hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহিমান্বিত জীবনের শেষ একশ দিনের অসিয়্যতসমূহ

লেখকঃ সালেহ ইবন আব্দুর রহমান আল-হুসাইন, আব্দুল আযীয ইবন আব্দুল্লাহ আল-হাজ

১২
দশম অসিয়্যত: ইয়াহূদী ও খৃস্টানদেরকে আরব উপদ্বীপ থেকে বের করে দেওয়া
১- ইমাম বুখারী ও মুসলিম রহ. ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন,

«يَوْمُ الخَمِيسِ وَمَا يَوْمُ الخَمِيسِ؟ ثُمَّ بَكَى حَتَّى خَضَبَ دَمْعُهُ الحَصْبَاءَ، فَقَالَ : اشْتَدَّ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَعُهُ يَوْمَ الخَمِيسِ، وَأَوْصَى عِنْدَ مَوْتِهِ بِثَلاَثٍ : «أَخْرِجُوا المُشْرِكِينَ مِنْ جَزِيرَةِ العَرَبِ، وَأَجِيزُوا الوَفْدَ بِنَحْوِ مَا كُنْتُ أُجِيزُهُمْ، وَنَسِيتُ الثَّالِثَةَ، وَقَالَ يَعْقُوبُ بْنُ مُحَمَّدٍ، سَأَلْتُ المُغِيرَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ جَزِيرَةِ العَرَبِ : فَقَالَ مَكَّةُ، وَالمَدِينَةُ، وَاليَمَامَةُ، وَاليَمَنُ، وَقَالَ يَعْقُوبُ وَالعَرْجُ أَوَّلُ تِهَامَةَ» .

“বৃহস্পতিবার! হায় বৃহস্পতিবার! এরপর তিনি কাঁদতে শুরু করলেন, এমনকি তাঁর অশ্রুতে (জমিনের) কঙ্করগুলো সিক্ত হয়ে গেলো আর তিনি বলতে লাগলেন, বৃহস্পতিবারে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রোগ যাতনা বেড়ে যায়। অবশেষে তিনি মারা যাওয়ার সময় তিনটি বিষয়ে অসিয়্যত করেন, মুশরিকদেরকে আরব উপদ্বীপ থেকে বিতাড়িত করো, প্রতিনিধি দলকে আমি যেরূপ উপঢৌকন দিয়েছি তোমরাও অনুরূপ দিও। (বর্ণনাকারী বলেন) তৃতীয় অসিয়্যতটি আমি ভুলে গিয়েছি। আবু আব্দুল্লাহ রহ. বলেন, ইবন মুহাম্মাদ ও ইয়াকূব রহ. বলেন, আমি মুগীরা ইবন আব্দুর রহমানকে জাযীরাতুল আরব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি বললেন, তাহলো মক্কা, মদীনা ইয়ামামা ও ইয়ামেন। ইয়াকূব রহ. বলেন, তিহামা আরম্ভ হলো ‘আরজ থেকে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩০৫৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬৩৭।]

হাদীসে উল্লিখিত ইয়ামেন দ্বারা মক্কার দক্ষিণাঞ্চলকে বুঝানো হয়েছে। এখানে ইয়ামান দ্বারা ইয়ামেন দেশ যার রাজধানী সান‘আ নির্দিষ্ট নয়, যা অচিরেই আগত ইমাম শাফে‘ঈ রহ.-এর কথায় স্পষ্ট বুঝা যায়।

২- ইমাম মুসলিম জাবির ইবন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমাকে উমার ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেছেন, তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন,

«لَأُخْرِجَنَّ الْيَهُودَ، وَالنَّصَارَى مِنْ جَزِيرَةِ الْعَرَبِ حَتَّى لَا أَدَعَ إِلَّا مُسْلِمًا» .

“নিশ্চয় আমি ইয়াহূদী ও খৃস্টানদেরকে আরব উপদ্বীপ থেকে বহিষ্কার করবো, পরিশেষে মুসলিম ব্যতীত অন্য কাউকে এখানে থাকতে দেবো না”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৭৬৭।]

৩- ইমাম আহমদ আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সর্বশেষ অঙ্গীকার ছিলো,

«لَا يُتْرَكُ بِجَزِيرَةِ الْعَرَبِ دِينَانِ » .

“আরব উপদ্বীপে একই সাথে দু’টি দীন অবশিষ্ট থাকতে পারে না”। [মুসনাদ আহমদ, হাদীস নং ২৬৩৫২।]

আরব উপদ্বীপ ইসলামের আঙ্গিনা, দীনের প্রথম গৃহ ও মুসলিমের কিবলা। এখান থেকেই তাওহীদের আলো বিকিরণ ছড়িয়েছে এবং এ ভূমিতেই ইসলাম সর্বশেষে আশ্রয় নিবে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«إِنَّ الْإِسْلَامَ بَدَأَ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ غَرِيبًا كَمَا بَدَأَ، وَهُوَ يَأْرِزُ بَيْنَ الْمَسْجِدَيْنِ، كَمَا تَأْرِزُ الْحَيَّةُ فِي جُحْرِهَا» .

“অপরিচিতের বেশে ইসলাম শুরু হয়েছিল, অচিরেই তা আবার অপরিচিত অবস্থায় ফিরে যাবে সাপ যেমন সংকুচিত হয়ে তার গর্তে প্রবেশ করে তদ্রূপ ইসলামও দুই মসজিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪৬।] এজন্যই সুউচ্চ প্রজ্ঞা ও হিকমত হলো আরব উপদ্বীপে ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো দীন অবশিষ্ট না থাকা; চাই কোনো ব্যক্তির অবশিষ্ট থাকা বা অন্য ধর্মের স্থাপনা বা সংস্থা অবশিষ্ট থাকা।

উপরোক্ত হাদীসে বর্ণিত জাযিরাতুল আরব দ্বারা উদ্দেশ্য হলো প্রায়, বর্তমান সৌদি আরবের সীমারেখা। ইমাম ইবন কুদামা ‘আল-মুগনী’ তে বলেন, “মদীনা ও তার আশ-পাশের এলাকায় কাফিরদের বসবাস করা নিষেধ আর তা হলো, মক্কা, ইয়ামামাহ, খাইবার, ইয়াম্বু‘, ফিদাক ও তার আশ-পাশের এলাকা। [কুরা ও হিজর ও তার আশেপাশের এলাকা।] এটি ইমাম শাফে‘ঈ রহ. এর অভিমত। কেননা পূর্ববর্তী শাসক ও আলেমরা তাইমা ও ইয়ামান থেকে কাফির ও মুশরিকদেরকে উচ্ছেদ করেন নি”। অতঃপর ইবন কুদামা বলেন, “উক্ত হাদীস মোতাবেক জাযিরাতুল আরব বলতে হিজাযকে বুঝানো হয়েছে”।

ইমাম বায়হাকী ‘মা‘রিফাতুস-সুনান ওয়াল-আসার’ এ বলেছেন, ‘হিজায বলতে মক্কা, মদীনা, ইয়ামামা ও এর আশ-পাশের সমস্ত এলাকাকে বুঝায়। কেননা তাদেরকে হিজাযে বসবাসের অনুমতি দেওয়া রহিত হয়ে গেছে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাইবারের অধিবাসীদের সাথে লেনদেনের ক্ষেত্রে এ শর্ত করেছেন যে,

«أُقِرُّكُمْ مَا أَقَرَّكُمُ اللَّهُ» .

“আল্লাহ তোমাদেরকে যতদিন অবশিষ্ট থাকার অনুমতি দিবেন ততদিন আমিও তোমাদেরকে তাতে বহাল রাখব”। [মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং ৮৩১।] (অর্থাৎ তোমাদেরকে সাময়িকভাবে এ চুক্তির অধীন করা হলো, স্থায়ীভাবে নয়, কারণ আল্লাহ তোমাদেরকে বের করার নির্দেশনা দিলে তোমরা বের হয়ে যাবে)। অতঃপর কাফেরদেরকে হিজায থেকে উচ্ছেদ করার জন্য তিনি আমাদেরকে আদেশ দিয়েছেন। এভাবেই ইমাম বায়হাকী রহ. আলোচনা আরো এগিয়ে নিলেন......। তিনি আরো বললেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক তাদেরকে উচ্ছেদ দ্বারা হয়ত স্থায়ীভাবে বসবাস না করাকে বুঝানো হয়েছে। আবার এটাও হতে পারে যে, তিনি বলেছেন, “আরব ভূমিতে দু’টি দীন অবশিষ্ট থাকতে পারবে না”। এ হাদীস যদি সহীহ হয় তবে তাদেরকে উচ্ছেদের উদ্দেশ্য হলো, আরবে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী দু’টি দীন থাকতে পারে না’।

ইমাম শাফে‘ঈ রহ. বলেছেন, ‘ইয়ামানের আহলে যিম্মাকে সেখান থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে কেউ একথা বলে নি, সেখানে যিম্মি ছিলো। ইয়ামেন হিজাযের অন্তর্ভুক্ত নয়’।

ইবনুল কাইয়্যেম রহ. ‘আহকামু আহলিয যিম্মা’ কিতাবে বলেন, ‘কাফিররা হয়ত যুদ্ধকারী হবে অথবা চুক্তিবদ্ধ হবে। আর চুক্তিবদ্ধরা আবার তিন ধরণের: আহলে যিম্মা, আহলে হুদনা এবং আহলে আমান। তিনি আহলে আমান সম্পর্কে বলেন, “নিরাপত্তা প্রার্থী হলো: যে ব্যক্তি মুসলিমদের দেশে স্থায়ী বসবাস ব্যতীত সাময়িকভাবে বসবাসের জন্য আবেদন পেশ করে। তারা আবার চার প্রকারের: প্রতিনিধিদল, ব্যবসায়ী ও ভাড়াটিয়া। তাদের নিকট ইসলাম ও কুরআন পেশ করা হবে। তারা ইচ্ছা করলে ইসলামে প্রবেশ করবে, আর ইসলাম গ্রহণ না করলে দেশে ফিরে যাবে। এর চতুর্থ প্রকার হলো ভ্রমণ বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ইসলামী রাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনাকারী। এ ধরণের লোকদের হুকুম হলো, তাদেরকে আক্রমণ করা যাবে না, হত্যা করা যাবে না ও তাদের থেকে জিযিয়া গ্রহণ করা যাবে না। সেখানে ভাড়ায় বসবাসকারীর নিকট ইসলাম ও কুরআন পেশ করা হবে। যদি তারা ইসলামে প্রবেশ করে তবে তো ভালো, আর যদি নিজের দেশে ফিরে যেতে চায় তাহলে নিরাপদে তাকে সেখানে যেতে দিতে হবে। সেখানে পৌঁছার আগে তার বিরুদ্ধে কোনো কিছু করা যাবে না। তারা নিজ দেশে পৌঁছে গেলে তখন সে আহলে হরব তথা যুদ্ধকারী হিসেবে গণ্য হবে’।

আল্লামা ইবন উসাইমীন রহ. শরহে সহীহ মুসলিমে (পাণ্ডুলিপি) তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, আহলে কিতাব ইয়াহূদী ও নাসারাদেরকে কর্মচারী হিসেবে কাজ করানো যাবে কি? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, তাদের দ্বারা কাজ করানো যাবে, তবে তাদেরকে স্থায়ীভাবে বসবাস ও নাগরিক করা যাবে না। জাযিরাতুল আরবে এটি করা নিষেধ। তবে তারা যদি ব্যবসা বা অস্থায়ীভাবে বসবাস করে কাজ করে তাতে কোনো অসুবিধে নেই’।

এ মতের দলীল হলো ইবন খুযাইমা তার সহীহ ইবন খুযাইমাতে জাবির রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীস, তিনি আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণী সম্পর্কে বলেছেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِنَّمَا ٱلۡمُشۡرِكُونَ نَجَسٞ فَلَا يَقۡرَبُواْ ٱلۡمَسۡجِدَ ٱلۡحَرَامَ بَعۡدَ عَامِهِمۡ هَٰذَاۚ﴾ [ التوبة : ٢٨ ]

“হে ঈমানদারগণ, নিশ্চয় মুশরিকরা নাপাক, সুতরাং তারা যেন এ বছরের পর মসজিদুল হারামের নিকটবর্তী না হয়”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ২৮] উপরোক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় জাবির রা. বলেন, ‘তবে দাস-দাসী বা আহলে যিম্মা হলে অসুবিধে নেই’ অর্থাৎ তাদের সাথে মুসলিমের নিরাপত্তার চুক্তি রয়েছে। এখানে আহলে যিম্মা দ্বারা ফিকাহ শাস্ত্রের পরিচিত যিম্মী উদ্দেশ্য নয়। অতএব, হাদীসে উল্লিখিত ইয়াহূদী ও নাসারাদেরকে জাযিরাতুল আরব থেকে বের করে দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো, মুশরিকদেরকে জাযিরাতুল আরবে স্থায়ীভাবে আবাসন দেওয়া নিষেধ, তবে সাময়িকভাবে বাস করা বা ব্যবসা-বাণিজ্য করা ইত্যাদি নিষেধ নয়, যা বিদেশী কাফিররা জাযিরাতুল আরবে করে থাকে।

তাদেরকে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে দেওয়া যেহেতু নিষেধ, সেহেতু অমুসলিমদের কোনো ধর্মীয় স্থাপনা বা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা আরো কঠোরভাবে নিষেধ যেমন, ইবাদতের গৃহ নির্মাণ, অমুসলিমের ধর্মীয় দাওয়াহ সেন্টার স্থাপন করা ইত্যাদি নিষেধ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন