hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আমরা কাদের সাথে বন্ধুত্ব করব

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

বন্ধুত্ব ও শত্রুতার গুরুত্ব
ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা হচ্ছে - اَلْوَلَاءُ وَالْبَرَاءُ (আল-ওয়ালাউ ওয়াল-বারাউ)। اَلْوَلَاءُ (আল-ওয়ালাউ) শব্দের অর্থ হচ্ছে- বন্ধুত্ব পোষণ করা, অভিভাবক বানানো, সম্পর্ক জোড়া ইত্যাদি। আর اَلْبَرَاءُ (আল-বারাউ) শব্দের অর্থ হচ্ছে- সম্পর্কচ্ছেদ করা, ত্যাগ করা, শত্রুতা পোষণ করা ইত্যাদি।

আল-ওয়ালাউ এর উৎস হচ্ছে ভালোবাসা, আর আল-বারাউ এর উৎস হচ্ছে ঘৃণা। আল-ওয়ালাউ সাহায্যের দিকে উৎসাহিত করে আর আল-বারাউ শত্রুতার দিকে উৎসাহিত করে। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর জন্য ভালোবাসা এবং আল্লাহর জন্য ঘৃণা পোষণ করাই হচ্ছে - اَلْوَلَاءُ وَالْبَرَاءُ (আল-ওয়ালাউ ওয়াল-বারাআউ) এর মূল কথা।

ইসলামে এ দুটি বিষয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসা এবং আল্লাহর জন্য কাউকে ঘৃণা করা ঈমানের একটি মৌলিক বিষয়। একজন মুমিন ব্যক্তি কাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে এবং কাদের সাথে শত্রুতা পোষণ করবে- এ জ্ঞান লাভ করা অত্যন্ত অপরিহার্য। আল্লাহর কোন শত্রুর সাথে বন্ধুত্ব পোষণ করা আবার কোন মুমিনের সাথে শত্রুতা পোষণ করা ঈমানের দাবির বিপরীত।

ঈমানের দাবি হচ্ছে, মুমিন ব্যক্তি শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য ভালোবাসবে এবং আল্লাহর জন্যই ঘৃণা করবে। কারো সাথে বন্ধুত্ব করতে হলে কেবল আল্লাহর জন্যই করবে এবং কারো সাথে শত্রুতা পোষণ করতে হলে তাও আল্লাহর জন্যই করবে। আল্লাহ যা ভালোবাসেন মুমিন তা ভালোবাসবে, আর আল্লাহ যা ঘৃণা করেন মুমিন তা ঘৃণা করবে।

ঈমানের স্বাদ হচ্ছে আল্লাহর জন্য ভালোবাসা পোষণ করা :

عَنْ اَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ قَالَ : ثَلَاثٌ مَنْ كُنَّ فِيْهِ وَجَدَ حَلَاوَةَ الْاِيْمَانِ اَنْ يَكُوْنَ اللهُ وَرَسُوْلُه اَحَبَّ اِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا وَاَنْ يُحِبَّ الْمَرْءَ لَا يُحِبُّه اِلَّا لِلّٰهِ، وَاَنْ يَكْرَهَ اَنْ يَعُوْدَ فِي الْكُفْرِ كَمَا يَكْرَهُ اَنْ يُقْذَفَ فِي النَّارِ

আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ ইরশাদ করেছেন, তিনটি গুণ যার মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে সে ঈমানের স্বাদ পেয়েছে :

(১) যার কাছে সকল জিনিস হতে স্বয়ং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিক প্রিয়,

(২) কাউকে ভালোবাসলে কেবল আল্লাহর জন্যই ভালোবাসে এবং

(৩) ঈমান গ্রহণের পর আবার কুফরীর দিকে ফিরে যাওয়া এমনভাবে অপছন্দ করে, যেমন সে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে অপছন্দ করে। [সহীহ বুখারী, হা/১৬।]

ঈমানের পূর্ণতা হচ্ছে আল্লাহর জন্য ভালোবাসা এবং আল্লাহর জন্য ঘৃণা করা :

عَنْ مُعَاذٍ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ اَنَّهٗ قَالَ مَنْ اَعْطٰى لِلّٰهِ تَعَالٰى وَمَنَعَ لِلّٰهِ تَعَالٰى وَاَحَبَّ لِلّٰهِ تَعَالٰى وَاَبْغَضَ لِلّٰهِ تَعَالٰى وَاَنْكَحَ لِلّٰهِ تَعَالٰى فَقَدِ اسْتَكْمَلَ اِيْمَانَهٗ

মু‘আয (রাঃ) রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে দান করল এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যেই দান করা থেকে বিরত থাকল এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যেই কাউকে ভালোবাসল, আবার আল্লাহর উদ্দেশ্যেই কাউকে ঘৃণা করল এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যেই বিবাহ করল সে তার ঈমানকে পরিপূর্ণ করে নিল। [তিরমিযী, হা/২৫২১; আবু দাউদ, হা/৪৬৭৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৫৬১৭।]

এ হাদীসে মুমিনের ৫টি আলামতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তার মধ্যে দুটি হলো :

১. اَلْحُبُّ لِلّٰهِ (কাউকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালোবাসা) অর্থাৎ আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে অথবা কাউকে আল্লাহওয়ালা মনে করে অথবা আল্লাহ ভালোবাসতে নির্দেশ করেছেন বিধায় তাকে ভালোবাসা।

২. اَلْبُغْضُ لِلّٰهِ (কাউকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঘৃণা করা) অর্থাৎ কোন ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে নয়; বরং শুধুমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই তাকে ঘৃণা করে।

ঈমানের সবচেয়ে দৃঢ় বন্ধন হচ্ছে আল্লাহর জন্য ভালোবাসা এবং আল্লাহর জন্য ঘৃণা করা :

عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : اَوْثَقُ عُرَى الْاِيْمَانِ الْحُبُّ فِي اللهِ وَالْبُغْضُ فِي اللهِ

বারা ইবনে আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, আল্লাহর জন্য ভালোবাসা এবং আল্লাহর জন্য ঘৃণা করা হচ্ছে ঈমানের সবচেয়ে দৃঢ় বন্ধন। [মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হা/৩৫৮৭৯।]

যে যাকে ভালোবাসবে পরকালেও সে তার সাথি হবে :

عَنْ عَبْدِ اللهِ عَنِ النَّبِيِّ اَنَّهٗ قَالَ : اَلْمَرْءُ مَعَ مَنْ اَحَبَّ

আবদুল্লাহ (রাঃ) নবী ﷺ হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, মানুষ তার সাথেই থাকবে, যাকে সে ভালোবাসে। [সহীহ বুখারী, হা/৬১৬৮; সহীহ মুসলিম, হা/৬৮৮৮।]

عَنْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ رَاَيْتُ اَصْحَابَ رَسُوْلِ اللهِ - - فَرِحُوْا بِشَىْءٍ لَمْ اَرَهُمْ فَرِحُوْا بِشَىْءٍ اَشَدَّ مِنْهُ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُوْلَ اللهِ اَلرَّجُلُ يُحِبُّ الرَّجُلَ عَلَى الْعَمَلِ مِنَ الْخَيْرِ يَعْمَلُ بِهٖ وَلَا يَعْمَلُ بِمِثْلِهٖ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ -: اَلْمَرْءُ مَعَ مَنْ اَحَبَّ

আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী ﷺ এর সাহাবীদেরকে দেখেছি যে, তারা একটি বিষয়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছে, যেভাবে খুশি হতে আমি তাদেরকে আর কখনো দেখিনি। (বিষয়টি হচ্ছে) একদা এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তিকে ভালোবাসে; কিন্তু তার মতো আমল করতে পারে না। তখন নবী ﷺ বললেন, মানুষ তার সাথেই থাকবে যাকে সে ভালোবাসে। [আবু দাউদ, হা/৫১২৯।]

যারা নবী ﷺ কে ভালোবাসবে তারা নবীর সাথি হবে :

﴿وَمَنْ يُّطِعِ اللهَ وَالرَّسُوْلَ فَاُولٰٓئِكَ مَعَ الَّذِيْنَ اَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ مِّنَ النَّبِيِّيْنَ وَالصِّدِّيْقِيْنَ وَالشُّهَدَآءِ وَالصَّالِحِيْنَۚ وَحَسُنَ اُولٰٓئِكَ رَفِيْقًا﴾

যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং রাসূলের আনুগত্য করবে, সে তো নবী, সত্যনিষ্ঠ, শহীদ ও সৎকর্মপরায়ণ এবং যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন তাদেরই সঙ্গী হবে। আর তারা কতই না উত্তম সঙ্গী! [সূরা নিসা- ৬৯।]

হাদীসে এসেছে,

عَنْ اَنَسٍ ، اَنَّهٗ قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ اِلٰى رَسُوْلِ اللهِ فَقَالَ : يَا رَسُوْلَ اللهِ مَتٰى قِيَامُ السَّاعَةِ ؟ فَقَامَ النَّبِيُّ اِلَى الصَّلَاةِ ، فَلَمَّا قَضٰى صَلَاتَهٗ قَالَ : اَيْنَ السَّائِلُ عَنْ قِيَامِ السَّاعَةِ ؟ فَقَالَ الرَّجُلُ : اَنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ . قَالَ : مَا اَعْدَدْتَّ لَهَا ؟ قَالَ : يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا اَعْدَدْتُّ لَهَا كَبِيْرَ صَلَاةٍ وَلَا صَوْمٍ اِلَّا اَنِّيْ أُحِبُّ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ . فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ : اَلْمَرْءُ مَعَ مَنْ اَحَبَّ وَاَنْتَ مَعَ مَنْ اَحْبَبْتَ فَمَا رَاَيْتُ فَرِحَ الْمُسْلِمُوْنَ بَعْدَ الْاِسْلَامِ فَرَحَهُمْ بِهٰذَا

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল যে, হে আল্লাহর রাসূল! কিয়ামত কখন হবে? তখন নবী ﷺ সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন। অতঃপর সালাত শেষ করে জিজ্ঞেস করলেন, কিয়ামত সম্পর্কে প্রশ্নকারী লোকটি কোথায়? তখন লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি। তখন তিনি বললেন, তুমি কিয়ামতের জন্য কী প্রস্তুত করে রেখেছ? সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তেমন কিছু প্রস্তুত করে রাখিনি। বেশি নামাযও নয় এবং বেশি রোযাও নয়। তবে আমি আল্লাহ এবং তার রাসূলকে ভালোবাসি। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, মানুষ তার সাথেই থাকবে যাকে সে ভালোবাসবে। আর তুমিও তার সাথে থাকবে যাকে তুমি ভালোবাস। আনাস (রাঃ) বলেন, নবী ﷺ এর এ কথা শুনার পর মানুষ যত খুশি হয়েছে ইসলাম গ্রহণের পর এত খুশি অন্য কিছুতে হয়নি। [তিরমিযী, হা/২৩৮৫।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন