hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সাহাবাদের ব্যাপারে আহলে সুন্নত ওয়াল-জামাতের আকিদা

লেখকঃ মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ আল-অহাইবি

সাহাবীদের মর্যাদা সকল বস্ত্ত বা ব্যক্তির ঊর্ধ্বে :
সাহাবী তথা যে ঈমানের সাথে রাসূলের সংস্রব অবলম্বন করেছে - যদিও তা অল্প ক্ষণের জন্য হোক- তার মর্যাদা সকল মানুষের নিকট স্বীকৃত, এমনকি একজন সাধারণ সাহাবীর মর্যাদাও অন্য একজন অসাধারণ সাহাবীর নিকট স্বীকৃত। একথার প্রমাণ হিসাবে হাফেজ ইবনে হাজার র. বলেন আমি মুহাম্মদ বিন কুদামা আল-মারওয়াজী লিখিত আখবারুল খাওয়ারেজ (খারেজীদের সম্পর্কে) কিতাবে পড়েছি, সেখানে লেখা ছিল নুবাইজ আল-আনাজি আবু সায়ীদ আল- খুদরীর ঘটনা বর্ণনা করেন যে আমরা তাঁর নিকট বসে ছিলাম আর তিনি তখন হেলান দিয়ে আমাদের সাথে আলাপ করছিলেন। এ সময় আলী রা. ও মুআবিয়ার রা. এর আলোচনা উঠে। ইতিমধ্যে এক ব্যক্তি মুআবিয়া রা. সম্পর্কে কুটুক্তি করে বসল। এতদাশ্রবণে সাহাবী আবু সায়ীদ আল- খুদরী সোজা হয়ে বসলেন এবং সাহাবীদের মর্যাদার প্রসঙ্গে নিজের একটি ঘটনা বললেন। ঘটনাটি হল আবু বকর, ওমর, একজন বেদুঈনসহ কয়েকজন সাহাবী রাসূলের নিকট বসা ছিলেন। অতঃপর দেখি সে বেদুঈন একদিন সাহাবী ওমর রা. এর নিকট এসে আনসারদের সম্পর্কে বিদ্রূপ করেছে। এটা শুনে ওমর রা. বললেন যদি রাসূলুলস্নাহ সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়া সালস্নাম এর সাথে এ বেদুঈনের সংস্রব না থাকত তাহলে এক্ষণে তার শির উচ্ছেদ করে ফেলতাম। এখানে ওমর রা. ঐ বেদুঈনকে শাস্তি দেওয়া তো দূরে থাক ভৎর্সনা পর্যন্ত করলেন না। কারণ এ বেদুঈন রাসূলের সংস্রব পেয়েছে। এতে সুস্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে, রাসূলের সহচর্য সকল সম্মানের ঊর্ধ্বে।

আল্লামা ওয়াকী র. বলেন আমি বিখ্যাত সাধক সুফিয়ান রা. কে মহান আল্লাহ তাআলার বাণীর—

قُلِ الْحَمْدُ لِلَّهِ وَسَلَامٌ عَلَى عِبَادِهِ الَّذِينَ اصْطَفَى

অর্থাৎ- ‘বলুন সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য আর শান্তি ও নিরাপত্তা নির্বাচিত বান্দাদের জন্য’—ব্যাখ্যায় বলতে শুনেছি যে এখানে নির্বাচিত ব্যক্তি দ্বারা সাহাবীগণকে বুঝান হয়েছে। আল্লাহর এ মনোনয়ন যে কত গুরুত্ববহ তা ধারণার ঊর্ধ্বে, তাই সাহাবায়ে কেরাম ছাড়া অন্য যে কোন ব্যক্তি এলেম ও আমলে যতই অগ্রসর হোক না কেন, কোন সাহাবী থেকে উত্তম হওয়া তো দূরের কথা তাদের বা তাদের নিকটবর্তীও হতে পারবে না। ইবনে ওমর রা. বলেন-

لا تسبوا أصحاب محمد فلمقام أحدهم ساعة خير من عمل أحدكم أربعين سنة و رواية وكيع خير من عبادة أحدكم عمره . رواه أحمد فى فضائل الصحابة : ১/৫৮ إبن ماجة : ১/৩১ ، بن أبى عاصم : ২/৪৮৪

‘‘তোমরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথিদেরকে মন্দ বলো না। কেননা রণক্ষেত্রে তাদের এক মুহূর্তের অবস্থান তোমাদের চল্লিশ বৎসর ইবাদত অপেক্ষা উত্তম।’’ অন্য বর্ণনায় আছে, ‘‘তোমাদের সারা জীবনের আমলের চেয়ে উত্তম।’’ বিরাট সংখ্যক আলেমগণের মতে যেহেতু সাহাবীগণের রাসূলের সহচর্যের সুযোগ হয়েছে তাই অন্য লোকের কোন আমলই তার সমকক্ষ হতে পারে না।

আর যে সব সাহাবী রাসূলের সংস্রব লাভের সাথে সাথে রাসূলের প্রতিরক্ষায় সচেষ্ট ছিলেন, সাহায্য ও হিজরতে অগ্রগামী ছিলেন অথবা রাসূল আনীত শরিয়তকে পরবর্তীদের নিকট পৌঁছানোর দায়িত্ব পালন করেছেন, অন্য কোন মানুষই সে সব সাহাবীর মর্যাদায় আরোহণ করতে পারে না।

কেননা তাঁরা যে সব নেক আমল করেছেন, ভবিষ্যতে যারাই সে সব নেক আমল করবে তাদের সমপরিমাণ পুণ্য প্রথম ব্যক্তিবর্গ অবশ্যই পাবেন, তাতে সহজেই বুঝা যাচ্ছে অন্য কেউ তাদের সমকক্ষ হতেই পারে না। (ফতহুল বারী ৭/৭)

ইমাম আহমদ (রহ.) বলেন-

فأدناهم صحته هو أفضل من القرن الذين لم يروه ولو لقوا الله بجميع الأعمال . شرح أصول إعتقاد أهل السنة للألكائي /১৬০

অর্থাৎ ‘‘রাসূলের স্বল্পতম সংস্রব প্রাপ্ত ব্যক্তি পশ্চাতে আগত যে কোন ব্যক্তি অপেক্ষায় উত্তম, যদিও তার মাঝে সব ধরনের নেক আমলের সমাবেশ ঘটে।’’

আল্লামা নববী (র.) বলেন। রাসূলের সংস্রব যদিও তা এক মুহূর্তের জন্য হয় তার সমকক্ষ অন্য কোনে আমলই হতে পারে না। এবং এ সংস্রব মর্যাদা অন্য কিছু দ্বারা অর্জন হয় না আর ফযীলত বা মর্যাদা কখনও অনুমানের ভিত্তিতে হয় না বরং তা শরীয়তের প্রমাণাদির ভিত্তিতেই হয়ে থাকে। আর এটা মহান আল্লাহ তাআলার অনুদান, যাকে ইচ্ছা দান করেন। মুসলিম শরহে নববী : ১৬/৯৩

এখানে আরো একটি লক্ষণীয় বিষয় হল, মহান আল্লাহ তাআলা যিনি অন্তর্যামী, স্বয়ং তিনি নিজেই তাদেরকে পরিশুদ্ধি করছেন, এর চেয়ে উচ্চ মর্যাদা আর কি হতে পারে। যেমন মহান আল্লাহ বলেন,

فعلم ما في قلوبهم

‘‘তাদের অন্তরের অবস্থা মহান আল্লাহ তাআলা জানেন।’’

মহান আল্লাহ আরও বলেন—

لقد تاب الله على النبي والمهاجرين والأنصار .

‘‘আল্লাহ দয়াশীল নবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতি।’’

মহান আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেছেন,

لَقَدْ رَضِيَ اللَّهُ عَنِ الْمُؤْمِنِينَ إِذْ يُبَايِعُونَكَ تَحْتَ الشَّجَرَةِ . سورة الفتح ﴿18﴾

‘‘আল্লাহ মু’মিনদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন যখন তারা বৃক্ষের নীচে আপনার নিকট শপথ করল।’’ আল্লাহর পক্ষ থেকে পরিশুদ্ধতার এ সনদ সাহাবীদের জন্যই সীমিত, অন্য কারো জন্য নয়।

এখন প্রশ্ন হতে পারে যে এমন কিছু হাদীস দেখা যায় যেগুলি দ্বারা বর্ণিত দাবীর বিপরীত বুঝা যায়। যেমন সাহাবী আবু ছালাবার হাদীস, যাতে রাসূল বলেন-

تأتي أيام للعامل فيهن أجر خمسين قيل : منهم أو منا يا رسول الله؟ قال بل منكم . رواه أبوداؤد : ৪৩৪১ والترمذي : ২/১৭৭ وابن ماجة : ৪০১৪

অর্থাৎ- ‘‘মানুষের উপর এমন এক সময় আসবে যখন আমলকারীকে পঞ্চাশ ব্যক্তির সম পরিমাণ পুণ্য দেয়া হবে।’’ প্রশ্ন করা হল হে রাসূল! তাদের মধ্য হতে পঞ্চাশ ব্যক্তির সমান পুণ্য না আমাদের থেকে পঞ্চাশ ব্যক্তির সমপুণ্য? রাসূল উত্তর দিলেন ‘‘তোমাদের থেকে পঞ্চাশ ব্যক্তির সমমানের পুণ্য তাদের দেয়া হবে।’’ এমনিভাবে আবু জুমায়াহ রা. বলেন আবু ওবাদা রা. রাসূলকে জিজ্ঞাসা করলেন হে আল্লাহর রাসূল আমরা আপনার উপস্থিতিতে আপনার ঈমান এনেছি এবং আপনার সাথি হয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছি তথাপিও কি আমাদের চেয়ে কোন উত্তম মানুষ হতে পার? উত্তরে রাসূল বললেন-

قوم يكونون من بعدكم يؤمنون بي ولم يروني . رواه أحمد ৪/১০৬ والدارمي والطبراني ৪/২৩،২২

‘‘হ্যাঁ এমন এক সম্প্রদায় যারা তোমাদের পরে আসবে এবং আমাকে না দেখেও আমার প্রতি ঈমান আনবে। বিপরীতমুখী এ দু প্রকারের হাদীসের সমাধানে আলেমগণ বলেছেন-এ দু’প্রকারের হাদীসগুলোকে বিভিন্নভাবে সম্পূরক অর্থে গ্রহণ করা যায়।

(ক) পরবর্তীদের আমলের পুণ্য পঞ্চাশ গুণ হওয়া পূর্ববর্তীদের চেয়ে উত্তমের প্রমাণ নয়। কেননা কোন ব্যক্তির আমলের বিনিময় অন্য ব্যক্তির আমলের চেয়ে পঞ্চাশ গুণ বেশি হওয়া সমষ্টিগত ভাবে অন্য ব্যক্তির চেয়ে উত্তম হওয়ার প্রমাণ নয়।

(খ) অনেক সময় সাধারণ মানুষের মাঝে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয় যা অসাধারণ ব্যক্তির মাঝেও পাওয়া যায় না। তাই বলে সে বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ব্যক্তিকে সঠিক বিবেচনায় সর্বোত্তম ব্যক্তি বলা যায় না।

(গ) পূর্ববর্তী আর পরবর্তীদের সম্মিলিত আমলের ক্ষেত্রে উত্তম অনুত্তমের প্রশ্ন হতে পারে। আর তাহল সর্ব প্রকারের ইবাদত যাতে সমস্ত মু’মিন অংশীদার। এ অসম্ভব কিছু নয় যে কতিপয় পরবর্তীদের আমল কতিপয় পূর্ববর্তীদের আমলের তুলনায় পঞ্চাশ গুণ বেশি নেকী রাখবে। তবে যেসব মর্যাদা শুধু সাহাবীদের জন্য নির্দিষ্ট, যেমন রাসূলের যুগে উপস্থিতি ও স্বচক্ষে রাসূলের দর্শন লাভ ইত্যাদি। এগুলো এমনি এক সৌভাগ্যের বিষয় যা পরবর্তীদের কারো লাভ করা সম্ভব নয়, পরবর্তীদের কেউ যদি দুনিয়ার সমস্ত নেক আমল করে তাও পূর্ববর্তীদের মর্যাদায় পৌঁছা তো দূরের কথা তাদের কাছেও পৌঁছতে পারবে না।

(ঙ) আবু জুমা বর্ণিত হাদীসের বর্ণনাভংগি সম্পর্কে বর্ণনাকারীদের মাঝে মতভেদ পরিলÿÿত হয়। কোন কোন বর্ণনাকারী خير (উত্তম) শব্দ উল্লেখ করেছেন আর কতিপয় বর্ণনাকারী أعظم (শ্রেষ্ঠ) শব্দ উল্লেখ করেছেন। যেমন তার বাণীর বর্ণনা এসেছে-

قلنا يا رسول الله هل من قوم أعظم منا أجراـ رواه الطبراني . ৪/২২-২৩

আমরা জিজ্ঞাসা করলাম হে রাসূল! এমন কোন দল আছে কি? যারা পুণ্যের দিক দিয়ে আমাদের চেয়ে বড়?

হাফেজ ইবনে হাজর (রহ.) ফতহুল বারী গ্রন্থে বলেন এ হাদীসটি আবু জুমার হাদীসের তুলনায় শক্তিশালী। যেহেতু এটি আবু ছালাবার হাদীস সাদৃশ্য, যার প্রসঙ্গে ইতিপূর্বে আলোচনা হয়েছে।

পরিশেষে একটি কথা না জানলেই নয়, তাহল অধিকাংশ আলেমের সাথে কতিপয় আলেমের যে মত পার্থক্য রয়েছে তাহল শুধু সে সকল সাহাবীদের ব্যাপারে যাদের মধ্যে রাসূলের সাহচর্য ব্যতীত অন্য কোন বৈশিষ্ট্য নেই। আর যে সব সাহাবীর রাসূলের সাহচর্যের সাথে সাথে অন্যান্য বৈশিষ্ট্য ও রয়েছে তাঁরা পরবর্তী যে কোন লোকের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হওয়ার ব্যাপারে কারো কোন দ্বিমত নেই। যেমন চার খলীফা, ও জান্নাতের শুভ সংবাদ প্রাপ্ত অন্যান্য সাহাবী এবং বদর, তাবুক ও বাইআতে আকাবায় অংশ গ্রহণকারী সাহাবীবৃন্দ। এ জন্যই ইমাম ইবনে আব্দুল বার বদর যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী ও হুদাইবিয়ার শপথে অংশ নেয়া সাহাবীদেরকে মতানৈক্যের ঊর্ধ্বে বলে অভিহিত করেছেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন