hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামী বিধান ও আধুনিক বিজ্ঞান (প্রথম খন্ড)

লেখকঃ মুহাম্মাদ ওসমান গনি

২৫
ইসলামে কিসাসের হুকুম ( জানের বদলে জান) কেন?
শরীয়তে কিসাসের মাধ্যমে নিরীহ নিস্পাপ প্রণগুলো নিরাপদ, সংরক্ষণ ও হিফাযতে থাকে। আর সেটাই স্পষ্ট ভাবে পরিস্ফুটিত হয় হত্যাকারীর কিসাসের মাধ্যমে। অন্যায় ভাবে খুন করলে, খুনের বদলে খুন করার বিধান দিয়েছেন আল্লাহ। আল্লাহ রাববুল আলামীন কিসাসকে ব্যক্তি ও সমাজের জীবন বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেনঃ

وَلَكُمْ فِي الْقِصَاصِ حَيَاةٌ يَا أُولِي الْأَلْبَابِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ ﴿البقرة 179﴾

অর্থঃ হে জ্ঞানী ব্যক্তিগণ! কিসাসের মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে জীবন, যাতে তোমরা ভয় কর (সূরা বাকারা, ২ঃ ১৭৯ আয়াত)।

পৃথিবীর বেশীর দেশেই মৃত্যুর বদলে মৃত্যুর আইন প্রচলিত আছে। তবে এর প্রয়োগ পদ্ধতি ভিন্ন।

একজন দোষী ব্যক্তিকে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিলে অন্যরা আর সে ধরনের কাজ করতে সাহস পায় না। অর্থাৎ হত্যাকারী যদি জানতে পারে যে, সে যদি অপরকে হত্যা করে তাহলে তাকেও হত্যা করা হবে, এ ক্ষেত্রে অবশ্যই সে এই ঘৃণিত অপরাধ থেকে নিজেকে বিরত রাখবে। তাই এই বিরত থাকা তার যেমন জীবন, অপরের জন্যও তেমনি জীবন। আর এটাই হচ্ছে আল্লাহর বিধানের মহান উদ্দেশ্য। ইসলাম এই কিসাসের মাধ্যমে হিংসা প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে প্রতিশোধ নিতে চায় এমন নয়, বরং এই কিসাস জীবনকে রক্ষার জন্যই।

কোন হত্যাকারী এই হুকুম জানার পরও যদি অপরকে হত্যা করে তাহলে তার অর্থ এই যে, তার দ্বারা শত শত হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়াই স্বাভাবিক। অতএব এই হত্যকারীর উপর ইসলামী আইন যদি জনসম্মুখে প্রয়োগ করা হয় তাহলে নিঃসন্দেহে বলা যাবে যে, শত শত জীবন রক্ষা পেয়েছে এই আইনের কারণেই। তাই আল্লাহর ভাষায়ঃ

وَلَكُمْ فِي الْقِصَاصِ حَيَاةٌ﴿البقرة 179﴾

অর্থঃ কিসাসের মধ্যে রয়েছে তোমাদের জন্য জীবন। (সূরা বাকারা, ২ঃ ১৭৯ আয়াত)।

এর মাধ্যমে আল্লাহ-ভীতির শিক্ষা দেয়া হয়েছে। কুরআন পাকের এ পদ্ধতি অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে মানবিক বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। মানব রচিত দন্ডবিধির মত কুরআনপাক শুধু অপরাধ ও শাস্তি বর্ণনা করেই ক্ষান্ত হয় না, বরং প্রত্যেক অপরাধ ও শাস্তির সাথে আল্লাহ-ভীতি ও পরকালে বিশ্বাস উপস্থাপন করে মানুষের ধ্যান ধারণাকে এমন এক জগতের দিকে ঘুরিয়ে দেয় যা মানুষকে যাবতীয় অপরাধ ও গোনাহ থেকে পবিত্র করে দেয়। গবেষণা দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, জনমনে আল্লাহ তা’আলা ও আখিরাতের ভয় সৃষ্টি করা ছাড়া জগতের কোন আইন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীই অপরাধ দমনের নিশ্চয়তা দিতে পারে না। কুরআন পাকের এই অদ্বিতীয় পদ্ধতিই জগতে অভূতপূর্ব বিপ্লব এনেছে। সমাজ থেকে চিরতরে নির্মূল হয়েছে খুন ও সন্ত্রাস।

অপরাধীর কিসাসের মাধ্যমে পরস্পরের যুদ্ধ বিগ্রহ, রক্তপাত, মারামারি হানাহানি বন্ধ হয়, যেমন বন্ধ হয়েছিল জাহিলিয়াত যুগের যুদ্ধ। বর্তমান আধুনিক যুগেও যে রক্তপাত, মারামারি, কাটাকাটি ও যুদ্ধ চলছে তা সেই র্ববর যুগের ঘটনাকেও অতিক্রম করে চলছে। দুই দল, দুই গোত্র, দুই সম্প্রদায় এবং পাশাপাশি দুই দেশের মাঝে যে হিংসাত্মক যুদ্ধ, সন্ত্রাসী যুলুম ও নির্যাতন চলছে তা একমাত্র কুরআনী আইন তথা ইসলামী শাসনের অভাবেই। সীমা লংঘনকারী ও অপরাধীর সঠিক বিচার হচ্ছে না বিধায় এ পরিণাম।

আজকে যদি আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবাগণের যুগের কথা স্মরণ করি তাহলে দেখতে পাই যে, ঐ সময় মাত্র গুটি কয়েক স্বেচ্ছা স্বীকৃত অপরাধের হদ প্রয়োগের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেজন্য ছিল না সেখানে কোন সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী। এমনকি যুগ যুগ ধরে চলে আসা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধও বন্ধ হয়ে সমস্ত পৃথিবীতে শান্তি বিরাজ করছিল। শত্রু পরিণত হয়েছিল মিত্রে। কোথাও কোন ভয় ভীতি ছিল না। নিরাপত্তা ছিল সর্বত্র।

বর্তমান যুগেও যদি আমরা সৌদী আরবের কথা চিন্তা করি, সেখানে এই শরীয়তী কিসাসের হুকুম জারী আছে বলেই হত্যা নামের অপরাধটি নেই বললেই চলে। যা সংঘটিত হচ্ছে তাও হাতে গোনা কয়েকটি মাত্র। অপর দিকে যদি আমরা বিশ্বের অন্যান্য দেশের প্রতি নজর করি, তা মুসলিম অধ্যুসিত দেশ হোক অথবা অমুসলিম দেশ হোক, সেখানে আমরা দেখতে পাই যে, তাদের কাছে হত্যা যেন সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। অথচ ইসলাম বলছেঃ

مِنْ أَجْلِ ذَلِكَ كَتَبْنَا عَلَى بَنِي إِسْرَائِيلَ أَنَّهُ مَنْ قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الْأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا وَمَنْ أَحْيَاهَا فَكَأَنَّمَا أَحْيَا النَّاسَ جَمِيعًا ( المائدة 32)

অর্থঃ এ কারণেই আমি বণী ইসরাঈলের প্রতি লিখে দিয়েছি যে, যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবা পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে এবং যে কারো জীবন রক্ষা করে সে যেন সবার জীবন রক্ষা করে। ( সূরা মায়েদা, ৫ঃ ৩২ আয়াত)।

যে দেশগুলোতে শত শত হত্যাকান্ড ঘটছে অথচ সেই সমস্ত দেশ থেকেই উস্কানী দেয়া হচ্ছে যে, ইসলামে হত্যার বদলে হত্যা আইনটি বর্বরতা। আমাদের দেশেও মুসলিম নামধারী কিছু লোক তাদের ছত্র ছায়ায় তাদের এজেন্ট হিসাবে এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে। হত্যাকারী যালেম, অপরাধী, লম্পট, বদমাইশদের পক্ষ অবলম্বন করে মেকী দরদ দেখাচ্ছে। অথচ এমন অপরাধীর দ্বারা যে শত শত নিস্পাপ নিরীহ প্রাণ অন্যায় ভাবে কঠিন যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে ছিনিয়ে নিচ্ছে সেই মাযলুমদের পক্ষে একবারও রহম বা দরদ দেখাচ্ছে না। তাদের কর্ণকুহরে তাদের সন্তান ও বিধবাদের অর্তনাদ, আহাজারী ও চিৎকার পৌঁছে না, যারা তাদের অভিভাবককে হারিয়ে ফেলায় এক মুঠো খাদ্য পাচ্ছে না, তাদের দেখা শুনার কেউ নেই। তাদের জীবন যাপন কতই না কষ্ট সাধ্যে পরিণত হয়েছে সেই চিন্তা কি তারা কখনও করেছে? অপরাধী ছাড়া কেউ অপরাধীর পক্ষ অবলম্বন করে না।

একটি অন্যায়কারী অপরাধীকে শাস্তি দেয়ার মাধ্যমে শত শত জীবন রক্ষায় ইসলাম যেমন নফছের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করছে, তেমনি সকল সমাজে প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠার নিশ্চয়তা দিচ্ছে, যেহেতু এই আইন সৃষ্টিকর্তা রাববুল আলামীনের পক্ষ থেকে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন