hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহিমান্বিত জীবনের শেষ একশ দিনের অসিয়্যতসমূহ

লেখকঃ সালেহ ইবন আব্দুর রহমান আল-হুসাইন, আব্দুল আযীয ইবন আব্দুল্লাহ আল-হাজ

১৭
পঞ্চদশ অসিয়্যত: দীনের দাওয়াত পৌঁছানোর অসিয়্যত
১- ইমাম বুখারী ও মুসলিম রহ. আবু বাকরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি মিনায় কুরবানীর দিনে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রদত্ত বিদায় হজের ভাষণ উল্লেখ করে বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«لِيُبَلِّغِ الشَّاهِدُ الغَائِبَ، فَإِنَّ الشَّاهِدَ عَسَى أَنْ يُبَلِّغَ مَنْ هُوَ أَوْعَى لَهُ مِنْهُ» .

“এখানে উপস্থিত ব্যক্তি (আমার এ বাণী) যেন অনুপস্থিত ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেয়; কারণ উপস্থিত ব্যক্তি হয়ত এমন এক ব্যক্তির কাছে পৌঁছাবে, যে এ বাণীকে তার থেকে বেশি মুখস্থ রাখতে পারবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬৭৯।]

২- ইমাম বুখারী রহ. ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিনে মানুষের মাঝে খুৎবায় দিয়েছেন। তিনি এ খুৎবা উল্লেখ করেছেন, এতে রয়েছে,

ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ فَقَالَ : «اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ، اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ» قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا : فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، إِنَّهَا لَوَصِيَّتُهُ إِلَى أُمَّتِهِ، فَلْيُبْلِغِ الشَّاهِدُ الغَائِبَ .

“অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মাথা উঁচু করলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ! আমি কি আমার দাওয়াত পৌঁছে দিয়েছি? হে আল্লাহ! আমি কি আমার দাওয়াত পৌঁছে দিয়েছি? ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, ঐ সত্ত্বার কসম যার হাতে আমার জীবন, নিশ্চয় এটি উম্মতের জন্য রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অসিয়্যত উপস্থিত ব্যক্তি যেন অনুপস্থিত ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেয়”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৭৩৯।]

৩- ইবন মাজাহ ও হাকেম রহ. জুবাইর ইবন মুত‘য়িম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, ইমাম হাকেম সনদটিকে সহীহ বলেছেন, তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিনার ‘খাইফ’ নামক স্থানে দাঁড়িয়ে বললেন,

«نَضَّرَ اللَّهُ امْرَأً سَمِعَ مَقَالَتِي فَبَلَّغَهَا، فَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ غَيْرِ فَقِيهٍ، وَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ إِلَى مَنْ هُوَ أَفْقَهُ مِنْهُ» .

“আল্লাহ এমন ব্যক্তিকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করুন যে আমার বক্তব্য শোনার পর তা প্রচার করলো (অপরের নিকট পৌঁছে দিল)। কেননা জ্ঞানের অনেক বাহক নিজেরাই জ্ঞানী নয়। জ্ঞানের এমন বাহকও আছে যে, তারা যাদের নিকট তা বয়ে নিয়ে যায় তারা তাদের চেয়ে অধিক জ্ঞানী”। [ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৩১; মুসতাদরাক হাকেম, হাদীস নং ২৯৪।]

ভূমিকা:

মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর পক্ষ থেকে হিদায়াত ও নূর নিয়ে এসেছেন, যা দ্বারা তিনি দুনিয়া আলোকিত করেছেন। তার সুসংবাদের মধ্যে অন্যতম সুসংবাদ হলো তার আনিত এ আলো প্রত্যেক ঘরে প্রবেশ করবে; এমনকি স্থায়ী স্থাপনা কিংবা অস্থায়ী ঘর কোথাও এমন কোনো বাড়ি-ঘর পাওয়া যাবে না যেখানে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে নি। এ মিশন বাস্তবায়নে মাধ্যম হিসেবে মুসলিমরা বিশ্বের দরবারে এ আলোর দাওয়াত পৌঁছানোর দায়িত্ব নিজেরাই নিয়েছেন এবং তাদেরকে সুসংবাদ দিচ্ছেন।

এ কারণেই দেখি যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবচেয়ে বড় সমাবেশে এ বিষয়ে গুরুত্বসহকারে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি তাঁর সাহাবীদেরকে বলেছেন, «لِيُبَلِّغِ الشَّاهِدُ» অর্থাৎ তাঁর সাহাবীরা الغَائِبَ অর্থাৎ যারা সাহাবীদের পরে আগমন করবে। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীগণকে বলেছেন,

«تَسْمَعُونَ وَيُسْمَعُ مِنْكُمْ وَيُسْمَعُ مِمَّنْ سَمِعَ مِنْكُمْ» .

“তোমরা আমার নিকট হতে শ্রবণ করো এবং লোকেরা তোমাদের নিকট হতে শ্রবণ করবে, আর যারা তোমাদের নিকট হতে শোনবে তাদের নিকট হতে অন্য লোকেরা শ্রবণ করবে”। [ইবন হিব্বান, হাদীস নং ৬২; মুসতাদরাক হাকেম, হাদীস নং ৩২৭।]

এভাবে পালাক্রমে একদল অন্য দলের কাছে ঘোষণা করবে, এভাবে এ কল্যাণ সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছে যাবে এবং এ নূর প্রসারিত হবে। পৃথিবীর বুকে এমন কোনো নারী-পুরুষ অবশিষ্ট থাকবে না যাদের কাছে এ কল্যাণ ও আলোর দাওয়াত পৌঁছে নি।

দাওয়াত ও প্রচারের অর্থ:

দীনের দাওয়াত পৌঁছানোর এ অসিয়্যতের অর্থ অনুধাবনে অনেক মুসলিমই শরী‘আত প্রণেতার (আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের) মূল উদ্দেশ্য বুঝতে ভুল করে থাকেন। এ কারণে দীনের এ আলো এখনো পৃথিবীর অনেক ঘরে পৌঁছে নি। শরী‘আতে দাওয়াত পৌঁছানো মানে এ নয় যে, দা‘ঈ হতে হলে আলেম বা মুফতি হতে হবে, যার কাছে শরী‘আতের অধিকাংশ মাস’আলা জানা থাকবে। আসলে ব্যাপারটি একেবারেই এমন নয়। যায়েদ ইবন সাবিত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত হাদীসটি শুনুন, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন,

«نَضَّرَ اللَّهُ امْرَأً سَمِعَ مِنَّا حَدِيثًا فَحَفِظَهُ حَتَّى يُبَلِّغَهُ غَيْرَهُ، فَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ إِلَى مَنْ هُوَ أَفْقَهُ مِنْهُ، وَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ لَيْسَ بِفَقِيهٍ» .

“সে ব্যক্তিকে আল্লাহ সৌন্দর্যমণ্ডিত করুন যে ব্যক্তি আমার নিকট থেকে হাদীস শুনেছে এবং তা অন্যের নিকট পৌঁছানো পর্যন্ত সংরক্ষণ করেছে। জ্ঞান বহনকারী অনেকেই তার চেয়ে বড় জ্ঞানীর নিকট জ্ঞান পৌঁছে দিতে পারে। আবার অনেক জ্ঞান বহনকারী ব্যক্তি নিজে প্রজ্ঞাবান নয়”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৬৬০; তিরমিযী, হাদীস নং ২৬৫৬; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৩০; ইবন হিব্বান, হাদীস নং ৬৮০।] এ হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিছু দা‘ঈ মূলত জ্ঞানীই নয়।

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণের ঘটনা একটু চিন্তা করলেই বিষয়টা আরো স্পষ্ট হয়ে যায়। তারা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে ইসলাম গ্রহণ করেই নিজ সম্প্রদায়ের নিকট মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনিত এ নূরের দা‘ঈ ও সুসংবাবাদদাতা হিসেবে ফিরে গেছেন। অতএব, ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানো ও লোকদেরকে সুসংবাদ দেওয়ার জন্য যদি বিজ্ঞ আলেম হওয়া জরুরী হতো তবে তারা ইসলাম গ্রহণ করেই তাদের স্বজাতির কাছে এ দাওয়াত পৌঁছানোর দায়িত্ব নিতেন না।

দা‘ঈর শর্তাবলী:

পূর্বোল্লিখিত যায়েদ ইবন সাবিত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত হাদীস অনুসারে আমরা দা‘ঈর জন্য দু’টি শর্ত পাই। তাহলো:

প্রথম শর্ত: শরী‘আতের যে বিষয়ে দাওয়াত দিবে তা যথার্থভাবে মুখস্ত করা যাতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ওপর মিথ্যারোপ করা না হয়। নিঃসন্দেহে একথা বলা যায় যে, এখানে শরী‘আতের সমস্ত বিধান মুখস্ত করা উদ্দেশ্য নয়; বরং দা‘ঈ যে বিষয়ে দাওয়াত দিবে শুধু সেটিই সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা।

দ্বিতীয় শর্ত: দা‘ঈ শরী‘আতের যা কিছু জেনেছে ও মুখস্ত করেছে তা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদেশ অনুযায়ী অন্যের কাছে পৌঁছানোর আগ্রহ থাকা। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«بَلِّغُوا عَنِّي وَلَوْ آيَةً» .

“আমার কাছ থেকে একটি আয়াতও যদি তোমাদের কাছে পৌঁছে তা তোমরা অন্যের কাছে পৌঁছে দাও”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৪৬১।]

তাছাড়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিম্নোক্ত দো‘আর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রত্যাশা থাকা। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«نَضَّرَ اللَّهُ امْرَأً سَمِعَ مِنَّا حَدِيثًا فَحَفِظَهُ حَتَّى يُبَلِّغَهُ غَيْرَهُ، فَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ إِلَى مَنْ هُوَ أَفْقَهُ مِنْهُ، وَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ لَيْسَ بِفَقِيهٍ» .

“সে ব্যক্তিকে আল্লাহ সৌন্দর্যমণ্ডিত করুন যে ব্যক্তি আমার নিকট থেকে হাদীস শুনেছে এবং তা অন্যের নিকট পৌঁছানো পর্যন্ত সংরক্ষণ করেছে। জ্ঞান বহনকারী অনেকেই তার চেয়ে বড় জ্ঞানীর নিকট জ্ঞান পৌঁছে দিতে পারে। আবার অনেক জ্ঞান বহনকারী ব্যক্তি নিজে সূক্ষ্মজ্ঞানী নয়”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৬৬০; তিরমিযী, হাদীস নং ২৬৫৬; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৩০; ইবন হিব্বান, হাদীস নং ৬৮০।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন