মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস এবং তাঁর কাজকর্ম থেকে উপলদ্ধি করা যায় যে, তিনি যেমন রোগের বর্ণনা দিয়েছেন তেমনি সেগুলির চিকিৎসার বর্ণনা দিয়েছেন যা ‘তিবেব নববী’ নামে প্রসিদ্ধ। পূর্ববর্তী চিকিৎসকগণ এর উপরেই নির্ভর করে চিকিৎসা সংক্রান্ত অনেক পুস্তক রচনা করেছেন।
রোগ বা ব্যাধি দুই প্রকার। হৃদয়ের ব্যাধি ও শরীরের ব্যাধি। অতএব চিকিৎসাও দুই ভাবে হয়ে থাকে। হৃদয়ের চিকিৎসা ও শরীরের চিকিৎসা। হৃদয়ের ব্যাধির চিকিৎসা কুরআন তেলাওয়াত ও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণিত দোয়া সমূহের মাধ্যমে হয়ে থাকে, আর শরীরের ব্যাধির চিকিৎসা হল ওষধ, পথ্য যা খাদ্যদ্রব্য থেকে তৈরী করা হয়েছে। প্রাকৃতিক ওষধের মধ্যে বিশেষ ভাবে উলেখযোগ্য কালজিরা, পিয়াজ, রসুন ও মধু।
মধু হচ্ছে সুস্বাদু গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য নির্যাস। মধু যেমন বলকারক খাদ্য এবং রসনার জন্য আনন্দ ও তৃপ্তিদায়ক তেমনি শরীরের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। রোগ ব্যাধি নিরাময়ে ব্যবস্থাপত্র হিসাবে প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন ব্যাধিতে মধু ব্যবহার হয়ে আসছে। কুরআন ও হাদীসে প্রমাণীত যে, মধু একটি গুরুত্বপূর্ণ ওষধ; এতে কোনই সন্দেহ নেই এবং বিভিন্ন চিকিৎসার ক্ষেত্রে মধুর বিশেষ বৈশিষ্ট রয়েছে। মধুর নিরাময় শক্তি বিরাট ও স্বতন্ত্র ধরনের। আল্লাহর হুকুম, রহমত ও কুদরতে মধু প্রত্যেক রোগের ওষধ।
অর্থঃ আপনার পালনকর্তা মধু মক্ষিকাকে আদেশ দিলেনঃ পর্বত গাত্রে, বৃক্ষে এবং ডালে গৃহ তৈরী কর। এরপর সর্ব প্রকার ফল থেকে আহার করা এবং আপন পালনকর্তার উন্মুক্ত পথ সমূহে চলমান হও। তার পেট থেকে বিভিন্ন রংয়ের পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য নির্দশন রয়েছে। (সূরা নাহল, ১৬ঃ ৬৮ ও ৬৯ আয়াত)।
এই পবিত্র আয়াতে আমরা দেখতে পাই যে, আল্লাহ রাববুল আলামীন মধু ও মধুমক্ষিকাকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন এবং মধুতে মানুষের জন্য রোগের প্রতিকার রয়েছে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণিত যে, অনেক রোগ নিরাময়ে মধু অতি আশ্চর্যজনক ফলকারক। অপর দিকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসসমূহ মধু ব্যবহারে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
অর্থঃ তোমরা কুরআন ও মধু দিয়ে ব্যাধি নিরাময়ের ব্যবস্থা করবে। বুখারী ও মুসলিম শরীফে আবু সাঈদ আল খুদরী রাঃ হতে বর্ণিত রয়েছেঃ
إنَّ رجُلاً أتى إلى النَّبىِّ صلى الله عليه وسلّمَ فقَالَ إنَّ أخِى يَِشْتَكي بَطْنَهُ فَقَالَ صلى الله عليه وسلّمَ اسْقِهِ عَسَلاً فَذَهَبَ ثُمَّ رَجَعَ فقَال : قَدْ سَقَيتُهُ فَلَمْ يُغْنِ عَنْهُ شَيئاً مَرَّتًينِ أوْ ثًلاثًا كلُّ ذلك يقُوْل له اسقه عَسَلا فقال له في الثالثة أو الرابعة صدق الله وكذب بطن أخيكَ ( رواه البخاري ومسلم )
অর্থঃ এক ব্যক্তি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বললঃ আমার ভাইয়ের পেটের অসুখ হয়েছে। তিনি বললেনঃ তুমি তাকে মধু পান করাও। সে চলে গেল। তারপর ফিরে এসে বললঃ আমি তাকে মধু পান করিয়েছি, তাতে তার কোন উপকার হয়নি। এবারও তিনি বললেনঃ তুমি তাকে মধু পান করাও। এভাবে দুইবার অথবা তিনবার বলা হল। প্রত্যেকবারেই তিনি মধু পান করানোর কথা বললেন। অতঃপর তৃতীয় অথবা চতুর্থ বারে তিনি তাকে বললেনঃ
তাতে মানুষের জন্য রোগের প্রতিকার রয়েছে। (সূরা নাহল, ১৬ঃ ৬৯ আয়াত)। এরপর রোগীকে আবার মধু পান করানো হলে সে সুস্থ হয়ে ওঠে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেনঃ
অর্থঃ প্রত্যেক রোগের ঔষধ রয়েছে। যখন কেহ নির্দিষ্ট রোগের সঠিক ঔষধ পেয়ে যায় তখন আল্লাহর হুকুমে সে রোগ থেকে মুক্তি লাভ করে।
বিজ্ঞানীরা গবেষণার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন যে, মধুর মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী জীবানু নাশক ক্ষমতা। এই ক্ষমতার নাম ‘‘ইনহিবিন’’। মধুর সাথে কোন তরল পদার্থ মিশ্রিত হলে তা তরলীভূত হয়ে পড়ে। গ্লুকোজ অক্সিডেজ নামক বিজারকের সাথে মধুর বিক্রিয়া ঘটলে গ্লুকোনা ল্যাকটোন হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডে পরিণত হয়। এই বিক্রিয়ায় জীবানু ধ্বংস হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, রোগ সৃষ্টিকারী ব্যকটেরিয়া মধুতে ডুবিয়ে দিলে মারা যায়। মধু ইষ্টের (Yeast) বংশ বৃদ্ধি ঘটতে দেয় না। এ কারণে খাঁটি মধু বোতলজাত করে অনেকদিন রাখা যায়। মধু একটি উৎকৃষ্ট প্রিজার্ভেটিভ বা সংরক্ষক। চিকিৎসা শাস্ত্রের এলোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদীতে ঔষধী গুণ বেশী দিন ধরে রাখার জন্য ঔষধের সাথে এলকোহল বা রেক্টিফাইড স্পিরিট মিশানো হয়। ইউনানীতে তৎপরিবর্তে মিশানো হয় মধু। বার্মার বৌদ্ধ সন্ন্যাসীগণ শবদাহ করার পূর্বে মধুতে ডুবিয়ে রেখে সংরক্ষণ করতেন। মিসরে গিজেহ পিরামিডের গহবর মধু দ্বারা পূর্ণ করা ছিল। সারা পৃথিবীতে কাশির ঔষধ ও অন্যান্য মিষ্টি দ্রব্য তৈরী করতে প্রতিবছর কম পক্ষে ২০০ টন মধু ব্যবহৃত হয়। খুসখুসে কাশিতে মধুর সাথে লেবুর রস উপশমদায়ক। মাতাল রোগীদেরকে স্থিরাবস্থায় ফিরিয়ে আনতে মধু কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
গ্লুকোজের ঘাটতিতে হৃদপেশীর শক্তি কমে যায়। মধুর ব্যবহারে এ ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম। ধমনী সম্প্রসারণ, করোনারী শিরার রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করতে মধুর ভূমিকা অপরিসীম। নিয়মিত মধু পান করলে রক্ত কণিকার সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ ভাগ বৃদ্ধি পায়। কাজেই এনিমিয়া আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে মধু উত্তম পানীয়। হাঁপানী রোগে মধুর স্থান সবার উপরে। প্যারিসের ‘‘ইনিষ্টিটিউট অফ বী কালচার’’ এর পরিচালক রিমে কুভেন বলেনঃ রক্তক্ষরণ, রিকেট, ক্যান্সার এবং শারীরিক দুর্বলতায় মধুর অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে। চিনির পরিবর্তে শিশুদেরকে মধু খেতে দেয়া হয়। চিনি দন্তক্ষয় ঘটায়, কিন্তু মধু তা করে না। মধু ব্যবহারে নবজাতক স্বাস্থ্যবান ও সবল হয়ে ওঠে।
এক চামচ বাদাম তেলের সাথে দুই চামচ মধু মিশিয়ে কাটা বা পোড়ার ক্ষতে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। ইনফেকশন, সাধারণ ঘা, ত্বকের আলসার, পচা-গলা ঘা মধু ব্যবহারে দ্রুত আরোগ্য লাভ হয়। নারীদের গোপন অঙ্গের অসহনীয় চুলকানীতে মধুর ব্যবহার অতীব কার্যকরী। [মাসিক আশরাফ, এপ্রিল ২০০০. পৃষ্ঠা ২৬,২৭।]
অর্থঃ এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে। (সূরা নাহল, ১৬ঃ ৬৯ আয়াত)।
বিজ্ঞান আমাদেরকে আরও জানতে সাহায্য করে যে, ফুলের পুস্পমঞ্জরী থেকে মৌমাছিরা মধু আরোহন করে। মাত্র ১০০ গ্রাম মধু আরোহন করতে মৌমাছিকে প্রায় দশ লক্ষ ফুলে ভ্রমণ করতে হয়। ফুল থেকেই ফলের জন্ম হয়। মৌমাছিরা ফুলের পরাগায়নে সহায়তা করে। ফুলে ভ্রমন করলেও পক্ষান্তরে ফলায়নেই সহায়তা করে থাকে। একটি পূর্ণ বয়স্ক মৌমাছি তার দেহের ওজনের পরিমাণের এক চতুর্থাংশ থেকে দুই চতুর্থাংশ পর্যন্ত পুস্পরস সংগ্রহ করে পাকস্থলীতে ধারণ করে এবং ১২০ থেকে ১৪০ বার উদগীরণ ও গলধঃকরণ করে। ফলে পাকস্থলীতে জটিল প্রক্রিয়ায় মধু তৈরী হয়।
বিজ্ঞানীরাও পরীক্ষা করে দেখেছেন, মধুর রং ও উৎপাদনে পার্থক্য থাকে। স্বাদ, সৌরভ এবং ঘ্রানও হয় ভিন্ন। মধুর রং পানির মত বা সোনালী ঘন লাল। কোন কোন ক্ষেত্রে মধুর রং হালকা ধরণের। মধুর মূল উপাদনগুলি হচ্ছে পানি, শর্করা বা চিনি, এসিড, খনিজ, আমিষ এবং বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন। শর্করাগুলোর মধ্যে থাকে লেকটোলেজ, ডেকট্রোজ, মালটোজ, ডাইম্যাকারাইড এবং কিছু উচ্চ মানের চিনি। মধুতে যে সব এসিড পাওয়া যায় সেগুলোর নাম সাইট্রিক, ম্যালিক, বুটানিক, গুটামিক, স্যাক্সিনিক, ফরমিক, এসিটিক, পাইরোগুটামিক এবং এমাইনো এসিড।
মধুতে মিশ্রিত খনিজ দ্রব্যগুলো হচ্ছে পটাসিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, সিলিকা ম্যাগনেসিয়াম, ক্লোরাইড, সালফেট, ফসফেট, কপার, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ প্রভৃতি। থায়ামিন, রিভোফ্লোবিন, ভিটামিন কে এবং ফলিক এসিড নামক ভিটামিন মধুতে বিদ্যমান থাকে।
বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, মধু খাদ্য হিসাবেও গুরুত্বপূর্ণ। দুধের পরেই আদর্শ খাদ্য হিসাবে মধুর স্থান। মধু সহজেই পরিপাক হয়। শর্করা থাকায় তা সহজেই শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। মধুর ক্যালরী উৎপাদন ক্ষমতা অত্যন্ত বেশী। প্রতি কেজী মধুতে ৩১৫৪ থেকে ৩৩৫০ ক্যালরী পরিমাণ শক্তি থাকে।
মধু শক্তি যোগানোর পাশাপাশী ভিটামিন, খনিজ ও এনজাইম সরবরাহ করে। মধু থেকে প্রসাধনীও তৈরী হয়। ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় মধুর ভূমিকা খাট করে দেখার অবকাশ নেই। যে সমস্ত ভিটামিন মানুষের শরীরে প্রয়োজন, মধুতে সেই সমস্ত ভিটামিন রয়েছে। যেমন ভিটামিন এ, বি, সি ইত্যাদি। মধু নিঃসন্দেহে উত্তম ও উপকারী পানীয়। মধু ও মধুমক্ষিকা আল্লাহর বিশেষ নেয়ামত। আল্লাহর আদেশে বিশেষ কৌশলে মধু উৎপাদনকারী মৌমাছিও তাই আল্লাহর এক প্রিয় সৃষ্টি। আমরা যদি মধুর মূল উপাদানগুলোর প্রতি লক্ষ্য করি যার জন্য আল্লাহ এটা খাস করেছেন এবং যার জন্য আল্লাহ রাববুল আলামীন মধুকে মানুষের শেফা হিসাবে নির্ধারণ করেছেন তাহলে আমরা দেখতে পাই যে, মধুতে রয়েছে সুগার যার মিষ্টত্ব তৈরীকৃত সুগারের চেয়ে অনেক গুন বেশী। মধুতে প্রায় পনের প্রকার সুগার রয়েছে। যেমন গ্লুকোজ, সাকরোজ, ফ্রকটজ, মালটোজ ইত্যাদি। এগুলো প্রতিটিই দ্রুত রক্তের সাথে মিয়ে যায় এবং সহজেই পরিপাক হয়। অতএব এক কথায় আমরা স্বীকার করতে বাধ্য যে, মধুতে মানুষের জন্য রোগের প্রতিকার রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/484/32
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।