hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

চিনে নাও তুমি তোমার নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে

লেখকঃ ড. আদেল আশ-শিদ্দী, ড. আহমাদ আল-মাযইয়াদ

১৭
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবু্ওয়াত:
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাঁর চল্লিশ বছর বয়সে নবুওয়াত প্রদান করা হয়, তারপর রমযান মাসের ১৭ তারিখ সোমবার হেরা গুহায় তাঁর নিকট ফিরিশতার আগমন ঘটে, আর ফিরিশতা যখন তাঁর নিকট অহী নিয়ে আগমন করতেন, তখন এটা তাঁর নিকট অত্যন্ত কষ্টকর মনে হত, তাঁর চেহারা পরিবর্তন হয়ে যেত এবং তাঁর কপাল ঘর্মাক্ত হয়ে যেত।

* অতঃপর যখন তাঁর নিকট ফিরিশতা অবতরণ করলেন, তখন তিনি (ফিরিশতা) তাঁকে (রাসূলকে) বললেন, ‘আপনি পড়ুন’। জবাবে তিনি বললেন: “আমি তো পড়তে জানি না”। অতঃপর ফিরিশতা তাঁকে জড়িয়ে ধরে এমনভাবে চাপ দিলেন যে, তাতে তাঁর কষ্ট হলো। অতঃপর তিনি তাঁকে আবার বললেন: ‘আপনি পড়ুন’, জবাবে তিনি বললেন: “আমি তো পড়তে জানি না”। এভাবে তিনি তিনবার বললেন। অতঃপর তিনি বললেন (আল-কুরআনের বাণী):

﴿ٱقۡرَأۡ بِٱسۡمِ رَبِّكَ ٱلَّذِي خَلَقَ ١ خَلَقَ ٱلۡإِنسَٰنَ مِنۡ عَلَقٍ ٢ ٱقۡرَأۡ وَرَبُّكَ ٱلۡأَكۡرَمُ ٣ ٱلَّذِي عَلَّمَ بِٱلۡقَلَمِ ٤ عَلَّمَ ٱلۡإِنسَٰنَ مَا لَمۡ يَعۡلَمۡ ٥﴾ [ العلق : ١، ٥ ]

“পড়ুন আপনার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাক’ (জমাট বাঁধা রক্ত) হতে। পড়ুন, আর আপনার রব মহামহিমান্বিত, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।” [সূরা আল-‘আলাক, আয়াত: ১-৫]

অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাঁপতে কাঁপতে খাদিজা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার নিকট গেলেন, তারপর তিনি তাঁকে নিয়ে যা ঘটেছে তা তাঁর কাছে খুলে বললেন, অতঃপর খাদিজা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সান্ত্বনা ও অভয় দিয়ে বললেন: আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন, অসম্ভব! আল্লাহ কখনও আপনাকে অপমানিত করবেন না। আপনি তো আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদ্ব্যবহার করেন, সত্য কথা বলেন, অসহায় দুর্বলের দায়িত্ব বহন করেন এবং দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করেন।

* অতঃপর অহী স্থগিত হয়ে গেল, তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অহীর অপেক্ষায় থাকলেন যতক্ষণ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর অপেক্ষা চেয়েছেন, তখন তিনি আর কোনো কিছুই দেখলেন না, যার কারণে তিনি চিন্তিত হয়ে পড়লেন এবং অহী নাযিলের প্রত্যাশায় উৎসুক হয়ে থাকলেন, অতঃপর একদিন তাঁর উদ্দেশ্যে ফিরিশতা আত্মপ্রকাশ করলেন, যিনি আসামন ও যমীনের ব্যাপী পাতা এক আসন বা চেয়ারে বসা। সেই ফিরিশতা তাঁকে সাহস দিলেন এবং সুসংবাদ দিলেন যে, তিনি সত্যিকার অর্থে আল্লাহর রাসূল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাকে (ফিরিশতাকে) দেখলেন, তখন তিনি ভয় পেয়ে গেলেন এবং সোজা খাদিজা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার নিকট চলে গেলেন এবং বললেন: “আমাকে বস্ত্রাবৃত কর, আমাকে কম্বল দ্বারা ঢেকে দাও”। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ওপর নাযিল করলেন:

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلۡمُدَّثِّرُ ١ قُمۡ فَأَنذِرۡ ٢ وَرَبَّكَ فَكَبِّرۡ ٣ وَثِيَابَكَ فَطَهِّرۡ ٤ ﴾ [ المدثر : ١، ٤ ]

“হে বস্ত্রাচ্ছাদিত! উঠুন, অতঃপর সতর্ক করুন, আর আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন। আর আপনার পরিচ্ছদ পবিত্র করুন।” [সূরা আল-মুদ্দাসসির, আয়াত: ১–৪]

কাজেই আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াতগুলোর মধ্যে তাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন- তিনি যাতে তাঁর সম্প্রদায়ের লোকজনকে সতর্ক করেন এবং তাদেরকে আল্লাহর দিকে আহ্বান করেন। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম দায়িত্ব পালনের প্রস্তুতি নিলেন এবং আল্লাহর আনুগত্য পালনে পুরোপুরিভাবে আত্মনিয়োগ করলেন- তিনি ছোট ও বড়, স্বাধীন ও গোলাম, পুরুষ ও নারী এবং কালো ও সাদা নির্বিশেষে সকল মানুষকে আল্লাহ তা‘আলার দিকে ডাকতে লাগলেন। অতঃপর প্রত্যেক গোত্র থেকে ঐসব আল্লাহর বান্দা তাঁর আহ্বানে সাড়া দিলেন, যাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা ও (জাহান্নাম থেকে) মুক্তি দানের জন্য কবুল করেছেন। ফলে তারা জেনে-শুনে ইসলামের ছায়াতলে প্রবেশ করেন। অতঃপর মক্কার নির্বোধ লোকগুলো তাদেরকে কষ্ট ও শাস্তি দিতে শুরু করে দিল, আর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলকে তাঁর চাচা আবু তালিবের মাধ্যমে প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করলেন। কারণ, তিনি (আবু তালিব) ছিলেন তাদের মধ্যে ভদ্র, অনুসরণীয়, বুদ্ধিমান ও বিচক্ষণ ব্যক্তি, যখন তারা চাচা কর্তৃক ভাতিজাকে প্রচণ্ডভাবে ভালোবাসার বিষয়টি জানত, তখন তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো কাজের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে সাহস করত না।

* ইবনুল জাওযী রহ বলেন: অবশেষে তিনি তিন বছর নবুওয়াতের বিষয়টি গোপন করে রাখেন, অতঃপর তাঁর প্রতি অহী নাযিল হয়:

﴿فَٱصۡدَعۡ بِمَا تُؤۡمَرُ وَأَعۡرِضۡ عَنِ ٱلۡمُشۡرِكِينَ ٩٤﴾ [ الحجر : ٩٤ ]

“অতএব, আপনি যে বিষয়ে আদেশপ্রাপ্ত হয়েছেন, তা প্রকাশ্যে প্রচার করুন এবং মুশরিকদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন।” [সূরা আল-হিজর, আয়াত: ৯৪]

এ আয়াত নাযিলের পর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রকাশ্যে দাওয়াতী কাজ শুরু করেন। তারপর যখন নাযিল হয় আল্লাহ তা‘আলার বাণী:

﴿وَأَنذِرۡ عَشِيرَتَكَ ٱلۡأَقۡرَبِينَ ٢١٤﴾ [ الشعراء : ٢١٤ ]

“আর আপনার নিকটস্থ জ্ঞাতি-গোষ্ঠীকে সতর্ক করুন” [সূরা আশ-শু‘আরা, আয়াত: ২১৪], তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘর থেকে বের হয়ে ‘সাফা’ পর্বতে আরোহন করেন, তারপর তিনি ( يا صباحاه )! (হায়! সকাল বেলার বিপদ) বলে চিৎকার করে ডাকতে লাগলেন, তারপর তারা বলল: কে চিৎকার করে ডাকছে? তারাই আবার বলল: এ তো মুহাম্মাদ! তখন তারা সকলে তাঁর কাছে সমবেত হলে তিনি বললেন,

«يَا بَنِى فُلاَنٍ ! يَا بَنِى فُلاَنٍ ! يَا بَنِى فُلاَنٍ ! يَا بَنِى عَبْدِ مَنَافٍ ! يَا بَنِى عَبْدِ الْمُطَّلِبِ ! فَاجْتَمَعُوا إِلَيْهِ فَقَالَ «أَرَأَيْتَكُمْ لَوْ أَخْبَرْتُكُمْ أَنَّ خَيْلاً تَخْرُجُ بِسَفْحِ هَذَا الْجَبَلِ أَكُنْتُمْ مُصَدِّقِىَّ» . قَالُوا مَا جَرَّبْنَا عَلَيْكَ كَذِبًا . قَالَ «فَإِنِّى نَذِيرٌ لَكُمْ بَيْنَ يَدَىْ عَذَابٍ شَدِيدٍ» . فَقَالَ أَبُو لَهَبٍ : تَبًّا لَكَ، أَمَا جَمَعْتَنَا إِلاَّ لِهَذَا ؟ ثُمَّ قَامَ، فَنَزَلَتْ : ﴿تَبَّتۡ يَدَآ أَبِي لَهَبٖ وَتَبَّ﴾ إِلَى آخِرِ السُّورَةِ» .

“হে অমুক সম্প্রদায়! ...হে অমুক সম্প্রদায়! ...হে অমুক সম্প্রদায়! ...হে বনী আবদে মান্নাফ! ...হে বনী আবদিল মুত্তালিব! তখন তারা সকলে তাঁর কাছে সমবেত হলো। তারপর তিনি বললেন, ‘যদি আমি বলি যে, একটি শত্রুদল পাহাড়ের পাদদেশ থেকে তোমাদেরকে আক্রমণের জন্য ক্রমশই এগিয়ে আসছে, তবে তোমরা আমার কথা বিশ্বাস করবে কি? সবাই একবাক্যে বলে উঠল: (হাঁ, অবশ্যই বিশ্বাস করব) আমরা কখনও তোমার ওপর মিথ্যা বলা অভিযোগ দেখি নি। তখন তিনি বললেন: (যদি তাই হয়) আমি (শির্ক ও কুফরের কারণে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত) এক ভীষণ আযাব সম্পর্কে তোমাদেরকে সতর্ক করছি। এ কথা শুনে আবু লাহাব বলল: " تباً لك ألهذا جمعتنا؟ (ধ্বংস হও তুমি, এজন্যেই কি আমাদেরকে একত্রিত করেছ’?) অতঃপর সে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পাথর মারতে উদ্যত হলো। তারপর নাযিল হলো আল্লাহ তা‘আলার বাণী (সূরা লাহাব):

﴿تَبَّتۡ يَدَآ أَبِي لَهَبٖ وَتَبَّ ١ مَآ أَغۡنَىٰ عَنۡهُ مَالُهُۥ وَمَا كَسَبَ ٢ سَيَصۡلَىٰ نَارٗا ذَاتَ لَهَبٖ ٣ وَٱمۡرَأَتُهُۥ حَمَّالَةَ ٱلۡحَطَبِ ٤ فِي جِيدِهَا حَبۡلٞ مِّن مَّسَدِۢ ٥﴾ [ المسد : ١، ٥ ]

“ধ্বংস হোক আবু লাহাবের দু‘হাত এবং ধ্বংস হয়েছে সে নিজেও। তার ধন-সম্পদ ও তার উপার্জন তার কোন কাজে আসে নি। অচিরে সে দগ্ধ হবে লেলিহান আগুনে এবং তার স্ত্রীও- যে ইন্ধন বহন করে, তার গলায় পাকানো রশি”।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৪৯২ ও ৪৬৮৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫২৯]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন