hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আমরা কাদের সাথে বন্ধুত্ব করব

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

সৎ বন্ধুত্বের দাবিসমূহ
বন্ধু হওয়ার জন্য মুমিনদের কতগুলো গুণ ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন- নামায কায়েম করা, যাকাতব্যবস্থা চালু করা, নিজেদের দৈনন্দিন জীবনের কার্যাবলিতে আল্লাহ ও রাসূলের দেয়া সীমারেখা অনুসরণ করে চলা এবং সমাজ জীবনেও তা প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা। সমাজব্যবস্থা ইসলাম নির্দেশিত কাঠামোতে গড়ে তোলার বাস্তব চেষ্টা করা। সমাজে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠা এবং অন্যায় ও মিথ্যা প্রতিরোধ করার কাজে আত্মনিয়োগ করা। আল্লাহর বান্দাদেরকে গায়রুল্লাহর দাসত্ব থেকে মুক্ত করে একমাত্র তাঁরই গোলামী করে চলার পরিবেশ সৃষ্টি করে দেয়া। সত্যপন্থীদের চলার পথ সুগম করে দেয়া ও বাতিলপন্থীদের অন্যায় ও অসত্য প্রতিষ্ঠার উপর আঘাত হানা। মুমিনদের সর্বপ্রকার সহায়তা করা এবং বিশৃংখলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। নিচে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

পরস্পরকে সহযোগিতা করা :

﴿وَتَعَاوَنُوْا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوٰى وَلَا تَعَاوَنُوْا عَلَى الْاِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاتَّقُوا اللهَؕ اِنَّ اللهَ شَدِيْدُ الْعِقَابِ﴾

তোমরা সৎকর্ম ও তাক্বওয়ার বিষয়ে পরস্পরকে সহযোগিতা করো এবং পাপ ও সীমালঙ্ঘনের বিষয়ে একে অন্যের সহযোগিতা করো না। আর আল্লাহকে ভয় করো; নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তিদানে খুবই কঠোর। [সূরা মায়েদা- ২।]

মুমিনরা পরস্পরের শুভাকাঙ্ক্ষী ও প্রকৃত বন্ধু। কেননা তারা একে অপরকে রাববুল আলামীনের পথে চলতে সহায়তা করে। আল্লাহ তা‘আলার বিধিনিষেধ মেনে চলতে ও তাঁর দেয়া সীমারেখার ভেতর থেকে বিশ্বজাহানকে তাঁরই পথে পরিচালনা করার কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা করে থাকে। এখানে تَعَاوَنُوْا (তা‘আওয়ানূ) বলতে সাহায্য, সহায়তা, সমর্থন, পৃষ্ঠপোষকতা, বন্ধুত্ব, আত্মীয়তা, অভিভাবকত্ব ইত্যাদি বিষয়সমূহকে বুঝানো হয়েছে। তাছাড়া এমন ধরণের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও বুঝানো হয়েছে, যা একটি রাষ্ট্রের সাথে নাগরিকদের, নাগরিকদের সাথে রাষ্ট্রের এবং নাগরিকদের নিজেদের মধ্যে বিরাজ করে। এমনকি যদি কোথাও মুসলিমদের উপর যুলুম হতে থাকে এবং ইসলামী সমাজের সাথে সম্পর্কের কারণে তারা দারুল ইসলামের সরকার ও তার অধিবাসীদের কাছে সাহায্য চায়, তাহলে নিজেদের এ মজলুম ভাইদের সাহায্য করা তাদের জন্য ফরয হয়ে যাবে। যেভাবে কাফিররা পরস্পরের সাহায্য-সমর্থন করে, তোমরা (ঈমানদাররা) যদি সেভাবে পরস্পরের সাহায্য-সমর্থন না কর, তাহলে পৃথিবীতে বিরাট বিপর্যয় সৃষ্টি হবে।

সৎকার্যের নির্দেশ ও অসৎকার্য হতে নিষেধ করা, সালাত কায়েম করা ও যাকাত দেয়া :

﴿وَالْمُؤْمِنُوْنَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ اَوْلِيَآءُ بَعْضٍ يَّاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُقِيْمُوْنَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوْنَ الزَّكَاةَ وَيُطِيْعُوْنَ اللهَ وَرَسُوْلَهٗؕ اُولٰٓئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ اللهُؕ اِنَّ اللهَ عَزِيْزٌ حَكِيْمٌ﴾

মুমিন নর ও মুমিন নারী একে অপরের বন্ধু, এরা সৎকার্যের নির্দেশ দেয় এবং অসৎকার্য হতে নিষেধ করে, সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে; অচিরেই আল্লাহ এদেরকে দয়া প্রদর্শন করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়। [সূরা তাওবা- ৭১।]

যেকোন মুসলিম সম্প্রদায়কে সমর্থন ও সাহায্য করা :

﴿اِنَّ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَهَاجَرُوْا وَجَاهَدُوْا بِاَمْوَالِهِمْ وَاَنْفُسِهِمْ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَالَّذِيْنَ اٰوَوْا وَّنَصَرُوْاۤ اُولٰٓئِكَ بَعْضُهُمْ اَوْلِيَآءُ بَعْضٍ﴾

যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে এবং জীবন ও সম্পদ দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে; আর যারা আশ্রয় দান করেছে এবং সাহায্য করেছে, তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। [সূরা আনফাল- ৭২।]

অন্যান্য মুসলিম ভাইদের আনন্দ এবং দুর্দশায় সাথি হওয়া :

عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍْ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ  : مَثَلُ الْمُؤْمِنِيْنَ فِىْ تَوَادِّهِمْ وَتَرَاحُمِهِمْ وَتَعَاطُفِهِمْ مَثَلُ الْجَسَدِ اِذَا اشْتَكٰى مِنْهُ عُضْوٌ تَدَاعٰى لَهٗ سَائِرُ الْجَسَدِ بِالسَّهَرِ وَالْحُمَّى

নু‘মান ইবনে বাশীর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, একে অন্যের প্রতি দয়া প্রদর্শনে, প্রেম-ভালোবাসায়, মায়া-মমতায় এবং একের সাহায্যে অন্যের ছুটে আসায় ঈমানদারদেরকে তুমি এক দেহের সমতুল্য দেখবে। যেমন দেহের কোন অঙ্গে ব্যথা হলে গোটা দেহটাই অনিদ্রা এবং জ্বরে তার শরীক হয়ে যায় (ঈমানদারদের অবস্থাও অনুরূপ)। [সহীহ বুখারী, হা/৬০১১; সহীহ মুসলিম, হা/৬৭৫১; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮৩৭৩।]

অন্যান্য মুসলিমদেরকে ঠাট্টা করা থেকে বিরত থাকা :

﴿يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِّنْ قَوْمٍ عَسٰۤى اَنْ يَّكُوْنُوْا خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَآءٌ مِّنْ نِّسَآءٍ عَسٰۤى اَنْ يَّكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّ ﴾

হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কোন সম্প্রদায় যেন অপর কোন সম্প্রদায়কে নিয়ে ঠাট্টা না করে। হতে পারে, তারাই এদের চেয়ে উত্তম আবার কোন মহিলা সম্প্রদায়ও যেন অপর কোন মহিলা সম্প্রদায়কে নিয়ে ঠাট্টা না করে। হতে পারে, তারাই এদের চেয়ে বেশি উত্তম। [সূরা হুজুরাত- ১১।]

এ আয়াতে এমনসব বড় বড় অন্যায়ের পথ রুদ্ধ করার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে, যা সাধারণত মুমিনদের পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট করে দেয়। পারস্পরিক শত্রুতা সৃষ্টির মূল কারণ হলো- একে অপরের ইজ্জতের উপর হামলা করা, মনোকষ্ট দেয়া, অপরের প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করা এবং একে অপরের দোষ-ত্রুটি তালাশ করা। এসব কারণ অন্যান্য কারণের সাথে মিশে বড় বড় ফিতনা সৃষ্টি করে।

একে অপরকে খারাপ নামে না ডাকা :

﴿وَلَا تَلْمِزُوْاۤ اَنْفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوْا بِالْاَلْقَابِؕ بِئْسَ الْاِسْمُ الْفُسُوْقُ بَعْدَ الْاِيْمَانِۚ وَمَنْ لَّمْ يَتُبْ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الظَّالِمُوْنَ﴾

তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে খারাপ নাম নিয়েও সম্বোধন করো না; ঈমান আনার পর মন্দ নামে ডাকা কতই না জঘন্য কাজ! যারা এ ধরণের আচরণ থেকে ফিরে না আসে, (প্রকৃতপক্ষে) তারাই যালিম। [সূরা হুজুরাত- ১১।]

لَمْزٌ (লামযুন) শব্দটির মধ্যে বিদ্রূপ ও কুৎসা ছাড়াও আরো অর্থ রয়েছে। যেমন- উপহাস করা, অপবাদ আরোপ করা, দোষ বের করা এবং খোলাখুলি বা গোপনে অথবা ইশারা-ইঙ্গিত করে কাউকে তিরস্কারের লক্ষ্যস্থল বানানো। এসব কাজও যেহেতু পারস্পরিক সুসম্পর্ক নষ্ট করে এবং সমাজে বিপর্যয় সৃষ্টি করে তাই এসব হারাম করে দেয়া হয়েছে। কাউকে খারাপ নামে ডাকা অথবা তাকে এমন উপাধি দেয়া, যা তার অপছন্দ হয়- এসবকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

কাফির-মুশরিকদের ঘৃণা করা ও তাদের বিরুদ্ধে শত্রুতা পোষণ করা :

﴿قَدْ كَانَتْ لَكُمْ اُسْوَةٌ حَسَنَةٌ فِۤيْ اِبْرَاهِيْمَ وَالَّذِيْنَ مَعَهٗۚ اِذْ قَالُوْا لِقَوْمِهِمْ اِنَّا بُرَآٰءُ مِنْكُمْ وَمِمَّا تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِؗ كَفَرْنَا بِكُمْ وَبَدَا بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةُ وَالْبَغْضَآءُ اَبَدًا حَتّٰى تُؤْمِنُوْا بِاللهِ وَحْدَهٗ﴾

তোমাদের জন্য ইবরাহীম ও তার অনুসারীদের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। তাঁরা তাদের সম্প্রদায়কে বলেছিল, তোমাদের সাথে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার ইবাদাত কর তার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদেরকে অবিশ্বাস করি। তোমাদের মধ্যে ও আমাদের মধ্যে চিরকালের জন্য শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি হলো, যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। [সূরা মুমতাহিনা– ৪।]

একটি বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (আঃ) এবং তার অনুসারীদেরকে মুসলিম জাতির আদর্শ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। আর সেটা হলো, মুশরিকদের থেকে সম্পর্কচ্ছেদ করা। ইবরাহীম (আঃ) নিজ পিতা মুশরিক হওয়ার কারণে তার থেকে সম্পর্কচ্ছেদ করেছিলেন। এমনকি তার সাথে যারা মুমিন ছিলেন সকলেই তাদের মুশরিক জাতি থেকে সম্পর্কচ্ছেদ করেছিলেন এবং স্পষ্টভাবে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, যতক্ষণ না তোমরা তাওহীদের অনুসারী হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। এ বিষয়টিকে আল্লাহ তা‘আলা মুসলিম জাতির জন্য দৃষ্টান্তস্বরূপ পেশ করেছেন বিধায় আমাদের সমাজেও যারা শিরকের মধ্যে লিপ্ত রয়েছে তাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখা মুমিনদের জন্য বৈধ নয়।

দ্বীনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিকারীদের থেকে দূরে থাকতে হবে :

﴿اِنَّ الَّذِيْنَ فَرَّقُوْا دِيْنَهُمْ وَكَانُوْا شِيَعًا لَّسْتَ مِنْهُمْ فِيْ شَيْءٍؕ اِنَّمَاۤ اَمْرُهُمْ اِلَى اللهِ ثُمَّ يُنَبِّئُهُمْ بِمَا كَانُوْا يَفْعَلُوْنَ﴾

নিশ্চয় যারা দ্বীনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, তাদের উপর তোমার কোন দায়িত্ব নেই; তাদের বিষয়টি আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে অবহিত করবেন। [সূরা আন‘আম- ১৫৯।]

বিভিন্ন যুগের লোকেরা পরবর্তীকালে তাদের নিজস্ব চিন্তা ও মানসিকতার ভ্রান্ত উদ্ভাবনী ক্ষমতার সাহায্যে অথবা নিজেদের প্রবৃত্তির প্রভাবে আসল দ্বীনকে বিকৃত করে বিভিন্ন প্রকার মতবাদ গড়ে তুলেছে। দ্বীনের মধ্যে নতুন নতুন কথা মিশিয়ে দিয়েছে। নিজেদের কুসংস্কার, বিলাসিতা, আন্দাজ-অনুমান ও নিজেদের দার্শনিক চিন্তা-ভাবনার মাধ্যমে এর আকীদা বিশ্বাসে ব্যাপক পরিবর্তন সাধন করেছে এবং কাট-ছাঁট করে তাকে পুরোপুরি বিকৃত করে দিয়েছে। অনেক নতুন বিষয় উদ্ভাবন করে তার সাথে জুড়ে দিয়েছে। মনগড়া আইন রচনা করেছে। আইনের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো নিয়ে অযথা চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছে। ছোটখাটো বিষয়গুলো নিয়ে মতবিরোধ করার ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করেছে। গুরুত্বপূর্ণকে গুরুত্বহীন ও গুরুত্বহীনকে গুরুত্বপূর্ণ বানিয়ে দিয়েছে। যেসব নবী-রাসূল এ দ্বীন প্রচার করেছেন এবং যেসব মনীষীগণ এ দ্বীন প্রতিষ্ঠায় জীবন দিয়ে গেছেন, তাদের কারো কারো প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রকাশের ক্ষেত্রে অধিক বাড়াবাড়ি করেছে; আবার কারো কারো প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষের প্রকাশ ঘটিয়েছে এবং তাদের বিরোধিতা করেছে। এভাবে অসংখ্য ধর্ম ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটেই চলছে। এদের প্রত্যেকটি ধর্ম ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উদ্ভব মানবসমাজকে কলহ, বিবাদ ও পারস্পরিক সংঘর্ষে লিপ্ত করেছে। এভাবে মানবসমাজ বিভিন্ন দলে-উপদলে বিভক্ত হয়ে চলেছে। কাজেই বর্তমানে যারাই আসল দ্বীনের অনুসারী হবে, তাদের জন্য এসব বিভিন্ন সম্প্রদায় ও দলাদলি থেকে আলাদা হয়ে ইসলামের সঠিক মূলনীতির উপর প্রতিষ্ঠিত হতে হবে এবং আল্লাহর দ্বীন কায়েম করতে হবে।

সুতরাং যারা শিরকমুক্ত ঈমানের অধিকারী হবে এবং ইখলাছের সাথে বিদআতমুক্ত আমল করবে তাদেরকে নিয়ে মুসলিমদের জামা‘আত গঠিত হবে। তারা পরস্পরের বন্ধু হবে এবং মানুষকে তাওহীদের দিকে আহবান করবে।

মুসলিম জামা‘আতের সাথে একতায় থাকা এবং ভাগাভাগি না করা :

﴿وَاعْتَصِمُوْا بِحَبْلِ اللهِ جَمِيْعًا وَّلَا تَفَرَّقُوْا﴾

আর তোমরা সকলে মিলে আল্লাহর রশিকে আঁকড়ে ধরো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। [সূরা আলে ইমরান- ১০৩।]

আল্লাহর রশি বলতে তাঁর দ্বীনকে বুঝানো হয়েছে। আল্লাহর দ্বীনকে রশির সাথে তুলনা করার কারণ হচ্ছে- এটি এমন একটি সম্পর্ক, যা একদিকে আল্লাহর সাথে ঈমানদারদের সম্পর্ক জুড়ে দেয়। অন্যদিকে সমস্ত ঈমানদারদেরকে পরস্পরের সাথে মিলিয়ে জামায়াতবদ্ধ করে দেয়। এ রশিকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরার তাৎপর্য হচ্ছে, মুসলিমরা দ্বীনকেই প্রকৃত গুরুত্বের অধিকারী মনে করবে, সে ব্যাপারেই আগ্রহ পোষণ করবে, তা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য প্রচেষ্টা চালাবে এবং পরস্পরের সাথে সহযোগিতা করবে। যেখানেই মুসলিমরা দ্বীনের মৌলিক শিক্ষা ও দ্বীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়বে এবং তাদের সমগ্র দৃষ্টি খুঁটিনাটি বিষয়ের প্রতি আকৃষ্ট হবে সেখানেই অনিবার্যভাবে তাদের মধ্যে সে একই প্রকারে দলাদলি ও মতবিরোধ দেখা দেবে, যা ইতোপূর্বে বিভিন্ন নবীর উম্মতকে জীবনের মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করে দুনিয়া ও আখিরাতে লাঞ্ছনার গর্তে নিক্ষেপ করেছিল। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

عَنْ اِبْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ قَالَ مَنْ رَاٰى مِنْ اَمِيْرِهٖ شَيْئًا يَّكْرَهُهٗ فَلْيَصْبِرْ عَلَيْهِ فَاِنَّهٗ مَنْ فَارَقَ الْجَمَاعَةَ شِبْرًا فَمَاتَ اِلَّا مَاتَ مِيْتَةً جَاهِلِيَّةً

ইবনে আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ ﷺ হতে বর্ণনা করে বলেন, যে ব্যক্তি তার আমীরের মধ্যে এমন কিছু দেখল, যা সে অপছন্দ করে তাহলে সে যেন ধৈর্যধারণ করে। কেননা যে ব্যক্তি মুসলিম জামা‘আত থেকে এক বিঘত পরিমাণ দূরে সরে যাওয়া অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে সে জাহেলিয়াতের মৃত্যুবরণ করবে। [সহীহ বুখারী, হা/৭০৫৪, ৭১৩৪; সহীহ মুসলিম, হা/৪৮৯৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৭০২; দারেমী, হা/২৫৭৩।]

عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ - - اَنَّهٗ قَالَ : مَنْ خَرَجَ مِنَ الطَّاعَةِ وَفَارَقَ الْجَمَاعَةَ فَمَاتَ مَاتَ مِيْتَةً جَاهِلِيَّةً وَمَنْ قَاتَلَ تَحْتَ رَايَةٍ عُمِّيَّةٍ يَغْضَبُ لِعَصَبَةٍ اَوْ يَدْعُوْ اِلٰى عَصَبَةٍ اَوْ يَنْصُرُ عَصَبَةً فَقُتِلَ فَقِتْلَةٌ جَاهِلِيَّةٌ وَمَنْ خَرَجَ عَلٰى اُمَّتِىْ يَضْرِبُ بَرَّهَا وَفَاجِرَهَا وَلَا يَتَحَاشَ مِنْ مُؤْمِنِهَا وَلَا يَفِىْ لِذِىْ عَهْدٍ عَهْدَهٗ فَلَيْسَ مِنِّىْ وَلَسْتُ مِنْهُ

আবু হুরায়রা (রাঃ)-এর সূত্রে নবী ﷺ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি (আমীরের) আনুগত্য থেকে বেরিয়ে গেল এবং জামা‘আত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল সে জাহেলিয়াতের মতো মৃত্যুবরণ করল। আর যে ব্যক্তি লক্ষ্যহীন নেতৃত্বের পতাকাতলে যুদ্ধ করে, গোত্রপ্রীতির জন্য ক্রুদ্ধ হয় অথবা গোত্রপ্রীতির দিকে আহবান করে অথবা গোত্রের সাহায্যার্থে যুদ্ধ করে (যার মধ্যে আল্লাহর সন্তুষ্টি থাকে না) আর তাতে নিহত হয়, সে জাহেলিয়াতের মৃত্যুবরণ করে। আর যে ব্যক্তি আমার উম্মতের উপর আক্রমণ করে, আমার উম্মতের ভালো-মন্দ সকলকেই নির্বিচারে হত্যা করে, মু’মিনকেও রেহাই দেয় না এবং যার সাথে সে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয় তার অঙ্গীকারও রক্ষা করে না, সে আমার কেউ নয় এবং আমিও তার কেউ নই। [সহীহ মুসলিম, হা/৪৮৯২; নাসাঈ, হা/৪১১৪।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন