hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শয়তান থেকে বাঁচার কৌশল

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

হাদীসে উল্লেখিত শয়তানের বৈশিষ্ট্য
বিশ্বনবী মুহাম্মাদ ﷺ আমাদেরকে শয়তান সম্পর্কে অনেক তথ্য দিয়েছেন, যাতে আমরা শয়তানকে চিনতে পারি এবং তার কবল থেকে বাঁচতে পারি। নিচে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

শয়তান আল্লাহ সম্পর্কে সন্দেহ সৃষ্টি করে :

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ  : إِنَّ الشَّيْطَانَ يَأْتِيْ أَحَدَكُمْ فَيَقُوْلُ : مَنْ خَلَقَ السَّمَاءَ؟ فَيَقُولُ : اللهُ، فَيَقُوْلُ : مَنْ خَلَقَ الْأَرْضَ؟ فَيَقُوْلُ : اللهُ، فَيَقُوْلُ : مَنْ خَلَقَ اللهَ؟ فَإِذَا وَجَدَ ذٰلِكَ أَحَدُكُمْ، فَلْيَقُلْ : اٰمَنْتُ بِاللهِ وَرَسُوْلِهٖ

আবু হুরায়রা (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, শয়তান তোমাদের নিকট এসে বলে, আকাশ কে সৃষ্টি করেছেন? জমিন কে সৃষ্টি করেছেন? উত্তরে সে বলে, আল্লাহ। তখন সে আবার প্রশ্ন করে তাহলে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? যখন তোমাদের কারো মনে এমন ওয়াসওয়াসা আসবে তখন সে যেন বলে ‘‘আমি আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের উপর ঈমান এনেছি’’। [মুসনাদে আহমাদ, হা/৮৩৫৮।]

শয়তান মানুষের নাকের ভেতর রাত্রি যাপন করে :

عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ اَنَّ النَّبِيَّ قَالَ ‏ : ‏ اِذَا اسْتَيْقَظَ اَحَدُكُمْ مِنْ مَنَامِهٖ فَلْيَسْتَنْثِرْ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَبِيْتُ عَلٰى خَيَاشِيْمِهٖ

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সাঃ) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ ঘুম থেকে উঠবে সে যেন নাকে পানি দিয়ে তিনবার নাক ঝেড়ে নেয়। কেননা, শয়তান তার নাকের ভেতর রাত্রি যাপন করে। [সহীহ মুসিলম, হা/৪৫২।]

মানুষ ঘুমানোর সময় শয়তান মাথার চুলে গিঁট দেয় :

عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ اَنَّ رَسُوْلَ ا للهِ قَالَ : ‏ يَعْقِدُ الشَّيْطَانُ عَلٰى قَافِيَةِ رَأْسِ اَحَدِكُمْ اِذَا هُوَ نَامَ ثَلَاثَ عُقَدٍ، يَضْرِبُ عَلٰى مَكَانِ كُلَّ عُقْدَةٍ عَلَيْكَ لَيْلٌ طَوِيْلٌ فَارْقُدْ، فَاِنِ اسْتَيْقَظَ فَذَكَرَ اللهَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فَاِنْ تَوَضَّأَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فَاِنْ صَلَّى انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَاَصْبَحَ نَشِيْطًا طَيِّبَ النَّفْسِ، وَاِلَّا اَصْبَحَ خَبِيْثَ النَّفْسِ كَسْلَانَ‏

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন শয়তান তার ঘাড়ের পেছনের অংশে তিনটি গিঁট দেয়। প্রতি গিঁটে সে এ বলে চাপড়ায় যে, তোমার সম্মুখে আছে লম্বা রাত, অতএব তুমি ঘুমিয়ে থাকো। অতঃপর সে যদি সজাগ হয়ে আল্লাহকে মনে করে, একটি গিঁট খুলে যায়, পরে উযূ করলে আর একটি গিঁট খুলে যায়, অতঃপর নামায পড়লে আর একটি গিঁট খুলে যায়। তখন তার সকাল হয়, উৎফুল্ল মনে ও অনাবিল চিত্তে। অন্যথায় সে ভোরে উঠে অপবিত্র মন নিয়ে ও আলস্য সহকারে। [সহীহ বুখারী, হা/১১৪২।]

ফজরের সালাত আদায় না করলে শয়তান কানে প্রস্রাব করে দেয় :

عَنْ عَبْدِ ا للهِ قَالَ : ذُكِرَ عِنْدَ النَّبِيِّ رَجُلٌ فَقِيْلَ : مَا زَالَ نَائِمًا حَتّٰى اَصْبَحَ مَا قَامَ اِلَى الصَّلَاةِ،‏ فَقَالَ ‏ : بَالَ الشَّيْطَانُ فِيْ اُذُنِه

আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নবী ﷺ এর সম্মুখে এক লোক সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো- ভোর বেলা পর্যন্ত সে ঘুমিয়েই কাটিয়েছে, নামাযের জন্য জাগ্রত হয়নি। তখন নবী ﷺ বললেন, শয়তান তার কানে প্রস্রাব করে দিয়েছে। [সহীহ বুখারী, হা/১১৪৪।]

শয়তান নামাযের মধ্যে দৃষ্টি এদিক সেদিক ঘুরিয়ে দেয় :

عَنْ عَائِشَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ : سَأَلْتُ رَسُوْلَ ا للهِ عَنِ الْاِلْتِفَاتِ فِي الصَّلَاةِ فَقَالَ : ‏ ‏ هُوَ اخْتِلَاسٌ يَّخْتَلِسُهُ الشَّيْطَانُ مِنْ صَلَاةِ الْعَبْدِ

আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, (কোন একদিন) রাসূলুল্লাহ ﷺ কে আমি নামাযরত অবস্থায় এদিক ওদিক দৃষ্টিপাত করা প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করি। জবাবে তিনি বলেন, এটা (শয়তানের) থাবা; শয়তান বান্দার নামাযের মধ্যে এ থাবা দিয়ে থাকে। [সহীহ বুখারী, হা/৭৫১।]

শয়তান মানুষের নামাযে গোলমাল সৃষ্টি করে :

عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ اَنَّه صَلّٰى صَلَاةً فَقَالَ : ‏ ‏ اِنَّ الشَّيْطَانَ عَرَضَ لِيْ فَشَدَّ عَلَىَّ لِيَقْطَعَ الصَّلَاةَ عَلَىَّ فَأَمْكَنَنِي ا للهُ مِنْهُ، فَذَعَتُّه ، وَلَقَدْ هَمَمْتُ اَنْ أُوْثِقَه اِلٰى سَارِيَةٍ حَتّٰى تُصْبِحُوْا فَتَنْظُرُوْا اِلَيْهِ فَذَكَرْتُ قَوْلَ سُلَيْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ : ﴿رَبِّ هَبْ لِيْ مُلْكًا لَّا يَنْۢبَغِيْ لِأَحَدٍ مِّنْ ۢبَعْدِيْ﴾ فَرَدَّهُ ا للهُ خَاسِئًا

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা নবী ﷺ নামায শেষ করে বললেন, শয়তান আমার সামনে এসে নামায বিনষ্ট করার জন্য আমার উপর আক্রমণ করল। কিন্তু আল্লাহ আমাকে তার উপর বিজয়ী করে দিলেন, ফলে আমি তাকে পরাজিত করলাম এবং তাকে একটি খুঁটির সাথে বেঁধে রাখতে ইচ্ছা করলাম, যাতে সকালে উঠে তোমরা তাকে দেখতে পাও। কিন্তু সুলায়মান (আঃ) এর একটি কথা আমার স্মরণ হলো। (তিনি আল্লাহর কাছে এ বলে দু‘আ করেছিলেন যে) ‘‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে এমন এক রাজত্ব দান করুন আমার পরে কেউ এর অধিকারী হবে না’’ [সূরা তূর-১৩।]। অতঃপর আল্লাহ তাকে (শয়তানকে) অপমানিত করে তাড়িয়ে দিলেন। [সহীহ বুখারী, হা/১২১০।]

উল্লেখ্য যে, সুলায়মান (আঃ) যে রাজত্বের জন্য দু‘আ করেছিলেন আল্লাহ তা‘আলা তাকে তা দান করেছিলেন। এজন্য নবী ﷺ শয়তানকে বেঁধে রাখতে পারতেন, কিন্তু সুলায়মান (আঃ) এর কথা স্মরণ করে তিনি তা করেননি।

عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ اَنَّ رَسُوْلَ ا للهِ قَالَ : ‏ ‏إِنَّ اَحَدَكُمْ اِذَا قَامَ يُصَلِّيْ جَاءَ الشَّيْطَانُ فَلَبَسَ عَلَيْهِ حَتّٰى لَا يَدْرِيَ كَمْ صَلّٰى، فَإِذَا وَجَدَ ذٰلِكَ اَحَدُكُمْ فَلْيَسْجُدْ سَجْدَتَيْنِ وَهُوَ جَالِسٌ

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন নামাযে দাঁড়ায় তখন শয়তান তার নিকট এসে তার মনে নানা ধরণের সংশয় সৃষ্টি করে দেয়। যার ফলে সে ব্যক্তি মনে রাখতে পারে না যে, কত রাক‘আত নামায পড়েছে। তোমাদের কেউ যখন এমন অবস্থায় পতিত হবে তখন সে বসে বসেই দুটি সিজদা (সিজদায়ে সাহু) করবে। [সহীহ বুখারী, হা/১২৩২।]

সূর্য উদয়ের সময় শয়তান শিং পেতে রাখে :

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ - قَالَ : فَإِذَا طَلَعَتِ الشَّمْسُ فَأَمْسِكْ عَنِ الصَّلَاةِ فَإِنَّهَا تَطْلُعُ بَيْنَ قَرْنَىْ شَيْطَانٍ

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, সূর্যোদয়ের সময় সালাত আদায় করা বন্ধ রাখবে। কারণ সূর্য শয়তানের দুশিংয়ের মধ্যখানে উদিত হয়। [সহীহ মুসলিম, হা/১৪১৯।]

শয়তান মানুষের আমল নষ্ট করাতে চায় :

عَنْ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ، قَالَ قَالَ عُمَرُ يَوْمًا لِّأَصْحَابِ النَّبِيِّ فِيْمَ تَرَوْنَ هٰذِهِ الْاٰيَةَ نَزَلَتْ ‏﴿‏أَيَوَدُّ اَحَدُكُمْ اَنْ تَكُوْنَ لَه جَنَّةٌ‏﴾‏ قَالُوْا : اَللهُ اَعْلَمُ‏ . ‏ فَغَضِبَ عُمَرُ فَقَالَ قُوْلُوْا نَعْلَمُ اَوْ لَا نَعْلَمُ‏ . ‏ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فِيْ نَفْسِيْ مِنْهَا شَىْءٌ يَا اَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ‏ . ‏ قَالَ عُمَرُ يَا ابْنَ اَخِيْ قُلْ وَلَا تَحْقِرْ نَفْسَكَ‏ . ‏ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ ضُرِبَتْ مَثَلًا لِعَمَلٍ‏ . ‏ قَالَ عُمَرُ اَىُّ عَمَلٍ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لِعَمَلٍ‏ . ‏ قَالَ عُمَرُ لِرَجُلٍ غَنِيٍّ يَعْمَلُ بِطَاعَةِ ا للهِ عَزَّ وَجَلَّ، ثُمَّ بَعَثَ ا للهُ لَهُ الشَّيْطَانَ فَعَمِلَ بِالْمَعَاصِيْ حَتّٰى اَغْرَقَ اَعْمَالَهٗ

উবাইদ ইবনে উমাইর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, একদিন উমর (রাঃ) নবী ﷺ এর সাহাবাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, ‏﴿‏اَيَوَدُّ اَحَدُكُمْ اَنْ تَكُوْنَ لَه جَنَّةٌ‏﴾‏ আয়াতটি কোন্ উপলক্ষে অবতীর্ণ হয়েছে? সবাই বললেন, আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন। এ কথা শ্রবণ করে উমর (রাঃ) রাগান্বিত হয়ে বললেন, জানি অথবা জানি না বলুন। তখন আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! এ ব্যাপারে আমি একটি ধারণা পোষণ করি। উমর (রাঃ) বললেন, ভাতিজা! তুমি নিজেকে তুচ্ছ ভেব না। তোমার ধারণা ব্যক্ত করো। তখন আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) বললেন, এটিকে (আয়াতটি) কর্মের উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। উমর (রাঃ) বললেন, কী ধরণের কর্মের উদাহরণ হিসেবে পেশ করা হয়েছে? আবদুল্লাহ ইবনে আববাস বললেন, শুধুমাত্র কর্মের উদাহরণ। এ কথা শুনে উমর (রাঃ) বললেন, এমন একজন সম্পদশালী লোকের উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যে মহান ও ক্ষমতাশালী আল্লাহ তা‘আলার অনুগত গোলাম হিসেবে কাজ করে। এরপর আল্লাহ তার কাছে শয়তানকে পাঠিয়ে দেন, ফলে সে অবাধ্যতামূলক আমল করে। এমনকি তার সমস্ত কর্মকে নষ্ট করে দেয়। [সহীহ বুখারী, হা/৪৫৩৮।]

শয়তান মানুষকে কবরপূজায় লিপ্ত করে :

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا صَارَتِ الْأَوْثَانُ الَّتِيْ كَانَتْ فِيْ قَوْمِ نُوْحٍ فِي الْعَرَبِ بَعْدُ، اَمَّا وُدٌّ كَانَتْ لِكَلْبٍ بِدَوْمَةِ الْجَنْدَلِ، وَأَمَّا سُوَاعٌ كَانَتْ لِهُذَيْلٍ، وَأَمَّا يَغُوْثُ فَكَانَتْ لِمُرَادٍ ثُمَّ لِبَنِيْ غُطَيْفٍ بِالْجُرُفِ عِنْدَ سَبَا، وَأَمَّا يَعُوْقُ فَكَانَتْ لِهَمْدَانَ، وَأَمَّا نَسْرٌ فَكَانَتْ لِحِمْيَرَ، لِاٰلِ ذِي الْكَلَاعِ ‏ . ‏ اَسْمَاءُ رِجَالٍ صَالِحِيْنَ مِنْ قَوْمِ نُوْحٍ، فَلَمَّا هَلَكُوْا اَوْحَى الشَّيْطَانُ اِلٰى قَوْمِهِمْ اَنِ انْصِبُوْا اِلٰى مَجَالِسِهِمُ الَّتِيْ كَانُوْا يَجْلِسُوْنَ اَنْصَابًا، وَسَمُّوْهَا بِأَسْمَائِهِمْ فَفَعَلُوْا فَلَمْ تُعْبَدْ حَتّٰى اِذَا هَلَكَ أُولٰئِكَ وَتَنَسَّخَ الْعِلْمُ عُبِدَتْ

আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূহ (আঃ) এর কাওমে যেসব মূর্তি ও দেব-দেবীর প্রচলন ছিল, পরবর্তী সময়ে তা আরবদের মধ্যেও চালু হয়েছিল। ওয়াদ ছিল কালব গোত্রের দেবমূর্তি। দাওমাতুল জানদাল নামক স্থানে ছিল এর মন্দির। আর সূওয়া‘ ছিল মক্কার নিকটবর্তী হুযাইল গোত্রের দেবমূর্তি। ইয়াগুস ছিল প্রথমে মুরাদ গোত্রের, পরে (মুরাদের শাখা গোত্র) বনী গুতাইফের দেবতা। এর আস্তানা ছিল সাবার নিকটবর্তী জাওক নামক স্থানে। আর ইয়া‘ঊক ছিল হামাদান গোত্রের দেবমূর্তি। আর নাসর ছিল হিম্য়ার গোত্রের শাখা যুলকালার দেবমূর্তি। নাসর কাওমে নূহের কিছু সৎলোকের নামও ছিল। এ লোকগুলো মারা গেলে তারা যেখানে বসে ইবাদাত করত, পরবর্তীতে শয়তান সেখানে কিছু মূর্তি তৈরি করার জন্য তাদের কাওমের মনে অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করে। তাই তাদের নামে কিছু মূর্তি তৈরি করে স্থাপন করে। কিন্তু তখনও সেসব মূর্তির পূজা করা হতো না। পরবর্তীতে সমসাময়িক যুগের লোকজন মারা গেলে এবং মূর্তিগুলো সম্পর্কে সত্যিকার জ্ঞান বিলুপ্ত হলে জীবিতরা সেগুলোর পূজা করতে শুরু করে। [সহীহ বুখারী, হা/৪৮২০।]

শয়তান মানুষকে মূর্তিপূজায় লিপ্ত করে :

ইয়া‘কূব ইবনে আসিম আস সাক্বাফী (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, একদা জনৈক ব্যক্তি তার কাছে এসে বললেন, আপনি এ কেমন হাদীস বর্ণনা করছেন যে, এত এত দিনের মধ্যে কিয়ামত সংঘটিত হবে। এ কথা শুনে তিনি বললেন, ‘সুবহানাল্লাহ’ অথবা ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ অথবা অবিকল কোন শব্দ। তারপর তিনি বললেন, আমি তো শুধু এ কথাই বলেছিলাম যে, অচিরেই তোমরা এমন ভয়াবহ ঘটনা প্রত্যক্ষ করবে, যা ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দেবে। আর এ ঘটনা সংঘটিত হবেই। এরপর তিনি বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যেই দাজ্জালের আবির্ভাব হবে এবং সে চল্লিশ দিন পর্যন্ত অবস্থান করবে। আমি জানি না চল্লিশ দিন, না চল্লিশ মাস, না চল্লিশ বছর। এ সময় আল্লাহ রাববুল আলামীন মারইয়ামের পুত্র ঈসা (আঃ) কে প্রেরণ করবেন। তাঁর আকৃতি উরওয়া ইবনে মাসঊদ (রাঃ) এর মতো হবে। তিনি দাজ্জালকে সন্ধান করে তাকে ধ্বংস করে দেবেন। তারপর সাতটি বছর লোকেরা এমনভাবে অতিবাহিত করবে যে, দুব্যক্তির মধ্যে কোন শত্রুতা থাকবে না। তখন আল্লাহ তা‘আলা সিরিয়ার দিক হতে শীতল বাতাস প্রবাহিত করবেন। ফলে যার হৃদয়ে কল্যাণ বা ঈমান থাকবে, এ ধরণের কোন লোকই এ দুনিয়াতে আর বেঁচে থাকবে না। বরং আল্লাহ তা‘আলা এ ধরণের প্রত্যেকের জান কবজ করে নেবেন। এমনকি তোমাদের কোন লোক যদি পর্বতের গভীরে গিয়ে আত্মগোপন করে তবে সেখানেও বাতাস তার কাছে পৌঁছে তার জান কবজ করে নেবে।

আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, তখন খারাপ লোকগুলো পৃথিবীতে অবশিষ্ট থাকবে। তাদের স্বভাব হবে দ্রতগামী পাখী এবং জ্ঞানশূন্য হিংস্রপ্রাণীর ন্যায়। তারা কল্যাণকে কল্যাণ বলে জানবে না এবং অকল্যাণকে অকল্যাণ বলে মনে করবে না। এ সময় শয়তান এক আকৃতিতে তাদের কাছে এসে বলবে, তোমরা কি আমার আহবানে সাড়া দেবে না? তারা বলবে, আপনি আমাদেরকে কোন্ বিষয়ের আদেশ করছেন? তখন সে তাদেরকে মূর্তিপূজার নির্দেশ দেবে। এমতাবস্থায়ও তাদের জীবনোপকরণে প্রশস্ততা থাকবে এবং তারা স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন যাপন করবে। আর তখনই শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে। যে এ আওয়াজ শুনবে সে তার ঘাড় একদিকে অবনমিত করবে এবং অন্যদিকে উত্তোলন করবে। এ আওয়াজ সর্বপ্রথম ঐ লোকই শুনতে পাবে, যে তার উটের জন্য হাওয সংস্করণের কাজে নিযুক্ত থাকবে। আওয়াজ শুনামাত্রই সে অজ্ঞান হয়ে লুটে পড়বে। সাথে সাথে অন্যান্য লোকেরাও অজ্ঞান হয়ে যাবে। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা শুক্র ফোঁটার অথবা ছায়ার ন্যায় বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। বর্ণনাকারী নু‘মান (রহঃ) সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এতে মানুষের শরীর পরিবর্ধিত হবে। অতঃপর আবার শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে। ফলে হঠাৎ তারা দাঁড়িয়ে তাকাতে থাকবে। অতঃপর আহবান করা হবে যে, হে লোক সকল! তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট এসো। অতঃপর (ফেরেশতাদেরকে বলা হবে) তাদেরকে থামাও, কারণ তাদেরকে প্রশ্ন করা হবে। তারপর আবারো বলা হবে, জাহান্নামী দল বের করো। জিজ্ঞেস করা হবে, কত জন? উত্তরে বলা হবে, প্রত্যেক হাজার থেকে নয়শ’ নিরানববই জন। অতঃপর তিনি বললেন, এ-ই তো ঐদিন, যেদিন কিশোরকে পরিণত করবে বৃদ্ধে। আর এটি একটি চরম সঙ্কটাপন্ন অবস্থার দিন। [সহীহ মুসলিম, হা/৭২৭১।]

কোন নারীর সাথে কেউ একা থাকলে শয়তান তৃতীয়জন হিসাবে অবস্থান নেয় :

عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ - - قَالَ : إِيَّاكُمْ وَالدُّخُوْلَ عَلَى النِّسَاءِ . فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَرَأَيْتَ الْحَمْوَ قَالَ : الْحَمْوُ الْمَوْتُ . - قَالَ : لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ إِلَّا كَانَ ثَالِثَهُمَا الشَّيْطَانُ . وَمَعْنٰى قَوْلِهٖ : اَلْحَمْوُ . يُقَالُ هُوَ أَخُو الزَّوْجِ كَأَنَّهٗ كَرِهَ لَهٗ أَنْ يَخْلُوَ بِهَا .

উকবা ইবনে আমের (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমরা নারীদের নিকট প্রবেশ করা থেকে সাবধান থাকো। তখন এক আনসারী ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! দেবর সম্পর্কে আপনি কী বলেন? তখন নবী ﷺ বললেন, দেবর হলো মৃত্যুর সমান (অর্থাৎ অনাকাঙ্খিত বিপদ) এবং তিনি আরো বলেন, যখনই কোন লোক কোন নারীর সাথে নির্জনে অবস্থান করে তখন শয়তান সেখানে তৃতীয়জন হিসেবে অবস্থান করে। [তিরমিযী, হা/১২০৪।]

শয়তান মানুষের রগের ভেতর দিয়ে চলে এবং কু-ধারণা সৃষ্টি করে :

عَنْ صَفِيَّةَ زَوْجِ النَّبِيِّ اَنَّهَا جَاءَتْ رَسُوْلَ ا للهِ تَزُوْ هُ فِي اعْتِكَافِه فِي الْمَسْجِدِ، فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ مِنْ رَّمَضَانَ، فَتَحَدَّثَتْ عِنْدَه سَاعَةً، ثُمَّ قَامَتْ تَنْقَلِبُ، فَقَامَ النَّبِيُّ مَعَهَا يَقْلِبُهَا، حَتّٰى اِذَا بَلَغَتْ بَابَ الْمَسْجِدِ عِنْدَ بَابِ أُمِّ سَلَمَةَ مَرَّ رَجُلَانِ مِنَ الْأَنْصَارِ، فَسَلَّمَا عَلٰى رَسُوْلِ ا للهِ فَقَالَ لَهُمَا النَّبِيُّ : ‏ ‏ عَلٰى رِسْلِكُمَا اِنَّمَا هِيَ صَفِيَّةُ بِنْتُ حُيَىٍّ‏ ‏‏ . ‏ فَقَالَا : سُبْحَانَ ا للهِ يَا رَسُوْلَ ا للهِ ‏ . ‏ وَكَبُرَ عَلَيْهِمَا‏ . ‏ فَقَالَ النَّبِيُّ : ‏ اِنَّ الشَّيْطَانَ يَبْلُغُ مِنَ الْإِنْسَانِ مَبْلَغَ الدَّمِ، وَإِنِّيْ خَشِيْتُ اَنْ يَقْذِفَ فِيْ قُلُوْبِكُمَا شَيْئًا‏ ‏‏ .‏

নবী ﷺ এর সহধর্মিণী সাফিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি (একবার) রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে দেখা করার জন্য মসজিদে গেলেন। তিনি তখন রমাযানের শেষ দশ দিনে ই‘তিকাফে ছিলেন। সাফিয়্যা (রাঃ) তাঁর কাছে (বসে) কিছু সময় কথাবার্তা বললেন। অতঃপর (ঘরে) ফেরার জন্য উঠে দাঁড়ালেন। নবীও সঙ্গে সঙ্গে উঠলেন এবং তাঁকে এগিয়ে দেবার জন্য উম্মু সালামা (রাঃ) এর দরজার কাছে মসজিদের দরজা পর্যন্ত গেলেন। তখন দু’জন আনসারী সাহাবী সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁরা রাসূলুল্লাহ ﷺ কে সালাম দিলেন। তখন নবী ﷺ তাদেরকে বললেন, তোমরা একটু অপেক্ষা করো। এ মহিলা হলো হুয়াই-এর কন্যা সাফিয়্যা। তাঁরা বললেন, সুবহানাল্লাহ, হে আল্লাহর রাসূল! তখন নবী ﷺ বললেন, শয়তান মানুষের শিরায় পৌঁছতে ক্ষমতা রাখে। তাই আমার ভয় হলো, সে তোমাদের মনে কোন খারাপ ধারণার সৃষ্টি করে দেয় কি না। [সহীহ বুখারী, হা/২০৩৫।]

সন্তান ভূমিষ্ট হলেই শয়তান স্পর্শ করে :

عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ ا للهِ يَقُوْلُ : ‏ مَا مِنْ بَنِيْ اٰدَمَ مَوْلُوْدٌ اِلَّا يَمَسُّهُ الشَّيْطَانُ حِيْنَ يُوْلَدُ، فَيَسْتَهِلُّ صَارِخًا مِّنْ مَّسِّ الشَّيْطَانِ، غَيْرَ مَرْيَمَ وَابْنِهَا ‏ ‏ ‏ . ‏ ثُمَّ يَقُوْلُ اَبُوْ هُرَيْرَةَ : ‏﴿‏وَإِنِّيْ أُعِيْذُهَا بِكَ وَذُرِّيَّتَهَا مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ‏﴾

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি, এমন কোন আদম সন্তান নেই, জন্মের সময় শয়তান যাকে স্পর্শ করে না। সৃষ্টি হওয়ার সময় শয়তান তাকে স্পর্শ করে বলেই সে চিৎকার দিয়ে কাঁদে। তবে মারইয়াম ও তার পুত্র (ঈসা) এর ব্যতিক্রম। অতঃপর আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, এর কারণ মারইয়ামের মায়ের এ প্রার্থনা وإنَّىْ أُعِيْذُهَا بِكَ وَذُرِّيَتَهَا مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (ইন্নি উ‘ঈযুহা বিকা ওয়া যুর্রিইয়াতাহা মিনাশ্ শাইত্বা-নির রাজীম।) অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি মারইয়ামকে ও তার বংশধরকে বিতাড়িত শয়তান হতে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। [সহীহ বুখারী, হা/৩৪৩১।]

عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : ‏ صِيَاحُ الْمَوْلُوْدِ حِيْنَ يَقَعُ نَزْغَةٌ مِّنَ الشَّيْطَانِ

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় বাচ্চার চিৎকার শয়তানের খোঁচার কারণে হয়। [সহীহ মুসলিম, হা/৬০৩০।]

শয়তান ভালো কাজ থেকে বিরত রাখতে শপথ করায় :

আবদুর রহমান ইবনে আবু বকর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা (আমার পিতা) আবু বকর (রাঃ) একজন কিংবা কয়েকজন মেহমান নিয়ে (বাড়ি) আসলেন। অতঃপর তিনি বেশ কিছু রাত পর্যন্ত নবী ﷺ এর কাছে অতিবাহিত করে ফিরে আসলে আমার আম্মা বললেন, আপনি আপনার মেহমান কিংবা মেহমানদেরকে আজ রাতের খাবার খাওয়াতে দেরী করে ফেলেছেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি এখনো তাদেরকে রাতের খাবার খাওয়াওনি? আম্মা বললেন, আমরা তাঁর বা তাঁদের সামনে খাবার উপস্থিত করেছিলাম; কিন্তু তারা বা তিনি খেতে রাজি হননি। তখন আবু বকর (রাঃ) রাগান্বিত হয়ে গেলেন, দুঃখ প্রকাশ করলেন এবং খাবার গ্রহণ করবেন না বলে শপথ করলেন। আবদুর রহমান (রাঃ) বর্ণনা করেন, আমি আত্মগোপন করলে আবু বকর (রাঃ) বললেন, ওরে মূর্খ! তখন তাঁর স্ত্রীও (আমার আম্মা) কসম করলেন, তিনি না খেলে তিনিও খাবেন না। এদিকে মেহমান বা মেহমানগণও কসম করলেন যে, আবু বকর (রাঃ) না খাওয়া পর্যন্ত তারাও খাবেন না। অতঃপর আবু বকর (রাঃ) বললেন, এটা শয়তানের কাজ। তারপর তিনি খাবার আনতে বললেন এবং নিজে খেলেন, তারাও (মেহমানগণ) খাদ্য খেলেন। (খেতে বসে) তারা যে লোকমাই মুখে উঠাচ্ছিলেন তার নীচ থেকে তার চেয়েও বেশি খাবার বৃদ্ধি পাচ্ছিল। তা দেখে আবু বকর (রাঃ) বললেন, হে বনী ফিরাসের বোন! এটা কী, তার স্ত্রীও (আশ্চর্য হয়ে) বললেন, হে আমার চোখের শীতলতা! আমাদের খাওয়ার আগে যে পরিমাণ খাবার ছিল এখন তো তার চেয়েও বেশি হয়ে গেছে। অতঃপর সবাই মিলে তা খেলেন। আবু বকর (রাঃ) এ (বরকতময়) খাদ্য থেকে কিছু অংশ নবী ﷺ এর কাছে পাঠিয়ে দিলেন। পরে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, নবী ﷺ তা খেয়েছেন। [সহীহ বুখারী, হা/৬১৪১।]

শয়তান একে অপরের মধ্যে উস্কানি সৃষ্টি করে :

عَنْ جَابِرٍ قَالَ : سَمِعْتُ النَّبِيَّ يَقُوْلُ : ‏ ‏إِنَّ الشَّيْطَانَ قَدْ اَيِسَ اَنْ يَعْبُدَهُ الْمُصَلُّوْنَ فِيْ جَزِيْرَةِ الْعَرَبِ وَلٰكِنْ فِي التَّحْرِيْشِ بَيْنَهُمْ‏ ‏‏ .‏

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আরব ভূখন্ডে মুসল্লীগণ শয়তানের উপাসনা করবে- এ বিষয়ে শয়তান নিরাশ হয়ে পড়েছে। তবে তাদের একজনকে অন্যের বিরুদ্ধে উস্কিয়ে দেয়ার ব্যাপারে নিরাশ হয়নি। [সহীহ মুসলিম, হা/৬৯৯৬।]

অস্ত্র দিয়ে মানুষের দিকে ইঙ্গিত করা শয়তানের কাজ :

عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ، وَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ‏ لَا يُشِيْرُ اَحَدُكُمْ اِلٰى اَخِيْهِ بِالسِّلَاحِ فَإِنَّه لَا يَدْرِيْ اَحَدُكُمْ لَعَلَّ الشَّيْطَانَ يَنْزِعُ فِيْ يَدِه فَيَقَعُ فِيْ حُفْرَةٍ مِّنَ النَّارِ‏

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, তোমাদের মধ্যে কোন ভাই যেন তরবারি দিয়ে তার ভাই-এর প্রতি ইঙ্গিত না করে। কেননা তোমরা জান না, হয়ত শয়তান তার মধ্যে হাত রেখে টানতে থাকে তারপর সে জাহান্নামের গর্তে পড়ে যায়। [সহীহ মুসলিম, হা/৬৫৬২।]

যে শয়তান বড় অন্যায় করাতে পারে বড় শয়তান তাকে ভালোবাসে :

عَنْ جَابِرٍ اَنَّه سَمِعَ النَّبِيَّ يَقُوْلُ : ‏ ‏يَبْعَثُ الشَّيْطَانُ سَرَايَاهُ فَيَفْتِنُوْنَ النَّاسَ فَأَعْظَمُهُمْ عِنْدَه مَنْزِلَةً اَعْظَمُهُمْ فِتْنَةً

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছেন যে, শয়তান তার সৈন্য বাহিনীকে পাঠিয়ে লোকদেরকে ফিতনায় লিপ্ত করে। অতঃপর তাদের মধ্যে সে-ই তার নিকট সবচেয়ে বেশি মর্যাদার অধিকারী হয়, যে অধিক ফিতনা সৃষ্টিকারী। [সহীহ মুসলিম, হা/৭০০০।]

‘হাই’ শয়তানের পক্ষ থেকে আসে :

عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ‏ ‏ اِنَّ ا للهَ يُحِبُّ الْعُطَاسَ، وَيَكْرَهُ التَّثَاؤُبَ، فَإِذَا عَطَسَ فَحَمِدَ اللهَ، فَحَقٌّ عَلٰى كُلِّ مُسْلِمٍ سَمِعَه اَنْ يَّشَمِّتَه ، وَأَمَّا التَّثَاوُبُ فَإِنَّمَا هُوَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَرُدَّهٗ مَا اسْتَطَاعَ، فَإِذَا قَالَ : هَا‏ . ‏ ضَحِكَ مِنْهُ الشَّيْطَانُ ‏ ‏‏ .‏

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা বান্দাদের হাঁচি পছন্দ করেন এবং হাই তোলা অপছন্দ করেন। কোন ব্যক্তি হাঁচি দিয়ে ‘আল্হাম্দু লিল্লাহ’ বললে যে সব মুসলিম তা শুনবে, তাদের প্রত্যেকের কর্তব্য হবে ‘ইয়ার হামুকাল্লাহ’ বলে জবাব দেয়া। আর হাই শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। সুতরাং যথাসাধ্য তা রোধ করা উচিত। যখন কোন ব্যক্তি হাই তোলার সময় মুখ খোলে বা হা করে আওয়াজ দেয়, তখন শয়তান তার প্রতি বিদ্রূপ করে হাসে। [সহীহ বুখারী, হা/৬২২৩।]

শয়তান খারাপ স্বপ্ন দেখায় :

عَنْ أَبِيْ قَتَادَةَ يَقُوْلُ : سَمِعْتُ النَّبِيَّ يَقُوْلُ : اَلرُّؤْيَا مِنَ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ

আবু কাতাদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী ﷺ কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ভালো স্বপ্ন আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ হতে আর খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। [সহীহ বুখারী, হা/৫৭৪৭।]

বিসমিল্লাহ না বললে শয়তান খাবারে শরীক হয়ে যায় :

عَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ : كُنَّا اِذَا حَضَرْنَا مَعَ النَّبِيِّ طَعَامًا لَمْ نَضَعْ اَيْدِيَنَا حَتّٰى يَبْدَأَ رَسُوْلُ اللهِ فَيَضَعَ يَدَهٗ وَإِنَّا حَضَرْنَا مَعَهٗ مَرَّةً طَعَامًا فَجَاءَتْ جَارِيَةٌ كَأَنَّهَا تُدْفَعُ فَذَهَبَتْ لِتَضَعَ يَدَهَا فِي الطَّعَامِ فَأَخَذَ رَسُوْلُ اللهِ بِيَدِهَا ثُمَّ جَاءَ اَعْرَابِيٌّ كَأَنَّمَا يُدْفَعُ فَأَخَذَ بِيَدِهٖ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ  : ‏ ‏ اِنَّ الشَّيْطَانَ يَسْتَحِلُّ الطَّعَامَ اَنْ لَا يُذْكَرَ اسْمُ اللهِ عَلَيْهِ وَإِنَّهٗ جَاءَ بِهٰذِهِ الْجَارِيَةِ لِيَسْتَحِلَّ بِهَا فَأَخَذْتُ بِيَدِهَا فَجَاءَ بِهٰذَا الْأَعْرَابِيِّ لِيَسْتَحِلَّ بِهٖ فَأَخَذْتُ بِيَدِهٖ وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهٖ اِنَّ يَدَهٗ فِيْ يَدِيْ مَعَ يَدِهَا

হুযাইফা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন আমরা কোন খাবার অনুষ্ঠানে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে উপবিষ্ট হতাম তখন যতক্ষণ তিনি স্বীয় হাত রেখে আরম্ভ না করতেন ততক্ষণ আমরা আমাদের হাত (আহারে) রাখতাম না। একবার আমরা তাঁর সাথে এক খাবার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলাম। এমনি মুহূর্তে একটি মেয়ে এলো। (মনে হচ্ছিল) যেন তাকে তাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। সে খাবারে হাত দিতে গেলে রাসূলুল্লাহ ﷺ তার হাত ধরে নিলেন।

অতঃপর একজন বেদুঈন এলো। (মনে হচ্ছিল) যেন তাকেও তাড়িয়ে দেয়া হচ্ছিল। তিনি তারও হাত ধরে নিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, আল্লাহর নাম স্মরণ করা না হলে শয়তান সে খাদ্যকে হালাল করে ফেলে। সে এ মেয়েটিকে নিয়ে এসেছে যাতে করে (এ খাদ্যকে) তার দ্বারা হালাল করতে পারে। অতঃপর আমি তার হাত ধরে ফেললে সে এ বেদুঈনকে নিয়ে এসেছে। যাতে করে (এ খাদ্যকে) তার দ্বারা হালাল করতে পারে; কিন্তু আমি তারও হাত ধরে ফেলেছি। সে সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার জীবন! অবশ্যই তার (শয়তানের) হাত মেয়েটির হাতসহ আমার হাতের মুঠোয়। [সহীহ মুসলিম, হা/৫১৫৪।]

শয়তান বাম হাতে খায় :

عَنْ جَابِرٍ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ قَالَ : ‏ لَا تَأْكُلُوْا بِالشِّمَالِ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَأْكُلُ بِالشِّمَالِ

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমরা বাম হাতে আহার করবে না। কারণ, শয়তান বাম হাতে আহার করে। [সহীহ মুসলিম, হা/৫১৫৯।]

পড়ে যাওয়া খাদ্য না উঠালে শয়তান তাতে অংশ নেয় :

عَنْ جَابِرٍ قَالَ : سَمِعْتُ النَّبِيَّ يَقُوْلُ : ‏ ‏ اِنَّ الشَّيْطَانَ يَحْضُرُ اَحَدَكُمْ عِنْدَ كُلِّ شَىْءٍ مِنْ شَأْنِهٖ حَتّٰى يَحْضُرَهٗ عِنْدَ طَعَامِهٖ فَإِذَا سَقَطَتْ مِنْ اَحَدِكُمُ اللُّقْمَةُ فَلْيُمِطْ مَا كَانَ بِهَا مِنْ اَذًى ثُمَّ لَيَأْكُلْهَا وَلَا يَدَعْهَا لِلشَّيْطَانِ فَإِذَا فَرَغَ فَلْيَلْعَقْ اَصَابِعَهٗ فَإِنَّهٗ لَا يَدْرِيْ فِيْ اَىِّ طَعَامِهٖ تَكُوْنُ الْبَرَكَةُ ‏ ‏

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী ﷺ কে বলতে শুনেছি যে, শয়তান তোমাদের সকল কাজকর্মে উপস্থিত হয়। এমনকি তোমাদের কারো খাবারের সময়ও উপস্থিত হয়। সুতরাং তোমাদের কারো যদি লোকমা মাটিতে পড়ে যায়, তবে সে যেন তাতে লেগে যাওয়া আবর্জনা সরিয়ে তা খেয়ে ফেলে। শয়তানের জন্য যেন ফেলে না রাখে। খাবার শেষে সে যেন তার আঙ্গুলগুলো চেটে খায়। কেননা সে জানে না, তার খাদ্যের কোন্ অংশে বরকত (কল্যাণ) রয়েছে। [সহীহ মুসলিম, হা/৫১৯৮।]

শয়তানের বাঁশি হলো ঘণ্টা :

عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ اَنَّ رَسُوْلُ اللهِ قَالَ : ‏ ‏ اَ لْجَرَسُ مَزَامِيْرُ الشَّيْطَانِ

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ঘণ্টা হলো শয়তানের বাঁশি। [সহীহ মুসলিম, হা/৫৪৪১।]

শয়তানের আড্ডাখানা হলো বাজার :

عَنْ سَلْمَانَ قَالَ : لَا تَكُوْنَنَّ اِنِ اسْتَطَعْتَ اَوَّلَ مَنْ يَدْخُلُ السُّوْقَ وَلَا اٰخِرَ مَنْ يَخْرُجُ مِنْهَا فَإِنَّهَا مَعْرَكَةُ الشَّيْطَانِ وَبِهَا يَنْصِبُ رَايَتَهٗ

সালমান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমার পক্ষে যদি সম্ভব হয় তবে বাজারে প্রবেশকারীদের মাঝে তুমি প্রথম হয়ো না এবং সেখান থেকে বহির্গমনকারীদের মাঝে তুমি শেষ লোক হয়ো না। কেননা বাজার হলো শয়তানের আড্ডাখানা। আর সেখানেই সে তার ঝান্ডা উঁচু করে রাখে। [সহীহ মুসলিম, হা/৬২০৯।]

শয়তান মানুষের আকৃতি ধারণ করতে পারে :

عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ اِنَّ الشَّيْطَانَ لَيَتَمَثَّلُ فِيْ صُوْرَةِ الرَّجُلِ فَيَأْتِي الْقَوْمَ فَيُحَدِّثُهُمْ بِالْحَدِيْثِ مِنَ الْكَذِبِ فَيَتَفَرَّقُوْنَ فَيَقُوْلُ الرَّجُلُ مِنْهُمْ سَمِعْتُ رَجُلًا اَعْرِفُ وَجْهَهٗ وَلَا اَدْرِيْ مَا اسْمُهٗ يُحَدِّثُ ‏ .‏

আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, শয়তান মানুষের আকৃতিতে লোকের কাছে আসে এবং মিথ্যা হাদীস শোনায়। পরে লোকেরা সেখান থেকে পৃথক হয়ে চলে যায়। তারপর তাঁদের মধ্যে থেকে এক ব্যক্তি বলে, আমি এমন এক ব্যক্তিকে হাদীস বলতে শুনেছি, যার চেহারা দেখলে চিনতে পারব কিন্তু তার নাম জানি না। [সহীহ মুসলিম, হা/১৭।]

শয়তান মুহাম্মাদ ﷺ এর রূপ ধারণ করতে পারে না :

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : مَنْ رَاٰنِيْ فِي الْمَنَامِ ، فَقَدْ رَاٰنِيْ ، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لَا يَتَمَثَّلُ بِيْ

ইবনে আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখল সে বাস্তবে আমাকেই দেখল। কেননা শয়তান আমার রূপ ধারণ করতে পারে না। [ইবনে মাজাহ, হা/৩৯০৫।]

শয়তান আযান ও ইকামত সহ্য করতে পারে না :

عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ : ‏ ‏ اِذَا نُوْدِيَ لِلصَّلَاةِ اَدْبَرَ الشَّيْطَانُ وَلَهٗ ضُرَاطٌ حَتّٰى لَا يَسْمَعَ التَّأْذِيْنَ، فَإِذَا قُضِىَ النِّدَاءَ اَقْبَلَ حَتّٰى اِذَا ثُوِّبَ بِالصَّلَاةِ اَدْبَرَ، حَتّٰى اِذَا قُضِىَ التَّثْوِيْبَ اَقْبَلَ حَتّٰى يَخْطُرَ بَيْنَ الْمَرْءِ وَنَفْسِه ، يَقُوْلُ : اُذْكُرْ كَذَا، اُذْكُرْ كَذَا ‏ . ‏ لِمَا لَمْ يَكُنْ يَذْكُرُ حَتّٰى يَظَلَّ الرَّجُلُ لَا يَدْرِيْ كَمْ صَلّٰى

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, যখন সালাতের আযান দেয়া হয়, তখন শয়তান বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পেছনের দিকে দৌড়াতে থাকে, যাতে সে আযানের শব্দ না শুনতে পায়। আযান শেষ হলে আবার সে ফিরে আসে। অতঃপর যখন সালাতের ইকামত দেয়া হয়, তখনো সে পেছনের দিকে দৌড়াতে থাকে। ইকামত শেষ হলে আবার সে ফিরে আসে এবং মুসল্লীর মনে কুমন্ত্রণা দিতে থাকে। সে বলে, তুমি এটা স্মরণ করো, ওটা স্মরণ করো। অতঃপর যা তার স্মরণে ছিল না এমন কথাও স্মরণ করতে বলে। এমনকি সে কত রাক‘আত নামায পড়ল তাও ভুলে যায়। [সহীহ বুখারী, হা/৩৭২।]

বান্দা সিজদা দিলে শয়তান কাঁদে :

عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ‏ اِذَا قَرَأَ ابْنُ اٰدَمَ السَّجْدَةَ فَسَجَدَ اعْتَزَلَ الشَّيْطَانُ يَبْكِيْ يَقُوْلُ يَا وَيْلَهٗ وَفِيْ رِوَايَةِ اَبِيْ كُرَيْبٍ يَا وَيْلِيْ أُمِرَ ابْنُ اٰدَمَ بِالسُّجُوْدِ فَسَجَدَ فَلَهُ الْجَنَّةُ وَأُمِرْتُ بِالسُّجُوْدِ فَأَبَيْتُ فَلِيَ النَّارُ

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যখন আদম সন্তান সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে সিজদায় যায়, তখন শয়তান কাঁদতে কাঁদতে দূরে সরে পড়ে এবং বলতে থাকে, হায়! আমার দুর্ভাগ্য! ইবনে কুরায়বের বর্ণনায় রয়েছে, হায়রে, আমার দুর্ভাগ্য! বনী আদম সিজদার জন্য আদিষ্ট হলো। তারপর সে সিজদা করল এবং এর বিনিময়ে তার জন্য জান্নাত নির্ধারিত হলো। আর আমাকে সিজদার জন্য আদেশ করা হলো, কিন্তু আমি তা অস্বীকার করলাম; ফলে আমার জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত হলো। [সহীহ মুসলিম, হা/১৪৬।]

শয়তান উমর (রাঃ) কে ভয় পেত :

عَنْ سَعْدِ بْنِ اَبِيْ وَقَّاصٍ قَالَ : اِسْتَأْذَنَ عُمَرُ عَلٰى رَسُوْلِ اللهِ وَعِنْدَه نِسَاءٌ مِّنْ قُرَيْشٍ يُكَلِّمْنَهٗ وَيَسْتَكْثِرْنَهٗ عَالِيَةً اَصْوَاتُهُنَّ فَلَمَّا اسْتَأْذَنَ عُمَرُ قُمْنَ يَبْتَدِرْنَ الْحِجَابَ فَأَذِنَ لَه رَسُوْلُ اللهِ وَرَسُوْلُ اللهِ يَضْحَكُ فَقَالَ عُمَرُ : اَضْحَكَ اللهُ سِنَّكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ ‏ . فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ : ‏ ‏ عَجِبْتُ مِنْ هٰؤُلَاءِ اللَّاتِيْ كُنَّ عِنْدِيْ فَلَمَّا سَمِعْنَ صَوْتَكَ ابْتَدَرْنَ الْحِجَابَ ‏ ‏ ‏ . قَالَ عُمَرُ : فَأَنْتَ يَا رَسُوْلَ اللهِ اَحَقُّ اَنْ يَهَبْنَ ثُمَّ قَالَ عُمَرُ : اَىْ عَدُوَّاتِ اَنْفُسِهِنَّ اَتَهَبْنَنِيْ وَلَا تَهَبْنَ رَسُوْلُ اللهِ ؟ قُلْنَ : نَعَمْ اَنْتَ اَغْلَظُ وَأَفَظُّ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ . قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : ‏ ‏ وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهٖ مَا لَقِيَكَ الشَّيْطَانُ قَطُّ سَالِكًا فَجًّا اِلَّا سَلَكَ فَجًّا غَيْرَ فَجِّكَ ‏

সা‘দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা উমর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে প্রবেশের সম্মতি চাইলেন। তখন কুরাইশ নারীরা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট কথোপকথনে লিপ্ত ছিল এবং তারা উচ্চৈঃস্বরে বেশি বেশি কথা বলছিল। কিন্তু যখন উমর (রাঃ) অনুমতি চাইলেন এরা উঠে অভ্যন্তরে চলে গেল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁকে অনুমতি দিলেন এবং তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ হাসছিলেন। উমর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ আপনার মুখকে হাস্যোজ্জ্বল রাখুন। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, আমি তাদের ব্যাপারে অবাক হচ্ছি, যারা আমার নিকট উপবিষ্ট ছিল তারা তোমার শব্দ শুনামাত্রই অভ্যন্তরে চলে গেল। উমর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাকেই তো এদের অধিক ভয় করা উচিত। তারপর উমর (রাঃ) বললেন, ওহে! নিজের প্রাণের শত্রুরা! তোমরা কি আমাকে ভয় কর; অথচ আল্লাহর রাসূলকে ভয় কর না? তারা বলল, হ্যাঁ- তুমি তো আল্লাহর রাসূলের চেয়ে বেশি তেজস্বী এবং রাগী। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, যাঁর হাতে আমার জীবন তাঁর কসম! যখন শয়তান তোমাকে কোন রাস্তায় চলতে দেখে তখন সে তোমার রাস্তা বাদ দিয়ে ভিন্ন পথ ধরে চলে। [সহীহ মুসলিম, হা/৬০৯৬।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন