hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সাহাবাদের ব্যাপারে আহলে সুন্নত ওয়াল-জামাতের আকিদা

লেখকঃ মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ আল-অহাইবি

১৮
নিম্নে তার কয়েকটি উদাহরণ পেশ করা হল।
আল্লামা যুহরী রহ. থেকে বর্ণিত মু’মিন জননী আয়েশা রা. বলেন আমার ধারণা ছিল যে, আমার অবস্থান মানুষের মাঝে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার অবসান ঘটাবে আমি ভাবতেও পারি নাই যে মুসলমানদের মাঝে এ ধরনের হত্যাকান্ড ঘটবে যদি জানতাম তাহলে কখনও এ অবস্থান নিতাম না। [মাগাজিউজ জুহুরী ১৫৪]

মু’মিন জননী আয়েশা রা. যখন আল্লাহর বাণী-

وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ . سورة الأحزاب ﴿33﴾

‘‘মু’মিন নারীগণ তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে।’’ পাঠ করতেন তখন এত বেশি ক্রন্দন করতেন যে তার ওড়না পর্যন্ত ভিজে যেত। [সিয়ারু আ’লাম আননাবলা-২/১৭৭]

আল্লামা শা’বি সূত্রে বর্ণিত আছে যে, খলীফাতুল মুসলিমীন আলী রা. যখন সাহাবী তালহা রা. কে মৃত্যু অবস্থায় দেখতে ফেলেন তখন তার মুখ থেকে ধুলি মুছতে ছিলেন ও বলতে ছিলেন আবু মুহাম্মাদকে এভাবে খোলা আকাশের নীচে পড়ে থাকতে দেখা আমার জন্য অসহ্য, অতঃপর বললেন আমার এহেন দুঃখ কষ্টের জন্য সমস্ত অভিযোগ মহান আল্লাহ তাআলার নিকটই পেশ করছি তার পর তিনি ও তার সাথিগণ সকলেই ডুকরে কেঁদে ফেললেন এবং তিনি আক্ষেপ করে বললেন হায় যদি আমি এর থেকে বিশ বৎসর পূর্বে মৃত্যুবরণ করতাম তাহলে কতই না ভাল হত। [ইবনুল আসির লিখিত উসদুল ঘায়াহ ৩/৮৮,৮৯]

খলীফাতুল মুসলিমিন আলী রা. আরও বলতেন, হে হাসান! হে হোসাইন! তোমার পিতা কখনও এ ধারণা করে নেই যে, ব্যাপারটি এত দূর গড়াবে যার কারণে তোমার পিতা আজ থেকে বিশ বৎসর পূর্বে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করেছে। [মানহাজুজ সুন্নাহ ৬/২০৯]

সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন ওমর ও সাহাবী সাআদ বিন মালেক তারা দুজনেই সিফফিনের যুদ্ধে অংশ না নিয়ে একাকিত্ব গ্রহণ করেছেন তাই আলী রা. যুদ্ধ কালীন অবস্থায় আফসোস করে বলতেন তারা দুজন কতই না সুন্দর কাজ করেছেন- যদি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ না করাটাই সঠিক হয়ে থাকে তাহলে তারা অনেক পুণ্যের অধিকারী। আর যদি তা অপরাধ হয়ে থাকে তাহলে সে অপরাধ খুবই নগণ্য। এটা হল সে আলী রা. এর বক্তব্য যার ব্যাপারে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের অভিমত হল তিনি সত্যের নিকটতম ছিলেন। [ফাতহুলবারী ২২/৬৭]

যুবায়ের বিন আওয়াম রা. যিনি মু’মিন জননী আয়েশার রা. সপক্ষে যুদ্ধ করছিলেন, বললেন এ যুদ্ধ ঐ সব ফেতনা যা নিয়ে আমরা পরস্পর আলোচনা করতাম এতদ শ্রবণে তার আজাদ কৃত গোলাম বলল, আপনি নিজেই এতে অংশ গ্রহণ করেছেন আবার আপনিই একে ফেতনা বলে আখ্যায়িত করছেন। যুবায়ের রা. বললেন আফসোস আমি অন্যকে আলোর সন্ধান দেই কিন্তু আমি নিজেই আলো দেখি না। আমি যে দিকেই তাকাই শুধু ফেতনাই দেখি তাই আমি এ পথে অগ্রসর হয়েছি, জানি না ভাল করেছি না মন্দ করেছি। [তারিখে তাবারি ৪/৪৭৬] যে মুআবিয়া রা. আলী রা. সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তার নিকট যখন আলী রা. এর মৃত্যুর সংবাদ পৌঁছাল তখন তিনি সাথে সাথে বসে পড়লেন এবং বললেন إنا لله وإنا أليه راجعون অতঃপর ক্রন্দনে ভেঙে পড়লেন এ অবস্থা দেখে তার স্ত্রী বলল, কাল তার সাথে যুদ্ধ করেছ আর আজ তার জন্য কাঁদতে কাঁদতে অস্থির হয়ে যাচ্ছ! উত্তরে তিনি বললেন, মানুষ যে তার জ্ঞান বুদ্ধি ও মান, মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হয়ে গেছে সে জন্য আমি কাঁদছি। অন্য বর্ণনায় আছে তিনি বললেন, তুমি কি জান মানুষ কি জ্ঞান-বিজ্ঞান আর মান মর্যাদা হারিয়েছে? [আল বিদায়াহ ওয়াননিহায়াহ ৮/১৫-১৩৩]

বড় আশ্চর্যের ব্যাপার এই যে, তাদের সপক্ষে অসংখ্য প্রমাণাদি রয়েছে তথাপিও ব্যাপারটি ছিল সম্পূর্ণ অস্পষ্ট, তাহলে এহেন একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে তাদের সমালোচনা করা কেমন করে শোভা পায়, আর এ ব্যাপারে তারা ছিলেন ইজতিহাদকারী তাই তাদের মধ্য হতে যারা শুদ্ধ করেছে তারা দু’ পুরস্কার পাবে আর যারা ভুল করেছে তারা এক পুরস্কার পাবে, তার পরে ও তাদের মাঝে ঘটে যাওয়া বিষয়ের জন্য তারা লজ্জিত ও মর্মাহত হয়ে আল্লাহর নিকট তাওবা করেছেন। আর যে সব দুঃখ কষ্ট তাদের উপর অতিবাহিত হয়েছে তার জন্য মহান আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ক্ষমা করবেন ও তাদের মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন। রাসূল সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়া সালস্নাম বলেনঃ

لا يزال البلاء بالمؤمن حتى يسير في الأرض وليس عليه خطيئته

‘‘অনেক সময়ে মু’মিনের উপর লাগাতার বিপদ আসতেই থাকে, যাতে জীবন্ত অবস্থায় তার সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যায়।’’ [তিরমিযি হাদিস নং ২৩৯৮]

যদি একথা মেনেও নেওয়া হওয়া যে তাদের কেউ কেউ নিশ্চিত অপরাধী ছিলেন তাহলেও তাদের ব্যাপারে কমপক্ষে এ কথাটুকু মানতেই হবে যে মহান আল্লাহ তাদেরকে বহুবিদ কারণে ক্ষমা করে দিয়েছেন। যেমন ঈমানে অগ্রণী, ঈমানের জন্য ত্যাগ তিতিক্ষা ও কষ্ট ক্লেশ সহ্য, যুদ্ধ বিগ্রহ ও তাওবা ইস্তিগফার যা দ্বারা মহান আল্লাহ তাআলা গুনাহগুলোকে নেকির দ্বারা পরিবর্তন করে দিয়েছেন। আর এ ধরনের তাওবার সৌভাগ্য মহান আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে দান করেন।

ষষ্ঠত : আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের আকীদা এই যে, যে সমস্ত সাহাবী ছোট বড় সব ধরনের গুনাহ থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র নয় বরং তাদের কেউ অপরাধী হতেও পারে তবে তাদের যে ঈমানে অগ্রণীও অন্যান্য মর্যাদা রয়েছে সে জন্য তারা ইনশাআল্লাহ ক্ষমা পেয়ে যাবে। তথাপিও তাদের মাঝে যখন আল্লাহর ভয় বিদ্যমান ছিল, তাই যদি তাদের কোন গুনাহ হয়েও যায়, তাহলে হয়তো সে গুনাহ থেকে তাওবা করেছেন। অথবা এমন কোন ভাল আমল করেছেন যা সে গুনাহকে মুছে ফেলেছে অথবা ঈমানে অগ্রণীর কারণে সে ক্ষমা পেয়ে যাবে অথবা রাসূল তার ক্ষমার জন্য সুপারিশ করবেন আর তারাই রাসূলের সুপারিশ পাওয়ার বেশি হকদার। অথবা দুনিয়াতে তারা কোন বিপদের সম্মুখীন হয়ে তার উপর ধৈর্য ধারণ করে ক্ষমা প্রাপ্ত হয়েছেন তাহলে ভেবে দেখা উচিত, নিশ্চিত গুনাহ থেকে নিষ্কৃতির এত উপায় থাকলে যে বিষয়ে তারা ইজতিহাদকারী সে বিষয়ের অবস্থা যেখানে ভুল করলেও এক নেকি আর শুদ্ধ করলে দু নেকি, সেখানে কি ÿমার ব্যবস্থা নাই? তারপরও বলব তাদের দ্বারা যে অপরাধ হয়েছে, তা তাদের দৃঢ় ঈমান, নিখুঁত ইলম ও আমলের তুলনায় খুবই নগণ্য মার্জনীয় যেহেতু তাদের অনেক মান ও মর্যাদা, ত্যাগ তিতিক্ষা রয়েছে যেমন ইসলামের জন্য হিজরত, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ ইত্যাদি। [খলিল হেরাস লিখিত শরহে আক্বিদাতুল ওয়াসেতিয়য়াহ।]

আল্লামা যাহাবি রহ. বলেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ ইবাদত ও ইসলামের অন্যান্য খেদমত ইত্যাদি গুনাহ ক্ষমার উপায়। আমরা তাদের ব্যাপারে সীমা-লঙ্ঘন করি না ও তাদেরকে সম্পূর্ণ নিষ্পাপও বলি না। [সিয়ারু আলামিন নুবালা ১০/৯৩]

তবে আমরা তাদেরকে ইনসাফগার ও ন্যায়পরায়ণ মনে করি, যার জন্য সম্পূর্ণ নিষ্পাপ হওয়া জরুরি নয়। ইনসাফগার বলতে বুঝায় স্বভাব চরিত্র ও ধর্ম কর্মে ঠিক থাকা। যার মধ্যে এগুণগুলো আসবে তার ভিতর আলস্নাহভীতি ও মানুষের প্রতি সহানুভূতি জাগ্রত হবে, যার কারণে তার ঈমান শক্তিশালী হবে। তবে এই ইনসাফের জন্য সম্পূর্ণ নিষ্পাপ হওয়া জরুরি নয়। [আল্লামা গাজ্জালী লিখিত আলমুস তাসফা] ইতিপূর্বেও আলোচনা হয়েছে যে, সাহাবীদের সমালোচনা করা মোটেই জায়েজ নয়, একান্ত প্রয়োজনে যদি তাদের ভুল ত্রুটির পর্যালোচনা করতে হয় তাহলে সাথে সাথে ঈমানে অগ্রণী ও জিহাদ তাওবার আলোকে তাদের ধর্মীয় মর্যাদাও বর্ণনা করতে হবে। যেমন সাহাবী হাতেব বিন আবি বালতাআ রা. থেকে একটি পদস্খলন ঘটেছিল কিন্তু পরক্ষণে তিনি এমন খাঁটি তাওবা করেছেন যা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষমার জন্য যথেষ্ট ছিল। এখন যদি কেউ তার এহেন তাওবার কথা আলোচনা না করে শুধু তার পদস্খলনের কথা আলোচনা করে তাহলে এটা তার জন্য বৈধ হবে না। [আবু নাঈম লিখিত আল ইমামাহ ৩৪০,৩৪১ মানহাজুস সুন্নাহ ৬/২০৭]

তাই মানুষের জীবনে ছোট খাট যে ভুল ভ্রান্তি হয়েছে পরক্ষণে তা থেকে তাওবা করেছে সংগত কারণেই তার আলোচনা করাই উচিত। কেননা অসম্পূর্ণ সূচনা দেখার বিষয় নয়, শুভ পরিণামই লক্ষণীয়- যদিও কেউ তার সাফায়ী না গায়। আর যদি তার সাফায়ী গায়, মহান আল্লাহ তাআলা যার আছে অদৃশ্যের জ্ঞান তাহলে তো আর কোন কথাই নেই।

رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلًّا لِلَّذِينَ آَمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ . سورة الحشر ﴿10﴾

‘‘হে আমাদের পালনকর্তা আমাদেরকে এবং ঈমানে অগ্রণী আমাদের ভ্রাতাদেরকে ক্ষমা কর এবং ঈমানদারের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোন বিদ্বেষ রেখো না। হে আমাদের পালনকর্তা তুমি দয়ালু পরম করুণাময়।’’

হে আল্লাহ সাহাবীগণকে ভালবাসার ও তাদের উপর আরোপিত অপবাদের প্রতিরোধ করার এবং তাদের প্রশংসা করার ও তাদের নীতি-আদর্শ অনুসরণ করার সৌভাগ্য দান কর।

وصلى الله على سيدنا محمد وعلى أله وصحبه وسلم

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন