট অবস্থায় রাত্রি যাপন করে, তখন ফেরেশতাগণ তার প্রতি সকাল পর্যন্ত অভিশাপ করতে থাকেন’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩২৪৬)।
৫৭
প্রশ্ন (১৬/১৭৬) : আমার কাপড়ের দোকানে মেয়েদের টপস, জিপসি, প্যান্ট, টাইটস ইত্যাদি আধুনিক পোষাক বিক্রয় করে থাকি। এটা শরী‘আতসম্মত হবে কি?-সোহেল আমীন
সিটি প্লাজা, গোহাটা রোড, যশোর।
উত্তর : নগ্নতা প্রকাশক ও যৌন উদ্দীপক যেকোন পোষাক পরিধান করা হারাম (মুসলিম হা/২১২৮, মিশকাত হা/৩৫২৪)। নারী-পুরুষের পোষাক এমন হবে যাতে (১) দেহের গোপনীয় স্থান সমূহ অন্যের চোখে প্রকট হয়ে না ওঠে (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৫২৪)। (২) ঢিলাঢালা, ভদ্র ও মার্জিত হওয়া (আ‘রাফ ৭/২৬; মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৮)। (৩) অমুসলিমদের সদৃশ না হওয়া (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৩৪৭)। (৪) অহংকার প্রকাশ না পাওয়া (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৪৩১১-১৪, ৪৩২১; নাসাঈ, ইবনু মাজাহ হা/৪৩৮১)। অতএব কোন ধরনের হারাম পোষাকের ব্যবসা করা শরী‘আতসম্মত নয়(আবুদাঊদ হা/৩৪৮৫ ও ৩৪৮৮, সনদ ছহীহ)।
সিটি প্লাজা, গোহাটা রোড, যশোর।
উত্তর : নগ্নতা প্রকাশক ও যৌন উদ্দীপক যেকোন পোষাক পরিধান করা হারাম (মুসলিম হা/২১২৮, মিশকাত হা/৩৫২৪)। নারী-পুরুষের পোষাক এমন হবে যাতে (১) দেহের গোপনীয় স্থান সমূহ অন্যের চোখে প্রকট হয়ে না ওঠে (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৫২৪)। (২) ঢিলাঢালা, ভদ্র ও মার্জিত হওয়া (আ‘রাফ ৭/২৬; মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৮)। (৩) অমুসলিমদের সদৃশ না হওয়া (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৩৪৭)। (৪) অহংকার প্রকাশ না পাওয়া (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৪৩১১-১৪, ৪৩২১; নাসাঈ, ইবনু মাজাহ হা/৪৩৮১)। অতএব কোন ধরনের হারাম পোষাকের ব্যবসা করা শরী‘আতসম্মত নয়(আবুদাঊদ হা/৩৪৮৫ ও ৩৪৮৮, সনদ ছহীহ)।
৫৮
প্রশ্ন (১৭/১৭৭) : ৫ লক্ষ টাকা ১ বছরের বিনিময়ে চার কিস্তিতে পরবর্তী একবছরে মোট পাঁচ লক্ষ ৫০ হাযার টাকা এবং সাথে মাসিক মুনাফা পরিশোধ শরী‘আতসম্মত হবে?জনৈক ব্যক্তি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫ লক্ষ টাকা ১ বছরের জন্য বিনিয়োগ হিসাবে চান। বিনিময়ে তিনি চার কিস্তিতে পরবর্তী একবছরে মোট পাঁচ লক্ষ ৫০ হাযার টাকা এবং সাথে মাসিক মুনাফা পরিশোধ করবেন। এরূপ লেনদেন শরী‘আতসম্মত হবে কি?
-খালিদ, মহাখালী, ঢাকা।
উত্তর : এরূপ লেন-দেন জায়েয নয়। এখানে বিনিয়োগের মোট টাকার অতিরিক্ত পঞ্চাশ হাযার টাকা স্পষ্ট সূদ। যা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ছাঃ) হারাম করেছেন (বাক্বারাহ ২/২৭৫)। শরী‘আতে যৌথ ব্যবসা পদ্ধতি দু’টি- (১) মুশারাকা : দুই বা ততোধিক ব্যক্তি বিনিয়োগ করবে এবং বিনিয়োগের পরিমাণ অনুযায়ী লাভ-লোকসান বণ্টিত হবে (দারাকুৎনী হা/৩০৭৭) (২) মুযারাবা : একজনের অর্থে অপরজন ব্যবসা করবে। লভ্যাংশ চুক্তি অনুপাতে উভয়ের মধ্যে বণ্টিত হবে (আবুদাঊদ হা/৪৮৩৬; সনদ ছহীহ, নায়ল হা/২৩৩৪-৩৫)।
-খালিদ, মহাখালী, ঢাকা।
উত্তর : এরূপ লেন-দেন জায়েয নয়। এখানে বিনিয়োগের মোট টাকার অতিরিক্ত পঞ্চাশ হাযার টাকা স্পষ্ট সূদ। যা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ছাঃ) হারাম করেছেন (বাক্বারাহ ২/২৭৫)। শরী‘আতে যৌথ ব্যবসা পদ্ধতি দু’টি- (১) মুশারাকা : দুই বা ততোধিক ব্যক্তি বিনিয়োগ করবে এবং বিনিয়োগের পরিমাণ অনুযায়ী লাভ-লোকসান বণ্টিত হবে (দারাকুৎনী হা/৩০৭৭) (২) মুযারাবা : একজনের অর্থে অপরজন ব্যবসা করবে। লভ্যাংশ চুক্তি অনুপাতে উভয়ের মধ্যে বণ্টিত হবে (আবুদাঊদ হা/৪৮৩৬; সনদ ছহীহ, নায়ল হা/২৩৩৪-৩৫)।
৫৯
প্রশ্ন (১৮/১৭৮) : মসজিদের মেহরাবের উপরে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ এবং একপাশে ‘আল্লাহ’ অপর পাশে ‘মুহাম্মাদ’ লেখা যাবে কি?-রফীকুল ইসলাম
মধ্য মাগুরা, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : মসজিদের মেহরাবের উপরে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ লেখা যাবে না। কেননা মসজিদে এরূপ লেখার নিয়ম রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের যুগে ছিল না। আর মেহরাবের এক পার্শ্বে ‘আল্লাহ’ অপর পাশে^র্ ‘মুহাম্মাদ’ লিখা শিরক। এতে আল্লাহ ও রাসূলকে তথা স্রষ্টা ও সৃষ্টিকে সমান গণ্য করা হয়। এইসব লেখার পিছনে সাধারণতঃ এই আক্বীদা কাজ করে যে, যিনিই আল্লাহ তিনিই মুহাম্মাদ। অর্থাৎ আল্লাহই মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর রূপধারণ করে দুনিয়াতে এসেছেন (নাঊযুবিল্লাহ)। যার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় ছূফীদের আবিষ্কৃত মীলাদ মাহফিলে পঠিত উর্দূ কবিতার মাধ্যমে। যেমন বলা হয়, ‘ওহ্ জো মুস্তাবী আরশ থা খোদা হো কার, উতার পাড়া হ্যায় মদীনা মেঁ মোছতফা হো কার্। অর্থ: আরশের অধিপতি আল্লাহ ছিলেন যিনি, মুছতফা রূপে মদীনায় অবতীর্ণ হ’লেন তিনি’। এগুলো পরিষ্কারভাবে শিরক। অতএব আল্লাহ ও মুহাম্মাদ পাশাপাশি লেখা থেকে মসজিদকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
আজকাল অনেকে এগুলি বাসের মাথায় দু’পাশে লেখেন। অনেকে মুহাম্মাদ-এর বদলে ‘গরীব নেওয়ায’ লেখেন। কোন কোন গাড়ীর মাথায় বড় করে আরবীতে ‘আল্লাহু’ লেখা হয়। এগুলি লেখা অনর্থক। কেননা মসজিদে, ঘর-বাড়ীতে, দেওয়ালে, পাত্রে বা পরিবহনে এসব লেখার কোন প্রমাণ কুরআন-হাদীছে নেই। এতে কোন লাভও নেই। বরং বিসমিল্লাহ বলে কাজ শুরু করা ও আলহামদুলিল্লাহ বলে কাজ শেষ করার মধ্যেই কেবল আল্লাহর রহমত ও বরকত নিহিত রয়েছে। অতএব এসব অনর্থক কাজ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
মধ্য মাগুরা, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : মসজিদের মেহরাবের উপরে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ লেখা যাবে না। কেননা মসজিদে এরূপ লেখার নিয়ম রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের যুগে ছিল না। আর মেহরাবের এক পার্শ্বে ‘আল্লাহ’ অপর পাশে^র্ ‘মুহাম্মাদ’ লিখা শিরক। এতে আল্লাহ ও রাসূলকে তথা স্রষ্টা ও সৃষ্টিকে সমান গণ্য করা হয়। এইসব লেখার পিছনে সাধারণতঃ এই আক্বীদা কাজ করে যে, যিনিই আল্লাহ তিনিই মুহাম্মাদ। অর্থাৎ আল্লাহই মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর রূপধারণ করে দুনিয়াতে এসেছেন (নাঊযুবিল্লাহ)। যার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় ছূফীদের আবিষ্কৃত মীলাদ মাহফিলে পঠিত উর্দূ কবিতার মাধ্যমে। যেমন বলা হয়, ‘ওহ্ জো মুস্তাবী আরশ থা খোদা হো কার, উতার পাড়া হ্যায় মদীনা মেঁ মোছতফা হো কার্। অর্থ: আরশের অধিপতি আল্লাহ ছিলেন যিনি, মুছতফা রূপে মদীনায় অবতীর্ণ হ’লেন তিনি’। এগুলো পরিষ্কারভাবে শিরক। অতএব আল্লাহ ও মুহাম্মাদ পাশাপাশি লেখা থেকে মসজিদকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
আজকাল অনেকে এগুলি বাসের মাথায় দু’পাশে লেখেন। অনেকে মুহাম্মাদ-এর বদলে ‘গরীব নেওয়ায’ লেখেন। কোন কোন গাড়ীর মাথায় বড় করে আরবীতে ‘আল্লাহু’ লেখা হয়। এগুলি লেখা অনর্থক। কেননা মসজিদে, ঘর-বাড়ীতে, দেওয়ালে, পাত্রে বা পরিবহনে এসব লেখার কোন প্রমাণ কুরআন-হাদীছে নেই। এতে কোন লাভও নেই। বরং বিসমিল্লাহ বলে কাজ শুরু করা ও আলহামদুলিল্লাহ বলে কাজ শেষ করার মধ্যেই কেবল আল্লাহর রহমত ও বরকত নিহিত রয়েছে। অতএব এসব অনর্থক কাজ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
৬০
প্রশ্ন (১৯/১৭৯) : জুম‘আ ও যোহর ছালাতের সময় কি একই? যদি তাই হয়, তবে খুৎবা লম্বা না করে জুম‘আর ছালাত আউয়াল ওয়াক্তে আদায় করাই কি উত্তম হবে?-ছাদরুল ইসলাম
-মেলান্দী, মোহনপুর, রাজশাহী।
উত্তর : জুম‘আ ও যোহরের ছালাতের সময় একই। আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, সূর্য যখন (পশ্চিম আকাশে) ঢলে যেত তখন নবী করীম (ছাঃ) জুম‘আর ছালাত আদায় করতেন (বুখারী হা/৯০৪; মিশকাত হা/১৪০১)। তবে এর অর্থ এই নয় যে, যোহরের ছালাত যেমন ১৫ মিনিটে শেষ হয়, খুৎবা সহ জুম‘আর ছালাত তেমনি সংক্ষিপ্ত সময়ে শেষ হবে। যোহরের ছালাতে খুৎবা নেই। কিন্তু জুম‘আর ছালাতে খুৎবা রয়েছে। যার অর্থ ভাষণ। ফলে তা লম্বা হবেই। অতএব খুৎবা আখেরাত মুখী, সংক্ষিপ্ত ও সারগর্ভ হওয়া বাঞ্ছনীয় (মুসলিম, মিশকাত হা/১৪০৫-০৬)। তবে দীর্ঘ হওয়াও জায়েয আছে (মুসলিম হা/২৮৯২)। জাবের (রাঃ) বলেন, খুৎবার সময় রাসূল (ছাঃ)-এর দু’চোখ উত্তেজনায় লাল হয়ে যেত। গলার স্বর উঁচু হ’ত? ক্রোধ ভীষণ হ’ত। যেন তিনি কোন সৈন্যদলকে হুঁশিয়ার করছেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/১৪০৭)। অতএব ঐ খুৎবা অবশ্যই দু’পাঁচ মিনিটের জন্য ছিল না। বরং প্রয়োজনমত ছিল। অতএব খুৎবা দীর্ঘ হ’লে খুৎবা শুরুর সময় প্রয়োজনমত এগিয়ে নিতে হবে এবং ছালাত আউয়াল ওয়াক্তে পড়াই উত্তম হবে।
উল্লেখ্য যে, আজকাল জুম‘আর মূল দু’টি খুৎবা আরবীতে ১০ মিনিটে শেষ করে দেওয়া হয় এবং তার পূর্বে মিম্বরে বসে বাংলায় আরেকটি খুৎবা দেওয়া হয়। যা পরিষ্কারভাবে বিদ‘আত। যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
-মেলান্দী, মোহনপুর, রাজশাহী।
উত্তর : জুম‘আ ও যোহরের ছালাতের সময় একই। আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, সূর্য যখন (পশ্চিম আকাশে) ঢলে যেত তখন নবী করীম (ছাঃ) জুম‘আর ছালাত আদায় করতেন (বুখারী হা/৯০৪; মিশকাত হা/১৪০১)। তবে এর অর্থ এই নয় যে, যোহরের ছালাত যেমন ১৫ মিনিটে শেষ হয়, খুৎবা সহ জুম‘আর ছালাত তেমনি সংক্ষিপ্ত সময়ে শেষ হবে। যোহরের ছালাতে খুৎবা নেই। কিন্তু জুম‘আর ছালাতে খুৎবা রয়েছে। যার অর্থ ভাষণ। ফলে তা লম্বা হবেই। অতএব খুৎবা আখেরাত মুখী, সংক্ষিপ্ত ও সারগর্ভ হওয়া বাঞ্ছনীয় (মুসলিম, মিশকাত হা/১৪০৫-০৬)। তবে দীর্ঘ হওয়াও জায়েয আছে (মুসলিম হা/২৮৯২)। জাবের (রাঃ) বলেন, খুৎবার সময় রাসূল (ছাঃ)-এর দু’চোখ উত্তেজনায় লাল হয়ে যেত। গলার স্বর উঁচু হ’ত? ক্রোধ ভীষণ হ’ত। যেন তিনি কোন সৈন্যদলকে হুঁশিয়ার করছেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/১৪০৭)। অতএব ঐ খুৎবা অবশ্যই দু’পাঁচ মিনিটের জন্য ছিল না। বরং প্রয়োজনমত ছিল। অতএব খুৎবা দীর্ঘ হ’লে খুৎবা শুরুর সময় প্রয়োজনমত এগিয়ে নিতে হবে এবং ছালাত আউয়াল ওয়াক্তে পড়াই উত্তম হবে।
উল্লেখ্য যে, আজকাল জুম‘আর মূল দু’টি খুৎবা আরবীতে ১০ মিনিটে শেষ করে দেওয়া হয় এবং তার পূর্বে মিম্বরে বসে বাংলায় আরেকটি খুৎবা দেওয়া হয়। যা পরিষ্কারভাবে বিদ‘আত। যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
-মাসঊদ রানা, বিরল, দিনাজপুর।
উত্তর : বাড়ীতে অবস্থান করাই মহিলাদের কর্তব্য (আহযাব ৩৩)। এক্ষণে চিকিৎসা মানুষের মৌলিক চাহিদা সমূহের অন্তর্ভুক্ত। যা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই একান্ত প্রয়োজন। সেকারণ নারীদের জন্য নারী এবং পুরুষদের জন্য পুরুষ চিকিৎসক ও সেবক থাকা এবং হাসপাতালগুলিতে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক বিভাগ থাকা আবশ্যক। এরূপ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নারীদের নার্স বা চিকিৎসকের দায়িত্বপালনে শরী‘আতে কোন বাধা নেই। তবে এরূপ ব্যবস্থা না থাকলে সার্বক্ষণিক পর্দার মধ্যে থাকা এবং পূর্ণ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা সাপেক্ষে নারীরা নার্সিং বা চিকিৎসা পেশায় অংশগ্রহণ করতে পারে।
উত্তর : বাড়ীতে অবস্থান করাই মহিলাদের কর্তব্য (আহযাব ৩৩)। এক্ষণে চিকিৎসা মানুষের মৌলিক চাহিদা সমূহের অন্তর্ভুক্ত। যা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই একান্ত প্রয়োজন। সেকারণ নারীদের জন্য নারী এবং পুরুষদের জন্য পুরুষ চিকিৎসক ও সেবক থাকা এবং হাসপাতালগুলিতে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক বিভাগ থাকা আবশ্যক। এরূপ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নারীদের নার্স বা চিকিৎসকের দায়িত্বপালনে শরী‘আতে কোন বাধা নেই। তবে এরূপ ব্যবস্থা না থাকলে সার্বক্ষণিক পর্দার মধ্যে থাকা এবং পূর্ণ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা সাপেক্ষে নারীরা নার্সিং বা চিকিৎসা পেশায় অংশগ্রহণ করতে পারে।
৬২
প্রশ্ন (২১/১৮১) : পিতার জীবদ্দশায় বড় বোন এবং মৃত্যুর পর ছোট ভাই মারা গেছে। বড় বোনের সন্তানেরা নানার সম্পদের অংশীদার হবে কি? আর ছোট ভাইয়ের প্রাপ্ত অংশ কারা পাবে?পিতার জীবদ্দশায় বড় বোন এবং মৃত্যুর পর ছোট ভাই মারা গেছে। এক্ষণে বড় বোনের সন্তানেরা নানার সম্পদের অংশীদার হবে কি? আর ছোট ভাইয়ের স্ত্রী-সন্তান না থাকায় তার প্রাপ্ত অংশ কারা পাবে? ছোট ভাইয়ের চিকিৎসা বাবদ খরচ করায় বড় ভাই এখন তার সম্পদের কোন অংশ নিতে পারবে কি?
-শফীকুর রহমান, পাংশা, রাজবাড়ী।
উত্তর : পিতার জীবদ্দশায় তার মেয়ে মৃত্যুবরণ করায় এবং মেয়ের ভাই-বোন জীবিত থাকায় ঐ মেয়ের সন্তানেরা তাদের নানার সম্পত্তির ওয়ারিছ হবে না (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ, ফৎওয়া নং ১৯১৪৯, ১৬/৪৮৯ পৃঃ)। এমতাবস্থায় নানা তার নাতী-নাতনীদের জন্য অছিয়ত করে যাবেন। আর পরবর্তীতে মারা যাওয়া ছোট ভাইয়ের সম্পদ তার ওয়ারিছদের মাঝে ভাগ হবে। বড় ভাই চিকিৎসা খরচ বাবদ মৃত ভাইয়ের প্রাপ্ত সম্পদ থেকে নিবেন। অতঃপর অবশিষ্ট সম্পদ ওয়ারিছদের মাঝে বণ্টিত হবে। এ সময় বড় ভাইও ওয়ারিছ হিসাবে অংশ পাবেন।
-শফীকুর রহমান, পাংশা, রাজবাড়ী।
উত্তর : পিতার জীবদ্দশায় তার মেয়ে মৃত্যুবরণ করায় এবং মেয়ের ভাই-বোন জীবিত থাকায় ঐ মেয়ের সন্তানেরা তাদের নানার সম্পত্তির ওয়ারিছ হবে না (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ, ফৎওয়া নং ১৯১৪৯, ১৬/৪৮৯ পৃঃ)। এমতাবস্থায় নানা তার নাতী-নাতনীদের জন্য অছিয়ত করে যাবেন। আর পরবর্তীতে মারা যাওয়া ছোট ভাইয়ের সম্পদ তার ওয়ারিছদের মাঝে ভাগ হবে। বড় ভাই চিকিৎসা খরচ বাবদ মৃত ভাইয়ের প্রাপ্ত সম্পদ থেকে নিবেন। অতঃপর অবশিষ্ট সম্পদ ওয়ারিছদের মাঝে বণ্টিত হবে। এ সময় বড় ভাইও ওয়ারিছ হিসাবে অংশ পাবেন।
৬৩
প্রশ্ন (২২/১৮২) : দাজ্জাল কি শেষ যামানায় জন্ম লাভ করবে, না পূর্ব থেকেই সে জীবিত রয়েছে? জানিয়ে বাধিত করবেন।-ডা. সেলিম মোল্লা, বুড়িচং, কুমিল্লা।
উত্তর : দাজ্জাল পূর্ব থেকেই জীবিত রয়েছে এবং বিখ্যাত ছাহাবী তামীম দারী (রাঃ) ও তার ত্রিশজন সাথীর সাথে অজ্ঞাত এক দ্বীপে বন্দী অবস্থায় তার সাক্ষাৎ ঘটেছিল। সেখানে দাজ্জাল তাদের নিকট থেকে রাসূল (ছাঃ)-এর আগমন সম্পর্কে জেনে অচিরেই বন্দীদশা থেকে সে মুক্তি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছিল। এ ঘটনাকে রাসূল (ছাঃ) স্বয়ং সত্যায়ন করেছিলেন (মুসলিম হা/২৯৪২, ৪৬; আহমাদ, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩০৮১)। অন্য বর্ণনায় রাসূল (ছাঃ) বলেন, দাজ্জাল শেষ যামানায় খোরাসান থেকে বের হবে (তিরমিযী হা/২২৩৭; ইবনু মাজাহ হা/৪০৭২)। কিন্তু তার জন্মগ্রহণের কথা বলা হয়নি। অতএব সে পূর্ব থেকেই জীবিত রয়েছে এবং শেষ যামানায় কিয়ামতের প্রাক্কালে বের হবে।
বর্তমান যুগের ইহুদী-খৃষ্টান সহ যালেম শাসকদের ‘দাজ্জাল’ আখ্যায়িত করে কোন কোন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল অপপ্রচার চালাচ্ছে। ইসলামী শরী‘আতে এর কোন ভিত্তি নেই।
উত্তর : দাজ্জাল পূর্ব থেকেই জীবিত রয়েছে এবং বিখ্যাত ছাহাবী তামীম দারী (রাঃ) ও তার ত্রিশজন সাথীর সাথে অজ্ঞাত এক দ্বীপে বন্দী অবস্থায় তার সাক্ষাৎ ঘটেছিল। সেখানে দাজ্জাল তাদের নিকট থেকে রাসূল (ছাঃ)-এর আগমন সম্পর্কে জেনে অচিরেই বন্দীদশা থেকে সে মুক্তি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছিল। এ ঘটনাকে রাসূল (ছাঃ) স্বয়ং সত্যায়ন করেছিলেন (মুসলিম হা/২৯৪২, ৪৬; আহমাদ, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩০৮১)। অন্য বর্ণনায় রাসূল (ছাঃ) বলেন, দাজ্জাল শেষ যামানায় খোরাসান থেকে বের হবে (তিরমিযী হা/২২৩৭; ইবনু মাজাহ হা/৪০৭২)। কিন্তু তার জন্মগ্রহণের কথা বলা হয়নি। অতএব সে পূর্ব থেকেই জীবিত রয়েছে এবং শেষ যামানায় কিয়ামতের প্রাক্কালে বের হবে।
বর্তমান যুগের ইহুদী-খৃষ্টান সহ যালেম শাসকদের ‘দাজ্জাল’ আখ্যায়িত করে কোন কোন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল অপপ্রচার চালাচ্ছে। ইসলামী শরী‘আতে এর কোন ভিত্তি নেই।
৬৪
প্রশ্ন (২৩/১৮৩) : কা‘বাঘরের কাজ সম্পন্ন করার পর আল্লাহ তা‘আলা ইব্রাহীম (আঃ)-কে অবশিষ্ট বালু ও পাথর সজোরে চারদিকে নিক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন কি?কা‘বাঘরের কাজ সম্পন্ন করার পর আল্লাহ তা‘আলা ইব্রাহীম (আঃ)-কে অবশিষ্ট বালু ও পাথর সজোরে চারদিকে নিক্ষেপ করার নির্দেশ দিলেন এবং বললেন যে, এ পাথরের টুকরা ও বালুকণা যেখানেই পড়বে, সেখানেই মসজিদ তৈরী হবে। এ ঘটনার কোন সত্যতা আছে কি?
-নাজমুল ইসলাম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
উত্তর : এরূপ ঘটনা ভিত্তিহীন।
-নাজমুল ইসলাম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
উত্তর : এরূপ ঘটনা ভিত্তিহীন।
-ওমর ফারূক
ধুলিয়ান, মুর্শিদাবাদ,ভারত।
উত্তর : নখ বড় রাখা যাবে না। কারণ রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) নখ ছোট করাকে মানুষের পাঁচটি স্বভাবধর্মের অন্তর্ভুক্ত বলেছেন (বুখারী, মুসলিম হা/২৫৮, মিশকাত হা/৪৪২০ ‘চুল আঁচড়ানো’ অনুচ্ছেদ)। শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পানি প্রবেশে বাধা সৃষ্টিকারী কোন বস্ত্ত ব্যবহার করা যাবে না। কেননা ওযূ-গোসলের ক্ষেত্রে দেহের সামান্য কোন স্থান শুকনা থাকলেও পবিত্রতা অর্জিত হয় না (মুসলিম হা/২৪৩, সুবুলুস সালাম হা/৫০)। সেকারণ নেইল পালিশ ব্যবহার করা যাবে না। বরং এর পরিবর্তে নারীরা মেহেদী ব্যবহার করতে পারে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘নারীদের সুগন্ধি হচ্ছে যা দেখা যায়, গন্ধ পাওয়া যায় না। আর পুরুষের সুগন্ধি হচ্ছে যা দেখা যায় না, গন্ধ পাওয়া যায়’ (নাসাঈ, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৪৪৪৩)।
ধুলিয়ান, মুর্শিদাবাদ,ভারত।
উত্তর : নখ বড় রাখা যাবে না। কারণ রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) নখ ছোট করাকে মানুষের পাঁচটি স্বভাবধর্মের অন্তর্ভুক্ত বলেছেন (বুখারী, মুসলিম হা/২৫৮, মিশকাত হা/৪৪২০ ‘চুল আঁচড়ানো’ অনুচ্ছেদ)। শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পানি প্রবেশে বাধা সৃষ্টিকারী কোন বস্ত্ত ব্যবহার করা যাবে না। কেননা ওযূ-গোসলের ক্ষেত্রে দেহের সামান্য কোন স্থান শুকনা থাকলেও পবিত্রতা অর্জিত হয় না (মুসলিম হা/২৪৩, সুবুলুস সালাম হা/৫০)। সেকারণ নেইল পালিশ ব্যবহার করা যাবে না। বরং এর পরিবর্তে নারীরা মেহেদী ব্যবহার করতে পারে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘নারীদের সুগন্ধি হচ্ছে যা দেখা যায়, গন্ধ পাওয়া যায় না। আর পুরুষের সুগন্ধি হচ্ছে যা দেখা যায় না, গন্ধ পাওয়া যায়’ (নাসাঈ, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৪৪৪৩)।
৬৬
প্রশ্ন (২৫/১৮৫) : হজ্জের খরচ বহন করার মত মূল্যমানের জমি থাকা সত্তেব্ও যদি কেউ হজ্জ পালন না করে মারা যান, তাহ’লে তিনি গোনাহগার হবেন কি?-আব্দুর রহমান
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা।
উত্তর : নিজের ও পরিবারের সকল মৌলিক চাহিদা পূরণের পর যদি অবশিষ্ট সম্পদ দ্বারা হজ্জের খরচ নির্বাহ করা যায়, তবে সেক্ষেত্রেই কেবল তা ফরয হবে। এরূপ সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যদি ইসলামের এ রুকন আদায় না করে কেউ মারা যায়, তাহ’লে অবশ্যই তাকে ফরয ত্যাগ করার কারণে গুনাহগার হ’তে হবে (আলে ইমরান ৩/৯৭; মুসলিম হা/১৩৩৭; মিশকাত হা/২৫০৫)।
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা।
উত্তর : নিজের ও পরিবারের সকল মৌলিক চাহিদা পূরণের পর যদি অবশিষ্ট সম্পদ দ্বারা হজ্জের খরচ নির্বাহ করা যায়, তবে সেক্ষেত্রেই কেবল তা ফরয হবে। এরূপ সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যদি ইসলামের এ রুকন আদায় না করে কেউ মারা যায়, তাহ’লে অবশ্যই তাকে ফরয ত্যাগ করার কারণে গুনাহগার হ’তে হবে (আলে ইমরান ৩/৯৭; মুসলিম হা/১৩৩৭; মিশকাত হা/২৫০৫)।
৬৭
প্রশ্ন (২৬/১৮৬) : পৃথক প্রাচীর থাকা সত্ত্বেও মসজিদের পশ্চিম দিকে কবর থাকলে উক্ত মসজিদে ছালাত হবে কি? আর মসজিদ থেকে কবরস্থান কতটুকু দূরে থাকা আবশ্যক?পৃথক প্রাচীর থাকা সত্ত্বেও মসজিদের পশ্চিম দিকে কবর থাকলে উক্ত মসজিদে ছালাত হবে কি? আর মসজিদ থেকে কবরস্থান কতটুকু দূরে থাকা আবশ্যক? মসজিদ পাঁচতলা থাকলে কবরস্থানের দেওয়ালও পাঁচতলা সমান উঁচু করতে হবে কি?
-ফযলুল হক
জামালপুর সদর, জামালপুর।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কবরের দিকে ফিরে ছালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন (মুসলিম হা/৯৭২; নাসাঈ হা/৭৬০; ছহীহাহ হা/১০১৬)। তবে মসজিদের দেয়াল ও কবরস্থানের মাঝে যদি রাস্তা থাকে কিংবা কবরস্থানের পৃথক প্রাচীর থাকে, তাহ’লে সে মসজিদে ছালাত আদায় করতে কোন বাধা নেই। এ ক্ষেত্রে মসজিদ পাঁচ-দশ তলা হওয়ায় কোন অসুবিধা নেই। সাধারণ প্রাচীর বা রাস্তা থাকলেই যথেষ্ট হবে।
-ফযলুল হক
জামালপুর সদর, জামালপুর।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কবরের দিকে ফিরে ছালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন (মুসলিম হা/৯৭২; নাসাঈ হা/৭৬০; ছহীহাহ হা/১০১৬)। তবে মসজিদের দেয়াল ও কবরস্থানের মাঝে যদি রাস্তা থাকে কিংবা কবরস্থানের পৃথক প্রাচীর থাকে, তাহ’লে সে মসজিদে ছালাত আদায় করতে কোন বাধা নেই। এ ক্ষেত্রে মসজিদ পাঁচ-দশ তলা হওয়ায় কোন অসুবিধা নেই। সাধারণ প্রাচীর বা রাস্তা থাকলেই যথেষ্ট হবে।
৬৮
প্রশ্ন (২৭/১৮৭) : সন্তান জন্মদানের সময় মা মারা যাওয়ায় উক্ত সন্তানের সহোদর বড় বোন ব্যতীত দুগ্ধ দানের কেউ নেই। এমতাবস্থায় বোনের দুগ্ধদান জায়েয হবে কি?-নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
উত্তর : এরূপ বাধ্যগত অবস্থায় বোনের দুধ পান করানোয় কোন বাধা নেই। সেক্ষেত্রে উক্ত সন্তান ও বড় বোনের সন্তানদের মধ্যে বিবাহের কোন সুযোগ থাকবে না। এছাড়া শিশুটি মেয়ে হ’লে এবং বড় বোন মারা গেলে বা তার সাথে তার স্বামীর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে উক্ত স্বামী দুধ পিতা হওয়ার কারণে উক্ত মেয়েকে বিবাহ করতে পারবে না (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ২১/১০৬, ফাৎওয়া নং ১৯৩২৯; বুখারী হা/২৬৪৫)।
উত্তর : এরূপ বাধ্যগত অবস্থায় বোনের দুধ পান করানোয় কোন বাধা নেই। সেক্ষেত্রে উক্ত সন্তান ও বড় বোনের সন্তানদের মধ্যে বিবাহের কোন সুযোগ থাকবে না। এছাড়া শিশুটি মেয়ে হ’লে এবং বড় বোন মারা গেলে বা তার সাথে তার স্বামীর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে উক্ত স্বামী দুধ পিতা হওয়ার কারণে উক্ত মেয়েকে বিবাহ করতে পারবে না (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ২১/১০৬, ফাৎওয়া নং ১৯৩২৯; বুখারী হা/২৬৪৫)।
৬৯
প্রশ্ন (২৮/১৮৮) : মসজিদে নববীতে আয়েশা খুঁটি, হান্নানা খুঁটি এরূপ বিভিন্ন খুঁটি রয়েছে। এসব স্থানের পাশে ছালাত আদায় করায় বিশেষ কোন ফযীলত আছে কি?-আশরাফ মজুমদার
জেদ্দা, সঊদী আরব।
উত্তর : এসব স্থানে ছালাত আদায় করার পৃথক কোন ফযীলত নেই। মসজিদে নববীর যে কোন স্থানে ছালাত আদায় করলে (মসজিদে হারাম ছাড়া) সে ছালাত অন্য স্থানের এক হাযার ছালাত অপেক্ষা উত্তম হবে (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৬৯২ ‘মসজিদ সমূহ’ অনুচ্ছেদ)। উল্লেখ্য যে, মসজিদে কারু নামে দরজা বা খুঁটি বানানো ঠিক নয়। কারণ তাতে মানুষ ফযীলতের ধোঁকায় পড়ে বিদ‘আতে লিপ্ত হ’তে পারে। রাসূল (ছাঃ)-এর যামানায় মসজিদে নববীতে এইসব খুঁটি ছিল না।
জেদ্দা, সঊদী আরব।
উত্তর : এসব স্থানে ছালাত আদায় করার পৃথক কোন ফযীলত নেই। মসজিদে নববীর যে কোন স্থানে ছালাত আদায় করলে (মসজিদে হারাম ছাড়া) সে ছালাত অন্য স্থানের এক হাযার ছালাত অপেক্ষা উত্তম হবে (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৬৯২ ‘মসজিদ সমূহ’ অনুচ্ছেদ)। উল্লেখ্য যে, মসজিদে কারু নামে দরজা বা খুঁটি বানানো ঠিক নয়। কারণ তাতে মানুষ ফযীলতের ধোঁকায় পড়ে বিদ‘আতে লিপ্ত হ’তে পারে। রাসূল (ছাঃ)-এর যামানায় মসজিদে নববীতে এইসব খুঁটি ছিল না।
৭০
প্রশ্ন (২৯/১৮৯) : স্ত্রী স্বামীকে এরূপ বলেছে যে, ‘তুমি যদি আমাকে স্পর্শ কর, তবে তা তোমার মৃত মায়ের সাথে যেনার সদৃশ হবে’। এক্ষণে এর কাফফারা কি হবে?উত্তর : এগুলি বাজে কথার অন্তর্ভুক্ত। যা মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়। আল্লাহ বলেন, সফলকাম মুমিন তারাই, যারা ছালাতে খুশূ-খুযূ অবলম্বন করে’ ‘এবং যারা অনর্থক কাজ এড়িয়ে চলে’ (মুমিনূন ২৩/১-৩)। উল্লেখ্য, স্ত্রীর পক্ষ থেকে যিহার হয় না (ফাতাওয়া মারআতুল মুসলিমাহ ২/৮০৩ পৃঃ; উছায়মীন, ফাতাওয়া নুরুন আলাদ দারব-১৯)।
-সাইফুল ইসলাম, শ্রীপুর, গাযীপুর।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদের মত মানুষ ছিলেন। অতএব তাঁর ছায়া থাকাই স্বাভাবিক। ছায়াহীন হওয়ার জন্য তাঁকে নূরের সৃষ্টি হওয়ার প্রয়োজন ছিল। অথচ আল্লাহ বলেন, হে নবী তুমি বলে দাও যে, ‘আমি তোমাদের মত একজন মানুষ মাত্র’ (কাহ্ফ ১৮/১১০)। অন্যত্র আল্লাহ বলেন, ‘(নবী) অন্য কিছুই নয়, বরং তোমাদের মতই একজন মানুষ। তোমরা যা খাও, সে তা খায়। তোমরা যা পান কর, সে তা পান করে’ (মুমিনূন ২৩/৩৩)। নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘আমি যখন দ্বীন সম্পর্কে তোমাদের কোন নির্দেশ দেই, তখন তোমরা তা গ্রহণ কর। আর যখন আমার ‘রায়’ অনুযায়ী কোন কিছুর নির্দেশ দিই, তখন (মনে রেখ) আমি তোমাদের মত একজন মানুষ’ (মুসলিম হা/২৩৬২; মিশকাত হা/১৪৭)। অতএব তাঁর ছায়া না থাকার প্রশ্নই আসে না।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদের মত মানুষ ছিলেন। অতএব তাঁর ছায়া থাকাই স্বাভাবিক। ছায়াহীন হওয়ার জন্য তাঁকে নূরের সৃষ্টি হওয়ার প্রয়োজন ছিল। অথচ আল্লাহ বলেন, হে নবী তুমি বলে দাও যে, ‘আমি তোমাদের মত একজন মানুষ মাত্র’ (কাহ্ফ ১৮/১১০)। অন্যত্র আল্লাহ বলেন, ‘(নবী) অন্য কিছুই নয়, বরং তোমাদের মতই একজন মানুষ। তোমরা যা খাও, সে তা খায়। তোমরা যা পান কর, সে তা পান করে’ (মুমিনূন ২৩/৩৩)। নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘আমি যখন দ্বীন সম্পর্কে তোমাদের কোন নির্দেশ দেই, তখন তোমরা তা গ্রহণ কর। আর যখন আমার ‘রায়’ অনুযায়ী কোন কিছুর নির্দেশ দিই, তখন (মনে রেখ) আমি তোমাদের মত একজন মানুষ’ (মুসলিম হা/২৩৬২; মিশকাত হা/১৪৭)। অতএব তাঁর ছায়া না থাকার প্রশ্নই আসে না।
-মতীউর রহমান
কৃষ্ণচন্দ্রপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : ছালাতে প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর বিশেষ ফযীলত আছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘প্রথম কাতারের (মুছল্লীদের) উপর আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতাগণ দো‘আ করেন’ (ইবনু মাজাহ হা/৯৯৭)। তিনি বলেন, ‘পুরুষদের জন্য সর্বোত্তম কাতার হ’ল প্রথম কাতার’ (মুসলিম হা/৪৪০, মিশকাত হা/১০৯২)।
তবে ইমামের সাথে একাকী ছালাত আদায়কালে ইমামের ডান দিকে দাঁড়াতে হবে (বুখারী হা/৬৯৯, ১১৭; মুসলিম হা/৬৬০; মিশকাত হা/১১০৬)। এছাড়া যখন ইমামের পিছনে দু’পার্শ্ব সমান হবে, তখন কাতারের ডানে দাঁড়ানো মুস্তাহাব। কিন্তু ডান পাশ অতিরিক্ত বেড়ে গেলে বামে দাঁড়ানো উত্তম হবে (উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১২/১৮৪)। তবে কোনক্রমেই ডান প্রান্ত থেকে বা মসজিদের উত্তর দেওয়াল থেকে দ্বিতীয় কাতার বা পরবর্তী কাতার সমূহ শুরু করা যাবে না। উল্লেখ্য, কাতারের ডানদিকে দাঁড়ানো সম্পর্কে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (ইবনু মাজাহ হা/১০০৫, সিলসিলা যঈফাহ হা/৫৬৮৬)।
কৃষ্ণচন্দ্রপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : ছালাতে প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর বিশেষ ফযীলত আছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘প্রথম কাতারের (মুছল্লীদের) উপর আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতাগণ দো‘আ করেন’ (ইবনু মাজাহ হা/৯৯৭)। তিনি বলেন, ‘পুরুষদের জন্য সর্বোত্তম কাতার হ’ল প্রথম কাতার’ (মুসলিম হা/৪৪০, মিশকাত হা/১০৯২)।
তবে ইমামের সাথে একাকী ছালাত আদায়কালে ইমামের ডান দিকে দাঁড়াতে হবে (বুখারী হা/৬৯৯, ১১৭; মুসলিম হা/৬৬০; মিশকাত হা/১১০৬)। এছাড়া যখন ইমামের পিছনে দু’পার্শ্ব সমান হবে, তখন কাতারের ডানে দাঁড়ানো মুস্তাহাব। কিন্তু ডান পাশ অতিরিক্ত বেড়ে গেলে বামে দাঁড়ানো উত্তম হবে (উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১২/১৮৪)। তবে কোনক্রমেই ডান প্রান্ত থেকে বা মসজিদের উত্তর দেওয়াল থেকে দ্বিতীয় কাতার বা পরবর্তী কাতার সমূহ শুরু করা যাবে না। উল্লেখ্য, কাতারের ডানদিকে দাঁড়ানো সম্পর্কে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (ইবনু মাজাহ হা/১০০৫, সিলসিলা যঈফাহ হা/৫৬৮৬)।
৭৩
প্রশ্ন (৩২/১৯২) : পীরদের মুরীদ হয়ে কত মানুষ নামাযী হচ্ছে, পাপ কাজ ছেড়ে দিচ্ছে। অতএব পীর থেকে সাধারণ মানুষকে বিমুখ করা শরী‘আতসম্মত হবে কি?পীরদের মুরীদ হয়ে কত মানুষ নামাযী হচ্ছে, পাপ কাজ ছেড়ে দিচ্ছে। অথচ এইসব পীরদের সমালোচনা করায় বহু মানুষ এদের থেকে বিমুখ হয়ে পড়ছে। অতএব পীর থেকে সাধারণ মানুষকে বিমুখ করা শরী‘আতসম্মত হবে কি?
-বেনিয়ামীন, বামনা, বরগুনা।
উত্তর : পীরগণ তাদের মুরীদদের নেক আমলের দিকে আহবানের পাশাপাশি শিরক ও বিদ‘আতের দিকে আহবান করেন। আর শিরক-বিদ‘আত মানুষের সকল নেক আমলকে নিষ্ফল করে দেয় (যুমার ৩৯/৬৫)। পীরবাদের সবচেয়ে বড় ক্ষতি এই যে, তারা মানুষকে কুরআন-হাদীছ থেকে মুখ ফিরিয়ে পীরের ধ্যানে মগ্ন রাখেন। পীরের কথিত কাশফ ও কেরামত এবং ভিত্তিহীন অলীক কল্পকাহিনীসমূহ এদের নিকট প্রধান দলীল হিসাবে গণ্য হয়। যুগে যুগে মানুষকে ধর্মের নামে শিরকে লিপ্ত করেছে এই শ্রেণীর লোকেরা। অথচ কাশফ ও কেরামত ইসলামী শরী‘আতের কোন দলীল নয়। সুতরাং এসব দল থেকে মানুষকে দূরে রাখার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো আবশ্যক।
-বেনিয়ামীন, বামনা, বরগুনা।
উত্তর : পীরগণ তাদের মুরীদদের নেক আমলের দিকে আহবানের পাশাপাশি শিরক ও বিদ‘আতের দিকে আহবান করেন। আর শিরক-বিদ‘আত মানুষের সকল নেক আমলকে নিষ্ফল করে দেয় (যুমার ৩৯/৬৫)। পীরবাদের সবচেয়ে বড় ক্ষতি এই যে, তারা মানুষকে কুরআন-হাদীছ থেকে মুখ ফিরিয়ে পীরের ধ্যানে মগ্ন রাখেন। পীরের কথিত কাশফ ও কেরামত এবং ভিত্তিহীন অলীক কল্পকাহিনীসমূহ এদের নিকট প্রধান দলীল হিসাবে গণ্য হয়। যুগে যুগে মানুষকে ধর্মের নামে শিরকে লিপ্ত করেছে এই শ্রেণীর লোকেরা। অথচ কাশফ ও কেরামত ইসলামী শরী‘আতের কোন দলীল নয়। সুতরাং এসব দল থেকে মানুষকে দূরে রাখার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো আবশ্যক।
-হাবীবুর রহমান
মাস্টার পাড়া, সপুরা, রাজশাহী।
উত্তর : উপরোক্ত সবগুলি নামই সুন্দর অর্থ বহন করে। সুতরাং তা রাখায় কোন দোষ নেই। তবে শী‘আদের আক্বীদা অনুযায়ী রোগমুক্তি ও বিশেষ ফযীলতের আশায় এগুলি রাখা হ’লে তা শিরক হবে। শী‘আরা বলে থাকে, আমার জন্য পাঁচজন রয়েছেন যাদের মাধ্যমে আমি সকল দুরারোগ্য ব্যাধি দূর করি। তারা হলেন, মুছতফা, মুরতাযা, তাঁর দুই পুত্র (হাসান-হোসায়েন) ও ফাতেমা’।
মাস্টার পাড়া, সপুরা, রাজশাহী।
উত্তর : উপরোক্ত সবগুলি নামই সুন্দর অর্থ বহন করে। সুতরাং তা রাখায় কোন দোষ নেই। তবে শী‘আদের আক্বীদা অনুযায়ী রোগমুক্তি ও বিশেষ ফযীলতের আশায় এগুলি রাখা হ’লে তা শিরক হবে। শী‘আরা বলে থাকে, আমার জন্য পাঁচজন রয়েছেন যাদের মাধ্যমে আমি সকল দুরারোগ্য ব্যাধি দূর করি। তারা হলেন, মুছতফা, মুরতাযা, তাঁর দুই পুত্র (হাসান-হোসায়েন) ও ফাতেমা’।
-শেখ সাদী, মোল্লাহাট, বাগেরহাট।
উত্তর : ছালাতের মধ্যে আঙ্গুল ফুটানো শরী‘আতসম্মত নয়। ইবনু আববাস (রাঃ)-এর গোলাম শো‘বা বলেন, আমি ইবনু আববাসের পাশে ছালাত আদায় করছিলাম। আমি আঙ্গুল ফুটালে তিনি আমাকে ছালাতের মধ্যে আঙ্গুল ফুটাতে নিষেধ করেন (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/৭৩৫৮, ইরওয়া হা/৩৭৮-এর ব্যাখ্যা, ২/৯৯ পৃঃ)। এছাড়া এতে ছালাতের খুশূ-খুযূ বিনষ্ট হয়। তবে একারণে ছালাত বাতিল হবে না (উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৩/২১৯)। কিন্তু ত্রুটিপূর্ণ হবে।
উত্তর : ছালাতের মধ্যে আঙ্গুল ফুটানো শরী‘আতসম্মত নয়। ইবনু আববাস (রাঃ)-এর গোলাম শো‘বা বলেন, আমি ইবনু আববাসের পাশে ছালাত আদায় করছিলাম। আমি আঙ্গুল ফুটালে তিনি আমাকে ছালাতের মধ্যে আঙ্গুল ফুটাতে নিষেধ করেন (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/৭৩৫৮, ইরওয়া হা/৩৭৮-এর ব্যাখ্যা, ২/৯৯ পৃঃ)। এছাড়া এতে ছালাতের খুশূ-খুযূ বিনষ্ট হয়। তবে একারণে ছালাত বাতিল হবে না (উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৩/২১৯)। কিন্তু ত্রুটিপূর্ণ হবে।
৭৬
প্রশ্ন (৩৫/১৯৫) : গাছের প্রথম ফল বরকতের আশায় মসজিদে বা গরীব-মিসকীনকে দান করা অথবা কোন আলেম ব্যক্তিকে খাওয়ানো যাবে কি?-সোহরাব হোসাইন
শাহবাগ, ঢাকা।
উত্তর : গাছের নতুন ফল মসজিদে বা গরীব-মিসকীনদের মধ্যে দান করার ফযীলত সম্পর্কে কোন দলীল পাওয়া যায় না। তবে বরকতের দো‘আ নেওয়ার জন্য পরহেযগার ব্যক্তির নিকটে নিয়ে যাওয়া সুন্নাত। ছাহাবীগণ নতুন ফল রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট নিয়ে যেতেন। তখন তিনি আল্লাহর দেওয়া নতুন নে‘মতের জন্য তাতে বরকতের দো‘আ করে দিতেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, ‘মানুষ যখন প্রথম ফল দেখত, তখন সে ফল রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট নিয়ে আসত। অতঃপর তিনি তা হাতে নিয়ে বলতেন, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাদের জন্য আমাদের ফলে বরকত দাও। ...অতঃপর তিনি উপস্থিত কোন ছোট বালককে ডাকতেন এবং সেই ফল তাকে দিয়ে দিতেন’ (মুসলিম হা/১৩৭৩, মিশকাত হা/২৭৩১)। এর উদ্দেশ্য এটা নয় যে, তিনি নিজে এটা খেতে পারবেন না। বরং এর উদ্দেশ্য ছিল, উপস্থিত কোন বাচ্চাকে খুশী করা।
শাহবাগ, ঢাকা।
উত্তর : গাছের নতুন ফল মসজিদে বা গরীব-মিসকীনদের মধ্যে দান করার ফযীলত সম্পর্কে কোন দলীল পাওয়া যায় না। তবে বরকতের দো‘আ নেওয়ার জন্য পরহেযগার ব্যক্তির নিকটে নিয়ে যাওয়া সুন্নাত। ছাহাবীগণ নতুন ফল রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট নিয়ে যেতেন। তখন তিনি আল্লাহর দেওয়া নতুন নে‘মতের জন্য তাতে বরকতের দো‘আ করে দিতেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, ‘মানুষ যখন প্রথম ফল দেখত, তখন সে ফল রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট নিয়ে আসত। অতঃপর তিনি তা হাতে নিয়ে বলতেন, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাদের জন্য আমাদের ফলে বরকত দাও। ...অতঃপর তিনি উপস্থিত কোন ছোট বালককে ডাকতেন এবং সেই ফল তাকে দিয়ে দিতেন’ (মুসলিম হা/১৩৭৩, মিশকাত হা/২৭৩১)। এর উদ্দেশ্য এটা নয় যে, তিনি নিজে এটা খেতে পারবেন না। বরং এর উদ্দেশ্য ছিল, উপস্থিত কোন বাচ্চাকে খুশী করা।
-আলমগীর
বাড্ডা, টাংগাঈল।
উত্তর : পরিচিত বা অপরিচিত যেকোন জারজ সন্তান পালন করা যাবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ব্যভিচারিণী গামেদী মহিলার জারজ সন্তানকে জনৈক ছাহাবীর হাতে দিয়ে তাকে লালন-পালনের জন্য আদেশ করেন (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৫৬২)। কারণ জারজ হওয়ার জন্য সন্তান দায়ী নয়। অতএব তাকে লালন-পালনের জন্য অবশ্যই ছওয়াব রয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘মুমিন পুরুষ বা নারী যে কোন সৎকর্ম করলে আমরা তার বিনিময়ে সর্বোত্তম প্রতিদান দেব’ (নাহল ১৬/৯৭)।
বাড্ডা, টাংগাঈল।
উত্তর : পরিচিত বা অপরিচিত যেকোন জারজ সন্তান পালন করা যাবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ব্যভিচারিণী গামেদী মহিলার জারজ সন্তানকে জনৈক ছাহাবীর হাতে দিয়ে তাকে লালন-পালনের জন্য আদেশ করেন (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৫৬২)। কারণ জারজ হওয়ার জন্য সন্তান দায়ী নয়। অতএব তাকে লালন-পালনের জন্য অবশ্যই ছওয়াব রয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘মুমিন পুরুষ বা নারী যে কোন সৎকর্ম করলে আমরা তার বিনিময়ে সর্বোত্তম প্রতিদান দেব’ (নাহল ১৬/৯৭)।
-সিরাজুল ইসলাম
নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : রূহ ও নফসের মধ্যে প্রকৃত অর্থে কোন পার্থক্য নেই। যদিও পারিভাষিক অর্থে পার্থক্য আছে। যেমন প্রাণীকে ‘নফস’ বলা হয়। কিন্তু ‘রূহ’ বা আত্মা বলা হয় না। আল্লাহ বলেন, প্রত্যেক প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে(আলে ইমরান ১৮৫)। এতে বুঝা যায় যে, দেহ ও আত্মার মিলিত সত্ত্বাকে ‘নফস’ বলা হয়। আর শুধুমাত্র আত্মাকে ‘রূহ’ বলা হয়। একদা ইহূদীগণ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে নবী! তুমি বল, রূহ হ’ল আল্লাহর একটি আদেশ’ (ইসরা ১৭/৮৫)। যার প্রকৃতি মানুষের জ্ঞানের বাইরে। এমনকি আম্বিয়ায়ে কেরামও এর প্রকৃতি জানতেন না(শাওকানী, যুবদাতুত তাফসীর, ইসরা ৮৫ আয়াতের ব্যাখ্যা)। আর নফস সেটাই, যা আল্লাহ মানব দেহে ফুঁকে দিয়েছেন। মৃত্যুর সময় যা দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই যখন রূহ কবয করা হয়, তখন তার চোখ তা দেখতে থাকে’ (মুসলিম হা/৯২০; মিশকাত হা/১৬১৯ ‘জানায়েয’ অধ্যায়)। অন্য হাদীছে এসেছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা কি দেখনি যে, মৃত্যুর সময় মানুষের চোখ তাকিয়ে থাকে? ছাহাবায়ে কেরাম বললেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! তখন তিনি বললেন, ‘তা তো ঐ সময় যখন তার চোখ তার নফসকে দেখতে থাকে’ (মুসলিম হা/৯২১)।
নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : রূহ ও নফসের মধ্যে প্রকৃত অর্থে কোন পার্থক্য নেই। যদিও পারিভাষিক অর্থে পার্থক্য আছে। যেমন প্রাণীকে ‘নফস’ বলা হয়। কিন্তু ‘রূহ’ বা আত্মা বলা হয় না। আল্লাহ বলেন, প্রত্যেক প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে(আলে ইমরান ১৮৫)। এতে বুঝা যায় যে, দেহ ও আত্মার মিলিত সত্ত্বাকে ‘নফস’ বলা হয়। আর শুধুমাত্র আত্মাকে ‘রূহ’ বলা হয়। একদা ইহূদীগণ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে নবী! তুমি বল, রূহ হ’ল আল্লাহর একটি আদেশ’ (ইসরা ১৭/৮৫)। যার প্রকৃতি মানুষের জ্ঞানের বাইরে। এমনকি আম্বিয়ায়ে কেরামও এর প্রকৃতি জানতেন না(শাওকানী, যুবদাতুত তাফসীর, ইসরা ৮৫ আয়াতের ব্যাখ্যা)। আর নফস সেটাই, যা আল্লাহ মানব দেহে ফুঁকে দিয়েছেন। মৃত্যুর সময় যা দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই যখন রূহ কবয করা হয়, তখন তার চোখ তা দেখতে থাকে’ (মুসলিম হা/৯২০; মিশকাত হা/১৬১৯ ‘জানায়েয’ অধ্যায়)। অন্য হাদীছে এসেছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা কি দেখনি যে, মৃত্যুর সময় মানুষের চোখ তাকিয়ে থাকে? ছাহাবায়ে কেরাম বললেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! তখন তিনি বললেন, ‘তা তো ঐ সময় যখন তার চোখ তার নফসকে দেখতে থাকে’ (মুসলিম হা/৯২১)।
-আব্দুল্লাহ আল-মামূন
ছোট বনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : ওযূতে ঘাড় মাসাহ করার কোন প্রমাণ নেই। আবূদাঊদে এ সম্পর্কে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, তা যঈফ (আবূদাঊদ হা/১৩২, সিলসিলা যঈফাহ হা/৬৯-এর আলোচনা দ্রঃ)। ইমাম নববী একে বিদ‘আত বলেছেন (নায়লুল আওত্বার ১/২৪৫-৪৭)। হেদায়ার ব্যাখ্যাকার আল্লামা ইবনুল হুমামের ভাষ্যমতে কেউ কেউ বলেন, এটা বিদ‘আত (ফাৎহুল ক্বাদীর, ১/৫৪)। হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, ‘ঘাড় মাসাহ-এর ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ) হ’তে কোন ছহীহ হাদীছ নেই’ (যাদুল মা‘আদ ১/১৮৭)। ‘যে ব্যক্তি ওযূতে ঘাড় মাসাহ করবে, ক্বিয়ামতের দিন তার গলায় বেড়ী পরানো হবে না’ বলে যে হাদীছ বলা হয়ে থাকে, সেটি মওযূ বা জাল (আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/৭৪৪)।
ছোট বনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : ওযূতে ঘাড় মাসাহ করার কোন প্রমাণ নেই। আবূদাঊদে এ সম্পর্কে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, তা যঈফ (আবূদাঊদ হা/১৩২, সিলসিলা যঈফাহ হা/৬৯-এর আলোচনা দ্রঃ)। ইমাম নববী একে বিদ‘আত বলেছেন (নায়লুল আওত্বার ১/২৪৫-৪৭)। হেদায়ার ব্যাখ্যাকার আল্লামা ইবনুল হুমামের ভাষ্যমতে কেউ কেউ বলেন, এটা বিদ‘আত (ফাৎহুল ক্বাদীর, ১/৫৪)। হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, ‘ঘাড় মাসাহ-এর ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ) হ’তে কোন ছহীহ হাদীছ নেই’ (যাদুল মা‘আদ ১/১৮৭)। ‘যে ব্যক্তি ওযূতে ঘাড় মাসাহ করবে, ক্বিয়ামতের দিন তার গলায় বেড়ী পরানো হবে না’ বলে যে হাদীছ বলা হয়ে থাকে, সেটি মওযূ বা জাল (আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/৭৪৪)।
-আব্দুর রহমান, রাজশাহী।
উত্তর : ওয়াইস বিন আমের আল-ক্বারনী (৫৯৪-৬৫৮ খ্রিঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর যুগের লোক। তবে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে তার সাক্ষাৎ হয়নি। যে কারণে তিনি ছাহাবী নন, বরং তাবেঈ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তাবেঈদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি হ’ল ওয়াইস’ (মুসলিম হা/২৫৪২, মিশকাত হা/৬২৫৭)। ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছি, তোমাদের নিকট ইয়ামন থেকে এক ব্যক্তি আসবে, যাকে ডাকা হবে ‘ওয়াইস’ নামে। সে শুধুমাত্র তার মাকে ইয়ামনে রেখে আসবে। তার শরীরে কুষ্ঠ রোগ ছিল। সে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলে এক দীনার অথবা এক দিরহাম সমপরিমাণ স্থান ছাড়া আল্লাহ তা দূর করে দেন। তোমাদের যার সাথে তার সাক্ষাৎ ঘটবে, সে যেন তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করে (মুসলিম ঐ)। পরবর্তীতে ওমর (রাঃ)-এর সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হ’লে, তিনি তার নিকটে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন জানান। উত্তরে তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ)-এর ছাহাবী হিসাবে আপনি আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার অধিক যোগ্য। এসময় তিনি উপরোক্ত হাদীছটি শুনালে তিনি তাঁর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন (মুসলিম হা/২৫৪২, আহমাদ হা/২৬৬)।ওয়াইস ক্বারনী ৩৭ হিজরীতে আলী (রাঃ)-এর পক্ষে ছিফফীনের যুদ্ধে নিহত হন (হাকেম হা/৫৭১৬)।
উল্লেখ্য যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ‘ওয়াইস ক্বারনী’কে জামা দান করেছিলেন, তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মহববতে বত্রিশটি দাঁত ভেঙ্গেছিলেন মর্মে প্রচলিত বক্তব্যটি ভিত্তিহীন। এছাড়া এই উম্মতের মধ্যে শুধুমাত্র ওয়ায়েস কুরনীকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) খলীল বা দোস্ত বলেছেন মর্মে যে হাদীছটি বর্ণিত হয়েছে, সেটিও ‘জাল’ (সিলসিলা যঈফা হা/১৭০৭)।
উত্তর : ওয়াইস বিন আমের আল-ক্বারনী (৫৯৪-৬৫৮ খ্রিঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর যুগের লোক। তবে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে তার সাক্ষাৎ হয়নি। যে কারণে তিনি ছাহাবী নন, বরং তাবেঈ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তাবেঈদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি হ’ল ওয়াইস’ (মুসলিম হা/২৫৪২, মিশকাত হা/৬২৫৭)। ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছি, তোমাদের নিকট ইয়ামন থেকে এক ব্যক্তি আসবে, যাকে ডাকা হবে ‘ওয়াইস’ নামে। সে শুধুমাত্র তার মাকে ইয়ামনে রেখে আসবে। তার শরীরে কুষ্ঠ রোগ ছিল। সে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলে এক দীনার অথবা এক দিরহাম সমপরিমাণ স্থান ছাড়া আল্লাহ তা দূর করে দেন। তোমাদের যার সাথে তার সাক্ষাৎ ঘটবে, সে যেন তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করে (মুসলিম ঐ)। পরবর্তীতে ওমর (রাঃ)-এর সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হ’লে, তিনি তার নিকটে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন জানান। উত্তরে তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ)-এর ছাহাবী হিসাবে আপনি আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার অধিক যোগ্য। এসময় তিনি উপরোক্ত হাদীছটি শুনালে তিনি তাঁর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন (মুসলিম হা/২৫৪২, আহমাদ হা/২৬৬)।ওয়াইস ক্বারনী ৩৭ হিজরীতে আলী (রাঃ)-এর পক্ষে ছিফফীনের যুদ্ধে নিহত হন (হাকেম হা/৫৭১৬)।
উল্লেখ্য যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ‘ওয়াইস ক্বারনী’কে জামা দান করেছিলেন, তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মহববতে বত্রিশটি দাঁত ভেঙ্গেছিলেন মর্মে প্রচলিত বক্তব্যটি ভিত্তিহীন। এছাড়া এই উম্মতের মধ্যে শুধুমাত্র ওয়ায়েস কুরনীকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) খলীল বা দোস্ত বলেছেন মর্মে যে হাদীছটি বর্ণিত হয়েছে, সেটিও ‘জাল’ (সিলসিলা যঈফা হা/১৭০৭)।
৮১
প্রশ্ন (৪০/২০০) : হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কি কুরআনের আয়াত সমূহে পরিবর্তন-পরিবর্ধন করেছিলেন? এ ব্যাপারে সঠিক ইতিহাস জানতে চাই।-বেলাল হোসাইন
নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কুরআনের আয়াত সমূহে কোন পরিবর্তন-পরিবর্ধন করেননি এবং কারো পক্ষে তা করাও সম্ভব নয়। আল্লাহ বলেন, ‘আমরাই কুরআন নাযিল করেছি এবং আমরাই এর হেফাযতকারী’ (হিজর ১৫/ ৯)। প্রকৃতপক্ষে খলীফা আব্দুল মালেক ইবনু মারওয়ানের নির্দেশে তিনি বিখ্যাত তাবেঈ ও আরবী ব্যাকরণবিদ আবুল আসওয়াদ আদ-দুআলী (৬০৩-৬৮৮ খ্রীঃ)-এর দুই ছাত্র নাছর বিন আছেম লায়ছী এবং ইয়াহইয়া বিন ইয়া‘মার ‘আদওয়ানীকে কুরআনে হরকত দেয়ার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। যাতে অনারব মুসলিমদের জন্য কুরআন তেলাওয়াত সহজ হয়। এভাবে এই দুই ছাত্রের মাধ্যমেই এই মহান কাজটি সুসম্পন্ন হয় (যুরক্বানী, মানাহিলুল ইরফান ১/৪০৬-৪০৭)। হরকত ছাড়া কুরআন পড়তে অপারগ অনারবদের জন্যই এরূপ করা হয়েছিল মাত্র। এছাড়া হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কুরআনের মোট ১১টি বর্ণে পরিবর্তন এনেছিলেন মর্মে যে বর্ণনাটির প্রসিদ্ধি রয়েছে (আবুদাঊদ সিজিস্তানী, আল-মাছাহেফ ১৫৭ পৃঃ), তা মওযূ‘ বা জাল। কারণ এর বর্ণনা সূত্রে আববান বিন ছুহায়েব নামে একজন রাবী রয়েছেন, যিনি মাতরূক বা পরিত্যক্ত (সিলসিলা যঈফাহ হা/৬১৯৯-এর আলোচনা দ্রঃ)।
বস্ত্ততঃ কুরআনের আয়াত হওয়ার জন্য হরকত থাকা বাধ্যতামূলক নয়। বাধ্যতামূলক হচ্ছে নির্ভুলভাবে পাঠ করা। তাই অনারবদের জন্য এর পাঠ সহজ করার জন্যই হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এ কাজটি করিয়েছিলেন মাত্র। তিনি এতে কোনরূপ কমবেশী করেননি।
নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কুরআনের আয়াত সমূহে কোন পরিবর্তন-পরিবর্ধন করেননি এবং কারো পক্ষে তা করাও সম্ভব নয়। আল্লাহ বলেন, ‘আমরাই কুরআন নাযিল করেছি এবং আমরাই এর হেফাযতকারী’ (হিজর ১৫/ ৯)। প্রকৃতপক্ষে খলীফা আব্দুল মালেক ইবনু মারওয়ানের নির্দেশে তিনি বিখ্যাত তাবেঈ ও আরবী ব্যাকরণবিদ আবুল আসওয়াদ আদ-দুআলী (৬০৩-৬৮৮ খ্রীঃ)-এর দুই ছাত্র নাছর বিন আছেম লায়ছী এবং ইয়াহইয়া বিন ইয়া‘মার ‘আদওয়ানীকে কুরআনে হরকত দেয়ার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। যাতে অনারব মুসলিমদের জন্য কুরআন তেলাওয়াত সহজ হয়। এভাবে এই দুই ছাত্রের মাধ্যমেই এই মহান কাজটি সুসম্পন্ন হয় (যুরক্বানী, মানাহিলুল ইরফান ১/৪০৬-৪০৭)। হরকত ছাড়া কুরআন পড়তে অপারগ অনারবদের জন্যই এরূপ করা হয়েছিল মাত্র। এছাড়া হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কুরআনের মোট ১১টি বর্ণে পরিবর্তন এনেছিলেন মর্মে যে বর্ণনাটির প্রসিদ্ধি রয়েছে (আবুদাঊদ সিজিস্তানী, আল-মাছাহেফ ১৫৭ পৃঃ), তা মওযূ‘ বা জাল। কারণ এর বর্ণনা সূত্রে আববান বিন ছুহায়েব নামে একজন রাবী রয়েছেন, যিনি মাতরূক বা পরিত্যক্ত (সিলসিলা যঈফাহ হা/৬১৯৯-এর আলোচনা দ্রঃ)।
বস্ত্ততঃ কুরআনের আয়াত হওয়ার জন্য হরকত থাকা বাধ্যতামূলক নয়। বাধ্যতামূলক হচ্ছে নির্ভুলভাবে পাঠ করা। তাই অনারবদের জন্য এর পাঠ সহজ করার জন্যই হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এ কাজটি করিয়েছিলেন মাত্র। তিনি এতে কোনরূপ কমবেশী করেননি।
৮২
মার্চ
প্রশ্ন (১/২০১) : ওমর (রাঃ)-এর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কুরআন মাজীদের মোট কতটি আয়াত নাযিল হয়? প্রেক্ষাপট সহ জানিয়ে বাধিত করবেন।-আব্দুস সুবহান
বিরল, দিনাজপুর।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলতেন, আল্লাহ তা‘আলা ওমরের যবানে ও হৃদয়ে সত্য প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছেন (তিরমিযী হা/৩৬৮২, হাদীছ ছহীহ)। এক্ষণে ৬টি বিষয়ে ওমর (রাঃ)-এর প্রস্তাবের সমর্থনে কুরআনে আয়াত নাযিল হয়েছে, যা ছহীহ হাদীছহসমূহ দ্বারা প্রমাণিত। যেমন (১) বদর যুদ্ধের ৭০ জন বন্দীর ব্যাপারে ওমর (রাঃ)-এর পরামর্শ ছিল তাদেরকে হত্যা করা। পরে তাঁর মতের সমর্থনে আল্লাহ সূরা আনফালের ৬৭-৬৯ আয়াত নাযিল করেন (মুসলিম হা/১৭৬৩)। (২) মক্কা বিজয়ের দিন রাসূল (ছাঃ) যখন মাকামে ইবরাহীমের কাছে দাঁড়ালেন, তখন ওমর (রাঃ) তাঁকে বলেন, আমরা কি মাক্বামে ইবরাহীমকে ছালাতের স্থান বানিয়ে নিতে পারি না?... তখন সূরা বাক্বারার ১২৫ আয়াতটি নাযিল হয়।
(৩) একদা তিনি রাসূল (ছাঃ)-কে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার স্ত্রীগণের নিকট ভালো-মন্দ সব ধরনের লোক প্রবেশ করে। অতএব আপনি যদি তাদেরকে পর্দা করার নির্দেশ দিতেন!... এরপর উম্মাহাতুল মুমিনীনদের পর্দা ফরয করে সূরা আহযাবের ৫৩ আয়াতটিনাযিল হয়। (৪) হাফছার নিকটে রাসূল (ছাঃ)-এর মধু খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্ত্রীগণের মাঝে পরস্পরে হিংসার ঘটনা ঘটলে তিনি তাদেরকে তালাক দেয়ার ধমকি দেন। অতঃপর তাঁর সমর্থনে সূরা তাহরীমের ৫ আয়াতটি নাযিল হয় (বুখারী হা/৪০২, মুসলিম হা/২৩৯৯, মিশকাত হা/৬০৪২)। (৫) ওমর (রাঃ) মুনাফিক নেতা আব্দুল্লাহ বিন উবাইয়ের জানাযার ছালাতে বাধা দেওয়ার পরেও রাসূল (ছাঃ) তা আদায় করেন। তখন আল্লাহ ওমরের সমর্থনে সূরা তাওবার ৮৪ আয়াতটি নাযিল করেন এবং মুনাফিকদের জানাযায় অংশগ্রহণে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন (বুখারী হা/১৩৬৬, তিরমিযী হা/৩০৯৭)। (৬) ওমর (রাঃ)-এর আকাংখা মাফিক আল্লাহ তা‘আলা মদ নিষিদ্ধের আয়াত নাযিল করেন (আবুদাউদ হা/৩৬৭০; তিরমিযী হা/৫৫৪০; নাসাঈ হা/৩০৪৯)। এছাড়া আরো কয়েকটি আয়াত নাযিলের ব্যাপারে তাফসীর গ্রন্থ সমূহে বর্ণিত হয়েছে, যা ছহীহ সনদে প্রমাণিত নয়।
বিরল, দিনাজপুর।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলতেন, আল্লাহ তা‘আলা ওমরের যবানে ও হৃদয়ে সত্য প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছেন (তিরমিযী হা/৩৬৮২, হাদীছ ছহীহ)। এক্ষণে ৬টি বিষয়ে ওমর (রাঃ)-এর প্রস্তাবের সমর্থনে কুরআনে আয়াত নাযিল হয়েছে, যা ছহীহ হাদীছহসমূহ দ্বারা প্রমাণিত। যেমন (১) বদর যুদ্ধের ৭০ জন বন্দীর ব্যাপারে ওমর (রাঃ)-এর পরামর্শ ছিল তাদেরকে হত্যা করা। পরে তাঁর মতের সমর্থনে আল্লাহ সূরা আনফালের ৬৭-৬৯ আয়াত নাযিল করেন (মুসলিম হা/১৭৬৩)। (২) মক্কা বিজয়ের দিন রাসূল (ছাঃ) যখন মাকামে ইবরাহীমের কাছে দাঁড়ালেন, তখন ওমর (রাঃ) তাঁকে বলেন, আমরা কি মাক্বামে ইবরাহীমকে ছালাতের স্থান বানিয়ে নিতে পারি না?... তখন সূরা বাক্বারার ১২৫ আয়াতটি নাযিল হয়।
(৩) একদা তিনি রাসূল (ছাঃ)-কে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার স্ত্রীগণের নিকট ভালো-মন্দ সব ধরনের লোক প্রবেশ করে। অতএব আপনি যদি তাদেরকে পর্দা করার নির্দেশ দিতেন!... এরপর উম্মাহাতুল মুমিনীনদের পর্দা ফরয করে সূরা আহযাবের ৫৩ আয়াতটিনাযিল হয়। (৪) হাফছার নিকটে রাসূল (ছাঃ)-এর মধু খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্ত্রীগণের মাঝে পরস্পরে হিংসার ঘটনা ঘটলে তিনি তাদেরকে তালাক দেয়ার ধমকি দেন। অতঃপর তাঁর সমর্থনে সূরা তাহরীমের ৫ আয়াতটি নাযিল হয় (বুখারী হা/৪০২, মুসলিম হা/২৩৯৯, মিশকাত হা/৬০৪২)। (৫) ওমর (রাঃ) মুনাফিক নেতা আব্দুল্লাহ বিন উবাইয়ের জানাযার ছালাতে বাধা দেওয়ার পরেও রাসূল (ছাঃ) তা আদায় করেন। তখন আল্লাহ ওমরের সমর্থনে সূরা তাওবার ৮৪ আয়াতটি নাযিল করেন এবং মুনাফিকদের জানাযায় অংশগ্রহণে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন (বুখারী হা/১৩৬৬, তিরমিযী হা/৩০৯৭)। (৬) ওমর (রাঃ)-এর আকাংখা মাফিক আল্লাহ তা‘আলা মদ নিষিদ্ধের আয়াত নাযিল করেন (আবুদাউদ হা/৩৬৭০; তিরমিযী হা/৫৫৪০; নাসাঈ হা/৩০৪৯)। এছাড়া আরো কয়েকটি আয়াত নাযিলের ব্যাপারে তাফসীর গ্রন্থ সমূহে বর্ণিত হয়েছে, যা ছহীহ সনদে প্রমাণিত নয়।
৮৩
প্রশ্ন (২/২০২) : জনৈক ব্যক্তি আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৬/৩৭০ পৃষ্ঠায় বর্ণিত ‘আলা ইবনুল হাযরামী কর্তৃক লোকদেরকে নিয়ে একত্রিত মুনাজাত করার ঘটনাটিকেসম্মিলিত মুনাজাতের পক্ষে দলীল হিসাবে উল্লেখ করেছেন। এর সত্যতা জানতে চাই।-রূহুল আমীন, দুবাই।
উত্তর : প্রথমতঃ এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যা সনদ বিহীনভাবে বর্ণিত হয়েছে। আর ঐতিহাসিক ও সনদ বিহীন কোন বক্তব্যকে শরী‘আতের দলীল হিসাবে গ্রহণ করা যায় না (সৈয়ূত্বী, আল-ইতক্বান ফী উলূমিল কুরআন ২/২২৭-২২৮ পৃঃ)। সনদ থাকার পরেও তা যঈফ হওয়ার কারণে যেখানে হাদীছ গ্রহণযোগ্য হয় না, সেখানে কোন ইবাদতের ক্ষেত্রে উক্ত ঘটনা দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
দ্বিতীয়তঃ এই দো‘আটি ছিল মূলতঃ ইস্তিস্কা বা পানি প্রার্থনার জন্য। আর পানি প্রার্থনার জন্য হাত তুলে সম্মিলিতভাবে দো‘আ করার বিষয়টি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (বুখারী হা/১০৯২, ‘ইস্তিস্কা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২১)। ঘটনাটি হ’ল, বাহরাইন যুদ্ধের প্রাক্কালে মুসলিম সেনাবাহিনী এমন এক স্থানে অবতরণ করে যেখানে পানি সংকটের কারণে তাদের থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। এমনকি তাদের উটগুলো তাদের খাদ্য সামগ্রী-পানীয় ও বস্ত্র সমূহ পিঠে করে নিয়ে হারিয়ে গিয়েছিল। ফলে তাদের সাথে তাদের পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই বাকী ছিল না। তখন ছাহাবী ‘আলা ইবনুল হাযরামী (রাঃ) লোকদের নিয়ে ফজরের ছালাত আদায় করেন ও সূর্যোদয় পর্যন্ত দো‘আ করতে থাকেন। তিনি যখন দো‘আর তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছলেন, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য তাদের পাশে একটি শীতল পানির পুকুর সৃষ্টি করে দিলেন। অতঃপর তিনি সহ সকলে সেখানে গেলেন এবং পানি পান করলেন ও গোসল করলেন। ওদিকে দিনের আলো প্রস্ফুটিত হ’তে না হ’তেই তাদের উটগুলো পিঠের বোঝা সহ বিভিন্ন দিক থেকে ফিরে আসল। অথচ তাদের আসবাবপত্রের একটিও হারায়নি। অতঃপর তারা তাদের উটগুলোকে উদর পূর্তি করে পানি পান করালেন (আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৬/৩২৮)।
অতএব স্পষ্ট যে, উক্ত ঘটনাটি ছিল পানি প্রার্থনার সাথে সংশ্লিষ্ট। প্রচলিত মুনাজাতের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই।
উত্তর : প্রথমতঃ এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যা সনদ বিহীনভাবে বর্ণিত হয়েছে। আর ঐতিহাসিক ও সনদ বিহীন কোন বক্তব্যকে শরী‘আতের দলীল হিসাবে গ্রহণ করা যায় না (সৈয়ূত্বী, আল-ইতক্বান ফী উলূমিল কুরআন ২/২২৭-২২৮ পৃঃ)। সনদ থাকার পরেও তা যঈফ হওয়ার কারণে যেখানে হাদীছ গ্রহণযোগ্য হয় না, সেখানে কোন ইবাদতের ক্ষেত্রে উক্ত ঘটনা দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
দ্বিতীয়তঃ এই দো‘আটি ছিল মূলতঃ ইস্তিস্কা বা পানি প্রার্থনার জন্য। আর পানি প্রার্থনার জন্য হাত তুলে সম্মিলিতভাবে দো‘আ করার বিষয়টি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (বুখারী হা/১০৯২, ‘ইস্তিস্কা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২১)। ঘটনাটি হ’ল, বাহরাইন যুদ্ধের প্রাক্কালে মুসলিম সেনাবাহিনী এমন এক স্থানে অবতরণ করে যেখানে পানি সংকটের কারণে তাদের থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। এমনকি তাদের উটগুলো তাদের খাদ্য সামগ্রী-পানীয় ও বস্ত্র সমূহ পিঠে করে নিয়ে হারিয়ে গিয়েছিল। ফলে তাদের সাথে তাদের পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই বাকী ছিল না। তখন ছাহাবী ‘আলা ইবনুল হাযরামী (রাঃ) লোকদের নিয়ে ফজরের ছালাত আদায় করেন ও সূর্যোদয় পর্যন্ত দো‘আ করতে থাকেন। তিনি যখন দো‘আর তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছলেন, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য তাদের পাশে একটি শীতল পানির পুকুর সৃষ্টি করে দিলেন। অতঃপর তিনি সহ সকলে সেখানে গেলেন এবং পানি পান করলেন ও গোসল করলেন। ওদিকে দিনের আলো প্রস্ফুটিত হ’তে না হ’তেই তাদের উটগুলো পিঠের বোঝা সহ বিভিন্ন দিক থেকে ফিরে আসল। অথচ তাদের আসবাবপত্রের একটিও হারায়নি। অতঃপর তারা তাদের উটগুলোকে উদর পূর্তি করে পানি পান করালেন (আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৬/৩২৮)।
অতএব স্পষ্ট যে, উক্ত ঘটনাটি ছিল পানি প্রার্থনার সাথে সংশ্লিষ্ট। প্রচলিত মুনাজাতের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই।
-সোহেল রাণা, মালয়েশিয়া।
উত্তর : মহিলাদের জন্য জুম‘আর ছালাত ফরয নয়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, জুম‘আর ছালাত প্রত্যেক মুসলমানের উপর জামা‘আতে আদায় করা ওয়াজিব। কিন্তু গোলাম, মহিলা, শিশু ও রোগী ব্যতীত (আবুদাঊদ হা/১০৬৭, মিশকাত হা/১৩৭৭; ইরওয়া হা/৫৯২)। এছাড়া সকল ছালাত বাড়িতে আদায় করাই মহিলাদের জন্য উত্তম (আবুদাঊদ হা/৫৬৭, মিশকাত হা/১০৬২)। তবে তারা জুম‘আর খুৎবা ও জামা‘আতে যোগদান করতে পারেন। যেমন বায়‘আতে রিযওয়ানে যোগদানকারিণী ছাহাবী উম্মে হিশাম বিনতে হারেছাহ (রাঃ) বলেন, আমি সূরা ক্বাফ (প্রথমাংশ) মুখস্থ করেছি রাসূল (ছাঃ)-এর যবানী থেকে, যা তিনি মিম্বরে দাঁড়িয়ে প্রতি জুম‘আর খুৎবায় পাঠ করতেন’ (মুসলিম হা/৮৭৩; মিশকাত হা/১৪০৯)। অতএব মহিলাদের জন্য এটি এখতিয়ারী বিষয়। কারণ তাতে তারা অনেক উপদেশ লাভ করতে পারেন (মির‘আত ৪/৪৯৮)।
উত্তর : মহিলাদের জন্য জুম‘আর ছালাত ফরয নয়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, জুম‘আর ছালাত প্রত্যেক মুসলমানের উপর জামা‘আতে আদায় করা ওয়াজিব। কিন্তু গোলাম, মহিলা, শিশু ও রোগী ব্যতীত (আবুদাঊদ হা/১০৬৭, মিশকাত হা/১৩৭৭; ইরওয়া হা/৫৯২)। এছাড়া সকল ছালাত বাড়িতে আদায় করাই মহিলাদের জন্য উত্তম (আবুদাঊদ হা/৫৬৭, মিশকাত হা/১০৬২)। তবে তারা জুম‘আর খুৎবা ও জামা‘আতে যোগদান করতে পারেন। যেমন বায়‘আতে রিযওয়ানে যোগদানকারিণী ছাহাবী উম্মে হিশাম বিনতে হারেছাহ (রাঃ) বলেন, আমি সূরা ক্বাফ (প্রথমাংশ) মুখস্থ করেছি রাসূল (ছাঃ)-এর যবানী থেকে, যা তিনি মিম্বরে দাঁড়িয়ে প্রতি জুম‘আর খুৎবায় পাঠ করতেন’ (মুসলিম হা/৮৭৩; মিশকাত হা/১৪০৯)। অতএব মহিলাদের জন্য এটি এখতিয়ারী বিষয়। কারণ তাতে তারা অনেক উপদেশ লাভ করতে পারেন (মির‘আত ৪/৪৯৮)।
৮৫
প্রশ্ন (৪/২০৪) : জনৈকা মহিলা তার বর্তমান স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে পূর্বের প্রেমিককে বিবাহ করতে চায়। এক্ষণে বর্তমান স্বামীকে ত্যাগ করে নতুন বিবাহের ক্ষেত্রে শরী‘আতের নির্দেশনা কি?রাশেদুল ইসলাম, ঢাকা।
উত্তর : যথাযোগ্য শারঈ কারণ ব্যতীত স্ত্রীর পক্ষ থেকে তালাক চাওয়া হারাম। কোন স্ত্রী এরূপ করলে তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধি হারাম হয়ে যাবে (আবুদাউদ হা/২২২৬; ইবনু মাজাহ হা/২০৫৫; তিরমিযী হা/১১৮৭; মিশকাত হা/৩২৭৯)। এক্ষণে কোন শরী‘আতসম্মত কারণ থাকলে উক্ত মহিলা সমাজের দায়িত্বশীল বা আদালতের মাধ্যমে বর্তমান স্বামীকে মোহর ফেরত দিয়ে ‘খোলা’ করতে পারে (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩২৭৪)। অতঃপর একমাসের ইদ্দত গণনা শেষে অন্যত্র বিবাহ করতে পারবে (বুখারী হা/৫২৭৩, মিশকাত হা/৩২৭৪, আবুদাঊদ হা/২২২৯-৩০)। স্মর্তব্য যে, বৈধ অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত কোন মহিলা এরূপ বিবাহ করলে, তা বাতিল বলে গণ্য হবে (আবুদাঊদ হা/২০৮৩, ইবনু মাজাহ হা/১৮৭৯, মিশকাত হা/৩১৩১)।
উত্তর : যথাযোগ্য শারঈ কারণ ব্যতীত স্ত্রীর পক্ষ থেকে তালাক চাওয়া হারাম। কোন স্ত্রী এরূপ করলে তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধি হারাম হয়ে যাবে (আবুদাউদ হা/২২২৬; ইবনু মাজাহ হা/২০৫৫; তিরমিযী হা/১১৮৭; মিশকাত হা/৩২৭৯)। এক্ষণে কোন শরী‘আতসম্মত কারণ থাকলে উক্ত মহিলা সমাজের দায়িত্বশীল বা আদালতের মাধ্যমে বর্তমান স্বামীকে মোহর ফেরত দিয়ে ‘খোলা’ করতে পারে (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩২৭৪)। অতঃপর একমাসের ইদ্দত গণনা শেষে অন্যত্র বিবাহ করতে পারবে (বুখারী হা/৫২৭৩, মিশকাত হা/৩২৭৪, আবুদাঊদ হা/২২২৯-৩০)। স্মর্তব্য যে, বৈধ অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত কোন মহিলা এরূপ বিবাহ করলে, তা বাতিল বলে গণ্য হবে (আবুদাঊদ হা/২০৮৩, ইবনু মাজাহ হা/১৮৭৯, মিশকাত হা/৩১৩১)।
-মুহাম্মাদ ছানাউল্লাহ, রাজশাহী।
উত্তর : খাদ্য গ্রহণের আদবসমূহ হ’ল : (১) হালাল ও পবিত্র রূযী খাবে (বাক্বারাহ ২/১৬৮)। (২) অতঃপর হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিবে (তুহফাতুল আহওয়াযী ৫/৪৮৫)।(৩) বিসমিল্লাহ বলে খাওয়া শুরু করবে (আবুদাউদ হা/৩৭৬৭; ইরওয়া হা/১৯৬৫)। (৪) অতঃপর ডান হাত দিয়ে খাবে এবং পান করবে (মুসলিম হা/২০২০; মিশকাত হা/৪১৬২)। (৫) পাত্রের মধ্যস্থল থেকে খাবে না বরং নিকট থেকে খাবে (বুখারী হা/৫৩৭৬, তিরমিযী হা/১৮০৫; মিশকাত হা/৪১৫৯, ৪২১১)। (৬) প্রথমে বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে গেলে স্মরণ হলেই ‘বিসমিল্লাহি আউয়ালাহূ ওয়া আখেরাহূ’ বলবে (আবুদাউদ হা/৩৭৬৭; মিশকাত হা/৪২০২)। (৭) প্লেট এবং আঙ্গুল ভালভাবে চেটে খাবে (মুসলিম হা/২০৩৪; আবুদাউদ হা/৩৮৪৫)। (৮) যদি খাবার পড়ে যায় তাহলে তা উঠিয়ে ছাফ করে খেয়ে নিবে। কারণ সে জানে না কোন খাবারে বরকত আছে (মুসলিম হা/২০৩৪; তিরমিযী হা/১৮০৩) (৯) একাকী না খেয়ে একত্রে খাবে। এতে বরকত রয়েছে। (আবুদাউদ হা/৩৭৬৪; মিশকাত হা/৪২৫২)। (১০) পান করার সময় পাত্রের বাইরে ৩ বার নিঃশ্বাস ফেলবে (বুখারী হা/৫৬৩১; ছহীহাহ হা/৩৮৭)। (১১) পানির পাত্রে বা খাবারে নিশ্বাস ছাড়বে না বা ফুঁক দিবে না। (বুখারী হা/১৫৩; মিশকাত হা/৪২৭৭)। (১২) দাঁড়িয়ে পানাহার করবে না(মুসলিম হা/২০২৬; মিশকাত হা/৪২৬৭)। (১৩) পেটের একভাগ খাদ্য দিয়ে ও একভাগ পানি দিয়ে ভরবে এবং একভাগ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য খালি রাখবে (তিরমিযী হা/২৩৮০)। (১৪) কাত হয়ে বা ঠেস দিয়ে খাবে না (বুখারী হা/৫৩৯৮; মিশকাত হা/৪১৬৮)। (১৫) খাওয়ার সময় পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে খাবে। অহেতুক গল্প-গুজব করবে না। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে এবং শেষে বলবে আল-হামদুল্লিাহ এবং অন্যান্য দো‘আ পড়বে। (১৬) খাওয়া শেষে প্লেট বা দস্তরখান উঠানোর সময় বলবে, আলহামদুলিল্লা-হি হামদান কাছীরান ত্বাইয়েবাম মুবা-রাকান ফীহি’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪১৯৯)। (১৭) দাওয়াত খেলে মেযবানে জন্য দো‘আ করে বলবে, আল্লা-হুম্মা আত্ব‘ইম মান আত্ব‘আমানী ওয়াসক্বি মান সাক্বা-নী’ (মুসলিম হা/২০৫৫; আহমাদ হা/২৩৮৬০ ‘সনদ ছহীহ’)।
উত্তর : খাদ্য গ্রহণের আদবসমূহ হ’ল : (১) হালাল ও পবিত্র রূযী খাবে (বাক্বারাহ ২/১৬৮)। (২) অতঃপর হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিবে (তুহফাতুল আহওয়াযী ৫/৪৮৫)।(৩) বিসমিল্লাহ বলে খাওয়া শুরু করবে (আবুদাউদ হা/৩৭৬৭; ইরওয়া হা/১৯৬৫)। (৪) অতঃপর ডান হাত দিয়ে খাবে এবং পান করবে (মুসলিম হা/২০২০; মিশকাত হা/৪১৬২)। (৫) পাত্রের মধ্যস্থল থেকে খাবে না বরং নিকট থেকে খাবে (বুখারী হা/৫৩৭৬, তিরমিযী হা/১৮০৫; মিশকাত হা/৪১৫৯, ৪২১১)। (৬) প্রথমে বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে গেলে স্মরণ হলেই ‘বিসমিল্লাহি আউয়ালাহূ ওয়া আখেরাহূ’ বলবে (আবুদাউদ হা/৩৭৬৭; মিশকাত হা/৪২০২)। (৭) প্লেট এবং আঙ্গুল ভালভাবে চেটে খাবে (মুসলিম হা/২০৩৪; আবুদাউদ হা/৩৮৪৫)। (৮) যদি খাবার পড়ে যায় তাহলে তা উঠিয়ে ছাফ করে খেয়ে নিবে। কারণ সে জানে না কোন খাবারে বরকত আছে (মুসলিম হা/২০৩৪; তিরমিযী হা/১৮০৩) (৯) একাকী না খেয়ে একত্রে খাবে। এতে বরকত রয়েছে। (আবুদাউদ হা/৩৭৬৪; মিশকাত হা/৪২৫২)। (১০) পান করার সময় পাত্রের বাইরে ৩ বার নিঃশ্বাস ফেলবে (বুখারী হা/৫৬৩১; ছহীহাহ হা/৩৮৭)। (১১) পানির পাত্রে বা খাবারে নিশ্বাস ছাড়বে না বা ফুঁক দিবে না। (বুখারী হা/১৫৩; মিশকাত হা/৪২৭৭)। (১২) দাঁড়িয়ে পানাহার করবে না(মুসলিম হা/২০২৬; মিশকাত হা/৪২৬৭)। (১৩) পেটের একভাগ খাদ্য দিয়ে ও একভাগ পানি দিয়ে ভরবে এবং একভাগ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য খালি রাখবে (তিরমিযী হা/২৩৮০)। (১৪) কাত হয়ে বা ঠেস দিয়ে খাবে না (বুখারী হা/৫৩৯৮; মিশকাত হা/৪১৬৮)। (১৫) খাওয়ার সময় পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে খাবে। অহেতুক গল্প-গুজব করবে না। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে এবং শেষে বলবে আল-হামদুল্লিাহ এবং অন্যান্য দো‘আ পড়বে। (১৬) খাওয়া শেষে প্লেট বা দস্তরখান উঠানোর সময় বলবে, আলহামদুলিল্লা-হি হামদান কাছীরান ত্বাইয়েবাম মুবা-রাকান ফীহি’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪১৯৯)। (১৭) দাওয়াত খেলে মেযবানে জন্য দো‘আ করে বলবে, আল্লা-হুম্মা আত্ব‘ইম মান আত্ব‘আমানী ওয়াসক্বি মান সাক্বা-নী’ (মুসলিম হা/২০৫৫; আহমাদ হা/২৩৮৬০ ‘সনদ ছহীহ’)।
-আব্দুল ক্বাইয়ূম,
নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : সন্তান মূলতঃ পিতার। তবে শৈশবে তার লালন-পালনের অধিকারী হ’লেন মা। কিন্তু মা অন্যত্র বিবাহ করলে তার এ অধিকার আর থাকে না। তখন সন্তান পিতার পূর্ণ দায়িত্বে থাকবে। আমর তাঁর পিতা শু‘আইব হ’তে, তিনি তাঁর পিতা আব্দুল্লাহ এবং তিনি তার পিতা আমর ইবনুল আছ (রাঃ) হ’তে বর্ণনা করেন যে, জনৈক স্ত্রীলোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এটি আমার ছেলে। আমার পেট ছিল তার পাত্র, আমার স্তন ছিল তার মশক এবং আমার কোল ছিল তার দোলনা। তার পিতা আমাকে তালাক দিয়েছে। সে এখন আমার ছেলে নিয়ে টানাটানি করছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘যতক্ষণ তুমি অন্যত্র বিবাহ না করবে, ততক্ষণ তুমিই তার অধিক হকদার’ (আহমাদ, আবুদাঊদ; মিশকাত হা/৩৩৭৮)।
তবে জ্ঞান-বুদ্ধি হওয়ার পর সন্তান যার নিকটে ইচ্ছা থাকতে পারে। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট জনৈকা স্ত্রীলোক এসে বলল, আমার স্বামী আমার ছেলে নিয়ে যেতে চায়। অথচ ছেলে আমার উপকার করে। সে আমাকে কূয়া থেকে পানি এনে দেয়। এসময় তার পিতা এলে নবী করীম (ছাঃ) ছেলেকে বললেন, ইনি তোমার পিতা আর ইনি তোমার মাতা- যাকে ইচ্ছা তুমি তার হাত ধর। ছেলে তার মায়ের হাত ধরল। অতঃপর মা তাকে নিয়ে চলে গেল’ (আবুদাঊদ, নাসাঈ; মিশকাত হা/৩৩৮০, সনদ ছহীহ)।
ইমাম শাওকানী বলেন, ‘হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ছেলে হৌক বা মেয়ে হৌক, সন্তানের ভাল-মন্দ বুঝার জ্ঞান হওয়ার পর যদি পিতা-মাতা সন্তান গ্রহণের ক্ষেত্রে মতভেদ করেন, তাহ’লে সন্তানকে এখতিয়ার দেওয়াই শরী‘আত সম্মত’ (নায়লুল আওত্বার ৮/১৬০ পৃঃ, ‘সন্তান পালনের অধিক হকদার কে?’ অনুচ্ছেদ)।
তবে মা কাফির হয়ে গেলে, মুসলিম সন্তানের উপরে তার কোন হক থাকবে না। আল্লাহ বলেন, আল্লাহ কাফিরদের জন্য মুমিনদের উপরে কোন অধিকার রাখেননি’ (নিসা ৪/১৪১)। ইবনুল ক্বাইয়িম বলেন, সন্তানকে এখতিয়ার দেওয়ার পূর্বে তার অধিকতর কল্যাণ বিবেচনা করা কর্তব্য। কেননা আল্লাহ বলেন, তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবারকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও (তাহরীম ৬)। তিনি তাঁর উস্তাদ ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, জনৈক সন্তান তার পিতার নিকটে যেতে চাইলে তার কারণ হিসাবে বলে যে, মা আমাকে মাদরাসায় পাঠায়, আর উস্তাদ আমাকে মারেন। কিন্তু আববা আমাকে খেলতে দেন। একথা শুনে বিচারক তাকে তার মায়ের কাছে পাঠাবার নির্দেশ দেন’ (নায়লুল আওত্বার ৮/১৬২)।
নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : সন্তান মূলতঃ পিতার। তবে শৈশবে তার লালন-পালনের অধিকারী হ’লেন মা। কিন্তু মা অন্যত্র বিবাহ করলে তার এ অধিকার আর থাকে না। তখন সন্তান পিতার পূর্ণ দায়িত্বে থাকবে। আমর তাঁর পিতা শু‘আইব হ’তে, তিনি তাঁর পিতা আব্দুল্লাহ এবং তিনি তার পিতা আমর ইবনুল আছ (রাঃ) হ’তে বর্ণনা করেন যে, জনৈক স্ত্রীলোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এটি আমার ছেলে। আমার পেট ছিল তার পাত্র, আমার স্তন ছিল তার মশক এবং আমার কোল ছিল তার দোলনা। তার পিতা আমাকে তালাক দিয়েছে। সে এখন আমার ছেলে নিয়ে টানাটানি করছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘যতক্ষণ তুমি অন্যত্র বিবাহ না করবে, ততক্ষণ তুমিই তার অধিক হকদার’ (আহমাদ, আবুদাঊদ; মিশকাত হা/৩৩৭৮)।
তবে জ্ঞান-বুদ্ধি হওয়ার পর সন্তান যার নিকটে ইচ্ছা থাকতে পারে। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট জনৈকা স্ত্রীলোক এসে বলল, আমার স্বামী আমার ছেলে নিয়ে যেতে চায়। অথচ ছেলে আমার উপকার করে। সে আমাকে কূয়া থেকে পানি এনে দেয়। এসময় তার পিতা এলে নবী করীম (ছাঃ) ছেলেকে বললেন, ইনি তোমার পিতা আর ইনি তোমার মাতা- যাকে ইচ্ছা তুমি তার হাত ধর। ছেলে তার মায়ের হাত ধরল। অতঃপর মা তাকে নিয়ে চলে গেল’ (আবুদাঊদ, নাসাঈ; মিশকাত হা/৩৩৮০, সনদ ছহীহ)।
ইমাম শাওকানী বলেন, ‘হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ছেলে হৌক বা মেয়ে হৌক, সন্তানের ভাল-মন্দ বুঝার জ্ঞান হওয়ার পর যদি পিতা-মাতা সন্তান গ্রহণের ক্ষেত্রে মতভেদ করেন, তাহ’লে সন্তানকে এখতিয়ার দেওয়াই শরী‘আত সম্মত’ (নায়লুল আওত্বার ৮/১৬০ পৃঃ, ‘সন্তান পালনের অধিক হকদার কে?’ অনুচ্ছেদ)।
তবে মা কাফির হয়ে গেলে, মুসলিম সন্তানের উপরে তার কোন হক থাকবে না। আল্লাহ বলেন, আল্লাহ কাফিরদের জন্য মুমিনদের উপরে কোন অধিকার রাখেননি’ (নিসা ৪/১৪১)। ইবনুল ক্বাইয়িম বলেন, সন্তানকে এখতিয়ার দেওয়ার পূর্বে তার অধিকতর কল্যাণ বিবেচনা করা কর্তব্য। কেননা আল্লাহ বলেন, তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবারকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও (তাহরীম ৬)। তিনি তাঁর উস্তাদ ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, জনৈক সন্তান তার পিতার নিকটে যেতে চাইলে তার কারণ হিসাবে বলে যে, মা আমাকে মাদরাসায় পাঠায়, আর উস্তাদ আমাকে মারেন। কিন্তু আববা আমাকে খেলতে দেন। একথা শুনে বিচারক তাকে তার মায়ের কাছে পাঠাবার নির্দেশ দেন’ (নায়লুল আওত্বার ৮/১৬২)।
৮৮
প্রশ্ন (৭/২০৭) : অনেককেই দেখা যাচ্ছে পিস টিভি দেখা ও ওলামায়ে কেরামের বক্তব্য শোনার জন্য টেলিভিশন-ইন্টারনেট নিচ্ছেন। কিন্তু পরিবারের অন্য সদস্যরা এগুলির মাধ্যমে বিভিন্ন শরী‘আত বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িয়ে যাচ্ছে। এক্ষণে পিতা হিসাবে আমাদের করণীয় কি?-সুহাইল
শিবগঞ্জ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : পরিবার প্রধান হিসাবে পিতা পরিবারের সার্বিক ব্যাপারে দায়িত্বশীল (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/৩৬৮৫)। পরিবারকে প্রকৃত দ্বীন শিক্ষা দানের সাথে সাথে সকল প্রকার অশ্লীলতা থেকে দূরে রাখা তাঁর মৌলিক দায়িত্ব। এক্ষণে উপরোক্ত অবস্থায় টেলিভিশন-ইন্টারনেট কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এজন্য সম্ভব সকল প্রকার ব্যবস্থা তিনি গ্রহণ করবেন। অন্যথায় এগুলি সরিয়ে দিতে হবে। নইলে পরিবারের সদস্যদের গোনাহের কারণে দায়িত্বশীল হিসাবে পিতাও গোনাহগার হবেন।
শিবগঞ্জ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : পরিবার প্রধান হিসাবে পিতা পরিবারের সার্বিক ব্যাপারে দায়িত্বশীল (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/৩৬৮৫)। পরিবারকে প্রকৃত দ্বীন শিক্ষা দানের সাথে সাথে সকল প্রকার অশ্লীলতা থেকে দূরে রাখা তাঁর মৌলিক দায়িত্ব। এক্ষণে উপরোক্ত অবস্থায় টেলিভিশন-ইন্টারনেট কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এজন্য সম্ভব সকল প্রকার ব্যবস্থা তিনি গ্রহণ করবেন। অন্যথায় এগুলি সরিয়ে দিতে হবে। নইলে পরিবারের সদস্যদের গোনাহের কারণে দায়িত্বশীল হিসাবে পিতাও গোনাহগার হবেন।
-আব্দুর রহমান, উত্তরা, ঢাকা।
উত্তর : গল্প-উপন্যাস যদি ইসলামী আকবীদা বিরোধী না হয় এবং চরিত্র গঠন ও শিক্ষামূলক হয়, তবে তা লেখা যাবে। যেমন প্রয়োজনে শিক্ষামূলক কবিতা পড়া যায়। মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা কবিতা সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, ‘এগুলি কিছু বাক্য মাত্র। অতএব এর ভালটি ভাল এবং মন্দটি মন্দ’ (দারাকুৎনী, মিশকাত হা/৪৮০৭ ‘শিষ্টাচারসমূহ’ অধ্যায় ‘বক্তৃতা ও কবিতা’ অনুচ্ছেদ)। তবে তা যদি নিছক খেল-তামাশা ও লোকদের হাসানোর উদ্দেশ্যে লেখা হয়, তবে জায়েয হবে না (উছায়মীন, ফাতাওয়া নূরুন আ‘লাদ-দারব ১/৩৩৫)। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘দুর্ভোগ ঐ ব্যক্তির জন্য যে কথা বলার সময় মিথ্যা বলে, যাতে লোকেরা হাসে’ (আবুদাউদ হা/৪৯৯০; মিশকাত হা/৪৮৩৪)।
উত্তর : গল্প-উপন্যাস যদি ইসলামী আকবীদা বিরোধী না হয় এবং চরিত্র গঠন ও শিক্ষামূলক হয়, তবে তা লেখা যাবে। যেমন প্রয়োজনে শিক্ষামূলক কবিতা পড়া যায়। মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা কবিতা সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, ‘এগুলি কিছু বাক্য মাত্র। অতএব এর ভালটি ভাল এবং মন্দটি মন্দ’ (দারাকুৎনী, মিশকাত হা/৪৮০৭ ‘শিষ্টাচারসমূহ’ অধ্যায় ‘বক্তৃতা ও কবিতা’ অনুচ্ছেদ)। তবে তা যদি নিছক খেল-তামাশা ও লোকদের হাসানোর উদ্দেশ্যে লেখা হয়, তবে জায়েয হবে না (উছায়মীন, ফাতাওয়া নূরুন আ‘লাদ-দারব ১/৩৩৫)। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘দুর্ভোগ ঐ ব্যক্তির জন্য যে কথা বলার সময় মিথ্যা বলে, যাতে লোকেরা হাসে’ (আবুদাউদ হা/৪৯৯০; মিশকাত হা/৪৮৩৪)।
-শাহাদত হোসাইন
ফুলবাড়িয়া, ময়মনসিংহ।
উত্তর : এসবের কোন যাকাত দিতে হবে না। তবে জমি থেকে উৎপাদিত ফসলের যাকাত দিতে হবে (বুখারী, মিশকাত হা/১৭৯৭)। শাক-সবজিতে কোন যাকাত নেই (তিরমিযী হা/৬৩৮; মিশকাত হা/১৮১৩)। বসবাসের জন্য নির্মিত বাড়িতে কোন যাকাত নেই। তবে বাড়ী বা দোকান থেকে প্রাপ্ত ভাড়া অথবা রিয়েল স্টেট ব্যবসার প্রাপ্ত লভ্যাংশ নিছাব পরিমাণ হ’লে এবং এক বছর অতিক্রান্ত হলে যাকাত দিতে হবে (আবুদাউদ হা/১৫৭৩; তিরমিযী হা/৬৩১)। গাছের কোন যাকাত নেই। তবে গাছ হতে উৎপন্ন শস্য নিছাব তথা পাঁচ ওয়াসাক্ব পরিমাণ হলে তাতে ২০ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হবে(বাক্বারাহ ২/২৬৭; মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৭৯৪)। উল্লেখ্য যে, ৫ ওয়াসাক্ব সমান ৬০ ছা‘ বা ৭৫০ কেজি।
ফুলবাড়িয়া, ময়মনসিংহ।
উত্তর : এসবের কোন যাকাত দিতে হবে না। তবে জমি থেকে উৎপাদিত ফসলের যাকাত দিতে হবে (বুখারী, মিশকাত হা/১৭৯৭)। শাক-সবজিতে কোন যাকাত নেই (তিরমিযী হা/৬৩৮; মিশকাত হা/১৮১৩)। বসবাসের জন্য নির্মিত বাড়িতে কোন যাকাত নেই। তবে বাড়ী বা দোকান থেকে প্রাপ্ত ভাড়া অথবা রিয়েল স্টেট ব্যবসার প্রাপ্ত লভ্যাংশ নিছাব পরিমাণ হ’লে এবং এক বছর অতিক্রান্ত হলে যাকাত দিতে হবে (আবুদাউদ হা/১৫৭৩; তিরমিযী হা/৬৩১)। গাছের কোন যাকাত নেই। তবে গাছ হতে উৎপন্ন শস্য নিছাব তথা পাঁচ ওয়াসাক্ব পরিমাণ হলে তাতে ২০ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হবে(বাক্বারাহ ২/২৬৭; মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৭৯৪)। উল্লেখ্য যে, ৫ ওয়াসাক্ব সমান ৬০ ছা‘ বা ৭৫০ কেজি।
৯১
প্রশ্ন (১০/২১০) : বিবাহের পর স্ত্রীর জন্য শ্বশুর-শ্বাশুড়ি, না নিজ পিতা-মাতার সেবা করা অধিক যরূরী? এছাড়া স্বামী এবং নিজ পিতা-মাতার আদেশ-নিষেধের মাঝে বৈপরীত্য দেখা দিলে কার আদেশ-নিষেধ অগ্রাধিকার পাবে?-মিলন সরকার
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।
উত্তর : প্রত্যেক সন্তানের জন্য তার পিতা-মাতার সেবাযত্ন করাই সর্বাগ্রে যরূরী (ইসরা ১৭/২৩)। স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ীর খেদমতে বাধ্য করা উচিৎ নয়। তবে অবশ্যই তাদের সাথে সদাচরণ করা কর্তব্য। স্বামী এবং পিতা-মাতা উভয়ের আদেশ-নিষেধ মেনে চলা স্ত্রীর জন্য ওয়াজিব। তাই সাধ্যমত উভয়কে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করবে। এরপরেও যদি উভয়ের আদেশ-নিষেধের মাঝে বৈপরীত্য দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে বৈষয়িক বিষয়ে স্বামীর আদেশকে অগ্রগণ্য করতে হবে। কেননা বিবাহের পূর্ব পর্যন্ত নারীরা পিতা-মাতার নিয়ন্ত্রণাধীনে থাকে। কিন্তু বিবাহের পর তারা স্বামীর নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। সুতরাং সেসময় স্বামীর আদেশ-নিষেধ মান্য করাই তার জন্য অগ্রগণ্য হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, আমি যদি কাউকে কোন মানুষের সিজদা করার আদেশ দিতাম, তাহ’লে স্ত্রীকে তার স্বামীর সামনে সিজদা করতে বলতাম (আবুদাউদ হা/২১৪০; মিশকাত হা/৩২৫৫)। তিনি বলেন, ক্বিয়ামতের দিন সর্বাধিক শাস্তি প্রাপ্ত হবে দু’ধরনের মানুষ। তাদের একজন হ’ল, অবাধ্য স্ত্রী (তিরমিযী হা/৩৫৯, সনদ ছহীহ)। তবে উভয়ে উভয়ের অধিকারের প্রতি যত্নশীল থাকতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমাদের উত্তম সেই ব্যক্তি, যে তার স্ত্রীর নিকটে উত্তম। আর আমি আমার স্ত্রীদের নিকটে উত্তম’ (তিরমিযী, দারেমী, মিশকাত হা/৩২৫২)।
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।
উত্তর : প্রত্যেক সন্তানের জন্য তার পিতা-মাতার সেবাযত্ন করাই সর্বাগ্রে যরূরী (ইসরা ১৭/২৩)। স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ীর খেদমতে বাধ্য করা উচিৎ নয়। তবে অবশ্যই তাদের সাথে সদাচরণ করা কর্তব্য। স্বামী এবং পিতা-মাতা উভয়ের আদেশ-নিষেধ মেনে চলা স্ত্রীর জন্য ওয়াজিব। তাই সাধ্যমত উভয়কে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করবে। এরপরেও যদি উভয়ের আদেশ-নিষেধের মাঝে বৈপরীত্য দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে বৈষয়িক বিষয়ে স্বামীর আদেশকে অগ্রগণ্য করতে হবে। কেননা বিবাহের পূর্ব পর্যন্ত নারীরা পিতা-মাতার নিয়ন্ত্রণাধীনে থাকে। কিন্তু বিবাহের পর তারা স্বামীর নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। সুতরাং সেসময় স্বামীর আদেশ-নিষেধ মান্য করাই তার জন্য অগ্রগণ্য হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, আমি যদি কাউকে কোন মানুষের সিজদা করার আদেশ দিতাম, তাহ’লে স্ত্রীকে তার স্বামীর সামনে সিজদা করতে বলতাম (আবুদাউদ হা/২১৪০; মিশকাত হা/৩২৫৫)। তিনি বলেন, ক্বিয়ামতের দিন সর্বাধিক শাস্তি প্রাপ্ত হবে দু’ধরনের মানুষ। তাদের একজন হ’ল, অবাধ্য স্ত্রী (তিরমিযী হা/৩৫৯, সনদ ছহীহ)। তবে উভয়ে উভয়ের অধিকারের প্রতি যত্নশীল থাকতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমাদের উত্তম সেই ব্যক্তি, যে তার স্ত্রীর নিকটে উত্তম। আর আমি আমার স্ত্রীদের নিকটে উত্তম’ (তিরমিযী, দারেমী, মিশকাত হা/৩২৫২)।
৯২
প্রশ্ন (১১/২১১) : শ্বশুরবাড়ির সকলেই বিড়ি তৈরীর ব্যবসা করে। এক্ষণে তাদের বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া, উঠা-বসা জায়েয হবে কি?-গোলাম মুক্তাদির
লক্ষ্মীনগর, ধুলিয়ান, মুর্শিদাবাদ, ভারত।
উত্তর : এর জন্য পাপের বোঝা শ্বশুরবাড়ীর লোকদের উপর বর্তাবে। আল্লাহ বলেন, একজনের পাপের বোঝা অন্যে বহন করবে না (নাজম ৫৩/৩৮)। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, তার নিকটে জনৈক ব্যক্তি এসে বলল, আমার একজন প্রতিবেশী আছে যে সূদ খায় এবং সর্বদা আমাকে তার বাড়িতে খাওয়ার জন্য দাওয়াত দেয়। এক্ষণে আমি তার দাওয়াত কবুল করব কি? জওয়াবে তিনি বললেন, مَهْنَأَهُ لَكَ وَإِثْمُهُ عَلَيْهِ ‘তোমার জন্য এটি বিনা কষ্টের অর্জন এবং এর গোনাহ তার উপরে’ (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/১৪৬৭৫, ইমাম আহমাদ আছারটি ‘ছহীহ’ বলেছেন, জামেঊল উলূম ওয়াল হিকাম ২০১ পৃঃ)। এক্ষণে আত্মীয় হিসাবে আপনার দায়িত্ব হবে শ্বশুরবাড়ীর লোকদের হালাল রূযীর দিকে ফিরিয়ে আনার জন্য সাধ্যপক্ষে চেষ্টা করা। আপনার চেষ্টা সফল হ’লে তাদের নেকীর সমপরিমান নেকী আপনি পাবেন। আর সফল না হলেও আপনি দাওয়াতের পূর্ণ নেকী পেয়ে যাবেন। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি কাউকে কল্যাণের পথ দেখায়, সে ঐ কর্মীর ন্যায় ছওয়াব পায় (মুসলিম, মিশকাত হা/২০৯)।
লক্ষ্মীনগর, ধুলিয়ান, মুর্শিদাবাদ, ভারত।
উত্তর : এর জন্য পাপের বোঝা শ্বশুরবাড়ীর লোকদের উপর বর্তাবে। আল্লাহ বলেন, একজনের পাপের বোঝা অন্যে বহন করবে না (নাজম ৫৩/৩৮)। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, তার নিকটে জনৈক ব্যক্তি এসে বলল, আমার একজন প্রতিবেশী আছে যে সূদ খায় এবং সর্বদা আমাকে তার বাড়িতে খাওয়ার জন্য দাওয়াত দেয়। এক্ষণে আমি তার দাওয়াত কবুল করব কি? জওয়াবে তিনি বললেন, مَهْنَأَهُ لَكَ وَإِثْمُهُ عَلَيْهِ ‘তোমার জন্য এটি বিনা কষ্টের অর্জন এবং এর গোনাহ তার উপরে’ (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/১৪৬৭৫, ইমাম আহমাদ আছারটি ‘ছহীহ’ বলেছেন, জামেঊল উলূম ওয়াল হিকাম ২০১ পৃঃ)। এক্ষণে আত্মীয় হিসাবে আপনার দায়িত্ব হবে শ্বশুরবাড়ীর লোকদের হালাল রূযীর দিকে ফিরিয়ে আনার জন্য সাধ্যপক্ষে চেষ্টা করা। আপনার চেষ্টা সফল হ’লে তাদের নেকীর সমপরিমান নেকী আপনি পাবেন। আর সফল না হলেও আপনি দাওয়াতের পূর্ণ নেকী পেয়ে যাবেন। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি কাউকে কল্যাণের পথ দেখায়, সে ঐ কর্মীর ন্যায় ছওয়াব পায় (মুসলিম, মিশকাত হা/২০৯)।
৯৩
প্রশ্ন (১২/২১২) : ছালাতরত অবস্থায় অজান্তে বের হওয়া মযী ছালাত শেষ হওয়ার পর বুঝতে পারলে উক্ত ছালাত পুনরায় আদায় করতে হবে কি?-তাওছীফ আহমাদ, মুর্শিদাবাদ, ভারত।
উত্তর : এমতাবস্থায় যদি দৃঢ় বিশ্বাস থাকে যে, ছালাতরত অবস্থাতেই মযী বের হয়েছে, তাহ’লে তাকে কাপড় ও শরীর উভয় স্থান থেকে মযী ধৌত করার পর ওযূ করে পুনরায় ছালাত আদায় করতে হবে। আর যদি কেবল সন্দেহ হয়, তবে পুনরায় ছালাত আদায় করতে হবে না। কারণ সন্দেহের দ্বারা পবিত্রতা নষ্ট হয় না (বুখারী হা/১৩৭, মুসলিম হা/৩৬২, মিশকাত হা/৩০৬)।
আর এটা রোগে পরিণত হ’লে মযী বের হলেও ছালাত পরিত্যাগ করার প্রয়োজন নেই। সেক্ষেত্রে প্রত্যেক ছালাতের জন্য পৃথকভাবে ওযূ করতে হবে (বুখারী হা/২২৮, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৫৮; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৬৮ পৃঃ)। কারণ আল্লাহপাক মানুষের উপর সাধ্যের অতিরিক্ত কিছু চাপিয়ে দেননি (বাক্বারাহ ২৮৬)।
উত্তর : এমতাবস্থায় যদি দৃঢ় বিশ্বাস থাকে যে, ছালাতরত অবস্থাতেই মযী বের হয়েছে, তাহ’লে তাকে কাপড় ও শরীর উভয় স্থান থেকে মযী ধৌত করার পর ওযূ করে পুনরায় ছালাত আদায় করতে হবে। আর যদি কেবল সন্দেহ হয়, তবে পুনরায় ছালাত আদায় করতে হবে না। কারণ সন্দেহের দ্বারা পবিত্রতা নষ্ট হয় না (বুখারী হা/১৩৭, মুসলিম হা/৩৬২, মিশকাত হা/৩০৬)।
আর এটা রোগে পরিণত হ’লে মযী বের হলেও ছালাত পরিত্যাগ করার প্রয়োজন নেই। সেক্ষেত্রে প্রত্যেক ছালাতের জন্য পৃথকভাবে ওযূ করতে হবে (বুখারী হা/২২৮, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৫৮; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৬৮ পৃঃ)। কারণ আল্লাহপাক মানুষের উপর সাধ্যের অতিরিক্ত কিছু চাপিয়ে দেননি (বাক্বারাহ ২৮৬)।
৯৪
প্রশ্ন (১৩/২১৩) : আযান দেওয়ার নির্দিষ্ট কোন স্থান কি শরী‘আত কর্তৃক নির্ধারিত রয়েছে? মসজিদ বা মসজিদের বাইরে যেকোন স্থান থেকে আযান দিলে চলবে কি?-মাহতাব, গোপালনগর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) আব্দুল্লাহ বিন যায়েদের স্বপ্নে পাওয়া আযানের বাক্যগুলো শুনে বললেন, তোমার স্বপ্ন সত্য, তুমি বেলালকে আযানের বাক্যগুলি শিখিয়ে দাও এবং তাকে আযান দিতে বল। কেননা বেলালের কণ্ঠস্বর তোমাদের সবার চেয়ে উঁচু (আবুদাউদ হা/৪৯৯; ইবনু মাজাহ হা/৭০৬; মিশকাত হা/৬৫০)। উরওয়া বিন যুবায়ের বনু নাজ্জারের জনৈকা মহিলা থেকে বর্ণনা করেন যে, মসজিদের পার্শ্ববর্তী আমার বাড়ী উঁচু ছিল। বেলাল তার উপরে উঠে ফজরের আযান দিতেন (আবুদাঊদ হা/৫১৯)। উল্লিখিত হাদীছ দুটি থেকে প্রমাণিত হয় যে, রাসূল (ছাঃ)-এর যামানায় মসজিদের বাইরে আযান দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল দূরবর্তী মুছল্লীর কাছে আযানের আওয়ায পৌঁছানো। অতএব মাইকে আযান দিলে মসজিদের ভিতর সহ যেকোন স্থানে দাঁড়িয়ে আযান দেওয়া যাবে। আর মাইক না থাকলে মসজিদের বাইরে দাঁড়িয়ে আযান দিবে। যাতে করে মানুষের কাছে আযানের আওয়ায পৌঁছে (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ফৎওয়া নং ৩৬৩০, ৪৩৩৫)।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) আব্দুল্লাহ বিন যায়েদের স্বপ্নে পাওয়া আযানের বাক্যগুলো শুনে বললেন, তোমার স্বপ্ন সত্য, তুমি বেলালকে আযানের বাক্যগুলি শিখিয়ে দাও এবং তাকে আযান দিতে বল। কেননা বেলালের কণ্ঠস্বর তোমাদের সবার চেয়ে উঁচু (আবুদাউদ হা/৪৯৯; ইবনু মাজাহ হা/৭০৬; মিশকাত হা/৬৫০)। উরওয়া বিন যুবায়ের বনু নাজ্জারের জনৈকা মহিলা থেকে বর্ণনা করেন যে, মসজিদের পার্শ্ববর্তী আমার বাড়ী উঁচু ছিল। বেলাল তার উপরে উঠে ফজরের আযান দিতেন (আবুদাঊদ হা/৫১৯)। উল্লিখিত হাদীছ দুটি থেকে প্রমাণিত হয় যে, রাসূল (ছাঃ)-এর যামানায় মসজিদের বাইরে আযান দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল দূরবর্তী মুছল্লীর কাছে আযানের আওয়ায পৌঁছানো। অতএব মাইকে আযান দিলে মসজিদের ভিতর সহ যেকোন স্থানে দাঁড়িয়ে আযান দেওয়া যাবে। আর মাইক না থাকলে মসজিদের বাইরে দাঁড়িয়ে আযান দিবে। যাতে করে মানুষের কাছে আযানের আওয়ায পৌঁছে (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ফৎওয়া নং ৩৬৩০, ৪৩৩৫)।
-রায়হান,
খয়রাবাদ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : ইসলামী শরী‘আতে এরূপ চিকিৎসার কোন ভিত্তি নেই। বরং রাগ কমানোর চিকিৎসা হিসাবে রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা যখন রেগে যাবে তখন আ‘ঊযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রাজীম পাঠ করবে (বুখারী হা/৬০৪৮; মুসলিম হা/২৬১০;, মিশকাত হা/২৪১৮)। অন্যত্র তিনি বলেন, এ সময় দাঁড়িয়ে থাকলে বসে যাবে এবং বসে থাকলে শুয়ে যাবে (আবুদাঊদ হা/৪৭৮২, মিশকাত হা/৫১১৪)। উল্লেখ্য যে, ক্রোধ নিবারণে ওযূ করা সম্পর্কিত হাদীছটি যঈফ (আবুদাঊদ হা/৪৭৮৪, যঈফাহ হা/৫৮২)।
খয়রাবাদ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : ইসলামী শরী‘আতে এরূপ চিকিৎসার কোন ভিত্তি নেই। বরং রাগ কমানোর চিকিৎসা হিসাবে রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা যখন রেগে যাবে তখন আ‘ঊযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রাজীম পাঠ করবে (বুখারী হা/৬০৪৮; মুসলিম হা/২৬১০;, মিশকাত হা/২৪১৮)। অন্যত্র তিনি বলেন, এ সময় দাঁড়িয়ে থাকলে বসে যাবে এবং বসে থাকলে শুয়ে যাবে (আবুদাঊদ হা/৪৭৮২, মিশকাত হা/৫১১৪)। উল্লেখ্য যে, ক্রোধ নিবারণে ওযূ করা সম্পর্কিত হাদীছটি যঈফ (আবুদাঊদ হা/৪৭৮৪, যঈফাহ হা/৫৮২)।
৯৬
প্রশ্ন (১৫/২১৫) : দাড়ির সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য অনেকে দাড়ি ছেটে সুন্দর করার চেষ্টা করেন এবং দলীল পেশ করে বলেন, আল্লাহ সৌন্দর্যকে পসন্দ করেন। সঊদী আরবের ওলামায়ে কেরামও নাকি এ ব্যাপারে একমত। এক্ষণে এটা জায়েয হবে কি?-মীযানুর রহমান
তাহেরপুর, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা মুশরিকদের বিরোধিতা কর এবং দাড়িকে নিজের অবস্থায় ছেড়ে দাও। আর গোঁফ ছোট কর (বুখারী হা/৫৮৯২; মুসলিম হা২৫৯; মিশকাত হা/৪৪২১)। দাড়ি ছাড়ার ব্যাপারে হাদীছে পাঁচ ধরনের শব্দ এসেছে। যেমন- ( أَوْفِرُوا وَأَوْفُوا وَأَرْخُوا , وَوَفِّرُوا ) আওফিরূ, আওফূ, আরখূ, ওয়াফ্ফিরূ। এই শব্দগুলো একই মর্ম বহন করে। আর তা হ’ল, দাড়ি তার নিজ গতিতে ছেড়ে দেওয়া। দাড়ি কাটা বা ছাঁটার পক্ষে ছহীহ কোন দলীল নেই; বরং এটি রাসূল (ছাঃ)-এর আদর্শের পরিপন্থী। উল্লেখ্য যে, দাড়ি ছাঁটার পক্ষে তিরমিযীতে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে তা জাল (তিরমিযী হা/২৭৬২; মিশকাত হা/৪৪৩৯; সিলসিলা যঈফাহ হা/২৮৮)।
সউদী আরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদ এ ব্যাপারে বলেন যে, দাড়ি মুন্ডন বা দাড়ির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হ’তে কিছু কেটে নেওয়া বৈধ নয়। এটা রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত বিরোধী কাজ (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ৫/১৩৭)। শায়খ উছায়মীন (রহঃ) বলেন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণ করতে চায়, তারা যেন অবশ্যই দাড়ির কোন অংশ না কাটে। কেননা শেষনবী (ছাঃ) এবং তার পূর্বের কোন নবী দাড়ি কাট- ছাঁট করতেন না (উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১১/৮২)। শায়খ বিন বায (রহঃ) বলেন, দাড়িকে তার নিজ অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া ওয়াজিব (বিন বায, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১০/৯৬-৯৭)। অতএব সৌন্দর্যের দোহাই দিয়ে দাড়ি কাট-ছাঁট করার কোন সুযোগ নেই।
তাহেরপুর, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা মুশরিকদের বিরোধিতা কর এবং দাড়িকে নিজের অবস্থায় ছেড়ে দাও। আর গোঁফ ছোট কর (বুখারী হা/৫৮৯২; মুসলিম হা২৫৯; মিশকাত হা/৪৪২১)। দাড়ি ছাড়ার ব্যাপারে হাদীছে পাঁচ ধরনের শব্দ এসেছে। যেমন- ( أَوْفِرُوا وَأَوْفُوا وَأَرْخُوا , وَوَفِّرُوا ) আওফিরূ, আওফূ, আরখূ, ওয়াফ্ফিরূ। এই শব্দগুলো একই মর্ম বহন করে। আর তা হ’ল, দাড়ি তার নিজ গতিতে ছেড়ে দেওয়া। দাড়ি কাটা বা ছাঁটার পক্ষে ছহীহ কোন দলীল নেই; বরং এটি রাসূল (ছাঃ)-এর আদর্শের পরিপন্থী। উল্লেখ্য যে, দাড়ি ছাঁটার পক্ষে তিরমিযীতে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে তা জাল (তিরমিযী হা/২৭৬২; মিশকাত হা/৪৪৩৯; সিলসিলা যঈফাহ হা/২৮৮)।
সউদী আরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদ এ ব্যাপারে বলেন যে, দাড়ি মুন্ডন বা দাড়ির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হ’তে কিছু কেটে নেওয়া বৈধ নয়। এটা রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত বিরোধী কাজ (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ৫/১৩৭)। শায়খ উছায়মীন (রহঃ) বলেন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণ করতে চায়, তারা যেন অবশ্যই দাড়ির কোন অংশ না কাটে। কেননা শেষনবী (ছাঃ) এবং তার পূর্বের কোন নবী দাড়ি কাট- ছাঁট করতেন না (উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১১/৮২)। শায়খ বিন বায (রহঃ) বলেন, দাড়িকে তার নিজ অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া ওয়াজিব (বিন বায, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১০/৯৬-৯৭)। অতএব সৌন্দর্যের দোহাই দিয়ে দাড়ি কাট-ছাঁট করার কোন সুযোগ নেই।
-মীযান, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : তাবীয দিয়ে কোন চিকিৎসা গ্রহণ করা যাবেনা। কারণ রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি তাবীয লটকালো, সে শিরক করল (আহমাদ হা/১৭৪৫৮; ছহীহাহ হা/৪৯২)। আর শিরকের গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করেন না (নিসা ৪/৪৮)। তবে সূরা ফাতিহা পাঠ করে ফুঁক দিয়ে সাপের বিষ নামানো শরী‘আতসম্মত (বুখারী হা/৫০০৭)। এছাড়া শরী‘আতবিরোধী নয়, এরূপ চিকিৎসা গ্রহণে কোন বাধা নেই।
উত্তর : তাবীয দিয়ে কোন চিকিৎসা গ্রহণ করা যাবেনা। কারণ রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি তাবীয লটকালো, সে শিরক করল (আহমাদ হা/১৭৪৫৮; ছহীহাহ হা/৪৯২)। আর শিরকের গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করেন না (নিসা ৪/৪৮)। তবে সূরা ফাতিহা পাঠ করে ফুঁক দিয়ে সাপের বিষ নামানো শরী‘আতসম্মত (বুখারী হা/৫০০৭)। এছাড়া শরী‘আতবিরোধী নয়, এরূপ চিকিৎসা গ্রহণে কোন বাধা নেই।
-মুবাশশিরাহ
বিবিহাটরা, মোহনপুর, রাজশাহী।
উত্তর : নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ নাবালকদের সাথে মহিলারা বিনা পর্দায় সাক্ষাৎ করতে পারে (নূর ২৪/৩১)। আবহাওয়াগত ভিন্নতার কারণে সাবালক হওয়ার বয়সে ভিন্নতা দেখা দেয়। অতএব শিশুর মধ্যে সাবালক হওয়ার আলামত পাওয়া গেলে তার থেকে পর্দা করতে হবে।
বিবিহাটরা, মোহনপুর, রাজশাহী।
উত্তর : নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ নাবালকদের সাথে মহিলারা বিনা পর্দায় সাক্ষাৎ করতে পারে (নূর ২৪/৩১)। আবহাওয়াগত ভিন্নতার কারণে সাবালক হওয়ার বয়সে ভিন্নতা দেখা দেয়। অতএব শিশুর মধ্যে সাবালক হওয়ার আলামত পাওয়া গেলে তার থেকে পর্দা করতে হবে।
৯৯
প্রশ্ন (১৮/২১৮) : জনৈক ব্যক্তি বলেন, ‘মহিলাদের পবিত্রতা অর্জনের জন্য প্রথমে ঢিলা-কুলুখ ব্যবহারের পর পানি ব্যবহার করতে হবে। এ বক্তব্যের কোন সত্যতা আছে কি?-মাজেদা বেগম, চুনাঘাট, লালমণিরহাট।
উত্তর : উক্ত বক্তব্য ভিত্তিহীন। পুরুষ-মহিলা সকলের জন্য পবিত্রতা অর্জনের প্রধান মাধ্যম হ’ল পানি। পানি না থাকলে ঢেলা বা ক্ষতিকর নয় এরূপ টিস্যু ব্যবহার করতে হবে। সূরা তওবার ১০৯ আয়াতে পবিত্রতা অর্জনের কারণে আল্লাহ যাদের প্রশংসা করেছেন, তারা পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করতেন (আবুদাঊদ হা/৪৪, সনদ ছহীহ)। উল্লেখ্য যে, আগে ঢেলা বা টিস্যু দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করতে হবে এবং পরে পানি ব্যবহার করতে হবে মর্মে মুসনাদে বাযযারে যে বর্ণনা এসেছে, তা মওযূ‘ বা জাল (ইরওয়াউল গালীল হা/৪২-এর আলোচনা দ্রঃ)।
উত্তর : উক্ত বক্তব্য ভিত্তিহীন। পুরুষ-মহিলা সকলের জন্য পবিত্রতা অর্জনের প্রধান মাধ্যম হ’ল পানি। পানি না থাকলে ঢেলা বা ক্ষতিকর নয় এরূপ টিস্যু ব্যবহার করতে হবে। সূরা তওবার ১০৯ আয়াতে পবিত্রতা অর্জনের কারণে আল্লাহ যাদের প্রশংসা করেছেন, তারা পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করতেন (আবুদাঊদ হা/৪৪, সনদ ছহীহ)। উল্লেখ্য যে, আগে ঢেলা বা টিস্যু দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করতে হবে এবং পরে পানি ব্যবহার করতে হবে মর্মে মুসনাদে বাযযারে যে বর্ণনা এসেছে, তা মওযূ‘ বা জাল (ইরওয়াউল গালীল হা/৪২-এর আলোচনা দ্রঃ)।
-নার্গিস সুলতানা, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা।
উত্তর : রাতে ঘুমানোর সময় ওযূ করা অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ কাজ। বারা ইবনে আযেব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে বলেন, যখন তুমি শুতে যাবে, তখন ছালাতের মত ওযূ কর এবং ডান কাতে শয়ন করো। অতঃপর তাকে একটি দো‘আ শিখিয়ে বললেন, ‘যদি তুমি এ অবস্থায় মারা যাও, তবে তুমি ইসলামী স্বভাবের উপর মারা যাবে। আর যদি সকাল কর তাহলে কল্যাণের উপর সকাল করবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৩৮৫)। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ওযূ অবস্থায় ঘুমায়, তার পাশে একজন ফেরেশতা অবস্থান করে। যখন সে জাগ্রত হয়, তখন ফেরেশতা বলে, হে আল্লাহ! তুমি তোমার এই বান্দাকে ক্ষমা করে দাও। কারণ সে পবিত্র অবস্থায় ঘুমিয়েছিল (ছহীহ ইবনু হিববান হা/১০৫১; ছহীহাহ হা/২৫৩৯)।
উত্তর : রাতে ঘুমানোর সময় ওযূ করা অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ কাজ। বারা ইবনে আযেব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে বলেন, যখন তুমি শুতে যাবে, তখন ছালাতের মত ওযূ কর এবং ডান কাতে শয়ন করো। অতঃপর তাকে একটি দো‘আ শিখিয়ে বললেন, ‘যদি তুমি এ অবস্থায় মারা যাও, তবে তুমি ইসলামী স্বভাবের উপর মারা যাবে। আর যদি সকাল কর তাহলে কল্যাণের উপর সকাল করবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৩৮৫)। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ওযূ অবস্থায় ঘুমায়, তার পাশে একজন ফেরেশতা অবস্থান করে। যখন সে জাগ্রত হয়, তখন ফেরেশতা বলে, হে আল্লাহ! তুমি তোমার এই বান্দাকে ক্ষমা করে দাও। কারণ সে পবিত্র অবস্থায় ঘুমিয়েছিল (ছহীহ ইবনু হিববান হা/১০৫১; ছহীহাহ হা/২৫৩৯)।
১০১
প্রশ্ন (২০/২২০) : স্ত্রীর চাকুরী অথবা ব্যবসার আয়ের অর্থের উপর স্বামীর হক আছে কি? স্বামী স্ত্রীর অর্থের হিসাব রাখতে পারবে কি? এছাড়া স্ত্রী স্বামীকে না জানিয়ে তার পিতার বাড়িতে কোন খরচ করতে পারবে কি?আরীফুল ইসলাম, ছোট বনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : স্ত্রীর সম্পদের উপর স্বামীর কোন হক নেই। তবে স্ত্রীর মৃত্যুর পর স্বামী তার সম্পদের উত্তরাধিকারী হবেন। স্বামী স্ত্রীর অর্থের হিসাব রাখতে পারেন, কেবল দ্বীনী দায়িত্ব হিসাবে। স্ত্রী তার স্বামীকে না বলে তার পিতার বাড়ীতে খরচ করতে পারে। তবে স্বামীর পরামর্শ ও অনুমতি নিয়ে ব্যয় করা উচিৎ। কেননা আল্লাহ তা‘আলা পরস্পরে পরামর্শ সাপেক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন (আলে ইমরান ৩/১৫৯)।
উত্তর : স্ত্রীর সম্পদের উপর স্বামীর কোন হক নেই। তবে স্ত্রীর মৃত্যুর পর স্বামী তার সম্পদের উত্তরাধিকারী হবেন। স্বামী স্ত্রীর অর্থের হিসাব রাখতে পারেন, কেবল দ্বীনী দায়িত্ব হিসাবে। স্ত্রী তার স্বামীকে না বলে তার পিতার বাড়ীতে খরচ করতে পারে। তবে স্বামীর পরামর্শ ও অনুমতি নিয়ে ব্যয় করা উচিৎ। কেননা আল্লাহ তা‘আলা পরস্পরে পরামর্শ সাপেক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন (আলে ইমরান ৩/১৫৯)।
-মুবাশশির, মীরপুর, ঢাকা।
উত্তর : একই রাক‘আতে একাধিক সূরা পাঠ করায় কোন বাধা নেই। রাসূল (ছাঃ) একই রাক‘আতে পরপর দু’টি বা ততোধিক সূরা পাঠ করেছেন (মুসলিম হা/৭৭২, নাসাঈ হা/১৬৬৪)। এছাড়া একই রাক‘আতে একাধিক সূরা পাঠের বিষয়টি বিভিন্ন ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (বুখারী হা/৭৪২, আবুদাঊদ হা/১৩৯৬; দ্রঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ১০১ পৃঃ)।
উত্তর : একই রাক‘আতে একাধিক সূরা পাঠ করায় কোন বাধা নেই। রাসূল (ছাঃ) একই রাক‘আতে পরপর দু’টি বা ততোধিক সূরা পাঠ করেছেন (মুসলিম হা/৭৭২, নাসাঈ হা/১৬৬৪)। এছাড়া একই রাক‘আতে একাধিক সূরা পাঠের বিষয়টি বিভিন্ন ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (বুখারী হা/৭৪২, আবুদাঊদ হা/১৩৯৬; দ্রঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ১০১ পৃঃ)।
১০৩
প্রশ্ন (২২/২২২) : আমি ২০১৩ সালে স্ত্রীকে মৌখিকভাবে এক তালাক দেই। অতঃপর ৩দিন পর তাকে ফিরিয়ে নিয়ে সংসার করতে থাকি। কিন্তু ২০১৪ সালে কোর্টের মাধ্যমে পুনরায় তালাক প্রদান করি এবং তালাকনামার কপি ডাকের মাধ্যমে স্ত্রীর পিতার বরাবরে প্রেরণ করি। সে গ্রহণ না করলেও জানতে পেরেছে। অতঃপর ৩ মাস পর ঐ তালাকের জাবেদা কপি পুনরায় স্ত্রীর পিতার বাড়ীতে প্রেরণ করি। উল্লেখ্য, ২য় তালাক দেওয়ার পর থেকেই স্ত্রীর সাথে আমার সম্পর্ক নেই। এক্ষণে এটা কি তিন তালাক হিসাবে গণ্য হবে?-মুহাম্মাদ সাফিউল ইসলাম
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
উত্তর : প্রশ্নে উল্লেখিত বিবরণ অনুযায়ী ২য় তালাক দেওয়ার পর ইদ্দতকাল তথা তিন মাসের মধ্যে স্ত্রীকে ফিরিয়ে না নেওয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেছে (বাক্বারাহ ২/২২৯)। এমতাবস্থায় স্বামী-স্ত্রী পরস্পরে সম্মত হ’লে নতুন বিবাহের মাধ্যমে পুনরায় ঘর-সংসার করতে পারে (বাক্বারাহ ২/২৩২; তালাক ৩৫/১; বুখারী হা/৫১৩০)।
তবে তিন তুহরে তিন তালাক প্রদান করলে এ সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়, যতক্ষণ না সে অন্যত্র বিবাহ করে ও সেখান থেকে স্বাভাবিকভাবে তালাকপ্রাপ্তা হয় (বাক্বারাহ ২/২৩০)। উল্লেখ্য, প্রশ্নকারী দ্বিতীয় তালাকের ইদ্দতকাল অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পর ৩য় তালাক প্রদান করায় তা গণ্য হবে না। কারণ তালাক দিতে হয় ইদ্দতকালের মধ্যে। আল্লাহ বলেন, ‘আর তাদেরকে তালাক দাও ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে এবং ইদ্দত গণনা কর’ (তালাক ৬৫/১)। আবদুল্লাহ্ ইবনু ওমর (রাঃ) স্বীয় স্ত্রীকে ঋতু অবস্থায় তালাক দিলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে ফিরিয়ে নিয়ে ইদ্দতের মধ্যে তালাক দেওয়ার নির্দেশ দেন (বুখারী হা/৫২৫১, মুসলিম হা/১৪৭১)। কেননা ঋতু অবস্থায় তালাক দেওয়া জায়েয নয় (বিস্তারিত দ্রঃ ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ২০/১৪৭, ফৎওয়া নং ৮২৫)।
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
উত্তর : প্রশ্নে উল্লেখিত বিবরণ অনুযায়ী ২য় তালাক দেওয়ার পর ইদ্দতকাল তথা তিন মাসের মধ্যে স্ত্রীকে ফিরিয়ে না নেওয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেছে (বাক্বারাহ ২/২২৯)। এমতাবস্থায় স্বামী-স্ত্রী পরস্পরে সম্মত হ’লে নতুন বিবাহের মাধ্যমে পুনরায় ঘর-সংসার করতে পারে (বাক্বারাহ ২/২৩২; তালাক ৩৫/১; বুখারী হা/৫১৩০)।
তবে তিন তুহরে তিন তালাক প্রদান করলে এ সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়, যতক্ষণ না সে অন্যত্র বিবাহ করে ও সেখান থেকে স্বাভাবিকভাবে তালাকপ্রাপ্তা হয় (বাক্বারাহ ২/২৩০)। উল্লেখ্য, প্রশ্নকারী দ্বিতীয় তালাকের ইদ্দতকাল অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পর ৩য় তালাক প্রদান করায় তা গণ্য হবে না। কারণ তালাক দিতে হয় ইদ্দতকালের মধ্যে। আল্লাহ বলেন, ‘আর তাদেরকে তালাক দাও ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে এবং ইদ্দত গণনা কর’ (তালাক ৬৫/১)। আবদুল্লাহ্ ইবনু ওমর (রাঃ) স্বীয় স্ত্রীকে ঋতু অবস্থায় তালাক দিলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে ফিরিয়ে নিয়ে ইদ্দতের মধ্যে তালাক দেওয়ার নির্দেশ দেন (বুখারী হা/৫২৫১, মুসলিম হা/১৪৭১)। কেননা ঋতু অবস্থায় তালাক দেওয়া জায়েয নয় (বিস্তারিত দ্রঃ ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ২০/১৪৭, ফৎওয়া নং ৮২৫)।
১০৪
প্রশ্ন (২৩/২২৩) : অজান্তে কবরযুক্ত মসজিদে ছালাত আদায় করে পরবর্তীতে জানতে পারলে উক্ত ছালাত পুনরায় আদায় করতে হবে কি?-যুবায়ের, ময়মনসিংহ।
উত্তর : অজান্তে কবরযুক্ত মসজিদে ছালাত আদায় করে ফেললে তা পুনরায় আদায় করতে হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘যা তোমাদের ভুলবশতঃ ঘটে সে বিষয়ে আল্লাহ তোমাদের পাকড়াও করবেন না (আহযাব ৩৩/৫)।
তবে এর জন্য তওবা ও ইস্তেগফার করবে। যেন পুনরায় এরূপ ভুল না হয়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, গোনাহ থেকে তওবাকারী ঐ ব্যক্তির মত, যার কোন গোনাহ নেই (ত্বাবারাণী, ছহীহুল জামে‘ হা/৬৮০৩)। স্মর্তব্য যে, ছালাত পুনরায় আদায় করতে হয় কেবল ছালাতের রুকনসমূহের কোন একটি তরক হলে।
উত্তর : অজান্তে কবরযুক্ত মসজিদে ছালাত আদায় করে ফেললে তা পুনরায় আদায় করতে হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘যা তোমাদের ভুলবশতঃ ঘটে সে বিষয়ে আল্লাহ তোমাদের পাকড়াও করবেন না (আহযাব ৩৩/৫)।
তবে এর জন্য তওবা ও ইস্তেগফার করবে। যেন পুনরায় এরূপ ভুল না হয়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, গোনাহ থেকে তওবাকারী ঐ ব্যক্তির মত, যার কোন গোনাহ নেই (ত্বাবারাণী, ছহীহুল জামে‘ হা/৬৮০৩)। স্মর্তব্য যে, ছালাত পুনরায় আদায় করতে হয় কেবল ছালাতের রুকনসমূহের কোন একটি তরক হলে।
-আশরাফুল ইসলাম
তাহেরপুর, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : নাপিতের পেশা বৈধ। নববী যুগে এর প্রচলন ছিল (বুখারী হা/৪১৯০, মিশকাত হা/৪৪৬২)। তবে এ পেশায় থেকে দাড়ি কেটে বা ছেটে দেওয়ার ন্যায় গর্হিত কাজ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। কেননা এতে অন্যায় কাজে সহায়তা করার পাপ হবে। যা থেকে আল্লাহ নিষেধ করেছেন (মায়েদাহ ৫/২)।
তাহেরপুর, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : নাপিতের পেশা বৈধ। নববী যুগে এর প্রচলন ছিল (বুখারী হা/৪১৯০, মিশকাত হা/৪৪৬২)। তবে এ পেশায় থেকে দাড়ি কেটে বা ছেটে দেওয়ার ন্যায় গর্হিত কাজ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। কেননা এতে অন্যায় কাজে সহায়তা করার পাপ হবে। যা থেকে আল্লাহ নিষেধ করেছেন (মায়েদাহ ৫/২)।
-মাসঊদ, মেহেরপুর।
উত্তর : শুক্রবার ফজরের ফরয ছালাতে সূরা দু’টি পাঠ করা সুন্নাত। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) এ দু’টি সূরা জুম‘আর দিন ফজরে নিয়মিত তেলাওয়াত করতেন (বুখারী হা/৮৯১, মুসলিম হা/৮৮০, মিশকাত হা/৮৩৮)। তবে অন্য সূরা পড়াও জায়েয আছে (মির‘আত ৩/১৪৫)। এছাড়া রাসূল (ছাঃ) সুরা সাজদা ও মুলক না পড়ে রাতে ঘুমাতেন না (তিরমিযী হা/৩৪০৪, মিশকাত হা/২১৫৫, ছহীহুল জামে‘ হা/৪৮৭৩)।
উত্তর : শুক্রবার ফজরের ফরয ছালাতে সূরা দু’টি পাঠ করা সুন্নাত। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) এ দু’টি সূরা জুম‘আর দিন ফজরে নিয়মিত তেলাওয়াত করতেন (বুখারী হা/৮৯১, মুসলিম হা/৮৮০, মিশকাত হা/৮৩৮)। তবে অন্য সূরা পড়াও জায়েয আছে (মির‘আত ৩/১৪৫)। এছাড়া রাসূল (ছাঃ) সুরা সাজদা ও মুলক না পড়ে রাতে ঘুমাতেন না (তিরমিযী হা/৩৪০৪, মিশকাত হা/২১৫৫, ছহীহুল জামে‘ হা/৪৮৭৩)।
-আহসান হাবীব, দক্ষিণ কোরিয়া।
উত্তর : দেশে হৌক আর বিদেশে হৌক অমুসলিমদের যবেহকৃত পশুর গোশত খাওয়া হালাল নয়। কেননা তা হালাল হওয়ার শর্ত হল, ‘বিসমিল্লাহ’ বলে যবেহ করা (আন‘আম ৬/১২১)। তবে আহলে কিতাবদের (ইহূদী এবং খৃষ্টানদের) যবেহ করা পশু খাওয়া জায়েয (মায়েদাহ ৫/৫)। শর্ত হ’ল যদি তারা আল্লাহর নামে যবেহ করে (বাক্বারাহ ২/১৭৩, আন‘আম ৬/১২১)। আর যদি এমন দেশে বসবাস করা হয়, যে দেশে মুসলিম ও আহলে কিতাব একত্রে বসবাস করে এবং যবহের সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলেছে কি-না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া না যায়, সেক্ষেত্রে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে খাওয়া যেতে পারে (বুখারী হা/৭৩৯৮; আবুদাউদ হা/২৮২৯; মিশকাত হা/৪০৬৯)। তবে সন্দেহ থেকে দূরে থাকার জন্য তা বর্জন করাই উত্তম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, হালাল স্পষ্ট, হারামও স্পষ্ট। এর মধ্যবর্তী বিষয়সমূহ অস্পষ্ট, যা অনেক মানুষ জানে না। অতএব যে ব্যক্তি সন্দিগ্ধ বস্ত্তসমূহ থেকে বেঁচে থাকবে, সে ব্যক্তি তার দ্বীন ও সম্মানকে পবিত্র রাখলো। আর যে ব্যক্তি সন্দিগ্ধ কাজে লিপ্ত হ’ল, সে হারামে পতিত হ’ল (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৬২)। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘তুমি সন্দেহযুক্ত বিষয় থেকে নিঃসন্দেহের দিকে ধাবিত হও’ (তিরমিযী হা/২৫১৮; নাসাঈ হা/৫৭১১; মিশকাত হা/২৭৭৩)।
উত্তর : দেশে হৌক আর বিদেশে হৌক অমুসলিমদের যবেহকৃত পশুর গোশত খাওয়া হালাল নয়। কেননা তা হালাল হওয়ার শর্ত হল, ‘বিসমিল্লাহ’ বলে যবেহ করা (আন‘আম ৬/১২১)। তবে আহলে কিতাবদের (ইহূদী এবং খৃষ্টানদের) যবেহ করা পশু খাওয়া জায়েয (মায়েদাহ ৫/৫)। শর্ত হ’ল যদি তারা আল্লাহর নামে যবেহ করে (বাক্বারাহ ২/১৭৩, আন‘আম ৬/১২১)। আর যদি এমন দেশে বসবাস করা হয়, যে দেশে মুসলিম ও আহলে কিতাব একত্রে বসবাস করে এবং যবহের সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলেছে কি-না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া না যায়, সেক্ষেত্রে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে খাওয়া যেতে পারে (বুখারী হা/৭৩৯৮; আবুদাউদ হা/২৮২৯; মিশকাত হা/৪০৬৯)। তবে সন্দেহ থেকে দূরে থাকার জন্য তা বর্জন করাই উত্তম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, হালাল স্পষ্ট, হারামও স্পষ্ট। এর মধ্যবর্তী বিষয়সমূহ অস্পষ্ট, যা অনেক মানুষ জানে না। অতএব যে ব্যক্তি সন্দিগ্ধ বস্ত্তসমূহ থেকে বেঁচে থাকবে, সে ব্যক্তি তার দ্বীন ও সম্মানকে পবিত্র রাখলো। আর যে ব্যক্তি সন্দিগ্ধ কাজে লিপ্ত হ’ল, সে হারামে পতিত হ’ল (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৬২)। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘তুমি সন্দেহযুক্ত বিষয় থেকে নিঃসন্দেহের দিকে ধাবিত হও’ (তিরমিযী হা/২৫১৮; নাসাঈ হা/৫৭১১; মিশকাত হা/২৭৭৩)।
-সারোয়ার
মুন্সির হাট, ধোবাউড়া, ময়মনসিংহ।
উত্তর : এরূপ অবস্থায় কোন গুনাহ হবে না বা কোন কাফফারাও ওয়াজিব হবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা আমার উম্মতের ভুলবশতঃ ও বাধ্যগত অবস্থায় কৃত অপরাধ ক্ষমা করে দিয়েছেন’ (ইবনু মাজাহ হা/২০৪৫, মিশকাত হা/৬২৮৪)। তবে নিজেকে সংযত রাখতে না পেরে এরূপ করলে তওবা করতে হবে এবং এক দীনার বা অর্ধ দীনার ছাদাক্বা করতে হবে (আবুদাঊদ হা/২৬৪; মিশকাত হা/৫৫৩)।
মুন্সির হাট, ধোবাউড়া, ময়মনসিংহ।
উত্তর : এরূপ অবস্থায় কোন গুনাহ হবে না বা কোন কাফফারাও ওয়াজিব হবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা আমার উম্মতের ভুলবশতঃ ও বাধ্যগত অবস্থায় কৃত অপরাধ ক্ষমা করে দিয়েছেন’ (ইবনু মাজাহ হা/২০৪৫, মিশকাত হা/৬২৮৪)। তবে নিজেকে সংযত রাখতে না পেরে এরূপ করলে তওবা করতে হবে এবং এক দীনার বা অর্ধ দীনার ছাদাক্বা করতে হবে (আবুদাঊদ হা/২৬৪; মিশকাত হা/৫৫৩)।
১০৯
প্রশ্ন (২৮/২২৮) : মেমোরী কার্ডে গান, ভিডিও, ইসলামী বক্তব্য ইত্যাদি লোড দেওয়ার ব্যবসা করা জায়েয হবে কি?-জসীমুদ্দীন
কাঠিগ্রাম, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ।
উত্তর : যে সব ব্যবসা মানুষকে মন্দের দিকে নিয়ে যায় তা থেকে বেঁচে থাকাই উত্তম। এ ব্যবসার নেতিবাচক দিক হ’ল এর মাধ্যমে অন্যায়-অশ্লীলতা দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও এটি দ্বীন প্রচারেও সহায়ক ভুমিকা পালন করে থাকে। তবে মন্দটি পরিত্যাগ করে এ ব্যবসা করায় কোন বাধা নেই। আল্লাহ বলেন, তোমরা সৎ ও তাক্বওয়ার কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা কর আর গুনাহ ও পাপ কাজে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাক (মায়েদাহ ৫/২)।
কাঠিগ্রাম, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ।
উত্তর : যে সব ব্যবসা মানুষকে মন্দের দিকে নিয়ে যায় তা থেকে বেঁচে থাকাই উত্তম। এ ব্যবসার নেতিবাচক দিক হ’ল এর মাধ্যমে অন্যায়-অশ্লীলতা দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও এটি দ্বীন প্রচারেও সহায়ক ভুমিকা পালন করে থাকে। তবে মন্দটি পরিত্যাগ করে এ ব্যবসা করায় কোন বাধা নেই। আল্লাহ বলেন, তোমরা সৎ ও তাক্বওয়ার কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা কর আর গুনাহ ও পাপ কাজে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাক (মায়েদাহ ৫/২)।
১১০
প্রশ্ন (২৯/২২৯) : আমাদের দেশে বিবাহ পড়ানোর সময় একই গ্লাসে একই শরবত বর ও কনেকে খাওয়ানো হয়। এগুলি জায়েয হবে কি?-রাশেদুল ইসলাম, নরসিংদী।
উত্তর : এভাবে খাওয়ানোর মাধ্যমে আল্লাহ বর-কনের মধ্যে অধিক ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিবেন বলে যদি কোন আক্বীদা থাকে, তবে তা জায়েয নয়। বরং কুসংস্কার মাত্র। তবে সাধারণভাবে এরূপ খাওয়ায় কোন বাধা নেই। রাসূল (ছাঃ) ও আয়েশা (রাঃ) একই পাত্রের একই স্থানে মুখ রেখে পানি পান করেছেন (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৪৭)।
উত্তর : এভাবে খাওয়ানোর মাধ্যমে আল্লাহ বর-কনের মধ্যে অধিক ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিবেন বলে যদি কোন আক্বীদা থাকে, তবে তা জায়েয নয়। বরং কুসংস্কার মাত্র। তবে সাধারণভাবে এরূপ খাওয়ায় কোন বাধা নেই। রাসূল (ছাঃ) ও আয়েশা (রাঃ) একই পাত্রের একই স্থানে মুখ রেখে পানি পান করেছেন (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৪৭)।
১১১
প্রশ্ন (৩০/২৩০) : দো‘আর অর্থ না জানা থাকলে তা দ্বারা আল্লাহর নিকটে কিছু কামনা করলে কবুলযোগ্য হবে কি?-শিহাবুদ্দীন,
পাংশা, রাজবাড়ী।
উত্তর : অবশ্যই হবে। কেননা আল্লাহ মানুষের হৃদয়ের খবর রাখেন। অতএব হৃদয় ঢেলে দিয়ে দো‘আ করলে আল্লাহ অবশ্যই তার ডাকে সাড়া দিবেন। তিনি বলেন, তোমরা আমাকে ডাক। আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব’ (মুমিন ৬০)। তবে অর্থ জেনে ও মর্ম বুঝে দো‘আ করলে তাতে একাগ্রতা ও বিনয় বেশী থাকে। ফলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনাও বেশী থাকে। তাই অর্থ না জানলে কবুলযোগ্য হলেও অর্থ জেনে দো‘আ করার চেষ্টা করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘মুছল্লী ছালাতের মধ্যে স্বীয় প্রভুর সাথে গোপনে কথা বলে। অতএব সে তার প্রভুর সাথে কি বলছে তার প্রতি যেন একাগ্র থাকে ..(আহমাদ, মিশকাত হা/৮৫৬)।
পাংশা, রাজবাড়ী।
উত্তর : অবশ্যই হবে। কেননা আল্লাহ মানুষের হৃদয়ের খবর রাখেন। অতএব হৃদয় ঢেলে দিয়ে দো‘আ করলে আল্লাহ অবশ্যই তার ডাকে সাড়া দিবেন। তিনি বলেন, তোমরা আমাকে ডাক। আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব’ (মুমিন ৬০)। তবে অর্থ জেনে ও মর্ম বুঝে দো‘আ করলে তাতে একাগ্রতা ও বিনয় বেশী থাকে। ফলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনাও বেশী থাকে। তাই অর্থ না জানলে কবুলযোগ্য হলেও অর্থ জেনে দো‘আ করার চেষ্টা করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘মুছল্লী ছালাতের মধ্যে স্বীয় প্রভুর সাথে গোপনে কথা বলে। অতএব সে তার প্রভুর সাথে কি বলছে তার প্রতি যেন একাগ্র থাকে ..(আহমাদ, মিশকাত হা/৮৫৬)।
- সিরাজুল ইসলাম
মোল্লাহাট, বাগেরহাট।
উত্তর : শরী‘আতে সময়ের মূল্য সম্পর্কে অপরিসীম গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। ক্বিয়ামতের দিন পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে আমরা কেউ এক পাও নড়াতে পারব না। তন্মধ্যে অন্যতম দু’টি হচ্ছে- ‘আমাদের জীবনের সময়কাল আমরা কিভাবে ব্যয় করেছি এবং আমাদের যৌবনকে আমরা কিভাবে ক্ষয় করেছি (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫১৯৭)। অন্য হাদীছে আছে, রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘দু’টি নে‘মতের ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষ ভ্রান্তির মধ্যে নিমজ্জিত। আর তা হচ্ছে স্বাস্থ্য ও অবসর সময়’ (বুখারী, মিশকাত হা/৫১৫৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪৯২৮)।
মোল্লাহাট, বাগেরহাট।
উত্তর : শরী‘আতে সময়ের মূল্য সম্পর্কে অপরিসীম গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। ক্বিয়ামতের দিন পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে আমরা কেউ এক পাও নড়াতে পারব না। তন্মধ্যে অন্যতম দু’টি হচ্ছে- ‘আমাদের জীবনের সময়কাল আমরা কিভাবে ব্যয় করেছি এবং আমাদের যৌবনকে আমরা কিভাবে ক্ষয় করেছি (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫১৯৭)। অন্য হাদীছে আছে, রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘দু’টি নে‘মতের ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষ ভ্রান্তির মধ্যে নিমজ্জিত। আর তা হচ্ছে স্বাস্থ্য ও অবসর সময়’ (বুখারী, মিশকাত হা/৫১৫৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪৯২৮)।
-আব্দুর রাকীব
জলপাইগুড়ি, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
উত্তর : পুকুরে ফরয গোসল করায় কোন বাধা নেই। রাসূল (ছাঃ) বলেন, নিশ্চয়ই পানি হ’ল পবিত্র। তাকে কোন বস্ত্ত অপবিত্র করতে পারে না (আবুদাঊদ হা/৬৭; মিশকাত হা/৪৭৮)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, যতক্ষণ না তা নাপাকী বহন করে (আবুদাঊদ হা/৬৩; মিশকাত হা/৪৭৭)। উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় ইবনুল মুনযির বলেন, বিদ্বানগণ এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন যে, পানি কম হৌক বেশী হৌক, সেখানে নাপাকী পড়ায় যদি তার স্বাদ, রং বা গন্ধে কোন পরিবর্তন আসে, তাহ’লে সেটা অপবিত্র হবে। ছাহেবে মির‘আত বলেন, উক্ত মর্মে সকল বিদ্বানগণ একমত হয়েছেন, যদিও এবিষয়ে হাদীছ দুর্বল (মির‘আত হা/৪৮১০এর আলোচনা দ্রঃ, ২/১৭৩)। অতএব পুকুরে ফরয গোসল করায় কোন দোষ নেই।
জলপাইগুড়ি, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
উত্তর : পুকুরে ফরয গোসল করায় কোন বাধা নেই। রাসূল (ছাঃ) বলেন, নিশ্চয়ই পানি হ’ল পবিত্র। তাকে কোন বস্ত্ত অপবিত্র করতে পারে না (আবুদাঊদ হা/৬৭; মিশকাত হা/৪৭৮)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, যতক্ষণ না তা নাপাকী বহন করে (আবুদাঊদ হা/৬৩; মিশকাত হা/৪৭৭)। উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় ইবনুল মুনযির বলেন, বিদ্বানগণ এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন যে, পানি কম হৌক বেশী হৌক, সেখানে নাপাকী পড়ায় যদি তার স্বাদ, রং বা গন্ধে কোন পরিবর্তন আসে, তাহ’লে সেটা অপবিত্র হবে। ছাহেবে মির‘আত বলেন, উক্ত মর্মে সকল বিদ্বানগণ একমত হয়েছেন, যদিও এবিষয়ে হাদীছ দুর্বল (মির‘আত হা/৪৮১০এর আলোচনা দ্রঃ, ২/১৭৩)। অতএব পুকুরে ফরয গোসল করায় কোন দোষ নেই।
-সুমন, পীরগঞ্জ. ঠাকুরগাঁও।
উত্তর : মুসলিম হৌক অমুসলিম হৌক প্রতিষ্ঠিত কোন সরকারের বিধি-বিধান শরী‘আত বিরোধী না হলে তা মেনে চলা সেদেশের নাগরিকদের জন্য আবশ্যক। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা তাদের (শাসকদের) হক আদায় কর এবং তোমাদের হক আল্লাহর কাছে চাও (বুখারী হা/৭০৫২; মিশকাত হা/৩৬৭২)। তবে ইসলাম বিরোধী হুকুম মানতে কোন মুসলিম নাগরিক বাধ্য নয় (বুখারী হা/৭২৫৭; মিশকাত হা/৩৬৯৬, ৩৬৬৪)। বরং তা থেকে বিরত থাকতে হবে, তার প্রতিবাদ করতে হবে অথবা তাকে ঘৃণা করতে হবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৩৭)। সেক্ষেত্রে বাধ্য করা হলে সেদেশ থেকে হিজরত করতে হবে। বাধ্যগত অবস্থায় সেখানে অবস্থান করতে হলে এবং তাকে শরী‘আতবিরোধী কাজ করতে বাধ্য করা হ’লে সেক্ষেত্রে সে গুনাহগার হবে না (বাক্বারাহ ২/১৭৩)। (বিস্তারিত দ্রঃ ‘জিহাদ ও ক্বিতাল’ বই ৪২-৪৪ পৃঃ)।
উত্তর : মুসলিম হৌক অমুসলিম হৌক প্রতিষ্ঠিত কোন সরকারের বিধি-বিধান শরী‘আত বিরোধী না হলে তা মেনে চলা সেদেশের নাগরিকদের জন্য আবশ্যক। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা তাদের (শাসকদের) হক আদায় কর এবং তোমাদের হক আল্লাহর কাছে চাও (বুখারী হা/৭০৫২; মিশকাত হা/৩৬৭২)। তবে ইসলাম বিরোধী হুকুম মানতে কোন মুসলিম নাগরিক বাধ্য নয় (বুখারী হা/৭২৫৭; মিশকাত হা/৩৬৯৬, ৩৬৬৪)। বরং তা থেকে বিরত থাকতে হবে, তার প্রতিবাদ করতে হবে অথবা তাকে ঘৃণা করতে হবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৩৭)। সেক্ষেত্রে বাধ্য করা হলে সেদেশ থেকে হিজরত করতে হবে। বাধ্যগত অবস্থায় সেখানে অবস্থান করতে হলে এবং তাকে শরী‘আতবিরোধী কাজ করতে বাধ্য করা হ’লে সেক্ষেত্রে সে গুনাহগার হবে না (বাক্বারাহ ২/১৭৩)। (বিস্তারিত দ্রঃ ‘জিহাদ ও ক্বিতাল’ বই ৪২-৪৪ পৃঃ)।
১১৬
প্রশ্ন (৩৫/২৩৫) : জনৈক বক্তা বলেন, ছালাত কমিয়ে ৫ ওয়াক্ত করার ব্যাপারে আল্লাহর নিকটে মূসা (আঃ)-এর বারবার যাওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বরং রাসূল (ছাঃ) স্বয়ং কয়েকবার গিয়ে তা কমিয়ে নিয়ে আসেন। এ বক্তব্যের সত্যতা জানতে চাই।-জসীমুদ্দীন, নিয়ামতপুর, নওগাঁ।
উত্তর: মূসা (আঃ)-এর পরামর্শক্রমে রাসূল (ছাঃ) বারবার গিয়েছিলেন (বুখারী হা/৩৮৮৭, মুসলিম হা/৪২৯)। তবে নিঃসন্দেহে এটা ছিল পূর্বনির্ধারিত তাক্বদীর।
উত্তর: মূসা (আঃ)-এর পরামর্শক্রমে রাসূল (ছাঃ) বারবার গিয়েছিলেন (বুখারী হা/৩৮৮৭, মুসলিম হা/৪২৯)। তবে নিঃসন্দেহে এটা ছিল পূর্বনির্ধারিত তাক্বদীর।
১১৭
প্রশ্ন (৩৬/২৩৬) : ওযূ অবস্থায় মোযা পরে কতক্ষণ যাবৎ পা মাসাহ করা যাবে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।-আমীনুল ইসলাম, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।
উত্তর: ওযু অবস্থায় মোযা পরে মুক্বীমের জন্য একদিন একরাত এবং মুসাফিরের জন্য তিন দিন তিন রাত পর্যন্ত মাসাহ করা জায়েয (মুসলিম হা/২৭৬; মিশকাত হা/৫১৭)। ছাফওয়ান (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) আমাদের আদেশ দিতেন, মুসাফির অবস্থায় আমরা যেন তিন দিন তিন রাত নাপাকীর গোসল ব্যতীত, এমনকি পায়খানা-পেশাব ও নিদ্রার পর ওযূ করার সময়ও আমাদের মোযাসমূহ না খুলি (তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/৫২০)।
উত্তর: ওযু অবস্থায় মোযা পরে মুক্বীমের জন্য একদিন একরাত এবং মুসাফিরের জন্য তিন দিন তিন রাত পর্যন্ত মাসাহ করা জায়েয (মুসলিম হা/২৭৬; মিশকাত হা/৫১৭)। ছাফওয়ান (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) আমাদের আদেশ দিতেন, মুসাফির অবস্থায় আমরা যেন তিন দিন তিন রাত নাপাকীর গোসল ব্যতীত, এমনকি পায়খানা-পেশাব ও নিদ্রার পর ওযূ করার সময়ও আমাদের মোযাসমূহ না খুলি (তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/৫২০)।
১১৮
প্রশ্ন (৩৭/২৩৭) : জনৈক আলেম বলেন, ছাহাবী ও তাবেঈগণ জায়নামাযের চেয়ে মাটির উপর সিজদাকে অধিক উত্তম বলে অভিহিত করেছেন’। এ বক্তব্য কতটুকু গ্রহণযোগ্য?-তাওয়াবুল ইসলাম
ছোটবনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : জায়নামাযের চেয়ে মাটির উপর সিজদা করা অধিক উত্তম মর্মে কোন দলীল পাওয়া যায়না। সম্ভবতঃ এটা ভ্রান্ত ফিরক্বা শী‘আদের অনুকরণ। কেননা তাদের নিকট মাটির উপর সিজদা করা ফরয। বিশেষতঃ কারবালার মাটিতে সিজদা করা অধিক ফযীলতপূর্ণ। রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক জায়নামাযে ছালাত আদায় করার বিষয়টি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। মায়মূনা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) মাদুরের উপর ছালাত আদায় করতেন (বুখারী হা/৩৮১)। আনাস (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে খেজুরের পাতার চাটাইয়ের উপর ছালাত আদায় করেছি (বুখারী হা/৩৮০; মুসলিম হা/৬৫৮)। আনাস (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে ছালাত আদায় করেছি। আমাদের মধ্যে অনেকেই প্রচন্ড গরমের কারণে কাপড়ের টুকরা মাটিতে রেখে তার উপর সিজদা করতেন (বুখারী হা/৩৮৫; ইরওয়া হা/৩১১)। এছাড়া এ মর্মে বহু ছাহাবীর আমল পাওয়া যায়।
ছোটবনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : জায়নামাযের চেয়ে মাটির উপর সিজদা করা অধিক উত্তম মর্মে কোন দলীল পাওয়া যায়না। সম্ভবতঃ এটা ভ্রান্ত ফিরক্বা শী‘আদের অনুকরণ। কেননা তাদের নিকট মাটির উপর সিজদা করা ফরয। বিশেষতঃ কারবালার মাটিতে সিজদা করা অধিক ফযীলতপূর্ণ। রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক জায়নামাযে ছালাত আদায় করার বিষয়টি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। মায়মূনা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) মাদুরের উপর ছালাত আদায় করতেন (বুখারী হা/৩৮১)। আনাস (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে খেজুরের পাতার চাটাইয়ের উপর ছালাত আদায় করেছি (বুখারী হা/৩৮০; মুসলিম হা/৬৫৮)। আনাস (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে ছালাত আদায় করেছি। আমাদের মধ্যে অনেকেই প্রচন্ড গরমের কারণে কাপড়ের টুকরা মাটিতে রেখে তার উপর সিজদা করতেন (বুখারী হা/৩৮৫; ইরওয়া হা/৩১১)। এছাড়া এ মর্মে বহু ছাহাবীর আমল পাওয়া যায়।
-ওমর ফারূক
মালঞ্চি, মুর্শিদাবাদ, ভারত।
উত্তর : সোনার বা চাঁদির পাত্রে পানাহার করা হারাম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা সোনা বা রূপার পাত্রে পানাহার করো না। কেননা দুনিয়াতে এগুলি কাফেরদের জন্য এবং আখেরাতে এগুলি তোমাদের জন্য (বুখারী হা/৫৬৩২, মুসলিম হা/২০৬৭, মিশকাত হা/৪২৭২)। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সোনা বা রূপার পাত্রে খাবে বা পান করবে, জাহান্নামের আগুন তার পেট ছিন্নভিন্ন করবে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪২৭১)।
মালঞ্চি, মুর্শিদাবাদ, ভারত।
উত্তর : সোনার বা চাঁদির পাত্রে পানাহার করা হারাম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা সোনা বা রূপার পাত্রে পানাহার করো না। কেননা দুনিয়াতে এগুলি কাফেরদের জন্য এবং আখেরাতে এগুলি তোমাদের জন্য (বুখারী হা/৫৬৩২, মুসলিম হা/২০৬৭, মিশকাত হা/৪২৭২)। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সোনা বা রূপার পাত্রে খাবে বা পান করবে, জাহান্নামের আগুন তার পেট ছিন্নভিন্ন করবে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪২৭১)।
-হাবীবুল বাশার
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
উত্তর : মহিলাদের যেরূপ পর পুরুষ হ’তে পর্দা করা ফরয, তেমনি পুরুষদেরও বেগানা মহিলা হ’তে পর্দা করা অপরিহার্য। আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী! তুমি মুমিন পুরুষদের বলে দাও, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে। আর এটাই তাদের জন্য উত্তম। বস্ত্ততপক্ষে তারা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবহিত’ (নূর ৩০)। তিনি আরো বলেন, ‘তোমরা যখন তাদের (মহিলাদের) নিকট কোন বস্ত্ত চাইবে তখন পর্দার বাইরে থেকে চাইবে। কেননা এটি তোমাদের ও তাদের অন্তর সমূহের জন্য পবিত্রতর’ (আহযাব ৩৩/৫৩)।
বুরায়দা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হযরত আলী (রাঃ) কে বলেন, ‘হে আলী! তুমি দৃষ্টির উপর দৃষ্টি ফেলো না। হঠাৎ যে দৃষ্টি পড়ে ওটা তোমার জন্য ক্ষমা। কিন্তু পরবর্তী দৃষ্টি তোমার জন্য বৈধ নয়’ (আহমাদ, তিরমিযী, আবুদাঊদ, দারেমী, মিশকাত হা/৩১১০)। পুরুষের জন্য দৃষ্টিকে সংযত করতে হবে। তবে মহিলাদের ন্যায় সর্বাঙ্গ ঢেকে পর্দা করতে হবে না।
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
উত্তর : মহিলাদের যেরূপ পর পুরুষ হ’তে পর্দা করা ফরয, তেমনি পুরুষদেরও বেগানা মহিলা হ’তে পর্দা করা অপরিহার্য। আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী! তুমি মুমিন পুরুষদের বলে দাও, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে। আর এটাই তাদের জন্য উত্তম। বস্ত্ততপক্ষে তারা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবহিত’ (নূর ৩০)। তিনি আরো বলেন, ‘তোমরা যখন তাদের (মহিলাদের) নিকট কোন বস্ত্ত চাইবে তখন পর্দার বাইরে থেকে চাইবে। কেননা এটি তোমাদের ও তাদের অন্তর সমূহের জন্য পবিত্রতর’ (আহযাব ৩৩/৫৩)।
বুরায়দা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হযরত আলী (রাঃ) কে বলেন, ‘হে আলী! তুমি দৃষ্টির উপর দৃষ্টি ফেলো না। হঠাৎ যে দৃষ্টি পড়ে ওটা তোমার জন্য ক্ষমা। কিন্তু পরবর্তী দৃষ্টি তোমার জন্য বৈধ নয়’ (আহমাদ, তিরমিযী, আবুদাঊদ, দারেমী, মিশকাত হা/৩১১০)। পুরুষের জন্য দৃষ্টিকে সংযত করতে হবে। তবে মহিলাদের ন্যায় সর্বাঙ্গ ঢেকে পর্দা করতে হবে না।
১২১
প্রশ্ন (৪০/২৪০) : সন্তান জন্মের ৭ দিন পর আকীকা করা না হলে সেক্ষেত্রে করণীয় কি? পিতা-মাতা আকীকা না করে থাকলে নিজেই নিজের আকীকা করা যাবে কি?-সোহেল, গোমস্তাপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর: আকীকা দেয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘প্রত্যেক শিশু তার আকীকার সাথে বন্ধক থাকে। অতএব জন্মের সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে পশু যবহ করতে হয়, নাম রাখতে হয় ও তার মাথা মুন্ডন করতে হয়’ (আবুদাউদ হা/২৮৩৯; ইবনু মাজাহ হা/৩১৬৫; মিশকাত হা/৪১৫৩)। তিনি বলেন, ‘সন্তানের সাথে আক্বীক্বা জড়িত। অতএব তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত কর (বুখারী, মিশকাত হা/৪১৪৯)। উক্ত হাদীছগুলিতে আকীকার গুরুত্ব ও সময় সম্পর্কে বলা হয়েছে এবং রাসূল (ছাঃ) তাঁর নাতি হাসান ও হুসাইনের আক্বীকাও সপ্তম দিনে করেছিলেন (ছহীহ ইবনু হিববান হা/৫৩১১, সনদ হাসান)। অতএব সক্ষম ব্যক্তি সপ্তম দিনেই আকীকা করবে। উল্লেখ্য, ৭ম দিনের পরে ১৪ ও ২১ দিনে দেওয়ার ব্যাপারে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (আলবানী, ইরওয়াউল গালীল হা/১১৭০)।
সঙ্গত কোন কারণে যদি সময়মত করা সম্ভব না হয়, পরবর্তীতে সুযোগ মত যেকোন সময় তা আদায় করবে (ইবনুল ক্বাইয়িম, তুহফাতুল মাওদূদ ৬৩ পৃঃ; আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, অডিও ক্লিপ নং- ১৯৯; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা, ফৎওয়া নং ১৭৭৬; মাজমূ‘ ফাতাওয়া উছায়মীন ২৫/২১৫)।
শাফেঈ বিদ্বানগণের মতে সাত দিনে আক্বীক্বার বিষয়টি সীমা নির্দেশ মূলক নয় বরং এখতিয়ার মূলক। ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন, সাত দিনে আকীকার অর্থ হ’ল, ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ সাত দিনের পরে আকীকা করবে না (নায়লুল আওত্বার ৬/২৬১ পৃঃ)।
অভিভাবক আকীকা না দিলে সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে নিজেই নিজের আকীকা করতে পারে (ইবনু কুদামা, আল-মুগনী, মাসআলা নং ৭৮৯৮; মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ২৬/২৬৬)। খ্যাতনামা তাবেঈ মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেন, যদি আমি জানতাম যে, আমার পক্ষে আকীকা দেওয়া হয়নি, তবে অবশ্যই আমি নিজেই নিজের আকীকা করতাম (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা হা/২৪৭১৮, ছহীহাহ হা/২৭২৬-এর আলোচনা দ্রঃ)। হাসান বছরী (রহঃ) বলতেন যে, যদি তোমার পক্ষ থেকে আকীকা দেওয়া না হয়, তবে তুমি নিজেই নিজের আকীকা দাও, যদিও তুমি বয়ঃপ্রাপ্ত ব্যক্তি হও (ইবনু হাযম, মুহাল্লা ৬/২৪০, সনদ হাসান, আলবানী, ছহীহাহ হা/২৭২৬-এর আলোচনা দ্রঃ)।
- See more at: http://at-tahreek.com/march2015/question.html#sthash.qqrGmbnR.dpuf
উত্তর: আকীকা দেয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘প্রত্যেক শিশু তার আকীকার সাথে বন্ধক থাকে। অতএব জন্মের সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে পশু যবহ করতে হয়, নাম রাখতে হয় ও তার মাথা মুন্ডন করতে হয়’ (আবুদাউদ হা/২৮৩৯; ইবনু মাজাহ হা/৩১৬৫; মিশকাত হা/৪১৫৩)। তিনি বলেন, ‘সন্তানের সাথে আক্বীক্বা জড়িত। অতএব তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত কর (বুখারী, মিশকাত হা/৪১৪৯)। উক্ত হাদীছগুলিতে আকীকার গুরুত্ব ও সময় সম্পর্কে বলা হয়েছে এবং রাসূল (ছাঃ) তাঁর নাতি হাসান ও হুসাইনের আক্বীকাও সপ্তম দিনে করেছিলেন (ছহীহ ইবনু হিববান হা/৫৩১১, সনদ হাসান)। অতএব সক্ষম ব্যক্তি সপ্তম দিনেই আকীকা করবে। উল্লেখ্য, ৭ম দিনের পরে ১৪ ও ২১ দিনে দেওয়ার ব্যাপারে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (আলবানী, ইরওয়াউল গালীল হা/১১৭০)।
সঙ্গত কোন কারণে যদি সময়মত করা সম্ভব না হয়, পরবর্তীতে সুযোগ মত যেকোন সময় তা আদায় করবে (ইবনুল ক্বাইয়িম, তুহফাতুল মাওদূদ ৬৩ পৃঃ; আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, অডিও ক্লিপ নং- ১৯৯; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা, ফৎওয়া নং ১৭৭৬; মাজমূ‘ ফাতাওয়া উছায়মীন ২৫/২১৫)।
শাফেঈ বিদ্বানগণের মতে সাত দিনে আক্বীক্বার বিষয়টি সীমা নির্দেশ মূলক নয় বরং এখতিয়ার মূলক। ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন, সাত দিনে আকীকার অর্থ হ’ল, ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ সাত দিনের পরে আকীকা করবে না (নায়লুল আওত্বার ৬/২৬১ পৃঃ)।
অভিভাবক আকীকা না দিলে সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে নিজেই নিজের আকীকা করতে পারে (ইবনু কুদামা, আল-মুগনী, মাসআলা নং ৭৮৯৮; মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ২৬/২৬৬)। খ্যাতনামা তাবেঈ মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেন, যদি আমি জানতাম যে, আমার পক্ষে আকীকা দেওয়া হয়নি, তবে অবশ্যই আমি নিজেই নিজের আকীকা করতাম (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা হা/২৪৭১৮, ছহীহাহ হা/২৭২৬-এর আলোচনা দ্রঃ)। হাসান বছরী (রহঃ) বলতেন যে, যদি তোমার পক্ষ থেকে আকীকা দেওয়া না হয়, তবে তুমি নিজেই নিজের আকীকা দাও, যদিও তুমি বয়ঃপ্রাপ্ত ব্যক্তি হও (ইবনু হাযম, মুহাল্লা ৬/২৪০, সনদ হাসান, আলবানী, ছহীহাহ হা/২৭২৬-এর আলোচনা দ্রঃ)।
- See more at: http://at-tahreek.com/march2015/question.html#sthash.qqrGmbnR.dpuf
১২৩
প্রশ্ন (২/২৪২) : সদ্য ভূমিষ্ট শিশুর ডান কানে আযান ও বাম কানে ইক্বামত শুনাতে হবে কি? না কেবল আযান শুনালেই যথেষ্ট হবে?-আশরাফ আলী, হুগলী, ভারত।
উত্তর : সদ্য ভুমিষ্ট সন্তানের ডান কানে আযান ও বাম কানে ইক্বামত শুনানোর হাদীছটি মওযূ‘ বা জাল (মুসনাদে আবী ইয়া‘লা, সিলসিলা যঈফাহ হা/৩২১)। এক্ষণে ‘কেবল আযান দেওয়া’ সম্পর্কিত হাদীছটি শায়খ আলবানী (রহঃ) ইতিপূর্বে ‘হাসান’ (আবুদাঊদ হা/৫১০৫, ইরওয়া হা/১১৭৩) হিসাবে গণ্য করলেও পরবর্তীতে তিনি এটিকে ‘যঈফ’ হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, আমি ইতিপূর্বে আবু রাফে‘ বর্ণিত এ হাদীছটি ‘হাসান’ বললেও এখন আমার নিকটে বর্ণনাটি যঈফ হিসাবে স্পষ্ট হয়েছে (সিলসিলা যঈফাহ হা/৬১২১)। তিনি বলেন, ...অতএব আমি সদ্য ভূমিষ্ট সন্তানের কানে আযান দেওয়ার বিধান সম্পর্কে আমার পূর্ববর্তী বক্তব্য থেকে ফিরে আসলাম (আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, অডিও ক্লিপ নং ৬২৩)। এ ব্যাপারে অপর মুহাক্কিক শু‘আইব আরনাউত্বও ঐক্যমত পোষণ করেছেন (তাহকীক মুসনাদে আহমাদ হা/২৭২৩০)। অতএব ‘যঈফ’ হিসাবে প্রমাণিত হওয়ার পর আযান দেওয়ার বিষয়টি আর আমলযোগ্য থাকে না।
সংশোধনী : ইতিপূর্বে মাসিক আত-তাহরীকের বিভিন্ন সংখ্যার প্রশ্নোত্তর কলামে (এপ্রিল ২০০০ (১/১৮১), জুন’০৩ (১০/৩১৫), মার্চ’০৫ (২/২০২) উক্ত হাদীছের ভিত্তিতে আযান দেওয়ার বিষয়টি জায়েয হিসাবে বলা হয়েছিল। এক্ষণে তা যঈফ হিসাবে প্রমাণিত হওয়ায় আমরা পূর্বের ফৎওয়া থেকে ফিরে আসছি। অতএব এ থেকে বিরত থাকাই কর্তব্য হবে।
উত্তর : সদ্য ভুমিষ্ট সন্তানের ডান কানে আযান ও বাম কানে ইক্বামত শুনানোর হাদীছটি মওযূ‘ বা জাল (মুসনাদে আবী ইয়া‘লা, সিলসিলা যঈফাহ হা/৩২১)। এক্ষণে ‘কেবল আযান দেওয়া’ সম্পর্কিত হাদীছটি শায়খ আলবানী (রহঃ) ইতিপূর্বে ‘হাসান’ (আবুদাঊদ হা/৫১০৫, ইরওয়া হা/১১৭৩) হিসাবে গণ্য করলেও পরবর্তীতে তিনি এটিকে ‘যঈফ’ হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, আমি ইতিপূর্বে আবু রাফে‘ বর্ণিত এ হাদীছটি ‘হাসান’ বললেও এখন আমার নিকটে বর্ণনাটি যঈফ হিসাবে স্পষ্ট হয়েছে (সিলসিলা যঈফাহ হা/৬১২১)। তিনি বলেন, ...অতএব আমি সদ্য ভূমিষ্ট সন্তানের কানে আযান দেওয়ার বিধান সম্পর্কে আমার পূর্ববর্তী বক্তব্য থেকে ফিরে আসলাম (আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, অডিও ক্লিপ নং ৬২৩)। এ ব্যাপারে অপর মুহাক্কিক শু‘আইব আরনাউত্বও ঐক্যমত পোষণ করেছেন (তাহকীক মুসনাদে আহমাদ হা/২৭২৩০)। অতএব ‘যঈফ’ হিসাবে প্রমাণিত হওয়ার পর আযান দেওয়ার বিষয়টি আর আমলযোগ্য থাকে না।
সংশোধনী : ইতিপূর্বে মাসিক আত-তাহরীকের বিভিন্ন সংখ্যার প্রশ্নোত্তর কলামে (এপ্রিল ২০০০ (১/১৮১), জুন’০৩ (১০/৩১৫), মার্চ’০৫ (২/২০২) উক্ত হাদীছের ভিত্তিতে আযান দেওয়ার বিষয়টি জায়েয হিসাবে বলা হয়েছিল। এক্ষণে তা যঈফ হিসাবে প্রমাণিত হওয়ায় আমরা পূর্বের ফৎওয়া থেকে ফিরে আসছি। অতএব এ থেকে বিরত থাকাই কর্তব্য হবে।
১২৪
প্রশ্ন (৩/২৪৩) : অনেক মসজিদে দেখা যায় মিহরাবের দু’পাশে বা ভিতরে কা‘বা শরীফ অথবা মসজিদে নববীর মিনারের ছবি লাগানো থাকে। এটা শরী‘আতসম্মত কি?-রশীদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম।
উত্তর : এটা শরী‘আতসম্মত নয়। মসজিদে কোনরূপ সাজ-সজ্জা ও জাঁকজমক না করা এবং মুছল্লীর দৃষ্টি কেড়ে নিতে পারে এরূপ যাবতীয় বস্ত্ত মসজিদ থেকে সরিয়ে ফেলা আবশ্যক (বুখারী হা/৫৯৫৯; মিশকাত হা/৭৫৮, ৭৫৭; আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৭১৮-১৯)।
অনেকে কেবল ভক্তি-ভালোবাসা দেখানোর উদ্দেশ্যে ক্বিবলার দিকে কা‘বা ও মাসজিদুল হারাম অথবা মসজিদে নববীর মিনারের ছবি ব্যবহার করে থাকেন এবং এমন আকুতি পেশ করে থাকেন যেন স্বয়ং কা‘বাই পূজনীয়। অথচ ক্বিবলা নির্দেশক এবং আল্লাহর ঘর হওয়া ব্যতীত কা‘বার নিজস্ব কোন মর্যাদা নেই। আল্লাহর সামনে সিজদা করার জন্য আল্লাহর নির্দেশেই মুসলমান কা‘বাগৃহের অভিমুখী হয়। অতএব পূজার বস্ত্তর ন্যায় ক্বিবলার দিকে কা‘বার ছবি রাখা গর্হিত কাজ।
উত্তর : এটা শরী‘আতসম্মত নয়। মসজিদে কোনরূপ সাজ-সজ্জা ও জাঁকজমক না করা এবং মুছল্লীর দৃষ্টি কেড়ে নিতে পারে এরূপ যাবতীয় বস্ত্ত মসজিদ থেকে সরিয়ে ফেলা আবশ্যক (বুখারী হা/৫৯৫৯; মিশকাত হা/৭৫৮, ৭৫৭; আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৭১৮-১৯)।
অনেকে কেবল ভক্তি-ভালোবাসা দেখানোর উদ্দেশ্যে ক্বিবলার দিকে কা‘বা ও মাসজিদুল হারাম অথবা মসজিদে নববীর মিনারের ছবি ব্যবহার করে থাকেন এবং এমন আকুতি পেশ করে থাকেন যেন স্বয়ং কা‘বাই পূজনীয়। অথচ ক্বিবলা নির্দেশক এবং আল্লাহর ঘর হওয়া ব্যতীত কা‘বার নিজস্ব কোন মর্যাদা নেই। আল্লাহর সামনে সিজদা করার জন্য আল্লাহর নির্দেশেই মুসলমান কা‘বাগৃহের অভিমুখী হয়। অতএব পূজার বস্ত্তর ন্যায় ক্বিবলার দিকে কা‘বার ছবি রাখা গর্হিত কাজ।
১২৫
প্রশ্ন (৪/২৪৪) : জুম‘আর ছালাতের পর ছয় রাক‘আত সুন্নাত আদায়ের বিষয়টি কি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত?-যার্রাফ যারীফ, হারাগাছ, রংপুর।
উত্তর : জুম‘আর ছালাতের পর দুই, চার বা ছয় রাক‘আত সুন্নাত ছালাত আদায় করা যায়। রাসূল (ছাঃ) জুম‘আর ছালাতের পরে তাঁর বাড়িতে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করতেন (আবুদাউদ হা/১১৩২)। তিনি বলেন, তোমাদের কেউ যখন জুম‘আর ছালাত আদায় করবে তখন সে যেন তার পরে চার রাক‘আত ছালাত আদায় করে (মুসলিম হা/৮৮১; মিশকাত হা/১১৬৬)। ছয় রাক‘আতের সমর্থনে আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) ও আলী (রাঃ)-এর আমল পাওয়া যায়। তারা জুম‘আর ছালাতের পর প্রথমে দু’রাক‘আত, এরপর চার রাক‘আত আদায় করতেন এবং আদায়ের নির্দেশ দিতেন (তিরমিযী হা/৫২৩; মিশকাত হা/১১৮৭)। অতএব জুম‘আর পর দুই, চার ও ছয় রাক‘আত সুন্নাত ছালাত রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারা প্রমাণিত।
উত্তর : জুম‘আর ছালাতের পর দুই, চার বা ছয় রাক‘আত সুন্নাত ছালাত আদায় করা যায়। রাসূল (ছাঃ) জুম‘আর ছালাতের পরে তাঁর বাড়িতে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করতেন (আবুদাউদ হা/১১৩২)। তিনি বলেন, তোমাদের কেউ যখন জুম‘আর ছালাত আদায় করবে তখন সে যেন তার পরে চার রাক‘আত ছালাত আদায় করে (মুসলিম হা/৮৮১; মিশকাত হা/১১৬৬)। ছয় রাক‘আতের সমর্থনে আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) ও আলী (রাঃ)-এর আমল পাওয়া যায়। তারা জুম‘আর ছালাতের পর প্রথমে দু’রাক‘আত, এরপর চার রাক‘আত আদায় করতেন এবং আদায়ের নির্দেশ দিতেন (তিরমিযী হা/৫২৩; মিশকাত হা/১১৮৭)। অতএব জুম‘আর পর দুই, চার ও ছয় রাক‘আত সুন্নাত ছালাত রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারা প্রমাণিত।
১২৬
প্রশ্ন (৫/২৪৫) : জনৈক ব্যক্তি বলেন, একজন আহলেহাদীছ ফাসেক একজন শিরক-বিদ‘আতে লিপ্ত আবেদের চেয়ে বহুগুণ উত্তম। এ বক্তব্যের সত্যতা জানতে চাই।-চঞ্চল মাষ্টার*
ক্ষেতলাল, জয়পুরহাট।
*[আরবীতে ইসলামী নাম রাখুন (স.স.)]
উত্তর : উক্ত বক্তব্যটি যথার্থ। কারণ একজন আহলেহাদীছ ফাসেক যত বড় গুনাহেই লিপ্ত হৌক না কেন সাধারণতঃ সে শিরক-বিদ‘আতে লিপ্ত হয় না। আর শিরক একটি অমার্জনীয় পাপ। যা থাকলে তার জন্য আল্লাহ জান্নাতকে হারাম করে দেন (মায়েদাহ ৫/৭২)। আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা শিরক ব্যতীত অন্য সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিতে পারেন (নিসা ৪/৪৮, ১১৬)। হাদীছে কুদসীতে আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি যদি আমার নিকট ক্ষমার আশা রাখো এবং ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। ... তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার নিকটে উপস্থিত হও এবং আমার সাথে কাউকে শরীক না করে আমার সামনে আস, তাহ’লে আমি পৃথিবী পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে উপস্থিত হব’ (তিরমিযী হা/৩৫৪০; মিশকাত হা/২৩৩৬)।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আমাদের এই দ্বীনে নতুন কিছু সৃষ্টি করবে, তা প্রত্যাখ্যাত (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৪০)। তিনি বলেন, ইসলামে প্রত্যেক নবোদ্ভূত বস্ত্ত হ’ল বিদ‘আত, আর প্রত্যেক বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা এবং প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম হ’ল জাহান্নাম’ (নাসাঈ হা/১৫৭৮)।
বিদ‘আতী কিয়ামতের দিন হাউয কাওছারের পানি পাবে না। কেননা রাসূল (ছাঃ) তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলবেন, দূর হও! দূর হও! যে ব্যক্তি আমার পরে আমার দ্বীনকে পরিবর্তন করেছ’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৫৭১)। অথচ অন্যান্য বড় পাপে জড়িত মুসলিমরা রাসূল (ছাঃ)-এর শাফা‘আতের অন্তর্ভুক্ত হবে (আবুদাউদ হা/৪৭৩৯; তিরমিযী হা/২৪৩৫, ইবনু মাজাহ হা/৪৩১০)। জেনে-শুনে বিদ‘আতকারীর কোন আমল গ্রহণযোগ্য হবে না যতক্ষণ না সে তওবা করে ফিরে আসে’ (বুখারী হা/৩১৭২; মুসলিম হা/১৩১৭; মিশকাত হা/২৭২৮, ত্বাবারাণী, ছহীহ আত-তারগীব হা/৫৪)।
ক্ষেতলাল, জয়পুরহাট।
*[আরবীতে ইসলামী নাম রাখুন (স.স.)]
উত্তর : উক্ত বক্তব্যটি যথার্থ। কারণ একজন আহলেহাদীছ ফাসেক যত বড় গুনাহেই লিপ্ত হৌক না কেন সাধারণতঃ সে শিরক-বিদ‘আতে লিপ্ত হয় না। আর শিরক একটি অমার্জনীয় পাপ। যা থাকলে তার জন্য আল্লাহ জান্নাতকে হারাম করে দেন (মায়েদাহ ৫/৭২)। আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা শিরক ব্যতীত অন্য সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিতে পারেন (নিসা ৪/৪৮, ১১৬)। হাদীছে কুদসীতে আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি যদি আমার নিকট ক্ষমার আশা রাখো এবং ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। ... তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার নিকটে উপস্থিত হও এবং আমার সাথে কাউকে শরীক না করে আমার সামনে আস, তাহ’লে আমি পৃথিবী পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে উপস্থিত হব’ (তিরমিযী হা/৩৫৪০; মিশকাত হা/২৩৩৬)।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আমাদের এই দ্বীনে নতুন কিছু সৃষ্টি করবে, তা প্রত্যাখ্যাত (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৪০)। তিনি বলেন, ইসলামে প্রত্যেক নবোদ্ভূত বস্ত্ত হ’ল বিদ‘আত, আর প্রত্যেক বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা এবং প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম হ’ল জাহান্নাম’ (নাসাঈ হা/১৫৭৮)।
বিদ‘আতী কিয়ামতের দিন হাউয কাওছারের পানি পাবে না। কেননা রাসূল (ছাঃ) তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলবেন, দূর হও! দূর হও! যে ব্যক্তি আমার পরে আমার দ্বীনকে পরিবর্তন করেছ’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৫৭১)। অথচ অন্যান্য বড় পাপে জড়িত মুসলিমরা রাসূল (ছাঃ)-এর শাফা‘আতের অন্তর্ভুক্ত হবে (আবুদাউদ হা/৪৭৩৯; তিরমিযী হা/২৪৩৫, ইবনু মাজাহ হা/৪৩১০)। জেনে-শুনে বিদ‘আতকারীর কোন আমল গ্রহণযোগ্য হবে না যতক্ষণ না সে তওবা করে ফিরে আসে’ (বুখারী হা/৩১৭২; মুসলিম হা/১৩১৭; মিশকাত হা/২৭২৮, ত্বাবারাণী, ছহীহ আত-তারগীব হা/৫৪)।
১২৭
প্রশ্ন (৬/২৪৬) : খেলাধুলার সামগ্রী যেমন ব্যাট, ফুটবল, লাটিম ইত্যাদি বিক্রয়ের দোকান করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?-গোলাম রববানী,
ভোলাহাট, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : নির্দোষ বিনোদন ও খেলাধুলার জন্য এসবের ব্যবহার ও ক্রয়-বিক্রয়ে কোন বাধা নেই। যদিও ব্যবহারকারীর মন্দ ব্যবহারের জন্য কখনো কখনো এসব খেলা হারামের পর্যায়ে চলে যায়। তবে তার জন্য ব্যবহারকারী দায়ী হবে, উক্ত সামগ্রী নয়। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সৎকর্ম ও আল্লাহভীতির কাজে পরস্পরকে সাহায্য কর এবং পাপ ও সীমা লংঘনের কাজে একে অপরকে সাহায্য করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠোর শাস্তি দানকারী’ (মায়েদাহ ৫/২)।
ভোলাহাট, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : নির্দোষ বিনোদন ও খেলাধুলার জন্য এসবের ব্যবহার ও ক্রয়-বিক্রয়ে কোন বাধা নেই। যদিও ব্যবহারকারীর মন্দ ব্যবহারের জন্য কখনো কখনো এসব খেলা হারামের পর্যায়ে চলে যায়। তবে তার জন্য ব্যবহারকারী দায়ী হবে, উক্ত সামগ্রী নয়। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সৎকর্ম ও আল্লাহভীতির কাজে পরস্পরকে সাহায্য কর এবং পাপ ও সীমা লংঘনের কাজে একে অপরকে সাহায্য করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠোর শাস্তি দানকারী’ (মায়েদাহ ৫/২)।
১২৮
প্রশ্ন (৭/২৪৭) : ওযায়ের কি নবী ছিলেন? নবী না হলে তিনি কোন নবীর আমলে দুনিয়ায় ছিলেন? এছাড়া কওমে তুববা‘ কোন নবীর কওম? বিস্তারিত জানতে চাই।-আব্দুল ওয়ারেছ, মান্দা, নওগাঁ।
উত্তর : এ বিষয়ে কেবল এতটুকু জানা যায় যে, ওযায়ের এবং তুববা‘ উভয়েই সৎ ব্যক্তি ছিলেন এবং তুববা দ্বীনে ইবরাহীমের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আমি জানি না তুববা‘ মাল‘উন (অভিশপ্ত কাফের) ছিল কি না? আমি আরো জানি না যে, ওযায়ের নবী ছিলেন কি না? (আবুদাউদ হা/৪৬৭৪)। তিনি বলেন, তোমরা তুববা‘ কে গালি দিয়ো না। কারণ তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৪২৩)। অর্থাৎ ইবরাহীমের দ্বীন কবুল করেছিলেন। আল্লাহ বলেন, জঙ্গলবাসীরা ও তুববার কওম সবাই রাসূলদের মিথ্যা বলেছিল’ (ক্বাফ ৫০/১৪)। ক্বাতাদাহ বলেন, এখানে আল্লাহ তুববার সম্প্রদায়কে মিথ্যারোপকারী বলেছেন, তুববাকে নয় (ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা ক্বাফ ১৪ আয়াত)।
উত্তর : এ বিষয়ে কেবল এতটুকু জানা যায় যে, ওযায়ের এবং তুববা‘ উভয়েই সৎ ব্যক্তি ছিলেন এবং তুববা দ্বীনে ইবরাহীমের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আমি জানি না তুববা‘ মাল‘উন (অভিশপ্ত কাফের) ছিল কি না? আমি আরো জানি না যে, ওযায়ের নবী ছিলেন কি না? (আবুদাউদ হা/৪৬৭৪)। তিনি বলেন, তোমরা তুববা‘ কে গালি দিয়ো না। কারণ তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৪২৩)। অর্থাৎ ইবরাহীমের দ্বীন কবুল করেছিলেন। আল্লাহ বলেন, জঙ্গলবাসীরা ও তুববার কওম সবাই রাসূলদের মিথ্যা বলেছিল’ (ক্বাফ ৫০/১৪)। ক্বাতাদাহ বলেন, এখানে আল্লাহ তুববার সম্প্রদায়কে মিথ্যারোপকারী বলেছেন, তুববাকে নয় (ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা ক্বাফ ১৪ আয়াত)।
১২৯
প্রশ্ন (৮/২৪৮) : বিভিন্ন সভা-সম্মেলনের শুরুতে কুরআন তেলাওয়াত করা কি বিদ‘আত? রাসূল (ছাঃ)-এর যুগে এরূপভাবে যেকোন অনুষ্ঠান শুরু হ’ত বলে প্রমাণ পাওয়া যায় কি?-ডা. মোশাররফ হোসাইন
ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ, নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে কোন সভা-সম্মেলন শুরু করায় কোন বাধা নেই। তবে সর্বপ্রথম হামদ ও ছানা পাঠ করতে হবে (আহমাদ হা/১৫২৬, ছহীহাহ হা/১৬৯)।
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, أصحاب النبي صلى الله عليه و سلم إذا جلسوا كان حديثهم يعني الفقه إلا أن يقرأ رجل سورة أو يأمر رجلا بقراءة سورة ‘ছাহাবায়ে কেরাম যখন কোন আলোচনা তথা ফিক্বহী আলোচনার মজলিসে বসতেন তখন তাদের মধ্যে একজন কোন সূরা পাঠ করতেন অথবা একজনকে কুরআনের কোন একটি সূরা পাঠ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হ’ত (হাকেম হা/৩২২, যাহাবী, সনদ ছহীহ, বায়হাক্বী, আল-মাদখাল হা/৩১৩; ইবনু সা‘দ ২/৩৭৪)।
খতীব বাগদাদী, ইবনুছ ছালাহ, ইবনু কাছীর, ইমাম নববী, সৈয়ূতী সহ অনেক ওলামায়ে সালাফ যেকোন মজলিস শুরুর পূর্বে হামদ ও ছানাসহ কুরআন তেলাওয়াতকে মুস্তাহাব বলে আখ্যায়িত করেছেন (খতীব বাগদাদী, আল-জামে‘ ২/৬৮; মুক্বাদ্দামা ইবনুছ ছালাহ ২২৪ পৃঃ, ইবনু কাছীর, আল-বা‘এছুল হাছীছ ১৫৩ পৃঃ, সৈয়ূতী তাদরীবুর রাবী ২/৫৭৩)।
শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, কুরআনের কিছু অংশ তেলাওয়াত করার মাধ্যমে মজলিস শুরু করার বিষয়টি সালাফে ছালেহীনের আমল দ্বারা প্রমাণিত (আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, অডিও ক্লিপ নং ৪০২)।
কোন কোন আলেম এভাবে তেলাওয়াত করার বিষয়টি দলীল বিহীন আখ্যায়িত করেছেন (ওছায়মীন, আল-বিদঊ ওয়াল মুহদাছাত ৫৪০ পৃঃ)। কেউ কেউ এটাকে বিদ‘আত বলে ১৩৪২ হিজরীর পূর্বে এর অস্তিত্ব ছিল না বলেছেন (শায়খ বকর আবু যায়েদ, তাছহীহুদ দো‘আ ৯৮ পৃঃ, ফাতাওয়া আব্দুর রাযযাক আফীফী ২২১ পৃঃ)। যা আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণিত উপরোক্ত আছারটি দ্বারা ভুল প্রমাণিত হয়।
ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ, নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে কোন সভা-সম্মেলন শুরু করায় কোন বাধা নেই। তবে সর্বপ্রথম হামদ ও ছানা পাঠ করতে হবে (আহমাদ হা/১৫২৬, ছহীহাহ হা/১৬৯)।
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, أصحاب النبي صلى الله عليه و سلم إذا جلسوا كان حديثهم يعني الفقه إلا أن يقرأ رجل سورة أو يأمر رجلا بقراءة سورة ‘ছাহাবায়ে কেরাম যখন কোন আলোচনা তথা ফিক্বহী আলোচনার মজলিসে বসতেন তখন তাদের মধ্যে একজন কোন সূরা পাঠ করতেন অথবা একজনকে কুরআনের কোন একটি সূরা পাঠ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হ’ত (হাকেম হা/৩২২, যাহাবী, সনদ ছহীহ, বায়হাক্বী, আল-মাদখাল হা/৩১৩; ইবনু সা‘দ ২/৩৭৪)।
খতীব বাগদাদী, ইবনুছ ছালাহ, ইবনু কাছীর, ইমাম নববী, সৈয়ূতী সহ অনেক ওলামায়ে সালাফ যেকোন মজলিস শুরুর পূর্বে হামদ ও ছানাসহ কুরআন তেলাওয়াতকে মুস্তাহাব বলে আখ্যায়িত করেছেন (খতীব বাগদাদী, আল-জামে‘ ২/৬৮; মুক্বাদ্দামা ইবনুছ ছালাহ ২২৪ পৃঃ, ইবনু কাছীর, আল-বা‘এছুল হাছীছ ১৫৩ পৃঃ, সৈয়ূতী তাদরীবুর রাবী ২/৫৭৩)।
শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, কুরআনের কিছু অংশ তেলাওয়াত করার মাধ্যমে মজলিস শুরু করার বিষয়টি সালাফে ছালেহীনের আমল দ্বারা প্রমাণিত (আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, অডিও ক্লিপ নং ৪০২)।
কোন কোন আলেম এভাবে তেলাওয়াত করার বিষয়টি দলীল বিহীন আখ্যায়িত করেছেন (ওছায়মীন, আল-বিদঊ ওয়াল মুহদাছাত ৫৪০ পৃঃ)। কেউ কেউ এটাকে বিদ‘আত বলে ১৩৪২ হিজরীর পূর্বে এর অস্তিত্ব ছিল না বলেছেন (শায়খ বকর আবু যায়েদ, তাছহীহুদ দো‘আ ৯৮ পৃঃ, ফাতাওয়া আব্দুর রাযযাক আফীফী ২২১ পৃঃ)। যা আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণিত উপরোক্ত আছারটি দ্বারা ভুল প্রমাণিত হয়।
১৩০
প্রশ্ন (৯/২৪৯) : আমাদের মসজিদের কিছু মুছল্লী মাঝে মাঝে ছালাতের পর বাড়ি ও দোকানে গিয়ে গিয়ে ছহীহ দ্বীনের দাওয়াত প্রদান করেন। যা তাবলীগ জামা‘আতে ভাইদের আমলের সাথে মিলে যায়। এক্ষণে এটি জায়েয হবে কি?মুর্তাযা, টাঙ্গাইল।
উত্তর : বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আমলের দাওয়াত মানুষের দুয়ারে পৌঁছে দেওয়ায় জন্য এরূপ পন্থা অবলম্বন করায় শরী‘আতে কোন বাধা নেই। তা তাবলীগ জামা‘আতের সাথে বা অন্য কোন বাতিল দলের ভাল কাজের সাথে মিলে গেলেও তাতে কোন অসুবিধা নেই। তবে দাঈকে স্থান-কাল-পাত্র বুঝে প্রজ্ঞার সাথে দাওয়াত দিতে হবে। সেই সাথে যে বিষয়ে দাওয়াত দিবেন সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় জ্ঞান থাকা আবশ্যক। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি হিকমত (কুরআন ও সুন্নাহ) ও উত্তম নছীহতের সাথে আল্লাহর পথে দাওয়াত দাও এবং তাদের সাথে বিতর্ক করো উত্তম পন্থায়’ (নাহল ১৬/১২৫)। তিনি বলেন, ‘বলুন! এটাই আমার পথ। আমি ও আমার অনুসারীগণ ডাকি আল্লাহর দিকে, জাগ্রত জ্ঞান সহকারে। আল্লাহ পবিত্র এবং আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই’ (ইউসুফ ১২/১০৮)।
উত্তর : বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আমলের দাওয়াত মানুষের দুয়ারে পৌঁছে দেওয়ায় জন্য এরূপ পন্থা অবলম্বন করায় শরী‘আতে কোন বাধা নেই। তা তাবলীগ জামা‘আতের সাথে বা অন্য কোন বাতিল দলের ভাল কাজের সাথে মিলে গেলেও তাতে কোন অসুবিধা নেই। তবে দাঈকে স্থান-কাল-পাত্র বুঝে প্রজ্ঞার সাথে দাওয়াত দিতে হবে। সেই সাথে যে বিষয়ে দাওয়াত দিবেন সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় জ্ঞান থাকা আবশ্যক। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি হিকমত (কুরআন ও সুন্নাহ) ও উত্তম নছীহতের সাথে আল্লাহর পথে দাওয়াত দাও এবং তাদের সাথে বিতর্ক করো উত্তম পন্থায়’ (নাহল ১৬/১২৫)। তিনি বলেন, ‘বলুন! এটাই আমার পথ। আমি ও আমার অনুসারীগণ ডাকি আল্লাহর দিকে, জাগ্রত জ্ঞান সহকারে। আল্লাহ পবিত্র এবং আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই’ (ইউসুফ ১২/১০৮)।
১৩১
প্রশ্ন (১০/২৫০) : জামা‘আত চলাকালীন সময়ে পিছনের কাতারে একাকী হয়ে গেলে সামনের কাতার থেকে কাউকে টেনে আনতে হবে কি?-হান্নান সরকার
ফুলবাড়িয়া, ময়মনসিংহ।
উত্তর : এমতাবস্থায় পিছনে একাকী দাঁড়িয়ে ছালাত আদায় করবেন। সামনের কাতার থেকে টেনে নেওয়া মর্মে বর্ণিত হাদীছটি অত্যন্ত যঈফ (ত্বাবরাণী আওসাত্ব হা/৭৭৬৪;মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/২৫৩৭; যঈফাহ হা/ ৯২১-৯২২;)। আর সামনের কাতার থেকে টেনে নিলে সে ব্যক্তি কাতারকে বিচ্ছিন্নকারী হিসেবে গণ্য হয়ে আল্লাহর রহমত থেকেও বিচ্ছিন্ন হবে (আবুদাউদ হা/৬৬৬; মিশকাত হা/১১০২)। তাছাড়া সামনের কাতার থেকে মুছল্লীকে পেছনে টেনে আনলে কাতারে শূন্যতা সৃষ্টি হয় (ফাতাওয়া উছায়মীন ১৩/৩৮)।
উল্লেখ্য যে, একাকী পেছনের কাতারে দাঁড়িয়ে ছালাত হবে না মর্মে যে হাদীছ রয়েছে (আবুদাউদ হা/৬৮২; তিরমিযী হা/২৩১; মিশকাত হা/১১০৫) তা তখনই প্রযোজ্য হবে, যখন সামনের কাতার অপূর্ণ থাকবে । অতএব এরূপ অবস্থায় মুছল্লী কাতারে একাকীই দাঁড়াবে এবং তার ছালাত হয়ে যাবে। কিন্তু সামনের কাতারে জায়গা থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ একাকী পেছনের কাতারে ছালাত আদায় করে, তাহ’লে তার ছালাত হবে না (ইরওয়া হা/৫৪১-এর আলোচনা দ্রঃ, ২/৩২৯)।
ফুলবাড়িয়া, ময়মনসিংহ।
উত্তর : এমতাবস্থায় পিছনে একাকী দাঁড়িয়ে ছালাত আদায় করবেন। সামনের কাতার থেকে টেনে নেওয়া মর্মে বর্ণিত হাদীছটি অত্যন্ত যঈফ (ত্বাবরাণী আওসাত্ব হা/৭৭৬৪;মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/২৫৩৭; যঈফাহ হা/ ৯২১-৯২২;)। আর সামনের কাতার থেকে টেনে নিলে সে ব্যক্তি কাতারকে বিচ্ছিন্নকারী হিসেবে গণ্য হয়ে আল্লাহর রহমত থেকেও বিচ্ছিন্ন হবে (আবুদাউদ হা/৬৬৬; মিশকাত হা/১১০২)। তাছাড়া সামনের কাতার থেকে মুছল্লীকে পেছনে টেনে আনলে কাতারে শূন্যতা সৃষ্টি হয় (ফাতাওয়া উছায়মীন ১৩/৩৮)।
উল্লেখ্য যে, একাকী পেছনের কাতারে দাঁড়িয়ে ছালাত হবে না মর্মে যে হাদীছ রয়েছে (আবুদাউদ হা/৬৮২; তিরমিযী হা/২৩১; মিশকাত হা/১১০৫) তা তখনই প্রযোজ্য হবে, যখন সামনের কাতার অপূর্ণ থাকবে । অতএব এরূপ অবস্থায় মুছল্লী কাতারে একাকীই দাঁড়াবে এবং তার ছালাত হয়ে যাবে। কিন্তু সামনের কাতারে জায়গা থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ একাকী পেছনের কাতারে ছালাত আদায় করে, তাহ’লে তার ছালাত হবে না (ইরওয়া হা/৫৪১-এর আলোচনা দ্রঃ, ২/৩২৯)।
১৩২
প্রশ্ন (১১/২৫১) : ফরয ছালাতের পর নিয়মিত ১টি হাদীছ শুনাতে গেলে মাসবূক ব্যক্তিদের ছালাতে বিঘ্ন ঘটে। অন্যদিকে দেরী করলে মুছল্লীরা চলে যায়। এক্ষণে মাসবূক ছালাতরত অবস্থায় মুছল্লীদের উদ্দেশ্যে কথা বলার ব্যাপারে শরী‘আতের বিধান কি?-আব্দুল আলীম, মান্দা, নওগাঁ।
উত্তর : মাসবূকের ছালাত শেষ হওয়ার পর হাদীছ শুনানোই উত্তম। কোন কারণে বিশেষভাবে ব্যস্ত না হ’লে ঈমানদার শ্রোতা কখনোই হাদীছ না শুনে উঠে যাবে না।
উত্তর : মাসবূকের ছালাত শেষ হওয়ার পর হাদীছ শুনানোই উত্তম। কোন কারণে বিশেষভাবে ব্যস্ত না হ’লে ঈমানদার শ্রোতা কখনোই হাদীছ না শুনে উঠে যাবে না।
-আলমগীর হোসাইন, ফকিরাপুল, ঢাকা।
উত্তর : এর দ্বারা গ্রীষ্মকাল ও শীতকালে পৃথক দু’টি করে উদয়াচল ও অস্তাচল বুঝানো হয়েছে। অন্য আয়াতে ‘বহু পূর্বের ও পশ্চিমের রব’ (মা‘আরেজ ৭০/৪০) বলা হয়েছে। এর দ্বারা সূর্যের সদা পরিবর্তনশীল উদয়াচল ও অস্তাচলের কথা বলা হয়েছে। কেননা সূর্য নিজের কক্ষপথে সদা সন্তরণশীল (ইয়াসীন ৩৬/৩৮)। যা আল্লাহর হুকুমে বান্দার কল্যাণে সর্বদা নিয়োজিত। এর মধ্যে সৌর বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ উৎস বর্ণিত হয়েছে।
উত্তর : এর দ্বারা গ্রীষ্মকাল ও শীতকালে পৃথক দু’টি করে উদয়াচল ও অস্তাচল বুঝানো হয়েছে। অন্য আয়াতে ‘বহু পূর্বের ও পশ্চিমের রব’ (মা‘আরেজ ৭০/৪০) বলা হয়েছে। এর দ্বারা সূর্যের সদা পরিবর্তনশীল উদয়াচল ও অস্তাচলের কথা বলা হয়েছে। কেননা সূর্য নিজের কক্ষপথে সদা সন্তরণশীল (ইয়াসীন ৩৬/৩৮)। যা আল্লাহর হুকুমে বান্দার কল্যাণে সর্বদা নিয়োজিত। এর মধ্যে সৌর বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ উৎস বর্ণিত হয়েছে।
১৩৪
প্রশ্ন (১৩/২৫৩) : জনৈক ব্যক্তি কারু নিকট থেকে অর্থ ঋণ গ্রহণ করলে ফেরত দেওয়ার সময় কিছু বেশী প্রদান করেন। এরূপ দেওয়া বা নেওয়া শরী‘আতসম্মত হবে কি?-তৌফীকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম।
উত্তর : ঋণ গ্রহণকারী ঋণ পরিশোধের সময় কোন পূর্বশর্ত ছাড়াই স্বেচ্ছায় যদি কিছু বেশী প্রদান করে, তবে তা দেওয়া এবং গ্রহণ করা জায়েয। জাবের (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে আগমন করলাম। এমতাবস্থায় তিনি মসজিদে ছিলেন....। তিনি আমাকে আমার পাওনা পরিশোধ করলেন এবং কিছু বেশী দিলেন (বুখারী হা/২৩০৫, মুসলিম হা/১৬০১)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, জনৈক ব্যক্তি উট ঋণ নিয়ে পরবর্তীতে পরিশোধের সময় তার চেয়ে দামী উট ব্যতীত তার নিকটে ছিল না। অতঃপর সে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, সেটা দ্বারাই ঋণ পরিশোধ কর। তোমাদের মধ্যে উত্তম ঐ ব্যক্তি যে উত্তমভাবে ঋণ পরিশোধ করে (বুখারী হা/২৩৯০; মুসলিম হা/১৬০১; মিশকাত হা/২৯০৬)। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, ঋণ গ্রহীতা স্বেচ্ছায় কিছু বেশী দিলে দিতে পারে এবং গ্রহীতাও তা নিতে পারে। তবে এক্ষেত্রে গ্রহীতা যদি বেশী পাওয়ার সুপ্ত কামনাও রাখে, তাহলে তা সূদে পরিণত হবে (বায়হাক্বী, ইরওয়াউল গালীল হা/১৩৯৬, সনদ মওকূফ ছহীহ)।
উত্তর : ঋণ গ্রহণকারী ঋণ পরিশোধের সময় কোন পূর্বশর্ত ছাড়াই স্বেচ্ছায় যদি কিছু বেশী প্রদান করে, তবে তা দেওয়া এবং গ্রহণ করা জায়েয। জাবের (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে আগমন করলাম। এমতাবস্থায় তিনি মসজিদে ছিলেন....। তিনি আমাকে আমার পাওনা পরিশোধ করলেন এবং কিছু বেশী দিলেন (বুখারী হা/২৩০৫, মুসলিম হা/১৬০১)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, জনৈক ব্যক্তি উট ঋণ নিয়ে পরবর্তীতে পরিশোধের সময় তার চেয়ে দামী উট ব্যতীত তার নিকটে ছিল না। অতঃপর সে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, সেটা দ্বারাই ঋণ পরিশোধ কর। তোমাদের মধ্যে উত্তম ঐ ব্যক্তি যে উত্তমভাবে ঋণ পরিশোধ করে (বুখারী হা/২৩৯০; মুসলিম হা/১৬০১; মিশকাত হা/২৯০৬)। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, ঋণ গ্রহীতা স্বেচ্ছায় কিছু বেশী দিলে দিতে পারে এবং গ্রহীতাও তা নিতে পারে। তবে এক্ষেত্রে গ্রহীতা যদি বেশী পাওয়ার সুপ্ত কামনাও রাখে, তাহলে তা সূদে পরিণত হবে (বায়হাক্বী, ইরওয়াউল গালীল হা/১৩৯৬, সনদ মওকূফ ছহীহ)।
১৩৫
প্রশ্ন (১৪/২৫৪) : রোগমুক্তি বা পরীক্ষায় ভালো করার আশায় কুরআন তেলাওয়াত, দান-ছাদাক্বা, ছিয়াম ইত্যাদি পালন করা যাবে কি?-হুমায়ূন, শিবগঞ্জ, সিলেট।
উত্তর : এতে শরী‘আতে কোন বাধা নেই। এগুলোর সাথে সাথে আল্লাহর কাছে তাওফীক কামনা করে দো‘আ করবে। নেক আমল মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে (তিরমিযী হা/২১; মিশকাত হা/২২৩৩; ছহীহাহ হা/১৫৪)। ছাদাক্বাকে চিকিৎসার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা যায় (ছহীহুল জামে‘ হা/৩৩৫৮) তবে এ ক্ষেত্রে মানত করা ঠিক নয়। কারণ মানত কৃপণতা থেকে বের করা ছাড়া তাকদীরের কোন কিছু প্রতিহত করতে পারে না (বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত হা/৩৪২৬; আবুদাউদ হা/৩২৮৭)। তবে কেউ মানত মানলে যদি তা আল্লাহর নাফারমানীর ক্ষেত্রে না হয় তাহলে পূর্ণ করা ওয়াজিব। পূর্ণ না করলে তাকে কসম ভঙ্গের কাফফারা দিতে হবে (তিরমিযী হা/১৫২৪, ১৫২৫; নাসাঈ হা/৩৮৩৪; আবুদাউদ হা/৩২৯০;মিশকাত হা/৩৪২৮, ৩৪৩৫)।
উত্তর : এতে শরী‘আতে কোন বাধা নেই। এগুলোর সাথে সাথে আল্লাহর কাছে তাওফীক কামনা করে দো‘আ করবে। নেক আমল মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে (তিরমিযী হা/২১; মিশকাত হা/২২৩৩; ছহীহাহ হা/১৫৪)। ছাদাক্বাকে চিকিৎসার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা যায় (ছহীহুল জামে‘ হা/৩৩৫৮) তবে এ ক্ষেত্রে মানত করা ঠিক নয়। কারণ মানত কৃপণতা থেকে বের করা ছাড়া তাকদীরের কোন কিছু প্রতিহত করতে পারে না (বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত হা/৩৪২৬; আবুদাউদ হা/৩২৮৭)। তবে কেউ মানত মানলে যদি তা আল্লাহর নাফারমানীর ক্ষেত্রে না হয় তাহলে পূর্ণ করা ওয়াজিব। পূর্ণ না করলে তাকে কসম ভঙ্গের কাফফারা দিতে হবে (তিরমিযী হা/১৫২৪, ১৫২৫; নাসাঈ হা/৩৮৩৪; আবুদাউদ হা/৩২৯০;মিশকাত হা/৩৪২৮, ৩৪৩৫)।
১৩৬
প্রশ্ন (১৫/২৫৫) : বাসায় স্ত্রীর কাজকর্মে সহায়তার জন্য কাজের মেয়ে রাখার ব্যাপারে শরী‘আতের বিধান কি? সঊদী আরবে সরকারীভাবে খাদেমা নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এভাবে মাহরাম বিহীন সেখানে অবস্থান করা শরী‘আতসম্মত হবে কি?মীযানুর রহমান
বড়পেটা, আসাম, ভারত।
উত্তর : বাসার কাজের জন্য কাজের মেয়ে রাখতে শরী‘আতে বাধা নেই। তবে শর্ত হচ্ছে বালেগা হ’লে বাড়ীর পুরুষ সদস্যদের তার সামনে পূর্ণরূপে পর্দা করতে হবে এবং মনিবের সাথে তার স্ত্রী কিংবা মা-বোন কাউকে থাকতে হবে। কারণ পর-পুরুষের সাথে গায়ের মাহরাম নারীর একাকী হওয়া নিষিদ্ধ’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৫১৩; তিরমিযী হা/২১৬৫)। সঊদীআরবে বা অন্যান্য দেশে সরকারীভাবে যেসব গৃহকর্মী পাঠানো হচ্ছে তা চরম অন্যায়। কারণ প্রথমতঃ মাহরাম ছাড়া এরূপ বিদেশ ভ্রমণ নারীদের জন্য হারাম’ (বুখারী হা/১৮৬২ ;মুসলিম হা/১৩৩৮, মিশকাত হা/২৫১৩)। দ্বিতীয়তঃ স্বামী-সন্তানের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে বিদেশে অবস্থান করা নারী জাতির প্রকৃতি ও দায়িত্বের বিরোধী। কারণ নিজ গৃহে অবস্থান করা ও ঘর-সংসার করাই তার প্রধানতম কর্তব্য (আহযাব ৩৩/৩৩)। তৃতীয়তঃ বিদেশে নারীর ইযযতের কোন নিশ্চয়তা নেই। অতএব প্রত্যেক নারীর জন্য এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
বড়পেটা, আসাম, ভারত।
উত্তর : বাসার কাজের জন্য কাজের মেয়ে রাখতে শরী‘আতে বাধা নেই। তবে শর্ত হচ্ছে বালেগা হ’লে বাড়ীর পুরুষ সদস্যদের তার সামনে পূর্ণরূপে পর্দা করতে হবে এবং মনিবের সাথে তার স্ত্রী কিংবা মা-বোন কাউকে থাকতে হবে। কারণ পর-পুরুষের সাথে গায়ের মাহরাম নারীর একাকী হওয়া নিষিদ্ধ’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৫১৩; তিরমিযী হা/২১৬৫)। সঊদীআরবে বা অন্যান্য দেশে সরকারীভাবে যেসব গৃহকর্মী পাঠানো হচ্ছে তা চরম অন্যায়। কারণ প্রথমতঃ মাহরাম ছাড়া এরূপ বিদেশ ভ্রমণ নারীদের জন্য হারাম’ (বুখারী হা/১৮৬২ ;মুসলিম হা/১৩৩৮, মিশকাত হা/২৫১৩)। দ্বিতীয়তঃ স্বামী-সন্তানের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে বিদেশে অবস্থান করা নারী জাতির প্রকৃতি ও দায়িত্বের বিরোধী। কারণ নিজ গৃহে অবস্থান করা ও ঘর-সংসার করাই তার প্রধানতম কর্তব্য (আহযাব ৩৩/৩৩)। তৃতীয়তঃ বিদেশে নারীর ইযযতের কোন নিশ্চয়তা নেই। অতএব প্রত্যেক নারীর জন্য এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
১৩৭
প্রশ্ন (১৬/২৫৬) : নবী-রাসূল, ছাহাবায়ে কেরাম বা অন্য কোন মানুষের নামের পূর্বে হযরত, জনাব ইত্যাদি শব্দটি ব্যবহার করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?-মবীনুল ইসলাম
উপশহর, রাজশাহী।
উত্তর : حضرة ‘হযরত’ আরবী শব্দ, পুংলিঙ্গ। অর্থ নৈকট্য, নেতা, জনাব, সম্মানসূচক উপাধি। جناب ‘জনাব’ আরবী শব্দ, উভয় লিঙ্গ। অর্থ সম্মানিত ব্যক্তি, আশ্রয়স্থল ইত্যাদি (ফীরোযুল লুগাত (উর্দূ)। সম্মানিত ব্যক্তিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য তাঁদের নামের শুরুতে ‘হযরত’, ‘জনাব’ ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। যেমন, হযরতুল উস্তায/আদ-দাকতূর, হযরতুল মুহতারাম ইত্যাদি’ (মু‘জামুল লুগাতিল আরাবিইয়াহ আল-মু‘আছারাহ ১/৪০১, ৫১৪)। আরবী ভাষায় ‘হযরত’ শব্দের ব্যবহার বহূ পূর্ব থেকেই চালু আছে। যেমন ইমাম যাহাবী, হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) প্রমুখ বিদ্বানগণ সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্বোধনের ক্ষেত্রে এ শব্দ ব্যবহার করেছেন (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ১০/৫৫২, আল-বিদায়াহ ১৩/২৬১)।
বস্ত্ততঃ প্রত্যেক দেশের প্রচলিত সর্বোচ্চ সম্মানসূচক শব্দ রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের নামের পূর্বে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন আরব দেশে উপনাম দিয়ে ডাকাকে সম্মানসূচক মনে করা হ’ত। যেমন, আবুল ক্বাসেম, আবু হুরায়রা, আবু হাফছ ইত্যাদি। বর্তমানে সেখানে শায়খ, সাইয়েদ, বহুবচনে সাদাত, সাইয়েদাত ইত্যাদি বলা হয়। এছাড়া ইংরেজীতে ইয়োর অনার, হিজ ম্যাজেস্টী, ইয়োর এক্সেলেন্সী এবং জাপানে ‘সান’, ‘সামা’, ‘চ্যান’ ইত্যাদি। একইভাবে উপমহাদেশে জনাব, হযরত, হুযুর, মাওলানা ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা হয়।
আল্লাহ পরস্পরকে মন্দ লকবে ডাকতে নিষেধ করেছেন (হুজুরাত ৪৯/১১)। অতএব প্রচলিত উত্তম লকব সমূহে আহবান করায় কোন দোষ নেই।
তবে যদি কেউ এর দ্বারা মন্দ অর্থ গ্রহণ করেন, সেজন্য তিনি দায়ী হবেন। যেমন, মদীনায় মুসলমানরা রাসূল (ছাঃ)-কে ‘রা‘এনা’ বলতেন (বাক্বারাহ ২/১০৪)। কিন্তু ইহূদীরা সেটা বলত গালি অর্থে। মুসলমানরা ‘রব’ বলতে আল্লাহকে বুঝেন, কিন্তু ফেরাঊন ‘রব’ বলতে নিজেকে বুঝিয়েছিল (নাযে‘আত ২৪)। কুরআনে আল্লাহকে ‘মাওলানা’ (আমাদের প্রভু) বলা হয়েছে (বাক্বারাহ ২/২৮৬, তওবা ৯/৫১)। কিন্তু বান্দার ক্ষেত্রেও ‘মাওলা’ বন্ধু বা গোলাম বা অভিভাবক অর্থে ব্যবহৃত হয়। ‘মৌলবী’ অর্থ দুনিয়াত্যাগী, বড় আলেম ইত্যাদি’ (আল-মু‘জামুল ওয়াসীত্ব)।
উপমহাদেশে সম্মানসূচক সম্বোধন হিসাবে ‘মাওলানা’ (আমাদের অভিভাবক) বলা হয়ে থাকে (ফীরোযুল লুগাত)। ‘শরীফ’ অর্থ সর্বোচ্চ সম্মানিত। সে অর্থে কুরআন শরীফ, কা‘বা শরীফ ইত্যাদি বলা হয়ে থাকে। এক্ষণে যদি কেউ শিরকের আড্ডাখানা কোন কবরকে ‘শরীফ’ বলেন, তার জন্য তিনি দায়ী হবেন। কিন্তু সেজন্য কুরআন শরীফ বলা যাবে না, এমনটি নয়। একইভাবে জনাব, হুযুর, মাওলানা, হযরত ইত্যাদি শব্দ সম্মানসূচক অর্থে ব্যবহার করায় কোন দোষ নেই।
উপশহর, রাজশাহী।
উত্তর : حضرة ‘হযরত’ আরবী শব্দ, পুংলিঙ্গ। অর্থ নৈকট্য, নেতা, জনাব, সম্মানসূচক উপাধি। جناب ‘জনাব’ আরবী শব্দ, উভয় লিঙ্গ। অর্থ সম্মানিত ব্যক্তি, আশ্রয়স্থল ইত্যাদি (ফীরোযুল লুগাত (উর্দূ)। সম্মানিত ব্যক্তিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য তাঁদের নামের শুরুতে ‘হযরত’, ‘জনাব’ ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। যেমন, হযরতুল উস্তায/আদ-দাকতূর, হযরতুল মুহতারাম ইত্যাদি’ (মু‘জামুল লুগাতিল আরাবিইয়াহ আল-মু‘আছারাহ ১/৪০১, ৫১৪)। আরবী ভাষায় ‘হযরত’ শব্দের ব্যবহার বহূ পূর্ব থেকেই চালু আছে। যেমন ইমাম যাহাবী, হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) প্রমুখ বিদ্বানগণ সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্বোধনের ক্ষেত্রে এ শব্দ ব্যবহার করেছেন (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ১০/৫৫২, আল-বিদায়াহ ১৩/২৬১)।
বস্ত্ততঃ প্রত্যেক দেশের প্রচলিত সর্বোচ্চ সম্মানসূচক শব্দ রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের নামের পূর্বে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন আরব দেশে উপনাম দিয়ে ডাকাকে সম্মানসূচক মনে করা হ’ত। যেমন, আবুল ক্বাসেম, আবু হুরায়রা, আবু হাফছ ইত্যাদি। বর্তমানে সেখানে শায়খ, সাইয়েদ, বহুবচনে সাদাত, সাইয়েদাত ইত্যাদি বলা হয়। এছাড়া ইংরেজীতে ইয়োর অনার, হিজ ম্যাজেস্টী, ইয়োর এক্সেলেন্সী এবং জাপানে ‘সান’, ‘সামা’, ‘চ্যান’ ইত্যাদি। একইভাবে উপমহাদেশে জনাব, হযরত, হুযুর, মাওলানা ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা হয়।
আল্লাহ পরস্পরকে মন্দ লকবে ডাকতে নিষেধ করেছেন (হুজুরাত ৪৯/১১)। অতএব প্রচলিত উত্তম লকব সমূহে আহবান করায় কোন দোষ নেই।
তবে যদি কেউ এর দ্বারা মন্দ অর্থ গ্রহণ করেন, সেজন্য তিনি দায়ী হবেন। যেমন, মদীনায় মুসলমানরা রাসূল (ছাঃ)-কে ‘রা‘এনা’ বলতেন (বাক্বারাহ ২/১০৪)। কিন্তু ইহূদীরা সেটা বলত গালি অর্থে। মুসলমানরা ‘রব’ বলতে আল্লাহকে বুঝেন, কিন্তু ফেরাঊন ‘রব’ বলতে নিজেকে বুঝিয়েছিল (নাযে‘আত ২৪)। কুরআনে আল্লাহকে ‘মাওলানা’ (আমাদের প্রভু) বলা হয়েছে (বাক্বারাহ ২/২৮৬, তওবা ৯/৫১)। কিন্তু বান্দার ক্ষেত্রেও ‘মাওলা’ বন্ধু বা গোলাম বা অভিভাবক অর্থে ব্যবহৃত হয়। ‘মৌলবী’ অর্থ দুনিয়াত্যাগী, বড় আলেম ইত্যাদি’ (আল-মু‘জামুল ওয়াসীত্ব)।
উপমহাদেশে সম্মানসূচক সম্বোধন হিসাবে ‘মাওলানা’ (আমাদের অভিভাবক) বলা হয়ে থাকে (ফীরোযুল লুগাত)। ‘শরীফ’ অর্থ সর্বোচ্চ সম্মানিত। সে অর্থে কুরআন শরীফ, কা‘বা শরীফ ইত্যাদি বলা হয়ে থাকে। এক্ষণে যদি কেউ শিরকের আড্ডাখানা কোন কবরকে ‘শরীফ’ বলেন, তার জন্য তিনি দায়ী হবেন। কিন্তু সেজন্য কুরআন শরীফ বলা যাবে না, এমনটি নয়। একইভাবে জনাব, হুযুর, মাওলানা, হযরত ইত্যাদি শব্দ সম্মানসূচক অর্থে ব্যবহার করায় কোন দোষ নেই।
-গোলাম রববানী,
ভোলাহাট, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তরঃ অনুমতি নিয়ে খাওয়া যাবে। অনুমতি দেওয়ার মতো কাউকে না পেলে, ক্ষুধা নিবৃত্ত হওয়া পর্যন্ত উক্ত ফল খাওয়া যাবে। কিন্তু বহন করে নিয়ে যাওয়া যাবে না। সামুরা বিন জুনদুব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, তোমাদের কেউ যখন কোন ছাগপালের নিকট আসবে (তখন দুধ পানের উদ্দেশ্যে) তার মনিবের অনুমতি নিবে। যদি সেখানে কেউ না থাকে, তাহ’লে তিনবার আওয়ায দিবে। অতঃপর উত্তর পেলে তার নিকট থেকে অনুমতি নিবে। আর যদি কেউ উত্তর না দেয়, তাহলে দুধ দোহন করবে ও পান করবে। কিন্তু বহন করে নিয়ে যাবে না’ (আবুদাঊদ হা/২৬১৯; মিশকাত হা/২৯৫৩)। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, ক্ষুধার্ত ব্যক্তি ক্ষুধা নিবারণের জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু খেতে পারবে।
ভোলাহাট, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তরঃ অনুমতি নিয়ে খাওয়া যাবে। অনুমতি দেওয়ার মতো কাউকে না পেলে, ক্ষুধা নিবৃত্ত হওয়া পর্যন্ত উক্ত ফল খাওয়া যাবে। কিন্তু বহন করে নিয়ে যাওয়া যাবে না। সামুরা বিন জুনদুব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, তোমাদের কেউ যখন কোন ছাগপালের নিকট আসবে (তখন দুধ পানের উদ্দেশ্যে) তার মনিবের অনুমতি নিবে। যদি সেখানে কেউ না থাকে, তাহ’লে তিনবার আওয়ায দিবে। অতঃপর উত্তর পেলে তার নিকট থেকে অনুমতি নিবে। আর যদি কেউ উত্তর না দেয়, তাহলে দুধ দোহন করবে ও পান করবে। কিন্তু বহন করে নিয়ে যাবে না’ (আবুদাঊদ হা/২৬১৯; মিশকাত হা/২৯৫৩)। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, ক্ষুধার্ত ব্যক্তি ক্ষুধা নিবারণের জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু খেতে পারবে।
-আশরাফুল ইসলাম
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাযীপুর।
উত্তর : গোসলখানা ও টয়লেট একত্রে থাকলেও যদি ওযূ করার স্থানে অপবিত্র বস্ত্ত ছড়িয়ে না থাকে, তাহ’লে সেখানে ওযূ করায় শরী‘আতে কোন বাধা নেই (ফাতওয়া লাজনা-দায়েমাহ ৫/৮৫; মাজমূ‘ ফাতাওয়া উছায়মীন ১২/৩৬৯)।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাযীপুর।
উত্তর : গোসলখানা ও টয়লেট একত্রে থাকলেও যদি ওযূ করার স্থানে অপবিত্র বস্ত্ত ছড়িয়ে না থাকে, তাহ’লে সেখানে ওযূ করায় শরী‘আতে কোন বাধা নেই (ফাতওয়া লাজনা-দায়েমাহ ৫/৮৫; মাজমূ‘ ফাতাওয়া উছায়মীন ১২/৩৬৯)।
১৪০
প্রশ্ন (১৯/২৫৯) : জনৈক ইমাম ছালাতের সময় কারো টাখনুর নীচে কাপড় দেখলে পুনরায় ওযূ করে আসতে বলেন। এটা কি ছহীহ হাদীছ সম্মত?-আব্দুল কাদের, পীরগাছা, রংপুর।
উত্তর : এ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ। বর্ণনাটি হ’ল- আত্বা ইবনু ইয়াসির (রাঃ) জনৈক ছাহাবী হ’তে বর্ণনা করেন যে, একদা এক ব্যক্তি টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে ছালাত আদায় করছিল। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে বললেন, যাও ওযূ কর। তাই সে গেল এবং ওযূ করে আসল। তখন অপর এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আপনি তাকে কেন ওযূ করতে বললেন? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘যে ব্যক্তি টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে ছালাত আদায় করে, আল্লাহ তার ছালাত কবুল করেন না (আবুদাঊদ হা/৪০৮৬, আহমাদ হা/২৩২৬৫, মিশকাত হা/৭৬১, সনদ যঈফ)। হাদীছটি যঈফ হওয়ার কারণে ইমাম ছাহেবের এরূপ নির্দেশ দেওয়া থেকে বিরত থাকা কর্তব্য। বরং তিনি ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী এ সম্পর্কে সতর্ক করবেন যে, ছালাত ও ছলাতের বাইরে কোন অবস্থাতেই টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরা যাবে না। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘টাখনুর নীচে কাপড়ের যতটুকু যাবে, ততটুকু জাহান্নামে পুড়বে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪৩১৪)।
উত্তর : এ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ। বর্ণনাটি হ’ল- আত্বা ইবনু ইয়াসির (রাঃ) জনৈক ছাহাবী হ’তে বর্ণনা করেন যে, একদা এক ব্যক্তি টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে ছালাত আদায় করছিল। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে বললেন, যাও ওযূ কর। তাই সে গেল এবং ওযূ করে আসল। তখন অপর এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আপনি তাকে কেন ওযূ করতে বললেন? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘যে ব্যক্তি টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে ছালাত আদায় করে, আল্লাহ তার ছালাত কবুল করেন না (আবুদাঊদ হা/৪০৮৬, আহমাদ হা/২৩২৬৫, মিশকাত হা/৭৬১, সনদ যঈফ)। হাদীছটি যঈফ হওয়ার কারণে ইমাম ছাহেবের এরূপ নির্দেশ দেওয়া থেকে বিরত থাকা কর্তব্য। বরং তিনি ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী এ সম্পর্কে সতর্ক করবেন যে, ছালাত ও ছলাতের বাইরে কোন অবস্থাতেই টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরা যাবে না। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘টাখনুর নীচে কাপড়ের যতটুকু যাবে, ততটুকু জাহান্নামে পুড়বে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪৩১৪)।
১৪১
প্রশ্ন (২০/২৬০) : যেখানে রাসূল (ছাঃ) অমুসলিম দেশে কুরআন নিয়ে গমন করতে নিষেধ করেছেন সেখানে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে ইতালিয়ানদেরকে কুরআনের অনূদিত কপি উপহার দেওয়া যাবে কি?-সাইফুল ইসলাম
বলোনিয়া, ইতালী।
উত্তর : কুরআনের অনূদিত কপি ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে অমুসলিমদের উপহার দেওয়া যাবে। অমুসলিমদের জন্য কুরআন শ্রবণ, কুরআনের তাফসীর বা অনুবাদ সহ কুরআন স্পর্শ করে পড়ায় কোন বাধা নেই (মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ২৪/৩৪০)। রাসূল (ছাঃ) কুরআনের আয়াত সম্বলিত পত্র অমুসলিম শাসকদের কাছে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে পাঠিয়েছেন’ (বুখারী হা/০৭, ১৯; মুসলিম হা/১৭৭৩; মিশকাত হা/৩৯২৬)। তবে আরবী মূল মুছহাফ তাদেরকে দেওয়া যাবেনা। কেননা তা স্পর্শ করা মুশরিকদের জন্য জায়েয নয় (ওয়াক্বি‘আহ ৫৬/৭৯; ত্বাবারাণী, ছহীহুল জামে‘ হা/৭৭৮০)।
বলোনিয়া, ইতালী।
উত্তর : কুরআনের অনূদিত কপি ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে অমুসলিমদের উপহার দেওয়া যাবে। অমুসলিমদের জন্য কুরআন শ্রবণ, কুরআনের তাফসীর বা অনুবাদ সহ কুরআন স্পর্শ করে পড়ায় কোন বাধা নেই (মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ২৪/৩৪০)। রাসূল (ছাঃ) কুরআনের আয়াত সম্বলিত পত্র অমুসলিম শাসকদের কাছে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে পাঠিয়েছেন’ (বুখারী হা/০৭, ১৯; মুসলিম হা/১৭৭৩; মিশকাত হা/৩৯২৬)। তবে আরবী মূল মুছহাফ তাদেরকে দেওয়া যাবেনা। কেননা তা স্পর্শ করা মুশরিকদের জন্য জায়েয নয় (ওয়াক্বি‘আহ ৫৬/৭৯; ত্বাবারাণী, ছহীহুল জামে‘ হা/৭৭৮০)।
১৪২
প্রশ্ন (২১/২৬১) : ত্বক ফর্সা করার জন্য ছেলেরা বিভিন্ন ধরনের স্নো, ক্রীম ইত্যাদি প্রসাধনী ব্যবহার করতে পারবে কি?-আব্দুল্লাহ
ধূনট, বগুড়া।
উত্তর : মানুষের ত্বক আল্লাহর সৃষ্টি এবং প্রকৃতিগত বিষয়, যা ফর্সা বা কালো করার ক্ষমতা মানুষের নেই। এ বিষয়ে যেসব প্রচারণা চালানো হয় সেগুলো পুঁজিবাদী ব্যবসায়ীদের অপপ্রচার মাত্র। এগুলো করতে গিয়ে অনেকে ত্বকের নানা রোগের শিকার হয়। এমনকি এর ফলে ত্বকের ক্যানসারও হ’তে পারে। তবে দেহকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সুন্দর। তিনি সৌন্দর্যকে পসন্দ করেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৮ ‘ক্রোধ ও গর্ব’ অনুচ্ছেদ)।
ধূনট, বগুড়া।
উত্তর : মানুষের ত্বক আল্লাহর সৃষ্টি এবং প্রকৃতিগত বিষয়, যা ফর্সা বা কালো করার ক্ষমতা মানুষের নেই। এ বিষয়ে যেসব প্রচারণা চালানো হয় সেগুলো পুঁজিবাদী ব্যবসায়ীদের অপপ্রচার মাত্র। এগুলো করতে গিয়ে অনেকে ত্বকের নানা রোগের শিকার হয়। এমনকি এর ফলে ত্বকের ক্যানসারও হ’তে পারে। তবে দেহকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সুন্দর। তিনি সৌন্দর্যকে পসন্দ করেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৮ ‘ক্রোধ ও গর্ব’ অনুচ্ছেদ)।
১৪৩
প্রশ্ন (২২/২৬২) : জনৈক আলেম বলেন, ছালাতের সালাম ফিরানোর পর আল্লাহু আকবার বলা যাবে না। বরং আসতাগফিরুল্লাহ বলতে হবে। একথা ঠিক কি?-রায়হান
খয়রাবাদ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : উক্ত কথা সঠিক নয়। বরং সালাম ফিরানোর পরে একবার সরবে ‘আল্লাহু আকবার’ এবং তিনবার ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ বলাই ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (বুখারী ফাৎহসহ হা/৮৪১-৪২; মুসলিম হা/৫৮৩; মিশকাত হা/৯৫৯)।
খয়রাবাদ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : উক্ত কথা সঠিক নয়। বরং সালাম ফিরানোর পরে একবার সরবে ‘আল্লাহু আকবার’ এবং তিনবার ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ বলাই ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (বুখারী ফাৎহসহ হা/৮৪১-৪২; মুসলিম হা/৫৮৩; মিশকাত হা/৯৫৯)।
১৪৪
প্রশ্ন (২৩/২৬৩) : কোন মুসলিম ব্যক্তির মাঝে কুফরী, মুনাফেকী ও শিরকী কার্যক্রম দেখতে পেলে তাকে কাফের, মুনাফিক বা মুশরিক নামে ডাকা যাবে কি?-তালীম হোসাইন প্রধান
পাটগ্রাম, লালমণিরহাট।
উত্তর : কোন মুসলিমের মধ্যে এরূপ দেখতে পেলে তাকে মুশরিক বা কাফের বলে ডাকা যাবে না। আল্লাহ বলেন, তোমরা কাউকে মন্দ লকবে ডেকো না’... (হুজুরাত ৪৯/১১)। উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ক্বাতাদাহ বলেন, এর অর্থ হ’ল, কাউকে হে মুনাফিক, হে ফাসেক ইত্যাদি বলে ডাকা যাবে না’ (বায়হাক্বী শু‘আব হা/৬৭৪৮, কুরতুবী, তাফসীর হুজুরাত ১১ আয়াত)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যাকে কাফের বলা হবে সে সত্যিকারে কাফের না হ’লে যে কাফের বলল তার দিকেই সেটা ফিরে আসবে (মুসলিম হা/৬০; বুখারী হা/৬১০৩)। তিনি বলেন, কোন ব্যক্তি কর্তৃক তার (মুসলিম) ভাইকে কাফের বলাটা তাকে হত্যা করার মত অপরাধ (বুখারী হা/৬০৪৭; মিশকাত হা/৩৪১০)। তবে কাউকে এরূপ কাজ করতে দেখলে, তোমার এ কাজটি কুফরী পর্যায়ভুক্ত বা তোমার মধ্যে মুনাফিকের এই আলামতটা দেখা যাচ্ছে এরূপ বলা যেতে পারে।
পাটগ্রাম, লালমণিরহাট।
উত্তর : কোন মুসলিমের মধ্যে এরূপ দেখতে পেলে তাকে মুশরিক বা কাফের বলে ডাকা যাবে না। আল্লাহ বলেন, তোমরা কাউকে মন্দ লকবে ডেকো না’... (হুজুরাত ৪৯/১১)। উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ক্বাতাদাহ বলেন, এর অর্থ হ’ল, কাউকে হে মুনাফিক, হে ফাসেক ইত্যাদি বলে ডাকা যাবে না’ (বায়হাক্বী শু‘আব হা/৬৭৪৮, কুরতুবী, তাফসীর হুজুরাত ১১ আয়াত)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যাকে কাফের বলা হবে সে সত্যিকারে কাফের না হ’লে যে কাফের বলল তার দিকেই সেটা ফিরে আসবে (মুসলিম হা/৬০; বুখারী হা/৬১০৩)। তিনি বলেন, কোন ব্যক্তি কর্তৃক তার (মুসলিম) ভাইকে কাফের বলাটা তাকে হত্যা করার মত অপরাধ (বুখারী হা/৬০৪৭; মিশকাত হা/৩৪১০)। তবে কাউকে এরূপ কাজ করতে দেখলে, তোমার এ কাজটি কুফরী পর্যায়ভুক্ত বা তোমার মধ্যে মুনাফিকের এই আলামতটা দেখা যাচ্ছে এরূপ বলা যেতে পারে।
১৪৫
প্রশ্ন (২৪/২৬৪) : হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশুনা শেষে সূদী কারবারের কারণে ব্যাংকে চাকুরী করতে পারছে না। এক্ষণে হিসাব বিভাগের সাথে জড়িত শরী‘আত অনুমোদিত কোন কোন ক্ষেত্রে চাকুরী করা যেতে পারে?-ওমর বিন হুসাইন
বগুড়া সেনানিবাস, বগুড়া।
উত্তর: ইসলামী নীতির বিরোধী নয় এরূপ দেশী-বিদেশী যেকোন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতে পারেন। ব্যাংক, বীমা এবং যেসব এনজিও সমাজ সেবার আড়ালে ক্ষুদ্র ঋণের নামে সূদী কারবার, ধর্মান্তরকরণ, নারীর পর্দাহীনতা, একসন্তান নীতি প্রভৃতি ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ডে ভুমিকা রাখছে, সেসব প্রতিষ্ঠান থেকে দূরে থাকা আবশ্যক। কেননা গুনাহের কাজে সহায়তা করা নিষিদ্ধ (মায়েদাহ ৫/২)।
বগুড়া সেনানিবাস, বগুড়া।
উত্তর: ইসলামী নীতির বিরোধী নয় এরূপ দেশী-বিদেশী যেকোন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতে পারেন। ব্যাংক, বীমা এবং যেসব এনজিও সমাজ সেবার আড়ালে ক্ষুদ্র ঋণের নামে সূদী কারবার, ধর্মান্তরকরণ, নারীর পর্দাহীনতা, একসন্তান নীতি প্রভৃতি ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ডে ভুমিকা রাখছে, সেসব প্রতিষ্ঠান থেকে দূরে থাকা আবশ্যক। কেননা গুনাহের কাজে সহায়তা করা নিষিদ্ধ (মায়েদাহ ৫/২)।
১৪৬
প্রশ্ন (২৫/২৬৫) : রাসূল (ছাঃ)-এর শরীর থেকে নির্গত ঘাম সংরক্ষণ করে জনৈক ছাহাবী তার কবরে নাজাতের জন্য কাফনের কাপড়ে লাগিয়ে দিতে বলেছিলেন মর্মে বক্তব্যটির কোন সত্যতা আছে কি?-হাসনা হেনা
পাঁচদোনা, নরসিংদী।
উত্তর : কথাটি ভিত্তিহীন। রাসূল (ছাঃ)-এর শরীরের ঘামের মাধ্যমে নাজাত নয় বরং নাজাতের জন্য প্রয়োজন তাঁর আনুগত্য এবং সেমতে তাঁর আদেশ ও নিষেধ সমূহ মেনে চলা। রাসূল (ছাঃ)-এর শরীর থেকে যে ঘাম নির্গত হ’ত তা ছিল সবচেয়ে সুগন্ধিময়’ (মুসলিম হা/২৩৩১)। সেকারণ রাসূল (ছাঃ)-এর খালা উম্মে সুলায়েম (রাঃ) একবার তাঁর ঘাম সুগন্ধি এবং বরকত হিসাবে নিয়েছিলেন (মুসলিম হা/২৩৩১, মিশকাত হা/৫৭৮৮)। এছাড়া অন্য কোন ছাহাবী এরূপ করেছিলেন বলে জানা যায় না।
পাঁচদোনা, নরসিংদী।
উত্তর : কথাটি ভিত্তিহীন। রাসূল (ছাঃ)-এর শরীরের ঘামের মাধ্যমে নাজাত নয় বরং নাজাতের জন্য প্রয়োজন তাঁর আনুগত্য এবং সেমতে তাঁর আদেশ ও নিষেধ সমূহ মেনে চলা। রাসূল (ছাঃ)-এর শরীর থেকে যে ঘাম নির্গত হ’ত তা ছিল সবচেয়ে সুগন্ধিময়’ (মুসলিম হা/২৩৩১)। সেকারণ রাসূল (ছাঃ)-এর খালা উম্মে সুলায়েম (রাঃ) একবার তাঁর ঘাম সুগন্ধি এবং বরকত হিসাবে নিয়েছিলেন (মুসলিম হা/২৩৩১, মিশকাত হা/৫৭৮৮)। এছাড়া অন্য কোন ছাহাবী এরূপ করেছিলেন বলে জানা যায় না।
১৪৭
প্রশ্ন (২৬/২৬৬) : মামা বা চাচা মারা গেলে অথবা মামী বা চাচীকে তালাক দিলে ঐ মামী বা চাচীকে তার ভাগ্নে বা ভাতিজা বিবাহ করতে পারবে কি?-রেযওয়ান
জামগড়া, বাইপাইল, ঢাকা।
উত্তর : পারবে। কেননা মামী বা চাচী ভাগ্নে বা ভাতিজার জন্য মুহাররামাতের অন্তর্ভুক্ত নয়। অর্থাৎ যে ১৪ জন মহিলাকে বিবাহ করা হারাম, তাদের অন্তর্ভুক্ত নয় (নিসা ৪/২৩)।
জামগড়া, বাইপাইল, ঢাকা।
উত্তর : পারবে। কেননা মামী বা চাচী ভাগ্নে বা ভাতিজার জন্য মুহাররামাতের অন্তর্ভুক্ত নয়। অর্থাৎ যে ১৪ জন মহিলাকে বিবাহ করা হারাম, তাদের অন্তর্ভুক্ত নয় (নিসা ৪/২৩)।
-তারেক আযীয
রহনপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : এধরনের দাওয়াতে অংশ গ্রহণ না করাই উত্তম। আল্লাহ তাঁর রাসূলকে বলেন, ‘ঐসব লোকদের পরিত্যাগ কর যারা তাদের ধর্মকে খেল-তামাশারূপে গ্রহণ করেছে এবং পার্থিব জীবন যাদেরকে ধোঁকায় ফেলেছে (আন‘আম ৬/৭০)। তবে এতে যেন পারস্পরিক সম্পর্ক বিনষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ দাওয়াতের ব্যাপারটি মুসলমানদের পারস্পরিক হক-এর অন্তর্ভুক্ত (নাসাঈ হা/১৯৩৮; মিশকাত হা/৪৬৩০)। তাছাড়া এর ফলে উপদেশ প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। তবে যেসব বিবাহ অনুষ্ঠানে গান-বাজনা, নারী-পুরুষের অবাধ মেলা-মেশা ইত্যাদি প্রকাশ্য শরী‘আত বিরোধী কর্মকান্ড হয়, যার কারণে দাওয়াতপ্রাপ্তদের গুনাহ হয়, সেসব অনুষ্ঠান পরিত্যাগ করতে হবে (আবুদাঊদ হা/৪৯২৪)। যদিও তাতে সম্পর্ক বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে (মুসলিম হা/১৮৪০; মিশকাত হা/৩৬৯৬)।
রহনপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : এধরনের দাওয়াতে অংশ গ্রহণ না করাই উত্তম। আল্লাহ তাঁর রাসূলকে বলেন, ‘ঐসব লোকদের পরিত্যাগ কর যারা তাদের ধর্মকে খেল-তামাশারূপে গ্রহণ করেছে এবং পার্থিব জীবন যাদেরকে ধোঁকায় ফেলেছে (আন‘আম ৬/৭০)। তবে এতে যেন পারস্পরিক সম্পর্ক বিনষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ দাওয়াতের ব্যাপারটি মুসলমানদের পারস্পরিক হক-এর অন্তর্ভুক্ত (নাসাঈ হা/১৯৩৮; মিশকাত হা/৪৬৩০)। তাছাড়া এর ফলে উপদেশ প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। তবে যেসব বিবাহ অনুষ্ঠানে গান-বাজনা, নারী-পুরুষের অবাধ মেলা-মেশা ইত্যাদি প্রকাশ্য শরী‘আত বিরোধী কর্মকান্ড হয়, যার কারণে দাওয়াতপ্রাপ্তদের গুনাহ হয়, সেসব অনুষ্ঠান পরিত্যাগ করতে হবে (আবুদাঊদ হা/৪৯২৪)। যদিও তাতে সম্পর্ক বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে (মুসলিম হা/১৮৪০; মিশকাত হা/৩৬৯৬)।
১৪৯
প্রশ্ন (২৮/২৬৮) : ইসলামী বা সাধারণ ব্যাংক, বিকাশ, এ.টি.এম কার্ড এর মাধ্যমে টাকা-পয়সা লেনদেন করায় সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। এক্ষণে এতে কোন বাধা আছে কি?-মুস্তানতাছির বিল্লাহ
হোসেনীগঞ্জ, রাজশাহী।
উত্তর : এখানে আদান-প্রদানের সার্ভিস চার্জ হিসাবে অতিরিক্ত কিছু অর্থ দিতে হয়। অতএব লেনদেনের উদ্দেশ্যে এসব মাধ্যম ব্যবহারে কোন বাধা নেই।
হোসেনীগঞ্জ, রাজশাহী।
উত্তর : এখানে আদান-প্রদানের সার্ভিস চার্জ হিসাবে অতিরিক্ত কিছু অর্থ দিতে হয়। অতএব লেনদেনের উদ্দেশ্যে এসব মাধ্যম ব্যবহারে কোন বাধা নেই।
-ইবরাহীম
কাচারী রোড, দিনাজপুর।
উত্তর : কা‘বাগৃহের কসম খাওয়া নিষিদ্ধ। ইবনু ওমর (রাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে কা‘বার কসম খেতে শুনে বললেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে কসম করল সে শিরক করল (আবুদাঊদ হা/৩২৫১ সনদ ছহীহ)। বরং কা‘বার রবের তথা আল্লাহর কসম করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমাদের কেউ যখন কসম করার ইচ্ছা করে সে যেন বলে, কা‘বার রবের কসম (নাসাঈ হা/৩৭৭৩)। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের পিতাদের নামে কসম খেতে নিষেধ করেছেন। অতএব যে কসম খেতে চায়, সে যেন আল্লাহর নামে কসম খায় অথবা চুপ থাকে’(মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৪০)।
কাচারী রোড, দিনাজপুর।
উত্তর : কা‘বাগৃহের কসম খাওয়া নিষিদ্ধ। ইবনু ওমর (রাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে কা‘বার কসম খেতে শুনে বললেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে কসম করল সে শিরক করল (আবুদাঊদ হা/৩২৫১ সনদ ছহীহ)। বরং কা‘বার রবের তথা আল্লাহর কসম করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমাদের কেউ যখন কসম করার ইচ্ছা করে সে যেন বলে, কা‘বার রবের কসম (নাসাঈ হা/৩৭৭৩)। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের পিতাদের নামে কসম খেতে নিষেধ করেছেন। অতএব যে কসম খেতে চায়, সে যেন আল্লাহর নামে কসম খায় অথবা চুপ থাকে’(মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৪০)।
১৫১
প্রশ্ন (৩০/২৭০) : মূসা (আঃ)-এর লাঠি কি তার নিজস্ব ব্যবহৃত লাঠি ছিল? না আল্লাহর পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছিল?-সুফিয়া খাতুন
পাঁচদোনা মোড়, নরসিংদী।
উত্তর : মূসা (আঃ)-এর লাঠি তাঁর নিজস্ব ব্যবহৃত লাঠি ছিল। মহান রাববুল আলামীন উক্ত লাঠির মাধ্যমেই তাঁর ‘মু‘জিযা’ প্রকাশ করান (শাওকানী, ফাৎহুল ক্বাদীর ৩/৩৬১)। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘হে মূসা! তোমার ডান হাতে ওটা কি?’ ‘মূসা বললেন, এটা আমার লাঠি। এর উপরে আমি ভর দেই এবং এর দ্বারা আমার ছাগপালের জন্য গাছের পাতা ঝেড়ে নামাই। তাছাড়া এর দ্বারা আমার অন্যান্য কাজও চলে’। ‘আল্লাহ বললেন, তুমি ওটা ফেলে দাও’। ‘অতঃপর তিনি ওটা (মাটিতে) ফেলে দিতেই তা সাপ হয়ে ছুটাছুটি করতে লাগল’। ‘আল্লাহ বললেন, তুমি ওটাকে ধর, ভয় করো না, আমি এখুনি ওকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেব’ (ত্বোয়াহা ২০/১৭-২১)।
পাঁচদোনা মোড়, নরসিংদী।
উত্তর : মূসা (আঃ)-এর লাঠি তাঁর নিজস্ব ব্যবহৃত লাঠি ছিল। মহান রাববুল আলামীন উক্ত লাঠির মাধ্যমেই তাঁর ‘মু‘জিযা’ প্রকাশ করান (শাওকানী, ফাৎহুল ক্বাদীর ৩/৩৬১)। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘হে মূসা! তোমার ডান হাতে ওটা কি?’ ‘মূসা বললেন, এটা আমার লাঠি। এর উপরে আমি ভর দেই এবং এর দ্বারা আমার ছাগপালের জন্য গাছের পাতা ঝেড়ে নামাই। তাছাড়া এর দ্বারা আমার অন্যান্য কাজও চলে’। ‘আল্লাহ বললেন, তুমি ওটা ফেলে দাও’। ‘অতঃপর তিনি ওটা (মাটিতে) ফেলে দিতেই তা সাপ হয়ে ছুটাছুটি করতে লাগল’। ‘আল্লাহ বললেন, তুমি ওটাকে ধর, ভয় করো না, আমি এখুনি ওকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেব’ (ত্বোয়াহা ২০/১৭-২১)।
১৫২
প্রশ্ন (৩১/২৭১) : অসুস্থ বা মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে তার সন্তানেরা ক্বাযা ছিয়াম আদায় করতে পারবে কি?-নাসরীন সুলতানা
কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
উত্তর : এ বিষয়ে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি মারা গেল এমতাবস্থায় যে, তার উপর রামাযান মাসের ছিয়ামের ক্বাযা রয়েছে, তার পক্ষ থেকে প্রতি ছিয়ামের বদলে প্রতিদিন একজন করে মিসকীন খাওয়াবে’ (তিরমিযী হা/৭১৮; মিশকাত হা/২০৩৪; মারফূ হিসাবে সনদ যঈফ। তবে মওকূফ হিসাবে ছহীহ)।
জনৈক ব্যক্তি মারা গেল। যার উপরে রামাযানের অথবা মানতের ছিয়ামের ক্বাযা ছিল। এক্ষণে তার পক্ষে উক্ত ছিয়াম আদায় করতে হবে কি-না এরূপ এক প্রশ্নের উত্তরে ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, কেউ কারু পক্ষে ছিয়াম পালন করবে না এবং কেউ কারু পক্ষে ছালাত আদায় করবে না। বরং তোমরা তার পরিত্যক্ত মাল থেকে তার পক্ষে ছিয়ামের বদলে ছাদাক্বা দাও প্রতিদিনের জন্য একজন করে মিসকীন। যার পরিমাণ হ’ল এক মুদ করে গম (বায়হাক্বী ৪/২৫৪, সনদ ছহীহ)। এক মুদ হ’ল সিকি ছা‘ (ইরওয়া হা/১৩৯, ১/১৭০২)। ইবনু আববাস (রাঃ) বর্ণিত অপর বর্ণনায় এসেছে, উত্তরাধিকারীরা ছাদাক্বা দিতে পারেন কিংবা ছিয়ামও আদায় করতে পারেন (বায়হাক্বী ৪/২৫৪)।
কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
উত্তর : এ বিষয়ে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি মারা গেল এমতাবস্থায় যে, তার উপর রামাযান মাসের ছিয়ামের ক্বাযা রয়েছে, তার পক্ষ থেকে প্রতি ছিয়ামের বদলে প্রতিদিন একজন করে মিসকীন খাওয়াবে’ (তিরমিযী হা/৭১৮; মিশকাত হা/২০৩৪; মারফূ হিসাবে সনদ যঈফ। তবে মওকূফ হিসাবে ছহীহ)।
জনৈক ব্যক্তি মারা গেল। যার উপরে রামাযানের অথবা মানতের ছিয়ামের ক্বাযা ছিল। এক্ষণে তার পক্ষে উক্ত ছিয়াম আদায় করতে হবে কি-না এরূপ এক প্রশ্নের উত্তরে ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, কেউ কারু পক্ষে ছিয়াম পালন করবে না এবং কেউ কারু পক্ষে ছালাত আদায় করবে না। বরং তোমরা তার পরিত্যক্ত মাল থেকে তার পক্ষে ছিয়ামের বদলে ছাদাক্বা দাও প্রতিদিনের জন্য একজন করে মিসকীন। যার পরিমাণ হ’ল এক মুদ করে গম (বায়হাক্বী ৪/২৫৪, সনদ ছহীহ)। এক মুদ হ’ল সিকি ছা‘ (ইরওয়া হা/১৩৯, ১/১৭০২)। ইবনু আববাস (রাঃ) বর্ণিত অপর বর্ণনায় এসেছে, উত্তরাধিকারীরা ছাদাক্বা দিতে পারেন কিংবা ছিয়ামও আদায় করতে পারেন (বায়হাক্বী ৪/২৫৪)।
১৫৩
প্রশ্ন (৩২/২৭২) : স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রী নাকফুল, কানের দুল, রঙিন শাড়ী ইত্যাদি খুলে ফেলে। এগুলি করা শরী‘আত সম্মত কি?-মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ
কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ।
উত্তর : এগুলি কুসংস্কার মাত্র। ইদ্দত কালে তথা চার মাস দশ দিন স্ত্রী স্বামীর বাড়ীতে অবস্থান করবে। একান্ত যরূরী প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হবে না। রঙ্গিন বা অধিক সৌন্দর্য প্রকাশক কোন পোষাক পরিধান করবে না। অলঙ্কার ব্যবহার করবে না। বিশেষ কারণ ব্যতীত সুগন্ধি, সুরমা, মেহেদীও ব্যবহার করবে না (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩৩৩১; আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৩৩৩২-৩৪)। মৃত্যুর সাথে সাথে স্ত্রীর নাকফুল, কানের দুল, পরিহিত শাড়ী খুলে রাখার রেওয়াজ বাড়াবাড়ি বৈ কিছুই নয়। অন্যদিকে সদ্য বিধবা স্ত্রীকে নতুন শাড়ী উপহার দেওয়াও কুসংস্কার মাত্র।
কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ।
উত্তর : এগুলি কুসংস্কার মাত্র। ইদ্দত কালে তথা চার মাস দশ দিন স্ত্রী স্বামীর বাড়ীতে অবস্থান করবে। একান্ত যরূরী প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হবে না। রঙ্গিন বা অধিক সৌন্দর্য প্রকাশক কোন পোষাক পরিধান করবে না। অলঙ্কার ব্যবহার করবে না। বিশেষ কারণ ব্যতীত সুগন্ধি, সুরমা, মেহেদীও ব্যবহার করবে না (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩৩৩১; আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৩৩৩২-৩৪)। মৃত্যুর সাথে সাথে স্ত্রীর নাকফুল, কানের দুল, পরিহিত শাড়ী খুলে রাখার রেওয়াজ বাড়াবাড়ি বৈ কিছুই নয়। অন্যদিকে সদ্য বিধবা স্ত্রীকে নতুন শাড়ী উপহার দেওয়াও কুসংস্কার মাত্র।
১৫৪
প্রশ্ন (৩৩/২৭৩) : কোন মহিলা বা পুরুষ লোক মৃত্যুবরণ করার পর কোন কোন পুরুষ বা কোন কোন নারী তাকে দেখতে পারবে?-আব্দুল্লাহ আল-মামূন
চন্ডিপুর, যশোর।
উত্তর : জীবিত অবস্থায় যাদের দেখা জায়েয মৃত্যুর পরেও তাদের দেখা জাযেয। মূলত মানুষ মারা গেলে একজন মুসলমানের জন্য যরূরী হ’ল তার জানাযায় অংশগ্রহণ করা, তাকে দেখা নয় (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৬৪৩০)। প্রচলিত আছে যে, স্বামীর মৃত্যুর পর স্বামী-স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। যার কোন ভিত্তি নেই। এগুলি কুসংস্কার মাত্র।
চন্ডিপুর, যশোর।
উত্তর : জীবিত অবস্থায় যাদের দেখা জায়েয মৃত্যুর পরেও তাদের দেখা জাযেয। মূলত মানুষ মারা গেলে একজন মুসলমানের জন্য যরূরী হ’ল তার জানাযায় অংশগ্রহণ করা, তাকে দেখা নয় (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৬৪৩০)। প্রচলিত আছে যে, স্বামীর মৃত্যুর পর স্বামী-স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। যার কোন ভিত্তি নেই। এগুলি কুসংস্কার মাত্র।
-আব্দুল জাববার,
কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : পোতা যাবে না। যারা এরূপ করে থাকেন তারা একটি হাদীছের অনুসরণে এরূপ করে থাকেন। যেমন নবী করীম (ছাঃ) একদিন দু‘টি কবরের শাস্তি জানতে পেরে একখানা খেজুরের ডাল দুই টুকরা করে দু’টি কবরে গেড়ে দেন। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, আপনি এরূপ করলেন কেন? তিনি বললেন, হয়ত ডাল দু’টি শুকানো পর্যন্ত তাদের শাস্তি হালকা হয়ে থাকবে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৩৮)। কিন্তু তাদের এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ তাদের শাস্তি হালকা হয়েছিল রাসূল (ছাঃ)-এর বিশেষ সুপারিশের জন্য। কাঁচা ডালের জন্য নয়। যা ছহীহ মুসলিমে জাবের (রাঃ) বর্ণিত হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। কাজেই খেজুরের কাঁচা ডাল বা অন্য কোন কাঁচা ডাল গেড়ে কবরের শাস্তি হালকা হবে বলে ধারণা করা একেবারেই ভ্রান্ত। কেননা যদি বিষয়টি তাই-ই হ’ত তহ’লে তিনি ডালটি চিরে ফেলতেন না। কেননা তাতে তো ডালটি দ্রুত শুকিয়ে যাবার কথা। আসল কারণ ছিল ঐ কবর দু’টিকে ঐ ডাল দ্বারা চিহ্নিত করা যে, তিনি তাদের জন্য সুপারিশ করেছেন (আলবানী, মিশকাত ১/১১০ পৃঃ; দ্রঃ ছালাতুর রাসূল ২৪২ পৃঃ)।
কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : পোতা যাবে না। যারা এরূপ করে থাকেন তারা একটি হাদীছের অনুসরণে এরূপ করে থাকেন। যেমন নবী করীম (ছাঃ) একদিন দু‘টি কবরের শাস্তি জানতে পেরে একখানা খেজুরের ডাল দুই টুকরা করে দু’টি কবরে গেড়ে দেন। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, আপনি এরূপ করলেন কেন? তিনি বললেন, হয়ত ডাল দু’টি শুকানো পর্যন্ত তাদের শাস্তি হালকা হয়ে থাকবে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৩৮)। কিন্তু তাদের এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ তাদের শাস্তি হালকা হয়েছিল রাসূল (ছাঃ)-এর বিশেষ সুপারিশের জন্য। কাঁচা ডালের জন্য নয়। যা ছহীহ মুসলিমে জাবের (রাঃ) বর্ণিত হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। কাজেই খেজুরের কাঁচা ডাল বা অন্য কোন কাঁচা ডাল গেড়ে কবরের শাস্তি হালকা হবে বলে ধারণা করা একেবারেই ভ্রান্ত। কেননা যদি বিষয়টি তাই-ই হ’ত তহ’লে তিনি ডালটি চিরে ফেলতেন না। কেননা তাতে তো ডালটি দ্রুত শুকিয়ে যাবার কথা। আসল কারণ ছিল ঐ কবর দু’টিকে ঐ ডাল দ্বারা চিহ্নিত করা যে, তিনি তাদের জন্য সুপারিশ করেছেন (আলবানী, মিশকাত ১/১১০ পৃঃ; দ্রঃ ছালাতুর রাসূল ২৪২ পৃঃ)।
১৫৬
প্রশ্ন (৩৫/২৭৫) : স্বামী স্ত্রীকে মোহরানা পরিশোধ না করে থাকলে সন্তান কি পিতার পক্ষ থেকে তা পরিশোধ করে দিতে পারবে?-তাসলিমা আক্তার জুলি
নাচোল, মুরাদপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : স্বামীর জন্য ফরয কর্তব্য হ’ল মোহর পরিশোধ করা (নিসা ৪, মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩১৪৩)। জীবিত অবস্থায় মোহর পরিশোধ না করলে মৃত্যুর পর তার পরিত্যক্ত সম্পদ হতে মোহর পরিশোধ করে তারপর বাকী অংশ ওয়ারিছদের মাঝে বণ্টন করতে হবে। আর সম্পদ না থাকলে সন্তান বা অন্য যে কেউ তা পরিশোধ করতে পারে (বুখারী, মিশকাত হা/২৯০৯; আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৩২০৮)।
নাচোল, মুরাদপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : স্বামীর জন্য ফরয কর্তব্য হ’ল মোহর পরিশোধ করা (নিসা ৪, মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩১৪৩)। জীবিত অবস্থায় মোহর পরিশোধ না করলে মৃত্যুর পর তার পরিত্যক্ত সম্পদ হতে মোহর পরিশোধ করে তারপর বাকী অংশ ওয়ারিছদের মাঝে বণ্টন করতে হবে। আর সম্পদ না থাকলে সন্তান বা অন্য যে কেউ তা পরিশোধ করতে পারে (বুখারী, মিশকাত হা/২৯০৯; আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৩২০৮)।
১৫৭
প্রশ্ন (৩৬/২৭৬) : ছালাত বিশুদ্ধভাবে আদায়ের জন্য পৃথক মসজিদ নির্মাণ করায় এলাকাবাসী উক্ত মসজিদকে যেরার মসজিদ বলে আখ্যায়িত করছে। এক্ষণে আমাদের করণীয় কি? কি কি কারণে কোন মসজিদকে যেরার মসজিদ হিসাবে গণ্য করা যায়?-রবীউল ইসলাম
বেড়া, পাবনা।
উত্তর : কোন মসজিদে ছহীহ তরীকায় ছালাত আদায়ে বাধাপ্রাপ্ত হ’লে পৃথক মসজিদ নির্মাণ করা যাবে। তবে সাধ্যপক্ষে একত্রে ছালাত আদায় করাই উত্তম হবে। কারণ ইমামের সুন্নাত বিরোধী আমলের জন্য তিনিই দায়ী হবেন, মুছল্লীরা নয়। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ইমামগণ তোমাদের ছালাত আদায় করান। যদি তারা সঠিকভাবে আদায় করান, তাহ’লে সকলের জন্য নেকী। পক্ষান্তরে যদি বেঠিকভাবে আদায় করান, তাহ’লে তোমাদের জন্য নেকী ও তাদের জন্য পাপ (বুখারী হা/৬৯৪, মিশকাত হা/১১৩৩)।
একই সমাজে পরস্পরের মধ্যে স্বার্থের দ্বন্দ্বের কারণে যদি নতুন মসজিদ তৈরি করা হয় এবং যার দ্বারা মুমিন সমাজে বিভক্তি সৃষ্টি ও ক্ষতি করা উদ্দেশ্য হয়, তাহ’লে উক্ত মসজিদকে ‘মসজিদে যেরার’ বা ‘ক্ষতিকর মসজিদ’ বলা হয়। এরূপ মসজিদ তৈরির ক্ষেত্রে আল্লাহর সন্তুষ্টি উদ্দেশ্য থাকে না এবং তা তাক্বওয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত হয় না (কুরতুবী, তাফসীর সূরা তওবা ১০৭ আয়াত; আলবানী, আছ-ছামরুল মুসতাত্বাব, পৃঃ ৩৯৮)।
বেড়া, পাবনা।
উত্তর : কোন মসজিদে ছহীহ তরীকায় ছালাত আদায়ে বাধাপ্রাপ্ত হ’লে পৃথক মসজিদ নির্মাণ করা যাবে। তবে সাধ্যপক্ষে একত্রে ছালাত আদায় করাই উত্তম হবে। কারণ ইমামের সুন্নাত বিরোধী আমলের জন্য তিনিই দায়ী হবেন, মুছল্লীরা নয়। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ইমামগণ তোমাদের ছালাত আদায় করান। যদি তারা সঠিকভাবে আদায় করান, তাহ’লে সকলের জন্য নেকী। পক্ষান্তরে যদি বেঠিকভাবে আদায় করান, তাহ’লে তোমাদের জন্য নেকী ও তাদের জন্য পাপ (বুখারী হা/৬৯৪, মিশকাত হা/১১৩৩)।
একই সমাজে পরস্পরের মধ্যে স্বার্থের দ্বন্দ্বের কারণে যদি নতুন মসজিদ তৈরি করা হয় এবং যার দ্বারা মুমিন সমাজে বিভক্তি সৃষ্টি ও ক্ষতি করা উদ্দেশ্য হয়, তাহ’লে উক্ত মসজিদকে ‘মসজিদে যেরার’ বা ‘ক্ষতিকর মসজিদ’ বলা হয়। এরূপ মসজিদ তৈরির ক্ষেত্রে আল্লাহর সন্তুষ্টি উদ্দেশ্য থাকে না এবং তা তাক্বওয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত হয় না (কুরতুবী, তাফসীর সূরা তওবা ১০৭ আয়াত; আলবানী, আছ-ছামরুল মুসতাত্বাব, পৃঃ ৩৯৮)।
১৫৮
প্রশ্ন (৩৭/২৭৭) : জনৈক আলেম বলেন, জুম‘আর খুৎবা চলা অবস্থায় সুন্নাত ছালাত আদায় করা হারাম। এ বক্তব্য কি সঠিক?-শামসুযযামান
রহনপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর: বক্তব্যটি ভিত্তিহীন ও ছহীহ হাদীছের বিরোধী। রাসূল ( ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করবে সে যেন বসার পূর্বে দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করে’ (বুখারী হা/৪৪৪; মুসলিম হা/৭১৪; মিশকাত হা/৭০৪)। একদা রাসূল (ছাঃ)-এর জুম‘আর খুৎবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় সুলাইক গাতফানী নামক জনৈক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সুন্নাত না পড়েই বসে পড়েন। রাসূল (ছাঃ) তাকে বললেন, হে সুলাইক! দাড়াও এবং দু’রাক‘আত ছালাত পড়ে বস। অতঃপর তিনি বললেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের খুৎবারত অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করবে, তখন সে যেন সংক্ষিপ্তভাবে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় ব্যতীত না বসে। (মুসলিম হা/৮৭৫; মিশকাত হা/১৪১১)।
রহনপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর: বক্তব্যটি ভিত্তিহীন ও ছহীহ হাদীছের বিরোধী। রাসূল ( ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করবে সে যেন বসার পূর্বে দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করে’ (বুখারী হা/৪৪৪; মুসলিম হা/৭১৪; মিশকাত হা/৭০৪)। একদা রাসূল (ছাঃ)-এর জুম‘আর খুৎবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় সুলাইক গাতফানী নামক জনৈক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সুন্নাত না পড়েই বসে পড়েন। রাসূল (ছাঃ) তাকে বললেন, হে সুলাইক! দাড়াও এবং দু’রাক‘আত ছালাত পড়ে বস। অতঃপর তিনি বললেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের খুৎবারত অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করবে, তখন সে যেন সংক্ষিপ্তভাবে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় ব্যতীত না বসে। (মুসলিম হা/৮৭৫; মিশকাত হা/১৪১১)।
১৫৯
প্রশ্ন (৩৮/২৭৮) : আমি দর্জির কাজ করি। মেয়েরা আমার নিকট থেকে টাইটফিট পোশাক তৈরী করে নেয়। এ জন্য কি আমি দায়ী হব?-উজ্জ্বল মিয়াঁ
নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
*[আরবীতে ইসলামী নাম রাখুন (স.স.)]
উত্তর : নগ্নতা প্রকাশক ও যৌন উদ্দীপক যেকোন পোষাক পরিধান করা হারাম (মুসলিম হা/২১২৮; মিশকাত হা/৩৫২৪)। একইভাবে তা তৈরী করাও হারাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তোমরা সৎ ও তাক্বওয়ার কাজে পরস্পরকে সাহায্য কর আর গুনাহ ও সীমালংঘনের কাজে সহযোগিতা করো না (মায়েদাহ ৫/০২)। মেয়েদের টাইটফিট পোশাক তৈরী করে দেওয়া অন্যায় কাজে সহযোগিতার শামিল। অতএব এসব হ’তে বিরত থাকতে হবে।
নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
*[আরবীতে ইসলামী নাম রাখুন (স.স.)]
উত্তর : নগ্নতা প্রকাশক ও যৌন উদ্দীপক যেকোন পোষাক পরিধান করা হারাম (মুসলিম হা/২১২৮; মিশকাত হা/৩৫২৪)। একইভাবে তা তৈরী করাও হারাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তোমরা সৎ ও তাক্বওয়ার কাজে পরস্পরকে সাহায্য কর আর গুনাহ ও সীমালংঘনের কাজে সহযোগিতা করো না (মায়েদাহ ৫/০২)। মেয়েদের টাইটফিট পোশাক তৈরী করে দেওয়া অন্যায় কাজে সহযোগিতার শামিল। অতএব এসব হ’তে বিরত থাকতে হবে।
১৬০
প্রশ্ন (৩৯/২৭৯) : আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ গ্রন্থে তাবূক যুদ্ধের ময়দানে রাসূল (ছাঃ)-এর সে সারগর্ভ ভাষণ সংকলিত হয়েছে, তা ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত কি?-রেযওয়ানুল ইসলাম
তাহেরপুর, রাজশাহী।
উত্তর : তাবূকের ময়দানে সমবেত সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্য রাসূল (ছাঃ) যে সংক্ষিপ্ত ও সারগর্ভ ভাষণ প্রদান করেছিলেন তা বিভিন্ন ইতিহাস গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে (ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ ৩/৪৭৩-৭৪; ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ৫/১৩-১৪; মুবারকপুরী, আর-রাহীক্ব ৪৩৫ পৃঃ)। কিন্তু এর সনদ ছহীহ নয়। ভাষণটি সম্পর্কে ইবনু কাছীর বলেন, হাদীছটি ‘গরীব’। এর মধ্যে অপ্রাসঙ্গিক ( نكارة ) কথা রয়েছে এবং এর সনদে দুর্বলতা রয়েছে’ (আল-বিদায়াহ ৫/১৪)। আলবানী বলেন, এর সনদ ‘যঈফ’ (সিলসিলা যঈফাহ হা/২০৫৯)। আরনাঊত্ব বলেন, এর সনদ ‘অতীব দুর্বল’ (যাদুল মা‘আদ ৩/৪৭৪- টীকা)।
সনদের বিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বক্তব্যগুলি বিভিন্ন ‘ছহীহ’ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। আকরাম যিয়া উমারী বলেন, তাবূকের এই দীর্ঘ ভাষণটি বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত নয়। যদিও এর বক্তব্যগুলি বিভিন্ন হাদীছ থেকে গৃহীত। যার কিছু ‘ছহীহ’ কিছু ‘হাসান’ (সীরাহ ছহীহাহ ২/৫৩৪, বিস্তারিত দ্রঃ ‘সীরাতুর রাসূল (ছাঃ)’, ৫৪২-৫৪৫ পৃঃ)।
তাহেরপুর, রাজশাহী।
উত্তর : তাবূকের ময়দানে সমবেত সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্য রাসূল (ছাঃ) যে সংক্ষিপ্ত ও সারগর্ভ ভাষণ প্রদান করেছিলেন তা বিভিন্ন ইতিহাস গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে (ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ ৩/৪৭৩-৭৪; ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ৫/১৩-১৪; মুবারকপুরী, আর-রাহীক্ব ৪৩৫ পৃঃ)। কিন্তু এর সনদ ছহীহ নয়। ভাষণটি সম্পর্কে ইবনু কাছীর বলেন, হাদীছটি ‘গরীব’। এর মধ্যে অপ্রাসঙ্গিক ( نكارة ) কথা রয়েছে এবং এর সনদে দুর্বলতা রয়েছে’ (আল-বিদায়াহ ৫/১৪)। আলবানী বলেন, এর সনদ ‘যঈফ’ (সিলসিলা যঈফাহ হা/২০৫৯)। আরনাঊত্ব বলেন, এর সনদ ‘অতীব দুর্বল’ (যাদুল মা‘আদ ৩/৪৭৪- টীকা)।
সনদের বিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বক্তব্যগুলি বিভিন্ন ‘ছহীহ’ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। আকরাম যিয়া উমারী বলেন, তাবূকের এই দীর্ঘ ভাষণটি বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত নয়। যদিও এর বক্তব্যগুলি বিভিন্ন হাদীছ থেকে গৃহীত। যার কিছু ‘ছহীহ’ কিছু ‘হাসান’ (সীরাহ ছহীহাহ ২/৫৩৪, বিস্তারিত দ্রঃ ‘সীরাতুর রাসূল (ছাঃ)’, ৫৪২-৫৪৫ পৃঃ)।
-ওমর ফারূক
রিয়াদ, সঊদী আরব।
উত্তর : যে হাদীছ কোন তাবেঈ মধ্যবর্তী রাবীর নাম না করে সরাসরি রাসূল (ছাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তাকে ‘মুরসাল’ হাদীছ বলে। ‘মুরসাল’ হাদীছ যঈফ হাদীছের শ্রেণীভূক্ত। এ জন্য জমহূর মুহাদ্দেছীনের নিকটে মুরসাল হাদীছ সাধারণভাবে দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয় (তাদরীবুর রাবী ১/১৯৮)।
তবে শর্তসাপেক্ষে ‘মুরসাল’ হাদীছ গ্রহণযোগ্য হতে পারে। যেমন ইমাম শাফেঈ সহ অপরাপর ইমামগণ উল্লেখ করেছেন- ১. রাবী উঁচু স্তরের তাবেঈ হওয়া। ২. রাবী যে রাবীর কাছ থেকে ‘ইরসাল’টি করেছেন তাঁকে ‘ছিক্বাহ’ বা বিশ্বস্ত বলে উল্লেখ করা। ৩. বিশ্বস্ত অন্য কোন রাবী’র বিরোধিতা না থাকা এবং ৪. নিম্নোক্ত চারটি শর্তের যে কোন একটি থাকা- যেমন (ক) অন্য কোন মুসনাদ সূত্রে বর্ণিত হওয়া। (খ) অপর কোন মুরসাল সূত্রে বর্ণিত হওয়া। (গ) ছাহাবীর কওল দ্বারা সমর্থিত হওয়া। অথবা (ঘ) অধিকাংশ বিদ্বানের মতামতের অনুকূলে হওয়া। এ সকল শর্ত পাওয়া গেলেই কেবল মুরসাল হাদীছ দলীল হিসাবে বিবেচিত হতে পারে (আল-মাজমূ‘ শারহুল মুহাযযাব ৬/২০৬, তায়সীরু মুছত্বলাহিল হাদীছ পৃঃ ৬০)।
- See more at: http://at-tahreek.com/april2015/question.html#sthash.fnh0kxxE.dpuf
রিয়াদ, সঊদী আরব।
উত্তর : যে হাদীছ কোন তাবেঈ মধ্যবর্তী রাবীর নাম না করে সরাসরি রাসূল (ছাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তাকে ‘মুরসাল’ হাদীছ বলে। ‘মুরসাল’ হাদীছ যঈফ হাদীছের শ্রেণীভূক্ত। এ জন্য জমহূর মুহাদ্দেছীনের নিকটে মুরসাল হাদীছ সাধারণভাবে দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয় (তাদরীবুর রাবী ১/১৯৮)।
তবে শর্তসাপেক্ষে ‘মুরসাল’ হাদীছ গ্রহণযোগ্য হতে পারে। যেমন ইমাম শাফেঈ সহ অপরাপর ইমামগণ উল্লেখ করেছেন- ১. রাবী উঁচু স্তরের তাবেঈ হওয়া। ২. রাবী যে রাবীর কাছ থেকে ‘ইরসাল’টি করেছেন তাঁকে ‘ছিক্বাহ’ বা বিশ্বস্ত বলে উল্লেখ করা। ৩. বিশ্বস্ত অন্য কোন রাবী’র বিরোধিতা না থাকা এবং ৪. নিম্নোক্ত চারটি শর্তের যে কোন একটি থাকা- যেমন (ক) অন্য কোন মুসনাদ সূত্রে বর্ণিত হওয়া। (খ) অপর কোন মুরসাল সূত্রে বর্ণিত হওয়া। (গ) ছাহাবীর কওল দ্বারা সমর্থিত হওয়া। অথবা (ঘ) অধিকাংশ বিদ্বানের মতামতের অনুকূলে হওয়া। এ সকল শর্ত পাওয়া গেলেই কেবল মুরসাল হাদীছ দলীল হিসাবে বিবেচিত হতে পারে (আল-মাজমূ‘ শারহুল মুহাযযাব ৬/২০৬, তায়সীরু মুছত্বলাহিল হাদীছ পৃঃ ৬০)।
- See more at: http://at-tahreek.com/april2015/question.html#sthash.fnh0kxxE.dpuf
১৬২
মে
প্রশ্ন (১/২৮১) : চার বা তিন রাক‘আত বিশিষ্ট ছালাতের প্রথম তাশাহহুদে দরূদে ইবরাহীমী পাঠ করা যাবে কি?-গোলাম রহমান, আইলাইন, বাহরাইন।
উত্তর : তিন বা চার রাক‘আত বিশিষ্ট ছালাতের প্রথম বৈঠকে কেবল তাশাহহুদ পড়াই যথেষ্ট। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আমাদের উপর তাশাহহুদ ফরয হওয়ার পূর্বে আমরা বলতাম, ‘আসসালামু ‘আলাল্লাহি মিন ইবাদিহী’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদেরকে বললেন, তোমরা এটা না বলে বরং ‘আত্ত্বাহিইয়াতু... বল’ (নাসাঈ হা/১১৬৮, ইরওয়া হা/৩১৯)।
প্রথম বৈঠকে তাশহ্হুদের পরে দরূদ পাঠ না করার বিষয়টি বিভিন্ন হাদীছ দ্বারা বুঝা যায়। যেমন (১) ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন যে, তাঁকে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তাশাহ্হুদ শিক্ষা দেন। ... অতঃপর তিনি ছালাতের মধ্যখানে হ’লে তাশাহ্হুদ পড়েই উঠে যেতেন। আর শেষ বৈঠক হ’লে তাশাহ্হুদের পরে ইচ্ছামত দো‘আ করতেন। অতঃপর সালাম ফিরাতেন’ (আহমাদ হা/৪৩৮২, ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৭০৮, সনদ হাসান)।(২) আবুবকর (রাঃ) যখন প্রথম বৈঠকে বসতেন, তখন তিনি যেন গরম পাথরের উপরে বসতেন’ (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩০৩৪, সনদ ছহীহ, ইবনু হাজার, তালখীছুল হাবীর হা/৪০৬)। (৩) ইবনু ওমর থেকেও অনুরূপ বর্ণনা এসেছে (ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩০৩৭)।
ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, প্রথম বৈঠকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) দরূদ পাঠ করেছেন মর্মে কিছুই বর্ণিত হয়নি। যিনি এটাকে মুস্তাহাব বলেন, তিনি দরূদ পাঠের সাধারণ নির্দেশের উপরে ধারণা করেই সম্ভবত এটা বলেন। যদিও শেষ বৈঠকে দরূদ পাঠের বিষয়টি বিশুদ্ধভাবে স্পষ্ট হয়ে গেছে’ (যাদুল মা‘আদ ১/২৩৭; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১২৯)।
ইমাম তিরমিযী বলেন, উক্ত আমল জারি রয়েছে বিদ্বানগণের নিকটে’ (তিরমিযী হা/৩৬৬-এর আলোচনা)। তবে অনেক বিদ্বান তাশাহহুদ পাঠের ‘আম’ হাদীছের আলোকে প্রথম তাশাহহুদে দরূদ পাঠ করা জায়েয বলেন (ছিফাতু ছালাতিন্নবী পৃঃ ১৪৬; ছহীহাহ হা/৮৭৮-এর আলোচনা)।
উত্তর : তিন বা চার রাক‘আত বিশিষ্ট ছালাতের প্রথম বৈঠকে কেবল তাশাহহুদ পড়াই যথেষ্ট। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আমাদের উপর তাশাহহুদ ফরয হওয়ার পূর্বে আমরা বলতাম, ‘আসসালামু ‘আলাল্লাহি মিন ইবাদিহী’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদেরকে বললেন, তোমরা এটা না বলে বরং ‘আত্ত্বাহিইয়াতু... বল’ (নাসাঈ হা/১১৬৮, ইরওয়া হা/৩১৯)।
প্রথম বৈঠকে তাশহ্হুদের পরে দরূদ পাঠ না করার বিষয়টি বিভিন্ন হাদীছ দ্বারা বুঝা যায়। যেমন (১) ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন যে, তাঁকে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তাশাহ্হুদ শিক্ষা দেন। ... অতঃপর তিনি ছালাতের মধ্যখানে হ’লে তাশাহ্হুদ পড়েই উঠে যেতেন। আর শেষ বৈঠক হ’লে তাশাহ্হুদের পরে ইচ্ছামত দো‘আ করতেন। অতঃপর সালাম ফিরাতেন’ (আহমাদ হা/৪৩৮২, ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৭০৮, সনদ হাসান)।(২) আবুবকর (রাঃ) যখন প্রথম বৈঠকে বসতেন, তখন তিনি যেন গরম পাথরের উপরে বসতেন’ (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩০৩৪, সনদ ছহীহ, ইবনু হাজার, তালখীছুল হাবীর হা/৪০৬)। (৩) ইবনু ওমর থেকেও অনুরূপ বর্ণনা এসেছে (ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩০৩৭)।
ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, প্রথম বৈঠকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) দরূদ পাঠ করেছেন মর্মে কিছুই বর্ণিত হয়নি। যিনি এটাকে মুস্তাহাব বলেন, তিনি দরূদ পাঠের সাধারণ নির্দেশের উপরে ধারণা করেই সম্ভবত এটা বলেন। যদিও শেষ বৈঠকে দরূদ পাঠের বিষয়টি বিশুদ্ধভাবে স্পষ্ট হয়ে গেছে’ (যাদুল মা‘আদ ১/২৩৭; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১২৯)।
ইমাম তিরমিযী বলেন, উক্ত আমল জারি রয়েছে বিদ্বানগণের নিকটে’ (তিরমিযী হা/৩৬৬-এর আলোচনা)। তবে অনেক বিদ্বান তাশাহহুদ পাঠের ‘আম’ হাদীছের আলোকে প্রথম তাশাহহুদে দরূদ পাঠ করা জায়েয বলেন (ছিফাতু ছালাতিন্নবী পৃঃ ১৪৬; ছহীহাহ হা/৮৭৮-এর আলোচনা)।
১৬৩
প্রশ্ন (২/২৮২) : রাসূল (ছাঃ) বলেন, প্রোথিতকারী (পিতা) এবং যাকে প্রোথিত করা হয়েছে (সন্তান) উভয়েই জাহান্নামী (আবুদাঊদ হা/৪৭১৭)। হাদীছটির সঠিক ব্যাখ্যা জানতে চাই।-আশরাফ হোসাইন
লালমাটিয়া, ঢাকা।
উত্তর : কন্যা সন্তান প্রোথিতকারিণী মাতা জাহান্নামে যাবে তার উক্ত অপরাধ ও কুফরীর কারণে। কিন্তু উপরোক্ত হাদীছ অনুযায়ী প্রোথিত সন্তান জাহান্নামে কেন যাবে তার ব্যাখ্যায় বিদ্বানগণ বলেন, হাদীছটি একটি নির্দিষ্ট ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। আর তা হ’ল মুলায়কা নাম্নী জনৈকা মহিলার দুই ছেলে এসে তার মা সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ)-কে প্রশ্ন করেন যে, আমার মা জাহেলী যুগে মারা গেছেন। কিন্তু তিনি আত্মীয়তা সম্পর্ক রক্ষাকারীণী, অতিথিপরায়ণা এবং বিভিন্ন সৎকর্মে অভ্যস্ত ছিলেন। কিন্তু তিনি আমাদের একটি বোনকে প্রোথিত করার মাধ্যমে হত্যা করেন। এমতাবস্থায় তার সৎকর্মসমূহ তার উক্ত পাপের কাফফারা হবে কি? জবাবে রাসূল (ছাঃ) বললেন, প্রোথিতকারিণী ও প্রোথিত কন্যা উভয়ে জাহান্নামী হবে। তবে যদি প্রোথিতকারিণী ইসলাম কবুল করত তাহলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করতেন’ (আহমাদ হা/১৫৯৬৫)। একই মর্মে আবুদাঊদে (হা/৪৭১৭, মিশকাত হা/১১২) হাদীছ এসেছে। এ বিষয়ে ছাহেবে মির‘আত বলেন, এটি একটি বিশেষ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। হয়তবা ঐ প্রোথিত কন্যা সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) অহীর মাধ্যমে তার জাহান্নামী হওয়ার বিষয়টি অবগত হয়েছিলেন (মির‘আত হা/১১২-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)। কেননা ইসলামী শরী‘আতে নাবালকের উপর কোন বিধান প্রযোজ্য হয় না। অতএব অপরাধী মাতার কারণে তার প্রোথিত সন্তান জাহান্নামী হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘একজনের পাপ অন্যজনে বহন করবে না’ (আন‘আম ৬/১৬৪)। অন্য হাদীছে রাসূল (ছাঃ) প্রোথিত সন্তানকে জান্নাতী বলেছেন (আবুদাঊদ হা/২৫২১, মিশকাত হা/৩৮৫৬, সনদ ছহীহ)। অতএব অত্র হাদীছ দ্বারা পূর্বের হাদীছটি ‘মানসূখ’ হ’তে পারে। জীবন্ত প্রোথিত কন্যা জিজ্ঞাসিত হবে মর্মে কুরআনেও বর্ণিত হয়েছে (তাকভীর ৮১/৮৯)। বিস্তারিত- তাফসীরুল কুরআন ৩০ তম পারা, উক্ত আয়াতের আলোচনা দ্রঃ।
লালমাটিয়া, ঢাকা।
উত্তর : কন্যা সন্তান প্রোথিতকারিণী মাতা জাহান্নামে যাবে তার উক্ত অপরাধ ও কুফরীর কারণে। কিন্তু উপরোক্ত হাদীছ অনুযায়ী প্রোথিত সন্তান জাহান্নামে কেন যাবে তার ব্যাখ্যায় বিদ্বানগণ বলেন, হাদীছটি একটি নির্দিষ্ট ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। আর তা হ’ল মুলায়কা নাম্নী জনৈকা মহিলার দুই ছেলে এসে তার মা সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ)-কে প্রশ্ন করেন যে, আমার মা জাহেলী যুগে মারা গেছেন। কিন্তু তিনি আত্মীয়তা সম্পর্ক রক্ষাকারীণী, অতিথিপরায়ণা এবং বিভিন্ন সৎকর্মে অভ্যস্ত ছিলেন। কিন্তু তিনি আমাদের একটি বোনকে প্রোথিত করার মাধ্যমে হত্যা করেন। এমতাবস্থায় তার সৎকর্মসমূহ তার উক্ত পাপের কাফফারা হবে কি? জবাবে রাসূল (ছাঃ) বললেন, প্রোথিতকারিণী ও প্রোথিত কন্যা উভয়ে জাহান্নামী হবে। তবে যদি প্রোথিতকারিণী ইসলাম কবুল করত তাহলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করতেন’ (আহমাদ হা/১৫৯৬৫)। একই মর্মে আবুদাঊদে (হা/৪৭১৭, মিশকাত হা/১১২) হাদীছ এসেছে। এ বিষয়ে ছাহেবে মির‘আত বলেন, এটি একটি বিশেষ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। হয়তবা ঐ প্রোথিত কন্যা সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) অহীর মাধ্যমে তার জাহান্নামী হওয়ার বিষয়টি অবগত হয়েছিলেন (মির‘আত হা/১১২-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)। কেননা ইসলামী শরী‘আতে নাবালকের উপর কোন বিধান প্রযোজ্য হয় না। অতএব অপরাধী মাতার কারণে তার প্রোথিত সন্তান জাহান্নামী হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘একজনের পাপ অন্যজনে বহন করবে না’ (আন‘আম ৬/১৬৪)। অন্য হাদীছে রাসূল (ছাঃ) প্রোথিত সন্তানকে জান্নাতী বলেছেন (আবুদাঊদ হা/২৫২১, মিশকাত হা/৩৮৫৬, সনদ ছহীহ)। অতএব অত্র হাদীছ দ্বারা পূর্বের হাদীছটি ‘মানসূখ’ হ’তে পারে। জীবন্ত প্রোথিত কন্যা জিজ্ঞাসিত হবে মর্মে কুরআনেও বর্ণিত হয়েছে (তাকভীর ৮১/৮৯)। বিস্তারিত- তাফসীরুল কুরআন ৩০ তম পারা, উক্ত আয়াতের আলোচনা দ্রঃ।
-আলী আহসান
রিয়াদ, সঊদী আরব।
উত্তর : মদীনার সনদ মূলতঃ শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে বসবাসের জন্য রাসূল (ছাঃ) ও মদীনার ইহূদীদের মধ্যেকার একটি চুক্তি পত্র। ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে কা‘ব বিন আশরাফের হত্যাকান্ডের পরে যা সম্পাদিত হয়েছিল।
মদীনার সংখ্যাগুরু আউস ও খাযরাজ নেতাগণ আগেই ইসলাম কবুল করায় এবং রাসূল (ছাঃ)-এর মদীনায় আগমনের পিছনে আউস ও খাযরাজ দুই প্রধান গোত্রের আমন্ত্রণ থাকায় তাদের সাথে সন্ধিচুক্তির কোন প্রশ্নই ছিল না। খাযরাজ গোত্রের আব্দুল্লাহ বিন উবাই নেতৃত্বের অভিলাষী থাকলেও গোত্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রকাশ্যে কিছু করার ক্ষমতা তার ছিল না। ফলে বদর যুদ্ধের পর সে এবং তার অনুসারীরা প্রকাশ্যে ইসলাম কবুল করে। তবে সেসময় মদীনার সংখ্যালঘু ইহূদী সম্প্রদায় মুসলমানদের নবতর জীবনধারার প্রতি এবং বিশেষভাবে রাসূল (ছাঃ)-এর প্রতি ঈর্ষান্বিত থাকলেও অতি ধূর্ত হওয়ার কারণে প্রকাশ্য বিরোধিতায় লিপ্ত হয়নি। সমস্যা ছিল কেবল কুরায়েশদের নিয়ে। তারা পত্র প্রেরণ ও অন্যান্য অপতৎপরতার মাধ্যমে মুনাফিক ও ইহূদীদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে রাসূল (ছাঃ) ও তার সাথীদেরকে মদীনা থেকে বহিষ্কারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে থাকে। একাজে তারা যাতে সফল না হয় সেজন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ২য় হিজরীতে সর্বপ্রথম মদীনার পার্শ্ববর্তী এলাকার বনু যামরাহ, বনু বুওয়াত্ব, বনু মুদলিজ প্রভৃতি গোত্রের সাথে সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদন করেন।
এভাবে রাসূল (ছাঃ) চেয়েছিলেন, যেন যুদ্ধাশংকা দূর হয় এবং সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু এ সময় মদীনায় ইহূদী চক্রান্ত চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে। যার নেতৃত্বে ছিল তাদের ধনশালী নেতা ও ব্যঙ্গ কবি কা‘ব বিন আশরাফ। রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে কটূক্তি করাই ছিল যার স্বভাব। অতঃপর তাকে হত্যা করা হয়। ফলে ইহূদীরা ভীত হয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে এলে রাসূল (ছাঃ) তাঁর ও তাদের মধ্যে একটি লিখিত চুক্তি সম্পাদনের আহবান জানান। অতঃপর নবী করীম (ছাঃ) তাঁর ও তাদের মধ্যে এবং মুসলমানদের মধ্যে সার্বজনীন একটা দলীল লিখে দেন’ (আবুদাঊদ হা/৩০০০)।
অত্র হাদীছ দৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে, চুক্তি লিখনের এই বিষয়টি হিজরতের পরেই নয়, বরং ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে কা‘ব বিন আশরাফের হত্যাকান্ডের পরে তা সম্পাদিত হয়েছিল।
অতএব ছহীহ হাদীছের আলোকে কেবল এটুকুই বলা যায় যে, এটি ছিল ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসের পরের ঘটনা। হিজরতের পরপরই নয়। নিঃসন্দেহে চুক্তিটি ছিল পারস্পরিক সন্ধিচুক্তি। কিন্তু চুক্তিটি কি ছিল, তার ভাষা কি ছিল, সেখানে কয়টি ধারা ছিল, কিছুই সঠিকভাবে বলার উপায় নেই।
তবে পার্শ্ববর্তী নিকট ও দূরের গোত্রসমূহের সাথে সন্ধিচুক্তিসমূহ সম্পাদনের পর ইহূদীদের সাথে অত্র চুক্তি সম্পাদনের ফলে প্রকৃত প্রস্তাবে ইসলামী খিলাফতের ভিত্তি স্থাপিত হয় এবং মদীনা তার রাজধানীতে পরিণত হয়। অতএব মদীনার সনদ ছিল একটি আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃসাম্প্রদায়িক চুক্তি, যার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ স্বার্থে ও একক লক্ষ্যে একটি উম্মাহ বা জাতি গঠিত হয়। আধুনিক পরিভাষায় যাকে ‘রাষ্ট্র’ বলা হয়। এই সনদ ছিল আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার সর্বপ্রথম ভিত্তি স্বরূপ। (বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) ‘মদীনার সনদ’ অধ্যায়)।
রিয়াদ, সঊদী আরব।
উত্তর : মদীনার সনদ মূলতঃ শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে বসবাসের জন্য রাসূল (ছাঃ) ও মদীনার ইহূদীদের মধ্যেকার একটি চুক্তি পত্র। ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে কা‘ব বিন আশরাফের হত্যাকান্ডের পরে যা সম্পাদিত হয়েছিল।
মদীনার সংখ্যাগুরু আউস ও খাযরাজ নেতাগণ আগেই ইসলাম কবুল করায় এবং রাসূল (ছাঃ)-এর মদীনায় আগমনের পিছনে আউস ও খাযরাজ দুই প্রধান গোত্রের আমন্ত্রণ থাকায় তাদের সাথে সন্ধিচুক্তির কোন প্রশ্নই ছিল না। খাযরাজ গোত্রের আব্দুল্লাহ বিন উবাই নেতৃত্বের অভিলাষী থাকলেও গোত্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রকাশ্যে কিছু করার ক্ষমতা তার ছিল না। ফলে বদর যুদ্ধের পর সে এবং তার অনুসারীরা প্রকাশ্যে ইসলাম কবুল করে। তবে সেসময় মদীনার সংখ্যালঘু ইহূদী সম্প্রদায় মুসলমানদের নবতর জীবনধারার প্রতি এবং বিশেষভাবে রাসূল (ছাঃ)-এর প্রতি ঈর্ষান্বিত থাকলেও অতি ধূর্ত হওয়ার কারণে প্রকাশ্য বিরোধিতায় লিপ্ত হয়নি। সমস্যা ছিল কেবল কুরায়েশদের নিয়ে। তারা পত্র প্রেরণ ও অন্যান্য অপতৎপরতার মাধ্যমে মুনাফিক ও ইহূদীদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে রাসূল (ছাঃ) ও তার সাথীদেরকে মদীনা থেকে বহিষ্কারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে থাকে। একাজে তারা যাতে সফল না হয় সেজন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ২য় হিজরীতে সর্বপ্রথম মদীনার পার্শ্ববর্তী এলাকার বনু যামরাহ, বনু বুওয়াত্ব, বনু মুদলিজ প্রভৃতি গোত্রের সাথে সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদন করেন।
এভাবে রাসূল (ছাঃ) চেয়েছিলেন, যেন যুদ্ধাশংকা দূর হয় এবং সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু এ সময় মদীনায় ইহূদী চক্রান্ত চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে। যার নেতৃত্বে ছিল তাদের ধনশালী নেতা ও ব্যঙ্গ কবি কা‘ব বিন আশরাফ। রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে কটূক্তি করাই ছিল যার স্বভাব। অতঃপর তাকে হত্যা করা হয়। ফলে ইহূদীরা ভীত হয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে এলে রাসূল (ছাঃ) তাঁর ও তাদের মধ্যে একটি লিখিত চুক্তি সম্পাদনের আহবান জানান। অতঃপর নবী করীম (ছাঃ) তাঁর ও তাদের মধ্যে এবং মুসলমানদের মধ্যে সার্বজনীন একটা দলীল লিখে দেন’ (আবুদাঊদ হা/৩০০০)।
অত্র হাদীছ দৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে, চুক্তি লিখনের এই বিষয়টি হিজরতের পরেই নয়, বরং ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে কা‘ব বিন আশরাফের হত্যাকান্ডের পরে তা সম্পাদিত হয়েছিল।
অতএব ছহীহ হাদীছের আলোকে কেবল এটুকুই বলা যায় যে, এটি ছিল ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসের পরের ঘটনা। হিজরতের পরপরই নয়। নিঃসন্দেহে চুক্তিটি ছিল পারস্পরিক সন্ধিচুক্তি। কিন্তু চুক্তিটি কি ছিল, তার ভাষা কি ছিল, সেখানে কয়টি ধারা ছিল, কিছুই সঠিকভাবে বলার উপায় নেই।
তবে পার্শ্ববর্তী নিকট ও দূরের গোত্রসমূহের সাথে সন্ধিচুক্তিসমূহ সম্পাদনের পর ইহূদীদের সাথে অত্র চুক্তি সম্পাদনের ফলে প্রকৃত প্রস্তাবে ইসলামী খিলাফতের ভিত্তি স্থাপিত হয় এবং মদীনা তার রাজধানীতে পরিণত হয়। অতএব মদীনার সনদ ছিল একটি আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃসাম্প্রদায়িক চুক্তি, যার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ স্বার্থে ও একক লক্ষ্যে একটি উম্মাহ বা জাতি গঠিত হয়। আধুনিক পরিভাষায় যাকে ‘রাষ্ট্র’ বলা হয়। এই সনদ ছিল আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার সর্বপ্রথম ভিত্তি স্বরূপ। (বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) ‘মদীনার সনদ’ অধ্যায়)।
-ফায়ছাল, ধামরাই, ঢাকা।
উত্তর : সাধারণভাবে এটা জায়েয নয়। আল্লাহ বলেন, ‘পরপুরুষের সাথে কোমল কণ্ঠে তোমরা এমনভাবে কথা বলো না, যাতে যার অন্তরে ব্যাধি আছে, সে প্রলুব্ধ হয়’ (আহযাব ৩৩/৩২)। তবে প্রয়োজনের তাকীদে যেমন শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে নিরূপায় অবস্থায় সাধারণ তেলাওয়াত পরপুরুষের নিকটে শুনানোতে বাধা নেই (উছায়মীন, লিকাউশ শাহর প্রশ্ন নং ৫৫)। যেমন রাসূল (ছাঃ) নারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতেন এবং তাদের দাবীক্রমে তাদের শিক্ষা দানের জন্য একটি দিন নির্ধারণ করে দেন (বুখারী হা/১০১)।
উত্তর : সাধারণভাবে এটা জায়েয নয়। আল্লাহ বলেন, ‘পরপুরুষের সাথে কোমল কণ্ঠে তোমরা এমনভাবে কথা বলো না, যাতে যার অন্তরে ব্যাধি আছে, সে প্রলুব্ধ হয়’ (আহযাব ৩৩/৩২)। তবে প্রয়োজনের তাকীদে যেমন শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে নিরূপায় অবস্থায় সাধারণ তেলাওয়াত পরপুরুষের নিকটে শুনানোতে বাধা নেই (উছায়মীন, লিকাউশ শাহর প্রশ্ন নং ৫৫)। যেমন রাসূল (ছাঃ) নারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতেন এবং তাদের দাবীক্রমে তাদের শিক্ষা দানের জন্য একটি দিন নির্ধারণ করে দেন (বুখারী হা/১০১)।
-সায়মা, রাজশাহী।
উত্তর : সন্তানকে সার্বিক প্রতিপালনই পিতা-মাতার মৌলিক দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালন না করলে তাদেরকে আল্লাহর নিকট জবাবদিহিতার সম্মুখীন হ’তে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, মহিলা ও তার স্বামী তার সন্তানের দায়িত্বশীল। অতএব তাদেরকে স্বীয় দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হতে হবে (বুখারী হা/২৪০৯, মুসলিম হা/৪৮২৮)। সার্বিক দায়িত্ব সমূহের মধ্যে রয়েছে যেমন (১) তাদের ভরণ-পোষণের জন্য খরচ করা (বাক্বারাহ ২/২৩৩; বুখারী হা/৫৩৬৪) (২) আকীকা দেওয়া (বুখারী হা/৫৪৭১) (৩) সুন্দর নাম রাখা (মুসলিম হা/২১৩৯, ২১৩২; তিরমিযী, মিশকাত হা/৪৭৫২, ৪৭৭৪) (৪) খাৎনা করা (বুখারী হা/৫৮৯১; মিশকাত হা/৪৪২০) (৫) দ্বীনী জ্ঞান ও আমল শিক্ষা দেওয়া। যেমন ছালাত শিক্ষা প্রদান এবং প্রয়োজনে প্রহারকরণ (আবুদাউদ হা/৪৯৫; মিশকাত হা/৫৭২, ১২৪০) (৬) সময়মত বিবাহ দেওয়া (ইবনু মাজাহ হা/১৮৬৩; ছহীহাহ হা/১০৬৭) (৭) তাদের জন্য দো‘আ করা(ইবরাহীম ১৪/৪০) এবং (৮) তাদেরকে উপদেশ দেওয়া (লোকমান ৩১/১৩) ইত্যাদি।
উত্তর : সন্তানকে সার্বিক প্রতিপালনই পিতা-মাতার মৌলিক দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালন না করলে তাদেরকে আল্লাহর নিকট জবাবদিহিতার সম্মুখীন হ’তে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, মহিলা ও তার স্বামী তার সন্তানের দায়িত্বশীল। অতএব তাদেরকে স্বীয় দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হতে হবে (বুখারী হা/২৪০৯, মুসলিম হা/৪৮২৮)। সার্বিক দায়িত্ব সমূহের মধ্যে রয়েছে যেমন (১) তাদের ভরণ-পোষণের জন্য খরচ করা (বাক্বারাহ ২/২৩৩; বুখারী হা/৫৩৬৪) (২) আকীকা দেওয়া (বুখারী হা/৫৪৭১) (৩) সুন্দর নাম রাখা (মুসলিম হা/২১৩৯, ২১৩২; তিরমিযী, মিশকাত হা/৪৭৫২, ৪৭৭৪) (৪) খাৎনা করা (বুখারী হা/৫৮৯১; মিশকাত হা/৪৪২০) (৫) দ্বীনী জ্ঞান ও আমল শিক্ষা দেওয়া। যেমন ছালাত শিক্ষা প্রদান এবং প্রয়োজনে প্রহারকরণ (আবুদাউদ হা/৪৯৫; মিশকাত হা/৫৭২, ১২৪০) (৬) সময়মত বিবাহ দেওয়া (ইবনু মাজাহ হা/১৮৬৩; ছহীহাহ হা/১০৬৭) (৭) তাদের জন্য দো‘আ করা(ইবরাহীম ১৪/৪০) এবং (৮) তাদেরকে উপদেশ দেওয়া (লোকমান ৩১/১৩) ইত্যাদি।
১৬৭
প্রশ্ন (৬/২৮৬) : অনেক আলেমকে দেখা যায় শরী‘আতের মাসআলাগত বিষয়ে বিরোধী পক্ষের প্রতি মোটা অংকের অর্থের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। এরূপ চ্যালেঞ্জ প্রদান ও গ্রহণ কতটুকু শরী‘আতসম্মত?-সুহাইল, শিবগঞ্জ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : এগুলি নিতান্তই নীতি-বহির্ভূত কাজ। শরী‘আতের বিষয়বস্ত্তসমূহ নিয়ে এরূপ করা খেল-তামাশার শামিল। যা আখেরাতে চরম শাস্তিযোগ্য অপরাধ (লোকমান ৩১/৬)। বরং এভাবে টাকার চ্যালেঞ্জ দেওয়া জুয়ার পর্যায়ভুক্ত কাজ, যা হারাম (মায়েদাহ ৫/৯০)। অতএব এসব থেকে দূরে থাকা আবশ্যক। এক্ষেত্রে শরী‘আতসম্মত পন্থা হ’ল আন্তরিকতার সাথে সংশোধনের উদ্দেশ্যে একে অপরের ভুল ধরিয়ে দেওয়া এবং নিজেকে সংশোধন করা। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহবান কর প্রজ্ঞা ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে এবং তাদের সাথে বিতর্ক কর সুন্দর পন্থায়। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক ভালভাবেই জানেন কে তার পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি ভালভাবেই জানেন কে সুপথপ্রাপ্ত হয়েছে’ (নাহল ১৬/১২৫)।
উত্তর : এগুলি নিতান্তই নীতি-বহির্ভূত কাজ। শরী‘আতের বিষয়বস্ত্তসমূহ নিয়ে এরূপ করা খেল-তামাশার শামিল। যা আখেরাতে চরম শাস্তিযোগ্য অপরাধ (লোকমান ৩১/৬)। বরং এভাবে টাকার চ্যালেঞ্জ দেওয়া জুয়ার পর্যায়ভুক্ত কাজ, যা হারাম (মায়েদাহ ৫/৯০)। অতএব এসব থেকে দূরে থাকা আবশ্যক। এক্ষেত্রে শরী‘আতসম্মত পন্থা হ’ল আন্তরিকতার সাথে সংশোধনের উদ্দেশ্যে একে অপরের ভুল ধরিয়ে দেওয়া এবং নিজেকে সংশোধন করা। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহবান কর প্রজ্ঞা ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে এবং তাদের সাথে বিতর্ক কর সুন্দর পন্থায়। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক ভালভাবেই জানেন কে তার পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি ভালভাবেই জানেন কে সুপথপ্রাপ্ত হয়েছে’ (নাহল ১৬/১২৫)।
১৬৮
প্রশ্ন (৭/২৮৭) : ফেসবুক চ্যাটের কারণে স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্যের পর আমি ফেসবুক ব্যবহার করব না বলে কসম করি। বর্তমানে আমি তার সম্মতিতে ফেসবুক ব্যবহার করছি। এক্ষণে উক্ত কসম ভঙ্গের কারণে কোন কাফফারা দিতে হবে কি?-বাবু*, বাঘা, রাজশাহী।
*[আরবীতে সুন্দর ইসলামী নাম রাখুন! (স.স)]
উত্তর : কাফফারা দিতে হবে (মুসলিম হা/১৬৫০, মিশকাত হা/৩৪১৩)। কসম ভঙ্গের কাফফারা হ’ল দশজন মিসকীনকে মধ্যম মানের খাদ্য খাওয়ানো। অথবা তাদের কাপড় দান করা কিংবা একটি দাস মুক্ত করা। এতে অসমর্থ হ’লে তিন দিন ছিয়াম পালন করা (মায়েদাহ ৫/৮৯)।
*[আরবীতে সুন্দর ইসলামী নাম রাখুন! (স.স)]
উত্তর : কাফফারা দিতে হবে (মুসলিম হা/১৬৫০, মিশকাত হা/৩৪১৩)। কসম ভঙ্গের কাফফারা হ’ল দশজন মিসকীনকে মধ্যম মানের খাদ্য খাওয়ানো। অথবা তাদের কাপড় দান করা কিংবা একটি দাস মুক্ত করা। এতে অসমর্থ হ’লে তিন দিন ছিয়াম পালন করা (মায়েদাহ ৫/৮৯)।
-মতীউর রহমান
কৃষ্ণচন্দ্রপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : জামা‘আত চলাকালে এথেকে বিরত থাকা কর্তব্য। কারণ এতে মুছল্লীদের খুশূ-খুযূ বিনষ্ট হয়। ইবনু আববাস (রাঃ)-এর গোলাম শো‘বা বলেন, আমি ইবনু আববাসের পাশে ছালাতরত অবস্থায় আঙ্গুল ফুটালে তিনি ছালাত শেষে আমাকে ধমক দিয়ে বলেন, তোমার ধ্বংস হোক তুমি ছালাতের মধ্যে আঙ্গুল ফুটালে? (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/৭৩৫৮; ইরওয়া হা/৩৭৮)। তবে ছালাতের মধ্যে উঠা-বসা করতে যদি কোন অঙ্গ আপনা থেকেই ফুটে যায়, সেক্ষেত্রে কোন দোষ নেই।
কৃষ্ণচন্দ্রপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : জামা‘আত চলাকালে এথেকে বিরত থাকা কর্তব্য। কারণ এতে মুছল্লীদের খুশূ-খুযূ বিনষ্ট হয়। ইবনু আববাস (রাঃ)-এর গোলাম শো‘বা বলেন, আমি ইবনু আববাসের পাশে ছালাতরত অবস্থায় আঙ্গুল ফুটালে তিনি ছালাত শেষে আমাকে ধমক দিয়ে বলেন, তোমার ধ্বংস হোক তুমি ছালাতের মধ্যে আঙ্গুল ফুটালে? (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/৭৩৫৮; ইরওয়া হা/৩৭৮)। তবে ছালাতের মধ্যে উঠা-বসা করতে যদি কোন অঙ্গ আপনা থেকেই ফুটে যায়, সেক্ষেত্রে কোন দোষ নেই।