hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তাক্বওয়া অর্জনের উপায়

লেখকঃ মোহাম্মদ ইমাম হোসাইন কামরুল

১৩
তাক্বওয়ার পরকালীন পুরস্কার
এটি হচ্ছে তাক্বওয়া অবলম্বন করার চিরস্থায়ী ও মূল ফলাফল, যা অর্জিত হবে মৃত্যুর পর কিয়ামতের মাঠে। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা তুলে ধরা হলো :

১. পাপ মোচন হবে ও অশেষ সওয়াব লাভ করা যাবে :

তাক্বওয়া অবলম্বন করলে আল্লাহ তা‘আলা তাদের গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন এবং অশেষ সওয়াব দান করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَنْ يَّتَّقِ اللهَ يُكَفِّرْ عَنْهُ سَيِّئَاتِهٖ وَيُعْظِمْ لَهٗۤ اَجْرًا﴾

যে আল্লাহকে ভয় করে তিনি তার পাপ মোচন করবেন এবং তাকে মহাপুরস্কারে ভূষিত করবেন। (সূরা তালাক্ব- ৫)

অতএব আয়াতের দুটি ব্যাখ্যা হতে পারে- (১) আল্লাহ তাদেরকে সামান্য আমলের বিনিময়ে অনেক বেশি সওয়াব দান করেন। ফলে তাদের সওয়াবের পরিমান গোনাহের থেকে বেশি হয়ে যায়। সুতরাং সেসব গুনাহও আল্লাহর পক্ষ হতে ক্ষমা হয়ে যায়। (২) তাক্বওয়াবান ব্যক্তিদের তওবা ও ইস্তেগফার সহ কিছু বিশেষ আমলের কারণে আল্লাহ তা‘আলা তাদের গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন।

২. ক্বিয়ামতের দিন মর্যাদার শীর্ষস্থান লাভ করা যাবে :

কিয়ামতের দিন যখন সমস্ত মানুষ একত্রিত হবে, তখন মুত্তাক্বীদেরকেই সর্বোচ্চ মর্যাদা প্রদান করা হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿زُيِّنَ لِلَّذِيْنَ كَفَرُوا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا وَيَسْخَرُوْنَ مِنَ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَالَّذِيْنَ اتَّقَوْا فَوْقَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ﴾

যারা সত্য প্রত্যাখ্যান করে তাদের নিকট পার্থিব জীবন সুশোভিত। তারা মুমিনদেরকে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে থাকে; অথচ যারা তাক্বওয়া অবলম্বন করে কিয়ামতের দিন তারা তাদের ঊর্ধ্বে থাকবে। (সূরা বাকারা- ২১২)

শীর্ষস্থান লাভের দুটি দিক হতে পারে- (১) দুনিয়াতে কাফিরদের যে অবস্থা ছিল, পরকালে মুমিনদের অবস্থা হবে তার শীর্ষে। (২) মুমিনরা পরকালে থাকবে (জান্নাতের) প্রকোষ্ঠে এবং কাফিররা থাকবে জাহান্নামের জ্বলন্ত অগ্নির মধ্যে।

৩. পুলসিরাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে :

পুলসিরাত হচ্ছে জাহান্নামের উপর অবস্থিত একটি বিশেষ রাস্তা বা পুল, যা সকলকেই অতিক্রম করতে হবে। এটি অতিক্রম করতে না পারলে জাহান্নামে পতিত হতে হবে। একমাত্র মুত্তাক্বী বান্দা ছাড়া এটিকে কেউ সুষ্ঠুভাবে অতিক্রম করতে পারবে না। আর আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَاِنْ مِّنْكُمْ اِلَّا وَارِدُهَاۚ كَانَ عَلٰى رَبِّكَ حَتْمًا مَّقْضِيًّا ثُمَّ نُنَجِّى الَّذِيْنَ اتَّقَوْا وَّنَذَرُ الظَّالِمِيْنَ فِيْهَا جِثِيًّا﴾

তোমাদের প্রত্যেকেই সেটা (পুলসিরাত) অতিক্রম করবে; এটা তোমার প্রতিপালকের অনিবার্য সিদ্ধান্ত। পরে আমি মুত্তাক্বীদেরকে উদ্ধার করব এবং যালিমদেরকে সেথায় নতজানু অবস্থায় রেখে দেব। (সূরা মারইয়াম- ৭১, ৭২)

৪. জান্নাত লাভ করা যাবে :

তাক্বওয়া অর্জনের চূড়ান্ত ফলাফল হচ্ছে জান্নাত লাভ করা। আল্লাহ তা‘আলা পরকালে মুত্তাক্বী বান্দাদেরকে তা দান করবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿تِلْكَ الْجَنَّةُ الَّتِيْ نُوْرِثُ مِنْ عِبَادِنَا مَنْ كَانَ تَقِيًّا﴾

এই সেই জান্নাত, যার অধিকারী করব আমার বান্দাদের মধ্যে মুত্তাক্বীদেরকে। (সূরা মারইয়াম- ৬৩)

﴿وَسَارِعُوْاۤ اِلٰى مَغْفِرَةٍ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمٰوَاتُ وَالْاَرْضُ اُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِيْنَ﴾

তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে ধাবিত হও, যার প্রসারতা ও বিস্তৃতি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সদৃশ। আর তা মুত্তাক্বীদের জন্যই নির্মিত হয়েছে। (সূরা আলে ইমরান- ১৩৩)

﴿إِنَّ لِلْمُتَّقِيْنَ عِنْدَ رَبِّهِمْ جَنَّاتِ النَّعِيْمِ﴾

অবশ্যই মুত্তাক্বীদের জন্য তাদের প্রতিপালকের নিকট রয়েছে ভোগবিলাসপূর্ণ জান্নাত। (সূরা কালাম- ৩৪)

অপর আয়াতে এসেছে,

﴿وَسِيْقَ الَّذِيْنَ اتَّقَوْا رَبَّهُمْ إِلَى الْجَنَّةِ زُمَرًا حَتّٰۤى اِذَا جَآءُوْهَا وَفُتِحَتْ اَبْوَابُهَا وَقَالَ لَهُمْ خَزَنَتُهَا سَلَامٌ عَلَيْكُمْ طِبْتُمْ فَادْخُلُوْهَا خَالِدِيْنَ﴾

যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করত তাদেরকে দলে দলে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে এবং এর দরজা খুলে দেয়া হবে, তখন তার রক্ষণাবেক্ষণকারী ফেরেশতারা বলবে, হে জান্নাতীরা! তোমাদের প্রতি সালাম। তোমাদের আগমন শুভ হোক। তোমরা চিরস্থায়ীভাবে জান্নাতে প্রবেশ করো। (সূরা যুমার- ৭৩)

হাফেয ইবনে কাসীর (রহ.) বলেন, এটা হচ্ছে সৌভাগ্যবান মুমিনদের সম্পর্কে সংবাদ, যখন তারা তাদের শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার স্তরের দিকে অগ্রসর হবে। অর্থাৎ দলবদ্ধভাবে জান্নাতের দিকে অগ্রসর হবে। দলে দলে বলতে নৈকট্যশীলদের দল, অতঃপর পুণ্যবানদের দল, অতঃপর তাদের নিকটতর সকল দল। অর্থাৎ নবীগণের সাথে নবীগণ সত্যপরায়ণদের সাথে তাদের সমগোত্রীয়গণ, শহীদদের সাথে তাদের সমপর্যায়ের লোক, ওলামায়ে কেরামের সাথে তাদের নিকটবর্তীগণ, অনুরূপভাবে প্রত্যেক দলের সাথে তাদের সমপর্যায়ভুক্ত দলবদ্ধ হয়ে। [তাফসীর ইবনে কাসীর, ৭ম খন্ড, পৃঃ ১১৯, সূরা যুমার ৭৩নং আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রঃ।]

৫. তারা জান্নাতের সর্বোচ্চ স্তর ও সর্বোত্তম নিয়ামত লাভ করবে :

মুত্তাক্বী বান্দাগণ কেবল জান্নাত পেয়ে ক্ষান্ত হবে না; বরং তারা তাক্বওয়ার ভিত্তিতে জান্নাতের বিভিন্ন স্তরে এমনকি শীর্ষস্থান পর্যন্তও আরোহণ করবে। অতঃপর তারা সেখানে সর্বোত্তম নিয়ামত লাভ করবে। কুরআন মাজীদে এসেছে,

﴿اِنَّ لِلْمُتَّقِيْنَ مَفَازًا ﴾

নিশ্চয় মুত্তাক্বীদের জন্য রয়েছে অনেক পুরস্কার। (সূরা নাবা- ৩১)

অপর আয়াতে এসেছে,

﴿وَإِنَّ لِلْمُتَّقِيْنَ لَحُسْنَ مَاٰبٍ﴾

মুত্তাক্বীদের জন্য রয়েছে উত্তম আবাস। (সূরা সোয়াদ- ৪৯)

﴿جَنَّاتِ عَدْنٍ مُّفَتَّحَةً لَّهُمُ الْأَبْوَابُ مُتَّكِئِيْنَ فِيْهَا يَدْعُوْنَ فِيْهَا بِفَاكِهَةٍ كَثِيْرَةٍ وَّشَرَابٍ وَعِنْدَهُمْ قَاصِرَاتُ الطَّرْفِ أَتْرَابٌ هٰذَا مَا تُوْعَدُوْنَ لِيَوْمِ الْحِسَابِ إِنَّ هٰذَا لَرِزْقُنَا مَا لَهٗ مِنْ نَّفَادٍ﴾

চিরস্থায়ী জান্নাত, তাদের জন্য উন্মুক্ত যার দ্বার। সেথায় তারা আসীন হবে হেলান দিয়ে, সেথায় তারা বহুবিধ ফলমূল ও পানীয়ের জন্য আদেশ দিবে এবং তাদের পার্শ্বে থাকবে আনতনয়না সমবয়স্কা তরুণীগণ। এটাই হিসাব দিবসের জন্য তোমাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি। এটাই আমার দেয়া রিযিক, যা নিঃশেষ হবে না। (সূরা সোয়াদ: ৫০-৫৪)

﴿وَزُخْرُفًاؕ وَاِنْ كُلُّ ذٰلِكَ لَمَّا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَاؕ وَالْاٰخِرَةُ عِنْدَ رَبِّكَ لِلْمُتَّقِيْنَ﴾

কিন্তু এগুলো তো শুধু পার্থিব জীবনের ভোগ সম্ভার। আর মুত্তাক্বীদের জন্য তোমার প্রতিপালকের নিকট রয়েছে আখিরাত (এর কল্যাণ)। (সূরা যুখরুফ- ৩৫)

﴿تِلْكَ الدَّارُ الْاٰخِرَةُ نَجْعَلُهَا لِلَّذِيْنَ لَا يُرِيْدُوْنَ عُلُوًّا فِى الْاَرْضِ وَلَا فَسَادًاؕ وَالْعَاقِبَةُ لِلْمُتَّقِيْنَ﴾

এটা আখিরাতের আবাস যা আমি নির্ধারিত করি তাদের জন্য, যারা এ পৃথিবীতে উগ্রতা প্রকাশ করে না এবং বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চায় না। আর শুভ পরিণাম মুত্তাক্বীদের জন্য। (সূরা ক্বাসাস- ৮৩)

৬. তারা দু‘টি জান্নাত লাভ করবে :

﴿وَلِمَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهٖ جَنَّتَانِ فَبِاَيِّ اٰلَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ﴾

আর যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের সামনে উপস্থিত হওয়াকে ভয় করে, তার জন্য রয়েছে দু’টি জান্নাত। অতএব হে জিন ও মানব! তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ কোন্ নিয়ামত অস্বীকার করবে? (সূরা আর রহমান- ৪৬, ৪৭)

এ দুটি জান্নাতের বর্ণনায় হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللّٰهِ بْنِ قَيْسٍ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ رَسُولَ اللّٰهِ قَالَ جَنَّتَانِ مِنْ فِضَّةٍ اٰنِيَتُهُمَا وَمَا فِيهِمَا وَجَنَّتَانِ مِنْ ذَهَبٍ اٰنِيَتُهُمَا وَمَا فِيهِمَا وَمَا بَيْنَ الْقَوْمِ وَبَيْنَ أَنْ يَنْظُرُوا إِلٰى رَبِّهِمْ إِلَّا رِدَاءُ الْكِبْرِ عَلٰى وَجْهِه فِي جَنَّةِ عَدْنٍ

দুটি জান্নাত এবং তার পাত্রসমূহ ও অন্যান্য সবকিছু হবে রুপার তৈরি। আরো দুটি জান্নাত এবং তার পাত্রসমূহ ও অন্যান্য সবকিছুই হবে স্বর্ণের তৈরি। আদন নামক জান্নাতে জান্নাতবাসীগণ ও তাদের বরকতময় মহান প্রভুর দীদার লাভের মাঝখানে তাঁর চেহারার উপর তাঁর গৌরবের চাদর ব্যতীত আর কোন প্রতিবন্ধক থাকবে না। [সহীহ বুখারী, হা/৪৮৭৮, ৭৪৪৪; সহীহ মুসলিম, হা/৪৬৬; ইবনে মাজাহ, হা/১৮৬।]

৭. কিয়ামতের দিন মুত্তাক্বী বান্দাদের বন্ধুত্ব লাভ করা যাবে :

কিয়ামতের দিন যখন নিজেদের আমলনামা নিয়ে সকল মানুষ দিশেহারা হয়ে যাবে, তখন প্রত্যেকেই একে অপরের শত্রুতে পরিণত হবে, তখন কেবলমাত্র মুত্তাক্বী বান্দাগণ একে অপরের বন্ধুত্ব লাভ করবে। কুরআন মাজীদে এসেছে,

﴿اَلْاَخِلَّآءُ يَوْمَئِذٍ ۢبَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ اِلَّا الْمُتَّقِيْنَ﴾

সেদিন বন্ধুরা একে অপরের শত্রুতে পরিণত হবে, তবে মুত্তাক্বীরা ব্যতীত।

(সূরা যুখরুফ- ৬৭)

﴿إِنَّ الْمُتَّقِيْنَ فِيْ جَنَّاتٍ وَّعُيُوْنٍ اُدْخُلُوْهَا بِسَلَامٍ اٰمِنِيْنَ وَنَزَعْنَا مَا فِي صُدُوْرِهِمْ مِّنْ غِلٍّ إِخْوَانًا عَلٰى سُرُرٍ مُّتَقَابِلِيْنَ﴾

মুত্তাক্বীরা থাকবে প্রস্রবণ-বহুল জান্নাতে। তাদেরকে বলা হবে, তোমরা শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে তাতে প্রবেশ করো। আমি তাদের অন্তর থেকে সকল প্রকার হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে দেব। তারা পরস্পর ভাই ভাই হিসেবে বসবাস করবে। তারা উঁচু উঁচু আসনে হেলান দিয়ে বসবে। (সূরা হিজর: ৪৫-৪৭)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন