HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
প্রশ্নোত্তরে তাওহীদ
লেখকঃ ড. ইবরাহীম ইবন সালেহ আল-খুদ্বায়রী
সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য। শ্রেষ্ঠ রাসূল আমাদের নবী মুহাম্মদ, তাঁর পরিবারবর্গ এবং সমস্ত সাহাবীদের উপর সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক...অতঃপর,
তাওহীদ বিষয়ক এ প্রশ্নোত্তরসমূহ চয়ন করেছি মহান আল্লাহর কালাম ও তাঁর রসূলের বাণী অতঃপর উত্তম জাতীর বিশিষ্ট আলেমগণের আলোচিত মাসয়ালা-মাসায়েল থেকে। আর আমাদের এ পুস্তিকা সংকলনের সম্মানজনক সূযোগ করে দিয়েছে রিয়াদ মহানগরীর শাফা এলাকার ‘দাওয়াত ও নির্দেশনা সহযোগী অফিসে’র জ্ঞান-গবেষণা বিভাগ। উদ্দেশ্য হচ্ছে পুস্তিকা প্রণয়ন করে মহামর্যাদাবান আল্লাহর দীন গ্রহণকারীদের জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করা এবং তা থেকে অন্যান্য মুসলিমদের ব্যাপাক ফায়দা অর্জন। এ পুস্তিকার নাম দেয়া’’ ( التوحيد بين السائل والمجيب ) [বা প্রশ্নোত্তরে তাওহীদ]।
আমি যেহেতু জ্ঞান-গবেষণা বিভাগের সদস্য, সেহেতু এ পুস্তকটি প্রণয়ন করেছি শিক্ষাদানের সিলেবাস হিসেবে।
মহা-বরকতময় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদের নেক প্রচেষ্টা কবুল করেন এবং উত্তম পুরষ্কার প্রদান করেন। আর ক্বিয়ামত দিবসে নেক আমলের পাল্লা ভারী করে দেন। আমাকে, আমার মাতা-পিতাকে এবং সকল মুমিনদেরকে বিচার দিবসে মাফ করে দেন। যারা মহা-মহিয়ান আল্লাহর দিকে ডাকে, সাহায্য করে, সৎকাজের আদেশ দান করে, সেদিকে দাওয়াত দেয়, আর যারা পাপকাজ করেন অপছন্দ ও তা থেকে নিষেধ করে তাদের প্রচেষ্টাকে আল্লাহ যেন বরকতময় করে দেন। আল্লাহ আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাঁর পরিবারবর্গ এবং সাহাবীগণের উপর সন্তুষ্টি ও শান্তি বর্ষণ করুন।
লিপিবদ্ধ হয়েছে যার কলমে তিনি আল্লাহর ক্ষমার ভিখারী;
ড. ইব্রাহীম ইবন সালেহ আল-খুদ্বায়রী
বিচারপতি উচ্চতর আদালত, রিয়াদ,
রাজকীয় সৌদী আরব।
(আল্লাহ তাঁকে এবং তাঁর মাতা-পিতাকে
ও মুমিনদেরকে মাফ করে দিন।)
১৫/০৪/১৪২১ হিজরী।
তাওহীদ বিষয়ক এ প্রশ্নোত্তরসমূহ চয়ন করেছি মহান আল্লাহর কালাম ও তাঁর রসূলের বাণী অতঃপর উত্তম জাতীর বিশিষ্ট আলেমগণের আলোচিত মাসয়ালা-মাসায়েল থেকে। আর আমাদের এ পুস্তিকা সংকলনের সম্মানজনক সূযোগ করে দিয়েছে রিয়াদ মহানগরীর শাফা এলাকার ‘দাওয়াত ও নির্দেশনা সহযোগী অফিসে’র জ্ঞান-গবেষণা বিভাগ। উদ্দেশ্য হচ্ছে পুস্তিকা প্রণয়ন করে মহামর্যাদাবান আল্লাহর দীন গ্রহণকারীদের জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করা এবং তা থেকে অন্যান্য মুসলিমদের ব্যাপাক ফায়দা অর্জন। এ পুস্তিকার নাম দেয়া’’ ( التوحيد بين السائل والمجيب ) [বা প্রশ্নোত্তরে তাওহীদ]।
আমি যেহেতু জ্ঞান-গবেষণা বিভাগের সদস্য, সেহেতু এ পুস্তকটি প্রণয়ন করেছি শিক্ষাদানের সিলেবাস হিসেবে।
মহা-বরকতময় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদের নেক প্রচেষ্টা কবুল করেন এবং উত্তম পুরষ্কার প্রদান করেন। আর ক্বিয়ামত দিবসে নেক আমলের পাল্লা ভারী করে দেন। আমাকে, আমার মাতা-পিতাকে এবং সকল মুমিনদেরকে বিচার দিবসে মাফ করে দেন। যারা মহা-মহিয়ান আল্লাহর দিকে ডাকে, সাহায্য করে, সৎকাজের আদেশ দান করে, সেদিকে দাওয়াত দেয়, আর যারা পাপকাজ করেন অপছন্দ ও তা থেকে নিষেধ করে তাদের প্রচেষ্টাকে আল্লাহ যেন বরকতময় করে দেন। আল্লাহ আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাঁর পরিবারবর্গ এবং সাহাবীগণের উপর সন্তুষ্টি ও শান্তি বর্ষণ করুন।
লিপিবদ্ধ হয়েছে যার কলমে তিনি আল্লাহর ক্ষমার ভিখারী;
ড. ইব্রাহীম ইবন সালেহ আল-খুদ্বায়রী
বিচারপতি উচ্চতর আদালত, রিয়াদ,
রাজকীয় সৌদী আরব।
(আল্লাহ তাঁকে এবং তাঁর মাতা-পিতাকে
ও মুমিনদেরকে মাফ করে দিন।)
১৫/০৪/১৪২১ হিজরী।
উত্তর: আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা শুধুমাত্র তাঁরই ইবাদাত বন্দেগী করার জন্যেই আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। দলীল হলো, আল্লাহর বাণী,
﴿ وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦ ﴾ [ الذاريات : ٥٦ ]
‘‘আর আমি জ্বিন এবং মানুষকে এ জন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা আমারই ‘‘ইবাদাত’ করবে’’। (সূরা আয-যারিয়াত: ৫৬)
উল্লেখ্য যে, ইবাদাতের অর্থ হলো: আদেশ, নিষেধ, সৃষ্টি ও ইবাদাতে আল্লাহকে একক জানতে হবে।
﴿ وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦ ﴾ [ الذاريات : ٥٦ ]
‘‘আর আমি জ্বিন এবং মানুষকে এ জন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা আমারই ‘‘ইবাদাত’ করবে’’। (সূরা আয-যারিয়াত: ৫৬)
উল্লেখ্য যে, ইবাদাতের অর্থ হলো: আদেশ, নিষেধ, সৃষ্টি ও ইবাদাতে আল্লাহকে একক জানতে হবে।
উত্তর: ইসলামী শরীয়ত হলো একটি সুনির্দিষ্ট পথ ও পদ্ধতি; যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একমাত্র জীবন বিধান হিসেবে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ইসলামী শরীয়তের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ:
(ক) এটা আল্লাহর নিকট থেকে এসেছে; আল্লাহ বলেন:
﴿ ثُمَّ جَعَلۡنَٰكَ عَلَىٰ شَرِيعَةٖ مِّنَ ٱلۡأَمۡرِ فَٱتَّبِعۡهَا وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَآءَ ٱلَّذِينَ لَا يَعۡلَمُونَ ١٨ ﴾ [ الجاثية : ١٨ ]
‘‘অতঃপর আমরা আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি নির্ধারিত শরীয়তের বিধানের উপর; সুতরাং আপনি এর অনুসরণ করুন, আর তাদের ইচ্ছা ও বাসনার অনুসরণ করবেন না, যাদের ইলম-জ্ঞান নেই’’ [সূরা আল জাসিয়া : ১৮।]।
আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ وَٱللَّهُ بَصِيرُۢ بِٱلۡعِبَادِ ﴾ [ ال عمران : ١٥ ]
‘‘আর আল্লাহ বান্দাদের প্রতি সম্যক দ্রষ্টা’’। (সূরা আলে-ইমরান: ১৫)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ বান্দাদের প্রতি সবিশেষ দৃষ্টি রাখেন এবং তিনি বান্দাদের কল্যাণের ব্যাপারে সর্বাধিক অবহিত।
(খ) এটা একমাত্র পূর্ণাঙ্গ, সর্বাত্মক, সার্বজনীন, শাশ্বত জীবন বিধান; মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ ٱلۡيَوۡمَ أَكۡمَلۡتُ لَكُمۡ دِينَكُمۡ وَأَتۡمَمۡتُ عَلَيۡكُمۡ نِعۡمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ ٱلۡإِسۡلَٰمَ دِينٗاۚ ﴾ [ المائدة : ٣ ]
‘‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে (জীবন বিধান) পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ (নেয়ামত) সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন (জীবন বিধান) নির্ধারণ করলাম’’ [সূরা আল-মায়িদা: ৩।]।
অনুরূপভাবে সূরা মরিয়মের ৬৪ নং আয়াতে আছে:
﴿ ۚ وَمَا كَانَ رَبُّكَ نَسِيّٗا ﴾ [ مريم : ٦٤ ]
‘‘আর আপনার রব কখনই ভুলে যান না’’।
ইসলামী শরীয়ত নামক বিধান আল্লাহর মনোনিত জীবন বিধান। মানুষের যাবতীয় প্রয়োজনের সুষ্ঠু সমাধান, দুনিয়া ও আখেরাতের সুখ-শান্তি নিহিত আছে আল্লাহ প্রদত্ত এ বিধানের মধ্যেই।
(গ) এটি সর্বকালীন এবং সর্বস্থানের উপযোগী একমাত্র আদর্শ বিধান। প্রতিদিন সূর্য উদিত হয় এবং আমরা দেখতে পাই যে, পৃথিবী শরীয়তের আলো হতে যা প্রয়োজন তা গ্রহণ করেছে। সুস্থ বুদ্ধি বিবেক এ সুন্দরতম সুশৃংখল নিয়ম-পদ্ধতি দেখে এ বিধানের প্রতি আগ্রহ উৎসাহ অবশ্যই বৃদ্ধি পাবে এবং সাক্ষ্য দিবে যে, এ বিধানই নির্ভরযোগ্য একমাত্র অনুসরণীয় আদর্শ বিধান। এটা শান্তিময় আলোর পথ এবং ঈমানদারদের জন্য এটা আল্লাহর নেয়ামতসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম নেয়ামত। সুমহান আল্লাহ বলেন:
﴿ لَقَدۡ مَنَّ ٱللَّهُ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِينَ إِذۡ بَعَثَ فِيهِمۡ رَسُولٗا مِّنۡ أَنفُسِهِمۡ يَتۡلُواْ عَلَيۡهِمۡ ءَايَٰتِهِۦ وَيُزَكِّيهِمۡ وَيُعَلِّمُهُمُ ٱلۡكِتَٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَإِن كَانُواْ مِن قَبۡلُ لَفِي ضَلَٰلٖ مُّبِينٍ ١٦٤ ﴾ [ ال عمران : ١٦٤ ]
‘‘তাদের নিজেদের (মানুষের) মধ্য থেকেই তাদের নিকট রাসূল প্রেরণ করে আল্লাহ মু’মিনদের প্রতি অবশ্যই অনুগ্রহ করেছেন; সে তাঁর (আল্লাহর) আয়াত তাদের নিকট তেলাওয়াত করে, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে এবং কিতাব ও হিকমাত (যাবতীয় বিষয়বস্তুকে সঠিক জ্ঞান দ্বারা জানাকে হিকমত বলে) শিক্ষা দেয়, যদিও তারা পূর্বে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতেই ছিল’’। (সূরা আল ইমরান: ১৬৪)
(ঘ) এটা নিরাপত্তার নিশ্চিত ব্যবস্থা। অতএব ইসলাম সম্পর্কে যে যত বেশী জ্ঞান অর্জন করবে তত বেশী সে ইসলামী শরীয়তের শ্রেষ্ঠত্বে মহাত্ম্যে মুগ্ধ ও আকৃষ্ট হবে। অতঃপর এ বিধানকে সে নিজে আঁকড়ে ধরে তা প্রচারের চেষ্টা করবে। আর যে সর্বোত্তম নেয়ামতকে (ইসলাম) গ্রহণ ও শক্তভাবে ধারণ করতে পারবে সে ব্যক্তিই মানুষের মাঝে স্থিতাবস্থায় মানসিক শান্তি ও নিরাপত্তা অনুভব করবে। ব্যক্তিগত স্বস্তি ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন:
﴿أَلَا بِذِكۡرِ ٱللَّهِ تَطۡمَئِنُّ ٱلۡقُلُوبُ ﴾ [ الرعد : ٢٨ ]
‘‘আল্লাহর যিকিরে কি তোমাদের চিত্ত প্রশান্ত হয় না’’। (সূরা আর-রা‘দ-২৮)
অনুরূপভাবে সামজিক ও পারিপার্শ্বিক শান্তি-নিরাপত্তার ব্যবস্থা প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন:
﴿ وَلَكُمۡ فِي ٱلۡقِصَاصِ حَيَوٰةٞ يَٰٓأُوْلِي ٱلۡأَلۡبَٰبِ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٧٩ ﴾ [ البقرة : ١٧٩ ]
‘‘হে বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিগণ! কিসাসের মধ্যেই তোমাদের জীবন রয়েছে। আশা করা যায় যে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করবে’’। (সূরা আল-বাকারাহ: ১৭৯)
তদ্রূপ আখেরাতে বা পরকালে জাহান্নামের আগুন থেকে নিরাপদ ও মুক্ত থাকার নিশ্চয়তা প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন:
﴿ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَلَمۡ يَلۡبِسُوٓاْ إِيمَٰنَهُم بِظُلۡمٍ أُوْلَٰٓئِكَ لَهُمُ ٱلۡأَمۡنُ وَهُم مُّهۡتَدُونَ ٨٢ ﴾ [ الانعام : ٨٢ ]
‘‘যারা ঈমান এনেছে অতঃপর তাদের ঈমানকে যুলুম (শির্ক) দ্বারা কুলুষিত করেনি, তাদের জন্যই নিরাপত্তা এবং এরাই হেদায়াতপ্রাপ্ত ও সত্যনিষ্ঠ। (সূরা আল-আন‘আম: ৮২)
(ঙ) এটা দুনিয়া ও আখেরাতে স্থায়ী সুখ-শান্তির ব্যাবস্থা। প্রত্যেকেই সুখ-শান্তি কামনা করে এবং সুখ কোথায় আছে তা খুজে বেড়ায়। আর কেউই সুখ-শান্তির বিপরীত চিন্তা করে না। স্থায়ী সুখ-শান্তি প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেনঃ
﴿ ۞وَأَمَّا ٱلَّذِينَ سُعِدُواْ فَفِي ٱلۡجَنَّةِ خَٰلِدِينَ فِيهَا مَا دَامَتِ ٱلسَّمَٰوَٰتُ وَٱلۡأَرۡضُ ﴾ [ هود : ١٠٨ ]
‘‘আর যারা ভাগ্যবান তাদের স্থান জান্নাতে, সেখানেই তারা স্থায়ী হবে, যতদিন আকাশমণ্ডলী ও যমীন বিলুপ্ত না হয়’’ [নিচে দাগ দেওয়া এ ধরনের বাক্য দ্বারা স্থায়ীভাবে থাকার কথা বুঝানো হয়ে থাকে। অনুবাদক।]। (সূরা হূদ-১০৮)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِن تَتَّقُواْ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّكُمۡ فُرۡقَانٗا وَيُكَفِّرۡ عَنكُمۡ سَئَِّاتِكُمۡ وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡۗ﴾ [ الانفال : ٢٩ ]
‘‘হে ঈমানদারগণ, যদি তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, তাহলে (আল্লাহ) তোমাদেরকে ন্যায়-অন্যায় পার্থক্য করার শক্তি দিবেন এবং তোমাদের পাপ মোচন করে দিবেন’’। (সূরা আল-আনফাল: ২৯)
বুদ্ধিমান লোকের সদা-সর্বদা সুখ-শান্তির অনুসন্ধান করে থাকে। আর এটা নিশ্চিত যে, সর্ব প্রকার সুখ-শান্তি পেতে হলে পবিত্র ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী জীবন-যাপন করতে হবে।
(ক) এটা আল্লাহর নিকট থেকে এসেছে; আল্লাহ বলেন:
﴿ ثُمَّ جَعَلۡنَٰكَ عَلَىٰ شَرِيعَةٖ مِّنَ ٱلۡأَمۡرِ فَٱتَّبِعۡهَا وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَآءَ ٱلَّذِينَ لَا يَعۡلَمُونَ ١٨ ﴾ [ الجاثية : ١٨ ]
‘‘অতঃপর আমরা আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি নির্ধারিত শরীয়তের বিধানের উপর; সুতরাং আপনি এর অনুসরণ করুন, আর তাদের ইচ্ছা ও বাসনার অনুসরণ করবেন না, যাদের ইলম-জ্ঞান নেই’’ [সূরা আল জাসিয়া : ১৮।]।
আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ وَٱللَّهُ بَصِيرُۢ بِٱلۡعِبَادِ ﴾ [ ال عمران : ١٥ ]
‘‘আর আল্লাহ বান্দাদের প্রতি সম্যক দ্রষ্টা’’। (সূরা আলে-ইমরান: ১৫)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ বান্দাদের প্রতি সবিশেষ দৃষ্টি রাখেন এবং তিনি বান্দাদের কল্যাণের ব্যাপারে সর্বাধিক অবহিত।
(খ) এটা একমাত্র পূর্ণাঙ্গ, সর্বাত্মক, সার্বজনীন, শাশ্বত জীবন বিধান; মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ ٱلۡيَوۡمَ أَكۡمَلۡتُ لَكُمۡ دِينَكُمۡ وَأَتۡمَمۡتُ عَلَيۡكُمۡ نِعۡمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ ٱلۡإِسۡلَٰمَ دِينٗاۚ ﴾ [ المائدة : ٣ ]
‘‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে (জীবন বিধান) পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ (নেয়ামত) সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন (জীবন বিধান) নির্ধারণ করলাম’’ [সূরা আল-মায়িদা: ৩।]।
অনুরূপভাবে সূরা মরিয়মের ৬৪ নং আয়াতে আছে:
﴿ ۚ وَمَا كَانَ رَبُّكَ نَسِيّٗا ﴾ [ مريم : ٦٤ ]
‘‘আর আপনার রব কখনই ভুলে যান না’’।
ইসলামী শরীয়ত নামক বিধান আল্লাহর মনোনিত জীবন বিধান। মানুষের যাবতীয় প্রয়োজনের সুষ্ঠু সমাধান, দুনিয়া ও আখেরাতের সুখ-শান্তি নিহিত আছে আল্লাহ প্রদত্ত এ বিধানের মধ্যেই।
(গ) এটি সর্বকালীন এবং সর্বস্থানের উপযোগী একমাত্র আদর্শ বিধান। প্রতিদিন সূর্য উদিত হয় এবং আমরা দেখতে পাই যে, পৃথিবী শরীয়তের আলো হতে যা প্রয়োজন তা গ্রহণ করেছে। সুস্থ বুদ্ধি বিবেক এ সুন্দরতম সুশৃংখল নিয়ম-পদ্ধতি দেখে এ বিধানের প্রতি আগ্রহ উৎসাহ অবশ্যই বৃদ্ধি পাবে এবং সাক্ষ্য দিবে যে, এ বিধানই নির্ভরযোগ্য একমাত্র অনুসরণীয় আদর্শ বিধান। এটা শান্তিময় আলোর পথ এবং ঈমানদারদের জন্য এটা আল্লাহর নেয়ামতসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম নেয়ামত। সুমহান আল্লাহ বলেন:
﴿ لَقَدۡ مَنَّ ٱللَّهُ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِينَ إِذۡ بَعَثَ فِيهِمۡ رَسُولٗا مِّنۡ أَنفُسِهِمۡ يَتۡلُواْ عَلَيۡهِمۡ ءَايَٰتِهِۦ وَيُزَكِّيهِمۡ وَيُعَلِّمُهُمُ ٱلۡكِتَٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَإِن كَانُواْ مِن قَبۡلُ لَفِي ضَلَٰلٖ مُّبِينٍ ١٦٤ ﴾ [ ال عمران : ١٦٤ ]
‘‘তাদের নিজেদের (মানুষের) মধ্য থেকেই তাদের নিকট রাসূল প্রেরণ করে আল্লাহ মু’মিনদের প্রতি অবশ্যই অনুগ্রহ করেছেন; সে তাঁর (আল্লাহর) আয়াত তাদের নিকট তেলাওয়াত করে, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে এবং কিতাব ও হিকমাত (যাবতীয় বিষয়বস্তুকে সঠিক জ্ঞান দ্বারা জানাকে হিকমত বলে) শিক্ষা দেয়, যদিও তারা পূর্বে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতেই ছিল’’। (সূরা আল ইমরান: ১৬৪)
(ঘ) এটা নিরাপত্তার নিশ্চিত ব্যবস্থা। অতএব ইসলাম সম্পর্কে যে যত বেশী জ্ঞান অর্জন করবে তত বেশী সে ইসলামী শরীয়তের শ্রেষ্ঠত্বে মহাত্ম্যে মুগ্ধ ও আকৃষ্ট হবে। অতঃপর এ বিধানকে সে নিজে আঁকড়ে ধরে তা প্রচারের চেষ্টা করবে। আর যে সর্বোত্তম নেয়ামতকে (ইসলাম) গ্রহণ ও শক্তভাবে ধারণ করতে পারবে সে ব্যক্তিই মানুষের মাঝে স্থিতাবস্থায় মানসিক শান্তি ও নিরাপত্তা অনুভব করবে। ব্যক্তিগত স্বস্তি ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন:
﴿أَلَا بِذِكۡرِ ٱللَّهِ تَطۡمَئِنُّ ٱلۡقُلُوبُ ﴾ [ الرعد : ٢٨ ]
‘‘আল্লাহর যিকিরে কি তোমাদের চিত্ত প্রশান্ত হয় না’’। (সূরা আর-রা‘দ-২৮)
অনুরূপভাবে সামজিক ও পারিপার্শ্বিক শান্তি-নিরাপত্তার ব্যবস্থা প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন:
﴿ وَلَكُمۡ فِي ٱلۡقِصَاصِ حَيَوٰةٞ يَٰٓأُوْلِي ٱلۡأَلۡبَٰبِ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٧٩ ﴾ [ البقرة : ١٧٩ ]
‘‘হে বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিগণ! কিসাসের মধ্যেই তোমাদের জীবন রয়েছে। আশা করা যায় যে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করবে’’। (সূরা আল-বাকারাহ: ১৭৯)
তদ্রূপ আখেরাতে বা পরকালে জাহান্নামের আগুন থেকে নিরাপদ ও মুক্ত থাকার নিশ্চয়তা প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন:
﴿ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَلَمۡ يَلۡبِسُوٓاْ إِيمَٰنَهُم بِظُلۡمٍ أُوْلَٰٓئِكَ لَهُمُ ٱلۡأَمۡنُ وَهُم مُّهۡتَدُونَ ٨٢ ﴾ [ الانعام : ٨٢ ]
‘‘যারা ঈমান এনেছে অতঃপর তাদের ঈমানকে যুলুম (শির্ক) দ্বারা কুলুষিত করেনি, তাদের জন্যই নিরাপত্তা এবং এরাই হেদায়াতপ্রাপ্ত ও সত্যনিষ্ঠ। (সূরা আল-আন‘আম: ৮২)
(ঙ) এটা দুনিয়া ও আখেরাতে স্থায়ী সুখ-শান্তির ব্যাবস্থা। প্রত্যেকেই সুখ-শান্তি কামনা করে এবং সুখ কোথায় আছে তা খুজে বেড়ায়। আর কেউই সুখ-শান্তির বিপরীত চিন্তা করে না। স্থায়ী সুখ-শান্তি প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেনঃ
﴿ ۞وَأَمَّا ٱلَّذِينَ سُعِدُواْ فَفِي ٱلۡجَنَّةِ خَٰلِدِينَ فِيهَا مَا دَامَتِ ٱلسَّمَٰوَٰتُ وَٱلۡأَرۡضُ ﴾ [ هود : ١٠٨ ]
‘‘আর যারা ভাগ্যবান তাদের স্থান জান্নাতে, সেখানেই তারা স্থায়ী হবে, যতদিন আকাশমণ্ডলী ও যমীন বিলুপ্ত না হয়’’ [নিচে দাগ দেওয়া এ ধরনের বাক্য দ্বারা স্থায়ীভাবে থাকার কথা বুঝানো হয়ে থাকে। অনুবাদক।]। (সূরা হূদ-১০৮)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِن تَتَّقُواْ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّكُمۡ فُرۡقَانٗا وَيُكَفِّرۡ عَنكُمۡ سَئَِّاتِكُمۡ وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡۗ﴾ [ الانفال : ٢٩ ]
‘‘হে ঈমানদারগণ, যদি তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, তাহলে (আল্লাহ) তোমাদেরকে ন্যায়-অন্যায় পার্থক্য করার শক্তি দিবেন এবং তোমাদের পাপ মোচন করে দিবেন’’। (সূরা আল-আনফাল: ২৯)
বুদ্ধিমান লোকের সদা-সর্বদা সুখ-শান্তির অনুসন্ধান করে থাকে। আর এটা নিশ্চিত যে, সর্ব প্রকার সুখ-শান্তি পেতে হলে পবিত্র ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী জীবন-যাপন করতে হবে।
উত্তর: বিষয় চারটি হলো:
(ক) ইলম বা জ্ঞান অর্জন করা। আর এ ইলমের সাহায্যে দলীল প্রমাণসহ আল্লাহ্, তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং দীন ইসলাম সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞানলাভ করা।
(খ) জেনে-বুঝে নেওয়া জ্ঞান অনুযায়ী আমল বা কাজ করা।
(গ) ইসলামী জীবন বিধানের দিকে অন্যদেরকে আহ্বান করা।
(ঘ) ইসলামী বিধি-বিধান অনুযায়ী জীবন যাপন করার সময়ে এবং এ বিধানের দিকে মানুষকে আহ্বান ও দীনের প্রচার করার সময় সম্ভাব্য বাধা-বিপত্তি, নিপিড়ন-নির্যাতন, কষ্ট এবং বিপদ-বিপর্যয়ে ধৈর্য ধারণ করা। [সালাসাতুল উসূল; শায়খ মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহাব। শায়খ ইবন বাযের ব্যাখ্যাসহ পৃষ্টা: ২১-২২, প্রথম ছাপা- ১৪১৬ হিজরী।]
(ক) ইলম বা জ্ঞান অর্জন করা। আর এ ইলমের সাহায্যে দলীল প্রমাণসহ আল্লাহ্, তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং দীন ইসলাম সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞানলাভ করা।
(খ) জেনে-বুঝে নেওয়া জ্ঞান অনুযায়ী আমল বা কাজ করা।
(গ) ইসলামী জীবন বিধানের দিকে অন্যদেরকে আহ্বান করা।
(ঘ) ইসলামী বিধি-বিধান অনুযায়ী জীবন যাপন করার সময়ে এবং এ বিধানের দিকে মানুষকে আহ্বান ও দীনের প্রচার করার সময় সম্ভাব্য বাধা-বিপত্তি, নিপিড়ন-নির্যাতন, কষ্ট এবং বিপদ-বিপর্যয়ে ধৈর্য ধারণ করা। [সালাসাতুল উসূল; শায়খ মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহাব। শায়খ ইবন বাযের ব্যাখ্যাসহ পৃষ্টা: ২১-২২, প্রথম ছাপা- ১৪১৬ হিজরী।]
উত্তর: সূরা আল-আসর
﴿ وَٱلۡعَصۡرِ ١ إِنَّ ٱلۡإِنسَٰنَ لَفِي خُسۡرٍ ٢ إِلَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ وَتَوَاصَوۡاْ بِٱلۡحَقِّ وَتَوَاصَوۡاْ بِٱلصَّبۡرِ ٣ ﴾ [ العصر : ١، ٣ ]
‘‘(১) আবহমান কালের কসম (২) মানুষ প্রকৃত পক্ষে বড়ই ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত (৩) তবে তারা ব্যতীত; যারা ঈমান এনেছে এবং সৎ কাজ করেছে আর যারা পরস্পরকে নিরন্তর (সর্বদা) হক (সত্যনিষ্ঠ) উপদেশ এবং ধৈর্য ধারণের পরামর্শ দিয়ে থাকে’’। (সূরা আল আসর)
﴿ وَٱلۡعَصۡرِ ١ إِنَّ ٱلۡإِنسَٰنَ لَفِي خُسۡرٍ ٢ إِلَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ وَتَوَاصَوۡاْ بِٱلۡحَقِّ وَتَوَاصَوۡاْ بِٱلصَّبۡرِ ٣ ﴾ [ العصر : ١، ٣ ]
‘‘(১) আবহমান কালের কসম (২) মানুষ প্রকৃত পক্ষে বড়ই ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত (৩) তবে তারা ব্যতীত; যারা ঈমান এনেছে এবং সৎ কাজ করেছে আর যারা পরস্পরকে নিরন্তর (সর্বদা) হক (সত্যনিষ্ঠ) উপদেশ এবং ধৈর্য ধারণের পরামর্শ দিয়ে থাকে’’। (সূরা আল আসর)
উত্তর: কখনই নয়; বরং তিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং প্রয়োজনীয় সব রিযিকের ব্যবস্থাও করেছেন। আর আমাদের জন্য রাসূল পাঠিয়েছেন (জীবন বিধান দিয়ে)। সুতরাং যে তাঁর আনুগত্য অনুসরণ করবে সে জান্নাতে যাবে আর যে রসূলের নাফরমানী করবে সে জাহান্নামে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ إِنَّآ أَرۡسَلۡنَآ إِلَيۡكُمۡ رَسُولٗا شَٰهِدًا عَلَيۡكُمۡ ﴾ [ المزمل : ١٥ ]
‘‘আমি তোমাদের নিকট রাসূল পাঠিয়েছি তোমাদের জন্য সাক্ষীস্বরূপ’’। (সূরা আল-মুয্যাম্মিল: ১৫)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ أَفَحَسِبۡتُمۡ أَنَّمَا خَلَقۡنَٰكُمۡ عَبَثٗا وَأَنَّكُمۡ إِلَيۡنَا لَا تُرۡجَعُونَ ١١٥ ﴾ [ المؤمنون : ١١٥ ]
‘‘তোমরা কি মনে করেছ যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক অযথা সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে না?’’ [সূরা আল মুমিনুন : ১১৫।]।
﴿ إِنَّآ أَرۡسَلۡنَآ إِلَيۡكُمۡ رَسُولٗا شَٰهِدًا عَلَيۡكُمۡ ﴾ [ المزمل : ١٥ ]
‘‘আমি তোমাদের নিকট রাসূল পাঠিয়েছি তোমাদের জন্য সাক্ষীস্বরূপ’’। (সূরা আল-মুয্যাম্মিল: ১৫)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ أَفَحَسِبۡتُمۡ أَنَّمَا خَلَقۡنَٰكُمۡ عَبَثٗا وَأَنَّكُمۡ إِلَيۡنَا لَا تُرۡجَعُونَ ١١٥ ﴾ [ المؤمنون : ١١٥ ]
‘‘তোমরা কি মনে করেছ যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক অযথা সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে না?’’ [সূরা আল মুমিনুন : ১১৫।]।
উত্তর : আল্লাহ কখনো তা পছন্দ করেন না। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿وَلَا يَرۡضَىٰ لِعِبَادِهِ ٱلۡكُفۡرَۖ ﴾ [ الزمر : ٧ ]
‘‘তিনি (আল্লাহ) তাঁর বান্দাদের কুফরী পছন্দ করেন না’’। (সূরা আয-যুমার: ৭)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ وَأَنَّ ٱلۡمَسَٰجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدۡعُواْ مَعَ ٱللَّهِ أَحَدٗا ١٨ ﴾ [ الجن : ١٨ ]
‘‘অবশ্যই মসজিদসমূহ আল্লাহরই জন্য। সুতরাং আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাউকে ডেকো না’’। (সূরা আল-জ্বিন: ১৮)
অতএব আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা প্রমাণ করে যে, তিনি কুফরী পছন্দ করেন না।
﴿وَلَا يَرۡضَىٰ لِعِبَادِهِ ٱلۡكُفۡرَۖ ﴾ [ الزمر : ٧ ]
‘‘তিনি (আল্লাহ) তাঁর বান্দাদের কুফরী পছন্দ করেন না’’। (সূরা আয-যুমার: ৭)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ وَأَنَّ ٱلۡمَسَٰجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدۡعُواْ مَعَ ٱللَّهِ أَحَدٗا ١٨ ﴾ [ الجن : ١٨ ]
‘‘অবশ্যই মসজিদসমূহ আল্লাহরই জন্য। সুতরাং আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাউকে ডেকো না’’। (সূরা আল-জ্বিন: ১৮)
অতএব আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা প্রমাণ করে যে, তিনি কুফরী পছন্দ করেন না।
উত্তর: (এক) তাদেরকে মুসলিমগণ মহান আল্লাহর দিকে দাওয়াত দিবে এবং তাদের হেদায়াত ও কল্যাণ কামনা করবে।
(দুই) আর যদি আল্লাহর দিকে ডাকা বা আহ্বান করা সম্ভব না হয় তবে ঘৃনা-অবজ্ঞা করতে হবে এবং তাদেরকে উৎসাহিত করা যাবে না বা তাদের পূজা-পার্বন, ধর্মীয় উৎসবে অংশ নেওয়া, অভিনন্দন-শুভেচ্ছা জানানো সম্পূর্ণ অবৈধ। বরং স্পষ্টভাবে তাদেরকে বুঝিয়ে দিতে হবে যে তারা সত্য-সঠিক পথে নেই। [তিনটি মূলনীতি: শায়খ মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহাব।]
(তিন) তারা যদি প্রকাশ্যে শত্রুতা-বিরোধিতা করে এবং যুদ্ধে লিপ্ত হয় তাহলে তাদের সাথে জিহাদ করতে হবে আল্লাহর দীন কায়েম না হওয়া পর্যন্ত। সুতরাং যেখানেই মুসলিমরা সজাগ-সতর্ক থাকবে সেখানে ধর্মনিরপেক্ষতার ছদ্মাবরণে ধর্মহীন এবং মূর্তিপূজকদের সরব উপস্থিতি সম্ভব হবে না। [তিনটি মূলনীতি: শায়খ মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহাব।]
(দুই) আর যদি আল্লাহর দিকে ডাকা বা আহ্বান করা সম্ভব না হয় তবে ঘৃনা-অবজ্ঞা করতে হবে এবং তাদেরকে উৎসাহিত করা যাবে না বা তাদের পূজা-পার্বন, ধর্মীয় উৎসবে অংশ নেওয়া, অভিনন্দন-শুভেচ্ছা জানানো সম্পূর্ণ অবৈধ। বরং স্পষ্টভাবে তাদেরকে বুঝিয়ে দিতে হবে যে তারা সত্য-সঠিক পথে নেই। [তিনটি মূলনীতি: শায়খ মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহাব।]
(তিন) তারা যদি প্রকাশ্যে শত্রুতা-বিরোধিতা করে এবং যুদ্ধে লিপ্ত হয় তাহলে তাদের সাথে জিহাদ করতে হবে আল্লাহর দীন কায়েম না হওয়া পর্যন্ত। সুতরাং যেখানেই মুসলিমরা সজাগ-সতর্ক থাকবে সেখানে ধর্মনিরপেক্ষতার ছদ্মাবরণে ধর্মহীন এবং মূর্তিপূজকদের সরব উপস্থিতি সম্ভব হবে না। [তিনটি মূলনীতি: শায়খ মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহাব।]
উত্তর: দুনিয়ায় তাদের সাথে স্বাভাবিক আচরণ করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَإِن جَٰهَدَاكَ عَلَىٰٓ أَن تُشۡرِكَ بِي مَا لَيۡسَ لَكَ بِهِۦ عِلۡمٞ فَلَا تُطِعۡهُمَاۖ وَصَاحِبۡهُمَا فِي ٱلدُّنۡيَا مَعۡرُوفٗاۖ وَٱتَّبِعۡ سَبِيلَ مَنۡ أَنَابَ إِلَيَّۚ ﴾ [ لقمان : ١٥ ]
‘‘তোমার মাতা-পিতা যদি তোমাকে পীড়াপীড়ি করে আমার সাথে শরীক করতে, যে বিষয়ে তোমার কোন ইলম (জ্ঞান) নেই, তখন তুমি তাদের কথা মানবে না। তবে দুনিয়াতে তাদের সাথে বসবাস করবে সৎভাবে। আর যে বিশুদ্ধচিত্তে আমার অভিমূখী হয়েছে তার পথকে অনুসরণ কর’’। (সূরা লুকমান: ১৫)
শুধুমাত্র ঈমান ও ইসলামের পরিপন্থী বিষয়ে তাদেরকে ভালোবাসা যাবে না এবং মান্য করবে না। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন:
﴿ لَّا تَجِدُ قَوۡمٗا يُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِ يُوَآدُّونَ مَنۡ حَآدَّ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَلَوۡ كَانُوٓاْ ءَابَآءَهُمۡ أَوۡ أَبۡنَآءَهُمۡ أَوۡ إِخۡوَٰنَهُمۡ أَوۡ عَشِيرَتَهُمۡۚ ﴾ [ المجادلة : ٢٢ ]
‘‘তুমি পাবে না আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাসী এমন কোনো সম্প্রদায়, যারা ভালবাসে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচারীদেরকে, হোক না এ বিরুদ্ধাচারীরা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা আত্মীয় বা জ্ঞাতি-গোত্র’’। (সূরা আল-মুজাদালাহ: ২২)
অর্থাৎ: শির্ক, কুফরী এবং আল্লাহর নাফরমানীমূলক কাজে মাতা-পিতা বা অন্য কারোই আনুগত্য বা অনুসরন করা যাবে না; কিন্তু তাদের সেবা-যত্ন সাহায্য-সহযোগিতা করতে হবে এবং খোজ-খবর নিতে হবে। হতাশ না হয়ে নিরলসভাবে তাদেরকে ইসলামের পথে ডাকতে হবে এবং কোনো অবস্থাতেই বিরক্ত হওয়া চলবে না।
﴿ وَإِن جَٰهَدَاكَ عَلَىٰٓ أَن تُشۡرِكَ بِي مَا لَيۡسَ لَكَ بِهِۦ عِلۡمٞ فَلَا تُطِعۡهُمَاۖ وَصَاحِبۡهُمَا فِي ٱلدُّنۡيَا مَعۡرُوفٗاۖ وَٱتَّبِعۡ سَبِيلَ مَنۡ أَنَابَ إِلَيَّۚ ﴾ [ لقمان : ١٥ ]
‘‘তোমার মাতা-পিতা যদি তোমাকে পীড়াপীড়ি করে আমার সাথে শরীক করতে, যে বিষয়ে তোমার কোন ইলম (জ্ঞান) নেই, তখন তুমি তাদের কথা মানবে না। তবে দুনিয়াতে তাদের সাথে বসবাস করবে সৎভাবে। আর যে বিশুদ্ধচিত্তে আমার অভিমূখী হয়েছে তার পথকে অনুসরণ কর’’। (সূরা লুকমান: ১৫)
শুধুমাত্র ঈমান ও ইসলামের পরিপন্থী বিষয়ে তাদেরকে ভালোবাসা যাবে না এবং মান্য করবে না। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন:
﴿ لَّا تَجِدُ قَوۡمٗا يُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِ يُوَآدُّونَ مَنۡ حَآدَّ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَلَوۡ كَانُوٓاْ ءَابَآءَهُمۡ أَوۡ أَبۡنَآءَهُمۡ أَوۡ إِخۡوَٰنَهُمۡ أَوۡ عَشِيرَتَهُمۡۚ ﴾ [ المجادلة : ٢٢ ]
‘‘তুমি পাবে না আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাসী এমন কোনো সম্প্রদায়, যারা ভালবাসে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচারীদেরকে, হোক না এ বিরুদ্ধাচারীরা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা আত্মীয় বা জ্ঞাতি-গোত্র’’। (সূরা আল-মুজাদালাহ: ২২)
অর্থাৎ: শির্ক, কুফরী এবং আল্লাহর নাফরমানীমূলক কাজে মাতা-পিতা বা অন্য কারোই আনুগত্য বা অনুসরন করা যাবে না; কিন্তু তাদের সেবা-যত্ন সাহায্য-সহযোগিতা করতে হবে এবং খোজ-খবর নিতে হবে। হতাশ না হয়ে নিরলসভাবে তাদেরকে ইসলামের পথে ডাকতে হবে এবং কোনো অবস্থাতেই বিরক্ত হওয়া চলবে না।
১২
{প্রশ্ন: ১০} মৃত্যু কিংবা পরিবার-পরিজনের ভয়ে অথবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হবার আশংকা হলে বা চাকুরি হারানের ভয়ে দীন ইসলাম গ্রহণ না করা জায়েয হবে কি?উত্তর: কোনো অবস্থাতেই জায়েয হবে না। তবে যদি জীবন বিপন্ন হওয়ার আশংকা হয় তাহলে দীন গ্রহণের খবর প্রকাশ না করে, মুসলিম হবার পরিচয় গোপন রাখার অনুমতি আছে। যেমন: মহান আল্লাহ বলেন:
﴿إِلَّا مَنۡ أُكۡرِهَ وَقَلۡبُهُۥ مُطۡمَئِنُّۢ بِٱلۡإِيمَٰنِ ﴾ [ النحل : ١٠٦ ]
‘‘যার উপর জবরদস্তি করা হয় এবং তার অন্তর বিশ্বাসে অটল থাকে সে ব্যতীত’’। (সূরা আন-নাহল: ১০৬)
﴿إِلَّا مَنۡ أُكۡرِهَ وَقَلۡبُهُۥ مُطۡمَئِنُّۢ بِٱلۡإِيمَٰنِ ﴾ [ النحل : ١٠٦ ]
‘‘যার উপর জবরদস্তি করা হয় এবং তার অন্তর বিশ্বাসে অটল থাকে সে ব্যতীত’’। (সূরা আন-নাহল: ১০৬)
উত্তর: আল্লাহর সবচেয়ে বড় নির্দেশ দিয়েছেন তাওহীদ বা একত্ববাদের আর বড় নিষেধ করেছেন শির্ক তথা ‘আল্লাহর সাথে শরীক করা’ হতে। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ ۞وَٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَلَا تُشۡرِكُواْ بِهِۦ شَيۡٔٗاۖ ﴾ [ النساء : ٣٦ ]
তোমরা আল্লাহর ইবাদাত করবে ও কোনো কিছুকে তাঁর সাথে শরীক করবে না’’। (সূরা আন-নিসা:৩৬)
﴿ ۞وَٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَلَا تُشۡرِكُواْ بِهِۦ شَيۡٔٗاۖ ﴾ [ النساء : ٣٦ ]
তোমরা আল্লাহর ইবাদাত করবে ও কোনো কিছুকে তাঁর সাথে শরীক করবে না’’। (সূরা আন-নিসা:৩৬)
উত্তর: তাওহীদ হলো: আল্লাহকেই এককভাবে ইবাদাত করা।
আর তাওহীদ তিন প্রকার:
(১) প্রতিপালন এবং রক্ষনাবেক্ষন ও কর্তৃত্বে একত্ববাদ। আর তা হলো; ভালভাবে জেনে এবং বুঝে দৃঢ় বিশ্বাস করা যে আল্লাহই একক সৃষ্টিকর্তা, রিযিকদাতা এবং বিশ্বজগতের সার্বভৌম পরিচালক। এ প্রকারের তাওহীদ (সৃষ্টিকর্তা থেকে সৃষ্টির জন্য) তৎকালীন মুশরিকরাও স্বীকার করতো, তাই বলে তারা কিন্তু ইসলামের গণ্ডির মধ্যে প্রবেশ করতে পারে নি বা মুসলিম হতে পারে নি। আল্লাহ বলেন:
﴿ وَلَئِن سَأَلۡتَهُم مَّنۡ خَلَقَهُمۡ لَيَقُولُنَّ ٱللَّهُۖ ﴾ [ الزخرف : ٨٧ ]
‘‘যদি তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর কে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তারা অবশ্যই বলবে ‘‘আল্লাহ’’। (সূরা আয-যুখরুফ: ৮৭)
আল্লাহর তাওহীদ বা একত্ববাদ খণ্ডিতরূপে বিশ্বাস করলে গ্রহণযোগ্য হয় না, কারণ আল্লাহ অবশ্যই স্বয়ংসম্পূর্ণ অতুলনীয় একক সত্তা।
(২) নাম ও গুণের তাওহীদ বা একত্ববাদ হলো; স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত সর্বোচ্চ মহত্ব মর্যাদাসম্পন্ন আল্লাহর যে সব নাম-গুণের উল্লেখ কুরআন ও হাদীসে এসেছে সেগুলোর স্বীকৃতি প্রদান করা। আর তা হতে হবে কুরআন ও সহীহ হাদীসে যেভাবে আছে সেভাবেই। এ প্রকারের তাওহীদ কিছু সংখ্যক মুশরিকরা স্বীকার করে এবং অন্যরা অস্বীকার করে অজ্ঞতাবশত ও স্বেচ্ছাচারী একগুঁয়েমীর কারণে।
(৩) আল্লাহর ইবাদাতে তাওহীদ বা একত্ববাদ; আর তা হলো, একনিষ্ঠভাবে (খালেছভাবে) শুধুমাত্র আল্লাহর ইবাদাত-বন্দেগী করা, তাঁর কোনো শরীক (অংশীদার) নেই। সর্বপ্রকারের ইবাদাত-বন্দেগী একমাত্র আল্লাহরই প্রাপ্য। যেমন: ভালোবাসা, ভয়, ভীতি, আশা-আকাঙ্খা, নির্ভরশীলতা-ভরসা, দো‘আ-প্রার্থনা এবং আরো অন্যান্য ইবাদাত যা মুশরিক সম্প্রদায় কেবল আল্লাহর জন্য করতে অস্বীকার তথা অমান্য করে থাকে। [আল-জামে‘উল ফরিদ পৃষ্ঠা: ১০]
আর তাওহীদ তিন প্রকার:
(১) প্রতিপালন এবং রক্ষনাবেক্ষন ও কর্তৃত্বে একত্ববাদ। আর তা হলো; ভালভাবে জেনে এবং বুঝে দৃঢ় বিশ্বাস করা যে আল্লাহই একক সৃষ্টিকর্তা, রিযিকদাতা এবং বিশ্বজগতের সার্বভৌম পরিচালক। এ প্রকারের তাওহীদ (সৃষ্টিকর্তা থেকে সৃষ্টির জন্য) তৎকালীন মুশরিকরাও স্বীকার করতো, তাই বলে তারা কিন্তু ইসলামের গণ্ডির মধ্যে প্রবেশ করতে পারে নি বা মুসলিম হতে পারে নি। আল্লাহ বলেন:
﴿ وَلَئِن سَأَلۡتَهُم مَّنۡ خَلَقَهُمۡ لَيَقُولُنَّ ٱللَّهُۖ ﴾ [ الزخرف : ٨٧ ]
‘‘যদি তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর কে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তারা অবশ্যই বলবে ‘‘আল্লাহ’’। (সূরা আয-যুখরুফ: ৮৭)
আল্লাহর তাওহীদ বা একত্ববাদ খণ্ডিতরূপে বিশ্বাস করলে গ্রহণযোগ্য হয় না, কারণ আল্লাহ অবশ্যই স্বয়ংসম্পূর্ণ অতুলনীয় একক সত্তা।
(২) নাম ও গুণের তাওহীদ বা একত্ববাদ হলো; স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত সর্বোচ্চ মহত্ব মর্যাদাসম্পন্ন আল্লাহর যে সব নাম-গুণের উল্লেখ কুরআন ও হাদীসে এসেছে সেগুলোর স্বীকৃতি প্রদান করা। আর তা হতে হবে কুরআন ও সহীহ হাদীসে যেভাবে আছে সেভাবেই। এ প্রকারের তাওহীদ কিছু সংখ্যক মুশরিকরা স্বীকার করে এবং অন্যরা অস্বীকার করে অজ্ঞতাবশত ও স্বেচ্ছাচারী একগুঁয়েমীর কারণে।
(৩) আল্লাহর ইবাদাতে তাওহীদ বা একত্ববাদ; আর তা হলো, একনিষ্ঠভাবে (খালেছভাবে) শুধুমাত্র আল্লাহর ইবাদাত-বন্দেগী করা, তাঁর কোনো শরীক (অংশীদার) নেই। সর্বপ্রকারের ইবাদাত-বন্দেগী একমাত্র আল্লাহরই প্রাপ্য। যেমন: ভালোবাসা, ভয়, ভীতি, আশা-আকাঙ্খা, নির্ভরশীলতা-ভরসা, দো‘আ-প্রার্থনা এবং আরো অন্যান্য ইবাদাত যা মুশরিক সম্প্রদায় কেবল আল্লাহর জন্য করতে অস্বীকার তথা অমান্য করে থাকে। [আল-জামে‘উল ফরিদ পৃষ্ঠা: ১০]
উত্তম: রুকন হলো দু’টি; (১) সিদক (বস্তুনিষ্ঠ সত্যবাদিতা) (২) ইখলাস (বিশুদ্ধচিত্ত হওয়া)।
তন্মধ্যে বস্তুনিষ্ঠ সত্যবাদিতা হলো: অন্তর, জিহবা ও কাজের সমন্বয়ে দৃঢ় বিশ্বাসকে সত্যে পরিণত করা।
আর ইখলাস হলো: যাবতীয় কাজ-কর্মসমূহ নির্মল বিশুদ্ধ নিয়তের সাথে কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যেই একনিষ্ঠভাবে সম্পন্ন করা; যাঁর কোনো শরীক নেই। [আল জামে‘উল-ফরিদ; পৃষ্ঠা:১০]
তন্মধ্যে বস্তুনিষ্ঠ সত্যবাদিতা হলো: অন্তর, জিহবা ও কাজের সমন্বয়ে দৃঢ় বিশ্বাসকে সত্যে পরিণত করা।
আর ইখলাস হলো: যাবতীয় কাজ-কর্মসমূহ নির্মল বিশুদ্ধ নিয়তের সাথে কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যেই একনিষ্ঠভাবে সম্পন্ন করা; যাঁর কোনো শরীক নেই। [আল জামে‘উল-ফরিদ; পৃষ্ঠা:১০]
উত্তর: আমার প্রতিপালক আল্লাহ; যিনি আমাকে ও সমস্ত পৃথিবীকে তাঁর বিশেষ নিয়ামতসমূহ দ্বারা লালন-পালন করেন। তিনিই আমার মা‘বুদ (উপাস্য) তিনি ব্যতীত আমার আর কোন মা‘বুদ নেই। এর সমর্থনে আল্লাহর বাণী হলো:
﴿ ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٢ ﴾ [ الفاتحة : ٢ ]
‘‘সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহরই জন্য যিনি সমগ্র বিশ্বের প্রতিপালক’’। (সূরা আল-ফাতিহা: ১)
অতএব আল্লাহ ছাড়া সব কিছুই সৃষ্টজগত এবং আমিও সেই সৃষ্টজগতের একটি অংশ মাত্র।
﴿ ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٢ ﴾ [ الفاتحة : ٢ ]
‘‘সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহরই জন্য যিনি সমগ্র বিশ্বের প্রতিপালক’’। (সূরা আল-ফাতিহা: ১)
অতএব আল্লাহ ছাড়া সব কিছুই সৃষ্টজগত এবং আমিও সেই সৃষ্টজগতের একটি অংশ মাত্র।
উত্তর: (১) আল্লাহর সৃষ্টিসমূহকে পর্যবেক্ষণ-পর্যালোচনা করলেই আল্লাহকে চেনা ও জানা সহজ হবে। সৃষ্টজগতে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব, আধিপত্য, সৃষ্টিতত্ত্ব (কৌশল) নিদর্শন এবং অনুগ্রহসমূহ দেখে চিন্তা ভাবনা করলেই আল্লাহ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যাবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা বলেন:
﴿ أَوَلَمۡ يَنظُرُواْ فِي مَلَكُوتِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا خَلَقَ ٱللَّهُ مِن شَيۡءٖ ﴾ [ الاعراف : ١٨٥ ]
‘‘তারা কি লক্ষ্য করে না, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌম কর্তৃত্ব সম্পর্কে এবং আল্লাহ যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তা সম্পর্কে’’। (সূরা আল-আ‘রাফ: ১৮৫)
অনুরূপভাবে মহান আল্লাহ সূরা আলে ইমরানের ১৯০ নং আয়াতে বলেন:
﴿ إِنَّ فِي خَلۡقِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَٱخۡتِلَٰفِ ٱلَّيۡلِ وَٱلنَّهَارِ لَأٓيَٰتٖ لِّأُوْلِي ٱلۡأَلۡبَٰبِ ١٩٠ ﴾ [ ال عمران : ١٩٠ ]
‘‘আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী ও দিবা-রাত্রির পরিবর্তনের মধ্যে অবশ্যই অনেক নিদর্শন বিদ্যমান আছে বোধশক্তিসম্পন্ন লোকদের জন্য’’।
(২) আল্লাহর অহী বা শরীয়তী বিধি ও বিধান সম্পর্কিত আয়াতসমূহ অনুধাবন করার মাধ্যমে আল্লাহকে চেনা যাবে। যেমন; মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ ٱلۡقُرۡءَانَۚ وَلَوۡ كَانَ مِنۡ عِندِ غَيۡرِ ٱللَّهِ لَوَجَدُواْ فِيهِ ٱخۡتِلَٰفٗا كَثِيرٗا ٨٢ ﴾ [ النساء : ٨٢ ]
‘‘তবে কি তারা কুরআন নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করে না? যদি তা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নিকট থেকে আসত তবে তারা এতে অনেক অসঙ্গতি পেত’’ (সূরা আন-নিসা: ৮২)
(৩) মুমিন ব্যক্তি জেনে ও বুঝে অন্তর দিয়ে আল্লাহকে গ্রহণ ও স্মরণ করবে অতঃপর এমনভাবে আমল ও ইবাদাত করবে যেন সে আল্লাহকে দেখছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহসান সম্পর্কে বলেন:
«أن تعبد الله كأنك تراه، فإن لم تكن تراه فإنه يراك» .
‘‘তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত ইবাদাত করবে যেন তুমি আল্লাহকে দেখছো, আর যদি মনে কর তুমি আল্লাহকে দেখছ না, কিন্তু আল্লাহ অবশ্যই তোমাকে দেখছেন’’। [মুখতাছার আল বুখারী লিয-যাবীদি, পৃষ্ঠা: ২১, নং ৪৭]
﴿ أَوَلَمۡ يَنظُرُواْ فِي مَلَكُوتِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا خَلَقَ ٱللَّهُ مِن شَيۡءٖ ﴾ [ الاعراف : ١٨٥ ]
‘‘তারা কি লক্ষ্য করে না, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌম কর্তৃত্ব সম্পর্কে এবং আল্লাহ যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তা সম্পর্কে’’। (সূরা আল-আ‘রাফ: ১৮৫)
অনুরূপভাবে মহান আল্লাহ সূরা আলে ইমরানের ১৯০ নং আয়াতে বলেন:
﴿ إِنَّ فِي خَلۡقِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَٱخۡتِلَٰفِ ٱلَّيۡلِ وَٱلنَّهَارِ لَأٓيَٰتٖ لِّأُوْلِي ٱلۡأَلۡبَٰبِ ١٩٠ ﴾ [ ال عمران : ١٩٠ ]
‘‘আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী ও দিবা-রাত্রির পরিবর্তনের মধ্যে অবশ্যই অনেক নিদর্শন বিদ্যমান আছে বোধশক্তিসম্পন্ন লোকদের জন্য’’।
(২) আল্লাহর অহী বা শরীয়তী বিধি ও বিধান সম্পর্কিত আয়াতসমূহ অনুধাবন করার মাধ্যমে আল্লাহকে চেনা যাবে। যেমন; মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ ٱلۡقُرۡءَانَۚ وَلَوۡ كَانَ مِنۡ عِندِ غَيۡرِ ٱللَّهِ لَوَجَدُواْ فِيهِ ٱخۡتِلَٰفٗا كَثِيرٗا ٨٢ ﴾ [ النساء : ٨٢ ]
‘‘তবে কি তারা কুরআন নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করে না? যদি তা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নিকট থেকে আসত তবে তারা এতে অনেক অসঙ্গতি পেত’’ (সূরা আন-নিসা: ৮২)
(৩) মুমিন ব্যক্তি জেনে ও বুঝে অন্তর দিয়ে আল্লাহকে গ্রহণ ও স্মরণ করবে অতঃপর এমনভাবে আমল ও ইবাদাত করবে যেন সে আল্লাহকে দেখছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহসান সম্পর্কে বলেন:
«أن تعبد الله كأنك تراه، فإن لم تكن تراه فإنه يراك» .
‘‘তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত ইবাদাত করবে যেন তুমি আল্লাহকে দেখছো, আর যদি মনে কর তুমি আল্লাহকে দেখছ না, কিন্তু আল্লাহ অবশ্যই তোমাকে দেখছেন’’। [মুখতাছার আল বুখারী লিয-যাবীদি, পৃষ্ঠা: ২১, নং ৪৭]
উত্তর: ইসলামের রুকন পাঁচটি;
(ক) ঘোষণা দেওয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো সত্য ইলাহ (মা‘বুদ) নেই; আর এ ঘোষণা দেওয়া যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দাহ ও রাসূল।
(খ) সালাত (নামায) কায়েম করা
(গ) যাকাত আদায় করা
(ঘ) রমযান মাসে সওম (রোযা) পালন করা
(ঙ) আল্লাহর ঘরে গিয়ে হজ্জ আদায় করা।
(ক) ঘোষণা দেওয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো সত্য ইলাহ (মা‘বুদ) নেই; আর এ ঘোষণা দেওয়া যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দাহ ও রাসূল।
(খ) সালাত (নামায) কায়েম করা
(গ) যাকাত আদায় করা
(ঘ) রমযান মাসে সওম (রোযা) পালন করা
(ঙ) আল্লাহর ঘরে গিয়ে হজ্জ আদায় করা।
উত্তর: ঈমানের আভিধানিক অর্থ হলো: স্বীকার করা। আর পারিভাষিক অর্থ হলো: মুখের স্বীকৃতি (ঘোষণা), অন্তরের বিশ্বাস এবং অংগ-প্রত্যংগ দিয়ে বাস্তবে কাজ করা। সৎ কাজের মাধ্যমে ঈমান বৃদ্ধি পায়, আর পাপ কাজ করলে ঈমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঈমানের শাখা-প্রশাখা সত্তরটিরও অধিক: এর সর্বোচ্চ শাখা হলো: ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা। আর সর্ব নিকটস্থ শাখা হলো, পথ থেকে কষ্টদায়ক বস্তু দূরে সরিয়ে দেওয়া। আর লজ্জা হলো ঈমানের শাখাসমূহের একটি [হাশিয়াতু ইবনে কাসেম, পৃষ্ঠা: ৬৫। বুখারীর হাদীস থেকে।]।
ঈমানের রুকন ছয়টি: পূর্ণ ঈমান আনয়ন করা (১) আল্লাহ (২) আল্লাহর ফেরেশতাগণ (৩) আল্লাহর কিতাবসমূহ (৪) তাঁর রাসূলগণ (৫) আখেরাত (পরকাল) দিবস এবং (৬) তাকদীরের ও মন্দের প্রতি। এর সমর্থনে দলীল হলো, আল্লাহর বাণী:
﴿ ۞لَّيۡسَ ٱلۡبِرَّ أَن تُوَلُّواْ وُجُوهَكُمۡ قِبَلَ ٱلۡمَشۡرِقِ وَٱلۡمَغۡرِبِ وَلَٰكِنَّ ٱلۡبِرَّ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِ وَٱلۡمَلَٰٓئِكَةِ وَٱلۡكِتَٰبِ وَٱلنَّبِيِّۧنَ ﴾ [ البقرة : ١٧٧ ]
‘‘সৎ কর্ম শুধু এ নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিম দিকে মুখ করবে, বরং সৎ কাজ হলো এ যে ঈমান আনবে আল্লাহর উপর, আখেরাত দিবসের উপর, ফিরিশতাদের উপর, আসমানী কিতাবের উপর এবং নবী-রাসুলগণের উপর’’। (সূরা আল-বাকারা: ১৭৭)
আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ إِنَّا كُلَّ شَيۡءٍ خَلَقۡنَٰهُ بِقَدَرٖ ٤٩ ﴾ [ القمر : ٤٩ ]
‘‘আমরা প্রত্যেক বস্তুকে নির্ধারণ অনুসারে সৃষ্টি করেছি’’। (সূরা আল ক্বামার: ৪৯)
ঈমানের শাখা-প্রশাখা সত্তরটিরও অধিক: এর সর্বোচ্চ শাখা হলো: ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা। আর সর্ব নিকটস্থ শাখা হলো, পথ থেকে কষ্টদায়ক বস্তু দূরে সরিয়ে দেওয়া। আর লজ্জা হলো ঈমানের শাখাসমূহের একটি [হাশিয়াতু ইবনে কাসেম, পৃষ্ঠা: ৬৫। বুখারীর হাদীস থেকে।]।
ঈমানের রুকন ছয়টি: পূর্ণ ঈমান আনয়ন করা (১) আল্লাহ (২) আল্লাহর ফেরেশতাগণ (৩) আল্লাহর কিতাবসমূহ (৪) তাঁর রাসূলগণ (৫) আখেরাত (পরকাল) দিবস এবং (৬) তাকদীরের ও মন্দের প্রতি। এর সমর্থনে দলীল হলো, আল্লাহর বাণী:
﴿ ۞لَّيۡسَ ٱلۡبِرَّ أَن تُوَلُّواْ وُجُوهَكُمۡ قِبَلَ ٱلۡمَشۡرِقِ وَٱلۡمَغۡرِبِ وَلَٰكِنَّ ٱلۡبِرَّ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِ وَٱلۡمَلَٰٓئِكَةِ وَٱلۡكِتَٰبِ وَٱلنَّبِيِّۧنَ ﴾ [ البقرة : ١٧٧ ]
‘‘সৎ কর্ম শুধু এ নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিম দিকে মুখ করবে, বরং সৎ কাজ হলো এ যে ঈমান আনবে আল্লাহর উপর, আখেরাত দিবসের উপর, ফিরিশতাদের উপর, আসমানী কিতাবের উপর এবং নবী-রাসুলগণের উপর’’। (সূরা আল-বাকারা: ১৭৭)
আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ إِنَّا كُلَّ شَيۡءٍ خَلَقۡنَٰهُ بِقَدَرٖ ٤٩ ﴾ [ القمر : ٤٩ ]
‘‘আমরা প্রত্যেক বস্তুকে নির্ধারণ অনুসারে সৃষ্টি করেছি’’। (সূরা আল ক্বামার: ৪৯)
উত্তর: ইহসান হলো: ‘‘আল্লাহর ইবাদাত করার সময় মনে করতে হবে যে, তুমি আল্লাহকে দেখছো, আর যদি তুমি দেখতে না পাও তবে নিশ্চয়ই তিনি তোমাকে দেখছেন’’। (সহীহ আল-বুখারী)
মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ إِنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلَّذِينَ ٱتَّقَواْ وَّٱلَّذِينَ هُم مُّحۡسِنُونَ ١٢٨ ﴾ [ النحل : ١٢٨ ]
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের সাথে আছেন [অর্থাৎ তিনি তোমাদের সাথে আছেন তার জ্ঞান, ক্ষমতা ও ক্ষেত্র বিশেষে সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে। [সম্পাদক]], যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং যারা মুহসিন (সর্বোত্তমভাবে তাদের কর্ম করে)’’। (সূরা আন-নাহল: ১২৮)
মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ إِنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلَّذِينَ ٱتَّقَواْ وَّٱلَّذِينَ هُم مُّحۡسِنُونَ ١٢٨ ﴾ [ النحل : ١٢٨ ]
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের সাথে আছেন [অর্থাৎ তিনি তোমাদের সাথে আছেন তার জ্ঞান, ক্ষমতা ও ক্ষেত্র বিশেষে সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে। [সম্পাদক]], যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং যারা মুহসিন (সর্বোত্তমভাবে তাদের কর্ম করে)’’। (সূরা আন-নাহল: ১২৮)
উত্তর: তিনি হলেন, মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল্লাহ ইবন আব্দুল-মুত্তালিব, ইবন হাশিম আল-কুরাশি আল-আরাবী ইসমাঈল ইবন ইবরাহীম আল- খলীলের বংশধর। আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরুদ ও সালাম বর্ষিত হউক।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়ত পেয়েছেন ৪০ বৎসর বয়সে, আর নবুওয়তের পর ২৩ বছর জীবিত ছিলেন। অর্থাৎ ৬৩ বৎসর বয়সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মারা যান। এ ২৩ বৎসর কেটেছে নবী ও রাসূল হিসেবে। নবুওয়তের সূচনা হয়:
﴿ ٱقۡرَأۡ بِٱسۡمِ رَبِّكَ ٱلَّذِي خَلَقَ ١ ﴾ [ العلق : ١ ]
‘‘পড় তোমার সৃষ্টিকর্তা রবের নামে’’ (সূরা আল-আলাক্ব:১) এর মাধ্যমে।
আর রেসালতের (আল্লাহর পথে কাফেরদেরকে আহ্বানের) দায়িত্ব পালনের আদেশ পান সূরা আল-মুদ্দাস্সিরের প্রথম ৬ আয়াতের মাধ্যমে। সেখানে আল্লাহ তাঁকে শির্কের ব্যাপারে সতর্ককারী এবং তাওহীদী (একত্ববাদ) দাওয়াতের পরিচালক বানিয়ে দেন। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلۡمُدَّثِّرُ ١ قُمۡ فَأَنذِرۡ ٢ وَرَبَّكَ فَكَبِّرۡ ٣ وَثِيَابَكَ فَطَهِّرۡ ٤ وَٱلرُّجۡزَ فَٱهۡجُرۡ ٥ وَلَا تَمۡنُن تَسۡتَكۡثِرُ ٦ ﴾ [ المدثر : ١، ٦ ]
(১) হে বস্ত্রাবৃত (২) উঠুন, সতর্ক করুন (৩) এবং আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন (৪) আপনার পোষাক-পরিচ্ছেদ পবিত্র করুন (৫) অপবিত্রতাকে বর্জন করুন (৬) আর দয়া প্রদর্শন না করে আরও বেশি করে কাজ করুন। (সূরা আল-মুদ্দাসসির: ১-৬)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ إِنَّآ أَرۡسَلۡنَٰكَ شَٰهِدٗا وَمُبَشِّرٗا وَنَذِيرٗا ٤٥ وَدَاعِيًا إِلَى ٱللَّهِ بِإِذۡنِهِۦ وَسِرَاجٗا مُّنِيرٗا ٤٦ ﴾ [ الاحزاب : ٤٥، ٤٦ ]
‘‘হে নবী! আমরা আপনাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষীপ্রদানকারী, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে এবং আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহ্বানকারী, এক উজ্জ্বল প্রদীপরূপে’’। (সূরা আল-আহযাব: ৪৫-৪৬)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়ত পেয়েছেন ৪০ বৎসর বয়সে, আর নবুওয়তের পর ২৩ বছর জীবিত ছিলেন। অর্থাৎ ৬৩ বৎসর বয়সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মারা যান। এ ২৩ বৎসর কেটেছে নবী ও রাসূল হিসেবে। নবুওয়তের সূচনা হয়:
﴿ ٱقۡرَأۡ بِٱسۡمِ رَبِّكَ ٱلَّذِي خَلَقَ ١ ﴾ [ العلق : ١ ]
‘‘পড় তোমার সৃষ্টিকর্তা রবের নামে’’ (সূরা আল-আলাক্ব:১) এর মাধ্যমে।
আর রেসালতের (আল্লাহর পথে কাফেরদেরকে আহ্বানের) দায়িত্ব পালনের আদেশ পান সূরা আল-মুদ্দাস্সিরের প্রথম ৬ আয়াতের মাধ্যমে। সেখানে আল্লাহ তাঁকে শির্কের ব্যাপারে সতর্ককারী এবং তাওহীদী (একত্ববাদ) দাওয়াতের পরিচালক বানিয়ে দেন। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلۡمُدَّثِّرُ ١ قُمۡ فَأَنذِرۡ ٢ وَرَبَّكَ فَكَبِّرۡ ٣ وَثِيَابَكَ فَطَهِّرۡ ٤ وَٱلرُّجۡزَ فَٱهۡجُرۡ ٥ وَلَا تَمۡنُن تَسۡتَكۡثِرُ ٦ ﴾ [ المدثر : ١، ٦ ]
(১) হে বস্ত্রাবৃত (২) উঠুন, সতর্ক করুন (৩) এবং আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন (৪) আপনার পোষাক-পরিচ্ছেদ পবিত্র করুন (৫) অপবিত্রতাকে বর্জন করুন (৬) আর দয়া প্রদর্শন না করে আরও বেশি করে কাজ করুন। (সূরা আল-মুদ্দাসসির: ১-৬)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ إِنَّآ أَرۡسَلۡنَٰكَ شَٰهِدٗا وَمُبَشِّرٗا وَنَذِيرٗا ٤٥ وَدَاعِيًا إِلَى ٱللَّهِ بِإِذۡنِهِۦ وَسِرَاجٗا مُّنِيرٗا ٤٦ ﴾ [ الاحزاب : ٤٥، ٤٦ ]
‘‘হে নবী! আমরা আপনাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষীপ্রদানকারী, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে এবং আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহ্বানকারী, এক উজ্জ্বল প্রদীপরূপে’’। (সূরা আল-আহযাব: ৪৫-৪৬)
উত্তর: কতিপয় বিদ্বান ব্যক্তি বলেন যে, তিনি নবুওয়ত প্রাপ্তির দশ বৎসর পরে উর্ধ্বাকাশে মিরাজে গমন করেন। বস্তুত মি‘রাজের সঠিক সময়কাল নিয়ে বিভিন্নজন যে মতামত ব্যক্ত করেছেন তা দশের অধিক। তবে কেউই জোর দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের কথা বলতে পারেন নি সুষ্পষ্ট দলিল প্রমাণের অভাবে।
আর যেভাবে গমন করেন তা হলো নিম্নরূপ:
তিনি বুরাকে আরোহণ করে জিবরিল আলাইহিস সাল্লামের সাথে মক্কা হতে বায়তুল মুকাদ্দাস গিয়ে অন্যান্য নবীদের সাথে সালাত আদায়ের পর আকাশ পথে বেশ কিছু সংখ্যক নবীদের সাক্ষাৎ করেন। অতঃপর তিনি সিদরাতুল মুনতাহায় পৌছে শোভা-সৌন্দর্যে মুগ্ধ-অভিভূত হয়ে এর নিকটবর্তী হন। এ পর্যায়ে আল্লাহ সালাত ফরয করে দেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাত অবলোকন করেন। অতঃপর মক্কায় ফিরে এসে ফযরের সালাত আদায় করেন। [হাশিয়াতু ইবনে কাসেম পৃষ্ঠা : ৮২।]
আর যেভাবে গমন করেন তা হলো নিম্নরূপ:
তিনি বুরাকে আরোহণ করে জিবরিল আলাইহিস সাল্লামের সাথে মক্কা হতে বায়তুল মুকাদ্দাস গিয়ে অন্যান্য নবীদের সাথে সালাত আদায়ের পর আকাশ পথে বেশ কিছু সংখ্যক নবীদের সাক্ষাৎ করেন। অতঃপর তিনি সিদরাতুল মুনতাহায় পৌছে শোভা-সৌন্দর্যে মুগ্ধ-অভিভূত হয়ে এর নিকটবর্তী হন। এ পর্যায়ে আল্লাহ সালাত ফরয করে দেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাত অবলোকন করেন। অতঃপর মক্কায় ফিরে এসে ফযরের সালাত আদায় করেন। [হাশিয়াতু ইবনে কাসেম পৃষ্ঠা : ৮২।]
২৭
{প্রশ্ন: ২৫} নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন পর্যায়ে ও কখন হিজরতের আদেশ পান এবং হিজরত অর্থ কি?উত্তর: মুশরিকদের মাত্রাতিরিক্ত নিষ্ঠুরতা ও চাপের মুখে হিজরতের অনুমতি আসে নবুওয়ত প্রাপ্তির ত্রয়োদশ বর্ষের রবিউল আউয়াল মাসে।
হিজরতের আভিধানিক অর্থ হলো: পরিত্যাগ বা প্রস্থান করা।
পারিভাষিক অর্থ হলো: শির্ক প্রাধান্য দেশ বা জনপদ ত্যাগ করে ইসলামী দেশ বা জনপদে প্রস্থান করা।
শির্ক প্রধান দেশে বা জনপদে কুফরী বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠিত থাকে; ইসলামী বিধি-বিধান প্রচলন ও প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয় না। যেমন; আযান, সালাত, জুমা, শরীয়তসম্মত ঈদ-উৎসব ইত্যাদি। [.হাশিয়াতু ইবনে কাসেম পৃষ্ঠা : ৮৩।]
হিজরতের আভিধানিক অর্থ হলো: পরিত্যাগ বা প্রস্থান করা।
পারিভাষিক অর্থ হলো: শির্ক প্রাধান্য দেশ বা জনপদ ত্যাগ করে ইসলামী দেশ বা জনপদে প্রস্থান করা।
শির্ক প্রধান দেশে বা জনপদে কুফরী বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠিত থাকে; ইসলামী বিধি-বিধান প্রচলন ও প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয় না। যেমন; আযান, সালাত, জুমা, শরীয়তসম্মত ঈদ-উৎসব ইত্যাদি। [.হাশিয়াতু ইবনে কাসেম পৃষ্ঠা : ৮৩।]
২৮
{প্রশ্ন: ২৬} ইসলামী জিন্দেগীর অন্যান্য বিধি-বিধান যেমন: যাকাত, হজ্জ, জিহাদ, আযান এবং সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ ইত্যাদি বিষয়ে কখন নির্দেশ জারী করা হয়?উত্তর: এসব নির্দেশ জারী করা হয় মাদানী যুগে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় দশ বছর সময়কালে তাওহীদ বা একত্ববাদের দিকে দাওয়াতী অভিযান পরিচালনা করেন। আর মক্কী যুগের দশ বছর পরে (শেষদিকে) পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয করা হয়। [.হাশিয়াতু ইবনে কাসেম পৃষ্ঠা: ৮৩।]
উত্তর: তাঁর মৃত্যুতে দীনে ইসলামের উপর কোনো প্রভাব পড়ে নি। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে গেছেন কিন্তু দীন ইসলাম পূর্ণাঙ্গরূপে দুনিয়াবাসীর জন্যে রেখে গেছেন। তিনি উম্মতকে যাবতীয় কল্যাণের পথ দেখিয়ে গেছেন এবং সকল অকল্যাণের ব্যাপারে সতর্ক করে গেছেন।
৩০
{প্রশ্ন: ২৮} নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে যে কল্যাণের পথ দেখিয়ে গেছেন এবং যে অকল্যাণ বা ক্ষতির ব্যাপারে সাবধান করেছেন তা কী?উত্তর: কল্যাণের পথ হলো: তাওহীদ বা একত্ববাদ ও আল্লাহ যা কিছু সন্তুষ্টির সাথে পছন্দ করেন এবং ভালবাসেন।
আর ক্ষতিকর বিষয় হলো: শির্ক ও যা কিছু অপছন্দনীয় এবং প্রত্যাখ্যাত। যাবতীয় কল্যাণের কথা ও কাজের শ্রেষ্ঠতম বিষয় হলো তাওহীদ বা একত্ববাদ। তা সবই উপস্থাপিত এবং প্রমাণিত। ক্ষতিকর বিষয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপদজনক হলো শির্ক, সে সম্পর্কেও যথাযথ সাবধান করা হয়েছে।
আর ক্ষতিকর বিষয় হলো: শির্ক ও যা কিছু অপছন্দনীয় এবং প্রত্যাখ্যাত। যাবতীয় কল্যাণের কথা ও কাজের শ্রেষ্ঠতম বিষয় হলো তাওহীদ বা একত্ববাদ। তা সবই উপস্থাপিত এবং প্রমাণিত। ক্ষতিকর বিষয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপদজনক হলো শির্ক, সে সম্পর্কেও যথাযথ সাবধান করা হয়েছে।
উত্তর: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমগ্র মানুষ ও জ্বিন জাতির জন্যে প্রেরিত হয়েছেন। আল্লাহ উভয় জাতিকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য করাকে ফরয করে দিয়েছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা বলেন:
﴿ قُلۡ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنِّي رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيۡكُمۡ جَمِيعًا﴾ [ الاعراف : ١٥٨ ]
‘‘বলুন: হে মানবসকল, নিশ্চয় আমি তোমাদের সকলের জন্যেই রাসূল’’। (সূরা আল-আ‘রাফ: ১৫৮)
মহান আল্লাহ রাববুল ‘আলামীন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দ্বারা দীনকে পূর্ণাঙ্গরূপে পেশ করেছেন।
﴿ قُلۡ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنِّي رَسُولُ ٱللَّهِ إِلَيۡكُمۡ جَمِيعًا﴾ [ الاعراف : ١٥٨ ]
‘‘বলুন: হে মানবসকল, নিশ্চয় আমি তোমাদের সকলের জন্যেই রাসূল’’। (সূরা আল-আ‘রাফ: ১৫৮)
মহান আল্লাহ রাববুল ‘আলামীন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দ্বারা দীনকে পূর্ণাঙ্গরূপে পেশ করেছেন।
উত্তর: আল্লাহ দুনিয়াবাসীদের কাছে রাসূলগণকে সুসংবাদ প্রদান ও সতর্ক করার জন্যে প্রেরণ করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ رُّسُلٗا مُّبَشِّرِينَ وَمُنذِرِينَ لِئَلَّا يَكُونَ لِلنَّاسِ عَلَى ٱللَّهِ حُجَّةُۢ بَعۡدَ ٱلرُّسُلِۚ ﴾ [ النساء : ١٦٥ ]
‘‘প্রেরিত রসূলগণ সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী। রাসূল প্রেরণের পর যেন মানুষ আল্লাহর প্রতি কোনো অভিযোগ আরোপ করার অবকাশ না পায়’’। (সূরা আন-নিসা: ১৬৫)
আর প্রথম রাসূল নূহ আলাইহিস সালাম এবং শেষ রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। মহামহিয়ান আল্লাহ বলেন:
﴿ ۞إِنَّآ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ كَمَآ أَوۡحَيۡنَآ إِلَىٰ نُوحٖ وَٱلنَّبِيِّۧنَ مِنۢ بَعۡدِهِۦۚ ﴾ [ النساء : ١٦٣ ]
“নিশ্চয় আমরা আপনার প্রতি অহী প্রেরণ করেছি যেমন করে নূহ ও তার পরবর্তী নবীগণের নিকট অহী প্রেরণ করেছিলাম’’। (আন-নিসা: ১৬৩)
অনুরূপভাবে শাফা‘আত সংক্রান্ত সহীহ হাদীসে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«فَيَأْتُونَ نُوحًا، فَيَقُولُونَ : يَا نُوحُ، أَنْتَ أَوَّلُ الرُّسُلِ إِلَى أَهْلِ الأَرْض»
‘‘কেয়ামত দিবসে মানবমণ্ডলী নূহ আলাইহিস সালাম এর নিকট এসে তাকে বলবে আপনি প্রথম রাসূল যাকে পৃথিবীবাসীদের কাছে পাঠানো হয়েছিল’’। (বুখারী, হাদীস নং ৩৩৪০, মুসলিম হাদীস নং ১৯৪)
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা বলেন:
﴿ مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَآ أَحَدٖ مِّن رِّجَالِكُمۡ وَلَٰكِن رَّسُولَ ٱللَّهِ وَخَاتَمَ ٱلنَّبِيِّۧنَۗ وَكَانَ ٱللَّهُ بِكُلِّ شَيۡءٍ عَلِيمٗا ٤٠ ﴾ [ الاحزاب : ٤٠ ]
‘‘মুহাম্মাদ তোমাদের কোনো পুরুষের পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং তিনি শেষ নবী। আর আল্লাহ সব বিষয়ে সর্বজ্ঞ’’। (সূরা আল-আহযাব: ৪০)
﴿ رُّسُلٗا مُّبَشِّرِينَ وَمُنذِرِينَ لِئَلَّا يَكُونَ لِلنَّاسِ عَلَى ٱللَّهِ حُجَّةُۢ بَعۡدَ ٱلرُّسُلِۚ ﴾ [ النساء : ١٦٥ ]
‘‘প্রেরিত রসূলগণ সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী। রাসূল প্রেরণের পর যেন মানুষ আল্লাহর প্রতি কোনো অভিযোগ আরোপ করার অবকাশ না পায়’’। (সূরা আন-নিসা: ১৬৫)
আর প্রথম রাসূল নূহ আলাইহিস সালাম এবং শেষ রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। মহামহিয়ান আল্লাহ বলেন:
﴿ ۞إِنَّآ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ كَمَآ أَوۡحَيۡنَآ إِلَىٰ نُوحٖ وَٱلنَّبِيِّۧنَ مِنۢ بَعۡدِهِۦۚ ﴾ [ النساء : ١٦٣ ]
“নিশ্চয় আমরা আপনার প্রতি অহী প্রেরণ করেছি যেমন করে নূহ ও তার পরবর্তী নবীগণের নিকট অহী প্রেরণ করেছিলাম’’। (আন-নিসা: ১৬৩)
অনুরূপভাবে শাফা‘আত সংক্রান্ত সহীহ হাদীসে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«فَيَأْتُونَ نُوحًا، فَيَقُولُونَ : يَا نُوحُ، أَنْتَ أَوَّلُ الرُّسُلِ إِلَى أَهْلِ الأَرْض»
‘‘কেয়ামত দিবসে মানবমণ্ডলী নূহ আলাইহিস সালাম এর নিকট এসে তাকে বলবে আপনি প্রথম রাসূল যাকে পৃথিবীবাসীদের কাছে পাঠানো হয়েছিল’’। (বুখারী, হাদীস নং ৩৩৪০, মুসলিম হাদীস নং ১৯৪)
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা বলেন:
﴿ مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَآ أَحَدٖ مِّن رِّجَالِكُمۡ وَلَٰكِن رَّسُولَ ٱللَّهِ وَخَاتَمَ ٱلنَّبِيِّۧنَۗ وَكَانَ ٱللَّهُ بِكُلِّ شَيۡءٍ عَلِيمٗا ٤٠ ﴾ [ الاحزاب : ٤٠ ]
‘‘মুহাম্মাদ তোমাদের কোনো পুরুষের পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং তিনি শেষ নবী। আর আল্লাহ সব বিষয়ে সর্বজ্ঞ’’। (সূরা আল-আহযাব: ৪০)
উত্তর: আল্লাহ তা‘আলা নূহ আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত প্রত্যেক জাতির মধ্যে নির্দিষ্ট রাসূল মনোনীত করে দিয়েছেন। তারা উম্মতের লোকদেরকে এক আল্লাহর ইবাদাত করার আদেশ দিয়েছেন এবং তাগুতসমূহের ইবাদাত উপাসনা করতে বারণ করেছেন। আর এ রিসালাতের বাণী সতর্ককারীগণ তাদের কওমের বা সম্প্রদায়ের কাছে পৌছে দিয়েছেন। এ সতর্ককারীগণ তাদের সম্প্রদায়ের জন্যে সত্যের সাক্ষী হয়ে অভিযোগ অপবাদের কোনো সুযোগ রেখে যান নি। সুমহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَلَقَدۡ بَعَثۡنَا فِي كُلِّ أُمَّةٖ رَّسُولًا أَنِ ٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَٱجۡتَنِبُواْ ٱلطَّٰغُوتَۖ ﴾ [ النحل : ٣٦ ]
‘‘অবশ্যই আমরা প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল প্রেরণ করেছি এ জন্যে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত বন্দেগী করবে এবং তাগুতসমূহ হতে নিরাপদ দূরে থাকবে’’। (সূরা আন-নাহল:৩৬)
আল্লাহ আরো বলেছেন:
﴿وَإِن مِّنۡ أُمَّةٍ إِلَّا خَلَا فِيهَا نَذِيرٞ ٢٤ ﴾ [ فاطر : ٢٤ ]
‘‘এমন কোনো জাতি বা সম্প্রদায় নেই যাদের মধ্যে কোনো সতর্ককারী প্রেরিত হয় নি’’। (সূরা ফাতির: ২৪)
বস্তুত এ সতর্ককারীগণ আল্লাহর ইবাদাতের দিকে আহ্বান করতেন এবং আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করতে নিষেধ করতেন।
﴿ وَلَقَدۡ بَعَثۡنَا فِي كُلِّ أُمَّةٖ رَّسُولًا أَنِ ٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَٱجۡتَنِبُواْ ٱلطَّٰغُوتَۖ ﴾ [ النحل : ٣٦ ]
‘‘অবশ্যই আমরা প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল প্রেরণ করেছি এ জন্যে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত বন্দেগী করবে এবং তাগুতসমূহ হতে নিরাপদ দূরে থাকবে’’। (সূরা আন-নাহল:৩৬)
আল্লাহ আরো বলেছেন:
﴿وَإِن مِّنۡ أُمَّةٍ إِلَّا خَلَا فِيهَا نَذِيرٞ ٢٤ ﴾ [ فاطر : ٢٤ ]
‘‘এমন কোনো জাতি বা সম্প্রদায় নেই যাদের মধ্যে কোনো সতর্ককারী প্রেরিত হয় নি’’। (সূরা ফাতির: ২৪)
বস্তুত এ সতর্ককারীগণ আল্লাহর ইবাদাতের দিকে আহ্বান করতেন এবং আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করতে নিষেধ করতেন।
উত্তর: তাগুতের সংখ্যা অনেক। তবে এর মধ্যে প্রধানতম পাঁচটি হলো: (ক) আল্লাহর লা‘নতপ্রাপ্ত ইবলিস।
(খ) আল্লাহর সাথে অথবা আল্লাহ ব্যতীত অন্য যাদের ইবাদাত উপাসনা পারস্পরিক সন্তুষ্টির সাথে হয়ে থাকে।
(গ) যে ব্যক্তি নিজের পূজা-উপাসনার আহ্বান জানাবে। আর যে সীমালংঘন করে যথোপযুক্ত সম্মান-মর্যাদার অধিক শ্রেষ্ঠত্বের দাবী করবে। যেমন: ফির‘আউন বা তার মত অন্য কেউ।
(ঘ) যে ব্যক্তি গায়েব জানার দাবী করবে সেও তাগুত। যেমন; জ্যোতিষ, গণক, জাদুকর এবং অদৃশ্যলোক সম্পর্কে জানার দাবীদার ইত্যাদি।
(ঙ) আল্লাহর নাযিলকৃত সুস্পষ্ট বিধান ব্যতীত যারা অন্য বিধান অনুযায়ী বিচার ফায়সালা করে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা বলেন:
﴿ وَمَن لَّمۡ يَحۡكُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡكَٰفِرُونَ ﴾ [ المائدة : ٤٤ ]
‘‘যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করে না, তারাই কাফের’’। (সূরা আল-মায়েদা: ৪৪)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
﴿ وَمَن لَّمۡ يَحۡكُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلظَّٰلِمُونَ ﴾ [ المائدة : ٤٥ ]
‘‘যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করে না, তারা যালেম (সীমালঙ্ঘনকারী)’’। (সূরা আল মায়েদা: ৪৫)
তাছাড়াও সূরা আল-মায়েদার ৪৭ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ أَفَحُكۡمَ ٱلۡجَٰهِلِيَّةِ يَبۡغُونَۚ وَمَنۡ أَحۡسَنُ مِنَ ٱللَّهِ حُكۡمٗا لِّقَوۡمٖ يُوقِنُونَ ٥٠ ﴾ [ المائدة : ٥٠ ]
‘‘তবে কি তারা জাহিলী যুগের বিধি বিধান (শাসন ব্যবস্থা) কামনা করে? আল্লাহ অপেক্ষা বিশ্বাসীদের জন্য সর্বোত্তম বিধানদাতা কে !?’’
তাগুতী তথা আল্লাহদ্রোহী রাষ্ট্র পরিচালক বা শাসকের বৈশিষ্ট্য হলো, সে বিশ্বাস করে যে, আল্লাহর বিধান ব্যতীত অন্য বিধান গ্রহণ করা হালাল বা বৈধ। অথবা আল্লাহর বিধান ব্যতীত অন্যের বিধানকে উত্তম বলে বিশ্বাস করে। অথবা উভয় বিধানকে সমপর্যায়ের (উভয় বিধানই শাসন কার্যের সমযোগী) বা আল্লাহর নাযিলকৃত শাসন প্রণালী বর্তমান কালের অনুপযোগী মনে করে।
(খ) আল্লাহর সাথে অথবা আল্লাহ ব্যতীত অন্য যাদের ইবাদাত উপাসনা পারস্পরিক সন্তুষ্টির সাথে হয়ে থাকে।
(গ) যে ব্যক্তি নিজের পূজা-উপাসনার আহ্বান জানাবে। আর যে সীমালংঘন করে যথোপযুক্ত সম্মান-মর্যাদার অধিক শ্রেষ্ঠত্বের দাবী করবে। যেমন: ফির‘আউন বা তার মত অন্য কেউ।
(ঘ) যে ব্যক্তি গায়েব জানার দাবী করবে সেও তাগুত। যেমন; জ্যোতিষ, গণক, জাদুকর এবং অদৃশ্যলোক সম্পর্কে জানার দাবীদার ইত্যাদি।
(ঙ) আল্লাহর নাযিলকৃত সুস্পষ্ট বিধান ব্যতীত যারা অন্য বিধান অনুযায়ী বিচার ফায়সালা করে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা বলেন:
﴿ وَمَن لَّمۡ يَحۡكُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡكَٰفِرُونَ ﴾ [ المائدة : ٤٤ ]
‘‘যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করে না, তারাই কাফের’’। (সূরা আল-মায়েদা: ৪৪)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন:
﴿ وَمَن لَّمۡ يَحۡكُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلظَّٰلِمُونَ ﴾ [ المائدة : ٤٥ ]
‘‘যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করে না, তারা যালেম (সীমালঙ্ঘনকারী)’’। (সূরা আল মায়েদা: ৪৫)
তাছাড়াও সূরা আল-মায়েদার ৪৭ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ أَفَحُكۡمَ ٱلۡجَٰهِلِيَّةِ يَبۡغُونَۚ وَمَنۡ أَحۡسَنُ مِنَ ٱللَّهِ حُكۡمٗا لِّقَوۡمٖ يُوقِنُونَ ٥٠ ﴾ [ المائدة : ٥٠ ]
‘‘তবে কি তারা জাহিলী যুগের বিধি বিধান (শাসন ব্যবস্থা) কামনা করে? আল্লাহ অপেক্ষা বিশ্বাসীদের জন্য সর্বোত্তম বিধানদাতা কে !?’’
তাগুতী তথা আল্লাহদ্রোহী রাষ্ট্র পরিচালক বা শাসকের বৈশিষ্ট্য হলো, সে বিশ্বাস করে যে, আল্লাহর বিধান ব্যতীত অন্য বিধান গ্রহণ করা হালাল বা বৈধ। অথবা আল্লাহর বিধান ব্যতীত অন্যের বিধানকে উত্তম বলে বিশ্বাস করে। অথবা উভয় বিধানকে সমপর্যায়ের (উভয় বিধানই শাসন কার্যের সমযোগী) বা আল্লাহর নাযিলকৃত শাসন প্রণালী বর্তমান কালের অনুপযোগী মনে করে।
উত্তর: সকল তাগুতকে অস্বীকার ও অমান্য করা এবং মহান আল্লাহর প্রতি ঈমান আনাকে ফরয করে দেওয়া হয়েছে। সুমহান আল্লাহ বলেন:
فَمَن يَكۡفُرۡ بِٱلطَّٰغُوتِ وَيُؤۡمِنۢ بِٱللَّهِ فَقَدِ ٱسۡتَمۡسَكَ بِٱلۡعُرۡوَةِ ٱلۡوُثۡقَىٰ لَا ٱنفِصَامَ لَهَاۗ ﴾ [ البقرة : ٢٥٦ ]
‘‘যে তাগুতকে অস্বীকার করবে ও আল্লাহর উপর ঈমান আনবে সে এমন এক মযবুত অবলম্বন আঁকড়ে ধরলো যা ভাঙ্গবে না’’। (সূরা আল-বাক্বারাহ: ২৫৬)
উক্ত আয়াতে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর প্রতিধ্বনি করা হয়েছে অর্থাৎ ঘোষণা দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য মা‘বুদ (উপাস্য) নেই। হাদীসে বর্ণিত আছে যে,
«رَأْسُ الأَمْرِ الإِسْلَامُ، وَعَمُودُهُ الصَّلَاةُ، وَذِرْوَةُ سَنَامِهِ الجِهَادُ»
‘‘সব বিষয়ের প্রধান হলো ইসলাম এবং ইসলামের স্তম্ভ হলো সালাত। আর ইসলামের উঁচু শৃঙ্ঘ বা চূড়া হলো আল্লাহর পথে জিহাদ’। (বুখারী: ১১৭৯, মুসলিম: ৩০)
আর আল্লাহর প্রতি ঈমান হলো: মনে প্রাণে এ স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে যে আল্লাহ তা‘আলা রবুবিয়াতে এবং নামে ও গুণে সাদৃশ্যহীন একক সত্ত্বা। আর একমাত্র তিনিই ইবাদাত পাওয়ার অধিকারী।
আর তাগুতের সাথে কুফরী (অস্বীকার) করার নিয়ম হলো:
সর্বপ্রকার মূর্তি ছুড়ে ফেলতে হবে এবং সেগুলোকে বয়কট করতে হবে। অতঃপর সেগুলোর পূজা-উপাসনা এবং সেগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা-সম্মান সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে হবে।
‘ঊরওয়াতুল উসকা’ হলো: তাওহীদ বা একত্ববাদের ঘোষণা আর এটাই হচ্ছে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো সত্য মা‘বুদ বা উপাস্য নেই) এর তাৎপর্য।
فَمَن يَكۡفُرۡ بِٱلطَّٰغُوتِ وَيُؤۡمِنۢ بِٱللَّهِ فَقَدِ ٱسۡتَمۡسَكَ بِٱلۡعُرۡوَةِ ٱلۡوُثۡقَىٰ لَا ٱنفِصَامَ لَهَاۗ ﴾ [ البقرة : ٢٥٦ ]
‘‘যে তাগুতকে অস্বীকার করবে ও আল্লাহর উপর ঈমান আনবে সে এমন এক মযবুত অবলম্বন আঁকড়ে ধরলো যা ভাঙ্গবে না’’। (সূরা আল-বাক্বারাহ: ২৫৬)
উক্ত আয়াতে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর প্রতিধ্বনি করা হয়েছে অর্থাৎ ঘোষণা দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য মা‘বুদ (উপাস্য) নেই। হাদীসে বর্ণিত আছে যে,
«رَأْسُ الأَمْرِ الإِسْلَامُ، وَعَمُودُهُ الصَّلَاةُ، وَذِرْوَةُ سَنَامِهِ الجِهَادُ»
‘‘সব বিষয়ের প্রধান হলো ইসলাম এবং ইসলামের স্তম্ভ হলো সালাত। আর ইসলামের উঁচু শৃঙ্ঘ বা চূড়া হলো আল্লাহর পথে জিহাদ’। (বুখারী: ১১৭৯, মুসলিম: ৩০)
আর আল্লাহর প্রতি ঈমান হলো: মনে প্রাণে এ স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে যে আল্লাহ তা‘আলা রবুবিয়াতে এবং নামে ও গুণে সাদৃশ্যহীন একক সত্ত্বা। আর একমাত্র তিনিই ইবাদাত পাওয়ার অধিকারী।
আর তাগুতের সাথে কুফরী (অস্বীকার) করার নিয়ম হলো:
সর্বপ্রকার মূর্তি ছুড়ে ফেলতে হবে এবং সেগুলোকে বয়কট করতে হবে। অতঃপর সেগুলোর পূজা-উপাসনা এবং সেগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা-সম্মান সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে হবে।
‘ঊরওয়াতুল উসকা’ হলো: তাওহীদ বা একত্ববাদের ঘোষণা আর এটাই হচ্ছে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো সত্য মা‘বুদ বা উপাস্য নেই) এর তাৎপর্য।
﴿ ۞وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعۡبُدُوٓاْ إِلَّآ إِيَّاهُ وَبِٱلۡوَٰلِدَيۡنِ إِحۡسَٰنًاۚ ﴾ [ الاسراء : ٢٣ ]
এ আয়াতের ব্যাখ্যা করুন?
উত্তর: ‘‘আপনার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারোই ইবাদাত করবে না, আর মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে’’। (সূরা বানী ইসরাঈল:২৩)
উক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেছেন যে, আদেশ দেওয়া হয়েছে একমাত্র তারই ইবাদাত করার জন্য এবং তাঁর কোনো শরীক নেই। আর মাতা-পিতার সাথে বিনয়-নম্র আচরণ করতে হবে, কেননা মাতা-পিতার শ্রদ্ধা-সম্মান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আল্লাহর ইবাদাতের পরেই এর স্থান। তারা মুশরিক হলেও সদ্ব্যবহার করতে হবে। মহান আল্লাহ সূরা লুকমানের ১৫ নং আয়াতে বলেন:
﴿ وَصَاحِبۡهُمَا فِي ٱلدُّنۡيَا مَعۡرُوفٗاۖ ﴾ [ لقمان : ١٥ ]
‘‘এবং দুনিয়ায় তাদের সাথে নম্র-ভদ্র এবং সদ্ভাব বজায় রাখবে’’।
এ আয়াতের ব্যাখ্যা করুন?
উত্তর: ‘‘আপনার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারোই ইবাদাত করবে না, আর মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে’’। (সূরা বানী ইসরাঈল:২৩)
উক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেছেন যে, আদেশ দেওয়া হয়েছে একমাত্র তারই ইবাদাত করার জন্য এবং তাঁর কোনো শরীক নেই। আর মাতা-পিতার সাথে বিনয়-নম্র আচরণ করতে হবে, কেননা মাতা-পিতার শ্রদ্ধা-সম্মান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আল্লাহর ইবাদাতের পরেই এর স্থান। তারা মুশরিক হলেও সদ্ব্যবহার করতে হবে। মহান আল্লাহ সূরা লুকমানের ১৫ নং আয়াতে বলেন:
﴿ وَصَاحِبۡهُمَا فِي ٱلدُّنۡيَا مَعۡرُوفٗاۖ ﴾ [ لقمان : ١٥ ]
‘‘এবং দুনিয়ায় তাদের সাথে নম্র-ভদ্র এবং সদ্ভাব বজায় রাখবে’’।
৪০
{প্রশ্ন:৩৮} মু‘আয রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: বান্দার উপরে আল্লাহর হক হলো: তারা আল্লাহর ইবাদাত করবে কিন্তু তাঁর সাথে অন্য কিছুকে শরীক করবে না। আর আল্লাহর কর্তব্য হলো যে বান্দা আল্লাহর সাথে অন্য কিছুকে শরীক করবে না তাকে আযাব বা শাস্তি না দেওয়া’’। (মুত্তাফাকুন আলাইহি)অতএব বান্দার উপরে আল্লাহর হক এবং আল্লাহর উপরে বান্দার হক এদূয়ের মধ্যে পার্থক্য কি? এ হাদীস হতে আমরা কী শিক্ষা পাই?
উত্তর: আল্লাহর হক বান্দার উপর ওয়াজিব বা বাধ্যতামূলক। পক্ষান্তরে আল্লাহর উপর বান্দার হক হচ্ছে যথোপযুক্ত প্রতিদান ও সম্মান।
হাদীসের যা শিক্ষণীয় তা হলো: আল্লাহর ইবাদাতে একত্ববাদ বজায় রাখা ওয়াজিব বা আবশ্যক। আল্লাহর রহমত, তাঁর দয়া দাক্ষিন্য, সম্মান মর্যাদা ও বদান্যতা সর্বোচ্চরূপে এবং সর্বত্র ব্যাপকভাবে তা বিস্তৃত হয়ে আছে।
উত্তর: আল্লাহর হক বান্দার উপর ওয়াজিব বা বাধ্যতামূলক। পক্ষান্তরে আল্লাহর উপর বান্দার হক হচ্ছে যথোপযুক্ত প্রতিদান ও সম্মান।
হাদীসের যা শিক্ষণীয় তা হলো: আল্লাহর ইবাদাতে একত্ববাদ বজায় রাখা ওয়াজিব বা আবশ্যক। আল্লাহর রহমত, তাঁর দয়া দাক্ষিন্য, সম্মান মর্যাদা ও বদান্যতা সর্বোচ্চরূপে এবং সর্বত্র ব্যাপকভাবে তা বিস্তৃত হয়ে আছে।
উত্তর:
(ক) যে তাওহীদ বজায় রাখবে সে অন্যান্য দোষত্রুটির কারণে জাহান্নামে গেলেও ত্রুটি অনুযায়ী শাস্তি ভোগের পর তা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হবে। চিরকাল জাহান্নামে থাকতে হবে না।
(খ) তাওহীদের মানদণ্ডে বান্দার সমস্ত কাজ বিচার-বিশ্লেষণ করে সওয়াব দেওয়া হবে।
(গ) কেবলমাত্র তাওহীদপন্থীরাই আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় লাভ করবে। তারা ইজ্জত ও সম্মানের অধিকারী হবে, হেদায়াত পাবে। তারা সার্বিক কল্যাণ অর্জন করবে। আল্লাহ সন্তুষ্টির সাথে তাদের তত্ত্বাবধান করবেন।
(ঘ) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা তাওহীদপন্থী ঈমানদারদেরকে দুনিয়াতে বিপদ আপদ মুক্ত রাখবেন আর পরকালে তারা লাভ করবে উত্তম জীবন।
(ক) যে তাওহীদ বজায় রাখবে সে অন্যান্য দোষত্রুটির কারণে জাহান্নামে গেলেও ত্রুটি অনুযায়ী শাস্তি ভোগের পর তা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হবে। চিরকাল জাহান্নামে থাকতে হবে না।
(খ) তাওহীদের মানদণ্ডে বান্দার সমস্ত কাজ বিচার-বিশ্লেষণ করে সওয়াব দেওয়া হবে।
(গ) কেবলমাত্র তাওহীদপন্থীরাই আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় লাভ করবে। তারা ইজ্জত ও সম্মানের অধিকারী হবে, হেদায়াত পাবে। তারা সার্বিক কল্যাণ অর্জন করবে। আল্লাহ সন্তুষ্টির সাথে তাদের তত্ত্বাবধান করবেন।
(ঘ) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা তাওহীদপন্থী ঈমানদারদেরকে দুনিয়াতে বিপদ আপদ মুক্ত রাখবেন আর পরকালে তারা লাভ করবে উত্তম জীবন।
৪২
{প্রশ্ন: ৪০} তাওহীদের হাকীকত (তাৎপর্য) কি? যে তাওহীদের তাৎপর্য অনুধাবন ও অনুসরণ করবে সে কী পুরস্কার পাবে?উত্তর: সর্বপ্রকার শির্ক, বিদ‘আত, কুসংস্কার, মনগড়া কথা-কাহিনী ও পাপাচার মুক্ত নির্মল কর্মের নামই তাওহীদ বা একত্ববাদ। আর জেনে-বুঝে তাওহীদের শিক্ষানুযায়ী জীবন যাপন করতে হবে।
আর যে ব্যক্তি তাওহীদের শিক্ষা ও তাৎপর্য বাস্তবায়ন করলো সে বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাকে কোনোই শাস্তি পেতে হবে না।
আর যে ব্যক্তি তাওহীদের শিক্ষা ও তাৎপর্য বাস্তবায়ন করলো সে বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাকে কোনোই শাস্তি পেতে হবে না।
﴿ إِنَّ إِبۡرَٰهِيمَ كَانَ أُمَّةٗ قَانِتٗا لِّلَّهِ حَنِيفٗا وَلَمۡ يَكُ مِنَ ٱلۡمُشۡرِكِينَ ١٢٠ ﴾ [ النحل : ١٢٠ ]
এ আয়াতের ব্যাখ্যা করুন এবং উম্মাতান, ক্বানেতান, ‘হানীফান’ এ শব্দগুলোর ভাবার্থ কি?
উত্তর: আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম আলাইহিস সালামের যে কয়টি গুণ-বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করেছেন তা সত্যিকারের তাওহীদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
(ক) ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম ছিলেন উম্মতের অনুসরণীয় বৈশিষ্ট্যের অধিকারী, সফল ইমাম ও শিক্ষক আর তাই হচ্ছে ‘উম্মাতান’ এর অর্থ।
(খ) তিনি ছিলেন সর্বদাই আল্লাহর অনুগত বান্দা আর তাই হচ্ছে ‘ক্বানেতান’ এর অর্থ।
(গ) তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ আল্লাহমুখী এবং আল্লাহর পরিপন্থী সবকিছুই বর্জনকারী। আর তাই হচ্ছে ‘হানীফান’ এর অর্থ।
(ঘ) তিনি কথায়, কাজে ও বিশ্বাসে মুশরিক ছিলেন না এবং পরিপূর্ণ ইসলামের সাথে শির্কমুক্ত সত্যিকারের বিশ্বাসের অধিকারী। [আল-জামে আল-ফরিদ, পৃষ্ঠা: ২২।]
এ আয়াতের ব্যাখ্যা করুন এবং উম্মাতান, ক্বানেতান, ‘হানীফান’ এ শব্দগুলোর ভাবার্থ কি?
উত্তর: আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম আলাইহিস সালামের যে কয়টি গুণ-বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করেছেন তা সত্যিকারের তাওহীদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
(ক) ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম ছিলেন উম্মতের অনুসরণীয় বৈশিষ্ট্যের অধিকারী, সফল ইমাম ও শিক্ষক আর তাই হচ্ছে ‘উম্মাতান’ এর অর্থ।
(খ) তিনি ছিলেন সর্বদাই আল্লাহর অনুগত বান্দা আর তাই হচ্ছে ‘ক্বানেতান’ এর অর্থ।
(গ) তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ আল্লাহমুখী এবং আল্লাহর পরিপন্থী সবকিছুই বর্জনকারী। আর তাই হচ্ছে ‘হানীফান’ এর অর্থ।
(ঘ) তিনি কথায়, কাজে ও বিশ্বাসে মুশরিক ছিলেন না এবং পরিপূর্ণ ইসলামের সাথে শির্কমুক্ত সত্যিকারের বিশ্বাসের অধিকারী। [আল-জামে আল-ফরিদ, পৃষ্ঠা: ২২।]
উত্তর: শির্ক দুই প্রকার:
(১) শির্কে আকবার বা বড় শির্ক: আল্লাহর ইবাদাতে অন্য কিছুকেই শরীক বা অংশীদার মনে করে সেগুলোর কাছে দো‘আ করা, কিছু কামনা করা, ভয় করা, আল্লাহর মতই সে সবকে ভালোবাসা অথবা অন্য যে কোনো প্রকারের ইবাদাতে আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে সংযোগ করা। এ জাতীয় শির্কে যারা জড়িত হবে তাদের জন্যে জান্নাত হারাম হয়ে যাবে এবং জাহান্নামই হবে তাদের চিরস্থায়ী বাসস্থান।
(২) শির্কে আসগর বা ছোট শির্ক: সব ধরনের কথা ও কাজ যা বড় শির্কের দিকে নিয়ে যায়। যেমন: আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে হলফ বা কসম করা, সামান্য লোক দেখানো ইবাদাত করা এবং খালেসভাবে আল্লাহর জন্য ইবাদাত সম্পন্ন না করা। [আল-জামে আল-ফরিদ, পৃষ্ঠা:২৭।]
(১) শির্কে আকবার বা বড় শির্ক: আল্লাহর ইবাদাতে অন্য কিছুকেই শরীক বা অংশীদার মনে করে সেগুলোর কাছে দো‘আ করা, কিছু কামনা করা, ভয় করা, আল্লাহর মতই সে সবকে ভালোবাসা অথবা অন্য যে কোনো প্রকারের ইবাদাতে আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে সংযোগ করা। এ জাতীয় শির্কে যারা জড়িত হবে তাদের জন্যে জান্নাত হারাম হয়ে যাবে এবং জাহান্নামই হবে তাদের চিরস্থায়ী বাসস্থান।
(২) শির্কে আসগর বা ছোট শির্ক: সব ধরনের কথা ও কাজ যা বড় শির্কের দিকে নিয়ে যায়। যেমন: আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে হলফ বা কসম করা, সামান্য লোক দেখানো ইবাদাত করা এবং খালেসভাবে আল্লাহর জন্য ইবাদাত সম্পন্ন না করা। [আল-জামে আল-ফরিদ, পৃষ্ঠা:২৭।]
﴿ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَغۡفِرُ أَن يُشۡرَكَ بِهِۦ وَيَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَآءُۚ ﴾ [ النساء : ٤٨ ]
এ আয়াতের ব্যাখ্যা ও শিক্ষা কি?
উত্তর: ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমা করবেন না, যে তাঁর সাথে অন্য কিছুকে শরিক করে। আর শির্ক ছাড়া অন্যান্য গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দিবেন’’। (সূরা আন-নিসা: ৪৮)
অর্থাৎ মহামহিয়ান আল্লাহ বলেছেন যে, তিনি মুশরিকদের শাস্তি মাফ করবেন না। কিন্তু শির্ক ছাড়া অন্যান্য গুনাহকারীদের মধ্য হতে যাকে ইচ্ছা তাকে তিনি ক্ষমা করে দিবেন।
আয়াতের শিক্ষা হলো: শির্ক সবচেয়ে বড় গুনাহ। শির্ক হতে তওবা না করলে আল্লাহ শির্ককারীদেরকে মাফ করবেন না। শির্ক ছাড়া অন্যান্য গুনাহগারদের মধ্য থেকে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দিবেন আর যাকে ইচ্ছা শাস্তি দিবেন।
অতএব শির্কের গুনাহকে আল্লাহর বান্দাদের অধিক ভয় করা উচিৎ। আল্লাহ চান যেন মানুষকে শির্কের ভয়াবহ পরিণতি বরণ করতে না হয়।
এ আয়াতের ব্যাখ্যা ও শিক্ষা কি?
উত্তর: ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমা করবেন না, যে তাঁর সাথে অন্য কিছুকে শরিক করে। আর শির্ক ছাড়া অন্যান্য গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দিবেন’’। (সূরা আন-নিসা: ৪৮)
অর্থাৎ মহামহিয়ান আল্লাহ বলেছেন যে, তিনি মুশরিকদের শাস্তি মাফ করবেন না। কিন্তু শির্ক ছাড়া অন্যান্য গুনাহকারীদের মধ্য হতে যাকে ইচ্ছা তাকে তিনি ক্ষমা করে দিবেন।
আয়াতের শিক্ষা হলো: শির্ক সবচেয়ে বড় গুনাহ। শির্ক হতে তওবা না করলে আল্লাহ শির্ককারীদেরকে মাফ করবেন না। শির্ক ছাড়া অন্যান্য গুনাহগারদের মধ্য থেকে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দিবেন আর যাকে ইচ্ছা শাস্তি দিবেন।
অতএব শির্কের গুনাহকে আল্লাহর বান্দাদের অধিক ভয় করা উচিৎ। আল্লাহ চান যেন মানুষকে শির্কের ভয়াবহ পরিণতি বরণ করতে না হয়।
৪৬
{প্রশ্ন: ৪৪} লোক দেখানো কাজ বা কপটতা তথা ‘রিয়া’ কী? এ বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাহাবীদের জন্য কেন ভয় করতেন?উত্তর: ‘রিয়া’ শব্দটি ‘রুইয়াহ’ থেকে উৎপত্তি হয়েছে। আভিধানিক অর্থ হলো কপটতা, প্রদর্শন করা বা লোক দেখানো কাজ করা। যে সব ভালো কাজ করা হয়ে থাকে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষন করে প্রশংসা পাওয়ার জন্য। এ রিয়াকারী কপটব্যক্তি বিশুদ্ধ নিয়তে ইবাদাত বা অন্যান্য কাজ করে না।
আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের ব্যাপারে এ জাতীয় রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করার কারণ হলো: এটি একদিকে মন্দ কাজের নির্দেশকারী নফসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং মনকে হঠাৎ মুগ্ধ বা আকৃষ্ট করে থাকে আর তা সহজেই মানুষের মনকে দুর্বল করে দেয়। যারা প্রশংসা পছন্দ করে তাদেরকে শয়তান রিয়ার সুযোগে সূক্ষ্মভাবে বিভ্রান্ত করে থাকে।
আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের ব্যাপারে এ জাতীয় রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করার কারণ হলো: এটি একদিকে মন্দ কাজের নির্দেশকারী নফসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং মনকে হঠাৎ মুগ্ধ বা আকৃষ্ট করে থাকে আর তা সহজেই মানুষের মনকে দুর্বল করে দেয়। যারা প্রশংসা পছন্দ করে তাদেরকে শয়তান রিয়ার সুযোগে সূক্ষ্মভাবে বিভ্রান্ত করে থাকে।
৪৭
{প্রশ্ন: ৪৫} ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আল্লাহর সাথে শির্কে লিপ্ত থেকে যার মৃত্যু হবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে’’। অন্য বর্ণনায় আছে ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য কিছুকে আহ্বান করে মারা যাবে (সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে)’’এ হাদিসের ব্যাখ্যা কি? এবং ‘‘যার মৃত্যু হবে’’ একথার দ্বারা কাদেরকে আলাদা (চিহ্নিত) করা হয়েছে। এখানে দো‘আর অর্থ কি এবং ‘নিদ্দ’ বলতে কি বুঝায়?
উত্তর: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানিয়ে দিয়েছেন ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোনো কিছুকে শরিক করলো এবং তাওবা না করে শির্কে জড়িত অবস্থায় মারা গেলো সে জাহান্নামে প্রবেশ করল। ‘‘যার মৃত্যু হলো” এ বাক্য দ্বারা তাদেরকে আলাদা করা হয়েছে যারা মৃত্যুর পূর্বে তওবা সম্পন্ন করেছে। আর দো‘আর অন্তর্ভুক্ত বিষয়ের মধ্যে অন্যতম হলো সর্বপ্রকার যিকির ও কোনো কিছু চাওয়া-প্রার্থনা।
তবে এখানে দো‘আর অর্থ হবে; যে কোনো প্রকার ইবাদাত বন্দেগী আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর জন্য সম্পন্ন করা।
আর ‘নিদ্দ’ হচ্ছে: সামঞ্জস্য, সমপর্যায়, অনুরূপ ও দৃষ্টান্ত।
উত্তর: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানিয়ে দিয়েছেন ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোনো কিছুকে শরিক করলো এবং তাওবা না করে শির্কে জড়িত অবস্থায় মারা গেলো সে জাহান্নামে প্রবেশ করল। ‘‘যার মৃত্যু হলো” এ বাক্য দ্বারা তাদেরকে আলাদা করা হয়েছে যারা মৃত্যুর পূর্বে তওবা সম্পন্ন করেছে। আর দো‘আর অন্তর্ভুক্ত বিষয়ের মধ্যে অন্যতম হলো সর্বপ্রকার যিকির ও কোনো কিছু চাওয়া-প্রার্থনা।
তবে এখানে দো‘আর অর্থ হবে; যে কোনো প্রকার ইবাদাত বন্দেগী আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর জন্য সম্পন্ন করা।
আর ‘নিদ্দ’ হচ্ছে: সামঞ্জস্য, সমপর্যায়, অনুরূপ ও দৃষ্টান্ত।
৪৮
{প্রশ্ন: ৪৬} জাবের রাদিয়াল্লাহ আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: ‘‘যে ব্যক্তি শির্ক মুক্ত থেকে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে শির্কের সাথে সম্পর্ক রেখে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে সে জাহান্নামে যাবে’’। (মুসলিম নং ৯৩)আল্লাহর সাথৈ সাক্ষাতের অর্থ কি এবং কখন এ সাক্ষাৎ হবে? আর নেতিবাচক ( لا ) শব্দের ফায়দা কি?
উত্তর: আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের অর্থ হলো: আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়া এবং সাক্ষাৎ করা। আর এ সাক্ষাত হবে ক্বিয়ামত দিবসে। আর নেতিবাচক শব্দের ফায়দা হলো, নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে যা নিষিদ্ধ নয় তা নির্ধারণ ও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। অর্থাৎ তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করা। আর যে শির্কমুক্ত থেকে প্রকৃত তাওহিদবাদী অবস্থায় আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করবে এব সেই জান্নাতে যাবে।
উত্তর: আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের অর্থ হলো: আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়া এবং সাক্ষাৎ করা। আর এ সাক্ষাত হবে ক্বিয়ামত দিবসে। আর নেতিবাচক শব্দের ফায়দা হলো, নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে যা নিষিদ্ধ নয় তা নির্ধারণ ও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। অর্থাৎ তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করা। আর যে শির্কমুক্ত থেকে প্রকৃত তাওহিদবাদী অবস্থায় আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করবে এব সেই জান্নাতে যাবে।
৪৯
{প্রশ্ন: ৪৭} দীন ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার হুকুম কী? একজন দা‘ঈ দাওয়াতের সূচনা করবে কী দ্বারা এবং কেন? ইহার প্রমাণ কী?উত্তর: দীন ইসলামের দাওয়াত দেওয়া ওয়াজিব বা অবশ্য কর্তব্য। একজন দা‘ঈকে দাওয়াতী কাজের সূচনায় তাওহীদ বা একত্ববাদ উপস্থাপন করতে হবে। কেননা তাওহীদ হচ্ছে সব ফরযের বড় ফরয বা ওয়াজিবসমূহের প্রধান ওয়াজিব। সব কাজের মূল ভিত্তিও তাওহীদ। বিশুদ্ধ তাওহীদ (একত্ববাদ) ছাড়া কোনো নেক কাজ কবুল করা হবে না। আর ইমাম আবু হানিফা (রাহমাহুমুল্লাহ) বিশুদ্ধ একত্ববাদের নাম দিয়েছেন শ্রেষ্ঠ ফিকাহ বা ‘আল-ফিকহুল আকবার’।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু‘আয রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলেন:
«إِنَّكَ تَأْتِي قَوْمًا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ، فَادْعُهُمْ إِلَى شَهَادَةِ أَنَّ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللهِ»
‘‘তুমি কিতাবী জনসাধারণের কাছে যাবে তাদেরকে সর্বপ্রথম যে বিষয়ের দাওয়াত দিবে তা হলো; তারা যেন সাক্ষ্য দেয় যে নিশ্চয় আল্লাহ ছাড়া আর কোনো (সত্য) ইলাহ বা মা‘বুদ নেই এবং নিশ্চয় আমি (মুহাম্মদ) আল্লাহর রসূল’’। (সহীহ মুসলিম ১/৫৩, হাদীস নং ১৯)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু‘আয রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলেন:
«إِنَّكَ تَأْتِي قَوْمًا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ، فَادْعُهُمْ إِلَى شَهَادَةِ أَنَّ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللهِ»
‘‘তুমি কিতাবী জনসাধারণের কাছে যাবে তাদেরকে সর্বপ্রথম যে বিষয়ের দাওয়াত দিবে তা হলো; তারা যেন সাক্ষ্য দেয় যে নিশ্চয় আল্লাহ ছাড়া আর কোনো (সত্য) ইলাহ বা মা‘বুদ নেই এবং নিশ্চয় আমি (মুহাম্মদ) আল্লাহর রসূল’’। (সহীহ মুসলিম ১/৫৩, হাদীস নং ১৯)
৫০
{প্রশ্ন: ৪৮} সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: ‘‘যে বলবে আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ বা মা‘বুদ নেই এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য যা কিছুর পূজা ও উপসনা করা হয় সেগুলোকে অস্বীকার করবে: তার মাল-সম্পদ জীবন, নিরাপদ হবে। আর তার হিসাব হবে মহামহিয়ান আল্লাহর যিম্মায়’। (মুসলিম)নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ হাদীসের মধ্যে ধন-সম্পদ ও জীবনের নিরাপত্তার যে শর্তারোপ করেছেন তা কি?
উত্তর: নিরাপত্তার দুটি শর্তারোপ করেছেন:
(এক) জেনে-বুঝে ইয়াকিন দৃঢ় বিশ্বাস এবং ভালোবাসা। আন্তরিকতার সাথে বলতে হবে ‘আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্য ইলাহ বা মা‘বুদ নেই’।
(দুই) আল্লাহ ব্যতীত সর্বপ্রকার মূর্তি, সৌধ বা অন্য যা কিছুর ইবাদাত উপাসনা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় সেগুলোকে অস্বীকার ও বর্জন করা।
উত্তর: নিরাপত্তার দুটি শর্তারোপ করেছেন:
(এক) জেনে-বুঝে ইয়াকিন দৃঢ় বিশ্বাস এবং ভালোবাসা। আন্তরিকতার সাথে বলতে হবে ‘আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্য ইলাহ বা মা‘বুদ নেই’।
(দুই) আল্লাহ ব্যতীত সর্বপ্রকার মূর্তি, সৌধ বা অন্য যা কিছুর ইবাদাত উপাসনা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় সেগুলোকে অস্বীকার ও বর্জন করা।
৫২
{প্রশ্ন:৫০} ‘‘আল্লাহ ব্যতীত অন্য যা কিছুর ইবাদাত উপাসনা করা হয় তা অস্বীকার করা’’। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এ কথার অর্থ কি?উত্তর: অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত মূর্তি, স্মৃতিসৌধ, ফিরিশতা নবী, আওলিয়া বা নেক লোকদের ইবাদাত উপসনা করতে অস্বীকার ও বর্জন করা। কাফেররা এ ধরনের মূর্তি, সৌধ বা ব্যক্তিদের ইবাদাত বন্দেগীতে লিপ্ত হতো অথচ তাতে আল্লাহর অনুমতি নেই। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَإِذۡ قَالَ ٱللَّهُ يَٰعِيسَى ٱبۡنَ مَرۡيَمَ ءَأَنتَ قُلۡتَ لِلنَّاسِ ٱتَّخِذُونِي وَأُمِّيَ إِلَٰهَيۡنِ مِن دُونِ ٱللَّهِۖ ﴾ [ المائدة : ١١٦ ]
‘‘যখন আল্লাহ বলবেন, হে ঈসা ইবনে মারইয়াম, তুমিই কি মানুষকে বলেছো যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়াও আমাকে এবং আমার আম্মাকে ইলাহ-মাবুদ হিসেবে গ্রহণ করে নাও?” (সূরা আল-মায়েদাহ: ১১৬)
আল্লাহ সব ধরনের বস্তু কিংবা যে কোনো ব্যক্তির ইবাদাত উপাসনা নিষিদ্ধ করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَلَا يَأۡمُرَكُمۡ أَن تَتَّخِذُواْ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةَ وَٱلنَّبِيِّۧنَ أَرۡبَابًا﴾ [ ال عمران : ٨٠ ]
‘‘ফিরিশতা এবং নবীগণকে প্রতিপালকরূপে গ্রহণ করার জন্য তোমাদেরকে আদেশ করা হয়নি।’’ (সূরা আলে ইমরান: ৮০)
﴿ وَإِذۡ قَالَ ٱللَّهُ يَٰعِيسَى ٱبۡنَ مَرۡيَمَ ءَأَنتَ قُلۡتَ لِلنَّاسِ ٱتَّخِذُونِي وَأُمِّيَ إِلَٰهَيۡنِ مِن دُونِ ٱللَّهِۖ ﴾ [ المائدة : ١١٦ ]
‘‘যখন আল্লাহ বলবেন, হে ঈসা ইবনে মারইয়াম, তুমিই কি মানুষকে বলেছো যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়াও আমাকে এবং আমার আম্মাকে ইলাহ-মাবুদ হিসেবে গ্রহণ করে নাও?” (সূরা আল-মায়েদাহ: ১১৬)
আল্লাহ সব ধরনের বস্তু কিংবা যে কোনো ব্যক্তির ইবাদাত উপাসনা নিষিদ্ধ করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَلَا يَأۡمُرَكُمۡ أَن تَتَّخِذُواْ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةَ وَٱلنَّبِيِّۧنَ أَرۡبَابًا﴾ [ ال عمران : ٨٠ ]
‘‘ফিরিশতা এবং নবীগণকে প্রতিপালকরূপে গ্রহণ করার জন্য তোমাদেরকে আদেশ করা হয়নি।’’ (সূরা আলে ইমরান: ৮০)
উত্তর: যে ব্যক্তি তার কন্ঠে কলেমার সাক্ষ্য দিবে আখেরাতে তার হিসাব-নিকাশের দায়-দায়িত্ব গ্রহণ করবেন স্বয়ং আল্লাহ। সাক্ষ্যদানে সে যদি সত্যবাদী হয় তাহলে আল্লাহ তাকে সুখময় জান্নাত দান করবেন। আর যদি মিথ্যাবাদী হয় তাহলে আল্লাহ তাকে পীড়াদায়ক শাস্তি দিবেন। তবে দুনিয়ায় বাহ্যিক অবস্থা অনুযায়ী মূল্যায়ন করতে হবে। কিন্তু আল্লাহ প্রত্যেকের গোপন বা প্রকৃত (আসল) অবস্থা অনুযায়ী আখিরাতে উপযুক্ত কর্মফল দিবেন। কালেমা পাঠ করার পরে কেউ তরবারীর শাস্তিযোগ্য অপরাধ করলে অথবা দীন ইসলামের পরিপন্থী কোনো কাজ করলে তাকে হত্যা করা যাবে। যেমন; বিবাহিত জ্বিনা-ব্যভিচারকারী, স্বেচ্ছায়-স্বজ্ঞানে কাউকে হত্যাকারী, ডাকাতি, সন্ত্রাস ইত্যাদি।
৫৫
{প্রশ্ন:৫৩} ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি; ‘‘অবৈধ বা ভ্রান্ত ঝাড়-ফুঁক, তাবিজ, কবয এবং স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক ভালোবাসা বজায় রাখার জন্য কোনো বস্ত্র ব্যবহার করা এসবই শির্ক’’। (মুসনাদে আহমাদ, আবু-দাউদ)অনুরূপভাবে আব্দুল্লাহ ইবনে উকাইম রাদিয়াল্লাহ আনহু হতে মারফু সূত্রে বর্ণিত আছে ‘‘যে ব্যক্তি কোথাও তাবীয কবয ঝুলানো বা বাধলো তাকে ওগুলোর জিম্মায় সোপর্দ করা হবে’’। (আহমাদ, তিরমিযি) ঝাড়-ফুঁক কাকে বলে এবং তার হুকুম কী?
উত্তর: ঝাড়-ফুঁক যাকে আরবীতে ‘রুকা’ বলা হয়, যা ‘রুকিয়া’ শব্দের বহুবচন। রুকিয়া হলো; ঝাড়-ফুঁক ব্যবহার করে জ্বর, বিষাক্ত কিছুর দংশন, বেহুশ হওয়া ইত্যাদি রোগ ব্যাধি নিরাময় বা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এ কাজকে অপরিহার্য ঝাড়-ফুঁকমন্ত্র হিসেবে অভিহিত। আর তা দু প্রকার:
[১] জায়েয:- যে ঝাড়-ফুক শির্ক মুক্ত তা তিনটি শর্তে জায়েয হবে; যথা: (ক) শরীয়তসম্মত আরবী বাক্য দ্বারা বোধগম্য অথবা বৈধ দো‘আর সঠিক ভাবার্থ পাঠ দ্বারা।
(খ) আল্লাহর কালাম, আল্লাহর নাম ও গুণ দ্বারা অথবা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীসে উল্লিখিত বাক্য দ্বারা।
(গ) দৃঢ় বিশ্বাস থাকতে হবে যে, ঝাড়-ফুঁকের বিশেষ (স্বতন্ত্র) কোনো প্রভাব নেই বরং সবই আল্লাহর সন্তুষ্টি বা অসন্তুষ্টির প্রভাবাধীন।
[২] পূর্বোক্ত পদ্ধতি ছাড়া অন্য কোনো পন্থার ঝাড়-ফুঁক করা নাজায়েয। মানুষের উপকার ও কল্যাণের জন্য ঝাড়-ফুঁক চিকিৎসাকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়া এবং বিনিময়ে কিছু (অর্থ) নেয়া জায়েয। তবে জাদু-টোনা, সাধু-সন্নাসী, গনক, ও বিদআতীদের সর্বপ্রকার বাজে কর্মকাণ্ড, কুসংস্কার এবং বিভ্রান্তি থেকে দূরে থাকতে হবে। টেপরেকর্ডার, মাইক এবং টেলিফোনের মাধ্যমে ঝাড়-ফুঁক করা যাবে না। কেননা বৈধ উপায়ে ঝাড়-ফুঁক করা ইবাদাতের অন্তর্ভুক্ত; যে কোনো কাজ-কর্ম, ইবাদাত বন্দেগী শরীয়ত নির্ধারিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা অপরিহার্য। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবাদের অনুসরণের মধ্যে বহুবিধ কল্যাণ নিহিত, তথা: মহান আল্লাহর সাথে অন্য কিছুর শরীক না হওয়ার উপায় এবং দীন ইসলামে কোনো প্রকার বিদআতের অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ করাও সম্ভব হয়। সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহ রাববুল আলামীনের প্রশংসা করা ঈমানদারদের একান্ত কর্তব্য।
উত্তর: ঝাড়-ফুঁক যাকে আরবীতে ‘রুকা’ বলা হয়, যা ‘রুকিয়া’ শব্দের বহুবচন। রুকিয়া হলো; ঝাড়-ফুঁক ব্যবহার করে জ্বর, বিষাক্ত কিছুর দংশন, বেহুশ হওয়া ইত্যাদি রোগ ব্যাধি নিরাময় বা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এ কাজকে অপরিহার্য ঝাড়-ফুঁকমন্ত্র হিসেবে অভিহিত। আর তা দু প্রকার:
[১] জায়েয:- যে ঝাড়-ফুক শির্ক মুক্ত তা তিনটি শর্তে জায়েয হবে; যথা: (ক) শরীয়তসম্মত আরবী বাক্য দ্বারা বোধগম্য অথবা বৈধ দো‘আর সঠিক ভাবার্থ পাঠ দ্বারা।
(খ) আল্লাহর কালাম, আল্লাহর নাম ও গুণ দ্বারা অথবা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীসে উল্লিখিত বাক্য দ্বারা।
(গ) দৃঢ় বিশ্বাস থাকতে হবে যে, ঝাড়-ফুঁকের বিশেষ (স্বতন্ত্র) কোনো প্রভাব নেই বরং সবই আল্লাহর সন্তুষ্টি বা অসন্তুষ্টির প্রভাবাধীন।
[২] পূর্বোক্ত পদ্ধতি ছাড়া অন্য কোনো পন্থার ঝাড়-ফুঁক করা নাজায়েয। মানুষের উপকার ও কল্যাণের জন্য ঝাড়-ফুঁক চিকিৎসাকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়া এবং বিনিময়ে কিছু (অর্থ) নেয়া জায়েয। তবে জাদু-টোনা, সাধু-সন্নাসী, গনক, ও বিদআতীদের সর্বপ্রকার বাজে কর্মকাণ্ড, কুসংস্কার এবং বিভ্রান্তি থেকে দূরে থাকতে হবে। টেপরেকর্ডার, মাইক এবং টেলিফোনের মাধ্যমে ঝাড়-ফুঁক করা যাবে না। কেননা বৈধ উপায়ে ঝাড়-ফুঁক করা ইবাদাতের অন্তর্ভুক্ত; যে কোনো কাজ-কর্ম, ইবাদাত বন্দেগী শরীয়ত নির্ধারিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা অপরিহার্য। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবাদের অনুসরণের মধ্যে বহুবিধ কল্যাণ নিহিত, তথা: মহান আল্লাহর সাথে অন্য কিছুর শরীক না হওয়ার উপায় এবং দীন ইসলামে কোনো প্রকার বিদআতের অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ করাও সম্ভব হয়। সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহ রাববুল আলামীনের প্রশংসা করা ঈমানদারদের একান্ত কর্তব্য।
উত্তর: ‘তামায়েম’ শব্দটি আরবী; যা ‘তামীমা’ শব্দের বহুবচন। অভিধানিক অর্থ হলো রক্ষা-কবচ। আর পারিভাষিক অর্থ হলো: যে সব বস্তু তাবিজ-তুমার আকারে (লোহা, তামা,কড়ি, কাঠ, পাথর ইত্যাদি) বাচ্চাদেরকে বদ নজর হইতে রক্ষা করার জন্য গলায় ঝুলানো হয় বা কোথাও বেঁধে রক্ষা-কবচ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দীন ইসলামে এ সব তাবিজ-তুমার নিষিদ্ধ, হারাম এবং বাতিল। কেননা আল্লাহ ছাড়া আর কেউই হেফাযত বা রক্ষা করতে পারে না [হামিয়াতু তাওহীদ পৃ: ৯০, ৯১ মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল ওয়াহহাব।]।
উত্তর: ‘তিওয়ালা’ এক প্রকার জাদুমন্ত্র। ধারণা করা হয়ে থাকে যে, এ ধরনের জাদু-মন্ত্র ব্যবহার করলে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক ভালোবাসা অটুট থাকে। আর শির্কের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণ হলো, আল্লাহ ব্যতীত এসব জাদু-মন্ত্রকে কল্যাণকর বা অকল্যাণ প্রতিরোধক হিসেবে গ্রহণ করা।
উত্তর: পাথর এবং গাছ থেকৈ তাবাররুক অর্জনের প্রচেষ্টা করা শির্ক। কেননা ঐসব বস্তু ছুয়ে-স্পর্শ করে অথবা তার নিকটবর্তী হয়ে পানাহার করা কিংবা প্রার্থনা করা হয় বরকত লাভের নিয়তে। [অথচ এ গুলোতে কোনো বরকত রয়েছে বলে কুরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় নি]
﴿ أَفَرَءَيۡتُمُ ٱللَّٰتَ وَٱلۡعُزَّىٰ ١٩ وَمَنَوٰةَ ٱلثَّالِثَةَ ٱلۡأُخۡرَىٰٓ ٢٠ ﴾ [ النجم : ١٩، ٢٠ ]
‘‘(১৯) তোমরা কি ভেবে দেখেছ ‘‘লাত ও উযযার অবস্থা সম্বন্ধে? (২০) এবং তৃতীয় আরেকটি মানাত সম্পর্কে?’’ (সূরা আন-নাজম) এ আয়াতে উল্লেখিত নামগুলো কিসের এবং এ নামকরণের উদ্দেশ্য কি? আয়াতের ব্যাখ্যা কি?
উত্তর: লাত, উযযা এবং মানাত এ তিনটি জাহেলী (অজ্ঞতা, অন্ধকার) যুগের মুশরিকদের দেব-দেবীর নাম। মুশরিকরা এগুলোর ইবাদাত উপাসনা করতো। ‘‘আফরাআইতুম’’ অর্থাৎ তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদেরকে ইলাহ বানিয়ে ইবাদাত করছো তাদের দ্বারা কারো উপকার বা অপকার হতে দেখেছো? অতঃপর ঐ সব বস্তুকে মহীয়ান গরিয়ান আল্লাহর শরীক বানানো যেতে পারে কি?
‘আল-লাত’ শব্দের ‘তা’ তাশদীদ বিহিন পড়লে অর্থ হবে, তৎকালিন তায়েফে অবস্থিত বড় একটি পাথর। এ পাথর কেন্দ্রিক ঘর তৈরী করে তার উপরে আবার কাপড়ের পর্দা ঝুলানো হয়। এ স্থানকে সাকিফ গোত্র সম্মান করত। (মক্কা বিজয়ের পর) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ স্থানে মুগিরা ইবনে শু‘বা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে প্রেরণ করেন, মুগিরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ঐ পুজা মন্ডুপ ভেঙ্গে চুরমার করে আগুন জ্বালিয়ে দেন। মুশরিক সম্প্রদায় আল-ইলাহ হতে আল-লাত শব্দ উদ্ভাবন করেছে। পক্ষান্তরে ‘আল-লাত’ শব্দের ‘তা’ বর্ণে তাশদীদ দিয়ে পাঠ করলে অর্থ হবে একজন ভালো লোকের নাম। ঐ ব্যক্তি হাজীদের ছাতুতে পানি মিশিয়ে দিত বা হাজীদেরকে সাহায্য করত। সে মারা গেলে লোকজন তার কবরের কাছে জড়ো হয়ে বাড়াবাড়ির এক পর্যায়ে মৃত ব্যক্তির পূজা-বন্দেগী শুরু করে দেয়। আলোচিত ব্যাখ্যা দুটির মধ্যে কোনো বৈপরিত্ব নেই।
‘আল-উয্যা’ হচ্ছে, মক্কা ও তায়েফের মধ্যস্থিত ‘নাখলা’ উপত্যকার একটি গাছ। কুরাইশরা এটাকে পূজা-ইবাদাত উপাসনা এবং তাজিম করত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিন এটাকে ধ্বংস করার জন্য খালিদ ইবন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহুকে প্রেরণ করেন এবং তা ধ্বংস করা হয়। উয্যা শব্দটি আরবী ‘ঈযযা’ বা সম্মান-ইযযত ধাতু হতে গৃহীত।
আর ‘মানাত’ হচ্ছে মক্কা ও মদিনার মধ্যস্থিত একটি প্রকাণ্ড পাথর। এটাকে আওস ও খাযরাজ গোত্রদ্বয় ভক্তি সম্মান-তাজিম করত। মানাত শব্দটি আল-মান্নান বা ‘সর্বশ্রেষ্ঠ হিতকারী’ যা আল্লাহর নাম হতে গ্রহণ করা হয়েছে। কথিত আছে যে ঐ পাথরের কাছে জাহেলী যুগের লোকেরা বরকতের জন্য জীব-জন্তুর রক্ত প্রবাহিত (যবাই) করে মন বাসনা পূরণের আশা করতো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের বৎসর ঐ স্থানে আলী ইবনে আবী তালেব রাদিয়াল্লাহু আনহুকে প্রেরণ করেন, অতঃপর তিনি তা ধ্বংস করে দেন [জামে আল-ফরিদ পৃ:৫২।]।
‘‘(১৯) তোমরা কি ভেবে দেখেছ ‘‘লাত ও উযযার অবস্থা সম্বন্ধে? (২০) এবং তৃতীয় আরেকটি মানাত সম্পর্কে?’’ (সূরা আন-নাজম) এ আয়াতে উল্লেখিত নামগুলো কিসের এবং এ নামকরণের উদ্দেশ্য কি? আয়াতের ব্যাখ্যা কি?
উত্তর: লাত, উযযা এবং মানাত এ তিনটি জাহেলী (অজ্ঞতা, অন্ধকার) যুগের মুশরিকদের দেব-দেবীর নাম। মুশরিকরা এগুলোর ইবাদাত উপাসনা করতো। ‘‘আফরাআইতুম’’ অর্থাৎ তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদেরকে ইলাহ বানিয়ে ইবাদাত করছো তাদের দ্বারা কারো উপকার বা অপকার হতে দেখেছো? অতঃপর ঐ সব বস্তুকে মহীয়ান গরিয়ান আল্লাহর শরীক বানানো যেতে পারে কি?
‘আল-লাত’ শব্দের ‘তা’ তাশদীদ বিহিন পড়লে অর্থ হবে, তৎকালিন তায়েফে অবস্থিত বড় একটি পাথর। এ পাথর কেন্দ্রিক ঘর তৈরী করে তার উপরে আবার কাপড়ের পর্দা ঝুলানো হয়। এ স্থানকে সাকিফ গোত্র সম্মান করত। (মক্কা বিজয়ের পর) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ স্থানে মুগিরা ইবনে শু‘বা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে প্রেরণ করেন, মুগিরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ঐ পুজা মন্ডুপ ভেঙ্গে চুরমার করে আগুন জ্বালিয়ে দেন। মুশরিক সম্প্রদায় আল-ইলাহ হতে আল-লাত শব্দ উদ্ভাবন করেছে। পক্ষান্তরে ‘আল-লাত’ শব্দের ‘তা’ বর্ণে তাশদীদ দিয়ে পাঠ করলে অর্থ হবে একজন ভালো লোকের নাম। ঐ ব্যক্তি হাজীদের ছাতুতে পানি মিশিয়ে দিত বা হাজীদেরকে সাহায্য করত। সে মারা গেলে লোকজন তার কবরের কাছে জড়ো হয়ে বাড়াবাড়ির এক পর্যায়ে মৃত ব্যক্তির পূজা-বন্দেগী শুরু করে দেয়। আলোচিত ব্যাখ্যা দুটির মধ্যে কোনো বৈপরিত্ব নেই।
‘আল-উয্যা’ হচ্ছে, মক্কা ও তায়েফের মধ্যস্থিত ‘নাখলা’ উপত্যকার একটি গাছ। কুরাইশরা এটাকে পূজা-ইবাদাত উপাসনা এবং তাজিম করত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের দিন এটাকে ধ্বংস করার জন্য খালিদ ইবন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহুকে প্রেরণ করেন এবং তা ধ্বংস করা হয়। উয্যা শব্দটি আরবী ‘ঈযযা’ বা সম্মান-ইযযত ধাতু হতে গৃহীত।
আর ‘মানাত’ হচ্ছে মক্কা ও মদিনার মধ্যস্থিত একটি প্রকাণ্ড পাথর। এটাকে আওস ও খাযরাজ গোত্রদ্বয় ভক্তি সম্মান-তাজিম করত। মানাত শব্দটি আল-মান্নান বা ‘সর্বশ্রেষ্ঠ হিতকারী’ যা আল্লাহর নাম হতে গ্রহণ করা হয়েছে। কথিত আছে যে ঐ পাথরের কাছে জাহেলী যুগের লোকেরা বরকতের জন্য জীব-জন্তুর রক্ত প্রবাহিত (যবাই) করে মন বাসনা পূরণের আশা করতো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের বৎসর ঐ স্থানে আলী ইবনে আবী তালেব রাদিয়াল্লাহু আনহুকে প্রেরণ করেন, অতঃপর তিনি তা ধ্বংস করে দেন [জামে আল-ফরিদ পৃ:৫২।]।
﴿ قُلۡ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحۡيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ١٦٢ لَا شَرِيكَ لَهُۥۖ وَبِذَٰلِكَ أُمِرۡتُ وَأَنَا۠ أَوَّلُ ٱلۡمُسۡلِمِينَ ١٦٣ ﴾ [ الانعام : ١٦٢، ١٦٣ ]
‘‘(১৬২) বলুন অবশ্যই আমার নামায, আমার হজ্জ-কুরবানী-ইবাদাত, আমার জীবন, আমার মৃত্যু শুধুমাত্র আল্লাহ রাববুল আলামীনের জন্যই। (১৬৩) তার কোনো শরীক বা অংশীদার নেই, আমি ঐ সবের জন্যই আদিষ্ট হয়েছি এবং মুসলিমগণের মধ্যে আমিই প্রথম’’। (সূরা আল আন‘আম)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَٱنۡحَرۡ ٢ ﴾ [ الكوثر : ٢ ]
‘‘তুমি আল্লাহরই জন্য সালাত পড় এবং যবেহ কর’’। (কাওসার ২)
উল্লেখিত আয়াতসমূহের ব্যাখ্যা কি? আর নুসুক বলতে কি বুঝায়?
উত্তর: প্রথম আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, হে মুহাম্মাদ! আপনি বলুন ঐ সব মুশরিক সম্প্রদায়কে যারা আল্লাহ ব্যতীত অন্যদের ইবাদাত, উপাসনা এবং অন্যদের জন্য প্রশু যবেহ করে থাকে। অবশ্যই আমি একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য আমার সালাত ইবাদাত যবাই কুরবানী, জীবনে বেঁচে থাকা এবং ঈমানের সাথে নেক কাজে জড়িতাবস্থায় যেন আমার মৃত্যু হয়। সব কিছুই লা-শরীক আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টির জন্য সম্পন্ন করতে আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আর সব কিছুই নিষ্ঠার সাথে সম্পন্ন করার জন্য আমি আদিষ্ট এবং এ উম্মতের মধ্যে আমিই প্রথম মুসলিম।
আর ‘নুসুক’ হচ্ছে কুরবানী বা যবাই।
আর সূরা আল কাওসারের দ্বিতীয় আয়াতের ভাবার্থ হচ্ছে; সালাত ইবাদাত এবং কুরবানী একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্যই সম্পন্ন করতে হবে। সর্বাবস্থায় মুশরিকদের বিরুদ্ধাচারণ করতে হবে [আল জামে-আল ফরিদ পৃ:৫৩।]।
‘‘(১৬২) বলুন অবশ্যই আমার নামায, আমার হজ্জ-কুরবানী-ইবাদাত, আমার জীবন, আমার মৃত্যু শুধুমাত্র আল্লাহ রাববুল আলামীনের জন্যই। (১৬৩) তার কোনো শরীক বা অংশীদার নেই, আমি ঐ সবের জন্যই আদিষ্ট হয়েছি এবং মুসলিমগণের মধ্যে আমিই প্রথম’’। (সূরা আল আন‘আম)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَٱنۡحَرۡ ٢ ﴾ [ الكوثر : ٢ ]
‘‘তুমি আল্লাহরই জন্য সালাত পড় এবং যবেহ কর’’। (কাওসার ২)
উল্লেখিত আয়াতসমূহের ব্যাখ্যা কি? আর নুসুক বলতে কি বুঝায়?
উত্তর: প্রথম আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, হে মুহাম্মাদ! আপনি বলুন ঐ সব মুশরিক সম্প্রদায়কে যারা আল্লাহ ব্যতীত অন্যদের ইবাদাত, উপাসনা এবং অন্যদের জন্য প্রশু যবেহ করে থাকে। অবশ্যই আমি একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য আমার সালাত ইবাদাত যবাই কুরবানী, জীবনে বেঁচে থাকা এবং ঈমানের সাথে নেক কাজে জড়িতাবস্থায় যেন আমার মৃত্যু হয়। সব কিছুই লা-শরীক আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টির জন্য সম্পন্ন করতে আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আর সব কিছুই নিষ্ঠার সাথে সম্পন্ন করার জন্য আমি আদিষ্ট এবং এ উম্মতের মধ্যে আমিই প্রথম মুসলিম।
আর ‘নুসুক’ হচ্ছে কুরবানী বা যবাই।
আর সূরা আল কাওসারের দ্বিতীয় আয়াতের ভাবার্থ হচ্ছে; সালাত ইবাদাত এবং কুরবানী একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্যই সম্পন্ন করতে হবে। সর্বাবস্থায় মুশরিকদের বিরুদ্ধাচারণ করতে হবে [আল জামে-আল ফরিদ পৃ:৫৩।]।
৬১
{প্রশ্ন:৫৯} আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে চারটি কথা বলেছেন:‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাহারো জন্য যবেহ করে তার জন্য আল্লাহর লা’নত (অভিশাপ বা ধ্বংস),
যে ব্যক্তি তার মাতা-পিতাকে অভিশাপ দিবে তার জন্যেও আল্লাহর অবিশাপ বা ধ্বংস,
যে ব্যক্তি বিদ‘আত-ভ্রষ্টতাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিবে তার জন্যেও আল্লাহর অভিশাপ-ধ্বংস,
যে ব্যক্তি যমীনের (মালিকানা নির্ধারক) নিদর্শন (চিহ্ন) পরিবর্তন করবে তাকেও আল্লাহ ধ্বংস করে দিবেন’’ (মুসলিম নং ১৯১৮)
হাদীসে বর্ণিত আল-লা‘ন শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: আল-লা‘ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হলে তার অর্থ হবে; আল্লাহর রহমত থেকে বিতাড়িত এবং বঞ্চিত হওয়া। আর আল-লা‘ন সৃষ্টির পক্ষ থেকে হলে অর্থ হবে; গালি ও ক্ষতিকর দো‘আ।
যে ব্যক্তি তার মাতা-পিতাকে অভিশাপ দিবে তার জন্যেও আল্লাহর অবিশাপ বা ধ্বংস,
যে ব্যক্তি বিদ‘আত-ভ্রষ্টতাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিবে তার জন্যেও আল্লাহর অভিশাপ-ধ্বংস,
যে ব্যক্তি যমীনের (মালিকানা নির্ধারক) নিদর্শন (চিহ্ন) পরিবর্তন করবে তাকেও আল্লাহ ধ্বংস করে দিবেন’’ (মুসলিম নং ১৯১৮)
হাদীসে বর্ণিত আল-লা‘ন শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: আল-লা‘ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হলে তার অর্থ হবে; আল্লাহর রহমত থেকে বিতাড়িত এবং বঞ্চিত হওয়া। আর আল-লা‘ন সৃষ্টির পক্ষ থেকে হলে অর্থ হবে; গালি ও ক্ষতিকর দো‘আ।
৬৩
{প্রশ্ন:৬১} মাতা-পিতাকে লা‘নত করার অর্থ কি? তাদেরকে কীভাবে লা‘নত করা হয়? তাদেরকে লা‘নত করার হুকুম কি?উত্তর: মাতা বা পিতাকে গালি দেওয়া বা মন্দ কথা বলা। তাদেরকে দুটি প্রক্রিয়ায় লানত করা হয়:
(ক) সরাসরি গালি দেওয়া, মন্দ কথা বলা; মাতা-পিতা উভয়কে অথবা যে কোনো একজনকে।
(খ) ভায়া বা ভিন্ন উপায়ে বা পরোক্ষ ভাবে গাল-মন্দ শুনানো যেমন; এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির পিতাকে গালি-মন্দ করার ফলে দ্বিতীয় ব্যাক্তি প্রতিশোধমূলক পূর্বোক্ত ব্যক্তির পিতাকে গালি-মন্দ করবে। মাতা-পিতাকে গালি-মন্দ করা কবীরা গুনাহ।
(ক) সরাসরি গালি দেওয়া, মন্দ কথা বলা; মাতা-পিতা উভয়কে অথবা যে কোনো একজনকে।
(খ) ভায়া বা ভিন্ন উপায়ে বা পরোক্ষ ভাবে গাল-মন্দ শুনানো যেমন; এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির পিতাকে গালি-মন্দ করার ফলে দ্বিতীয় ব্যাক্তি প্রতিশোধমূলক পূর্বোক্ত ব্যক্তির পিতাকে গালি-মন্দ করবে। মাতা-পিতাকে গালি-মন্দ করা কবীরা গুনাহ।
উত্তর: ‘আওয়া’ অর্থ দীনের দুশমনকে সাহায্য করা, তার সাথে নিজকে শামিল করা, তাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া এবং সত্যকে উপলব্ধি করে তা গ্রহণ করার ব্যাপারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা।
‘মুহদিস’ হচ্ছে সে, যে ব্যক্তি মনগড়া কোনো কিছুকে দীনের মধ্যে শামিল করে। অতঃপর তা আল্লাহর অধিকারকে বিভ্রান্ত করে দেয় ও দুনিয়ায় বিপর্যয় সৃষ্টি করে।
রাষ্ট্র পরিচালক বিধি সম্মত পন্থায় মহান আল্লাহর বিধানসমূহ বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানাবে, যে ব্যক্তি আল্লাহর বিধান ছাড়া অন্য কোনো উপায় অনুসন্ধান করে সেও মুহদিস।
‘মুহদিস’ হচ্ছে সে, যে ব্যক্তি মনগড়া কোনো কিছুকে দীনের মধ্যে শামিল করে। অতঃপর তা আল্লাহর অধিকারকে বিভ্রান্ত করে দেয় ও দুনিয়ায় বিপর্যয় সৃষ্টি করে।
রাষ্ট্র পরিচালক বিধি সম্মত পন্থায় মহান আল্লাহর বিধানসমূহ বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানাবে, যে ব্যক্তি আল্লাহর বিধান ছাড়া অন্য কোনো উপায় অনুসন্ধান করে সেও মুহদিস।
উত্তর: মানারুল আরদ হচ্ছে জমি-জমার সীমানায় পরিবর্তন ঘটানো, সীমানার চিহ্ন অপসারণ একটার বদলে অন্যটাকে গ্রহণ। পৃথিবীর প্রান্ত সীমা ও নিদর্শনসমূহ মানারুল আরদের অন্তর্ভুক্ত।
কেউ কেউ বলেন এটি এমন এক নিদর্শন যার মাধ্যমে ভ্রমণ, সফর কালে পথ খুজে পাওয়া যায়।
আবার কেউ বলেন: যার সাহায্যে একজন মানুষের অধিকার এবং তার প্রতিবেশীর অধিকারের মধ্যে পার্থক্য নির্ধারিত হয়। অতঃপর তাদের প্রাপ্য অধিকার আগ-পিছ করে বদলে দেওয়া।
কেউ কেউ বলেন এটি এমন এক নিদর্শন যার মাধ্যমে ভ্রমণ, সফর কালে পথ খুজে পাওয়া যায়।
আবার কেউ বলেন: যার সাহায্যে একজন মানুষের অধিকার এবং তার প্রতিবেশীর অধিকারের মধ্যে পার্থক্য নির্ধারিত হয়। অতঃপর তাদের প্রাপ্য অধিকার আগ-পিছ করে বদলে দেওয়া।
উত্তর: আভিধানিক অর্থ হলো বাধ্য হওয়া। পারিভাষিক অর্থে: স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে যথোপযুক্ত বয়সে নিজকে কোনো কিছু পালনে বাধ্য করা যা শরীয়ত নির্ধারিত বাধ্যতামূলক কর্তব্যের অন্তর্ভুক্ত নয়।
মহামহিয়ান আল্লাহ বলেন:
﴿ يُوفُونَ بِٱلنَّذۡرِ﴾ [ الانسان : ٧ ]
‘‘তারা মানতসমূহ আদায় করে’’। (সূরা আল ইনসান বা আদ-দাহর:৭)
মহামহিয়ান আল্লাহ বলেন:
﴿ يُوفُونَ بِٱلنَّذۡرِ﴾ [ الانسان : ٧ ]
‘‘তারা মানতসমূহ আদায় করে’’। (সূরা আল ইনসান বা আদ-দাহর:৭)
৬৯
{প্রশ্ন: ৬৭} আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত আছে; রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্যমূলক মানত করবে সে যেন তা পালন (বাস্তবায়ন) করে, আর যে ব্যক্তি আল্লাহর নাফরমানীমূলক মানত করবে সে যেন তা পালন না করে’’। (বুখারী নং ২০৫৪ মুখতাসার যুবাইদি পৃ: ৭০৩)।এ হাদীসের ব্যাখ্যা কি এবং শিক্ষণীয় কি?
উত্তর: রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করেন: যে ব্যক্তি মানতের মাধ্যমে নেক কাজ করার জন্য নিজকে দায়বদ্ধ করলে সে যেন তা সুষ্ঠুভাবে পালন করে। কেননা আল্লাহর আনুগত্যমূলক কাজ সম্পন্ন করা ওয়াজিব বা অবশ্য কর্তব্য। আর যে ব্যক্তি কোনো প্রকার গুনাহর কাজ করার জন্য মানত করবে সে যেন তা সম্পন্ন না করে। কেননা আল্লাহর নাফরমানী করা হারাম।
হাদীস থেকে শিক্ষনীয় বিষয়গুলো নিম্নরূপ:
(১) যে কোনো প্রকার নেক মানত পালন করা ওয়াজিব বা অবশ্য কর্তব্য।
(২) নাফরমানীমূলক বা যে কোনো প্রকার গুনাহর মানত সম্পন্ন করা জায়েয হবে না।
উত্তর: রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করেন: যে ব্যক্তি মানতের মাধ্যমে নেক কাজ করার জন্য নিজকে দায়বদ্ধ করলে সে যেন তা সুষ্ঠুভাবে পালন করে। কেননা আল্লাহর আনুগত্যমূলক কাজ সম্পন্ন করা ওয়াজিব বা অবশ্য কর্তব্য। আর যে ব্যক্তি কোনো প্রকার গুনাহর কাজ করার জন্য মানত করবে সে যেন তা সম্পন্ন না করে। কেননা আল্লাহর নাফরমানী করা হারাম।
হাদীস থেকে শিক্ষনীয় বিষয়গুলো নিম্নরূপ:
(১) যে কোনো প্রকার নেক মানত পালন করা ওয়াজিব বা অবশ্য কর্তব্য।
(২) নাফরমানীমূলক বা যে কোনো প্রকার গুনাহর মানত সম্পন্ন করা জায়েয হবে না।
উত্তর: আল-ইসতিআযা হচ্ছে; পানাহ, পরিত্রাণ এবং মযবুত অবলম্বন।
আল-ইয়ায এবং লিয়ায এর মধ্যে প্রার্থক্য; আল-ইয়ায হচ্ছে: আশ্রয়-অবলম্বন করা, অনিষ্ট ও ক্ষতি প্রতিরোধের জন্যে। আল-লিয়ায হচ্ছে: আশ্রয় সুযোগ গ্রহণ করা কল্যাণ অর্জনের জন্যে।
আল-ইয়ায এবং লিয়ায এর মধ্যে প্রার্থক্য; আল-ইয়ায হচ্ছে: আশ্রয়-অবলম্বন করা, অনিষ্ট ও ক্ষতি প্রতিরোধের জন্যে। আল-লিয়ায হচ্ছে: আশ্রয় সুযোগ গ্রহণ করা কল্যাণ অর্জনের জন্যে।
﴿ وَأَنَّهُۥ كَانَ رِجَالٞ مِّنَ ٱلۡإِنسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٖ مِّنَ ٱلۡجِنِّ فَزَادُوهُمۡ رَهَقٗا ٦ ﴾ [ الجن : ٦ ]
‘‘মানুষের মধ্য থেকে কতিপয় লোক জ্বিন সম্প্রদায়ের মধ্যস্থিত কিছু জ্বিনের আশ্রয় নিতো। ফলে ঐ মানুষগুলো জ্বিনদের মান মর্যাদা আত্মন্তরিতা বাড়িয়ে দিতো’’। (সূরা আল-জ্বিন:৬)
এ আয়াতের ব্যাখ্যা কী? এ আয়াত থেকে কী জানা গেল বা কী প্রমাণিত হলো?
উত্তর: জাহেলীযুগের আরব ব্যক্তি জন-মানবহীন কোনো উপত্যকায় গিয়ে বা অপরাহ্নে অবস্থান করার সময় ভয় পেত এবং বলত যে; এ উপত্যকায় যারা আছে আমি তাদের নেতার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। অর্থাৎ জ্বিনদের নেতা। আর জ্বিনেরা যখন দেখলো যে, মানুষ তাদেরকে ভয় করে এব তাদের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তখন তাদের মধ্যে আত্মভরিতা অহংকার ও প্রতাপ-দাপট বৃদ্ধি পেল, আর তাদের ব্যাপারে মানুষের ভয়-ভীতি এবং আতংক বৃদ্ধি পেল।
এ আয়াত হতে জানা গেল যে; রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থাপিত দীনে হক জেনে-বুঝে গ্রহণকারী ঈমানদার জ্বিন সম্প্রদায় জাহেলী (বেদীন) অবস্থায় যেসব পাপাচারে লিপ্ত হত কিংবা শির্ক করত এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর আশ্রয় সাহায্য প্রার্থনা করত, তারাই মহান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর আশ্রয় ও সাহায্য প্রার্থনা করত, এখানে মহান আল্লাহ সে কথাই বিবৃত করেছেন [আল-জামে আল-ফরিদ, পৃষ্ঠা:৬২ । ইবনে কাসেমের হাশিয়াতু কিতাব আত-তাওহীদ, পৃষ্ঠা: ১১৩।]।
‘‘মানুষের মধ্য থেকে কতিপয় লোক জ্বিন সম্প্রদায়ের মধ্যস্থিত কিছু জ্বিনের আশ্রয় নিতো। ফলে ঐ মানুষগুলো জ্বিনদের মান মর্যাদা আত্মন্তরিতা বাড়িয়ে দিতো’’। (সূরা আল-জ্বিন:৬)
এ আয়াতের ব্যাখ্যা কী? এ আয়াত থেকে কী জানা গেল বা কী প্রমাণিত হলো?
উত্তর: জাহেলীযুগের আরব ব্যক্তি জন-মানবহীন কোনো উপত্যকায় গিয়ে বা অপরাহ্নে অবস্থান করার সময় ভয় পেত এবং বলত যে; এ উপত্যকায় যারা আছে আমি তাদের নেতার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। অর্থাৎ জ্বিনদের নেতা। আর জ্বিনেরা যখন দেখলো যে, মানুষ তাদেরকে ভয় করে এব তাদের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তখন তাদের মধ্যে আত্মভরিতা অহংকার ও প্রতাপ-দাপট বৃদ্ধি পেল, আর তাদের ব্যাপারে মানুষের ভয়-ভীতি এবং আতংক বৃদ্ধি পেল।
এ আয়াত হতে জানা গেল যে; রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থাপিত দীনে হক জেনে-বুঝে গ্রহণকারী ঈমানদার জ্বিন সম্প্রদায় জাহেলী (বেদীন) অবস্থায় যেসব পাপাচারে লিপ্ত হত কিংবা শির্ক করত এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর আশ্রয় সাহায্য প্রার্থনা করত, তারাই মহান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর আশ্রয় ও সাহায্য প্রার্থনা করত, এখানে মহান আল্লাহ সে কথাই বিবৃত করেছেন [আল-জামে আল-ফরিদ, পৃষ্ঠা:৬২ । ইবনে কাসেমের হাশিয়াতু কিতাব আত-তাওহীদ, পৃষ্ঠা: ১১৩।]।
৭২
{প্রশ্ন: ৭০} খাওলা বিনতে হাকীম রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন: রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি; যে ব্যক্তি কোনো বাসা-বাড়িতে প্রবেশ করে পাঠ করে: ‘‘আউযু বি কালিমাতিল্লাহিততা-ম্মাতি মিন শাররী মা খালাকা’’ এ বাড়িতে অবস্থান কালে ঐ ব্যক্তির কোনো ক্ষতি হবে না। (মুসলিম-২৭০৮)হাদীসের শিক্ষণীয় বিষয়গুলো কী কী? ‘কালিমাতিল্লাহি’ দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে এবং আত-তাম্মাত অর্থ কী?
উত্তর: হাদীসের শিক্ষনীয় বিষয় নিম্নরূপ;
(১) আল্লাহ তা‘আলা দীন ইসলামের অনুসারীদেরকে আশ্রয় প্রার্থনা করার বৈধ উপায় জানিয়ে দিয়েছে। অতঃপর কেউ যেন জাহিলী যুগের অজ্ঞলোকদের মত জ্বিনদের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা না করে।
(২) হাদীসে বর্ণিত দো‘আর ফযিলত বা উপকারিতা জানা গেল।
[‘কালিমাতিল্লাহি’ দ্বারা] আল কুরআনের কথা বলা হয়েছে। আত-[তা-ম্মা-ত’ অর্থ]: পুর্ণাংগ বা সম্পূর্ণ, তাতে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি অপূর্ণতা বা ঘাটতি নেই। আবার কেউ কেউ বলেছেন, সর্ববিষয়ে সর্বোচ্চ প্রয়োজন পূরণকারী। তবে মানুষের রচিত পুস্তকাদি ত্রুটি-বিচ্যুতি মুক্ত নয় এবং পূর্ণাঙ্গ নয়।
উত্তর: হাদীসের শিক্ষনীয় বিষয় নিম্নরূপ;
(১) আল্লাহ তা‘আলা দীন ইসলামের অনুসারীদেরকে আশ্রয় প্রার্থনা করার বৈধ উপায় জানিয়ে দিয়েছে। অতঃপর কেউ যেন জাহিলী যুগের অজ্ঞলোকদের মত জ্বিনদের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা না করে।
(২) হাদীসে বর্ণিত দো‘আর ফযিলত বা উপকারিতা জানা গেল।
[‘কালিমাতিল্লাহি’ দ্বারা] আল কুরআনের কথা বলা হয়েছে। আত-[তা-ম্মা-ত’ অর্থ]: পুর্ণাংগ বা সম্পূর্ণ, তাতে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি অপূর্ণতা বা ঘাটতি নেই। আবার কেউ কেউ বলেছেন, সর্ববিষয়ে সর্বোচ্চ প্রয়োজন পূরণকারী। তবে মানুষের রচিত পুস্তকাদি ত্রুটি-বিচ্যুতি মুক্ত নয় এবং পূর্ণাঙ্গ নয়।
উত্তর: আল-ইসতেগাসা হচ্ছে, বিপদে-আপদে আক্রান্ত হয়ে সাহায্য প্রার্থনা করা।
ইসতিগাসা এবং দো‘আর মধ্যে পার্থক্য: ইস্তিগাসা বিশেষভাবে বিপদ-আপদ আক্রান্ত হয়ে সাহায্য প্রার্থনা করা আর দো‘আ বিপদ-আপদ ছাড়াও যে কোনো প্রয়োজনে যখন ইচ্ছা করা হয়ে থাকে।
ইসতিগাসা এবং দো‘আর মধ্যে পার্থক্য: ইস্তিগাসা বিশেষভাবে বিপদ-আপদ আক্রান্ত হয়ে সাহায্য প্রার্থনা করা আর দো‘আ বিপদ-আপদ ছাড়াও যে কোনো প্রয়োজনে যখন ইচ্ছা করা হয়ে থাকে।
উত্তর: সাহায্য বা আশ্রয় প্রার্থনা দুই প্রকার;
(ক) শরীয়তসম্মত বৈধ ইস্তিগাসা
(খ) শরীয়ত পরিপন্থী নিষিদ্ধ ইস্তিগাসা।
নিষিদ্ধ ইসতিগাসা: আল্লাহ ছাড়া এমন কারো সাহায্য আশ্রয় চাওয়া বা ধর্ণা দেওয়া যার পক্ষে কিছুই করা সম্ভব নয়। যেমন; মৃত ব্যক্তির নিকট আবেদন নিবেদন, সাহায্য চাওয়া।
অতএব সার্বিক বিশ্লেষণে ইসতিগাসা তিন প্রকার:
(এক) আল্লাহর নিকট চাওয়া বা ধর্ণা দেওয়া। খালেছভাবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলার কাছে ধর্ণা দেওয়া এবং অন্য সবকিছু অগ্রাহ্য করা অবশ্য কর্তব্য।
(দুই) আল্লাহ ছাড়া মৃত, অনুপস্থিত বা অন্য যাদের পক্ষে কিছুই করা সম্ভব নয় তাদের কাছে বিপদ-আপদে অথবা যে কোনো সাহায্য চাওয়া হারাম; কেননা তা শির্ক।
(তিন) যে জীবিত এবং সাহায্য ও উপকার করতে সক্ষম তার কাছে আবেদন নিবেদন করা কিংবা ধর্ণা দেওয়া জায়েয বা বৈধ। [আল-জামে আল ফরিদ পৃ: ৬৫। হাশিয়াতু ইবনে কাসেম আত তাওহীদ পৃ: ১১৫।]
(ক) শরীয়তসম্মত বৈধ ইস্তিগাসা
(খ) শরীয়ত পরিপন্থী নিষিদ্ধ ইস্তিগাসা।
নিষিদ্ধ ইসতিগাসা: আল্লাহ ছাড়া এমন কারো সাহায্য আশ্রয় চাওয়া বা ধর্ণা দেওয়া যার পক্ষে কিছুই করা সম্ভব নয়। যেমন; মৃত ব্যক্তির নিকট আবেদন নিবেদন, সাহায্য চাওয়া।
অতএব সার্বিক বিশ্লেষণে ইসতিগাসা তিন প্রকার:
(এক) আল্লাহর নিকট চাওয়া বা ধর্ণা দেওয়া। খালেছভাবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলার কাছে ধর্ণা দেওয়া এবং অন্য সবকিছু অগ্রাহ্য করা অবশ্য কর্তব্য।
(দুই) আল্লাহ ছাড়া মৃত, অনুপস্থিত বা অন্য যাদের পক্ষে কিছুই করা সম্ভব নয় তাদের কাছে বিপদ-আপদে অথবা যে কোনো সাহায্য চাওয়া হারাম; কেননা তা শির্ক।
(তিন) যে জীবিত এবং সাহায্য ও উপকার করতে সক্ষম তার কাছে আবেদন নিবেদন করা কিংবা ধর্ণা দেওয়া জায়েয বা বৈধ। [আল-জামে আল ফরিদ পৃ: ৬৫। হাশিয়াতু ইবনে কাসেম আত তাওহীদ পৃ: ১১৫।]
উত্তর: দো‘আ দুই ভাগে বিভক্ত; উভয় প্রকার দো‘আ মহান আল্লাহর ইবাদাতের অন্তর্ভুক্ত:
(এক) ইবাদাতের মাধ্যমে দো‘আ:
আর তা হচ্ছে সর্বপ্রকার নেক কাজের দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা। মহান আল্লাহ নামায, হজ্জ এবং অন্যান্য ইবাদাত বন্দেগী নির্ধারিত নিয়মে পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন। বৈধ উপায়ে আল্লাহর তাজীমের উদ্দেশ্যে যে সব প্রশংসা করা হয় তা সবই ইবাদাত। যেমন; সূরা ফাতিহা পাঠ; সালাতের দো‘আসমূহ, হজ্জপালন, রোজা রাখা এবং অন্যান্য যিকিরসমূহ পালন।
(দুই) চাওয়ার মাধ্যমে দো‘আ: কোনো কিছু প্রাপ্তির জন্য দো‘আ করা, সেটা হতে পারে কোনো কল্যাণের জন্য দো‘আ অথবা বিপদ মুক্তির মুক্তির জন্য দো‘আ।
(এক) ইবাদাতের মাধ্যমে দো‘আ:
আর তা হচ্ছে সর্বপ্রকার নেক কাজের দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা। মহান আল্লাহ নামায, হজ্জ এবং অন্যান্য ইবাদাত বন্দেগী নির্ধারিত নিয়মে পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন। বৈধ উপায়ে আল্লাহর তাজীমের উদ্দেশ্যে যে সব প্রশংসা করা হয় তা সবই ইবাদাত। যেমন; সূরা ফাতিহা পাঠ; সালাতের দো‘আসমূহ, হজ্জপালন, রোজা রাখা এবং অন্যান্য যিকিরসমূহ পালন।
(দুই) চাওয়ার মাধ্যমে দো‘আ: কোনো কিছু প্রাপ্তির জন্য দো‘আ করা, সেটা হতে পারে কোনো কল্যাণের জন্য দো‘আ অথবা বিপদ মুক্তির মুক্তির জন্য দো‘আ।
﴿ وَمَنۡ أَضَلُّ مِمَّن يَدۡعُواْ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَن لَّا يَسۡتَجِيبُ لَهُۥٓ إِلَىٰ يَوۡمِ ٱلۡقِيَٰمَةِ وَهُمۡ عَن دُعَآئِهِمۡ غَٰفِلُونَ ٥ وَإِذَا حُشِرَ ٱلنَّاسُ كَانُواْ لَهُمۡ أَعۡدَآءٗ وَكَانُواْ بِعِبَادَتِهِمۡ كَٰفِرِينَ ٦ ﴾ [ الاحقاف : ٥، ٦ ]
‘‘(৫) সে ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত কে যে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে, যা কিয়ামত দিবস পর্যন্ত তার ডাকে সাড়া দিবে না। তারা এদের দো‘আ সম্পর্কে অবগতও নয় (৬) হাশরের মাঠে যখন মানুষদেরকে তাদের একত্রিত করা হবে, তখন এগুলো তাদের শত্রু হবে (এ উপাস্য দেবতাগুলো)। আর তারা এদের দ্বারা কৃত ইবাদাত অস্বীকার করবে’’। (সূরা আল আহকাফ: ৫,৬) এ আয়াতের ব্যাখ্যা কী?
উত্তর: এ আয়াতে আল্লাহ ছুবহানাহু ওয়াতা‘আলা বলেছেন যে, আল্লাহ ছাড়া যে অন্য কিছুকে ডাকে তার চেয়ে অধিক বিভ্রান্ত আর কেউ নেই। আল্লাহ আরো জানাচ্ছেন যে, কিয়ামত পর্যন্তও অন্য কেউই ডাকে সাড়া দিতে সক্ষম হবে না এবং যারা ডাকবে তাদের ব্যাপারে গাফেল থাকবে। আর আল্লাহ যখন কিয়ামত দিবসে হিসাবের জন্য সব মানুষকে একত্রিত করবেন, তখন ঐসব মিথ্যা মা‘বুদ, যাদেরকে ডাকা হত, তারা দো‘আ প্রার্থনাকারীদের বিপক্ষে যাবে এবং তাদের ইবাদাত উপাসনা অস্বীকার করবে।
‘‘(৫) সে ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত কে যে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে, যা কিয়ামত দিবস পর্যন্ত তার ডাকে সাড়া দিবে না। তারা এদের দো‘আ সম্পর্কে অবগতও নয় (৬) হাশরের মাঠে যখন মানুষদেরকে তাদের একত্রিত করা হবে, তখন এগুলো তাদের শত্রু হবে (এ উপাস্য দেবতাগুলো)। আর তারা এদের দ্বারা কৃত ইবাদাত অস্বীকার করবে’’। (সূরা আল আহকাফ: ৫,৬) এ আয়াতের ব্যাখ্যা কী?
উত্তর: এ আয়াতে আল্লাহ ছুবহানাহু ওয়াতা‘আলা বলেছেন যে, আল্লাহ ছাড়া যে অন্য কিছুকে ডাকে তার চেয়ে অধিক বিভ্রান্ত আর কেউ নেই। আল্লাহ আরো জানাচ্ছেন যে, কিয়ামত পর্যন্তও অন্য কেউই ডাকে সাড়া দিতে সক্ষম হবে না এবং যারা ডাকবে তাদের ব্যাপারে গাফেল থাকবে। আর আল্লাহ যখন কিয়ামত দিবসে হিসাবের জন্য সব মানুষকে একত্রিত করবেন, তখন ঐসব মিথ্যা মা‘বুদ, যাদেরকে ডাকা হত, তারা দো‘আ প্রার্থনাকারীদের বিপক্ষে যাবে এবং তাদের ইবাদাত উপাসনা অস্বীকার করবে।
﴿ أَمَّن يُجِيبُ ٱلۡمُضۡطَرَّ إِذَا دَعَاهُ وَيَكۡشِفُ ٱلسُّوٓءَ ﴾ [ النمل : ٦٢ ]
‘‘আর কে আছে এমন যে নিরুপায় আর্তের আহ্বানে সাড়া দেয়, যখন সে তাঁকে ডেকে থাকে এবং তার বিপদ-আপদ দূরীভূত করেন’’? এ আয়াতের ব্যাখ্যা ও শিক্ষা কী?
উত্তর: আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ বর্ণনা করেছেন যে, আরব এবং অনারব মুশরিক সম্প্রদায় ভালো করেই জানে যে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউই অসহায়-আর্তের ডাকে সাড়া দিতে এবং বিপদ আপদ দূরীভূত করতে সক্ষম নয়। সত্য জানার পরেও কেন তারা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুকে মা‘বুদ এবং শাফা‘আতকারী হিসেবে গ্রহণ করে? তাদেরকে আল্লাহ ছুবাহানাহু অতাআলা অজ্ঞ-মূর্খ অসু্স্থ মস্তিস্কের বিভ্রান্ত মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। অতএব আল্লাহর সাথে অন্য কিছুকে শরীক করা সম্পূর্ণ অবৈধ; কেননা একমাত্র আল্লাহই অসহায় আর্তের ডাকে সাড়া দেন এবং বিপদ-আপদ দূরীভূত করেন।
সুতরাং আয়াতের শিক্ষা হলো: যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্যের কাছে বিপদ-আপদ এবং অসহায়ত্ব দূরীভূত করার জন্যে প্রার্থনা করবে সে আল্লাহর সাথে শরীক করলো।
‘‘আর কে আছে এমন যে নিরুপায় আর্তের আহ্বানে সাড়া দেয়, যখন সে তাঁকে ডেকে থাকে এবং তার বিপদ-আপদ দূরীভূত করেন’’? এ আয়াতের ব্যাখ্যা ও শিক্ষা কী?
উত্তর: আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ বর্ণনা করেছেন যে, আরব এবং অনারব মুশরিক সম্প্রদায় ভালো করেই জানে যে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউই অসহায়-আর্তের ডাকে সাড়া দিতে এবং বিপদ আপদ দূরীভূত করতে সক্ষম নয়। সত্য জানার পরেও কেন তারা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুকে মা‘বুদ এবং শাফা‘আতকারী হিসেবে গ্রহণ করে? তাদেরকে আল্লাহ ছুবাহানাহু অতাআলা অজ্ঞ-মূর্খ অসু্স্থ মস্তিস্কের বিভ্রান্ত মানুষ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। অতএব আল্লাহর সাথে অন্য কিছুকে শরীক করা সম্পূর্ণ অবৈধ; কেননা একমাত্র আল্লাহই অসহায় আর্তের ডাকে সাড়া দেন এবং বিপদ-আপদ দূরীভূত করেন।
সুতরাং আয়াতের শিক্ষা হলো: যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্যের কাছে বিপদ-আপদ এবং অসহায়ত্ব দূরীভূত করার জন্যে প্রার্থনা করবে সে আল্লাহর সাথে শরীক করলো।
" إِذَا قَضَى اللَّهُ الأَمْرَ فِي السَّمَاءِ، ضَرَبَتِ المَلاَئِكَةُ بِأَجْنِحَتِهَا خُضْعَانًا لِقَوْلِهِ، كَأَنَّهُ سِلْسِلَةٌ عَلَى صَفْوَانٍ، ينفذهم ذلك، فَإِذَا فُزِّعَ عَنْ قُلُوبِهِمْ قَالُوا : مَاذَا قَالَ رَبُّكُمْ؟ قَالُوا لِلَّذِي قَالَ : الحَقَّ، وَهُوَ العَلِيُّ الكَبِيرُ، فَيَسْمَعُهَا مُسْتَرِقُ السَّمْعِ، وَمُسْتَرِقُ السَّمْعِ هَكَذَا بَعْضُهُ فَوْقَ بَعْضٍ - وَوَصَفَ سُفْيَانُ بِكَفِّهِ فَحَرَفَهَا، وَبَدَّدَ بَيْنَ أَصَابِعِهِ - فَيَسْمَعُ الكَلِمَةَ فَيُلْقِيهَا إِلَى مَنْ تَحْتَهُ، ثُمَّ يُلْقِيهَا الآخَرُ إِلَى مَنْ تَحْتَهُ، حَتَّى يُلْقِيَهَا عَلَى لِسَانِ السَّاحِرِ أَوِ الكَاهِنِ، فَرُبَّمَا أَدْرَكَ الشِّهَابُ قَبْلَ أَنْ يُلْقِيَهَا، وَرُبَّمَا أَلْقَاهَا قَبْلَ أَنْ يُدْرِكَهُ، فَيَكْذِبُ مَعَهَا مِائَةَ كَذْبَةٍ، فَيُقَالُ : أَلَيْسَ قَدْ قَالَ لَنَا يَوْمَ كَذَا وَكَذَا : كَذَا وَكَذَا، فَيُصَدَّقُ بِتِلْكَ الكَلِمَةِ الَّتِي سَمِعَ مِنَ السَّمَاءِ "
‘‘আল্লাহ আসমান হতে যখন কোনো ফরমান জারি করেন তখন ফিরিশতা ডানা ঝাপটে ঐ মহত্বপূর্ণ আদেশের প্রতি বিনয়াবনত সম্মতি, আনুগত্য প্রকাশ্য করে, আল্লাহর কোনো সিদ্ধান্ত বা ফরমান অত্যন্ত স্পষ্টভাবে নাযিল হওয়ার প্রাক্কালে তা প্রচ্ছন্ন পাথরের উপর লোহার শিকলের হৃদয়গ্রাহী ঝনঝন শব্দের তরঙ্গ মালার ন্যায় ফিরিশতাদের অন্তরে গ্রথিত হয়ে যায়। অতঃপর যখন তাদের ক্বলবের উপর হতে সে চাপ দূরীভূত হয়ে যায় তখন তারা তাদের পরস্পরকে প্রশ্ন করে বলে, তোমাদের রব্ব কি বলেছেন? তারা বলে: সর্বশ্রেষ্ট আল্লাহ শাশ্বত সত্য বলেছেন। ফেরেশতাদের পারস্পরিক কথোপকথন জ্বিন শয়তান ওৎ পেতে শ্রবণ করে। এ শয়তানগুলো একটার উপরে অপরটা অবস্থান করে থাকে (সুফিয়ান হাত সম্প্রসারিত করে এবং আংগুলসমূহ ফাঁকা করে একটার উপরে অপরটা কীভাবে অবস্থান নেয় তা বুঝিয়ে দেন) এবং ফিরিশতাদের নিকটবর্তী ওৎ পেতে থাকা জ্বিন তার নিচের জ্বিনকে শ্রুত কথাগুলো জানিয়ে দেয়। অতঃপর সে তার নিচের জনকে জানায় আর এভাবেই জাদুকর বা গনক ঠাকুরদের কানে পৌছে দেয়। কখনো বা ওৎ পেতে থাকা শয়তান অপরকে জানানোর পূর্বেই ওৎ পেতে থাকা শয়তানকে অগ্নি তারকায় আক্রান্ত করে ফলে। আবার কখনোবা আক্রান্ত হওয়ার পূর্বেই অপরকে জানিয়ে দিতে সক্ষম হয়। অতঃপর জাদু-মন্ত্রণাকারী সত্যের সাথে শত শত মিথ্যার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে তাদের কাছে আগত ব্যক্তিকে আশ্চর্যজনক অদ্ভুত করে জানতে চায় সে কি অমুক দিন এরকম এরকম বলে নি? এভাবে আকাশ থেকে শ্রবণকৃত আল্লাহর জারি করা সিদ্ধান্তটিকে মানুষের সত্যয়ণ লাভ করে মানুষ বিভ্রান্ত হয়”। (সহীহ আল-বুখারী, নং ৪৮০০,৮৭০১)
পূর্বোক্ত হাদীসের নিচে দাগ দেওয়া বাক্যসমূহের ভাবার্থ কী?
উত্তর: ( قَضَى اللَّهُ الأَمْرَ )= আল্লাহ জিব্রিল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে যখন কোনো আদেশ জারি করেন।
( خُضْعَانًا لِقَوْلِه ) মহামহিয়ান পবিত্র আল্লাহর আমোঘ বাণী শ্রবণে বিনাবনত আনুগত্য।
( كَأَنَّهُ سِلْسِلَةٌ )= শ্রবনকৃত আদেশ বাণীর শব্দ লৌহ শিকলের শব্দের ন্যায় মনে হত।
( صَفْوَانٍ )= পরিচ্ছন্ন মসৃন পাথর,
( ينفذهم ذلك )= আল্লাহর আদেশ নামা নির্মলভাবে ফেরেশতাদের হৃদয়ে গেথে যায়।
( مُسْتَرِقُ السَّمْعِ ) = জ্বিন শয়তান।
( فَحَرَفَهَا ) = বাকা করলো।
( وَبَدَّدَ بَيْنَ أَصَابِعِهِ ) =জ্বিনেরা ওৎ পেতে চুরি করে কীভাবে আল্লাহর কথা জানার চেষ্টা করে তা বুঝাবার জন্য হাত বাকা করে আংগুলসমূহ ফাক ফাক করে ধরা হয়েছে।
( الشِّهَابُ ) = অগ্নি তারকা যা নিক্ষিপ্ত হয়।
( السَّاحِرِ ) = জাদুকর, আর এ জাদুকর ভেল্কিবাজী দ্বারা মিথ্যাকে সত্যের ন্যায় উপস্থাপন করে থাকে। তারা মানুষের দৃষ্টি এড়িয়ে চুপি চুপি মিথ্যা ও ধোকাবাজী অপতৎপরতা সম্পন্ন করে।
( الكَاهِنِ ) = যে গায়ের অদৃশ্য জানার দাবী করে [আল-জামে আল-ফরিদ পৃষ্ঠা; ৭৬, ৭৭।]।
‘‘আল্লাহ আসমান হতে যখন কোনো ফরমান জারি করেন তখন ফিরিশতা ডানা ঝাপটে ঐ মহত্বপূর্ণ আদেশের প্রতি বিনয়াবনত সম্মতি, আনুগত্য প্রকাশ্য করে, আল্লাহর কোনো সিদ্ধান্ত বা ফরমান অত্যন্ত স্পষ্টভাবে নাযিল হওয়ার প্রাক্কালে তা প্রচ্ছন্ন পাথরের উপর লোহার শিকলের হৃদয়গ্রাহী ঝনঝন শব্দের তরঙ্গ মালার ন্যায় ফিরিশতাদের অন্তরে গ্রথিত হয়ে যায়। অতঃপর যখন তাদের ক্বলবের উপর হতে সে চাপ দূরীভূত হয়ে যায় তখন তারা তাদের পরস্পরকে প্রশ্ন করে বলে, তোমাদের রব্ব কি বলেছেন? তারা বলে: সর্বশ্রেষ্ট আল্লাহ শাশ্বত সত্য বলেছেন। ফেরেশতাদের পারস্পরিক কথোপকথন জ্বিন শয়তান ওৎ পেতে শ্রবণ করে। এ শয়তানগুলো একটার উপরে অপরটা অবস্থান করে থাকে (সুফিয়ান হাত সম্প্রসারিত করে এবং আংগুলসমূহ ফাঁকা করে একটার উপরে অপরটা কীভাবে অবস্থান নেয় তা বুঝিয়ে দেন) এবং ফিরিশতাদের নিকটবর্তী ওৎ পেতে থাকা জ্বিন তার নিচের জ্বিনকে শ্রুত কথাগুলো জানিয়ে দেয়। অতঃপর সে তার নিচের জনকে জানায় আর এভাবেই জাদুকর বা গনক ঠাকুরদের কানে পৌছে দেয়। কখনো বা ওৎ পেতে থাকা শয়তান অপরকে জানানোর পূর্বেই ওৎ পেতে থাকা শয়তানকে অগ্নি তারকায় আক্রান্ত করে ফলে। আবার কখনোবা আক্রান্ত হওয়ার পূর্বেই অপরকে জানিয়ে দিতে সক্ষম হয়। অতঃপর জাদু-মন্ত্রণাকারী সত্যের সাথে শত শত মিথ্যার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে তাদের কাছে আগত ব্যক্তিকে আশ্চর্যজনক অদ্ভুত করে জানতে চায় সে কি অমুক দিন এরকম এরকম বলে নি? এভাবে আকাশ থেকে শ্রবণকৃত আল্লাহর জারি করা সিদ্ধান্তটিকে মানুষের সত্যয়ণ লাভ করে মানুষ বিভ্রান্ত হয়”। (সহীহ আল-বুখারী, নং ৪৮০০,৮৭০১)
পূর্বোক্ত হাদীসের নিচে দাগ দেওয়া বাক্যসমূহের ভাবার্থ কী?
উত্তর: ( قَضَى اللَّهُ الأَمْرَ )= আল্লাহ জিব্রিল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে যখন কোনো আদেশ জারি করেন।
( خُضْعَانًا لِقَوْلِه ) মহামহিয়ান পবিত্র আল্লাহর আমোঘ বাণী শ্রবণে বিনাবনত আনুগত্য।
( كَأَنَّهُ سِلْسِلَةٌ )= শ্রবনকৃত আদেশ বাণীর শব্দ লৌহ শিকলের শব্দের ন্যায় মনে হত।
( صَفْوَانٍ )= পরিচ্ছন্ন মসৃন পাথর,
( ينفذهم ذلك )= আল্লাহর আদেশ নামা নির্মলভাবে ফেরেশতাদের হৃদয়ে গেথে যায়।
( مُسْتَرِقُ السَّمْعِ ) = জ্বিন শয়তান।
( فَحَرَفَهَا ) = বাকা করলো।
( وَبَدَّدَ بَيْنَ أَصَابِعِهِ ) =জ্বিনেরা ওৎ পেতে চুরি করে কীভাবে আল্লাহর কথা জানার চেষ্টা করে তা বুঝাবার জন্য হাত বাকা করে আংগুলসমূহ ফাক ফাক করে ধরা হয়েছে।
( الشِّهَابُ ) = অগ্নি তারকা যা নিক্ষিপ্ত হয়।
( السَّاحِرِ ) = জাদুকর, আর এ জাদুকর ভেল্কিবাজী দ্বারা মিথ্যাকে সত্যের ন্যায় উপস্থাপন করে থাকে। তারা মানুষের দৃষ্টি এড়িয়ে চুপি চুপি মিথ্যা ও ধোকাবাজী অপতৎপরতা সম্পন্ন করে।
( الكَاهِنِ ) = যে গায়ের অদৃশ্য জানার দাবী করে [আল-জামে আল-ফরিদ পৃষ্ঠা; ৭৬, ৭৭।]।
﴿ يُؤۡمِنُونَ بِٱلۡجِبۡتِ وَٱلطَّٰغُوتِ ﴾ [ النساء : ٥١ ]
তারা জিবত এবং তাগুতের প্রতি ঈমান রাখে বা বিশ্বাস করে’’ (আন-নিসা: ৫১) এখানে জিবত এবং তাগুত কী?
উত্তর: খাত্তাবের পূত্র উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: জিবত অর্থ জাদু-বান টোনা, আর তাগুত হলো শয়তান। অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত যার ইবাদাত করা হয় এবং সে যদি তাতে সন্তুষ্ট থাকে তাহলেই সে তাগুত বলে গণ্য হবে।
তারা জিবত এবং তাগুতের প্রতি ঈমান রাখে বা বিশ্বাস করে’’ (আন-নিসা: ৫১) এখানে জিবত এবং তাগুত কী?
উত্তর: খাত্তাবের পূত্র উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: জিবত অর্থ জাদু-বান টোনা, আর তাগুত হলো শয়তান। অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত যার ইবাদাত করা হয় এবং সে যদি তাতে সন্তুষ্ট থাকে তাহলেই সে তাগুত বলে গণ্য হবে।
৮০
{প্রশ্ন: ৭৮} তাগুত সম্পর্কে জাবির রাদিয়াল্লাহ আনহু বলেন যে; এরা হলো গনক-ঠাকুর সম্প্রদায়, প্রত্যেক গোত্রে বা মহল্লায় তাদের একজন থাকে’। জাবের রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর একথার অর্থ কী? এবং (الحي) ‘আল-হাই’ কাকে বলে?উত্তর: জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু যা বুঝিয়েছেন তা হলো: গনক-ঠাকুর জ্যোতিষরা তাগুতের অন্তর্ভুক্ত। শয়তান তাদের কাছে এসে তথাকথিত গোপন তথ্য (সত্য-মিথ্যা সংমিশ্রিত) প্রদান করে থাকে।
( وفي كل حي واحد ) আল হাই ( الحي ) হচ্ছে কবিলা, জ্ঞাতি-গোষ্ঠি। অর্থাৎ প্রত্যেক গোষ্ঠির মধ্যে যে ব্যক্তি গনক-ঠাকুর বা জাদু মন্ত্রের কাজ করে থাকে। [আল-জামে আল ফরিদ পৃষ্ঠা: ১০৭।]
( وفي كل حي واحد ) আল হাই ( الحي ) হচ্ছে কবিলা, জ্ঞাতি-গোষ্ঠি। অর্থাৎ প্রত্যেক গোষ্ঠির মধ্যে যে ব্যক্তি গনক-ঠাকুর বা জাদু মন্ত্রের কাজ করে থাকে। [আল-জামে আল ফরিদ পৃষ্ঠা: ১০৭।]
উত্তর: কুফর দুই প্রকার:
(১) বড় কুফর (২) ছোট কুফর।
মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَضَرَبَ ٱللَّهُ مَثَلٗا قَرۡيَةٗ كَانَتۡ ءَامِنَةٗ مُّطۡمَئِنَّةٗ يَأۡتِيهَا رِزۡقُهَا رَغَدٗا مِّن كُلِّ مَكَانٖ فَكَفَرَتۡ بِأَنۡعُمِ ٱللَّهِ فَأَذَٰقَهَا ٱللَّهُ لِبَاسَ ٱلۡجُوعِ وَٱلۡخَوۡفِ بِمَا كَانُواْ يَصۡنَعُونَ ١١٢ ﴾ [ النحل : ١١٢ ]
‘‘আল্লাহ এক জনপদের দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন আর তা ছিল এক নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত জনপদ; যেখানে সর্বদিক হতে আসত প্রচুর জীবনোপকরণ। অতঃপর তারা আল্লাহর নিয়ামত -অনুগ্রহ অস্বীকার (অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ) করলো। আর আল্লাহ তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদেরকে আস্বাদন করলেন ও ভয়-ভীতির আচ্ছাদন বা পোষাক’’। (আন-নাহল:১১২)
আর যে বড় কুফরীতে লিপ্ত হবে সে মুসলিম মিল্লাত হতে বহিষ্কৃত হয়ে যাবে বা মুসলিম থাকবে না। তবে ছোট কুফরিতে লিপ্ত ব্যক্তিও প্রর্যায়ক্রমে বড় কুফরীতে নিমজ্জিত হয়।
(১) বড় কুফর (২) ছোট কুফর।
মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَضَرَبَ ٱللَّهُ مَثَلٗا قَرۡيَةٗ كَانَتۡ ءَامِنَةٗ مُّطۡمَئِنَّةٗ يَأۡتِيهَا رِزۡقُهَا رَغَدٗا مِّن كُلِّ مَكَانٖ فَكَفَرَتۡ بِأَنۡعُمِ ٱللَّهِ فَأَذَٰقَهَا ٱللَّهُ لِبَاسَ ٱلۡجُوعِ وَٱلۡخَوۡفِ بِمَا كَانُواْ يَصۡنَعُونَ ١١٢ ﴾ [ النحل : ١١٢ ]
‘‘আল্লাহ এক জনপদের দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন আর তা ছিল এক নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত জনপদ; যেখানে সর্বদিক হতে আসত প্রচুর জীবনোপকরণ। অতঃপর তারা আল্লাহর নিয়ামত -অনুগ্রহ অস্বীকার (অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ) করলো। আর আল্লাহ তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদেরকে আস্বাদন করলেন ও ভয়-ভীতির আচ্ছাদন বা পোষাক’’। (আন-নাহল:১১২)
আর যে বড় কুফরীতে লিপ্ত হবে সে মুসলিম মিল্লাত হতে বহিষ্কৃত হয়ে যাবে বা মুসলিম থাকবে না। তবে ছোট কুফরিতে লিপ্ত ব্যক্তিও প্রর্যায়ক্রমে বড় কুফরীতে নিমজ্জিত হয়।
উত্তর: নিফাক দুই প্রকার;
(এক) বিশ্বাসগত (অন্তরে) নিফাক, এ নিফাকে জড়িত ব্যক্তি মুসলিম থাকবে না। (নিফাকের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা পর্যালোচনার জন্য সূরা আত-তাওবা অধ্যায়ন করা দরকার)
(দুই) কাজ ও কর্মে নিফাক; এ প্রকারের নিফাক পাঁচ প্রকার। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
" آيَةُ المُنَافِقِ ثَلاَثٌ : إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ، وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ، وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ " وفي رواية : وَإِذَا عَاهَدَ غَدَرَ، وَإِذَا خَاصَمَ فَجَرَ "
‘‘মুনাফিকের আলামত বা লক্ষণ তিনটি: কথায় কথায় মিথ্যা বলা, ওয়াদা দিয়ে তা লঙ্ঘন করা, আমানত রাখা হলে তার খিয়ানত করা’’।
অন্য এক বর্ণনায় আছে: ‘‘চুক্তি-সন্ধি ভংগ করা ও ঝগড়া-বিবাদ কালে অশ্লীল কথা বলা’’। (বুখারী ৩৩, ৩৪)
(এক) বিশ্বাসগত (অন্তরে) নিফাক, এ নিফাকে জড়িত ব্যক্তি মুসলিম থাকবে না। (নিফাকের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা পর্যালোচনার জন্য সূরা আত-তাওবা অধ্যায়ন করা দরকার)
(দুই) কাজ ও কর্মে নিফাক; এ প্রকারের নিফাক পাঁচ প্রকার। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
" آيَةُ المُنَافِقِ ثَلاَثٌ : إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ، وَإِذَا وَعَدَ أَخْلَفَ، وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ " وفي رواية : وَإِذَا عَاهَدَ غَدَرَ، وَإِذَا خَاصَمَ فَجَرَ "
‘‘মুনাফিকের আলামত বা লক্ষণ তিনটি: কথায় কথায় মিথ্যা বলা, ওয়াদা দিয়ে তা লঙ্ঘন করা, আমানত রাখা হলে তার খিয়ানত করা’’।
অন্য এক বর্ণনায় আছে: ‘‘চুক্তি-সন্ধি ভংগ করা ও ঝগড়া-বিবাদ কালে অশ্লীল কথা বলা’’। (বুখারী ৩৩, ৩৪)
উত্তর: ইসলাম বিনষ্টের কারণ কয়টি তা নিয়ে মত পার্থক্য আছে।
কেউ কেউ বলেছেন ৮০টি। তন্মধ্য থেকে কয়েকটি হলো:
(ক) আল্লাহর সাথে শির্ক করা।
(খ) জাদু-মন্ত্র।
(গ) আল্লাহর পক্ষ থেকে যা এসেছে অতঃপর তাঁর নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা উপস্থাপন করেছেন তার কোনো কিছুকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা।
(ঘ) আল্লাহর নাযিলকৃত আইন-বিধান ব্যতীত অন্যকোনো বিধানকে বৈধ হিসেবে বিশ্বাস বা গ্রহণ করে শাসনকার্য পরিচালনা করা।
(ঙ) নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপস্থাপিত কোনো কিছুকে উপহাস ঠাট্রা-বিদ্রূপ করা।
(চ) দীন ইসলামের কোনো প্রকার ক্ষতি হলে এবং মর্যাদা হ্রাস পেলে আনন্দিত হওয়া।
(ছ) নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা কিছু পেশ করেছেন যা কিছু পেশ করেছেন তা অবজ্ঞা-অপছন্দ করা।
(জ) কাফের-কুফরকে মহব্বত বা আনুগত্য, অনুসরণ করা।
(ঝ) নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হিদায়াত (মুক্তির বিধান) ব্যতীত অন্য কোনো মতবাদকে উত্তম বলে বিশ্বাস ও গ্রহণ করা।
কেউ কেউ বলেছেন ৮০টি। তন্মধ্য থেকে কয়েকটি হলো:
(ক) আল্লাহর সাথে শির্ক করা।
(খ) জাদু-মন্ত্র।
(গ) আল্লাহর পক্ষ থেকে যা এসেছে অতঃপর তাঁর নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা উপস্থাপন করেছেন তার কোনো কিছুকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা।
(ঘ) আল্লাহর নাযিলকৃত আইন-বিধান ব্যতীত অন্যকোনো বিধানকে বৈধ হিসেবে বিশ্বাস বা গ্রহণ করে শাসনকার্য পরিচালনা করা।
(ঙ) নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপস্থাপিত কোনো কিছুকে উপহাস ঠাট্রা-বিদ্রূপ করা।
(চ) দীন ইসলামের কোনো প্রকার ক্ষতি হলে এবং মর্যাদা হ্রাস পেলে আনন্দিত হওয়া।
(ছ) নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা কিছু পেশ করেছেন যা কিছু পেশ করেছেন তা অবজ্ঞা-অপছন্দ করা।
(জ) কাফের-কুফরকে মহব্বত বা আনুগত্য, অনুসরণ করা।
(ঝ) নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হিদায়াত (মুক্তির বিধান) ব্যতীত অন্য কোনো মতবাদকে উত্তম বলে বিশ্বাস ও গ্রহণ করা।
উত্তর: কোনো উপকার অর্জন অথবা বিপদ হতে উদ্ধারের লক্ষ্যে অন্য কাউকে মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করাকে শাফা‘আত বলে।
শাফা‘আত দুই প্রকার;
(ক) কার্যকর ইতিবাচক শাফা‘আত: এ প্রকার শাফা‘আতের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। তিনি যার কথা ও কাজে সন্তুষ্ট আল্লাহর অনুমতিতে সে শাফা‘আত করতে পারে। অথবা যে শাফা‘আত করার উপযুক্ত, সক্ষম তার কাছে শাফা‘আত চাওয়া।
(খ) নেতিবাচক বা নিষিদ্ধ শাফা‘আত: যে সব বিষয় আল্লাহ ব্যতীত অন্যের পক্ষে সম্পন্ন (সমাধান) করা অসম্ভব সে সব বিষয়ে অন্যের কাছে শাফা‘আত (সুপারিশ) চাওয়া। আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত শাফা‘আত করা অবৈধ বৃথা তৎপরতা। যারা আল্লাহর সাথে কোনো কিছু শরীক করে তাদের জন্য শাফা‘আত বা সুপারিশ করাও নিষিদ্ধ [আল-জামে আল-ফরিদ ৭৯।]।
শাফা‘আত দুই প্রকার;
(ক) কার্যকর ইতিবাচক শাফা‘আত: এ প্রকার শাফা‘আতের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। তিনি যার কথা ও কাজে সন্তুষ্ট আল্লাহর অনুমতিতে সে শাফা‘আত করতে পারে। অথবা যে শাফা‘আত করার উপযুক্ত, সক্ষম তার কাছে শাফা‘আত চাওয়া।
(খ) নেতিবাচক বা নিষিদ্ধ শাফা‘আত: যে সব বিষয় আল্লাহ ব্যতীত অন্যের পক্ষে সম্পন্ন (সমাধান) করা অসম্ভব সে সব বিষয়ে অন্যের কাছে শাফা‘আত (সুপারিশ) চাওয়া। আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত শাফা‘আত করা অবৈধ বৃথা তৎপরতা। যারা আল্লাহর সাথে কোনো কিছু শরীক করে তাদের জন্য শাফা‘আত বা সুপারিশ করাও নিষিদ্ধ [আল-জামে আল-ফরিদ ৭৯।]।
উত্তর: শর্ত দুটি;
(এক) শাফা‘আতকারীর জন্য আল্লাহর অনুমতি পাওয়া। যেমন; মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ مَن ذَا ٱلَّذِي يَشۡفَعُ عِندَهُۥٓ إِلَّا بِإِذۡنِهِۦۚ﴾ [ البقرة : ٢٥٥ ]
‘‘কে আছে এমন যে আল্লাহর অনুমতি ছাড়া তার কাছে শাফা‘আত (সুপারিশ) করবে’’? (সূরা আল-বাকারাহ: ২৫৫)
(দুই)যার জন্য শাফা‘আত করা হবে তার ব্যাপারে আল্লাহর সন্তুষ্টি থাকতে হবে। যেমন; মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَلَا يَشۡفَعُونَ إِلَّا لِمَنِ ٱرۡتَضَىٰ ﴾ [ الانبياء : ٢٨ ]
‘‘যার প্রতি তিনি (আল্লাহ) সন্তুষ্ট বা রাজি নন তার জন্য তারা শাফা‘আত করবে না’’। (সূরা আল-আম্বিয়া: ২৮)
(এক) শাফা‘আতকারীর জন্য আল্লাহর অনুমতি পাওয়া। যেমন; মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ مَن ذَا ٱلَّذِي يَشۡفَعُ عِندَهُۥٓ إِلَّا بِإِذۡنِهِۦۚ﴾ [ البقرة : ٢٥٥ ]
‘‘কে আছে এমন যে আল্লাহর অনুমতি ছাড়া তার কাছে শাফা‘আত (সুপারিশ) করবে’’? (সূরা আল-বাকারাহ: ২৫৫)
(দুই)যার জন্য শাফা‘আত করা হবে তার ব্যাপারে আল্লাহর সন্তুষ্টি থাকতে হবে। যেমন; মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَلَا يَشۡفَعُونَ إِلَّا لِمَنِ ٱرۡتَضَىٰ ﴾ [ الانبياء : ٢٨ ]
‘‘যার প্রতি তিনি (আল্লাহ) সন্তুষ্ট বা রাজি নন তার জন্য তারা শাফা‘আত করবে না’’। (সূরা আল-আম্বিয়া: ২৮)
উত্তর: নবী মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শাফা‘আত ছয় প্রকার:
(ক) বৃহৎ শাফা‘আত; আখিরাত দিবসে হাশরের ময়দানের কষ্টলাঘবের জন্য মানুষ যখন উঁচুপর্যায়ের রসূলগণকে একজনের পর অন্যজনকে আল্লাহর কাছে সুপারিশ করার জন্য বলবে তখন তাঁরা অপারগতা প্রকাশ করবেন। সবার শেষে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলে তিনি বলবেন যে, আমি তোমাদের জন্য এ শাফা‘আত করবো।
(খ) জান্নাতবাসীদের জন্য জান্নাতে প্রবেশের শাফা‘আত।
(গ) নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মতের মধ্যে যারা গুনাহগার তাদের মধ্য হতে যাদেরকে সম্ভব জাহান্নামে প্রবেশ না করার শাফা‘আত।
(ঘ)যারা গুনাহগার কিন্তু আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী তাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির সুপারিশ-শাফা‘আত।
(ঙ) যারা জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের সওয়াব ও মর্যাদা বৃদ্ধির শাফা‘আত।
(চ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চাচা আবু তালেবের আযাব হ্রাস করার শাফা‘আত।
(ক) বৃহৎ শাফা‘আত; আখিরাত দিবসে হাশরের ময়দানের কষ্টলাঘবের জন্য মানুষ যখন উঁচুপর্যায়ের রসূলগণকে একজনের পর অন্যজনকে আল্লাহর কাছে সুপারিশ করার জন্য বলবে তখন তাঁরা অপারগতা প্রকাশ করবেন। সবার শেষে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলে তিনি বলবেন যে, আমি তোমাদের জন্য এ শাফা‘আত করবো।
(খ) জান্নাতবাসীদের জন্য জান্নাতে প্রবেশের শাফা‘আত।
(গ) নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মতের মধ্যে যারা গুনাহগার তাদের মধ্য হতে যাদেরকে সম্ভব জাহান্নামে প্রবেশ না করার শাফা‘আত।
(ঘ)যারা গুনাহগার কিন্তু আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী তাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির সুপারিশ-শাফা‘আত।
(ঙ) যারা জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের সওয়াব ও মর্যাদা বৃদ্ধির শাফা‘আত।
(চ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চাচা আবু তালেবের আযাব হ্রাস করার শাফা‘আত।
৮৭
{প্রশ্ন: ৮৫} নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শাফা‘আত পেয়ে কে সবচেয়ে সুখী হবে? আর এ শাফা‘আতের হাকীকত (তাৎপর্য) কী এবং শাফা‘আত কার জন্যে নির্ধারিত?উত্তর: নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শাফা‘আত পেয়ে সেই বেশী সুখী হবে যে অন্তর থেকে খালেছভাবে বলবে ‘‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’’। (বা আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোনো মা‘বুদ নেই)
আর শাফা‘আতের হাকীকত হলো: মহা গুণ ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী আল্লাহ যাদেরকে শাফা‘আতের অনুমতি দেন তাদের দো‘আর মাধ্যমে একনিষ্ঠ মুখলিছ, তাওহীদ পন্থী নেক বান্দাদের গুনাহ মাফ করে দিবেন।
আর শাফা‘আতের হাকীকত হলো: মহা গুণ ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী আল্লাহ যাদেরকে শাফা‘আতের অনুমতি দেন তাদের দো‘আর মাধ্যমে একনিষ্ঠ মুখলিছ, তাওহীদ পন্থী নেক বান্দাদের গুনাহ মাফ করে দিবেন।
﴿ مَن ذَا ٱلَّذِي يَشۡفَعُ عِندَهُۥٓ إِلَّا بِإِذۡنِهِۦۚ﴾ [ البقرة : ٢٥٥ ]
‘‘কে আছে এমন যে আল্লাহর নিকট হতে অনুমতি ছাড়া শাফা‘আত করতে পারে’’? (সূরা আল বাক্বারাহ: ২৫৫) এ আয়াতের ভাবার্থ এবং নাযিল হওয়ার উপলক্ষ্যই বা কী?
উত্তর: মহান আল্লাহ বলছেন যে, আখিরাতে তাঁর অনুমতি ছাড়া শাফা‘আত কার্যকর হবে না।
উক্ত আয়াত নাযিল হওয়ার কারণ: অংশিবাদী মুশরিক সম্প্রদায় বলতো, আমরা প্রতিমাদের ইবাদাত করি এ জন্য যে তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দিবে। মহান আল্লাহ তাদের কথার উল্লেখ করেছেন সূরা যুমারে ৩ নং আয়াতে:
﴿ مَا نَعۡبُدُهُمۡ إِلَّا لِيُقَرِّبُونَآ إِلَى ٱللَّهِ زُلۡفَىٰٓ ﴾ [ الزمر : ٣ ]
‘‘আমরা তাদের ইবাদাত এ জন্য করি, যেন তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়’’। (সূরা আয-যুমার)
‘‘কে আছে এমন যে আল্লাহর নিকট হতে অনুমতি ছাড়া শাফা‘আত করতে পারে’’? (সূরা আল বাক্বারাহ: ২৫৫) এ আয়াতের ভাবার্থ এবং নাযিল হওয়ার উপলক্ষ্যই বা কী?
উত্তর: মহান আল্লাহ বলছেন যে, আখিরাতে তাঁর অনুমতি ছাড়া শাফা‘আত কার্যকর হবে না।
উক্ত আয়াত নাযিল হওয়ার কারণ: অংশিবাদী মুশরিক সম্প্রদায় বলতো, আমরা প্রতিমাদের ইবাদাত করি এ জন্য যে তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দিবে। মহান আল্লাহ তাদের কথার উল্লেখ করেছেন সূরা যুমারে ৩ নং আয়াতে:
﴿ مَا نَعۡبُدُهُمۡ إِلَّا لِيُقَرِّبُونَآ إِلَى ٱللَّهِ زُلۡفَىٰٓ ﴾ [ الزمر : ٣ ]
‘‘আমরা তাদের ইবাদাত এ জন্য করি, যেন তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়’’। (সূরা আয-যুমার)
﴿ إِنَّكَ لَا تَهۡدِي مَنۡ أَحۡبَبۡتَ ﴾ [ القصص : ٥٦ ]
‘‘আপনি ভালবেসে যাকে ইচ্ছা (পছন্দ) তাকে হেদায়েত করতে পারবেন না’’। (সূরা আল-ক্বাসাস: ৫৬)
এ আয়াতের ভাবার্থ ও নাযিল হওয়ার উপলক্ষ্য কী?
উত্তর: মহান আল্লাহ তাঁর নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উদ্দেশ্যে বলেন: আপনি যাকে ভালোবাসেন তাকে কল্যাণের পথে আনতে চান, তা আপনি পারবেন না। অর্থাৎ হেদায়াতের মালিক আপনি নন বরং আপনার কর্তব্য হলো সত্যের (হেদায়াতের) দিকে আহ্বান করা। এ আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হেদায়েত করবেন। কে হেদায়েত পাওয়ার উপযুক্ত তা একমাত্র আল্লাহই পরিপূর্ণভাবে অবগত এবং এ বিষয়ে তিনিই সর্বময় হিকমতের আধিকারী।
আর আয়াত নাযিলের উপলক্ষ্য: যখন নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চাচা আবু তালেবকে দীন ইসলাম কবুল করানোর জন্য নিষ্ঠার সাথে জোর চেষ্টা করছিলেন তখন এ আয়াত নাযিল হয়।
‘‘আপনি ভালবেসে যাকে ইচ্ছা (পছন্দ) তাকে হেদায়েত করতে পারবেন না’’। (সূরা আল-ক্বাসাস: ৫৬)
এ আয়াতের ভাবার্থ ও নাযিল হওয়ার উপলক্ষ্য কী?
উত্তর: মহান আল্লাহ তাঁর নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উদ্দেশ্যে বলেন: আপনি যাকে ভালোবাসেন তাকে কল্যাণের পথে আনতে চান, তা আপনি পারবেন না। অর্থাৎ হেদায়াতের মালিক আপনি নন বরং আপনার কর্তব্য হলো সত্যের (হেদায়াতের) দিকে আহ্বান করা। এ আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হেদায়েত করবেন। কে হেদায়েত পাওয়ার উপযুক্ত তা একমাত্র আল্লাহই পরিপূর্ণভাবে অবগত এবং এ বিষয়ে তিনিই সর্বময় হিকমতের আধিকারী।
আর আয়াত নাযিলের উপলক্ষ্য: যখন নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চাচা আবু তালেবকে দীন ইসলাম কবুল করানোর জন্য নিষ্ঠার সাথে জোর চেষ্টা করছিলেন তখন এ আয়াত নাযিল হয়।
উত্তর: হিদায়াত দুই প্রকার:
(এক) হিদায়াতুত তাওফীক (হিদায়াত লাভে সক্ষমতা অর্জন করা)। আর এটা হলো পথভ্রষ্টের ক্বলবে হেদায়েতের আবির্ভাব ঘটানো। আলোচ্য আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এ প্রকার হেদায়েত দান করার সাধ্য আল্লাহ ছাড়া আর কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। যেমন মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ إِنَّكَ لَا تَهۡدِي مَنۡ أَحۡبَبۡتَ ﴾ [ القصص : ٥٦ ]
‘‘আপনি যাকে ভালোবাসেন তাকেই হিদায়াত করতে পারবে না’’। (সূরা আল-কাসাস:৫৬)
অর্থাৎ আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তাকে হিদায়াত প্রদান করার কোনোই সাধ্য নেই।
(দুই) দলীল প্রমাণ সহ হিদায়াতের পরিচয় পাওয়া বা দেওয়া। যেমন; মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَإِنَّكَ لَتَهۡدِيٓ إِلَىٰ صِرَٰطٖ مُّسۡتَقِيمٖ ﴾ [ الشورا : ٥٢ ]
‘‘আর আপনি তো সরল-সোজা পথের সন্ধান দিয়ে থাকেন’’। (সূরা আশ-শূরা: ৫২)
সুতরাং এ প্রকারের হিদায়াতের বিষয়বস্তু আল্লাহর দীন ও শরীয়াতের প্রমাণ সহ আল্লাহর পক্ষ থেকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা সহ দূনিয়াবাসীর কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে।
(এক) হিদায়াতুত তাওফীক (হিদায়াত লাভে সক্ষমতা অর্জন করা)। আর এটা হলো পথভ্রষ্টের ক্বলবে হেদায়েতের আবির্ভাব ঘটানো। আলোচ্য আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এ প্রকার হেদায়েত দান করার সাধ্য আল্লাহ ছাড়া আর কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। যেমন মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ إِنَّكَ لَا تَهۡدِي مَنۡ أَحۡبَبۡتَ ﴾ [ القصص : ٥٦ ]
‘‘আপনি যাকে ভালোবাসেন তাকেই হিদায়াত করতে পারবে না’’। (সূরা আল-কাসাস:৫৬)
অর্থাৎ আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তাকে হিদায়াত প্রদান করার কোনোই সাধ্য নেই।
(দুই) দলীল প্রমাণ সহ হিদায়াতের পরিচয় পাওয়া বা দেওয়া। যেমন; মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَإِنَّكَ لَتَهۡدِيٓ إِلَىٰ صِرَٰطٖ مُّسۡتَقِيمٖ ﴾ [ الشورا : ٥٢ ]
‘‘আর আপনি তো সরল-সোজা পথের সন্ধান দিয়ে থাকেন’’। (সূরা আশ-শূরা: ৫২)
সুতরাং এ প্রকারের হিদায়াতের বিষয়বস্তু আল্লাহর দীন ও শরীয়াতের প্রমাণ সহ আল্লাহর পক্ষ থেকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা সহ দূনিয়াবাসীর কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে।
﴿ يَٰٓأَهۡلَ ٱلۡكِتَٰبِ لَا تَغۡلُواْ فِي دِينِكُمۡ ﴾ [ النساء : ١٧١ ]
‘‘হে আহলে কিতাব সম্প্রদায় তোমরা তোমাদের (জন্য নাযিলকৃত) দীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না। (সূরা আন-নিসা: ১৭১) এ আয়াতের ভাবার্থ কী? আয়াতের মধ্যে উল্লিখিত গুলু ( غلو ) কাকে বলে?
উত্তর: আহলে কিতাব অর্থাৎ ইয়াহূদী এবং খ্রষ্টানদের উদ্দেশ্যে মহান আল্লাহ বলেন যে, তোমরা দীনের ব্যাপারে আল্লাহর নির্ধারিত সীমালঙ্ঘন করো না। আর আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিকে যে সীমিত সম্মান দিয়েছেন তা থেকে বেশী সম্মান করতে যেও না। এইরূপ করা অন্যায়; কেননা অসীম সম্মান মর্যাদার অধিকারী আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ নয়।
আর গুলু হচ্ছে; সীমা লংঘন, শ্রদ্ধা সম্মানের ক্ষেত্রে কথায় ও বিশ্বাসে অতিরঞ্জন।
‘‘হে আহলে কিতাব সম্প্রদায় তোমরা তোমাদের (জন্য নাযিলকৃত) দীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না। (সূরা আন-নিসা: ১৭১) এ আয়াতের ভাবার্থ কী? আয়াতের মধ্যে উল্লিখিত গুলু ( غلو ) কাকে বলে?
উত্তর: আহলে কিতাব অর্থাৎ ইয়াহূদী এবং খ্রষ্টানদের উদ্দেশ্যে মহান আল্লাহ বলেন যে, তোমরা দীনের ব্যাপারে আল্লাহর নির্ধারিত সীমালঙ্ঘন করো না। আর আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিকে যে সীমিত সম্মান দিয়েছেন তা থেকে বেশী সম্মান করতে যেও না। এইরূপ করা অন্যায়; কেননা অসীম সম্মান মর্যাদার অধিকারী আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ নয়।
আর গুলু হচ্ছে; সীমা লংঘন, শ্রদ্ধা সম্মানের ক্ষেত্রে কথায় ও বিশ্বাসে অতিরঞ্জন।
﴿ وَقَالُواْ لَا تَذَرُنَّ ءَالِهَتَكُمۡ وَلَا تَذَرُنَّ وَدّٗا وَلَا سُوَاعٗا وَلَا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسۡرٗا ٢٣ ﴾ [ نوح : ٢٣ ]
‘‘আর তারা বলেছিল তোমরা তোমাদের ইলাহদেরকে (দেব-দেবী) পরিত্যাগ করবে না এবং ওয়াদ, সূয়া, ইয়াগু, ইয়াউক, নাসর এদেরকেও পরিত্যাগ করবে না’’। (আন-নূহ: ২৩) প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন:
‘‘এ (আয়াতে উল্লিখিত) নামসমূহ নূহ আ: এর কাওমের সৎ লোকদের। তাদের মৃত্যুর পর তাদের অনুরূপ ছবি-মূর্তি তৈরী করে নাম উল্লেখ সহকারে বসবাসের জায়গায় সাজিয়ে রাখার জন্য ঐ কওমের লোকদেরকে শয়তান প্ররোচিত করলো। আর (ঐ সৎ ব্যক্তিদের) কাওমের লোকেরা শয়তানের প্ররোচনা অনুযায়ী কাজ করলো তবে এরা মূর্তি পূজায় লিপ্ত হয়নি। কিন্তু এদের মৃত্যু পরবর্তী প্রজন্মের নিকট থেকে তাওহীদের জ্ঞান বিলুপ্ত হওয়ার ফলে তারা সৎব্যক্তিদের মূর্তিগুলোর ইবাদাত শুরু করে দেয়’’। (বুখারী: ২৬৩ আল-যুবাইদি পৃ: ৯১)
হাদীসে উল্লেখিত ছবি মূর্তি দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে? এ সব মূর্তির ইবাদাত করার কারণ কী? ইলেম ভুলে যাওয়ার তাৎপর্য কী?
উত্তর: এখানে ছবি মূর্তি বলতে: নেক ও সৎকর্মপরায়ন ব্যক্তিদের প্রতিকৃতি বুঝানো হয়েছে।
তাদের ইবাদাতের কারণ হলো: পূর্ব-পরুষগণ নেক লোকদের মৃত্যুর পর তাদের প্রতি শ্রদ্ধা, তাজিম, সম্মান ও ভক্তি প্রকাশ করার জন্য কবরের কাছে আস্তানা গড়ে তুলে এবং কবরবাসীদের প্রতিকৃতি গৃহভ্যন্তরে সাজিয়ে রাখে। অতঃপর তাদের পরবর্তী লোকদেরকে শয়তান এ বলে বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয় যে, তোমাদের পূর্ব পুরুষরা ঐ সব প্রতিকৃতির ইবাদাত-উপাসনা করতো এবং বৃষ্টি বর্ষণের প্রার্থনা জানাত।
ইলম (জ্ঞান-বিদ্যা) ভূলে যাওয়া বা বিলুপ্ত হওয়ার অর্থ হচ্ছে:
সত্যনিষ্ঠ দীন প্রচারক, আলেম-ওলামা ও বিদ্বানগণের প্রস্থান বা মৃত্যু হওয়া।
‘‘আর তারা বলেছিল তোমরা তোমাদের ইলাহদেরকে (দেব-দেবী) পরিত্যাগ করবে না এবং ওয়াদ, সূয়া, ইয়াগু, ইয়াউক, নাসর এদেরকেও পরিত্যাগ করবে না’’। (আন-নূহ: ২৩) প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন:
‘‘এ (আয়াতে উল্লিখিত) নামসমূহ নূহ আ: এর কাওমের সৎ লোকদের। তাদের মৃত্যুর পর তাদের অনুরূপ ছবি-মূর্তি তৈরী করে নাম উল্লেখ সহকারে বসবাসের জায়গায় সাজিয়ে রাখার জন্য ঐ কওমের লোকদেরকে শয়তান প্ররোচিত করলো। আর (ঐ সৎ ব্যক্তিদের) কাওমের লোকেরা শয়তানের প্ররোচনা অনুযায়ী কাজ করলো তবে এরা মূর্তি পূজায় লিপ্ত হয়নি। কিন্তু এদের মৃত্যু পরবর্তী প্রজন্মের নিকট থেকে তাওহীদের জ্ঞান বিলুপ্ত হওয়ার ফলে তারা সৎব্যক্তিদের মূর্তিগুলোর ইবাদাত শুরু করে দেয়’’। (বুখারী: ২৬৩ আল-যুবাইদি পৃ: ৯১)
হাদীসে উল্লেখিত ছবি মূর্তি দ্বারা কী বুঝানো হয়েছে? এ সব মূর্তির ইবাদাত করার কারণ কী? ইলেম ভুলে যাওয়ার তাৎপর্য কী?
উত্তর: এখানে ছবি মূর্তি বলতে: নেক ও সৎকর্মপরায়ন ব্যক্তিদের প্রতিকৃতি বুঝানো হয়েছে।
তাদের ইবাদাতের কারণ হলো: পূর্ব-পরুষগণ নেক লোকদের মৃত্যুর পর তাদের প্রতি শ্রদ্ধা, তাজিম, সম্মান ও ভক্তি প্রকাশ করার জন্য কবরের কাছে আস্তানা গড়ে তুলে এবং কবরবাসীদের প্রতিকৃতি গৃহভ্যন্তরে সাজিয়ে রাখে। অতঃপর তাদের পরবর্তী লোকদেরকে শয়তান এ বলে বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয় যে, তোমাদের পূর্ব পুরুষরা ঐ সব প্রতিকৃতির ইবাদাত-উপাসনা করতো এবং বৃষ্টি বর্ষণের প্রার্থনা জানাত।
ইলম (জ্ঞান-বিদ্যা) ভূলে যাওয়া বা বিলুপ্ত হওয়ার অর্থ হচ্ছে:
সত্যনিষ্ঠ দীন প্রচারক, আলেম-ওলামা ও বিদ্বানগণের প্রস্থান বা মৃত্যু হওয়া।
৯৪
{প্রশ্ন: ৯২} ইবনুল ক্বাইয়েম বলেন: একদিকে সালাফে সালেহীন বলেছেন; ঐ সৎকর্মপরায়ন ব্যক্তিদের মৃত্যুর পর তাদের পরবর্তী লোকেরা কবরের কাছে ই‘তিকাফ শুরু করে দেয়। অতঃপর কবরবাসীদের প্রতিকৃতি (তামাসিল) স্থাপন করে। এভাবে অনেকদিন (আল-আমাদ) অতিবাহিত হওয়ার পর স্থাপিত ঐ প্রতিকৃতি তথা কবরপূজা চালু হয়।কবরের কাছে ই‘তিকাফ করার অর্থ কী? তামাসিল কী বস্তু? ‘আল-আমাদ’ অর্থ কী?
উত্তর: কবরে ই‘তিকাফ করার অর্থ হচ্ছে; কবর কেন্দ্রিক আস্তনায় ধর্ণা দেওয়া আর তামাসিল হলো; মূর্তি, সাদৃশ্য, প্রতিকৃতি বা ছবি। আল-আমাদ অর্থ হলো: সময়কাল।
উত্তর: কবরে ই‘তিকাফ করার অর্থ হচ্ছে; কবর কেন্দ্রিক আস্তনায় ধর্ণা দেওয়া আর তামাসিল হলো; মূর্তি, সাদৃশ্য, প্রতিকৃতি বা ছবি। আল-আমাদ অর্থ হলো: সময়কাল।
( غلو ) ‘‘অতিরঞ্জন বা বাড়াবাড়ি করার ব্যাপারে তোমাদেরকে সাবধান করছি। তোমাদের পূর্ববর্তী যারা বাড়াবাড়ি করেছিল তারা ধ্বংস হয়ে গেছে’’। (মুসনাদে আহমাদ ১/২১৫, নাসায়ী ৫/২৬৮, ইবনে মাজাহ; ৩০২৯)
উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা কী?
উত্তর: নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উম্মতকে সতর্ক করে দিয়েছেন যেন তারা পূর্ববর্তী উম্মতের মত নবী ও নেককার লোকদেরকে ভক্তি-শ্রদ্ধায় আতিরঞ্জন করে পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত না হয়। কেননা পূর্ববর্তী উম্মতের কতিপয় লোক নবী ও নেক ব্যক্তিদের ভক্তি-সম্মান ও মর্যাদায় সীমালঙ্ঘন করার ফলে ধ্বংসের মধ্যে নিপতিত হয়েছে।
উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা কী?
উত্তর: নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উম্মতকে সতর্ক করে দিয়েছেন যেন তারা পূর্ববর্তী উম্মতের মত নবী ও নেককার লোকদেরকে ভক্তি-শ্রদ্ধায় আতিরঞ্জন করে পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত না হয়। কেননা পূর্ববর্তী উম্মতের কতিপয় লোক নবী ও নেক ব্যক্তিদের ভক্তি-সম্মান ও মর্যাদায় সীমালঙ্ঘন করার ফলে ধ্বংসের মধ্যে নিপতিত হয়েছে।
৯৬
{প্রশ্ন: ৯৪} ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহ আনহ হতে বর্ণিত আছে যে, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: (মুতানাত্তে‘উন) ‘‘বাড়াবাড়িকারীরা ধ্বংস হোক’’; এ কথাটি তিনবার উচ্চারণ করেন। (মুসলিম- ২৬৭০)মুতানাত্তেউন কারা? ( هلك ) ধ্বংস হোক কথাটি তিনবার বলার কারণ কী? তানাত্তু‘ কী এবং এর উদাহরণ কী?
উত্তর: মুতানাত্তে‘উন এবং তানাত্তু‘ হচ্ছে; কোনো বিষয়ে ব্যুৎপত্তি অর্জনের ভাব প্রকাশ করা এবং ঐ বিষয়ে পারদর্শীতা দেখানোর চেষ্টা করা। যেমন; বিশুদ্ধ ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করা, আলাপ-আলোচনায় তাত্বিকভাব ফুটিয়ে তোলা, মুবাহ বা সাধারণ বৈধ জিনিস হতে নিজকে বিরত রাখা।
এ কথা তিনবার বলার কারণ হচ্ছে; গুরুত্ব অনুধাবন করে সর্তকতা অবলম্বন করা।
উত্তর: মুতানাত্তে‘উন এবং তানাত্তু‘ হচ্ছে; কোনো বিষয়ে ব্যুৎপত্তি অর্জনের ভাব প্রকাশ করা এবং ঐ বিষয়ে পারদর্শীতা দেখানোর চেষ্টা করা। যেমন; বিশুদ্ধ ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করা, আলাপ-আলোচনায় তাত্বিকভাব ফুটিয়ে তোলা, মুবাহ বা সাধারণ বৈধ জিনিস হতে নিজকে বিরত রাখা।
এ কথা তিনবার বলার কারণ হচ্ছে; গুরুত্ব অনুধাবন করে সর্তকতা অবলম্বন করা।
৯৭
{প্রশ্ন: ৯৫} আয়েশা রাদিয়াল্লাহ আনহা থেকে বর্ণিত আছে; উম্মে হাবীবা ও উম্মে সালামাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জানালেন যে, তারা হাবাশায় (আবিসিনিয়া বা ইথিওপিয়ায়) গীর্জা দেখেছেন এবং গীর্জার ভিতরে ছবি-প্রতিকৃতি ছিল। অতঃপর নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, «إِنَّ أُولَئِكَ إِذَا كَانَ فِيهِمُ الرَّجُلُ الصَّالِحُ فَمَاتَ، بَنَوْا عَلَى قَبْرِهِ مَسْجِدًا، وَصَوَّرُوا فِيهِ تِلْكَ الصُّوَرَ، فَأُولَئِكَ شِرَارُ الخَلْقِ عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ القِيَامَةِ»
‘‘সেখানে কোনো সৎকর্মপরায়ন ব্যক্তি বা নেক বান্দার মৃত্যুর পর ঐ জনপদের লোকেরা কবরের সন্নিকটে মসজিদ বানিয়েছে অতঃপর কবরবাসীদের প্রতিকৃতি তৈরী করে লটকিয়ে রেখেছে। যে লোকেরা ঐ কাজ করছে তারা আল্লাহর কাছে নিকৃষ্টতম জীবের অন্তর্ভুক্ত।’’ (মুত্তাফিকুন আলাইহি: বুখারী, ৪২৭; মুসলিম, ৫২৮)
হাদীসে যে দু’টি ফিতনার উল্লেখ হয়েছে তা হলো: (ক) কবরের ফিতনা (খ) মূর্তির ফিতনা। এখানে কানীসা বলে কী বুঝানো হয়েছে? আর ‘ঐ লোকদের’ কথা বলে কাদেরকে বুঝানো হয়েছে? ঐ লোকেরা বলতে কাদের দিকে ইশারা করা হয়েছে?
উত্তর: ‘কানীসা’ হচ্ছে খ্রীষ্টানদের গীর্জা বা উপাসনালয়। ঐ লোকদের সম্পর্কে উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে ধারণা দেওয়া হয়েছে। ঐ লোকেরা বলতে বুঝানো হয়েছে তাদেরকে যারা কবরের কাছে মসজিদের নামে আস্তানা গড়ে তোলে এবং সমাধিস্ত ব্যক্তিদের প্রতিকৃতি তৈরি ও সংরক্ষণ করে।
‘‘সেখানে কোনো সৎকর্মপরায়ন ব্যক্তি বা নেক বান্দার মৃত্যুর পর ঐ জনপদের লোকেরা কবরের সন্নিকটে মসজিদ বানিয়েছে অতঃপর কবরবাসীদের প্রতিকৃতি তৈরী করে লটকিয়ে রেখেছে। যে লোকেরা ঐ কাজ করছে তারা আল্লাহর কাছে নিকৃষ্টতম জীবের অন্তর্ভুক্ত।’’ (মুত্তাফিকুন আলাইহি: বুখারী, ৪২৭; মুসলিম, ৫২৮)
হাদীসে যে দু’টি ফিতনার উল্লেখ হয়েছে তা হলো: (ক) কবরের ফিতনা (খ) মূর্তির ফিতনা। এখানে কানীসা বলে কী বুঝানো হয়েছে? আর ‘ঐ লোকদের’ কথা বলে কাদেরকে বুঝানো হয়েছে? ঐ লোকেরা বলতে কাদের দিকে ইশারা করা হয়েছে?
উত্তর: ‘কানীসা’ হচ্ছে খ্রীষ্টানদের গীর্জা বা উপাসনালয়। ঐ লোকদের সম্পর্কে উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে ধারণা দেওয়া হয়েছে। ঐ লোকেরা বলতে বুঝানো হয়েছে তাদেরকে যারা কবরের কাছে মসজিদের নামে আস্তানা গড়ে তোলে এবং সমাধিস্ত ব্যক্তিদের প্রতিকৃতি তৈরি ও সংরক্ষণ করে।
উত্তর: যারা কবরের পাশে মসজিদ নির্মান করে এবং সেখানে কবরস্ত লোকদের ছবি-প্রতিকৃতি স্থাপন করে তারাই নিকৃষ্ট জীব।
তারা নিকৃষ্ট জীব হিসেবে পরিগণিত হওয়ার কারণ হলো; তারা নিজেরা পথভ্রষ্ট হয়ে আবার অন্যদেরকেও পথভ্রষ্ট করে থাকে। আর পরবর্তী লোকদেরকে পথভ্রষ্ট হবার উপায় ও উপকরণ আবিস্কার করে দিয়ে যায়। অতঃপর মৃত্যুবরণকারী নেক লোকদের কবর কেন্দ্রিক সীমালংঘনের এক পর্যায়ে কবর পূজা শুরু করে দেয়।
তারা নিকৃষ্ট জীব হিসেবে পরিগণিত হওয়ার কারণ হলো; তারা নিজেরা পথভ্রষ্ট হয়ে আবার অন্যদেরকেও পথভ্রষ্ট করে থাকে। আর পরবর্তী লোকদেরকে পথভ্রষ্ট হবার উপায় ও উপকরণ আবিস্কার করে দিয়ে যায়। অতঃপর মৃত্যুবরণকারী নেক লোকদের কবর কেন্দ্রিক সীমালংঘনের এক পর্যায়ে কবর পূজা শুরু করে দেয়।
﴿ لَقَدۡ جَآءَكُمۡ رَسُولٞ مِّنۡ أَنفُسِكُمۡ عَزِيزٌ عَلَيۡهِ مَا عَنِتُّمۡ حَرِيصٌ عَلَيۡكُم بِٱلۡمُؤۡمِنِينَ رَءُوفٞ رَّحِيمٞ ١٢٨ ﴾ [ التوبة : ١٢٨ ]
‘‘তোমাদের কাছে রাসূল এসেছেন তোমাদের মধ্য থেকেই। তোমাদের দুঃখ-কষ্টে তিনি ব্যাথিত হন। তিনি তোমাদের কল্যাণে মনোযোগী আর তিনি মুমিনদের প্রতি স্নেহময় ও দয়ালু’’। (সূরা আত-তাওবা:১২৮)
এ আয়াতের ভাবার্থ কী? আয়াতে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যে কয়টি বৈশিষ্ট্যের কথা বলা হয়েছে তা থেকে উম্মতের শিক্ষণীয় কিছু আছে কি?
উত্তর: আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদেরকে তাঁর অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন যে, তাদের কাছে রাসূল প্রেরণ করা হয়েছে। আর তিনি তাদের মধ্য থেকে নির্ধারিত। অর্থাৎ তাদের মতই মানুষ এবং ভাষাও অভিন্ন। তাদের কাছে তিনি পরিচিত, বিশ্বস্ত এবং আমানতের সুখ্যাতি স্বীকৃত।
অতঃপর আল্লাহ নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রশংসনীয় কিছু গুণ-বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করেন, যথা; তিনি তার আশে-পাশের লোকদের হিদায়াতের জন্য যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালাতেন, তাদেরকে সুপরামর্শ দিতেন এবং ইসলাম গ্রহণের জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন। তাদের কোনো বিপদ-আপদ হলে তিনি পেরেশান হয়ে যেতেন। আর তাদের দুনিয়া ও আখেরাতের কোনো ক্ষতি তাঁর কাছে অপছন্দনীয়। তাছাড়াও মুমিনদের প্রতি রয়েছে তাঁর স্নেহের পরশ ও দয়া।
এ সব গুণ-বৈশিষ্ট্য থেকে উম্মতের শিক্ষণীয় হলো: আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসুলের গুণ-বৈশিষ্টসমূহ উল্লেখ করেছেন যেন উম্মতের চেতনা হয়। আর তাদের প্রয়োজনেই রাসূলের আবির্ভাব তিনি তাদেরকে সাবধান বাণী শুনিয়ে শির্কের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন এবং শির্ক হচ্ছে সবচেয়ে বড় গুনাহ। যে সব কারণে শির্কে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে তার বর্ণনা করেছেন। অত্যন্ত জোর দিয়েই তিনি শির্ক করতে নিষেধ করেছেন যার মধ্যে আছে কবরের তাজীম-সম্মান এবং বাড়াবাড়ি করা। কবরের কাছে সালাত পড়া এবং অন্যান্য কার্যকলাপ যা কবর পূজা হিসেবে বিবেচিত।
‘‘তোমাদের কাছে রাসূল এসেছেন তোমাদের মধ্য থেকেই। তোমাদের দুঃখ-কষ্টে তিনি ব্যাথিত হন। তিনি তোমাদের কল্যাণে মনোযোগী আর তিনি মুমিনদের প্রতি স্নেহময় ও দয়ালু’’। (সূরা আত-তাওবা:১২৮)
এ আয়াতের ভাবার্থ কী? আয়াতে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যে কয়টি বৈশিষ্ট্যের কথা বলা হয়েছে তা থেকে উম্মতের শিক্ষণীয় কিছু আছে কি?
উত্তর: আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদেরকে তাঁর অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন যে, তাদের কাছে রাসূল প্রেরণ করা হয়েছে। আর তিনি তাদের মধ্য থেকে নির্ধারিত। অর্থাৎ তাদের মতই মানুষ এবং ভাষাও অভিন্ন। তাদের কাছে তিনি পরিচিত, বিশ্বস্ত এবং আমানতের সুখ্যাতি স্বীকৃত।
অতঃপর আল্লাহ নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রশংসনীয় কিছু গুণ-বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করেন, যথা; তিনি তার আশে-পাশের লোকদের হিদায়াতের জন্য যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালাতেন, তাদেরকে সুপরামর্শ দিতেন এবং ইসলাম গ্রহণের জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন। তাদের কোনো বিপদ-আপদ হলে তিনি পেরেশান হয়ে যেতেন। আর তাদের দুনিয়া ও আখেরাতের কোনো ক্ষতি তাঁর কাছে অপছন্দনীয়। তাছাড়াও মুমিনদের প্রতি রয়েছে তাঁর স্নেহের পরশ ও দয়া।
এ সব গুণ-বৈশিষ্ট্য থেকে উম্মতের শিক্ষণীয় হলো: আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসুলের গুণ-বৈশিষ্টসমূহ উল্লেখ করেছেন যেন উম্মতের চেতনা হয়। আর তাদের প্রয়োজনেই রাসূলের আবির্ভাব তিনি তাদেরকে সাবধান বাণী শুনিয়ে শির্কের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন এবং শির্ক হচ্ছে সবচেয়ে বড় গুনাহ। যে সব কারণে শির্কে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে তার বর্ণনা করেছেন। অত্যন্ত জোর দিয়েই তিনি শির্ক করতে নিষেধ করেছেন যার মধ্যে আছে কবরের তাজীম-সম্মান এবং বাড়াবাড়ি করা। কবরের কাছে সালাত পড়া এবং অন্যান্য কার্যকলাপ যা কবর পূজা হিসেবে বিবেচিত।
" إِنَّ اللهَ زَوَى لِي الْأَرْضَ، فَرَأَيْتُ مَشَارِقَهَا وَمَغَارِبَهَا، وَإِنَّ أُمَّتِي سَيَبْلُغُ مُلْكُهَا مَا زُوِيَ لِي مِنْهَا، وَأُعْطِيتُ الْكَنْزَيْنِ الْأَحْمَرَ وَالْأَبْيَضَ، وَإِنِّي سَأَلْتُ رَبِّي لِأُمَّتِي أَنْ لَا يُهْلِكَهَا بِسَنَةٍ عَامَّةٍ، وَأَنْ لَا يُسَلِّطَ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ سِوَى أَنْفُسِهِمْ، فَيَسْتَبِيحَ بَيْضَتَهُمْ، وَإِنَّ رَبِّي قَالَ : يَا مُحَمَّدُ إِنِّي إِذَا قَضَيْتُ قَضَاءً فَإِنَّهُ لَا يُرَدُّ، وَإِنِّي أَعْطَيْتُكَ لِأُمَّتِكَ أَنْ لَا أُهْلِكَهُمْ بِسَنَةٍ عَامَّةٍ، وَأَنْ لَا أُسَلِّطَ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ سِوَى أَنْفُسِهِمْ، يَسْتَبِيحُ بَيْضَتَهُمْ، وَلَوِ اجْتَمَعَ عَلَيْهِمْ مَنْ بِأَقْطَارِهَا - أَوْ قَالَ مَنْ بَيْنَ أَقْطَارِهَا - حَتَّى يَكُونَ بَعْضُهُمْ يُهْلِكُ بَعْضًا، وَيَسْبِي بَعْضُهُمْ بَعْضًا "
‘‘অবশ্যই আল্লাহ আমার জন্য যমীনকে সংকুচিত করে দেখালেন। অতঃপর আমি পৃথিবীর পূর্বপ্রান্ত হতে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত দেখতে পেলাম। অবশ্যই আমার উম্মতের কর্তৃত্ব ঐ পর্যন্ত পৌছবে যে পর্যন্ত আমাকে সংকোচন করে দেখানো হয়েছে। আমাকে লাল (কায়সার) ও শ্বেত বর্ণের (কিসরা) দুটি ভাণ্ডার (স্বর্ণ ও রৌপ্য) প্রদান করা হয়েছে। আর আমি আল্লাহর কাছে আবেদন করেছি, তিনি যেন আমার উম্মতকে মহামারী দিয়ে ধ্বংস করে না দেন এবং অন্য জাতিকে এ উম্মতের উপর যেন এমন ব্যাপক নিরংকুশ বিজয় না দেন যার মাধ্যমে তাদের ছোট বড় সবাই ধ্বংস হয়ে যাবে, তবে এ উম্মতের নিজেদের ব্যাপার ভিন্ন। এরপর আমার রব্ব আমাকে বললেন; হে মুহাম্মদ; ‘আমি যদি কোনো ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিয়ে ফেলি তবে তা পরিবর্তন করা হয় না। তোমাকে এবং তোমার উম্মতকে সর্বাত্মকভাবে মহামারী দিয়ে হালাক করে দেব না। আর শত্রুপক্ষ ঐক্যবদ্ধ হয়েও তোমার উম্মতকে সার্বিকভাবে ধ্বংস করতে পারবে না। অথবা বলেছেন: দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত হতে ঐক্যবদ্ধ হলেও তারা তোমার উম্মতকে ধ্বংস করতে পারবে না। তবে এ উম্মতের একে অপরকে ধ্বংস-উৎখাতে লিপ্ত হবে এবং একে অন্যকে বন্দী করায় লিপ্ত থাকবে’’ (মুসলিম: ২৮৮৯ কিতাবুল ফিতান)
( زوى لي )এর অর্থ কী?
উত্তর: অর্থাৎ আল্লাহ আমার জন্যে পৃথিবীকে সংকুচিত করে দেখান আর আমি পৃথিবীর পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত দেখতে পেলাম এবং তা আমার উম্মতের সাম্রাজ্য বিস্তারিত হওয়ার চিত্র।
‘‘অবশ্যই আল্লাহ আমার জন্য যমীনকে সংকুচিত করে দেখালেন। অতঃপর আমি পৃথিবীর পূর্বপ্রান্ত হতে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত দেখতে পেলাম। অবশ্যই আমার উম্মতের কর্তৃত্ব ঐ পর্যন্ত পৌছবে যে পর্যন্ত আমাকে সংকোচন করে দেখানো হয়েছে। আমাকে লাল (কায়সার) ও শ্বেত বর্ণের (কিসরা) দুটি ভাণ্ডার (স্বর্ণ ও রৌপ্য) প্রদান করা হয়েছে। আর আমি আল্লাহর কাছে আবেদন করেছি, তিনি যেন আমার উম্মতকে মহামারী দিয়ে ধ্বংস করে না দেন এবং অন্য জাতিকে এ উম্মতের উপর যেন এমন ব্যাপক নিরংকুশ বিজয় না দেন যার মাধ্যমে তাদের ছোট বড় সবাই ধ্বংস হয়ে যাবে, তবে এ উম্মতের নিজেদের ব্যাপার ভিন্ন। এরপর আমার রব্ব আমাকে বললেন; হে মুহাম্মদ; ‘আমি যদি কোনো ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিয়ে ফেলি তবে তা পরিবর্তন করা হয় না। তোমাকে এবং তোমার উম্মতকে সর্বাত্মকভাবে মহামারী দিয়ে হালাক করে দেব না। আর শত্রুপক্ষ ঐক্যবদ্ধ হয়েও তোমার উম্মতকে সার্বিকভাবে ধ্বংস করতে পারবে না। অথবা বলেছেন: দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত হতে ঐক্যবদ্ধ হলেও তারা তোমার উম্মতকে ধ্বংস করতে পারবে না। তবে এ উম্মতের একে অপরকে ধ্বংস-উৎখাতে লিপ্ত হবে এবং একে অন্যকে বন্দী করায় লিপ্ত থাকবে’’ (মুসলিম: ২৮৮৯ কিতাবুল ফিতান)
( زوى لي )এর অর্থ কী?
উত্তর: অর্থাৎ আল্লাহ আমার জন্যে পৃথিবীকে সংকুচিত করে দেখান আর আমি পৃথিবীর পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত দেখতে পেলাম এবং তা আমার উম্মতের সাম্রাজ্য বিস্তারিত হওয়ার চিত্র।
১০২
{প্রশ্ন: ১০০} রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৃথিবীর পূর্ব-পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত সম্রাজ্য বিস্তারের যে খবর বলেছেন তা কি বাস্তবায়িত হয়েছে?উত্তর: হ্যাঁ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মত পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্তে স্পেন এবং পূর্ব দিগন্তে ভারত ও চিন দেশ পর্যন্ত সম্রাজ্য বিস্তার করেছে।
১০৩
{প্রশ্ন: ১০১} পূর্বোক্ত হাদীসে লাল ও সফেদ (শুভ্র) দুটি ভাণ্ডার অর্জনের কথা বলা হয়েছে তা কী এবং কখন অর্জিত হয়েছে?উত্তর: সফেদ সম্পদের ভাণ্ডার হলো তৎকালীন পারস্যের সম্রাট কিসরার সম্পদ ও ভাণ্ডার যার মধ্যে প্রধান হলো রৌপ্যলংকার সামগ্রী। আর লাল সম্পদের ভাণ্ডার হলো রোম দেশের সম্রাট কাইসারের ভাণ্ডার। আর স্বর্ণই ছিল তাদের প্রধান সম্পদ যা লাল বর্ণের।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পূর্বাভাষ বাস্তবায়িত হয় ওমর ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতকালে মুসলিমরা ঐ দুটি সাম্রাজ্য জয় করার মাধ্যমে। অতঃপর সমস্ত সম্পদ ওমর রাদিয়াল্লাহ আনহুর তত্ত্বাবধানে সমর্পিত হয়।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পূর্বাভাষ বাস্তবায়িত হয় ওমর ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতকালে মুসলিমরা ঐ দুটি সাম্রাজ্য জয় করার মাধ্যমে। অতঃপর সমস্ত সম্পদ ওমর রাদিয়াল্লাহ আনহুর তত্ত্বাবধানে সমর্পিত হয়।
১০৫
(প্রশ্ন: ১০৩} হাদীসে বর্ণিত; (وَأَنْ لَا يُسَلِّطَ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ سِوَى أَنْفُسِهِمْ، فَيَسْتَبِيحَ بَيْضَتَهُمْ) এর ভাবার্থ কি?উত্তর: অর্থাৎ আমি আমার রব্বের কাছে উম্মতের জন্যে নিবেদন করলাম যে, তাদের উপর কোনো কাফের সম্প্রদায় যেন এমনভাবে বিজয়লাভ করতে না পারে; যাতে তারা সম্পূর্ণরূপে পর্যুদস্ত হয়ে পড়ে।
১০৬
{প্রশ্ন: ১০৪} আল্লাহ কি দুশমনদের সর্বাত্মক বিজয় না দেওয়ার ব্যাপারে নবীর আবেদন মঞ্জুর করেছেন? (بَيْضَتَهُمْ) অর্থ কী? হাদীসে বর্ণিত (أَقْطَارِ) দ্বারা কী বুঝায়?উত্তর: হ্যাঁ, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানিয়েছেন যে, আল্লাহ ঐ আবেদন অনুযায়ী মুসলিমদের উপর দুশমনদেরকে সর্বাত্মক বিজয় ও কতৃত্ব প্রতিষ্ঠা লাভ করার সুযোগ দিবেন না। আর তারা মুসলিমদের দেশে ও জনপদে নিরংকুশ আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হবে না। এটাই ( أَقْطَارِ ) এবং ( بَيْضَتَهُمْ ) এর অর্থ।
আবার কেউ কেউ বলেন যে, এর অর্থ হলো; অধিকাংশ শত্রু সম্প্রদায় অথবা তাদের একটি সংগবন্ধ দল। তারা সংখ্যায় কম হয়েও দুনিযার সর্বস্থান হতে যদি একত্রিত হয় তবুও নিরংকুশ সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হবে না।
আবার কেউ কেউ বলেন যে, এর অর্থ হলো; অধিকাংশ শত্রু সম্প্রদায় অথবা তাদের একটি সংগবন্ধ দল। তারা সংখ্যায় কম হয়েও দুনিযার সর্বস্থান হতে যদি একত্রিত হয় তবুও নিরংকুশ সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হবে না।
১০৭
{প্রশ্ন: ১০৫} হাদীসে বর্ণিত; (حَتَّى يَكُونَ بَعْضُهُمْ يُهْلِكُ بَعْضًا، وَيَسْبِي بَعْضُهُمْ بَعْضًا) এর অর্থ কী এবং তা কি সংঘটিত হয়েছে?উত্তর: অর্থাৎ আল্লাহ কাফেরদেরকে মুমিনদের উপরে নিরংকুশ আধিপত্য বিস্তার করতে দিবেন না। যতক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদারগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কুরআন-হাদীস ভিত্তিক দীন ইসলামকে আঁকড়ে থাকবে। আর যদি নিজেদের মধ্যে মতভেদ, অনৈক্য, খুনা-খুনী, রক্তপাত, লুটতরাজ ইত্যাদি অবস্থা বিরাজ করে তাহলেই কেবল কুফরী শক্তির আধিপত্য বিস্তারলাভ করবে।
বিভিন্ন সময়ে মুসলিম জাতি দীন ইসলামের দাবী অনুযায়ী ঐক্যবদ্ধ থাকতে সক্ষম হয় নি বরং পারস্পরিক দ্বন্দ সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে আর তখনই কুফরী শক্তি আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ পেয়েছে। তাছাড়াও মুসলিমগণ শত্রুদের বিরুদ্ধে জিহাদে মনোনিবেশ না করে অন্য কিছুতে বিভোর থেকেছে। অতঃপর মুসলিম জাতির বিপর্যয় হলেও তা দীন ইসলামের কোনো দুর্বলতার কারণে নয় এবং তাতে দীনের শ্রেষ্ঠত্বের কোনো ক্ষতিও হবে না। সুতরাং মুসলিম জাতির দুর্বলতা ও বিপর্যয়কে, দীন ইসলামের দুর্বলতা ও বিপর্যয় বলার কোনো সুযোগ নেই [আল-জামে আল ফরিদ পৃষ্ঠা: ১০২।]।
বিভিন্ন সময়ে মুসলিম জাতি দীন ইসলামের দাবী অনুযায়ী ঐক্যবদ্ধ থাকতে সক্ষম হয় নি বরং পারস্পরিক দ্বন্দ সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে আর তখনই কুফরী শক্তি আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ পেয়েছে। তাছাড়াও মুসলিমগণ শত্রুদের বিরুদ্ধে জিহাদে মনোনিবেশ না করে অন্য কিছুতে বিভোর থেকেছে। অতঃপর মুসলিম জাতির বিপর্যয় হলেও তা দীন ইসলামের কোনো দুর্বলতার কারণে নয় এবং তাতে দীনের শ্রেষ্ঠত্বের কোনো ক্ষতিও হবে না। সুতরাং মুসলিম জাতির দুর্বলতা ও বিপর্যয়কে, দীন ইসলামের দুর্বলতা ও বিপর্যয় বলার কোনো সুযোগ নেই [আল-জামে আল ফরিদ পৃষ্ঠা: ১০২।]।
উত্তর: আভিধানিক অর্থ হলো: সূক্ষ্ম কারচুপি। পারিভাষিক অর্থ হলো: মন্ত্র পাঠ করে ঝাড়া, গিরায় ফুঁক দেওয়া, তাবিজ করা এবং ঐ ধরনের অন্যান্য কাজ করা যা দ্বারা অন্যের ক্বলবে, শরীরে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। আর ঐ প্রতিক্রিয়ায় কেউ রোগাক্রান্ত হয়, পারস্পরিক সম্পর্কের অবনতি হয়, কারো মৃত্যু ঘটে কিংবা স্বামী-স্ত্রী পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
উত্তর: জাদু হারাম; কেননা তা ঈমান ও তাওহীদের পরিপন্থী কুফরী কাজ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنۡ أَحَدٍ حَتَّىٰ يَقُولَآ إِنَّمَا نَحۡنُ فِتۡنَةٞ فَلَا تَكۡفُرۡۖ فَيَتَعَلَّمُونَ مِنۡهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِۦ بَيۡنَ ٱلۡمَرۡءِ وَزَوۡجِهِۦ﴾ [ البقرة : ١٠٢ ]
‘‘তারা কাউকেই জাদু শিখাতোনা একথা না বলে যে, আমরা পরীক্ষার জন্য অতএব তোমরা কুফরি করো না। অতঃপর তারা তাদের নিকট থেকে এমন জাদু শিখত, যা দ্বারা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে’’। (সূরা আল-বাক্বারা; ১০২)
জাদুকরের শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড, আর দলীল হলো:
(১) জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে মারফু সনদে বর্ণিত আছে;
«حَدُّ السَّاحِرِ ضَرْبَةٌ بِالسَّيْفِ»
‘‘জাদুকরের দণ্ড হচ্ছে তরবারী দ্বারা (শিরচ্ছেদ)’’। (তিরমিযী-১৪৫০ হাকেম; ৪/৩৬০ বায়হাক্বী: ৮/১২৮)
(২) ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি তার খিলাফতকালে রাষ্ট্রিয় কর্মকর্তাদের নিকট ফরমান জারি করেছেন যে,
«اقتلوا كل ساحر وساحرة»
‘‘তোমরা প্রত্যেক পুরুষ ও মহিলা জাদুকরদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আদেশ করেছেন’’। (বুখারী, আবুদাউদ, মুসন্নাফে আব্দুর রাযযাক)
(৩) উম্মুল মু’মিনীন হাফসা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত আছে যে, তাঁরই ঘরে আশ্রিত একটি মেয়ে তাঁকে জাদু করে, ফলে সে মেয়েটিকে হত্যা করার আদেশ দেওয়া হয় এবং তাকে হত্যা করা হয়। (মালেক তাঁর মুআত্তায় এবং বায়হাকী (৮/১৩৬) বর্ণনা করেন, দেখুন: মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ ৬/২৮০)
অতএব, জাদুকরকে হত্যার দলীল আল্লাহর রাসূলের তিনজন সাহাবী থেকে সহীহভাবে প্রমাণিত হল; তারা হলেন:- ওমর, তাঁর মেয়ে হাফসা এবং জুনদুব রাদ্বিয়াল্লাহ তা‘আলা আনহুম। (আল-বুখারী ফিত-তারিখ: ২/২২২, বায়হাকী: ৮/১৩৬)
﴿ وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنۡ أَحَدٍ حَتَّىٰ يَقُولَآ إِنَّمَا نَحۡنُ فِتۡنَةٞ فَلَا تَكۡفُرۡۖ فَيَتَعَلَّمُونَ مِنۡهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِۦ بَيۡنَ ٱلۡمَرۡءِ وَزَوۡجِهِۦ﴾ [ البقرة : ١٠٢ ]
‘‘তারা কাউকেই জাদু শিখাতোনা একথা না বলে যে, আমরা পরীক্ষার জন্য অতএব তোমরা কুফরি করো না। অতঃপর তারা তাদের নিকট থেকে এমন জাদু শিখত, যা দ্বারা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে’’। (সূরা আল-বাক্বারা; ১০২)
জাদুকরের শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড, আর দলীল হলো:
(১) জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে মারফু সনদে বর্ণিত আছে;
«حَدُّ السَّاحِرِ ضَرْبَةٌ بِالسَّيْفِ»
‘‘জাদুকরের দণ্ড হচ্ছে তরবারী দ্বারা (শিরচ্ছেদ)’’। (তিরমিযী-১৪৫০ হাকেম; ৪/৩৬০ বায়হাক্বী: ৮/১২৮)
(২) ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি তার খিলাফতকালে রাষ্ট্রিয় কর্মকর্তাদের নিকট ফরমান জারি করেছেন যে,
«اقتلوا كل ساحر وساحرة»
‘‘তোমরা প্রত্যেক পুরুষ ও মহিলা জাদুকরদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আদেশ করেছেন’’। (বুখারী, আবুদাউদ, মুসন্নাফে আব্দুর রাযযাক)
(৩) উম্মুল মু’মিনীন হাফসা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত আছে যে, তাঁরই ঘরে আশ্রিত একটি মেয়ে তাঁকে জাদু করে, ফলে সে মেয়েটিকে হত্যা করার আদেশ দেওয়া হয় এবং তাকে হত্যা করা হয়। (মালেক তাঁর মুআত্তায় এবং বায়হাকী (৮/১৩৬) বর্ণনা করেন, দেখুন: মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ ৬/২৮০)
অতএব, জাদুকরকে হত্যার দলীল আল্লাহর রাসূলের তিনজন সাহাবী থেকে সহীহভাবে প্রমাণিত হল; তারা হলেন:- ওমর, তাঁর মেয়ে হাফসা এবং জুনদুব রাদ্বিয়াল্লাহ তা‘আলা আনহুম। (আল-বুখারী ফিত-তারিখ: ২/২২২, বায়হাকী: ৮/১৩৬)
«الْعِيَافَةُ، وَالطِّيَرَةُ، وَالطَّرْقُ مِنَ الجِبْتِ»
(আহমাদ ৩/৪৭৭, আবু দাউদ: ৩৯০৮, নাসায়ী ফিল কুবরা: ৮/২৭৫, আল-বাগায়ী ফি শারহীস সুন্নাহ; ১২/১৭৭)
হাদীসে উল্লেখিত শব্দগুলির ভাবার্থ কি?
উত্তর: ( الْعِيَافَةُ ) (আল-‘ইয়াফা) = পাখীর ডাক, পাখী উড়ানোর মাধ্যমে লক্ষণ গ্রহণ করা এবং পাখীর নড়াচড়া। পাখীর নাম, পাখীর ডাক এবং চলাচল অনুযায়ী শুভ বা অশুভ লক্ষণ মনে করা।
( الطَّرْقُ ) (আত্তরক্ব) = যমীনের রেখা অথবা বালুর মধ্যে রেখাপাত। কিংবা জাদু মন্ত্রের প্রয়োজনে ঢিল ছুড়া অতঃপর তথাকথিত গায়েব আবিস্কার করা।
( الطِّيَرَةُ ) (আত-ত্বিয়ারাহ) = শ্রুত অথবা দর্শিত অশুভ লক্ষণ।
( الجِبْتِ ) (আল-জিবত) = জাদু-মন্ত্র, কিংবা শয়তানের সূর শব্দ ঝংকার। [আল জামে আল-ফরিদ ১১০।]
(আহমাদ ৩/৪৭৭, আবু দাউদ: ৩৯০৮, নাসায়ী ফিল কুবরা: ৮/২৭৫, আল-বাগায়ী ফি শারহীস সুন্নাহ; ১২/১৭৭)
হাদীসে উল্লেখিত শব্দগুলির ভাবার্থ কি?
উত্তর: ( الْعِيَافَةُ ) (আল-‘ইয়াফা) = পাখীর ডাক, পাখী উড়ানোর মাধ্যমে লক্ষণ গ্রহণ করা এবং পাখীর নড়াচড়া। পাখীর নাম, পাখীর ডাক এবং চলাচল অনুযায়ী শুভ বা অশুভ লক্ষণ মনে করা।
( الطَّرْقُ ) (আত্তরক্ব) = যমীনের রেখা অথবা বালুর মধ্যে রেখাপাত। কিংবা জাদু মন্ত্রের প্রয়োজনে ঢিল ছুড়া অতঃপর তথাকথিত গায়েব আবিস্কার করা।
( الطِّيَرَةُ ) (আত-ত্বিয়ারাহ) = শ্রুত অথবা দর্শিত অশুভ লক্ষণ।
( الجِبْتِ ) (আল-জিবত) = জাদু-মন্ত্র, কিংবা শয়তানের সূর শব্দ ঝংকার। [আল জামে আল-ফরিদ ১১০।]
১১১
{প্রশ্ন: ১০৯} নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কয়েকজন সহধর্মিনী হতে বর্ণিত আছে: রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: «مَنْ أَتَى عَرَّافًا فَسَأَلَهُ عَنْ شَيْءٍ، لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلَاةٌ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً»
‘‘যে ব্যক্তি গণকের কাছে যাবে এবং তাকে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করবে অতঃপর তাকে কিছু জিজ্ঞেস করবে সে ব্যক্তির চল্লিশ দিনের সালাত কবুল হবে না’’। (মুসলিম-২২৩০)
আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহ থেকে বর্ণিত আছে: নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
" مَنْ أَتَى كَاهِنًا فَصَدَّقَهُ بِمَا يَقُولُ، فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ "
‘‘যে জ্যোতিষের কাছে যাবে এবং তাদের কথা বিশ্বাস করলো সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপরে নাযিলকৃত বিষয়ে কুফরি করলো’’। (আবু দাউদ: ৩৯০৪)
হাকেম সহ আরো চারজন বিশুদ্ধতার শর্ত অনুযায়ী আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বরাত দিয়ে উল্লেখ করেছেন যে;
«مَنْ أَتَى كَاهِنًا، أَوْ عَرَّافًا، فَصَدَّقَهُ بِمَا يَقُولُ، فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ»
‘‘যে ব্যক্তি গণক অথবা জ্যোতিষের কাছে যাবে অতঃপর ঐ গণক অথবা জ্যোতিষ যা বলবে তা বিশ্বাস করলে, গমনকারী ব্যক্তি মুহাম্মাদ নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপরে নাযিলকৃত বিষয়ে কুফরিতে লিপ্ত হবে’’ (হাকেম ও বায়হাকী)
এখানে মুহাম্মদ এর উপর নাযিলকৃত বিষয় কী?
উত্তর: মহাগ্রন্থ আল-কুরআন এবং সহীহ আল-হাদীস।
‘‘যে ব্যক্তি গণকের কাছে যাবে এবং তাকে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করবে অতঃপর তাকে কিছু জিজ্ঞেস করবে সে ব্যক্তির চল্লিশ দিনের সালাত কবুল হবে না’’। (মুসলিম-২২৩০)
আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহ থেকে বর্ণিত আছে: নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
" مَنْ أَتَى كَاهِنًا فَصَدَّقَهُ بِمَا يَقُولُ، فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ "
‘‘যে জ্যোতিষের কাছে যাবে এবং তাদের কথা বিশ্বাস করলো সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপরে নাযিলকৃত বিষয়ে কুফরি করলো’’। (আবু দাউদ: ৩৯০৪)
হাকেম সহ আরো চারজন বিশুদ্ধতার শর্ত অনুযায়ী আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বরাত দিয়ে উল্লেখ করেছেন যে;
«مَنْ أَتَى كَاهِنًا، أَوْ عَرَّافًا، فَصَدَّقَهُ بِمَا يَقُولُ، فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ»
‘‘যে ব্যক্তি গণক অথবা জ্যোতিষের কাছে যাবে অতঃপর ঐ গণক অথবা জ্যোতিষ যা বলবে তা বিশ্বাস করলে, গমনকারী ব্যক্তি মুহাম্মাদ নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপরে নাযিলকৃত বিষয়ে কুফরিতে লিপ্ত হবে’’ (হাকেম ও বায়হাকী)
এখানে মুহাম্মদ এর উপর নাযিলকৃত বিষয় কী?
উত্তর: মহাগ্রন্থ আল-কুরআন এবং সহীহ আল-হাদীস।
১১২
{প্রশ্ন:১১০} উল্লেখিত হাদীস দুটির বিষয় বস্তুকে একীভূত করলে কি অর্থ দাড়ায়? হাদীস দুটির শিক্ষণীয় বিষয়গুলি কী কী?উত্তর: একটিতে বলা হয়েছে চল্লিশ দিনের সালাত কবুল হবে না। আর এটা হবে গণকের কাছে গমন করে, তাকে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করার কারণে। কেননা কতিপয় বিশুদ্ধ বর্ণনায় ( فَصَدَّقَهُ ) ‘বিশ্বাস করা’ শব্দটি উল্লেখ করা হয়নি।
অপর এক বর্ণনায় কুফরী করার কথা বলা হয়েছে আর এর অর্থ কুফরী কাজ অর্থাৎ গমনকারী ব্যক্তি কাফের হয়ে যাবে।
হাদীসের শিক্ষা:
(ক) জাদুকর, গণক, জ্যোতিষ এবং এ ধরনের কাজের সাথে জড়িতরা কাফের। কেননা তারা গায়েবী বিষয়ে জ্ঞানের দাবী করে অথচ গায়েবী বিষয় একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলাই পরিজ্ঞাত। অন্য কেউই গায়েব জানে না।
(খ) জাদুকর, জ্যোতিষী এবং এ ধরনের অন্যান্যদের কাছে গমণ করা, কোনো কিছু জানতে চাওয়া, তাদের কথায় বিশ্বাস স্থাপন করার ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়েছে।
(গ) তাদের কাছে যাওয়া এবং বিশ্বাস করা কুফরী কাজ।
(ঘ) জাদুকর-জ্যোতিষীদেরকে বিশ্বাস করা আল-কুরআনের প্রতি ঈমানের পরিপন্থী।
অপর এক বর্ণনায় কুফরী করার কথা বলা হয়েছে আর এর অর্থ কুফরী কাজ অর্থাৎ গমনকারী ব্যক্তি কাফের হয়ে যাবে।
হাদীসের শিক্ষা:
(ক) জাদুকর, গণক, জ্যোতিষ এবং এ ধরনের কাজের সাথে জড়িতরা কাফের। কেননা তারা গায়েবী বিষয়ে জ্ঞানের দাবী করে অথচ গায়েবী বিষয় একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলাই পরিজ্ঞাত। অন্য কেউই গায়েব জানে না।
(খ) জাদুকর, জ্যোতিষী এবং এ ধরনের অন্যান্যদের কাছে গমণ করা, কোনো কিছু জানতে চাওয়া, তাদের কথায় বিশ্বাস স্থাপন করার ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়েছে।
(গ) তাদের কাছে যাওয়া এবং বিশ্বাস করা কুফরী কাজ।
(ঘ) জাদুকর-জ্যোতিষীদেরকে বিশ্বাস করা আল-কুরআনের প্রতি ঈমানের পরিপন্থী।
১১৩
{প্রশ্ন: ১১১} ‘আররাফ (عراف), রম্মাল (رمال), কাহেন (كاهن), মুনাজ্জেম (منجم), এ শব্দসমূহের মধ্যে অর্থগত পার্থক্য কী?উত্তর: যারা গায়েব জানার দাবী করে এগুলো তাদেরই নাম কিন্তু তাদের পদ্ধতি ভিন্ন:
আররাফ = যে ওৎপেতে তথ্য সংগ্রহ করে এবং সামষ্টিক বিষয়ে ভবিষ্যৎ বাণী শুনায়। অথবা কারো মনের কথা বলে দেয়, কিংবা সে দাবী করে যে; বিভিন্ন বিষয়ের সুচনাতেই সব কিছু বলে দিতে পারে যেমন; চোরের সন্ধান এবং জিনিস-পত্র কোথায় আছে ইত্যাদি।
রম্মাল = যে ব্যক্তি ঢিল ছুড়ে কিংবা মাটিতে রেখা চিত্র এঁকে গায়েব বা অনুপস্থিত বিষয়ে জ্ঞান লাভ করার দাবী করে।
কাহেন = জাদুকর; যে গায়েবের খবর জানার দাবী করে।
মুনাজ্জেম = জ্যোতিষ (হস্তরেখাবিদ); যে ব্যক্তি গ্রহ নক্ষত্রের সাহায্যে দূনিয়ার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আগাম কথা বলে।
জ্যোতিষী তিন প্রকার:
(এক) কুফরী; এমন বিশ্বাস করা যে, গ্রহ-নক্ষত্রের আপন প্রভাবেই পৃথিবীর বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহ সংঘটিত হয়।
(দুই) হারাম এবং এক প্রকার শির্ক; যখন গ্রহ নক্ষত্র একটা অপরটার কাছাকাছি আসা কিংবা নির্দিষ্ট কক্ষপথ পরিবর্তন করাকে বিভিন্ন ঘটনা দুর্ঘটনার প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করে। পত্র-পত্রিকায় তথাকথিত মহাজাতকের নক্ষত্র বিশ্লেষণ পূর্বক সাপ্তাহিক রাশিফল প্রকাশ করাও ঐসবের অন্তর্ভুক্ত। অথচ সব কিছুই সংঘটিত হয় আল্লাহর ইচ্ছায়।
(তিন) আকাশপানে চেয়ে নক্ষত্র দেখে সময় ও ক্বিবলা নির্বাচন করা; আর এটা জায়েয আছে। মহামহিয়ান আল্লাহর বাণী:
﴿ وَعَلَٰمَٰتٖۚ وَبِٱلنَّجۡمِ هُمۡ يَهۡتَدُونَ ١٦ ﴾ [ النحل : ١٦ ]
‘‘আর তাহারা নক্ষত্র এবং চিহ্নসমূহ দ্বারা পথনির্দেশ লাভ করে’’। (সূরা আন নাহল-১৬)
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া বলেন: আর-রাফ (তথ্য চোর) হচ্ছে কাহেন বা জাদু-মন্ত্রনাকারী ঠাকুর, জ্যোতিষ, গণক, রেখাবিদ ইত্যাদি। এরা সকলেই প্রায় একই পদ্ধতিতে বিভিন্ন বিষয়ে তাত্বিক ও বিশ্লেষণমূলক কথা বলে থাকে। [আল-জামে আল ফরিদ ১১৪-১১৬।]
আররাফ = যে ওৎপেতে তথ্য সংগ্রহ করে এবং সামষ্টিক বিষয়ে ভবিষ্যৎ বাণী শুনায়। অথবা কারো মনের কথা বলে দেয়, কিংবা সে দাবী করে যে; বিভিন্ন বিষয়ের সুচনাতেই সব কিছু বলে দিতে পারে যেমন; চোরের সন্ধান এবং জিনিস-পত্র কোথায় আছে ইত্যাদি।
রম্মাল = যে ব্যক্তি ঢিল ছুড়ে কিংবা মাটিতে রেখা চিত্র এঁকে গায়েব বা অনুপস্থিত বিষয়ে জ্ঞান লাভ করার দাবী করে।
কাহেন = জাদুকর; যে গায়েবের খবর জানার দাবী করে।
মুনাজ্জেম = জ্যোতিষ (হস্তরেখাবিদ); যে ব্যক্তি গ্রহ নক্ষত্রের সাহায্যে দূনিয়ার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আগাম কথা বলে।
জ্যোতিষী তিন প্রকার:
(এক) কুফরী; এমন বিশ্বাস করা যে, গ্রহ-নক্ষত্রের আপন প্রভাবেই পৃথিবীর বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহ সংঘটিত হয়।
(দুই) হারাম এবং এক প্রকার শির্ক; যখন গ্রহ নক্ষত্র একটা অপরটার কাছাকাছি আসা কিংবা নির্দিষ্ট কক্ষপথ পরিবর্তন করাকে বিভিন্ন ঘটনা দুর্ঘটনার প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করে। পত্র-পত্রিকায় তথাকথিত মহাজাতকের নক্ষত্র বিশ্লেষণ পূর্বক সাপ্তাহিক রাশিফল প্রকাশ করাও ঐসবের অন্তর্ভুক্ত। অথচ সব কিছুই সংঘটিত হয় আল্লাহর ইচ্ছায়।
(তিন) আকাশপানে চেয়ে নক্ষত্র দেখে সময় ও ক্বিবলা নির্বাচন করা; আর এটা জায়েয আছে। মহামহিয়ান আল্লাহর বাণী:
﴿ وَعَلَٰمَٰتٖۚ وَبِٱلنَّجۡمِ هُمۡ يَهۡتَدُونَ ١٦ ﴾ [ النحل : ١٦ ]
‘‘আর তাহারা নক্ষত্র এবং চিহ্নসমূহ দ্বারা পথনির্দেশ লাভ করে’’। (সূরা আন নাহল-১৬)
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া বলেন: আর-রাফ (তথ্য চোর) হচ্ছে কাহেন বা জাদু-মন্ত্রনাকারী ঠাকুর, জ্যোতিষ, গণক, রেখাবিদ ইত্যাদি। এরা সকলেই প্রায় একই পদ্ধতিতে বিভিন্ন বিষয়ে তাত্বিক ও বিশ্লেষণমূলক কথা বলে থাকে। [আল-জামে আল ফরিদ ১১৪-১১৬।]
১১৪
{প্রশ্ন: ১১২} জ্বিন যদি শর্তারোপ করে যে; সে অন্য জ্বিনের সহযোগিতা গ্রহণ ব্যতীত মানুষের ভিতর থেক বের হবে না, তাহলে কী করতে হবে?উত্তর: সম্মানীত শায়খ আব্দুল আযীয ইবন বায জ্বিনের সাহায্য সহযোগিতা গ্রহণকে মাকরূহ বলে ফতোয়া দিয়েছেন। আর জ্বিন যে মানুষের মধ্যে প্রবেশ করে তিনি তা সঠিক মনে করেন। [রিসালাতু ফি দুখলিল জ্বিন্নি বিল ইনসি, ফতোয়ায়ে ইবনে তাইমিয়া ১/১৮৩ এবং ফতোয়ার স্থায়ী পরিষদের ফতোয়া নং ১০৮০২)।]
আর শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া বলেন: তাদের সাহায্য নেওয়া মুবাহ (সাধারণ ব্যাপারে এতে সওয়াব গুনাহ কিছু নেই)।
মুবাহ প্রসঙ্গে আমার কথা হলো: বর্তমানকালে জ্বিন ও জাদুর ধোকাবাজী, অনিষ্টতা দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। অতএব যারা জ্বিন ও জাদুর ধোকা তামাশায় লিপ্ত তাদের সাথে সহযোগিতা করা যাবে না। কেননা জ্বিন ও জাদুমন্ত্র ঈমান আক্বীদার জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, বিপদজনক এবং বিভ্রান্তির উপাদান। তাছাড়াও এর দ্বারা বিশ্বাসী মুমিনদের ক্ষতি সাধন করে কষ্ট দেওয়া হয়। এমন কি ঈমানী দুর্বলতাও দেখা দিতে পারে যেহেতু জ্বিন এবং জাদু-মন্ত্রের সঠিক ধারণা বা অবস্থা স্পষ্ট নয়। আর তাই বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট। মহান আল্লাহই সর্বজ্ঞ।
আর শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া বলেন: তাদের সাহায্য নেওয়া মুবাহ (সাধারণ ব্যাপারে এতে সওয়াব গুনাহ কিছু নেই)।
মুবাহ প্রসঙ্গে আমার কথা হলো: বর্তমানকালে জ্বিন ও জাদুর ধোকাবাজী, অনিষ্টতা দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। অতএব যারা জ্বিন ও জাদুর ধোকা তামাশায় লিপ্ত তাদের সাথে সহযোগিতা করা যাবে না। কেননা জ্বিন ও জাদুমন্ত্র ঈমান আক্বীদার জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, বিপদজনক এবং বিভ্রান্তির উপাদান। তাছাড়াও এর দ্বারা বিশ্বাসী মুমিনদের ক্ষতি সাধন করে কষ্ট দেওয়া হয়। এমন কি ঈমানী দুর্বলতাও দেখা দিতে পারে যেহেতু জ্বিন এবং জাদু-মন্ত্রের সঠিক ধারণা বা অবস্থা স্পষ্ট নয়। আর তাই বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট। মহান আল্লাহই সর্বজ্ঞ।
১১৬
{প্রশ্ন: ১১৪} আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: «لاَ عَدْوَى وَلاَ طِيَرَةَ، وَلاَ هَامَةَ وَلاَ صَفَرَ» وزاد مسلم : «ولا نوء ولا غول» رواه البخاري ومسلم .
হাদীসে বর্ণিত নিচে দাগ দেওয়া শব্দসমূহের ভাবার্থ কি?
উত্তর: উক্ত হাদীসে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাহেলিয়াতের কুসংস্কারসমূহ বর্জনের কথা বলেছেন। জাহেলরা আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত বিভিন্ন কারণে শুভ-অশুভ লক্ষণ বিশ্বাস ও নির্ধারণ করে নিত। যেমন; আদওয়া: রুগ্ন ব্যক্তির রোগ ব্যাধি সংক্রমিত হয়ে সুস্থ্য ব্যাক্তিকে আক্রান্ত করে। জাহেলী যুগের লোকেরা বিশ্বাস করতো যে; রোগ-ব্যধি আপনা-আপনি বিভিন্ন জনকে আক্রান্ত করতো আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীতই।
ত্বিয়ারাতা: উড়ন্ত কোনকিছুর দ্বারা অশুভ লক্ষণ গ্রহণ করা।
হা-ম্মা: রাতের পাখী পেঁচা। জাহেল সম্প্রদায় বিশ্বাস করতো যে, এ পাখী যার ঘরের উপরে আসবে তার মৃত্যু অথবা ঐ ঘরের যে কোনো সদস্যের মৃত্যু সংবাদ বুঝতে হবে। আর হাদীসে এজাতীয় বিশ্বাসকে ভুল আখ্যায়িত করা হয়েছে।
সফর: এটা হিজরী ২য় মাস, জাহেলী লোকেরা এ মাসকে অশুভ মনে করতো। আর কেউ কেউ বলেন, এটা হলো পেটের ভিতরের কৃমি যা ক্ষুধার সময় নড়াচড়া করে হয়তবা জীবনই বিপন্ন করে দেয়। অজ্ঞ বা জাহেল লোকেরা বিশ্বাস করে যে, ঐসব কৃমি জাতীয় কিট খোস-পাচড়া থেকেও বিপদজনক। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এগুলোকেও বাতিল অলিক বলেছেন।
নাওউ: যে স্থানে তারকা পতিত হয়। কেউ কেউ বলেন যে, এটা একটা তারকা এর কারণেই বৃষ্টি বর্ষিত হয় বলে জাহেল লোকদের ধারণা।
গৌল: ভূত-প্রেত; এক ধরনের শয়তান। ইসলাম পূর্ব অন্ধকার যুগের লোকেরা বিশ্বাস করতো যে, এ শয়তান তাদেরকে পথে-ঘাটে বাধা দিয়ে ও বিভ্রান্ত করে পথ ভুলিয়ে বিপদাক্রান্ত করে থাকে। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগুলো অস্বীকার করেছেন। কেননা যে ব্যক্তি আল্লাহর যিকির (স্মরণ) করে এবং তাঁর উপর তাওয়াক্কুল (নির্ভর) করে তাকে কেউই বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয় না। [আল-জামে আল ফরিদ: ১২২।]
হাদীসে বর্ণিত নিচে দাগ দেওয়া শব্দসমূহের ভাবার্থ কি?
উত্তর: উক্ত হাদীসে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাহেলিয়াতের কুসংস্কারসমূহ বর্জনের কথা বলেছেন। জাহেলরা আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত বিভিন্ন কারণে শুভ-অশুভ লক্ষণ বিশ্বাস ও নির্ধারণ করে নিত। যেমন; আদওয়া: রুগ্ন ব্যক্তির রোগ ব্যাধি সংক্রমিত হয়ে সুস্থ্য ব্যাক্তিকে আক্রান্ত করে। জাহেলী যুগের লোকেরা বিশ্বাস করতো যে; রোগ-ব্যধি আপনা-আপনি বিভিন্ন জনকে আক্রান্ত করতো আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীতই।
ত্বিয়ারাতা: উড়ন্ত কোনকিছুর দ্বারা অশুভ লক্ষণ গ্রহণ করা।
হা-ম্মা: রাতের পাখী পেঁচা। জাহেল সম্প্রদায় বিশ্বাস করতো যে, এ পাখী যার ঘরের উপরে আসবে তার মৃত্যু অথবা ঐ ঘরের যে কোনো সদস্যের মৃত্যু সংবাদ বুঝতে হবে। আর হাদীসে এজাতীয় বিশ্বাসকে ভুল আখ্যায়িত করা হয়েছে।
সফর: এটা হিজরী ২য় মাস, জাহেলী লোকেরা এ মাসকে অশুভ মনে করতো। আর কেউ কেউ বলেন, এটা হলো পেটের ভিতরের কৃমি যা ক্ষুধার সময় নড়াচড়া করে হয়তবা জীবনই বিপন্ন করে দেয়। অজ্ঞ বা জাহেল লোকেরা বিশ্বাস করে যে, ঐসব কৃমি জাতীয় কিট খোস-পাচড়া থেকেও বিপদজনক। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এগুলোকেও বাতিল অলিক বলেছেন।
নাওউ: যে স্থানে তারকা পতিত হয়। কেউ কেউ বলেন যে, এটা একটা তারকা এর কারণেই বৃষ্টি বর্ষিত হয় বলে জাহেল লোকদের ধারণা।
গৌল: ভূত-প্রেত; এক ধরনের শয়তান। ইসলাম পূর্ব অন্ধকার যুগের লোকেরা বিশ্বাস করতো যে, এ শয়তান তাদেরকে পথে-ঘাটে বাধা দিয়ে ও বিভ্রান্ত করে পথ ভুলিয়ে বিপদাক্রান্ত করে থাকে। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগুলো অস্বীকার করেছেন। কেননা যে ব্যক্তি আল্লাহর যিকির (স্মরণ) করে এবং তাঁর উপর তাওয়াক্কুল (নির্ভর) করে তাকে কেউই বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয় না। [আল-জামে আল ফরিদ: ১২২।]
«لَا عَدْوَى، وَلَا طِيَرَةَ، وَيُعْجِبُنِي الْفَأْلُ» قَالَ قِيلَ : وَمَا الْفَأْلُ؟ قَالَ : «الْكَلِمَةُ الطَّيِّبَةُ»
অনুরূপ ‘‘উরওয়াহ ইবনে আমের আল-কুরাশী রাদিয়াল্লাহ বলেন যে,
ذُكِرَتِ الطِّيَرَةُ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ : «أَحْسَنُهَا الْفَأْلُ وَلَا تَرُدُّ مُسْلِمًا، فَإِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ مَا يَكْرَهُ فَلْيَقُلِ اللَّهُمَّ لَا يَأْتِي بِالْحَسَنَاتِ إِلَّا أَنْتَ، وَلَا يَدْفَعُ السَّيِّئَاتِ إِلَّا أَنْتَ، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِكَ»
রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট ত্বিয়ারাহ (অশুভ মানা) সম্পর্কে বলা হলো। তিনি বললেন, উত্তম হলো ফাল বা সুন্দর মন জুড়ান শুনে সুলক্ষণ নেওয়া, আর যেন কোনো মুসলিমকে ফিরিয়ে না দেয়। বরং তোমাদের কেউ যদি কারো অশুভ কিছু দেখে তাহলে সে যেন দো‘আ করে এ বলে যে, ‘‘আল্লাহম্মা লা ইয়াতী বিল হাসানাতি ইল্লা আনতা। ওয়ালা ইয়াদফাউস সাইয়েআতা ইল্লা আনতা, অলা হাওলা অলা কুআতা ইল্লা বিকা। (আবু দাউদ:৩৯১৯, বায়হাকী: ৮/১৩৯)
ত্বিয়ারাহ কত প্রকার এবং কী কী? ফাল কি, ফাল ও ত্বিয়ারাহর মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর: ত্বিয়ারাহ দু’ প্রকার,
(১) ফাল; অর্থাৎ সুন্দর বাক্য উচ্চারণ বা মন জুড়ান কথা যা মানুষ শ্রবণ করে মানসিক প্রশান্তি লাভ করে এবং আনন্দ অনুভব করে যার ফলে মনের হতাশা-ভয় দূর হয়ে যায়। অতঃপর আশার আলোতে উদ্যম ফিরে আসে, সুলক্ষণ গ্রহণ করে মহান আল্লাহর প্রতি আস্থা দৃঢ় হয়। এটা প্রশংসনীয় কাজ; কেননা এর ফলে আল্লাহর প্রতি সুন্দর ও ভাল ধারণার উদ্ভব হয়, এটা জায়েয।
যেমন ধরুন: যখন কেউ অসুস্থ ব্যক্তিকে বলে যে, আপনি দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন, কেননা এটা সাধারণ অসুস্থতা। অসুস্থ ব্যক্তিও সুস্থতার আশায় মনে প্রশান্তি অনুভব করে। আর কারো কিছু হারিয়ে যাবার খবর শুনে তাকে যদি বলা হয় যে, আপনি তা ফিরে পাবেন তাহলে সেও হারানো দ্রব্য-সামগ্রী ফিরে পাবার আশায় আনন্দিত হবে।
(দুই) ত্বিয়ারা মুহাররমা: অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুকে অশুভ সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারে ভিত্তি নির্ধারণ করা হারাম।
মানুষ কোনো কিছু করা বা না করার ব্যাপারে যে সব অশুভ লক্ষণের উপর নির্ভর করে থাকে তা নিন্দনীয় কুসংস্কার। কেননা তা আল্লাহর উপর নির্ভরশীল নয় বরং আল্লাহর ব্যাপারে নেতিবাচক মন্দ ধারণার উদ্ভব ঘটায়।
‘ফাল’ এবং ‘ত্বিয়ারা’র মধ্যে পার্থক্য হলো যে; ফাল ভাল এবং মন্দের জন্যে ব্যবহৃত হয় আর ত্বিয়ারাহ শুধু মন্দ বা অশুভ ক্ষেত্রে ব্যাবহৃত হয়।
অনুরূপ ‘‘উরওয়াহ ইবনে আমের আল-কুরাশী রাদিয়াল্লাহ বলেন যে,
ذُكِرَتِ الطِّيَرَةُ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ : «أَحْسَنُهَا الْفَأْلُ وَلَا تَرُدُّ مُسْلِمًا، فَإِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ مَا يَكْرَهُ فَلْيَقُلِ اللَّهُمَّ لَا يَأْتِي بِالْحَسَنَاتِ إِلَّا أَنْتَ، وَلَا يَدْفَعُ السَّيِّئَاتِ إِلَّا أَنْتَ، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِكَ»
রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট ত্বিয়ারাহ (অশুভ মানা) সম্পর্কে বলা হলো। তিনি বললেন, উত্তম হলো ফাল বা সুন্দর মন জুড়ান শুনে সুলক্ষণ নেওয়া, আর যেন কোনো মুসলিমকে ফিরিয়ে না দেয়। বরং তোমাদের কেউ যদি কারো অশুভ কিছু দেখে তাহলে সে যেন দো‘আ করে এ বলে যে, ‘‘আল্লাহম্মা লা ইয়াতী বিল হাসানাতি ইল্লা আনতা। ওয়ালা ইয়াদফাউস সাইয়েআতা ইল্লা আনতা, অলা হাওলা অলা কুআতা ইল্লা বিকা। (আবু দাউদ:৩৯১৯, বায়হাকী: ৮/১৩৯)
ত্বিয়ারাহ কত প্রকার এবং কী কী? ফাল কি, ফাল ও ত্বিয়ারাহর মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর: ত্বিয়ারাহ দু’ প্রকার,
(১) ফাল; অর্থাৎ সুন্দর বাক্য উচ্চারণ বা মন জুড়ান কথা যা মানুষ শ্রবণ করে মানসিক প্রশান্তি লাভ করে এবং আনন্দ অনুভব করে যার ফলে মনের হতাশা-ভয় দূর হয়ে যায়। অতঃপর আশার আলোতে উদ্যম ফিরে আসে, সুলক্ষণ গ্রহণ করে মহান আল্লাহর প্রতি আস্থা দৃঢ় হয়। এটা প্রশংসনীয় কাজ; কেননা এর ফলে আল্লাহর প্রতি সুন্দর ও ভাল ধারণার উদ্ভব হয়, এটা জায়েয।
যেমন ধরুন: যখন কেউ অসুস্থ ব্যক্তিকে বলে যে, আপনি দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন, কেননা এটা সাধারণ অসুস্থতা। অসুস্থ ব্যক্তিও সুস্থতার আশায় মনে প্রশান্তি অনুভব করে। আর কারো কিছু হারিয়ে যাবার খবর শুনে তাকে যদি বলা হয় যে, আপনি তা ফিরে পাবেন তাহলে সেও হারানো দ্রব্য-সামগ্রী ফিরে পাবার আশায় আনন্দিত হবে।
(দুই) ত্বিয়ারা মুহাররমা: অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুকে অশুভ সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারে ভিত্তি নির্ধারণ করা হারাম।
মানুষ কোনো কিছু করা বা না করার ব্যাপারে যে সব অশুভ লক্ষণের উপর নির্ভর করে থাকে তা নিন্দনীয় কুসংস্কার। কেননা তা আল্লাহর উপর নির্ভরশীল নয় বরং আল্লাহর ব্যাপারে নেতিবাচক মন্দ ধারণার উদ্ভব ঘটায়।
‘ফাল’ এবং ‘ত্বিয়ারা’র মধ্যে পার্থক্য হলো যে; ফাল ভাল এবং মন্দের জন্যে ব্যবহৃত হয় আর ত্বিয়ারাহ শুধু মন্দ বা অশুভ ক্ষেত্রে ব্যাবহৃত হয়।
«اللَّهُمَّ لَا يَأْتِي بِالْحَسَنَاتِ إِلَّا أَنْتَ، وَلَا يَدْفَعُ السَّيِّئَاتِ إِلَّا أَنْتَ، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِكَ»
হাদীসে উল্লেখিত দো‘আর অর্থ ও শিক্ষণীয় কি?
উত্তর: ‘‘হে আল্লাহ তুমি ছাড়া আর কেউ কল্যাণ এনে দিতে পারে না এবং তুমি ব্যতীত আর কেউ অনিষ্টতা প্রতিরোধ করতে পারে না। আর তুমি ব্যতীত প্রকৃতপক্ষে অসীম শক্তি-সামর্থ্য অন্য কারোই নেই’’। (আবু দাউদ: ৩৯১৯, বায়হাক্বী: ৮/১৩৯)
কল্যাণের অর্থ হলো; নেয়ামত ও অনুগ্রহ। আর অনিষ্টতার অর্থ হলো; বিপদ-মুসিবত।
আপনা আপনি কিংবা কোনো সংকেত অনুযায়ী কল্যাণ হয় না এবং বিপদ আপদ দূরীভূত হয় না বরং একমাত্র লা শরীক আল্লাহই কল্যাণকারী ও তিনিই বিপদ-আপদ দূর করে দেন। আর একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত কোনো অবস্থার পরিবর্তন হয় না এবং লা শরীক আল্লাহই সর্ববিষয়ে মহা পরাক্রমশালী শক্তিধর [আল জামে আল ফরিদ: ১২৩।]।
এ দো‘আর শিক্ষনীয় বিষয় হলো:
(ক) মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর ইচ্ছা শক্তি ব্যতীত কারোই কিছু করার সামর্থ্য ও সাধ্য নেই।
(খ) ভালো কিছু হওয়া কিংবা আপদ-বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া সব কিছুই আল্লাহর উপর নির্ভরশীল এবং এর সাথে অন্য কারো সম্পর্ক নেই।
হাদীসে উল্লেখিত দো‘আর অর্থ ও শিক্ষণীয় কি?
উত্তর: ‘‘হে আল্লাহ তুমি ছাড়া আর কেউ কল্যাণ এনে দিতে পারে না এবং তুমি ব্যতীত আর কেউ অনিষ্টতা প্রতিরোধ করতে পারে না। আর তুমি ব্যতীত প্রকৃতপক্ষে অসীম শক্তি-সামর্থ্য অন্য কারোই নেই’’। (আবু দাউদ: ৩৯১৯, বায়হাক্বী: ৮/১৩৯)
কল্যাণের অর্থ হলো; নেয়ামত ও অনুগ্রহ। আর অনিষ্টতার অর্থ হলো; বিপদ-মুসিবত।
আপনা আপনি কিংবা কোনো সংকেত অনুযায়ী কল্যাণ হয় না এবং বিপদ আপদ দূরীভূত হয় না বরং একমাত্র লা শরীক আল্লাহই কল্যাণকারী ও তিনিই বিপদ-আপদ দূর করে দেন। আর একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত কোনো অবস্থার পরিবর্তন হয় না এবং লা শরীক আল্লাহই সর্ববিষয়ে মহা পরাক্রমশালী শক্তিধর [আল জামে আল ফরিদ: ১২৩।]।
এ দো‘আর শিক্ষনীয় বিষয় হলো:
(ক) মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর ইচ্ছা শক্তি ব্যতীত কারোই কিছু করার সামর্থ্য ও সাধ্য নেই।
(খ) ভালো কিছু হওয়া কিংবা আপদ-বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া সব কিছুই আল্লাহর উপর নির্ভরশীল এবং এর সাথে অন্য কারো সম্পর্ক নেই।
১১৯
{প্রশ্ন: ১১৭} আল্লাহ কেন তারকারাজী সৃষ্টি করেছেন এবং এর দলীল কী? এগুলো যে উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করা হয়েছে তা ব্যতীত অন্য কিছু বিশ্বাস করার হুকুম কি?উত্তর: আল্লাহ ৩টি বৈশিষ্ট্য দিয়ে তারকারাজী সৃষ্টি করেছেন;
(১) আকাশের শোভাবর্ধনের জন্য; মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَلَقَدۡ زَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنۡيَا بِمَصَٰبِيحَ ﴾ [ الملك : ٥ ]
‘‘আমরা দুনিয়ার আকাশকে সুশোভিত করেছি প্রদীপমালা দিয়ে’’। (সূরা আল-মুলক: ৫)
(২) শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপ করার জন্যে; মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَجَعَلۡنَٰهَا رُجُومٗا لِّلشَّيَٰطِينِۖ ﴾ [ الملك : ٥ ]
‘‘আর আমরা তা শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপ করার জন্য প্রস্তুত রেখেছি’’। (সূরা আল মূলক: ৫)
(৩) আর যেন এর সাহায্যে মানুষ দিক নির্ণয় করতে সক্ষম হয়। অর্থাৎ দিক নির্ণয় উপকরণও এগুলো সৃষ্টির উদ্দেশ্য বটে। যেমন; মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَعَلَٰمَٰتٖۚ وَبِٱلنَّجۡمِ هُمۡ يَهۡتَدُونَ ١٦ ﴾ [ النحل : ١٦ ]
‘‘আর তা (দিক নির্ণয়কারী) চিহ্ন বা উপকরণ এবং তারা নক্ষত্রের সাহায্যে পথ নির্দেশ লাভ করে থাকে” (সূরা আন-নাহল: ১৬)
অতএব উপরোক্ত বৈশিষ্ট্য ব্যতীত তারকারাজীর অন্য কোনো ক্ষমতা বা গুণাবলী আছে মনে করা সত্যের অপলাপ এবং ভুল। আর যে ব্যক্তি নক্ষত্ররাজীর ব্যাপারে ভ্রান্ত পথ অবলম্বন করলো সে সর্বপ্রকার কল্যাণ থেকে নিজকে বঞ্চিত করলো; যেহেতু সে অজানা ব্যাপার কল্পনা প্রসূত মনগড়া সমাধানের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে।
(১) আকাশের শোভাবর্ধনের জন্য; মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَلَقَدۡ زَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنۡيَا بِمَصَٰبِيحَ ﴾ [ الملك : ٥ ]
‘‘আমরা দুনিয়ার আকাশকে সুশোভিত করেছি প্রদীপমালা দিয়ে’’। (সূরা আল-মুলক: ৫)
(২) শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপ করার জন্যে; মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَجَعَلۡنَٰهَا رُجُومٗا لِّلشَّيَٰطِينِۖ ﴾ [ الملك : ٥ ]
‘‘আর আমরা তা শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপ করার জন্য প্রস্তুত রেখেছি’’। (সূরা আল মূলক: ৫)
(৩) আর যেন এর সাহায্যে মানুষ দিক নির্ণয় করতে সক্ষম হয়। অর্থাৎ দিক নির্ণয় উপকরণও এগুলো সৃষ্টির উদ্দেশ্য বটে। যেমন; মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَعَلَٰمَٰتٖۚ وَبِٱلنَّجۡمِ هُمۡ يَهۡتَدُونَ ١٦ ﴾ [ النحل : ١٦ ]
‘‘আর তা (দিক নির্ণয়কারী) চিহ্ন বা উপকরণ এবং তারা নক্ষত্রের সাহায্যে পথ নির্দেশ লাভ করে থাকে” (সূরা আন-নাহল: ১৬)
অতএব উপরোক্ত বৈশিষ্ট্য ব্যতীত তারকারাজীর অন্য কোনো ক্ষমতা বা গুণাবলী আছে মনে করা সত্যের অপলাপ এবং ভুল। আর যে ব্যক্তি নক্ষত্ররাজীর ব্যাপারে ভ্রান্ত পথ অবলম্বন করলো সে সর্বপ্রকার কল্যাণ থেকে নিজকে বঞ্চিত করলো; যেহেতু সে অজানা ব্যাপার কল্পনা প্রসূত মনগড়া সমাধানের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে।
উত্তর: ইসতিসকা হচ্ছে পানির জন্যে প্রার্থনা। পানির প্রবাহ এবং বৃষ্টি বর্ষিত হওয়ার স্থান। আনওয়া বহুবচন এক বচনে ‘নাও’ ( نوء ) যা নক্ষত্র পতিত হওয়ার স্থান, কারো কারো মতে তা নক্ষত্র এবং তারকা। জাহেলী যুগে আরবরা মনে করত যে, এক তারকা উদিত হওয়া এবং অন্যটি অস্ত যাওয়ার কারণে বৃষ্টি হয়। তারা বৃষ্টির সাথে তারকার একটি সম্পর্ক আছে মনে করত, আর তা হচ্ছে চন্দ্রেয় উদয় অস্ত যাওয়ার স্থান। ‘নাওয়’ বলা হয় এ জন্যে যে, তা পশ্চিমে পতিত হয় আবার পূর্ব হতে তা উদিত হয় এবং আবির্ভাব ঘটে বা প্রস্ফুটিত হয়।
﴿ وَتَجۡعَلُونَ رِزۡقَكُمۡ أَنَّكُمۡ تُكَذِّبُونَ ٨٢ ﴾ [ الواقعة : ٨٢ ]
‘‘আর সেটাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেই বুঝি তোমরা তোমাদের জীবিকা নির্বাহ করতে চাও’’। (সূরা আল-ওয়াকিয়া: ৮২)
এ আয়াতের ব্যাখ্যা কি?
উত্তর: মহান আল্লাহ বলেন যে, হে মুশরিক সম্প্রদায়, আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর রহমতের ধারা প্রবাহিত করেছেন, তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন। অতঃপর ফসল উদ্ভিদ অংকুর হতে বেড়িয়ে আসছে এবং দুগ্ধপোষ্যদের জন্য দুধের ব্যবস্থা হচ্ছে। আর বান্দাদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্যতার উদ্ভব হচ্ছে এবং মাঠ-ঘাট প্রান্তর সজীব-সতেজ হয়ে উঠছে। অথচ তোমরা হে মুশরিক সম্প্রদায়, আল্লাহর ঐ সব নিয়ামত অনুগ্রহকে গ্রহ-নক্ষত্রের কৃপা হিসেবে চিহ্নিত করে নির্জলা মিথ্যাবাদিতায় লিপ্ত রয়েছো।
‘‘আর সেটাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেই বুঝি তোমরা তোমাদের জীবিকা নির্বাহ করতে চাও’’। (সূরা আল-ওয়াকিয়া: ৮২)
এ আয়াতের ব্যাখ্যা কি?
উত্তর: মহান আল্লাহ বলেন যে, হে মুশরিক সম্প্রদায়, আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর রহমতের ধারা প্রবাহিত করেছেন, তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন। অতঃপর ফসল উদ্ভিদ অংকুর হতে বেড়িয়ে আসছে এবং দুগ্ধপোষ্যদের জন্য দুধের ব্যবস্থা হচ্ছে। আর বান্দাদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্যতার উদ্ভব হচ্ছে এবং মাঠ-ঘাট প্রান্তর সজীব-সতেজ হয়ে উঠছে। অথচ তোমরা হে মুশরিক সম্প্রদায়, আল্লাহর ঐ সব নিয়ামত অনুগ্রহকে গ্রহ-নক্ষত্রের কৃপা হিসেবে চিহ্নিত করে নির্জলা মিথ্যাবাদিতায় লিপ্ত রয়েছো।
উত্তর: মহব্বাত বা ভালোবাসা চার প্রকার:
(১) আল্লাহকে ভালোবাসা; আর তাই ঈমান ও একত্ববাদের মূল ভিত্তি ও দাবী।
(২) আল্লাহর জন্য ভালোবাসা; আর তা হলো আল্লাহর নবী, রাসূল এবং দীনদার ঈমানদার নেক বান্দাগণকে ভালোবাসা। ইচ্ছা ছাড়াও যে সব কাজ, সময় স্থান কিংবা অন্য যা কিছু আল্লাহ ভালোবাসেন তাকেও ভালোবাসা। আর এগুলো সবই আল্লাহকে ভালোবাসার অন্তর্ভুক্ত এবং সম্পূরক।
(৩) আল্লাহর সাথে অন্যের প্রতিও ভালোবাসা স্থাপন করা, যেমন মুশরিক সম্প্রদায় তাদের কল্পিত দেব-দেবীদের, বৃক্ষরাজী, মূর্তি-ভাস্কর্য, মানুষ, ফেরেশতা, রাজা-বাদশা এবং অন্যান্যদেরকে মহব্বত করে থাকে। অথচ এগুলো সবই হচ্ছে শির্কের মূলভিত্তি।
(৪) প্রকৃতিগত সাধারণ মহব্বত বা ভালোবাসা। এধরনের ভালোবাসা তিন প্রকার; যথা:
(ক) শ্রদ্ধা-ভক্তির ভালোবাসা, যথা; মাতা-পিতাকে সম্মান, শ্রদ্ধা ও ভক্তির সাথে ভালোবাসা।
(খ) স্নেহ, আদর ও দরদের ভালোবাসা, যথা; সন্তানদেরকে ভালোবাসা।
(গ) বিভিন্ন প্রকৃতির ভালোবাসা ও হিতাকাংখী হওয়া। যেমন; জন- মানুষের প্রতি মহব্বত রাখা এবং জনকল্যাণ করা।
তাছাড়াও খাদ্য-দ্রব্য, পিপাসা নিবারক পানীয়, পোষাক পরিচ্ছদ বিয়ে শাদী ইত্যাদি পছন্দ বা গ্রহণ করা দোষনীয় হবে না: যদি তা আল্লাহর আনুগত্যের পরিপন্থী না হয়। বরং তা আল্লাহর ইবাদাত হিসেবে গণ্য হবে।
আর যদি ঐ সব বিষয়-বস্তু আল্লাহর নাফরমানীর কারণ হয় তাহলে তা প্রত্যাশা কিংবা পছন্দ করা হারাম। তবে হারাম হবার কারণ না ঘটলে তা মুবাহ বা বৈধ।
(১) আল্লাহকে ভালোবাসা; আর তাই ঈমান ও একত্ববাদের মূল ভিত্তি ও দাবী।
(২) আল্লাহর জন্য ভালোবাসা; আর তা হলো আল্লাহর নবী, রাসূল এবং দীনদার ঈমানদার নেক বান্দাগণকে ভালোবাসা। ইচ্ছা ছাড়াও যে সব কাজ, সময় স্থান কিংবা অন্য যা কিছু আল্লাহ ভালোবাসেন তাকেও ভালোবাসা। আর এগুলো সবই আল্লাহকে ভালোবাসার অন্তর্ভুক্ত এবং সম্পূরক।
(৩) আল্লাহর সাথে অন্যের প্রতিও ভালোবাসা স্থাপন করা, যেমন মুশরিক সম্প্রদায় তাদের কল্পিত দেব-দেবীদের, বৃক্ষরাজী, মূর্তি-ভাস্কর্য, মানুষ, ফেরেশতা, রাজা-বাদশা এবং অন্যান্যদেরকে মহব্বত করে থাকে। অথচ এগুলো সবই হচ্ছে শির্কের মূলভিত্তি।
(৪) প্রকৃতিগত সাধারণ মহব্বত বা ভালোবাসা। এধরনের ভালোবাসা তিন প্রকার; যথা:
(ক) শ্রদ্ধা-ভক্তির ভালোবাসা, যথা; মাতা-পিতাকে সম্মান, শ্রদ্ধা ও ভক্তির সাথে ভালোবাসা।
(খ) স্নেহ, আদর ও দরদের ভালোবাসা, যথা; সন্তানদেরকে ভালোবাসা।
(গ) বিভিন্ন প্রকৃতির ভালোবাসা ও হিতাকাংখী হওয়া। যেমন; জন- মানুষের প্রতি মহব্বত রাখা এবং জনকল্যাণ করা।
তাছাড়াও খাদ্য-দ্রব্য, পিপাসা নিবারক পানীয়, পোষাক পরিচ্ছদ বিয়ে শাদী ইত্যাদি পছন্দ বা গ্রহণ করা দোষনীয় হবে না: যদি তা আল্লাহর আনুগত্যের পরিপন্থী না হয়। বরং তা আল্লাহর ইবাদাত হিসেবে গণ্য হবে।
আর যদি ঐ সব বিষয়-বস্তু আল্লাহর নাফরমানীর কারণ হয় তাহলে তা প্রত্যাশা কিংবা পছন্দ করা হারাম। তবে হারাম হবার কারণ না ঘটলে তা মুবাহ বা বৈধ।
১২৩
{প্রশ্ন: ১২১} আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করার উপায় কী এবং বান্দা কীভাবে আল্লাহকে ভালোবাসার প্রমাণ দিবে?উত্তর: দশটি উপায়ে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন এবং আল্লাহকে ভালোবাসার প্রমাণ দেওয়া যায়;
(এক) জেনে-বুঝে, তাৎপর্য অনুধাবন করে কুরআন অধ্যায়ন করা এবং কুরআনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সে অনুযায়ী আমল করা ও হুকুম-আহকাম বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে।
(দুই) নির্ধারিত ফরযসমূহ পালন ছাড়াও নফল ইবাদাতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা। বেশী বেশী ভালো কাজ করা এবং মন্দ কাজ হতে নিরাপদ দূরে থাকা।
(তিন) মুখে, অন্তরে এবং কাজে-কর্মে সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকির (স্মরণ) অব্যহত রাখা।
(চার) মনের প্রবল ইচ্ছা বাসনাকে আল্লাহর ভালোবাসার অধীন করে দেওয়া।
(পাঁচ) মন-অন্তকরণ, আল্লাহর নাম, গুণ এবং গুণাবলীর প্রত্যক্ষ প্রভাব-প্রতিপত্তির মর্ম গভীরভাবে উপলব্ধি করা।
(ছয়) আল্লাহর প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য মহা অনুগ্রহ, দয়া নিয়ামতের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে সর্বদা স্মরণ রাখা প্রত্যেকের একান্ত কর্তব্য।
(সাত) হৃদয়-মন উজাড় করে বিনয়াবনত চিত্তে একাগ্রতার সাথে মহামহিয়ান আল্লাহর দরবারে ধর্ণা দেওয়া।
(আট) আল্লাহর সান্নিধ্যে নিজকে সম্পূর্ণ সোপর্দ করে রাতের শেষভাগে বা লগ্নে আল্লাহ যখন প্রথম আকাশে অবতরণ করেন তখন এবং দো‘আ কবুলের অন্যান্য সময়ে অবিরাম, অক্লান্তভাবে দো‘আয় মগ্ন থাকা।
(নয়) সত্যপন্থি দীনদার-ঈমানদার আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের সাথে সুসম্পর্ক রাখা, তাদের কাছে গমন করা, পরামর্শ নেওয়া। তাদের কথা-বার্তা, আলাপ আলাচনা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ এবং তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা। জীবনকে সুস্থ-সুন্দররূপে গড়ে তোলা। আর পূর্বাপর পরিবেশ পরিস্থিতির সমন্নয় করতে হবে সত্যপন্থী ন্যায়-নিষ্ঠদের উপস্থাপিত আদর্শ এবং তার মূলসূত্র থেকে।
(দশ) মহামহিয়ান আল্লাহ এবং বান্দার আত্মার মাঝের প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করতে হবে। যেমন: মিথ্যা বলা, হারাম খাওয়া, জুলুম অত্যাচার করা ইত্যাদি [আল-জামে আল-ফরিদ: ১৩৮।]।
(এক) জেনে-বুঝে, তাৎপর্য অনুধাবন করে কুরআন অধ্যায়ন করা এবং কুরআনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সে অনুযায়ী আমল করা ও হুকুম-আহকাম বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে।
(দুই) নির্ধারিত ফরযসমূহ পালন ছাড়াও নফল ইবাদাতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা। বেশী বেশী ভালো কাজ করা এবং মন্দ কাজ হতে নিরাপদ দূরে থাকা।
(তিন) মুখে, অন্তরে এবং কাজে-কর্মে সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিকির (স্মরণ) অব্যহত রাখা।
(চার) মনের প্রবল ইচ্ছা বাসনাকে আল্লাহর ভালোবাসার অধীন করে দেওয়া।
(পাঁচ) মন-অন্তকরণ, আল্লাহর নাম, গুণ এবং গুণাবলীর প্রত্যক্ষ প্রভাব-প্রতিপত্তির মর্ম গভীরভাবে উপলব্ধি করা।
(ছয়) আল্লাহর প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য মহা অনুগ্রহ, দয়া নিয়ামতের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে সর্বদা স্মরণ রাখা প্রত্যেকের একান্ত কর্তব্য।
(সাত) হৃদয়-মন উজাড় করে বিনয়াবনত চিত্তে একাগ্রতার সাথে মহামহিয়ান আল্লাহর দরবারে ধর্ণা দেওয়া।
(আট) আল্লাহর সান্নিধ্যে নিজকে সম্পূর্ণ সোপর্দ করে রাতের শেষভাগে বা লগ্নে আল্লাহ যখন প্রথম আকাশে অবতরণ করেন তখন এবং দো‘আ কবুলের অন্যান্য সময়ে অবিরাম, অক্লান্তভাবে দো‘আয় মগ্ন থাকা।
(নয়) সত্যপন্থি দীনদার-ঈমানদার আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের সাথে সুসম্পর্ক রাখা, তাদের কাছে গমন করা, পরামর্শ নেওয়া। তাদের কথা-বার্তা, আলাপ আলাচনা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ এবং তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা। জীবনকে সুস্থ-সুন্দররূপে গড়ে তোলা। আর পূর্বাপর পরিবেশ পরিস্থিতির সমন্নয় করতে হবে সত্যপন্থী ন্যায়-নিষ্ঠদের উপস্থাপিত আদর্শ এবং তার মূলসূত্র থেকে।
(দশ) মহামহিয়ান আল্লাহ এবং বান্দার আত্মার মাঝের প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করতে হবে। যেমন: মিথ্যা বলা, হারাম খাওয়া, জুলুম অত্যাচার করা ইত্যাদি [আল-জামে আল-ফরিদ: ১৩৮।]।
উত্তর: খাওফ এর অর্থ: ভয়-ভীতি, অজানা শাস্তির আশংকা করা, সন্ত্রস্ত থাকা।
আর তা চার প্রকার:
(১) আল্লাহর ভয়, ইলাহ, মাবুদ হিসেবে এবং তার নৈকট্য অর্জনের লক্ষ্যে। আর এটাই হলো ঈমানের ওয়াজিবসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ ওয়াজিব।
(২) গোপন বা অদৃশ্য ভয়: আর তাহলো, আল্লাহ ব্যতীত মূর্তি প্রতিকৃতি, ভাস্কর্য তাগুত, মৃত কিংবা অনুপস্থিত কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর দ্বারা ক্ষতি বা অনিষ্ট হওয়ার ভয়, আশংকা করা। এধরনের ভয়-শংকা বড় শির্কের অন্তর্ভুক্ত এবং তাওহীদের পরিপন্থী।
(৩) মানুষের যা অবশ্য কর্তব্য বা ওয়াজিব তা কতিপয় লোকদের ভয়ে না করা। আর এটাও হারাম এবং এক প্রকারের শির্ক যার ফলে ঐ ব্যক্তি পূর্ণাঙ্গ তাওহীদবাদী হতে পারে না।
(৪) প্রকৃতিগত স্বাভাবিক ভয়-ভীতি; যেমন: দুশমন অথবা হিংস্র জীব-জানোয়ার ইত্যাদিকে ভয় করা, আক্রান্ত হয়ে ক্ষতি বা বিপদের আশংকা করা। এধরনের ভয় বৈধ। অতএব যে এ প্রকারের ভয় করবে তাকে তিরস্কার করা যাবে না। [আল-জামে-ফরিদ পৃ: ১৪০।]
আর তা চার প্রকার:
(১) আল্লাহর ভয়, ইলাহ, মাবুদ হিসেবে এবং তার নৈকট্য অর্জনের লক্ষ্যে। আর এটাই হলো ঈমানের ওয়াজিবসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ ওয়াজিব।
(২) গোপন বা অদৃশ্য ভয়: আর তাহলো, আল্লাহ ব্যতীত মূর্তি প্রতিকৃতি, ভাস্কর্য তাগুত, মৃত কিংবা অনুপস্থিত কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর দ্বারা ক্ষতি বা অনিষ্ট হওয়ার ভয়, আশংকা করা। এধরনের ভয়-শংকা বড় শির্কের অন্তর্ভুক্ত এবং তাওহীদের পরিপন্থী।
(৩) মানুষের যা অবশ্য কর্তব্য বা ওয়াজিব তা কতিপয় লোকদের ভয়ে না করা। আর এটাও হারাম এবং এক প্রকারের শির্ক যার ফলে ঐ ব্যক্তি পূর্ণাঙ্গ তাওহীদবাদী হতে পারে না।
(৪) প্রকৃতিগত স্বাভাবিক ভয়-ভীতি; যেমন: দুশমন অথবা হিংস্র জীব-জানোয়ার ইত্যাদিকে ভয় করা, আক্রান্ত হয়ে ক্ষতি বা বিপদের আশংকা করা। এধরনের ভয় বৈধ। অতএব যে এ প্রকারের ভয় করবে তাকে তিরস্কার করা যাবে না। [আল-জামে-ফরিদ পৃ: ১৪০।]
﴿ إِنَّمَا يَعۡمُرُ مَسَٰجِدَ ٱللَّهِ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِ وَأَقَامَ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَى ٱلزَّكَوٰةَ وَلَمۡ يَخۡشَ إِلَّا ٱللَّهَۖ فَعَسَىٰٓ أُوْلَٰٓئِكَ أَن يَكُونُواْ مِنَ ٱلۡمُهۡتَدِينَ ١٨ ﴾ [ التوبة : ١٨ ]
‘‘তারাই আল্লাহর মসজিদসমূহের প্রতিষ্ঠা/তত্ত্বাবধান করবে, যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি এবং সালাত কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে, আর আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকেই ভয় করে না। অতএব আশা করা যায় যে, তারাই হিদায়তপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’’। (আত-তাওবাহ:১৮)
উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা কী? ভয় এবং মসজিদসমূহের প্রতিষ্ঠা ও তত্ত্বাবধানের উদ্দেশ্য কি?
উত্তর: উক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ তাঁর ইবাদাত বন্দেগীর জন্য মসজিদ ঘর প্রতিষ্ঠা তত্ত্বাবধান ও সেটার রক্ষণাবেক্ষণ কাজে সংশ্লিষ্টদের যে সব মৌলিক বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে তারই উল্লেখ করেছেন। আর তাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে; একমাত্র আল্লাহই সৃষ্টিকর্তা, তিনিই সর্বময় মালিক, তিনিই হুকুমদাতা, বিধানদাতা এবং তিনি ব্যতীত ইবাদাতের যোগ্য কিছুই নেই।
আরো বিশ্বাস করতে হবে যে, মৃত্যুর পরে পূনরুত্থান ঘটবেই। অতঃপর ভালো কিংবা মন্দ কাজের হিসাব নিয়ে যথোপযুক্ত প্রতিফল দেওয়া হবে। তাদের অন্তরসমূহ এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বাহ্যিক কাজে-কর্মে ঈমানদার-মুসলিম হতে হবে। তারা সালাত কায়েম করবে এবং সেটাকে শর্ত, রুকন, ওয়াজিব ও সুন্নাত অনুযায়ী আদায় করতে হবে। আর এ ব্যাপারে অবহেলা, গাফলতী করার কোনো অবকাশ নেই। যাদের উপর যাকাত ফরয তারা অবশ্যই যাকাতের হকদারদের কাছে যাকাত পৌছে দিবে। তারা একক আল্লাহকেই ভয় করবে এবং তাঁকে ছাড়া অন্য কাউকেই ভয় করবে না। সর্বপ্রকার ওয়াজিব পালন করবে এবং সর্বপ্রকার হারাম বা নিষিদ্ধ কাজ পরিত্যাগ করবে।
আর ‘ভয়’ শব্দের ভাবার্থ ও দাবী হচ্ছে: আল্লাহর তাজীম (মর্যাদার) ইবাদাত ও আনুগত্যে ক্রটি-বিচ্যুতি হওয়ার ভয় করা।
মসজিদ প্রতিষ্ঠা ও তত্ত্বাবধানের উদ্দেশ্যে হচ্ছে: মসজিদের সাথে সংশ্লিষ্ট সব ধরনের কাজ-কর্ম, যেমন; নির্মাণ-পুননির্মাণ, পরিবর্তন, পরিবর্ধন এবং সালাত-যিকির ইত্যাদি আল্লাহর সন্তুষ্টিমূলক ইবাদাত অব্যাহত রাখা। [রিসালাতুল আহকালিম মাসজিদ ফিশ-শারিয়াহ, লেখক: আল-খুদাইরি পৃ: ৩৪৭, তাফসির ইবনে কাসীর ৪/৬১-৬৩, হাশিয়াতুল হামাল আলাল জালালাইন ২/২৭১)।]
‘‘তারাই আল্লাহর মসজিদসমূহের প্রতিষ্ঠা/তত্ত্বাবধান করবে, যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি এবং সালাত কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে, আর আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকেই ভয় করে না। অতএব আশা করা যায় যে, তারাই হিদায়তপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’’। (আত-তাওবাহ:১৮)
উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা কী? ভয় এবং মসজিদসমূহের প্রতিষ্ঠা ও তত্ত্বাবধানের উদ্দেশ্য কি?
উত্তর: উক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ তাঁর ইবাদাত বন্দেগীর জন্য মসজিদ ঘর প্রতিষ্ঠা তত্ত্বাবধান ও সেটার রক্ষণাবেক্ষণ কাজে সংশ্লিষ্টদের যে সব মৌলিক বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে তারই উল্লেখ করেছেন। আর তাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে; একমাত্র আল্লাহই সৃষ্টিকর্তা, তিনিই সর্বময় মালিক, তিনিই হুকুমদাতা, বিধানদাতা এবং তিনি ব্যতীত ইবাদাতের যোগ্য কিছুই নেই।
আরো বিশ্বাস করতে হবে যে, মৃত্যুর পরে পূনরুত্থান ঘটবেই। অতঃপর ভালো কিংবা মন্দ কাজের হিসাব নিয়ে যথোপযুক্ত প্রতিফল দেওয়া হবে। তাদের অন্তরসমূহ এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বাহ্যিক কাজে-কর্মে ঈমানদার-মুসলিম হতে হবে। তারা সালাত কায়েম করবে এবং সেটাকে শর্ত, রুকন, ওয়াজিব ও সুন্নাত অনুযায়ী আদায় করতে হবে। আর এ ব্যাপারে অবহেলা, গাফলতী করার কোনো অবকাশ নেই। যাদের উপর যাকাত ফরয তারা অবশ্যই যাকাতের হকদারদের কাছে যাকাত পৌছে দিবে। তারা একক আল্লাহকেই ভয় করবে এবং তাঁকে ছাড়া অন্য কাউকেই ভয় করবে না। সর্বপ্রকার ওয়াজিব পালন করবে এবং সর্বপ্রকার হারাম বা নিষিদ্ধ কাজ পরিত্যাগ করবে।
আর ‘ভয়’ শব্দের ভাবার্থ ও দাবী হচ্ছে: আল্লাহর তাজীম (মর্যাদার) ইবাদাত ও আনুগত্যে ক্রটি-বিচ্যুতি হওয়ার ভয় করা।
মসজিদ প্রতিষ্ঠা ও তত্ত্বাবধানের উদ্দেশ্যে হচ্ছে: মসজিদের সাথে সংশ্লিষ্ট সব ধরনের কাজ-কর্ম, যেমন; নির্মাণ-পুননির্মাণ, পরিবর্তন, পরিবর্ধন এবং সালাত-যিকির ইত্যাদি আল্লাহর সন্তুষ্টিমূলক ইবাদাত অব্যাহত রাখা। [রিসালাতুল আহকালিম মাসজিদ ফিশ-শারিয়াহ, লেখক: আল-খুদাইরি পৃ: ৩৪৭, তাফসির ইবনে কাসীর ৪/৬১-৬৩, হাশিয়াতুল হামাল আলাল জালালাইন ২/২৭১)।]
১২৬
{প্রশ্ন: ১২৪} তাওয়াক্কুল কাকে বলে? তাওয়াক্কুল কত প্রকার, তার হুকুম কী? তার সাথে ঈমানের সম্পর্ক কী?উত্তর: তাওয়াক্কুল হচ্ছে; কোনো কিছুর উপর নির্ভর করা বা কাউকে কোনো বিষয় সম্পন্ন করার ক্ষমতা রয়েছে মনে কের দায়িত্ব অর্পন করা।
তাওয়াক্কুল চার প্রকার:
(ক) বিপদ-আপদে সর্বাবস্থায়ই আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করা। কেননা শুধুমাত্র আল্লাহই বিপদ দূর করে কল্যাণ এনে দিতে পারেন। আর এটা করা ওয়াজিব এবং ঈমানের শর্ত।
(খ) সৃষ্ট জীবের উপর এমন বিষয়ে তাওয়াক্কুল করা যা সংঘটিত করার ক্ষমতা আল্লাহ ছাড়া আর কারো নেই। যেমন; মৃত ও অনুপস্থিত এবং এ ধরনের অন্যান্য তাগুতদের উপর ভরসা করা। অতঃপর প্রয়োজনের কথা তাদেরকে বলা, সাহায্য প্রার্থনা, রিযিকের জন্য ফরিয়াদ করা অথবা হেফাযতের আবেদন নিবেদন করা। এধরনের কার্যকলাপ তাওহীদ (একত্ববাদ) পরিপন্থী বড় শির্কের অন্তর্ভুক্ত।
(গ) জীবিত উপস্থিতদের উপর তাওয়াক্কুল করা; যেমন, আমীর-উমারা, রাষ্ট্রনায়ক ইত্যাদি যাদেরকে আল্লাহ ধন-সম্পদের অধিকারী করেছেন সৃষ্টিজীবের দুঃখ কষ্ট দূরীকরণের উপায়-উপকরণ ইত্যাদি দান করেছেন। এদের কারো উপর তাওয়াক্কুল ছোট শির্কের অন্তর্ভুক্ত হবে।
(ঘ) কোনো ব্যক্তিকে উকিল বা প্রতিনিধি নির্ধারণ করা। আর তা এমন বিষয়ে হতে হবে যা ঐ প্রতিনিধির নিয়োগকর্তার পক্ষ থেকে সমপন্ন করতে সক্ষম; যেমন: ক্রয়-বিক্রয়, ভাড়া দেওয়া-নেওয়া ইত্যাদি। এ প্রকারের তাওয়াক্কুল বা নির্ভরতা জায়েয। তবে উকিল বা প্রতিনিধিকে দায়িত্ব অর্পণের সময় ‘‘আমি কোনো ব্যক্তি বিশেষের উপর তাওয়াক্কুল করলাম’’ বলা যাবে না। বরং বলতে হবে আমি অমুককে আমার পক্ষ থেকে নির্ভরযোগ্য প্রতিনিধি করলাম। কেননা যিনি যাকেই দায়িত্ব দিয়ে প্রতিনিধি করবেন তাকে অবশ্যই সার্বিক ব্যাপারে মহান পবিত্র আল্লাহর উপরই তাওয়াক্কুল বা নির্ভর করতে হবে [আল-জামে আল ফরিদ পৃষ্ঠা: ১৪৪।]।
তাওয়াক্কুল চার প্রকার:
(ক) বিপদ-আপদে সর্বাবস্থায়ই আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করা। কেননা শুধুমাত্র আল্লাহই বিপদ দূর করে কল্যাণ এনে দিতে পারেন। আর এটা করা ওয়াজিব এবং ঈমানের শর্ত।
(খ) সৃষ্ট জীবের উপর এমন বিষয়ে তাওয়াক্কুল করা যা সংঘটিত করার ক্ষমতা আল্লাহ ছাড়া আর কারো নেই। যেমন; মৃত ও অনুপস্থিত এবং এ ধরনের অন্যান্য তাগুতদের উপর ভরসা করা। অতঃপর প্রয়োজনের কথা তাদেরকে বলা, সাহায্য প্রার্থনা, রিযিকের জন্য ফরিয়াদ করা অথবা হেফাযতের আবেদন নিবেদন করা। এধরনের কার্যকলাপ তাওহীদ (একত্ববাদ) পরিপন্থী বড় শির্কের অন্তর্ভুক্ত।
(গ) জীবিত উপস্থিতদের উপর তাওয়াক্কুল করা; যেমন, আমীর-উমারা, রাষ্ট্রনায়ক ইত্যাদি যাদেরকে আল্লাহ ধন-সম্পদের অধিকারী করেছেন সৃষ্টিজীবের দুঃখ কষ্ট দূরীকরণের উপায়-উপকরণ ইত্যাদি দান করেছেন। এদের কারো উপর তাওয়াক্কুল ছোট শির্কের অন্তর্ভুক্ত হবে।
(ঘ) কোনো ব্যক্তিকে উকিল বা প্রতিনিধি নির্ধারণ করা। আর তা এমন বিষয়ে হতে হবে যা ঐ প্রতিনিধির নিয়োগকর্তার পক্ষ থেকে সমপন্ন করতে সক্ষম; যেমন: ক্রয়-বিক্রয়, ভাড়া দেওয়া-নেওয়া ইত্যাদি। এ প্রকারের তাওয়াক্কুল বা নির্ভরতা জায়েয। তবে উকিল বা প্রতিনিধিকে দায়িত্ব অর্পণের সময় ‘‘আমি কোনো ব্যক্তি বিশেষের উপর তাওয়াক্কুল করলাম’’ বলা যাবে না। বরং বলতে হবে আমি অমুককে আমার পক্ষ থেকে নির্ভরযোগ্য প্রতিনিধি করলাম। কেননা যিনি যাকেই দায়িত্ব দিয়ে প্রতিনিধি করবেন তাকে অবশ্যই সার্বিক ব্যাপারে মহান পবিত্র আল্লাহর উপরই তাওয়াক্কুল বা নির্ভর করতে হবে [আল-জামে আল ফরিদ পৃষ্ঠা: ১৪৪।]।
﴿ إِنَّمَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ٱلَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ ٱللَّهُ وَجِلَتۡ قُلُوبُهُمۡ وَإِذَا تُلِيَتۡ عَلَيۡهِمۡ ءَايَٰتُهُۥ زَادَتۡهُمۡ إِيمَٰنٗا وَعَلَىٰ رَبِّهِمۡ يَتَوَكَّلُونَ ٢ ﴾ [ الانفال : ٢ ]
‘‘যারা প্রকৃত ইমানদার তারা এমন যে, যখন আল্লাহকে স্বরণ করা হয় তখন প্রকম্পিত হয় তাদের হৃদয়। আর যখন তাদের সামনে তাঁর আয়াত পাঠ করা হয় তখন তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তারা স্বীয় রবের উপরেই ভরসা করে’’ (সূরা আল-আনফাল: ২)
উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা কী? আলোচ্য বিষয়ে আয়াত হতে কী সাক্ষ্য পাওয়া যায়, আয়াতের শিক্ষা কী?
উত্তর: আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াতে মুমিনদের কতিপয় প্রশংসনীয় গুণ বৈশিষ্ট্যের বিবরণ দিয়েছেন। এ গুণাবলীর মাধ্যমে তারা ঈমানের পূর্ণতা অর্জন করতে পারবে এবং ঈমানের হাকীকত অনুভব করবে।
মুমিনদের গুণ-বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপ:
(ক) যখন তাদের নিকট আল্লাহকে স্মরণ করা হয় তখন তাদের হৃদয় অন্তর প্রকম্পিত হয়। অর্থাৎ মনে ভয় জাগ্রত হয় অতঃপর আল্লাহর ফরযসমূহ পালন এবং নিষিদ্ধ কার্যকলাপ পরিত্যাগ করার প্রেরণা পাওয়া যায়।
(খ) তারা একক আল্লাহকে অবলম্বন, তাঁর উপর নির্ভর ও ভরসা করে তাদের সব কিছুই তাঁর নিকট সোপর্দ করে থাকে। আর আলোচ্য অধ্যায়ে এ সব গুণাবলীর সাক্ষ্যই দেওয়া হয়েছে।
(গ) তাদের নিকট যখন আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং তাদের মনোবল সুদৃঢ় হয়।
(ঘ) তারা যথাযথভাবে সালাত প্রতিষ্ঠা করে। আর তা যথাসময়ে ফরয, শর্ত ও রুকন অনুযায়ী পূর্ণভাবে আদায় করে।
(ঙ) তাদেরকে আল্লাহ যে ধন-সম্পদ রিযিক হিসেবে দিয়েছেন তা থেকে তারা আল্লাহর হুকুম মোতাবেক ফরয কিংবা মুস্তাহাব পালনে ব্যয় করে।
উক্ত পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের দ্বারা মুমিনগণ যা লাভ করবে তা হলো:
উত্তম অনাবিল প্রতিদান, উচ্চমর্যাদা, গুনাহ মাফ এবং সুখময় জান্নাতের মধ্যে অঢেল ও অফুরন্ত রিযিক।
আয়াতের শিক্ষা: সৎকাজে ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং অসৎ কাজে ঈমান হ্রাস পায় [আল-জামে আল ফরিদ: ১৪৫।]।
‘‘যারা প্রকৃত ইমানদার তারা এমন যে, যখন আল্লাহকে স্বরণ করা হয় তখন প্রকম্পিত হয় তাদের হৃদয়। আর যখন তাদের সামনে তাঁর আয়াত পাঠ করা হয় তখন তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তারা স্বীয় রবের উপরেই ভরসা করে’’ (সূরা আল-আনফাল: ২)
উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা কী? আলোচ্য বিষয়ে আয়াত হতে কী সাক্ষ্য পাওয়া যায়, আয়াতের শিক্ষা কী?
উত্তর: আল্লাহ তা‘আলা এ আয়াতে মুমিনদের কতিপয় প্রশংসনীয় গুণ বৈশিষ্ট্যের বিবরণ দিয়েছেন। এ গুণাবলীর মাধ্যমে তারা ঈমানের পূর্ণতা অর্জন করতে পারবে এবং ঈমানের হাকীকত অনুভব করবে।
মুমিনদের গুণ-বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপ:
(ক) যখন তাদের নিকট আল্লাহকে স্মরণ করা হয় তখন তাদের হৃদয় অন্তর প্রকম্পিত হয়। অর্থাৎ মনে ভয় জাগ্রত হয় অতঃপর আল্লাহর ফরযসমূহ পালন এবং নিষিদ্ধ কার্যকলাপ পরিত্যাগ করার প্রেরণা পাওয়া যায়।
(খ) তারা একক আল্লাহকে অবলম্বন, তাঁর উপর নির্ভর ও ভরসা করে তাদের সব কিছুই তাঁর নিকট সোপর্দ করে থাকে। আর আলোচ্য অধ্যায়ে এ সব গুণাবলীর সাক্ষ্যই দেওয়া হয়েছে।
(গ) তাদের নিকট যখন আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং তাদের মনোবল সুদৃঢ় হয়।
(ঘ) তারা যথাযথভাবে সালাত প্রতিষ্ঠা করে। আর তা যথাসময়ে ফরয, শর্ত ও রুকন অনুযায়ী পূর্ণভাবে আদায় করে।
(ঙ) তাদেরকে আল্লাহ যে ধন-সম্পদ রিযিক হিসেবে দিয়েছেন তা থেকে তারা আল্লাহর হুকুম মোতাবেক ফরয কিংবা মুস্তাহাব পালনে ব্যয় করে।
উক্ত পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের দ্বারা মুমিনগণ যা লাভ করবে তা হলো:
উত্তম অনাবিল প্রতিদান, উচ্চমর্যাদা, গুনাহ মাফ এবং সুখময় জান্নাতের মধ্যে অঢেল ও অফুরন্ত রিযিক।
আয়াতের শিক্ষা: সৎকাজে ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং অসৎ কাজে ঈমান হ্রাস পায় [আল-জামে আল ফরিদ: ১৪৫।]।
﴿وَمَن يَقۡنَطُ مِن رَّحۡمَةِ رَبِّهِۦٓ إِلَّا ٱلضَّآلُّونَ ٥٦ ﴾ [ الحجر : ٥٦ ]
‘‘আর রবের রহমত থেকে পথভ্রষ্টরা ছাড়া কে নিরাশ হয়’’। (সূরা আল হিজর: ৫৬)
এ আয়াতে উল্লেখিত: পথভ্রষ্ট করা?
উত্তর: সকলকে স্মরণ রাখতে হবে যে, আল্লাহকে যিনি ভয় করবেন তিনি যেন আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না হয়ে যান। বরং ভয় করতে হবে ঠিকই কিন্তু হতাশ হওয়া অনুচিত। আল্লাহর অবাধ্য বা গুনাহর কাজকে ভয় করে চলা উচিৎ এবং আল্লাহর সন্তুষ্টিমূলক সৎকাজ করা ও তাঁর রহমতের আশা পোষণ করা আল্লাহর বান্দাদের বৈশিষ্ট্য। আর তারাই পথভ্রষ্ট, যারা সত্যনিষ্ঠ নির্ভুল পথের অনুসারী নয় অথবা তারা কাফের সম্প্রদায়।
‘‘আর রবের রহমত থেকে পথভ্রষ্টরা ছাড়া কে নিরাশ হয়’’। (সূরা আল হিজর: ৫৬)
এ আয়াতে উল্লেখিত: পথভ্রষ্ট করা?
উত্তর: সকলকে স্মরণ রাখতে হবে যে, আল্লাহকে যিনি ভয় করবেন তিনি যেন আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না হয়ে যান। বরং ভয় করতে হবে ঠিকই কিন্তু হতাশ হওয়া অনুচিত। আল্লাহর অবাধ্য বা গুনাহর কাজকে ভয় করে চলা উচিৎ এবং আল্লাহর সন্তুষ্টিমূলক সৎকাজ করা ও তাঁর রহমতের আশা পোষণ করা আল্লাহর বান্দাদের বৈশিষ্ট্য। আর তারাই পথভ্রষ্ট, যারা সত্যনিষ্ঠ নির্ভুল পথের অনুসারী নয় অথবা তারা কাফের সম্প্রদায়।
১২৯
{প্রশ্ন: ১২৭} সবরের আভিধানিক ও পারিভাষিক অর্থ কি? তা কয় প্রকার, ঈমানের আলোকে এর হুকুম ও মর্যাদা কী?উত্তর: সবর আরবী শব্দ; যার অর্থ আকড়ে ধরে রাখা, বিরত রাখা।
পারিভাষিক অর্থ হলো: ভয়-ভীতি বা বিপদ-আপদ কালে সংযত থাকা বা নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। রাগ হয়ে মনের ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে রূঢ় কিংবা অসংলগ্ন কথাবার্তা হতে জিহ্বাকে সংযত রাখা। বিপদ-আপদ কালে হাত পা এবং অন্যান্য অংগপ্রত্যঙ্গসমূহের ভারসাম্য রক্ষা করা। অর্থাৎ যে কোনো পরিস্থিতিতে কপালে-গালে আঘাত করা কিংবা জামা-কাপড়, চুল ইত্যাদি ছিড়ে উম্মাদের মত আচরণ না করা।
আর ধৈর্য ঈমানের অংগ এবং ঈমান হলো দেহের সাথে মাথার সম্পর্কের অনুরূপ। ধৈর্য তিন প্রকার:
(১) ধৈর্যের সাথে মহান আল্লাহর আদেশ প্রতিপালন করা। আর এটিই হলো আল্লাহর প্রকৃত আনুগত্য।
(২) ধৈর্যের সাথে আল্লাহর নিষেধ মেনে চলা, অর্থাৎ মহান আল্লাহর নাফরমানী ও পাপাচারে লিপ্ত না হওয়া।
(৩) বিপদ-আপদে সিদ্ধান্ত ও ফয়সালাকে ধৈর্যের সাথে মোকাবিলা করা। অর্থাৎ ভাগ্যের ফয়সালাকে ধৈর্যের সাথে মেনে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা।
ধৈর্য ধারনের বিধান হলো: তা ফরয বা অবশ্য কর্তব্য [আল-জামে আল ফরিদ: ১৫১।]।
পারিভাষিক অর্থ হলো: ভয়-ভীতি বা বিপদ-আপদ কালে সংযত থাকা বা নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। রাগ হয়ে মনের ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে রূঢ় কিংবা অসংলগ্ন কথাবার্তা হতে জিহ্বাকে সংযত রাখা। বিপদ-আপদ কালে হাত পা এবং অন্যান্য অংগপ্রত্যঙ্গসমূহের ভারসাম্য রক্ষা করা। অর্থাৎ যে কোনো পরিস্থিতিতে কপালে-গালে আঘাত করা কিংবা জামা-কাপড়, চুল ইত্যাদি ছিড়ে উম্মাদের মত আচরণ না করা।
আর ধৈর্য ঈমানের অংগ এবং ঈমান হলো দেহের সাথে মাথার সম্পর্কের অনুরূপ। ধৈর্য তিন প্রকার:
(১) ধৈর্যের সাথে মহান আল্লাহর আদেশ প্রতিপালন করা। আর এটিই হলো আল্লাহর প্রকৃত আনুগত্য।
(২) ধৈর্যের সাথে আল্লাহর নিষেধ মেনে চলা, অর্থাৎ মহান আল্লাহর নাফরমানী ও পাপাচারে লিপ্ত না হওয়া।
(৩) বিপদ-আপদে সিদ্ধান্ত ও ফয়সালাকে ধৈর্যের সাথে মোকাবিলা করা। অর্থাৎ ভাগ্যের ফয়সালাকে ধৈর্যের সাথে মেনে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা।
ধৈর্য ধারনের বিধান হলো: তা ফরয বা অবশ্য কর্তব্য [আল-জামে আল ফরিদ: ১৫১।]।
﴿ وَمَن يُؤۡمِنۢ بِٱللَّهِ يَهۡدِ قَلۡبَهُۥۚ ﴾ [ التغابن : ١١ ] আয়াতের ব্যাখ্যা এবং শিক্ষনীয় বিষয় কি?
উত্তর: ‘‘যে আল্লাহর প্রতি সুদৃঢ় ঈমান রাখে আল্লাহ তার হৃদয়ে প্রশান্তি দান করেন’’। (সূরা আত-তাগাবুন: ১১)
অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে এমন ব্যক্তি কোনো প্রকার বিপদ-আপদে আক্রান্ত হলেও সে ধৈর্য ধারণ করে থাকে, কেননা তার জানা আছে যে সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী হয়ে থাকে। যে ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহর ফয়সালাকে মেনে নেয় তার হৃদয় মনকে আল্লাহ হিদায়াতের দিকে ধাবিত হওয়ার তৌফিক দান করেন। আর ধৈর্যের বিনিময়ে আল্লাহ দুনিয়ার ক্ষতি ও বিপদ আপদ দূর করে দেন। ধৈর্যশীল ব্যক্তি সত্যিকারের হিদায়াত লাভ করে এবং অন্তর আত্মায় স্বস্তি অনুভব করে। তার আরো জানা আছে যে, শুধু ত্রুটির কারণেই বিপদ-আপদ হয় না কিংবা বিপদ ঘটবার জন্য ভুল করা হয় না।
আয়াতের ফায়দা বা শিক্ষা হচ্ছে: ধৈর্যাবলম্বন করলে হেদায়াত লাভের পথ সুগম হয়। হৃদয়ে স্বস্তি প্রশান্তি লাভ করা যায়। আর এটিই হচ্ছে ধৈর্যশীলদের সওয়াব যা পূর্ণের অন্তর্ভুক্ত [আল-জামে ফরিদ পৃ: ১৫২।]।
মহামহিয়ান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَبَشِّرِ ٱلصَّٰبِرِينَ ١٥٥ ٱلَّذِينَ إِذَآ أَصَٰبَتۡهُم مُّصِيبَةٞ قَالُوٓاْ إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّآ إِلَيۡهِ رَٰجِعُونَ ١٥٦ ﴾ [ البقرة : ١٥٥، ١٥٦ ]
‘‘(১৫৫) আর ঐ সব ধৈর্যশীলদেরকে সু-সংবাদ দিন; (১৫৬) যারা বিপদ মুসিবতে আক্রান্ত হলে বলে থাকে যে আমরা সকলেই আল্লাহর মালিকানাধীন (অনুগত) এবং আমরা নিশ্চিতভাবে তারই নিকট প্রর্ত্যাবর্তনকারী’’। (সূরা আল বাক্বারাহ)
উত্তর: ‘‘যে আল্লাহর প্রতি সুদৃঢ় ঈমান রাখে আল্লাহ তার হৃদয়ে প্রশান্তি দান করেন’’। (সূরা আত-তাগাবুন: ১১)
অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে এমন ব্যক্তি কোনো প্রকার বিপদ-আপদে আক্রান্ত হলেও সে ধৈর্য ধারণ করে থাকে, কেননা তার জানা আছে যে সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী হয়ে থাকে। যে ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহর ফয়সালাকে মেনে নেয় তার হৃদয় মনকে আল্লাহ হিদায়াতের দিকে ধাবিত হওয়ার তৌফিক দান করেন। আর ধৈর্যের বিনিময়ে আল্লাহ দুনিয়ার ক্ষতি ও বিপদ আপদ দূর করে দেন। ধৈর্যশীল ব্যক্তি সত্যিকারের হিদায়াত লাভ করে এবং অন্তর আত্মায় স্বস্তি অনুভব করে। তার আরো জানা আছে যে, শুধু ত্রুটির কারণেই বিপদ-আপদ হয় না কিংবা বিপদ ঘটবার জন্য ভুল করা হয় না।
আয়াতের ফায়দা বা শিক্ষা হচ্ছে: ধৈর্যাবলম্বন করলে হেদায়াত লাভের পথ সুগম হয়। হৃদয়ে স্বস্তি প্রশান্তি লাভ করা যায়। আর এটিই হচ্ছে ধৈর্যশীলদের সওয়াব যা পূর্ণের অন্তর্ভুক্ত [আল-জামে ফরিদ পৃ: ১৫২।]।
মহামহিয়ান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَبَشِّرِ ٱلصَّٰبِرِينَ ١٥٥ ٱلَّذِينَ إِذَآ أَصَٰبَتۡهُم مُّصِيبَةٞ قَالُوٓاْ إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّآ إِلَيۡهِ رَٰجِعُونَ ١٥٦ ﴾ [ البقرة : ١٥٥، ١٥٦ ]
‘‘(১৫৫) আর ঐ সব ধৈর্যশীলদেরকে সু-সংবাদ দিন; (১৫৬) যারা বিপদ মুসিবতে আক্রান্ত হলে বলে থাকে যে আমরা সকলেই আল্লাহর মালিকানাধীন (অনুগত) এবং আমরা নিশ্চিতভাবে তারই নিকট প্রর্ত্যাবর্তনকারী’’। (সূরা আল বাক্বারাহ)
﴿ ٱتَّخَذُوٓاْ أَحۡبَارَهُمۡ وَرُهۡبَٰنَهُمۡ أَرۡبَابٗا مِّن دُونِ ٱللَّهِ ﴾ [ التوبة : ٣١ ]
‘‘তাদের মধ্য থেকে আলেম ওলামা (পীর-পুরোহিত) সংসার বিরাগীদেরকে রবরূপে (হালাল-হারাম বিধায়ক) গ্রহণ বা নির্ধারণ করে নিয়েছে’’। (সূরা আত-তাওবা: ৩১)
এ আয়াতের ভাবার্থ কী? আয়াতে উল্লিখিত ‘আহবার’, ‘রুহবান’ বলে কাদেরকে বুঝানো হয়েছে?
উত্তর: মহামহিয়ান আল্লাহ জানাচ্ছেন যে, মুশরিক সম্প্রদায় আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদের আলেম-ওলামা, পণ্ডিত, পীর-পুরোহিত সংসারত্যাগী বৈরাগীদেরকে মাবুদ বা উপাস্যরূপে গ্রহণ করে নিয়েছে। কেননা তারা আল্লাহর নাফরমানীমূলক গুনাহের কাজে তাদের আনুগত্য-অনুসরণ করে থাকে। অথচ তারা হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল বলে থাকে।
‘আহবার’ অর্থ উলামা বা বিদ্যান এবং ‘রুহবান’ হচ্ছে দুনিয়াবিমুখ ‘আবেদ সম্প্রদায় যারা শুধু ইবাদাত বন্দেগীতে মগ্ন থাকে [আল-জামে আল ফরিদ, পৃষ্টা: ১৬৪।]।
‘‘তাদের মধ্য থেকে আলেম ওলামা (পীর-পুরোহিত) সংসার বিরাগীদেরকে রবরূপে (হালাল-হারাম বিধায়ক) গ্রহণ বা নির্ধারণ করে নিয়েছে’’। (সূরা আত-তাওবা: ৩১)
এ আয়াতের ভাবার্থ কী? আয়াতে উল্লিখিত ‘আহবার’, ‘রুহবান’ বলে কাদেরকে বুঝানো হয়েছে?
উত্তর: মহামহিয়ান আল্লাহ জানাচ্ছেন যে, মুশরিক সম্প্রদায় আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদের আলেম-ওলামা, পণ্ডিত, পীর-পুরোহিত সংসারত্যাগী বৈরাগীদেরকে মাবুদ বা উপাস্যরূপে গ্রহণ করে নিয়েছে। কেননা তারা আল্লাহর নাফরমানীমূলক গুনাহের কাজে তাদের আনুগত্য-অনুসরণ করে থাকে। অথচ তারা হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল বলে থাকে।
‘আহবার’ অর্থ উলামা বা বিদ্যান এবং ‘রুহবান’ হচ্ছে দুনিয়াবিমুখ ‘আবেদ সম্প্রদায় যারা শুধু ইবাদাত বন্দেগীতে মগ্ন থাকে [আল-জামে আল ফরিদ, পৃষ্টা: ১৬৪।]।
১৩২
{প্রশ্ন: ১৩০} মহান আল্লাহ বলেন: ﴿ أَفَحُكۡمَ ٱلۡجَٰهِلِيَّةِ يَبۡغُونَۚ وَمَنۡ أَحۡسَنُ مِنَ ٱللَّهِ حُكۡمٗا لِّقَوۡمٖ يُوقِنُونَ ٥٠ ﴾ [المائدة: ٥٠] ‘‘তারা কি জাহেলিয়াতের বিধান কামনা করে? দৃঢ়বিশ্বাসীদের জন্য আল্লাহ অপেক্ষা উত্তম ফয়সালাকারী কে?’’ (সূরা আল-মায়েদাহ: ৫০)এ আয়াতের ভাবার্থ এবং শিক্ষণীয় বিষয় কী?
উত্তর: মহান আল্লাহ উক্ত আয়াতে বিদ্রূপাত্মক প্রশ্ন করে অন্যান্য বিধান ও মতবাদকে অস্বীকার করেছেন। কেননা আল্লাহর হুকুম-বিধানই চুড়ান্ত সত্য বিধান এবং পূর্ণাঙ্গ কল্যাণময়। আর নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে, সর্বপ্রকার ক্ষতিকর পাপাচারের উপর। ঐ সব বিষয়বস্তুও বর্জন করতে হবে যা আল্লাহর শরীয়তে স্বীকৃত হয় নি। বরং তা কতিপয় ব্যক্তির মনগড়া বক্তব্য বিশ্লেষণ বিদ‘আত এবং স্বরচিত পরিভাষা ছাড়া আর কিছুই নয়। অন্ধকার যুগেও জাহেল লোকেরা অজ্ঞতা, মুর্খতার বেড়াজালে বিভ্রান্তিকর বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা করে রেখেছিল।
আয়াতের শিক্ষা: আল্লাহ প্রদত্ত এবং রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হুকুম বিধান অবজ্ঞা বা অপছন্দ করে জাহেলিয়াতের হুকুম-বিধান গ্রহণ ও অনুসরণকারীদেরকে সাবধান করে দেওয়া হয়েছে।
উত্তর: মহান আল্লাহ উক্ত আয়াতে বিদ্রূপাত্মক প্রশ্ন করে অন্যান্য বিধান ও মতবাদকে অস্বীকার করেছেন। কেননা আল্লাহর হুকুম-বিধানই চুড়ান্ত সত্য বিধান এবং পূর্ণাঙ্গ কল্যাণময়। আর নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে, সর্বপ্রকার ক্ষতিকর পাপাচারের উপর। ঐ সব বিষয়বস্তুও বর্জন করতে হবে যা আল্লাহর শরীয়তে স্বীকৃত হয় নি। বরং তা কতিপয় ব্যক্তির মনগড়া বক্তব্য বিশ্লেষণ বিদ‘আত এবং স্বরচিত পরিভাষা ছাড়া আর কিছুই নয়। অন্ধকার যুগেও জাহেল লোকেরা অজ্ঞতা, মুর্খতার বেড়াজালে বিভ্রান্তিকর বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা করে রেখেছিল।
আয়াতের শিক্ষা: আল্লাহ প্রদত্ত এবং রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হুকুম বিধান অবজ্ঞা বা অপছন্দ করে জাহেলিয়াতের হুকুম-বিধান গ্রহণ ও অনুসরণকারীদেরকে সাবধান করে দেওয়া হয়েছে।
﴿ وَهُمۡ يَكۡفُرُونَ بِٱلرَّحۡمَٰنِۚ ﴾ [ الرعد : ٣٠ ] ‘‘তারা রহমানের সাথে কুফরী (অস্বীকার) করে’’। (সূরা আর-রাদ:৩০) এ আয়াতাংশ নাযিলের উপলক্ষ্য কি? যারা আল্লাহর কিছু নাম ও গুণকে অস্বীকার করে তাদের হুকুম কী?
উত্তর: এ আয়াতাংশ নাযিল হয়েছে ঐ সব মুশরিক সম্প্রদায়কে উপলক্ষ্য করে যারা আল্লাহর ‘নামকে উদ্ধত্যের সাথে অবজ্ঞা, অস্বীকার করেছে।
অথচ ‘‘আর-রহমান’’ মহান আল্লাহর পবিত্র একটি নাম এবং ‘রহমত’ মহান আল্লাহর সাদৃশ্যহীন গুণাবলীর অন্তর্ভুক্ত। আর মহান আল্লাহর সাদৃশ্যহীন পবিত্র নাম ও গুণাবলীর প্রতি ঈমান আনা ফরয। মহান আল্লাহর সর্বোচ্চ মর্যাদার সাথে সংগতিপূর্ণ সাদৃশ্যহীন তাঁর নাম ও গুণ বৈশিষ্ট্যের স্বীকৃতি দিতে হবে। আর যে তা অস্বীকার বা অমান্য করবে সে কাফের বলে বিবেচিত হবে [আল-জামে আল ফরিদ, পৃষ্ঠা: ১৭০।]।
উত্তর: এ আয়াতাংশ নাযিল হয়েছে ঐ সব মুশরিক সম্প্রদায়কে উপলক্ষ্য করে যারা আল্লাহর ‘নামকে উদ্ধত্যের সাথে অবজ্ঞা, অস্বীকার করেছে।
অথচ ‘‘আর-রহমান’’ মহান আল্লাহর পবিত্র একটি নাম এবং ‘রহমত’ মহান আল্লাহর সাদৃশ্যহীন গুণাবলীর অন্তর্ভুক্ত। আর মহান আল্লাহর সাদৃশ্যহীন পবিত্র নাম ও গুণাবলীর প্রতি ঈমান আনা ফরয। মহান আল্লাহর সর্বোচ্চ মর্যাদার সাথে সংগতিপূর্ণ সাদৃশ্যহীন তাঁর নাম ও গুণ বৈশিষ্ট্যের স্বীকৃতি দিতে হবে। আর যে তা অস্বীকার বা অমান্য করবে সে কাফের বলে বিবেচিত হবে [আল-জামে আল ফরিদ, পৃষ্ঠা: ১৭০।]।
﴿وَلِلَّهِ ٱلۡأَسۡمَآءُ ٱلۡحُسۡنَىٰ فَٱدۡعُوهُ بِهَاۖ وَذَرُواْ ٱلَّذِينَ يُلۡحِدُونَ فِيٓ أَسۡمَٰٓئِهِۦۚ سَيُجۡزَوۡنَ مَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ١٨٠﴾ [ الاعراف : ١٨٠ ]
‘‘আর আল্লাহর যে সব নাম আছে তা সর্ব সুন্দর উত্তম, অতএব সে নাম ধরেই তাকে ডাক। আর তোমরা তাদেরকে বর্জন কর যারা আল্লাহর নামসমূহের বিকৃতি করে থাকে। তারা তাদের কৃতকর্মের যথপোযুক্ত প্রতিদান শীঘ্রই পাবে’’। (সূরা আল-আরাফ: ১৮০), এ আয়াতের ব্যাখ্যা কী?
উত্তর: মহামহিয়ান আল্লাহ জানাচ্ছেন যে, তাঁর অনেক নাম আছে এবং তা সর্বোত্তম ও সুন্দর, অর্থাৎ তাঁর নামের চেয়ে উত্তম বা সমকক্ষ আর কিছুই নেই। আর সে সব নাম পূর্ণাংগ গুণ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। আল্লাহ আমাদেরকে ঐ নাম ধরেই তাকে ডাকতে বা দো‘আ প্রার্থনা করতে বলেছেন। তার প্রশংসাও করতে হবে ঐসব নাম ও গুণের স্বীকৃতি দিয়ে। আর বর্জন করতে হবে তাদেরকে যারা আল্লাহর নামের বিকৃতি ঘটায়, তাঁর নামসমূহকে সাদৃশ্য মুক্ত মর্যাদাবান উত্তম বলে স্বীকার করে না। তারা আল্লাহর দুষমন মুর্খ ও জাহেল। আর আমরা যেন তাঁর নামের সঠিক তাৎপর্য ও হাকীকত নিয়ে কোনোরূপ বিভ্রান্তির সৃষ্টি না করি। আমাদেরকে সঠিক অর্থের ব্যাপারে দৃঢ়তা অবলম্বন করতে হবে। আবার সতর্ক থাকতে যেন কুরআন-সুন্নাহর প্রমাণহীন মনগড়া কোনো কিছুকে ঐ নামসমূহের অন্তর্ভুক্ত করে না ফেলি।
অতঃপর আল্লাহ মুলহিদ বা আল্লাহর নাম বিকৃতকারী তার অর্থের ব্যাপারে পথভ্রষ্ট লোকদের পথ অনুসরণকারীদেরকে আখিরাত দিবসে তাদের কৃতকর্মের যথোপযুক্ত প্রতিদান আযাব দানের ঘোষণা দিয়েছেন।
‘‘আর আল্লাহর যে সব নাম আছে তা সর্ব সুন্দর উত্তম, অতএব সে নাম ধরেই তাকে ডাক। আর তোমরা তাদেরকে বর্জন কর যারা আল্লাহর নামসমূহের বিকৃতি করে থাকে। তারা তাদের কৃতকর্মের যথপোযুক্ত প্রতিদান শীঘ্রই পাবে’’। (সূরা আল-আরাফ: ১৮০), এ আয়াতের ব্যাখ্যা কী?
উত্তর: মহামহিয়ান আল্লাহ জানাচ্ছেন যে, তাঁর অনেক নাম আছে এবং তা সর্বোত্তম ও সুন্দর, অর্থাৎ তাঁর নামের চেয়ে উত্তম বা সমকক্ষ আর কিছুই নেই। আর সে সব নাম পূর্ণাংগ গুণ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। আল্লাহ আমাদেরকে ঐ নাম ধরেই তাকে ডাকতে বা দো‘আ প্রার্থনা করতে বলেছেন। তার প্রশংসাও করতে হবে ঐসব নাম ও গুণের স্বীকৃতি দিয়ে। আর বর্জন করতে হবে তাদেরকে যারা আল্লাহর নামের বিকৃতি ঘটায়, তাঁর নামসমূহকে সাদৃশ্য মুক্ত মর্যাদাবান উত্তম বলে স্বীকার করে না। তারা আল্লাহর দুষমন মুর্খ ও জাহেল। আর আমরা যেন তাঁর নামের সঠিক তাৎপর্য ও হাকীকত নিয়ে কোনোরূপ বিভ্রান্তির সৃষ্টি না করি। আমাদেরকে সঠিক অর্থের ব্যাপারে দৃঢ়তা অবলম্বন করতে হবে। আবার সতর্ক থাকতে যেন কুরআন-সুন্নাহর প্রমাণহীন মনগড়া কোনো কিছুকে ঐ নামসমূহের অন্তর্ভুক্ত করে না ফেলি।
অতঃপর আল্লাহ মুলহিদ বা আল্লাহর নাম বিকৃতকারী তার অর্থের ব্যাপারে পথভ্রষ্ট লোকদের পথ অনুসরণকারীদেরকে আখিরাত দিবসে তাদের কৃতকর্মের যথোপযুক্ত প্রতিদান আযাব দানের ঘোষণা দিয়েছেন।
১৩৫
{প্রশ্ন: ১৩৩} ইলহাদ কি? আল্লাহর নামসমূহের ক্ষেত্রে ইলহাদ অর্থ কী? ইলহাদ কত প্রকার ও কী কী, উদাহরণ দিন?উত্তর: ইলহাদ হলো, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যে বিচ্যুতি ঘটা, সত্য এড়িয়ে যাওয়া, বিমুখ হওয়া ও পথভ্রষ্ট হওয়া, বক্রতা অবলম্বন। আর সে কবরের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে থাকে ‘‘আল-লাহদ’’ যেখানে কবরস্থ লোককে কিবলার দিকে সরিয়ে রাখা হয়।
আল্লাহর নামের ক্ষেত্রে ইলহাদের অর্থ হলো: আল্লাহর নামের ব্যাপারে বক্রতা অবলম্বন করা; যেমন সুস্পষ্ট, সত্য-সঠিক এবং প্রমাণিত অর্থ ব্যাখ্যা গ্রহণ না করে বিকৃতি ঘটিয়ে, অপব্যাখ্যার আশ্রয় নিয়ে সত্য বিমুখ হওয়া।
ইলহাদের প্রকারভেদ:
(১) আল্লাহর নামের পবিত্র শব্দ হতে মুর্তির নামকরণ, যেরূপ করতো অন্ধকার যুগের মুশরিকরা। যেমন তারা মূর্তির নাম দিয়েছিল আল্লাত; এ শব্দ উদ্ভাবন করেছিল আল-ইলাহ শব্দ থেকে, তারা আরো আবিস্কার করেছিল আল-উযযা, এ শব্দ উদ্ভাবন করেছিল আল-আযীয থেকে এবং মানাত নাম রেখেছিল আল-মান্নান শব্দ থেকে উদ্ভাবন করে।
(২) মহান আল্লাহকে এমন কোনো নামে অভহিত করা যা তার মর্যাদা ও ইযযাতের সাথে সংগতিপূর্ণ নয় বরং তাতে মহত্ব ও মর্যাদা সংকুচিত হয়। যেমন; খ্রীষ্টান (নাসারা) সম্প্রদায় আল্লাহকে পিতা নামে অভিহিত করে থাকে।
(৩) আল্লাহর মর্যাদা ও গুণকে খাটো করার অপচেষ্টা,যেমন; ইয়াহূদী সম্প্রদায় আল্লাহকে ফকীর বা অন্যের মুখাপেক্ষী ভিক্ষুক বলার ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। তারা আল্লাহকে আরো যে সব অপবাদ দিয়েছে তার মধ্যে আছে যে, তিনি বিশ্রাম গ্রহণকারী এবং আল্লাহর হাত সংকুচিত অর্থাৎ তিনি কৃপণ।
(৪) আল্লাহর সুন্দর নামসমূহের হাকীকত তথা বাস্তব অর্থ অস্বীকার করা এবং সংগতিপূর্ণ সঠিক অর্থকে পরিহার ও পরিবর্তন করা। যেমন; জাহমিয়া সম্প্রদায় আল্লাহর নামসমূহকে গুণ-বৈশিষ্ট্য এবং অর্থহীন বলে থাকে। তারা বলে আল্লাহ ‘সামী‘ কিন্তু শ্রবণ নেই। তিনি ‘বাছীর’ কিন্তু চোখ নেই ইত্যাদি। মহামহিয়ান আল্লাহ ঐ সব লোকদের বিভ্রান্তিকর কথা-বার্তা হতে সম্পূর্ণ মুক্ত ও পবিত্র।
(৫) মহান আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ গুণ-বৈশিষ্টকে তাঁরই সৃষ্টির গুণের সাথে সংগতিপূর্ণ মনে করা বা সাদৃশ্য স্থাপন করা। যেমন; এরূপ বলা যে, আল্লাহর চেহারা আমাদের চেহারার মত, আল্লাহর হাত আমাদের হাতের মত ইত্যাদি।
মহান আল্লাহ ঐ সব সত্যভ্রষ্ট সম্প্রদায়ের অপবাদ, বিকৃতি, থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত, তিনি সর্বোচ্চ মহামহিয়ান।
আল্লাহর নামের ক্ষেত্রে ইলহাদের অর্থ হলো: আল্লাহর নামের ব্যাপারে বক্রতা অবলম্বন করা; যেমন সুস্পষ্ট, সত্য-সঠিক এবং প্রমাণিত অর্থ ব্যাখ্যা গ্রহণ না করে বিকৃতি ঘটিয়ে, অপব্যাখ্যার আশ্রয় নিয়ে সত্য বিমুখ হওয়া।
ইলহাদের প্রকারভেদ:
(১) আল্লাহর নামের পবিত্র শব্দ হতে মুর্তির নামকরণ, যেরূপ করতো অন্ধকার যুগের মুশরিকরা। যেমন তারা মূর্তির নাম দিয়েছিল আল্লাত; এ শব্দ উদ্ভাবন করেছিল আল-ইলাহ শব্দ থেকে, তারা আরো আবিস্কার করেছিল আল-উযযা, এ শব্দ উদ্ভাবন করেছিল আল-আযীয থেকে এবং মানাত নাম রেখেছিল আল-মান্নান শব্দ থেকে উদ্ভাবন করে।
(২) মহান আল্লাহকে এমন কোনো নামে অভহিত করা যা তার মর্যাদা ও ইযযাতের সাথে সংগতিপূর্ণ নয় বরং তাতে মহত্ব ও মর্যাদা সংকুচিত হয়। যেমন; খ্রীষ্টান (নাসারা) সম্প্রদায় আল্লাহকে পিতা নামে অভিহিত করে থাকে।
(৩) আল্লাহর মর্যাদা ও গুণকে খাটো করার অপচেষ্টা,যেমন; ইয়াহূদী সম্প্রদায় আল্লাহকে ফকীর বা অন্যের মুখাপেক্ষী ভিক্ষুক বলার ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। তারা আল্লাহকে আরো যে সব অপবাদ দিয়েছে তার মধ্যে আছে যে, তিনি বিশ্রাম গ্রহণকারী এবং আল্লাহর হাত সংকুচিত অর্থাৎ তিনি কৃপণ।
(৪) আল্লাহর সুন্দর নামসমূহের হাকীকত তথা বাস্তব অর্থ অস্বীকার করা এবং সংগতিপূর্ণ সঠিক অর্থকে পরিহার ও পরিবর্তন করা। যেমন; জাহমিয়া সম্প্রদায় আল্লাহর নামসমূহকে গুণ-বৈশিষ্ট্য এবং অর্থহীন বলে থাকে। তারা বলে আল্লাহ ‘সামী‘ কিন্তু শ্রবণ নেই। তিনি ‘বাছীর’ কিন্তু চোখ নেই ইত্যাদি। মহামহিয়ান আল্লাহ ঐ সব লোকদের বিভ্রান্তিকর কথা-বার্তা হতে সম্পূর্ণ মুক্ত ও পবিত্র।
(৫) মহান আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ গুণ-বৈশিষ্টকে তাঁরই সৃষ্টির গুণের সাথে সংগতিপূর্ণ মনে করা বা সাদৃশ্য স্থাপন করা। যেমন; এরূপ বলা যে, আল্লাহর চেহারা আমাদের চেহারার মত, আল্লাহর হাত আমাদের হাতের মত ইত্যাদি।
মহান আল্লাহ ঐ সব সত্যভ্রষ্ট সম্প্রদায়ের অপবাদ, বিকৃতি, থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত, তিনি সর্বোচ্চ মহামহিয়ান।
উত্তর: আল্লাহ তাঁর নাম ও গুণসমূহকে ঠিক ঐভাবে বিশ্বাস করা যেভাবে আল্লাহ নিজে এবং তার রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন। আর তাতে আল্লাহর মহাত্ম-মর্যাদার সাথে অবশ্যই সংগতি থাকতে হবে। তাঁর নাম ও গুণসমূহের কোনো কিছুই অস্বীকার করা যাবে না। তাঁর নাম এবং গুণের কোনো প্রকার সাদৃশ্যও সাব্যস্ত করা যাবে না। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ ﴾ [ الشورا : ١١ ]
‘‘তাঁর মতো কোনো কিছুই নেই, তিনি সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা’’। (সূরা আশ-শূরা: ১১)
﴿ لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ ﴾ [ الشورا : ١١ ]
‘‘তাঁর মতো কোনো কিছুই নেই, তিনি সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা’’। (সূরা আশ-শূরা: ১১)
উত্তর: আর-রহমান (দযাময়), আর রহীম (দয়ালু), আস সামী (সর্বশ্রোতা) আল-বাসীর (সর্বদ্রষ্টা), আল-আযীয (পরাক্রমশালী), আল-হাকীম (প্রজ্ঞাময়) আল-হালীম (সহনশীল), আল-আলীম (সর্বজ্ঞ), আল-আলীউল কাবীর (সর্বোচ্চ, মহান) আল-হাইউল কাইউম (চিরঞ্জীব, সংরক্ষক ও বিধায়ক) [আল-জামে আল ফরিদ পৃ: ১৯৭।]।
১৩৮
{প্রশ্ন: ১৩৬} আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহ আনহু বর্ণনা করেন যে, রাসূল সল্লাল্লাহ আলাইহ ওয়াসাল্লাম বলেন: «إِنَّ لِلَّهِ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ اسْمًا مِائَةً إِلَّا وَاحِدًا، مَنْ أَحْصَاهَا دَخَلَ الجَنَّةَ»
‘‘আল্লাহর নিরানববই নামটি নাম রয়েছে যে ব্যক্তি সেগুলোর যথাযথভাবে আয়ত্ব করতে সক্ষম হবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’’। (বুখারী, ২৭৩৬ ও মুসলিম, ২৬৭৭)
হাদীসে উল্লেখিত ‘আহসাহা’ এ শব্দের তাৎপর্য কী? আল্লাহর নামসমূহ কি উল্লেখিত সংখ্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ? প্রমাণ দিন?
উত্তর: আল্লাহর নিরানব্বইটি নাম ‘ইহসা’ করার তিনটি তাৎপর্য আছে:
(১) পবিত্র শব্দসমূহ উচ্চারণসহ আয়ত্ব করা।
(২) সেগুলোর অর্থ ও তাৎপর্য অনুধাবন করা।
(৩) সে শব্দগুচ্ছের মাধ্যমে আল্লাহকে ডাকা এবং দো‘আ করা। আল্লাহর কাছে দো‘আ প্রার্থনা এবং তাঁর মহত্ব-প্রশংসা করার মাধ্যমে আল্লাহর দরবারে ধর্ণা দেওয়া ও ফরিয়াদ করা।
আল্লাহর নাম উক্ত সংখ্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তার প্রমাণ হলো প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী:
«أَسْأَلُكَ بِكُلِّ اسْمٍ هُوَ لَكَ، سَمَّيْتَ بِهِ نَفْسَكَ، أَوْ أَنْزَلْتَهُ فِي كِتَابِكَ، أَوْ عَلَّمْتَهُ أَحَدًا مِنْ خَلْقِكَ، أَوِ اسْتَأْثَرْتَ بِهِ فِي عِلْمِ الْغَيْبِ عِنْدَكَ»
‘‘হে আল্লাহ, তোমার কাছে ফরিয়াদ করছি তোমার স্বঘোষিত ঐ সব নাম নিয়ে যে নামসমূহ তুমি নিজের জন্য পছন্দ করে রেখেছো, কিংবা তোমার কিতাবে উল্লেখ করেছো অথবা তোমার বান্দাদের মধ্যে কাউকে শিখিয়েছ কিংবা তুমি নিজের কাছে গোপন করে রেখেছ’’। (আহমাদ, আবু হাতেম, ইবনে হিববান তার সহীহ গ্রন্থে)
অর্থাৎ: আল্লাহর নামসমূহ তিন প্রকারের;
(১) আল্লাহর স্বঘোষিত কিছু নাম বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা করেছেন তাকে জানিয়েছেন।
(২) কিছু নাম তাঁর কিতাবে উল্লেখ করেছেন এবং তা বান্দাদেরকে অবহিত করেছেন।
(৩) মহান আল্লাহ আরো কিছু নাম নিজের কাছে গোপন করে রেখেছেন এবং তা সৃষ্টির কেউই তা জানে না।
‘‘আল্লাহর নিরানববই নামটি নাম রয়েছে যে ব্যক্তি সেগুলোর যথাযথভাবে আয়ত্ব করতে সক্ষম হবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’’। (বুখারী, ২৭৩৬ ও মুসলিম, ২৬৭৭)
হাদীসে উল্লেখিত ‘আহসাহা’ এ শব্দের তাৎপর্য কী? আল্লাহর নামসমূহ কি উল্লেখিত সংখ্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ? প্রমাণ দিন?
উত্তর: আল্লাহর নিরানব্বইটি নাম ‘ইহসা’ করার তিনটি তাৎপর্য আছে:
(১) পবিত্র শব্দসমূহ উচ্চারণসহ আয়ত্ব করা।
(২) সেগুলোর অর্থ ও তাৎপর্য অনুধাবন করা।
(৩) সে শব্দগুচ্ছের মাধ্যমে আল্লাহকে ডাকা এবং দো‘আ করা। আল্লাহর কাছে দো‘আ প্রার্থনা এবং তাঁর মহত্ব-প্রশংসা করার মাধ্যমে আল্লাহর দরবারে ধর্ণা দেওয়া ও ফরিয়াদ করা।
আল্লাহর নাম উক্ত সংখ্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তার প্রমাণ হলো প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী:
«أَسْأَلُكَ بِكُلِّ اسْمٍ هُوَ لَكَ، سَمَّيْتَ بِهِ نَفْسَكَ، أَوْ أَنْزَلْتَهُ فِي كِتَابِكَ، أَوْ عَلَّمْتَهُ أَحَدًا مِنْ خَلْقِكَ، أَوِ اسْتَأْثَرْتَ بِهِ فِي عِلْمِ الْغَيْبِ عِنْدَكَ»
‘‘হে আল্লাহ, তোমার কাছে ফরিয়াদ করছি তোমার স্বঘোষিত ঐ সব নাম নিয়ে যে নামসমূহ তুমি নিজের জন্য পছন্দ করে রেখেছো, কিংবা তোমার কিতাবে উল্লেখ করেছো অথবা তোমার বান্দাদের মধ্যে কাউকে শিখিয়েছ কিংবা তুমি নিজের কাছে গোপন করে রেখেছ’’। (আহমাদ, আবু হাতেম, ইবনে হিববান তার সহীহ গ্রন্থে)
অর্থাৎ: আল্লাহর নামসমূহ তিন প্রকারের;
(১) আল্লাহর স্বঘোষিত কিছু নাম বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা করেছেন তাকে জানিয়েছেন।
(২) কিছু নাম তাঁর কিতাবে উল্লেখ করেছেন এবং তা বান্দাদেরকে অবহিত করেছেন।
(৩) মহান আল্লাহ আরো কিছু নাম নিজের কাছে গোপন করে রেখেছেন এবং তা সৃষ্টির কেউই তা জানে না।
উত্তর: আল্লাহর সুন্দর নামের প্রতি ঈমানের দাবী তিনটি; (এক) নামসমূহের প্রতি বিশ্বাস রাখা। (দুই) নামের সঠিক তাৎপর্য মেনে নেয়া। (তিন) নামের ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য মনীষীদের প্রমাণভিত্তিক বিশ্লেষণ গ্রহণ করা।
সুতরাং আমাদেরকে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে হবে যে, মহান আল্লাহর জ্ঞান সর্বব্যাপী তিনিই সর্বজ্ঞ, তিনি পরম দয়ালু, তার রহমত সর্বত্র পরিব্যাপ্ত, তিনি সর্বশক্তিমান; যা ইচ্ছা তা করতে পারেন। আর মহামহিয়ান সর্বোচ্চ মর্যাদাবান আল্লাহর অন্যান্য সুন্দর নামসমূহ এবং উচ্চতর গুণ-বৈশিষ্ট্যের প্রতিও দৃঢ় বিশ্বাস রাখতে হবে।
সুতরাং আমাদেরকে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে হবে যে, মহান আল্লাহর জ্ঞান সর্বব্যাপী তিনিই সর্বজ্ঞ, তিনি পরম দয়ালু, তার রহমত সর্বত্র পরিব্যাপ্ত, তিনি সর্বশক্তিমান; যা ইচ্ছা তা করতে পারেন। আর মহামহিয়ান সর্বোচ্চ মর্যাদাবান আল্লাহর অন্যান্য সুন্দর নামসমূহ এবং উচ্চতর গুণ-বৈশিষ্ট্যের প্রতিও দৃঢ় বিশ্বাস রাখতে হবে।
﴿ يَعۡرِفُونَ نِعۡمَتَ ٱللَّهِ ثُمَّ يُنكِرُونَهَا وَأَكۡثَرُهُمُ ٱلۡكَٰفِرُونَ ٨٣ ﴾ [ النحل : ٨٣ ]
উক্ত আয়াতের ভাবার্থ কি?
উত্তর: আল্লাহ তাদেরকে ভৎর্সনা করছেন যারা তাঁর নিয়ামতকে অন্যের সাথে যুক্ত করে থাকে এবং শির্কে লিপ্ত হয়। যেমন কেউ বা বলে থাকে যে, ঝড়- বাতাস ভালো ছিল এবং মাঝি-মাল্লা বা নাবিক ছিল দক্ষতাসম্পন্ন সে জন্য বিপদ হয় নি। এ ধরনের আরো যে সব কথা-বার্তা অনেক মানুষের মুখে উচ্চারিত হয়ে থাকে তা সবই শরীয়ত পরিপন্থী [আল-জামে আল ফরিদ পৃষ্ঠা: ১৭২।]।
উক্ত আয়াতের ভাবার্থ কি?
উত্তর: আল্লাহ তাদেরকে ভৎর্সনা করছেন যারা তাঁর নিয়ামতকে অন্যের সাথে যুক্ত করে থাকে এবং শির্কে লিপ্ত হয়। যেমন কেউ বা বলে থাকে যে, ঝড়- বাতাস ভালো ছিল এবং মাঝি-মাল্লা বা নাবিক ছিল দক্ষতাসম্পন্ন সে জন্য বিপদ হয় নি। এ ধরনের আরো যে সব কথা-বার্তা অনেক মানুষের মুখে উচ্চারিত হয়ে থাকে তা সবই শরীয়ত পরিপন্থী [আল-জামে আল ফরিদ পৃষ্ঠা: ১৭২।]।
১৪১
{প্রশ্ন: ১৩৯} হুযাইফা রাদিয়াল্লাহ আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: «لَا تَقُولُوا مَا شَاءَ اللَّهُ، وَشَاءَ فُلَانٌ، وَلَكِنْ قُولُوا مَا شَاءَ اللَّهُ ثُمَّ شَاءَ فُلَانٌ»
‘‘তোমরা বলবে না যে, আল্লাহ যা ইচ্ছা করেছেন এবং অমুকে যা চেয়েছে তাই হয়েছে। বরং বলবে যে, আল্লাহ যা ইচ্ছা করেছেন অতঃপর অমুকে যা কামনা করেছে (করতে চেয়েছে) তাই হয়েছে’’। (আবু দাউদ, নং ৪৯৮০, আহমদ ৫/৩৮৪)
এ বিষয়ে ইব্রাহীম আন-নাখায়ী বলেন যে, আমি আল্লাহর আশ্রয় চাচ্ছি এবং আপনারও আশ্রয় চাচ্ছি’ বলা মাকরুহ। তবে জায়েয হবে এভাবে বললে ‘আল্লাহ অতঃপর আপনার আশ্রয় চাই। তিনি বলেন, সবাই যেন বলে, ‘যদি আল্লাহ অতঃপর অমুকের সাহায্য না পেলে মুক্তি পেতাম না’’। কিন্তু এ কথার মধ্যে আল্লাহর সাথে ‘এবং’ সংযুক্ত করে অন্য কিছুই উল্লেখ করা যাবে না। (আব্দুর রাযযাক এবং ইবনে আবী দুনিয়া)।
ঊপরোক্ত বিষয় বস্তুর ব্যাখ্যা কী এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর আশ্রয়-নিরাপত্তা প্রার্থনা করার হুকুম কী?
উত্তর: আরবী ভাষায় ‘‘ واو ’’ অক্ষর দ্বারা পূর্বা-পর বিষয়কে একত্রিত করা হয়ে থাকে, কিংবা একটি আগে অপরটা পরে তাও বুঝায় না, বরং ওয়াও (এবং) দ্বারা পূর্বা-পর দুটোকেই একসাথে বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আর সৃষ্টিকে স্রষ্টার সমপর্যায় বলা, বিশ্বাস করা শির্ক বা অংশীবাদীতা। কিন্তু ( ثم ) সুম্মা বা ‘অতঃপর’ শব্দ দ্বারা পূর্বা-পর বিষয়কে সমপর্যায়ের বুঝায় না বরং পূর্বাপর বিষয়ের মধ্যে পার্থক্য বা স্তর বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অতএব আরবী ( ثم ) সুম্মা বা ‘অতঃপর’ শব্দ ব্যাবহার করা দোষনীয় নয়; কেননা তাদ্বারা পার্থক্য বা স্তর বুঝানো হয়ে থাকে এবং পরের বিষয়কে পূর্বের বিষয়ের অনুগত প্রমাণ করে।
যে সব বিষয়ের সমাধান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো পক্ষে সম্ভব নয় সে সব বিষয়ে অন্যের কাছে আশ্রয়-নিরাপত্তার আবেদন নিবেদন জানানো বড় শির্কের অর্ন্তভুক্ত। তবে আল্লাহর সৃষ্ট জীবনের পক্ষে যে সব বিষয়ে সমাধান করা অসম্ভব নয় সে বিষয়ে তাদের সাহায্য চাওয়া জায়েয। কিন্তু আহ্বান-আবদার সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে যেন আল্লাহ ও বান্দার মাঝে শির্ক না হয়ে যায়। আর হ্যাঁ যে ব্যক্তি জীবিত ও উপস্থিত সে কোনো কিছু করতে সক্ষম, পক্ষান্তরে যারা মৃত তাদেরকে ডেকে আবেদন-নিবেদন জানালে কোনোই লাভ হবে না। কেননা মৃতরা সাড়া দিতে অক্ষম এবং কারোই কোনো কল্যাণ কিংবা অকল্যাণ করার সাধ্য তাদের নেই।
অতএব তাদের সান্নিধ্যে কোনো কিছু পেশ করা কিংবা উপস্থাপন করা সম্পূর্ণ নাজায়েয [হাশিয়াতু ইবনে কাসেম পৃ:৩০৪।]।
‘‘তোমরা বলবে না যে, আল্লাহ যা ইচ্ছা করেছেন এবং অমুকে যা চেয়েছে তাই হয়েছে। বরং বলবে যে, আল্লাহ যা ইচ্ছা করেছেন অতঃপর অমুকে যা কামনা করেছে (করতে চেয়েছে) তাই হয়েছে’’। (আবু দাউদ, নং ৪৯৮০, আহমদ ৫/৩৮৪)
এ বিষয়ে ইব্রাহীম আন-নাখায়ী বলেন যে, আমি আল্লাহর আশ্রয় চাচ্ছি এবং আপনারও আশ্রয় চাচ্ছি’ বলা মাকরুহ। তবে জায়েয হবে এভাবে বললে ‘আল্লাহ অতঃপর আপনার আশ্রয় চাই। তিনি বলেন, সবাই যেন বলে, ‘যদি আল্লাহ অতঃপর অমুকের সাহায্য না পেলে মুক্তি পেতাম না’’। কিন্তু এ কথার মধ্যে আল্লাহর সাথে ‘এবং’ সংযুক্ত করে অন্য কিছুই উল্লেখ করা যাবে না। (আব্দুর রাযযাক এবং ইবনে আবী দুনিয়া)।
ঊপরোক্ত বিষয় বস্তুর ব্যাখ্যা কী এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর আশ্রয়-নিরাপত্তা প্রার্থনা করার হুকুম কী?
উত্তর: আরবী ভাষায় ‘‘ واو ’’ অক্ষর দ্বারা পূর্বা-পর বিষয়কে একত্রিত করা হয়ে থাকে, কিংবা একটি আগে অপরটা পরে তাও বুঝায় না, বরং ওয়াও (এবং) দ্বারা পূর্বা-পর দুটোকেই একসাথে বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আর সৃষ্টিকে স্রষ্টার সমপর্যায় বলা, বিশ্বাস করা শির্ক বা অংশীবাদীতা। কিন্তু ( ثم ) সুম্মা বা ‘অতঃপর’ শব্দ দ্বারা পূর্বা-পর বিষয়কে সমপর্যায়ের বুঝায় না বরং পূর্বাপর বিষয়ের মধ্যে পার্থক্য বা স্তর বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অতএব আরবী ( ثم ) সুম্মা বা ‘অতঃপর’ শব্দ ব্যাবহার করা দোষনীয় নয়; কেননা তাদ্বারা পার্থক্য বা স্তর বুঝানো হয়ে থাকে এবং পরের বিষয়কে পূর্বের বিষয়ের অনুগত প্রমাণ করে।
যে সব বিষয়ের সমাধান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো পক্ষে সম্ভব নয় সে সব বিষয়ে অন্যের কাছে আশ্রয়-নিরাপত্তার আবেদন নিবেদন জানানো বড় শির্কের অর্ন্তভুক্ত। তবে আল্লাহর সৃষ্ট জীবনের পক্ষে যে সব বিষয়ে সমাধান করা অসম্ভব নয় সে বিষয়ে তাদের সাহায্য চাওয়া জায়েয। কিন্তু আহ্বান-আবদার সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে যেন আল্লাহ ও বান্দার মাঝে শির্ক না হয়ে যায়। আর হ্যাঁ যে ব্যক্তি জীবিত ও উপস্থিত সে কোনো কিছু করতে সক্ষম, পক্ষান্তরে যারা মৃত তাদেরকে ডেকে আবেদন-নিবেদন জানালে কোনোই লাভ হবে না। কেননা মৃতরা সাড়া দিতে অক্ষম এবং কারোই কোনো কল্যাণ কিংবা অকল্যাণ করার সাধ্য তাদের নেই।
অতএব তাদের সান্নিধ্যে কোনো কিছু পেশ করা কিংবা উপস্থাপন করা সম্পূর্ণ নাজায়েয [হাশিয়াতু ইবনে কাসেম পৃ:৩০৪।]।
﴿ وَقَالُواْ مَا هِيَ إِلَّا حَيَاتُنَا ٱلدُّنۡيَا نَمُوتُ وَنَحۡيَا وَمَا يُهۡلِكُنَآ إِلَّا ٱلدَّهۡرُۚ ﴾ [ الجاثية : ٢٤ ]
‘‘তারা বলে যে, দুনিয়ার (পার্থিব) জীবনই আমাদের একমাত্র জীবন; আমরা মৃত্যু বরণ করি এবং বেঁচে থাকি, আর মহাকালই (প্রকৃতি) আমাদেরকে ধ্বংস করে’’। (সূরা জাসিয়া: ২৪) এ আয়াতের ব্যাখ্যা কী?
উত্তর: আলোচ্য আয়াতে সুমহান আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়ের সংশয় এবং তাদের সাথে সংযুক্ত আরব মুশরিক সম্প্রদায় যারা পুনরুত্থানকে অস্বীকার করে থাকে এদের ধ্যান-ধারনার বিবরণ প্রকাশ করেছেন। তারা বলে যে, দুনিয়ার জীবনই আমাদের একমাত্র জীবন যেখানে আমরা অবস্থান করছি এটা ছাড়া আর কোনো জীবন নেই। আমাদের মধ্যে কারো মৃত্যু হয় এবং কেউবা বেঁচে থাকে, অর্থাৎ কতিপয় লোকের মৃত্যু হয় এবং অন্যরা বেঁচে থাকে। পুনরুত্থান বা কিয়ামত বলতে কোনো কিছু নেই।
তারা আরো বলে যে, মহাকালের (প্রকৃতি) ধারাবাহিকতায় রাত-দিনের ব্যবধানে, যথোপযুক্ত বয়স অতিবাহিত হওয়ার পর ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে আমরা বিলুপ্ত হয়ে যাই। তারা সৃষ্টিকর্তা প্রতিপালকের অস্তিত্ব এবং তাঁর আদেশ, কর্তৃত্বে বিশ্বাস করে না [আল জামে আল ফরিদ পৃ: ১৮১।]।
‘‘তারা বলে যে, দুনিয়ার (পার্থিব) জীবনই আমাদের একমাত্র জীবন; আমরা মৃত্যু বরণ করি এবং বেঁচে থাকি, আর মহাকালই (প্রকৃতি) আমাদেরকে ধ্বংস করে’’। (সূরা জাসিয়া: ২৪) এ আয়াতের ব্যাখ্যা কী?
উত্তর: আলোচ্য আয়াতে সুমহান আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়ের সংশয় এবং তাদের সাথে সংযুক্ত আরব মুশরিক সম্প্রদায় যারা পুনরুত্থানকে অস্বীকার করে থাকে এদের ধ্যান-ধারনার বিবরণ প্রকাশ করেছেন। তারা বলে যে, দুনিয়ার জীবনই আমাদের একমাত্র জীবন যেখানে আমরা অবস্থান করছি এটা ছাড়া আর কোনো জীবন নেই। আমাদের মধ্যে কারো মৃত্যু হয় এবং কেউবা বেঁচে থাকে, অর্থাৎ কতিপয় লোকের মৃত্যু হয় এবং অন্যরা বেঁচে থাকে। পুনরুত্থান বা কিয়ামত বলতে কোনো কিছু নেই।
তারা আরো বলে যে, মহাকালের (প্রকৃতি) ধারাবাহিকতায় রাত-দিনের ব্যবধানে, যথোপযুক্ত বয়স অতিবাহিত হওয়ার পর ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে আমরা বিলুপ্ত হয়ে যাই। তারা সৃষ্টিকর্তা প্রতিপালকের অস্তিত্ব এবং তাঁর আদেশ, কর্তৃত্বে বিশ্বাস করে না [আল জামে আল ফরিদ পৃ: ১৮১।]।
১৪৩
{প্রশ্ন: ১৪১} সহীহ হাদীসে আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত আছে; নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মহান আল্লাহ বলেছেন: «يُؤْذِينِي ابْنُ آدَمَ يَسُبُّ الدَّهْرَ وَأَنَا الدَّهْرُ، بِيَدِي الأَمْرُ أُقَلِّبُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ»
وفي رواية : «لَا تَسُبُّوا الدَّهْرَ، فَإِنَّ اللهَ هُوَ الدَّهْرُ»
‘‘আদম সন্তান মহাকালকে গালি দিয়ে (মন্দ বলে) আমাকে কষ্ট দেয়। কেননা আমিই মহাকাল; আমার হাতেই সবকিছু আমিই রাত এবং দিনের আবর্তন ঘটিয়ে থাকি’’। অন্য বর্ণনায় আছে ‘‘মহাকালকে গালি দিবেনা কেননা তিনি আল্লাহই প্রকৃত মহাকাল।’’ (মুত্তাফিকুন আলাইহি বুখারী হাদীস নং ১৬৯৪, মুখতাসার যুবাইদী পৃষ্ঠা নং ৫৯৩, মুসলিম: ২২৪৬)
এহাদীসের ভাবার্থ কী? মহাকালকে গালি দেয়ার হুকুম কী? ব্যাখ্যা সহ বুঝিয়ে দিন?
উত্তর: অন্ধকার যুগে আরবরা যখন কঠিন বিপদ-আপদ এবং জটিল সমস্যার সম্মুখীন হত তখনই তারা মহাকালকে গালি দিত বা মন্দ বলতো। তারা বলতো: ‘হতাশাজনক অকর্মন্য মহাকাল আমাদেরকে বিপদে ফেলেছে’। অর্থাৎ তারা বিপদ-আপদের জন্য মহাকালকে দোষারোপ করতো। অথচ বিপদ-আপদ সব আল্লাহই দিয়ে থাকেন। অতএব গাল-মন্দ আল্লাহর উপরই পতিত হয়; কেননা ভাল-মন্দ সব আল্লাহই পরিচালনা করে থাকেন। যেমন; মহান আল্লাহ বলেন; ( أقلب الليل والنهار ) ‘‘আমিই রাত এবং দিনের পরিবর্তন করি’’ আর এ পরিবর্তন মহান আল্লাহর কতৃত্বে সংঘটিত হয়ে থাকে তা হয়ত মানুষ পছন্দ করে কিংবা অপছন্দ করে।
‘‘মহাকাল প্রকৃত পক্ষে আল্লাহ’’ এ কথার অর্থ হচ্ছে যে, চলমান বিশ্ব জগতে মহাকালের গতিপথে ভাল কিংবা মন্দ সব কিছুই মহান আল্লাহর ইচ্ছা, সুষ্ঠু পরিকল্পনা অনুযায়ী সংঘটিত হয়ে থাকে। তিনি সুমহান পরিচালক, সর্বজ্ঞ, তিনি সর্বোচ্চ কৌশলের অধিকারী আর ভাল-মন্দ সংগঠিত করার ব্যাপারে তাঁর কোনোই শরীক নেই।
অতএব মহাকালকে গাল-মন্দ করা বা দোষারোপ করা হারাম কেননা তার ফলে আল্লাহকে গালি দেওয়া হয় এবং তাঁকে কষ্ট দেওয়া হয়। তিনি বলেছেন: ‘‘আদম সন্তান মহাকালকে গালি দিয়ে আমাকে কষ্ট দেয় কেননা আমিই মহাকাল’’।
সুতরাং মহাকালকে গালি প্রদানকারীর হুকুমের দুটি পর্যায়; হয়ত সে আল্লাহকে গালি দিচ্ছে অথবা আল্লাহর সাথে মহাকালকে শরীক করছে। যদি কেউ মনে করে মহাকাল এবং আল্লাহ যৌথভাবে বিপদ-আপদ সংঘটিত করে তাহলে সে মুশরিক হয়ে যাবে। আর যে স্বীকার করে যে, আল্লাহই এককভাবে তা সংঘটিত করেছেন তারপরও ঐ সংঘটিত কাজকে গালি দিল, প্রকৃতপক্ষে সে মহান আল্লাহকেই গালি দিল [আল-জামে আর ফরীদ, পৃষ্ঠা: ১৮২।]।
وفي رواية : «لَا تَسُبُّوا الدَّهْرَ، فَإِنَّ اللهَ هُوَ الدَّهْرُ»
‘‘আদম সন্তান মহাকালকে গালি দিয়ে (মন্দ বলে) আমাকে কষ্ট দেয়। কেননা আমিই মহাকাল; আমার হাতেই সবকিছু আমিই রাত এবং দিনের আবর্তন ঘটিয়ে থাকি’’। অন্য বর্ণনায় আছে ‘‘মহাকালকে গালি দিবেনা কেননা তিনি আল্লাহই প্রকৃত মহাকাল।’’ (মুত্তাফিকুন আলাইহি বুখারী হাদীস নং ১৬৯৪, মুখতাসার যুবাইদী পৃষ্ঠা নং ৫৯৩, মুসলিম: ২২৪৬)
এহাদীসের ভাবার্থ কী? মহাকালকে গালি দেয়ার হুকুম কী? ব্যাখ্যা সহ বুঝিয়ে দিন?
উত্তর: অন্ধকার যুগে আরবরা যখন কঠিন বিপদ-আপদ এবং জটিল সমস্যার সম্মুখীন হত তখনই তারা মহাকালকে গালি দিত বা মন্দ বলতো। তারা বলতো: ‘হতাশাজনক অকর্মন্য মহাকাল আমাদেরকে বিপদে ফেলেছে’। অর্থাৎ তারা বিপদ-আপদের জন্য মহাকালকে দোষারোপ করতো। অথচ বিপদ-আপদ সব আল্লাহই দিয়ে থাকেন। অতএব গাল-মন্দ আল্লাহর উপরই পতিত হয়; কেননা ভাল-মন্দ সব আল্লাহই পরিচালনা করে থাকেন। যেমন; মহান আল্লাহ বলেন; ( أقلب الليل والنهار ) ‘‘আমিই রাত এবং দিনের পরিবর্তন করি’’ আর এ পরিবর্তন মহান আল্লাহর কতৃত্বে সংঘটিত হয়ে থাকে তা হয়ত মানুষ পছন্দ করে কিংবা অপছন্দ করে।
‘‘মহাকাল প্রকৃত পক্ষে আল্লাহ’’ এ কথার অর্থ হচ্ছে যে, চলমান বিশ্ব জগতে মহাকালের গতিপথে ভাল কিংবা মন্দ সব কিছুই মহান আল্লাহর ইচ্ছা, সুষ্ঠু পরিকল্পনা অনুযায়ী সংঘটিত হয়ে থাকে। তিনি সুমহান পরিচালক, সর্বজ্ঞ, তিনি সর্বোচ্চ কৌশলের অধিকারী আর ভাল-মন্দ সংগঠিত করার ব্যাপারে তাঁর কোনোই শরীক নেই।
অতএব মহাকালকে গাল-মন্দ করা বা দোষারোপ করা হারাম কেননা তার ফলে আল্লাহকে গালি দেওয়া হয় এবং তাঁকে কষ্ট দেওয়া হয়। তিনি বলেছেন: ‘‘আদম সন্তান মহাকালকে গালি দিয়ে আমাকে কষ্ট দেয় কেননা আমিই মহাকাল’’।
সুতরাং মহাকালকে গালি প্রদানকারীর হুকুমের দুটি পর্যায়; হয়ত সে আল্লাহকে গালি দিচ্ছে অথবা আল্লাহর সাথে মহাকালকে শরীক করছে। যদি কেউ মনে করে মহাকাল এবং আল্লাহ যৌথভাবে বিপদ-আপদ সংঘটিত করে তাহলে সে মুশরিক হয়ে যাবে। আর যে স্বীকার করে যে, আল্লাহই এককভাবে তা সংঘটিত করেছেন তারপরও ঐ সংঘটিত কাজকে গালি দিল, প্রকৃতপক্ষে সে মহান আল্লাহকেই গালি দিল [আল-জামে আর ফরীদ, পৃষ্ঠা: ১৮২।]।
﴿ وَلَئِن سَأَلۡتَهُمۡ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلۡعَبُۚ قُلۡ أَبِٱللَّهِ وَءَايَٰتِهِۦ وَرَسُولِهِۦ كُنتُمۡ تَسۡتَهۡزِءُونَ ٦٥ لَا تَعۡتَذِرُواْ قَدۡ كَفَرۡتُم بَعۡدَ إِيمَٰنِكُمۡۚ ٦٦ ﴾ [ التوبة : ٦٥، ٦٦ ]
এ আয়াতের অর্থ, ব্যাখ্যা এবং শিক্ষণীয় বিষয়গুলি কী?
উত্তর: ‘‘(৬৫) আর যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, তাহলে তারা বলে যে; আমরাতো কথার কথা বলছিলাম এবং ক্রিয়া-কৌতুক করছিলাম। আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহ, তাঁর হুকুম-আহকাম এবং তাঁর রসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে? (৬৬) অপরাধ এড়ানোর জন্য বাহানার চেষ্টা করো না; তোমরা ঈমান আনার পর কাফের হয়ে গেছ’’। (সূরা আত-তাওবাহ)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ তাঁর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেন যে, আল্লাহ সম্পর্কে, তাঁর বিধান সম্পর্কে, অতঃপর রাসূল সম্পর্কে এবং সাহাবাদের সম্পর্কে, ঐ সব মুনাফিক সম্প্রদায়ের অসংলগ্ন কথাবার্তা, ঠাট্টা-বিদ্রূপ ও তিরস্কার প্রসঙ্গে আপনি যদি প্রশ্ন করেন: তখন তারা আপনাকে বলে থাকে যে; ‘হে মুহাম্মাদ, আমরা দোষনীয় কিছু করি নি বরং আমরা নিজেরা হাসি তামাসা ও কথার কথা বলে পথে-ঘাটে সময় অতিবাহিত করেছি মাত্র কিন্তু ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়’।
তবে তারা যত প্রকারই ওযর পেশ করুক না কেন তাতে আল্লাহর আযাব থেকে পরিত্রান পাবে না। বরং তাদের কার্যকলাপ গর্হিত, অমর্যাদাকর এবং বিদ্রূপ-উপহাসের অন্তর্ভুক্ত; অতএব তারা ঈমান আনার পরে কাফের হয়ে গেছে।
আয়াতের শিক্ষা: সত্য দীন আল-ইসলাম এবং ইসলামের অনুসারীদের সাথে কোনো প্রকার খেল-তামাসা, বিদ্রূপ করা কুফরী।
এ আয়াতের অর্থ, ব্যাখ্যা এবং শিক্ষণীয় বিষয়গুলি কী?
উত্তর: ‘‘(৬৫) আর যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, তাহলে তারা বলে যে; আমরাতো কথার কথা বলছিলাম এবং ক্রিয়া-কৌতুক করছিলাম। আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহ, তাঁর হুকুম-আহকাম এবং তাঁর রসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে? (৬৬) অপরাধ এড়ানোর জন্য বাহানার চেষ্টা করো না; তোমরা ঈমান আনার পর কাফের হয়ে গেছ’’। (সূরা আত-তাওবাহ)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ তাঁর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেন যে, আল্লাহ সম্পর্কে, তাঁর বিধান সম্পর্কে, অতঃপর রাসূল সম্পর্কে এবং সাহাবাদের সম্পর্কে, ঐ সব মুনাফিক সম্প্রদায়ের অসংলগ্ন কথাবার্তা, ঠাট্টা-বিদ্রূপ ও তিরস্কার প্রসঙ্গে আপনি যদি প্রশ্ন করেন: তখন তারা আপনাকে বলে থাকে যে; ‘হে মুহাম্মাদ, আমরা দোষনীয় কিছু করি নি বরং আমরা নিজেরা হাসি তামাসা ও কথার কথা বলে পথে-ঘাটে সময় অতিবাহিত করেছি মাত্র কিন্তু ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়’।
তবে তারা যত প্রকারই ওযর পেশ করুক না কেন তাতে আল্লাহর আযাব থেকে পরিত্রান পাবে না। বরং তাদের কার্যকলাপ গর্হিত, অমর্যাদাকর এবং বিদ্রূপ-উপহাসের অন্তর্ভুক্ত; অতএব তারা ঈমান আনার পরে কাফের হয়ে গেছে।
আয়াতের শিক্ষা: সত্য দীন আল-ইসলাম এবং ইসলামের অনুসারীদের সাথে কোনো প্রকার খেল-তামাসা, বিদ্রূপ করা কুফরী।
উত্তর: আনুগত্যে শির্ক হচ্ছে; অংশিদারিত্বের (শির্কের) মৌখিক বা বাহ্যিক ঘোষণা মাত্র কিন্তু আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করা উদ্দেশ্য নয়। আর একথার প্রমাণ হলো আল্লাহর বাণী:
﴿ جَعَلَا لَهُۥ شُرَكَآءَ ﴾ [ الاعراف : ١٩٠ ]
‘‘তারা দুজনে তাঁর (আল্লাহর) অংশিদার বানাল’’। (সূরা আল-আ‘রাফ: ১৯০) কাতাদাহ এ প্রসংগে বলেন: আল্লাহর মৌখিক ও বাহ্যিক আনুগত্যে অংশীদার করল কিন্তু আল্লাহর ইবাদাতে অংশীদার নয় [আল-জামে আল ফরিদ, পৃষ্ঠা:১৮৬।]।
﴿ جَعَلَا لَهُۥ شُرَكَآءَ ﴾ [ الاعراف : ١٩٠ ]
‘‘তারা দুজনে তাঁর (আল্লাহর) অংশিদার বানাল’’। (সূরা আল-আ‘রাফ: ১৯০) কাতাদাহ এ প্রসংগে বলেন: আল্লাহর মৌখিক ও বাহ্যিক আনুগত্যে অংশীদার করল কিন্তু আল্লাহর ইবাদাতে অংশীদার নয় [আল-জামে আল ফরিদ, পৃষ্ঠা:১৮৬।]।
১৪৬
{প্রশ্ন: ১৪৪} ইবনে হাযম রহ. বলেন: ‘যে সব নামকরণে আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর ইবাদাতের ইংগিত থাকবে সে ধরনের নাম রাখা সর্বসম্মতভাবে হারাম। যেমন; আবদে ওমর (ওমরের বান্দা বা দাস) আব্দুল কাবা (কাবার দাস) ইত্যাদি’। ইবনে হাযমের এ কথার ব্যাখ্যা কী?উত্তর: আবু মুহাম্মাদ ইবনে হাযম ছিলেন স্পেনের আলেম। তিনি বলেন; আলেম সমাজ সর্বসম্মতভাবে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদাত-উপাসনাকে হারাম বলেছেন। কেননা একদিকে তা আল্লাহর প্রভুত্বে এবং ইবাদাত বন্দেগীতে শির্ক; অন্যদিকে সব সৃষ্টির মালিকানা আল্লাহর এবং সবই আল্লাহর দাস। আর সব কিছুর প্রতিপালক উপাস্য মাবুদ তিনি ব্যতীত ইবাদাতের যোগ্য আর কেউ নেই। তিনি মহাপবিত্র এবং প্রশংসাময়।
১৪৭
{প্রশ্ন: ১৪৫} জাবের রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: «لَا يُسْأَلُ بِوَجْهِ اللَّهِ، إِلَّا الْجَنَّةُ»
‘‘আল্লাহর সত্ত্বার বিনিময়ে জান্নাত ছাড়া অন্য কিছু চাইবে না’’। (আবু দাউদ) এ হাদীসের ব্যাখ্যা ও শিক্ষনীয় বিষয় কী?
উত্তর: এ হাদীসে দো‘আ প্রার্থনাকারীদের জানানো হয়েছে যে, তারা যেন আল্লাহর নাম এবং গুণসমূহের উচ্চ মর্যাদা রক্ষা করে। আল্লাহর চেহারার দোহাই দিয়ে দুনিয়ার কোনো কিছু প্রার্থনা না করে বরং চাইতে হবে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়-বস্তু আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে জান্নাতের প্রার্থনা। জান্নাতে রয়েছে চিরস্থায়ী সুখ-শান্তি, আল্লাহর সন্তুষ্টি, সুমহান সত্ত্বার দর্শনলাভ এবং তার সুমিষ্ট আহ্বানের অপূর্ব স্বাদ আস্বাদন।
অতএব এ ধরনের উচ্চাভিলাষী প্রাপ্যের জন্য আল্লাহর সত্ত্বার দোহাই দিয়ে প্রার্থনা করা উচিৎ। তবে দুনিয়াবী এবং দ্বীনি বিষয়ে আল্লাহর কাছেই প্রার্থনা করতে হবে কিন্তু আল্লাহর সত্ত্বা বা চেহারার দোহাই দিয়ে চাওয়া যাবে না। হাদীসে আছে:
‘‘যে আল্লাহর চেহারার দোহাই দিয়ে সাধারণ কিছু প্রার্থনা করবে সে অভিশপ্ত হবে। আর সেও অভিশপ্ত যার কাছে আল্লাহর সত্তার দোহাই দিয়ে কিছু চাওয়ার পর প্রার্থিতকে নিষেধ করা হয়েছে। যতক্ষণ না খারাপ বা অন্যায় কিছু চাইবে।’’ (ত্ববারানী, ২২/৩৭৭)
হাদীসের শিক্ষা:
(১) আল্লাহর চেহারার দোহাই দিয়ে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জান্নাত ছাড়া আর কিছু প্রার্থনা করা উচিৎ হবে না।
(২) মহান আল্লাহর সাদৃশ্যহীন যথাযথ মার্যাদার সাথে সংগতিপূর্ণ চেহারা আছে তার প্রমাণ পাওয়া যায়।
‘‘আল্লাহর সত্ত্বার বিনিময়ে জান্নাত ছাড়া অন্য কিছু চাইবে না’’। (আবু দাউদ) এ হাদীসের ব্যাখ্যা ও শিক্ষনীয় বিষয় কী?
উত্তর: এ হাদীসে দো‘আ প্রার্থনাকারীদের জানানো হয়েছে যে, তারা যেন আল্লাহর নাম এবং গুণসমূহের উচ্চ মর্যাদা রক্ষা করে। আল্লাহর চেহারার দোহাই দিয়ে দুনিয়ার কোনো কিছু প্রার্থনা না করে বরং চাইতে হবে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়-বস্তু আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে জান্নাতের প্রার্থনা। জান্নাতে রয়েছে চিরস্থায়ী সুখ-শান্তি, আল্লাহর সন্তুষ্টি, সুমহান সত্ত্বার দর্শনলাভ এবং তার সুমিষ্ট আহ্বানের অপূর্ব স্বাদ আস্বাদন।
অতএব এ ধরনের উচ্চাভিলাষী প্রাপ্যের জন্য আল্লাহর সত্ত্বার দোহাই দিয়ে প্রার্থনা করা উচিৎ। তবে দুনিয়াবী এবং দ্বীনি বিষয়ে আল্লাহর কাছেই প্রার্থনা করতে হবে কিন্তু আল্লাহর সত্ত্বা বা চেহারার দোহাই দিয়ে চাওয়া যাবে না। হাদীসে আছে:
‘‘যে আল্লাহর চেহারার দোহাই দিয়ে সাধারণ কিছু প্রার্থনা করবে সে অভিশপ্ত হবে। আর সেও অভিশপ্ত যার কাছে আল্লাহর সত্তার দোহাই দিয়ে কিছু চাওয়ার পর প্রার্থিতকে নিষেধ করা হয়েছে। যতক্ষণ না খারাপ বা অন্যায় কিছু চাইবে।’’ (ত্ববারানী, ২২/৩৭৭)
হাদীসের শিক্ষা:
(১) আল্লাহর চেহারার দোহাই দিয়ে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জান্নাত ছাড়া আর কিছু প্রার্থনা করা উচিৎ হবে না।
(২) মহান আল্লাহর সাদৃশ্যহীন যথাযথ মার্যাদার সাথে সংগতিপূর্ণ চেহারা আছে তার প্রমাণ পাওয়া যায়।
﴿ إِنَّا كُلَّ شَيۡءٍ خَلَقۡنَٰهُ بِقَدَرٖ ٤٩ ﴾ [ القمر : ٤٩ ]
‘‘নিশ্চয়ই আমি সবকিছু সৃষ্টি করেছি যথাযথ পরিমাণ অনুসারে’’। (সূরা আল-ক্বামার: ৪৯)
তাক্বদীরের উপর কীভাবে ঈমান আনতে হবে? তক্বদীরের পর্যায় কয়টি?
উত্তর: তাক্বদীর হচ্ছে; সুদৃঢ় বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা হয় আর যা করতে চান না তা হয় না। এমন কোনো কিছুরই অস্তিত্ব পাওয়া যাবে না যা আল্লাহর ইচ্ছা ও নিয়ন্ত্রণমুক্ত। অতএব আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত শুধু ভুলের কারণে কেউ আক্রান্ত হয় না কিংবা বিপদে ফেলার জন্যে কাউকে ভুলে পথে পরিচালিত করা হয় না। ত্বাকদীরের প্রতি ঈমানের চারটি ধারা:
(এক) সৃষ্টির অস্তিত্ব লাভ করার আগেই আল্লাহ সব কিছু (পূর্বা-পর) জানেন।
(দুই) আসমান ও যমীন সৃষ্টি করার আগেই আল্লাহ সবকিছু (ভাল-মন্দ ইত্যাদি) লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন।
(তিন) সৃষ্টির সব কিছুই আল্লাহর নিরংকুশ কতৃত্বের ইচ্ছাধীন।
(চার) আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী ভাল-মন্দ সবকিছুই যথাযথভাবে সৃষ্টি হয়ে থাকে [হাশিয়াতু ইবনে কাসেম-৩৬৪।]।
‘‘নিশ্চয়ই আমি সবকিছু সৃষ্টি করেছি যথাযথ পরিমাণ অনুসারে’’। (সূরা আল-ক্বামার: ৪৯)
তাক্বদীরের উপর কীভাবে ঈমান আনতে হবে? তক্বদীরের পর্যায় কয়টি?
উত্তর: তাক্বদীর হচ্ছে; সুদৃঢ় বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা হয় আর যা করতে চান না তা হয় না। এমন কোনো কিছুরই অস্তিত্ব পাওয়া যাবে না যা আল্লাহর ইচ্ছা ও নিয়ন্ত্রণমুক্ত। অতএব আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত শুধু ভুলের কারণে কেউ আক্রান্ত হয় না কিংবা বিপদে ফেলার জন্যে কাউকে ভুলে পথে পরিচালিত করা হয় না। ত্বাকদীরের প্রতি ঈমানের চারটি ধারা:
(এক) সৃষ্টির অস্তিত্ব লাভ করার আগেই আল্লাহ সব কিছু (পূর্বা-পর) জানেন।
(দুই) আসমান ও যমীন সৃষ্টি করার আগেই আল্লাহ সবকিছু (ভাল-মন্দ ইত্যাদি) লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন।
(তিন) সৃষ্টির সব কিছুই আল্লাহর নিরংকুশ কতৃত্বের ইচ্ছাধীন।
(চার) আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী ভাল-মন্দ সবকিছুই যথাযথভাবে সৃষ্টি হয়ে থাকে [হাশিয়াতু ইবনে কাসেম-৩৬৪।]।
১৪৯
{প্রশ্ন: ১৪৭} ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: «خَيْرُ النَّاسِ قَرْنِي، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ يَجِيءُ أَقْوَامٌ تَسْبِقُ شَهَادَةُ أَحَدِهِمْ يَمِينَهُ، وَيَمِينُهُ شَهَادَتَهُ»
‘‘আমার প্রজন্মের লোকেরা উত্তম, অতঃপর তাদের পরবর্তী লোকেরা, তারপর তাদের পরবর্তী লোকেরা, অতঃপর যে সম্প্রদায় আসবে তারা সাক্ষী দেওয়ার আগেই শপথ করবে এবং শপথের আগেই সাক্ষী দিবে’’ (বুখারী: হাদীস নং ২৬৫১, মুসলিম; হাদীস নং ২৫৩৫) এ হাদীসের মূল বিষয়বস্তু কী?
উত্তর: এ হাদীসে হিজরী প্রথম তিন শতাব্দীর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করা হয়েছে পরবর্তী কালের চেয়ে। আর এটা সুস্পষ্ট যে, শুধুমাত্র প্রথম তিন শতাব্দীই উত্তম তার পরের সময়কাল উত্তম নয়। এর মধ্যে আরো নির্দেশনা আছে যে, দ্রুত সাক্ষী না দেওয়া এবং কসম না করা। যাদের মনোবাসনা দুনিয়া কেন্দ্রিক তারা আখেরাতক ভুলে যায়। তাদের কাছে সত্যের সাক্ষ্য-স্বীকৃতি এবং কসম-শপথ যথাযথ গুরুত্ব পায় না। কেননা তাদের ঈমানে কমতি আছে, তাদের অন্তরে আল্লাহর ভয় অনুপস্থিত এবং এসব ব্যাপারে অবহেলা করে থাকে।
‘‘আমার প্রজন্মের লোকেরা উত্তম, অতঃপর তাদের পরবর্তী লোকেরা, তারপর তাদের পরবর্তী লোকেরা, অতঃপর যে সম্প্রদায় আসবে তারা সাক্ষী দেওয়ার আগেই শপথ করবে এবং শপথের আগেই সাক্ষী দিবে’’ (বুখারী: হাদীস নং ২৬৫১, মুসলিম; হাদীস নং ২৫৩৫) এ হাদীসের মূল বিষয়বস্তু কী?
উত্তর: এ হাদীসে হিজরী প্রথম তিন শতাব্দীর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করা হয়েছে পরবর্তী কালের চেয়ে। আর এটা সুস্পষ্ট যে, শুধুমাত্র প্রথম তিন শতাব্দীই উত্তম তার পরের সময়কাল উত্তম নয়। এর মধ্যে আরো নির্দেশনা আছে যে, দ্রুত সাক্ষী না দেওয়া এবং কসম না করা। যাদের মনোবাসনা দুনিয়া কেন্দ্রিক তারা আখেরাতক ভুলে যায়। তাদের কাছে সত্যের সাক্ষ্য-স্বীকৃতি এবং কসম-শপথ যথাযথ গুরুত্ব পায় না। কেননা তাদের ঈমানে কমতি আছে, তাদের অন্তরে আল্লাহর ভয় অনুপস্থিত এবং এসব ব্যাপারে অবহেলা করে থাকে।
﴿ وَأَوۡفُواْ بِعَهۡدِ ٱللَّهِ إِذَا عَٰهَدتُّمۡ وَلَا تَنقُضُواْ ٱلۡأَيۡمَٰنَ بَعۡدَ تَوۡكِيدِهَا ﴾ [ النحل : ٩١ ]
‘‘তোমরা আল্লাহর অংগীকার (যথাযথ ভাবে) রক্ষা করবে; যখন তোমরা পরস্পরে অংগীকার কর এবং তোমরা (আল্লাহর নাম নিয়ে) শপথ দৃঢ় করলে তা আর ভংগ করবে না’’। (সূরা আন-নাহল: ৯১) এ আয়াতের ব্যাখ্যা কী?
উত্তর: মহান আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন; সন্ধি, চুক্তি অংগীকার যথাযথভাবে পালন এবং আল্লাহর নাম নিয়ে দৃঢ়তা দেখিয়ে শপথের গুরুত্ব বাড়ানোর পর তা রক্ষা করা। তবে জাহেলী অবৈধ শপথ যেহেতু দীনের পরিপন্থী সেহেতু তা ধর্তব্য নয়।
‘‘তোমরা আল্লাহর অংগীকার (যথাযথ ভাবে) রক্ষা করবে; যখন তোমরা পরস্পরে অংগীকার কর এবং তোমরা (আল্লাহর নাম নিয়ে) শপথ দৃঢ় করলে তা আর ভংগ করবে না’’। (সূরা আন-নাহল: ৯১) এ আয়াতের ব্যাখ্যা কী?
উত্তর: মহান আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন; সন্ধি, চুক্তি অংগীকার যথাযথভাবে পালন এবং আল্লাহর নাম নিয়ে দৃঢ়তা দেখিয়ে শপথের গুরুত্ব বাড়ানোর পর তা রক্ষা করা। তবে জাহেলী অবৈধ শপথ যেহেতু দীনের পরিপন্থী সেহেতু তা ধর্তব্য নয়।
উত্তর: মানুষকে মৃত্যুর পরে কবরে দাফন করতে হয়। যদি সে মুমিন হয় তাহলে কবরে সুখ-শান্তি পায়, আর যদি কাফের হয় তাহলে কবরে আযাব বা শাস্তি পায়। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«إِنَّمَا القَبْرُ رَوْضَةٌ مِنْ رِيَاضِ الجَنَّةِ أَوْ حُفْرَةٌ مِنْ حُفَرِ النَّارِ»
‘‘নিশ্চয় কবর হচেছ জান্নাতের (সাথে সংযুক্ত) বাগান বিশেষ অথবা জাহান্নামের সাথে সংশ্লিষ্ট গর্ত বিশেষ’’। (তিরমিযি দুর্বল সনদে ৩৪ নং বাবে বর্ণনা করেন, হাদীস নং ৪৯০০)
সহীহ সনদে বর্ণিত আছে যে; নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি কবরের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বলেন:
«وإنهما ليعذبان»
‘‘এ কবরে শায়িত দুজনের আযাব হচ্ছে’’।
অতঃপর তারা কিয়ামত দিবসে পুনরুত্থিত হবে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ মৃতদেরকে পুনরায় জীবিত করবেন এবং কৃতকর্মের যথাযথ পুরস্কার প্রদান করবেন।
মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ ۞مِنۡهَا خَلَقۡنَٰكُمۡ وَفِيهَا نُعِيدُكُمۡ وَمِنۡهَا نُخۡرِجُكُمۡ تَارَةً أُخۡرَىٰ ٥٥ ﴾ [ طه : ٥٥ ]
‘‘মাটি হতে তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং মাটিতেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে। অতঃপর মাটি থেকে পুনরায় বের করে আনা হবে’’। (সূরা ত্বাহা: ৫৫) অর্থাৎ ক্বিয়ামত দিবসে পুণরুত্থান হবে।
আল্লাহ সুবহানাহু অতাঅলা আরো বলেন:
﴿ وَٱللَّهُ أَنۢبَتَكُم مِّنَ ٱلۡأَرۡضِ نَبَاتٗا ١٧ ثُمَّ يُعِيدُكُمۡ فِيهَا وَيُخۡرِجُكُمۡ إِخۡرَاجٗا ١٨ ﴾ [ نوح : ١٧، ١٨ ]
‘‘(১৭) আল্লাহ তোমাদেরকে মাটি হতে উৎপাদন করেছেন, (১৮) অতঃপর মাটিতেই প্রত্যাবর্তন করানো হবে এবং পূণরায় যথাযথভাবে বের করে আনা হবে’’। (সূরা নূহ)
«إِنَّمَا القَبْرُ رَوْضَةٌ مِنْ رِيَاضِ الجَنَّةِ أَوْ حُفْرَةٌ مِنْ حُفَرِ النَّارِ»
‘‘নিশ্চয় কবর হচেছ জান্নাতের (সাথে সংযুক্ত) বাগান বিশেষ অথবা জাহান্নামের সাথে সংশ্লিষ্ট গর্ত বিশেষ’’। (তিরমিযি দুর্বল সনদে ৩৪ নং বাবে বর্ণনা করেন, হাদীস নং ৪৯০০)
সহীহ সনদে বর্ণিত আছে যে; নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি কবরের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বলেন:
«وإنهما ليعذبان»
‘‘এ কবরে শায়িত দুজনের আযাব হচ্ছে’’।
অতঃপর তারা কিয়ামত দিবসে পুনরুত্থিত হবে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ মৃতদেরকে পুনরায় জীবিত করবেন এবং কৃতকর্মের যথাযথ পুরস্কার প্রদান করবেন।
মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ ۞مِنۡهَا خَلَقۡنَٰكُمۡ وَفِيهَا نُعِيدُكُمۡ وَمِنۡهَا نُخۡرِجُكُمۡ تَارَةً أُخۡرَىٰ ٥٥ ﴾ [ طه : ٥٥ ]
‘‘মাটি হতে তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং মাটিতেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে। অতঃপর মাটি থেকে পুনরায় বের করে আনা হবে’’। (সূরা ত্বাহা: ৫৫) অর্থাৎ ক্বিয়ামত দিবসে পুণরুত্থান হবে।
আল্লাহ সুবহানাহু অতাঅলা আরো বলেন:
﴿ وَٱللَّهُ أَنۢبَتَكُم مِّنَ ٱلۡأَرۡضِ نَبَاتٗا ١٧ ثُمَّ يُعِيدُكُمۡ فِيهَا وَيُخۡرِجُكُمۡ إِخۡرَاجٗا ١٨ ﴾ [ نوح : ١٧، ١٨ ]
‘‘(১৭) আল্লাহ তোমাদেরকে মাটি হতে উৎপাদন করেছেন, (১৮) অতঃপর মাটিতেই প্রত্যাবর্তন করানো হবে এবং পূণরায় যথাযথভাবে বের করে আনা হবে’’। (সূরা নূহ)
উত্তর: কবরের মধ্যে মানুষ পরীক্ষার সম্মুখীন হয়; দুইজন ফিরিশতা এসে প্রশ্ন করেন যে, তোমার রবব কে? তোমার দীন কি? আর সে ব্যক্তিটি কে যাকে তোমাদেরকে মাঝে পাঠানো হয়েছিল?
এ সব প্রশ্নের উত্তরে মুমিন ব্যক্তি বলবে: ( ربي الله ) আল্লাহ আমার রব্ব, ( ديني الإسلام ) ইসলাম আমার দীন এবং নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রসংগে বলবে; ( هو عبد الله ورسوله ) এ ব্যক্তি হচ্ছেন আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আর অবিশ্বাসী কাফের বলবে: ( هاه، هاه، لا أدري ) ‘‘হায়, হায় আমিতো কিছুই জানিনা’’।
মুনাফিক (মুখে বিশ্বাসী অন্তরে অবিশ্বাসী) বলবে: ( لا أدري، سمعت الناس يقولون شيئاً فقلته ) ‘‘জানিনা তবে লোকজনকে কী যেন বলতে শুনেছি এবং আমি তা বলেছিলাম’’।
এ সব প্রশ্নের উত্তরে মুমিন ব্যক্তি বলবে: ( ربي الله ) আল্লাহ আমার রব্ব, ( ديني الإسلام ) ইসলাম আমার দীন এবং নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রসংগে বলবে; ( هو عبد الله ورسوله ) এ ব্যক্তি হচ্ছেন আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আর অবিশ্বাসী কাফের বলবে: ( هاه، هاه، لا أدري ) ‘‘হায়, হায় আমিতো কিছুই জানিনা’’।
মুনাফিক (মুখে বিশ্বাসী অন্তরে অবিশ্বাসী) বলবে: ( لا أدري، سمعت الناس يقولون شيئاً فقلته ) ‘‘জানিনা তবে লোকজনকে কী যেন বলতে শুনেছি এবং আমি তা বলেছিলাম’’।
১৫৩
{প্রশ্ন: ১৫১} কবরে কি মৃত ব্যক্তি জান্নাতের প্রশান্তি কিংবা জাহান্নামের শাস্তি পেয়ে থাকে? তার দলীল কী?উত্তর: কবরে মুমিন দৈহিক ও আত্মিক প্রশান্তি লাভ করবে। আর কাফের ব্যক্তি দৈহিক এবং আত্মিক শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। তবে গুনাহগার মুসলিমকেও শাস্তি ভোগ করা লাগতে পারে, যেমন; নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِنَّهُمَا لَيُعَذَّبَانِ، وَمَا يُعَذَّبَانِ فِي كَبِيرٍ، أَمَّا أَحَدُهُمَا فَكَانَ لاَ يَسْتَتِرُ مِنَ البَوْلِ، وَأَمَّا الآخَرُ فَكَانَ يَمْشِي بِالنَّمِيمَةِ»
‘‘তারা দুজনে কষ্ট ভোগ করছে, তবে তাদের শাস্তি বড় ধরনের ত্রুটির জন্য নয় (অর্থাৎ এ ক্রটি দূর করা কঠিন কাজ নয়), তাদের একজন প্রশ্রাবের পরে ইস্তিঞ্জা (পরিচ্ছন্নতা অর্জন) করতো না, আর অন্যজন মানুষের মধ্যে চোগলখূরী (কুৎসা রটনা) করে বেড়াত। (আল-বুখারী)
মহান আল্লাহ সূরা ইব্রাহীমের ২৭ নং আয়াতে আরও বলেন,
﴿ يُثَبِّتُ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ بِٱلۡقَوۡلِ ٱلثَّابِتِ فِي ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا وَفِي ٱلۡأٓخِرَةِۖ ﴾ [ ابراهيم : ٢٧ ]
‘‘যারা শাশ্বত বাণী (কালেমাতুল হক্ব পূর্ণাংগ রূপে) বিশ্বাস করেছে তাদেরকে আল্লাহ সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন ইহা জীবন ও পরজীবনে’’।
মহান আল্লাহ সূরা আল-মুমিনে আরো বলেন:
﴿ فَوَقَىٰهُ ٱللَّهُ سَئَِّاتِ مَا مَكَرُواْۖ وَحَاقَ بَِٔالِ فِرۡعَوۡنَ سُوٓءُ ٱلۡعَذَابِ ٤٥ ٱلنَّارُ يُعۡرَضُونَ عَلَيۡهَا غُدُوّٗا وَعَشِيّٗاۚ وَيَوۡمَ تَقُومُ ٱلسَّاعَةُ أَدۡخِلُوٓاْ ءَالَ فِرۡعَوۡنَ أَشَدَّ ٱلۡعَذَابِ ٤٦ ﴾ [ غافر : ٤٥، ٤٦ ]
‘‘(৪৫) অতঃপর আল্লাহ তাঁকে (মতান্তরে মূসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম অথবা ফিরআউন সম্প্রদায়ের ঈমানদার ব্যক্তিটি) তাদের ষড়যন্ত্রের অনিষ্টতা থেকে রক্ষা করলেন এবং ফির‘আউন সম্প্রদায়কে কঠিন শাস্তিতে গ্রাস করলো। (৪৬) সকাল সন্ধ্যায় তাদেরকে আগুনের সংস্পর্শে উপস্থিত করা হয়। আর যেদিন ক্বিয়ামত সংঘটিতে হবে সেদিন আদেশ দেওয়া হবে যে, ফিরআউন সম্প্রদায়কে কঠিন আযাবে নিক্ষেপ/নিমজ্জিত করো’’। (আল-কুরআন)
নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِنَّ العَبْدَ إِذَا وُضِعَ فِي قَبْرِهِ وَتَوَلَّى عَنْهُ أَصْحَابُهُ، وَإِنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ نِعَالِهِمْ، أَتَاهُ مَلَكَانِ فَيُقْعِدَانِهِ، فَيَقُولاَنِ : مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ لِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَمَّا المُؤْمِنُ، فَيَقُولُ : أَشْهَدُ أَنَّهُ عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ، فَيُقَالُ لَهُ : انْظُرْ إِلَى مَقْعَدِكَ مِنَ النَّارِ قَدْ أَبْدَلَكَ اللَّهُ بِهِ مَقْعَدًا مِنَ الجَنَّةِ»
‘‘যখন বান্দাকে তার কবরে দাফন করে সকলে প্রস্থান করতে আরম্ভ করে তখন সমাধিস্থ ব্যক্তি তাদের জুতা-স্যান্ডেলের শব্দ শুনতে পায়। এ সময় দু’জন ফেরেশতা এসে কবরস্থ ব্যক্তিকে উঠিয়ে বসায় এবং তাকে বলে যে; তুমি এ ব্যক্তি (মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সম্পর্কে কী জানো? তখন মুমিন ব্যক্তি বলবে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল। অতঃপর তাকে বলা হবে; তুমি জাহান্নামের মধ্যে ঐ জায়গাটিতে তাকিয়ে দেখো যেটা তোমার ছিল, আল্লাহ সেটার পরিবর্তে তোমাকে জান্নাতে জায়গা করে দিয়েছেন’’ (মুত্তাফিকুন আলাইহি)
«إِنَّهُمَا لَيُعَذَّبَانِ، وَمَا يُعَذَّبَانِ فِي كَبِيرٍ، أَمَّا أَحَدُهُمَا فَكَانَ لاَ يَسْتَتِرُ مِنَ البَوْلِ، وَأَمَّا الآخَرُ فَكَانَ يَمْشِي بِالنَّمِيمَةِ»
‘‘তারা দুজনে কষ্ট ভোগ করছে, তবে তাদের শাস্তি বড় ধরনের ত্রুটির জন্য নয় (অর্থাৎ এ ক্রটি দূর করা কঠিন কাজ নয়), তাদের একজন প্রশ্রাবের পরে ইস্তিঞ্জা (পরিচ্ছন্নতা অর্জন) করতো না, আর অন্যজন মানুষের মধ্যে চোগলখূরী (কুৎসা রটনা) করে বেড়াত। (আল-বুখারী)
মহান আল্লাহ সূরা ইব্রাহীমের ২৭ নং আয়াতে আরও বলেন,
﴿ يُثَبِّتُ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ بِٱلۡقَوۡلِ ٱلثَّابِتِ فِي ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا وَفِي ٱلۡأٓخِرَةِۖ ﴾ [ ابراهيم : ٢٧ ]
‘‘যারা শাশ্বত বাণী (কালেমাতুল হক্ব পূর্ণাংগ রূপে) বিশ্বাস করেছে তাদেরকে আল্লাহ সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন ইহা জীবন ও পরজীবনে’’।
মহান আল্লাহ সূরা আল-মুমিনে আরো বলেন:
﴿ فَوَقَىٰهُ ٱللَّهُ سَئَِّاتِ مَا مَكَرُواْۖ وَحَاقَ بَِٔالِ فِرۡعَوۡنَ سُوٓءُ ٱلۡعَذَابِ ٤٥ ٱلنَّارُ يُعۡرَضُونَ عَلَيۡهَا غُدُوّٗا وَعَشِيّٗاۚ وَيَوۡمَ تَقُومُ ٱلسَّاعَةُ أَدۡخِلُوٓاْ ءَالَ فِرۡعَوۡنَ أَشَدَّ ٱلۡعَذَابِ ٤٦ ﴾ [ غافر : ٤٥، ٤٦ ]
‘‘(৪৫) অতঃপর আল্লাহ তাঁকে (মতান্তরে মূসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম অথবা ফিরআউন সম্প্রদায়ের ঈমানদার ব্যক্তিটি) তাদের ষড়যন্ত্রের অনিষ্টতা থেকে রক্ষা করলেন এবং ফির‘আউন সম্প্রদায়কে কঠিন শাস্তিতে গ্রাস করলো। (৪৬) সকাল সন্ধ্যায় তাদেরকে আগুনের সংস্পর্শে উপস্থিত করা হয়। আর যেদিন ক্বিয়ামত সংঘটিতে হবে সেদিন আদেশ দেওয়া হবে যে, ফিরআউন সম্প্রদায়কে কঠিন আযাবে নিক্ষেপ/নিমজ্জিত করো’’। (আল-কুরআন)
নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِنَّ العَبْدَ إِذَا وُضِعَ فِي قَبْرِهِ وَتَوَلَّى عَنْهُ أَصْحَابُهُ، وَإِنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ نِعَالِهِمْ، أَتَاهُ مَلَكَانِ فَيُقْعِدَانِهِ، فَيَقُولاَنِ : مَا كُنْتَ تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ لِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَمَّا المُؤْمِنُ، فَيَقُولُ : أَشْهَدُ أَنَّهُ عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ، فَيُقَالُ لَهُ : انْظُرْ إِلَى مَقْعَدِكَ مِنَ النَّارِ قَدْ أَبْدَلَكَ اللَّهُ بِهِ مَقْعَدًا مِنَ الجَنَّةِ»
‘‘যখন বান্দাকে তার কবরে দাফন করে সকলে প্রস্থান করতে আরম্ভ করে তখন সমাধিস্থ ব্যক্তি তাদের জুতা-স্যান্ডেলের শব্দ শুনতে পায়। এ সময় দু’জন ফেরেশতা এসে কবরস্থ ব্যক্তিকে উঠিয়ে বসায় এবং তাকে বলে যে; তুমি এ ব্যক্তি (মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সম্পর্কে কী জানো? তখন মুমিন ব্যক্তি বলবে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল। অতঃপর তাকে বলা হবে; তুমি জাহান্নামের মধ্যে ঐ জায়গাটিতে তাকিয়ে দেখো যেটা তোমার ছিল, আল্লাহ সেটার পরিবর্তে তোমাকে জান্নাতে জায়গা করে দিয়েছেন’’ (মুত্তাফিকুন আলাইহি)
উত্তর: পুনরুত্থানের পর হিসাব-নিকাশ করে কাজের যথোপযুক্ত পুরস্কার প্রদান করা হবে। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ لِيَجۡزِيَ ٱلَّذِينَ أَسَٰٓـُٔواْ بِمَا عَمِلُواْ وَيَجۡزِيَ ٱلَّذِينَ أَحۡسَنُواْ بِٱلۡحُسۡنَى﴾ [ النجم : ٣١ ]
‘‘যারা মন্দ কাজ করে তাদেরকে তিনি মন্দ ফল দিবেন এবং যারা ভালো কাজ করে তাদেরকে দিবেন উত্তম পুরস্কার’’। (সূরা আন-নাজম: ৩১)
সুতরাং প্রত্যেকেই যথাযথ (ভাল বা মন্দ) প্রতিদিন পাবে। মুমিনগণ জান্নাতে প্রবেশ করবে আর কাফেরগণ প্রবেশ করবে জাহান্নামে। (কবর আযাবের প্রমাণ; বায়হাকী)
﴿ لِيَجۡزِيَ ٱلَّذِينَ أَسَٰٓـُٔواْ بِمَا عَمِلُواْ وَيَجۡزِيَ ٱلَّذِينَ أَحۡسَنُواْ بِٱلۡحُسۡنَى﴾ [ النجم : ٣١ ]
‘‘যারা মন্দ কাজ করে তাদেরকে তিনি মন্দ ফল দিবেন এবং যারা ভালো কাজ করে তাদেরকে দিবেন উত্তম পুরস্কার’’। (সূরা আন-নাজম: ৩১)
সুতরাং প্রত্যেকেই যথাযথ (ভাল বা মন্দ) প্রতিদিন পাবে। মুমিনগণ জান্নাতে প্রবেশ করবে আর কাফেরগণ প্রবেশ করবে জাহান্নামে। (কবর আযাবের প্রমাণ; বায়হাকী)
উত্তর: সে কাফের এবং মুসলিম মিল্লাত থেকে বহিষ্কৃত হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ زَعَمَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ أَن لَّن يُبۡعَثُواْۚ قُلۡ بَلَىٰ وَرَبِّي لَتُبۡعَثُنَّ ثُمَّ لَتُنَبَّؤُنَّ بِمَا عَمِلۡتُمۡۚ وَذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ يَسِيرٞ ٧ ﴾ [ التغابن : ٧ ]
‘‘কাফিররা ধারণা করে যে, তারা কখনো পুনরুত্থিত হবে না। বলুন: হ্যাঁ নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালকের শপথ; তোমাদেরকে অবশ্যই পুনরুত্থিত করা হবে। অতঃপর অবশ্যই তোমাদের কৃতকর্ম সমন্ধে তোমাদেরকে অবহিত করা হবে। আর এ সবই আল্লাহর পক্ষে সহজ’’। (সূরা আত-তাগাবুনের ৭নং আয়াত)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ وَقَالُوٓاْ إِنۡ هِيَ إِلَّا حَيَاتُنَا ٱلدُّنۡيَا وَمَا نَحۡنُ بِمَبۡعُوثِينَ ٢٩ وَلَوۡ تَرَىٰٓ إِذۡ وُقِفُواْ عَلَىٰ رَبِّهِمۡۚ قَالَ أَلَيۡسَ هَٰذَا بِٱلۡحَقِّۚ قَالُواْ بَلَىٰ وَرَبِّنَاۚ قَالَ فَذُوقُواْ ٱلۡعَذَابَ بِمَا كُنتُمۡ تَكۡفُرُونَ ٣٠ ﴾ [ الانعام : ٢٩، ٣٠ ]
‘‘(২৯) তারা বলে, আমাদের এ দুনিয়ার জীবনই একমাত্র জীবন এবং আমাদের পুনরুত্থানও হবে না। (৩০) তুমি যদি তাদেরকে দেখতে যখন তাদেরকে প্রতিপালকের সম্মুখে দাঁড় করানো হবে এবং তিনি বলবেন, তা কি প্রকৃত সত্য নয়? তারা বলবে ‘‘আমাদের রবের শপথ, নিশ্চয়ই সত্য। তিনি বলবেন: অতএব তোমরা যেসব কুফরী করেছো সে জন্য এখন আযাব আস্বাদন কর’’। (সূরা আল-আন‘আমের ২৯-৩০)
সর্বোচ্চ মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ بَلۡ كَذَّبُواْ بِٱلسَّاعَةِۖ وَأَعۡتَدۡنَا لِمَن كَذَّبَ بِٱلسَّاعَةِ سَعِيرًا ١١ ﴾ [ الفرقان : ١١ ]
‘‘অথচ তারা ক্বিয়ামতকে মিথ্যা বলছে আর যারা ক্বিয়ামতকে মিথ্যা বলবে তাদের জন্য আমরা প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত অগ্নি’’। (সূরা আল-ফুরকান: ১১)
﴿ زَعَمَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ أَن لَّن يُبۡعَثُواْۚ قُلۡ بَلَىٰ وَرَبِّي لَتُبۡعَثُنَّ ثُمَّ لَتُنَبَّؤُنَّ بِمَا عَمِلۡتُمۡۚ وَذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ يَسِيرٞ ٧ ﴾ [ التغابن : ٧ ]
‘‘কাফিররা ধারণা করে যে, তারা কখনো পুনরুত্থিত হবে না। বলুন: হ্যাঁ নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালকের শপথ; তোমাদেরকে অবশ্যই পুনরুত্থিত করা হবে। অতঃপর অবশ্যই তোমাদের কৃতকর্ম সমন্ধে তোমাদেরকে অবহিত করা হবে। আর এ সবই আল্লাহর পক্ষে সহজ’’। (সূরা আত-তাগাবুনের ৭নং আয়াত)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ وَقَالُوٓاْ إِنۡ هِيَ إِلَّا حَيَاتُنَا ٱلدُّنۡيَا وَمَا نَحۡنُ بِمَبۡعُوثِينَ ٢٩ وَلَوۡ تَرَىٰٓ إِذۡ وُقِفُواْ عَلَىٰ رَبِّهِمۡۚ قَالَ أَلَيۡسَ هَٰذَا بِٱلۡحَقِّۚ قَالُواْ بَلَىٰ وَرَبِّنَاۚ قَالَ فَذُوقُواْ ٱلۡعَذَابَ بِمَا كُنتُمۡ تَكۡفُرُونَ ٣٠ ﴾ [ الانعام : ٢٩، ٣٠ ]
‘‘(২৯) তারা বলে, আমাদের এ দুনিয়ার জীবনই একমাত্র জীবন এবং আমাদের পুনরুত্থানও হবে না। (৩০) তুমি যদি তাদেরকে দেখতে যখন তাদেরকে প্রতিপালকের সম্মুখে দাঁড় করানো হবে এবং তিনি বলবেন, তা কি প্রকৃত সত্য নয়? তারা বলবে ‘‘আমাদের রবের শপথ, নিশ্চয়ই সত্য। তিনি বলবেন: অতএব তোমরা যেসব কুফরী করেছো সে জন্য এখন আযাব আস্বাদন কর’’। (সূরা আল-আন‘আমের ২৯-৩০)
সর্বোচ্চ মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ بَلۡ كَذَّبُواْ بِٱلسَّاعَةِۖ وَأَعۡتَدۡنَا لِمَن كَذَّبَ بِٱلسَّاعَةِ سَعِيرًا ١١ ﴾ [ الفرقان : ١١ ]
‘‘অথচ তারা ক্বিয়ামতকে মিথ্যা বলছে আর যারা ক্বিয়ামতকে মিথ্যা বলবে তাদের জন্য আমরা প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত অগ্নি’’। (সূরা আল-ফুরকান: ১১)
উত্তর: এ দিন দুনিয়ার সমাপ্তি হবে, এরপর আর দিন অবশিষ্ট থাকবে না। আর এটাই হচ্ছে পুনরুত্থান দিবস।
আখেরাত দিবসের প্রতি ঈমান আনা ওয়াজিব; কেননা তা ঈমানের ছয়টি রুকনের একটি।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন:
﴿ ٱقۡتَرَبَتِ ٱلسَّاعَةُ وَٱنشَقَّ ٱلۡقَمَرُ ١ ﴾ [ القمر : ١ ]
‘‘ক্বিয়ামত নিকটবর্তী হয়েছে এবং চন্দ্র বিদীর্ণ হয়েছে’’। (সূরা আল-ক্বামার: ১)
আর যারা আখেরাতকে অস্বীকার করবে তারা কাফের হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ زَعَمَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ أَن لَّن يُبۡعَثُواْۚ قُلۡ بَلَىٰ وَرَبِّي لَتُبۡعَثُنَّ ثُمَّ لَتُنَبَّؤُنَّ بِمَا عَمِلۡتُمۡۚ وَذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ يَسِيرٞ ٧ ﴾ [ التغابن : ٧ ]
‘‘কাফির সম্প্রদায় ধারণা করে যে, তারা কখনো পুনরুত্থিত হবে না। বলুন: হ্যাঁ নিশ্চয়ই, আমার রবের শপথ; তোমাদেরকে অবশ্যই পুনরুত্থিত করা হবে। অতঃপর তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কেও অবশ্যই অবহিত করা হবে, আর এ সবই আল্লাহর পক্ষে সহজ’’। (সূরা আত-তাগাবুন: ৭)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ قَدۡ خَسِرَ ٱلَّذِينَ كَذَّبُواْ بِلِقَآءِ ٱللَّهِ وَمَا كَانُواْ مُهۡتَدِينَ ﴾ [ يونس : ٤٥ ]
‘‘আল্লাহর সাক্ষাৎকে যারা মিথ্যা বলে তারা নিশ্চিতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আর তারা হেদায়াতপ্রাপ্ত হয় নি’’। (সূরা ইউনুস: ৪৫)
তবে পুনরুত্থান কবে কখন হবে একমাত্র আল্লাহই জানেন, তিনি আর কাউকেই তা জানান নি। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ يَسَۡٔلُونَكَ عَنِ ٱلسَّاعَةِ أَيَّانَ مُرۡسَىٰهَاۖ قُلۡ إِنَّمَا عِلۡمُهَا عِندَ رَبِّيۖ لَا يُجَلِّيهَا لِوَقۡتِهَآ إِلَّا هُوَۚ ثَقُلَتۡ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ لَا تَأۡتِيكُمۡ إِلَّا بَغۡتَةٗۗ يَسَۡٔلُونَكَ كَأَنَّكَ حَفِيٌّ عَنۡهَاۖ قُلۡ إِنَّمَا عِلۡمُهَا عِندَ ٱللَّهِ وَلَٰكِنَّ أَكۡثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعۡلَمُونَ ١٨٧ ﴾ [ الاعراف : ١٨٧ ]
‘‘তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করে ক্বিয়ামত কখন সংঘটিত হবে। বলুন: এ বিষয়ের জ্ঞান শুধু আমার প্রতিপালকই জানেন। তিনি যথাসময়ে তা প্রকাশ করবেন। আর তখন আকাশমণ্ডলি ও পৃথিবীতে কঠিন পরিস্থিতির উদ্ভব হবে, ‘‘আকস্মিকভাবেই তা তোমাদের উপর আসবে। আপনাকে এবিষয়ে সম্পূর্ণ অবহিত ধারণা করেই তারা আপনাকে প্রশ্ন করে। বলে দিন: এ বিষয়ের জ্ঞান আমার রবেরই আছে, কিন্তু অধিকাংশ লোক তা জানে না’’। (সূরা আল-আ‘রাফ: ১৮৭)
নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«بُعِثْتُ أَنَا وَالسَّاعَةَ كَهَاتَيْنِ»
‘‘আমার নবুওয়ত এবং শেষদিবস এইরূপ’’ (তিনি মধ্যমা এবং তর্জনী আংগুলদ্বয় উচু করে দেখান) (মুত্তাফিকুন আলাইহি)।
আখেরাত দিবসের প্রতি ঈমান আনা ওয়াজিব; কেননা তা ঈমানের ছয়টি রুকনের একটি।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন:
﴿ ٱقۡتَرَبَتِ ٱلسَّاعَةُ وَٱنشَقَّ ٱلۡقَمَرُ ١ ﴾ [ القمر : ١ ]
‘‘ক্বিয়ামত নিকটবর্তী হয়েছে এবং চন্দ্র বিদীর্ণ হয়েছে’’। (সূরা আল-ক্বামার: ১)
আর যারা আখেরাতকে অস্বীকার করবে তারা কাফের হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ زَعَمَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ أَن لَّن يُبۡعَثُواْۚ قُلۡ بَلَىٰ وَرَبِّي لَتُبۡعَثُنَّ ثُمَّ لَتُنَبَّؤُنَّ بِمَا عَمِلۡتُمۡۚ وَذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ يَسِيرٞ ٧ ﴾ [ التغابن : ٧ ]
‘‘কাফির সম্প্রদায় ধারণা করে যে, তারা কখনো পুনরুত্থিত হবে না। বলুন: হ্যাঁ নিশ্চয়ই, আমার রবের শপথ; তোমাদেরকে অবশ্যই পুনরুত্থিত করা হবে। অতঃপর তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কেও অবশ্যই অবহিত করা হবে, আর এ সবই আল্লাহর পক্ষে সহজ’’। (সূরা আত-তাগাবুন: ৭)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ قَدۡ خَسِرَ ٱلَّذِينَ كَذَّبُواْ بِلِقَآءِ ٱللَّهِ وَمَا كَانُواْ مُهۡتَدِينَ ﴾ [ يونس : ٤٥ ]
‘‘আল্লাহর সাক্ষাৎকে যারা মিথ্যা বলে তারা নিশ্চিতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আর তারা হেদায়াতপ্রাপ্ত হয় নি’’। (সূরা ইউনুস: ৪৫)
তবে পুনরুত্থান কবে কখন হবে একমাত্র আল্লাহই জানেন, তিনি আর কাউকেই তা জানান নি। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ يَسَۡٔلُونَكَ عَنِ ٱلسَّاعَةِ أَيَّانَ مُرۡسَىٰهَاۖ قُلۡ إِنَّمَا عِلۡمُهَا عِندَ رَبِّيۖ لَا يُجَلِّيهَا لِوَقۡتِهَآ إِلَّا هُوَۚ ثَقُلَتۡ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ لَا تَأۡتِيكُمۡ إِلَّا بَغۡتَةٗۗ يَسَۡٔلُونَكَ كَأَنَّكَ حَفِيٌّ عَنۡهَاۖ قُلۡ إِنَّمَا عِلۡمُهَا عِندَ ٱللَّهِ وَلَٰكِنَّ أَكۡثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعۡلَمُونَ ١٨٧ ﴾ [ الاعراف : ١٨٧ ]
‘‘তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করে ক্বিয়ামত কখন সংঘটিত হবে। বলুন: এ বিষয়ের জ্ঞান শুধু আমার প্রতিপালকই জানেন। তিনি যথাসময়ে তা প্রকাশ করবেন। আর তখন আকাশমণ্ডলি ও পৃথিবীতে কঠিন পরিস্থিতির উদ্ভব হবে, ‘‘আকস্মিকভাবেই তা তোমাদের উপর আসবে। আপনাকে এবিষয়ে সম্পূর্ণ অবহিত ধারণা করেই তারা আপনাকে প্রশ্ন করে। বলে দিন: এ বিষয়ের জ্ঞান আমার রবেরই আছে, কিন্তু অধিকাংশ লোক তা জানে না’’। (সূরা আল-আ‘রাফ: ১৮৭)
নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«بُعِثْتُ أَنَا وَالسَّاعَةَ كَهَاتَيْنِ»
‘‘আমার নবুওয়ত এবং শেষদিবস এইরূপ’’ (তিনি মধ্যমা এবং তর্জনী আংগুলদ্বয় উচু করে দেখান) (মুত্তাফিকুন আলাইহি)।
উত্তর: পর্যায়ক্রমে তিনবার শিংগায় ফুঁক দেওয়া হবে।
প্রথম পর্যায়: পৃথিবীতে ভীতিকর বিপর্যয় দেখা দিবে, এাস সৃষ্টি হবে এবং দুনিয়া ওলট-পালট হয়ে যাবে। মহান পবিত্র আল্লাহ বলেন:
﴿ وَيَوۡمَ يُنفَخُ فِي ٱلصُّورِ فَفَزِعَ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَن فِي ٱلۡأَرۡضِ إِلَّا مَن شَآءَ ٱللَّهُۚ وَكُلٌّ أَتَوۡهُ دَٰخِرِينَ ٨٧ ﴾ [ النمل : ٨٧ ]
‘‘যেদিন শিংগায় ফুঁক (প্রথম) দেওয়া হবে, সেদিন আল্লাহ যাদেরকে চাইবেন, তারা ব্যতীত আকাশমণ্ডলীর ও পৃথিবীর সকলেই ভীত, বিহ্বল হয়ে পড়বে। অতঃপর সকলেই তাঁর নিকট আসবে বিনীত অবস্থায়’’। (সূরা আন-নামল: ৮৭)
দ্বিতীয় পর্যায়: প্রচণ্ড গর্জন হবে এবং দুনিয়ার সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে [বিশুদ্ধমতে উপরের দু’টি পর্যায় একই ফুঁকের ভিন্ন ভিন্ন অংশ। [সম্পাদক]]। মহান আল্লাহর বাণী:
﴿ وَنُفِخَ فِي ٱلصُّورِ فَصَعِقَ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَن فِي ٱلۡأَرۡضِ إِلَّا مَن شَآءَ ٱللَّهُۖ ﴾ [ الزمر : ٦٨ ]
‘‘শিংগায় ফুঁক দেওয়া হবে অতঃপর যাদেরকে আল্লাহ ইচ্ছা করেন তারা ব্যতীত আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সকলে মূর্ছা যাবে (মৃত্যু হবে)’’। (সূরা আয-যুমার: ৬৮)
তৃতীয় পর্যায়: পুনরুত্থান ও জাগিয়ে তুলে সংগঠিত করার ফুঁক। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ثُمَّ نُفِخَ فِيهِ أُخۡرَىٰ فَإِذَا هُمۡ قِيَامٞ يَنظُرُونَ ﴾ [ الزمر : ٦٨ ]
‘‘অতঃপর আবার শিংগায় ফুঁক দেওয়া হবে, আর তৎক্ষনাৎ তারা দণ্ডায়মান হয়ে তাকিয়ে দেখবে’’। (সূরা আয-যুমার: ৬৮)
প্রথম পর্যায়: পৃথিবীতে ভীতিকর বিপর্যয় দেখা দিবে, এাস সৃষ্টি হবে এবং দুনিয়া ওলট-পালট হয়ে যাবে। মহান পবিত্র আল্লাহ বলেন:
﴿ وَيَوۡمَ يُنفَخُ فِي ٱلصُّورِ فَفَزِعَ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَن فِي ٱلۡأَرۡضِ إِلَّا مَن شَآءَ ٱللَّهُۚ وَكُلٌّ أَتَوۡهُ دَٰخِرِينَ ٨٧ ﴾ [ النمل : ٨٧ ]
‘‘যেদিন শিংগায় ফুঁক (প্রথম) দেওয়া হবে, সেদিন আল্লাহ যাদেরকে চাইবেন, তারা ব্যতীত আকাশমণ্ডলীর ও পৃথিবীর সকলেই ভীত, বিহ্বল হয়ে পড়বে। অতঃপর সকলেই তাঁর নিকট আসবে বিনীত অবস্থায়’’। (সূরা আন-নামল: ৮৭)
দ্বিতীয় পর্যায়: প্রচণ্ড গর্জন হবে এবং দুনিয়ার সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে [বিশুদ্ধমতে উপরের দু’টি পর্যায় একই ফুঁকের ভিন্ন ভিন্ন অংশ। [সম্পাদক]]। মহান আল্লাহর বাণী:
﴿ وَنُفِخَ فِي ٱلصُّورِ فَصَعِقَ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَن فِي ٱلۡأَرۡضِ إِلَّا مَن شَآءَ ٱللَّهُۖ ﴾ [ الزمر : ٦٨ ]
‘‘শিংগায় ফুঁক দেওয়া হবে অতঃপর যাদেরকে আল্লাহ ইচ্ছা করেন তারা ব্যতীত আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সকলে মূর্ছা যাবে (মৃত্যু হবে)’’। (সূরা আয-যুমার: ৬৮)
তৃতীয় পর্যায়: পুনরুত্থান ও জাগিয়ে তুলে সংগঠিত করার ফুঁক। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ثُمَّ نُفِخَ فِيهِ أُخۡرَىٰ فَإِذَا هُمۡ قِيَامٞ يَنظُرُونَ ﴾ [ الزمر : ٦٨ ]
‘‘অতঃপর আবার শিংগায় ফুঁক দেওয়া হবে, আর তৎক্ষনাৎ তারা দণ্ডায়মান হয়ে তাকিয়ে দেখবে’’। (সূরা আয-যুমার: ৬৮)
উত্তর: পুনরুত্থিত হবে; ‘‘খালি পায়ে উলংগাবস্থায় এবং খাৎনা পূর্বাবস্থায়। সকলেই উদ্ভিদ লতা-পাতার মত বেড়ে উঠবে, অতঃপর দলে দলে হাশরের ময়দানের দিকে এগিয়ে যাবে। এখানে সৃষ্টির সব কিছুই আল্লাহর সম্মুখে উপস্থিত হবে। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ يَوۡمَئِذٖ تُعۡرَضُونَ لَا تَخۡفَىٰ مِنكُمۡ خَافِيَةٞ ١٨ ﴾ [ الحاقة : ١٨ ]
‘‘সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে এবং তোমাদের কোনো কিছুই গোপন থাকবে না’’। (সূরা আল-হাক্কাহ: ১৮)
সবার হিসাব-নিকাশ করা হবে এবং সকলেই তাদের কৃতকর্ম জানতে পারবে। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ يَوۡمَ يَبۡعَثُهُمُ ٱللَّهُ جَمِيعٗا فَيُنَبِّئُهُم بِمَا عَمِلُوٓاْۚ أَحۡصَىٰهُ ٱللَّهُ وَنَسُوهُۚ ﴾ [ المجادلة : ٦ ]
‘‘সেদিন আল্লাহ তাদের সকলকে একত্রে পুনরুত্থিত করবেন এবং তাদের তাদের আমল সম্পর্কে তিনি জানিয়ে দিবেন, আল্লাহ তা হিসেব করে রেখেছেন অথচ তারা তা বিস্মৃত হয়েছে’’। (সূরা আল-মুজাদালা: ৬)
দাঁড়িপাল্লা দ্বারা বান্দাদের কৃতকর্ম ওজন করা হবে এবং কাজ-কর্মের যাথাযথ মূল্যায়ন ও উপস্থাপন করা হবে। আল্লাহ বলেন:
﴿ وَنَضَعُ ٱلۡمَوَٰزِينَ ٱلۡقِسۡطَ لِيَوۡمِ ٱلۡقِيَٰمَةِ فَلَا تُظۡلَمُ نَفۡسٞ شَيۡٔٗاۖ وَإِن كَانَ مِثۡقَالَ حَبَّةٖ مِّنۡ خَرۡدَلٍ أَتَيۡنَا بِهَاۗ وَكَفَىٰ بِنَا حَٰسِبِينَ ٤٧ ﴾ [ الانبياء : ٤٧ ]
‘‘ক্বিয়ামত দিবসে আমরা স্থাপন করব ন্যায় বিচারের পাল্লা। সুতরাং কারো প্রতি কোনোই অবিচার করা হবে না এবং কর্ম যদি সরিষা দানা পরমাণ ওজনেরও হয় তবুও উহা আমরা উপস্থিত করব। হিসাব গ্রহণে আমরাই যথেষ্ট’’। (সূরা আল-আম্বিয়া: ৪৭)
প্রত্যেকেই নিজের আমলনামা স্বহস্তে গ্রহণ করবে এবং তা পাঠ করবে। সুমহান আল্লাহ বলেন:
﴿ فَأَمَّا مَنۡ أُوتِيَ كِتَٰبَهُۥ بِيَمِينِهِۦ فَيَقُولُ هَآؤُمُ ٱقۡرَءُواْ كِتَٰبِيَهۡ ١٩ ﴾ [ الحاقة : ١٩ ]
‘‘আর যাকে তার আমলনামা তারই ডান হাতে দেওয়া হবে, অতঃপর তাকে বলা হবে; নাও তোমরাও লিপিবদ্ধ আমলনামা পড়ে দেখ’’। (সূরা আল হা-ক্কাহ: ১৯)
হাশরের ময়দানে হিসাব-নিকাশ শেষ হবার পরে সকলকে জাহান্নামের উপর দিয়ে পথ অতিক্রম করতে হবে। যে অতিক্রম করতে সক্ষম হবে সে নিরাপত্তা লাভ করলো। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে:
«وَيُضْرَبُ الصِّرَاطُ بَيْنَ ظَهْرَيْ جَهَنَّمَ، فَأَكُونُ أَنَا وَأُمَّتِي أَوَّلَ مَنْ يُجِيزُهَا»
‘‘আর জাহান্নামের উপর দিয়ে চলাচলের রাস্তা স্থাপন করা হবে। আমি এবং আমার উম্মতই প্রথম তা অতিক্রম করবো’’।
জাহান্নামের উপর দিয়ে মুমিনগণ পথ অতিক্রমকালে তাদের পরস্পরের দেনা-পাওনা পরিশোধ করবে যা দুনিয়ায় পরস্পরে আদায় করে নি। আবু সাঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«يَخْلُصُ المُؤْمِنُونَ مِنَ النَّارِ، فَيُحْبَسُونَ عَلَى قَنْطَرَةٍ بَيْنَ الجَنَّةِ وَالنَّارِ، فَيُقَصُّ لِبَعْضِهِمْ مِنْ بَعْضٍ مَظَالِمُ كَانَتْ بَيْنَهُمْ فِي الدُّنْيَا، حَتَّى إِذَا هُذِّبُوا وَنُقُّوا أُذِنَ لَهُمْ فِي دُخُولِ الجَنَّةِ»
‘‘মুমিনগণ জাহান্নাম থেকে মুক্ত হয়ে জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝে কানতারা বা সাঁকো পথ অতিক্রমকালে তাদের পরস্পরিক দেনা পাওনা পরিশোধের কাজ সমাপ্ত করা হবে, যে দেনা-পাওনা দুনিয়াতে অমিমাংসিত রয়ে গেছে। পারস্পরিক দেনা-পাওনা পরিশোধিত হবার পরই জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি লাভ করবে’’ [এটা মূলত পুলসিরাত পার হওয়ার পর কানতারা বা সাঁকোপথের বাধা। এটি শুধু মুমিনদের পরস্পরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। [সম্পাদক]]। (আল-বুখারী)
﴿ يَوۡمَئِذٖ تُعۡرَضُونَ لَا تَخۡفَىٰ مِنكُمۡ خَافِيَةٞ ١٨ ﴾ [ الحاقة : ١٨ ]
‘‘সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে এবং তোমাদের কোনো কিছুই গোপন থাকবে না’’। (সূরা আল-হাক্কাহ: ১৮)
সবার হিসাব-নিকাশ করা হবে এবং সকলেই তাদের কৃতকর্ম জানতে পারবে। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ يَوۡمَ يَبۡعَثُهُمُ ٱللَّهُ جَمِيعٗا فَيُنَبِّئُهُم بِمَا عَمِلُوٓاْۚ أَحۡصَىٰهُ ٱللَّهُ وَنَسُوهُۚ ﴾ [ المجادلة : ٦ ]
‘‘সেদিন আল্লাহ তাদের সকলকে একত্রে পুনরুত্থিত করবেন এবং তাদের তাদের আমল সম্পর্কে তিনি জানিয়ে দিবেন, আল্লাহ তা হিসেব করে রেখেছেন অথচ তারা তা বিস্মৃত হয়েছে’’। (সূরা আল-মুজাদালা: ৬)
দাঁড়িপাল্লা দ্বারা বান্দাদের কৃতকর্ম ওজন করা হবে এবং কাজ-কর্মের যাথাযথ মূল্যায়ন ও উপস্থাপন করা হবে। আল্লাহ বলেন:
﴿ وَنَضَعُ ٱلۡمَوَٰزِينَ ٱلۡقِسۡطَ لِيَوۡمِ ٱلۡقِيَٰمَةِ فَلَا تُظۡلَمُ نَفۡسٞ شَيۡٔٗاۖ وَإِن كَانَ مِثۡقَالَ حَبَّةٖ مِّنۡ خَرۡدَلٍ أَتَيۡنَا بِهَاۗ وَكَفَىٰ بِنَا حَٰسِبِينَ ٤٧ ﴾ [ الانبياء : ٤٧ ]
‘‘ক্বিয়ামত দিবসে আমরা স্থাপন করব ন্যায় বিচারের পাল্লা। সুতরাং কারো প্রতি কোনোই অবিচার করা হবে না এবং কর্ম যদি সরিষা দানা পরমাণ ওজনেরও হয় তবুও উহা আমরা উপস্থিত করব। হিসাব গ্রহণে আমরাই যথেষ্ট’’। (সূরা আল-আম্বিয়া: ৪৭)
প্রত্যেকেই নিজের আমলনামা স্বহস্তে গ্রহণ করবে এবং তা পাঠ করবে। সুমহান আল্লাহ বলেন:
﴿ فَأَمَّا مَنۡ أُوتِيَ كِتَٰبَهُۥ بِيَمِينِهِۦ فَيَقُولُ هَآؤُمُ ٱقۡرَءُواْ كِتَٰبِيَهۡ ١٩ ﴾ [ الحاقة : ١٩ ]
‘‘আর যাকে তার আমলনামা তারই ডান হাতে দেওয়া হবে, অতঃপর তাকে বলা হবে; নাও তোমরাও লিপিবদ্ধ আমলনামা পড়ে দেখ’’। (সূরা আল হা-ক্কাহ: ১৯)
হাশরের ময়দানে হিসাব-নিকাশ শেষ হবার পরে সকলকে জাহান্নামের উপর দিয়ে পথ অতিক্রম করতে হবে। যে অতিক্রম করতে সক্ষম হবে সে নিরাপত্তা লাভ করলো। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে:
«وَيُضْرَبُ الصِّرَاطُ بَيْنَ ظَهْرَيْ جَهَنَّمَ، فَأَكُونُ أَنَا وَأُمَّتِي أَوَّلَ مَنْ يُجِيزُهَا»
‘‘আর জাহান্নামের উপর দিয়ে চলাচলের রাস্তা স্থাপন করা হবে। আমি এবং আমার উম্মতই প্রথম তা অতিক্রম করবো’’।
জাহান্নামের উপর দিয়ে মুমিনগণ পথ অতিক্রমকালে তাদের পরস্পরের দেনা-পাওনা পরিশোধ করবে যা দুনিয়ায় পরস্পরে আদায় করে নি। আবু সাঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«يَخْلُصُ المُؤْمِنُونَ مِنَ النَّارِ، فَيُحْبَسُونَ عَلَى قَنْطَرَةٍ بَيْنَ الجَنَّةِ وَالنَّارِ، فَيُقَصُّ لِبَعْضِهِمْ مِنْ بَعْضٍ مَظَالِمُ كَانَتْ بَيْنَهُمْ فِي الدُّنْيَا، حَتَّى إِذَا هُذِّبُوا وَنُقُّوا أُذِنَ لَهُمْ فِي دُخُولِ الجَنَّةِ»
‘‘মুমিনগণ জাহান্নাম থেকে মুক্ত হয়ে জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝে কানতারা বা সাঁকো পথ অতিক্রমকালে তাদের পরস্পরিক দেনা পাওনা পরিশোধের কাজ সমাপ্ত করা হবে, যে দেনা-পাওনা দুনিয়াতে অমিমাংসিত রয়ে গেছে। পারস্পরিক দেনা-পাওনা পরিশোধিত হবার পরই জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি লাভ করবে’’ [এটা মূলত পুলসিরাত পার হওয়ার পর কানতারা বা সাঁকোপথের বাধা। এটি শুধু মুমিনদের পরস্পরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। [সম্পাদক]]। (আল-বুখারী)
উত্তর: মহান আল্লাহ জান্নাত এবং জাহান্নাম প্রস্তুত করে রেখেছেন বান্দাদেরকে কর্মফল ভোগ করাবার জন্যে। সুতরাং জান্নাত হচ্ছে শান্তির ঘর এবং মর্যাদাময় আবাসস্থল। আর এখানে আল্লাহর প্রিয় মোমেন বান্দাগণ (আউলিয়াগণ) শান্তি-সুখে বাস করবে। জান্নাতের প্রশান্তি এমনতর যা কোনো চর্মচোখ দেখে নি, কোনো কান শ্রবণ করে নি এবং কোনো মানুষের হৃদয় অনুভব করে নি। জান্নাতের সর্বোচ্চ আনন্দময় প্রশান্তি হচ্ছে জান্নাতবাসীরা তাদের মহান প্রতিপালক আল্লাহর দর্শন লাভ করবে।
সর্বোচ্চ বরকতময় আল্লাহ বলেন:
﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ أُوْلَٰٓئِكَ هُمۡ خَيۡرُ ٱلۡبَرِيَّةِ ٧ جَزَآؤُهُمۡ عِندَ رَبِّهِمۡ جَنَّٰتُ عَدۡنٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدٗاۖ رَّضِيَ ٱللَّهُ عَنۡهُمۡ وَرَضُواْ عَنۡهُۚ ذَٰلِكَ لِمَنۡ خَشِيَ رَبَّهُۥ ٨ ﴾ [ البينة : ٧، ٨ ]
‘‘(৭)যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে তারাই সৃষ্টির মধ্যে উত্তম। (৮)তাদের প্রতিপালকের কাছে রয়েছে তাদের জন্য পুরস্কার স্থায়ী জান্নাত, যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহমান। সেখানেই তাদের স্থায়ী নিবাস। আল্লাহ তাদের প্রতি প্রসন্ন এবং তারাও সন্তুষ্ট তাঁর প্রতি; আর তা তারই জন্যে, যে তার রবকে ভয় করে’’। (সূরা আল-বায়্যিনাহ)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ فَلَا تَعۡلَمُ نَفۡسٞ مَّآ أُخۡفِيَ لَهُم مِّن قُرَّةِ أَعۡيُنٖ جَزَآءَۢ بِمَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ١٧ ﴾ [ السجدة : ١٧ ]
‘‘আর কেউই জানে না তাদের জন্য নয়ন-প্রীতিকর কি লুকায়িত রাখা হয়েছে, তাদের কৃতকর্মের পুরস্কারস্বরূপ’’। (সূরা আস-সাজদাহ’ আয়াত নং ১৭)
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আরো বলেন:
﴿ وُجُوهٞ يَوۡمَئِذٖ نَّاضِرَةٌ ٢٢ إِلَىٰ رَبِّهَا نَاظِرَةٞ ٢٣ ﴾ [ القيامة : ٢٢، ٢٣ ]
‘‘(২২) সে দিন কোনো কোনো মুখমণ্ডল উজ্জল হবে, (২৩) তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে’’। (সূরা আল -ক্বিয়ামাহ)
আর জাহান্নাম হচ্ছে আযাব, অপমান ও লাঞ্ছনার গৃহ। আল্লাহ তাঁর শত্রু কাফের সম্প্রদায়ের জন্য তা প্রস্তুত রেখেছেন। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَٱتَّقُواْ ٱلنَّارَ ٱلَّتِيٓ أُعِدَّتۡ لِلۡكَٰفِرِينَ ١٣١ ﴾ [ ال عمران : ١٣١ ]
‘‘তোমরা সে অগ্নিকে ভয় কর যা কাফিরদের জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে’’। (আলে ইমরান: ১৩১)
জাহান্নামের মধ্যেও বিভিন্ন ধরনের আযাব হবে; মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন:
﴿إِنَّآ أَعۡتَدۡنَا لِلظَّٰلِمِينَ نَارًا أَحَاطَ بِهِمۡ سُرَادِقُهَاۚ وَإِن يَسۡتَغِيثُواْ يُغَاثُواْ بِمَآءٖ كَٱلۡمُهۡلِ يَشۡوِي ٱلۡوُجُوهَۚ بِئۡسَ ٱلشَّرَابُ وَسَآءَتۡ مُرۡتَفَقًا ٢٩ ﴾ [ الكهف : ٢٩ ]
‘‘আমরা সীমালংঘনকারীদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি অগ্নি, যার দেয়াল তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রাখবে। তারা (পিপাসা নিবারনের জন্য) পানির জন্য আর্ত চিৎকার করবে, কিন্তু তাদেরকে দেওয়া হবে গলিত পদার্থের ন্যায় পানীয়, যা তাদের মুখমণ্ডল দগ্ধ করবে। তা কত নিকৃষ্ট পানীয় এবং তা কত নিকৃষ্ট আশ্রয়স্থল!’’ (সূরা আল-কাহাফ: ২৯)
সর্বশেষ কথা হচ্ছে যে, জান্নাত এবং জাহান্নাম প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা তিনি যেন আমাদেরকে জান্নাত দান করেন এবং জাহান্নাম হতে রক্ষা করেন।
সর্বোচ্চ বরকতময় আল্লাহ বলেন:
﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ أُوْلَٰٓئِكَ هُمۡ خَيۡرُ ٱلۡبَرِيَّةِ ٧ جَزَآؤُهُمۡ عِندَ رَبِّهِمۡ جَنَّٰتُ عَدۡنٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدٗاۖ رَّضِيَ ٱللَّهُ عَنۡهُمۡ وَرَضُواْ عَنۡهُۚ ذَٰلِكَ لِمَنۡ خَشِيَ رَبَّهُۥ ٨ ﴾ [ البينة : ٧، ٨ ]
‘‘(৭)যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে তারাই সৃষ্টির মধ্যে উত্তম। (৮)তাদের প্রতিপালকের কাছে রয়েছে তাদের জন্য পুরস্কার স্থায়ী জান্নাত, যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহমান। সেখানেই তাদের স্থায়ী নিবাস। আল্লাহ তাদের প্রতি প্রসন্ন এবং তারাও সন্তুষ্ট তাঁর প্রতি; আর তা তারই জন্যে, যে তার রবকে ভয় করে’’। (সূরা আল-বায়্যিনাহ)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ فَلَا تَعۡلَمُ نَفۡسٞ مَّآ أُخۡفِيَ لَهُم مِّن قُرَّةِ أَعۡيُنٖ جَزَآءَۢ بِمَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ١٧ ﴾ [ السجدة : ١٧ ]
‘‘আর কেউই জানে না তাদের জন্য নয়ন-প্রীতিকর কি লুকায়িত রাখা হয়েছে, তাদের কৃতকর্মের পুরস্কারস্বরূপ’’। (সূরা আস-সাজদাহ’ আয়াত নং ১৭)
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আরো বলেন:
﴿ وُجُوهٞ يَوۡمَئِذٖ نَّاضِرَةٌ ٢٢ إِلَىٰ رَبِّهَا نَاظِرَةٞ ٢٣ ﴾ [ القيامة : ٢٢، ٢٣ ]
‘‘(২২) সে দিন কোনো কোনো মুখমণ্ডল উজ্জল হবে, (২৩) তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে’’। (সূরা আল -ক্বিয়ামাহ)
আর জাহান্নাম হচ্ছে আযাব, অপমান ও লাঞ্ছনার গৃহ। আল্লাহ তাঁর শত্রু কাফের সম্প্রদায়ের জন্য তা প্রস্তুত রেখেছেন। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ وَٱتَّقُواْ ٱلنَّارَ ٱلَّتِيٓ أُعِدَّتۡ لِلۡكَٰفِرِينَ ١٣١ ﴾ [ ال عمران : ١٣١ ]
‘‘তোমরা সে অগ্নিকে ভয় কর যা কাফিরদের জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে’’। (আলে ইমরান: ১৩১)
জাহান্নামের মধ্যেও বিভিন্ন ধরনের আযাব হবে; মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন:
﴿إِنَّآ أَعۡتَدۡنَا لِلظَّٰلِمِينَ نَارًا أَحَاطَ بِهِمۡ سُرَادِقُهَاۚ وَإِن يَسۡتَغِيثُواْ يُغَاثُواْ بِمَآءٖ كَٱلۡمُهۡلِ يَشۡوِي ٱلۡوُجُوهَۚ بِئۡسَ ٱلشَّرَابُ وَسَآءَتۡ مُرۡتَفَقًا ٢٩ ﴾ [ الكهف : ٢٩ ]
‘‘আমরা সীমালংঘনকারীদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি অগ্নি, যার দেয়াল তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রাখবে। তারা (পিপাসা নিবারনের জন্য) পানির জন্য আর্ত চিৎকার করবে, কিন্তু তাদেরকে দেওয়া হবে গলিত পদার্থের ন্যায় পানীয়, যা তাদের মুখমণ্ডল দগ্ধ করবে। তা কত নিকৃষ্ট পানীয় এবং তা কত নিকৃষ্ট আশ্রয়স্থল!’’ (সূরা আল-কাহাফ: ২৯)
সর্বশেষ কথা হচ্ছে যে, জান্নাত এবং জাহান্নাম প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা তিনি যেন আমাদেরকে জান্নাত দান করেন এবং জাহান্নাম হতে রক্ষা করেন।
উত্তর: তিনি আল্লাহর বান্দাহ ও তাঁর রসূল। আল্লাহ তাকে পিতা ছাড়াই সৃষ্টি করেছেন অতঃপর তাকে বলেছেন হও আর সে হয়ে গেছে। তিনি শেষ যামানায় দুনিয়ায় আসবেন এবং মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শরীয়ত অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করবেন। কেননা আল্লাহ তাকে রুহ এবং স্বশরীরে তাঁর কাছে উঠিয়ে নিয়ে গেছেন। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ إِنَّ مَثَلَ عِيسَىٰ عِندَ ٱللَّهِ كَمَثَلِ ءَادَمَۖ خَلَقَهُۥ مِن تُرَابٖ ثُمَّ قَالَ لَهُۥ كُن فَيَكُونُ ٥٩ ﴾ [ ال عمران : ٥٩ ]
‘‘নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত হচ্ছে আদমের মতো। তাকে মাটি দিয়ে তৈরী করে ছিলেন অতঃপর তাকে বলেছিলেন হয়ে যাও, সঙ্গে সঙ্গে হয়ে গেলেন’’। (সূরা আলে ইমরান: ৫৯)
তিনি সুদৃঢ় সাহসী রাসূলগণের একজন, তিনি মানুষকে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের সুসংবাদ জানিয়েছিলেন। তার মা সত্যবাদী ও পবিত্রা ত্রুটিমুক্ত অত্যন্ত ভালো, পাক পবিত্র এবং নিষ্কলুষ ছিলেন।
﴿ إِنَّ مَثَلَ عِيسَىٰ عِندَ ٱللَّهِ كَمَثَلِ ءَادَمَۖ خَلَقَهُۥ مِن تُرَابٖ ثُمَّ قَالَ لَهُۥ كُن فَيَكُونُ ٥٩ ﴾ [ ال عمران : ٥٩ ]
‘‘নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত হচ্ছে আদমের মতো। তাকে মাটি দিয়ে তৈরী করে ছিলেন অতঃপর তাকে বলেছিলেন হয়ে যাও, সঙ্গে সঙ্গে হয়ে গেলেন’’। (সূরা আলে ইমরান: ৫৯)
তিনি সুদৃঢ় সাহসী রাসূলগণের একজন, তিনি মানুষকে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের সুসংবাদ জানিয়েছিলেন। তার মা সত্যবাদী ও পবিত্রা ত্রুটিমুক্ত অত্যন্ত ভালো, পাক পবিত্র এবং নিষ্কলুষ ছিলেন।
১৬১
{প্রশ্ন: ১৫৯} নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মানুষ্ঠান এবং ইসরা, মিরাজ ও অন্যান্য উৎসব পালনের হুকুম কি?উত্তর: এগুলো বিদ‘আত ও নাজায়েয এবং হারাম। কেননা মুমিনদের জন্য এমন কোনো কিছুই পালন করা বৈধ নয় যা আল্লাহর শরীয়তে মওজুদ নেই। আর এসব অনুষ্ঠান পালন করার কোনো বিধান আল্লাহ দেন নি। আল্লাহ আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, আল্লাহ ও নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে শরীয়তি বিধান দিয়েছেন শুধুমাত্র তা-ই পালন করার জন্য। মহান আল্লাহ বলেছেন:
﴿ وَمَآ ءَاتَىٰكُمُ ٱلرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَىٰكُمۡ عَنۡهُ فَٱنتَهُواْۚ ﴾ [ الحشر : ٧ ]
‘‘আর রাসূল তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেছেন তা বর্জন কর’’। (সূরা আল-হাশর: ৭)
নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ»
‘‘যে ব্যক্তি এমন কিছু নব উদ্ভাবন করবোর অস্তিত্ব আমাদের শরীয়তে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত হবে’’। (বুখারী ও মুসলিম)
অতএব নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মানুষ্ঠান আল্লাহর অনুমোদিত দীনের অন্তর্ভুক্ত নয়। সুতরাং তা বিদ‘আত।
﴿ وَمَآ ءَاتَىٰكُمُ ٱلرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَىٰكُمۡ عَنۡهُ فَٱنتَهُواْۚ ﴾ [ الحشر : ٧ ]
‘‘আর রাসূল তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেছেন তা বর্জন কর’’। (সূরা আল-হাশর: ৭)
নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ»
‘‘যে ব্যক্তি এমন কিছু নব উদ্ভাবন করবোর অস্তিত্ব আমাদের শরীয়তে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত হবে’’। (বুখারী ও মুসলিম)
অতএব নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মানুষ্ঠান আল্লাহর অনুমোদিত দীনের অন্তর্ভুক্ত নয়। সুতরাং তা বিদ‘আত।
উত্তর: তারা রাসূলের আনুগত্য করে, তাঁর হেদায়াতের পথে চলে এবং তারা নিজেদের মধ্যে আল্লাহ ও রাসূলের হুকুম বিধান বাস্তবায়ন করে থাকে। তারাই উত্তম চরিত্র-বৈশিষ্ট্যের দিকে মানুষকে আহ্বান করে। তারা অপর মুসলিম ভাইদের জন্য তাই পছন্দ করে যা নিজেদের জন্য পছন্দ করে। আর তারা আল্লাহ ও রাসূলের দুষমনদেরকে পছন্দ করে না এবং মুমিনগণ ব্যতীত অন্য কাউকে বন্ধু মনে করে না। তারা সৎকাজের আদেশ দান করে এবং অসৎ কাজে বাধা প্রদান করে, তারা জেনে-বুঝে সুস্পষ্ট বিধানের দিকে সকলকে আহ্বান করে। তারা দৃঢ়তা অবলম্বন করে এবং আল্লাহর পথে যত কষ্ট ও বাধা আসে সবই ধৈর্য্যের সাথে মোকাবিলা করে।
তাদের অন্যান্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে: হক উপদেশ, ধৈর্যের পরামর্শ, সালাত কায়েম, যাকাত আদায়, রমাযান মাসে সাওম পালন ও হজ্জ আদায় করা। তারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে এবং তারা কারো কোনো অপমান ও নিন্দাকে ভয় পায় না। তারা আল্লাহওয়ালা সৎ নেতৃত্বের আনুগত্য করে, আল্লাহ ও রাসূলের জন্য নছিহত করে এবং মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ লোকদেরকেও নসীহত দান করে। আর তারা কোনো প্রকার খেয়ানত করে না, গাদ্দারী করে না, অন্যায়, অপরাধ করে না। তারা দীনে হকের ব্যাপারে একনিষ্ঠ, দীনদার এবং তারা আল্লাহর রজ্জুকে যথাযথভবে আঁকড়ে থাকে।
তাদের অন্যান্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে: হক উপদেশ, ধৈর্যের পরামর্শ, সালাত কায়েম, যাকাত আদায়, রমাযান মাসে সাওম পালন ও হজ্জ আদায় করা। তারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে এবং তারা কারো কোনো অপমান ও নিন্দাকে ভয় পায় না। তারা আল্লাহওয়ালা সৎ নেতৃত্বের আনুগত্য করে, আল্লাহ ও রাসূলের জন্য নছিহত করে এবং মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ লোকদেরকেও নসীহত দান করে। আর তারা কোনো প্রকার খেয়ানত করে না, গাদ্দারী করে না, অন্যায়, অপরাধ করে না। তারা দীনে হকের ব্যাপারে একনিষ্ঠ, দীনদার এবং তারা আল্লাহর রজ্জুকে যথাযথভবে আঁকড়ে থাকে।
উত্তর: ফিকাহর বিধান হচ্ছে; দীন ইসলামকে দলীল প্রমাণ সহ জানা ও বুঝা। আরো যা জানা যাবে তা হচ্ছে যে, দীনের সাথে সম্পর্কহীন বিষয়বস্তু, দীনকে যে সব বিষয় ত্রুটিপূর্ণ করে এবং দীনকে দুর্বল করে দেয় তাও স্পষ্ট হবে। দীনকে এভাবে জানা সকল মুসলিম বান্দার ওয়াজিব এবং অপরিহার্য; কেননা তা ব্যতীত আল্লাহর বান্দারা সুষ্ঠু সুন্দর ও নির্ভুলভাবে দৃঢ় চিত্তে ইবাদাত করতে সক্ষম হবে না। আর তারই দ্বারা কেবল বিপদ-আপদ ও ফিতনার মোকাবেলায় ধৈর্য ধারণ করে দীনের উপর সুদৃঢ়ভাবে টিকে থাকতে সক্ষম হয়। যারা জেনে-বুঝে ইসলামকে কবুল করেছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন:
﴿ وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَقُولُ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ فَإِذَآ أُوذِيَ فِي ٱللَّهِ جَعَلَ فِتۡنَةَ ٱلنَّاسِ كَعَذَابِ ٱللَّهِۖ ﴾ [ العنكبوت : ١٠ ]
‘‘কতক লোক বলে, আমরা আল্লাহর উপর ঈমান স্থাপন করেছি; কিন্তু আল্লাহর পথে যখন তারা নির্যাতিত হয়, তখন তারা মানুষের নির্যাতনকে আল্লাহর আযাবের মত মনে করে’’। (সূরা আল-আনকাবূত: ১০)
সুতরাং দীনকে এমনভাবে বুঝে নিতে হবে যেন, আল্লাহ ও রাসুলের হুকুম-বিধান পালনের সময় বিপদ-আপদ এমনকি সব রকম ফিতনা-ফাসাদের সময় ঈমানের বিপর্যয় না ঘটে। বরং সর্বাবস্থায় আল্লাহর বিধান অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে এবং তাঁর বিধানের পরিপন্থী কার্যকলাপ থেকে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখতে হবে। [(আল-ফিকহ ফিদদীন ঈসমাতুন মিনাল ফিতান, ড: সলেহ আল-ফাউযান, পৃষ্টা নং-১২, প্রথম প্রকাশ ১৪১৮ হিজরী)।]
আল-ফিকহুল আকবার বা সর্বোচ্চ ফিকহ হচ্ছে: শরীয়তের দাবী অনুযায়ী বিশুদ্ধ আকীদা-বিশ্বাসকে জানা।
﴿ وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَقُولُ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ فَإِذَآ أُوذِيَ فِي ٱللَّهِ جَعَلَ فِتۡنَةَ ٱلنَّاسِ كَعَذَابِ ٱللَّهِۖ ﴾ [ العنكبوت : ١٠ ]
‘‘কতক লোক বলে, আমরা আল্লাহর উপর ঈমান স্থাপন করেছি; কিন্তু আল্লাহর পথে যখন তারা নির্যাতিত হয়, তখন তারা মানুষের নির্যাতনকে আল্লাহর আযাবের মত মনে করে’’। (সূরা আল-আনকাবূত: ১০)
সুতরাং দীনকে এমনভাবে বুঝে নিতে হবে যেন, আল্লাহ ও রাসুলের হুকুম-বিধান পালনের সময় বিপদ-আপদ এমনকি সব রকম ফিতনা-ফাসাদের সময় ঈমানের বিপর্যয় না ঘটে। বরং সর্বাবস্থায় আল্লাহর বিধান অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে এবং তাঁর বিধানের পরিপন্থী কার্যকলাপ থেকে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখতে হবে। [(আল-ফিকহ ফিদদীন ঈসমাতুন মিনাল ফিতান, ড: সলেহ আল-ফাউযান, পৃষ্টা নং-১২, প্রথম প্রকাশ ১৪১৮ হিজরী)।]
আল-ফিকহুল আকবার বা সর্বোচ্চ ফিকহ হচ্ছে: শরীয়তের দাবী অনুযায়ী বিশুদ্ধ আকীদা-বিশ্বাসকে জানা।
উত্তর: এ জাতীয় প্রশ্ন করা ফরয বা অবশ্য কর্তব্য। কেননা মহান আল্লাহ বলেছেন:
﴿ فَسَۡٔلُوٓاْ أَهۡلَ ٱلذِّكۡرِ إِن كُنتُمۡ لَا تَعۡلَمُونَ ٤٣ بِٱلۡبَيِّنَٰتِ وَٱلزُّبُرِۗ ﴾ [ النحل : ٤٣، ٤٤ ]
‘‘৪৩) অতএব তোমরা যদি না জান; তবে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস করবে, (৪৪) স্পষ্ট দলীল-প্রমাণ সহ’’। (সূরা আন-নাহল)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ وَإِذۡ أَخَذَ ٱللَّهُ مِيثَٰقَ ٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَٰبَ لَتُبَيِّنُنَّهُۥ لِلنَّاسِ وَلَا تَكۡتُمُونَهُۥ ﴾ [ ال عمران : ١٨٧ ]
‘‘আর স্মরণ করুন, আল্লাহ যখন আহলে কিতাবদের কাছ থেকে প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করলেন যে; তারা তা (কিতাবকে) মানুষের নিকট বর্ণনা করবে এবং তা গোপন করবে না’’। (সূরা আলে-ইমরান: ১৮৭)
সালফে সালেহীনের মধ্যে কেউ কেউ বলেন যে, ‘‘তুমি তোমার দীন সম্পর্কে জানার জন্য এমনভাবে প্রশ্ন করবে যেন লোকে বলে তুমি দীনের জন্য পাগল হয়ে গেছ’! সাহাবায়ে কিরামগণ রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দীন সম্পর্কে তাদের অজানা বিষয়ে প্রশ্ন করে জেনে নিতেন।
﴿ فَسَۡٔلُوٓاْ أَهۡلَ ٱلذِّكۡرِ إِن كُنتُمۡ لَا تَعۡلَمُونَ ٤٣ بِٱلۡبَيِّنَٰتِ وَٱلزُّبُرِۗ ﴾ [ النحل : ٤٣، ٤٤ ]
‘‘৪৩) অতএব তোমরা যদি না জান; তবে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস করবে, (৪৪) স্পষ্ট দলীল-প্রমাণ সহ’’। (সূরা আন-নাহল)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿ وَإِذۡ أَخَذَ ٱللَّهُ مِيثَٰقَ ٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَٰبَ لَتُبَيِّنُنَّهُۥ لِلنَّاسِ وَلَا تَكۡتُمُونَهُۥ ﴾ [ ال عمران : ١٨٧ ]
‘‘আর স্মরণ করুন, আল্লাহ যখন আহলে কিতাবদের কাছ থেকে প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করলেন যে; তারা তা (কিতাবকে) মানুষের নিকট বর্ণনা করবে এবং তা গোপন করবে না’’। (সূরা আলে-ইমরান: ১৮৭)
সালফে সালেহীনের মধ্যে কেউ কেউ বলেন যে, ‘‘তুমি তোমার দীন সম্পর্কে জানার জন্য এমনভাবে প্রশ্ন করবে যেন লোকে বলে তুমি দীনের জন্য পাগল হয়ে গেছ’! সাহাবায়ে কিরামগণ রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দীন সম্পর্কে তাদের অজানা বিষয়ে প্রশ্ন করে জেনে নিতেন।
উত্তর: মুসলিমদেরকে পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয় বিভিন্ন কারণে এবং তার পিছনে অনেক হেকমত আছে। যেমন; আল্লাহ বলেন:
﴿ لِيَبۡلُوَكُمۡ أَيُّكُمۡ أَحۡسَنُ عَمَلٗاۚ ﴾ [ الملك : ٢ ]
‘‘তোমাদেরকে পরীক্ষা করে দেখা হয় যে, কে তোমাদের মাঝে কাজ-কর্মে উত্তম’’। (সূরাতুল মুলক:২)
হিকমাতের মধ্যে আরো আছে: মানুষের মধ্যে কে কতটুকু ধৈর্য ও সংযত থাকতে পারে তার পরীক্ষা। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ إِنَّمَآ أَمۡوَٰلُكُمۡ وَأَوۡلَٰدُكُمۡ فِتۡنَةٞۚ وَٱللَّهُ عِندَهُۥٓ أَجۡرٌ عَظِيمٞ ١٥ ﴾ [ التغابن : ١٥ ]
‘‘তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো কেবল পরীক্ষাস্বরূপ। আর আল্লাহর কাছে রয়েছে মহা পুরস্কার’’। (সূরা আত-তাগাবুন: ১৫)
অতএব ঈমান ও আমলের মানদণ্ডে দীনের অনুসারীদের শেষ পরিণতি বিপদজনক হয়ে যেতে পারে। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ قُلۡ إِن كَانَ ءَابَآؤُكُمۡ وَأَبۡنَآؤُكُمۡ وَإِخۡوَٰنُكُمۡ وَأَزۡوَٰجُكُمۡ وَعَشِيرَتُكُمۡ وَأَمۡوَٰلٌ ٱقۡتَرَفۡتُمُوهَا وَتِجَٰرَةٞ تَخۡشَوۡنَ كَسَادَهَا وَمَسَٰكِنُ تَرۡضَوۡنَهَآ أَحَبَّ إِلَيۡكُم مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَجِهَادٖ فِي سَبِيلِهِۦ فَتَرَبَّصُواْ حَتَّىٰ يَأۡتِيَ ٱللَّهُ بِأَمۡرِهِۦۗ وَٱللَّهُ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡفَٰسِقِينَ ٢٤ ﴾ [ التوبة : ٢٤ ]
‘‘বলুন; তোমাদের নিকট যদি তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই, তোমাদের পত্নী, তোমাদের গোত্র, তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ, তোমাদের ব্যাবসা যা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় কর এবং তোমাদের বাসস্থান -যাকে তোমারা পছন্দ কর- আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও তাঁর পথে জিহাদ করা থেকে অধিক প্রিয় হয়, তবে অপেক্ষা কর আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত! আর আল্লাহ কোনো ফাসেক সম্প্রদায়কে হেদায়াত দেন না। (সূরা আত-তাওবাহ: ২৪)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿وَجَعَلۡنَا بَعۡضَكُمۡ لِبَعۡضٖ فِتۡنَةً أَتَصۡبِرُونَۗ وَكَانَ رَبُّكَ بَصِيرٗا ٢٠۞﴾ [ الفرقان : ٢٠ ]
‘‘আর আমরা তোমাদের কিছু সংখ্যককে অন্যদের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ করেছি। তোমরা ধৈর্য ধারণ করবে কি? আপনার প্রতিপালনক সব কিছু দেখেন’’। (সূরা আল-ফুরকান: ২০)
সুতরাং মুসলিমদের উপর কর্তব্য হচ্ছে ঈমানের বলে বলিয়ান হয়ে ফেতনা প্রতিরোধ করা এবং আল্লাহর রজ্জুকে (কুরআন-হাদীস) সংগবদ্ধ হয়ে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা। আর যারা কুরআন-হাদীসের জ্ঞান রাখে তাদের থেকেই শরীয়তের হুকুম-আহকাম জেনে নেওয়া [‘আল ফিকহ ফিদ দীন ঈসমাতুন মিনাল ফিতান’/ ড. সালেহ আল-ফাউযান, প্রথম প্রকাশ: ১৪১৮ হিজরী)]।
﴿ لِيَبۡلُوَكُمۡ أَيُّكُمۡ أَحۡسَنُ عَمَلٗاۚ ﴾ [ الملك : ٢ ]
‘‘তোমাদেরকে পরীক্ষা করে দেখা হয় যে, কে তোমাদের মাঝে কাজ-কর্মে উত্তম’’। (সূরাতুল মুলক:২)
হিকমাতের মধ্যে আরো আছে: মানুষের মধ্যে কে কতটুকু ধৈর্য ও সংযত থাকতে পারে তার পরীক্ষা। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ إِنَّمَآ أَمۡوَٰلُكُمۡ وَأَوۡلَٰدُكُمۡ فِتۡنَةٞۚ وَٱللَّهُ عِندَهُۥٓ أَجۡرٌ عَظِيمٞ ١٥ ﴾ [ التغابن : ١٥ ]
‘‘তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো কেবল পরীক্ষাস্বরূপ। আর আল্লাহর কাছে রয়েছে মহা পুরস্কার’’। (সূরা আত-তাগাবুন: ১৫)
অতএব ঈমান ও আমলের মানদণ্ডে দীনের অনুসারীদের শেষ পরিণতি বিপদজনক হয়ে যেতে পারে। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ قُلۡ إِن كَانَ ءَابَآؤُكُمۡ وَأَبۡنَآؤُكُمۡ وَإِخۡوَٰنُكُمۡ وَأَزۡوَٰجُكُمۡ وَعَشِيرَتُكُمۡ وَأَمۡوَٰلٌ ٱقۡتَرَفۡتُمُوهَا وَتِجَٰرَةٞ تَخۡشَوۡنَ كَسَادَهَا وَمَسَٰكِنُ تَرۡضَوۡنَهَآ أَحَبَّ إِلَيۡكُم مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَجِهَادٖ فِي سَبِيلِهِۦ فَتَرَبَّصُواْ حَتَّىٰ يَأۡتِيَ ٱللَّهُ بِأَمۡرِهِۦۗ وَٱللَّهُ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡفَٰسِقِينَ ٢٤ ﴾ [ التوبة : ٢٤ ]
‘‘বলুন; তোমাদের নিকট যদি তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই, তোমাদের পত্নী, তোমাদের গোত্র, তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ, তোমাদের ব্যাবসা যা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় কর এবং তোমাদের বাসস্থান -যাকে তোমারা পছন্দ কর- আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও তাঁর পথে জিহাদ করা থেকে অধিক প্রিয় হয়, তবে অপেক্ষা কর আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত! আর আল্লাহ কোনো ফাসেক সম্প্রদায়কে হেদায়াত দেন না। (সূরা আত-তাওবাহ: ২৪)
মহান আল্লাহ আরো বলেন:
﴿وَجَعَلۡنَا بَعۡضَكُمۡ لِبَعۡضٖ فِتۡنَةً أَتَصۡبِرُونَۗ وَكَانَ رَبُّكَ بَصِيرٗا ٢٠۞﴾ [ الفرقان : ٢٠ ]
‘‘আর আমরা তোমাদের কিছু সংখ্যককে অন্যদের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ করেছি। তোমরা ধৈর্য ধারণ করবে কি? আপনার প্রতিপালনক সব কিছু দেখেন’’। (সূরা আল-ফুরকান: ২০)
সুতরাং মুসলিমদের উপর কর্তব্য হচ্ছে ঈমানের বলে বলিয়ান হয়ে ফেতনা প্রতিরোধ করা এবং আল্লাহর রজ্জুকে (কুরআন-হাদীস) সংগবদ্ধ হয়ে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা। আর যারা কুরআন-হাদীসের জ্ঞান রাখে তাদের থেকেই শরীয়তের হুকুম-আহকাম জেনে নেওয়া [‘আল ফিকহ ফিদ দীন ঈসমাতুন মিনাল ফিতান’/ ড. সালেহ আল-ফাউযান, প্রথম প্রকাশ: ১৪১৮ হিজরী)]।
১৬৬
{প্রশ্ন: ১৬৪} মুসলিম জাহানে দলের সংখ্যা অনেক, আর প্রত্যেকটি দলই নিজেদেরকে সার্বিক ধর্মবিশ্বাসের অধিকারী মনে করে; অতএব সত্য সঠিক কোনটি তা বুঝার উপায় কি?উত্তর: সুস্পষ্ট কথা হচ্ছে যে, সঠিক সোজা পথের অনুসারী (আহলুস-সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত) তারাই যারা আল্লাহর রাসুলকে অনুসরণ করে অর্থাৎ তারা কুরআন এবং সুন্নাহ মেনে চলে। আর তারা আহ্বান করে আল্লাহর কিতাব ও রসূলের সুন্নাতের দিকে। তারা কুরআন ও হাদীস অনুযায়ী যথাযথ যুগোপযোগী জীবন-যাপন করে সাহাবীগণের আদর্শ গ্রহণ করত তাদের প্রতি সন্তুষ্টি জ্ঞাপন এবং তাদের হিদায়াতের পথে যারা চলে তারাই সত্য সঠিক দল বা জামায়াত। এসব বৈশিষ্ট্য ব্যতীত কোনো দল সঠিক বলে বিবেচিত নয় বরং বাতিল ও পথভ্রষ্ট।