মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
১- ইমাম আহমদ রহ. তার মুসনাদে আবু হুররা আর-রিকাশী রহ. থেকে, তিনি তার চাচার থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি আইয়্যামে তাশরীকের দিনে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রতিরক্ষার জন্য তাঁর উটের লাগাম ধরে ছিলাম। তিনি তাঁর ভাষণে বললেন, হে মানবকুল! (তিনি দীর্ঘ খুৎবা প্রদান করলেন)। এতে তিনি উল্লেখ করেছেন,
“সাবধান! কারো কাছে অন্যের আমানত থাকলে সে যেন তা আমানতদাতার কাছে দিয়ে দেয়”। [মুসনাদ আহমদ, হাদীস নং ২০৬৯৫।]
২- ইমাম আহমদ, তিরমিযী, বায়হাকী ও তাবরানী উমামা আল-বাহেলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিদায় হজের ভাষণে বলতে শুনেছি,
“ধারের জিনিস তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দিতে হবে, যামিনদার প্রাপ্য পরিশোধের জিম্মাদার হবে, আর ঋণ অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে”। [তিরমিযী, হাদীস নং ১২৬৫, ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান গরীব বলেছেন। ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৩৯৮; মুসনাদ আহমদ, হাদীস নং ২২৫০৭; সুনান আল-কুবরা লিল-বায়হাকী, হাদীস নং ১১৪৭৬; তাবরানী, হাদীস নং ৭৬২১।]
ভূমিকা:
ইসলামী শরী‘আতে আমানত শব্দটি এমন ব্যাপক ও পরিব্যাপ্তি একটি শব্দ, যা প্রথম শ্রবণে যতটুকু বুঝা যায় তার চেয়েও ব্যাপক অর্থ প্রদান করে। ইমাম কুরতবী আল-মালেকী রহ. তার তাফসীরে নিম্নোক্ত আয়াতের তাফসীরে বলেন,
“আর যারা নিজদের আমানতসমূহ ও অঙ্গীকারে যত্নবান”। [সূরা আল-মুমিনূন, আয়াত: ৮] আমানত ও অঙ্গীকার মানুষের দীন ও দুনিয়ার যাবতীয় কথা-বার্তা ও কাজ-কর্মকে শামিল করে। এ আমানত মানুষের যাবতীয় আচার-আচরণ, লেনদেন ও ওয়াদাসমূহকে অন্তর্ভুক্ত করে। এ আমানতের মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিকে রক্ষা করা। এ আমানতের বিশালতা ও গুরুত্বের কারণে পাহাড়-পর্বত, আসমান-জমিন এতো বড় সৃষ্টি হওয়া সত্বেও কুরআন বহন করতে অস্বীকার করে। আর এ মহান আমানত মানুষ গ্রহণ করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
“নিশ্চয় আমি আসমানসমূহ, জমিন ও পর্বতমালার প্রতি এ আমানত পেশ করেছি, অতঃপর তারা তা বহন করতে অস্বীকার করেছে এবং এতে ভীত হয়েছে। আর মানুষ তা বহন করেছে। নিশ্চয় সে ছিল অতিশয় যালিম, একান্তই অজ্ঞ”। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৭২]
এ কারণে আল্লাহ মানুষকে অতিশয় যালিম ও একান্তই অজ্ঞ বলে আখ্যায়িত করেছেন। কেননা সে বিশাল এক আমানত বহন করেছে। যদিও এ আমানত গ্রহণ করা সম্মান ও মর্যাদাকর; কিন্তু আমানতের যথাযথ হক আদায় করতে না পারা ও দায়িত্ব-কর্তব্যে অবহেলা করা অতিশয় যালিম ও অজ্ঞতার নামান্তর।
উম্মতের মধ্যে আমানত আদায়ে নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখা দিয়েছে। আমানতদারের আমানতকে আদায় না করে খিয়ানত করছে, কর্মচারীরা ও ভাড়াটিয়ারা চুক্তি অনুযায়ী কাজ না করে গাফলাতি করছে। এ জন্যই মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবনের শেষ সময়ে আমানতের ব্যাপারে কঠোরতা ও গুরুত্ব দিয়েছেন; বরং তিনি একথাও বলেছেন যে, উম্মতের মধ্য থেকে সর্বপ্রথম আমানতকে উঠিয়ে নেওয়া হবে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে দু’টি হাদীস বর্ণনা করেছেন। একটি তো আমি প্রত্যক্ষ করেছি এবং দ্বিতীয়টির জন্য অপেক্ষা করছি। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন যে, আমানত মানুষের অন্তর্মূলে অধোগামী হয়, তারপর তারা কুরআন থেকে জ্ঞান অর্জন করে, এরপর তারা নবীর সুন্নাহ থেকে জ্ঞান অর্জন করে” (অর্থাৎ এভাবে তাদের অন্তরের আমানত বৃদ্ধি পায়)। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে আমানত তুলে নেওয়া সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন, “যে ব্যক্তিটি (ঈমানদার) এক পর্যায়ে ঘুমানোর পর তার অন্তর থেকে আমানত তুলে নেওয়া হবে। তখন একটি বিন্দুর মতো চিহ্ন অবশিষ্ট থাকবে। পুনরায় ঘুমাবে, তখন আবার উঠিয়ে নেওয়া হবে। অতঃপর তার চিহ্ন ফোস্কার মত অবশিষ্ট থাকবে যেমন তোমার পায়ের উপর গড়িয়ে পড়া অঙ্গার সৃষ্ট চিহ্ন, যেটিকে তুমি ফোলা মনে করবে, অথচ তার মধ্যে আদৌ কিছু নেই। মানুষ লেনদেন করবে বটে; কেউ আমানত আদায় করবে না। তারপর লোকেরা বলাবলি করবে যে, অমুক বংশে একজন আমানতদার লোক রয়েছে। সে ব্যক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করা হবে যে, সে কতোই না বুদ্ধিমান, কতই না বিচক্ষণ, কতই না বীর? অথচ তার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমানও থাকবে না”। [মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৪৯৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪৩।]
আমানতের ফযীলত:
যদি আমানত সম্পর্কে আলাদা কোনো ফযিলত বর্ণিত নাও হতো, তবুও আমানতদারের প্রতি মানুষের অন্তর স্বাভাবিকভাবেই ঝুকে পড়তো এবং এর প্রয়োজনীয়তার নিরিখে আমানতদারকে ভালোবাসতো ও সম্মান করতো। কেনই বা করবে না? এটি তো আল্লাহর আদেশ মান্য করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
“নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত রাসূল”। [সূরা আশ-শুআ‘রা, আয়াত: ১০৭]
আর এটিই ছিলো সর্বোত্তম যুগের (রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরে তিন যুগের) মানুষের বৈশিষ্ট্য। ইমরান ইবন হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“তোমাদের মধ্যে আমার যুগের লোকেরাই সর্বোত্তম, তারপর এর পরবর্তী যুগের লোকেরা, তারপর এদের পরবর্তী যুগের লোকেরা। তারপর এমন লোকেদের আবির্ভাব হবে, তারা সাক্ষ্য দিবে অথচ তাদের সাক্ষ্য চাওয়া হবে না, তারা খিয়ানতকারী হবে, তাদের আমানতদার মনে করা হবে না”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৪২৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৫৩৫।]
মুসলিমের জীবনে আমানতের অপরিসীম গুরুত্ব থাকায় ইসলামী শরী‘আত এ গুণে গুণান্বিত হতে নির্দেশ দিয়েছে এমনকি খিয়ানতকারীর সাথেও রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“যে ব্যক্তি তোমার কাছে আমানত রেখেছে তুমি তার সে আমানত আদায় করে দাও আর তোমার সঙ্গে যে খিয়ানত করেছে তার সাথে তুমি খিয়ানত করবে না”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৫৩৪; তিরমিযী, হাদীস নং ১২৬৪। ইমাম তিরমিযী রহ. হাদীসটিকে হাসান গরীব বলেছেন।]
আমানতের খিয়ানত করা মুনাফিকের আলামত:
উপরোক্ত আলোচনা থেকে একথা স্পষ্টভাবে জানতে পারলাম যে, আমানত কীভাবে মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে গণ্য; বরং শ্রেষ্ঠ মুমিন হলো পাক-পবিত্র মন ও উঁচু হিম্মতের অধিকারী হচ্ছেন আমানতদারগণ। এর বিপরীতে সবচেয়ে নিকৃষ্ট, রুগ্ন ও দুর্বল মনের অধিকারী হলো যারা খিয়ানতকারী ও গাদ্দার। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“মুনাফিকের আলামত তিনটি: যখন কথা বলে মিথ্যা বলে, ওয়াদা করলে ভঙ্গ করে এবং আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে”। [মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৯।]
“কোনো ব্যক্তির গুঞ্জন ধ্বনিতে তোমাদেরকে যেন আশ্চর্য না করে; বরং যে ব্যক্তি আমানত আদায় করে এবং মানুষের সম্মান বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকে সেই মূলত পুরুষ”। [বায়হাকী, আস-সুনানুল আল-কাবীর, হাদীস নং ১২৬৯৫।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/414/11
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।