hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সাহাবাদের ব্যাপারে আহলে সুন্নত ওয়াল-জামাতের আকিদা

লেখকঃ মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ আল-অহাইবি

১৫
মন্দ বলার পরিণতি
পূর্ব মনীষীগণ সাহাবীদিগকে মন্দ বলার কু-পরিণামের ব্যাপারে সকলকে সজাগ করেছেন। এবং কুচক্রীদের অশুভ অভিপ্রায় সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন করেছেন, কেননা তাঁরা ভালভাবে জানতেন সাহাবীদের প্রতি অপরাধের পিছনে সে কুচক্রীদের কি মন্দ অভিলাষ লুকিয়েছিল। আর তাহল দীনে ইসলামকে সমূলে ধ্বংস করা।

তাই তাদের অনেকেই সংক্ষিপ্ত হলেও ব্যাপক অর্থ বোধক শব্দ বলেছেন যা আমি এ অধ্যায়ের ভূমিকায় আলোকপাত করব। অতঃপর তার ভয়াবহ পরিণতির উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব, ইনশাআল্লাহ।

আমার প্রতিবাদমূলক এ আলোচনা কেন্দ্রীভূত হবে প্রথম ও দ্বিতীয় প্রকার অপবাদীর বিপক্ষে। যারা সব সাহাবী বা অধিকাংশ সাহাবীদেরকে কাফের, ফাসেক বলে। অথবা যারা এমন ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে অপবাদ রটায় যাদের মর্যাদার সপক্ষে শরীয়তের ধারাবাহিক প্রমাণাদি রয়েছে। যেমন চার খলীফা। যারা সাহাবীগণকে গালমন্দ বলে, তাদের সম্পর্কে ইমাম মালেক রহ. বলেন তারা প্রথমে রাসূলকে অপবাদ দিতে চেয়েছিল যখন সম্ভব হল না তখন সাহাবীদেরকে অপবাদ দিতে আরম্ভ করল যাতে মানুষ রাসূল সম্বন্ধে এ মন্তব্য করতে পারে যে, লোকটি খুব মন্দ ছিল। অন্যথায় তার সাথিগণ মন্দ হত না। [রিছালাতুন ফি হুকমি সাবিব আসসাহাবা ৪৬, আচ্ছারেম আল-মাসলুল ৫৮০।]

ইমাম আহমদ রহ. বলেন যদি কোন ব্যক্তিকে দেখতে পাও যে, সে সাহাবীদের সমালোচনা করছে তাহলে মনে করবে সে মুসলমান নয়। [আল বেদায়া ওয়াননেহায়া : ৮/১৪২]

আবু যুরআহ আর রাজি রহ. বলেন, যদি দেখ কোন ব্যক্তি রাসূলের কোন সাহাবীকে হেয় প্রতিপন্ন করছে তাহলে মনে করবে যে, সে কাফের নাস্তিক। আর তা এজন্য যে, রাসূলকে সত্য নবী বলে আমরা বিশ্বাস করি, আর কুরআনকে সত্য কিতাব বলে আমরা বিশ্বাস করি, আর রাসূলের বাণী হাদীস ও কুরআন আমাদের পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন সাহাবীগণই, সুতরাং সাহাবীদেরকে অপবাদের উদ্দেশ্য হল কুরআন ও হাদীসকে ভ্রান্ত বলে প্রমাণ করা সুতরাং তারা যে নাস্তিক হবে এটাই স্বাভাবিক। ইমাম আবু নাঈম রহ. বলেন সাহাবীদের ভুল ত্রুটির পিছে পড়ো না। সাহাবীগণ শুধু ক্রোধ ও আবেগে যা করেছেন তার পিছে সে সব লোকেরাই পড়ে যাদের অন্তরাত্মা রোগাক্রান্ত। [আল ইমামত লি আনি নাঈম : ৩৪৪] তিনি আরও বলেন রাসূল, সাহাবী, ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে বল্গাহীন কথা বার্তা শুধু সেই বলবে যার অন্তর খারাপ। [আল ইমামাতু লি আবি নাঈম : ৩৭৬] আলেমগণের ভীতি প্রদর্শন নির্দিষ্ট কোন সাহাবী কেন্দ্রিক নয় বরং এতে সমস্ত সাহাবীই অন্তর্ভুক্ত। আবু যুরআহ রহ. বলেন ينتقص أحدا যে কোন এক সাহাবীকে হেয় প্রতিপন্ন করে। এখানে আলেমগণ শুধু সমালোচনা ও হেয় প্রতিপন্নের উপর ভীতি প্রদর্শন করেছেন। যা তাদেরকে গালি দেয়া ও কাফের বলা থেকে অনেক কর্ম অপবাদ, তাও শুধু যে কোন এক সাহাবীর ক্ষেত্রে। এখন ভেবে দেখা উচিত যারা অধিকাংশ সাহাবীদেরকে মন্দ বলে তাদের ব্যাপারে তারা কি বলবে।

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ ! আপনাদের সমীপে সাহাবীদেরকে মন্দ বলার কিছু কু-পরিণতি তুলে ধরা হল।

প্রথমত : কিছু সংখ্যক সাহাবী ব্যতীত বাকিদেরকে কাফের, ধর্মত্যাগী বলায় কুরআন ও হাদীসের বিশুদ্ধতার প্রতি সন্দেহের উদ্রেক হয়। কেননা বর্ণনা কারীর উপর সন্দেহ হলে বর্ণিত বস্ত্তর উপরও সন্দেহ হওয়াটাই স্বাভাবিক। তাহলে যে কুরআন আমাদের পর্যন্ত কাফের, ফাসেক ধর্ম ত্যাগীগণ পৌঁছিয়েছেন তা সঠিক বলে আমরা কীভাবে মেনে নিব? তাইতো দেখা যায় যারা সাহাবীদেরকে এহেন মন্দ বলে তাদের কেউ কেউ সুস্পষ্ট এ কথা বলে যে, আমাদের কাছে বিদ্যমান কুরআন বিকৃত কুরআন, আবার কেউ কেউ মুখে এরূপ না বললেও অন্তরে এ ধরনের আকীদা রাখে। এমনিভাবে হাদীসের অবস্থাও একই। যদি অধিকাংশ সাহাবীর অবস্থা এই হয় যে, তারা কাফের ফাসেক ধর্মত্যাগী, তাহলে সব হাদীসই مقطوع তথা রাসূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। যা কখনও শরীয়তের প্রমাণ হওয়ার যোগ্যতা রাখে না। এতদ সত্ত্বেও তাদের কেউ কেউ এ দাবি করে যে, তারা কুরআন বিশ্বাস করে। আমরা তাদেরকে বলব, যদি তাই হয় তাহলে কুরআনে যা বলা আছে তাই মানতে হবে। আর কুরআনে আছে ‘সাহাবীগণ এ উম্মতের শ্রেষ্ঠ মানুষ। আল্লাহ তাদের উপর সন্তুষ্ট আছেন। তারাও আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট আছে এবং আল্লাহ তাদের কিয়ামতের দিন অপমান করবেন না।’ তাদের সম্পর্কে এত সব শুভ সংবাদের পরও যারা তাদেরকে এ ধরনের মন্দ বলে তারা কুরআন অস্বীকারকারী। সুতরাং তারা নিজ দাবিতেই মিথ্যাবাদী।

দ্বিতীয়ত : তাদের এ কথা যা দাবি করে তাহল, এ উম্মত নিকৃষ্টতম উম্মত। এদেরকে মানুষের মন্দের জন্যই প্রেরণ করা হয়েছে। আর এদের মধ্য হতে প্রথম যুগের মানুষ যাদেরকে শ্রেষ্ঠ মানুষ বলা হয়েছে তারাই সর্ব নিকৃষ্ট মানুষ। কেননা এদের অধিকাংশই কাফের ফাসেক হয়ে গিয়েছে। [আসসারেমুল মাসলুল পৃ: ৫৮৭] কতই না মন্দ তাদের এহেন মন্তব্য।

তৃতীয়ত : তাদের এ কথার প্রেক্ষিতে মহান আল্লাহ তাআলার ব্যাপারে এমন দুটি বিষয়ের যে কোন একটি অবধারিত হয় যা আল্লাহর জন্য মোটেই প্রযোজ্য নয়। হয়তো আল্লাহ তাআলাকে অজ্ঞ বলতে হবে, নয়তো সাহাবীদের প্রসঙ্গে প্রশংসা সংবলিত আয়াতসমূহকে অনর্থক বলতে হবে। যদি বলা হয় যে, মহান আল্লাহ এ কথা জানতেন না যে তারা কাফের হয়ে যাবে তাই তাদের প্রশংসা বাণী নাজিল করেছেন ও তাদের সাথে উত্তম প্রতিদানের অঙ্গিকার করেছেন। তাহলে আল্লাহকে অজ্ঞ বলতে হবে যা তাঁর জন্য অশোভনীয় ও অসম্ভব। আর যদি বলা হয়, তারা যে কাফের হয়ে যাবে আল্লাহ তাআলা জানতেন তাহলে তাদেরকে উত্তম প্রতিদানের প্রতিশ্রুতি ও তাদের প্রতি সন্তুষ্টির যে ঘোষণা দিয়েছেন তা অনর্থক। আর আল্লাহ তাআলা থেকে অনর্থক কিছু প্রকাশ পাওয়া অসম্ভব। [ইত্তিহাক যাবিন নাজাবা লিখক মুহাম্মদ বিন আরবী পৃ: ৭৫] সাথে সাথে মহান আল্লাহ তাআলার কর্ম কৌশলের উপরও অপবাদ আসে, কেননা তাদের মন্তব্য অনুযায়ী মহান আল্লাহ তাআলা তার রাসূলের সংস্রবের জন্যও তার সার্বিক সাহায্য সহযোগিতা ও তার আত্মীয়তার জন্য (যেমন সাহাবী ওসমানের রা. নিকট তার দু কন্যাকে বিয়ে দিয়েছেন এবং সাহাবী আবু বকর ও ওমরের রা. দু’ কন্নাকে রাসূল সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়া সালস্নাম স্বয়ং বিয়ে করেছেন) এমন সব লোকদের নির্বাচন করেছেন যারা অচিরেই কাফের হয়ে যাবে। এটা প্রজ্ঞাময় মহান আল্লাহ তাআলার পক্ষে কীভাবে শোভা পায় ?

চতুর্থতঃ রাসূল সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়া সালস্নাম সাহাবীদের জন্য সুদীর্ঘ তেইশ বৎসর যাবৎ অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন যার ফলে এমন এক জাতি গড়ে উঠেছিল যাদের আলস্নাহ ভীরুতা ও দুনিয়া বিমুখ চরিত্র ও ত্যাগ তিতিক্ষা ছিল দৃষ্টান্ত তুল্য। এটা রাসূল সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়া সালস্নাম সর্বোত্তম প্রশিক্ষক হওয়ার জ্বলন্ত প্রমাণ।

কিন্তু এর বিপরীতে একদল লোক যারা নিজেদেরকে রাসূলের সাথে ও ইসলামের সাথে সংশ্লিষ্টতার দাবি করে অথচ সাহাবীদের সে সোনালি সমাজকে এমন এক বিকৃত আকৃতিতে উপস্থাপন করে যা রাসূলের তেইশ বৎসরের অক্লান্ত পরিশ্রম ও শিক্ষা দীক্ষাকে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়। এবং তারা সাহাবীদের সে সোনালি সমাজের এরূপ এক নৈতিক অবক্ষয় প্রমাণ করতে চায় যার দ্বারা এ কথা প্রতীয়মান হয় যে, তাদের নিকট মহান আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে কোন নিষ্ঠাবান সচেতন অভিভাবক আসেনি, যা ছিল এক জন নবীর নৈতিক গুণ। [তাদের অনেকেই সুস্পষ্ট এ মন্তব্যও করেছে যে রাসূল সমাজ সংস্কার করণে সফল হন নেই বরং এতে সফল হবে তাদের অদৃশ্য মাহদী। আল্লামা আশকারী লিখিত রাসূল ও রিসালত : ২১২,২১৩]

ইমামিয়াহ সম্প্রদায় রাসূলের তিরোধানের পর সত্যিকার ইসলামের বিস্তারে বিশ্বাসী। কেননা তাদের ধারণা মতে রাসূলের সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়া সালস্নাম দীর্ঘ তেইশ বৎসরের পরিশ্রমের ফসল হল তিন চারজন লোক মুসলমান হওয়া বাকি সব তার মৃত্যুর পর ধর্ম ত্যাগী হয়ে যায়। তাদের এ ঘৃণ্য চক্রান্তের উদ্দেশ্য হল এ কথা প্রমাণ করা যে, রাসূলের সংস্রব ও তার শিক্ষা দীক্ষা সম্পূর্ণ অকৃতকার্য ও নিষ্ফল হয়ে গিয়েছে। তার মৃত্যুর পর এর কার্যকারিতার কোন প্রভাব অবশিষ্ট ছিল না।

তাদের এ সমস্ত ভ্রান্ত ধারণা মানব সংশোধনে নৈরাশ্যের জন্ম দেয় এবং ইসলামের সুন্দর আদর্শ ও নৈতিক চরিত্র শিক্ষার প্রতি অনাস্থা সৃষ্টি করে ও মুহাম্মদ সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়া সালস্নাম নবী হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি করে। যেহেতু যে ইসলাম তার ধারক বাহক ও তার আহবায়কের উপস্থিতিতে এমন এক জাতি উপহার দিতে পারল না যারা হবে সমস্ত পৃথিবীর জন্য দৃষ্টান্ততুল্য, যাদের সমাজ হবে সমস্ত জগৎ বাসীর জন্য অনুসরণীয়। তাহলে কি করে দীর্ঘকাল পর সে ইসলাম অনুসরণ যোগ্য হতে পারে এবং এই দাওয়াতের প্রথম বিশ্বাসীগণ যখন সঠিক পথের উপর স্থির থাকতে পারেনি, পারেনি রাসূলের সাথে কৃত অঙ্গিকার রক্ষা করতে বরং তার মৃত্যুর পর চার জন ব্যতীত সকলই ধর্মত্যাগী হয়ে যায়। তাহলে আমরা কীভাবে বিশ্বাস করতে পারি যে, সে ধর্ম মানব জাতির আত্ম পরিশুদ্ধতায় ও চরিত্র গঠনে সফল-সক্ষম হবে এবং অসভ্য বর্বর মানব সমাজকে হেদায়েতের আলো দেখাতে সক্ষম হবে? বরং এ কথাই যুক্তি যুক্ত হবে যে যদি এ ধর্মের আহবায়ক সত্যিকারের নবী হতেন, তাহলে তাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে বিশ্বাসকারীর সু-বিশাল এক জামাআত তৈরি হত, ও তার দাওয়াত ও শিক্ষা, সফল শিক্ষা হত। তাদের ধারণা অনুযায়ী যদি কয়েক জন ব্যতীত সকলেই ধর্ম ত্যাগী কাফের ও মুনাফেক হয়ে যায়, তাহলে সে রাসূল থেকে কে বা কারা উপকৃত হল? আর রাসূল ও বা কেমন করে জগৎ বাসীর জন্য রহমত হলেন?! [শায়খ আবুল হাসান আলি নদবি লিখিত সুরতানে মুতাজাদ্দানে ১৩/৫৩,৫৪,৫৮,৯৯]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন