HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
সিয়াম ও রমজান শিক্ষা-তাৎপর্য-মাসায়েল
লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
রহমত, মাগফিরাত ও নারকীয় জীবনের স্পর্শ থেকে মুক্তি লাভের অফুরান সম্ভাবনা নিয়ে ফিরে আসে মাহে রমজান। আসে তাকওয়ার উত্তাপ অনুভব করাতে, যা কিছু অকল্যাণকর, অন্ধকারময় তা থেকে ব্যক্তির আন্তর ও বাহ্য জগৎকে বিমুক্ত করে শুদ্ধ-আলোকিত মানুষের উন্মেষ ঘটাতে। তবে তার জন্য প্রয়োজন মাহে রমজানকে যথার্থভাবে যাপন, সিয়াম পালনের নীতি-বিধান বিষয়ে সম্যক জ্ঞানার্জন, সিয়ামের শিক্ষা ও মাসায়েল বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা অর্জন।
‘সিয়াম ও রমজান : শিক্ষা-তাৎপর্য-মাসাইল’ বইটি এ বিষয়ের একটি অনবদ্য গবেষণা। লেখক ও গবেষক হাফেজ মাওলানা আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান কেবলমাত্র সহীহ ও হাসান হাদীসের নির্ভরতায় সিয়াম সাধনা বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ দলীল প্রস্ত্তত করেছেন বলে তাকে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাতে হয়। মুফতী নোমান আবুল বাশার, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা ইকবাল হোসাইন মাসুম, মুফতী জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের, মাওলানা আলী হাসান তৈয়ব-এর আন্তরিক সহযোগিতায় গবেষণা কর্মটি আরও উজ্জ্বলতা পেয়েছে নিঃসন্দেহে। অক্লান্ত পরিশ্রম করে বইটিকে মুদ্রণ উপযুক্ত করে তুলেছেন মুফতী কামাল উদ্দিন মোল্লা, তাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
মাহে রমজান ও সিয়াম সাধনা বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ এই রচনাটি ইমাম ও দায়ীদের জন্য একটি অতি-মূল্যবান তথ্য-ভান্ডার হিসেবে কাজ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। সাধারণ পাঠক সিয়াম সাধনার খুঁটি-নাটি বিষয়ে অজানা বহু তথ্য খুঁজে পাবেন বইটিতে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে উত্তম জাযা দান করুন। আমীন।
ড. মুহাম্মদ শামসুল হক সিদ্দিক
মহাপরিচালক
আবহাস এডুকেশনাল এন্ড রিসার্চ সোসাইটি ঢাকা।
‘সিয়াম ও রমজান : শিক্ষা-তাৎপর্য-মাসাইল’ বইটি এ বিষয়ের একটি অনবদ্য গবেষণা। লেখক ও গবেষক হাফেজ মাওলানা আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান কেবলমাত্র সহীহ ও হাসান হাদীসের নির্ভরতায় সিয়াম সাধনা বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ দলীল প্রস্ত্তত করেছেন বলে তাকে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাতে হয়। মুফতী নোমান আবুল বাশার, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা ইকবাল হোসাইন মাসুম, মুফতী জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের, মাওলানা আলী হাসান তৈয়ব-এর আন্তরিক সহযোগিতায় গবেষণা কর্মটি আরও উজ্জ্বলতা পেয়েছে নিঃসন্দেহে। অক্লান্ত পরিশ্রম করে বইটিকে মুদ্রণ উপযুক্ত করে তুলেছেন মুফতী কামাল উদ্দিন মোল্লা, তাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
মাহে রমজান ও সিয়াম সাধনা বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ এই রচনাটি ইমাম ও দায়ীদের জন্য একটি অতি-মূল্যবান তথ্য-ভান্ডার হিসেবে কাজ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। সাধারণ পাঠক সিয়াম সাধনার খুঁটি-নাটি বিষয়ে অজানা বহু তথ্য খুঁজে পাবেন বইটিতে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে উত্তম জাযা দান করুন। আমীন।
ড. মুহাম্মদ শামসুল হক সিদ্দিক
মহাপরিচালক
আবহাস এডুকেশনাল এন্ড রিসার্চ সোসাইটি ঢাকা।
রমজান মাসের আগমনে মুসলিমগণ আনন্দ প্রকাশ করে থাকেন। আনন্দ প্রকাশ করাই স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ততা। আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
বল, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়ায়। সুতরাং এতে তারা আনন্দিত হোক। তারা যা সঞ্চয় করে এটা তার চেয়ে উত্তম। [সূরা ইউনুস : ৫৮]
পার্থিব কোন সম্পদের সাথে আল্লাহর এ অনুগ্রহের তুলনা চলে না, তা হবে এক ধরনের অবাস্তব কল্পনা। যখন রমজানের আগমন হত তখন রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতিশয় আনন্দিত হতেন, তার সাহাবাদের বলতেন:—
أتاكم رمضان شهر مبارك . سنن النسائي : 2105
তোমাদের দ্বারে বরকতময় মাস রমজান এসেছে। এরপর তিনি এ মাসের কিছু ফযীলত বর্ণনা করে বলতেন :—
فرض الله عز وجل عليكم صيامه، تفتح فيه أبواب السماء، وتغلق فيه أبواب الجحيم، وتغل فيه مردة الشياطين، فيه ليلة خير من ألف شهر، من حرم خيرها فقد حرم . رواه النسائي : ২১১৮
আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য সিয়াম পালন ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দ্বারসমূহ খুলে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। অভিশপ্ত শয়তানকে বন্দি করা হয়। এ মাসে রয়েছে একটি রাত যা হাজার রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো সে মূলত সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল। [নাসায়ী : ২১০৫]
আমাদের কর্তব্য: আল্লাহর এ অনুগ্রহের মূল্যায়ন করতে চেষ্টা করা, এ মাসের ফযীলত ও তাৎপর্য অনুধাবনে সচেষ্ট হওয়া ও ইবাদত-বন্দেগীসহ সকল কল্যাণকর কাজে নিয়োজিত থাকা।
এ মাসের যে সকল ফযীলত রয়েছে তা হল:—
(আরবি)
বল, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়ায়। সুতরাং এতে তারা আনন্দিত হোক। তারা যা সঞ্চয় করে এটা তার চেয়ে উত্তম। [সূরা ইউনুস : ৫৮]
পার্থিব কোন সম্পদের সাথে আল্লাহর এ অনুগ্রহের তুলনা চলে না, তা হবে এক ধরনের অবাস্তব কল্পনা। যখন রমজানের আগমন হত তখন রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতিশয় আনন্দিত হতেন, তার সাহাবাদের বলতেন:—
أتاكم رمضان شهر مبارك . سنن النسائي : 2105
তোমাদের দ্বারে বরকতময় মাস রমজান এসেছে। এরপর তিনি এ মাসের কিছু ফযীলত বর্ণনা করে বলতেন :—
فرض الله عز وجل عليكم صيامه، تفتح فيه أبواب السماء، وتغلق فيه أبواب الجحيم، وتغل فيه مردة الشياطين، فيه ليلة خير من ألف شهر، من حرم خيرها فقد حرم . رواه النسائي : ২১১৮
আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য সিয়াম পালন ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দ্বারসমূহ খুলে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। অভিশপ্ত শয়তানকে বন্দি করা হয়। এ মাসে রয়েছে একটি রাত যা হাজার রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো সে মূলত সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল। [নাসায়ী : ২১০৫]
আমাদের কর্তব্য: আল্লাহর এ অনুগ্রহের মূল্যায়ন করতে চেষ্টা করা, এ মাসের ফযীলত ও তাৎপর্য অনুধাবনে সচেষ্ট হওয়া ও ইবাদত-বন্দেগীসহ সকল কল্যাণকর কাজে নিয়োজিত থাকা।
এ মাসের যে সকল ফযীলত রয়েছে তা হল:—
হজ যেমন জিলহজ মাসের সাথে সম্পর্কিত হওয়ার কারণে সে মাসের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে এমনি সিয়াম রমজান মাসে হওয়ার কারণে এ মাসের মর্যাদা বেড়ে গেছে।
আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
‘হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমনি ফরজ করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর—যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার।’’ [সূরা বাকারা: ১৮৩]
রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ইসলাম যে পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত তার একটি হল সিয়াম পালন। এ সিয়াম জান্নাত লাভের একটি মাধ্যম ; যেমন হাদীসে এসেছে :—
من آمن بالله ورسولـه، وأقام الصلاة، وآتى الزكاة، وصام رمضان، كان حقاً على الله أن يدخله الجنة ... رواه البخاري : ৭৪২৩
যে আল্লাহর তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনল, সালাত কায়েম করল, যাকাত আদায় করল, সিয়াম পালন করল রমজান মাসে, আল্লাহ তাআলার কর্তব্য হয়ে যায় তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো...। [বুখারী : ৭৪২৩]
আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
‘হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমনি ফরজ করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর—যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার।’’ [সূরা বাকারা: ১৮৩]
রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ইসলাম যে পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত তার একটি হল সিয়াম পালন। এ সিয়াম জান্নাত লাভের একটি মাধ্যম ; যেমন হাদীসে এসেছে :—
من آمن بالله ورسولـه، وأقام الصلاة، وآتى الزكاة، وصام رمضان، كان حقاً على الله أن يدخله الجنة ... رواه البخاري : ৭৪২৩
যে আল্লাহর তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনল, সালাত কায়েম করল, যাকাত আদায় করল, সিয়াম পালন করল রমজান মাসে, আল্লাহ তাআলার কর্তব্য হয়ে যায় তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো...। [বুখারী : ৭৪২৩]
আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
রমজান মাস, এতে নাযিল করা হয়েছে আল-কুরআন, যা মানুষের দিশারী এবং স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী। [সূরা বাকারা : ১৮৫]
রমজান মাসে সপ্তম আকাশের লওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আকাশের বায়তুল ইজ্জতে পবিত্র আল-কুরআন একবারে নাযিল হয়েছে। সেখান থেকে আবার রমজান মাসে অল্প অল্প করে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর প্রতি নাযিল হতে শুরু করে। কুরআন নাযিলের দুটি পর্বই রমজান মাসকে ধন্য করেছে। শুধু আল-কুরআনই নয় বরং ইবরাহীম আ.-এর সহীফা, তাওরাত, যবুর, ইঞ্জীল সহ সকল ঐশী গ্রন্থ এ মাসে অবতীর্ণ হয়েছে বলে তাবরানী বর্ণিত একটি সহীহ হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ মাসে মানুষের হিদায়াত ও আলোকবর্তিকা যেমন নাযিল হয়েছে তেমনি আল্লাহর রহমত হিসেবে এসেছে সিয়াম। তাই এ দুই নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে বেশি বেশি করে কুরআন তিলাওয়াত করা উচিত। প্রতি বছর রমজান মাসে জিবরীল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে পূর্ণ কুরআন শোনাতেন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -ও তাকে পূর্ণ কুরআন শোনাতেন। আর জীবনের শেষ রমজানে আল্লাহর রাসূল দু বার পূর্ণ কুরআন তিলাওয়াত করেছেন। সহীহ মুসলিমের হাদীস দ্বারা এটা প্রমাণিত।
(আরবি)
রমজান মাস, এতে নাযিল করা হয়েছে আল-কুরআন, যা মানুষের দিশারী এবং স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী। [সূরা বাকারা : ১৮৫]
রমজান মাসে সপ্তম আকাশের লওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আকাশের বায়তুল ইজ্জতে পবিত্র আল-কুরআন একবারে নাযিল হয়েছে। সেখান থেকে আবার রমজান মাসে অল্প অল্প করে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর প্রতি নাযিল হতে শুরু করে। কুরআন নাযিলের দুটি পর্বই রমজান মাসকে ধন্য করেছে। শুধু আল-কুরআনই নয় বরং ইবরাহীম আ.-এর সহীফা, তাওরাত, যবুর, ইঞ্জীল সহ সকল ঐশী গ্রন্থ এ মাসে অবতীর্ণ হয়েছে বলে তাবরানী বর্ণিত একটি সহীহ হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ মাসে মানুষের হিদায়াত ও আলোকবর্তিকা যেমন নাযিল হয়েছে তেমনি আল্লাহর রহমত হিসেবে এসেছে সিয়াম। তাই এ দুই নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে বেশি বেশি করে কুরআন তিলাওয়াত করা উচিত। প্রতি বছর রমজান মাসে জিবরীল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে পূর্ণ কুরআন শোনাতেন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -ও তাকে পূর্ণ কুরআন শোনাতেন। আর জীবনের শেষ রমজানে আল্লাহর রাসূল দু বার পূর্ণ কুরআন তিলাওয়াত করেছেন। সহীহ মুসলিমের হাদীস দ্বারা এটা প্রমাণিত।
৬
তিন. রমজান মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় ও জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয় শয়তানদের।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
إذا جاء رمضان فتحت أبواب الجنة، وأغلقت أبواب النار، وصفدت الشياطين . وفي لفظ ( وسلسلت الشياطين ). رواه مسلم : ২৫৪৭
ফর্মা-২
ফর্মা-২
যখন রমজান মাসের আগমন ঘটে তখন জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানদের আবদ্ধ করা হয়। অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে—‘শয়তানদের শিকল পরানো হয়।’ [মুসলিম : ২৫৪৭]
তাই শয়তান রমজানের পূর্বে যে সকল স্থানে অবাধে বিচরণ করত রমজান মাস আসার ফলে সে সকল স্থানে যেতে পারে না। শয়তানের তৎপরতা দুর্বল হয়ে যায়। ফলে দেখা যায় ব্যাপকভাবে মানুষ তওবা, ধর্মপরায়ণতা, ও সৎকর্মের দিকে অগ্রসর হয় ও পাপাচার থেকে দূরে থাকে। তারপরও কিছু মানুষ অসৎ ও অন্যায় কাজ-কর্মে তৎপর থাকে। কারণ, শয়তানের কু-প্রভাবে তারা অনেক বেশি প্রভাবিত হয়ে পড়েছে।
إذا جاء رمضان فتحت أبواب الجنة، وأغلقت أبواب النار، وصفدت الشياطين . وفي لفظ ( وسلسلت الشياطين ). رواه مسلم : ২৫৪৭
ফর্মা-২
ফর্মা-২
যখন রমজান মাসের আগমন ঘটে তখন জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানদের আবদ্ধ করা হয়। অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে—‘শয়তানদের শিকল পরানো হয়।’ [মুসলিম : ২৫৪৭]
তাই শয়তান রমজানের পূর্বে যে সকল স্থানে অবাধে বিচরণ করত রমজান মাস আসার ফলে সে সকল স্থানে যেতে পারে না। শয়তানের তৎপরতা দুর্বল হয়ে যায়। ফলে দেখা যায় ব্যাপকভাবে মানুষ তওবা, ধর্মপরায়ণতা, ও সৎকর্মের দিকে অগ্রসর হয় ও পাপাচার থেকে দূরে থাকে। তারপরও কিছু মানুষ অসৎ ও অন্যায় কাজ-কর্মে তৎপর থাকে। কারণ, শয়তানের কু-প্রভাবে তারা অনেক বেশি প্রভাবিত হয়ে পড়েছে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :—
لكل مسلم دعوة مستجابة , يدعوبهافي رمضان . دروس رمضانية
(রমজান মাসে) প্রত্যেক মুসলিমের দোয়া কবুল করা হয়। [দুরুসুন রামজানিয়া]
অন্য হাদীসে এসেছে—
إن لله تبارك وتعالى عتقاء في كل يوم وليلة، ( يعني في رمضان ) وإن لكل مسلم في كل يوم وليلة دعوة مستجابة . مجموع مؤلفات الألباني : ১০০২
আল্লাহ রাববুল আলামীন রমজানের প্রতি রাতে ও দিনে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন এবং প্রতি রাত ও দিবসে মুসলিমের দোয়া-প্রার্থনা কবুল করা হয়। [মাজমুউ মুআল্লাফাতিল আলবানী : ১০০২]
তাই প্রত্যেক মুসলমান এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজের কল্যাণের জন্য যেমন দোয়া-প্রার্থনা করবে, তেমনি সকল মুসলিমের কল্যাণ, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জ্ঞাপন করবে।
لكل مسلم دعوة مستجابة , يدعوبهافي رمضان . دروس رمضانية
(রমজান মাসে) প্রত্যেক মুসলিমের দোয়া কবুল করা হয়। [দুরুসুন রামজানিয়া]
অন্য হাদীসে এসেছে—
إن لله تبارك وتعالى عتقاء في كل يوم وليلة، ( يعني في رمضان ) وإن لكل مسلم في كل يوم وليلة دعوة مستجابة . مجموع مؤلفات الألباني : ১০০২
আল্লাহ রাববুল আলামীন রমজানের প্রতি রাতে ও দিনে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন এবং প্রতি রাত ও দিবসে মুসলিমের দোয়া-প্রার্থনা কবুল করা হয়। [মাজমুউ মুআল্লাফাতিল আলবানী : ১০০২]
তাই প্রত্যেক মুসলমান এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজের কল্যাণের জন্য যেমন দোয়া-প্রার্থনা করবে, তেমনি সকল মুসলিমের কল্যাণ, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জ্ঞাপন করবে।
যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়েও তার পাপসমূহ ক্ষমা করানো থেকে বঞ্চিত হলো আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে ধিক্কার দিয়েছেন। তিনি বলেছেন :—
.. رغم أنف رجل، دخل عليه رمضان، ثم انسلخ قبل أن يغفر له . جامع الأصول في أحاديث الرسول : ১৪১০
ঐ ব্যক্তির নাক ধুলায় ধূসরিত হোক যার কাছে রমজান মাস এসে চলে গেল অথচ তার পাপগুলো ক্ষমা করা হয়নি। [জামেউল উসুল ফি আহাদিসির রাসূল : ১৪১০]
সত্যিই সে প্রকৃত পক্ষে সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত যে এ মাসেও আল্লাহ রাববুল আলামীনের অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত রয়ে গেল।
.. رغم أنف رجل، دخل عليه رمضان، ثم انسلخ قبل أن يغفر له . جامع الأصول في أحاديث الرسول : ১৪১০
ঐ ব্যক্তির নাক ধুলায় ধূসরিত হোক যার কাছে রমজান মাস এসে চলে গেল অথচ তার পাপগুলো ক্ষমা করা হয়নি। [জামেউল উসুল ফি আহাদিসির রাসূল : ১৪১০]
সত্যিই সে প্রকৃত পক্ষে সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত যে এ মাসেও আল্লাহ রাববুল আলামীনের অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত রয়ে গেল।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :—
إذا كان أول ليلة من رمضان صفدت الشياطين ومردة الجن، وغلقت أبواب النار، فلم يفتح منها باب، وفتحت أبواب الجنة فلم يغلق منها باب، وينادي مناد كل ليلة : يا باغي الخير أقبل ! ويا باغي الشر أقصر ! ولله عتقاء من النار، وذلك في كل ليلة . السنن الصغرى : ১৪২৯
রমজান মাসের প্রথম রজনীর যখন আগমন ঘটে তখন শয়তান ও অসৎ জিনগুলোকে বন্দি করা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, এ মাসে একটি দরজাও খোলা হয় না। জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, এ মাসে তা আর বন্ধ করা হয় না। প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ বলে ঘোষণা দিতে থাকে যে, হে সৎকর্মের অনুসন্ধানকারী তুমি অগ্রসর হও! হে অসৎ কাজের অনুসন্ধানকারী তুমি থেমে যাও! এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তাআলা জাহান্নাম থেকে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। [আস সুনান আস সুগরা : ১৪২৯]
إذا كان أول ليلة من رمضان صفدت الشياطين ومردة الجن، وغلقت أبواب النار، فلم يفتح منها باب، وفتحت أبواب الجنة فلم يغلق منها باب، وينادي مناد كل ليلة : يا باغي الخير أقبل ! ويا باغي الشر أقصر ! ولله عتقاء من النار، وذلك في كل ليلة . السنن الصغرى : ১৪২৯
রমজান মাসের প্রথম রজনীর যখন আগমন ঘটে তখন শয়তান ও অসৎ জিনগুলোকে বন্দি করা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, এ মাসে একটি দরজাও খোলা হয় না। জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, এ মাসে তা আর বন্ধ করা হয় না। প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ বলে ঘোষণা দিতে থাকে যে, হে সৎকর্মের অনুসন্ধানকারী তুমি অগ্রসর হও! হে অসৎ কাজের অনুসন্ধানকারী তুমি থেমে যাও! এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তাআলা জাহান্নাম থেকে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। [আস সুনান আস সুগরা : ১৪২৯]
এ মাসে ঈমানদার ব্যক্তিগণ খাওয়া-দাওয়া, বিবাহ-শাদি ও অন্যান্য সকল আচার-আচরণে ধৈর্য ও সবরের এত অধিক অনুশীলন করেন তা অন্য কোন মাসে বা অন্য কোন পর্বে করেন না। এমনিভাবে সিয়াম পালন করে যে ধৈর্যের প্রমাণ দেয়া হয় তা অন্য কোন ইবাদতে পাওয়া যায় না। আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেছেন :—
(আরবি)
ধৈর্যশীলদের তো বিনা হিসাবে পুরস্কার দেয়া হবে। [সূরা যুমার : ১০]
(আরবি)
ধৈর্যশীলদের তো বিনা হিসাবে পুরস্কার দেয়া হবে। [সূরা যুমার : ১০]
আল্লাহ রাববুল আলামীন নিজের সাথে সিয়ামের সম্পর্ক ঘোষণা করেছেন। এমনিভাবে তিনি সকল ইবাদত-বন্দেগী থেকে সিয়ামকে আলাদা মর্যাদা দিয়েছেন।
যেমন তিনি এক হাদীসে কুদসীতে বলেন :—
قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ لَهُ إِلاَّ الصِّيَامَ هُوَ لِى وَأَنَا أَجْزِى بِه . مسلم 2760
মানুষের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্য, কিন্তু সিয়াম তার ব্যতিক্রম, তা শুধু আমার জন্য, আমিই তার প্রতিদান দেব। [মুসলিম : ২৭৬০]
এ হাদীস দ্বারা আমরা অনুধাবন করতে পারি নেক আমলের মাঝে সিয়াম পালনের গুরুত্ব আল্লাহর কাছে কত বেশি।
তাই সাহাবী আবু হুরাইরা রা. যখন বলেছিলেন—
يا رسول الله مرني بعمل قال عليك بالصوم فإنه لا عدل له . السنن الكبرى للنسائي :2534
‘হে রাসূলুল্লাহ ! আমাকে অতি উত্তম কোন নেক আমলের নির্দেশ দিন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : ‘তুমি সিয়াম পালন কর। কারণ এর সমমর্যাদার আর কোন আমল নেই।’ [নাসায়ী : ২৫৩৪]
সিয়ামের এত মর্যাদার কারণ কী তা আল্লাহ রাববুল আলামীন ভাল জানেন। তবে, আমরা যা দেখি তা হল, সিয়াম এমন একটি আমল যাতে লোক দেখানো ভাব থাকে না। বান্দা ও আল্লাহ তাআলার মধ্যকার একটি অতি গোপন বিষয়। সালাত হজ, যাকাতসহ অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগী কে করল তা দেখা যায়। পরিত্যাগ করলেও বুঝা যায়। কিন্তু সিয়াম পালনে লোক দেখানো বা শোনানোর ভাবনা থাকে না। ফলে সিয়ামের মাঝে ইখলাস, আন্তরিকতা বা আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠতা নির্ভেজাল ও বেশি থাকে।
যেমন আল্লাহ বলেন :—
يدع شهوته وطعامه من أجلي . مسلم :২৭৬৩
‘সিয়াম পালনকারী আমার জন্যই পানাহার ও যৌনতা পরিহার করে।’ তাই সিয়াম পালনকারী আল্লাহর সন্তুষ্টি ব্যতীত অন্য কিছুর আশা করে না।
যেমন তিনি এক হাদীসে কুদসীতে বলেন :—
قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ لَهُ إِلاَّ الصِّيَامَ هُوَ لِى وَأَنَا أَجْزِى بِه . مسلم 2760
মানুষের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্য, কিন্তু সিয়াম তার ব্যতিক্রম, তা শুধু আমার জন্য, আমিই তার প্রতিদান দেব। [মুসলিম : ২৭৬০]
এ হাদীস দ্বারা আমরা অনুধাবন করতে পারি নেক আমলের মাঝে সিয়াম পালনের গুরুত্ব আল্লাহর কাছে কত বেশি।
তাই সাহাবী আবু হুরাইরা রা. যখন বলেছিলেন—
يا رسول الله مرني بعمل قال عليك بالصوم فإنه لا عدل له . السنن الكبرى للنسائي :2534
‘হে রাসূলুল্লাহ ! আমাকে অতি উত্তম কোন নেক আমলের নির্দেশ দিন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : ‘তুমি সিয়াম পালন কর। কারণ এর সমমর্যাদার আর কোন আমল নেই।’ [নাসায়ী : ২৫৩৪]
সিয়ামের এত মর্যাদার কারণ কী তা আল্লাহ রাববুল আলামীন ভাল জানেন। তবে, আমরা যা দেখি তা হল, সিয়াম এমন একটি আমল যাতে লোক দেখানো ভাব থাকে না। বান্দা ও আল্লাহ তাআলার মধ্যকার একটি অতি গোপন বিষয়। সালাত হজ, যাকাতসহ অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগী কে করল তা দেখা যায়। পরিত্যাগ করলেও বুঝা যায়। কিন্তু সিয়াম পালনে লোক দেখানো বা শোনানোর ভাবনা থাকে না। ফলে সিয়ামের মাঝে ইখলাস, আন্তরিকতা বা আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠতা নির্ভেজাল ও বেশি থাকে।
যেমন আল্লাহ বলেন :—
يدع شهوته وطعامه من أجلي . مسلم :২৭৬৩
‘সিয়াম পালনকারী আমার জন্যই পানাহার ও যৌনতা পরিহার করে।’ তাই সিয়াম পালনকারী আল্লাহর সন্তুষ্টি ব্যতীত অন্য কিছুর আশা করে না।
কিন্তু অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগী ও সৎ কর্মের প্রতিদান বিনা হিসাবে দেয়া হয় না। বরং প্রত্যেকটি নেক আমলের পরিবর্তে আমলকারীকে দশ গুণ থেকে সাত শত গুণ পর্যন্ত প্রতিদান দেয়া হয়।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
كل عمل ابن آدم يضاعف الحسنة بعشر أمثالـها إلى سبع مئة ضعف . قال الله عز وجل : إلا الصوم فإنه لي وأنا أجزى به . . . مسلم :১১৫১
‘মানব সন্তানের প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান দশ থেকে সাত শত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন—কিন্তু সিয়ামের বিষয়টা ভিন্ন। কেননা সিয়াম শুধু আমার জন্য আমিই তার প্রতিদান দেব।’ [মুসলিম : ১৫৫১]
সারা জাহানের সর্বশক্তিমান প্রতিপালক আল্লাহ নিজেই যখন এর পুরস্কার দেবেন তখন কি পরিমাণে দেবেন? ইমাম আওযায়ী রহ. এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, আল্লাহ যে সিয়াম আদায়কারীকে প্রতিদান দেবেন তা মাপা হবে না, ওজন করা হবে না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
كل عمل ابن آدم يضاعف الحسنة بعشر أمثالـها إلى سبع مئة ضعف . قال الله عز وجل : إلا الصوم فإنه لي وأنا أجزى به . . . مسلم :১১৫১
‘মানব সন্তানের প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান দশ থেকে সাত শত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন—কিন্তু সিয়ামের বিষয়টা ভিন্ন। কেননা সিয়াম শুধু আমার জন্য আমিই তার প্রতিদান দেব।’ [মুসলিম : ১৫৫১]
সারা জাহানের সর্বশক্তিমান প্রতিপালক আল্লাহ নিজেই যখন এর পুরস্কার দেবেন তখন কি পরিমাণে দেবেন? ইমাম আওযায়ী রহ. এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, আল্লাহ যে সিয়াম আদায়কারীকে প্রতিদান দেবেন তা মাপা হবে না, ওজন করা হবে না।
সিয়াম পালনের মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কু-প্রবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকার দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন :—
يا معشر الشباب ! من استطاع منكم الباءة فليتزوج، فإنه أغض للبصر، وأحصن للفرج، ومن لم يستطع فعليه بالصوم، فإنه له وجاء . مسلم :১৪০০
হে যুবকেরা ! তোমাদের মাঝে যে সামর্থ্য রাখে সে যেন বিবাহ করে। কেননা বিবাহ দৃষ্টি-কে অবনত করে ও লজ্জাস্থানের সুরক্ষা দেয়। আর যে বিবাহের সামর্থ্য রাখে না সে যেন সিয়াম পালন করে। কারণ এটা তার রক্ষা কবচ। [মুসলিম : ১৪০০]
এমনিভাবে সিয়াম সকল অশ্লীলতা ও অনর্থক কথা ও কাজ থেকে বিরত রাখে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
. . والصيام جنة، فإذا كان يوم صوم أحدكم فلا يرفث يومئذ ولا يصخب، فإن سابه أحد أو قاتله فليقل إني امرأ صائم . رواه مسلم :১১৫১
‘সিয়াম হল ঢাল। সুতরাং তোমাদের মাঝে যে সিয়াম পালন করবে সে যেন অশ্লীল আচরণ ও শোরগোল থেকে বিরত থাকে। যদি তার সাথে কেউ ঝগড়া বিবাদ কিংবা মারামারিতে লিপ্ত হতে চায় তবে তাকে বলে দেবে আমি সিয়াম পালনকারী।’ [মুসলিম : ১৫৫১]
সিয়াম পালনকারী যেমনি নিজের অন্তরকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে তেমনি সকল অশ্লীল আচরণ, ঝগড়া-বিবাদ, অনর্থক কথা ও কাজ থেকে নিজের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে হেফাজত করে।
يا معشر الشباب ! من استطاع منكم الباءة فليتزوج، فإنه أغض للبصر، وأحصن للفرج، ومن لم يستطع فعليه بالصوم، فإنه له وجاء . مسلم :১৪০০
হে যুবকেরা ! তোমাদের মাঝে যে সামর্থ্য রাখে সে যেন বিবাহ করে। কেননা বিবাহ দৃষ্টি-কে অবনত করে ও লজ্জাস্থানের সুরক্ষা দেয়। আর যে বিবাহের সামর্থ্য রাখে না সে যেন সিয়াম পালন করে। কারণ এটা তার রক্ষা কবচ। [মুসলিম : ১৪০০]
এমনিভাবে সিয়াম সকল অশ্লীলতা ও অনর্থক কথা ও কাজ থেকে বিরত রাখে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
. . والصيام جنة، فإذا كان يوم صوم أحدكم فلا يرفث يومئذ ولا يصخب، فإن سابه أحد أو قاتله فليقل إني امرأ صائم . رواه مسلم :১১৫১
‘সিয়াম হল ঢাল। সুতরাং তোমাদের মাঝে যে সিয়াম পালন করবে সে যেন অশ্লীল আচরণ ও শোরগোল থেকে বিরত থাকে। যদি তার সাথে কেউ ঝগড়া বিবাদ কিংবা মারামারিতে লিপ্ত হতে চায় তবে তাকে বলে দেবে আমি সিয়াম পালনকারী।’ [মুসলিম : ১৫৫১]
সিয়াম পালনকারী যেমনি নিজের অন্তরকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে তেমনি সকল অশ্লীল আচরণ, ঝগড়া-বিবাদ, অনর্থক কথা ও কাজ থেকে নিজের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে হেফাজত করে।
যেমন হাদীসে এসেছে—
الصيام جنة، وحصن حصين من النار . أحمد :৯২১৪
‘সিয়াম হল ঢাল ও জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার মজবুত দুর্গ।’ [আহমদ : ৯২১৪]
বুখারী ও মুসলিমের হাদীসে এসেছে—
من صام يوما في سبيل الله باعد الله وجهه عن النار سبعين خريفا . مسلم :২৭৬৯
‘যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে একদিন সিয়াম পালন করবে আল্লাহ তার থেকে জাহান্নাম-কে এক খরিফ (সত্তুর বছরের) দুরত্বে সরিয়ে দেবেন।’ [মুসলিম : ২৭৬৯]
উলামায়ে কেরাম বলেছেন, ‘আল্লাহর পথে সিয়াম পালনের অর্থ হল: শুধু আল্ল সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সিয়াম পালন করা।’ এমনিভাবে আল্লাহ তাআলা বহু াহর সিয়াম পালনকারীকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। যেমন হাদীসে এসেছে—
إن لله تعالى عند كل فطر عتقاء من النار، وذلك كل ليلة . البيهقي :৩৬০৫
‘ইফতারের সময় আল্লাহ রাববুল আলামীন বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। আর এটা রমজানের প্রতি রাতে।’ [বাইহাকী : ৩৬০৫]
الصيام جنة، وحصن حصين من النار . أحمد :৯২১৪
‘সিয়াম হল ঢাল ও জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার মজবুত দুর্গ।’ [আহমদ : ৯২১৪]
বুখারী ও মুসলিমের হাদীসে এসেছে—
من صام يوما في سبيل الله باعد الله وجهه عن النار سبعين خريفا . مسلم :২৭৬৯
‘যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে একদিন সিয়াম পালন করবে আল্লাহ তার থেকে জাহান্নাম-কে এক খরিফ (সত্তুর বছরের) দুরত্বে সরিয়ে দেবেন।’ [মুসলিম : ২৭৬৯]
উলামায়ে কেরাম বলেছেন, ‘আল্লাহর পথে সিয়াম পালনের অর্থ হল: শুধু আল্ল সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সিয়াম পালন করা।’ এমনিভাবে আল্লাহ তাআলা বহু াহর সিয়াম পালনকারীকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। যেমন হাদীসে এসেছে—
إن لله تعالى عند كل فطر عتقاء من النار، وذلك كل ليلة . البيهقي :৩৬০৫
‘ইফতারের সময় আল্লাহ রাববুল আলামীন বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। আর এটা রমজানের প্রতি রাতে।’ [বাইহাকী : ৩৬০৫]
হাদীসে এসেছে—
عن أبي هريرة رضي الله عنه أنه قال : يا رسول الله مرني بأمر ينفعني الله به، قال : عليك بالصوم فإنه لا مثل له . النسائي :২২২০
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, আমাকে এমন একটি কাজের নির্দেশ দিন যার দ্বারা আমি লাভবান হতে পারি। তিনি বললেন : ‘তুমি সিয়াম পালন কর। কেননা, এর সমকক্ষ আর কোন কাজ নেই।’ [নাসায়ী : ২২২০]
আললাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের জন্য সিয়ামের সাথে কোন আমলের তুলনা হয় না। সিয়াম পালনকারীদের উপর আল্লাহর অনুগ্রহের আরেকটি দৃষ্টান্ত হল তিনি সিয়াম পালনকারীদের জন্য জান্নাতে একটি দরজা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। যে দরজা দিয়ে সিয়াম পালনকারীরা ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশ করবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
إن في الجنة بابا يقال له الريان، يدخل منه الصائمون يوم القيامة لا يدخل منه أحد غيرهم، يقال : أين الصائمون ؟ فيقومون، لا يدخل منه أحد غيرهم، فإذا دخلوا أغلق، فلم يدخل منه أحد . البخاري :১৭৯৭, مسلم :১১৫২
‘জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে। যার নাম রাইয়ান। কেয়ামতের দিন সিয়াম পালনকারীরাই শুধু সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া অন্য কেউ সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। সেদিন ঘোষণা করা হবে, সিয়াম পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়িয়ে যাবে সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করার জন্য। যখন তারা প্রবেশ করবে, দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। ফলে তারা ব্যতীত অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।’ [বুখারী : ১৭৯৭, মুসলিম : ১১৫২]
عن أبي هريرة رضي الله عنه أنه قال : يا رسول الله مرني بأمر ينفعني الله به، قال : عليك بالصوم فإنه لا مثل له . النسائي :২২২০
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, আমাকে এমন একটি কাজের নির্দেশ দিন যার দ্বারা আমি লাভবান হতে পারি। তিনি বললেন : ‘তুমি সিয়াম পালন কর। কেননা, এর সমকক্ষ আর কোন কাজ নেই।’ [নাসায়ী : ২২২০]
আললাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের জন্য সিয়ামের সাথে কোন আমলের তুলনা হয় না। সিয়াম পালনকারীদের উপর আল্লাহর অনুগ্রহের আরেকটি দৃষ্টান্ত হল তিনি সিয়াম পালনকারীদের জন্য জান্নাতে একটি দরজা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। যে দরজা দিয়ে সিয়াম পালনকারীরা ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশ করবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
إن في الجنة بابا يقال له الريان، يدخل منه الصائمون يوم القيامة لا يدخل منه أحد غيرهم، يقال : أين الصائمون ؟ فيقومون، لا يدخل منه أحد غيرهم، فإذا دخلوا أغلق، فلم يدخل منه أحد . البخاري :১৭৯৭, مسلم :১১৫২
‘জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে। যার নাম রাইয়ান। কেয়ামতের দিন সিয়াম পালনকারীরাই শুধু সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া অন্য কেউ সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। সেদিন ঘোষণা করা হবে, সিয়াম পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়িয়ে যাবে সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করার জন্য। যখন তারা প্রবেশ করবে, দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। ফলে তারা ব্যতীত অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।’ [বুখারী : ১৭৯৭, মুসলিম : ১১৫২]
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:—
والذي نفس محمد بيده لخلوف فم الصائم أطيب عند الله من ريح المسك . البخاري :১৭৯০, مسلم :১১৫১
‘যার হাতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর জীবন, সে সত্তার শপথ, সিয়াম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহ তাআলার কাছে মেশকের ঘ্রাণ হতেও প্রিয়।’ [বুখারী : ১৭৯০, মুসলিম : ১১৫১]
মুখের গন্ধ বলতে পেট খালি থাকার কারণে যে গন্ধ আসে সেটাকে বুঝায়। দাঁত অপরিষ্কার থাকার কারণে যে গন্ধ সেটা নয়।
والذي نفس محمد بيده لخلوف فم الصائم أطيب عند الله من ريح المسك . البخاري :১৭৯০, مسلم :১১৫১
‘যার হাতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর জীবন, সে সত্তার শপথ, সিয়াম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহ তাআলার কাছে মেশকের ঘ্রাণ হতেও প্রিয়।’ [বুখারী : ১৭৯০, মুসলিম : ১১৫১]
মুখের গন্ধ বলতে পেট খালি থাকার কারণে যে গন্ধ আসে সেটাকে বুঝায়। দাঁত অপরিষ্কার থাকার কারণে যে গন্ধ সেটা নয়।
যেমন হাদীসে এসেছে—
للصائم فرحتان : فرحة عند فطره، وفرحة عند لقاء ربه . مسلم :১৫১, البخاري :১৭৯০
‘সিয়াম পালনকারীর জন্য দুটি আনন্দ : একটি হল ইফতারের সময় অন্যটি তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাতের সময়।’ [বুখারী : ১৭৯০, মুসলিম : ১১৫১]
ইফতারের সময় আনন্দ হল এ কারণে যে, সিয়াম পূর্ণ করতে পারল ও খাবার-দাবারের অনুমতি পাওয়া গেল। এটা বাস্তব সম্মত আনন্দের বিষয়, যা আমাদের সকলের বুঝে আসে ও অনুভব করি। অপর দিকে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের যে আনন্দ, তা অনুভব করতে আমরা এখন না পারলেও কেয়ামতের দিন পারা যাবে। যখন সকল মানুষ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহমুখী থাকবে।
للصائم فرحتان : فرحة عند فطره، وفرحة عند لقاء ربه . مسلم :১৫১, البخاري :১৭৯০
‘সিয়াম পালনকারীর জন্য দুটি আনন্দ : একটি হল ইফতারের সময় অন্যটি তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাতের সময়।’ [বুখারী : ১৭৯০, মুসলিম : ১১৫১]
ইফতারের সময় আনন্দ হল এ কারণে যে, সিয়াম পূর্ণ করতে পারল ও খাবার-দাবারের অনুমতি পাওয়া গেল। এটা বাস্তব সম্মত আনন্দের বিষয়, যা আমাদের সকলের বুঝে আসে ও অনুভব করি। অপর দিকে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের যে আনন্দ, তা অনুভব করতে আমরা এখন না পারলেও কেয়ামতের দিন পারা যাবে। যখন সকল মানুষ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহমুখী থাকবে।
হাদীসে এসেছে—
عن عبد الله بن عمرو أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : ( الصيام والقرآن يشفعان للعبد يوم القيامة، يقول الصيام أي رب : منعته الطعام والشهوات بالنهار، فشفعني فيه . ويقول القرآن : منعته النوم بالليل، فشفعني فيه . قال : فيشفعان . أحمد :৬৬২৬
আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘সিয়াম ও কুরআন কেয়ামতের দিন মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে, সিয়াম বলবে হে প্রতিপালক! আমি দিনের বেলা তাকে পানাহার ও যৌনতা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর। কুরআন বলবে হে প্রতিপালক ! আমি তাকে রাতে নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছি, তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর। তিনি বলেন, অতঃপর উভয়ের সুপারিশই কবুল করা হবে।’ [আহমদ : ৬৬২৬]
عن عبد الله بن عمرو أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : ( الصيام والقرآن يشفعان للعبد يوم القيامة، يقول الصيام أي رب : منعته الطعام والشهوات بالنهار، فشفعني فيه . ويقول القرآن : منعته النوم بالليل، فشفعني فيه . قال : فيشفعان . أحمد :৬৬২৬
আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘সিয়াম ও কুরআন কেয়ামতের দিন মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে, সিয়াম বলবে হে প্রতিপালক! আমি দিনের বেলা তাকে পানাহার ও যৌনতা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর। কুরআন বলবে হে প্রতিপালক ! আমি তাকে রাতে নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছি, তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর। তিনি বলেন, অতঃপর উভয়ের সুপারিশই কবুল করা হবে।’ [আহমদ : ৬৬২৬]
সিয়াম হল অনেকগুলো নেক আমলের সমষ্টি। আর নেক আমল পাপকে মুছে দেয়। আল্লাহর রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
‘সৎকর্ম অবশ্যই পাপসমূহ মিটিয়ে দেয়।’ [সূরা হুদ : ১১৪]
বহু হাদীস রয়েছে যা প্রমাণ করে যে, নেক আমলকে বিভিন্ন ছোট খাট পাপের কাফফারা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। অর্থাৎ নেক আমলের কারণে গুনাহগুলো আল্লাহ ক্ষমা করে দেন।
যেমন হাদীসে এসেছে—
فتنة الرجل في أهله وماله وجاره تكفرها الصلاة والصيام والصدقة . البخاري : ১৮৯৫ ومسلم : ৭৪৫০
‘মানুষ যখন পরিবার-পরিজন, প্রতিবেশী ও ধন-সম্পদের কারণে গুনাহ করে ফেলে, তখন সালাত, সিয়াম, সদকা সে গুনাহগুলোকে মিটিয়ে দেয়।’ [বুখারী : ১৭৯৫, মুসলিম : ৭৪৫০]
আর রমজান তো গুনাহ মাফ ও মিটিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে আরো বেশি সুযোগ দিয়েছে।
হাদীসে এসেছে—
من صام رمضان إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه . البخاري : ২০১৪, مسلم : ১৮১৭
‘যে রমজান মাসে ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।’ [বুখারী : ২০১৪, মুসলিম : ১৮১৭]
ইহতিসাবের অর্থ হল: আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরস্কার পাওয়া যাবে এ দৃঢ় বিশ্বাস রেখে নিষ্ঠার সাথে সন্তুষ্ট চিত্তে সিয়াম ও কিয়াম আদায় করা।
হাদীসে আরো এসেছে—
الصلوات الخمس والجمعة إلى الجمعة ورمضان إلى رمضان مكفرات لما بينهن إذا اجتنبت الكبائر . مسلم :৫৭৪
‘পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, এক জুমআ থেকে অপর জুমআ এবং এক রমজান থেকে অপর রমজান হল মধ্যবর্তী সময়ের পাপের কাফফারা, যদি কবীরা গুনাহ থেকে বেচে থাকা যায়।’ [মুসলিম : ৫৭৪]
সিয়াম ছোট পাপগুলোকে মিটিয়ে দেয় আর তাওবা করলে কবীরা গুনাহ মাফ করা হয়।
আল্লাহ তাআলা বলেন :—
(আরবি)
‘তোমাদেরকে যা নিষেধ করা হয়েছে তার মাঝে যা গুরুতর তা হতে বিরত থাকলে তোমাদের লঘুতর পাপগুলো ক্ষমা করে দেব। এবং তোমাদের সম্মানজনক স্থানে প্রবেশ করাব।’ [সূরা নিসা: ৩১]
এ আয়াত ও হাদীস দুটো দ্বারা প্রমাণিত হল, আল্লাহর পক্ষ থেকে যে ক্ষমার ওয়াদা করা হয়েছে তা তিনটি শর্ত সাপেক্ষে।
প্রথম: রমজানের সিয়াম পালন করতে হবে ঈমানের সাথে। অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান এবং সিয়াম যে একটি ফরজ ইবাদত এর প্রতি বিশ্বাস। সিয়াম পালনকারীকে আল্লাহ যে সকল পুরস্কার দেবেন তার প্রতি বিশ্বাস রাখা।
দ্বিতীয়: সিয়াম পালন করতে হবে ইহতিসাবের সাথে। ইহতিসাব অর্থ: আল্লাহর পক্ষ থেকে সওয়াব ও পুরস্কারের আশা করা, তাকে সন্তুষ্ট করতেই সিয়াম পালন করা, আর সিয়ামকে বোঝা মনে না করা।
তৃতীয় : কবিরা গুনাহ থেকে দূরে থাকতে হবে। কবিরা গুনাহ ঐ সকল পাপকে বলা হয় যেগুলোর ব্যাপারে ইহকালীন শাস্তির বিধান দেয়া হয়েছে, পরকালে শাস্তির ঘোষণা রয়েছে, অথবা আল্লাহর তার রাসূলের পক্ষ থেকে লানত (অভিসম্পাত) বা ক্রোধের ঘোষণা রয়েছে। যেমন, শিরক করা, সুদ খাওয়া, এতিমের সম্পদ আত্মসাত করা, ব্যভিচার করা, জাদু-টোনা, অন্যায় হত্যা, মাতা-পিতার সাথে দুর্ব্যবহার, আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদ, মিথ্যা সাক্ষ্য, মিথ্যা মামলা, মাদক সেবন, ধোঁকাবাজি, মিথ্যা শপথ, অপবাদ দেয়া, গিবত বা পরদোষচর্চা, চোগলখোরি, সত্য গোপন করা—ইত্যাদি ।
(আরবি)
‘সৎকর্ম অবশ্যই পাপসমূহ মিটিয়ে দেয়।’ [সূরা হুদ : ১১৪]
বহু হাদীস রয়েছে যা প্রমাণ করে যে, নেক আমলকে বিভিন্ন ছোট খাট পাপের কাফফারা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। অর্থাৎ নেক আমলের কারণে গুনাহগুলো আল্লাহ ক্ষমা করে দেন।
যেমন হাদীসে এসেছে—
فتنة الرجل في أهله وماله وجاره تكفرها الصلاة والصيام والصدقة . البخاري : ১৮৯৫ ومسلم : ৭৪৫০
‘মানুষ যখন পরিবার-পরিজন, প্রতিবেশী ও ধন-সম্পদের কারণে গুনাহ করে ফেলে, তখন সালাত, সিয়াম, সদকা সে গুনাহগুলোকে মিটিয়ে দেয়।’ [বুখারী : ১৭৯৫, মুসলিম : ৭৪৫০]
আর রমজান তো গুনাহ মাফ ও মিটিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে আরো বেশি সুযোগ দিয়েছে।
হাদীসে এসেছে—
من صام رمضان إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه . البخاري : ২০১৪, مسلم : ১৮১৭
‘যে রমজান মাসে ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।’ [বুখারী : ২০১৪, মুসলিম : ১৮১৭]
ইহতিসাবের অর্থ হল: আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরস্কার পাওয়া যাবে এ দৃঢ় বিশ্বাস রেখে নিষ্ঠার সাথে সন্তুষ্ট চিত্তে সিয়াম ও কিয়াম আদায় করা।
হাদীসে আরো এসেছে—
الصلوات الخمس والجمعة إلى الجمعة ورمضان إلى رمضان مكفرات لما بينهن إذا اجتنبت الكبائر . مسلم :৫৭৪
‘পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, এক জুমআ থেকে অপর জুমআ এবং এক রমজান থেকে অপর রমজান হল মধ্যবর্তী সময়ের পাপের কাফফারা, যদি কবীরা গুনাহ থেকে বেচে থাকা যায়।’ [মুসলিম : ৫৭৪]
সিয়াম ছোট পাপগুলোকে মিটিয়ে দেয় আর তাওবা করলে কবীরা গুনাহ মাফ করা হয়।
আল্লাহ তাআলা বলেন :—
(আরবি)
‘তোমাদেরকে যা নিষেধ করা হয়েছে তার মাঝে যা গুরুতর তা হতে বিরত থাকলে তোমাদের লঘুতর পাপগুলো ক্ষমা করে দেব। এবং তোমাদের সম্মানজনক স্থানে প্রবেশ করাব।’ [সূরা নিসা: ৩১]
এ আয়াত ও হাদীস দুটো দ্বারা প্রমাণিত হল, আল্লাহর পক্ষ থেকে যে ক্ষমার ওয়াদা করা হয়েছে তা তিনটি শর্ত সাপেক্ষে।
প্রথম: রমজানের সিয়াম পালন করতে হবে ঈমানের সাথে। অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান এবং সিয়াম যে একটি ফরজ ইবাদত এর প্রতি বিশ্বাস। সিয়াম পালনকারীকে আল্লাহ যে সকল পুরস্কার দেবেন তার প্রতি বিশ্বাস রাখা।
দ্বিতীয়: সিয়াম পালন করতে হবে ইহতিসাবের সাথে। ইহতিসাব অর্থ: আল্লাহর পক্ষ থেকে সওয়াব ও পুরস্কারের আশা করা, তাকে সন্তুষ্ট করতেই সিয়াম পালন করা, আর সিয়ামকে বোঝা মনে না করা।
তৃতীয় : কবিরা গুনাহ থেকে দূরে থাকতে হবে। কবিরা গুনাহ ঐ সকল পাপকে বলা হয় যেগুলোর ব্যাপারে ইহকালীন শাস্তির বিধান দেয়া হয়েছে, পরকালে শাস্তির ঘোষণা রয়েছে, অথবা আল্লাহর তার রাসূলের পক্ষ থেকে লানত (অভিসম্পাত) বা ক্রোধের ঘোষণা রয়েছে। যেমন, শিরক করা, সুদ খাওয়া, এতিমের সম্পদ আত্মসাত করা, ব্যভিচার করা, জাদু-টোনা, অন্যায় হত্যা, মাতা-পিতার সাথে দুর্ব্যবহার, আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদ, মিথ্যা সাক্ষ্য, মিথ্যা মামলা, মাদক সেবন, ধোঁকাবাজি, মিথ্যা শপথ, অপবাদ দেয়া, গিবত বা পরদোষচর্চা, চোগলখোরি, সত্য গোপন করা—ইত্যাদি ।
যে সকল ফযীলত ও সওয়াবের কথা এতক্ষণ আলোচনা করা হল তা শুধু ঐ ব্যক্তি লাভ করবে যে নিম্নোক্ত শর্তাবলি পালন করে সিয়াম আদায় করবে।
(১) সিয়াম একমাত্র আল্লাহর জন্য আদায় করতে হবে। মানুষকে দেখানো বা শোনানো অথবা মানুষের প্রশংসা অর্জন কিংবা স্বাস্থ্যের উন্নতির নিয়তে সিয়াম আদায় করবে না।
(২) সিয়াম আদায়ের ক্ষেত্রে আল্লাহর রাসূলের সুন্নত অনুসরণ করতে হবে। সাহরী, ইফতার, তারাবীহসহ সকল বিষয় রাসূলের সুন্নত অনুযায়ী আদায় করতে হবে।
(৩) শুধু খাওয়া-দাওয়া ও যৌনাচার থেকে বিরত থাকলে যথেষ্ট হবে না। মিথ্যা, পরনিন্দা, অশ্লীলতা, ধোঁকাবাজি, ঝগড়া-বিবাদ সহ সকল প্রকার অবৈধ কাজ হতে বিরত থাকতে হবে। মুখ যেমন খাবার থেকে বিরত থাকে, তেমনিভাবে চোখ বিরত থাকবে অন্যায় দৃষ্টি থেকে, কান বিরত থাকবে অনর্থক কথা ও গান-বাজনা শোনা থেকে, পা বিরত থাকব অন্যায়-অসৎ পথে চলা থেকে।
সিয়াম পালনের মহান উদ্দেশ্য এটাই যে, সিয়াম পালনকারী শরীয়তের দৃষ্টিতে সকল প্রকার অন্যায় ও গহীর্হত আচার-আচরণ থেকে নিজেকে হেফাজত করবে। অতএব সিয়াম হল, সকল ভাল বিষয় অর্জন ও অন্যায়-গহীর্হত কাজ ও কথা বর্জন অনুশীলনের একটি শিক্ষালয়।
তাইতো দেখা যায় রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
من لم يدع قول الزور والعمل به والجهل فليس لله حاجة أن يدع طعامه وشرابه . البخاري :৬০৫৭
‘যে মিথ্যা কথা ও কাজ এবং মূর্খতা পরিত্যাগ করতে পারল না, তার পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।’ [বুখারী : ৬০৫৭]
তিনি আরো বলেছেন:—
رب صائم حظه من صيامه الجوع والعطش، ورب قائم حظه من قيامه السهر . أحمد :৯০৯১
‘অনেক সিয়াম পালনকারী আছে, যার সিয়াম থেকে প্রাপ্তি শুধু অভুক্ত ও পিপাসার্ত থাকা। আবার অনেক সালাত আদায়কারী আছে, যার সালাত থেকে প্রাপ্তি শুধু রাত জাগা।’ [আহমদ : ৯০৯১] (এ ছাড়া আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন প্রতিদান লাভ করে না)
(১) সিয়াম একমাত্র আল্লাহর জন্য আদায় করতে হবে। মানুষকে দেখানো বা শোনানো অথবা মানুষের প্রশংসা অর্জন কিংবা স্বাস্থ্যের উন্নতির নিয়তে সিয়াম আদায় করবে না।
(২) সিয়াম আদায়ের ক্ষেত্রে আল্লাহর রাসূলের সুন্নত অনুসরণ করতে হবে। সাহরী, ইফতার, তারাবীহসহ সকল বিষয় রাসূলের সুন্নত অনুযায়ী আদায় করতে হবে।
(৩) শুধু খাওয়া-দাওয়া ও যৌনাচার থেকে বিরত থাকলে যথেষ্ট হবে না। মিথ্যা, পরনিন্দা, অশ্লীলতা, ধোঁকাবাজি, ঝগড়া-বিবাদ সহ সকল প্রকার অবৈধ কাজ হতে বিরত থাকতে হবে। মুখ যেমন খাবার থেকে বিরত থাকে, তেমনিভাবে চোখ বিরত থাকবে অন্যায় দৃষ্টি থেকে, কান বিরত থাকবে অনর্থক কথা ও গান-বাজনা শোনা থেকে, পা বিরত থাকব অন্যায়-অসৎ পথে চলা থেকে।
সিয়াম পালনের মহান উদ্দেশ্য এটাই যে, সিয়াম পালনকারী শরীয়তের দৃষ্টিতে সকল প্রকার অন্যায় ও গহীর্হত আচার-আচরণ থেকে নিজেকে হেফাজত করবে। অতএব সিয়াম হল, সকল ভাল বিষয় অর্জন ও অন্যায়-গহীর্হত কাজ ও কথা বর্জন অনুশীলনের একটি শিক্ষালয়।
তাইতো দেখা যায় রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
من لم يدع قول الزور والعمل به والجهل فليس لله حاجة أن يدع طعامه وشرابه . البخاري :৬০৫৭
‘যে মিথ্যা কথা ও কাজ এবং মূর্খতা পরিত্যাগ করতে পারল না, তার পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।’ [বুখারী : ৬০৫৭]
তিনি আরো বলেছেন:—
رب صائم حظه من صيامه الجوع والعطش، ورب قائم حظه من قيامه السهر . أحمد :৯০৯১
‘অনেক সিয়াম পালনকারী আছে, যার সিয়াম থেকে প্রাপ্তি শুধু অভুক্ত ও পিপাসার্ত থাকা। আবার অনেক সালাত আদায়কারী আছে, যার সালাত থেকে প্রাপ্তি শুধু রাত জাগা।’ [আহমদ : ৯০৯১] (এ ছাড়া আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন প্রতিদান লাভ করে না)
আমরা যখন এ মাসের গুরুত্ব অনুধাবন করলাম তখন আমাদের কর্তব্য হয়ে দাঁড়াল কীভাবে এ মাসের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগানো যায় সে প্রচেষ্টা চালানো। এ মাসে হিদায়াতের আলোকবর্তিকা আল-কুরআন নাযিল হয়েছে। এ মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। এ মাসে জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। শয়তানকে শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হয়। একজন ঘোষণাকারী ভাল কাজের আহবান জানাতে থাকে ও খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলে। সাথে সাথে এটা হল মাগফিরাতের মাস, জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস। এ মাসে রয়েছে লাইলাতুল কদর যা হাজার মাস থেকে শ্রেষ্ঠ। আমাদের অনেকের ধারণা রমজান মাস সিয়াম পালন ও তারাবীহ আদায়ের মাস। ব্যাস! আর কীসের আমল? দিনের বেলা পানাহার থেকে বিরত থাকছি এটা কম কি? না, ব্যাপারটা শুধু এ টুকুতে সীমিত নয়। রমজান একটি বিশাল বিদ্যাপীঠ।
এ রমজানে আমরা কি কি নেক আমল করতে পারি তা নিম্নে আলোচনা করা হল:—
এ রমজানে আমরা কি কি নেক আমল করতে পারি তা নিম্নে আলোচনা করা হল:—
কিয়ামুল লাইল শব্দের অর্থ রাতের সালাত। অর্থাৎ সালাতে তারাবীহ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :—
من قام رمضان إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه . مسلم :১৭৩
‘যে রমজান মাসে ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে রাতে সালাত আদায় করবে তার অতীতের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।’ [মুসলিম : ১৭৩]
সালাতে তারাবীহ যেমন কিয়ামুল লাইলের মাঝে পড়ে, তেমনি শেষ রাতে তাহাজ্জুদও সালাতুল লাইল এর অন্তর্ভুক্ত। ইমাম সাহেবের সাথে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জামাতে সালাত আদায় করলে রমজানের পূর্ণ রাত সালাত আদায়ের সওয়াব অর্জিত হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
من قام مع الإمام حتى ينصرف كتب له قيام ليلة . سنن النسائي :১৬১৬
‘ইমাম সাহেব সালাত শেষ করা পর্যন্ত তার সাথে যে সালাত আদায় করবে, সে পূর্ণ এক রাত সালাত আদায়ের সওয়াব পাবে।’ [সুনানে নাসায়ী : ১৬১৬]
যে সামর্থ্য রাখে সে ইমামের সাথে সালাত শেষ করে একা একা যত ইচ্ছা তত সালাত আদায় করবে। অনেকে রমজানের শেষ দিকে অলসতায় আক্রান্ত হয়, কিংবা মাত্র আট রাকাআত তারাবীহ আদায় করে মসজিদ হতে চলে যান ; এটা কোন ভাবেই বাঞ্ছনীয় নয়। এর ফলে তারা পূর্ণ রমজানের কিয়ামুল লাইলের সওয়াব থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকেন।
من قام رمضان إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه . مسلم :১৭৩
‘যে রমজান মাসে ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে রাতে সালাত আদায় করবে তার অতীতের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।’ [মুসলিম : ১৭৩]
সালাতে তারাবীহ যেমন কিয়ামুল লাইলের মাঝে পড়ে, তেমনি শেষ রাতে তাহাজ্জুদও সালাতুল লাইল এর অন্তর্ভুক্ত। ইমাম সাহেবের সাথে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জামাতে সালাত আদায় করলে রমজানের পূর্ণ রাত সালাত আদায়ের সওয়াব অর্জিত হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
من قام مع الإمام حتى ينصرف كتب له قيام ليلة . سنن النسائي :১৬১৬
‘ইমাম সাহেব সালাত শেষ করা পর্যন্ত তার সাথে যে সালাত আদায় করবে, সে পূর্ণ এক রাত সালাত আদায়ের সওয়াব পাবে।’ [সুনানে নাসায়ী : ১৬১৬]
যে সামর্থ্য রাখে সে ইমামের সাথে সালাত শেষ করে একা একা যত ইচ্ছা তত সালাত আদায় করবে। অনেকে রমজানের শেষ দিকে অলসতায় আক্রান্ত হয়, কিংবা মাত্র আট রাকাআত তারাবীহ আদায় করে মসজিদ হতে চলে যান ; এটা কোন ভাবেই বাঞ্ছনীয় নয়। এর ফলে তারা পূর্ণ রমজানের কিয়ামুল লাইলের সওয়াব থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকেন।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
الصيام والقرآن يشفعان للعبد يوم القيامة . أحمد :৬৬২৬
‘সিয়াম ও কুরআন কেয়ামতের দিন মানুষের জন্য সুপারিশ করবে...।’ [আহমাদ : ৬৬২৬]
হাদীসে এসেছে, রমজানে জিবরীল রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে কুরআন পাঠ করে শোনাতেন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পূর্ণ কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে জিবরীলের কাছে তুলে ধরতেন। আল-কুরআন তিলাওয়াত হল সর্বশ্রেষ্ঠ যিকির। সিয়াম পালনকারী এ যিকির থেকে বঞ্চিত থাকতে পারেন না। আল-কুরআন তিলাওয়াতের একটি সঠিক দিক-নির্দেশনামুলক প্রবন্ধ এ বইয়ের শেষ দিকে যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। পাঠক এ থেকে উপকৃত হতে পারবেন। যদি কেউ কুরআন তিলাওয়াত করতে অপারগ হন, তাহলে বিভিন্ন তাসবীহ, তাহলীল, তাহমীদ আদায়ের মাধ্যমে মুখে আল্লাহর যিকির অব্যাহত রাখবেন।
الصيام والقرآن يشفعان للعبد يوم القيامة . أحمد :৬৬২৬
‘সিয়াম ও কুরআন কেয়ামতের দিন মানুষের জন্য সুপারিশ করবে...।’ [আহমাদ : ৬৬২৬]
হাদীসে এসেছে, রমজানে জিবরীল রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে কুরআন পাঠ করে শোনাতেন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পূর্ণ কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে জিবরীলের কাছে তুলে ধরতেন। আল-কুরআন তিলাওয়াত হল সর্বশ্রেষ্ঠ যিকির। সিয়াম পালনকারী এ যিকির থেকে বঞ্চিত থাকতে পারেন না। আল-কুরআন তিলাওয়াতের একটি সঠিক দিক-নির্দেশনামুলক প্রবন্ধ এ বইয়ের শেষ দিকে যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। পাঠক এ থেকে উপকৃত হতে পারবেন। যদি কেউ কুরআন তিলাওয়াত করতে অপারগ হন, তাহলে বিভিন্ন তাসবীহ, তাহলীল, তাহমীদ আদায়ের মাধ্যমে মুখে আল্লাহর যিকির অব্যাহত রাখবেন।
প্রখ্যাত সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস বলেন :—
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم أجود الناس بالخير، وكان أجود ما يكون في شهر رمضان . مسلم :২৩০৮
‘নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন মানুষের মাঝে সবচেয়ে বেশি দানশীল। আর রমজানে তার বদান্যতা আরো বেড়ে যেত।’ [মুসলিম : ৩২০৮]
ইমাম শাফেয়ী রহ. বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর অনুসরণ করে তার উম্মতের জন্য উত্তম কাজ হল, রমজান মাসে তারা বেশি করে দান-সদকা করবে। কারণ এ মাসে মানুষের প্রয়োজন বেশি থাকে। অপরদিকে রমজান হল জিহাদের মাস। তাই প্রত্যেকের উচিত অর্থ-সম্পদ দান করার মাধ্যমে জিহাদে অংশ নেয়া।
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم أجود الناس بالخير، وكان أجود ما يكون في شهر رمضان . مسلم :২৩০৮
‘নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন মানুষের মাঝে সবচেয়ে বেশি দানশীল। আর রমজানে তার বদান্যতা আরো বেড়ে যেত।’ [মুসলিম : ৩২০৮]
ইমাম শাফেয়ী রহ. বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর অনুসরণ করে তার উম্মতের জন্য উত্তম কাজ হল, রমজান মাসে তারা বেশি করে দান-সদকা করবে। কারণ এ মাসে মানুষের প্রয়োজন বেশি থাকে। অপরদিকে রমজান হল জিহাদের মাস। তাই প্রত্যেকের উচিত অর্থ-সম্পদ দান করার মাধ্যমে জিহাদে অংশ নেয়া।
ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন :—
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يعتكف العشر الأواخر من رمضان . مسلم :১১৭১
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশকে এতেকাফ করতেন।’ [মুসলিম : ১১৭১]
এতেকাফ প্রসঙ্গে ইমাম যুহরি বলেন, ‘আশ্চর্যজনক হল মুসলমানরা এতেকাফ পরিত্যাগ করে অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় আসার পর থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত কখনো এতেকাফ পরিত্যাগ করেননি।’
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يعتكف العشر الأواخر من رمضان . مسلم :১১৭১
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশকে এতেকাফ করতেন।’ [মুসলিম : ১১৭১]
এতেকাফ প্রসঙ্গে ইমাম যুহরি বলেন, ‘আশ্চর্যজনক হল মুসলমানরা এতেকাফ পরিত্যাগ করে অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় আসার পর থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত কখনো এতেকাফ পরিত্যাগ করেননি।’
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
من فطر صائما كان له مثل أجره ، غير أنه لا ينقص من أجر الصائم شيئا . أحمد :২২৩০২
‘যে ব্যক্তি কোন সিয়াম পালনকারীকে (রোজাদারকে) ইফতার করাবে সে সিয়াম পালনকারীর অনুরূপ সওয়াব লাভ করবে, তবে সিয়াম পালনকারীর সওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না।’ [আহমদ : ২২৩০২]
من فطر صائما كان له مثل أجره ، غير أنه لا ينقص من أجر الصائم شيئا . أحمد :২২৩০২
‘যে ব্যক্তি কোন সিয়াম পালনকারীকে (রোজাদারকে) ইফতার করাবে সে সিয়াম পালনকারীর অনুরূপ সওয়াব লাভ করবে, তবে সিয়াম পালনকারীর সওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না।’ [আহমদ : ২২৩০২]
আল্লাহ রাববুল আলামীন সিয়ামের বিধান বর্ণনা করার পর বলেছেন—
(আরবি)
‘আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে তোমাকে প্রশ্ন করে, আমি তো নিকটেই। প্রার্থনাকারী যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে, আমি তার প্রার্থনায় সাড়া দেই।’ [সূরা আল-বাকারা : ১৮৬]
তাই সিয়াম পালনকারী আল্লাহর কাছে অধিক পরিমাণে দোয়া-প্রার্থনা করবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
ثلاث دعوات مستجابة : دعوة الصائم، دعوة المظلوم، دعوة المسافر . البيهقي في شعب الإيمان وصححه الألباني في الجامع :৭২০৫
‘তিনজনের দোয়া কবুল করা হয় ; সিয়াম পালনকারীর দোয়া, অত্যাচারিত ব্যক্তির দোয়া এবং মুসাফিরের দোয়া।’ [বাইহাকী ফি শুআবুল ইমান : ৭২০৫]
(আরবি)
‘আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে তোমাকে প্রশ্ন করে, আমি তো নিকটেই। প্রার্থনাকারী যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে, আমি তার প্রার্থনায় সাড়া দেই।’ [সূরা আল-বাকারা : ১৮৬]
তাই সিয়াম পালনকারী আল্লাহর কাছে অধিক পরিমাণে দোয়া-প্রার্থনা করবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
ثلاث دعوات مستجابة : دعوة الصائم، دعوة المظلوم، دعوة المسافر . البيهقي في شعب الإيمان وصححه الألباني في الجامع :৭২০৫
‘তিনজনের দোয়া কবুল করা হয় ; সিয়াম পালনকারীর দোয়া, অত্যাচারিত ব্যক্তির দোয়া এবং মুসাফিরের দোয়া।’ [বাইহাকী ফি শুআবুল ইমান : ৭২০৫]
সর্বদা তওবা করা ওয়াজিব। বিশেষ করে এ মাসে তো বটেই। এ মাসে তওবার অনুকূল অবস্থা বিরাজ করে। শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়, জাহান্নাম থেকে মানুষকে মুক্তি দেয়া হয়। এ ছাড়া রমজান মাসের সকল ইবাদত বন্দেগী তওবার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
ফর্মা-৩
ফর্মা-৩
رغم أنف رجل دخل عليه رمضان، ثم انسلخ قبل أن يغفر له . جامع الأصول في أحاديث الرسول :১৪১০
‘যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়েও তার পাপ ক্ষমা করাতে পারেনি, তার নাক ধুলায় ধূসরিত হোক।’ [জামেউল উসুল : ১৪১০]
তাই রমজান মাসটাকে তওবা ও ক্ষমা পাওয়ার মাস হিসেবে গ্রহণ করে সে অনুযায়ী আমল করা উচিত।
ফর্মা-৩
ফর্মা-৩
رغم أنف رجل دخل عليه رمضان، ثم انسلخ قبل أن يغفر له . جامع الأصول في أحاديث الرسول :১৪১০
‘যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়েও তার পাপ ক্ষমা করাতে পারেনি, তার নাক ধুলায় ধূসরিত হোক।’ [জামেউল উসুল : ১৪১০]
তাই রমজান মাসটাকে তওবা ও ক্ষমা পাওয়ার মাস হিসেবে গ্রহণ করে সে অনুযায়ী আমল করা উচিত।
বিশেষ করে রমজানের শেষ দশকে—
عن عائشة رضي الله عنها قالت : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا دخل العشر أحيى الليل، وأيقظ أهله، وجد وشد المئزر . مسلم :১১৭৪
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : ‘যখন রমজানের শেষ দশক এসে যেত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন রাত্রি জাগরণ করতেন, পরিবার বর্গকে নিদ্রা থেকে জাগিয়ে দিতেন, লুঙ্গি শক্ত ও ভাল করে বেঁধে (প্রস্ত্ততি গ্রহণ) নিতেন।’ [মুসলিম : ১১৭৪]
তিনি আরো বলেন :—
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يجتهد في العشر الأواخر ما لا يجتهده في غيره . مسلم :১১৭৫
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশকে ইবাদত-বন্দেগীতে যে পরিশ্রম করতেন অন্য সময় এ রকম করতেন না।’ [মুসলিম : ১১৭৫]
عن عائشة رضي الله عنها قالت : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا دخل العشر أحيى الليل، وأيقظ أهله، وجد وشد المئزر . مسلم :১১৭৪
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : ‘যখন রমজানের শেষ দশক এসে যেত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন রাত্রি জাগরণ করতেন, পরিবার বর্গকে নিদ্রা থেকে জাগিয়ে দিতেন, লুঙ্গি শক্ত ও ভাল করে বেঁধে (প্রস্ত্ততি গ্রহণ) নিতেন।’ [মুসলিম : ১১৭৪]
তিনি আরো বলেন :—
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يجتهد في العشر الأواخر ما لا يجتهده في غيره . مسلم :১১৭৫
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশকে ইবাদত-বন্দেগীতে যে পরিশ্রম করতেন অন্য সময় এ রকম করতেন না।’ [মুসলিম : ১১৭৫]
ইসলামী শিক্ষা হল সকল প্রকার শিক্ষার মূল। তা ছাড়া দুটি বিষয় লক্ষ্য করা খুব জরুরি -
এক. ইসলামের সকল ইবাদত-বন্দেগী সঠিকভাবে আদায় করতে হলে ইসলামী শিক্ষা অর্জন করতে হয়। এ ব্যাপারে কোন ওজর-আপত্তি গ্রহণযোগ্য নয়। সালাতের নিয়মকানুন, সিয়ামের বিধান, জাকাতের নিয়ম-নীতি, হজের আহকাম না শিখে এগুলো আদায় করা যায় না।
দুই. আল-কুরআনের তাফসীর শেখা ও অধ্যয়ন অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে আমরা যে সকল সূরা-কেরাত সালাতের মাঝে পড়ে থাকি, সেগুলোর মর্ম অনুধাবন করে তিলাওয়াত করা দরকার। কাজেই রমজান মাসকে আমরা ইসলামী শিক্ষা অর্জন ও শিক্ষা প্রসারের একটি সুযোগ হিসেবে নিতে পারি। মূর্খতার অবসান ঘটানো সিয়ামের একটা গুরুত্বপূর্ণ দাবি।
যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
من لم يدع قول الزور والعمل به والجهل، فليس لله حاجة أن يدع طعامه وشرابه . البخاري :৫৭১০
‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ এবং মূর্খতা পরিত্যাগ করতে পারল না, তার পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।’ [বুখারী : ৫৭১]
হাদিসটি দ্বারা স্পষ্ট বুঝে আসে যদি মূর্খতা পরিহার না করা হয় তবে সিয়াম আল্লাহর কাছে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। আর মূর্খতা ত্যাগ করা যাবে শুধু শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে।
এক. ইসলামের সকল ইবাদত-বন্দেগী সঠিকভাবে আদায় করতে হলে ইসলামী শিক্ষা অর্জন করতে হয়। এ ব্যাপারে কোন ওজর-আপত্তি গ্রহণযোগ্য নয়। সালাতের নিয়মকানুন, সিয়ামের বিধান, জাকাতের নিয়ম-নীতি, হজের আহকাম না শিখে এগুলো আদায় করা যায় না।
দুই. আল-কুরআনের তাফসীর শেখা ও অধ্যয়ন অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে আমরা যে সকল সূরা-কেরাত সালাতের মাঝে পড়ে থাকি, সেগুলোর মর্ম অনুধাবন করে তিলাওয়াত করা দরকার। কাজেই রমজান মাসকে আমরা ইসলামী শিক্ষা অর্জন ও শিক্ষা প্রসারের একটি সুযোগ হিসেবে নিতে পারি। মূর্খতার অবসান ঘটানো সিয়ামের একটা গুরুত্বপূর্ণ দাবি।
যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
من لم يدع قول الزور والعمل به والجهل، فليس لله حاجة أن يدع طعامه وشرابه . البخاري :৫৭১০
‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ এবং মূর্খতা পরিত্যাগ করতে পারল না, তার পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।’ [বুখারী : ৫৭১]
হাদিসটি দ্বারা স্পষ্ট বুঝে আসে যদি মূর্খতা পরিহার না করা হয় তবে সিয়াম আল্লাহর কাছে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। আর মূর্খতা ত্যাগ করা যাবে শুধু শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে।
ইসলাম অর্থ আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ। সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহর নির্দেশের কাছে নিজেকে সন্তুষ্ট চিত্তে সঁপে দেয়া। তার প্রতি ঈমান রাখা, তার কাছে প্রতিদানের আশা করা এবং বিশ্বাস করা যে, আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবন যাপনের মাঝে রয়েছে কল্যাণ ও সফলতা। এটাও বিশ্বাস করতে হবে যে, আল্লাহ তাআলা হলেন হাকিম বা মহাজ্ঞানী। তার বিধানই পূর্ণাঙ্গ ও সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ এবং সুন্দর। তার প্রতিটি বিধানে রয়েছে হিকমত বা কল্যাণকর মহা উদ্দেশ্য। অনেক সময় মানুষ তার বিধানের কল্যাণকর দিক ও হিকমত যথার্থ ভাবে অনুধাবন করতে পারে না। এটা মানুষের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা। আল্লাহতাআলা বলেন :—
(আরবি)
‘তোমাদের খুব অল্পই জ্ঞান দেয়া হয়েছে।’ [সূরা আল-ইসরা :৮৫]
মানুষের কর্তব্য হল সর্বদা আল্লাহ তাআলার আদেশ-নির্দেশ পালন করা। এ আদেশ-নির্দেশসমূহের হিকমত তথা বৈজ্ঞানিক লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও উপকারিতা অনুধাবন করতে পারা যাক বা না যাক। যদি এমন হয় যে, আল্লাহর যে সকল বিধানের উপকারিতা আমাদের কাছে স্পষ্ট সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করব আর অন্যগুলো গুরুত্ব দেব না তাহলে তো আল্লাহর দাসত্ব করা হলো না। বরং নিজের মনের দাসত্ব করা হলো। এরূপ কেউ করলে এর মাধ্যমে তার ঈমান ও বিশ্বাসের দুর্বলতার পরিচয় দিল। আবার এর অর্থ এটা-ও নয় যে আমরা আল্লাহ তাআলার বিধি-বিধানের বৈজ্ঞানিক লাভ-ক্ষতি, উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করতে পারব না। অবশ্যই পারব, কারণ এটা আমাদের ঈমানকে আরো শক্তিশালী করবে, তাঁর প্রতি বিশ্বাসকে মজবুত করবে। তাই আমরা এখন সিয়ামের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য তার কল্যাণ ও উপকারিতার দিকগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব।
(আরবি)
‘তোমাদের খুব অল্পই জ্ঞান দেয়া হয়েছে।’ [সূরা আল-ইসরা :৮৫]
মানুষের কর্তব্য হল সর্বদা আল্লাহ তাআলার আদেশ-নির্দেশ পালন করা। এ আদেশ-নির্দেশসমূহের হিকমত তথা বৈজ্ঞানিক লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও উপকারিতা অনুধাবন করতে পারা যাক বা না যাক। যদি এমন হয় যে, আল্লাহর যে সকল বিধানের উপকারিতা আমাদের কাছে স্পষ্ট সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করব আর অন্যগুলো গুরুত্ব দেব না তাহলে তো আল্লাহর দাসত্ব করা হলো না। বরং নিজের মনের দাসত্ব করা হলো। এরূপ কেউ করলে এর মাধ্যমে তার ঈমান ও বিশ্বাসের দুর্বলতার পরিচয় দিল। আবার এর অর্থ এটা-ও নয় যে আমরা আল্লাহ তাআলার বিধি-বিধানের বৈজ্ঞানিক লাভ-ক্ষতি, উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করতে পারব না। অবশ্যই পারব, কারণ এটা আমাদের ঈমানকে আরো শক্তিশালী করবে, তাঁর প্রতি বিশ্বাসকে মজবুত করবে। তাই আমরা এখন সিয়ামের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য তার কল্যাণ ও উপকারিতার দিকগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব।
এটা আল্লাহ রাববুল আলামীন নিজেই স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন। সিয়ামের লক্ষ্য হল মানুষ তাকওয়া বা আল্লাহ-ভীতি অর্জন করবে। তিনি বলেন :
(আরবি)
‘হে বিশ্বাসীগণ ! তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেয়া হল, যেমন বিধান তোমাদের পর্ববর্তীদের দেয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।’ [সূরা আল-বাকারা : ১৮৩]
তাকওয়া কী? যা অর্জন করা যাবে সিয়াম পালন করলে।
তাকওয়া হল : আল্লাহ যা আদেশ করেছেন তা পালন করা, আর যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকা। এটা করা হবে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিদান লাভ ও তাঁর শাস্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায়। সিয়াম পালনকারী আল্লাহর নির্দেশের সামনে আত্মসমর্পণ করে যখন বৈধ পানাহার ও যৌনাচার বর্জন করতে পারে তখন সে অবশ্যই অবৈধ আচার-আচরণ, কথা ও কাজ এবং ভোগ-বিলাস থেকে বেঁচে থাকতে পারবে।
(আরবি)
‘হে বিশ্বাসীগণ ! তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেয়া হল, যেমন বিধান তোমাদের পর্ববর্তীদের দেয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।’ [সূরা আল-বাকারা : ১৮৩]
তাকওয়া কী? যা অর্জন করা যাবে সিয়াম পালন করলে।
তাকওয়া হল : আল্লাহ যা আদেশ করেছেন তা পালন করা, আর যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকা। এটা করা হবে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিদান লাভ ও তাঁর শাস্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায়। সিয়াম পালনকারী আল্লাহর নির্দেশের সামনে আত্মসমর্পণ করে যখন বৈধ পানাহার ও যৌনাচার বর্জন করতে পারে তখন সে অবশ্যই অবৈধ আচার-আচরণ, কথা ও কাজ এবং ভোগ-বিলাস থেকে বেঁচে থাকতে পারবে।
শয়তান মানুষের শিরা-উপশিরায় প্রবেশ ও চলাচল করতে পারে। আর কু-প্রবৃত্তি যদি যখন যা ইচ্ছা তা করতে থাকে তখন সে উদ্ধত ও অপ্রতিরোধ্য হয়ে থাকে। এবং সে তার আরো চাহিদা মিটানোর জন্য চাপ অব্যাহত রাখে। এমতাবস্থায় মানুষ ক্ষুধা ও পিপাসা দিয়ে শয়তানের সাথে যুদ্ধ করে। এ যুদ্ধে সিয়াম পালনকারী আল্লাহর সাহায্যে শয়তান ও কু-প্রবৃত্তিকে পরাজিত করে। এ কারণে কু-প্রবৃত্তিকে দমন করার জন্য নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সিয়াম নামক চিকিৎসা দিয়েছিলেন। কেননা নফ্সে আম্মারা বা কু-প্রবৃত্তির তাড়নায় মানুষ সকল প্রকারের পাপাচারে লিপ্ত হয়। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন—
يا معشر الشباب ! من استطاع منكم الباءة فليتزوج، فإنه أغض للبصر، وأحصن للفرج، ومن لم يستطع فعليه بالصوم، فإنه له وجاء . مسلم :১৪০০
‘হে যুবকেরা ! তোমাদের মাঝে যে সামর্থ্য রাখে সে যেন বিবাহ করে। কেননা বিবাহ দৃষ্টি অবনত রাখে ও লজ্জাস্থানের সুরক্ষা দেয়। আর যে বিবাহের সামর্থ্য রাখে না সে যেন সিয়াম পালন করে। কারণ এটা তার রক্ষা কবচ।’ [মুসলিম : ১৪০০]
সিয়ামের বিধানের এটা একটা হিকমত। এভাবেই সিয়াম মানুষকে তাকওয়ার পথে নিয়ে যায়। মোটকথা সিয়াম যাবতীয় জৈবিক চাহিদা নিয়ন্ত্রণ ও তা বৈধ পথে পরিচালিত করার প্রশিক্ষণ দেয়।
يا معشر الشباب ! من استطاع منكم الباءة فليتزوج، فإنه أغض للبصر، وأحصن للفرج، ومن لم يستطع فعليه بالصوم، فإنه له وجاء . مسلم :১৪০০
‘হে যুবকেরা ! তোমাদের মাঝে যে সামর্থ্য রাখে সে যেন বিবাহ করে। কেননা বিবাহ দৃষ্টি অবনত রাখে ও লজ্জাস্থানের সুরক্ষা দেয়। আর যে বিবাহের সামর্থ্য রাখে না সে যেন সিয়াম পালন করে। কারণ এটা তার রক্ষা কবচ।’ [মুসলিম : ১৪০০]
সিয়ামের বিধানের এটা একটা হিকমত। এভাবেই সিয়াম মানুষকে তাকওয়ার পথে নিয়ে যায়। মোটকথা সিয়াম যাবতীয় জৈবিক চাহিদা নিয়ন্ত্রণ ও তা বৈধ পথে পরিচালিত করার প্রশিক্ষণ দেয়।
মানুষ যখন তার প্রবৃত্তির গোলামি ও শয়তানের আগ্রাসন থেকে মুক্তি লাভ করবে তখনই সে আল্লাহ রাববুল আলামীনের বান্দা বা দাস হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবে। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ব্যতীত তার সামনে আর কোন উদ্দেশ্য থাকে না। তাই সে আল্লাহ রাববুল আলামীনের আদেশ-নিষেধকে নিজের প্রবৃত্তির দাবির উপর অগ্রাধিকার দেয়। এতে যত কষ্ট হোক, যত ধৈর্যের প্রয়োজন হোক, যত ত্যাগের দরকার হোক সব কিছু করতে সে প্রস্ত্তত হয়ে যায়। তাই সিয়াম পালনকারীকে দেখবেন সে দিনের বেলা খাচ্ছে না, খাচ্ছে রাতে। রাতে নিদ্রা যাচ্ছে না, রাত জেগে সে সালাত আদায় করছে। মিথ্যা কথা ও কাজ এবং সব ধরনের অসদাচরণ সে পরিহার করে চলছে । অথচ তার মন ও প্রবৃত্তি নির্দেশ দিচ্ছে দিনের বেলায় খাওয়া-দাওয়া করতে, রাতের বেলা বিশ্রাম নিতে, মিথ্যা কথা বলতে ইত্যাদি। এমনিভাবে সিয়াম ও এ সম্পর্কিত কাজগুলো আদায় করার মাধ্যমে সিয়াম পালনকারী প্রবৃত্তিসহ সকল মানুষের দাসত্ব অস্বীকার করে আল্লাহর দাসত্বে প্রবেশ করার যোগ্যতা অর্জন করে।
আল্লাহ রাববুল আলামীনের নির্ধারণ করা সময়ে তারই সন্তুষ্টি লাভের জন্য সকল প্রকার পানাহার পরিহার করা, আল্লাহকে ভয় করা ও তার মোরাকাবার একটি বলিষ্ঠ প্রমাণ বহন করে। এটাই প্রকৃত ঈমান। সিয়াম পালনকারী যদি লোক চক্ষুর আড়ালে পানাহার করে আর মানুষের কাছে প্রকাশ করল যে, সে সিয়াম অবস্থায় আছে, তাহলে সে সিয়াম পালনকারী বলে গণ্য হবে না। এমনিভাবে সে দিনের বেলা পানাহার ও যৌনাচার ত্যাগ করল বটে কিন্তু সিয়ামের নিয়ত ধারণ করেনি, তাহলে সে সিয়াম আদায় করেছে বলে ধরা হবে না। সিয়াম পালনকারীর এ অনুভূতি আল্লাহকে ভয় করা ও তার মোরাকাবার প্রমাণ দিতে শিখায়। (মোরাকাবা হল : আল্লাহ আমাকে ও আমি যা করছি তা সর্বদা প্রত্যক্ষ করছেন। এ ধরনের দৃঢ় অনুভূতি ধারণ করা) তাই সিয়াম মুসলিমকে ঈমানের সত্যতার প্রমাণ দিতে প্রশিক্ষণ দেয়। তাকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, মুমিন হিসেবে তার কর্তব্য হল সর্বদা আল্লাহর মোরাকাবা করা অর্থাৎ এ দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করা যে, আমার প্রতিটি মুহূর্তের প্রতিটি কাজ আল্লাহ রাববুল আলামীন পর্যবেক্ষণ করছেন। তাই আমাকে কোন কাজে তার অবাধ্য হওয়া চলবে না। তিনি যাতে সন্তুষ্ট হন, শুধু তা-ই আমাকে করতে হবে। যদি এ রকম মোরাকাবার সাথে সিয়াম আদায় করা যায়, তাহলে তার জন্য রয়েছে তা-ই যা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
كل عمل ابن آدم يضاعف الحسنة بعشر أمثالـها إلى سبع مائة ضعف، قال الله عز وجل : إلا الصوم فإنه لي وأنا أجزي به، يدع شهوته وطعامه من أجلي ... مسلم :১১৫১
‘মানব সন্তানের প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান দশ থেকে সাত শত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, কিন্তু সিয়ামের বিষয়টা ভিন্ন। কেননা সিয়াম শুধু আমার জন্য, আমিই তার প্রতিদান দেব। আমার জন্যই সে পানাহার ত্যাগ করে থাকে। [মুসলিম : ১১৫১]
আর এ বিষয়টা সকল প্রকার ইবাদত-বন্দেগীতে থাকতে হয়। যখন মানুষ বিশ্বাস করবে আল্লাহ আমাকে সর্বদা দেখছেন তখন সে বিনা ওজুতে সালাত আদায় করবে না। ঠিক তেমনি কোন কাজে ফাঁকি দিতে চেষ্টা করবে না। সকল প্রকার কাজ-কর্ম যথাযথ ও সুন্দরভাবে সম্পাদন করবে।
كل عمل ابن آدم يضاعف الحسنة بعشر أمثالـها إلى سبع مائة ضعف، قال الله عز وجل : إلا الصوم فإنه لي وأنا أجزي به، يدع شهوته وطعامه من أجلي ... مسلم :১১৫১
‘মানব সন্তানের প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান দশ থেকে সাত শত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, কিন্তু সিয়ামের বিষয়টা ভিন্ন। কেননা সিয়াম শুধু আমার জন্য, আমিই তার প্রতিদান দেব। আমার জন্যই সে পানাহার ত্যাগ করে থাকে। [মুসলিম : ১১৫১]
আর এ বিষয়টা সকল প্রকার ইবাদত-বন্দেগীতে থাকতে হয়। যখন মানুষ বিশ্বাস করবে আল্লাহ আমাকে সর্বদা দেখছেন তখন সে বিনা ওজুতে সালাত আদায় করবে না। ঠিক তেমনি কোন কাজে ফাঁকি দিতে চেষ্টা করবে না। সকল প্রকার কাজ-কর্ম যথাযথ ও সুন্দরভাবে সম্পাদন করবে।
সিয়ামের মাস মূলত ধৈর্য ও সবরের মাস। সিয়াম মনের চাহিদা পূরণে বাধা দেয়ার মাধ্যমে সংকল্পের দৃঢ়তার প্রশিক্ষণ দেয়। আল্লাহ রাববুল আলামীন কর্তৃক নির্ধারিত সীমারেখা লঙ্ঘন না করে তা মেনে চলার অভ্যাস গড়তে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলে। কখনো তাঁর সীমা লঙ্ঘনের কথা চিন্তা করে না। আল্লাহ তাআলা সিয়ামের বিধান বর্ণনা করার পর বলেছেন :
تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَقْرَبُوهَا ( البقرة : ১৮৭)
‘ওগুলো আল্লাহর সীমারেখা। সুতরাং ওগুলোর নিকটবর্তী হয়ো না।’ [সূরা বাকারা :১৮৭]
সিয়ামের মাধ্যমে মানুষ নিজের মন ও বিবেককে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা লাভ করে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, ধরুন কোন ব্যক্তি একটি খারাপ অভ্যাসে লিপ্ত। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সে এর থেকে বিরত থাকতে পারছে না। রমজান মাসের সিয়াম তার বদ অভ্যাস উৎপাটন করতে একটা বিরল সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। এরপর সে যেন আর বলতে না পারে যে আমি পারি না।
تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَقْرَبُوهَا ( البقرة : ১৮৭)
‘ওগুলো আল্লাহর সীমারেখা। সুতরাং ওগুলোর নিকটবর্তী হয়ো না।’ [সূরা বাকারা :১৮৭]
সিয়ামের মাধ্যমে মানুষ নিজের মন ও বিবেককে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা লাভ করে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, ধরুন কোন ব্যক্তি একটি খারাপ অভ্যাসে লিপ্ত। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সে এর থেকে বিরত থাকতে পারছে না। রমজান মাসের সিয়াম তার বদ অভ্যাস উৎপাটন করতে একটা বিরল সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। এরপর সে যেন আর বলতে না পারে যে আমি পারি না।
সিয়াম পালনকারী পার্থিব সকল ভোগ-বিলাস ত্যাগ করে দুনিয়ার প্রতি বিমুখ হয়ে আখেরাতমুখী হওয়ার দীক্ষা নিয়ে থাকে। তার এ ত্যাগ শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে আখেরাতে জান্নাত লাভের উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কিছুর জন্যে নয়। এ আধ্যাত্মিক শিক্ষার মাধ্যমে দুনিয়ার সাথে সম্পর্ক কমিয়ে আখেরাতের সম্পর্ককে প্রাধান্য দেয়ায় সবক নিয়ে থাকে। আর এ লক্ষ্য অর্জনে সে শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত-বন্দেগী ও সৎকর্ম সম্পাদন ক্ষেত্র প্রশস্ত করতে চেষ্টা করে।
অনুগ্রহের কথা ভুলে যাওয়া মানুষের একটি স্বভাব। অনুগ্রহ মূল্যায়ন করতে শেখে তখন, যখন সে তা হারিয়ে ফেলে। সিয়াম আদায়ের মাধ্যমে বঞ্চিত ও অভাবী মানুষদের দূরাবস্থা অনুধাবন করতে শেখে। তখন সে যেমন তার প্রতি আল্লাহ রাববুল আলামীনের অনুগ্রহের কথা স্মরণ করে আল্লাহর শোকর আদায়ে যত্নবান হয়, তেমনি বঞ্চিত, অভাবী, অনাহার-ক্লিষ্ট মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য দায়িত্ব পালনে অগ্রসর হয় ও তাদের সেবা করতে উৎসাহ পায়।
সিয়ামের যে সকল হিকমত ব্যক্তিকে পরিশুদ্ধ করে, সে সকল হিকমত সমাজকেও পরিশুদ্ধি করণ ও সংস্কারে ভূমিকা রাখে। কেননা ব্যক্তির পরিশুদ্ধতা হল সমাজ শুদ্ধির পথ। ব্যক্তি সংশোধন হয়ে গেলে সমাজ সংশোধন হয়ে যায়। তাইতো আমরা দেখি, সিয়ামকে সামাজিক ভাবে আদায় করতে হয়। অর্থাৎ একই সাথে একই সময়ে। কিন্তু নফল সিয়াম সকলকে এক সময়ে এক সাথে আদায় করতে হবে বলে কোন বাধ্য-বাধকতা নেই। রমজান আমাদেরকে সমাজ সংস্কারের পথে উদ্বুদ্ধ করে, সমাজ যতই কলুষিত হয়ে যাক না কেন। রমজান ইসলামী শরিয়া বাস্তবায়নের আন্দোলনের এক অনুকূল সময়। এ সময় যেমন শয়তানের সৃষ্ট প্রতিকূলতা দুর্বল হয়ে পড়ে, তেমনিভাবে মানুষের মাঝে ইসলামের প্রতি আগ্রহ অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি দেখা যায়। তাই সমাজ সংস্কারের উদ্যোগের এটাই উপযুক্ত সময়। মানুষকে বুঝানোর এটা উত্তম সময় যে, ইসলামী শরিয়ার বাস্তবায়ন সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ।
এক নম্বর থেকে আট পর্যন্ত সিয়ামের যে সকল কল্যাণকর দিক আলোচিত হল তা ছাড়াও সিয়ামের একটি কল্যাণকর দিক হল স্বাস্থ্যের উন্নতি। নিয়মতান্ত্রিক ভাবে খাবার গ্রহণ, পরিমিত আহার, ঠিক একই সময় পানাহার আবার ঠিক একই সময় বিরতি দেয়া ইত্যাদি পাকস্থলীকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিশ্রাম দেয়, ফলে পাকস্থলী শক্তিশালী হয়। এমনিভাবে ইসলাম প্রবর্তিত প্রত্যেকটি ইবাদত-বন্দেগীতে রয়েছে হিকমত ও মানুষের জন্য অসংখ্য পার্থিব কল্যাণ।
আদব হল মানুষের জীবনের সৌন্দর্য। ইবাদত-বন্দেগীর আদবসমূহ ইবাদতকে উজ্জ্বল ও স্বচ্ছ করে দেয়। তাই প্রত্যেকটি ইবাদতের রয়েছে কিছু আদব-কায়দা বা শিষ্টাচার। কিছু আদব হল অবশ্য পালনীয় যা বাস্তবায়ন না করলে ইবাদতটি গ্রহণযোগ্য হবে না, আর কিছু হল মুস্তাহাব অর্থাৎ যা পালন করলে ইবাদতটি পরিপূর্ণতার সহায়ক হয় এবং ইবাদতের মাঝে কোন ত্রুটি হয়ে গেলে তা কাটিয়ে উঠা যায় ও পরিপূর্ণ সওয়াব পাওয়া যায়। তাই আমরা এখানে সিয়ামের কতিপয় আদব নিয়ে আলোচনা করব। আমরা যদি এ আদবসমূহ মান্য করে সিয়াম আদায় করতে পারি, তাহলে আল্লাহর ফজলে আমরা সিয়ামের পূর্ণ সওয়াব লাভ করতে সক্ষম হব।
সিয়াম পালনকারী তো বটেই প্রত্যেক মুসলিমের কর্তব্য হল আল্লাহ যা কিছু আদেশ করেছেন তা পালন করা। আর যা কিছু নিষেধ করেছেন তার প্রত্যেকটি বর্জন করা। এর নামই হল ইসলাম বা স্রষ্টার কাছে মানুষের পূর্ণ আত্মসমর্পণ। একজন মুসলিম যেমন কখনো নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করতে পারে না, তেমনি অন্য মানুষের খেয়াল-খুশি বা তাদের রচিত বিধানের অনুগত হতে পারে না। যদি হয়, তবে তা স্রষ্টার কাছে আত্মসমর্পণ করা হল না। যদি এভাবে আল্লাহর বিধান অনুসারে জীবনকে পরিচালিত করা যায়, তাকেই বলা হবে পরিপূর্ণ ইসলাম। আর পরিপূর্ণ ইসলামে প্রবেশ করতে আল্লাহর রাববুল আলামীন আদেশ করেছেন মানুষকে।
আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
‘হে মুমিনগণ! তোমরা সর্বাত্মকভাবে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ [সূরা বাকারা : ২০৮]
ইসলামকে পূর্ণাঙ্গভাবে অনুসরণ করার নামই হল তাকওয়া। যে তাকওয়া অবলম্বন করতে আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বার বার নির্দেশ দিয়েছেন। এ তাকওয়ার দাবি হল, আল্লাহর আনুগত্য করতে হবে, অবাধ্য হওয়া যাবে না। তাকে স্মরণ করতে হবে ভুলে যাওয়া চলবে না। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হতে হবে অকৃতজ্ঞ (কাফির) হওয়া যাবে না। ঈমানদারের সবচেয়ে বড় কর্তব্য হল, শিরক ও রিয়া মুক্ত থেকে খালেস আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ইবাদতসমূহ সম্পাদন করা। এর মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত হল পাঁচ ওয়াক্ত সালাত। সালাত বাদ দিয়ে সিয়ামের কি মূল্য আছে? দৈনিক পাঁচবার সালাত আদায় করতে হবে জামাতের সাথে। জামাতের সাথে সালাত আদায়ের মাধ্যমে মুনাফেকি থেকে মুক্তির সনদ নিতে হবে। এরপর যথা সময় যাকাত আদায় করতে হবে। সত্যিকার হকদারকে যাকাত প্রদান করতে হবে। এমনিভাবে যে সামর্থ্য রাখে তাকে হজ ও ওমরাহ আদায় করতে হবে। সাথে সাথে উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে সকলের সাথে আচরণ করতে হবে। মাতা-পিতার সাথে ভাল আচরণ, আত্মীয়তার সম্পর্ক সু-দৃঢ় রাখা, প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ, সাধ্য-মত সৎকাজের আদেশ ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখার দায়িত্ব পালন করতে হবে। এমনিভাবে জাদু-টোনা, সুদি কারবার, মিথ্যা কথা, ধোঁকাবাজি, ঘুসসহ সকল প্রকার দুর্নীতি, মাদক সেবন, ব্যভিচার, সৃষ্টি জীবকে কষ্ট দেয়া ও গান-বাদ্য পরিহার করতে হবে। মানুষের অধিকারগুলো যথাযথভাবে আদায় করতে হবে।
আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
‘হে মুমিনগণ! তোমরা সর্বাত্মকভাবে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ [সূরা বাকারা : ২০৮]
ইসলামকে পূর্ণাঙ্গভাবে অনুসরণ করার নামই হল তাকওয়া। যে তাকওয়া অবলম্বন করতে আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বার বার নির্দেশ দিয়েছেন। এ তাকওয়ার দাবি হল, আল্লাহর আনুগত্য করতে হবে, অবাধ্য হওয়া যাবে না। তাকে স্মরণ করতে হবে ভুলে যাওয়া চলবে না। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হতে হবে অকৃতজ্ঞ (কাফির) হওয়া যাবে না। ঈমানদারের সবচেয়ে বড় কর্তব্য হল, শিরক ও রিয়া মুক্ত থেকে খালেস আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ইবাদতসমূহ সম্পাদন করা। এর মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত হল পাঁচ ওয়াক্ত সালাত। সালাত বাদ দিয়ে সিয়ামের কি মূল্য আছে? দৈনিক পাঁচবার সালাত আদায় করতে হবে জামাতের সাথে। জামাতের সাথে সালাত আদায়ের মাধ্যমে মুনাফেকি থেকে মুক্তির সনদ নিতে হবে। এরপর যথা সময় যাকাত আদায় করতে হবে। সত্যিকার হকদারকে যাকাত প্রদান করতে হবে। এমনিভাবে যে সামর্থ্য রাখে তাকে হজ ও ওমরাহ আদায় করতে হবে। সাথে সাথে উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে সকলের সাথে আচরণ করতে হবে। মাতা-পিতার সাথে ভাল আচরণ, আত্মীয়তার সম্পর্ক সু-দৃঢ় রাখা, প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ, সাধ্য-মত সৎকাজের আদেশ ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখার দায়িত্ব পালন করতে হবে। এমনিভাবে জাদু-টোনা, সুদি কারবার, মিথ্যা কথা, ধোঁকাবাজি, ঘুসসহ সকল প্রকার দুর্নীতি, মাদক সেবন, ব্যভিচার, সৃষ্টি জীবকে কষ্ট দেয়া ও গান-বাদ্য পরিহার করতে হবে। মানুষের অধিকারগুলো যথাযথভাবে আদায় করতে হবে।
রমজানে সকল প্রকার অন্যায় থেকে বিরত না থাকলে সিয়াম কবুলের বিষয়টা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে। অনেককে দেখা যায় সিয়াম পালন করে অযথা কথা-বার্তা, ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু সে খবর রাখে না যে, এ সকল অন্যায় কাজ-কর্ম সিয়ামের প্রতিদান লাভে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাদের ব্যাপারেই হয়তো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
كم من صائم ليس له من صيامه إلا الظمأ، وكم من قائم ليس له من قيامه إلا السهر . الدارمي :২৭২০
‘অনেক সিয়াম পালনকারী আছে যারা উপোস থাকা ছাড়া আর কিছু পায় না। আর অনেক রাতজাগা সালাত আদায়কারী আছে যারা রাত্রি-জাগরণ ব্যতীত আর কিছু লাভ করে না।’ [দারামী : ২৭২০]
অতএব যার উদর সিয়াম পালন করছে তার উচিত তার মুখ, কর্ণ, চক্ষু, হাত ও পা সবকিছুই সিয়াম পালন করবে। সকল অন্যায়-অবৈধ কাজ হতে এ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো পবিত্র থাকবে। যেমন রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
. والصيام جنة، فإذا كان يوم صوم أحدكم فلا يرفث يومئذ ولا يصخب، فإن سابه أحد أو قاتله فليقل إني امرأ صائم . مسلم :১১৫১
‘সিয়াম হল ঢাল। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সিয়াম পালন করবে সে যেন অশ্লীল আচরণ ও শোরগোল থেকে বিরত থাকে। যদি তার সাথে কেউ ঝগড়া বিবাদ কিংবা মারামারিতে লিপ্ত হতে চায়, তবে তাকে বলে দেবে আমি সিয়াম পালনকারী।’ [মুসলিম : ১১৫১]
রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন :—
ليس الصيام من الأكل والشرب، إنما الصيام من اللغو والرفث، فإن سابك أحد أو جهل عليك، فليقل : إني صائم . الحاكم :১৫২০
‘শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকার নামই সিয়াম নয়। মূলত সিয়াম হল : অনর্থক-অশ্লীল কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকা। যদি তোমার সাথে কেউ ঝগড়া-বিবাদ কিংবা মারামারিতে লিপ্ত হতে চায়, অথবা মূর্খতা সুলভ আচরণ করে তবে তাকে বলে দেবে আমি সিয়াম পালনকারী।’ [হাকেম : ১৫২০]
যদি সিয়াম পালনকারী নিষিদ্ধ কথা ও কাজ-কর্ম পরিত্যাগ না করেন, তবে তার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পক্ষ থেকে দুঃসংবাদ :—
من لم يدع قول الزور والعمل به والجهل، فليس لله حاجة أن يدع طعامه وشرابه . البخاري :৬০৫৭
‘যে মিথ্যা কথা ও কাজ এবং মূর্খতা পরিত্যাগ করতে পারল না তার পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।’ [বুখারী : ৬০৫৭]
كم من صائم ليس له من صيامه إلا الظمأ، وكم من قائم ليس له من قيامه إلا السهر . الدارمي :২৭২০
‘অনেক সিয়াম পালনকারী আছে যারা উপোস থাকা ছাড়া আর কিছু পায় না। আর অনেক রাতজাগা সালাত আদায়কারী আছে যারা রাত্রি-জাগরণ ব্যতীত আর কিছু লাভ করে না।’ [দারামী : ২৭২০]
অতএব যার উদর সিয়াম পালন করছে তার উচিত তার মুখ, কর্ণ, চক্ষু, হাত ও পা সবকিছুই সিয়াম পালন করবে। সকল অন্যায়-অবৈধ কাজ হতে এ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো পবিত্র থাকবে। যেমন রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
. والصيام جنة، فإذا كان يوم صوم أحدكم فلا يرفث يومئذ ولا يصخب، فإن سابه أحد أو قاتله فليقل إني امرأ صائم . مسلم :১১৫১
‘সিয়াম হল ঢাল। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সিয়াম পালন করবে সে যেন অশ্লীল আচরণ ও শোরগোল থেকে বিরত থাকে। যদি তার সাথে কেউ ঝগড়া বিবাদ কিংবা মারামারিতে লিপ্ত হতে চায়, তবে তাকে বলে দেবে আমি সিয়াম পালনকারী।’ [মুসলিম : ১১৫১]
রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন :—
ليس الصيام من الأكل والشرب، إنما الصيام من اللغو والرفث، فإن سابك أحد أو جهل عليك، فليقل : إني صائم . الحاكم :১৫২০
‘শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকার নামই সিয়াম নয়। মূলত সিয়াম হল : অনর্থক-অশ্লীল কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকা। যদি তোমার সাথে কেউ ঝগড়া-বিবাদ কিংবা মারামারিতে লিপ্ত হতে চায়, অথবা মূর্খতা সুলভ আচরণ করে তবে তাকে বলে দেবে আমি সিয়াম পালনকারী।’ [হাকেম : ১৫২০]
যদি সিয়াম পালনকারী নিষিদ্ধ কথা ও কাজ-কর্ম পরিত্যাগ না করেন, তবে তার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পক্ষ থেকে দুঃসংবাদ :—
من لم يدع قول الزور والعمل به والجهل، فليس لله حاجة أن يدع طعامه وشرابه . البخاري :৬০৫৭
‘যে মিথ্যা কথা ও কাজ এবং মূর্খতা পরিত্যাগ করতে পারল না তার পানাহার বর্জনে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।’ [বুখারী : ৬০৫৭]
কোন কাজে ইখলাস অবলম্বন করার অর্থ হল কাজটা করার উদ্দেশ্য হবে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। এ ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকতে পারবে না। শুধু সিয়াম নয়, এ ইখলাস ব্যতীত কোন আমল কবুল হবে না। আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
‘তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে এবং সালাত কায়েম করতে ও যাকাত দিতে, এটাই সঠিক দ্বীন।’’ [সূরা আল-বাইয়েনা: ৫]
আর সিয়াম পালনে ইখলাসের বিষয়টাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
من صام رمضان إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه . البخاري :২০১৪, مسلم : ১৮১৭
‘যে রমজান মাসে ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে সিয়াম পালন করবে তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।’ [বুখারী : ২০১৪, মুসলিম : ১৮১৭]
এ হাদীসে ‘ইহতিসাব’ শব্দ এসেছে। এর অর্থ ইখলাসের সাথে সিয়াম পালন করতে হবে। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও তার কাছ থেকে প্রতিদানের আশা করার নাম হল ‘ইহতিসাব।’
(আরবি)
‘তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে এবং সালাত কায়েম করতে ও যাকাত দিতে, এটাই সঠিক দ্বীন।’’ [সূরা আল-বাইয়েনা: ৫]
আর সিয়াম পালনে ইখলাসের বিষয়টাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
من صام رمضان إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه . البخاري :২০১৪, مسلم : ১৮১৭
‘যে রমজান মাসে ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে সিয়াম পালন করবে তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।’ [বুখারী : ২০১৪, মুসলিম : ১৮১৭]
এ হাদীসে ‘ইহতিসাব’ শব্দ এসেছে। এর অর্থ ইখলাসের সাথে সিয়াম পালন করতে হবে। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও তার কাছ থেকে প্রতিদানের আশা করার নাম হল ‘ইহতিসাব।’
কোন আমল—তা যতই ইখলাসের সাথে সম্পাদন করা হোক না কেন, যদি আল্লাহর রাসূলের নির্দেশিত পদ্ধতিতে আদায় করা না হয়, তবে তা কবুল করা হবে না। বরং তা আল্লাহর দরবার থেকে প্রত্যাখ্যাত হবে।
যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন—
من عمل عملا ليس عليه أمرنا فهو رد . مسلم :৪৫৯০
‘যে এমন আমল করবে যার প্রতি আমাদের দ্বীনের নির্দেশ নেই তা প্রত্যাখ্যাত।’ [মুসলিম : ৪৫৯০]
‘যার প্রতি আমাদের দ্বীনের নির্দেশ নেই’—কথাটির অর্থ হল, যা আমাদের সুন্নত দ্বারা প্রমাণিত নয়। অতএব এমন ধরনের আমল যতই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়তে করা হোক, তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর পক্ষ থেকে অনুমোদিত না হওয়ার কারণে আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। অতএব কোন ধর্মীয় আমল আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য দুটো শর্ত। তা হল : এক. কাজটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে করতে হবে। দুই. কাজটি আল্লাহর রাসূলের নির্দেশিত পদ্ধতিতে সম্পাদন করতে হবে। কাজটি যদি আল্লাহর রাসূলের নির্দেশিত পদ্ধতিতে সম্পাদন করা না হয় বা এ কাজে তার অনুমোদনের প্রমাণ না থাকে, তাহলে কাজটি করে কোন সওয়াব অর্জিত হবে না। বরং গুনাহ হবে।
যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন—
من عمل عملا ليس عليه أمرنا فهو رد . مسلم :৪৫৯০
‘যে এমন আমল করবে যার প্রতি আমাদের দ্বীনের নির্দেশ নেই তা প্রত্যাখ্যাত।’ [মুসলিম : ৪৫৯০]
‘যার প্রতি আমাদের দ্বীনের নির্দেশ নেই’—কথাটির অর্থ হল, যা আমাদের সুন্নত দ্বারা প্রমাণিত নয়। অতএব এমন ধরনের আমল যতই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়তে করা হোক, তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর পক্ষ থেকে অনুমোদিত না হওয়ার কারণে আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। অতএব কোন ধর্মীয় আমল আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য দুটো শর্ত। তা হল : এক. কাজটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে করতে হবে। দুই. কাজটি আল্লাহর রাসূলের নির্দেশিত পদ্ধতিতে সম্পাদন করতে হবে। কাজটি যদি আল্লাহর রাসূলের নির্দেশিত পদ্ধতিতে সম্পাদন করা না হয় বা এ কাজে তার অনুমোদনের প্রমাণ না থাকে, তাহলে কাজটি করে কোন সওয়াব অর্জিত হবে না। বরং গুনাহ হবে।
সিয়াম পালনকারীকে এ ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে যে, যে সকল আচার-আচরণ সিয়াম ভঙ্গ করার কারণ হয় অথবা সিয়াম নষ্ট করার সহায়ক হয় এমন সকল বিষয় থেকে দুরত্ব বজায় রাখা। বিশেষত: স্বামী স্ত্রীর আলিঙ্গন, চুম্বন বা এক কাঁথা-কম্বলের নীচে শয়ন ইত্যাদি পরিহার করা উচিত। এ সকল কাজ যদিও সিয়াম অবস্থায় করার অনুমতি আছে কিন্তু দেখা গেছে এ সকল কাজ করতে যেয়ে অনেকে সমস্যায় পড়ে গেছে, ফলে সিয়াম ভঙ্গ হয়ে গেছে। প্রত্যেক বিষয়ের একটি সীমানা আছে, এ সীমা যাতে অতিক্রম না হয়ে যায় এ লক্ষ্যে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য হাদীসে নির্দেশ এসেছে। যদিও সীমানা পর্যন্ত যাওয়া বৈধ কিন্তু সাবধানতা অবলম্বন বিধেয়। মনে রাখতে হবে রমজানের দিনের বেলা সিয়াম ভেঙে ফেলা একটি কবিরা গুনাহ। ‘আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি’ বা ‘এমনটি হবে বুঝতে পারিনি’ বলে কবিরা গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। এ ধরনের কথা কখনো যুক্তিগ্রাহ্য কারণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে না।
প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির কর্তব্য হল, সিয়াম-সালাতসহ সকল ইবাদত সঠিক পদ্ধতিতে আদায় করা। কিন্তু তার জানা থাকে না যে, তার এ সালাত ও সিয়াম আল্লাহ কবুল করেছেন না প্রত্যাখ্যান করেছেন। অতএব তার সর্বদা এ ভয় থাকা উচিত যে, হয়তো আমি আমার ইবাদত-বন্দেগী এমনভাবে আদায় করতে পারিনি যেভাবে আদায় করলে আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। ফলে আল্লাহর কাছ থেকে প্রতিদান হয়তো পাব না। আবার এ আশাও পোষণ করা উচিত যে, আল্লাহ তাআলা নিজ অনুগ্রহে আমার ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে আমার ইবাদত-বন্দেগী কবুল করে আমাকে প্রতিদান দেবেন। এ অবস্থার নাম হল ‘আল-খাওফ ওয়ার রজা’ অর্থাৎ ‘ভয় ও আশা।’ এটা ইসলামের একটা গুরুত্বপূর্ণ আকীদা বিষয়ক পরিভাষা।
মনে রাখতে হবে আল্লাহ তাআলা সকলের নেক আমল কবুল করেন না। যেমন তিনি বলেন :—
(আরবি)
‘অবশ্যই আল্লাহ মুত্তাকীদের কাজ কবুল করেন।’ [সূরা মায়িদাহ: ২৭]
হাদীসে এসেছে আয়েশা রা. নিম্নোক্ত আয়াতের অর্থ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করলেন :—
( والذين يؤتون ما آتوا وقلوبهم وجلة ) أي خائفة . أهم الذين يشربون الخمر ويسرقون ؟ قال : لا يا بنت الصديق، ولكنهم الذين يصومون ويصلون ويتصدقون وهم يخافون أن لا تقبل منهم . أولئك يسارعون في الخيرات وهم لها سابقون . الترمذي :৩৪৭৫
‘যারা তাদের যা দান করার তা দান করে ভীত-কম্পিত হৃদয়ে’—আল্লাহ এ কথা কাদের জন্য বলেছেন, যারা মদ্য পান করে, চুরি করে তাদের জন্য? তিনি উত্তরে বললেন : না, হে সত্যবাদীর কন্যা ! তারা হল, যারা সিয়াম পালন করে, সালাত আদায় করে, দান-সদকা করে সাথে সাথে এ ভয় রাখে যে হয়তো আমার এ আমলগুলো আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। তারাই দ্রুত সম্পাদন করে কল্যাণকর কাজ এবং তারা তাতে অগ্রগামী।’ বর্ণনায় : তিরমিযী
বর্ণিত আয়াত ও হাদীস দ্বারা স্পষ্ট হল যে, আল্লাহ ঐ সকল মুমিনদের প্রশংসা করেছেন যারা নেক আমল করে ‘কবুল হবে কি হবে না’ এরকম একটা ভয় পোষণ করে। এবং আমল আরো সুন্দর করার চেষ্টা করে। কিন্তু এ ভয় যেন আবার মানুষকে নৈরাশ্যবাদী না করে। কোন অবস্থাতেই কোন মুসলিম আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত থেকে নিরাশ হতে পারে না। আল্লাহর সম্পর্কে নৈরাশ্যবাদী হওয়া একটা কুফরী। নেক আমল কবুল হওয়ার ব্যাপারে প্রবল আশাবাদী হতে হবে কিন্তু এ আশাবাদী মনোভাব যেন অহংকার ও আত্ম-তৃপ্তিতে ফেলে না দেয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। অহংকার ও আত্ম-তৃপ্তি নেক আমলকে বাতিল করে দেয়। অনেক সময় অলসতা নিয়ে আসে। অপরদিকে ভয় মানুষকে তৎপর ও কর্মঠ হতে সাহায্য করে। তাই সকলের উচিত সকল প্রকার নেক আমল করতে হবে ভয় ও আশা নিয়ে। শুধুই ভয় অথবা শুধুই পাওয়ার আশায় নয়।
মনে রাখতে হবে আল্লাহ তাআলা সকলের নেক আমল কবুল করেন না। যেমন তিনি বলেন :—
(আরবি)
‘অবশ্যই আল্লাহ মুত্তাকীদের কাজ কবুল করেন।’ [সূরা মায়িদাহ: ২৭]
হাদীসে এসেছে আয়েশা রা. নিম্নোক্ত আয়াতের অর্থ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করলেন :—
( والذين يؤتون ما آتوا وقلوبهم وجلة ) أي خائفة . أهم الذين يشربون الخمر ويسرقون ؟ قال : لا يا بنت الصديق، ولكنهم الذين يصومون ويصلون ويتصدقون وهم يخافون أن لا تقبل منهم . أولئك يسارعون في الخيرات وهم لها سابقون . الترمذي :৩৪৭৫
‘যারা তাদের যা দান করার তা দান করে ভীত-কম্পিত হৃদয়ে’—আল্লাহ এ কথা কাদের জন্য বলেছেন, যারা মদ্য পান করে, চুরি করে তাদের জন্য? তিনি উত্তরে বললেন : না, হে সত্যবাদীর কন্যা ! তারা হল, যারা সিয়াম পালন করে, সালাত আদায় করে, দান-সদকা করে সাথে সাথে এ ভয় রাখে যে হয়তো আমার এ আমলগুলো আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। তারাই দ্রুত সম্পাদন করে কল্যাণকর কাজ এবং তারা তাতে অগ্রগামী।’ বর্ণনায় : তিরমিযী
বর্ণিত আয়াত ও হাদীস দ্বারা স্পষ্ট হল যে, আল্লাহ ঐ সকল মুমিনদের প্রশংসা করেছেন যারা নেক আমল করে ‘কবুল হবে কি হবে না’ এরকম একটা ভয় পোষণ করে। এবং আমল আরো সুন্দর করার চেষ্টা করে। কিন্তু এ ভয় যেন আবার মানুষকে নৈরাশ্যবাদী না করে। কোন অবস্থাতেই কোন মুসলিম আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত থেকে নিরাশ হতে পারে না। আল্লাহর সম্পর্কে নৈরাশ্যবাদী হওয়া একটা কুফরী। নেক আমল কবুল হওয়ার ব্যাপারে প্রবল আশাবাদী হতে হবে কিন্তু এ আশাবাদী মনোভাব যেন অহংকার ও আত্ম-তৃপ্তিতে ফেলে না দেয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। অহংকার ও আত্ম-তৃপ্তি নেক আমলকে বাতিল করে দেয়। অনেক সময় অলসতা নিয়ে আসে। অপরদিকে ভয় মানুষকে তৎপর ও কর্মঠ হতে সাহায্য করে। তাই সকলের উচিত সকল প্রকার নেক আমল করতে হবে ভয় ও আশা নিয়ে। শুধুই ভয় অথবা শুধুই পাওয়ার আশায় নয়।
সিয়াম পালনের জন্য সাহরী খাওয়া সুন্নত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
تسحروا فإن في السحور بركة . البخاري :১৯২৩, ومسلم :২৬০৩
‘তোমরা সাহরী খাও, কারণ সাহরীতে বরকত রয়েছে।’ [বুখারী : ১৯২৩, মুসলিম : ২৬০৩]
সাহরী না খেয়ে সিয়াম পালন করলে যখন সিয়াম আদায় হবে। তবে সাহরী খাবেন কেন ?
(ক) সাহরী খাওয়া সুন্নত। রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহরী খাওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছেন।
(খ) ক্ষুধা-পিপাসা মোকাবিলা করার জন্য।
(গ) সাহরী খেলে সিয়াম পালনে কষ্ট কম হয় ও সিয়াম পালন সহজ হয়।
(ঘ) ইহুদী ও খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধাচরণ করা। কারণ তারা সিয়াম পালন করতে সাহরী খায় না। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
فصل ما بين صيامنا وصيام أهل الكتاب أكلة السحور . مسلم :২৬০৪
‘আমাদের ও ইহুদী-খ্রিস্টানদের সিয়ামের মাঝে পার্থক্য হল সাহরী খাওয়া।’ [মুসলিম : ২৬০৪]
(ঙ) সাহরীর মাধ্যমে শেষ রাতে তাহাজ্জুদ ও কিয়ামুল লাইল করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
(চ) ফজরের সালাত জামাতের সাথে আদায় করা নিশ্চিত হয়।
তাই সাহরী খাওয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। তবে সাহরীর খাবার হালকা হওয়া ভাল। এমন বেশি খাওয়া উচিত নয়, যাতে দিনের বেলা কাজ-কর্মে অলসতা দেখা দেয়। যে কোন হালাল খাবার সাহরীতে গ্রহণ করা যায়। রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
نعم سحور المؤمن التمر . أبو داود :২৩৪৭
‘মুমিনের উত্তম সাহরী হল খেজুর।’ [আবু দাউদ : ২৩৪৭] তিনি আরো বলেন :—
السحور أكلة بركة فلا تدعوه، ولو أن يـجرع أحدكم جرعة من ماء، فإن الله وملائكته يصلون على المتسحرين . أحمد :১১৩৮৪
‘সাহরী হল একটি বরকতময় খাদ্য, তাই তা তোমরা ছেড়ে দিয়ো না। এক ঢোক পানি দ্বারা হলেও সাহরী করে নাও। কেননা আল্লাহ রাববুল আলামীন ও ফেরেশ্তাগণ সাহরীতে অংশ গ্রহণকারীদের জন্য দোয়া করে থাকেন।’ [আহমদ : ১১৩৮৪]
تسحروا فإن في السحور بركة . البخاري :১৯২৩, ومسلم :২৬০৩
‘তোমরা সাহরী খাও, কারণ সাহরীতে বরকত রয়েছে।’ [বুখারী : ১৯২৩, মুসলিম : ২৬০৩]
সাহরী না খেয়ে সিয়াম পালন করলে যখন সিয়াম আদায় হবে। তবে সাহরী খাবেন কেন ?
(ক) সাহরী খাওয়া সুন্নত। রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহরী খাওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছেন।
(খ) ক্ষুধা-পিপাসা মোকাবিলা করার জন্য।
(গ) সাহরী খেলে সিয়াম পালনে কষ্ট কম হয় ও সিয়াম পালন সহজ হয়।
(ঘ) ইহুদী ও খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধাচরণ করা। কারণ তারা সিয়াম পালন করতে সাহরী খায় না। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
فصل ما بين صيامنا وصيام أهل الكتاب أكلة السحور . مسلم :২৬০৪
‘আমাদের ও ইহুদী-খ্রিস্টানদের সিয়ামের মাঝে পার্থক্য হল সাহরী খাওয়া।’ [মুসলিম : ২৬০৪]
(ঙ) সাহরীর মাধ্যমে শেষ রাতে তাহাজ্জুদ ও কিয়ামুল লাইল করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
(চ) ফজরের সালাত জামাতের সাথে আদায় করা নিশ্চিত হয়।
তাই সাহরী খাওয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। তবে সাহরীর খাবার হালকা হওয়া ভাল। এমন বেশি খাওয়া উচিত নয়, যাতে দিনের বেলা কাজ-কর্মে অলসতা দেখা দেয়। যে কোন হালাল খাবার সাহরীতে গ্রহণ করা যায়। রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
نعم سحور المؤمن التمر . أبو داود :২৩৪৭
‘মুমিনের উত্তম সাহরী হল খেজুর।’ [আবু দাউদ : ২৩৪৭] তিনি আরো বলেন :—
السحور أكلة بركة فلا تدعوه، ولو أن يـجرع أحدكم جرعة من ماء، فإن الله وملائكته يصلون على المتسحرين . أحمد :১১৩৮৪
‘সাহরী হল একটি বরকতময় খাদ্য, তাই তা তোমরা ছেড়ে দিয়ো না। এক ঢোক পানি দ্বারা হলেও সাহরী করে নাও। কেননা আল্লাহ রাববুল আলামীন ও ফেরেশ্তাগণ সাহরীতে অংশ গ্রহণকারীদের জন্য দোয়া করে থাকেন।’ [আহমদ : ১১৩৮৪]
সাহরীর অর্থ হল যা কিছু রাতের শেষ ভাগে খাওয়া হয়। সুন্নত হল দেরি করে সাহরী খাওয়া। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বদা শেষ সময়ে সাহরী খেতেন। ফজরের ওয়াক্ত আসার পূর্ব-ক্ষণে সাহরী খেলে সিয়াম পালন অধিকতর সহজ হয়, ফজরের সালাত আদায় করার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে কষ্ট করতে হয় না। সতর্কতা অবলম্বন করে ফজরের অনেক আগে সাহরী শেষ করা সুন্নত নয়। সাহরীর সময় শেষ হলো কি-না তা জানবেন নিজের চোখে পূর্বাকাশের শুভ্রতা দেখে, অথবা ক্যালেন্ডার ও ঘড়ির মাধ্যমে সূক্ষ্ম হিসাব করে কিংবা নির্ভরযোগ্য মুয়াজ্জিনের ফজরের আযান শুনে।
সাহরীর সময় অত্যন্ত মর্যাদা-পূর্ণ একটি সময়। এ সময় জাগ্রত হওয়ার কারণে আল্লাহ যা পছন্দ করেন এমন অনেক ভাল কাজ করা যায়। যেমন তিনি মুমিনদের প্রশংসায় বলেছেন :—
(আরবি)
‘তারা শেষ রাতে (সাহরীর সময়) ক্ষমা প্রার্থনা করে।’ [সূরা যারিয়াত: ১৮]
তিনি এ আয়াতে ঐ সকল জান্নাতবাসী মানুষদের প্রশংসা করেছেন যারা শেষ রাতে দোয়া-প্রার্থনা করে ও ক্ষমা চায় আল্লাহর কাছে। এর মাধ্যমে তারা যে জান্নাত লাভ করবে এর সুসংবাদও দেয়া হয়েছে। সাহরীর সময়টা এমন একটি সময় যখন আল্লাহ রাববুল আলামীন দুনিয়ার নিকটতম আকাশে অবতরণ করেন। যে সকল মানুষ তখন তার প্রতি আগ্রহী হয়ে সালাত ও দোয়া-প্রার্থনা করে, তিনি তাদের প্রতি অনুগ্রহ করেন। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
ينـزل ربنا تبارك وتعالى كل ليلة إلى السماء الدنيا حين يـبقى ثلث الليل الآخر، فيقول : من يدعوني فأستجيب له، من يسألني فأعطيه، من يستغفرني فأغفرله . البخاري :১১৪৫ ومسلم :১৮০৮
ফর্মা-৪
ফর্মা-৪
‘আমাদের মহান প্রতিপালক আল্লাহ রাববুল আলামীন প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন। তখন মানুষদের উদ্দেশ্য করে বলেন, যে আমার কাছে দোয়া করবে আমি তাতে সাড়া দেব, যে আমার কাছে চাইবে আমি তাকে দান করব ও যে আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে আমি তাকে ক্ষমা করব।’ [বুখারী : ১১৪৫, মুসলিম : ১৮০৮]
অতএব সাহরীর সময় হল আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি দান-প্রতিদানের সময়। এ সময় সে ব্যক্তিই তার সামনে হাজির হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন যিনি আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্ব ভালভাবে অনুধাবন করতে পেরেছেন, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নিজের নিয়তকে বিশুদ্ধ করেছেন। অনেক মানুষ এমন আছেন যারা এ সময় জাগ্রত হয়ে খাওয়া-দাওয়াসহ অনেক কাজ সমাধা করেন কিন্তু দোয়া- প্রার্থনা. ইস্তিগফার, তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করার সুযোগ করে নিতে পারেন না।
শেষ রাতের সালাত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:—
أيها الناس أفشوا السلام، وأطعموا الطعام، وصلوا الأرحام، وصلوا بالليل والناس نيام تدخلوا الجنة بسلام . الدارمي :১৪৬০
‘হে মানবসকল ! তোমরা সালামের প্রচলন কর। অন্যকে খাবার দাও। আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখ আর রাতে যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকে তখন তোমরা সালাত আদায় কর তাহলে শান্তির সাথে জান্নাতে যেতে পারবে।’ [দারামী : ১৪৬০]
(আরবি)
‘তারা শেষ রাতে (সাহরীর সময়) ক্ষমা প্রার্থনা করে।’ [সূরা যারিয়াত: ১৮]
তিনি এ আয়াতে ঐ সকল জান্নাতবাসী মানুষদের প্রশংসা করেছেন যারা শেষ রাতে দোয়া-প্রার্থনা করে ও ক্ষমা চায় আল্লাহর কাছে। এর মাধ্যমে তারা যে জান্নাত লাভ করবে এর সুসংবাদও দেয়া হয়েছে। সাহরীর সময়টা এমন একটি সময় যখন আল্লাহ রাববুল আলামীন দুনিয়ার নিকটতম আকাশে অবতরণ করেন। যে সকল মানুষ তখন তার প্রতি আগ্রহী হয়ে সালাত ও দোয়া-প্রার্থনা করে, তিনি তাদের প্রতি অনুগ্রহ করেন। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
ينـزل ربنا تبارك وتعالى كل ليلة إلى السماء الدنيا حين يـبقى ثلث الليل الآخر، فيقول : من يدعوني فأستجيب له، من يسألني فأعطيه، من يستغفرني فأغفرله . البخاري :১১৪৫ ومسلم :১৮০৮
ফর্মা-৪
ফর্মা-৪
‘আমাদের মহান প্রতিপালক আল্লাহ রাববুল আলামীন প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন। তখন মানুষদের উদ্দেশ্য করে বলেন, যে আমার কাছে দোয়া করবে আমি তাতে সাড়া দেব, যে আমার কাছে চাইবে আমি তাকে দান করব ও যে আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে আমি তাকে ক্ষমা করব।’ [বুখারী : ১১৪৫, মুসলিম : ১৮০৮]
অতএব সাহরীর সময় হল আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি দান-প্রতিদানের সময়। এ সময় সে ব্যক্তিই তার সামনে হাজির হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন যিনি আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্ব ভালভাবে অনুধাবন করতে পেরেছেন, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নিজের নিয়তকে বিশুদ্ধ করেছেন। অনেক মানুষ এমন আছেন যারা এ সময় জাগ্রত হয়ে খাওয়া-দাওয়াসহ অনেক কাজ সমাধা করেন কিন্তু দোয়া- প্রার্থনা. ইস্তিগফার, তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করার সুযোগ করে নিতে পারেন না।
শেষ রাতের সালাত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:—
أيها الناس أفشوا السلام، وأطعموا الطعام، وصلوا الأرحام، وصلوا بالليل والناس نيام تدخلوا الجنة بسلام . الدارمي :১৪৬০
‘হে মানবসকল ! তোমরা সালামের প্রচলন কর। অন্যকে খাবার দাও। আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখ আর রাতে যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকে তখন তোমরা সালাত আদায় কর তাহলে শান্তির সাথে জান্নাতে যেতে পারবে।’ [দারামী : ১৪৬০]
সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে রাতের আগমন ঘটে ও ইফতার করার সময় হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা বলেছেন :—
(আরবি)
‘অতঃপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পালন করবে।’ [সূরা বাকারা : ১৮৭]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
إذا أقبل الليل من هاهنا وأدبر النهارمن هاهنا وغربت الشمس فقد أفطر الصائم . البخاري :১৮৫৩
‘যখন এখান থেকে রাত্রির আগমন ঘটে ও ওখান থেকে দিন চলে যায় এবং সূর্য অস্ত যায় তখন সিয়াম পালনকারী ইফতার করবে।’ [বুখারী : ১৮৫৩]
তাই ইফতারের আদব হল সূর্যাস্ত মাত্রই দেরি না করে ইফতার করা। সময় হওয়া মাত্র ইফতার করার ব্যাপারে অনেক হাদীসে উৎসাহ দেয়া হয়েছে। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
لا يزال الناس بخير ما عجلوا الفطر . البخاري : ১৮৫৬ ومسلم :১০৯৮
‘মানুষ যতদিন পর্যন্ত সময় হওয়া মাত্র ইফতার করবে ততদিন কল্যাণের সাথে থাকবে।’ [বুখারী : ১৮৫২, মুসলিম : ১০৯৮]
তিনি আরো বলেছেন :—
لا يزال الدين ظاهرا ما عجل الناس الفطر، لأن اليهود والنصارى يؤخرونه . أبو داود :২৩৫৫
‘যতদিন মানুষ সময় হওয়া মাত্র ইফতার করবে ততদিন দ্বীন বিজয়ী থাকবে। কেননা ইহুদী ও খ্রিস্টানরা ইফতারিতে দেরি করে।’ [আবু দাউদ : ২৩৫৫]
হাদীসে আরো এসেছে—
قال أبو الدرداء رضي الله عنه : ثلاث من أخلاق النبوة : تعجيل الإفطار، وتأخير السحور، ووضع اليمين على الشمال في الصلاة . مصنف عبد الرزاق :৭৬১৭
আবু দারদা রা. বলেন : ‘তিনটি বিষয় নবী চরিত্রের অংশ : সময় হওয়া মাত্র ইফতার করে ফেলা, দেরি করে সাহরী খাওয়া ও সালাতে দাঁড়িয়ে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক : ৭৬১৮]
আমর ইবনে মায়মূন আওদী বলেন:—
كان أصحاب محمد صلى الله عليه وسلم أسرع الناس إفطارا وأبطأهم سحورا . عبد الرزاق :৭৫৯১
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সাহাবীরা সকলের চেয়ে তাড়াতাড়ি (সময় হওয়া মাত্র) ইফতার করতেন ও সকলের চেয়ে দেরিতে সাহরী খেতেন।’ [মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক : ৭৫৯১]
কোন ব্যক্তি দেখে-শুনে ধারণা করে নিল যে, সূর্য ডুবে গেছে ও সে ইফতার করে নিল অথচ সূর্য তখনও অস্ত যায়নি। এমতাবস্থায় তার সওমের কোন ক্ষতি হবে না। তবে ইফতার শুরু করার পর সে যদি বুঝতে পারে সূর্য এখনও অস্ত যায়নি তা হলে সাথে সাথে পানাহার থেকে বিরত হয়ে যাবে। তার বিষয়টা যে ভুলে পানাহার করেছে তার মতই।
(আরবি)
‘অতঃপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পালন করবে।’ [সূরা বাকারা : ১৮৭]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
إذا أقبل الليل من هاهنا وأدبر النهارمن هاهنا وغربت الشمس فقد أفطر الصائم . البخاري :১৮৫৩
‘যখন এখান থেকে রাত্রির আগমন ঘটে ও ওখান থেকে দিন চলে যায় এবং সূর্য অস্ত যায় তখন সিয়াম পালনকারী ইফতার করবে।’ [বুখারী : ১৮৫৩]
তাই ইফতারের আদব হল সূর্যাস্ত মাত্রই দেরি না করে ইফতার করা। সময় হওয়া মাত্র ইফতার করার ব্যাপারে অনেক হাদীসে উৎসাহ দেয়া হয়েছে। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
لا يزال الناس بخير ما عجلوا الفطر . البخاري : ১৮৫৬ ومسلم :১০৯৮
‘মানুষ যতদিন পর্যন্ত সময় হওয়া মাত্র ইফতার করবে ততদিন কল্যাণের সাথে থাকবে।’ [বুখারী : ১৮৫২, মুসলিম : ১০৯৮]
তিনি আরো বলেছেন :—
لا يزال الدين ظاهرا ما عجل الناس الفطر، لأن اليهود والنصارى يؤخرونه . أبو داود :২৩৫৫
‘যতদিন মানুষ সময় হওয়া মাত্র ইফতার করবে ততদিন দ্বীন বিজয়ী থাকবে। কেননা ইহুদী ও খ্রিস্টানরা ইফতারিতে দেরি করে।’ [আবু দাউদ : ২৩৫৫]
হাদীসে আরো এসেছে—
قال أبو الدرداء رضي الله عنه : ثلاث من أخلاق النبوة : تعجيل الإفطار، وتأخير السحور، ووضع اليمين على الشمال في الصلاة . مصنف عبد الرزاق :৭৬১৭
আবু দারদা রা. বলেন : ‘তিনটি বিষয় নবী চরিত্রের অংশ : সময় হওয়া মাত্র ইফতার করে ফেলা, দেরি করে সাহরী খাওয়া ও সালাতে দাঁড়িয়ে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক : ৭৬১৮]
আমর ইবনে মায়মূন আওদী বলেন:—
كان أصحاب محمد صلى الله عليه وسلم أسرع الناس إفطارا وأبطأهم سحورا . عبد الرزاق :৭৫৯১
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সাহাবীরা সকলের চেয়ে তাড়াতাড়ি (সময় হওয়া মাত্র) ইফতার করতেন ও সকলের চেয়ে দেরিতে সাহরী খেতেন।’ [মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক : ৭৫৯১]
কোন ব্যক্তি দেখে-শুনে ধারণা করে নিল যে, সূর্য ডুবে গেছে ও সে ইফতার করে নিল অথচ সূর্য তখনও অস্ত যায়নি। এমতাবস্থায় তার সওমের কোন ক্ষতি হবে না। তবে ইফতার শুরু করার পর সে যদি বুঝতে পারে সূর্য এখনও অস্ত যায়নি তা হলে সাথে সাথে পানাহার থেকে বিরত হয়ে যাবে। তার বিষয়টা যে ভুলে পানাহার করেছে তার মতই।
প্রথমত: ইসলামী জীবনাদর্শের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ধর্মীয়, সংস্কৃতি, আচার-আচরণ ও লেবাস-পোশাকে ইহুদী ও খ্রিস্টানদের অনুকরণ প্রত্যাখ্যান করা। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :
وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَ الَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ . الجاثية :18
‘যাদের জ্ঞান নেই তুমি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করবে না।’ [সূরা জাসিয়া, আয়াত ১৮]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
من تشبه بقوم فهو منهم . سنن أبي داود :৪০৩৩
‘যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য হবে।’ [আবু দাঊদ : ১৪৩৩]
এ হাদীস দ্বারা বুঝে আসে, যে কাফেরদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করবে সে কাফের হয়ে যাবে। যদি সে কাফের না-ও হয় তবে কাজটি যে হারাম বা নিষিদ্ধ এতে কোন সন্দেহ নেই।
দ্বিতীয়ত : আল্লাহর রাববুল আলামীন তার বান্দাদের প্রতি পরম দয়ালু। তিনি মানুষদের কষ্ট দিতে চান না কখনো। মানুষের জন্য সব কিছু তিনি সহজ করতে চান। তাই সিয়াম পালনকারীর যাতে অযথা কষ্ট না হয় সে দিকে লক্ষ্য রেখে দেরি করে সাহরী ও সময় হওয়া মাত্র ইফতারের নির্দেশ এসেছে। সিয়াম পালন করা যেমন ইসলামের নির্দেশ, তেমনি সিয়ামের সময় শেষে পানাহার করাও ইসলামের নির্দেশ। এ নির্দেশ পালনে দেরি করা বা গড়িমসি করা কখনো ঠিক নয়।
তৃতীয়ত : রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সাহাবীগণ তাঁর অনুসরণের ব্যাপারে কত যত্নবান ছিলেন সেটা লক্ষণীয়। প্রতি পদে পদে রাসূলের অনুসরণ করার জন্য আমাদের প্রতি আল্লাহর নির্দেশ রয়েছে।
আল্লাহ বলেন :—
(আরবি)
‘বল ! যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস তাহলে আমার অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন।’ [সূরা আলে ইমরান : ৩১]
তিনি আরো বলেন :—
(আরবি)
‘রাসূল তোমাদের কাছে যা নিয়ে এসেছেন তা ধারণ কর। আর যা থেকে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকো।’ [সূরা হাশর, আয়াত: ৭]
কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমাদের মাঝে কিছু শিথিলতা পরিলক্ষিত হয়। যেমন : অনেকে নিশ্চিত হয়েছেন যে সূর্যাস্ত হয়েছে, তারপরও ইফতার শুরু করার জন্য আজানের অপেক্ষা করেন। আবার অনেকে মনে করেন সূর্য ডুবে গেছে ঠিকই কিন্তু মাগরিবের আযান না শুনে ইফতার করব কীভাবে? আবার অনেকে আযান শোনার পর ইচ্ছে করেই সতর্কতা অবলম্বন করতে যেয়ে কিছুক্ষণ বিলম্ব করেন। অনেক সময় আযান হয়ে যাওয়ার পর দোয়া-প্রার্থনায় রত থাকতে দেখা যায়। এগুলো পরিহার করা উচিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সুন্নত অনুযায়ী সূর্যাস্তের সাথে সাথে ইফতার শুরু করে দেয়া কর্তব্য।
وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَ الَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ . الجاثية :18
‘যাদের জ্ঞান নেই তুমি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করবে না।’ [সূরা জাসিয়া, আয়াত ১৮]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
من تشبه بقوم فهو منهم . سنن أبي داود :৪০৩৩
‘যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য হবে।’ [আবু দাঊদ : ১৪৩৩]
এ হাদীস দ্বারা বুঝে আসে, যে কাফেরদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করবে সে কাফের হয়ে যাবে। যদি সে কাফের না-ও হয় তবে কাজটি যে হারাম বা নিষিদ্ধ এতে কোন সন্দেহ নেই।
দ্বিতীয়ত : আল্লাহর রাববুল আলামীন তার বান্দাদের প্রতি পরম দয়ালু। তিনি মানুষদের কষ্ট দিতে চান না কখনো। মানুষের জন্য সব কিছু তিনি সহজ করতে চান। তাই সিয়াম পালনকারীর যাতে অযথা কষ্ট না হয় সে দিকে লক্ষ্য রেখে দেরি করে সাহরী ও সময় হওয়া মাত্র ইফতারের নির্দেশ এসেছে। সিয়াম পালন করা যেমন ইসলামের নির্দেশ, তেমনি সিয়ামের সময় শেষে পানাহার করাও ইসলামের নির্দেশ। এ নির্দেশ পালনে দেরি করা বা গড়িমসি করা কখনো ঠিক নয়।
তৃতীয়ত : রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সাহাবীগণ তাঁর অনুসরণের ব্যাপারে কত যত্নবান ছিলেন সেটা লক্ষণীয়। প্রতি পদে পদে রাসূলের অনুসরণ করার জন্য আমাদের প্রতি আল্লাহর নির্দেশ রয়েছে।
আল্লাহ বলেন :—
(আরবি)
‘বল ! যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস তাহলে আমার অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন।’ [সূরা আলে ইমরান : ৩১]
তিনি আরো বলেন :—
(আরবি)
‘রাসূল তোমাদের কাছে যা নিয়ে এসেছেন তা ধারণ কর। আর যা থেকে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকো।’ [সূরা হাশর, আয়াত: ৭]
কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমাদের মাঝে কিছু শিথিলতা পরিলক্ষিত হয়। যেমন : অনেকে নিশ্চিত হয়েছেন যে সূর্যাস্ত হয়েছে, তারপরও ইফতার শুরু করার জন্য আজানের অপেক্ষা করেন। আবার অনেকে মনে করেন সূর্য ডুবে গেছে ঠিকই কিন্তু মাগরিবের আযান না শুনে ইফতার করব কীভাবে? আবার অনেকে আযান শোনার পর ইচ্ছে করেই সতর্কতা অবলম্বন করতে যেয়ে কিছুক্ষণ বিলম্ব করেন। অনেক সময় আযান হয়ে যাওয়ার পর দোয়া-প্রার্থনায় রত থাকতে দেখা যায়। এগুলো পরিহার করা উচিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সুন্নত অনুযায়ী সূর্যাস্তের সাথে সাথে ইফতার শুরু করে দেয়া কর্তব্য।
عن أنس بن مالك رضي الله عنه قال : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يفطر على رطبات قبل أن يصلي، فإن لم يكن رطبات فتمرات، فإن لم يكن تمرات، حسا حسوات من ماء . أحمد :১৩০১২
আনাস ইবনে মালেক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সালাতের পূর্বে তাজা খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। যদি তাজা খেজুর না পাওয়া যেত তবে শুকনো খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। যদি শুকনো খেজুর না পাওয়া যেত তাহলে কয়েক ঢোক পানি দ্বারা ইফতার করতেন।’ [আহমদ : ১৩০১২]
এ হাদীস আমাদের শিক্ষা দেয় যে, ইফতারের আদব হল: মাগরিবের সালাতের পূর্বে ইফতার করা। তাজা খেজুর বা শুকনো খেজুর দ্বারা ইফতার করা। খেজুর দিয়ে ইফতার করার উপকারিতা হল, খেজুর সহজপাচ্য। দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকার কারণে খাওয়ার পর যে সমস্যা হওয়ার কথা খেজুর খেলে তা হয় না। উপরন্তু খেজুর হালকা খাবারের একটি। পানি, খেজুর এগুলো দ্বারা ইফতার করলে অলসতা সৃষ্টি হয় না।
দ্বিতীয়ত পেট পুরে পানাহার ইসলাম সমর্থন করে না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
ما وعي ابن آدم وعاء شرا من بطنه، بحسب ابن آدم أكلات يقين صلبه، فإن كان لا محالة فاعلا فثلث لطعامه، وثلث لشرابه، وثلث لنفسه . الحاكم :৭১৩৯
‘মানুষ সে সকল পাত্র পূর্ণ করে তার মাঝে মানুষের পেট অপেক্ষা আর কোন খারাপ পাত্র নেই। মানুষের কোমর সোজা রাখার জন্য কয়েকটি লোকমা-ই যথেষ্ট। এর থেকেও বেশি যদি প্রয়োজন হয়, তবে পেটের এক তৃতীয়াংশ খাদ্যের জন্য, এক তৃতীয়াংশ পানীয়ের জন্য এবং অবশিষ্ট এক তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাস চলাচলের জন্য রেখে দেয়া উচিত।’ [হাকেম : ৭১৩৯]
আনাস ইবনে মালেক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সালাতের পূর্বে তাজা খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। যদি তাজা খেজুর না পাওয়া যেত তবে শুকনো খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। যদি শুকনো খেজুর না পাওয়া যেত তাহলে কয়েক ঢোক পানি দ্বারা ইফতার করতেন।’ [আহমদ : ১৩০১২]
এ হাদীস আমাদের শিক্ষা দেয় যে, ইফতারের আদব হল: মাগরিবের সালাতের পূর্বে ইফতার করা। তাজা খেজুর বা শুকনো খেজুর দ্বারা ইফতার করা। খেজুর দিয়ে ইফতার করার উপকারিতা হল, খেজুর সহজপাচ্য। দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকার কারণে খাওয়ার পর যে সমস্যা হওয়ার কথা খেজুর খেলে তা হয় না। উপরন্তু খেজুর হালকা খাবারের একটি। পানি, খেজুর এগুলো দ্বারা ইফতার করলে অলসতা সৃষ্টি হয় না।
দ্বিতীয়ত পেট পুরে পানাহার ইসলাম সমর্থন করে না।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
ما وعي ابن آدم وعاء شرا من بطنه، بحسب ابن آدم أكلات يقين صلبه، فإن كان لا محالة فاعلا فثلث لطعامه، وثلث لشرابه، وثلث لنفسه . الحاكم :৭১৩৯
‘মানুষ সে সকল পাত্র পূর্ণ করে তার মাঝে মানুষের পেট অপেক্ষা আর কোন খারাপ পাত্র নেই। মানুষের কোমর সোজা রাখার জন্য কয়েকটি লোকমা-ই যথেষ্ট। এর থেকেও বেশি যদি প্রয়োজন হয়, তবে পেটের এক তৃতীয়াংশ খাদ্যের জন্য, এক তৃতীয়াংশ পানীয়ের জন্য এবং অবশিষ্ট এক তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাস চলাচলের জন্য রেখে দেয়া উচিত।’ [হাকেম : ৭১৩৯]
সিয়াম পালনকারীর দোয়া কবুল হয়। বিশেষ করে ইফতারের সময়। কারণ ইফতারের সময়টা হল বিনয় ও আল্লাহর জন্য ধৈর্য ধারণের চরম মুহূর্ত। এ সময় জাহান্নাম থেকে মুক্তি দানের মুহূর্ত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
إن لله تعالى عند كل فطر عتقاء من النار، وذلك كل ليلة، لكل عبد منهم دعوة مستجابة . البيهقي :৩৬০৫
‘ইফতারের সময় আল্লাহ রাববুল আলামীন বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। আর এটা রমজানের প্রতি রাতে। সিয়াম পালনকারী প্রত্যেক বান্দার দোয়া কবুল হয়।’ [বাইহাকী : ৩৬০৫]
ইফতার করার পর এ দোয়াটি পাঠ করা সুন্নত—
ذَهَبَ الظَمَأُ، وَابْتَلَّتِ العُرُوْقُ، وَثَبَتَ الأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللهُ . أبو داود :২৩৫৭
অর্থ : ‘পিপাসা নিবারণ হল, শিরা-উপশিরা সিক্ত হল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় পুরস্কার নির্ধারিত হল।’ [আবু দাউদ : ২৩৫৭]
ইফতারের সময়টা আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার একটা সুযোগ। এ সময়টা যেন বৃথা না যায় এ দিকে খেয়াল রেখে সময়টাকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। ইফতারের সময় অন্তর দিয়ে দোয়া-প্রার্থনা করা এবং যা কিছু দোয়া কবুলের অন্তরায় তা থেকে দূরে থাকা প্রয়োজন। যেমন হারাম বা অবৈধ উপায়ে অর্জিত খাদ্য গ্রহণ। দোয়া কবুলের কত চমৎকার সময় যে, আল্লাহ নিজে যখন দোয়া কবুলের ওয়াদা করেছেন !
(আরবি)
‘আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে তোমাকে প্রশ্ন করে, আমি তো নিকটেই। প্রার্থনাকারী যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে, আমি তার প্রার্থনায় সাড়া দেই। সুতরাং তারা আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক যাতে তারা ঠিক পথে চলতে পারে।’ [সূরা আল-বাকারা : ১৮৬]
ইফতারের সময় ও আজানের পরের সময়টাও দোয়া কবুলের সময়। হাদীসে এসেছে প্রতি আযান ও একামতের মধ্যবর্তী সময়ে দোয়া কবুল হয়।
إن لله تعالى عند كل فطر عتقاء من النار، وذلك كل ليلة، لكل عبد منهم دعوة مستجابة . البيهقي :৩৬০৫
‘ইফতারের সময় আল্লাহ রাববুল আলামীন বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। আর এটা রমজানের প্রতি রাতে। সিয়াম পালনকারী প্রত্যেক বান্দার দোয়া কবুল হয়।’ [বাইহাকী : ৩৬০৫]
ইফতার করার পর এ দোয়াটি পাঠ করা সুন্নত—
ذَهَبَ الظَمَأُ، وَابْتَلَّتِ العُرُوْقُ، وَثَبَتَ الأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللهُ . أبو داود :২৩৫৭
অর্থ : ‘পিপাসা নিবারণ হল, শিরা-উপশিরা সিক্ত হল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় পুরস্কার নির্ধারিত হল।’ [আবু দাউদ : ২৩৫৭]
ইফতারের সময়টা আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার একটা সুযোগ। এ সময়টা যেন বৃথা না যায় এ দিকে খেয়াল রেখে সময়টাকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। ইফতারের সময় অন্তর দিয়ে দোয়া-প্রার্থনা করা এবং যা কিছু দোয়া কবুলের অন্তরায় তা থেকে দূরে থাকা প্রয়োজন। যেমন হারাম বা অবৈধ উপায়ে অর্জিত খাদ্য গ্রহণ। দোয়া কবুলের কত চমৎকার সময় যে, আল্লাহ নিজে যখন দোয়া কবুলের ওয়াদা করেছেন !
(আরবি)
‘আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে তোমাকে প্রশ্ন করে, আমি তো নিকটেই। প্রার্থনাকারী যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে, আমি তার প্রার্থনায় সাড়া দেই। সুতরাং তারা আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক যাতে তারা ঠিক পথে চলতে পারে।’ [সূরা আল-বাকারা : ১৮৬]
ইফতারের সময় ও আজানের পরের সময়টাও দোয়া কবুলের সময়। হাদীসে এসেছে প্রতি আযান ও একামতের মধ্যবর্তী সময়ে দোয়া কবুল হয়।
রমজান হল কুরআন নাযিলের মাস। কুরআন নাযিলের কারণে রমজান মাসের এত মর্যাদা। এ মাসে অবশ্যই অন্য সকল সময়ের চেয়ে বেশি করে কুরআন তিলাওয়াত করা উচিত। হাদীসে এসেছে—
عن عبد الله بن عمرو أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : الصيام والقرآن يشفعان للعبد يوم القيامة، يقول الصيام أي رب : منعته الطعام والشهوات بالنهار، فشفعني فيه . ويقول القرآن : منعته النوم بالليل، فشفعني فيه . قال فيشفعان . أحمد :৬৬২৬
আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘সিয়াম ও কুরআন কেয়ামতের দিন মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে, সিয়াম বলবে হে প্রতিপালক! আমি দিনের বেলা তাকে পানাহার ও যৌনতা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর। কুরআন বলবে হে প্রতিপালক! আমি তাকে রাতে নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছি তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর। তিনি বলেন, অতপর উভয়ের সুপারিশই কবুল করা হবে।’ [আহমদ : ৬৬২৬]
عن عبد الله بن عمرو أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : الصيام والقرآن يشفعان للعبد يوم القيامة، يقول الصيام أي رب : منعته الطعام والشهوات بالنهار، فشفعني فيه . ويقول القرآن : منعته النوم بالليل، فشفعني فيه . قال فيشفعان . أحمد :৬৬২৬
আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘সিয়াম ও কুরআন কেয়ামতের দিন মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে, সিয়াম বলবে হে প্রতিপালক! আমি দিনের বেলা তাকে পানাহার ও যৌনতা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর। কুরআন বলবে হে প্রতিপালক! আমি তাকে রাতে নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছি তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর। তিনি বলেন, অতপর উভয়ের সুপারিশই কবুল করা হবে।’ [আহমদ : ৬৬২৬]
একটু চিন্তা করে দেখা যেতে পারে যে, কত মানুষ রয়েছে যাদেরকে আল্লাহর তার ইবাদত-বন্দেগী করতে সামর্থ্য দেননি কিন্তু আমাকে দিয়েছেন। এটা আমার প্রতি তাঁর এক মহা-অনুগ্রহ। এরপর তিনি যদি আমার এ ভাল কাজগুলো কবুল করে আমাকে প্রতিদান দেন তাহলে এটা হবে তাঁর পক্ষ থেকে আরেকটি অনুগ্রহ। কত মানুষ ভাল কাজ করে কিন্তু সকলের ভাল কাজ-তো কবুল করা হয় না।
إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللَّهُ مِنَ الْمُتَّقِينَ ( المائدة : ২৭)
‘আল্লাহ মুত্তাকীদের কাজই কবুল করেন।’ [সূরা মায়িদা : ২৭]
এ ধরনের অনুভূতি থাকলে নেক-আমল করে আত্ম-তৃপ্তি ও অহংকার নামক ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকা যায়। কেননা অহংকার ও আত্ম-তৃপ্তি ভাল কাজের প্রতিদান নষ্ট করে দেয়। তখন ভাল কাজগুলো মরীচিকার মত হয়ে যায়।
إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللَّهُ مِنَ الْمُتَّقِينَ ( المائدة : ২৭)
‘আল্লাহ মুত্তাকীদের কাজই কবুল করেন।’ [সূরা মায়িদা : ২৭]
এ ধরনের অনুভূতি থাকলে নেক-আমল করে আত্ম-তৃপ্তি ও অহংকার নামক ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকা যায়। কেননা অহংকার ও আত্ম-তৃপ্তি ভাল কাজের প্রতিদান নষ্ট করে দেয়। তখন ভাল কাজগুলো মরীচিকার মত হয়ে যায়।
সিয়াম পালনের মাধ্যমে অসহায় সম্বলহীন, অভুক্ত মানুষের প্রতি দয়া ও মমতা সৃষ্টি হয়। তাদের অসহায়ত্ব অনুভব করা যায়। তাই এ দান-প্রতিদানের পবিত্র মাসে তাদের জন্য বেশি করে কল্যাণকর কাজ করা উচিত। ইফতার করানো, সদকাতুল ফিতর, যাকাত আদায় করার সাথে সাথে ব্যাপকভাবে দান-সদকা করা যেতে পারে। হাদীসে এসেছে—
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم أجود الناس بالخير، وكان أجود ما يكون في شهر رمضان . مسلم :২৩০৮
‘নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন মানুষের মাঝে সবচেয়ে বেশি দানশীল। আর রমজানে তার দানশীলতা আরো বেড়ে যেত।’ [মুসলিম : ৩২০৮]
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم أجود الناس بالخير، وكان أجود ما يكون في شهر رمضان . مسلم :২৩০৮
‘নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন মানুষের মাঝে সবচেয়ে বেশি দানশীল। আর রমজানে তার দানশীলতা আরো বেড়ে যেত।’ [মুসলিম : ৩২০৮]
রমজান হল ধৈর্যের মাস আর সিয়াম হল একটি বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয় থাকাকালীন অবশ্যই সদাচরণ, ধৈর্য, সুন্দর চরিত্রের অনুশীলন করতে হবে। রোজাদারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সে যেন মূর্খতাপূর্ণ আচরণকারীর জবাব না দেয়, তার সঙ্গে যে ভ্রান্ত আচরণ করে তাকে বলে দেয়,‘ আমি রোজাদার’। সর্বোপরি তাকে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হবে।
অপচয় তা যে কোন বিষয়েই হোক ইসলামী শরীয়তে নিষিদ্ধ। পবিত্র মাসে যখন আমাদের বেশি করে সৎকাজ করা উচিত তখন আমরা খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে কোন ধরনের অপচয় করে যেন পাপ অর্জন না করি। রমজান মাসে দেখা যায় অনেকে খেতে পারব মনে করে অনেক কিছু আয়োজন করে। অবশেষে খেতে না পেরে তা নষ্ট করে ফেলে। এটা সত্যিই অন্যায়।
রমজানের সময়টা অন্য সময়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু সংক্ষিপ্ত মনে হয়। তাই আপনি রুটিন করে সময়টাকে কি কি কাজে ব্যয় করবেন তা যদি ঠিক করে না নেন তাহলে দেখবেন অনেক কাজই অসমাপ্ত রয়ে গেছে। অনর্থক কথা-বার্তা, আড্ডা বাজি, গল্পগুজব, নিষ্ফল বিতর্ক ইত্যাদি পরিহার করুন। কোন কথা বা কাজ করার আগে ভেবে দেখুন কথা বা কাজটা আপনার জন্য কতটুকু কল্যাণ বয়ে আনবে। ‘আমার পাশে বসে অন্য লোক একটি বিষয় আলোচনা করছে তাই আমাকে অংশ নিতেই হয়—তাই একটু বললাম’ এমন যেন না হয়। অযথা কথা ও কাজ পরিহার করা সিয়ামের একটি শিক্ষা ও দাবি।
রমজান মাসে নিজের ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণের জন্য দুনিয়াদারির ব্যস্ততা কমিয়ে দিয়ে একটি ভারসাম্য সৃষ্টি করুন। অনেকেই রমজান মাসকে অর্থ উপার্জন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও মুনাফা লাভের সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেন। এ দিকেই বেশি সময় ব্যয় করেন। দুনিয়াদারি যতটুকু না করলেই নয় ততটুকুতো অবশ্যই করবেন। আর বাকি সময়টা আখেরাতের মুনাফা অর্জনের জন্য ব্যয় করুন।
আমাদের মাঝে অনেকে রমজান মাসে যেমন খাওয়া দাওয়া বেশি করে তেমনি আবার বেশি সময় ঘুমিয়ে কাটায়। তারাবীহ ও সাহরীর কারণে যদি রাতে দু ঘণ্টা নিদ্রা কম হয় তবে দিনে তার কাফফারা আদায় করে চার ঘণ্টা ঘুমিয়ে। খাবার ব্যাপারে অনেকে একই নীতি অনুসরণ করে। যদি এরকমই আমাদের অবস্থা হয় তবে আমরা রমজানের জন্য কি কুরবানী করলাম? বিষয়টা গভীরভাবে ভেবে দেখা উচিত।
প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন, মুকীম, সামর্থ্যবান মুসলিমের জন্য সিয়াম পালন ফরজ।
যে ব্যক্তি এ সকল শর্তাবলির অধিকারী তাকে অবশ্যই রমজান মাসে সিয়াম পালন করতে হবে।
আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
‘সুতরাং তোমাদের মাঝে যারা এ মাস পাবে তারা যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে।’ [সুরা বাকারা : ১৮৫]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
إذا رأيتم الهلال فصوموا . مسلم :১০৮১
‘যখন তোমরা রমজানের চাঁদ দেখবে তখন সিয়াম পালন করবে।’ [মুসলিম: ১০৮১]
যে ব্যক্তি এ সকল শর্তাবলির অধিকারী তাকে অবশ্যই রমজান মাসে সিয়াম পালন করতে হবে।
আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
‘সুতরাং তোমাদের মাঝে যারা এ মাস পাবে তারা যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে।’ [সুরা বাকারা : ১৮৫]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
إذا رأيتم الهلال فصوموا . مسلم :১০৮১
‘যখন তোমরা রমজানের চাঁদ দেখবে তখন সিয়াম পালন করবে।’ [মুসলিম: ১০৮১]
কারণ তারা ইবাদত করার যোগ্যতা রাখে না। ইবাদত করলেও তাদের মধ্যে ইসলাম অনুপস্থিত থাকার কারণে তা সহীহ হবে না, কবুলও হবে না। যদি কোন কাফের রমজানে ইসলাম গ্রহণ করে, তবে পিছনের সিয়ামের কাজা আদায় করতে হবে না। কারণ আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
‘যারা কুফরী করে তাদেরকে বল, ‘যদি তারা বিরত হয় তবে যা অতীতে হয়েছে আল্লাহতা ক্ষমা করবেন।’ [সূরা আনফাল: ৩৮]
তবে রমজানের দিনে ইসলাম গ্রহণ করলে ঐ দিনের বাকি অংশটা পানাহার থেকে বিরত থাকবে।
(আরবি)
‘যারা কুফরী করে তাদেরকে বল, ‘যদি তারা বিরত হয় তবে যা অতীতে হয়েছে আল্লাহতা ক্ষমা করবেন।’ [সূরা আনফাল: ৩৮]
তবে রমজানের দিনে ইসলাম গ্রহণ করলে ঐ দিনের বাকি অংশটা পানাহার থেকে বিরত থাকবে।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তার জন্য সিয়াম পালন ফরজ নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
رفع القلم عن ثلاثة : عن النائم حتى يستيقظ، وعن الصغير حتى يكبر، وعن المجنون حتى يفيق . السنن الكبرى للنسائي :৫৬২৬
‘তিন ব্যক্তি থেকে কলমকে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। নিদ্রা মগ্ন ব্যক্তি যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়। কম বয়সী ব্যক্তি যতক্ষণ না সে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়। পাগল ব্যক্তি যতক্ষণ না সে সুস্থ হয়।’ [সুনানে নাসায়ী : ৫৬২৬]
যদিও অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক-বালিকাদের উপর সিয়াম পালন ফরজ নয় তবে অভিভাবকরা অভ্যস্ত করার জন্য তাদের সিয়াম পালন করতে বলবেন। সাহাবায়ে কেরাম তাদের বাচ্চাদের সিয়াম পালনে অভ্যস্ত করেছেন। তাই আমাদের জন্য মুস্তাহাব হল আমরাও আমাদের অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদের সিয়াম পালনে উদ্বুদ্ধ করব, যদি সিয়াম পালন তাদের কোন ক্ষতি না করে।
رفع القلم عن ثلاثة : عن النائم حتى يستيقظ، وعن الصغير حتى يكبر، وعن المجنون حتى يفيق . السنن الكبرى للنسائي :৫৬২৬
‘তিন ব্যক্তি থেকে কলমকে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। নিদ্রা মগ্ন ব্যক্তি যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়। কম বয়সী ব্যক্তি যতক্ষণ না সে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়। পাগল ব্যক্তি যতক্ষণ না সে সুস্থ হয়।’ [সুনানে নাসায়ী : ৫৬২৬]
যদিও অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক-বালিকাদের উপর সিয়াম পালন ফরজ নয় তবে অভিভাবকরা অভ্যস্ত করার জন্য তাদের সিয়াম পালন করতে বলবেন। সাহাবায়ে কেরাম তাদের বাচ্চাদের সিয়াম পালনে অভ্যস্ত করেছেন। তাই আমাদের জন্য মুস্তাহাব হল আমরাও আমাদের অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদের সিয়াম পালনে উদ্বুদ্ধ করব, যদি সিয়াম পালন তাদের কোন ক্ষতি না করে।
যদি কোন অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক বা বালিকাদের মাঝে তিনটি আলামতের কোন একটি পরিলক্ষিত হয় তখন তাদের প্রাপ্তবয়স্ক বলে ধরা হবে। আলামত তিনটি হল:
(১) স্বপ্নদোষ অথবা অন্য কোন কারণে বীর্যপাত হলে।
(২) যৌনাঙ্গে কেশ দেখা দিতে শুরু করলে।
(৩) বয়স পনেরো বছর পূর্ণ হলে।
ছেলেদের মাঝে যখন এ তিনটি আলামতের কোন একটি পরিলক্ষিত হবে তখন তাদের পূর্ণবয়স্ক বলে ধরা হবে। অবশ্য মেয়েদের জন্য চতুর্থ একটি আলামত রয়েছে, তা হল মাসিক দেখা দেয়া। যদি দশ বছর বয়সী কিশোরীদেরও মাসিক দেখা দেয় তাহলে তাদের পূর্ণবয়স্ক বলে ধরতে হবে। এবং শরীয়তের সকল আদেশ-নিষেধ তার জন্য অবশ্য পালনীয় বলে গণ্য হবে। কোন কিশোর বা কিশোরী রমজান মাসের দিনের বেলা যদি বয়স প্রাপ্ত হয়, তাহলে তাকে দিনের অবশিষ্ট অংশ পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে। এ দিনের সওম তার কাজা করতে হবে না। পিতা-মাতার কর্তব্য হল, এ বিষয়ে সতর্ক থাকা ও সন্তানকে সচেতন করা। সাথে সাথে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তার উপর যে সকল ধর্মীয় দায়িত্ব-কর্তব্য আছে তা পালনে দিক-নির্দেশনা দেয়া। পাক-পবিত্রতা অর্জনের নিয়ম-নীতিগুলো সে জানে কি না বা মনে রাখতে পেরেছে কিনা তার প্রতি খেয়াল রাখা।
(১) স্বপ্নদোষ অথবা অন্য কোন কারণে বীর্যপাত হলে।
(২) যৌনাঙ্গে কেশ দেখা দিতে শুরু করলে।
(৩) বয়স পনেরো বছর পূর্ণ হলে।
ছেলেদের মাঝে যখন এ তিনটি আলামতের কোন একটি পরিলক্ষিত হবে তখন তাদের পূর্ণবয়স্ক বলে ধরা হবে। অবশ্য মেয়েদের জন্য চতুর্থ একটি আলামত রয়েছে, তা হল মাসিক দেখা দেয়া। যদি দশ বছর বয়সী কিশোরীদেরও মাসিক দেখা দেয় তাহলে তাদের পূর্ণবয়স্ক বলে ধরতে হবে। এবং শরীয়তের সকল আদেশ-নিষেধ তার জন্য অবশ্য পালনীয় বলে গণ্য হবে। কোন কিশোর বা কিশোরী রমজান মাসের দিনের বেলা যদি বয়স প্রাপ্ত হয়, তাহলে তাকে দিনের অবশিষ্ট অংশ পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে। এ দিনের সওম তার কাজা করতে হবে না। পিতা-মাতার কর্তব্য হল, এ বিষয়ে সতর্ক থাকা ও সন্তানকে সচেতন করা। সাথে সাথে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তার উপর যে সকল ধর্মীয় দায়িত্ব-কর্তব্য আছে তা পালনে দিক-নির্দেশনা দেয়া। পাক-পবিত্রতা অর্জনের নিয়ম-নীতিগুলো সে জানে কি না বা মনে রাখতে পেরেছে কিনা তার প্রতি খেয়াল রাখা।
পাগল বলতে বুঝায় যার জ্ঞান-বুদ্ধি লোপ পেয়েছে। যার কারণে ভাল-মন্দের মাঝে পার্থক্য করতে পারে না। এর জন্য সিয়াম পালন ফরজ নয়। যেমন পূর্বের হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে। পাগল যখনই সুস্থ হয়ে যাবে তখনই সে সিয়াম পালন শুরু করে দেবে। যদি এমন হয় যে দিনের কিছু অংশ সে সুস্থ থাকে কিছু অংশ অসুস্থ তাহলে সুস্থ হওয়া মাত্রই সে পানাহার থেকে বিরত থাকবে। সিয়াম পূর্ণ করবে। পাগলামি শুরু হলেই তার সিয়াম ভঙ্গ হবে না, যদি না সে সিয়াম ভঙ্গের কোন কাজ করে।
এমন ব্যক্তি, যার বয়সের কারণে ভাল-মন্দ পার্থক্য করার অনুভূতি চলে গেছে সে শিশুর মতই। শিশু যেমন শরীয়তের নির্দেশমুক্ত তেমনি সেও। তবে অনুভূতি ফিরে আসলে সে পানাহার থেকে বিরত থাকবে। যদি তার অবস্থা এমন হয় যে কখনো অনুভূতি আসে আবার কখনো চলে যায়, তাহলে অনুভূতি থাকাকালীন সময়ে তার উপর সালাত, সিয়াম ফরজ হবে।
এমন সামর্থ্যহীন অক্ষম ব্যক্তি যার সিয়াম পালনের সামর্থ্য ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই। যেমন অত্যধিক বৃদ্ধ অথবা এমন রোগী যার রোগ মুক্তির সম্ভাবনা নেই—আল্লাহর কাছে আমরা এ ধরনের রোগ-ব্যাধি থেকে আশ্রয় চাই- এ ধরনের লোকদের সিয়াম পালন জরুরি নয়। কারণ সে এ কাজের সামর্থ্য রাখে না।
আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
لاَ يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا . ( البقرة : ২৮৬)
‘আল্লাহ কারো উপর এমন কোন কষ্টদায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না যা তার সাধ্যাতীত।’ [সূরা আল-বাকারা: ২৮৬]
কিন্তু এমন ব্যক্তির উপর সিয়ামের ফিদিয়া প্রদান করা ওয়াজিব। সিয়ামের ফিদিয়া হল, প্রতিটি দিনের পরিবর্তে একজন মিসকিন (অভাবী) লোককে খাদ্য প্রদান করবে।
আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
لاَ يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا . ( البقرة : ২৮৬)
‘আল্লাহ কারো উপর এমন কোন কষ্টদায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না যা তার সাধ্যাতীত।’ [সূরা আল-বাকারা: ২৮৬]
কিন্তু এমন ব্যক্তির উপর সিয়ামের ফিদিয়া প্রদান করা ওয়াজিব। সিয়ামের ফিদিয়া হল, প্রতিটি দিনের পরিবর্তে একজন মিসকিন (অভাবী) লোককে খাদ্য প্রদান করবে।
মিসকিনদের দু ভাবে খাদ্য প্রদান করা যায় :
(১) খাদ্য তৈরি করে সিয়ামের সংখ্যা অনুযায়ী সমসংখ্যক মিসকিনকে আপ্যায়ন করাবে। (২) মিসকিনদের প্রত্যেককে এক মুদ পরিমাণ ভাল আটা দেবে। এক মুদ হল ৫১০ গ্রাম। (তবে হানাফি ফিকাহ অনুযায়ী দুই মুদ বা এক কেজি বিশ গ্রাম আটা বা সমপরিমাণ টাকা দেয়া যেতে পারে।)
(১) খাদ্য তৈরি করে সিয়ামের সংখ্যা অনুযায়ী সমসংখ্যক মিসকিনকে আপ্যায়ন করাবে। (২) মিসকিনদের প্রত্যেককে এক মুদ পরিমাণ ভাল আটা দেবে। এক মুদ হল ৫১০ গ্রাম। (তবে হানাফি ফিকাহ অনুযায়ী দুই মুদ বা এক কেজি বিশ গ্রাম আটা বা সমপরিমাণ টাকা দেয়া যেতে পারে।)
মুসাফিরের জন্য সিয়াম পালন না করা জায়েয আছে। তবে সফরকে যেন সিয়াম পালন না করার কৌশল হিসেবে ব্যবহার না করা হয়। আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
‘যে কেউ অসুস্থ থাকে বা সফরে থাকে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান, যা কষ্টকর তা চান না।’ [সূরা বাকারা : ১৮৫]
সুতরাং যে ব্যক্তি সফরে থাকে, তার জন্য সিয়াম ভঙ্গের অনুমতি আছে এবং সফর শেষে সে সিয়াম আদায় করবে। এমনিভাবে সে যদি সফরাবস্থায় সিয়াম পালন করে তবে তা আদায় হবে। তবে উত্তম কোনটি, সফরকালীন সময়ে সিয়াম পালন করা, না সিয়াম ত্যাগ করা ? যেটা সহজ মুসাফির সেটাই করবেন। যদি তিনি দেখেন সফরকালীন সময়ে তার সিয়াম পালন বাড়িতে থাকাকালীন সময়ের মতই মনে হয়, তাহলে সফরে তার সিয়াম পালন করা উত্তম। আর যদি দেখেন সফরে সিয়াম পালন করলে অতিরিক্ত কষ্ট হয় তবে সিয়াম ত্যাগ করা তার জন্য উত্তম। বরং বেশি কষ্ট হলে সিয়াম পালন মাকরূহ হবে। যেমন রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সাথে একদল সাহাবী সফরে থাকাকালীন সময়ে সিয়াম পালন করে খুব কষ্ট সহ্য করেছিলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের লক্ষ্য করে বললেন :—
أولئك العصاة، أولئك العصاة . مسلم :২৬৬৬
‘তারাইতো অবাধ্য ! তারাইতো অবাধ্য !!’ [মুসলিম : ২৬৬৬]
সফরে কেউ সিয়াম পালন শুরু করল পরে দেখা গেল সিয়াম অব্যাহত রাখতে তার কষ্ট হচ্ছে, তখন সে সিয়াম ভঙ্গ করে ফেলবে। এখন কথা হল এক ব্যক্তি সারা জীবনই সফরে থাকে এবং সফরাবস্থায় সিয়াম পালন তার জন্য কষ্টকর সে কীভাবে সিয়াম পালন করবে? সে শীতকালে ছোট দিনগুলোতে সিয়াম পালন করতে পারে।
(আরবি)
‘যে কেউ অসুস্থ থাকে বা সফরে থাকে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান, যা কষ্টকর তা চান না।’ [সূরা বাকারা : ১৮৫]
সুতরাং যে ব্যক্তি সফরে থাকে, তার জন্য সিয়াম ভঙ্গের অনুমতি আছে এবং সফর শেষে সে সিয়াম আদায় করবে। এমনিভাবে সে যদি সফরাবস্থায় সিয়াম পালন করে তবে তা আদায় হবে। তবে উত্তম কোনটি, সফরকালীন সময়ে সিয়াম পালন করা, না সিয়াম ত্যাগ করা ? যেটা সহজ মুসাফির সেটাই করবেন। যদি তিনি দেখেন সফরকালীন সময়ে তার সিয়াম পালন বাড়িতে থাকাকালীন সময়ের মতই মনে হয়, তাহলে সফরে তার সিয়াম পালন করা উত্তম। আর যদি দেখেন সফরে সিয়াম পালন করলে অতিরিক্ত কষ্ট হয় তবে সিয়াম ত্যাগ করা তার জন্য উত্তম। বরং বেশি কষ্ট হলে সিয়াম পালন মাকরূহ হবে। যেমন রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সাথে একদল সাহাবী সফরে থাকাকালীন সময়ে সিয়াম পালন করে খুব কষ্ট সহ্য করেছিলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের লক্ষ্য করে বললেন :—
أولئك العصاة، أولئك العصاة . مسلم :২৬৬৬
‘তারাইতো অবাধ্য ! তারাইতো অবাধ্য !!’ [মুসলিম : ২৬৬৬]
সফরে কেউ সিয়াম পালন শুরু করল পরে দেখা গেল সিয়াম অব্যাহত রাখতে তার কষ্ট হচ্ছে, তখন সে সিয়াম ভঙ্গ করে ফেলবে। এখন কথা হল এক ব্যক্তি সারা জীবনই সফরে থাকে এবং সফরাবস্থায় সিয়াম পালন তার জন্য কষ্টকর সে কীভাবে সিয়াম পালন করবে? সে শীতকালে ছোট দিনগুলোতে সিয়াম পালন করতে পারে।
যে রোগাক্রান্ত ব্যক্তির সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা আছে তার অবস্থা তিনটির যে কোন একটি হয়ে থাকে :
প্রথম: এমন রোগী যার পক্ষে সিয়াম পালন কষ্টসাধ্য নয় এবং সিয়াম তার কোন ক্ষতি করে না। এমন ব্যক্তির সিয়াম পালন অপরিহার্য।
দ্বিতীয়: এমন রোগী, সিয়াম পালন যার জন্য কষ্টকর। এমন ব্যক্তির সিয়াম পালন বিধেয় নয়-মাকরূহ। সিয়াম পালন করলে আদায় হয়ে যাবে তবে মাকরূহ হবে। ইসলামী শরীয়তের উদ্দেশ্য মানুষকে কষ্ট দেয়া নয় বরং শরীয়তের উদ্দেশ্য হল মানুষের সমস্যাকে হালকা করা।
তৃতীয়: এমন রোগী যে সিয়াম পালন করলে রোগ বেড়ে যাবে। এ অবস্থায় তার সিয়াম ত্যাগ করাই হল ওয়াজিব বা অপরিহার্য।
প্রথম: এমন রোগী যার পক্ষে সিয়াম পালন কষ্টসাধ্য নয় এবং সিয়াম তার কোন ক্ষতি করে না। এমন ব্যক্তির সিয়াম পালন অপরিহার্য।
দ্বিতীয়: এমন রোগী, সিয়াম পালন যার জন্য কষ্টকর। এমন ব্যক্তির সিয়াম পালন বিধেয় নয়-মাকরূহ। সিয়াম পালন করলে আদায় হয়ে যাবে তবে মাকরূহ হবে। ইসলামী শরীয়তের উদ্দেশ্য মানুষকে কষ্ট দেয়া নয় বরং শরীয়তের উদ্দেশ্য হল মানুষের সমস্যাকে হালকা করা।
তৃতীয়: এমন রোগী যে সিয়াম পালন করলে রোগ বেড়ে যাবে। এ অবস্থায় তার সিয়াম ত্যাগ করাই হল ওয়াজিব বা অপরিহার্য।
ঋতুকালীন সময়ে নারীর জন্য সওম পালন জায়েয নয় বরং নিষেধ। যদি সওম পালন করা অবস্থায় মাসিক দেখা দেয় তাহলে তার সওম ভেঙে যাবে। যদি সূর্যাস্তের এক মুহূর্ত পূর্বেও দেখা যায় তবুও তাকে সওমের কাজা আদায় করতে হবে। মাসিক অবস্থায় রমজানের দিনের বেলা কোন মহিলার মাসিক বন্ধ হয়ে গেল তাহলে তাকে ঐ দিনের বাকি সময়টা খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে, পরে এটারও কাজা করতে হবে। যদি সুবহে সাদিকের এক মুহূর্ত পূর্বে মাসিক বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ঐ দিনের সওম পালন অপরিহার্য। এমন ভাবা ঠিক নয় যে, গোসল করা হয়নি তাই সওম পালন থেকে বিরত থাকতে হবে। বরং তার কর্তব্য হল, রোজার নিয়ত করে নিবে। গোসল পরে করলে সমস্যা নেই। সিয়াম আদায়ের ক্ষেত্রে সদ্য প্রসূতি নারীর বিধান ঋতুবতী নারীর অনুরূপ। ঋতুবতী ও সদ্য প্রসূতি নারীরা সুস্থ হয়ে সিয়ামের কাজা আদায় করবে। তবে তাদের সালাতের কাজা আদায় করতে হবে না। আয়েশা রা.-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, ঋতুবতী নারী সালাতের কাজা আদায় করবে না, কিন্তু তাদের সিয়ামের কাজা আদায় করতে হবে কেন ? তিনি উত্তরে বললেন, ‘আমাদের এ অবস্থায় শুধু সিয়ামের কাজা আদায় করতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন, সালাতের কাজা আদায়ের নির্দেশ দেননি।’
এটা আল্লাহ রাববুল আলামীনের এক বিরাট অনুগ্রহ যে তিনি মহিলাদের হায়েজ ও নিফাস চলাকালীন সময়ের সালাত মাফ করে দিয়েছেন।
এটা আল্লাহ রাববুল আলামীনের এক বিরাট অনুগ্রহ যে তিনি মহিলাদের হায়েজ ও নিফাস চলাকালীন সময়ের সালাত মাফ করে দিয়েছেন।
যদি গর্ভবতী বা দুগ্ধ দান কারী নারী সিয়ামের কারণে তার নিজের বা সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা করে তবে সে সিয়াম ভঙ্গ করতে পারবে। পরে নিরাপদ সময়ে সে সিয়ামের কাজা আদায় করে নিবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
إن الله تبارك وتعالى وضع عن المسافر شطر الصلاة وعن الحامل والمرضع الصوم أو الصيام . مسند أحمد :১৯৫৬৩
‘আল্লাহ রাববুল আলামীন মুসাফিরের অর্ধেক সালাত কমিয়ে দিয়েছেন এবং গর্ভবতী ও দুগ্ধ দান করী নারীর সিয়াম না রেখে পরে আদায় করার অবকাশ দিয়েছেন।’ [আহমাদ : ১৯৫৬৩]
إن الله تبارك وتعالى وضع عن المسافر شطر الصلاة وعن الحامل والمرضع الصوم أو الصيام . مسند أحمد :১৯৫৬৩
‘আল্লাহ রাববুল আলামীন মুসাফিরের অর্ধেক সালাত কমিয়ে দিয়েছেন এবং গর্ভবতী ও দুগ্ধ দান করী নারীর সিয়াম না রেখে পরে আদায় করার অবকাশ দিয়েছেন।’ [আহমাদ : ১৯৫৬৩]
যেমন কোন বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি ; পানিতে পড়ে যাওয়া মানুষকে অথবা আগুনে নিপতিত ব্যক্তিকে কিংবা বাড়িঘর ধসে তার মাঝে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করতে যেয়ে সিয়াম ভঙ্গ করল। এতে অসুবিধা নেই। যদি এমন হয় যে, সিয়াম ভঙ্গ করা ব্যতীত এ সকল মানুষকে উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না, তাহলে সিয়াম ভঙ্গ করে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত হওয়া অপরিহার্য হয়ে পড়বে। কেননা জীবনের প্রতি হুমকি সৃষ্টি হয়েছে এমন বিপদগ্রস্ত মানুষকে উদ্ধার করা ফরজ। এমনিভাবে যে ইসলাম ও মুসলিমদের শত্রুদের বিরুদ্ধে আল্লাহর পথে জিহাদে নিয়োজিত, সে সিয়াম ভঙ্গ করে শক্তি অর্জন করতে পারবে। এ দশ প্রকার মানুষ যাদের জন্য সিয়াম ভঙ্গ করার অনুমতি দেয়া হল, তারা যেন প্রকাশ্যে পানাহার না করে সে দিকে খেয়াল রাখা উচিত। কারণ এতে অনেক অজানা লোকজন খারাপ ধারণা পোষণ করবে যা ব্যক্তি ও সমাজের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
উপরে বর্ণিত যে সকল কারণে রমজানের সিয়াম ত্যাগ করা হয়, রমজানের পর তা আদায় করাকে ‘কাজা’ বলে। যেমন আল্লাহতা আলা বলেছেন :—
(আরবি)
‘অন্য সময় এ সংখ্যা পূর্ণ করবে।’ [সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৪]
বিলম্ব না করে কাজা সিয়ামগুলো আদায় করা উত্তম। এমনিভাবে সকল মানুষের উচিত ভালো কাজে কোন বিলম্ব না করা। ভালো কাজ তাড়াতাড়ি করা প্রমাণ করে যে, কাজের প্রতি তার আন্তরিকতা ও ভালোবাসা রয়েছে। অপরদিকে দেরি করা হলে তার অলসতা ও ঈমানের দুর্বলতার পরিচয় বহন করে। পরবর্তী রমজান আসার পূর্বে অবশ্যই কাজা সিয়ামগুলো আদায় করে নিতে হবে।
(আরবি)
‘অন্য সময় এ সংখ্যা পূর্ণ করবে।’ [সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৪]
বিলম্ব না করে কাজা সিয়ামগুলো আদায় করা উত্তম। এমনিভাবে সকল মানুষের উচিত ভালো কাজে কোন বিলম্ব না করা। ভালো কাজ তাড়াতাড়ি করা প্রমাণ করে যে, কাজের প্রতি তার আন্তরিকতা ও ভালোবাসা রয়েছে। অপরদিকে দেরি করা হলে তার অলসতা ও ঈমানের দুর্বলতার পরিচয় বহন করে। পরবর্তী রমজান আসার পূর্বে অবশ্যই কাজা সিয়ামগুলো আদায় করে নিতে হবে।
(১) মুসলিম দাস বা দাসী মুক্ত করে দেয়া। বর্তমানে যেহেতু দাস প্রথা নেই। ইসলাম ধাপে ধাপে দাস প্রথাকে উচ্ছেদ করেছে, তাই দাস-দাসী মুক্ত করে কাফফারা আদায় করার সুযোগ নেই।
(২) এক একটি রোজার পরিবর্তে দু মাস বিরতিহীন সিয়াম পালন করা। এ বিরতিহীন সিয়াম পালন করতে গিয়ে সংগত কারণ ব্যতীত যদি বিরতি দেয়া হয়, তবে আবার নতুন করে দু মাস সিয়াম পালন করতে হবে।
(৩) যদি বিরতিহীন ভাবে দু মাস সিয়াম পালনের সামর্থ্য না রাখে তবে এক একটি রোজার পরিবর্তে ষাট জন অভাবী মানুষকে খাদ্য দান করতে হবে। প্রত্যেকের খাদ্য হবে এক ফিতরার সম পরিমাণ।
(২) এক একটি রোজার পরিবর্তে দু মাস বিরতিহীন সিয়াম পালন করা। এ বিরতিহীন সিয়াম পালন করতে গিয়ে সংগত কারণ ব্যতীত যদি বিরতি দেয়া হয়, তবে আবার নতুন করে দু মাস সিয়াম পালন করতে হবে।
(৩) যদি বিরতিহীন ভাবে দু মাস সিয়াম পালনের সামর্থ্য না রাখে তবে এক একটি রোজার পরিবর্তে ষাট জন অভাবী মানুষকে খাদ্য দান করতে হবে। প্রত্যেকের খাদ্য হবে এক ফিতরার সম পরিমাণ।
যেমন কাউকে চুমো দেয়ার মাধ্যমে বা স্পর্শ করার কারণে কিংবা হস্ত মৈথুন ইত্যাদি কারণে বীর্যপাত ঘটানো হলে সিয়াম বাতিল হয়ে যায়। তবে এ সকল কারণে কামভাব থাকা সত্ত্বেও যদি বীর্যপাত না হয় তবে সিয়াম বাতিল হবে না। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সওম অবস্থায় স্ত্রীকে চুমো দিতেন ও স্পর্শ করতেন। তবে তিনি নিজেকে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমর্থ ছিলেন। যদি চুমো ও স্পর্শ দ্বারা বীর্যপাত হওয়ার আশঙ্কা থাকে তবে এ সকল কাজ থেকে বিরত থাকা অত্যন্ত জরুরি। ইসলামী শরীয়তের একটা মূলনীতি হল, যা কিছু অন্যায় বা হারাম কাজের দিকে নিয়ে যায় বা তার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে তা থেকে দূরে থাকা ওয়াজিব। এ কারণে সিয়াম পালনকারীর জন্য কুলি করা ও নাকে পানি দেয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। সে কুলি করার সময় গড়গড়া করবে না। স্বপ্নদোষের কারণে বীর্যপাত হলে সিয়াম ভঙ্গ হবে না। কারণ এটা অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়ে গেছে। যা কিছু অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়ে যায় আল্লাহ তা ক্ষমা করে দেন। এমনিভাবে নিদ্রামগ্ন ব্যক্তি থেকে কলম উঠিয়ে রাখা হয়। কাজেই নিদ্রাকালে যা কিছু ঘটে তার জন্য কাউকে দায়ী করা যায় না। এটা আমাদের প্রতি আল্লাহ রাববুল আলামীনের একটি রহমত। কেউ কোন বিষয় কল্পনা করার ফলে যদি বীর্যপাত হয়ে যায়, এতে সিয়াম ভঙ্গ হবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
إن الله تجاوز عن أمتي ما حدثت به أنفسها ما لم تعمل أو تتكلم . البخاري :৪৯৬৮
‘অবশ্যই আল্লাহ তাআলা আমার উম্মত যা কল্পনা করে তা ক্ষমা করে দেন। যদি না সে কাজ বা কথার দ্বারা তা বাস্তবায়ন করে।’ [বুখারী : ৪৯৬৮]
إن الله تجاوز عن أمتي ما حدثت به أنفسها ما لم تعمل أو تتكلم . البخاري :৪৯৬৮
‘অবশ্যই আল্লাহ তাআলা আমার উম্মত যা কল্পনা করে তা ক্ষমা করে দেন। যদি না সে কাজ বা কথার দ্বারা তা বাস্তবায়ন করে।’ [বুখারী : ৪৯৬৮]
আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
‘আর তোমরা পানাহার কর, যতক্ষণ রাতের কালো রেখা হতে উষার শুভ্র রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। অতঃপর রাতের আগমন পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর।’ [সূরা বাকারা, আয়াত ১৭৮]
নাক দিয়ে ঔষধ সেবন করা পানাহার করার মতই সিয়াম বাতিল করে দেয়। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
وبالغ في الاستنشاق إلا أن تكون صائما ( أبو داود :১২৩)
‘তোমরা ওজুর সময় নাকে পানি দিতে একটু অতিরিক্ত করবে, তবে সিয়াম অবস্থায় নয়।’ [আবু দাউদ : ১২৩]
এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হল সিয়াম অবস্থায় নাকের ভিতরে এমনভাবে পানি দিতে নিষেধ করা হয়েছে, যাতে পানি ভিতরে চলে যায়। অতএব নাক দিয়ে কিছু ভিতরে প্রবেশ করালে সিয়াম নষ্ট হয়ে যায়।
(আরবি)
‘আর তোমরা পানাহার কর, যতক্ষণ রাতের কালো রেখা হতে উষার শুভ্র রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। অতঃপর রাতের আগমন পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর।’ [সূরা বাকারা, আয়াত ১৭৮]
নাক দিয়ে ঔষধ সেবন করা পানাহার করার মতই সিয়াম বাতিল করে দেয়। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
وبالغ في الاستنشاق إلا أن تكون صائما ( أبو داود :১২৩)
‘তোমরা ওজুর সময় নাকে পানি দিতে একটু অতিরিক্ত করবে, তবে সিয়াম অবস্থায় নয়।’ [আবু দাউদ : ১২৩]
এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হল সিয়াম অবস্থায় নাকের ভিতরে এমনভাবে পানি দিতে নিষেধ করা হয়েছে, যাতে পানি ভিতরে চলে যায়। অতএব নাক দিয়ে কিছু ভিতরে প্রবেশ করালে সিয়াম নষ্ট হয়ে যায়।
(১) সিয়াম পালনকারী শরীরে রক্ত গ্রহণ করলে সিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। কারণ পানাহার দ্বারা রক্ত তৈরি হয়। তাই রক্ত গ্রহণ পানাহারের একটি বিকল্প।
(২) খাবারের বিকল্প হিসেবে স্যালাইন বা ইনজেকশন গ্রহণ করা। তবে যে সকল ইনজেকশন ও স্যালাইন খাবারের বিকল্প নয়, তা গ্রহণ করতে বাধা নেই।
(২) খাবারের বিকল্প হিসেবে স্যালাইন বা ইনজেকশন গ্রহণ করা। তবে যে সকল ইনজেকশন ও স্যালাইন খাবারের বিকল্প নয়, তা গ্রহণ করতে বাধা নেই।
যে শিঙা লাগায় ও যাকে শিঙা লাগানো হয় উভয়ের সিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। যেমন হাদীসে এসেছে—
أفطر الحاجم والمحجوم أب ৬৯ و داود :২০২৩
‘শিঙা যে লাগাল ও যাকে লাগা৬৬৯না হলো উভয়ে সিয়াম ভঙ্গ করল।’ [আবু দাউদ : ২০২৩]
শিঙা লাগালে শরীরে এর প্রভাব পড়ে। এটা রক্ত দানের মতই। তাই সিয়াম পালনকারীর জন্য শিঙা ব্যবহার জায়েয নয়। তবে প্রয়োজন হলে সিয়াম ভঙ্গ করে শিঙা ব্যবহার করবে, পরে সিয়াম কাজা করবে। নাক দিয়ে রক্ত পড়লে কিংবা দাঁত ওঠালে অথবা আহত হয়ে রক্ত প্রবাহিত হলে সিয়ামের কোন ক্ষতি হয় না।
أفطر الحاجم والمحجوم أب ৬৯ و داود :২০২৩
‘শিঙা যে লাগাল ও যাকে লাগা৬৬৯না হলো উভয়ে সিয়াম ভঙ্গ করল।’ [আবু দাউদ : ২০২৩]
শিঙা লাগালে শরীরে এর প্রভাব পড়ে। এটা রক্ত দানের মতই। তাই সিয়াম পালনকারীর জন্য শিঙা ব্যবহার জায়েয নয়। তবে প্রয়োজন হলে সিয়াম ভঙ্গ করে শিঙা ব্যবহার করবে, পরে সিয়াম কাজা করবে। নাক দিয়ে রক্ত পড়লে কিংবা দাঁত ওঠালে অথবা আহত হয়ে রক্ত প্রবাহিত হলে সিয়ামের কোন ক্ষতি হয় না।
যদি কেউ ইচ্ছা করে বমি করে তবে তার সিয়াম বাতিল হয়ে যাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
من ذرعه القيئ فليس عليه شيء ومن استقاء عمدا فليقض . الترمذي :৬৫৩
‘অনিচ্ছাকৃতভাবে যার বমি হল তার কিছু করণীয় নেই। আর যে নিজের ইচ্ছায় বমি করল সে সিয়াম কাজা করবে।’ [তিরমিযী : ৬৫৩]
তবে বমি আসলে তা আটকে রাখার চেষ্টা করবে না।
من ذرعه القيئ فليس عليه شيء ومن استقاء عمدا فليقض . الترمذي :৬৫৩
‘অনিচ্ছাকৃতভাবে যার বমি হল তার কিছু করণীয় নেই। আর যে নিজের ইচ্ছায় বমি করল সে সিয়াম কাজা করবে।’ [তিরমিযী : ৬৫৩]
তবে বমি আসলে তা আটকে রাখার চেষ্টা করবে না।
সুরমা ব্যবহার, চোখে বা কানে ঔষধ ব্যবহার করলে সিয়াম নষ্ট হয় না, যদিও তার স্বাদ অনুভূত হয়। কোন কিছুর স্বাদ অনুভূত হলে সিয়াম ভঙ্গ হয় না। সিয়াম ভঙ্গ হওয়ার সম্পর্ক হল পানাহারের সাথে। কোন কিছুর স্বাদ পরীক্ষা করার কারণে সিয়াম ভঙ্গ হয় না, যদি না তা গিলে ফেলে। কোন কিছুর ঘ্রাণ নিলে সিয়াম ভঙ্গ হয় না। তবে ধুম জাতীয় ঘ্রাণ সিয়াম অবস্থায় গ্রহণ করবে না। যেমন আগরবাতি বা চন্দন কাঠের ধুয়া কিংবা ধুপ গ্রহণ করবে না। কুলি করলে বা নাকে পানি দিলে সিয়াম ভঙ্গ হয় না, তবে গড়গড়া করবে না বা নাকের খুব ভিতরে পানি দেবে না, বা নাকে পানি দিয়ে উপরে টান দেবে না। মিসওয়াক বা ব্রাশ করলে সিয়ামের কোন ক্ষতি হয় না। সিয়াম অবস্থায় দিনের যে কোন সময় মেস ওয়াক কিংবা ব্রাশ করতে দোষ নেই। এমনিভাবে দাঁতের মাজন বা টুথপেস্ট ব্যবহার করলে সিয়ামের কোন ক্ষতি হয় না তবে তা যেন গলার ভিতরে প্রবেশ না করে তার প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। ‘সিয়াম অবস্থায় দুপুরের পর মেস ওয়াক করা উচিত নয়’ বলে যে কথা প্রচলিত আছে তার কোন ভিত্তি নেই। গরম থেকে বাঁচতে পানি গায়ে দেয়া বা ভিজা কাপড় গায়ে জড়াতে কোন দোষ নেই। এতে সিয়ামের কোন ক্ষতি হয় না।
রমজান মাসের শেষ দশকের বিশেষ ফযীলত রয়েছে এবং আছে বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য। এগুলো হল :
(১) এ দশ দিনের মাঝে রয়েছে লাইলাতুল কদর নামের একটি রাত। যা হাজার মাস থেকেও শ্রেষ্ঠ। যে এ রাতে ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে ইবাদত-বন্দেগী করবে তার অতীতের পাপগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে।
(২) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ রাতে ইবাদত-বন্দেগীতে বেশি সময় ও শ্রম দিতেন, যা অন্য কোন রাতে দেখা যেত না। যেমন সহীহ মুসলিমে আয়েশা রা. বর্ণিত হাদীসে এসেছে যে, তিনি এ রাতে কুরআন তিলাওয়াত, যিকির, সালাত ও দোয়ার মাধ্যমে জাগ্রত থাকতেন এরপর সাহরী গ্রহণ করতেন।
(৩) রমজানের শেষ দশক আসলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরনের লুঙ্গি শক্ত করে বেঁধে নিতেন। রাত্রি জাগরণ করতেন এবং পরিবারের সকলকে জাগিয়ে দিতেন। যেমন বুখারী ও মুসলিমে আয়েশা রা. বর্ণিত হাদীসে এসেছে। তিনি এ দশদিনের রাতে মোটেই নিদ্রা যেতেন না। পরিবারের সকলকে তিনি এ রাতে ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য জাগিয়ে দিতেন। ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লুঙ্গি শক্ত করে নিতেন’ কথাটির অর্থ হল তিনি এ দিনগুলোতে স্ত্রীদের থেকে আলাদা হয়ে যেতেন।
(৪) এ দশদিনের একটি বৈশিষ্ট্য হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ শেষ দশদিনে মসজিদে এতেকাফ করতেন। প্রয়োজন ব্যতীত তিনি মসজিদ থেকে বের হতেন না।
(১) এ দশ দিনের মাঝে রয়েছে লাইলাতুল কদর নামের একটি রাত। যা হাজার মাস থেকেও শ্রেষ্ঠ। যে এ রাতে ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে ইবাদত-বন্দেগী করবে তার অতীতের পাপগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে।
(২) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ রাতে ইবাদত-বন্দেগীতে বেশি সময় ও শ্রম দিতেন, যা অন্য কোন রাতে দেখা যেত না। যেমন সহীহ মুসলিমে আয়েশা রা. বর্ণিত হাদীসে এসেছে যে, তিনি এ রাতে কুরআন তিলাওয়াত, যিকির, সালাত ও দোয়ার মাধ্যমে জাগ্রত থাকতেন এরপর সাহরী গ্রহণ করতেন।
(৩) রমজানের শেষ দশক আসলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরনের লুঙ্গি শক্ত করে বেঁধে নিতেন। রাত্রি জাগরণ করতেন এবং পরিবারের সকলকে জাগিয়ে দিতেন। যেমন বুখারী ও মুসলিমে আয়েশা রা. বর্ণিত হাদীসে এসেছে। তিনি এ দশদিনের রাতে মোটেই নিদ্রা যেতেন না। পরিবারের সকলকে তিনি এ রাতে ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য জাগিয়ে দিতেন। ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লুঙ্গি শক্ত করে নিতেন’ কথাটির অর্থ হল তিনি এ দিনগুলোতে স্ত্রীদের থেকে আলাদা হয়ে যেতেন।
(৪) এ দশদিনের একটি বৈশিষ্ট্য হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ শেষ দশদিনে মসজিদে এতেকাফ করতেন। প্রয়োজন ব্যতীত তিনি মসজিদ থেকে বের হতেন না।
আল্লাহ রাববুল আলামীন এ রাতকে সকল রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দিয়েছেন। তিনি তার কালামে এ রাতকে প্রশংসার সাথে উল্লেখ করেছেন। তিনি তাঁর কালাম সম্পর্কে বলতে যেয়ে এরশাদ করেন :—
(আরবি)
‘আমি তো ইহা অবতীর্ণ করেছি এক বরকতময় রজনীতে। আমি তো সতর্ককারী। এ রজনীতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরকৃত হয়।’ [সূরা আদ-দুখান: ৩-৪]
বরকতময় রজনী হল লাইলাতুল কদর। আল্লাহ তাআলা একে বরকতময় বলে অভিহিত করেছেন। কারণ এ রাতে রয়েছে যেমন বরকত তেমনি কল্যাণ ও তাৎপর্য। বরকতের প্রধান কারণ হল এ রাতে আল-কুরআন নাযিল হয়েছে। এ রাতে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়-সিদ্ধান্ত লওহে মাহফুজ থেকে ফেরেশতাদের হাতে অর্পণ করা হয় বাস্তবায়নের জন্য। এ রাতের অপর একটি বৈশিষ্ট্য হল আল্লাহ তাআলা এ রাত সম্পর্কে একটি পূর্ণ সূরা অবতীর্ণ করেছেন। যা কিয়ামত পর্যন্ত পঠিত হতে থাকবে।
(আরবি)
‘নিশ্চয় আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি এক মহিমান্বিত রজনীতে। আর মহিমান্বিত রজনী সম্পর্কে তুমি কী জান? মহিমান্বিত রজনী সহস্র মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতেই ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি, সে রজনী উষার আবির্ভাব পর্যন্ত।’ [সূরা আল-কদর]
এ সূরাতে যে সকল বিষয় জানা গেল তা হল:—
(১) এ রাত এমন এক রজনী যাতে মানবজাতির হিদায়াতের আলোকবর্তিকা মহা গ্রন্থ আল-কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে।
(২) এ রজনী হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। অর্থাৎ তিরাশি বছরের চেয়েও এর মূল্য বেশি।
(৩) এ রাতে ফেরেশতাগণ রহমত, বরকত ও কল্যাণ নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করে থাকে।
(৪) এ রজনী শান্তির রজনী। আল্লাহর বান্দারা এ রাতে জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে শান্তি অর্জন করে থাকে।
(৫) সময়ের প্রতি গুরুত্ব দেয়া। এ আয়াতগুলোতে অল্প সময়ে বেশি কাজ করার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হল। যত সময় তত বেশি কাজ করতে হবে। সময় নষ্ট করা চলবে না।
(৬) গুনাহ ও পাপ থেকে ক্ষমা লাভ। এ রাতের এই ফযীলত সম্পর্কে বুখারী ও মুসলিম বর্ণিত হাদীসে এসেছে—
إن النبي صلى الله عليه وسلم قال : من قام ليلة القدر إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه . البخاري :১২৬৬ ومسلم :৩৪
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘যে লাইলাতুল কদরে ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে সালাত আদায় ও ইবাদত-বন্দেগী করবে তার অতীতের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।’ [বুখারী : ১২৬৬, মুসলিম : ৩৪]
(আরবি)
‘আমি তো ইহা অবতীর্ণ করেছি এক বরকতময় রজনীতে। আমি তো সতর্ককারী। এ রজনীতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরকৃত হয়।’ [সূরা আদ-দুখান: ৩-৪]
বরকতময় রজনী হল লাইলাতুল কদর। আল্লাহ তাআলা একে বরকতময় বলে অভিহিত করেছেন। কারণ এ রাতে রয়েছে যেমন বরকত তেমনি কল্যাণ ও তাৎপর্য। বরকতের প্রধান কারণ হল এ রাতে আল-কুরআন নাযিল হয়েছে। এ রাতে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়-সিদ্ধান্ত লওহে মাহফুজ থেকে ফেরেশতাদের হাতে অর্পণ করা হয় বাস্তবায়নের জন্য। এ রাতের অপর একটি বৈশিষ্ট্য হল আল্লাহ তাআলা এ রাত সম্পর্কে একটি পূর্ণ সূরা অবতীর্ণ করেছেন। যা কিয়ামত পর্যন্ত পঠিত হতে থাকবে।
(আরবি)
‘নিশ্চয় আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি এক মহিমান্বিত রজনীতে। আর মহিমান্বিত রজনী সম্পর্কে তুমি কী জান? মহিমান্বিত রজনী সহস্র মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতেই ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি, সে রজনী উষার আবির্ভাব পর্যন্ত।’ [সূরা আল-কদর]
এ সূরাতে যে সকল বিষয় জানা গেল তা হল:—
(১) এ রাত এমন এক রজনী যাতে মানবজাতির হিদায়াতের আলোকবর্তিকা মহা গ্রন্থ আল-কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে।
(২) এ রজনী হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। অর্থাৎ তিরাশি বছরের চেয়েও এর মূল্য বেশি।
(৩) এ রাতে ফেরেশতাগণ রহমত, বরকত ও কল্যাণ নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করে থাকে।
(৪) এ রজনী শান্তির রজনী। আল্লাহর বান্দারা এ রাতে জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে শান্তি অর্জন করে থাকে।
(৫) সময়ের প্রতি গুরুত্ব দেয়া। এ আয়াতগুলোতে অল্প সময়ে বেশি কাজ করার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হল। যত সময় তত বেশি কাজ করতে হবে। সময় নষ্ট করা চলবে না।
(৬) গুনাহ ও পাপ থেকে ক্ষমা লাভ। এ রাতের এই ফযীলত সম্পর্কে বুখারী ও মুসলিম বর্ণিত হাদীসে এসেছে—
إن النبي صلى الله عليه وسلم قال : من قام ليلة القدر إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه . البخاري :১২৬৬ ومسلم :৩৪
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘যে লাইলাতুল কদরে ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে সালাত আদায় ও ইবাদত-বন্দেগী করবে তার অতীতের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।’ [বুখারী : ১২৬৬, মুসলিম : ৩৪]
আল-কোরআনে নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি লাইলাতুল কদর কোন রাত। তবে কুরআনের ভাষ্য হল লাইলাতুল কদর রমজান মাসে। কিয়ামত পর্যন্ত রমজান মাসে লাইলাতুল কদর অব্যাহত থাকবে। এবং এ রজনী রমজানের শেষ দশকে হবে বলে সহীহ হাদীসে এসেছে। এবং তা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে হাদীসে এসেছে।
تحروا ليلة القدر في العشر الأواخر من رمضان . البخاري :১৮৭৪
‘তোমরা রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর অন্বেষণ কর।’ [বুখারী : ১৮৭৪]
এবং রমজানের শেষ সাত দিনে লাইলাতুল কদর থাকার সম্ভাবনা অধিকতর। যেমন হাদীসে এসেছে
... فمن كان متحريا بها فليتحرها في السبع الأواخر . البخاري :১৮৭৪, مسلم :১৯৮
‘যে লাইলাতুল কদর অন্বেষণ করতে চায় সে যেন শেষ সাত দিনে অন্বেষণ করে।’ [বুখারী : ১৮৭৩, মুসলিম : ১৯৮]
অধিকতর সম্ভাবনার দিক দিয়ে প্রথম হল রমজান মাসের সাতাশ তারিখ। দ্বিতীয় হল পঁচিশ তারিখ। তৃতীয় হল উনত্রিশ তারিখ। চতুর্থ হল একুশ তারিখ। পঞ্চম হল তেইশ তারিখ। আল্লাহ রাববুল আলামীন এ রাতকে গোপন রেখেছেন আমাদের উপর রহম করে। তিনি দেখতে চান এর বরকত ও ফযীলত লাভের জন্য কে কত প্রচেষ্টা চালাতে পারে।
লাইলাতুল কদরে আমাদের করণীয় হল বেশি করে দোয়া করা। আয়েশা রা. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করলেন, লাইলাতুল কদরে আমি কি দোয়া করতে পারি? তিনি বললেন, বলবে—
اَللّهُم إِنَّكَ عَفُوٌّ تٌحِبُّ العَفْوَ فَاعْفُ عَنِّيْ . ابن ماجه :৩৯৮২
‘হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল। ক্ষমাকে ভালোবাসেন, অতএব আমাকে ক্ষমা করুন।’ [ইবনে মাজাহ : ৩৯৮২]
تحروا ليلة القدر في العشر الأواخر من رمضان . البخاري :১৮৭৪
‘তোমরা রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর অন্বেষণ কর।’ [বুখারী : ১৮৭৪]
এবং রমজানের শেষ সাত দিনে লাইলাতুল কদর থাকার সম্ভাবনা অধিকতর। যেমন হাদীসে এসেছে
... فمن كان متحريا بها فليتحرها في السبع الأواخر . البخاري :১৮৭৪, مسلم :১৯৮
‘যে লাইলাতুল কদর অন্বেষণ করতে চায় সে যেন শেষ সাত দিনে অন্বেষণ করে।’ [বুখারী : ১৮৭৩, মুসলিম : ১৯৮]
অধিকতর সম্ভাবনার দিক দিয়ে প্রথম হল রমজান মাসের সাতাশ তারিখ। দ্বিতীয় হল পঁচিশ তারিখ। তৃতীয় হল উনত্রিশ তারিখ। চতুর্থ হল একুশ তারিখ। পঞ্চম হল তেইশ তারিখ। আল্লাহ রাববুল আলামীন এ রাতকে গোপন রেখেছেন আমাদের উপর রহম করে। তিনি দেখতে চান এর বরকত ও ফযীলত লাভের জন্য কে কত প্রচেষ্টা চালাতে পারে।
লাইলাতুল কদরে আমাদের করণীয় হল বেশি করে দোয়া করা। আয়েশা রা. নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করলেন, লাইলাতুল কদরে আমি কি দোয়া করতে পারি? তিনি বললেন, বলবে—
اَللّهُم إِنَّكَ عَفُوٌّ تٌحِبُّ العَفْوَ فَاعْفُ عَنِّيْ . ابن ماجه :৩৯৮২
‘হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল। ক্ষমাকে ভালোবাসেন, অতএব আমাকে ক্ষমা করুন।’ [ইবনে মাজাহ : ৩৯৮২]
এতেকাফ একটি মহান ইবাদত, মদিনায় অবস্থানকালীন সময়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি বছরই এতেকাফ পালন করেছেন। দাওয়াত, তরবিয়ত, শিক্ষা এবং জিহাদে ব্যস্ত থাকা সত্ত্বেও রমজানে তিনি এতেকাফ ছাড়েননি। এতেকাফ ঈমানী তরবিয়তের একটি পাঠশালা, এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হিদায়াতি আলোর একটি প্রতীক। এতেকাফরত অবস্থায় বান্দা নিজেকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দুনিয়ার অন্যান্য সকল বিষয় থেকে আলাদা করে নেয়। ঐকান্তিকভাবে মশগুল হয়ে পড়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের নিরন্তর সাধনায়। এতেকাফ ঈমান বৃদ্ধির একটি মূখ্য সুযোগ। সকলের উচিত এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের ঈমানী চেতনাকে প্রাণিত করে তোলা ও উন্নততর পর্যায়ে পৌছেঁ দেয়ার চেষ্টা করা।
আল-কুরআনুল কারিমে বিভিন্নভাবে এতেকাফ সম্পর্কে বর্ণনা এসেছে, ইবরাহীম আ. ও ইসমাইল আ. এর কথা উল্লেখ করে এরশাদ হয়েছে :
(আরবি)
‘এবং আমি ইবরাহীম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, এতেকাফকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো।’ [সূরা বাকারা: ১২৫]
এতেকাফ অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে কি আচরণ হবে তা বলতে গিয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(আরবি)
‘আর তোমরা মসজিদে এতেকাফ কালে স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করো না।’ [সূরা বাকারা : ১৮৭]
ইবরাহীম আ. তাঁর পিতা এবং জাতিকে লক্ষ্য করে মূর্তির ভৎর্সনা করতে যেয়ে যা বলেছিলেন, আল্লাহ তা‘আলা তা উল্লেখ করে বলেন:
(আরবি)
‘যখন তিনি তাঁর পিতা ও তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন: ‘এই মূর্তিগুলো কি, যাদের পূজারি (এতেকাফকারী) হয়ে তোমরা বসে আছ’? [সূরা আম্বিয়া : ৫২]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অসংখ্য হাদীস এতেকাফ সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে, তার মধ্য হতে ফযীলত সম্পর্কিত কিছু হাদীস নিম্নে উল্লেখ করা হল:
عن عائشة رضي الله عنها قالت : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يعتكف العشر الأواخر حتى توفاه الله، ثم أزواجه من بعده . البخاري :১৮৮৬ و مسلم :২০০৬
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: ‘রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষের দশকে এতেকাফ করেছেন, ইন্তেকাল পর্যন্ত। এরপর তাঁর স্ত্রী গণ এতেকাফ করেছেন।’ [বুখারি : ১৮৬৮, মুসলিম : ২০০৬]
عن عائشة رضي الله عنها قالت : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يعتكف في كل رمضان . البخاري : ২০৪১
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: ‘রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যেক রমজানে এতেকাফ করতেন।’ [বুখারি ২০৪১]
অন্য এক হাদীসে এসেছে—
إني اعتكفت العشر الأول ألتمس هذه الليلة، ثم اعتكفت العشر الأوسط، ثم أُتيت فقيل لي إنها في العشر الأواخر فمن أحب منكم أن يعتكف فليعتكف، فاعتكف الناس معه، قال : وإني أُريتها ليلة وتر وأني أسجد صبيحتها في طين وماء، فأصبح من ليلة إحدى وعشرين وقد قام إلى الصبح، فمطرت السماء فوكف المسجد، فأبصرت الطين والماء، فخرج حين فرغ من صلاة الصبح وجبينه وروثة أنفه فيهما الطين والماء، وإذا هي ليلة إحدى وعشرين . مسلم :১৯৯৪
আমি (প্রথমে) এ রাতের সন্ধানে প্রথম দশে এতেকাফ পালন করি। অত:পর এতেকাফ পালন করি মাঝের দশে। পরবর্তীতে ওহির মাধ্যমে আমাকে জানানো হয় যে, এ রাত শেষ দশে রয়েছে। সুতরাং তোমাদের মাঝে যে (এ দশে) এতেকাফ পালনে আগ্রহী, সে যেন তা পালন করে। লোকেরা তার সাথে এতেকাফ পালন করল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমাকে তা এক বেজোড় রাতে দেখানো হয়েছে এবং দেখানো হয়েছে যে, আমি সে ভোরে কাদা ও মাটিতে সেজদা দিচ্ছি। অত:পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একুশের রাতের ভোর যাপন করলেন, ফজর পর্যন্ত তিনি কিয়ামুল্লাইল করেছিলেন। তিনি ফজর আদায়ের জন্য দন্ডায়মান হয়েছিলেন। তখন আকাশ ছেপে বৃষ্টি নেমে এল, এবং মসজিদে চুঁইয়ে চুঁইয়ে পানি পড়ল। আমি কাদা ও পানি দেখতে পেলাম। ফজর সালাত শেষে যখন তিনি বের হলেন, তখন তার কপাল ও নাকের পাশে ছিল পানি ও কাদা। সেটি ছিল একুশের রাত। [মুসলিম : ১৯৯৪]
আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন :
كان النبي صلي الله عليه و سلم يعتكف في كل رمضان عشرة أيام، فلما كان العام الذي قبض فيه اعتكف عشرين يوماً . البخاري : ১৯০৩
‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রমজানে দশ দিন এতেকাফ করতেন, তবে যে বছর তিনি পরলোকগত হন, সে বছর তিনি বিশ দিন এতেকাফে কাটান।’ [বুখারী : ১৯০৩]
আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত হাদীসে উভয়টির উল্লেখ পাওয়া যায়। তিনি বলেন —
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : كان النبي صلى الله عليه وسلم يعتكف في كل رمضان عشرة أيام فلما كان العام الذي قبض فيه اعتكف عشرين يوما . البخاري : ১৯০৩
আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রমজানের শেষ দশদিন এতেকাফ করতেন। তবে যে বছর পরলোকগত হন তিনি বিশ দিন এতেকাফ করেছেন।’ [বুখারী : ১৯০৩]
عن عائشة رضي الله عنها أن النبي صلى الله عليه وسلم اعتكف معه بعض نسائه وهي مستحاضة ترى الدم فربما وضعت الطست تحتها من الدم ) البخاري :২৯৮
আয়শা রা. বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে তাঁর জনৈকা স্ত্রীও এতেকাফ করলেন। তখন তিনি ছিলেন এস্তেহাজা অবস্থায়, রক্ত দেখছেন। রক্তের কারণে হয়তো তাঁর নীচে গামলা রাখা হচ্ছে। [বুখারী : ২৯৮] রাসূল বলেন—
إني اعتكفت العشر الأُوَل ألتمس هذه الليلة، ثم اعتكفت العشر الأوسط، ثم أُتيت فقيل لي : إنها في العشر الأواخر؛ فمن أحب منكم أن يعتكف فليعتكف؛ فاعتكف الناس معه . مسلم :১৯৯৪
‘আমি কদরের রাত্রির সন্ধানে প্রথম দশ দিন এতেকাফ করলাম। এরপর এতেকাফ করলাম মধ্যবর্তী দশদিন। অত:পর ওহি প্রেরণ করে আমাকে জানানো হল যে তা শেষ দশদিনে। সুতরাং তোমাদের যে এতেকাফ পছন্দ করবে, সে যেন এতেকাফ করে।’ ফলে, মানুষ তার সাথে এতেকাফ যাপন করল। [মুসলিম : ১৯৯৪]
আল-কুরআনুল কারিমে বিভিন্নভাবে এতেকাফ সম্পর্কে বর্ণনা এসেছে, ইবরাহীম আ. ও ইসমাইল আ. এর কথা উল্লেখ করে এরশাদ হয়েছে :
(আরবি)
‘এবং আমি ইবরাহীম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, এতেকাফকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো।’ [সূরা বাকারা: ১২৫]
এতেকাফ অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে কি আচরণ হবে তা বলতে গিয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(আরবি)
‘আর তোমরা মসজিদে এতেকাফ কালে স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করো না।’ [সূরা বাকারা : ১৮৭]
ইবরাহীম আ. তাঁর পিতা এবং জাতিকে লক্ষ্য করে মূর্তির ভৎর্সনা করতে যেয়ে যা বলেছিলেন, আল্লাহ তা‘আলা তা উল্লেখ করে বলেন:
(আরবি)
‘যখন তিনি তাঁর পিতা ও তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন: ‘এই মূর্তিগুলো কি, যাদের পূজারি (এতেকাফকারী) হয়ে তোমরা বসে আছ’? [সূরা আম্বিয়া : ৫২]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অসংখ্য হাদীস এতেকাফ সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে, তার মধ্য হতে ফযীলত সম্পর্কিত কিছু হাদীস নিম্নে উল্লেখ করা হল:
عن عائشة رضي الله عنها قالت : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يعتكف العشر الأواخر حتى توفاه الله، ثم أزواجه من بعده . البخاري :১৮৮৬ و مسلم :২০০৬
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: ‘রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষের দশকে এতেকাফ করেছেন, ইন্তেকাল পর্যন্ত। এরপর তাঁর স্ত্রী গণ এতেকাফ করেছেন।’ [বুখারি : ১৮৬৮, মুসলিম : ২০০৬]
عن عائشة رضي الله عنها قالت : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يعتكف في كل رمضان . البخاري : ২০৪১
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: ‘রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যেক রমজানে এতেকাফ করতেন।’ [বুখারি ২০৪১]
অন্য এক হাদীসে এসেছে—
إني اعتكفت العشر الأول ألتمس هذه الليلة، ثم اعتكفت العشر الأوسط، ثم أُتيت فقيل لي إنها في العشر الأواخر فمن أحب منكم أن يعتكف فليعتكف، فاعتكف الناس معه، قال : وإني أُريتها ليلة وتر وأني أسجد صبيحتها في طين وماء، فأصبح من ليلة إحدى وعشرين وقد قام إلى الصبح، فمطرت السماء فوكف المسجد، فأبصرت الطين والماء، فخرج حين فرغ من صلاة الصبح وجبينه وروثة أنفه فيهما الطين والماء، وإذا هي ليلة إحدى وعشرين . مسلم :১৯৯৪
আমি (প্রথমে) এ রাতের সন্ধানে প্রথম দশে এতেকাফ পালন করি। অত:পর এতেকাফ পালন করি মাঝের দশে। পরবর্তীতে ওহির মাধ্যমে আমাকে জানানো হয় যে, এ রাত শেষ দশে রয়েছে। সুতরাং তোমাদের মাঝে যে (এ দশে) এতেকাফ পালনে আগ্রহী, সে যেন তা পালন করে। লোকেরা তার সাথে এতেকাফ পালন করল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমাকে তা এক বেজোড় রাতে দেখানো হয়েছে এবং দেখানো হয়েছে যে, আমি সে ভোরে কাদা ও মাটিতে সেজদা দিচ্ছি। অত:পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একুশের রাতের ভোর যাপন করলেন, ফজর পর্যন্ত তিনি কিয়ামুল্লাইল করেছিলেন। তিনি ফজর আদায়ের জন্য দন্ডায়মান হয়েছিলেন। তখন আকাশ ছেপে বৃষ্টি নেমে এল, এবং মসজিদে চুঁইয়ে চুঁইয়ে পানি পড়ল। আমি কাদা ও পানি দেখতে পেলাম। ফজর সালাত শেষে যখন তিনি বের হলেন, তখন তার কপাল ও নাকের পাশে ছিল পানি ও কাদা। সেটি ছিল একুশের রাত। [মুসলিম : ১৯৯৪]
আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন :
كان النبي صلي الله عليه و سلم يعتكف في كل رمضان عشرة أيام، فلما كان العام الذي قبض فيه اعتكف عشرين يوماً . البخاري : ১৯০৩
‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রমজানে দশ দিন এতেকাফ করতেন, তবে যে বছর তিনি পরলোকগত হন, সে বছর তিনি বিশ দিন এতেকাফে কাটান।’ [বুখারী : ১৯০৩]
আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত হাদীসে উভয়টির উল্লেখ পাওয়া যায়। তিনি বলেন —
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : كان النبي صلى الله عليه وسلم يعتكف في كل رمضان عشرة أيام فلما كان العام الذي قبض فيه اعتكف عشرين يوما . البخاري : ১৯০৩
আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রমজানের শেষ দশদিন এতেকাফ করতেন। তবে যে বছর পরলোকগত হন তিনি বিশ দিন এতেকাফ করেছেন।’ [বুখারী : ১৯০৩]
عن عائشة رضي الله عنها أن النبي صلى الله عليه وسلم اعتكف معه بعض نسائه وهي مستحاضة ترى الدم فربما وضعت الطست تحتها من الدم ) البخاري :২৯৮
আয়শা রা. বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে তাঁর জনৈকা স্ত্রীও এতেকাফ করলেন। তখন তিনি ছিলেন এস্তেহাজা অবস্থায়, রক্ত দেখছেন। রক্তের কারণে হয়তো তাঁর নীচে গামলা রাখা হচ্ছে। [বুখারী : ২৯৮] রাসূল বলেন—
إني اعتكفت العشر الأُوَل ألتمس هذه الليلة، ثم اعتكفت العشر الأوسط، ثم أُتيت فقيل لي : إنها في العشر الأواخر؛ فمن أحب منكم أن يعتكف فليعتكف؛ فاعتكف الناس معه . مسلم :১৯৯৪
‘আমি কদরের রাত্রির সন্ধানে প্রথম দশ দিন এতেকাফ করলাম। এরপর এতেকাফ করলাম মধ্যবর্তী দশদিন। অত:পর ওহি প্রেরণ করে আমাকে জানানো হল যে তা শেষ দশদিনে। সুতরাং তোমাদের যে এতেকাফ পছন্দ করবে, সে যেন এতেকাফ করে।’ ফলে, মানুষ তার সাথে এতেকাফ যাপন করল। [মুসলিম : ১৯৯৪]
১- এতেকাফকারী এক নামাযের পর আর এক নামাযের জন্য অপেক্ষা করে থাকে, আর এ অপেক্ষার অনেক ফযীলত রয়েছে।
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
إن الملائكة تصلي على أحدكم ما دام في مصلاه ما لم يحدث : اللهم اغفر له، اللهم ارحمه لا يزال أحدكم في مصلاه ما دامت الصلاة تحبسه، لا يمنعه أن ينقلب إلي أهله إلا الصلاة . مسلم :৬১১
‘নিশ্চয় ফেরেশতারা তোমাদের একজনের জন্য দোয়া করতে থাকেন যতক্ষণ সে কথা না বলে, নামাযের স্থানে অবস্থান করে। তারা বলতে থাকে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিন, আল্লাহ তার প্রতি দয়া করুন, যতক্ষণ তোমাদের কেউ নামাযের স্থানে থাকবে, ও নামায তাকে আটকিয়ে রাখবে, তার পরিবারের নিকট যেতে নামায ছাড়া আর কিছু বিরত রাখবে না, ফেরেশতারা তার জন্য এভাবে দোয়া করতে থাকবে।’ [মুসলিম : ৬০১১]
২- এতেকাফকারী কদরের রাতের তালাশে থাকে, যে রাত অনির্দিষ্টভাবে রমজানের যে কোন রাত হতে পারে। এই রহস্যের কারণে আল্লাহ তা‘আলা সেটিকে বান্দাদের থেকে গোপন রেখেছেন, যেন তারা মাস জুড়ে তাকে তালাশ করতে থাকে।
৩- এতেকাফের ফলে আল্লাহ তা‘আলার সাথে সম্পর্ক দৃঢ় হয়, এবং আল্লাহ তা‘আলার জন্য মস্তক অবনত করার প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(আরবি)
অর্থাৎ: আমি মানুষ এবং জিন জাতিকে একমাত্র আমারই ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি। [সুরা আজ-জারিয়াত: ৫৬]
আর এ ইবাদতের বিবিধ প্রতিফলন ঘটে এতেকাফ অবস্থায়। কেননা এতেকাফ অবস্থায় একজন মানুষ নিজেকে পুরোপুরি আল্লাহর ইবাদতের সীমানায় বেঁধে নেয় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির কামনায় ব্যাকুল হয়ে পড়ে।
আল্লাহ তা‘আলাও তাঁর বান্দাদেরকে নিরাশ করেন না, বরং তিনি বান্দাদেরকে নিরাশ হতে নিষেধ করে দিয়ে বলেছেন:
(আরবি)
অর্থাৎ: বলুন, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের উপর জুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [সুরা যুমার : ৫৩]
(আরবি)
আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে- বস্ত্তত আমি রয়েছি সন্নিকটে। প্রার্থনাকারীর প্রার্থনা কবুল করি যখন সে প্রার্থনা করে। কাজেই তারা যেন আমার হুকুম মান্য করে এবং আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। সম্ভবত তারা পথ প্রাপ্ত হবে। [আল-বাকারা : ১৮৬]
৪- যখন কেউ মসজিদে অবস্থান করা পছন্দ করতে লাগে— যা সম্ভব প্রবৃত্তিকে অভ্যস্ত করানোর মাধ্যমে, কেননা প্রবৃত্তিকে যে বিষয়ে অভ্যস্ত করানো হবে সে বিষয়েই সে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে— মসজিদে অবস্থান করা পছন্দ হতে শুরু করলে মসজিদকে সে ভালোবাসবে, সেখানে নামায আদায়কে ভালোবাসবে। আর এ প্রক্রিয়ায় আল্লাহর সাথে তার সম্পর্ক মজবুত হবে। হৃদয়ে সৃষ্টি হবে নামাযের ভালোবাসা, এবং নামায আদায়ের মাধ্যমেই অনুভব করতে শুরু করবে হৃদয়ের প্রশান্তি। যে প্রশান্তির কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবে বলেছিলেন:
( أرحنا بها يا بلال، أرحنا بها يا بلال ) المعجم الكبير للطبراني :৬০৯০
‘নামাযের মাধ্যমে আমাদেরকে শান্ত করো হে বেলাল! নামাযের মাধ্যমে আমাদেরকে শান্ত করো হে বেলাল!’ [আল মাজমাউল কাবীর : ৬০৯০]
৫- মসজিদে এতেকাফের মাধ্যমে একমাত্র আল্লাহ তা’আলার উদ্দেশে নিজেকে আবদ্ধ করে নেওয়ার কারণে মুসলমানের অন্তরের কঠোরতা দূরীভূত হয়, কেননা কঠোরতা সৃষ্টি হয় দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা ও পার্থিবতায় নিজেকে আরোপিত করে রাখার কারণে। মসজিদে নিজেকে আবদ্ধ করে রাখার কারণে দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসায় ছেদ পড়ে এবং আত্মিক উন্নতির অভিজ্ঞতা অনুভূত হয়।
মসজিদে এতেকাফ করার কারণে ফেরেশতারা দোয়া করতে থাকে, ফলে এতেকাফকারী ব্যক্তির আত্মা নিম্নাবস্থার নাগপাশ কাটিয়ে ফেরেশতাদের স্তরের দিকে ধাবিত হয়। ফেরেশতাদের পর্যায় থেকেও বরং ঊর্ধ্বে ওঠার প্রয়াস পায়। কেননা ফেরেশতাদের প্রবৃত্তি নেই বিধায় প্রবৃত্তির ফাঁদে তারা পড়ে না। আর মানুষের প্রবৃত্তি থাকা সত্ত্বেও সব কিছু থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর জন্য একাগ্রচিত্ত হয়ে যায়।
৬- এতেকাফের মাধ্যমে অন্তরে প্রশান্তি আসে।
৭- বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াতের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
৮- ঐকান্তিকভাবে তওবা করার সুযোগ লাভ হয়।
৯- তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত হওয়া যায়।
১০-সময়কে সুন্দরভাবে কাজে লাগানো যায়।
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
إن الملائكة تصلي على أحدكم ما دام في مصلاه ما لم يحدث : اللهم اغفر له، اللهم ارحمه لا يزال أحدكم في مصلاه ما دامت الصلاة تحبسه، لا يمنعه أن ينقلب إلي أهله إلا الصلاة . مسلم :৬১১
‘নিশ্চয় ফেরেশতারা তোমাদের একজনের জন্য দোয়া করতে থাকেন যতক্ষণ সে কথা না বলে, নামাযের স্থানে অবস্থান করে। তারা বলতে থাকে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিন, আল্লাহ তার প্রতি দয়া করুন, যতক্ষণ তোমাদের কেউ নামাযের স্থানে থাকবে, ও নামায তাকে আটকিয়ে রাখবে, তার পরিবারের নিকট যেতে নামায ছাড়া আর কিছু বিরত রাখবে না, ফেরেশতারা তার জন্য এভাবে দোয়া করতে থাকবে।’ [মুসলিম : ৬০১১]
২- এতেকাফকারী কদরের রাতের তালাশে থাকে, যে রাত অনির্দিষ্টভাবে রমজানের যে কোন রাত হতে পারে। এই রহস্যের কারণে আল্লাহ তা‘আলা সেটিকে বান্দাদের থেকে গোপন রেখেছেন, যেন তারা মাস জুড়ে তাকে তালাশ করতে থাকে।
৩- এতেকাফের ফলে আল্লাহ তা‘আলার সাথে সম্পর্ক দৃঢ় হয়, এবং আল্লাহ তা‘আলার জন্য মস্তক অবনত করার প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(আরবি)
অর্থাৎ: আমি মানুষ এবং জিন জাতিকে একমাত্র আমারই ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি। [সুরা আজ-জারিয়াত: ৫৬]
আর এ ইবাদতের বিবিধ প্রতিফলন ঘটে এতেকাফ অবস্থায়। কেননা এতেকাফ অবস্থায় একজন মানুষ নিজেকে পুরোপুরি আল্লাহর ইবাদতের সীমানায় বেঁধে নেয় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির কামনায় ব্যাকুল হয়ে পড়ে।
আল্লাহ তা‘আলাও তাঁর বান্দাদেরকে নিরাশ করেন না, বরং তিনি বান্দাদেরকে নিরাশ হতে নিষেধ করে দিয়ে বলেছেন:
(আরবি)
অর্থাৎ: বলুন, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের উপর জুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [সুরা যুমার : ৫৩]
(আরবি)
আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে- বস্ত্তত আমি রয়েছি সন্নিকটে। প্রার্থনাকারীর প্রার্থনা কবুল করি যখন সে প্রার্থনা করে। কাজেই তারা যেন আমার হুকুম মান্য করে এবং আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। সম্ভবত তারা পথ প্রাপ্ত হবে। [আল-বাকারা : ১৮৬]
৪- যখন কেউ মসজিদে অবস্থান করা পছন্দ করতে লাগে— যা সম্ভব প্রবৃত্তিকে অভ্যস্ত করানোর মাধ্যমে, কেননা প্রবৃত্তিকে যে বিষয়ে অভ্যস্ত করানো হবে সে বিষয়েই সে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে— মসজিদে অবস্থান করা পছন্দ হতে শুরু করলে মসজিদকে সে ভালোবাসবে, সেখানে নামায আদায়কে ভালোবাসবে। আর এ প্রক্রিয়ায় আল্লাহর সাথে তার সম্পর্ক মজবুত হবে। হৃদয়ে সৃষ্টি হবে নামাযের ভালোবাসা, এবং নামায আদায়ের মাধ্যমেই অনুভব করতে শুরু করবে হৃদয়ের প্রশান্তি। যে প্রশান্তির কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবে বলেছিলেন:
( أرحنا بها يا بلال، أرحنا بها يا بلال ) المعجم الكبير للطبراني :৬০৯০
‘নামাযের মাধ্যমে আমাদেরকে শান্ত করো হে বেলাল! নামাযের মাধ্যমে আমাদেরকে শান্ত করো হে বেলাল!’ [আল মাজমাউল কাবীর : ৬০৯০]
৫- মসজিদে এতেকাফের মাধ্যমে একমাত্র আল্লাহ তা’আলার উদ্দেশে নিজেকে আবদ্ধ করে নেওয়ার কারণে মুসলমানের অন্তরের কঠোরতা দূরীভূত হয়, কেননা কঠোরতা সৃষ্টি হয় দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা ও পার্থিবতায় নিজেকে আরোপিত করে রাখার কারণে। মসজিদে নিজেকে আবদ্ধ করে রাখার কারণে দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসায় ছেদ পড়ে এবং আত্মিক উন্নতির অভিজ্ঞতা অনুভূত হয়।
মসজিদে এতেকাফ করার কারণে ফেরেশতারা দোয়া করতে থাকে, ফলে এতেকাফকারী ব্যক্তির আত্মা নিম্নাবস্থার নাগপাশ কাটিয়ে ফেরেশতাদের স্তরের দিকে ধাবিত হয়। ফেরেশতাদের পর্যায় থেকেও বরং ঊর্ধ্বে ওঠার প্রয়াস পায়। কেননা ফেরেশতাদের প্রবৃত্তি নেই বিধায় প্রবৃত্তির ফাঁদে তারা পড়ে না। আর মানুষের প্রবৃত্তি থাকা সত্ত্বেও সব কিছু থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর জন্য একাগ্রচিত্ত হয়ে যায়।
৬- এতেকাফের মাধ্যমে অন্তরে প্রশান্তি আসে।
৭- বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াতের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
৮- ঐকান্তিকভাবে তওবা করার সুযোগ লাভ হয়।
৯- তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত হওয়া যায়।
১০-সময়কে সুন্দরভাবে কাজে লাগানো যায়।
আল্লাহর দিকে আকৃষ্ট হওয়া ও আল্লাহকেন্দ্রিক ব্যতিব্যস্ততা যখন অন্তর সংশোধিত ও ঈমানী দৃঢ়তা অর্জনের পথ, কেয়ামতের দিন তার মুক্তিও বরং এ পথেই। তাহলে এতেকাফ হল এমন একটি ইবাদত, যার মাধ্যমে বান্দা সমস্ত সৃষ্টি-জীব থেকে আলাদা হয়ে যথাসম্ভব প্রভুর সান্নিধ্যে চলে আসে। বান্দার কাজ হল তাঁকে স্মরণ করা, তাঁকে ভালোবাসা ও তাঁর ইবাদত করা। সর্বদা তার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা, এরই মাধ্যমে আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক দৃঢ় ও মজবুত হয়।
রোজার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদেরকে বাঁচিয়ে রাখেন অতিরিক্ত পানাহার ও যৌনাচারসহ পশু প্রবৃত্তির বিবিধ প্রয়োগ থেকে, অনুরূপভাবে তিনি এতেকাফের বিধানের মাধ্যমে তাদেরকে বাঁচিয়ে রাখেন অহেতুক কথা-বার্তা, মন্দ সংস্পর্শ, ও অধিক ঘুম হতে।
এতেকাফের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ অর্থে আল্লাহর জন্য নিবেদিত হয়ে যায়। নামায, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির ও দোয়া ইত্যাদির নির্বাধ চর্চার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের অফুরান সুযোগের আবহে সে নিজেকে পেয়ে যায়।
এতেকাফের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ অর্থে আল্লাহর জন্য নিবেদিত হয়ে যায়। নামায, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির ও দোয়া ইত্যাদির নির্বাধ চর্চার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের অফুরান সুযোগের আবহে সে নিজেকে পেয়ে যায়।
এতেকাফের মাধ্যমে শবে কদর খোঁজ করা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মূল উদ্দেশ্য ছিল। আবু সায়ীদ খুদরি রা. থেকে বর্ণিত হাদীস সে কথারই প্রমাণ বহন করে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
إني اعتكفت العشر الأول ألتمس هذه الليلة ثم اعتكفت العشر الأوسط ثم أتيت فقيل لي إنها في العشر الأواخر فمن أحب منكم أن يعتكف فليعتكف فاعتكف الناس معه . مسلم : ১১৬৭
‘আমি প্রথম দশকে এতেকাফ করেছি এই (কদর) রজনী খোঁজ করার উদ্দেশে। অতঃপর এতেকাফ করেছি মাঝের দশকে। অত:পর মাঝ-দশক পেরিয়ে এলাম। তারপর আমাকে বলা হল, (কদর) তো শেষ দশকে। তোমাদের মধ্যে যদি কেউ এতেকাফ করতে চায় সে যেন এতেকাফ করে।’ অত:পর লোকেরা তাঁর সাথে এতেকাফ করল। [মুসলিম : ১১৬৭]
إني اعتكفت العشر الأول ألتمس هذه الليلة ثم اعتكفت العشر الأوسط ثم أتيت فقيل لي إنها في العشر الأواخر فمن أحب منكم أن يعتكف فليعتكف فاعتكف الناس معه . مسلم : ১১৬৭
‘আমি প্রথম দশকে এতেকাফ করেছি এই (কদর) রজনী খোঁজ করার উদ্দেশে। অতঃপর এতেকাফ করেছি মাঝের দশকে। অত:পর মাঝ-দশক পেরিয়ে এলাম। তারপর আমাকে বলা হল, (কদর) তো শেষ দশকে। তোমাদের মধ্যে যদি কেউ এতেকাফ করতে চায় সে যেন এতেকাফ করে।’ অত:পর লোকেরা তাঁর সাথে এতেকাফ করল। [মুসলিম : ১১৬৭]
এতেকাফের মাধ্যমে বান্দার অন্তর মসজিদের সাথে জুড়ে যায়, মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার অভ্যাস গড়ে উঠে। হাদীস অনুযায়ী যে সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিজের ছায়ার নীচে ছায়া দান করবেন তাদের মধ্যে একজন হলেন ওই ব্যক্তি মসজিদের সাথে যার হৃদয় ছিল বাঁধা :
( ورجل قلبه معلق بالمساجد ) البخاري :৬২০
‘ এবং ঐ ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সঙ্গে বাঁধা।’ [বুখারী : ৬২০]
( ورجل قلبه معلق بالمساجد ) البخاري :৬২০
‘ এবং ঐ ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সঙ্গে বাঁধা।’ [বুখারী : ৬২০]
১০৩
৬- ইচ্ছাশক্তি প্রবল করা এবং প্রবৃত্তিকে খারাপ অভ্যাস ও কামনা-বাসনা থেকে বিরত রাখার অভ্যাস গড়ে তোলাকেননা এতেকাফ দ্বারা খারাপ অভ্যাস থেকে বিরত থাকার ট্রেন্ড গড়ে উঠে। এতেকাফ তার জন্য সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করে দেয় নিজেকে ধৈর্যের গুণে গুণান্বিত করতে ও নিজের ইচ্ছাশক্তিকে শানিত করতে। এতেকাফ থেকে একজন মানুষ সম্পূর্ণ নতুন মানুষ হয়ে বের হয়ে আসার সুযোগ পায়। যা পরকালে উপকারে আসবে না তা থেকে বিরত থাকার ফুরসত মেলে।
সবচেয়ে কম সময়ের এতেকাফ হল, শুদ্ধ মত অনুযায়ী, একদিন এক রাত। কেননা সাহাবায়ে কেরাম রাদি-আল্লাহু আনহুম নামায অথবা উপদেশ শ্রবণ করার অপেক্ষায় বা জ্ঞান অর্জন ইত্যাদির জন্য মসজিদে বসতেন, তবে তারা এ সবের জন্য এতেকাফের নিয়ত করেছেন বলে শোনা যায়নি।
সর্বোচ্চ কতদিনের জন্য এতেকাফ করা যায় এ ব্যাপারে ওলামাদের মতামত হল, এ ব্যাপারে নির্ধারিত কোন সীমা-রেখা নেই।
সর্বোচ্চ কতদিনের জন্য এতেকাফ করা যায় এ ব্যাপারে ওলামাদের মতামত হল, এ ব্যাপারে নির্ধারিত কোন সীমা-রেখা নেই।
এতেকাফকারী যদি রমজানের শেষ দশকে এতেকাফের নিয়ত করে তা হলে একুশতম রাত্রির সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্বে মসজিদে প্রবেশ করবে, কেননা তার উদ্দেশ্য কদরের রাত তালাশ করা, যা আশা করা হয়ে থাকে বেজোড় রাত্রগুলোতে, যার মধ্যে একুশের রাতও রয়েছে। ঈদের চাঁদ দেখা যাওয়ার পর সে এতেকাফ থেকে বের হতে পারবে।
এতেকাফের অনেকগুলো শর্ত রয়েছে । শর্ত গুলো নিম্নরূপ:
এতেকাফের জন্য কেউ কেউ রোজার শর্ত করেছেন, কিন্তু বিশুদ্ধ মত হল রোজা শর্ত নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত আছে যে তিনি কোন এক বছর শাওয়ালের প্রথম দশকে এতেকাফ করেছিলেন, আর এ দশকে ঈদের দিনও আছে। আর ঈদের দিনে তো রোজা রাখা নিষিদ্ধ।
* এতেকাফের জন্য মুসলমান হওয়া শর্ত। কেননা কাফেরের ইবাদত গ্রহণযোগ্য হয় না।
* এতেকাফকারীকে বোধশক্তিসম্পন্ন হতে হবে, কেননা নির্বোধ ব্যক্তির কাজের কোনো উদ্দেশ্য থাকে না, আর উদ্দেশ্য ব্যতীত কাজ শুদ্ধ হতে পারে না।
* ভালো-মন্দ পার্থক্য করার জ্ঞান থাকতে হবে, কেননা কম বয়সী, যে ভাল-মন্দের পার্থক্য করতে পারে না, তার নিয়তও শুদ্ধ হয় না।
*এতেকাফের নিয়ত করতে হবে, কেননা মসজিদে অবস্থান হয়তো এতেকাফের নিয়তে হবে অথবা অন্য কোনো নিয়তে। আর এ দুটোর মধ্যে পার্থক্য করার জন্য নিয়তের প্রয়োজন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো বলেছেন :
إنما الأعمال بالنيات ، وإنما لكل إمري ما نوى . البخاري :০১
‘প্রত্যেক কাজের নির্ভরতা নিয়তের উপর, যে যা নিয়ত করবে সে কেবল তাই পাবে।’ [বুখারী : ০১]
* এতেকাফ অবস্থায় মহিলাদের হায়েজ-নিফাস থেকে পবিত্র থাকা জরুরি, কেননা এ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান করা হারাম, অবশ্য এস্তেহাজা অবস্থায় এতেকাফ করা বৈধ। আয়েশা রা. আনহা বলেন :
اعتكفت مع رسول الله صلي الله عليه وسلم امرأة من أزواجه مستحاضة فكانت ترى الحمرة والصفرة فربما وضعنا الطست تحتها وهي تصلي . البخاري : ২০৩৭
‘রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে তাঁর স্ত্রী-গণের মধ্য হতে কেউ একজন এতেকাফ করেছিলেন এস্তেহাজা অবস্থায়। তিনি লাল ও হলুদ রঙ্গের স্রাব দেখতে পাচ্ছিলেন, আমরা কখনো তার নীচে পাত্র রেখে দিয়েছি নামাযের সময়।’ [বুখারী : ২০৩৭]
এস্তেহাজাগ্রস্তদের সাথে অন্যান্য ব্যাধি গ্রস্তদেরকে মেলানো যায়, যেমন যার বহুমূত্র রোগ আছে। তবে শর্ত হল মসজিদ যেন অপবিত্র না হয়।
* গোসল ফরজ হয় এমন ধরনের অপবিত্রতা থেকে পবিত্র হতে হবে। অপবিত্র লোকের মসজিদে অবস্থান করা হারাম। যদিও কোন কোন আলেম ওজু করার শর্তে মসজিদে অবস্থান বৈধ বলেছেন। আর যদি অপবিত্রতা, যৌন স্পর্শ অথবা স্বামী -স্ত্রীর মিলনের ফলে হয়, তবে সকলের মতে এতেকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে। আর যদি স্বপ্নদোষের কারণে হয়, তা হলে কারোর মতে এতেকাফ ভঙ্গ হবে না। যদি হস্ত মৈথুনের কারণে হয় তা হলে সঠিক মত অনুসারে এতেকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
এতেকাফের জন্য কেউ কেউ রোজার শর্ত করেছেন, কিন্তু বিশুদ্ধ মত হল রোজা শর্ত নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত আছে যে তিনি কোন এক বছর শাওয়ালের প্রথম দশকে এতেকাফ করেছিলেন, আর এ দশকে ঈদের দিনও আছে। আর ঈদের দিনে তো রোজা রাখা নিষিদ্ধ।
* এতেকাফের জন্য মুসলমান হওয়া শর্ত। কেননা কাফেরের ইবাদত গ্রহণযোগ্য হয় না।
* এতেকাফকারীকে বোধশক্তিসম্পন্ন হতে হবে, কেননা নির্বোধ ব্যক্তির কাজের কোনো উদ্দেশ্য থাকে না, আর উদ্দেশ্য ব্যতীত কাজ শুদ্ধ হতে পারে না।
* ভালো-মন্দ পার্থক্য করার জ্ঞান থাকতে হবে, কেননা কম বয়সী, যে ভাল-মন্দের পার্থক্য করতে পারে না, তার নিয়তও শুদ্ধ হয় না।
*এতেকাফের নিয়ত করতে হবে, কেননা মসজিদে অবস্থান হয়তো এতেকাফের নিয়তে হবে অথবা অন্য কোনো নিয়তে। আর এ দুটোর মধ্যে পার্থক্য করার জন্য নিয়তের প্রয়োজন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো বলেছেন :
إنما الأعمال بالنيات ، وإنما لكل إمري ما نوى . البخاري :০১
‘প্রত্যেক কাজের নির্ভরতা নিয়তের উপর, যে যা নিয়ত করবে সে কেবল তাই পাবে।’ [বুখারী : ০১]
* এতেকাফ অবস্থায় মহিলাদের হায়েজ-নিফাস থেকে পবিত্র থাকা জরুরি, কেননা এ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান করা হারাম, অবশ্য এস্তেহাজা অবস্থায় এতেকাফ করা বৈধ। আয়েশা রা. আনহা বলেন :
اعتكفت مع رسول الله صلي الله عليه وسلم امرأة من أزواجه مستحاضة فكانت ترى الحمرة والصفرة فربما وضعنا الطست تحتها وهي تصلي . البخاري : ২০৩৭
‘রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে তাঁর স্ত্রী-গণের মধ্য হতে কেউ একজন এতেকাফ করেছিলেন এস্তেহাজা অবস্থায়। তিনি লাল ও হলুদ রঙ্গের স্রাব দেখতে পাচ্ছিলেন, আমরা কখনো তার নীচে পাত্র রেখে দিয়েছি নামাযের সময়।’ [বুখারী : ২০৩৭]
এস্তেহাজাগ্রস্তদের সাথে অন্যান্য ব্যাধি গ্রস্তদেরকে মেলানো যায়, যেমন যার বহুমূত্র রোগ আছে। তবে শর্ত হল মসজিদ যেন অপবিত্র না হয়।
* গোসল ফরজ হয় এমন ধরনের অপবিত্রতা থেকে পবিত্র হতে হবে। অপবিত্র লোকের মসজিদে অবস্থান করা হারাম। যদিও কোন কোন আলেম ওজু করার শর্তে মসজিদে অবস্থান বৈধ বলেছেন। আর যদি অপবিত্রতা, যৌন স্পর্শ অথবা স্বামী -স্ত্রীর মিলনের ফলে হয়, তবে সকলের মতে এতেকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে। আর যদি স্বপ্নদোষের কারণে হয়, তা হলে কারোর মতে এতেকাফ ভঙ্গ হবে না। যদি হস্ত মৈথুনের কারণে হয় তা হলে সঠিক মত অনুসারে এতেকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
* এতেকাফকারী যদি বিনা প্রয়োজনে মসজিদ থেকে বের হয় তাহলে তার এতেকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
* আর এতেকাফের স্থান থেকে যদি মানবীয় প্রয়োজন মিটানোর জন্য বের হয় তাহলে এতেকাফ ভঙ্গ হবে না।
* মসজিদে থেকে পবিত্রতা অর্জন সম্ভব না হলে মসজিদ থেকে বের হওয়ার অনুমতি আছে।
* বাহক না থাকার কারণে এতেকাফকারীকে যদি পানাহারের প্রয়োজনে বাইরে যেতে হয় অথবা মসজিদে খাবার গ্রহণ করতে লজ্জা বোধ হয়, তবে এরূপ প্রয়োজনে বাইরে যাওয়ার অনুমতি আছে।
* যে মসজিদে এতেকাফে বসেছে সেখানে জুমার নামাযের ব্যবস্থা না থাকলে জুমার নামায আদায়ের প্রয়োজনে মসজিদ থেকে বের হওয়া ওয়াজিব, এবং আগে ভাগেই রওয়ানা হওয়া তার জন্য মুস্তাহাব ।
* ওজরের কারণে এতেকাফকারী মসজিদ থেকে বের হতে পারে। ছাফিয়্যা রা. থেকে বর্ণিত হাদীস এর প্রমাণ :
أنها جاءت إلى رسول الله صلي الله عليه وسلم تزوره في اعتكافه في المسجد في العشر الأواخر من رمضان فتحدثت عنده ساعة ثم قامت تنقلب فقام النبي صلي الله عليه وسلم معها يقلبها . البخاري :১৮৯৪
ছাফিয়্যা রা. রমজানের শেষ দশকে এতেকাফস্থলে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে সাক্ষাৎ করতে এলেন। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে কতক্ষণ কথা বললেন, অতঃপর যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ালেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বিদায় দিতে উঠে দাঁড়ালেন। [বুখারী : ১৮৯৪]
* কোন নেকির কাজ করার জন্য এতেকাফকারীর মসজিদ থেকে বের হওয়া বৈধ নয়। যেমন রোগী দেখতে যাওয়া, জানাযায় উপস্থিত হওয়া ইত্যাদি। এ মর্মে আয়শা রা. বলেন:
السنة علي المعتكف أن لا يعود مريضا ولا يشهد جنازة ولا يمس إمرأة ولا يباشرها ولا يخرج لحاجة إلا لما لا بد منه أبو داود : ২১১৫
‘এতেকাফকারীর জন্য সুন্নত হল, সে রোগী দেখতে যাবে না, জানাযায় উপস্থিত হবে না, স্ত্রীকে স্পর্শ করবে না ও তার সাথে কামাচার থেকে বিরত থাকবে এবং অতি প্রয়োজন ব্যতীত মসজিদ থেকে বের হবে না।’ [আবু দাউদ : ২১১৫]
* এতেকাফ-বিরুদ্ধ কোন কাজের জন্য এতেকাফকারীর মসজিদ থেকে বের হওয়া বৈধ নয়, যেমন ক্রয়-বিক্রয়, স্বামী-স্ত্রীর মিলন ইত্যাদি।
* আর এতেকাফের স্থান থেকে যদি মানবীয় প্রয়োজন মিটানোর জন্য বের হয় তাহলে এতেকাফ ভঙ্গ হবে না।
* মসজিদে থেকে পবিত্রতা অর্জন সম্ভব না হলে মসজিদ থেকে বের হওয়ার অনুমতি আছে।
* বাহক না থাকার কারণে এতেকাফকারীকে যদি পানাহারের প্রয়োজনে বাইরে যেতে হয় অথবা মসজিদে খাবার গ্রহণ করতে লজ্জা বোধ হয়, তবে এরূপ প্রয়োজনে বাইরে যাওয়ার অনুমতি আছে।
* যে মসজিদে এতেকাফে বসেছে সেখানে জুমার নামাযের ব্যবস্থা না থাকলে জুমার নামায আদায়ের প্রয়োজনে মসজিদ থেকে বের হওয়া ওয়াজিব, এবং আগে ভাগেই রওয়ানা হওয়া তার জন্য মুস্তাহাব ।
* ওজরের কারণে এতেকাফকারী মসজিদ থেকে বের হতে পারে। ছাফিয়্যা রা. থেকে বর্ণিত হাদীস এর প্রমাণ :
أنها جاءت إلى رسول الله صلي الله عليه وسلم تزوره في اعتكافه في المسجد في العشر الأواخر من رمضان فتحدثت عنده ساعة ثم قامت تنقلب فقام النبي صلي الله عليه وسلم معها يقلبها . البخاري :১৮৯৪
ছাফিয়্যা রা. রমজানের শেষ দশকে এতেকাফস্থলে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে সাক্ষাৎ করতে এলেন। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে কতক্ষণ কথা বললেন, অতঃপর যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ালেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বিদায় দিতে উঠে দাঁড়ালেন। [বুখারী : ১৮৯৪]
* কোন নেকির কাজ করার জন্য এতেকাফকারীর মসজিদ থেকে বের হওয়া বৈধ নয়। যেমন রোগী দেখতে যাওয়া, জানাযায় উপস্থিত হওয়া ইত্যাদি। এ মর্মে আয়শা রা. বলেন:
السنة علي المعتكف أن لا يعود مريضا ولا يشهد جنازة ولا يمس إمرأة ولا يباشرها ولا يخرج لحاجة إلا لما لا بد منه أبو داود : ২১১৫
‘এতেকাফকারীর জন্য সুন্নত হল, সে রোগী দেখতে যাবে না, জানাযায় উপস্থিত হবে না, স্ত্রীকে স্পর্শ করবে না ও তার সাথে কামাচার থেকে বিরত থাকবে এবং অতি প্রয়োজন ব্যতীত মসজিদ থেকে বের হবে না।’ [আবু দাউদ : ২১১৫]
* এতেকাফ-বিরুদ্ধ কোন কাজের জন্য এতেকাফকারীর মসজিদ থেকে বের হওয়া বৈধ নয়, যেমন ক্রয়-বিক্রয়, স্বামী-স্ত্রীর মিলন ইত্যাদি।
* ইবাদত আদায়, যেমন নামায, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির ও দোয়া ইত্যাদি। কেননা এতেকাফের উদ্দেশ্য হল আল্লাহ তা‘আলার সমীপে অন্তরের একাগ্রতা নিবেদন করা এবং তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হওয়া যা উপরোক্ত ইবাদত আদায় ছাড়া সম্ভব নয়।
অনুরূপভাবে যেসব ইবাদতের প্রভাব অন্যদের পর্যন্ত পৌঁছায় যেমন সালামের উত্তর দেওয়া, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে বারণ, প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, পথ দেখানো, ইলম শিক্ষা দেওয়া, কুরআন পড়ানো ইত্যাদিও করতে পারবে। কিন্তু শর্ত হল এগুলো যেন এত বেশি না হয় যে এতেকাফের মূল উদ্দেশ্যই ছুটে যায়।
* এতেকাফকারীর জন্য মুস্তাহাব হল, তার এতেকাফের স্থানে কোন কিছু দ্বারা পর্দা করে নেয়া। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তুর্কি তাবুর ভিতরে এতেকাফ করেছেন যার দরজায় ছিল চাটাই।
اعتكف في قبة تركية على سدتها حصير ( مسلم :১৯৯৪)
* এতেকাফকারী তার প্রয়োজনীয় জিনিস-পত্র সঙ্গে নেবে যাতে নিজের প্রয়োজনে তাকে বার বার মসজিদের বাইরে যেতে না হয়। আবু সাইদ খুদরি রা. এর হাদীসে এসেছে , তিনি বলেন:
اعتكفنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم العشر الأوسط فلما كان صبيحة عشرين نقلنا متاعنا، فأتانا رسول الله صلي الله عليه وسلم فقال : من اعتكف فليرجع إلى معتكفه البخاري :১৮৯৯
অর্থাৎ: আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে রমজানের মাঝের দশকে এতেকাফ করলাম, যখন বিশ তারিখ সকাল হল আমরা আমাদের বিছানা-পত্র সরিয়ে নিলাম, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসে বললেন: ‘যে এতেকাফ করেছে সে তার এতেকাফের স্থানে ফিরে যাবে।’ [বুখারী : ১৮৯৯]
অনুরূপভাবে যেসব ইবাদতের প্রভাব অন্যদের পর্যন্ত পৌঁছায় যেমন সালামের উত্তর দেওয়া, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে বারণ, প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, পথ দেখানো, ইলম শিক্ষা দেওয়া, কুরআন পড়ানো ইত্যাদিও করতে পারবে। কিন্তু শর্ত হল এগুলো যেন এত বেশি না হয় যে এতেকাফের মূল উদ্দেশ্যই ছুটে যায়।
* এতেকাফকারীর জন্য মুস্তাহাব হল, তার এতেকাফের স্থানে কোন কিছু দ্বারা পর্দা করে নেয়া। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তুর্কি তাবুর ভিতরে এতেকাফ করেছেন যার দরজায় ছিল চাটাই।
اعتكف في قبة تركية على سدتها حصير ( مسلم :১৯৯৪)
* এতেকাফকারী তার প্রয়োজনীয় জিনিস-পত্র সঙ্গে নেবে যাতে নিজের প্রয়োজনে তাকে বার বার মসজিদের বাইরে যেতে না হয়। আবু সাইদ খুদরি রা. এর হাদীসে এসেছে , তিনি বলেন:
اعتكفنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم العشر الأوسط فلما كان صبيحة عشرين نقلنا متاعنا، فأتانا رسول الله صلي الله عليه وسلم فقال : من اعتكف فليرجع إلى معتكفه البخاري :১৮৯৯
অর্থাৎ: আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে রমজানের মাঝের দশকে এতেকাফ করলাম, যখন বিশ তারিখ সকাল হল আমরা আমাদের বিছানা-পত্র সরিয়ে নিলাম, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসে বললেন: ‘যে এতেকাফ করেছে সে তার এতেকাফের স্থানে ফিরে যাবে।’ [বুখারী : ১৮৯৯]
* এতেকাফকারীর জন্য মসজিদে পানাহার ও ঘুমানোর অনুমতি আছে। এ ব্যাপারে সকল ইমামদের ঐক্যমত রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত। কেননা আল্লাহর প্রতি একাগ্রচিত্ত এবং একনিষ্ঠভাবে মনোনিবেশের জন্য কম খাওয়া কম ঘুমানো সহায়ক বলে বিবেচিত।
* গোসল করা, চুল আঁচড়ানো, তেল ও সুগন্ধি ব্যবহার, ভাল পোশাক পরা, এ সবের অনুমতি আছে। আয়েশা রা. এর হাদীসে এসেছে :
أنها كانت ترجل النبي صلي الله عليه وسلم وهي حائض وهو معتكف في المسجد وهي في حجرتها يناولها رأسه ) البخاري : ২০৪৬)
অর্থাৎ: তিনি মাসিক অবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাথার কেশ বিন্যাস করে দিতেন, যখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে এতেকাফরত অবস্থায় থাকতেন, আয়েশা রা. তার কক্ষে থাকা অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাথার নাগাল পেতেন। [বুখারী : ২০৪৬]
* এতেকাফকারীর পরিবার তার সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবে, কথা বলতে পারবে, কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্ত্রীগণ এতেকাফকালীন তার সাথে সাক্ষাৎ করতেন। কিন্তু সাক্ষাৎ দীর্ঘ না হওয়া বাঞ্ছনীয়।
* গোসল করা, চুল আঁচড়ানো, তেল ও সুগন্ধি ব্যবহার, ভাল পোশাক পরা, এ সবের অনুমতি আছে। আয়েশা রা. এর হাদীসে এসেছে :
أنها كانت ترجل النبي صلي الله عليه وسلم وهي حائض وهو معتكف في المسجد وهي في حجرتها يناولها رأسه ) البخاري : ২০৪৬)
অর্থাৎ: তিনি মাসিক অবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাথার কেশ বিন্যাস করে দিতেন, যখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে এতেকাফরত অবস্থায় থাকতেন, আয়েশা রা. তার কক্ষে থাকা অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাথার নাগাল পেতেন। [বুখারী : ২০৪৬]
* এতেকাফকারীর পরিবার তার সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবে, কথা বলতে পারবে, কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্ত্রীগণ এতেকাফকালীন তার সাথে সাক্ষাৎ করতেন। কিন্তু সাক্ষাৎ দীর্ঘ না হওয়া বাঞ্ছনীয়।
* ওজর ছাড়া এতেকাফকারী এমন কোন কাজ করবে না যা এতেকাফকে ভঙ্গ করে দেয়, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَلَا تُبْطِلُوا أَعْمَالَكُمْ
‘তোমরা তোমাদের কাজ সমূহকে নষ্ট করো না।’ [সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত ৩৩]
* ঐ সকল কাজ যা এতেকাফের উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে, যেমন বেশি কথা বলা, বেশি মেলামেশা করা, অধিক ঘুমানো, ইবাদতের সময়কে কাজে না লাগানো ইত্যাদি।
* এতেকাফকারী মসজিদে অবস্থানকালে ক্রয়-বিক্রয় করবে না, কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। [মুসনাদ আহমদ : ৬৯৯১]
نهى عن البيع والاشتراء في المسجد . المسند لأحمد : ৬৯৯১
এমনিভাবে যা ক্রয় বিক্রয়ের কাজ বলে বিবেচিত, যেমন বিভিন্ন ধরনের চুক্তিপত্র, ভাড়া, মুদারাবা, মুশারাকা, বন্ধক রাখা ইত্যাদি। কিন্তু যদি মসজিদের বাহিরে এমন ক্রয়-বিক্রয় হয়, যা ছাড়া এতেকাফকারীর সংসার চলে না তবে তা বৈধ বলে বিবেচিত হবে।
আনাস রা. এর হাদীসে এসেছে, যখন বেদুইন লোকটি মসজিদে প্রস্রাব করেছিল তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন:
إن هذه المساجد لا تصلح لشيئ من هذا البول ولا القذر إنما هي لذكر الله عز وجل والصلاة وقراءة القرآن . مسلم : ৪২৯
অর্থাৎ: মসজিদ প্রস্রাব, ময়লা-আবর্জনার উপযোগী নয়, বরং মসজিদ অবশ্যই আল্লাহর যিকির এবং নামায ও কুরআন তিলাওয়াতের জন্য। [মুসলিম : ৪২৯]
* এতেকাফ অবস্থায় যৌন স্পর্শ নিষেধ, এ ব্যাপারে সকল ওলামাদের ঐকমত্য রয়েছে। তবে অধিকাংশ ওলামাদের মতে বীর্য স্খলনের দ্বারাই কেবল এতেকাফ ভঙ্গ হয়।
وَلَا تُبْطِلُوا أَعْمَالَكُمْ
‘তোমরা তোমাদের কাজ সমূহকে নষ্ট করো না।’ [সূরা মুহাম্মাদ, আয়াত ৩৩]
* ঐ সকল কাজ যা এতেকাফের উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে, যেমন বেশি কথা বলা, বেশি মেলামেশা করা, অধিক ঘুমানো, ইবাদতের সময়কে কাজে না লাগানো ইত্যাদি।
* এতেকাফকারী মসজিদে অবস্থানকালে ক্রয়-বিক্রয় করবে না, কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। [মুসনাদ আহমদ : ৬৯৯১]
نهى عن البيع والاشتراء في المسجد . المسند لأحمد : ৬৯৯১
এমনিভাবে যা ক্রয় বিক্রয়ের কাজ বলে বিবেচিত, যেমন বিভিন্ন ধরনের চুক্তিপত্র, ভাড়া, মুদারাবা, মুশারাকা, বন্ধক রাখা ইত্যাদি। কিন্তু যদি মসজিদের বাহিরে এমন ক্রয়-বিক্রয় হয়, যা ছাড়া এতেকাফকারীর সংসার চলে না তবে তা বৈধ বলে বিবেচিত হবে।
আনাস রা. এর হাদীসে এসেছে, যখন বেদুইন লোকটি মসজিদে প্রস্রাব করেছিল তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন:
إن هذه المساجد لا تصلح لشيئ من هذا البول ولا القذر إنما هي لذكر الله عز وجل والصلاة وقراءة القرآن . مسلم : ৪২৯
অর্থাৎ: মসজিদ প্রস্রাব, ময়লা-আবর্জনার উপযোগী নয়, বরং মসজিদ অবশ্যই আল্লাহর যিকির এবং নামায ও কুরআন তিলাওয়াতের জন্য। [মুসলিম : ৪২৯]
* এতেকাফ অবস্থায় যৌন স্পর্শ নিষেধ, এ ব্যাপারে সকল ওলামাদের ঐকমত্য রয়েছে। তবে অধিকাংশ ওলামাদের মতে বীর্য স্খলনের দ্বারাই কেবল এতেকাফ ভঙ্গ হয়।
আমাদের প্রতি আল্লাহ রাববুল আলামীনের আরেকটি অনুগ্রহ যে তিনি আমাদের ইবাদত-বন্দেগীতে কোন ত্রুটি হলে তার ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা রেখেছেন। যেমন নফল নামায দ্বারা ফরজ নামাযের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা রেখেছেন। এমনি সিয়াম পালনে যে সকল ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়ে থাকে তার ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার জন্য সদকাতুল ফিতর আদায়ের বিধান দিয়েছেন। সাথে সাথে দরিদ্র ও অনাহারক্লিষ্ট মানুষেরা যেন ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে সে ব্যবস্থাও দিয়েছেন। কেউ যেন অর্থাভাবে ঈদের খুশি থেকে বঞ্চিত না থাকে সে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইসলামী সমাজকে এ বিধান দিয়েছেন। এ ফিতরা আদায়ের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে থাকে। তিনিই তো সিয়াম পূর্ণ করা ও রমজানের রাতে কিয়াম সহ অন্যান্য নেক আমল এবং কল্যাণকর কাজ করার তাওফীক দিয়েছেন।
হাদীসে এসেছে—
عن ابن عباس رضي الله عنهما قال : فرض رسول الله صلى الله عليه وسلم زكاة الفطر طهرة للصائم من اللغو والرفث وطعمة للمساكين، فمن أداها قبل الصلاة فهي مقبولـة، ومن أداها بعد الصلاة فهي صدقة من الصدقات . أبوداود :১৩৭১
‘ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সিয়াম পালনকারীর জন্য সদকাতুল ফিতর আদায় অপরিহার্য করে দিয়েছেন। যা সিয়াম পালনকারীর অনর্থক, অশ্লীল কথা ও কাজ পরিশুদ্ধকারী ও অভাবী মানুষের জন্য আহারের ব্যবস্থা হিসেবে প্রচলিত। যে ব্যক্তি ঈদের সালাতের পূর্বে এটা আদায় করবে তা সদকাতুল ফিতর হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে। আর যে ঈদের সালাতের পর আদায় করবে তা অপরাপর (নফল) সদকা হিসেবে গৃহিত।’ [আবু দাউদ : ১৩৭১]
অতএব সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা কিছু ওয়াজিব করেছেন তা পালন করা উম্মতের জন্য অপরিহার্য। আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন:—
(আরবি)
‘যে রাসূলের আনুগত্য করল সে তো আল্লাহর-ই আনুগত্য করল। এবং যে মুখ ফিরিয়ে নিল (জেনে রেখ) আমি তোমাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক করে পাঠাইনি।’ [সূরা নিসা : ৮০]
অতএব রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা নির্দেশ দিয়েছেন তা মূলত আল্লাহর-ই নির্দেশ। আল্লাহ বলেন:—
(আরবি)
‘তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং আনুগত্য কর রাসূলের।’ [সূরা নিসা: ৫৯]
عن ابن عباس رضي الله عنهما قال : فرض رسول الله صلى الله عليه وسلم زكاة الفطر طهرة للصائم من اللغو والرفث وطعمة للمساكين، فمن أداها قبل الصلاة فهي مقبولـة، ومن أداها بعد الصلاة فهي صدقة من الصدقات . أبوداود :১৩৭১
‘ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সিয়াম পালনকারীর জন্য সদকাতুল ফিতর আদায় অপরিহার্য করে দিয়েছেন। যা সিয়াম পালনকারীর অনর্থক, অশ্লীল কথা ও কাজ পরিশুদ্ধকারী ও অভাবী মানুষের জন্য আহারের ব্যবস্থা হিসেবে প্রচলিত। যে ব্যক্তি ঈদের সালাতের পূর্বে এটা আদায় করবে তা সদকাতুল ফিতর হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে। আর যে ঈদের সালাতের পর আদায় করবে তা অপরাপর (নফল) সদকা হিসেবে গৃহিত।’ [আবু দাউদ : ১৩৭১]
অতএব সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা কিছু ওয়াজিব করেছেন তা পালন করা উম্মতের জন্য অপরিহার্য। আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন:—
(আরবি)
‘যে রাসূলের আনুগত্য করল সে তো আল্লাহর-ই আনুগত্য করল। এবং যে মুখ ফিরিয়ে নিল (জেনে রেখ) আমি তোমাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক করে পাঠাইনি।’ [সূরা নিসা : ৮০]
অতএব রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা নির্দেশ দিয়েছেন তা মূলত আল্লাহর-ই নির্দেশ। আল্লাহ বলেন:—
(আরবি)
‘তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং আনুগত্য কর রাসূলের।’ [সূরা নিসা: ৫৯]
প্রত্যেক এমন মুসলমান ব্যক্তির উপর ওয়াজিব যারা ঈদের দিনে তার পরিবারের এক দিন এক রাতের খাবারের অতিরিক্ত যদি এক সা’ পরিমাণ খাদ্যের মালিক থাকে তবে তার উপর সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব। তবে ইমাম আবু হানীফা রহ.-এর মতে ঐ ব্যক্তির উপর সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব যে ঈদের দিন ভোরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ হিসেবে সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য বা সম-পরিমাণ সম্পদের মালিক। যার উপর সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব তিনি নিজের পক্ষ থেকে যেমন আদায় করবেন তেমনি নিজের পোষ্যদের পক্ষ থেকেও আদায় করবেন।
প্রধান খাদ্য হিসেবে যে সকল বস্ত্ত স্বীকৃত যেমন গম, যব, ভুট্টা, চাউল, খেজুর ইত্যাদি থেকে এক সা’ পরিমাণ দান করতে হবে। যেমন হাদীসে এসেছে—
عن ابن عمر رضي الله عنهما قال : فرض رسول الله صلى الله عليه وسلم زكاة الفطر من رمضان، صاعا من تمر أو صاعا من شعير . مسلم :১৬৩৫
ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন : ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের যাকাতুল ফিতর হিসেবে এক সা’ খেজুর অথবা এক সা’ গম আদায় অপরিহার্য করে দিয়েছেন।।’ [মুসলিম : ১৬৩৫]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমলের সা’-র হিসেবে এক সা’-তে ২ কেজি ৪০ গ্রাম হয়ে থাকে। এটা অধিকাংশ ইমামের মত। আর ইমাম আবু হানীফা রহ.-র মতে অর্ধ সা’ পরিমাণ আটা দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করা জায়েয। তবে ‘এক সা’ পরিমাণ আদায় করলে আদায় হবে না, অর্ধ সা’ দিতেই হবে’ এমন কথা কখনো কোন হানাফী ইমাম বলেননি। বরং যুক্তির দিক দিয়েও এটাই উত্তম যাতে মানুষের বিশেষ করে দরিদ্র অসহায়দের উপকার বেশি হয়। তাই এক সা’ পরিমাণ খাদ্য সদকাতুল ফিতর হিসেবে দান করা হানাফি মাজহাবের বিরোধী নয়, বরং উত্তম। কেননা অধিকাংশ সহীহ হাদীসে এক সা’ পরিমাণ আদায় করতে বলা হয়েছে।
তা ছাড়া হানাফী মাযহাবে যে অর্ধ সা’ এর কথা বরা হয়েছে, সেটি ইরাকী সা’ এর হিসাবে। ইরাকী সা’ এর হিসাবে অর্ধ সা’ তে এক কেজি সাত শত পঞ্চাশ গ্রাম হয়ে থাকে।
عن ابن عمر رضي الله عنهما قال : فرض رسول الله صلى الله عليه وسلم زكاة الفطر من رمضان، صاعا من تمر أو صاعا من شعير . مسلم :১৬৩৫
ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন : ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের যাকাতুল ফিতর হিসেবে এক সা’ খেজুর অথবা এক সা’ গম আদায় অপরিহার্য করে দিয়েছেন।।’ [মুসলিম : ১৬৩৫]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমলের সা’-র হিসেবে এক সা’-তে ২ কেজি ৪০ গ্রাম হয়ে থাকে। এটা অধিকাংশ ইমামের মত। আর ইমাম আবু হানীফা রহ.-র মতে অর্ধ সা’ পরিমাণ আটা দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করা জায়েয। তবে ‘এক সা’ পরিমাণ আদায় করলে আদায় হবে না, অর্ধ সা’ দিতেই হবে’ এমন কথা কখনো কোন হানাফী ইমাম বলেননি। বরং যুক্তির দিক দিয়েও এটাই উত্তম যাতে মানুষের বিশেষ করে দরিদ্র অসহায়দের উপকার বেশি হয়। তাই এক সা’ পরিমাণ খাদ্য সদকাতুল ফিতর হিসেবে দান করা হানাফি মাজহাবের বিরোধী নয়, বরং উত্তম। কেননা অধিকাংশ সহীহ হাদীসে এক সা’ পরিমাণ আদায় করতে বলা হয়েছে।
তা ছাড়া হানাফী মাযহাবে যে অর্ধ সা’ এর কথা বরা হয়েছে, সেটি ইরাকী সা’ এর হিসাবে। ইরাকী সা’ এর হিসাবে অর্ধ সা’ তে এক কেজি সাত শত পঞ্চাশ গ্রাম হয়ে থাকে।
সদকাতুল ফিতর আদায় করার দুটো সময় আছে। একটি হল উত্তম সময় অন্যটি হল বৈধ সময়। আদায় করার উত্তম সময় হল ঈদের দিন ঈদের সালাতের পূর্বে আদায় করা।
যেমন হাদীসে এসেছে—
عن ابن عمر رضي الله عنهما أن النبي صلى الله عليه وسلم أمر بزكاة الفطر قبل خروج الناس إلى الصلاة . مسلم :১৬৪৬
‘ইবনে উমার থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সদকাতুল ফিতর আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।’ [মুসলিম : ১৬৩৬]
সদকাতুল ফিতর আদায় করার সুযোগ দেয়ার জন্যই ঈদুল ফিতরের সালাত একটু বিলম্বে আদায় করা মুস্তাহাব। সদকাতুল ফিতর আদায় করার বৈধ সময় হল: যদি কেউ ঈদের দু একদিন পূর্বে সদকাতুল ফিতর আদায় করে তবে আদায় হয়ে যাবে। সহীহ বুখারীতে আছে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. এভাবে আদায় করতেন। তবে কোন সংগত কারণ ব্যতীত ঈদের সালাতের পরে আদায় করলে সদকাতুল ফিতর হিসেবে আদায় হবে না বরং একটি নফল সদকা হিসেবে আদায় হবে। ওজর বা বিশেষ অসুবিধায় কেউ যদি ঈদের সালাতের পূর্বে আদায় করতে না পারে তবে সে ঈদের সালাতের পর আদায় করবে।
যেমন হাদীসে এসেছে—
عن ابن عمر رضي الله عنهما أن النبي صلى الله عليه وسلم أمر بزكاة الفطر قبل خروج الناس إلى الصلاة . مسلم :১৬৪৬
‘ইবনে উমার থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সদকাতুল ফিতর আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।’ [মুসলিম : ১৬৩৬]
সদকাতুল ফিতর আদায় করার সুযোগ দেয়ার জন্যই ঈদুল ফিতরের সালাত একটু বিলম্বে আদায় করা মুস্তাহাব। সদকাতুল ফিতর আদায় করার বৈধ সময় হল: যদি কেউ ঈদের দু একদিন পূর্বে সদকাতুল ফিতর আদায় করে তবে আদায় হয়ে যাবে। সহীহ বুখারীতে আছে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. এভাবে আদায় করতেন। তবে কোন সংগত কারণ ব্যতীত ঈদের সালাতের পরে আদায় করলে সদকাতুল ফিতর হিসেবে আদায় হবে না বরং একটি নফল সদকা হিসেবে আদায় হবে। ওজর বা বিশেষ অসুবিধায় কেউ যদি ঈদের সালাতের পূর্বে আদায় করতে না পারে তবে সে ঈদের সালাতের পর আদায় করবে।
ঈদ আরবী শব্দ। এমন দিনকে ঈদ বলা হয় যে দিন মানুষ একত্র হয় ও দিনটি বার বার ফিরে আসে। এটা আরবী শব্দ عاد يعود থেকে উৎপত্তি হয়েছে। যার অর্থ ফিরে আসা। অনেকে বলেন এটা আরবী শব্দ العادة আদত বা অভ্যাস থেকে উৎপত্তি হয়েছে। কেননা মানুষ ঈদ উদযাপনে অভ্যস্ত। সে যাই হোক, যেহেতু এ দিনটি বার বার ফিরে আসে তাই এর নাম ঈদ। এ শব্দ দ্বারা এ দিবসের নাম রাখার তাৎপর্য হলো আল্লাহ রাববুল আলামীন এ দিবসে তার বান্দাদেরকে নেয়ামত ও অনুগ্রহ দ্বারা বার বার ধন্য করেন ও বার বার তার এহসানের দৃষ্টি দান করেন। যেমন রমজানে পানাহার নিষিদ্ধ করার পর আবার পানাহারের আদেশ প্রদান করেন। ছদকায়ে ফিতর, হজ-যিয়ারত, কুরবানীর গোশত ইত্যাদি নেয়ামত তিনি বার বার ফিরিয়ে দেন। আর এ সকল নেয়ামত ফিরে পেয়ে ভোগ করার জন্য অভ্যাসগত ভাবেই মানুষ আনন্দ-ফুর্তি করে থাকে।
আল্লাহ রাববুল আলামীন মুসলিম উম্মাহর প্রতি রহমত হিসেবে ঈদ দান করেছেন। হাদীসে এসেছে—
عن أنس بن مالك رضي الله عنهما قال : قدم رسول الله صلى الله عليه وسلم المدينة، ولهم يومان يلعبون فيهما، قال : ما هذان اليومان؟ قالوا كنا نلعب فيهما في الجاهلية، قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : قد أبدلكم الله خيرا منهما : يوم الأضحى ويوم الفطر . أبو داود :৯৫৯
‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদিনাতে আগমন করলেন তখন মদিনা বাসীদের দুটো দিবস ছিল, যে দিবসে তারা খেলাধুলা করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন এ দু দিনের কি তাৎপর্য আছে? মদিনা বাসীগণ উত্তর দিলেন : আমরা মূর্খতার যুগে এ দু দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : ‘আল্লাহ রাববুল আলামীন এ দু দিনের পরিবর্তে তোমাদের এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দুটো দিন দিয়েছেন। তা হল ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর।’ [আবু দাউদ : ৯৫৯]
শুধু খেলাধুলা, আমোদ-ফুর্তির জন্য যে দুটো দিন ছিল আল্লাহ তাআলা তা পরিবর্তন করে এমন দুটো দিন দান করলেন যে দিনে আল্লাহর শুকরিয়া, তার যিকির, তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনার সাথে সাথে শালীন আমোদ-ফুর্তি, সাজ-সজ্জা, খাওয়া-দাওয়া করা হবে।
عن أنس بن مالك رضي الله عنهما قال : قدم رسول الله صلى الله عليه وسلم المدينة، ولهم يومان يلعبون فيهما، قال : ما هذان اليومان؟ قالوا كنا نلعب فيهما في الجاهلية، قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : قد أبدلكم الله خيرا منهما : يوم الأضحى ويوم الفطر . أبو داود :৯৫৯
‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদিনাতে আগমন করলেন তখন মদিনা বাসীদের দুটো দিবস ছিল, যে দিবসে তারা খেলাধুলা করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন এ দু দিনের কি তাৎপর্য আছে? মদিনা বাসীগণ উত্তর দিলেন : আমরা মূর্খতার যুগে এ দু দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : ‘আল্লাহ রাববুল আলামীন এ দু দিনের পরিবর্তে তোমাদের এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দুটো দিন দিয়েছেন। তা হল ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর।’ [আবু দাউদ : ৯৫৯]
শুধু খেলাধুলা, আমোদ-ফুর্তির জন্য যে দুটো দিন ছিল আল্লাহ তাআলা তা পরিবর্তন করে এমন দুটো দিন দান করলেন যে দিনে আল্লাহর শুকরিয়া, তার যিকির, তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনার সাথে সাথে শালীন আমোদ-ফুর্তি, সাজ-সজ্জা, খাওয়া-দাওয়া করা হবে।
ইতিপূর্বে আলোচিত আনাস রা. বর্ণিত হাদীস থেকে ঈদের তাৎপর্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেছে। তা হল আল্লাহ রাববুল আলামীন উম্মতে মুহাম্মদীকে সম্মানিত করে তাদের এ দুটো ঈদ দান করেছেন। আর এ দুটো দিন বিশ্বে যত উৎসবের দিন ও শ্রেষ্ঠ দিন রয়েছে তার সকলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ দিন ও সেরা ঈদ।
ইসলামের এ দু’টো উৎসবের দিন শুধু আনন্দ-ফুর্তির দিন নয়। বরং এ দিন দুটোকে আনন্দ-উৎসব এর সাথে সাথে জগৎসমূহের প্রতিপালকের ইবাদত-বন্দেগী দ্বারা সুসজ্জিত করা হবে। যিনি জীবন দান করেছেন, দান করেছেন সুন্দর আকৃতি, সুস্থ শরীর, ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি, পরিবার-পরিজন, যার জন্য জীবন ও মরণ তাকে এ আনন্দের দিনে ভুলে থাকা হবে আর সব কিছু ঠিকঠাক মত চলবে এটা কীভাবে মেনে নেয়া যায়? তাই ইসলাম আনন্দ-উৎসবের এ দিনটাকে আল্লাহ রাববুল আলামীনের ইবাদত-বন্দেগী, তার প্রতি শুকরিয়া-কৃতজ্ঞতা প্রকাশ দ্বারা সু-সজ্জিত করেছে।
ইসলামের এ দু’টো উৎসবের দিন শুধু আনন্দ-ফুর্তির দিন নয়। বরং এ দিন দুটোকে আনন্দ-উৎসব এর সাথে সাথে জগৎসমূহের প্রতিপালকের ইবাদত-বন্দেগী দ্বারা সুসজ্জিত করা হবে। যিনি জীবন দান করেছেন, দান করেছেন সুন্দর আকৃতি, সুস্থ শরীর, ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি, পরিবার-পরিজন, যার জন্য জীবন ও মরণ তাকে এ আনন্দের দিনে ভুলে থাকা হবে আর সব কিছু ঠিকঠাক মত চলবে এটা কীভাবে মেনে নেয়া যায়? তাই ইসলাম আনন্দ-উৎসবের এ দিনটাকে আল্লাহ রাববুল আলামীনের ইবাদত-বন্দেগী, তার প্রতি শুকরিয়া-কৃতজ্ঞতা প্রকাশ দ্বারা সু-সজ্জিত করেছে।
ঈদের দিন গোসল করার মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা মুস্তাহাব। কেননা এ দিনে সকল মানুষ সালাত আদায়ের জন্য মিলিত হয়। যে কারণে জুমআর দিন গোসল করা মুস্তাহাব সে কারণেই ঈদের দিন ঈদের সালাতের পূর্বে গোসল করা মুস্তাহাব। হাদীসে এসেছে—
صح عن ابن عمر رضي الله عنهما أنه كان يغتسل يوم الفطر قبل أن يغدو إلى المصلى رواه الإمام مالك في أول كتاب العيدين وقال سعيد بن المسيب سنة الفطر ثلاث : المشي إلى المصلى والأكل قبل الخروج و الاغتسال . إرواء الغليل للألباني ২/১০৪
ইবনে উমার রা. থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত যে তিনি ঈদুল-ফিতরের দিনে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে গোসল করতেন। সায়ীদ ইবনে মুসাইয়াব রহ. বলেন : ঈদুল ফিতরের সুন্নত তিনটি : ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া, ঈদগাহের দিকে রওয়ানার পূর্বে কিছু খাওয়া, গোসল করা। [ইরওয়া উল গালিল : ২/১০৪]
এমনিভাবে সুগন্ধি ব্যবহার ও উত্তম পোশাক পরিধান করা মুস্তাহাব। হাদীসে এসেছে—
عن عبد الله بن عمر رضي الله عنهما قال : أخذ عمر جبة من استبرق تباع في السوق، فأخذها فآتى بها رسول الله صلى الله عليه وسلم، فقال يا رسول الله ابتع هذه تجمل بها للعيد والوفود، فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم : إنما هذه لباس من لا خلاق له . البخاري : ৯৪৮
আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত যে, উমার রা. একবার বাজার থেকে একটি রেশমি কাপড়ের জুববা আনলেন ও রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে দিয়ে বললেন : আপনি এটা কিনে নিন। ঈদের সময় ও আগত গণ্যমান্য প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাতে পরিধান করবেন। রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : ‘এটা তার পোশাক যার আখেরাতে কোন অংশ নেই।’ [বুখারী : ৯৪৮]
এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদের দিনে উত্তম পোশাক পরিধান করার প্রয়োজনীয়তার প্রতি সম্মতি দিয়েছেন। আর উক্ত পোশাকটি রেশমি পোশাক হওয়ায় তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। কেননা, ইসলামী শরীয়তে পুরুষদের রেশমি পোশাক পরিধান জায়েয নয়।
عن ابن عمر ، أنه كان « يلبس في العيدين أحسن ثيابه . معرفة السنن والآثار للبيهقي :১৯০১
ইবনে উমার রা. থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত যে তিনি দু ঈদের দিনে সুন্দরতম পোশাক পরিধান করতেন। [বায়হাকী : ১৯০১]
ইমাম মালেক রহ. বলেন: ‘আমি ওলামাদের কাছ থেকে শুনেছি তারা প্রত্যেক ঈদে সুগন্ধি ব্যবহার ও সাজ-সজ্জাকে মুস্তাহাব বলেছেন।’ (আল-মুগনি: ইবনে কুদামাহ)
ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেছেন: নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু ঈদেই ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সুন্দরতম পোশাক পরিধান করতেন। [যাদুল মায়াদ]
এ দিনে সকল মানুষ একত্রে জমায়েত হয়, তাই প্রত্যেক মুসলিমের উচিত হল তার প্রতি আল্লাহর যে নেয়ামত তা প্রকাশ ও আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করনারথে নিজেকে সর্বোত্তম সাজে সজ্জিত করা। হাদীসে এসেছে—
عن عبد الله ابن عمرو قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : إن الله تعالى يحب أن يرى أثر نعمته على عبده . حسنه الألباني في صحيح الجامع : ১৮৮৭
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘আল্লাহ রাববুল আলামীন তার বান্দার উপর তার প্রদত্ত নেয়ামতের প্রকাশ দেখতে পছন্দ করেন।’ [সহীহ আল-জামে হাদীস নং ১৮৮৭]
صح عن ابن عمر رضي الله عنهما أنه كان يغتسل يوم الفطر قبل أن يغدو إلى المصلى رواه الإمام مالك في أول كتاب العيدين وقال سعيد بن المسيب سنة الفطر ثلاث : المشي إلى المصلى والأكل قبل الخروج و الاغتسال . إرواء الغليل للألباني ২/১০৪
ইবনে উমার রা. থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত যে তিনি ঈদুল-ফিতরের দিনে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে গোসল করতেন। সায়ীদ ইবনে মুসাইয়াব রহ. বলেন : ঈদুল ফিতরের সুন্নত তিনটি : ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া, ঈদগাহের দিকে রওয়ানার পূর্বে কিছু খাওয়া, গোসল করা। [ইরওয়া উল গালিল : ২/১০৪]
এমনিভাবে সুগন্ধি ব্যবহার ও উত্তম পোশাক পরিধান করা মুস্তাহাব। হাদীসে এসেছে—
عن عبد الله بن عمر رضي الله عنهما قال : أخذ عمر جبة من استبرق تباع في السوق، فأخذها فآتى بها رسول الله صلى الله عليه وسلم، فقال يا رسول الله ابتع هذه تجمل بها للعيد والوفود، فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم : إنما هذه لباس من لا خلاق له . البخاري : ৯৪৮
আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত যে, উমার রা. একবার বাজার থেকে একটি রেশমি কাপড়ের জুববা আনলেন ও রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে দিয়ে বললেন : আপনি এটা কিনে নিন। ঈদের সময় ও আগত গণ্যমান্য প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাতে পরিধান করবেন। রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : ‘এটা তার পোশাক যার আখেরাতে কোন অংশ নেই।’ [বুখারী : ৯৪৮]
এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদের দিনে উত্তম পোশাক পরিধান করার প্রয়োজনীয়তার প্রতি সম্মতি দিয়েছেন। আর উক্ত পোশাকটি রেশমি পোশাক হওয়ায় তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। কেননা, ইসলামী শরীয়তে পুরুষদের রেশমি পোশাক পরিধান জায়েয নয়।
عن ابن عمر ، أنه كان « يلبس في العيدين أحسن ثيابه . معرفة السنن والآثار للبيهقي :১৯০১
ইবনে উমার রা. থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত যে তিনি দু ঈদের দিনে সুন্দরতম পোশাক পরিধান করতেন। [বায়হাকী : ১৯০১]
ইমাম মালেক রহ. বলেন: ‘আমি ওলামাদের কাছ থেকে শুনেছি তারা প্রত্যেক ঈদে সুগন্ধি ব্যবহার ও সাজ-সজ্জাকে মুস্তাহাব বলেছেন।’ (আল-মুগনি: ইবনে কুদামাহ)
ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেছেন: নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু ঈদেই ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সুন্দরতম পোশাক পরিধান করতেন। [যাদুল মায়াদ]
এ দিনে সকল মানুষ একত্রে জমায়েত হয়, তাই প্রত্যেক মুসলিমের উচিত হল তার প্রতি আল্লাহর যে নেয়ামত তা প্রকাশ ও আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করনারথে নিজেকে সর্বোত্তম সাজে সজ্জিত করা। হাদীসে এসেছে—
عن عبد الله ابن عمرو قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : إن الله تعالى يحب أن يرى أثر نعمته على عبده . حسنه الألباني في صحيح الجامع : ১৮৮৭
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘আল্লাহ রাববুল আলামীন তার বান্দার উপর তার প্রদত্ত নেয়ামতের প্রকাশ দেখতে পছন্দ করেন।’ [সহীহ আল-জামে হাদীস নং ১৮৮৭]
ফর্মা-৭
(২) ঈদের দিনে খাবার গ্রহণ প্রসঙ্গে
সুন্নত হল ঈদুল ফিতরের দিনে ঈদের সালাত আদায়ের পূর্বে খাবার গ্রহণ করা। আর ঈদুল আজহার দিন ঈদের সালাতের পূর্বে কিছু না খেয়ে সালাত আদায়ের পর কুরবানীর গোশত খাওয়া সুন্নত। হাদীসে এসেছে—
عن بريدة رضي الله عنه قال : كان النبي صلى الله عليه وسلم لا يخرج يوم الفطر حتى يأكل، ولا يأكل يوم الأضحى حتى يرجع فيأكل من أضحيته . أحمد : ১৪২২ وصححه الألباني في صحيح ابن ماجه
বুরাইদা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিনে না খেয়ে বের হতেন না, আর ঈদুল আজহার দিনে ঈদের সালাতের পূর্বে খেতেন না। সালাত থেকে ফিরে এসে কুরবানীর গোশত খেতেন। [আহমদ : ১৪২২]
ঈদুল ফিতরের দিনে ঈদের সালাতের পূর্বে তিনটি, পাঁচটি অথবা সাতটি এভাবে বে-জোড় সংখ্যায় খেজুর খাওয়া সুন্নত। যেমন হাদীসে এসেছে—
عن أنس رضي الله عنه قال : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يغدو يوم الفطر حتى يأكل تمرات، ويأكلهن وتراً . البخاري :৯০০
সাহাবী আনাস রা. বর্ণিত তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিন কয়েকটি খেজুর না খেয়ে বের হতেন না, আর খেজুর খেতেন বে-জোড় সংখ্যায়। [বুখারী : ৯০০]
সম্ভবত আল্লাহর রাববুল আলামীনের হুকুম অতি তাড়াতাড়ি আদায় করার ইচ্ছায় রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরূপ করতেন। কেননা দীর্ঘ এক মাস সিয়াম আদায়ের পর আল্লাহর নির্দেশ হল পানাহার করা। এটা করতে যেন দেরি না হয়ে যায় এজন্য তিনি উপস্থিতভাবে খেজুর হলেও খেয়ে নিতেন। যিনি কুরবানী দেবেন, তার জন্য সুন্নত হল ঈদুল আজহার দিনে প্রথমে কুরবানী দিয়ে তার গোশত খাওয়া। আর যিনি কুরবানী দেবেন না তিনি ঈদের সালাতের পূর্বে কিছু খেতে পারেন।
(২) ঈদের দিনে খাবার গ্রহণ প্রসঙ্গে
সুন্নত হল ঈদুল ফিতরের দিনে ঈদের সালাত আদায়ের পূর্বে খাবার গ্রহণ করা। আর ঈদুল আজহার দিন ঈদের সালাতের পূর্বে কিছু না খেয়ে সালাত আদায়ের পর কুরবানীর গোশত খাওয়া সুন্নত। হাদীসে এসেছে—
عن بريدة رضي الله عنه قال : كان النبي صلى الله عليه وسلم لا يخرج يوم الفطر حتى يأكل، ولا يأكل يوم الأضحى حتى يرجع فيأكل من أضحيته . أحمد : ১৪২২ وصححه الألباني في صحيح ابن ماجه
বুরাইদা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিনে না খেয়ে বের হতেন না, আর ঈদুল আজহার দিনে ঈদের সালাতের পূর্বে খেতেন না। সালাত থেকে ফিরে এসে কুরবানীর গোশত খেতেন। [আহমদ : ১৪২২]
ঈদুল ফিতরের দিনে ঈদের সালাতের পূর্বে তিনটি, পাঁচটি অথবা সাতটি এভাবে বে-জোড় সংখ্যায় খেজুর খাওয়া সুন্নত। যেমন হাদীসে এসেছে—
عن أنس رضي الله عنه قال : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يغدو يوم الفطر حتى يأكل تمرات، ويأكلهن وتراً . البخاري :৯০০
সাহাবী আনাস রা. বর্ণিত তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিন কয়েকটি খেজুর না খেয়ে বের হতেন না, আর খেজুর খেতেন বে-জোড় সংখ্যায়। [বুখারী : ৯০০]
সম্ভবত আল্লাহর রাববুল আলামীনের হুকুম অতি তাড়াতাড়ি আদায় করার ইচ্ছায় রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরূপ করতেন। কেননা দীর্ঘ এক মাস সিয়াম আদায়ের পর আল্লাহর নির্দেশ হল পানাহার করা। এটা করতে যেন দেরি না হয়ে যায় এজন্য তিনি উপস্থিতভাবে খেজুর হলেও খেয়ে নিতেন। যিনি কুরবানী দেবেন, তার জন্য সুন্নত হল ঈদুল আজহার দিনে প্রথমে কুরবানী দিয়ে তার গোশত খাওয়া। আর যিনি কুরবানী দেবেন না তিনি ঈদের সালাতের পূর্বে কিছু খেতে পারেন।
ঈদগাহে তাড়াতাড়ি যাওয়া উচিত। যাতে ইমাম সাহেবের নিকটবর্তী স্থানে বসা যায় ও ভালো-কাজ অতি তাড়াতাড়ি করার সওয়াব অর্জন করা যায়, সাথে সাথে সালাতের অপেক্ষায় থাকার সওয়াব পাওয়া যায়। ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া হল মুস্তাহাব। হাদীসে এসেছে—
عن علي رضي الله عنه قال : من السنة أن تخرج إلى العيد ماشيا . الترمذي :৪৮৭ وحسنه وقال : والعمل على هذا عند أكثر أهل العلم : يستحبون أن يخرج الرجل إلى العيد ماشيا، وأن لا يركب إلا بعذر .
আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : ‘সুন্নত হল ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া।’ ইমাম তিরমিযী হাদিসটি বর্ণনা করে বলেন হাদিসটি হাসান। তিনি আরো বলেন : অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম এ অনুযায়ী আমল করেন। এবং তাদের মত হল পুরুষ ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাবে, এটা মুস্তাহাব। আর গ্রহণযোগ্য কোন কারণ ছাড়া যানবাহনে আরোহণ করবে না। [তিরমিযী : ১৮৭]
আর একটি সুন্নত হল : যে পথে ঈদগাহে যাবে সে পথে না ফিরে অন্য পথে ফিরে আসবে। যেমন হাদীসে এসেছে—
عن جابر رضي الله عنه قال : كان النبي صلى الله عليه و سلم إذا كان يوم العيد خالف الطريق . البخاري :৯৩৩
জাবের রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন : ‘নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদের দিনে পথ বিপরীত করতেন।’ [বুখারী : ৯৩৩]
অর্থাৎ যে পথে ঈদগাহে যেতেন সে পথে ফিরে না এসে অন্য পথে আসতেন।
তিনি এটা কেন করতেন ? এর ব্যাখ্যায় উলামায়ে কেরাম বিভিন্ন হিকমত বর্ণনা করেছেন। অনেকে বলেছেন : যেন ঈদের দিনে উভয় পথের লোকদেরকে সালাম দেয়া ও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায় এ কারণে তিনি দুটো পথ ব্যবহার করতেন। আবার অনেকে বলেছেন ইসলাম ধর্মের শৌর্য-বীর্য প্রকাশ করার জন্য তিনি সকল পথে আসা-যাওয়া করতেন যেন সকল পথের অধিবাসীরা মুসলমানদের শান-শওকত প্রত্যক্ষ করতে পারে। আবার কেউ বলেছেন গাছ-পালা তরুলতা সহ মাটি যেন অধিক হারে মুসলমানদের পক্ষে সাক্ষী হতে পারে সে জন্য তিনি একাধিক পথ ব্যবহার করতেন। আসল কথা হল, হিকমত ও উদ্দেশ্য যাই হোক, আর তা বুঝে আসুক বা না আসুক, আমাদের কর্তব্য হল আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সুন্নত অনুসরণ করা। [যাদুল-মায়াদ]
عن علي رضي الله عنه قال : من السنة أن تخرج إلى العيد ماشيا . الترمذي :৪৮৭ وحسنه وقال : والعمل على هذا عند أكثر أهل العلم : يستحبون أن يخرج الرجل إلى العيد ماشيا، وأن لا يركب إلا بعذر .
আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : ‘সুন্নত হল ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া।’ ইমাম তিরমিযী হাদিসটি বর্ণনা করে বলেন হাদিসটি হাসান। তিনি আরো বলেন : অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম এ অনুযায়ী আমল করেন। এবং তাদের মত হল পুরুষ ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাবে, এটা মুস্তাহাব। আর গ্রহণযোগ্য কোন কারণ ছাড়া যানবাহনে আরোহণ করবে না। [তিরমিযী : ১৮৭]
আর একটি সুন্নত হল : যে পথে ঈদগাহে যাবে সে পথে না ফিরে অন্য পথে ফিরে আসবে। যেমন হাদীসে এসেছে—
عن جابر رضي الله عنه قال : كان النبي صلى الله عليه و سلم إذا كان يوم العيد خالف الطريق . البخاري :৯৩৩
জাবের রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন : ‘নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদের দিনে পথ বিপরীত করতেন।’ [বুখারী : ৯৩৩]
অর্থাৎ যে পথে ঈদগাহে যেতেন সে পথে ফিরে না এসে অন্য পথে আসতেন।
তিনি এটা কেন করতেন ? এর ব্যাখ্যায় উলামায়ে কেরাম বিভিন্ন হিকমত বর্ণনা করেছেন। অনেকে বলেছেন : যেন ঈদের দিনে উভয় পথের লোকদেরকে সালাম দেয়া ও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায় এ কারণে তিনি দুটো পথ ব্যবহার করতেন। আবার অনেকে বলেছেন ইসলাম ধর্মের শৌর্য-বীর্য প্রকাশ করার জন্য তিনি সকল পথে আসা-যাওয়া করতেন যেন সকল পথের অধিবাসীরা মুসলমানদের শান-শওকত প্রত্যক্ষ করতে পারে। আবার কেউ বলেছেন গাছ-পালা তরুলতা সহ মাটি যেন অধিক হারে মুসলমানদের পক্ষে সাক্ষী হতে পারে সে জন্য তিনি একাধিক পথ ব্যবহার করতেন। আসল কথা হল, হিকমত ও উদ্দেশ্য যাই হোক, আর তা বুঝে আসুক বা না আসুক, আমাদের কর্তব্য হল আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সুন্নত অনুসরণ করা। [যাদুল-মায়াদ]
হাদীস দ্বারা প্রমাণিত আছে যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিন ঘর থেকে বের হয়ে ঈদগাহে পৌঁছা পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করতেন। ঈদের সালাত শেষ হওয়া পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করতেন। যখন সালাত শেষ হয়ে যেত তখন আর তাকবীর পাঠ করতেন না। আর কোন কোন বর্ণনায় ঈদুল আজহার ব্যাপারে একই কথা পাওয়া যায়। আরো প্রমাণিত আছে যে ইবনে উমার রা. ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে ঈদগাহে আসা পর্যন্ত উচ্চস্বরে তাকবীর পাঠ করতেন। ঈদগাহে এসে ইমামের আগমন পর্যন্ত এভাবে তাকবীর পাঠ করতেন। আগে আলোচিত হয়েছে যে, সুন্নত হল মসজিদ, বাজার, রাস্তা-ঘাট সহ সর্বত্র উচ্চস্বরে তাকবীর পাঠ করা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল মানুষ এ সুন্নতের প্রতি খুবই উদাসীন। আমাদের সকলের কর্তব্য হবে এ সুন্নতটি সমাজে চালু করার জন্য প্রচেষ্টা চালান। শেষ রমজানের সূর্যাস্তের পর থেকে ঈদুল ফিতরের সালাত শেষ হওয়া পর্যন্ত তাকবীর পাঠ করবে। বিশেষভাবে ঈদগাহের উদ্দেশ্যে যখন বের হবে ও ঈদগাহে সালাতের অপেক্ষায় যখন থাকবে তখন গুরুত্ব সহকারে তাকবীর পাঠ করবে।
আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন—
(আরবি)
‘তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর ও কুরবানী কর।’ [সূরা কাউসার : ০২]
অধিকাংশ মুফাসসিরে কেরামের মতে এ আয়াতে সালাত বলতে ঈদের সালাতকে বুঝানো হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বদা এ সালাত আদায় করেছেন। কোন ঈদেই ঈদের সালাত পরিত্যাগ করেননি। ইমাম আবু হানীফা রহ. বলেছেন : ‘ঈদের সালাত প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ওয়াজিব। তবে ফরজ নয়।’
ইবনে তাইমিয়া রহ. ও এ মত পোষণ করেন। আর ঈদের সালাত যে ওয়াজিব এর আরেকটা প্রমাণ হল, যদি কোন সময় জুমআর দিনে (শুক্রবার) ঈদ হয় তখন সে দিন যারা ঈদের সালাত আদায় করেছে তারা জুমআর সালাতের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি লাভ করে। অর্থাৎ জুমআর সালাতে অংশ না নিলে কোন গুনাহ নেই। তবে এলাকার ইমামের কর্তব্য হল, সে ঈদের দিনে জুমআর সালাতের ব্যবস্থা করবে, যাদের আগ্রহ আছে তারা যাতে শরিক হতে পারে। মনে রাখতে হবে ঈদের দিন জুমআর সালাত পরিত্যাগ করার অনুমতি আছে। আর এ অনুমতির ভিত্তিতে কেউ জুমআর সালাত ত্যাগ করলে তার অবশ্যই জোহরের সালাত আদায় করতে হবে। তবে উত্তম আমল হবে জুমআর দিনে ঈদ হলে জুমআ ও ঈদের সালাত উভয়টাই আদায় করা। কোন অবস্থাই কেউ যেন ঈদের সালাত আদায়ে অলসতা না করে। শিশু-সন্তানদের ঈদের সালাতে নিয়ে যাবে ও ব্যবস্থা থাকলে মেয়েদের যেতে উৎসাহিত করবে। মনে রাখতে হবে ঈদের সালাত ইসলামের একটি শিআ’র তথা মহান নিদর্শন। শাহ ওয়ালী উল্লাহ দেহলভী রহ. বলেছেন : ‘প্রত্যেক জাতির এমন কিছু উৎসব থাকে যাতে সকলে একত্র হয়ে নিজেদের শান-শওকত, সংখ্যাধিক্য প্রদর্শন করে। ঈদ মুসলিম জাতির এমনি একটি উৎসব। এ কারণেই তো শিশু, নারী, এমন মহিলা যারা সাধারণত ঘরের বাইরে বের হয় না ও ঋতুবতী মেয়ে লোক -যাদের সালাত আদায় করতে হয় না—এদের সহ সকলকেই এ দিনে ঈদগাহের উদ্দেশ্যে বের হওয়া মুস্তাহাব। [হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগাহ]
(আরবি)
‘তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর ও কুরবানী কর।’ [সূরা কাউসার : ০২]
অধিকাংশ মুফাসসিরে কেরামের মতে এ আয়াতে সালাত বলতে ঈদের সালাতকে বুঝানো হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বদা এ সালাত আদায় করেছেন। কোন ঈদেই ঈদের সালাত পরিত্যাগ করেননি। ইমাম আবু হানীফা রহ. বলেছেন : ‘ঈদের সালাত প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ওয়াজিব। তবে ফরজ নয়।’
ইবনে তাইমিয়া রহ. ও এ মত পোষণ করেন। আর ঈদের সালাত যে ওয়াজিব এর আরেকটা প্রমাণ হল, যদি কোন সময় জুমআর দিনে (শুক্রবার) ঈদ হয় তখন সে দিন যারা ঈদের সালাত আদায় করেছে তারা জুমআর সালাতের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি লাভ করে। অর্থাৎ জুমআর সালাতে অংশ না নিলে কোন গুনাহ নেই। তবে এলাকার ইমামের কর্তব্য হল, সে ঈদের দিনে জুমআর সালাতের ব্যবস্থা করবে, যাদের আগ্রহ আছে তারা যাতে শরিক হতে পারে। মনে রাখতে হবে ঈদের দিন জুমআর সালাত পরিত্যাগ করার অনুমতি আছে। আর এ অনুমতির ভিত্তিতে কেউ জুমআর সালাত ত্যাগ করলে তার অবশ্যই জোহরের সালাত আদায় করতে হবে। তবে উত্তম আমল হবে জুমআর দিনে ঈদ হলে জুমআ ও ঈদের সালাত উভয়টাই আদায় করা। কোন অবস্থাই কেউ যেন ঈদের সালাত আদায়ে অলসতা না করে। শিশু-সন্তানদের ঈদের সালাতে নিয়ে যাবে ও ব্যবস্থা থাকলে মেয়েদের যেতে উৎসাহিত করবে। মনে রাখতে হবে ঈদের সালাত ইসলামের একটি শিআ’র তথা মহান নিদর্শন। শাহ ওয়ালী উল্লাহ দেহলভী রহ. বলেছেন : ‘প্রত্যেক জাতির এমন কিছু উৎসব থাকে যাতে সকলে একত্র হয়ে নিজেদের শান-শওকত, সংখ্যাধিক্য প্রদর্শন করে। ঈদ মুসলিম জাতির এমনি একটি উৎসব। এ কারণেই তো শিশু, নারী, এমন মহিলা যারা সাধারণত ঘরের বাইরে বের হয় না ও ঋতুবতী মেয়ে লোক -যাদের সালাত আদায় করতে হয় না—এদের সহ সকলকেই এ দিনে ঈদগাহের উদ্দেশ্যে বের হওয়া মুস্তাহাব। [হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগাহ]
পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের জামাতে ও জুমআর সালাতে মহিলাদের অংশ গ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মেয়েদেরকে ঈদের সালাতে অংশ গ্রহণ করার হুকুম (নির্দেশ) দিয়েছেন। যেমন হাদীসে এসেছে—
عن أم عطية رضي الله عنها قالت : أمرنا رسول الله صلى الله عليه وسلم أن نخرج في الفطر والأضحى، العواتق والحيض وذوات الخدر، فأما الحيض فيعتزلن الصلاة ويشهدن الخير ودعوة المسلمين، قالت : يا رسول الله إحدانا لا يكون لها جلباب، قال : لتلبسها أختها من جلبابها . مسلم :১৪৭৫
‘উম্মে আতিয়া রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আদেশ করেছেন আমরা মেয়েরা যেন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহাতে সালাতের জন্য বের হয়ে যাই ; পরিণত বয়স্কা, ঋতুবতী ও গৃহবাসিনী সকলেই বের হবে। কিন্তু ঋতুবতী মেয়েরা (ঈদগাহে উপস্থিত হয়ে) সালাত আদায় থেকে বিরত থাকবে তবে কল্যাণ ও মুসলিমদের দোয়ায় অংশ নেবে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মাঝে কারো কারো ওড়না নেই। (যা পরিধান করে সে ঈদের সালাতে যেতে পারে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : তার বোন তাকে নিজের ওড়নাগুলো থেকে একটি ওড়না পরিধান করাবে।’ [মুসলিম : ১৪৭৫]
দুঃখের বিষয় হল আজকে দেখা যায় অনেকে মেয়েদের ঈদের সালাতে অংশ নিতে নিরুৎসাহিত করেন। অনেকে বাধা দেন। আবার কোথাও মহিলাদের জন্য ঈদের সালাতের ব্যবস্থা করা সম্ভব হলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না বা এটাকে একেবারে অপ্রয়োজনীয় মনে করা হয়। বলা হয়, বর্তমান যুগ ফিতনার যুগ, কোন নিরাপত্তা নেই ইত্যাদি বলে কত অজুহাত সৃষ্টি করা হয়—যাতে মেয়েরা ঈদের সালাতে অংশ না নেয়। আসলে কোন অজুহাতই এ ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নয়। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর নির্দেশ ও তাঁর সুন্নাহর বিপরীতে যত অজুহাত ও যুক্তি দেয়া হোক না কেন সবই প্রত্যাখ্যান করতে হবে। যেমন আমরা এ হাদিসটিতে দেখি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন অজুহাত গ্রহণ করেননি। কেউ বলেছিল অনেকের ওড়না নেই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তার বোন তাকে ওড়না ধার দেবে।’ এমনকি যারা ঋতুবতী ছিল তাদেরকেও নির্দেশ দেয়া হল যে, তোমরা ঈদগাহে যাবে। তাদের সালাত আদায় বৈধ না হওয়া সত্ত্বেও ঈদের জামাত ও সালাত প্রত্যক্ষ করবে। তাই আমাদের কর্তব্য হবে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর মৃতপ্রায় এ সুন্নতকে বাস্তবায়ন করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আমাদের মনে রাখতে হবে যুগের ফিতনা ও মেয়েদের ফিতনা সম্পর্কে আমাদের চেয়ে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক বেশি সচেতন ছিলেন।
عن أم عطية رضي الله عنها قالت : أمرنا رسول الله صلى الله عليه وسلم أن نخرج في الفطر والأضحى، العواتق والحيض وذوات الخدر، فأما الحيض فيعتزلن الصلاة ويشهدن الخير ودعوة المسلمين، قالت : يا رسول الله إحدانا لا يكون لها جلباب، قال : لتلبسها أختها من جلبابها . مسلم :১৪৭৫
‘উম্মে আতিয়া রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আদেশ করেছেন আমরা মেয়েরা যেন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহাতে সালাতের জন্য বের হয়ে যাই ; পরিণত বয়স্কা, ঋতুবতী ও গৃহবাসিনী সকলেই বের হবে। কিন্তু ঋতুবতী মেয়েরা (ঈদগাহে উপস্থিত হয়ে) সালাত আদায় থেকে বিরত থাকবে তবে কল্যাণ ও মুসলিমদের দোয়ায় অংশ নেবে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মাঝে কারো কারো ওড়না নেই। (যা পরিধান করে সে ঈদের সালাতে যেতে পারে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : তার বোন তাকে নিজের ওড়নাগুলো থেকে একটি ওড়না পরিধান করাবে।’ [মুসলিম : ১৪৭৫]
দুঃখের বিষয় হল আজকে দেখা যায় অনেকে মেয়েদের ঈদের সালাতে অংশ নিতে নিরুৎসাহিত করেন। অনেকে বাধা দেন। আবার কোথাও মহিলাদের জন্য ঈদের সালাতের ব্যবস্থা করা সম্ভব হলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না বা এটাকে একেবারে অপ্রয়োজনীয় মনে করা হয়। বলা হয়, বর্তমান যুগ ফিতনার যুগ, কোন নিরাপত্তা নেই ইত্যাদি বলে কত অজুহাত সৃষ্টি করা হয়—যাতে মেয়েরা ঈদের সালাতে অংশ না নেয়। আসলে কোন অজুহাতই এ ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নয়। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর নির্দেশ ও তাঁর সুন্নাহর বিপরীতে যত অজুহাত ও যুক্তি দেয়া হোক না কেন সবই প্রত্যাখ্যান করতে হবে। যেমন আমরা এ হাদিসটিতে দেখি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন অজুহাত গ্রহণ করেননি। কেউ বলেছিল অনেকের ওড়না নেই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তার বোন তাকে ওড়না ধার দেবে।’ এমনকি যারা ঋতুবতী ছিল তাদেরকেও নির্দেশ দেয়া হল যে, তোমরা ঈদগাহে যাবে। তাদের সালাত আদায় বৈধ না হওয়া সত্ত্বেও ঈদের জামাত ও সালাত প্রত্যক্ষ করবে। তাই আমাদের কর্তব্য হবে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর মৃতপ্রায় এ সুন্নতকে বাস্তবায়ন করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আমাদের মনে রাখতে হবে যুগের ফিতনা ও মেয়েদের ফিতনা সম্পর্কে আমাদের চেয়ে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক বেশি সচেতন ছিলেন।
সূর্যোদয়ের পর যখন তা এক লেজা (অর্ধ হাত) পরিমাণ উপরে উঠে তখন থেকে শুরু করে সূর্য ঠিক মাথার উপরে আসা পর্যন্ত সময়টা হল সালাতুল ঈদ আদায়ের ওয়াক্ত। এ সময়ের মাঝে যে কোন সময় ঈদের সালাত আদায় করা যায়। ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেছেন : নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল ফিতরের সালাত দেরি করে আদায় করতেন আর ঈদুল আজহার সালাত প্রথম ওয়াক্তে তাড়াতাড়ি আদায় করতেন। [যাদুল-মায়াদ]
ঈদুল ফিতরের সালাত একটু দেরিতে আদায় করতেন, যাতে মুসলমানগণ সদকাতুল ফিতর আদায় করার প্রয়োজনীয় সময় পায়। আর ঈদুল আজহার সালাত তাড়াতাড়ি আদায় করতেন, যাতে মুসলমানগণ সালাত শেষ করে দুপুরের পূর্বে কুরবানীর পশু জবেহ সম্পন্ন করতে পারে।
ঈদুল ফিতরের সালাত একটু দেরিতে আদায় করতেন, যাতে মুসলমানগণ সদকাতুল ফিতর আদায় করার প্রয়োজনীয় সময় পায়। আর ঈদুল আজহার সালাত তাড়াতাড়ি আদায় করতেন, যাতে মুসলমানগণ সালাত শেষ করে দুপুরের পূর্বে কুরবানীর পশু জবেহ সম্পন্ন করতে পারে।
হাদীসে এসেছে :—
عن أبي سعيد الخدري رضي الله عنه قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يخرج يوم الفطر والأضحى إلى المصلى . رواه البخاري :৯০৩
আবু সাইদ খুদরি রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন ঈদগাহের উদ্দেশ্যে বের হতেন...।’ [বুখারী : ৯০৩]
ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন: ‘রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদর্শ হল তিনি সর্বদা ঈদের সালাত ঈদগাহে আদায় করতেন।’ [যাদুল-মায়াদ]
ইবনে কুদামাহ রহ. বলেন: ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো উত্তম কাজ পরিত্যাগ করেননি। কখনো পরিপূর্ণতা বাদ দিয়ে অপূর্ণাঙ্গ পদ্ধতি অনুসরণ করেননি। তার চেয়ে বড় কথা হল আমাদেরকে আল্লাহ রাববুল আলামীনের পক্ষ থেকে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর আনুগত্যের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এসব দিকে লক্ষ্য করে আমাদের অবশ্যই ঈদের সালাত ঈদগাহে (উন্মুক্ত প্রান্তরে) আদায় করা উচিত।’
আর রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো ঈদের সালাত মসজিদে আদায় করেছেন এমন কোন বর্ণনা নেই। অবশ্য আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ বর্ণিত একটি হাদীসে জানা যায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার কোন এক অসুবিধা থাকায় মসজিদে ঈদের সালাত আদায় করেছেন। তবে এ হাদিসটিকে প্রখ্যাত মুহাদ্দিস নাসিরুদ্দীন আলবানী দুর্বল বলে প্রমাণ করেছেন। তাই আমাদের অলসতা পরিত্যাগ করে কিছুটা কষ্ট করে হলেও ঈদের সালাত ঈদগাহে আদায় করার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া উচিত। এ দিনে মুসলিমগণ এক সম্মেলনে মিলিত হবেন। মসজিদ এ কাজের জন্য যথাযথ প্রশস্ত স্থান হতে পারে না। মসজিদে সালাত আদায়ের ফযীলত থাকা সত্ত্বেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বদা ঈদগাহে ঈদের সালাত আদায় করেছেন। এমনিভাবে মসজিদের ফযীলত থাকা সত্ত্বেও নফল নামায ঘরে আদায় করা উত্তম।
عن أبي سعيد الخدري رضي الله عنه قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يخرج يوم الفطر والأضحى إلى المصلى . رواه البخاري :৯০৩
আবু সাইদ খুদরি রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন ঈদগাহের উদ্দেশ্যে বের হতেন...।’ [বুখারী : ৯০৩]
ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন: ‘রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদর্শ হল তিনি সর্বদা ঈদের সালাত ঈদগাহে আদায় করতেন।’ [যাদুল-মায়াদ]
ইবনে কুদামাহ রহ. বলেন: ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো উত্তম কাজ পরিত্যাগ করেননি। কখনো পরিপূর্ণতা বাদ দিয়ে অপূর্ণাঙ্গ পদ্ধতি অনুসরণ করেননি। তার চেয়ে বড় কথা হল আমাদেরকে আল্লাহ রাববুল আলামীনের পক্ষ থেকে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর আনুগত্যের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এসব দিকে লক্ষ্য করে আমাদের অবশ্যই ঈদের সালাত ঈদগাহে (উন্মুক্ত প্রান্তরে) আদায় করা উচিত।’
আর রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো ঈদের সালাত মসজিদে আদায় করেছেন এমন কোন বর্ণনা নেই। অবশ্য আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ বর্ণিত একটি হাদীসে জানা যায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার কোন এক অসুবিধা থাকায় মসজিদে ঈদের সালাত আদায় করেছেন। তবে এ হাদিসটিকে প্রখ্যাত মুহাদ্দিস নাসিরুদ্দীন আলবানী দুর্বল বলে প্রমাণ করেছেন। তাই আমাদের অলসতা পরিত্যাগ করে কিছুটা কষ্ট করে হলেও ঈদের সালাত ঈদগাহে আদায় করার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া উচিত। এ দিনে মুসলিমগণ এক সম্মেলনে মিলিত হবেন। মসজিদ এ কাজের জন্য যথাযথ প্রশস্ত স্থান হতে পারে না। মসজিদে সালাত আদায়ের ফযীলত থাকা সত্ত্বেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বদা ঈদগাহে ঈদের সালাত আদায় করেছেন। এমনিভাবে মসজিদের ফযীলত থাকা সত্ত্বেও নফল নামায ঘরে আদায় করা উত্তম।
হাদীসে এসেছে :—
عن ابن عباس رضي الله عنهما أن النبي صلى الله عليه وسلم خرج يوم الفطر فصلى ركعتين لم يصل قبلها ولا بعدها . البخاري :৯৩৫
ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, ‘নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল-ফিতরের দিনে বের হয়ে দু রাকাআত ঈদের সালাত আদায় করেছেন। এর পূর্বে ও পরে অন্য কোন নামায আদায় করেননি।’ [বুখারী : ৯৩৫]
সুন্নত হল ঈদের সালাতের ওয়াক্তে শুধু ঈদের নামায আদায় করবে অন্য কোন নফল নামায আদায় করবে না। তবে যদি কোন অসুবিধার কারণে ঈদের সালাত মসজিদে আদায় করতে হয় তাহলে মসজিদে প্রবেশ করে দু রাকাআত তাহিয়্যাতুল মসজিদ আদায় করা যেতে পারে।
عن ابن عباس رضي الله عنهما أن النبي صلى الله عليه وسلم خرج يوم الفطر فصلى ركعتين لم يصل قبلها ولا بعدها . البخاري :৯৩৫
ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, ‘নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল-ফিতরের দিনে বের হয়ে দু রাকাআত ঈদের সালাত আদায় করেছেন। এর পূর্বে ও পরে অন্য কোন নামায আদায় করেননি।’ [বুখারী : ৯৩৫]
সুন্নত হল ঈদের সালাতের ওয়াক্তে শুধু ঈদের নামায আদায় করবে অন্য কোন নফল নামায আদায় করবে না। তবে যদি কোন অসুবিধার কারণে ঈদের সালাত মসজিদে আদায় করতে হয় তাহলে মসজিদে প্রবেশ করে দু রাকাআত তাহিয়্যাতুল মসজিদ আদায় করা যেতে পারে।
হাদীসে এসেছে :—
عن ابن عباس و جابر رضي الله عنهما قالا : لم يكن يؤذن يوم الفطر ولا يوم الأضحى . رواه البخاري :৯০৭
ইবনে আববাস ও জাবের রা. থেকে বর্ণিত তারা বলেন: ‘ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার সালাতে আযান দেয়া হতো না।’ [বুখারী : ৯০৭]
وعن جابر بن سمرة رضي الله عنه قال : صليت مع رسول الله صلى الله عليه وسلم العيدين غير مرة ولا مرتين بغير أذان ولا إقامة . مسلم :১৪৬৭
জাবের ইবনে সামুরা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: ‘আমি একাধিকবার রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সাথে দু ঈদের সালাত আদায় করেছি কোন আযান ও ইকামাত ব্যতীত।’ [মুসলিম : ১৪৬৭]
عن ابن عباس و جابر رضي الله عنهما قالا : لم يكن يؤذن يوم الفطر ولا يوم الأضحى . رواه البخاري :৯০৭
ইবনে আববাস ও জাবের রা. থেকে বর্ণিত তারা বলেন: ‘ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার সালাতে আযান দেয়া হতো না।’ [বুখারী : ৯০৭]
وعن جابر بن سمرة رضي الله عنه قال : صليت مع رسول الله صلى الله عليه وسلم العيدين غير مرة ولا مرتين بغير أذان ولا إقامة . مسلم :১৪৬৭
জাবের ইবনে সামুরা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: ‘আমি একাধিকবার রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সাথে দু ঈদের সালাত আদায় করেছি কোন আযান ও ইকামাত ব্যতীত।’ [মুসলিম : ১৪৬৭]
ঈদের সালাত হল দু রাকাআত। হাদীসে এসেছে—
قال عمر رضي الله عنه : صلاة الجمعة ركعتان وصلاة الفطر ركعتان وصلاة الأضحى ركعتان وصلاة السفر ركعتان . النسائي :১৪০৩ وصححه الألباني
উমার রা.বলেন: ‘জুমআর সালাত দু রাকাআত, ঈদুল ফিতরের সালাত দু রাকাআত, ঈদুল আজহার সালাত দু রাকাআত ও সফর অবস্থায় সালাত হল দু রাকাআত।’ [নাসায়ী : ১৪০৩]
ঈদের সালাত শুরু হবে তাকবীরে তাহরীমা দিয়ে।
ঈদের সালাতে অতিরিক্ত প্রত্যেক তাকবীরের পর হাত উঠাতে হবে। তাকবীর সমূহ আদায় করার পর সুরা ফাতেহা পড়বে, তারপর প্রথম রাকাতে সূরা আ’লা’ পড়বে আর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা গাশিয়াহ পড়বে। অথবা প্রথম রাকাতে সূরা ফাতেহার পর সূরা কাফ পড়বে আর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কামার পড়বে।
এভাবে পড়া মুস্তাহাব। কেউ এভাবে না পড়ে অন্য সূরা দিয়ে পড়লে কোন ক্ষতি নেই। সালাত শেষ হওয়ার পর ইমাম সাহেব খুতবা দেবেন। মনে রাখা দরকার, ঈদের খুতবা হবে সালাত আদায়ের পর। সালাত আদায়ের পূর্বে কোন খুতবা নেই। হাদীসে এসেছে—
عن أبي سعيد الخدري رضي الله عنه قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يخرج يوم الفطر والأضحى إلى المصلى، فأول شيء يبدأ به الصلاة، ثم ينصرف فيقوم مقابل الناس والناس جلوس على صفوفهم، فيعظهم ويوصيهم ويأمرهم . البخاري :৯০৩
আবু সায়ীদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল ফিতর ও ঈদুল-আজহার দিন ঈদগাহের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হতেন। ঈদগাহে প্রথম সালাত শুরু করতেন। সালাত শেষে মানুষের দিকে ফিরে খুতবা দিতেন, এ খুতবাতে তিনি তাদের ওয়াজ করতেন, উপদেশ দিতেন, বিভিন্ন নির্দেশ দিতেন। আর এ অবস্থায় মানুষেরা তাদের কাতারে বসে থাকতো।’ [বুখারী : ৯০৩]
এ হাদীস দ্বারা যে কয়েকটি বিষয় প্রমাণিত হল তার মাঝে: ঈদের সালাতের পূর্বে কোন ওয়াজ-নসিহত বা খুতবা হবে না। ইমাম সাহেব ঈদগাহে এসে সালাত শুরু করে দেবেন।
قال عمر رضي الله عنه : صلاة الجمعة ركعتان وصلاة الفطر ركعتان وصلاة الأضحى ركعتان وصلاة السفر ركعتان . النسائي :১৪০৩ وصححه الألباني
উমার রা.বলেন: ‘জুমআর সালাত দু রাকাআত, ঈদুল ফিতরের সালাত দু রাকাআত, ঈদুল আজহার সালাত দু রাকাআত ও সফর অবস্থায় সালাত হল দু রাকাআত।’ [নাসায়ী : ১৪০৩]
ঈদের সালাত শুরু হবে তাকবীরে তাহরীমা দিয়ে।
ঈদের সালাতে অতিরিক্ত প্রত্যেক তাকবীরের পর হাত উঠাতে হবে। তাকবীর সমূহ আদায় করার পর সুরা ফাতেহা পড়বে, তারপর প্রথম রাকাতে সূরা আ’লা’ পড়বে আর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা গাশিয়াহ পড়বে। অথবা প্রথম রাকাতে সূরা ফাতেহার পর সূরা কাফ পড়বে আর দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কামার পড়বে।
এভাবে পড়া মুস্তাহাব। কেউ এভাবে না পড়ে অন্য সূরা দিয়ে পড়লে কোন ক্ষতি নেই। সালাত শেষ হওয়ার পর ইমাম সাহেব খুতবা দেবেন। মনে রাখা দরকার, ঈদের খুতবা হবে সালাত আদায়ের পর। সালাত আদায়ের পূর্বে কোন খুতবা নেই। হাদীসে এসেছে—
عن أبي سعيد الخدري رضي الله عنه قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يخرج يوم الفطر والأضحى إلى المصلى، فأول شيء يبدأ به الصلاة، ثم ينصرف فيقوم مقابل الناس والناس جلوس على صفوفهم، فيعظهم ويوصيهم ويأمرهم . البخاري :৯০৩
আবু সায়ীদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদুল ফিতর ও ঈদুল-আজহার দিন ঈদগাহের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হতেন। ঈদগাহে প্রথম সালাত শুরু করতেন। সালাত শেষে মানুষের দিকে ফিরে খুতবা দিতেন, এ খুতবাতে তিনি তাদের ওয়াজ করতেন, উপদেশ দিতেন, বিভিন্ন নির্দেশ দিতেন। আর এ অবস্থায় মানুষেরা তাদের কাতারে বসে থাকতো।’ [বুখারী : ৯০৩]
এ হাদীস দ্বারা যে কয়েকটি বিষয় প্রমাণিত হল তার মাঝে: ঈদের সালাতের পূর্বে কোন ওয়াজ-নসিহত বা খুতবা হবে না। ইমাম সাহেব ঈদগাহে এসে সালাত শুরু করে দেবেন।
সালাতের পর ইমাম দুটো খুতবা দেবেন। সে খুতবায় তিনি আল্লাহ রাববুল আলামীনের প্রশংসা, গুণ-গান ও অধিক পরিমাণে তাকবীর পাঠ করবেন। তবে ঈদের সালাত আদায়কারীকে ঈদের খুতবা শুনতেই হবে এমন কথা নেই। যেমন হাদীসে এসেছে—
عن عبد الله بن السائب رضي الله عنه قال : شهدت العيد مع النبي صلى الله عليه وسلم فلما قضى الصلاة قال : إنا نخطب فمن أحب أن يجلس فليجلس ومن أحب أن يذهب فليذهب أبو داود :৯৭৫ وصححه الألباني
আব্দুল্লাহ বিন সায়েব রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে ঈদ উদযাপন করলাম। যখন তিনি ঈদের সালাত শেষ করলেন, বললেন: ‘আমরা এখন খুতবা দেব। যার ভাল লাগে সে যেন বসে, আর যে চলে যেতে চায়, সে যেতে পারে।’ [আবু দাউদ : ৯৫৭]
আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে খুতবা শুনলে অনেক সওয়াব অর্জন করা যাবে। তাতে যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীনের যিকির আছে, দ্বীনি শিক্ষা বিষয়ক কথা-বার্তা রয়েছে তেমনি রয়েছে ফেরেশতাদের আগমন ও আল্লাহ তা‘আলার সাকীনা ও রহমত। তাই এটা অবহেলা করে হারানো উচিত নয়।
عن عبد الله بن السائب رضي الله عنه قال : شهدت العيد مع النبي صلى الله عليه وسلم فلما قضى الصلاة قال : إنا نخطب فمن أحب أن يجلس فليجلس ومن أحب أن يذهب فليذهب أبو داود :৯৭৫ وصححه الألباني
আব্দুল্লাহ বিন সায়েব রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে ঈদ উদযাপন করলাম। যখন তিনি ঈদের সালাত শেষ করলেন, বললেন: ‘আমরা এখন খুতবা দেব। যার ভাল লাগে সে যেন বসে, আর যে চলে যেতে চায়, সে যেতে পারে।’ [আবু দাউদ : ৯৫৭]
আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে খুতবা শুনলে অনেক সওয়াব অর্জন করা যাবে। তাতে যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীনের যিকির আছে, দ্বীনি শিক্ষা বিষয়ক কথা-বার্তা রয়েছে তেমনি রয়েছে ফেরেশতাদের আগমন ও আল্লাহ তা‘আলার সাকীনা ও রহমত। তাই এটা অবহেলা করে হারানো উচিত নয়।
কারো যদি ঈদের সালাত ছুটে যায় তাহলে সে কি করবে। কাজা করা দরকার কিনা? এ বিষয়ে উলামাদের একাধিক মত রয়েছে। তবে বিশুদ্ধ মত হল কাজা আদায় করবে। এরপর কথা থেকে যায় সে কাজা আদায় করতে যেয়ে কত রাকাআত আদায় করবে। চার রাকাআত না দু রাকাআত? এ বিষয়ে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন মত। ইমাম বুখারী রহ. বলেছেন : ‘যদি কেউ ঈদের সালাত ধরতে না পারে তবে দু রাকাআত কাজা আদায় করবে।’ আতা রহ. বলেছেন: ‘যদি ঈদের সালাত ছুটে যায় তবে কাজা হিসেবে দু রাকাআত আদায় করবে।’ হাফেজ ইবনে হাজার রহ. বলেছেন: ‘যদি ঈদের সালাত ছুটে যায় তবে ইমামের সাথে দু রাকাআত আদায় করবে।’ অর্থাৎ কাজা করবে জামাতের সাথে। মূলত দু রাকাআত কাজা আদায় করা যুক্তি সংগত। ইমাম মুযনী সহ একদল ফিকাহবিদ বলেছেন, ‘ঈদের সালাত ছুটে গেলে তা কাজা করার প্রয়োজন নেই।’ আর ইমাম সওরী ও ইমাম আহমদ বিন হান্বল রহ. বলেছেন, ‘যদি কেউ একা একা ঈদের সালাতের কাজা আদায় করে তবে সে দু রাকাআত আদায় করবে। আর যদি জামাতের সাথে আদায় করে তবেও দু রাকাআত।’
ইমাম আবু হানীফা রহ. বলেছেন : ‘যদি কেউ ঈদের সালাত কোন কারণে আদায় করতে না পারে তবে সে ইচ্ছা করলে কাজা আদায় করতে পারে, আর না করলে কোন অসুবিধা নেই। যদি আদায় করে তবে চার রাকাআতও আদায় করতে পারে আবার দু রাকাআতও।’ [ফাতহুল বারী]
ইমাম আবু হানীফা রহ. বলেছেন : ‘যদি কেউ ঈদের সালাত কোন কারণে আদায় করতে না পারে তবে সে ইচ্ছা করলে কাজা আদায় করতে পারে, আর না করলে কোন অসুবিধা নেই। যদি আদায় করে তবে চার রাকাআতও আদায় করতে পারে আবার দু রাকাআতও।’ [ফাতহুল বারী]
একে অপরকে শুভেচ্ছা জানানো, অভিবাদন করা মানুষের সুন্দর চরিত্রের একটি দিক। এতে খারাপ কিছু নেই। বরং এর মাধ্যমে অপরের জন্য কল্যাণ কামনা ও দোয়া করা যায়। পরস্পরের মাঝে বন্ধুত্ব ও আন্তরিকতা বৃদ্ধি পায়। ঈদ উপলক্ষে পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানানো শরীয়ত অনুমোদিত একটি বিষয়। বিভিন্ন বাক্য দ্বারা এ শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। যেমন :
(ক) হাফেজ ইবনে হাজার রহ. বলেছেন: ‘জোবায়ের ইবনে নফীর থেকে সঠিক সূত্রে বর্ণিত যে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহাবায়ে কেরাম ঈদের দিন সাক্ষাৎকালে একে অপরকে বলতেন:
تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَمِنْكَ . المعجم الكبير للطبراني :১৭৫৮৯
‘আল্লাহ তাআলা আমাদের ও আপনার ভাল কাজগুলো কবুল করুন।’ [আল মুজামুল কাবির লিত তাবারি : ১৭৫৮৯]
(খ) ঈদ মুবারক বলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়।
(গ) প্রতি বছরই আপনারা ভাল থাকুন: وَكُلُّ عَامٍ وَأَنْتُمْ بِخَيْرٍ বলা যায়। এ ধরনের সকল মার্জিত বাক্যের দ্বারা শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। তবে প্রথমে উল্লেখিত বাক্য ( تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَمِنْكَ ) দ্বারা শুভেচ্ছা বিনিময় করা উত্তম। কারণ সাহাবায়ে কেরাম রা. এ বাক্য ব্যবহার করতেন ও এতে পরস্পরের জন্য কল্যাণ কামনা ও আল্লাহ রাববুল আলামীনের কাছে দোয়া রয়েছে। আর যদি কেউ সব বাক্যগুলো দ্বারা শুভেচ্ছা বিনিময় করতে চায় তাতে অসুবিধা নেই। যেমন ঈদের দিন দেখা হলে বলবে—
تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَمِنْكَ، وَكُلُّ عَامٍ وَأَنْتُمْ بِخَيْرٍ، عِيْدُكَ مُبَارَكٌ
‘আল্লাহ রাববুল আলামীন আমার ও আপনার সৎ-কর্ম সমূহ কবুল করুন। সারা বছরই আপনারা সুখে থাকুন। আপনাকে বরকতময় ঈদের শুভেচ্ছা।’
(ক) হাফেজ ইবনে হাজার রহ. বলেছেন: ‘জোবায়ের ইবনে নফীর থেকে সঠিক সূত্রে বর্ণিত যে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহাবায়ে কেরাম ঈদের দিন সাক্ষাৎকালে একে অপরকে বলতেন:
تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَمِنْكَ . المعجم الكبير للطبراني :১৭৫৮৯
‘আল্লাহ তাআলা আমাদের ও আপনার ভাল কাজগুলো কবুল করুন।’ [আল মুজামুল কাবির লিত তাবারি : ১৭৫৮৯]
(খ) ঈদ মুবারক বলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়।
(গ) প্রতি বছরই আপনারা ভাল থাকুন: وَكُلُّ عَامٍ وَأَنْتُمْ بِخَيْرٍ বলা যায়। এ ধরনের সকল মার্জিত বাক্যের দ্বারা শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। তবে প্রথমে উল্লেখিত বাক্য ( تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَمِنْكَ ) দ্বারা শুভেচ্ছা বিনিময় করা উত্তম। কারণ সাহাবায়ে কেরাম রা. এ বাক্য ব্যবহার করতেন ও এতে পরস্পরের জন্য কল্যাণ কামনা ও আল্লাহ রাববুল আলামীনের কাছে দোয়া রয়েছে। আর যদি কেউ সব বাক্যগুলো দ্বারা শুভেচ্ছা বিনিময় করতে চায় তাতে অসুবিধা নেই। যেমন ঈদের দিন দেখা হলে বলবে—
تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَمِنْكَ، وَكُلُّ عَامٍ وَأَنْتُمْ بِخَيْرٍ، عِيْدُكَ مُبَارَكٌ
‘আল্লাহ রাববুল আলামীন আমার ও আপনার সৎ-কর্ম সমূহ কবুল করুন। সারা বছরই আপনারা সুখে থাকুন। আপনাকে বরকতময় ঈদের শুভেচ্ছা।’
সদাচরণ পাওয়ার ক্ষেত্রে আত্মীয়-স্বজনের মাঝে সবচেয়ে বেশি হকদার হল মাতা ও পিতা। তারপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন। আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ ও তাদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং সকল প্রকার মনোমালিন্য দূর করার জন্য ঈদ হল একটা বিরাট সুযোগ। কেননা হিংসা-বিদ্বেষ ও আত্মীয়-স্বজনের সাথে খারাপ সম্পর্ক এমন একটা বিষয় যা আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে দেয়। হাদীসে এসেছে—
عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : تفتح أبواب الجنة يوم الاثنين والخميس، فيغفر لكل عبد لا يشرك بالله شيئا إلا رجلا كانت بينه وبين أخيه شحناء، فيقال : أنظروا هذين حتى يصطلحا ! أنظروا هذين حتى يصطلحا ! أنظروا هذين حتى يصطلحا !. رواه مسلم : ৪৬৫২
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘সোমবার ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। যে আল্লাহর সাথে শিরক করে তাকে ব্যতীত সে দিন সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেয়া হয় কিন্তু ঐ দু ভাইকে ক্ষমা করা হয় না যাদের মাঝে হিংসা ও দ্বন্দ্ব রয়েছে। তখন (ফেরেশতাদেরকে) বলা হয় এ দুজনকে অবকাশ দাও যেন তারা নিজেদের দ্বন্দ্ব-বিবাদ মিটিয়ে মিলে মিশে যায়! এ দুজনকে অবকাশ দাও যেন তারা নিজেদের দ্বন্দ্ব-বিবাদ মিটিয়ে মিলে মিশে যায়! এ দুজনকে অবকাশ দাও যেন তারা নিজেদের দ্বন্দ্ব-বিবাদ মিটিয়ে মিলে মিশে যায়!! ’ (তাহলে তাদেরও যেন ক্ষমা করে দেয়া হয়)। [মুসলিম : ৪৬৫২]
এ হাদীস দ্বারা স্পষ্টভাবে অনুধাবন করা যায় যে নিজেদের মাঝে হিংসা, বিবাদ, দ্বন্দ্ব রাখা এত বড় অপরাধ যার কারণে আল্লাহর সাধারণ রহমত তো বটেই বিশেষ ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হতে হয়। হাদীসে আরো এসেছে—
عن أبي أيوب الأنصاري رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : لا يحل لمسلم أن يهجر أخاه فوق ثلاث ليال، يلتقيان فيعرض هذا ويعرض هذا، وخيرهما الذي يبدأ بالسلام . مسلم :৪৬৪৩
আবু আইয়ুব আনসারী রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘কোন মুসলিমের জন্য বৈধ নয় যে তার ভাইকে তিন দিনের বেশি সময় বয়কট করবে বা সম্পর্ক ছিন্ন রাখবে। তাদের অবস্থা এমন যে দেখা সাক্ষাৎ হলে একজন অন্য জনকে এড়িয়ে চলে। এ দুজনের মাঝে ঐ ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ যে প্রথম সালাম দেয়।’ [মুসলিম : ৪৬৪৩]
এ সকল হাদীসে ভাই বলতে শুধু আপন ভাইকে বুঝানো হয়নি বরং সকল মুসলমানকেই বুঝানো হয়েছে। হোক সে ভাই অথবা প্রতিবেশী কিংবা চাচা বা বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী, সহপাঠী বা অন্য কোন আত্মীয়। তাই যার সাথে ইতিপূর্বে ভাল সম্পর্ক ছিল এমন কোন মুসলমানের সাথে সম্পর্ক খারাপ করা শরীয়তের দৃষ্টিতে মারাত্মক অন্যায়। যদি কেউ এমন অন্যায়ে লিপ্ত হয়ে পড়ে তার এ অন্যায় থেকে ফিরে আসার এক মহা সুযোগ হল ঈদ।
عن أبي هريرة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : تفتح أبواب الجنة يوم الاثنين والخميس، فيغفر لكل عبد لا يشرك بالله شيئا إلا رجلا كانت بينه وبين أخيه شحناء، فيقال : أنظروا هذين حتى يصطلحا ! أنظروا هذين حتى يصطلحا ! أنظروا هذين حتى يصطلحا !. رواه مسلم : ৪৬৫২
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘সোমবার ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। যে আল্লাহর সাথে শিরক করে তাকে ব্যতীত সে দিন সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেয়া হয় কিন্তু ঐ দু ভাইকে ক্ষমা করা হয় না যাদের মাঝে হিংসা ও দ্বন্দ্ব রয়েছে। তখন (ফেরেশতাদেরকে) বলা হয় এ দুজনকে অবকাশ দাও যেন তারা নিজেদের দ্বন্দ্ব-বিবাদ মিটিয়ে মিলে মিশে যায়! এ দুজনকে অবকাশ দাও যেন তারা নিজেদের দ্বন্দ্ব-বিবাদ মিটিয়ে মিলে মিশে যায়! এ দুজনকে অবকাশ দাও যেন তারা নিজেদের দ্বন্দ্ব-বিবাদ মিটিয়ে মিলে মিশে যায়!! ’ (তাহলে তাদেরও যেন ক্ষমা করে দেয়া হয়)। [মুসলিম : ৪৬৫২]
এ হাদীস দ্বারা স্পষ্টভাবে অনুধাবন করা যায় যে নিজেদের মাঝে হিংসা, বিবাদ, দ্বন্দ্ব রাখা এত বড় অপরাধ যার কারণে আল্লাহর সাধারণ রহমত তো বটেই বিশেষ ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হতে হয়। হাদীসে আরো এসেছে—
عن أبي أيوب الأنصاري رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : لا يحل لمسلم أن يهجر أخاه فوق ثلاث ليال، يلتقيان فيعرض هذا ويعرض هذا، وخيرهما الذي يبدأ بالسلام . مسلم :৪৬৪৩
আবু আইয়ুব আনসারী রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘কোন মুসলিমের জন্য বৈধ নয় যে তার ভাইকে তিন দিনের বেশি সময় বয়কট করবে বা সম্পর্ক ছিন্ন রাখবে। তাদের অবস্থা এমন যে দেখা সাক্ষাৎ হলে একজন অন্য জনকে এড়িয়ে চলে। এ দুজনের মাঝে ঐ ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ যে প্রথম সালাম দেয়।’ [মুসলিম : ৪৬৪৩]
এ সকল হাদীসে ভাই বলতে শুধু আপন ভাইকে বুঝানো হয়নি বরং সকল মুসলমানকেই বুঝানো হয়েছে। হোক সে ভাই অথবা প্রতিবেশী কিংবা চাচা বা বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী, সহপাঠী বা অন্য কোন আত্মীয়। তাই যার সাথে ইতিপূর্বে ভাল সম্পর্ক ছিল এমন কোন মুসলমানের সাথে সম্পর্ক খারাপ করা শরীয়তের দৃষ্টিতে মারাত্মক অন্যায়। যদি কেউ এমন অন্যায়ে লিপ্ত হয়ে পড়ে তার এ অন্যায় থেকে ফিরে আসার এক মহা সুযোগ হল ঈদ।
ঈদ হল মুসলমানদের শান-শওকত প্রদর্শন, তাদের আত্মার পরিশুদ্ধতা, তাদের ঐক্য সংহতি ও আল্লাহ রাববুল আলামীনের প্রতি আনুগত্য ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উৎসব। কিন্তু দুঃখজনক হল বহু মুসলিম এ দিনটাকে যথার্থ মূল্যায়ন করতে জানে না। তারা এ দিনে বিভিন্ন অইৈসলামীক কাজ-কর্মে মশগুল হয়ে পড়ে। এ ধরনের কিছু কাজ-কর্মের আলোচনা করা হল :
মুসলিম সমাজে এ ব্যাধি ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তারা পোশাক-পরিচ্ছদে, চাল-চলনে, শুভেচ্ছা বিনিময়ে অমুসলিমদের অন্ধ অনুকরণে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। এর মাধ্যমে তারা যেমন সাংস্কৃতিক দৈন্যতার পরিচয় দিচ্ছে অপর দিকে নিজেদের তাহজীব-তামাদ্দুনের প্রতি অনীহা দেখাচ্ছে। এ ধরনের আচরণ ইসলামে শরীয়তে নিষিদ্ধ। হাদীসে এসেছে—
عن عبد الله بن عمرو رضي الله عنهما أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : من تشبه بقوم فهو منهم رواه أبو داود :৩৫১২ وصححه الألباني
সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘যে ব্যক্তি অন্য জাতির সাথে সা-দৃশ্যতা রাখবে সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য হবে।’ [আবু দাউদ ৩৫১২]
এ হাদীসের ব্যাখ্যায় শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, ‘এ হাদীসের বাহ্যিক অর্থ হল, যে কাফেরদের সাথে সাদৃশ্য রাখবে সে কাফের হয়ে যাবে। যদি এ বাহ্যিক অর্থ (কুফরীর হুকুম) আমরা না-ও ধরি তবুও কমপক্ষে এ কাজটি যে হারাম তাতে সন্দেহ নেই।’
عن عبد الله بن عمرو رضي الله عنهما أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : من تشبه بقوم فهو منهم رواه أبو داود :৩৫১২ وصححه الألباني
সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘যে ব্যক্তি অন্য জাতির সাথে সা-দৃশ্যতা রাখবে সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য হবে।’ [আবু দাউদ ৩৫১২]
এ হাদীসের ব্যাখ্যায় শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, ‘এ হাদীসের বাহ্যিক অর্থ হল, যে কাফেরদের সাথে সাদৃশ্য রাখবে সে কাফের হয়ে যাবে। যদি এ বাহ্যিক অর্থ (কুফরীর হুকুম) আমরা না-ও ধরি তবুও কমপক্ষে এ কাজটি যে হারাম তাতে সন্দেহ নেই।’
পোশাক-পরিচ্ছদ, চাল-চলন ও সাজ-সজ্জার ক্ষেত্রে পুরুষের মহিলার বেশ ধারণ ও মহিলার পুরুষের বেশ ধারণ করা হারাম। ঈদের দিনে এ কাজটি অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। হাদীসে এসেছে—
عن ابن عباس رضي الله عنهما عن النبي صلى الله عليه وسلم : أنه لعن المتشبهات من النساء بالرجال والمتشبهين من الرجال بالنساء . أبو داود :৩৫৭৪
ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ সকল মহিলাকে অভিসম্পাত করেছেন যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে এবং ঐ সকল পুরুষকে অভিসম্পাত করেছেন যারা মহিলার বেশ ধারণ করে। [আবু দাউদ ৩৫৭৪]
عن ابن عباس رضي الله عنهما عن النبي صلى الله عليه وسلم : أنه لعن المتشبهات من النساء بالرجال والمتشبهين من الرجال بالنساء . أبو داود :৩৫৭৪
ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ সকল মহিলাকে অভিসম্পাত করেছেন যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে এবং ঐ সকল পুরুষকে অভিসম্পাত করেছেন যারা মহিলার বেশ ধারণ করে। [আবু দাউদ ৩৫৭৪]
কবর যিয়ারত করা শরীয়ত সমর্থিত একটা নেক আমল। যেমন হাদীসে এসেছে—
عن أنس رضي الله عنه قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : كنت نهيتكم عن زيارة القبور، ألا فزورها فإنها ترق القلب وتدمع العين وتذكر الآخرة، ولا تقولوا هجراً . صحيح الجامع : ৪৫৮৪
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, হ্যাঁ এখন তোমরা কবর যিয়ারত করবে। কারণ কবর যিয়ারত হৃদয়কে কোমল করে, নয়নকে অশ্রুসিক্ত করে ও পরকালকে স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে তোমরা শোক ও বেদনা প্রকাশ করতে যেয়ে সেখানে কিছু বলবে না।’ [সহীহ আল-জামে হাদীস নং ৪৫৮৪]
কিন্তু ঈদের দিনে কবর যিয়ারতকে অভ্যাসে পরিণত করা বা একটা প্রথা বানিয়ে নেয়া শরীয়ত সম্মত নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
لا تجعلوا قبري عيداً . . . أبو داود :১৭৪৬
‘তোমরা আমার কবরে ঈদ উদযাপন করবে না বা ঈদের স্থান বানাবে না...।’ [আবু দাউদ : ১৭৪৬]
যদি ঈদের দিনে কবর যিয়ারত করা হয়, তাহলে তা কবরে ঈদ উদযাপন বলে গণ্য হয়। মনে রাখা প্রয়োজন যে ‘ঈদ’ মানে যা বার বার আসে। প্রতি বছরে অথবা প্রতি মাসে বা প্রতি সপ্তাহে। যদি বছরের কোন একটি দিনকে কবর জিয়ারতের জন্য নির্দিষ্ট করে নেয়া হয় আর তা প্রতি বছরে করা হয় তা হলে এটার নামই হল কবরে ঈদ উদযাপন। আর সেটা যদি সত্যিকার ঈদের দিনে হয় তবে তা আরো মারাত্মক বলে ধরে নেয়া যায়। যখন আল্লাহর রাসূলের কবরে ঈদ পালন নিষিদ্ধ, তখন অন্যের কবরে ঈদ উদযাপন করার হুকুম কতখানি নিষিদ্ধের পর্যায়ে পড়ে তা একটু অনুমান করা যেতে পারে।
عن أنس رضي الله عنه قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : كنت نهيتكم عن زيارة القبور، ألا فزورها فإنها ترق القلب وتدمع العين وتذكر الآخرة، ولا تقولوا هجراً . صحيح الجامع : ৪৫৮৪
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, হ্যাঁ এখন তোমরা কবর যিয়ারত করবে। কারণ কবর যিয়ারত হৃদয়কে কোমল করে, নয়নকে অশ্রুসিক্ত করে ও পরকালকে স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে তোমরা শোক ও বেদনা প্রকাশ করতে যেয়ে সেখানে কিছু বলবে না।’ [সহীহ আল-জামে হাদীস নং ৪৫৮৪]
কিন্তু ঈদের দিনে কবর যিয়ারতকে অভ্যাসে পরিণত করা বা একটা প্রথা বানিয়ে নেয়া শরীয়ত সম্মত নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
لا تجعلوا قبري عيداً . . . أبو داود :১৭৪৬
‘তোমরা আমার কবরে ঈদ উদযাপন করবে না বা ঈদের স্থান বানাবে না...।’ [আবু দাউদ : ১৭৪৬]
যদি ঈদের দিনে কবর যিয়ারত করা হয়, তাহলে তা কবরে ঈদ উদযাপন বলে গণ্য হয়। মনে রাখা প্রয়োজন যে ‘ঈদ’ মানে যা বার বার আসে। প্রতি বছরে অথবা প্রতি মাসে বা প্রতি সপ্তাহে। যদি বছরের কোন একটি দিনকে কবর জিয়ারতের জন্য নির্দিষ্ট করে নেয়া হয় আর তা প্রতি বছরে করা হয় তা হলে এটার নামই হল কবরে ঈদ উদযাপন। আর সেটা যদি সত্যিকার ঈদের দিনে হয় তবে তা আরো মারাত্মক বলে ধরে নেয়া যায়। যখন আল্লাহর রাসূলের কবরে ঈদ পালন নিষিদ্ধ, তখন অন্যের কবরে ঈদ উদযাপন করার হুকুম কতখানি নিষিদ্ধের পর্যায়ে পড়ে তা একটু অনুমান করা যেতে পারে।
মনে রাখা প্রয়োজন যে খোলামেলা ও অশালীন পোষাকে রাস্তা-ঘাটে বের হওয়া ইসলামী শরীয়তে নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা বলেন :—
(আরবি)
‘আর তোমরা নিজ ঘরে অবস্থান করবে এবং প্রাচীন মূর্খতার যুগের মত নিজেদের প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’ [সূরা আহযাব : ৩৩]
হাদীসে এসেছে—
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : صنفان من أهل النار لم أرهما : قوم معهم سياط كأذناب البقر يضربون بها الناس، ونساء كاسيات عاريات، مميلات مائلات، رؤسهن كأسنمة البخت المائلة لا يدخلن الجنة ولا يجدن ريحها، وإن ريحها ليوجد من مسيرة كذا وكذا . مسلم :৩৯৭১
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘জাহান্নামবাসী দু’ ধরনের লোক আছে যাদের আমি এখনও দেখতে পাইনি। (আমার যুগের পরে দেখা যাবে) একদল লোক যাদের সাথে গরুর লেজের ন্যায় চাবুক থাকবে, তা দিয়ে তারা লোকজনকে প্রহার করবে। আর এক দল এমন মেয়ে-লোক যারা পোশাক পরিধান করেও উলঙ্গ মানুষের মত হবে। অন্যদের আকৃষ্ট করবে ও তারা অন্যদের প্রতি আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথার চুলের অবস্থা উটের হেলে পড়া কুঁজের ন্যায়। ওরা জান্নাতে প্রবেশ করবে না, এমনকি তার সুগন্ধিও পাবে না। যদিও তার সুগন্ধি বহু দূর থেকে পাওয়া যাবে।’ [মুসলিম : ৩৯৭১]
(আরবি)
‘আর তোমরা নিজ ঘরে অবস্থান করবে এবং প্রাচীন মূর্খতার যুগের মত নিজেদের প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’ [সূরা আহযাব : ৩৩]
হাদীসে এসেছে—
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : صنفان من أهل النار لم أرهما : قوم معهم سياط كأذناب البقر يضربون بها الناس، ونساء كاسيات عاريات، مميلات مائلات، رؤسهن كأسنمة البخت المائلة لا يدخلن الجنة ولا يجدن ريحها، وإن ريحها ليوجد من مسيرة كذا وكذا . مسلم :৩৯৭১
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘জাহান্নামবাসী দু’ ধরনের লোক আছে যাদের আমি এখনও দেখতে পাইনি। (আমার যুগের পরে দেখা যাবে) একদল লোক যাদের সাথে গরুর লেজের ন্যায় চাবুক থাকবে, তা দিয়ে তারা লোকজনকে প্রহার করবে। আর এক দল এমন মেয়ে-লোক যারা পোশাক পরিধান করেও উলঙ্গ মানুষের মত হবে। অন্যদের আকৃষ্ট করবে ও তারা অন্যদের প্রতি আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথার চুলের অবস্থা উটের হেলে পড়া কুঁজের ন্যায়। ওরা জান্নাতে প্রবেশ করবে না, এমনকি তার সুগন্ধিও পাবে না। যদিও তার সুগন্ধি বহু দূর থেকে পাওয়া যাবে।’ [মুসলিম : ৩৯৭১]
অনেককে দেখা যায় অন্যান্য সময়ের চেয়ে এই গুনাহের কাজটা ঈদের দিনে বেশি করা হয়। নিকট আত্মীয়দের মাঝে যাদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ শরীয়ত অনুমোদিত নয়, তাদের সাথে অবাধে দেখা-সাক্ষাৎ করা হয়। হাদীসে এসেছে—
عن عقبة بن عامر رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله قال : إياكم والدخول على النساء، فقال رجل من الأنصار : يا رسول الله أفرأيت الحمو؟ قال : الحمو : الموت . مسلم :৪০৩৭
সাহাবী উকবাহ ইবনে আমের রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘তোমরা মেয়েদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করা থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখবে।’ আনসারী সাহাবীদের মধ্য থেকে এক লোক প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল ! দেবর-ভাসুর প্রমুখ আত্মীয়দের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? তিনি উত্তরে বললেন : ‘এ ধরনের আত্মীয়-স্বজন তো মৃত্যু।’ [মুসলিম : ৪০৩৭]
এ হাদীসে আরবী ‘হামউ’ শব্দ নেয়া হয়েছে। এর অর্থ এমন সকল আত্মীয় যারা স্বামীর সম্পর্কের দিক দিয়ে নিকটতম। যেমন স্বামীর ভাই, তার মামা, খালু প্রমুখ। তাদেরকে মৃত্যুর সাথে তুলনা করার কারণ হল, এ সকল আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমেই বে-পর্দাজনিত বিপদ আপদ বেশি ঘটে থাকে। যেমনটি অপরিচিত পুরুষদের বেলায় কম ঘটে।
عن عقبة بن عامر رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله قال : إياكم والدخول على النساء، فقال رجل من الأنصار : يا رسول الله أفرأيت الحمو؟ قال : الحمو : الموت . مسلم :৪০৩৭
সাহাবী উকবাহ ইবনে আমের রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘তোমরা মেয়েদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করা থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখবে।’ আনসারী সাহাবীদের মধ্য থেকে এক লোক প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল ! দেবর-ভাসুর প্রমুখ আত্মীয়দের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? তিনি উত্তরে বললেন : ‘এ ধরনের আত্মীয়-স্বজন তো মৃত্যু।’ [মুসলিম : ৪০৩৭]
এ হাদীসে আরবী ‘হামউ’ শব্দ নেয়া হয়েছে। এর অর্থ এমন সকল আত্মীয় যারা স্বামীর সম্পর্কের দিক দিয়ে নিকটতম। যেমন স্বামীর ভাই, তার মামা, খালু প্রমুখ। তাদেরকে মৃত্যুর সাথে তুলনা করার কারণ হল, এ সকল আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমেই বে-পর্দাজনিত বিপদ আপদ বেশি ঘটে থাকে। যেমনটি অপরিচিত পুরুষদের বেলায় কম ঘটে।
ঈদের দিনে এ গুনাহের কাজটাও বেশি হতে দেখা যায়। গান ও বাদ্যযন্ত্র যে শরীয়তে নিষিদ্ধ এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। আবার যদি হয় অশ্লীল গান তাহলে তো তা হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোন ভিন্নমত নেই। হাদীসে এসেছে—
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ليكون أقواما من أمتي يستحلون الحر والحرير والخمر والمعازف . البخاري :ص২৯৮ باب :১৭
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘আমার উম্মতের মাঝে এমন একটা দল পাওয়া যাবে যারা ব্যভিচার, রেশমি পোশাক, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল (বৈধ) মনে করবে।’ [বুখারী : পৃ: ২৯৪ অধ্যায়: ১৭]
এ হাদীস দ্বারা বুঝা যায় গান-বাদ্য নিষিদ্ধ। কারণ হাদীসে বলা হয়েছে ‘তারা হালাল মনে করবে’। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় মূলত এটা হারাম। ইসলামী শরীয়ত কিছু কিছু পর্বে বিনোদনের অনুমতি দিয়েছে। তাই অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম নিম্নোক্ত কয়েকটি সময়ে দফ (একদিকে খোলা ঢোল জাতীয় বাদ্য) বাজানোকে জায়েয বলেছেন :
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ليكون أقواما من أمتي يستحلون الحر والحرير والخمر والمعازف . البخاري :ص২৯৮ باب :১৭
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘আমার উম্মতের মাঝে এমন একটা দল পাওয়া যাবে যারা ব্যভিচার, রেশমি পোশাক, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল (বৈধ) মনে করবে।’ [বুখারী : পৃ: ২৯৪ অধ্যায়: ১৭]
এ হাদীস দ্বারা বুঝা যায় গান-বাদ্য নিষিদ্ধ। কারণ হাদীসে বলা হয়েছে ‘তারা হালাল মনে করবে’। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় মূলত এটা হারাম। ইসলামী শরীয়ত কিছু কিছু পর্বে বিনোদনের অনুমতি দিয়েছে। তাই অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম নিম্নোক্ত কয়েকটি সময়ে দফ (একদিকে খোলা ঢোল জাতীয় বাদ্য) বাজানোকে জায়েয বলেছেন :
হাদীসে এসেছে—
عن الربيع بنت معوذ بن عفراء قالت : جاء النبي صلى الله عليه وسلم حين بني علي فجلس على فراشي كمجلسك مني، فجعلت جويريات لنا يضربن بالدف، ويندبن من قتل من آبائي يوم بدر، إذ قالت إحداهن : وفينا نبي يعلم ما في غد . فقال : دعي هذه وقولي بالذي كنت تقولين . البخاري :৪৭৫০
রবী বিনতে মুয়াওয়াজ রা. বর্ণনা করেন : ‘যখন আমার বিবাহের অনুষ্ঠান হচ্ছিল তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার কাছে এসে আমার বিছানায় এমনভাবে বসলেন যেমন তুমি বসেছ। তখন কয়েকজন বালিকা দফ বাজাচ্ছিল ও আমাদের পূর্ব-পুরুষদের মাঝে যারা বদর যুদ্ধে নিহত হয়েছিল তাদের প্রশংসামূলক সংগীত পরিবেশন করছিল। এ সংগীতের মাঝে এক বালিকা বলে উঠল, ‘আমাদের মাঝে এমন এক নবী আছেন যিনি জানেন আগামী কাল কি হবে।’ তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ‘এ কথা বাদ দাও এবং যা বলছিলে তা বল।’ [বুখারী: ৪৭৫০]
عن الربيع بنت معوذ بن عفراء قالت : جاء النبي صلى الله عليه وسلم حين بني علي فجلس على فراشي كمجلسك مني، فجعلت جويريات لنا يضربن بالدف، ويندبن من قتل من آبائي يوم بدر، إذ قالت إحداهن : وفينا نبي يعلم ما في غد . فقال : دعي هذه وقولي بالذي كنت تقولين . البخاري :৪৭৫০
রবী বিনতে মুয়াওয়াজ রা. বর্ণনা করেন : ‘যখন আমার বিবাহের অনুষ্ঠান হচ্ছিল তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার কাছে এসে আমার বিছানায় এমনভাবে বসলেন যেমন তুমি বসেছ। তখন কয়েকজন বালিকা দফ বাজাচ্ছিল ও আমাদের পূর্ব-পুরুষদের মাঝে যারা বদর যুদ্ধে নিহত হয়েছিল তাদের প্রশংসামূলক সংগীত পরিবেশন করছিল। এ সংগীতের মাঝে এক বালিকা বলে উঠল, ‘আমাদের মাঝে এমন এক নবী আছেন যিনি জানেন আগামী কাল কি হবে।’ তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ‘এ কথা বাদ দাও এবং যা বলছিলে তা বল।’ [বুখারী: ৪৭৫০]
যেমন হাদীসে এসেছে—
عن عائشة رضي الله عنها قالت : دخل أبو بكر وعندي جاريتان من جواري الأنصار تغنيان بما تقاولت الأنصار يوم بعاث، قالت وليستا بمغنيتين، فقال أبو بكر : أمزامير الشيطان في بيت رسول الله ؟ وذلك يوم عيد، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم : يا أبا بكر إن لكل قوم عيداً وهذا عيدنا . البخاري :৮৯৯
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, একদিন আবু বকর রা. আমার ঘরে প্রবেশ করলেন। তখন দু জন আনসারী বালিকা বুয়াছ যুদ্ধে তাদের বীরত্ব সম্পর্কিত গান গাচ্ছিল, কিন্তু তারা পেশাদার গায়িকা ছিল না। আবু বকর রা. বললেন : ‘আশ্চর্য, আল্লাহর রাসূলের ঘরে শয়তানের বাদ্য !’ এদিনটা ছিল ঈদের দিন। আবু বকর রা. এর একথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : ‘হে আবু বকর ! প্রত্যেক জাতির ঈদ আছে, আর এদিন হল আমাদের ঈদ।’ [বুখারী : ৮৯৯]
عن عائشة رضي الله عنها قالت : دخل أبو بكر وعندي جاريتان من جواري الأنصار تغنيان بما تقاولت الأنصار يوم بعاث، قالت وليستا بمغنيتين، فقال أبو بكر : أمزامير الشيطان في بيت رسول الله ؟ وذلك يوم عيد، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم : يا أبا بكر إن لكل قوم عيداً وهذا عيدنا . البخاري :৮৯৯
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, একদিন আবু বকর রা. আমার ঘরে প্রবেশ করলেন। তখন দু জন আনসারী বালিকা বুয়াছ যুদ্ধে তাদের বীরত্ব সম্পর্কিত গান গাচ্ছিল, কিন্তু তারা পেশাদার গায়িকা ছিল না। আবু বকর রা. বললেন : ‘আশ্চর্য, আল্লাহর রাসূলের ঘরে শয়তানের বাদ্য !’ এদিনটা ছিল ঈদের দিন। আবু বকর রা. এর একথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : ‘হে আবু বকর ! প্রত্যেক জাতির ঈদ আছে, আর এদিন হল আমাদের ঈদ।’ [বুখারী : ৮৯৯]
রমজান মাসের সিয়াম ফরজ। এ ছাড়া আরো কিছু সিয়াম বা রোজা আছে যা পালন করা সুন্নত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজান ব্যতীত অন্য কোন মাসে এক মাস ব্যাপী সিয়াম পালন করতেন না। হাদীসে এসেছে—
عن عائشة رضي الله عنها قالت : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يصوم حتى نقول إنه لا يفطر، ويفطر حتى نقول أنه لا يصوم، ما رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم استكمل صيام شهر إلا رمضان، وما رأيته أكثر صياما منه في شعبان . البخاري :১৮৩৩
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেনে: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনভাবে নফল সিয়াম পালন করতেন আমরা ধরে নিতাম তিনি সিয়ামে বিরতি দেবেন না। আবার এমন ভাবে সিয়াম পরিত্যাগ করতেন আমরা মনে করতাম তিনি আর সিয়াম পালন করবেন না। রমজান ব্যতীত অন্য কোন মাসে তাকে পূর্ণ মাস সিয়াম পালন করতে দেখিনি। আর শাবান মাস ব্যতীত অন্য মাসে অধিক পরিমাণে নফল সিয়াম পালন করতে দেখিনি। [বুখারী ১৮৩৩]
এ হাদীস দ্বারা বুঝে আসে যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অধিক পরিমাণে নফল সিয়াম পালন করতেন। তিনি কি কি ধরনের নফল সিয়াম পালন করতেন তা নিম্নে আলোচনা করা হল :
عن عائشة رضي الله عنها قالت : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يصوم حتى نقول إنه لا يفطر، ويفطر حتى نقول أنه لا يصوم، ما رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم استكمل صيام شهر إلا رمضان، وما رأيته أكثر صياما منه في شعبان . البخاري :১৮৩৩
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেনে: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনভাবে নফল সিয়াম পালন করতেন আমরা ধরে নিতাম তিনি সিয়ামে বিরতি দেবেন না। আবার এমন ভাবে সিয়াম পরিত্যাগ করতেন আমরা মনে করতাম তিনি আর সিয়াম পালন করবেন না। রমজান ব্যতীত অন্য কোন মাসে তাকে পূর্ণ মাস সিয়াম পালন করতে দেখিনি। আর শাবান মাস ব্যতীত অন্য মাসে অধিক পরিমাণে নফল সিয়াম পালন করতে দেখিনি। [বুখারী ১৮৩৩]
এ হাদীস দ্বারা বুঝে আসে যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অধিক পরিমাণে নফল সিয়াম পালন করতেন। তিনি কি কি ধরনের নফল সিয়াম পালন করতেন তা নিম্নে আলোচনা করা হল :
عن أبي أيوب الأنصاري رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : من صام رمضان ثم أتبعه ستا من شوال كان كصيام الدهر . مسلم :১৯৮৪
আবু আইয়ুব আনসারী রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে সিয়াম পালন করল অতঃপর শাওয়াল মাসে ছয়টি সিয়াম আদায় করল সে যেন সাড়া বছর সিয়াম পালন করল।’ [মুসলিম ১৯৮৪]
উলামায়ে কেরাম সাড়া বছর সিয়াম পালনের সওয়াবের ব্যাখ্যা এভাবে দিয়েছেন যে, প্রত্যেক নেক আমলের সওয়াব দশগুণ দেয়া হয় সে হিসেবে রমজানের এক মাস সিয়াম পালনে দশ মাস সিয়াম পালনের সওয়াব। শাওয়ালের ছয়টি সিয়ামে দু মাস সিয়াম পালনের সওয়াব। এভাবে পুরো বছর সিয়াম পালনের সওয়াব পাওয়া যেতে পারে শাওয়ালের ছয়টি সিয়াম পালন করলে। যদি কারো দায়িত্বে রমজানের কাজা সিয়াম থাকে তবে সে প্রথমে কাজা আদায় করবে তারপরে শাওয়ালের সিয়াম পালন করবে। শাওয়ালের ছয়টি সিয়াম একাধারে আদায় করা যায়, আবার বিরতি দিয়েও আদায় করা যায়। তবে শাওয়াল মাস চলে যাওয়ার পর ছয় রোজার কাজা হিসেবে সিয়াম পালনের বিধান নেই।
আবু আইয়ুব আনসারী রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে সিয়াম পালন করল অতঃপর শাওয়াল মাসে ছয়টি সিয়াম আদায় করল সে যেন সাড়া বছর সিয়াম পালন করল।’ [মুসলিম ১৯৮৪]
উলামায়ে কেরাম সাড়া বছর সিয়াম পালনের সওয়াবের ব্যাখ্যা এভাবে দিয়েছেন যে, প্রত্যেক নেক আমলের সওয়াব দশগুণ দেয়া হয় সে হিসেবে রমজানের এক মাস সিয়াম পালনে দশ মাস সিয়াম পালনের সওয়াব। শাওয়ালের ছয়টি সিয়ামে দু মাস সিয়াম পালনের সওয়াব। এভাবে পুরো বছর সিয়াম পালনের সওয়াব পাওয়া যেতে পারে শাওয়ালের ছয়টি সিয়াম পালন করলে। যদি কারো দায়িত্বে রমজানের কাজা সিয়াম থাকে তবে সে প্রথমে কাজা আদায় করবে তারপরে শাওয়ালের সিয়াম পালন করবে। শাওয়ালের ছয়টি সিয়াম একাধারে আদায় করা যায়, আবার বিরতি দিয়েও আদায় করা যায়। তবে শাওয়াল মাস চলে যাওয়ার পর ছয় রোজার কাজা হিসেবে সিয়াম পালনের বিধান নেই।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে আরাফা দিবসের (জিলহজ মাসের নবম তারিখে) সওম সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন :
صيام يوم عرفة أحتسب على الله أن يكفر السنة التي قبله والسنة التي بعده . مسلم :১৮৯৫
‘আরাফা দিবসের সওম সম্পর্কে আল্লাহর কাছে আশা করি যে, তাকে বিগত ও আগত বছরে পাপের কাফফারা হিসেবে গ্রহণ করা হবে।’ [মুসলিম ১৮৯৫]
তবে যারা পবিত্র হজ পালনরত আছেন তারা এ দিনে রোজা রাখবেন না।
صيام يوم عرفة أحتسب على الله أن يكفر السنة التي قبله والسنة التي بعده . مسلم :১৮৯৫
‘আরাফা দিবসের সওম সম্পর্কে আল্লাহর কাছে আশা করি যে, তাকে বিগত ও আগত বছরে পাপের কাফফারা হিসেবে গ্রহণ করা হবে।’ [মুসলিম ১৮৯৫]
তবে যারা পবিত্র হজ পালনরত আছেন তারা এ দিনে রোজা রাখবেন না।
হাদীসে এসেছে—
عن عائشة رضي الله عنها قالت : . . ما رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم استكمل صيام شهر إلا رمضان، وما رأيته أكثر صياما منه في شعبان . البخاري :১৮৩৩
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেনে : আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে শাবান মাস ব্যতীত অন্য মাসে অধিক পরিমাণে নফল সিয়াম পালন করতে দেখিনি। [বুখারী ১৮৩৩]
তিনি শাবান মাসে অধিক পরিমাণে নফল সিয়াম আদায় করতেন। এর কারণ সম্পর্কে উসামা বিন যায়েদ রা. বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে তিনি বলেন, আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল ! নফল সিয়ামের ব্যাপারে আমি তো শাবান মাস ব্যতীত অন্য কোন মাসে আপনাকে এত বেশি সিয়াম পালন করতে দেখি না। তিনি বললেন: শাবান, রজব ও রমজানের মধ্যবর্তী এমন একটি মাস যাতে মানুষ সিয়াম সম্পর্কে উদাসীন থাকে।
عن عائشة رضي الله عنها قالت : . . ما رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم استكمل صيام شهر إلا رمضان، وما رأيته أكثر صياما منه في شعبان . البخاري :১৮৩৩
আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেনে : আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে শাবান মাস ব্যতীত অন্য মাসে অধিক পরিমাণে নফল সিয়াম পালন করতে দেখিনি। [বুখারী ১৮৩৩]
তিনি শাবান মাসে অধিক পরিমাণে নফল সিয়াম আদায় করতেন। এর কারণ সম্পর্কে উসামা বিন যায়েদ রা. বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে তিনি বলেন, আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল ! নফল সিয়ামের ব্যাপারে আমি তো শাবান মাস ব্যতীত অন্য কোন মাসে আপনাকে এত বেশি সিয়াম পালন করতে দেখি না। তিনি বললেন: শাবান, রজব ও রমজানের মধ্যবর্তী এমন একটি মাস যাতে মানুষ সিয়াম সম্পর্কে উদাসীন থাকে।
হাদীসে এসেছে—
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : أوصاني خليلي صلى الله عليه وسلم بثلاث : صيام ثلاثة أيام من كل شهر، وركعتي الضحى، وأن أوتر قبل أن أنام . البخاري :১৮৪৫
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে বলেন, আমার বন্ধু আমাকে তিনটি বিষয়ে উপদেশ দিয়েছেন : প্রত্যেক মাসে তিনটি সিয়াম পালন করা, দ্বি-প্রহরের পূর্বে দু রাকাআত সালাত আদায় করা ও নিদ্রার পূর্বে বিতির সালাত আদায় করা। [বুখারী ১৮৪৫]
এ তিনটি সিয়াম আদায় করলে পূর্ণ বছর নফল সিয়াম আদায়ের সওয়াব লাভের কথা এসেছে। একটি নেক আমলের সওয়াব কমপক্ষে দশগুণ দেয়া হয়। তিন দিনের সিয়ামের সওয়াব দশগুণ করলে ত্রিশ দিন হয়। যেমন আবু কাতাদা রা. বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে—
صوم ثلاثة أيام من كل شهر ورمضان إلى رمضان فهذا صيام الدهركله . مسلم :১৯৭৬
‘প্রত্যেক মাসে তিনটি সিয়াম ও এক রমজান থেকে আরেক রমজান সিয়াম পালন করলে পূর্ণ বছর সিয়াম আদায়ের সমপরিমাণ সওয়াব ধরা হয়।’ [মুসলিম ১৯৭৬]
মাসের যে তিন দিন সিয়াম পালন করা হবে সে তিন দিনকে হাদীসের পরিভাষায় বলা হয় ‘আইয়ামুল বীয’। এ তিন দিন হল হিজরি মাসের তেরো, চৌদ্দ ও পনেরো তারিখ। বীজ শব্দের অর্থ আলোকিত। এ তিন দিনের রাতগুলো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চাঁদের আলোতে আলোকিত থাকে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ সিয়াম গুরুত্ব সহকারে আদায় করতেন। যেমন হাদীসে এসেছে—
عن ابن عباس رضي الله عنهما قال : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يفطر أيام البيض في حضر ولا سفر . النسائي :২৩০৫
ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফর ও দেশে থাকা অবস্থায় আইয়ামে বীযের সিয়াম ত্যাগ করতেন না।’ [নাসায়ী ২৩০৫]
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : أوصاني خليلي صلى الله عليه وسلم بثلاث : صيام ثلاثة أيام من كل شهر، وركعتي الضحى، وأن أوتر قبل أن أنام . البخاري :১৮৪৫
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে বলেন, আমার বন্ধু আমাকে তিনটি বিষয়ে উপদেশ দিয়েছেন : প্রত্যেক মাসে তিনটি সিয়াম পালন করা, দ্বি-প্রহরের পূর্বে দু রাকাআত সালাত আদায় করা ও নিদ্রার পূর্বে বিতির সালাত আদায় করা। [বুখারী ১৮৪৫]
এ তিনটি সিয়াম আদায় করলে পূর্ণ বছর নফল সিয়াম আদায়ের সওয়াব লাভের কথা এসেছে। একটি নেক আমলের সওয়াব কমপক্ষে দশগুণ দেয়া হয়। তিন দিনের সিয়ামের সওয়াব দশগুণ করলে ত্রিশ দিন হয়। যেমন আবু কাতাদা রা. বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে—
صوم ثلاثة أيام من كل شهر ورمضان إلى رمضان فهذا صيام الدهركله . مسلم :১৯৭৬
‘প্রত্যেক মাসে তিনটি সিয়াম ও এক রমজান থেকে আরেক রমজান সিয়াম পালন করলে পূর্ণ বছর সিয়াম আদায়ের সমপরিমাণ সওয়াব ধরা হয়।’ [মুসলিম ১৯৭৬]
মাসের যে তিন দিন সিয়াম পালন করা হবে সে তিন দিনকে হাদীসের পরিভাষায় বলা হয় ‘আইয়ামুল বীয’। এ তিন দিন হল হিজরি মাসের তেরো, চৌদ্দ ও পনেরো তারিখ। বীজ শব্দের অর্থ আলোকিত। এ তিন দিনের রাতগুলো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চাঁদের আলোতে আলোকিত থাকে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ সিয়াম গুরুত্ব সহকারে আদায় করতেন। যেমন হাদীসে এসেছে—
عن ابن عباس رضي الله عنهما قال : كان رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يفطر أيام البيض في حضر ولا سفر . النسائي :২৩০৫
ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফর ও দেশে থাকা অবস্থায় আইয়ামে বীযের সিয়াম ত্যাগ করতেন না।’ [নাসায়ী ২৩০৫]
সপ্তাহে দু দিন সোমবার ও বৃহস্পতিবার সিয়াম পালন করা সুন্নত। হাদীসে এসেছে—
عن أبي قتادة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم سئل عن صوم يوم الاثنين، فقال ذلك يوم ولدت فيه ويوم بعثت فيه أو أنزل علي فيه . مسلم :১৯৭৭
সাহাবী আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে সোমবারে সিয়াম পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেন, ‘এ দিনে আমার জন্ম হয়েছে এবং এ দিনে আমাকে নবুওয়াত দেয়া হয়েছে বা আমার উপর কুরআন নাযিল শুরু হয়েছে।’ [মুসলিম ১৯৭৭] হাদীসে এসেছে :—
عن أبي هريرة رضي الله عنه عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : تعرض الأعمال يوم الاثنين والخميس، فأحب أن يعرض عملي وأنا صائم . رواه الترمذي رواه مسلم بغير ذكر الصوم
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘সোমবার ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই আমি পছন্দ করি, যখন আমার আমল পেশ করা হবে তখন আমি সিয়াম অবস্থায় থাকব।’ [মুসলিম : , তিরমিযী :]
عن أبي قتادة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم سئل عن صوم يوم الاثنين، فقال ذلك يوم ولدت فيه ويوم بعثت فيه أو أنزل علي فيه . مسلم :১৯৭৭
সাহাবী আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -কে সোমবারে সিয়াম পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেন, ‘এ দিনে আমার জন্ম হয়েছে এবং এ দিনে আমাকে নবুওয়াত দেয়া হয়েছে বা আমার উপর কুরআন নাযিল শুরু হয়েছে।’ [মুসলিম ১৯৭৭] হাদীসে এসেছে :—
عن أبي هريرة رضي الله عنه عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : تعرض الأعمال يوم الاثنين والخميس، فأحب أن يعرض عملي وأنا صائم . رواه الترمذي رواه مسلم بغير ذكر الصوم
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘সোমবার ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই আমি পছন্দ করি, যখন আমার আমল পেশ করা হবে তখন আমি সিয়াম অবস্থায় থাকব।’ [মুসলিম : , তিরমিযী :]
হাদীসে এসেছে—
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ صِيَامُ يَوْمِ عَاشُورَاءَ إِنِّي أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ . الترمذي : ৬৮৩
আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘আমি আল্লাহর নিকট আশা রাখি, আশুরা দিবসের রোজা আল্লাহ তাআলার কাছে বিগত এক বছরের গুনাহের কাফফারা হিসেবে গৃহীত হয়।’ [মুসলিম, তিরমিযী]
অন্য বর্ণনায় এসেছে—
عن أبي قتادة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : . . . . . صيام يوم عاشوراء احتسب على الله أن يكفر السنة التي قبله . مسلم :১৯৭৬
‘আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ...আমি আশা রাখি আশুরার দিনের সওমকে আল্লাহ তাআলা বিগত এক বছরের গুনাহের কাফফারা হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন।’ [মুসলিম :] হাদীসে আরো এসেছে—
عن ابن عباس رضي الله عنهما أنه قال : حين صام رسول الله صلى الله عليه وسلم يوم عاشوراء وأمر بصيامه، قالوا إنه يوم تعظمه اليهود والنصارى . فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم ( فإذا كان العام المقبل إن شاء الله صمنا اليوم التاسع ) قال : فلم يأت العام المقبل حتى توفي رسول الله صلى الله عليه وسلم . مسلم :১৯১৬
ইবনে আববাস রা. বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আশুরার সওম পালন করলেন ও অন্যকে পালন করার নির্দেশ দিলেন তখন সাহাবায়ে কেরাম রা. বললেন : ‘এটা তো এমন এক দিন যাকে ইহুদী ও খ্রিস্টানরা সম্মান করে থাকে।’ তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : ‘আগামী বছর আসলে ইনশা আল্লাহ আমরা নবম তারিখে সওম পালন করব।’ ইবনে আববাস রা. বলেন : ‘পরবর্তী বছর আসার পূর্বেই রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইন্তেকাল করলেন।’ [মুসলিম] হাদীসে এসেছে—
عن ابن عباس رضي الله عنهما قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : صوموا يوم عاشوراء وخالفوا فيه اليهود، وصوموا قبله يوما أو بعده يوما . أحمد :২০৪৭
ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘তোমরা আশুরা দিবসে সওম পালন কর ও এ ক্ষেত্রে ইহুদীদের বিরোধিতা কর। তাই তোমরা আশুরার একদিন পূর্বে অথবা একদিন পরে সওম পালন করবে।’ [আহমদ :]
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ صِيَامُ يَوْمِ عَاشُورَاءَ إِنِّي أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ . الترمذي : ৬৮৩
আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘আমি আল্লাহর নিকট আশা রাখি, আশুরা দিবসের রোজা আল্লাহ তাআলার কাছে বিগত এক বছরের গুনাহের কাফফারা হিসেবে গৃহীত হয়।’ [মুসলিম, তিরমিযী]
অন্য বর্ণনায় এসেছে—
عن أبي قتادة رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : . . . . . صيام يوم عاشوراء احتسب على الله أن يكفر السنة التي قبله . مسلم :১৯৭৬
‘আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ...আমি আশা রাখি আশুরার দিনের সওমকে আল্লাহ তাআলা বিগত এক বছরের গুনাহের কাফফারা হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন।’ [মুসলিম :] হাদীসে আরো এসেছে—
عن ابن عباس رضي الله عنهما أنه قال : حين صام رسول الله صلى الله عليه وسلم يوم عاشوراء وأمر بصيامه، قالوا إنه يوم تعظمه اليهود والنصارى . فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم ( فإذا كان العام المقبل إن شاء الله صمنا اليوم التاسع ) قال : فلم يأت العام المقبل حتى توفي رسول الله صلى الله عليه وسلم . مسلم :১৯১৬
ইবনে আববাস রা. বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আশুরার সওম পালন করলেন ও অন্যকে পালন করার নির্দেশ দিলেন তখন সাহাবায়ে কেরাম রা. বললেন : ‘এটা তো এমন এক দিন যাকে ইহুদী ও খ্রিস্টানরা সম্মান করে থাকে।’ তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : ‘আগামী বছর আসলে ইনশা আল্লাহ আমরা নবম তারিখে সওম পালন করব।’ ইবনে আববাস রা. বলেন : ‘পরবর্তী বছর আসার পূর্বেই রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইন্তেকাল করলেন।’ [মুসলিম] হাদীসে এসেছে—
عن ابن عباس رضي الله عنهما قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : صوموا يوم عاشوراء وخالفوا فيه اليهود، وصوموا قبله يوما أو بعده يوما . أحمد :২০৪৭
ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ‘তোমরা আশুরা দিবসে সওম পালন কর ও এ ক্ষেত্রে ইহুদীদের বিরোধিতা কর। তাই তোমরা আশুরার একদিন পূর্বে অথবা একদিন পরে সওম পালন করবে।’ [আহমদ :]
(ক) মুহাররম মাসের নবম ও দশম তারিখে সওম পালন করা। এ পদ্ধতি অতি উত্তম। কারণ রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবেই আশুরার সওম পালনের সংকল্প করেছিলেন। যেমন ইতিপূর্বে আলোচিত ইবনে আববাস রা.-এর হাদীস এর প্রমাণ বহন করে।
(খ) মুহাররম মাসের দশম ও একাদশ দিবসে সওম পালন করা। এ পদ্ধতিও হাদীস দ্বারা সমর্থিত। যদি কেউ নবম তারিখে কোন কারণে সওম পালন করতে না পারেন তিনি এ পদ্ধতিতে সওম পালন করবেন।
(গ) শুধু মুহাররম মাসের দশম তারিখে সওম পালন করা। এ পদ্ধতি মাকরূহ। কারণ এটা ইহুদীদের আমলের সাথে সংগতিপূর্ণ। [ইকতেজাউ সিরাতিল মুস্তাকীম: ইমাম তাইমিয়া ও রদ্দুল মুহতার : ইবনে আবেদীন]
(খ) মুহাররম মাসের দশম ও একাদশ দিবসে সওম পালন করা। এ পদ্ধতিও হাদীস দ্বারা সমর্থিত। যদি কেউ নবম তারিখে কোন কারণে সওম পালন করতে না পারেন তিনি এ পদ্ধতিতে সওম পালন করবেন।
(গ) শুধু মুহাররম মাসের দশম তারিখে সওম পালন করা। এ পদ্ধতি মাকরূহ। কারণ এটা ইহুদীদের আমলের সাথে সংগতিপূর্ণ। [ইকতেজাউ সিরাতিল মুস্তাকীম: ইমাম তাইমিয়া ও রদ্দুল মুহতার : ইবনে আবেদীন]
যদি আপনাকে প্রশ্ন করা হয় এমন একটি গ্রন্থের নাম বলতে পারেন কি যেটি বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পাঠ করা হয়? উত্তরে আপনি বলবেন : হা, পারি। সে গ্রন্থখানা হল পবিত্র আল-কুরআন আল-কারিম। বিগত কালে ও বর্তমানে ইনশা আল্লাহ ভবিষ্যতেও যে গ্রন্থখানা সবচেয়ে বেশি পঠিত, তা হল আল-কুরআন। ভাবতে আশ্চর্য লাগবে সাড়া বিশ্ব থেকে যদি এর সকল কপি নিঃশেষ করে দেয়া হয় -আল্লাহ না করুন - তা হলেও আল-কুরআন সবচেয়ে বেশি পঠিত গ্রন্থ হিসেবেই টিকে থাকবে। বরং এমতাবস্থায় আল-কুরআনের পঠন কয়েক হাজার গুন বেড়ে যাবে। কারণ সাড়া বিশ্বে যে লক্ষ লক্ষ হাফেজে কুরআন আছেন তারা তাদের কুরআন চর্চা কয়েকশত গুন বাড়িয়ে দেবেন। এবং মুসলমানদের মাঝে যারা এতদিন কুরআন হিফজ করাকে অর্থহীন অপ্রয়োজনীয় মনে করতেন, তারা তাদের সন্তানদেরকে কলেজ ভার্সিটি থেকে বের করে এনে তাহফীজুল কুরআন বিভাগে ভর্তি করে দেবেন। আর বলবেন, আল্লাহর কালামের এ সংকটময় সময়ে তার রক্ষার ফযীলত থেকে মাহরুম হতে পারি না। আর এভাবেই আল্লাহ রাববুল আলামীন তার দ্বীনের দুশমনদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিয়ে তার কালামকে রক্ষা করবেন। এরপর যদি প্রশ্ন করা হয় এমন একটি গ্রন্থের নাম বলতে পারেন যেটা পাঠ করা হয় অথচ পাঠকরা এর অর্থ বোঝেন সবচেয়ে কম। এর উত্তরে আপনি বলবেন সে গ্রন্থটি হল আল-কুরআন। তারপর যদি প্রশ্ন করা হয় এমন একটি গ্রন্থের নাম বলতে পারেন, যার পাঠকেরা তার বাণী জীবনে বাস্তবায়ন করেন সবচেয়ে কম ? এর উত্তরেও আপনি বলবেন, তা হল পবিত্র গ্রন্থ আল-কুরআন। মূলত আমাদের আলোচনার বিষয়, কীভাবে কুরআন অধ্যয়ন করা উচিত। এ বিষয়ে বলতে যেয়ে প্রথমে বলব যারা কুরআন পাঠ করেন তাদের নিয়ে। যারা আল-কুরআন পাঠ করেন তাদের তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
প্রথমত : যারা আরবীতে কুরআন তিলাওয়াত করেন সাথে সাথে তরজমা বোঝেন অথবা পাঠ করে বুঝে নেন।
দ্বিতীয়ত : যারা শুধু আল-কুরআনের অনুবাদ পাঠ করেন। আরবীতে পাঠ করতে পারেন না।
তৃতীয়ত : যারা আরবীতে কুরআন তিলাওয়াত করেন কিন্তু তরজমা বোঝেন না বা বুঝে পাঠ করার প্রয়োজন অনুভব করেন না। আমি এ প্রবন্ধে আল-কুরআন অধ্যয়নে এ তিন দলের ভূমিকা নিয়ে নিয়ে আলোচনা করব। প্রথম প্রকারের যারা আরবী ভাষায় কুরআন তিলাওয়াত করেন ও অর্থ-তরজমা বোঝেন, তারাই সঠিক ভাবে কুরআন তিলাওয়াত করছেন। কারণ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার সাহাবায়ে কেরাম রা. তাদের পরবর্তী উম্মতের ইমাম ও আলেমগণ এভাবে অর্থ ও তরজমাসহ কুরআন তিলাওয়াত করেছেন। এবং আল্লাহ নিজেও চান বান্দা তার কালামের অর্থ বুঝে শুনে তিলাওয়াত করুক। তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এটাই চেয়েছেন ও তার সাহাবাগণও এরকম আমলই করেছেন। আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
‘আমি তো তোমাদের জন্য অবতীর্ণ করেছি কিতাব, যাতে আছে তোমাদের জন্য উপদেশ। তোমরা কি তা বুঝবে না ?’ [সূরা আম্বিয়া : ১০]
‘তোমরা কি তা বুঝবে না’ প্রশ্নের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা কুরআন বুঝার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
আল্লাহ রাববুল আলামীন আরো বলেন :—
(আরবি)
‘এ হল এক কল্যাণময় কিতাব, যা আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি। যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ অনুধাবন করে এবং বোধ শক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিগণ গ্রহণ করে উপদেশ।’ [সূরা সাদ : ২৯]
এখানে আল্লাহ তাআলা কুরআন অনুধাবন ও উপদেশ গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর এ দুটোর কোনটাই অর্থ বুঝা ব্যতীত শুধু তিলাওয়াত দ্বারা সম্ভব নয়। এ ধরনের আরো বহু আয়াত রয়েছে, যাতে আল্লাহতাআলা কুরআন অর্থ বুঝে তিলাওয়াত করা ও গভীর ভাবে অনুধাবন করার জন্য বলেছেন। শুধু এতটুকুই নয় বরং যারা আল-কুরআন তিলাওয়াত করে অথচ অর্থ বুঝে না, আল্লাহ তাদের সমালোচনা করেছেন।
যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
‘আর তাদের মাঝে এমন কতক নিরক্ষর লোক আছে যাদের মিথ্যা আশা (আমানিয়্যা) ব্যতীত কিতাব সম্পর্কে কোন জ্ঞান নেই, তারা শুধু অমূলক ধারণা পোষণ করে।’ [সূরা বাকারা : ৭৮]
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা শাওকানী বলেন : ‘আমানিয়্যার অর্থ হল : তরজমা অনুধাবন ব্যতীত শুধু তিলাওয়াত করা অর্থাৎ তিলাওয়াত করা ছাড়া তাদের কিতাব সম্পর্কে কোন জ্ঞান নেই। অর্থ বুঝে না, গভীর ভাবে চিন্তা-ভাবনা করে না।’ [তাফসীর ফতহুল কাদীর :]
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন : ‘আল্লাহ রাববুল আলামীন এ আয়াত ও পূর্ববর্তী আয়াতে দু ধরনের লোকদের তিরস্কার করেছেন। প্রথমত যারা আল্লাহর কিতাবকে বিকৃত করেছে, দ্বিতীয়ত যারা তিলাওয়াত ছাড়া আল্লাহর কিতাবের আর কোন খবর রাখে না। অর্থ অনুধাবন ব্যতীত তিলাওয়াতকেই বলে আমানিয়া।’ (বাদায়ে আত-তাফসীর)
তাই বলা যায়, যারা আল-কুরআন শুধু তিলাওয়াত করে, অর্থ অনুধাবনের কোন চেষ্টা করে না আল্লাহ তাদের তিরস্কার করেছেন। আল্লাহ রাববুল আলামীন পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতকারীদের প্রশংসা করতে যেয়ে বহু আয়াতে বলেছেন, যারা তিলাওয়াত করে তাদের অন্তর বিগলিত হয়, ঈমান বৃদ্ধি পায়, অশ্রু প্রবাহিত হয় ইত্যাদি। আর আমরা সকলেই জানি ও বুঝি ; অর্থ অনুধাবন ব্যতীত এগুলোর কোনটিই হয় না। অতএব নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় আল্লাহ যে সকল তিলাওয়াতকারীর প্রশংসা করেছেন, তারা হলেন, যারা অর্থ-তরজমা বুঝে বুঝে তিলাওয়াত করেন।
আল্লাহ রাববুল আলামীন আল-কোরআনে এরশাদ করেন :—
(আরবি)
‘রাসূল বলবেন : হে আমার প্রতিপালক ! আমার সম্প্রদায় তো এ কুরআনকে পরিত্যাগ করেছে।’ [সুরা আল-ফুরকান : ৩০]
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাশরের ময়দানে যে সকল উম্মত কুরআন ত্যাগ করেছে তাদের বিরুদ্ধে এভাবেই নালিশ করবেন। আচ্ছা তার উম্মতের মাঝে কারা কুরআন ত্যাগ করল? আল্লামা ইবনে কাসীর রহ. বলেন : ‘যারা কুরআন তিলাওয়াত অগ্রাহ্য করল, তারা কুরআন ত্যাগের অভিযোগে অভিযুক্ত। যারা কুরআনের অর্থ অনুধাবন ও তা গভীরভাবে বুঝতে চেষ্টা করল না, তারাও কুরআন ত্যাগের অভিযোগে অভিযুক্ত হবে। যারা কুরআনের বিধি-বিধান মানল না, তারাও কুরআন ত্যাগকারী বলে অভিযুক্ত হবে।’ [তাফসীরে ইবনে কাসীর :]
আল্লামা ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন: ‘কুরআন ত্যাগের বিভিন্ন প্রকার আছে তার মাঝে একটি হল কুরআনের তরজমা অনুধাবন পরিহার করা।’ (বাদায়ে আত-তাফসীর)
হাসান বসরী রহ. বলেছেন: আল-কুরআন নাযিল হয়েছে এজন্য যে, তা মানুষ বুঝবে ও আমল করবে। কিন্তু আফসোস! মানুষ আজ শুধু তার তিলাওয়াতকেই আমল হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছে। [সিয়ারু আ’লাম আন-নুবালা :]
বিখ্যাত সাহাবী ইবনে মাসঊদ রা. বলেন : ‘আমাদের যুগে কুরআন হিফজ করা কঠিন ছিল আর তা আমল করা সহজ ছিল। আমাদের পর এমন যুগ আসবে যখন কুরআন হিফজ করা সহজ হবে কিন্তু তার উপর আমল করা কঠিন হবে।’ [আল-জামে লি আহকামিল কুরআন :]
পূর্ববর্তী আকাবিরে দ্বীন, সালাফে সালেহীন ও মুফাসসিরে কেরামগণ এভাবে আল-কুরআন বুঝার জন্য মুসলিম উম্মাহকে হিদায়াত দিয়েছেন। আল-কুরআন বুঝে-বুঝে তিলাওয়াত করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার দায়িত্ব মূলত আলেম-ওলামা, দায়ী ও আইম্মায়ে মাসাজিদের। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাদের অধিকাংশের ভূমিকা নেতিবাচক। তাদের অনেকে মনে করেন সাধারণ মানুষ তরজমাসহ কুরআন তিলাওয়াত করলে গোমরাহ হয়ে যেতে পারে। হা হতে পারে ! তবে এ আশঙ্কায় মানুষকে কুরআন বুঝা থেকে বিরত রাখার দায়িত্ব আপনার নয়, আপনার দায়িত্ব তাদের উৎসাহিত করা। আলেমদের অনেকে কুরআন তিলাওয়াতের ফযীলত বয়ান করতে যেয়ে এমন সব কথা বলেন যা শুনে মানুষ মনে করে কুরআনের অর্থ বুঝার দরকার নেই। তারা কুরআনের অর্থ-তরজমা বুঝতে নিরুৎসাহিত হন।
যেমন বলা হয়, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘... কুরআন তিলাওয়াতের প্রতি হরফে ১০ টি করে সওয়াব পাওয়া যায়। আলিফ লাম মীম একটি হরফ নয়, তিনটি হরফ। এটা পড়লে তিনটি সওয়াব পাওয়া যায়। আলিফ লাম মীম এর অর্থ বুঝা যায় না তা পাঠ করলে যখন সওয়াব পাওয়া যায় তখন আল-কুরআন অর্থ না বুঝে পড়লেও সওয়াব পাওয়া যাবে।’ আমি বলব, আপনার এ দলীল পেশ করা বা যুক্তি মোটেই ঠিক নয়। কখনো সঠিক নয়। কয়েকটি কারণে:
এক. এ হাদীসে আল্লাহর রাসূলের এ বাণীর উদ্দেশ্য (নস) হল আলিফ লাম মীম একটি হরফ নয়, তিনটি হরফ এ কথা বুঝানো।
দুই. এ হাদীসের ইশারা ইঙ্গিতে (দালালাহ ও ইশারাহ দ্বারা) বুঝে আসে কেউ যদি আল-কুরআনের হুরূফে মুকাত্তায়াহ বা আয়াতে মুতাশাবিহা তিলাওয়াত করে যার অর্থ সাধারণত বুঝে আসে না তা হলেও সে সওয়াব পাবে।
তিন. এ হাদীসে আলিফ লাম মীম-এর কথা বলা হয়েছে যা আয়াতে মুতাশাবিহার অন্তর্ভুক্ত। এর সাথে আয়াতে মুহকামাহ-র (যার অর্থ স্পষ্ট ভাবে বুঝে আসে) কিয়াস (তুলনা) করা ঠিক নয়। দুটো সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়।
চার. এ হাদীস দ্বারা কখনো রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর উদ্দেশ্য মানুষকে কুরআনের অর্থ অনুধাবনে নিরুৎসাহিত করা ছিল না। আমি কিন্তু এ কথা বলছি না যে অর্থ-তরজমা অনুধাবন ছাড়া আল-কুরআন তিলাওয়াতে সওয়াব নেই। সওয়াব হলে হতেও পারে। বরং আমি আমি বলতে চাচ্ছি, অর্থ অনুধাবন ব্যতীত আল-কুরআন পাঠে সওয়াব পাওয়ার যে দলীল ও যুক্তি দেয়া হয় তা মোটেই সঠিক নয়। এবং আল-কুরআন বুঝা, গবেষণা ও গভীর চিন্তা করতে যা মানুষকে অনুৎসাহিত করে এমন ধরনের কথা বলা মোটেই শুদ্ধ নয়। তাই আল-কুরআন নাযিলের এ মাসে অর্থ সহ আল-কুরআন তিলাওয়াতের জন্য আমরা কর্মসূচী গ্রহণ করব, অন্যকে উপদেশ দেব। এ ক্ষেত্রে আমরা প্রখ্যাত সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা.-এর একটি পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারি। যে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :
مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَقْرَأَ الْقُرْآنَ غَضًّا كَمَا أُنْزِلَ فَلْيَقْرَأْهُ عَلَى قِرَاءَةِ ابْنِ أُمِّ عَبْدٍ . مسند أحمد : ৩৫(ج ১ / ص ৩৮)
‘যে ব্যক্তি চায়, কুরআন যেভাবে নাযিল হয়েছে সেভাবেই পাঠ করবে, সে যেন ইবনে উম্মে আব্দ (আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ)-এর মত পাঠ করে।’ [মাসনাদে আহমদ: ভলিয়ম:০১ পৃ:৩৮: হাদিস: ৩৫]
কী তার পদ্ধতি? তিনি বলেছেন :—
كان الرجل منا إذا تعلم عشر آيات لم يجاوزهن حتى يعرف معانيهن والعمل بـهـن . جامع البيان للطبري : ص :80
‘আমাদের মাঝে কোন ব্যক্তি যখন দশটি আয়াতের তিলাওয়াত শিখত তখন সামনে আর অগ্রসর হতো না, যতক্ষণ না সে দশটি আয়াতের অর্থ অনুধাবন করত ও সে মোতাবেক আমল করত।’ [তাফসীরে তাবারী : পৃ: ৪০]
অর্থাৎ দশটি আয়াত প্রথম তিলাওয়াত, তারপর অর্থ-তরজমা অনুধাবন, অতঃপর হিসাব নেয়া যে, এর বাস্তবায়ন আমার জীবনে কতটুকু। এ রকমই ছিল সাহাবায়ে কেরামের কুরআন তিলাওয়াত পদ্ধতি।
সম্মানিত পাঠক ! একটু চিন্তা করে দেখুন, যে আল্লাহ রাববুল আলামীন আমাদের নিজ অনুগ্রহে হাজারও নেয়ামতে ডুবিয়ে রেখেছেন। নিজ মেহেরবানিতে আমাদের ইসলামের মত মহা-নেয়ামত দান করেছেন, তিনি আমাদের জন্য একটা কিতাব পাঠালেন যেটি আমাদের প্রতি তার একমাত্র পত্র হিসেবে গণ্য করা যায়। সে পত্রটি পাঠ করতে ও বুঝতে আমাদের কত অলসতা! কত উদাসীনতা! আপনার কি ইচ্ছে হয় না আমার প্রভু আমার উদ্দেশ্যে কী বলতে চাচ্ছেন, সাড়া জীবনে একটি বার হলেও জেনে নেই? আমাদের অনেকে বছরে কয়েক বার এমন কি শুধু রমজান মাসে কয়েক বার কুরআন পাঠ করে ‘খতম’ করি, অথচ একটি বারও তার অর্থ অনুধাবন ‘শুরু’ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছি কি? এমনকি আরবী ভাষা জানে ও বুঝে এমন অনেক লোককে দেখেছি, তারা যখন কুরআন পাঠ করেন তখন অর্থ বা তরজমার দিকে খেয়াল করার সামান্য প্রয়োজন অনুভব করেন না। তাই সকলকে আহবান জানাই আর বেশি বেশি কুরআন ‘খতম’ করা নয়, বরং তিলাওয়াত ও বুঝার চেষ্টা ‘আরম্ভ ’করি। আমরা কি পারি না, প্রত্যেকে এ সিদ্ধান্ত নিতে জীবনে একবার হলেও আমি কুরআনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অর্থ বুঝে বুঝে তিলাওয়াত করব। শুরু করেই দেখুন না ! আপনি অভিভূত হয়ে যাবেন। মনে হবে আপনি সত্যিই মহান আল্লাহর সাথে সরাসরি কথা বলছেন আর আল্লাহ আপনার সামনে উপস্থিত। আপনি যেন তাকে দেখতে পাচ্ছেন। মনে হবে তাঁকে প্রশ্ন করছেন, তিনি উত্তর দিচ্ছেন। মনে হবে, আপনি যেন নতুন করে ঈমান গ্রহণ করলেন। আপনার বিশ্বাস হতে চাইবে না যে, এ কুরআন চৌদ্দ শত বছর আগে অবতীর্ণ হয়েছে। মনে হবে মাত্র কিছুক্ষণ আগে নাযিল হয়েছে। আর তখনই প্রতিফলন দেখতে পাবেন আল্লাহর সে কথাগুলোর যা তিনি কুরআন তিলাওয়াত কারীদের প্রশংসায় বলেছেন। আমরা আল্লাহ রাববুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা করছি আল্লাহ তাআলা যেন আমাদেরকে ঐ সকল লোকদের অন্তর্ভূত না করেন, যাদের সম্পর্কে তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :
وَيَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ حَنَاجِرَهُمْ . صحيح البخاري :৪৬৭০
‘তারা কুরআন পাঠ করবে কিন্তু তা তাদের কণ্ঠ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে, কণ্ঠ অতিক্রম করে অন্তর পর্যন্ত পৌঁছোবে না।’ [বুখারী : ৪৬৭০]
সমাপ্ত
প্রথমত : যারা আরবীতে কুরআন তিলাওয়াত করেন সাথে সাথে তরজমা বোঝেন অথবা পাঠ করে বুঝে নেন।
দ্বিতীয়ত : যারা শুধু আল-কুরআনের অনুবাদ পাঠ করেন। আরবীতে পাঠ করতে পারেন না।
তৃতীয়ত : যারা আরবীতে কুরআন তিলাওয়াত করেন কিন্তু তরজমা বোঝেন না বা বুঝে পাঠ করার প্রয়োজন অনুভব করেন না। আমি এ প্রবন্ধে আল-কুরআন অধ্যয়নে এ তিন দলের ভূমিকা নিয়ে নিয়ে আলোচনা করব। প্রথম প্রকারের যারা আরবী ভাষায় কুরআন তিলাওয়াত করেন ও অর্থ-তরজমা বোঝেন, তারাই সঠিক ভাবে কুরআন তিলাওয়াত করছেন। কারণ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার সাহাবায়ে কেরাম রা. তাদের পরবর্তী উম্মতের ইমাম ও আলেমগণ এভাবে অর্থ ও তরজমাসহ কুরআন তিলাওয়াত করেছেন। এবং আল্লাহ নিজেও চান বান্দা তার কালামের অর্থ বুঝে শুনে তিলাওয়াত করুক। তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এটাই চেয়েছেন ও তার সাহাবাগণও এরকম আমলই করেছেন। আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
‘আমি তো তোমাদের জন্য অবতীর্ণ করেছি কিতাব, যাতে আছে তোমাদের জন্য উপদেশ। তোমরা কি তা বুঝবে না ?’ [সূরা আম্বিয়া : ১০]
‘তোমরা কি তা বুঝবে না’ প্রশ্নের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা কুরআন বুঝার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
আল্লাহ রাববুল আলামীন আরো বলেন :—
(আরবি)
‘এ হল এক কল্যাণময় কিতাব, যা আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি। যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ অনুধাবন করে এবং বোধ শক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিগণ গ্রহণ করে উপদেশ।’ [সূরা সাদ : ২৯]
এখানে আল্লাহ তাআলা কুরআন অনুধাবন ও উপদেশ গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর এ দুটোর কোনটাই অর্থ বুঝা ব্যতীত শুধু তিলাওয়াত দ্বারা সম্ভব নয়। এ ধরনের আরো বহু আয়াত রয়েছে, যাতে আল্লাহতাআলা কুরআন অর্থ বুঝে তিলাওয়াত করা ও গভীর ভাবে অনুধাবন করার জন্য বলেছেন। শুধু এতটুকুই নয় বরং যারা আল-কুরআন তিলাওয়াত করে অথচ অর্থ বুঝে না, আল্লাহ তাদের সমালোচনা করেছেন।
যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—
(আরবি)
‘আর তাদের মাঝে এমন কতক নিরক্ষর লোক আছে যাদের মিথ্যা আশা (আমানিয়্যা) ব্যতীত কিতাব সম্পর্কে কোন জ্ঞান নেই, তারা শুধু অমূলক ধারণা পোষণ করে।’ [সূরা বাকারা : ৭৮]
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা শাওকানী বলেন : ‘আমানিয়্যার অর্থ হল : তরজমা অনুধাবন ব্যতীত শুধু তিলাওয়াত করা অর্থাৎ তিলাওয়াত করা ছাড়া তাদের কিতাব সম্পর্কে কোন জ্ঞান নেই। অর্থ বুঝে না, গভীর ভাবে চিন্তা-ভাবনা করে না।’ [তাফসীর ফতহুল কাদীর :]
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন : ‘আল্লাহ রাববুল আলামীন এ আয়াত ও পূর্ববর্তী আয়াতে দু ধরনের লোকদের তিরস্কার করেছেন। প্রথমত যারা আল্লাহর কিতাবকে বিকৃত করেছে, দ্বিতীয়ত যারা তিলাওয়াত ছাড়া আল্লাহর কিতাবের আর কোন খবর রাখে না। অর্থ অনুধাবন ব্যতীত তিলাওয়াতকেই বলে আমানিয়া।’ (বাদায়ে আত-তাফসীর)
তাই বলা যায়, যারা আল-কুরআন শুধু তিলাওয়াত করে, অর্থ অনুধাবনের কোন চেষ্টা করে না আল্লাহ তাদের তিরস্কার করেছেন। আল্লাহ রাববুল আলামীন পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতকারীদের প্রশংসা করতে যেয়ে বহু আয়াতে বলেছেন, যারা তিলাওয়াত করে তাদের অন্তর বিগলিত হয়, ঈমান বৃদ্ধি পায়, অশ্রু প্রবাহিত হয় ইত্যাদি। আর আমরা সকলেই জানি ও বুঝি ; অর্থ অনুধাবন ব্যতীত এগুলোর কোনটিই হয় না। অতএব নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় আল্লাহ যে সকল তিলাওয়াতকারীর প্রশংসা করেছেন, তারা হলেন, যারা অর্থ-তরজমা বুঝে বুঝে তিলাওয়াত করেন।
আল্লাহ রাববুল আলামীন আল-কোরআনে এরশাদ করেন :—
(আরবি)
‘রাসূল বলবেন : হে আমার প্রতিপালক ! আমার সম্প্রদায় তো এ কুরআনকে পরিত্যাগ করেছে।’ [সুরা আল-ফুরকান : ৩০]
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাশরের ময়দানে যে সকল উম্মত কুরআন ত্যাগ করেছে তাদের বিরুদ্ধে এভাবেই নালিশ করবেন। আচ্ছা তার উম্মতের মাঝে কারা কুরআন ত্যাগ করল? আল্লামা ইবনে কাসীর রহ. বলেন : ‘যারা কুরআন তিলাওয়াত অগ্রাহ্য করল, তারা কুরআন ত্যাগের অভিযোগে অভিযুক্ত। যারা কুরআনের অর্থ অনুধাবন ও তা গভীরভাবে বুঝতে চেষ্টা করল না, তারাও কুরআন ত্যাগের অভিযোগে অভিযুক্ত হবে। যারা কুরআনের বিধি-বিধান মানল না, তারাও কুরআন ত্যাগকারী বলে অভিযুক্ত হবে।’ [তাফসীরে ইবনে কাসীর :]
আল্লামা ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন: ‘কুরআন ত্যাগের বিভিন্ন প্রকার আছে তার মাঝে একটি হল কুরআনের তরজমা অনুধাবন পরিহার করা।’ (বাদায়ে আত-তাফসীর)
হাসান বসরী রহ. বলেছেন: আল-কুরআন নাযিল হয়েছে এজন্য যে, তা মানুষ বুঝবে ও আমল করবে। কিন্তু আফসোস! মানুষ আজ শুধু তার তিলাওয়াতকেই আমল হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছে। [সিয়ারু আ’লাম আন-নুবালা :]
বিখ্যাত সাহাবী ইবনে মাসঊদ রা. বলেন : ‘আমাদের যুগে কুরআন হিফজ করা কঠিন ছিল আর তা আমল করা সহজ ছিল। আমাদের পর এমন যুগ আসবে যখন কুরআন হিফজ করা সহজ হবে কিন্তু তার উপর আমল করা কঠিন হবে।’ [আল-জামে লি আহকামিল কুরআন :]
পূর্ববর্তী আকাবিরে দ্বীন, সালাফে সালেহীন ও মুফাসসিরে কেরামগণ এভাবে আল-কুরআন বুঝার জন্য মুসলিম উম্মাহকে হিদায়াত দিয়েছেন। আল-কুরআন বুঝে-বুঝে তিলাওয়াত করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার দায়িত্ব মূলত আলেম-ওলামা, দায়ী ও আইম্মায়ে মাসাজিদের। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাদের অধিকাংশের ভূমিকা নেতিবাচক। তাদের অনেকে মনে করেন সাধারণ মানুষ তরজমাসহ কুরআন তিলাওয়াত করলে গোমরাহ হয়ে যেতে পারে। হা হতে পারে ! তবে এ আশঙ্কায় মানুষকে কুরআন বুঝা থেকে বিরত রাখার দায়িত্ব আপনার নয়, আপনার দায়িত্ব তাদের উৎসাহিত করা। আলেমদের অনেকে কুরআন তিলাওয়াতের ফযীলত বয়ান করতে যেয়ে এমন সব কথা বলেন যা শুনে মানুষ মনে করে কুরআনের অর্থ বুঝার দরকার নেই। তারা কুরআনের অর্থ-তরজমা বুঝতে নিরুৎসাহিত হন।
যেমন বলা হয়, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘... কুরআন তিলাওয়াতের প্রতি হরফে ১০ টি করে সওয়াব পাওয়া যায়। আলিফ লাম মীম একটি হরফ নয়, তিনটি হরফ। এটা পড়লে তিনটি সওয়াব পাওয়া যায়। আলিফ লাম মীম এর অর্থ বুঝা যায় না তা পাঠ করলে যখন সওয়াব পাওয়া যায় তখন আল-কুরআন অর্থ না বুঝে পড়লেও সওয়াব পাওয়া যাবে।’ আমি বলব, আপনার এ দলীল পেশ করা বা যুক্তি মোটেই ঠিক নয়। কখনো সঠিক নয়। কয়েকটি কারণে:
এক. এ হাদীসে আল্লাহর রাসূলের এ বাণীর উদ্দেশ্য (নস) হল আলিফ লাম মীম একটি হরফ নয়, তিনটি হরফ এ কথা বুঝানো।
দুই. এ হাদীসের ইশারা ইঙ্গিতে (দালালাহ ও ইশারাহ দ্বারা) বুঝে আসে কেউ যদি আল-কুরআনের হুরূফে মুকাত্তায়াহ বা আয়াতে মুতাশাবিহা তিলাওয়াত করে যার অর্থ সাধারণত বুঝে আসে না তা হলেও সে সওয়াব পাবে।
তিন. এ হাদীসে আলিফ লাম মীম-এর কথা বলা হয়েছে যা আয়াতে মুতাশাবিহার অন্তর্ভুক্ত। এর সাথে আয়াতে মুহকামাহ-র (যার অর্থ স্পষ্ট ভাবে বুঝে আসে) কিয়াস (তুলনা) করা ঠিক নয়। দুটো সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়।
চার. এ হাদীস দ্বারা কখনো রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর উদ্দেশ্য মানুষকে কুরআনের অর্থ অনুধাবনে নিরুৎসাহিত করা ছিল না। আমি কিন্তু এ কথা বলছি না যে অর্থ-তরজমা অনুধাবন ছাড়া আল-কুরআন তিলাওয়াতে সওয়াব নেই। সওয়াব হলে হতেও পারে। বরং আমি আমি বলতে চাচ্ছি, অর্থ অনুধাবন ব্যতীত আল-কুরআন পাঠে সওয়াব পাওয়ার যে দলীল ও যুক্তি দেয়া হয় তা মোটেই সঠিক নয়। এবং আল-কুরআন বুঝা, গবেষণা ও গভীর চিন্তা করতে যা মানুষকে অনুৎসাহিত করে এমন ধরনের কথা বলা মোটেই শুদ্ধ নয়। তাই আল-কুরআন নাযিলের এ মাসে অর্থ সহ আল-কুরআন তিলাওয়াতের জন্য আমরা কর্মসূচী গ্রহণ করব, অন্যকে উপদেশ দেব। এ ক্ষেত্রে আমরা প্রখ্যাত সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা.-এর একটি পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারি। যে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :
مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَقْرَأَ الْقُرْآنَ غَضًّا كَمَا أُنْزِلَ فَلْيَقْرَأْهُ عَلَى قِرَاءَةِ ابْنِ أُمِّ عَبْدٍ . مسند أحمد : ৩৫(ج ১ / ص ৩৮)
‘যে ব্যক্তি চায়, কুরআন যেভাবে নাযিল হয়েছে সেভাবেই পাঠ করবে, সে যেন ইবনে উম্মে আব্দ (আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ)-এর মত পাঠ করে।’ [মাসনাদে আহমদ: ভলিয়ম:০১ পৃ:৩৮: হাদিস: ৩৫]
কী তার পদ্ধতি? তিনি বলেছেন :—
كان الرجل منا إذا تعلم عشر آيات لم يجاوزهن حتى يعرف معانيهن والعمل بـهـن . جامع البيان للطبري : ص :80
‘আমাদের মাঝে কোন ব্যক্তি যখন দশটি আয়াতের তিলাওয়াত শিখত তখন সামনে আর অগ্রসর হতো না, যতক্ষণ না সে দশটি আয়াতের অর্থ অনুধাবন করত ও সে মোতাবেক আমল করত।’ [তাফসীরে তাবারী : পৃ: ৪০]
অর্থাৎ দশটি আয়াত প্রথম তিলাওয়াত, তারপর অর্থ-তরজমা অনুধাবন, অতঃপর হিসাব নেয়া যে, এর বাস্তবায়ন আমার জীবনে কতটুকু। এ রকমই ছিল সাহাবায়ে কেরামের কুরআন তিলাওয়াত পদ্ধতি।
সম্মানিত পাঠক ! একটু চিন্তা করে দেখুন, যে আল্লাহ রাববুল আলামীন আমাদের নিজ অনুগ্রহে হাজারও নেয়ামতে ডুবিয়ে রেখেছেন। নিজ মেহেরবানিতে আমাদের ইসলামের মত মহা-নেয়ামত দান করেছেন, তিনি আমাদের জন্য একটা কিতাব পাঠালেন যেটি আমাদের প্রতি তার একমাত্র পত্র হিসেবে গণ্য করা যায়। সে পত্রটি পাঠ করতে ও বুঝতে আমাদের কত অলসতা! কত উদাসীনতা! আপনার কি ইচ্ছে হয় না আমার প্রভু আমার উদ্দেশ্যে কী বলতে চাচ্ছেন, সাড়া জীবনে একটি বার হলেও জেনে নেই? আমাদের অনেকে বছরে কয়েক বার এমন কি শুধু রমজান মাসে কয়েক বার কুরআন পাঠ করে ‘খতম’ করি, অথচ একটি বারও তার অর্থ অনুধাবন ‘শুরু’ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছি কি? এমনকি আরবী ভাষা জানে ও বুঝে এমন অনেক লোককে দেখেছি, তারা যখন কুরআন পাঠ করেন তখন অর্থ বা তরজমার দিকে খেয়াল করার সামান্য প্রয়োজন অনুভব করেন না। তাই সকলকে আহবান জানাই আর বেশি বেশি কুরআন ‘খতম’ করা নয়, বরং তিলাওয়াত ও বুঝার চেষ্টা ‘আরম্ভ ’করি। আমরা কি পারি না, প্রত্যেকে এ সিদ্ধান্ত নিতে জীবনে একবার হলেও আমি কুরআনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অর্থ বুঝে বুঝে তিলাওয়াত করব। শুরু করেই দেখুন না ! আপনি অভিভূত হয়ে যাবেন। মনে হবে আপনি সত্যিই মহান আল্লাহর সাথে সরাসরি কথা বলছেন আর আল্লাহ আপনার সামনে উপস্থিত। আপনি যেন তাকে দেখতে পাচ্ছেন। মনে হবে তাঁকে প্রশ্ন করছেন, তিনি উত্তর দিচ্ছেন। মনে হবে, আপনি যেন নতুন করে ঈমান গ্রহণ করলেন। আপনার বিশ্বাস হতে চাইবে না যে, এ কুরআন চৌদ্দ শত বছর আগে অবতীর্ণ হয়েছে। মনে হবে মাত্র কিছুক্ষণ আগে নাযিল হয়েছে। আর তখনই প্রতিফলন দেখতে পাবেন আল্লাহর সে কথাগুলোর যা তিনি কুরআন তিলাওয়াত কারীদের প্রশংসায় বলেছেন। আমরা আল্লাহ রাববুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা করছি আল্লাহ তাআলা যেন আমাদেরকে ঐ সকল লোকদের অন্তর্ভূত না করেন, যাদের সম্পর্কে তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :
وَيَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ حَنَاجِرَهُمْ . صحيح البخاري :৪৬৭০
‘তারা কুরআন পাঠ করবে কিন্তু তা তাদের কণ্ঠ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে, কণ্ঠ অতিক্রম করে অন্তর পর্যন্ত পৌঁছোবে না।’ [বুখারী : ৪৬৭০]
সমাপ্ত
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন