HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
মাসিক আত-তাহরীক প্রশ্নোত্তর ২০১৫
লেখকঃ দারুল ইফতা
-সজল*, হারুপুর, রাজশাহী।
উত্তর : সালাম সর্বাবস্থায় আদান-প্রদান করা যায়। রাসূল (ছাঃ) ছালাতরত অবস্থাতেও হাতের ইশারায় সালামের উত্তর দিতেন (আবুদাউদ হা/৯২৬, তিরমিযী হা/৩৬৭, মিশকাত হা/৯৯১)। কেবল পেশাব-পায়খানার সময় তিনি সালামের উত্তর দিতেন না, বরং বের হয়ে উত্তর দিতেন (যদি সেই ব্যক্তি মওজুদ থাকত) (বুখারী হা/৩৩৭, আবুদাঊদ হা/১৭, মিশকাত হা/৪৬৭, ৫৩৫)।
*[আরবীতে ইসলামী নাম রাখুন ও সেই নামে ডাকুন (স.স.)]।
উত্তর : সালাম সর্বাবস্থায় আদান-প্রদান করা যায়। রাসূল (ছাঃ) ছালাতরত অবস্থাতেও হাতের ইশারায় সালামের উত্তর দিতেন (আবুদাউদ হা/৯২৬, তিরমিযী হা/৩৬৭, মিশকাত হা/৯৯১)। কেবল পেশাব-পায়খানার সময় তিনি সালামের উত্তর দিতেন না, বরং বের হয়ে উত্তর দিতেন (যদি সেই ব্যক্তি মওজুদ থাকত) (বুখারী হা/৩৩৭, আবুদাঊদ হা/১৭, মিশকাত হা/৪৬৭, ৫৩৫)।
*[আরবীতে ইসলামী নাম রাখুন ও সেই নামে ডাকুন (স.স.)]।
-আব্দুল মুত্তালিব
বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : মুমিনের কাফন-দাফন সম্পন্ন করা অত্যন্ত নেকীর কাজ। মুসলমানগণ নেকীর আশায় উক্ত কাজে শরীক হয়ে থাকে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন মুসলিম মাইয়েতকে গোসল করাল। অতঃপর তার গোপনীয়তাসমূহ গোপন রাখল, আল্লাহ তাকে চল্লিশ বার ক্ষমা করবেন। যে ব্যক্তি মাইয়েতের জন্য কবর খনন করল, অতঃপর দাফন শেষে তা ঢেকে দিল, আল্লাহ তাকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত পুরস্কার দিবেন জান্নাতের একটি বাড়ীর সমপরিমাণ, যেখানে আল্লাহ তাকে রাখবেন। যে ব্যক্তি মাইয়েতকে কাফন পরাবে, আল্লাহ তাকে ক্বিয়ামতের দিন জান্নাতের মিহি ও মোটা রেশমের পোষাক পরাবেন’(বায়হাক্বী ৩/৩৯৫; ত্বাবারাণী, ছহীহ আত-তারগীব হা/৩৪৯২, সনদ ছহীহ)। কিন্তু হিন্দু বা অমুসলিমদের উক্ত নিয়ত থাকে না। তবে সাধারণভাবে তারা ছোট-খাট যেকোন সহযোগিতা করতে পারে।
বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : মুমিনের কাফন-দাফন সম্পন্ন করা অত্যন্ত নেকীর কাজ। মুসলমানগণ নেকীর আশায় উক্ত কাজে শরীক হয়ে থাকে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন মুসলিম মাইয়েতকে গোসল করাল। অতঃপর তার গোপনীয়তাসমূহ গোপন রাখল, আল্লাহ তাকে চল্লিশ বার ক্ষমা করবেন। যে ব্যক্তি মাইয়েতের জন্য কবর খনন করল, অতঃপর দাফন শেষে তা ঢেকে দিল, আল্লাহ তাকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত পুরস্কার দিবেন জান্নাতের একটি বাড়ীর সমপরিমাণ, যেখানে আল্লাহ তাকে রাখবেন। যে ব্যক্তি মাইয়েতকে কাফন পরাবে, আল্লাহ তাকে ক্বিয়ামতের দিন জান্নাতের মিহি ও মোটা রেশমের পোষাক পরাবেন’(বায়হাক্বী ৩/৩৯৫; ত্বাবারাণী, ছহীহ আত-তারগীব হা/৩৪৯২, সনদ ছহীহ)। কিন্তু হিন্দু বা অমুসলিমদের উক্ত নিয়ত থাকে না। তবে সাধারণভাবে তারা ছোট-খাট যেকোন সহযোগিতা করতে পারে।
৪
প্রশ্ন (৩/১২৩) : ইমাম জুম‘আ ব্যতীত কোন ছালাত আদায় করে না এবং সিগারেট-জর্দা-গুল ব্যবহার করে। এক্ষণে আমাদের করণীয় কি?আমাদের মসজিদের ইমাম জুম‘আ ব্যতীত কোন ছালাত আদায় করে না এবং সিগারেট-জর্দা-গুল ব্যবহার করে। তাকে সরিয়ে দেওয়াও সম্ভব নয়। এক্ষণে আমাদের করণীয় কি?
-আব্দুল্লাহ
মাটিয়ানী, পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও।
উত্তর : ইমাম যদি জুম‘আ ব্যতীত পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত তরককারী হয়, তবে তার পিছনে ছালাত সিদ্ধ হবে না। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘মুমিন ও কাফির-মুশরিকের মধ্যে পার্থক্য হ’ল ছালাত’ (মুসলিম হা/১৩৪, মিশকাত হা/৫৬৯)। প্রশ্নে উল্লিখিত অবস্থায় ইমামকে নছীহত করতে হবে অথবা এড়িয়ে যেতে হবে। আর ঐ ইমামের ছালাত কবুল হয় না মুছল্লীরা যাকে শারঈ কারণে অপসন্দ করে (তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১১২২, ২৮)।
-আব্দুল্লাহ
মাটিয়ানী, পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও।
উত্তর : ইমাম যদি জুম‘আ ব্যতীত পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত তরককারী হয়, তবে তার পিছনে ছালাত সিদ্ধ হবে না। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘মুমিন ও কাফির-মুশরিকের মধ্যে পার্থক্য হ’ল ছালাত’ (মুসলিম হা/১৩৪, মিশকাত হা/৫৬৯)। প্রশ্নে উল্লিখিত অবস্থায় ইমামকে নছীহত করতে হবে অথবা এড়িয়ে যেতে হবে। আর ঐ ইমামের ছালাত কবুল হয় না মুছল্লীরা যাকে শারঈ কারণে অপসন্দ করে (তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১১২২, ২৮)।
অনেকে বলে থাকে যে, রাতের অন্ধকারে ছালাত আদায় করা ঠিক নয়, বরং আলো জ্বালিয়ে ছালাত আদায় করতে হবে। এ বক্তব্য সঠিক কি-না জানিয়ে বাধিত করবেন।
-মুহসিন আলম, ছোট বনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : বক্তব্যটি ভিত্তিহীন। আলো ছালাতের কবুল হওয়ার কোন শর্ত নয়। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) স্বীয় গৃহে অনেক সময় অন্ধকারে ছালাত আদায় করেছেন (বুখারী হা/৩৮২; মুসলিম হা/৫১২, মিশকাত হা/৭৮৬, ‘সুৎরা’ অনুচ্ছেদ)। তবে মসজিদে আলোর ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক। যাতে সাপ-বিচ্ছু বা অন্য কিছুর ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং মুছল্লী সহজে জামা‘আতে শরীক হ’তে পারে।
-মুহসিন আলম, ছোট বনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : বক্তব্যটি ভিত্তিহীন। আলো ছালাতের কবুল হওয়ার কোন শর্ত নয়। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) স্বীয় গৃহে অনেক সময় অন্ধকারে ছালাত আদায় করেছেন (বুখারী হা/৩৮২; মুসলিম হা/৫১২, মিশকাত হা/৭৮৬, ‘সুৎরা’ অনুচ্ছেদ)। তবে মসজিদে আলোর ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক। যাতে সাপ-বিচ্ছু বা অন্য কিছুর ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং মুছল্লী সহজে জামা‘আতে শরীক হ’তে পারে।
-রায়হানা, পাবনা।
উত্তর : পর্দার মধ্যে মহিলা পরিবেশে প্রয়োজন নেই। অন্য সময়ে যথাসাধ্য ঢেকে রাখবে। কেননা দু’হাতের তালু ও চেহারা ব্যতীত মহিলাদের সর্বাঙ্গ সতরের অন্তর্ভুক্ত (আবুদাঊদ হা/৪১০৪; মিশকাত হা/৪৩৭২)। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সাধ্যমত আল্লাহ্কে ভয় কর’ (তাগাবুন ৬৪/১৬)।
উত্তর : পর্দার মধ্যে মহিলা পরিবেশে প্রয়োজন নেই। অন্য সময়ে যথাসাধ্য ঢেকে রাখবে। কেননা দু’হাতের তালু ও চেহারা ব্যতীত মহিলাদের সর্বাঙ্গ সতরের অন্তর্ভুক্ত (আবুদাঊদ হা/৪১০৪; মিশকাত হা/৪৩৭২)। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সাধ্যমত আল্লাহ্কে ভয় কর’ (তাগাবুন ৬৪/১৬)।
৭
প্রশ্ন (৬/১২৬) : কথা কাটাকাটি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের কারণে ৬/৭ মাস বান্ধবীর সাথে কথা না বলার কারণে কি আমি গোনাহগার হচ্ছি?কথা কাটাকাটির কারণে এবং পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের কারণে ৬/৭ মাস যাবৎ বান্ধবীর সাথে কথা বলিনি। এক্ষণে এর জন্য কি আমি গোনাহগার হচ্ছি?
-রাশীদা, নাটোর।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তিন দিনের বেশী কোন মুসলমানের জন্য অপর মুসলিম হ’তে সম্পর্ক ছিন্ন রাখা হালাল নয়। তাদের উভয়ের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে প্রথমে সালাম করে’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫০২৭ ‘সালাম’ অনুচ্ছেদ)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, যে ব্যক্তি তিন দিনের বেশী সম্পর্ক ছিন্ন রাখবে এবং ঐ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে’ (আহমাদ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫০৩৫)। অতএব মন থেকে দূরত্ব পরিহার করতে হবে এবং সম্ভবপর যেকোন মাধ্যমে দ্রুত তার সাথে যোগাযোগ করে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে নিতে হবে।
-রাশীদা, নাটোর।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তিন দিনের বেশী কোন মুসলমানের জন্য অপর মুসলিম হ’তে সম্পর্ক ছিন্ন রাখা হালাল নয়। তাদের উভয়ের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে প্রথমে সালাম করে’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫০২৭ ‘সালাম’ অনুচ্ছেদ)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, যে ব্যক্তি তিন দিনের বেশী সম্পর্ক ছিন্ন রাখবে এবং ঐ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে’ (আহমাদ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫০৩৫)। অতএব মন থেকে দূরত্ব পরিহার করতে হবে এবং সম্ভবপর যেকোন মাধ্যমে দ্রুত তার সাথে যোগাযোগ করে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে নিতে হবে।
৮
প্রশ্ন (৭/১২৭) : কোন ব্যক্তি ওয়ায মাহফিলে যাওয়ার ইচ্ছা করে সামনের পা বাড়িয়ে পিছনের পা তোলার আগেই সকল গোনাহ মাফ হয়ে যায়?জনৈক ব্যক্তি বলেন, কোন ব্যক্তি ওয়ায মাহফিলে যাওয়ার ইচ্ছা করে সামনের পা বাড়িয়ে পিছনের পা তোলার আগেই সকল গোনাহ মাফ হয়ে যায়। একথার কোন সত্যতা আছে কি?
-মাহবূব, শঠীবাড়ী, রংপুর।
উত্তর : এইরূপ শব্দে হাদীছ পাওয়া যায় না। তবে নেকীর উদ্দেশ্যে পূর্ণ ইখলাছের সাথে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক কোন আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করলে অসংখ্য নেকী পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, আল্লাহ তা‘আলা নেকী ও পাপ লিখেন। অতএব যে ব্যক্তি কোন নেকী করার ইচ্ছা করে তা বাস্তবায়ন করতে পারে না, আল্লাহ তার পূর্ণ নেকী লিখে থাকেন। আর যে ব্যক্তি তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়, তার আমলনামায় ১০ থেকে ৭শ’র অধিক নেকী লেখা হয়’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৩৭৪ ‘আল্লাহর রহমত প্রশস্ত’ অনুচ্ছেদ, ‘দো‘আ’ অধ্যায়)। তিনি আরো বলেন, যে ব্যক্তি ইলম অর্জনের জন্য রাস্তায় বের হ’ল, আল্লাহ তাঁর জান্নাতের রাস্তা সহজ করে দিবেন (মুসলিম, মিশকাত হা/২০৪)। তিনি বলেন, ‘যখন কোন কওম আল্লাহ্কে স্মরণ করার জন্য একত্রিত হয়ে বসে, তখন ফেরেশতাগণ তাদেরকে ঘিরে নেন, আল্লাহর রহমত তাদেরকে ঢেকে ফেলে এবং তাদের উপর শান্তি বর্ষিত হয়। আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর পাশের ফেরেশতাগণের সামনে তাদের প্রশংসামূলক আলোচনা করেন’(মুসলিম হা/২৭০০; ছহীহুল জামে‘ হা/৫৫০৯; মিশকাত হা/২২৬১)।
-মাহবূব, শঠীবাড়ী, রংপুর।
উত্তর : এইরূপ শব্দে হাদীছ পাওয়া যায় না। তবে নেকীর উদ্দেশ্যে পূর্ণ ইখলাছের সাথে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক কোন আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করলে অসংখ্য নেকী পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, আল্লাহ তা‘আলা নেকী ও পাপ লিখেন। অতএব যে ব্যক্তি কোন নেকী করার ইচ্ছা করে তা বাস্তবায়ন করতে পারে না, আল্লাহ তার পূর্ণ নেকী লিখে থাকেন। আর যে ব্যক্তি তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়, তার আমলনামায় ১০ থেকে ৭শ’র অধিক নেকী লেখা হয়’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৩৭৪ ‘আল্লাহর রহমত প্রশস্ত’ অনুচ্ছেদ, ‘দো‘আ’ অধ্যায়)। তিনি আরো বলেন, যে ব্যক্তি ইলম অর্জনের জন্য রাস্তায় বের হ’ল, আল্লাহ তাঁর জান্নাতের রাস্তা সহজ করে দিবেন (মুসলিম, মিশকাত হা/২০৪)। তিনি বলেন, ‘যখন কোন কওম আল্লাহ্কে স্মরণ করার জন্য একত্রিত হয়ে বসে, তখন ফেরেশতাগণ তাদেরকে ঘিরে নেন, আল্লাহর রহমত তাদেরকে ঢেকে ফেলে এবং তাদের উপর শান্তি বর্ষিত হয়। আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর পাশের ফেরেশতাগণের সামনে তাদের প্রশংসামূলক আলোচনা করেন’(মুসলিম হা/২৭০০; ছহীহুল জামে‘ হা/৫৫০৯; মিশকাত হা/২২৬১)।
৯
প্রশ্ন (৮/১২৮) : স্কুল-কলেজে নাচ-গানসহ বিভিন্ন অনৈসলামিক কর্মকান্ডের পাপের ভার কি কেবল বর্তমান পরিচালকদের নাকি প্রতিষ্ঠাতার আমলনামাতেও যুক্ত হবে?জনৈক দানশীল ধার্মিক ব্যক্তি কিছু স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠার পর মারা গেছেন। বর্তমানে সেগুলিতে নাচ-গানসহ বিভিন্ন অনৈসলামিক কর্মকান্ড হয়ে থাকে। এক্ষণে এসব পাপের ভার কি কেবল বর্তমান পরিচালকদের না উক্ত প্রতিষ্ঠাতার আমলনামাতেও যুক্ত হবে?
-আব্দুল্লাহ
সোহাগদল, নেছারাবাদ, পিরোজপুর।
উত্তর : যেহেতু প্রতিষ্ঠাতা মারা যাওয়ার পর এসব কার্যকলাপ শুরু হয়েছে, সেহেতু তিনি এর জন্য দায়ী হবেন না। বরং বর্তমান পরিচালকগণ এর জন্য গুনাহগার হবে। আল্লাহ বলেন, ‘একজনের পাপের বোঝা আরেকজন বইবে না’ (আন‘আম ৬/১৬৪)। তবে যদি এগুলির পিছনে প্রতিষ্ঠাতার সমর্থন ছিল বলে প্রমাণিত হয়, তবে তিনিও দায়ী হবেন।
-আব্দুল্লাহ
সোহাগদল, নেছারাবাদ, পিরোজপুর।
উত্তর : যেহেতু প্রতিষ্ঠাতা মারা যাওয়ার পর এসব কার্যকলাপ শুরু হয়েছে, সেহেতু তিনি এর জন্য দায়ী হবেন না। বরং বর্তমান পরিচালকগণ এর জন্য গুনাহগার হবে। আল্লাহ বলেন, ‘একজনের পাপের বোঝা আরেকজন বইবে না’ (আন‘আম ৬/১৬৪)। তবে যদি এগুলির পিছনে প্রতিষ্ঠাতার সমর্থন ছিল বলে প্রমাণিত হয়, তবে তিনিও দায়ী হবেন।
আমার জানা মতে, হিন্দুরা যেমন সিঁদুর ব্যবহার করে স্বামীর মঙ্গলের জন্য, মুসলিমদের মাঝেও নাকফুল পরিধানের নীতি এরূপ কারণেই এসেছে। এক্ষণে মহিলাদের জন্য এটা ব্যবহার করা শরী‘আত সম্মত হবে কি?
-হাফীযুর রহমান
মহাদেবপুর, নওগাঁ।
উত্তর : উক্ত বক্তব্য ভুল। কোন মুসলিম মহিলাই স্বামীর মঙ্গলের জন্য নাকফুল পরে না। বরং এটি নারীদের অলংকার বিশেষ। যা তারা তাদের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার জন্য পরিধান করে থাকে। অতএব নাকফুল ব্যবহারে শরী‘আতে কোন বাধা নেই (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ২৪/৩৬)। আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘স্বর্ণ ও রেশমী কাপড় আমার উম্মতের নারীদের জন্য হালাল করা হয়েছে এবং পুরুষদের জন্য হারাম করা হয়েছে’ (ইবনু মাজাহ হা/৩৫৯৫, আবুদাঊদ হা/৪০৫৭, মিশকাত হা/৪৩৯৪)। উল্লেখ্য, মেয়েদের কান ফুটানোর বিষয়টিও জায়েয আছে। জাহেলী যুগে এটা করা হ’ত। কিন্তু ইসলামী যুগে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এটাতে কোন আপত্তি করেননি (ফিক্বহুস সুন্নাহ পৃঃ ২/৩৪)।
-হাফীযুর রহমান
মহাদেবপুর, নওগাঁ।
উত্তর : উক্ত বক্তব্য ভুল। কোন মুসলিম মহিলাই স্বামীর মঙ্গলের জন্য নাকফুল পরে না। বরং এটি নারীদের অলংকার বিশেষ। যা তারা তাদের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার জন্য পরিধান করে থাকে। অতএব নাকফুল ব্যবহারে শরী‘আতে কোন বাধা নেই (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ২৪/৩৬)। আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘স্বর্ণ ও রেশমী কাপড় আমার উম্মতের নারীদের জন্য হালাল করা হয়েছে এবং পুরুষদের জন্য হারাম করা হয়েছে’ (ইবনু মাজাহ হা/৩৫৯৫, আবুদাঊদ হা/৪০৫৭, মিশকাত হা/৪৩৯৪)। উল্লেখ্য, মেয়েদের কান ফুটানোর বিষয়টিও জায়েয আছে। জাহেলী যুগে এটা করা হ’ত। কিন্তু ইসলামী যুগে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এটাতে কোন আপত্তি করেননি (ফিক্বহুস সুন্নাহ পৃঃ ২/৩৪)।
-মান্না সরকার
পাঁচবিবি, জয়পুরহাট।
উত্তর: রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে, তখন তার সমস্ত আমল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কেবল তিনটি আমল ব্যতীত। (১) ছাদাক্বায়ে জারিয়াহ। (যেমন মসজিদ, মাদরাসা, ইয়াতীমখানা, রাস্তা ও বাঁধ নির্মাণ, অনাবাদী জমিকে আবাদকরণ, সুপেয় পানির ব্যবস্থাকরণ, দাতব্য চিকিৎসালয় ও হাসপাতাল স্থাপন বই ক্রয় করে বা ছাপিয়ে বিতরণ, বৃক্ষরোপণ ইত্যাদি)। (২) ইলম, যা দ্বারা মানুষ উপকৃত হয়। (যা মানুষকে নির্ভেজাল তাওহীদ ও ছহীহ সুন্নাহর পথ দেখায় এবং যাবতীয় শিরক ও বিদ‘আত হ’তে বিরত রাখে। উক্ত উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে শিক্ষাদান করা, ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে সহযোগিতা প্রদান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আমল সম্পন্ন বই-প্রবন্ধ লেখা, ছাপানো ও বিতরণ করা এবং এজন্য অন্যান্য স্থায়ী প্রচার মাধ্যম স্থাপন ও পরিচালনা করা ইত্যাদি)। (৩) সুসন্তান, যে তার জন্য দো‘আ করে’। (মৃতের জন্য সর্বোত্তম হাদিয়া হ’ল সুসন্তান, যে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, ছাদাক্বা করে, তার পক্ষ হ’তে হজ্জ করে ইত্যাদি)। (মুসলিম হা/১৬৩১, মিশকাত হা/২০৩)।
অন্য বর্ণনায় রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘মৃত্যুর পর কবরে থাকা অবস্থায় বান্দার সাতটি আমল জারী থাকে। (১) দ্বীনী ইলম শিক্ষা দান করা (২) নদী-নালা প্রবাহিত করা (৩) কূপ খনন করা (৪) খেজুর তথা ফলবান বৃক্ষ রোপণ করা (৫) মসজিদ নির্মাণ করা (৬) কুরআন বিতরণ করা (৭) এমন সন্তান রেখে যাওয়া, যে পিতার মৃত্যুর পর তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে’ (মুসনাদ বাযযার হা/৭২৮৯; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান; ছহীহুল জামে‘ হা/৩৬০২)। এটি পূর্বের হাদীছের ব্যাখ্যা স্বরূপ।
পাঁচবিবি, জয়পুরহাট।
উত্তর: রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে, তখন তার সমস্ত আমল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কেবল তিনটি আমল ব্যতীত। (১) ছাদাক্বায়ে জারিয়াহ। (যেমন মসজিদ, মাদরাসা, ইয়াতীমখানা, রাস্তা ও বাঁধ নির্মাণ, অনাবাদী জমিকে আবাদকরণ, সুপেয় পানির ব্যবস্থাকরণ, দাতব্য চিকিৎসালয় ও হাসপাতাল স্থাপন বই ক্রয় করে বা ছাপিয়ে বিতরণ, বৃক্ষরোপণ ইত্যাদি)। (২) ইলম, যা দ্বারা মানুষ উপকৃত হয়। (যা মানুষকে নির্ভেজাল তাওহীদ ও ছহীহ সুন্নাহর পথ দেখায় এবং যাবতীয় শিরক ও বিদ‘আত হ’তে বিরত রাখে। উক্ত উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে শিক্ষাদান করা, ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে সহযোগিতা প্রদান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আমল সম্পন্ন বই-প্রবন্ধ লেখা, ছাপানো ও বিতরণ করা এবং এজন্য অন্যান্য স্থায়ী প্রচার মাধ্যম স্থাপন ও পরিচালনা করা ইত্যাদি)। (৩) সুসন্তান, যে তার জন্য দো‘আ করে’। (মৃতের জন্য সর্বোত্তম হাদিয়া হ’ল সুসন্তান, যে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, ছাদাক্বা করে, তার পক্ষ হ’তে হজ্জ করে ইত্যাদি)। (মুসলিম হা/১৬৩১, মিশকাত হা/২০৩)।
অন্য বর্ণনায় রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘মৃত্যুর পর কবরে থাকা অবস্থায় বান্দার সাতটি আমল জারী থাকে। (১) দ্বীনী ইলম শিক্ষা দান করা (২) নদী-নালা প্রবাহিত করা (৩) কূপ খনন করা (৪) খেজুর তথা ফলবান বৃক্ষ রোপণ করা (৫) মসজিদ নির্মাণ করা (৬) কুরআন বিতরণ করা (৭) এমন সন্তান রেখে যাওয়া, যে পিতার মৃত্যুর পর তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে’ (মুসনাদ বাযযার হা/৭২৮৯; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান; ছহীহুল জামে‘ হা/৩৬০২)। এটি পূর্বের হাদীছের ব্যাখ্যা স্বরূপ।
১২
প্রশ্ন (১১/১৩১) : যে উদ্দেশ্যে মানত করা হয়েছিল, তা পূরণ না হলে মানত আদায় করতে হবে? আর যে বস্ত্তর মানত করা হয়েছিল তার পরিবর্তে সমমানের বস্ত্ত দান করা যাবে?যে উদ্দেশ্য পূরণের জন্য মানত করা হয়েছিল, তা পূরণ হয়নি। এক্ষণে মানত আদায় করতে হবে কি? আর যে বস্ত্ত দান করার মানত করা হয়েছিল তার পরিবর্তে সমমানের বস্ত্ত দান করা যাবে কি?
-মি‘রাজুল ইসলাম, কানাডা।
উত্তর : উদ্দেশ্য পূরণ না হ’লে মানত আদায় করতে হবে না (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা, ফৎওয়া নং ৭৬৪২)। কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই সমস্ত আমল নিয়তের উপরে নির্ভরশীল এবং প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য তাই হবে, যার সে নিয়ত করবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১)। দ্বিতীয়তঃ যে জিনিসের মানত মেনেছে সেটাই আদায় করতে হবে, যদি তা আল্লাহর আনুগত্যপূর্ণ কাজ হয়ে থাকে (বুখারী, মিশকাত হা/৩৪২৭)। সমমানের অন্য বস্ত্ত দ্বারা আদায় করা যাবে না। না পারলে কাফফারা দিতে হবে। তা হ’ল দশজন অভাবগ্রস্তকে মধ্যম মানের খাদ্য অথবা বস্ত্র দান করা অথবা একজন (মুমিন) ক্রীতদাস মুক্ত করা অথবা তিনদিন (একটানা) ছিয়াম রাখা (মায়েদাহ ৮৯, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৪২৯)।
-মি‘রাজুল ইসলাম, কানাডা।
উত্তর : উদ্দেশ্য পূরণ না হ’লে মানত আদায় করতে হবে না (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা, ফৎওয়া নং ৭৬৪২)। কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই সমস্ত আমল নিয়তের উপরে নির্ভরশীল এবং প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য তাই হবে, যার সে নিয়ত করবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১)। দ্বিতীয়তঃ যে জিনিসের মানত মেনেছে সেটাই আদায় করতে হবে, যদি তা আল্লাহর আনুগত্যপূর্ণ কাজ হয়ে থাকে (বুখারী, মিশকাত হা/৩৪২৭)। সমমানের অন্য বস্ত্ত দ্বারা আদায় করা যাবে না। না পারলে কাফফারা দিতে হবে। তা হ’ল দশজন অভাবগ্রস্তকে মধ্যম মানের খাদ্য অথবা বস্ত্র দান করা অথবা একজন (মুমিন) ক্রীতদাস মুক্ত করা অথবা তিনদিন (একটানা) ছিয়াম রাখা (মায়েদাহ ৮৯, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৪২৯)।
১৩
প্রশ্ন (১২/১৩২) : গোসল কি ওযূর বিকল্প হ’তে পারে? কেউ যদি ভুলবশতঃ কেবল গোসল করে ছালাত আদায় করে, তবে তা কবুল হবে কি?-নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
চরকুড়া, কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ।
উত্তর : ছালাত কবুল হওয়ার জন্য ওযূ শর্ত (মায়েদাহ ৫/৬)। অতএব গোসল ওযূর বিকল্প হবে না। ওযূ না করে গোসল করলে ছালাতের জন্য পুনরায় ওযূ করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, বায়ু নিঃসরণের পর ওযূ না করা পর্যন্ত আল্লাহ তোমাদের ছালাত কবুল করবেন না (বুখারী হা৬৯৫৪/, মুসলিম হা/২২৫)। এছাড়া ওযূ করার পর সর্বাঙ্গ ধৌত করাই গোসলের সুন্নাতী নিয়ম (বুখারী হা/২৪৮, মুসলিম হা/৩১৬, মিশকাত হা/৪৩৫)। অতএব ওযূ ব্যতীত স্রেফ গোসল করে ছালাত আদায় করলে পুনরায় ওযূ করে তা আদায় করতে হবে।
চরকুড়া, কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ।
উত্তর : ছালাত কবুল হওয়ার জন্য ওযূ শর্ত (মায়েদাহ ৫/৬)। অতএব গোসল ওযূর বিকল্প হবে না। ওযূ না করে গোসল করলে ছালাতের জন্য পুনরায় ওযূ করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, বায়ু নিঃসরণের পর ওযূ না করা পর্যন্ত আল্লাহ তোমাদের ছালাত কবুল করবেন না (বুখারী হা৬৯৫৪/, মুসলিম হা/২২৫)। এছাড়া ওযূ করার পর সর্বাঙ্গ ধৌত করাই গোসলের সুন্নাতী নিয়ম (বুখারী হা/২৪৮, মুসলিম হা/৩১৬, মিশকাত হা/৪৩৫)। অতএব ওযূ ব্যতীত স্রেফ গোসল করে ছালাত আদায় করলে পুনরায় ওযূ করে তা আদায় করতে হবে।
১৪
প্রশ্ন (১৩/১৩৩) : যাকাত ফান্ডের অর্থ মসজিদের সম্প্রসারণ, ইমাম ও মুওয়াযযিনের বেতন ইত্যাদি খাতে ব্যয় করা যাবে?যাকাত ফান্ডের অর্থ ছহীহ আক্বীদা আমলের প্রচারের স্বার্থে নির্মিত মসজিদের সম্প্রসারণ, ইমাম ও মুওয়াযযিনের বেতন ইত্যাদি খাতে ব্যয় করা যাবে কি?
-ডা. মানছূর আলী
তাহেরপুর, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : আল্লাহ রাববুল ‘আলামীন যাকাত বণ্টনের যেসব খাত উল্লেখ করেছেন, মসজিদ তার অন্তর্ভুক্ত নয় (তওবা ৯/৬০)। অতএব যাকাতের টাকা দিয়ে মসজিদ সম্প্রসারণ করা যাবে না (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৩৭৬, ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, মাসআলা নং ৩৬৮)। ইমাম বা মুওয়াযযিন অভাবগ্রস্থ হ’লে তাদেরকে দেওয়া যাবে। কিন্তু বেতন হিসাবে দেওয়া যাবে না। স্মর্তব্য যে, ইমাম-মুওয়াযযিন হচ্ছেন সমাজের সম্মানিত ব্যক্তি। তাদের দায়-দায়িত্ব সমাজের উপর ন্যস্ত। সুতরাং সমাজের লোকদের উচিত সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্মানজনক ভাতা বা বেতনের ব্যবস্থা করা (আবুদাঊদ হা/৩৫৮৮, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৩৭৪৮)।
-ডা. মানছূর আলী
তাহেরপুর, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : আল্লাহ রাববুল ‘আলামীন যাকাত বণ্টনের যেসব খাত উল্লেখ করেছেন, মসজিদ তার অন্তর্ভুক্ত নয় (তওবা ৯/৬০)। অতএব যাকাতের টাকা দিয়ে মসজিদ সম্প্রসারণ করা যাবে না (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৩৭৬, ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম, মাসআলা নং ৩৬৮)। ইমাম বা মুওয়াযযিন অভাবগ্রস্থ হ’লে তাদেরকে দেওয়া যাবে। কিন্তু বেতন হিসাবে দেওয়া যাবে না। স্মর্তব্য যে, ইমাম-মুওয়াযযিন হচ্ছেন সমাজের সম্মানিত ব্যক্তি। তাদের দায়-দায়িত্ব সমাজের উপর ন্যস্ত। সুতরাং সমাজের লোকদের উচিত সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্মানজনক ভাতা বা বেতনের ব্যবস্থা করা (আবুদাঊদ হা/৩৫৮৮, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৩৭৪৮)।
১৫
প্রশ্ন (১৪/১৩৪) : আল্লাহ তা‘আলা একদিন জিবরীল (আঃ)-কে একজন আল্লাহভীরু ব্যক্তি সহ একটি শহর ধ্বংস করার নির্দেশ দানের বর্ণনাটির সত্য?আল্লাহ তা‘আলা একদিন জিবরীল (আঃ)-কে কয়েকটি শহর ধ্বংস করতে বললে তিনি ঘুরে এসে বললেন, শহরগুলির একটিতে একজন আল্লাহভীরু ব্যক্তি রয়েছেন। কিন্তু তিনি তাঁকে সহই শহরটি ধ্বংস করার নির্দেশ দিলেন। বর্ণনাটির সত্যতা জানিয়ে বাধিত করবেন।
-মুস্তাফীযুর রহমান, পার্বতীপুর, দিনাজপুর।
উত্তর : এ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ, যা বিভিন্ন গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে (শু‘আবুল ঈমান হা/৭১৮৯; মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/১২১৫৬; মিশকাত হা/৫১৫২)। এর সনদে উবায়েদ বিন ইসহাক্ব ও আম্মার বিন সাইফ নামক দু’জন দুর্বল রাবী রয়েছেন (বিস্তারিত দ্রঃ আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/১৯০৪; হায়ছামী ও হাফেয ইরাক্বীও বর্ণনাটিকে যঈফ বলেছেন)।
-মুস্তাফীযুর রহমান, পার্বতীপুর, দিনাজপুর।
উত্তর : এ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ, যা বিভিন্ন গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে (শু‘আবুল ঈমান হা/৭১৮৯; মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/১২১৫৬; মিশকাত হা/৫১৫২)। এর সনদে উবায়েদ বিন ইসহাক্ব ও আম্মার বিন সাইফ নামক দু’জন দুর্বল রাবী রয়েছেন (বিস্তারিত দ্রঃ আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/১৯০৪; হায়ছামী ও হাফেয ইরাক্বীও বর্ণনাটিকে যঈফ বলেছেন)।
১৬
প্রশ্ন (১৫/১৩৫) : আযানের সময় বিভিন্ন মসজিদের যেকোন একটির উত্তর দিলেই হবে, না সবগুলিরই উত্তর দিতে হবে?আযানের সময় বিভিন্ন মসজিদের আযান শোনা যায়। এক্ষণে যেকোন একটির উত্তর দিলেই যথেষ্ট হবে, না সবগুলিরই উত্তর দিতে হবে?
-মূসা, সাঘাটা, গাইবান্ধা।
উত্তর : একটির উত্তর দিলেই যথেষ্ট হবে। এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যখন তোমরা আযান শুনবে, তখন মুওয়াযযিন যা বলে তদ্রূপ বল’... (মুসলিম, মিশকাত হা/৬৫৭)। অন্যত্র তিনি এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি মুওয়ায্যিনের পিছে পিছে আযানের বাক্যগুলি অন্তর থেকে পাঠ করে..., সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৬৫৮)। উল্লেখ্য যে, ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ’ বলার পরে ‘ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বলা যাবে না।
-মূসা, সাঘাটা, গাইবান্ধা।
উত্তর : একটির উত্তর দিলেই যথেষ্ট হবে। এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যখন তোমরা আযান শুনবে, তখন মুওয়াযযিন যা বলে তদ্রূপ বল’... (মুসলিম, মিশকাত হা/৬৫৭)। অন্যত্র তিনি এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি মুওয়ায্যিনের পিছে পিছে আযানের বাক্যগুলি অন্তর থেকে পাঠ করে..., সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৬৫৮)। উল্লেখ্য যে, ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ’ বলার পরে ‘ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বলা যাবে না।
-আযীম সরকার, সাভার, ঢাকা।
উত্তর : নিজ ধর্ম যথাযথভাবে পালন সাপেক্ষে বিধর্মী কোন ব্যক্তির সাথে হালাল ব্যবসা-বাণিজ্য করা যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে না এবং তোমাদেরকে তোমাদের বাড়ি থেকে বিতাড়িত করে না, তাদের সাথে সদাচরণ করতে আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করেন না’ (মুমতাহিনা ৬০/৮)। তিনি বলেন, ‘তোমরা ভাল ও তাক্বওয়াশীল কাজে পরস্পর সহযোগিতা কর। পাপ ও সীমালংঘনের কাজে সহযোগিতা করো না’ (মায়েদাহ ৪/২)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) খায়বারের জমি ও বাগান সেখানকার ইহূদীদেরকে নির্দিষ্ট অংশ প্রদানের শর্তে চাষাবাদ করার জন্য দিয়েছিলেন(বুখারী, মিশকাত হা/২৯৭২)। খেয়াল রাখতে হবে যেন উক্ত ব্যবসায় কোনভাবে সূদ-ঘুষ বা লেনদেনের কমবেশী ও কোনরূপ প্রতারণার আশ্রয় না নেওয়া হয়। কেননা এগুলি ইসলামী ব্যবসানীতির ঘোর বিরোধী।
উত্তর : নিজ ধর্ম যথাযথভাবে পালন সাপেক্ষে বিধর্মী কোন ব্যক্তির সাথে হালাল ব্যবসা-বাণিজ্য করা যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে না এবং তোমাদেরকে তোমাদের বাড়ি থেকে বিতাড়িত করে না, তাদের সাথে সদাচরণ করতে আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করেন না’ (মুমতাহিনা ৬০/৮)। তিনি বলেন, ‘তোমরা ভাল ও তাক্বওয়াশীল কাজে পরস্পর সহযোগিতা কর। পাপ ও সীমালংঘনের কাজে সহযোগিতা করো না’ (মায়েদাহ ৪/২)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) খায়বারের জমি ও বাগান সেখানকার ইহূদীদেরকে নির্দিষ্ট অংশ প্রদানের শর্তে চাষাবাদ করার জন্য দিয়েছিলেন(বুখারী, মিশকাত হা/২৯৭২)। খেয়াল রাখতে হবে যেন উক্ত ব্যবসায় কোনভাবে সূদ-ঘুষ বা লেনদেনের কমবেশী ও কোনরূপ প্রতারণার আশ্রয় না নেওয়া হয়। কেননা এগুলি ইসলামী ব্যবসানীতির ঘোর বিরোধী।
১৮
প্রশ্ন (১৭/১৩৭) : কাফন-দাফনে আগত আত্মীয়-স্বজনের জন্য মৃতের পরিবার থেকে খাবার ব্যবস্থা করা বা টাকা-পয়সা দিয়ে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে ব্যবস্থা করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?মৃত ব্যক্তির কাফন-দাফনের সময় আগত আত্মীয়-স্বজনের আপ্যায়নের জন্য মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে খাবার ব্যবস্থা করা বা টাকা-পয়সা দিয়ে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে ব্যবস্থা করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?
-কামরুল হাসান
আটগ্রাম, আত্রাই, নওগাঁ।
উত্তর : মৃত ব্যক্তির বাড়ীতে আত্মীয়-স্বজনের আপ্যায়নের জন্য রান্না-বান্না করা যাবে না। বরং প্রতিবেশীরা বা আত্মীয়-স্বজন উক্ত পরিবারের জন্য রান্না করে খাওয়াবে। মুতার যুদ্ধে জা‘ফর বিন আবু তালেব (রাঃ)-এর মৃত্যু খবর আসলে রাসূল (ছাঃ) বললেন, তোমরা জা‘ফরের পরিবারের জন্য খাদ্য তৈরী কর। কারণ তার পরিবার এখন শোকে কাতর (তিরমিযী, মিশকাত হা/১৭৩৯, ১৭৪৩)। প্রত্যেক মুসলিম সমাজে এ সুন্নাতী আমল জারী রাখা অবশ্য কর্তব্য। উল্লেখ্য যে, সমাজে মৃতব্যক্তির জানাযায় আগত সকলকে খাওয়ানোর রীতি চালু আছে, যা সুন্নাত পরিপন্থী। অতএব তা পরিত্যাজ্য।
-কামরুল হাসান
আটগ্রাম, আত্রাই, নওগাঁ।
উত্তর : মৃত ব্যক্তির বাড়ীতে আত্মীয়-স্বজনের আপ্যায়নের জন্য রান্না-বান্না করা যাবে না। বরং প্রতিবেশীরা বা আত্মীয়-স্বজন উক্ত পরিবারের জন্য রান্না করে খাওয়াবে। মুতার যুদ্ধে জা‘ফর বিন আবু তালেব (রাঃ)-এর মৃত্যু খবর আসলে রাসূল (ছাঃ) বললেন, তোমরা জা‘ফরের পরিবারের জন্য খাদ্য তৈরী কর। কারণ তার পরিবার এখন শোকে কাতর (তিরমিযী, মিশকাত হা/১৭৩৯, ১৭৪৩)। প্রত্যেক মুসলিম সমাজে এ সুন্নাতী আমল জারী রাখা অবশ্য কর্তব্য। উল্লেখ্য যে, সমাজে মৃতব্যক্তির জানাযায় আগত সকলকে খাওয়ানোর রীতি চালু আছে, যা সুন্নাত পরিপন্থী। অতএব তা পরিত্যাজ্য।
১৯
প্রশ্ন (১৮/১৩৮) : ফল পাকার সময় চাষীরা সুরক্ষার জন্য জাল টাঙিয়ে রাখে। কিন্তু তাতে পাখি আটকা পড়ে মারা যায়। এরূপ জাল ব্যবহারে শরী‘আতে বাধা আছে কি?কুল, লিচু, আঙ্গুর ইত্যাদি ফল পাকার সময় পাখিরা ক্ষতি করায় চাষীরা সুরক্ষার জন্য জাল টাঙিয়ে রাখে। কিন্তু তাতে পাখি বসে আটকা পড়ে এবং মারা যায়। এক্ষণে এরূপ জাল ব্যবহার করায় শরী‘আতে বাধা আছে কি?
-আব্দুছ ছবূর, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : সম্পদ রক্ষার উপকরণ ব্যবহার করাতে ক্ষতিকারক যে কোন কীট-পতঙ্গ বা পশু-পাখী মারা গেলে তাতে তারা দায়ী হবে না। কেননা প্রত্যেকেরই নিজের সম্পদ রক্ষা করার অধিকার রয়েছে। সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে ডাকাত বা ছিনতাইকারীকে হত্যা করা হ’লে নিহত ব্যক্তি জাহান্নামী হবে। আর মালিক মারা গেলে সে শহীদ হবে (মুসলিম হা/১৪০; মিশকাত হা/৩৫১৩)।
-আব্দুছ ছবূর, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : সম্পদ রক্ষার উপকরণ ব্যবহার করাতে ক্ষতিকারক যে কোন কীট-পতঙ্গ বা পশু-পাখী মারা গেলে তাতে তারা দায়ী হবে না। কেননা প্রত্যেকেরই নিজের সম্পদ রক্ষা করার অধিকার রয়েছে। সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে ডাকাত বা ছিনতাইকারীকে হত্যা করা হ’লে নিহত ব্যক্তি জাহান্নামী হবে। আর মালিক মারা গেলে সে শহীদ হবে (মুসলিম হা/১৪০; মিশকাত হা/৩৫১৩)।
-তাজুল ইসলাম, গাছবাড়ী, সিলেট।
উত্তর : এরূপ পোষাক ব্যবহার করা যাবে না। মিক্বদাম (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূল (ছাঃ) হিংস্র জন্তুর চামড়া পরতে এবং তার উপর বসতে নিষেধ করেছেন (আবুদাঊদ হা/৪১৩১, মিশকাত হা/৫০৫)। তিনি বলেন ‘তোমরা রেশমী কাপড় এবং বাঘের চামড়ার তৈরী গদির উপর সওয়ার হয়ো না (আবুদাঊদ হা/৪১২৯; নাসাঈ, মিশকাত হা/৪৩৫৭, সনদ ছহীহ)। অতএব সকল প্রকার হিংস্র প্রাণীর চামড়া পোষাক বা বসার স্থান হিসাবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
উত্তর : এরূপ পোষাক ব্যবহার করা যাবে না। মিক্বদাম (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূল (ছাঃ) হিংস্র জন্তুর চামড়া পরতে এবং তার উপর বসতে নিষেধ করেছেন (আবুদাঊদ হা/৪১৩১, মিশকাত হা/৫০৫)। তিনি বলেন ‘তোমরা রেশমী কাপড় এবং বাঘের চামড়ার তৈরী গদির উপর সওয়ার হয়ো না (আবুদাঊদ হা/৪১২৯; নাসাঈ, মিশকাত হা/৪৩৫৭, সনদ ছহীহ)। অতএব সকল প্রকার হিংস্র প্রাণীর চামড়া পোষাক বা বসার স্থান হিসাবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
-মাহতাবুদ্দীন, ঘোড়াঘাট, দিনাজপুর।
উত্তর : বার্ধক্যের কোন চিকিৎসা বা ঔষধ নেই। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, হে আল্লাহর বান্দারা! তোমরা ঔষধ ব্যবহার কর কেননা আল্লাহ তা‘আলা এমন কোন রোগ দেননি, যার আরোগ্যের কোন ব্যবস্থা দেননি। তবে একটি রোগ ব্যতীত। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, সে রোগটি কি? তিনি বললেন, বার্ধক্য’ (আহমাদ, তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৫৩২, সনদ ছহীহ)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিম্নোক্ত দো‘আটি পড়ে অতি বার্ধক্য হ’তে পানাহ চেয়েছেন, আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল জুব্নে ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিনাল বুখ্লে ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন আরযালিল ‘উমুরে; ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন্ ফিৎনাতিদ দুন্ইয়া ওয়া ‘আযা-বিল ক্বাবরে। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি ভীরুতা হ’তে, আশ্রয় প্রার্থনা করছি কৃপণতা হ’তে, আশ্রয় প্রার্থনা করছি নিকৃষ্টতম বয়স হ’তে এবং আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুনিয়ার ফিৎনা হ’তে ও কবরের আযাব হ’তে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৯৬৪)।
উত্তর : বার্ধক্যের কোন চিকিৎসা বা ঔষধ নেই। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, হে আল্লাহর বান্দারা! তোমরা ঔষধ ব্যবহার কর কেননা আল্লাহ তা‘আলা এমন কোন রোগ দেননি, যার আরোগ্যের কোন ব্যবস্থা দেননি। তবে একটি রোগ ব্যতীত। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, সে রোগটি কি? তিনি বললেন, বার্ধক্য’ (আহমাদ, তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৫৩২, সনদ ছহীহ)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিম্নোক্ত দো‘আটি পড়ে অতি বার্ধক্য হ’তে পানাহ চেয়েছেন, আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল জুব্নে ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিনাল বুখ্লে ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন আরযালিল ‘উমুরে; ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন্ ফিৎনাতিদ দুন্ইয়া ওয়া ‘আযা-বিল ক্বাবরে। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি ভীরুতা হ’তে, আশ্রয় প্রার্থনা করছি কৃপণতা হ’তে, আশ্রয় প্রার্থনা করছি নিকৃষ্টতম বয়স হ’তে এবং আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুনিয়ার ফিৎনা হ’তে ও কবরের আযাব হ’তে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৯৬৪)।
-আব্দুল্লাহিল কাফী, ছোটবনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : এ তাফসীরে কিছু ভ্রান্ত আক্বীদা ও আমল এবং বহু স্থানে ভুল তাফসীরের সমাবেশ ঘটেছে। ফলে একে বিশুদ্ধ তাফসীর বলা যায় না। এর মধ্যে উল্লেখিত ভুলগুলোর কিছু দৃষ্টান্ত পেশ করা হ’ল : (১) ‘নবী’ বা ‘ওলী’র বরাত দিয়েও আল্লাহ তা‘আলার সাহায্য প্রার্থনা করা কুরআনের নির্দেশ ও হাদীছের বর্ণনায় বৈধ প্রমাণিত হয়েছে’ (পৃঃ ৯, ৩২৭)। অথচ মৃত নবী বা অন্য কারুর অসীলা দিয়ে প্রার্থনা করা স্পষ্ট শিরক (মুসলিম হা/২০৪; মিশকাত হা/৫৩৭৩) (২) ‘সৃষ্ট জগতের মাঝে সর্বপ্রথম রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নূর সৃষ্টি করা হয়েছে’... এক হাদীছে বলা হয়েছে, আল্লাহ তা‘আলা সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করেছেন’ (পৃঃ ৪২৮)। অথচ এটি সম্পূর্ণ ভুল আক্বীদা এবং হাদীছটি জাল (ছহীহাহ হা/৪৫৮-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)। (৩) ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁর পবিত্র রওজা শরীফে জীবিত আছেন।... এ কারণই তাঁর পরিত্যক্ত সম্পত্তি বণ্টন করা হয়নি এবং এর ভিত্তিতেই তাঁর পত্নীগণের অবস্থা অপরাপর বিধবা নারীদের মত হয়নি’ (পৃঃ ১০৯৩)। অথচ ‘হায়াতুন্নবী’-র এই আক্বীদা পরিষ্কার শিরকী আক্বীদা (যুমার ৩০) (৪) ‘কোন না কোন একজন মুজতাহিদ ইমামের তাক্বলীদ করা অপরিহার্য। সকল মুজতাহিদ ইমামই সত্য’ (পৃঃ ৭৪৩)। অথচ কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণই কেবল অপরিহার্য এবং মুজতাহিদ ইমামগণ ভুলের ঊর্ধ্বে নন (৫) ‘আল্লাহ তা‘আলার কোন আকার নেই’ (পৃঃ ১৪৬৫)। অথচ কুরতুবী স্বীয় তাফসীরে অন্যের মন্তব্য উদ্ধৃত করেছেন এভাবে যে, ‘আমরা মানুষকে সর্বোত্তম অবয়বে সৃষ্টি করেছি’। এর অর্থ অনেকে করেছেন علي صورة الرحمن ‘আল্লাহর আকৃতিতে’। অথচ আল্লাহর বাস্তব আকার ( صورة مةشخصة ) কোথায় আছে ভাবার্থ ব্যতীত? (ঐ, ২০/১১৪)’। এ বিষয়ে সঠিক আক্বীদা হ’ল এই যে, আললাহর আকার আছে। কিন্তু তার তুলনীয় কিছুই নেই (শূরা ১১)। (৬) ‘এলমে তাছাউফও ফরযে আইনের অন্তর্ভুক্ত’ (পৃঃ ৫৯৬)। অথচ দ্বীনী ইলম হাছিল করা ফরয। ইসলামের সকল ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য হ’ল তাযকিয়ায়ে নাফ্স বা আত্মশুদ্ধি। পৃথকভাবে ইলমে তাছাউওফের কোন অস্তিত্ব শরী‘আতে নেই। বরং কথিত ছুফীবাদের চোরাগলি দিয়েই মুলমানদের মধ্যে অধিকাংশ শিরক প্রবেশ করেছে (৭) অনুরূপভাবে সূরায়ে ‘মুহাম্মাদ’ ৩৮ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম সৈয়ূতীর বরাতে বলা হয়েছে যে, ‘আলোচ্য আয়াতে ইমাম আবু হানীফা ও তাঁর সহচরদেরকে বুঝানো হয়েছে। কেননা তাঁরা পারস্য সন্তান। কোন দলই জ্ঞানের সেই স্তরে পৌঁছেনি, যেখানে আবু হানীফা ও তাঁর সহচরগণ পৌঁছেছেন’ (পৃঃ ১২৬৩)। এমনিভাবে অসংখ্য শিরকী আক্বীদা ও বিদ‘আতী আমলের প্রচারণা চালানো হয়েছে অত্র তাফসীর গ্রন্থে। অতএব কেউ পড়তে চাইলে জ্ঞান-বিবেক জাগ্রত রেখেই এ তাফসীর পড়তে হবে। কেননা তার মধ্যে অনেক শিক্ষণীয় বিষয় ও রয়েছে।
উত্তর : এ তাফসীরে কিছু ভ্রান্ত আক্বীদা ও আমল এবং বহু স্থানে ভুল তাফসীরের সমাবেশ ঘটেছে। ফলে একে বিশুদ্ধ তাফসীর বলা যায় না। এর মধ্যে উল্লেখিত ভুলগুলোর কিছু দৃষ্টান্ত পেশ করা হ’ল : (১) ‘নবী’ বা ‘ওলী’র বরাত দিয়েও আল্লাহ তা‘আলার সাহায্য প্রার্থনা করা কুরআনের নির্দেশ ও হাদীছের বর্ণনায় বৈধ প্রমাণিত হয়েছে’ (পৃঃ ৯, ৩২৭)। অথচ মৃত নবী বা অন্য কারুর অসীলা দিয়ে প্রার্থনা করা স্পষ্ট শিরক (মুসলিম হা/২০৪; মিশকাত হা/৫৩৭৩) (২) ‘সৃষ্ট জগতের মাঝে সর্বপ্রথম রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নূর সৃষ্টি করা হয়েছে’... এক হাদীছে বলা হয়েছে, আল্লাহ তা‘আলা সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করেছেন’ (পৃঃ ৪২৮)। অথচ এটি সম্পূর্ণ ভুল আক্বীদা এবং হাদীছটি জাল (ছহীহাহ হা/৪৫৮-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)। (৩) ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁর পবিত্র রওজা শরীফে জীবিত আছেন।... এ কারণই তাঁর পরিত্যক্ত সম্পত্তি বণ্টন করা হয়নি এবং এর ভিত্তিতেই তাঁর পত্নীগণের অবস্থা অপরাপর বিধবা নারীদের মত হয়নি’ (পৃঃ ১০৯৩)। অথচ ‘হায়াতুন্নবী’-র এই আক্বীদা পরিষ্কার শিরকী আক্বীদা (যুমার ৩০) (৪) ‘কোন না কোন একজন মুজতাহিদ ইমামের তাক্বলীদ করা অপরিহার্য। সকল মুজতাহিদ ইমামই সত্য’ (পৃঃ ৭৪৩)। অথচ কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণই কেবল অপরিহার্য এবং মুজতাহিদ ইমামগণ ভুলের ঊর্ধ্বে নন (৫) ‘আল্লাহ তা‘আলার কোন আকার নেই’ (পৃঃ ১৪৬৫)। অথচ কুরতুবী স্বীয় তাফসীরে অন্যের মন্তব্য উদ্ধৃত করেছেন এভাবে যে, ‘আমরা মানুষকে সর্বোত্তম অবয়বে সৃষ্টি করেছি’। এর অর্থ অনেকে করেছেন علي صورة الرحمن ‘আল্লাহর আকৃতিতে’। অথচ আল্লাহর বাস্তব আকার ( صورة مةشخصة ) কোথায় আছে ভাবার্থ ব্যতীত? (ঐ, ২০/১১৪)’। এ বিষয়ে সঠিক আক্বীদা হ’ল এই যে, আললাহর আকার আছে। কিন্তু তার তুলনীয় কিছুই নেই (শূরা ১১)। (৬) ‘এলমে তাছাউফও ফরযে আইনের অন্তর্ভুক্ত’ (পৃঃ ৫৯৬)। অথচ দ্বীনী ইলম হাছিল করা ফরয। ইসলামের সকল ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য হ’ল তাযকিয়ায়ে নাফ্স বা আত্মশুদ্ধি। পৃথকভাবে ইলমে তাছাউওফের কোন অস্তিত্ব শরী‘আতে নেই। বরং কথিত ছুফীবাদের চোরাগলি দিয়েই মুলমানদের মধ্যে অধিকাংশ শিরক প্রবেশ করেছে (৭) অনুরূপভাবে সূরায়ে ‘মুহাম্মাদ’ ৩৮ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম সৈয়ূতীর বরাতে বলা হয়েছে যে, ‘আলোচ্য আয়াতে ইমাম আবু হানীফা ও তাঁর সহচরদেরকে বুঝানো হয়েছে। কেননা তাঁরা পারস্য সন্তান। কোন দলই জ্ঞানের সেই স্তরে পৌঁছেনি, যেখানে আবু হানীফা ও তাঁর সহচরগণ পৌঁছেছেন’ (পৃঃ ১২৬৩)। এমনিভাবে অসংখ্য শিরকী আক্বীদা ও বিদ‘আতী আমলের প্রচারণা চালানো হয়েছে অত্র তাফসীর গ্রন্থে। অতএব কেউ পড়তে চাইলে জ্ঞান-বিবেক জাগ্রত রেখেই এ তাফসীর পড়তে হবে। কেননা তার মধ্যে অনেক শিক্ষণীয় বিষয় ও রয়েছে।
২৩
প্রশ্ন (২২/১৪২) : মালফূযাত গ্রন্থের ২৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিত ‘যাকাতের দরজা হাদিয়ার নিম্নে।’ এর সত্যতা জানিয়ে বাধিত করবেন।মাওলানা ইলিয়াস ছাহেব লিখিত মালফূযাত গ্রন্থের ২৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে যে, ‘যাকাতের দরজা হাদিয়ার নিম্নে। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর উপর ছাদাক্বা হারাম ছিল, হাদিয়া হারাম ছিল না।’ এর সত্যতা জানিয়ে বাধিত করবেন।
-আব্দুল আলীম
কাঞ্চন, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।
উত্তর : উল্লিখিত মন্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কারণ ইসলামী শরী‘আতে যাকাত ‘ফরয’। যে পাঁচটি স্তম্ভের উপর ইসলাম দাঁড়িয়ে আছে, তার অন্যতম হচ্ছে যাকাত। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা ছালাত কায়েম কর, যাকাত আদায় কর ও রাসূলের আনুগত্য কর। অবশ্যই তোমরা রহমত প্রাপ্ত হবে’ (নূর ২৪/৫৬)। পবিত্র কুরআনের বহু স্থানে ছালাতের পরেই যাকাতের নির্দেশ এসেছে। ছহীহ হাদীছে যাকাতকে ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ বলা হয়েছে। অপরদিকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার জন্য হাদিয়ার কথা বলেছেন মাত্র। পারস্পরিক ‘হাদিয়া’ প্রদান করা সুন্নাত। কাজেই যাকাতের ‘ফরয’ দরজা হাদিয়ার নিম্নে উল্লেখ করা নিতান্ত অন্যায়। দ্বিতীয়তঃ যাকাত হ’ল ছাদাক্বা বা ফরয অনুদান। যা গ্রহণ করা বিশ্বনবী হিসাবে রাসূল (ছাঃ) ও তাঁর পরিবারের জন্য মর্যাদাকর নয়। পক্ষান্তরে ‘হাদিয়া’ হ’ল উপঢৌকন। এতে মর্যাদা হানিকর কিছু নেই। সম্ভবতঃ সেকারণে রাসূল (ছাঃ)-এর জন্য ‘হাদিয়া’ হারাম করা হয়নি।
-আব্দুল আলীম
কাঞ্চন, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।
উত্তর : উল্লিখিত মন্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কারণ ইসলামী শরী‘আতে যাকাত ‘ফরয’। যে পাঁচটি স্তম্ভের উপর ইসলাম দাঁড়িয়ে আছে, তার অন্যতম হচ্ছে যাকাত। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা ছালাত কায়েম কর, যাকাত আদায় কর ও রাসূলের আনুগত্য কর। অবশ্যই তোমরা রহমত প্রাপ্ত হবে’ (নূর ২৪/৫৬)। পবিত্র কুরআনের বহু স্থানে ছালাতের পরেই যাকাতের নির্দেশ এসেছে। ছহীহ হাদীছে যাকাতকে ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ বলা হয়েছে। অপরদিকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার জন্য হাদিয়ার কথা বলেছেন মাত্র। পারস্পরিক ‘হাদিয়া’ প্রদান করা সুন্নাত। কাজেই যাকাতের ‘ফরয’ দরজা হাদিয়ার নিম্নে উল্লেখ করা নিতান্ত অন্যায়। দ্বিতীয়তঃ যাকাত হ’ল ছাদাক্বা বা ফরয অনুদান। যা গ্রহণ করা বিশ্বনবী হিসাবে রাসূল (ছাঃ) ও তাঁর পরিবারের জন্য মর্যাদাকর নয়। পক্ষান্তরে ‘হাদিয়া’ হ’ল উপঢৌকন। এতে মর্যাদা হানিকর কিছু নেই। সম্ভবতঃ সেকারণে রাসূল (ছাঃ)-এর জন্য ‘হাদিয়া’ হারাম করা হয়নি।
-আনোয়ারুল ইসলাম
বামনগ্রাম, লালপুর, নাটোর।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ছালাত আদায়কারী তার ডানে এবং বামে থাকা ভাইদেরকে সালাম প্রদান করবে (মুসলিম হা/৪৩১; ছহীহুল জামে‘ হা/৪০১৯)। অতএব সালাম ফিরানোর সময় ডানে এবং বামে থাকা ভাইদেরকে সালাম প্রদানের নিয়ত করবে। আর যদি একাকী ছালাত আদায় করে, তাহ’লে ডানে ও বামে থাকা ফেরেশতাদের সালাম প্রদানের নিয়ত করবে (ইমাম নববী, আল-মাজমূ‘ ৩/৪৫৬, ৪৬২; ইবনু কুদামা, আল-মুগনী ১/৩২৬, ৩২৭; শায়খ ওছাইমীন, শারহুল মুমতে‘ ৩/২০৮)। সর্বোপরি রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত অনুসরণে এটা করা হয়। যার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা সম্ভব।
বামনগ্রাম, লালপুর, নাটোর।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ছালাত আদায়কারী তার ডানে এবং বামে থাকা ভাইদেরকে সালাম প্রদান করবে (মুসলিম হা/৪৩১; ছহীহুল জামে‘ হা/৪০১৯)। অতএব সালাম ফিরানোর সময় ডানে এবং বামে থাকা ভাইদেরকে সালাম প্রদানের নিয়ত করবে। আর যদি একাকী ছালাত আদায় করে, তাহ’লে ডানে ও বামে থাকা ফেরেশতাদের সালাম প্রদানের নিয়ত করবে (ইমাম নববী, আল-মাজমূ‘ ৩/৪৫৬, ৪৬২; ইবনু কুদামা, আল-মুগনী ১/৩২৬, ৩২৭; শায়খ ওছাইমীন, শারহুল মুমতে‘ ৩/২০৮)। সর্বোপরি রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত অনুসরণে এটা করা হয়। যার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা সম্ভব।
প্রস্রাব শেষে দু’এক কদম হাঁটার পর সবসময়ই দু’এক ফোঁটা প্রস্রাব নির্গত হ’তে দেখা যায়। এক্ষণে টয়লেটের মধ্যেই টিস্যু নিয়ে দু’এক কদম হাঁটায় কোন বাধা আছে কি?
-এম. এ. রহমান
রাণীবাজার, ঘোড়ামারা, রাজশাহী।
উত্তর : এটা এক প্রকার রোগ। এর জন্য চিকিৎসা নিতে হবে। এক্ষত্রে সর্বশেষ ফোঁটা বের হয়ে আসা পর্যন্ত বসে থেকে পানি দিয়ে ধুয়ে তারপর উঠবে। আর পানি না থাকলে ঢিলা অথবা টিস্যু ব্যবহার করবে (তিরমিযী হা/১৬, ইবনু মাজাহ হা/৩১৬, সনদ ছহীহ)। এরপরেও দু’এক ফোঁট নির্গত হ’তে দেখলে টয়লেটের ভিতরে থেকে প্রস্রাব হ’তে পবিত্র হওয়ার জন্য যে কোন উপায় গ্রহণ করা যেতে পারে।
-এম. এ. রহমান
রাণীবাজার, ঘোড়ামারা, রাজশাহী।
উত্তর : এটা এক প্রকার রোগ। এর জন্য চিকিৎসা নিতে হবে। এক্ষত্রে সর্বশেষ ফোঁটা বের হয়ে আসা পর্যন্ত বসে থেকে পানি দিয়ে ধুয়ে তারপর উঠবে। আর পানি না থাকলে ঢিলা অথবা টিস্যু ব্যবহার করবে (তিরমিযী হা/১৬, ইবনু মাজাহ হা/৩১৬, সনদ ছহীহ)। এরপরেও দু’এক ফোঁট নির্গত হ’তে দেখলে টয়লেটের ভিতরে থেকে প্রস্রাব হ’তে পবিত্র হওয়ার জন্য যে কোন উপায় গ্রহণ করা যেতে পারে।
২৬
প্রশ্ন (২৫/১৪৫) : সূরা ফাতিহার ‘ওয়ালাযযাল্লীন’ পাঠে উচ্চারণগত মতপার্থক্যের কারণে ছালাত বিনষ্ট বা গুনাহ হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে কি?সূরা ফাতিহার ‘ওয়ালাযযাল্লীন’ পাঠে ক্বারীগণের মতভেদ রয়েছে। এক্ষণে এরূপ উচ্চারণগত মতপার্থক্যের কারণে ছালাত বিনষ্ট বা গুনাহ হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে কি?
-আব্দুল লতীফ, বগুড়া।
উত্তর : বিশুদ্ধভাবে কুরআন পাঠকারী ক্বারীদের মাঝে ‘ওয়ালাযযাল্লীন’ পাঠের ক্ষেত্রে কোন মতভেদ নেই। প্রতিটি আরবী অক্ষরের মাখরাজ বা নির্দিষ্ট উচ্চারণস্থল রয়েছে। আরবী অক্ষর মাখরাজ অনুযায়ী উচ্চারণ করতে হবে। ‘যোয়াদ’-কে অন্য অক্ষরের ন্যায় উচ্চারণ করা হ’লে অর্থ পরিবর্তন হয়ে যাবে। ফলে ছালাত বাতিল না হ’লেও ত্রুটিপূর্ণ হবে। অতএব আরবী হরফের মাখরাজ অনুযায়ী বিশুদ্ধভাবে উচ্চারণ করে পড়া যরূরী। তবে ভুলক্রমে বা চেষ্টা করা সত্ত্বেও উচ্চারণ করতে না পারলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
-আব্দুল লতীফ, বগুড়া।
উত্তর : বিশুদ্ধভাবে কুরআন পাঠকারী ক্বারীদের মাঝে ‘ওয়ালাযযাল্লীন’ পাঠের ক্ষেত্রে কোন মতভেদ নেই। প্রতিটি আরবী অক্ষরের মাখরাজ বা নির্দিষ্ট উচ্চারণস্থল রয়েছে। আরবী অক্ষর মাখরাজ অনুযায়ী উচ্চারণ করতে হবে। ‘যোয়াদ’-কে অন্য অক্ষরের ন্যায় উচ্চারণ করা হ’লে অর্থ পরিবর্তন হয়ে যাবে। ফলে ছালাত বাতিল না হ’লেও ত্রুটিপূর্ণ হবে। অতএব আরবী হরফের মাখরাজ অনুযায়ী বিশুদ্ধভাবে উচ্চারণ করে পড়া যরূরী। তবে ভুলক্রমে বা চেষ্টা করা সত্ত্বেও উচ্চারণ করতে না পারলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
২৭
প্রশ্ন (২৬/১৪৬) : জামা‘আতবদ্ধ ছালাতে ইমাম অধিকহারে ভুল করলে মুক্তাদীদের করণীয় কি? এরূপ ছালাত পুনরায় আদায় করতে হবে কি?-আব্দুল হাদী নাসীম
আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা।
উত্তর : ছালাতে ইমাম ভুল করলে মুক্তাদীদের কর্তব্য হ’ল লোকমা দিয়ে ভুলটি শুধরিয়ে দেওয়া (আবুদাঊদ হা/৯০৭, সনদ হাসান)। আর শুধরানো সম্ভব না হ’লে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ছালাত বাতিল হবে না। আর ইমাম উদাসীনতার কারণে বার বার ভুল করলে এর গুনাহ তার উপরে বর্তাবে, মুক্তাদীর উপরে নয়। ছালাতে ভুলক্রমে কোন ‘ওয়াজিব’ তরক হয়ে গেলে শেষ বৈঠকের তাশাহ্হুদ শেষে সালাম ফিরানোর পূর্বে ‘সিজদায়ে সহো’ দিতে হয়। শাওকানী বলেন, ওয়াজিব তরক হ’লে ‘সিজদায়ে সহো’ ওয়াজিব হবে এবং সুন্নাত তরক হ’লে ‘সিজদায়ে সহো’ সুন্নাত হবে (আস-সায়লুল জাররা-র ১/২৭৪ পৃঃ)। কিন্তু ছালাতে ক্বিরাআত ভুল হ’লে বা সের্রী ছালাতে ভুলবশত ক্বিরাআত জোরে বা তার বিপরীত হয়ে গেলে সহো সিজদার প্রয়োজন নেই।
স্মর্তব্য যে, ছালাতের প্রতি যত্নবান হওয়া সফল মুমিনের বৈশিষ্ট্য (মা‘আরিজ ৭০/৩৪)। আর ছালাতে উদাসীনদের জন্য রয়েছে ‘দুর্ভোগ’ (মাউন ১০৭/৫)। অতএব ইমামদের কর্তব্য হ’ল পূর্ণ সচেতনতার সাথে ইমামতির দায়িত্ব পালন করা।
আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা।
উত্তর : ছালাতে ইমাম ভুল করলে মুক্তাদীদের কর্তব্য হ’ল লোকমা দিয়ে ভুলটি শুধরিয়ে দেওয়া (আবুদাঊদ হা/৯০৭, সনদ হাসান)। আর শুধরানো সম্ভব না হ’লে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ছালাত বাতিল হবে না। আর ইমাম উদাসীনতার কারণে বার বার ভুল করলে এর গুনাহ তার উপরে বর্তাবে, মুক্তাদীর উপরে নয়। ছালাতে ভুলক্রমে কোন ‘ওয়াজিব’ তরক হয়ে গেলে শেষ বৈঠকের তাশাহ্হুদ শেষে সালাম ফিরানোর পূর্বে ‘সিজদায়ে সহো’ দিতে হয়। শাওকানী বলেন, ওয়াজিব তরক হ’লে ‘সিজদায়ে সহো’ ওয়াজিব হবে এবং সুন্নাত তরক হ’লে ‘সিজদায়ে সহো’ সুন্নাত হবে (আস-সায়লুল জাররা-র ১/২৭৪ পৃঃ)। কিন্তু ছালাতে ক্বিরাআত ভুল হ’লে বা সের্রী ছালাতে ভুলবশত ক্বিরাআত জোরে বা তার বিপরীত হয়ে গেলে সহো সিজদার প্রয়োজন নেই।
স্মর্তব্য যে, ছালাতের প্রতি যত্নবান হওয়া সফল মুমিনের বৈশিষ্ট্য (মা‘আরিজ ৭০/৩৪)। আর ছালাতে উদাসীনদের জন্য রয়েছে ‘দুর্ভোগ’ (মাউন ১০৭/৫)। অতএব ইমামদের কর্তব্য হ’ল পূর্ণ সচেতনতার সাথে ইমামতির দায়িত্ব পালন করা।
২৮
প্রশ্ন (২৭/১৪৭) : তাশাহহুদে বসা অবস্থায় দৃষ্টি সিজদার স্থানের দিকে না আঙ্গুল নাড়ানোর দিকে রাখতে হবে?-যাকারিয়া হাবীব, বগুড়া।
উত্তর : তাশাহহুদে বসা অবস্থায় দৃষ্টি রাখতে হবে আঙ্গুলের ইশারার দিকে। রাসূল (ছাঃ) যখন তাশাহহুদে বসতেন, তখন ...তর্জনী আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন এবং তাঁর দৃষ্টি আঙ্গুলের ইশারা বরাবর থাকত তার বাইরে যেত না। (আবুদাউদ হা/৯৮৮, ৯৯০; নাসাঈ হা/১২৭৫; মিশকাত হা/৯১২)। ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, তাশাহহুদের সময় দৃষ্টি আঙ্গুলের উপর রাখাই সুন্নাত (নববী, শারহ মুসলিম হা/৯১০, নায়লুল আওতার ২/৩১৭)।
উত্তর : তাশাহহুদে বসা অবস্থায় দৃষ্টি রাখতে হবে আঙ্গুলের ইশারার দিকে। রাসূল (ছাঃ) যখন তাশাহহুদে বসতেন, তখন ...তর্জনী আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন এবং তাঁর দৃষ্টি আঙ্গুলের ইশারা বরাবর থাকত তার বাইরে যেত না। (আবুদাউদ হা/৯৮৮, ৯৯০; নাসাঈ হা/১২৭৫; মিশকাত হা/৯১২)। ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, তাশাহহুদের সময় দৃষ্টি আঙ্গুলের উপর রাখাই সুন্নাত (নববী, শারহ মুসলিম হা/৯১০, নায়লুল আওতার ২/৩১৭)।
৩০
প্রশ্ন (২৯/১৪৯) : পেনশন দ্বারা হজ্জের ফরযিয়াত আদায় করা যরূরী না স্ত্রী-সন্তানদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ করা যরূরী হবে?আমি পেনশন হিসাবে যে অর্থ পেয়েছি তা দ্বারা আমার জন্য হজ্জের ফরযিয়াত আদায় করা যরূরী না স্ত্রী-সন্তানদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ করা যরূরী হবে? সঠিক সিদ্ধান্ত জানতে চাই।
-কামাল হোসাইন, পাংশা, রাজবাড়ী।
উত্তর : খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা এগুলি মানুষের মৌলিক চাহিদা। এক্ষণে যদি পরিবারের জন্য থাকার উপযোগী নিজস্ব কোন বাসস্থান না থাকে, তাহ’লে প্রথমে বাসস্থান নির্মাণ করবে। অতঃপর সামর্থ্য থাকলে হজ্জ করবে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) বলেন, একজন লোক তাকে জিজ্ঞেস করল, আমরা কি দরিদ্র মুহাজিরদের অন্তর্ভুক্ত নই? আব্দুল্লাহ (রাঃ) তাকে বললেন, তোমার কি স্ত্রী আছে, যেখানে তুমি শান্তি পেতে পার? লোকটি বলল, হ্যাঁ। তোমার বাসস্থান আছে কি যেখানে তুমি আশ্রয় নিতে পার? লোকটি বলল, জি হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহ’লে তুমি ধনী (মুসলিম হা/২৯৭৯, মিশকাত হা/৫২৫৭)।
-কামাল হোসাইন, পাংশা, রাজবাড়ী।
উত্তর : খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা এগুলি মানুষের মৌলিক চাহিদা। এক্ষণে যদি পরিবারের জন্য থাকার উপযোগী নিজস্ব কোন বাসস্থান না থাকে, তাহ’লে প্রথমে বাসস্থান নির্মাণ করবে। অতঃপর সামর্থ্য থাকলে হজ্জ করবে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) বলেন, একজন লোক তাকে জিজ্ঞেস করল, আমরা কি দরিদ্র মুহাজিরদের অন্তর্ভুক্ত নই? আব্দুল্লাহ (রাঃ) তাকে বললেন, তোমার কি স্ত্রী আছে, যেখানে তুমি শান্তি পেতে পার? লোকটি বলল, হ্যাঁ। তোমার বাসস্থান আছে কি যেখানে তুমি আশ্রয় নিতে পার? লোকটি বলল, জি হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহ’লে তুমি ধনী (মুসলিম হা/২৯৭৯, মিশকাত হা/৫২৫৭)।
৩১
প্রশ্ন (৩০/১৫০) : জনৈক ধার্মিক ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাত করে বিপুল সম্পদের মালিক। তার ধার্মিক কোন মেয়েকে বিবাহ করা জায়েয হবে কি?জনৈক ধার্মিক ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাতের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে পরবর্তীতে মারা গেছেন। তার মেয়েরাও ধার্মিক। এক্ষণে তার কোন মেয়েকে বিবাহ করা জায়েয হবে কি?
-মাহফূযুর রহমান, জেদ্দা, সঊদী আরব।
উত্তর : এরূপ মেয়েদের বিবাহ করায় কোন দোষ নেই। বরং ধার্মিক মনে করলে তাদেরকেই বিবাহ করতে হবে (তিরমিযী, মিশকাত হা/৩০৯০)। অবৈধ সম্পদ উপার্জনের জন্য পিতা দায়ী হবেন, সন্তানরা নয় (আন‘আম ৬/১৬৪)।
-মাহফূযুর রহমান, জেদ্দা, সঊদী আরব।
উত্তর : এরূপ মেয়েদের বিবাহ করায় কোন দোষ নেই। বরং ধার্মিক মনে করলে তাদেরকেই বিবাহ করতে হবে (তিরমিযী, মিশকাত হা/৩০৯০)। অবৈধ সম্পদ উপার্জনের জন্য পিতা দায়ী হবেন, সন্তানরা নয় (আন‘আম ৬/১৬৪)।
৩২
প্রশ্ন (৩১/১৫১) : বোন পিতার সম্মতি ছাড়াই বিবাহ করে বাড়ি ছাড়লে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা যাবে কি?আমার ছোট বোন জনৈক লম্পট ছেলেকে পিতার সম্মতি ছাড়াই বিবাহ করে বাড়ি ছেড়েছে। এক্ষণে আমাদের করণীয় কি? তার দৈনিক খরচ নির্বাহের জন্য প্রদত্ত অর্থ এবং পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা যাবে কি? অথচ তা প্রদান করলেও উক্ত লম্পট ছেলেটি তা হারাম কাজে ব্যবহার করবে। এক্ষণে আমাদের করণীয় কি?
-আমীনুল সরকার
ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক।
উত্তর : ধর্মত্যাগ ও হত্যাকারী ব্যতীত সন্তানকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার কোন বিধান শরী‘আতে নেই (বুখারী, মুসলিম, আবুদাঊদ মিশকাত হা/৩০৪৩, ৩৫০০)। পিতা-মাতা একাজ করলে সন্তানের হক নষ্ট করা হবে, যা পরকালে নিজের নেকী থেকে তাকে পরিশোধ করতে হবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১২৭)। এক্ষণে পিতার জন্য করণীয় হ’ল, দ্রুত সমাঝোতা করে নতুনভাবে বিবাহের ব্যবস্থা করা অথবা মেয়েকে বুঝিয়ে ফিরিয়ে আনা। কারণ অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত নারীদের বিবাহ জায়েয নয় (তিরমিযী, মিশকাত হা/৩১৩১)। অথবা মেয়ে স্বামীর সাথে ‘খোলা’ করে ফিরে আসবে। কারণ এভাবে একত্রে অবস্থান করা যেনার শামিল।
-আমীনুল সরকার
ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক।
উত্তর : ধর্মত্যাগ ও হত্যাকারী ব্যতীত সন্তানকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার কোন বিধান শরী‘আতে নেই (বুখারী, মুসলিম, আবুদাঊদ মিশকাত হা/৩০৪৩, ৩৫০০)। পিতা-মাতা একাজ করলে সন্তানের হক নষ্ট করা হবে, যা পরকালে নিজের নেকী থেকে তাকে পরিশোধ করতে হবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১২৭)। এক্ষণে পিতার জন্য করণীয় হ’ল, দ্রুত সমাঝোতা করে নতুনভাবে বিবাহের ব্যবস্থা করা অথবা মেয়েকে বুঝিয়ে ফিরিয়ে আনা। কারণ অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত নারীদের বিবাহ জায়েয নয় (তিরমিযী, মিশকাত হা/৩১৩১)। অথবা মেয়ে স্বামীর সাথে ‘খোলা’ করে ফিরে আসবে। কারণ এভাবে একত্রে অবস্থান করা যেনার শামিল।
৩৩
প্রশ্ন (৩২/১৫২) : রাসূল (ছাঃ) ঋতুবতীদের ঈদের ছালাতে অংশগ্রহণ না করে দো‘আয় শরীক হ’তে বলা কি ছালাতে সম্মিলিত মুনাজাত প্রমাণ হয় না?রাসূল (ছাঃ) ঋতুবতীদের ঈদের ছালাতে অংশগ্রহণ না করে দো‘আয় শরীক হ’তে বলেছেন। এটা দ্বারা কি উক্ত ছালাতে সম্মিলিত মুনাজাত প্রমাণ হয় না?
-এ. কে. এম. আব্দুল খালেক
৮নং উপশহর, সদর, দিনাজপুর।
উত্তর: এখানে দো‘আয় শরীক হওয়ার অর্থ হ’ল, খুৎবা শ্রবণ করা, তা থেকে নছীহত গ্রহণ করা, উক্ত সমাগমে শরীক হয়ে তাকবীর, তাহলীল, তাহমীদ ও তাসবীহে অংশগ্রহণ করা ইত্যাদি। সেকারণ ঊক্ত হাদীছের বর্ণনাকারী উম্মু আতিয়া (রাঃ) বলেন, আমাদের পর্দানশীন কুমারী হায়েযা মহিলারা ঈদের ময়দানে বের হ’তেন। অতঃপর লোকদের পিছনে অবস্থান করে তাদের সাথে তাকবীরে অংশগ্রহণ করতেন (মুসলিম হা/৮৯০; ছহীহাহ হা/৬০০)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘অতঃপর মহিলারা পুরুষদের পিছনে থাকত, তারপর তাদের তাকবীরের সাথে তাকবীর ও তাদের দো‘আর সাথে দো‘আ করত এবং এই দিনের বরকত ও পবিত্রতার প্রত্যাশা করত’ (বুখারী হা/৯৭১)। উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় মিশকাতের ভাষ্যকার ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী বলেন, ‘মুসলিমদের দো‘আ বলতে সকলকে শামিল করে। উক্ত কথা দ্বারা ঈদের ছালাতের পরে দো‘আ করা বুঝানো হয়, যেমনটি পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতের শেষে করা হয়। অথচ তা ত্রুটিপূর্ণ। কারণ ঈদায়েনের ছালাতের পর দো‘আ করা রাসূল (ছাঃ) থেকে প্রমাণিত নয়। আর কেউ তা বর্ণনাও করেনি। বরং তাঁর থেকে প্রমাণিত আছে যে, ছালাতের পরে খুৎবা ছাড়া দ্বিতীয় কোন কাজ করতেন না। সুতরাং ‘দা‘ওয়াতুল মুসলিমীন’ দ্বারা উক্ত অর্থ গ্রহণ করা ঠিক হবে। বরং এর মূল উদ্দেশ্য হ’ল- যিকির-আযকার-দো‘আ, বক্তব্য-নছীহত। কারণ দাওয়াত শব্দটি ব্যাপক’ (মির‘আতুল মাফাতীহ ৫/৩১)।
-এ. কে. এম. আব্দুল খালেক
৮নং উপশহর, সদর, দিনাজপুর।
উত্তর: এখানে দো‘আয় শরীক হওয়ার অর্থ হ’ল, খুৎবা শ্রবণ করা, তা থেকে নছীহত গ্রহণ করা, উক্ত সমাগমে শরীক হয়ে তাকবীর, তাহলীল, তাহমীদ ও তাসবীহে অংশগ্রহণ করা ইত্যাদি। সেকারণ ঊক্ত হাদীছের বর্ণনাকারী উম্মু আতিয়া (রাঃ) বলেন, আমাদের পর্দানশীন কুমারী হায়েযা মহিলারা ঈদের ময়দানে বের হ’তেন। অতঃপর লোকদের পিছনে অবস্থান করে তাদের সাথে তাকবীরে অংশগ্রহণ করতেন (মুসলিম হা/৮৯০; ছহীহাহ হা/৬০০)। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘অতঃপর মহিলারা পুরুষদের পিছনে থাকত, তারপর তাদের তাকবীরের সাথে তাকবীর ও তাদের দো‘আর সাথে দো‘আ করত এবং এই দিনের বরকত ও পবিত্রতার প্রত্যাশা করত’ (বুখারী হা/৯৭১)। উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় মিশকাতের ভাষ্যকার ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী বলেন, ‘মুসলিমদের দো‘আ বলতে সকলকে শামিল করে। উক্ত কথা দ্বারা ঈদের ছালাতের পরে দো‘আ করা বুঝানো হয়, যেমনটি পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতের শেষে করা হয়। অথচ তা ত্রুটিপূর্ণ। কারণ ঈদায়েনের ছালাতের পর দো‘আ করা রাসূল (ছাঃ) থেকে প্রমাণিত নয়। আর কেউ তা বর্ণনাও করেনি। বরং তাঁর থেকে প্রমাণিত আছে যে, ছালাতের পরে খুৎবা ছাড়া দ্বিতীয় কোন কাজ করতেন না। সুতরাং ‘দা‘ওয়াতুল মুসলিমীন’ দ্বারা উক্ত অর্থ গ্রহণ করা ঠিক হবে। বরং এর মূল উদ্দেশ্য হ’ল- যিকির-আযকার-দো‘আ, বক্তব্য-নছীহত। কারণ দাওয়াত শব্দটি ব্যাপক’ (মির‘আতুল মাফাতীহ ৫/৩১)।
৩৪
প্রশ্ন (৩৩/১৫৩) : নবী করীম (ছাঃ)-এর দেহে খাতমে নবুঅতের চিহ্ন কোথায় এবং কেমন ছিল? কোন কোন ছাহাবী তা চুমু দিয়েছিলেন?নবী করীম (ছাঃ)-এর দেহে খাতমে নবুঅতের চিহ্ন কোথায় ছিল এবং তা কেমন ছিল? কোন কোন ছাহাবী তা চুমু দিয়েছিলেন বলে যা প্রচলিত রয়েছে। এর সত্যতা আছে কি?
-আতাউর রহমান, বান্দাইখাড়া, নওগাঁ।
উত্তর : নবী করীম (ছাঃ)-এর খাতমে নবুঅতের চিহ্ন তাঁর উভয় কাঁধের মধ্যস্থলে ছিল। আর তা ছিল কবুতরের ডিমের মত (মুসলিম হা/২৩৪৪; তিরমিযী হা/৩৬৪৪; মিশকাত হা/৫৭৭৯; ছহীহাহ হা/৩০০৫)। ছাহাবী সালমান ফারেসী (রাঃ) সেটা দেখেই তাকে আখেরী নবী ও সত্যনবী হিসাবে চিনেছিলেন এবং তাতে চুমু খেয়েছিলেন (আহমাদ হা/২৩৭৮৮; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৮৯৪)।
-আতাউর রহমান, বান্দাইখাড়া, নওগাঁ।
উত্তর : নবী করীম (ছাঃ)-এর খাতমে নবুঅতের চিহ্ন তাঁর উভয় কাঁধের মধ্যস্থলে ছিল। আর তা ছিল কবুতরের ডিমের মত (মুসলিম হা/২৩৪৪; তিরমিযী হা/৩৬৪৪; মিশকাত হা/৫৭৭৯; ছহীহাহ হা/৩০০৫)। ছাহাবী সালমান ফারেসী (রাঃ) সেটা দেখেই তাকে আখেরী নবী ও সত্যনবী হিসাবে চিনেছিলেন এবং তাতে চুমু খেয়েছিলেন (আহমাদ হা/২৩৭৮৮; সিলসিলা ছহীহাহ হা/৮৯৪)।
-খন্দকার আব্দুল মালেক
টুনিরহাট, পঞ্চগড়।
উত্তর : মানবজাতির ন্যায় জিন জাতিকে বিচারের সম্মুখীন করা হবে। আল্লাহ বলেন, ‘আমি জিন ও মানব জাতিকে কেবল আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি’ (যারিয়াত ৫১/৫৬)। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমি জিন ও মানুষ দিয়ে জাহান্নামকে পূর্ণ করব’ (সাজদাহ ৩২/১৩)। তিনি আরো বলেন, ‘হে জিন ও মানব সম্প্রদায়! তোমাদের কাছে কি তোমাদের মধ্য থেকে পয়গম্বরগণ আগমন করেননি, যাঁরা তোমাদেরকে আমার বিধানসমূহ বর্ণনা করতেন এবং তোমাদেরকে আজকের এ দিনে সাক্ষাতের ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করতেন? (আন‘আম ৬/১৩০)। উল্লিখিত আয়াতসমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, জিন জাতি বিচারের সম্মুখীন হবে, তারা জান্নাতী বা জাহান্নামী হবে। সূরা আহক্বাফের ৩১ আয়াতের আলোকে ইবনু কাছীর (রহঃ) একথাকেই প্রধান্য দিয়েছেন (ইবনু কাছীর আহক্বাফ ৩১ আয়াতের তাফসীর দ্রঃ)। আর মুহাম্মাদ (ছাঃ) মানব ও জিন সহ সমস্ত সৃষ্টির নিকটে নবী হিসাবে প্রেরিত হয়েছেন (মুসলিম হা/৫২৩; তিরমিযী হা/১৫৫৩; মিশকাত হা/৫৭৪৮)। এছাড়া অন্যান্য নবীগণের সময়ে জিনেরা তাঁদের অনুসারী উম্মত ছিল।
টুনিরহাট, পঞ্চগড়।
উত্তর : মানবজাতির ন্যায় জিন জাতিকে বিচারের সম্মুখীন করা হবে। আল্লাহ বলেন, ‘আমি জিন ও মানব জাতিকে কেবল আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি’ (যারিয়াত ৫১/৫৬)। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমি জিন ও মানুষ দিয়ে জাহান্নামকে পূর্ণ করব’ (সাজদাহ ৩২/১৩)। তিনি আরো বলেন, ‘হে জিন ও মানব সম্প্রদায়! তোমাদের কাছে কি তোমাদের মধ্য থেকে পয়গম্বরগণ আগমন করেননি, যাঁরা তোমাদেরকে আমার বিধানসমূহ বর্ণনা করতেন এবং তোমাদেরকে আজকের এ দিনে সাক্ষাতের ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করতেন? (আন‘আম ৬/১৩০)। উল্লিখিত আয়াতসমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, জিন জাতি বিচারের সম্মুখীন হবে, তারা জান্নাতী বা জাহান্নামী হবে। সূরা আহক্বাফের ৩১ আয়াতের আলোকে ইবনু কাছীর (রহঃ) একথাকেই প্রধান্য দিয়েছেন (ইবনু কাছীর আহক্বাফ ৩১ আয়াতের তাফসীর দ্রঃ)। আর মুহাম্মাদ (ছাঃ) মানব ও জিন সহ সমস্ত সৃষ্টির নিকটে নবী হিসাবে প্রেরিত হয়েছেন (মুসলিম হা/৫২৩; তিরমিযী হা/১৫৫৩; মিশকাত হা/৫৭৪৮)। এছাড়া অন্যান্য নবীগণের সময়ে জিনেরা তাঁদের অনুসারী উম্মত ছিল।
-কামারুযযামান, মান্দা, নওগাঁ।
উত্তর : ‘তাহরীক’ ( تحريك ) অর্থ আন্দোলন। ‘আত-তাহরীক’ অর্থ বিশেষ আন্দোলন। ইংরেজীতে যাকে বলা যাবে The Movement অথবা That very Movement। অতএব ‘আত-তাহরীক’ বিশেষ একটি আন্দোলনের লক্ষ্যে আত্মপ্রকাশ করেছে। সে আন্দোলন পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক জীবন গড়ার আন্দোলন। সে আন্দোলন আললাহ প্রেরিত সর্বশেষ অহি ভিত্তিক সমাজ গড়ার আন্দোলন। সে আন্দোলন বিশ্ব মানবতার প্রকৃত মুক্তি আন্দোলন। যে মানুষ নিজের জ্ঞানকে অহি-র জ্ঞানের সামনে বিনা দ্বিধায় সমর্পণ করে দিবে, যে মানুষ পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের নির্দেশকে সানন্দে মাথা পেতে মেনে নিবে, দুনিয়ার চাইতে আখেরাতকে সর্বক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিবে ‘আত-তাহরীক’ ইনশাআল্লাহ তাদেরই মুখপত্র।
উত্তর : ‘তাহরীক’ ( تحريك ) অর্থ আন্দোলন। ‘আত-তাহরীক’ অর্থ বিশেষ আন্দোলন। ইংরেজীতে যাকে বলা যাবে The Movement অথবা That very Movement। অতএব ‘আত-তাহরীক’ বিশেষ একটি আন্দোলনের লক্ষ্যে আত্মপ্রকাশ করেছে। সে আন্দোলন পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক জীবন গড়ার আন্দোলন। সে আন্দোলন আললাহ প্রেরিত সর্বশেষ অহি ভিত্তিক সমাজ গড়ার আন্দোলন। সে আন্দোলন বিশ্ব মানবতার প্রকৃত মুক্তি আন্দোলন। যে মানুষ নিজের জ্ঞানকে অহি-র জ্ঞানের সামনে বিনা দ্বিধায় সমর্পণ করে দিবে, যে মানুষ পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের নির্দেশকে সানন্দে মাথা পেতে মেনে নিবে, দুনিয়ার চাইতে আখেরাতকে সর্বক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিবে ‘আত-তাহরীক’ ইনশাআল্লাহ তাদেরই মুখপত্র।
৩৭
প্রশ্ন (৩৬/১৫৬) : জানাযার ছালাতের লাশ সামনে রেখে মৃতের ঋণ ও অছিয়ত ছাড়াও সমাজের বিশিষ্টজন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের আলোচনা শরী‘আতসম্মত কি?জানাযার ছালাতের সময় লাশ সামনে রেখে মৃতের ঋণ ও অছিয়ত ছাড়াও একজন পরিচালকের মাধ্যম সমাজের বিশিষ্টজন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের আলোচনার সুযোগ দেওয়া হয়। এরূপ কর্মকান্ড শরী‘আতসম্মত কি?
-আব্দুল লতীফ
রাজপুর, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : এরূপ করা শরী‘আতসম্মত নয়। রাসূল (ছাঃ) এবং ছাহাবায়ে কেরাম থেকে এ ব্যাপারে কোন আমল পাওয়া যায় না। যিনি ইমামতি করবেন, তিনি উপস্থিত জনসাধরণের উদ্দেশ্যে ঈমান বর্ধক সংক্ষিপ্তভাবে কিছু নছীহত করতে পারবেন। যাতে উপস্থিতগণ নিজেদেরকে মৃত্যুর জন্য প্রস্ত্তত করতে পারেন (বুখারী হা/৪৯৪৯; আবুদাউদ হা/৪৭৫৩; মিশকাত হা/১৬৩০)।
-আব্দুল লতীফ
রাজপুর, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : এরূপ করা শরী‘আতসম্মত নয়। রাসূল (ছাঃ) এবং ছাহাবায়ে কেরাম থেকে এ ব্যাপারে কোন আমল পাওয়া যায় না। যিনি ইমামতি করবেন, তিনি উপস্থিত জনসাধরণের উদ্দেশ্যে ঈমান বর্ধক সংক্ষিপ্তভাবে কিছু নছীহত করতে পারবেন। যাতে উপস্থিতগণ নিজেদেরকে মৃত্যুর জন্য প্রস্ত্তত করতে পারেন (বুখারী হা/৪৯৪৯; আবুদাউদ হা/৪৭৫৩; মিশকাত হা/১৬৩০)।
-শরীফুল ইসলাম, মহেশপুর, ঝিনাইদহ।
উত্তর : মসজিদে প্রবেশ করে যদি কেউ দেখেন যে, মুছল্লীগণ ছালাত আদায় করে নিয়েছেন ও মাসবূক তার বাকী ছালাত আদায় করছেন। এমতাবস্থায় তিনি জামা‘আতের নেকীর আশায় মাসবূককে ইমাম করতে পারেন মর্মে বহু বিদ্বান মত প্রকাশ করেছেন। তবে এ ব্যাপারে ছাহাবায়ে কেরাম থেকে কোন আমল পাওয়া যায় না।
শায়খ ওছায়মীন (রহঃ) বলেন, এ ব্যাপারে বিদ্বানগণ মতভেদ করেছেন। কেউ বলেছেন, এটি ছহীহ নয়। কেউ বলেছেন, এটা ছহীহ। তবে উত্তমের বিরোধী’। (তিনি বলেন,) এটি ছহীহ হ’লেও সুন্নাতের চাইতে বিদ‘আতের অধিক নিকটবর্তী। কেননা ছাহাবায়ে কেরাম এমনটি করেননি। কোন ব্যক্তির যখন জামা‘আতের কিছু অংশ ছুটে যায়, তখন তিনি বাকীটা একাকী দাঁড়িয়ে আদায় করেন। অতঃপর যদি মাসবূকের ইমামতি ছহীহ ধরা হয়, তাহ’লে এটাতে ধারাবাহিকতা সৃষ্টি হ’তে পারে। ফলে পরে যিনি প্রবেশ করবেন তিনি দ্বিতীয় ব্যক্তির, তারপর যিনি প্রবেশ করবেন তিনি তৃতীয় ব্যক্তির, অতঃপর চতুর্থ ব্যক্তির, এভাবে জামা‘আত চলতেই থাকবে... (ওছায়মীন, মুহাযারাতুল মাক্বরূআহ, লিকাউল বাবিল মাফতূহ-১২)।
উত্তর : মসজিদে প্রবেশ করে যদি কেউ দেখেন যে, মুছল্লীগণ ছালাত আদায় করে নিয়েছেন ও মাসবূক তার বাকী ছালাত আদায় করছেন। এমতাবস্থায় তিনি জামা‘আতের নেকীর আশায় মাসবূককে ইমাম করতে পারেন মর্মে বহু বিদ্বান মত প্রকাশ করেছেন। তবে এ ব্যাপারে ছাহাবায়ে কেরাম থেকে কোন আমল পাওয়া যায় না।
শায়খ ওছায়মীন (রহঃ) বলেন, এ ব্যাপারে বিদ্বানগণ মতভেদ করেছেন। কেউ বলেছেন, এটি ছহীহ নয়। কেউ বলেছেন, এটা ছহীহ। তবে উত্তমের বিরোধী’। (তিনি বলেন,) এটি ছহীহ হ’লেও সুন্নাতের চাইতে বিদ‘আতের অধিক নিকটবর্তী। কেননা ছাহাবায়ে কেরাম এমনটি করেননি। কোন ব্যক্তির যখন জামা‘আতের কিছু অংশ ছুটে যায়, তখন তিনি বাকীটা একাকী দাঁড়িয়ে আদায় করেন। অতঃপর যদি মাসবূকের ইমামতি ছহীহ ধরা হয়, তাহ’লে এটাতে ধারাবাহিকতা সৃষ্টি হ’তে পারে। ফলে পরে যিনি প্রবেশ করবেন তিনি দ্বিতীয় ব্যক্তির, তারপর যিনি প্রবেশ করবেন তিনি তৃতীয় ব্যক্তির, অতঃপর চতুর্থ ব্যক্তির, এভাবে জামা‘আত চলতেই থাকবে... (ওছায়মীন, মুহাযারাতুল মাক্বরূআহ, লিকাউল বাবিল মাফতূহ-১২)।
- জাহাঙ্গীর আলম, নীলফামারী।
উত্তর : নিরুপায় অবস্থায় হেফাযতের উদ্দেশ্য ব্যাংকে টাকা রাখা যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আল্লাহ যা তোমাদের উপর হারাম করেছেন, তা স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন। তবে তোমরা নিরূপায় হয়ে পড়লে তা স্বতন্ত্র কথা... (আন‘আম ১১৯)। তবে অন্য কোন নিরাপদ ব্যবস্থা থাকলে না রাখাই কর্তব্য। কেননা এরূপ রাখার মাধ্যমে পাপের সহযোগিতা করা হয়। আর আল্লাহ পাপের সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন (মায়েদাহ ৫/২)।
উত্তর : নিরুপায় অবস্থায় হেফাযতের উদ্দেশ্য ব্যাংকে টাকা রাখা যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আল্লাহ যা তোমাদের উপর হারাম করেছেন, তা স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন। তবে তোমরা নিরূপায় হয়ে পড়লে তা স্বতন্ত্র কথা... (আন‘আম ১১৯)। তবে অন্য কোন নিরাপদ ব্যবস্থা থাকলে না রাখাই কর্তব্য। কেননা এরূপ রাখার মাধ্যমে পাপের সহযোগিতা করা হয়। আর আল্লাহ পাপের সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন (মায়েদাহ ৫/২)।
৪০
প্রশ্ন (৩৯/১৫৯) : আদম (আঃ) আরশের পায়ায় লেখা কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ দেখার কোন সত্যতা আছে কি?আদম (আঃ) আরশের পায়ায় লেখা কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ দেখে বলেন, আল্লাহ তুমি আমাকে ‘মুহাম্মাদ’ নামের অসীলায় মাফ করে দাও, তখন আল্লাহ তাকে মাফ করেন। একথার কোন সত্যতা আছে কি?
- আমানুল্লাহ
কাকিয়ার চর, বুড়িচং, কুমিল্লা।
উত্তর : উক্ত মর্মে বর্ণিত হাদীছটি ‘মওযূ‘ বা জাল (আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/২৫; হাকেম হা/৪২২, তাহকীক যাহাবী, সনদ জাল)।
- আমানুল্লাহ
কাকিয়ার চর, বুড়িচং, কুমিল্লা।
উত্তর : উক্ত মর্মে বর্ণিত হাদীছটি ‘মওযূ‘ বা জাল (আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/২৫; হাকেম হা/৪২২, তাহকীক যাহাবী, সনদ জাল)।
৪১
প্রশ্ন (৪০/১৬০) : রাসূল (ছাঃ)-কে তাঁর চাচা আবু ত্বালেব যে দুশমনদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন এর বিনিময়ে কি তিনি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেন? তার অবস্থা কি হবে?-রবীউল ইসলাম
বোয়ালিয়া, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : জান্নাতবাসী হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা এবং তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক না করা। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর চাচা আবু ত্বালেব এর মৃত্যু মুশরিক অবস্থায় হয়েছিল। তবে রাসূল (ছাঃ)-এর কারণে জাহান্নামীদের মধ্যে তার শাস্তি সর্বাপেক্ষা সহজতর হবে। ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘জাহান্নামীদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সহজতর শাস্তি হবে আবু ত্বালেবের। তাঁর দু’পায়ে দু’খানা আগুনের জুতা পরানো হবে। এতে তার মাথার মগজ ফুটতে থাকবে’ (বুখারী হা/৬৫৬২, মুসলিম হা/২১২, মিশকাত হা/৫৬৬৮)। তিনি বলেন, যদি আমি না হ’তাম (অর্থাৎ শাফা‘আত না থাকত), তাহ’লে তিনি জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকতেন। অতঃপর আমি তাকে নিম্নস্তর থেকে টাখনু পর্যন্ত উঠিয়ে আনি’ (মুসলিম হা/২০৯)। নিঃসন্দেহে এটি ছিল রাসূল (ছাঃ)-এর বিশেষ সম্মান ও মর্যাদা (আলোচনা দ্রঃ সিলসিলা ছহীহাহ হা/৫৫)।
বোয়ালিয়া, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : জান্নাতবাসী হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা এবং তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক না করা। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর চাচা আবু ত্বালেব এর মৃত্যু মুশরিক অবস্থায় হয়েছিল। তবে রাসূল (ছাঃ)-এর কারণে জাহান্নামীদের মধ্যে তার শাস্তি সর্বাপেক্ষা সহজতর হবে। ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘জাহান্নামীদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সহজতর শাস্তি হবে আবু ত্বালেবের। তাঁর দু’পায়ে দু’খানা আগুনের জুতা পরানো হবে। এতে তার মাথার মগজ ফুটতে থাকবে’ (বুখারী হা/৬৫৬২, মুসলিম হা/২১২, মিশকাত হা/৫৬৬৮)। তিনি বলেন, যদি আমি না হ’তাম (অর্থাৎ শাফা‘আত না থাকত), তাহ’লে তিনি জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকতেন। অতঃপর আমি তাকে নিম্নস্তর থেকে টাখনু পর্যন্ত উঠিয়ে আনি’ (মুসলিম হা/২০৯)। নিঃসন্দেহে এটি ছিল রাসূল (ছাঃ)-এর বিশেষ সম্মান ও মর্যাদা (আলোচনা দ্রঃ সিলসিলা ছহীহাহ হা/৫৫)।
৪২
ফেব্রুয়ারি
প্রশ্ন (১/১৬১) : ‘ক্বিয়ামতের দিন সূর্য সোয়া হাত নীচে নেমে আসবে’ হাদীছের এই বাণীটির যৌক্তিকতা ও ওলামায়ে কেরামের ব্যাখ্যা জানতে চাই।-যুলফিক্বার আলম
খানপুকুর, পঞ্চগড়।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ক্বিয়ামতের দিন সূর্যকে সৃষ্টিকুলের অতি নিকটে করে দেওয়া হবে। এমনকি সূর্য প্রায় এক বা দুই মাইলের ব্যবধানে হয়ে যাবে (মুসলিম হা/২৮৬৪, আহমাদ হা/২৩৮৬৪, মিশকাত হা/৫৫৪০)। অতএব প্রশ্নে বর্ণিত ‘সোয়া হাত নীচে নেমে আসবে’ কথাটি সঠিক নয়। হাদীছটির বর্ণনাকারী তাবেঈ সুলাইম বিন আমের (রহঃ) বলেন, আমি জানি না যে ‘মীল’ শব্দ দ্বারা যমীনের দূরত্ব না চোখে সুরমা দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত শলাকার দূরত্ব বুঝানো হয়েছে’ (মুসলিম ঐ দ্রঃ)। মূলতঃ এর দ্বারা সূর্যের নিকটবর্তী হওয়ার পরিমাণ বুঝানো হয়েছে (মিরক্বাত হা/৫৫৪০-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)।
প্রথমতঃ হাদীছ অনুযায়ী সূর্য সেদিন যত নিকটবর্তী হবে এবং তার প্রভাবে মানুষের যে অবস্থার কথা বর্ণিত হয়েছে, দুনিয়াবী হিসাবে তা অবিশ্বাস্য। কিন্তু এটা গায়েবের খবর হওয়ায় মুমিনের জন্য তা সত্য বলে মেনে নেওয়া আবশ্যক। আর এর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা বিদ‘আত (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৩৩/১৭৮)।
দ্বিতীয়তঃ ক্বিয়ামতের দিন দুনিয়াবী বৈশিষ্ট্য থেকে পৃথক শারীরিক গঠন ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে মানুষ পুনরুত্থিত হবে। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘যেদিন এই পৃথিবীকে অন্য পৃথিবীতে পরিবর্তন করা হবে এবং সকলেই আল্লাহর সামনে প্রকাশিত হবে, যিনি এক ও মহা পরাক্রান্ত (ইবরাহীম ১৪/৪৮)। সেদিনের দৈর্ঘ্য হবে দুনিয়ার হিসাবে পঞ্চাশ হাযার বছর (মা‘আরেজ ৭০/৪)। অতএব গায়েবের বিষয়ে যুক্তি তালাশ করা নিতান্ত নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক। বরং পূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে পরকালীন প্রস্ত্ততি গ্রহণ করাই মুমিনের কর্তব্য (বিস্তারিত দ্রঃ মাজমূ‘ ফাতাওয়া ওছায়মীন ২/৩৬)।
খানপুকুর, পঞ্চগড়।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ক্বিয়ামতের দিন সূর্যকে সৃষ্টিকুলের অতি নিকটে করে দেওয়া হবে। এমনকি সূর্য প্রায় এক বা দুই মাইলের ব্যবধানে হয়ে যাবে (মুসলিম হা/২৮৬৪, আহমাদ হা/২৩৮৬৪, মিশকাত হা/৫৫৪০)। অতএব প্রশ্নে বর্ণিত ‘সোয়া হাত নীচে নেমে আসবে’ কথাটি সঠিক নয়। হাদীছটির বর্ণনাকারী তাবেঈ সুলাইম বিন আমের (রহঃ) বলেন, আমি জানি না যে ‘মীল’ শব্দ দ্বারা যমীনের দূরত্ব না চোখে সুরমা দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত শলাকার দূরত্ব বুঝানো হয়েছে’ (মুসলিম ঐ দ্রঃ)। মূলতঃ এর দ্বারা সূর্যের নিকটবর্তী হওয়ার পরিমাণ বুঝানো হয়েছে (মিরক্বাত হা/৫৫৪০-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)।
প্রথমতঃ হাদীছ অনুযায়ী সূর্য সেদিন যত নিকটবর্তী হবে এবং তার প্রভাবে মানুষের যে অবস্থার কথা বর্ণিত হয়েছে, দুনিয়াবী হিসাবে তা অবিশ্বাস্য। কিন্তু এটা গায়েবের খবর হওয়ায় মুমিনের জন্য তা সত্য বলে মেনে নেওয়া আবশ্যক। আর এর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা বিদ‘আত (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৩৩/১৭৮)।
দ্বিতীয়তঃ ক্বিয়ামতের দিন দুনিয়াবী বৈশিষ্ট্য থেকে পৃথক শারীরিক গঠন ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে মানুষ পুনরুত্থিত হবে। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘যেদিন এই পৃথিবীকে অন্য পৃথিবীতে পরিবর্তন করা হবে এবং সকলেই আল্লাহর সামনে প্রকাশিত হবে, যিনি এক ও মহা পরাক্রান্ত (ইবরাহীম ১৪/৪৮)। সেদিনের দৈর্ঘ্য হবে দুনিয়ার হিসাবে পঞ্চাশ হাযার বছর (মা‘আরেজ ৭০/৪)। অতএব গায়েবের বিষয়ে যুক্তি তালাশ করা নিতান্ত নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক। বরং পূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে পরকালীন প্রস্ত্ততি গ্রহণ করাই মুমিনের কর্তব্য (বিস্তারিত দ্রঃ মাজমূ‘ ফাতাওয়া ওছায়মীন ২/৩৬)।
-আবু আমাতুল্লাহ
মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর।
উত্তর : খাঁচায় আটকে রেখে পাখি পালনে শরী‘আতে কোন বাধা নেই। তবে অবশ্যই পাখির আহার প্রদানসহ যথাযথ যত্ন নিতে হবে। আনাস (রাঃ)-এর ছোট ভাই আবু উমায়ের বুলবুলি পাখি পুষতেন এবং তার সাথে খেলা করতেন। একদা পাখিটি মারা গেলে রাসূল (ছাঃ) মজা করে বলেছিলেন, হে আবু উমায়ের! তোমার ছোট বুলবুলিটির কি হ’ল?’ (বুখারী হা/৬১২৯, মুসলিম হা/২১৫০, মিশকাত হা/৪৮৮৪)। আর যথাযথভাবে খাদ্য প্রদান ও যত্ন না নিতে পারলে জায়েয হবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, এক মহিলা একটি বিড়ালকে বেঁধে রেখে খেতে না দেওয়ায় মারা যায়। ফলে মহিলাটিকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয় (বুখারী হা/৩৩১৮, মুসলিম হা/২৬১৯; মিশকাত হা/৫৩৪১)।
মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর।
উত্তর : খাঁচায় আটকে রেখে পাখি পালনে শরী‘আতে কোন বাধা নেই। তবে অবশ্যই পাখির আহার প্রদানসহ যথাযথ যত্ন নিতে হবে। আনাস (রাঃ)-এর ছোট ভাই আবু উমায়ের বুলবুলি পাখি পুষতেন এবং তার সাথে খেলা করতেন। একদা পাখিটি মারা গেলে রাসূল (ছাঃ) মজা করে বলেছিলেন, হে আবু উমায়ের! তোমার ছোট বুলবুলিটির কি হ’ল?’ (বুখারী হা/৬১২৯, মুসলিম হা/২১৫০, মিশকাত হা/৪৮৮৪)। আর যথাযথভাবে খাদ্য প্রদান ও যত্ন না নিতে পারলে জায়েয হবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, এক মহিলা একটি বিড়ালকে বেঁধে রেখে খেতে না দেওয়ায় মারা যায়। ফলে মহিলাটিকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয় (বুখারী হা/৩৩১৮, মুসলিম হা/২৬১৯; মিশকাত হা/৫৩৪১)।
-রেযওয়ান রানা
ফৌজদারহাট, চট্টগ্রাম।
উত্তর : জন্মদিবস, মৃত্যুদিবস, শোক দিবস সহ যত দিবস পালিত হয়, তার সাথে ইসলামের কোনই সম্পর্ক নেই। এগুলি স্রেফ জাহেলিয়াত এবং বিজাতীয় অপসংস্কৃতি মাত্র। অতএব এগুলি পালন করা, এর জন্য শুভেচ্ছা জানানো, কার্ড পাঠানো ইত্যাদি সবই নিষিদ্ধ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে ব্যক্তি (কিয়ামতের দিন) তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৩৪৭)।
ফৌজদারহাট, চট্টগ্রাম।
উত্তর : জন্মদিবস, মৃত্যুদিবস, শোক দিবস সহ যত দিবস পালিত হয়, তার সাথে ইসলামের কোনই সম্পর্ক নেই। এগুলি স্রেফ জাহেলিয়াত এবং বিজাতীয় অপসংস্কৃতি মাত্র। অতএব এগুলি পালন করা, এর জন্য শুভেচ্ছা জানানো, কার্ড পাঠানো ইত্যাদি সবই নিষিদ্ধ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে ব্যক্তি (কিয়ামতের দিন) তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৩৪৭)।
৪৫
প্রশ্ন (৪/১৬৪) : গরু বা অন্য কোন পশুকে কৃত্রিমভাবে প্রজনন করা এবং এর বিনিময় গ্রহণ করতে কোন বাধা আছে কি?-রওশানুল ইসলাম
গজঘন্টা, গংগাচড়া, রংপুর।
উত্তর : পশুর ক্ষেত্রে প্রজনন বৃদ্ধির জন্য যে কোন পদ্ধতি গ্রহণ করা যায়। কারণ শরী‘আতের বিধান পশুর উপরে প্রযোজ্য নয়। তা কেবল জিন ও ইনসানের প্রতি প্রযোজ্য (যারিয়াত ৫৬; মায়েদাহ ৫/৩)। অতএব কৃত্রিমভাবে প্রজনন করা জায়েয। আর এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ ব্যক্তি হিসাবে কাজের বিনিময় গ্রহণেও কোন বাধা নেই।
গজঘন্টা, গংগাচড়া, রংপুর।
উত্তর : পশুর ক্ষেত্রে প্রজনন বৃদ্ধির জন্য যে কোন পদ্ধতি গ্রহণ করা যায়। কারণ শরী‘আতের বিধান পশুর উপরে প্রযোজ্য নয়। তা কেবল জিন ও ইনসানের প্রতি প্রযোজ্য (যারিয়াত ৫৬; মায়েদাহ ৫/৩)। অতএব কৃত্রিমভাবে প্রজনন করা জায়েয। আর এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ ব্যক্তি হিসাবে কাজের বিনিময় গ্রহণেও কোন বাধা নেই।
৪৬
প্রশ্ন (৫/১৬৫) : জনৈক হিন্দু ব্যক্তি সুস্থ হওয়ায় নিয়ত অনুযায়ী মসজিদে কিছু টাকা ও কুরআন দিয়ে মানত পূরণ করতে চায়। এক্ষণে উক্ত মানত গ্রহণ করা যাবে কি?-কাওছার আলী, দিনাজপুর।
উত্তর : উক্ত মানত গ্রহণ করা যাবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অমুসলিমদের নিকট থেকে বিভিন্ন সময়ে ‘হাদিয়া’ গ্রহণ করেছেন (বুখারী হা/২৬১৫-১৮ ‘মুশরিকদের নিকট থেকে হাদিয়া গ্রহণ’ অনুচ্ছেদ)।
উত্তর : উক্ত মানত গ্রহণ করা যাবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অমুসলিমদের নিকট থেকে বিভিন্ন সময়ে ‘হাদিয়া’ গ্রহণ করেছেন (বুখারী হা/২৬১৫-১৮ ‘মুশরিকদের নিকট থেকে হাদিয়া গ্রহণ’ অনুচ্ছেদ)।
৪৭
প্রশ্ন (৬/১৬৬) : ছালাতে শেষ বৈঠকে দো‘আ মাছূরাহ পড়ার পর নিজের জন্য ইচ্ছানুযায়ী দো‘আ করা যায় কি? তাশাহ্হুদ লম্বা করা নিষিদ্ধ?ছালাতে শেষ বৈঠকে দো‘আ মাছূরাহ পড়ার পর নিজের জন্য ইচ্ছানুযায়ী দো‘আ করা যায় কি? অনেকেই বলেন, তাশাহ্হুদ লম্বা করা নিষিদ্ধ। এ বিষয়ে জানিয়ে বাধিত করবেন।
-আদৃতা*, জার্মানী।
উত্তর : ছালাতের শেষ বৈঠক দো‘আ কবূল হওয়ার অন্যতম প্রধান স্থান। রাসূল (ছাঃ) বলেন, সবচেয়ে বেশী দো‘আ কবুল হয় শেষ রাতে এবং প্রত্যেক ফরয ছালাতের শেষে (তিরমিযী হা/৩৪৯৯, মিশকাত হা/৯৬৮)। উক্ত হাদীছে ‘ছালাতের শেষ ভাগ’ অর্থ সালামের পূর্বে শেষ বৈঠক (ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ ১/৩০৫; উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৩/২৬৮)। রাসূল (ছাঃ) শেষ তাশাহ্হুদে একাধিক দো‘আ করতেন (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/৯০৯)। অতএব শেষ বৈঠকে ইচ্ছা মত দো‘আ করতে কোন বাধা নেই। আর বান্দার যেকোন মনষ্কামনা পেশ করার জন্য ‘রববানা আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া... আযা-বান্নার’ দো‘আটি পাঠ করাই যথেষ্ট। রাসূল (ছাঃ) এই দো‘আটিই অধিকাংশ সময় পাঠ করতেন’ (বুখারী হা/৪৫২২; মিশকাত হা/২৪৮৭)।
এক্ষণে শেষ বৈঠক তুলনামূলক কিছু লম্বা করায় দোষ নেই। তবে এমন লম্বা নয়, তাতে ছালাতের সাযুজ্য বিনষ্ট হয় এবং মুছল্লী বিরক্ত হয়।
* [আপনার নাম পরিবর্তন করে আরবীতে ইসলামী নাম রাখুন (স.স.)]
-আদৃতা*, জার্মানী।
উত্তর : ছালাতের শেষ বৈঠক দো‘আ কবূল হওয়ার অন্যতম প্রধান স্থান। রাসূল (ছাঃ) বলেন, সবচেয়ে বেশী দো‘আ কবুল হয় শেষ রাতে এবং প্রত্যেক ফরয ছালাতের শেষে (তিরমিযী হা/৩৪৯৯, মিশকাত হা/৯৬৮)। উক্ত হাদীছে ‘ছালাতের শেষ ভাগ’ অর্থ সালামের পূর্বে শেষ বৈঠক (ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ ১/৩০৫; উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৩/২৬৮)। রাসূল (ছাঃ) শেষ তাশাহ্হুদে একাধিক দো‘আ করতেন (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/৯০৯)। অতএব শেষ বৈঠকে ইচ্ছা মত দো‘আ করতে কোন বাধা নেই। আর বান্দার যেকোন মনষ্কামনা পেশ করার জন্য ‘রববানা আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া... আযা-বান্নার’ দো‘আটি পাঠ করাই যথেষ্ট। রাসূল (ছাঃ) এই দো‘আটিই অধিকাংশ সময় পাঠ করতেন’ (বুখারী হা/৪৫২২; মিশকাত হা/২৪৮৭)।
এক্ষণে শেষ বৈঠক তুলনামূলক কিছু লম্বা করায় দোষ নেই। তবে এমন লম্বা নয়, তাতে ছালাতের সাযুজ্য বিনষ্ট হয় এবং মুছল্লী বিরক্ত হয়।
* [আপনার নাম পরিবর্তন করে আরবীতে ইসলামী নাম রাখুন (স.স.)]
৪৮
প্রশ্ন (৭/১৬৭) :‘ফেরেশতারা শিশুদের সাথে খেলা করার কারণে তারা হাসে বা কাঁদে’- এ বিষয়টির কোন সত্যতা আছে কি?-মাহমূদ আল-ফারূক
ওমরপুর, নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : কথাটি ভিত্তিহীন। তবে প্রত্যেক মানুষের সাথেই সর্বদা ফেরেশতা থাকে। আল্লাহ বলেন, ‘প্রত্যেক মানুষের জন্য তার সামনে ও পিছনে পরপর আগত পাহারাদার ফেরেশতাগণ রয়েছে। যারা তাকে হেফাযত করে আল্লাহর হুকুমে’ (রা‘দ ১৩/১১)। সে হিসাবে শিশুদের সাথেও ফেরেশতা থাকে। কিন্তু তারা শিশুদের সাথে খেলা করে মর্মে কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না।
ওমরপুর, নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : কথাটি ভিত্তিহীন। তবে প্রত্যেক মানুষের সাথেই সর্বদা ফেরেশতা থাকে। আল্লাহ বলেন, ‘প্রত্যেক মানুষের জন্য তার সামনে ও পিছনে পরপর আগত পাহারাদার ফেরেশতাগণ রয়েছে। যারা তাকে হেফাযত করে আল্লাহর হুকুমে’ (রা‘দ ১৩/১১)। সে হিসাবে শিশুদের সাথেও ফেরেশতা থাকে। কিন্তু তারা শিশুদের সাথে খেলা করে মর্মে কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না।
-মাসঊদ, মিরপুর, ঢাকা।
উত্তর : ‘আযল’ হ’ল, স্ত্রীমিলনের সময় বাইরে বীর্যপাত করা। যার উদ্দেশ্য স্ত্রীকে গর্ভধারণ থেকে বিরত রাখা। শারীরিক অসুস্থতা অথবা দুই সন্তানের মাঝে প্রয়োজনীয় ব্যবধান রাখার ক্ষেত্রে অস্থায়ীভাবে আযল করা শরী‘আতে বৈধ। জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য এটি একটি কৌশল মাত্র। তবে বিশ্বাস রাখতে হবে যে, আল্লাহ চাইলে এর পরেও গর্ভে সন্তান আসতে পারে। জনৈক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট এসে বলল, আমার দাসীর সাথে আমি মিলিত হ’লেও তার গর্ভধারণ আমি পসন্দ করি না। তিনি বললেন, তুমি চাইলে আযল করতে পার, তবে আল্লাহ তা‘আলা যা তাক্বদীরে লিখেছেন তা হবেই (মুসলিম হা/৩৬২৯; মিশকাত হা/৩১৮৫)।
সন্তানের ভরণ-পোষণের ভয়ে ‘আযল’ করা নিষিদ্ধ। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা দরিদ্রতার ভয়ে সন্তানদেরকে হত্যা করো না। কেননা আমি যেমন তোমাদেরকে রূযী দেই, তেমনি তাদেরকেও রূযী দেব’ (আন‘আম ৬/১৫১)। অতএব আযল পদ্ধতি অথবা বর্তমান যুগে আবিষ্কৃত জন্মনিয়ন্ত্রণের যত পদ্ধতি রয়েছে, সেগুলো শারীরিক অসুস্থতা অথবা দুই সন্তানের মাঝে প্রয়োজনীয় ব্যবধান রাখার উদ্দেশ্যে অস্থায়ীভাবে গ্রহণ করা জায়েয। স্থায়ীভাবে গর্ভনিরোধ নিষিদ্ধ।
মনে রাখতে হবে যে, ইসলামে অধিক সন্তান লাভে উৎসাহিত করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা প্রেমময়ী ও অধিক সন্তানদায়িনী নারীকে বিবাহ কর। কেননা আমি ক্বিয়ামতের দিন অন্যান্য উম্মতের চাইতে তোমাদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে গর্ব করব’ (আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৩০৯১; আহমাদ)। জন্মনিয়ন্ত্রণ বা জন্মনিরোধে উক্ত উদ্দেশ্য যেমন ব্যাহত হয়, তেমনি নারীর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। যে নারীর যত সন্তান বেশী, সে নারী তত সুখী ও স্বাস্থ্যবর্তী। সন্তান জন্ম দেওয়াই নারীর প্রকৃতি। আর এই প্রকৃতির উপর হস্তক্ষেপ করলে তার মন্দ প্রতিক্রিয়া হওয়াটাই স্বাভাবিক।
উত্তর : ‘আযল’ হ’ল, স্ত্রীমিলনের সময় বাইরে বীর্যপাত করা। যার উদ্দেশ্য স্ত্রীকে গর্ভধারণ থেকে বিরত রাখা। শারীরিক অসুস্থতা অথবা দুই সন্তানের মাঝে প্রয়োজনীয় ব্যবধান রাখার ক্ষেত্রে অস্থায়ীভাবে আযল করা শরী‘আতে বৈধ। জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য এটি একটি কৌশল মাত্র। তবে বিশ্বাস রাখতে হবে যে, আল্লাহ চাইলে এর পরেও গর্ভে সন্তান আসতে পারে। জনৈক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট এসে বলল, আমার দাসীর সাথে আমি মিলিত হ’লেও তার গর্ভধারণ আমি পসন্দ করি না। তিনি বললেন, তুমি চাইলে আযল করতে পার, তবে আল্লাহ তা‘আলা যা তাক্বদীরে লিখেছেন তা হবেই (মুসলিম হা/৩৬২৯; মিশকাত হা/৩১৮৫)।
সন্তানের ভরণ-পোষণের ভয়ে ‘আযল’ করা নিষিদ্ধ। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা দরিদ্রতার ভয়ে সন্তানদেরকে হত্যা করো না। কেননা আমি যেমন তোমাদেরকে রূযী দেই, তেমনি তাদেরকেও রূযী দেব’ (আন‘আম ৬/১৫১)। অতএব আযল পদ্ধতি অথবা বর্তমান যুগে আবিষ্কৃত জন্মনিয়ন্ত্রণের যত পদ্ধতি রয়েছে, সেগুলো শারীরিক অসুস্থতা অথবা দুই সন্তানের মাঝে প্রয়োজনীয় ব্যবধান রাখার উদ্দেশ্যে অস্থায়ীভাবে গ্রহণ করা জায়েয। স্থায়ীভাবে গর্ভনিরোধ নিষিদ্ধ।
মনে রাখতে হবে যে, ইসলামে অধিক সন্তান লাভে উৎসাহিত করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা প্রেমময়ী ও অধিক সন্তানদায়িনী নারীকে বিবাহ কর। কেননা আমি ক্বিয়ামতের দিন অন্যান্য উম্মতের চাইতে তোমাদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে গর্ব করব’ (আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৩০৯১; আহমাদ)। জন্মনিয়ন্ত্রণ বা জন্মনিরোধে উক্ত উদ্দেশ্য যেমন ব্যাহত হয়, তেমনি নারীর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। যে নারীর যত সন্তান বেশী, সে নারী তত সুখী ও স্বাস্থ্যবর্তী। সন্তান জন্ম দেওয়াই নারীর প্রকৃতি। আর এই প্রকৃতির উপর হস্তক্ষেপ করলে তার মন্দ প্রতিক্রিয়া হওয়াটাই স্বাভাবিক।
৫০
প্রশ্ন (৯/১৬৯) : ব্রেসলেটের ম্যাগনেটিক পাথরের মধ্যে কোন ওষধি গুণ আছে কি? যদি থাকে তবে তা ব্যবহার করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?-মীযানুর রহমান
বদরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, রংপুর।
উত্তর : এতে কোন ঔষধি গুণ নেই। এসম্পর্কে যা কিছু ধারণা করা হয়, তা কুসংস্কার মাত্র। তাছাড়া রাসূল (ছাঃ) অসুস্থতা দূর করার জন্য শরীরে কোন কিছু ঝুলাতে নিষেধ করেছেন (তিরমিযী হা/২০৭২; মিশকাত হা/৪৫৫৬)। অতএব রোগ প্রতিরোধ, চোখ লাগা ইত্যাদি যে উদ্দেশ্যেই হৌক না কেন, তা ব্যবহার থেকে বিরত থাকা আবশ্যক (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ, ফৎওয়া নং ১৭০৪২)।
বদরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, রংপুর।
উত্তর : এতে কোন ঔষধি গুণ নেই। এসম্পর্কে যা কিছু ধারণা করা হয়, তা কুসংস্কার মাত্র। তাছাড়া রাসূল (ছাঃ) অসুস্থতা দূর করার জন্য শরীরে কোন কিছু ঝুলাতে নিষেধ করেছেন (তিরমিযী হা/২০৭২; মিশকাত হা/৪৫৫৬)। অতএব রোগ প্রতিরোধ, চোখ লাগা ইত্যাদি যে উদ্দেশ্যেই হৌক না কেন, তা ব্যবহার থেকে বিরত থাকা আবশ্যক (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ, ফৎওয়া নং ১৭০৪২)।
-আব্দুল কুদ্দূস, লালমণিরহাট।
উত্তর : অসুস্থ ব্যক্তির প্রয়োজনে রক্ত দান করায় কোন বাধা নেই। বরং মানুষের জীবন বাঁচানোর স্বার্থে এরূপ সাহায্য করা নিঃসন্দেহে নেকীর কাজ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। যে ব্যক্তি তার কোন ভাইয়ের সাহায্যে এগিয়ে আসে, আল্লাহ তা‘আলা তার সাহায্যে এগিয়ে আসেন। যে ব্যক্তি দুনিয়াতে তার ভাইয়ের কোন কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ তা‘আলাও ক্বিয়ামতের দিন তার একটি কষ্ট দূর করবেন’ (বুখারী হা/২৪৪২; মুসলিম হা/২৫৮০; মিশকাত হা/৪৯৫৮ ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়, ‘সৃষ্টির প্রতি দয়া’ অনুচ্ছেদ)। তিনি বলেন, (নেকীর উদ্দেশ্যে কৃত) প্রত্যেক সৎকর্মই ছাদাক্বা (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/১৮৯৩)। অতএব এটিও ছাদাক্বার অন্তর্ভুক্ত হবে।
উত্তর : অসুস্থ ব্যক্তির প্রয়োজনে রক্ত দান করায় কোন বাধা নেই। বরং মানুষের জীবন বাঁচানোর স্বার্থে এরূপ সাহায্য করা নিঃসন্দেহে নেকীর কাজ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। যে ব্যক্তি তার কোন ভাইয়ের সাহায্যে এগিয়ে আসে, আল্লাহ তা‘আলা তার সাহায্যে এগিয়ে আসেন। যে ব্যক্তি দুনিয়াতে তার ভাইয়ের কোন কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ তা‘আলাও ক্বিয়ামতের দিন তার একটি কষ্ট দূর করবেন’ (বুখারী হা/২৪৪২; মুসলিম হা/২৫৮০; মিশকাত হা/৪৯৫৮ ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়, ‘সৃষ্টির প্রতি দয়া’ অনুচ্ছেদ)। তিনি বলেন, (নেকীর উদ্দেশ্যে কৃত) প্রত্যেক সৎকর্মই ছাদাক্বা (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/১৮৯৩)। অতএব এটিও ছাদাক্বার অন্তর্ভুক্ত হবে।
৫২
প্রশ্ন (১১/১৭১) : শ্বশুর বাড়ীতে স্থায়ীভাবে থাকলেও মাঝে মধ্যে পিতার বাড়িতে যাই। এক্ষণে পিতার বাড়িতে ছালাত ক্বছর করা যাবে কি?-এম.এস.এ আব্দুর রব
ওমরগাড়ী, চারঘাট, রাজশাহী।
উত্তর : সাময়িকভাবে অবস্থান করলে পারবে। কেননা রাসূল (ছাঃ) মদীনা থেকে মক্কায় হজ্জব্রত পালন করতে গিয়ে ক্বছর করেছিলেন, যদিও তিনি পূর্বে মক্কার অধিবাসী ছিলেন। তাঁর সাথে বহুসংখ্যক ছাহাবী ছিলেন, মক্কায় যাদের বাড়ি-ঘর ও নিকটাত্মীয় ছিল। কিন্তু রাসূল (ছাঃ) কাউকেই পূর্ণ ছালাত আদায়ের নির্দেশ দেননি (ইমাম শাফেঈ, কিতাবুল উম্ম ১/২১৬)। এছাড়া রাসূল (ছাঃ) সেখানে জুম‘আ আদায় না করে যোহর ছালাত আদায় করেছিলেন (ইরওয়া হা/৫৯৪)।
ওমরগাড়ী, চারঘাট, রাজশাহী।
উত্তর : সাময়িকভাবে অবস্থান করলে পারবে। কেননা রাসূল (ছাঃ) মদীনা থেকে মক্কায় হজ্জব্রত পালন করতে গিয়ে ক্বছর করেছিলেন, যদিও তিনি পূর্বে মক্কার অধিবাসী ছিলেন। তাঁর সাথে বহুসংখ্যক ছাহাবী ছিলেন, মক্কায় যাদের বাড়ি-ঘর ও নিকটাত্মীয় ছিল। কিন্তু রাসূল (ছাঃ) কাউকেই পূর্ণ ছালাত আদায়ের নির্দেশ দেননি (ইমাম শাফেঈ, কিতাবুল উম্ম ১/২১৬)। এছাড়া রাসূল (ছাঃ) সেখানে জুম‘আ আদায় না করে যোহর ছালাত আদায় করেছিলেন (ইরওয়া হা/৫৯৪)।
৫৩
প্রশ্ন (১২/১৭২) : সতর না ঢেকে সামান্য বস্ত্র পরা অবস্থায় ওযূ করলে উক্ত ওযূতে ছালাত আদায় করা যাবে কি, না সতর ঢেকে পুনরায় ওযূ করতে হবে?-খাদীজা
চারঘাট, রাজশাহী।
উত্তর : এ অবস্থায় পুনরায় ওযূ করতে হবে না। কারণ সতর অনাবৃত অবস্থায় ওযূ করা ওযূ ভঙ্গের কারণ সমূহের অন্তর্ভুক্ত নয়। ওযূ ভঙ্গের প্রধান কারণ হ’ল, পেশাব ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে কিছু বের হওয়া (নিসা ৪/৪৩, বুখারী হা/১৩৫)।
চারঘাট, রাজশাহী।
উত্তর : এ অবস্থায় পুনরায় ওযূ করতে হবে না। কারণ সতর অনাবৃত অবস্থায় ওযূ করা ওযূ ভঙ্গের কারণ সমূহের অন্তর্ভুক্ত নয়। ওযূ ভঙ্গের প্রধান কারণ হ’ল, পেশাব ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে কিছু বের হওয়া (নিসা ৪/৪৩, বুখারী হা/১৩৫)।
৫৪
প্রশ্ন (১৩/১৭৩) : পিতা-মাতাকে মারধর করে ভুল বুঝে ক্ষমা চাইলে মাতা ক্ষমা করলেও জীবিত পিতা ক্ষমা করেননি। আল্লাহর নিকটে তওবা করলে উক্ত গোনাহ মাফ হবে?পিতা-মাতাকে মারধর করার পর ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চাইলে মাতা ক্ষমা করলেও জীবিত পিতা ক্ষমা করেননি। এক্ষণে আল্লাহর নিকটে তওবা করলে উক্ত গোনাহ মাফ হবে কি?
-যুবায়ের, পিংলু, জয়পুরহাট।
উত্তর : পিতা-মাতাকে প্রহার করা কবীরা গোনাহের অন্তর্ভুক্ত (বুখারী হা/৬১৭১, মিশকাত হা/৩৭৭৭)। এ গোনাহটি হাক্কুল ইবাদের সাথে সম্পর্কিত গোনাহ। সুতরাং এর জন্য কেবল আল্লাহর নিকটে তওবা করলেই যথেষ্ট হবে না (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৮/১৮৭; নববী, শরহ মুসলিম হা/১৮৮৬-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)। বরং অনুতপ্ত হয়ে পিতার নিকটে ক্ষমা নেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে এবং তার সাথে সদ্ব্যবহার অব্যাহত রাখতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘পিতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং পিতার অসন্তুষ্টিতে আল্লাহর অসন্তুষ্টি’ (তিরমিযী হা/১৮৯৯, মিশকাত হা/৪৯২৭)।
-যুবায়ের, পিংলু, জয়পুরহাট।
উত্তর : পিতা-মাতাকে প্রহার করা কবীরা গোনাহের অন্তর্ভুক্ত (বুখারী হা/৬১৭১, মিশকাত হা/৩৭৭৭)। এ গোনাহটি হাক্কুল ইবাদের সাথে সম্পর্কিত গোনাহ। সুতরাং এর জন্য কেবল আল্লাহর নিকটে তওবা করলেই যথেষ্ট হবে না (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৮/১৮৭; নববী, শরহ মুসলিম হা/১৮৮৬-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)। বরং অনুতপ্ত হয়ে পিতার নিকটে ক্ষমা নেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে এবং তার সাথে সদ্ব্যবহার অব্যাহত রাখতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘পিতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং পিতার অসন্তুষ্টিতে আল্লাহর অসন্তুষ্টি’ (তিরমিযী হা/১৮৯৯, মিশকাত হা/৪৯২৭)।
৫৫
প্রশ্ন (১৪/১৭৪) : প্রবল শীতের কারণে বা রোগ বৃদ্ধির আশংকায় ফরয গোসল না করে তায়াম্মুম বা ওযূ করে ছালাত আদায় করা যাবে কি?-আব্দুর রহীম
পুঠিয়া, রাজশাহী।
উত্তর : প্রবল শীতের কারণে শারীরিক অসুস্থতা, রোগ সৃষ্টি বা বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকলে ওযূ নয়, বরং তায়াম্মুম করে ছালাত আদায় করবে (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৩১)। আমর ইবনুল ‘আছ (রাঃ) বলেন, ‘যাতুস সালাসিল’ যুদ্ধে শীতের রাতে আমার স্বপ্নদোষ হয়েছিল। শারীরিক অসুস্থতার আশংকায় গোসল না করে তায়াম্মুম করে সাথীদের নিয়ে ফজরের ছালাত আদায় করলাম। পরে সাথীরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকটে এই ঘটনা বর্ণনা করলে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি কি অপবিত্রাবস্থায় তোমার সাথীদের নিয়ে ছালাত আদায় করেছ? তখন আমি গোসল না করার কারণ ব্যাখ্যা করলাম এবং বললাম আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের সম্মুখীন কর না’ (বাক্বারাহ ২/১৯৫)। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হাসলেন এবং চুপ থাকলেন (আবুদাঊদ হা/৩৩৪, ‘ঠান্ডা লাগার ভয় থাকলে অপবিত্র ব্যক্তি কি করবে’ অনুচ্ছেদ, সনদ ছহীহ)।
পুঠিয়া, রাজশাহী।
উত্তর : প্রবল শীতের কারণে শারীরিক অসুস্থতা, রোগ সৃষ্টি বা বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকলে ওযূ নয়, বরং তায়াম্মুম করে ছালাত আদায় করবে (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৩১)। আমর ইবনুল ‘আছ (রাঃ) বলেন, ‘যাতুস সালাসিল’ যুদ্ধে শীতের রাতে আমার স্বপ্নদোষ হয়েছিল। শারীরিক অসুস্থতার আশংকায় গোসল না করে তায়াম্মুম করে সাথীদের নিয়ে ফজরের ছালাত আদায় করলাম। পরে সাথীরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকটে এই ঘটনা বর্ণনা করলে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি কি অপবিত্রাবস্থায় তোমার সাথীদের নিয়ে ছালাত আদায় করেছ? তখন আমি গোসল না করার কারণ ব্যাখ্যা করলাম এবং বললাম আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের সম্মুখীন কর না’ (বাক্বারাহ ২/১৯৫)। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হাসলেন এবং চুপ থাকলেন (আবুদাঊদ হা/৩৩৪, ‘ঠান্ডা লাগার ভয় থাকলে অপবিত্র ব্যক্তি কি করবে’ অনুচ্ছেদ, সনদ ছহীহ)।
৫৬
প্রশ্ন (১৫/১৭৫) : ৪৫ বছরের অধিক বয়সী মহিলা শারীরিক অক্ষমতার কারণে স্বামীর চাহিদা মিটাতে অপারগতা প্রকাশ করলে গোনাহগার হবেন কি?-মুহাম্মাদ ইবরাহীম, চাঁদপুর।
উত্তর : আল্লাহ তা‘আলা কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না (বাক্বারাহ ২/২৮৬)। তবে তাকে সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করতে হবে। চেষ্টায় ঘাটতি হ’লে গুনাহগার হবে (তাগাবুন ৬৪/১৬)। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন কোন ব্যক্তি স্ত্রীকে তার বিছানায় ডাকে সে তার বিছানায় যেতে অস্বীকার করে এবং অসন্তুষ্ট অবস্থায় রাত্রি যাপন করে, তখন ফেরেশতাগণ তার প্রতি সকাল পর্যন্ত অভিশাপ করতে থাকেন’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩২৪৬)।
উত্তর : আল্লাহ তা‘আলা কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না (বাক্বারাহ ২/২৮৬)। তবে তাকে সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করতে হবে। চেষ্টায় ঘাটতি হ’লে গুনাহগার হবে (তাগাবুন ৬৪/১৬)। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন কোন ব্যক্তি স্ত্রীকে তার বিছানায় ডাকে সে তার বিছানায় যেতে অস্বীকার করে এবং অসন্তুষ্ট অবস্থায় রাত্রি যাপন করে, তখন ফেরেশতাগণ তার প্রতি সকাল পর্যন্ত অভিশাপ করতে থাকেন’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩২৪৬)।
৫৭
প্রশ্ন (১৬/১৭৬) : আমার কাপড়ের দোকানে মেয়েদের টপস, জিপসি, প্যান্ট, টাইটস ইত্যাদি আধুনিক পোষাক বিক্রয় করে থাকি। এটা শরী‘আতসম্মত হবে কি?-সোহেল আমীন
সিটি প্লাজা, গোহাটা রোড, যশোর।
উত্তর : নগ্নতা প্রকাশক ও যৌন উদ্দীপক যেকোন পোষাক পরিধান করা হারাম (মুসলিম হা/২১২৮, মিশকাত হা/৩৫২৪)। নারী-পুরুষের পোষাক এমন হবে যাতে (১) দেহের গোপনীয় স্থান সমূহ অন্যের চোখে প্রকট হয়ে না ওঠে (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৫২৪)। (২) ঢিলাঢালা, ভদ্র ও মার্জিত হওয়া (আ‘রাফ ৭/২৬; মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৮)। (৩) অমুসলিমদের সদৃশ না হওয়া (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৩৪৭)। (৪) অহংকার প্রকাশ না পাওয়া (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৪৩১১-১৪, ৪৩২১; নাসাঈ, ইবনু মাজাহ হা/৪৩৮১)। অতএব কোন ধরনের হারাম পোষাকের ব্যবসা করা শরী‘আতসম্মত নয়(আবুদাঊদ হা/৩৪৮৫ ও ৩৪৮৮, সনদ ছহীহ)।
সিটি প্লাজা, গোহাটা রোড, যশোর।
উত্তর : নগ্নতা প্রকাশক ও যৌন উদ্দীপক যেকোন পোষাক পরিধান করা হারাম (মুসলিম হা/২১২৮, মিশকাত হা/৩৫২৪)। নারী-পুরুষের পোষাক এমন হবে যাতে (১) দেহের গোপনীয় স্থান সমূহ অন্যের চোখে প্রকট হয়ে না ওঠে (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৫২৪)। (২) ঢিলাঢালা, ভদ্র ও মার্জিত হওয়া (আ‘রাফ ৭/২৬; মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৮)। (৩) অমুসলিমদের সদৃশ না হওয়া (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৩৪৭)। (৪) অহংকার প্রকাশ না পাওয়া (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৪৩১১-১৪, ৪৩২১; নাসাঈ, ইবনু মাজাহ হা/৪৩৮১)। অতএব কোন ধরনের হারাম পোষাকের ব্যবসা করা শরী‘আতসম্মত নয়(আবুদাঊদ হা/৩৪৮৫ ও ৩৪৮৮, সনদ ছহীহ)।
৫৮
প্রশ্ন (১৭/১৭৭) : ৫ লক্ষ টাকা ১ বছরের বিনিময়ে চার কিস্তিতে পরবর্তী একবছরে মোট পাঁচ লক্ষ ৫০ হাযার টাকা এবং সাথে মাসিক মুনাফা পরিশোধ শরী‘আতসম্মত হবে?জনৈক ব্যক্তি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫ লক্ষ টাকা ১ বছরের জন্য বিনিয়োগ হিসাবে চান। বিনিময়ে তিনি চার কিস্তিতে পরবর্তী একবছরে মোট পাঁচ লক্ষ ৫০ হাযার টাকা এবং সাথে মাসিক মুনাফা পরিশোধ করবেন। এরূপ লেনদেন শরী‘আতসম্মত হবে কি?
-খালিদ, মহাখালী, ঢাকা।
উত্তর : এরূপ লেন-দেন জায়েয নয়। এখানে বিনিয়োগের মোট টাকার অতিরিক্ত পঞ্চাশ হাযার টাকা স্পষ্ট সূদ। যা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ছাঃ) হারাম করেছেন (বাক্বারাহ ২/২৭৫)। শরী‘আতে যৌথ ব্যবসা পদ্ধতি দু’টি- (১) মুশারাকা : দুই বা ততোধিক ব্যক্তি বিনিয়োগ করবে এবং বিনিয়োগের পরিমাণ অনুযায়ী লাভ-লোকসান বণ্টিত হবে (দারাকুৎনী হা/৩০৭৭) (২) মুযারাবা : একজনের অর্থে অপরজন ব্যবসা করবে। লভ্যাংশ চুক্তি অনুপাতে উভয়ের মধ্যে বণ্টিত হবে (আবুদাঊদ হা/৪৮৩৬; সনদ ছহীহ, নায়ল হা/২৩৩৪-৩৫)।
-খালিদ, মহাখালী, ঢাকা।
উত্তর : এরূপ লেন-দেন জায়েয নয়। এখানে বিনিয়োগের মোট টাকার অতিরিক্ত পঞ্চাশ হাযার টাকা স্পষ্ট সূদ। যা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ছাঃ) হারাম করেছেন (বাক্বারাহ ২/২৭৫)। শরী‘আতে যৌথ ব্যবসা পদ্ধতি দু’টি- (১) মুশারাকা : দুই বা ততোধিক ব্যক্তি বিনিয়োগ করবে এবং বিনিয়োগের পরিমাণ অনুযায়ী লাভ-লোকসান বণ্টিত হবে (দারাকুৎনী হা/৩০৭৭) (২) মুযারাবা : একজনের অর্থে অপরজন ব্যবসা করবে। লভ্যাংশ চুক্তি অনুপাতে উভয়ের মধ্যে বণ্টিত হবে (আবুদাঊদ হা/৪৮৩৬; সনদ ছহীহ, নায়ল হা/২৩৩৪-৩৫)।
৫৯
প্রশ্ন (১৮/১৭৮) : মসজিদের মেহরাবের উপরে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ এবং একপাশে ‘আল্লাহ’ অপর পাশে ‘মুহাম্মাদ’ লেখা যাবে কি?-রফীকুল ইসলাম
মধ্য মাগুরা, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : মসজিদের মেহরাবের উপরে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ লেখা যাবে না। কেননা মসজিদে এরূপ লেখার নিয়ম রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের যুগে ছিল না। আর মেহরাবের এক পার্শ্বে ‘আল্লাহ’ অপর পাশে^র্ ‘মুহাম্মাদ’ লিখা শিরক। এতে আল্লাহ ও রাসূলকে তথা স্রষ্টা ও সৃষ্টিকে সমান গণ্য করা হয়। এইসব লেখার পিছনে সাধারণতঃ এই আক্বীদা কাজ করে যে, যিনিই আল্লাহ তিনিই মুহাম্মাদ। অর্থাৎ আল্লাহই মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর রূপধারণ করে দুনিয়াতে এসেছেন (নাঊযুবিল্লাহ)। যার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় ছূফীদের আবিষ্কৃত মীলাদ মাহফিলে পঠিত উর্দূ কবিতার মাধ্যমে। যেমন বলা হয়, ‘ওহ্ জো মুস্তাবী আরশ থা খোদা হো কার, উতার পাড়া হ্যায় মদীনা মেঁ মোছতফা হো কার্। অর্থ: আরশের অধিপতি আল্লাহ ছিলেন যিনি, মুছতফা রূপে মদীনায় অবতীর্ণ হ’লেন তিনি’। এগুলো পরিষ্কারভাবে শিরক। অতএব আল্লাহ ও মুহাম্মাদ পাশাপাশি লেখা থেকে মসজিদকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
আজকাল অনেকে এগুলি বাসের মাথায় দু’পাশে লেখেন। অনেকে মুহাম্মাদ-এর বদলে ‘গরীব নেওয়ায’ লেখেন। কোন কোন গাড়ীর মাথায় বড় করে আরবীতে ‘আল্লাহু’ লেখা হয়। এগুলি লেখা অনর্থক। কেননা মসজিদে, ঘর-বাড়ীতে, দেওয়ালে, পাত্রে বা পরিবহনে এসব লেখার কোন প্রমাণ কুরআন-হাদীছে নেই। এতে কোন লাভও নেই। বরং বিসমিল্লাহ বলে কাজ শুরু করা ও আলহামদুলিল্লাহ বলে কাজ শেষ করার মধ্যেই কেবল আল্লাহর রহমত ও বরকত নিহিত রয়েছে। অতএব এসব অনর্থক কাজ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
মধ্য মাগুরা, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : মসজিদের মেহরাবের উপরে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ লেখা যাবে না। কেননা মসজিদে এরূপ লেখার নিয়ম রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের যুগে ছিল না। আর মেহরাবের এক পার্শ্বে ‘আল্লাহ’ অপর পাশে^র্ ‘মুহাম্মাদ’ লিখা শিরক। এতে আল্লাহ ও রাসূলকে তথা স্রষ্টা ও সৃষ্টিকে সমান গণ্য করা হয়। এইসব লেখার পিছনে সাধারণতঃ এই আক্বীদা কাজ করে যে, যিনিই আল্লাহ তিনিই মুহাম্মাদ। অর্থাৎ আল্লাহই মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর রূপধারণ করে দুনিয়াতে এসেছেন (নাঊযুবিল্লাহ)। যার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় ছূফীদের আবিষ্কৃত মীলাদ মাহফিলে পঠিত উর্দূ কবিতার মাধ্যমে। যেমন বলা হয়, ‘ওহ্ জো মুস্তাবী আরশ থা খোদা হো কার, উতার পাড়া হ্যায় মদীনা মেঁ মোছতফা হো কার্। অর্থ: আরশের অধিপতি আল্লাহ ছিলেন যিনি, মুছতফা রূপে মদীনায় অবতীর্ণ হ’লেন তিনি’। এগুলো পরিষ্কারভাবে শিরক। অতএব আল্লাহ ও মুহাম্মাদ পাশাপাশি লেখা থেকে মসজিদকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
আজকাল অনেকে এগুলি বাসের মাথায় দু’পাশে লেখেন। অনেকে মুহাম্মাদ-এর বদলে ‘গরীব নেওয়ায’ লেখেন। কোন কোন গাড়ীর মাথায় বড় করে আরবীতে ‘আল্লাহু’ লেখা হয়। এগুলি লেখা অনর্থক। কেননা মসজিদে, ঘর-বাড়ীতে, দেওয়ালে, পাত্রে বা পরিবহনে এসব লেখার কোন প্রমাণ কুরআন-হাদীছে নেই। এতে কোন লাভও নেই। বরং বিসমিল্লাহ বলে কাজ শুরু করা ও আলহামদুলিল্লাহ বলে কাজ শেষ করার মধ্যেই কেবল আল্লাহর রহমত ও বরকত নিহিত রয়েছে। অতএব এসব অনর্থক কাজ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
৬০
প্রশ্ন (১৯/১৭৯) : জুম‘আ ও যোহর ছালাতের সময় কি একই? যদি তাই হয়, তবে খুৎবা লম্বা না করে জুম‘আর ছালাত আউয়াল ওয়াক্তে আদায় করাই কি উত্তম হবে?-ছাদরুল ইসলাম
-মেলান্দী, মোহনপুর, রাজশাহী।
উত্তর : জুম‘আ ও যোহরের ছালাতের সময় একই। আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, সূর্য যখন (পশ্চিম আকাশে) ঢলে যেত তখন নবী করীম (ছাঃ) জুম‘আর ছালাত আদায় করতেন (বুখারী হা/৯০৪; মিশকাত হা/১৪০১)। তবে এর অর্থ এই নয় যে, যোহরের ছালাত যেমন ১৫ মিনিটে শেষ হয়, খুৎবা সহ জুম‘আর ছালাত তেমনি সংক্ষিপ্ত সময়ে শেষ হবে। যোহরের ছালাতে খুৎবা নেই। কিন্তু জুম‘আর ছালাতে খুৎবা রয়েছে। যার অর্থ ভাষণ। ফলে তা লম্বা হবেই। অতএব খুৎবা আখেরাত মুখী, সংক্ষিপ্ত ও সারগর্ভ হওয়া বাঞ্ছনীয় (মুসলিম, মিশকাত হা/১৪০৫-০৬)। তবে দীর্ঘ হওয়াও জায়েয আছে (মুসলিম হা/২৮৯২)। জাবের (রাঃ) বলেন, খুৎবার সময় রাসূল (ছাঃ)-এর দু’চোখ উত্তেজনায় লাল হয়ে যেত। গলার স্বর উঁচু হ’ত? ক্রোধ ভীষণ হ’ত। যেন তিনি কোন সৈন্যদলকে হুঁশিয়ার করছেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/১৪০৭)। অতএব ঐ খুৎবা অবশ্যই দু’পাঁচ মিনিটের জন্য ছিল না। বরং প্রয়োজনমত ছিল। অতএব খুৎবা দীর্ঘ হ’লে খুৎবা শুরুর সময় প্রয়োজনমত এগিয়ে নিতে হবে এবং ছালাত আউয়াল ওয়াক্তে পড়াই উত্তম হবে।
উল্লেখ্য যে, আজকাল জুম‘আর মূল দু’টি খুৎবা আরবীতে ১০ মিনিটে শেষ করে দেওয়া হয় এবং তার পূর্বে মিম্বরে বসে বাংলায় আরেকটি খুৎবা দেওয়া হয়। যা পরিষ্কারভাবে বিদ‘আত। যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
-মেলান্দী, মোহনপুর, রাজশাহী।
উত্তর : জুম‘আ ও যোহরের ছালাতের সময় একই। আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, সূর্য যখন (পশ্চিম আকাশে) ঢলে যেত তখন নবী করীম (ছাঃ) জুম‘আর ছালাত আদায় করতেন (বুখারী হা/৯০৪; মিশকাত হা/১৪০১)। তবে এর অর্থ এই নয় যে, যোহরের ছালাত যেমন ১৫ মিনিটে শেষ হয়, খুৎবা সহ জুম‘আর ছালাত তেমনি সংক্ষিপ্ত সময়ে শেষ হবে। যোহরের ছালাতে খুৎবা নেই। কিন্তু জুম‘আর ছালাতে খুৎবা রয়েছে। যার অর্থ ভাষণ। ফলে তা লম্বা হবেই। অতএব খুৎবা আখেরাত মুখী, সংক্ষিপ্ত ও সারগর্ভ হওয়া বাঞ্ছনীয় (মুসলিম, মিশকাত হা/১৪০৫-০৬)। তবে দীর্ঘ হওয়াও জায়েয আছে (মুসলিম হা/২৮৯২)। জাবের (রাঃ) বলেন, খুৎবার সময় রাসূল (ছাঃ)-এর দু’চোখ উত্তেজনায় লাল হয়ে যেত। গলার স্বর উঁচু হ’ত? ক্রোধ ভীষণ হ’ত। যেন তিনি কোন সৈন্যদলকে হুঁশিয়ার করছেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/১৪০৭)। অতএব ঐ খুৎবা অবশ্যই দু’পাঁচ মিনিটের জন্য ছিল না। বরং প্রয়োজনমত ছিল। অতএব খুৎবা দীর্ঘ হ’লে খুৎবা শুরুর সময় প্রয়োজনমত এগিয়ে নিতে হবে এবং ছালাত আউয়াল ওয়াক্তে পড়াই উত্তম হবে।
উল্লেখ্য যে, আজকাল জুম‘আর মূল দু’টি খুৎবা আরবীতে ১০ মিনিটে শেষ করে দেওয়া হয় এবং তার পূর্বে মিম্বরে বসে বাংলায় আরেকটি খুৎবা দেওয়া হয়। যা পরিষ্কারভাবে বিদ‘আত। যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
-মাসঊদ রানা, বিরল, দিনাজপুর।
উত্তর : বাড়ীতে অবস্থান করাই মহিলাদের কর্তব্য (আহযাব ৩৩)। এক্ষণে চিকিৎসা মানুষের মৌলিক চাহিদা সমূহের অন্তর্ভুক্ত। যা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই একান্ত প্রয়োজন। সেকারণ নারীদের জন্য নারী এবং পুরুষদের জন্য পুরুষ চিকিৎসক ও সেবক থাকা এবং হাসপাতালগুলিতে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক বিভাগ থাকা আবশ্যক। এরূপ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নারীদের নার্স বা চিকিৎসকের দায়িত্বপালনে শরী‘আতে কোন বাধা নেই। তবে এরূপ ব্যবস্থা না থাকলে সার্বক্ষণিক পর্দার মধ্যে থাকা এবং পূর্ণ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা সাপেক্ষে নারীরা নার্সিং বা চিকিৎসা পেশায় অংশগ্রহণ করতে পারে।
উত্তর : বাড়ীতে অবস্থান করাই মহিলাদের কর্তব্য (আহযাব ৩৩)। এক্ষণে চিকিৎসা মানুষের মৌলিক চাহিদা সমূহের অন্তর্ভুক্ত। যা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই একান্ত প্রয়োজন। সেকারণ নারীদের জন্য নারী এবং পুরুষদের জন্য পুরুষ চিকিৎসক ও সেবক থাকা এবং হাসপাতালগুলিতে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক বিভাগ থাকা আবশ্যক। এরূপ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নারীদের নার্স বা চিকিৎসকের দায়িত্বপালনে শরী‘আতে কোন বাধা নেই। তবে এরূপ ব্যবস্থা না থাকলে সার্বক্ষণিক পর্দার মধ্যে থাকা এবং পূর্ণ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা সাপেক্ষে নারীরা নার্সিং বা চিকিৎসা পেশায় অংশগ্রহণ করতে পারে।
৬২
প্রশ্ন (২১/১৮১) : পিতার জীবদ্দশায় বড় বোন এবং মৃত্যুর পর ছোট ভাই মারা গেছে। বড় বোনের সন্তানেরা নানার সম্পদের অংশীদার হবে কি? আর ছোট ভাইয়ের প্রাপ্ত অংশ কারা পাবে?পিতার জীবদ্দশায় বড় বোন এবং মৃত্যুর পর ছোট ভাই মারা গেছে। এক্ষণে বড় বোনের সন্তানেরা নানার সম্পদের অংশীদার হবে কি? আর ছোট ভাইয়ের স্ত্রী-সন্তান না থাকায় তার প্রাপ্ত অংশ কারা পাবে? ছোট ভাইয়ের চিকিৎসা বাবদ খরচ করায় বড় ভাই এখন তার সম্পদের কোন অংশ নিতে পারবে কি?
-শফীকুর রহমান, পাংশা, রাজবাড়ী।
উত্তর : পিতার জীবদ্দশায় তার মেয়ে মৃত্যুবরণ করায় এবং মেয়ের ভাই-বোন জীবিত থাকায় ঐ মেয়ের সন্তানেরা তাদের নানার সম্পত্তির ওয়ারিছ হবে না (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ, ফৎওয়া নং ১৯১৪৯, ১৬/৪৮৯ পৃঃ)। এমতাবস্থায় নানা তার নাতী-নাতনীদের জন্য অছিয়ত করে যাবেন। আর পরবর্তীতে মারা যাওয়া ছোট ভাইয়ের সম্পদ তার ওয়ারিছদের মাঝে ভাগ হবে। বড় ভাই চিকিৎসা খরচ বাবদ মৃত ভাইয়ের প্রাপ্ত সম্পদ থেকে নিবেন। অতঃপর অবশিষ্ট সম্পদ ওয়ারিছদের মাঝে বণ্টিত হবে। এ সময় বড় ভাইও ওয়ারিছ হিসাবে অংশ পাবেন।
-শফীকুর রহমান, পাংশা, রাজবাড়ী।
উত্তর : পিতার জীবদ্দশায় তার মেয়ে মৃত্যুবরণ করায় এবং মেয়ের ভাই-বোন জীবিত থাকায় ঐ মেয়ের সন্তানেরা তাদের নানার সম্পত্তির ওয়ারিছ হবে না (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ, ফৎওয়া নং ১৯১৪৯, ১৬/৪৮৯ পৃঃ)। এমতাবস্থায় নানা তার নাতী-নাতনীদের জন্য অছিয়ত করে যাবেন। আর পরবর্তীতে মারা যাওয়া ছোট ভাইয়ের সম্পদ তার ওয়ারিছদের মাঝে ভাগ হবে। বড় ভাই চিকিৎসা খরচ বাবদ মৃত ভাইয়ের প্রাপ্ত সম্পদ থেকে নিবেন। অতঃপর অবশিষ্ট সম্পদ ওয়ারিছদের মাঝে বণ্টিত হবে। এ সময় বড় ভাইও ওয়ারিছ হিসাবে অংশ পাবেন।
৬৩
প্রশ্ন (২২/১৮২) : দাজ্জাল কি শেষ যামানায় জন্ম লাভ করবে, না পূর্ব থেকেই সে জীবিত রয়েছে? জানিয়ে বাধিত করবেন।-ডা. সেলিম মোল্লা, বুড়িচং, কুমিল্লা।
উত্তর : দাজ্জাল পূর্ব থেকেই জীবিত রয়েছে এবং বিখ্যাত ছাহাবী তামীম দারী (রাঃ) ও তার ত্রিশজন সাথীর সাথে অজ্ঞাত এক দ্বীপে বন্দী অবস্থায় তার সাক্ষাৎ ঘটেছিল। সেখানে দাজ্জাল তাদের নিকট থেকে রাসূল (ছাঃ)-এর আগমন সম্পর্কে জেনে অচিরেই বন্দীদশা থেকে সে মুক্তি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছিল। এ ঘটনাকে রাসূল (ছাঃ) স্বয়ং সত্যায়ন করেছিলেন (মুসলিম হা/২৯৪২, ৪৬; আহমাদ, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩০৮১)। অন্য বর্ণনায় রাসূল (ছাঃ) বলেন, দাজ্জাল শেষ যামানায় খোরাসান থেকে বের হবে (তিরমিযী হা/২২৩৭; ইবনু মাজাহ হা/৪০৭২)। কিন্তু তার জন্মগ্রহণের কথা বলা হয়নি। অতএব সে পূর্ব থেকেই জীবিত রয়েছে এবং শেষ যামানায় কিয়ামতের প্রাক্কালে বের হবে।
বর্তমান যুগের ইহুদী-খৃষ্টান সহ যালেম শাসকদের ‘দাজ্জাল’ আখ্যায়িত করে কোন কোন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল অপপ্রচার চালাচ্ছে। ইসলামী শরী‘আতে এর কোন ভিত্তি নেই।
উত্তর : দাজ্জাল পূর্ব থেকেই জীবিত রয়েছে এবং বিখ্যাত ছাহাবী তামীম দারী (রাঃ) ও তার ত্রিশজন সাথীর সাথে অজ্ঞাত এক দ্বীপে বন্দী অবস্থায় তার সাক্ষাৎ ঘটেছিল। সেখানে দাজ্জাল তাদের নিকট থেকে রাসূল (ছাঃ)-এর আগমন সম্পর্কে জেনে অচিরেই বন্দীদশা থেকে সে মুক্তি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছিল। এ ঘটনাকে রাসূল (ছাঃ) স্বয়ং সত্যায়ন করেছিলেন (মুসলিম হা/২৯৪২, ৪৬; আহমাদ, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩০৮১)। অন্য বর্ণনায় রাসূল (ছাঃ) বলেন, দাজ্জাল শেষ যামানায় খোরাসান থেকে বের হবে (তিরমিযী হা/২২৩৭; ইবনু মাজাহ হা/৪০৭২)। কিন্তু তার জন্মগ্রহণের কথা বলা হয়নি। অতএব সে পূর্ব থেকেই জীবিত রয়েছে এবং শেষ যামানায় কিয়ামতের প্রাক্কালে বের হবে।
বর্তমান যুগের ইহুদী-খৃষ্টান সহ যালেম শাসকদের ‘দাজ্জাল’ আখ্যায়িত করে কোন কোন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল অপপ্রচার চালাচ্ছে। ইসলামী শরী‘আতে এর কোন ভিত্তি নেই।
৬৪
প্রশ্ন (২৩/১৮৩) : কা‘বাঘরের কাজ সম্পন্ন করার পর আল্লাহ তা‘আলা ইব্রাহীম (আঃ)-কে অবশিষ্ট বালু ও পাথর সজোরে চারদিকে নিক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন কি?কা‘বাঘরের কাজ সম্পন্ন করার পর আল্লাহ তা‘আলা ইব্রাহীম (আঃ)-কে অবশিষ্ট বালু ও পাথর সজোরে চারদিকে নিক্ষেপ করার নির্দেশ দিলেন এবং বললেন যে, এ পাথরের টুকরা ও বালুকণা যেখানেই পড়বে, সেখানেই মসজিদ তৈরী হবে। এ ঘটনার কোন সত্যতা আছে কি?
-নাজমুল ইসলাম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
উত্তর : এরূপ ঘটনা ভিত্তিহীন।
-নাজমুল ইসলাম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
উত্তর : এরূপ ঘটনা ভিত্তিহীন।
-ওমর ফারূক
ধুলিয়ান, মুর্শিদাবাদ,ভারত।
উত্তর : নখ বড় রাখা যাবে না। কারণ রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) নখ ছোট করাকে মানুষের পাঁচটি স্বভাবধর্মের অন্তর্ভুক্ত বলেছেন (বুখারী, মুসলিম হা/২৫৮, মিশকাত হা/৪৪২০ ‘চুল আঁচড়ানো’ অনুচ্ছেদ)। শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পানি প্রবেশে বাধা সৃষ্টিকারী কোন বস্ত্ত ব্যবহার করা যাবে না। কেননা ওযূ-গোসলের ক্ষেত্রে দেহের সামান্য কোন স্থান শুকনা থাকলেও পবিত্রতা অর্জিত হয় না (মুসলিম হা/২৪৩, সুবুলুস সালাম হা/৫০)। সেকারণ নেইল পালিশ ব্যবহার করা যাবে না। বরং এর পরিবর্তে নারীরা মেহেদী ব্যবহার করতে পারে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘নারীদের সুগন্ধি হচ্ছে যা দেখা যায়, গন্ধ পাওয়া যায় না। আর পুরুষের সুগন্ধি হচ্ছে যা দেখা যায় না, গন্ধ পাওয়া যায়’ (নাসাঈ, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৪৪৪৩)।
ধুলিয়ান, মুর্শিদাবাদ,ভারত।
উত্তর : নখ বড় রাখা যাবে না। কারণ রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) নখ ছোট করাকে মানুষের পাঁচটি স্বভাবধর্মের অন্তর্ভুক্ত বলেছেন (বুখারী, মুসলিম হা/২৫৮, মিশকাত হা/৪৪২০ ‘চুল আঁচড়ানো’ অনুচ্ছেদ)। শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পানি প্রবেশে বাধা সৃষ্টিকারী কোন বস্ত্ত ব্যবহার করা যাবে না। কেননা ওযূ-গোসলের ক্ষেত্রে দেহের সামান্য কোন স্থান শুকনা থাকলেও পবিত্রতা অর্জিত হয় না (মুসলিম হা/২৪৩, সুবুলুস সালাম হা/৫০)। সেকারণ নেইল পালিশ ব্যবহার করা যাবে না। বরং এর পরিবর্তে নারীরা মেহেদী ব্যবহার করতে পারে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘নারীদের সুগন্ধি হচ্ছে যা দেখা যায়, গন্ধ পাওয়া যায় না। আর পুরুষের সুগন্ধি হচ্ছে যা দেখা যায় না, গন্ধ পাওয়া যায়’ (নাসাঈ, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৪৪৪৩)।
৬৬
প্রশ্ন (২৫/১৮৫) : হজ্জের খরচ বহন করার মত মূল্যমানের জমি থাকা সত্তেব্ও যদি কেউ হজ্জ পালন না করে মারা যান, তাহ’লে তিনি গোনাহগার হবেন কি?-আব্দুর রহমান
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা।
উত্তর : নিজের ও পরিবারের সকল মৌলিক চাহিদা পূরণের পর যদি অবশিষ্ট সম্পদ দ্বারা হজ্জের খরচ নির্বাহ করা যায়, তবে সেক্ষেত্রেই কেবল তা ফরয হবে। এরূপ সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যদি ইসলামের এ রুকন আদায় না করে কেউ মারা যায়, তাহ’লে অবশ্যই তাকে ফরয ত্যাগ করার কারণে গুনাহগার হ’তে হবে (আলে ইমরান ৩/৯৭; মুসলিম হা/১৩৩৭; মিশকাত হা/২৫০৫)।
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা।
উত্তর : নিজের ও পরিবারের সকল মৌলিক চাহিদা পূরণের পর যদি অবশিষ্ট সম্পদ দ্বারা হজ্জের খরচ নির্বাহ করা যায়, তবে সেক্ষেত্রেই কেবল তা ফরয হবে। এরূপ সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যদি ইসলামের এ রুকন আদায় না করে কেউ মারা যায়, তাহ’লে অবশ্যই তাকে ফরয ত্যাগ করার কারণে গুনাহগার হ’তে হবে (আলে ইমরান ৩/৯৭; মুসলিম হা/১৩৩৭; মিশকাত হা/২৫০৫)।
৬৭
প্রশ্ন (২৬/১৮৬) : পৃথক প্রাচীর থাকা সত্ত্বেও মসজিদের পশ্চিম দিকে কবর থাকলে উক্ত মসজিদে ছালাত হবে কি? আর মসজিদ থেকে কবরস্থান কতটুকু দূরে থাকা আবশ্যক?পৃথক প্রাচীর থাকা সত্ত্বেও মসজিদের পশ্চিম দিকে কবর থাকলে উক্ত মসজিদে ছালাত হবে কি? আর মসজিদ থেকে কবরস্থান কতটুকু দূরে থাকা আবশ্যক? মসজিদ পাঁচতলা থাকলে কবরস্থানের দেওয়ালও পাঁচতলা সমান উঁচু করতে হবে কি?
-ফযলুল হক
জামালপুর সদর, জামালপুর।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কবরের দিকে ফিরে ছালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন (মুসলিম হা/৯৭২; নাসাঈ হা/৭৬০; ছহীহাহ হা/১০১৬)। তবে মসজিদের দেয়াল ও কবরস্থানের মাঝে যদি রাস্তা থাকে কিংবা কবরস্থানের পৃথক প্রাচীর থাকে, তাহ’লে সে মসজিদে ছালাত আদায় করতে কোন বাধা নেই। এ ক্ষেত্রে মসজিদ পাঁচ-দশ তলা হওয়ায় কোন অসুবিধা নেই। সাধারণ প্রাচীর বা রাস্তা থাকলেই যথেষ্ট হবে।
-ফযলুল হক
জামালপুর সদর, জামালপুর।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কবরের দিকে ফিরে ছালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন (মুসলিম হা/৯৭২; নাসাঈ হা/৭৬০; ছহীহাহ হা/১০১৬)। তবে মসজিদের দেয়াল ও কবরস্থানের মাঝে যদি রাস্তা থাকে কিংবা কবরস্থানের পৃথক প্রাচীর থাকে, তাহ’লে সে মসজিদে ছালাত আদায় করতে কোন বাধা নেই। এ ক্ষেত্রে মসজিদ পাঁচ-দশ তলা হওয়ায় কোন অসুবিধা নেই। সাধারণ প্রাচীর বা রাস্তা থাকলেই যথেষ্ট হবে।
৬৮
প্রশ্ন (২৭/১৮৭) : সন্তান জন্মদানের সময় মা মারা যাওয়ায় উক্ত সন্তানের সহোদর বড় বোন ব্যতীত দুগ্ধ দানের কেউ নেই। এমতাবস্থায় বোনের দুগ্ধদান জায়েয হবে কি?-নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
উত্তর : এরূপ বাধ্যগত অবস্থায় বোনের দুধ পান করানোয় কোন বাধা নেই। সেক্ষেত্রে উক্ত সন্তান ও বড় বোনের সন্তানদের মধ্যে বিবাহের কোন সুযোগ থাকবে না। এছাড়া শিশুটি মেয়ে হ’লে এবং বড় বোন মারা গেলে বা তার সাথে তার স্বামীর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে উক্ত স্বামী দুধ পিতা হওয়ার কারণে উক্ত মেয়েকে বিবাহ করতে পারবে না (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ২১/১০৬, ফাৎওয়া নং ১৯৩২৯; বুখারী হা/২৬৪৫)।
উত্তর : এরূপ বাধ্যগত অবস্থায় বোনের দুধ পান করানোয় কোন বাধা নেই। সেক্ষেত্রে উক্ত সন্তান ও বড় বোনের সন্তানদের মধ্যে বিবাহের কোন সুযোগ থাকবে না। এছাড়া শিশুটি মেয়ে হ’লে এবং বড় বোন মারা গেলে বা তার সাথে তার স্বামীর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে উক্ত স্বামী দুধ পিতা হওয়ার কারণে উক্ত মেয়েকে বিবাহ করতে পারবে না (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ২১/১০৬, ফাৎওয়া নং ১৯৩২৯; বুখারী হা/২৬৪৫)।
৬৯
প্রশ্ন (২৮/১৮৮) : মসজিদে নববীতে আয়েশা খুঁটি, হান্নানা খুঁটি এরূপ বিভিন্ন খুঁটি রয়েছে। এসব স্থানের পাশে ছালাত আদায় করায় বিশেষ কোন ফযীলত আছে কি?-আশরাফ মজুমদার
জেদ্দা, সঊদী আরব।
উত্তর : এসব স্থানে ছালাত আদায় করার পৃথক কোন ফযীলত নেই। মসজিদে নববীর যে কোন স্থানে ছালাত আদায় করলে (মসজিদে হারাম ছাড়া) সে ছালাত অন্য স্থানের এক হাযার ছালাত অপেক্ষা উত্তম হবে (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৬৯২ ‘মসজিদ সমূহ’ অনুচ্ছেদ)। উল্লেখ্য যে, মসজিদে কারু নামে দরজা বা খুঁটি বানানো ঠিক নয়। কারণ তাতে মানুষ ফযীলতের ধোঁকায় পড়ে বিদ‘আতে লিপ্ত হ’তে পারে। রাসূল (ছাঃ)-এর যামানায় মসজিদে নববীতে এইসব খুঁটি ছিল না।
জেদ্দা, সঊদী আরব।
উত্তর : এসব স্থানে ছালাত আদায় করার পৃথক কোন ফযীলত নেই। মসজিদে নববীর যে কোন স্থানে ছালাত আদায় করলে (মসজিদে হারাম ছাড়া) সে ছালাত অন্য স্থানের এক হাযার ছালাত অপেক্ষা উত্তম হবে (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৬৯২ ‘মসজিদ সমূহ’ অনুচ্ছেদ)। উল্লেখ্য যে, মসজিদে কারু নামে দরজা বা খুঁটি বানানো ঠিক নয়। কারণ তাতে মানুষ ফযীলতের ধোঁকায় পড়ে বিদ‘আতে লিপ্ত হ’তে পারে। রাসূল (ছাঃ)-এর যামানায় মসজিদে নববীতে এইসব খুঁটি ছিল না।
৭০
প্রশ্ন (২৯/১৮৯) : স্ত্রী স্বামীকে এরূপ বলেছে যে, ‘তুমি যদি আমাকে স্পর্শ কর, তবে তা তোমার মৃত মায়ের সাথে যেনার সদৃশ হবে’। এক্ষণে এর কাফফারা কি হবে?উত্তর : এগুলি বাজে কথার অন্তর্ভুক্ত। যা মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়। আল্লাহ বলেন, সফলকাম মুমিন তারাই, যারা ছালাতে খুশূ-খুযূ অবলম্বন করে’ ‘এবং যারা অনর্থক কাজ এড়িয়ে চলে’ (মুমিনূন ২৩/১-৩)। উল্লেখ্য, স্ত্রীর পক্ষ থেকে যিহার হয় না (ফাতাওয়া মারআতুল মুসলিমাহ ২/৮০৩ পৃঃ; উছায়মীন, ফাতাওয়া নুরুন আলাদ দারব-১৯)।
-সাইফুল ইসলাম, শ্রীপুর, গাযীপুর।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদের মত মানুষ ছিলেন। অতএব তাঁর ছায়া থাকাই স্বাভাবিক। ছায়াহীন হওয়ার জন্য তাঁকে নূরের সৃষ্টি হওয়ার প্রয়োজন ছিল। অথচ আল্লাহ বলেন, হে নবী তুমি বলে দাও যে, ‘আমি তোমাদের মত একজন মানুষ মাত্র’ (কাহ্ফ ১৮/১১০)। অন্যত্র আল্লাহ বলেন, ‘(নবী) অন্য কিছুই নয়, বরং তোমাদের মতই একজন মানুষ। তোমরা যা খাও, সে তা খায়। তোমরা যা পান কর, সে তা পান করে’ (মুমিনূন ২৩/৩৩)। নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘আমি যখন দ্বীন সম্পর্কে তোমাদের কোন নির্দেশ দেই, তখন তোমরা তা গ্রহণ কর। আর যখন আমার ‘রায়’ অনুযায়ী কোন কিছুর নির্দেশ দিই, তখন (মনে রেখ) আমি তোমাদের মত একজন মানুষ’ (মুসলিম হা/২৩৬২; মিশকাত হা/১৪৭)। অতএব তাঁর ছায়া না থাকার প্রশ্নই আসে না।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদের মত মানুষ ছিলেন। অতএব তাঁর ছায়া থাকাই স্বাভাবিক। ছায়াহীন হওয়ার জন্য তাঁকে নূরের সৃষ্টি হওয়ার প্রয়োজন ছিল। অথচ আল্লাহ বলেন, হে নবী তুমি বলে দাও যে, ‘আমি তোমাদের মত একজন মানুষ মাত্র’ (কাহ্ফ ১৮/১১০)। অন্যত্র আল্লাহ বলেন, ‘(নবী) অন্য কিছুই নয়, বরং তোমাদের মতই একজন মানুষ। তোমরা যা খাও, সে তা খায়। তোমরা যা পান কর, সে তা পান করে’ (মুমিনূন ২৩/৩৩)। নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘আমি যখন দ্বীন সম্পর্কে তোমাদের কোন নির্দেশ দেই, তখন তোমরা তা গ্রহণ কর। আর যখন আমার ‘রায়’ অনুযায়ী কোন কিছুর নির্দেশ দিই, তখন (মনে রেখ) আমি তোমাদের মত একজন মানুষ’ (মুসলিম হা/২৩৬২; মিশকাত হা/১৪৭)। অতএব তাঁর ছায়া না থাকার প্রশ্নই আসে না।
-মতীউর রহমান
কৃষ্ণচন্দ্রপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : ছালাতে প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর বিশেষ ফযীলত আছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘প্রথম কাতারের (মুছল্লীদের) উপর আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতাগণ দো‘আ করেন’ (ইবনু মাজাহ হা/৯৯৭)। তিনি বলেন, ‘পুরুষদের জন্য সর্বোত্তম কাতার হ’ল প্রথম কাতার’ (মুসলিম হা/৪৪০, মিশকাত হা/১০৯২)।
তবে ইমামের সাথে একাকী ছালাত আদায়কালে ইমামের ডান দিকে দাঁড়াতে হবে (বুখারী হা/৬৯৯, ১১৭; মুসলিম হা/৬৬০; মিশকাত হা/১১০৬)। এছাড়া যখন ইমামের পিছনে দু’পার্শ্ব সমান হবে, তখন কাতারের ডানে দাঁড়ানো মুস্তাহাব। কিন্তু ডান পাশ অতিরিক্ত বেড়ে গেলে বামে দাঁড়ানো উত্তম হবে (উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১২/১৮৪)। তবে কোনক্রমেই ডান প্রান্ত থেকে বা মসজিদের উত্তর দেওয়াল থেকে দ্বিতীয় কাতার বা পরবর্তী কাতার সমূহ শুরু করা যাবে না। উল্লেখ্য, কাতারের ডানদিকে দাঁড়ানো সম্পর্কে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (ইবনু মাজাহ হা/১০০৫, সিলসিলা যঈফাহ হা/৫৬৮৬)।
কৃষ্ণচন্দ্রপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : ছালাতে প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর বিশেষ ফযীলত আছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘প্রথম কাতারের (মুছল্লীদের) উপর আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতাগণ দো‘আ করেন’ (ইবনু মাজাহ হা/৯৯৭)। তিনি বলেন, ‘পুরুষদের জন্য সর্বোত্তম কাতার হ’ল প্রথম কাতার’ (মুসলিম হা/৪৪০, মিশকাত হা/১০৯২)।
তবে ইমামের সাথে একাকী ছালাত আদায়কালে ইমামের ডান দিকে দাঁড়াতে হবে (বুখারী হা/৬৯৯, ১১৭; মুসলিম হা/৬৬০; মিশকাত হা/১১০৬)। এছাড়া যখন ইমামের পিছনে দু’পার্শ্ব সমান হবে, তখন কাতারের ডানে দাঁড়ানো মুস্তাহাব। কিন্তু ডান পাশ অতিরিক্ত বেড়ে গেলে বামে দাঁড়ানো উত্তম হবে (উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১২/১৮৪)। তবে কোনক্রমেই ডান প্রান্ত থেকে বা মসজিদের উত্তর দেওয়াল থেকে দ্বিতীয় কাতার বা পরবর্তী কাতার সমূহ শুরু করা যাবে না। উল্লেখ্য, কাতারের ডানদিকে দাঁড়ানো সম্পর্কে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (ইবনু মাজাহ হা/১০০৫, সিলসিলা যঈফাহ হা/৫৬৮৬)।
৭৩
প্রশ্ন (৩২/১৯২) : পীরদের মুরীদ হয়ে কত মানুষ নামাযী হচ্ছে, পাপ কাজ ছেড়ে দিচ্ছে। অতএব পীর থেকে সাধারণ মানুষকে বিমুখ করা শরী‘আতসম্মত হবে কি?পীরদের মুরীদ হয়ে কত মানুষ নামাযী হচ্ছে, পাপ কাজ ছেড়ে দিচ্ছে। অথচ এইসব পীরদের সমালোচনা করায় বহু মানুষ এদের থেকে বিমুখ হয়ে পড়ছে। অতএব পীর থেকে সাধারণ মানুষকে বিমুখ করা শরী‘আতসম্মত হবে কি?
-বেনিয়ামীন, বামনা, বরগুনা।
উত্তর : পীরগণ তাদের মুরীদদের নেক আমলের দিকে আহবানের পাশাপাশি শিরক ও বিদ‘আতের দিকে আহবান করেন। আর শিরক-বিদ‘আত মানুষের সকল নেক আমলকে নিষ্ফল করে দেয় (যুমার ৩৯/৬৫)। পীরবাদের সবচেয়ে বড় ক্ষতি এই যে, তারা মানুষকে কুরআন-হাদীছ থেকে মুখ ফিরিয়ে পীরের ধ্যানে মগ্ন রাখেন। পীরের কথিত কাশফ ও কেরামত এবং ভিত্তিহীন অলীক কল্পকাহিনীসমূহ এদের নিকট প্রধান দলীল হিসাবে গণ্য হয়। যুগে যুগে মানুষকে ধর্মের নামে শিরকে লিপ্ত করেছে এই শ্রেণীর লোকেরা। অথচ কাশফ ও কেরামত ইসলামী শরী‘আতের কোন দলীল নয়। সুতরাং এসব দল থেকে মানুষকে দূরে রাখার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো আবশ্যক।
-বেনিয়ামীন, বামনা, বরগুনা।
উত্তর : পীরগণ তাদের মুরীদদের নেক আমলের দিকে আহবানের পাশাপাশি শিরক ও বিদ‘আতের দিকে আহবান করেন। আর শিরক-বিদ‘আত মানুষের সকল নেক আমলকে নিষ্ফল করে দেয় (যুমার ৩৯/৬৫)। পীরবাদের সবচেয়ে বড় ক্ষতি এই যে, তারা মানুষকে কুরআন-হাদীছ থেকে মুখ ফিরিয়ে পীরের ধ্যানে মগ্ন রাখেন। পীরের কথিত কাশফ ও কেরামত এবং ভিত্তিহীন অলীক কল্পকাহিনীসমূহ এদের নিকট প্রধান দলীল হিসাবে গণ্য হয়। যুগে যুগে মানুষকে ধর্মের নামে শিরকে লিপ্ত করেছে এই শ্রেণীর লোকেরা। অথচ কাশফ ও কেরামত ইসলামী শরী‘আতের কোন দলীল নয়। সুতরাং এসব দল থেকে মানুষকে দূরে রাখার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো আবশ্যক।
-হাবীবুর রহমান
মাস্টার পাড়া, সপুরা, রাজশাহী।
উত্তর : উপরোক্ত সবগুলি নামই সুন্দর অর্থ বহন করে। সুতরাং তা রাখায় কোন দোষ নেই। তবে শী‘আদের আক্বীদা অনুযায়ী রোগমুক্তি ও বিশেষ ফযীলতের আশায় এগুলি রাখা হ’লে তা শিরক হবে। শী‘আরা বলে থাকে, আমার জন্য পাঁচজন রয়েছেন যাদের মাধ্যমে আমি সকল দুরারোগ্য ব্যাধি দূর করি। তারা হলেন, মুছতফা, মুরতাযা, তাঁর দুই পুত্র (হাসান-হোসায়েন) ও ফাতেমা’।
মাস্টার পাড়া, সপুরা, রাজশাহী।
উত্তর : উপরোক্ত সবগুলি নামই সুন্দর অর্থ বহন করে। সুতরাং তা রাখায় কোন দোষ নেই। তবে শী‘আদের আক্বীদা অনুযায়ী রোগমুক্তি ও বিশেষ ফযীলতের আশায় এগুলি রাখা হ’লে তা শিরক হবে। শী‘আরা বলে থাকে, আমার জন্য পাঁচজন রয়েছেন যাদের মাধ্যমে আমি সকল দুরারোগ্য ব্যাধি দূর করি। তারা হলেন, মুছতফা, মুরতাযা, তাঁর দুই পুত্র (হাসান-হোসায়েন) ও ফাতেমা’।
-শেখ সাদী, মোল্লাহাট, বাগেরহাট।
উত্তর : ছালাতের মধ্যে আঙ্গুল ফুটানো শরী‘আতসম্মত নয়। ইবনু আববাস (রাঃ)-এর গোলাম শো‘বা বলেন, আমি ইবনু আববাসের পাশে ছালাত আদায় করছিলাম। আমি আঙ্গুল ফুটালে তিনি আমাকে ছালাতের মধ্যে আঙ্গুল ফুটাতে নিষেধ করেন (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/৭৩৫৮, ইরওয়া হা/৩৭৮-এর ব্যাখ্যা, ২/৯৯ পৃঃ)। এছাড়া এতে ছালাতের খুশূ-খুযূ বিনষ্ট হয়। তবে একারণে ছালাত বাতিল হবে না (উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৩/২১৯)। কিন্তু ত্রুটিপূর্ণ হবে।
উত্তর : ছালাতের মধ্যে আঙ্গুল ফুটানো শরী‘আতসম্মত নয়। ইবনু আববাস (রাঃ)-এর গোলাম শো‘বা বলেন, আমি ইবনু আববাসের পাশে ছালাত আদায় করছিলাম। আমি আঙ্গুল ফুটালে তিনি আমাকে ছালাতের মধ্যে আঙ্গুল ফুটাতে নিষেধ করেন (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/৭৩৫৮, ইরওয়া হা/৩৭৮-এর ব্যাখ্যা, ২/৯৯ পৃঃ)। এছাড়া এতে ছালাতের খুশূ-খুযূ বিনষ্ট হয়। তবে একারণে ছালাত বাতিল হবে না (উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৩/২১৯)। কিন্তু ত্রুটিপূর্ণ হবে।
৭৬
প্রশ্ন (৩৫/১৯৫) : গাছের প্রথম ফল বরকতের আশায় মসজিদে বা গরীব-মিসকীনকে দান করা অথবা কোন আলেম ব্যক্তিকে খাওয়ানো যাবে কি?-সোহরাব হোসাইন
শাহবাগ, ঢাকা।
উত্তর : গাছের নতুন ফল মসজিদে বা গরীব-মিসকীনদের মধ্যে দান করার ফযীলত সম্পর্কে কোন দলীল পাওয়া যায় না। তবে বরকতের দো‘আ নেওয়ার জন্য পরহেযগার ব্যক্তির নিকটে নিয়ে যাওয়া সুন্নাত। ছাহাবীগণ নতুন ফল রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট নিয়ে যেতেন। তখন তিনি আল্লাহর দেওয়া নতুন নে‘মতের জন্য তাতে বরকতের দো‘আ করে দিতেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, ‘মানুষ যখন প্রথম ফল দেখত, তখন সে ফল রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট নিয়ে আসত। অতঃপর তিনি তা হাতে নিয়ে বলতেন, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাদের জন্য আমাদের ফলে বরকত দাও। ...অতঃপর তিনি উপস্থিত কোন ছোট বালককে ডাকতেন এবং সেই ফল তাকে দিয়ে দিতেন’ (মুসলিম হা/১৩৭৩, মিশকাত হা/২৭৩১)। এর উদ্দেশ্য এটা নয় যে, তিনি নিজে এটা খেতে পারবেন না। বরং এর উদ্দেশ্য ছিল, উপস্থিত কোন বাচ্চাকে খুশী করা।
শাহবাগ, ঢাকা।
উত্তর : গাছের নতুন ফল মসজিদে বা গরীব-মিসকীনদের মধ্যে দান করার ফযীলত সম্পর্কে কোন দলীল পাওয়া যায় না। তবে বরকতের দো‘আ নেওয়ার জন্য পরহেযগার ব্যক্তির নিকটে নিয়ে যাওয়া সুন্নাত। ছাহাবীগণ নতুন ফল রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট নিয়ে যেতেন। তখন তিনি আল্লাহর দেওয়া নতুন নে‘মতের জন্য তাতে বরকতের দো‘আ করে দিতেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, ‘মানুষ যখন প্রথম ফল দেখত, তখন সে ফল রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট নিয়ে আসত। অতঃপর তিনি তা হাতে নিয়ে বলতেন, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাদের জন্য আমাদের ফলে বরকত দাও। ...অতঃপর তিনি উপস্থিত কোন ছোট বালককে ডাকতেন এবং সেই ফল তাকে দিয়ে দিতেন’ (মুসলিম হা/১৩৭৩, মিশকাত হা/২৭৩১)। এর উদ্দেশ্য এটা নয় যে, তিনি নিজে এটা খেতে পারবেন না। বরং এর উদ্দেশ্য ছিল, উপস্থিত কোন বাচ্চাকে খুশী করা।
-আলমগীর
বাড্ডা, টাংগাঈল।
উত্তর : পরিচিত বা অপরিচিত যেকোন জারজ সন্তান পালন করা যাবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ব্যভিচারিণী গামেদী মহিলার জারজ সন্তানকে জনৈক ছাহাবীর হাতে দিয়ে তাকে লালন-পালনের জন্য আদেশ করেন (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৫৬২)। কারণ জারজ হওয়ার জন্য সন্তান দায়ী নয়। অতএব তাকে লালন-পালনের জন্য অবশ্যই ছওয়াব রয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘মুমিন পুরুষ বা নারী যে কোন সৎকর্ম করলে আমরা তার বিনিময়ে সর্বোত্তম প্রতিদান দেব’ (নাহল ১৬/৯৭)।
বাড্ডা, টাংগাঈল।
উত্তর : পরিচিত বা অপরিচিত যেকোন জারজ সন্তান পালন করা যাবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ব্যভিচারিণী গামেদী মহিলার জারজ সন্তানকে জনৈক ছাহাবীর হাতে দিয়ে তাকে লালন-পালনের জন্য আদেশ করেন (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৫৬২)। কারণ জারজ হওয়ার জন্য সন্তান দায়ী নয়। অতএব তাকে লালন-পালনের জন্য অবশ্যই ছওয়াব রয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘মুমিন পুরুষ বা নারী যে কোন সৎকর্ম করলে আমরা তার বিনিময়ে সর্বোত্তম প্রতিদান দেব’ (নাহল ১৬/৯৭)।
-সিরাজুল ইসলাম
নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : রূহ ও নফসের মধ্যে প্রকৃত অর্থে কোন পার্থক্য নেই। যদিও পারিভাষিক অর্থে পার্থক্য আছে। যেমন প্রাণীকে ‘নফস’ বলা হয়। কিন্তু ‘রূহ’ বা আত্মা বলা হয় না। আল্লাহ বলেন, প্রত্যেক প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে(আলে ইমরান ১৮৫)। এতে বুঝা যায় যে, দেহ ও আত্মার মিলিত সত্ত্বাকে ‘নফস’ বলা হয়। আর শুধুমাত্র আত্মাকে ‘রূহ’ বলা হয়। একদা ইহূদীগণ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে নবী! তুমি বল, রূহ হ’ল আল্লাহর একটি আদেশ’ (ইসরা ১৭/৮৫)। যার প্রকৃতি মানুষের জ্ঞানের বাইরে। এমনকি আম্বিয়ায়ে কেরামও এর প্রকৃতি জানতেন না(শাওকানী, যুবদাতুত তাফসীর, ইসরা ৮৫ আয়াতের ব্যাখ্যা)। আর নফস সেটাই, যা আল্লাহ মানব দেহে ফুঁকে দিয়েছেন। মৃত্যুর সময় যা দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই যখন রূহ কবয করা হয়, তখন তার চোখ তা দেখতে থাকে’ (মুসলিম হা/৯২০; মিশকাত হা/১৬১৯ ‘জানায়েয’ অধ্যায়)। অন্য হাদীছে এসেছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা কি দেখনি যে, মৃত্যুর সময় মানুষের চোখ তাকিয়ে থাকে? ছাহাবায়ে কেরাম বললেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! তখন তিনি বললেন, ‘তা তো ঐ সময় যখন তার চোখ তার নফসকে দেখতে থাকে’ (মুসলিম হা/৯২১)।
নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : রূহ ও নফসের মধ্যে প্রকৃত অর্থে কোন পার্থক্য নেই। যদিও পারিভাষিক অর্থে পার্থক্য আছে। যেমন প্রাণীকে ‘নফস’ বলা হয়। কিন্তু ‘রূহ’ বা আত্মা বলা হয় না। আল্লাহ বলেন, প্রত্যেক প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে(আলে ইমরান ১৮৫)। এতে বুঝা যায় যে, দেহ ও আত্মার মিলিত সত্ত্বাকে ‘নফস’ বলা হয়। আর শুধুমাত্র আত্মাকে ‘রূহ’ বলা হয়। একদা ইহূদীগণ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে নবী! তুমি বল, রূহ হ’ল আল্লাহর একটি আদেশ’ (ইসরা ১৭/৮৫)। যার প্রকৃতি মানুষের জ্ঞানের বাইরে। এমনকি আম্বিয়ায়ে কেরামও এর প্রকৃতি জানতেন না(শাওকানী, যুবদাতুত তাফসীর, ইসরা ৮৫ আয়াতের ব্যাখ্যা)। আর নফস সেটাই, যা আল্লাহ মানব দেহে ফুঁকে দিয়েছেন। মৃত্যুর সময় যা দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই যখন রূহ কবয করা হয়, তখন তার চোখ তা দেখতে থাকে’ (মুসলিম হা/৯২০; মিশকাত হা/১৬১৯ ‘জানায়েয’ অধ্যায়)। অন্য হাদীছে এসেছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা কি দেখনি যে, মৃত্যুর সময় মানুষের চোখ তাকিয়ে থাকে? ছাহাবায়ে কেরাম বললেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! তখন তিনি বললেন, ‘তা তো ঐ সময় যখন তার চোখ তার নফসকে দেখতে থাকে’ (মুসলিম হা/৯২১)।
-আব্দুল্লাহ আল-মামূন
ছোট বনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : ওযূতে ঘাড় মাসাহ করার কোন প্রমাণ নেই। আবূদাঊদে এ সম্পর্কে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, তা যঈফ (আবূদাঊদ হা/১৩২, সিলসিলা যঈফাহ হা/৬৯-এর আলোচনা দ্রঃ)। ইমাম নববী একে বিদ‘আত বলেছেন (নায়লুল আওত্বার ১/২৪৫-৪৭)। হেদায়ার ব্যাখ্যাকার আল্লামা ইবনুল হুমামের ভাষ্যমতে কেউ কেউ বলেন, এটা বিদ‘আত (ফাৎহুল ক্বাদীর, ১/৫৪)। হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, ‘ঘাড় মাসাহ-এর ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ) হ’তে কোন ছহীহ হাদীছ নেই’ (যাদুল মা‘আদ ১/১৮৭)। ‘যে ব্যক্তি ওযূতে ঘাড় মাসাহ করবে, ক্বিয়ামতের দিন তার গলায় বেড়ী পরানো হবে না’ বলে যে হাদীছ বলা হয়ে থাকে, সেটি মওযূ বা জাল (আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/৭৪৪)।
ছোট বনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : ওযূতে ঘাড় মাসাহ করার কোন প্রমাণ নেই। আবূদাঊদে এ সম্পর্কে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, তা যঈফ (আবূদাঊদ হা/১৩২, সিলসিলা যঈফাহ হা/৬৯-এর আলোচনা দ্রঃ)। ইমাম নববী একে বিদ‘আত বলেছেন (নায়লুল আওত্বার ১/২৪৫-৪৭)। হেদায়ার ব্যাখ্যাকার আল্লামা ইবনুল হুমামের ভাষ্যমতে কেউ কেউ বলেন, এটা বিদ‘আত (ফাৎহুল ক্বাদীর, ১/৫৪)। হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, ‘ঘাড় মাসাহ-এর ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ) হ’তে কোন ছহীহ হাদীছ নেই’ (যাদুল মা‘আদ ১/১৮৭)। ‘যে ব্যক্তি ওযূতে ঘাড় মাসাহ করবে, ক্বিয়ামতের দিন তার গলায় বেড়ী পরানো হবে না’ বলে যে হাদীছ বলা হয়ে থাকে, সেটি মওযূ বা জাল (আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/৭৪৪)।
-আব্দুর রহমান, রাজশাহী।
উত্তর : ওয়াইস বিন আমের আল-ক্বারনী (৫৯৪-৬৫৮ খ্রিঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর যুগের লোক। তবে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে তার সাক্ষাৎ হয়নি। যে কারণে তিনি ছাহাবী নন, বরং তাবেঈ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তাবেঈদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি হ’ল ওয়াইস’ (মুসলিম হা/২৫৪২, মিশকাত হা/৬২৫৭)। ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছি, তোমাদের নিকট ইয়ামন থেকে এক ব্যক্তি আসবে, যাকে ডাকা হবে ‘ওয়াইস’ নামে। সে শুধুমাত্র তার মাকে ইয়ামনে রেখে আসবে। তার শরীরে কুষ্ঠ রোগ ছিল। সে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলে এক দীনার অথবা এক দিরহাম সমপরিমাণ স্থান ছাড়া আল্লাহ তা দূর করে দেন। তোমাদের যার সাথে তার সাক্ষাৎ ঘটবে, সে যেন তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করে (মুসলিম ঐ)। পরবর্তীতে ওমর (রাঃ)-এর সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হ’লে, তিনি তার নিকটে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন জানান। উত্তরে তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ)-এর ছাহাবী হিসাবে আপনি আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার অধিক যোগ্য। এসময় তিনি উপরোক্ত হাদীছটি শুনালে তিনি তাঁর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন (মুসলিম হা/২৫৪২, আহমাদ হা/২৬৬)।ওয়াইস ক্বারনী ৩৭ হিজরীতে আলী (রাঃ)-এর পক্ষে ছিফফীনের যুদ্ধে নিহত হন (হাকেম হা/৫৭১৬)।
উল্লেখ্য যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ‘ওয়াইস ক্বারনী’কে জামা দান করেছিলেন, তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মহববতে বত্রিশটি দাঁত ভেঙ্গেছিলেন মর্মে প্রচলিত বক্তব্যটি ভিত্তিহীন। এছাড়া এই উম্মতের মধ্যে শুধুমাত্র ওয়ায়েস কুরনীকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) খলীল বা দোস্ত বলেছেন মর্মে যে হাদীছটি বর্ণিত হয়েছে, সেটিও ‘জাল’ (সিলসিলা যঈফা হা/১৭০৭)।
উত্তর : ওয়াইস বিন আমের আল-ক্বারনী (৫৯৪-৬৫৮ খ্রিঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর যুগের লোক। তবে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে তার সাক্ষাৎ হয়নি। যে কারণে তিনি ছাহাবী নন, বরং তাবেঈ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তাবেঈদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি হ’ল ওয়াইস’ (মুসলিম হা/২৫৪২, মিশকাত হা/৬২৫৭)। ওমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে আমি বলতে শুনেছি, তোমাদের নিকট ইয়ামন থেকে এক ব্যক্তি আসবে, যাকে ডাকা হবে ‘ওয়াইস’ নামে। সে শুধুমাত্র তার মাকে ইয়ামনে রেখে আসবে। তার শরীরে কুষ্ঠ রোগ ছিল। সে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলে এক দীনার অথবা এক দিরহাম সমপরিমাণ স্থান ছাড়া আল্লাহ তা দূর করে দেন। তোমাদের যার সাথে তার সাক্ষাৎ ঘটবে, সে যেন তার নিকট ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করে (মুসলিম ঐ)। পরবর্তীতে ওমর (রাঃ)-এর সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হ’লে, তিনি তার নিকটে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন জানান। উত্তরে তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ)-এর ছাহাবী হিসাবে আপনি আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার অধিক যোগ্য। এসময় তিনি উপরোক্ত হাদীছটি শুনালে তিনি তাঁর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন (মুসলিম হা/২৫৪২, আহমাদ হা/২৬৬)।ওয়াইস ক্বারনী ৩৭ হিজরীতে আলী (রাঃ)-এর পক্ষে ছিফফীনের যুদ্ধে নিহত হন (হাকেম হা/৫৭১৬)।
উল্লেখ্য যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ‘ওয়াইস ক্বারনী’কে জামা দান করেছিলেন, তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মহববতে বত্রিশটি দাঁত ভেঙ্গেছিলেন মর্মে প্রচলিত বক্তব্যটি ভিত্তিহীন। এছাড়া এই উম্মতের মধ্যে শুধুমাত্র ওয়ায়েস কুরনীকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) খলীল বা দোস্ত বলেছেন মর্মে যে হাদীছটি বর্ণিত হয়েছে, সেটিও ‘জাল’ (সিলসিলা যঈফা হা/১৭০৭)।
৮১
প্রশ্ন (৪০/২০০) : হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কি কুরআনের আয়াত সমূহে পরিবর্তন-পরিবর্ধন করেছিলেন? এ ব্যাপারে সঠিক ইতিহাস জানতে চাই।-বেলাল হোসাইন
নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কুরআনের আয়াত সমূহে কোন পরিবর্তন-পরিবর্ধন করেননি এবং কারো পক্ষে তা করাও সম্ভব নয়। আল্লাহ বলেন, ‘আমরাই কুরআন নাযিল করেছি এবং আমরাই এর হেফাযতকারী’ (হিজর ১৫/ ৯)। প্রকৃতপক্ষে খলীফা আব্দুল মালেক ইবনু মারওয়ানের নির্দেশে তিনি বিখ্যাত তাবেঈ ও আরবী ব্যাকরণবিদ আবুল আসওয়াদ আদ-দুআলী (৬০৩-৬৮৮ খ্রীঃ)-এর দুই ছাত্র নাছর বিন আছেম লায়ছী এবং ইয়াহইয়া বিন ইয়া‘মার ‘আদওয়ানীকে কুরআনে হরকত দেয়ার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। যাতে অনারব মুসলিমদের জন্য কুরআন তেলাওয়াত সহজ হয়। এভাবে এই দুই ছাত্রের মাধ্যমেই এই মহান কাজটি সুসম্পন্ন হয় (যুরক্বানী, মানাহিলুল ইরফান ১/৪০৬-৪০৭)। হরকত ছাড়া কুরআন পড়তে অপারগ অনারবদের জন্যই এরূপ করা হয়েছিল মাত্র। এছাড়া হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কুরআনের মোট ১১টি বর্ণে পরিবর্তন এনেছিলেন মর্মে যে বর্ণনাটির প্রসিদ্ধি রয়েছে (আবুদাঊদ সিজিস্তানী, আল-মাছাহেফ ১৫৭ পৃঃ), তা মওযূ‘ বা জাল। কারণ এর বর্ণনা সূত্রে আববান বিন ছুহায়েব নামে একজন রাবী রয়েছেন, যিনি মাতরূক বা পরিত্যক্ত (সিলসিলা যঈফাহ হা/৬১৯৯-এর আলোচনা দ্রঃ)।
বস্ত্ততঃ কুরআনের আয়াত হওয়ার জন্য হরকত থাকা বাধ্যতামূলক নয়। বাধ্যতামূলক হচ্ছে নির্ভুলভাবে পাঠ করা। তাই অনারবদের জন্য এর পাঠ সহজ করার জন্যই হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এ কাজটি করিয়েছিলেন মাত্র। তিনি এতে কোনরূপ কমবেশী করেননি।
নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কুরআনের আয়াত সমূহে কোন পরিবর্তন-পরিবর্ধন করেননি এবং কারো পক্ষে তা করাও সম্ভব নয়। আল্লাহ বলেন, ‘আমরাই কুরআন নাযিল করেছি এবং আমরাই এর হেফাযতকারী’ (হিজর ১৫/ ৯)। প্রকৃতপক্ষে খলীফা আব্দুল মালেক ইবনু মারওয়ানের নির্দেশে তিনি বিখ্যাত তাবেঈ ও আরবী ব্যাকরণবিদ আবুল আসওয়াদ আদ-দুআলী (৬০৩-৬৮৮ খ্রীঃ)-এর দুই ছাত্র নাছর বিন আছেম লায়ছী এবং ইয়াহইয়া বিন ইয়া‘মার ‘আদওয়ানীকে কুরআনে হরকত দেয়ার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। যাতে অনারব মুসলিমদের জন্য কুরআন তেলাওয়াত সহজ হয়। এভাবে এই দুই ছাত্রের মাধ্যমেই এই মহান কাজটি সুসম্পন্ন হয় (যুরক্বানী, মানাহিলুল ইরফান ১/৪০৬-৪০৭)। হরকত ছাড়া কুরআন পড়তে অপারগ অনারবদের জন্যই এরূপ করা হয়েছিল মাত্র। এছাড়া হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কুরআনের মোট ১১টি বর্ণে পরিবর্তন এনেছিলেন মর্মে যে বর্ণনাটির প্রসিদ্ধি রয়েছে (আবুদাঊদ সিজিস্তানী, আল-মাছাহেফ ১৫৭ পৃঃ), তা মওযূ‘ বা জাল। কারণ এর বর্ণনা সূত্রে আববান বিন ছুহায়েব নামে একজন রাবী রয়েছেন, যিনি মাতরূক বা পরিত্যক্ত (সিলসিলা যঈফাহ হা/৬১৯৯-এর আলোচনা দ্রঃ)।
বস্ত্ততঃ কুরআনের আয়াত হওয়ার জন্য হরকত থাকা বাধ্যতামূলক নয়। বাধ্যতামূলক হচ্ছে নির্ভুলভাবে পাঠ করা। তাই অনারবদের জন্য এর পাঠ সহজ করার জন্যই হাজ্জাজ বিন ইউসুফ এ কাজটি করিয়েছিলেন মাত্র। তিনি এতে কোনরূপ কমবেশী করেননি।
৮২
মার্চ
প্রশ্ন (১/২০১) : ওমর (রাঃ)-এর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কুরআন মাজীদের মোট কতটি আয়াত নাযিল হয়? প্রেক্ষাপট সহ জানিয়ে বাধিত করবেন।-আব্দুস সুবহান
বিরল, দিনাজপুর।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলতেন, আল্লাহ তা‘আলা ওমরের যবানে ও হৃদয়ে সত্য প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছেন (তিরমিযী হা/৩৬৮২, হাদীছ ছহীহ)। এক্ষণে ৬টি বিষয়ে ওমর (রাঃ)-এর প্রস্তাবের সমর্থনে কুরআনে আয়াত নাযিল হয়েছে, যা ছহীহ হাদীছহসমূহ দ্বারা প্রমাণিত। যেমন (১) বদর যুদ্ধের ৭০ জন বন্দীর ব্যাপারে ওমর (রাঃ)-এর পরামর্শ ছিল তাদেরকে হত্যা করা। পরে তাঁর মতের সমর্থনে আল্লাহ সূরা আনফালের ৬৭-৬৯ আয়াত নাযিল করেন (মুসলিম হা/১৭৬৩)। (২) মক্কা বিজয়ের দিন রাসূল (ছাঃ) যখন মাকামে ইবরাহীমের কাছে দাঁড়ালেন, তখন ওমর (রাঃ) তাঁকে বলেন, আমরা কি মাক্বামে ইবরাহীমকে ছালাতের স্থান বানিয়ে নিতে পারি না?... তখন সূরা বাক্বারার ১২৫ আয়াতটি নাযিল হয়।
(৩) একদা তিনি রাসূল (ছাঃ)-কে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার স্ত্রীগণের নিকট ভালো-মন্দ সব ধরনের লোক প্রবেশ করে। অতএব আপনি যদি তাদেরকে পর্দা করার নির্দেশ দিতেন!... এরপর উম্মাহাতুল মুমিনীনদের পর্দা ফরয করে সূরা আহযাবের ৫৩ আয়াতটিনাযিল হয়। (৪) হাফছার নিকটে রাসূল (ছাঃ)-এর মধু খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্ত্রীগণের মাঝে পরস্পরে হিংসার ঘটনা ঘটলে তিনি তাদেরকে তালাক দেয়ার ধমকি দেন। অতঃপর তাঁর সমর্থনে সূরা তাহরীমের ৫ আয়াতটি নাযিল হয় (বুখারী হা/৪০২, মুসলিম হা/২৩৯৯, মিশকাত হা/৬০৪২)। (৫) ওমর (রাঃ) মুনাফিক নেতা আব্দুল্লাহ বিন উবাইয়ের জানাযার ছালাতে বাধা দেওয়ার পরেও রাসূল (ছাঃ) তা আদায় করেন। তখন আল্লাহ ওমরের সমর্থনে সূরা তাওবার ৮৪ আয়াতটি নাযিল করেন এবং মুনাফিকদের জানাযায় অংশগ্রহণে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন (বুখারী হা/১৩৬৬, তিরমিযী হা/৩০৯৭)। (৬) ওমর (রাঃ)-এর আকাংখা মাফিক আল্লাহ তা‘আলা মদ নিষিদ্ধের আয়াত নাযিল করেন (আবুদাউদ হা/৩৬৭০; তিরমিযী হা/৫৫৪০; নাসাঈ হা/৩০৪৯)। এছাড়া আরো কয়েকটি আয়াত নাযিলের ব্যাপারে তাফসীর গ্রন্থ সমূহে বর্ণিত হয়েছে, যা ছহীহ সনদে প্রমাণিত নয়।
বিরল, দিনাজপুর।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলতেন, আল্লাহ তা‘আলা ওমরের যবানে ও হৃদয়ে সত্য প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছেন (তিরমিযী হা/৩৬৮২, হাদীছ ছহীহ)। এক্ষণে ৬টি বিষয়ে ওমর (রাঃ)-এর প্রস্তাবের সমর্থনে কুরআনে আয়াত নাযিল হয়েছে, যা ছহীহ হাদীছহসমূহ দ্বারা প্রমাণিত। যেমন (১) বদর যুদ্ধের ৭০ জন বন্দীর ব্যাপারে ওমর (রাঃ)-এর পরামর্শ ছিল তাদেরকে হত্যা করা। পরে তাঁর মতের সমর্থনে আল্লাহ সূরা আনফালের ৬৭-৬৯ আয়াত নাযিল করেন (মুসলিম হা/১৭৬৩)। (২) মক্কা বিজয়ের দিন রাসূল (ছাঃ) যখন মাকামে ইবরাহীমের কাছে দাঁড়ালেন, তখন ওমর (রাঃ) তাঁকে বলেন, আমরা কি মাক্বামে ইবরাহীমকে ছালাতের স্থান বানিয়ে নিতে পারি না?... তখন সূরা বাক্বারার ১২৫ আয়াতটি নাযিল হয়।
(৩) একদা তিনি রাসূল (ছাঃ)-কে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার স্ত্রীগণের নিকট ভালো-মন্দ সব ধরনের লোক প্রবেশ করে। অতএব আপনি যদি তাদেরকে পর্দা করার নির্দেশ দিতেন!... এরপর উম্মাহাতুল মুমিনীনদের পর্দা ফরয করে সূরা আহযাবের ৫৩ আয়াতটিনাযিল হয়। (৪) হাফছার নিকটে রাসূল (ছাঃ)-এর মধু খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্ত্রীগণের মাঝে পরস্পরে হিংসার ঘটনা ঘটলে তিনি তাদেরকে তালাক দেয়ার ধমকি দেন। অতঃপর তাঁর সমর্থনে সূরা তাহরীমের ৫ আয়াতটি নাযিল হয় (বুখারী হা/৪০২, মুসলিম হা/২৩৯৯, মিশকাত হা/৬০৪২)। (৫) ওমর (রাঃ) মুনাফিক নেতা আব্দুল্লাহ বিন উবাইয়ের জানাযার ছালাতে বাধা দেওয়ার পরেও রাসূল (ছাঃ) তা আদায় করেন। তখন আল্লাহ ওমরের সমর্থনে সূরা তাওবার ৮৪ আয়াতটি নাযিল করেন এবং মুনাফিকদের জানাযায় অংশগ্রহণে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন (বুখারী হা/১৩৬৬, তিরমিযী হা/৩০৯৭)। (৬) ওমর (রাঃ)-এর আকাংখা মাফিক আল্লাহ তা‘আলা মদ নিষিদ্ধের আয়াত নাযিল করেন (আবুদাউদ হা/৩৬৭০; তিরমিযী হা/৫৫৪০; নাসাঈ হা/৩০৪৯)। এছাড়া আরো কয়েকটি আয়াত নাযিলের ব্যাপারে তাফসীর গ্রন্থ সমূহে বর্ণিত হয়েছে, যা ছহীহ সনদে প্রমাণিত নয়।
৮৩
প্রশ্ন (২/২০২) : জনৈক ব্যক্তি আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৬/৩৭০ পৃষ্ঠায় বর্ণিত ‘আলা ইবনুল হাযরামী কর্তৃক লোকদেরকে নিয়ে একত্রিত মুনাজাত করার ঘটনাটিকেসম্মিলিত মুনাজাতের পক্ষে দলীল হিসাবে উল্লেখ করেছেন। এর সত্যতা জানতে চাই।-রূহুল আমীন, দুবাই।
উত্তর : প্রথমতঃ এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যা সনদ বিহীনভাবে বর্ণিত হয়েছে। আর ঐতিহাসিক ও সনদ বিহীন কোন বক্তব্যকে শরী‘আতের দলীল হিসাবে গ্রহণ করা যায় না (সৈয়ূত্বী, আল-ইতক্বান ফী উলূমিল কুরআন ২/২২৭-২২৮ পৃঃ)। সনদ থাকার পরেও তা যঈফ হওয়ার কারণে যেখানে হাদীছ গ্রহণযোগ্য হয় না, সেখানে কোন ইবাদতের ক্ষেত্রে উক্ত ঘটনা দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
দ্বিতীয়তঃ এই দো‘আটি ছিল মূলতঃ ইস্তিস্কা বা পানি প্রার্থনার জন্য। আর পানি প্রার্থনার জন্য হাত তুলে সম্মিলিতভাবে দো‘আ করার বিষয়টি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (বুখারী হা/১০৯২, ‘ইস্তিস্কা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২১)। ঘটনাটি হ’ল, বাহরাইন যুদ্ধের প্রাক্কালে মুসলিম সেনাবাহিনী এমন এক স্থানে অবতরণ করে যেখানে পানি সংকটের কারণে তাদের থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। এমনকি তাদের উটগুলো তাদের খাদ্য সামগ্রী-পানীয় ও বস্ত্র সমূহ পিঠে করে নিয়ে হারিয়ে গিয়েছিল। ফলে তাদের সাথে তাদের পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই বাকী ছিল না। তখন ছাহাবী ‘আলা ইবনুল হাযরামী (রাঃ) লোকদের নিয়ে ফজরের ছালাত আদায় করেন ও সূর্যোদয় পর্যন্ত দো‘আ করতে থাকেন। তিনি যখন দো‘আর তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছলেন, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য তাদের পাশে একটি শীতল পানির পুকুর সৃষ্টি করে দিলেন। অতঃপর তিনি সহ সকলে সেখানে গেলেন এবং পানি পান করলেন ও গোসল করলেন। ওদিকে দিনের আলো প্রস্ফুটিত হ’তে না হ’তেই তাদের উটগুলো পিঠের বোঝা সহ বিভিন্ন দিক থেকে ফিরে আসল। অথচ তাদের আসবাবপত্রের একটিও হারায়নি। অতঃপর তারা তাদের উটগুলোকে উদর পূর্তি করে পানি পান করালেন (আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৬/৩২৮)।
অতএব স্পষ্ট যে, উক্ত ঘটনাটি ছিল পানি প্রার্থনার সাথে সংশ্লিষ্ট। প্রচলিত মুনাজাতের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই।
উত্তর : প্রথমতঃ এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যা সনদ বিহীনভাবে বর্ণিত হয়েছে। আর ঐতিহাসিক ও সনদ বিহীন কোন বক্তব্যকে শরী‘আতের দলীল হিসাবে গ্রহণ করা যায় না (সৈয়ূত্বী, আল-ইতক্বান ফী উলূমিল কুরআন ২/২২৭-২২৮ পৃঃ)। সনদ থাকার পরেও তা যঈফ হওয়ার কারণে যেখানে হাদীছ গ্রহণযোগ্য হয় না, সেখানে কোন ইবাদতের ক্ষেত্রে উক্ত ঘটনা দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
দ্বিতীয়তঃ এই দো‘আটি ছিল মূলতঃ ইস্তিস্কা বা পানি প্রার্থনার জন্য। আর পানি প্রার্থনার জন্য হাত তুলে সম্মিলিতভাবে দো‘আ করার বিষয়টি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (বুখারী হা/১০৯২, ‘ইস্তিস্কা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২১)। ঘটনাটি হ’ল, বাহরাইন যুদ্ধের প্রাক্কালে মুসলিম সেনাবাহিনী এমন এক স্থানে অবতরণ করে যেখানে পানি সংকটের কারণে তাদের থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। এমনকি তাদের উটগুলো তাদের খাদ্য সামগ্রী-পানীয় ও বস্ত্র সমূহ পিঠে করে নিয়ে হারিয়ে গিয়েছিল। ফলে তাদের সাথে তাদের পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই বাকী ছিল না। তখন ছাহাবী ‘আলা ইবনুল হাযরামী (রাঃ) লোকদের নিয়ে ফজরের ছালাত আদায় করেন ও সূর্যোদয় পর্যন্ত দো‘আ করতে থাকেন। তিনি যখন দো‘আর তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছলেন, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য তাদের পাশে একটি শীতল পানির পুকুর সৃষ্টি করে দিলেন। অতঃপর তিনি সহ সকলে সেখানে গেলেন এবং পানি পান করলেন ও গোসল করলেন। ওদিকে দিনের আলো প্রস্ফুটিত হ’তে না হ’তেই তাদের উটগুলো পিঠের বোঝা সহ বিভিন্ন দিক থেকে ফিরে আসল। অথচ তাদের আসবাবপত্রের একটিও হারায়নি। অতঃপর তারা তাদের উটগুলোকে উদর পূর্তি করে পানি পান করালেন (আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৬/৩২৮)।
অতএব স্পষ্ট যে, উক্ত ঘটনাটি ছিল পানি প্রার্থনার সাথে সংশ্লিষ্ট। প্রচলিত মুনাজাতের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই।
-সোহেল রাণা, মালয়েশিয়া।
উত্তর : মহিলাদের জন্য জুম‘আর ছালাত ফরয নয়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, জুম‘আর ছালাত প্রত্যেক মুসলমানের উপর জামা‘আতে আদায় করা ওয়াজিব। কিন্তু গোলাম, মহিলা, শিশু ও রোগী ব্যতীত (আবুদাঊদ হা/১০৬৭, মিশকাত হা/১৩৭৭; ইরওয়া হা/৫৯২)। এছাড়া সকল ছালাত বাড়িতে আদায় করাই মহিলাদের জন্য উত্তম (আবুদাঊদ হা/৫৬৭, মিশকাত হা/১০৬২)। তবে তারা জুম‘আর খুৎবা ও জামা‘আতে যোগদান করতে পারেন। যেমন বায়‘আতে রিযওয়ানে যোগদানকারিণী ছাহাবী উম্মে হিশাম বিনতে হারেছাহ (রাঃ) বলেন, আমি সূরা ক্বাফ (প্রথমাংশ) মুখস্থ করেছি রাসূল (ছাঃ)-এর যবানী থেকে, যা তিনি মিম্বরে দাঁড়িয়ে প্রতি জুম‘আর খুৎবায় পাঠ করতেন’ (মুসলিম হা/৮৭৩; মিশকাত হা/১৪০৯)। অতএব মহিলাদের জন্য এটি এখতিয়ারী বিষয়। কারণ তাতে তারা অনেক উপদেশ লাভ করতে পারেন (মির‘আত ৪/৪৯৮)।
উত্তর : মহিলাদের জন্য জুম‘আর ছালাত ফরয নয়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, জুম‘আর ছালাত প্রত্যেক মুসলমানের উপর জামা‘আতে আদায় করা ওয়াজিব। কিন্তু গোলাম, মহিলা, শিশু ও রোগী ব্যতীত (আবুদাঊদ হা/১০৬৭, মিশকাত হা/১৩৭৭; ইরওয়া হা/৫৯২)। এছাড়া সকল ছালাত বাড়িতে আদায় করাই মহিলাদের জন্য উত্তম (আবুদাঊদ হা/৫৬৭, মিশকাত হা/১০৬২)। তবে তারা জুম‘আর খুৎবা ও জামা‘আতে যোগদান করতে পারেন। যেমন বায়‘আতে রিযওয়ানে যোগদানকারিণী ছাহাবী উম্মে হিশাম বিনতে হারেছাহ (রাঃ) বলেন, আমি সূরা ক্বাফ (প্রথমাংশ) মুখস্থ করেছি রাসূল (ছাঃ)-এর যবানী থেকে, যা তিনি মিম্বরে দাঁড়িয়ে প্রতি জুম‘আর খুৎবায় পাঠ করতেন’ (মুসলিম হা/৮৭৩; মিশকাত হা/১৪০৯)। অতএব মহিলাদের জন্য এটি এখতিয়ারী বিষয়। কারণ তাতে তারা অনেক উপদেশ লাভ করতে পারেন (মির‘আত ৪/৪৯৮)।
৮৫
প্রশ্ন (৪/২০৪) : জনৈকা মহিলা তার বর্তমান স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে পূর্বের প্রেমিককে বিবাহ করতে চায়। এক্ষণে বর্তমান স্বামীকে ত্যাগ করে নতুন বিবাহের ক্ষেত্রে শরী‘আতের নির্দেশনা কি?রাশেদুল ইসলাম, ঢাকা।
উত্তর : যথাযোগ্য শারঈ কারণ ব্যতীত স্ত্রীর পক্ষ থেকে তালাক চাওয়া হারাম। কোন স্ত্রী এরূপ করলে তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধি হারাম হয়ে যাবে (আবুদাউদ হা/২২২৬; ইবনু মাজাহ হা/২০৫৫; তিরমিযী হা/১১৮৭; মিশকাত হা/৩২৭৯)। এক্ষণে কোন শরী‘আতসম্মত কারণ থাকলে উক্ত মহিলা সমাজের দায়িত্বশীল বা আদালতের মাধ্যমে বর্তমান স্বামীকে মোহর ফেরত দিয়ে ‘খোলা’ করতে পারে (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩২৭৪)। অতঃপর একমাসের ইদ্দত গণনা শেষে অন্যত্র বিবাহ করতে পারবে (বুখারী হা/৫২৭৩, মিশকাত হা/৩২৭৪, আবুদাঊদ হা/২২২৯-৩০)। স্মর্তব্য যে, বৈধ অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত কোন মহিলা এরূপ বিবাহ করলে, তা বাতিল বলে গণ্য হবে (আবুদাঊদ হা/২০৮৩, ইবনু মাজাহ হা/১৮৭৯, মিশকাত হা/৩১৩১)।
উত্তর : যথাযোগ্য শারঈ কারণ ব্যতীত স্ত্রীর পক্ষ থেকে তালাক চাওয়া হারাম। কোন স্ত্রী এরূপ করলে তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধি হারাম হয়ে যাবে (আবুদাউদ হা/২২২৬; ইবনু মাজাহ হা/২০৫৫; তিরমিযী হা/১১৮৭; মিশকাত হা/৩২৭৯)। এক্ষণে কোন শরী‘আতসম্মত কারণ থাকলে উক্ত মহিলা সমাজের দায়িত্বশীল বা আদালতের মাধ্যমে বর্তমান স্বামীকে মোহর ফেরত দিয়ে ‘খোলা’ করতে পারে (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩২৭৪)। অতঃপর একমাসের ইদ্দত গণনা শেষে অন্যত্র বিবাহ করতে পারবে (বুখারী হা/৫২৭৩, মিশকাত হা/৩২৭৪, আবুদাঊদ হা/২২২৯-৩০)। স্মর্তব্য যে, বৈধ অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত কোন মহিলা এরূপ বিবাহ করলে, তা বাতিল বলে গণ্য হবে (আবুদাঊদ হা/২০৮৩, ইবনু মাজাহ হা/১৮৭৯, মিশকাত হা/৩১৩১)।
-মুহাম্মাদ ছানাউল্লাহ, রাজশাহী।
উত্তর : খাদ্য গ্রহণের আদবসমূহ হ’ল : (১) হালাল ও পবিত্র রূযী খাবে (বাক্বারাহ ২/১৬৮)। (২) অতঃপর হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিবে (তুহফাতুল আহওয়াযী ৫/৪৮৫)।(৩) বিসমিল্লাহ বলে খাওয়া শুরু করবে (আবুদাউদ হা/৩৭৬৭; ইরওয়া হা/১৯৬৫)। (৪) অতঃপর ডান হাত দিয়ে খাবে এবং পান করবে (মুসলিম হা/২০২০; মিশকাত হা/৪১৬২)। (৫) পাত্রের মধ্যস্থল থেকে খাবে না বরং নিকট থেকে খাবে (বুখারী হা/৫৩৭৬, তিরমিযী হা/১৮০৫; মিশকাত হা/৪১৫৯, ৪২১১)। (৬) প্রথমে বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে গেলে স্মরণ হলেই ‘বিসমিল্লাহি আউয়ালাহূ ওয়া আখেরাহূ’ বলবে (আবুদাউদ হা/৩৭৬৭; মিশকাত হা/৪২০২)। (৭) প্লেট এবং আঙ্গুল ভালভাবে চেটে খাবে (মুসলিম হা/২০৩৪; আবুদাউদ হা/৩৮৪৫)। (৮) যদি খাবার পড়ে যায় তাহলে তা উঠিয়ে ছাফ করে খেয়ে নিবে। কারণ সে জানে না কোন খাবারে বরকত আছে (মুসলিম হা/২০৩৪; তিরমিযী হা/১৮০৩) (৯) একাকী না খেয়ে একত্রে খাবে। এতে বরকত রয়েছে। (আবুদাউদ হা/৩৭৬৪; মিশকাত হা/৪২৫২)। (১০) পান করার সময় পাত্রের বাইরে ৩ বার নিঃশ্বাস ফেলবে (বুখারী হা/৫৬৩১; ছহীহাহ হা/৩৮৭)। (১১) পানির পাত্রে বা খাবারে নিশ্বাস ছাড়বে না বা ফুঁক দিবে না। (বুখারী হা/১৫৩; মিশকাত হা/৪২৭৭)। (১২) দাঁড়িয়ে পানাহার করবে না(মুসলিম হা/২০২৬; মিশকাত হা/৪২৬৭)। (১৩) পেটের একভাগ খাদ্য দিয়ে ও একভাগ পানি দিয়ে ভরবে এবং একভাগ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য খালি রাখবে (তিরমিযী হা/২৩৮০)। (১৪) কাত হয়ে বা ঠেস দিয়ে খাবে না (বুখারী হা/৫৩৯৮; মিশকাত হা/৪১৬৮)। (১৫) খাওয়ার সময় পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে খাবে। অহেতুক গল্প-গুজব করবে না। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে এবং শেষে বলবে আল-হামদুল্লিাহ এবং অন্যান্য দো‘আ পড়বে। (১৬) খাওয়া শেষে প্লেট বা দস্তরখান উঠানোর সময় বলবে, আলহামদুলিল্লা-হি হামদান কাছীরান ত্বাইয়েবাম মুবা-রাকান ফীহি’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪১৯৯)। (১৭) দাওয়াত খেলে মেযবানে জন্য দো‘আ করে বলবে, আল্লা-হুম্মা আত্ব‘ইম মান আত্ব‘আমানী ওয়াসক্বি মান সাক্বা-নী’ (মুসলিম হা/২০৫৫; আহমাদ হা/২৩৮৬০ ‘সনদ ছহীহ’)।
উত্তর : খাদ্য গ্রহণের আদবসমূহ হ’ল : (১) হালাল ও পবিত্র রূযী খাবে (বাক্বারাহ ২/১৬৮)। (২) অতঃপর হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিবে (তুহফাতুল আহওয়াযী ৫/৪৮৫)।(৩) বিসমিল্লাহ বলে খাওয়া শুরু করবে (আবুদাউদ হা/৩৭৬৭; ইরওয়া হা/১৯৬৫)। (৪) অতঃপর ডান হাত দিয়ে খাবে এবং পান করবে (মুসলিম হা/২০২০; মিশকাত হা/৪১৬২)। (৫) পাত্রের মধ্যস্থল থেকে খাবে না বরং নিকট থেকে খাবে (বুখারী হা/৫৩৭৬, তিরমিযী হা/১৮০৫; মিশকাত হা/৪১৫৯, ৪২১১)। (৬) প্রথমে বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে গেলে স্মরণ হলেই ‘বিসমিল্লাহি আউয়ালাহূ ওয়া আখেরাহূ’ বলবে (আবুদাউদ হা/৩৭৬৭; মিশকাত হা/৪২০২)। (৭) প্লেট এবং আঙ্গুল ভালভাবে চেটে খাবে (মুসলিম হা/২০৩৪; আবুদাউদ হা/৩৮৪৫)। (৮) যদি খাবার পড়ে যায় তাহলে তা উঠিয়ে ছাফ করে খেয়ে নিবে। কারণ সে জানে না কোন খাবারে বরকত আছে (মুসলিম হা/২০৩৪; তিরমিযী হা/১৮০৩) (৯) একাকী না খেয়ে একত্রে খাবে। এতে বরকত রয়েছে। (আবুদাউদ হা/৩৭৬৪; মিশকাত হা/৪২৫২)। (১০) পান করার সময় পাত্রের বাইরে ৩ বার নিঃশ্বাস ফেলবে (বুখারী হা/৫৬৩১; ছহীহাহ হা/৩৮৭)। (১১) পানির পাত্রে বা খাবারে নিশ্বাস ছাড়বে না বা ফুঁক দিবে না। (বুখারী হা/১৫৩; মিশকাত হা/৪২৭৭)। (১২) দাঁড়িয়ে পানাহার করবে না(মুসলিম হা/২০২৬; মিশকাত হা/৪২৬৭)। (১৩) পেটের একভাগ খাদ্য দিয়ে ও একভাগ পানি দিয়ে ভরবে এবং একভাগ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য খালি রাখবে (তিরমিযী হা/২৩৮০)। (১৪) কাত হয়ে বা ঠেস দিয়ে খাবে না (বুখারী হা/৫৩৯৮; মিশকাত হা/৪১৬৮)। (১৫) খাওয়ার সময় পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে খাবে। অহেতুক গল্প-গুজব করবে না। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে এবং শেষে বলবে আল-হামদুল্লিাহ এবং অন্যান্য দো‘আ পড়বে। (১৬) খাওয়া শেষে প্লেট বা দস্তরখান উঠানোর সময় বলবে, আলহামদুলিল্লা-হি হামদান কাছীরান ত্বাইয়েবাম মুবা-রাকান ফীহি’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪১৯৯)। (১৭) দাওয়াত খেলে মেযবানে জন্য দো‘আ করে বলবে, আল্লা-হুম্মা আত্ব‘ইম মান আত্ব‘আমানী ওয়াসক্বি মান সাক্বা-নী’ (মুসলিম হা/২০৫৫; আহমাদ হা/২৩৮৬০ ‘সনদ ছহীহ’)।
-আব্দুল ক্বাইয়ূম,
নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : সন্তান মূলতঃ পিতার। তবে শৈশবে তার লালন-পালনের অধিকারী হ’লেন মা। কিন্তু মা অন্যত্র বিবাহ করলে তার এ অধিকার আর থাকে না। তখন সন্তান পিতার পূর্ণ দায়িত্বে থাকবে। আমর তাঁর পিতা শু‘আইব হ’তে, তিনি তাঁর পিতা আব্দুল্লাহ এবং তিনি তার পিতা আমর ইবনুল আছ (রাঃ) হ’তে বর্ণনা করেন যে, জনৈক স্ত্রীলোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এটি আমার ছেলে। আমার পেট ছিল তার পাত্র, আমার স্তন ছিল তার মশক এবং আমার কোল ছিল তার দোলনা। তার পিতা আমাকে তালাক দিয়েছে। সে এখন আমার ছেলে নিয়ে টানাটানি করছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘যতক্ষণ তুমি অন্যত্র বিবাহ না করবে, ততক্ষণ তুমিই তার অধিক হকদার’ (আহমাদ, আবুদাঊদ; মিশকাত হা/৩৩৭৮)।
তবে জ্ঞান-বুদ্ধি হওয়ার পর সন্তান যার নিকটে ইচ্ছা থাকতে পারে। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট জনৈকা স্ত্রীলোক এসে বলল, আমার স্বামী আমার ছেলে নিয়ে যেতে চায়। অথচ ছেলে আমার উপকার করে। সে আমাকে কূয়া থেকে পানি এনে দেয়। এসময় তার পিতা এলে নবী করীম (ছাঃ) ছেলেকে বললেন, ইনি তোমার পিতা আর ইনি তোমার মাতা- যাকে ইচ্ছা তুমি তার হাত ধর। ছেলে তার মায়ের হাত ধরল। অতঃপর মা তাকে নিয়ে চলে গেল’ (আবুদাঊদ, নাসাঈ; মিশকাত হা/৩৩৮০, সনদ ছহীহ)।
ইমাম শাওকানী বলেন, ‘হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ছেলে হৌক বা মেয়ে হৌক, সন্তানের ভাল-মন্দ বুঝার জ্ঞান হওয়ার পর যদি পিতা-মাতা সন্তান গ্রহণের ক্ষেত্রে মতভেদ করেন, তাহ’লে সন্তানকে এখতিয়ার দেওয়াই শরী‘আত সম্মত’ (নায়লুল আওত্বার ৮/১৬০ পৃঃ, ‘সন্তান পালনের অধিক হকদার কে?’ অনুচ্ছেদ)।
তবে মা কাফির হয়ে গেলে, মুসলিম সন্তানের উপরে তার কোন হক থাকবে না। আল্লাহ বলেন, আল্লাহ কাফিরদের জন্য মুমিনদের উপরে কোন অধিকার রাখেননি’ (নিসা ৪/১৪১)। ইবনুল ক্বাইয়িম বলেন, সন্তানকে এখতিয়ার দেওয়ার পূর্বে তার অধিকতর কল্যাণ বিবেচনা করা কর্তব্য। কেননা আল্লাহ বলেন, তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবারকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও (তাহরীম ৬)। তিনি তাঁর উস্তাদ ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, জনৈক সন্তান তার পিতার নিকটে যেতে চাইলে তার কারণ হিসাবে বলে যে, মা আমাকে মাদরাসায় পাঠায়, আর উস্তাদ আমাকে মারেন। কিন্তু আববা আমাকে খেলতে দেন। একথা শুনে বিচারক তাকে তার মায়ের কাছে পাঠাবার নির্দেশ দেন’ (নায়লুল আওত্বার ৮/১৬২)।
নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : সন্তান মূলতঃ পিতার। তবে শৈশবে তার লালন-পালনের অধিকারী হ’লেন মা। কিন্তু মা অন্যত্র বিবাহ করলে তার এ অধিকার আর থাকে না। তখন সন্তান পিতার পূর্ণ দায়িত্বে থাকবে। আমর তাঁর পিতা শু‘আইব হ’তে, তিনি তাঁর পিতা আব্দুল্লাহ এবং তিনি তার পিতা আমর ইবনুল আছ (রাঃ) হ’তে বর্ণনা করেন যে, জনৈক স্ত্রীলোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এটি আমার ছেলে। আমার পেট ছিল তার পাত্র, আমার স্তন ছিল তার মশক এবং আমার কোল ছিল তার দোলনা। তার পিতা আমাকে তালাক দিয়েছে। সে এখন আমার ছেলে নিয়ে টানাটানি করছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘যতক্ষণ তুমি অন্যত্র বিবাহ না করবে, ততক্ষণ তুমিই তার অধিক হকদার’ (আহমাদ, আবুদাঊদ; মিশকাত হা/৩৩৭৮)।
তবে জ্ঞান-বুদ্ধি হওয়ার পর সন্তান যার নিকটে ইচ্ছা থাকতে পারে। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট জনৈকা স্ত্রীলোক এসে বলল, আমার স্বামী আমার ছেলে নিয়ে যেতে চায়। অথচ ছেলে আমার উপকার করে। সে আমাকে কূয়া থেকে পানি এনে দেয়। এসময় তার পিতা এলে নবী করীম (ছাঃ) ছেলেকে বললেন, ইনি তোমার পিতা আর ইনি তোমার মাতা- যাকে ইচ্ছা তুমি তার হাত ধর। ছেলে তার মায়ের হাত ধরল। অতঃপর মা তাকে নিয়ে চলে গেল’ (আবুদাঊদ, নাসাঈ; মিশকাত হা/৩৩৮০, সনদ ছহীহ)।
ইমাম শাওকানী বলেন, ‘হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ছেলে হৌক বা মেয়ে হৌক, সন্তানের ভাল-মন্দ বুঝার জ্ঞান হওয়ার পর যদি পিতা-মাতা সন্তান গ্রহণের ক্ষেত্রে মতভেদ করেন, তাহ’লে সন্তানকে এখতিয়ার দেওয়াই শরী‘আত সম্মত’ (নায়লুল আওত্বার ৮/১৬০ পৃঃ, ‘সন্তান পালনের অধিক হকদার কে?’ অনুচ্ছেদ)।
তবে মা কাফির হয়ে গেলে, মুসলিম সন্তানের উপরে তার কোন হক থাকবে না। আল্লাহ বলেন, আল্লাহ কাফিরদের জন্য মুমিনদের উপরে কোন অধিকার রাখেননি’ (নিসা ৪/১৪১)। ইবনুল ক্বাইয়িম বলেন, সন্তানকে এখতিয়ার দেওয়ার পূর্বে তার অধিকতর কল্যাণ বিবেচনা করা কর্তব্য। কেননা আল্লাহ বলেন, তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবারকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও (তাহরীম ৬)। তিনি তাঁর উস্তাদ ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, জনৈক সন্তান তার পিতার নিকটে যেতে চাইলে তার কারণ হিসাবে বলে যে, মা আমাকে মাদরাসায় পাঠায়, আর উস্তাদ আমাকে মারেন। কিন্তু আববা আমাকে খেলতে দেন। একথা শুনে বিচারক তাকে তার মায়ের কাছে পাঠাবার নির্দেশ দেন’ (নায়লুল আওত্বার ৮/১৬২)।
৮৮
প্রশ্ন (৭/২০৭) : অনেককেই দেখা যাচ্ছে পিস টিভি দেখা ও ওলামায়ে কেরামের বক্তব্য শোনার জন্য টেলিভিশন-ইন্টারনেট নিচ্ছেন। কিন্তু পরিবারের অন্য সদস্যরা এগুলির মাধ্যমে বিভিন্ন শরী‘আত বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িয়ে যাচ্ছে। এক্ষণে পিতা হিসাবে আমাদের করণীয় কি?-সুহাইল
শিবগঞ্জ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : পরিবার প্রধান হিসাবে পিতা পরিবারের সার্বিক ব্যাপারে দায়িত্বশীল (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/৩৬৮৫)। পরিবারকে প্রকৃত দ্বীন শিক্ষা দানের সাথে সাথে সকল প্রকার অশ্লীলতা থেকে দূরে রাখা তাঁর মৌলিক দায়িত্ব। এক্ষণে উপরোক্ত অবস্থায় টেলিভিশন-ইন্টারনেট কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এজন্য সম্ভব সকল প্রকার ব্যবস্থা তিনি গ্রহণ করবেন। অন্যথায় এগুলি সরিয়ে দিতে হবে। নইলে পরিবারের সদস্যদের গোনাহের কারণে দায়িত্বশীল হিসাবে পিতাও গোনাহগার হবেন।
শিবগঞ্জ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : পরিবার প্রধান হিসাবে পিতা পরিবারের সার্বিক ব্যাপারে দায়িত্বশীল (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/৩৬৮৫)। পরিবারকে প্রকৃত দ্বীন শিক্ষা দানের সাথে সাথে সকল প্রকার অশ্লীলতা থেকে দূরে রাখা তাঁর মৌলিক দায়িত্ব। এক্ষণে উপরোক্ত অবস্থায় টেলিভিশন-ইন্টারনেট কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এজন্য সম্ভব সকল প্রকার ব্যবস্থা তিনি গ্রহণ করবেন। অন্যথায় এগুলি সরিয়ে দিতে হবে। নইলে পরিবারের সদস্যদের গোনাহের কারণে দায়িত্বশীল হিসাবে পিতাও গোনাহগার হবেন।
-আব্দুর রহমান, উত্তরা, ঢাকা।
উত্তর : গল্প-উপন্যাস যদি ইসলামী আকবীদা বিরোধী না হয় এবং চরিত্র গঠন ও শিক্ষামূলক হয়, তবে তা লেখা যাবে। যেমন প্রয়োজনে শিক্ষামূলক কবিতা পড়া যায়। মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা কবিতা সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, ‘এগুলি কিছু বাক্য মাত্র। অতএব এর ভালটি ভাল এবং মন্দটি মন্দ’ (দারাকুৎনী, মিশকাত হা/৪৮০৭ ‘শিষ্টাচারসমূহ’ অধ্যায় ‘বক্তৃতা ও কবিতা’ অনুচ্ছেদ)। তবে তা যদি নিছক খেল-তামাশা ও লোকদের হাসানোর উদ্দেশ্যে লেখা হয়, তবে জায়েয হবে না (উছায়মীন, ফাতাওয়া নূরুন আ‘লাদ-দারব ১/৩৩৫)। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘দুর্ভোগ ঐ ব্যক্তির জন্য যে কথা বলার সময় মিথ্যা বলে, যাতে লোকেরা হাসে’ (আবুদাউদ হা/৪৯৯০; মিশকাত হা/৪৮৩৪)।
উত্তর : গল্প-উপন্যাস যদি ইসলামী আকবীদা বিরোধী না হয় এবং চরিত্র গঠন ও শিক্ষামূলক হয়, তবে তা লেখা যাবে। যেমন প্রয়োজনে শিক্ষামূলক কবিতা পড়া যায়। মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা কবিতা সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, ‘এগুলি কিছু বাক্য মাত্র। অতএব এর ভালটি ভাল এবং মন্দটি মন্দ’ (দারাকুৎনী, মিশকাত হা/৪৮০৭ ‘শিষ্টাচারসমূহ’ অধ্যায় ‘বক্তৃতা ও কবিতা’ অনুচ্ছেদ)। তবে তা যদি নিছক খেল-তামাশা ও লোকদের হাসানোর উদ্দেশ্যে লেখা হয়, তবে জায়েয হবে না (উছায়মীন, ফাতাওয়া নূরুন আ‘লাদ-দারব ১/৩৩৫)। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘দুর্ভোগ ঐ ব্যক্তির জন্য যে কথা বলার সময় মিথ্যা বলে, যাতে লোকেরা হাসে’ (আবুদাউদ হা/৪৯৯০; মিশকাত হা/৪৮৩৪)।
-শাহাদত হোসাইন
ফুলবাড়িয়া, ময়মনসিংহ।
উত্তর : এসবের কোন যাকাত দিতে হবে না। তবে জমি থেকে উৎপাদিত ফসলের যাকাত দিতে হবে (বুখারী, মিশকাত হা/১৭৯৭)। শাক-সবজিতে কোন যাকাত নেই (তিরমিযী হা/৬৩৮; মিশকাত হা/১৮১৩)। বসবাসের জন্য নির্মিত বাড়িতে কোন যাকাত নেই। তবে বাড়ী বা দোকান থেকে প্রাপ্ত ভাড়া অথবা রিয়েল স্টেট ব্যবসার প্রাপ্ত লভ্যাংশ নিছাব পরিমাণ হ’লে এবং এক বছর অতিক্রান্ত হলে যাকাত দিতে হবে (আবুদাউদ হা/১৫৭৩; তিরমিযী হা/৬৩১)। গাছের কোন যাকাত নেই। তবে গাছ হতে উৎপন্ন শস্য নিছাব তথা পাঁচ ওয়াসাক্ব পরিমাণ হলে তাতে ২০ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হবে(বাক্বারাহ ২/২৬৭; মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৭৯৪)। উল্লেখ্য যে, ৫ ওয়াসাক্ব সমান ৬০ ছা‘ বা ৭৫০ কেজি।
ফুলবাড়িয়া, ময়মনসিংহ।
উত্তর : এসবের কোন যাকাত দিতে হবে না। তবে জমি থেকে উৎপাদিত ফসলের যাকাত দিতে হবে (বুখারী, মিশকাত হা/১৭৯৭)। শাক-সবজিতে কোন যাকাত নেই (তিরমিযী হা/৬৩৮; মিশকাত হা/১৮১৩)। বসবাসের জন্য নির্মিত বাড়িতে কোন যাকাত নেই। তবে বাড়ী বা দোকান থেকে প্রাপ্ত ভাড়া অথবা রিয়েল স্টেট ব্যবসার প্রাপ্ত লভ্যাংশ নিছাব পরিমাণ হ’লে এবং এক বছর অতিক্রান্ত হলে যাকাত দিতে হবে (আবুদাউদ হা/১৫৭৩; তিরমিযী হা/৬৩১)। গাছের কোন যাকাত নেই। তবে গাছ হতে উৎপন্ন শস্য নিছাব তথা পাঁচ ওয়াসাক্ব পরিমাণ হলে তাতে ২০ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হবে(বাক্বারাহ ২/২৬৭; মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৭৯৪)। উল্লেখ্য যে, ৫ ওয়াসাক্ব সমান ৬০ ছা‘ বা ৭৫০ কেজি।
৯১
প্রশ্ন (১০/২১০) : বিবাহের পর স্ত্রীর জন্য শ্বশুর-শ্বাশুড়ি, না নিজ পিতা-মাতার সেবা করা অধিক যরূরী? এছাড়া স্বামী এবং নিজ পিতা-মাতার আদেশ-নিষেধের মাঝে বৈপরীত্য দেখা দিলে কার আদেশ-নিষেধ অগ্রাধিকার পাবে?-মিলন সরকার
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।
উত্তর : প্রত্যেক সন্তানের জন্য তার পিতা-মাতার সেবাযত্ন করাই সর্বাগ্রে যরূরী (ইসরা ১৭/২৩)। স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ীর খেদমতে বাধ্য করা উচিৎ নয়। তবে অবশ্যই তাদের সাথে সদাচরণ করা কর্তব্য। স্বামী এবং পিতা-মাতা উভয়ের আদেশ-নিষেধ মেনে চলা স্ত্রীর জন্য ওয়াজিব। তাই সাধ্যমত উভয়কে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করবে। এরপরেও যদি উভয়ের আদেশ-নিষেধের মাঝে বৈপরীত্য দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে বৈষয়িক বিষয়ে স্বামীর আদেশকে অগ্রগণ্য করতে হবে। কেননা বিবাহের পূর্ব পর্যন্ত নারীরা পিতা-মাতার নিয়ন্ত্রণাধীনে থাকে। কিন্তু বিবাহের পর তারা স্বামীর নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। সুতরাং সেসময় স্বামীর আদেশ-নিষেধ মান্য করাই তার জন্য অগ্রগণ্য হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, আমি যদি কাউকে কোন মানুষের সিজদা করার আদেশ দিতাম, তাহ’লে স্ত্রীকে তার স্বামীর সামনে সিজদা করতে বলতাম (আবুদাউদ হা/২১৪০; মিশকাত হা/৩২৫৫)। তিনি বলেন, ক্বিয়ামতের দিন সর্বাধিক শাস্তি প্রাপ্ত হবে দু’ধরনের মানুষ। তাদের একজন হ’ল, অবাধ্য স্ত্রী (তিরমিযী হা/৩৫৯, সনদ ছহীহ)। তবে উভয়ে উভয়ের অধিকারের প্রতি যত্নশীল থাকতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমাদের উত্তম সেই ব্যক্তি, যে তার স্ত্রীর নিকটে উত্তম। আর আমি আমার স্ত্রীদের নিকটে উত্তম’ (তিরমিযী, দারেমী, মিশকাত হা/৩২৫২)।
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।
উত্তর : প্রত্যেক সন্তানের জন্য তার পিতা-মাতার সেবাযত্ন করাই সর্বাগ্রে যরূরী (ইসরা ১৭/২৩)। স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ীর খেদমতে বাধ্য করা উচিৎ নয়। তবে অবশ্যই তাদের সাথে সদাচরণ করা কর্তব্য। স্বামী এবং পিতা-মাতা উভয়ের আদেশ-নিষেধ মেনে চলা স্ত্রীর জন্য ওয়াজিব। তাই সাধ্যমত উভয়কে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করবে। এরপরেও যদি উভয়ের আদেশ-নিষেধের মাঝে বৈপরীত্য দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে বৈষয়িক বিষয়ে স্বামীর আদেশকে অগ্রগণ্য করতে হবে। কেননা বিবাহের পূর্ব পর্যন্ত নারীরা পিতা-মাতার নিয়ন্ত্রণাধীনে থাকে। কিন্তু বিবাহের পর তারা স্বামীর নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। সুতরাং সেসময় স্বামীর আদেশ-নিষেধ মান্য করাই তার জন্য অগ্রগণ্য হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, আমি যদি কাউকে কোন মানুষের সিজদা করার আদেশ দিতাম, তাহ’লে স্ত্রীকে তার স্বামীর সামনে সিজদা করতে বলতাম (আবুদাউদ হা/২১৪০; মিশকাত হা/৩২৫৫)। তিনি বলেন, ক্বিয়ামতের দিন সর্বাধিক শাস্তি প্রাপ্ত হবে দু’ধরনের মানুষ। তাদের একজন হ’ল, অবাধ্য স্ত্রী (তিরমিযী হা/৩৫৯, সনদ ছহীহ)। তবে উভয়ে উভয়ের অধিকারের প্রতি যত্নশীল থাকতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমাদের উত্তম সেই ব্যক্তি, যে তার স্ত্রীর নিকটে উত্তম। আর আমি আমার স্ত্রীদের নিকটে উত্তম’ (তিরমিযী, দারেমী, মিশকাত হা/৩২৫২)।
৯২
প্রশ্ন (১১/২১১) : শ্বশুরবাড়ির সকলেই বিড়ি তৈরীর ব্যবসা করে। এক্ষণে তাদের বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া, উঠা-বসা জায়েয হবে কি?-গোলাম মুক্তাদির
লক্ষ্মীনগর, ধুলিয়ান, মুর্শিদাবাদ, ভারত।
উত্তর : এর জন্য পাপের বোঝা শ্বশুরবাড়ীর লোকদের উপর বর্তাবে। আল্লাহ বলেন, একজনের পাপের বোঝা অন্যে বহন করবে না (নাজম ৫৩/৩৮)। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, তার নিকটে জনৈক ব্যক্তি এসে বলল, আমার একজন প্রতিবেশী আছে যে সূদ খায় এবং সর্বদা আমাকে তার বাড়িতে খাওয়ার জন্য দাওয়াত দেয়। এক্ষণে আমি তার দাওয়াত কবুল করব কি? জওয়াবে তিনি বললেন, مَهْنَأَهُ لَكَ وَإِثْمُهُ عَلَيْهِ ‘তোমার জন্য এটি বিনা কষ্টের অর্জন এবং এর গোনাহ তার উপরে’ (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/১৪৬৭৫, ইমাম আহমাদ আছারটি ‘ছহীহ’ বলেছেন, জামেঊল উলূম ওয়াল হিকাম ২০১ পৃঃ)। এক্ষণে আত্মীয় হিসাবে আপনার দায়িত্ব হবে শ্বশুরবাড়ীর লোকদের হালাল রূযীর দিকে ফিরিয়ে আনার জন্য সাধ্যপক্ষে চেষ্টা করা। আপনার চেষ্টা সফল হ’লে তাদের নেকীর সমপরিমান নেকী আপনি পাবেন। আর সফল না হলেও আপনি দাওয়াতের পূর্ণ নেকী পেয়ে যাবেন। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি কাউকে কল্যাণের পথ দেখায়, সে ঐ কর্মীর ন্যায় ছওয়াব পায় (মুসলিম, মিশকাত হা/২০৯)।
লক্ষ্মীনগর, ধুলিয়ান, মুর্শিদাবাদ, ভারত।
উত্তর : এর জন্য পাপের বোঝা শ্বশুরবাড়ীর লোকদের উপর বর্তাবে। আল্লাহ বলেন, একজনের পাপের বোঝা অন্যে বহন করবে না (নাজম ৫৩/৩৮)। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, তার নিকটে জনৈক ব্যক্তি এসে বলল, আমার একজন প্রতিবেশী আছে যে সূদ খায় এবং সর্বদা আমাকে তার বাড়িতে খাওয়ার জন্য দাওয়াত দেয়। এক্ষণে আমি তার দাওয়াত কবুল করব কি? জওয়াবে তিনি বললেন, مَهْنَأَهُ لَكَ وَإِثْمُهُ عَلَيْهِ ‘তোমার জন্য এটি বিনা কষ্টের অর্জন এবং এর গোনাহ তার উপরে’ (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/১৪৬৭৫, ইমাম আহমাদ আছারটি ‘ছহীহ’ বলেছেন, জামেঊল উলূম ওয়াল হিকাম ২০১ পৃঃ)। এক্ষণে আত্মীয় হিসাবে আপনার দায়িত্ব হবে শ্বশুরবাড়ীর লোকদের হালাল রূযীর দিকে ফিরিয়ে আনার জন্য সাধ্যপক্ষে চেষ্টা করা। আপনার চেষ্টা সফল হ’লে তাদের নেকীর সমপরিমান নেকী আপনি পাবেন। আর সফল না হলেও আপনি দাওয়াতের পূর্ণ নেকী পেয়ে যাবেন। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি কাউকে কল্যাণের পথ দেখায়, সে ঐ কর্মীর ন্যায় ছওয়াব পায় (মুসলিম, মিশকাত হা/২০৯)।
৯৩
প্রশ্ন (১২/২১২) : ছালাতরত অবস্থায় অজান্তে বের হওয়া মযী ছালাত শেষ হওয়ার পর বুঝতে পারলে উক্ত ছালাত পুনরায় আদায় করতে হবে কি?-তাওছীফ আহমাদ, মুর্শিদাবাদ, ভারত।
উত্তর : এমতাবস্থায় যদি দৃঢ় বিশ্বাস থাকে যে, ছালাতরত অবস্থাতেই মযী বের হয়েছে, তাহ’লে তাকে কাপড় ও শরীর উভয় স্থান থেকে মযী ধৌত করার পর ওযূ করে পুনরায় ছালাত আদায় করতে হবে। আর যদি কেবল সন্দেহ হয়, তবে পুনরায় ছালাত আদায় করতে হবে না। কারণ সন্দেহের দ্বারা পবিত্রতা নষ্ট হয় না (বুখারী হা/১৩৭, মুসলিম হা/৩৬২, মিশকাত হা/৩০৬)।
আর এটা রোগে পরিণত হ’লে মযী বের হলেও ছালাত পরিত্যাগ করার প্রয়োজন নেই। সেক্ষেত্রে প্রত্যেক ছালাতের জন্য পৃথকভাবে ওযূ করতে হবে (বুখারী হা/২২৮, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৫৮; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৬৮ পৃঃ)। কারণ আল্লাহপাক মানুষের উপর সাধ্যের অতিরিক্ত কিছু চাপিয়ে দেননি (বাক্বারাহ ২৮৬)।
উত্তর : এমতাবস্থায় যদি দৃঢ় বিশ্বাস থাকে যে, ছালাতরত অবস্থাতেই মযী বের হয়েছে, তাহ’লে তাকে কাপড় ও শরীর উভয় স্থান থেকে মযী ধৌত করার পর ওযূ করে পুনরায় ছালাত আদায় করতে হবে। আর যদি কেবল সন্দেহ হয়, তবে পুনরায় ছালাত আদায় করতে হবে না। কারণ সন্দেহের দ্বারা পবিত্রতা নষ্ট হয় না (বুখারী হা/১৩৭, মুসলিম হা/৩৬২, মিশকাত হা/৩০৬)।
আর এটা রোগে পরিণত হ’লে মযী বের হলেও ছালাত পরিত্যাগ করার প্রয়োজন নেই। সেক্ষেত্রে প্রত্যেক ছালাতের জন্য পৃথকভাবে ওযূ করতে হবে (বুখারী হা/২২৮, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৫৮; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৬৮ পৃঃ)। কারণ আল্লাহপাক মানুষের উপর সাধ্যের অতিরিক্ত কিছু চাপিয়ে দেননি (বাক্বারাহ ২৮৬)।
৯৪
প্রশ্ন (১৩/২১৩) : আযান দেওয়ার নির্দিষ্ট কোন স্থান কি শরী‘আত কর্তৃক নির্ধারিত রয়েছে? মসজিদ বা মসজিদের বাইরে যেকোন স্থান থেকে আযান দিলে চলবে কি?-মাহতাব, গোপালনগর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) আব্দুল্লাহ বিন যায়েদের স্বপ্নে পাওয়া আযানের বাক্যগুলো শুনে বললেন, তোমার স্বপ্ন সত্য, তুমি বেলালকে আযানের বাক্যগুলি শিখিয়ে দাও এবং তাকে আযান দিতে বল। কেননা বেলালের কণ্ঠস্বর তোমাদের সবার চেয়ে উঁচু (আবুদাউদ হা/৪৯৯; ইবনু মাজাহ হা/৭০৬; মিশকাত হা/৬৫০)। উরওয়া বিন যুবায়ের বনু নাজ্জারের জনৈকা মহিলা থেকে বর্ণনা করেন যে, মসজিদের পার্শ্ববর্তী আমার বাড়ী উঁচু ছিল। বেলাল তার উপরে উঠে ফজরের আযান দিতেন (আবুদাঊদ হা/৫১৯)। উল্লিখিত হাদীছ দুটি থেকে প্রমাণিত হয় যে, রাসূল (ছাঃ)-এর যামানায় মসজিদের বাইরে আযান দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল দূরবর্তী মুছল্লীর কাছে আযানের আওয়ায পৌঁছানো। অতএব মাইকে আযান দিলে মসজিদের ভিতর সহ যেকোন স্থানে দাঁড়িয়ে আযান দেওয়া যাবে। আর মাইক না থাকলে মসজিদের বাইরে দাঁড়িয়ে আযান দিবে। যাতে করে মানুষের কাছে আযানের আওয়ায পৌঁছে (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ফৎওয়া নং ৩৬৩০, ৪৩৩৫)।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) আব্দুল্লাহ বিন যায়েদের স্বপ্নে পাওয়া আযানের বাক্যগুলো শুনে বললেন, তোমার স্বপ্ন সত্য, তুমি বেলালকে আযানের বাক্যগুলি শিখিয়ে দাও এবং তাকে আযান দিতে বল। কেননা বেলালের কণ্ঠস্বর তোমাদের সবার চেয়ে উঁচু (আবুদাউদ হা/৪৯৯; ইবনু মাজাহ হা/৭০৬; মিশকাত হা/৬৫০)। উরওয়া বিন যুবায়ের বনু নাজ্জারের জনৈকা মহিলা থেকে বর্ণনা করেন যে, মসজিদের পার্শ্ববর্তী আমার বাড়ী উঁচু ছিল। বেলাল তার উপরে উঠে ফজরের আযান দিতেন (আবুদাঊদ হা/৫১৯)। উল্লিখিত হাদীছ দুটি থেকে প্রমাণিত হয় যে, রাসূল (ছাঃ)-এর যামানায় মসজিদের বাইরে আযান দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল দূরবর্তী মুছল্লীর কাছে আযানের আওয়ায পৌঁছানো। অতএব মাইকে আযান দিলে মসজিদের ভিতর সহ যেকোন স্থানে দাঁড়িয়ে আযান দেওয়া যাবে। আর মাইক না থাকলে মসজিদের বাইরে দাঁড়িয়ে আযান দিবে। যাতে করে মানুষের কাছে আযানের আওয়ায পৌঁছে (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ফৎওয়া নং ৩৬৩০, ৪৩৩৫)।
-রায়হান,
খয়রাবাদ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : ইসলামী শরী‘আতে এরূপ চিকিৎসার কোন ভিত্তি নেই। বরং রাগ কমানোর চিকিৎসা হিসাবে রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা যখন রেগে যাবে তখন আ‘ঊযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রাজীম পাঠ করবে (বুখারী হা/৬০৪৮; মুসলিম হা/২৬১০;, মিশকাত হা/২৪১৮)। অন্যত্র তিনি বলেন, এ সময় দাঁড়িয়ে থাকলে বসে যাবে এবং বসে থাকলে শুয়ে যাবে (আবুদাঊদ হা/৪৭৮২, মিশকাত হা/৫১১৪)। উল্লেখ্য যে, ক্রোধ নিবারণে ওযূ করা সম্পর্কিত হাদীছটি যঈফ (আবুদাঊদ হা/৪৭৮৪, যঈফাহ হা/৫৮২)।
খয়রাবাদ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : ইসলামী শরী‘আতে এরূপ চিকিৎসার কোন ভিত্তি নেই। বরং রাগ কমানোর চিকিৎসা হিসাবে রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা যখন রেগে যাবে তখন আ‘ঊযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রাজীম পাঠ করবে (বুখারী হা/৬০৪৮; মুসলিম হা/২৬১০;, মিশকাত হা/২৪১৮)। অন্যত্র তিনি বলেন, এ সময় দাঁড়িয়ে থাকলে বসে যাবে এবং বসে থাকলে শুয়ে যাবে (আবুদাঊদ হা/৪৭৮২, মিশকাত হা/৫১১৪)। উল্লেখ্য যে, ক্রোধ নিবারণে ওযূ করা সম্পর্কিত হাদীছটি যঈফ (আবুদাঊদ হা/৪৭৮৪, যঈফাহ হা/৫৮২)।
৯৬
প্রশ্ন (১৫/২১৫) : দাড়ির সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য অনেকে দাড়ি ছেটে সুন্দর করার চেষ্টা করেন এবং দলীল পেশ করে বলেন, আল্লাহ সৌন্দর্যকে পসন্দ করেন। সঊদী আরবের ওলামায়ে কেরামও নাকি এ ব্যাপারে একমত। এক্ষণে এটা জায়েয হবে কি?-মীযানুর রহমান
তাহেরপুর, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা মুশরিকদের বিরোধিতা কর এবং দাড়িকে নিজের অবস্থায় ছেড়ে দাও। আর গোঁফ ছোট কর (বুখারী হা/৫৮৯২; মুসলিম হা২৫৯; মিশকাত হা/৪৪২১)। দাড়ি ছাড়ার ব্যাপারে হাদীছে পাঁচ ধরনের শব্দ এসেছে। যেমন- ( أَوْفِرُوا وَأَوْفُوا وَأَرْخُوا , وَوَفِّرُوا ) আওফিরূ, আওফূ, আরখূ, ওয়াফ্ফিরূ। এই শব্দগুলো একই মর্ম বহন করে। আর তা হ’ল, দাড়ি তার নিজ গতিতে ছেড়ে দেওয়া। দাড়ি কাটা বা ছাঁটার পক্ষে ছহীহ কোন দলীল নেই; বরং এটি রাসূল (ছাঃ)-এর আদর্শের পরিপন্থী। উল্লেখ্য যে, দাড়ি ছাঁটার পক্ষে তিরমিযীতে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে তা জাল (তিরমিযী হা/২৭৬২; মিশকাত হা/৪৪৩৯; সিলসিলা যঈফাহ হা/২৮৮)।
সউদী আরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদ এ ব্যাপারে বলেন যে, দাড়ি মুন্ডন বা দাড়ির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হ’তে কিছু কেটে নেওয়া বৈধ নয়। এটা রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত বিরোধী কাজ (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ৫/১৩৭)। শায়খ উছায়মীন (রহঃ) বলেন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণ করতে চায়, তারা যেন অবশ্যই দাড়ির কোন অংশ না কাটে। কেননা শেষনবী (ছাঃ) এবং তার পূর্বের কোন নবী দাড়ি কাট- ছাঁট করতেন না (উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১১/৮২)। শায়খ বিন বায (রহঃ) বলেন, দাড়িকে তার নিজ অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া ওয়াজিব (বিন বায, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১০/৯৬-৯৭)। অতএব সৌন্দর্যের দোহাই দিয়ে দাড়ি কাট-ছাঁট করার কোন সুযোগ নেই।
তাহেরপুর, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা মুশরিকদের বিরোধিতা কর এবং দাড়িকে নিজের অবস্থায় ছেড়ে দাও। আর গোঁফ ছোট কর (বুখারী হা/৫৮৯২; মুসলিম হা২৫৯; মিশকাত হা/৪৪২১)। দাড়ি ছাড়ার ব্যাপারে হাদীছে পাঁচ ধরনের শব্দ এসেছে। যেমন- ( أَوْفِرُوا وَأَوْفُوا وَأَرْخُوا , وَوَفِّرُوا ) আওফিরূ, আওফূ, আরখূ, ওয়াফ্ফিরূ। এই শব্দগুলো একই মর্ম বহন করে। আর তা হ’ল, দাড়ি তার নিজ গতিতে ছেড়ে দেওয়া। দাড়ি কাটা বা ছাঁটার পক্ষে ছহীহ কোন দলীল নেই; বরং এটি রাসূল (ছাঃ)-এর আদর্শের পরিপন্থী। উল্লেখ্য যে, দাড়ি ছাঁটার পক্ষে তিরমিযীতে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে তা জাল (তিরমিযী হা/২৭৬২; মিশকাত হা/৪৪৩৯; সিলসিলা যঈফাহ হা/২৮৮)।
সউদী আরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদ এ ব্যাপারে বলেন যে, দাড়ি মুন্ডন বা দাড়ির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হ’তে কিছু কেটে নেওয়া বৈধ নয়। এটা রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত বিরোধী কাজ (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ৫/১৩৭)। শায়খ উছায়মীন (রহঃ) বলেন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণ করতে চায়, তারা যেন অবশ্যই দাড়ির কোন অংশ না কাটে। কেননা শেষনবী (ছাঃ) এবং তার পূর্বের কোন নবী দাড়ি কাট- ছাঁট করতেন না (উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১১/৮২)। শায়খ বিন বায (রহঃ) বলেন, দাড়িকে তার নিজ অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া ওয়াজিব (বিন বায, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১০/৯৬-৯৭)। অতএব সৌন্দর্যের দোহাই দিয়ে দাড়ি কাট-ছাঁট করার কোন সুযোগ নেই।
-মীযান, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : তাবীয দিয়ে কোন চিকিৎসা গ্রহণ করা যাবেনা। কারণ রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি তাবীয লটকালো, সে শিরক করল (আহমাদ হা/১৭৪৫৮; ছহীহাহ হা/৪৯২)। আর শিরকের গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করেন না (নিসা ৪/৪৮)। তবে সূরা ফাতিহা পাঠ করে ফুঁক দিয়ে সাপের বিষ নামানো শরী‘আতসম্মত (বুখারী হা/৫০০৭)। এছাড়া শরী‘আতবিরোধী নয়, এরূপ চিকিৎসা গ্রহণে কোন বাধা নেই।
উত্তর : তাবীয দিয়ে কোন চিকিৎসা গ্রহণ করা যাবেনা। কারণ রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি তাবীয লটকালো, সে শিরক করল (আহমাদ হা/১৭৪৫৮; ছহীহাহ হা/৪৯২)। আর শিরকের গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করেন না (নিসা ৪/৪৮)। তবে সূরা ফাতিহা পাঠ করে ফুঁক দিয়ে সাপের বিষ নামানো শরী‘আতসম্মত (বুখারী হা/৫০০৭)। এছাড়া শরী‘আতবিরোধী নয়, এরূপ চিকিৎসা গ্রহণে কোন বাধা নেই।
-মুবাশশিরাহ
বিবিহাটরা, মোহনপুর, রাজশাহী।
উত্তর : নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ নাবালকদের সাথে মহিলারা বিনা পর্দায় সাক্ষাৎ করতে পারে (নূর ২৪/৩১)। আবহাওয়াগত ভিন্নতার কারণে সাবালক হওয়ার বয়সে ভিন্নতা দেখা দেয়। অতএব শিশুর মধ্যে সাবালক হওয়ার আলামত পাওয়া গেলে তার থেকে পর্দা করতে হবে।
বিবিহাটরা, মোহনপুর, রাজশাহী।
উত্তর : নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ নাবালকদের সাথে মহিলারা বিনা পর্দায় সাক্ষাৎ করতে পারে (নূর ২৪/৩১)। আবহাওয়াগত ভিন্নতার কারণে সাবালক হওয়ার বয়সে ভিন্নতা দেখা দেয়। অতএব শিশুর মধ্যে সাবালক হওয়ার আলামত পাওয়া গেলে তার থেকে পর্দা করতে হবে।
৯৯
প্রশ্ন (১৮/২১৮) : জনৈক ব্যক্তি বলেন, ‘মহিলাদের পবিত্রতা অর্জনের জন্য প্রথমে ঢিলা-কুলুখ ব্যবহারের পর পানি ব্যবহার করতে হবে। এ বক্তব্যের কোন সত্যতা আছে কি?-মাজেদা বেগম, চুনাঘাট, লালমণিরহাট।
উত্তর : উক্ত বক্তব্য ভিত্তিহীন। পুরুষ-মহিলা সকলের জন্য পবিত্রতা অর্জনের প্রধান মাধ্যম হ’ল পানি। পানি না থাকলে ঢেলা বা ক্ষতিকর নয় এরূপ টিস্যু ব্যবহার করতে হবে। সূরা তওবার ১০৯ আয়াতে পবিত্রতা অর্জনের কারণে আল্লাহ যাদের প্রশংসা করেছেন, তারা পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করতেন (আবুদাঊদ হা/৪৪, সনদ ছহীহ)। উল্লেখ্য যে, আগে ঢেলা বা টিস্যু দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করতে হবে এবং পরে পানি ব্যবহার করতে হবে মর্মে মুসনাদে বাযযারে যে বর্ণনা এসেছে, তা মওযূ‘ বা জাল (ইরওয়াউল গালীল হা/৪২-এর আলোচনা দ্রঃ)।
উত্তর : উক্ত বক্তব্য ভিত্তিহীন। পুরুষ-মহিলা সকলের জন্য পবিত্রতা অর্জনের প্রধান মাধ্যম হ’ল পানি। পানি না থাকলে ঢেলা বা ক্ষতিকর নয় এরূপ টিস্যু ব্যবহার করতে হবে। সূরা তওবার ১০৯ আয়াতে পবিত্রতা অর্জনের কারণে আল্লাহ যাদের প্রশংসা করেছেন, তারা পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করতেন (আবুদাঊদ হা/৪৪, সনদ ছহীহ)। উল্লেখ্য যে, আগে ঢেলা বা টিস্যু দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করতে হবে এবং পরে পানি ব্যবহার করতে হবে মর্মে মুসনাদে বাযযারে যে বর্ণনা এসেছে, তা মওযূ‘ বা জাল (ইরওয়াউল গালীল হা/৪২-এর আলোচনা দ্রঃ)।
-নার্গিস সুলতানা, মধ্য বাড্ডা, ঢাকা।
উত্তর : রাতে ঘুমানোর সময় ওযূ করা অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ কাজ। বারা ইবনে আযেব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে বলেন, যখন তুমি শুতে যাবে, তখন ছালাতের মত ওযূ কর এবং ডান কাতে শয়ন করো। অতঃপর তাকে একটি দো‘আ শিখিয়ে বললেন, ‘যদি তুমি এ অবস্থায় মারা যাও, তবে তুমি ইসলামী স্বভাবের উপর মারা যাবে। আর যদি সকাল কর তাহলে কল্যাণের উপর সকাল করবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৩৮৫)। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ওযূ অবস্থায় ঘুমায়, তার পাশে একজন ফেরেশতা অবস্থান করে। যখন সে জাগ্রত হয়, তখন ফেরেশতা বলে, হে আল্লাহ! তুমি তোমার এই বান্দাকে ক্ষমা করে দাও। কারণ সে পবিত্র অবস্থায় ঘুমিয়েছিল (ছহীহ ইবনু হিববান হা/১০৫১; ছহীহাহ হা/২৫৩৯)।
উত্তর : রাতে ঘুমানোর সময় ওযূ করা অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ কাজ। বারা ইবনে আযেব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে বলেন, যখন তুমি শুতে যাবে, তখন ছালাতের মত ওযূ কর এবং ডান কাতে শয়ন করো। অতঃপর তাকে একটি দো‘আ শিখিয়ে বললেন, ‘যদি তুমি এ অবস্থায় মারা যাও, তবে তুমি ইসলামী স্বভাবের উপর মারা যাবে। আর যদি সকাল কর তাহলে কল্যাণের উপর সকাল করবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৩৮৫)। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ওযূ অবস্থায় ঘুমায়, তার পাশে একজন ফেরেশতা অবস্থান করে। যখন সে জাগ্রত হয়, তখন ফেরেশতা বলে, হে আল্লাহ! তুমি তোমার এই বান্দাকে ক্ষমা করে দাও। কারণ সে পবিত্র অবস্থায় ঘুমিয়েছিল (ছহীহ ইবনু হিববান হা/১০৫১; ছহীহাহ হা/২৫৩৯)।
১০১
প্রশ্ন (২০/২২০) : স্ত্রীর চাকুরী অথবা ব্যবসার আয়ের অর্থের উপর স্বামীর হক আছে কি? স্বামী স্ত্রীর অর্থের হিসাব রাখতে পারবে কি? এছাড়া স্ত্রী স্বামীকে না জানিয়ে তার পিতার বাড়িতে কোন খরচ করতে পারবে কি?আরীফুল ইসলাম, ছোট বনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : স্ত্রীর সম্পদের উপর স্বামীর কোন হক নেই। তবে স্ত্রীর মৃত্যুর পর স্বামী তার সম্পদের উত্তরাধিকারী হবেন। স্বামী স্ত্রীর অর্থের হিসাব রাখতে পারেন, কেবল দ্বীনী দায়িত্ব হিসাবে। স্ত্রী তার স্বামীকে না বলে তার পিতার বাড়ীতে খরচ করতে পারে। তবে স্বামীর পরামর্শ ও অনুমতি নিয়ে ব্যয় করা উচিৎ। কেননা আল্লাহ তা‘আলা পরস্পরে পরামর্শ সাপেক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন (আলে ইমরান ৩/১৫৯)।
উত্তর : স্ত্রীর সম্পদের উপর স্বামীর কোন হক নেই। তবে স্ত্রীর মৃত্যুর পর স্বামী তার সম্পদের উত্তরাধিকারী হবেন। স্বামী স্ত্রীর অর্থের হিসাব রাখতে পারেন, কেবল দ্বীনী দায়িত্ব হিসাবে। স্ত্রী তার স্বামীকে না বলে তার পিতার বাড়ীতে খরচ করতে পারে। তবে স্বামীর পরামর্শ ও অনুমতি নিয়ে ব্যয় করা উচিৎ। কেননা আল্লাহ তা‘আলা পরস্পরে পরামর্শ সাপেক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন (আলে ইমরান ৩/১৫৯)।
-মুবাশশির, মীরপুর, ঢাকা।
উত্তর : একই রাক‘আতে একাধিক সূরা পাঠ করায় কোন বাধা নেই। রাসূল (ছাঃ) একই রাক‘আতে পরপর দু’টি বা ততোধিক সূরা পাঠ করেছেন (মুসলিম হা/৭৭২, নাসাঈ হা/১৬৬৪)। এছাড়া একই রাক‘আতে একাধিক সূরা পাঠের বিষয়টি বিভিন্ন ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (বুখারী হা/৭৪২, আবুদাঊদ হা/১৩৯৬; দ্রঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ১০১ পৃঃ)।
উত্তর : একই রাক‘আতে একাধিক সূরা পাঠ করায় কোন বাধা নেই। রাসূল (ছাঃ) একই রাক‘আতে পরপর দু’টি বা ততোধিক সূরা পাঠ করেছেন (মুসলিম হা/৭৭২, নাসাঈ হা/১৬৬৪)। এছাড়া একই রাক‘আতে একাধিক সূরা পাঠের বিষয়টি বিভিন্ন ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (বুখারী হা/৭৪২, আবুদাঊদ হা/১৩৯৬; দ্রঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ১০১ পৃঃ)।
১০৩
প্রশ্ন (২২/২২২) : আমি ২০১৩ সালে স্ত্রীকে মৌখিকভাবে এক তালাক দেই। অতঃপর ৩দিন পর তাকে ফিরিয়ে নিয়ে সংসার করতে থাকি। কিন্তু ২০১৪ সালে কোর্টের মাধ্যমে পুনরায় তালাক প্রদান করি এবং তালাকনামার কপি ডাকের মাধ্যমে স্ত্রীর পিতার বরাবরে প্রেরণ করি। সে গ্রহণ না করলেও জানতে পেরেছে। অতঃপর ৩ মাস পর ঐ তালাকের জাবেদা কপি পুনরায় স্ত্রীর পিতার বাড়ীতে প্রেরণ করি। উল্লেখ্য, ২য় তালাক দেওয়ার পর থেকেই স্ত্রীর সাথে আমার সম্পর্ক নেই। এক্ষণে এটা কি তিন তালাক হিসাবে গণ্য হবে?-মুহাম্মাদ সাফিউল ইসলাম
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
উত্তর : প্রশ্নে উল্লেখিত বিবরণ অনুযায়ী ২য় তালাক দেওয়ার পর ইদ্দতকাল তথা তিন মাসের মধ্যে স্ত্রীকে ফিরিয়ে না নেওয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেছে (বাক্বারাহ ২/২২৯)। এমতাবস্থায় স্বামী-স্ত্রী পরস্পরে সম্মত হ’লে নতুন বিবাহের মাধ্যমে পুনরায় ঘর-সংসার করতে পারে (বাক্বারাহ ২/২৩২; তালাক ৩৫/১; বুখারী হা/৫১৩০)।
তবে তিন তুহরে তিন তালাক প্রদান করলে এ সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়, যতক্ষণ না সে অন্যত্র বিবাহ করে ও সেখান থেকে স্বাভাবিকভাবে তালাকপ্রাপ্তা হয় (বাক্বারাহ ২/২৩০)। উল্লেখ্য, প্রশ্নকারী দ্বিতীয় তালাকের ইদ্দতকাল অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পর ৩য় তালাক প্রদান করায় তা গণ্য হবে না। কারণ তালাক দিতে হয় ইদ্দতকালের মধ্যে। আল্লাহ বলেন, ‘আর তাদেরকে তালাক দাও ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে এবং ইদ্দত গণনা কর’ (তালাক ৬৫/১)। আবদুল্লাহ্ ইবনু ওমর (রাঃ) স্বীয় স্ত্রীকে ঋতু অবস্থায় তালাক দিলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে ফিরিয়ে নিয়ে ইদ্দতের মধ্যে তালাক দেওয়ার নির্দেশ দেন (বুখারী হা/৫২৫১, মুসলিম হা/১৪৭১)। কেননা ঋতু অবস্থায় তালাক দেওয়া জায়েয নয় (বিস্তারিত দ্রঃ ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ২০/১৪৭, ফৎওয়া নং ৮২৫)।
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
উত্তর : প্রশ্নে উল্লেখিত বিবরণ অনুযায়ী ২য় তালাক দেওয়ার পর ইদ্দতকাল তথা তিন মাসের মধ্যে স্ত্রীকে ফিরিয়ে না নেওয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেছে (বাক্বারাহ ২/২২৯)। এমতাবস্থায় স্বামী-স্ত্রী পরস্পরে সম্মত হ’লে নতুন বিবাহের মাধ্যমে পুনরায় ঘর-সংসার করতে পারে (বাক্বারাহ ২/২৩২; তালাক ৩৫/১; বুখারী হা/৫১৩০)।
তবে তিন তুহরে তিন তালাক প্রদান করলে এ সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়, যতক্ষণ না সে অন্যত্র বিবাহ করে ও সেখান থেকে স্বাভাবিকভাবে তালাকপ্রাপ্তা হয় (বাক্বারাহ ২/২৩০)। উল্লেখ্য, প্রশ্নকারী দ্বিতীয় তালাকের ইদ্দতকাল অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পর ৩য় তালাক প্রদান করায় তা গণ্য হবে না। কারণ তালাক দিতে হয় ইদ্দতকালের মধ্যে। আল্লাহ বলেন, ‘আর তাদেরকে তালাক দাও ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে এবং ইদ্দত গণনা কর’ (তালাক ৬৫/১)। আবদুল্লাহ্ ইবনু ওমর (রাঃ) স্বীয় স্ত্রীকে ঋতু অবস্থায় তালাক দিলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে ফিরিয়ে নিয়ে ইদ্দতের মধ্যে তালাক দেওয়ার নির্দেশ দেন (বুখারী হা/৫২৫১, মুসলিম হা/১৪৭১)। কেননা ঋতু অবস্থায় তালাক দেওয়া জায়েয নয় (বিস্তারিত দ্রঃ ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ২০/১৪৭, ফৎওয়া নং ৮২৫)।
১০৪
প্রশ্ন (২৩/২২৩) : অজান্তে কবরযুক্ত মসজিদে ছালাত আদায় করে পরবর্তীতে জানতে পারলে উক্ত ছালাত পুনরায় আদায় করতে হবে কি?-যুবায়ের, ময়মনসিংহ।
উত্তর : অজান্তে কবরযুক্ত মসজিদে ছালাত আদায় করে ফেললে তা পুনরায় আদায় করতে হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘যা তোমাদের ভুলবশতঃ ঘটে সে বিষয়ে আল্লাহ তোমাদের পাকড়াও করবেন না (আহযাব ৩৩/৫)।
তবে এর জন্য তওবা ও ইস্তেগফার করবে। যেন পুনরায় এরূপ ভুল না হয়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, গোনাহ থেকে তওবাকারী ঐ ব্যক্তির মত, যার কোন গোনাহ নেই (ত্বাবারাণী, ছহীহুল জামে‘ হা/৬৮০৩)। স্মর্তব্য যে, ছালাত পুনরায় আদায় করতে হয় কেবল ছালাতের রুকনসমূহের কোন একটি তরক হলে।
উত্তর : অজান্তে কবরযুক্ত মসজিদে ছালাত আদায় করে ফেললে তা পুনরায় আদায় করতে হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘যা তোমাদের ভুলবশতঃ ঘটে সে বিষয়ে আল্লাহ তোমাদের পাকড়াও করবেন না (আহযাব ৩৩/৫)।
তবে এর জন্য তওবা ও ইস্তেগফার করবে। যেন পুনরায় এরূপ ভুল না হয়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, গোনাহ থেকে তওবাকারী ঐ ব্যক্তির মত, যার কোন গোনাহ নেই (ত্বাবারাণী, ছহীহুল জামে‘ হা/৬৮০৩)। স্মর্তব্য যে, ছালাত পুনরায় আদায় করতে হয় কেবল ছালাতের রুকনসমূহের কোন একটি তরক হলে।
-আশরাফুল ইসলাম
তাহেরপুর, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : নাপিতের পেশা বৈধ। নববী যুগে এর প্রচলন ছিল (বুখারী হা/৪১৯০, মিশকাত হা/৪৪৬২)। তবে এ পেশায় থেকে দাড়ি কেটে বা ছেটে দেওয়ার ন্যায় গর্হিত কাজ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। কেননা এতে অন্যায় কাজে সহায়তা করার পাপ হবে। যা থেকে আল্লাহ নিষেধ করেছেন (মায়েদাহ ৫/২)।
তাহেরপুর, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : নাপিতের পেশা বৈধ। নববী যুগে এর প্রচলন ছিল (বুখারী হা/৪১৯০, মিশকাত হা/৪৪৬২)। তবে এ পেশায় থেকে দাড়ি কেটে বা ছেটে দেওয়ার ন্যায় গর্হিত কাজ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। কেননা এতে অন্যায় কাজে সহায়তা করার পাপ হবে। যা থেকে আল্লাহ নিষেধ করেছেন (মায়েদাহ ৫/২)।
-মাসঊদ, মেহেরপুর।
উত্তর : শুক্রবার ফজরের ফরয ছালাতে সূরা দু’টি পাঠ করা সুন্নাত। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) এ দু’টি সূরা জুম‘আর দিন ফজরে নিয়মিত তেলাওয়াত করতেন (বুখারী হা/৮৯১, মুসলিম হা/৮৮০, মিশকাত হা/৮৩৮)। তবে অন্য সূরা পড়াও জায়েয আছে (মির‘আত ৩/১৪৫)। এছাড়া রাসূল (ছাঃ) সুরা সাজদা ও মুলক না পড়ে রাতে ঘুমাতেন না (তিরমিযী হা/৩৪০৪, মিশকাত হা/২১৫৫, ছহীহুল জামে‘ হা/৪৮৭৩)।
উত্তর : শুক্রবার ফজরের ফরয ছালাতে সূরা দু’টি পাঠ করা সুন্নাত। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) এ দু’টি সূরা জুম‘আর দিন ফজরে নিয়মিত তেলাওয়াত করতেন (বুখারী হা/৮৯১, মুসলিম হা/৮৮০, মিশকাত হা/৮৩৮)। তবে অন্য সূরা পড়াও জায়েয আছে (মির‘আত ৩/১৪৫)। এছাড়া রাসূল (ছাঃ) সুরা সাজদা ও মুলক না পড়ে রাতে ঘুমাতেন না (তিরমিযী হা/৩৪০৪, মিশকাত হা/২১৫৫, ছহীহুল জামে‘ হা/৪৮৭৩)।
-আহসান হাবীব, দক্ষিণ কোরিয়া।
উত্তর : দেশে হৌক আর বিদেশে হৌক অমুসলিমদের যবেহকৃত পশুর গোশত খাওয়া হালাল নয়। কেননা তা হালাল হওয়ার শর্ত হল, ‘বিসমিল্লাহ’ বলে যবেহ করা (আন‘আম ৬/১২১)। তবে আহলে কিতাবদের (ইহূদী এবং খৃষ্টানদের) যবেহ করা পশু খাওয়া জায়েয (মায়েদাহ ৫/৫)। শর্ত হ’ল যদি তারা আল্লাহর নামে যবেহ করে (বাক্বারাহ ২/১৭৩, আন‘আম ৬/১২১)। আর যদি এমন দেশে বসবাস করা হয়, যে দেশে মুসলিম ও আহলে কিতাব একত্রে বসবাস করে এবং যবহের সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলেছে কি-না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া না যায়, সেক্ষেত্রে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে খাওয়া যেতে পারে (বুখারী হা/৭৩৯৮; আবুদাউদ হা/২৮২৯; মিশকাত হা/৪০৬৯)। তবে সন্দেহ থেকে দূরে থাকার জন্য তা বর্জন করাই উত্তম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, হালাল স্পষ্ট, হারামও স্পষ্ট। এর মধ্যবর্তী বিষয়সমূহ অস্পষ্ট, যা অনেক মানুষ জানে না। অতএব যে ব্যক্তি সন্দিগ্ধ বস্ত্তসমূহ থেকে বেঁচে থাকবে, সে ব্যক্তি তার দ্বীন ও সম্মানকে পবিত্র রাখলো। আর যে ব্যক্তি সন্দিগ্ধ কাজে লিপ্ত হ’ল, সে হারামে পতিত হ’ল (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৬২)। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘তুমি সন্দেহযুক্ত বিষয় থেকে নিঃসন্দেহের দিকে ধাবিত হও’ (তিরমিযী হা/২৫১৮; নাসাঈ হা/৫৭১১; মিশকাত হা/২৭৭৩)।
উত্তর : দেশে হৌক আর বিদেশে হৌক অমুসলিমদের যবেহকৃত পশুর গোশত খাওয়া হালাল নয়। কেননা তা হালাল হওয়ার শর্ত হল, ‘বিসমিল্লাহ’ বলে যবেহ করা (আন‘আম ৬/১২১)। তবে আহলে কিতাবদের (ইহূদী এবং খৃষ্টানদের) যবেহ করা পশু খাওয়া জায়েয (মায়েদাহ ৫/৫)। শর্ত হ’ল যদি তারা আল্লাহর নামে যবেহ করে (বাক্বারাহ ২/১৭৩, আন‘আম ৬/১২১)। আর যদি এমন দেশে বসবাস করা হয়, যে দেশে মুসলিম ও আহলে কিতাব একত্রে বসবাস করে এবং যবহের সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলেছে কি-না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া না যায়, সেক্ষেত্রে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে খাওয়া যেতে পারে (বুখারী হা/৭৩৯৮; আবুদাউদ হা/২৮২৯; মিশকাত হা/৪০৬৯)। তবে সন্দেহ থেকে দূরে থাকার জন্য তা বর্জন করাই উত্তম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, হালাল স্পষ্ট, হারামও স্পষ্ট। এর মধ্যবর্তী বিষয়সমূহ অস্পষ্ট, যা অনেক মানুষ জানে না। অতএব যে ব্যক্তি সন্দিগ্ধ বস্ত্তসমূহ থেকে বেঁচে থাকবে, সে ব্যক্তি তার দ্বীন ও সম্মানকে পবিত্র রাখলো। আর যে ব্যক্তি সন্দিগ্ধ কাজে লিপ্ত হ’ল, সে হারামে পতিত হ’ল (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৬২)। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘তুমি সন্দেহযুক্ত বিষয় থেকে নিঃসন্দেহের দিকে ধাবিত হও’ (তিরমিযী হা/২৫১৮; নাসাঈ হা/৫৭১১; মিশকাত হা/২৭৭৩)।
-সারোয়ার
মুন্সির হাট, ধোবাউড়া, ময়মনসিংহ।
উত্তর : এরূপ অবস্থায় কোন গুনাহ হবে না বা কোন কাফফারাও ওয়াজিব হবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা আমার উম্মতের ভুলবশতঃ ও বাধ্যগত অবস্থায় কৃত অপরাধ ক্ষমা করে দিয়েছেন’ (ইবনু মাজাহ হা/২০৪৫, মিশকাত হা/৬২৮৪)। তবে নিজেকে সংযত রাখতে না পেরে এরূপ করলে তওবা করতে হবে এবং এক দীনার বা অর্ধ দীনার ছাদাক্বা করতে হবে (আবুদাঊদ হা/২৬৪; মিশকাত হা/৫৫৩)।
মুন্সির হাট, ধোবাউড়া, ময়মনসিংহ।
উত্তর : এরূপ অবস্থায় কোন গুনাহ হবে না বা কোন কাফফারাও ওয়াজিব হবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা আমার উম্মতের ভুলবশতঃ ও বাধ্যগত অবস্থায় কৃত অপরাধ ক্ষমা করে দিয়েছেন’ (ইবনু মাজাহ হা/২০৪৫, মিশকাত হা/৬২৮৪)। তবে নিজেকে সংযত রাখতে না পেরে এরূপ করলে তওবা করতে হবে এবং এক দীনার বা অর্ধ দীনার ছাদাক্বা করতে হবে (আবুদাঊদ হা/২৬৪; মিশকাত হা/৫৫৩)।
১০৯
প্রশ্ন (২৮/২২৮) : মেমোরী কার্ডে গান, ভিডিও, ইসলামী বক্তব্য ইত্যাদি লোড দেওয়ার ব্যবসা করা জায়েয হবে কি?-জসীমুদ্দীন
কাঠিগ্রাম, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ।
উত্তর : যে সব ব্যবসা মানুষকে মন্দের দিকে নিয়ে যায় তা থেকে বেঁচে থাকাই উত্তম। এ ব্যবসার নেতিবাচক দিক হ’ল এর মাধ্যমে অন্যায়-অশ্লীলতা দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও এটি দ্বীন প্রচারেও সহায়ক ভুমিকা পালন করে থাকে। তবে মন্দটি পরিত্যাগ করে এ ব্যবসা করায় কোন বাধা নেই। আল্লাহ বলেন, তোমরা সৎ ও তাক্বওয়ার কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা কর আর গুনাহ ও পাপ কাজে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাক (মায়েদাহ ৫/২)।
কাঠিগ্রাম, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ।
উত্তর : যে সব ব্যবসা মানুষকে মন্দের দিকে নিয়ে যায় তা থেকে বেঁচে থাকাই উত্তম। এ ব্যবসার নেতিবাচক দিক হ’ল এর মাধ্যমে অন্যায়-অশ্লীলতা দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও এটি দ্বীন প্রচারেও সহায়ক ভুমিকা পালন করে থাকে। তবে মন্দটি পরিত্যাগ করে এ ব্যবসা করায় কোন বাধা নেই। আল্লাহ বলেন, তোমরা সৎ ও তাক্বওয়ার কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা কর আর গুনাহ ও পাপ কাজে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাক (মায়েদাহ ৫/২)।
১১০
প্রশ্ন (২৯/২২৯) : আমাদের দেশে বিবাহ পড়ানোর সময় একই গ্লাসে একই শরবত বর ও কনেকে খাওয়ানো হয়। এগুলি জায়েয হবে কি?-রাশেদুল ইসলাম, নরসিংদী।
উত্তর : এভাবে খাওয়ানোর মাধ্যমে আল্লাহ বর-কনের মধ্যে অধিক ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিবেন বলে যদি কোন আক্বীদা থাকে, তবে তা জায়েয নয়। বরং কুসংস্কার মাত্র। তবে সাধারণভাবে এরূপ খাওয়ায় কোন বাধা নেই। রাসূল (ছাঃ) ও আয়েশা (রাঃ) একই পাত্রের একই স্থানে মুখ রেখে পানি পান করেছেন (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৪৭)।
উত্তর : এভাবে খাওয়ানোর মাধ্যমে আল্লাহ বর-কনের মধ্যে অধিক ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিবেন বলে যদি কোন আক্বীদা থাকে, তবে তা জায়েয নয়। বরং কুসংস্কার মাত্র। তবে সাধারণভাবে এরূপ খাওয়ায় কোন বাধা নেই। রাসূল (ছাঃ) ও আয়েশা (রাঃ) একই পাত্রের একই স্থানে মুখ রেখে পানি পান করেছেন (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৪৭)।
১১১
প্রশ্ন (৩০/২৩০) : দো‘আর অর্থ না জানা থাকলে তা দ্বারা আল্লাহর নিকটে কিছু কামনা করলে কবুলযোগ্য হবে কি?-শিহাবুদ্দীন,
পাংশা, রাজবাড়ী।
উত্তর : অবশ্যই হবে। কেননা আল্লাহ মানুষের হৃদয়ের খবর রাখেন। অতএব হৃদয় ঢেলে দিয়ে দো‘আ করলে আল্লাহ অবশ্যই তার ডাকে সাড়া দিবেন। তিনি বলেন, তোমরা আমাকে ডাক। আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব’ (মুমিন ৬০)। তবে অর্থ জেনে ও মর্ম বুঝে দো‘আ করলে তাতে একাগ্রতা ও বিনয় বেশী থাকে। ফলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনাও বেশী থাকে। তাই অর্থ না জানলে কবুলযোগ্য হলেও অর্থ জেনে দো‘আ করার চেষ্টা করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘মুছল্লী ছালাতের মধ্যে স্বীয় প্রভুর সাথে গোপনে কথা বলে। অতএব সে তার প্রভুর সাথে কি বলছে তার প্রতি যেন একাগ্র থাকে ..(আহমাদ, মিশকাত হা/৮৫৬)।
পাংশা, রাজবাড়ী।
উত্তর : অবশ্যই হবে। কেননা আল্লাহ মানুষের হৃদয়ের খবর রাখেন। অতএব হৃদয় ঢেলে দিয়ে দো‘আ করলে আল্লাহ অবশ্যই তার ডাকে সাড়া দিবেন। তিনি বলেন, তোমরা আমাকে ডাক। আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব’ (মুমিন ৬০)। তবে অর্থ জেনে ও মর্ম বুঝে দো‘আ করলে তাতে একাগ্রতা ও বিনয় বেশী থাকে। ফলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনাও বেশী থাকে। তাই অর্থ না জানলে কবুলযোগ্য হলেও অর্থ জেনে দো‘আ করার চেষ্টা করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘মুছল্লী ছালাতের মধ্যে স্বীয় প্রভুর সাথে গোপনে কথা বলে। অতএব সে তার প্রভুর সাথে কি বলছে তার প্রতি যেন একাগ্র থাকে ..(আহমাদ, মিশকাত হা/৮৫৬)।
- সিরাজুল ইসলাম
মোল্লাহাট, বাগেরহাট।
উত্তর : শরী‘আতে সময়ের মূল্য সম্পর্কে অপরিসীম গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। ক্বিয়ামতের দিন পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে আমরা কেউ এক পাও নড়াতে পারব না। তন্মধ্যে অন্যতম দু’টি হচ্ছে- ‘আমাদের জীবনের সময়কাল আমরা কিভাবে ব্যয় করেছি এবং আমাদের যৌবনকে আমরা কিভাবে ক্ষয় করেছি (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫১৯৭)। অন্য হাদীছে আছে, রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘দু’টি নে‘মতের ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষ ভ্রান্তির মধ্যে নিমজ্জিত। আর তা হচ্ছে স্বাস্থ্য ও অবসর সময়’ (বুখারী, মিশকাত হা/৫১৫৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪৯২৮)।
মোল্লাহাট, বাগেরহাট।
উত্তর : শরী‘আতে সময়ের মূল্য সম্পর্কে অপরিসীম গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। ক্বিয়ামতের দিন পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে আমরা কেউ এক পাও নড়াতে পারব না। তন্মধ্যে অন্যতম দু’টি হচ্ছে- ‘আমাদের জীবনের সময়কাল আমরা কিভাবে ব্যয় করেছি এবং আমাদের যৌবনকে আমরা কিভাবে ক্ষয় করেছি (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫১৯৭)। অন্য হাদীছে আছে, রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘দু’টি নে‘মতের ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষ ভ্রান্তির মধ্যে নিমজ্জিত। আর তা হচ্ছে স্বাস্থ্য ও অবসর সময়’ (বুখারী, মিশকাত হা/৫১৫৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪৯২৮)।
-আব্দুর রাকীব
জলপাইগুড়ি, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
উত্তর : পুকুরে ফরয গোসল করায় কোন বাধা নেই। রাসূল (ছাঃ) বলেন, নিশ্চয়ই পানি হ’ল পবিত্র। তাকে কোন বস্ত্ত অপবিত্র করতে পারে না (আবুদাঊদ হা/৬৭; মিশকাত হা/৪৭৮)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, যতক্ষণ না তা নাপাকী বহন করে (আবুদাঊদ হা/৬৩; মিশকাত হা/৪৭৭)। উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় ইবনুল মুনযির বলেন, বিদ্বানগণ এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন যে, পানি কম হৌক বেশী হৌক, সেখানে নাপাকী পড়ায় যদি তার স্বাদ, রং বা গন্ধে কোন পরিবর্তন আসে, তাহ’লে সেটা অপবিত্র হবে। ছাহেবে মির‘আত বলেন, উক্ত মর্মে সকল বিদ্বানগণ একমত হয়েছেন, যদিও এবিষয়ে হাদীছ দুর্বল (মির‘আত হা/৪৮১০এর আলোচনা দ্রঃ, ২/১৭৩)। অতএব পুকুরে ফরয গোসল করায় কোন দোষ নেই।
জলপাইগুড়ি, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
উত্তর : পুকুরে ফরয গোসল করায় কোন বাধা নেই। রাসূল (ছাঃ) বলেন, নিশ্চয়ই পানি হ’ল পবিত্র। তাকে কোন বস্ত্ত অপবিত্র করতে পারে না (আবুদাঊদ হা/৬৭; মিশকাত হা/৪৭৮)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, যতক্ষণ না তা নাপাকী বহন করে (আবুদাঊদ হা/৬৩; মিশকাত হা/৪৭৭)। উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় ইবনুল মুনযির বলেন, বিদ্বানগণ এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন যে, পানি কম হৌক বেশী হৌক, সেখানে নাপাকী পড়ায় যদি তার স্বাদ, রং বা গন্ধে কোন পরিবর্তন আসে, তাহ’লে সেটা অপবিত্র হবে। ছাহেবে মির‘আত বলেন, উক্ত মর্মে সকল বিদ্বানগণ একমত হয়েছেন, যদিও এবিষয়ে হাদীছ দুর্বল (মির‘আত হা/৪৮১০এর আলোচনা দ্রঃ, ২/১৭৩)। অতএব পুকুরে ফরয গোসল করায় কোন দোষ নেই।
-সুমন, পীরগঞ্জ. ঠাকুরগাঁও।
উত্তর : মুসলিম হৌক অমুসলিম হৌক প্রতিষ্ঠিত কোন সরকারের বিধি-বিধান শরী‘আত বিরোধী না হলে তা মেনে চলা সেদেশের নাগরিকদের জন্য আবশ্যক। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা তাদের (শাসকদের) হক আদায় কর এবং তোমাদের হক আল্লাহর কাছে চাও (বুখারী হা/৭০৫২; মিশকাত হা/৩৬৭২)। তবে ইসলাম বিরোধী হুকুম মানতে কোন মুসলিম নাগরিক বাধ্য নয় (বুখারী হা/৭২৫৭; মিশকাত হা/৩৬৯৬, ৩৬৬৪)। বরং তা থেকে বিরত থাকতে হবে, তার প্রতিবাদ করতে হবে অথবা তাকে ঘৃণা করতে হবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৩৭)। সেক্ষেত্রে বাধ্য করা হলে সেদেশ থেকে হিজরত করতে হবে। বাধ্যগত অবস্থায় সেখানে অবস্থান করতে হলে এবং তাকে শরী‘আতবিরোধী কাজ করতে বাধ্য করা হ’লে সেক্ষেত্রে সে গুনাহগার হবে না (বাক্বারাহ ২/১৭৩)। (বিস্তারিত দ্রঃ ‘জিহাদ ও ক্বিতাল’ বই ৪২-৪৪ পৃঃ)।
উত্তর : মুসলিম হৌক অমুসলিম হৌক প্রতিষ্ঠিত কোন সরকারের বিধি-বিধান শরী‘আত বিরোধী না হলে তা মেনে চলা সেদেশের নাগরিকদের জন্য আবশ্যক। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা তাদের (শাসকদের) হক আদায় কর এবং তোমাদের হক আল্লাহর কাছে চাও (বুখারী হা/৭০৫২; মিশকাত হা/৩৬৭২)। তবে ইসলাম বিরোধী হুকুম মানতে কোন মুসলিম নাগরিক বাধ্য নয় (বুখারী হা/৭২৫৭; মিশকাত হা/৩৬৯৬, ৩৬৬৪)। বরং তা থেকে বিরত থাকতে হবে, তার প্রতিবাদ করতে হবে অথবা তাকে ঘৃণা করতে হবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৩৭)। সেক্ষেত্রে বাধ্য করা হলে সেদেশ থেকে হিজরত করতে হবে। বাধ্যগত অবস্থায় সেখানে অবস্থান করতে হলে এবং তাকে শরী‘আতবিরোধী কাজ করতে বাধ্য করা হ’লে সেক্ষেত্রে সে গুনাহগার হবে না (বাক্বারাহ ২/১৭৩)। (বিস্তারিত দ্রঃ ‘জিহাদ ও ক্বিতাল’ বই ৪২-৪৪ পৃঃ)।
১১৬
প্রশ্ন (৩৫/২৩৫) : জনৈক বক্তা বলেন, ছালাত কমিয়ে ৫ ওয়াক্ত করার ব্যাপারে আল্লাহর নিকটে মূসা (আঃ)-এর বারবার যাওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বরং রাসূল (ছাঃ) স্বয়ং কয়েকবার গিয়ে তা কমিয়ে নিয়ে আসেন। এ বক্তব্যের সত্যতা জানতে চাই।-জসীমুদ্দীন, নিয়ামতপুর, নওগাঁ।
উত্তর: মূসা (আঃ)-এর পরামর্শক্রমে রাসূল (ছাঃ) বারবার গিয়েছিলেন (বুখারী হা/৩৮৮৭, মুসলিম হা/৪২৯)। তবে নিঃসন্দেহে এটা ছিল পূর্বনির্ধারিত তাক্বদীর।
উত্তর: মূসা (আঃ)-এর পরামর্শক্রমে রাসূল (ছাঃ) বারবার গিয়েছিলেন (বুখারী হা/৩৮৮৭, মুসলিম হা/৪২৯)। তবে নিঃসন্দেহে এটা ছিল পূর্বনির্ধারিত তাক্বদীর।
১১৭
প্রশ্ন (৩৬/২৩৬) : ওযূ অবস্থায় মোযা পরে কতক্ষণ যাবৎ পা মাসাহ করা যাবে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।-আমীনুল ইসলাম, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।
উত্তর: ওযু অবস্থায় মোযা পরে মুক্বীমের জন্য একদিন একরাত এবং মুসাফিরের জন্য তিন দিন তিন রাত পর্যন্ত মাসাহ করা জায়েয (মুসলিম হা/২৭৬; মিশকাত হা/৫১৭)। ছাফওয়ান (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) আমাদের আদেশ দিতেন, মুসাফির অবস্থায় আমরা যেন তিন দিন তিন রাত নাপাকীর গোসল ব্যতীত, এমনকি পায়খানা-পেশাব ও নিদ্রার পর ওযূ করার সময়ও আমাদের মোযাসমূহ না খুলি (তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/৫২০)।
উত্তর: ওযু অবস্থায় মোযা পরে মুক্বীমের জন্য একদিন একরাত এবং মুসাফিরের জন্য তিন দিন তিন রাত পর্যন্ত মাসাহ করা জায়েয (মুসলিম হা/২৭৬; মিশকাত হা/৫১৭)। ছাফওয়ান (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) আমাদের আদেশ দিতেন, মুসাফির অবস্থায় আমরা যেন তিন দিন তিন রাত নাপাকীর গোসল ব্যতীত, এমনকি পায়খানা-পেশাব ও নিদ্রার পর ওযূ করার সময়ও আমাদের মোযাসমূহ না খুলি (তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/৫২০)।
১১৮
প্রশ্ন (৩৭/২৩৭) : জনৈক আলেম বলেন, ছাহাবী ও তাবেঈগণ জায়নামাযের চেয়ে মাটির উপর সিজদাকে অধিক উত্তম বলে অভিহিত করেছেন’। এ বক্তব্য কতটুকু গ্রহণযোগ্য?-তাওয়াবুল ইসলাম
ছোটবনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : জায়নামাযের চেয়ে মাটির উপর সিজদা করা অধিক উত্তম মর্মে কোন দলীল পাওয়া যায়না। সম্ভবতঃ এটা ভ্রান্ত ফিরক্বা শী‘আদের অনুকরণ। কেননা তাদের নিকট মাটির উপর সিজদা করা ফরয। বিশেষতঃ কারবালার মাটিতে সিজদা করা অধিক ফযীলতপূর্ণ। রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক জায়নামাযে ছালাত আদায় করার বিষয়টি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। মায়মূনা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) মাদুরের উপর ছালাত আদায় করতেন (বুখারী হা/৩৮১)। আনাস (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে খেজুরের পাতার চাটাইয়ের উপর ছালাত আদায় করেছি (বুখারী হা/৩৮০; মুসলিম হা/৬৫৮)। আনাস (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে ছালাত আদায় করেছি। আমাদের মধ্যে অনেকেই প্রচন্ড গরমের কারণে কাপড়ের টুকরা মাটিতে রেখে তার উপর সিজদা করতেন (বুখারী হা/৩৮৫; ইরওয়া হা/৩১১)। এছাড়া এ মর্মে বহু ছাহাবীর আমল পাওয়া যায়।
ছোটবনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : জায়নামাযের চেয়ে মাটির উপর সিজদা করা অধিক উত্তম মর্মে কোন দলীল পাওয়া যায়না। সম্ভবতঃ এটা ভ্রান্ত ফিরক্বা শী‘আদের অনুকরণ। কেননা তাদের নিকট মাটির উপর সিজদা করা ফরয। বিশেষতঃ কারবালার মাটিতে সিজদা করা অধিক ফযীলতপূর্ণ। রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক জায়নামাযে ছালাত আদায় করার বিষয়টি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। মায়মূনা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) মাদুরের উপর ছালাত আদায় করতেন (বুখারী হা/৩৮১)। আনাস (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে খেজুরের পাতার চাটাইয়ের উপর ছালাত আদায় করেছি (বুখারী হা/৩৮০; মুসলিম হা/৬৫৮)। আনাস (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে ছালাত আদায় করেছি। আমাদের মধ্যে অনেকেই প্রচন্ড গরমের কারণে কাপড়ের টুকরা মাটিতে রেখে তার উপর সিজদা করতেন (বুখারী হা/৩৮৫; ইরওয়া হা/৩১১)। এছাড়া এ মর্মে বহু ছাহাবীর আমল পাওয়া যায়।
-ওমর ফারূক
মালঞ্চি, মুর্শিদাবাদ, ভারত।
উত্তর : সোনার বা চাঁদির পাত্রে পানাহার করা হারাম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা সোনা বা রূপার পাত্রে পানাহার করো না। কেননা দুনিয়াতে এগুলি কাফেরদের জন্য এবং আখেরাতে এগুলি তোমাদের জন্য (বুখারী হা/৫৬৩২, মুসলিম হা/২০৬৭, মিশকাত হা/৪২৭২)। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সোনা বা রূপার পাত্রে খাবে বা পান করবে, জাহান্নামের আগুন তার পেট ছিন্নভিন্ন করবে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪২৭১)।
মালঞ্চি, মুর্শিদাবাদ, ভারত।
উত্তর : সোনার বা চাঁদির পাত্রে পানাহার করা হারাম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা সোনা বা রূপার পাত্রে পানাহার করো না। কেননা দুনিয়াতে এগুলি কাফেরদের জন্য এবং আখেরাতে এগুলি তোমাদের জন্য (বুখারী হা/৫৬৩২, মুসলিম হা/২০৬৭, মিশকাত হা/৪২৭২)। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সোনা বা রূপার পাত্রে খাবে বা পান করবে, জাহান্নামের আগুন তার পেট ছিন্নভিন্ন করবে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪২৭১)।
-হাবীবুল বাশার
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
উত্তর : মহিলাদের যেরূপ পর পুরুষ হ’তে পর্দা করা ফরয, তেমনি পুরুষদেরও বেগানা মহিলা হ’তে পর্দা করা অপরিহার্য। আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী! তুমি মুমিন পুরুষদের বলে দাও, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে। আর এটাই তাদের জন্য উত্তম। বস্ত্ততপক্ষে তারা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবহিত’ (নূর ৩০)। তিনি আরো বলেন, ‘তোমরা যখন তাদের (মহিলাদের) নিকট কোন বস্ত্ত চাইবে তখন পর্দার বাইরে থেকে চাইবে। কেননা এটি তোমাদের ও তাদের অন্তর সমূহের জন্য পবিত্রতর’ (আহযাব ৩৩/৫৩)।
বুরায়দা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হযরত আলী (রাঃ) কে বলেন, ‘হে আলী! তুমি দৃষ্টির উপর দৃষ্টি ফেলো না। হঠাৎ যে দৃষ্টি পড়ে ওটা তোমার জন্য ক্ষমা। কিন্তু পরবর্তী দৃষ্টি তোমার জন্য বৈধ নয়’ (আহমাদ, তিরমিযী, আবুদাঊদ, দারেমী, মিশকাত হা/৩১১০)। পুরুষের জন্য দৃষ্টিকে সংযত করতে হবে। তবে মহিলাদের ন্যায় সর্বাঙ্গ ঢেকে পর্দা করতে হবে না।
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
উত্তর : মহিলাদের যেরূপ পর পুরুষ হ’তে পর্দা করা ফরয, তেমনি পুরুষদেরও বেগানা মহিলা হ’তে পর্দা করা অপরিহার্য। আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী! তুমি মুমিন পুরুষদের বলে দাও, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে। আর এটাই তাদের জন্য উত্তম। বস্ত্ততপক্ষে তারা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবহিত’ (নূর ৩০)। তিনি আরো বলেন, ‘তোমরা যখন তাদের (মহিলাদের) নিকট কোন বস্ত্ত চাইবে তখন পর্দার বাইরে থেকে চাইবে। কেননা এটি তোমাদের ও তাদের অন্তর সমূহের জন্য পবিত্রতর’ (আহযাব ৩৩/৫৩)।
বুরায়দা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হযরত আলী (রাঃ) কে বলেন, ‘হে আলী! তুমি দৃষ্টির উপর দৃষ্টি ফেলো না। হঠাৎ যে দৃষ্টি পড়ে ওটা তোমার জন্য ক্ষমা। কিন্তু পরবর্তী দৃষ্টি তোমার জন্য বৈধ নয়’ (আহমাদ, তিরমিযী, আবুদাঊদ, দারেমী, মিশকাত হা/৩১১০)। পুরুষের জন্য দৃষ্টিকে সংযত করতে হবে। তবে মহিলাদের ন্যায় সর্বাঙ্গ ঢেকে পর্দা করতে হবে না।
১২১
প্রশ্ন (৪০/২৪০) : সন্তান জন্মের ৭ দিন পর আকীকা করা না হলে সেক্ষেত্রে করণীয় কি? পিতা-মাতা আকীকা না করে থাকলে নিজেই নিজের আকীকা করা যাবে কি?-সোহেল, গোমস্তাপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর: আকীকা দেয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘প্রত্যেক শিশু তার আকীকার সাথে বন্ধক থাকে। অতএব জন্মের সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে পশু যবহ করতে হয়, নাম রাখতে হয় ও তার মাথা মুন্ডন করতে হয়’ (আবুদাউদ হা/২৮৩৯; ইবনু মাজাহ হা/৩১৬৫; মিশকাত হা/৪১৫৩)। তিনি বলেন, ‘সন্তানের সাথে আক্বীক্বা জড়িত। অতএব তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত কর (বুখারী, মিশকাত হা/৪১৪৯)। উক্ত হাদীছগুলিতে আকীকার গুরুত্ব ও সময় সম্পর্কে বলা হয়েছে এবং রাসূল (ছাঃ) তাঁর নাতি হাসান ও হুসাইনের আক্বীকাও সপ্তম দিনে করেছিলেন (ছহীহ ইবনু হিববান হা/৫৩১১, সনদ হাসান)। অতএব সক্ষম ব্যক্তি সপ্তম দিনেই আকীকা করবে। উল্লেখ্য, ৭ম দিনের পরে ১৪ ও ২১ দিনে দেওয়ার ব্যাপারে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (আলবানী, ইরওয়াউল গালীল হা/১১৭০)।
সঙ্গত কোন কারণে যদি সময়মত করা সম্ভব না হয়, পরবর্তীতে সুযোগ মত যেকোন সময় তা আদায় করবে (ইবনুল ক্বাইয়িম, তুহফাতুল মাওদূদ ৬৩ পৃঃ; আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, অডিও ক্লিপ নং- ১৯৯; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা, ফৎওয়া নং ১৭৭৬; মাজমূ‘ ফাতাওয়া উছায়মীন ২৫/২১৫)।
শাফেঈ বিদ্বানগণের মতে সাত দিনে আক্বীক্বার বিষয়টি সীমা নির্দেশ মূলক নয় বরং এখতিয়ার মূলক। ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন, সাত দিনে আকীকার অর্থ হ’ল, ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ সাত দিনের পরে আকীকা করবে না (নায়লুল আওত্বার ৬/২৬১ পৃঃ)।
অভিভাবক আকীকা না দিলে সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে নিজেই নিজের আকীকা করতে পারে (ইবনু কুদামা, আল-মুগনী, মাসআলা নং ৭৮৯৮; মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ২৬/২৬৬)। খ্যাতনামা তাবেঈ মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেন, যদি আমি জানতাম যে, আমার পক্ষে আকীকা দেওয়া হয়নি, তবে অবশ্যই আমি নিজেই নিজের আকীকা করতাম (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা হা/২৪৭১৮, ছহীহাহ হা/২৭২৬-এর আলোচনা দ্রঃ)। হাসান বছরী (রহঃ) বলতেন যে, যদি তোমার পক্ষ থেকে আকীকা দেওয়া না হয়, তবে তুমি নিজেই নিজের আকীকা দাও, যদিও তুমি বয়ঃপ্রাপ্ত ব্যক্তি হও (ইবনু হাযম, মুহাল্লা ৬/২৪০, সনদ হাসান, আলবানী, ছহীহাহ হা/২৭২৬-এর আলোচনা দ্রঃ)।
- See more at: http://at-tahreek.com/march2015/question.html#sthash.qqrGmbnR.dpuf
উত্তর: আকীকা দেয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘প্রত্যেক শিশু তার আকীকার সাথে বন্ধক থাকে। অতএব জন্মের সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে পশু যবহ করতে হয়, নাম রাখতে হয় ও তার মাথা মুন্ডন করতে হয়’ (আবুদাউদ হা/২৮৩৯; ইবনু মাজাহ হা/৩১৬৫; মিশকাত হা/৪১৫৩)। তিনি বলেন, ‘সন্তানের সাথে আক্বীক্বা জড়িত। অতএব তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত কর (বুখারী, মিশকাত হা/৪১৪৯)। উক্ত হাদীছগুলিতে আকীকার গুরুত্ব ও সময় সম্পর্কে বলা হয়েছে এবং রাসূল (ছাঃ) তাঁর নাতি হাসান ও হুসাইনের আক্বীকাও সপ্তম দিনে করেছিলেন (ছহীহ ইবনু হিববান হা/৫৩১১, সনদ হাসান)। অতএব সক্ষম ব্যক্তি সপ্তম দিনেই আকীকা করবে। উল্লেখ্য, ৭ম দিনের পরে ১৪ ও ২১ দিনে দেওয়ার ব্যাপারে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (আলবানী, ইরওয়াউল গালীল হা/১১৭০)।
সঙ্গত কোন কারণে যদি সময়মত করা সম্ভব না হয়, পরবর্তীতে সুযোগ মত যেকোন সময় তা আদায় করবে (ইবনুল ক্বাইয়িম, তুহফাতুল মাওদূদ ৬৩ পৃঃ; আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, অডিও ক্লিপ নং- ১৯৯; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা, ফৎওয়া নং ১৭৭৬; মাজমূ‘ ফাতাওয়া উছায়মীন ২৫/২১৫)।
শাফেঈ বিদ্বানগণের মতে সাত দিনে আক্বীক্বার বিষয়টি সীমা নির্দেশ মূলক নয় বরং এখতিয়ার মূলক। ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন, সাত দিনে আকীকার অর্থ হ’ল, ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ সাত দিনের পরে আকীকা করবে না (নায়লুল আওত্বার ৬/২৬১ পৃঃ)।
অভিভাবক আকীকা না দিলে সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে নিজেই নিজের আকীকা করতে পারে (ইবনু কুদামা, আল-মুগনী, মাসআলা নং ৭৮৯৮; মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ২৬/২৬৬)। খ্যাতনামা তাবেঈ মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেন, যদি আমি জানতাম যে, আমার পক্ষে আকীকা দেওয়া হয়নি, তবে অবশ্যই আমি নিজেই নিজের আকীকা করতাম (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা হা/২৪৭১৮, ছহীহাহ হা/২৭২৬-এর আলোচনা দ্রঃ)। হাসান বছরী (রহঃ) বলতেন যে, যদি তোমার পক্ষ থেকে আকীকা দেওয়া না হয়, তবে তুমি নিজেই নিজের আকীকা দাও, যদিও তুমি বয়ঃপ্রাপ্ত ব্যক্তি হও (ইবনু হাযম, মুহাল্লা ৬/২৪০, সনদ হাসান, আলবানী, ছহীহাহ হা/২৭২৬-এর আলোচনা দ্রঃ)।
- See more at: http://at-tahreek.com/march2015/question.html#sthash.qqrGmbnR.dpuf
১২৩
প্রশ্ন (২/২৪২) : সদ্য ভূমিষ্ট শিশুর ডান কানে আযান ও বাম কানে ইক্বামত শুনাতে হবে কি? না কেবল আযান শুনালেই যথেষ্ট হবে?-আশরাফ আলী, হুগলী, ভারত।
উত্তর : সদ্য ভুমিষ্ট সন্তানের ডান কানে আযান ও বাম কানে ইক্বামত শুনানোর হাদীছটি মওযূ‘ বা জাল (মুসনাদে আবী ইয়া‘লা, সিলসিলা যঈফাহ হা/৩২১)। এক্ষণে ‘কেবল আযান দেওয়া’ সম্পর্কিত হাদীছটি শায়খ আলবানী (রহঃ) ইতিপূর্বে ‘হাসান’ (আবুদাঊদ হা/৫১০৫, ইরওয়া হা/১১৭৩) হিসাবে গণ্য করলেও পরবর্তীতে তিনি এটিকে ‘যঈফ’ হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, আমি ইতিপূর্বে আবু রাফে‘ বর্ণিত এ হাদীছটি ‘হাসান’ বললেও এখন আমার নিকটে বর্ণনাটি যঈফ হিসাবে স্পষ্ট হয়েছে (সিলসিলা যঈফাহ হা/৬১২১)। তিনি বলেন, ...অতএব আমি সদ্য ভূমিষ্ট সন্তানের কানে আযান দেওয়ার বিধান সম্পর্কে আমার পূর্ববর্তী বক্তব্য থেকে ফিরে আসলাম (আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, অডিও ক্লিপ নং ৬২৩)। এ ব্যাপারে অপর মুহাক্কিক শু‘আইব আরনাউত্বও ঐক্যমত পোষণ করেছেন (তাহকীক মুসনাদে আহমাদ হা/২৭২৩০)। অতএব ‘যঈফ’ হিসাবে প্রমাণিত হওয়ার পর আযান দেওয়ার বিষয়টি আর আমলযোগ্য থাকে না।
সংশোধনী : ইতিপূর্বে মাসিক আত-তাহরীকের বিভিন্ন সংখ্যার প্রশ্নোত্তর কলামে (এপ্রিল ২০০০ (১/১৮১), জুন’০৩ (১০/৩১৫), মার্চ’০৫ (২/২০২) উক্ত হাদীছের ভিত্তিতে আযান দেওয়ার বিষয়টি জায়েয হিসাবে বলা হয়েছিল। এক্ষণে তা যঈফ হিসাবে প্রমাণিত হওয়ায় আমরা পূর্বের ফৎওয়া থেকে ফিরে আসছি। অতএব এ থেকে বিরত থাকাই কর্তব্য হবে।
উত্তর : সদ্য ভুমিষ্ট সন্তানের ডান কানে আযান ও বাম কানে ইক্বামত শুনানোর হাদীছটি মওযূ‘ বা জাল (মুসনাদে আবী ইয়া‘লা, সিলসিলা যঈফাহ হা/৩২১)। এক্ষণে ‘কেবল আযান দেওয়া’ সম্পর্কিত হাদীছটি শায়খ আলবানী (রহঃ) ইতিপূর্বে ‘হাসান’ (আবুদাঊদ হা/৫১০৫, ইরওয়া হা/১১৭৩) হিসাবে গণ্য করলেও পরবর্তীতে তিনি এটিকে ‘যঈফ’ হিসাবে উল্লেখ করে বলেন, আমি ইতিপূর্বে আবু রাফে‘ বর্ণিত এ হাদীছটি ‘হাসান’ বললেও এখন আমার নিকটে বর্ণনাটি যঈফ হিসাবে স্পষ্ট হয়েছে (সিলসিলা যঈফাহ হা/৬১২১)। তিনি বলেন, ...অতএব আমি সদ্য ভূমিষ্ট সন্তানের কানে আযান দেওয়ার বিধান সম্পর্কে আমার পূর্ববর্তী বক্তব্য থেকে ফিরে আসলাম (আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, অডিও ক্লিপ নং ৬২৩)। এ ব্যাপারে অপর মুহাক্কিক শু‘আইব আরনাউত্বও ঐক্যমত পোষণ করেছেন (তাহকীক মুসনাদে আহমাদ হা/২৭২৩০)। অতএব ‘যঈফ’ হিসাবে প্রমাণিত হওয়ার পর আযান দেওয়ার বিষয়টি আর আমলযোগ্য থাকে না।
সংশোধনী : ইতিপূর্বে মাসিক আত-তাহরীকের বিভিন্ন সংখ্যার প্রশ্নোত্তর কলামে (এপ্রিল ২০০০ (১/১৮১), জুন’০৩ (১০/৩১৫), মার্চ’০৫ (২/২০২) উক্ত হাদীছের ভিত্তিতে আযান দেওয়ার বিষয়টি জায়েয হিসাবে বলা হয়েছিল। এক্ষণে তা যঈফ হিসাবে প্রমাণিত হওয়ায় আমরা পূর্বের ফৎওয়া থেকে ফিরে আসছি। অতএব এ থেকে বিরত থাকাই কর্তব্য হবে।
১২৪
প্রশ্ন (৩/২৪৩) : অনেক মসজিদে দেখা যায় মিহরাবের দু’পাশে বা ভিতরে কা‘বা শরীফ অথবা মসজিদে নববীর মিনারের ছবি লাগানো থাকে। এটা শরী‘আতসম্মত কি?-রশীদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম।
উত্তর : এটা শরী‘আতসম্মত নয়। মসজিদে কোনরূপ সাজ-সজ্জা ও জাঁকজমক না করা এবং মুছল্লীর দৃষ্টি কেড়ে নিতে পারে এরূপ যাবতীয় বস্ত্ত মসজিদ থেকে সরিয়ে ফেলা আবশ্যক (বুখারী হা/৫৯৫৯; মিশকাত হা/৭৫৮, ৭৫৭; আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৭১৮-১৯)।
অনেকে কেবল ভক্তি-ভালোবাসা দেখানোর উদ্দেশ্যে ক্বিবলার দিকে কা‘বা ও মাসজিদুল হারাম অথবা মসজিদে নববীর মিনারের ছবি ব্যবহার করে থাকেন এবং এমন আকুতি পেশ করে থাকেন যেন স্বয়ং কা‘বাই পূজনীয়। অথচ ক্বিবলা নির্দেশক এবং আল্লাহর ঘর হওয়া ব্যতীত কা‘বার নিজস্ব কোন মর্যাদা নেই। আল্লাহর সামনে সিজদা করার জন্য আল্লাহর নির্দেশেই মুসলমান কা‘বাগৃহের অভিমুখী হয়। অতএব পূজার বস্ত্তর ন্যায় ক্বিবলার দিকে কা‘বার ছবি রাখা গর্হিত কাজ।
উত্তর : এটা শরী‘আতসম্মত নয়। মসজিদে কোনরূপ সাজ-সজ্জা ও জাঁকজমক না করা এবং মুছল্লীর দৃষ্টি কেড়ে নিতে পারে এরূপ যাবতীয় বস্ত্ত মসজিদ থেকে সরিয়ে ফেলা আবশ্যক (বুখারী হা/৫৯৫৯; মিশকাত হা/৭৫৮, ৭৫৭; আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৭১৮-১৯)।
অনেকে কেবল ভক্তি-ভালোবাসা দেখানোর উদ্দেশ্যে ক্বিবলার দিকে কা‘বা ও মাসজিদুল হারাম অথবা মসজিদে নববীর মিনারের ছবি ব্যবহার করে থাকেন এবং এমন আকুতি পেশ করে থাকেন যেন স্বয়ং কা‘বাই পূজনীয়। অথচ ক্বিবলা নির্দেশক এবং আল্লাহর ঘর হওয়া ব্যতীত কা‘বার নিজস্ব কোন মর্যাদা নেই। আল্লাহর সামনে সিজদা করার জন্য আল্লাহর নির্দেশেই মুসলমান কা‘বাগৃহের অভিমুখী হয়। অতএব পূজার বস্ত্তর ন্যায় ক্বিবলার দিকে কা‘বার ছবি রাখা গর্হিত কাজ।
১২৫
প্রশ্ন (৪/২৪৪) : জুম‘আর ছালাতের পর ছয় রাক‘আত সুন্নাত আদায়ের বিষয়টি কি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত?-যার্রাফ যারীফ, হারাগাছ, রংপুর।
উত্তর : জুম‘আর ছালাতের পর দুই, চার বা ছয় রাক‘আত সুন্নাত ছালাত আদায় করা যায়। রাসূল (ছাঃ) জুম‘আর ছালাতের পরে তাঁর বাড়িতে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করতেন (আবুদাউদ হা/১১৩২)। তিনি বলেন, তোমাদের কেউ যখন জুম‘আর ছালাত আদায় করবে তখন সে যেন তার পরে চার রাক‘আত ছালাত আদায় করে (মুসলিম হা/৮৮১; মিশকাত হা/১১৬৬)। ছয় রাক‘আতের সমর্থনে আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) ও আলী (রাঃ)-এর আমল পাওয়া যায়। তারা জুম‘আর ছালাতের পর প্রথমে দু’রাক‘আত, এরপর চার রাক‘আত আদায় করতেন এবং আদায়ের নির্দেশ দিতেন (তিরমিযী হা/৫২৩; মিশকাত হা/১১৮৭)। অতএব জুম‘আর পর দুই, চার ও ছয় রাক‘আত সুন্নাত ছালাত রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারা প্রমাণিত।
উত্তর : জুম‘আর ছালাতের পর দুই, চার বা ছয় রাক‘আত সুন্নাত ছালাত আদায় করা যায়। রাসূল (ছাঃ) জুম‘আর ছালাতের পরে তাঁর বাড়িতে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করতেন (আবুদাউদ হা/১১৩২)। তিনি বলেন, তোমাদের কেউ যখন জুম‘আর ছালাত আদায় করবে তখন সে যেন তার পরে চার রাক‘আত ছালাত আদায় করে (মুসলিম হা/৮৮১; মিশকাত হা/১১৬৬)। ছয় রাক‘আতের সমর্থনে আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) ও আলী (রাঃ)-এর আমল পাওয়া যায়। তারা জুম‘আর ছালাতের পর প্রথমে দু’রাক‘আত, এরপর চার রাক‘আত আদায় করতেন এবং আদায়ের নির্দেশ দিতেন (তিরমিযী হা/৫২৩; মিশকাত হা/১১৮৭)। অতএব জুম‘আর পর দুই, চার ও ছয় রাক‘আত সুন্নাত ছালাত রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারা প্রমাণিত।
১২৬
প্রশ্ন (৫/২৪৫) : জনৈক ব্যক্তি বলেন, একজন আহলেহাদীছ ফাসেক একজন শিরক-বিদ‘আতে লিপ্ত আবেদের চেয়ে বহুগুণ উত্তম। এ বক্তব্যের সত্যতা জানতে চাই।-চঞ্চল মাষ্টার*
ক্ষেতলাল, জয়পুরহাট।
*[আরবীতে ইসলামী নাম রাখুন (স.স.)]
উত্তর : উক্ত বক্তব্যটি যথার্থ। কারণ একজন আহলেহাদীছ ফাসেক যত বড় গুনাহেই লিপ্ত হৌক না কেন সাধারণতঃ সে শিরক-বিদ‘আতে লিপ্ত হয় না। আর শিরক একটি অমার্জনীয় পাপ। যা থাকলে তার জন্য আল্লাহ জান্নাতকে হারাম করে দেন (মায়েদাহ ৫/৭২)। আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা শিরক ব্যতীত অন্য সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিতে পারেন (নিসা ৪/৪৮, ১১৬)। হাদীছে কুদসীতে আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি যদি আমার নিকট ক্ষমার আশা রাখো এবং ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। ... তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার নিকটে উপস্থিত হও এবং আমার সাথে কাউকে শরীক না করে আমার সামনে আস, তাহ’লে আমি পৃথিবী পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে উপস্থিত হব’ (তিরমিযী হা/৩৫৪০; মিশকাত হা/২৩৩৬)।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আমাদের এই দ্বীনে নতুন কিছু সৃষ্টি করবে, তা প্রত্যাখ্যাত (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৪০)। তিনি বলেন, ইসলামে প্রত্যেক নবোদ্ভূত বস্ত্ত হ’ল বিদ‘আত, আর প্রত্যেক বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা এবং প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম হ’ল জাহান্নাম’ (নাসাঈ হা/১৫৭৮)।
বিদ‘আতী কিয়ামতের দিন হাউয কাওছারের পানি পাবে না। কেননা রাসূল (ছাঃ) তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলবেন, দূর হও! দূর হও! যে ব্যক্তি আমার পরে আমার দ্বীনকে পরিবর্তন করেছ’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৫৭১)। অথচ অন্যান্য বড় পাপে জড়িত মুসলিমরা রাসূল (ছাঃ)-এর শাফা‘আতের অন্তর্ভুক্ত হবে (আবুদাউদ হা/৪৭৩৯; তিরমিযী হা/২৪৩৫, ইবনু মাজাহ হা/৪৩১০)। জেনে-শুনে বিদ‘আতকারীর কোন আমল গ্রহণযোগ্য হবে না যতক্ষণ না সে তওবা করে ফিরে আসে’ (বুখারী হা/৩১৭২; মুসলিম হা/১৩১৭; মিশকাত হা/২৭২৮, ত্বাবারাণী, ছহীহ আত-তারগীব হা/৫৪)।
ক্ষেতলাল, জয়পুরহাট।
*[আরবীতে ইসলামী নাম রাখুন (স.স.)]
উত্তর : উক্ত বক্তব্যটি যথার্থ। কারণ একজন আহলেহাদীছ ফাসেক যত বড় গুনাহেই লিপ্ত হৌক না কেন সাধারণতঃ সে শিরক-বিদ‘আতে লিপ্ত হয় না। আর শিরক একটি অমার্জনীয় পাপ। যা থাকলে তার জন্য আল্লাহ জান্নাতকে হারাম করে দেন (মায়েদাহ ৫/৭২)। আল্লাহ তা‘আলা যাকে ইচ্ছা শিরক ব্যতীত অন্য সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিতে পারেন (নিসা ৪/৪৮, ১১৬)। হাদীছে কুদসীতে আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি যদি আমার নিকট ক্ষমার আশা রাখো এবং ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। ... তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার নিকটে উপস্থিত হও এবং আমার সাথে কাউকে শরীক না করে আমার সামনে আস, তাহ’লে আমি পৃথিবী পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে উপস্থিত হব’ (তিরমিযী হা/৩৫৪০; মিশকাত হা/২৩৩৬)।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আমাদের এই দ্বীনে নতুন কিছু সৃষ্টি করবে, তা প্রত্যাখ্যাত (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৪০)। তিনি বলেন, ইসলামে প্রত্যেক নবোদ্ভূত বস্ত্ত হ’ল বিদ‘আত, আর প্রত্যেক বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা এবং প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম হ’ল জাহান্নাম’ (নাসাঈ হা/১৫৭৮)।
বিদ‘আতী কিয়ামতের দিন হাউয কাওছারের পানি পাবে না। কেননা রাসূল (ছাঃ) তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলবেন, দূর হও! দূর হও! যে ব্যক্তি আমার পরে আমার দ্বীনকে পরিবর্তন করেছ’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৫৭১)। অথচ অন্যান্য বড় পাপে জড়িত মুসলিমরা রাসূল (ছাঃ)-এর শাফা‘আতের অন্তর্ভুক্ত হবে (আবুদাউদ হা/৪৭৩৯; তিরমিযী হা/২৪৩৫, ইবনু মাজাহ হা/৪৩১০)। জেনে-শুনে বিদ‘আতকারীর কোন আমল গ্রহণযোগ্য হবে না যতক্ষণ না সে তওবা করে ফিরে আসে’ (বুখারী হা/৩১৭২; মুসলিম হা/১৩১৭; মিশকাত হা/২৭২৮, ত্বাবারাণী, ছহীহ আত-তারগীব হা/৫৪)।
১২৭
প্রশ্ন (৬/২৪৬) : খেলাধুলার সামগ্রী যেমন ব্যাট, ফুটবল, লাটিম ইত্যাদি বিক্রয়ের দোকান করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?-গোলাম রববানী,
ভোলাহাট, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : নির্দোষ বিনোদন ও খেলাধুলার জন্য এসবের ব্যবহার ও ক্রয়-বিক্রয়ে কোন বাধা নেই। যদিও ব্যবহারকারীর মন্দ ব্যবহারের জন্য কখনো কখনো এসব খেলা হারামের পর্যায়ে চলে যায়। তবে তার জন্য ব্যবহারকারী দায়ী হবে, উক্ত সামগ্রী নয়। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সৎকর্ম ও আল্লাহভীতির কাজে পরস্পরকে সাহায্য কর এবং পাপ ও সীমা লংঘনের কাজে একে অপরকে সাহায্য করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠোর শাস্তি দানকারী’ (মায়েদাহ ৫/২)।
ভোলাহাট, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : নির্দোষ বিনোদন ও খেলাধুলার জন্য এসবের ব্যবহার ও ক্রয়-বিক্রয়ে কোন বাধা নেই। যদিও ব্যবহারকারীর মন্দ ব্যবহারের জন্য কখনো কখনো এসব খেলা হারামের পর্যায়ে চলে যায়। তবে তার জন্য ব্যবহারকারী দায়ী হবে, উক্ত সামগ্রী নয়। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সৎকর্ম ও আল্লাহভীতির কাজে পরস্পরকে সাহায্য কর এবং পাপ ও সীমা লংঘনের কাজে একে অপরকে সাহায্য করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠোর শাস্তি দানকারী’ (মায়েদাহ ৫/২)।
১২৮
প্রশ্ন (৭/২৪৭) : ওযায়ের কি নবী ছিলেন? নবী না হলে তিনি কোন নবীর আমলে দুনিয়ায় ছিলেন? এছাড়া কওমে তুববা‘ কোন নবীর কওম? বিস্তারিত জানতে চাই।-আব্দুল ওয়ারেছ, মান্দা, নওগাঁ।
উত্তর : এ বিষয়ে কেবল এতটুকু জানা যায় যে, ওযায়ের এবং তুববা‘ উভয়েই সৎ ব্যক্তি ছিলেন এবং তুববা দ্বীনে ইবরাহীমের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আমি জানি না তুববা‘ মাল‘উন (অভিশপ্ত কাফের) ছিল কি না? আমি আরো জানি না যে, ওযায়ের নবী ছিলেন কি না? (আবুদাউদ হা/৪৬৭৪)। তিনি বলেন, তোমরা তুববা‘ কে গালি দিয়ো না। কারণ তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৪২৩)। অর্থাৎ ইবরাহীমের দ্বীন কবুল করেছিলেন। আল্লাহ বলেন, জঙ্গলবাসীরা ও তুববার কওম সবাই রাসূলদের মিথ্যা বলেছিল’ (ক্বাফ ৫০/১৪)। ক্বাতাদাহ বলেন, এখানে আল্লাহ তুববার সম্প্রদায়কে মিথ্যারোপকারী বলেছেন, তুববাকে নয় (ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা ক্বাফ ১৪ আয়াত)।
উত্তর : এ বিষয়ে কেবল এতটুকু জানা যায় যে, ওযায়ের এবং তুববা‘ উভয়েই সৎ ব্যক্তি ছিলেন এবং তুববা দ্বীনে ইবরাহীমের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আমি জানি না তুববা‘ মাল‘উন (অভিশপ্ত কাফের) ছিল কি না? আমি আরো জানি না যে, ওযায়ের নবী ছিলেন কি না? (আবুদাউদ হা/৪৬৭৪)। তিনি বলেন, তোমরা তুববা‘ কে গালি দিয়ো না। কারণ তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৪২৩)। অর্থাৎ ইবরাহীমের দ্বীন কবুল করেছিলেন। আল্লাহ বলেন, জঙ্গলবাসীরা ও তুববার কওম সবাই রাসূলদের মিথ্যা বলেছিল’ (ক্বাফ ৫০/১৪)। ক্বাতাদাহ বলেন, এখানে আল্লাহ তুববার সম্প্রদায়কে মিথ্যারোপকারী বলেছেন, তুববাকে নয় (ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা ক্বাফ ১৪ আয়াত)।
১২৯
প্রশ্ন (৮/২৪৮) : বিভিন্ন সভা-সম্মেলনের শুরুতে কুরআন তেলাওয়াত করা কি বিদ‘আত? রাসূল (ছাঃ)-এর যুগে এরূপভাবে যেকোন অনুষ্ঠান শুরু হ’ত বলে প্রমাণ পাওয়া যায় কি?-ডা. মোশাররফ হোসাইন
ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ, নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে কোন সভা-সম্মেলন শুরু করায় কোন বাধা নেই। তবে সর্বপ্রথম হামদ ও ছানা পাঠ করতে হবে (আহমাদ হা/১৫২৬, ছহীহাহ হা/১৬৯)।
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, أصحاب النبي صلى الله عليه و سلم إذا جلسوا كان حديثهم يعني الفقه إلا أن يقرأ رجل سورة أو يأمر رجلا بقراءة سورة ‘ছাহাবায়ে কেরাম যখন কোন আলোচনা তথা ফিক্বহী আলোচনার মজলিসে বসতেন তখন তাদের মধ্যে একজন কোন সূরা পাঠ করতেন অথবা একজনকে কুরআনের কোন একটি সূরা পাঠ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হ’ত (হাকেম হা/৩২২, যাহাবী, সনদ ছহীহ, বায়হাক্বী, আল-মাদখাল হা/৩১৩; ইবনু সা‘দ ২/৩৭৪)।
খতীব বাগদাদী, ইবনুছ ছালাহ, ইবনু কাছীর, ইমাম নববী, সৈয়ূতী সহ অনেক ওলামায়ে সালাফ যেকোন মজলিস শুরুর পূর্বে হামদ ও ছানাসহ কুরআন তেলাওয়াতকে মুস্তাহাব বলে আখ্যায়িত করেছেন (খতীব বাগদাদী, আল-জামে‘ ২/৬৮; মুক্বাদ্দামা ইবনুছ ছালাহ ২২৪ পৃঃ, ইবনু কাছীর, আল-বা‘এছুল হাছীছ ১৫৩ পৃঃ, সৈয়ূতী তাদরীবুর রাবী ২/৫৭৩)।
শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, কুরআনের কিছু অংশ তেলাওয়াত করার মাধ্যমে মজলিস শুরু করার বিষয়টি সালাফে ছালেহীনের আমল দ্বারা প্রমাণিত (আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, অডিও ক্লিপ নং ৪০২)।
কোন কোন আলেম এভাবে তেলাওয়াত করার বিষয়টি দলীল বিহীন আখ্যায়িত করেছেন (ওছায়মীন, আল-বিদঊ ওয়াল মুহদাছাত ৫৪০ পৃঃ)। কেউ কেউ এটাকে বিদ‘আত বলে ১৩৪২ হিজরীর পূর্বে এর অস্তিত্ব ছিল না বলেছেন (শায়খ বকর আবু যায়েদ, তাছহীহুদ দো‘আ ৯৮ পৃঃ, ফাতাওয়া আব্দুর রাযযাক আফীফী ২২১ পৃঃ)। যা আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণিত উপরোক্ত আছারটি দ্বারা ভুল প্রমাণিত হয়।
ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ, নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে কোন সভা-সম্মেলন শুরু করায় কোন বাধা নেই। তবে সর্বপ্রথম হামদ ও ছানা পাঠ করতে হবে (আহমাদ হা/১৫২৬, ছহীহাহ হা/১৬৯)।
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, أصحاب النبي صلى الله عليه و سلم إذا جلسوا كان حديثهم يعني الفقه إلا أن يقرأ رجل سورة أو يأمر رجلا بقراءة سورة ‘ছাহাবায়ে কেরাম যখন কোন আলোচনা তথা ফিক্বহী আলোচনার মজলিসে বসতেন তখন তাদের মধ্যে একজন কোন সূরা পাঠ করতেন অথবা একজনকে কুরআনের কোন একটি সূরা পাঠ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হ’ত (হাকেম হা/৩২২, যাহাবী, সনদ ছহীহ, বায়হাক্বী, আল-মাদখাল হা/৩১৩; ইবনু সা‘দ ২/৩৭৪)।
খতীব বাগদাদী, ইবনুছ ছালাহ, ইবনু কাছীর, ইমাম নববী, সৈয়ূতী সহ অনেক ওলামায়ে সালাফ যেকোন মজলিস শুরুর পূর্বে হামদ ও ছানাসহ কুরআন তেলাওয়াতকে মুস্তাহাব বলে আখ্যায়িত করেছেন (খতীব বাগদাদী, আল-জামে‘ ২/৬৮; মুক্বাদ্দামা ইবনুছ ছালাহ ২২৪ পৃঃ, ইবনু কাছীর, আল-বা‘এছুল হাছীছ ১৫৩ পৃঃ, সৈয়ূতী তাদরীবুর রাবী ২/৫৭৩)।
শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, কুরআনের কিছু অংশ তেলাওয়াত করার মাধ্যমে মজলিস শুরু করার বিষয়টি সালাফে ছালেহীনের আমল দ্বারা প্রমাণিত (আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, অডিও ক্লিপ নং ৪০২)।
কোন কোন আলেম এভাবে তেলাওয়াত করার বিষয়টি দলীল বিহীন আখ্যায়িত করেছেন (ওছায়মীন, আল-বিদঊ ওয়াল মুহদাছাত ৫৪০ পৃঃ)। কেউ কেউ এটাকে বিদ‘আত বলে ১৩৪২ হিজরীর পূর্বে এর অস্তিত্ব ছিল না বলেছেন (শায়খ বকর আবু যায়েদ, তাছহীহুদ দো‘আ ৯৮ পৃঃ, ফাতাওয়া আব্দুর রাযযাক আফীফী ২২১ পৃঃ)। যা আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণিত উপরোক্ত আছারটি দ্বারা ভুল প্রমাণিত হয়।
১৩০
প্রশ্ন (৯/২৪৯) : আমাদের মসজিদের কিছু মুছল্লী মাঝে মাঝে ছালাতের পর বাড়ি ও দোকানে গিয়ে গিয়ে ছহীহ দ্বীনের দাওয়াত প্রদান করেন। যা তাবলীগ জামা‘আতে ভাইদের আমলের সাথে মিলে যায়। এক্ষণে এটি জায়েয হবে কি?মুর্তাযা, টাঙ্গাইল।
উত্তর : বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আমলের দাওয়াত মানুষের দুয়ারে পৌঁছে দেওয়ায় জন্য এরূপ পন্থা অবলম্বন করায় শরী‘আতে কোন বাধা নেই। তা তাবলীগ জামা‘আতের সাথে বা অন্য কোন বাতিল দলের ভাল কাজের সাথে মিলে গেলেও তাতে কোন অসুবিধা নেই। তবে দাঈকে স্থান-কাল-পাত্র বুঝে প্রজ্ঞার সাথে দাওয়াত দিতে হবে। সেই সাথে যে বিষয়ে দাওয়াত দিবেন সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় জ্ঞান থাকা আবশ্যক। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি হিকমত (কুরআন ও সুন্নাহ) ও উত্তম নছীহতের সাথে আল্লাহর পথে দাওয়াত দাও এবং তাদের সাথে বিতর্ক করো উত্তম পন্থায়’ (নাহল ১৬/১২৫)। তিনি বলেন, ‘বলুন! এটাই আমার পথ। আমি ও আমার অনুসারীগণ ডাকি আল্লাহর দিকে, জাগ্রত জ্ঞান সহকারে। আল্লাহ পবিত্র এবং আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই’ (ইউসুফ ১২/১০৮)।
উত্তর : বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আমলের দাওয়াত মানুষের দুয়ারে পৌঁছে দেওয়ায় জন্য এরূপ পন্থা অবলম্বন করায় শরী‘আতে কোন বাধা নেই। তা তাবলীগ জামা‘আতের সাথে বা অন্য কোন বাতিল দলের ভাল কাজের সাথে মিলে গেলেও তাতে কোন অসুবিধা নেই। তবে দাঈকে স্থান-কাল-পাত্র বুঝে প্রজ্ঞার সাথে দাওয়াত দিতে হবে। সেই সাথে যে বিষয়ে দাওয়াত দিবেন সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় জ্ঞান থাকা আবশ্যক। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি হিকমত (কুরআন ও সুন্নাহ) ও উত্তম নছীহতের সাথে আল্লাহর পথে দাওয়াত দাও এবং তাদের সাথে বিতর্ক করো উত্তম পন্থায়’ (নাহল ১৬/১২৫)। তিনি বলেন, ‘বলুন! এটাই আমার পথ। আমি ও আমার অনুসারীগণ ডাকি আল্লাহর দিকে, জাগ্রত জ্ঞান সহকারে। আল্লাহ পবিত্র এবং আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই’ (ইউসুফ ১২/১০৮)।
১৩১
প্রশ্ন (১০/২৫০) : জামা‘আত চলাকালীন সময়ে পিছনের কাতারে একাকী হয়ে গেলে সামনের কাতার থেকে কাউকে টেনে আনতে হবে কি?-হান্নান সরকার
ফুলবাড়িয়া, ময়মনসিংহ।
উত্তর : এমতাবস্থায় পিছনে একাকী দাঁড়িয়ে ছালাত আদায় করবেন। সামনের কাতার থেকে টেনে নেওয়া মর্মে বর্ণিত হাদীছটি অত্যন্ত যঈফ (ত্বাবরাণী আওসাত্ব হা/৭৭৬৪;মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/২৫৩৭; যঈফাহ হা/ ৯২১-৯২২;)। আর সামনের কাতার থেকে টেনে নিলে সে ব্যক্তি কাতারকে বিচ্ছিন্নকারী হিসেবে গণ্য হয়ে আল্লাহর রহমত থেকেও বিচ্ছিন্ন হবে (আবুদাউদ হা/৬৬৬; মিশকাত হা/১১০২)। তাছাড়া সামনের কাতার থেকে মুছল্লীকে পেছনে টেনে আনলে কাতারে শূন্যতা সৃষ্টি হয় (ফাতাওয়া উছায়মীন ১৩/৩৮)।
উল্লেখ্য যে, একাকী পেছনের কাতারে দাঁড়িয়ে ছালাত হবে না মর্মে যে হাদীছ রয়েছে (আবুদাউদ হা/৬৮২; তিরমিযী হা/২৩১; মিশকাত হা/১১০৫) তা তখনই প্রযোজ্য হবে, যখন সামনের কাতার অপূর্ণ থাকবে । অতএব এরূপ অবস্থায় মুছল্লী কাতারে একাকীই দাঁড়াবে এবং তার ছালাত হয়ে যাবে। কিন্তু সামনের কাতারে জায়গা থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ একাকী পেছনের কাতারে ছালাত আদায় করে, তাহ’লে তার ছালাত হবে না (ইরওয়া হা/৫৪১-এর আলোচনা দ্রঃ, ২/৩২৯)।
ফুলবাড়িয়া, ময়মনসিংহ।
উত্তর : এমতাবস্থায় পিছনে একাকী দাঁড়িয়ে ছালাত আদায় করবেন। সামনের কাতার থেকে টেনে নেওয়া মর্মে বর্ণিত হাদীছটি অত্যন্ত যঈফ (ত্বাবরাণী আওসাত্ব হা/৭৭৬৪;মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ হা/২৫৩৭; যঈফাহ হা/ ৯২১-৯২২;)। আর সামনের কাতার থেকে টেনে নিলে সে ব্যক্তি কাতারকে বিচ্ছিন্নকারী হিসেবে গণ্য হয়ে আল্লাহর রহমত থেকেও বিচ্ছিন্ন হবে (আবুদাউদ হা/৬৬৬; মিশকাত হা/১১০২)। তাছাড়া সামনের কাতার থেকে মুছল্লীকে পেছনে টেনে আনলে কাতারে শূন্যতা সৃষ্টি হয় (ফাতাওয়া উছায়মীন ১৩/৩৮)।
উল্লেখ্য যে, একাকী পেছনের কাতারে দাঁড়িয়ে ছালাত হবে না মর্মে যে হাদীছ রয়েছে (আবুদাউদ হা/৬৮২; তিরমিযী হা/২৩১; মিশকাত হা/১১০৫) তা তখনই প্রযোজ্য হবে, যখন সামনের কাতার অপূর্ণ থাকবে । অতএব এরূপ অবস্থায় মুছল্লী কাতারে একাকীই দাঁড়াবে এবং তার ছালাত হয়ে যাবে। কিন্তু সামনের কাতারে জায়গা থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ একাকী পেছনের কাতারে ছালাত আদায় করে, তাহ’লে তার ছালাত হবে না (ইরওয়া হা/৫৪১-এর আলোচনা দ্রঃ, ২/৩২৯)।
১৩২
প্রশ্ন (১১/২৫১) : ফরয ছালাতের পর নিয়মিত ১টি হাদীছ শুনাতে গেলে মাসবূক ব্যক্তিদের ছালাতে বিঘ্ন ঘটে। অন্যদিকে দেরী করলে মুছল্লীরা চলে যায়। এক্ষণে মাসবূক ছালাতরত অবস্থায় মুছল্লীদের উদ্দেশ্যে কথা বলার ব্যাপারে শরী‘আতের বিধান কি?-আব্দুল আলীম, মান্দা, নওগাঁ।
উত্তর : মাসবূকের ছালাত শেষ হওয়ার পর হাদীছ শুনানোই উত্তম। কোন কারণে বিশেষভাবে ব্যস্ত না হ’লে ঈমানদার শ্রোতা কখনোই হাদীছ না শুনে উঠে যাবে না।
উত্তর : মাসবূকের ছালাত শেষ হওয়ার পর হাদীছ শুনানোই উত্তম। কোন কারণে বিশেষভাবে ব্যস্ত না হ’লে ঈমানদার শ্রোতা কখনোই হাদীছ না শুনে উঠে যাবে না।
-আলমগীর হোসাইন, ফকিরাপুল, ঢাকা।
উত্তর : এর দ্বারা গ্রীষ্মকাল ও শীতকালে পৃথক দু’টি করে উদয়াচল ও অস্তাচল বুঝানো হয়েছে। অন্য আয়াতে ‘বহু পূর্বের ও পশ্চিমের রব’ (মা‘আরেজ ৭০/৪০) বলা হয়েছে। এর দ্বারা সূর্যের সদা পরিবর্তনশীল উদয়াচল ও অস্তাচলের কথা বলা হয়েছে। কেননা সূর্য নিজের কক্ষপথে সদা সন্তরণশীল (ইয়াসীন ৩৬/৩৮)। যা আল্লাহর হুকুমে বান্দার কল্যাণে সর্বদা নিয়োজিত। এর মধ্যে সৌর বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ উৎস বর্ণিত হয়েছে।
উত্তর : এর দ্বারা গ্রীষ্মকাল ও শীতকালে পৃথক দু’টি করে উদয়াচল ও অস্তাচল বুঝানো হয়েছে। অন্য আয়াতে ‘বহু পূর্বের ও পশ্চিমের রব’ (মা‘আরেজ ৭০/৪০) বলা হয়েছে। এর দ্বারা সূর্যের সদা পরিবর্তনশীল উদয়াচল ও অস্তাচলের কথা বলা হয়েছে। কেননা সূর্য নিজের কক্ষপথে সদা সন্তরণশীল (ইয়াসীন ৩৬/৩৮)। যা আল্লাহর হুকুমে বান্দার কল্যাণে সর্বদা নিয়োজিত। এর মধ্যে সৌর বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ উৎস বর্ণিত হয়েছে।
১৩৪
প্রশ্ন (১৩/২৫৩) : জনৈক ব্যক্তি কারু নিকট থেকে অর্থ ঋণ গ্রহণ করলে ফেরত দেওয়ার সময় কিছু বেশী প্রদান করেন। এরূপ দেওয়া বা নেওয়া শরী‘আতসম্মত হবে কি?-তৌফীকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম।
উত্তর : ঋণ গ্রহণকারী ঋণ পরিশোধের সময় কোন পূর্বশর্ত ছাড়াই স্বেচ্ছায় যদি কিছু বেশী প্রদান করে, তবে তা দেওয়া এবং গ্রহণ করা জায়েয। জাবের (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে আগমন করলাম। এমতাবস্থায় তিনি মসজিদে ছিলেন....। তিনি আমাকে আমার পাওনা পরিশোধ করলেন এবং কিছু বেশী দিলেন (বুখারী হা/২৩০৫, মুসলিম হা/১৬০১)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, জনৈক ব্যক্তি উট ঋণ নিয়ে পরবর্তীতে পরিশোধের সময় তার চেয়ে দামী উট ব্যতীত তার নিকটে ছিল না। অতঃপর সে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, সেটা দ্বারাই ঋণ পরিশোধ কর। তোমাদের মধ্যে উত্তম ঐ ব্যক্তি যে উত্তমভাবে ঋণ পরিশোধ করে (বুখারী হা/২৩৯০; মুসলিম হা/১৬০১; মিশকাত হা/২৯০৬)। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, ঋণ গ্রহীতা স্বেচ্ছায় কিছু বেশী দিলে দিতে পারে এবং গ্রহীতাও তা নিতে পারে। তবে এক্ষেত্রে গ্রহীতা যদি বেশী পাওয়ার সুপ্ত কামনাও রাখে, তাহলে তা সূদে পরিণত হবে (বায়হাক্বী, ইরওয়াউল গালীল হা/১৩৯৬, সনদ মওকূফ ছহীহ)।
উত্তর : ঋণ গ্রহণকারী ঋণ পরিশোধের সময় কোন পূর্বশর্ত ছাড়াই স্বেচ্ছায় যদি কিছু বেশী প্রদান করে, তবে তা দেওয়া এবং গ্রহণ করা জায়েয। জাবের (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে আগমন করলাম। এমতাবস্থায় তিনি মসজিদে ছিলেন....। তিনি আমাকে আমার পাওনা পরিশোধ করলেন এবং কিছু বেশী দিলেন (বুখারী হা/২৩০৫, মুসলিম হা/১৬০১)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, জনৈক ব্যক্তি উট ঋণ নিয়ে পরবর্তীতে পরিশোধের সময় তার চেয়ে দামী উট ব্যতীত তার নিকটে ছিল না। অতঃপর সে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, সেটা দ্বারাই ঋণ পরিশোধ কর। তোমাদের মধ্যে উত্তম ঐ ব্যক্তি যে উত্তমভাবে ঋণ পরিশোধ করে (বুখারী হা/২৩৯০; মুসলিম হা/১৬০১; মিশকাত হা/২৯০৬)। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, ঋণ গ্রহীতা স্বেচ্ছায় কিছু বেশী দিলে দিতে পারে এবং গ্রহীতাও তা নিতে পারে। তবে এক্ষেত্রে গ্রহীতা যদি বেশী পাওয়ার সুপ্ত কামনাও রাখে, তাহলে তা সূদে পরিণত হবে (বায়হাক্বী, ইরওয়াউল গালীল হা/১৩৯৬, সনদ মওকূফ ছহীহ)।
১৩৫
প্রশ্ন (১৪/২৫৪) : রোগমুক্তি বা পরীক্ষায় ভালো করার আশায় কুরআন তেলাওয়াত, দান-ছাদাক্বা, ছিয়াম ইত্যাদি পালন করা যাবে কি?-হুমায়ূন, শিবগঞ্জ, সিলেট।
উত্তর : এতে শরী‘আতে কোন বাধা নেই। এগুলোর সাথে সাথে আল্লাহর কাছে তাওফীক কামনা করে দো‘আ করবে। নেক আমল মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে (তিরমিযী হা/২১; মিশকাত হা/২২৩৩; ছহীহাহ হা/১৫৪)। ছাদাক্বাকে চিকিৎসার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা যায় (ছহীহুল জামে‘ হা/৩৩৫৮) তবে এ ক্ষেত্রে মানত করা ঠিক নয়। কারণ মানত কৃপণতা থেকে বের করা ছাড়া তাকদীরের কোন কিছু প্রতিহত করতে পারে না (বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত হা/৩৪২৬; আবুদাউদ হা/৩২৮৭)। তবে কেউ মানত মানলে যদি তা আল্লাহর নাফারমানীর ক্ষেত্রে না হয় তাহলে পূর্ণ করা ওয়াজিব। পূর্ণ না করলে তাকে কসম ভঙ্গের কাফফারা দিতে হবে (তিরমিযী হা/১৫২৪, ১৫২৫; নাসাঈ হা/৩৮৩৪; আবুদাউদ হা/৩২৯০;মিশকাত হা/৩৪২৮, ৩৪৩৫)।
উত্তর : এতে শরী‘আতে কোন বাধা নেই। এগুলোর সাথে সাথে আল্লাহর কাছে তাওফীক কামনা করে দো‘আ করবে। নেক আমল মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে (তিরমিযী হা/২১; মিশকাত হা/২২৩৩; ছহীহাহ হা/১৫৪)। ছাদাক্বাকে চিকিৎসার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা যায় (ছহীহুল জামে‘ হা/৩৩৫৮) তবে এ ক্ষেত্রে মানত করা ঠিক নয়। কারণ মানত কৃপণতা থেকে বের করা ছাড়া তাকদীরের কোন কিছু প্রতিহত করতে পারে না (বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত হা/৩৪২৬; আবুদাউদ হা/৩২৮৭)। তবে কেউ মানত মানলে যদি তা আল্লাহর নাফারমানীর ক্ষেত্রে না হয় তাহলে পূর্ণ করা ওয়াজিব। পূর্ণ না করলে তাকে কসম ভঙ্গের কাফফারা দিতে হবে (তিরমিযী হা/১৫২৪, ১৫২৫; নাসাঈ হা/৩৮৩৪; আবুদাউদ হা/৩২৯০;মিশকাত হা/৩৪২৮, ৩৪৩৫)।
১৩৬
প্রশ্ন (১৫/২৫৫) : বাসায় স্ত্রীর কাজকর্মে সহায়তার জন্য কাজের মেয়ে রাখার ব্যাপারে শরী‘আতের বিধান কি? সঊদী আরবে সরকারীভাবে খাদেমা নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এভাবে মাহরাম বিহীন সেখানে অবস্থান করা শরী‘আতসম্মত হবে কি?মীযানুর রহমান
বড়পেটা, আসাম, ভারত।
উত্তর : বাসার কাজের জন্য কাজের মেয়ে রাখতে শরী‘আতে বাধা নেই। তবে শর্ত হচ্ছে বালেগা হ’লে বাড়ীর পুরুষ সদস্যদের তার সামনে পূর্ণরূপে পর্দা করতে হবে এবং মনিবের সাথে তার স্ত্রী কিংবা মা-বোন কাউকে থাকতে হবে। কারণ পর-পুরুষের সাথে গায়ের মাহরাম নারীর একাকী হওয়া নিষিদ্ধ’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৫১৩; তিরমিযী হা/২১৬৫)। সঊদীআরবে বা অন্যান্য দেশে সরকারীভাবে যেসব গৃহকর্মী পাঠানো হচ্ছে তা চরম অন্যায়। কারণ প্রথমতঃ মাহরাম ছাড়া এরূপ বিদেশ ভ্রমণ নারীদের জন্য হারাম’ (বুখারী হা/১৮৬২ ;মুসলিম হা/১৩৩৮, মিশকাত হা/২৫১৩)। দ্বিতীয়তঃ স্বামী-সন্তানের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে বিদেশে অবস্থান করা নারী জাতির প্রকৃতি ও দায়িত্বের বিরোধী। কারণ নিজ গৃহে অবস্থান করা ও ঘর-সংসার করাই তার প্রধানতম কর্তব্য (আহযাব ৩৩/৩৩)। তৃতীয়তঃ বিদেশে নারীর ইযযতের কোন নিশ্চয়তা নেই। অতএব প্রত্যেক নারীর জন্য এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
বড়পেটা, আসাম, ভারত।
উত্তর : বাসার কাজের জন্য কাজের মেয়ে রাখতে শরী‘আতে বাধা নেই। তবে শর্ত হচ্ছে বালেগা হ’লে বাড়ীর পুরুষ সদস্যদের তার সামনে পূর্ণরূপে পর্দা করতে হবে এবং মনিবের সাথে তার স্ত্রী কিংবা মা-বোন কাউকে থাকতে হবে। কারণ পর-পুরুষের সাথে গায়ের মাহরাম নারীর একাকী হওয়া নিষিদ্ধ’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৫১৩; তিরমিযী হা/২১৬৫)। সঊদীআরবে বা অন্যান্য দেশে সরকারীভাবে যেসব গৃহকর্মী পাঠানো হচ্ছে তা চরম অন্যায়। কারণ প্রথমতঃ মাহরাম ছাড়া এরূপ বিদেশ ভ্রমণ নারীদের জন্য হারাম’ (বুখারী হা/১৮৬২ ;মুসলিম হা/১৩৩৮, মিশকাত হা/২৫১৩)। দ্বিতীয়তঃ স্বামী-সন্তানের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে বিদেশে অবস্থান করা নারী জাতির প্রকৃতি ও দায়িত্বের বিরোধী। কারণ নিজ গৃহে অবস্থান করা ও ঘর-সংসার করাই তার প্রধানতম কর্তব্য (আহযাব ৩৩/৩৩)। তৃতীয়তঃ বিদেশে নারীর ইযযতের কোন নিশ্চয়তা নেই। অতএব প্রত্যেক নারীর জন্য এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
১৩৭
প্রশ্ন (১৬/২৫৬) : নবী-রাসূল, ছাহাবায়ে কেরাম বা অন্য কোন মানুষের নামের পূর্বে হযরত, জনাব ইত্যাদি শব্দটি ব্যবহার করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?-মবীনুল ইসলাম
উপশহর, রাজশাহী।
উত্তর : حضرة ‘হযরত’ আরবী শব্দ, পুংলিঙ্গ। অর্থ নৈকট্য, নেতা, জনাব, সম্মানসূচক উপাধি। جناب ‘জনাব’ আরবী শব্দ, উভয় লিঙ্গ। অর্থ সম্মানিত ব্যক্তি, আশ্রয়স্থল ইত্যাদি (ফীরোযুল লুগাত (উর্দূ)। সম্মানিত ব্যক্তিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য তাঁদের নামের শুরুতে ‘হযরত’, ‘জনাব’ ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। যেমন, হযরতুল উস্তায/আদ-দাকতূর, হযরতুল মুহতারাম ইত্যাদি’ (মু‘জামুল লুগাতিল আরাবিইয়াহ আল-মু‘আছারাহ ১/৪০১, ৫১৪)। আরবী ভাষায় ‘হযরত’ শব্দের ব্যবহার বহূ পূর্ব থেকেই চালু আছে। যেমন ইমাম যাহাবী, হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) প্রমুখ বিদ্বানগণ সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্বোধনের ক্ষেত্রে এ শব্দ ব্যবহার করেছেন (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ১০/৫৫২, আল-বিদায়াহ ১৩/২৬১)।
বস্ত্ততঃ প্রত্যেক দেশের প্রচলিত সর্বোচ্চ সম্মানসূচক শব্দ রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের নামের পূর্বে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন আরব দেশে উপনাম দিয়ে ডাকাকে সম্মানসূচক মনে করা হ’ত। যেমন, আবুল ক্বাসেম, আবু হুরায়রা, আবু হাফছ ইত্যাদি। বর্তমানে সেখানে শায়খ, সাইয়েদ, বহুবচনে সাদাত, সাইয়েদাত ইত্যাদি বলা হয়। এছাড়া ইংরেজীতে ইয়োর অনার, হিজ ম্যাজেস্টী, ইয়োর এক্সেলেন্সী এবং জাপানে ‘সান’, ‘সামা’, ‘চ্যান’ ইত্যাদি। একইভাবে উপমহাদেশে জনাব, হযরত, হুযুর, মাওলানা ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা হয়।
আল্লাহ পরস্পরকে মন্দ লকবে ডাকতে নিষেধ করেছেন (হুজুরাত ৪৯/১১)। অতএব প্রচলিত উত্তম লকব সমূহে আহবান করায় কোন দোষ নেই।
তবে যদি কেউ এর দ্বারা মন্দ অর্থ গ্রহণ করেন, সেজন্য তিনি দায়ী হবেন। যেমন, মদীনায় মুসলমানরা রাসূল (ছাঃ)-কে ‘রা‘এনা’ বলতেন (বাক্বারাহ ২/১০৪)। কিন্তু ইহূদীরা সেটা বলত গালি অর্থে। মুসলমানরা ‘রব’ বলতে আল্লাহকে বুঝেন, কিন্তু ফেরাঊন ‘রব’ বলতে নিজেকে বুঝিয়েছিল (নাযে‘আত ২৪)। কুরআনে আল্লাহকে ‘মাওলানা’ (আমাদের প্রভু) বলা হয়েছে (বাক্বারাহ ২/২৮৬, তওবা ৯/৫১)। কিন্তু বান্দার ক্ষেত্রেও ‘মাওলা’ বন্ধু বা গোলাম বা অভিভাবক অর্থে ব্যবহৃত হয়। ‘মৌলবী’ অর্থ দুনিয়াত্যাগী, বড় আলেম ইত্যাদি’ (আল-মু‘জামুল ওয়াসীত্ব)।
উপমহাদেশে সম্মানসূচক সম্বোধন হিসাবে ‘মাওলানা’ (আমাদের অভিভাবক) বলা হয়ে থাকে (ফীরোযুল লুগাত)। ‘শরীফ’ অর্থ সর্বোচ্চ সম্মানিত। সে অর্থে কুরআন শরীফ, কা‘বা শরীফ ইত্যাদি বলা হয়ে থাকে। এক্ষণে যদি কেউ শিরকের আড্ডাখানা কোন কবরকে ‘শরীফ’ বলেন, তার জন্য তিনি দায়ী হবেন। কিন্তু সেজন্য কুরআন শরীফ বলা যাবে না, এমনটি নয়। একইভাবে জনাব, হুযুর, মাওলানা, হযরত ইত্যাদি শব্দ সম্মানসূচক অর্থে ব্যবহার করায় কোন দোষ নেই।
উপশহর, রাজশাহী।
উত্তর : حضرة ‘হযরত’ আরবী শব্দ, পুংলিঙ্গ। অর্থ নৈকট্য, নেতা, জনাব, সম্মানসূচক উপাধি। جناب ‘জনাব’ আরবী শব্দ, উভয় লিঙ্গ। অর্থ সম্মানিত ব্যক্তি, আশ্রয়স্থল ইত্যাদি (ফীরোযুল লুগাত (উর্দূ)। সম্মানিত ব্যক্তিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য তাঁদের নামের শুরুতে ‘হযরত’, ‘জনাব’ ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। যেমন, হযরতুল উস্তায/আদ-দাকতূর, হযরতুল মুহতারাম ইত্যাদি’ (মু‘জামুল লুগাতিল আরাবিইয়াহ আল-মু‘আছারাহ ১/৪০১, ৫১৪)। আরবী ভাষায় ‘হযরত’ শব্দের ব্যবহার বহূ পূর্ব থেকেই চালু আছে। যেমন ইমাম যাহাবী, হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) প্রমুখ বিদ্বানগণ সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্বোধনের ক্ষেত্রে এ শব্দ ব্যবহার করেছেন (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ১০/৫৫২, আল-বিদায়াহ ১৩/২৬১)।
বস্ত্ততঃ প্রত্যেক দেশের প্রচলিত সর্বোচ্চ সম্মানসূচক শব্দ রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের নামের পূর্বে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন আরব দেশে উপনাম দিয়ে ডাকাকে সম্মানসূচক মনে করা হ’ত। যেমন, আবুল ক্বাসেম, আবু হুরায়রা, আবু হাফছ ইত্যাদি। বর্তমানে সেখানে শায়খ, সাইয়েদ, বহুবচনে সাদাত, সাইয়েদাত ইত্যাদি বলা হয়। এছাড়া ইংরেজীতে ইয়োর অনার, হিজ ম্যাজেস্টী, ইয়োর এক্সেলেন্সী এবং জাপানে ‘সান’, ‘সামা’, ‘চ্যান’ ইত্যাদি। একইভাবে উপমহাদেশে জনাব, হযরত, হুযুর, মাওলানা ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা হয়।
আল্লাহ পরস্পরকে মন্দ লকবে ডাকতে নিষেধ করেছেন (হুজুরাত ৪৯/১১)। অতএব প্রচলিত উত্তম লকব সমূহে আহবান করায় কোন দোষ নেই।
তবে যদি কেউ এর দ্বারা মন্দ অর্থ গ্রহণ করেন, সেজন্য তিনি দায়ী হবেন। যেমন, মদীনায় মুসলমানরা রাসূল (ছাঃ)-কে ‘রা‘এনা’ বলতেন (বাক্বারাহ ২/১০৪)। কিন্তু ইহূদীরা সেটা বলত গালি অর্থে। মুসলমানরা ‘রব’ বলতে আল্লাহকে বুঝেন, কিন্তু ফেরাঊন ‘রব’ বলতে নিজেকে বুঝিয়েছিল (নাযে‘আত ২৪)। কুরআনে আল্লাহকে ‘মাওলানা’ (আমাদের প্রভু) বলা হয়েছে (বাক্বারাহ ২/২৮৬, তওবা ৯/৫১)। কিন্তু বান্দার ক্ষেত্রেও ‘মাওলা’ বন্ধু বা গোলাম বা অভিভাবক অর্থে ব্যবহৃত হয়। ‘মৌলবী’ অর্থ দুনিয়াত্যাগী, বড় আলেম ইত্যাদি’ (আল-মু‘জামুল ওয়াসীত্ব)।
উপমহাদেশে সম্মানসূচক সম্বোধন হিসাবে ‘মাওলানা’ (আমাদের অভিভাবক) বলা হয়ে থাকে (ফীরোযুল লুগাত)। ‘শরীফ’ অর্থ সর্বোচ্চ সম্মানিত। সে অর্থে কুরআন শরীফ, কা‘বা শরীফ ইত্যাদি বলা হয়ে থাকে। এক্ষণে যদি কেউ শিরকের আড্ডাখানা কোন কবরকে ‘শরীফ’ বলেন, তার জন্য তিনি দায়ী হবেন। কিন্তু সেজন্য কুরআন শরীফ বলা যাবে না, এমনটি নয়। একইভাবে জনাব, হুযুর, মাওলানা, হযরত ইত্যাদি শব্দ সম্মানসূচক অর্থে ব্যবহার করায় কোন দোষ নেই।
-গোলাম রববানী,
ভোলাহাট, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তরঃ অনুমতি নিয়ে খাওয়া যাবে। অনুমতি দেওয়ার মতো কাউকে না পেলে, ক্ষুধা নিবৃত্ত হওয়া পর্যন্ত উক্ত ফল খাওয়া যাবে। কিন্তু বহন করে নিয়ে যাওয়া যাবে না। সামুরা বিন জুনদুব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, তোমাদের কেউ যখন কোন ছাগপালের নিকট আসবে (তখন দুধ পানের উদ্দেশ্যে) তার মনিবের অনুমতি নিবে। যদি সেখানে কেউ না থাকে, তাহ’লে তিনবার আওয়ায দিবে। অতঃপর উত্তর পেলে তার নিকট থেকে অনুমতি নিবে। আর যদি কেউ উত্তর না দেয়, তাহলে দুধ দোহন করবে ও পান করবে। কিন্তু বহন করে নিয়ে যাবে না’ (আবুদাঊদ হা/২৬১৯; মিশকাত হা/২৯৫৩)। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, ক্ষুধার্ত ব্যক্তি ক্ষুধা নিবারণের জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু খেতে পারবে।
ভোলাহাট, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তরঃ অনুমতি নিয়ে খাওয়া যাবে। অনুমতি দেওয়ার মতো কাউকে না পেলে, ক্ষুধা নিবৃত্ত হওয়া পর্যন্ত উক্ত ফল খাওয়া যাবে। কিন্তু বহন করে নিয়ে যাওয়া যাবে না। সামুরা বিন জুনদুব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, তোমাদের কেউ যখন কোন ছাগপালের নিকট আসবে (তখন দুধ পানের উদ্দেশ্যে) তার মনিবের অনুমতি নিবে। যদি সেখানে কেউ না থাকে, তাহ’লে তিনবার আওয়ায দিবে। অতঃপর উত্তর পেলে তার নিকট থেকে অনুমতি নিবে। আর যদি কেউ উত্তর না দেয়, তাহলে দুধ দোহন করবে ও পান করবে। কিন্তু বহন করে নিয়ে যাবে না’ (আবুদাঊদ হা/২৬১৯; মিশকাত হা/২৯৫৩)। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, ক্ষুধার্ত ব্যক্তি ক্ষুধা নিবারণের জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু খেতে পারবে।
-আশরাফুল ইসলাম
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাযীপুর।
উত্তর : গোসলখানা ও টয়লেট একত্রে থাকলেও যদি ওযূ করার স্থানে অপবিত্র বস্ত্ত ছড়িয়ে না থাকে, তাহ’লে সেখানে ওযূ করায় শরী‘আতে কোন বাধা নেই (ফাতওয়া লাজনা-দায়েমাহ ৫/৮৫; মাজমূ‘ ফাতাওয়া উছায়মীন ১২/৩৬৯)।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাযীপুর।
উত্তর : গোসলখানা ও টয়লেট একত্রে থাকলেও যদি ওযূ করার স্থানে অপবিত্র বস্ত্ত ছড়িয়ে না থাকে, তাহ’লে সেখানে ওযূ করায় শরী‘আতে কোন বাধা নেই (ফাতওয়া লাজনা-দায়েমাহ ৫/৮৫; মাজমূ‘ ফাতাওয়া উছায়মীন ১২/৩৬৯)।
১৪০
প্রশ্ন (১৯/২৫৯) : জনৈক ইমাম ছালাতের সময় কারো টাখনুর নীচে কাপড় দেখলে পুনরায় ওযূ করে আসতে বলেন। এটা কি ছহীহ হাদীছ সম্মত?-আব্দুল কাদের, পীরগাছা, রংপুর।
উত্তর : এ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ। বর্ণনাটি হ’ল- আত্বা ইবনু ইয়াসির (রাঃ) জনৈক ছাহাবী হ’তে বর্ণনা করেন যে, একদা এক ব্যক্তি টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে ছালাত আদায় করছিল। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে বললেন, যাও ওযূ কর। তাই সে গেল এবং ওযূ করে আসল। তখন অপর এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আপনি তাকে কেন ওযূ করতে বললেন? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘যে ব্যক্তি টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে ছালাত আদায় করে, আল্লাহ তার ছালাত কবুল করেন না (আবুদাঊদ হা/৪০৮৬, আহমাদ হা/২৩২৬৫, মিশকাত হা/৭৬১, সনদ যঈফ)। হাদীছটি যঈফ হওয়ার কারণে ইমাম ছাহেবের এরূপ নির্দেশ দেওয়া থেকে বিরত থাকা কর্তব্য। বরং তিনি ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী এ সম্পর্কে সতর্ক করবেন যে, ছালাত ও ছলাতের বাইরে কোন অবস্থাতেই টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরা যাবে না। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘টাখনুর নীচে কাপড়ের যতটুকু যাবে, ততটুকু জাহান্নামে পুড়বে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪৩১৪)।
উত্তর : এ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ। বর্ণনাটি হ’ল- আত্বা ইবনু ইয়াসির (রাঃ) জনৈক ছাহাবী হ’তে বর্ণনা করেন যে, একদা এক ব্যক্তি টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে ছালাত আদায় করছিল। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে বললেন, যাও ওযূ কর। তাই সে গেল এবং ওযূ করে আসল। তখন অপর এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আপনি তাকে কেন ওযূ করতে বললেন? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘যে ব্যক্তি টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে ছালাত আদায় করে, আল্লাহ তার ছালাত কবুল করেন না (আবুদাঊদ হা/৪০৮৬, আহমাদ হা/২৩২৬৫, মিশকাত হা/৭৬১, সনদ যঈফ)। হাদীছটি যঈফ হওয়ার কারণে ইমাম ছাহেবের এরূপ নির্দেশ দেওয়া থেকে বিরত থাকা কর্তব্য। বরং তিনি ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী এ সম্পর্কে সতর্ক করবেন যে, ছালাত ও ছলাতের বাইরে কোন অবস্থাতেই টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরা যাবে না। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘টাখনুর নীচে কাপড়ের যতটুকু যাবে, ততটুকু জাহান্নামে পুড়বে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪৩১৪)।
১৪১
প্রশ্ন (২০/২৬০) : যেখানে রাসূল (ছাঃ) অমুসলিম দেশে কুরআন নিয়ে গমন করতে নিষেধ করেছেন সেখানে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে ইতালিয়ানদেরকে কুরআনের অনূদিত কপি উপহার দেওয়া যাবে কি?-সাইফুল ইসলাম
বলোনিয়া, ইতালী।
উত্তর : কুরআনের অনূদিত কপি ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে অমুসলিমদের উপহার দেওয়া যাবে। অমুসলিমদের জন্য কুরআন শ্রবণ, কুরআনের তাফসীর বা অনুবাদ সহ কুরআন স্পর্শ করে পড়ায় কোন বাধা নেই (মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ২৪/৩৪০)। রাসূল (ছাঃ) কুরআনের আয়াত সম্বলিত পত্র অমুসলিম শাসকদের কাছে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে পাঠিয়েছেন’ (বুখারী হা/০৭, ১৯; মুসলিম হা/১৭৭৩; মিশকাত হা/৩৯২৬)। তবে আরবী মূল মুছহাফ তাদেরকে দেওয়া যাবেনা। কেননা তা স্পর্শ করা মুশরিকদের জন্য জায়েয নয় (ওয়াক্বি‘আহ ৫৬/৭৯; ত্বাবারাণী, ছহীহুল জামে‘ হা/৭৭৮০)।
বলোনিয়া, ইতালী।
উত্তর : কুরআনের অনূদিত কপি ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে অমুসলিমদের উপহার দেওয়া যাবে। অমুসলিমদের জন্য কুরআন শ্রবণ, কুরআনের তাফসীর বা অনুবাদ সহ কুরআন স্পর্শ করে পড়ায় কোন বাধা নেই (মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ২৪/৩৪০)। রাসূল (ছাঃ) কুরআনের আয়াত সম্বলিত পত্র অমুসলিম শাসকদের কাছে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে পাঠিয়েছেন’ (বুখারী হা/০৭, ১৯; মুসলিম হা/১৭৭৩; মিশকাত হা/৩৯২৬)। তবে আরবী মূল মুছহাফ তাদেরকে দেওয়া যাবেনা। কেননা তা স্পর্শ করা মুশরিকদের জন্য জায়েয নয় (ওয়াক্বি‘আহ ৫৬/৭৯; ত্বাবারাণী, ছহীহুল জামে‘ হা/৭৭৮০)।
১৪২
প্রশ্ন (২১/২৬১) : ত্বক ফর্সা করার জন্য ছেলেরা বিভিন্ন ধরনের স্নো, ক্রীম ইত্যাদি প্রসাধনী ব্যবহার করতে পারবে কি?-আব্দুল্লাহ
ধূনট, বগুড়া।
উত্তর : মানুষের ত্বক আল্লাহর সৃষ্টি এবং প্রকৃতিগত বিষয়, যা ফর্সা বা কালো করার ক্ষমতা মানুষের নেই। এ বিষয়ে যেসব প্রচারণা চালানো হয় সেগুলো পুঁজিবাদী ব্যবসায়ীদের অপপ্রচার মাত্র। এগুলো করতে গিয়ে অনেকে ত্বকের নানা রোগের শিকার হয়। এমনকি এর ফলে ত্বকের ক্যানসারও হ’তে পারে। তবে দেহকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সুন্দর। তিনি সৌন্দর্যকে পসন্দ করেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৮ ‘ক্রোধ ও গর্ব’ অনুচ্ছেদ)।
ধূনট, বগুড়া।
উত্তর : মানুষের ত্বক আল্লাহর সৃষ্টি এবং প্রকৃতিগত বিষয়, যা ফর্সা বা কালো করার ক্ষমতা মানুষের নেই। এ বিষয়ে যেসব প্রচারণা চালানো হয় সেগুলো পুঁজিবাদী ব্যবসায়ীদের অপপ্রচার মাত্র। এগুলো করতে গিয়ে অনেকে ত্বকের নানা রোগের শিকার হয়। এমনকি এর ফলে ত্বকের ক্যানসারও হ’তে পারে। তবে দেহকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সুন্দর। তিনি সৌন্দর্যকে পসন্দ করেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৮ ‘ক্রোধ ও গর্ব’ অনুচ্ছেদ)।
১৪৩
প্রশ্ন (২২/২৬২) : জনৈক আলেম বলেন, ছালাতের সালাম ফিরানোর পর আল্লাহু আকবার বলা যাবে না। বরং আসতাগফিরুল্লাহ বলতে হবে। একথা ঠিক কি?-রায়হান
খয়রাবাদ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : উক্ত কথা সঠিক নয়। বরং সালাম ফিরানোর পরে একবার সরবে ‘আল্লাহু আকবার’ এবং তিনবার ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ বলাই ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (বুখারী ফাৎহসহ হা/৮৪১-৪২; মুসলিম হা/৫৮৩; মিশকাত হা/৯৫৯)।
খয়রাবাদ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : উক্ত কথা সঠিক নয়। বরং সালাম ফিরানোর পরে একবার সরবে ‘আল্লাহু আকবার’ এবং তিনবার ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ বলাই ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (বুখারী ফাৎহসহ হা/৮৪১-৪২; মুসলিম হা/৫৮৩; মিশকাত হা/৯৫৯)।
১৪৪
প্রশ্ন (২৩/২৬৩) : কোন মুসলিম ব্যক্তির মাঝে কুফরী, মুনাফেকী ও শিরকী কার্যক্রম দেখতে পেলে তাকে কাফের, মুনাফিক বা মুশরিক নামে ডাকা যাবে কি?-তালীম হোসাইন প্রধান
পাটগ্রাম, লালমণিরহাট।
উত্তর : কোন মুসলিমের মধ্যে এরূপ দেখতে পেলে তাকে মুশরিক বা কাফের বলে ডাকা যাবে না। আল্লাহ বলেন, তোমরা কাউকে মন্দ লকবে ডেকো না’... (হুজুরাত ৪৯/১১)। উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ক্বাতাদাহ বলেন, এর অর্থ হ’ল, কাউকে হে মুনাফিক, হে ফাসেক ইত্যাদি বলে ডাকা যাবে না’ (বায়হাক্বী শু‘আব হা/৬৭৪৮, কুরতুবী, তাফসীর হুজুরাত ১১ আয়াত)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যাকে কাফের বলা হবে সে সত্যিকারে কাফের না হ’লে যে কাফের বলল তার দিকেই সেটা ফিরে আসবে (মুসলিম হা/৬০; বুখারী হা/৬১০৩)। তিনি বলেন, কোন ব্যক্তি কর্তৃক তার (মুসলিম) ভাইকে কাফের বলাটা তাকে হত্যা করার মত অপরাধ (বুখারী হা/৬০৪৭; মিশকাত হা/৩৪১০)। তবে কাউকে এরূপ কাজ করতে দেখলে, তোমার এ কাজটি কুফরী পর্যায়ভুক্ত বা তোমার মধ্যে মুনাফিকের এই আলামতটা দেখা যাচ্ছে এরূপ বলা যেতে পারে।
পাটগ্রাম, লালমণিরহাট।
উত্তর : কোন মুসলিমের মধ্যে এরূপ দেখতে পেলে তাকে মুশরিক বা কাফের বলে ডাকা যাবে না। আল্লাহ বলেন, তোমরা কাউকে মন্দ লকবে ডেকো না’... (হুজুরাত ৪৯/১১)। উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ক্বাতাদাহ বলেন, এর অর্থ হ’ল, কাউকে হে মুনাফিক, হে ফাসেক ইত্যাদি বলে ডাকা যাবে না’ (বায়হাক্বী শু‘আব হা/৬৭৪৮, কুরতুবী, তাফসীর হুজুরাত ১১ আয়াত)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যাকে কাফের বলা হবে সে সত্যিকারে কাফের না হ’লে যে কাফের বলল তার দিকেই সেটা ফিরে আসবে (মুসলিম হা/৬০; বুখারী হা/৬১০৩)। তিনি বলেন, কোন ব্যক্তি কর্তৃক তার (মুসলিম) ভাইকে কাফের বলাটা তাকে হত্যা করার মত অপরাধ (বুখারী হা/৬০৪৭; মিশকাত হা/৩৪১০)। তবে কাউকে এরূপ কাজ করতে দেখলে, তোমার এ কাজটি কুফরী পর্যায়ভুক্ত বা তোমার মধ্যে মুনাফিকের এই আলামতটা দেখা যাচ্ছে এরূপ বলা যেতে পারে।
১৪৫
প্রশ্ন (২৪/২৬৪) : হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশুনা শেষে সূদী কারবারের কারণে ব্যাংকে চাকুরী করতে পারছে না। এক্ষণে হিসাব বিভাগের সাথে জড়িত শরী‘আত অনুমোদিত কোন কোন ক্ষেত্রে চাকুরী করা যেতে পারে?-ওমর বিন হুসাইন
বগুড়া সেনানিবাস, বগুড়া।
উত্তর: ইসলামী নীতির বিরোধী নয় এরূপ দেশী-বিদেশী যেকোন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতে পারেন। ব্যাংক, বীমা এবং যেসব এনজিও সমাজ সেবার আড়ালে ক্ষুদ্র ঋণের নামে সূদী কারবার, ধর্মান্তরকরণ, নারীর পর্দাহীনতা, একসন্তান নীতি প্রভৃতি ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ডে ভুমিকা রাখছে, সেসব প্রতিষ্ঠান থেকে দূরে থাকা আবশ্যক। কেননা গুনাহের কাজে সহায়তা করা নিষিদ্ধ (মায়েদাহ ৫/২)।
বগুড়া সেনানিবাস, বগুড়া।
উত্তর: ইসলামী নীতির বিরোধী নয় এরূপ দেশী-বিদেশী যেকোন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতে পারেন। ব্যাংক, বীমা এবং যেসব এনজিও সমাজ সেবার আড়ালে ক্ষুদ্র ঋণের নামে সূদী কারবার, ধর্মান্তরকরণ, নারীর পর্দাহীনতা, একসন্তান নীতি প্রভৃতি ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ডে ভুমিকা রাখছে, সেসব প্রতিষ্ঠান থেকে দূরে থাকা আবশ্যক। কেননা গুনাহের কাজে সহায়তা করা নিষিদ্ধ (মায়েদাহ ৫/২)।
১৪৬
প্রশ্ন (২৫/২৬৫) : রাসূল (ছাঃ)-এর শরীর থেকে নির্গত ঘাম সংরক্ষণ করে জনৈক ছাহাবী তার কবরে নাজাতের জন্য কাফনের কাপড়ে লাগিয়ে দিতে বলেছিলেন মর্মে বক্তব্যটির কোন সত্যতা আছে কি?-হাসনা হেনা
পাঁচদোনা, নরসিংদী।
উত্তর : কথাটি ভিত্তিহীন। রাসূল (ছাঃ)-এর শরীরের ঘামের মাধ্যমে নাজাত নয় বরং নাজাতের জন্য প্রয়োজন তাঁর আনুগত্য এবং সেমতে তাঁর আদেশ ও নিষেধ সমূহ মেনে চলা। রাসূল (ছাঃ)-এর শরীর থেকে যে ঘাম নির্গত হ’ত তা ছিল সবচেয়ে সুগন্ধিময়’ (মুসলিম হা/২৩৩১)। সেকারণ রাসূল (ছাঃ)-এর খালা উম্মে সুলায়েম (রাঃ) একবার তাঁর ঘাম সুগন্ধি এবং বরকত হিসাবে নিয়েছিলেন (মুসলিম হা/২৩৩১, মিশকাত হা/৫৭৮৮)। এছাড়া অন্য কোন ছাহাবী এরূপ করেছিলেন বলে জানা যায় না।
পাঁচদোনা, নরসিংদী।
উত্তর : কথাটি ভিত্তিহীন। রাসূল (ছাঃ)-এর শরীরের ঘামের মাধ্যমে নাজাত নয় বরং নাজাতের জন্য প্রয়োজন তাঁর আনুগত্য এবং সেমতে তাঁর আদেশ ও নিষেধ সমূহ মেনে চলা। রাসূল (ছাঃ)-এর শরীর থেকে যে ঘাম নির্গত হ’ত তা ছিল সবচেয়ে সুগন্ধিময়’ (মুসলিম হা/২৩৩১)। সেকারণ রাসূল (ছাঃ)-এর খালা উম্মে সুলায়েম (রাঃ) একবার তাঁর ঘাম সুগন্ধি এবং বরকত হিসাবে নিয়েছিলেন (মুসলিম হা/২৩৩১, মিশকাত হা/৫৭৮৮)। এছাড়া অন্য কোন ছাহাবী এরূপ করেছিলেন বলে জানা যায় না।
১৪৭
প্রশ্ন (২৬/২৬৬) : মামা বা চাচা মারা গেলে অথবা মামী বা চাচীকে তালাক দিলে ঐ মামী বা চাচীকে তার ভাগ্নে বা ভাতিজা বিবাহ করতে পারবে কি?-রেযওয়ান
জামগড়া, বাইপাইল, ঢাকা।
উত্তর : পারবে। কেননা মামী বা চাচী ভাগ্নে বা ভাতিজার জন্য মুহাররামাতের অন্তর্ভুক্ত নয়। অর্থাৎ যে ১৪ জন মহিলাকে বিবাহ করা হারাম, তাদের অন্তর্ভুক্ত নয় (নিসা ৪/২৩)।
জামগড়া, বাইপাইল, ঢাকা।
উত্তর : পারবে। কেননা মামী বা চাচী ভাগ্নে বা ভাতিজার জন্য মুহাররামাতের অন্তর্ভুক্ত নয়। অর্থাৎ যে ১৪ জন মহিলাকে বিবাহ করা হারাম, তাদের অন্তর্ভুক্ত নয় (নিসা ৪/২৩)।
-তারেক আযীয
রহনপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : এধরনের দাওয়াতে অংশ গ্রহণ না করাই উত্তম। আল্লাহ তাঁর রাসূলকে বলেন, ‘ঐসব লোকদের পরিত্যাগ কর যারা তাদের ধর্মকে খেল-তামাশারূপে গ্রহণ করেছে এবং পার্থিব জীবন যাদেরকে ধোঁকায় ফেলেছে (আন‘আম ৬/৭০)। তবে এতে যেন পারস্পরিক সম্পর্ক বিনষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ দাওয়াতের ব্যাপারটি মুসলমানদের পারস্পরিক হক-এর অন্তর্ভুক্ত (নাসাঈ হা/১৯৩৮; মিশকাত হা/৪৬৩০)। তাছাড়া এর ফলে উপদেশ প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। তবে যেসব বিবাহ অনুষ্ঠানে গান-বাজনা, নারী-পুরুষের অবাধ মেলা-মেশা ইত্যাদি প্রকাশ্য শরী‘আত বিরোধী কর্মকান্ড হয়, যার কারণে দাওয়াতপ্রাপ্তদের গুনাহ হয়, সেসব অনুষ্ঠান পরিত্যাগ করতে হবে (আবুদাঊদ হা/৪৯২৪)। যদিও তাতে সম্পর্ক বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে (মুসলিম হা/১৮৪০; মিশকাত হা/৩৬৯৬)।
রহনপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : এধরনের দাওয়াতে অংশ গ্রহণ না করাই উত্তম। আল্লাহ তাঁর রাসূলকে বলেন, ‘ঐসব লোকদের পরিত্যাগ কর যারা তাদের ধর্মকে খেল-তামাশারূপে গ্রহণ করেছে এবং পার্থিব জীবন যাদেরকে ধোঁকায় ফেলেছে (আন‘আম ৬/৭০)। তবে এতে যেন পারস্পরিক সম্পর্ক বিনষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ দাওয়াতের ব্যাপারটি মুসলমানদের পারস্পরিক হক-এর অন্তর্ভুক্ত (নাসাঈ হা/১৯৩৮; মিশকাত হা/৪৬৩০)। তাছাড়া এর ফলে উপদেশ প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। তবে যেসব বিবাহ অনুষ্ঠানে গান-বাজনা, নারী-পুরুষের অবাধ মেলা-মেশা ইত্যাদি প্রকাশ্য শরী‘আত বিরোধী কর্মকান্ড হয়, যার কারণে দাওয়াতপ্রাপ্তদের গুনাহ হয়, সেসব অনুষ্ঠান পরিত্যাগ করতে হবে (আবুদাঊদ হা/৪৯২৪)। যদিও তাতে সম্পর্ক বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে (মুসলিম হা/১৮৪০; মিশকাত হা/৩৬৯৬)।
১৪৯
প্রশ্ন (২৮/২৬৮) : ইসলামী বা সাধারণ ব্যাংক, বিকাশ, এ.টি.এম কার্ড এর মাধ্যমে টাকা-পয়সা লেনদেন করায় সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। এক্ষণে এতে কোন বাধা আছে কি?-মুস্তানতাছির বিল্লাহ
হোসেনীগঞ্জ, রাজশাহী।
উত্তর : এখানে আদান-প্রদানের সার্ভিস চার্জ হিসাবে অতিরিক্ত কিছু অর্থ দিতে হয়। অতএব লেনদেনের উদ্দেশ্যে এসব মাধ্যম ব্যবহারে কোন বাধা নেই।
হোসেনীগঞ্জ, রাজশাহী।
উত্তর : এখানে আদান-প্রদানের সার্ভিস চার্জ হিসাবে অতিরিক্ত কিছু অর্থ দিতে হয়। অতএব লেনদেনের উদ্দেশ্যে এসব মাধ্যম ব্যবহারে কোন বাধা নেই।
-ইবরাহীম
কাচারী রোড, দিনাজপুর।
উত্তর : কা‘বাগৃহের কসম খাওয়া নিষিদ্ধ। ইবনু ওমর (রাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে কা‘বার কসম খেতে শুনে বললেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে কসম করল সে শিরক করল (আবুদাঊদ হা/৩২৫১ সনদ ছহীহ)। বরং কা‘বার রবের তথা আল্লাহর কসম করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমাদের কেউ যখন কসম করার ইচ্ছা করে সে যেন বলে, কা‘বার রবের কসম (নাসাঈ হা/৩৭৭৩)। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের পিতাদের নামে কসম খেতে নিষেধ করেছেন। অতএব যে কসম খেতে চায়, সে যেন আল্লাহর নামে কসম খায় অথবা চুপ থাকে’(মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৪০)।
কাচারী রোড, দিনাজপুর।
উত্তর : কা‘বাগৃহের কসম খাওয়া নিষিদ্ধ। ইবনু ওমর (রাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে কা‘বার কসম খেতে শুনে বললেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে কসম করল সে শিরক করল (আবুদাঊদ হা/৩২৫১ সনদ ছহীহ)। বরং কা‘বার রবের তথা আল্লাহর কসম করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমাদের কেউ যখন কসম করার ইচ্ছা করে সে যেন বলে, কা‘বার রবের কসম (নাসাঈ হা/৩৭৭৩)। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের পিতাদের নামে কসম খেতে নিষেধ করেছেন। অতএব যে কসম খেতে চায়, সে যেন আল্লাহর নামে কসম খায় অথবা চুপ থাকে’(মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৪০)।
১৫১
প্রশ্ন (৩০/২৭০) : মূসা (আঃ)-এর লাঠি কি তার নিজস্ব ব্যবহৃত লাঠি ছিল? না আল্লাহর পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছিল?-সুফিয়া খাতুন
পাঁচদোনা মোড়, নরসিংদী।
উত্তর : মূসা (আঃ)-এর লাঠি তাঁর নিজস্ব ব্যবহৃত লাঠি ছিল। মহান রাববুল আলামীন উক্ত লাঠির মাধ্যমেই তাঁর ‘মু‘জিযা’ প্রকাশ করান (শাওকানী, ফাৎহুল ক্বাদীর ৩/৩৬১)। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘হে মূসা! তোমার ডান হাতে ওটা কি?’ ‘মূসা বললেন, এটা আমার লাঠি। এর উপরে আমি ভর দেই এবং এর দ্বারা আমার ছাগপালের জন্য গাছের পাতা ঝেড়ে নামাই। তাছাড়া এর দ্বারা আমার অন্যান্য কাজও চলে’। ‘আল্লাহ বললেন, তুমি ওটা ফেলে দাও’। ‘অতঃপর তিনি ওটা (মাটিতে) ফেলে দিতেই তা সাপ হয়ে ছুটাছুটি করতে লাগল’। ‘আল্লাহ বললেন, তুমি ওটাকে ধর, ভয় করো না, আমি এখুনি ওকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেব’ (ত্বোয়াহা ২০/১৭-২১)।
পাঁচদোনা মোড়, নরসিংদী।
উত্তর : মূসা (আঃ)-এর লাঠি তাঁর নিজস্ব ব্যবহৃত লাঠি ছিল। মহান রাববুল আলামীন উক্ত লাঠির মাধ্যমেই তাঁর ‘মু‘জিযা’ প্রকাশ করান (শাওকানী, ফাৎহুল ক্বাদীর ৩/৩৬১)। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘হে মূসা! তোমার ডান হাতে ওটা কি?’ ‘মূসা বললেন, এটা আমার লাঠি। এর উপরে আমি ভর দেই এবং এর দ্বারা আমার ছাগপালের জন্য গাছের পাতা ঝেড়ে নামাই। তাছাড়া এর দ্বারা আমার অন্যান্য কাজও চলে’। ‘আল্লাহ বললেন, তুমি ওটা ফেলে দাও’। ‘অতঃপর তিনি ওটা (মাটিতে) ফেলে দিতেই তা সাপ হয়ে ছুটাছুটি করতে লাগল’। ‘আল্লাহ বললেন, তুমি ওটাকে ধর, ভয় করো না, আমি এখুনি ওকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেব’ (ত্বোয়াহা ২০/১৭-২১)।
১৫২
প্রশ্ন (৩১/২৭১) : অসুস্থ বা মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে তার সন্তানেরা ক্বাযা ছিয়াম আদায় করতে পারবে কি?-নাসরীন সুলতানা
কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
উত্তর : এ বিষয়ে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি মারা গেল এমতাবস্থায় যে, তার উপর রামাযান মাসের ছিয়ামের ক্বাযা রয়েছে, তার পক্ষ থেকে প্রতি ছিয়ামের বদলে প্রতিদিন একজন করে মিসকীন খাওয়াবে’ (তিরমিযী হা/৭১৮; মিশকাত হা/২০৩৪; মারফূ হিসাবে সনদ যঈফ। তবে মওকূফ হিসাবে ছহীহ)।
জনৈক ব্যক্তি মারা গেল। যার উপরে রামাযানের অথবা মানতের ছিয়ামের ক্বাযা ছিল। এক্ষণে তার পক্ষে উক্ত ছিয়াম আদায় করতে হবে কি-না এরূপ এক প্রশ্নের উত্তরে ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, কেউ কারু পক্ষে ছিয়াম পালন করবে না এবং কেউ কারু পক্ষে ছালাত আদায় করবে না। বরং তোমরা তার পরিত্যক্ত মাল থেকে তার পক্ষে ছিয়ামের বদলে ছাদাক্বা দাও প্রতিদিনের জন্য একজন করে মিসকীন। যার পরিমাণ হ’ল এক মুদ করে গম (বায়হাক্বী ৪/২৫৪, সনদ ছহীহ)। এক মুদ হ’ল সিকি ছা‘ (ইরওয়া হা/১৩৯, ১/১৭০২)। ইবনু আববাস (রাঃ) বর্ণিত অপর বর্ণনায় এসেছে, উত্তরাধিকারীরা ছাদাক্বা দিতে পারেন কিংবা ছিয়ামও আদায় করতে পারেন (বায়হাক্বী ৪/২৫৪)।
কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
উত্তর : এ বিষয়ে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি মারা গেল এমতাবস্থায় যে, তার উপর রামাযান মাসের ছিয়ামের ক্বাযা রয়েছে, তার পক্ষ থেকে প্রতি ছিয়ামের বদলে প্রতিদিন একজন করে মিসকীন খাওয়াবে’ (তিরমিযী হা/৭১৮; মিশকাত হা/২০৩৪; মারফূ হিসাবে সনদ যঈফ। তবে মওকূফ হিসাবে ছহীহ)।
জনৈক ব্যক্তি মারা গেল। যার উপরে রামাযানের অথবা মানতের ছিয়ামের ক্বাযা ছিল। এক্ষণে তার পক্ষে উক্ত ছিয়াম আদায় করতে হবে কি-না এরূপ এক প্রশ্নের উত্তরে ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, কেউ কারু পক্ষে ছিয়াম পালন করবে না এবং কেউ কারু পক্ষে ছালাত আদায় করবে না। বরং তোমরা তার পরিত্যক্ত মাল থেকে তার পক্ষে ছিয়ামের বদলে ছাদাক্বা দাও প্রতিদিনের জন্য একজন করে মিসকীন। যার পরিমাণ হ’ল এক মুদ করে গম (বায়হাক্বী ৪/২৫৪, সনদ ছহীহ)। এক মুদ হ’ল সিকি ছা‘ (ইরওয়া হা/১৩৯, ১/১৭০২)। ইবনু আববাস (রাঃ) বর্ণিত অপর বর্ণনায় এসেছে, উত্তরাধিকারীরা ছাদাক্বা দিতে পারেন কিংবা ছিয়ামও আদায় করতে পারেন (বায়হাক্বী ৪/২৫৪)।
১৫৩
প্রশ্ন (৩২/২৭২) : স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রী নাকফুল, কানের দুল, রঙিন শাড়ী ইত্যাদি খুলে ফেলে। এগুলি করা শরী‘আত সম্মত কি?-মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ
কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ।
উত্তর : এগুলি কুসংস্কার মাত্র। ইদ্দত কালে তথা চার মাস দশ দিন স্ত্রী স্বামীর বাড়ীতে অবস্থান করবে। একান্ত যরূরী প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হবে না। রঙ্গিন বা অধিক সৌন্দর্য প্রকাশক কোন পোষাক পরিধান করবে না। অলঙ্কার ব্যবহার করবে না। বিশেষ কারণ ব্যতীত সুগন্ধি, সুরমা, মেহেদীও ব্যবহার করবে না (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩৩৩১; আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৩৩৩২-৩৪)। মৃত্যুর সাথে সাথে স্ত্রীর নাকফুল, কানের দুল, পরিহিত শাড়ী খুলে রাখার রেওয়াজ বাড়াবাড়ি বৈ কিছুই নয়। অন্যদিকে সদ্য বিধবা স্ত্রীকে নতুন শাড়ী উপহার দেওয়াও কুসংস্কার মাত্র।
কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ।
উত্তর : এগুলি কুসংস্কার মাত্র। ইদ্দত কালে তথা চার মাস দশ দিন স্ত্রী স্বামীর বাড়ীতে অবস্থান করবে। একান্ত যরূরী প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হবে না। রঙ্গিন বা অধিক সৌন্দর্য প্রকাশক কোন পোষাক পরিধান করবে না। অলঙ্কার ব্যবহার করবে না। বিশেষ কারণ ব্যতীত সুগন্ধি, সুরমা, মেহেদীও ব্যবহার করবে না (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩৩৩১; আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৩৩৩২-৩৪)। মৃত্যুর সাথে সাথে স্ত্রীর নাকফুল, কানের দুল, পরিহিত শাড়ী খুলে রাখার রেওয়াজ বাড়াবাড়ি বৈ কিছুই নয়। অন্যদিকে সদ্য বিধবা স্ত্রীকে নতুন শাড়ী উপহার দেওয়াও কুসংস্কার মাত্র।
১৫৪
প্রশ্ন (৩৩/২৭৩) : কোন মহিলা বা পুরুষ লোক মৃত্যুবরণ করার পর কোন কোন পুরুষ বা কোন কোন নারী তাকে দেখতে পারবে?-আব্দুল্লাহ আল-মামূন
চন্ডিপুর, যশোর।
উত্তর : জীবিত অবস্থায় যাদের দেখা জায়েয মৃত্যুর পরেও তাদের দেখা জাযেয। মূলত মানুষ মারা গেলে একজন মুসলমানের জন্য যরূরী হ’ল তার জানাযায় অংশগ্রহণ করা, তাকে দেখা নয় (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৬৪৩০)। প্রচলিত আছে যে, স্বামীর মৃত্যুর পর স্বামী-স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। যার কোন ভিত্তি নেই। এগুলি কুসংস্কার মাত্র।
চন্ডিপুর, যশোর।
উত্তর : জীবিত অবস্থায় যাদের দেখা জায়েয মৃত্যুর পরেও তাদের দেখা জাযেয। মূলত মানুষ মারা গেলে একজন মুসলমানের জন্য যরূরী হ’ল তার জানাযায় অংশগ্রহণ করা, তাকে দেখা নয় (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৬৪৩০)। প্রচলিত আছে যে, স্বামীর মৃত্যুর পর স্বামী-স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। যার কোন ভিত্তি নেই। এগুলি কুসংস্কার মাত্র।
-আব্দুল জাববার,
কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : পোতা যাবে না। যারা এরূপ করে থাকেন তারা একটি হাদীছের অনুসরণে এরূপ করে থাকেন। যেমন নবী করীম (ছাঃ) একদিন দু‘টি কবরের শাস্তি জানতে পেরে একখানা খেজুরের ডাল দুই টুকরা করে দু’টি কবরে গেড়ে দেন। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, আপনি এরূপ করলেন কেন? তিনি বললেন, হয়ত ডাল দু’টি শুকানো পর্যন্ত তাদের শাস্তি হালকা হয়ে থাকবে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৩৮)। কিন্তু তাদের এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ তাদের শাস্তি হালকা হয়েছিল রাসূল (ছাঃ)-এর বিশেষ সুপারিশের জন্য। কাঁচা ডালের জন্য নয়। যা ছহীহ মুসলিমে জাবের (রাঃ) বর্ণিত হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। কাজেই খেজুরের কাঁচা ডাল বা অন্য কোন কাঁচা ডাল গেড়ে কবরের শাস্তি হালকা হবে বলে ধারণা করা একেবারেই ভ্রান্ত। কেননা যদি বিষয়টি তাই-ই হ’ত তহ’লে তিনি ডালটি চিরে ফেলতেন না। কেননা তাতে তো ডালটি দ্রুত শুকিয়ে যাবার কথা। আসল কারণ ছিল ঐ কবর দু’টিকে ঐ ডাল দ্বারা চিহ্নিত করা যে, তিনি তাদের জন্য সুপারিশ করেছেন (আলবানী, মিশকাত ১/১১০ পৃঃ; দ্রঃ ছালাতুর রাসূল ২৪২ পৃঃ)।
কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : পোতা যাবে না। যারা এরূপ করে থাকেন তারা একটি হাদীছের অনুসরণে এরূপ করে থাকেন। যেমন নবী করীম (ছাঃ) একদিন দু‘টি কবরের শাস্তি জানতে পেরে একখানা খেজুরের ডাল দুই টুকরা করে দু’টি কবরে গেড়ে দেন। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, আপনি এরূপ করলেন কেন? তিনি বললেন, হয়ত ডাল দু’টি শুকানো পর্যন্ত তাদের শাস্তি হালকা হয়ে থাকবে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৩৮)। কিন্তু তাদের এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ তাদের শাস্তি হালকা হয়েছিল রাসূল (ছাঃ)-এর বিশেষ সুপারিশের জন্য। কাঁচা ডালের জন্য নয়। যা ছহীহ মুসলিমে জাবের (রাঃ) বর্ণিত হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। কাজেই খেজুরের কাঁচা ডাল বা অন্য কোন কাঁচা ডাল গেড়ে কবরের শাস্তি হালকা হবে বলে ধারণা করা একেবারেই ভ্রান্ত। কেননা যদি বিষয়টি তাই-ই হ’ত তহ’লে তিনি ডালটি চিরে ফেলতেন না। কেননা তাতে তো ডালটি দ্রুত শুকিয়ে যাবার কথা। আসল কারণ ছিল ঐ কবর দু’টিকে ঐ ডাল দ্বারা চিহ্নিত করা যে, তিনি তাদের জন্য সুপারিশ করেছেন (আলবানী, মিশকাত ১/১১০ পৃঃ; দ্রঃ ছালাতুর রাসূল ২৪২ পৃঃ)।
১৫৬
প্রশ্ন (৩৫/২৭৫) : স্বামী স্ত্রীকে মোহরানা পরিশোধ না করে থাকলে সন্তান কি পিতার পক্ষ থেকে তা পরিশোধ করে দিতে পারবে?-তাসলিমা আক্তার জুলি
নাচোল, মুরাদপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : স্বামীর জন্য ফরয কর্তব্য হ’ল মোহর পরিশোধ করা (নিসা ৪, মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩১৪৩)। জীবিত অবস্থায় মোহর পরিশোধ না করলে মৃত্যুর পর তার পরিত্যক্ত সম্পদ হতে মোহর পরিশোধ করে তারপর বাকী অংশ ওয়ারিছদের মাঝে বণ্টন করতে হবে। আর সম্পদ না থাকলে সন্তান বা অন্য যে কেউ তা পরিশোধ করতে পারে (বুখারী, মিশকাত হা/২৯০৯; আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৩২০৮)।
নাচোল, মুরাদপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : স্বামীর জন্য ফরয কর্তব্য হ’ল মোহর পরিশোধ করা (নিসা ৪, মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩১৪৩)। জীবিত অবস্থায় মোহর পরিশোধ না করলে মৃত্যুর পর তার পরিত্যক্ত সম্পদ হতে মোহর পরিশোধ করে তারপর বাকী অংশ ওয়ারিছদের মাঝে বণ্টন করতে হবে। আর সম্পদ না থাকলে সন্তান বা অন্য যে কেউ তা পরিশোধ করতে পারে (বুখারী, মিশকাত হা/২৯০৯; আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৩২০৮)।
১৫৭
প্রশ্ন (৩৬/২৭৬) : ছালাত বিশুদ্ধভাবে আদায়ের জন্য পৃথক মসজিদ নির্মাণ করায় এলাকাবাসী উক্ত মসজিদকে যেরার মসজিদ বলে আখ্যায়িত করছে। এক্ষণে আমাদের করণীয় কি? কি কি কারণে কোন মসজিদকে যেরার মসজিদ হিসাবে গণ্য করা যায়?-রবীউল ইসলাম
বেড়া, পাবনা।
উত্তর : কোন মসজিদে ছহীহ তরীকায় ছালাত আদায়ে বাধাপ্রাপ্ত হ’লে পৃথক মসজিদ নির্মাণ করা যাবে। তবে সাধ্যপক্ষে একত্রে ছালাত আদায় করাই উত্তম হবে। কারণ ইমামের সুন্নাত বিরোধী আমলের জন্য তিনিই দায়ী হবেন, মুছল্লীরা নয়। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ইমামগণ তোমাদের ছালাত আদায় করান। যদি তারা সঠিকভাবে আদায় করান, তাহ’লে সকলের জন্য নেকী। পক্ষান্তরে যদি বেঠিকভাবে আদায় করান, তাহ’লে তোমাদের জন্য নেকী ও তাদের জন্য পাপ (বুখারী হা/৬৯৪, মিশকাত হা/১১৩৩)।
একই সমাজে পরস্পরের মধ্যে স্বার্থের দ্বন্দ্বের কারণে যদি নতুন মসজিদ তৈরি করা হয় এবং যার দ্বারা মুমিন সমাজে বিভক্তি সৃষ্টি ও ক্ষতি করা উদ্দেশ্য হয়, তাহ’লে উক্ত মসজিদকে ‘মসজিদে যেরার’ বা ‘ক্ষতিকর মসজিদ’ বলা হয়। এরূপ মসজিদ তৈরির ক্ষেত্রে আল্লাহর সন্তুষ্টি উদ্দেশ্য থাকে না এবং তা তাক্বওয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত হয় না (কুরতুবী, তাফসীর সূরা তওবা ১০৭ আয়াত; আলবানী, আছ-ছামরুল মুসতাত্বাব, পৃঃ ৩৯৮)।
বেড়া, পাবনা।
উত্তর : কোন মসজিদে ছহীহ তরীকায় ছালাত আদায়ে বাধাপ্রাপ্ত হ’লে পৃথক মসজিদ নির্মাণ করা যাবে। তবে সাধ্যপক্ষে একত্রে ছালাত আদায় করাই উত্তম হবে। কারণ ইমামের সুন্নাত বিরোধী আমলের জন্য তিনিই দায়ী হবেন, মুছল্লীরা নয়। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ইমামগণ তোমাদের ছালাত আদায় করান। যদি তারা সঠিকভাবে আদায় করান, তাহ’লে সকলের জন্য নেকী। পক্ষান্তরে যদি বেঠিকভাবে আদায় করান, তাহ’লে তোমাদের জন্য নেকী ও তাদের জন্য পাপ (বুখারী হা/৬৯৪, মিশকাত হা/১১৩৩)।
একই সমাজে পরস্পরের মধ্যে স্বার্থের দ্বন্দ্বের কারণে যদি নতুন মসজিদ তৈরি করা হয় এবং যার দ্বারা মুমিন সমাজে বিভক্তি সৃষ্টি ও ক্ষতি করা উদ্দেশ্য হয়, তাহ’লে উক্ত মসজিদকে ‘মসজিদে যেরার’ বা ‘ক্ষতিকর মসজিদ’ বলা হয়। এরূপ মসজিদ তৈরির ক্ষেত্রে আল্লাহর সন্তুষ্টি উদ্দেশ্য থাকে না এবং তা তাক্বওয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত হয় না (কুরতুবী, তাফসীর সূরা তওবা ১০৭ আয়াত; আলবানী, আছ-ছামরুল মুসতাত্বাব, পৃঃ ৩৯৮)।
১৫৮
প্রশ্ন (৩৭/২৭৭) : জনৈক আলেম বলেন, জুম‘আর খুৎবা চলা অবস্থায় সুন্নাত ছালাত আদায় করা হারাম। এ বক্তব্য কি সঠিক?-শামসুযযামান
রহনপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর: বক্তব্যটি ভিত্তিহীন ও ছহীহ হাদীছের বিরোধী। রাসূল ( ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করবে সে যেন বসার পূর্বে দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করে’ (বুখারী হা/৪৪৪; মুসলিম হা/৭১৪; মিশকাত হা/৭০৪)। একদা রাসূল (ছাঃ)-এর জুম‘আর খুৎবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় সুলাইক গাতফানী নামক জনৈক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সুন্নাত না পড়েই বসে পড়েন। রাসূল (ছাঃ) তাকে বললেন, হে সুলাইক! দাড়াও এবং দু’রাক‘আত ছালাত পড়ে বস। অতঃপর তিনি বললেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের খুৎবারত অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করবে, তখন সে যেন সংক্ষিপ্তভাবে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় ব্যতীত না বসে। (মুসলিম হা/৮৭৫; মিশকাত হা/১৪১১)।
রহনপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর: বক্তব্যটি ভিত্তিহীন ও ছহীহ হাদীছের বিরোধী। রাসূল ( ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করবে সে যেন বসার পূর্বে দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করে’ (বুখারী হা/৪৪৪; মুসলিম হা/৭১৪; মিশকাত হা/৭০৪)। একদা রাসূল (ছাঃ)-এর জুম‘আর খুৎবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় সুলাইক গাতফানী নামক জনৈক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সুন্নাত না পড়েই বসে পড়েন। রাসূল (ছাঃ) তাকে বললেন, হে সুলাইক! দাড়াও এবং দু’রাক‘আত ছালাত পড়ে বস। অতঃপর তিনি বললেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের খুৎবারত অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করবে, তখন সে যেন সংক্ষিপ্তভাবে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় ব্যতীত না বসে। (মুসলিম হা/৮৭৫; মিশকাত হা/১৪১১)।
১৫৯
প্রশ্ন (৩৮/২৭৮) : আমি দর্জির কাজ করি। মেয়েরা আমার নিকট থেকে টাইটফিট পোশাক তৈরী করে নেয়। এ জন্য কি আমি দায়ী হব?-উজ্জ্বল মিয়াঁ
নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
*[আরবীতে ইসলামী নাম রাখুন (স.স.)]
উত্তর : নগ্নতা প্রকাশক ও যৌন উদ্দীপক যেকোন পোষাক পরিধান করা হারাম (মুসলিম হা/২১২৮; মিশকাত হা/৩৫২৪)। একইভাবে তা তৈরী করাও হারাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তোমরা সৎ ও তাক্বওয়ার কাজে পরস্পরকে সাহায্য কর আর গুনাহ ও সীমালংঘনের কাজে সহযোগিতা করো না (মায়েদাহ ৫/০২)। মেয়েদের টাইটফিট পোশাক তৈরী করে দেওয়া অন্যায় কাজে সহযোগিতার শামিল। অতএব এসব হ’তে বিরত থাকতে হবে।
নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
*[আরবীতে ইসলামী নাম রাখুন (স.স.)]
উত্তর : নগ্নতা প্রকাশক ও যৌন উদ্দীপক যেকোন পোষাক পরিধান করা হারাম (মুসলিম হা/২১২৮; মিশকাত হা/৩৫২৪)। একইভাবে তা তৈরী করাও হারাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তোমরা সৎ ও তাক্বওয়ার কাজে পরস্পরকে সাহায্য কর আর গুনাহ ও সীমালংঘনের কাজে সহযোগিতা করো না (মায়েদাহ ৫/০২)। মেয়েদের টাইটফিট পোশাক তৈরী করে দেওয়া অন্যায় কাজে সহযোগিতার শামিল। অতএব এসব হ’তে বিরত থাকতে হবে।
১৬০
প্রশ্ন (৩৯/২৭৯) : আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ গ্রন্থে তাবূক যুদ্ধের ময়দানে রাসূল (ছাঃ)-এর সে সারগর্ভ ভাষণ সংকলিত হয়েছে, তা ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত কি?-রেযওয়ানুল ইসলাম
তাহেরপুর, রাজশাহী।
উত্তর : তাবূকের ময়দানে সমবেত সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্য রাসূল (ছাঃ) যে সংক্ষিপ্ত ও সারগর্ভ ভাষণ প্রদান করেছিলেন তা বিভিন্ন ইতিহাস গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে (ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ ৩/৪৭৩-৭৪; ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ৫/১৩-১৪; মুবারকপুরী, আর-রাহীক্ব ৪৩৫ পৃঃ)। কিন্তু এর সনদ ছহীহ নয়। ভাষণটি সম্পর্কে ইবনু কাছীর বলেন, হাদীছটি ‘গরীব’। এর মধ্যে অপ্রাসঙ্গিক ( نكارة ) কথা রয়েছে এবং এর সনদে দুর্বলতা রয়েছে’ (আল-বিদায়াহ ৫/১৪)। আলবানী বলেন, এর সনদ ‘যঈফ’ (সিলসিলা যঈফাহ হা/২০৫৯)। আরনাঊত্ব বলেন, এর সনদ ‘অতীব দুর্বল’ (যাদুল মা‘আদ ৩/৪৭৪- টীকা)।
সনদের বিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বক্তব্যগুলি বিভিন্ন ‘ছহীহ’ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। আকরাম যিয়া উমারী বলেন, তাবূকের এই দীর্ঘ ভাষণটি বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত নয়। যদিও এর বক্তব্যগুলি বিভিন্ন হাদীছ থেকে গৃহীত। যার কিছু ‘ছহীহ’ কিছু ‘হাসান’ (সীরাহ ছহীহাহ ২/৫৩৪, বিস্তারিত দ্রঃ ‘সীরাতুর রাসূল (ছাঃ)’, ৫৪২-৫৪৫ পৃঃ)।
তাহেরপুর, রাজশাহী।
উত্তর : তাবূকের ময়দানে সমবেত সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্য রাসূল (ছাঃ) যে সংক্ষিপ্ত ও সারগর্ভ ভাষণ প্রদান করেছিলেন তা বিভিন্ন ইতিহাস গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে (ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ ৩/৪৭৩-৭৪; ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ৫/১৩-১৪; মুবারকপুরী, আর-রাহীক্ব ৪৩৫ পৃঃ)। কিন্তু এর সনদ ছহীহ নয়। ভাষণটি সম্পর্কে ইবনু কাছীর বলেন, হাদীছটি ‘গরীব’। এর মধ্যে অপ্রাসঙ্গিক ( نكارة ) কথা রয়েছে এবং এর সনদে দুর্বলতা রয়েছে’ (আল-বিদায়াহ ৫/১৪)। আলবানী বলেন, এর সনদ ‘যঈফ’ (সিলসিলা যঈফাহ হা/২০৫৯)। আরনাঊত্ব বলেন, এর সনদ ‘অতীব দুর্বল’ (যাদুল মা‘আদ ৩/৪৭৪- টীকা)।
সনদের বিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বক্তব্যগুলি বিভিন্ন ‘ছহীহ’ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। আকরাম যিয়া উমারী বলেন, তাবূকের এই দীর্ঘ ভাষণটি বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত নয়। যদিও এর বক্তব্যগুলি বিভিন্ন হাদীছ থেকে গৃহীত। যার কিছু ‘ছহীহ’ কিছু ‘হাসান’ (সীরাহ ছহীহাহ ২/৫৩৪, বিস্তারিত দ্রঃ ‘সীরাতুর রাসূল (ছাঃ)’, ৫৪২-৫৪৫ পৃঃ)।
-ওমর ফারূক
রিয়াদ, সঊদী আরব।
উত্তর : যে হাদীছ কোন তাবেঈ মধ্যবর্তী রাবীর নাম না করে সরাসরি রাসূল (ছাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তাকে ‘মুরসাল’ হাদীছ বলে। ‘মুরসাল’ হাদীছ যঈফ হাদীছের শ্রেণীভূক্ত। এ জন্য জমহূর মুহাদ্দেছীনের নিকটে মুরসাল হাদীছ সাধারণভাবে দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয় (তাদরীবুর রাবী ১/১৯৮)।
তবে শর্তসাপেক্ষে ‘মুরসাল’ হাদীছ গ্রহণযোগ্য হতে পারে। যেমন ইমাম শাফেঈ সহ অপরাপর ইমামগণ উল্লেখ করেছেন- ১. রাবী উঁচু স্তরের তাবেঈ হওয়া। ২. রাবী যে রাবীর কাছ থেকে ‘ইরসাল’টি করেছেন তাঁকে ‘ছিক্বাহ’ বা বিশ্বস্ত বলে উল্লেখ করা। ৩. বিশ্বস্ত অন্য কোন রাবী’র বিরোধিতা না থাকা এবং ৪. নিম্নোক্ত চারটি শর্তের যে কোন একটি থাকা- যেমন (ক) অন্য কোন মুসনাদ সূত্রে বর্ণিত হওয়া। (খ) অপর কোন মুরসাল সূত্রে বর্ণিত হওয়া। (গ) ছাহাবীর কওল দ্বারা সমর্থিত হওয়া। অথবা (ঘ) অধিকাংশ বিদ্বানের মতামতের অনুকূলে হওয়া। এ সকল শর্ত পাওয়া গেলেই কেবল মুরসাল হাদীছ দলীল হিসাবে বিবেচিত হতে পারে (আল-মাজমূ‘ শারহুল মুহাযযাব ৬/২০৬, তায়সীরু মুছত্বলাহিল হাদীছ পৃঃ ৬০)।
- See more at: http://at-tahreek.com/april2015/question.html#sthash.fnh0kxxE.dpuf
রিয়াদ, সঊদী আরব।
উত্তর : যে হাদীছ কোন তাবেঈ মধ্যবর্তী রাবীর নাম না করে সরাসরি রাসূল (ছাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তাকে ‘মুরসাল’ হাদীছ বলে। ‘মুরসাল’ হাদীছ যঈফ হাদীছের শ্রেণীভূক্ত। এ জন্য জমহূর মুহাদ্দেছীনের নিকটে মুরসাল হাদীছ সাধারণভাবে দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয় (তাদরীবুর রাবী ১/১৯৮)।
তবে শর্তসাপেক্ষে ‘মুরসাল’ হাদীছ গ্রহণযোগ্য হতে পারে। যেমন ইমাম শাফেঈ সহ অপরাপর ইমামগণ উল্লেখ করেছেন- ১. রাবী উঁচু স্তরের তাবেঈ হওয়া। ২. রাবী যে রাবীর কাছ থেকে ‘ইরসাল’টি করেছেন তাঁকে ‘ছিক্বাহ’ বা বিশ্বস্ত বলে উল্লেখ করা। ৩. বিশ্বস্ত অন্য কোন রাবী’র বিরোধিতা না থাকা এবং ৪. নিম্নোক্ত চারটি শর্তের যে কোন একটি থাকা- যেমন (ক) অন্য কোন মুসনাদ সূত্রে বর্ণিত হওয়া। (খ) অপর কোন মুরসাল সূত্রে বর্ণিত হওয়া। (গ) ছাহাবীর কওল দ্বারা সমর্থিত হওয়া। অথবা (ঘ) অধিকাংশ বিদ্বানের মতামতের অনুকূলে হওয়া। এ সকল শর্ত পাওয়া গেলেই কেবল মুরসাল হাদীছ দলীল হিসাবে বিবেচিত হতে পারে (আল-মাজমূ‘ শারহুল মুহাযযাব ৬/২০৬, তায়সীরু মুছত্বলাহিল হাদীছ পৃঃ ৬০)।
- See more at: http://at-tahreek.com/april2015/question.html#sthash.fnh0kxxE.dpuf
১৬২
মে
প্রশ্ন (১/২৮১) : চার বা তিন রাক‘আত বিশিষ্ট ছালাতের প্রথম তাশাহহুদে দরূদে ইবরাহীমী পাঠ করা যাবে কি?-গোলাম রহমান, আইলাইন, বাহরাইন।
উত্তর : তিন বা চার রাক‘আত বিশিষ্ট ছালাতের প্রথম বৈঠকে কেবল তাশাহহুদ পড়াই যথেষ্ট। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আমাদের উপর তাশাহহুদ ফরয হওয়ার পূর্বে আমরা বলতাম, ‘আসসালামু ‘আলাল্লাহি মিন ইবাদিহী’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদেরকে বললেন, তোমরা এটা না বলে বরং ‘আত্ত্বাহিইয়াতু... বল’ (নাসাঈ হা/১১৬৮, ইরওয়া হা/৩১৯)।
প্রথম বৈঠকে তাশহ্হুদের পরে দরূদ পাঠ না করার বিষয়টি বিভিন্ন হাদীছ দ্বারা বুঝা যায়। যেমন (১) ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন যে, তাঁকে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তাশাহ্হুদ শিক্ষা দেন। ... অতঃপর তিনি ছালাতের মধ্যখানে হ’লে তাশাহ্হুদ পড়েই উঠে যেতেন। আর শেষ বৈঠক হ’লে তাশাহ্হুদের পরে ইচ্ছামত দো‘আ করতেন। অতঃপর সালাম ফিরাতেন’ (আহমাদ হা/৪৩৮২, ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৭০৮, সনদ হাসান)।(২) আবুবকর (রাঃ) যখন প্রথম বৈঠকে বসতেন, তখন তিনি যেন গরম পাথরের উপরে বসতেন’ (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩০৩৪, সনদ ছহীহ, ইবনু হাজার, তালখীছুল হাবীর হা/৪০৬)। (৩) ইবনু ওমর থেকেও অনুরূপ বর্ণনা এসেছে (ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩০৩৭)।
ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, প্রথম বৈঠকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) দরূদ পাঠ করেছেন মর্মে কিছুই বর্ণিত হয়নি। যিনি এটাকে মুস্তাহাব বলেন, তিনি দরূদ পাঠের সাধারণ নির্দেশের উপরে ধারণা করেই সম্ভবত এটা বলেন। যদিও শেষ বৈঠকে দরূদ পাঠের বিষয়টি বিশুদ্ধভাবে স্পষ্ট হয়ে গেছে’ (যাদুল মা‘আদ ১/২৩৭; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১২৯)।
ইমাম তিরমিযী বলেন, উক্ত আমল জারি রয়েছে বিদ্বানগণের নিকটে’ (তিরমিযী হা/৩৬৬-এর আলোচনা)। তবে অনেক বিদ্বান তাশাহহুদ পাঠের ‘আম’ হাদীছের আলোকে প্রথম তাশাহহুদে দরূদ পাঠ করা জায়েয বলেন (ছিফাতু ছালাতিন্নবী পৃঃ ১৪৬; ছহীহাহ হা/৮৭৮-এর আলোচনা)।
উত্তর : তিন বা চার রাক‘আত বিশিষ্ট ছালাতের প্রথম বৈঠকে কেবল তাশাহহুদ পড়াই যথেষ্ট। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আমাদের উপর তাশাহহুদ ফরয হওয়ার পূর্বে আমরা বলতাম, ‘আসসালামু ‘আলাল্লাহি মিন ইবাদিহী’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদেরকে বললেন, তোমরা এটা না বলে বরং ‘আত্ত্বাহিইয়াতু... বল’ (নাসাঈ হা/১১৬৮, ইরওয়া হা/৩১৯)।
প্রথম বৈঠকে তাশহ্হুদের পরে দরূদ পাঠ না করার বিষয়টি বিভিন্ন হাদীছ দ্বারা বুঝা যায়। যেমন (১) ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন যে, তাঁকে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) তাশাহ্হুদ শিক্ষা দেন। ... অতঃপর তিনি ছালাতের মধ্যখানে হ’লে তাশাহ্হুদ পড়েই উঠে যেতেন। আর শেষ বৈঠক হ’লে তাশাহ্হুদের পরে ইচ্ছামত দো‘আ করতেন। অতঃপর সালাম ফিরাতেন’ (আহমাদ হা/৪৩৮২, ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৭০৮, সনদ হাসান)।(২) আবুবকর (রাঃ) যখন প্রথম বৈঠকে বসতেন, তখন তিনি যেন গরম পাথরের উপরে বসতেন’ (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩০৩৪, সনদ ছহীহ, ইবনু হাজার, তালখীছুল হাবীর হা/৪০৬)। (৩) ইবনু ওমর থেকেও অনুরূপ বর্ণনা এসেছে (ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩০৩৭)।
ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, প্রথম বৈঠকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) দরূদ পাঠ করেছেন মর্মে কিছুই বর্ণিত হয়নি। যিনি এটাকে মুস্তাহাব বলেন, তিনি দরূদ পাঠের সাধারণ নির্দেশের উপরে ধারণা করেই সম্ভবত এটা বলেন। যদিও শেষ বৈঠকে দরূদ পাঠের বিষয়টি বিশুদ্ধভাবে স্পষ্ট হয়ে গেছে’ (যাদুল মা‘আদ ১/২৩৭; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১২৯)।
ইমাম তিরমিযী বলেন, উক্ত আমল জারি রয়েছে বিদ্বানগণের নিকটে’ (তিরমিযী হা/৩৬৬-এর আলোচনা)। তবে অনেক বিদ্বান তাশাহহুদ পাঠের ‘আম’ হাদীছের আলোকে প্রথম তাশাহহুদে দরূদ পাঠ করা জায়েয বলেন (ছিফাতু ছালাতিন্নবী পৃঃ ১৪৬; ছহীহাহ হা/৮৭৮-এর আলোচনা)।
১৬৩
প্রশ্ন (২/২৮২) : রাসূল (ছাঃ) বলেন, প্রোথিতকারী (পিতা) এবং যাকে প্রোথিত করা হয়েছে (সন্তান) উভয়েই জাহান্নামী (আবুদাঊদ হা/৪৭১৭)। হাদীছটির সঠিক ব্যাখ্যা জানতে চাই।-আশরাফ হোসাইন
লালমাটিয়া, ঢাকা।
উত্তর : কন্যা সন্তান প্রোথিতকারিণী মাতা জাহান্নামে যাবে তার উক্ত অপরাধ ও কুফরীর কারণে। কিন্তু উপরোক্ত হাদীছ অনুযায়ী প্রোথিত সন্তান জাহান্নামে কেন যাবে তার ব্যাখ্যায় বিদ্বানগণ বলেন, হাদীছটি একটি নির্দিষ্ট ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। আর তা হ’ল মুলায়কা নাম্নী জনৈকা মহিলার দুই ছেলে এসে তার মা সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ)-কে প্রশ্ন করেন যে, আমার মা জাহেলী যুগে মারা গেছেন। কিন্তু তিনি আত্মীয়তা সম্পর্ক রক্ষাকারীণী, অতিথিপরায়ণা এবং বিভিন্ন সৎকর্মে অভ্যস্ত ছিলেন। কিন্তু তিনি আমাদের একটি বোনকে প্রোথিত করার মাধ্যমে হত্যা করেন। এমতাবস্থায় তার সৎকর্মসমূহ তার উক্ত পাপের কাফফারা হবে কি? জবাবে রাসূল (ছাঃ) বললেন, প্রোথিতকারিণী ও প্রোথিত কন্যা উভয়ে জাহান্নামী হবে। তবে যদি প্রোথিতকারিণী ইসলাম কবুল করত তাহলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করতেন’ (আহমাদ হা/১৫৯৬৫)। একই মর্মে আবুদাঊদে (হা/৪৭১৭, মিশকাত হা/১১২) হাদীছ এসেছে। এ বিষয়ে ছাহেবে মির‘আত বলেন, এটি একটি বিশেষ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। হয়তবা ঐ প্রোথিত কন্যা সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) অহীর মাধ্যমে তার জাহান্নামী হওয়ার বিষয়টি অবগত হয়েছিলেন (মির‘আত হা/১১২-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)। কেননা ইসলামী শরী‘আতে নাবালকের উপর কোন বিধান প্রযোজ্য হয় না। অতএব অপরাধী মাতার কারণে তার প্রোথিত সন্তান জাহান্নামী হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘একজনের পাপ অন্যজনে বহন করবে না’ (আন‘আম ৬/১৬৪)। অন্য হাদীছে রাসূল (ছাঃ) প্রোথিত সন্তানকে জান্নাতী বলেছেন (আবুদাঊদ হা/২৫২১, মিশকাত হা/৩৮৫৬, সনদ ছহীহ)। অতএব অত্র হাদীছ দ্বারা পূর্বের হাদীছটি ‘মানসূখ’ হ’তে পারে। জীবন্ত প্রোথিত কন্যা জিজ্ঞাসিত হবে মর্মে কুরআনেও বর্ণিত হয়েছে (তাকভীর ৮১/৮৯)। বিস্তারিত- তাফসীরুল কুরআন ৩০ তম পারা, উক্ত আয়াতের আলোচনা দ্রঃ।
লালমাটিয়া, ঢাকা।
উত্তর : কন্যা সন্তান প্রোথিতকারিণী মাতা জাহান্নামে যাবে তার উক্ত অপরাধ ও কুফরীর কারণে। কিন্তু উপরোক্ত হাদীছ অনুযায়ী প্রোথিত সন্তান জাহান্নামে কেন যাবে তার ব্যাখ্যায় বিদ্বানগণ বলেন, হাদীছটি একটি নির্দিষ্ট ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। আর তা হ’ল মুলায়কা নাম্নী জনৈকা মহিলার দুই ছেলে এসে তার মা সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ)-কে প্রশ্ন করেন যে, আমার মা জাহেলী যুগে মারা গেছেন। কিন্তু তিনি আত্মীয়তা সম্পর্ক রক্ষাকারীণী, অতিথিপরায়ণা এবং বিভিন্ন সৎকর্মে অভ্যস্ত ছিলেন। কিন্তু তিনি আমাদের একটি বোনকে প্রোথিত করার মাধ্যমে হত্যা করেন। এমতাবস্থায় তার সৎকর্মসমূহ তার উক্ত পাপের কাফফারা হবে কি? জবাবে রাসূল (ছাঃ) বললেন, প্রোথিতকারিণী ও প্রোথিত কন্যা উভয়ে জাহান্নামী হবে। তবে যদি প্রোথিতকারিণী ইসলাম কবুল করত তাহলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করতেন’ (আহমাদ হা/১৫৯৬৫)। একই মর্মে আবুদাঊদে (হা/৪৭১৭, মিশকাত হা/১১২) হাদীছ এসেছে। এ বিষয়ে ছাহেবে মির‘আত বলেন, এটি একটি বিশেষ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। হয়তবা ঐ প্রোথিত কন্যা সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) অহীর মাধ্যমে তার জাহান্নামী হওয়ার বিষয়টি অবগত হয়েছিলেন (মির‘আত হা/১১২-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)। কেননা ইসলামী শরী‘আতে নাবালকের উপর কোন বিধান প্রযোজ্য হয় না। অতএব অপরাধী মাতার কারণে তার প্রোথিত সন্তান জাহান্নামী হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘একজনের পাপ অন্যজনে বহন করবে না’ (আন‘আম ৬/১৬৪)। অন্য হাদীছে রাসূল (ছাঃ) প্রোথিত সন্তানকে জান্নাতী বলেছেন (আবুদাঊদ হা/২৫২১, মিশকাত হা/৩৮৫৬, সনদ ছহীহ)। অতএব অত্র হাদীছ দ্বারা পূর্বের হাদীছটি ‘মানসূখ’ হ’তে পারে। জীবন্ত প্রোথিত কন্যা জিজ্ঞাসিত হবে মর্মে কুরআনেও বর্ণিত হয়েছে (তাকভীর ৮১/৮৯)। বিস্তারিত- তাফসীরুল কুরআন ৩০ তম পারা, উক্ত আয়াতের আলোচনা দ্রঃ।
-আলী আহসান
রিয়াদ, সঊদী আরব।
উত্তর : মদীনার সনদ মূলতঃ শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে বসবাসের জন্য রাসূল (ছাঃ) ও মদীনার ইহূদীদের মধ্যেকার একটি চুক্তি পত্র। ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে কা‘ব বিন আশরাফের হত্যাকান্ডের পরে যা সম্পাদিত হয়েছিল।
মদীনার সংখ্যাগুরু আউস ও খাযরাজ নেতাগণ আগেই ইসলাম কবুল করায় এবং রাসূল (ছাঃ)-এর মদীনায় আগমনের পিছনে আউস ও খাযরাজ দুই প্রধান গোত্রের আমন্ত্রণ থাকায় তাদের সাথে সন্ধিচুক্তির কোন প্রশ্নই ছিল না। খাযরাজ গোত্রের আব্দুল্লাহ বিন উবাই নেতৃত্বের অভিলাষী থাকলেও গোত্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রকাশ্যে কিছু করার ক্ষমতা তার ছিল না। ফলে বদর যুদ্ধের পর সে এবং তার অনুসারীরা প্রকাশ্যে ইসলাম কবুল করে। তবে সেসময় মদীনার সংখ্যালঘু ইহূদী সম্প্রদায় মুসলমানদের নবতর জীবনধারার প্রতি এবং বিশেষভাবে রাসূল (ছাঃ)-এর প্রতি ঈর্ষান্বিত থাকলেও অতি ধূর্ত হওয়ার কারণে প্রকাশ্য বিরোধিতায় লিপ্ত হয়নি। সমস্যা ছিল কেবল কুরায়েশদের নিয়ে। তারা পত্র প্রেরণ ও অন্যান্য অপতৎপরতার মাধ্যমে মুনাফিক ও ইহূদীদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে রাসূল (ছাঃ) ও তার সাথীদেরকে মদীনা থেকে বহিষ্কারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে থাকে। একাজে তারা যাতে সফল না হয় সেজন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ২য় হিজরীতে সর্বপ্রথম মদীনার পার্শ্ববর্তী এলাকার বনু যামরাহ, বনু বুওয়াত্ব, বনু মুদলিজ প্রভৃতি গোত্রের সাথে সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদন করেন।
এভাবে রাসূল (ছাঃ) চেয়েছিলেন, যেন যুদ্ধাশংকা দূর হয় এবং সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু এ সময় মদীনায় ইহূদী চক্রান্ত চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে। যার নেতৃত্বে ছিল তাদের ধনশালী নেতা ও ব্যঙ্গ কবি কা‘ব বিন আশরাফ। রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে কটূক্তি করাই ছিল যার স্বভাব। অতঃপর তাকে হত্যা করা হয়। ফলে ইহূদীরা ভীত হয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে এলে রাসূল (ছাঃ) তাঁর ও তাদের মধ্যে একটি লিখিত চুক্তি সম্পাদনের আহবান জানান। অতঃপর নবী করীম (ছাঃ) তাঁর ও তাদের মধ্যে এবং মুসলমানদের মধ্যে সার্বজনীন একটা দলীল লিখে দেন’ (আবুদাঊদ হা/৩০০০)।
অত্র হাদীছ দৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে, চুক্তি লিখনের এই বিষয়টি হিজরতের পরেই নয়, বরং ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে কা‘ব বিন আশরাফের হত্যাকান্ডের পরে তা সম্পাদিত হয়েছিল।
অতএব ছহীহ হাদীছের আলোকে কেবল এটুকুই বলা যায় যে, এটি ছিল ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসের পরের ঘটনা। হিজরতের পরপরই নয়। নিঃসন্দেহে চুক্তিটি ছিল পারস্পরিক সন্ধিচুক্তি। কিন্তু চুক্তিটি কি ছিল, তার ভাষা কি ছিল, সেখানে কয়টি ধারা ছিল, কিছুই সঠিকভাবে বলার উপায় নেই।
তবে পার্শ্ববর্তী নিকট ও দূরের গোত্রসমূহের সাথে সন্ধিচুক্তিসমূহ সম্পাদনের পর ইহূদীদের সাথে অত্র চুক্তি সম্পাদনের ফলে প্রকৃত প্রস্তাবে ইসলামী খিলাফতের ভিত্তি স্থাপিত হয় এবং মদীনা তার রাজধানীতে পরিণত হয়। অতএব মদীনার সনদ ছিল একটি আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃসাম্প্রদায়িক চুক্তি, যার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ স্বার্থে ও একক লক্ষ্যে একটি উম্মাহ বা জাতি গঠিত হয়। আধুনিক পরিভাষায় যাকে ‘রাষ্ট্র’ বলা হয়। এই সনদ ছিল আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার সর্বপ্রথম ভিত্তি স্বরূপ। (বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) ‘মদীনার সনদ’ অধ্যায়)।
রিয়াদ, সঊদী আরব।
উত্তর : মদীনার সনদ মূলতঃ শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে বসবাসের জন্য রাসূল (ছাঃ) ও মদীনার ইহূদীদের মধ্যেকার একটি চুক্তি পত্র। ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে কা‘ব বিন আশরাফের হত্যাকান্ডের পরে যা সম্পাদিত হয়েছিল।
মদীনার সংখ্যাগুরু আউস ও খাযরাজ নেতাগণ আগেই ইসলাম কবুল করায় এবং রাসূল (ছাঃ)-এর মদীনায় আগমনের পিছনে আউস ও খাযরাজ দুই প্রধান গোত্রের আমন্ত্রণ থাকায় তাদের সাথে সন্ধিচুক্তির কোন প্রশ্নই ছিল না। খাযরাজ গোত্রের আব্দুল্লাহ বিন উবাই নেতৃত্বের অভিলাষী থাকলেও গোত্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রকাশ্যে কিছু করার ক্ষমতা তার ছিল না। ফলে বদর যুদ্ধের পর সে এবং তার অনুসারীরা প্রকাশ্যে ইসলাম কবুল করে। তবে সেসময় মদীনার সংখ্যালঘু ইহূদী সম্প্রদায় মুসলমানদের নবতর জীবনধারার প্রতি এবং বিশেষভাবে রাসূল (ছাঃ)-এর প্রতি ঈর্ষান্বিত থাকলেও অতি ধূর্ত হওয়ার কারণে প্রকাশ্য বিরোধিতায় লিপ্ত হয়নি। সমস্যা ছিল কেবল কুরায়েশদের নিয়ে। তারা পত্র প্রেরণ ও অন্যান্য অপতৎপরতার মাধ্যমে মুনাফিক ও ইহূদীদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে রাসূল (ছাঃ) ও তার সাথীদেরকে মদীনা থেকে বহিষ্কারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে থাকে। একাজে তারা যাতে সফল না হয় সেজন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ২য় হিজরীতে সর্বপ্রথম মদীনার পার্শ্ববর্তী এলাকার বনু যামরাহ, বনু বুওয়াত্ব, বনু মুদলিজ প্রভৃতি গোত্রের সাথে সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদন করেন।
এভাবে রাসূল (ছাঃ) চেয়েছিলেন, যেন যুদ্ধাশংকা দূর হয় এবং সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু এ সময় মদীনায় ইহূদী চক্রান্ত চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে। যার নেতৃত্বে ছিল তাদের ধনশালী নেতা ও ব্যঙ্গ কবি কা‘ব বিন আশরাফ। রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে কটূক্তি করাই ছিল যার স্বভাব। অতঃপর তাকে হত্যা করা হয়। ফলে ইহূদীরা ভীত হয়ে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে এলে রাসূল (ছাঃ) তাঁর ও তাদের মধ্যে একটি লিখিত চুক্তি সম্পাদনের আহবান জানান। অতঃপর নবী করীম (ছাঃ) তাঁর ও তাদের মধ্যে এবং মুসলমানদের মধ্যে সার্বজনীন একটা দলীল লিখে দেন’ (আবুদাঊদ হা/৩০০০)।
অত্র হাদীছ দৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে, চুক্তি লিখনের এই বিষয়টি হিজরতের পরেই নয়, বরং ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসে কা‘ব বিন আশরাফের হত্যাকান্ডের পরে তা সম্পাদিত হয়েছিল।
অতএব ছহীহ হাদীছের আলোকে কেবল এটুকুই বলা যায় যে, এটি ছিল ৩য় হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসের পরের ঘটনা। হিজরতের পরপরই নয়। নিঃসন্দেহে চুক্তিটি ছিল পারস্পরিক সন্ধিচুক্তি। কিন্তু চুক্তিটি কি ছিল, তার ভাষা কি ছিল, সেখানে কয়টি ধারা ছিল, কিছুই সঠিকভাবে বলার উপায় নেই।
তবে পার্শ্ববর্তী নিকট ও দূরের গোত্রসমূহের সাথে সন্ধিচুক্তিসমূহ সম্পাদনের পর ইহূদীদের সাথে অত্র চুক্তি সম্পাদনের ফলে প্রকৃত প্রস্তাবে ইসলামী খিলাফতের ভিত্তি স্থাপিত হয় এবং মদীনা তার রাজধানীতে পরিণত হয়। অতএব মদীনার সনদ ছিল একটি আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃসাম্প্রদায়িক চুক্তি, যার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ স্বার্থে ও একক লক্ষ্যে একটি উম্মাহ বা জাতি গঠিত হয়। আধুনিক পরিভাষায় যাকে ‘রাষ্ট্র’ বলা হয়। এই সনদ ছিল আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার সর্বপ্রথম ভিত্তি স্বরূপ। (বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) ‘মদীনার সনদ’ অধ্যায়)।
-ফায়ছাল, ধামরাই, ঢাকা।
উত্তর : সাধারণভাবে এটা জায়েয নয়। আল্লাহ বলেন, ‘পরপুরুষের সাথে কোমল কণ্ঠে তোমরা এমনভাবে কথা বলো না, যাতে যার অন্তরে ব্যাধি আছে, সে প্রলুব্ধ হয়’ (আহযাব ৩৩/৩২)। তবে প্রয়োজনের তাকীদে যেমন শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে নিরূপায় অবস্থায় সাধারণ তেলাওয়াত পরপুরুষের নিকটে শুনানোতে বাধা নেই (উছায়মীন, লিকাউশ শাহর প্রশ্ন নং ৫৫)। যেমন রাসূল (ছাঃ) নারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতেন এবং তাদের দাবীক্রমে তাদের শিক্ষা দানের জন্য একটি দিন নির্ধারণ করে দেন (বুখারী হা/১০১)।
উত্তর : সাধারণভাবে এটা জায়েয নয়। আল্লাহ বলেন, ‘পরপুরুষের সাথে কোমল কণ্ঠে তোমরা এমনভাবে কথা বলো না, যাতে যার অন্তরে ব্যাধি আছে, সে প্রলুব্ধ হয়’ (আহযাব ৩৩/৩২)। তবে প্রয়োজনের তাকীদে যেমন শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে নিরূপায় অবস্থায় সাধারণ তেলাওয়াত পরপুরুষের নিকটে শুনানোতে বাধা নেই (উছায়মীন, লিকাউশ শাহর প্রশ্ন নং ৫৫)। যেমন রাসূল (ছাঃ) নারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতেন এবং তাদের দাবীক্রমে তাদের শিক্ষা দানের জন্য একটি দিন নির্ধারণ করে দেন (বুখারী হা/১০১)।
-সায়মা, রাজশাহী।
উত্তর : সন্তানকে সার্বিক প্রতিপালনই পিতা-মাতার মৌলিক দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালন না করলে তাদেরকে আল্লাহর নিকট জবাবদিহিতার সম্মুখীন হ’তে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, মহিলা ও তার স্বামী তার সন্তানের দায়িত্বশীল। অতএব তাদেরকে স্বীয় দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হতে হবে (বুখারী হা/২৪০৯, মুসলিম হা/৪৮২৮)। সার্বিক দায়িত্ব সমূহের মধ্যে রয়েছে যেমন (১) তাদের ভরণ-পোষণের জন্য খরচ করা (বাক্বারাহ ২/২৩৩; বুখারী হা/৫৩৬৪) (২) আকীকা দেওয়া (বুখারী হা/৫৪৭১) (৩) সুন্দর নাম রাখা (মুসলিম হা/২১৩৯, ২১৩২; তিরমিযী, মিশকাত হা/৪৭৫২, ৪৭৭৪) (৪) খাৎনা করা (বুখারী হা/৫৮৯১; মিশকাত হা/৪৪২০) (৫) দ্বীনী জ্ঞান ও আমল শিক্ষা দেওয়া। যেমন ছালাত শিক্ষা প্রদান এবং প্রয়োজনে প্রহারকরণ (আবুদাউদ হা/৪৯৫; মিশকাত হা/৫৭২, ১২৪০) (৬) সময়মত বিবাহ দেওয়া (ইবনু মাজাহ হা/১৮৬৩; ছহীহাহ হা/১০৬৭) (৭) তাদের জন্য দো‘আ করা(ইবরাহীম ১৪/৪০) এবং (৮) তাদেরকে উপদেশ দেওয়া (লোকমান ৩১/১৩) ইত্যাদি।
উত্তর : সন্তানকে সার্বিক প্রতিপালনই পিতা-মাতার মৌলিক দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালন না করলে তাদেরকে আল্লাহর নিকট জবাবদিহিতার সম্মুখীন হ’তে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, মহিলা ও তার স্বামী তার সন্তানের দায়িত্বশীল। অতএব তাদেরকে স্বীয় দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হতে হবে (বুখারী হা/২৪০৯, মুসলিম হা/৪৮২৮)। সার্বিক দায়িত্ব সমূহের মধ্যে রয়েছে যেমন (১) তাদের ভরণ-পোষণের জন্য খরচ করা (বাক্বারাহ ২/২৩৩; বুখারী হা/৫৩৬৪) (২) আকীকা দেওয়া (বুখারী হা/৫৪৭১) (৩) সুন্দর নাম রাখা (মুসলিম হা/২১৩৯, ২১৩২; তিরমিযী, মিশকাত হা/৪৭৫২, ৪৭৭৪) (৪) খাৎনা করা (বুখারী হা/৫৮৯১; মিশকাত হা/৪৪২০) (৫) দ্বীনী জ্ঞান ও আমল শিক্ষা দেওয়া। যেমন ছালাত শিক্ষা প্রদান এবং প্রয়োজনে প্রহারকরণ (আবুদাউদ হা/৪৯৫; মিশকাত হা/৫৭২, ১২৪০) (৬) সময়মত বিবাহ দেওয়া (ইবনু মাজাহ হা/১৮৬৩; ছহীহাহ হা/১০৬৭) (৭) তাদের জন্য দো‘আ করা(ইবরাহীম ১৪/৪০) এবং (৮) তাদেরকে উপদেশ দেওয়া (লোকমান ৩১/১৩) ইত্যাদি।
১৬৭
প্রশ্ন (৬/২৮৬) : অনেক আলেমকে দেখা যায় শরী‘আতের মাসআলাগত বিষয়ে বিরোধী পক্ষের প্রতি মোটা অংকের অর্থের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। এরূপ চ্যালেঞ্জ প্রদান ও গ্রহণ কতটুকু শরী‘আতসম্মত?-সুহাইল, শিবগঞ্জ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : এগুলি নিতান্তই নীতি-বহির্ভূত কাজ। শরী‘আতের বিষয়বস্ত্তসমূহ নিয়ে এরূপ করা খেল-তামাশার শামিল। যা আখেরাতে চরম শাস্তিযোগ্য অপরাধ (লোকমান ৩১/৬)। বরং এভাবে টাকার চ্যালেঞ্জ দেওয়া জুয়ার পর্যায়ভুক্ত কাজ, যা হারাম (মায়েদাহ ৫/৯০)। অতএব এসব থেকে দূরে থাকা আবশ্যক। এক্ষেত্রে শরী‘আতসম্মত পন্থা হ’ল আন্তরিকতার সাথে সংশোধনের উদ্দেশ্যে একে অপরের ভুল ধরিয়ে দেওয়া এবং নিজেকে সংশোধন করা। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহবান কর প্রজ্ঞা ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে এবং তাদের সাথে বিতর্ক কর সুন্দর পন্থায়। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক ভালভাবেই জানেন কে তার পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি ভালভাবেই জানেন কে সুপথপ্রাপ্ত হয়েছে’ (নাহল ১৬/১২৫)।
উত্তর : এগুলি নিতান্তই নীতি-বহির্ভূত কাজ। শরী‘আতের বিষয়বস্ত্তসমূহ নিয়ে এরূপ করা খেল-তামাশার শামিল। যা আখেরাতে চরম শাস্তিযোগ্য অপরাধ (লোকমান ৩১/৬)। বরং এভাবে টাকার চ্যালেঞ্জ দেওয়া জুয়ার পর্যায়ভুক্ত কাজ, যা হারাম (মায়েদাহ ৫/৯০)। অতএব এসব থেকে দূরে থাকা আবশ্যক। এক্ষেত্রে শরী‘আতসম্মত পন্থা হ’ল আন্তরিকতার সাথে সংশোধনের উদ্দেশ্যে একে অপরের ভুল ধরিয়ে দেওয়া এবং নিজেকে সংশোধন করা। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহবান কর প্রজ্ঞা ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে এবং তাদের সাথে বিতর্ক কর সুন্দর পন্থায়। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক ভালভাবেই জানেন কে তার পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি ভালভাবেই জানেন কে সুপথপ্রাপ্ত হয়েছে’ (নাহল ১৬/১২৫)।
১৬৮
প্রশ্ন (৭/২৮৭) : ফেসবুক চ্যাটের কারণে স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্যের পর আমি ফেসবুক ব্যবহার করব না বলে কসম করি। বর্তমানে আমি তার সম্মতিতে ফেসবুক ব্যবহার করছি। এক্ষণে উক্ত কসম ভঙ্গের কারণে কোন কাফফারা দিতে হবে কি?-বাবু*, বাঘা, রাজশাহী।
*[আরবীতে সুন্দর ইসলামী নাম রাখুন! (স.স)]
উত্তর : কাফফারা দিতে হবে (মুসলিম হা/১৬৫০, মিশকাত হা/৩৪১৩)। কসম ভঙ্গের কাফফারা হ’ল দশজন মিসকীনকে মধ্যম মানের খাদ্য খাওয়ানো। অথবা তাদের কাপড় দান করা কিংবা একটি দাস মুক্ত করা। এতে অসমর্থ হ’লে তিন দিন ছিয়াম পালন করা (মায়েদাহ ৫/৮৯)।
*[আরবীতে সুন্দর ইসলামী নাম রাখুন! (স.স)]
উত্তর : কাফফারা দিতে হবে (মুসলিম হা/১৬৫০, মিশকাত হা/৩৪১৩)। কসম ভঙ্গের কাফফারা হ’ল দশজন মিসকীনকে মধ্যম মানের খাদ্য খাওয়ানো। অথবা তাদের কাপড় দান করা কিংবা একটি দাস মুক্ত করা। এতে অসমর্থ হ’লে তিন দিন ছিয়াম পালন করা (মায়েদাহ ৫/৮৯)।
-মতীউর রহমান
কৃষ্ণচন্দ্রপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : জামা‘আত চলাকালে এথেকে বিরত থাকা কর্তব্য। কারণ এতে মুছল্লীদের খুশূ-খুযূ বিনষ্ট হয়। ইবনু আববাস (রাঃ)-এর গোলাম শো‘বা বলেন, আমি ইবনু আববাসের পাশে ছালাতরত অবস্থায় আঙ্গুল ফুটালে তিনি ছালাত শেষে আমাকে ধমক দিয়ে বলেন, তোমার ধ্বংস হোক তুমি ছালাতের মধ্যে আঙ্গুল ফুটালে? (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/৭৩৫৮; ইরওয়া হা/৩৭৮)। তবে ছালাতের মধ্যে উঠা-বসা করতে যদি কোন অঙ্গ আপনা থেকেই ফুটে যায়, সেক্ষেত্রে কোন দোষ নেই।
কৃষ্ণচন্দ্রপুর, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : জামা‘আত চলাকালে এথেকে বিরত থাকা কর্তব্য। কারণ এতে মুছল্লীদের খুশূ-খুযূ বিনষ্ট হয়। ইবনু আববাস (রাঃ)-এর গোলাম শো‘বা বলেন, আমি ইবনু আববাসের পাশে ছালাতরত অবস্থায় আঙ্গুল ফুটালে তিনি ছালাত শেষে আমাকে ধমক দিয়ে বলেন, তোমার ধ্বংস হোক তুমি ছালাতের মধ্যে আঙ্গুল ফুটালে? (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/৭৩৫৮; ইরওয়া হা/৩৭৮)। তবে ছালাতের মধ্যে উঠা-বসা করতে যদি কোন অঙ্গ আপনা থেকেই ফুটে যায়, সেক্ষেত্রে কোন দোষ নেই।
১৭১
প্রশ্ন (১০/২৯০) : আমি ছালাত আদায় করি। কিন্তু আমার পরিবার করে না এবং কেউ কেউ তা করতে অস্বীকার করে। এক্ষণে আমার করণীয় কি?-নাজমুল ইসলাম, খয়রাবাদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : তাদের উপর আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না হয়ে সর্বাবস্থায় দাওয়াত অব্যাহত রাখতে হবে। প্রয়োজনে বাধ্য করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি তোমার পরিবারকে ছালাতের আদেশ দাও এবং তুমি এর উপর অবিচল থাক’ (ত্বোয়াহা ২০/১৩২)। পরিবারে কেউ ছালাতকে ইসলামের ফরয বিধান হিসাবে অস্বীকার করলে সে ‘কাফের’ পর্যায়ভুক্ত হয়ে যাবে। যার শাস্তি মৃত্যুদন্ড। যা বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের। উক্ত দায়িত্ব পালন না করলে সরকার গুনাহগার হবেন, অন্যেরা নয়। এমতাবস্থায় ঐ ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলতে হবে। আর কোনভাবেই না হ’লে অন্তরে তাদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করতে হবে(মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯১০)।
উত্তর : তাদের উপর আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না হয়ে সর্বাবস্থায় দাওয়াত অব্যাহত রাখতে হবে। প্রয়োজনে বাধ্য করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি তোমার পরিবারকে ছালাতের আদেশ দাও এবং তুমি এর উপর অবিচল থাক’ (ত্বোয়াহা ২০/১৩২)। পরিবারে কেউ ছালাতকে ইসলামের ফরয বিধান হিসাবে অস্বীকার করলে সে ‘কাফের’ পর্যায়ভুক্ত হয়ে যাবে। যার শাস্তি মৃত্যুদন্ড। যা বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের। উক্ত দায়িত্ব পালন না করলে সরকার গুনাহগার হবেন, অন্যেরা নয়। এমতাবস্থায় ঐ ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলতে হবে। আর কোনভাবেই না হ’লে অন্তরে তাদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করতে হবে(মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯১০)।
১৭২
প্রশ্ন (১১/২৯১) : ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী ‘যে জাতি কোন নারীকে ক্ষমতাসীন করে সে জাতি কখনোই সফলকাম হবে না’ (বুখারী)। এক্ষণে নারী নেতৃত্বাধীন দেশের পুরো দেশবাসী, না কেবল ভোটদাতারা এর অন্তর্ভুক্ত হবে?-আব্দুস সালাম, কানসাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : কেবল ভোটদাতা বা সমর্থন দাতারাই এ হাদীছের অন্তর্ভুক্ত হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের উপর অনেক শাসক নিযুক্ত হবে। যাদের কোন কাজ তোমরা পসন্দ করবে এবং কোন কাজ অপসন্দ করবে। এক্ষণে যে ব্যক্তি উক্ত অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করবে, সে দায়িত্বমুক্ত হবে। আর যে ব্যক্তি তা অপসন্দ করবে, সে (মুনাফেকী থেকে) নিরাপদ থাকবে। কিন্তু যে ব্যক্তি তাতে সন্তুষ্ট থাকবে ও তার অনুসরণ করবে... (সে তাদের ন্যায় গোনাহগার হবে) (মুসলিম হা/১৮৫৪, মিশকাত হা/৩৬৭১)।
উত্তর : কেবল ভোটদাতা বা সমর্থন দাতারাই এ হাদীছের অন্তর্ভুক্ত হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের উপর অনেক শাসক নিযুক্ত হবে। যাদের কোন কাজ তোমরা পসন্দ করবে এবং কোন কাজ অপসন্দ করবে। এক্ষণে যে ব্যক্তি উক্ত অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করবে, সে দায়িত্বমুক্ত হবে। আর যে ব্যক্তি তা অপসন্দ করবে, সে (মুনাফেকী থেকে) নিরাপদ থাকবে। কিন্তু যে ব্যক্তি তাতে সন্তুষ্ট থাকবে ও তার অনুসরণ করবে... (সে তাদের ন্যায় গোনাহগার হবে) (মুসলিম হা/১৮৫৪, মিশকাত হা/৩৬৭১)।
১৭৩
প্রশ্ন (১২/২৯২) : সরকারী এমপিওভুক্ত মাদ্রাসায় যাকাত, ফেৎরা, ওশর, কুরবানীর চামড়া ইত্যাদি গ্রহণ করা এবং তা প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় করা যাবে কি?-মুহাম্মাদ নূরুল ইসলাম
উনাইল আলিম মাদ্রাসা, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা।
উত্তর : সরকারী এমপিওভুক্ত মাদ্রাসায় এসব অর্থ গ্রহণ করা যাবে না। বরং এযুগে বেসরকারী মাদরাসা সমূহের মধ্যে যারা ছহীহ আক্বীদা ও আমল প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে এবং একদল দাঈ ইলাল্লাহ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে এবং যাদের পর্যাপ্ত আর্থিক সক্ষমতা নেই, কেবল তারাই এসব ‘ফী সাবীলিল্লাহ’ খাতের দানগুলি গ্রহণ করতে পারবে ইনশাআল্লাহ।
উনাইল আলিম মাদ্রাসা, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা।
উত্তর : সরকারী এমপিওভুক্ত মাদ্রাসায় এসব অর্থ গ্রহণ করা যাবে না। বরং এযুগে বেসরকারী মাদরাসা সমূহের মধ্যে যারা ছহীহ আক্বীদা ও আমল প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে এবং একদল দাঈ ইলাল্লাহ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে এবং যাদের পর্যাপ্ত আর্থিক সক্ষমতা নেই, কেবল তারাই এসব ‘ফী সাবীলিল্লাহ’ খাতের দানগুলি গ্রহণ করতে পারবে ইনশাআল্লাহ।
১৭৪
প্রশ্ন (১৩/২৯৩) : রামাযানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রিগুলিতে তারাবীহর জামা‘আত প্রথম রাতে না করে শেষ রাতে করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?-রাশেদুল হাসান, ধানমন্ডি, ঢাকা।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) ২৩, ২৫ ও ২৭ যে তিনদিন জামা‘আতের সাথে তারাবীহর ছালাত আদায় করেছেন সেই তিনদিন প্রথম রাতেই শুরু করেছেন। যা কখনো রাত্রির এক-তৃতীয়াংশ, কখনো অর্ধাংশ এবং শেষদিন সাহারীর আগ-পর্যন্ত ছালাত আদায় করেছেন। অতঃপর তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ইমামের সাথে শেষ পর্যন্ত রাত্রির ছালাত আদায় করবে, তার জন্য সারা রাত্রি ছালাত আদায়ের নেকী লেখা হবে (আবুদাঊদ হা/১৩৭৫, তিরমিযী, মিশকাত হা/১২৯৮)।
ইমাম আহমাদ (রাঃ)-কে তারাবীহর ছালাত শেষ রাত পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বললেন, না। বরং মুসলমানদের প্রচলিত আমলই আমার নিকটে অধিক প্রিয় (ইবনু কুদামা, আল-মুগনী ২/১২৫)।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) ২৩, ২৫ ও ২৭ যে তিনদিন জামা‘আতের সাথে তারাবীহর ছালাত আদায় করেছেন সেই তিনদিন প্রথম রাতেই শুরু করেছেন। যা কখনো রাত্রির এক-তৃতীয়াংশ, কখনো অর্ধাংশ এবং শেষদিন সাহারীর আগ-পর্যন্ত ছালাত আদায় করেছেন। অতঃপর তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ইমামের সাথে শেষ পর্যন্ত রাত্রির ছালাত আদায় করবে, তার জন্য সারা রাত্রি ছালাত আদায়ের নেকী লেখা হবে (আবুদাঊদ হা/১৩৭৫, তিরমিযী, মিশকাত হা/১২৯৮)।
ইমাম আহমাদ (রাঃ)-কে তারাবীহর ছালাত শেষ রাত পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বললেন, না। বরং মুসলমানদের প্রচলিত আমলই আমার নিকটে অধিক প্রিয় (ইবনু কুদামা, আল-মুগনী ২/১২৫)।
১৭৫
প্রশ্ন (১৪/২৯৪) : কুরআন-হাদীছ থেকে দো‘আ পড়ে পানিতে ফুঁক দিয়ে সেই পানি খাওয়া বা তা দিয়ে গোসল করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?-আব্দুল করীম, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : এতে কোন বাধা নেই। আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত, একদিন ছালাতরত অবস্থায় রাসূল (ছাঃ)-কে বিচ্ছু দংশন করলে ছালাত শেষে তিনি বললেন, বিচ্ছুর উপর আল্লাহর লানত বর্ষিত হৌক! সে কাউকে ছাড়ে না এমনকি মুছল্লীকেও নয়। অতঃপর তিনি পানি এবং লবন নিয়ে ক্ষতস্থানের উপর ঘসতে লাগলেন এবং সূরা নাস ও ফালাক্ব পড়তে থাকলেন (ত্বাবারাণী ছাগীর, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৫৪৮)।
আয়েশা (রাঃ) পানিতে দো‘আ পাঠ করে উক্ত পানি দ্বারা রোগীর দেহ ধৌত করাকে দোষের কিছু মনে করতেন না (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/২৩৯৭৫, সনদ ছহীহ; আব্দুল মুহসিন আববাদ, আবুদাঊদ হা/৩৮৮৫-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)।
উত্তর : এতে কোন বাধা নেই। আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত, একদিন ছালাতরত অবস্থায় রাসূল (ছাঃ)-কে বিচ্ছু দংশন করলে ছালাত শেষে তিনি বললেন, বিচ্ছুর উপর আল্লাহর লানত বর্ষিত হৌক! সে কাউকে ছাড়ে না এমনকি মুছল্লীকেও নয়। অতঃপর তিনি পানি এবং লবন নিয়ে ক্ষতস্থানের উপর ঘসতে লাগলেন এবং সূরা নাস ও ফালাক্ব পড়তে থাকলেন (ত্বাবারাণী ছাগীর, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৫৪৮)।
আয়েশা (রাঃ) পানিতে দো‘আ পাঠ করে উক্ত পানি দ্বারা রোগীর দেহ ধৌত করাকে দোষের কিছু মনে করতেন না (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/২৩৯৭৫, সনদ ছহীহ; আব্দুল মুহসিন আববাদ, আবুদাঊদ হা/৩৮৮৫-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)।
১৭৬
প্রশ্ন (১৫/২৯৫) : কলম, প্লাস্টিক ইত্যাদি ফ্যাক্টরীর মালিকেরা যদি সূদের উপর ঋণ নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালায়, সেসব প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করা যাবে কি?-হাসান বিন নযরুল, ঢাকা।
উত্তর : বৈধ জিনিস উৎপাদনকারী, বৈধ কোন কাজে প্রতিষ্ঠিত যেকোন কোম্পানীতে চাকুরী করা যাবে। যদিও তার মজুরী সূদযুক্ত অর্থ দিয়ে প্রদান করা হয়। আর এজন্য দায়ী হবে উক্ত সূদের গ্রহীতা কোম্পানীর মালিক (উছায়মীন, লিকাউল বাবিল মাফতূহ ১৫/৫৯)। তবে সরাসরি সূদী লেনদেন হয় যেমন ব্যাংক, বীমা সহ এরূপ কোন প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মে অংশগ্রহণ করা যাবে না।
উত্তর : বৈধ জিনিস উৎপাদনকারী, বৈধ কোন কাজে প্রতিষ্ঠিত যেকোন কোম্পানীতে চাকুরী করা যাবে। যদিও তার মজুরী সূদযুক্ত অর্থ দিয়ে প্রদান করা হয়। আর এজন্য দায়ী হবে উক্ত সূদের গ্রহীতা কোম্পানীর মালিক (উছায়মীন, লিকাউল বাবিল মাফতূহ ১৫/৫৯)। তবে সরাসরি সূদী লেনদেন হয় যেমন ব্যাংক, বীমা সহ এরূপ কোন প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মে অংশগ্রহণ করা যাবে না।
১৭৭
প্রশ্ন (১৬/২৯৬) : আমাদের দেশে সাধারণত সেশন জটের কারণে স্নাতক পাশ করতে ২-৩ বছর লস হয়। সেকারণ এসএসসি পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীরা বয়স কমিয়ে দেয়। এরূপ কাজ শরী‘আতসম্মত হবে কি?-আরীফুর রহমান, মিয়ামী, জাপান।
উত্তর : এরূপ কাজ শরী‘আত সম্মত হবে না। কারণ এটি প্রতারণা এবং মিথ্যার অন্তর্ভুক্ত, যা নিঃসন্দেহে হারাম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি প্রতারণা করে, সে আমার দলভুক্ত নয় (মুসলিম হা/১০১; মিশকাত হা/৩৫২০)। এক্ষণে এরূপ কাজ করে থাকলে এবং তা পরিবর্তন করা সম্ভব না হ’লে এজন্য আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
উত্তর : এরূপ কাজ শরী‘আত সম্মত হবে না। কারণ এটি প্রতারণা এবং মিথ্যার অন্তর্ভুক্ত, যা নিঃসন্দেহে হারাম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি প্রতারণা করে, সে আমার দলভুক্ত নয় (মুসলিম হা/১০১; মিশকাত হা/৩৫২০)। এক্ষণে এরূপ কাজ করে থাকলে এবং তা পরিবর্তন করা সম্ভব না হ’লে এজন্য আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
১৭৮
প্রশ্ন (১৭/২৯৭) : ছয় বছরের শিশু সাথে নিয়ে মসজিদে ছালাত আদায় করলে ইমাম ছাহেব ‘শিশুরা ছালাতের একাগ্রতা বিনষ্ট করে’-এই কারণ দেখিয়ে সাথে আনতে নিষেধ করেছেন। এ নিষেধাজ্ঞা শরী‘আতসম্মত কি?-লুৎফর রহমান, উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ।
উত্তর : ছালাতের শিশুদের সাথে করে নিয়ে যাওয়া অন্যায় নয় এবং শিশুরা ছালাতের একাগ্রতা বিনষ্ট করে এটাও ঠিক নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) শিশুর ক্রন্দন শ্রবণের কারণে ছালাত সংক্ষিপ্ত করেছেন (বুখারী হা/৭০৯, মুসলিম হা/৪৭০। কিন্তু শিশুকে সাথে আনতে নিষেধ করেননি। উপরন্তু তিনি নিজেও নাতনীকে নিয়ে জামা‘আতে ছালাত আদায় করেছেন। আবু ক্বাতাদাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে লোকদের ইমামতি করতে দেখেছি, এমতাবস্থায় নাতনী উমামা বিনতে আবিল ‘আছ তার কাঁধে ছিল। যখন তিনি রুকূতে যেতেন, তখন তাকে রেখে দিতেন এবং যখন সিজদা হ’তে উঠতেন, তখন তাকে (পুনরায় কাঁধে) ফিরিয়ে নিতেন (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৯৮৪ ‘ছালাত’ অধ্যায়)। এছাড়া তিনি হাসান ও হোসাইন (রাঃ)-কে কোলে নিয়ে খুৎবাও দিয়েছেন (আবুদাঊদ হা/১১০৯, ইবনু মাজাহ হা/২৯২৬)। অতএব ইমাম ছাহেবের এরূপ নিষেধাজ্ঞা জারি করা ঠিক হয়নি।
উত্তর : ছালাতের শিশুদের সাথে করে নিয়ে যাওয়া অন্যায় নয় এবং শিশুরা ছালাতের একাগ্রতা বিনষ্ট করে এটাও ঠিক নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) শিশুর ক্রন্দন শ্রবণের কারণে ছালাত সংক্ষিপ্ত করেছেন (বুখারী হা/৭০৯, মুসলিম হা/৪৭০। কিন্তু শিশুকে সাথে আনতে নিষেধ করেননি। উপরন্তু তিনি নিজেও নাতনীকে নিয়ে জামা‘আতে ছালাত আদায় করেছেন। আবু ক্বাতাদাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে লোকদের ইমামতি করতে দেখেছি, এমতাবস্থায় নাতনী উমামা বিনতে আবিল ‘আছ তার কাঁধে ছিল। যখন তিনি রুকূতে যেতেন, তখন তাকে রেখে দিতেন এবং যখন সিজদা হ’তে উঠতেন, তখন তাকে (পুনরায় কাঁধে) ফিরিয়ে নিতেন (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৯৮৪ ‘ছালাত’ অধ্যায়)। এছাড়া তিনি হাসান ও হোসাইন (রাঃ)-কে কোলে নিয়ে খুৎবাও দিয়েছেন (আবুদাঊদ হা/১১০৯, ইবনু মাজাহ হা/২৯২৬)। অতএব ইমাম ছাহেবের এরূপ নিষেধাজ্ঞা জারি করা ঠিক হয়নি।
১৭৯
প্রশ্ন (১৮/২৯৮) : মসজিদে নববীতে একাধারে ৪০ ওয়াক্ত ছালাত আদায়কারী জাহান্নামের আগুন ও মুনাফিকের আলামত থেকে মুক্তি পাবে মর্মে কোন বিধান আছে কি?-ইউসুফ, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
উত্তর : এ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি মুনকার ও যঈফ। এর সনদে নাবীত্ব ইবনু ওমর নামে একজন অপরিচিত রাবী আছেন (আহমাদ হা/১২৬০৫; সিলসিলা যঈফাহ হা/৩৬৪, সনদ যঈফ- আলবানী, আরনাঊত্ব)। অতএব উক্ত আমল অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
উত্তর : এ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি মুনকার ও যঈফ। এর সনদে নাবীত্ব ইবনু ওমর নামে একজন অপরিচিত রাবী আছেন (আহমাদ হা/১২৬০৫; সিলসিলা যঈফাহ হা/৩৬৪, সনদ যঈফ- আলবানী, আরনাঊত্ব)। অতএব উক্ত আমল অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
-আফিয়া সুলতানা, শরী‘আতপুর।
উত্তর : স্বামী-স্ত্রী জামা‘আত করে ছালাত আদায় করতে পারে। তবে স্ত্রীকে স্বামীর পিছনে দাঁড়াতে হবে (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/১৭৪৪১, মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/৭৫৪৭, সনদ ছহীহ)। এতদ্ব্যতীত পুরুষ ও নারী একত্রে জামা‘আত করার সময় নারী পিছনে দাঁড়াবে। যেমন আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) একদিন আমাকে এবং আমার মা ও খালাকে নিয়ে ছালাত আদায় করেছিলেন। তখন আমাকে তাঁর ডান পার্শ্বে এবং মহিলাদের আমাদের পিছনে দাঁড় করিয়েছিলেন (মুসলিম হা/৬৬০)।
উত্তর : স্বামী-স্ত্রী জামা‘আত করে ছালাত আদায় করতে পারে। তবে স্ত্রীকে স্বামীর পিছনে দাঁড়াতে হবে (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/১৭৪৪১, মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/৭৫৪৭, সনদ ছহীহ)। এতদ্ব্যতীত পুরুষ ও নারী একত্রে জামা‘আত করার সময় নারী পিছনে দাঁড়াবে। যেমন আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) একদিন আমাকে এবং আমার মা ও খালাকে নিয়ে ছালাত আদায় করেছিলেন। তখন আমাকে তাঁর ডান পার্শ্বে এবং মহিলাদের আমাদের পিছনে দাঁড় করিয়েছিলেন (মুসলিম হা/৬৬০)।
১৮১
প্রশ্ন (২০/৩০০) : একসময় গান-বাজনা করতাম এবং ছাত্র-ছাত্রীদের শিখাতাম। এখন সেপথ থেকে ফিরে আসলেও শিখানোর কারণে ঐ ছাত্র-ছাত্রীদের কৃত গোনাহের যে অংশ নিয়মিতভাবে আমার আমালনামায় যোগ হচ্ছে, তা থেকে বাঁচার উপায় কি?-ফযলুল হক, শিবরামপুর, ফরিদপুর।
উত্তর : কেউ খালেছ নিয়তে তওবা করলে আল্লাহ তার পূর্বে কৃত সকল গুনাহ মাফ করে দেন। আল্লাহ বলেন, যারা তওবা করে ও সংশোধিত হয় এবং সত্য প্রকাশ করে, বস্ত্ততঃ আমি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (বাক্বারাহ ২/১৬০)। অতএব তাদের কৃত গোনাহ আপনার আমলনামায় যুক্ত হবে না ইনশাআল্লাহ। তবে সম্ভব হ’লে উক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের গান-বাজনা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে হবে।
উত্তর : কেউ খালেছ নিয়তে তওবা করলে আল্লাহ তার পূর্বে কৃত সকল গুনাহ মাফ করে দেন। আল্লাহ বলেন, যারা তওবা করে ও সংশোধিত হয় এবং সত্য প্রকাশ করে, বস্ত্ততঃ আমি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (বাক্বারাহ ২/১৬০)। অতএব তাদের কৃত গোনাহ আপনার আমলনামায় যুক্ত হবে না ইনশাআল্লাহ। তবে সম্ভব হ’লে উক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের গান-বাজনা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে হবে।
-মীযানুর রহমান, দিনাজপুর।
উত্তর : ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ভ্রান্ত ধর্ম-বিশ্বাসের মৌলিক জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না। এরূপ কাজ উক্ত ধর্মের প্রচার-প্রসারে সহযোগিতার শামিল। আর আল্লাহ অন্যায় কর্মে সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন (মায়েদাহ ৫/২)। এছাড়া রাসূল (ছাঃ) খৃষ্টানদের ক্রুশ বা পৌত্তলিকদের ছবি-মূর্তি দেখলে ধ্বংস করে দিতেন (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/৪৪৯১, ৪৪৯৩)। অতএব এ সকল বস্ত্ত ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ৩/৪৩৭)।
উত্তর : ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ভ্রান্ত ধর্ম-বিশ্বাসের মৌলিক জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না। এরূপ কাজ উক্ত ধর্মের প্রচার-প্রসারে সহযোগিতার শামিল। আর আল্লাহ অন্যায় কর্মে সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন (মায়েদাহ ৫/২)। এছাড়া রাসূল (ছাঃ) খৃষ্টানদের ক্রুশ বা পৌত্তলিকদের ছবি-মূর্তি দেখলে ধ্বংস করে দিতেন (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/৪৪৯১, ৪৪৯৩)। অতএব এ সকল বস্ত্ত ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ৩/৪৩৭)।
-খাদেমুল ইসলাম, রংপুর।
উত্তর : পেটে বাচ্চা থাকা অবস্থায় পশু কুরবাণী করায় শরী‘আতে কোন বাধা নেই। এছাড়া উক্ত পশুর গোশত খাওয়া যাবে। এমনকি রুচি হ’লে পেটের বাচ্চাও খেতে পারে। আবু সাঈদ খুদরী বলেন, আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল! আমরা উটনী, গাভী ও ছাগী যবেহ করি এবং কখনো কখনো আমরা তার পেটে বাচ্চা পাই। আমরা ঐ বাচ্চা ফেলে দিব, না খাব? রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘তোমাদের ইচ্ছা হ’লে খাও। কারণ বাচ্চার মাকে যবেহ করা বাচ্চাকে যবেহ করার শামিল’ (আবুদাউদ হা/২৮২৮; মিশকাত হা/৪০৯১-৯২)।
উত্তর : পেটে বাচ্চা থাকা অবস্থায় পশু কুরবাণী করায় শরী‘আতে কোন বাধা নেই। এছাড়া উক্ত পশুর গোশত খাওয়া যাবে। এমনকি রুচি হ’লে পেটের বাচ্চাও খেতে পারে। আবু সাঈদ খুদরী বলেন, আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল! আমরা উটনী, গাভী ও ছাগী যবেহ করি এবং কখনো কখনো আমরা তার পেটে বাচ্চা পাই। আমরা ঐ বাচ্চা ফেলে দিব, না খাব? রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘তোমাদের ইচ্ছা হ’লে খাও। কারণ বাচ্চার মাকে যবেহ করা বাচ্চাকে যবেহ করার শামিল’ (আবুদাউদ হা/২৮২৮; মিশকাত হা/৪০৯১-৯২)।
১৮৪
প্রশ্ন (২৩/৩০৩) : একজন প্রাণী চিকিৎসক হিসাবে কুকুর, বিড়াল ইত্যাদির চিকিৎসা করে অর্থ উপার্জন করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?-ডা. আনোয়ার হোসাইন, পীরগঞ্জ, রংপুর।
উত্তর : চিকিৎসক হিসাবে কুকুর, বিড়াল ইত্যাদির চিকিৎসা করা এবং তার বিনিময় গ্রহণ করায় বাধা নেই। এটি পশুদের প্রতি দয়ার নিদর্শন, যাতে প্রভূত নেকী রয়েছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, এক লোক এক পিপাসার্ত কুকুরকে পানি পান করানোর কারণে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। ছাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! প্রাণীর জীবন রক্ষায় ছওয়াব রয়েছে? তিনি বললেন, প্রত্যেক তাযা প্রাণ রক্ষায় ছওয়াব রয়েছে (বুখারী হা/২৩৬৩, মিশকাত হা/১৯০২)। তিনি বলেন, একজন ব্যভিচারী নারী একটি পিপাসার্ত কুকুরকে পানি পান করানোর কারণে জান্নাতে যাবে (বুখারী হা/৩৪৬৭)।
উত্তর : চিকিৎসক হিসাবে কুকুর, বিড়াল ইত্যাদির চিকিৎসা করা এবং তার বিনিময় গ্রহণ করায় বাধা নেই। এটি পশুদের প্রতি দয়ার নিদর্শন, যাতে প্রভূত নেকী রয়েছে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, এক লোক এক পিপাসার্ত কুকুরকে পানি পান করানোর কারণে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। ছাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! প্রাণীর জীবন রক্ষায় ছওয়াব রয়েছে? তিনি বললেন, প্রত্যেক তাযা প্রাণ রক্ষায় ছওয়াব রয়েছে (বুখারী হা/২৩৬৩, মিশকাত হা/১৯০২)। তিনি বলেন, একজন ব্যভিচারী নারী একটি পিপাসার্ত কুকুরকে পানি পান করানোর কারণে জান্নাতে যাবে (বুখারী হা/৩৪৬৭)।
-ফীরোয আহমাদ, রাজশাহী।
উত্তর : উক্ত অবস্থায় ছালাত ছেড়ে দিয়ে কিছু মুছল্লী অজ্ঞান ব্যক্তির সেবা করবে এবং অন্যরা অন্য কাউকে ইমামতির দায়িত্ব দিয়ে বাকী ছালাত আদায় করবে। কারণ এতে অজ্ঞান ব্যক্তির জীবনাবসানের আশংকা রয়েছে। যেমন এরূপ আশংকা থাকায় রাসূল (ছাঃ) ছালাতরত অবস্থায় সাপ ও বিচ্ছু মারতে বলেছেন (আহমাদ, আবুদাঊদ, নাসাঈ, তিরমিযী, মিশকাত হা/১০০৪)। ওমর (রাঃ) ছালাতরত অবস্থায় আহত হ’লে উপস্থিত ছাহাবীগণ তাঁকে নিয়ে তার বাড়িতে যান। বাকীদের নিয়ে আব্দুর রহমান বিন আওফ (রাঃ) সংক্ষিপ্ততম সূরা দিয়ে ফজরের ছালাত আদায় করেন (ছহীহ ইবনু হিববান হা/৬৯০৫, সনদ ছহীহ; আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৭/১৩৭)।
উত্তর : উক্ত অবস্থায় ছালাত ছেড়ে দিয়ে কিছু মুছল্লী অজ্ঞান ব্যক্তির সেবা করবে এবং অন্যরা অন্য কাউকে ইমামতির দায়িত্ব দিয়ে বাকী ছালাত আদায় করবে। কারণ এতে অজ্ঞান ব্যক্তির জীবনাবসানের আশংকা রয়েছে। যেমন এরূপ আশংকা থাকায় রাসূল (ছাঃ) ছালাতরত অবস্থায় সাপ ও বিচ্ছু মারতে বলেছেন (আহমাদ, আবুদাঊদ, নাসাঈ, তিরমিযী, মিশকাত হা/১০০৪)। ওমর (রাঃ) ছালাতরত অবস্থায় আহত হ’লে উপস্থিত ছাহাবীগণ তাঁকে নিয়ে তার বাড়িতে যান। বাকীদের নিয়ে আব্দুর রহমান বিন আওফ (রাঃ) সংক্ষিপ্ততম সূরা দিয়ে ফজরের ছালাত আদায় করেন (ছহীহ ইবনু হিববান হা/৬৯০৫, সনদ ছহীহ; আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৭/১৩৭)।
১৮৬
প্রশ্ন (২৫/৩০৫) : জনৈক আলেম বলেন, ইবরাহীম (আঃ) আমাদের ‘জাতির পিতা’-একথা ভুল। বরং তিনি কুরায়েশ বংশের পিতা। এ বক্তব্যের সত্যতা আছে কি?-জুয়েল মোল্লা*, ফরিদপুর।
*[আরবীতে সুন্দর ইসলামী নাম রাখুন! (স.স)]
উত্তর : বক্তব্যটি সঠিক নয়। ইবরাহীম (আঃ) কেবল মুসলিম জাতির পিতা নন বরং তিনি ছিলেন ইহূদী-খৃষ্টান-মুসলমান সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পিতা। কারণ আদম (আঃ) হ’তে ইবরাহীম (আঃ) পর্যন্ত সকল নবী ও রাসূল বাদে পরবর্তী সকল নবী ও রাসূল তার বংশধর’ (হাদীদ ৫৭/২৬; ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা আলে ইমরান ২৩-২৪ ও আন‘আম ৮৪ আয়াত)। তিনি যেমন পুত্র ইসমাঈলের পিতা হিসাবে আরব জাতির পিতা ছিলেন। তেমনি অপর পুত্র ইসহাক (আঃ)-এর পিতা হিসাবে বনু ইস্রাঈলেরও পিতা ছিলেন (উছায়মীন, লিকাউল বাবিল মাফতূহ ১৬/১৮৯)। এছাড়া মুসলিম জাতির পিতা বলে আখ্যায়িত করে আল্লাহ বলেন, مِلَّةَ أَبِيكُمْ إِبْرَاهِيمَ ‘তোমরা তোমাদের পিতা ইবরাহীমের ধর্মের উপর কায়েম থাক’ (হজ্জ ৭৮)। উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) সকাল-সন্ধ্যা একটি দো‘আ পাঠ করতেন। যার মধ্যে তিনি বলতেন, আমি সকাল করলাম ... আমাদের পিতা ইবরাহীমের মিল্লাতের উপর, যিনি ছিলেন একনিষ্ঠ ও আজ্ঞাবহ’ (দারেমী, আহমাদ হা/১৫৩৬৪; ছহীহাহ হা/২৯৮৯)।
*[আরবীতে সুন্দর ইসলামী নাম রাখুন! (স.স)]
উত্তর : বক্তব্যটি সঠিক নয়। ইবরাহীম (আঃ) কেবল মুসলিম জাতির পিতা নন বরং তিনি ছিলেন ইহূদী-খৃষ্টান-মুসলমান সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পিতা। কারণ আদম (আঃ) হ’তে ইবরাহীম (আঃ) পর্যন্ত সকল নবী ও রাসূল বাদে পরবর্তী সকল নবী ও রাসূল তার বংশধর’ (হাদীদ ৫৭/২৬; ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা আলে ইমরান ২৩-২৪ ও আন‘আম ৮৪ আয়াত)। তিনি যেমন পুত্র ইসমাঈলের পিতা হিসাবে আরব জাতির পিতা ছিলেন। তেমনি অপর পুত্র ইসহাক (আঃ)-এর পিতা হিসাবে বনু ইস্রাঈলেরও পিতা ছিলেন (উছায়মীন, লিকাউল বাবিল মাফতূহ ১৬/১৮৯)। এছাড়া মুসলিম জাতির পিতা বলে আখ্যায়িত করে আল্লাহ বলেন, مِلَّةَ أَبِيكُمْ إِبْرَاهِيمَ ‘তোমরা তোমাদের পিতা ইবরাহীমের ধর্মের উপর কায়েম থাক’ (হজ্জ ৭৮)। উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) সকাল-সন্ধ্যা একটি দো‘আ পাঠ করতেন। যার মধ্যে তিনি বলতেন, আমি সকাল করলাম ... আমাদের পিতা ইবরাহীমের মিল্লাতের উপর, যিনি ছিলেন একনিষ্ঠ ও আজ্ঞাবহ’ (দারেমী, আহমাদ হা/১৫৩৬৪; ছহীহাহ হা/২৯৮৯)।
-আব্দুছ ছামাদ, পবা, রাজশাহী।
উত্তর : কথা ও কাজের মধ্যে মিল থাকা মুমিনের অন্যতম গুণ। যার কথা ও কাজের মধ্যে মিল নেই, তার পরিণতি সম্পর্কে কুরআন ও হাদীছে কঠোর সাবধান বাণী উচ্চারিত হয়েছে (ছফ ২; বুখারী হা/৩২৬৭, মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৩৯; ‘সৎ কাজের নির্দেশ’ অনুচ্ছেদ)। নিজে সৎকাজ করা এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকা যেমন ওয়াজিব, তেমনি অপরকে সৎকাজের উপদেশ দেওয়া এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করাও ওয়াজিব। তবে একটি ওয়াজিব পালন করতে না পারলেও আরেকটি ওয়াজিব ত্যাগ করা যাবে না। সর্বদা উপদেশ দিয়ে যেতে হবে। কারণ আল্লাহ বলেন, ‘তুমি উপদেশ দাও। কারণ উপদেশ মুমিনদের উপকার করে’ (যারিয়াত ৫১/৫৫)। তাবেঈ বিদ্বান সাঈদ বিন জুবায়ের (রহঃ) বলেন, ‘মানুষ যদি নিজে করতে না পারার কারণে সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা থেকে বিরত থাকত, তাহ’লে সৎ-অসৎ কাজের আদেশ-নিষেধকারী খুঁজে পাওয়া যেত না’ (আলোচনা দ্রঃ ইবনু কাছীর, বাক্বারাহ ৪৪ আয়াতের ব্যাখ্যা)।
অতএব কারো আদেশ-নিষেধ যদি শরী‘আতসম্মত হয়, সেক্ষেত্রে তা মেনে চলায় কোন বাধা নেই। আল্লাহ বলেন, সুসংবাদ দাও আমার ঐ সব বান্দাদেরকে’ ‘যারা মনোযোগ দিয়ে কথা শোনে এবং তার উত্তমটি গ্রহণ করে’ (যুমার ৩৯/১৭-১৮)। এখানে ‘উত্তম কথা’ বলতে ‘কুরআন ও হাদীছ’কে বুঝানো হয়েছে।
তবে শরী‘আতের আদেশ-নিষেধ গ্রহণের সময় ছহীহ আক্বীদা ও আমলসম্পন্ন আলেম ও তাদের লেখনী থেকে গ্রহণ করতে হবে। শিরক বা বিদ‘আতপন্থীদের নিকট থেকে নয়।
ওমর (রাঃ) বলেন, তোমরা রায়পন্থীদের থেকে দূরে থাক। ওরা সুন্নাতের শত্রু (দারাকুৎনী হা/৪২৩৬, সিলসিলাতুল আছার আছ-ছহীহাহ হা/২৭৭)। তাবেঈ বিদ্বান ইবনু সীরীন ও হাসান বাছরী বলেন, তোমরা কখনোই বিদ‘আতী ও ঝগড়াটে লোকদের সাথে বসবে না, তাদের সাথে তর্কে জড়াবে না ও তাদের কোন কথা শুনবে না (দারেমী হা/৪০১)। ইবনু সীরীন পরিষ্কারভাবে বলেন, নিশ্চয়ই কুরআন-হাদীছের ইলম হ’ল দ্বীন। অতএব তোমরা দেখ কার কাছ থেকে দ্বীন গ্রহণ করছ’ (মুক্বাদ্দামা মুসলিম, দারেমী হা/৪২৪)।
উত্তর : কথা ও কাজের মধ্যে মিল থাকা মুমিনের অন্যতম গুণ। যার কথা ও কাজের মধ্যে মিল নেই, তার পরিণতি সম্পর্কে কুরআন ও হাদীছে কঠোর সাবধান বাণী উচ্চারিত হয়েছে (ছফ ২; বুখারী হা/৩২৬৭, মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৩৯; ‘সৎ কাজের নির্দেশ’ অনুচ্ছেদ)। নিজে সৎকাজ করা এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকা যেমন ওয়াজিব, তেমনি অপরকে সৎকাজের উপদেশ দেওয়া এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করাও ওয়াজিব। তবে একটি ওয়াজিব পালন করতে না পারলেও আরেকটি ওয়াজিব ত্যাগ করা যাবে না। সর্বদা উপদেশ দিয়ে যেতে হবে। কারণ আল্লাহ বলেন, ‘তুমি উপদেশ দাও। কারণ উপদেশ মুমিনদের উপকার করে’ (যারিয়াত ৫১/৫৫)। তাবেঈ বিদ্বান সাঈদ বিন জুবায়ের (রহঃ) বলেন, ‘মানুষ যদি নিজে করতে না পারার কারণে সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা থেকে বিরত থাকত, তাহ’লে সৎ-অসৎ কাজের আদেশ-নিষেধকারী খুঁজে পাওয়া যেত না’ (আলোচনা দ্রঃ ইবনু কাছীর, বাক্বারাহ ৪৪ আয়াতের ব্যাখ্যা)।
অতএব কারো আদেশ-নিষেধ যদি শরী‘আতসম্মত হয়, সেক্ষেত্রে তা মেনে চলায় কোন বাধা নেই। আল্লাহ বলেন, সুসংবাদ দাও আমার ঐ সব বান্দাদেরকে’ ‘যারা মনোযোগ দিয়ে কথা শোনে এবং তার উত্তমটি গ্রহণ করে’ (যুমার ৩৯/১৭-১৮)। এখানে ‘উত্তম কথা’ বলতে ‘কুরআন ও হাদীছ’কে বুঝানো হয়েছে।
তবে শরী‘আতের আদেশ-নিষেধ গ্রহণের সময় ছহীহ আক্বীদা ও আমলসম্পন্ন আলেম ও তাদের লেখনী থেকে গ্রহণ করতে হবে। শিরক বা বিদ‘আতপন্থীদের নিকট থেকে নয়।
ওমর (রাঃ) বলেন, তোমরা রায়পন্থীদের থেকে দূরে থাক। ওরা সুন্নাতের শত্রু (দারাকুৎনী হা/৪২৩৬, সিলসিলাতুল আছার আছ-ছহীহাহ হা/২৭৭)। তাবেঈ বিদ্বান ইবনু সীরীন ও হাসান বাছরী বলেন, তোমরা কখনোই বিদ‘আতী ও ঝগড়াটে লোকদের সাথে বসবে না, তাদের সাথে তর্কে জড়াবে না ও তাদের কোন কথা শুনবে না (দারেমী হা/৪০১)। ইবনু সীরীন পরিষ্কারভাবে বলেন, নিশ্চয়ই কুরআন-হাদীছের ইলম হ’ল দ্বীন। অতএব তোমরা দেখ কার কাছ থেকে দ্বীন গ্রহণ করছ’ (মুক্বাদ্দামা মুসলিম, দারেমী হা/৪২৪)।
১৮৮
প্রশ্ন (২৭/৩০৭) : হজ্জব্রত পালনের সময় পুরুষের জন্য মাথায় ও দাড়িতে মেহেদী লাগিয়ে যাওয়ায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?-আব্দুস সাত্তার, জামদই, নওগাঁ।
উত্তর : ইহরাম অবস্থায় মেহেদী ব্যবহার করা যাবে না। রাসূল (ছাঃ) ইহরাম অবস্থায় রঙিন ও যাফরানযুক্ত কাপড় পরিধান করতে নিষেধ করেছেন (বুখারী হা/৫৮৪৭; মিশকাত হা/২৬৭৮)। এ হাদীছের ব্যাখ্যায় ইমাম নববী বলেন, মেহেদী যাফরানের ন্যায় (আল-মাজমূ‘ ১/২৯৫)। অতএব ইহরামের পূর্বে দাড়িতে মেহেদী দেওয়া যাবে, কিন্তু পরে নয়। যেমন রাসূল (ছাঃ) ইহরামের পূর্বে সুগন্ধি ব্যবহার করেছেন, পরে নয় (বুখারী হা/২৭০)।
উত্তর : ইহরাম অবস্থায় মেহেদী ব্যবহার করা যাবে না। রাসূল (ছাঃ) ইহরাম অবস্থায় রঙিন ও যাফরানযুক্ত কাপড় পরিধান করতে নিষেধ করেছেন (বুখারী হা/৫৮৪৭; মিশকাত হা/২৬৭৮)। এ হাদীছের ব্যাখ্যায় ইমাম নববী বলেন, মেহেদী যাফরানের ন্যায় (আল-মাজমূ‘ ১/২৯৫)। অতএব ইহরামের পূর্বে দাড়িতে মেহেদী দেওয়া যাবে, কিন্তু পরে নয়। যেমন রাসূল (ছাঃ) ইহরামের পূর্বে সুগন্ধি ব্যবহার করেছেন, পরে নয় (বুখারী হা/২৭০)।
১৮৯
প্রশ্ন (২৮/৩০৮) : পিতা জীবিত থাকা অবস্থায় ছেলে মারা গেলে তার অর্জিত সম্পদে পিতা-মাতা কোন অংশ পাবেন কি?-আব্দুল ওয়ারেছ, ঘোনাপাড়া, জয়পুরহাট।
উত্তর : পিতা জীবিত থাকা অবস্থায় ছেলে মারা গেলে তার অর্জিত সম্পদে পিতা-মাতা ওয়ারিছ হবেন। প্রথমতঃ মৃত ব্যক্তির স্ত্রী ও সন্তান থাকা অবস্থায় পিতা-মাতা এক-ষষ্ঠাংশ করে পাবেন (নিসা ৪/১১)। এছাড়া আরো কয়েকটি অবস্থা রয়েছে। সেসব ক্ষেত্রে অবস্থাভেদে নির্ধারিত অংশ পাবেন।
উত্তর : পিতা জীবিত থাকা অবস্থায় ছেলে মারা গেলে তার অর্জিত সম্পদে পিতা-মাতা ওয়ারিছ হবেন। প্রথমতঃ মৃত ব্যক্তির স্ত্রী ও সন্তান থাকা অবস্থায় পিতা-মাতা এক-ষষ্ঠাংশ করে পাবেন (নিসা ৪/১১)। এছাড়া আরো কয়েকটি অবস্থা রয়েছে। সেসব ক্ষেত্রে অবস্থাভেদে নির্ধারিত অংশ পাবেন।
-ওমর ফারূক, মুর্শিদাবাদ, ভারত।
উত্তর : মিথ্যা অপবাদ হ’ল কারো ব্যাপারে অন্যের নিকটে এমন কথা বলা যা তার মাঝে নেই (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৮২৮)। কারো উপর মিথ্যা অপবাদ লাগিয়ে প্রচার করা কাবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। আর মিথ্যা অপবাদকারীর শাস্তি হচ্ছে ৮০ বেত্রাঘাত (নূর ২৪/৪-৫)। ইবনু হাজার (রহঃ) বলেন, এ ব্যাপারে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত রয়েছে যে, সতীসাধ্বী নারীর উপর অপবাদ দেওয়ার শাস্তি পুরুষের উপর মিথ্যা অপবাদ আরোপের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে (ফৎহুল বারী ১২/১৮১)। উল্লেখ্য, শরী‘আত নির্ধারিত হদ্দ বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের, সাধারণভাবে অন্যদের নয়।
উত্তর : মিথ্যা অপবাদ হ’ল কারো ব্যাপারে অন্যের নিকটে এমন কথা বলা যা তার মাঝে নেই (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৮২৮)। কারো উপর মিথ্যা অপবাদ লাগিয়ে প্রচার করা কাবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। আর মিথ্যা অপবাদকারীর শাস্তি হচ্ছে ৮০ বেত্রাঘাত (নূর ২৪/৪-৫)। ইবনু হাজার (রহঃ) বলেন, এ ব্যাপারে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত রয়েছে যে, সতীসাধ্বী নারীর উপর অপবাদ দেওয়ার শাস্তি পুরুষের উপর মিথ্যা অপবাদ আরোপের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে (ফৎহুল বারী ১২/১৮১)। উল্লেখ্য, শরী‘আত নির্ধারিত হদ্দ বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের, সাধারণভাবে অন্যদের নয়।
১৯১
প্রশ্ন (৩০/৩১০) : আমাদের দেশে তৃতীয় পক্ষ থেকে উকীল নিয়োগ করে উক্ত ‘উকীল বাবা’র মাধ্যমে বিবাহ পড়ানো হয়। এটা কতটুকু শরী‘আত সম্মত?-মনীরুল ইসলাম, কুমিল্লা।
উত্তর : এটি শরী‘আত সম্মত নয়। পিতার উপস্থিতিতে অন্য কেউ উকীল হ’তে পারে না। পিতার অনুপস্থিতিতে দাদা, অতঃপর তুলনামূলক নিকটবর্তী আত্মীয়রা উকীল হবে (মুগনী ৯/৩৫৫)। যেমন মা‘ক্বিল বিন ইয়াসার (রাঃ) তার বোনকে বিবাহ দিয়েছিলেন (বুখারী হা/৫১৩০)।
উত্তর : এটি শরী‘আত সম্মত নয়। পিতার উপস্থিতিতে অন্য কেউ উকীল হ’তে পারে না। পিতার অনুপস্থিতিতে দাদা, অতঃপর তুলনামূলক নিকটবর্তী আত্মীয়রা উকীল হবে (মুগনী ৯/৩৫৫)। যেমন মা‘ক্বিল বিন ইয়াসার (রাঃ) তার বোনকে বিবাহ দিয়েছিলেন (বুখারী হা/৫১৩০)।
১৯২
প্রশ্ন (৩১/৩১১) : মহিলাদের উপর কখন হজ্জ ফরয হবে? স্বামীর নিকট দু’জনের খরচের সমপরিমাণ অর্থ থাকলে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর হজ্জ ফরয হবে কি?-হাফীযুর রহমান, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা।
উত্তর : বায়তুল্লাহ পর্যন্ত যাতায়াতের সামর্থ্য থাকলে প্রত্যেক মুমিন নারী ও পুরুষের উপর হজ্জ ফরয হবে (আলে-ইমরান ৩/৯৭)। সেই হিসাবে স্বামী ও স্ত্রীর উপর পৃথকভাবে হজ্জ ফরয হবে। আল্লাহ বলেন, আমরা তোমাদের কোন পুরুষ বা নারীর কোন আমল বিনষ্ট করি না’ (আলে ইমরান ৩/১৯৫)। অতএব স্বামী উভয়ের খরচ বহনে সক্ষম হ’লেই স্ত্রীর উপর হজ্জ ফরয হয় না। তবে স্বামী স্বীয় স্ত্রীকে হজ্জে নিয়ে গেলে তার উপর থেকে হজ্জের ফরযিয়াত শেষ হয়ে যাবে। পরে সক্ষম হ’লেও আর করার প্রয়োজন হবে না। উল্লেখ্য যে, নারীদের সাথে মাহরাম ব্যক্তি থাকা অপরিহার্য (বুখারী হা/১০৮৬; মিশকাত হা/২৫১৫)।
উত্তর : বায়তুল্লাহ পর্যন্ত যাতায়াতের সামর্থ্য থাকলে প্রত্যেক মুমিন নারী ও পুরুষের উপর হজ্জ ফরয হবে (আলে-ইমরান ৩/৯৭)। সেই হিসাবে স্বামী ও স্ত্রীর উপর পৃথকভাবে হজ্জ ফরয হবে। আল্লাহ বলেন, আমরা তোমাদের কোন পুরুষ বা নারীর কোন আমল বিনষ্ট করি না’ (আলে ইমরান ৩/১৯৫)। অতএব স্বামী উভয়ের খরচ বহনে সক্ষম হ’লেই স্ত্রীর উপর হজ্জ ফরয হয় না। তবে স্বামী স্বীয় স্ত্রীকে হজ্জে নিয়ে গেলে তার উপর থেকে হজ্জের ফরযিয়াত শেষ হয়ে যাবে। পরে সক্ষম হ’লেও আর করার প্রয়োজন হবে না। উল্লেখ্য যে, নারীদের সাথে মাহরাম ব্যক্তি থাকা অপরিহার্য (বুখারী হা/১০৮৬; মিশকাত হা/২৫১৫)।
১৯৩
প্রশ্ন (৩২/৩১২) : এক শ্রেণীর মানুষ ১৮ই জিলহজ্জকে ‘ঈদে গাদীর’ হিসাবে আখ্যায়িত করে। এদিনের বিভিন্ন ফযীলত যেমন এদিনে রাসূল (ছাঃ) ছিয়াম পালন করেন, এদিন আল্লাহ ইসলামের পূর্ণতা ঘোষণা করেন ইত্যাদি বলে থাকে। এর কোন ভিত্তি আছে কি?-আশরাফুল হক, প্রফেসর পাড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : এগুলি সবই বানাওয়াট কথা এবং ভ্রান্ত ফিরক্বা শী‘আদের অনুকরণ মাত্র। ঘটনা হ’ল এই যে, বিদায় হজ্জ থেকে ফেরার পথে বুরাইদা আসলামী (রাঃ) রাসূলে করীম (ছাঃ)-এর নিকটে আলী (রাঃ) সম্পর্কে কিছু অভিযোগ পেশ করেন। যা ইয়ামনে গণীমত বণ্টন সংক্রান্ত বিষয়ে ছিল। মূলতঃ এটা ছিল বুরাইদার বুঝের ভুল। এজন্য আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) খুম কূয়ার নিকটে যাত্রাবিরতি করে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন। যেখানে তিনি নবী পরিবারের উচ্চ মর্যাদা ব্যাখ্যা করেন। অতঃপর আলীর হাত ধরে বলেন, مَنْ كُنْتُ مَوْلاَهُ فَعَلِىٌّ مَوْلاَهُ ‘আমি যার বন্ধু, আলীও তার বন্ধু’ (তিরমিযী হা/৩৭১৩; মিশকাত হা/৬০৮২; ছহীহাহ হা/১৭৫০; বিস্তারিত দ্রঃ সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) ৬৪৩ পৃঃ)। এই ভাষণটি ইতিহাসে খুম কূয়ার নিকটে ভাষণ ( خطبة غدير خم ) বলে পরিচিত।
দ্বিতীয়তঃ ১৮ই যিলহজ্জ ওছমান (রাঃ)-এর শাহাদত বরণের তারিখকে শী‘আরা ঈদের দিন হিসাবে ঘোষণা করে। যা আববাসীয় খলীফা মুতী‘ বিন মুক্বতাদিরের সময় তাঁর কট্টর শী‘আ আমীর মুইযযুদ্দৌলা ৩৫১ হিজরীর ১৮ই যিলহজ্জ তারিখে উক্ত ঘোষণা করেন। ফলে তখন থেকে এই দিনটি শী‘আদের মধ্যে ঈদুল আযহার চাইতেও গুরুত্ব পায় (বিস্তারিত দ্রঃ আশূরায়ে মুহাররম পৃঃ ৬-৭)।
উত্তর : এগুলি সবই বানাওয়াট কথা এবং ভ্রান্ত ফিরক্বা শী‘আদের অনুকরণ মাত্র। ঘটনা হ’ল এই যে, বিদায় হজ্জ থেকে ফেরার পথে বুরাইদা আসলামী (রাঃ) রাসূলে করীম (ছাঃ)-এর নিকটে আলী (রাঃ) সম্পর্কে কিছু অভিযোগ পেশ করেন। যা ইয়ামনে গণীমত বণ্টন সংক্রান্ত বিষয়ে ছিল। মূলতঃ এটা ছিল বুরাইদার বুঝের ভুল। এজন্য আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) খুম কূয়ার নিকটে যাত্রাবিরতি করে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন। যেখানে তিনি নবী পরিবারের উচ্চ মর্যাদা ব্যাখ্যা করেন। অতঃপর আলীর হাত ধরে বলেন, مَنْ كُنْتُ مَوْلاَهُ فَعَلِىٌّ مَوْلاَهُ ‘আমি যার বন্ধু, আলীও তার বন্ধু’ (তিরমিযী হা/৩৭১৩; মিশকাত হা/৬০৮২; ছহীহাহ হা/১৭৫০; বিস্তারিত দ্রঃ সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) ৬৪৩ পৃঃ)। এই ভাষণটি ইতিহাসে খুম কূয়ার নিকটে ভাষণ ( خطبة غدير خم ) বলে পরিচিত।
দ্বিতীয়তঃ ১৮ই যিলহজ্জ ওছমান (রাঃ)-এর শাহাদত বরণের তারিখকে শী‘আরা ঈদের দিন হিসাবে ঘোষণা করে। যা আববাসীয় খলীফা মুতী‘ বিন মুক্বতাদিরের সময় তাঁর কট্টর শী‘আ আমীর মুইযযুদ্দৌলা ৩৫১ হিজরীর ১৮ই যিলহজ্জ তারিখে উক্ত ঘোষণা করেন। ফলে তখন থেকে এই দিনটি শী‘আদের মধ্যে ঈদুল আযহার চাইতেও গুরুত্ব পায় (বিস্তারিত দ্রঃ আশূরায়ে মুহাররম পৃঃ ৬-৭)।
১৯৪
প্রশ্ন (৩৩/৩১৩) : আমার ইচ্ছা আলেম হওয়া। কিন্তু পিতা-মাতা আমাকে মাদরাসায় পড়াতে রাযী নন। এক্ষণে আমার করণীয় কি?-আফযাল শরীফ, মাটিয়ানী, পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও।
উত্তর : এরূপ ইচ্ছা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কারণ যারা দ্বীনের জ্ঞানার্জন করে, তারা আল্লাহর নিকট উচ্চ মর্যাদা লাভ করে (মুজাদালাহ ৫৮/১১)। যে ব্যক্তি দ্বীনী ইলম শিক্ষা করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের রাস্তা সহজ করে দেন’ (বায়হাক্বী, মিশকাত হা/২৫৫, হাদীছ ছহীহ)। এক্ষণে আপনার পিতা-মাতাকে নিজে কিংবা কোন ভাল আলেমের মাধ্যমে বুঝানোর চেষ্টা করুন।
উত্তর : এরূপ ইচ্ছা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কারণ যারা দ্বীনের জ্ঞানার্জন করে, তারা আল্লাহর নিকট উচ্চ মর্যাদা লাভ করে (মুজাদালাহ ৫৮/১১)। যে ব্যক্তি দ্বীনী ইলম শিক্ষা করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের রাস্তা সহজ করে দেন’ (বায়হাক্বী, মিশকাত হা/২৫৫, হাদীছ ছহীহ)। এক্ষণে আপনার পিতা-মাতাকে নিজে কিংবা কোন ভাল আলেমের মাধ্যমে বুঝানোর চেষ্টা করুন।
১৯৬
প্রশ্ন (৩৫/৩১৫) : ঈমানের ছয়টি মৌলিক বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপনকারী মুসলিম কবরপূজা সহ বিভিন্ন প্রকার শিরকী কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়া ব্যক্তি তওবা না করে মৃত্যুবরণ করলে অমুসলিমদের মত চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামের অধিবাসী হবে কি?-উম্মে সুলতানা, ক্ষেতলাল, জয়পুরহাট।
উত্তর : কবরপূজা সহ শিরকে আকবর বা বড় শিরকে লিপ্ত ব্যক্তি তওবা না করে মৃত্যুবরণ করলে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামী হবে। আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্যকে শরীক করে, আল্লাহ অবশ্যই তার উপরে জান্নাতকে হারাম করে দেন এবং তার ঠিকানা হ’ল জাহান্নাম। আর যালেমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই’ (মায়েদাহ ৫/৭২)। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ঐ ব্যক্তিকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সাথে অন্যকে শরীক করে। এতদ্ব্যতীত তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে থাকেন’ (নিসা ৪/৪৮, ১১৬)। তার ছালাত-ছিয়াম ইত্যাদি সকল আমল নিষ্ফল হয়ে যাবে। আল্লাহ বলেন, ‘যদি তুমি শিরক কর, তাহ’লে তোমার সকল আমল অবশ্যই বরবাদ হয়ে যাবে এবং তুমি অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (যুমার ৩৯/৬৫)।
এক্ষেত্রে অমুসলিমদের সাথে তাদের পার্থক্যকরণের কোন সুযোগ নেই। কারণ মক্কার কুরায়েশরা আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাসী হওয়া সত্ত্বেও অসীলা পূজার কারণে তাদের কোন আমলই গৃহীত হয়নি। তারা বলত আমরা মূর্তিকে এজন্য পূজা করি যে, তারা আমাদেরকে আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছে দিবে’ (যুমার ৩৯/৩)। তারা বলত যে, এগুলি আল্লাহর নিকটে আমাদের জন্য সুফারিশকারী’ (ইউনুস ১০/১৮)। যারা কবরপূজারী, তারা একই আক্বীদা পোষণ করে যে, মৃত পীর তাদের জন্য সুফারিশ করবে এবং তার অসীলায় তারা মুক্তি পাবে। তবে যদি মৃত্যুর পূর্বে কেউ শিরক থেকে তওবা করে সঠিক পথে ফিরে আসে, তাহ’লে সে অন্যান্য পাপের শাস্তি ভোগ করে রাসূল (ছাঃ)-এর শাফা‘আতের মাধ্যমে একসময় জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি লাভ করবে ইনশাআল্লাহ (বুখারী হা/৭৪১০; মুসলিম হা/১৯১)। আল্লাহ সর্বাধিক অবগত।
উত্তর : কবরপূজা সহ শিরকে আকবর বা বড় শিরকে লিপ্ত ব্যক্তি তওবা না করে মৃত্যুবরণ করলে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামী হবে। আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্যকে শরীক করে, আল্লাহ অবশ্যই তার উপরে জান্নাতকে হারাম করে দেন এবং তার ঠিকানা হ’ল জাহান্নাম। আর যালেমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই’ (মায়েদাহ ৫/৭২)। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ঐ ব্যক্তিকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সাথে অন্যকে শরীক করে। এতদ্ব্যতীত তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে থাকেন’ (নিসা ৪/৪৮, ১১৬)। তার ছালাত-ছিয়াম ইত্যাদি সকল আমল নিষ্ফল হয়ে যাবে। আল্লাহ বলেন, ‘যদি তুমি শিরক কর, তাহ’লে তোমার সকল আমল অবশ্যই বরবাদ হয়ে যাবে এবং তুমি অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (যুমার ৩৯/৬৫)।
এক্ষেত্রে অমুসলিমদের সাথে তাদের পার্থক্যকরণের কোন সুযোগ নেই। কারণ মক্কার কুরায়েশরা আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাসী হওয়া সত্ত্বেও অসীলা পূজার কারণে তাদের কোন আমলই গৃহীত হয়নি। তারা বলত আমরা মূর্তিকে এজন্য পূজা করি যে, তারা আমাদেরকে আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছে দিবে’ (যুমার ৩৯/৩)। তারা বলত যে, এগুলি আল্লাহর নিকটে আমাদের জন্য সুফারিশকারী’ (ইউনুস ১০/১৮)। যারা কবরপূজারী, তারা একই আক্বীদা পোষণ করে যে, মৃত পীর তাদের জন্য সুফারিশ করবে এবং তার অসীলায় তারা মুক্তি পাবে। তবে যদি মৃত্যুর পূর্বে কেউ শিরক থেকে তওবা করে সঠিক পথে ফিরে আসে, তাহ’লে সে অন্যান্য পাপের শাস্তি ভোগ করে রাসূল (ছাঃ)-এর শাফা‘আতের মাধ্যমে একসময় জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি লাভ করবে ইনশাআল্লাহ (বুখারী হা/৭৪১০; মুসলিম হা/১৯১)। আল্লাহ সর্বাধিক অবগত।
১৯৭
প্রশ্ন (৩৬/৩১৬) : তাবলীগের ভাইয়েরা তাদের চিল্লার দলীল হিসাবে একটি হাদীছ বলে থাকেন, যেখানে রাসূল (ছাঃ) বলেন, হিজরত দু’প্রকার বা-ত্তাহ ও বাদিয়াহ। তারা ২য় প্রকার হিজরত করার জন্য দেশের বাইরে যান ও ফিরে আসেন। এ হাদীছটির সত্যতা এবং সঠিক ব্যাখ্যা কি?-মুহাম্মাদ শোভন, ঢাকা।
উত্তর : উক্ত মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (ত্বাবারাণী কাবীর, সিলসিলা যঈফাহ হা/৬৯৪৮)। বিষয়টি এই যে, ওয়াছেলা বিন আসক্বা‘ (রাঃ) মদীনায় হিজরতে করে আসলে রাসূল (ছাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি কি বা-ত্তাহ অর্থাৎ এখানে স্থায়ীভাবে থাকার জন্য এসেছ? নাকি বাদিয়াহ অর্থাৎ পুনরায় তোমার দেশে ফিরে যাবে?...। বিষয়টির সাথে তাবলীগ জামা‘আতের বিদেশ সফরের কোনই সম্পর্ক নেই। এগুলি নিজেদের বিদ‘আতী রীতিগুলিকে গ্রহণযোগ্য প্রমাণ করার জন্য হাদীছের দোহাই দেওয়া মাত্র।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম সর্বাধিক দাওয়াতী সফর করেছেন। কিন্তু তারা ৩, ১০, ৪০, ১২০ ইত্যাদি কোন সীমা নির্ধারণ করেননি। এগুলি সবই তাবলীগী নেতাদের মনগড়া রীতি বৈ কিছুই নয়। উল্লেখ্য, এ জামা‘আতটির অধিকাংশ প্রচারণাই শিরক ও বিদ‘আতী কাহিনী ও জাল-যঈফ বর্ণনায় ভরা। তাদের মূল পাঠ্য বই ‘তাবলীগী নেছাব’ যার সুস্পষ্ট প্রমাণ। অতএব এসব থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক।
উত্তর : উক্ত মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (ত্বাবারাণী কাবীর, সিলসিলা যঈফাহ হা/৬৯৪৮)। বিষয়টি এই যে, ওয়াছেলা বিন আসক্বা‘ (রাঃ) মদীনায় হিজরতে করে আসলে রাসূল (ছাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি কি বা-ত্তাহ অর্থাৎ এখানে স্থায়ীভাবে থাকার জন্য এসেছ? নাকি বাদিয়াহ অর্থাৎ পুনরায় তোমার দেশে ফিরে যাবে?...। বিষয়টির সাথে তাবলীগ জামা‘আতের বিদেশ সফরের কোনই সম্পর্ক নেই। এগুলি নিজেদের বিদ‘আতী রীতিগুলিকে গ্রহণযোগ্য প্রমাণ করার জন্য হাদীছের দোহাই দেওয়া মাত্র।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম সর্বাধিক দাওয়াতী সফর করেছেন। কিন্তু তারা ৩, ১০, ৪০, ১২০ ইত্যাদি কোন সীমা নির্ধারণ করেননি। এগুলি সবই তাবলীগী নেতাদের মনগড়া রীতি বৈ কিছুই নয়। উল্লেখ্য, এ জামা‘আতটির অধিকাংশ প্রচারণাই শিরক ও বিদ‘আতী কাহিনী ও জাল-যঈফ বর্ণনায় ভরা। তাদের মূল পাঠ্য বই ‘তাবলীগী নেছাব’ যার সুস্পষ্ট প্রমাণ। অতএব এসব থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক।
১৯৮
প্রশ্ন (৩৭/৩১৭) : এক বিঘা জমি ৯০ হাযার টাকার বিনিময়ে কট নিয়েছি বছরে ১ হাযার টাকা করে কর্তন হওয়ার শর্তে। এরূপ চুক্তি শরী‘আতসম্মত কি?-আব্দুল্লাহ, আত্রাই, নওগাঁ।
উত্তর : টাকার বিনিময়ে জমি কট নিয়ে সেই জমি থেকে ফায়দা গ্রহণ করা সূদের অন্তর্ভুক্ত। ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, যে ঋণের বিনিময় লাভ করা হয়, তা সূদ (ইরওয়াউল গালীল হা/১৩৯৭)। এই প্রকার সূদকে জায়েয করার জন্য এক শ্রেণীর মানুষ মাসে মাসে কিছু টাকা কর্তনের চুক্তি করেন। এটি হারামকে হালাল করার কৌশল মাত্র। যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
উত্তর : টাকার বিনিময়ে জমি কট নিয়ে সেই জমি থেকে ফায়দা গ্রহণ করা সূদের অন্তর্ভুক্ত। ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, যে ঋণের বিনিময় লাভ করা হয়, তা সূদ (ইরওয়াউল গালীল হা/১৩৯৭)। এই প্রকার সূদকে জায়েয করার জন্য এক শ্রেণীর মানুষ মাসে মাসে কিছু টাকা কর্তনের চুক্তি করেন। এটি হারামকে হালাল করার কৌশল মাত্র। যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
১৯৯
প্রশ্ন (৩৮/৩১৮) : স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ীর সকলেই হানাফী হওয়ায় ছহীহ হাদীছের দাওয়াত দিলে সবাই দুর্ব্যবহার করে। আমাকে লুকিয়ে ছালাত আদায় করতে হয়। এক্ষণে আমার জন্য ‘খোলা’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে কি?-ছাফিয়া সুলতানা, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : এরূপ অবস্থায় ‘খোলা’ করে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। কারণ যথাযোগ্য কারণে স্বামী থেকে ‘খোলা’ করা অর্থাৎ মোহর ফিরিয়ে দিয়ে বিচ্ছিন্ন হওয়া শরী‘আতসম্মত (বুখারী হা/৫২৭৩; মিশকাত হা/৩২৭৪)। মাযহাবী ভাইদের অনেকের মধ্যে গুরুতর সমস্যা রয়েছে। যেমন (১) আক্বীদাগত দিক থেকে তাদের নিকটে আল্লাহ ‘নিরাকার’। (২) তাদের মতে শেষনবী (ছাঃ) ‘নূরের তৈরী’ এবং তিনি মৃত্যুবরণ করেননি। (৩) তারা মৃত পীরের অসীলায় আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করেন এবং কবর পূজা করেন। (৪) তাদের মতে পীর-আউলিয়ারা কবরে যিন্দা থাকেন ও ভক্তের আহবান শোনেন। (৫) তারা ছহীহ তরীকায় ছালাত আদায় করেন না। (৬) তারা একসাথে তিন তালাককে তিন তালাক বায়েন গণ্য করেন এবং (৭) হিল্লা করাকে জায়েয বলেন ইত্যাদি।
উত্তর : এরূপ অবস্থায় ‘খোলা’ করে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। কারণ যথাযোগ্য কারণে স্বামী থেকে ‘খোলা’ করা অর্থাৎ মোহর ফিরিয়ে দিয়ে বিচ্ছিন্ন হওয়া শরী‘আতসম্মত (বুখারী হা/৫২৭৩; মিশকাত হা/৩২৭৪)। মাযহাবী ভাইদের অনেকের মধ্যে গুরুতর সমস্যা রয়েছে। যেমন (১) আক্বীদাগত দিক থেকে তাদের নিকটে আল্লাহ ‘নিরাকার’। (২) তাদের মতে শেষনবী (ছাঃ) ‘নূরের তৈরী’ এবং তিনি মৃত্যুবরণ করেননি। (৩) তারা মৃত পীরের অসীলায় আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করেন এবং কবর পূজা করেন। (৪) তাদের মতে পীর-আউলিয়ারা কবরে যিন্দা থাকেন ও ভক্তের আহবান শোনেন। (৫) তারা ছহীহ তরীকায় ছালাত আদায় করেন না। (৬) তারা একসাথে তিন তালাককে তিন তালাক বায়েন গণ্য করেন এবং (৭) হিল্লা করাকে জায়েয বলেন ইত্যাদি।
২০০
প্রশ্ন (৩৯/৩১৯) : জনৈকা মহিলার মাথায় জট আছে। তা কেটে ফেললে তার ক্ষতি হবে বলে ধারণা করা হয়। শরী‘আতের দৃষ্টিকোণ থেকে এতে ক্ষতির কোন আশংকা আছে কি?-কামাল হোসাইন, ঢাকা।
উত্তর : ঐ মহিলার চুলের জট আগে কাটতে হবে এবং এর মাধ্যমে তার কুসংস্কারপূর্ণ আক্বীদার জট ছাড়াতে হবে। ‘জট কারু উপকার বা ক্ষতি করতে পারে না আল্লাহর হুকুম ব্যতীত’ এই আক্বীদা তার হৃদয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। অতঃপর তার চুলের যত্ন নিতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসা করাতে হবে। কেননা সাধারণতঃ চুলের অযত্নের কারণেই এরূপ অবস্থার সৃষ্টি হয়ে থাকে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যার চুল আছে, সে যেন স্বীয় চুলকে সম্মান করে অর্থাৎ যত্ন নেয় (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৪৫০)।
উত্তর : ঐ মহিলার চুলের জট আগে কাটতে হবে এবং এর মাধ্যমে তার কুসংস্কারপূর্ণ আক্বীদার জট ছাড়াতে হবে। ‘জট কারু উপকার বা ক্ষতি করতে পারে না আল্লাহর হুকুম ব্যতীত’ এই আক্বীদা তার হৃদয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। অতঃপর তার চুলের যত্ন নিতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসা করাতে হবে। কেননা সাধারণতঃ চুলের অযত্নের কারণেই এরূপ অবস্থার সৃষ্টি হয়ে থাকে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যার চুল আছে, সে যেন স্বীয় চুলকে সম্মান করে অর্থাৎ যত্ন নেয় (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৪৫০)।
২০১
প্রশ্ন (৪০/৩২০) : জনৈক হিন্দু ৫০ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেছে। এখন তাকে সুন্নাতে খাৎনা করতে হবে কি?-আলমগীর, নরসিংদী।
উত্তর : খাৎনা করা মুস্তাহাব। জনৈক ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে বলেন, তুমি কুফরীর চুল ফেলে দাও এবং খাৎনা কর (আবুদাঊদ হা/৩৫৬, সনদ হাসান, ইরওয়া হা/৭৯)। খাৎনা করা মানুষের ফিৎরাত বা স্বভাবজাত পাঁচটি বিষয়ের অন্যতম (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৪৪২০ ‘পোষাক’ অধ্যায় ‘চুল আঁচড়ানো’ অনুচ্ছেদ)। এটি ইসলাম ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য স্বরূপ। এর মধ্যে যে স্বাস্থ্যগত কল্যাণ নিহিত রয়েছে, সে বিষয়ে সকল স্বাস্থ্যবিজ্ঞানী একমত। ইবরাহীম (আঃ) ৮০ বছর বয়সে আল্লাহর হুকুমে খাৎনা করেছিলেন (বুখারী হা/৩৩৫৬)।
- See more at: http://at-tahreek.com/may2015/question.html#sthash.8j7pq0j5.dpuf
উত্তর : খাৎনা করা মুস্তাহাব। জনৈক ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে বলেন, তুমি কুফরীর চুল ফেলে দাও এবং খাৎনা কর (আবুদাঊদ হা/৩৫৬, সনদ হাসান, ইরওয়া হা/৭৯)। খাৎনা করা মানুষের ফিৎরাত বা স্বভাবজাত পাঁচটি বিষয়ের অন্যতম (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৪৪২০ ‘পোষাক’ অধ্যায় ‘চুল আঁচড়ানো’ অনুচ্ছেদ)। এটি ইসলাম ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য স্বরূপ। এর মধ্যে যে স্বাস্থ্যগত কল্যাণ নিহিত রয়েছে, সে বিষয়ে সকল স্বাস্থ্যবিজ্ঞানী একমত। ইবরাহীম (আঃ) ৮০ বছর বয়সে আল্লাহর হুকুমে খাৎনা করেছিলেন (বুখারী হা/৩৩৫৬)।
- See more at: http://at-tahreek.com/may2015/question.html#sthash.8j7pq0j5.dpuf
২০২
জুন
প্রশ্ন (১/৩২১) : বাচ্চাদের বিভিন্ন অসুখের জন্য ঔষধ ব্যবহার না করে তেল, পানি, মিছরী ইত্যাদি কারো নিকট থেকে পড়ে নিয়ে ব্যবহারে বাধা আছে কি?-ফারূক, থানাপাড়া, কুষ্টিয়া।
উত্তর : এতে কোন দোষ নেই (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/২৩৯৭৫, সনদ ছহীহ)। তবে অবশ্যই তা শিরক মুক্ত হতে হবে (মুসলিম হা/২২০০; মিশকাত হা/৪৫৩০)। অতএব নষ্ট আক্বীদার লোকদের কাছ থেকে ঝাড়ফুঁক নেওয়া থেকে দুরে থাকতে হবে।
উত্তর : এতে কোন দোষ নেই (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/২৩৯৭৫, সনদ ছহীহ)। তবে অবশ্যই তা শিরক মুক্ত হতে হবে (মুসলিম হা/২২০০; মিশকাত হা/৪৫৩০)। অতএব নষ্ট আক্বীদার লোকদের কাছ থেকে ঝাড়ফুঁক নেওয়া থেকে দুরে থাকতে হবে।
-মারিয়াম, তালাইমারী, রাজশাহী।
উত্তর : উক্ত অবস্থায় অনুতপ্ত হয়ে ‘ইন্নালিল্লা-হি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেঊন’ পড়া যায় (বাক্বারাহ ১৫৬)। সেই সাথে সতর্ক থাকতে হবে যেন এমনটি পুনরায় আর না ঘটে। উল্লেখ্য যে, পড়ে গেলে তুলে চুমো দেওয়া বা চাল বিতরণ করা ভিত্তিহীন প্রথা মাত্র।
উত্তর : উক্ত অবস্থায় অনুতপ্ত হয়ে ‘ইন্নালিল্লা-হি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেঊন’ পড়া যায় (বাক্বারাহ ১৫৬)। সেই সাথে সতর্ক থাকতে হবে যেন এমনটি পুনরায় আর না ঘটে। উল্লেখ্য যে, পড়ে গেলে তুলে চুমো দেওয়া বা চাল বিতরণ করা ভিত্তিহীন প্রথা মাত্র।
২০৪
প্রশ্ন (৩/৩২৩) : চিকিৎসা হিসাবে তাবীয ব্যবহার করা যাবে কি? যদি এটা শিরক হয়, তবে অন্যান্য চিকিৎসা গ্রহণ করাও কি শিরক হবে?-নূর আলম, টাঙ্গাইল।
উত্তর : তাবীয কোন ঔষধ নয়। বরং তা রোগমুক্তির জন্য গৃহীত অসীলা মাত্র। মানুষ যখন তাবীয নেয়, তখন সে তার উপরেই ভরসা করে। ফলে এই বিশ্বাসটি শিরকে পরিণত হয়। অতএব আক্বীদাগত কারণে তাবীয ব্যবহার করা শিরক। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তাবীয লটকালো সে শিরক করল’ (আহমাদ হা/১৬৯৬৯; ছহীহাহ হা/৪৯২)। অন্যদিকে ঔষধ বা প্রতিষেধক সরাসরি রোগের চিকিৎসা। যা আল্লাহর হুকুমে কার্যকর হয়। সুতরাং এগুলি তাবীয বা পীরের কবরে মানত ইত্যাদির ন্যায় কোন শিরকী অসীলা নয়। অতএব ঔষধ ব্যবহারে কোন বাধা নেই। একদা ছাহাবীগণ রোগের জন্য ঔষধ সেবন করতে চাইলে তিনি অনুমতি দিয়ে বলেন, তোমরা ঔষধ সেবন কর, নিশ্চয় মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের ঔষধ আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন (আহমাদ, মিশকাত হা/৪৫৩২)। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক রোগের ঔষধ রয়েছে। যখন সেটা পৌঁছে যায়, তখন সে রোগমুক্ত হয় আল্লাহর হুকুমে (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৫১৫)। অতএব আল্লাহর উপরে পূর্ণ তাওয়াক্কুল সহ ঔষধ সেবন করবে। এর বেশী কিছু নয়।
উত্তর : তাবীয কোন ঔষধ নয়। বরং তা রোগমুক্তির জন্য গৃহীত অসীলা মাত্র। মানুষ যখন তাবীয নেয়, তখন সে তার উপরেই ভরসা করে। ফলে এই বিশ্বাসটি শিরকে পরিণত হয়। অতএব আক্বীদাগত কারণে তাবীয ব্যবহার করা শিরক। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তাবীয লটকালো সে শিরক করল’ (আহমাদ হা/১৬৯৬৯; ছহীহাহ হা/৪৯২)। অন্যদিকে ঔষধ বা প্রতিষেধক সরাসরি রোগের চিকিৎসা। যা আল্লাহর হুকুমে কার্যকর হয়। সুতরাং এগুলি তাবীয বা পীরের কবরে মানত ইত্যাদির ন্যায় কোন শিরকী অসীলা নয়। অতএব ঔষধ ব্যবহারে কোন বাধা নেই। একদা ছাহাবীগণ রোগের জন্য ঔষধ সেবন করতে চাইলে তিনি অনুমতি দিয়ে বলেন, তোমরা ঔষধ সেবন কর, নিশ্চয় মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের ঔষধ আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন (আহমাদ, মিশকাত হা/৪৫৩২)। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক রোগের ঔষধ রয়েছে। যখন সেটা পৌঁছে যায়, তখন সে রোগমুক্ত হয় আল্লাহর হুকুমে (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৫১৫)। অতএব আল্লাহর উপরে পূর্ণ তাওয়াক্কুল সহ ঔষধ সেবন করবে। এর বেশী কিছু নয়।
২০৫
প্রশ্ন (৪/৩২৪) : সুলতান নূরুদ্দীন যঙ্গী কর্তৃক রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক স্বপ্নে আহূত হওয়া এবং তাঁর লাশ চুরির দায়ে অভিযুক্ত দু’জন ইহূদীকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করার যে কাহিনী প্রচলিত আছে, তার সত্যতা রয়েছে কি?-আব্দুল হালীম, মালদ্বীপ।
উত্তর : এগুলির ঐতিহাসিক সত্যতা নিয়ে ব্যাপক সন্দেহ রয়েছে। মুহাক্কিক ইবরাহীম যায়বাক্ব বলেন, ইলমী নীতিমালা অনুযায়ী এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় না। ঘটনাটি সর্বপ্রথম মসজিদুল হারামের মুওয়াযযিন মুহাম্মাদ বিন আহমাদ আল মাতরী স্বীয় ‘আত-তা‘রীফ’ গ্রন্থে বর্ণনা করেন, যিনি ৭৪১ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন। আর নূরুদ্দীন যঙ্গীর মৃত্যু হয়েছে ৫৬৯ হিজরীতে। ফলে তাদের উভয়ের মাঝে ব্যবধান ১৭২ বছর। আর ঘটনাটির সনদও অপরিচিত রাবী দ্বারা পূর্ণ। ফলে মাতারীও ঘটনাটি সত্যতার ব্যাপারে দৃঢ়তা প্রকাশ করেননি এবং পরবর্তী নকলকারীগণ স্ব স্ব গ্রন্থসমূহে সনদবিহীনভাবেই ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন। উপরন্তু ঘটনাটি বাদশাহ নূরুদ্দীন যঙ্গীর সমসাময়িক ইবনু আসাকির, ইবনুল আছীর, ইবনু মুনকিয, ইমাদ ইস্ফাহানী প্রমুখ বিখ্যাত ঐতিহাসিকগণের কেউ-ই আলোচনা করেননি। এমনকি তাঁর জীবনী বিষয়ে সূক্ষ্ম অনুসন্ধানকারী ইবনুল আছীর ও আবু শামা-র মত বিদ্বানগণ তাদের ব্যাপক আগ্রহ ও সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এরূপ ঘটনার সন্ধান পাননি। হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) ‘আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ’ গ্রন্থে নূরুদ্দীন যঙ্গীর বিস্তারিত জীবনী লিখলেও এ সম্পর্কে কিছু লিখেননি। মাতারী উল্লেখ করেন যে, এ ঘটনা ৫৫৭ হিজরী সালে সংঘঠিত হয়। অথচ একজন ব্যতীত কোন ঐতিহাসিকই ৫৫৭ হিজরীতে তাঁর মদীনায় যাওয়া তো দূরের কথা, কখনো হজ্জে গিয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেননি। কারণ খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে জিহাদের ব্যস্ততাতেই তার সারাটা জীবন কেটেছিল।
বিস্তারিত আলোচনা শেষে সম্মানিত মুহাক্কিক বলেন, এই কাহিনী ছড়িয়ে পড়ার কারণ কি? সে বিষয়ে আমি বলতে চাই যে, নূরুদ্দীন যঙ্গী মদীনার চতুস্পার্শ্বকে মযবুত দেওয়াল দিয়ে ঘিরে দিতে চেয়েছিলেন এবং সেখানে নিজের নাম খোদাই করতে চেয়েছিলেন (যা তিনি পারেননি)। পরে ৫৭৮ হিজরীতে ক্রুসেডাররা মদীনা দখল করে রাসূল (ছাঃ)-এর লাশ উঠিয়ে ফিলিস্তীনে নিয়ে যেতে চেয়েছিল (যেটা তারাও পারেনি)। বিষয়টি ইবনু জুবায়ের স্বীয় রিহলাহ-এর মধ্যে এবং মাকরেযী স্বীয় খুত্বাত্ব-এর মধ্যে বর্ণনা করেছেন। পরে দু’টি কাহিনী মিশ্রিত হয়ে একটি কাহিনীতে পরিণত হয়েছে। আল্লাহ সর্বাধিক অবগত’ (দ্রঃ ড. আলী মুহাম্মাদ ছাল্লাবী, আল-কাএদুল মুজাহিদ নূরুদ্দীন মাহমূদ যঙ্গী, পৃঃ ২৬০-২৬১)। এছাড়া এ ঘটনার মধ্যে পুড়িয়ে হত্যা করার কথা বিবৃত হয়েছে, যা শরী‘আত বিরোধী। অতএব ঘটনাটি বর্ণনা করা থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।
উত্তর : এগুলির ঐতিহাসিক সত্যতা নিয়ে ব্যাপক সন্দেহ রয়েছে। মুহাক্কিক ইবরাহীম যায়বাক্ব বলেন, ইলমী নীতিমালা অনুযায়ী এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় না। ঘটনাটি সর্বপ্রথম মসজিদুল হারামের মুওয়াযযিন মুহাম্মাদ বিন আহমাদ আল মাতরী স্বীয় ‘আত-তা‘রীফ’ গ্রন্থে বর্ণনা করেন, যিনি ৭৪১ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন। আর নূরুদ্দীন যঙ্গীর মৃত্যু হয়েছে ৫৬৯ হিজরীতে। ফলে তাদের উভয়ের মাঝে ব্যবধান ১৭২ বছর। আর ঘটনাটির সনদও অপরিচিত রাবী দ্বারা পূর্ণ। ফলে মাতারীও ঘটনাটি সত্যতার ব্যাপারে দৃঢ়তা প্রকাশ করেননি এবং পরবর্তী নকলকারীগণ স্ব স্ব গ্রন্থসমূহে সনদবিহীনভাবেই ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন। উপরন্তু ঘটনাটি বাদশাহ নূরুদ্দীন যঙ্গীর সমসাময়িক ইবনু আসাকির, ইবনুল আছীর, ইবনু মুনকিয, ইমাদ ইস্ফাহানী প্রমুখ বিখ্যাত ঐতিহাসিকগণের কেউ-ই আলোচনা করেননি। এমনকি তাঁর জীবনী বিষয়ে সূক্ষ্ম অনুসন্ধানকারী ইবনুল আছীর ও আবু শামা-র মত বিদ্বানগণ তাদের ব্যাপক আগ্রহ ও সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এরূপ ঘটনার সন্ধান পাননি। হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) ‘আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ’ গ্রন্থে নূরুদ্দীন যঙ্গীর বিস্তারিত জীবনী লিখলেও এ সম্পর্কে কিছু লিখেননি। মাতারী উল্লেখ করেন যে, এ ঘটনা ৫৫৭ হিজরী সালে সংঘঠিত হয়। অথচ একজন ব্যতীত কোন ঐতিহাসিকই ৫৫৭ হিজরীতে তাঁর মদীনায় যাওয়া তো দূরের কথা, কখনো হজ্জে গিয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেননি। কারণ খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে জিহাদের ব্যস্ততাতেই তার সারাটা জীবন কেটেছিল।
বিস্তারিত আলোচনা শেষে সম্মানিত মুহাক্কিক বলেন, এই কাহিনী ছড়িয়ে পড়ার কারণ কি? সে বিষয়ে আমি বলতে চাই যে, নূরুদ্দীন যঙ্গী মদীনার চতুস্পার্শ্বকে মযবুত দেওয়াল দিয়ে ঘিরে দিতে চেয়েছিলেন এবং সেখানে নিজের নাম খোদাই করতে চেয়েছিলেন (যা তিনি পারেননি)। পরে ৫৭৮ হিজরীতে ক্রুসেডাররা মদীনা দখল করে রাসূল (ছাঃ)-এর লাশ উঠিয়ে ফিলিস্তীনে নিয়ে যেতে চেয়েছিল (যেটা তারাও পারেনি)। বিষয়টি ইবনু জুবায়ের স্বীয় রিহলাহ-এর মধ্যে এবং মাকরেযী স্বীয় খুত্বাত্ব-এর মধ্যে বর্ণনা করেছেন। পরে দু’টি কাহিনী মিশ্রিত হয়ে একটি কাহিনীতে পরিণত হয়েছে। আল্লাহ সর্বাধিক অবগত’ (দ্রঃ ড. আলী মুহাম্মাদ ছাল্লাবী, আল-কাএদুল মুজাহিদ নূরুদ্দীন মাহমূদ যঙ্গী, পৃঃ ২৬০-২৬১)। এছাড়া এ ঘটনার মধ্যে পুড়িয়ে হত্যা করার কথা বিবৃত হয়েছে, যা শরী‘আত বিরোধী। অতএব ঘটনাটি বর্ণনা করা থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।
২০৬
প্রশ্ন (৫/৩২৫) : মানুষের উপর জিন জাতির বিভিন্ন অলৌকিক কর্মকান্ড যেমন উড়িয়ে নেওয়া, তার উপর আছর করা ইত্যাদি যেসব বিষয় সমাজে প্রচলিত রয়েছে, এগুলির সত্যতা কতটুকু?-পারভেয, বহদ্দারহাট, চট্টগ্রাম।
উত্তর : জিনদের এসব কর্মকান্ডের সত্যতা রয়েছে। যেমন জনৈক জিন সুলায়মান (আঃ)-এর নির্দেশে সাবা-র রাণী বিলক্বীসের সিংহাসন চোখের পলকে তাঁর দরবারে এনে হাযির করেছিল (নামল ২৭/৩৯-৪২)। রাসূল (ছাঃ) এক শিশুর মধ্য থেকে জিনকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন, ‘বেরিয়ে যা হে আল্লাহর দুশমন! আমি আল্লাহর রাসূল’। অতঃপর সে বেরিয়ে যায়। শিশুটি সাত বছর যাবৎ প্রতিদিন দু’বার করে জিন দ্বারা আক্রান্ত হ’ত (হাকেম হা/৪২৩২; ছহীহাহ হা/৪৮৫)। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, ‘আমরা সবাই মক্কার বাইরে রাত্রিকালে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে ছিলাম। কিন্তু এক সময় তিনি হারিয়ে গেলেন। আমরা ভয় পেলাম তাঁকে জিনে উড়িয়ে নিয়ে গেল, নাকি কেউ অপহরণ করল। আমরা চারদিকে খুঁজতে থাকলাম। কিন্তু না পেয়ে গভীর দুশ্চিন্তায় রাত কাটালাম। ...সকালে তাঁকে আমরা হেরা পাহাড়ের দিক থেকে আসতে দেখলাম। অতঃপর তিনি আমাদের বললেন, জিনদের একজন প্রতিনিধি আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। আমি গিয়ে তাদেরকে কুরআন শুনালাম’। ... (মুসলিম হা/৪৫০)। অতএব এগুলি অবিশ্বাস করার কোন কারণ নেই।
জিনের প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সূরা ফালাক্ব ও নাস পাঠ করাই যথেষ্ট। এছাড়া সূরা ফাতিহা, সূরা কাফেরূন, সূরা ইখলাছ, আয়াতুল কুরসী ইত্যাদি পাঠ করা যায়।
উত্তর : জিনদের এসব কর্মকান্ডের সত্যতা রয়েছে। যেমন জনৈক জিন সুলায়মান (আঃ)-এর নির্দেশে সাবা-র রাণী বিলক্বীসের সিংহাসন চোখের পলকে তাঁর দরবারে এনে হাযির করেছিল (নামল ২৭/৩৯-৪২)। রাসূল (ছাঃ) এক শিশুর মধ্য থেকে জিনকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন, ‘বেরিয়ে যা হে আল্লাহর দুশমন! আমি আল্লাহর রাসূল’। অতঃপর সে বেরিয়ে যায়। শিশুটি সাত বছর যাবৎ প্রতিদিন দু’বার করে জিন দ্বারা আক্রান্ত হ’ত (হাকেম হা/৪২৩২; ছহীহাহ হা/৪৮৫)। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, ‘আমরা সবাই মক্কার বাইরে রাত্রিকালে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে ছিলাম। কিন্তু এক সময় তিনি হারিয়ে গেলেন। আমরা ভয় পেলাম তাঁকে জিনে উড়িয়ে নিয়ে গেল, নাকি কেউ অপহরণ করল। আমরা চারদিকে খুঁজতে থাকলাম। কিন্তু না পেয়ে গভীর দুশ্চিন্তায় রাত কাটালাম। ...সকালে তাঁকে আমরা হেরা পাহাড়ের দিক থেকে আসতে দেখলাম। অতঃপর তিনি আমাদের বললেন, জিনদের একজন প্রতিনিধি আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। আমি গিয়ে তাদেরকে কুরআন শুনালাম’। ... (মুসলিম হা/৪৫০)। অতএব এগুলি অবিশ্বাস করার কোন কারণ নেই।
জিনের প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সূরা ফালাক্ব ও নাস পাঠ করাই যথেষ্ট। এছাড়া সূরা ফাতিহা, সূরা কাফেরূন, সূরা ইখলাছ, আয়াতুল কুরসী ইত্যাদি পাঠ করা যায়।
২০৭
প্রশ্ন (৬/৩২৬) : মেহেদী পাতা ব্যতীত চুল-দাড়িতে লাল কলপ বা বগলী ব্যবহার করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?-নাজমুল হক, ভবানীগঞ্জ, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : চুল ও দাড়ি সাদা হয়ে গেলে মেহেদী বা অন্য কোন রং দিয়ে তা পরিবর্তন করা যাবে। তবে কালো রং ব্যবহার করা নিষিদ্ধ (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৪২৪)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, শেষ যামানায় কিছু লোকের আবির্ভাব ঘটবে, যারা কবুতরের বুকের পশমের ন্যায় কালো কলপ দিয়ে চুল-দাড়ি কালো করবে। এরা জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না’ (আবুদাঊদ হা/৪২১২; নাসাঈ, মিশকাত হা/৪৪৫২)। এজন্য উত্তম রং হ’ল মেহেদী (আবুদাঊদ হা/৪২০৫, মিশকাত হা/৪৪৫১)। উল্লেখ্য, স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করা এবং শত্রুর হৃদয়ে ভীতি সঞ্চার করার জন্য কালো খেযাব ব্যবহার করা সম্পর্কে বর্ণিত হাদীছটি ‘মুনকার’ বা ‘যঈফ’ (ইবনু মাজাহ হা/৩৬২৫; সিলসিলা যঈফাহ হা/২৯৭২)।
উত্তর : চুল ও দাড়ি সাদা হয়ে গেলে মেহেদী বা অন্য কোন রং দিয়ে তা পরিবর্তন করা যাবে। তবে কালো রং ব্যবহার করা নিষিদ্ধ (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৪২৪)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, শেষ যামানায় কিছু লোকের আবির্ভাব ঘটবে, যারা কবুতরের বুকের পশমের ন্যায় কালো কলপ দিয়ে চুল-দাড়ি কালো করবে। এরা জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না’ (আবুদাঊদ হা/৪২১২; নাসাঈ, মিশকাত হা/৪৪৫২)। এজন্য উত্তম রং হ’ল মেহেদী (আবুদাঊদ হা/৪২০৫, মিশকাত হা/৪৪৫১)। উল্লেখ্য, স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করা এবং শত্রুর হৃদয়ে ভীতি সঞ্চার করার জন্য কালো খেযাব ব্যবহার করা সম্পর্কে বর্ণিত হাদীছটি ‘মুনকার’ বা ‘যঈফ’ (ইবনু মাজাহ হা/৩৬২৫; সিলসিলা যঈফাহ হা/২৯৭২)।
-আব্দুল্লাহ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : কবরস্থান ভরে গেলে এবং প্রশস্ত করা সম্ভব না হলে, এমতাবস্থায় পুরাতন কবরগুলোর লাশ মাটির সাথে মিশে গেছে বলে অভিজ্ঞ ব্যক্তিগণ একমত হলে সেখানে নতুনভাবে কবর দেওয়ায় কোন বাধা নেই। কবর খুঁড়তে গিয়ে যদি প্রথম দিকেই মৃত ব্যক্তির হাড়-হাড্ডি পাওয়া যায়, তাহ’লে কবর খনন বন্ধ করবে। কিন্তু যদি শেষের দিকে পাওয়া যায়, তবে হাড়টিকে কবরের একপাশে রেখেই সেখানে নতুন লাশের কবর দিবে। কেননা এক কবরে একাধিক লাশ দাফন করা জায়েয আছে (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৩০১)। মদীনার বাক্বী‘উল গারক্বাদ এবং মক্কার আল-মু‘আল্লা কবরস্থানে এ নিয়মই পালিত হয়ে আসছে (ফাতাওয়া ওয়া ইসতিশারাতুল ইসলাম ১৫/২০১)।
উত্তর : কবরস্থান ভরে গেলে এবং প্রশস্ত করা সম্ভব না হলে, এমতাবস্থায় পুরাতন কবরগুলোর লাশ মাটির সাথে মিশে গেছে বলে অভিজ্ঞ ব্যক্তিগণ একমত হলে সেখানে নতুনভাবে কবর দেওয়ায় কোন বাধা নেই। কবর খুঁড়তে গিয়ে যদি প্রথম দিকেই মৃত ব্যক্তির হাড়-হাড্ডি পাওয়া যায়, তাহ’লে কবর খনন বন্ধ করবে। কিন্তু যদি শেষের দিকে পাওয়া যায়, তবে হাড়টিকে কবরের একপাশে রেখেই সেখানে নতুন লাশের কবর দিবে। কেননা এক কবরে একাধিক লাশ দাফন করা জায়েয আছে (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৩০১)। মদীনার বাক্বী‘উল গারক্বাদ এবং মক্কার আল-মু‘আল্লা কবরস্থানে এ নিয়মই পালিত হয়ে আসছে (ফাতাওয়া ওয়া ইসতিশারাতুল ইসলাম ১৫/২০১)।
২০৯
প্রশ্ন (৮/৩২৮) : দাজ্জাল আসবে ক্বিয়ামতের পূর্বে। কিন্তু রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক দাজ্জালের ফেৎনা থেকে পানাহ চাওয়ার কারণ কি ছিল?-এনামুল হক, চারঘাট, রাজশাহী।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) নিজে সর্বদা দাজ্জালের ফিৎনা থেকে পানাহ চেয়েছেন। তিনি স্বীয় উম্মতকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন এবং তার অনিষ্ট থেকে পানাহ চাওয়ার দো‘আ শিখিয়েছেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৪৫৯)। কেবল আমাদের নবীই নন বরং সকল নবীই স্ব স্ব উম্মতকে দাজ্জালের ব্যাপারে সাবধান করে গেছেন (আবুদাউদ হা/৪৩১৬)। কারণ দাজ্জাল ক্বিয়ামতের পূর্বে আসলেও ক্বিয়ামত কখন ঘটবে সে ব্যাপারে কারো জানা নেই। আল্লাহ বলেন, ‘ক্বিয়ামত সন্নিকটে’ (ক্বামার ৫৪/১)। তিনি বলেন, তারা একে দূরে মনে করে। অথচ আমরা একে নিকটে মনে করি’ (মা‘আরেজ ৭০/৬-৭)। রাসূল (ছাঃ) ক্বিয়ামতের ব্যাপারে সর্বদা ভীত থাকতেন বলেই দাজ্জালের ফেৎনা থেকে পানাহ চাইতেন। যেমন একদা সূর্যগ্রহণ শুরু হলে তিনি ক্বিয়ামত শুরু হয়েছে মনে করে ভীত হয়ে দাঁড়িয়ে যান (বুখারী হা/১০৫৯)। সুতরাং আমাদেরকেও সদা সর্বদা দাজ্জালের ফেৎনা থেকে পানাহ চাইতে হবে এবং ক্বিয়ামতের সেই ভয়াবহ দিবস আসন্ন বিবেচনা করে প্রস্ত্ততি গ্রহণ করতে হবে।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) নিজে সর্বদা দাজ্জালের ফিৎনা থেকে পানাহ চেয়েছেন। তিনি স্বীয় উম্মতকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন এবং তার অনিষ্ট থেকে পানাহ চাওয়ার দো‘আ শিখিয়েছেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৪৫৯)। কেবল আমাদের নবীই নন বরং সকল নবীই স্ব স্ব উম্মতকে দাজ্জালের ব্যাপারে সাবধান করে গেছেন (আবুদাউদ হা/৪৩১৬)। কারণ দাজ্জাল ক্বিয়ামতের পূর্বে আসলেও ক্বিয়ামত কখন ঘটবে সে ব্যাপারে কারো জানা নেই। আল্লাহ বলেন, ‘ক্বিয়ামত সন্নিকটে’ (ক্বামার ৫৪/১)। তিনি বলেন, তারা একে দূরে মনে করে। অথচ আমরা একে নিকটে মনে করি’ (মা‘আরেজ ৭০/৬-৭)। রাসূল (ছাঃ) ক্বিয়ামতের ব্যাপারে সর্বদা ভীত থাকতেন বলেই দাজ্জালের ফেৎনা থেকে পানাহ চাইতেন। যেমন একদা সূর্যগ্রহণ শুরু হলে তিনি ক্বিয়ামত শুরু হয়েছে মনে করে ভীত হয়ে দাঁড়িয়ে যান (বুখারী হা/১০৫৯)। সুতরাং আমাদেরকেও সদা সর্বদা দাজ্জালের ফেৎনা থেকে পানাহ চাইতে হবে এবং ক্বিয়ামতের সেই ভয়াবহ দিবস আসন্ন বিবেচনা করে প্রস্ত্ততি গ্রহণ করতে হবে।
-আবুল হোসেন, রাজশাহী।
উত্তর : এটি কোন দো‘আ নয়, বরং কবিতা। বাক্যটি পারস্য কবি শেখ সা‘দী (৫৮৫ অথবা ৬০৬-৬৯১ হিঃ) স্বীয় গুলিস্তাঁ গ্রন্থে আরবীতে লিখিত তার অল্প সংখ্যক কবিতা সমূহের মধ্যে রাসূল (ছাঃ)-এর প্রশংসায় লিখিত কবিতার একটি অংশ। এটি দরূদ হিসাবে পাঠ করা যাবে না। কারণ এটি একটি কবিতা মাত্র। দ্বিতীয়তঃ এটি শিরক মিশ্রিত। এখানে বলা হয়েছে, ‘উচ্চতা তার পূর্ণতায় পৌঁছে গেছে’। অথচ এটি কেবল আল্লাহর জন্য খাছ। তৃতীয়তঃ এখানে রাসূল (ছাঃ)-কে নূরের তৈরী কল্পনা করা হয়েছে। যাঁর দেহের আলোকচ্ছটায় অন্ধকার বিদূরিত হয়েছে। এটি কুরআন বিরোধী আক্বীদা (কাহফ ১৮/১১০)। সুতরাং এটি পাঠ করা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। উল্লেখ্য যে, স্বয়ং কবিও এটিকে দরূদ বলেননি। বরং শেষে বলেছেন, صَلُّوا عَلَيْهِ وَآلِهِ ‘তোমরা তাঁর ও তাঁর পরিবারের প্রতি দরূদ পাঠ কর’।
উত্তর : এটি কোন দো‘আ নয়, বরং কবিতা। বাক্যটি পারস্য কবি শেখ সা‘দী (৫৮৫ অথবা ৬০৬-৬৯১ হিঃ) স্বীয় গুলিস্তাঁ গ্রন্থে আরবীতে লিখিত তার অল্প সংখ্যক কবিতা সমূহের মধ্যে রাসূল (ছাঃ)-এর প্রশংসায় লিখিত কবিতার একটি অংশ। এটি দরূদ হিসাবে পাঠ করা যাবে না। কারণ এটি একটি কবিতা মাত্র। দ্বিতীয়তঃ এটি শিরক মিশ্রিত। এখানে বলা হয়েছে, ‘উচ্চতা তার পূর্ণতায় পৌঁছে গেছে’। অথচ এটি কেবল আল্লাহর জন্য খাছ। তৃতীয়তঃ এখানে রাসূল (ছাঃ)-কে নূরের তৈরী কল্পনা করা হয়েছে। যাঁর দেহের আলোকচ্ছটায় অন্ধকার বিদূরিত হয়েছে। এটি কুরআন বিরোধী আক্বীদা (কাহফ ১৮/১১০)। সুতরাং এটি পাঠ করা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। উল্লেখ্য যে, স্বয়ং কবিও এটিকে দরূদ বলেননি। বরং শেষে বলেছেন, صَلُّوا عَلَيْهِ وَآلِهِ ‘তোমরা তাঁর ও তাঁর পরিবারের প্রতি দরূদ পাঠ কর’।
২১১
প্রশ্ন (১০/৩৩০) : মসজিদের জন্য জমি ওয়াকফ করার পর কমিটির কোন সদস্যের সাথে মনোমালিন্যের কারণে জমিদাতা তাকে বলেন যে, আপনি এ মসজিদে ছালাত আদায় থেকে বিরত না থাকলে কিয়ামত পর্যন্ত এর উপর আমার দাবী থাকবে। এক্ষণে ওয়াকফকারী কি এরূপ বলার অধিকার রাখেন? এতে কি ওয়াকফের কোন ক্ষতি হয়? উক্ত মুছল্লী এই মসজিদে ছালাত আদায় করতে পারবে কি?-নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, জামালপুর।
উত্তর : কোন ব্যক্তি কিছু ওয়াকফ করে তা পুনরায় দাবী করতে পারে না। কেননা ওয়াকফকৃত বস্ত্ত তার থাকে না। সুতরাং এরূপ দাবী করা সম্পদ ফিরিয়ে নেওয়ার শামিল। যাকে বমি করে পুনরায় খাওয়ার সাথে তুলনা করা হয়েছে (বুখারী হা/১৪৯০, মুসলিম হা/১৬২২, মিশকাত হা/১৯৫৪)। আর কোন মুসলিম অপর মুসলিমকে মসজিদে ছালাত আদায় থেকে বাধা দেওয়ার অধিকার রাখে না। মসজিদে ছালাত আদায় করতে নিষেধ করা বড় গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ বলেন, ‘তার চাইতে বড় যালেম আর কে আছে যে আল্লাহর মসজিদ সমূহে তাঁর নাম উচ্চারণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলিকে বিরান করার চেষ্টা চালায়? (বাক্বারাহ ২/১১৪)। এক্ষণে উক্ত জমির ওয়াকফকারী হিসাবে নিজের বড়ত্ব যাহির করে এরূপ কাজ করলে তাকে তওবা করতে হবে। নতুবা ওয়াকফের নেকী থেকে তিনি বঞ্চিত হবেন।
উত্তর : কোন ব্যক্তি কিছু ওয়াকফ করে তা পুনরায় দাবী করতে পারে না। কেননা ওয়াকফকৃত বস্ত্ত তার থাকে না। সুতরাং এরূপ দাবী করা সম্পদ ফিরিয়ে নেওয়ার শামিল। যাকে বমি করে পুনরায় খাওয়ার সাথে তুলনা করা হয়েছে (বুখারী হা/১৪৯০, মুসলিম হা/১৬২২, মিশকাত হা/১৯৫৪)। আর কোন মুসলিম অপর মুসলিমকে মসজিদে ছালাত আদায় থেকে বাধা দেওয়ার অধিকার রাখে না। মসজিদে ছালাত আদায় করতে নিষেধ করা বড় গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ বলেন, ‘তার চাইতে বড় যালেম আর কে আছে যে আল্লাহর মসজিদ সমূহে তাঁর নাম উচ্চারণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলিকে বিরান করার চেষ্টা চালায়? (বাক্বারাহ ২/১১৪)। এক্ষণে উক্ত জমির ওয়াকফকারী হিসাবে নিজের বড়ত্ব যাহির করে এরূপ কাজ করলে তাকে তওবা করতে হবে। নতুবা ওয়াকফের নেকী থেকে তিনি বঞ্চিত হবেন।
-আবুল বাশার, কাঞ্চন, নারায়ণগঞ্জ।
উত্তর : উক্ত বক্তব্যটি রাসূল (ছাঃ) বা ছাহাবায়ে কেরামের আমল থেকে প্রমাণিত নয়। তবে উক্ত মর্মে দো‘আ হিসাবে হাদীছ পাওয়া যায়। যেমন জনৈক ছাহাবী সফরকালে রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে বিদায় চাইলে তিনি তার হাত ধরে বলেন, ‘ফী হিফযিল্লাহ ওয়া ফী কানাফিল্লাহ’... (আল্লাহর হেফাযতে ও তাঁর রহমতের ছায়া তলে...) (দারেমী হা/২৬৭১, সনদ জাইয়িদ, তাহকীক : সালীম আসাদ)। বিদায়কালে এর চাইতে বিশুদ্ধ ও সুন্দর দো‘আ সমূহ হাদীছে বর্ণিত হয়েছে। যেমন আসতাওদি‘উল্লা-হা দীনাকুম ওয়া আমা-নাতাকুম ওয়া খাওয়া-তীমা আ‘মা-লিকুম’ (আমি আপনার বা আপনাদের দ্বীন, ও আমানত সমূহ এবং শেষ আমল সমূহকে আল্লাহর হেফাযতে ন্যস্ত করলাম’) (তিরমিযী, আবুদাঊদ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/২৪৩৫)।
উল্লেখ্য যে, ফী আমা-নিল্লা-হ বলে বিদায় দেওয়ার প্রচলিত প্রথার কোন ভিত্তি নেই। এছাড়া অনেকে ‘ভাল থাকুন’ ‘সুস্থ থাকুন’ ইত্যাদি বলেন। এরূপ বলা যাবে না। বরং ‘আল্লাহ আপনাকে ভাল রাখুন’ ‘সুস্থ রাখুন’ বলা যাবে। কারণ মানুষ নিজে নিজে ভাল থাকতে পারে না আল্লাহর রহমত ব্যতীত।
উত্তর : উক্ত বক্তব্যটি রাসূল (ছাঃ) বা ছাহাবায়ে কেরামের আমল থেকে প্রমাণিত নয়। তবে উক্ত মর্মে দো‘আ হিসাবে হাদীছ পাওয়া যায়। যেমন জনৈক ছাহাবী সফরকালে রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে বিদায় চাইলে তিনি তার হাত ধরে বলেন, ‘ফী হিফযিল্লাহ ওয়া ফী কানাফিল্লাহ’... (আল্লাহর হেফাযতে ও তাঁর রহমতের ছায়া তলে...) (দারেমী হা/২৬৭১, সনদ জাইয়িদ, তাহকীক : সালীম আসাদ)। বিদায়কালে এর চাইতে বিশুদ্ধ ও সুন্দর দো‘আ সমূহ হাদীছে বর্ণিত হয়েছে। যেমন আসতাওদি‘উল্লা-হা দীনাকুম ওয়া আমা-নাতাকুম ওয়া খাওয়া-তীমা আ‘মা-লিকুম’ (আমি আপনার বা আপনাদের দ্বীন, ও আমানত সমূহ এবং শেষ আমল সমূহকে আল্লাহর হেফাযতে ন্যস্ত করলাম’) (তিরমিযী, আবুদাঊদ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/২৪৩৫)।
উল্লেখ্য যে, ফী আমা-নিল্লা-হ বলে বিদায় দেওয়ার প্রচলিত প্রথার কোন ভিত্তি নেই। এছাড়া অনেকে ‘ভাল থাকুন’ ‘সুস্থ থাকুন’ ইত্যাদি বলেন। এরূপ বলা যাবে না। বরং ‘আল্লাহ আপনাকে ভাল রাখুন’ ‘সুস্থ রাখুন’ বলা যাবে। কারণ মানুষ নিজে নিজে ভাল থাকতে পারে না আল্লাহর রহমত ব্যতীত।
-ইবরাহীম, সিংড়া, নাটোর।
উত্তর : সালাম প্রদানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ‘আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’ এবং সর্বনিম্ন ‘আসসালামু ‘আলাইকুম’ বলবে। সর্বোচ্চটি বললে ত্রিশ নেকী এবং সর্বনিম্নটি বললে দশ নেকী হবে (আবুদাঊদ হা/৫১৯৫; তিরমিযী হা/২৬৮৯)। আর সালাম প্রদানের সময় ‘ওয়া মাগফিরাতুহু’ যোগ করা সম্পর্কিত হাদীছটি যঈফ হ’লেও (আবুদাউদ হা/৫১৯৬; মিশকাত হা/৪৬৪৫) উত্তর প্রদানের সময় যোগ করার হাদীছটি ‘হাসান’ (বুখারী, তারীখুল কাবীর ১/৩৩০; সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৪৪৯)।
উত্তর : সালাম প্রদানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ‘আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’ এবং সর্বনিম্ন ‘আসসালামু ‘আলাইকুম’ বলবে। সর্বোচ্চটি বললে ত্রিশ নেকী এবং সর্বনিম্নটি বললে দশ নেকী হবে (আবুদাঊদ হা/৫১৯৫; তিরমিযী হা/২৬৮৯)। আর সালাম প্রদানের সময় ‘ওয়া মাগফিরাতুহু’ যোগ করা সম্পর্কিত হাদীছটি যঈফ হ’লেও (আবুদাউদ হা/৫১৯৬; মিশকাত হা/৪৬৪৫) উত্তর প্রদানের সময় যোগ করার হাদীছটি ‘হাসান’ (বুখারী, তারীখুল কাবীর ১/৩৩০; সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৪৪৯)।
২১৪
প্রশ্ন (১৩/৩৩৩) : জনৈক বক্তা বলেন, ‘মাক্কী সূরায় মুসলমানদেরকে ‘হে ঈমানদারগণ’ বলা হয়নি। কিন্তু মাদানী সূরায় বলা হয়েছে। এ থেকে বুঝা যায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যতীত পূর্ণ ঈমানদার হওয়া সম্ভব নয়’। একথা গ্রহণযোগ্য কি?-দেলোয়ার, জামিরা, পুঠিয়া, রাজশাহী।
উত্তর : উক্ত বক্তার বক্তব্য সঠিক নয়। কারণ মাক্কী যুগেও ‘হে ঈমানদারগণ’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে (হজ্জ ২২/৭৭)। উক্ত বক্তার রাজনৈতিক দর্শন সঠিক নয়। তিনি ইক্বামতে দ্বীনের অর্থ ইক্বামতে হুকূমত বা রাষ্ট্র ক্ষমতার অধিকারী হওয়াকে বুঝেন। তার বক্তব্য অনুযায়ী মাক্কী যুগে ছাহাবায়ে কেরাম পূর্ণ মুমিন ছিলেন না এবং এসময় মা খাদীজা সহ যেসব মুসলিম মারা গেছেন, তারা পূর্ণ ঈমানের উপর মারা যাননি (নাঊযুবিল্লাহ)। এ ধরনের আক্বীদা থেকে তওবা করা উচিত। শেষনবী (ছাঃ) সহ কোন নবীই রাষ্ট্র কায়েমের জন্য দুনিয়াতে আসেননি। বরং তাঁরা এসেছিলেন মানুষকে জান্নাতের পথ দেখাতে ও জাহান্নামের ভয় প্রদর্শন করতে (ইসরা ১৭/১০৫)।
উত্তর : উক্ত বক্তার বক্তব্য সঠিক নয়। কারণ মাক্কী যুগেও ‘হে ঈমানদারগণ’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে (হজ্জ ২২/৭৭)। উক্ত বক্তার রাজনৈতিক দর্শন সঠিক নয়। তিনি ইক্বামতে দ্বীনের অর্থ ইক্বামতে হুকূমত বা রাষ্ট্র ক্ষমতার অধিকারী হওয়াকে বুঝেন। তার বক্তব্য অনুযায়ী মাক্কী যুগে ছাহাবায়ে কেরাম পূর্ণ মুমিন ছিলেন না এবং এসময় মা খাদীজা সহ যেসব মুসলিম মারা গেছেন, তারা পূর্ণ ঈমানের উপর মারা যাননি (নাঊযুবিল্লাহ)। এ ধরনের আক্বীদা থেকে তওবা করা উচিত। শেষনবী (ছাঃ) সহ কোন নবীই রাষ্ট্র কায়েমের জন্য দুনিয়াতে আসেননি। বরং তাঁরা এসেছিলেন মানুষকে জান্নাতের পথ দেখাতে ও জাহান্নামের ভয় প্রদর্শন করতে (ইসরা ১৭/১০৫)।
-শহীদুল্লাহ, বোয়ালকান্দি, সিরাজগঞ্জ।
উত্তর : ইসলামী পরিভাষায় ‘জিহাদ’ অর্থ- আল্লাহর পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো’ এবং ‘ক্বিতাল’ অর্থ- আল্লাহর পথে কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করা’। দু’টি শব্দ অনেক সময় একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। তবে ক্বিতাল শব্দটি নির্দিষ্ট অর্থবোধক এবং জিহাদ ব্যাপক অর্থবোধক। অর্থগত ব্যাপকতার কারণে কখনো পিতা-মাতার খেদমত করাকে অন্যতম জিহাদ বলা হয়েছে, কখনো কুপ্রবৃত্তি ও শয়তানের কুমন্ত্রণার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করাকে জিহাদ বলা হয়েছে। অনুরূপ শাসকের নিকট হক কথা বলাকে সর্বোত্তম জিহাদ বলা হয়েছে (আনকাবূত ৬; বুখারী হা/৫৯৭২, ৬৪৯৪; তিরমিযী, হা/১৬৭১; মিশকাত হা/৩৭০৫)।
বাতিলের বিরুদ্ধে জিহাদ সর্বাবস্থায় ফরয। তবে সেটি স্থান-কাল-পাত্র ভেদে কখনো নিরস্ত্র হবে, কখনো সশস্ত্র হবে। নিরস্ত্র জিহাদ মূলতঃ প্রজ্ঞাপূর্ণ দাওয়াত ও হক-এর উপরে দৃঢ় থাকার মাধ্যমে হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে ক্বিতালের জন্য অনুকূল পরিবেশ, পর্যাপ্ত সামর্থ্য, বৈধ কর্তৃপক্ষ এবং আল্লাহর পথে নির্দেশ দানকারী আমীরের প্রয়োজন হবে। নইলে ছবর করতে হবে এবং সম্ভবপর আমর বিল মা‘রূফ ও নাহি ‘আনিল মুনকারের মৌলিক দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে।
শান্তিপূর্ণ অবস্থায় কুরআন, হাদীছ, বিজ্ঞান, যুক্তি-প্রমাণ ও প্রজ্ঞাপূর্ণ পন্থায় ইসলামকে অন্যান্য দ্বীনের উপরে বিজয়ী করার সংগ্রামকে বলা হবে ‘জিহাদ’। যাকে এযুগে ‘চিন্তার যুদ্ধ’ ( الْغَزْوُ الْفِكْرِيُّ ) বলা হয়। এই জিহাদে দৃঢ় ও আপোষহীন থাকা এবং জান-মাল ব্যয় করা নিঃসন্দেহে জান্নাত লাভের উত্তম অসীলা হবে। (বিস্তারিত দেখুন : ‘জিহাদ ও ক্বিতাল’ বই)।
উত্তর : ইসলামী পরিভাষায় ‘জিহাদ’ অর্থ- আল্লাহর পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো’ এবং ‘ক্বিতাল’ অর্থ- আল্লাহর পথে কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করা’। দু’টি শব্দ অনেক সময় একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। তবে ক্বিতাল শব্দটি নির্দিষ্ট অর্থবোধক এবং জিহাদ ব্যাপক অর্থবোধক। অর্থগত ব্যাপকতার কারণে কখনো পিতা-মাতার খেদমত করাকে অন্যতম জিহাদ বলা হয়েছে, কখনো কুপ্রবৃত্তি ও শয়তানের কুমন্ত্রণার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করাকে জিহাদ বলা হয়েছে। অনুরূপ শাসকের নিকট হক কথা বলাকে সর্বোত্তম জিহাদ বলা হয়েছে (আনকাবূত ৬; বুখারী হা/৫৯৭২, ৬৪৯৪; তিরমিযী, হা/১৬৭১; মিশকাত হা/৩৭০৫)।
বাতিলের বিরুদ্ধে জিহাদ সর্বাবস্থায় ফরয। তবে সেটি স্থান-কাল-পাত্র ভেদে কখনো নিরস্ত্র হবে, কখনো সশস্ত্র হবে। নিরস্ত্র জিহাদ মূলতঃ প্রজ্ঞাপূর্ণ দাওয়াত ও হক-এর উপরে দৃঢ় থাকার মাধ্যমে হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে ক্বিতালের জন্য অনুকূল পরিবেশ, পর্যাপ্ত সামর্থ্য, বৈধ কর্তৃপক্ষ এবং আল্লাহর পথে নির্দেশ দানকারী আমীরের প্রয়োজন হবে। নইলে ছবর করতে হবে এবং সম্ভবপর আমর বিল মা‘রূফ ও নাহি ‘আনিল মুনকারের মৌলিক দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে।
শান্তিপূর্ণ অবস্থায় কুরআন, হাদীছ, বিজ্ঞান, যুক্তি-প্রমাণ ও প্রজ্ঞাপূর্ণ পন্থায় ইসলামকে অন্যান্য দ্বীনের উপরে বিজয়ী করার সংগ্রামকে বলা হবে ‘জিহাদ’। যাকে এযুগে ‘চিন্তার যুদ্ধ’ ( الْغَزْوُ الْفِكْرِيُّ ) বলা হয়। এই জিহাদে দৃঢ় ও আপোষহীন থাকা এবং জান-মাল ব্যয় করা নিঃসন্দেহে জান্নাত লাভের উত্তম অসীলা হবে। (বিস্তারিত দেখুন : ‘জিহাদ ও ক্বিতাল’ বই)।
২১৬
প্রশ্ন (১৫/৩৩৫) : প্রবাসী স্বামীর দেশে থাকা স্ত্রীর সাথে তার শ্বশুরের অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠলে বিষয়টি হাতেনাতে ধরা পড়ে। তখন পিতা ছেলের নিকটে ক্ষমা চাইলেও পরবর্তীতে একই সমস্যা একাধিক বার দেখা দেওয়ায় এক্ষণে উক্ত স্বামীর জন্য করণীয় কি?-নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, সঊদী আরব।
উত্তর : বর্ণনা অনুযায়ী নিশ্চিতভাবে বুঝা যায়, উভয়ের সম্মতিতে এ কাজ হচ্ছে। এক্ষেত্রে ইসলামের বিধান হ’ল উভয়কে পাথর মেরে হত্যা করা। এক্ষণে রাষ্ট্রে ইসলামী আইন জারি না থাকায় তা সম্ভব নয়। অতএব এক্ষেত্রে স্ত্রীকে তালাক দিতে হবে। নইলে স্বামী ‘দাইয়ূছ’ হিসাবে গণ্য হবে। যার জন্য জান্নাতকে হারাম করা হয়েছে (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৩২/১৪১)।
উত্তর : বর্ণনা অনুযায়ী নিশ্চিতভাবে বুঝা যায়, উভয়ের সম্মতিতে এ কাজ হচ্ছে। এক্ষেত্রে ইসলামের বিধান হ’ল উভয়কে পাথর মেরে হত্যা করা। এক্ষণে রাষ্ট্রে ইসলামী আইন জারি না থাকায় তা সম্ভব নয়। অতএব এক্ষেত্রে স্ত্রীকে তালাক দিতে হবে। নইলে স্বামী ‘দাইয়ূছ’ হিসাবে গণ্য হবে। যার জন্য জান্নাতকে হারাম করা হয়েছে (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৩২/১৪১)।
২১৭
প্রশ্ন (১৬/৩৩৬) : নিয়োগ পরীক্ষায় ১ম হওয়া সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য অনুদান না দিলে চাকুরী হবে না। এক্ষেত্রে আমার করণীয় কি?-রফীকুল ফাহদ, হারাগাছ, রংপুর।
উত্তর : অন্যের হক নষ্ট করে নিজে তা নেওয়ার জন্য ঘুষ দিলে সেটা হবে মহাপাপ। সেক্ষেত্রে ঘুষ দাতা এবং ঘুষ গ্রহীতা উভয়েই কঠিন গুনাহের ভাগিদার হবে। রাসূল (ছাঃ) ঘুষদাতা ও ঘুষগ্রহীতার উপর লা‘নত করেছেন (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৩৭৫৩)।
পক্ষান্তরে মযলূম ব্যক্তি যুলুম প্রতিরোধের জন্য বাধ্যগত অবস্থায় এটা করলে, সেটা তার জন্য ‘মুবাহ’ হবে। কিন্তু ঘুষ গ্রহীতার জন্য তা হারাম হবে। এক্ষেত্রে ঘুষগ্রহীতাই পাপের বোঝা বহন করবে। ইবনু হাযম (রহঃ) বলেন, যাকে তার হক থেকে বঞ্চিত করা হয়, তার জন্য যুলুম প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে অর্থ প্রদান করা ‘মুবাহ’। তবে এক্ষেত্রে গ্রহণকারী হবে মহাপাপী (মুহাল্লা ৮/১১৮ মাসআলা নং ১৬৩৮)। ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, গ্রহণকারীর জন্য এটি হারাম এবং দাতার জন্য যুলুম প্রতিরোধের স্বার্থে জায়েয’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৩১/২৮৬)। তবে যতদূর সম্ভব এ ব্যতীত অন্য কোন বৈধ উপায় অবলম্বন করা তাক্বওয়াশীল মুমিনের জন্য কর্তব্য। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সাধ্যমত আল্লাহকে ভয় কর’ (তাগাবুন ৬৪/১৬)।
উল্লেখ্য যে, চাকুরীর লোভ দেখিয়ে প্রার্থীর নিকট থেকে প্রতিষ্ঠানের জন্য ‘ডোনেশন’ আদায় করা ঘুষ আদায় করার শামিল। তাছাড়া বর্তমানে নিয়োগ পরীক্ষায় ১ম হওয়া না হওয়া আর্থিক লেনদেন বা প্রভাবশালীদের চাপ সৃষ্টির উপরে অনেকটাই নির্ভরশীল। অতএব উভয় পক্ষকে সাধ্যমত তাক্বওয়া অবলম্বন করা আবশ্যক।
উত্তর : অন্যের হক নষ্ট করে নিজে তা নেওয়ার জন্য ঘুষ দিলে সেটা হবে মহাপাপ। সেক্ষেত্রে ঘুষ দাতা এবং ঘুষ গ্রহীতা উভয়েই কঠিন গুনাহের ভাগিদার হবে। রাসূল (ছাঃ) ঘুষদাতা ও ঘুষগ্রহীতার উপর লা‘নত করেছেন (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৩৭৫৩)।
পক্ষান্তরে মযলূম ব্যক্তি যুলুম প্রতিরোধের জন্য বাধ্যগত অবস্থায় এটা করলে, সেটা তার জন্য ‘মুবাহ’ হবে। কিন্তু ঘুষ গ্রহীতার জন্য তা হারাম হবে। এক্ষেত্রে ঘুষগ্রহীতাই পাপের বোঝা বহন করবে। ইবনু হাযম (রহঃ) বলেন, যাকে তার হক থেকে বঞ্চিত করা হয়, তার জন্য যুলুম প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে অর্থ প্রদান করা ‘মুবাহ’। তবে এক্ষেত্রে গ্রহণকারী হবে মহাপাপী (মুহাল্লা ৮/১১৮ মাসআলা নং ১৬৩৮)। ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, গ্রহণকারীর জন্য এটি হারাম এবং দাতার জন্য যুলুম প্রতিরোধের স্বার্থে জায়েয’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৩১/২৮৬)। তবে যতদূর সম্ভব এ ব্যতীত অন্য কোন বৈধ উপায় অবলম্বন করা তাক্বওয়াশীল মুমিনের জন্য কর্তব্য। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সাধ্যমত আল্লাহকে ভয় কর’ (তাগাবুন ৬৪/১৬)।
উল্লেখ্য যে, চাকুরীর লোভ দেখিয়ে প্রার্থীর নিকট থেকে প্রতিষ্ঠানের জন্য ‘ডোনেশন’ আদায় করা ঘুষ আদায় করার শামিল। তাছাড়া বর্তমানে নিয়োগ পরীক্ষায় ১ম হওয়া না হওয়া আর্থিক লেনদেন বা প্রভাবশালীদের চাপ সৃষ্টির উপরে অনেকটাই নির্ভরশীল। অতএব উভয় পক্ষকে সাধ্যমত তাক্বওয়া অবলম্বন করা আবশ্যক।
২১৮
প্রশ্ন (১৭/৩৩৭) : বিভিন্ন বিদ‘আতী দিবস উপলক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় সেগুলিতে অংশগ্রহণ করা যাবে কি?-রায়হান, খয়রাবাদ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তরঃ বিদ‘আতী দিবস উপলক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ অন্যান্য যেকোন প্রতিষ্ঠানে আয়োজিত অনুষ্ঠান থেকে দূরে থাকতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তোমরা পাপ ও সীমালংঘনের কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা করো না’ (মায়েদা ৫/২)।
উত্তরঃ বিদ‘আতী দিবস উপলক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ অন্যান্য যেকোন প্রতিষ্ঠানে আয়োজিত অনুষ্ঠান থেকে দূরে থাকতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তোমরা পাপ ও সীমালংঘনের কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা করো না’ (মায়েদা ৫/২)।
-আব্দুল্লাহ, মুরাদনগর, কুমিল্লা।
উত্তর : উক্ত আয়াতের অর্থ হ’ল- ‘তারা আল্লাহকে ছেড়ে নিজেদের আলেম-ওলামা ও পোপ-পাদ্রীদের এবং মারিয়াম পুত্র মসীহ ঈসাকে ‘রব’ হিসাবে গ্রহণ করেছে। অথচ তাদের প্রতি কেবল এই আদেশ করা হয়েছিল যে, তারা শুধুমাত্র এক উপাস্যের ইবাদত করবে। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আর তারা যাদেরকে শরীক সাব্যস্ত করে, তিনি সে সব থেকে পবিত্র’ (তওবা ৯/৩১)।
খ্রিষ্টান ধর্মনেতা ‘আদী ইবনু হাতেম যখন ইসলাম কবুল করার জন্য রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে আসেন, তখন তিনি তার গলায় ঝুলানো স্বর্ণের বা রৌপ্য নির্মিত ক্রুসটি ফেলে দিতে বললেন। অতঃপর উক্ত আয়াতটি পাঠ করলেন। তখন ‘আদী বললেন, ‘আমরা তো তাদের ইবাদত করি না’। জবাবে রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘তারা কি সেই সব বস্ত্ত হারাম করে না যা আল্লাহ হালাল করেছেন, অতঃপর তোমরাও তা হারাম কর? আর তারা কি ঐসব বস্ত্ত হালাল করে না যা আল্লাহ হারাম করেছেন। অতঃপর তোমরাও তা হালাল কর? আদী বললেন, হ্যাঁ। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, এটাই তো ওদের ইবাদত হ’ল(তিরমিযী হা/৩০৯৫, ছহীহাহ হা/৩২৯৩)। আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ‘তারা তাদেরকে সিজদা করার আদেশ দিত না। বরং তাদেরকে আল্লাহর অবাধ্যতার আদেশ দিত এবং তারা তাদের সে আদেশ পালন করত। সেকারণে আল্লাহ তাদেরকে ‘রব’ হিসাবে অভিহিত করেছেন’ (তাফসীর ত্বাবারী হা/১৬৬৪১)।
উত্তর : উক্ত আয়াতের অর্থ হ’ল- ‘তারা আল্লাহকে ছেড়ে নিজেদের আলেম-ওলামা ও পোপ-পাদ্রীদের এবং মারিয়াম পুত্র মসীহ ঈসাকে ‘রব’ হিসাবে গ্রহণ করেছে। অথচ তাদের প্রতি কেবল এই আদেশ করা হয়েছিল যে, তারা শুধুমাত্র এক উপাস্যের ইবাদত করবে। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আর তারা যাদেরকে শরীক সাব্যস্ত করে, তিনি সে সব থেকে পবিত্র’ (তওবা ৯/৩১)।
খ্রিষ্টান ধর্মনেতা ‘আদী ইবনু হাতেম যখন ইসলাম কবুল করার জন্য রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে আসেন, তখন তিনি তার গলায় ঝুলানো স্বর্ণের বা রৌপ্য নির্মিত ক্রুসটি ফেলে দিতে বললেন। অতঃপর উক্ত আয়াতটি পাঠ করলেন। তখন ‘আদী বললেন, ‘আমরা তো তাদের ইবাদত করি না’। জবাবে রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘তারা কি সেই সব বস্ত্ত হারাম করে না যা আল্লাহ হালাল করেছেন, অতঃপর তোমরাও তা হারাম কর? আর তারা কি ঐসব বস্ত্ত হালাল করে না যা আল্লাহ হারাম করেছেন। অতঃপর তোমরাও তা হালাল কর? আদী বললেন, হ্যাঁ। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, এটাই তো ওদের ইবাদত হ’ল(তিরমিযী হা/৩০৯৫, ছহীহাহ হা/৩২৯৩)। আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ‘তারা তাদেরকে সিজদা করার আদেশ দিত না। বরং তাদেরকে আল্লাহর অবাধ্যতার আদেশ দিত এবং তারা তাদের সে আদেশ পালন করত। সেকারণে আল্লাহ তাদেরকে ‘রব’ হিসাবে অভিহিত করেছেন’ (তাফসীর ত্বাবারী হা/১৬৬৪১)।
২২০
প্রশ্ন (১৯/৩৩৯) : ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী কে ছিলেন? জনৈক বক্তা বলেন, ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) তাকে কাফের ঘোষণা করেছিলেন। এ কথার সত্যতা আছে কি?-ফরহাদ, মীরপুর, ঢাকা।
উত্তরঃ ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু ওমর ফখরুদ্দীন রাযী (রহঃ) ৫৪৪ হিজরী সনে ইরানের রায় শহরে জন্মগ্রহণ করেন এবং ৬০৬ হিজরী সনে আফগানিস্তানে মারা যান। তিনি আশ‘আরী আক্বীদায় বিশ্বাসী একজন উঁচুদরের আলেম, মুফাসসির ও দার্শনিক ছিলেন। তিনি বিখ্যাত তাফসীর ‘তাফসীরে কাবীর’-এর প্রণেতা। তবে তাঁর রচিত ‘আস-সিররুল মাকতূম ফিস সিহরে ওয়া মুখাতাবাতুন-নুজূম’ নামক গ্রন্থে তিনি নক্ষত্র ও মূর্তিপূজাকে সমর্থন করে বই লিখেন। এর পক্ষে প্রমাণ সমূহ উপস্থাপন করেন। সেকারণ ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রাঃ) বলেন, ‘এটি মুসলিম উম্মাহর ঐক্য মতে ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার শামিল ( وَهَذِهِ رِدَّةٌ عَنْ الْإِسْلَامِ بِاتِّفَاقِ الْمُسْلِمِينَ )। যদিও কখনো কেউ তওবা করে ইসলামের দিকে ফিরে আসে’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৪/৫৫)।
তবে শেষ জীবনে তিনি পূর্ববর্তী কর্মকান্ডের জন্য লজ্জিত হন এবং তওবা করে সালাফে ছালেহীনের অনুসৃত পথে ফিরে আসেন (ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ১৩/৫৫; ইবনুল ক্বাইয়িম, ছাওয়ায়েকুল মুরসালাহ ৩/১১৬৬)। ইমাম যাহাবী বলেন, আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করে দিবেন। কারণ তিনি প্রশংসিত পথের উপর মৃত্যুবরণ করেন (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ২১/৫০০)।
উত্তরঃ ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনু ওমর ফখরুদ্দীন রাযী (রহঃ) ৫৪৪ হিজরী সনে ইরানের রায় শহরে জন্মগ্রহণ করেন এবং ৬০৬ হিজরী সনে আফগানিস্তানে মারা যান। তিনি আশ‘আরী আক্বীদায় বিশ্বাসী একজন উঁচুদরের আলেম, মুফাসসির ও দার্শনিক ছিলেন। তিনি বিখ্যাত তাফসীর ‘তাফসীরে কাবীর’-এর প্রণেতা। তবে তাঁর রচিত ‘আস-সিররুল মাকতূম ফিস সিহরে ওয়া মুখাতাবাতুন-নুজূম’ নামক গ্রন্থে তিনি নক্ষত্র ও মূর্তিপূজাকে সমর্থন করে বই লিখেন। এর পক্ষে প্রমাণ সমূহ উপস্থাপন করেন। সেকারণ ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রাঃ) বলেন, ‘এটি মুসলিম উম্মাহর ঐক্য মতে ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার শামিল ( وَهَذِهِ رِدَّةٌ عَنْ الْإِسْلَامِ بِاتِّفَاقِ الْمُسْلِمِينَ )। যদিও কখনো কেউ তওবা করে ইসলামের দিকে ফিরে আসে’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৪/৫৫)।
তবে শেষ জীবনে তিনি পূর্ববর্তী কর্মকান্ডের জন্য লজ্জিত হন এবং তওবা করে সালাফে ছালেহীনের অনুসৃত পথে ফিরে আসেন (ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ১৩/৫৫; ইবনুল ক্বাইয়িম, ছাওয়ায়েকুল মুরসালাহ ৩/১১৬৬)। ইমাম যাহাবী বলেন, আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করে দিবেন। কারণ তিনি প্রশংসিত পথের উপর মৃত্যুবরণ করেন (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ২১/৫০০)।
-মোশাররফ হোসাইন, সাপাহার, নওগাঁ।
উত্তর : সরকারী খাস জমি অবহেলায় অনাবাদী হয়ে পড়ে থাকলে তাতে গাছ বা ফসল লাগিয়ে উপকৃত হওয়ায় কোন বাধা নেই। এক্ষেত্রে প্রথমে যিনি শুরু করবেন, তিনিই এর হকদার হবেন। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি এমন কোন জমি আবাদ করে, যার কোন মালিকানা নেই। তবে সেই তার অধিক হকদার (বুখারী হা/২৩৩৫, মিশকাত হা/২৯৯১)। তবে সরকার বাধা দিলে বা কোন কাজে লাগাতে চাইলে তা ফেরত দিতে হবে।
উত্তর : সরকারী খাস জমি অবহেলায় অনাবাদী হয়ে পড়ে থাকলে তাতে গাছ বা ফসল লাগিয়ে উপকৃত হওয়ায় কোন বাধা নেই। এক্ষেত্রে প্রথমে যিনি শুরু করবেন, তিনিই এর হকদার হবেন। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি এমন কোন জমি আবাদ করে, যার কোন মালিকানা নেই। তবে সেই তার অধিক হকদার (বুখারী হা/২৩৩৫, মিশকাত হা/২৯৯১)। তবে সরকার বাধা দিলে বা কোন কাজে লাগাতে চাইলে তা ফেরত দিতে হবে।
২২২
প্রশ্ন (২১/৩৪১) : বিবাহের মোহর নির্ধারণ হয়েছে অনেক বেশী। যা আমার সামর্থ্যের বাইরে। এমতাবস্থায় করণীয় কি?-রাশেদুল ইসলাম, সফিপুর, গাযীপুর।
উত্তর : এমতাবস্থায় বিষয়টি স্ত্রীর নিকটে পেশ করবে। স্ত্রী যদি সন্তুষ্ট চিত্তে তাকে কিছু ছাড় দেয়, সেক্ষেত্রে স্বামীর জন্য তা গ্রহণ করা বৈধ হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহরানা ফরয হিসাবে প্রদান কর। তবে তারা যদি তা থেকে খুশী মনে তোমাদের কিছু দেয়, তাহ’লে তা তোমরা সন্তুষ্টচিত্তে স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর’ (নিসা ৪/৪)। বস্ত্ততঃ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে অধিক পরিমাণ মোহরানা ধার্য করা এবং পরে স্ত্রীর কাছে মাফ চাওয়া ধোঁকার শামিল। কারণ মোহর আদায় না করলে দুনিয়া ও আখেরাতে স্ত্রীর নিকটে ঋণগ্রস্ত হয়ে থাকতে হবে।
উত্তর : এমতাবস্থায় বিষয়টি স্ত্রীর নিকটে পেশ করবে। স্ত্রী যদি সন্তুষ্ট চিত্তে তাকে কিছু ছাড় দেয়, সেক্ষেত্রে স্বামীর জন্য তা গ্রহণ করা বৈধ হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহরানা ফরয হিসাবে প্রদান কর। তবে তারা যদি তা থেকে খুশী মনে তোমাদের কিছু দেয়, তাহ’লে তা তোমরা সন্তুষ্টচিত্তে স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর’ (নিসা ৪/৪)। বস্ত্ততঃ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে অধিক পরিমাণ মোহরানা ধার্য করা এবং পরে স্ত্রীর কাছে মাফ চাওয়া ধোঁকার শামিল। কারণ মোহর আদায় না করলে দুনিয়া ও আখেরাতে স্ত্রীর নিকটে ঋণগ্রস্ত হয়ে থাকতে হবে।
-তামীমা, ছাতিহাটি, টাঙ্গাইল।
উত্তর : যাবে না। এটা একদিকে আল্লাহর বাণীর প্রতি অসম্মান। অন্যদিকে ইহূদী-খৃষ্টানদের অনুসরণ। যারা ক্রুস বা অনুরূপ কিছু ঝুলিয়ে রেখে সম্মান প্রদর্শন করে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অন্য কওমের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে’ (আহমাদ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৩৪৭)। এছাড়া তাবীযের উপর ভ্রান্ত বিশ্বাসের ন্যায় কোরআনের আয়াত লিখিত এরূপ লকেট ব্যবহার করাও হারাম। কেননা সে ভাববে, কুরআনের আয়াত লিখিত ‘লকেট’ ঝুলানো থাকলে সে সকল প্রকার ক্ষতি থেকে বেঁচে যাবে। এরূপ আক্বীদা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তাবীয লটকালো, সে শিরক করল’ (আহমাদ হা/১৭৪৫৮; ছহীহাহ হা/৪৯২)। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন কিছু লটকাবে তার দায়-দায়িত্ব তার উপরই অর্পিত হবে’ অর্থাৎ আল্লাহ তার কোন দায়িত্ব নিবেন না’ (তিরমিযী হা/২০৭২; মিশকাত হা/৪৫৫৬)।
উত্তর : যাবে না। এটা একদিকে আল্লাহর বাণীর প্রতি অসম্মান। অন্যদিকে ইহূদী-খৃষ্টানদের অনুসরণ। যারা ক্রুস বা অনুরূপ কিছু ঝুলিয়ে রেখে সম্মান প্রদর্শন করে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অন্য কওমের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে’ (আহমাদ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৩৪৭)। এছাড়া তাবীযের উপর ভ্রান্ত বিশ্বাসের ন্যায় কোরআনের আয়াত লিখিত এরূপ লকেট ব্যবহার করাও হারাম। কেননা সে ভাববে, কুরআনের আয়াত লিখিত ‘লকেট’ ঝুলানো থাকলে সে সকল প্রকার ক্ষতি থেকে বেঁচে যাবে। এরূপ আক্বীদা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তাবীয লটকালো, সে শিরক করল’ (আহমাদ হা/১৭৪৫৮; ছহীহাহ হা/৪৯২)। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন কিছু লটকাবে তার দায়-দায়িত্ব তার উপরই অর্পিত হবে’ অর্থাৎ আল্লাহ তার কোন দায়িত্ব নিবেন না’ (তিরমিযী হা/২০৭২; মিশকাত হা/৪৫৫৬)।
-শো‘আইব, চাঁদগাঁও, চট্টগ্রাম।
উত্তর : আযানের পূর্বে দরূদে ইবরাহীমী পাঠ করার ব্যাপারে শরী‘আতের কোন নির্দেশনা নেই। সুতরাং তা বিদ‘আত। রাসূল (ছা) বলেন, যে ব্যক্তি এমন আমল করল, ‘যার প্রতি আমার নির্দেশ নেই তা প্রত্যাখ্যাত’ (মুসলিম হা/১৭১৮; মিশকাত হা/১৪০)। এছাড়া আযানের পূর্বে ও পরে আরো কিছু দো‘আ পাঠ করা হয় যেগুলিও বিদ‘আত (বিস্তারিত দ্রঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃঃ ৭৯)।
উত্তর : আযানের পূর্বে দরূদে ইবরাহীমী পাঠ করার ব্যাপারে শরী‘আতের কোন নির্দেশনা নেই। সুতরাং তা বিদ‘আত। রাসূল (ছা) বলেন, যে ব্যক্তি এমন আমল করল, ‘যার প্রতি আমার নির্দেশ নেই তা প্রত্যাখ্যাত’ (মুসলিম হা/১৭১৮; মিশকাত হা/১৪০)। এছাড়া আযানের পূর্বে ও পরে আরো কিছু দো‘আ পাঠ করা হয় যেগুলিও বিদ‘আত (বিস্তারিত দ্রঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃঃ ৭৯)।
-কাওছার আলম, জবাই, সাপাহার, নওগাঁ।
উত্তর : ভুমিকম্প, বন্যা প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বেশী বেশী আল্লাহর যিকির, দো‘আ এবং তওবা-ইস্তেগফার করতে হবে। একদা সূর্যগ্রহণ শুরু হলে রাসূল (ছাঃ) ক্বিয়ামত শুরু হয়েছে মনে করে ভীত হয়ে দাঁড়িয়ে যান। অতঃপর সূর্যগ্রহণের দীর্ঘ ছালাত আদায়ের পর বললেন, আল্লাহ তা‘আলা এরূপ বিপদ-মুছীবত দ্বারা তাঁর বান্দাদের সতর্ক করেন। অতএব তোমরা যখন এর সম্মুখীন হবে, তখন ভীত অবস্থায় যিকির, দো‘আ ও ক্ষমা প্রার্থনায় রত হও (বুখারী হা/১০৫৯)। এছাড়া তওবা-ইস্তেগফার সহ দো‘আ ইউনুস পাঠ করা আবশ্যক।
উত্তর : ভুমিকম্প, বন্যা প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বেশী বেশী আল্লাহর যিকির, দো‘আ এবং তওবা-ইস্তেগফার করতে হবে। একদা সূর্যগ্রহণ শুরু হলে রাসূল (ছাঃ) ক্বিয়ামত শুরু হয়েছে মনে করে ভীত হয়ে দাঁড়িয়ে যান। অতঃপর সূর্যগ্রহণের দীর্ঘ ছালাত আদায়ের পর বললেন, আল্লাহ তা‘আলা এরূপ বিপদ-মুছীবত দ্বারা তাঁর বান্দাদের সতর্ক করেন। অতএব তোমরা যখন এর সম্মুখীন হবে, তখন ভীত অবস্থায় যিকির, দো‘আ ও ক্ষমা প্রার্থনায় রত হও (বুখারী হা/১০৫৯)। এছাড়া তওবা-ইস্তেগফার সহ দো‘আ ইউনুস পাঠ করা আবশ্যক।
-হাসান, ভাঙ্গা, ফরিদপুর।
উত্তর : গানের সূরে বক্তব্য দেয়া ঠিক নয়। বক্তব্যের উদ্দেশ্য হবে মানুষকে জান্নাতের পথ প্রদর্শন করা ও জাহান্নাম থেকে ভয় দেখানো। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা মানুষকে ডাক তোমাদের প্রভুর রাস্তায় প্রজ্ঞা ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে’... (নাহল ১৬/১২৫)। রাসূল (ছাঃ) যখন জুম‘আর খুৎবা দিতেন, তখন তাঁর দু’চোখ লাল হয়ে যেত। তাঁর কণ্ঠ উঁচু হ’ত এবং তাঁর ক্রোধ বেড়ে যেত। যেন তিনি সেনাবাহিনীকে কোন নির্দেশ দিচ্ছেন’ (মুসলিম হা/২০৪২; মিশকাত হা/১৪০৭)। সূর দিয়ে বক্তব্য দিলে মানুষ সূর শুনবে। কিন্তু কোন উপদেশ গ্রহণ করবে না। অবশ্য কুরআনের আয়াতসমূহ সুন্দর কন্ঠে তেলাওয়াত করতে হবে। কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি সূরেলা কন্ঠে কুরআন তেলাওয়াত করেনা, সে ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়’ (বুখারী হা/৭৫২৭, মিশকাত হা/২১৯৪)। সাবধান থাকতে হবে বক্তৃতার উদ্দেশ্য যেন দুনিয়া উপার্জন না হয়। কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘অতদিন ক্বিয়ামত হবে না, যতদিন না এমন একদল লোক বের হবে যারা তাদের যবান দিয়ে খাবে, যেমন গাভী তার জিহবা দিয়ে খায়’ (আহমাদ হা/১৫৯৭; মিশকাত হা/৪৭৯৯)।
উত্তর : গানের সূরে বক্তব্য দেয়া ঠিক নয়। বক্তব্যের উদ্দেশ্য হবে মানুষকে জান্নাতের পথ প্রদর্শন করা ও জাহান্নাম থেকে ভয় দেখানো। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা মানুষকে ডাক তোমাদের প্রভুর রাস্তায় প্রজ্ঞা ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে’... (নাহল ১৬/১২৫)। রাসূল (ছাঃ) যখন জুম‘আর খুৎবা দিতেন, তখন তাঁর দু’চোখ লাল হয়ে যেত। তাঁর কণ্ঠ উঁচু হ’ত এবং তাঁর ক্রোধ বেড়ে যেত। যেন তিনি সেনাবাহিনীকে কোন নির্দেশ দিচ্ছেন’ (মুসলিম হা/২০৪২; মিশকাত হা/১৪০৭)। সূর দিয়ে বক্তব্য দিলে মানুষ সূর শুনবে। কিন্তু কোন উপদেশ গ্রহণ করবে না। অবশ্য কুরআনের আয়াতসমূহ সুন্দর কন্ঠে তেলাওয়াত করতে হবে। কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি সূরেলা কন্ঠে কুরআন তেলাওয়াত করেনা, সে ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়’ (বুখারী হা/৭৫২৭, মিশকাত হা/২১৯৪)। সাবধান থাকতে হবে বক্তৃতার উদ্দেশ্য যেন দুনিয়া উপার্জন না হয়। কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘অতদিন ক্বিয়ামত হবে না, যতদিন না এমন একদল লোক বের হবে যারা তাদের যবান দিয়ে খাবে, যেমন গাভী তার জিহবা দিয়ে খায়’ (আহমাদ হা/১৫৯৭; মিশকাত হা/৪৭৯৯)।
-আল-আমীন, বালিয়াডাঙ্গা, নাটোর।
উত্তর : মুক্তাদীদেরকে তার জবাব দিতে হবে না। বরং মুক্তাদীরা তাই বলবে, ইমাম যা বলেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ইমাম নির্ধারণ করা হয় তার অনুসরণের জন্য (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১১৩৯)। উল্লেখ্য যে, ইমামের সালামের জবাব প্রদান সম্পর্কিত হাদীছটি যঈফ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৯৫৮)।
উত্তর : মুক্তাদীদেরকে তার জবাব দিতে হবে না। বরং মুক্তাদীরা তাই বলবে, ইমাম যা বলেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ইমাম নির্ধারণ করা হয় তার অনুসরণের জন্য (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১১৩৯)। উল্লেখ্য যে, ইমামের সালামের জবাব প্রদান সম্পর্কিত হাদীছটি যঈফ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৯৫৮)।
২২৮
প্রশ্ন (২৭/৩৪৭) : খালেছ তওবা দ্বারা কবীরা গোনাহ মাফ হয় কি? যেনা, চুরি ইত্যাদি অপরাধের ক্ষেত্রে হদের শাস্তি গ্রহণ করা তওবা কবুল হওয়ার জন্য শর্ত কি? অমুসলিম বা ইসলামী বিধান জারি নেই সেসব দেশে এ শাস্তি গ্রহণ করার উপায় কি?-আব্দুল্লাহ আল-ছায়েম, চট্টগ্রাম।
উত্তর : খালেছ তওবা দ্বারা কবীরা গুনাহ মাফ হবে ইনশাআল্লাহ। কেননা আল্লাহ শিরক ব্যতীত বান্দার সকল গুনাহ ক্ষমা করতে পারেন (নিসা ৪/৪৮, ১১৬)। আল্লাহ বলেন, অন্যত্র আল্লাহ বলেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর নিকট খালেছ অন্তরে তওবা কর। অবশ্যই তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের গোনাহসমূহ মার্জনা করে দিবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত (তাহরীম ৬৬/৮)। হদের বিধান জারি রয়েছে এরূপ দেশে হদের শাস্তি গ্রহণ করলে সেটাই তার পাপের কাফফারা হবে। যদি হদ জারি না হয়ে থাকে এবং আল্লাহ তার পাপ গোপন রাখেন, তাহ’লে তিনি তাকে ক্ষমাও করতে পারেন, শাস্তিও দিতে পারেন’ (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/১৮)।
উত্তর : খালেছ তওবা দ্বারা কবীরা গুনাহ মাফ হবে ইনশাআল্লাহ। কেননা আল্লাহ শিরক ব্যতীত বান্দার সকল গুনাহ ক্ষমা করতে পারেন (নিসা ৪/৪৮, ১১৬)। আল্লাহ বলেন, অন্যত্র আল্লাহ বলেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর নিকট খালেছ অন্তরে তওবা কর। অবশ্যই তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের গোনাহসমূহ মার্জনা করে দিবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত (তাহরীম ৬৬/৮)। হদের বিধান জারি রয়েছে এরূপ দেশে হদের শাস্তি গ্রহণ করলে সেটাই তার পাপের কাফফারা হবে। যদি হদ জারি না হয়ে থাকে এবং আল্লাহ তার পাপ গোপন রাখেন, তাহ’লে তিনি তাকে ক্ষমাও করতে পারেন, শাস্তিও দিতে পারেন’ (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/১৮)।
২২৯
প্রশ্ন (২৮/৩৪৮) : বিউটি পার্লার করে বিবাহের সাজগোজ, ফেসিয়াল ও হেয়ার ট্রিটমেন্ট ইত্যাদি শরী‘আতসম্মত কাজগুলি করা যাবে কি? এছাড়া শরী‘আতসম্মত উপায়ে বিউটি পার্লার পরিচালনার উপায় কি?-নাছের আহমেদ, ঢাকা।
উত্তর : নারী-পুরুষ প্রত্যেকে তার আল্লাহ প্রদত্ত সৌন্দর্য নিজেই বৃদ্ধি করতে পারে। এর জন্য আলাদাভাবে কোন ব্যবসায়িক দোকান খোলার প্রয়োজন নেই। বিউটি পার্লারে অসুন্দরকে সুন্দর করার মাধ্যমে প্রতারণা করা হয়। তাছাড়া বহু অনৈতিক কাজের পথ খুলে যায়। এর মধ্যে উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশী। অতএব এসব ব্যবসা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। দেহে বা চুলে কোন অসুখ থাকলে তার জন্য চিকিৎসা নিতে হবে। বিউটি পার্লারের কোন প্রয়োজন নেই।
উত্তর : নারী-পুরুষ প্রত্যেকে তার আল্লাহ প্রদত্ত সৌন্দর্য নিজেই বৃদ্ধি করতে পারে। এর জন্য আলাদাভাবে কোন ব্যবসায়িক দোকান খোলার প্রয়োজন নেই। বিউটি পার্লারে অসুন্দরকে সুন্দর করার মাধ্যমে প্রতারণা করা হয়। তাছাড়া বহু অনৈতিক কাজের পথ খুলে যায়। এর মধ্যে উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশী। অতএব এসব ব্যবসা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। দেহে বা চুলে কোন অসুখ থাকলে তার জন্য চিকিৎসা নিতে হবে। বিউটি পার্লারের কোন প্রয়োজন নেই।
-আব্দুর রহমান, ফরিদপুর।
উত্তর : মাথার সম্মুখ থেকে পিছনে নিয়ে সেখান থেকে পুনরায় সামনে এনে একবার মাসাহ করাই রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের নিয়মিত সুন্নাত। আব্দুল্লাহ বিন যায়েদ (রাঃ) রাসূল (ছাঃ) থেকে মাথা মাসাহের পদ্ধতি বর্ণনা করে বলেন, পানি নিয়ে দু’হাতের ভিজা আংগুলগুলি মাথার সম্মুখ হ’তে পিছনে ও পিছন হ’তে সম্মুখে বুলিয়ে একবার পুরো মাথা মাসাহ করবে’ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৪১৫; আবুদাঊদ হা/১১৮, মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৩৯৩-৯৪)। তবে তিনবার মাসাহ করা বিষয়ে ওছমান (রাঃ) থেকে একটি আমল পাওয়া যায় (আবুদাঊদ হা/১০৭, ১১০)।
উত্তর : মাথার সম্মুখ থেকে পিছনে নিয়ে সেখান থেকে পুনরায় সামনে এনে একবার মাসাহ করাই রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের নিয়মিত সুন্নাত। আব্দুল্লাহ বিন যায়েদ (রাঃ) রাসূল (ছাঃ) থেকে মাথা মাসাহের পদ্ধতি বর্ণনা করে বলেন, পানি নিয়ে দু’হাতের ভিজা আংগুলগুলি মাথার সম্মুখ হ’তে পিছনে ও পিছন হ’তে সম্মুখে বুলিয়ে একবার পুরো মাথা মাসাহ করবে’ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৪১৫; আবুদাঊদ হা/১১৮, মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৩৯৩-৯৪)। তবে তিনবার মাসাহ করা বিষয়ে ওছমান (রাঃ) থেকে একটি আমল পাওয়া যায় (আবুদাঊদ হা/১০৭, ১১০)।
-আব্দুল্লাহ, নাযিরা বাজার, ঢাকা।
উত্তর : ‘হাদিয়া’ হ’ল কোন কিছুর বিনিময় ছাড়াই কাউকে কোন কিছু প্রদান করা। এটি শরী‘আতে বৈধ (বুখারী হা/২৫৭৬)। রাসূল (ছাঃ) ভালোবাসা বৃদ্ধির মাধ্যম হিসাবে পরস্পরকে হাদিয়া দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন (আদাবুল মুফরাদ, ছহীহুল জামে‘ হা/৩০০৪)। আর অন্যায়ভাবে কিছু পাওয়ার আশায় কাউকে কিছু প্রদান করাকে ‘ঘুষ’ বলে। এটি হারাম (ছহীহ ইবনু হিববান হা/৫০৭৬; মিশকাত হা/৩৭৫৩)। ঘুষ দাতা ও ঘুষ গ্রহীতা উভয়ের উপর আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের লা‘নত (আবুদাউদ হা/৩৫৮০; ইবনু মাজাহ হা/২৩১৩)।
‘মুনাফা’ হ’ল হালাল ব্যবসার মাধ্যমে উপার্জিত লভ্যাংশ। এটি শরী‘আতে বৈধ। কিন্তু অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে উপার্জিত মুনাফা অবৈধ বা হারাম (ছহীহ ইবনু হিববান হা/৪৯৩৮, সনদ ছহীহ)। ‘সূদ’ হ’ল একই জাতীয় জিনিসের বিনিময়ে অতিরিক্ত গ্রহণ করা, যা হারাম (বাক্বারাহ ২/২৭৫; মুসলিম হা/১৫৯৮)। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ‘প্রত্যেক ঋণ যা লাভ নিয়ে আসে, সেটাই সূদ’ (ইরওয়া হা/১৩৯৭)।
উত্তর : ‘হাদিয়া’ হ’ল কোন কিছুর বিনিময় ছাড়াই কাউকে কোন কিছু প্রদান করা। এটি শরী‘আতে বৈধ (বুখারী হা/২৫৭৬)। রাসূল (ছাঃ) ভালোবাসা বৃদ্ধির মাধ্যম হিসাবে পরস্পরকে হাদিয়া দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন (আদাবুল মুফরাদ, ছহীহুল জামে‘ হা/৩০০৪)। আর অন্যায়ভাবে কিছু পাওয়ার আশায় কাউকে কিছু প্রদান করাকে ‘ঘুষ’ বলে। এটি হারাম (ছহীহ ইবনু হিববান হা/৫০৭৬; মিশকাত হা/৩৭৫৩)। ঘুষ দাতা ও ঘুষ গ্রহীতা উভয়ের উপর আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের লা‘নত (আবুদাউদ হা/৩৫৮০; ইবনু মাজাহ হা/২৩১৩)।
‘মুনাফা’ হ’ল হালাল ব্যবসার মাধ্যমে উপার্জিত লভ্যাংশ। এটি শরী‘আতে বৈধ। কিন্তু অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে উপার্জিত মুনাফা অবৈধ বা হারাম (ছহীহ ইবনু হিববান হা/৪৯৩৮, সনদ ছহীহ)। ‘সূদ’ হ’ল একই জাতীয় জিনিসের বিনিময়ে অতিরিক্ত গ্রহণ করা, যা হারাম (বাক্বারাহ ২/২৭৫; মুসলিম হা/১৫৯৮)। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ‘প্রত্যেক ঋণ যা লাভ নিয়ে আসে, সেটাই সূদ’ (ইরওয়া হা/১৩৯৭)।
২৩২
প্রশ্ন (৩১/৩৫১) : প্রচলিত আছে যে, আরশের নীচে রাসূল (ছাঃ)-এর নাম লেখা ছিল। আদম (আঃ) ঐ নামের অসীলায় ক্ষমা পেয়েছিলেন। এ বক্তব্যের কোন ভিত্তি আছে কি?-মাহফূয, মুরাদনগর, কুমিল্লা।
উত্তর : উক্ত মর্মের বর্ণনাটি জাল। ইমাম যাহাবী, ইবনু তায়মিয়াহ, ইবনু হাজার, আলবানী সকলেই এ ব্যাপারে একমত (হাকেম হা/৪২২৮, সিলসিলা যঈফাহ হা/২৫)।
উত্তর : উক্ত মর্মের বর্ণনাটি জাল। ইমাম যাহাবী, ইবনু তায়মিয়াহ, ইবনু হাজার, আলবানী সকলেই এ ব্যাপারে একমত (হাকেম হা/৪২২৮, সিলসিলা যঈফাহ হা/২৫)।
-সাজিদুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : সমকামিতা একটি ঘৃণ্য অপরাধ এবং কবীরা গুনাহ। এই পাপের কারণেই বর্তমান পৃথিবী এইডস-এর মত মরণ ব্যধিতে ভরে গেছে। এটাই আল্লাহর গযব। এ অপরাধের কারণে বিগত যুগে আল্লাহ তা‘আলা কওমে লূতকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন (আ‘রাফ ৭/৮০-৮৪; হিজর ১৫/৭২-৭৬)। এর শাস্তি হ’ল সমকামীদের উভয়কে হত্যা করা। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা যাকে লুৎ (আঃ)-এর সম্প্রদায়ের মত পুরুষে পুরুষে অপকর্ম করতে দেখবে তাদের উভয়কে হত্যা কর (তিরমিযী হা/১৪৫৬; আবুদাউদ হা/৪৪৬২; মিশকাত হা/৩৫৭৫)। তিনি আরো বলেন, আল্লাহ তা‘আলা কওমে লূতের ন্যায় অপকর্মকারীদের প্রতি লা‘নত করেছেন, তিনি একথাটি তিনবার বললেন (আহমাদ হা/২৯১৫; ছহীহাহ হা/৩৪৬২)। তবে এ শাস্তি বাস্তবায়নের দায়িত্ব রাষ্ট্রীয় দায়িত্বশীলদের (কুরতুবী)। না করলে সরকার গোনাহগার হবে।
উত্তর : সমকামিতা একটি ঘৃণ্য অপরাধ এবং কবীরা গুনাহ। এই পাপের কারণেই বর্তমান পৃথিবী এইডস-এর মত মরণ ব্যধিতে ভরে গেছে। এটাই আল্লাহর গযব। এ অপরাধের কারণে বিগত যুগে আল্লাহ তা‘আলা কওমে লূতকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন (আ‘রাফ ৭/৮০-৮৪; হিজর ১৫/৭২-৭৬)। এর শাস্তি হ’ল সমকামীদের উভয়কে হত্যা করা। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা যাকে লুৎ (আঃ)-এর সম্প্রদায়ের মত পুরুষে পুরুষে অপকর্ম করতে দেখবে তাদের উভয়কে হত্যা কর (তিরমিযী হা/১৪৫৬; আবুদাউদ হা/৪৪৬২; মিশকাত হা/৩৫৭৫)। তিনি আরো বলেন, আল্লাহ তা‘আলা কওমে লূতের ন্যায় অপকর্মকারীদের প্রতি লা‘নত করেছেন, তিনি একথাটি তিনবার বললেন (আহমাদ হা/২৯১৫; ছহীহাহ হা/৩৪৬২)। তবে এ শাস্তি বাস্তবায়নের দায়িত্ব রাষ্ট্রীয় দায়িত্বশীলদের (কুরতুবী)। না করলে সরকার গোনাহগার হবে।
২৩৪
প্রশ্ন (৩৩/৩৫৩) : অসুখের কারণে ১৭ বছর বয়সে ব্যাপকভাবে চুল পাকতে শুরু করেছে। এক্ষণে এরূপ চুলে কালো খেযাব ব্যবহার করা যাবে কি?-এমদাদুল ইসলাম, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
উত্তর : এরূপ অবস্থায় যে কোন বৈধ চিকিৎসা গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে কালো খেযাব ব্যবহার করা যাবে না। কেননা রাসূল (ছাঃ) কালো খেযাব ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন (মুসলিম হা/২১০২, নাসাঈ হা/৫০৭৫, মিশকাত হা/২৪৭০, ৪৪২৪, ৪৪৫২)। আর অকালপক্কতা ও বার্ধক্য লুকানোর জন্য কালো খেযাব ব্যবহার করা মর্মে যে আছারগুলি বর্ণিত হয়েছে, তা মুনকার বা যঈফ (সিলসিলা যঈফাহ হা/২৯৭২)।
উত্তর : এরূপ অবস্থায় যে কোন বৈধ চিকিৎসা গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে কালো খেযাব ব্যবহার করা যাবে না। কেননা রাসূল (ছাঃ) কালো খেযাব ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন (মুসলিম হা/২১০২, নাসাঈ হা/৫০৭৫, মিশকাত হা/২৪৭০, ৪৪২৪, ৪৪৫২)। আর অকালপক্কতা ও বার্ধক্য লুকানোর জন্য কালো খেযাব ব্যবহার করা মর্মে যে আছারগুলি বর্ণিত হয়েছে, তা মুনকার বা যঈফ (সিলসিলা যঈফাহ হা/২৯৭২)।
২৩৫
প্রশ্ন (৩৪/৩৫৪) : জনৈক নারীর সাথে জনৈক পুরুষের অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। এক্ষণে উক্ত নারীর মেয়েকে সে বিবাহ করতে পারবে কি?-আব্দুর রহমান, ধানমন্ডি, ঢাকা।
উত্তর: কাজটি অত্যন্ত গর্হিত হলেও উক্ত নারীকে বিবাহ করতে বাধা নেই। কারণ কোন হারাম সম্পর্ক কোন হালাল সম্পর্ক স্থাপনে বাধা হতে পারে না। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ‘যেনা বৈবাহিক বন্ধনকে হারাম করে না’ (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা, বায়হাক্বী, ইরওয়া হা/১৮৮১, ৬/২৮৭ পৃঃ)। এছাড়া শরী‘আতে যে ১৪জন নারীকে বিয়ে করা হারাম করা হয়েছে (নিসা ৪/২৩), উক্ত নারী তাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।
উত্তর: কাজটি অত্যন্ত গর্হিত হলেও উক্ত নারীকে বিবাহ করতে বাধা নেই। কারণ কোন হারাম সম্পর্ক কোন হালাল সম্পর্ক স্থাপনে বাধা হতে পারে না। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ‘যেনা বৈবাহিক বন্ধনকে হারাম করে না’ (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা, বায়হাক্বী, ইরওয়া হা/১৮৮১, ৬/২৮৭ পৃঃ)। এছাড়া শরী‘আতে যে ১৪জন নারীকে বিয়ে করা হারাম করা হয়েছে (নিসা ৪/২৩), উক্ত নারী তাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।
-লুৎফর হাসান সাগর* ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
* [লুৎফর রহমান নাম রাখুন]
উত্তর : ধর্মের ব্যাপারে ক্ষতি বা ফিৎনার আশংকা না থাকলে স্বাভাবিক বন্ধুত্বে কোন দোষ নেই। আল্লাহ বলেন, ‘ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি এবং তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিষ্কার করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ন্যায় বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না... (মুমতাহিনাহ ৬০/৮)। তবে তাকে সর্বদা ইসলামের দিকে দাওয়াত দিতে হবে (আলে ইমরান ৩/১১০)।
* [লুৎফর রহমান নাম রাখুন]
উত্তর : ধর্মের ব্যাপারে ক্ষতি বা ফিৎনার আশংকা না থাকলে স্বাভাবিক বন্ধুত্বে কোন দোষ নেই। আল্লাহ বলেন, ‘ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি এবং তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিষ্কার করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ন্যায় বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না... (মুমতাহিনাহ ৬০/৮)। তবে তাকে সর্বদা ইসলামের দিকে দাওয়াত দিতে হবে (আলে ইমরান ৩/১১০)।
২৩৭
প্রশ্ন (৩৬/৩৫৬) : স্বামী-স্ত্রী উভয়ের সম্মতিতে কাযী অফিসের মাধ্যমে একত্রে ৩ তালাকের মাধ্যমে ছাড়াছাড়ির ৮ মাস পর তারা পুনরায় একত্রিত হতে পারবে কি?-ফীরোয, পুঠিয়া, রাজশাহী।
উত্তর : উভয়ের সম্মতিতে নতুন বিবাহের মাধ্যমে স্বামী তার স্ত্রীকে ফেরত নিতে পারবে। কেননা এক মজলিসে তিন তালাক এক তালাক হিসাবে গণ্য হবে। আবদু ইয়াযীদ তার স্ত্রী উম্মে রুকানাকে তালাক দেন। পরবর্তীতে তিনি দারুণভাবে মর্মাহত হন। তখন রাসূল (ছাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি তোমার স্ত্রীকে কিভাবে তালাক দিয়েছ? তিনি উত্তরে বলেন, এক মজলিসে তিন তালাক দিয়েছি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ওটা এক তালাক হয়েছে। তুমি স্ত্রীকে ফেরত নাও’ (আবুদাঊদ হা/২১৯৬; আহমাদ হা/২৩৮৭; আওনুল মা‘বূদ ৬/২৭৯; যাদুল মা‘আদ ৫/২২৯; সনদ হাসান)। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যামানায় এবং হযরত আবু বকর (রাঃ) ও ওমর (রাঃ)-এর খেলাফতের প্রথম দু’বছর একত্রিত তিন তালাককে এক তালাক গণ্য করা হ’ত (মুসলিম হা/১৪৭২; ফিক্বহুস সুন্নাহ ২/২৯৯)। অতএব আপনার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে কোন বাধা নেই।
উত্তর : উভয়ের সম্মতিতে নতুন বিবাহের মাধ্যমে স্বামী তার স্ত্রীকে ফেরত নিতে পারবে। কেননা এক মজলিসে তিন তালাক এক তালাক হিসাবে গণ্য হবে। আবদু ইয়াযীদ তার স্ত্রী উম্মে রুকানাকে তালাক দেন। পরবর্তীতে তিনি দারুণভাবে মর্মাহত হন। তখন রাসূল (ছাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি তোমার স্ত্রীকে কিভাবে তালাক দিয়েছ? তিনি উত্তরে বলেন, এক মজলিসে তিন তালাক দিয়েছি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ওটা এক তালাক হয়েছে। তুমি স্ত্রীকে ফেরত নাও’ (আবুদাঊদ হা/২১৯৬; আহমাদ হা/২৩৮৭; আওনুল মা‘বূদ ৬/২৭৯; যাদুল মা‘আদ ৫/২২৯; সনদ হাসান)। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যামানায় এবং হযরত আবু বকর (রাঃ) ও ওমর (রাঃ)-এর খেলাফতের প্রথম দু’বছর একত্রিত তিন তালাককে এক তালাক গণ্য করা হ’ত (মুসলিম হা/১৪৭২; ফিক্বহুস সুন্নাহ ২/২৯৯)। অতএব আপনার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে কোন বাধা নেই।
২৩৮
প্রশ্ন (৩৭/৩৫৭) : জামা‘আত অবস্থায় রুকূ থেকে উঠে কওমা ও দুই সিজদার মধ্যবর্তী বৈঠকের দো‘আ সরবে না নীরবে পাঠ করতে হবে?-বায়েযীদ হোসাইন, উত্তরা, ঢাকা।
উত্তর : উক্ত দো‘আগুলি অনুচ্চস্বরে পাঠ করা উত্তম। আল্লাহ বলেন, ‘তোমার প্রতিপালককে স্মরণ কর মনে মনে কাকুতি-মিনতি ও ভীতি সহকারে অনুচ্চস্বরে সকালে ও সন্ধ্যায়। আর তুমি উদাসীনদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না’ (আ‘রাফ ৭/২০৫, ৫৫; ইসরা ১৭/১১০)।
উত্তর : উক্ত দো‘আগুলি অনুচ্চস্বরে পাঠ করা উত্তম। আল্লাহ বলেন, ‘তোমার প্রতিপালককে স্মরণ কর মনে মনে কাকুতি-মিনতি ও ভীতি সহকারে অনুচ্চস্বরে সকালে ও সন্ধ্যায়। আর তুমি উদাসীনদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না’ (আ‘রাফ ৭/২০৫, ৫৫; ইসরা ১৭/১১০)।
২৩৯
প্রশ্ন (৩৮/৩৫৮) : চাকুরী শেষে ছাত্র-ছাত্রী কর্তৃক শিক্ষককে যে উপঢৌকন প্রদান করা হয়, তা নেওয়া জায়েয হবে কি?-আব্দুল কুদ্দূস, ল্যাবরেটরী হাইস্কুল, ঢাকা।
উত্তর : নিঃসন্দেহে জায়েয হবে। কারণ এর মাধ্যমে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হাদিয়া গ্রহণ করতেন ও অন্যকে প্রদান করতেন’ (বুখারী হা/১৭৩৪)। তিনি বলেন, ‘তোমরা পরস্পরকে হাদিয়া দাও ও মহববত বৃদ্ধি কর’ (ছহীহুল জামে‘ হা/৩০০৪)।
উত্তর : নিঃসন্দেহে জায়েয হবে। কারণ এর মাধ্যমে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হাদিয়া গ্রহণ করতেন ও অন্যকে প্রদান করতেন’ (বুখারী হা/১৭৩৪)। তিনি বলেন, ‘তোমরা পরস্পরকে হাদিয়া দাও ও মহববত বৃদ্ধি কর’ (ছহীহুল জামে‘ হা/৩০০৪)।
-হাসান মুন্তাছির, হরিপুর, ঠাকুরগাঁও।
উত্তর : পানির ব্যাপারে সাধারণ নির্দেশ এই যে, বদ্ধ পানিতে পেশাব করা যাবে না (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৭৪)। এমনকি বদ্ধ পানিতে ফরয গোসলও করা যাবে না (মুসলিম হা/২৮৩)। তবে এই নিষেধাজ্ঞা হারামের পর্যায়ে যাবে, যখন পানি কম হবে। আর বেশী হলে তা মাকরূহ হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যদি পানি দুই কুল্লা হয়, তাহ’লে তা অপবিত্র হয় না’ (আবুদাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/৪৭৭ ‘পানি’ অনুচ্ছেদ)। অতএব যদি বদ্ধ পানি দুই কুল্লা অর্থাৎ ২২৭ কেজি বা তার বেশী হয়, তাহ’লে তা অপবিত্র হবে না। যদি কম হয়, তাহ’লে নাপাকী পড়ার কারণে তা অপবিত্র হয়ে যাবে। এক্ষণে পানির পরিমাণ কম হৌক বা বেশী হৌক, যদি তার স্বাদ, গন্ধ ও রং তিনটি গুণের যেকোন একটির পরিবর্তন হয়ে যায়, তবে তা অপবিত্র বলে গণ্য হবে। উল্লেখ্য যে, ‘রং, স্বাদ ও গন্ধ বিনষ্ট হওয়ার কারণে পানি অপবিত্র হয়ে যায়’ মর্মে ইবনু মাজাহ বর্ণিত হাদীছটির (হা/৫২১) সনদ ‘যঈফ’ হ’লেও মর্মগতভাবে ছহীহ। ইবনুল মুনযির বলেন, এ ব্যাপারে বিদ্বানগণের মধ্যে ঐক্যমত রয়েছে’ (বিস্তারিত দ্রঃ ছফিউর রহমান মুবারকপুরী, বুলূগুল মারাম হা/৪-৫ ‘পানি’ অনুচ্ছেদ)। অতএব বদ্ধ পানি কম হৌক বা বেশী হৌক তাতে পেশাব করা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
উত্তর : পানির ব্যাপারে সাধারণ নির্দেশ এই যে, বদ্ধ পানিতে পেশাব করা যাবে না (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৭৪)। এমনকি বদ্ধ পানিতে ফরয গোসলও করা যাবে না (মুসলিম হা/২৮৩)। তবে এই নিষেধাজ্ঞা হারামের পর্যায়ে যাবে, যখন পানি কম হবে। আর বেশী হলে তা মাকরূহ হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যদি পানি দুই কুল্লা হয়, তাহ’লে তা অপবিত্র হয় না’ (আবুদাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/৪৭৭ ‘পানি’ অনুচ্ছেদ)। অতএব যদি বদ্ধ পানি দুই কুল্লা অর্থাৎ ২২৭ কেজি বা তার বেশী হয়, তাহ’লে তা অপবিত্র হবে না। যদি কম হয়, তাহ’লে নাপাকী পড়ার কারণে তা অপবিত্র হয়ে যাবে। এক্ষণে পানির পরিমাণ কম হৌক বা বেশী হৌক, যদি তার স্বাদ, গন্ধ ও রং তিনটি গুণের যেকোন একটির পরিবর্তন হয়ে যায়, তবে তা অপবিত্র বলে গণ্য হবে। উল্লেখ্য যে, ‘রং, স্বাদ ও গন্ধ বিনষ্ট হওয়ার কারণে পানি অপবিত্র হয়ে যায়’ মর্মে ইবনু মাজাহ বর্ণিত হাদীছটির (হা/৫২১) সনদ ‘যঈফ’ হ’লেও মর্মগতভাবে ছহীহ। ইবনুল মুনযির বলেন, এ ব্যাপারে বিদ্বানগণের মধ্যে ঐক্যমত রয়েছে’ (বিস্তারিত দ্রঃ ছফিউর রহমান মুবারকপুরী, বুলূগুল মারাম হা/৪-৫ ‘পানি’ অনুচ্ছেদ)। অতএব বদ্ধ পানি কম হৌক বা বেশী হৌক তাতে পেশাব করা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
২৪১
প্রশ্ন (৪০/৩৬০) : ঈসা (আঃ) কি বর্তমানে জীবিত? ক্বিয়ামতের কতদিন পূর্বে তিনি আসবেন এবং কি কি কাজ করবেন?-আতীক মৃধা, ইসলামপুর, ঢাকা।
উত্তর : ঈসা (আঃ) দ্বিতীয় আসমানে জীবিত আছেন (আলে ইমরান ৩/৫৫, নিসা ৪/১৫৭; বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৮৬২)। তিনি দামেশকের পূর্বপ্রান্তের শ্বেত মিনার হ’তে হলুদ বর্ণের দু’টি পোষাক পরিহিত অবস্থায় দু’জন ফেরেশতার পাখায় ভর করে অবতরণ করবেন।... অতঃপর তিনি বায়তুল মুক্বাদ্দাসের ‘লুদ্দ’ দরজার নিকটে ‘দাজ্জাল’কে হত্যা করবেন।... অতঃপর আল্লাহ ‘ইয়াজূজ-মা’জূজ’কে পাঠাবেন। তারা প্রত্যেকে উঁচু জায়গা থেকে বের হয়ে দ্রুত বেগে নীচে চলে আসবে (আম্বিয়া ২১/৯৬)।... তারা সামনে যাকে পাবে, তাকেই হত্যা করবে।... তখন ঈসা ও তাঁর ঈমানদার সাথীগণ আল্লাহর নিকট দো‘আ করবেন। ফলে আল্লাহর পক্ষ হতে গযব অবতীর্ণ হয়ে ‘ইয়াজূজ-মা’জূজ’ সব ধ্বংস হয়ে যাবে।...
ঈসা (আঃ) ইসলামী শরী‘আত অনুযায়ী পৃথিবীতে ইনছাফ প্রতিষ্ঠা করবেন। ক্রুশ ভেঙ্গে ফেলবেন। শূকর হত্যা করবেন। জিযিয়া বিলুপ্ত করবেন (কারণ তখন সবাই মুসলমান হবে (নিসা ৪/১৫৯)। সে সময় সম্পদের এমন প্রাচুর্য হবে যে, তা নেবার মত লোক পাওয়া যাবে না’... (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৫০৫)। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, মানুষের মন থেকে কৃপণতা, হিংসা ও বিদ্বেষ দূর হয়ে যাবে’।... তখন মুসলমানদের মধ্য থেকে ইমাম মাহদী ইমাম হবেন এবং ঈসা হবেন মুক্তাদী। এটি হবে উম্মতে মুহাম্মাদীর জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে প্রদত্ত বিশেষ সম্মান’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৫০৬-০৭)। মাহদী রাসূল (ছাঃ)-এর বংশধর হবেন’ (তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৪৫২-৫৩)। তিনি সাত বছর দুনিয়ায় অবস্থান করবেন’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৪৫৪)। ঈসা (আঃ)ও দুনিয়াতে সাত বছর অবস্থান করবেন’ (মুসলিম হা/২৯৪৩)। ঊর্ধ্বারোহনের পূর্বের ৩৩ বছর এবং দুনিয়ায় অবতরণের পরের ৭ বছর মিলে তাঁর বয়স হবে মোট ৪০ বছর। তারপর তিনি মৃত্যুবরণ করবেন। মুসলমানগণ তাঁর জানাযার ছালাত আদায় করবে (আবুদাঊদ শরহ ‘আউনুল মা‘বূদ সহ হা/৪৩২৪, ছহীহাহ হা/২১৮২)। এ সময় মানুষ সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করবে। হঠাৎ একদিন স্নিগ্ধ বায়ু প্রবাহিত হবে। তাতে সকল ঈমানদার মানুষ মৃত্যুবরণ করবে। কেবল পাপী লোকেরাই অবশিষ্ট থাকবে। যারা গাধার ন্যায় পরস্পর দ্বন্দ্ব-কলহে লিপ্ত হবে। অতঃপর তাদের উপরেই ক্বিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৪৭৫)। - See more at: http://at-tahreek.com/june2015/question.html#sthash.1icr8wNK.dpuf
উত্তর : ঈসা (আঃ) দ্বিতীয় আসমানে জীবিত আছেন (আলে ইমরান ৩/৫৫, নিসা ৪/১৫৭; বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৮৬২)। তিনি দামেশকের পূর্বপ্রান্তের শ্বেত মিনার হ’তে হলুদ বর্ণের দু’টি পোষাক পরিহিত অবস্থায় দু’জন ফেরেশতার পাখায় ভর করে অবতরণ করবেন।... অতঃপর তিনি বায়তুল মুক্বাদ্দাসের ‘লুদ্দ’ দরজার নিকটে ‘দাজ্জাল’কে হত্যা করবেন।... অতঃপর আল্লাহ ‘ইয়াজূজ-মা’জূজ’কে পাঠাবেন। তারা প্রত্যেকে উঁচু জায়গা থেকে বের হয়ে দ্রুত বেগে নীচে চলে আসবে (আম্বিয়া ২১/৯৬)।... তারা সামনে যাকে পাবে, তাকেই হত্যা করবে।... তখন ঈসা ও তাঁর ঈমানদার সাথীগণ আল্লাহর নিকট দো‘আ করবেন। ফলে আল্লাহর পক্ষ হতে গযব অবতীর্ণ হয়ে ‘ইয়াজূজ-মা’জূজ’ সব ধ্বংস হয়ে যাবে।...
ঈসা (আঃ) ইসলামী শরী‘আত অনুযায়ী পৃথিবীতে ইনছাফ প্রতিষ্ঠা করবেন। ক্রুশ ভেঙ্গে ফেলবেন। শূকর হত্যা করবেন। জিযিয়া বিলুপ্ত করবেন (কারণ তখন সবাই মুসলমান হবে (নিসা ৪/১৫৯)। সে সময় সম্পদের এমন প্রাচুর্য হবে যে, তা নেবার মত লোক পাওয়া যাবে না’... (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৫০৫)। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, মানুষের মন থেকে কৃপণতা, হিংসা ও বিদ্বেষ দূর হয়ে যাবে’।... তখন মুসলমানদের মধ্য থেকে ইমাম মাহদী ইমাম হবেন এবং ঈসা হবেন মুক্তাদী। এটি হবে উম্মতে মুহাম্মাদীর জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে প্রদত্ত বিশেষ সম্মান’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৫০৬-০৭)। মাহদী রাসূল (ছাঃ)-এর বংশধর হবেন’ (তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৪৫২-৫৩)। তিনি সাত বছর দুনিয়ায় অবস্থান করবেন’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৪৫৪)। ঈসা (আঃ)ও দুনিয়াতে সাত বছর অবস্থান করবেন’ (মুসলিম হা/২৯৪৩)। ঊর্ধ্বারোহনের পূর্বের ৩৩ বছর এবং দুনিয়ায় অবতরণের পরের ৭ বছর মিলে তাঁর বয়স হবে মোট ৪০ বছর। তারপর তিনি মৃত্যুবরণ করবেন। মুসলমানগণ তাঁর জানাযার ছালাত আদায় করবে (আবুদাঊদ শরহ ‘আউনুল মা‘বূদ সহ হা/৪৩২৪, ছহীহাহ হা/২১৮২)। এ সময় মানুষ সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করবে। হঠাৎ একদিন স্নিগ্ধ বায়ু প্রবাহিত হবে। তাতে সকল ঈমানদার মানুষ মৃত্যুবরণ করবে। কেবল পাপী লোকেরাই অবশিষ্ট থাকবে। যারা গাধার ন্যায় পরস্পর দ্বন্দ্ব-কলহে লিপ্ত হবে। অতঃপর তাদের উপরেই ক্বিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৪৭৫)। - See more at: http://at-tahreek.com/june2015/question.html#sthash.1icr8wNK.dpuf
২৪২
জুলাই
প্রশ্ন (১/৩৬১) : জামা‘আতবদ্ধ ছালাতে শেষ তাশাহহুদের সময় যোগদান করলে তাশাহহুদ সহ অন্যান্য দো‘আসমূহ পাঠ করতে হবে কি?-আমীর ফাহদ, দুবাই, আরব আমিরাত।
উত্তর : শেষ তাশাহহুদে যতটুকু সম্ভব ততটুকু পড়বে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই ইমাম নির্ধারিত হন, তাকে অনুসরণ করার জন্য’ (বুখারী হা/৩৭৮; মিশকাত হা/১১৩৯)। তিনি বলেন, যখন তোমাদের কেউ ছালাতে উপস্থিত হবে, তখন ইমাম যে অবস্থায় যা করতে থাকবে, সেও যেন তাই করে (তিরমিযী হা/৫৯১, মিশকাত হা/১১৪২)।
উত্তর : শেষ তাশাহহুদে যতটুকু সম্ভব ততটুকু পড়বে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই ইমাম নির্ধারিত হন, তাকে অনুসরণ করার জন্য’ (বুখারী হা/৩৭৮; মিশকাত হা/১১৩৯)। তিনি বলেন, যখন তোমাদের কেউ ছালাতে উপস্থিত হবে, তখন ইমাম যে অবস্থায় যা করতে থাকবে, সেও যেন তাই করে (তিরমিযী হা/৫৯১, মিশকাত হা/১১৪২)।
-রেযাউল করীম, কাছনা, তরিটারী, রংপুর।
উত্তর : ইসলাম গ্রহণের সময় কেবল কালেমা শাহাদাত ‘আশহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহূ ওয়া রাসূলুহু’ পাঠ করাই যথেষ্ট। ছুমামা বিন উছাল, যিমাদ আযদী প্রমুখ ইসলাম গ্রহণকালে এই কালেমাই পাঠ করেছিলেন (মুসলিম হা/১৭৬৪, ৮৬৮; মিশকাত হা/৩৯৬৪, ৫৮৬০)। বাকী কালেমাগুলি যেকোন সময় পাঠ করা যায়।
উত্তর : ইসলাম গ্রহণের সময় কেবল কালেমা শাহাদাত ‘আশহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহূ ওয়া রাসূলুহু’ পাঠ করাই যথেষ্ট। ছুমামা বিন উছাল, যিমাদ আযদী প্রমুখ ইসলাম গ্রহণকালে এই কালেমাই পাঠ করেছিলেন (মুসলিম হা/১৭৬৪, ৮৬৮; মিশকাত হা/৩৯৬৪, ৫৮৬০)। বাকী কালেমাগুলি যেকোন সময় পাঠ করা যায়।
২৪৪
প্রশ্ন (৩/৩৬৩) : মসজিদের ইমাম ছাহেব ছাত্রীরা বেপর্দায় চলে এরূপ সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন। এটা জায়েয হবে কি? এছাড়া যেসব এলাকায় প্রতিবেশী বেপর্দা নারীরা চলাফেরা করে, সেসব এলাকায় বাস করা জায়েয হবে কি?-আব্দুল ওয়াহেদ, আদমদীঘি, বগুড়া।
উত্তর : সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী না করাই শরী‘আত সম্মত। এতে অনৈতিক সম্পর্কের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এরপরেও যদি চাকুরী করতে হয়, তাহ’লে উভয়কে কথায় ও কর্মে কঠোরভাবে পর্দা মেনে চলতে হবে। পুরুষ ও নারী সর্বদা পরস্পরে দৃষ্টি নত করে চলবে। নারীকে অবশ্যই তার পুরা দেহ আবৃত করতে হবে এবং এমনভাবে চলতে হবে যেন তার গোপন সৌন্দর্য প্রকাশিত না হয় (নূর ৩০-৩১)। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীলতা সমূহের নিকটবর্তী হয়ো না’ (আন‘আম ৬/১৫১)।
এলাকায় থেকেই উপদেশের মাধ্যমে বেহায়াপনার মুকাবিলা করতে হবে। লূত (আঃ) তাঁর বেহায়া কওমকে তাদের মধ্যে থেকেই দাওয়াত দিতেন। যেজন্য তাঁর কওম তাঁকে লক্ষ্য করে বলেছিল, ‘তোমরা এদেরকে তোমাদের শহর থেকে বের করে দাও। এরা বড়ই সাধু থাকতে চায়’ (আ‘রাফ ৭/৮২)।
এরপরেও বাধ্যগত অবস্থায় দ্বীন বাঁচানোর স্বার্থে হিজরত করা জায়েয (ফাৎহুল বারী হা/২৮২৫-এর আলোচনা দ্রঃ)।
উত্তর : সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী না করাই শরী‘আত সম্মত। এতে অনৈতিক সম্পর্কের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এরপরেও যদি চাকুরী করতে হয়, তাহ’লে উভয়কে কথায় ও কর্মে কঠোরভাবে পর্দা মেনে চলতে হবে। পুরুষ ও নারী সর্বদা পরস্পরে দৃষ্টি নত করে চলবে। নারীকে অবশ্যই তার পুরা দেহ আবৃত করতে হবে এবং এমনভাবে চলতে হবে যেন তার গোপন সৌন্দর্য প্রকাশিত না হয় (নূর ৩০-৩১)। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীলতা সমূহের নিকটবর্তী হয়ো না’ (আন‘আম ৬/১৫১)।
এলাকায় থেকেই উপদেশের মাধ্যমে বেহায়াপনার মুকাবিলা করতে হবে। লূত (আঃ) তাঁর বেহায়া কওমকে তাদের মধ্যে থেকেই দাওয়াত দিতেন। যেজন্য তাঁর কওম তাঁকে লক্ষ্য করে বলেছিল, ‘তোমরা এদেরকে তোমাদের শহর থেকে বের করে দাও। এরা বড়ই সাধু থাকতে চায়’ (আ‘রাফ ৭/৮২)।
এরপরেও বাধ্যগত অবস্থায় দ্বীন বাঁচানোর স্বার্থে হিজরত করা জায়েয (ফাৎহুল বারী হা/২৮২৫-এর আলোচনা দ্রঃ)।
-আল-আমীন, ঘোনাপাড়া, জয়পুরহাট।
উত্তর : লোমনাশক প্রসাধনী ব্যবহার করায় কোন দোষ নেই। হাদীছে উভয়স্থানের লোম ছাফ করতে বলা হয়েছে (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৫০)। হাদীছে নাৎফ ও হালাক্ব দু’টি পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে কষ্টদায়ক নয়, এমন যেকোন পদ্ধতি অবলম্বন করা জায়েয (মির‘আত হা/৩৮২-এর আলোচনা ২/৮০-৮১ পৃঃ)।
উত্তর : লোমনাশক প্রসাধনী ব্যবহার করায় কোন দোষ নেই। হাদীছে উভয়স্থানের লোম ছাফ করতে বলা হয়েছে (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৫০)। হাদীছে নাৎফ ও হালাক্ব দু’টি পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে কষ্টদায়ক নয়, এমন যেকোন পদ্ধতি অবলম্বন করা জায়েয (মির‘আত হা/৩৮২-এর আলোচনা ২/৮০-৮১ পৃঃ)।
২৪৬
প্রশ্ন (৫/৩৬৫) : বিবাহের সময় পাজামা-পাঞ্জাবী ও টুপী পরা কি যরূরী? কনের বাড়ীতে গিয়ে বর গলায় মালা ও হাতে ফুল উপহার নিতে পারে কি?-আমীনুল ইসলাম
বাংলাবান্ধা, তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়।
উত্তর : তাক্বওয়াপূর্ণ পোশাক হিসাবে পাজামা-পাঞ্জাবী ও টুপী পরা উত্তম। কারণ অমুসলিমদের পোষাকের বিপরীতে এগুলি উপমহাদেশে দ্বীনদার মুসলমানদের পোষাক হিসাবে গৃহীত। বরের গলায় মালা দেওয়া, তার হাতে ফুল দেওয়া ইত্যাদি অপ্রয়োজনীয় সামাজিক প্রথা মাত্র। যা থেকে দূরে থাকাই উত্তম। এতদ্ব্যতীত বিবাহকালে প্রচলিত যাবতীয় শরী‘আত বিরোধী রেওয়াজ ও নারী-পুরুষের পর্দাহীন চলাফেরা বন্ধ করা আবশ্যক।
বাংলাবান্ধা, তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়।
উত্তর : তাক্বওয়াপূর্ণ পোশাক হিসাবে পাজামা-পাঞ্জাবী ও টুপী পরা উত্তম। কারণ অমুসলিমদের পোষাকের বিপরীতে এগুলি উপমহাদেশে দ্বীনদার মুসলমানদের পোষাক হিসাবে গৃহীত। বরের গলায় মালা দেওয়া, তার হাতে ফুল দেওয়া ইত্যাদি অপ্রয়োজনীয় সামাজিক প্রথা মাত্র। যা থেকে দূরে থাকাই উত্তম। এতদ্ব্যতীত বিবাহকালে প্রচলিত যাবতীয় শরী‘আত বিরোধী রেওয়াজ ও নারী-পুরুষের পর্দাহীন চলাফেরা বন্ধ করা আবশ্যক।
-মাহমূদুল হাসান, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : নাম পরিবর্তন করলে আকীকা দিতে হবে না। রাসূল (ছাঃ) বহু মানুষের নাম পরিবর্তন করে দিয়েছেন (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৭৫৬ ‘শিষ্টাচারসমূহ’ অধ্যায়, ‘নামসমূহ’ অনুচ্ছেদ)। যেমন ওমর (রাঃ)-এর বোন ‘আছিয়ার নাম পরিবর্তন করে তিনি ‘জামীলা’ রেখেছিলেন। কিন্তু আকীকা করতে বলেননি (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৭৫৮)।
উত্তর : নাম পরিবর্তন করলে আকীকা দিতে হবে না। রাসূল (ছাঃ) বহু মানুষের নাম পরিবর্তন করে দিয়েছেন (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৭৫৬ ‘শিষ্টাচারসমূহ’ অধ্যায়, ‘নামসমূহ’ অনুচ্ছেদ)। যেমন ওমর (রাঃ)-এর বোন ‘আছিয়ার নাম পরিবর্তন করে তিনি ‘জামীলা’ রেখেছিলেন। কিন্তু আকীকা করতে বলেননি (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৭৫৮)।
২৪৯
প্রশ্ন (৮/৩৬৮) : মসজিদের সামনে বা মেহরাবের সামনে কালেমায়ে ত্বাইয়েবা বা কালেমায়ে শাহাদাত লেখা যাবে কি?-রায়হানুল ইসলাম
ভাদুরিয়া, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : এগুলি করা যাবে না। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বাণীকে এরূপ সৌন্দর্য বর্ধনের কাজে ব্যবহার করা অবমাননার শামিল। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও খুলাফায়ে রাশেদীনের আমলে কোন মসজিদে এগুলি লেখা হ’ত না। মসজিদ জাঁকজমকপূর্ণ করতে রাসূল (ছাঃ) নিষেধ করেছেন’ (আবুদাঊদ হা/৪৪৮; মিশকাত হা/৭১৮)। উপরন্তু ছালাতের সময় এসব চোখে পড়লে ছালাতের একাগ্রতা বিনষ্ট হয় (বুখারী হা/৩২৯১)। অতএব এসব থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
ভাদুরিয়া, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : এগুলি করা যাবে না। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বাণীকে এরূপ সৌন্দর্য বর্ধনের কাজে ব্যবহার করা অবমাননার শামিল। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও খুলাফায়ে রাশেদীনের আমলে কোন মসজিদে এগুলি লেখা হ’ত না। মসজিদ জাঁকজমকপূর্ণ করতে রাসূল (ছাঃ) নিষেধ করেছেন’ (আবুদাঊদ হা/৪৪৮; মিশকাত হা/৭১৮)। উপরন্তু ছালাতের সময় এসব চোখে পড়লে ছালাতের একাগ্রতা বিনষ্ট হয় (বুখারী হা/৩২৯১)। অতএব এসব থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
২৫০
প্রশ্ন (৯/৩৬৯) : জনৈক আলেম বলেন, যঈফ হাদীছের বিপরীতে ছহীহ হাদীছ না থাকলে, ঐ যঈফ হাদীছের উপর আমল করা যাবে। একথা কি ঠিক?-মোমিনুল ইসলাম
চর বাগডাঙ্গা, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : উক্ত বক্তব্য সঠিক নয়। যঈফ হাদীছ কোন ক্ষেত্রেই আমলযোগ্য নয়। ইমাম বুখারী, মুসলিম, ইয়াহইয়া ইবনু মাঈন, ইবনুল ‘আরাবী, ইবনু হাযম, ইবনু তায়মিয়াহ প্রমুখ শীর্ষস্থানীয় মুহাদ্দিছগণ সকল ক্ষেত্রে যঈফ হাদীছ বর্জনযোগ্য বলেছেন (দ্রঃ জামালুদ্দীন ক্বাসেমী, ক্বাওয়াইদুত তাহদীছ; আশরাফ বিন সাঈদ, হুকমুল ‘আমাল বিল হাদীছিয যঈফ)। শায়খ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) বলেন, ‘যঈফ হাদীছ অতিরিক্ত ধারণার ফায়েদা দেয় মাত্র। তবে এ বিষয়ে সকল বিদ্বান একমত যে, আহকাম ও ফাযায়েল কোন বিষয়েই যঈফ হাদীছের উপর আমল করা বৈধ নয়’ (তামামুল মিন্নাহ ৩৪ পৃঃ)।
চর বাগডাঙ্গা, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : উক্ত বক্তব্য সঠিক নয়। যঈফ হাদীছ কোন ক্ষেত্রেই আমলযোগ্য নয়। ইমাম বুখারী, মুসলিম, ইয়াহইয়া ইবনু মাঈন, ইবনুল ‘আরাবী, ইবনু হাযম, ইবনু তায়মিয়াহ প্রমুখ শীর্ষস্থানীয় মুহাদ্দিছগণ সকল ক্ষেত্রে যঈফ হাদীছ বর্জনযোগ্য বলেছেন (দ্রঃ জামালুদ্দীন ক্বাসেমী, ক্বাওয়াইদুত তাহদীছ; আশরাফ বিন সাঈদ, হুকমুল ‘আমাল বিল হাদীছিয যঈফ)। শায়খ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) বলেন, ‘যঈফ হাদীছ অতিরিক্ত ধারণার ফায়েদা দেয় মাত্র। তবে এ বিষয়ে সকল বিদ্বান একমত যে, আহকাম ও ফাযায়েল কোন বিষয়েই যঈফ হাদীছের উপর আমল করা বৈধ নয়’ (তামামুল মিন্নাহ ৩৪ পৃঃ)।
-বদরুযযামান, কেঁড়াগাছি, সাতক্ষীরা।
উত্তর : বৈধ হবে না। কারণ রাষ্ট্রীয় স্বার্থ মানেই জনস্বার্থ। আর ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার মাধ্যমে জনস্বার্থের ক্ষতি করা ইসলাম অনুমোদন করে না। ইসলামী রাষ্ট্রে এ ধরনের অপরাধকে চুরির অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হবে। অন্যদিকে একজন ঈমানদার ব্যক্তি কখনো অন্যের ক্ষতি সাধন করে আপন স্বার্থ হাছিল করতে পারে না (বিস্তারিত দ্রঃ ২য় বর্ষ সেপ্টেম্বর’৯৯ প্রশ্নোত্তর ২২/১২২)।
উত্তর : বৈধ হবে না। কারণ রাষ্ট্রীয় স্বার্থ মানেই জনস্বার্থ। আর ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার মাধ্যমে জনস্বার্থের ক্ষতি করা ইসলাম অনুমোদন করে না। ইসলামী রাষ্ট্রে এ ধরনের অপরাধকে চুরির অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হবে। অন্যদিকে একজন ঈমানদার ব্যক্তি কখনো অন্যের ক্ষতি সাধন করে আপন স্বার্থ হাছিল করতে পারে না (বিস্তারিত দ্রঃ ২য় বর্ষ সেপ্টেম্বর’৯৯ প্রশ্নোত্তর ২২/১২২)।
২৫২
প্রশ্ন (১১/৩৭১) : সূদ আদান-প্রদানকারী ব্যাংক বা বীমা প্রতিষ্ঠানকে বাসা ভাড়া দেওয়ায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?-শহীদুল ইসলাম, ছোটবনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : ব্যাংক বা বীমা প্রতিষ্ঠানকে বাসা ভাড়া দেওয়া যাবে না। এগুলি সরাসরি সূদী কারবারের সাথে জড়িত। আল্লাহ তা‘আলা অন্যায় ও পাপ কাজের সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন (মায়েদাহ ৫/২)।
উত্তর : ব্যাংক বা বীমা প্রতিষ্ঠানকে বাসা ভাড়া দেওয়া যাবে না। এগুলি সরাসরি সূদী কারবারের সাথে জড়িত। আল্লাহ তা‘আলা অন্যায় ও পাপ কাজের সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন (মায়েদাহ ৫/২)।
-মিনহাজুল ইসলাম, উপশহর, রাজশাহী।
উত্তর : এতে ছিয়াম ভঙ্গ হবে না। কারণ এটি মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন বিষয় নয়। আর যা মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে, তা করার জন্য মানুষকে বাধ্য করা হয়নি। ব্যাপারটি অনিচ্ছায় বমন করার মত। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, কারো অনিচ্ছায় বমি হ’লে ছিয়াম নষ্ট হবে না’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২০০৭; ইরওয়া ৪/৫১ পৃঃ)।
উত্তর : এতে ছিয়াম ভঙ্গ হবে না। কারণ এটি মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন বিষয় নয়। আর যা মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে, তা করার জন্য মানুষকে বাধ্য করা হয়নি। ব্যাপারটি অনিচ্ছায় বমন করার মত। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, কারো অনিচ্ছায় বমি হ’লে ছিয়াম নষ্ট হবে না’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২০০৭; ইরওয়া ৪/৫১ পৃঃ)।
-তাওহীদুযযামান, ঝিকরগাছা, যশোর
উত্তর : সেক্ষেত্রে প্রশংসিত ব্যক্তি নিম্নের দো‘আটি পাঠ করতে পারেন। - اللَّهُمَّ لَا تُؤَاخِذْنِيْ بِمَا يَقُولُوْنَ وَاغْفِرْ لِيْ مَا لاَ يَعْلَمُوْنَ (আল্লাহুম্মা লা তুআখিযনী বিমা ইয়াকূলূন, ওয়াগফিরলী মা লা ইয়া‘লামূন)। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তারা যা বলছে সে ব্যপারে আমাকে পাকড়াও কর না এবং যে বিষয়ে তারা জানে না, সে বিষয়ে আমাকে ক্ষমা করে দাও’। জনৈক ছাহাবী এ দো‘আটি পাঠ করতেন’ (আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৭৬১, সনদ ছহীহ)।
স্মর্তব্য যে, প্রশংসাকৃত ব্যক্তির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে এবং এতে তার কল্যাণের সম্ভাবনা থাকলে প্রশংসা করা যেতে পারে (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ২৬/১২৪)। তবে সামনে হৌক বা পিছনে হৌক কারো ব্যাপারে অতি প্রশংসা করা উচিৎ নয়। রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে জনৈক ছাহাবী অপর এক ছাহাবীর উচ্চ প্রশংসা করলে তিনি বলেন, আফসোস! তুমি তো তোমার সাথীর গর্দান কেটে ফেললে (কথাটি তিনি তিনবার বললেন)। অতঃপর বললেন, যদি কারো প্রশংসা করতে হয়, তবে সে যেন বলে, আমি তার ব্যাপারে এমন এমন ধারণা পোষণ করি। কারণ তার প্রকৃত হিসাব আল্লাহ জানেন...(বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৮২৭)।
উত্তর : সেক্ষেত্রে প্রশংসিত ব্যক্তি নিম্নের দো‘আটি পাঠ করতে পারেন। - اللَّهُمَّ لَا تُؤَاخِذْنِيْ بِمَا يَقُولُوْنَ وَاغْفِرْ لِيْ مَا لاَ يَعْلَمُوْنَ (আল্লাহুম্মা লা তুআখিযনী বিমা ইয়াকূলূন, ওয়াগফিরলী মা লা ইয়া‘লামূন)। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তারা যা বলছে সে ব্যপারে আমাকে পাকড়াও কর না এবং যে বিষয়ে তারা জানে না, সে বিষয়ে আমাকে ক্ষমা করে দাও’। জনৈক ছাহাবী এ দো‘আটি পাঠ করতেন’ (আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৭৬১, সনদ ছহীহ)।
স্মর্তব্য যে, প্রশংসাকৃত ব্যক্তির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে এবং এতে তার কল্যাণের সম্ভাবনা থাকলে প্রশংসা করা যেতে পারে (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ২৬/১২৪)। তবে সামনে হৌক বা পিছনে হৌক কারো ব্যাপারে অতি প্রশংসা করা উচিৎ নয়। রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে জনৈক ছাহাবী অপর এক ছাহাবীর উচ্চ প্রশংসা করলে তিনি বলেন, আফসোস! তুমি তো তোমার সাথীর গর্দান কেটে ফেললে (কথাটি তিনি তিনবার বললেন)। অতঃপর বললেন, যদি কারো প্রশংসা করতে হয়, তবে সে যেন বলে, আমি তার ব্যাপারে এমন এমন ধারণা পোষণ করি। কারণ তার প্রকৃত হিসাব আল্লাহ জানেন...(বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৮২৭)।
২৫৫
প্রশ্ন (১৪/৩৭৪) : ‘হাসবুনাল্লাহ ওয়া নি‘মাল ওয়াকীল, নি‘মাল মাওলা ওয়া নি‘মান নাছীর’- দো‘আটি কি ছহীহ কি? কোন কোন ক্ষেত্রে দো‘আটি পাঠ করা যায়?-শহীদুল ইসলাম, কামারপাড়া, মাগুরা।
উত্তর : ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি‘মাল ওয়াকীল’-অংশটি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। ইবরাহীম (আঃ)-কে আগুনে নিক্ষেপ করা হ’লে এবং রাসূল (ছাঃ) (মুশরিকদের হামলা হবে এমন খবর শুনে হামরাউল আসাদে) উক্ত দো‘আটি পাঠ করেন (বুখারী হা/৪৫৬৩; আলে ইমরান ৩/১৭৩)। অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) এ দো‘আটি পাঠ করার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন (তিরমিযী হা/৩২৪৩; ছহীহাহ হা/১০৭৯)। তবে ‘নি‘মাল মাওলা ওয়া নি‘মান নাছীর’ বাক্যটি আল্লাহর প্রশংসাসূচক কুরআনের আয়াত (আনফাল ৪০; হজ্জ ৭৮), যা কোন দো‘আর সাথে যুক্ত করে পাঠ করায় কোন বাধা নেই। যেকোন দুঃখ, কষ্ট, বিপদ, দুশ্চিন্তায় আল্লাহর উপরে পূর্ণ তাওয়াক্কুল প্রকাশের জন্য উপরোক্ত দো‘আটি পাঠ করা যায়।
উত্তর : ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি‘মাল ওয়াকীল’-অংশটি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। ইবরাহীম (আঃ)-কে আগুনে নিক্ষেপ করা হ’লে এবং রাসূল (ছাঃ) (মুশরিকদের হামলা হবে এমন খবর শুনে হামরাউল আসাদে) উক্ত দো‘আটি পাঠ করেন (বুখারী হা/৪৫৬৩; আলে ইমরান ৩/১৭৩)। অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) এ দো‘আটি পাঠ করার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন (তিরমিযী হা/৩২৪৩; ছহীহাহ হা/১০৭৯)। তবে ‘নি‘মাল মাওলা ওয়া নি‘মান নাছীর’ বাক্যটি আল্লাহর প্রশংসাসূচক কুরআনের আয়াত (আনফাল ৪০; হজ্জ ৭৮), যা কোন দো‘আর সাথে যুক্ত করে পাঠ করায় কোন বাধা নেই। যেকোন দুঃখ, কষ্ট, বিপদ, দুশ্চিন্তায় আল্লাহর উপরে পূর্ণ তাওয়াক্কুল প্রকাশের জন্য উপরোক্ত দো‘আটি পাঠ করা যায়।
২৫৬
প্রশ্ন (১৫/৩৭৫) : আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) যখন কোন যুবককে দেখতেন তখন তাকে রাসূল (ছাঃ)-এর অছিয়ত অনুযায়ী স্বাগত জানাতেন মর্মে বর্ণিত হাদীছটি কি ছহীহ?-নূরুল ইসলাম
সাতক্ষীরা সদর, সাতক্ষীরা।
উত্তর : হাদীছটির প্রথমাংশ সনদে ও মতনে ছহীহ এবং শেষাংশের খবর ছহীহ। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) যখন কোন যুবককে, অন্য বর্ণনায় কোন ইলমে হাদীছ অন্বেষণকারীকে দেখতেন, তখন তাকে বলতেন, রাসূল (ছাঃ)-এর অছিয়ত অনুযায়ী আমি তোমাকে মারহাবা জানাচ্ছি। রাসূল (ছাঃ) তোমাদের ব্যাপারে আমাদের অছিয়ত করেছেন’ (হাকেম ১/৮৮, হা/২৯৮; যাহাবী সনদ ছহীহ; আলবানী, সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৮০)। কিন্তু শেষাংশ তথা- (আমারানা ... আহলুল হাদীছে বা‘দানা) ‘রাসূল (ছাঃ) আমাদেরকে তোমাদের জন্য মজলিস প্রশস্ত করার এবং তোমাদেরকে হাদীছ বুঝাবার নির্দেশ দিয়ে গেছেন। কেননা তোমরা আমাদের পরবর্তী বংশধর এবং তোমরাই আমাদের পরবর্তী আহলেহাদীছ’ অংশটুকুর বর্ণনাসূত্রে আবু হারূণ আম্মারা বিন জুওয়াইন আবাদী ও মুহাম্মদ ইবনু যাকওয়ান আযদী নামক দু’জন অত্যন্ত দুর্বল রাবী রয়েছেন। সেকারণ শেষাংশটুকুর সনদ দুর্বল (তাকরীবুত তাহযীব ১/৪০৮, রাবী নং ৪৮৪০; ১/৭১১; তাহযীবুত-তাহযীব ৭/৪১২, রাবী নং ৬৭০, মীযান ৩/১৭৩, রাবী নং ৬০১৮)। কিন্তু মর্ম এবং খবর ছহীহ। কেননা তখন ছাহাবীগণই ছিলেন হাদীছের ধারক-বাহক ও প্রচারক, তথা আহলুল হাদীছ।
ছাহাবীগণসহ যুগে যুগে আহলুল হাদীছগণই যে ত্বায়েফাহ মানছূরাহ (তিরমিযী হা/২১৯২) বা ফিরক্বা নাজিয়াহ সে ব্যাপারে সালাফে ছালেহীনের মধ্যে কোন মতভেদ নেই। যেমন ‘ত্বায়েফাহ মানছূরাহ’-এর পরিচয় দিতে গিয়ে ইমাম বুখারী (রহঃ)-এর উস্তাদ ইমাম আলী ইবনুল মাদীনী (রহঃ) বলেছেন, ‘তারা হ’লেন আছহাবুল হাদীছ’ (তিরমিযী হা/২১৯২)। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, ‘তারা হ’লেন আহলেহাদীছ’ (খত্বীব বাগদাদী, মাসআলাতুল ইহতিজাজ বিশ-শাফেঈ, পৃঃ ৪৭, সনদ ছহীহ)। ইমাম ইবনু হিববান ‘ইলম’ অধ্যায়ে উপরোক্ত হাদীছের উপর অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন, ذِكْرُ إِثْبَاتِ النُّصْرَةِ لِأَصْحَابِ الْحَدِيثِ إِلَى قِيَامِ السَّاعَةِ ‘ক্বিয়ামত অবধি আল্লাহ কর্তৃক আহলেহাদীছদের সাহায্যপ্রাপ্তি প্রমাণিত হওয়ার বিবরণ’ (ছহীহ ইবনু হিববান, ১/২৬১, হা/৬১)। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) বলেন, ‘সাহায্যপ্রাপ্ত এই দলটি যদি আছহাবুল হাদীছ (আহলেহাদীছ) না হয়, তবে আমি জানি না তারা কারা’? (হাকেম, মা‘রিফাতু উলূমিল হাদীছ হা/২, সনদ হাসান)। ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন, ‘আমি যখন কোন ‘আহলেহাদীছ’-কে দেখি তখন যেন রাসূল (ছাঃ)-কেই জীবন্ত দেখি’ (খত্বীব বাগদাদী, শারফু আছহাবিল হাদীছ, হা/৮৫)। (বিস্তারিত দ্রঃ আলবানী, সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৭০ ও ২৮০-এর আলোচনা; যুবায়ের আলী যাঈ, ‘আহলেহাদীছ একটি বৈশিষ্ট্যগত নাম’ (মাসিক আত-তাহরীক এপ্রিল-জুলাই ২০১৫)।
সাতক্ষীরা সদর, সাতক্ষীরা।
উত্তর : হাদীছটির প্রথমাংশ সনদে ও মতনে ছহীহ এবং শেষাংশের খবর ছহীহ। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) যখন কোন যুবককে, অন্য বর্ণনায় কোন ইলমে হাদীছ অন্বেষণকারীকে দেখতেন, তখন তাকে বলতেন, রাসূল (ছাঃ)-এর অছিয়ত অনুযায়ী আমি তোমাকে মারহাবা জানাচ্ছি। রাসূল (ছাঃ) তোমাদের ব্যাপারে আমাদের অছিয়ত করেছেন’ (হাকেম ১/৮৮, হা/২৯৮; যাহাবী সনদ ছহীহ; আলবানী, সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৮০)। কিন্তু শেষাংশ তথা- (আমারানা ... আহলুল হাদীছে বা‘দানা) ‘রাসূল (ছাঃ) আমাদেরকে তোমাদের জন্য মজলিস প্রশস্ত করার এবং তোমাদেরকে হাদীছ বুঝাবার নির্দেশ দিয়ে গেছেন। কেননা তোমরা আমাদের পরবর্তী বংশধর এবং তোমরাই আমাদের পরবর্তী আহলেহাদীছ’ অংশটুকুর বর্ণনাসূত্রে আবু হারূণ আম্মারা বিন জুওয়াইন আবাদী ও মুহাম্মদ ইবনু যাকওয়ান আযদী নামক দু’জন অত্যন্ত দুর্বল রাবী রয়েছেন। সেকারণ শেষাংশটুকুর সনদ দুর্বল (তাকরীবুত তাহযীব ১/৪০৮, রাবী নং ৪৮৪০; ১/৭১১; তাহযীবুত-তাহযীব ৭/৪১২, রাবী নং ৬৭০, মীযান ৩/১৭৩, রাবী নং ৬০১৮)। কিন্তু মর্ম এবং খবর ছহীহ। কেননা তখন ছাহাবীগণই ছিলেন হাদীছের ধারক-বাহক ও প্রচারক, তথা আহলুল হাদীছ।
ছাহাবীগণসহ যুগে যুগে আহলুল হাদীছগণই যে ত্বায়েফাহ মানছূরাহ (তিরমিযী হা/২১৯২) বা ফিরক্বা নাজিয়াহ সে ব্যাপারে সালাফে ছালেহীনের মধ্যে কোন মতভেদ নেই। যেমন ‘ত্বায়েফাহ মানছূরাহ’-এর পরিচয় দিতে গিয়ে ইমাম বুখারী (রহঃ)-এর উস্তাদ ইমাম আলী ইবনুল মাদীনী (রহঃ) বলেছেন, ‘তারা হ’লেন আছহাবুল হাদীছ’ (তিরমিযী হা/২১৯২)। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, ‘তারা হ’লেন আহলেহাদীছ’ (খত্বীব বাগদাদী, মাসআলাতুল ইহতিজাজ বিশ-শাফেঈ, পৃঃ ৪৭, সনদ ছহীহ)। ইমাম ইবনু হিববান ‘ইলম’ অধ্যায়ে উপরোক্ত হাদীছের উপর অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন, ذِكْرُ إِثْبَاتِ النُّصْرَةِ لِأَصْحَابِ الْحَدِيثِ إِلَى قِيَامِ السَّاعَةِ ‘ক্বিয়ামত অবধি আল্লাহ কর্তৃক আহলেহাদীছদের সাহায্যপ্রাপ্তি প্রমাণিত হওয়ার বিবরণ’ (ছহীহ ইবনু হিববান, ১/২৬১, হা/৬১)। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) বলেন, ‘সাহায্যপ্রাপ্ত এই দলটি যদি আছহাবুল হাদীছ (আহলেহাদীছ) না হয়, তবে আমি জানি না তারা কারা’? (হাকেম, মা‘রিফাতু উলূমিল হাদীছ হা/২, সনদ হাসান)। ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন, ‘আমি যখন কোন ‘আহলেহাদীছ’-কে দেখি তখন যেন রাসূল (ছাঃ)-কেই জীবন্ত দেখি’ (খত্বীব বাগদাদী, শারফু আছহাবিল হাদীছ, হা/৮৫)। (বিস্তারিত দ্রঃ আলবানী, সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৭০ ও ২৮০-এর আলোচনা; যুবায়ের আলী যাঈ, ‘আহলেহাদীছ একটি বৈশিষ্ট্যগত নাম’ (মাসিক আত-তাহরীক এপ্রিল-জুলাই ২০১৫)।
২৫৭
প্রশ্ন (১৬/৩৭৬) : জনৈক আলেম বলেন, সুন্নাতযুক্ত ফরয ছালাত শেষে সংক্ষিপ্ত দো‘আ পাঠ করতে হবে। আর সুন্নাত বিহীন তথা ফজর ও আছর ছালাতের পর বিস্তারিত যিকির করতে হবে। এর কোন সত্যতা আছে কি?-আবুল বাশার, হালিশহর, চট্টগ্রাম।
উত্তর : উক্ত বক্তব্যের কোন ভিত্তি নেই। বরং যেকোন ফরয ছালাত শেষে তাসবীহ ও দো‘আ সমূহ সংক্ষিপ্ত বা দীর্ঘ করা দু’টিই জায়েয। মুছল্লী সম্ভবপর সকল দো‘আ পাঠ করবে। আর ব্যস্ততা বা গৃহাভ্যন্তরে গিয়ে যিকর-আযকার করতে চাইলে সংক্ষিপ্ত করবে। তবে কমপক্ষে তিনি ‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম, ...ইকরাম’ বলে উঠে যাবেন (বুখারী হা/৮৪৯; মুসলিম হা/৫৯২; মিশকাত হা/৯৬০)। রাসূল (ছাঃ) কখনো কখনো দীর্ঘ সময় ধরে দো‘আ সমূহ পাঠ করতেন (বুখারী হা/৮৪৪; ছহীহাহ হা/১৯৬, ১০২)।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, প্রত্যেক ফরয ছালাতের শেষে যে ব্যক্তি ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করে, সে নিরাশ হয় না’ (মুসলিম হা/৫৯৬; মিশকাত হা/৯৬৬)। উক্ত হাদীছে প্রত্যেক ফরয ছালাতের কথা বলা হয়েছে, কেবলমাত্র সুন্নাতবিহীন ছালাতের কথা বলা হয়নি। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, প্রত্যেক ফরয ছালাতের পর হাদীছে বর্ণিত যিকর ও দো‘আ সমূহ পাঠ করবে। তার পরে সুন্নাত ছালাত থাক বা না থাক সেটা ধর্তব্য নয় (ছহীহাহ হা/১০২ আলোচনা দ্রঃ)।
উত্তর : উক্ত বক্তব্যের কোন ভিত্তি নেই। বরং যেকোন ফরয ছালাত শেষে তাসবীহ ও দো‘আ সমূহ সংক্ষিপ্ত বা দীর্ঘ করা দু’টিই জায়েয। মুছল্লী সম্ভবপর সকল দো‘আ পাঠ করবে। আর ব্যস্ততা বা গৃহাভ্যন্তরে গিয়ে যিকর-আযকার করতে চাইলে সংক্ষিপ্ত করবে। তবে কমপক্ষে তিনি ‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম, ...ইকরাম’ বলে উঠে যাবেন (বুখারী হা/৮৪৯; মুসলিম হা/৫৯২; মিশকাত হা/৯৬০)। রাসূল (ছাঃ) কখনো কখনো দীর্ঘ সময় ধরে দো‘আ সমূহ পাঠ করতেন (বুখারী হা/৮৪৪; ছহীহাহ হা/১৯৬, ১০২)।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, প্রত্যেক ফরয ছালাতের শেষে যে ব্যক্তি ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করে, সে নিরাশ হয় না’ (মুসলিম হা/৫৯৬; মিশকাত হা/৯৬৬)। উক্ত হাদীছে প্রত্যেক ফরয ছালাতের কথা বলা হয়েছে, কেবলমাত্র সুন্নাতবিহীন ছালাতের কথা বলা হয়নি। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, প্রত্যেক ফরয ছালাতের পর হাদীছে বর্ণিত যিকর ও দো‘আ সমূহ পাঠ করবে। তার পরে সুন্নাত ছালাত থাক বা না থাক সেটা ধর্তব্য নয় (ছহীহাহ হা/১০২ আলোচনা দ্রঃ)।
২৫৮
প্রশ্ন (১৭/৩৭৭) : জুম‘আর ছালাত আদায়রত অবস্থায় মাইকের লাইন বন্ধ হয়ে গেলে এবং কিছু মুছল্লী ইমাম ছাহেবের আওয়ায শুনতে না পেলে তাদের জন্য করণীয় কি?-ইউসুফ, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
উত্তর : এমতাবস্থায় ইমামের তাকবীর শুনতে পাচ্ছেন এমন কেউ ইমামের পিছে পিছে সশব্দে তাকবীর সমূহ বলবেন। যাতে বাইরের মুছল্লীরা শুনতে পান। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহ’লে তাদের মধ্যে কেউ এগিয়ে গিয়ে ইমামতি করবেন অথবা মাসবূকের ন্যায় প্রত্যেকে একাকী ছালাত আদায় করে নিবেন (মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ১২/৩৩১)।
উত্তর : এমতাবস্থায় ইমামের তাকবীর শুনতে পাচ্ছেন এমন কেউ ইমামের পিছে পিছে সশব্দে তাকবীর সমূহ বলবেন। যাতে বাইরের মুছল্লীরা শুনতে পান। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহ’লে তাদের মধ্যে কেউ এগিয়ে গিয়ে ইমামতি করবেন অথবা মাসবূকের ন্যায় প্রত্যেকে একাকী ছালাত আদায় করে নিবেন (মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ১২/৩৩১)।
২৫৯
প্রশ্ন (১৮/৩৭৮) : প্রত্যেক চার রাক‘আত তারাবীহ ছালাতের পর উচ্চৈঃস্বরে ‘সুবহানা যিল-মুলকি ওয়াল মালাকূতি... আবাদান আবাদা... মালাইকাতি ওয়ার রূহ’ দো‘আ পাঠ করার কোন ভিত্তি আছে কি?-রূহুল আমীন, নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : উক্ত দো‘আটি ছূফীদের আবিষ্কৃত বানোয়াট দো‘আ মাত্র। মূলতঃ তারাবীহর ছালাতে চার রাক‘আত পরপর পড়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন দো‘আ নেই। তবে রাসূল (ছাঃ) বিতর ছালাতে সালাম ফিরানোর পর سُبْحانَ المَلِكِ القُدُّوسِ (সুবহা-নাল মালিকিল কুদ্দূস) দো‘আটি সশব্দে পাঠ করতেন (আবুদাউদ হা/১৪৩০; মিশকাত হা/১২৭৫)।
উত্তর : উক্ত দো‘আটি ছূফীদের আবিষ্কৃত বানোয়াট দো‘আ মাত্র। মূলতঃ তারাবীহর ছালাতে চার রাক‘আত পরপর পড়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন দো‘আ নেই। তবে রাসূল (ছাঃ) বিতর ছালাতে সালাম ফিরানোর পর سُبْحانَ المَلِكِ القُدُّوسِ (সুবহা-নাল মালিকিল কুদ্দূস) দো‘আটি সশব্দে পাঠ করতেন (আবুদাউদ হা/১৪৩০; মিশকাত হা/১২৭৫)।
২৬০
প্রশ্ন (১৯/৩৭৯) : আমার প্রতিবেশী বন্ধু ইসলাম সম্পর্কে বিভিন্ন সন্দেহবাদ আরোপ করে এবং রাসূল (ছাঃ) সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে কটূক্তি করে থাকে। আমার জানা মতে, এরূপ কটূক্তির ক্ষেত্রে কোন তওবার সুযোগ নেই। আর সরকারও এর সমর্থক। এক্ষণে আমি কি তাকে হত্যা করতে পারি?-আব্দুল হাকীম, ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ইহূদী হৌক, নাছারা হৌক যে ব্যক্তি ইসলাম কবুল না করে মৃত্যুবরণ করে, সে ব্যক্তি জাহান্নামবাসী হবে’ (মুসলিম হা/১৫৩; মিশকাত হা/১০)। অতঃপর রাসূল (ছাঃ) সম্পর্কে কটূক্তিকারী ব্যক্তি তওবা না করলে সে অবশ্যই ধর্মত্যাগী ও কাফের (তাওবাহ ৬৫-৬৬)। ছাহাবীগণসহ সর্বযুগের বিদ্বানগণ এ বিষয়ে একমত যে ঐ ব্যক্তি কাফের ও মুরতাদ এবং তাকে হত্যা করা ওয়াজিব (ইবনু তায়মিয়াহ, আছ-ছারেমুল মাসলূল ২/১৩-১৬)। তবে তা আদালতের মাধ্যমে প্রমাণ সাপেক্ষে বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব সরকারের। যেমন ইহূদী নেতা কা‘ব বিন আশরাফ রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামকে কটূক্তি করে ব্যঙ্গ কবিতা লিখলেও রাসূল (ছাঃ)-এর নির্দেশ পাওয়ার আগ পর্যন্ত ছাহাবীগণ তাকে হত্যা করেননি (বুখারী হা/৪০৩৭)। এছাড়া মু‘আয বিন জাবাল (রাঃ) ইয়ামনে জনৈক মুরতাদকে সেখানকার গভর্ণরের অনুমতি ক্রমেই হত্যা করেছিলেন (আবুদাঊদ হা/৪৩৫৪)। প্রত্যেকেই যদি দন্ড বাস্তবায়ন শুরু করে, তাহ’লে সমাজে চরম বিশৃংখলা সৃষ্টি হবে। সেকারণ দন্ড বাস্তবায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট আদালত ও সরকার এ দায়িত্ব পালন করবেন। না করলে তারা কবীরা গোনাহগার হবেন এবং আল্লাহর নিকট কৈফিয়তের সম্মুখীন হবেন (উছায়মীন, শারহুল মুমতে‘ ১৪/৪৪১-৪২)।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ইহূদী হৌক, নাছারা হৌক যে ব্যক্তি ইসলাম কবুল না করে মৃত্যুবরণ করে, সে ব্যক্তি জাহান্নামবাসী হবে’ (মুসলিম হা/১৫৩; মিশকাত হা/১০)। অতঃপর রাসূল (ছাঃ) সম্পর্কে কটূক্তিকারী ব্যক্তি তওবা না করলে সে অবশ্যই ধর্মত্যাগী ও কাফের (তাওবাহ ৬৫-৬৬)। ছাহাবীগণসহ সর্বযুগের বিদ্বানগণ এ বিষয়ে একমত যে ঐ ব্যক্তি কাফের ও মুরতাদ এবং তাকে হত্যা করা ওয়াজিব (ইবনু তায়মিয়াহ, আছ-ছারেমুল মাসলূল ২/১৩-১৬)। তবে তা আদালতের মাধ্যমে প্রমাণ সাপেক্ষে বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব সরকারের। যেমন ইহূদী নেতা কা‘ব বিন আশরাফ রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামকে কটূক্তি করে ব্যঙ্গ কবিতা লিখলেও রাসূল (ছাঃ)-এর নির্দেশ পাওয়ার আগ পর্যন্ত ছাহাবীগণ তাকে হত্যা করেননি (বুখারী হা/৪০৩৭)। এছাড়া মু‘আয বিন জাবাল (রাঃ) ইয়ামনে জনৈক মুরতাদকে সেখানকার গভর্ণরের অনুমতি ক্রমেই হত্যা করেছিলেন (আবুদাঊদ হা/৪৩৫৪)। প্রত্যেকেই যদি দন্ড বাস্তবায়ন শুরু করে, তাহ’লে সমাজে চরম বিশৃংখলা সৃষ্টি হবে। সেকারণ দন্ড বাস্তবায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট আদালত ও সরকার এ দায়িত্ব পালন করবেন। না করলে তারা কবীরা গোনাহগার হবেন এবং আল্লাহর নিকট কৈফিয়তের সম্মুখীন হবেন (উছায়মীন, শারহুল মুমতে‘ ১৪/৪৪১-৪২)।
২৬১
প্রশ্ন (২০/৩৮০) : বর্তমানে একই দিনে ছিয়াম ও ঈদ পালন করার জন্য কিছু লোকের মাঝে উৎসুক্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শারঈ দৃষ্টিকোণ থেকে এটা সঠিক হবে কি?-আমজাদুল ইসলাম, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা।
উত্তর : শরী‘আতের দৃষ্টিতে এটি সঠিক হবে না। কেননা আল্লাহ পাক বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি (রামাযানের) এ মাস পাবে, সে যেন ছিয়াম রাখে’ (রাক্বারাহ ১৮৫)। ‘এ মাস পাবে’ অর্থ এ মাসের চাঁদ দেখতে পাবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে ছিয়াম রাখ ও চাঁদ দেখে ছিয়াম ভঙ্গ কর। যদি চাঁদ তোমাদের নিকটে আচ্ছন্ন থাকে, তাহ’লে শা‘বান ত্রিশ দিন পূর্ণ করে নাও’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৯৭০ ‘ছাওম’ অধ্যায়, ‘চাঁদ দেখা’ অনুচ্ছেদ)। উপরোক্ত দলীলসমূহ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, ছিয়াম ও ঈদের জন্য চাঁদ দেখা শর্ত। এক্ষণে এই চাঁদ দেখার বিষয়টি অঞ্চল বিশেষের সঙ্গে সম্পৃক্ত, না আধুনিক মিডিয়ার মাধ্যমে বিশ্বের যেকোন প্রান্তে দু’জন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি চাঁদ দেখার সংবাদ পেলেই পৃথিবীর সকল দেশের সকল মুমিনের জন্য তা প্রযোজ্য হবে?
এ ব্যাপারে মানুষের মস্তিষ্কপ্রসূত যুক্তি-তর্ক বাদ দিয়ে ছাহাবায়ে কেরামের আমলকে অগ্রাধিকার দেয়াই যথার্থ হবে। কুরাইব (রাঃ) বর্ণিত আছারে এসেছে যে, তিনি সিরিয়ায় রামাযানের ছিয়াম রেখে মাস শেষে মদীনায় ফিরে এখানকার ছিয়ামের সাথে এক দিন কমবেশ দেখতে পান। এ বিষয়ে ইবনু আববাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, তোমরা ওখানে কবে চাঁদ দেখেছিলে? আমি বললাম, শুক্রবার সন্ধ্যায়। তিনি বললেন, আমরা এখানে শনিবারে সন্ধ্যায় চাঁদ দেখেছি। অতএব এখানে আমরা ছিয়াম চালিয়ে যাব, যতক্ষণ না ঈদের চাঁদ দেখতে পাব’। অন্য বর্ণনায় এসেছে, আমরা ৩০ দিন পূর্ণ করব। তাঁকে বলা হ’ল, মু‘আবিয়ার চাঁদ দেখা ও ছিয়াম রাখা কি আপনার জন্য যথেষ্ট নয়? তিনি বললেন, না। এভাবেই রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদেরকে নির্দেশ দান করেছেন’ (মুসলিম হা/১০৮৭ ‘ছিয়াম’ অধ্যায়)। ইমাম নববী বলেন, এ হাদীছ স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, এক শহরের চন্দ্র দর্শন অন্য শহরে প্রযোজ্য নয় অধিক দূরত্বের কারণে (মির‘আত হা/১৯৮৯-এর ব্যাখ্যা ৬/৪২৮ পৃঃ)।
উল্লেখ্য যে, সিরিয়া মদীনা থেকে উত্তর-পশ্চিমে এক মাসের পথ এবং প্রায় ৭০০ মাইল দূরত্বে অবস্থিত। সময়ের পার্থক্য মদীনা থেকে ১৪ মিনিট ৪০ সেকেন্ড পরে। চন্দ্র পশ্চিম দিক থেকে আগে উঠে বিধায় সেখানে মদীনার একদিন পূর্বে চাঁদ দেখা গিয়েছিল। মিশকাতের ভাষ্যকার ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী বলেন, ‘আধুনিক হিসাব মতে পশ্চিম অঞ্চলে চাঁদ দেখা গেলে পশ্চিমাঞ্চলসহ সেখান থেকে অন্যূন ৫৬০ মাইল দূরত্বে পূর্বাঞ্চলের অধিবাসীদের জন্য ঐ চাঁদ গণ্য হবে। আর যদি পূর্বাঞ্চলে চাঁদ দেখা যায়, তাহ’লে পশ্চিমাঞ্চলের অনুরূপ দূরত্বের অধিবাসীদের জন্য উক্ত চাঁদ গণ্য হবে’ (মির‘আত ৬/৪২৯)। জ্যোতির্বিজ্ঞানের উক্ত হিসাব মতে মক্কায় চাঁদ দেখা গেলে আশপাশের ৫৬০ মাইল পর্যন্ত উক্ত চাঁদ দেখতে পাওয়া সম্ভব। অতএব উক্ত দূরত্বের অধিবাসীগণ উক্ত চাঁদের হিসাবে ছিয়াম ও ঈদ পালন করতে পারেন, সারা পৃথিবীর মানুষ নয়।
অতএব দু’জন মুসলিমের সাক্ষ্য ঐ অঞ্চলের মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, যে অঞ্চলে একই দিনে চাঁদ দেখা সম্ভব (বিস্তারিত দ্রঃ মাসিক আত-তাহরীক প্রশ্নোত্তর জানুয়ারী ২০০৫ প্রশ্ন নং ১/১২১; আগষ্ট ২০১১ প্রশ্ন নং ৩৩/৪৩৩; আগস্ট ২০১৩ প্রবন্ধ, প্রসঙ্গ : সারাবিশ্বে একইদিনে ছিয়াম ও ঈদ; সেপ্টেম্বর’১৩, দরসে কুরআন : নবচন্দ্রসমূহ)।
উত্তর : শরী‘আতের দৃষ্টিতে এটি সঠিক হবে না। কেননা আল্লাহ পাক বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি (রামাযানের) এ মাস পাবে, সে যেন ছিয়াম রাখে’ (রাক্বারাহ ১৮৫)। ‘এ মাস পাবে’ অর্থ এ মাসের চাঁদ দেখতে পাবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে ছিয়াম রাখ ও চাঁদ দেখে ছিয়াম ভঙ্গ কর। যদি চাঁদ তোমাদের নিকটে আচ্ছন্ন থাকে, তাহ’লে শা‘বান ত্রিশ দিন পূর্ণ করে নাও’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৯৭০ ‘ছাওম’ অধ্যায়, ‘চাঁদ দেখা’ অনুচ্ছেদ)। উপরোক্ত দলীলসমূহ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, ছিয়াম ও ঈদের জন্য চাঁদ দেখা শর্ত। এক্ষণে এই চাঁদ দেখার বিষয়টি অঞ্চল বিশেষের সঙ্গে সম্পৃক্ত, না আধুনিক মিডিয়ার মাধ্যমে বিশ্বের যেকোন প্রান্তে দু’জন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি চাঁদ দেখার সংবাদ পেলেই পৃথিবীর সকল দেশের সকল মুমিনের জন্য তা প্রযোজ্য হবে?
এ ব্যাপারে মানুষের মস্তিষ্কপ্রসূত যুক্তি-তর্ক বাদ দিয়ে ছাহাবায়ে কেরামের আমলকে অগ্রাধিকার দেয়াই যথার্থ হবে। কুরাইব (রাঃ) বর্ণিত আছারে এসেছে যে, তিনি সিরিয়ায় রামাযানের ছিয়াম রেখে মাস শেষে মদীনায় ফিরে এখানকার ছিয়ামের সাথে এক দিন কমবেশ দেখতে পান। এ বিষয়ে ইবনু আববাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, তোমরা ওখানে কবে চাঁদ দেখেছিলে? আমি বললাম, শুক্রবার সন্ধ্যায়। তিনি বললেন, আমরা এখানে শনিবারে সন্ধ্যায় চাঁদ দেখেছি। অতএব এখানে আমরা ছিয়াম চালিয়ে যাব, যতক্ষণ না ঈদের চাঁদ দেখতে পাব’। অন্য বর্ণনায় এসেছে, আমরা ৩০ দিন পূর্ণ করব। তাঁকে বলা হ’ল, মু‘আবিয়ার চাঁদ দেখা ও ছিয়াম রাখা কি আপনার জন্য যথেষ্ট নয়? তিনি বললেন, না। এভাবেই রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদেরকে নির্দেশ দান করেছেন’ (মুসলিম হা/১০৮৭ ‘ছিয়াম’ অধ্যায়)। ইমাম নববী বলেন, এ হাদীছ স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, এক শহরের চন্দ্র দর্শন অন্য শহরে প্রযোজ্য নয় অধিক দূরত্বের কারণে (মির‘আত হা/১৯৮৯-এর ব্যাখ্যা ৬/৪২৮ পৃঃ)।
উল্লেখ্য যে, সিরিয়া মদীনা থেকে উত্তর-পশ্চিমে এক মাসের পথ এবং প্রায় ৭০০ মাইল দূরত্বে অবস্থিত। সময়ের পার্থক্য মদীনা থেকে ১৪ মিনিট ৪০ সেকেন্ড পরে। চন্দ্র পশ্চিম দিক থেকে আগে উঠে বিধায় সেখানে মদীনার একদিন পূর্বে চাঁদ দেখা গিয়েছিল। মিশকাতের ভাষ্যকার ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী বলেন, ‘আধুনিক হিসাব মতে পশ্চিম অঞ্চলে চাঁদ দেখা গেলে পশ্চিমাঞ্চলসহ সেখান থেকে অন্যূন ৫৬০ মাইল দূরত্বে পূর্বাঞ্চলের অধিবাসীদের জন্য ঐ চাঁদ গণ্য হবে। আর যদি পূর্বাঞ্চলে চাঁদ দেখা যায়, তাহ’লে পশ্চিমাঞ্চলের অনুরূপ দূরত্বের অধিবাসীদের জন্য উক্ত চাঁদ গণ্য হবে’ (মির‘আত ৬/৪২৯)। জ্যোতির্বিজ্ঞানের উক্ত হিসাব মতে মক্কায় চাঁদ দেখা গেলে আশপাশের ৫৬০ মাইল পর্যন্ত উক্ত চাঁদ দেখতে পাওয়া সম্ভব। অতএব উক্ত দূরত্বের অধিবাসীগণ উক্ত চাঁদের হিসাবে ছিয়াম ও ঈদ পালন করতে পারেন, সারা পৃথিবীর মানুষ নয়।
অতএব দু’জন মুসলিমের সাক্ষ্য ঐ অঞ্চলের মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, যে অঞ্চলে একই দিনে চাঁদ দেখা সম্ভব (বিস্তারিত দ্রঃ মাসিক আত-তাহরীক প্রশ্নোত্তর জানুয়ারী ২০০৫ প্রশ্ন নং ১/১২১; আগষ্ট ২০১১ প্রশ্ন নং ৩৩/৪৩৩; আগস্ট ২০১৩ প্রবন্ধ, প্রসঙ্গ : সারাবিশ্বে একইদিনে ছিয়াম ও ঈদ; সেপ্টেম্বর’১৩, দরসে কুরআন : নবচন্দ্রসমূহ)।
২৬২
প্রশ্ন (২১/৩৮১) : জনৈক মুফতী লিখেছেন, পৃথিবীতে কোটি কোটি মুসলমানের মধ্যে সামান্য কিছু লোক ছাড়া সবাই কোন না কোন মাযহাবের অনুসারী। আর মুসলমানদের সম্মিলিত দলের উপর আল্লাহর হাত রয়েছে। এর বাইরের সকলেই জাহান্নামী। একথার সত্যতা আছে কি?-সিরাজুল ইসলাম, বাঁশদহা বাজার, সাতক্ষীরা।
উত্তর : জামা‘আতের উপর আল্লাহর হাত রয়েছে (ছহীহুল জামে‘ হা/১৮৪৮, ৮০৬৫)। এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। তন্মধ্যে ৭২টি দল জাহান্নামে যাবে। মাত্র একটি দল জান্নাতে যাবে। সেটি হ’ল জামা‘আত’ (আহমাদ হা/১৬৯৭৯; আবুদাঊদ হা/৪৫৯৭; ছহীহ তিরমিযী সনদ ছহীহ, তাহকীক মিশকাত হা/১৭২ ‘কিতাব ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ পৃঃ ৩০)। জামা‘আতের অর্থ অন্য হাদীছে রাসূল (ছাঃ) বলেন, যার উপরে আমি ও আমার ছাহাবীগণ আছি’ (তিরমিযী হা/২৬৪১; মিশকাত হা/১৭১)। আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন, ‘হক-এর অনুসারী দলই জামা‘আত। যদিও তুমি একাকী হও’ (ইবনু আসাকির, তারীখ দেমাশক্ব ১৩/৩২২ পৃঃ; সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/১৭৩-এর টীকা নং (৫)। আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারককে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হ’লে, তিনি বলেন, আবুবকর ও ওমর (রাঃ) হ’লেন জামা‘আত (মিশকাত ১/৬১ পৃঃ টীকা-৫)। উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের নিঃশর্ত অনুসারীগণই প্রকৃত অর্থে জামা‘আত। আর তারা হ’লেন ছাহাবায়ে কেরাম, সালাফে ছালেহীন ও তাদের যথাযথ অনুসারী যুগে যুগে আহলুল হাদীছগণ।
উত্তর : জামা‘আতের উপর আল্লাহর হাত রয়েছে (ছহীহুল জামে‘ হা/১৮৪৮, ৮০৬৫)। এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। তন্মধ্যে ৭২টি দল জাহান্নামে যাবে। মাত্র একটি দল জান্নাতে যাবে। সেটি হ’ল জামা‘আত’ (আহমাদ হা/১৬৯৭৯; আবুদাঊদ হা/৪৫৯৭; ছহীহ তিরমিযী সনদ ছহীহ, তাহকীক মিশকাত হা/১৭২ ‘কিতাব ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ পৃঃ ৩০)। জামা‘আতের অর্থ অন্য হাদীছে রাসূল (ছাঃ) বলেন, যার উপরে আমি ও আমার ছাহাবীগণ আছি’ (তিরমিযী হা/২৬৪১; মিশকাত হা/১৭১)। আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন, ‘হক-এর অনুসারী দলই জামা‘আত। যদিও তুমি একাকী হও’ (ইবনু আসাকির, তারীখ দেমাশক্ব ১৩/৩২২ পৃঃ; সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/১৭৩-এর টীকা নং (৫)। আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারককে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হ’লে, তিনি বলেন, আবুবকর ও ওমর (রাঃ) হ’লেন জামা‘আত (মিশকাত ১/৬১ পৃঃ টীকা-৫)। উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের নিঃশর্ত অনুসারীগণই প্রকৃত অর্থে জামা‘আত। আর তারা হ’লেন ছাহাবায়ে কেরাম, সালাফে ছালেহীন ও তাদের যথাযথ অনুসারী যুগে যুগে আহলুল হাদীছগণ।
-ইসহাক, কাঁঠালপাড়া, পবা, রাজশাহী।
উত্তর : (১) দীর্ঘ রুকূ ও সিজদার মাধ্যমে বিতরসহ ১১ রাক‘আত তারাবীহ বা তাহাজ্জুদ ছালাত আদায় করা (বুখারী হা/১১৪৭; মুসলিম হা/৭৩৮)। (২) একই সূরা, তাসবীহ, দো‘আ বারবার পড়ে ছালাত দীর্ঘ করা (ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১২০৫, সনদ হাসান; আবুদাঊদ হা/৮১৬; মিশকাত হা/৮৬২)। (৩) অধিকহারে তেলাওয়াত করা (বায়হাক্বী, মিশকাত হা/১৯৬৩)। (৪) একনিষ্ঠ চিত্তে দো‘আ-দরূদ ও তওবা-ইস্তেগফার করা। ক্বদরের রাতে ক্ষমা প্রার্থনার বিশেষ দো‘আ ‘আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা ‘আফুউভুন তোহেববুল ‘আফ্ওয়া ফা‘ফু ‘আন্নী’ (হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল। তুমি ক্ষমা করতে ভালবাস। অতএব আমাকে ক্ষমা কর) (তিরমিযী, মিশকাত হা/২০৯১) বেশী বেশী পাঠ করা। (৫) তারাবীহ’র ৮ রাক‘আত ছালাত জামা‘আতে আদায় করাই উত্তম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ইমামের সাথে জামা‘আতে ক্বিয়ামকারী সারা রাত্রি ছালাত আদায়ের নেকী পেয়ে থাকে’ (তিরমিযী হা/৮০৬, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১২৯৮)। (৬) এ রাতে মসজিদে জামা‘আতের সাথে ৮ রাক‘আত তারাবীহ পড়া। অতঃপর তাসবীহ-তেলাওয়াত শেষে ঘুমিয়ে যাওয়া। অতঃপর শেষ রাতে উঠে তাহিইয়াতুল ওযূ, তাহিইয়াতুল মসজিদ ইত্যাদি শেষে ৩ অথবা ৫ রাক‘আত বিতর পড়া, তেলাওয়াত করা, দো‘আ-দরূদ পাঠ করা ইত্যাদি।
উত্তর : (১) দীর্ঘ রুকূ ও সিজদার মাধ্যমে বিতরসহ ১১ রাক‘আত তারাবীহ বা তাহাজ্জুদ ছালাত আদায় করা (বুখারী হা/১১৪৭; মুসলিম হা/৭৩৮)। (২) একই সূরা, তাসবীহ, দো‘আ বারবার পড়ে ছালাত দীর্ঘ করা (ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১২০৫, সনদ হাসান; আবুদাঊদ হা/৮১৬; মিশকাত হা/৮৬২)। (৩) অধিকহারে তেলাওয়াত করা (বায়হাক্বী, মিশকাত হা/১৯৬৩)। (৪) একনিষ্ঠ চিত্তে দো‘আ-দরূদ ও তওবা-ইস্তেগফার করা। ক্বদরের রাতে ক্ষমা প্রার্থনার বিশেষ দো‘আ ‘আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা ‘আফুউভুন তোহেববুল ‘আফ্ওয়া ফা‘ফু ‘আন্নী’ (হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল। তুমি ক্ষমা করতে ভালবাস। অতএব আমাকে ক্ষমা কর) (তিরমিযী, মিশকাত হা/২০৯১) বেশী বেশী পাঠ করা। (৫) তারাবীহ’র ৮ রাক‘আত ছালাত জামা‘আতে আদায় করাই উত্তম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ইমামের সাথে জামা‘আতে ক্বিয়ামকারী সারা রাত্রি ছালাত আদায়ের নেকী পেয়ে থাকে’ (তিরমিযী হা/৮০৬, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১২৯৮)। (৬) এ রাতে মসজিদে জামা‘আতের সাথে ৮ রাক‘আত তারাবীহ পড়া। অতঃপর তাসবীহ-তেলাওয়াত শেষে ঘুমিয়ে যাওয়া। অতঃপর শেষ রাতে উঠে তাহিইয়াতুল ওযূ, তাহিইয়াতুল মসজিদ ইত্যাদি শেষে ৩ অথবা ৫ রাক‘আত বিতর পড়া, তেলাওয়াত করা, দো‘আ-দরূদ পাঠ করা ইত্যাদি।
২৬৪
প্রশ্ন (২৩/৩৮৩) : ই‘তিকাফ-এর ফযীলত কি? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ই‘তিকাফের পদ্ধতি কি ছিল? মহিলারা কি এ ইবাদতে অংশগ্রহণ করতে পারবে?-শহীদুল্লাহ, রসূলপুর, কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ।
উত্তর : ই‘তিকাফ তাকওয়া অর্জন করার বড় মাধ্যম। আল্লাহ বলেন, যতক্ষণ তোমরা ইতিকাফ অবস্থায় মসজিদ সমূহে অবস্থান কর ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা কর না। এগুলো আল্লাহর সীমারেখা (বাক্বারাহ ২/১৮৭)। এতে লায়লাতুল ক্বদর অনুসন্ধানের সুযোগ হয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিয়মিত ই‘তিকাফ করেছেন। তবে এ সম্পর্কে বিশেষ কোন ফযীলতের কথা ছহীহ হাদীছে পাওয়া যায় না। ই‘তিকাফের পদ্ধতি হ’ল, ই‘তিকাফ স্থলে সূর্যাস্তের পূর্বে প্রবেশ করবে এবং ঈদের আগের দিন বাদ মাগরিব বের হবে। রাসূল (ছাঃ) রামাযানের শেষ দশকে ই‘তিকাফ করতেন (বুখারী হা/২০২৫, মুসলিম; মিশকাত হা/২০৯৭)। আর শেষ দশক বলতে শেষ দশ রাত্রিকে বুঝানো হয় (ফজর ২)। যা ২০ তারিখ সুর্যাস্তের মাধ্যমে ২১ তারিখ শুরু হয় এবং ১লা শাওয়ালের চন্দ্রোদয়ের মাধ্যমে শেষ হয়। প্রাকৃতিক প্রয়োজন ছাড়া ইতিকাফকারী নিজ বাড়ীতে প্রবেশ করবে না (বুখারী হা/২০২৯)।
মহিলাগণ কোন জামে মসজিদে ই‘তিকাফে বসতে পারবেন। রাসূল (ছাঃ)-এর স্ত্রীগণ মসজিদে নববীতে ই‘তিকাফে বসতেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২০৯৭)। তাঁর জীবদ্দশাতেও অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তা কারণবশতঃ বাস্তবায়ন হয়নি (বুখারী হা/২০৪১; মির‘আত ৭/১৪৩-৪৪, হা/২১১৭ আলোচনা দ্রঃ)। নারীদের জন্য বাড়ীর পাশের জুম‘আ মসজিদে ই‘তিকাফ করা উত্তম (ফাৎহুল বারী হা/২০৩৩-এর আলোচনা)।
উত্তর : ই‘তিকাফ তাকওয়া অর্জন করার বড় মাধ্যম। আল্লাহ বলেন, যতক্ষণ তোমরা ইতিকাফ অবস্থায় মসজিদ সমূহে অবস্থান কর ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা কর না। এগুলো আল্লাহর সীমারেখা (বাক্বারাহ ২/১৮৭)। এতে লায়লাতুল ক্বদর অনুসন্ধানের সুযোগ হয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিয়মিত ই‘তিকাফ করেছেন। তবে এ সম্পর্কে বিশেষ কোন ফযীলতের কথা ছহীহ হাদীছে পাওয়া যায় না। ই‘তিকাফের পদ্ধতি হ’ল, ই‘তিকাফ স্থলে সূর্যাস্তের পূর্বে প্রবেশ করবে এবং ঈদের আগের দিন বাদ মাগরিব বের হবে। রাসূল (ছাঃ) রামাযানের শেষ দশকে ই‘তিকাফ করতেন (বুখারী হা/২০২৫, মুসলিম; মিশকাত হা/২০৯৭)। আর শেষ দশক বলতে শেষ দশ রাত্রিকে বুঝানো হয় (ফজর ২)। যা ২০ তারিখ সুর্যাস্তের মাধ্যমে ২১ তারিখ শুরু হয় এবং ১লা শাওয়ালের চন্দ্রোদয়ের মাধ্যমে শেষ হয়। প্রাকৃতিক প্রয়োজন ছাড়া ইতিকাফকারী নিজ বাড়ীতে প্রবেশ করবে না (বুখারী হা/২০২৯)।
মহিলাগণ কোন জামে মসজিদে ই‘তিকাফে বসতে পারবেন। রাসূল (ছাঃ)-এর স্ত্রীগণ মসজিদে নববীতে ই‘তিকাফে বসতেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২০৯৭)। তাঁর জীবদ্দশাতেও অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তা কারণবশতঃ বাস্তবায়ন হয়নি (বুখারী হা/২০৪১; মির‘আত ৭/১৪৩-৪৪, হা/২১১৭ আলোচনা দ্রঃ)। নারীদের জন্য বাড়ীর পাশের জুম‘আ মসজিদে ই‘তিকাফ করা উত্তম (ফাৎহুল বারী হা/২০৩৩-এর আলোচনা)।
-উম্মে হাবীবাহ, শাজাহানপুর, বগুড়া।
উত্তর : রামাযানের ছিয়াম পালন ইসলামের পাঁচটি ন্তম্ভের অন্যতম (বুখারী হা/৮, মুসলিম হা/১৬)। ইচ্ছাকৃতভাবে যা পরিত্যাগ করা কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৫/২২৫)। এক্ষণে যেসব কারণে ফরয ছিয়াম ক্বাযা করা যায়, পরীক্ষা তার অন্তর্ভুক্ত নয়। অতএব পরীক্ষার অজুহাতে ছিয়াম ক্বাযা করা হারাম হবে (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ১০/২৪০)।
উত্তর : রামাযানের ছিয়াম পালন ইসলামের পাঁচটি ন্তম্ভের অন্যতম (বুখারী হা/৮, মুসলিম হা/১৬)। ইচ্ছাকৃতভাবে যা পরিত্যাগ করা কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৫/২২৫)। এক্ষণে যেসব কারণে ফরয ছিয়াম ক্বাযা করা যায়, পরীক্ষা তার অন্তর্ভুক্ত নয়। অতএব পরীক্ষার অজুহাতে ছিয়াম ক্বাযা করা হারাম হবে (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ১০/২৪০)।
-শফীকুল ইসলাম, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : সফর অবস্থায় কষ্টকর হ’লে ছিয়াম ছেড়ে দেওয়াই উত্তম। আর তা না হ’লে পালন করাই উত্তম হবে। হামযা আসলামী (রাঃ) রাসূল (ছাঃ)-কে সফরে ছিয়াম রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, সফরে ছিয়াম না রাখা আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি অনুগ্রহ। যে তা গ্রহণ করবে, তার জন্য এটা কল্যাণকর হবে। আর যদি কেউ ছিয়াম রাখতে পসন্দ করে, তাহ’লে তাতে কোন গুনাহ নেই (মুসলিম হা/১১২১, মিশকাত হা/২০২৯)। মক্কা বিজয়ের সফরে রাসূল (ছাঃ) ছিয়াম অবস্থায় মক্কার উদ্দেশ্যে বের হন। অতঃপর মক্কার ৪২ মাইল আগে ‘কুরাউল গামীম’ নামক স্থানে পৌঁছে ছিয়াম ভেঙ্গে ফেলেন (মুসলিম হা/১১১৪, মিশকাত হা/২০২৭)।
উত্তর : সফর অবস্থায় কষ্টকর হ’লে ছিয়াম ছেড়ে দেওয়াই উত্তম। আর তা না হ’লে পালন করাই উত্তম হবে। হামযা আসলামী (রাঃ) রাসূল (ছাঃ)-কে সফরে ছিয়াম রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, সফরে ছিয়াম না রাখা আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি অনুগ্রহ। যে তা গ্রহণ করবে, তার জন্য এটা কল্যাণকর হবে। আর যদি কেউ ছিয়াম রাখতে পসন্দ করে, তাহ’লে তাতে কোন গুনাহ নেই (মুসলিম হা/১১২১, মিশকাত হা/২০২৯)। মক্কা বিজয়ের সফরে রাসূল (ছাঃ) ছিয়াম অবস্থায় মক্কার উদ্দেশ্যে বের হন। অতঃপর মক্কার ৪২ মাইল আগে ‘কুরাউল গামীম’ নামক স্থানে পৌঁছে ছিয়াম ভেঙ্গে ফেলেন (মুসলিম হা/১১১৪, মিশকাত হা/২০২৭)।
২৬৭
প্রশ্ন (২৬/৩৮৬) : শাওয়াল মাসের ছয়টি ছিয়াম পালনের ফযীলত কি? রামাযানের ক্বাযা ছিয়াম থাকলে তা আগে করতে হবে না শাওয়ালের ছিয়াম আগে পালন করতে হবে?-আব্দুল গফূর, আশাশুনি, সাতক্ষীরা।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রামাযানের ছিয়াম পালন শেষে শাওয়াল মাসের ছয়টি ছিয়াম পালন করল, সে যেন সারা বছর ছিয়াম পালন করল’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২০৪৭)। অন্য হাদীছে এক বছরের হিসাব রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এভাবে দিয়েছেন যে, ‘রামাযানের একমাস ছিয়াম (১০ গুণ নেকী ধরলে) ১০ মাসের সমান এবং (শাওয়ালের) ছয়টি ছিয়াম দু’মাসের সমান’ (ইবনু মাজাহ হা/১৭১৫; ইরওয়া ৪/১০৭ পৃঃ হা/৯৫০-এর আলোচনা)। এভাবে মোট বারো মাস বা সারা বছর।
শাওয়াল মাসের ছিয়াম আগে করাই কর্তব্য। কারণ শাওয়াল পার হ’লে শাওয়াল মাসের ছিয়াম পালনের সুযোগ থাকে না। আর রামাযানের ক্বাযা ছিয়াম বছরের যেকোন সময়ে আদায় করা যায় (বাক্বারাহ ২/১৮৫)। ব্যস্ততার কারণে আয়েশা (রাঃ) তাঁর রামাযানের ছুটে যাওয়া ছিয়াম পরবর্তী শা‘বান মাসে আদায় করতেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২০৩০)। তবে ফরযের ক্বাযা যত দ্রুত সম্ভব আদায় করাই উচিৎ (মির‘আত ৫/২৩)।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রামাযানের ছিয়াম পালন শেষে শাওয়াল মাসের ছয়টি ছিয়াম পালন করল, সে যেন সারা বছর ছিয়াম পালন করল’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২০৪৭)। অন্য হাদীছে এক বছরের হিসাব রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এভাবে দিয়েছেন যে, ‘রামাযানের একমাস ছিয়াম (১০ গুণ নেকী ধরলে) ১০ মাসের সমান এবং (শাওয়ালের) ছয়টি ছিয়াম দু’মাসের সমান’ (ইবনু মাজাহ হা/১৭১৫; ইরওয়া ৪/১০৭ পৃঃ হা/৯৫০-এর আলোচনা)। এভাবে মোট বারো মাস বা সারা বছর।
শাওয়াল মাসের ছিয়াম আগে করাই কর্তব্য। কারণ শাওয়াল পার হ’লে শাওয়াল মাসের ছিয়াম পালনের সুযোগ থাকে না। আর রামাযানের ক্বাযা ছিয়াম বছরের যেকোন সময়ে আদায় করা যায় (বাক্বারাহ ২/১৮৫)। ব্যস্ততার কারণে আয়েশা (রাঃ) তাঁর রামাযানের ছুটে যাওয়া ছিয়াম পরবর্তী শা‘বান মাসে আদায় করতেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২০৩০)। তবে ফরযের ক্বাযা যত দ্রুত সম্ভব আদায় করাই উচিৎ (মির‘আত ৫/২৩)।
-আসমা, মণিরামপুর, যশোর।
উত্তর : পিতা-মাতার প্রতি সন্তানদের অবশ্য কর্তব্য সমূহ রয়েছে। যেমন (১) তাদের প্রতি অনুগ্রহ করা (নিসা ৩৬)। তথা কথা-কর্ম, শারীরিক-মানসিক, আর্থিক সকল বিষয়ে অনুগ্রহ ও নম্রতা পাওয়ার সর্বোচ্চ হকদার হ’লেন পিতা-মাতা। আল্লাহ বলেন, তোমরা তাদের সঙ্গে এমন কথা বলো না যেন তারা বিরক্ত হয়ে উহ্ শব্দ করেন’ (ইসরা ২৩-২৪)। (২) তাদের জন্য ব্যয় করা (বাক্বারাহ ২/২১৫; ইবনু মাজাহ হা/২২৯১; আবুদাঊদ হা/৩৫৩০, মিশকাত হা/৩৩৫৪)। (৩) শরী‘আতসম্মত সকল বিষয়ে তাদের আনুগত্য করা। (বুখারী হা/৭২৫৭, ইসরা ১৭/২৩; লোকমান ৩১/১৪)। (৪) তাদের জন্য দো‘আ করা (ইসরা ১৭/২৩, মুসলিম, মিশকাত হা/২০৩)। এছাড়া তাঁদের জীবদ্দশায় ও মৃত্যুর পরে তাঁদের বন্ধু-বান্ধবদের প্রতি সদাচরণ করা (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯১৭) ইত্যাদি।
উত্তর : পিতা-মাতার প্রতি সন্তানদের অবশ্য কর্তব্য সমূহ রয়েছে। যেমন (১) তাদের প্রতি অনুগ্রহ করা (নিসা ৩৬)। তথা কথা-কর্ম, শারীরিক-মানসিক, আর্থিক সকল বিষয়ে অনুগ্রহ ও নম্রতা পাওয়ার সর্বোচ্চ হকদার হ’লেন পিতা-মাতা। আল্লাহ বলেন, তোমরা তাদের সঙ্গে এমন কথা বলো না যেন তারা বিরক্ত হয়ে উহ্ শব্দ করেন’ (ইসরা ২৩-২৪)। (২) তাদের জন্য ব্যয় করা (বাক্বারাহ ২/২১৫; ইবনু মাজাহ হা/২২৯১; আবুদাঊদ হা/৩৫৩০, মিশকাত হা/৩৩৫৪)। (৩) শরী‘আতসম্মত সকল বিষয়ে তাদের আনুগত্য করা। (বুখারী হা/৭২৫৭, ইসরা ১৭/২৩; লোকমান ৩১/১৪)। (৪) তাদের জন্য দো‘আ করা (ইসরা ১৭/২৩, মুসলিম, মিশকাত হা/২০৩)। এছাড়া তাঁদের জীবদ্দশায় ও মৃত্যুর পরে তাঁদের বন্ধু-বান্ধবদের প্রতি সদাচরণ করা (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯১৭) ইত্যাদি।
-তাসলীমা যামান, ভাদিয়ালী, সাতক্ষীরা।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘ক্বসম’ বা মানত ব্যক্তির নিয়তের উপর নির্ভরশীল’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৪১৬)। ইমাম শাওকানী বলেন, ‘মানতকারী ব্যক্তি গুনাহের কাজ ব্যতীত সব ধরনের বৈধ মানত বাস্তবায়নে স্বাধীন ইচ্ছার অধিকারী’ (নায়লুল আওত্বার ১০/২৩১ ‘নযর’ অধ্যায়)। সুতরাং মানতকারী মানতকৃত বস্ত্ত যে স্থানে বণ্টনের নিয়ত করবে, সেখানেই তা বণ্টন করবে। আর নির্দিষ্ট না করলে ফকীর-মিসকীনদের মাঝে বণ্টন করে দিবে (ফিক্বহুস-সুন্নাহ ৩/১২৩)।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘ক্বসম’ বা মানত ব্যক্তির নিয়তের উপর নির্ভরশীল’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৩৪১৬)। ইমাম শাওকানী বলেন, ‘মানতকারী ব্যক্তি গুনাহের কাজ ব্যতীত সব ধরনের বৈধ মানত বাস্তবায়নে স্বাধীন ইচ্ছার অধিকারী’ (নায়লুল আওত্বার ১০/২৩১ ‘নযর’ অধ্যায়)। সুতরাং মানতকারী মানতকৃত বস্ত্ত যে স্থানে বণ্টনের নিয়ত করবে, সেখানেই তা বণ্টন করবে। আর নির্দিষ্ট না করলে ফকীর-মিসকীনদের মাঝে বণ্টন করে দিবে (ফিক্বহুস-সুন্নাহ ৩/১২৩)।
-আব্দুল হাকীম, তাহেরপুর, রাজশাহী।
উত্তর : আদায় করতে পারে। ছাহাবীগণের কারু কারু আমল দ্বারা এটি প্রমাণিত। উসাইদের দাস আবু সাঈদ বলেন, আমি বিয়ে করলে আবু যার গিফারী, ইবনু মাসউদ ও হুযায়ফা (রাঃ) আমাকে বললেন, তোমার ঘরে যখন তোমার স্ত্রী প্রবেশ করবে, তখন তুমি দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করবে এবং তার কল্যাণের জন্য দো‘আ করবে ও অকল্যাণ হ’তে আশ্রয় প্রার্থনা করবে (ইবনু আবী শায়বাহ হা/১৭১৫৩; ইরওয়া হা/৫২৩; আলবানী, আদাবুয যিফাফ পৃ:২২, সনদ ছহীহ)। অন্য বর্ণনায় ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বাসরের পূর্বে স্ত্রীকে তার পিছনে দাঁড় করিয়ে জামা‘আত সহ দু’রাক‘আত ছালাত আদায়ের পরামর্শ দেন (ইবনু আবী শায়বাহ হা/১৭৪৪১; আদাবুয যিফাফ ২২ পৃঃ, সনদ ছহীহ)।
উত্তর : আদায় করতে পারে। ছাহাবীগণের কারু কারু আমল দ্বারা এটি প্রমাণিত। উসাইদের দাস আবু সাঈদ বলেন, আমি বিয়ে করলে আবু যার গিফারী, ইবনু মাসউদ ও হুযায়ফা (রাঃ) আমাকে বললেন, তোমার ঘরে যখন তোমার স্ত্রী প্রবেশ করবে, তখন তুমি দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করবে এবং তার কল্যাণের জন্য দো‘আ করবে ও অকল্যাণ হ’তে আশ্রয় প্রার্থনা করবে (ইবনু আবী শায়বাহ হা/১৭১৫৩; ইরওয়া হা/৫২৩; আলবানী, আদাবুয যিফাফ পৃ:২২, সনদ ছহীহ)। অন্য বর্ণনায় ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বাসরের পূর্বে স্ত্রীকে তার পিছনে দাঁড় করিয়ে জামা‘আত সহ দু’রাক‘আত ছালাত আদায়ের পরামর্শ দেন (ইবনু আবী শায়বাহ হা/১৭৪৪১; আদাবুয যিফাফ ২২ পৃঃ, সনদ ছহীহ)।
-রাকীবুল ইসলাম, মিঠাপুকুর, রংপুর।
উত্তর : উক্ত বক্তব্যটি আল্লাহর বাণী দ্বারা প্রমাণিত। আল্লাহ বলেন, তোমার যে কল্যাণ হয়, তা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়। আর যে অকল্যাণ হয়, তা তোমার (আমলের) কারণে হয় (নিসা ৪/৭৯)। অর্থাৎ আল্লাহ সব সময় বান্দার মঙ্গল করেন। কিন্তু বান্দা ভুলক্রমে বা ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেই নিজের অকল্যাণ করে থাকে। আল্লাহ তাতে বাধা দেন না বান্দার স্বাধীন ইচ্ছা শক্তিকে অব্যাহত রাখার স্বার্থে। তাই যে ভাল কর্ম করবে সে নে‘মত লাভ করবে। আর যে অন্যায় করবে সে বিপদে পতিত হবে (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৮/২৩৯)। তবে এটাও তাক্বদীর অনুযায়ী হয়ে থাকে, যা পূর্বেই নির্ধারিত ছিল।
প্রকৃত ঈমানদারের জন্য ভাল-মন্দ উভয়টিই কল্যাণকর হয়ে থাকে। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন, মুমিনের ব্যাপারটি কতই না বিস্ময়কর! তার সমস্ত কাজই তার জন্য কল্যাণকর।... যদি তার কোন মঙ্গল স্পর্শ করে, সে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। এটা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি তার কোন মন্দ স্পর্শ করে, সে ছবর করে। আর এটাও তার জন্য কল্যাণকর হয়’ (মুসলিম হা/২৯৯৯; মিশকাত হা/৫২৯৭)।
উত্তর : উক্ত বক্তব্যটি আল্লাহর বাণী দ্বারা প্রমাণিত। আল্লাহ বলেন, তোমার যে কল্যাণ হয়, তা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়। আর যে অকল্যাণ হয়, তা তোমার (আমলের) কারণে হয় (নিসা ৪/৭৯)। অর্থাৎ আল্লাহ সব সময় বান্দার মঙ্গল করেন। কিন্তু বান্দা ভুলক্রমে বা ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেই নিজের অকল্যাণ করে থাকে। আল্লাহ তাতে বাধা দেন না বান্দার স্বাধীন ইচ্ছা শক্তিকে অব্যাহত রাখার স্বার্থে। তাই যে ভাল কর্ম করবে সে নে‘মত লাভ করবে। আর যে অন্যায় করবে সে বিপদে পতিত হবে (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৮/২৩৯)। তবে এটাও তাক্বদীর অনুযায়ী হয়ে থাকে, যা পূর্বেই নির্ধারিত ছিল।
প্রকৃত ঈমানদারের জন্য ভাল-মন্দ উভয়টিই কল্যাণকর হয়ে থাকে। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন, মুমিনের ব্যাপারটি কতই না বিস্ময়কর! তার সমস্ত কাজই তার জন্য কল্যাণকর।... যদি তার কোন মঙ্গল স্পর্শ করে, সে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। এটা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি তার কোন মন্দ স্পর্শ করে, সে ছবর করে। আর এটাও তার জন্য কল্যাণকর হয়’ (মুসলিম হা/২৯৯৯; মিশকাত হা/৫২৯৭)।
২৭২
প্রশ্ন (৩১/৩৯১) : অনেক প্রাইভেট কোম্পানীতে দাড়ি শেভ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেখানে চাকুরী করা যাবে কি?-শাকীল, তানোর, রাজশাহী।
উত্তর : এরূপ কোম্পানী থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ তারা রাসূল (ছাঃ)-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত বিরোধী নির্দেশ দিচ্ছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা গোঁফ ছাটো ও দাড়ি ছেড়ে দাও এবং এ ব্যাপারে মুশরিকদের বিরোধিতা কর’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৪৪২১)।
উত্তর : এরূপ কোম্পানী থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ তারা রাসূল (ছাঃ)-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত বিরোধী নির্দেশ দিচ্ছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা গোঁফ ছাটো ও দাড়ি ছেড়ে দাও এবং এ ব্যাপারে মুশরিকদের বিরোধিতা কর’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৪৪২১)।
-ইসমাঈল, মোহনপুর, রাজশাহী।
উত্তর : বিবাহের দু’টি রুকন হ’ল ঈজাব ও কবুল (নিসা ১৯)। আর শর্ত হ’ল মেয়ের ওলী থাকা (তিরমিযী; মিশকাত হা/৩১৩০) এবং দু’জন ন্যায়নিষ্ঠ সাক্ষী থাকা (ত্বাবারাণী, ছহীহুল জামে‘ হা/৭৫৫৮)। উক্ত শর্তাদি পূরণের পর রেজিষ্ট্রি হয়ে থাকলে সহবাস বৈধ হবে।
উত্তর : বিবাহের দু’টি রুকন হ’ল ঈজাব ও কবুল (নিসা ১৯)। আর শর্ত হ’ল মেয়ের ওলী থাকা (তিরমিযী; মিশকাত হা/৩১৩০) এবং দু’জন ন্যায়নিষ্ঠ সাক্ষী থাকা (ত্বাবারাণী, ছহীহুল জামে‘ হা/৭৫৫৮)। উক্ত শর্তাদি পূরণের পর রেজিষ্ট্রি হয়ে থাকলে সহবাস বৈধ হবে।
২৭৬
প্রশ্ন (৩৫/৩৯৫) : জনৈক আলেম বলেন, নমরূদ উঁচু টাওয়ারে উঠে আল্লাহর লক্ষ্যে তীর নিক্ষেপ করলে উপর থেকে রক্ত মাখা তীর আল্লাহ আবার ফেরত পাঠান। এ বক্তব্যের সত্যতা আছে কি?-ইয়াকূব ইসলাম, ঘোনাপাড়া, জয়পুরহাট।
উত্তর : ইমাম কুরতুবী (রহঃ) স্বীয় তাফসীরে সূরা ইবরাহীম ৪৬ আয়াতের ব্যাখ্যায় উক্ত ঘটনাটি সূত্রবিহীনভাবে উল্লেখ করেছেন। যা ইস্রাঈলী বর্ণনা বলেই অনুমিত হয়। তবে ফেরাঊন আল্লাহকে দেখার জন্য স্বীয় মন্ত্রী হামানকে উঁচু একটি টাওয়ার নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছিলেন (কাছাছ ২৮/৩৮; গাফের ৪০/৩৬)। আর ক্বিয়ামতের প্রাক্কালে ইয়াজুজ-মাজুজ সম্প্রদায় তাদের ধারণা মতে পৃথিবীর সকল জীব হত্যা করার পর আসমানবাসীকে হত্যা করার জন্য আকাশপানে তীর ছুড়বে। তখন তাদের ধারণা সত্যায়নের জন্য উক্ত তীরে রক্ত মিশিয়ে ফেরত পাঠানো হবে। এতে তারা মনে করবে যে, তারা আসমানবাসীকে হত্যা করে ফেলেছে (ইবনু মাজাহ হা/৪০৭৯, ছহীহাহ হা/১৭৯৩)।
উত্তর : ইমাম কুরতুবী (রহঃ) স্বীয় তাফসীরে সূরা ইবরাহীম ৪৬ আয়াতের ব্যাখ্যায় উক্ত ঘটনাটি সূত্রবিহীনভাবে উল্লেখ করেছেন। যা ইস্রাঈলী বর্ণনা বলেই অনুমিত হয়। তবে ফেরাঊন আল্লাহকে দেখার জন্য স্বীয় মন্ত্রী হামানকে উঁচু একটি টাওয়ার নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছিলেন (কাছাছ ২৮/৩৮; গাফের ৪০/৩৬)। আর ক্বিয়ামতের প্রাক্কালে ইয়াজুজ-মাজুজ সম্প্রদায় তাদের ধারণা মতে পৃথিবীর সকল জীব হত্যা করার পর আসমানবাসীকে হত্যা করার জন্য আকাশপানে তীর ছুড়বে। তখন তাদের ধারণা সত্যায়নের জন্য উক্ত তীরে রক্ত মিশিয়ে ফেরত পাঠানো হবে। এতে তারা মনে করবে যে, তারা আসমানবাসীকে হত্যা করে ফেলেছে (ইবনু মাজাহ হা/৪০৭৯, ছহীহাহ হা/১৭৯৩)।
২৭৭
প্রশ্ন (৩৬/৩৯৬) : গার্মেন্টস, গাড়ী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির জন্য ভবিষ্যৎ বিপদের ‘ঝুঁকি তহবিল’ হিসাবে ইসলামী বীমা করা যাবে কি?-কাওছার, পুঠিয়া, রাজশাহী।
উত্তরঃ বীমার ধারণাটাই ইসলামী অর্থনীতির বিরোধী এবং পুঁজিবাদী অর্থনীতির অনুসঙ্গ। অতএব এগুলো থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক। বীমার মধ্যে কয়েকটি ইসলাম বিরোধী নীতি রয়েছে যথা (১) বীমা জুয়ার অন্তর্ভুক্ত। যেমন- কেউ জীবনবীমা করল এ মর্মে যে, সে মারা গেলে কোম্পানী তার মৃত্যুর পরে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ তার সন্তানদেরকে প্রদান করবে। এর শর্ত হচ্ছে সে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বীমা কোম্পানীতে জমা দিবে। এখন সে যদি এক বছর পর মারা যায় তাহ’লে কোম্পানী ক্ষতিগ্রস্ত হবে, আর ব্যক্তি লাভবান হবে। আর যদি সে দীর্ঘ দিন জীবিত থাকে, তবে মাসে মাসে অর্থ প্রদান করে ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে আর কোম্পানী লাভবান হবে। অর্থাৎ যিনি মাসে মাসে টাকা জমা দিচ্ছেন তিনি হয় প্রদত্ত অর্থের চেয়ে বেশী পাবেন অথবা কম পাবেন। তিনি লাভ-লোকসানের অনিশ্চয়তার মাঝে ঘুরপাক খাবেন। এটিই জুয়া। যা আল্লাহ হারাম করেছেন (মায়েদাহ ৯০; উছায়মীন, লিক্বাউল বাবিল মাফতূহ ২৩/১৫৮)।
(২) বীমা করার কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়। কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটতেও পারে, নাও পারে। তাছাড়া দুর্ঘটনা কখন ঘটবে ও কি পরিমাণে ঘটবে, তা সবই অজ্ঞাত। ফলে এর মধ্যে প্রতারণা সুস্পষ্ট। আর প্রতারণামূলক ব্যবসা করতে রাসূল (ছাঃ) নিষেধ করেছেন (মুসলিম হা/১৫১৩ প্রভৃতি)। (৩) নিরাপত্তা দেয়ার মালিক আল্লাহ। তাই ভরসা করতে হবে কেবলমাত্র আল্লাহর উপরে। অথচ এখানে ভরসা করা হচ্ছে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর উপর। যা সম্পূর্ণরূপে ছহীহ আক্বীদা বিরোধী। ইসলামী বিধান হ’ল, ব্যক্তির যেকোন দুর্ঘটনায় কিংবা তার অপারগ অবস্থায় সমাজ ও সরকার তার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। অতএব এসব থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক।
উত্তরঃ বীমার ধারণাটাই ইসলামী অর্থনীতির বিরোধী এবং পুঁজিবাদী অর্থনীতির অনুসঙ্গ। অতএব এগুলো থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক। বীমার মধ্যে কয়েকটি ইসলাম বিরোধী নীতি রয়েছে যথা (১) বীমা জুয়ার অন্তর্ভুক্ত। যেমন- কেউ জীবনবীমা করল এ মর্মে যে, সে মারা গেলে কোম্পানী তার মৃত্যুর পরে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ তার সন্তানদেরকে প্রদান করবে। এর শর্ত হচ্ছে সে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বীমা কোম্পানীতে জমা দিবে। এখন সে যদি এক বছর পর মারা যায় তাহ’লে কোম্পানী ক্ষতিগ্রস্ত হবে, আর ব্যক্তি লাভবান হবে। আর যদি সে দীর্ঘ দিন জীবিত থাকে, তবে মাসে মাসে অর্থ প্রদান করে ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে আর কোম্পানী লাভবান হবে। অর্থাৎ যিনি মাসে মাসে টাকা জমা দিচ্ছেন তিনি হয় প্রদত্ত অর্থের চেয়ে বেশী পাবেন অথবা কম পাবেন। তিনি লাভ-লোকসানের অনিশ্চয়তার মাঝে ঘুরপাক খাবেন। এটিই জুয়া। যা আল্লাহ হারাম করেছেন (মায়েদাহ ৯০; উছায়মীন, লিক্বাউল বাবিল মাফতূহ ২৩/১৫৮)।
(২) বীমা করার কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়। কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটতেও পারে, নাও পারে। তাছাড়া দুর্ঘটনা কখন ঘটবে ও কি পরিমাণে ঘটবে, তা সবই অজ্ঞাত। ফলে এর মধ্যে প্রতারণা সুস্পষ্ট। আর প্রতারণামূলক ব্যবসা করতে রাসূল (ছাঃ) নিষেধ করেছেন (মুসলিম হা/১৫১৩ প্রভৃতি)। (৩) নিরাপত্তা দেয়ার মালিক আল্লাহ। তাই ভরসা করতে হবে কেবলমাত্র আল্লাহর উপরে। অথচ এখানে ভরসা করা হচ্ছে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর উপর। যা সম্পূর্ণরূপে ছহীহ আক্বীদা বিরোধী। ইসলামী বিধান হ’ল, ব্যক্তির যেকোন দুর্ঘটনায় কিংবা তার অপারগ অবস্থায় সমাজ ও সরকার তার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। অতএব এসব থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক।
২৭৮
প্রশ্ন (৩৭/৩৯৭) : গর্ভবতী বা দুর্বল দরিদ্র মহিলারা ছিয়াম পালন করতে এবং ফিদইয়া দিতে সক্ষম না হ’লে করণীয় কি?-ছাবের আলী মোল্লা
এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার, বিদ্যুৎ ভবন, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
উত্তর : গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারিনী মহিলা পরবর্তীতে ক্বাযা আদায় করবে (আবুদাঊদ, নাসাঈ; মিশকাত হা/২০২৫)। আর ক্বাযা করতে পারবে না এমন ভয় থাকলে প্রতি ছিয়ামের বদলে একজন মিসকীনকে খাদ্য প্রদান করবে (বাক্বারাহ ২/১৮৪)। তবে ইবনে আববাস (রাঃ) গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারিনী মহিলাদের জন্য এবং দুর্বল বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য ফিদইয়া দিতে বলতেন, ক্বাযা আদায় নয় (আবুদাঊদ হা/২৩১৭, সনদ ছহীহ, বুখারী হা/৪৫০৫)। দৈনিক নিয়মিত মিসকীন না পেলে রামাযান শেষে একদিনে ত্রিশজন মিসকীনকে খানা খাওয়ানো যাবে (ইবনে কাছীর, বাক্বারাহ ১৮৪ আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রঃ)। সেটাও না পেলে কোন ইয়াতীমখানায় উক্ত ফিদইয়া পৌঁছে দিবে। ফিদইয়া বা ক্বাযা আদায়ে অক্ষম হ’লে আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার, বিদ্যুৎ ভবন, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
উত্তর : গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারিনী মহিলা পরবর্তীতে ক্বাযা আদায় করবে (আবুদাঊদ, নাসাঈ; মিশকাত হা/২০২৫)। আর ক্বাযা করতে পারবে না এমন ভয় থাকলে প্রতি ছিয়ামের বদলে একজন মিসকীনকে খাদ্য প্রদান করবে (বাক্বারাহ ২/১৮৪)। তবে ইবনে আববাস (রাঃ) গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারিনী মহিলাদের জন্য এবং দুর্বল বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য ফিদইয়া দিতে বলতেন, ক্বাযা আদায় নয় (আবুদাঊদ হা/২৩১৭, সনদ ছহীহ, বুখারী হা/৪৫০৫)। দৈনিক নিয়মিত মিসকীন না পেলে রামাযান শেষে একদিনে ত্রিশজন মিসকীনকে খানা খাওয়ানো যাবে (ইবনে কাছীর, বাক্বারাহ ১৮৪ আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রঃ)। সেটাও না পেলে কোন ইয়াতীমখানায় উক্ত ফিদইয়া পৌঁছে দিবে। ফিদইয়া বা ক্বাযা আদায়ে অক্ষম হ’লে আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
২৭৯
প্রশ্ন (৩৮/৩৯৮) : হোদায়বিয়ার সন্ধির সময় রাসূল (ছাঃ) মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ কেটে দিয়ে মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ লেখার মাধ্যমে নবুঅতের দাবী থেকে সরে এসেছিলেন কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং ভবিষ্যতে মক্কা বিজয়ের লক্ষ্যে। বর্তমানে এ লক্ষ্যেই কি গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করা উচিৎ হবে না?-গোলাম কাদের
আমিরাবাদ, লোহাগড়া, চট্টগ্রাম।
উত্তর : প্রচলিত গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অংশগ্রহণের কোন সুযোগ নেই। প্রথমতঃ গণতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতার সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। অথচ ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’ একটি নিরেট কুফরী মতবাদ। ইসলামের সাথে এর আপোষের কোন সুযোগ নেই। দ্বিতীয়তঃ গণতন্ত্রের মৌলিক নীতি হ’ল- ‘জনগণই সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস’, আইন রচনার ক্ষেত্রে ‘দলীয় সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ই চূড়ান্ত’। অর্থাৎ গণতন্ত্রে মানুষকে মানুষের মনগড়া বিধান মানতে বাধ্য করে। পক্ষান্তরে ইসলামী শরী‘আতের মৌল নীতি হ’ল ‘আল্লাহ্ই সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস’ এবং ‘অহি’-র বিধানই চূড়ান্ত’। এখানে মানুষ স্রেফ আল্লাহর বিধান মানে। যার অধীনে সকল মানুষের অধিকার সমান। বস্ত্ততঃ ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ প্রথমে মুসলমানকে ঈমানের গন্ডীমুক্ত করে। অতঃপর গণতন্ত্র তাকে মানুষের গোলাম বানায়। অতঃপর সে আল্লাহর সন্তুষ্টি বাদ দিয়ে ভোটারের মনস্ত্তষ্টিকে অগ্রাধিকার দেয়। যা তাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়।
তৃতীয়তঃ প্রচলিত রাজনীতির সাথে আপোষ করাকে ‘হোদায়বিয়ার সন্ধি’-র সময় ‘রাসূলুল্লাহ’ শব্দ বাদ দেওয়ার সাথে তুলনা করা নিতান্তই হাস্যকর ব্যাপার। কেননা তাঁকে আল্লাহর রাসূল হিসাবে না মানার কারণেই কুরায়েশদের সঙ্গে যুদ্ধ হয়েছিল। তারা এটা মানলে তো আপোষ হয়ে যেত। সন্ধির কোন প্রয়োজন হ’ত না। সেকারণ তিনি ‘রাসূলুল্লাহ’ কেটে ‘মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ’ লিখেছিলেন। এটা লেখাতে তিনি কোন তাগূতী বিধানের সাথে আপোষ করেননি বা নবুঅতের দাবী থেকে সরে আসেননি। অতএব বর্তমানের কুফরী রাজনীতির সাথে আপোষ করার জন্য উক্ত ঘটনাকে প্রমাণ হিসাবে পেশ করা স্রেফ খোঁড়া অজুহাত মাত্র।
বলা বাহুল্য, প্রচলিত রাজনীতির সঙ্গে আপোষ নয়; বরং জনমত পরিবর্তনের মাধ্যমে একে পরিবর্তন করাই হ’ল প্রকৃত অর্থে ইসলামী রাজনীতি (বিঃদ্রঃ ‘ইসলামী খেলাফত ও নেতৃত্ব নির্বাচন’, ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন কি ও কেন?’ এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’ বই)।
আমিরাবাদ, লোহাগড়া, চট্টগ্রাম।
উত্তর : প্রচলিত গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অংশগ্রহণের কোন সুযোগ নেই। প্রথমতঃ গণতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষতার সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। অথচ ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’ একটি নিরেট কুফরী মতবাদ। ইসলামের সাথে এর আপোষের কোন সুযোগ নেই। দ্বিতীয়তঃ গণতন্ত্রের মৌলিক নীতি হ’ল- ‘জনগণই সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস’, আইন রচনার ক্ষেত্রে ‘দলীয় সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ই চূড়ান্ত’। অর্থাৎ গণতন্ত্রে মানুষকে মানুষের মনগড়া বিধান মানতে বাধ্য করে। পক্ষান্তরে ইসলামী শরী‘আতের মৌল নীতি হ’ল ‘আল্লাহ্ই সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস’ এবং ‘অহি’-র বিধানই চূড়ান্ত’। এখানে মানুষ স্রেফ আল্লাহর বিধান মানে। যার অধীনে সকল মানুষের অধিকার সমান। বস্ত্ততঃ ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ প্রথমে মুসলমানকে ঈমানের গন্ডীমুক্ত করে। অতঃপর গণতন্ত্র তাকে মানুষের গোলাম বানায়। অতঃপর সে আল্লাহর সন্তুষ্টি বাদ দিয়ে ভোটারের মনস্ত্তষ্টিকে অগ্রাধিকার দেয়। যা তাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়।
তৃতীয়তঃ প্রচলিত রাজনীতির সাথে আপোষ করাকে ‘হোদায়বিয়ার সন্ধি’-র সময় ‘রাসূলুল্লাহ’ শব্দ বাদ দেওয়ার সাথে তুলনা করা নিতান্তই হাস্যকর ব্যাপার। কেননা তাঁকে আল্লাহর রাসূল হিসাবে না মানার কারণেই কুরায়েশদের সঙ্গে যুদ্ধ হয়েছিল। তারা এটা মানলে তো আপোষ হয়ে যেত। সন্ধির কোন প্রয়োজন হ’ত না। সেকারণ তিনি ‘রাসূলুল্লাহ’ কেটে ‘মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ’ লিখেছিলেন। এটা লেখাতে তিনি কোন তাগূতী বিধানের সাথে আপোষ করেননি বা নবুঅতের দাবী থেকে সরে আসেননি। অতএব বর্তমানের কুফরী রাজনীতির সাথে আপোষ করার জন্য উক্ত ঘটনাকে প্রমাণ হিসাবে পেশ করা স্রেফ খোঁড়া অজুহাত মাত্র।
বলা বাহুল্য, প্রচলিত রাজনীতির সঙ্গে আপোষ নয়; বরং জনমত পরিবর্তনের মাধ্যমে একে পরিবর্তন করাই হ’ল প্রকৃত অর্থে ইসলামী রাজনীতি (বিঃদ্রঃ ‘ইসলামী খেলাফত ও নেতৃত্ব নির্বাচন’, ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন কি ও কেন?’ এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’ বই)।
২৮০
প্রশ্ন (৩৯/৩৯৯) : আমি ৩ বছর যাবৎ লিবিয়ায় আছি। প্রায় দিন স্ত্রীর সাথে আমার যোগাযোগ হয়। কিন্তু একজন ইমাম ছাহেব আমাকে বলেছেন যে, ১ বছরের বেশী এরূপ পৃথক থাকলে দেশে যাওয়ার পর পুনরায় বিবাহ করে সংসার করতে হবে। এক্ষণে আমার করণীয় কি?-আব্দুছ ছবূর ইলিয়াস, লিবিয়া।
উত্তর : প্রশ্নে বর্ণিত অবস্থায় স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাক না দেয় এবং স্ত্রীও যদি ‘খোলা’ না করে, তাহ’লে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার প্রশ্নই আসে না। এমনকি উভয়ের সম্মতিক্রমে ৩ বছরের অধিক সময় অতিবাহিত হ’লেও তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হবে না’ (হাইআতু কিবারিল ওলামা; আত-ত্বালাকুস সুন্নাহ ওয়াল বিদ‘আহ, পৃঃ ৬২)।
উত্তর : প্রশ্নে বর্ণিত অবস্থায় স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাক না দেয় এবং স্ত্রীও যদি ‘খোলা’ না করে, তাহ’লে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার প্রশ্নই আসে না। এমনকি উভয়ের সম্মতিক্রমে ৩ বছরের অধিক সময় অতিবাহিত হ’লেও তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হবে না’ (হাইআতু কিবারিল ওলামা; আত-ত্বালাকুস সুন্নাহ ওয়াল বিদ‘আহ, পৃঃ ৬২)।
২৮১
প্রশ্ন (৪০/৪০০) : রাসূল (ছাঃ) তায়েফের সফরে নির্যাতিত হওয়ার পর একটি আঙ্গুর বাগানে বসে ‘মযলূমের দো‘আ’ হিসাবে পরিচিত যে দো‘আটি করেছিলেন, তা ছহীহ কি?-মুবীনুল ইসলাম, সপুরা, রাজশাহী।
উত্তর : দো‘আ করার ঘটনাটি ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত (আর-রাহীক্ব পৃঃ ১২৬; ইবনু হিশাম ১/৪২০)। তবে এর সনদ যঈফ (ত্বাবারাণী, যঈফুল জামে‘ হা/১১৮২; সিলসিলা যঈফাহ হা/২৯৩৩; দ্রঃ সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) ‘তায়েফ সফর’ অধ্যায়)।
উত্তর : দো‘আ করার ঘটনাটি ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত (আর-রাহীক্ব পৃঃ ১২৬; ইবনু হিশাম ১/৪২০)। তবে এর সনদ যঈফ (ত্বাবারাণী, যঈফুল জামে‘ হা/১১৮২; সিলসিলা যঈফাহ হা/২৯৩৩; দ্রঃ সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) ‘তায়েফ সফর’ অধ্যায়)।
-মুস্তাফীযুর রহমান, শাফীপুর, গাযীপুর।
উত্তর : বিপদের সময় দো‘আ ইউনুস পাঠ করা যাবে। আল্লাহ বলেন, অতঃপর সে (মাছের পেটে) ঘন অন্ধকারের মধ্যে আহবান করল, لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ ‘(হে আল্লাহ!) তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তুমি পবিত্র। আমি সীমালংঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত’। ‘অতঃপর আমরা তার আহবানে সাড়া দিলাম এবং তাকে দুশ্চিন্তা হতে মুক্ত করলাম। আর এভাবেই আমরা বিশ্বাসীদের মুক্তি দিয়ে থাকি’ (আম্বিয়া ২১/৮৭-৮৮)।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘এই দো‘আ ইউনুস (আঃ) মাছের পেটে পড়েছিলেন। যে কোন মুসলিম ব্যক্তি যে কোন সমস্যায় দো‘আটি পড়লে আল্লাহ তা কবুল করেন’ (তিরমিযী হা/৩৫০৫; মিশকাত হা/২২৯২)। তিনি আরও বলেন, যে ব্যক্তি কোন কষ্ট বা মুছীবতে নিপতিত হবে, অতঃপর দো‘আ ইউনুস পাঠ করবে, আল্লাহ তার বিপদ দূর করে দিবেন’ (হাকেম হা/১৮৬৪; ছহীহাহ হা/১৭৪৪)। উল্লেখ্য যে, এক লক্ষ বার দো‘আ ইউনুস পাঠ করলে কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করা যায় মর্মে যে ধারণা প্রচলিত আছে, তা ভিত্তিহীন।
উত্তর : বিপদের সময় দো‘আ ইউনুস পাঠ করা যাবে। আল্লাহ বলেন, অতঃপর সে (মাছের পেটে) ঘন অন্ধকারের মধ্যে আহবান করল, لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ ‘(হে আল্লাহ!) তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তুমি পবিত্র। আমি সীমালংঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত’। ‘অতঃপর আমরা তার আহবানে সাড়া দিলাম এবং তাকে দুশ্চিন্তা হতে মুক্ত করলাম। আর এভাবেই আমরা বিশ্বাসীদের মুক্তি দিয়ে থাকি’ (আম্বিয়া ২১/৮৭-৮৮)।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘এই দো‘আ ইউনুস (আঃ) মাছের পেটে পড়েছিলেন। যে কোন মুসলিম ব্যক্তি যে কোন সমস্যায় দো‘আটি পড়লে আল্লাহ তা কবুল করেন’ (তিরমিযী হা/৩৫০৫; মিশকাত হা/২২৯২)। তিনি আরও বলেন, যে ব্যক্তি কোন কষ্ট বা মুছীবতে নিপতিত হবে, অতঃপর দো‘আ ইউনুস পাঠ করবে, আল্লাহ তার বিপদ দূর করে দিবেন’ (হাকেম হা/১৮৬৪; ছহীহাহ হা/১৭৪৪)। উল্লেখ্য যে, এক লক্ষ বার দো‘আ ইউনুস পাঠ করলে কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করা যায় মর্মে যে ধারণা প্রচলিত আছে, তা ভিত্তিহীন।
২৮৩
প্রশ্ন (২/৪০২) : আমাদের দেশে সরকারীভাবে সুস্থ শিশুকে রোগ না হওয়ার আগেই প্রতিষেধক হিসাবে পোলিও সহ বিভিন্ন টিকা দেওয়া হয়। এসব টিকা গ্রহণ করা যাবে কি?-আব্দুল্লাহ, ঢাকা।
উত্তর : যাবতীয় কল্যাণ বা অকল্যাণ সংঘটিত হয় আল্লাহ্র হুকুমে। এরূপ আক্বীদা পোষণ করে যাবতীয় হালাল চিকিৎসা বা প্রতিষেধক গ্রহণে শরী‘আতে কোন বাধা নেই (মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ৪/৪২৭)। উপরোক্ত টিকাগুলি যদি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্ষতিকর হিসাবে প্রমাণিত হয়, তবে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
উত্তর : যাবতীয় কল্যাণ বা অকল্যাণ সংঘটিত হয় আল্লাহ্র হুকুমে। এরূপ আক্বীদা পোষণ করে যাবতীয় হালাল চিকিৎসা বা প্রতিষেধক গ্রহণে শরী‘আতে কোন বাধা নেই (মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ৪/৪২৭)। উপরোক্ত টিকাগুলি যদি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্ষতিকর হিসাবে প্রমাণিত হয়, তবে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
-ডা. ফযলুল হক, শফীপুর, গাযীপুর।
উত্তর : বার্ধক্য জনিত কারণে কষ্ট হলে তা থেকে মুক্তি লাভের ব্যাপারে আল্লাহ্র নবী (ছাঃ) কিছু দো‘আ শিক্ষা দিয়েছেন। তন্মধ্যে একটি হ’ল ‘আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল জুব্নে ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিনাল বুখ্লে ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন আরযালিল ‘উমুরে; ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন্ ফিৎনাতিদ দুন্ইয়া ওয়া ‘আযা-বিল ক্বাবরে’। অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! (১) আমি
আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি ভীরুতা হ’তে (২) আশ্রয় প্রার্থনা করছি কৃপণতা হ’তে (৩) আশ্রয় প্রার্থনা করছি চরম বার্ধক্যের বয়স হ’তে এবং (৪) আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুনিয়ার ফিৎনা হ’তে ও (৫) কবরের আযাব হ’তে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৯৬৪)। এছাড়া আরো দো‘আ রয়েছে। এগুলি বারবার পাঠ করলে বার্ধক্যের কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
উত্তর : বার্ধক্য জনিত কারণে কষ্ট হলে তা থেকে মুক্তি লাভের ব্যাপারে আল্লাহ্র নবী (ছাঃ) কিছু দো‘আ শিক্ষা দিয়েছেন। তন্মধ্যে একটি হ’ল ‘আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল জুব্নে ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিনাল বুখ্লে ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন আরযালিল ‘উমুরে; ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন্ ফিৎনাতিদ দুন্ইয়া ওয়া ‘আযা-বিল ক্বাবরে’। অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! (১) আমি
আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি ভীরুতা হ’তে (২) আশ্রয় প্রার্থনা করছি কৃপণতা হ’তে (৩) আশ্রয় প্রার্থনা করছি চরম বার্ধক্যের বয়স হ’তে এবং (৪) আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুনিয়ার ফিৎনা হ’তে ও (৫) কবরের আযাব হ’তে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৯৬৪)। এছাড়া আরো দো‘আ রয়েছে। এগুলি বারবার পাঠ করলে বার্ধক্যের কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
-ফীরোয, গোপালপুর, দুর্গাপুর রাজশাহী।
উত্তর : মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ইচ্ছাকৃতভাবে ছালাত তরককারী অথবা ছালাত ফরয হওয়াকে অস্বীকারকারী এবং শিরকে লিপ্ত ব্যক্তি কাফির ও চিরস্থায়ী জাহান্নামী। ঐ ব্যক্তি ইসলাম হ’তে বহিষ্কৃত। তাদের জানাযা পড়া যাবে না (তওবা ৮৪, ১১৩)। মুসলিম কবরস্থানে তাদের দাফনও করা যাবে না (মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ১০/২৫০)। কিন্তু যে ব্যক্তি ঈমান রাখে, অথচ অলসতা ও ব্যস্ততার অজুহাতে ছালাত তরক করে, সে ব্যক্তি কবীরা গোনাহগার। তার জানাযা কোন বড় আলেম পড়াবেন না (মুসলিম হা/৯৭৮)। আর যে ব্যক্তির অবস্থা অজ্ঞাত এবং যার ব্যাপারটা অস্পষ্ট ও সন্দেহযুক্ত, তার জানাযা পড়া যাবে(বিস্তারিত দ্রঃ ছালাতুর রাসূল, পৃঃ ৩২-৩৫)।
উত্তর : মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ইচ্ছাকৃতভাবে ছালাত তরককারী অথবা ছালাত ফরয হওয়াকে অস্বীকারকারী এবং শিরকে লিপ্ত ব্যক্তি কাফির ও চিরস্থায়ী জাহান্নামী। ঐ ব্যক্তি ইসলাম হ’তে বহিষ্কৃত। তাদের জানাযা পড়া যাবে না (তওবা ৮৪, ১১৩)। মুসলিম কবরস্থানে তাদের দাফনও করা যাবে না (মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ১০/২৫০)। কিন্তু যে ব্যক্তি ঈমান রাখে, অথচ অলসতা ও ব্যস্ততার অজুহাতে ছালাত তরক করে, সে ব্যক্তি কবীরা গোনাহগার। তার জানাযা কোন বড় আলেম পড়াবেন না (মুসলিম হা/৯৭৮)। আর যে ব্যক্তির অবস্থা অজ্ঞাত এবং যার ব্যাপারটা অস্পষ্ট ও সন্দেহযুক্ত, তার জানাযা পড়া যাবে(বিস্তারিত দ্রঃ ছালাতুর রাসূল, পৃঃ ৩২-৩৫)।
-হেলাল, চিরিরবন্দর, দিনাজপুর।
উত্তর : ক্লাসের সময় পরিবর্তনের আবেদন করতে হবে এবং সাধ্যমত ছালাত আদায়ের চেষ্টা করতে হবে। নিয়মিতভাবে এরূপ দেরী করানো হলে ক্লাস বাদ দিয়ে ছালাত আদায় করতে হবে। কেননা আল্লাহ বলেন, ‘দুর্ভোগ ঐসব মুছল্লীর জন্য, যারা তাদের ছালাত থেকে উদাসীন’ (মাঊন ১০৭/৫)।
উত্তর : ক্লাসের সময় পরিবর্তনের আবেদন করতে হবে এবং সাধ্যমত ছালাত আদায়ের চেষ্টা করতে হবে। নিয়মিতভাবে এরূপ দেরী করানো হলে ক্লাস বাদ দিয়ে ছালাত আদায় করতে হবে। কেননা আল্লাহ বলেন, ‘দুর্ভোগ ঐসব মুছল্লীর জন্য, যারা তাদের ছালাত থেকে উদাসীন’ (মাঊন ১০৭/৫)।
-নূরুন্নবী, কাশিমপুর, গাযীপুর।
[নাম পরিবর্তন করে ‘আব্দুন নূর’ রাখুন (স.স)]
উত্তর : নাম, উপনাম ও লকব একত্রে রাখা যায় । যেমন আবু হুরায়রা (রাঃ)-এর নাম আব্দুর রহমান হওয়া সত্ত্বেও তার লকব ছিল আবু হুরায়রা’ (ইবনুল ক্বাইয়িম, তুহফাতুল মাওলূদ ১৩৪-১৪৪ পৃঃ)।
[নাম পরিবর্তন করে ‘আব্দুন নূর’ রাখুন (স.স)]
উত্তর : নাম, উপনাম ও লকব একত্রে রাখা যায় । যেমন আবু হুরায়রা (রাঃ)-এর নাম আব্দুর রহমান হওয়া সত্ত্বেও তার লকব ছিল আবু হুরায়রা’ (ইবনুল ক্বাইয়িম, তুহফাতুল মাওলূদ ১৩৪-১৪৪ পৃঃ)।
২৮৯
প্রশ্ন (৮/৪০৮) : জনৈক প্রবাসীর গৃহে পাঠদানের সুবাদে গৃহকত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক তৈরী হয়। পরবর্তীতে তার মেয়ের সাথে আমার সামাজিকভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের পরও পূর্বের ন্যায় অনৈতিক সম্পর্ক চলতে থাকে। বর্তমানে আমি দুই সন্তানের পিতা। ছহীহ আক্বীদা গ্রহণ করার পর সব বুঝতে পেরে গত আড়াই বছর যাবৎ নিজ স্ত্রী থেকে দূরে রয়েছি। এক্ষণে আমার করণীয় কি?-নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
উত্তর : স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক রাখতে কোন বাধা নেই। কারণ হারাম সম্পর্ক কোন হালালকে হারাম করতে পারে না। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ‘যেনা বৈবাহিক বন্ধনকে হারাম করে না‘ (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা, বায়হাক্বী, ইরওয়া হা/১৮৮১, ৬/২৮৭ পৃঃ)। অতএব আপনি নিজের কৃত মহাপাপের জন্য অনুতপ্ত হৃদয়ে আল্লাহ্র নিকটে তওবা করুন এবং স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে শ্বাশুড়ী থেকে দূরে অবস্থান করুন।
উত্তর : স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক রাখতে কোন বাধা নেই। কারণ হারাম সম্পর্ক কোন হালালকে হারাম করতে পারে না। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ‘যেনা বৈবাহিক বন্ধনকে হারাম করে না‘ (মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা, বায়হাক্বী, ইরওয়া হা/১৮৮১, ৬/২৮৭ পৃঃ)। অতএব আপনি নিজের কৃত মহাপাপের জন্য অনুতপ্ত হৃদয়ে আল্লাহ্র নিকটে তওবা করুন এবং স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে শ্বাশুড়ী থেকে দূরে অবস্থান করুন।
২৯০
প্রশ্ন (৯/৪০৯) : আমরা আমাদের সমিতির মাধ্যমে সকলের সম্মতিক্রমে কোন চাকুরীজীবি ব্যক্তিকে পঞ্চাশ হাযার টাকা বিনিয়োগ প্রদান করি ১২ টি চেকের পাতার বিনিময়ে। যার দ্বারা আমরা ১২ মাসে মোট ৬০ হাযার টাকা গ্রহণ করি। এরূপ বিনিয়োগ পদ্ধতি জায়েয হবে কি?-কামাল হোসাইন, ইসলামপুর, জামালপুর।
উত্তর : এরূপ বিনিয়োগ পদ্ধতিতে একই জিনিসের বিনিময়ে অতিরিক্ত গ্রহণ করা হয়, যা সূদ এবং সম্পূর্ণরূপে হারাম (বাক্বারাহ ২/২৭৫; মুসলিম হা/১৫৯৮, ইরওয়া হা/১৩৯৭)।
উত্তর : এরূপ বিনিয়োগ পদ্ধতিতে একই জিনিসের বিনিময়ে অতিরিক্ত গ্রহণ করা হয়, যা সূদ এবং সম্পূর্ণরূপে হারাম (বাক্বারাহ ২/২৭৫; মুসলিম হা/১৫৯৮, ইরওয়া হা/১৩৯৭)।
২৯২
প্রশ্ন (১১/৪১১) : আমাদের সমাজে ৫০টি পরিবারে ২৩১ জন লোক। আমরা কুরবানীর গোশত এক জায়গায় জমা করে ২৩১ ভাগ করে যে পরিবারে যত লোক সেই কয় ভাগ তাদেরকে দেই। এভাবে গোশত বণ্টন করা যাবে কি?-জাহাঙ্গীর আলম
বানেশদী, নকলা, শেরপুর।
উত্তর : এরূপ কোন বিধান শরী‘আতে নেই। আল্লাহ বলেন, ‘(কুরবানীর গোশত) তোমরা নিজেরা খাও, যারা চায় না তাদের খাওয়াও এবং যারা নিজেদের প্রয়োজন পেশ করে তাদের খাওয়াও’ (হজ্জ ৩৬)। অতএব কুরবানী দাতাগণ স্ব স্ব কুরবানীর গোশতের এক-তৃতীয়াংশ একস্থানে জমা করে মহল্লায় যারা কুরবানী করতে পারেনি, তাদের তালিকা করে সুশৃংখলভাবে তাদের মধ্যে বিতরণ করবেন ও প্রয়োজনে তাদের বাড়ীতে পৌঁছে দিবেন। বাকী এক-তৃতীয়াংশ ফকীর-মিসকীনদের মধ্যে বিতরণ করবেন (দ্রঃ মাসায়েলে কুরবানী ও আক্বীক্বা’ বই, পৃঃ ২৩)।
বানেশদী, নকলা, শেরপুর।
উত্তর : এরূপ কোন বিধান শরী‘আতে নেই। আল্লাহ বলেন, ‘(কুরবানীর গোশত) তোমরা নিজেরা খাও, যারা চায় না তাদের খাওয়াও এবং যারা নিজেদের প্রয়োজন পেশ করে তাদের খাওয়াও’ (হজ্জ ৩৬)। অতএব কুরবানী দাতাগণ স্ব স্ব কুরবানীর গোশতের এক-তৃতীয়াংশ একস্থানে জমা করে মহল্লায় যারা কুরবানী করতে পারেনি, তাদের তালিকা করে সুশৃংখলভাবে তাদের মধ্যে বিতরণ করবেন ও প্রয়োজনে তাদের বাড়ীতে পৌঁছে দিবেন। বাকী এক-তৃতীয়াংশ ফকীর-মিসকীনদের মধ্যে বিতরণ করবেন (দ্রঃ মাসায়েলে কুরবানী ও আক্বীক্বা’ বই, পৃঃ ২৩)।
-শামস সাহেলা, দুপচাঁচিয়া, বগুড়া।
উত্তর : দিতে হবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘শাক-সবজিতে কোন যাকাত (ওশর) নেই’ (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, ছহীহুল জামে‘ হা/৫৪১১; মিশকাত হা/১৮১৩)। তবে এসবের ব্যবসার অর্থ যদি নিছাব পরিমাণ হয় এবং এক বছর সঞ্চিত থাকে, তাহ’লে উক্ত অর্থের ১/৪০ ভাগ যাকাত দিবে (আবুদাঊদ হা/১৫৭৩-৭৪)। অর্থাৎ শতকরা আড়াই টাকা হিসাবে। তবে ঐসব ফসল উঠানোর সময় গরীব-মিসকীনকে কিছু দান করবে (বুখারী হা/২৩৩৭)।
উত্তর : দিতে হবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘শাক-সবজিতে কোন যাকাত (ওশর) নেই’ (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, ছহীহুল জামে‘ হা/৫৪১১; মিশকাত হা/১৮১৩)। তবে এসবের ব্যবসার অর্থ যদি নিছাব পরিমাণ হয় এবং এক বছর সঞ্চিত থাকে, তাহ’লে উক্ত অর্থের ১/৪০ ভাগ যাকাত দিবে (আবুদাঊদ হা/১৫৭৩-৭৪)। অর্থাৎ শতকরা আড়াই টাকা হিসাবে। তবে ঐসব ফসল উঠানোর সময় গরীব-মিসকীনকে কিছু দান করবে (বুখারী হা/২৩৩৭)।
২৯৪
প্রশ্ন (১৩/৪১৩) : পুরুষদের জন্য আংটি ব্যবহার করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি? রাসূল (ছাঃ) কি সোলায়মানী পাথরের আংটি ব্যবহার করতেন?-ডা. আহসান, ইটাগাছা, সাতক্ষীরা।
উত্তর : পুরুষের জন্য বিনা প্রয়োজনে আংটি পরিধান করা অপসন্দনীয় কাজ। ৬ষ্ঠ হিজরীর যুলক্বা‘দাহ মাসে হোদায়বিয়ার সন্ধি সম্পাদনের পর ৭ম হিজরীর মুহাররম মাসে বিভিন্ন রাষ্ট্র প্রধানের নিকটে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে রাসূল (ছাঃ) পত্র প্রেরণ করেন। তখন সেযুগের নিয়ম অনুযায়ী সীলমোহর হিসাবে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ‘মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ’ নাম খোদাইকৃত আংটি ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে খুলাফায়ে রাশেদীনও রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে আংটি ব্যবহার করেন (বুখারী হা/৫৮৬৬, ৫৮৭০; ফাৎহুলবারী, ১০/৩২৫ ‘আংটি ব্যবহার’ অনুচ্ছেদ)। তবে আলী (রাঃ) থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, তিনি রাসূল (ছাঃ)-এর জীবদ্দশায় রুপার আংটি ব্যবহার করেছেন (মুসলিম হা/২০৯৫)। সুতরাং এটি জায়েয।
রাসূল (ছাঃ) সোলায়মানী পাথরের আংটি ব্যবহার করতেন বলে কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। তাছাড়া ‘সোলায়মানী’ শব্দটি বিশেষ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়, যা ভিত্তিহীন। কেননা সোলায়মান (আঃ)-এর ব্যবহৃত কোন আংটির অস্তিত্ব দুনিয়াতে নেই।
উত্তর : পুরুষের জন্য বিনা প্রয়োজনে আংটি পরিধান করা অপসন্দনীয় কাজ। ৬ষ্ঠ হিজরীর যুলক্বা‘দাহ মাসে হোদায়বিয়ার সন্ধি সম্পাদনের পর ৭ম হিজরীর মুহাররম মাসে বিভিন্ন রাষ্ট্র প্রধানের নিকটে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে রাসূল (ছাঃ) পত্র প্রেরণ করেন। তখন সেযুগের নিয়ম অনুযায়ী সীলমোহর হিসাবে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ‘মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ’ নাম খোদাইকৃত আংটি ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে খুলাফায়ে রাশেদীনও রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে আংটি ব্যবহার করেন (বুখারী হা/৫৮৬৬, ৫৮৭০; ফাৎহুলবারী, ১০/৩২৫ ‘আংটি ব্যবহার’ অনুচ্ছেদ)। তবে আলী (রাঃ) থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, তিনি রাসূল (ছাঃ)-এর জীবদ্দশায় রুপার আংটি ব্যবহার করেছেন (মুসলিম হা/২০৯৫)। সুতরাং এটি জায়েয।
রাসূল (ছাঃ) সোলায়মানী পাথরের আংটি ব্যবহার করতেন বলে কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। তাছাড়া ‘সোলায়মানী’ শব্দটি বিশেষ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়, যা ভিত্তিহীন। কেননা সোলায়মান (আঃ)-এর ব্যবহৃত কোন আংটির অস্তিত্ব দুনিয়াতে নেই।
২৯৫
প্রশ্ন (১৪/৪১৪) : আমাদের এলাকা হানাফী অধ্যুষিত। আমি কি তাদের সাথে ৬ তাকবীরে ঈদের ছালাত পড়ব, না ছালাত আদায় থেকে বিরত থাকব?-ফরীদুদ্দীন, নন্দীগ্রাম, বগুড়া।
উত্তর : ঈদায়নের ছালাতে ১২ তাকবীরের হাদীছগুলি ছহীহ(আবুদাঊদ হা/১১৫০; ইবনু মাজাহ হা/১২৮০, দারাকুৎনী হা/১৭০৪, ১৭১০, সনদ ছহীহ)। সেকারণ ১২ তাকবীরে ঈদের ছালাত হয়, এমন জামা‘আতে শরীক হওয়া যরূরী। তবে সম্ভব না হ’লে ৬ তাকবীরের জামা‘আতেই শরীক হবে। কেননা এতে সুন্নাত অনুসরণ না হলেও ছালাত বাতিল হবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘ইমামগণ তোমাদের ছালাতে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। এক্ষণে তারা সঠিকভাবে ছালাত আদায় করালে তোমাদের জন্য নেকী রয়েছে। আর তারা ভুল করলে তোমাদের জন্য রয়েছে নেকী, কিন্তু তাদের জন্য রয়েছে গোনাহ’ (বুখারী হা/৬৯; মিশকাত হা/১১৩৩)।
উত্তর : ঈদায়নের ছালাতে ১২ তাকবীরের হাদীছগুলি ছহীহ(আবুদাঊদ হা/১১৫০; ইবনু মাজাহ হা/১২৮০, দারাকুৎনী হা/১৭০৪, ১৭১০, সনদ ছহীহ)। সেকারণ ১২ তাকবীরে ঈদের ছালাত হয়, এমন জামা‘আতে শরীক হওয়া যরূরী। তবে সম্ভব না হ’লে ৬ তাকবীরের জামা‘আতেই শরীক হবে। কেননা এতে সুন্নাত অনুসরণ না হলেও ছালাত বাতিল হবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘ইমামগণ তোমাদের ছালাতে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। এক্ষণে তারা সঠিকভাবে ছালাত আদায় করালে তোমাদের জন্য নেকী রয়েছে। আর তারা ভুল করলে তোমাদের জন্য রয়েছে নেকী, কিন্তু তাদের জন্য রয়েছে গোনাহ’ (বুখারী হা/৬৯; মিশকাত হা/১১৩৩)।
২৯৬
প্রশ্ন (১৫/৪১৫) : বিবাহের ক্ষেত্রে ছেলের জন্য ওয়ালীমা করা সুন্নাত। এক্ষণে মেয়ের বাড়ীতে যে ভোজের আয়োজন করা হয়, তা কি শরী‘আত সম্মত?-আফযাল, মাটিয়ানী, পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও।
উত্তর : ছেলেপক্ষ বিয়ে করতে যায় এবং মোহরানা দিয়ে বিয়ে করে। সেখানে মেয়েপক্ষের কোনরূপ খরচ করার কথা নয়। এরপরেও যেটা করা হয় সেটা স্রেফ সৌজন্যমূলক আপ্যায়ন মাত্র। যা শরী‘আতসম্মত (বুখারী হা/৬০১৮)। বিয়ের পর বাসর যাপন শেষে ছেলের পক্ষ থেকে ওয়ালীমা করা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তুমি ওয়ালীমা কর। একটি বকরী দিয়ে হ’লেও’ (বুখারী হা/২০৪৮, মিশকাত হা/৩২১০)। অথচ বর্তমান যুগে ওয়ালীমার এই সুন্নাত বর্জনের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা নিঃসন্দেহে গুনাহের শামিল।
উত্তর : ছেলেপক্ষ বিয়ে করতে যায় এবং মোহরানা দিয়ে বিয়ে করে। সেখানে মেয়েপক্ষের কোনরূপ খরচ করার কথা নয়। এরপরেও যেটা করা হয় সেটা স্রেফ সৌজন্যমূলক আপ্যায়ন মাত্র। যা শরী‘আতসম্মত (বুখারী হা/৬০১৮)। বিয়ের পর বাসর যাপন শেষে ছেলের পক্ষ থেকে ওয়ালীমা করা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তুমি ওয়ালীমা কর। একটি বকরী দিয়ে হ’লেও’ (বুখারী হা/২০৪৮, মিশকাত হা/৩২১০)। অথচ বর্তমান যুগে ওয়ালীমার এই সুন্নাত বর্জনের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা নিঃসন্দেহে গুনাহের শামিল।
-শফীকুল ইসলাম, মান্দাই, সিঙ্গাপুর।
উত্তর : অমুসলিমদের প্রদত্ত ইফতার খাওয়া জায়েয। রাসূল (ছাঃ) অমুসলিমদের দাওয়াত খেয়েছেন এবং তাদের উপহার গ্রহণ করেছেন (বুখারী হা/২৬১৫-১৮, ‘মুশরিকদের নিকট থেকে হাদিয়া গ্রহণ’ অনুচ্ছেদ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৯৩১)। তবে তাদের যবহ কৃত পশুর গোশত খাওয়া যাবে না (বাক্বারাহ ১৭৩)।
উত্তর : অমুসলিমদের প্রদত্ত ইফতার খাওয়া জায়েয। রাসূল (ছাঃ) অমুসলিমদের দাওয়াত খেয়েছেন এবং তাদের উপহার গ্রহণ করেছেন (বুখারী হা/২৬১৫-১৮, ‘মুশরিকদের নিকট থেকে হাদিয়া গ্রহণ’ অনুচ্ছেদ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৯৩১)। তবে তাদের যবহ কৃত পশুর গোশত খাওয়া যাবে না (বাক্বারাহ ১৭৩)।
-আব্দুল ওয়ারেছ, পুঠিয়া, রাজশাহী।
উত্তর : খোলা ও নির্জন স্থানে একাকী মুছল্লীর জন্য আযান দেওয়া মুস্তাহাব। রাসূল (ছাঃ) বলেন, কোন ব্যক্তি সমতল স্থানে থাকা অবস্থায় ওযূ বা তায়াম্মুম করে যদি কেবল ইক্বামত দিয়ে ছালাত আদায় করে, তবে তার সাথে দু’জন ফেরেশতা ছালাত আদায় করে। আর যদি আযান ও ইক্বামত দেয়, তবে আল্লাহ্র একদল সৈন্য তার পিছনে ছালাত আদায় করে, যা সে দেখতে পায় না (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক, ছহীহ আত-তারগীব হা/২৪৯)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, পাহাড়ের উঁচু স্থানে আযান দিয়ে ছালাত আদায়কারী রাখালকে দেখে আল্লাহ তা‘আলা বিস্মিত হয়ে বলেন, আমার বান্দার দিকে দেখ, সে আমার ভয়ে আযান দেয় এবং ছালাত কায়েম করে। অতএব আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালাম (আবুদাউদ হা/১২০৩; ছহীহাহ হা/৪১; মিশকাত হা/৬৬৪)। ইমাম শাওকানী বলেন, এ হাদীছের মধ্যে একাকী মুছল্লীর জন্য আযান দেওয়া সুন্নাত হওয়ার দলীল রয়েছে (নায়লুল আওত্বার ২/৪৩)।
উত্তর : খোলা ও নির্জন স্থানে একাকী মুছল্লীর জন্য আযান দেওয়া মুস্তাহাব। রাসূল (ছাঃ) বলেন, কোন ব্যক্তি সমতল স্থানে থাকা অবস্থায় ওযূ বা তায়াম্মুম করে যদি কেবল ইক্বামত দিয়ে ছালাত আদায় করে, তবে তার সাথে দু’জন ফেরেশতা ছালাত আদায় করে। আর যদি আযান ও ইক্বামত দেয়, তবে আল্লাহ্র একদল সৈন্য তার পিছনে ছালাত আদায় করে, যা সে দেখতে পায় না (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক, ছহীহ আত-তারগীব হা/২৪৯)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, পাহাড়ের উঁচু স্থানে আযান দিয়ে ছালাত আদায়কারী রাখালকে দেখে আল্লাহ তা‘আলা বিস্মিত হয়ে বলেন, আমার বান্দার দিকে দেখ, সে আমার ভয়ে আযান দেয় এবং ছালাত কায়েম করে। অতএব আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালাম (আবুদাউদ হা/১২০৩; ছহীহাহ হা/৪১; মিশকাত হা/৬৬৪)। ইমাম শাওকানী বলেন, এ হাদীছের মধ্যে একাকী মুছল্লীর জন্য আযান দেওয়া সুন্নাত হওয়ার দলীল রয়েছে (নায়লুল আওত্বার ২/৪৩)।
২৯৯
প্রশ্ন (১৮/৪১৮) : জনৈক আলেম বলেন, মাটি পুড়িয়ে ইট প্রস্ত্তত করা হয়। তাই ইটের ভাটার ব্যবসা করা হারাম। একথা কি ঠিক?-মুকুল, মুরাদপুর, সাতক্ষীরা।
[আরবীতে সুন্দর নাম রাখুন (স.স)]
উত্তর : কথাটি মনগড়া ও ভিত্তিহীন। মাটি পুড়িয়ে ইট তৈরী করা এবং তা দ্বারা নির্মাণ কাজ করা এসব দুনিয়াবী প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত। আর আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবকিছুই মানুষের ব্যবহারের জন্য সৃষ্টি করেছেন (হজ্জ ২২/৬৫)। এছাড়া শরী‘আতে প্রাণীকে পুড়িয়ে মারতে নিষেধ করা হয়েছে (বুখারী হা/৩০১৬-১৭) মাটি, গাছ ইত্যাদি কোন জড় বস্ত্তকে নয়।
[আরবীতে সুন্দর নাম রাখুন (স.স)]
উত্তর : কথাটি মনগড়া ও ভিত্তিহীন। মাটি পুড়িয়ে ইট তৈরী করা এবং তা দ্বারা নির্মাণ কাজ করা এসব দুনিয়াবী প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত। আর আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবকিছুই মানুষের ব্যবহারের জন্য সৃষ্টি করেছেন (হজ্জ ২২/৬৫)। এছাড়া শরী‘আতে প্রাণীকে পুড়িয়ে মারতে নিষেধ করা হয়েছে (বুখারী হা/৩০১৬-১৭) মাটি, গাছ ইত্যাদি কোন জড় বস্ত্তকে নয়।
৩০০
প্রশ্ন (১৯/৪১৯) : রংপুর হারাগাছে বিড়ি-তামাকের ব্যাপক ব্যবসা থাকায় স্থানীয় অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ওয়ায মাহফিল ঐসব ব্যবসায়ীদের প্রদত্ত অর্থে পরিচালিত হয়ে থাকে। এক্ষণে এসব দানে দাতার কোন নেকী হবে কি? গ্রহীতা তা গ্রহণ করতে পারবে কি?-আল-আমীন, হারাগাছ, রংপুর।
উত্তর : বিড়ি-তামাক ইত্যাদি নেশাকর দ্রব্যের অন্তর্ভুক্ত। এগুলির উৎপাদন ও ব্যবসা দু’টিই হারাম। আর হারাম উপার্জন থেকে দান করলে তাতে দাতার কোন নেকী হবে না। কারণ আল্লাহ হারাম বস্ত্ত কবুল করেন না (মুসলিম হা/১০১৫; মিশকাত হা/২৭৬০)। তবে উক্ত অর্থ অন্যের জন্য নিষিদ্ধ নয়। কেননা আল্লাহ বলেন, একজনের পাপের বোঝা অন্যে বইবে না’ (আন‘আম ৬/১৬৪ প্রভৃতি)।
উত্তর : বিড়ি-তামাক ইত্যাদি নেশাকর দ্রব্যের অন্তর্ভুক্ত। এগুলির উৎপাদন ও ব্যবসা দু’টিই হারাম। আর হারাম উপার্জন থেকে দান করলে তাতে দাতার কোন নেকী হবে না। কারণ আল্লাহ হারাম বস্ত্ত কবুল করেন না (মুসলিম হা/১০১৫; মিশকাত হা/২৭৬০)। তবে উক্ত অর্থ অন্যের জন্য নিষিদ্ধ নয়। কেননা আল্লাহ বলেন, একজনের পাপের বোঝা অন্যে বইবে না’ (আন‘আম ৬/১৬৪ প্রভৃতি)।
৩০১
প্রশ্ন (২০/৪২০) : আমার জীবিত পিতা আমাদের দশ ভাইবোনের মধ্যে ভাইদের কাউকে বেশী কাউকে কম জমি লিখে দিয়েছেন এবং বোনদের কোন জমি দেননি। এক্ষণে তার করণীয় কি?-ছানাউল্লাহ, মচমইল, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : ওয়ারিছগণ কে কতটুকু পাবে তা স্বয়ং আল্লাহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন (নিসা ৭, ১১)। সুতরাং বণ্টনের ক্ষেত্রে উক্ত নীতির ভিত্তিতেই ভাগ করতে হবে। এক্ষেত্রে মেয়েদেরকে অংশ না দেওয়া এবং ছেলেদের মধ্যে কমবেশী করা নিঃসন্দেহে কাবীরা গুনাহ এবং তা হক বিনষ্টের শামিল। তারা ক্ষমা না করলেও আললাহ তা‘আলা উক্ত পাপ ক্ষমা করবেন না। কিয়ামতের দিন পিতার নেকী থেকে নিয়ে সন্তানদের হক পূরণ করে দেওয়া হবে। যদি তার নেকীতে না কুলায়, তাহ’লে সন্তানদের পাপসমূহ পিতার আমলনামায় যোগ করা হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে’ (বুখারী হা/২৪৪৯, মিশকাত হা/৫১২৬-২৭)।
এক্ষণে উক্ত পিতার করণীয় হ’ল, সন্তানদেরকে বুঝিয়ে সকল সম্পদ ফেরত নেওয়া এবং শরী‘আত মোতাবেক তা বণ্টন করা। পিতার সদিচ্ছার পরেও যদি সন্তানগণ ফিরিয়ে দিতে রাযী না হয়, তাহ’লে তারাও কঠিন গোনাহগার হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কারো এক বিঘত পরিমাণ যমীন যুলুম করে নেয়, ক্বিয়ামতের দিন তার গলায় সাত তবক যমীন বেড়ী পরানো হবে’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৯৩৮)। অন্য হাদীছে এসেছে, ক্বিয়ামতের দিন ঐ মাটির বোঝা তার গর্দানে চাপিয়ে দেওয়া হবে’ (আহমাদ, ছহীহাহ হা/২৪২)। কোন পথ না পেলে পিতা শরী‘আত মোতাবেক সম্পত্তি বণ্টন করে অছিয়ত নামা (উইল) লিখে যাবেন। এর মাধ্যমে পিতা তার পাপ থেকে বাঁচতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
উত্তর : ওয়ারিছগণ কে কতটুকু পাবে তা স্বয়ং আল্লাহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন (নিসা ৭, ১১)। সুতরাং বণ্টনের ক্ষেত্রে উক্ত নীতির ভিত্তিতেই ভাগ করতে হবে। এক্ষেত্রে মেয়েদেরকে অংশ না দেওয়া এবং ছেলেদের মধ্যে কমবেশী করা নিঃসন্দেহে কাবীরা গুনাহ এবং তা হক বিনষ্টের শামিল। তারা ক্ষমা না করলেও আললাহ তা‘আলা উক্ত পাপ ক্ষমা করবেন না। কিয়ামতের দিন পিতার নেকী থেকে নিয়ে সন্তানদের হক পূরণ করে দেওয়া হবে। যদি তার নেকীতে না কুলায়, তাহ’লে সন্তানদের পাপসমূহ পিতার আমলনামায় যোগ করা হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে’ (বুখারী হা/২৪৪৯, মিশকাত হা/৫১২৬-২৭)।
এক্ষণে উক্ত পিতার করণীয় হ’ল, সন্তানদেরকে বুঝিয়ে সকল সম্পদ ফেরত নেওয়া এবং শরী‘আত মোতাবেক তা বণ্টন করা। পিতার সদিচ্ছার পরেও যদি সন্তানগণ ফিরিয়ে দিতে রাযী না হয়, তাহ’লে তারাও কঠিন গোনাহগার হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কারো এক বিঘত পরিমাণ যমীন যুলুম করে নেয়, ক্বিয়ামতের দিন তার গলায় সাত তবক যমীন বেড়ী পরানো হবে’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৯৩৮)। অন্য হাদীছে এসেছে, ক্বিয়ামতের দিন ঐ মাটির বোঝা তার গর্দানে চাপিয়ে দেওয়া হবে’ (আহমাদ, ছহীহাহ হা/২৪২)। কোন পথ না পেলে পিতা শরী‘আত মোতাবেক সম্পত্তি বণ্টন করে অছিয়ত নামা (উইল) লিখে যাবেন। এর মাধ্যমে পিতা তার পাপ থেকে বাঁচতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
৩০২
প্রশ্ন (২১/৪২১) : ডাচ-বাংলা ও অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট হয়ে উক্ত ব্যাংকগুলিতে কারো একাউন্ট খুলে দিলে যে মজুরী পাওয়া যায় তা বৈধ হবে কি? উল্লেখ্য ঐ একাউণ্টে সূদ জমা হয়।-রেযওয়ানুল ইসলাম, তাহেরপুর, রাজশাহী।
উত্তর : উক্ত কাজে মজুরী গ্রহণ করা জায়েয (আবুদাঊদ হা/২৯৪৩, মিশকাত হা/৩৭৪৮)। কারণ এটা একাউণ্ট খোলার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার বিনিময় স্বরূপ প্রদান করা হয় মাত্র। আর ইসলামী বা সাধারণ সকল ব্যাংক একাউণ্টেই সূদ জমা হয়। সুতরাং তাতে জমা হওয়া সূদ নেকীর উদ্দেশ্য ছাড়াই দান করে দিলে সূদ গ্রহণের পাপ থেকে বাঁচা যাবে ইনশাআল্লাহ।
উত্তর : উক্ত কাজে মজুরী গ্রহণ করা জায়েয (আবুদাঊদ হা/২৯৪৩, মিশকাত হা/৩৭৪৮)। কারণ এটা একাউণ্ট খোলার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার বিনিময় স্বরূপ প্রদান করা হয় মাত্র। আর ইসলামী বা সাধারণ সকল ব্যাংক একাউণ্টেই সূদ জমা হয়। সুতরাং তাতে জমা হওয়া সূদ নেকীর উদ্দেশ্য ছাড়াই দান করে দিলে সূদ গ্রহণের পাপ থেকে বাঁচা যাবে ইনশাআল্লাহ।
৩০৩
প্রশ্ন (২২/৪২২) : হাদীছে বর্ণিত জামা‘আত বলে কি বুঝায়? হকপন্থী তথা নাজাতপ্রাপ্ত জামা‘আতের বৈশিষ্ট্য কি?-আকমাল হোসাইন, চারঘাট, রাজশাহী।
উত্তর : জামা‘আত অর্থ দল। আর হাদীছে বর্ণিত জামা‘আত বলতে ছাহাবায়ে কেরাম এবং তাঁদের আক্বীদা, আমল ও রীতি-পদ্ধতির সনিষ্ঠ অনুসারীদের বুঝায় (মির‘আত ১/২৭৮, মিশকাত হা/১৭১-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)। খ্যাতনামা ছাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ)-এর কাছে রাসূল (ছাঃ) বর্ণিত ‘আল-জামা‘আত’ অর্থ কি- একথা জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, ‘হক-এর অনুগামী দলই জামা‘আত, যদিও তুমি একাকী হও’ (তারীখু দিমাশ্ক্ব, সনদ ছহীহ; হাশিয়া মিশকাত আলবানী, হা/১৭৩)।
এক্ষণে নাজাতপ্রাপ্ত জামা‘আতের বৈশিষ্ট্যসমূহ হ’ল- (১) তারা সর্বদা পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের প্রকাশ্য অর্থের অনুসারী হবেন এবং ছাহাবায়ে কেরাম ও সালাফে ছালেহীনের বুঝ অনুযায়ী শরী‘আত ব্যাখ্যা করবেন (তিরমিযী হা/২৬৪১; মিশকাত হা/১৭১)। বিশেষতঃ আল্লাহ্র নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে তারা কোন রূপক অর্থের আশ্রয় নিবেন না। (২) আক্বীদার ক্ষেত্রে তারা সর্বদা মধ্যপন্থী হবেন এবং কখনোই চরমপন্থী বা শৈথিল্যবাদী হবেন না (বাক্বারাহ ২/১৪৩)। (৩) তাঁরা সংস্কারক হবেন (আহমাদ, মিশকাত হা/১৫৯, ১৭০; ছহীহাহ হা/১২৭৩)। (৪) তারা কুফর ও কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ও শক্তিশালী থাকেন এবং নিজেদের মধ্যে সর্বদা রহমদিল ও আল্লাহ্র প্রতি বিনীত থাকেন (ফাৎহ ৪৮/২৯, হজ্জ ২২/৩৪)। (৫) তারা জামা‘আতবদ্ধভাবে আল্লাহ্র রাস্তায় সংগ্রাম করেন এবং কখনোই উদ্ধত ও বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী হন না (ছফ ৬১/৪, তিরমিযী হা/২১৬৫)। (৬) তাঁরা যেকোন মূল্যে সুন্নাতকে আঁকড়ে থাকেন ও বিদ‘আত হ’তে দূরে থাকেন (ছহীহুল জামে‘ হা/২২৩৪, মিশকাত হা/১৬৫)। (৭) তারা আপোষহীনভাবে সমাবেতভাবে হাবলুল্লাহকে ধারণ করে থাকেন এবং কখনোই তা থেকে বিচ্ছিন্ন হন না (আলে ইমরান ৩/১০৩)। (৮) তারা মানুষের সাথে সদ্ব্যবহার করেন এবং আপোষে মহববতের সম্পর্ক অটুট রাখেন। (৯) তারা ব্যাখ্যাগত মতভেদ-কে লঘু করে দেখেন এবং কখনোই তাকে দলীয় বিভক্তিতে পরিণত করেন না। (১০) তারা সর্বদা উত্তম মুমিন হওয়ার জন্য চেষ্টিত থাকেন এবং এজন্য সর্বদা আল্লাহ্র সাহায্য প্রার্থনা করেন (বিস্তারিত দ্রঃ ‘ফিরক্বা নাজিয়াহ’ বই ২৫ ও ৫৪ পৃঃ)।
উত্তর : জামা‘আত অর্থ দল। আর হাদীছে বর্ণিত জামা‘আত বলতে ছাহাবায়ে কেরাম এবং তাঁদের আক্বীদা, আমল ও রীতি-পদ্ধতির সনিষ্ঠ অনুসারীদের বুঝায় (মির‘আত ১/২৭৮, মিশকাত হা/১৭১-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)। খ্যাতনামা ছাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ)-এর কাছে রাসূল (ছাঃ) বর্ণিত ‘আল-জামা‘আত’ অর্থ কি- একথা জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, ‘হক-এর অনুগামী দলই জামা‘আত, যদিও তুমি একাকী হও’ (তারীখু দিমাশ্ক্ব, সনদ ছহীহ; হাশিয়া মিশকাত আলবানী, হা/১৭৩)।
এক্ষণে নাজাতপ্রাপ্ত জামা‘আতের বৈশিষ্ট্যসমূহ হ’ল- (১) তারা সর্বদা পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের প্রকাশ্য অর্থের অনুসারী হবেন এবং ছাহাবায়ে কেরাম ও সালাফে ছালেহীনের বুঝ অনুযায়ী শরী‘আত ব্যাখ্যা করবেন (তিরমিযী হা/২৬৪১; মিশকাত হা/১৭১)। বিশেষতঃ আল্লাহ্র নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে তারা কোন রূপক অর্থের আশ্রয় নিবেন না। (২) আক্বীদার ক্ষেত্রে তারা সর্বদা মধ্যপন্থী হবেন এবং কখনোই চরমপন্থী বা শৈথিল্যবাদী হবেন না (বাক্বারাহ ২/১৪৩)। (৩) তাঁরা সংস্কারক হবেন (আহমাদ, মিশকাত হা/১৫৯, ১৭০; ছহীহাহ হা/১২৭৩)। (৪) তারা কুফর ও কুফরী শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ও শক্তিশালী থাকেন এবং নিজেদের মধ্যে সর্বদা রহমদিল ও আল্লাহ্র প্রতি বিনীত থাকেন (ফাৎহ ৪৮/২৯, হজ্জ ২২/৩৪)। (৫) তারা জামা‘আতবদ্ধভাবে আল্লাহ্র রাস্তায় সংগ্রাম করেন এবং কখনোই উদ্ধত ও বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী হন না (ছফ ৬১/৪, তিরমিযী হা/২১৬৫)। (৬) তাঁরা যেকোন মূল্যে সুন্নাতকে আঁকড়ে থাকেন ও বিদ‘আত হ’তে দূরে থাকেন (ছহীহুল জামে‘ হা/২২৩৪, মিশকাত হা/১৬৫)। (৭) তারা আপোষহীনভাবে সমাবেতভাবে হাবলুল্লাহকে ধারণ করে থাকেন এবং কখনোই তা থেকে বিচ্ছিন্ন হন না (আলে ইমরান ৩/১০৩)। (৮) তারা মানুষের সাথে সদ্ব্যবহার করেন এবং আপোষে মহববতের সম্পর্ক অটুট রাখেন। (৯) তারা ব্যাখ্যাগত মতভেদ-কে লঘু করে দেখেন এবং কখনোই তাকে দলীয় বিভক্তিতে পরিণত করেন না। (১০) তারা সর্বদা উত্তম মুমিন হওয়ার জন্য চেষ্টিত থাকেন এবং এজন্য সর্বদা আল্লাহ্র সাহায্য প্রার্থনা করেন (বিস্তারিত দ্রঃ ‘ফিরক্বা নাজিয়াহ’ বই ২৫ ও ৫৪ পৃঃ)।
৩০৪
প্রশ্ন (২৩/৪২৩) : ‘বড় পীর’ বলে খ্যাত আব্দুল কাদের জীলানী (রহঃ) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই। তাঁর সম্পর্কে যেসব কাহিনী শোনা যায়, তার কোন ভিত্তি আছে কি?-সাকলাইন শাহরিয়ার, ঢাকা।
উত্তর : তাঁর নাম আবু মুহাম্মাদ আব্দুল কাদের বিন মূসা বিন আব্দুল্লাহ। তিনি ৪৭০ হিঃ মোতাবেক ১০৭৭ খৃষ্টাব্দে বর্তমান ইরানের অন্তুর্ভুক্ত তাবারিস্তানের জীলান নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক শিক্ষা শেষে উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি ৪৮৮ হিজরীতে বাগদাদ গমন করেন। সেখানে বিভিন্ন বিদ্বানগণের নিকট কুরআন-হাদীছ ,ফিক্বহ, আদব, নাহু সহ বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেন।
ইবনুল আছীর, ইমাম যাহাবী, সাম‘আনী প্রমুখ বিদ্বানগণ তাঁকে সৎ, পরহেযগার, ফক্বীহ, যাহেদ ও হাম্বলী মাযহাবের ইমাম হিসাবে অভিহিত করেছেন (আল-কামেল ৯/৩২৬; যাহাবী, তারীখুল ইসলাম ৩৯/৮৯; সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ২০/৪৩৯-৪১)। ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, তাঁর সুন্দর সুনাম ছিল... তাঁর মাঝে দুনিয়াবিমুখতা অধিক ছিল। তাঁর ব্যাপারে তাঁর অনুসারী ও সাথীদের অনেক বক্তব্য রয়েছে। তারা তার অনেক কথা, কর্ম ও কাশফ-কারামাতের কথা উল্লেখ করেন, যার অধিকাংশই বাড়াবাড়ি বৈ কিছুই নয়। বরং তিনি সৎ ও পরহেযগার ছিলেন। তিনি আল-গুনিয়াহ ও ফুতূহুল গায়েব গ্রন্থদ্বয় রচনা করেছেন। তাতে অনেক সুন্দর বিষয় রয়েছে। তবে তাতে তিনি বহু যঈফ ও জাল হাদীছ বর্ণিত হয়েছে (আল-বিদায়াহ ১২/৭৬৮)। শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ)-কে আব্দুল কাদের জীলানীর কবরে শিরকী কর্মকান্ড সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে শায়খ আব্দুল কাদের এ সব কর্মকান্ড করতে বলেননি এবং তিনি এ ব্যাপারে নির্দেশও দেননি। তার ব্যাপারে যারা এ সব কথা বলবে তারা মিথ্যাবাদী। বরং শিরকী ও চরমপন্থী একদল লোক এসব বিদ‘আত আবিষ্কার করেছে’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ইবনু তায়মিয়াহ ২৭/১২৭)। তিনি ৫৬১ হিজরী মোতাবেক ১১৬৬ খৃষ্টাব্দে ইরাকের বাগদাদে মৃত্যুবরণ করেন।
উল্লেখ্য যে, তিনি মায়ের গর্ভে থাকাকালীন সময় ১৮ পারা কুরআন মুখস্থ করেছিলেন মর্মে যে বক্তব্য প্রচলিত আছে, তা ভিত্তিহীন(দ্রঃ প্রশ্নোত্তর ৩/১২৩, জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারী’১৪)।
উত্তর : তাঁর নাম আবু মুহাম্মাদ আব্দুল কাদের বিন মূসা বিন আব্দুল্লাহ। তিনি ৪৭০ হিঃ মোতাবেক ১০৭৭ খৃষ্টাব্দে বর্তমান ইরানের অন্তুর্ভুক্ত তাবারিস্তানের জীলান নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক শিক্ষা শেষে উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি ৪৮৮ হিজরীতে বাগদাদ গমন করেন। সেখানে বিভিন্ন বিদ্বানগণের নিকট কুরআন-হাদীছ ,ফিক্বহ, আদব, নাহু সহ বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেন।
ইবনুল আছীর, ইমাম যাহাবী, সাম‘আনী প্রমুখ বিদ্বানগণ তাঁকে সৎ, পরহেযগার, ফক্বীহ, যাহেদ ও হাম্বলী মাযহাবের ইমাম হিসাবে অভিহিত করেছেন (আল-কামেল ৯/৩২৬; যাহাবী, তারীখুল ইসলাম ৩৯/৮৯; সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ২০/৪৩৯-৪১)। ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, তাঁর সুন্দর সুনাম ছিল... তাঁর মাঝে দুনিয়াবিমুখতা অধিক ছিল। তাঁর ব্যাপারে তাঁর অনুসারী ও সাথীদের অনেক বক্তব্য রয়েছে। তারা তার অনেক কথা, কর্ম ও কাশফ-কারামাতের কথা উল্লেখ করেন, যার অধিকাংশই বাড়াবাড়ি বৈ কিছুই নয়। বরং তিনি সৎ ও পরহেযগার ছিলেন। তিনি আল-গুনিয়াহ ও ফুতূহুল গায়েব গ্রন্থদ্বয় রচনা করেছেন। তাতে অনেক সুন্দর বিষয় রয়েছে। তবে তাতে তিনি বহু যঈফ ও জাল হাদীছ বর্ণিত হয়েছে (আল-বিদায়াহ ১২/৭৬৮)। শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ)-কে আব্দুল কাদের জীলানীর কবরে শিরকী কর্মকান্ড সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে শায়খ আব্দুল কাদের এ সব কর্মকান্ড করতে বলেননি এবং তিনি এ ব্যাপারে নির্দেশও দেননি। তার ব্যাপারে যারা এ সব কথা বলবে তারা মিথ্যাবাদী। বরং শিরকী ও চরমপন্থী একদল লোক এসব বিদ‘আত আবিষ্কার করেছে’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ইবনু তায়মিয়াহ ২৭/১২৭)। তিনি ৫৬১ হিজরী মোতাবেক ১১৬৬ খৃষ্টাব্দে ইরাকের বাগদাদে মৃত্যুবরণ করেন।
উল্লেখ্য যে, তিনি মায়ের গর্ভে থাকাকালীন সময় ১৮ পারা কুরআন মুখস্থ করেছিলেন মর্মে যে বক্তব্য প্রচলিত আছে, তা ভিত্তিহীন(দ্রঃ প্রশ্নোত্তর ৩/১২৩, জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারী’১৪)।
-আব্দুল হাই, ভারুয়াখালী, জামালপুর।
উত্তর : যাকাত বণ্টনের যে নির্ধারিত খাত সমূহ রয়েছে, তা ব্যতীত অন্য খাতে যাকাত বণ্টন করা যাবে না (তাওবাহ ৯/৬০)। মসজিদের ইমাম-মুওয়াযযিন উক্ত খাতগুলির অন্তর্ভুক্ত নন। অতএব তাদেরকে তা দেওয়া যাবে না। তবে তারা নিতান্ত গরীব হ’লে কিছু দেওয়া যাবে (আবুদাঊদ হা/১৬৩৫, মিশকাত হা/১৮৩৩)। উল্লেখ্য যে, মসজিদ কমিটির উচিৎ হবে ইমাম-মুওয়াযযিনের জন্য এমন ভাতা নির্ধারণ করা যাতে তাদের অভাব দূরীভূত হয় (আবুদাঊদ হা/২৯৪৩; মিশকাত হা/৩৭৪৮)।
উত্তর : যাকাত বণ্টনের যে নির্ধারিত খাত সমূহ রয়েছে, তা ব্যতীত অন্য খাতে যাকাত বণ্টন করা যাবে না (তাওবাহ ৯/৬০)। মসজিদের ইমাম-মুওয়াযযিন উক্ত খাতগুলির অন্তর্ভুক্ত নন। অতএব তাদেরকে তা দেওয়া যাবে না। তবে তারা নিতান্ত গরীব হ’লে কিছু দেওয়া যাবে (আবুদাঊদ হা/১৬৩৫, মিশকাত হা/১৮৩৩)। উল্লেখ্য যে, মসজিদ কমিটির উচিৎ হবে ইমাম-মুওয়াযযিনের জন্য এমন ভাতা নির্ধারণ করা যাতে তাদের অভাব দূরীভূত হয় (আবুদাঊদ হা/২৯৪৩; মিশকাত হা/৩৭৪৮)।
৩০৭
প্রশ্ন (২৬/৪২৬) : মাগরিবের আযানের পূর্বে মসজিদে প্রবেশ করলে তাহিইয়াতুল মাসজিদ পড়তে হবে না বসে থেকে আযানের পর দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করতে হবে?-সাঈদুর রহমান, হারাগাছ, রংপুর।
উত্তর : আযানের পূর্বে মসজিদে প্রবেশ করার পর যদি দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করার মত সময় থাকে, তবে তা আদায় করে বসবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করবে, তখন সে যেন দু’রাক‘আত ছালাত আদায় ব্যতীত না বসে’ (বুখারী হা/৪৪৪; মুসলিম হা/৭১৪; মিশকাত হা/৭০৪)। তবে সময় না থাকলে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করবে। অতঃপর মাগরিবের পূর্বের দু’রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করবে (বুখারী হা/১১৮৩, মিশকাত হা/১১৬৫)।
উত্তর : আযানের পূর্বে মসজিদে প্রবেশ করার পর যদি দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করার মত সময় থাকে, তবে তা আদায় করে বসবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করবে, তখন সে যেন দু’রাক‘আত ছালাত আদায় ব্যতীত না বসে’ (বুখারী হা/৪৪৪; মুসলিম হা/৭১৪; মিশকাত হা/৭০৪)। তবে সময় না থাকলে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করবে। অতঃপর মাগরিবের পূর্বের দু’রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করবে (বুখারী হা/১১৮৩, মিশকাত হা/১১৬৫)।
৩০৮
প্রশ্ন (২৭/৪২৭) : দরিদ্রতার কারণে স্ত্রীর কাছে মোহরানার টাকা মাফ চাইলে এবং স্ত্রী সন্তুষ্টচিত্তে তা মাফ করে দিলে দায়মুক্ত হওয়া যাবে কি?-আল-আমীন, সাতক্ষীরা।
উত্তর : নিরূপায় অবস্থায় স্বামী মোহর পরিশোধে অক্ষম হয়ে পড়লে এবং স্ত্রী স্বেচ্ছায় কিছু ছাড় দিলে, তা গ্রহণযোগ্য হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা তোমাদের স্ত্রীদেরকে ফরয মোহরানা প্রদান কর। তবে যদি তারা সেখান থেকে স্বেচ্ছায় তোমাদের কিছু প্রদান করে, তাহ’লে তা হৃষ্টচিত্তে গ্রহণ কর(নিসা ৪)।
উত্তর : নিরূপায় অবস্থায় স্বামী মোহর পরিশোধে অক্ষম হয়ে পড়লে এবং স্ত্রী স্বেচ্ছায় কিছু ছাড় দিলে, তা গ্রহণযোগ্য হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা তোমাদের স্ত্রীদেরকে ফরয মোহরানা প্রদান কর। তবে যদি তারা সেখান থেকে স্বেচ্ছায় তোমাদের কিছু প্রদান করে, তাহ’লে তা হৃষ্টচিত্তে গ্রহণ কর(নিসা ৪)।
৩০৯
প্রশ্ন (২৮/৪২৮) : ‘আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাঈনুকা...’ মর্মে বর্ণিত দো‘আটি বিতরের কুনূত হিসাবে পাঠ করা যাবে কি?-নাজমুল হাসান, বাঁশদহা, সাতক্ষীরা।
উত্তর : বিতর ছালাতের কুনূত হিসাবে উপরোক্ত দো‘আটি না পড়ে ‘আল্লা-হুম্মাহ্দিনী ফীমা হাদাইতা...’ মর্মে বর্ণিত ছহীহ দো‘আটি পড়তে হবে (আবুদাঊদ হা/১৪২৫; তিরমিযী হা/৪৬৪; মিশকাত হা/১২৭৩)। ‘আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাঈনুকা...’ দো‘আটি কুনূতে নাযেলায় পড়ার ব্যাপারে এসেছে (বায়হাক্বী ২/২১০, হা/২৯৬৩)। আলবানী (রহঃ) বলেন, আমি এ দো‘আটি বিতরের কুনূতে পড়ার ব্যাপারে কোন রেওয়ায়াত পাইনি’ (ইরওয়া হা/৪২৫ ২/১৭২ পৃঃ)।
উত্তর : বিতর ছালাতের কুনূত হিসাবে উপরোক্ত দো‘আটি না পড়ে ‘আল্লা-হুম্মাহ্দিনী ফীমা হাদাইতা...’ মর্মে বর্ণিত ছহীহ দো‘আটি পড়তে হবে (আবুদাঊদ হা/১৪২৫; তিরমিযী হা/৪৬৪; মিশকাত হা/১২৭৩)। ‘আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাঈনুকা...’ দো‘আটি কুনূতে নাযেলায় পড়ার ব্যাপারে এসেছে (বায়হাক্বী ২/২১০, হা/২৯৬৩)। আলবানী (রহঃ) বলেন, আমি এ দো‘আটি বিতরের কুনূতে পড়ার ব্যাপারে কোন রেওয়ায়াত পাইনি’ (ইরওয়া হা/৪২৫ ২/১৭২ পৃঃ)।
৩১০
প্রশ্ন (২৯/৪২৯) : আমাদের দেশে গভীর রাত পর্যন্ত ইসলামী সম্মেলন হয়। এটা কি শরী‘আত সম্মত? উক্ত সম্মেলনে মহিলারা যেতে পারে কি?-ফারীহা, কেশবপুর, যশোর।
উত্তর : শ্রোতাদের চাহিদার ভিত্তিতে জালসার সময় ও সময়সীমা নির্ধারিত হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, হে জনগণ! তোমরা তোমাদের সাধ্যমত আমল করে যাও। কেননা আল্লাহ বিরক্ত হন না, যতক্ষণ না তোমরা বিরক্ত হও (বুখারী হা/৫৮৬১; মিশকাত হা/১২৪৩)। ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) প্রতি বৃহস্পতিবার তা‘লীমী বৈঠক করতেন। লোকেরা প্রতিদিন এটা দাবী করলে তিনি বলেন, আমি তোমাদের বিরক্তি উৎপাদন করাকে অপসন্দ করি। রাসূল (ছাঃ) আমাদের বিরক্তির ভয়ে আমাদেরকে মাঝে-মধ্যে ওয়ায করতেন’ (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২০৭)। ইবনু আববাস (রাঃ) জুম‘আর দিন নছীহত করতেন। লোকেরা তাকীদ দিলে তিনি সপ্তাহে দুই বা তিন দিন তা‘লীমী বৈঠক করার ব্যাপারে নির্দেশ দেন’ (বুখারী, মিশকাত হা/২৫২)। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও পর্দার ব্যবস্থা থাকলে নারীরা এসব মাহফিলে অংশগ্রহণ করতে পারবে। আল্লাহ বলেন, তুমি উপদেশ দাও। কেননা উপদেশ মুমিনদের উপকার করে’ (যারিয়াত ৫১/৫৫)। এই উপদেশ মুমিন পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। রাসূল (ছাঃ) নারীদের উপদেশ দেওয়ার জন্য তাদের দাবীক্রমে পৃথক একটি দিন নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন’ (বুখারী, মিশকাত হা/১৭৫৩)।
অতএব দিনে বা রাতে যখনই যতটুকু সময়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জালসা বা সম্মেলনের সময় নির্ধারণ করবেন, সে হিসাবে স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনায় সম্মেলন পরিচালিত হবে।
উত্তর : শ্রোতাদের চাহিদার ভিত্তিতে জালসার সময় ও সময়সীমা নির্ধারিত হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, হে জনগণ! তোমরা তোমাদের সাধ্যমত আমল করে যাও। কেননা আল্লাহ বিরক্ত হন না, যতক্ষণ না তোমরা বিরক্ত হও (বুখারী হা/৫৮৬১; মিশকাত হা/১২৪৩)। ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) প্রতি বৃহস্পতিবার তা‘লীমী বৈঠক করতেন। লোকেরা প্রতিদিন এটা দাবী করলে তিনি বলেন, আমি তোমাদের বিরক্তি উৎপাদন করাকে অপসন্দ করি। রাসূল (ছাঃ) আমাদের বিরক্তির ভয়ে আমাদেরকে মাঝে-মধ্যে ওয়ায করতেন’ (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২০৭)। ইবনু আববাস (রাঃ) জুম‘আর দিন নছীহত করতেন। লোকেরা তাকীদ দিলে তিনি সপ্তাহে দুই বা তিন দিন তা‘লীমী বৈঠক করার ব্যাপারে নির্দেশ দেন’ (বুখারী, মিশকাত হা/২৫২)। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও পর্দার ব্যবস্থা থাকলে নারীরা এসব মাহফিলে অংশগ্রহণ করতে পারবে। আল্লাহ বলেন, তুমি উপদেশ দাও। কেননা উপদেশ মুমিনদের উপকার করে’ (যারিয়াত ৫১/৫৫)। এই উপদেশ মুমিন পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। রাসূল (ছাঃ) নারীদের উপদেশ দেওয়ার জন্য তাদের দাবীক্রমে পৃথক একটি দিন নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন’ (বুখারী, মিশকাত হা/১৭৫৩)।
অতএব দিনে বা রাতে যখনই যতটুকু সময়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জালসা বা সম্মেলনের সময় নির্ধারণ করবেন, সে হিসাবে স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনায় সম্মেলন পরিচালিত হবে।
-মোহেববুল্লাহ, চট্টগ্রাম।
উত্তর : উক্ত মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (আলবানী, আহকামুল জানায়েয ২৪৬ পৃঃ; ইবনু রজব, আহওয়ালুল কুবূর ১/১০৫)। স্মর্তব্য যে, ‘রামাযান মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খোলা হয় এবং জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয়’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৯৫৬) মর্মে বর্ণিত হাদীছটি দ্বারা কেউ কেউ কবরের আযাব মাফ হওয়ার ব্যাখ্যা করে থাকেন, যার প্রমাণে কোন দলীল নেই। বরং হাদীছটির ব্যাখ্যা হ’ল- রামাযান মাসে বান্দার আনুগত্যের পথ অধিক সহজ করে দেওয়া হয় যা জান্নাত লাভের উপায় এবং পাপকর্ম থেকে বান্দার চিন্তা-চেতনাকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়, যা তার জন্য জাহান্নামের দরজা বন্ধ হওয়ার উপায়’ (ইবনু হাজার, ফাৎহুল বারী ৪/১১৪, হা/১৮৯৯-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ; উছায়মীন, ফাতাওয়া ইসলামিয়া ২/১৬২)।
উত্তর : উক্ত মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (আলবানী, আহকামুল জানায়েয ২৪৬ পৃঃ; ইবনু রজব, আহওয়ালুল কুবূর ১/১০৫)। স্মর্তব্য যে, ‘রামাযান মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খোলা হয় এবং জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয়’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৯৫৬) মর্মে বর্ণিত হাদীছটি দ্বারা কেউ কেউ কবরের আযাব মাফ হওয়ার ব্যাখ্যা করে থাকেন, যার প্রমাণে কোন দলীল নেই। বরং হাদীছটির ব্যাখ্যা হ’ল- রামাযান মাসে বান্দার আনুগত্যের পথ অধিক সহজ করে দেওয়া হয় যা জান্নাত লাভের উপায় এবং পাপকর্ম থেকে বান্দার চিন্তা-চেতনাকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়, যা তার জন্য জাহান্নামের দরজা বন্ধ হওয়ার উপায়’ (ইবনু হাজার, ফাৎহুল বারী ৪/১১৪, হা/১৮৯৯-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ; উছায়মীন, ফাতাওয়া ইসলামিয়া ২/১৬২)।
-কাওছার, বড়াইগ্রাম, নাটোর।
উত্তর : জুম‘আর দ্বিতীয় খুৎবায় খতীব ছাহেব হাম্দ ও দরূদ সহ সকল মুসলমানের জন্য দো‘আ করবেন (জুম‘আ ৬২/১১; মুসলিম, মিশকাত হা/১৪০৫, ১৫, ১৬; নাসাঈ হা/১৪১৮, ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২৩৪; মির‘আত ২/৩০৮)। প্রয়োজনে এই সময় কিছু নছীহতও করা যায় (নাসাঈ হা/১৪১৭-১৮, তিরমিযী হা/৫০৬)। এছাড়া মাতৃভাষায় খুৎবা দেওয়ার ন্যায় এসময় মাতৃভাষায় দো‘আও করা যায় (বিস্তারিত দ্রঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ১৯৬-১৯৮ পৃঃ)।
উত্তর : জুম‘আর দ্বিতীয় খুৎবায় খতীব ছাহেব হাম্দ ও দরূদ সহ সকল মুসলমানের জন্য দো‘আ করবেন (জুম‘আ ৬২/১১; মুসলিম, মিশকাত হা/১৪০৫, ১৫, ১৬; নাসাঈ হা/১৪১৮, ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২৩৪; মির‘আত ২/৩০৮)। প্রয়োজনে এই সময় কিছু নছীহতও করা যায় (নাসাঈ হা/১৪১৭-১৮, তিরমিযী হা/৫০৬)। এছাড়া মাতৃভাষায় খুৎবা দেওয়ার ন্যায় এসময় মাতৃভাষায় দো‘আও করা যায় (বিস্তারিত দ্রঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ১৯৬-১৯৮ পৃঃ)।
৩১৩
প্রশ্ন (৩২/৪৩২) : পুরাতন মসজিদ ভেঙ্গে বহুতল ভবন তৈরী করে সেখানে মসজিদ, বইয়ের মার্কেট, গাড়ির গ্যারেজ, গবেষণাগার, মাদ্রাসা ইত্যাদি করতে চাই। এটা শরী‘আত সম্মত হবে কি?-মেহরাব আলম তাকী
মালতিনগর, বগুড়া।
উত্তর : মসজিদের মান অক্ষুণ্ণ রেখে এরূপ করা জায়েয (ফাতাওয়া ইবনে তায়মিয়াহ, ৩১/২১৮ পৃঃ; মুগনী ৬/১৬৮)। স্মর্তব্য যে, উক্ত মসজিদের জমি ওয়াকফকৃত হলে এসব থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ মসজিদের আয় হিসাবেই গণ্য হবে। ওয়াকফকারী সেখান থেকে কোন উপকার ভোগ করতে পারবেন না।
মালতিনগর, বগুড়া।
উত্তর : মসজিদের মান অক্ষুণ্ণ রেখে এরূপ করা জায়েয (ফাতাওয়া ইবনে তায়মিয়াহ, ৩১/২১৮ পৃঃ; মুগনী ৬/১৬৮)। স্মর্তব্য যে, উক্ত মসজিদের জমি ওয়াকফকৃত হলে এসব থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ মসজিদের আয় হিসাবেই গণ্য হবে। ওয়াকফকারী সেখান থেকে কোন উপকার ভোগ করতে পারবেন না।
৩১৪
প্রশ্ন (৩৩/৪৩৩) : সাধ্যমত চেষ্টা করেও কোন চাকুরী না পাওয়ায় ছেলে সূদী ব্যাংকে চাকুরী নিয়েছে। তাকে শর্ত দিয়েছি যে, হালাল রূযির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব এ চাকুরী ছাড়তে হবে। এক্ষণে ছেলের উক্ত উপার্জন ভোগ করা পিতা-মাতার জন্য বৈধ হবে কি?-সুলতান আহমাদ, মুরাদপুর, চট্টগ্রাম।
উত্তর : ছেলের উক্ত উপার্জন হারাম। অতএব তা পিতার জন্য ভক্ষণ করাও হারাম। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের সন্তানগণ তোমাদের উপার্জনের অন্তর্ভুক্ত’ (আবুদাঊদ, নাসাঈ, তিরমিযী, মিশকাত হা/২৭৭০)। এক্ষণে পিতা-মাতা যদি নিঃস্ব, অচল ও নিরুপায় হয়, তখন বাধ্যগত অবস্থায় সন্তানের হারাম উপার্জন থেকে জীবন বাঁচানোর মত খেতে পারবে। আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি বাধ্য হয় এবং বাড়াবাড়ি ও সীমালংঘনকারী না হয়, তার জন্য তা ভক্ষণে কোন পাপ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (বাক্বারাহ ১৭৩)।
উত্তর : ছেলের উক্ত উপার্জন হারাম। অতএব তা পিতার জন্য ভক্ষণ করাও হারাম। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের সন্তানগণ তোমাদের উপার্জনের অন্তর্ভুক্ত’ (আবুদাঊদ, নাসাঈ, তিরমিযী, মিশকাত হা/২৭৭০)। এক্ষণে পিতা-মাতা যদি নিঃস্ব, অচল ও নিরুপায় হয়, তখন বাধ্যগত অবস্থায় সন্তানের হারাম উপার্জন থেকে জীবন বাঁচানোর মত খেতে পারবে। আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি বাধ্য হয় এবং বাড়াবাড়ি ও সীমালংঘনকারী না হয়, তার জন্য তা ভক্ষণে কোন পাপ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (বাক্বারাহ ১৭৩)।
-জামাল, সারিয়াকান্দি, বগুড়া।
উত্তর : ইচ্ছাকৃতভাবে সাহারী না করে ঘুমিয়ে থাকা সুন্নাতের বরখেলাফ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা সাহারী খাও। কেননা তাতে বরকত রয়েছে’ (বুখারী হা/১৯২৩, মুসলিম হা/১০৯৫)। তিনি বলেন, ‘আমাদের ও আহলে কিতাবদের ছিয়ামের পার্থক্য হ’ল সাহারী করা’ (মুসলিম হা/১০৯৬)। অর্থাৎ ইহূদী-নাছারারা সাহারী করে না, আমরা করি। তিনি আরও বলেন, সাহারী বরকতপূর্ণ খাদ্য। অতএব তোমরা তা পরিত্যাগ করো না। বরং একঢোক পানি হলেও তোমরা তা পান করো। কেননা আল্লাহ ও তার ফেরেশতাগণ সাহারী গ্রহণকারীদের উপর রহমত বর্ষণ করেন (আহমাদ, ছহীহুল জামে‘ হা/৩৬৮৩)। তবে বাধ্যগত কারণে সাহারী খেতে না পারলেও ছিয়ামের নিয়ত করলে ছিয়াম আদায় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ (বুখারী, ফাৎহুল বারী ৪/১৭৫ হা/১৯২২-এর আলোচনা দ্রঃ ‘সাহারী ওয়াজিব নয়’ অনুচ্ছেদ; নায়লুল আওত্বার ২/২২২)।
উত্তর : ইচ্ছাকৃতভাবে সাহারী না করে ঘুমিয়ে থাকা সুন্নাতের বরখেলাফ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা সাহারী খাও। কেননা তাতে বরকত রয়েছে’ (বুখারী হা/১৯২৩, মুসলিম হা/১০৯৫)। তিনি বলেন, ‘আমাদের ও আহলে কিতাবদের ছিয়ামের পার্থক্য হ’ল সাহারী করা’ (মুসলিম হা/১০৯৬)। অর্থাৎ ইহূদী-নাছারারা সাহারী করে না, আমরা করি। তিনি আরও বলেন, সাহারী বরকতপূর্ণ খাদ্য। অতএব তোমরা তা পরিত্যাগ করো না। বরং একঢোক পানি হলেও তোমরা তা পান করো। কেননা আল্লাহ ও তার ফেরেশতাগণ সাহারী গ্রহণকারীদের উপর রহমত বর্ষণ করেন (আহমাদ, ছহীহুল জামে‘ হা/৩৬৮৩)। তবে বাধ্যগত কারণে সাহারী খেতে না পারলেও ছিয়ামের নিয়ত করলে ছিয়াম আদায় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ (বুখারী, ফাৎহুল বারী ৪/১৭৫ হা/১৯২২-এর আলোচনা দ্রঃ ‘সাহারী ওয়াজিব নয়’ অনুচ্ছেদ; নায়লুল আওত্বার ২/২২২)।
-ওমর আব্দুল্লাহ, উত্তরা, ঢাকা।
উত্তর : জেনে-শুনে ওয়াহদাতুল উজূদে বিশ্বাসী কোন ইমামের পিছনে ছালাত বৈধ নয়। কেননা এটি সম্পূর্ণ কুফরী আক্বীদা। ওয়াহদাতুল উজূদ বলতে অদ্বৈতবাদী দর্শন বুঝায়, যা বান্দার সত্তাকে আল্লাহ্র সত্তায় বিলীন করে দেয়। এই আক্বীদার অনুসারী ছূফীরা স্রষ্টা ও সৃষ্টিতে কোন পার্থক্য করে না। তাদের দৃষ্টিতে সবই আল্লাহ এবং সব সৃষ্টিই আল্লাহ্র অংশ। তাদের মতে, আল্লাহ নিরাকার। তিনি আরশে নন, বরং সর্বত্র বিরাজমান। অতএব যে ব্যক্তি মূর্তিপূজা করে কিংবা গাছ, পাথর, মানুষ, তারকা ইত্যাদি পূজা করে, সে মূলতঃ আল্লাহকেই পূজা করে। সবকিছুর মধ্যে আল্লাহর নূর বা জ্যোতির প্রকাশ রয়েছে। সুতরাং মানুষের মধ্যে মুমিন ও কাফের-মুশরিক বলে কোন পার্থক্য নেই। তাদের ধারণায় খৃষ্টানরা কাফের এজন্য যে, তারা কেবল ঈসা (আঃ)-কেই প্রভু বলেছে। যদি তারা সকল সৃষ্টিকেই আল্লাহ বলত, তাহ’লে তারা কাফের হ’ত না। বলা বাহুল্য এটাই হ‘ল হিন্দুদের ‘সর্বেশ্বরবাদ’। বর্তমানে এই আক্বীদাই মা‘রেফাতপন্থী ছূফীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচলিত। অতএব জেনে-শুনে এরূপ নষ্ট আক্বীদাসম্পন্ন ইমামের পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে না। তবে না জেনে যদি কেউ তাদের ইক্তেদা করে, তবে তার ছালাত হয়ে যাবে।
উত্তর : জেনে-শুনে ওয়াহদাতুল উজূদে বিশ্বাসী কোন ইমামের পিছনে ছালাত বৈধ নয়। কেননা এটি সম্পূর্ণ কুফরী আক্বীদা। ওয়াহদাতুল উজূদ বলতে অদ্বৈতবাদী দর্শন বুঝায়, যা বান্দার সত্তাকে আল্লাহ্র সত্তায় বিলীন করে দেয়। এই আক্বীদার অনুসারী ছূফীরা স্রষ্টা ও সৃষ্টিতে কোন পার্থক্য করে না। তাদের দৃষ্টিতে সবই আল্লাহ এবং সব সৃষ্টিই আল্লাহ্র অংশ। তাদের মতে, আল্লাহ নিরাকার। তিনি আরশে নন, বরং সর্বত্র বিরাজমান। অতএব যে ব্যক্তি মূর্তিপূজা করে কিংবা গাছ, পাথর, মানুষ, তারকা ইত্যাদি পূজা করে, সে মূলতঃ আল্লাহকেই পূজা করে। সবকিছুর মধ্যে আল্লাহর নূর বা জ্যোতির প্রকাশ রয়েছে। সুতরাং মানুষের মধ্যে মুমিন ও কাফের-মুশরিক বলে কোন পার্থক্য নেই। তাদের ধারণায় খৃষ্টানরা কাফের এজন্য যে, তারা কেবল ঈসা (আঃ)-কেই প্রভু বলেছে। যদি তারা সকল সৃষ্টিকেই আল্লাহ বলত, তাহ’লে তারা কাফের হ’ত না। বলা বাহুল্য এটাই হ‘ল হিন্দুদের ‘সর্বেশ্বরবাদ’। বর্তমানে এই আক্বীদাই মা‘রেফাতপন্থী ছূফীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচলিত। অতএব জেনে-শুনে এরূপ নষ্ট আক্বীদাসম্পন্ন ইমামের পিছনে ছালাত আদায় করা যাবে না। তবে না জেনে যদি কেউ তাদের ইক্তেদা করে, তবে তার ছালাত হয়ে যাবে।
৩১৭
প্রশ্ন (৩৬/৪৩৬) : স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য স্ত্রীর মধ্যে কি কি গুণ থাকা আবশ্যক?-ছালেহা, বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য স্ত্রীর মধ্যে প্রধানতঃ যে গুণগুলি থাকা আবশ্যক তা হ’ল (১) স্বামীর সাথে সর্বদা হাসি মুখে কথা বলা (২) স্বামীর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা। যদি তা শরী‘আতের পরিপন্থী না হয় (৩) নিজের ইয্যত রক্ষা করা (৪) স্বামীর ধন-সম্পদ হেফাযত করা (৫) অল্পে তুষ্ট থাকা। আল্লাহ বলেন, সতী-সাধ্বী স্ত্রীগণ হয় (স্বামীর) অনুগত এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোকচক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে’ (নিসা ৩৪)। রাসূল (ছাঃ) সর্বোত্তম স্ত্রী সম্পর্কে বলেন, উত্তম স্ত্রী সেই, যার দিকে তাকিয়ে স্বামী আনন্দিত হয়। স্বামী কোন আদেশ করলে তা পালন করে এবং নিজের ক্ষেত্রে ও নিজ সম্পদের ক্ষেত্রে স্বামী যা অপসন্দ করেন, সে তা করেনা’ (নাসাঈ, মিশকাত হা/৩২৭২)।
উত্তর : স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য স্ত্রীর মধ্যে প্রধানতঃ যে গুণগুলি থাকা আবশ্যক তা হ’ল (১) স্বামীর সাথে সর্বদা হাসি মুখে কথা বলা (২) স্বামীর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা। যদি তা শরী‘আতের পরিপন্থী না হয় (৩) নিজের ইয্যত রক্ষা করা (৪) স্বামীর ধন-সম্পদ হেফাযত করা (৫) অল্পে তুষ্ট থাকা। আল্লাহ বলেন, সতী-সাধ্বী স্ত্রীগণ হয় (স্বামীর) অনুগত এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোকচক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে’ (নিসা ৩৪)। রাসূল (ছাঃ) সর্বোত্তম স্ত্রী সম্পর্কে বলেন, উত্তম স্ত্রী সেই, যার দিকে তাকিয়ে স্বামী আনন্দিত হয়। স্বামী কোন আদেশ করলে তা পালন করে এবং নিজের ক্ষেত্রে ও নিজ সম্পদের ক্ষেত্রে স্বামী যা অপসন্দ করেন, সে তা করেনা’ (নাসাঈ, মিশকাত হা/৩২৭২)।
-আফসার, উমরপুর, ঘোড়াশাল, মুর্শিদাবাদ।
উত্তর : এ্যালকোহল তথা মাদক মিশ্রিত খাদ্য ও পানীয় হারাম (মায়েদাহ ৫/৯০-৯১)। সেন্টে ব্যবহৃত এ্যালকোহল খাদ্য বা পানীয়ের অন্তর্ভুক্ত নয়। এতে সামান্য পরিমাণ পরিশোধিত এ্যালকোহল ব্যবহার করা হয় কেবল তা সংরক্ষণের জন্য। এছাড়া সেন্ট শরীরে বা মস্তিষ্কে কোন মাদকতা আনে না। অতএব এসব সেন্ট ব্যবহার করা হারাম নয়।
উত্তর : এ্যালকোহল তথা মাদক মিশ্রিত খাদ্য ও পানীয় হারাম (মায়েদাহ ৫/৯০-৯১)। সেন্টে ব্যবহৃত এ্যালকোহল খাদ্য বা পানীয়ের অন্তর্ভুক্ত নয়। এতে সামান্য পরিমাণ পরিশোধিত এ্যালকোহল ব্যবহার করা হয় কেবল তা সংরক্ষণের জন্য। এছাড়া সেন্ট শরীরে বা মস্তিষ্কে কোন মাদকতা আনে না। অতএব এসব সেন্ট ব্যবহার করা হারাম নয়।
৩১৯
প্রশ্ন (৩৮/৪৩৮) : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘চল্লিশটি (উত্তম) স্বভাব রয়েছে। তন্মধ্যে সবচেয়ে উন্নত স্বভাব হ’ল দুধেল প্রাণী কাউকে দান করা। যে কোন আমলকারী ঐ স্বভাবগুলির কোনটির উপর ছওয়াব লাভের উদ্দেশ্যে ও তার জন্য প্রতিশ্রুত প্রতিদানের বিষয়কে সত্য জেনে আমল করবে তাকে অবশ্যই মহান আল্লাহ জান্নাতে দাখিল করবেন’ (বুখারী হা/২৬৩১)। উক্ত হাদীছে বর্ণিত চল্লিশটি স্বভাব কি কি?-ফেরদৌস মন্ডল, চিলমারী, কুড়িগ্রাম।
উত্তর : প্রশ্নে উল্লেখিত চল্লিশটি উত্তম স্বভাব সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অবগত ছিলেন। কিন্তু তিনি সেগুলির বর্ণনা দেননি। কারণ তাতে উম্মতে মুহাম্মাদী কেবল ঐগুলিই আমল করবে এবং অন্যান্য উত্তম স্বভাবগুলির প্রতি উদাসীন হবে। তবে উক্ত চল্লিশটি উত্তম স্বভাবের মধ্য থেকে কতিপয় উত্তম স্বভাব বিভিন্ন ছহীহ হাদীছ থেকে ইবনু বাত্ত্বাল উল্লেখ করেছেন, যেগুলি নিম্নরূপ :
(১) বকরী দান করা (২) সালামের জবাব দেওয়া (৩) হাঁচির জবাব দেওয়া (৪) রাস্তা হ’তে কষ্টদায়ক বস্ত্ত সরিয়ে দেওয়া (৫) শিল্প প্রস্ত্ততকারীকে সহায়তা করা (৬) অজ্ঞকে শিক্ষা দান করা (৭) জুতার ফিতা দান করা (৮) মুসলিম ভাইয়ের কোন দোষ গোপন করা (৯) মানহানি থেকে মুসলিম ভাইকে রক্ষা করা (১০) তাকে আনন্দ দান করা (১১) বৈঠকে কেউ আসলে তার জন্য জায়গা করে দেওয়া (১২) উত্তম কাজের পথ প্রদর্শন করা (১৩) উত্তম কথা বলা (১৪) জনকল্যাণে গাছ লাগানো (১৫) চাষাবাদ করা (১৬) অন্যের কল্যাণে সুফারিশ করা (১৭) রোগীকে দেখতে যাওয়া (১৮) মুছাফাহা করা (১৯) আল্লাহ্র জন্যই কাউকে ভালোবাসা (২০) আল্লাহ্র জন্যই কাউকে ঘৃণা করা (২১) আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে পরস্পরে বৈঠক করা (২২) ও সাক্ষাৎ করা (২৩) মানুষের প্রতি শুভ কামনা করা (২৪) অপরের প্রতি অনুগ্রহ করা প্রভৃতি (ফাৎহুল বারী, ৫/৩০৭, হা/২৬৩১-এর আলোচনা ‘দানের মর্যাদা’ অনুচ্ছেদ)।
উত্তর : প্রশ্নে উল্লেখিত চল্লিশটি উত্তম স্বভাব সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অবগত ছিলেন। কিন্তু তিনি সেগুলির বর্ণনা দেননি। কারণ তাতে উম্মতে মুহাম্মাদী কেবল ঐগুলিই আমল করবে এবং অন্যান্য উত্তম স্বভাবগুলির প্রতি উদাসীন হবে। তবে উক্ত চল্লিশটি উত্তম স্বভাবের মধ্য থেকে কতিপয় উত্তম স্বভাব বিভিন্ন ছহীহ হাদীছ থেকে ইবনু বাত্ত্বাল উল্লেখ করেছেন, যেগুলি নিম্নরূপ :
(১) বকরী দান করা (২) সালামের জবাব দেওয়া (৩) হাঁচির জবাব দেওয়া (৪) রাস্তা হ’তে কষ্টদায়ক বস্ত্ত সরিয়ে দেওয়া (৫) শিল্প প্রস্ত্ততকারীকে সহায়তা করা (৬) অজ্ঞকে শিক্ষা দান করা (৭) জুতার ফিতা দান করা (৮) মুসলিম ভাইয়ের কোন দোষ গোপন করা (৯) মানহানি থেকে মুসলিম ভাইকে রক্ষা করা (১০) তাকে আনন্দ দান করা (১১) বৈঠকে কেউ আসলে তার জন্য জায়গা করে দেওয়া (১২) উত্তম কাজের পথ প্রদর্শন করা (১৩) উত্তম কথা বলা (১৪) জনকল্যাণে গাছ লাগানো (১৫) চাষাবাদ করা (১৬) অন্যের কল্যাণে সুফারিশ করা (১৭) রোগীকে দেখতে যাওয়া (১৮) মুছাফাহা করা (১৯) আল্লাহ্র জন্যই কাউকে ভালোবাসা (২০) আল্লাহ্র জন্যই কাউকে ঘৃণা করা (২১) আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে পরস্পরে বৈঠক করা (২২) ও সাক্ষাৎ করা (২৩) মানুষের প্রতি শুভ কামনা করা (২৪) অপরের প্রতি অনুগ্রহ করা প্রভৃতি (ফাৎহুল বারী, ৫/৩০৭, হা/২৬৩১-এর আলোচনা ‘দানের মর্যাদা’ অনুচ্ছেদ)।
৩২০
প্রশ্ন (৩৯/৪৩৯) : কুরআন হেফয করার পর মুখস্থ না রাখতে পারলে গোনাহগার হবে কি? ‘কুরআন ভুলে গেলে ক্বিয়ামতের দিন তাদের মুখের চামড়া থাকবে না’ কথাটির সত্যতা আছে কি?-শরীফ হোসাইন, হারাগাছ, রংপুর।
উত্তর : কুরআন ভুলে যাওয়া বড়ই মন্দ কাজ। বিশেষতঃ অলসতা বশতঃ এরূপ হলে তা আরো নিন্দনীয়। আবুল ‘আলিয়া (রহঃ) থেকে মওকূফ সূত্রে বর্ণিত আছারে এসেছে, তিনি বলেন, আমরা কোন ব্যক্তির কুরআন শিক্ষার পর তা থেকে চোখ ফিরিয়ে রাখার কারণে ভুলে যাওয়াকে বড় পাপ হিসাবে গণ্য করতাম’ (সনদ জাইয়িদ)। ইবনু সীরীন বলেন, কেউ কুরআন ভুলে গেলে লোকেরা তাকে কঠিন ভাষায় ভৎর্সনা করত’ (ইবনু হাজার, ফাৎহুল বারী হা/৫০৩৮-এর আলোচনা, সনদ ছহীহ)। তবে চেষ্টা সত্ত্বেও যদি ভুলে যায়, তবে সে গুনাহগার হবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা কুরআনের প্রতি যথাযথভাবে যত্নবান হও। আল্লাহ্র কসম! উট যেমন বাঁধন ছিঁড়ে চলে যায়, কুরআন তার চেয়ে বেশী দ্রুত চলে যায়’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২১৮৭)। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি কষ্টকরভাবে কুরআন পাঠ করে, সে দ্বিগুণ ছওয়াব পায়’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২১১২)। তিনি বলেন, ‘তোমাদের কেউ যেন এরূপ না বলে যে, আমি কুরআনের অমুক অমুক আয়াত ভুলে গেছি। বরং সে যেন বলে, আমাকে ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২১৮৮)।
‘ক্বিয়ামতের দিন তার মুখের চামড়া থাকবে না’ মর্মে কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না। তবে যে ব্যক্তি কুরআন শিক্ষা করে ভুলে যাবে সে ক্বিয়ামতের দিন অঙ্গহানী অবস্থায় আল্লাহ্র সাথে সাক্ষাৎ করবে মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (আবুদাঊদ হা/১৪৭৪; মিশকাত হা/২২০০)। এছাড়া ‘কুরআন বা কুরআনের কোন আয়াত ভুলে যাওয়া সবচেয়ে বড় গোনাহ‘ মর্মে বর্ণিত হাদীছটিও যঈফ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৭২০, যঈফুল জামে‘ হা/৩৭০০)।
উত্তর : কুরআন ভুলে যাওয়া বড়ই মন্দ কাজ। বিশেষতঃ অলসতা বশতঃ এরূপ হলে তা আরো নিন্দনীয়। আবুল ‘আলিয়া (রহঃ) থেকে মওকূফ সূত্রে বর্ণিত আছারে এসেছে, তিনি বলেন, আমরা কোন ব্যক্তির কুরআন শিক্ষার পর তা থেকে চোখ ফিরিয়ে রাখার কারণে ভুলে যাওয়াকে বড় পাপ হিসাবে গণ্য করতাম’ (সনদ জাইয়িদ)। ইবনু সীরীন বলেন, কেউ কুরআন ভুলে গেলে লোকেরা তাকে কঠিন ভাষায় ভৎর্সনা করত’ (ইবনু হাজার, ফাৎহুল বারী হা/৫০৩৮-এর আলোচনা, সনদ ছহীহ)। তবে চেষ্টা সত্ত্বেও যদি ভুলে যায়, তবে সে গুনাহগার হবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা কুরআনের প্রতি যথাযথভাবে যত্নবান হও। আল্লাহ্র কসম! উট যেমন বাঁধন ছিঁড়ে চলে যায়, কুরআন তার চেয়ে বেশী দ্রুত চলে যায়’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২১৮৭)। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি কষ্টকরভাবে কুরআন পাঠ করে, সে দ্বিগুণ ছওয়াব পায়’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২১১২)। তিনি বলেন, ‘তোমাদের কেউ যেন এরূপ না বলে যে, আমি কুরআনের অমুক অমুক আয়াত ভুলে গেছি। বরং সে যেন বলে, আমাকে ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২১৮৮)।
‘ক্বিয়ামতের দিন তার মুখের চামড়া থাকবে না’ মর্মে কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না। তবে যে ব্যক্তি কুরআন শিক্ষা করে ভুলে যাবে সে ক্বিয়ামতের দিন অঙ্গহানী অবস্থায় আল্লাহ্র সাথে সাক্ষাৎ করবে মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (আবুদাঊদ হা/১৪৭৪; মিশকাত হা/২২০০)। এছাড়া ‘কুরআন বা কুরআনের কোন আয়াত ভুলে যাওয়া সবচেয়ে বড় গোনাহ‘ মর্মে বর্ণিত হাদীছটিও যঈফ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৭২০, যঈফুল জামে‘ হা/৩৭০০)।
-আব্দুল্লাহ আল-মামূন, ছোটবনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : আয়াতের জওয়াব নীরবে দিতে হবে। কারণ ছালাতের শুরু হ’তে শেষ পর্যন্ত শুধুমাত্র ‘আমীন’ সরবে বলার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় (আবুদাঊদ, তিরমিযী, দারাকুৎনী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/৮৪৫)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘মুছল্লী তার প্রতিপালকের সাথে চুপে চুপে কথা বলে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৭১০)।
- See more at: http://at-tahreek.com/august2015/question.html#sthash.1uTh8nB1.dpuf
উত্তর : আয়াতের জওয়াব নীরবে দিতে হবে। কারণ ছালাতের শুরু হ’তে শেষ পর্যন্ত শুধুমাত্র ‘আমীন’ সরবে বলার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় (আবুদাঊদ, তিরমিযী, দারাকুৎনী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/৮৪৫)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘মুছল্লী তার প্রতিপালকের সাথে চুপে চুপে কথা বলে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৭১০)।
- See more at: http://at-tahreek.com/august2015/question.html#sthash.1uTh8nB1.dpuf
৩২২
সেপ্টেম্বর
প্রশ্ন (১/৪৪১) : কুরআনে আল্লাহ বলেছেন, আমি কিছু মানুষকে জান্নাতের জন্য এবং কিছু মানুষকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি। এক্ষণে মানুষের কিছু করণীয় আছে কি?-নূরুল ইসলাম, নওদাপাড়া, রাজশাহী।
উত্তর : এটি তাক্বদীরের বিষয়। যার জ্ঞান কেবল আল্লাহর কাছেই রয়েছে। অতএব মানুষের কর্তব্য হ’ল আল্লাহকে খুশী করার উদ্দেশ্যে তাঁর বিধান মেনে সাধ্যমত সৎকর্ম করে যাওয়া। কারণ কোন মানুষই জানে না তার ভাগ্যে কি লেখা রয়েছে। আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত, একদা রাসূল (ছাঃ) একটা ছড়ি দিয়ে মাটির উপর দাগ কাটছিলেন। তখন তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন কোন লোক নেই, যার ঠিকানা জাহান্নামে বা জান্নাতে লেখা হয়নি। একথা শুনে একজন বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি তাহলে সকল আমল ত্যাগ করে আমাদের লিখিত ভাগ্যের উপর ভরসা করব না? তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, তোমরা সৎকর্ম করে যাও। কেননা যাকে যেজন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার পক্ষে সে কাজ সহজসাধ্য হবে। যারা সৌভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত, তাদের জন্য সেরূপ আমল এবং যারা দুর্ভাগাদের অন্তর্ভুক্ত তাদের জন্য সেরূপ আমল সহজ করে দেওয়া হয়েছে। অতঃপর তিনি কুরআন থেকে পাঠ করলেন, ‘অতঃপর যে ব্যক্তি দান করে ও আল্লাহভীরু হয় এবং উত্তম বিষয়কে (তাওহীদকে) সত্য বলে বিশ্বাস করে, অচিরেই আমরা তাকে সরল পথের জন্য সহজ করে দেব। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি কৃপণতা করে ও বেপরোয়া হয় এবং উত্তম বিষয়কে মিথ্যা মনে করে, অচিরেই আমরা তাকে কঠিন পথের জন্য সহজ করে দেব (লায়েল ৯২/৫-৭, বুখারী হা/৪৯৪৯)।
উত্তর : এটি তাক্বদীরের বিষয়। যার জ্ঞান কেবল আল্লাহর কাছেই রয়েছে। অতএব মানুষের কর্তব্য হ’ল আল্লাহকে খুশী করার উদ্দেশ্যে তাঁর বিধান মেনে সাধ্যমত সৎকর্ম করে যাওয়া। কারণ কোন মানুষই জানে না তার ভাগ্যে কি লেখা রয়েছে। আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত, একদা রাসূল (ছাঃ) একটা ছড়ি দিয়ে মাটির উপর দাগ কাটছিলেন। তখন তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন কোন লোক নেই, যার ঠিকানা জাহান্নামে বা জান্নাতে লেখা হয়নি। একথা শুনে একজন বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি তাহলে সকল আমল ত্যাগ করে আমাদের লিখিত ভাগ্যের উপর ভরসা করব না? তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, তোমরা সৎকর্ম করে যাও। কেননা যাকে যেজন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার পক্ষে সে কাজ সহজসাধ্য হবে। যারা সৌভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত, তাদের জন্য সেরূপ আমল এবং যারা দুর্ভাগাদের অন্তর্ভুক্ত তাদের জন্য সেরূপ আমল সহজ করে দেওয়া হয়েছে। অতঃপর তিনি কুরআন থেকে পাঠ করলেন, ‘অতঃপর যে ব্যক্তি দান করে ও আল্লাহভীরু হয় এবং উত্তম বিষয়কে (তাওহীদকে) সত্য বলে বিশ্বাস করে, অচিরেই আমরা তাকে সরল পথের জন্য সহজ করে দেব। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি কৃপণতা করে ও বেপরোয়া হয় এবং উত্তম বিষয়কে মিথ্যা মনে করে, অচিরেই আমরা তাকে কঠিন পথের জন্য সহজ করে দেব (লায়েল ৯২/৫-৭, বুখারী হা/৪৯৪৯)।
৩২৩
প্রশ্ন (২/৪৪২) : আমার পিতা-মাতা কবরপূজারী। তাদেরকে অনেক বুঝিয়েও ব্যর্থ হয়েছি। তারা ছালাত-ছিয়াম, আল্লাহ ও রাসূলকে অস্বীকার করে। পিতা ব্যভিচারে জড়িত। মা জেনেও তাতে বাধা দেয় না। এখন আমার করণীয় কি?-নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ফরিদপুর।
উত্তর : পিতা-মাতার এরূপ কর্ম কুফরীর পর্যায়ভুক্ত। এজন্য পিতা-মাতাকে সাধ্যমত নছীহত করে যেতে হবে এবং তাদের হেদায়াতের জন্য আল্লাহর নিকট আন্তরিকভাবে দো‘আ করতে হবে। তাদের সাথে মন্দ আচরণ করা যাবে না। কেননা সন্তানকে পিতা-মাতা শিরক করার জন্য চাপ দিলেও আল্লাহ তা‘আলা তাদের সাথে সদাচরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন (লোকমান ৩১/১৫)। আর যেকোন মূল্যে নিজেকে যাবতীয় শিরক ও পাপাচার থেকে দূরে রাখতে হবে। আল্লাহ বলেন, তোমরা প্রকাশ্য ও গোপন কোন প্রকার অশ্লীল কাজের নিকটবর্তী হয়োনা’ (আন‘আম ৬/১৫১)।
উত্তর : পিতা-মাতার এরূপ কর্ম কুফরীর পর্যায়ভুক্ত। এজন্য পিতা-মাতাকে সাধ্যমত নছীহত করে যেতে হবে এবং তাদের হেদায়াতের জন্য আল্লাহর নিকট আন্তরিকভাবে দো‘আ করতে হবে। তাদের সাথে মন্দ আচরণ করা যাবে না। কেননা সন্তানকে পিতা-মাতা শিরক করার জন্য চাপ দিলেও আল্লাহ তা‘আলা তাদের সাথে সদাচরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন (লোকমান ৩১/১৫)। আর যেকোন মূল্যে নিজেকে যাবতীয় শিরক ও পাপাচার থেকে দূরে রাখতে হবে। আল্লাহ বলেন, তোমরা প্রকাশ্য ও গোপন কোন প্রকার অশ্লীল কাজের নিকটবর্তী হয়োনা’ (আন‘আম ৬/১৫১)।
৩২৪
প্রশ্ন (৩/৪৪৩) : চার রাক‘আত বিশিষ্ট ছালাত আদায়ের ক্ষেত্রে প্রথম দুই রাক‘আত না পেলে পরে তা আদায়ের সময় সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলাতে হবে কি?-আবুবকর, রিয়াদ, সঊদী আরব।
উত্তর : মিলাতে হবে না। এ সময় তিনি ইমামের অনুসরণে কেবল সূরা ফাতিহা পড়বেন। অতঃপর ইমামের সালাম শেষে মাসবূক হিসাবে তার শেষ দু‘রাক‘আতে অন্য সময়ের ন্যায় কেবল সূরা ফাতিহা পাঠ করবেন। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ইমাম নিযুক্ত হন তাকে অনুসরণের জন্য’ (বুখারী হা/৩৭৮)। তিনি বলেন, ‘ছালাতের যে অংশটুকু তোমরা পাও সেটুকু আদায় কর এবং যেটুকু বাদ পড়ে, সেটুকু পূর্ণ কর’ (বুখারী হা/৬৩৫, মিশকাত হা/৬৮৬)। এখানে ইমামের শেষাংশ হ’ল মাসবূকের প্রথমাংশ। অতঃপর মাসবূক তার বাকী শেষ দু‘রাক‘আত আদায় করবেন। এর ফলে মাসবূকের মোট চার রাক‘আতেই সূরা ফাতিহা পাঠ করতে হয়। তাছাড়া ছালাত প্রথম দিক থেকে শেষে এসে সংক্ষেপ করতে হয় (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২৮০)।
উত্তর : মিলাতে হবে না। এ সময় তিনি ইমামের অনুসরণে কেবল সূরা ফাতিহা পড়বেন। অতঃপর ইমামের সালাম শেষে মাসবূক হিসাবে তার শেষ দু‘রাক‘আতে অন্য সময়ের ন্যায় কেবল সূরা ফাতিহা পাঠ করবেন। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ইমাম নিযুক্ত হন তাকে অনুসরণের জন্য’ (বুখারী হা/৩৭৮)। তিনি বলেন, ‘ছালাতের যে অংশটুকু তোমরা পাও সেটুকু আদায় কর এবং যেটুকু বাদ পড়ে, সেটুকু পূর্ণ কর’ (বুখারী হা/৬৩৫, মিশকাত হা/৬৮৬)। এখানে ইমামের শেষাংশ হ’ল মাসবূকের প্রথমাংশ। অতঃপর মাসবূক তার বাকী শেষ দু‘রাক‘আত আদায় করবেন। এর ফলে মাসবূকের মোট চার রাক‘আতেই সূরা ফাতিহা পাঠ করতে হয়। তাছাড়া ছালাত প্রথম দিক থেকে শেষে এসে সংক্ষেপ করতে হয় (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২৮০)।
-আব্দুল ওয়াহহাব
সিলেট সেনানিবাস, সিলেট।
উত্তর : কেবল ডান হাতের আঙ্গুলের মাধ্যমে তাসবীহ গণনা করতে হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ডান হাতে তাসবীহ গণনা করতেন (আবুদাঊদ হা/১৫০২; সিলসিলা যঈফাহ হা/৮৩-এর আলোচনা)। তিনি ডান দিক থেকে কাজ করা পসন্দ করতেন (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৪০০)। এছাড়া গণনা কড়ে আঙ্গুল দিয়ে শুরু করতে হবে, বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে নয়। কেননা ডান হাতের ডান পাশ কড়ে আঙ্গুল দিয়েই শুরু হয়েছে এবং এ আঙ্গুল দিয়ে গণনা শুরু করাটাই সহজ ও স্বভাবগত (বিস্তারিত দ্রঃ ছালাতুর রাসূল পৃঃ ১৫০)। তবে ডান হাতে গণনা করতে অক্ষম হ’লে বাম হাতে গণনা করতে পারে।
সিলেট সেনানিবাস, সিলেট।
উত্তর : কেবল ডান হাতের আঙ্গুলের মাধ্যমে তাসবীহ গণনা করতে হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ডান হাতে তাসবীহ গণনা করতেন (আবুদাঊদ হা/১৫০২; সিলসিলা যঈফাহ হা/৮৩-এর আলোচনা)। তিনি ডান দিক থেকে কাজ করা পসন্দ করতেন (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৪০০)। এছাড়া গণনা কড়ে আঙ্গুল দিয়ে শুরু করতে হবে, বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে নয়। কেননা ডান হাতের ডান পাশ কড়ে আঙ্গুল দিয়েই শুরু হয়েছে এবং এ আঙ্গুল দিয়ে গণনা শুরু করাটাই সহজ ও স্বভাবগত (বিস্তারিত দ্রঃ ছালাতুর রাসূল পৃঃ ১৫০)। তবে ডান হাতে গণনা করতে অক্ষম হ’লে বাম হাতে গণনা করতে পারে।
-হাবীবুল্লাহ, শার্শা, যশোর।
উত্তর : নারী হৌক বা পুরুষ হৌক ছালাত পরিত্যাগ করা কুফরী পর্যায়ভুক্ত মহাপাপ। তাই শাসনের জন্য এসব লোকদের রান্না না খাওয়াই উত্তম। তবে এটি হারাম নয়। কেননা রাসূল (ছাঃ) ইহূদী ও মুশরিক মহিলার বাড়ীতে খেয়েছেন (বুখারী হা/৩৪৪, মিশকাত হা/৫৯৩১)।
উত্তর : নারী হৌক বা পুরুষ হৌক ছালাত পরিত্যাগ করা কুফরী পর্যায়ভুক্ত মহাপাপ। তাই শাসনের জন্য এসব লোকদের রান্না না খাওয়াই উত্তম। তবে এটি হারাম নয়। কেননা রাসূল (ছাঃ) ইহূদী ও মুশরিক মহিলার বাড়ীতে খেয়েছেন (বুখারী হা/৩৪৪, মিশকাত হা/৫৯৩১)।
-আনীসুল হক, শেরপুর।
উত্তর : আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা ধৈর্য ও ছালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর’ (বাক্বারাহ ৪৫)। এর অর্থ হ’ল- আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত তাক্বদীরের উপর ভরসা করে যেকোন বিপদ ধৈর্যের সাথে মোকাবিলা করা। কেননা বিপদে ধৈর্যধারণের মাধ্যমেই ভবিষ্যত সফলতার পথ উন্মোচিত হয়। দ্বিতীয়তঃ ছালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করা। কেননা রাসূল (ছাঃ) যখন কোন বিষয়ে দুশ্চিন্তায় পড়তেন, তখন তিনি নফল ছালাতে দন্ডায়মান হ’তেন (আবুদাঊদ হা/১৩১৯, মিশকাত হা/১৩২৫, সনদ হাসান)। বদর যুদ্ধের দিন তিনি ছালাত ও ক্রন্দনের মাধ্যমে সারা রাত অতিবাহিত করেন (আহমাদ হা/১০২৩, ইবনু হিববান হা/২২৫৭, সনদ ছহীহ)। মিসর গমনকালে ইবরাহীম (আঃ)-এর স্ত্রী সারা সেদেশের বাদশাহ কর্তৃক অপহৃত হলে ইবরাহীম (আঃ) তাকে আল্লাহর যিম্মায় ছেড়ে দিয়ে ছালাতের মাধ্যমে স্ত্রীর ইয্যতের হেফাযতের জন্য আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা করেছিলেন। তাঁর স্ত্রী সারাও ছালাতে রত হয়ে আল্লাহর নিকটে আশ্রয় চেয়েছিলেন। তাতে ঐ লম্পটের হাত-পা অবশ হয়ে গিয়েছিল’ (বুখারী হা/২২১৭; ‘ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ২৬২ পৃঃ)। মূলতঃ ছালাতের মাধ্যমেই বান্দা আল্লাহর সর্বাধিক নৈকট্য লাভ করে। সেকারণ বিপদ মুহূর্তে বা কোন সফলতা লাভের আশায় ধৈর্য ও ছালাতের মাধ্যমেই আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে।
উত্তর : আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা ধৈর্য ও ছালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর’ (বাক্বারাহ ৪৫)। এর অর্থ হ’ল- আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত তাক্বদীরের উপর ভরসা করে যেকোন বিপদ ধৈর্যের সাথে মোকাবিলা করা। কেননা বিপদে ধৈর্যধারণের মাধ্যমেই ভবিষ্যত সফলতার পথ উন্মোচিত হয়। দ্বিতীয়তঃ ছালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করা। কেননা রাসূল (ছাঃ) যখন কোন বিষয়ে দুশ্চিন্তায় পড়তেন, তখন তিনি নফল ছালাতে দন্ডায়মান হ’তেন (আবুদাঊদ হা/১৩১৯, মিশকাত হা/১৩২৫, সনদ হাসান)। বদর যুদ্ধের দিন তিনি ছালাত ও ক্রন্দনের মাধ্যমে সারা রাত অতিবাহিত করেন (আহমাদ হা/১০২৩, ইবনু হিববান হা/২২৫৭, সনদ ছহীহ)। মিসর গমনকালে ইবরাহীম (আঃ)-এর স্ত্রী সারা সেদেশের বাদশাহ কর্তৃক অপহৃত হলে ইবরাহীম (আঃ) তাকে আল্লাহর যিম্মায় ছেড়ে দিয়ে ছালাতের মাধ্যমে স্ত্রীর ইয্যতের হেফাযতের জন্য আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা করেছিলেন। তাঁর স্ত্রী সারাও ছালাতে রত হয়ে আল্লাহর নিকটে আশ্রয় চেয়েছিলেন। তাতে ঐ লম্পটের হাত-পা অবশ হয়ে গিয়েছিল’ (বুখারী হা/২২১৭; ‘ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ২৬২ পৃঃ)। মূলতঃ ছালাতের মাধ্যমেই বান্দা আল্লাহর সর্বাধিক নৈকট্য লাভ করে। সেকারণ বিপদ মুহূর্তে বা কোন সফলতা লাভের আশায় ধৈর্য ও ছালাতের মাধ্যমেই আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে।
-খোরশেদ আলম, নলডাঙ্গা, নাটোর।
উত্তর : দোকানে ছবি টাঙ্গানো না থাকলে, ছবির সম্মান প্রদর্শন না করা হ’লে, মালের সাথে যুক্ত ছবি দোকানে প্রদর্শন করা না হ’লে, মালের সাথে ছবি বিক্রি উদ্দেশ্য না হ’লে ছবিযুক্ত মাল বিক্রি করা যাবে। আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি একটি পর্দা টাঙ্গিয়ে ছিলেন, যাতে ছবি ছিল। নবী করীম (ছাঃ) বাড়ীতে প্রবেশ করে তা টেনে ফেলে দেন। তিনি বলেন, অতঃপর আমি তা কেটে দু’টি বালিশ তৈরী করি। নবী (ছাঃ) তাতে হেলান দিয়ে বসতেন (বুখারী, নায়ল ২/১০৩ পৃঃ; বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৪৯৪)। অতএব সম্ভবপর ছবিযুক্ত পণ্য আড়াল করে বা উল্টা করে রেখে ব্যবসা করতে হবে। অর্থাৎ হীনকর কাজে ছবি ব্যবহার করা যাবে। তবে অশ্লীল ছবিযুক্ত পণ্যের ক্রয়-বিক্রয় থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকতে হবে। কেননা এগুলির মাধ্যমে দোকানী ও ক্রেতা উভয়েরই চোখের যেনায় পতিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রকাশ থাকে যে, ছবি ও মূর্তি প্রদর্শন করে ব্যবসা করা হারাম, যেমনটি আজকাল বহু দোকানে দেখা যায়। তাছাড়া এমন বস্ত্ত ক্রয়-বিক্রয় হারাম, যার লাভ-লোকসান ছবির উপর নির্ভরশীল। যেমন বিভিন্ন নায়ক-নায়িকা ও খেলোয়াড়ের ছবি ব্যবহার করা।
উত্তর : দোকানে ছবি টাঙ্গানো না থাকলে, ছবির সম্মান প্রদর্শন না করা হ’লে, মালের সাথে যুক্ত ছবি দোকানে প্রদর্শন করা না হ’লে, মালের সাথে ছবি বিক্রি উদ্দেশ্য না হ’লে ছবিযুক্ত মাল বিক্রি করা যাবে। আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি একটি পর্দা টাঙ্গিয়ে ছিলেন, যাতে ছবি ছিল। নবী করীম (ছাঃ) বাড়ীতে প্রবেশ করে তা টেনে ফেলে দেন। তিনি বলেন, অতঃপর আমি তা কেটে দু’টি বালিশ তৈরী করি। নবী (ছাঃ) তাতে হেলান দিয়ে বসতেন (বুখারী, নায়ল ২/১০৩ পৃঃ; বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৪৯৪)। অতএব সম্ভবপর ছবিযুক্ত পণ্য আড়াল করে বা উল্টা করে রেখে ব্যবসা করতে হবে। অর্থাৎ হীনকর কাজে ছবি ব্যবহার করা যাবে। তবে অশ্লীল ছবিযুক্ত পণ্যের ক্রয়-বিক্রয় থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকতে হবে। কেননা এগুলির মাধ্যমে দোকানী ও ক্রেতা উভয়েরই চোখের যেনায় পতিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রকাশ থাকে যে, ছবি ও মূর্তি প্রদর্শন করে ব্যবসা করা হারাম, যেমনটি আজকাল বহু দোকানে দেখা যায়। তাছাড়া এমন বস্ত্ত ক্রয়-বিক্রয় হারাম, যার লাভ-লোকসান ছবির উপর নির্ভরশীল। যেমন বিভিন্ন নায়ক-নায়িকা ও খেলোয়াড়ের ছবি ব্যবহার করা।
৩২৯
প্রশ্ন (৮/৪৪৮) : ছালাতে তাশাহহুদ থেকে সালাম ফিরানো পর্যন্ত আঙুল কি একবার উঠালেই চলবে না অনবরত নাড়াতে হবে?-নওশাদ আলী, ভেলকুপাড়া, পঞ্চগড়।
উত্তর : নাড়ানোই সুন্নাত। তবে তা যেন দ্রুত ও দৃষ্টিকটূ না হয়। ওয়ায়েল বিন হুজ্র (রাঃ) হ’তে বর্ণিত হাদীছে তিনি বলেন, فَحَلَّقَ حَلْقَةً ثُمَّ رَفَعَ أُصْبُعَهُ فَرَأَيْتُهُ يُحَرِّكُهَا يَدْعُو بِهَا অর্থাৎ ‘নবী করীম (ছাঃ) হাতের আঙ্গুলসমূহকে গুটিয়ে মুঠ বাঁধলেন। অতঃপর তিনি আঙ্গুল উঁচু করলেন। আমি তাঁকে দেখলাম যে, তিনি সেই আঙ্গুলটি নাড়াচ্ছেন ও তার দ্বারা দো‘আ করছেন’ (আবুদাঊদ হা/৯৮৯, দারেমী হা/১৩৫৭, মিশকাত ‘তাশাহ্হুদ’ অধ্যায় হা/৯১১)। উল্লেখ্য যে, একবার ওঠাতে হবে মর্মে কোন জাল-যঈফ হাদীছও নেই (মিশকাত হা/৯০৬ নং হাদীছের টীকা দ্রঃ)।
উত্তর : নাড়ানোই সুন্নাত। তবে তা যেন দ্রুত ও দৃষ্টিকটূ না হয়। ওয়ায়েল বিন হুজ্র (রাঃ) হ’তে বর্ণিত হাদীছে তিনি বলেন, فَحَلَّقَ حَلْقَةً ثُمَّ رَفَعَ أُصْبُعَهُ فَرَأَيْتُهُ يُحَرِّكُهَا يَدْعُو بِهَا অর্থাৎ ‘নবী করীম (ছাঃ) হাতের আঙ্গুলসমূহকে গুটিয়ে মুঠ বাঁধলেন। অতঃপর তিনি আঙ্গুল উঁচু করলেন। আমি তাঁকে দেখলাম যে, তিনি সেই আঙ্গুলটি নাড়াচ্ছেন ও তার দ্বারা দো‘আ করছেন’ (আবুদাঊদ হা/৯৮৯, দারেমী হা/১৩৫৭, মিশকাত ‘তাশাহ্হুদ’ অধ্যায় হা/৯১১)। উল্লেখ্য যে, একবার ওঠাতে হবে মর্মে কোন জাল-যঈফ হাদীছও নেই (মিশকাত হা/৯০৬ নং হাদীছের টীকা দ্রঃ)।
৩৩০
প্রশ্ন (৯/৪৪৯) : শুক্রবার দিনে বা রাতে কেউ মৃত্যুবরণ করলে ক্বিয়ামত অবধি তার কবরের আযাব মাফ হয়ে যাবে মর্মে বক্তব্যটির সত্যতা আছে কি?-রাফাত মামূন, হালিয়াকান্দি, আসাম, ভারত।
উত্তর : এ ব্যাপারে বর্ণিত হাদীছটি হ’ল, ‘কোন মুসলমান যদি জুম‘আর দিনে বা রাতে মারা যায়, আল্লাহ তাকে কবরের ফিৎনা হতে রক্ষা করেন’ (আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/১৩৬৭; ছহীহুল জামে‘ হা/৫৭৭৩)। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা এ দিনের বরকতে মুমিন ব্যক্তিদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা তাকে কবরের ফিৎনা তথা আযাব থেকে রক্ষা করবেন ইনশাআল্লাহ (মির‘আতুল মাফাতীহ ৪/৪৪০)। উক্ত হাদীছটি শায়খ নাছিরুদ্দীন আলবানী বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হওয়ার কারণে ‘হাসান’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। তবে শায়খ শু‘আইব আরনাঊত্ব ও হুসাইন সালীম আসাদ বলেন, হাদীছটির শাহেদ থাকলেও সেগুলো এমন শক্তিশালী নয় যা হাদীছকে ছহীহ বা হাসানের পর্যায়ে উন্নীত করবে। অতএব হাদীছটি যঈফ (তাহকীক মুসনাদে আহমাদ হা/৬৫৮২; তাহকীক মুসনাদে আবু ইয়া‘লা হা/৪১১৩)। ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) এ বিষয়ে বর্ণিত হাদীছ সমূহকে যঈফ বলেছেন (ফাৎহুল বারী ৩/২৫৩)। এছাড়া কোন ছাহাবী শুক্রবারে মৃত্যুর জন্য আকাংখা প্রকাশ করেছেন বলেও কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। অথচ আবুবকর (রাঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর দিন তথা সোমবারে মৃত্যুর জন্য আকাংখা করেছেন (বুখারী হা/১৩৮৭)। মোদ্দাকথা এরূপ গায়েবের বিষয় ত্রুটিপূর্ণ দলীল দ্বারা সাব্যস্ত না করাই উত্তম হবে।
উত্তর : এ ব্যাপারে বর্ণিত হাদীছটি হ’ল, ‘কোন মুসলমান যদি জুম‘আর দিনে বা রাতে মারা যায়, আল্লাহ তাকে কবরের ফিৎনা হতে রক্ষা করেন’ (আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/১৩৬৭; ছহীহুল জামে‘ হা/৫৭৭৩)। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা এ দিনের বরকতে মুমিন ব্যক্তিদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা তাকে কবরের ফিৎনা তথা আযাব থেকে রক্ষা করবেন ইনশাআল্লাহ (মির‘আতুল মাফাতীহ ৪/৪৪০)। উক্ত হাদীছটি শায়খ নাছিরুদ্দীন আলবানী বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হওয়ার কারণে ‘হাসান’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। তবে শায়খ শু‘আইব আরনাঊত্ব ও হুসাইন সালীম আসাদ বলেন, হাদীছটির শাহেদ থাকলেও সেগুলো এমন শক্তিশালী নয় যা হাদীছকে ছহীহ বা হাসানের পর্যায়ে উন্নীত করবে। অতএব হাদীছটি যঈফ (তাহকীক মুসনাদে আহমাদ হা/৬৫৮২; তাহকীক মুসনাদে আবু ইয়া‘লা হা/৪১১৩)। ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) এ বিষয়ে বর্ণিত হাদীছ সমূহকে যঈফ বলেছেন (ফাৎহুল বারী ৩/২৫৩)। এছাড়া কোন ছাহাবী শুক্রবারে মৃত্যুর জন্য আকাংখা প্রকাশ করেছেন বলেও কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। অথচ আবুবকর (রাঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর দিন তথা সোমবারে মৃত্যুর জন্য আকাংখা করেছেন (বুখারী হা/১৩৮৭)। মোদ্দাকথা এরূপ গায়েবের বিষয় ত্রুটিপূর্ণ দলীল দ্বারা সাব্যস্ত না করাই উত্তম হবে।
৩৩১
প্রশ্ন (১০/৪৫০) : কোন মহিলা জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য ইমপ্লান্ট বা অন্য কোন মাধ্যম গ্রহণ করা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে সে জাহান্নামী হবে। একথার শারঈ ভিত্তি আছে কি?-আব্দুর রব মিলন*
পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, কালাই, জয়পুরহাট।
[শুধু ‘আব্দুর রব’ লিখুন, মিলন নয় (স.স)]
উত্তর : দরিদ্রতার ভয়ে কোন কিছুর মাধ্যমে স্থায়ীভাবে জন্মনিরোধ করা হারাম (ইসরা ১৭/৩১, বুখারী হা/৪৭৬১; মুসলিম হা/৮৬; মিশকাত হা/৪৯ ‘কাবীরা গোনাহ’ অনুচ্ছেদ)। এগুলি কবীরা গোনাহ। অন্যদিকে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কারণে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে ইমপ্লান্টের ন্যায় জন্মনিয়ন্ত্রণের অস্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণ করা যেতে পারে। যেমন অস্থায়ী পদ্ধতি ‘আযল’ করা জায়েয (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩১৮৪)। তবে স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণরত অবস্থায় মারা গেলে জাহান্নামী হবে একথা ঠিক নয়। কেননা আল্লাহ তা‘আলা শিরক ব্যতীত সকল গোনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করতে পারেন (নিসা ৪৮)।
পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, কালাই, জয়পুরহাট।
[শুধু ‘আব্দুর রব’ লিখুন, মিলন নয় (স.স)]
উত্তর : দরিদ্রতার ভয়ে কোন কিছুর মাধ্যমে স্থায়ীভাবে জন্মনিরোধ করা হারাম (ইসরা ১৭/৩১, বুখারী হা/৪৭৬১; মুসলিম হা/৮৬; মিশকাত হা/৪৯ ‘কাবীরা গোনাহ’ অনুচ্ছেদ)। এগুলি কবীরা গোনাহ। অন্যদিকে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কারণে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে ইমপ্লান্টের ন্যায় জন্মনিয়ন্ত্রণের অস্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণ করা যেতে পারে। যেমন অস্থায়ী পদ্ধতি ‘আযল’ করা জায়েয (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩১৮৪)। তবে স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণরত অবস্থায় মারা গেলে জাহান্নামী হবে একথা ঠিক নয়। কেননা আল্লাহ তা‘আলা শিরক ব্যতীত সকল গোনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করতে পারেন (নিসা ৪৮)।
-মীযান, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : ঝাঁকি নয় বরং স্বাভাবিকভাবে উভয়ের ডান হাত মিলাবে। যা অত্যন্ত নেকীর কাজ (আবুদাঊদ হা/৫২১২; মিশকাত হা/৪৬৭৯, সনদ ছহীহ)। জনৈক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে মুছাফাহা করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কেবল দু’হাত মিলানোর ব্যাপারে সম্মতি দেন (তিরমিযী হা/২৭২৮; মিশকাত হা/৪৬৮০; ছহীহাহ হা/১৬০)। সুতরাং এর বাইরে ঝাঁকি দেওয়া বাড়াবাড়ি বৈ কিছু নয়।
উত্তর : ঝাঁকি নয় বরং স্বাভাবিকভাবে উভয়ের ডান হাত মিলাবে। যা অত্যন্ত নেকীর কাজ (আবুদাঊদ হা/৫২১২; মিশকাত হা/৪৬৭৯, সনদ ছহীহ)। জনৈক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে মুছাফাহা করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কেবল দু’হাত মিলানোর ব্যাপারে সম্মতি দেন (তিরমিযী হা/২৭২৮; মিশকাত হা/৪৬৮০; ছহীহাহ হা/১৬০)। সুতরাং এর বাইরে ঝাঁকি দেওয়া বাড়াবাড়ি বৈ কিছু নয়।
-মা‘ছূম সোহেল, ইসলামপুর, জামালপুর।
উত্তর : যাবে। তবে যাকাতের হিসাব সর্বাগ্রে সম্পন্ন করতে হবে। অতঃপর উক্ত অর্থ দ্বারা এগুলি ক্রয় করে বিতরণ করতে হবে। স্মর্তব্য যে, যাকাত ও ছাদাক্বাসমূহ মুসলিম আমীরের নিকট জমা করে তাঁর মাধ্যমে হকদারগণের মধ্যে বিতরণ করাই হ’ল ইসলামী বিধান। বর্তমান যুগে কোন হকপন্থী ইসলামী সংগঠন বা সংস্থার মাধ্যমে এটি করা যেতে পারে। তারা তা কেন্দ্রীয় বায়তুল মাল ফান্ডে জমা করে যাকাতের খাত সমূহে বিতরণ করবেন। এছাড়া নিজ গ্রামে বা মহল্লায় দ্বীনদার কমিটির নিকট বায়তুল মাল জমা করার ব্যবস্থা থাকলে সেখানে কিছু অংশ জমা করার মাধ্যমে বিতরণ করা যেতে পারে। এরূপ সুন্নাতী তরীকা বাদ দিয়ে নিজ হাতে বিতরণ করতে গিয়ে একদিকে গরীবরা লাইনে পদদলিত হয়ে মারা পড়ছে, অন্যদিকে দাতা রিয়া ও শ্রুতির পাপে জড়িয়ে পড়ছেন। ফলে তার যাকাত কবুল হচ্ছে না। অতএব ইসলামী বিধান মেনে যাকাত আদায় করাই উত্তম।
উত্তর : যাবে। তবে যাকাতের হিসাব সর্বাগ্রে সম্পন্ন করতে হবে। অতঃপর উক্ত অর্থ দ্বারা এগুলি ক্রয় করে বিতরণ করতে হবে। স্মর্তব্য যে, যাকাত ও ছাদাক্বাসমূহ মুসলিম আমীরের নিকট জমা করে তাঁর মাধ্যমে হকদারগণের মধ্যে বিতরণ করাই হ’ল ইসলামী বিধান। বর্তমান যুগে কোন হকপন্থী ইসলামী সংগঠন বা সংস্থার মাধ্যমে এটি করা যেতে পারে। তারা তা কেন্দ্রীয় বায়তুল মাল ফান্ডে জমা করে যাকাতের খাত সমূহে বিতরণ করবেন। এছাড়া নিজ গ্রামে বা মহল্লায় দ্বীনদার কমিটির নিকট বায়তুল মাল জমা করার ব্যবস্থা থাকলে সেখানে কিছু অংশ জমা করার মাধ্যমে বিতরণ করা যেতে পারে। এরূপ সুন্নাতী তরীকা বাদ দিয়ে নিজ হাতে বিতরণ করতে গিয়ে একদিকে গরীবরা লাইনে পদদলিত হয়ে মারা পড়ছে, অন্যদিকে দাতা রিয়া ও শ্রুতির পাপে জড়িয়ে পড়ছেন। ফলে তার যাকাত কবুল হচ্ছে না। অতএব ইসলামী বিধান মেনে যাকাত আদায় করাই উত্তম।
-নাছিরুদ্দীন, গাযীপুর।
উত্তর : অমুসলিম উপজাতীয়দের সাথে মানবিক সম্পর্ক রাখায় এবং তাদের তৈরী খাবার খাওয়ায় কোন বাধা নেই। কেননা রাসূল (ছাঃ) মুশরিক মহিলার মশক থেকে পানি পান করেছেন (বুখারী হা/৩৪৪; মিশকাত হা/৫৮৮৪)। আবু হুরায়রা (রাঃ) তার মুশরিক মাতার সাথে বসবাস করতেন (মুসলিম হা/২৪৯১; মিশকাত হা/৫৮৯৫ ‘মু‘জেযাহ’ অনুচ্ছেদ)। তবে তাদের যবহকৃত প্রাণীর গোশত খাওয়া যাবে না (আন‘আম ৬/১২১)। এক্ষেত্রে নিজে বিসমিল্লাহ বলে যবেহ করে দিতে হবে। অতঃপর তারা রান্না করে দিতে পারবে।
উত্তর : অমুসলিম উপজাতীয়দের সাথে মানবিক সম্পর্ক রাখায় এবং তাদের তৈরী খাবার খাওয়ায় কোন বাধা নেই। কেননা রাসূল (ছাঃ) মুশরিক মহিলার মশক থেকে পানি পান করেছেন (বুখারী হা/৩৪৪; মিশকাত হা/৫৮৮৪)। আবু হুরায়রা (রাঃ) তার মুশরিক মাতার সাথে বসবাস করতেন (মুসলিম হা/২৪৯১; মিশকাত হা/৫৮৯৫ ‘মু‘জেযাহ’ অনুচ্ছেদ)। তবে তাদের যবহকৃত প্রাণীর গোশত খাওয়া যাবে না (আন‘আম ৬/১২১)। এক্ষেত্রে নিজে বিসমিল্লাহ বলে যবেহ করে দিতে হবে। অতঃপর তারা রান্না করে দিতে পারবে।
৩৩৫
প্রশ্ন (১৪/৪৫৪) : জনৈক ব্যক্তি পিতা-মাতা, স্ত্রী ও তিন মেয়েকে রেখে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে অংশ কিভাবে বণ্টিত হবে? শোনা যায় যে, এ ব্যাপারে আলী (রাঃ) প্রবর্তিত আওল বিধান কুরআনের নির্দেশ বিরোধী। এর সত্যতা জানতে চাই।-আব্দুল মুত্ত্বালিব, বগুড়া।
উত্তর : এমতাবস্থায় ৩ মেয়ে দুই-তৃতীয়াংশ, পিতা-মাতা প্রত্যেকে এক ষষ্ঠাংশ এবং স্ত্রী এক অষ্টমাংশ পাবে (নিসা ১১-১২)। অত্র মাসআলায় ‘আওল হয়েছে। অর্থাৎ বণ্টন সংখ্যা ২৪ হলেও অংশ হয়েছে ২৭ টি। যেমন মাতা-পিতা ৪+৪=৮, স্ত্রী ৩ ও তিন কন্যা ১৬ মোট ২৭ ভাগে বণ্টিত হয়েছে। অতিরিক্ত তিন অংশ বেশী হওয়াটাই ‘আওল। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত তিন অংশ সকলের অংশ থেকে সমানভাবে কমিয়ে ‘আদল করতে হবে। ‘আওলের এই বিধান সর্বপ্রথম প্রবর্তন করেন দ্বিতীয় খলীফা ওমর (রাঃ) (বায়হাকী, সুনানুল কুবরা হা/১২২৩৭; ইরওয়া হা/১৭০৬, সনদ হাসান)। আলী (রাঃ)-এর ব্যাপারেও কিছু বর্ণনা রয়েছে। তবে তা দুর্বল (ইরওয়া হা/১৭০৬/১)। ওমর (রাঃ) প্রবর্তিত ‘আওল বিধান কুরআনের বিরোধী নয়। বরং তার ব্যাখ্যা মাত্র। রাসূল (ছাঃ) ও আবুবকর (রাঃ)-এর যুগে এর সমস্যা দেখা দেয়নি। ওমর (রাঃ)-এর নিকট এরূপ সমস্যা দেখা দিলে তিনি ছাহাবায়ে কেরামের সাথে পরামর্শ করে এ বিধানটি প্রবর্তন করেন (হাকেম হা/৭৯৮৫, বিস্তারিত দ্রঃ ছালেহ আল-ফাওযান, আত-তাহক্বীক্বাতুল মারযিইয়াহ ফিল মাবাহিছিল ফারযিইয়াহ, পৃষ্ঠা ৬১-৬৬)।
উত্তর : এমতাবস্থায় ৩ মেয়ে দুই-তৃতীয়াংশ, পিতা-মাতা প্রত্যেকে এক ষষ্ঠাংশ এবং স্ত্রী এক অষ্টমাংশ পাবে (নিসা ১১-১২)। অত্র মাসআলায় ‘আওল হয়েছে। অর্থাৎ বণ্টন সংখ্যা ২৪ হলেও অংশ হয়েছে ২৭ টি। যেমন মাতা-পিতা ৪+৪=৮, স্ত্রী ৩ ও তিন কন্যা ১৬ মোট ২৭ ভাগে বণ্টিত হয়েছে। অতিরিক্ত তিন অংশ বেশী হওয়াটাই ‘আওল। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত তিন অংশ সকলের অংশ থেকে সমানভাবে কমিয়ে ‘আদল করতে হবে। ‘আওলের এই বিধান সর্বপ্রথম প্রবর্তন করেন দ্বিতীয় খলীফা ওমর (রাঃ) (বায়হাকী, সুনানুল কুবরা হা/১২২৩৭; ইরওয়া হা/১৭০৬, সনদ হাসান)। আলী (রাঃ)-এর ব্যাপারেও কিছু বর্ণনা রয়েছে। তবে তা দুর্বল (ইরওয়া হা/১৭০৬/১)। ওমর (রাঃ) প্রবর্তিত ‘আওল বিধান কুরআনের বিরোধী নয়। বরং তার ব্যাখ্যা মাত্র। রাসূল (ছাঃ) ও আবুবকর (রাঃ)-এর যুগে এর সমস্যা দেখা দেয়নি। ওমর (রাঃ)-এর নিকট এরূপ সমস্যা দেখা দিলে তিনি ছাহাবায়ে কেরামের সাথে পরামর্শ করে এ বিধানটি প্রবর্তন করেন (হাকেম হা/৭৯৮৫, বিস্তারিত দ্রঃ ছালেহ আল-ফাওযান, আত-তাহক্বীক্বাতুল মারযিইয়াহ ফিল মাবাহিছিল ফারযিইয়াহ, পৃষ্ঠা ৬১-৬৬)।
৩৩৬
প্রশ্ন (১৫/৪৫৫) : আগে শোনা যেত গিরগিটি মারলে ১০০ নেকী হয়। এখন জানলাম সেটা টিকটিকি। এক্ষণে কোনটি সঠিক?-বদরুল হুদা, ধানমন্ডি, ঢাকা।
উত্তর : গিরগিটি নয়। বরং টিকিটিকিই সঠিক। প্রকাশ থাকে যে, ‘আল-ওয়াযাগ’ ( اَلْوَزَغُ ) শব্দের উর্দূ অনুবাদ ‘ছিপকলী’ (মিছবাহুল লুগাত (আরবী-উর্দূ অভিধান), পৃঃ ৯৪৩; আল-মুনজিদ (আরবী-উর্দূ) পৃঃ ১০৮২)। যার বাংলা অর্থ টিকটিকি (ফ‘রহঙ্গ-ই-রববানী; পৃঃ ২৬০; ফরহঙ্গ-এ-জাদীদ (উর্দূ-বাংলা অভিধান), পৃঃ ৩৫৬)। আর ‘আল-হিরবাউ’ ( اَلْحِرْبَاءُ )-এর উর্দূ অর্থ গিরগিট্ (মিছবাহুল লুগাত পৃঃ ১৪৪; আল-মুনজিদ পৃঃ ১৯৮)। যার বাংলা গিরগিটি বা কাকলাস ব্যবহৃত হয় (ফরহঙ্গ-এ-জাদীদ, পৃঃ ৬৯১; ফ‘রহঙ্গ-ই-রববানী, পৃঃ ৫০৭-৮)। গিরগিটি মুহূর্তের মধ্যে গায়ের রং পরিবর্তন করতে পারে, কিন্তু টিকটিকি তা পারে না। ফলে গিরগিটির গায়ের পরিবর্তিত রং দেখেই আমাদের দেশের লোকজন মারতে বেশী উদ্যত হয়। (বিস্তারিত দেখুন : আল-ক্বামূস; আল-মু‘জামুল ওয়াসীত্ব পৃঃ ১০২৯; আরবী-বাংলা অভিধান (ঢাকা : বাংলা একাডেমী), ৩/২৫৫৪ পৃঃ)। উল্লেখ্য যে, ভারতের কতিপয় লেখক স্ব স্ব লেখনীতে এবং এ দেশের বাংলা অনুবাদ মিশকাতে ও ‘আল-কাওছার’ আরবী-বাংলা অভিধানে ‘আল-ওয়াযাগ’ অর্থ গিরগিটি লেখা হয়েছে, যা শুদ্ধ নয়।
উল্লেখ্য, টিকটিকির লেজে মাদকতা আছে। ইবনুল মালেক বলেন, এটি একটি কষ্টদানকারী ও বিষাক্ত প্রাণী। শয়তান একে ইবরাহীমের অগ্নিকুন্ডে ফুঁক দেওয়া ছাড়াও অন্যান্য পাপের কাজে ব্যবহার করে থাকে (মিরক্বাত হা/৪১১৯-এর ব্যাখ্যা)। আয়েশা (রাঃ) তার পাশে একটি বর্শা রাখতেন। যা দিয়ে টিকটিকি মারতেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদের খবর দিয়েছেন যে, ইবরাহীম (আঃ)-কে যখন আগুনে নিক্ষেপ করা হয়, তখন পৃথিবীর সকল প্রাণী তা নিভানোর চেষ্টা করেছিল। কেবল এই টিকটিকি ব্যতীত। সে তাতে ফুঁক দিয়েছিল। যাতে আগুন আরও বেশী জ্বলে ওঠে। সেকারণ তিনি এদের মারতে বলেছেন’ (ইবনু মাজাহ হা/৩২৩১; ছহীহাহ হা/১৫৮১)। উম্মে শারীক (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) টিকটিকি মারতে বলেছেন। তিনি আরো বলেন, টিকটিকি ইবরাহীম (আঃ)-এর বিরুদ্ধে আগুনে ফুঁক দিয়েছিল (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪১১৯)। তিনি বলেন, ‘প্রথমবারে টিকটিকি মারতে পারলে ১০০ নেকী, দ্বিতীয়বারে তার চেয়ে কম, তৃতীয় বারে তার চেয়ে কম নেকী পাবে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৪১২১)।
উত্তর : গিরগিটি নয়। বরং টিকিটিকিই সঠিক। প্রকাশ থাকে যে, ‘আল-ওয়াযাগ’ ( اَلْوَزَغُ ) শব্দের উর্দূ অনুবাদ ‘ছিপকলী’ (মিছবাহুল লুগাত (আরবী-উর্দূ অভিধান), পৃঃ ৯৪৩; আল-মুনজিদ (আরবী-উর্দূ) পৃঃ ১০৮২)। যার বাংলা অর্থ টিকটিকি (ফ‘রহঙ্গ-ই-রববানী; পৃঃ ২৬০; ফরহঙ্গ-এ-জাদীদ (উর্দূ-বাংলা অভিধান), পৃঃ ৩৫৬)। আর ‘আল-হিরবাউ’ ( اَلْحِرْبَاءُ )-এর উর্দূ অর্থ গিরগিট্ (মিছবাহুল লুগাত পৃঃ ১৪৪; আল-মুনজিদ পৃঃ ১৯৮)। যার বাংলা গিরগিটি বা কাকলাস ব্যবহৃত হয় (ফরহঙ্গ-এ-জাদীদ, পৃঃ ৬৯১; ফ‘রহঙ্গ-ই-রববানী, পৃঃ ৫০৭-৮)। গিরগিটি মুহূর্তের মধ্যে গায়ের রং পরিবর্তন করতে পারে, কিন্তু টিকটিকি তা পারে না। ফলে গিরগিটির গায়ের পরিবর্তিত রং দেখেই আমাদের দেশের লোকজন মারতে বেশী উদ্যত হয়। (বিস্তারিত দেখুন : আল-ক্বামূস; আল-মু‘জামুল ওয়াসীত্ব পৃঃ ১০২৯; আরবী-বাংলা অভিধান (ঢাকা : বাংলা একাডেমী), ৩/২৫৫৪ পৃঃ)। উল্লেখ্য যে, ভারতের কতিপয় লেখক স্ব স্ব লেখনীতে এবং এ দেশের বাংলা অনুবাদ মিশকাতে ও ‘আল-কাওছার’ আরবী-বাংলা অভিধানে ‘আল-ওয়াযাগ’ অর্থ গিরগিটি লেখা হয়েছে, যা শুদ্ধ নয়।
উল্লেখ্য, টিকটিকির লেজে মাদকতা আছে। ইবনুল মালেক বলেন, এটি একটি কষ্টদানকারী ও বিষাক্ত প্রাণী। শয়তান একে ইবরাহীমের অগ্নিকুন্ডে ফুঁক দেওয়া ছাড়াও অন্যান্য পাপের কাজে ব্যবহার করে থাকে (মিরক্বাত হা/৪১১৯-এর ব্যাখ্যা)। আয়েশা (রাঃ) তার পাশে একটি বর্শা রাখতেন। যা দিয়ে টিকটিকি মারতেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদের খবর দিয়েছেন যে, ইবরাহীম (আঃ)-কে যখন আগুনে নিক্ষেপ করা হয়, তখন পৃথিবীর সকল প্রাণী তা নিভানোর চেষ্টা করেছিল। কেবল এই টিকটিকি ব্যতীত। সে তাতে ফুঁক দিয়েছিল। যাতে আগুন আরও বেশী জ্বলে ওঠে। সেকারণ তিনি এদের মারতে বলেছেন’ (ইবনু মাজাহ হা/৩২৩১; ছহীহাহ হা/১৫৮১)। উম্মে শারীক (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) টিকটিকি মারতে বলেছেন। তিনি আরো বলেন, টিকটিকি ইবরাহীম (আঃ)-এর বিরুদ্ধে আগুনে ফুঁক দিয়েছিল (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪১১৯)। তিনি বলেন, ‘প্রথমবারে টিকটিকি মারতে পারলে ১০০ নেকী, দ্বিতীয়বারে তার চেয়ে কম, তৃতীয় বারে তার চেয়ে কম নেকী পাবে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৪১২১)।
৩৩৭
প্রশ্ন (১৬/৪৫৬) : রামাযান মাসে ধনী-গরীব নির্বিশেষে অনির্ধারিত অর্থ বা খাবার তুলে মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রতিদিন ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এরূপ আয়োজন জায়েয কি? এছাড়া বিভিন্ন সংগঠন কর্তৃক যে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয় তা জায়েয কি?-মুস্তাফীযুর রহমান, বড়াইগ্রাম, নাটোর।
উত্তর : ইফতার করানো নেকীর কাজ। যে ব্যক্তি কোন ছায়েমকে ইফতার করায়, সে ঐ ছায়েম-এর সমান নেকী অর্জন করে (তিরমিযী হা/৮০৭, ইবনু মাজাহ হা/১৭৪৬)। হাদীছে একত্রিতভাবে খাওয়া বরকত লাভের মাধ্যম হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে (আবুদাঊদ হা/৩৭৬৪, মিশকাত হা/৪২৫২)। এছাড়া ইফতার মাহফিলের আয়োজনের মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন মানুষ বিপুল পরিমাণ ছায়েমকে ইফতার করানোর নেকী লাভে ধন্য হয়। অন্যদিকে মানুষের মাঝে দ্বীনের দাওয়াত দানের সুযোগ হয়। সুতরাং এরূপ আয়োজন করায় বাধা নেই। স্মর্তব্য যে, কারু কাছ থেকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অর্থ আদায় করা যাবে না এবং মৃতব্যক্তির নামে ও যাকাতের টাকায় ইফতার করানো যাবে না।
উত্তর : ইফতার করানো নেকীর কাজ। যে ব্যক্তি কোন ছায়েমকে ইফতার করায়, সে ঐ ছায়েম-এর সমান নেকী অর্জন করে (তিরমিযী হা/৮০৭, ইবনু মাজাহ হা/১৭৪৬)। হাদীছে একত্রিতভাবে খাওয়া বরকত লাভের মাধ্যম হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে (আবুদাঊদ হা/৩৭৬৪, মিশকাত হা/৪২৫২)। এছাড়া ইফতার মাহফিলের আয়োজনের মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন মানুষ বিপুল পরিমাণ ছায়েমকে ইফতার করানোর নেকী লাভে ধন্য হয়। অন্যদিকে মানুষের মাঝে দ্বীনের দাওয়াত দানের সুযোগ হয়। সুতরাং এরূপ আয়োজন করায় বাধা নেই। স্মর্তব্য যে, কারু কাছ থেকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অর্থ আদায় করা যাবে না এবং মৃতব্যক্তির নামে ও যাকাতের টাকায় ইফতার করানো যাবে না।
৩৩৮
প্রশ্ন (১৭/৪৫৭) : বাড়ী থেকে মসজিদ দূরে হওয়ায় অলসতাবশতঃ জামা‘আতে ছালাত আদায় করা হয় না। এক্ষণে জুম‘আ ছাড়া পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত বাড়ীতে জামা‘আতে আদায় করা যাবে কি?-মুবাশশির গাযী
উত্তর ২৪ পরগণা, পশ্চিম বঙ্গ ,ভারত।
উত্তর : শারঈ ওযর ব্যতীত আযান শুনে মসজিদে না আসলে ছালাত কবুলযোগ্য হবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আযান শুনতে পেয়েও বিনা ওযরে মসজিদে যায় না তার ছালাত সিদ্ধ হবে না’। রাবী আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ‘ওযর’ হচ্ছে ভয় ও অসুস্থতা (ইবনু মাজাহ, দারাকুৎনী, হাকেম, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/১০৭৭; ছহীহ ইবনু মাজাহ হা/৬৫২)। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকটে জনৈক অন্ধ ছাহাবী মসজিদের পথ দেখানোর মত কেউ না থাকার ওযর পেশ করে বাড়ীতে ছালাত আদায়ের অনুমতি প্রার্থনা করলে তিনি বললেন, ‘তুমি কি আযান শুনতে পাও? শুনতে পেলে মসজিদে এসো’ (মুসলিম হা/৬৫৩, মিশকাত হা/১০৫৪)। এছাড়া মুছল্লী যত বেশী দূর থেকে মসজিদে আগমন করবে, ততবেশী পরিমাণ নেকী তার আমলনামায় যুক্ত হবে (আবুদাঊদ হা/৫৫৬)। আর শারঈ ওযর বশতঃ বাড়ীতে জামা‘আতে ছালাত আদায় করলে জামা‘আতের নেকী পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
উত্তর ২৪ পরগণা, পশ্চিম বঙ্গ ,ভারত।
উত্তর : শারঈ ওযর ব্যতীত আযান শুনে মসজিদে না আসলে ছালাত কবুলযোগ্য হবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আযান শুনতে পেয়েও বিনা ওযরে মসজিদে যায় না তার ছালাত সিদ্ধ হবে না’। রাবী আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ‘ওযর’ হচ্ছে ভয় ও অসুস্থতা (ইবনু মাজাহ, দারাকুৎনী, হাকেম, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/১০৭৭; ছহীহ ইবনু মাজাহ হা/৬৫২)। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকটে জনৈক অন্ধ ছাহাবী মসজিদের পথ দেখানোর মত কেউ না থাকার ওযর পেশ করে বাড়ীতে ছালাত আদায়ের অনুমতি প্রার্থনা করলে তিনি বললেন, ‘তুমি কি আযান শুনতে পাও? শুনতে পেলে মসজিদে এসো’ (মুসলিম হা/৬৫৩, মিশকাত হা/১০৫৪)। এছাড়া মুছল্লী যত বেশী দূর থেকে মসজিদে আগমন করবে, ততবেশী পরিমাণ নেকী তার আমলনামায় যুক্ত হবে (আবুদাঊদ হা/৫৫৬)। আর শারঈ ওযর বশতঃ বাড়ীতে জামা‘আতে ছালাত আদায় করলে জামা‘আতের নেকী পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
৩৩৯
প্রশ্ন (১৮/৪৫৮) : বিবাহের মোহর নির্ধারণের শরী‘আতের নির্দেশনা কি? সমাজে ‘মোহরে ফাতেমী’ নামে একটি পরিভাষা চালু আছে। এটা কি সুন্নাত?-সুলতান আহমাদ, মুরাদপুর, চট্টগ্রাম।
উত্তর : বিবাহ মানবজাতির জন্য আল্লাহ প্রদত্ত অন্যতম প্রধান নে‘মত। আল্লাহ বলেন, তাঁর নে‘মতসমূহের অন্যতম হ’ল তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের নিকট প্রশান্তি লাভ করতে পার’ (রূম ২১)। সেকারণ বিবাহ সহজে সম্পন্ন হওয়া যরূরী। রাসূল (ছাঃ) বলেন, সর্বোত্তম বিবাহ হ’ল যা সহজভাবে সম্পন্ন হয় (ইবনু হিববান, ছহীহুল জামে‘ হা/৩৩০০)। আর বিবাহের প্রধান শর্ত হ‘ল মোহর আদায় করা (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩১৪৩)। এর পরিমাণ শরী‘আত কর্তৃক নির্ধারিত নয়। তবে পরিমাণে তা যত কম হয়, ততই উত্তম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, শ্রেষ্ঠ মোহর যা সহজে পরিশোধযোগ্য (বায়হাক্বী, ছহীহুল জামে‘ হা/৩২৭৯)। ওমর (রাঃ) বলেন, ‘মেয়েদের মোহর সীমাহীন করো না। কেননা সীমাহীন মোহর নির্ধারণ যদি দুনিয়ায় সম্মান অথবা আখেরাতে তাক্বওয়া অর্জনের কারণ হ’ত, তবে এরূপ মোহর প্রদানে আল্লাহর নবী আগ্রহী হ’তেন। কিন্তু তিনি তার কোন স্ত্রী বা কন্যার মোহর বারো উক্বিয়া বা ৪৮০ দিরহামের অধিক নির্ধারণ করেননি’ (আহমাদ, তিরমিযী, নাসাঈ প্রভৃতি মিশকাত ‘মোহর’ অধ্যায় হা/৩২০৪)। রাসূল (ছাঃ) কুরআন শিক্ষা প্রদান, লোহার আংটি (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩২০২), এমনকি ইসলাম গ্রহণের শর্তেও বিবাহ প্রদান করেছেন (নাসাঈ, মিশকাত হা/৩২০৯)।
তবে স্বেচ্ছায় স্ত্রীকে মোহর বেশীও প্রদান করা যায়। জনৈক ছাহাবী তার স্ত্রীকে সে যুগে এক লক্ষ দিরহাম সমমূল্যের জমি প্রদান করেছিলেন (হাকেম, আবুদাঊদ, ইরওয়া হা/১৯২৪ ও ৪০)। বাদশাহ নাজাশী রাসূল (ছাঃ)-এর এক স্ত্রী উম্মে হাবীবাহর মোহর প্রদান করেছিলেন। যার পরিমাণ ছিল সেযুগের চার হাযার দিরহাম (নাসাঈ, মিশকাত হা/৩২০৮)।
‘মোহরে ফাতেমী’ বলে ইসলামে কোন পরিভাষা নেই। মোহরে ফাতেমী তথা বিশেষ ফযীলতের আশায় ফাতেমা (রাঃ)-কে প্রদত্ত মোহর অনুসরণ করা শী‘আদের আবিষ্কৃত রীতি। রাসূল (ছাঃ) আলী (রাঃ)-কে তার প্রশস্ত ও ভারী ঢালটিকে মোহর হিসাবে ফাতিমা (রাঃ)-কে দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেছিলেন (নাসাঈ হা/৩৩৭৫)। তাই বলে এটা অনুসরণে বিশেষ কোন ফযীলত রয়েছে, এমনটি নয়।
উত্তর : বিবাহ মানবজাতির জন্য আল্লাহ প্রদত্ত অন্যতম প্রধান নে‘মত। আল্লাহ বলেন, তাঁর নে‘মতসমূহের অন্যতম হ’ল তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের নিকট প্রশান্তি লাভ করতে পার’ (রূম ২১)। সেকারণ বিবাহ সহজে সম্পন্ন হওয়া যরূরী। রাসূল (ছাঃ) বলেন, সর্বোত্তম বিবাহ হ’ল যা সহজভাবে সম্পন্ন হয় (ইবনু হিববান, ছহীহুল জামে‘ হা/৩৩০০)। আর বিবাহের প্রধান শর্ত হ‘ল মোহর আদায় করা (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩১৪৩)। এর পরিমাণ শরী‘আত কর্তৃক নির্ধারিত নয়। তবে পরিমাণে তা যত কম হয়, ততই উত্তম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, শ্রেষ্ঠ মোহর যা সহজে পরিশোধযোগ্য (বায়হাক্বী, ছহীহুল জামে‘ হা/৩২৭৯)। ওমর (রাঃ) বলেন, ‘মেয়েদের মোহর সীমাহীন করো না। কেননা সীমাহীন মোহর নির্ধারণ যদি দুনিয়ায় সম্মান অথবা আখেরাতে তাক্বওয়া অর্জনের কারণ হ’ত, তবে এরূপ মোহর প্রদানে আল্লাহর নবী আগ্রহী হ’তেন। কিন্তু তিনি তার কোন স্ত্রী বা কন্যার মোহর বারো উক্বিয়া বা ৪৮০ দিরহামের অধিক নির্ধারণ করেননি’ (আহমাদ, তিরমিযী, নাসাঈ প্রভৃতি মিশকাত ‘মোহর’ অধ্যায় হা/৩২০৪)। রাসূল (ছাঃ) কুরআন শিক্ষা প্রদান, লোহার আংটি (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩২০২), এমনকি ইসলাম গ্রহণের শর্তেও বিবাহ প্রদান করেছেন (নাসাঈ, মিশকাত হা/৩২০৯)।
তবে স্বেচ্ছায় স্ত্রীকে মোহর বেশীও প্রদান করা যায়। জনৈক ছাহাবী তার স্ত্রীকে সে যুগে এক লক্ষ দিরহাম সমমূল্যের জমি প্রদান করেছিলেন (হাকেম, আবুদাঊদ, ইরওয়া হা/১৯২৪ ও ৪০)। বাদশাহ নাজাশী রাসূল (ছাঃ)-এর এক স্ত্রী উম্মে হাবীবাহর মোহর প্রদান করেছিলেন। যার পরিমাণ ছিল সেযুগের চার হাযার দিরহাম (নাসাঈ, মিশকাত হা/৩২০৮)।
‘মোহরে ফাতেমী’ বলে ইসলামে কোন পরিভাষা নেই। মোহরে ফাতেমী তথা বিশেষ ফযীলতের আশায় ফাতেমা (রাঃ)-কে প্রদত্ত মোহর অনুসরণ করা শী‘আদের আবিষ্কৃত রীতি। রাসূল (ছাঃ) আলী (রাঃ)-কে তার প্রশস্ত ও ভারী ঢালটিকে মোহর হিসাবে ফাতিমা (রাঃ)-কে দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেছিলেন (নাসাঈ হা/৩৩৭৫)। তাই বলে এটা অনুসরণে বিশেষ কোন ফযীলত রয়েছে, এমনটি নয়।
৩৪০
প্রশ্ন (১৯/৪৫৯) : পুরুষের ইমামতিতে মহিলা জামা‘আত চলাকালীন অবস্থায় ইমামের ক্বিরাআতে বা ছালাতে ভুল হলে মহিলারা লোকমা বা ভুল সংশোধন করে দিতে পারবে কি?-আব্দুর রহীম, কাসেমপুর, সাতক্ষীরা।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ইমাম কোন ভুল করলে পুরুষেরা সুবহানাল্লাহ বলবে এবং মহিলা মুক্তাদীগণ হাতে হাত মেরে আওয়ায করবেন (বুখারী হা/১২০৩; মুসলিম হা/৪২২; মিশকাত হা/৯৮৮; ফাৎহুল বারী ৩/৭৭)।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ইমাম কোন ভুল করলে পুরুষেরা সুবহানাল্লাহ বলবে এবং মহিলা মুক্তাদীগণ হাতে হাত মেরে আওয়ায করবেন (বুখারী হা/১২০৩; মুসলিম হা/৪২২; মিশকাত হা/৯৮৮; ফাৎহুল বারী ৩/৭৭)।
৩৪১
প্রশ্ন (২০/৪৬০) : আমি একজন কাপড় ব্যবসায়ী। এখানে মূলধন সবসময় কমবেশী হয়। নির্দিষ্ট মূলধন বছর অতিক্রম করে না। এক্ষেত্রে আমি যাকাত বের করব কিভাবে?-রায়হান, ভাদুরিয়া, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : বছর শেষে ব্যবসায়রত সম্পদ কমবেশী গড় হিসাব করে তা নিছাব পরিমাণ হ’লে শতকরা আড়াই টাকা হারে যাকাত দিতে হবে (তিরমিযী হা/৬২৮, বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৭৩৯৪; আলবানী, তামামুল মিন্নাহ ৩৬৪ পৃঃ, সনদ ছহীহ)। পুংখানুপুংখ হিসাব রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। অনিচ্ছাকৃত ভুল-ত্রুটি আল্লাহ ক্ষমা করবেন ইনশাআল্লাহ।
উত্তর : বছর শেষে ব্যবসায়রত সম্পদ কমবেশী গড় হিসাব করে তা নিছাব পরিমাণ হ’লে শতকরা আড়াই টাকা হারে যাকাত দিতে হবে (তিরমিযী হা/৬২৮, বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৭৩৯৪; আলবানী, তামামুল মিন্নাহ ৩৬৪ পৃঃ, সনদ ছহীহ)। পুংখানুপুংখ হিসাব রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। অনিচ্ছাকৃত ভুল-ত্রুটি আল্লাহ ক্ষমা করবেন ইনশাআল্লাহ।
৩৪২
প্রশ্ন (২১/৪৬১) : জনৈক ইমাম বলেন, তারাবীহ বা তাহাজ্জুদ ছালাতের পূর্বে সংক্ষেপে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করতে হবে। এ বক্তব্যের সত্যতা আছে কি?-আহমাদ, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : একথা সঠিক নয়। বরং রাসূল (ছাঃ) তাহাজ্জুদ ছালাতের প্রথম দু’রাক‘আত সংক্ষিপ্তভাবে আদায় করতেন। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন রাতের ছালাতে দন্ডায়মান হবে, সে যেন সংক্ষেপে দু’রাক‘আত ছালাতের মাধ্যমে (তাহাজ্জুদ) ছালাতের সূচনা করে’ (মুসলিম হা/৭৬৮; আবুদাউদ হা/১৩২৩; মিশকাত হা/১১৯৪)। ইমাম ছাহেব হয়ত এ হাদীছের ব্যাখ্যা বুঝতে ভুল করেছেন।
উত্তর : একথা সঠিক নয়। বরং রাসূল (ছাঃ) তাহাজ্জুদ ছালাতের প্রথম দু’রাক‘আত সংক্ষিপ্তভাবে আদায় করতেন। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন রাতের ছালাতে দন্ডায়মান হবে, সে যেন সংক্ষেপে দু’রাক‘আত ছালাতের মাধ্যমে (তাহাজ্জুদ) ছালাতের সূচনা করে’ (মুসলিম হা/৭৬৮; আবুদাউদ হা/১৩২৩; মিশকাত হা/১১৯৪)। ইমাম ছাহেব হয়ত এ হাদীছের ব্যাখ্যা বুঝতে ভুল করেছেন।
-আব্দুল্লাহেল কাফী, ছোটবনগ্রাম, রাজশাহী।
উত্তর : ইতিকাফ অবস্থায় বাইরে গিয়ে জানাযার ছালাত পড়া বা পড়ানো যাবে না। আয়েশা (রাঃ) বলেন, ই‘তিকাফকারীর জন্য সুন্নাত হ’ল ... কোন জানাযায় যোগদান করবে না.. (আবুদাউদ হা/২৪৭৩; মিশকাত হা/২১০৬; সনদ হাসান, ফাতাওয়া লাজনাহ দায়েমাহ ১০/৪১০)। ই‘তিকাফকারী বাইরে গিয়ে জানাযায় অংশগ্রহণ করতে পারবে মর্মে যে মারফূ‘ ও মাওকূফ হাদীছগুলি রয়েছে তার কোনটি যঈফ কোনটি মওযূ‘ (সিলসিলা যঈফাহ হা/৪৬৭৯, তাহকীক সুনান দারাকুৎনী হা/২৩৩৩-৩৪, সনদ যঈফ)। তবে জুম‘আর খুৎবা দেওয়া যেতে পারে। রাসূল (ছাঃ) ই‘তিকাফরত অবস্থায় তিনি ব্যতীত অন্য কেউ খুৎবা দিয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না। অতএব যোগ্য কেউ না থাকলে খুৎবা দেওয়ায় বাধা নেই। তবে এটি ই‘তিকাফের ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্যের বিরোধী বিবেচনায় এড়িয়ে যাওয়ায় কোন দোষ নেই।
উত্তর : ইতিকাফ অবস্থায় বাইরে গিয়ে জানাযার ছালাত পড়া বা পড়ানো যাবে না। আয়েশা (রাঃ) বলেন, ই‘তিকাফকারীর জন্য সুন্নাত হ’ল ... কোন জানাযায় যোগদান করবে না.. (আবুদাউদ হা/২৪৭৩; মিশকাত হা/২১০৬; সনদ হাসান, ফাতাওয়া লাজনাহ দায়েমাহ ১০/৪১০)। ই‘তিকাফকারী বাইরে গিয়ে জানাযায় অংশগ্রহণ করতে পারবে মর্মে যে মারফূ‘ ও মাওকূফ হাদীছগুলি রয়েছে তার কোনটি যঈফ কোনটি মওযূ‘ (সিলসিলা যঈফাহ হা/৪৬৭৯, তাহকীক সুনান দারাকুৎনী হা/২৩৩৩-৩৪, সনদ যঈফ)। তবে জুম‘আর খুৎবা দেওয়া যেতে পারে। রাসূল (ছাঃ) ই‘তিকাফরত অবস্থায় তিনি ব্যতীত অন্য কেউ খুৎবা দিয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না। অতএব যোগ্য কেউ না থাকলে খুৎবা দেওয়ায় বাধা নেই। তবে এটি ই‘তিকাফের ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্যের বিরোধী বিবেচনায় এড়িয়ে যাওয়ায় কোন দোষ নেই।
৩৪৪
প্রশ্ন (২৩/৪৬৩) : তারাবীহ বা তাহাজ্জুদের ছালাত আদায়ের ক্ষেত্রে প্রত্যেক দু’রাক‘আত শুরু করার সময় ছানা পাঠ করতে হবে না প্রথমে একবার পড়লেই যথেষ্ট হবে?-শহীদুল ইসলাম, মোঘলহাট, লালমণিরহাট।
উত্তর : ফরয হোক নফল হোক প্রত্যেক ছালাতের শুরুতে ছানা পাঠ করতে হবে। কেননা রাসূল (ছাঃ) যখন কোন ছালাত শুরু করতেন, তখন ছানা পাঠ করতেন (বুখারী হা/৭৪৪, তিরমিযী, মিশকাত হা/৮১২-১৩, ৮১৫)। এখানে ছানাকে ছালাত শুরুর সাথে খাছ করা হয়েছে। সুতরাং সালাম ফিরানোর পর নতুনভাবে ছালাত শুরু করলে ছানা পাঠ করতে হবে।
উত্তর : ফরয হোক নফল হোক প্রত্যেক ছালাতের শুরুতে ছানা পাঠ করতে হবে। কেননা রাসূল (ছাঃ) যখন কোন ছালাত শুরু করতেন, তখন ছানা পাঠ করতেন (বুখারী হা/৭৪৪, তিরমিযী, মিশকাত হা/৮১২-১৩, ৮১৫)। এখানে ছানাকে ছালাত শুরুর সাথে খাছ করা হয়েছে। সুতরাং সালাম ফিরানোর পর নতুনভাবে ছালাত শুরু করলে ছানা পাঠ করতে হবে।
৩৪৫
প্রশ্ন (২৪/৪৬৪) : বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আমল সম্পন্ন পাত্র না পেয়ে জেনে-শুনে শিরক-বিদ‘আতে লিপ্ত পাত্রের সাথে বিবাহ দিলে অভিভাবককে গুনাহগার হতে হবে কি?-সাইফুল ইসলাম, লাকসাম, কুমিল্লা।
উত্তর : জেনে-শুনে শিরক-বিদ‘আতে লিপ্ত পাত্রের সাথে বিবাহ দিলে এবং ফলশ্রুতিতে মেয়ের উপর দ্বীনী ক্ষতি নেমে আসলে অভিভাবক অবশ্যই গুনাহগার হবেন। রাসূল (ছাঃ) বিবাহের পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে দ্বীনকে অগ্রাধিকার দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন (বুখারী হা/৫০৯০; মিশকাত হা/৩০৮২; তিরমিযী হা/১০৮৪; মিশকাত হা/৩০৯০)। আল্লাহ তা‘আলা মুশরিক নারী বা পুরুষকে বিবাহ করতে নিষেধ করেছেন যদিও তারা মুমিনদের চেয়ে আকর্ষণীয় হয় (বাক্বারাহ ২/২২১)। অতএব অভিভাবকের দায়িত্ব হ’ল- মেয়েকে ছহীহ আক্বীদা সম্পন্ন দ্বীনদার পাত্রের হাতে তুলে দেওয়া।
উত্তর : জেনে-শুনে শিরক-বিদ‘আতে লিপ্ত পাত্রের সাথে বিবাহ দিলে এবং ফলশ্রুতিতে মেয়ের উপর দ্বীনী ক্ষতি নেমে আসলে অভিভাবক অবশ্যই গুনাহগার হবেন। রাসূল (ছাঃ) বিবাহের পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে দ্বীনকে অগ্রাধিকার দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন (বুখারী হা/৫০৯০; মিশকাত হা/৩০৮২; তিরমিযী হা/১০৮৪; মিশকাত হা/৩০৯০)। আল্লাহ তা‘আলা মুশরিক নারী বা পুরুষকে বিবাহ করতে নিষেধ করেছেন যদিও তারা মুমিনদের চেয়ে আকর্ষণীয় হয় (বাক্বারাহ ২/২২১)। অতএব অভিভাবকের দায়িত্ব হ’ল- মেয়েকে ছহীহ আক্বীদা সম্পন্ন দ্বীনদার পাত্রের হাতে তুলে দেওয়া।
৩৪৬
প্রশ্ন (২৫/৪৬৫) : বার্ধক্য জনিত হাঁটুর ব্যথার কারণে চেয়ারে বসে নিয়মিত ভাবে ছালাতের ইমামতি করা জায়েয হবে কি?-তরীকুল ইসলাম, দারুশা, পবা, রাজশাহী।
উত্তর : নিয়মিতভাবে নয়, বরং মাঝে-মধ্যে বাধ্যগত অবস্থায় দাঁড়িয়ে ইমামতি করতে অক্ষম ব্যক্তির চেয়ারে বসে মাঝে-মধ্যে ছালাতের ইমামতি করা জায়েয। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একবার ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়ে যোহর-আছরের ছালাতে বসে ইমামতি করেছেন এবং ছাহাবীগণ তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে ছালাত আদায় করেছেন (বুখারী হা/৬৮৯, মিশকাত হা/১১৩৯; মির‘আত ৪/৮৯)। অতএব স্থায়ীভাবে অক্ষম হয়ে পড়লে এবং দাঁড়াতে সক্ষম যোগ্য ব্যক্তি থাকলে ইমামতি ছেড়ে দেওয়াই উত্তম হবে। কেননা দাঁড়িয়ে ছালাত আদায় করা ছালাতের অন্যতম রুকন (বাক্বারাহ ২/২৩৮)।
উত্তর : নিয়মিতভাবে নয়, বরং মাঝে-মধ্যে বাধ্যগত অবস্থায় দাঁড়িয়ে ইমামতি করতে অক্ষম ব্যক্তির চেয়ারে বসে মাঝে-মধ্যে ছালাতের ইমামতি করা জায়েয। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একবার ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়ে যোহর-আছরের ছালাতে বসে ইমামতি করেছেন এবং ছাহাবীগণ তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে ছালাত আদায় করেছেন (বুখারী হা/৬৮৯, মিশকাত হা/১১৩৯; মির‘আত ৪/৮৯)। অতএব স্থায়ীভাবে অক্ষম হয়ে পড়লে এবং দাঁড়াতে সক্ষম যোগ্য ব্যক্তি থাকলে ইমামতি ছেড়ে দেওয়াই উত্তম হবে। কেননা দাঁড়িয়ে ছালাত আদায় করা ছালাতের অন্যতম রুকন (বাক্বারাহ ২/২৩৮)।
৩৪৭
প্রশ্ন (২৬/৪৬৬) : ইয়াকূব (আঃ)-এর সন্তানরা তাঁকে সিজদা করেছিলেন। এক্ষণে আমাদের পিতা-মাতা বা পীর ছাহেবদেরকে সিজদা করতে বাধা কোথায়?-জাহাঙ্গীর আলম, কাকীবুকী, সিংগাপুর।
উত্তর : সিজদা এবং যাবতীয় ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট করাকেই তাওহীদ বলে। ইয়াকূব (আঃ)-এর সন্তানরা তাঁকে সিজদা ছিল সম্মান প্রদর্শনের সিজদা, ইবাদতের সিজদা নয়। এই প্রথা আদম থেকে ঈসা (আঃ) পর্যন্ত তাঁদের শরী‘আতে বৈধ ছিল। পরবর্তীতে উক্ত প্রথাকে ইসলামে চিরতরে নিষিদ্ধ করা হয়েছে (ইবনু কাছীর, সূরা ইউসুফ ১০০ আয়াতের তাফসীর দ্রঃ)। মু‘আয বিন জাবাল (রাঃ) যখন ইয়ামানে গিয়ে দেখলেন যে খ্রীষ্টানরা তাদের নেতাদের সম্মানের সিজদা করে, তখন তিনি ভাবলেন যে, এই সম্মান তো আমাদের নবী পাওয়ার বেশি হকদার। অতঃপর তিনি রাসূল (ছাঃ)-এর উদ্দেশ্যে উক্ত সম্মানটি প্রদর্শন করতে চাইলে তিনি তাকে এমনটি করতে নিষেধ করে বলেন যে, আমি যদি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে সিজদা করার আদেশ দিতাম তাহ’লে স্ত্রীকে তার স্বামীর জন্য সিজদা করার নির্দেশ দিতাম (তিরমিযী হা/১১৫৯; ইবনে মাজা হা/১৮৫৩; মিশকাত হা/৩২৫৫)।
উত্তর : সিজদা এবং যাবতীয় ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট করাকেই তাওহীদ বলে। ইয়াকূব (আঃ)-এর সন্তানরা তাঁকে সিজদা ছিল সম্মান প্রদর্শনের সিজদা, ইবাদতের সিজদা নয়। এই প্রথা আদম থেকে ঈসা (আঃ) পর্যন্ত তাঁদের শরী‘আতে বৈধ ছিল। পরবর্তীতে উক্ত প্রথাকে ইসলামে চিরতরে নিষিদ্ধ করা হয়েছে (ইবনু কাছীর, সূরা ইউসুফ ১০০ আয়াতের তাফসীর দ্রঃ)। মু‘আয বিন জাবাল (রাঃ) যখন ইয়ামানে গিয়ে দেখলেন যে খ্রীষ্টানরা তাদের নেতাদের সম্মানের সিজদা করে, তখন তিনি ভাবলেন যে, এই সম্মান তো আমাদের নবী পাওয়ার বেশি হকদার। অতঃপর তিনি রাসূল (ছাঃ)-এর উদ্দেশ্যে উক্ত সম্মানটি প্রদর্শন করতে চাইলে তিনি তাকে এমনটি করতে নিষেধ করে বলেন যে, আমি যদি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে সিজদা করার আদেশ দিতাম তাহ’লে স্ত্রীকে তার স্বামীর জন্য সিজদা করার নির্দেশ দিতাম (তিরমিযী হা/১১৫৯; ইবনে মাজা হা/১৮৫৩; মিশকাত হা/৩২৫৫)।
৩৪৮
প্রশ্ন (২৭/৪৬৭) : জনৈক মেয়েকে বিবাহ করব বলে কসম করার পর পরিবারের বাধার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। এক্ষণে এতে কোন ক্ষতির আশংকা আছে কি? উক্ত কসমের জন্য কাফফারা দিতে হবে কি?-কাওছার আলী, চট্টগ্রাম।
উত্তর : পরিবারের সিদ্ধান্ত ছাড়া কাউকে বিবাহ করার ব্যাপারে এভাবে কসম করা উচিত নয়। এক্ষেত্রে তাকে কসম ভঙ্গের কাফফারা দিতে হবে। তা হ’ল- দশজন অভাবগ্রস্তকে মধ্যম শ্রেণীর খাদ্য প্রদান করা অথবা তাদেরকে বস্ত্র প্রদান করা অথবা একজন দাস বা দাসী মুক্ত করা। আর যদি কেউ এর সামর্থ্য না রাখে, তাহলে তিন দিন ছিয়াম পালন করবে’ (মায়েদাহ ৫/৮৯)। তবে এরূপ কসম পুরা না করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে গযব নাযিল হবে বলে আশংকা করা ঠিক নয়। কারণ এ মর্মে কোন দলীল পাওয়া যায় না।
উত্তর : পরিবারের সিদ্ধান্ত ছাড়া কাউকে বিবাহ করার ব্যাপারে এভাবে কসম করা উচিত নয়। এক্ষেত্রে তাকে কসম ভঙ্গের কাফফারা দিতে হবে। তা হ’ল- দশজন অভাবগ্রস্তকে মধ্যম শ্রেণীর খাদ্য প্রদান করা অথবা তাদেরকে বস্ত্র প্রদান করা অথবা একজন দাস বা দাসী মুক্ত করা। আর যদি কেউ এর সামর্থ্য না রাখে, তাহলে তিন দিন ছিয়াম পালন করবে’ (মায়েদাহ ৫/৮৯)। তবে এরূপ কসম পুরা না করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে গযব নাযিল হবে বলে আশংকা করা ঠিক নয়। কারণ এ মর্মে কোন দলীল পাওয়া যায় না।
৩৪৯
প্রশ্ন (২৮/৪৬৮) : কুরবানীর দিন ছালাতের পূর্বে না খেয়ে থাকা এবং কুরবানীর পর কলিজা দ্বারা ইফতার করা কি সুন্নাত?-সাজিদুল ইসলাম, রংপুর।
উত্তর : কুরবানীদাতার জন্য ঈদের দিন কুরবানীর গোশত খাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত না খেয়ে থাকা সুন্নাত। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ঈদুল আযহার দিন ছালাত শেষ না করে খেতেন না’ (তিরমিযী হা/৫৪২, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১৪৪০, সনদ ছহীহ)। আর তিনি স্বীয় কুরবানীর গোশত হ’তে খেতেন’ (আহমাদ হা/২৩০৩৪, সনদ হাসান; নায়লুল আওত্বার ৪/২৪১)। বায়হাক্বীর বর্ণনায় নির্দিষ্টভাবে ‘কলিজা’র কথা এসেছে (বায়হাক্বী হা/৫৯৫৬; মির‘আতুল মাফাতীহ ৪/৪৫ পৃঃ,)। তবে বর্ণনাটি যঈফ (সুবুলুস সালাম, তা‘লীক্ব আলবানী ২/২০০)।
উত্তর : কুরবানীদাতার জন্য ঈদের দিন কুরবানীর গোশত খাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত না খেয়ে থাকা সুন্নাত। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ঈদুল আযহার দিন ছালাত শেষ না করে খেতেন না’ (তিরমিযী হা/৫৪২, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১৪৪০, সনদ ছহীহ)। আর তিনি স্বীয় কুরবানীর গোশত হ’তে খেতেন’ (আহমাদ হা/২৩০৩৪, সনদ হাসান; নায়লুল আওত্বার ৪/২৪১)। বায়হাক্বীর বর্ণনায় নির্দিষ্টভাবে ‘কলিজা’র কথা এসেছে (বায়হাক্বী হা/৫৯৫৬; মির‘আতুল মাফাতীহ ৪/৪৫ পৃঃ,)। তবে বর্ণনাটি যঈফ (সুবুলুস সালাম, তা‘লীক্ব আলবানী ২/২০০)।
-শিহাবুদ্দীন, শেরপুর, ঢাকা।
উত্তর : জুম‘আ ও ঈদ একই দিনে হ’লে ঈদের ছালাত আদায় করার পর জুম‘আর ছালাত আদায় করা ইচ্ছাধীন বিষয়। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যুগে ঈদ ও জুম‘আ একই দিনে হ’লে তিনি সকলকে নিয়ে ঈদের ছালাত আদায় করতেন। অতঃপর বলতেন, এক্ষণে জুম‘আ পড়তে আসা বা না আসা তোমাদের ইচ্ছাধীন বিষয়। তবে আমরা জুম‘আ পড়ব’ (আবুদাঊদ হা/১০৭৩)।
উত্তর : জুম‘আ ও ঈদ একই দিনে হ’লে ঈদের ছালাত আদায় করার পর জুম‘আর ছালাত আদায় করা ইচ্ছাধীন বিষয়। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যুগে ঈদ ও জুম‘আ একই দিনে হ’লে তিনি সকলকে নিয়ে ঈদের ছালাত আদায় করতেন। অতঃপর বলতেন, এক্ষণে জুম‘আ পড়তে আসা বা না আসা তোমাদের ইচ্ছাধীন বিষয়। তবে আমরা জুম‘আ পড়ব’ (আবুদাঊদ হা/১০৭৩)।
৩৫১
প্রশ্ন (৩০/৪৭০) : বৃষ্টির কারণে মসজিদে মাগরিব ও এশার ছালাত জমা করার পর নির্ধারিত সময়ে এশার আযান দিতে হবে কি?-মোযাম্মেল হক, সাতক্ষীরা।
উত্তর : নির্ধারিত সময়ে এশার আযান দিবে এবং সেসময় উপস্থিত মুছল্লীদের নিয়ে ইমাম পুনরায় জামা‘আত করবেন। তাবূক যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে ছালাতের সময় হয়ে গেলে আব্দুর রহমান বিন ‘আওফের ইমামতিতে সকলে ফজরের ছালাত আদায় করেন। সে সময় রাসূল (ছাঃ) হাজত সারতে যাওয়ায় এক রাক‘আত পাননি। অতঃপর সালাম ফিরিয়ে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, তোমরা সুন্দর কাজ করেছ অথবা বললেন, তোমরা ঠিক করেছ। এর দ্বারা নির্ধারিত সময়ে ছালাত আদায়ে তিনি তাদেরকে উৎসাহিত করেন’ (মুসলিম হা/২৭৪)। অতএব কারণবশতঃ ছালাত জমা করলেও নির্ধারিত সময়ে মসজিদে আযান-জামা‘আত করতে হবে।
উত্তর : নির্ধারিত সময়ে এশার আযান দিবে এবং সেসময় উপস্থিত মুছল্লীদের নিয়ে ইমাম পুনরায় জামা‘আত করবেন। তাবূক যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে ছালাতের সময় হয়ে গেলে আব্দুর রহমান বিন ‘আওফের ইমামতিতে সকলে ফজরের ছালাত আদায় করেন। সে সময় রাসূল (ছাঃ) হাজত সারতে যাওয়ায় এক রাক‘আত পাননি। অতঃপর সালাম ফিরিয়ে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, তোমরা সুন্দর কাজ করেছ অথবা বললেন, তোমরা ঠিক করেছ। এর দ্বারা নির্ধারিত সময়ে ছালাত আদায়ে তিনি তাদেরকে উৎসাহিত করেন’ (মুসলিম হা/২৭৪)। অতএব কারণবশতঃ ছালাত জমা করলেও নির্ধারিত সময়ে মসজিদে আযান-জামা‘আত করতে হবে।
-আব্দুল আলী, বান্দাইখাড়া, নওগাঁ।
উত্তর : বিষাক্ত ইনজেকশন, ইউরিয়া সার বা ট্যাবলেট খাইয়ে পশু মোটাতাজাকরণ অত্যন্ত গর্হিত কাজ। এটি কুরবানী বা সকল সময়ের জন্য নিষিদ্ধ। কেননা এসব ব্যবহারে পশুর গোশত বিষাক্ত হয়ে যায়, যা মানবদেহের জন্য চরম ক্ষতিকর। এতে মানুষ লিভার, কিডনী, ক্যান্সার ও হৃদরোগসহ নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়। সুতরাং নিশ্চিত ক্ষতিকর জেনেও এসব ব্যবহার করা কবীরা গোনাহ। এর মাধ্যমে ক্রেতারা প্রতারিত হয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতারণা করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয় (মুসলিম হা/১০২)। প্রতারণা করা ও ধোঁকা দেওয়ার কারণে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে’ (ছহীহ ইবনু হিববান হা/৫৬৭, ছহীহাহ হা/১০৫৮)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা ক্ষতি করো না এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়ো না’ (ইবনু মাজাহ হা/২৩৪১; আহমাদ হা/২৮৬৭)।
উত্তর : বিষাক্ত ইনজেকশন, ইউরিয়া সার বা ট্যাবলেট খাইয়ে পশু মোটাতাজাকরণ অত্যন্ত গর্হিত কাজ। এটি কুরবানী বা সকল সময়ের জন্য নিষিদ্ধ। কেননা এসব ব্যবহারে পশুর গোশত বিষাক্ত হয়ে যায়, যা মানবদেহের জন্য চরম ক্ষতিকর। এতে মানুষ লিভার, কিডনী, ক্যান্সার ও হৃদরোগসহ নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়। সুতরাং নিশ্চিত ক্ষতিকর জেনেও এসব ব্যবহার করা কবীরা গোনাহ। এর মাধ্যমে ক্রেতারা প্রতারিত হয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতারণা করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয় (মুসলিম হা/১০২)। প্রতারণা করা ও ধোঁকা দেওয়ার কারণে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে’ (ছহীহ ইবনু হিববান হা/৫৬৭, ছহীহাহ হা/১০৫৮)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা ক্ষতি করো না এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়ো না’ (ইবনু মাজাহ হা/২৩৪১; আহমাদ হা/২৮৬৭)।
৩৫৩
প্রশ্ন (৩২/৪৭২) : বাংলাদেশে যেসব ইসলামী ব্যাংক রয়েছে, সেগুলিতে বিভিন্ন মেয়াদী ডিপোজিট করা যাবে কি?-বযলুল করীম, পুঠিয়া, রাজশাহী।
উত্তর : দেশে প্রচলিত সাধারণ বা ইসলামী কোন ব্যাংকই পূর্ণভাবে সূদমুক্ত নয়। সুতরাং কোন ব্যাংকেই লাভের উদ্দেশ্যে অর্থ সঞ্চয় করা এবং লভ্যাংশ গ্রহণ করা জায়েয নয়। দেশে প্রচলিত ইসলামী ব্যাংকগুলি ঝুঁকি থাকার কারণে ইসলামী ব্যবসা পদ্ধতি মুশারাকা ও মুযারাবা বলতে গেলে পরিত্যাগ করে মুরাবাহা পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। ফলে ব্যাংকে সঞ্চয়কারীরা ঝুঁকিহীনভাবে কেবল মুনাফাই পাচ্ছে। অন্যদিকে ‘মুরাবাহা’র ভিত্তিতে নির্দিষ্ট লাভের চুক্তিতে ঋণগ্রহিতারা সময়মত লাভের টাকা পরিশোধ করতে না পারলে তার বিপরীতে জরিমানার নামে চক্রবৃদ্ধিহারে ঋণ পরিশোধ করতে করতে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। এগুলি যুলুম ছাড়া কিছু নয়। সুতরাং এসব থেকে দূরে থাকা মুমিনের জন্য একান্ত কর্তব্য।
উত্তর : দেশে প্রচলিত সাধারণ বা ইসলামী কোন ব্যাংকই পূর্ণভাবে সূদমুক্ত নয়। সুতরাং কোন ব্যাংকেই লাভের উদ্দেশ্যে অর্থ সঞ্চয় করা এবং লভ্যাংশ গ্রহণ করা জায়েয নয়। দেশে প্রচলিত ইসলামী ব্যাংকগুলি ঝুঁকি থাকার কারণে ইসলামী ব্যবসা পদ্ধতি মুশারাকা ও মুযারাবা বলতে গেলে পরিত্যাগ করে মুরাবাহা পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। ফলে ব্যাংকে সঞ্চয়কারীরা ঝুঁকিহীনভাবে কেবল মুনাফাই পাচ্ছে। অন্যদিকে ‘মুরাবাহা’র ভিত্তিতে নির্দিষ্ট লাভের চুক্তিতে ঋণগ্রহিতারা সময়মত লাভের টাকা পরিশোধ করতে না পারলে তার বিপরীতে জরিমানার নামে চক্রবৃদ্ধিহারে ঋণ পরিশোধ করতে করতে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। এগুলি যুলুম ছাড়া কিছু নয়। সুতরাং এসব থেকে দূরে থাকা মুমিনের জন্য একান্ত কর্তব্য।
-রফীকুযযামান
হরিরামপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, ভারত।
উত্তর : মহিলা মাইয়েতের চুল বেণী করে তিন ভাগ করবে এবং একটি পিছনে ও অপর দুটি দু’পাশে ছেড়ে দিবে। উম্মে ‘অvত্বিয়া (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)-এর কন্যা যয়নব (রাঃ) মৃত্যুবরণ করলে তিনি তার চুল তিন ভাগে ভাগ করে বেণী করতে বলেছিলেন (বুখারী হা/১২৬৩; মুসলিম; মিশকাত হা/১৬৩৪)।
হরিরামপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, ভারত।
উত্তর : মহিলা মাইয়েতের চুল বেণী করে তিন ভাগ করবে এবং একটি পিছনে ও অপর দুটি দু’পাশে ছেড়ে দিবে। উম্মে ‘অvত্বিয়া (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)-এর কন্যা যয়নব (রাঃ) মৃত্যুবরণ করলে তিনি তার চুল তিন ভাগে ভাগ করে বেণী করতে বলেছিলেন (বুখারী হা/১২৬৩; মুসলিম; মিশকাত হা/১৬৩৪)।
৩৫৫
প্রশ্ন (৩৪/৪৭৪) : নিফাসের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ সীমা কতদিন? ৪০ দিনের পূর্বে রক্ত বন্ধ হয়ে গেলেও ইবাদতের জন্য ৪০ দিন অপেক্ষা করতে হবে কি?-মানযূর, তানোর, রাজশাহী।
উত্তর : নিফাসের নিম্ন সময়ের কোন মেয়াদ নেই। যখনই পবিত্র হবে, তখনই ছালাত ও ছিয়াম শুরু করবে (তিরমিযী হা/১৩৯)। তবে এর ঊর্ধ্ব সময়সীমা হ’ল ৪০ দিন। উম্মে সালামা (রাঃ) বলেন, নিফাসগ্রস্ত মহিলাগণ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যুগে ৪০ দিন অপেক্ষা করতেন’(আবুদাঊদ হা/৩১১; তিরমিযী হা/১৩৯; ইবনু মাজাহ হা/৬৪৮)। অতএব ৪০ দিন পরও যদি কারো রক্তস্রাব বন্ধ না হয়, তাহ’লে বুঝতে হবে যে, এটি এস্তেহাযা, বা এক প্রকার প্রদর রোগ। এমতাবস্থায় গোসল করে ছালাত আদায় করবে এবং প্রতি ছালাতের পূর্বে ওযূ করবে’ (বুখারী হা/২২৮; মুসলিম হা/৩৩৩; মিশকাত হা/৫৫৭)।
উত্তর : নিফাসের নিম্ন সময়ের কোন মেয়াদ নেই। যখনই পবিত্র হবে, তখনই ছালাত ও ছিয়াম শুরু করবে (তিরমিযী হা/১৩৯)। তবে এর ঊর্ধ্ব সময়সীমা হ’ল ৪০ দিন। উম্মে সালামা (রাঃ) বলেন, নিফাসগ্রস্ত মহিলাগণ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যুগে ৪০ দিন অপেক্ষা করতেন’(আবুদাঊদ হা/৩১১; তিরমিযী হা/১৩৯; ইবনু মাজাহ হা/৬৪৮)। অতএব ৪০ দিন পরও যদি কারো রক্তস্রাব বন্ধ না হয়, তাহ’লে বুঝতে হবে যে, এটি এস্তেহাযা, বা এক প্রকার প্রদর রোগ। এমতাবস্থায় গোসল করে ছালাত আদায় করবে এবং প্রতি ছালাতের পূর্বে ওযূ করবে’ (বুখারী হা/২২৮; মুসলিম হা/৩৩৩; মিশকাত হা/৫৫৭)।
-আব্দুর রশীদ, যশোর।
উত্তর : জুম‘আ ও ঈদায়নের খুৎবার মধ্যে খতীব দো‘আ করার সময় হাত উত্তোলন করার পক্ষে কোন দলীল পাওয়া যায়না। কেবল বৃষ্টি প্রার্থনার জন্য খুৎবা চলাকালে ইমাম মিম্বরে দাঁড়িয়ে হাত উঠিয়ে দো‘আ করতে পারবেন (বুখারী হা/৯৩৩; মুসলিম হা/৮৯৭; মিশকাত হা/৫৯০২)।
উত্তর : জুম‘আ ও ঈদায়নের খুৎবার মধ্যে খতীব দো‘আ করার সময় হাত উত্তোলন করার পক্ষে কোন দলীল পাওয়া যায়না। কেবল বৃষ্টি প্রার্থনার জন্য খুৎবা চলাকালে ইমাম মিম্বরে দাঁড়িয়ে হাত উঠিয়ে দো‘আ করতে পারবেন (বুখারী হা/৯৩৩; মুসলিম হা/৮৯৭; মিশকাত হা/৫৯০২)।
৩৫৭
প্রশ্ন (৩৬/৪৭৬) : যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশকে ছিয়াম পালন করা যাবে কি? এতে প্রতি দিনের জন্য এক বছর ছিয়াম পালনের নেকী পাওয়া যায় কি?-হাবীবুর রহমান, মহাখালী, ঢাকা।
উত্তর : যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশদিন অধিক ফযীলতের জন্য ছিয়াম কিংবা অন্যান্য নেকীর কাজ করা যাবে। (বুখারী, মিশকাত হা/১৪৬০)। সে হিসাব ১ম থেকে ৯ই তারিখ পর্যন্ত ছিয়াম রাখা যায়। কেননা আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) উক্ত ছিয়াম রাখতেন (নাসাঈ হা/২৪১৭, সনদ ছহীহ)। তবে প্রতি দিনের জন্য একবছর ছিয়াম পালনের নেকী পাওয়া যাবে মর্মে বর্ণিত হাদীছ যঈফ (তিরমিযী হা/৭৫৮; ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১৪৭১)। উল্লেখ্য যে, মা আয়েশা (রাঃ) বর্ণিত ছহীহ মুসলিমের হাদীছে এসেছে যে, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে যিলহজ্জের ১ম দশকে কোন ছিয়াম পালন করতে দেখিনি’ (মুসলিম হা/২৭৮১-৮২)। এ বিষয়ে ভাষ্যকার ইমাম নববী বলেন, সফর বা অন্য কোন কারণে হয়ত আয়েশা (রাঃ) এটা দেখেননি। তবে এর দ্বারা এ সময় ছিয়াম পালন অসিদ্ধ প্রমাণিত হয় না (নববী, শরহে মুসলিম ঐ হাদীছের ব্যাখ্যা)।
উত্তর : যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশদিন অধিক ফযীলতের জন্য ছিয়াম কিংবা অন্যান্য নেকীর কাজ করা যাবে। (বুখারী, মিশকাত হা/১৪৬০)। সে হিসাব ১ম থেকে ৯ই তারিখ পর্যন্ত ছিয়াম রাখা যায়। কেননা আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) উক্ত ছিয়াম রাখতেন (নাসাঈ হা/২৪১৭, সনদ ছহীহ)। তবে প্রতি দিনের জন্য একবছর ছিয়াম পালনের নেকী পাওয়া যাবে মর্মে বর্ণিত হাদীছ যঈফ (তিরমিযী হা/৭৫৮; ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১৪৭১)। উল্লেখ্য যে, মা আয়েশা (রাঃ) বর্ণিত ছহীহ মুসলিমের হাদীছে এসেছে যে, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে যিলহজ্জের ১ম দশকে কোন ছিয়াম পালন করতে দেখিনি’ (মুসলিম হা/২৭৮১-৮২)। এ বিষয়ে ভাষ্যকার ইমাম নববী বলেন, সফর বা অন্য কোন কারণে হয়ত আয়েশা (রাঃ) এটা দেখেননি। তবে এর দ্বারা এ সময় ছিয়াম পালন অসিদ্ধ প্রমাণিত হয় না (নববী, শরহে মুসলিম ঐ হাদীছের ব্যাখ্যা)।
৩৫৮
প্রশ্ন (৩৭/৪৭৭) : রাসূল (ছাঃ) নুপুরের আওয়াযকে ঘণ্টার-ধ্বনির সাথে তুলনা করে তাকে ফেরেশতা প্রবেশ না করার কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। এক্ষণে মোবাইলের রিংটোন কি এর অন্তর্ভুক্ত হবে?-নযরুল ইসলাম, উকিলপাড়া, ভোলা।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘ফেরেশতাগণ সে দলের সঙ্গি হন না যে দলে কুকুর ও ঘণ্টাধনি থাকে’ (মুসলিম হা/২১১৩; মিশকাত হা/৩৮৯৪; ছহীহাহ হা/১৮৭৩)। তিনি আরো বলেন, ঘণ্টা-ধ্বনি মূলত শয়তানের স্বরধ্বনি (মুসলিম হা/২১১৪; মিশকাত হা/৩৮৯৫)। অতএব মোবাইলে ঘণ্টা-ধ্বনির মত রিংটোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘ফেরেশতাগণ সে দলের সঙ্গি হন না যে দলে কুকুর ও ঘণ্টাধনি থাকে’ (মুসলিম হা/২১১৩; মিশকাত হা/৩৮৯৪; ছহীহাহ হা/১৮৭৩)। তিনি আরো বলেন, ঘণ্টা-ধ্বনি মূলত শয়তানের স্বরধ্বনি (মুসলিম হা/২১১৪; মিশকাত হা/৩৮৯৫)। অতএব মোবাইলে ঘণ্টা-ধ্বনির মত রিংটোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩৫৯
প্রশ্ন (৩৮/৪৭৮) : গ্রাম্য ডাক্তার হিসাবে অনেক মহিলা গর্ভস্থ ভ্রূণ নষ্টের জন্য আমার কাছে আসে। এক্ষণে এ অপারেশন করা জায়েয হবে কি?-ডা. এম. এ. লতীফ, মান্দা, নওগাঁ।
উত্তর: জায়েয হবে না। কারণ গর্ভপাত ঘটনো অর্থই সন্তান হত্যা করা। যা শরী‘আতে হারাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আল্লাহ যাকে হত্যা করা হারাম করেছেন তাকে তোমরা হত্যা করো না’ (আন‘আম ৬/১৫১)। আল্লাহ আরও বলেন, ‘তোমরা নিজেদের সন্তানদেরকে দারিদ্রে্যর কারণে হত্যা করো না। আমি তাদেরকে ও তোমাদেরকে রিযিক দান করি’ (আন‘আম ৬/১৫১)। তবে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শের আলোকে যদি মায়ের জীবনের হুমকি থাকে তাহলেই কেবল গর্ভস্থিত ভ্রূণ ফেলে দেয়া জায়েয।
উত্তর: জায়েয হবে না। কারণ গর্ভপাত ঘটনো অর্থই সন্তান হত্যা করা। যা শরী‘আতে হারাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আল্লাহ যাকে হত্যা করা হারাম করেছেন তাকে তোমরা হত্যা করো না’ (আন‘আম ৬/১৫১)। আল্লাহ আরও বলেন, ‘তোমরা নিজেদের সন্তানদেরকে দারিদ্রে্যর কারণে হত্যা করো না। আমি তাদেরকে ও তোমাদেরকে রিযিক দান করি’ (আন‘আম ৬/১৫১)। তবে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শের আলোকে যদি মায়ের জীবনের হুমকি থাকে তাহলেই কেবল গর্ভস্থিত ভ্রূণ ফেলে দেয়া জায়েয।
৩৬০
প্রশ্ন (৩৯/৪৭৯) : আমার আমবাগানের সাথে পুকুর ও শাক-সবজি চাষও করা হয়। দাওয়াতী কাজে ব্যস্ততার জন্য সেগুলি দেখাশোনা সম্ভব না হওয়ায় এক্ষণে উক্ত আমবাগান, পুকুর ও চাষাবাদের জমি সহ লীজ দিতে চাই। এক্ষণে সেটা জায়েয হবে কি?-মুবীনুল ইসলাম, উপশহর, রাজশাহী।
উত্তর : দাতা ও গ্রহীতার পারস্পরিক সম্মতিক্রমে কেবল জমি ও পুকুর লীজ দেওয়া যাবে। হানযালা বিন ক্বায়েস (রাঃ) বলেন, আমি রাফে‘ বিন খাদীজ (রাঃ)-কে দীনার ও দিরহামের বিনিময়ে জমি লীজ দেওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এতে কোন দোষ নেই (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২৯৭৪)। আর গাছ সমূহের আম ‘মুযারাবা’ অংশীদারী চুক্তিতে পৃথকভাবে বর্গা দিতে হবে (আবুদাঊদ হা/৪৮৩৬; সনদ ছহীহ)।
উত্তর : দাতা ও গ্রহীতার পারস্পরিক সম্মতিক্রমে কেবল জমি ও পুকুর লীজ দেওয়া যাবে। হানযালা বিন ক্বায়েস (রাঃ) বলেন, আমি রাফে‘ বিন খাদীজ (রাঃ)-কে দীনার ও দিরহামের বিনিময়ে জমি লীজ দেওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এতে কোন দোষ নেই (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২৯৭৪)। আর গাছ সমূহের আম ‘মুযারাবা’ অংশীদারী চুক্তিতে পৃথকভাবে বর্গা দিতে হবে (আবুদাঊদ হা/৪৮৩৬; সনদ ছহীহ)।
৩৬১
প্রশ্ন (৪০/৪৮০) : আমি একজন নতুন আহলেহাদীছ। আমাদের ঈদগাহে ছয় তাকবীরে ঈদের ছালাত হয়। এমতাবস্থায় ইমামের পিছনে ১২ তাকবীর দিলে আমার ছালাত হবে কি?-মহীউদ্দীন আহমাদ, কনুটিয়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
উত্তর : ইমামের পিছনে ১২ তাকবীর দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ ইমামের অনুসরণ করা আবশ্যক (বুখারী হা/৬৮৯; মুসলিম, মিশকাত হা/১১৩৯)। এতে ছালাতের ক্ষতি হ’লে সরাসরি ইমাম দায়ী হবেন (বুখারী গা/৬৯৪, মিশকাত হা/১১৩৩)। তাছাড়া ঈদায়নের অতিরিক্ত তাকবীরে কমবেশী হ’লে তাতে ছালাতের ক্ষতি হয় না (মির‘আত ৫/৫৩)।
উত্তর : ইমামের পিছনে ১২ তাকবীর দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ ইমামের অনুসরণ করা আবশ্যক (বুখারী হা/৬৮৯; মুসলিম, মিশকাত হা/১১৩৯)। এতে ছালাতের ক্ষতি হ’লে সরাসরি ইমাম দায়ী হবেন (বুখারী গা/৬৯৪, মিশকাত হা/১১৩৩)। তাছাড়া ঈদায়নের অতিরিক্ত তাকবীরে কমবেশী হ’লে তাতে ছালাতের ক্ষতি হয় না (মির‘আত ৫/৫৩)।
৩৬২
অক্টোবর
প্রশ্ন (১/১) : মৌসুমে ইট আগাম কিনে রেখে অন্য সময়ে তা বেশী দামে বিক্রয় করা এবং খাদ্যদ্রব্য যেমন ধান-চাল, আলু- পিঁয়াজ ইত্যাদি স্টক রেখে পরে তা বিক্রয় করা যাবে কি? এছাড়া মাছ চাষের সময় টাকা বিনিয়োগ করে পরে মাছ বিক্রয়ের সময় মনপ্রতি কিছু টাকা লাভ নেওয়া জায়েয হবে কি?-মুহসিন আলী
দৌলতপুর, কুষ্টিয়া।
উত্তর : ইট খাদ্যদ্রব্যের অন্তর্ভুক্ত নয়। সুতরাং এতে ইহতিকার হয় না। বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অধিক মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত করাই হ’ল ‘ইহতেকার’, যা হারাম। মা‘মার (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি বেশী দামের আশায় সম্পদ জমা রাখে সে গুনাহগার (মুসলিম হা/১৬০৫, আবুদাঊদ হা/৩৪৪৭)। তবে সাধারণভাবে উৎপাদনের মৌসুমে হরাসপ্রাপ্ত মূল্যে খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করে অন্য মৌসুমে প্রচলিত বাজার মূল্যে বিক্রয় করায় কোন দোষ নেই। কেননা খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত করায় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হ’লে তা জায়েয (আউনুল মা‘বূদ ৫/২২৬-২২৮ পৃ, ‘ইহতেকার নিষিদ্ধ’ অনুচ্ছেদ; নায়ল, ৫/২২২ পৃঃ, ‘ইহতেকার’ অনুচ্ছেদ)।
আর মাছ চাষের ক্ষেত্রে যদি ‘মুযারাবা’ পদ্ধতিতে একজনের অর্থে অপরজন ব্যবসা করে এবং লভ্যাংশ চুক্তি অনুপাতে উভয়ের মধ্যে বণ্টিত হয়, তবে তা জায়েয (আবুদাঊদ হা/৪৮৩৬; সনদ ছহীহ, নায়ল হা/২৩৩৪-৩৫)।
দৌলতপুর, কুষ্টিয়া।
উত্তর : ইট খাদ্যদ্রব্যের অন্তর্ভুক্ত নয়। সুতরাং এতে ইহতিকার হয় না। বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অধিক মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত করাই হ’ল ‘ইহতেকার’, যা হারাম। মা‘মার (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি বেশী দামের আশায় সম্পদ জমা রাখে সে গুনাহগার (মুসলিম হা/১৬০৫, আবুদাঊদ হা/৩৪৪৭)। তবে সাধারণভাবে উৎপাদনের মৌসুমে হরাসপ্রাপ্ত মূল্যে খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করে অন্য মৌসুমে প্রচলিত বাজার মূল্যে বিক্রয় করায় কোন দোষ নেই। কেননা খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত করায় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হ’লে তা জায়েয (আউনুল মা‘বূদ ৫/২২৬-২২৮ পৃ, ‘ইহতেকার নিষিদ্ধ’ অনুচ্ছেদ; নায়ল, ৫/২২২ পৃঃ, ‘ইহতেকার’ অনুচ্ছেদ)।
আর মাছ চাষের ক্ষেত্রে যদি ‘মুযারাবা’ পদ্ধতিতে একজনের অর্থে অপরজন ব্যবসা করে এবং লভ্যাংশ চুক্তি অনুপাতে উভয়ের মধ্যে বণ্টিত হয়, তবে তা জায়েয (আবুদাঊদ হা/৪৮৩৬; সনদ ছহীহ, নায়ল হা/২৩৩৪-৩৫)।
-হাফেয আনীসুর রহমান, হারাগাছ, রংপুর।
উত্তর : মাযার কেন্দ্রিক মসজিদে ছালাত আদায় করা যাবে না। কারণ এর উদ্দেশ্যই হ’ল শিরকের প্রতি মুছল্লীদের প্রলুব্ধ করা ও তাদেরকে মাযারমুখী করা। জানা-অজানা কবর ও ভুয়া কবর নিয়েই বহু স্থানে মাযার নাম দিয়ে নযর-নেয়ায ও ওরসের জমজমাট ব্যবসা চলছে। আর এইসব স্থানে দ্বীনদার মানুষকে আকর্ষণ করার জন্য বানানো হয় মসজিদ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যুগে কুফরীর উদ্দেশ্যে মুনাফিকরা ক্বোবায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিল, যা ‘মসজিদে যেরার’ নামে খ্যাত (তওবা ৯/১০৭)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নির্দেশে সেই মসজিদ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এ যুগের এইসব মসজিদ শিরকের উদ্দেশ্যে নির্মিত। অতএব এখানে ছালাত জায়েয হবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কবরের দিকে ফিরে ছালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন (মুসলিম হা/৯৭২)।
উত্তর : মাযার কেন্দ্রিক মসজিদে ছালাত আদায় করা যাবে না। কারণ এর উদ্দেশ্যই হ’ল শিরকের প্রতি মুছল্লীদের প্রলুব্ধ করা ও তাদেরকে মাযারমুখী করা। জানা-অজানা কবর ও ভুয়া কবর নিয়েই বহু স্থানে মাযার নাম দিয়ে নযর-নেয়ায ও ওরসের জমজমাট ব্যবসা চলছে। আর এইসব স্থানে দ্বীনদার মানুষকে আকর্ষণ করার জন্য বানানো হয় মসজিদ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যুগে কুফরীর উদ্দেশ্যে মুনাফিকরা ক্বোবায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিল, যা ‘মসজিদে যেরার’ নামে খ্যাত (তওবা ৯/১০৭)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নির্দেশে সেই মসজিদ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এ যুগের এইসব মসজিদ শিরকের উদ্দেশ্যে নির্মিত। অতএব এখানে ছালাত জায়েয হবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কবরের দিকে ফিরে ছালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন (মুসলিম হা/৯৭২)।
৩৬৪
প্রশ্ন (৩/৩) : আমাদের সমাজে কিছু মানুষ ফিৎরার খাতসমূহে বণ্টন শেষে ১টি অংশ নিজ আত্মীয়-স্বজনের মাঝে বণ্টন করে। এটা জায়েয হবে কি?-সিরাজুল ইসলাম
সারদা, রাজশাহী।
উত্তর : খাতসমূহের মধ্যে হকদার গরীব আত্মীয়-স্বজনের মধ্যেও বণ্টন করবে। এতে কোন দোষ নেই। এছাড়া সেখান থেকে সারা বছরের জন্য স্থানীয় বায়তুল মাল ফান্ডে যেটা রাখা হবে, তা থেকেও প্রয়োজনে অন্যান্য হকদারগণের ন্যায় তারাও পাবেন। উল্লেখ্য যে, আত্মীয়-স্বজন হকদার না হ’লে তাদের মাঝে ফিৎরা বণ্টন করা যাবে না (আবুদাঊদ হা/১৬০৯)।
সারদা, রাজশাহী।
উত্তর : খাতসমূহের মধ্যে হকদার গরীব আত্মীয়-স্বজনের মধ্যেও বণ্টন করবে। এতে কোন দোষ নেই। এছাড়া সেখান থেকে সারা বছরের জন্য স্থানীয় বায়তুল মাল ফান্ডে যেটা রাখা হবে, তা থেকেও প্রয়োজনে অন্যান্য হকদারগণের ন্যায় তারাও পাবেন। উল্লেখ্য যে, আত্মীয়-স্বজন হকদার না হ’লে তাদের মাঝে ফিৎরা বণ্টন করা যাবে না (আবুদাঊদ হা/১৬০৯)।
৩৬৫
প্রশ্ন (৪/৪) : একজন শরী‘আত সম্পর্কে অজ্ঞ ব্যক্তি কোন বিষয়ে দু’জন আলেমের নিকটে দু’রকম মাসআলা পেলে তার জন্য করণীয় কি হবে?-নাছির রায়হান
হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।
উত্তর : ফৎওয়া গ্রহণের ক্ষেত্রে সকল স্তরের মানুষের জন্য যরূরী হ’ল, দলীল জেনে নেওয়া। ছাহাবীগণ একটি বিষয়ে একাধিক ছাহাবীর কাছে জানতেন (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১১৫) এবং পরস্পরের নিকট দলীলও চাইতেন (তিরমিযী, মিশকাত হা/৩৫৫৪)। তবে দলীল বুঝার ক্ষমতা না থাকলে যিনি যিদ ও হঠকারিতা থেকে মুক্ত এবং যিনি পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী ফৎওয়া দেন, সেইরূপ যোগ্য ও আল্লাহভীরু আলেমের নিকট থেকে ফৎওয়া গ্রহণ করতে হবে। এরপরেও এরূপ আলেম যদি ইচ্ছাকৃতভাবে দলীলবিহীন ফৎওয়া দেন, তাহ’লে তার পাপ তার উপরেই বর্তাবে (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৪২)।
উল্লেখ্য যে, প্রত্যেক আলেমের কর্তব্য হ’ল জেনে-শুনে যাচাই-বাছাই করে ছহীহ দলীলভিত্তিক ফৎওয়া দেওয়া। আর জানা না থাকলে ‘আল্লাহ ভালো জানেন’ বলা (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৭২)। ইমাম মালেক (রহঃ) দুই-তৃতীয়াংশ ফৎওয়ার ক্ষেত্রে না জানার ওযর পেশ করেছেন। তিনি বলতেন, ‘আলেমের রক্ষাকবচ হ’ল ‘আমি জানি না বলা’। যদি সে এ রক্ষাকবচ ব্যবহারে গাফেল হয়, তাহ’লে সে ধ্বংসে নিক্ষিপ্ত হবে’ (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ৭/১৬৭)।
হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।
উত্তর : ফৎওয়া গ্রহণের ক্ষেত্রে সকল স্তরের মানুষের জন্য যরূরী হ’ল, দলীল জেনে নেওয়া। ছাহাবীগণ একটি বিষয়ে একাধিক ছাহাবীর কাছে জানতেন (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১১৫) এবং পরস্পরের নিকট দলীলও চাইতেন (তিরমিযী, মিশকাত হা/৩৫৫৪)। তবে দলীল বুঝার ক্ষমতা না থাকলে যিনি যিদ ও হঠকারিতা থেকে মুক্ত এবং যিনি পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী ফৎওয়া দেন, সেইরূপ যোগ্য ও আল্লাহভীরু আলেমের নিকট থেকে ফৎওয়া গ্রহণ করতে হবে। এরপরেও এরূপ আলেম যদি ইচ্ছাকৃতভাবে দলীলবিহীন ফৎওয়া দেন, তাহ’লে তার পাপ তার উপরেই বর্তাবে (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৪২)।
উল্লেখ্য যে, প্রত্যেক আলেমের কর্তব্য হ’ল জেনে-শুনে যাচাই-বাছাই করে ছহীহ দলীলভিত্তিক ফৎওয়া দেওয়া। আর জানা না থাকলে ‘আল্লাহ ভালো জানেন’ বলা (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৭২)। ইমাম মালেক (রহঃ) দুই-তৃতীয়াংশ ফৎওয়ার ক্ষেত্রে না জানার ওযর পেশ করেছেন। তিনি বলতেন, ‘আলেমের রক্ষাকবচ হ’ল ‘আমি জানি না বলা’। যদি সে এ রক্ষাকবচ ব্যবহারে গাফেল হয়, তাহ’লে সে ধ্বংসে নিক্ষিপ্ত হবে’ (সিয়ারু আ‘লামিন নুবালা ৭/১৬৭)।
৩৬৬
প্রশ্ন (৫/৫) : জীববিজ্ঞানের ব্যবহারিক ক্লাসে ব্যাঙ কেটে পরীক্ষা করতে হয়। কিন্তু শুনেছি এ প্রাণীকে এভাবে হত্যা করা গোনাহের কাজ। এক্ষণে করণীয় কি?-নুছরাত সাকী ইউহা
সাতকানিয়া সরকারী কলেজ, চট্টগ্রাম।
উত্তর : জীববিজ্ঞানের পড়াশুনার জন্য ব্যাঙ কেটে পরীক্ষা করা জায়েয নয়। কারণ রাসূল (ছাঃ) ব্যাঙ মারতে নিষেধ করেছেন এমনকি ঔষধের প্রয়োজনেও তিনি তা নিষেধ করেছেন। আব্দুর রহমান বিন ওছমান (রাঃ) বলেন, একদা জনৈক ডাক্তার ঔষধ হিসাবে ব্যাঙের ব্যবহার সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাকে ব্যাঙ মারতে নিষেধ করেন (আবুদাউদ, মিশকাত হা/৪৫৪৫)। প্রয়োজনে একই জাতীয় অন্য প্রাণীর সাহায্য নিবে।
সাতকানিয়া সরকারী কলেজ, চট্টগ্রাম।
উত্তর : জীববিজ্ঞানের পড়াশুনার জন্য ব্যাঙ কেটে পরীক্ষা করা জায়েয নয়। কারণ রাসূল (ছাঃ) ব্যাঙ মারতে নিষেধ করেছেন এমনকি ঔষধের প্রয়োজনেও তিনি তা নিষেধ করেছেন। আব্দুর রহমান বিন ওছমান (রাঃ) বলেন, একদা জনৈক ডাক্তার ঔষধ হিসাবে ব্যাঙের ব্যবহার সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাকে ব্যাঙ মারতে নিষেধ করেন (আবুদাউদ, মিশকাত হা/৪৫৪৫)। প্রয়োজনে একই জাতীয় অন্য প্রাণীর সাহায্য নিবে।
৩৬৭
প্রশ্ন (৬/৬) : আমি একজন মুওয়াযযিন। আমার দুই স্ত্রী এবং ৫ ছেলে ও ২ মেয়ে আছে। সম্পদের ৪ ভাগের ৩ ভাগ আমি ছেলেমেয়েদের মাঝে হেবা বিল এওয়ায মোতাবেক বণ্টন করেছি। কিন্তু ইমাম ছাহেব বলছেন, মালিক জীবিত অবস্থায় বণ্টন করা জায়েয নয়। তাই তা ফেরত না নিলে চাকুরী করা যাবে না। এক্ষণে আমার করণীয় কি?-আব্দুল জাববার
আত্রাই, নওগাঁ।
উত্তর : উত্তরাধিকার সম্পদ মৃত্যুর পরে বণ্টন হওয়াই শরী‘আত নির্দেশিত বিধান, যা সকলের জন্য কল্যাণকর। তবে মৃত্যুর পূর্বে পিতা সন্তানদের মাঝে কিছু বণ্টন করতে পারেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে সকলকে সমানভাবে প্রদান করতে হবে। একদা নু‘মান বিন বাশীর (রাঃ) তার এক ছেলেকে একটি গোলাম দান করার ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ)-কে জানালে তিনি তাকে তার অন্য ছেলেদের একই সমান প্রদানের নির্দেশ দেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩০১৯)। অতএব জীবিত অবস্থায় শরী‘আত মোতাবেক হকদারকে কিছু সম্পদ প্রদান করা জায়েয। এজন্য মুওয়াযযিনকে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কোন কারণ নেই।
আত্রাই, নওগাঁ।
উত্তর : উত্তরাধিকার সম্পদ মৃত্যুর পরে বণ্টন হওয়াই শরী‘আত নির্দেশিত বিধান, যা সকলের জন্য কল্যাণকর। তবে মৃত্যুর পূর্বে পিতা সন্তানদের মাঝে কিছু বণ্টন করতে পারেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে সকলকে সমানভাবে প্রদান করতে হবে। একদা নু‘মান বিন বাশীর (রাঃ) তার এক ছেলেকে একটি গোলাম দান করার ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ)-কে জানালে তিনি তাকে তার অন্য ছেলেদের একই সমান প্রদানের নির্দেশ দেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩০১৯)। অতএব জীবিত অবস্থায় শরী‘আত মোতাবেক হকদারকে কিছু সম্পদ প্রদান করা জায়েয। এজন্য মুওয়াযযিনকে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কোন কারণ নেই।
৩৬৮
প্রশ্ন (৭/৭) : ফেরেশতাগণকে জিবরীল, আযরাঈল, মিকাঈল ইত্যাদি নামে নামকরণ করার বিষয়টি কি কুরআন ও ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত? যেমন মালাকুল মাউতকে আযরাঈল বলা ইত্যাদি।-আশরাফ হাসাইন, দোগাছী, পাবনা।
উত্তর : ফেরেশতাগণের নামগুলি কুরআন এবং ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। জিবরীল এবং মীকাঈলের নাম কুরআনে বর্ণিত হয়েছে (বাক্বারাহ ৯৮)। কুরআনে মীকাল আসলেও হাদীছে মীকাঈল শব্দে এসেছে (বুখারী হা/৩২৩৬)। এছাড়া ইসরাফীলের নাম হাদীছে পাওয়া যায় (মুসলিম হা/৭৭০, মিশকাত হা/১২১২)। আর যে ফেরেশতা জান কবয করেন তার নাম মালাকুল মাঊত (সাজদাহ ১১)। ক্বিয়ামতের প্রাক্কালে যিনি সিংগায় ফুঁক দিবেন তার নাম ইসরাফীল (ইবনু কাছীর, সূরা বাক্বারাহ ৯৮ আয়াতের ব্যাখ্যা)। যারা কবরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাদের নাম মুনকার এবং নাকীর (তিরমিযী, মিশকাত হা/১৩০)। আব্দুর রহমান বিন সাবাত্ব বলেন, দুনিয়াবী কর্মসমূহ পরিচালনা করেন চার জন ফেরেশতা। জিব্রীল, মীকাঈল, মালাকুল মাঊত যার নাম আযরাঈল এবং ইস্রাফীল (কুরতুবী, তাফসীর সূরা নাযে‘আত ৭৯/৫)। তিনি বলেন, মালাকুল মউতের নাম হ’ল আযরাঈল। যার অর্থ আব্দুল্লাহ (কুরতুবী, শাওকানী, আয়সারুত তাফাসীর, তাফসীর সূরা সাজদাহ ৩২/১১)। তবে আলবানী (রহঃ) বলেন, ‘মালাকুল মাঊত’ কুরআনে বর্ণিত নাম। কিন্তু মানুষের মাঝে প্রচলিত তার ‘আযরাঈল’ নামকরণের কোন শারঈ ভিত্তি নেই। এটা ইসরাঈলী বর্ণনা মাত্র (আলবানী, তা‘লীক্ব ‘আলাত তাহাবী পৃঃ ৭২)।
উত্তর : ফেরেশতাগণের নামগুলি কুরআন এবং ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত। জিবরীল এবং মীকাঈলের নাম কুরআনে বর্ণিত হয়েছে (বাক্বারাহ ৯৮)। কুরআনে মীকাল আসলেও হাদীছে মীকাঈল শব্দে এসেছে (বুখারী হা/৩২৩৬)। এছাড়া ইসরাফীলের নাম হাদীছে পাওয়া যায় (মুসলিম হা/৭৭০, মিশকাত হা/১২১২)। আর যে ফেরেশতা জান কবয করেন তার নাম মালাকুল মাঊত (সাজদাহ ১১)। ক্বিয়ামতের প্রাক্কালে যিনি সিংগায় ফুঁক দিবেন তার নাম ইসরাফীল (ইবনু কাছীর, সূরা বাক্বারাহ ৯৮ আয়াতের ব্যাখ্যা)। যারা কবরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাদের নাম মুনকার এবং নাকীর (তিরমিযী, মিশকাত হা/১৩০)। আব্দুর রহমান বিন সাবাত্ব বলেন, দুনিয়াবী কর্মসমূহ পরিচালনা করেন চার জন ফেরেশতা। জিব্রীল, মীকাঈল, মালাকুল মাঊত যার নাম আযরাঈল এবং ইস্রাফীল (কুরতুবী, তাফসীর সূরা নাযে‘আত ৭৯/৫)। তিনি বলেন, মালাকুল মউতের নাম হ’ল আযরাঈল। যার অর্থ আব্দুল্লাহ (কুরতুবী, শাওকানী, আয়সারুত তাফাসীর, তাফসীর সূরা সাজদাহ ৩২/১১)। তবে আলবানী (রহঃ) বলেন, ‘মালাকুল মাঊত’ কুরআনে বর্ণিত নাম। কিন্তু মানুষের মাঝে প্রচলিত তার ‘আযরাঈল’ নামকরণের কোন শারঈ ভিত্তি নেই। এটা ইসরাঈলী বর্ণনা মাত্র (আলবানী, তা‘লীক্ব ‘আলাত তাহাবী পৃঃ ৭২)।
-আব্দুল আহাদ
তানোর, রাজশাহী।
উত্তর: রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মোট চার ধরণের পশু কুরবানী করতে নিষেধ করেছেন। যথা স্পষ্ট খোঁড়া, স্পষ্ট কানা, স্পষ্ট রোগী ও জীর্ণ-শীর্ণ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১৪৬৫)। হাতমা ( الْهَتْمَاءُ ) অর্থাৎ কিছু দাঁত পড়ে যাওয়া পশু এর অন্তর্ভুক্ত নয়। অতএব এরূপ পশু কুরাবানী করায় কোন বাধা নেই। তবে নিখুঁত ও সুন্দর পশু ক্রয় করাই উত্তম (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ইবনু তায়মিয়াহ ২৬/৩০৮; উছায়মীন, শারহুল মুমতে‘ ৭/৪৩২)।
তানোর, রাজশাহী।
উত্তর: রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মোট চার ধরণের পশু কুরবানী করতে নিষেধ করেছেন। যথা স্পষ্ট খোঁড়া, স্পষ্ট কানা, স্পষ্ট রোগী ও জীর্ণ-শীর্ণ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১৪৬৫)। হাতমা ( الْهَتْمَاءُ ) অর্থাৎ কিছু দাঁত পড়ে যাওয়া পশু এর অন্তর্ভুক্ত নয়। অতএব এরূপ পশু কুরাবানী করায় কোন বাধা নেই। তবে নিখুঁত ও সুন্দর পশু ক্রয় করাই উত্তম (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ইবনু তায়মিয়াহ ২৬/৩০৮; উছায়মীন, শারহুল মুমতে‘ ৭/৪৩২)।
৩৭০
প্রশ্ন (৯/৯) : টয়লেট সহ বাথরুমে ওযু করার পর ওযুর দো‘আ পাঠ করা যাবে কি? না বাইরে এসে দো‘আ পড়তে হবে?-মা‘ছূম
জঙ্গীপুর, মুর্শিদাবাদ, ভারত।
উত্তর : টয়লেটের ভিতরে উক্ত দো‘আ পাঠে বাধা নেই। কেবল পেশাব-পায়খানারত অবস্থায় দো‘আ সহ সকল প্রকার যিকির থেকে বিরত থাকবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৩৫)। সাধারণভাবে বাথরুমে দো‘আ পড়া যাবে। আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকর করতেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৫৬)।
জঙ্গীপুর, মুর্শিদাবাদ, ভারত।
উত্তর : টয়লেটের ভিতরে উক্ত দো‘আ পাঠে বাধা নেই। কেবল পেশাব-পায়খানারত অবস্থায় দো‘আ সহ সকল প্রকার যিকির থেকে বিরত থাকবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৩৫)। সাধারণভাবে বাথরুমে দো‘আ পড়া যাবে। আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকর করতেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৫৬)।
৩৭১
প্রশ্ন (১০/১০) : মোবাইলে বা কম্পিউটারে দেখে কুরআন পাঠ করা যাবে কি? করা গেলেও পূর্ণ নেকী লাভ করা যাবে কি?-রবীউল ইসলাম তাজ, সিলেট।
উত্তর : যাবে। এতে পূর্ণ নেকীও অর্জিত হবে ইনশাআল্লাহ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব হ’তে একটি হরফ পাঠ করবে তার জন্য দশটি নেকী রয়েছে (তিরমিযী হা/২৯১০; মিশকাত হা/২১৩৭)। অতএব মুখস্ত হৌক, মুছহাফ দেখে হৌক আর কম্পিউটারে দেখে হৌক, সবক্ষেত্রেই সমান নেকী অর্জিত হবে। আর মুছহাফ দেখে কুরআন পাঠের বিশেষ ফযীলত মর্মে বর্ণিত হাদীছগুলি যঈফ ও জাল (সিলসিলা যঈফাহ হা/৩৫৬, ১৫৮৬; যঈফুল জামে‘ হা/২৮৫৫)।
উত্তর : যাবে। এতে পূর্ণ নেকীও অর্জিত হবে ইনশাআল্লাহ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব হ’তে একটি হরফ পাঠ করবে তার জন্য দশটি নেকী রয়েছে (তিরমিযী হা/২৯১০; মিশকাত হা/২১৩৭)। অতএব মুখস্ত হৌক, মুছহাফ দেখে হৌক আর কম্পিউটারে দেখে হৌক, সবক্ষেত্রেই সমান নেকী অর্জিত হবে। আর মুছহাফ দেখে কুরআন পাঠের বিশেষ ফযীলত মর্মে বর্ণিত হাদীছগুলি যঈফ ও জাল (সিলসিলা যঈফাহ হা/৩৫৬, ১৫৮৬; যঈফুল জামে‘ হা/২৮৫৫)।
-মুনীর খান
পীরগঞ্জ, রংপুর।
উত্তর : যাবে না। কারণ উভয়ের বিধান পৃথক। শরী‘আতে মোযা পরিধান সিদ্ধ (তিরমিযী হা/২৮২০; মিশকাত হা/৪৪১৮)। কিন্তু টাখনুর নীচে কাপড় পরা হারাম। টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরলে ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না, তার সাথে কথা বলবেন না এবং তাকে (গোনাহ থেকে) পবিত্রও করবেন না (মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৯৫, ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন টাখনুর নীচে কাপড় যতটুকু যাবে, ততটুকু জাহান্নামে পুড়বে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪৩১৪)। অতএব সর্বাবস্থায় এ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
পীরগঞ্জ, রংপুর।
উত্তর : যাবে না। কারণ উভয়ের বিধান পৃথক। শরী‘আতে মোযা পরিধান সিদ্ধ (তিরমিযী হা/২৮২০; মিশকাত হা/৪৪১৮)। কিন্তু টাখনুর নীচে কাপড় পরা হারাম। টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরলে ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না, তার সাথে কথা বলবেন না এবং তাকে (গোনাহ থেকে) পবিত্রও করবেন না (মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৯৫, ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন টাখনুর নীচে কাপড় যতটুকু যাবে, ততটুকু জাহান্নামে পুড়বে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪৩১৪)। অতএব সর্বাবস্থায় এ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩৭৩
প্রশ্ন (১২/১২) : আমি একটি মসজিদের বেতনভুক মুওয়াযযিন। কিন্ত কর্মব্যস্ততার কারণে যোহর ও আছরের ছালাতে আযান দিতে পারি না। এজন্য আমি দায়ী হব কি?-রফীকুল ইসলাম
বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘সাবধান! তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমরা প্রত্যেকেই ক্বিয়ামতের দিন স্ব স্ব দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে’ (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৩৬৮৫, ‘নেতৃত্ব ও পদ মর্যাদা’ অধ্যায়)। সুতরাং কৌশলে বা অবাধ্য হয়ে এরূপ করলে অবশ্যই গুনাহগার হ’তে হবে। আর যদি বিষয়টি কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে হয়ে থাকে তবে কোন সমস্যা নেই।
বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘সাবধান! তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমরা প্রত্যেকেই ক্বিয়ামতের দিন স্ব স্ব দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে’ (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৩৬৮৫, ‘নেতৃত্ব ও পদ মর্যাদা’ অধ্যায়)। সুতরাং কৌশলে বা অবাধ্য হয়ে এরূপ করলে অবশ্যই গুনাহগার হ’তে হবে। আর যদি বিষয়টি কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে হয়ে থাকে তবে কোন সমস্যা নেই।
৩৭৪
প্রশ্ন (১৩/১৩) : ধান, গম, ভুট্টা ইত্যাদি শস্য চাষের জমিতে আগে ওশর দিতাম। বর্তমানে পুকুর কেটে মাছ এবং কলার চাষ করছি। এক্ষণে এই ফসলের ওশর বা যাকাত আদায় করব কিভাবে?-যাকির হোসাইন, গুরুদাসপুর, নাটোর।
উত্তর : মাছ বা কলার শরী‘আত নির্ধারিত কোন যাকাত নেই। তবে উভয়টিই যদি ব্যবসার উদ্দেশ্যে করা হয় তবে বছর শেষে মূলধন ও লভ্যাংশ হিসাব করে নিছাব পরিমাণ হলে তা থেকে শতকরা আড়াই টাকা হারে যাকাত আদায় করতে হবে।
উত্তর : মাছ বা কলার শরী‘আত নির্ধারিত কোন যাকাত নেই। তবে উভয়টিই যদি ব্যবসার উদ্দেশ্যে করা হয় তবে বছর শেষে মূলধন ও লভ্যাংশ হিসাব করে নিছাব পরিমাণ হলে তা থেকে শতকরা আড়াই টাকা হারে যাকাত আদায় করতে হবে।
-ফাহীমা, কেঁড়াগাছি, সাতক্ষীরা।
উত্তর : আয়াতটির অর্থ হ’ল- আর ‘শপথ দশ রাত্রির’। ইবনু আববাস, ইবনু যুবায়ের, মুজাহিদ, সুদ্দী, কালবী প্রমুখ বিগত ও পরবর্তী যুগের অধিকাংশ বিদ্বান এর দ্বারা যুলহিজ্জাহর প্রথম দশদিন অর্থ নিয়েছেন। তবে কেউ কেউ রামাযানের শেষ দশকের কথাও বলেছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘এই দশদিনের (অর্থাৎ যুলহিজ্জাহর প্রথম দশদিনের) আমলের চাইতে প্রিয়তর কোন আমল আল্লাহর কাছে নেই। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, ‘আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও কি নয়’? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়। তবে ঐ ব্যক্তি, যে স্বীয় জান ও মাল নিয়ে জিহাদে বেরিয়েছে। কিন্তু কিছুই নিয়ে ফিরে আসেনি’। অর্থাৎ শহীদ হয়ে গেছে (বুখারী হা/৯৬৯; তিরমিযী হা/৭৫৭; ইবনু মাজাহ হা/১৭২৭; মিশকাত হা/১৪৬০; দ্রঃ তাফসীরুল কুরআন ৩০তম পারা ২৭১ পৃঃ)।
উত্তর : আয়াতটির অর্থ হ’ল- আর ‘শপথ দশ রাত্রির’। ইবনু আববাস, ইবনু যুবায়ের, মুজাহিদ, সুদ্দী, কালবী প্রমুখ বিগত ও পরবর্তী যুগের অধিকাংশ বিদ্বান এর দ্বারা যুলহিজ্জাহর প্রথম দশদিন অর্থ নিয়েছেন। তবে কেউ কেউ রামাযানের শেষ দশকের কথাও বলেছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘এই দশদিনের (অর্থাৎ যুলহিজ্জাহর প্রথম দশদিনের) আমলের চাইতে প্রিয়তর কোন আমল আল্লাহর কাছে নেই। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, ‘আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও কি নয়’? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়। তবে ঐ ব্যক্তি, যে স্বীয় জান ও মাল নিয়ে জিহাদে বেরিয়েছে। কিন্তু কিছুই নিয়ে ফিরে আসেনি’। অর্থাৎ শহীদ হয়ে গেছে (বুখারী হা/৯৬৯; তিরমিযী হা/৭৫৭; ইবনু মাজাহ হা/১৭২৭; মিশকাত হা/১৪৬০; দ্রঃ তাফসীরুল কুরআন ৩০তম পারা ২৭১ পৃঃ)।
-আবুল কাসেম
বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : মাদকতা না আসা পর্যন্ত তাল গাছের রস পানে বাধা নেই। যা মাদকতা সৃষ্টি করে কেবল সেটি হারাম (মুসলিম হা/২০২০৩; মিশকাত হা/৩৬৩৮; ছহীহাহ হা/২০৩৯)। সাধারণতঃ তাযা রসে মাদকতা থাকেনা। কিন্তু তা রোদ্রের তাপ পেলে তাতে মাদকতা আসতে পারে। যখন মাদকতা আসবে তখন হারাম। তবে তালের লালি খাওয়াতে কোন বাধা নেই। কারণ তাতে কোন মাদকতা সৃষ্টি করে না।
বাগমারা, রাজশাহী।
উত্তর : মাদকতা না আসা পর্যন্ত তাল গাছের রস পানে বাধা নেই। যা মাদকতা সৃষ্টি করে কেবল সেটি হারাম (মুসলিম হা/২০২০৩; মিশকাত হা/৩৬৩৮; ছহীহাহ হা/২০৩৯)। সাধারণতঃ তাযা রসে মাদকতা থাকেনা। কিন্তু তা রোদ্রের তাপ পেলে তাতে মাদকতা আসতে পারে। যখন মাদকতা আসবে তখন হারাম। তবে তালের লালি খাওয়াতে কোন বাধা নেই। কারণ তাতে কোন মাদকতা সৃষ্টি করে না।
-তাওহীদ, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : উক্ত খাবার খাওয়া যাবে। তবে রুচি না হলে খাবে না। তাবেঈ বিদ্বান দাঊদ ইবনু ছালেহ তাঁর মাতা হতে বর্ণনা করেন যে, তাঁর মাতার মুক্তিদানকারিণী মনিব একবার তাঁকে কিছু হারীসা নিয়ে আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট পাঠালে তিনি তাঁকে ছালাতরত অবস্থায় পেলেন। তখন তিনি আমাকে ইশারা করে খাবারটি রেখে যেতে বললেন। এসময় একটি বিড়াল আসল এবং তা হ’তে কিছু খেল। ছালাত শেষে আয়েশা (রাঃ) বিড়ালের খাওয়া স্থান হতেই কিছু খাবার খেলেন এবং বললেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, বিড়াল নাপাক নয়। তা তোমাদের পাশে অধিক বিচরণকারী একটি জন্তু। আর আমি রাসূল (ছাঃ)-কে তার উচ্ছিষ্ট পানি দ্বারা ওযূ করতে দেখেছি (আবুদাঊদ হা/৭৬, মিশকাত হা/৪৮৩)।
উত্তর : উক্ত খাবার খাওয়া যাবে। তবে রুচি না হলে খাবে না। তাবেঈ বিদ্বান দাঊদ ইবনু ছালেহ তাঁর মাতা হতে বর্ণনা করেন যে, তাঁর মাতার মুক্তিদানকারিণী মনিব একবার তাঁকে কিছু হারীসা নিয়ে আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট পাঠালে তিনি তাঁকে ছালাতরত অবস্থায় পেলেন। তখন তিনি আমাকে ইশারা করে খাবারটি রেখে যেতে বললেন। এসময় একটি বিড়াল আসল এবং তা হ’তে কিছু খেল। ছালাত শেষে আয়েশা (রাঃ) বিড়ালের খাওয়া স্থান হতেই কিছু খাবার খেলেন এবং বললেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, বিড়াল নাপাক নয়। তা তোমাদের পাশে অধিক বিচরণকারী একটি জন্তু। আর আমি রাসূল (ছাঃ)-কে তার উচ্ছিষ্ট পানি দ্বারা ওযূ করতে দেখেছি (আবুদাঊদ হা/৭৬, মিশকাত হা/৪৮৩)।
৩৭৮
প্রশ্ন (১৭/১৭) : জেহরী ছালাতে মুক্তাদী সূরা ফাতিহা ইমামের সাথে সাথে পাঠ করবে, নাকি এক আয়াত পরে পরে পাঠ করবে?-এস এ তালুকদার, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।
উত্তর : মুক্তাদী ইমামের পিছে পিছে নীরবে সূরা ফাতিহা পড়বে। জেহরী ছালাতে মুক্তাদী কিভাবে সূরা ফাতিহা পাঠ করবে, এরূপ এক প্রশ্নের জবাবে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, ‘তুমি এটা মনে মনে পড়’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৮২৩ ‘ছালাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ ১২)।
উত্তর : মুক্তাদী ইমামের পিছে পিছে নীরবে সূরা ফাতিহা পড়বে। জেহরী ছালাতে মুক্তাদী কিভাবে সূরা ফাতিহা পাঠ করবে, এরূপ এক প্রশ্নের জবাবে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, ‘তুমি এটা মনে মনে পড়’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৮২৩ ‘ছালাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ ১২)।
-মেহেদী হাসান
কানসাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : রাখা যাবে (নববী, মাজমূ‘ শারহুল মুহাযযাব ৮/৪৩৬)। ফেরেশতাগণের নামে নাম রাখা যাবে না মর্মে বর্ণিত হাদীছটি খুবই দুর্বল (আলবানী, যঈফুল জামে‘ হা/৩২৮৩)। এছাড়া নবীগণের নামেও নাম রাখায় কোন বাধা নেই। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা আমার নামে নাম রাখ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৭৫০)।
কানসাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : রাখা যাবে (নববী, মাজমূ‘ শারহুল মুহাযযাব ৮/৪৩৬)। ফেরেশতাগণের নামে নাম রাখা যাবে না মর্মে বর্ণিত হাদীছটি খুবই দুর্বল (আলবানী, যঈফুল জামে‘ হা/৩২৮৩)। এছাড়া নবীগণের নামেও নাম রাখায় কোন বাধা নেই। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা আমার নামে নাম রাখ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৭৫০)।
৩৮০
প্রশ্ন (১৯/১৯) : হজ্জ পালনকালে মীক্বাতের বাইরে কোন স্থান পরিদর্শনে গিয়ে পুনরায় ফিরে আসলে ওমরাহ করতে হবে কি?-আখতারুল ইসলাম, রাজশাহী।
উত্তর : হজ্জ করতে গিয়ে মীক্বাতের বাইরে গেলেও ওমরাহ করতে হবে না। কারণ এক সফরে একটি ওমরাহ হয়ে থাকে। আয়েশা (রাঃ) ঋতুবতী হওয়ায় প্রথমে হজ্জে ক্বিরান-এর ওমরাহ করতে না পারায় হজ্জের পরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ওমরার জন্য তাঁর ভাই আব্দুর রহমানকে তার সাথে মীক্বাতের বাইরে তানঈমে পাঠালেন। আয়েশা (রাঃ) সেখানে ইহরাম বেঁধে ওমরাহ করলেন। কিন্তু সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আব্দুর রহমান পুনরায় ওমরাহ করেননি (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২৫৫৬, ২৬৬৭)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথী অন্য কোন ছাহাবীও একাধিক ওমরাহ করেননি। অতএব মীক্বাতের বাইরে গিয়ে পরে মক্কায় ফিরে আসলেও ওমরাহ করতে হবে না (ওছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২২/৭৮; ঐ, প্রশ্নোত্তর নং-১৫৯৩; আলবানী, ছহীহাহ হা/১৯৮৪-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য, ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ ২/৮৯)।
উত্তর : হজ্জ করতে গিয়ে মীক্বাতের বাইরে গেলেও ওমরাহ করতে হবে না। কারণ এক সফরে একটি ওমরাহ হয়ে থাকে। আয়েশা (রাঃ) ঋতুবতী হওয়ায় প্রথমে হজ্জে ক্বিরান-এর ওমরাহ করতে না পারায় হজ্জের পরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ওমরার জন্য তাঁর ভাই আব্দুর রহমানকে তার সাথে মীক্বাতের বাইরে তানঈমে পাঠালেন। আয়েশা (রাঃ) সেখানে ইহরাম বেঁধে ওমরাহ করলেন। কিন্তু সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আব্দুর রহমান পুনরায় ওমরাহ করেননি (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/২৫৫৬, ২৬৬৭)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথী অন্য কোন ছাহাবীও একাধিক ওমরাহ করেননি। অতএব মীক্বাতের বাইরে গিয়ে পরে মক্কায় ফিরে আসলেও ওমরাহ করতে হবে না (ওছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২২/৭৮; ঐ, প্রশ্নোত্তর নং-১৫৯৩; আলবানী, ছহীহাহ হা/১৯৮৪-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য, ইবনুল ক্বাইয়িম, যাদুল মা‘আদ ২/৮৯)।
-ইলিয়াস সরকার, জামালপুর।
উত্তর : শরী‘আতে যাকাতের মাল হকদারদের মাঝে বণ্টন করার নির্দেশ এসেছে (তওবা ৯/৬০)। এজন্য তাদেরকে জানানোর কোন আবশ্যকতা নেই। কাউকে জানানো হ’লে বরং তাকে ছোট করা হয়, যা খোটা দানের শামিল। আর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তোমরা খোটা দিয়ে তোমাদের ছাদাক্বাগুলিকে বিনষ্ট করো না’ (বাক্বারাহ ২/২৬৪)।
উত্তর : শরী‘আতে যাকাতের মাল হকদারদের মাঝে বণ্টন করার নির্দেশ এসেছে (তওবা ৯/৬০)। এজন্য তাদেরকে জানানোর কোন আবশ্যকতা নেই। কাউকে জানানো হ’লে বরং তাকে ছোট করা হয়, যা খোটা দানের শামিল। আর আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তোমরা খোটা দিয়ে তোমাদের ছাদাক্বাগুলিকে বিনষ্ট করো না’ (বাক্বারাহ ২/২৬৪)।
৩৮২
প্রশ্ন (২১/২১) : বিশ বছর পূর্বে আমার দাদারা আমাদের মসজিদটি আহমাদিয়া জামা‘আতের নামে লিখে দিয়ে তাদের অন্তর্ভুক্ত হন। বর্তমানে তারা কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী আমল করছেন। কিন্তু মসজিদ তাদের নামেই লেখা আছে। এক্ষণে আমাদের করণীয় কি?-আবু সাঈদ, গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
উত্তর : আদালতে ঘোষণাপত্র দলীল সম্পাদনের মাধ্যমে উক্ত রেজিস্ট্রি পরিবর্তন করে নতুনভাবে রেজিস্ট্রি করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। অন্যথায় সুযোগ সন্ধানীরা পুনরায় মসজিদটি দখলের অপচেষ্টা চালাবে। এখুনি নাম পরিবর্তন করা না গেলেও উক্ত মসজিদে বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আমলসম্পন্ন ইমামের পিছনে ছালাত আদায়ে কোন বাধা নেই। মনে রাখতে হবে যে, আহমাদিয়া জামা‘আত শেষনবী হিসাবে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে মানেনা। সেকারণ ওরা মুসলমান নয়। ওদের নবী হ’ল পূর্ব পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর যেলার কাদিয়ান শহরের ভন্ডনবী গোলাম আহমাদ কাদিয়ানী।
উত্তর : আদালতে ঘোষণাপত্র দলীল সম্পাদনের মাধ্যমে উক্ত রেজিস্ট্রি পরিবর্তন করে নতুনভাবে রেজিস্ট্রি করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। অন্যথায় সুযোগ সন্ধানীরা পুনরায় মসজিদটি দখলের অপচেষ্টা চালাবে। এখুনি নাম পরিবর্তন করা না গেলেও উক্ত মসজিদে বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আমলসম্পন্ন ইমামের পিছনে ছালাত আদায়ে কোন বাধা নেই। মনে রাখতে হবে যে, আহমাদিয়া জামা‘আত শেষনবী হিসাবে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে মানেনা। সেকারণ ওরা মুসলমান নয়। ওদের নবী হ’ল পূর্ব পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর যেলার কাদিয়ান শহরের ভন্ডনবী গোলাম আহমাদ কাদিয়ানী।
৩৮৩
প্রশ্ন (২২/২২) : বর্তমানে বিভিন্ন মসজিদে দেখা যাচ্ছে, বহু অর্থ খরচ করে অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে সিংহাসন সদৃশ মিম্বার তৈরী করা হচ্ছে। এটা কতটুকু গ্রহণযোগ্য?-লোকমান আলী
গোমস্তাপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : মসজিদে অধিক সাজ-সজ্জা ও জাঁকজমক করা নিষেধ। মুছল্লীর দৃষ্টি কেড়ে নেয় এরূপ বস্ত্ত সেখান থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে (বুখারী হা/৫৯৫৯; মিশকাত হা/৭৫৮, ৭৫৭; আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৭১৮-১৯)। সুতরাং মিম্বার এমনভাবে তৈরী করা যাবে না, যা মুছল্লীর দৃষ্টি কেড়ে নেয় এবং অপব্যয়ের শামিল হয়। শরী‘আতে সরলতা পসন্দনীয়। সকল প্রকার বাড়িবাড়ি ও অপব্যয় পরিত্যাজ্য (আ‘রাফ ৩১; ইসরা ২৬-২৭)।
গোমস্তাপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : মসজিদে অধিক সাজ-সজ্জা ও জাঁকজমক করা নিষেধ। মুছল্লীর দৃষ্টি কেড়ে নেয় এরূপ বস্ত্ত সেখান থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে (বুখারী হা/৫৯৫৯; মিশকাত হা/৭৫৮, ৭৫৭; আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৭১৮-১৯)। সুতরাং মিম্বার এমনভাবে তৈরী করা যাবে না, যা মুছল্লীর দৃষ্টি কেড়ে নেয় এবং অপব্যয়ের শামিল হয়। শরী‘আতে সরলতা পসন্দনীয়। সকল প্রকার বাড়িবাড়ি ও অপব্যয় পরিত্যাজ্য (আ‘রাফ ৩১; ইসরা ২৬-২৭)।
৩৮৪
প্রশ্ন (২৩/২৩) : হজ্জে গমনকারী পিতা সেখানে কুরবানী দিবেন। এক্ষণে বাড়ীতে অবস্থানকারী পরিবারের জন্য কুরবানী দিতে হবে কি?-আহসানুল্লাহ, মুজিবনগর, মেহেরপুর।
উত্তর : হজ্জপালনকারীকে হজ্জের ওয়াজিব হিসাবে সেখানে নিজের পক্ষ থেকে কুরবানী করতে হয়। যা অনাদায়ে ফিদইয়া দিতে হয় (বাক্বারাহ ২/১৯৬)। এর সাথে পরিবারের কুরবানীর কোন সম্পর্ক নেই। সেকারণ সামর্থ্য থাকলে বাড়িতে পরিবারের পক্ষ থেকে একটি পশু কুরবানী করবে (ইবনু মাজাহ হা/৩১২৩, সনদ হাসান)।
উত্তর : হজ্জপালনকারীকে হজ্জের ওয়াজিব হিসাবে সেখানে নিজের পক্ষ থেকে কুরবানী করতে হয়। যা অনাদায়ে ফিদইয়া দিতে হয় (বাক্বারাহ ২/১৯৬)। এর সাথে পরিবারের কুরবানীর কোন সম্পর্ক নেই। সেকারণ সামর্থ্য থাকলে বাড়িতে পরিবারের পক্ষ থেকে একটি পশু কুরবানী করবে (ইবনু মাজাহ হা/৩১২৩, সনদ হাসান)।
৩৮৫
প্রশ্ন (২৪/২৪) : মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় স্ত্রী স্বামীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলে যে, মোহরানাসহ তোমার যা কিছু আছে সব ফেরত নিয়ে আমাকে তালাক দাও। অন্যথায় এখনই আমি আত্মহত্যা করব বলে সে আত্মহত্যা করতে উদ্যত হয়। এমতাবস্থায় স্বামী নিরুপায় হয়ে একত্রে তিন তালাক প্রদান করে। অতঃপর ঘন্টাখানেক পর স্ত্রী স্বাভাবিক হ’লে তারা উভয়ে অনুতপ্ত হয়ে একত্রে বসবাস করতে থাকে। বিভিন্ন সময়ে তিনবার এরূপ ঘটনা ঘটে। এক্ষণে করণীয় কি?-নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
উত্তর : প্রশ্নে বর্ণিত বিবরণ অনুযায়ী স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তার পক্ষ থেকে ‘খোলা’ প্রার্থনা এবং স্বামী কর্তৃক জীবন বাঁচানোর স্বার্থে এভাবে তালাক প্রদান শরী‘আতের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ রাসূল (ছাঃ) বলেন, তিন ব্যক্তির উপর হ’তে শরী‘আতের বিধান উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে একজন হ’ল মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি (তিরমিযী হা/১৪২৩; মিশকাত হা/৩২৮৭)।
উত্তর : প্রশ্নে বর্ণিত বিবরণ অনুযায়ী স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তার পক্ষ থেকে ‘খোলা’ প্রার্থনা এবং স্বামী কর্তৃক জীবন বাঁচানোর স্বার্থে এভাবে তালাক প্রদান শরী‘আতের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ রাসূল (ছাঃ) বলেন, তিন ব্যক্তির উপর হ’তে শরী‘আতের বিধান উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে একজন হ’ল মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি (তিরমিযী হা/১৪২৩; মিশকাত হা/৩২৮৭)।
৩৮৬
প্রশ্ন (২৫/২৫) : ইদানিং অনেক লোক হজ্জ করতে গিয়ে ইহরাম বাঁধার পর জেদ্দা বিমান বন্দর থেকে সরাসরি মদীনায় যান এবং মদীনা থেকে ফিরে এসে মক্কায় হজ্জের কাজ সমাধা করেন। এতে হজ্জের কোন ত্রুটি হয় কি?-মাহমূদুল ইসলাম
রিয়াদ, সঊদী আরব।
উত্তর : ইহরাম বাঁধা হয় হজ্জ ও ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে। এ সময় বলতে হয় ‘লাববাইক ওমরাতান’ অথবা ‘হাজ্জান’ (হে আল্লাহ! আমি ওমরাহ অথবা হজ্জের উদ্দেশ্যে তোমার দরবারে হাযির) (মুসলিম হা/১২৩২)। সেকারণ ইহরাম বেঁধে বায়তুল্লাহ ব্যতীত অন্যত্র যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। রাসূল (ছাঃ) হজ্জ ও ওমরাহ পালনকারীদের জন্যই মীক্বাত নির্ধারণ করেছেন (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/২৫১৬ ‘হজ্জ’ অধ্যায়)। তবে সফরসূচী যদি জেদ্দা থেকে মদীনা হয়, সেক্ষেত্রে ইহরাম না বেঁধেই মদীনা গমন করবেন। অতঃপর সেখান থেকে আসার পথে যুল-হুলায়ফা মীক্বাত থেকে ইহরাম বেঁধে মক্কায় এসে ওমরাহ ও হজ্জ পালন করবেন।
রিয়াদ, সঊদী আরব।
উত্তর : ইহরাম বাঁধা হয় হজ্জ ও ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে। এ সময় বলতে হয় ‘লাববাইক ওমরাতান’ অথবা ‘হাজ্জান’ (হে আল্লাহ! আমি ওমরাহ অথবা হজ্জের উদ্দেশ্যে তোমার দরবারে হাযির) (মুসলিম হা/১২৩২)। সেকারণ ইহরাম বেঁধে বায়তুল্লাহ ব্যতীত অন্যত্র যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। রাসূল (ছাঃ) হজ্জ ও ওমরাহ পালনকারীদের জন্যই মীক্বাত নির্ধারণ করেছেন (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/২৫১৬ ‘হজ্জ’ অধ্যায়)। তবে সফরসূচী যদি জেদ্দা থেকে মদীনা হয়, সেক্ষেত্রে ইহরাম না বেঁধেই মদীনা গমন করবেন। অতঃপর সেখান থেকে আসার পথে যুল-হুলায়ফা মীক্বাত থেকে ইহরাম বেঁধে মক্কায় এসে ওমরাহ ও হজ্জ পালন করবেন।
-নাছিরুদ্দীন, গাযীপুর।
উত্তর : হোমিও ঔষধ সেবনে শরী‘আতে কোন বাধা নেই। কেননা হোমিও সহ বিভিন্ন ঔষধে কেবল সংরক্ষণের জন্য সামান্য পরিমাণ পরিশোধিত এ্যালকোহল ব্যবহার করা হয়। যাতে মাদকতা আসে না এবং তা ছালাত ও যিকর হ’তে বিরতও রাখে না (ফাতাওয়া উছায়মীন ১১/২৫৬-২৫৯, ১৭/৩১)।
উত্তর : হোমিও ঔষধ সেবনে শরী‘আতে কোন বাধা নেই। কেননা হোমিও সহ বিভিন্ন ঔষধে কেবল সংরক্ষণের জন্য সামান্য পরিমাণ পরিশোধিত এ্যালকোহল ব্যবহার করা হয়। যাতে মাদকতা আসে না এবং তা ছালাত ও যিকর হ’তে বিরতও রাখে না (ফাতাওয়া উছায়মীন ১১/২৫৬-২৫৯, ১৭/৩১)।
-মাহবূব, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের যুগে সাত পরিবারের পক্ষ থেকে সাত ভাগে কুরবানী করার কোন দলীল পাওয়া যায় না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বিদায় হজ্জে আরাফার দিনে সমবেত জনমন্ডলীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘হে জনগণ! নিশ্চয়ই প্রতিটি পরিবারের উপরে প্রতি বছর একটি করে কুরবানী’ (আবুদাউদ হা/২৭৮৮; তিরমিযী হা/১৫১৮; মিশকাত হা/১৪৭৮)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মদীনায় সর্বদা নিজ পরিবারের পক্ষ থেকে একটি বা দু’টি দুম্বা কুরবানী করেছেন’ (বুখারী হা/৫৫৬৪-৬৫; মুসলিম হা/১৯৬৭, মিশকাত হা/১৪৫৩-৫৪)। ছাহাবীগণের মধ্যেও সর্বদা একই প্রচলন ছিল। প্রখ্যাত ছাহাবী আবু আইয়ূব আনছারী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)-এর সময়ে লোকেরা নিজের ও নিজ পরিবারের পক্ষ থেকে একটি করে বকরী কুরবানী দিত (তিরমিযী হা/১৫০৫, সনদ ছহীহ)। ধনাঢ্য ছাহাবী আবু সারীহা (রাঃ) বলেন, সুন্নাত জানার পর লোকেরা পরিবারপিছু একটি বা দু’টি করে বকরী কুরবানী দিত। অথচ এখন প্রতিবেশীরা আমাদের বখীল বলছে’ (ইবনু মাজাহ হা/৩১৪৮, সনদ ছহীহ)। অতএব পরিবারের পক্ষ থেকে একটি পশু কুরবানী করাই সুন্নাত।
উল্লেখ্য যে, সাত পরিবার নয় বরং সাতজন ব্যক্তি মিলে একটি গরু বা উট কুরবানী করার বিধান রয়েছে সফর অবস্থায়। যেমন জাবের (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে হোদায়বিয়া এবং হজ্জের সফরে ছিলাম। তখন তিনি আমাদেরকে একটি উটে ও গরুতে সাতজন করে শরীক হবার নির্দেশ দিলেন (মুসলিম হা/১৩১৮ (৩৫০-৫১)। একই বাক্যে বর্ণিত মুসলিম ও আবুদাঊদের উক্ত হাদীছটি সংক্ষেপে এসেছে মিশকাতে (হা/১৪৫৮)। যেখানে বলা হয়েছে, গরু ও উট সাতজনের পক্ষ হ’তে। এটি সফরের অবস্থায়। যা একই রাবীর অন্য বর্ণনায় এসেছে। যেমন ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে একটি সফরে ছিলাম। এমন সময় ঈদুল আযহা উপস্থিত হয়। তখন আমরা একটি গরুতে সাতজন ও একটি উটে দশজন করে শরীক হই’ (তিরমিযী হা/৯০৯; ইবনু মাজাহ হা/৩১৩১; মিশকাত হা/১৪৬৯)।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের যুগে সাত পরিবারের পক্ষ থেকে সাত ভাগে কুরবানী করার কোন দলীল পাওয়া যায় না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বিদায় হজ্জে আরাফার দিনে সমবেত জনমন্ডলীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘হে জনগণ! নিশ্চয়ই প্রতিটি পরিবারের উপরে প্রতি বছর একটি করে কুরবানী’ (আবুদাউদ হা/২৭৮৮; তিরমিযী হা/১৫১৮; মিশকাত হা/১৪৭৮)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মদীনায় সর্বদা নিজ পরিবারের পক্ষ থেকে একটি বা দু’টি দুম্বা কুরবানী করেছেন’ (বুখারী হা/৫৫৬৪-৬৫; মুসলিম হা/১৯৬৭, মিশকাত হা/১৪৫৩-৫৪)। ছাহাবীগণের মধ্যেও সর্বদা একই প্রচলন ছিল। প্রখ্যাত ছাহাবী আবু আইয়ূব আনছারী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)-এর সময়ে লোকেরা নিজের ও নিজ পরিবারের পক্ষ থেকে একটি করে বকরী কুরবানী দিত (তিরমিযী হা/১৫০৫, সনদ ছহীহ)। ধনাঢ্য ছাহাবী আবু সারীহা (রাঃ) বলেন, সুন্নাত জানার পর লোকেরা পরিবারপিছু একটি বা দু’টি করে বকরী কুরবানী দিত। অথচ এখন প্রতিবেশীরা আমাদের বখীল বলছে’ (ইবনু মাজাহ হা/৩১৪৮, সনদ ছহীহ)। অতএব পরিবারের পক্ষ থেকে একটি পশু কুরবানী করাই সুন্নাত।
উল্লেখ্য যে, সাত পরিবার নয় বরং সাতজন ব্যক্তি মিলে একটি গরু বা উট কুরবানী করার বিধান রয়েছে সফর অবস্থায়। যেমন জাবের (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে হোদায়বিয়া এবং হজ্জের সফরে ছিলাম। তখন তিনি আমাদেরকে একটি উটে ও গরুতে সাতজন করে শরীক হবার নির্দেশ দিলেন (মুসলিম হা/১৩১৮ (৩৫০-৫১)। একই বাক্যে বর্ণিত মুসলিম ও আবুদাঊদের উক্ত হাদীছটি সংক্ষেপে এসেছে মিশকাতে (হা/১৪৫৮)। যেখানে বলা হয়েছে, গরু ও উট সাতজনের পক্ষ হ’তে। এটি সফরের অবস্থায়। যা একই রাবীর অন্য বর্ণনায় এসেছে। যেমন ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে একটি সফরে ছিলাম। এমন সময় ঈদুল আযহা উপস্থিত হয়। তখন আমরা একটি গরুতে সাতজন ও একটি উটে দশজন করে শরীক হই’ (তিরমিযী হা/৯০৯; ইবনু মাজাহ হা/৩১৩১; মিশকাত হা/১৪৬৯)।
৩৮৯
প্রশ্ন (২৮/২৮) : আমাদের এলাকায় ঈদুল আযহার এক সপ্তাহ পূর্বেই কুরবানীর পশুর চামড়া বিক্রি হয়ে যায়। এটা শরী‘আত সম্মত কি?-মকবূল, আড়াই হাযার, নারায়ণগঞ্জ।
উত্তর : এরূপ ক্রয়-বিক্রয় দোষণীয় নয়। কারণ অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় জায়েয আছে, যদি সেখানে পরিমাপ, পরিমাণ ও মেয়াদ নির্ধারিত থাকে (বুখারী হা/২২৪০, মুসলিম, মিশকাত হা/২৮৮৩)।
উত্তর : এরূপ ক্রয়-বিক্রয় দোষণীয় নয়। কারণ অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় জায়েয আছে, যদি সেখানে পরিমাপ, পরিমাণ ও মেয়াদ নির্ধারিত থাকে (বুখারী হা/২২৪০, মুসলিম, মিশকাত হা/২৮৮৩)।
৩৯০
প্রশ্ন (২৯/২৯) : পুরুষের ইমামতিতে মহিলা জামা‘আত চলাকালীন অবস্থায় ইমামের ক্বিরাআতে ভুল হ’লে মহিলারা ভুল সংশোধন করে দিতে পারবে কি?-আব্দুর রহীম, কাসেমপুর, সাতক্ষীরা।
উত্তর : এমতাবস্থায় মহিলাগণ ক্বিরাআতের সংশোধনী দিবেন না। কেননা রাক‘আত বা অনুরূপ কোন বড় ভুলে ‘হাতের উপর হাত’ মারা (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৯৮৮) ব্যতীত তাদের জন্য সকণ্ঠে সংশোধনী দেওয়ার কোন বিধান নেই।
উত্তর : এমতাবস্থায় মহিলাগণ ক্বিরাআতের সংশোধনী দিবেন না। কেননা রাক‘আত বা অনুরূপ কোন বড় ভুলে ‘হাতের উপর হাত’ মারা (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৯৮৮) ব্যতীত তাদের জন্য সকণ্ঠে সংশোধনী দেওয়ার কোন বিধান নেই।
৩৯১
প্রশ্ন (৩০/৩০) : কোন কোন ছালাত আদায় না করলে গোনাহ হবে এবং কোন ছালাত আদায় না করলে গোনাহ হবে না। বিস্তারিত জানতে চাই।-মুনীর, উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ।
উত্তর : কালেমা পাঠকারী প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জ্ঞান থাকা পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করা ফরয। এছাড়া বাকি সকল ছালাতই নফল (বুখারী হা/২৬৭৮; মুসলিম হা/১১; মিশকাত হা/১৬৯)। যেকোন ফরয ছালাত পরিত্যাগকারী ব্যক্তি গোনাহগার হবে। কেননা অবহেলাবশতঃ ফরয ছালাত পরিত্যাগ করা ‘কুফরী’ পর্যায়ভুক্ত মহাপাপ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৬৯, ৫৭৪, ৫৮০)। এছাড়া নফল ছালাত পরিত্যাগকারী ব্যক্তি গোনাহগার হবে না। তবে এর গুরুত্ব অপরিসীম। এর মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর ভালবাসা ও নৈকট্য লাভ করে (বুখারী হা/৬৫০২)। বান্দার ফরয ইবাদতের ঘাটতিসমূহ এর দ্বারা পূরণ হয় (আবুদাঊদ হা/৮৬৪, মিশকাত হা/১৩৩০)। তবে কিছু নফল ছালাত রয়েছে, যা রাসূল (ছাঃ) কখনোই ছাড়তেন না। যেমন ফজরের সুন্নাত ও বিতর ছালাত (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১১৬৩, ১২৬২)। এতদ্ব্যতীত যোহরের আগে-পরের ৬ বা ৪, মাগরিবের পরে ২ ও এশার পরের ২ রাক‘আত ছালাত তিনি পারতপক্ষে ছাড়তেন না (তিরমিযী হা/৪১৫; ঐ, মিশকাত হা/ ১১৫৯)।
তাছাড়া ইদায়নের ছালাত সুন্নাতে মুওয়াক্কাদাহ, যা সবাইকে আদায় করা আবশ্যক। এটি ইসলামের নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। আর জানাযার ছালাত ফরযে কিফায়া, যা মহল্লার কেউ আদায় না করলে সকলেই গুনাহগার হয় এবং কিছু লোক আদায় করলে সকলের জন্য যথেষ্ট হয়ে যায় (ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃ. ২১৩)।
উত্তর : কালেমা পাঠকারী প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জ্ঞান থাকা পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করা ফরয। এছাড়া বাকি সকল ছালাতই নফল (বুখারী হা/২৬৭৮; মুসলিম হা/১১; মিশকাত হা/১৬৯)। যেকোন ফরয ছালাত পরিত্যাগকারী ব্যক্তি গোনাহগার হবে। কেননা অবহেলাবশতঃ ফরয ছালাত পরিত্যাগ করা ‘কুফরী’ পর্যায়ভুক্ত মহাপাপ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫৬৯, ৫৭৪, ৫৮০)। এছাড়া নফল ছালাত পরিত্যাগকারী ব্যক্তি গোনাহগার হবে না। তবে এর গুরুত্ব অপরিসীম। এর মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর ভালবাসা ও নৈকট্য লাভ করে (বুখারী হা/৬৫০২)। বান্দার ফরয ইবাদতের ঘাটতিসমূহ এর দ্বারা পূরণ হয় (আবুদাঊদ হা/৮৬৪, মিশকাত হা/১৩৩০)। তবে কিছু নফল ছালাত রয়েছে, যা রাসূল (ছাঃ) কখনোই ছাড়তেন না। যেমন ফজরের সুন্নাত ও বিতর ছালাত (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১১৬৩, ১২৬২)। এতদ্ব্যতীত যোহরের আগে-পরের ৬ বা ৪, মাগরিবের পরে ২ ও এশার পরের ২ রাক‘আত ছালাত তিনি পারতপক্ষে ছাড়তেন না (তিরমিযী হা/৪১৫; ঐ, মিশকাত হা/ ১১৫৯)।
তাছাড়া ইদায়নের ছালাত সুন্নাতে মুওয়াক্কাদাহ, যা সবাইকে আদায় করা আবশ্যক। এটি ইসলামের নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। আর জানাযার ছালাত ফরযে কিফায়া, যা মহল্লার কেউ আদায় না করলে সকলেই গুনাহগার হয় এবং কিছু লোক আদায় করলে সকলের জন্য যথেষ্ট হয়ে যায় (ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃ. ২১৩)।
-বুলবুল, কাঠালপাড়া, নবাবগঞ্জ।
উত্তর: উভয় কাঁধ পূর্ণরূপে ঢেকে থাকলে এরূপ কাপড় গায়ে দিয়ে ছালাত আদায় করা যাবে (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৭৫৪)। তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও তাক্বওয়াপূর্ণ সুন্দর পোষাক পরে আল্লাহর সামনে দন্ডায়মান হওয়া যরূরী। আল্লাহ বলেন, তোমরা ছালাতের সময় সুন্দর পোষাক পরিধান কর’ (আ‘রাফ ৭/৩১)।
উত্তর: উভয় কাঁধ পূর্ণরূপে ঢেকে থাকলে এরূপ কাপড় গায়ে দিয়ে ছালাত আদায় করা যাবে (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৭৫৪)। তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও তাক্বওয়াপূর্ণ সুন্দর পোষাক পরে আল্লাহর সামনে দন্ডায়মান হওয়া যরূরী। আল্লাহ বলেন, তোমরা ছালাতের সময় সুন্দর পোষাক পরিধান কর’ (আ‘রাফ ৭/৩১)।
৩৯৩
প্রশ্ন (৩২/৩২) : জনৈক আলেম বলেন, ২৫ উক্বিয়া বা ২০০ দিরহাম যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ৮ হাযার টাকা, একবছর থাকলে যাকাত দিতে হবে। এর সত্যতা আছে কি?-আব্দুল্লাহ
সরিষাবাড়ী, জামালপুর।
উত্তর : একথা ভিত্তিহীন। উক্ত আলেম হাদীছে বর্ণিত দিরহাম ও দীনারের মান বুঝতে ভুল করেছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘বিশ দীনারের কম স্বর্ণে যাকাত ফরয নয়’ (আবূদাউদ হা/১৫৭৩) এবং ‘পাঁচ উক্বিয়ার কম পরিমাণ রৌপ্যে যাকাত নেই’ (বুখারী হা/১৪৮৪)। হাদীছে বর্ণিত ২০ দীনার সমান ৮৫ গ্রাম তথা ৭ ভরি ৫ আনা ৫ রতি স্বর্ণ। আর ১ উক্বিয়া সমান ৪০ দিরহাম হিসাবে ৫ উক্বিয়া সমান ২০০ দিরহাম তথা ৫৯৫ গ্রাম সমান ৫১.০২ ভরি রৌপ্য (উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৮/১৩৮)। অতএব ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ বা ৫৯৫ গ্রাম রৌপ্যের মধ্যে যেটির মূল্যমান অপেক্ষাকৃত কম থাকবে সেটি অনুযায়ী নিছাব পরিমাণ হলে যাকাত আদায় করতে হবে (ফাতাওয়া হাইআতু কিবারিল ওলামা ১/৩৭৩, ৩৮৮, ৪১১ পৃঃ, ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ৯/২৫৭)।
তবে স্বর্ণের মূল্যমান রৌপ্য অপেক্ষা স্থিতিশীল এবং বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য বিধায় অধিকাংশ বিদ্বান স্বর্ণের হিসাব অনুযায়ী যাকাত দেওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেন।
সরিষাবাড়ী, জামালপুর।
উত্তর : একথা ভিত্তিহীন। উক্ত আলেম হাদীছে বর্ণিত দিরহাম ও দীনারের মান বুঝতে ভুল করেছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘বিশ দীনারের কম স্বর্ণে যাকাত ফরয নয়’ (আবূদাউদ হা/১৫৭৩) এবং ‘পাঁচ উক্বিয়ার কম পরিমাণ রৌপ্যে যাকাত নেই’ (বুখারী হা/১৪৮৪)। হাদীছে বর্ণিত ২০ দীনার সমান ৮৫ গ্রাম তথা ৭ ভরি ৫ আনা ৫ রতি স্বর্ণ। আর ১ উক্বিয়া সমান ৪০ দিরহাম হিসাবে ৫ উক্বিয়া সমান ২০০ দিরহাম তথা ৫৯৫ গ্রাম সমান ৫১.০২ ভরি রৌপ্য (উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৮/১৩৮)। অতএব ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ বা ৫৯৫ গ্রাম রৌপ্যের মধ্যে যেটির মূল্যমান অপেক্ষাকৃত কম থাকবে সেটি অনুযায়ী নিছাব পরিমাণ হলে যাকাত আদায় করতে হবে (ফাতাওয়া হাইআতু কিবারিল ওলামা ১/৩৭৩, ৩৮৮, ৪১১ পৃঃ, ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ৯/২৫৭)।
তবে স্বর্ণের মূল্যমান রৌপ্য অপেক্ষা স্থিতিশীল এবং বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য বিধায় অধিকাংশ বিদ্বান স্বর্ণের হিসাব অনুযায়ী যাকাত দেওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেন।
-আবুল কালাম
আলীপুর, সাতক্ষীরা।
উত্তর : যাবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা মুশরিক নারীদেরকে বিবাহ করো না যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে’ (বাক্বারাহ ২২১)। তবে তার অভিভাবক অমুসলিম হওয়ার কারণে যেহেতু অলী হ’তে পারবে না, তাই সরকারের মুসলিম প্রতিনিধি বা সমাজ নেতা উক্ত মেয়ের অলীর দায়িত্ব পালন করবেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যার অলী নেই তার অলী হবে দেশের শাসক’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৩১৩১ ‘বিবাহের অভিভাবক’ অনুচ্ছেদ)। আবু সুফিয়ান অমুসলিম থাকাবস্থায় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে তার কন্যা উম্মে হাবীবার বিয়েতে বাদশাহ নাজাশী অলীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন (ইরওয়াউল গালীল ৬/৩৫৩, হা/১৮৫০ ‘অলী’ অনুচ্ছেদ)।
আলীপুর, সাতক্ষীরা।
উত্তর : যাবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা মুশরিক নারীদেরকে বিবাহ করো না যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে’ (বাক্বারাহ ২২১)। তবে তার অভিভাবক অমুসলিম হওয়ার কারণে যেহেতু অলী হ’তে পারবে না, তাই সরকারের মুসলিম প্রতিনিধি বা সমাজ নেতা উক্ত মেয়ের অলীর দায়িত্ব পালন করবেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যার অলী নেই তার অলী হবে দেশের শাসক’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৩১৩১ ‘বিবাহের অভিভাবক’ অনুচ্ছেদ)। আবু সুফিয়ান অমুসলিম থাকাবস্থায় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে তার কন্যা উম্মে হাবীবার বিয়েতে বাদশাহ নাজাশী অলীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন (ইরওয়াউল গালীল ৬/৩৫৩, হা/১৮৫০ ‘অলী’ অনুচ্ছেদ)।
৩৯৫
প্রশ্ন (৩৪/৩৪) : শিরক সম্পর্কে না জানার কারণে মাযার ও শহীদ মিনারের সামনে মাথা নত করে শিরক করেছি। এক্ষণে পূর্বে কৃত এসব পাপ থেকে মুক্তির উপায় কি?-ওমর ফারূক
বিরল, দিনাজপুর।
উত্তর : এসব গোনাহ হ’তে মুক্তি লাভের আশায় অনুতপ্ত হৃদয়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলে ক্ষমা পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ (তাহরীম ৬৬/৮)। তওবা কবুলের জন্য তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে- (১) একমাত্র আল্লাহ্কে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যেই তওবা করতে হবে। (২) কৃত গোনাহের জন্য অনুতপ্ত হ’তে হবে। (৩) পুনরায় সে গোনাহে জড়িত না হওয়ার প্রতিজ্ঞা করতে হবে। তওবার জন্য বেশী বেশী পাঠ করতে হবে ‘আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ুম ওয়া আতূবু ইলাইহে’ (তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৩৫৩; ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ২৯৪ পৃঃ)।
বিরল, দিনাজপুর।
উত্তর : এসব গোনাহ হ’তে মুক্তি লাভের আশায় অনুতপ্ত হৃদয়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলে ক্ষমা পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ (তাহরীম ৬৬/৮)। তওবা কবুলের জন্য তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে- (১) একমাত্র আল্লাহ্কে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যেই তওবা করতে হবে। (২) কৃত গোনাহের জন্য অনুতপ্ত হ’তে হবে। (৩) পুনরায় সে গোনাহে জড়িত না হওয়ার প্রতিজ্ঞা করতে হবে। তওবার জন্য বেশী বেশী পাঠ করতে হবে ‘আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ুম ওয়া আতূবু ইলাইহে’ (তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৩৫৩; ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ২৯৪ পৃঃ)।
৩৯৬
প্রশ্ন (৩৫/৩৫) : একসাথে দুই স্ত্রীর ভরণ-পোষণের ক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও দ্বিতীয় বিবাহ করা শরী‘আত সম্মত হবে কি?- আব্দুল্লাহ, কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মোহর ও ভরণ-পোষণের সামর্থ্য থাকার শর্তে বিবাহের নির্দেশ দিয়েছেন। আর সামর্থ্য না থাকলে ছিয়াম পালনের নির্দেশ দিয়েছেন (বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত হা/৩০৮০, মিরক্বাত ৬/১৮৬)। যেখানে প্রথম বিবাহের জন্যই সামর্থ্যের শর্তারোপ করা হয়েছে, সেখানে সামর্থ্যহীন অবস্থায় দ্বিতীয় বিবাহ জায়েয হয় কিভাবে? উল্লেখ্য যে, রাসূল (ছাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে অভাবমুক্ত হওয়ার জন্য একাধিক বিবাহ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (সিলসিলা যঈফাহ হা/৩৪০০ আলোচনা দ্রঃ)।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মোহর ও ভরণ-পোষণের সামর্থ্য থাকার শর্তে বিবাহের নির্দেশ দিয়েছেন। আর সামর্থ্য না থাকলে ছিয়াম পালনের নির্দেশ দিয়েছেন (বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত হা/৩০৮০, মিরক্বাত ৬/১৮৬)। যেখানে প্রথম বিবাহের জন্যই সামর্থ্যের শর্তারোপ করা হয়েছে, সেখানে সামর্থ্যহীন অবস্থায় দ্বিতীয় বিবাহ জায়েয হয় কিভাবে? উল্লেখ্য যে, রাসূল (ছাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে অভাবমুক্ত হওয়ার জন্য একাধিক বিবাহ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (সিলসিলা যঈফাহ হা/৩৪০০ আলোচনা দ্রঃ)।
-মুছত্বফা কামাল, যশোর।
উত্তর : যায়েদ বিন ছাবিত (রাঃ) ছিলেন অহি লেখকগণের মধ্যে সর্বাগ্রগণ্য। সেকারণ কুরআন জমা করার সময় ওছমান (রাঃ) তাঁকেই এ গুরুদায়িত্ব প্রদান করেন (বুখারী হা/৪৬৭৯, ৪৯৭৯)। তিনি ব্যতীত আরো অনেক ছাহাবী বিভিন্ন সময়ে এ মহান দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়েছেন। যাদের সংখ্যা ২৬ থেকে ৪২ পর্যন্ত বর্ণিত হয়েছে। ইবনু কাছীর (রহঃ) এক্ষেত্রে ২৫ জন ছাহাবীর নাম উল্লেখ করেছেন। তারা হ’লেন (১) হযরত আবুবকর (২) ওমর (৩) ওছমান (৪) আলী (৫) আবান বিন সাঈদ ইবনুল আছ (৬) উবাই বিন কা‘ব (৭) যায়েদ বিন ছাবেত (৮) খালেদ বিন সাঈদ ইবনুল ‘আছ (৯) মু‘আয বিন জাবাল (১০) আরক্বাম বিন আবুল আরক্বাম (১১) ছাবেত বিন ক্বায়েস বিন শাম্মাস (১২) হানযালা বিন রবী‘ (১৩) ও তার ভাই রাবাহ (১৪) ও চাচা আকছাম বিন ছায়ফী (১৫) খালেদ বিন ওয়ালীদ (১৬) যুবায়ের ইবনুল ‘আওয়াম (১৭) আব্দুল্লাহ বিন সা‘দ বিন আবী সারাহ (১৮) ‘আমের বিন ফুহায়রাহ (১৯) আব্দুল্লাহ বিন আরক্বাম (২০) আব্দুল্লাহ বিন যায়েদ বিন আব্দে রবিবহি (২১) ‘আলা ইবনুল হাযরামী (২২) ‘আলা বিন উক্ববাহ (২৩) মুহাম্মাদ বিন মাসলামাহ (২৪) মু‘আবিয়া বিন আবু সুফিয়ান (২৫) মুগীরাহ বিন শো‘বা (রাঃ) (আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৫/৩৩৯-৩৫৫)।
উত্তর : যায়েদ বিন ছাবিত (রাঃ) ছিলেন অহি লেখকগণের মধ্যে সর্বাগ্রগণ্য। সেকারণ কুরআন জমা করার সময় ওছমান (রাঃ) তাঁকেই এ গুরুদায়িত্ব প্রদান করেন (বুখারী হা/৪৬৭৯, ৪৯৭৯)। তিনি ব্যতীত আরো অনেক ছাহাবী বিভিন্ন সময়ে এ মহান দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়েছেন। যাদের সংখ্যা ২৬ থেকে ৪২ পর্যন্ত বর্ণিত হয়েছে। ইবনু কাছীর (রহঃ) এক্ষেত্রে ২৫ জন ছাহাবীর নাম উল্লেখ করেছেন। তারা হ’লেন (১) হযরত আবুবকর (২) ওমর (৩) ওছমান (৪) আলী (৫) আবান বিন সাঈদ ইবনুল আছ (৬) উবাই বিন কা‘ব (৭) যায়েদ বিন ছাবেত (৮) খালেদ বিন সাঈদ ইবনুল ‘আছ (৯) মু‘আয বিন জাবাল (১০) আরক্বাম বিন আবুল আরক্বাম (১১) ছাবেত বিন ক্বায়েস বিন শাম্মাস (১২) হানযালা বিন রবী‘ (১৩) ও তার ভাই রাবাহ (১৪) ও চাচা আকছাম বিন ছায়ফী (১৫) খালেদ বিন ওয়ালীদ (১৬) যুবায়ের ইবনুল ‘আওয়াম (১৭) আব্দুল্লাহ বিন সা‘দ বিন আবী সারাহ (১৮) ‘আমের বিন ফুহায়রাহ (১৯) আব্দুল্লাহ বিন আরক্বাম (২০) আব্দুল্লাহ বিন যায়েদ বিন আব্দে রবিবহি (২১) ‘আলা ইবনুল হাযরামী (২২) ‘আলা বিন উক্ববাহ (২৩) মুহাম্মাদ বিন মাসলামাহ (২৪) মু‘আবিয়া বিন আবু সুফিয়ান (২৫) মুগীরাহ বিন শো‘বা (রাঃ) (আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৫/৩৩৯-৩৫৫)।
-আব্দুর রহমান
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
উত্তর : হজ্জ করতে গিয়ে সেখান থেকে বৈধ পন্থায় ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে মালামাল নিয়ে আসাতে কোন বাধা নেই। কারণ হজ্জ পালনকালেও মালামাল ক্রয়-বিক্রয় বৈধ। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের উপর কোন গোনাহ নেই স্বীয় প্রতিপালকের অনুগ্রহ অন্বেষণ করতে’ (বাক্বারাহ ২/১৯৮)। অনুগ্রহ বলতে এখানে ক্রয়-বিক্রয়কে বুঝানো হয়েছে। তবে হজ্জের সময় ব্যবসা যেন মূল উদ্দেশ্য না হয়। তাতে হজ্জের নেকীতে ঘাটতি হবে।
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
উত্তর : হজ্জ করতে গিয়ে সেখান থেকে বৈধ পন্থায় ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে মালামাল নিয়ে আসাতে কোন বাধা নেই। কারণ হজ্জ পালনকালেও মালামাল ক্রয়-বিক্রয় বৈধ। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের উপর কোন গোনাহ নেই স্বীয় প্রতিপালকের অনুগ্রহ অন্বেষণ করতে’ (বাক্বারাহ ২/১৯৮)। অনুগ্রহ বলতে এখানে ক্রয়-বিক্রয়কে বুঝানো হয়েছে। তবে হজ্জের সময় ব্যবসা যেন মূল উদ্দেশ্য না হয়। তাতে হজ্জের নেকীতে ঘাটতি হবে।
-আব্দুল্লাহ আল-মামূন, বাঘা, রাজশাহী।
উত্তর : ঘর হ’তে বের হওয়ার সময় পড়বে ‘বিসমিল্লা-হি তাওয়াক্কালতু ‘আলাল্লা-হি লা হাওলা ওয়ালা কুউওয়াতা ইল্লাবিল্লা-হি’। অর্থাৎ ‘আল্লাহর নামে (বের হচ্ছি), তাঁর উপরে ভরসা করছি। নেই কোন ক্ষমতা, নেই কোন শক্তি আল্লাহ ব্যতীত’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৪৪৩)।
অতঃপর পড়বে ‘আল্লা-হুম্মা ইন্না নাজ‘আলুকা ফী নুহূরিহিম ওয়া নাঊযুবিকা মিন শুরূরিহিম’। অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! আমরা আপনাকে শত্রুদের মুকাবিলায় পেশ করছি এবং তাদের অনিষ্টসমূহ হ’তে আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি’ (আহমাদ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৪৪১, দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়; ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃঃ ২৮৭)। ‘নবী করীম (ছাঃ) যখন কোন গোত্রের ভয় করতেন, তখন উপরোক্ত দো‘আটি পড়তেন।
এছাড়া আরো পড়বে- ‘আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তাম্মা-তি মিন শার্রি মা খালাক্ব’ অর্থাৎ আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমা সমূহের মাধ্যমে তাঁর সৃষ্টির যাবতীয় অনিষ্টকারিতা হ’তে পানাহ চাচ্ছি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘এই দো‘আ পাঠ করলে, ঐ স্থান হ’তে প্রস্থান করা পর্যন্ত তাকে কোন কিছুই ক্ষতি করবে না’।(মুসলিম, মিশকাত হা/২৪২২)।
উত্তর : ঘর হ’তে বের হওয়ার সময় পড়বে ‘বিসমিল্লা-হি তাওয়াক্কালতু ‘আলাল্লা-হি লা হাওলা ওয়ালা কুউওয়াতা ইল্লাবিল্লা-হি’। অর্থাৎ ‘আল্লাহর নামে (বের হচ্ছি), তাঁর উপরে ভরসা করছি। নেই কোন ক্ষমতা, নেই কোন শক্তি আল্লাহ ব্যতীত’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৪৪৩)।
অতঃপর পড়বে ‘আল্লা-হুম্মা ইন্না নাজ‘আলুকা ফী নুহূরিহিম ওয়া নাঊযুবিকা মিন শুরূরিহিম’। অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! আমরা আপনাকে শত্রুদের মুকাবিলায় পেশ করছি এবং তাদের অনিষ্টসমূহ হ’তে আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি’ (আহমাদ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৪৪১, দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়; ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃঃ ২৮৭)। ‘নবী করীম (ছাঃ) যখন কোন গোত্রের ভয় করতেন, তখন উপরোক্ত দো‘আটি পড়তেন।
এছাড়া আরো পড়বে- ‘আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তাম্মা-তি মিন শার্রি মা খালাক্ব’ অর্থাৎ আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমা সমূহের মাধ্যমে তাঁর সৃষ্টির যাবতীয় অনিষ্টকারিতা হ’তে পানাহ চাচ্ছি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘এই দো‘আ পাঠ করলে, ঐ স্থান হ’তে প্রস্থান করা পর্যন্ত তাকে কোন কিছুই ক্ষতি করবে না’।(মুসলিম, মিশকাত হা/২৪২২)।
-মীযানুর রহমান
আল-বুরাইদা, সঊদী আরব।
উত্তর : হারাম পন্থায় উপার্জিত অর্থ দ্বারা হজ্জ করলে তা আল্লাহর নিকট কবুল হবে না (মুসলিম হা/১০১৫, মিশকাত হা/২৭৬০)। অর্থাৎ এর মাধ্যমে কোন নেকী অর্জিত হবে না। তবে এর দ্বারা হজ্জ-এর ফরযিয়াত আদায় হয়ে যাবে মর্মে জমহূর বিদ্বানগণ ঐক্যমত পোষণ করেছেন (নববী, আল-মাজমূ‘ ৭/৬২; আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, অডিও ক্লিপ নং ২৯; উছায়মীন, লিক্বাউল বাবিল মাফতূহ ৮৮/১৩; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ১১/৪৩)। যেমন ছালাতের মধ্যে ‘রিয়া’ থাকলে ছালাত আদায় হয়ে যায়, কিন্তু তা আল্লাহর নিকটে কবুলযোগ্য হয় না।
আল-বুরাইদা, সঊদী আরব।
উত্তর : হারাম পন্থায় উপার্জিত অর্থ দ্বারা হজ্জ করলে তা আল্লাহর নিকট কবুল হবে না (মুসলিম হা/১০১৫, মিশকাত হা/২৭৬০)। অর্থাৎ এর মাধ্যমে কোন নেকী অর্জিত হবে না। তবে এর দ্বারা হজ্জ-এর ফরযিয়াত আদায় হয়ে যাবে মর্মে জমহূর বিদ্বানগণ ঐক্যমত পোষণ করেছেন (নববী, আল-মাজমূ‘ ৭/৬২; আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, অডিও ক্লিপ নং ২৯; উছায়মীন, লিক্বাউল বাবিল মাফতূহ ৮৮/১৩; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ১১/৪৩)। যেমন ছালাতের মধ্যে ‘রিয়া’ থাকলে ছালাত আদায় হয়ে যায়, কিন্তু তা আল্লাহর নিকটে কবুলযোগ্য হয় না।
৪০১
প্রশ্ন (৪০/৪০) : ঈদের মাঠে মিম্বার কখন থেকে চালু হয়েছে? জনৈক আলেম কয়েকটি হাদীছ উল্লেখ করে বলেন, রাসূল (ছাঃ) মিম্বারের উপরে দাঁড়িয়ে ঈদের খুৎবা দিতেন। এক্ষণে এ ব্যাপারে সঠিক সমাধান জানতে চাই।-মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম
সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) ঈদের খুৎবায় মিম্বার ব্যবহার করতেন না। উমাইয়া খলীফা মারওয়ান বিন হাকাম (৬৪-৬৫ হিঃ) সর্বপ্রথম ঈদগাহে মিম্বার ব্যবহার করেন।
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনে ঈদগাহে পৌঁছে প্রথমে ছালাত আদায় করতেন। অতঃপর মুছল্লীদের দিকে মুখ করে দাঁড়াতেন আর তারা তখন স্ব স্ব কাতারে বসা থাকত। ... রাবী বলেন, মানুষ এভাবে আমল করতে থাকে। পরে আমি মারওয়ানের সাথে ঈদুল ফিৎর অথবা ঈদুল আযহায় গেলাম। তখন তিনি মদীনার আমীর। মাঠে এসে দেখি কাছীর ইবনুছ ছালত মাটি ও কাঁচা ইট দ্বারা একটি মিম্বার তৈরী করেছে। মারওয়ান মিম্বরে চড়ে ছালাতের পূর্বে খুৎবা দিতে চাইলে আমি তার কাপড় টেনে ধরলাম। কিন্তু তিনি জোরপূর্বক মিম্বরে উঠে ছালাতের পূর্বে খুৎবা দিলেন। আমি তাকে বললাম, আল্লাহর কসম! তোমরা (রাসূলের সুন্নাত) পরিবর্তন করলে। মারওয়ান বললেন, আবু সাঈদ! তুমি যে নিয়ম জান ঐ নিয়ম এখন চলবে না। আমি বললাম, আমি যে নিয়ম জানি তাতেই কল্যাণ রয়েছে। তখন মারওয়ান বললেন, মানুষ ছালাতের পর আমার খুৎবা শুনার জন্য বসে না। তাই আমি খুৎবাকে ছালাতের পূর্বে করেছি’ (বুখারী হা/৯৫৬; মুসলিম, হা/৮৮৯ ‘ঈদায়েন-এর ছালাত’ অধ্যায়)।
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘মারওয়ান ঈদের দিন মিম্বার নিয়ে বের হ’লেন এবং ছালাতের পূর্বেই খুৎবা শুরু করলেন। তখন জনৈক ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে বলল, ‘হে মারওয়ান! তুমি সুন্নাতের বিরোধিতা করলে। ঈদের দিন তুমি মিম্বর বের করলে যা কখনো এখানে বের হয়নি! আবার তুমি ছালাতের পূর্বে খুৎবাও শুরু করলে! একথা শুনে আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বললেন, ঐ ব্যক্তি কে? তখন উপস্থিত অন্যরা বলল, অমুক। তখন তিনি বললেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তোমাদের মধ্যে কেউ ‘মুনকার’ কিছু দেখলে তা যেন হাত দিয়ে পরিবর্তন করে। নইলে যবান দিয়ে। নইলে অন্তর দিয়ে ঘৃণা করে। আর এটা হ’ল দুর্বলতম ঈমান (আবুদাঊদ হা/১১৪০)। এই হাদীছ শুনানোর মাধ্যমে তিনি ঐ ব্যক্তির প্রতিবাদকে সমর্থন করলেন এবং প্রকারান্তরে তিনি ছালাতের পূর্বে খুৎবা ও মিম্বার উভয়েরই প্রতিবাদ করলেন।
ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, নিঃসন্দেহে মিম্বর মসজিদ হ’তে বের করে মাঠে নিয়ে যাওয়া হ’ত না, সর্বপ্রথম মারওয়ান ইবনুল হাকাম এটি করেছেন’ (যাদুল মাআদ ১/৪৩১ পৃঃ)।
উপরোক্ত দলীল সমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, খলীফা মারওয়ানই তার শাসনামলে সর্বপ্রথম ঈদগাহে মিম্বারের প্রচলন ঘটান। আবু সাঈদ (রাঃ) ও অন্যান্যগণ যার তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন।
এক্ষণে রাসূল (ছাঃ) ঈদের খুৎবা মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে দিয়েছেন মর্মে প্রশ্নকারীর উপস্থাপিত দলীলগুলির বিশ্লেষণ নিম্নরূপ :
(১) জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, ‘আমি কুরবানীর ঈদে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে ঈদগাহে উপস্থিত ছিলাম। তিনি যখন খুৎবা শেষ করলেন, তখন মিম্বার থেকে নামলেন’ (আহমাদ হা/১৪৯৩৮, আবুদাঊদ হা/২৮১০; তিরমিযী হা/১৫২১)।
শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, হাদীছটি মুত্ত্বালিব ও জাবের (রাঃ)-এর মাঝে ইনক্বিতা‘ বা সনদে বিচ্ছিন্নতার দোষে দুষ্ট...। রাবী মুত্ত্বালিব একজন মুদাল্লিস রাবী। অতএব এরূপ বর্ণনা দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যায় না। তাছাড়া অন্য বর্ণনায় এ হাদীছটি বুখারী ও মুসলিমে জাবের থেকে বর্ণিত হয়েছে, যেখানে মিম্বারের কথা উল্লেখ নেই (সিলসিলা যঈফাহ হা/৯৬৩-এর আলোচনা দ্রঃ)।
(২) অন্যত্র জাবের (রাঃ) বলেন, ‘রাসূল (ছাঃ) ঈদের খুৎবা শেষে অবতরণ করে নারীদের কাছে গিয়ে তাদেরকে উপদেশ দিয়েছেন’ (বুখারী হা/৯৭৮)। এ হাদীছের ব্যাপারে ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, ‘ইতিপূর্বে ‘মুছাল্লার দিকে বের হওয়া’ অনুচ্ছেদে পাওয়া গেছে যে, রাসূল (ছাঃ) ঈদের মুছাল্লায় যমীনের উপর দাঁড়িয়ে খুৎবা দিতেন। তাই সম্ভবতঃ রাবী স্থান পরিবর্তনকে অবতরণ করা শব্দে এনেছেন’ ( ضَمَّنَ النُّزُولَ مَعْنَى الاِنْتِقَالِ ) (ফাৎহুল বারী ঐ হাদীছের ব্যাখ্যা দ্রঃ ২/৪৬৭)।
(৩) ইবনু আববাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীছে এসেছে, তিনি রাসূল (ছাঃ)-এর যুগে ঈদের মুছাল্লা সম্পর্কে জনৈক ব্যক্তির প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ঈদের দিন রাসূল (ছাঃ) ( أَتَى الْعَلَمَ الَّذِى عِنْدَ دَارِ كَثِيرِ بْنِ الصَّلْتِ ) কাছীর বিন ছালতের বাড়ির সামনে যে নিশানা ছিল সেখানে আসলেন এবং ছালাত আদায়ের পর খুৎবা দিলেন (বুখারী হা/৯৭৭)।
উল্লেখ্য যে, হাদীছে বর্ণিত নিশানা এবং কাছীর ইবনুছ ছালতের বাড়ী কোনটিই রাসূল (ছাঃ)-এর যুগে ছিল না। বরং তা পরবর্তীতে তৈরীকৃত। কারণ হাদীছে এসেছে রাসূল (ছাঃ)-এর মুছাল্লা ছিল খোলা ময়দান। সেখানে কোন সুৎরা বা নিশানা ছিল না। ফলে তার সামনে একটি বর্শা পুঁতে দেওয়া হ’ত এবং তিনি সেদিকে ফিরে ছালাত আদায় করতেন (ইবনু মাজাহ হা/১৩০৪, ইবনু রজব হাম্বলী, ফৎহুল বারী হা/৯৭৭ এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)। অর্থাৎ পরবর্তীতে সেখানে বাড়ি এবং নিশানা নির্মিত হওয়ার পর ইবনু আববাস (রাঃ) ঐ ব্যক্তিকে সেগুলির মাধ্যমে স্থানটি চিনিয়ে দিচ্ছিলেন মাত্র।
(৪) ইবনু আববাস (রাঃ) বর্ণিত আরেকটি হাদীছে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূল (ছাঃ) মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে জুম‘আ, ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিৎরের খুৎবা দিতেন’। এ হাদীছটি যঈফ (আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/৯৬৩)।
সুতরাং সার্বিক পর্যালোচনায় এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ঈদের খুৎবা মিম্বারে দেয়ার প্রমাণে কোন বিশুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য দলীল নেই। সুতরাং মিম্বারহীন খোলা ময়দানে দাঁড়িয়েই খুৎবা দিতে হবে।
সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) ঈদের খুৎবায় মিম্বার ব্যবহার করতেন না। উমাইয়া খলীফা মারওয়ান বিন হাকাম (৬৪-৬৫ হিঃ) সর্বপ্রথম ঈদগাহে মিম্বার ব্যবহার করেন।
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনে ঈদগাহে পৌঁছে প্রথমে ছালাত আদায় করতেন। অতঃপর মুছল্লীদের দিকে মুখ করে দাঁড়াতেন আর তারা তখন স্ব স্ব কাতারে বসা থাকত। ... রাবী বলেন, মানুষ এভাবে আমল করতে থাকে। পরে আমি মারওয়ানের সাথে ঈদুল ফিৎর অথবা ঈদুল আযহায় গেলাম। তখন তিনি মদীনার আমীর। মাঠে এসে দেখি কাছীর ইবনুছ ছালত মাটি ও কাঁচা ইট দ্বারা একটি মিম্বার তৈরী করেছে। মারওয়ান মিম্বরে চড়ে ছালাতের পূর্বে খুৎবা দিতে চাইলে আমি তার কাপড় টেনে ধরলাম। কিন্তু তিনি জোরপূর্বক মিম্বরে উঠে ছালাতের পূর্বে খুৎবা দিলেন। আমি তাকে বললাম, আল্লাহর কসম! তোমরা (রাসূলের সুন্নাত) পরিবর্তন করলে। মারওয়ান বললেন, আবু সাঈদ! তুমি যে নিয়ম জান ঐ নিয়ম এখন চলবে না। আমি বললাম, আমি যে নিয়ম জানি তাতেই কল্যাণ রয়েছে। তখন মারওয়ান বললেন, মানুষ ছালাতের পর আমার খুৎবা শুনার জন্য বসে না। তাই আমি খুৎবাকে ছালাতের পূর্বে করেছি’ (বুখারী হা/৯৫৬; মুসলিম, হা/৮৮৯ ‘ঈদায়েন-এর ছালাত’ অধ্যায়)।
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘মারওয়ান ঈদের দিন মিম্বার নিয়ে বের হ’লেন এবং ছালাতের পূর্বেই খুৎবা শুরু করলেন। তখন জনৈক ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে বলল, ‘হে মারওয়ান! তুমি সুন্নাতের বিরোধিতা করলে। ঈদের দিন তুমি মিম্বর বের করলে যা কখনো এখানে বের হয়নি! আবার তুমি ছালাতের পূর্বে খুৎবাও শুরু করলে! একথা শুনে আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বললেন, ঐ ব্যক্তি কে? তখন উপস্থিত অন্যরা বলল, অমুক। তখন তিনি বললেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তোমাদের মধ্যে কেউ ‘মুনকার’ কিছু দেখলে তা যেন হাত দিয়ে পরিবর্তন করে। নইলে যবান দিয়ে। নইলে অন্তর দিয়ে ঘৃণা করে। আর এটা হ’ল দুর্বলতম ঈমান (আবুদাঊদ হা/১১৪০)। এই হাদীছ শুনানোর মাধ্যমে তিনি ঐ ব্যক্তির প্রতিবাদকে সমর্থন করলেন এবং প্রকারান্তরে তিনি ছালাতের পূর্বে খুৎবা ও মিম্বার উভয়েরই প্রতিবাদ করলেন।
ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, নিঃসন্দেহে মিম্বর মসজিদ হ’তে বের করে মাঠে নিয়ে যাওয়া হ’ত না, সর্বপ্রথম মারওয়ান ইবনুল হাকাম এটি করেছেন’ (যাদুল মাআদ ১/৪৩১ পৃঃ)।
উপরোক্ত দলীল সমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, খলীফা মারওয়ানই তার শাসনামলে সর্বপ্রথম ঈদগাহে মিম্বারের প্রচলন ঘটান। আবু সাঈদ (রাঃ) ও অন্যান্যগণ যার তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন।
এক্ষণে রাসূল (ছাঃ) ঈদের খুৎবা মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে দিয়েছেন মর্মে প্রশ্নকারীর উপস্থাপিত দলীলগুলির বিশ্লেষণ নিম্নরূপ :
(১) জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, ‘আমি কুরবানীর ঈদে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে ঈদগাহে উপস্থিত ছিলাম। তিনি যখন খুৎবা শেষ করলেন, তখন মিম্বার থেকে নামলেন’ (আহমাদ হা/১৪৯৩৮, আবুদাঊদ হা/২৮১০; তিরমিযী হা/১৫২১)।
শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, হাদীছটি মুত্ত্বালিব ও জাবের (রাঃ)-এর মাঝে ইনক্বিতা‘ বা সনদে বিচ্ছিন্নতার দোষে দুষ্ট...। রাবী মুত্ত্বালিব একজন মুদাল্লিস রাবী। অতএব এরূপ বর্ণনা দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যায় না। তাছাড়া অন্য বর্ণনায় এ হাদীছটি বুখারী ও মুসলিমে জাবের থেকে বর্ণিত হয়েছে, যেখানে মিম্বারের কথা উল্লেখ নেই (সিলসিলা যঈফাহ হা/৯৬৩-এর আলোচনা দ্রঃ)।
(২) অন্যত্র জাবের (রাঃ) বলেন, ‘রাসূল (ছাঃ) ঈদের খুৎবা শেষে অবতরণ করে নারীদের কাছে গিয়ে তাদেরকে উপদেশ দিয়েছেন’ (বুখারী হা/৯৭৮)। এ হাদীছের ব্যাপারে ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, ‘ইতিপূর্বে ‘মুছাল্লার দিকে বের হওয়া’ অনুচ্ছেদে পাওয়া গেছে যে, রাসূল (ছাঃ) ঈদের মুছাল্লায় যমীনের উপর দাঁড়িয়ে খুৎবা দিতেন। তাই সম্ভবতঃ রাবী স্থান পরিবর্তনকে অবতরণ করা শব্দে এনেছেন’ ( ضَمَّنَ النُّزُولَ مَعْنَى الاِنْتِقَالِ ) (ফাৎহুল বারী ঐ হাদীছের ব্যাখ্যা দ্রঃ ২/৪৬৭)।
(৩) ইবনু আববাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীছে এসেছে, তিনি রাসূল (ছাঃ)-এর যুগে ঈদের মুছাল্লা সম্পর্কে জনৈক ব্যক্তির প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ঈদের দিন রাসূল (ছাঃ) ( أَتَى الْعَلَمَ الَّذِى عِنْدَ دَارِ كَثِيرِ بْنِ الصَّلْتِ ) কাছীর বিন ছালতের বাড়ির সামনে যে নিশানা ছিল সেখানে আসলেন এবং ছালাত আদায়ের পর খুৎবা দিলেন (বুখারী হা/৯৭৭)।
উল্লেখ্য যে, হাদীছে বর্ণিত নিশানা এবং কাছীর ইবনুছ ছালতের বাড়ী কোনটিই রাসূল (ছাঃ)-এর যুগে ছিল না। বরং তা পরবর্তীতে তৈরীকৃত। কারণ হাদীছে এসেছে রাসূল (ছাঃ)-এর মুছাল্লা ছিল খোলা ময়দান। সেখানে কোন সুৎরা বা নিশানা ছিল না। ফলে তার সামনে একটি বর্শা পুঁতে দেওয়া হ’ত এবং তিনি সেদিকে ফিরে ছালাত আদায় করতেন (ইবনু মাজাহ হা/১৩০৪, ইবনু রজব হাম্বলী, ফৎহুল বারী হা/৯৭৭ এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)। অর্থাৎ পরবর্তীতে সেখানে বাড়ি এবং নিশানা নির্মিত হওয়ার পর ইবনু আববাস (রাঃ) ঐ ব্যক্তিকে সেগুলির মাধ্যমে স্থানটি চিনিয়ে দিচ্ছিলেন মাত্র।
(৪) ইবনু আববাস (রাঃ) বর্ণিত আরেকটি হাদীছে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূল (ছাঃ) মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে জুম‘আ, ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিৎরের খুৎবা দিতেন’। এ হাদীছটি যঈফ (আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/৯৬৩)।
সুতরাং সার্বিক পর্যালোচনায় এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ঈদের খুৎবা মিম্বারে দেয়ার প্রমাণে কোন বিশুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য দলীল নেই। সুতরাং মিম্বারহীন খোলা ময়দানে দাঁড়িয়েই খুৎবা দিতে হবে।
৪০২
নভেম্বর
প্রশ্ন (১/৪১) : ওযূর সময় কথা বলা যাবে কি? ওযূ করার সময় কথা বললে মাথার উপরে রহমতের চাদর নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ফেরেশতারা চলে যায়। একথার কোন ভিত্তি আছে কি?-সোহেল খান, মুরাদনগর, কুমিল্লা।
উত্তর : ওযূর সময় প্রয়োজনীয় কথা বলায় কোন দোষ নেই। রাসূল (ছাঃ) ওযূর সময় প্রয়োজনীয় কথা বলেছেন (বুখারী হা/৫৭৯৯, মুসলিম হা/২৭৪)। ওছমান (রাঃ) হ’তে মারফূ‘ সূত্রে ‘ওযূ করার সময় কথা বলা থেকে বিরত থাকলে, উভয় ওযূর মাঝে সংঘটিত ছগীরা গোনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে’ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি অত্যন্ত যঈফ (তাহকীক সুনান দারাকুৎনী হা/৩০১, ৩০৪)। এছাড়া ফেরেশতারা চলে যায় একথার কোন ভিত্তি নেই।
উত্তর : ওযূর সময় প্রয়োজনীয় কথা বলায় কোন দোষ নেই। রাসূল (ছাঃ) ওযূর সময় প্রয়োজনীয় কথা বলেছেন (বুখারী হা/৫৭৯৯, মুসলিম হা/২৭৪)। ওছমান (রাঃ) হ’তে মারফূ‘ সূত্রে ‘ওযূ করার সময় কথা বলা থেকে বিরত থাকলে, উভয় ওযূর মাঝে সংঘটিত ছগীরা গোনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে’ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি অত্যন্ত যঈফ (তাহকীক সুনান দারাকুৎনী হা/৩০১, ৩০৪)। এছাড়া ফেরেশতারা চলে যায় একথার কোন ভিত্তি নেই।
৪০৩
প্রশ্ন (২/৪২) : মহিলাদের ব্যাপারে হজ্জের গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হ’ল মাহরাম থাকা। এক্ষণে কোন মহিলা তার ছোট বোন ও ছোট বোনের স্বামীর সাথে হজ্জ পালন করতে পারবে কি?-মুহাম্মাদ হারূনুর রশীদ
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, চট্টগ্রাম।
উত্তর : সফরের জন্য মহিলাদের সাথে মাহরাম পুরুষ থাকা শর্ত (বুখারী হা/১৮৬২)। এছাড়া রাসূল (ছাঃ) বলেন, মাহরাম ব্যতীত কোন নারী হজ্জ করবে না (বাযযার, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩০৬৫)। বোনের স্বামী মাহরাম নয়। অতএব বোন থাকা সত্ত্বেও বোনের স্বামীর তত্ত্বাবধানে হজ্জে গমন করা যাবে না (মাজমূ‘ ফাতাওয়া উছায়মীন ২১/১৯০)।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, চট্টগ্রাম।
উত্তর : সফরের জন্য মহিলাদের সাথে মাহরাম পুরুষ থাকা শর্ত (বুখারী হা/১৮৬২)। এছাড়া রাসূল (ছাঃ) বলেন, মাহরাম ব্যতীত কোন নারী হজ্জ করবে না (বাযযার, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩০৬৫)। বোনের স্বামী মাহরাম নয়। অতএব বোন থাকা সত্ত্বেও বোনের স্বামীর তত্ত্বাবধানে হজ্জে গমন করা যাবে না (মাজমূ‘ ফাতাওয়া উছায়মীন ২১/১৯০)।
-আবু আমাতুল্লাহ
মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর।
উত্তর : এ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি জাল (সিলসিলা যঈফাহ হা/৩৩৭০)। তবে বড় ভাই অবশ্যই সম্মান পাওয়ার যোগ্য। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ছোটদের স্নেহ করে না এবং বড়দের মর্যাদা বুঝে না, সে আমাদের দলভুক্ত নয়’ (আবুদাঊদ হা/৪৯৩৯, তিরমিযী হা/১৯২০)।
মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর।
উত্তর : এ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি জাল (সিলসিলা যঈফাহ হা/৩৩৭০)। তবে বড় ভাই অবশ্যই সম্মান পাওয়ার যোগ্য। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ছোটদের স্নেহ করে না এবং বড়দের মর্যাদা বুঝে না, সে আমাদের দলভুক্ত নয়’ (আবুদাঊদ হা/৪৯৩৯, তিরমিযী হা/১৯২০)।
৪০৫
প্রশ্ন (৪/৪৪) : ঈদের ছালাতে ছানা পড়তে হবে কি? যদি পড়তে হয় তবে অতিরিক্ত তাকবীরগুলো ছানা পাঠের আগে না পরে দিতে হবে?-আবুল কালাম, সিলেট।
উত্তর : ছানা পড়তে হবে এবং তা তাকবীরে তাহরীমার পর ও অতিরিক্ত তাকবীরের পূর্বে পাঠ করবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন কোন ছালাত আরম্ভ করতেন, তখন তাকবীরে তাহরীমার পর দো‘আয়ে ইস্তিফতাহ বা ছানা পড়তেন (মুসলিম, মিশকাত হা/৮১৩, ‘তাকবীরে তাহরীমার পরে পাঠ্য’ অনুচ্ছেদ)। ঈদের ছালাতেও অনুরূপভাবে প্রথম তাকবীরের পর ছানা পাঠ করতে হবে (ইবনু কুদামা, মুগনী, মাসআলা নং ১৪১৬; নববী, আল-মাজমূ‘ ৫/২০; ওছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৬/২৪০)।
উত্তর : ছানা পড়তে হবে এবং তা তাকবীরে তাহরীমার পর ও অতিরিক্ত তাকবীরের পূর্বে পাঠ করবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন কোন ছালাত আরম্ভ করতেন, তখন তাকবীরে তাহরীমার পর দো‘আয়ে ইস্তিফতাহ বা ছানা পড়তেন (মুসলিম, মিশকাত হা/৮১৩, ‘তাকবীরে তাহরীমার পরে পাঠ্য’ অনুচ্ছেদ)। ঈদের ছালাতেও অনুরূপভাবে প্রথম তাকবীরের পর ছানা পাঠ করতে হবে (ইবনু কুদামা, মুগনী, মাসআলা নং ১৪১৬; নববী, আল-মাজমূ‘ ৫/২০; ওছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১৬/২৪০)।
৪০৬
প্রশ্ন (৫/৪৫) : নির্দিষ্ট বছরে হজ্জের নিয়ত করার পর কোন কারণবশতঃ সে বছর তা আদায় করতে না পারলে গোনাহ হবে কি? বা এর জন্য কোন কাফফারা দিতে হবে কি?-রিফাত হাসান, সঊদী আরব।
উত্তর : শারঈ ওযরবশতঃ বিলম্ব করলে গোনাহ হবে না এবং এর জন্য কোন কাফফারাও দিতে হবে না। তবে যাদের উপর হজ্জ ফরয হয়েছে, তাদের বিলম্ব করা মোটেই ঠিক নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজ্জের সংকল্প করে, সে যেন তা দ্রুত সম্পন্ন করে’ (আবুদাঊদ হা/১৭৩২, মিশকাত হা/২৫২৩ ‘মানাসিক’ অধ্যায়)।
উত্তর : শারঈ ওযরবশতঃ বিলম্ব করলে গোনাহ হবে না এবং এর জন্য কোন কাফফারাও দিতে হবে না। তবে যাদের উপর হজ্জ ফরয হয়েছে, তাদের বিলম্ব করা মোটেই ঠিক নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজ্জের সংকল্প করে, সে যেন তা দ্রুত সম্পন্ন করে’ (আবুদাঊদ হা/১৭৩২, মিশকাত হা/২৫২৩ ‘মানাসিক’ অধ্যায়)।
৪০৭
প্রশ্ন (৬/৪৬) : আমার স্বামী স্বেচ্ছায় আমার নামে কিছু জমি লিখে দিয়েছিল। এখন তার নিজ নামে নির্মিতব্য একটি বাড়ির নির্মাণ ব্যয় নির্বাহের জন্য উক্ত জমিটি আমার নিকট থেকে ফেরত নিয়ে বিক্রি করতে চাচ্ছে। এভাবে ফেরত নেওয়া কি তার জন্য ঠিক হবে? আর আমি যদি না দেই সেক্ষেত্রে আমি গোনাহগার হব কি?-নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ঢাকা।
উত্তর : স্বামীর জন্য জোর করে জমি ফেরত নেওয়া যাবে না এবং ফেরত না দিলে স্ত্রী গোনাহগার হবে না। কারণ এটা স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীর জন্য হাদিয়া স্বরূপ। আর হাদিয়া ফেরত নেওয়া শরী‘আত সম্মত নয়।রাসূল (ছাঃ) বলেন, পিতা তার সন্তানকে প্রদত্ত দান ফেরত নিতে পারেন। কিন্তু অন্যান্যদের ক্ষেত্রে দান করে ফেরত নেওয়া বমি করে বমি খাওয়ার ন্যায় (আবুদাঊদ হা/৩৫৩৯; মিশকাত হা/৩০২১)। তবে পরিবারের কল্যাণার্থে যদি স্বামী এরূপ উদ্যোগ নিয়ে থাকেন এবং স্বামীর জন্য এ ব্যতীত অন্য কোন উপায় না থাকে, তাহ’লে স্ত্রীর জন্য স্বেচ্ছায় তা বিক্রয়ের জন্য প্রদান করায় কোন দোষ নেই।
উত্তর : স্বামীর জন্য জোর করে জমি ফেরত নেওয়া যাবে না এবং ফেরত না দিলে স্ত্রী গোনাহগার হবে না। কারণ এটা স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীর জন্য হাদিয়া স্বরূপ। আর হাদিয়া ফেরত নেওয়া শরী‘আত সম্মত নয়।রাসূল (ছাঃ) বলেন, পিতা তার সন্তানকে প্রদত্ত দান ফেরত নিতে পারেন। কিন্তু অন্যান্যদের ক্ষেত্রে দান করে ফেরত নেওয়া বমি করে বমি খাওয়ার ন্যায় (আবুদাঊদ হা/৩৫৩৯; মিশকাত হা/৩০২১)। তবে পরিবারের কল্যাণার্থে যদি স্বামী এরূপ উদ্যোগ নিয়ে থাকেন এবং স্বামীর জন্য এ ব্যতীত অন্য কোন উপায় না থাকে, তাহ’লে স্ত্রীর জন্য স্বেচ্ছায় তা বিক্রয়ের জন্য প্রদান করায় কোন দোষ নেই।
৪০৮
প্রশ্ন (৭/৪৭) : জনৈক বক্তা বলেন, এক বালতি গরুর পেশাবে চাদর ভিজিয়ে তা গায়ে দিয়ে ছালাত আদায় করলে ছালাত হয়ে যাবে। একথার কোন সত্যতা আছে কি?-হাসান হাফীয, আশুলিয়া, ঢাকা।
উত্তর : এভাবে বলা ঠিক হয়নি। তবে যেসব প্রাণীর গোশত খাওয়া হালাল, সেসব প্রাণীর পেশাব-পায়খানা পবিত্র। সেটা কাপড়ে লাগলে উক্ত কাপড়ে ছালাত আদায় করা জায়েয। রাসূল (ছাঃ) নিজে ছাগল বাঁধার স্থানে ছালাত আদায় করেছেন এবং অন্যদের অনুমতি দিয়েছেন (বুখারী হা/২৩৪, মুসলিম হা/৩৬০, ৫২৪)। এছাড়া তিনি উটের পেশাব পানের মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণের অনুমতি দিয়েছেন (তিরমিযী হা/১৮৪৫)। অন্যদিকে হারাম বস্ত্ত দ্বারা চিকিৎসা গ্রহণ করতে রাসূল (ছাঃ) নিষেধ করেছেন (ছহীহুল জামে‘ হা/১৭৬২; সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৬৩৩)। অর্থাৎ উটের পেশাব হালাল হওয়ার কারণেই রাসূল (ছাঃ) তা পান করার অনুমিত দিয়েছেন। প্রশ্নে বর্ণিত বক্তব্য দ্বারা উদাহরণ পেশ করা হয়েছে মাত্র। এর অর্থ এটা নয় যে, গরু-ছাগলের পেশাবে কাপড় ডুবিয়ে তা গায়ে দিতে হবে। কেননা এটা রুচি বিরোধী। আল্লাহ বলেন, তোমরা ছালাতের সময় সুন্দর পোষাক পরিধান কর’ (আ‘রাফ ৭/৩১)।
উত্তর : এভাবে বলা ঠিক হয়নি। তবে যেসব প্রাণীর গোশত খাওয়া হালাল, সেসব প্রাণীর পেশাব-পায়খানা পবিত্র। সেটা কাপড়ে লাগলে উক্ত কাপড়ে ছালাত আদায় করা জায়েয। রাসূল (ছাঃ) নিজে ছাগল বাঁধার স্থানে ছালাত আদায় করেছেন এবং অন্যদের অনুমতি দিয়েছেন (বুখারী হা/২৩৪, মুসলিম হা/৩৬০, ৫২৪)। এছাড়া তিনি উটের পেশাব পানের মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণের অনুমতি দিয়েছেন (তিরমিযী হা/১৮৪৫)। অন্যদিকে হারাম বস্ত্ত দ্বারা চিকিৎসা গ্রহণ করতে রাসূল (ছাঃ) নিষেধ করেছেন (ছহীহুল জামে‘ হা/১৭৬২; সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৬৩৩)। অর্থাৎ উটের পেশাব হালাল হওয়ার কারণেই রাসূল (ছাঃ) তা পান করার অনুমিত দিয়েছেন। প্রশ্নে বর্ণিত বক্তব্য দ্বারা উদাহরণ পেশ করা হয়েছে মাত্র। এর অর্থ এটা নয় যে, গরু-ছাগলের পেশাবে কাপড় ডুবিয়ে তা গায়ে দিতে হবে। কেননা এটা রুচি বিরোধী। আল্লাহ বলেন, তোমরা ছালাতের সময় সুন্দর পোষাক পরিধান কর’ (আ‘রাফ ৭/৩১)।
৪০৯
প্রশ্ন (৮/৪৮) : আমরা জানি যে, আল্লাহ তা‘আলা ১৮ হাযার মাখলূকাত সৃষ্টি করেছেন। একথার কোন দলীল আছে কি?-মুহসিন হোসাইন, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।
উত্তর : মাখলূক্বাতের কোন পরিসংখ্যান কুরআন ও হাদীছে নেই। তবে সালাফে ছালেহীন এ ব্যাপারে বিভিন্ন মত পেশ করেছেন। যেমন মুক্বাতিল বলেন, মাখলূক্বাতের সংখ্যা ৮০ হাযার। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ)-এর মতে ৪০ হাযার, ওয়াহাব বিন মুনাবিবহ (রহঃ)-এর মতে ১৮ হাযার প্রভৃতি। কা‘ব আল-আহবারের মতে, আল্লাহর সৃষ্টির কোন নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান নেই (ইবনু কাছীর ১/২৬, তাফসীর সূরা ফাতেহা ‘রববুল আলামীন’-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)। মূলতঃ উক্ত বর্ণনাগুলি থেকে অধিক সংখ্যক মাখলূক্বাতের কথাই বুঝানো হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ রববুল আলামীন যে নে‘মত দান করেছেন তা তোমরা গণনা করে শেষ করতে পারবে না’ (নাহল ১৬/১৮)। অতএব মাখলূক্বাতের সংখ্যা আল্লাহ সর্বাধিক অবগত।
উত্তর : মাখলূক্বাতের কোন পরিসংখ্যান কুরআন ও হাদীছে নেই। তবে সালাফে ছালেহীন এ ব্যাপারে বিভিন্ন মত পেশ করেছেন। যেমন মুক্বাতিল বলেন, মাখলূক্বাতের সংখ্যা ৮০ হাযার। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ)-এর মতে ৪০ হাযার, ওয়াহাব বিন মুনাবিবহ (রহঃ)-এর মতে ১৮ হাযার প্রভৃতি। কা‘ব আল-আহবারের মতে, আল্লাহর সৃষ্টির কোন নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান নেই (ইবনু কাছীর ১/২৬, তাফসীর সূরা ফাতেহা ‘রববুল আলামীন’-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ)। মূলতঃ উক্ত বর্ণনাগুলি থেকে অধিক সংখ্যক মাখলূক্বাতের কথাই বুঝানো হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ রববুল আলামীন যে নে‘মত দান করেছেন তা তোমরা গণনা করে শেষ করতে পারবে না’ (নাহল ১৬/১৮)। অতএব মাখলূক্বাতের সংখ্যা আল্লাহ সর্বাধিক অবগত।
৪১০
প্রশ্ন (৯/৪৯) : মসজিদে জুম‘আর ছালাতের আগে বা পরে মুছল্লীদের জানার স্বার্থে ইমামের নেতৃত্বে প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?-মাহবূবুর রহমান
ক্ষেতলাল, জয়পুরহাট।
উত্তর : ছালাতের পূর্বে এরূপ আয়োজন করা যাবে না। কেননা রাসূল (ছাঃ) জুম‘আর দিন ছালাতের পূর্বে মসজিদে খুৎবা ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে একত্রিত হ’তে নিষেধ করেছেন (আবুদাঊদ হা/১০৭৯, ছহীহুল জামে‘ হা/৬৮৮৫, সনদ হাসান)। তবে ছালাতের পরে কোন বাধা নেই।
ক্ষেতলাল, জয়পুরহাট।
উত্তর : ছালাতের পূর্বে এরূপ আয়োজন করা যাবে না। কেননা রাসূল (ছাঃ) জুম‘আর দিন ছালাতের পূর্বে মসজিদে খুৎবা ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে একত্রিত হ’তে নিষেধ করেছেন (আবুদাঊদ হা/১০৭৯, ছহীহুল জামে‘ হা/৬৮৮৫, সনদ হাসান)। তবে ছালাতের পরে কোন বাধা নেই।
৪১১
প্রশ্ন (১০/৫০) : সরকারী চাকুরীতে বাধ্যতামূলকভাবে জিপি ফান্ডে বেতনের একটি অংশ জমা করতে হয় এবং প্রতিবছর সরকার জমাকৃত টাকার সাথে ১২.৫% হারে জমা করে। এক্ষণে সরকার প্রদত্ত অংশটি কি সূদ হিসাবে গণ্য হবে?-সুজা সরকার
গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা।
উত্তর : জিপি ফান্ডে জমাকৃত টাকার অতিরিক্ত অংশটি সূদ হিসাবে গণ্য হবে। কেননা সরকার বাৎসরিক জমাকৃত টাকার উপরে চক্রবৃদ্ধিহারে সূদ হিসাবে প্রদান করে থাকে। অতএব সরকারের পক্ষ থেকে নির্ধারিত বেতনের যে অংশ প্রতি মাসে কেটে নেওয়া হয়, চাকুরী শেষে সেটুকু ব্যতীত অতিরিক্ত গ্রহণ করা জায়েয হবে না। তবে অতিরিক্ত এ অংশটি আলাদা করে নেকীর আশা ব্যতীত সমাজকল্যাণে ব্যয় করা যাবে। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘হারাম রূযী দ্বারা পরিপুষ্ট দেহ কখনোই জান্নাতে প্রবেশ করবে না’ (বায়হাক্বী, মিশকাত হা/২৭৮৭; ছহীহাহ হা/২৬০৯)।
গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা।
উত্তর : জিপি ফান্ডে জমাকৃত টাকার অতিরিক্ত অংশটি সূদ হিসাবে গণ্য হবে। কেননা সরকার বাৎসরিক জমাকৃত টাকার উপরে চক্রবৃদ্ধিহারে সূদ হিসাবে প্রদান করে থাকে। অতএব সরকারের পক্ষ থেকে নির্ধারিত বেতনের যে অংশ প্রতি মাসে কেটে নেওয়া হয়, চাকুরী শেষে সেটুকু ব্যতীত অতিরিক্ত গ্রহণ করা জায়েয হবে না। তবে অতিরিক্ত এ অংশটি আলাদা করে নেকীর আশা ব্যতীত সমাজকল্যাণে ব্যয় করা যাবে। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘হারাম রূযী দ্বারা পরিপুষ্ট দেহ কখনোই জান্নাতে প্রবেশ করবে না’ (বায়হাক্বী, মিশকাত হা/২৭৮৭; ছহীহাহ হা/২৬০৯)।
৪১২
প্রশ্ন (১১/৫১) : বেলাল (রাঃ) আযান দেওয়ার সময় ‘শীন’-কে ‘সীন’ উচ্চারণ করায় কারু আপত্তির জবাবে রাসূল (ছাঃ) বলেন, إن سين بلال عند الله شين ‘বেলালের সীন উচ্চারণই আল্লাহর নিকটে শীন। এ ঘটনার সত্যতা জানতে চাই।-আব্দুর রহমান, রাজশাহী।
উত্তর : এটি মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত কথা মাত্র। ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, ঘটনাটির কোন ভিত্তি নেই (আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৭/১০২)। ‘আজলূনীও তাই বলেছেন (কাশফুল খাফা ‘আম্মাশতাহারা মিনাল আহাদীছ ফী আলসিনাতিন নাস হা/১৫২০)। এছাড়া মোল্লা আলী ক্বারী, ‘আমেরী, মুহাম্মাদ তারাবলেসী, আলী হারাবী, সাখাবী সহ বহু মুহাদ্দিছ তাদের মওযূ‘আত তথা জাল হাদীছের সংকলন গ্রন্থসমূহে বর্ণনাটি সংকলন করেছেন।
উত্তর : এটি মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত কথা মাত্র। ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, ঘটনাটির কোন ভিত্তি নেই (আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৭/১০২)। ‘আজলূনীও তাই বলেছেন (কাশফুল খাফা ‘আম্মাশতাহারা মিনাল আহাদীছ ফী আলসিনাতিন নাস হা/১৫২০)। এছাড়া মোল্লা আলী ক্বারী, ‘আমেরী, মুহাম্মাদ তারাবলেসী, আলী হারাবী, সাখাবী সহ বহু মুহাদ্দিছ তাদের মওযূ‘আত তথা জাল হাদীছের সংকলন গ্রন্থসমূহে বর্ণনাটি সংকলন করেছেন।
৪১৩
প্রশ্ন (১২/৫২) : স্ত্রীর জীবদ্দশায় যদি স্বামী মোহরানা পরিশোধ না করেন, তাহ’লে তার মৃত্যুর পর তা পরিশোধ করতে হবে কি?-হালীমা খাতুন, কাটিয়া, সাতক্ষীরা।
উত্তর : স্বামীর জন্য ফরয কর্তব্য হ’ল স্ত্রীর জীবদ্দশায় মোহরানা পরিশোধ করা (নিসা ৪, মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩১৪৩)। জীবদ্দশায় তা পরিশোধ করা না হ’লে মৃত্যুর পর স্ত্রীর ওয়ারিছদের মধ্যে মোহরানার অর্থ বণ্টন করে দিতে হবে। অতঃপর স্বামী অনুতপ্ত হৃদয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যদি কেউ অজ্ঞতাবশে কোন মন্দ কাজ করে, অতঃপর যদি সে তওবা করে ও নিজেকে সংশোধন করে নেয়, তবে তিনি (তার ব্যাপারে) ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (আন’আম ৬/৫৪)।
উত্তর : স্বামীর জন্য ফরয কর্তব্য হ’ল স্ত্রীর জীবদ্দশায় মোহরানা পরিশোধ করা (নিসা ৪, মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩১৪৩)। জীবদ্দশায় তা পরিশোধ করা না হ’লে মৃত্যুর পর স্ত্রীর ওয়ারিছদের মধ্যে মোহরানার অর্থ বণ্টন করে দিতে হবে। অতঃপর স্বামী অনুতপ্ত হৃদয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যদি কেউ অজ্ঞতাবশে কোন মন্দ কাজ করে, অতঃপর যদি সে তওবা করে ও নিজেকে সংশোধন করে নেয়, তবে তিনি (তার ব্যাপারে) ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (আন’আম ৬/৫৪)।
৪১৪
প্রশ্ন (১৩/৫৩) : জুম‘আর ছালাতের খুৎবা শুরুর পূর্বে মসজিদে প্রবেশ করার পর আযান শুরু হয়ে গেলে আযান শোনা ও তার জবাব দেওয়া যরূরী, নাকি আযান চলাকালীন অবস্থায় সুন্নাত ছালাত আদায়ই যরূরী হবে?-আব্দুস সালাম
দাম্মাম, সঊদী আরব।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা যখন আযান শুনবে, তখন মুওয়াযযিন যা বলে তোমরাও তা বল’ (বুখারী হা/৬১১; মুসলিম হা/৩৮৩)। অতএব আযানের জবাব দেওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে সংক্ষেপে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করার পর বসে খুৎবা শ্রবণ করাই উত্তম হবে (ইবনু কুদামা, মুগনী ১/৩১১)। আদবের স্বার্থে উক্ত ছালাত খত্বীবের সামনে না পড়ে বারান্দায় পড়ে ভিতরে গিয়ে বসা ভাল হবে।
দাম্মাম, সঊদী আরব।
উত্তর : রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা যখন আযান শুনবে, তখন মুওয়াযযিন যা বলে তোমরাও তা বল’ (বুখারী হা/৬১১; মুসলিম হা/৩৮৩)। অতএব আযানের জবাব দেওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে সংক্ষেপে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করার পর বসে খুৎবা শ্রবণ করাই উত্তম হবে (ইবনু কুদামা, মুগনী ১/৩১১)। আদবের স্বার্থে উক্ত ছালাত খত্বীবের সামনে না পড়ে বারান্দায় পড়ে ভিতরে গিয়ে বসা ভাল হবে।
৪১৫
প্রশ্ন (১৪/৫৪) : আমাদের এলাকার ইমাম ছাহেব একই বৈঠকে জনৈক ব্যক্তিকে দিয়ে তার স্ত্রীকে তিন তালাক প্রদান করান। অতঃপর ঐ বৈঠকেই উক্ত মহিলাকে অপর এক পুরুষের সাথে বিবাহ দেন। উক্ত তালাক ও বিবাহ সঠিক হয়েছে কি?-ডা. মনছূর আলী
ফুলতলা, পঞ্চগড়।
উত্তর : উক্ত তালাক ও বিবাহ দু’টিই শরী‘আতের দৃষ্টিতে অবৈধ হয়েছে। প্রথমতঃ একসাথে তিন তালাক দিলে সেটি এক তালাক হিসাবে গণ্য হবে (মুসলিম হা/১৪৭২-৭৩; আবুদাঊদ হা/২১৯৬, সনদ হাসান)। কেননা তালাকের সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে পৃথক পৃথকভাবে তিন তুহুরে তিনবার তালাক দেওয়া (বাক্বারাহ ২/২২৯; তালাক্ব ৬৫/১-২)। দ্বিতীয়তঃ সঠিকভাবে তালাক সম্পন্নের পর ইদ্দত শেষে উক্ত মহিলা অন্যত্র বিবাহ করতে পারবে (বাক্বারাহ ২/২২৮)। ইদ্দতের মধ্যে বিবাহের কোন সুযোগ নেই।
ফুলতলা, পঞ্চগড়।
উত্তর : উক্ত তালাক ও বিবাহ দু’টিই শরী‘আতের দৃষ্টিতে অবৈধ হয়েছে। প্রথমতঃ একসাথে তিন তালাক দিলে সেটি এক তালাক হিসাবে গণ্য হবে (মুসলিম হা/১৪৭২-৭৩; আবুদাঊদ হা/২১৯৬, সনদ হাসান)। কেননা তালাকের সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে পৃথক পৃথকভাবে তিন তুহুরে তিনবার তালাক দেওয়া (বাক্বারাহ ২/২২৯; তালাক্ব ৬৫/১-২)। দ্বিতীয়তঃ সঠিকভাবে তালাক সম্পন্নের পর ইদ্দত শেষে উক্ত মহিলা অন্যত্র বিবাহ করতে পারবে (বাক্বারাহ ২/২২৮)। ইদ্দতের মধ্যে বিবাহের কোন সুযোগ নেই।
৪১৬
প্রশ্ন (১৫/৫৫) : জন্মগতভাবে হিজড়াদের ব্যাপারে শরী‘আতের বিধান কি? তারা শরী‘আত অনুযায়ী সকল বিধি-বিধান মেনে চললে কি তারা জান্নাতে যেতে পারবে?-মনছূর আলী
রাজগড়, দঃ চবিবশ পরাগণা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
উত্তর : জন্মগত হিজড়ারা যদি বিবেকসম্পন্ন হয়, তাহ’লে তাদের উপরে ইসলামের বিধি-বিধান অপরিহার্য। তা পালন করলে তারাও জান্নাতে যাবে ইনশাআল্লাহ। তাই সমাজের একজন সদস্য হিসাবে তাদেরকে ইসলামী জীবন যাপন করতে হবে। লজ্জাস্থান ও শারীরিক গঠন বিবেচনায় তার উপর নারী বা পুরুষের বিধান প্রযোজ্য হবে। আলী (রাঃ) এই বিবেচনাতেই তাদের জন্য সম্পদের অংশ নির্ধারণ করতেন (ইবনু হাজার, তালখীছুল হাবীর হা/১৭২, সনদ ছহীহ)। স্মর্তব্য যে, জন্মগতভাবে হিজড়াদের সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা অনুচিত। বরং চিকিৎসার মাধ্যমে তাদেরকে পূর্ণাঙ্গ নারী বা পুরুষে পরিণত করা যেতে পারে।
রাজগড়, দঃ চবিবশ পরাগণা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
উত্তর : জন্মগত হিজড়ারা যদি বিবেকসম্পন্ন হয়, তাহ’লে তাদের উপরে ইসলামের বিধি-বিধান অপরিহার্য। তা পালন করলে তারাও জান্নাতে যাবে ইনশাআল্লাহ। তাই সমাজের একজন সদস্য হিসাবে তাদেরকে ইসলামী জীবন যাপন করতে হবে। লজ্জাস্থান ও শারীরিক গঠন বিবেচনায় তার উপর নারী বা পুরুষের বিধান প্রযোজ্য হবে। আলী (রাঃ) এই বিবেচনাতেই তাদের জন্য সম্পদের অংশ নির্ধারণ করতেন (ইবনু হাজার, তালখীছুল হাবীর হা/১৭২, সনদ ছহীহ)। স্মর্তব্য যে, জন্মগতভাবে হিজড়াদের সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা অনুচিত। বরং চিকিৎসার মাধ্যমে তাদেরকে পূর্ণাঙ্গ নারী বা পুরুষে পরিণত করা যেতে পারে।
৪১৭
প্রশ্ন (১৬/৫৬) : ইয়াজূজ-মাজূজ কারা? এদের উৎপত্তি কোথায়? কিয়ামতের কতদিন পূর্বে এরা বের হবে এবং কি কি করবে? কিভাবে এরা ধ্বংস হবে?-ছালাহুদ্দীন তুহীন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
উত্তর : ইয়াজূজ-মাজূজ পৃথক কোন সম্প্রদায় নয়, বরং তারা আদম (আঃ)-এর বংশধর (বুখারী হা/৪৭৪১ মুসলিম হা/২২২)। মানুষের ঈমান পরীক্ষা করার জন্য এদের সৃষ্টি করা হয়েছে। তারা পৃথিবীতে কখন ও কিভাবে আগমন করেছে, এ বিষয়ে বিদ্বানদের মাঝে মতপার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। তবে তারা অবশ্যই আদম সন্তান ছিল এবং হযরত নূহ (আঃ)-এর পরে পৃথিবীতে তাদের আগমন ঘটেছিল (ফাৎহুল বারী ১৩/১৩১ পৃঃ; ‘ইয়াজূজ মাজূজ’ অধ্যায়)। বর্তমানে যুলক্বারনাইন নির্মিত প্রাচীর দ্বারা তারা আবেষ্টিত রয়েছে (কাহফ ১৮/৯৪-৯৮)।
এ দু’জাতির বেরিয়ে আসাটা ক্বিয়ামতের দশটি বড় আলামতের একটি (মুসলিম হা/২৮৮০; তিরমিযী হা/২১৮৩; আবুদাউদ হা/৪৩১১)। ক্বিয়ামতের প্রাক্কালে তাদের বংশধররা আল্লাহর হুকুমে প্রাচীর ভেঙ্গে বেরিয়ে আসবে। তারা সামনে যা পাবে সব খেয়ে ফেলবে। তাদের সাথে কেউ লড়াই করতে সাহস পাবে না। তারা বহু লোককে হত্যা করবে। সমুদ্রের পানি পান করে শেষ করবে। এক সময় বায়তুল মুক্বাদ্দাসের এক পাহাড়ে উঠে তারা হুংকার দিয়ে বলবে, দুনিয়াতে যারা ছিল সব শেষ করেছি, এখন আসমানে যারা আছে তাদের শেষ করব। এই বলে তারা আকাশে তীর ছুঁড়তে থাকবে। আল্লাহ তাদের তীরে রক্ত মাখিয়ে ফেরত পাঠাবেন। এক সময় ঈসা (আঃ) তাদের জন্য বদদো‘আ করবেন। তাতে তারা সবাই একযোগে মারা পড়বে ও লাশ সমূহ পচে দুর্গন্ধ হবে। আল্লাহ তখন শকুন পাঠাবেন। তারা লাশগুলিকে ‘নাহবাল’ নামক স্থানে নিক্ষেপ করবে। মুসলমানেরা তাদের তীর-ধনুকগুলি সাত বছর ধরে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৪৭৫)।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
উত্তর : ইয়াজূজ-মাজূজ পৃথক কোন সম্প্রদায় নয়, বরং তারা আদম (আঃ)-এর বংশধর (বুখারী হা/৪৭৪১ মুসলিম হা/২২২)। মানুষের ঈমান পরীক্ষা করার জন্য এদের সৃষ্টি করা হয়েছে। তারা পৃথিবীতে কখন ও কিভাবে আগমন করেছে, এ বিষয়ে বিদ্বানদের মাঝে মতপার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। তবে তারা অবশ্যই আদম সন্তান ছিল এবং হযরত নূহ (আঃ)-এর পরে পৃথিবীতে তাদের আগমন ঘটেছিল (ফাৎহুল বারী ১৩/১৩১ পৃঃ; ‘ইয়াজূজ মাজূজ’ অধ্যায়)। বর্তমানে যুলক্বারনাইন নির্মিত প্রাচীর দ্বারা তারা আবেষ্টিত রয়েছে (কাহফ ১৮/৯৪-৯৮)।
এ দু’জাতির বেরিয়ে আসাটা ক্বিয়ামতের দশটি বড় আলামতের একটি (মুসলিম হা/২৮৮০; তিরমিযী হা/২১৮৩; আবুদাউদ হা/৪৩১১)। ক্বিয়ামতের প্রাক্কালে তাদের বংশধররা আল্লাহর হুকুমে প্রাচীর ভেঙ্গে বেরিয়ে আসবে। তারা সামনে যা পাবে সব খেয়ে ফেলবে। তাদের সাথে কেউ লড়াই করতে সাহস পাবে না। তারা বহু লোককে হত্যা করবে। সমুদ্রের পানি পান করে শেষ করবে। এক সময় বায়তুল মুক্বাদ্দাসের এক পাহাড়ে উঠে তারা হুংকার দিয়ে বলবে, দুনিয়াতে যারা ছিল সব শেষ করেছি, এখন আসমানে যারা আছে তাদের শেষ করব। এই বলে তারা আকাশে তীর ছুঁড়তে থাকবে। আল্লাহ তাদের তীরে রক্ত মাখিয়ে ফেরত পাঠাবেন। এক সময় ঈসা (আঃ) তাদের জন্য বদদো‘আ করবেন। তাতে তারা সবাই একযোগে মারা পড়বে ও লাশ সমূহ পচে দুর্গন্ধ হবে। আল্লাহ তখন শকুন পাঠাবেন। তারা লাশগুলিকে ‘নাহবাল’ নামক স্থানে নিক্ষেপ করবে। মুসলমানেরা তাদের তীর-ধনুকগুলি সাত বছর ধরে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৪৭৫)।
৪১৮
প্রশ্ন (১৭/৫৭) : আমরা আলেমদের নিকটে শুনেছি যে, ছিয়ামের ত্রুটি-বিচ্যুতি হ’লে তা ফিৎরা আদায়ের মাধ্যমে কাফফারা হয়ে যায়। এক্ষণে শিশুরা ছিয়াম পালন না করলেও তাদের জন্য ফিৎরা আদায়ের আবশ্যকতার কারণ কি?-রবীউল ইসলাম
শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : ছিয়ামের ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য ফিৎরা যে কাফফারা তা রাসূল (ছাঃ) বলেছেন (আবুদাঊদ মিশকাত হা/১৮১৭)। আর ছোট-বড় সকল মুসলিমকে ফিৎরা দিতে হবে এ কথাও রাসূল (ছাঃ) বলেছেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৮১৫)। আলী (রাঃ) বলেন, ‘যদি দ্বীন মানুষের রায় অনুযায়ী হ’ত, তাহ’লে মোযার নীচে মাসাহ করা অধিক উত্তম হ’ত উপরে মাসাহ করার চাইতে’ (আবুদাঊদ হা/১৬২, সনদ ছহীহ)। অতএব যুক্তি নয় বরং রাসূল (ছাঃ)-এর নির্দেশ অনুসরণের মধ্যেই পরকালীন মুক্তি নিহিত।
শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : ছিয়ামের ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য ফিৎরা যে কাফফারা তা রাসূল (ছাঃ) বলেছেন (আবুদাঊদ মিশকাত হা/১৮১৭)। আর ছোট-বড় সকল মুসলিমকে ফিৎরা দিতে হবে এ কথাও রাসূল (ছাঃ) বলেছেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৮১৫)। আলী (রাঃ) বলেন, ‘যদি দ্বীন মানুষের রায় অনুযায়ী হ’ত, তাহ’লে মোযার নীচে মাসাহ করা অধিক উত্তম হ’ত উপরে মাসাহ করার চাইতে’ (আবুদাঊদ হা/১৬২, সনদ ছহীহ)। অতএব যুক্তি নয় বরং রাসূল (ছাঃ)-এর নির্দেশ অনুসরণের মধ্যেই পরকালীন মুক্তি নিহিত।
-সিরাজুম মুনীরা, রাজশাহী।
উত্তর : মুসলিম নারী যেকোন মুসলিম পুরুষের পক্ষ থেকে হজ্জ করতে পারে। বিদায় হজ্জের সময় খাছ‘আম গোত্রের জনৈক মহিলা রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে তার অতি বৃদ্ধ পিতার পক্ষ থেকে হজ্জ করার অনুমতি চাইলে তিনি অনুমতি দেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৫১১)। তবে ঐ মহিলার সাথে মাহরাম পুরুষ থাকতে হবে।
উত্তর : মুসলিম নারী যেকোন মুসলিম পুরুষের পক্ষ থেকে হজ্জ করতে পারে। বিদায় হজ্জের সময় খাছ‘আম গোত্রের জনৈক মহিলা রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে তার অতি বৃদ্ধ পিতার পক্ষ থেকে হজ্জ করার অনুমতি চাইলে তিনি অনুমতি দেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৫১১)। তবে ঐ মহিলার সাথে মাহরাম পুরুষ থাকতে হবে।
৪২০
প্রশ্ন (১৯/৫৯) : সরকারী চাকুরীর বয়স কম হওয়ায় ভবিষ্যতে চাকুরীর সময়কাল বাড়িয়ে নেওয়ার জন্য সার্টিফিকেটে বয়স কম দেখানোয় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি? অনিচ্ছাকৃত বা না জানার কারণে এরূপ হয়ে গেলে তার জন্য করণীয় কি?-আযীয মিঞা, মোহনপুর, রাজশাহী।
উত্তর : এরূপ কাজ শরী‘আত সম্মত নয়। কারণ এটি প্রতারণা এবং মিথ্যার অন্তর্ভুক্ত, যা নিঃসন্দেহে হারাম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তিু প্রতারণা করে, সে আমার দলভুক্ত নয় (মুসলিম হা/১০১; মিশকাত হা/৩৫২০)। এক্ষণে এরূপ কাজ করে থাকলে এবং তা পরিবর্তন করা সম্ভব না হ’লে, এজন্য আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
উত্তর : এরূপ কাজ শরী‘আত সম্মত নয়। কারণ এটি প্রতারণা এবং মিথ্যার অন্তর্ভুক্ত, যা নিঃসন্দেহে হারাম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তিু প্রতারণা করে, সে আমার দলভুক্ত নয় (মুসলিম হা/১০১; মিশকাত হা/৩৫২০)। এক্ষণে এরূপ কাজ করে থাকলে এবং তা পরিবর্তন করা সম্ভব না হ’লে, এজন্য আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
-ড. আব্দুল হান্নান
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী।
উত্তর : জাওনিয়ার ( الجونية ) সাথে রাসূল (ছাঃ)-এর বিবাহ ও তালাকের ব্যাপারে আয়েশা (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীছটিই যথেষ্ট। যেখানে তিনি বলেন, জাওনের কন্যাকে যখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট (একটি ঘরে) পাঠানো হ’ল। আর তিনি তার নিকটবর্তী হ’লেন, তখন সে বলল, আমি আপনার থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, তুমি তো মহান সত্তার কাছে পানাহ চেয়েছ। অতএব তুমি তোমার পরিবারের সাথে মিলিত হও (বুখারী হা/৫২৫৪)। অতএব জাওনিয়া বিবাহের পর রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে বসবাসে অস্বীকৃতি জানালে তিনি তাকে তালাক প্রদান করেন (বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : ফাৎহুলবারী, উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যা)।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী।
উত্তর : জাওনিয়ার ( الجونية ) সাথে রাসূল (ছাঃ)-এর বিবাহ ও তালাকের ব্যাপারে আয়েশা (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীছটিই যথেষ্ট। যেখানে তিনি বলেন, জাওনের কন্যাকে যখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট (একটি ঘরে) পাঠানো হ’ল। আর তিনি তার নিকটবর্তী হ’লেন, তখন সে বলল, আমি আপনার থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, তুমি তো মহান সত্তার কাছে পানাহ চেয়েছ। অতএব তুমি তোমার পরিবারের সাথে মিলিত হও (বুখারী হা/৫২৫৪)। অতএব জাওনিয়া বিবাহের পর রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে বসবাসে অস্বীকৃতি জানালে তিনি তাকে তালাক প্রদান করেন (বিস্তারিত দ্রষ্টব্য : ফাৎহুলবারী, উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যা)।
-রিফাত, বাগিচাগাঁও, কুমিল্লা।
উত্তর : উক্ত অবস্থায় যরূরী প্রয়োজনে মুছল্লীর সিজদার স্থানের বাহির দিয়ে অতিক্রম করা যাবে (বুখারী হা/৫০৯, মুসলিম হা/৫০৫)। উক্ত হাদীছে بين يدي المصلي দ্বারা মুছল্লীর সিজদার স্থান পর্যন্ত বুঝানো হয়েছে (ইবনু হাজার, ফৎহুলবারী ঐ হাদীছের ব্যাখ্যা দ্রঃ; ফাতাওয়া ওছায়মীন, মাসআলা নং ৬২৪)। মসজিদ ছাড়া অন্যত্র একাকী ছালাত আদায়কারী মুছল্লী সামনে সুতরা রেখে ছালাত আদায় করবেন (আবুদাঊদ হা/৬৯৮; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৪১)। যদি সুতরা না রেখে ছালাত আদায় করেন, তবে তার সিজদার স্থান পর্যন্ত জায়গার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করা যাবে না (বুখারী হা/৫১০; মুসলিম হা/৫০৭; মিশকাত হা/৭৭৬)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ কোন বস্ত্তকে সম্মুখে রেখে ছালাত আদায় করবে যা তাকে লোকদের থেকে সুৎরা বা পর্দা স্বরূপ হবে, এমন অবস্থায় তার সম্মুখ থেকে যদি কেউ অতিক্রম করতে চায়, তাহ’লে সে যেন তাকে বাধা দেয়’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৭৭৭ ‘ছালাত’ অধ্যায় ‘সুৎরা’ অনুচ্ছেদ। বিস্তারিত দ্রষ্টব্য; মির‘আতুল মাফাতীহ হা/৭৮৬-এর ব্যাখ্যা; উছায়মীন, আরকানুল ইসলাম ২/৪৯৩ পৃঃ, প্রশ্নোত্তর সংখ্যা ২৬৭)।
উত্তর : উক্ত অবস্থায় যরূরী প্রয়োজনে মুছল্লীর সিজদার স্থানের বাহির দিয়ে অতিক্রম করা যাবে (বুখারী হা/৫০৯, মুসলিম হা/৫০৫)। উক্ত হাদীছে بين يدي المصلي দ্বারা মুছল্লীর সিজদার স্থান পর্যন্ত বুঝানো হয়েছে (ইবনু হাজার, ফৎহুলবারী ঐ হাদীছের ব্যাখ্যা দ্রঃ; ফাতাওয়া ওছায়মীন, মাসআলা নং ৬২৪)। মসজিদ ছাড়া অন্যত্র একাকী ছালাত আদায়কারী মুছল্লী সামনে সুতরা রেখে ছালাত আদায় করবেন (আবুদাঊদ হা/৬৯৮; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৪১)। যদি সুতরা না রেখে ছালাত আদায় করেন, তবে তার সিজদার স্থান পর্যন্ত জায়গার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করা যাবে না (বুখারী হা/৫১০; মুসলিম হা/৫০৭; মিশকাত হা/৭৭৬)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ কোন বস্ত্তকে সম্মুখে রেখে ছালাত আদায় করবে যা তাকে লোকদের থেকে সুৎরা বা পর্দা স্বরূপ হবে, এমন অবস্থায় তার সম্মুখ থেকে যদি কেউ অতিক্রম করতে চায়, তাহ’লে সে যেন তাকে বাধা দেয়’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৭৭৭ ‘ছালাত’ অধ্যায় ‘সুৎরা’ অনুচ্ছেদ। বিস্তারিত দ্রষ্টব্য; মির‘আতুল মাফাতীহ হা/৭৮৬-এর ব্যাখ্যা; উছায়মীন, আরকানুল ইসলাম ২/৪৯৩ পৃঃ, প্রশ্নোত্তর সংখ্যা ২৬৭)।
৪২৩
প্রশ্ন (২২/৬২) : আমি আমার দাদীর বুকের দুধ খেয়ে বড় হয়েছি। অতঃপর গত ২ বছর পূর্বে আমার আপন ফুফুর মেয়ের সাথে আমার বিবাহ হয়েছে। এ বিবাহ সঠিক হয়েছে কি?-নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
উত্তর : উক্ত বিবাহ সঠিক হয়নি। কারণ এক্ষেত্রে দাদী দুধ মা হওয়ায় উক্ত মেয়েটি আপনার দুধ বোনের মেয়ে তথা আপন ভাগ্নী হিসাবে গণ্য হবে। যাকে বিবাহ করা হারাম (নিসা ৪/২৩)। রাসূল (ছাঃ) ও তাঁর চাচা হামযা (রাঃ) একই মায়ের দুধপান করেছিলেন। সেকারণ হামযার মেয়ের সাথে রাসূল (ছাঃ)-এর বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হ’লে তিনি বলেন, সে আমার জন্য হালাল নয়। কেননা সে আমার দুধ ভাইয়ের মেয়ে। বংশীয় সূত্রে যে সকল মহিলাকে বিবাহ করা হারাম, দুগ্ধ পান সূত্রেও সেসকল মহিলাকে বিবাহ করা হারাম (বুখারী হা/২৬৪৫; মুসলিম হা/১৪৪৭; মিশকাত হা/৩১৬১)। সে রাসূলের চাচাতো বোন। কিন্তু দুধপানের কারণে ভাতিজী হয়ে গেছে। অনুরূপ ফুফাতো বোন হওয়া সত্ত্বেও দুধপানের কারণে এখন সে আপনার আপন ভাগ্নীতে পরিণত হয়েছে। অতএব উক্ত বিবাহ বিচ্ছিন্ন করা আবশ্যক (বুখারী, মিশকাত হা/৩১৬৯)।
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
উত্তর : উক্ত বিবাহ সঠিক হয়নি। কারণ এক্ষেত্রে দাদী দুধ মা হওয়ায় উক্ত মেয়েটি আপনার দুধ বোনের মেয়ে তথা আপন ভাগ্নী হিসাবে গণ্য হবে। যাকে বিবাহ করা হারাম (নিসা ৪/২৩)। রাসূল (ছাঃ) ও তাঁর চাচা হামযা (রাঃ) একই মায়ের দুধপান করেছিলেন। সেকারণ হামযার মেয়ের সাথে রাসূল (ছাঃ)-এর বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হ’লে তিনি বলেন, সে আমার জন্য হালাল নয়। কেননা সে আমার দুধ ভাইয়ের মেয়ে। বংশীয় সূত্রে যে সকল মহিলাকে বিবাহ করা হারাম, দুগ্ধ পান সূত্রেও সেসকল মহিলাকে বিবাহ করা হারাম (বুখারী হা/২৬৪৫; মুসলিম হা/১৪৪৭; মিশকাত হা/৩১৬১)। সে রাসূলের চাচাতো বোন। কিন্তু দুধপানের কারণে ভাতিজী হয়ে গেছে। অনুরূপ ফুফাতো বোন হওয়া সত্ত্বেও দুধপানের কারণে এখন সে আপনার আপন ভাগ্নীতে পরিণত হয়েছে। অতএব উক্ত বিবাহ বিচ্ছিন্ন করা আবশ্যক (বুখারী, মিশকাত হা/৩১৬৯)।
-সফীউদ্দীন আহমাদ
পাঁচদোনা, নরসিংদী।
উত্তর : হজব্রত পালনরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারীর বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। একদা আরাফার মাঠে জনৈক ছাহাবী মুহরিম অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা তাকে বরই পাতা ও পানি দিয়ে গোসল করাও, তাকে দু’টি কাপড়ে কাফন পরাও, তাকে সুগন্ধি লাগিয়ো না এবং মাথা ঢেকে দিয়ো না। কেননা ক্বিয়ামতের দিন তাকে তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উঠানো হবে’ (বুখারী হা/১২৬৫; মুসলিম হা/১২০৬; মিশকাত হা/১৬৩৭)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি হজ্জ বা ওমরার উদ্দেশ্যে বের হ’ল। অতঃপর মারা গেল। আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামত পর্যন্ত তার আমলনামায় হজ্জ বা ওমরার ছওয়াব লিখে দিবেন (আবু ইয়া‘লা হা/৬৩৫৭; ছহীহাহ হা/২৫৫৩)।
পাঁচদোনা, নরসিংদী।
উত্তর : হজব্রত পালনরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারীর বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। একদা আরাফার মাঠে জনৈক ছাহাবী মুহরিম অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা তাকে বরই পাতা ও পানি দিয়ে গোসল করাও, তাকে দু’টি কাপড়ে কাফন পরাও, তাকে সুগন্ধি লাগিয়ো না এবং মাথা ঢেকে দিয়ো না। কেননা ক্বিয়ামতের দিন তাকে তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উঠানো হবে’ (বুখারী হা/১২৬৫; মুসলিম হা/১২০৬; মিশকাত হা/১৬৩৭)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি হজ্জ বা ওমরার উদ্দেশ্যে বের হ’ল। অতঃপর মারা গেল। আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামত পর্যন্ত তার আমলনামায় হজ্জ বা ওমরার ছওয়াব লিখে দিবেন (আবু ইয়া‘লা হা/৬৩৫৭; ছহীহাহ হা/২৫৫৩)।
৪২৫
প্রশ্ন (২৪/৬৪) : অমুসলিমদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বিনিময় করা অথবা সেখানে অংশগ্রহণ করা জায়েয হবে কি?-আমানুল্লাহ, ওয়ান ব্যাংক, ঢাকা।
উত্তর : অমুসলিমদের ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় ও তাতে অংশগ্রহণ করা মুসলমানদের জন্য নিষিদ্ধ। এর মাধ্যমে তাদের বাতিল ধর্মবিশ্বাসকে সমর্থন করা হয়, যা হারাম। আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন তালাশ করে, তার নিকট থেকে তা কখনোই কবুল করা হবে না এবং এমন ব্যক্তি পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (আলে ইমরান ৩/৮৫)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে ব্যক্তি (কিয়ামতের দিন) তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৩৪৭)। তিনি বলেন, যে আমাদের ব্যতীত অন্যদের রীতি- নীতির অনুসরণ করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয় (তিরমিযী হা/২৬৯৫, মিশকাত হা/৪৬৪৯)। তিনি আরো বলেন, শীঘ্রই আমার উম্মতের কিছু দল মূর্তিপূজা করবে এবং মুশরিকদের সাথে মিশে যাবে (ইবনু মাজাহ হা/৩৯৫২, আবুদাঊদ হা/৪২৫২; মিশকাত হা/৫৪০৬)। ওছায়মীন (রহঃ) বলেন, কাফেরদের বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে উপহার বিনিময়, মিষ্টান্ন বিতরণ, রকমারি খাদ্য তৈরী করা, কাজ বন্ধ রাখা ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের সাদৃশ্য অবলম্বন করা মুসলমানদের জন্য হারাম (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৩/৪৬)।
উত্তর : অমুসলিমদের ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় ও তাতে অংশগ্রহণ করা মুসলমানদের জন্য নিষিদ্ধ। এর মাধ্যমে তাদের বাতিল ধর্মবিশ্বাসকে সমর্থন করা হয়, যা হারাম। আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন তালাশ করে, তার নিকট থেকে তা কখনোই কবুল করা হবে না এবং এমন ব্যক্তি পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (আলে ইমরান ৩/৮৫)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে, সে ব্যক্তি (কিয়ামতের দিন) তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৩৪৭)। তিনি বলেন, যে আমাদের ব্যতীত অন্যদের রীতি- নীতির অনুসরণ করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয় (তিরমিযী হা/২৬৯৫, মিশকাত হা/৪৬৪৯)। তিনি আরো বলেন, শীঘ্রই আমার উম্মতের কিছু দল মূর্তিপূজা করবে এবং মুশরিকদের সাথে মিশে যাবে (ইবনু মাজাহ হা/৩৯৫২, আবুদাঊদ হা/৪২৫২; মিশকাত হা/৫৪০৬)। ওছায়মীন (রহঃ) বলেন, কাফেরদের বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে উপহার বিনিময়, মিষ্টান্ন বিতরণ, রকমারি খাদ্য তৈরী করা, কাজ বন্ধ রাখা ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের সাদৃশ্য অবলম্বন করা মুসলমানদের জন্য হারাম (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৩/৪৬)।
-ছালেহ আহমাদ, দেরাই, সুনামগঞ্জ।
উত্তর : (১) ছুরি ভালোভাবে ধার দেওয়া এবং দ্রুত যবহের কাজ সমাধা করা। যেন পশুর কষ্ট কম হয় (মুসলিম হা/১৯৫৫; মিশকাত হা/৪০৭৩)। (২) ক্বিবলামুখী হয়ে যবেহ করা (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/৮৫৮৫; আলবানী, মানাসিকুল হাজ্জ, সনদ ছহীহ)। (৩) যবহকালীন সময়ে দো‘আ পাঠ করা (ক) বিসমিল্লা-হি ওয়াল্লা-হু আকবার (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৪৫৩) (খ) কুরবানীর পশু হ’লে বলবে, বিসমিল্লা-হি আল্লা-হুম্মা তাক্বাববাল মিন্নী ওয়া মিন আহলে বায়তী (মুসলিম হা/১৯৬৭)।
এক্ষণে পশু যবেহ করার সুন্নাতী তরীকা হ’ল- উট দাঁড়ানো অবস্থায় এর ‘হলক্বূম’ বা কণ্ঠনালীর গোড়ায় অস্ত্রাঘাতের মাধ্যমে রক্ত প্রবাহিত করে ‘নহর’ করা এবং গরু বা ছাগলের মাথা দক্ষিণ দিকে রেখে, বাম কাতে ফেলে ক্বিলামুখী হয়ে ‘যবহ’ করা (সুবুলুস সালাম, ৪/১৭৭ পৃঃ; মির‘আত ২/৩৫১; ঐ, ৫/৭৫ পৃঃ)।
উত্তর : (১) ছুরি ভালোভাবে ধার দেওয়া এবং দ্রুত যবহের কাজ সমাধা করা। যেন পশুর কষ্ট কম হয় (মুসলিম হা/১৯৫৫; মিশকাত হা/৪০৭৩)। (২) ক্বিবলামুখী হয়ে যবেহ করা (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/৮৫৮৫; আলবানী, মানাসিকুল হাজ্জ, সনদ ছহীহ)। (৩) যবহকালীন সময়ে দো‘আ পাঠ করা (ক) বিসমিল্লা-হি ওয়াল্লা-হু আকবার (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৪৫৩) (খ) কুরবানীর পশু হ’লে বলবে, বিসমিল্লা-হি আল্লা-হুম্মা তাক্বাববাল মিন্নী ওয়া মিন আহলে বায়তী (মুসলিম হা/১৯৬৭)।
এক্ষণে পশু যবেহ করার সুন্নাতী তরীকা হ’ল- উট দাঁড়ানো অবস্থায় এর ‘হলক্বূম’ বা কণ্ঠনালীর গোড়ায় অস্ত্রাঘাতের মাধ্যমে রক্ত প্রবাহিত করে ‘নহর’ করা এবং গরু বা ছাগলের মাথা দক্ষিণ দিকে রেখে, বাম কাতে ফেলে ক্বিলামুখী হয়ে ‘যবহ’ করা (সুবুলুস সালাম, ৪/১৭৭ পৃঃ; মির‘আত ২/৩৫১; ঐ, ৫/৭৫ পৃঃ)।
৪২৭
প্রশ্ন (২৬/৬৬) : জনৈক আলেম বলেন, বিদায়কালে মুছাফাহা করতে হবে না, কেবল সালাম দিতে হবে। কারণ মুছাফাহা করার হাদীছ যঈফ। এ ব্যাপারে সঠিক সমাধান জানতে চাই।-রবীউল ইসলাম
নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : বিদায় বেলায় মুছাফাহা করা যাবে। ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) যখন কোন ব্যক্তিকে বিদায় দিতেন, তখন তার হাত ধরতেন এবং বিদায় হওয়া ব্যক্তি তাঁর হাত না ছাড়া পর্যন্ত রাসূল (ছাঃ) তার হাত ছাড়তেন না। অতঃপর তিনি দো‘আ করে দিতেন...’ (তিরমিযী হা/৩৪৪২, মিশকাত হা/২৪৩৫)।
নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : বিদায় বেলায় মুছাফাহা করা যাবে। ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) যখন কোন ব্যক্তিকে বিদায় দিতেন, তখন তার হাত ধরতেন এবং বিদায় হওয়া ব্যক্তি তাঁর হাত না ছাড়া পর্যন্ত রাসূল (ছাঃ) তার হাত ছাড়তেন না। অতঃপর তিনি দো‘আ করে দিতেন...’ (তিরমিযী হা/৩৪৪২, মিশকাত হা/২৪৩৫)।
৪২৮
প্রশ্ন (২৭/৬৭) : জানাযার সময় জনৈক ব্যক্তির লাশ দেখে জনৈক আলেম বললেন, ‘লাশ যিকিরের হালতে রয়েছে’। এছাড়া আরেকজন আলেম বললেন, ‘আজকে আমরা এই মাইয়েতের জন্য জীবনের সমস্ত নেকী দিয়ে দিলাম’। প্রথম কথাটির কোন ভিত্তি আছে কি? এছাড়া ২য় কথাটি বলায় মাইয়েত উপকৃত হবে কি?-আব্দুল্লাহ
নামো শংকরবাটী. চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : উক্ত বক্তব্য দু’টিই ছহীহ আক্বীদা বিরোধী ও ভিত্তিহীন।
নামো শংকরবাটী. চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : উক্ত বক্তব্য দু’টিই ছহীহ আক্বীদা বিরোধী ও ভিত্তিহীন।
৪২৯
প্রশ্ন (২৮/৬৮) : কোন অসুস্থ বা মৃত ব্যক্তির অনেক বছরের ক্বাযা ছিয়াম বা ক্বাযা ছালাত তার সন্তান আদায় করে দিতে কিংবা ফিদইয়া দিতে পারবে কি?-আব্দুল আহাদ, আসাম, ভারত।
উত্তর : অনেক বছরের ক্বাযা ছালাত ও ছিয়ামের জন্য অসুস্থ ব্যক্তি নিজে আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। আর মৃত ব্যক্তির সন্তানেরা অনুতপ্ত হৃদয়ে তার জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে (যুমার ৩৯/৫৩)। কেননা ‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না...’ (বাক্বারাহ ২৮৬)। তবে অসুস্থ অবস্থায় শারীরিক অক্ষমতার কারণে প্রতি ছিয়ামের জন্য একজন মিসকীন খাওয়াতে হবে (বুখারী হা/৪৫০৫ ‘তাফসীর’ অধ্যায় ২৫ অনুচ্ছেদ)।
উত্তর : অনেক বছরের ক্বাযা ছালাত ও ছিয়ামের জন্য অসুস্থ ব্যক্তি নিজে আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। আর মৃত ব্যক্তির সন্তানেরা অনুতপ্ত হৃদয়ে তার জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে (যুমার ৩৯/৫৩)। কেননা ‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না...’ (বাক্বারাহ ২৮৬)। তবে অসুস্থ অবস্থায় শারীরিক অক্ষমতার কারণে প্রতি ছিয়ামের জন্য একজন মিসকীন খাওয়াতে হবে (বুখারী হা/৪৫০৫ ‘তাফসীর’ অধ্যায় ২৫ অনুচ্ছেদ)।
৪৩০
প্রশ্ন (২৯/৬৯) : যোহর, আছর, মাগরিব একত্রে জমা-ক্বছর করার ক্ষেত্রে অথবা ক্বাযা আদায়ের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যরূরী কি?-আব্দুল্লাহ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
উত্তর : সকল ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সুন্নাত। খন্দক যুদ্ধের দিন ব্যস্ততার কারণে আছরের ছালাত ছুটে গেলে রাসূল (ছাঃ) মাগরিবের আযানের পর প্রথমে আছর তারপর মাগরিবের ছালাত আদায় করেছিলেন (বুখারী হা/৯৪৫; মুসলিম হা/৬২৭; ছহীহুল জামে‘ হা/৫৮৮৭)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, যুদ্ধের ব্যস্ততার কারণে এদিন তিনি রাতের বেলা ধারাবাহিকভাবে আছর থেকে এশা পর্যন্ত ক্বাযা ছালাত আদায় করেছিলেন (আহমাদ হা/১১৬৬২, মুসনাদ আবু ইয়া‘লা হা/১২৯৬, সনদ ছহীহ)।
উত্তর : সকল ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সুন্নাত। খন্দক যুদ্ধের দিন ব্যস্ততার কারণে আছরের ছালাত ছুটে গেলে রাসূল (ছাঃ) মাগরিবের আযানের পর প্রথমে আছর তারপর মাগরিবের ছালাত আদায় করেছিলেন (বুখারী হা/৯৪৫; মুসলিম হা/৬২৭; ছহীহুল জামে‘ হা/৫৮৮৭)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, যুদ্ধের ব্যস্ততার কারণে এদিন তিনি রাতের বেলা ধারাবাহিকভাবে আছর থেকে এশা পর্যন্ত ক্বাযা ছালাত আদায় করেছিলেন (আহমাদ হা/১১৬৬২, মুসনাদ আবু ইয়া‘লা হা/১২৯৬, সনদ ছহীহ)।
৪৩১
প্রশ্ন (৩০/৭০) : স্বামীর নিকট থেকে আমি নববই হাযার টাকা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ না করেই তাকে ডিভোর্স দিয়েছি এবং পরে চাইলে তা অস্বীকার করেছি। এক্ষণে আমার করণীয় কি? তা ফেরত না দিলে গোনাহগার হ’তে হবে কি?-মুনীরা খাতুন
কাসেমপুর, সাতক্ষীরা।
উত্তর : এরূপ কাজ আত্মসাতের নামান্তর। আর আত্মসাৎকারীর পরিণাম জাহান্নাম’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৯৯৭)। এক্ষণে টাকা ফেরত দিলে এ গোনাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ (বুখারী, মিশকাত হা/৫১২৬)। তাছাড়া স্ত্রী স্বামীকে ডিভোর্স নয়, বরং তার থেকে ‘খোলা’ বা বিচ্ছিন্ন হ’তে পারে। আর এজন্য তাকে স্বামী প্রদত্ত মোহরানা ফেরৎ দিতে হবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩২৭৪ ‘বিবাহ’ অধ্যায়, ‘খোলা ও তালাক’ অনুচ্ছেদ)। অতঃপর এক মাস ইদ্দত পালন করে অন্যত্র বিবাহ করবে।
কাসেমপুর, সাতক্ষীরা।
উত্তর : এরূপ কাজ আত্মসাতের নামান্তর। আর আত্মসাৎকারীর পরিণাম জাহান্নাম’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৯৯৭)। এক্ষণে টাকা ফেরত দিলে এ গোনাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ (বুখারী, মিশকাত হা/৫১২৬)। তাছাড়া স্ত্রী স্বামীকে ডিভোর্স নয়, বরং তার থেকে ‘খোলা’ বা বিচ্ছিন্ন হ’তে পারে। আর এজন্য তাকে স্বামী প্রদত্ত মোহরানা ফেরৎ দিতে হবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩২৭৪ ‘বিবাহ’ অধ্যায়, ‘খোলা ও তালাক’ অনুচ্ছেদ)। অতঃপর এক মাস ইদ্দত পালন করে অন্যত্র বিবাহ করবে।
৪৩২
প্রশ্ন (৩১/৭১) : টয়লেটে পশ্চিম বা পূর্ব দিকে ফিরে বসায় কোন বাধা আছে কি? অনেকে এটাকে শরী‘আতবিরোধী বা ক্বিবলার সাথে বেআদবী হিসাবে গণ্য করে। এর কোন ভিত্তি আছে কি?-ইসরাফীল, মান্দা, নওগাঁ।
উত্তর : না। এতে কোন বাধা নেই এবং এটাকে বেআদবী গণ্য করাও ঠিক নয়। ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, ‘আমি হাফছার বাড়ীর ছাদে কোন কারণে উঠেছিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে ক্বিবলাকে পিঠ করে হাজত সারতে দেখলাম’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩৩৫)। জাবের (রাঃ) থেকেও অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে (আবুদাঊদ হা/১৭)। তবে টয়লেটের বাইরে খোলা স্থানে ক্বিবলাকে সামনে বা পিছনে রাখা যাবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘... পায়খানা-পেশাবের সময় তোমরা ক্বিবলাকে সামনে বা পিছনে রাখবে না’ (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৩৩৪ ‘পেশাব-পায়খানার শিষ্টাচার’ পরিচ্ছেদ)। একদা ইবনু ওমর (রাঃ) স্বীয় উটকে সামনে রেখে কিবলার দিকে ফিরে পেশাব করলেন এবং এ ব্যাপারে প্রশ্নকারীকে বললেন, খোলা জায়গায় এরূপ করা হ’তে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু যখন তোমার আর ক্বিবলার মধ্যে কোন পর্দা থাকবে, যা তোমাকে আড়াল করবে, তখন কোন বাধা নেই (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৩৭৩)। সাইয়িদ সাবিক এ বিষয়ে বর্ণিত হাদীছ সমূহের সমন্বয় করে বলেন, উন্মুক্ত স্থানে ক্বিবলামুখী বা ক্বিবলার দিকে পিঠ করে পেশাব-পায়খানা করা নিষিদ্ধ। আর ঘেরাস্থানের মধ্যে জায়েয’ (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২৫-২৬ পৃঃ ‘পবিত্রতা’ অধ্যায়)।
উত্তর : না। এতে কোন বাধা নেই এবং এটাকে বেআদবী গণ্য করাও ঠিক নয়। ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, ‘আমি হাফছার বাড়ীর ছাদে কোন কারণে উঠেছিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে ক্বিবলাকে পিঠ করে হাজত সারতে দেখলাম’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৩৩৫)। জাবের (রাঃ) থেকেও অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে (আবুদাঊদ হা/১৭)। তবে টয়লেটের বাইরে খোলা স্থানে ক্বিবলাকে সামনে বা পিছনে রাখা যাবে না। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘... পায়খানা-পেশাবের সময় তোমরা ক্বিবলাকে সামনে বা পিছনে রাখবে না’ (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৩৩৪ ‘পেশাব-পায়খানার শিষ্টাচার’ পরিচ্ছেদ)। একদা ইবনু ওমর (রাঃ) স্বীয় উটকে সামনে রেখে কিবলার দিকে ফিরে পেশাব করলেন এবং এ ব্যাপারে প্রশ্নকারীকে বললেন, খোলা জায়গায় এরূপ করা হ’তে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু যখন তোমার আর ক্বিবলার মধ্যে কোন পর্দা থাকবে, যা তোমাকে আড়াল করবে, তখন কোন বাধা নেই (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৩৭৩)। সাইয়িদ সাবিক এ বিষয়ে বর্ণিত হাদীছ সমূহের সমন্বয় করে বলেন, উন্মুক্ত স্থানে ক্বিবলামুখী বা ক্বিবলার দিকে পিঠ করে পেশাব-পায়খানা করা নিষিদ্ধ। আর ঘেরাস্থানের মধ্যে জায়েয’ (ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২৫-২৬ পৃঃ ‘পবিত্রতা’ অধ্যায়)।
৪৩৩
প্রশ্ন (৩২/৭২) : পুরুষরা কি পরিমাণ স্বর্ণ ব্যবহার করতে পারবে? শুনেছি তারা সর্বোচ্চ ২ আনা পরিমাণ ব্যবহার করতে পারে। এর কোন সত্যতা আছে কি?-রিমোন* আহমাদ
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
* কেবল ‘আহমাদ’ নাম রাখুন (স.স.)।
উত্তর : পুরুষের জন্য সর্বাবস্থায় স্বর্ণ ব্যবহার করা হারাম। একদা রাসূল ডান হাতে রেশম এবং বাম হাতে স্বর্ণ নিয়ে বললেন, এ দু’টি আমার উম্মতের পুরুষদের জন্য হারাম এবং নারীদের জন্য হালাল’ (আবুদাউদ হা/৪০৫৭; ইবনু মাজাহ হা/৩৫৯৫; মিশকাত হা/৪৩৯৪)। তিনি আরো বলেন, ‘যে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলকে বিশ্বাস করে সে স্বর্ণ এবং রেশম ব্যবহার করবে না’ (ছহীহাহ হা/৩৩৭; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৫০৯)। এছাড়া ২ আনা ব্যবহার করতে পারবে যেন কোথাও মারা গেলে সেটা বিক্রি করে কাফনের কাপড় কিনতে পারে মর্মে কোন দলীল নেই। অনুরূপভাবে স্বর্ণের পাত্র বা স্বর্ণ দ্বারা তৈরি কোন আসবাবপত্র যেমন কলম, থালা ইত্যাদি মুসলিম নারী-পুরুষ সকলের জন্য হারাম (বুখারী হা/৫৪২৬; মুসলিম হা/২০৬৭; মিশকাত হা/৪২৭২)।
গোদাগাড়ী, রাজশাহী।
* কেবল ‘আহমাদ’ নাম রাখুন (স.স.)।
উত্তর : পুরুষের জন্য সর্বাবস্থায় স্বর্ণ ব্যবহার করা হারাম। একদা রাসূল ডান হাতে রেশম এবং বাম হাতে স্বর্ণ নিয়ে বললেন, এ দু’টি আমার উম্মতের পুরুষদের জন্য হারাম এবং নারীদের জন্য হালাল’ (আবুদাউদ হা/৪০৫৭; ইবনু মাজাহ হা/৩৫৯৫; মিশকাত হা/৪৩৯৪)। তিনি আরো বলেন, ‘যে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলকে বিশ্বাস করে সে স্বর্ণ এবং রেশম ব্যবহার করবে না’ (ছহীহাহ হা/৩৩৭; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৫০৯)। এছাড়া ২ আনা ব্যবহার করতে পারবে যেন কোথাও মারা গেলে সেটা বিক্রি করে কাফনের কাপড় কিনতে পারে মর্মে কোন দলীল নেই। অনুরূপভাবে স্বর্ণের পাত্র বা স্বর্ণ দ্বারা তৈরি কোন আসবাবপত্র যেমন কলম, থালা ইত্যাদি মুসলিম নারী-পুরুষ সকলের জন্য হারাম (বুখারী হা/৫৪২৬; মুসলিম হা/২০৬৭; মিশকাত হা/৪২৭২)।
৪৩৪
প্রশ্ন (৩৩/৭৩) : ‘মসজিদে দুনিয়াবী কথা বললে ১৭ বছরের ইবাদত বাতিল হয়ে যায়’ মর্মে কোন ছহীহ বর্ণনা আছে কি?-মাহফূয আহমাদ
সোনারগাঁও, ঢাকা।
উত্তর : এ মর্মে ছহীহ বা যঈফ কোন বর্ণনা নেই। তবে মসজিদে দুনিয়াবী কথা বললে চল্লিশ বছরের আমল বাতিল হয়ে যায় মর্মে বর্ণিত হাদীছটি জাল (আলবানী, আছ-ছামারুল মুসতাত্বাব ১/৮৩৩; ‘আজলূনী, কাশফুল খাফা হা/২৪৪০; ছাগানী, আল-মাওযু‘আত হা/৪০)। বরং মুছল্লীদের অসুবিধা সৃষ্টি না হ’লে মসজিদে দুনিয়াবী কথা-বার্তা বলা যায়। যেমন জাবের বিন সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে ছাহাবায়ে কেরাম মসজিদে জাহেলী যুগের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরস্পর আলোচনা এবং হাসাহাসি করতেন এবং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তা শ্রবণে মুচকি হাসতেন (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৭৪৭)। তবে অন্য মুছল্লীদের মনোযোগ যাতে বিনষ্ট না হয়, সেদিকে গভীরভাবে নযর রাখতে হবে। কেননা রাসূল (ছাঃ) কোন মুছল্লী ছালাতরত অবস্থায় থাকলে অন্যদেরকে কুরআন পর্যন্ত নিম্নস্বরে তেলাওয়াত করার নির্দেশ দিয়েছেন (আহমাদ; মিশকাত হা/৮৫৬, সনদ ছহীহ)।
সোনারগাঁও, ঢাকা।
উত্তর : এ মর্মে ছহীহ বা যঈফ কোন বর্ণনা নেই। তবে মসজিদে দুনিয়াবী কথা বললে চল্লিশ বছরের আমল বাতিল হয়ে যায় মর্মে বর্ণিত হাদীছটি জাল (আলবানী, আছ-ছামারুল মুসতাত্বাব ১/৮৩৩; ‘আজলূনী, কাশফুল খাফা হা/২৪৪০; ছাগানী, আল-মাওযু‘আত হা/৪০)। বরং মুছল্লীদের অসুবিধা সৃষ্টি না হ’লে মসজিদে দুনিয়াবী কথা-বার্তা বলা যায়। যেমন জাবের বিন সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে ছাহাবায়ে কেরাম মসজিদে জাহেলী যুগের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরস্পর আলোচনা এবং হাসাহাসি করতেন এবং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তা শ্রবণে মুচকি হাসতেন (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৭৪৭)। তবে অন্য মুছল্লীদের মনোযোগ যাতে বিনষ্ট না হয়, সেদিকে গভীরভাবে নযর রাখতে হবে। কেননা রাসূল (ছাঃ) কোন মুছল্লী ছালাতরত অবস্থায় থাকলে অন্যদেরকে কুরআন পর্যন্ত নিম্নস্বরে তেলাওয়াত করার নির্দেশ দিয়েছেন (আহমাদ; মিশকাত হা/৮৫৬, সনদ ছহীহ)।
৪৩৫
প্রশ্ন (৩৪/৭৪) : যেসব পোষাকে মানুষের কোন অঙ্গের যেমন কেবল হাতের ছবি থাকে সেসব পোষাক পরিধান করায় কোন বাধা আছে কি?-আশফাক হোসাইন, ঢাকা।
উত্তর : যা দেখলে বুঝা যায় যে এটি প্রাণীর অঙ্গ, এরূপ ছবিযুক্ত পোশাক ব্যবহার করা যাবে না। আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রাণীর ছবিযুক্ত কোন কিছু বাড়ীতে দেখলে তা বিনষ্ট করে দিতেন (বুখারী, মিশকাত হা/৪৪৯১ ‘ছবিসমূহ’ অনুচ্ছেদ)।
উত্তর : যা দেখলে বুঝা যায় যে এটি প্রাণীর অঙ্গ, এরূপ ছবিযুক্ত পোশাক ব্যবহার করা যাবে না। আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রাণীর ছবিযুক্ত কোন কিছু বাড়ীতে দেখলে তা বিনষ্ট করে দিতেন (বুখারী, মিশকাত হা/৪৪৯১ ‘ছবিসমূহ’ অনুচ্ছেদ)।
৪৩৬
প্রশ্ন (৩৫/৭৫) : আল্লাহ বলেন, ব্যভিচারী পুরুষ ব্যভিচারিণী নারী ব্যতীত বিবাহ করে না এবং ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ ব্যতীত বিবাহ করে না’ (নূর ৩)। আয়াতটির সঠিক মর্মার্থ কি?-মুস্তাফীযুর রহমান
পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, ঢাকা।
উত্তর : উক্ত আয়াত দ্বারা উদ্দেশ্য হ’ল, কোন সৎকর্মশীল পুরুষের জন্য কোন ব্যভিচারিণী নারীকে বিবাহ করা বৈধ নয়, যতক্ষণ না সে তওবা করে। অনুরূপ এর বিপরীত। অর্থাৎ তওবা করলে বিবাহ করা জায়েয। ইমাম আহমাদ বলেছেন, কোন সৎকর্মশীল পুরুষের সাথে কোন ব্যভিচারিণী নারীর বিবাহ শুদ্ধ হবে না, যতক্ষণ না সে তওবা করে। অনুরূপ কোন সতী নারীর সাথে কোন ব্যভিচারী পুরুষের বিবাহ শুদ্ধ হবে না, যতক্ষণ না সে তওবা করে (ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা নূর ৩ আয়াত)।
পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, ঢাকা।
উত্তর : উক্ত আয়াত দ্বারা উদ্দেশ্য হ’ল, কোন সৎকর্মশীল পুরুষের জন্য কোন ব্যভিচারিণী নারীকে বিবাহ করা বৈধ নয়, যতক্ষণ না সে তওবা করে। অনুরূপ এর বিপরীত। অর্থাৎ তওবা করলে বিবাহ করা জায়েয। ইমাম আহমাদ বলেছেন, কোন সৎকর্মশীল পুরুষের সাথে কোন ব্যভিচারিণী নারীর বিবাহ শুদ্ধ হবে না, যতক্ষণ না সে তওবা করে। অনুরূপ কোন সতী নারীর সাথে কোন ব্যভিচারী পুরুষের বিবাহ শুদ্ধ হবে না, যতক্ষণ না সে তওবা করে (ইবনু কাছীর, তাফসীর সূরা নূর ৩ আয়াত)।
-মামূন, গাংণী, মেহেরপুর।
উত্তর : জুতা পায়ে দিয়ে কবরে মাটি দেওয়া ও কবরস্থানে যাওয়া যাবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১২৬)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জুতা পায়ে দিয়ে ছালাত আদায় করেছেন (আবুদাঊদ, দারেমী, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৭৬৬)। তবে বিলাসী জুতা পরে গর্ব সহকারে কবরস্থানে যাওয়া ঠিক নয়। কেননা রাসূল (ছাঃ) একজন লোককে সিবতী জুতা পরে কবরস্থানে চলতে দেখে বললেন, হে সিবতী জুতাওয়ালা! তোমার ধ্বংস হোক। তুমি তোমার জুতা খুলে ফেল। লোকটি রাসূল (ছাঃ)-এর দিকে দেখে রাগ বুঝতে পেরে জুতা খুলে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিল (আবুদাঊদ হা/৩২৩০)।খাত্ত্বাবী বলেন, এ জুতা পরিধানের মাধ্যমে গর্বভাব সৃষ্টি হয়। সেকারণ রাসূল (ছাঃ) এটাকে অপসন্দ করেছিলেন। কেননা এটা ধনী ব্যক্তিদের জুতা (আওনুল মা‘বূদ শরহ আবুদাঊদ উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যা দ্রঃ)।
উত্তর : জুতা পায়ে দিয়ে কবরে মাটি দেওয়া ও কবরস্থানে যাওয়া যাবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১২৬)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জুতা পায়ে দিয়ে ছালাত আদায় করেছেন (আবুদাঊদ, দারেমী, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৭৬৬)। তবে বিলাসী জুতা পরে গর্ব সহকারে কবরস্থানে যাওয়া ঠিক নয়। কেননা রাসূল (ছাঃ) একজন লোককে সিবতী জুতা পরে কবরস্থানে চলতে দেখে বললেন, হে সিবতী জুতাওয়ালা! তোমার ধ্বংস হোক। তুমি তোমার জুতা খুলে ফেল। লোকটি রাসূল (ছাঃ)-এর দিকে দেখে রাগ বুঝতে পেরে জুতা খুলে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিল (আবুদাঊদ হা/৩২৩০)।খাত্ত্বাবী বলেন, এ জুতা পরিধানের মাধ্যমে গর্বভাব সৃষ্টি হয়। সেকারণ রাসূল (ছাঃ) এটাকে অপসন্দ করেছিলেন। কেননা এটা ধনী ব্যক্তিদের জুতা (আওনুল মা‘বূদ শরহ আবুদাঊদ উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যা দ্রঃ)।
৪৩৮
প্রশ্ন (৩৭/৭৭) : আপন শ্যালিকার পরিবার কি আত্মীয়ের মধ্যে গণ্য হবে? ২৭ বছর পূর্বে শ্যালিকার বিবাহ থেকে তাদের সাথে সম্পর্ক নেই। এক্ষেত্রে কি আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্নকারী হিসাবে গোনাহগার হ’তে হবে?-সুলতান আহমাদ, মুরাদপুর, চট্টগ্রাম।
উত্তর : আত্মীয় দু’রকমের। পিতৃ বংশগত ও শ্বশুর বংশগত। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘তিনিই মানুষকে পানি হ’তে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি তার বংশগত ও বিবাহগত সম্পর্ক নির্ধারণ করেছেন’ (ফুরক্বান ২৫/৫৪)। এছাড়া দুগ্ধসম্পর্কীয় আত্মীয়ও রয়েছে। যারা বংশগত আত্মীয়ের ন্যায় (নিসা ৪/২৩)। শ্যালিকা হ’ল শশুর বংশগত আত্মীয়াদের অন্তর্ভুক্ত। অতএব তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা যাবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেন, আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/৪৯২২)। তবে দ্বীনী কারণে সাময়িকভাবে কাউকে এড়িয়ে যাওয়া যাবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৭০১)।
উত্তর : আত্মীয় দু’রকমের। পিতৃ বংশগত ও শ্বশুর বংশগত। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘তিনিই মানুষকে পানি হ’তে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি তার বংশগত ও বিবাহগত সম্পর্ক নির্ধারণ করেছেন’ (ফুরক্বান ২৫/৫৪)। এছাড়া দুগ্ধসম্পর্কীয় আত্মীয়ও রয়েছে। যারা বংশগত আত্মীয়ের ন্যায় (নিসা ৪/২৩)। শ্যালিকা হ’ল শশুর বংশগত আত্মীয়াদের অন্তর্ভুক্ত। অতএব তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা যাবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেন, আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না (বুখারী, মুসলিম; মিশকাত হা/৪৯২২)। তবে দ্বীনী কারণে সাময়িকভাবে কাউকে এড়িয়ে যাওয়া যাবে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৭০১)।
৪৩৯
প্রশ্ন (৩৮/৭৮) : আমার অবিবাহিত মামা ১ বিঘা জমি রেখে মারা গিয়েছেন। তার দাদা ও বোন জীবিত রয়েছে এবং আরেক বোন মারা গেছে। দাদার ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে, জীবিত বোনের ১ ছেলে এবং মৃত বোনের ৪ ছেলে রয়েছে। এক্ষণে উক্ত জমি কিভাবে ভাগ হবে?-মুনীরুল শেখ
মালদহ, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
উত্তর : পুরো সম্পত্তির মালিক হবেন দাদা। আবুবকর (রাঃ) বলেন, দাদা পিতার ন্যায়। হযরত ওছমান, ইবনু আববাস, ইবনু যুবায়ের (রাঃ) প্রমুখ ছাহাবীগণ একই কথা বলেন। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, আবুবকর (রাঃ)-এর জীবদ্দশায় কোন ছাহাবী এই মাসআলার বিরোধিতা করেননি (বুখারী ‘ফারায়েয’ অধ্যায়-৮৫, অনুচ্ছেদ-৯)।
মালদহ, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
উত্তর : পুরো সম্পত্তির মালিক হবেন দাদা। আবুবকর (রাঃ) বলেন, দাদা পিতার ন্যায়। হযরত ওছমান, ইবনু আববাস, ইবনু যুবায়ের (রাঃ) প্রমুখ ছাহাবীগণ একই কথা বলেন। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, আবুবকর (রাঃ)-এর জীবদ্দশায় কোন ছাহাবী এই মাসআলার বিরোধিতা করেননি (বুখারী ‘ফারায়েয’ অধ্যায়-৮৫, অনুচ্ছেদ-৯)।
৪৪০
প্রশ্ন (৩৯/৭৯) : মহিলা সমাবেশে পুরুষ বক্তার সালামের জবাব বা পুরুষের কোন প্রশ্নের জবাব মহিলারা সরবে দিতে পারবে কি?-আবুল কালাম
কমরগ্রাম, বানিয়াপাড়া, জয়পুরহাট।
উত্তর : মহিলা সমাবেশে পুরুষ বক্তার সালামের জবাব মহিলারা নীরবে দিবে (আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিইয়াহ ২৫/১৬৬)। ফিৎনার আশংকা না থাকলে পুরুষের কোন প্রশ্নের জবাব মহিলারা সরবে দিতে পারে। আয়েশা (রাঃ) বহু ছাহাবীর প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন (তিরমিযী হা/৩৮৮৩; মিশকাত হা/৬১৮৫)।
কমরগ্রাম, বানিয়াপাড়া, জয়পুরহাট।
উত্তর : মহিলা সমাবেশে পুরুষ বক্তার সালামের জবাব মহিলারা নীরবে দিবে (আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিইয়াহ ২৫/১৬৬)। ফিৎনার আশংকা না থাকলে পুরুষের কোন প্রশ্নের জবাব মহিলারা সরবে দিতে পারে। আয়েশা (রাঃ) বহু ছাহাবীর প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন (তিরমিযী হা/৩৮৮৩; মিশকাত হা/৬১৮৫)।
- আব্দুল কুদ্দূস, নাটোর।
উত্তর : কারো ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে গাছ লাগানো তার উপর যুলুমের শামিল। রাসূল (ছাঃ) যুলুম থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫১২৩ ‘অত্যাচার’ অনুচ্ছেদ)। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘কোন ব্যক্তি যদি তার কোন মুসলিম ভাইয়ের প্রতি তার সম্মান কিংবা অন্য কোন বিষয়ে যুলুম করে, তবে সে যেন ঐ দিন আসার পূর্বেই যেন তার নিকট হ’তে উহা মাফ করে নেয়, যেদিন তার নিকট দিরহাম ও দীনার কিছুই থাকবে না (অর্থাৎ মৃত্যু বা ক্বিয়ামতের দিনের পূর্বে)। কেননা ক্বিয়ামতের দিন যদি তার নিকট নেক আমল থাকে, তবে তার যুলুম পরিমাণ নেকী নেওয়া হবে। আর যদি তার কাছে নেকী না থাকে, তবে মাযলূম ব্যক্তির গুনাহ তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪৮৯৯)।
উত্তর : কারো ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে গাছ লাগানো তার উপর যুলুমের শামিল। রাসূল (ছাঃ) যুলুম থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫১২৩ ‘অত্যাচার’ অনুচ্ছেদ)। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘কোন ব্যক্তি যদি তার কোন মুসলিম ভাইয়ের প্রতি তার সম্মান কিংবা অন্য কোন বিষয়ে যুলুম করে, তবে সে যেন ঐ দিন আসার পূর্বেই যেন তার নিকট হ’তে উহা মাফ করে নেয়, যেদিন তার নিকট দিরহাম ও দীনার কিছুই থাকবে না (অর্থাৎ মৃত্যু বা ক্বিয়ামতের দিনের পূর্বে)। কেননা ক্বিয়ামতের দিন যদি তার নিকট নেক আমল থাকে, তবে তার যুলুম পরিমাণ নেকী নেওয়া হবে। আর যদি তার কাছে নেকী না থাকে, তবে মাযলূম ব্যক্তির গুনাহ তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪৮৯৯)।
-মুজীবুর রহমান, মান্দা, নওগাঁ।
উত্তর : আল্লাহ প্রথমে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আসমান সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘তিনিই সেই সত্তা যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবকিছু। অতঃপর তিনি মনঃসংযোগ করেন আকাশের দিকে। অতঃপর তাকে সপ্ত আকাশে বিন্যস্ত করেন। আর তিনি সকল বিষয়ে জ্ঞাত’ (বাক্বারাহ ২/২৯)। তিনি আরো বলেন, আপনি বলে দিন, তোমরা কি তাঁকে অস্বীকার করবে যিনি দু’দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন? ...তারপর তিনি আসমানের দিকে মনোনিবেশ করেন। তা ছিল ধোঁয়া।..’ (ফুছছিলাত/হামীম সাজদাহ ৪১/৯-১১)। ইবনু কাছীর, শাওকানীসহ জমহূর মুফাসসিরগণ বলেন, আল্লাহ প্রথমে পৃথিবী সৃষ্টি করেন তারপর আসমান সৃষ্টি করেন। কারণ যমীন হ’ল ভিত্তি। আর কোন কিছুর ভিত্তি প্রথমে স্থাপন করা হয়, তারপর ছাদ’ (তাফসীর উক্ত আয়াত)।
তবে সূরা নাযি‘আতে এর বিপরীত বর্ণিত হয়েছে। সেখানে এসেছে, তোমাদের সৃষ্টি অধিক কঠিন, না আকাশের সৃষ্টি? যা তিনি নির্মাণ করেছেন। তিনি তার ছাদকে সুউচ্চ করেছেন। অতঃপর তাকে বিন্যস্ত করেছেন। ... পৃথিবীকে এর পরে তিনি বিস্তৃত করেছেন। সেখান থেকে তিনি নির্গত করেছেন পানি...’ (নাযি‘আত ৭৯/২৭-৩২)। প্রথমোক্ত আয়াতদ্বয়ের সাথে এ আয়াতটির বাহ্যিক বিরোধ সম্পর্কে মুফাসসিরগণ বলেন, আল্লাহ তা‘আলা প্রথমে যমীনকে অবিস্তৃত আকারে সৃষ্টি করেন। অতঃপর আসমান সৃষ্টি করেন। এরপর যমীনকে প্রসারিত করে তাতে পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা, গাছ-পালা ইত্যাদি স্থাপন করেন’(কুরতুবী, তাফসীর সূরা বাক্বারাহ ২৯ আয়াত; শানক্বীতী, আযওয়াউল বায়ান, তাফসীর সূরা ফুছছিলাত ১০ আয়াত)।
উত্তর : আল্লাহ প্রথমে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আসমান সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘তিনিই সেই সত্তা যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবকিছু। অতঃপর তিনি মনঃসংযোগ করেন আকাশের দিকে। অতঃপর তাকে সপ্ত আকাশে বিন্যস্ত করেন। আর তিনি সকল বিষয়ে জ্ঞাত’ (বাক্বারাহ ২/২৯)। তিনি আরো বলেন, আপনি বলে দিন, তোমরা কি তাঁকে অস্বীকার করবে যিনি দু’দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন? ...তারপর তিনি আসমানের দিকে মনোনিবেশ করেন। তা ছিল ধোঁয়া।..’ (ফুছছিলাত/হামীম সাজদাহ ৪১/৯-১১)। ইবনু কাছীর, শাওকানীসহ জমহূর মুফাসসিরগণ বলেন, আল্লাহ প্রথমে পৃথিবী সৃষ্টি করেন তারপর আসমান সৃষ্টি করেন। কারণ যমীন হ’ল ভিত্তি। আর কোন কিছুর ভিত্তি প্রথমে স্থাপন করা হয়, তারপর ছাদ’ (তাফসীর উক্ত আয়াত)।
তবে সূরা নাযি‘আতে এর বিপরীত বর্ণিত হয়েছে। সেখানে এসেছে, তোমাদের সৃষ্টি অধিক কঠিন, না আকাশের সৃষ্টি? যা তিনি নির্মাণ করেছেন। তিনি তার ছাদকে সুউচ্চ করেছেন। অতঃপর তাকে বিন্যস্ত করেছেন। ... পৃথিবীকে এর পরে তিনি বিস্তৃত করেছেন। সেখান থেকে তিনি নির্গত করেছেন পানি...’ (নাযি‘আত ৭৯/২৭-৩২)। প্রথমোক্ত আয়াতদ্বয়ের সাথে এ আয়াতটির বাহ্যিক বিরোধ সম্পর্কে মুফাসসিরগণ বলেন, আল্লাহ তা‘আলা প্রথমে যমীনকে অবিস্তৃত আকারে সৃষ্টি করেন। অতঃপর আসমান সৃষ্টি করেন। এরপর যমীনকে প্রসারিত করে তাতে পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা, গাছ-পালা ইত্যাদি স্থাপন করেন’(কুরতুবী, তাফসীর সূরা বাক্বারাহ ২৯ আয়াত; শানক্বীতী, আযওয়াউল বায়ান, তাফসীর সূরা ফুছছিলাত ১০ আয়াত)।
৪৪৩
প্রশ্ন (২/৮২) : তাহাজ্জুদ ফউত হওয়ার আশংকা থাকায় এশার ছালাতের পর বিতর পড়লে শেষ রাতে তাহাজ্জুদ পড়ার পর পুনরায় বিতর পড়তে হবে কি?-ছফিউদ্দীন আহমাদ, পাঁচদোনা, নরসিংদী।
উত্তর : পুনরায় বিতর পড়তে হবে না। কারণ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘এক রাতে দুই বিতর নেই’ (তিরমিযী হা/৪৭০; আবুদাঊদ হা/১৪৩৯)। আর তাহাজ্জুদ ফউত হওয়ার আশংকা থাকলে রাতের প্রথম ভাগে বিতর ছালাতের পর দু’রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করলে সেটাই তার রাত্রির নফল ছালাতের স্থলাভিষিক্ত হবে (দারেমী, মিশকাত হা/১২৮৬; ছহীহাহ হা/১৯৯৩)। তাছাড়া ইচ্ছা থাকা সত্ত্বে্ও তাহাজ্জুদ আদায় করতে না পারলে সূর্য উদিত হওয়ার পর থেকে যোহরের পূর্ব পর্যন্ত যেকোন সময় বিতরের ক্বাযা আদায় করবে। এতে সে রাতে বিতর আদায়ের নেকী পেয়ে যাবে’ (মুসলিম হা/৭৪৭; মিশকাত হা/১২৪৭; ছহীহুত তারগীব হা/৬৬৩)। স্মর্তব্য যে, ফজরের ইক্বামতের পূর্ব পর্যন্ত বিতর আদায় করা যায়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি বিতর আদায় না করে ঘুমিয়ে পড়ল বা ভুলে গেল, সে যেন সকাল হলে বা স্মরণ হ’লে তা আদায় করে নেয়’
(আবুদাউদ হা/১৪৩১; তিরমিযী হা/৪৬৬; মিশকাত হা/১২৬৮)। হাদীছটির ব্যাখ্যায় শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, ফজর উদিত হওয়ার পর থেকে ছালাত শুরুর পূর্ব পর্যন্ত বিতর আদায় করা যায়। যেমন ইবনু ওমর, আয়েশা ও অনেকে করতেন’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৩/৮৯; ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃঃ ১৮১)।
উত্তর : পুনরায় বিতর পড়তে হবে না। কারণ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘এক রাতে দুই বিতর নেই’ (তিরমিযী হা/৪৭০; আবুদাঊদ হা/১৪৩৯)। আর তাহাজ্জুদ ফউত হওয়ার আশংকা থাকলে রাতের প্রথম ভাগে বিতর ছালাতের পর দু’রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করলে সেটাই তার রাত্রির নফল ছালাতের স্থলাভিষিক্ত হবে (দারেমী, মিশকাত হা/১২৮৬; ছহীহাহ হা/১৯৯৩)। তাছাড়া ইচ্ছা থাকা সত্ত্বে্ও তাহাজ্জুদ আদায় করতে না পারলে সূর্য উদিত হওয়ার পর থেকে যোহরের পূর্ব পর্যন্ত যেকোন সময় বিতরের ক্বাযা আদায় করবে। এতে সে রাতে বিতর আদায়ের নেকী পেয়ে যাবে’ (মুসলিম হা/৭৪৭; মিশকাত হা/১২৪৭; ছহীহুত তারগীব হা/৬৬৩)। স্মর্তব্য যে, ফজরের ইক্বামতের পূর্ব পর্যন্ত বিতর আদায় করা যায়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি বিতর আদায় না করে ঘুমিয়ে পড়ল বা ভুলে গেল, সে যেন সকাল হলে বা স্মরণ হ’লে তা আদায় করে নেয়’
(আবুদাউদ হা/১৪৩১; তিরমিযী হা/৪৬৬; মিশকাত হা/১২৬৮)। হাদীছটির ব্যাখ্যায় শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, ফজর উদিত হওয়ার পর থেকে ছালাত শুরুর পূর্ব পর্যন্ত বিতর আদায় করা যায়। যেমন ইবনু ওমর, আয়েশা ও অনেকে করতেন’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৩/৮৯; ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃঃ ১৮১)।
৪৪৪
প্রশ্ন (৩/৮৩) : ইমাম ছাহেব জুম‘আ ব্যতীত অন্য ওয়াক্তে মসজিদে কোন সুৎরা ছাড়াই সামনে এক কাতার স্থান খালি রেখে ইমামতি করেন। এটা জায়েয হবে কি?-হারূনুর রশীদ, চট্টগ্রাম।
উত্তর : এভাবে ছালাত আদায়ে বাধা নেই। কারণ দেওয়াল বেষ্টিত মসজিদের দেওয়াল অথবা মসজিদের ক্বিবলার দিকের খাম্বা বা খুঁটিই মুছল্লীর জন্য সুৎরা। নতুন করে ইমামের সামনে সুৎরা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
উত্তর : এভাবে ছালাত আদায়ে বাধা নেই। কারণ দেওয়াল বেষ্টিত মসজিদের দেওয়াল অথবা মসজিদের ক্বিবলার দিকের খাম্বা বা খুঁটিই মুছল্লীর জন্য সুৎরা। নতুন করে ইমামের সামনে সুৎরা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
৪৪৫
প্রশ্ন (৪/৮৪) : হান্নান ও মান্নান কি আল্লাহর গুণবাচক নাম? আল্লাহ নামটিও কি গুণবাচক নামসমূহের অন্তর্ভুক্ত?-আব্দুল হান্নান, ঢাকা।
উত্তর : মান্নান (অধিক দাতা) আল্লাহর গুণবাচক নামসমূহের মধ্যে অন্যতম, যা ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (আবুদাউদ হা/১৪৯৫; তিরমিযী হা/৩৫৪৪; মিশকাত হা/২২৯০, সনদ ছহীহ)। তবে হান্নান (অধিক স্নেহশীল) আল্লাহর ছিফাতী নাম মর্মে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, তা যঈফ (আহমাদ হা/১৩৪৩৫; সিলসিলা যঈফাহ হা/১২৪৯)। তাই হান্নান নাম রাখায় বাধা নেই। আর ‘আল্লাহ’ হ’ল ইসমে যাত বা সত্তাগত নাম। এটিই আল্লাহর প্রকৃত নাম (আবুদাউদ হা/১৪৯৬, ৩৮৫৭; মিশকাত হা/২২৯১; যঈফাহ হা/৬১২৪-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)।
উত্তর : মান্নান (অধিক দাতা) আল্লাহর গুণবাচক নামসমূহের মধ্যে অন্যতম, যা ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (আবুদাউদ হা/১৪৯৫; তিরমিযী হা/৩৫৪৪; মিশকাত হা/২২৯০, সনদ ছহীহ)। তবে হান্নান (অধিক স্নেহশীল) আল্লাহর ছিফাতী নাম মর্মে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, তা যঈফ (আহমাদ হা/১৩৪৩৫; সিলসিলা যঈফাহ হা/১২৪৯)। তাই হান্নান নাম রাখায় বাধা নেই। আর ‘আল্লাহ’ হ’ল ইসমে যাত বা সত্তাগত নাম। এটিই আল্লাহর প্রকৃত নাম (আবুদাউদ হা/১৪৯৬, ৩৮৫৭; মিশকাত হা/২২৯১; যঈফাহ হা/৬১২৪-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)।
৪৪৬
প্রশ্ন (৫/৮৫) : হাইকোর্টের বিচারপতিগণকে এডভোকেটদের বাধ্যগতভাবে ‘মাই লর্ড’ বলে সম্বোধন করতে হয়। অথচ শব্দটি আল্লাহ ব্যতীত কারো ব্যাপারে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ বলে আমরা জানি। এক্ষণে এটা বলা যাবে কি?-আবু ইজতিহাদ অহী, কুমিল্লা।
উত্তর : এটি গোলামী যুগে এদেশে ইংরেজদের চালুকৃত একটি আদালতী পরিভাষা। এটি ইংল্যান্ডে সম্মানসূচক সম্বোধনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। যেমন Oxford ডিকশনারীতে বলা হয়েছে, My Lord : (in Britain) a title of respect used when speaking to a judge, bishop or some male members of the nobility (people of high social class). অর্থাৎ বৃটেনে ‘মাই লর্ড’ বলতে বিচারক, বিশপ এবং উচ্চ সামাজিক মর্যাদা সম্পন্ন পুরুষের প্রতি সম্মানসূচক সম্বোধনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়’। সুতরাং বিচারককে সম্মানসূচক সম্বোধনের ক্ষেত্রে ‘মাই লর্ড’ বলা ইংল্যান্ডের পরিভাষায় দোষণীয় নয়। লর্ড শব্দটি ইংরেজরা গড-এর ক্ষেত্রেও ব্যবহার করে থাকেন (ঐ)। অতএব এ জাতীয় দ্ব্যর্থবোধক শব্দ ব্যবহার করা থেকে বেঁচে থাকাই উত্তম। এক্ষেত্রে ‘মহামান্য বা মাননীয় বা বিজ্ঞ আদালত’ বলা যেতে পারে।
উত্তর : এটি গোলামী যুগে এদেশে ইংরেজদের চালুকৃত একটি আদালতী পরিভাষা। এটি ইংল্যান্ডে সম্মানসূচক সম্বোধনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। যেমন Oxford ডিকশনারীতে বলা হয়েছে, My Lord : (in Britain) a title of respect used when speaking to a judge, bishop or some male members of the nobility (people of high social class). অর্থাৎ বৃটেনে ‘মাই লর্ড’ বলতে বিচারক, বিশপ এবং উচ্চ সামাজিক মর্যাদা সম্পন্ন পুরুষের প্রতি সম্মানসূচক সম্বোধনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়’। সুতরাং বিচারককে সম্মানসূচক সম্বোধনের ক্ষেত্রে ‘মাই লর্ড’ বলা ইংল্যান্ডের পরিভাষায় দোষণীয় নয়। লর্ড শব্দটি ইংরেজরা গড-এর ক্ষেত্রেও ব্যবহার করে থাকেন (ঐ)। অতএব এ জাতীয় দ্ব্যর্থবোধক শব্দ ব্যবহার করা থেকে বেঁচে থাকাই উত্তম। এক্ষেত্রে ‘মহামান্য বা মাননীয় বা বিজ্ঞ আদালত’ বলা যেতে পারে।
৪৪৭
প্রশ্ন (৬/৮৬) : জেহরী ছালাত সমূহ বাড়িতে বা মসজিদে একাকী পড়ার ক্ষেত্রে ক্বিরাআত সরবে না নীরবে পাঠ করতে হবে? এসময় ইক্বামত দিতে হবে কি?-মুহাম্মাদ হারূনুর রশীদ, চট্টগ্রাম।
উত্তর : বাড়িতে বা মসজিদে, একাকী হৌক বা জামা‘আতে হৌক, যে ওয়াক্তের ছালাত রাসূল (ছাঃ) যেভাবে আদায় করেছেন, তা সেভাবেই আদায় করা আবশ্যক (বুখারী হা/৬৩১)। তবে মসজিদে বা জনবহুল স্থানে যেখানে অপর মুছল্লীর অসুবিধা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেসব স্থানে নীরবে বা নীচু কণ্ঠে ক্বিরাআত করাই উত্তম। রাসূল (ছাঃ) ই‘তিকাফে থাকাকালীন সময়ে এক ব্যক্তি সরবে ক্বিরাআত করলে তিনি বলেন, তোমাদের প্রত্যেকে তার রবের সাথে গোপনে কথা (মুনাজাত) বলে থাকে। অতএব তোমাদের কেউ যেন কাউকে সরবে ক্বিরাআত পাঠ করে কষ্ট না দেয় (আবুদাউদ হা/১৩৩২; ছহীহাহ হা/১৬০৩)। আর একাকী হৌক বা জামা‘আতে হৌক উভয় ক্ষেত্রে ইক্বামত দেওয়া সুন্নাত (মুসলিম হা/৬৮০, আবুদাউদ হা/৪৩৫; ইবনু হিববান হা/১৬৬০)।
উত্তর : বাড়িতে বা মসজিদে, একাকী হৌক বা জামা‘আতে হৌক, যে ওয়াক্তের ছালাত রাসূল (ছাঃ) যেভাবে আদায় করেছেন, তা সেভাবেই আদায় করা আবশ্যক (বুখারী হা/৬৩১)। তবে মসজিদে বা জনবহুল স্থানে যেখানে অপর মুছল্লীর অসুবিধা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেসব স্থানে নীরবে বা নীচু কণ্ঠে ক্বিরাআত করাই উত্তম। রাসূল (ছাঃ) ই‘তিকাফে থাকাকালীন সময়ে এক ব্যক্তি সরবে ক্বিরাআত করলে তিনি বলেন, তোমাদের প্রত্যেকে তার রবের সাথে গোপনে কথা (মুনাজাত) বলে থাকে। অতএব তোমাদের কেউ যেন কাউকে সরবে ক্বিরাআত পাঠ করে কষ্ট না দেয় (আবুদাউদ হা/১৩৩২; ছহীহাহ হা/১৬০৩)। আর একাকী হৌক বা জামা‘আতে হৌক উভয় ক্ষেত্রে ইক্বামত দেওয়া সুন্নাত (মুসলিম হা/৬৮০, আবুদাউদ হা/৪৩৫; ইবনু হিববান হা/১৬৬০)।
-মুহিউদ্দীন, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
উত্তর : এতে কোন বাধা নেই। আল্লাহ বলেন, কুরআন থেকে তোমার যা সহজ তা পাঠ কর’ (মুয্যাম্মিল ৭৩/২০)। একদা রাসূল (ছাঃ) ফজরের দু’রাক‘আত ছালাতেই সূরা যিলযাল পাঠ করেন’ (আবুদাউদ হা/৮১৬, সনদ হাসান)। অন্য একদিন তিনি মাগরিবের দু’রাক‘আতেই সূরা আ‘রাফ (অর্থাৎ তার কিছু অংশ) পাঠ করেন’ (তিরমিযী হা/৩০৮; ইবনু মাজাহ হা/৮৩১, সনদ ছহীহ)। তবে এসবই সাময়িক আমল। অধিকাংশ সময় তিনি ভিন্ন ভিন্ন সূরা পাঠ করতেন। ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, ‘আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) খুব কমই দু’রাক‘আতে একই সূরা পাঠ করেছেন’ (যাদুল মা‘আদ ১/২০৭)। অতএব প্রত্যেক রাক‘আতে ভিন্ন ভিন্ন সূরা বা আয়াত পাঠ করাই উত্তম। যদিও একই সূরা পাঠে বাধা নেই।
উত্তর : এতে কোন বাধা নেই। আল্লাহ বলেন, কুরআন থেকে তোমার যা সহজ তা পাঠ কর’ (মুয্যাম্মিল ৭৩/২০)। একদা রাসূল (ছাঃ) ফজরের দু’রাক‘আত ছালাতেই সূরা যিলযাল পাঠ করেন’ (আবুদাউদ হা/৮১৬, সনদ হাসান)। অন্য একদিন তিনি মাগরিবের দু’রাক‘আতেই সূরা আ‘রাফ (অর্থাৎ তার কিছু অংশ) পাঠ করেন’ (তিরমিযী হা/৩০৮; ইবনু মাজাহ হা/৮৩১, সনদ ছহীহ)। তবে এসবই সাময়িক আমল। অধিকাংশ সময় তিনি ভিন্ন ভিন্ন সূরা পাঠ করতেন। ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, ‘আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) খুব কমই দু’রাক‘আতে একই সূরা পাঠ করেছেন’ (যাদুল মা‘আদ ১/২০৭)। অতএব প্রত্যেক রাক‘আতে ভিন্ন ভিন্ন সূরা বা আয়াত পাঠ করাই উত্তম। যদিও একই সূরা পাঠে বাধা নেই।
৪৫০
প্রশ্ন (৯/৮৯) : সূদী অর্থ সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার করা যায়। এক্ষণে এ উদ্দেশ্যে পিতার জমাকৃত টাকা নতুনভাবে ব্যাংকে রেখে লভ্যাংশ গ্রহণ করা জায়েয হবে কি?-আরিফ, উত্তরা, ঢাকা।
উত্তর : এ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ বাধ্যগত অবস্থায় ব্যাংকে টাকা রাখার কারণে প্রাপ্ত সূদ থেকে মুক্তি পাওয়ার লক্ষ্যেই প্রাপ্ত লভ্যাংশ সমাজকল্যাণ খাতে ব্যয় করার অনুমতি রয়েছে। যার মাধ্যমে নেকী অর্জনের কোন সুযোগ নেই। এক্ষণে ইচ্ছাকৃতভাবে সমাজকল্যাণে ব্যয় করার লক্ষ্যে ব্যাংকে রেখে সূদ গ্রহণ করলে গুনাহগার হ’তে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَنْ جَمَعَ مَالًا حَرَامًا ثُمَّ تَصَدَّقَ بِهِ لَمْ يَكُنْ لَهُ فِيهِ أَجْرٌ، وَكَانَ إِصْرُهُ عَلَيْهِ ‘যে ব্যক্তি হারাম সম্পদ উপার্জন করল এবং তা দ্বারা ছাদাক্বা করল। তার জন্য কোন নেকী নেই। বরং এর গোনাহ তার উপরেই বর্তাবে’ (ছহীহ ইবনে হিববান হা/৩৩৫৬, ছহীহুত তারগীব হা/৮৮০)।
উত্তর : এ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ বাধ্যগত অবস্থায় ব্যাংকে টাকা রাখার কারণে প্রাপ্ত সূদ থেকে মুক্তি পাওয়ার লক্ষ্যেই প্রাপ্ত লভ্যাংশ সমাজকল্যাণ খাতে ব্যয় করার অনুমতি রয়েছে। যার মাধ্যমে নেকী অর্জনের কোন সুযোগ নেই। এক্ষণে ইচ্ছাকৃতভাবে সমাজকল্যাণে ব্যয় করার লক্ষ্যে ব্যাংকে রেখে সূদ গ্রহণ করলে গুনাহগার হ’তে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَنْ جَمَعَ مَالًا حَرَامًا ثُمَّ تَصَدَّقَ بِهِ لَمْ يَكُنْ لَهُ فِيهِ أَجْرٌ، وَكَانَ إِصْرُهُ عَلَيْهِ ‘যে ব্যক্তি হারাম সম্পদ উপার্জন করল এবং তা দ্বারা ছাদাক্বা করল। তার জন্য কোন নেকী নেই। বরং এর গোনাহ তার উপরেই বর্তাবে’ (ছহীহ ইবনে হিববান হা/৩৩৫৬, ছহীহুত তারগীব হা/৮৮০)।
৪৫১
প্রশ্ন (১০/৯০) : আমার মৃত পিতা ছালাত আদায় করতেন না। এক্ষণে তার সম্পদের প্রাপ্য অংশ গ্রহণ করা সন্তানদের জন্য হালাল হবে কি?-আকায়েদুল ইসলাম, কাদিরগঞ্জ, রাজশাহী।
উত্তর : অবহেলাবশতঃ ছালাত পরিত্যাগ করে থাকলে তার সম্পদ তার সন্তানরা গ্রহণ করতে পারবে। কারণ এরূপ ছালাত পরিত্যাগকারী ব্যক্তি কবীরা গোনাহগার। পক্ষান্তরে যদি তিনি ছালাতের ফরযিয়াতকে ‘অস্বীকার’ করে ছালাত পরিত্যাগ করে থাকেন, তবে তিনি ‘কাফের’ হিসাবে গণ্য হবেন (মুসলিম হা/৮২; মিশকাত হা/৬১, ৫৮০)। এমতাবস্থায় তার সম্পদ পরিবারের মাঝে বণ্টন হবে না। বরং তা বায়তুল মাল হিসাবে জমা করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, মুসলিম কোন কাফিরের ওয়ারিছ হবে না এবং কাফির কোন মুসলিমের ওয়ারিছ হবে না’ (বুখারী হা/৬৭৬৮; মুসলিম হা/১৬১৪; মিশকাত হা/৩০৪৩)।
উত্তর : অবহেলাবশতঃ ছালাত পরিত্যাগ করে থাকলে তার সম্পদ তার সন্তানরা গ্রহণ করতে পারবে। কারণ এরূপ ছালাত পরিত্যাগকারী ব্যক্তি কবীরা গোনাহগার। পক্ষান্তরে যদি তিনি ছালাতের ফরযিয়াতকে ‘অস্বীকার’ করে ছালাত পরিত্যাগ করে থাকেন, তবে তিনি ‘কাফের’ হিসাবে গণ্য হবেন (মুসলিম হা/৮২; মিশকাত হা/৬১, ৫৮০)। এমতাবস্থায় তার সম্পদ পরিবারের মাঝে বণ্টন হবে না। বরং তা বায়তুল মাল হিসাবে জমা করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, মুসলিম কোন কাফিরের ওয়ারিছ হবে না এবং কাফির কোন মুসলিমের ওয়ারিছ হবে না’ (বুখারী হা/৬৭৬৮; মুসলিম হা/১৬১৪; মিশকাত হা/৩০৪৩)।
৪৫২
প্রশ্ন (১১/৯১) : আমি একজন পুলিশ। দুর্গাপূজার সময় দায়িত্বরত অবস্থায় মন্দির থেকে প্রদত্ত টিফিন খাওয়া যাবে কি?-মুহাম্মাদ হেলাল, মুর্শিদাবাদ, ভারত।
উত্তর : পূজা উপলক্ষে তাদের দেয়া টিফিন খাওয়া যাবে না। কারণ এতে শিরকের সমর্থন ও সহযোগিতা করা হবে। আল্লাহ তা‘আলা পাপ ও সীমালংঘনের কাজে সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন (মায়েদাহ ৫/২; লাজনা দায়েমা, ফৎওয়া নং ২৮৮২)।
উত্তর : পূজা উপলক্ষে তাদের দেয়া টিফিন খাওয়া যাবে না। কারণ এতে শিরকের সমর্থন ও সহযোগিতা করা হবে। আল্লাহ তা‘আলা পাপ ও সীমালংঘনের কাজে সহযোগিতা করতে নিষেধ করেছেন (মায়েদাহ ৫/২; লাজনা দায়েমা, ফৎওয়া নং ২৮৮২)।
৪৫৩
প্রশ্ন (১২/৯২) : হাদিয়া ফেরৎ দেওয়ার ব্যাপারে শরী‘আতের বিধান কি? বিশেষত অসৎ নিয়তে যে হাদিয়া প্রদান করা হয় সেক্ষেত্রে করণীয় কি?-মাঈদুল ইসলাম, ফরিদপুর।
উত্তর : ইসলাম পরস্পরকে হাদিয়া দিতে উৎসাহিত করেছে। পরস্পরের মাঝে ভালোবাসা সৃষ্টিতে তা সহায়ক হয় (আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৫৯৪)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা দাওয়াত কবুল কর এবং হাদিয়া ফেরৎ দিয়ো না ...’ (আল-আদাবুল মুফরাদ হা/১৫৭; আহমাদ হা/৩৮৩৮, সনদ ছহীহ)। তিনি বলেন, কারো নিকটে তার মুসলিম ভাইয়ের পক্ষ থেকে যদি কোন হাদিয়া আসে, অথচ তার প্রতি তার কোন কামনা নেই, এক্ষেত্রে তা ফিরিয়ে না দিয়ে সে যেন তা গ্রহণ করে। কারণ এটা এমন রিযিক, যা আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য ব্যবস্থা করেছেন (আহমাদ; ছহীহাহ হা/১০০৫)। তবে যৌক্তিক কারণে হাদিয়া ফেরৎ দেওয়া যায়। রাসূল (ছাঃ) আবওয়া নামক স্থানে ইহরাম অবস্থায় থাকাকালে জনৈক ব্যক্তি একটি বন্য গাধা হাদিয়া হিসাবে দিলে তিনি তা ফেরৎ দেন। এতে লোকটি মন খারাপ করলে তিনি বলেন, আমরা হাদিয়া ফেরৎ দেই না। কিন্তু ইহরাম অবস্থায় থাকার কারণে ফেরৎ দিলাম (বুখারী হা/১৮২৫; মুসলিম হা/১১৯৩; মিশকাত হা/২৬৯৬)। আর অসৎ উদ্দেশ্যে হাছিলের উদ্দেশ্যে কেউ হাদিয়া গ্রদান করলে তা গ্রহণ করা যাবে না। যেমন বেতনভুক কর্মচারী কর্তৃক অন্যদের নিকট থেকে হাদিয়া গ্রহণ করা (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৭৭৯)। ঋণগ্রহীতার নিকট থেকে ঋণদাতার পাওনার অতিরিক্ত হাদিয়া গ্রহণ করা (বুখারী হা/৩৮১৪; ইরওয়া হা/১৩৯৭) ইত্যাদি।
উত্তর : ইসলাম পরস্পরকে হাদিয়া দিতে উৎসাহিত করেছে। পরস্পরের মাঝে ভালোবাসা সৃষ্টিতে তা সহায়ক হয় (আল-আদাবুল মুফরাদ হা/৫৯৪)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা দাওয়াত কবুল কর এবং হাদিয়া ফেরৎ দিয়ো না ...’ (আল-আদাবুল মুফরাদ হা/১৫৭; আহমাদ হা/৩৮৩৮, সনদ ছহীহ)। তিনি বলেন, কারো নিকটে তার মুসলিম ভাইয়ের পক্ষ থেকে যদি কোন হাদিয়া আসে, অথচ তার প্রতি তার কোন কামনা নেই, এক্ষেত্রে তা ফিরিয়ে না দিয়ে সে যেন তা গ্রহণ করে। কারণ এটা এমন রিযিক, যা আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য ব্যবস্থা করেছেন (আহমাদ; ছহীহাহ হা/১০০৫)। তবে যৌক্তিক কারণে হাদিয়া ফেরৎ দেওয়া যায়। রাসূল (ছাঃ) আবওয়া নামক স্থানে ইহরাম অবস্থায় থাকাকালে জনৈক ব্যক্তি একটি বন্য গাধা হাদিয়া হিসাবে দিলে তিনি তা ফেরৎ দেন। এতে লোকটি মন খারাপ করলে তিনি বলেন, আমরা হাদিয়া ফেরৎ দেই না। কিন্তু ইহরাম অবস্থায় থাকার কারণে ফেরৎ দিলাম (বুখারী হা/১৮২৫; মুসলিম হা/১১৯৩; মিশকাত হা/২৬৯৬)। আর অসৎ উদ্দেশ্যে হাছিলের উদ্দেশ্যে কেউ হাদিয়া গ্রদান করলে তা গ্রহণ করা যাবে না। যেমন বেতনভুক কর্মচারী কর্তৃক অন্যদের নিকট থেকে হাদিয়া গ্রহণ করা (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৭৭৯)। ঋণগ্রহীতার নিকট থেকে ঋণদাতার পাওনার অতিরিক্ত হাদিয়া গ্রহণ করা (বুখারী হা/৩৮১৪; ইরওয়া হা/১৩৯৭) ইত্যাদি।
-মেহদী হাসান, সাতক্ষীরা।
উত্তর : এরূপ কোন বাধ্যবাধকতা নেই। আল্লাহ বলেন, ‘যখন তোমরা সফর কর, তখন ছালাতে ক্বছর করায় তোমাদের কোন দোষ নেই’ (নিসা ৪/১০১)। সফর অবস্থায় ছালাতে ‘ক্বছর’ করা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাদের প্রতি একটি উপহার স্বরূপ। আর উপহার যে গ্রহণ করাই উত্তম, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যেমন- ওমর (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এটি ছাদাক্বা। আল্লাহ তা‘আলা (ছালাত ‘ক্বছর’ করার অনুমতি দানের মাধ্যমে) তোমাদের প্রতি এটি ছাদাক্বা হিসাবে দিয়েছেন। অতএব তোমরা তাঁর ছাদাক্বা গ্রহণ কর’ (মুসলিম হা/৬৮৬, মিশকাত হা/১৩৩৫)। ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, আমি নবী করীম (ছাঃ), আবুবকর, ওমর ও ওছমান (রাঃ)-এর সাথে সফরে থেকেছি। তাঁরা সফরে দু’রাক‘আতের অধিক ছালাত আদায় করতেন না’ (বুখারী হা/১১০২; মুসলিম হা/৬৮৯; মিশকাত হা/১৩৩৮)।
উত্তর : এরূপ কোন বাধ্যবাধকতা নেই। আল্লাহ বলেন, ‘যখন তোমরা সফর কর, তখন ছালাতে ক্বছর করায় তোমাদের কোন দোষ নেই’ (নিসা ৪/১০১)। সফর অবস্থায় ছালাতে ‘ক্বছর’ করা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাদের প্রতি একটি উপহার স্বরূপ। আর উপহার যে গ্রহণ করাই উত্তম, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যেমন- ওমর (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এটি ছাদাক্বা। আল্লাহ তা‘আলা (ছালাত ‘ক্বছর’ করার অনুমতি দানের মাধ্যমে) তোমাদের প্রতি এটি ছাদাক্বা হিসাবে দিয়েছেন। অতএব তোমরা তাঁর ছাদাক্বা গ্রহণ কর’ (মুসলিম হা/৬৮৬, মিশকাত হা/১৩৩৫)। ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, আমি নবী করীম (ছাঃ), আবুবকর, ওমর ও ওছমান (রাঃ)-এর সাথে সফরে থেকেছি। তাঁরা সফরে দু’রাক‘আতের অধিক ছালাত আদায় করতেন না’ (বুখারী হা/১১০২; মুসলিম হা/৬৮৯; মিশকাত হা/১৩৩৮)।
৪৫৫
প্রশ্ন (১৪/৯৪) : দ্বিতীয় বিবাহের জন্য স্ত্রীর অনুমতি যরূরী কি? একাধিক স্ত্রীর মাঝে ইনছাফ না করতে পারার পরিণতি কি?-মাসঊদ, পুঠিয়া, রাজশাহী।
উত্তর : শারঈ দৃষ্টিতে পূর্ব স্ত্রীর অনুমতির প্রয়োজন নেই। আল্লাহ তা‘আলা মুসলিম পুরুষকে চারজন পর্যন্ত স্ত্রী রাখার অনুমতি দিয়েছেন (নিসা ৩)। তবে বিবাহ করার চেয়ে স্ত্রীদের মাঝে ইনছাফ করার বিষয়টি বেশী যরূরী ও কঠিন। এজন্য একাধিক বিবাহের ক্ষেত্রে ইনছাফের বিষয়টি ভাবতে হবে। একাধিক স্ত্রী থাকলে ইনছাফ করা আবশ্যক। কেননা নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘কারো নিকট যদি দু’জন স্ত্রী থাকে আর সে তাদের মাঝে ইনছাফ না করে, তাহ’লে সে ক্বিয়ামতের দিন এক অঙ্গ পতিত অবস্থায় উঠবে’ (নাসাঈ, মিশকাত হা/৩২৩৬)। তবে পারিবারিক শান্তির স্বার্থে পূর্ব স্ত্রীর সম্মতি গ্রহণ করা ভাল।
উত্তর : শারঈ দৃষ্টিতে পূর্ব স্ত্রীর অনুমতির প্রয়োজন নেই। আল্লাহ তা‘আলা মুসলিম পুরুষকে চারজন পর্যন্ত স্ত্রী রাখার অনুমতি দিয়েছেন (নিসা ৩)। তবে বিবাহ করার চেয়ে স্ত্রীদের মাঝে ইনছাফ করার বিষয়টি বেশী যরূরী ও কঠিন। এজন্য একাধিক বিবাহের ক্ষেত্রে ইনছাফের বিষয়টি ভাবতে হবে। একাধিক স্ত্রী থাকলে ইনছাফ করা আবশ্যক। কেননা নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘কারো নিকট যদি দু’জন স্ত্রী থাকে আর সে তাদের মাঝে ইনছাফ না করে, তাহ’লে সে ক্বিয়ামতের দিন এক অঙ্গ পতিত অবস্থায় উঠবে’ (নাসাঈ, মিশকাত হা/৩২৩৬)। তবে পারিবারিক শান্তির স্বার্থে পূর্ব স্ত্রীর সম্মতি গ্রহণ করা ভাল।
৪৫৬
প্রশ্ন (১৫/৯৫) : রাসূল (ছাঃ) ক্বাদারিয়া বা তাকদীরকে অস্বীকারকারীদের মাজূসী বা অগ্নিউপাসক বলে আখ্যায়িত করেছেন কি? করলে তার কারণ কি?-যুবায়ের হাসান, বাগেরহাট।
উত্তর : আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ভাগ্যকে অস্বীকারকারীরা এ উম্মতের অগ্নি উপাসকদের ন্যায়। তারা অসুস্থ হ’লে তোমরা তাদেরকে দেখতে যাবে না। আর মারা গেলে তাদের জানাযায় অংশ নিবে না (আবুদাঊদ হা/৪৬৯১, সনদ হাসান)। এর ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিছগণ বলেন, আলো এবং অন্ধকারের ব্যাপারে ক্বাদারিয়াদের সাথে অগ্নি উপাসকদের মতবাদের সাদৃশ্যের কারণে রাসূল (ছাঃ) এরূপ বলেছেন। মজূসীরা ধারণা করে যে, ভাল কথা ও কর্ম আলো থেকে আসে। আর মন্দ কথা ও কর্ম অন্ধকার থেকে আসে। এভাবে তারা দ্বৈতবাদী। তেমনিভাবে ক্বাদারিয়ারা ভালো কাজকে আল্লাহর সাথে এবং মন্দকর্মকে মানুষ, শয়তান ইত্যাদির সাথে সম্পৃক্ত করে। অথচ আল্লাহ ভালো-মন্দ উভয়েরই স্রষ্টা। তাঁর ইচ্ছা ব্যতীত কোনটাই সংঘটিত হয় না। সৃষ্টি ও অস্তিত্বে আনয়নের দিক দিয়ে এ দু’টি আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত এবং কর্ম ও উপার্জনের দিক দিয়ে এ দু’টি বান্দার সাথে সম্পর্কিত’(নববী, শরহ মুসলিম ১/১৫৪; আযীমাবাদী, আওনুল মা‘বূদ শহর আবুদাঊদ ১২/২৯৫)। আল্লাহ হ’লেন কর্মের স্রষ্টা এবং বান্দা হ’ল কর্মের বাস্তবায়নকারী’। অতএব তাওহীদী আক্বীদার সাথে ক্বাদরিয়াদের আক্বীদা পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। যা থেকে বিরত থাকা যরূরী।
উত্তর : আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ভাগ্যকে অস্বীকারকারীরা এ উম্মতের অগ্নি উপাসকদের ন্যায়। তারা অসুস্থ হ’লে তোমরা তাদেরকে দেখতে যাবে না। আর মারা গেলে তাদের জানাযায় অংশ নিবে না (আবুদাঊদ হা/৪৬৯১, সনদ হাসান)। এর ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিছগণ বলেন, আলো এবং অন্ধকারের ব্যাপারে ক্বাদারিয়াদের সাথে অগ্নি উপাসকদের মতবাদের সাদৃশ্যের কারণে রাসূল (ছাঃ) এরূপ বলেছেন। মজূসীরা ধারণা করে যে, ভাল কথা ও কর্ম আলো থেকে আসে। আর মন্দ কথা ও কর্ম অন্ধকার থেকে আসে। এভাবে তারা দ্বৈতবাদী। তেমনিভাবে ক্বাদারিয়ারা ভালো কাজকে আল্লাহর সাথে এবং মন্দকর্মকে মানুষ, শয়তান ইত্যাদির সাথে সম্পৃক্ত করে। অথচ আল্লাহ ভালো-মন্দ উভয়েরই স্রষ্টা। তাঁর ইচ্ছা ব্যতীত কোনটাই সংঘটিত হয় না। সৃষ্টি ও অস্তিত্বে আনয়নের দিক দিয়ে এ দু’টি আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত এবং কর্ম ও উপার্জনের দিক দিয়ে এ দু’টি বান্দার সাথে সম্পর্কিত’(নববী, শরহ মুসলিম ১/১৫৪; আযীমাবাদী, আওনুল মা‘বূদ শহর আবুদাঊদ ১২/২৯৫)। আল্লাহ হ’লেন কর্মের স্রষ্টা এবং বান্দা হ’ল কর্মের বাস্তবায়নকারী’। অতএব তাওহীদী আক্বীদার সাথে ক্বাদরিয়াদের আক্বীদা পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। যা থেকে বিরত থাকা যরূরী।
৪৫৭
প্রশ্ন (১৬/৯৬) : রুকনে ইয়ামানী ও হাজারে আসওয়াদ ব্যতীত কা‘বাগৃহের অন্য কোন স্থান বরকত লাভের উদ্দেশ্যে স্পর্শ করায় শরী‘আতে কোন বাধা আছে কি?-সাখাওয়াত হোসাইন, বরিশাল।
উত্তর : কা‘বাগৃহের রুকনে ইয়ামানী স্পর্শ এবং হাজারে আসওয়াদ চুমা দেওয়া বা ইশারা করার বিষয়টি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (বুখারী, মিশকাত হা/২৫৬৮, ২৫৮৯)। অন্যান্য স্থানে স্পর্শ করার ব্যাপারে কোন স্পষ্ট নির্দেশনা নেই। একবার হযরত মু‘আবিয়া ও ইবনু আববাস (রাঃ) একত্রে ত্বাওয়াফরত অবস্থায় মু‘আবিয়া (রাঃ) কা‘বাগৃহের সবগুলি রুকন (চারটি কোণ) স্পর্শ করলে ইবনু আববাস (রাঃ) তার প্রতিবাদ করে বলেন, কেন আপনি এ দু’টি রুকন স্পর্শ করছেন? অথচ রাসূল (ছাঃ) এ দু’টি স্পর্শ করেননি। জবাবে মু‘আবিয়া (রাঃ) বলেন, কা‘বাগৃহের কোন অংশই পরিত্যাগ করার নয়। তখন ইবনু আববাস আয়াত পাঠ করে শোনালেন, ‘তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যেই উত্তম আদর্শ নিহিত রয়েছে’ (আহযাব ২১)। জবাবে মু‘আবিয়া (রাঃ) বললেন, আপনি সত্য বলেছেন’ (ত্বাবারাণী আওসাত্ব হা/২৩২৩; আহমাদ হা/৩৫৩২, সনদ ছহীহ)।
উত্তর : কা‘বাগৃহের রুকনে ইয়ামানী স্পর্শ এবং হাজারে আসওয়াদ চুমা দেওয়া বা ইশারা করার বিষয়টি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত (বুখারী, মিশকাত হা/২৫৬৮, ২৫৮৯)। অন্যান্য স্থানে স্পর্শ করার ব্যাপারে কোন স্পষ্ট নির্দেশনা নেই। একবার হযরত মু‘আবিয়া ও ইবনু আববাস (রাঃ) একত্রে ত্বাওয়াফরত অবস্থায় মু‘আবিয়া (রাঃ) কা‘বাগৃহের সবগুলি রুকন (চারটি কোণ) স্পর্শ করলে ইবনু আববাস (রাঃ) তার প্রতিবাদ করে বলেন, কেন আপনি এ দু’টি রুকন স্পর্শ করছেন? অথচ রাসূল (ছাঃ) এ দু’টি স্পর্শ করেননি। জবাবে মু‘আবিয়া (রাঃ) বলেন, কা‘বাগৃহের কোন অংশই পরিত্যাগ করার নয়। তখন ইবনু আববাস আয়াত পাঠ করে শোনালেন, ‘তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যেই উত্তম আদর্শ নিহিত রয়েছে’ (আহযাব ২১)। জবাবে মু‘আবিয়া (রাঃ) বললেন, আপনি সত্য বলেছেন’ (ত্বাবারাণী আওসাত্ব হা/২৩২৩; আহমাদ হা/৩৫৩২, সনদ ছহীহ)।
৪৫৮
প্রশ্ন (১৭/৯৭) : জনৈক পিতা তার পুত্রকে বলেন,আল্লাহর কসম আমি তোকে ত্যাজ্য পুত্র করলাম। এক্ষণে এরূপ কসম করা শরী‘আতসম্মত কি? উক্ত কসমের কাফফারা দিতে হবে কি?-আবু ইজতিহাদ অহী,* কুমিল্লা।
* [নাম শুদ্ধ করুন (স.স.)]
উত্তর : ইসলামে সন্তানকে ত্যাজ্য করার কোন বিধান নেই। এরূপ করলে পিতা-মাতা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী কবীরা গোনাহগার হিসাবে গণ্য হবেন। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না’ (বুখারী হা/৫৯৮৪; মুসলিম হা/ ২৫৫৬; মিশকাত হা/৪৯২২)। পক্ষান্তরে সন্তান পিতা-মাতার অবাধ্য হ’লে সেটি কবীরা গোনাহের অন্তর্ভুক্ত হবে। যতক্ষণ না পিতা-মাতা তাকে পাপকর্মে বাধ্য করেন (লোকমান ৩১/১৫)।
এক্ষণে পিতাকে কসম ভেঙ্গে সন্তান ফিরিয়ে নিতে হবে এবং কাফফারা আদায় করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমাদের কেউ যদি নিজ পরিবারের ব্যাপারে (সদাচরণ করবে না বলে) কসম করে এবং আল্লাহ কর্তৃক ফরযকৃত কাফফারা আদায় না করে স্বীয় কসমের উপর অটল থাকে, তাহ’লে সে আল্লাহর নিকটে (কসম ভঙ্গের চাইতে) অধিক গুনাহগার হবে(বুখারী হা/৬৬২৫, মুসলিম হা/১৬৫০, মিশকাত হা/৩৪১৪)। কারণ পরিবারের ব্যাপারে এরূপ কসম করা অন্যের ব্যাপারে কসমের তুলনায় অধিকতর পাপ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি কোন বিষয়ে কসম করে, পরে অন্যটিকে তা থেকে উত্তম মনে করে, সে যেন তা করে এবং নিজের কসমের কাফফারা দেয় (মুসলিম হা/১৬৫০, মিশকাত হা/৩৪১৩)। আর কসম ভঙ্গের কাফফারা হ’ল দশজন মিসকীনকে মধ্যম মানের খাদ্য খাওয়ানো অথবা বস্ত্র দান করা অথবা একটি দাস মুক্ত করা। এতে অসমর্থ হ’লে তিন দিন ছিয়াম পালন করা (মায়েদাহ ৫/৮৯)।
* [নাম শুদ্ধ করুন (স.স.)]
উত্তর : ইসলামে সন্তানকে ত্যাজ্য করার কোন বিধান নেই। এরূপ করলে পিতা-মাতা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী কবীরা গোনাহগার হিসাবে গণ্য হবেন। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না’ (বুখারী হা/৫৯৮৪; মুসলিম হা/ ২৫৫৬; মিশকাত হা/৪৯২২)। পক্ষান্তরে সন্তান পিতা-মাতার অবাধ্য হ’লে সেটি কবীরা গোনাহের অন্তর্ভুক্ত হবে। যতক্ষণ না পিতা-মাতা তাকে পাপকর্মে বাধ্য করেন (লোকমান ৩১/১৫)।
এক্ষণে পিতাকে কসম ভেঙ্গে সন্তান ফিরিয়ে নিতে হবে এবং কাফফারা আদায় করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমাদের কেউ যদি নিজ পরিবারের ব্যাপারে (সদাচরণ করবে না বলে) কসম করে এবং আল্লাহ কর্তৃক ফরযকৃত কাফফারা আদায় না করে স্বীয় কসমের উপর অটল থাকে, তাহ’লে সে আল্লাহর নিকটে (কসম ভঙ্গের চাইতে) অধিক গুনাহগার হবে(বুখারী হা/৬৬২৫, মুসলিম হা/১৬৫০, মিশকাত হা/৩৪১৪)। কারণ পরিবারের ব্যাপারে এরূপ কসম করা অন্যের ব্যাপারে কসমের তুলনায় অধিকতর পাপ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি কোন বিষয়ে কসম করে, পরে অন্যটিকে তা থেকে উত্তম মনে করে, সে যেন তা করে এবং নিজের কসমের কাফফারা দেয় (মুসলিম হা/১৬৫০, মিশকাত হা/৩৪১৩)। আর কসম ভঙ্গের কাফফারা হ’ল দশজন মিসকীনকে মধ্যম মানের খাদ্য খাওয়ানো অথবা বস্ত্র দান করা অথবা একটি দাস মুক্ত করা। এতে অসমর্থ হ’লে তিন দিন ছিয়াম পালন করা (মায়েদাহ ৫/৮৯)।
৪৫৯
প্রশ্ন (১৮/৯৮) : ইয়াযীদ বিন মু‘আবিয়া (রাঃ) হোসাইন (রাঃ)- কে হত্যার কারণে ওবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদকে কোন শাস্তি প্রদান করেছিলেন কি? না করে থাকলে কেন প্রদান করেননি?-মনোয়ার, পুরানা পল্টন, ঢাকা।
উত্তর : ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, ইয়াযীদের সকল সৈন্য এমনকি ইয়াযীদ নিজেও এ হত্যাকান্ডের ব্যাপারে রাযী ছিলেন না। ...তবে ধারণা করা যায় যে, তিনি যদি তাকে হত্যা করার পূর্বে পেতেন, তাহ’লে ক্ষমা করে দিতেন। যেমনটি তার পিতা তাকে নছীহত করেছিলেন এবং তিনিও স্পষ্টভাবে সেকথা জানিয়েছিলেন। তিনি এজন্য ইবনু যিয়াদকে লা‘নত করেছিলেন, গালি দিয়েছিলেন। কিন্তু ক্ষমতা থেকে অপসারণ করেননি বা শাস্তি দেননি’ (আল-বিদায়াহ ৮/২০২-০৩)। তিনি বলেন, মৃত্যুকালে ইয়াযীদের শেষ কথা ছিল, ‘হে আল্লাহ! আমাকে পাকড়াও করো না ঐ বিষয়ে যা আমি চাইনি এবং আমি প্রতিরোধও করিনি এবং আপনি আমার ও ওবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদের মধ্যে ফায়ছালা করুন’(আল-বিদায়াহ ৮/২৩৯ পৃঃ)। এক্ষণে সম্ভবতঃ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য তিনি গভর্নর ওবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
উত্তর : ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, ইয়াযীদের সকল সৈন্য এমনকি ইয়াযীদ নিজেও এ হত্যাকান্ডের ব্যাপারে রাযী ছিলেন না। ...তবে ধারণা করা যায় যে, তিনি যদি তাকে হত্যা করার পূর্বে পেতেন, তাহ’লে ক্ষমা করে দিতেন। যেমনটি তার পিতা তাকে নছীহত করেছিলেন এবং তিনিও স্পষ্টভাবে সেকথা জানিয়েছিলেন। তিনি এজন্য ইবনু যিয়াদকে লা‘নত করেছিলেন, গালি দিয়েছিলেন। কিন্তু ক্ষমতা থেকে অপসারণ করেননি বা শাস্তি দেননি’ (আল-বিদায়াহ ৮/২০২-০৩)। তিনি বলেন, মৃত্যুকালে ইয়াযীদের শেষ কথা ছিল, ‘হে আল্লাহ! আমাকে পাকড়াও করো না ঐ বিষয়ে যা আমি চাইনি এবং আমি প্রতিরোধও করিনি এবং আপনি আমার ও ওবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদের মধ্যে ফায়ছালা করুন’(আল-বিদায়াহ ৮/২৩৯ পৃঃ)। এক্ষণে সম্ভবতঃ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য তিনি গভর্নর ওবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
৪৬০
প্রশ্ন (১৯/৯৯) : ধর্মীয় বিধি-বিধান পালনের ক্ষেত্রে আমি এবং আমার পরিবার উদাসীন। এক্ষণে নিজেদেরকে দ্বীনের পথে ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের কোন দো‘আ বা নিয়মিত আমল আছে কি?-ফাইয়ায ইকরাম, মিসর।
উত্তর : এজন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন আল্লাহভীতি এবং প্রবল ইচ্ছাশক্তি। যে আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি দুনিয়ায় এসেছেন এবং যার ইচ্ছায় আপনি দুনিয়া ছেড়ে চলে যাবেন, তার হুকুম পালন না করে মৃত্যুবরণ করলে পরিণামে জাহান্নামের কঠিন শাস্তির কথা বারবার স্মরণ করুন। জীবন্ত মানুষের পুড়ন্ত অবস্থা মনের চোখ দিয়ে দেখুন। দুনিয়ার চাকচিক্য সাময়িক। কিন্তু আখেরাত চিরস্থায়ী। তাই নশ্বর দুনিয়ার আকর্ষণে অবিনশ্বর আখেরাত থেকে উদাসীন হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আপনি আল্লাহর নামে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিন যে, পরকালে চিরস্থায়ী শান্তির জন্য আমি ইহকালে সবকিছু করব। এজন্য আল্লাহর নিকট সাহায্য চান। দেখবেন সত্বর আপনি ফল পাবেন। অতঃপর নিম্নোক্ত আমলগুলি করুন।- (১) আল্লাহকে অধিকহারে স্মরণ করুন (যারিয়াত ৫১/৫৫)। (২) সকল ইবাদত খুশূ-খুযূ সহকারে আদায় করুন (বুখারী হা/৫০) (৩) বেশী বেশী মৃত্যুকে স্মরণ করুন (তিরমিযী হা/২৩০৭) (৪) গুনাহ থেকে দূরে করুন (ইবনু মাজাহ হা/৪২৪৪) (৫) অল্পে তুষ্ট করুন। কারণ অধিক ধনসম্পদের আকাংখা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গাফেল করে দেয় (তাকাছুর ১০২/১) (৬) অধিক হারে নফল ইবাদত করুন (বুখারী হা/৬৫০২)। যেমন তাহাজ্জুদের ছালাত, প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবারে নফল ছিয়াম ইত্যাদি।
এছাড়া নিম্নোক্ত দো‘আটি নিয়মিতভাবে পাঠ করবেন। ‘ইয়া মুক্বাল্লিবাল ক্বুলূবে ছাবিবত ক্বালবী ‘আলা দ্বীনিকা, আল্লা-হুম্মা মুছারিরফাল ক্বুলূবে ছাররিফ ক্বুলূবানা ‘আলা ত্বোয়া-‘আতিকা’। অর্থাৎ ‘হে অন্তর সমূহের পরিবর্তনকারী আল্লাহ! তুমি আমার অন্তরকে তোমার দ্বীনের উপরে দৃঢ় রাখ’। ‘হে অন্তর সমূহের পরিবর্তনকারী আল্লাহ! আমাদের অন্তর সমূহকে তোমার আনুগত্যের দিকে ফিরিয়ে দাও’ (তিরমিযী হা/২১৪০; মুসলিম হা/২৬৫৪)।
উত্তর : এজন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন আল্লাহভীতি এবং প্রবল ইচ্ছাশক্তি। যে আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি দুনিয়ায় এসেছেন এবং যার ইচ্ছায় আপনি দুনিয়া ছেড়ে চলে যাবেন, তার হুকুম পালন না করে মৃত্যুবরণ করলে পরিণামে জাহান্নামের কঠিন শাস্তির কথা বারবার স্মরণ করুন। জীবন্ত মানুষের পুড়ন্ত অবস্থা মনের চোখ দিয়ে দেখুন। দুনিয়ার চাকচিক্য সাময়িক। কিন্তু আখেরাত চিরস্থায়ী। তাই নশ্বর দুনিয়ার আকর্ষণে অবিনশ্বর আখেরাত থেকে উদাসীন হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আপনি আল্লাহর নামে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিন যে, পরকালে চিরস্থায়ী শান্তির জন্য আমি ইহকালে সবকিছু করব। এজন্য আল্লাহর নিকট সাহায্য চান। দেখবেন সত্বর আপনি ফল পাবেন। অতঃপর নিম্নোক্ত আমলগুলি করুন।- (১) আল্লাহকে অধিকহারে স্মরণ করুন (যারিয়াত ৫১/৫৫)। (২) সকল ইবাদত খুশূ-খুযূ সহকারে আদায় করুন (বুখারী হা/৫০) (৩) বেশী বেশী মৃত্যুকে স্মরণ করুন (তিরমিযী হা/২৩০৭) (৪) গুনাহ থেকে দূরে করুন (ইবনু মাজাহ হা/৪২৪৪) (৫) অল্পে তুষ্ট করুন। কারণ অধিক ধনসম্পদের আকাংখা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গাফেল করে দেয় (তাকাছুর ১০২/১) (৬) অধিক হারে নফল ইবাদত করুন (বুখারী হা/৬৫০২)। যেমন তাহাজ্জুদের ছালাত, প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবারে নফল ছিয়াম ইত্যাদি।
এছাড়া নিম্নোক্ত দো‘আটি নিয়মিতভাবে পাঠ করবেন। ‘ইয়া মুক্বাল্লিবাল ক্বুলূবে ছাবিবত ক্বালবী ‘আলা দ্বীনিকা, আল্লা-হুম্মা মুছারিরফাল ক্বুলূবে ছাররিফ ক্বুলূবানা ‘আলা ত্বোয়া-‘আতিকা’। অর্থাৎ ‘হে অন্তর সমূহের পরিবর্তনকারী আল্লাহ! তুমি আমার অন্তরকে তোমার দ্বীনের উপরে দৃঢ় রাখ’। ‘হে অন্তর সমূহের পরিবর্তনকারী আল্লাহ! আমাদের অন্তর সমূহকে তোমার আনুগত্যের দিকে ফিরিয়ে দাও’ (তিরমিযী হা/২১৪০; মুসলিম হা/২৬৫৪)।
৪৬১
প্রশ্ন (২০/১০০) : কা‘বা গৃহের দিকে দৃষ্টিপাত করা কি ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত? ছহীহ হাদীছের আলোকে জানতে চাই।-রায়হান কবীর, ঢাকা।
উত্তর : এটি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত নয়। এ মর্মে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে সবই যঈফ। যেমন আয়েশা (রাঃ) হ’তে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণিত, কা‘বাগৃহের দিকে তাকিয়ে থাকা ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত (দায়লামী, সিলসিলা যঈফাহ হা/৪৭০১)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, পাঁচটি জিনিসের দিকে তাকিয়ে থাকা ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। যার একটি হ’ল বা‘বাগৃহের দিকে তাকিয়ে থাকা। এ বর্ণনাটিও অত্যন্ত যঈফ (যঈফুল জামে‘ হা/২৮৫৪-৫৫)।
উত্তর : এটি ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত নয়। এ মর্মে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে সবই যঈফ। যেমন আয়েশা (রাঃ) হ’তে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণিত, কা‘বাগৃহের দিকে তাকিয়ে থাকা ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত (দায়লামী, সিলসিলা যঈফাহ হা/৪৭০১)। অন্য বর্ণনায় এসেছে, পাঁচটি জিনিসের দিকে তাকিয়ে থাকা ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। যার একটি হ’ল বা‘বাগৃহের দিকে তাকিয়ে থাকা। এ বর্ণনাটিও অত্যন্ত যঈফ (যঈফুল জামে‘ হা/২৮৫৪-৫৫)।
৪৬২
প্রশ্ন (২১/১০১) : প্রচলিত আছে যে, ১৯২৯ সালে জাবির বিন আব্দুল্লাহ এবং হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) ইরাকের তৎকালীন বাদশাহ ফয়ছালকে স্বপ্নযোগে তাদের লাশ স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। অতঃপর সারা বিশ্বের লাখো মানুষের উপস্থিতিতে তাদের অবিকৃত লাশ স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনার সত্যতা জানতে চাই।-কাওছার আলম, আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা।
উত্তর : ঘটনাটি ভিত্তিহীন। কারণ জাবের (রাঃ) ৭৮ হিজরীতে ৯৪ বছর বয়সে মদীনায় মৃত্যুবরণ করেন এবং সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়। তিনি মদীনায় মৃত্যুবরণকারী সর্বশেষ ছাহাবী ছিলেন। মদীনার আমীর আবান বিন ওছমান তাঁর জানাযায় ইমামতি করেন (ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ১২/২৮১; ইবনু হাজার, আল-ইছাবাহ, জাবের ক্রমিক ১০২৮; ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৭/৪১৯)। অপরদিকে হুযায়ফা (রাঃ) ওমর (রাঃ)-এর খেলাফতকালে মাদায়েনের গবর্ণর নিযুক্ত হন এবং ওছমান (রাঃ)-এর শাহাদাত অবধি এ পদে বহাল থাকেন এবং এর ৪০ দিন পর তিনি মৃত্যুবরণ করেন’(ইবনু হাজার, আল-ইছাবাহ, হুযায়ফা ক্রমিক ১৬৫২; যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন-নুবালা ৪/২৯)। উপরন্তু আবুবকর ও ওমর (রাঃ) ব্যতীত কোন ছাহাবীর কবর এভাবে নির্দিষ্ট নেই যে, সেটি অমুক ছাহাবীর কবর হিসাবে চিহ্নিত করা যাবে। অতএব কবর নিয়ে যেকোন বাড়াবাড়ি ও ধারণার উপর ভিত্তি করে কোন সিদ্ধান্ত প্রদান থেকে দূরে থাকা আবশ্যক।
উত্তর : ঘটনাটি ভিত্তিহীন। কারণ জাবের (রাঃ) ৭৮ হিজরীতে ৯৪ বছর বয়সে মদীনায় মৃত্যুবরণ করেন এবং সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়। তিনি মদীনায় মৃত্যুবরণকারী সর্বশেষ ছাহাবী ছিলেন। মদীনার আমীর আবান বিন ওছমান তাঁর জানাযায় ইমামতি করেন (ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ১২/২৮১; ইবনু হাজার, আল-ইছাবাহ, জাবের ক্রমিক ১০২৮; ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৭/৪১৯)। অপরদিকে হুযায়ফা (রাঃ) ওমর (রাঃ)-এর খেলাফতকালে মাদায়েনের গবর্ণর নিযুক্ত হন এবং ওছমান (রাঃ)-এর শাহাদাত অবধি এ পদে বহাল থাকেন এবং এর ৪০ দিন পর তিনি মৃত্যুবরণ করেন’(ইবনু হাজার, আল-ইছাবাহ, হুযায়ফা ক্রমিক ১৬৫২; যাহাবী, সিয়ারু আ‘লামিন-নুবালা ৪/২৯)। উপরন্তু আবুবকর ও ওমর (রাঃ) ব্যতীত কোন ছাহাবীর কবর এভাবে নির্দিষ্ট নেই যে, সেটি অমুক ছাহাবীর কবর হিসাবে চিহ্নিত করা যাবে। অতএব কবর নিয়ে যেকোন বাড়াবাড়ি ও ধারণার উপর ভিত্তি করে কোন সিদ্ধান্ত প্রদান থেকে দূরে থাকা আবশ্যক।
৪৬৩
প্রশ্ন (২২/১০২) : শরী‘আতের দৃষ্টিকোণ থেকে একজন স্ত্রী থাকা উত্তম, নাকি একাধিক স্ত্রী? বিস্তারিত জানতে চাই।-ডা. এ.এফ. সুমন, চৌড়হাস, কুষ্টিয়া।
উত্তর : শারীরিক, অর্থনৈতিক ও ইনছাফ রক্ষার ব্যাপারে ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তির জন্য একাধিক বিবাহ করা উত্তম। কেননা একজন স্ত্রীর প্রতি ইহসান, শিক্ষাদান ও ভরণ-পোষণের ফলে যে নেকী অর্জিত হয়, একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে সে অনুপাতে নেকী বেশী হয় (উছায়মীন, ফাতাওয়া নূরুন আলাদ দারব)। তবে উপরোক্ত শর্তাবলী পূরণে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য একজন স্ত্রীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকাই উত্তম। আল্লাহ বলেন, ‘...তাহ’লে অন্য মেয়েদের মধ্য থেকে যাদের তোমরা ভাল মনে কর দুই, তিন বা চারটি পর্যন্ত বিবাহ করতে পার। কিন্তু যদি তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে পারবে না বলে ভয় কর, তাহ’লে মাত্র একটি বিবাহ কর...’ (নিসা ৪/০৩)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমরা অধিক সোহাগিনী ও অধিক সন্তানদায়িনী মহিলাকে বিবাহ কর। কারণ আমি ক্বিয়ামতের দিন তোমাদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে গর্ব করব’ (আবুদাঊদ হা/২০৫০; মিশকাত হা/৩০৯১ সনদ ছহীহ)।
উত্তর : শারীরিক, অর্থনৈতিক ও ইনছাফ রক্ষার ব্যাপারে ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তির জন্য একাধিক বিবাহ করা উত্তম। কেননা একজন স্ত্রীর প্রতি ইহসান, শিক্ষাদান ও ভরণ-পোষণের ফলে যে নেকী অর্জিত হয়, একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে সে অনুপাতে নেকী বেশী হয় (উছায়মীন, ফাতাওয়া নূরুন আলাদ দারব)। তবে উপরোক্ত শর্তাবলী পূরণে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য একজন স্ত্রীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকাই উত্তম। আল্লাহ বলেন, ‘...তাহ’লে অন্য মেয়েদের মধ্য থেকে যাদের তোমরা ভাল মনে কর দুই, তিন বা চারটি পর্যন্ত বিবাহ করতে পার। কিন্তু যদি তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে পারবে না বলে ভয় কর, তাহ’লে মাত্র একটি বিবাহ কর...’ (নিসা ৪/০৩)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমরা অধিক সোহাগিনী ও অধিক সন্তানদায়িনী মহিলাকে বিবাহ কর। কারণ আমি ক্বিয়ামতের দিন তোমাদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে গর্ব করব’ (আবুদাঊদ হা/২০৫০; মিশকাত হা/৩০৯১ সনদ ছহীহ)।
-রেযা, হালসা, নাটোর।
উত্তর : যোহরের পূর্বে চার রাক‘আত কিংবা দুই রাক‘আত উভয় আমল করা যাবে (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১১৫৯-৬০)। আর চার রাক‘আত সুন্নাত এক সালামে বা দুই সালামে উভয়ভাবেই পড়া যাবে (নাসাঈ হা/৮৭৫; ইবনু মাজাহ হা/১৩২২)।
উল্লেখ্য, ‘যোহরের পূর্বে সালামবিহীন চার রাক‘আত ছালাতের জন্য আসমানের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করা হয়’ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (আবুদাঊদ হা/১২৭০; যঈফ তারগীব হা/৩২০; মিশকাত হা/১১৬৮, সনদ যঈফ)।
উত্তর : যোহরের পূর্বে চার রাক‘আত কিংবা দুই রাক‘আত উভয় আমল করা যাবে (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১১৫৯-৬০)। আর চার রাক‘আত সুন্নাত এক সালামে বা দুই সালামে উভয়ভাবেই পড়া যাবে (নাসাঈ হা/৮৭৫; ইবনু মাজাহ হা/১৩২২)।
উল্লেখ্য, ‘যোহরের পূর্বে সালামবিহীন চার রাক‘আত ছালাতের জন্য আসমানের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করা হয়’ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (আবুদাঊদ হা/১২৭০; যঈফ তারগীব হা/৩২০; মিশকাত হা/১১৬৮, সনদ যঈফ)।
৪৬৫
প্রশ্ন (২৪/১০৪) : জনৈক আলেম বলেন, রাসূল (ছাঃ) সূরা ফাতিহা পড়ার পর মাঝে মাঝে জোরে আমীন বলতেন লোকদেরকে এ ব্যাপারে জানানোর জন্য। এটা তার সবসময়কার আমল ছিল না। একথার সত্যতা জানতে চাই।-ছদরুদ্দীন, জামালপুর।
উত্তর : উক্ত দাবীটি সঠিক নয়। ইমাম যখন সশব্দে সূরা ফাতিহা শেষ করবেন, তখন মুক্তাদীগণও সাথে সাথে সশব্দে আমীন বলবেন। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন ‘যখনই ইমাম ওয়া লাযযা-ল্লীন’ বলবে অন্য বর্ণনায় যখন ‘আমীন’ বলবেন, তখন তোমরাও আমীন বল’। কেননা যার আমীন ফেরেশতাদের আমীন-এর সঙ্গে মিলে যাবে, তার পূর্বেকার সকল গুনাহ মাফ করা হবে’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৮২৫)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিজে সশব্দে আমীন বলতেন, যার আওয়ায উচ্চ হ’ত’ (আবুদাঊদ, তিরমিযী, ইবনু কাছীর, দারেমী, মিশকাত হা/৮৪৫)। উল্লেখ্য যে, নিম্ন স্বরে আমীন বলার হাদীছটি যঈফ (তিরমিযী হা/২৪৯; নায়ল ৩/৭৫)।
ওয়ায়েল বিন হুজর (রাঃ) বলেন, ‘আমি রাসূল (ছাঃ)-কে ‘গায়রিল মাগযূবি ‘আলাইহিম ওয়া লাযযোয়া-ল্লীন’ পড়ে জোরে আমীন বলতে শুনেছি’ (তিরমিযী হা/২৪৮; আবুদাঊদ হা/৯৩২; মিশকাত হা/৮৪৫)। তাবেঈ বিদ্বান আত্বা (রহঃ) বলেন, ইবনে যুবায়ের ও তাঁর মুক্তাদীগণ এত জোরে ‘আমীন’ বলতেন যে, মসজিদে নববী গমগম করে উঠত (বুখারী তা‘লীক্ব ৩/৩১৫, অনুচ্ছেদ নং ২৬২ হা/৭৮০; মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/২৬৪০)। জোরে ‘আমীন’ বলার প্রমাণে সতেরটি হাদীছ এবং ছাহাবীদের তিনটি আছার পাওয়া যায় (নায়লুল আওত্বার ২/১২২ পৃঃ)। এমনকি হানাফী আলেমদের নিকটেও নীরবে আমীন বলার হাদীছের সনদ ছহীহ নয়। যেমন আব্দুল হাই লাক্ষ্ণৌবী হানাফী (রহঃ) বলেন, ‘নীরবে আমীন’ বলার সনদে ত্রুটি আছে। সঠিক ফৎওয়া হ’ল জোরে ‘আমীন’ বলা’ (শরহে বেকায়াহ ১৪৬ পৃঃ)।
উত্তর : উক্ত দাবীটি সঠিক নয়। ইমাম যখন সশব্দে সূরা ফাতিহা শেষ করবেন, তখন মুক্তাদীগণও সাথে সাথে সশব্দে আমীন বলবেন। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন ‘যখনই ইমাম ওয়া লাযযা-ল্লীন’ বলবে অন্য বর্ণনায় যখন ‘আমীন’ বলবেন, তখন তোমরাও আমীন বল’। কেননা যার আমীন ফেরেশতাদের আমীন-এর সঙ্গে মিলে যাবে, তার পূর্বেকার সকল গুনাহ মাফ করা হবে’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৮২৫)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিজে সশব্দে আমীন বলতেন, যার আওয়ায উচ্চ হ’ত’ (আবুদাঊদ, তিরমিযী, ইবনু কাছীর, দারেমী, মিশকাত হা/৮৪৫)। উল্লেখ্য যে, নিম্ন স্বরে আমীন বলার হাদীছটি যঈফ (তিরমিযী হা/২৪৯; নায়ল ৩/৭৫)।
ওয়ায়েল বিন হুজর (রাঃ) বলেন, ‘আমি রাসূল (ছাঃ)-কে ‘গায়রিল মাগযূবি ‘আলাইহিম ওয়া লাযযোয়া-ল্লীন’ পড়ে জোরে আমীন বলতে শুনেছি’ (তিরমিযী হা/২৪৮; আবুদাঊদ হা/৯৩২; মিশকাত হা/৮৪৫)। তাবেঈ বিদ্বান আত্বা (রহঃ) বলেন, ইবনে যুবায়ের ও তাঁর মুক্তাদীগণ এত জোরে ‘আমীন’ বলতেন যে, মসজিদে নববী গমগম করে উঠত (বুখারী তা‘লীক্ব ৩/৩১৫, অনুচ্ছেদ নং ২৬২ হা/৭৮০; মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/২৬৪০)। জোরে ‘আমীন’ বলার প্রমাণে সতেরটি হাদীছ এবং ছাহাবীদের তিনটি আছার পাওয়া যায় (নায়লুল আওত্বার ২/১২২ পৃঃ)। এমনকি হানাফী আলেমদের নিকটেও নীরবে আমীন বলার হাদীছের সনদ ছহীহ নয়। যেমন আব্দুল হাই লাক্ষ্ণৌবী হানাফী (রহঃ) বলেন, ‘নীরবে আমীন’ বলার সনদে ত্রুটি আছে। সঠিক ফৎওয়া হ’ল জোরে ‘আমীন’ বলা’ (শরহে বেকায়াহ ১৪৬ পৃঃ)।
৪৬৬
প্রশ্ন (২৫/১০৫) : জনৈক ব্যক্তি বলেন, ক্বিয়ামতের দিন হাশরের ময়দান হবে সিরিয়ায়। একথার কোন সত্যতা আছে কি?-তহুরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : কেবল সিরিয়ায় নয় বরং শামে হাশরের ময়দান হবে মর্মে ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। আর তৎকালীন শাম বর্তমানে সিরিয়া, জর্দান, লেবানন, ফিলিস্তীন ও ইসরাঈলের পুরো ভূখন্ড এবং ইরাক, তুরস্ক, মিসর ও সঊদী আরবের কিছু অংশকে শামিল করে (উইকিপিডিয়া)। আবু যর গেফারী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘শাম হ’ল একত্রিত হওয়ার ও পুনরুত্থিত হওয়ার স্থান’ (ছহীহুল জামে‘ হা/৩৭২৬)। অন্য বর্ণনায় তিনি হাশরের স্থান হিসাবে শামের দিকে ইশারা করেছেন (আহমাদ হা/২০০৪৩, ছহীহুল জামে‘ হা/২৩০২)। মনে রাখতে হবে যে, ক্বিয়ামতের দিন বর্তমান পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে অন্য পৃথিবীতে পরিণত হবে (ইবরাহীম ৪৮) এবং পাহাড়-পর্বত সব একাকার হয়ে সমতল হয়ে যাবে (ত্বোয়াহা ২০/১০৬)। যেটা মানুষের কল্পনার বাইরে।
উত্তর : কেবল সিরিয়ায় নয় বরং শামে হাশরের ময়দান হবে মর্মে ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। আর তৎকালীন শাম বর্তমানে সিরিয়া, জর্দান, লেবানন, ফিলিস্তীন ও ইসরাঈলের পুরো ভূখন্ড এবং ইরাক, তুরস্ক, মিসর ও সঊদী আরবের কিছু অংশকে শামিল করে (উইকিপিডিয়া)। আবু যর গেফারী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘শাম হ’ল একত্রিত হওয়ার ও পুনরুত্থিত হওয়ার স্থান’ (ছহীহুল জামে‘ হা/৩৭২৬)। অন্য বর্ণনায় তিনি হাশরের স্থান হিসাবে শামের দিকে ইশারা করেছেন (আহমাদ হা/২০০৪৩, ছহীহুল জামে‘ হা/২৩০২)। মনে রাখতে হবে যে, ক্বিয়ামতের দিন বর্তমান পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে অন্য পৃথিবীতে পরিণত হবে (ইবরাহীম ৪৮) এবং পাহাড়-পর্বত সব একাকার হয়ে সমতল হয়ে যাবে (ত্বোয়াহা ২০/১০৬)। যেটা মানুষের কল্পনার বাইরে।
৪৬৭
প্রশ্ন (২৬/১০৬) : জনৈকা মুসলিম মহিলা এক হিন্দু পুরুষের সঙ্গে পালিয়ে যায়। সেখানে মহিলাটির গর্ভে এক কন্যা সন্তান জন্ম হয়। পরবর্তীতে মহিলাটি ফিরে আসে। এক্ষণে তার কন্যা সন্তানটি মুসলিম হবে, না হিন্দু হিসাবে গণ্য হবে।-হাফেয নূর আলম নূরী*, নীলফামারী।
* নামটি পরিবর্তন করে আব্দুন নূর রাখুন (স.স.)।
উত্তর : উক্ত শিশুটি মুসলিম হিসাবে গণ্য হবে। কারণ ‘জারজ’ সন্তান মাতার সাথে সম্পর্কিত হয় (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৩৩১২, ৩৩২০)। এছাড়া প্রত্যেক শিশুই ফিৎরাত তথা ইসলামের উপরে জন্মগ্রহণ করে (বুখারী হা/১৩৮৫, মুসলিম, মিশকাত হা/৯০; রূম ৩০)।
* নামটি পরিবর্তন করে আব্দুন নূর রাখুন (স.স.)।
উত্তর : উক্ত শিশুটি মুসলিম হিসাবে গণ্য হবে। কারণ ‘জারজ’ সন্তান মাতার সাথে সম্পর্কিত হয় (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৩৩১২, ৩৩২০)। এছাড়া প্রত্যেক শিশুই ফিৎরাত তথা ইসলামের উপরে জন্মগ্রহণ করে (বুখারী হা/১৩৮৫, মুসলিম, মিশকাত হা/৯০; রূম ৩০)।
৪৬৮
প্রশ্ন (২৭/১০৭) : ছালাতে বুকের উপর হাত বাঁধার ক্ষেত্রে কেউ কনুই পর্যন্ত পুরো হাত অপর হাতের উপর রাখে। আবার কেউ হাতের তালু অপর হাতের তালুর উপর রাখে। এক্ষণে হাত বাঁধার সঠিক নিয়ম কি?-আব্দুল ক্বাইয়ূম, সাভার, ঢাকা।
উত্তর : বাম হাতের উপরে ডান হাত বুকের উপরে রাখাই ছালাতে হাত বাঁধার সঠিক নিয়ম। ওয়ায়েল বিন হুজ্র (রাঃ) বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে ছালাত আদায় করলাম। এমতাবস্থায় দেখলাম যে, তিনি বাম হাতের উপরে ডান হাত স্বীয় বুকের উপরে রাখলেন’ (ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৪৭৯; আবুদাঊদ হা/৭৫৫)। একই রাবী কর্তৃক অন্য বর্ণনায় আরো স্পষ্টভাবে এসেছে যে, রাসূল (ছাঃ) ছালাতে ডান হাত বাম হাতের পাতা, কব্জি ও হাতের উপর রাখতেন (নাসাঈ হা/৮৮৯, সনদ ছহীহ)। এর দ্বারা কনুই থেকে কনুই পর্যন্ত পুরা হাতকে বুঝানো হয়েছে। যেমন সাহ্ল বিন সা‘দ (রাঃ) বলেন,‘লোকদেরকে নির্দেশ দেওয়া হ’ত যেন তারা ছালাতের সময় ডান হাত বাম হাতের উপরে রাখে (বুখারী হা/৭৪০; মিশকাত হা/৭৯৮)। অনুরূপভাবে বাম হাতের জোড়ের (কব্জির) উপরে ডান হাতের জোড় বুকের উপরেও রাখা যাবে (আহমাদ হা/২২০১৭; আহকামুল জানায়েয ১/১১৮, সনদ হাসান)।
‘ছালাতে তালুর উপর তালু রাখা সুন্নাত’ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (দারাকুৎনী হা/১০৮৫, সনদ যঈফ)। এতদ্ব্যতীত নাভীর নীচে হাত বাঁধা সম্পর্কে যত হাদীছ এসেছে সবই যঈফ (দারাকুৎনী হা/১০৮৯-৯০; আবুদাঊদ হা/৭৫৬; মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩৯৬৩, সনদ যঈফ)।
আলবানী (রহঃ) বলেন, হাতের উপর হাত রাখা এবং ধরা দু’টিই সুন্নাত। কিন্তু এ বিষয়ে পরবর্তী হানাফী বিদ্বানগণের কেউ কেউ যা বলেছেন সেটি বিদ‘আত। তার নিয়ম যা তারা বলেছেন যে, ডান হাত বাম হাতের কব্জির উপর রাখবে এমনভাবে যে, কনিষ্ঠা ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা কব্জি ধরবে এবং বাকি তিনটি আঙ্গুল খোলা থাকবে (ছিফাতু ছালাতিন্নবী পৃঃ ৬৮, টীকা-৬)।
উত্তর : বাম হাতের উপরে ডান হাত বুকের উপরে রাখাই ছালাতে হাত বাঁধার সঠিক নিয়ম। ওয়ায়েল বিন হুজ্র (রাঃ) বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে ছালাত আদায় করলাম। এমতাবস্থায় দেখলাম যে, তিনি বাম হাতের উপরে ডান হাত স্বীয় বুকের উপরে রাখলেন’ (ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৪৭৯; আবুদাঊদ হা/৭৫৫)। একই রাবী কর্তৃক অন্য বর্ণনায় আরো স্পষ্টভাবে এসেছে যে, রাসূল (ছাঃ) ছালাতে ডান হাত বাম হাতের পাতা, কব্জি ও হাতের উপর রাখতেন (নাসাঈ হা/৮৮৯, সনদ ছহীহ)। এর দ্বারা কনুই থেকে কনুই পর্যন্ত পুরা হাতকে বুঝানো হয়েছে। যেমন সাহ্ল বিন সা‘দ (রাঃ) বলেন,‘লোকদেরকে নির্দেশ দেওয়া হ’ত যেন তারা ছালাতের সময় ডান হাত বাম হাতের উপরে রাখে (বুখারী হা/৭৪০; মিশকাত হা/৭৯৮)। অনুরূপভাবে বাম হাতের জোড়ের (কব্জির) উপরে ডান হাতের জোড় বুকের উপরেও রাখা যাবে (আহমাদ হা/২২০১৭; আহকামুল জানায়েয ১/১১৮, সনদ হাসান)।
‘ছালাতে তালুর উপর তালু রাখা সুন্নাত’ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি যঈফ (দারাকুৎনী হা/১০৮৫, সনদ যঈফ)। এতদ্ব্যতীত নাভীর নীচে হাত বাঁধা সম্পর্কে যত হাদীছ এসেছে সবই যঈফ (দারাকুৎনী হা/১০৮৯-৯০; আবুদাঊদ হা/৭৫৬; মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ হা/৩৯৬৩, সনদ যঈফ)।
আলবানী (রহঃ) বলেন, হাতের উপর হাত রাখা এবং ধরা দু’টিই সুন্নাত। কিন্তু এ বিষয়ে পরবর্তী হানাফী বিদ্বানগণের কেউ কেউ যা বলেছেন সেটি বিদ‘আত। তার নিয়ম যা তারা বলেছেন যে, ডান হাত বাম হাতের কব্জির উপর রাখবে এমনভাবে যে, কনিষ্ঠা ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা কব্জি ধরবে এবং বাকি তিনটি আঙ্গুল খোলা থাকবে (ছিফাতু ছালাতিন্নবী পৃঃ ৬৮, টীকা-৬)।
৪৬৯
প্রশ্ন (২৮/১০৮) : বর্তমানে বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বেশ কিছু কবরকে বিভিন্ন নবীর কবর হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। এর কোন সত্যতা আছে কি?-আব্দুল ক্বাইয়ূম, সাভার, ঢাকা।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কবর ব্যতীত সকল নবীর কবরের অবস্থান অজ্ঞাত। ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, ‘রাসূল (ছাঃ)-এর কবর ব্যতীত কোন নবীর কবরের অবস্থানের ব্যাপারে পৃথিবীর মানুষ একমত নয়’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৭/১১৬)। শায়খ বিন বায বলেন, নবী (ছাঃ)-এর কবর ব্যতীত সকল নবীর কবরের অবস্থান অজ্ঞাত। ..তবে ইবরাহীম (আঃ)-এর কবর ফিলিস্তীনের মাগারাতে আছে বলে প্রসিদ্ধ রয়েছে। ...আর যে ব্যক্তি দাবী করবে যে, এটি অমুকের কবর, এটির অমুকের কবর তাহলে সে মিথ্যা বলবে। এর কোন সত্যতা এবং বিশুদ্ধতা নেই’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ১/১৬০)। মূলতঃ কবর চিহ্নিত থাকলে লোকেরা তাঁদের কবরে পূজা শুরু করে দিত। সম্ভবতঃ একারণেই আল্লাহ তা‘আলা নবীগণের কবর সমূহ অজ্ঞাত রেখেছেন।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কবর ব্যতীত সকল নবীর কবরের অবস্থান অজ্ঞাত। ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, ‘রাসূল (ছাঃ)-এর কবর ব্যতীত কোন নবীর কবরের অবস্থানের ব্যাপারে পৃথিবীর মানুষ একমত নয়’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৭/১১৬)। শায়খ বিন বায বলেন, নবী (ছাঃ)-এর কবর ব্যতীত সকল নবীর কবরের অবস্থান অজ্ঞাত। ..তবে ইবরাহীম (আঃ)-এর কবর ফিলিস্তীনের মাগারাতে আছে বলে প্রসিদ্ধ রয়েছে। ...আর যে ব্যক্তি দাবী করবে যে, এটি অমুকের কবর, এটির অমুকের কবর তাহলে সে মিথ্যা বলবে। এর কোন সত্যতা এবং বিশুদ্ধতা নেই’ (মাজমূ‘ ফাতাওয়া বিন বায ১/১৬০)। মূলতঃ কবর চিহ্নিত থাকলে লোকেরা তাঁদের কবরে পূজা শুরু করে দিত। সম্ভবতঃ একারণেই আল্লাহ তা‘আলা নবীগণের কবর সমূহ অজ্ঞাত রেখেছেন।
৪৭০
প্রশ্ন (২৯/১০৯) : ছহীহ বুখারীতে এসেছে ‘যদি হাওয়া খেয়ানত না করতেন, তবে যুগে যুগে কোন নারী তার স্বামীর সাথে খেয়ানত করত না’। হাদীছটির ব্যাখ্যা জানতে চাই।-মামূন, রাজশাহী।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এখানে নারীর ফিৎরাতের কথা বলেছেন, তার কর্মকে দায়ী করেন নি। যেমন অন্য হাদীছে আদম তার আয়ুষ্কালকে অস্বীকার করেছিলেন বলে মানুষ অস্বীকার করে বলা হয়েছে (তিরমিযী হা/৩০৭৬, মিশকাত হা/১১৮)। এর অর্থ এটা নয় যে, বনু আদমের অস্বীকারের জন্য আদম (আঃ) দায়ী হবেন। কারণ একজনের পাপের বোঝা অন্যে বইবে না (আন‘আম ১৬৪ ও অন্যান্য)। আল্লাহ নিজেও হাওয়াকে এককভাবে এ বিষয়ে দায়ী করেননি। বরং কুরআনে শয়তান ‘আদম’কে এবং ‘আদম ও হাওয়া’ উভয়কে প্রতারিত করেছিল বলে বর্ণিত হয়েছে (ত্বোয়াহা ১২০, আ‘রাফ ২০)।
অতএব আলোচ্য হাদীছ সহ অন্যান্য হাদীছে ‘হাওয়া আদমকে উৎসাহিত করেছিলেন’ মর্মে যা কিছু বলা হয়েছে সবটারই উদ্দেশ্য হ’ল, নারীর স্বাভাবিক প্রবণতার দিকে ইঙ্গিত করা। যাতে মুমিন নারী ও পুরুষ স্ব স্ব মন্দ প্রবণতাকে সংযত রাখে।
উত্তর : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এখানে নারীর ফিৎরাতের কথা বলেছেন, তার কর্মকে দায়ী করেন নি। যেমন অন্য হাদীছে আদম তার আয়ুষ্কালকে অস্বীকার করেছিলেন বলে মানুষ অস্বীকার করে বলা হয়েছে (তিরমিযী হা/৩০৭৬, মিশকাত হা/১১৮)। এর অর্থ এটা নয় যে, বনু আদমের অস্বীকারের জন্য আদম (আঃ) দায়ী হবেন। কারণ একজনের পাপের বোঝা অন্যে বইবে না (আন‘আম ১৬৪ ও অন্যান্য)। আল্লাহ নিজেও হাওয়াকে এককভাবে এ বিষয়ে দায়ী করেননি। বরং কুরআনে শয়তান ‘আদম’কে এবং ‘আদম ও হাওয়া’ উভয়কে প্রতারিত করেছিল বলে বর্ণিত হয়েছে (ত্বোয়াহা ১২০, আ‘রাফ ২০)।
অতএব আলোচ্য হাদীছ সহ অন্যান্য হাদীছে ‘হাওয়া আদমকে উৎসাহিত করেছিলেন’ মর্মে যা কিছু বলা হয়েছে সবটারই উদ্দেশ্য হ’ল, নারীর স্বাভাবিক প্রবণতার দিকে ইঙ্গিত করা। যাতে মুমিন নারী ও পুরুষ স্ব স্ব মন্দ প্রবণতাকে সংযত রাখে।
৪৭১
প্রশ্ন (৩০/১১০) : জনৈক ব্যক্তি বলে, যে ব্যক্তি মৃত্যু পর্যন্ত টুপী পরিধান করবে, ক্বিয়ামতের দিন সূর্যের তাপ ঐ ব্যক্তির শরীরে লাগবে না। এ বর্ণনার কোন সত্যতা আছে কি?-আব্দুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
উত্তর : কথাটি মিথ্যা ও বানোয়াট। উল্লেখ্য যে, মাথা ঢাকা বা টুপী পরা শিষ্টাচারমূলক পোষাকের অন্তর্ভুক্ত। এটাকে তাক্বওয়ার পোশাক হিসাবে গণ্য করা হয় (দ্রঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃঃ ৪৭)।
উত্তর : কথাটি মিথ্যা ও বানোয়াট। উল্লেখ্য যে, মাথা ঢাকা বা টুপী পরা শিষ্টাচারমূলক পোষাকের অন্তর্ভুক্ত। এটাকে তাক্বওয়ার পোশাক হিসাবে গণ্য করা হয় (দ্রঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃঃ ৪৭)।
-ইসমাঈল তালুকদার, নওগাঁ।
উত্তর : দানিয়াল সম্পর্কে কুরআন ও হাদীছে কিছু পাওয়া যায় না। অতএব তিনি যে নবী ছিলেন, এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে বলার কোন উপায় নেই। তবে ঐতিহাসিকভাবে যা জানা যায় তা নিম্নরূপ : আবুল ‘আলিয়ার বর্ণনা অনুযায়ী, ওমর (রাঃ)-এর খেলাফতকালে (১৩-২৩ হিঃ) আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) কর্তৃক ইরাকের তুসতার নগরী বিজিত হ’লে সেখানকার শাসক হুরমুযানের বায়তুল মালে চৌকির উপরে একজন ব্যক্তির অক্ষত লাশ পাওয়া যায়। যার মাথার কাছে একটি মুছহাফ ছিল। মুছহাফটি ওমর (রাঃ)-এর নিকটে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি নওমুসলিম ইহূদী পন্ডিত কা‘ব আল-আহবারকে ডেকে আরবীতে তার মর্ম উদ্ধার করেন। যার মধ্যে মানুষের আচরণবিধি, আদেশ-নিষেধ ও ভবিষ্যদ্বাণীসমূহ লিপিবদ্ধ ছিল। অতঃপর খলীফার নির্দেশক্রমে সেখানে দিনের বেলা ১৩টি কবর খনন করা হয় এবং রাতের বেলায় এগুলির কোন একটিতে দাফন করে মাটি সমান করে দেওয়া হয়। যাতে লোকেরা তা খুঁজে না পায় এবং ফিৎনায় পতিত না হয়। কেননা ইতিপূর্বে খরার সময় লোকেরা চৌকিসহ লাশটি বের করত এবং তার অসীলায় বৃষ্টি প্রার্থনা করত। বর্ণনাকারীর ধারণা মতে এটি ৩০০ বছর পূর্বেকার লাশ। লাশটির মাথার পিছনের কয়েকটি চুল পাকা ব্যতীত দেহের কোন অংশে পরিবর্তন ঘটেনি। কারণ নবীদের লাশ মাটি ও পশুতে খায় না’। ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, আবুল ‘আলিয়া পর্যন্ত বর্ণনাটির সূত্র ছহীহ। তবে ৩০০ বছরের পূর্বেকার ধারণামূলক বক্তব্যটি যদি সঠিক হয়, তাহ’লে তিনি নবী ছিলেন না বরং একজন সৎ ব্যক্তি ছিলেন। কেননা ঈসা ও মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর মধ্যে কোন নবী ছিলেন না, যা ছহীহ বুখারীর হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত’ (আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ২/৪০; আলবানী, তাখরীজ ফাযায়েলুশ শাম ১/৫১, আছার ছহীহ)। উল্লেখ্য যে, দানিয়াল বিষয়ে একটি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে যে, ‘যে ব্যক্তি দানিয়াল সম্পর্কে খবর দিবে, তোমরা তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ো’। ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, হাদীছটি ‘মুরসাল’ এবং এর সনদ নিরাপদ হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে (আল-বিদায়াহ ২/৪১)। এতদ্ব্যতীত দানিয়াল সম্পর্কে আরও অনেক কিছু বর্ণিত হয়েছে, যা বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত নয়।
উত্তর : দানিয়াল সম্পর্কে কুরআন ও হাদীছে কিছু পাওয়া যায় না। অতএব তিনি যে নবী ছিলেন, এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে বলার কোন উপায় নেই। তবে ঐতিহাসিকভাবে যা জানা যায় তা নিম্নরূপ : আবুল ‘আলিয়ার বর্ণনা অনুযায়ী, ওমর (রাঃ)-এর খেলাফতকালে (১৩-২৩ হিঃ) আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) কর্তৃক ইরাকের তুসতার নগরী বিজিত হ’লে সেখানকার শাসক হুরমুযানের বায়তুল মালে চৌকির উপরে একজন ব্যক্তির অক্ষত লাশ পাওয়া যায়। যার মাথার কাছে একটি মুছহাফ ছিল। মুছহাফটি ওমর (রাঃ)-এর নিকটে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি নওমুসলিম ইহূদী পন্ডিত কা‘ব আল-আহবারকে ডেকে আরবীতে তার মর্ম উদ্ধার করেন। যার মধ্যে মানুষের আচরণবিধি, আদেশ-নিষেধ ও ভবিষ্যদ্বাণীসমূহ লিপিবদ্ধ ছিল। অতঃপর খলীফার নির্দেশক্রমে সেখানে দিনের বেলা ১৩টি কবর খনন করা হয় এবং রাতের বেলায় এগুলির কোন একটিতে দাফন করে মাটি সমান করে দেওয়া হয়। যাতে লোকেরা তা খুঁজে না পায় এবং ফিৎনায় পতিত না হয়। কেননা ইতিপূর্বে খরার সময় লোকেরা চৌকিসহ লাশটি বের করত এবং তার অসীলায় বৃষ্টি প্রার্থনা করত। বর্ণনাকারীর ধারণা মতে এটি ৩০০ বছর পূর্বেকার লাশ। লাশটির মাথার পিছনের কয়েকটি চুল পাকা ব্যতীত দেহের কোন অংশে পরিবর্তন ঘটেনি। কারণ নবীদের লাশ মাটি ও পশুতে খায় না’। ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, আবুল ‘আলিয়া পর্যন্ত বর্ণনাটির সূত্র ছহীহ। তবে ৩০০ বছরের পূর্বেকার ধারণামূলক বক্তব্যটি যদি সঠিক হয়, তাহ’লে তিনি নবী ছিলেন না বরং একজন সৎ ব্যক্তি ছিলেন। কেননা ঈসা ও মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর মধ্যে কোন নবী ছিলেন না, যা ছহীহ বুখারীর হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত’ (আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ২/৪০; আলবানী, তাখরীজ ফাযায়েলুশ শাম ১/৫১, আছার ছহীহ)। উল্লেখ্য যে, দানিয়াল বিষয়ে একটি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে যে, ‘যে ব্যক্তি দানিয়াল সম্পর্কে খবর দিবে, তোমরা তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ো’। ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, হাদীছটি ‘মুরসাল’ এবং এর সনদ নিরাপদ হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে (আল-বিদায়াহ ২/৪১)। এতদ্ব্যতীত দানিয়াল সম্পর্কে আরও অনেক কিছু বর্ণিত হয়েছে, যা বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত নয়।
৪৭৩
প্রশ্ন (৩২/১১২) : আমাদের মসজিদের ভিতরের এক কর্ণারে ডাষ্টবিন রাখা আছে, যা অনেক সময় নোংরা পরিবেশ সৃষ্টি করে। এক্ষণে মসজিদের ভিতরে ডাস্টবিন রাখা জায়েয হবে কি?-সাজিদুল ইসলাম, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।
উত্তর : মসজিদে ডাষ্টবিন রাখা যাবে না। বরং তা মসজিদের বাইরে কোন স্থানে রাখতে হবে। আনাস (রাঃ) বলেন, জনৈক বেদুঈন মসজিদে পেশাব করলে রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘মসজিদ পেশাব করা বা আবর্জনা ফেলার স্থান নয়। মসজিদ হচ্ছে আল্লাহর যিকির, ছালাত ও কুরআন তেলাওয়াতের জন্য’ (মুসলিম হা/২৮৫, মিশকাত হা/৪৯২)। আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘ রাসূল (ছাঃ) আমাদেরকে মহল্লায় মহল্লায় মসজিদ নির্মাণ করতে এবং তাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সুগন্ধিময় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন’ (তিরমিযী, আবুদাউদ, মিশকাত হা/৭১৭)।
উত্তর : মসজিদে ডাষ্টবিন রাখা যাবে না। বরং তা মসজিদের বাইরে কোন স্থানে রাখতে হবে। আনাস (রাঃ) বলেন, জনৈক বেদুঈন মসজিদে পেশাব করলে রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘মসজিদ পেশাব করা বা আবর্জনা ফেলার স্থান নয়। মসজিদ হচ্ছে আল্লাহর যিকির, ছালাত ও কুরআন তেলাওয়াতের জন্য’ (মুসলিম হা/২৮৫, মিশকাত হা/৪৯২)। আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘ রাসূল (ছাঃ) আমাদেরকে মহল্লায় মহল্লায় মসজিদ নির্মাণ করতে এবং তাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সুগন্ধিময় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন’ (তিরমিযী, আবুদাউদ, মিশকাত হা/৭১৭)।
-ফযলুল করীম, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুর।
উত্তর : দলবদ্ধভাবে কোরাস গাওয়ার ন্যায় কুরআন তিলাওয়াত করা জায়েয নয়। রাসূল (ছাঃ) বা ছাহাবায়ে কেরাম এভাবে কুরআন তেলাওয়াত করেননি। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন যে, যে ব্যক্তি সুর দিয়ে কুরআন তেলাওয়াত করে না, সে আমার দলভুক্ত নয় (বুখারী হা/৭৫২৭, মিশকাত হা/২১৯৪)। এর অর্থ কোরাস দিয়ে দলবদ্ধভাবে পড়া নয় বরং একাকী মধুর সুরে পড়া। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা কুরআনকে তোমাদের স্বরের দ্বারা সৌন্দর্যমন্ডিত কর। কেননা সুন্দর স্বর কুরআনের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে’ (দারেমী হা/৩৫০১, মিশকাত হা/২২০৮)।
উত্তর : দলবদ্ধভাবে কোরাস গাওয়ার ন্যায় কুরআন তিলাওয়াত করা জায়েয নয়। রাসূল (ছাঃ) বা ছাহাবায়ে কেরাম এভাবে কুরআন তেলাওয়াত করেননি। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন যে, যে ব্যক্তি সুর দিয়ে কুরআন তেলাওয়াত করে না, সে আমার দলভুক্ত নয় (বুখারী হা/৭৫২৭, মিশকাত হা/২১৯৪)। এর অর্থ কোরাস দিয়ে দলবদ্ধভাবে পড়া নয় বরং একাকী মধুর সুরে পড়া। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা কুরআনকে তোমাদের স্বরের দ্বারা সৌন্দর্যমন্ডিত কর। কেননা সুন্দর স্বর কুরআনের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে’ (দারেমী হা/৩৫০১, মিশকাত হা/২২০৮)।
-মুহাম্মাদ হাফীযুর রহমান, ঢাকা।
উত্তর : উত্তরাধিকার সম্পদ মৃত্যুর পরে বণ্টন হওয়াই ইসলামী শরী‘আতের বিধান। কেননা আল্লাহ প্রত্যেক হকদারের জন্য তার হক নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন’ (আবুদাঊদ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/৩০৭৩)। তবে অন্য ওয়ারিছদের বঞ্চিত করার অসৎ উদ্দেশ্য না থাকলে সুস্থ অবস্থায় হাদিয়া হিসাবে এরূপ প্রদান করায় বাধা নেই (দ্রঃ ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা, ফৎওয়া নং ৬৭৪৫)।
উত্তর : উত্তরাধিকার সম্পদ মৃত্যুর পরে বণ্টন হওয়াই ইসলামী শরী‘আতের বিধান। কেননা আল্লাহ প্রত্যেক হকদারের জন্য তার হক নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন’ (আবুদাঊদ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/৩০৭৩)। তবে অন্য ওয়ারিছদের বঞ্চিত করার অসৎ উদ্দেশ্য না থাকলে সুস্থ অবস্থায় হাদিয়া হিসাবে এরূপ প্রদান করায় বাধা নেই (দ্রঃ ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা, ফৎওয়া নং ৬৭৪৫)।
৪৭৭
প্রশ্ন (৩৬/১১৬) : ছহীহ হাদীছের আলোকে মৃত ব্যক্তিকে গোসল, কাফন-দাফন ও খাটিয়া বহনের ফযীলত সম্পর্কে জানতে চাই।-আব্দুল্লাহিল কাফী, রাজশাহী।
উত্তর : মৃত ব্যক্তিকে গোসল ও কাফন-দাফনের ফযীলত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কোন মুসলিম মাইয়েতকে গোসল করাবে, অতঃপর তার গোপনীয়তা সমূহ গোপন রাখবে, আল্লাহ তাকে চল্লিশ বার ক্ষমা করবেন। যে ব্যক্তি মাইয়েতকে কাফন পরাবে, আল্লাহ তাকে ক্বিয়ামতের দিন জান্নাতের মিহি ও মোটা রেশমের পোষাক পরিধান করাবেন। যে ব্যক্তি মাইয়েতের জন্য কবর খনন করবে, অতঃপর দাফন শেষে তা ঢেকে দিবে, আল্লাহ তাকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত পুরস্কার দিবেন জান্নাতের একটি বাড়ীর সমপরিমাণ, যেখানে আল্লাহ তাকে রাখবেন’ (হাকেম হা/১৩০৭; ছহীহ তারগীব হা/৩৪৯২; আলবানী, আহকামুল জানায়েয হা/৩০, ১/৫১, সনদ ছহীহ)।
দাফনের উদ্দেশ্যে মাইয়েতের খাটিয়া বহন নিঃসন্দেহে নেকীর কাজ। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও ছওয়াবের আশায় কোন জানাযায় শরীক হ’ল এবং দাফন শেষে ফিরে এলো, সে ব্যক্তি দুই ‘ক্বীরাত’ সমপরিমাণ নেকী পেল। প্রতি ‘ক্বীরাত’ ওহোদ পাহাড়ের সমতুল্য। আর যে ব্যক্তি কেবলমাত্র জানাযা পড়ে ফিরে এলো, সে এক ‘ক্বীরাত’ পরিমাণ নেকী পেল’ (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১৬৫১)। তবে ‘জানাযার খাটিয়া বহন করলে তা চল্লিশটি কবীরা গোনাহের কাফফারা হবে’ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি মুনকার বা যঈফ (ত্বাবারাণী, সিলসিলা যঈফাহ হা/১৮৯১)। এছাড়া বহনের সময় ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’, ‘আল্লাহু আকবার’ ইত্যাদি বলে যিকির করার কোন বিধান নেই।
উত্তর : মৃত ব্যক্তিকে গোসল ও কাফন-দাফনের ফযীলত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কোন মুসলিম মাইয়েতকে গোসল করাবে, অতঃপর তার গোপনীয়তা সমূহ গোপন রাখবে, আল্লাহ তাকে চল্লিশ বার ক্ষমা করবেন। যে ব্যক্তি মাইয়েতকে কাফন পরাবে, আল্লাহ তাকে ক্বিয়ামতের দিন জান্নাতের মিহি ও মোটা রেশমের পোষাক পরিধান করাবেন। যে ব্যক্তি মাইয়েতের জন্য কবর খনন করবে, অতঃপর দাফন শেষে তা ঢেকে দিবে, আল্লাহ তাকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত পুরস্কার দিবেন জান্নাতের একটি বাড়ীর সমপরিমাণ, যেখানে আল্লাহ তাকে রাখবেন’ (হাকেম হা/১৩০৭; ছহীহ তারগীব হা/৩৪৯২; আলবানী, আহকামুল জানায়েয হা/৩০, ১/৫১, সনদ ছহীহ)।
দাফনের উদ্দেশ্যে মাইয়েতের খাটিয়া বহন নিঃসন্দেহে নেকীর কাজ। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও ছওয়াবের আশায় কোন জানাযায় শরীক হ’ল এবং দাফন শেষে ফিরে এলো, সে ব্যক্তি দুই ‘ক্বীরাত’ সমপরিমাণ নেকী পেল। প্রতি ‘ক্বীরাত’ ওহোদ পাহাড়ের সমতুল্য। আর যে ব্যক্তি কেবলমাত্র জানাযা পড়ে ফিরে এলো, সে এক ‘ক্বীরাত’ পরিমাণ নেকী পেল’ (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১৬৫১)। তবে ‘জানাযার খাটিয়া বহন করলে তা চল্লিশটি কবীরা গোনাহের কাফফারা হবে’ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি মুনকার বা যঈফ (ত্বাবারাণী, সিলসিলা যঈফাহ হা/১৮৯১)। এছাড়া বহনের সময় ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’, ‘আল্লাহু আকবার’ ইত্যাদি বলে যিকির করার কোন বিধান নেই।
-মুখলেছুর রহমান, উত্তর দিনাজপুর, ভারত।
উত্তর : এতে ওযূ নষ্ট হবে না (আবুদাঊদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৩২০)। যে হাদীছে লজ্জাস্থান স্পর্শে ওযূ নষ্ট হবে বলা হয়েছে (আহমাদ, ইরওয়া হা/১১৬, ১১৭; মিশকাত হা/৩৯০), তার ব্যাখ্য হ’ল, উত্তেজনার সাথে স্পর্শ করা (টীকা দ্রঃ মিশকাত হা/৩২০)।
উত্তর : এতে ওযূ নষ্ট হবে না (আবুদাঊদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৩২০)। যে হাদীছে লজ্জাস্থান স্পর্শে ওযূ নষ্ট হবে বলা হয়েছে (আহমাদ, ইরওয়া হা/১১৬, ১১৭; মিশকাত হা/৩৯০), তার ব্যাখ্য হ’ল, উত্তেজনার সাথে স্পর্শ করা (টীকা দ্রঃ মিশকাত হা/৩২০)।
৪৮০
প্রশ্ন (৩৯/১১৯) : কিছু আলেমের মুখে শোনা যায় যে, আল্লাহর যিক্র পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতের চেয়েও উত্তম। তারা প্রমাণে কুরআনের আয়াতও পেশ করে থাকেন। তাদের বক্তব্য কি সঠিক?-আব্দুল্লাহ আল-মামূন, রাজশাহী।
উত্তর : যিকর অর্থ স্মরণ করা। আর আল্লাহকে স্মরণ করার শ্রেষ্ঠ অনুষ্ঠান হ’ল ছালাত আদায় করা। যেমন আল্লাহ বলেন, তুমি ছালাত কায়েম কর আমাকে স্মরণ করার জন্য’ (ত্বোয়াহা হা/২০/১৪)। ছালাতের বাইরে সর্বোত্তম যিকর হ’ল ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। এছাড়াও সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবর ইত্যাদি। কিন্তু এর অর্থ এটা নয় যে, এগুলি ছালাত আদায়ের চাইতে উত্তম। অতঃপর যিকর দ্বারা যদি প্রচলিত ‘আল্লাহ আল্লাহ’ যিকর অর্থ নেওয়া হয়, তবে সেটি বিদ‘আত মাত্র। কেননা এমন যিকর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারা প্রমাণিত নয়। তাছাড়া আল্লাহ তা‘আলা ছালাতকেই বড় যিক্র বলেছেন (আনকাবূত ৪৫)। কেননা পুরো ছালাতই মূলতঃ যিক্র, দো‘আ ও তাসবীহতে পরিপূর্ণ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘ছালাত সঠিক না হ’লে কোন ইবাদত সঠিক হবে না’ (ত্বাবারাণী, সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৩৫৮)। কাজেই সাধারণ যিক্রকে ফরয ছালাতের যিকরের চেয়ে উত্তম মনে করা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত আক্বীদা।
উত্তর : যিকর অর্থ স্মরণ করা। আর আল্লাহকে স্মরণ করার শ্রেষ্ঠ অনুষ্ঠান হ’ল ছালাত আদায় করা। যেমন আল্লাহ বলেন, তুমি ছালাত কায়েম কর আমাকে স্মরণ করার জন্য’ (ত্বোয়াহা হা/২০/১৪)। ছালাতের বাইরে সর্বোত্তম যিকর হ’ল ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। এছাড়াও সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবর ইত্যাদি। কিন্তু এর অর্থ এটা নয় যে, এগুলি ছালাত আদায়ের চাইতে উত্তম। অতঃপর যিকর দ্বারা যদি প্রচলিত ‘আল্লাহ আল্লাহ’ যিকর অর্থ নেওয়া হয়, তবে সেটি বিদ‘আত মাত্র। কেননা এমন যিকর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারা প্রমাণিত নয়। তাছাড়া আল্লাহ তা‘আলা ছালাতকেই বড় যিক্র বলেছেন (আনকাবূত ৪৫)। কেননা পুরো ছালাতই মূলতঃ যিক্র, দো‘আ ও তাসবীহতে পরিপূর্ণ। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘ছালাত সঠিক না হ’লে কোন ইবাদত সঠিক হবে না’ (ত্বাবারাণী, সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৩৫৮)। কাজেই সাধারণ যিক্রকে ফরয ছালাতের যিকরের চেয়ে উত্তম মনে করা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত আক্বীদা।
-জামালুদ্দীন, কালদিয়া, বাগেরহাট।
উত্তর : ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা ও ব্যবহার না জেনে নিজের স্বল্প জ্ঞানের উপর গোঁড়ামী করাকে ধর্মান্ধতা বলে। ‘ধর্মান্ধ’ শব্দটি প্রকৃত মুসলিমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কেননা ‘ইসলাম’ হ’ল মানবজাতির জন্য আল্লাহর মনোনীত একমাত্র ধর্ম (আলে ইমরান ৩/১৯)। আর ইসলামের প্রকৃত অনুসারী ব্যক্তিই হ’লেন প্রকৃত ধার্মিক। প্রকৃত ধার্মিক ব্যক্তি কখনো ধর্মান্ধ হন না। বর্তমান যুগে কিছু নামধারী মুসলিম প্রকৃত দ্বীনদার মুসলিম পুরুষ ও নারীকে ‘ধর্মান্ধ’ বলেন গালি হিসাবে। তাদের মতে, যারা যুক্তির উপরে ধর্মকে স্থান দেয়, তারাই ধর্মান্ধ। এর দ্বারা তারা ইসলামের প্রতি ইঙ্গিত করেন। এটি তাদের অজ্ঞতার পরিচায়ক। কেননা মানুষের জ্ঞান সসীম। আর আল্লাহ হ’লেন অসীম জ্ঞানের আধার। ইসলাম আল্লাহ প্রেরিত ধর্ম। তার কল্যাণবিধান অনেক সময় সাধারণ মানুষের জ্ঞান ও যুক্তি আয়ত্ত করতে ব্যর্থ হয়। যদিও গভীর জ্ঞানীগণ তা অনুধাবনে সমর্থ হন। সেক্ষেত্রে ইসলামী বিধানকে নিজের জ্ঞানের উপর স্থান দেওয়াই হ’ল প্রকৃত মুসলিমের কর্তব্য। দুঃখের বিষয় এই যে, স্থানপূজা, মূর্তিপূজা, কবরপূজা, ছবি-প্রতিকৃতি পূজা ইত্যাদি বৃথা কর্মগুলিতে এরা ধর্মান্ধতা বলেন না।
মুসলমান হ’ল আল্লাহর শ্রেষ্ঠ উম্মত (আলে-ইমরান ৩/১১০) এবং মধ্যপন্থী জাতি (বাক্বারাহ ২/১৪৩)। রাসূল (ছাঃ) সকল কাজে মধ্যপন্থা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন (মুসলিম হা/২৮১৬, তিরমিযী হা/২১৪১; মিশকাত হা/৯৬)। উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় ছাহেবে মির‘আত বলেন, তোমরা তোমাদের সৎকর্মের মাধ্যমে সুষ্ঠুতা ও দৃঢ়তা অন্বেষণ কর এবং কোনরূপ বাড়াবাড়ি ও হরাসকরণ ছাড়াই মধ্যপন্থা অবলম্বন কর (মির‘আত হা/৯৬-এর ব্যাখ্যা)।
সংশোধনী
গত নভেম্বর’১৫ সংখ্যায় (৩৮/৭৮) প্রশ্নোত্তরে দাদা ও দাদার বোন হিসাবে উত্তর প্রদান করা হয়েছে। এক্ষণে উক্ত বোন যদি মৃতের বোন হয়, তবে পুরো সম্পদের ৩ ভাগের ২ ভাগ দাদা এবং ১ ভাগ বোন পাবে। দাদার বর্তমানে মৃত বোন ও তার সন্তানেরা ওয়ারিছ হবে না।
উত্তর : ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা ও ব্যবহার না জেনে নিজের স্বল্প জ্ঞানের উপর গোঁড়ামী করাকে ধর্মান্ধতা বলে। ‘ধর্মান্ধ’ শব্দটি প্রকৃত মুসলিমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কেননা ‘ইসলাম’ হ’ল মানবজাতির জন্য আল্লাহর মনোনীত একমাত্র ধর্ম (আলে ইমরান ৩/১৯)। আর ইসলামের প্রকৃত অনুসারী ব্যক্তিই হ’লেন প্রকৃত ধার্মিক। প্রকৃত ধার্মিক ব্যক্তি কখনো ধর্মান্ধ হন না। বর্তমান যুগে কিছু নামধারী মুসলিম প্রকৃত দ্বীনদার মুসলিম পুরুষ ও নারীকে ‘ধর্মান্ধ’ বলেন গালি হিসাবে। তাদের মতে, যারা যুক্তির উপরে ধর্মকে স্থান দেয়, তারাই ধর্মান্ধ। এর দ্বারা তারা ইসলামের প্রতি ইঙ্গিত করেন। এটি তাদের অজ্ঞতার পরিচায়ক। কেননা মানুষের জ্ঞান সসীম। আর আল্লাহ হ’লেন অসীম জ্ঞানের আধার। ইসলাম আল্লাহ প্রেরিত ধর্ম। তার কল্যাণবিধান অনেক সময় সাধারণ মানুষের জ্ঞান ও যুক্তি আয়ত্ত করতে ব্যর্থ হয়। যদিও গভীর জ্ঞানীগণ তা অনুধাবনে সমর্থ হন। সেক্ষেত্রে ইসলামী বিধানকে নিজের জ্ঞানের উপর স্থান দেওয়াই হ’ল প্রকৃত মুসলিমের কর্তব্য। দুঃখের বিষয় এই যে, স্থানপূজা, মূর্তিপূজা, কবরপূজা, ছবি-প্রতিকৃতি পূজা ইত্যাদি বৃথা কর্মগুলিতে এরা ধর্মান্ধতা বলেন না।
মুসলমান হ’ল আল্লাহর শ্রেষ্ঠ উম্মত (আলে-ইমরান ৩/১১০) এবং মধ্যপন্থী জাতি (বাক্বারাহ ২/১৪৩)। রাসূল (ছাঃ) সকল কাজে মধ্যপন্থা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন (মুসলিম হা/২৮১৬, তিরমিযী হা/২১৪১; মিশকাত হা/৯৬)। উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় ছাহেবে মির‘আত বলেন, তোমরা তোমাদের সৎকর্মের মাধ্যমে সুষ্ঠুতা ও দৃঢ়তা অন্বেষণ কর এবং কোনরূপ বাড়াবাড়ি ও হরাসকরণ ছাড়াই মধ্যপন্থা অবলম্বন কর (মির‘আত হা/৯৬-এর ব্যাখ্যা)।
সংশোধনী
গত নভেম্বর’১৫ সংখ্যায় (৩৮/৭৮) প্রশ্নোত্তরে দাদা ও দাদার বোন হিসাবে উত্তর প্রদান করা হয়েছে। এক্ষণে উক্ত বোন যদি মৃতের বোন হয়, তবে পুরো সম্পদের ৩ ভাগের ২ ভাগ দাদা এবং ১ ভাগ বোন পাবে। দাদার বর্তমানে মৃত বোন ও তার সন্তানেরা ওয়ারিছ হবে না।
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন