hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সিয়াম ও রমজান শিক্ষা-তাৎপর্য-মাসায়েল

লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

১৫৭
রমজান মাসে আল-কুরআন কিভাবে তিলাওয়াত করা উচিত :
যদি আপনাকে প্রশ্ন করা হয় এমন একটি গ্রন্থের নাম বলতে পারেন কি যেটি বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পাঠ করা হয়? উত্তরে আপনি বলবেন : হা, পারি। সে গ্রন্থখানা হল পবিত্র আল-কুরআন আল-কারিম। বিগত কালে ও বর্তমানে ইনশা আল্লাহ ভবিষ্যতেও যে গ্রন্থখানা সবচেয়ে বেশি পঠিত, তা হল আল-কুরআন। ভাবতে আশ্চর্য লাগবে সাড়া বিশ্ব থেকে যদি এর সকল কপি নিঃশেষ করে দেয়া হয় -আল্লাহ না করুন - তা হলেও আল-কুরআন সবচেয়ে বেশি পঠিত গ্রন্থ হিসেবেই টিকে থাকবে। বরং এমতাবস্থায় আল-কুরআনের পঠন কয়েক হাজার গুন বেড়ে যাবে। কারণ সাড়া বিশ্বে যে লক্ষ লক্ষ হাফেজে কুরআন আছেন তারা তাদের কুরআন চর্চা কয়েকশত গুন বাড়িয়ে দেবেন। এবং মুসলমানদের মাঝে যারা এতদিন কুরআন হিফজ করাকে অর্থহীন অপ্রয়োজনীয় মনে করতেন, তারা তাদের সন্তানদেরকে কলেজ ভার্সিটি থেকে বের করে এনে তাহফীজুল কুরআন বিভাগে ভর্তি করে দেবেন। আর বলবেন, আল্লাহর কালামের এ সংকটময় সময়ে তার রক্ষার ফযীলত থেকে মাহরুম হতে পারি না। আর এভাবেই আল্লাহ রাববুল আলামীন তার দ্বীনের দুশমনদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিয়ে তার কালামকে রক্ষা করবেন। এরপর যদি প্রশ্ন করা হয় এমন একটি গ্রন্থের নাম বলতে পারেন যেটা পাঠ করা হয় অথচ পাঠকরা এর অর্থ বোঝেন সবচেয়ে কম। এর উত্তরে আপনি বলবেন সে গ্রন্থটি হল আল-কুরআন। তারপর যদি প্রশ্ন করা হয় এমন একটি গ্রন্থের নাম বলতে পারেন, যার পাঠকেরা তার বাণী জীবনে বাস্তবায়ন করেন সবচেয়ে কম ? এর উত্তরেও আপনি বলবেন, তা হল পবিত্র গ্রন্থ আল-কুরআন। মূলত আমাদের আলোচনার বিষয়, কীভাবে কুরআন অধ্যয়ন করা উচিত। এ বিষয়ে বলতে যেয়ে প্রথমে বলব যারা কুরআন পাঠ করেন তাদের নিয়ে। যারা আল-কুরআন পাঠ করেন তাদের তিন ভাগে ভাগ করা যায়।

প্রথমত : যারা আরবীতে কুরআন তিলাওয়াত করেন সাথে সাথে তরজমা বোঝেন অথবা পাঠ করে বুঝে নেন।

দ্বিতীয়ত : যারা শুধু আল-কুরআনের অনুবাদ পাঠ করেন। আরবীতে পাঠ করতে পারেন না।

তৃতীয়ত : যারা আরবীতে কুরআন তিলাওয়াত করেন কিন্তু তরজমা বোঝেন না বা বুঝে পাঠ করার প্রয়োজন অনুভব করেন না। আমি এ প্রবন্ধে আল-কুরআন অধ্যয়নে এ তিন দলের ভূমিকা নিয়ে নিয়ে আলোচনা করব। প্রথম প্রকারের যারা আরবী ভাষায় কুরআন তিলাওয়াত করেন ও অর্থ-তরজমা বোঝেন, তারাই সঠিক ভাবে কুরআন তিলাওয়াত করছেন। কারণ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার সাহাবায়ে কেরাম রা. তাদের পরবর্তী উম্মতের ইমাম ও আলেমগণ এভাবে অর্থ ও তরজমাসহ কুরআন তিলাওয়াত করেছেন। এবং আল্লাহ নিজেও চান বান্দা তার কালামের অর্থ বুঝে শুনে তিলাওয়াত করুক। তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এটাই চেয়েছেন ও তার সাহাবাগণও এরকম আমলই করেছেন। আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—

(আরবি)

‘আমি তো তোমাদের জন্য অবতীর্ণ করেছি কিতাব, যাতে আছে তোমাদের জন্য উপদেশ। তোমরা কি তা বুঝবে না ?’ [সূরা আম্বিয়া : ১০]

‘তোমরা কি তা বুঝবে না’ প্রশ্নের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা কুরআন বুঝার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

আল্লাহ রাববুল আলামীন আরো বলেন :—

(আরবি)

‘এ হল এক কল্যাণময় কিতাব, যা আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি। যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ অনুধাবন করে এবং বোধ শক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিগণ গ্রহণ করে উপদেশ।’ [সূরা সাদ : ২৯]

এখানে আল্লাহ তাআলা কুরআন অনুধাবন ও উপদেশ গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর এ দুটোর কোনটাই অর্থ বুঝা ব্যতীত শুধু তিলাওয়াত দ্বারা সম্ভব নয়। এ ধরনের আরো বহু আয়াত রয়েছে, যাতে আল্লাহতাআলা কুরআন অর্থ বুঝে তিলাওয়াত করা ও গভীর ভাবে অনুধাবন করার জন্য বলেছেন। শুধু এতটুকুই নয় বরং যারা আল-কুরআন তিলাওয়াত করে অথচ অর্থ বুঝে না, আল্লাহ তাদের সমালোচনা করেছেন।

যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন :—

(আরবি)

‘আর তাদের মাঝে এমন কতক নিরক্ষর লোক আছে যাদের মিথ্যা আশা (আমানিয়্যা) ব্যতীত কিতাব সম্পর্কে কোন জ্ঞান নেই, তারা শুধু অমূলক ধারণা পোষণ করে।’ [সূরা বাকারা : ৭৮]

এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা শাওকানী বলেন : ‘আমানিয়্যার অর্থ হল : তরজমা অনুধাবন ব্যতীত শুধু তিলাওয়াত করা অর্থাৎ তিলাওয়াত করা ছাড়া তাদের কিতাব সম্পর্কে কোন জ্ঞান নেই। অর্থ বুঝে না, গভীর ভাবে চিন্তা-ভাবনা করে না।’ [তাফসীর ফতহুল কাদীর :]

এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন : ‘আল্লাহ রাববুল আলামীন এ আয়াত ও পূর্ববর্তী আয়াতে দু ধরনের লোকদের তিরস্কার করেছেন। প্রথমত যারা আল্লাহর কিতাবকে বিকৃত করেছে, দ্বিতীয়ত যারা তিলাওয়াত ছাড়া আল্লাহর কিতাবের আর কোন খবর রাখে না। অর্থ অনুধাবন ব্যতীত তিলাওয়াতকেই বলে আমানিয়া।’ (বাদায়ে আত-তাফসীর)

তাই বলা যায়, যারা আল-কুরআন শুধু তিলাওয়াত করে, অর্থ অনুধাবনের কোন চেষ্টা করে না আল্লাহ তাদের তিরস্কার করেছেন। আল্লাহ রাববুল আলামীন পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতকারীদের প্রশংসা করতে যেয়ে বহু আয়াতে বলেছেন, যারা তিলাওয়াত করে তাদের অন্তর বিগলিত হয়, ঈমান বৃদ্ধি পায়, অশ্রু প্রবাহিত হয় ইত্যাদি। আর আমরা সকলেই জানি ও বুঝি ; অর্থ অনুধাবন ব্যতীত এগুলোর কোনটিই হয় না। অতএব নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় আল্লাহ যে সকল তিলাওয়াতকারীর প্রশংসা করেছেন, তারা হলেন, যারা অর্থ-তরজমা বুঝে বুঝে তিলাওয়াত করেন।

আল্লাহ রাববুল আলামীন আল-কোরআনে এরশাদ করেন :—

(আরবি)

‘রাসূল বলবেন : হে আমার প্রতিপালক ! আমার সম্প্রদায় তো এ কুরআনকে পরিত্যাগ করেছে।’ [সুরা আল-ফুরকান : ৩০]

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাশরের ময়দানে যে সকল উম্মত কুরআন ত্যাগ করেছে তাদের বিরুদ্ধে এভাবেই নালিশ করবেন। আচ্ছা তার উম্মতের মাঝে কারা কুরআন ত্যাগ করল? আল্লামা ইবনে কাসীর রহ. বলেন : ‘যারা কুরআন তিলাওয়াত অগ্রাহ্য করল, তারা কুরআন ত্যাগের অভিযোগে অভিযুক্ত। যারা কুরআনের অর্থ অনুধাবন ও তা গভীরভাবে বুঝতে চেষ্টা করল না, তারাও কুরআন ত্যাগের অভিযোগে অভিযুক্ত হবে। যারা কুরআনের বিধি-বিধান মানল না, তারাও কুরআন ত্যাগকারী বলে অভিযুক্ত হবে।’ [তাফসীরে ইবনে কাসীর :]

আল্লামা ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন: ‘কুরআন ত্যাগের বিভিন্ন প্রকার আছে তার মাঝে একটি হল কুরআনের তরজমা অনুধাবন পরিহার করা।’ (বাদায়ে আত-তাফসীর)

হাসান বসরী রহ. বলেছেন: আল-কুরআন নাযিল হয়েছে এজন্য যে, তা মানুষ বুঝবে ও আমল করবে। কিন্তু আফসোস! মানুষ আজ শুধু তার তিলাওয়াতকেই আমল হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছে। [সিয়ারু আ’লাম আন-নুবালা :]

বিখ্যাত সাহাবী ইবনে মাসঊদ রা. বলেন : ‘আমাদের যুগে কুরআন হিফজ করা কঠিন ছিল আর তা আমল করা সহজ ছিল। আমাদের পর এমন যুগ আসবে যখন কুরআন হিফজ করা সহজ হবে কিন্তু তার উপর আমল করা কঠিন হবে।’ [আল-জামে লি আহকামিল কুরআন :]

পূর্ববর্তী আকাবিরে দ্বীন, সালাফে সালেহীন ও মুফাসসিরে কেরামগণ এভাবে আল-কুরআন বুঝার জন্য মুসলিম উম্মাহকে হিদায়াত দিয়েছেন। আল-কুরআন বুঝে-বুঝে তিলাওয়াত করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার দায়িত্ব মূলত আলেম-ওলামা, দায়ী ও আইম্মায়ে মাসাজিদের। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাদের অধিকাংশের ভূমিকা নেতিবাচক। তাদের অনেকে মনে করেন সাধারণ মানুষ তরজমাসহ কুরআন তিলাওয়াত করলে গোমরাহ হয়ে যেতে পারে। হা হতে পারে ! তবে এ আশঙ্কায় মানুষকে কুরআন বুঝা থেকে বিরত রাখার দায়িত্ব আপনার নয়, আপনার দায়িত্ব তাদের উৎসাহিত করা। আলেমদের অনেকে কুরআন তিলাওয়াতের ফযীলত বয়ান করতে যেয়ে এমন সব কথা বলেন যা শুনে মানুষ মনে করে কুরআনের অর্থ বুঝার দরকার নেই। তারা কুরআনের অর্থ-তরজমা বুঝতে নিরুৎসাহিত হন।

যেমন বলা হয়, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: ‘... কুরআন তিলাওয়াতের প্রতি হরফে ১০ টি করে সওয়াব পাওয়া যায়। আলিফ লাম মীম একটি হরফ নয়, তিনটি হরফ। এটা পড়লে তিনটি সওয়াব পাওয়া যায়। আলিফ লাম মীম এর অর্থ বুঝা যায় না তা পাঠ করলে যখন সওয়াব পাওয়া যায় তখন আল-কুরআন অর্থ না বুঝে পড়লেও সওয়াব পাওয়া যাবে।’ আমি বলব, আপনার এ দলীল পেশ করা বা যুক্তি মোটেই ঠিক নয়। কখনো সঠিক নয়। কয়েকটি কারণে:

এক. এ হাদীসে আল্লাহর রাসূলের এ বাণীর উদ্দেশ্য (নস) হল আলিফ লাম মীম একটি হরফ নয়, তিনটি হরফ এ কথা বুঝানো।

দুই. এ হাদীসের ইশারা ইঙ্গিতে (দালালাহ ও ইশারাহ দ্বারা) বুঝে আসে কেউ যদি আল-কুরআনের হুরূফে মুকাত্তায়াহ বা আয়াতে মুতাশাবিহা তিলাওয়াত করে যার অর্থ সাধারণত বুঝে আসে না তা হলেও সে সওয়াব পাবে।

তিন. এ হাদীসে আলিফ লাম মীম-এর কথা বলা হয়েছে যা আয়াতে মুতাশাবিহার অন্তর্ভুক্ত। এর সাথে আয়াতে মুহকামাহ-র (যার অর্থ স্পষ্ট ভাবে বুঝে আসে) কিয়াস (তুলনা) করা ঠিক নয়। দুটো সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়।

চার. এ হাদীস দ্বারা কখনো রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর উদ্দেশ্য মানুষকে কুরআনের অর্থ অনুধাবনে নিরুৎসাহিত করা ছিল না। আমি কিন্তু এ কথা বলছি না যে অর্থ-তরজমা অনুধাবন ছাড়া আল-কুরআন তিলাওয়াতে সওয়াব নেই। সওয়াব হলে হতেও পারে। বরং আমি আমি বলতে চাচ্ছি, অর্থ অনুধাবন ব্যতীত আল-কুরআন পাঠে সওয়াব পাওয়ার যে দলীল ও যুক্তি দেয়া হয় তা মোটেই সঠিক নয়। এবং আল-কুরআন বুঝা, গবেষণা ও গভীর চিন্তা করতে যা মানুষকে অনুৎসাহিত করে এমন ধরনের কথা বলা মোটেই শুদ্ধ নয়। তাই আল-কুরআন নাযিলের এ মাসে অর্থ সহ আল-কুরআন তিলাওয়াতের জন্য আমরা কর্মসূচী গ্রহণ করব, অন্যকে উপদেশ দেব। এ ক্ষেত্রে আমরা প্রখ্যাত সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা.-এর একটি পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারি। যে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :

مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَقْرَأَ الْقُرْآنَ غَضًّا كَمَا أُنْزِلَ فَلْيَقْرَأْهُ عَلَى قِرَاءَةِ ابْنِ أُمِّ عَبْدٍ . مسند أحمد : ৩৫(ج ১ / ص ৩৮)

‘যে ব্যক্তি চায়, কুরআন যেভাবে নাযিল হয়েছে সেভাবেই পাঠ করবে, সে যেন ইবনে উম্মে আব্দ (আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ)-এর মত পাঠ করে।’ [মাসনাদে আহমদ: ভলিয়ম:০১ পৃ:৩৮: হাদিস: ৩৫]

কী তার পদ্ধতি? তিনি বলেছেন :—

كان الرجل منا إذا تعلم عشر آيات لم يجاوزهن حتى يعرف معانيهن والعمل بـهـن . جامع البيان للطبري : ص :80

‘আমাদের মাঝে কোন ব্যক্তি যখন দশটি আয়াতের তিলাওয়াত শিখত তখন সামনে আর অগ্রসর হতো না, যতক্ষণ না সে দশটি আয়াতের অর্থ অনুধাবন করত ও সে মোতাবেক আমল করত।’ [তাফসীরে তাবারী : পৃ: ৪০]

অর্থাৎ দশটি আয়াত প্রথম তিলাওয়াত, তারপর অর্থ-তরজমা অনুধাবন, অতঃপর হিসাব নেয়া যে, এর বাস্তবায়ন আমার জীবনে কতটুকু। এ রকমই ছিল সাহাবায়ে কেরামের কুরআন তিলাওয়াত পদ্ধতি।

সম্মানিত পাঠক ! একটু চিন্তা করে দেখুন, যে আল্লাহ রাববুল আলামীন আমাদের নিজ অনুগ্রহে হাজারও নেয়ামতে ডুবিয়ে রেখেছেন। নিজ মেহেরবানিতে আমাদের ইসলামের মত মহা-নেয়ামত দান করেছেন, তিনি আমাদের জন্য একটা কিতাব পাঠালেন যেটি আমাদের প্রতি তার একমাত্র পত্র হিসেবে গণ্য করা যায়। সে পত্রটি পাঠ করতে ও বুঝতে আমাদের কত অলসতা! কত উদাসীনতা! আপনার কি ইচ্ছে হয় না আমার প্রভু আমার উদ্দেশ্যে কী বলতে চাচ্ছেন, সাড়া জীবনে একটি বার হলেও জেনে নেই? আমাদের অনেকে বছরে কয়েক বার এমন কি শুধু রমজান মাসে কয়েক বার কুরআন পাঠ করে ‘খতম’ করি, অথচ একটি বারও তার অর্থ অনুধাবন ‘শুরু’ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছি কি? এমনকি আরবী ভাষা জানে ও বুঝে এমন অনেক লোককে দেখেছি, তারা যখন কুরআন পাঠ করেন তখন অর্থ বা তরজমার দিকে খেয়াল করার সামান্য প্রয়োজন অনুভব করেন না। তাই সকলকে আহবান জানাই আর বেশি বেশি কুরআন ‘খতম’ করা নয়, বরং তিলাওয়াত ও বুঝার চেষ্টা ‘আরম্ভ ’করি। আমরা কি পারি না, প্রত্যেকে এ সিদ্ধান্ত নিতে জীবনে একবার হলেও আমি কুরআনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অর্থ বুঝে বুঝে তিলাওয়াত করব। শুরু করেই দেখুন না ! আপনি অভিভূত হয়ে যাবেন। মনে হবে আপনি সত্যিই মহান আল্লাহর সাথে সরাসরি কথা বলছেন আর আল্লাহ আপনার সামনে উপস্থিত। আপনি যেন তাকে দেখতে পাচ্ছেন। মনে হবে তাঁকে প্রশ্ন করছেন, তিনি উত্তর দিচ্ছেন। মনে হবে, আপনি যেন নতুন করে ঈমান গ্রহণ করলেন। আপনার বিশ্বাস হতে চাইবে না যে, এ কুরআন চৌদ্দ শত বছর আগে অবতীর্ণ হয়েছে। মনে হবে মাত্র কিছুক্ষণ আগে নাযিল হয়েছে। আর তখনই প্রতিফলন দেখতে পাবেন আল্লাহর সে কথাগুলোর যা তিনি কুরআন তিলাওয়াত কারীদের প্রশংসায় বলেছেন। আমরা আল্লাহ রাববুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা করছি আল্লাহ তাআলা যেন আমাদেরকে ঐ সকল লোকদের অন্তর্ভূত না করেন, যাদের সম্পর্কে তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :

وَيَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ حَنَاجِرَهُمْ . صحيح البخاري :৪৬৭০

‘তারা কুরআন পাঠ করবে কিন্তু তা তাদের কণ্ঠ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে, কণ্ঠ অতিক্রম করে অন্তর পর্যন্ত পৌঁছোবে না।’ [বুখারী : ৪৬৭০]

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন