hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সাহাবাদের ব্যাপারে আহলে সুন্নত ওয়াল-জামাতের আকিদা

লেখকঃ মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ আল-অহাইবি

১৩
পঞ্চম : আয়েশা রা. কে মন্দ বলার বিধানঃ
আলেমগণের সর্বসম্মতিক্রমে যে বিষয়ে মহান আল্লাহ তাআলা মু’মিন জননী আয়েশা রা. পÿÿ পবিত্রতার কথা বলেছেন সে বিষয়ে পুনরায় তাঁকে অপবাদ দেয়া কুফরী। যে ব্যক্তি এ ধরনের অপবাদ দিবে সে কাফের।

কাজী আবু ইয়ালা রহ. বলেন, যে ব্যাপারে মহান আল্লাহ আয়েশা রা. কে নিষ্পাপ বলেছেন সে বিষয়ে তাঁকে পুনরায় দোষারোপ করা সর্বসম্মতিক্রমে কুফরী।

প্রথমতঃ ইমাম মালেক রহ. হতে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আবু বকর রা. কে মন্দ বলবে তাকে কোড়া মারা হবে আর যে আয়েশা রা. কে মন্দ বলবে তাকে হত্যা করা হবে। কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন যে আয়েশাকে মন্দ বলল, সে কুরআনের বিরোধিতা করল। আর কুরআনের বিরোধিতা করল তাকে হত্যা করাই শ্রেয়। আল্লামা ইবনে শাবান রহ. ইমাম মালেক রহ. থেকে বর্ণনা করেন যেহেতু মহান আল্লাহ তাআলা আয়েশা রা. সম্পর্কে বলেছেন-

يَعِظُكُمَ اللَّهُ أَنْ تَعُودُوا لِمِثْلِهِ أَبَدًا إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ . سورة النور ﴿17﴾

‘‘আল্লাহ তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছেন তোমরা যদি ঈমানদার হও তবে কখনও পুনরায় এ ধরনের আচরণের পুনরাবৃত্তি করবে না।’’ সূরা আন-নূর :১৭) সুতরাং যে পুনরায় মা আয়েশাকে দোষারোপ করল, সে কুরআনের বিরুদ্ধাচরণ করল আর যে কুরআনের বিরুদ্ধাচরণ করবে সে কাফের। [ الصارم المسلول ص ৫৬০-৫৬৬ والحبر بسنده فى المحلى ১৮/৪১৪-৪১৫] মু’মিন জননী আয়েশা রা. কে অপবাদদাতার কাফের হওয়ার প্রমাণাদি একেবারেই সুস্পষ্ট। তন্মধ্যে- ১ম ইমাম মালেক রহ. এর প্রমাণ। তিনি বলেন কুরআন যেহেতু আয়েশা রা. কে নিষ্পাপ বলে ঘোষণা দিয়েছে, তাই তাঁকে অপবাদ দেয়ার অর্থ হল কুরআন বিশ্বাস না করা আর যে কুরআন বিশ্বাস না করে সে কাফের। আলস্নামা ইবনে কাছির রহ. বলেন, সমস্ত আলেম এ কথার উপর একমত যে মহান আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আয়েশা রা. সপক্ষে যে পবিত্রতার কথা বলা হয়েছে তার পরও তাঁকে মন্দ বলা, অপবাদ দেয়া কুফরী। আর যে এ ধরনের অপবাদ দিবে সে কাফের। কেননা সে কুরআনের বিরোধী।

ইবনে হাযম রহ. ইমাম মালেকের মন্তব্য পর্যালোচনায় বলেন, তাঁর কথা সম্পূর্ণ সত্য ; আয়েশা রা.-কে এ ধরনের অপবাদ দেয়া, ধর্ম ত্যাগের শামিল। কেননা মহান আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তাঁর নিশ্চিত পবিত্রতা ঘোষণার পরও অপবাদ দেয়ার অর্থ হল স্বয়ং আল্লাহ তাআলাকে মিথ্যাচারী বলে সাব্যস্ত করা।

দ্বিতীয়ত : পবিত্র কুরআনের ভাষ্যানুযায়ী এতে বিভিন্নভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কষ্ট দেয়া হয় ও তার মানহানি করা হয়। পবিত্র কুরআন তার প্রমাণ, যেমন সাহাবী ইবনে আববাস রা. বলেন মহান আল্লাহ তাআলার বাণী—

وَالَّذِينَ يَرْمُونَ الْمُحْصَنَاتِ ثُمَّ لَمْ يَأْتُوا بِأَرْبَعَةِ شُهَدَاءَ فَاجْلِدُوهُمْ ثَمَانِينَ جَلْدَةً وَلَا تَقْبَلُوا لَهُمْ شَهَادَةً أَبَدًا وَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ . سورة النور ﴿4﴾

‘‘যারা সতী-সাধ্বী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে, অতঃপর এর সপক্ষে চারজন পুরুষ সাক্ষী উপস্থিত করে না। তাদের আশিটি বেত্রাঘাত কর, কখনো তাদের স্বাÿ্য গ্রহণ করবে না; তারাতো ফাসেক।’’ (সূরা আন-নূর : ৪)

আল্লাহ তাআলার বাণী-

إِنَّ الَّذِينَ يَرْمُونَ الْمُحْصَنَاتِ الْغَافِلَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ لُعِنُوا فِي الدُّنْيَا وَالْآَخِرَةِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ . سورة النور ﴿23﴾

‘‘যারা সতী-সাধ্বী, সরলমনা মুমিন নারীদের অপবাদ দেয়, দুনিয়া ও আখিরাতে তারা অভিশপ্ত, তাদের জন্য রয়েছে মহা-শাসিত্ম।’’ (সূরা আন-নূর : ২৩)

এ দু আয়াতের মাঝে পার্থক্য রয়েছে। প্রথম আয়াত সাধারণ নারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আর দ্বিতীয় আয়াত আয়েশা রা. ও রাসূলের অন্যান্য স্ত্রীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যারা রাসূলের স্ত্রীদেরকে অপবাদ দেবে তারা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধী, আর যারা অন্য নারীদেরকে অপবাদ দেবে তারা ক্ষমা যোগ্য অপরাধী। সাহাবী ইবনে আববাসের এহেন সুন্দর ব্যাখ্যা শুনে জনৈক ব্যক্তির তার মাথায় চুমু খাওয়ার জন্য উদ্যত হলেন। [ইবনে জারির ১৮/৮৩ ইবনে কাছির ৩/২৭৭।] ইবনে আববাস রা. সুস্পষ্ট বর্ণনা দিলেন যে, দ্বিতীয় আয়াত আয়েশা ও অন্যান্য মু’মিন জননীদের দোষারোপ কারীদের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। আর তারা ক্ষমার অযোগ্য এ জন্য যে এতে সূক্ষ্মভাবে রাসূলকে অপমান ও রাসূলের প্রতি অপবাদ দেয়া হয়। কেননা কোন লোকের স্ত্রীকে অপবাদ দেয়ার অর্থ তার স্বামীকে কষ্ট দেয়া ও তার ছেলেকে কষ্ট দেয়া। কারণ এতে স্বামী বা ছেলে দায়ুস (অশস্নীলতার দোষে দুষ্ট) সাব্যস্ত হয় এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ধ্বংস প্রমাণিত হয়। যদি কোন স্ত্রী ব্যাভিচারে লিপ্ত হয় তাহলে স্বামী অবর্ণনীয় লজ্জায় পতিত হয়। বরং অনেক ক্ষেত্রে নিজের উপর ব্যভিচারের অপবাদ আরোপে যে পরিমাণ লজ্জিত হয় তার চেয়ে বেশি লজ্জিত হয় নিজ স্ত্রীর উপর ব্যভিচারের অপবাদ আরোপ দ্বারা। [আচ্ছারেমুল মাসলুল পৃ : ৪৫ কুরতুবি ১২/১৩৯] আর এ কথা সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকৃত যে রাসূলকে কষ্ট দেয়া কুফরী।

বিশিষ্ট তফসিরকারক আল্লামা কুরতুবী রহ. বলেন মহান আল্লাহ তাআলার বাণী—

يعظكم الله ان تعودوا لمثله أبدا

‘‘আল্লাহ তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছেন এ ধরনের আচরণের পুনরাবৃত্তি না করার জন্য।’’ এখানে لمثله দ্বারা আয়েশা রা. ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। কেননা তার প্রসঙ্গেই আলোচনা চলছে অথবা তার সমমর্যাদা সম্পূর্ণ রাসূলের অন্যান্য স্ত্রীদেরকে বুঝান হয়েছে। যেহেতু এতে রাসূল ও তার স্ত্রীদের মানহানী দ্বারা রাসূলকে কষ্টা দেয়া হয় তাই মহান আল্লাহ চিরকালের জন্য এ ধরনের জঘন্য কাজ থেকে কঠিনভাবে নিষেধ করে দিয়েছেন।

মু’মিন জননীদের প্রতি অপবাদ আরোপ রাসূলকে কষ্ট দেয়। যার প্রমাণ বুখারী ও মুসলিমে ইফক অধ্যায় বর্ণিত আয়েশা রা.-এর হাদীস। তিনি বলেন রাসূল সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়া সালস্নাম মিম্বরে দাঁড়িয়ে এ বলে আব্দুল্লাহ বিন উবাইকে শাস্তি প্রয়োগে নিরুপায়ত্ব প্রকাশ করলেন যে-

يا معشر المسلمين من يعذرنى من رجل قد بلغنى أذاه فى أهل بيتى . ( رواه البخارى و المســلم )

‘‘ঐ ব্যক্তির শাস্তি প্রয়োগে কে আমাকে নিরুপায় মনে করবে, যে আমার পরিবারের প্রতি অপবাদ রটিয়ে আমাকে কষ্ট দিয়েছে।’’ (বুখারী ও মুসলিম) এখানে রাসূল সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়া সালস্নাম আব্দুল্লাহ বিন উবাইকে মু’মিন জননীর প্রতি অপবাদ আরোপের কারণে শাস্তির সম্মুখে নিরুপায় বলে এদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ কাছে যে সে বাস্তবিকেই শাস্তির উপযুক্ত। তাই যদি আমি তাকে শাস্তির সম্মুখীন করি তাহলে কে একে ন্যায় বিচার বলে মেনে নিবে। এ হাদীস এ কথার উজ্জ্বল প্রমাণ যে মু’মিন জননীদের প্রতি অপবাদ রাসূলের কষ্টের কারণ। তাই মু’মিনদের মাঝে যারা স্বজনপ্রীতির স্বীকার হয়নি তারা সকলেই বলে উঠলেন—

مرنا نضرب أعناقهم فإنا نعذرك إذا أمرتنا بضر أعناقهم .

‘‘হে রাসূল! আপনার অনুমতি পেলে তার গর্দান উড়িয়ে দেব এবং আপনাকে এ নির্দেশের ব্যাপারে নিরুপায় মনে করব।’’ এ জন্যই তো সাআদ বিন মায়াজ (রা.) তার গর্দান উড়িয়ে দেয়ার অনুমতি চাইলে রাসূল তা অস্বীকার করেনি।

শায়খ মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব রহ. বলেন পূত পবিত্র মু’মিন জননী, রাসূলের স্ত্রীদের প্রতি যে বা যারা অপবাদ আরোপ করে তারা মুনাফেক নেতা আব্দুল্লাহ বিন উবায় বিন সালুলের দলভুক্ত। তাদের সকলের উদ্দেশ্যেই রাসূল বলেছেন—

يا معشر المسلمين من يعذرنى فيمن آذانى فى أهلى . رواه البخاري والمسلم

‘‘হে মুসলিম জনতা! যে ব্যক্তি আমাকে আমার স্ত্রী বিষয়ে কষ্ট দিয়েছে তাকে শাস্তির সম্মুখীন করলে কে আমাকে নিরুপায় মনে করবে।’’

মহান আল্লাহ তাআলা এ প্রসঙ্গে বলেন-

إِنَّ الَّذِينَ يُؤْذُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآَخِرَةِ وَأَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا مُهِينًا ﴿57﴾ وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُبِينًا ﴿58﴾

‘‘যারা আল্লাহ ও তার রাসূলকে কষ্ট দেয় আল্লাহ তাদের প্রতি ইহকালে ও পরকালে অভিসম্পাত করেন এবং তাদের জন্য প্রস্ত্তত রেখেছেন অবমাননাকর শাস্তি। যারা বিনা অপরাধে মু’মিন পুরুষ ও মু’মিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে।’’ সূরা আল-আহযাব : ৫৭-৫৮)

সুতরাং যারা পরবর্তীতে এ ধরনের কোন অপপ্রচার চালাবে মু’মিনদের উচিত তাদেরকে শক্ত হাতে দমন করা ও তাদের প্রতিবাদ করা। [রিসালুতন ফি রাদ্দি আলা রাফিজাহ ২৫,২৬] শুধু তাই নয় বরং মু’মিন জননীদের প্রতি এহেন অপবাদ স্বয়ং রাসূলের প্রতি ও জঘন্য অপবাদ, কেননা মহান আল্লাহ তাআলা বলেছেন—

الْخَبِيثَاتُ لِلْخَبِيثِينَ

‘‘মন্দ নারীগণ মন্দ পুরুষের জন্য।’’ তাই রাসূলের স্ত্রীগণ যদি মন্দ হয় তাহলে স্বয়ং রাসূল নিজেই মন্দ (নাউজুবিল্লাহি মিন জালিক)

আল্লামা ইবনে কাছির রহ. বলেন আয়েশা রা. পরিপূর্ণ পূত পবিত্র বিধায় রাসূলের স্ত্রী হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। কেননা রাসূল পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ পবিত্র ব্যক্তি। যদি তিনি অপবিত্র হতেন তাহলে কখনো রাসূলের স্ত্রী হওয়ার সুযোগ পেত না। তাই মহান আল্লাহ বলেছেন—

اولئك مبرؤن مما يقولون

‘‘অপবাদ আরোপকারীরা যা বলে মু’মিন জননীগণ তা থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র ও নিষ্কলুষ। [ইবনে কাসির ৩/২৭৮]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন