মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আট: সাহাবীগণের ব্যাপারে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের মাযহাব।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/447/17
ক. সাহাবীগণের মহব্বত করা ঈমানের নিদর্শন, আর তাদের সাথে বিদ্বেষ পোষণ করা নিফাকের নিদর্শন। সহীহ হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন,
«آية الإيمان حب الأنصار وآية النفاق بغض الأنصار» .
“আনসারদের মহব্বত করা ঈমানের আলামত ও তাদের সাথে বিদ্বেষ পোষণ করা নিফাকের আলামত”।
অপর হাদীসে তিনি বলেছেন,
«لايحبهم إلا مؤمن ولايبغضهم إلا منافق» .
“মুমিন ব্যতীত কেউ তাদের মহব্বত করবে না এবং মুনাফিক ব্যতীত কেউ তাদের সাথে বিদ্বেষ পোষণ করবে না”।
এ ফযীলত যদি আনসারদের হয়, মুহাজিরদের ফযীলত তার চেয়ে বেশি। কারণ, মোটের ওপর তারাই শ্রেষ্ঠ উম্মত। সর্বপ্রথম মুহাজিররা ইসলাম গ্রহণ করেছেন এবং দীনকে সাহায্য ও দীনের জন্য হিজরত করেছেন। যেসব আয়াতে মুহাজির ও আনসারদের ফযীলত, আল্লাহর সন্তুষ্টি, সাওয়াব ও প্রতিদানের আলোচনা এসেছে, তাতে আনসারদের আগে মুহাজিরদের নাম রয়েছে, যার অর্থ মুহাজিরগণ শ্রেষ্ঠ।
খ. সাহাবীগণের সম্পর্কে কোনও প্রকার বিদ্বেষ ও হিংসা অন্তরে রাখা যাবে না, যেমন আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশ দিয়েছেন:
“যারা তাদের পরে এসেছে, তারা বলে: হে আমাদের রব, আমাদেরকে ও আমাদের ভাই যারা ঈমান নিয়ে আমাদের পূর্বে অতিক্রান্ত হয়েছে তাদেরকে ক্ষমা করুন”। [সূরা আল-হাশর, আয়াত: ৭-১০]
গ. সাহাবীগণের সমালোচনা থেকে জবানকে নিরাপদ রাখা। কোনও সাহাবীকে খারাপ বিশেষণসহ উল্লেখ করা যাবে না, বরং প্রশংসা ও কল্যাণের সাথে স্মরণ করা জরুরি। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সম্মানকে সুরক্ষা দিয়েছেন। যেমন, তিনি বলেছেন,
«لاتسبوا أصحابي، فوالذي نفسي بيده لو أنفق أحدكم مثل أحد ذهبا ما بلغ مد أحدهم ولا نصيفه» .
“তোমরা আমার সাহাবীগণের গাল-মন্দ কর না, সে সত্ত্বার কসম, যার হাতে আমার নফস, তোমাদের কেউ যদি উহুদ পরিমাণ স্বর্ণ সদকা করে, তাদের কারও এক মুদ বা তার অর্ধেকেও পৌঁছবে না”। এ হাদীস থেকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়, সাহাবীগণের গালমন্দ করা হারাম, লা‘নত করা তার চেয়েও বড় পাপ। অতএব, সেটা আরও মারাত্মক হারাম। যদিও উভয় পাপ কবিরা গুনাহ। একটি সহীহ হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«لعن المؤمن كقتله» .
“মুমিনকে লা‘নত করা তাকে হত্যা করার মতো”।
অপর হাদীসে তিনি বলেছেন,
«الله الله في أصحابي، لاتتخذوهم غرضا ومن آذاهم فقد آذاني ومن آذاني فقد آذى الله، ومن آذى الله فيوشك أن يأخذه» .
“আমার সাহাবীগণের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর, আল্লাহকে ভয় কর, তাদেরকে তোমরা লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত কর না, যে তাদেরকে কষ্ট দিল সে আমাকে কষ্ট দিল, আর যে আমাকে কষ্ট দিল সে আল্লাহকে কষ্ট দিল। আর যে আল্লাহকে কষ্ট দেয়, অবশ্যই আল্লাহ তাকে পাকড়াও করবেন”।
অতএব, উম্মতের ওপর সাহাবীগণের হক, একটি বড় হক। উম্মতের ভেতর সাহাবীগণ সর্বশ্রেষ্ঠ, বরং নবী ও রাসূলদের পর সকল মানুষ থেকে তারা শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ তাদের সবার ওপর সন্তুষ্ট হোন।
ঘ. আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের বিশ্বাস কোনোও সাহাবী নিষ্পাপ নয়, হোক সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আত্মীয় বা অগ্রগামী কোনোও সাহাবী; বরং আহলুস সুন্নাহর নিকট সাহাবীগণের থেকে পাপ প্রকাশ পাওয়া সম্ভব, হোক সেটা কবিরা কিংবা ছগিরা পাপ, তবে কিছু বৈশিষ্ট্যের জন্য আল্লাহ তাদের সেসব পাপ ক্ষমা করবেন, যার তাওফিক তাদেরকে তিনিই দিয়েছেন। যেমন,
১. পাপ সংঘটিত হলে তাওবা করার তাওফীক, আর সত্যিকার তাওবা দ্বারা পূর্বাপেক্ষা মর্যাদা বর্ধিত হয়।
২. পাপ মোচনকারী নেকির তাওফীক। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আর যে সত্যসহ এসেছে এবং যে তা সত্য বলে মেনে নিয়েছে, তারাই হল মুত্তাকি। তাদের জন্য তাদের রবের কাছে তাই রয়েছে যা তারা চাইবে। এটাই মুমিনদের পুরস্কার”। [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৩৩-৩৪]
আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি সাহাবীগণ সত্যিকার অর্থে ঈমান এনেছেন, তাদের এমন অনেক নেকি ও ফযীলত রয়েছে, যা তাদের পাপকে নিঃশেষ করে দেয়, যদি তাদের থেকে কখনো পাপ সংঘটিত হয়। আল্লাহ তাদের সবার ওপর সন্তুষ্ট হোন।
৩. সাহাবীগণের যে পরিমাণ পাপ ক্ষমা করা হবে, সে পরিমাণ পাপ পরবর্তী কারও ক্ষমা হবে না, যদিও তাদের কারো থেকে সেরূপ পাপ সংঘটিত হয়, তবে সেরূপ পাপ সংঘটিত হয় নি। কীভাবেই হবে, যেখানে তাদের যুগ সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সহীহ সনদে প্রমাণিত: “সাহাবীগণের যুগ সর্বশ্রেষ্ঠ যুগ। তাদের কারও এক মুদ সদকা, তাদের পরবর্তীদের পাহাড় পরিমাণ সদকা থেকে উত্তম”।
৪. যদি কোনোও সাহাবী থেকে পাপ প্রকাশ পায়, তাহলে সে পাপ থেকে তিনি তাওবা করেছেন এটাই স্বাভাবিক। কারণ, তাদের ভেতর আল্লাহর ভয় সবার অপেক্ষা বেশি ছিল। তাওবা ও মাগফিরাত প্রার্থনা করার ক্ষেত্রে তারা সবার থেকে অগ্রগামী ছিলেন, তারা কোনোও পাপ বারবার করেন নি।
৫. অধিকন্তু সবার আগে ইসলাম গ্রহণ করার ফযীলত, পাপ মোচনকারী অনেক নেকি এবং আরও অনেক বৈশিষ্ট্য সাহাবীগণের রয়েছে, যা একমাত্র আল্লাহ তাদেরকেই দান করেছেন। দ্বিতীয়ত আল্লাহ তাদেরকে অনেক মুসিবত দিয়ে পরীক্ষা করেছেন, যা তাদের পাপকে মোচন করে দিয়েছে স্বাভাবিক।
৬. সাহাবীগণই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুপারিশের বেশি হকদার। এ ছাড়া আরও অনেক নেকি তাদের রয়েছে।
যদি সাহাবীগণের আসলেই পাপ সংঘটিত হয়, তাহলে এসব কারণে তাদের পাপ মোচন হবে ও তারা মুক্তি পাবেন। আর যদি বিষয়টা হয় ইজতিহাদের, তাহলে তারা সাওয়াবের অধিকারী হবেন। যদি ইজতিহাদ সঠিক হয় দু’টি সাওয়াব পাবেন: একটি ইজতিহাদ ও অপরটি সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছার সাওয়াব। যদি ইজতিহাদ ভুল হয় একটি সাওয়াব পাবেন অর্থাৎ ইজতিহাদ করার সাওয়াব, আর ভুলটি মাপ।
ঘ. আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত সবাই একমত যে, উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর মৃত্যুর পর সাহাবীগণের মাঝে যে ফিতনার সৃষ্টি হয়েছে তার ব্যাপারে চুপ থাকাই নিরাপদ। এসব বিষয় আল্লাহর ওপর সোপর্দ করে উভয় পক্ষের মৃতদের জন্য ইস্তেগফার ও রহমতের দো‘আ করা। জনৈক সালাফকে সাহাবীগণের মাঝে সৃষ্ট যুদ্ধ-বিগ্রহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, তিনি উত্তর দেন: “আল্লাহ যে রক্ত থেকে আমাদের হাত পাক রেখেছেন, সে রক্ত দিয়ে আমরা আমাদের জবানকে নাপাক করতে চাই না, অতঃপর তিনি পাঠ করেন:
“সেটা ছিল একটি উম্মত, যারা বিগত হয়েছে। তারা যা অর্জন করেছে তা তাদের জন্য আর তোমরা যা অর্জন করেছ তা তোমাদের জন্য। আর তারা যা করেছে সে সম্পর্কে তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে না”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৪১]
সাহাবীগণের সম্পর্কে আমাদের করণীয় হচ্ছে তাদের মর্যাদা সংরক্ষণ করা। তাদের অগ্রগামীতা স্বীকার করা ও তাদের ফযীলত প্রচার করা। আর বিশ্বাস করা যে, তাদের প্রত্যেকের ইজতিহাদ করার যোগ্যতা রয়েছে, তারা কেউ ইচ্ছা করে ভুল করেননি। যিনি ঠিক করেছেন তার জন্য দু’টি সাওয়াব, যিনি ভুল করেছেন তার জন্য দু’টি সাওয়াব, আর ভুলটি মাফ। সাহাবীগণের দুর্নাম করে যা বর্ণনা করা হয়, তার অধিকাংশ মিথ্যা ও বানোয়াট। কতক ঘটনা হ্রাস-বৃদ্ধির কারণে মূল বক্তব্য হারিয়েছে। ইজতিহাদের ক্ষেত্রে সাহাবীগণ মা‘জুর ছিলেন এ কথাই সঠিক। তারা কেউ ইচ্ছে করে ভুল করে নি। অতঃপর তাদের যে কাজগুলোয় আপত্তি করা হয় তার পরিমাণও খুব কম তাদের নেকি ও ফযীলত অপেক্ষা। যেমন, আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান আনা, দীনের জন্য হিজরত ও রাসূলকে সাহায্য করা; আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা, ইলমে নাফি ও নেক আমল করা। যে জ্ঞান ও বিবেক দিয়ে সাহাবীগণের জীবন চরিত ও তাদের ফযীলত দেখবে, সে অবশ্যই জানবে নবী ও রাসূলদের পর তারাই সর্বশ্রেষ্ঠ, তাদের মত কেউ ছিল না, ভবিষ্যতেও হবে না। তারা মুসলিম উম্মাহর খাঁটি ও নির্ভেজাল সদস্য এবং সর্বোত্তম উম্মত ও আল্লাহর নিকট সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিত্ব।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/447/17
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।