hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শয়তান থেকে বাঁচার কৌশল

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১১
টেলিভিশনের অপব্যহার
বর্তমান যুগে ইলেক্ট্রিক মিডিয়ার মাধ্যমে খারাপ কাজ ছড়িয়ে দিয়ে শয়তান তার উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে টেলিভিশন। বিজ্ঞানের সৃষ্টি হিসেবে টেলিভিশনের কোন দোষ নেই। তবে এর ব্যবহারের উপর নির্ভর করছে তার ভালো-মন্দের দিক। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, টেলিভিশনের মাধ্যমে যা সম্প্রচার করা হচ্ছে তার মধ্যে ভালোর চেয়ে খারাপই বেশি থাকে। যেমন, টেলিভিশনের অপব্যবহারের কয়েকটি ধ্বংসাত্মক দিক হচ্ছে,

১. অবৈধ ছবি দেখা।

২. গায়রে মাহরাম মেয়েদের কণ্ঠ শোনা।

৩. পুরুষরা গায়রে মাহরাম মহিলাদের দেখা।

৪. অশ্লীলতার বিস্তার।

৫. বিজাতীয় অনুকরণ।

৬. সময়ের অপচয়।

৭. লজ্জাশীলতা উঠে যাওয়া।

৮. গান-বাজনার প্রতি আসক্তি।

৯. ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার দিকে মনোযোগ কমে যাওয়া।

১০. যুবক-যুবতীদের চরিত্র নষ্ট হওয়া।

১১. আল্লাহর ইবাদাতে গাফলতি করা।

১২. মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে মিডিয়া সন্ত্রাস চালিয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

এছাড়াও আরো অনেক কবীরা গোনাহ আছে, যা টেলিভিশনের মাধ্যমে মানুষ অর্জন করছে; অথচ এর পরিণাম খুবই ভয়াবহ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّشْتَرِيْ لَهْوَ الْحَدِيْثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيْلِ اللهِ بِغَيْرِ عِلْمٍۗ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًاؕ اُولٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِيْنٌ﴾

মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে, যারা লোকদেরকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য অজ্ঞতাবশত অমূলক কাহিনী ক্রয় করে নেয় এবং আল্লাহর দেখানো পথকে ঠাট্টা-বিদ্রূপের বস্তু বানিয়ে নেয়। (জেনে রেখো) এদের জন্যই রয়েছে অপমানজনক শাস্তি। [সূরা লুক্বমান- ৬।]

টেলিভিশন মানুষের লজ্জা উঠিয়ে দিয়েছে :

মহিলাদেরকে বেপর্দা বানিয়ে বেহায়াপনা প্রচারের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে টেলিভিশন। অথচ লজ্জা ঈমানের একটি শাখা। এটা মানুষের চারিত্রিক অলংকার। নবী ﷺ বলেন-

اَ لْحَيَاءُ شُعْبَةٌ مِّنَ الْاِيْمَانِ

লজ্জা ঈমানের অঙ্গ। [সহীহ বুখারী, হা/৯; সহীহ মুসলিম, হা/১৬১; নাসাঈ, হা/৫০০৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/৯৭০৮।]

টেলিভিশনের মাধ্যমে গান-বাজনার বিস্তার ঘটছে :

গান-বাজনা টেলিভিশনের একটি নিয়মিত প্রোগাম। এমনিতেই তো এটা হারাম। কিন্তু টেলিভিশন যেহেতু বেহায়াপনায় পূর্ণ। এজন্য এসব গান-বাজনা বেহায়া মেয়েদের কণ্ঠে পরিবেশন করা হয়। যেসব মেয়েকে কণ্ঠ দিতে দেখা যায় তারাও আবার বেপর্দা যুবতী। গান অন্তরে মুনাফিকীর বীজ বপন করে।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন,

اَ لْغِنَاءُ يُنْبِتُ النِّفَاقَ فِى الْقَلْبِ

গান অন্তরে মুনাফিকী জন্ম দেয়। [সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হা/২১৫৩৫।]

মোটকথা, টেলিভিশনের যত গোনাহ আছে তন্মধ্যে উলেলখযোগ্য গোনাহ হলো, গান-বাজনার গোনাহ। অধিকাংশ টেলিভিশনে দর্শক এ মারাত্মক গুনাহে লিপ্ত রয়েছে। কখনো তাদের ঘর থেকে গানের এমন সুর ওঠে যে, পরস্পরের কথাও শুনা যায় না। এমনও দেখা যায় যে, একদিকে মসজিদে নামায শুরু হয়েছে আর অন্য দিকে টেলিভিশন চলছে। এটা কোন মুসলিমের কাজ হতে পারে না। মুসলিম হয়ে কুফুরী কাজের ব্যাপারে তো লজ্জিত হওয়া উচিত।

টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রতিবেশীর অধিকার নষ্ট হয় :

অনেকে ভলিয়ম বাড়িয়ে দিয়ে গান-বাজনা শুনতে থাকে- এটা আশপাশের লোকদের জন্যও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অথচ প্রতিবেশী চাই সে মুসলিম হোক অথবা অমুসলিম হোক ইসলাম তার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। হাদীসে এসেছে,

عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ اَنَّ رَسُولَ اللهِ - - قَالَ : لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ لَا يَأْمَنُ جَارُهٗ بَوَائِقَهٗ

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যার প্রতিবেশী তার অনিষ্ট থেকে নিরাপদ থাকতে পারে না, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। [সহীহ মুসলিম, হা/১৮১।]

عَنْ اَبِي شُرَيْحٍ اَنَّ النَّبِيَّ قَالَ وَاللهِ لَا يُؤْمِنُ وَاللهِ لَا يُؤْمِنُ وَاللهِ لَا يُؤْمِنُ قِيلَ وَمَنْ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ الَّذِي لَا يَأْمَنُ جَارُهٗ بَوَايِقَهٗ

আবু শুরাইহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেছেন, আল্লাহর শপথ, সে মুমিন নয়! আল্লাহর কসম, সে মুমিন নয়! আল্লাহর কসম, সে মুমিন নয়! সাহাবারা জিজ্ঞেস করেন, কে- হে আল্লাহর রাসূল? তখন নবী ﷺ উত্তরে বললেন, যার অনিষ্টতা থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়। [সহীহ বুখারী, হা/৬০১৬।]

টেলিভিশন দেখতে দেখতে অন্তরে মরিচা পড়ে যায় :

মানুষ যখন প্রবৃত্তির অনুসরণ করে এবং অনবরত পাপ কাজে লিপ্ত থাকে তখন তার অন্তরে মরিচা পড়ে যায়। তাকে ভালো উপদেশ দিলেও সে তা কাজে লাগাতে চায় না। এমনকি নানা যুক্তি দেখিয়ে সে তার পাপগুলোকে বৈধ করে নিতে চায়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন,

﴿اَفَرَاَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ اِلٰهَهٗ هَوَاهُ وَاَضَلَّهُ اللهُ عَلٰى عِلْمٍ وَّخَتَمَ عَلٰى سَمْعِهٖ وَقَلْبِهٖ وَجَعَلَ عَلٰى بَصَرِهٖ غِشَاوَةًؕ فَمَنْ يَّهْدِيْهِ مِنْ ۢبَعْدِ اللهِؕ اَفَلَا تَذَكَّرُوْنَ﴾

তুমি কি ঐ ব্যক্তির প্রতি লক্ষ্য করেছ, যে তার প্রবৃত্তিকে নিজের উপাস্য বানিয়ে নিয়েছে? আল্লাহ জেনে শুনেই তাকে বিভ্রান্ত করেছেন এবং তার কর্ণ ও হৃদয়ে মোহর মেরে দিয়েছেন; আর তার চক্ষুর উপর রেখে দিয়েছেন আবরণ। অতএব আল্লাহর পর কে আছে, যে তাকে হেদায়াত করবে? তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না? [সূরা জাসিয়া- ২৩।]

গোনাহের প্রতি ঘৃণাবোধ মন থেকে মুছে যায় :

গোনাহ মুসলিমের নেক কাজকেও ধ্বংস করে দেয়। এজন্য গোনাহ ছাড়ার প্রতি কুরআন ও হাদীসে যতটুকু জোর দেয়া হয়েছে, এত জোর কোন নফল নামাযের জন্যও দেয়া হয়নি। যেমন : আল্লাহ তা’আলা বলেন-

﴿وَذَرُوْا ظَاهِرَ الْاِثْمِ وَبَاطِنَهٗ﴾

তোমরা প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য গোনাহ ছাড়ো। [সূরা আনআম- ১২০।]

﴿وَلَا تَقْرَبُوا الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ﴾

তোমরা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অশ্লীলতার কাছেও যেয়ো না। [সূরা আনআম- ১৫১।]

অনেক হাদীসে গোনাহ থেকে বেঁচে থাকার জন্য তাগিদ করা হয়েছে। প্রিয় নবী ﷺ বলেন,

وَالْمُهَاجِرُ مَنْ هَجَرَ مَا نَهَى اللهُ عَنْهُ

প্রকৃত মুহাজির সে, যে আল্লাহর নিষেধকৃত কাজ থেকে দূরে থাকে। [সহীহ বুখারী, হা/১০; আবু দাউদ, হা/২৪৮৩; নাসাঈ, হা/৪৯৯৬; ইবনে মাজাহ, হা/৩৯৩৪।]

গোনাহ না ছেড়ে যে লোক ইবাদাত করে তার উদাহরণ ঐ ব্যক্তির মতো, যে নড়বড়ে একটি বিল্ডিং-এর ফাউন্ডেশন মজবুত করার চিন্তা না করে তার ভাঙ্গা দেয়ালগুলোকে রঙ করার কাজে ব্যস্ত থাকে।

টেলিভিশন মূল্যবান সময় নষ্ট করে :

সময় মুমিনের এক মূল্যবান সম্পদ। কোন মুমিন এ সম্পদকে অবহেলায় নষ্ট করতে পারে না। কেননা মুমিনের অন্যতম গুণ হলো অনর্থক বিষয়াবলি থেকে দূরে থাকা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা কুরআন মাজীদে বলেন,

﴿قَدْ اَفْلَحَ الْمُؤْمِنُوْنَ اَ لَّذِيْنَ هُمْ فِيْ صَلَاتِهِمْ خَاشِعُوْنَ وَالَّذِيْنَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُوْنَ﴾

অবশ্যই মুমিনগণ সফলকাম হয়েছে, যারা নিজেদের সালাতে বিনয় ও নম্র এবং যারা অনর্থক ক্রিয়াকলাপ হতে বিরত থাকে। [সূরা মু’মিনূন- ১, ৩।]

لَغْوٌ (লাগভুন) বলতে এমন প্রত্যেকটি কথা ও কাজকে বুঝানো হয়, যা একেবারেই অপ্রয়োজনীয় ও অর্থহীন এবং যাতে কোন ফায়দা হয় না। তাছাড়া যেগুলোর পরিণাম কল্যাণময় নয় এবং যেগুলোর উদ্দেশ্যও ভালো নয়- তা সবই ‘লাগভুন’ এর অন্তর্ভুক্ত। আয়াতের পূর্ণ বক্তব্য হচ্ছে, মুমিন অনর্থক ও বেহুদা কথা ও কাজে কান দেয় না, সেদিকে দৃষ্টি দেয় না এবং সে ব্যাপারে কোন প্রকার কৌতুহলও প্রকাশ করে না। যেখানে এ ধরণের কথাবার্তা হতে থাকে, সেখানে সে অংশগ্রহণ করে না। আর যদি কোথাও এসবের মুখোমুখি হয়েও যায়, তাহলে তা এড়িয়ে চলে যায় অথবা অন্ততপক্ষে তা থেকে সম্পর্কহীন হয়ে যায়। এ ছোট্ট ও সংক্ষিপ্ত বাক্যটিতে যে কথা বলা হয়েছে তা আসলে মুমিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলির অন্তর্ভুক্ত। মুমিন এমন এক ব্যক্তি, যার মধ্যে সবসময় দায়িত্বানুভূতি সজাগ থাকে, সে মনে করে দুনিয়াটা আসলে একটা পরীক্ষাগৃহ। যে জিনিসটিকে জীবন, বয়স, সময় ইত্যাদি বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে, সেটি আসলে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ। তাকে পরীক্ষা করার জন্য এ সময়টি দেয়া হয়েছে। যে ছাত্র পরীক্ষার হলে বসে নিজের প্রশ্নপত্রের জবাব লিখে যাচ্ছে, সে যেমন নিজের কাজকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে পূর্ণ ব্যস্ততা সহকারে তার মধ্যে নিজেকে নিমগ্ন করে দেয়, ঠিক তেমনি মুমিন ব্যক্তিও গুরুত্বপূর্ণ কাজে সময় কাটায়। ছাত্রটি যেমন এ ঘণ্টাগুলোর একটি সেকেন্ডও অহেতুক কাজে নষ্ট করতে চায় না, ঠিক তেমনি মুমিনও দুনিয়ার সময়কে এমনসব কাজে ব্যয় করে, যা পরিণামের দিক দিয়ে কল্যাণকর। এমনকি সে খেলাধুলা ও আনন্দ উপভোগের ক্ষেত্রেও এমনসব জিনিস নির্বাচন করে, যা নিছক সময় কাটানোর কারণ হয় না বরং কোন অপেক্ষাকৃত ভালো উদ্দেশ্য পূর্ণ করার জন্য তাকে তৈরি করে। তার দৃষ্টিতে সময় অবহেলা করার জিনিস নয় বরং ব্যবহার করার জিনিস। এছাড়াও মুমিন ব্যক্তি সবসময় শান্ত প্রকৃতি এবং পবিত্র-পরিচ্ছন্ন স্বভাব ও সুস্থ রুচিসম্পন্ন গুণের অধিকারী হয়। সে ফলদায়ক কথা বলতে পারে, কিন্তু অহেতুক কথা বলতে পারে না। সে ব্যঙ্গ, কৌতুক ও হালকা পরিহাস করতে পারে, কিন্তু ঠাট্টা-তামাসায় মেতে উঠতে পারে না, বাজে ঠাট্টা-মস্করা সহ্য করতে পারে না এবং আনন্দ-ফূর্তির কথাবার্তাকে নিজের পেশায় পরিণত করতে পারে না। মুমিনের কান গালি-গালাজ, পরনিন্দা, পরচর্চা, অপবাদ, মিথ্যা কথা, গান-বাজনা ও অশ্লীল কথাবার্তা থেকে নিরাপদ থাকবে। যে সমাজে এসব চলে ঐ সমাজে সে শান্তিতে বসবাস করতে পারে না।

নশ্বর এ জীবনের হাতেগোণা কয়েকটি শ্বাস প্রশ্বাসই মানুষের জীবনের মূল পুঁজি। এর প্রতিটি সেকেন্ড মানুষের জন্য সবচেয়ে দামী। প্রিয় নবী ﷺ বলেন-

إِنَّ مِنْ حُسْنِ اِسْلَامِ الْمَرْءِ، تَرَكُهٗ مَالَا يَعْنِيْهِ

একজন মুসলিমের দ্বীনের সৌন্দর্য হলো অযথা কাজ ছেড়ে দেয়া। [তিরমিযী, হা/২৩১৭; মু‘জামুল কাবীর লিত ত্বাবারানী, হা/২৭৫।]

হাদীসে আরো ইরশাদ হয়েছে,

عَنْ مُعَاذِ بن جَبَلٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : لَيْسَ يَتَحَسَّرُ اَهْلُ الْجَنَّةِ اِلَّا عَلٰى سَاعَةٍ مَرَّتْ بِهِمْ لَمْ يَذْكُرُوا اللهَ فِيْهَا

মু‘আয ইবনে জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, জান্নাতবাসীরা একটা ব্যাপার ছাড়া আর কোন ব্যাপারে আফসোস করবে না, যে ব্যাপারে আফসোস করবে তা হলো- দুনিয়ার ঐসব মুহূর্ত যার মধ্যে তারা আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন থেকেছে। [মু‘জামুল কাবীর লিত ত্বাবারানী, হা/১৬৬০৮।]

উদাসীন মুসলিম যার কোন দিন টেলিভিশন দেখা ছাড়া অতিবাহিত হয় না তার একটু বসে চিন্তা করা উচিত যে, এর মাধ্যমে সে পরকালীন জীবনের জন্য কত বড় আফসোসের কারণ তৈরি করছে।

শারীরিক ক্ষতি :

অনেকেই দীর্ঘ রাত জেগে টেলিভিশন দেখে থাকে। শয়তান এ কাজের মাধ্যমে কয়েকটি ফায়দা হাসিল করে :

১. অনেক রাত জেগে থাকার কারণে এই বান্দা ফজরের সময় ঘুম থেকে উঠতে পারে না। যার ফলে তার ফরয নামায কাযা হয়ে যায়।

২. যে সময়টাকে আল্লাহ তা‘আলা ঘুমের জন্য নির্ধারণ করেছিলেন, সেসময় জাগ্রত থাকার কারণে সে শরীরেরও ক্ষতি করে। শারীরিক সুস্থতা এবং নিরাপদ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অনেক বড় নিয়ামত। কিন্তু অধিকাংশ লোক এ মূল্যবান নিয়ামতের সদ্ব্যবহার করে না। বরং এ ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। হাদীসে এসেছে-

عَنْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ  : نِعْمَتَانِ مَغْبُوْنَ فِيْهِمَا كَثِيْرٌ مِّنَ النَّاسِ اَلصِّحَّةُ وَالْفَرَاغُ

ইবনে আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, দুটি নিয়ামত এমন রয়েছে যে ব্যাপারে অনেক লোকই উদাসীন। একটি হচ্ছে, সুস্থতা; আর অপরটি হচ্ছে, অবসর। [সহীহ বুখারী, হা/৬০৪৯।]

পরিবারকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া হয় :

পরিবার-পরিজন আল্লাহর এক বড় নিয়ামত। পরিবার-পরিজনকে ভরণ-পোষণ দেয়ার জন্য একজন মানুষ অক্লান্ত পরিশ্রম করে। কিন্তু এই পরিবার-পরিজন যাতে জাহান্নামের উপযুক্ত না হয় সে দিকেও খেয়াল রাখার জন্য পরিবারের প্রধানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা কুরআন মাজীদে বলেন,

﴿يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا قُوْا اَ نْفُسَكُمْ وَاَهْلِيْكُمْ نَارًا وَّقُوْدُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ﴾

হে ঈমানদাররা! তোমরা নিজেদেরকে এবং নিজের পরিবারকে ঐ আগুন থেকে বাঁচাও, যার ইন্ধন হবে মানুষ এবং পাথর। [সূরা তাহরীম- ৬।]

আয়াতে বর্ণিত ‘আহলুন’ শব্দ দ্বারা স্ত্রী-পুত্র, দাস-দাসী সবাইকে বুঝানো হয়েছে। এ আয়াতের মাধ্যমে বলা হয়েছে যে, মুসলিমদের জন্য সব ফরজসমূহ নিজে শেখা এবং আয়ত্তাধীন লোকদেরকে শেখানো ওয়াজিব।

কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, অনেক পিতামাতা নিজেরাই তাদের পরিবারকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অধিকাংশ সময় অভিভাবকরা বাসাবাড়িতে অবস্থান করে না। এই সুযোগে তাদের পরিবারের লোকজন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই টেলিভিশন, মোবাইল ইত্যাদির মাধ্যমে পাপ কাজে জড়িয়ে পড়ে। ঐ সময় তারা নাচ-গান ও অশ্লীল ছবি দেখতে থাকে। যখন অভিভাবক আসার সময় হয় তখন বন্ধ করে দেয়। এভাবে তারা জাহান্নামের উপযুক্ত হচ্ছে। এজন্য পরিবার প্রধানের দায়িত্ব হলো এসব পাপ থেকে যাতে তারা দূরে থাকতে পারে সে ব্যবস্থা করা।

যেসব ছেলেমেয়েরা অন্যায় কাজে জড়িয়ে পড়ে তারা সাধারণত পিতামাতার কথা শুনতে চায় না। এ জন্য মূলত দায়ী অভিভাবকরা। তারা যদি ছোটকাল থেকেই সন্তানদেরকে দ্বীন শিক্ষা দিতেন এবং পাপমুক্ত পরিবেশে তাদেরকে গড়ে তুলতেন তাহলে তারা অবশ্যই পিতামাতার কথা শুনত এবং তাদের সাথে সম্মানজনক আচরণ করত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন