মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনের সর্বশেষ কথা ছিল, সালাত, সালাত (অর্থাৎ সালাত ঠিকভাবে আদায় করবে) এবং তোমরা তোমাদের দাস-দাসীদের ব্যাপারে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করবে (অর্থাৎ তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে)”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৫১৫৬; মুসনাদ আহমদ, হাদীস নং ৫৮৫, শু‘আইব আরনাউত হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, আর এ হাদীসের সনদটিকে হাসান বলেছেন। আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]
ভূমিকা:
প্রাক ইসলামী যুগে দাস-দাসীরা তাদের মনিবের ইচ্ছামতো কাজ করতো, তাদেরকে তাদের সাধ্য ও সামর্থ্যের বাহিরেও বোঝা চাপিয়ে দিতো। মনিবের সেবা করতে জীবনে বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু খাবারের দরকার ছিলো শুধু ততটুকো খাবার তাদেরকে দেওয়া হতো। তা স্বত্বেও তাদেরকে কাজের সময় মনিবের চিত্তবিনোদনের জন্য বেত্রাঘাত করা হতো। মনিবেরা এসব দরিদ্র দাস-দাসীদেরকে নির্যাতন করে আনন্দ পেতো। আর এ অবস্থা ছিলো রোমান সম্রাজ্যের দাস-দাসীর।
পারস্য, ভারত, আরব ও অন্যান্যদের অবস্থা এর চেয়ে ভালো ছিলো না। এমন সময় মানবতার দয়ালু ও স্নেহশীল নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমন ঘটে। তিনি দাস-দাসীকে এমন অধিকার প্রদান করেছে যা তাদেরকে ইসলামে নেতৃত্বের স্থানে সমাসীন করেছে। মনিব ও দাস-দাসীকে শরী‘আতের দায়িত্ব-কর্তব্য ও আদেশ-নিষধ পালনে সমান করেছেন। কৃতদাস সালমান ফারসী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে সুউচ্চ আসনে বসিয়েছেন। সুহাইব আর-রূমী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর মর্যাদা সুউচ্চ করেছেন। তিনি বিলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সম্পর্কে বলেছেন,
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাস-দাসীদের সম্পর্কে সর্বদা অসিয়্যত করতেন, এমনকি জীবনের শেষ সময়ে সালাতের সাথে তিনি দাস-দাসীদের অধিকার আদায় করতে উম্মতকে অসিয়্যত করে গেছেন।
দাস-দাসী ও খাদেমের সাথে সদাচরণ:
ইসলামী শরী‘আত দাস-দাসী ও চাকর চাকরাণীর সাথে সদাচরণ করতে নির্দেশ দিয়েছে এবং এ ব্যাপারে সব ধরণের আদেশ দিয়েছে যা সর্বদিক শামিল করেছে। তাদের সাথে মানসিক দিক থেকে সদাচরণের ব্যাপারে ইসলাম তাদেরকে ডাকার সময় অনুভূতির প্রতি লক্ষ্য রেখেছে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“তোমাদের কেউ যেন এরূপ বলে না ডাকে “আমার দাস, আমার দাসী; বরং বলবে, আমার বালক, আমার বালিকা ও আমার খাদেম”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৫৫২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৪৯।]
এমনিভাবে খাবার গ্রহণের সময়ও তাদের অনুভূতির প্রতি লক্ষ্য রাখতে নির্দেশ দিয়েছে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“তোমাদের কারো খাদেম খাবার নিয়ে আসলে হলে তাকেও নিজের সাথে বসানো উচিত। তাকে সাথে না বসালে দু’ এক লোকমা কিংবা দু’ এক গ্রাস তাকে দেওয়া উচিত। কেননা সে এর জন্য পরিশ্রম করেছে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৫৫৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬৬৩।] অর্থাৎ সে এ খাবার তৈরি করেছে।
দাস-দাসীর শারীরিক দিক থেকে ইহসান করতে ইসলাম তাদের সাধ্যের অধিক কোনো কাজ করাতে নিষেধ করেছে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“এবং তাদের সাধ্যাতীত কোনো কাজে বাধ্য করো না। তোমরা যদি তাদের শক্তির উর্ধ্বে কোনো কাজ তাদের দাও তবে তাদের সহযোগীতা করো”। [মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬৬১।]
তাদেরকে কেউ প্রহর করলে তিনি তার ব্যাপারে কঠোর শাস্তি ও সতর্ক করেছেন। আবু মাসউদ আল-আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,
“আমি আমার এক ক্রীতদাসকে প্রহার করছিলাম। হঠাৎ আমার পিছন দিক থেকে একটি শব্দ শুনলাম, হে আবু মাস‘উদ! জেনে রেখো, তুমি তার ওপর যেরূপ ক্ষমতাবান, আল্লাহ তোমার ওপর এর চেয়ে অধিক ক্ষমতাবান। হঠাৎ পিছন দিকে তাকিয়ে দেখি তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! সে আল্লাহর ওয়াস্তে আযাদ। এরপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সাবধান! যদি তুমি তা না করতে তাহলে অবশ্যই জাহান্নাম তোমাকে গ্রাস করতো। কিংবা (রাবীর সন্দেহ) জাহান্নাম তোমাকে অবশ্যই স্পর্শ করতো”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬৫৯।]
দাস-দাসীর অধিকারসমূহ:
ইসলামে দাস-দাসীরা মনিবের চেয়ে কোনো অংশেই নিম্নমানের সৃষ্টি নয়; বরং সৃষ্টিগত দিক থেকে দাস-দাসী ও মনিব সবাই সবাই। আল্লাহর হিকমত অনুযায়ী মানুষের মাঝে এ ধরণের পার্থক্য হয়েছে। যাতে আল্লাহর ইচ্ছা পরিপূর্ণ হয়, তাহলো পৃথিবী পরিচালনা ও এর দ্বারা আল্লাহ মানুষকে পরীক্ষা করেন। আল্লাহ তা‘আলা এ ধরণের পার্থক্য সম্পর্কে কুরআনে বলেছেন,
“তারা কি তোমার রবের রহমত ভাগ-বণ্টন করে? আমিই দুনিয়ার জীবনে তাদের মধ্যে তাদের জীবিকা বণ্টন করে দেই এবং তাদের একজনকে অপর জনের ওপর মর্যাদায় উন্নীত করি যাতে একে অপরকে অধিনস্থ হিসেবে কাজে লাগাতে পারে। আর তারা যা সঞ্চয় করে তোমার রবের রহমত তা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট”। [সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ৩২]
“আর আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত। তোমরা একে অন্যের থেকে (এসেছ)”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ২৫]
আল-কুরআনে বর্ণিত শব্দ ‘তোমরা একে অন্যের থেকে (এসেছ)’ এর চেয়ে সমতা বিধানের আর কোনো উপযোগী শব্দ হতে পারে না। ইসলাম দাস-দাসীদের অধিকার প্রদান করেছে এবং মনিবকে তা পালন করতে অত্যাবশ্যকীয় করেছে। সেগুলো সংক্ষেপে নিম্নোরূপ:
১- মালিক যে খাবার খাবে তাকেও একই জাতীয় খাবার খাওয়ানো।
২- মনিব যে মানের পোশাক পরিধান করবে তাকেও সে মানের পোশাক পরিধান করানো।
৩- সাধ্যানুযায়ী তাদেরকে কাজের আদেশ দেওয়া।
৪- তাদেরকে কোনো কাজের আদেশ দিলে নিজে সে কাজে তাদেরকে সাহায্য করা যাতে তাদের মনে প্রশান্তি পায় এবং কাজের চাপ কমে যায়।
৫- তাদেরকে প্রহার না করা।
৬- তাদেরকে তিরস্কার না করা।
৭- তাদেরকে মুসলিম ভাই হিসেবে মনে করা। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“জেনে রেখো, তোমাদের দাস-দাসী তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাদের তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন। তাই যার ভাই তার অধীনে থাকবে, সে যেন নিজে যা খায় তাকে তা-ই খাওয়ায় এবং নিজে যা পরে, তাকে তা-ই পরায়। তাদের উপর এমন কাজ চাপিয়ে দিও না, যা তাদের জন্য খুব কষ্টকর। যদি এমন কষ্টকর কাজ করতে দাও, তাহলে তোমরাও তাদের সে কাজে সাহায্য করবে”। [মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬৬১।]
৮- তাদের পারিশ্রমিক কাজের সাথে সাথেই আদায় করে দেওয়া এবং এ ব্যাপারে টালবাহানা না করা। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“আল্লাহ ঘোষণা করেছেন যে, কিয়ামতের দিবসে আমি নিজে তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাদী হবো। এক ব্যক্তি যে আমার নামে ওয়াদা করে তা ভঙ্গ করে। আরেক ব্যক্তি, যে কোনো আযাদ মানুষকে বিক্রি করে তার মূল্য ভোগ করল। আর এক ব্যক্তি, যে কোনো মজুর নিয়োগ করে তার থেকে পুরো কাজ আদায় করে এবং তার পারিশ্রমিক দেয় না”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২২২৭।]
সতর্কীকরণ:
এ অধ্যয়ে অধিকাংশ হাদীস দাস-দাসী সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে। যদিও বর্তমানে দাস-দাসী প্রথা নেই। আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী দাসপ্রথার বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। নিম্নোক্ত আয়াত অনুসারে ইসলামী রাষ্ট্রের সাথে এ চুক্তি একাত্মতা ঘোষণা করেছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
“হে মুমিনগণ, তোমরা অঙ্গীকারসমূহ পূর্ণ করো”। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ১] অতএব, দাস-দাসীর ব্যাপারে আল্লাহর নির্দেশনার মধ্যে বাসা-বাড়ির কাজের লোক এবং উৎপাদন কাজে নিয়োজিত কর্মচারীরাও অন্তর্ভুক্ত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/414/10
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।